জুমার দিনের ফজিলত. জুম্মার নামাজের ফজিলত ও ইতিহাস

জুমার দিনের ফজিলত, জুমার নামাজের ফজিলত, জুমার নামাজের ইতিহাস, জুমার ফজিলত, জুমার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস, জুম্মার দিনের ফজিলত, জুম্মার নামাজের ফজিলত, জুম্মার ফজিলত

জুমার-দিনের-ফজিলত.-জুম্মার-নামাজের-ফজিলত-ও-ইতিহাস

জুমার দিনের ফজিলত. জুম্মার নামাজের ফজিলত ও ইতিহাস

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে জুমার দিনের ফজিলত, জুম্মার নামাজের ফজিলত ও জুমার নামাজের ইতিহাস।

জুমার দিনের ফজিলত

১. জুমার দিন সর্বোত্তম দিন:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দিনকে সর্বোত্তম দিন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে  বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

সূর্য উদয় হয়েছে এমন দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম দিন জুমার দিন। এ দিন আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এ দিনে তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়। আর কিয়ামত জুমু’আর দিনেই সংঘটিত হবে।

মুসলিম, হাদিস: ৮৫৪, ১৮; তিরমিজি, হাদিস: ৪৮৮; নাসায়ী, হাদিস: ৮৯/৩

২. এ দিনটির মধ্যে জুমার সালাত রয়েছে:

যা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং মুসলিমদের মহান মিলন মেলা। যে ব্যক্তি কোন কারণ ছাড়া জুমার সালাত ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তা’আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেবে।

মুসলিম, হাদিস নং ৮৬৫

৩. এ দিনটি দুআ কবুল হওয়ার দিন:

জুমু’আর দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে মুহূর্তে দুআ করলে, আল্লাহ তাআলা দু’আ কবুল করেন। তবে মুহূর্তটি অজ্ঞাত রাখা হয়েছে, যাতে মানুষ পুরাে জুমু’আর দিনটিকে গুরুত্ব দেয় এবং মুহূর্তটি অনুসন্ধান করতে থাকে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

জুম’আর দিন এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যদি কোন মুসলিম বান্দা ঐ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় রত অবস্থায় আল্লাহর নিকট কোন কিছু প্রার্থনা করেন আল্লাহ তা’আলা তাকে তা অবশ্যই দেবেন।

বুখারি, হাদিস: ৯৩৫ মুসলিম, হাদিস: ৮৫২

আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রহ. জুমার দিন দুআ কবুলের সময় এর ব্যাপারে আলেমদের বিভিন্ন মতামত তুলে ধরার পর বলেন, সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মতামত হল, দুটি মত যে দুটি মতামত হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত ও প্রমাণিত।

১- ইমাম মিম্বারে বসা থেকে নিয়ে সালাত শেষ করা পর্যন্ত মুহূর্তটি। কারণ, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

ইমাম মিম্বারে বসা থেকে নিয়ে সালাত শেষ করা পর্যন্ত।

মুসলিম, হাদিস: ৮৫৩; সহীহ ইবনে খুজাইমা, ১৭৩৯; বাইহাকী, হাদিস: ৫৯৯৯

২- মুহুর্তটি হল, জুমার দিন আসরের সালাত আদায়ের পর। এটি উল্লিখিত দুটি মতের মধ্যে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মতামত।

যাদুল মা’আদ: ৩৯০, ৩৮৯/১

৪. সদকা করার জন্য উত্তম দিন:

জুম’আর দিন সদকা করা অন্যান্য দিনের তুলনায় অধিক উত্তম। আল্লামা ইবনুল কাইয়ুম রহ. বলেন, সপ্তাহের অন্যান্য দিনে সদকা করার তুলনায় এ দিনে সদকা করা এমন উত্তম যেমন বছরের অন্যান্য মাসের সদকার তুলনায় রমজান মাসে সদকা করা উত্তম। কাআব বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বিশুদ্ধ সনদে মওকুফ হাদিস যা মারফু হাদিস বলে বিবেচিত এমন একটি হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন,

জুমার দিন সদকা করা অন্যান্য দিন সদকা করার তুলনায় অধিক সওয়াব ও গুরুত্বপূর্ণ।

মুসলিম

৫. জান্নাতীদের আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের দিন:

জুমু’আ এমন একটি দিন, যে দিন আল্লাহ তা’আলা জান্নাতে মুমিন বন্ধুদের সাথে সাক্ষাত করবেন। আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ তা’আলা প্রতি জুমার দিন জান্নাতীদের জন্য প্রকাশ্যে আসবেন। 

৬. জুমার দিন মুসলিমদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন:

