তারাবির নামাজ কত রাকাত সহীহ হাদিস. Tarabi Namaz koto Rakat

তারাবির নামাজ কত রাকাত, তারাবির নামাজ ৮ রাকাতের দলিল, তারাবির নামাজ কত রাকাত এবং কিভাবে পড়বেন, তারাবি নামাজ কত রাকাত, তারাবির নামাজ কত রাকাত সহীহ হাদিস, তারাবির নামাজ কয় রাকাত, তারাবির নামাজ সর্বনিম্ন কত রাকাত পড়া যায়, তারাবির নামাজ 20 রাকাত না 8 রাকাত, তারাবির নামাজ কয় রাকাত পড়তে হয়, তারাবির নামাজ কি ৪ রাকাত করে পড়া যায়, তারাবীর নামাজ কত রাকাত, তারাবির নামাজ কয় রাকাত করে পড়তে হয়, tarabi namaz koto rakat, tarabi namaz koy rakat, tarabi namaz koy rakat bangla, tarabi namaj koy rakat, tarabi namaz koto rakat bangla, tarabir namaj koto rakat, how many rakats in taraweeh, taraweeh namaz rakat

তারাবির নামাজ কত রাকাত সহীহ হাদিস. Tarabi Namaz koto Rakat

তারাবির নামাজ কত রাকাত সহীহ হাদিস. Tarabi Namaz koto Rakat

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; তারাবির নামাজ কত রাকাত: আজকে তারাবি নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে সহীহ হাদিস থেকে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। যেহেতু তারাবির নামাজ কয় রাকাত এই মর্মে অনেক মতভেদ আলেমদের মাঝে দেখা যায়। আজকের আলোচনা থেকে আপনারা সহজেই তারাবীর নামাজ কত রাকাত পড়তে হবে সেই মর্মে স্পষ্ট ধারণা পাবেন ইনশাআল্লাহ।

তারাবির নামাজ ৮ রাকাতের দলিল

আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন,

তিনি একদা আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রমজানের রাতের সালাত কেমন ছিল। উত্তরে তিনি বলেন, রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রামাযান মাসে এবং রামাযানের বাইরে ১১ রাকাতের বেশি ছালাত আদায় করতেন না। তিনি প্রথমে (২+২) চার রাকাত পড়তেন। তুমি (আবু সালামা) তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করাে না। অতঃপর তিনি (২+২) চার রাকাত পড়তেন। তুমি তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করাে না। অতঃপর তিনি তিন রাকাত (বিতর) পড়তেন। 

সহীহ মুসলিম ২০১৩

হাদীছটি প্রায় সকল হাদীস গ্রন্থেই বর্ণিত হয়েছে। এর বিশুদ্ধতা সম্পর্কে আলোচনার প্রশ্নই উঠে না। কারণ ইমাম বুখারী (১৯৪-২৫৬ হিঃ) ও মুসলিম (২০৪-২৬১ হিঃ) স্ব স্ব সহীহ গ্রন্থে এটি বর্ণনা করেছেন। বিশেষ করে ইমাম বুখারী (রহঃ) হাদীছটি তারাবীর সালাত অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। তিনি রামাযান ও অন্য মাসে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাত্রির সালাত অধ্যায়েও হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও অন্য আরেকটি অধ্যায়ে ভিন্ন সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। 

উল্লেখ্য যে, ইমাম বুখারী (রহঃ) উক্ত শিরোনাম উল্লেখ করলেও ভারত উপমহাদেশের ছাপা সহীহ বুখারী থেকে তা মুছে দেওয়া হয়েছে। কারণ হল, তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ পৃথক সালাত, তারাবীহ ২০ রাকাত আর তাহাজ্জুদ ১১ রাকাত, আয়েশা (রাঃ)-এর হাদীসে তাহাজ্জুদের কথা বলা হয়েছে ইত্যাদি যে সমস্ত মিথ্যা কথা প্রচলিত আছে উক্ত শিরোনামের মাধ্যমে সেগুলো ভ্রান্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া উপমহাদেশে ছহীহ বুখারীর পাঠদান ও পাঠগ্রহণকারী লক্ষ লক্ষ শিক্ষক-ছাত্র ও ওলামায়ে কেরামের নিকট বিষয়টি যখন পরিস্কার হয়ে যাবে, তখন তাদের মনে চিরতরে বদ্ধমূল হয়ে যাবে যে, তারাবীহর ছালাত ৮ রাকআত; ২০ রাকআত নয়।

