বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) কর্তৃক প্রকাশিত তাফসীরে ইবনে আব্বাস এর pdf ফাইল ডাউনলোড করতে নিচে নামের উপর ক্লিক করুন।
তাফসীরে ইবন আব্বাস ইসলামিক ফাউন্ডেশন pdf
ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত তাফসীরে ইবন আব্বাস এর pdf ফাইল ডাউনলোড করতে নিচে নামের উপর ক্লিক করুন।
হযরত ইবনে আব্বাস (রা) ছিলেন রাসূল (সাঃ)-এর একজন বিখ্যাত সাহাবী। তিনি মহানবী সাঃ -এর চাচা; হযরত আব্বাস (রা)-এর ছেলে; তিনি রাসূল সাঃ-এর প্রিয় পাত্র ছিলেন; পরিণত বয়সে তিনি মুসলিম সমাজে প্রথম কাতারের ইসলামী ব্যক্তিত্ব ছিলেন; পবিত্র আল-কুরআনের ব্যাখ্যায় তিনি ছিলেন শীর্ষস্থানীয় মুফাসসির; প্রবীণ সাহাবাগণও কুরআনের শব্দ ও বিষয়ের ব্যাখ্যায় তার মতামত নিতেন; পরবর্তী যুগে যত মুফাসসির তাফসীর গ্রন্থ রচনা করেছেন; প্রায় সকলেই তাফসীরের মূল সূত্র হিসেবে হযরত ইবনে আব্বাস (রা)-কে উল্লেখ করেছেন। শুধুমাত্র তার সূত্রের উপর ভিত্তি করে পবিত্র আল-কুরআনের একটি তাফসীর গ্রন্থ সংকলিত হয়েছে; যা তাফসীরে ইবনে আব্বাস নামে পরিচিত।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) এর উপাধি আল-হিবর (বা হিবরুল উম্মাহ)। অর্থাৎ মহাজ্ঞানী বা আল-বাহর অর্থাৎ সাগর। কারণ তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট ফকীহ ও মুফাসসির। ইনি আবদুল্লাহ নামক পাঁচজন বিশিষ্ট সাহাবীর অন্যতম। তিনি হযরত মুহাম্মদ সাঃ -এর পিতৃব্য-পুত্র ছিলেন। উম্মুল মু’মিনীন মায়মুনা (রা) তার আপন খালা ছিলেন। প্রথম যুগের মুসলিমদের মধ্যে তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী বলা না গেলেও নিঃসন্দেহে অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম ও ইসলাম ধর্ম বিশারদ বলে মনে করা হত। কুরআন করীমের তাফসীরের ক্ষেত্রে তার অসাধারণ প্রজ্ঞা, দক্ষতা ও অন্তর্দৃষ্টির দরুন তাকে রঈসুল মুফাসসিরীন অর্থাৎ তাফসিরকারদের প্রধান বলে অভিহিত করা হত। তিনি এমন এক সময়ে কুরআন কারীমের ব্যাখ্যা দানে আত্মনিয়োগ করেন, যখন মুসলিম সমাজে যুগ-জিজ্ঞাসার প্রেক্ষিতে কুরআন করীমের সঠিক ব্যাখ্যা প্রদানের তীব্র প্রয়োজনীয়তা দেখা গিয়েছিল। তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও যােগ্যতা সহকারেই এই বিরাট দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
বাল্যকাল হতেই তার মধ্যে অভ্রান্ত জ্ঞান সাধনা ও গবেষণার প্রেরণা পরিলক্ষিত হয়। অতি শীঘ্র তাঁর মনে এই ধারণা জন্ম লাভ করে যে, সাহাবীগণের নিকট জিজ্ঞাসাবাদ করে হযরত মুহাম্মদ সাঃ -এর সম্পর্কে জ্ঞান সঞ্চয় করা উচিত। অল্প বয়সেই তিনি শিক্ষকের মর্যাদা লাভ করেন। এবং, জ্ঞান-পিপাসু শিক্ষার্থীরা তার চতুম্পাশে একত্রিত হতে থাকে। কেবল স্মৃতি শক্তিই তার জ্ঞান-গরিমার ভিত্তি ছিল না। বরং, তাঁর নিকট বিভিন্ন বিষয়ের লিখিত সংকলনের এক বিরাট সম্ভার ও মজুদ ছিল। নির্দিষ্ট সময়সূচী অনুসারে সপ্তাহের বিভিন্ন দিন বিভিন্ন বিষয়ে বক্তৃতাও দান করতেন।
কুরআন করীমের শব্দ ও বাক্য দ্বারা ব্যাখ্যা দান প্রসঙ্গে স্বীয় বক্তব্যের সমর্থনে প্রাচীন আরব কবিদের কাব্য হতেও উদ্ধৃতি দান তাঁর রীতি ছিল। এই রীতি অনুসরণের ফলে আলিমদের মধ্যে প্রাচীন আরবী কাব্যের গুরুত্ব স্বীকৃতি লাভ করে। তিনি যেহেতু একজন সুবিজ্ঞ ফিকহবিদ ছিলেন, সেহেতু সাধারণ লােকগণ তার নিকট হতে বিভিন্ন বিষয়ে ফাতওয়া গ্রহণ করত। বহু গুরুত্বপূর্ণ ফাতওয়া দানের জন্য তিনি অতিশয় প্রসিদ্ধি লাভ করেন। কিছু ফাতওয়ার সমর্থনে পরে তাকে প্রমাণ পেশ করতে হয়েছিল। কুরআনের মর্ম সম্পর্কে তার বক্তব্য ও ভাষণ সমূহ একত্রিত করে পরবর্তীকালে কতিপয় সংকলনও করা হয়েছে।