জুমার দিন মুসলিমদের জন্য সাপ্তাহিক ঈদের দিন। আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

এটি ঈদের দিন আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। যে ব্যক্তি জুমার সালাতে উপস্থিত হয় সে যেন ওজু করে উপস্থিত হয়।

ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১০৯৮; সহীহ আত-তারগীব: ২৯৮/১; আলবানী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।

৭. গুনাহ মাফের দিন:

এ দিন আল্লাহ তা’আলা বান্দার গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেন। সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, যথাসাধ্য পবিত্রতা অর্জন করল, তেল লাগালাে এবং ঘর থেকে আতর খুশবু লাগিয়ে ঘর থেকে বের হল, দুই ব্যক্তির মাঝে ফাঁক করে সামনে গেল না, অতঃপর তার তাকদীরে যত সালাত পড়া নির্ধারিত ছিল তা আদায় করল এবং ইমামের খুতবার সময় সে চুপ থাকল, তাহলে তার এ জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত সংঘটিত গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। 

বুখারি, হাদিস: ৯১০, ৮৮৩

৮. এক বছর কিয়ামুল লাইল ও এক বছর রোজা রাখার সওয়াব:

জুমার দিন পায়ে হেঁটে জুমার সালাতে উপস্থিত হওয়া এক বছর রোজা রাখা ও এক বছর কিয়ামুল লাইল করার সমপরিমাণ সওয়াব সমতুল্য।

আউস ইবনে আউস আস-সাকাফী রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,

যে ব্যক্তি জুমু’আর দিন নিজে গােসল করল, অপরকে উদ্বুদ্ধ করল, সকাল সকাল মসজিদে গমন করল, অপরকে উৎসাহ দিল এবং আরোহণ না করে পায়ে হেঁটে মসজিদে এসে ইমামের কাছাকাছি বসল, কোন অনর্থক কর্ম করল না, সে প্রতিটি কদমে এক বছর রোজা রাখা এবং এক বছর কিয়ামুল লাইল করার সওয়াব পাবে।

আহমদ, হাদিস: ১৬১৭৩

৯. এ দিন জাহান্নামকে প্রজ্বলিত করা বন্ধ থাকে:

সপ্তাহের প্রতি দিন জাহান্নামকে উত্তপ্ত করা হয়, কেবল জুমার দিন ছাড়া। জুমার দিনের সম্মানে এ দিনে জাহান্নামকে প্রজ্বলিত করা ও উত্তপ্ত করাকে বন্ধ করে রাখা হয়। 

যাদুল মা’আদ: ৩৮৭/১

১০. জুমার দিন বা জুমার রাতে মৃত্যু বরণ করা শুভ লক্ষণ:

জুমার দিন বা জুমার রাতে মৃত্যু বরণ করা, উত্তম পরিণতির লক্ষণ। কারণ, জুমার দিন বা জুমার রাত্রিতে যে ব্যক্তি মারা যায় সে ব্যক্তি কবরের আযাব ও মুনকার নাকিরের প্রশ্ন হতে বেঁচে যায়। আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

যে কোন মুসলিম জুমার দিন বা জুমার রাতে মারা গেল আল্লাহ তা’আলা তাকে অবশ্যই কবরের আযাব থেকে রেহাই দেবেন।

আহমদ ৬৫৮২; তিরমিযি, হাদিস: ১০৭৪ আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।

জুমার নামাজের ফজিলত

১. গুনাহ মাফ হয়:

জুমার দিন জুমার সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে ভালোভাবে অজু করে মসজিদে গমন করলে আল্লাহ তা’আলা গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেন। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

যে ব্যক্তি সুন্দর করে ওযু করল, অতঃপর জুমু’আর সালাতে উপস্থিত হয়ে মনোযোগ দিয়ে জুমার খুতবা শুনল এবং চুপ থাকলাে, তার জন্য এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত মধ্যবর্তী গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হয় এবং আরও অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি পাথর স্পর্শ করল সে অনর্থক কর্ম করল। 

মুসলিম, হাদিস: ৮৫৭, ২৭; আবু দাউদ, হাদিস: ১০৫০ তিরমিজি, হাদিস: ৪৯৮ ইবনে মাযা, হাদিস: ১০২৫, ১০৯০।

২. জুমার সালাত কবিরা গুনাহ ছাড়া অন্যান্য গুনাহের জন্য কাফফারা:

আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, জুমু’আ এবং রমজানের মধ্যবর্তী সময়ে যে সব গুনাহ হয়ে থাকে, পরবর্তী সালাত, জুমু’আ ও রমাদান সে সব মধ্যবর্তী গুনাহসমূহের জন্য কাফফারা। যদি কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে।