কারণ তখন ইমাম বুখারীর উপরে অন্য কোন ব্যক্তির প্রাধান্য থাকবে না। তাই এই ন্যক্কারজনক কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস করি যে, ছল-চাতুরী করে ইসলামী শরীআতকে কখনাে গােপন করা যায় না। ছহীহ বুখারী শুধু উপমহাদেশেই ছাপা হয় না; বরং বিশ্বের বহু দেশে আল্লাহ তাআলা তা ছাপানাের ব্যবস্থা রেখেছেন। তাই সিরিয়া, মিসর, কুয়েত, লেবানন, সউদী আরবসহ অন্যান্য দেশে ছহীহ বুখারী যত বার ছাপানাে হয়েছে সেখানেই উক্ত শিরােনাম বহাল রয়েছে, তা পুরাতন হােক আর নতুন হােক। আফসােস! হককে গোপন করার এই কৌশলী ব্যবসা আর কত দিন চলবে! উক্ত হাদিস থেকে স্পষ্ট ভাবে প্রমাণিত হয় যে, রামাযান মাসে হোক আর অন্য মাসে হােক রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাত্রির সালাত ১১ রাকাতের বেশি কখনাে পড়তেন না। যার মধ্যে আট রাকাত তারাবীহ বা তাহাজ্জুদ আর তিন রাকাত বিতর ।

আরো প্রমাণিত হল যে, তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ একই সালাত, ভিন্ন কোন সালাত নয়। তাই ইমাম বুখারী হাদীছটি ‘তাহাজ্জুদ’ সালাতের অধ্যায়েও বর্ণনা করেছেন। উক্ত হাদীছের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলা যায় যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাত্রির সালাত অর্থাৎ তারাবীহ ও তাহাজ্জুদের রাকাত সংখ্যার ব্যাপারে এর চেয়ে অধিক বিশুদ্ধ হাদীস পৃথিবীতে আর নেই। এছাড়া আয়েশা (রাঃ)-কে আবু সালামা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রমজান মাসের রাতের সালাত সম্পর্কেই জিজ্ঞেস করেছিলেন। আর তারই জবাবে তিনি ১১ রাকাতের কথা উল্লেখ করেন।

আরো স্পষ্ট হয় যে, হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে মা আয়েশা (রাঃ)-এর মাধ্যমে। আর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাত্রির অবস্থা সম্পর্কে অন্যদের চেয়ে তিনিই বেশি জানবেন এটাই স্বাভাবিক। অতএব দ্বীনের প্রকৃত অনুসারীদের জন্য এই একটি হাদীস ই যথেষ্ট।

জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাঃ বলেন,

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমজান মাসে আমাদের সাথে ৮ রাকআত সালাত আদায় করেছেন এবং বিতর পড়েছেন। 

সহীহ ইবনে খুযায়মাহ ১০৭০

হাদীছটি কয়েকটি সূত্রে হাসান সনদে বর্ণিত হয়েছে; আল্লামা যাহাবী (৬৭৩-৭৪৮ হিঃ) তার মীযানুল ইতিদাল গ্রন্থে হাদীসটি উল্লেখ করার পর বলেন, হাদিসটির সনদ উত্তম স্তরের অর্থাৎ হাসান; শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) বলেন, হাদিসটির সনদ হাসান; ইবনে খুযায়মার মুহাক্কিক ড. মুহাম্মাদ মুস্তাফা আল আজামী বলেন, এর সনদ হাসান; উল্লেখ্য, হাদীসটিকে কেউ কেউ ত্রুটিপূর্ণ বলতে চাইলেও তা সঠিক নয়; কারণ ইমাম যাহাবী এর সম্পর্কে হাসান বলে মন্তব্য করেছেন; তাই সাধারণত অন্যের মন্তব্যের অপেক্ষা রাখে না।

