যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং যাকাত না দেওয়ার শাস্তি

যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য, যাকাতের গুরুত্ব, ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব, যাকাত না দেওয়ার শাস্তি, যাকাত না দেয়ার শাস্তি, যাকাত না দেয়ার শাস্তি, যাকাত না দেওয়ার শাস্তি

যাকাতের-গুরুত্ব-ও-তাৎপর্য-এবং-যাকাত-না-দেওয়ার-শাস্তি

যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং যাকাত না দেওয়ার শাস্তি

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং যাকাত না দেওয়ার শাস্তি।

যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

যাকাত ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির মধ্যে একটি। যাকাত ছাড়া দ্বীন পরিপূর্ণতা লাভ করে না। যারা যাকাত অস্বীকার করে তাদের হত্যা করা হবে। এবং যারা যাকাত ফরয অস্বীকার করে তাদের কাফের বলে গণ্য করা হবে। এই যাকাত ফরয করা হয় ২য় হিজরীতে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারিমের বহু জায়গায় ইরশাদ করেছেন—

আর তোমরা নামাজ কায়েম কর, যাকাত আদায় কর এবং রুকু কর রুকুকারীদের সঙ্গে। (সূরা বাকারা: ৪৩)

আর যাদের ধন সম্পদে রয়েছে ভিক্ষুক এবং বঞ্চিতদের জন্য নির্দিষ্ট অধিকার। (সূরা মায়ারিজ: ২৪-২৫)

এই পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে নামাজ এবং রোজার সম্পর্ক মানুষের দৈহিক পরিশ্রম ও মনের সাথে সম্পৃক্ত, পক্ষান্তরে যাকাত ও হজ্বের সম্পর্ক অর্থের সাথেও রয়েছে। বিশেষভাবে যাকাত ধনী বা ধনাঢ্য ব্যক্তির উপর ফরয হয়ে থাকে। হাদিস শরিফে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-

তাদের মধ্যে যারা ধনী তাদের থেকে গ্রহণ করা হবে। আর তাদের মধ্যে যারা দরিদ্র বা অভাবী তাদের মধ্যে বন্টন করা হবে। (বুখারী ১৪০১)

ইসলাম সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। একজনের হাতে বিপুল অর্থ-সম্পদ জমা হওয়াকে ইসলাম পছন্দ করে না। ইসলাম চায় ধনী-গরিব সবাই স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করুক। তাই দরিদ্রের প্রতি লক্ষ্য করে যাকাতের বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। হাদিসের ভান্ডারে সংরক্ষিত হয়েছে যাকাতের বিশেষ গুরুত্ব সংবলিত অনেক হাদিস ।

আব্দুল্লাহ বিন উমর রা. হতে বর্ণিত রাসূল সালালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- আমাকে মানুষের সাথে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয়- আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল আর নামাজ কায়েম করে এবং যাকাত আদায় করে। (বুখারী, মুসলিম)

জারির ইবনে আব্দুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর হাতে বায়াত গ্রহণ করি নামাজ কায়েম করা, যাকাত আদায় করা এবং প্রত্যেক মুসলমানের কল্যাণ কামনার উপর। (বুখারী, মুসলিম)

আবু সায়ীদ রা. বর্ণনা করেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে নসিহত করছিলেন। তিন বার শপথ করে তিনি বললেন, যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে, রমযানের রোযা রাখবে, যাকাত প্রদান করবে এবং সব ধরনের কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য অবশ্যই বেহেশতের দরজা খুলে দিয়ে বলবেন, তোমরা নিরাপদে তাতে প্রবেশ কর। (নাসায়ী: ২৩৯৫)

যাকাত না দেওয়ার শাস্তি

যারা যাকাত আদায় করে না তাদের ব্যাপারে কঠোর শাস্তির সংবাদ এসেছে।

আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-

যে কোনো স্বর্ণ বা রুপার মালিক যদি আপন সম্পদের যাকাত আদায় না করে, তার এ সম্পদকে আল্লাহ জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করে কিয়ামতের দিন তা দ্বারা পিঠ, পার্শ্ব এবং কপালে ছ্যাকা দিবেন। আর যখনই তা ঠাণ্ডা হবে সাথে সাথে আগুনে পুনরায় উত্তপ্ত করা হবে। এমন দিনে তাকে শাস্তি দেয়া হবে যে দিনটি হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। আর বান্দার বিচারকার্য শেষ হওয়া পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকবে। অতঃপর সে দেখতে পাবে তার গন্তব্য হয় জান্নাতের দিকে নয়তো জাহান্নামের দিকে। (মুসলিম)

আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-

আল্লাহ তাআলা যাকে সম্পদ দিয়েছেন অথচ সে তার যাকাত আদায় করে না, কিয়ামত দিবসে তার সম্পদকে দুই চোখ বিশিষ্ট বিষাক্ত সাপে পরিণত করা হবে। তারপর সাপটিকে কিয়ামতের সে দিবসে তার গলায় জড়িয়ে দেয়া হবে। সাপ তার দুই মুখে দংশন করতে করতে বলতে থাকবে, আমি তোমার বিত্ত, আমি তোমার গচ্ছিত সম্পদ। (বুখারী)

সুনানে নাসায়ীতে বর্ণিত, রাসূলুলাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-

যে ব্যক্তি যাকাত আদায় করে না সে কিয়ামতের দিন একটি অগ্নিশিখা নিয়ে আসবে যা দ্বারা তার কপালে ও পিঠে দাগ দেয়া হবে।

বুরাইদা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-

যে সম্প্রদায় যাকাত প্রদান করবে না আল্লাহ তাদেরকে দুর্ভিক্ষের মতো বিপদে নিপতিত করবেন। (বাইহাকী)

যাকাত গরিবের প্রতি কোন করুণা নয় বরং তার হক; যা ধনী ব্যক্তিকে অবশ্যই আদায় করতে হবে। এ কারণে আবু বকর রা. বলেছেন, যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম- এর যুগে একটি উটের রশিও যাকাত হিসেবে আদায় করত আর এখন তারা যদি যাকাত দিতে অস্বীকার করে আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম। (বুখারী: ১৩১২)

তার এ ভাষণের মর্মার্থই ছিল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা যাতে কেউ কাউকে তার অধিকার হতে বঞ্চিত করতে না পারে।

যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং যাকাত না দেওয়ার শাস্তি

যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য, যাকাতের গুরুত্ব, ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব, যাকাত না দেওয়ার শাস্তি, যাকাত না দেয়ার শাস্তি, যাকাত না দেয়ার শাস্তি, যাকাত না দেওয়ার শাস্তি

যাকাত শব্দের অর্থ কি এবং যাকাত কাকে বলে?

যাকাত কেন জরুরী ? – ইসলামিক রিলিফ ইউএসএ

ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব – Ekushey Television