মুসলিম, হাদিস: ২৩৩

অপর একটি হাদিস- আবু আইয়ুব আল আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি- তিনি বলেন,

যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে, আতর-খুশবু লাগায়, যদি তার কাছে থাকে এবং সুন্দর জামা-কাপড় পরে, মসজিদে এসে সালাত আদায় করে এবং কাউকে সে কষ্ট না দেয়, তারপর সে জুমু’আর সালাত আদায় করা পর্যন্ত চুপ থাকে, তাহলে তা তার এ জুমু’আ থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত সংঘটিত গুনাহ সমূহের কাফফারা হবে। 

আহমদ, হাদিস: ২৩৫৭১; ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ১৭৬২

৩. আরও অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করা হবে:

আবু মালিক আল-আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

জুমার সালাত তার পরবর্তী জুমা পর্যন্ত মধ্যবর্তী গুনাহসমূহের এবং আরও অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহের জন্য কাফফারা। কারণ, আল্লাহ তা’আলা বলেন, যে কোন নেক আমল করে আল্লাহ তা’আলা তার সাওয়াবকে দশ গুণ বাড়িয়ে দেন।

সহীহ আত-তারগীব, হাদিস: ৬৮২

৪. জুমার সালাত জান্নাত লাভের বিশেষ আমল:

জুমার সালাত আদায় দ্বারা জান্নাত লাভ করা যায়। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন,

যে ব্যক্তি কোন দিন পাঁচটি আমল করবে, আল্লাহ তা’আলা তার নাম জান্নাতীদের খাতায় লিপিবদ্ধ করবেন: রোগী দেখতে যাবে, কারো জানাযায় উপস্থিত হবে, রোজা রাখবে, জুমার সালাতে গমন করবে এবং দাস মুক্ত করবে। 

সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস: ২৭৭১; সহীহ আত-তারগীব, হাদিস: ৬৮৩

৫. প্রতিটি কদমে কদমে এক বছর রোজা রাখা ও কিয়ামুল লাইল করার সওয়াব:

পায়ে হেঁটে জুমার সালাতে গমন করলে, প্রতি কদমে এক বছর রোজা রাখা এবং এক বছর কিয়ামুল লাইল করার সওয়াব পাবে। আউস ইবনে আউস আস-সাকাফী রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি,

যে জুমার দিন গোসল করাল ও করল, সকাল সকাল নিজে মসজিদে গমন করল, অপরকে উৎসাহ দিল এবং আরোহণ না করে পায়ে হেঁটে মসজিদে এসে ইমামের কাছাকাছি বসল, অতঃপর শুনল এবং কোন অনর্থক কর্ম করল না, সে প্রতিটি কদমে এক বছর রোজা রাখা এবং এক বছর কিয়ামুল লাইল করার সওয়াব পাবে।

আহমদ, হাদিস: ১৬১৭৬; আবু দাউদ, হাদিস: ৩৪৫; তিরমিজি, হাদিস: ৪৯৬

৬. জন্তু কুরবানি করার সওয়াব:

জুমার দিন যে ব্যক্তি যত আগে জুমার সালাতে আসবে, সে তত বেশি সওয়াব লাভ করবে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

যে ব্যক্তি জুমার দিন ফরজ গোসলের মত গোসল করে, তারপর প্রথম সময়ে মসজিদে গমন করে, সে যেন আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি উট কুরবানী করল। তারপর যে লোকটি মসজিদে গমন করল, সে যেন আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি গরু কুরবানি করল। তারপর যে লোকটি মসজিদে গমন করল, সে যেন আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি ভেড়া কুরবানি করল। তারপর যে লোকটি মসজিদে গমন করল, সে যেন আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি মুরগী আল্লাহর রাস্তায় দান করল। তারপর যে লোকটি মসজিদে গমন করল, সে যেন আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি ডিম আল্লাহর রাস্তায় দান করল। অত:পর যখন ইমাম উপস্থিত হয়, তখন ফেরেশতারাও উপস্থিত হয় এবং তার খুতবা শ্রবণ করে।

বুখারী হাদিস নং ৮৮১

জুমার নামাজের ইতিহাস

১ম হিজরীতে জুম’আ ফরয হয় এবং হিজরতকালে কাবা ও মদিনার মধ্যবর্তী বনু সালেম বিন আওফ গোত্রের ‘রানূনা উপত্যকায় সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জুম’আর সালাত আদায় করেন।