সরাসরি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে মারফু সূত্রে বর্ণিত উপরিউক্ত ছহীহ হাদীছ সমূহের মাধ্যমে অকাট্য ভাবে প্রমাণিত হল যে, তারাবীহর সালাত ৮ রাকাতের বেশি নয়।

তাই শায়খ আলবানী উক্ত দলিল সমূহ পেশ করার পর বলেন,

যা পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে তাতে আমাদের নিকট স্পষ্ট হয়েছে যে, রাত্রির সালাতের রাকাত সংখ্যা হল ১১, যা রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আমল থেকে সহীহ দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। 

সুতরাং উম্মতে মুহাম্মদীর উপর অপরিহার্য কর্তব্য হল, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই সুন্নাতকে শক্ত ভাবে হাতে দাঁতে আঁকড়ে ধরা। কারণ তিনি কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিলে সে বিষয়ে মুসলিম নর-নারীর স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়ে কিছু করার অধিকার থাকে না।

যদি কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সিদ্ধান্তের বাইরে যায় তাহলে তার পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিলে কোন মুমিন পুরুষ বা কোন মুমিন নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকে না; যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করবে সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।

সূরা আহযাব আয়াত নং ৩৬ 

অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন,

আপনার প্রতিপালকের শপথ! তারা মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার আপনার উপর অর্পণ না করবে; অতঃপর আপনার দেওয়া সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে তাদের মনে কোন দ্বিধা থাকবে না এবং সর্বান্তকরণে মেনে নেবে।

সূরা আন নিসা আয়াত নং ৬৫

এছাড়া আরো নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে যে, কোন বিষয়ে মতানৈক্য দেখা দিলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সিদ্ধান্তের দিকে ফিরে যেতে হবে। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,

হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের মধ্যে যিনি শাসক তার; তোমাদের মাঝে কোন বিষয়ে মতভেদ হলে সেটাকে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও; যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক; এটাই কল্যাণকর ও পরিণতির দিক থেকে উত্তম।

সূরা আন নিসা আয়াত নং ৫৯ 

উক্ত দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা সত্ত্বেও যদি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাতের বিরোধিতা করা হয় তাহলে ইহকালে ও পরকালে এর পরিণতি হবে অত্যন্ত মর্মান্তিক। 

মহান আল্লাহ বলেন,

অতএব যারা রাসূলের আদেশের বিরুদ্ধাচারণ করে তারা এ বিষয়ে সতর্ক হােক যে, তাদেরকে মহা বিপর্যয় পাকড়াও করবে (দুনিয়াতে) অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে।

সূরা আন নূর আয়াত নং ৬৩

মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদর্শের বিরােধী হওয়ার কারণেই আজ বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহর এই মহা বিপর্যয়। তাদের পরকাল হবে আরো ভয়াবহ। 

সাহাবীদের যুগে তারাবির নামাজ কত রাকাত ছিল

মুসলিম সমাজে প্রচার করা হয় যে, ওমর ও আলী (রাঃ) উভয়েই বিশ (২০) রাকাত তারাবি চালু করেছিলেন; এটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা; মর্যাদাশীল জান্নাতি সাহাবীগণের বিরুদ্ধে এগুলো মিথ্যা অপবাদ মাত্র; কারণ তারা কখনো রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আমলের বিপরীতে ২০ রাকাত তারাবীহ পড়েননি, নির্দেশও দেননি; নিম্নে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হলঃ

সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত,

তিনি বলেন, ওমর (রাঃ) উবাই ইবনে কা’ব ও তামীম আদ-দারী (রাঃ)-কে লােকদেরকে নিয়ে ১১ রাকাত সালাত আদায় করার নির্দেশ প্রদান করেন।

মুয়াত্তা মালেক ১/১১৫ পৃঃ, রামাযান মাসে রাত্রির সালাত’ অনুচ্ছেদ; সহীহ ইবনে খুযায়মা ৪/৬৯৮ পৃঃ; সাঈদ ইবনু মানসূর, আস-সুনান; কিয়ামুল লাইল, পৃঃ ৯১; আবু বকর আন-নিশাপুরী, আল ফাওয়ায়েদ ১/১৩৫ পৃঃ; বায়হাকী আল-মারেফা; ফির ইয়াবী ১/৭৬ পৃঃ ও ২/৭৫ পৃঃ; আলবানী, তাহক্বীক্ব মিশকাত (বৈরূত: আল-মাকতাবুল ইসলামী, ১৯৮৫/১৪০৫), ১/৪০৭ পৃঃ হা/১৩০২-এর টীকা সহ দ্রঃ; বঙ্গানুবাদ মিশকাত, ৩/১৫২ পৃঃ, হা/১২২৮ রমজানের রাতের সালাত অনুচ্ছেদ। 

