Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

দাজ্জাল কে? দাজ্জালের পরিচয়

দাজ্জাল কে? দাজ্জালের পরিচয়

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে দাজ্জাল কে বা দাজ্জালের পরিচয় কি।

দাজ্জালের পরিচয়

রাসুল স. দাজ্জালের ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক করেছেন, যেমন পূর্বের নবীগণ তাদের উম্মতদেরকে সতর্ক করেছিলেন। রাসুল স. দাজ্জালের পরিচয় তার উম্মতের সামনে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন, যেন আমরা দাজ্জালকে চিনতে পারি এবং তার মোকাবিলা করতে পারি।

আবু উমামা আল বাহিলী রা. হতে বর্ণিত লম্বা হাদিসে দাজ্জালের পরিচয় সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। হাদিসটির সনদ দুর্বল। কিন্তু সেই হাদিসের স্বপক্ষে অনেকগুলো সহিহ হাদিস রয়েছে। তাই দাজ্জালের পরিচয়ে বর্ণিত সেই সহিহ হাদিসগুলোর আলোকে আজ আমরা আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

রাসুল স. বলেছেন,

১. হে লোকসকল!

আল্লাহ যেদিন থেকে আদম সন্তানাদি সৃষ্টি করেছেন তখন থেকে জমিনের উপর দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে ভয়ঙ্কর ফিতনা আর নেই এবং কিয়ামত পর্যন্ত হবেও না। যে ব্যক্তি পূর্ববর্তী ফিতনাসমূহ থেকে নাজাত পাবে সে দাজ্জালের ফিতনা থেকেও নাজাত পাবে। আর সে মুসলিমদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

২. নিশ্চয়ই আল্লাহ যত নবী পাঠিয়েছেন তারা প্রত্যেকেই স্বীয় উম্মতকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। আমিও তোমাদেরকে তার ব্যাপারে সাবধান করছি।
৩. আমি নবীদের মধ্যে সর্বশেষ নবী এবং তোমরা উম্মতসমূহের মধ্যে সর্বশেষ উম্মত।
৪. দাজ্জাল অবশ্যই তোমাদের মাঝে প্রকাশ পাবে।

এটা অবশ্যই সত্য এবং তা অতি নিকটেই। আর যা কিছুই ঘটবে তা অতি নিকটে। দাজ্জাল সর্বপ্রথম ক্রোধের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করবে। সে বের হবে না যতক্ষণ না অবস্থা এরূপ হয় যে, মীরাস বন্টন করা হবে না এবং গণীমত পেয়ে কোন আনন্দ প্রকাশ করা হবে না।

৫. আমি তোমাদের মাঝে বর্তমান থাকাবস্থায় যদি সে বের হয়,

তাহলে আমি প্রত্যেক মুসলিমের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করব আর দাজ্জালকে দোষারোপ করব। আর যদি সে আমার পরে বের হয়, তাহলে প্রত্যেককে নিজের পক্ষে দলিল পেশ করতে হবে। তখন মহান আল্লাহ প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আমার খলিফা স্বরূপ হবেন।

৬. নিশ্চয়ই দাজ্জাল বের হবে পূর্ব দেশ থেকে যাকে খুরাসান বলা হয়।

আসবাহানের ইয়াহুদিদের মাঝে তাদের চেহারা হবে ভাঁজযুক্ত। দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করবে সিরিয়া ও ইরাকের খাল্লা নামক স্থান হতে। আর সে তার ডান ও বামে সর্বত্র বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা ঈমানের উপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকবে। এই কথা তিনি তিনবার বললেন।

৭. কেননা আমি তোমাদের কাছে তার এমন অবস্থা বর্ণনা করব, যা আমার পূর্বে কোন নবী স্বীয় উম্মতের কাছে বর্ণনা করেননি।

উবাদার হাদিসে রয়েছে, আমি তোমাদের কাছে দাজ্জাল সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণনা করেছি; এতদসত্ত্বেও আমার ভয় হয়, তোমরা তাকে চিনতে পারবে না।