মিরআত ২/২৮৮; ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ২/২১১।

যাতে একশত মুছল্লী শরিক ছিলেন।

ইবনু মাজাহ হা/১০৮২; সীরাতে ইবনে হিশাম ১/৪৯৪; যা-দুল মাআদ ১/৯৮।

তবে হিজরতের পূর্বে মদীনায় আনসারগণ আপোষে পরামর্শক্রমে ইহুদী ও নাসারাদের সাপ্তাহিক ইবাদতের দিনের বিপরীতে নিজেদের জন্য একটি ইবাদতের দিন ধার্য করেন ও সেমতে আসআদ বিন যুরারাহ (রাঃ)-এর নেতৃত্বে মদিনার বনু বায়াযাহ গোত্রের নাক্বী’উল খাযেমাত নামক স্থানের সমতল ভূমিতে সর্বপ্রথম জুমার সালাত চালু হয়। যেখানে চল্লিশ জন মুসল্লি যোগদান করেন। 

ইবনু মাজাহ হা/১০৮২; আবু দাউদ হা/১০৬৯ সনদ হাসান।

অতঃপর হিজরতের পর জুম’আ ফরয করা হয়।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, জুমআর এই দিনটি প্রথমে ইয়াহুদ-নাসারাদের উপর ফরয করা হয়েছিল; কিন্তু তারা এ বিষয়ে মতভেদ করে; তখন আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই দিনের প্রতি (ওহীর মাধ্যমে) হেদায়েত দান করেন; এক্ষণে সকল মানুষ আমাদের পশ্চাদানুসারী; ইহুদীরা পরের দিন (শনিবার) এবং নাছারারা তার পরের দিন (রবিবার)। 

মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৩৫৪ ‘জুম‘আ’ অনুচ্ছেদ-৪২।

যেহেতু আল্লাহ শনিবারে কিছু সৃষ্টি করেননি এবং আরশে স্বীয় আসনে সমাসীন হন, সেহেতু ইহুদীরা এদিনকে তাদের সাপ্তাহিক ইবাদতের দিন হিসেবে বেছে নেয়। যেহেতু আল্লাহ রবিবারে সৃষ্টির সূচনা করেন, সেহেতু নাছারাগণ এ দিনটিকে পসন্দ করে। এভাবে তারা আল্লাহর নির্দেশের উপর নিজেদের যুক্তিকে অগ্রাধিকার দেয়। পক্ষান্তরে জুম’আর দিনে সকল সৃষ্টিকর্ম সম্পন্ন হয় এবং সর্বশেষ সৃষ্টি হিসাবে আদমকে পয়দা করা হয়। তাই এ দিনটি হল সকল দিনের সেরা। এই দিনটি মুসলিম উম্মাহর সাপ্তাহিক ইবাদতের দিন হিসেবে নির্ধারিত হওয়ায় বিগত সকল উম্মতের উপর তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়। 

মিরআত ৪/৪১৯-২১ পৃ; ইবনে কাসীর, তাফসীর সূরা আরাফ ৫৪। 

কা’ব বিন মালেক (রাঃ) অন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আযানের আওয়াজ শুনে বিগলিত হৃদয়ে বলতেন, আল্লাহ রহম করুন আসআদ বিন যুরারাহর উপর, সেই-ই প্রথম আমাদের নিয়ে জুমার সালাত কায়েম করে রাসূল (ছাঃ)-এর মক্কা থেকে আগমনের পূর্বে। 

ইবনু মাজাহ হা/১০৮২ সালাতে দাঁড়ানো অধ্যায়-৫, জুম’আ ফরয হওয়া’ অনুচ্ছেদ-৭৮।

জুমার দিনের ফজিলত. জুম্মার নামাজের ফজিলত ও ইতিহাস

জুমার দিনের ফজিলত, জুমার নামাজের ফজিলত, জুমার নামাজের ইতিহাস, জুমার ফজিলত, জুমার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস, জুমার দিনের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস, জুমার দিনের ফজিলতের হাদিস, জুম্মার দিনের ফজিলত, জুম্মার নামাজের ফজিলত, জুম্মার ফজিলত

জুম্মার দিনের ফজিলত বর্ণিত হয়েছে যে ৪ হাদিসে – Dhaka Post

জুমার দিনের ফজিলত ও বিশেষ আমল

জুমার দিনের ফজিলত ও বিশেষ আমল

জুম্মার নামাজের ফজিলত – Somoy Tv

জুমার নামাজ – উইকিপিডিয়া

জুমার নামাজের নিয়ত ও জুম্মার নামাজের নিয়ম

জুম্মার নামাজ কত রাকাত? জুম্মার নামাজ ফরজ না ওয়াজিব?

জুমার দিনের ১১ টি আমল. জুম্মার দিনের শ্রেষ্ঠ আমল

জুমার দিনের ফজিলত. জুম্মার নামাজের ফজিলত ও ইতিহাস