উপরিউক্ত হাদীছটি অনেকগুলো হাদিস গ্রন্থে বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে তার সবগুলােই সহীহ।

আল্লামা নীমভী হানাফী (রহঃ) তাঁর আছারুস সুনান গ্রন্থে হাদিসটির সনদ সম্পর্কে বলেন, এই হাদীসের সনদ ছহীহ। 

শায়খ আলবানী বলেন, এই হাদীসের সনদ অতীব বিশুদ্ধ; কারণ সায়িব ইবনু ইয়াযীদ একজন সাহাবী, তিনি ছােটতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হজ্জ করেছেন। 

অন্যত্র তিনি বলেন, আমি বলছি, এই হাদীসের সনদ অত্যন্ত ছহীহ; কেননা এর রাবী মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফ ইমাম মালেক (রহঃ)-এর উস্তাদ; সকলের ঐকমত্যে তিনি একজন অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য রাবী; তাছাড়া ইমাম বুখারী ও মুসলিম তার হাদীস থেকে দলীল গ্রহণ করেছেন। 

উল্লেখ্য যে, মুয়াত্তার ভাষ্যকার আল্লামা যারকানী ইবনু আব্দিল বার-এর বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন যে, ইমাম মালেক ছাড়া অন্যরা কেউ ১১ রাকাতের কথা বর্ণনা করেননি; বরং সবাই ২১ রাকাত বর্ণনা করেছেন, যা মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাকে বর্ণিত হয়েছে; অবশ্য পরেই তিনি এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন; ২১ রাকাত সংক্রান্ত উক্ত বক্তব্য চরম বিভ্রান্তির; কারণ ইমাম মালেক ছাড়াও অনেকেই ১১ রাকাতের উক্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন; আবু বকর নিশাপুরী, ফিরইয়াবী, বায়হাক্বী, ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ আল-ক্বাত্বান,২৪ ইসমাঈল ইবনে উমাইয়া, উসামা ইবনে যায়েদ, মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক, ইসমাইল ইবনে জাফর প্রমুখ ওমর (রাঃ) নির্দেশিত ১১ রাকাতের হাদীস বর্ণনা করেছেন। 

আব্দুর রহমান মুবারকপুরী উক্ত বক্তব্যের বিরুদ্ধে বলেন,

আমি বলছি, ১১ রাকাত ত্রুটিপূর্ণ’ ইবনে আব্দুল বার-এর এই বক্তব্য আমার নিকট অতীব ভ্রান্তিপূর্ণ।

শায়খ আল্লামা ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (মৃঃ ১৯৯৪ খৃঃ) তার মিশকাতুল মাসাবীহ-এর জগদ্বিখ্যাত ভাষ্য ‘মিরআতুল মাফাতীহ’ গ্রন্থে উক্ত হাদীসের আলোচনায় বলেন,

ওমর (রাঃ) রমজানের রাতের সালাতের জন্য লােকদেরকে যে একত্রিত করেছিলেন এবং তিনি যে তাদেরকে বিতর সহ ১১ রাকাত করে পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, এই হাদীস তার প্রামাণ্য দলীল। এছাড়া তার যুগে সকল সাহাবা ও তাবেয়ীগণ যে তারাবীর সালাত ১১ রাকআতই পড়তেন এটা তারও সুস্পষ্ট প্রমাণ। কারণ এ হাদীছটি পূর্বে বর্ণিত আয়েশা (রাঃ)-এর হাদীসের সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যশীল এবং জাবির (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের সাথেও সামঞ্জস্যশীল।

মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ রাঃ বলেন, সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ)-কে জানানো হয়েছে যে, ওমর (রাঃ) উবাই ও তামীম আদ-দারীর মাধ্যমে লােকদের একত্রিত করেন। অতঃপর তারা উভয়ে ১১ রাক’আত ছালাত আদায় করান। 