৮. প্রথমে সে বলবে, আমি নবী এবং আমার পরে আর কোন নবী নেই।
৯. অতঃপর সে দাবী করে বলবে, আমি তোমাদের রব্ব। অথচ তোমরা তোমাদের রব্বকে মৃত্যুর পূর্বে দেখবে না।
১০. আর সে হবে কানা।

তার বাম চোখ হবে মিশানো। যার উপর মোটা চামড়ায় ঢাকা হবে। তা যেন উজ্জল নক্ষত্র; তার ডান চোখ যেন জ্যোতিহীন, আঙ্গুর সদৃশ গোল। যা উপরে উঠে থাকবে না এবং নীচে থাকবে না; সে কুকড়ানো চুলবিশিষ্ট হবে। সাবধান! (দাজ্জালের বিষয় তোমাদের কাছে গোপন নয়; আর তোমাদের কাছে গোপন নয় যে, তোমাদের রব্ব কানা নন। তিনবার বললেন। তোমরা মৃত্যুর আগে তোমাদের রব্বকে দেখবে না।

১১. সে পৃথিবীতে বিচরণ করবে। আর আকাশ ও জমিন তো আল্লাহরই।
১২. সে হবে বেঁটে, তার পদক্ষেপ হবে দীর্ঘ, মাথার চুল হবে কুঞ্চিত, সে হবে খুঁতযুক্ত।
১৩. সে হবে কোঁকড়ানো চুল বিশিষ্ট লোক।
১৪. তার দুই চোখের মাঝে কপালে লেখা থাকবে কাফির।

এই লেখা পড়তে পারবে যারা তার কার্যকলাপ অপসন্দ করবে; অথবা প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তিই পড়তে পারবে, চাই সে অক্ষর হোক বা নিরক্ষর।

১৫. তার অন্যতম ফিতনা হলো,তার সাথে থাকবে জান্নাত ও জাহান্নাম [নদী ও পানি] এবং রুটির পাহাড়।

সে আত্মপ্রকাশ করবে সাথে জান্নাত ও জাহান্নাম সদৃশ বস্তু নিয়ে। তার জাহান্নাম হলো জান্নাত আর জান্নাত হলো জাহান্নাম। মুগীরাহ ইবনে শুবাহকে দাজ্জাল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি বললাম লোকেরা বলাবলি করছে যে,তার সাথে নাকি রুটি ও গোশতের পাহাড় এবং পানির নহর থাকবে? তিনি বলেন আল্লাহর পক্ষে তো তা এর চাইতে অধিক সহজ। আরেক হাদিসে এসেছে, দাজ্জালের সাথে থাকবে দুটি প্রবাহিত নহর। তার একটি বাহ্যিক চোখে দেখা যাবে সাদা পানি আর দ্বিতীয়টি বাহ্যিক চোখে দেখা যাবে জ্বলন্ত আগুন।

তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ঐ যুগ পাবে তার উচিত হবে সে যেন সেটা থেকেই পান করে যেটাকে আগুন মনে করবে এবং চক্ষু বন্ধ করবে; অতঃপর মাথা নত করে পান করবে। কেননা তা হবে প্রকৃতপক্ষে পানি, শীতল মিঠা পানি, উত্তম পানি; কাজেই সাবধান তোমরা ধোকায় পড়ে নিজেদের ধ্বংস কর না। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, যে ব্যক্তি তার জান্নাতে প্রবেশ করবে তার সওয়াব বিনষ্ট হবে এবং পাপ সাব্যস্ত হবে; আর যে ব্যক্তি তার জাহান্নামে প্রবেশ করবে তার জন্য সওয়াব সাব্যস্ত হবে এবং পাপ মোচন হবে।

১৬. যে ব্যক্তি তার আগুনের দ্বারা পরিক্ষিত হবে, সে যেন আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে

এবং সূরা কাহাফ এর প্রথমাংশ তিলাওয়াত করে। কেননা তা পাঠ করলে তোমরা তার ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকবে।

Share the Post

Rate the Post

Rating Summary

0.0
0.0 out of 5 stars (based on 0 reviews)
Excellent0%
Very good0%
Average0%
Poor0%
Terrible0%

Latest Reviews

There are no reviews yet. Be the first one to write one.

Latest Post