দাজ্জালের ফিতনার চেয়েও ভয়ঙ্কর ফিতনা কোনটি?

দাজ্জালের-ফিতনার-চেয়েও-ভয়ঙ্কর-ফিতনা-কোনটি

দাজ্জালের ফিতনার চেয়েও ভয়ঙ্কর ফিতনা কোনটি?

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; আজকে আমরা আলোচনা করব এমন একটি বিষয় নিয়ে যেটি দাজ্জালের ফিতনার চেয়েও ভয়ঙ্কর ফিতনা; যেই সম্পর্কে রাসুল সঃ আমাদেরকে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন।

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয়ের সংবাদ দিব না, যে বিষয়টি আমার কাছে মাসীহ দাজ্জালের চাইতেও ভয়ঙ্কর? সাহাবীগণ বললেন : হ্যাঁ; তিনি বললেন : তা হচ্ছে গোপন শিরক; (এর উদাহরণ হলো) একজন মানুষ দাঁড়িয়ে শুধু এ জন্যই তার সালাতকে খুব সুন্দরভাবে আদায় করে যে, কোন মানুষ তার সালাত দেখছে।

ইবনু মাজাহ হাদিস নং ৪২০৪।

দাজ্জাল যেমন খুব সহজে মানুষকে ফিতনায় পতিত করবে তার চেয়েও বেশি সহজে মানুষ গোপন শিরকের ফিতনায় পতিত হয়ে যায়।

দাজ্জালের ফিতনায় পতিত হয়ে ঈমান রক্ষা করা যেমন খুবই কঠিন হবে গোপন শিরকের ফিতনা থেকে বাঁচা; অর্থাৎ ঈমান রক্ষা করা তার চেয়েও বেশি কঠিন।

দাজ্জালের ফিতনায় পতিত হয়ে যেমন খুব সহজে মানুষ ঈমান হারা হবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে, ধ্বংস হবে অর্থাৎ জাহান্নামের দিকে ধেয়ে যাবে তেমন গোপন শিরকের কারনে মানুষ তার চেয়েও বেশি সহজে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অর্থাৎ জাহান্নামের দিকে ধেয়ে যাবে।

রাসুল সঃ বলেছেন, আল্লাহ যেদিন থেকে আদম সন্তানাদি সৃষ্টি করেছেন তখন থেকে জমীনের উপর দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে ভয়ঙ্কর ফিতনা আর নেই এবং কিয়ামত পর্যন্ত হবেও না; আবার আগের হাদিসে তিনি সঃ বলছেন যে, গোপন শিরক দাজ্জালের চেয়েও ভয়ঙ্কর; আসলে দাজ্জালের ফিতনা তো আসবে দাজ্জালের পক্ষ থেকে কিন্তু গোপন শিরক মানুষের নিজের অন্তরে সৃষ্টি হয়; দাজ্জাল ও গোপন শিরকের মাঝে পার্থক্য এটাই; যে ফিতনা অন্যের থেকে আসে বা বাইরে থেকে আসে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ফিতনা হলো দাজ্জালের ফিতনা আর গোপন শিরক যেটা নিজের মধ্যেই সৃষ্টি হয় সেটা দাজ্জালের ফিতনা থেকেও ভয়ঙ্কর।

আমরা হাদিস থেকে জানতে পারি দাজ্জালের ফিতনা এতো এতো এতো বেশি ভয়ঙ্কর তাহলে গোপন শিরক কতো ভয়ঙ্কর হতে পারে।

গোপন শিরকের একটি উদাহরন রাসুল সঃ উক্ত হাদিসে দিয়েছেন আর তা হলো একজন মানুষ দাঁড়িয়ে শুধু এ জন্যই তার সালাতকে খুব সুন্দরভাবে আদায় করে যে, কোন মানুষ তার সালাত দেখছে। শুধু সালাতের ক্ষেত্রেই নয় বরং যেকোন ইবাদাত যদি কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য ছাড়া অন্যের জন্য করে তা যদি ইবাদাতের সামান্য অংশও হয় তবুও এমনকি ইবাদাতের সেীন্দর্য্যও যদি অন্য কারও জন্য হয় আর যদি তা বাইরে থেকে বুঝা না যায় তাহলে তা গোপন শিরক; আর যদি তা বাইরে থেকে বুঝা যায় তবে তা শিরক; উক্ত হাদিসে রাসুল সঃ আমাদেরকে গোপন শিরক থেকে সাবধান করেছেন যেমন সাবধান করেছেন দাজ্জাল থেকে বরং তার চেয়েও বেশি।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিষয়গুলো সঠিকভাবে বুঝার ও গোপন শিরক থেকে বেচে থাকার তাওফীক দান করুক। আল্লাহুম্মা আমীন।

youtube video