মুহাম্মাদ ইবনু আবী শায়বা আল-কুফী, আল-মুসান্নাফ (বৈরুত: দারুল ফিকর, ১৯৮৯/১৪০৯ হিঃ), ২/২৮৪ পৃঃ, হা/৭৭২৭, রামাযান মাসে রাতের সালাত অনুচ্ছেদ।

হাদীছটি সম্পর্কে আল্লামা ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) বলেন, হাদিসটির সনদ ছহীহ।

মুহাদ্দিসগণের পক্ষ থেকে সহীহ বলে স্বীকৃত উক্ত হাদীস দ্বয়ের মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় যে, দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের ন্যায় ১১ রাকাত তারাবিহ পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। 

এক্ষণে আমরা জানব, ওমর (রাঃ)-এর যুগে কত রাকআত তারাবীহ পড়া হত।

মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রাঃ) বলেন,

আমি সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন, আমরা ওমর (রাঃ)-এর যামানায় ১১ রাকাত সালাত আদায় করতাম।

সাঈদ ইবনু মানছুর, আস-সুনান, আওনুল মাবুদ ৪/১৭৫, হা/১৩৭২-এর আলােচনা দ্রঃ।

হাদিসটির সনদ সম্পর্কে শায়খ আলবানী ও আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী (৮৪৯৯১১ হিঃ) বলেন, হাদিসটির সনদ ছহীহ পর্যায়ভুক্ত।

সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) বলেন,

আমরা ওমর (রাঃ)-এর যামানায় রামাযান মাসে ১৩। রাকাত সালাত পড়তাম।

মুহাম্মাদ ইবনু নাছর, কিয়ামুল লাইল; ফাৎহুল বারী ৪/৩১৯ পৃঃ।

উক্ত বর্ণনাতে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত সহ বর্ণিত হয়েছে; আয়েশা (রাঃ)-এর হাদীছের সাথে সামঞ্জস্য রয়েছে যেখানে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত সহ এসেছে; সেই সাথে ইমাম মালেক বর্ণিত ওমর (রাঃ)-এর নির্দেশিত ১১ রাকআতের হাদীসের সাথেও মিল রয়েছে।

তাই আল্লামা নীমভী হানাফী এ সম্পর্কে বলেন,

ইমাম মালেক মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ থেকে যা বর্ণনা করেছেন, এ হাদীসটি তার অতীব নিকটবর্তী অর্থাৎ সহীহ। 

ইবনে হাজার আসকালানী বলেন, হাদীছটি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাত্রির সালাতের ব্যাপারে বর্ণিত মা আয়েশা (রাঃ)-এর হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ইবনে ইসহাক বলেন,

তারাবীর সালাত সম্পর্কে আমি যা শুনেছি তার মধ্যে এটিই সর্বাধিক বলিষ্ঠ বর্ণনা।

আমরা এতক্ষণ আট বা এগারো রাকাতের পক্ষে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীগণ এবং তাদের যুগ পর্যন্ত যে হাদীসগুলো পেশ করলাম তার সবগুলোই সহীহ। রিজাল শাস্ত্র বিদগণ এবং বিশ্ব বিখ্যাত মুহাদ্দিস গণের বলিষ্ঠ উক্তির মাধ্যমে যা প্রমাণিত হয়েছে।

শায়খ আলবানী ১১ রাকাত সংক্রান্ত রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ছাহাবায়ে কেরামের আমল বিশ্লেষণ করার পর মুসলিম উম্মাহর জন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অবিস্মরণীয় ভাষণ সামনে রেখে বলেন,

উপরিউক্ত আলোচনাগুলো আমাদের জন্য সঠিক পথ উন্মোচন করেছে; তাই আমরা অবশ্যই বলব যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বক্তব্যের আনুগত্য করণার্থে নির্দিষ্ট সংখ্যা (১১ রাকাত)-কে আঁকড়ে ধরা এবং এর অতিরিক্ত সংখ্যা পরিত্যাগ করা ওয়াজিব। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বক্তব্য হল, নিশ্চয়ই আমার পরে তােমাদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকবে তারা অতি সত্বর অসংখ্য মতপার্থক্য দেখতে পাবে। সে সময় তােমাদের অপরিহার্য কর্তব্য হবে আমার সুন্নাত এবং অভ্রান্ত পথ প্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরা এবং দাঁত দ্বারা কামড়ে ধরা। আর (শরীয়তের মধ্যে) তোমরা নতুন সৃষ্ট বিষয়সমূহ থেকে সাবধান থাকবে। কারণ নতুন সৃষ্ট বস্তুই বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআতি পথভ্রষ্ট, আর প্রত্যেক পথভ্রষ্টই জাহান্নামী। 

আশা করি হাদীছটি শতধা বিভক্ত মুসলিম উম্মাহর জন্য ঐক্যের প্রতীক বিবেচিত হবে, হবে সঠিক পথের দিশারী। কারণ সহীহ বর্ণনার মাধ্যমে রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কোন আমল প্রমাণিত হলে এর বিপরীত যে আমলই সমাজে প্রচলিত থাক না কেন তা বাতিল বলে গণ্য হবে। চাই তা কোন ইমামের বক্তব্য হোক, বা কোন মনীষী, আলেম, মুজতাহিদ, ফকীহ এর বক্তব্য হোক কিংবা যঈফ ও জাল হাদীছ হোক সর্বাবস্থায় তা বাতিল সাব্যস্ত হবে।

তারাবির নামাজ কত রাকাত সহীহ হাদিস. Tarabi Namaz koto Rakat

তারাবির নামাজ কত রাকাত, তারাবির নামাজ ৮ রাকাতের দলিল, তারাবির নামাজ কত রাকাত এবং কিভাবে পড়বেন, তারাবি নামাজ কত রাকাত, তারাবির নামাজ কত রাকাত সহীহ হাদিস, তারাবির নামাজ কয় রাকাত, তারাবির নামাজ সর্বনিম্ন কত রাকাত পড়া যায়, তারাবির নামাজ 20 রাকাত না 8 রাকাত, তারাবির নামাজ কয় রাকাত পড়তে হয়, তারাবির নামাজ কি ৪ রাকাত করে পড়া যায়, তারাবীর নামাজ কত রাকাত, তারাবির নামাজ কয় রাকাত করে পড়তে হয়, তারাবির নামাজ আসলে কয় রাকাত, তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা, তারাবির নামাজ কত রাকাত করে পড়তে হয়, তারাবির নামাজের কত রাকাত, তারাবির নামাজ ২০ রাকাতের দলিল, তারাবির নামাজ কত রাকাত দলিল সহ, তারাবির নামাজ কয় রাকাত, তারাবীর নামাজ কয় রাকাত, তারাবি নামাজ কয় রাকাত, তারাবি নামাজ কত রাকাত পড়তে হবে, তারাবি নামাজ কয় রাকাত, ৮ রাকাত তারাবি নামাজের সহিহ হাদিস, তারাবি নামাজ রাকাত, তারাবী নামাজ কত রাকাত

তারাবীহ নামাজ কত রাকাত, তারাবীহ নামাজ কয় রাকাত, তারাবিহ নামাজ কত রাকাত, তারাবিহ কত রাকাত, তারাবীহ কত রাকাত, রাসুল সাঃ কত রাকাত তারাবীহ পড়তেন, তারাবীহ ২০ রাকাতের দলিল, তারাবীর রাকাত সংখ্যা, তারাবী কত রাকাত, তারাবি কত রাকাত, তারাবি কত রাকাত নামাজ, তারাবি কত রাকাত ২০ না ৮, তারাবি কয় রাকাত,তারাবির নামাজ কত রাকাত ও কি কি, তারাবির নামাজ কত রাকাত পড়া যায়, তারাবির নামাজ কত রাকাত পড়তে হয়, তারাবির নামাজ কত রাকাত পড়তে হবে, তারাবির নামাজ কত রাকাত সহি হাদিস, তারাবির নামাজ কত রাকাত পড়া উত্তম, তারাবির নামাজ কয় রাকাত ও কি কি, তারাবির নামাজ কয় রাকাত পড়তে হবে, তারাবির নামাজ কয় রাকাত পড়া যায়, তারাবির নামাজ কয় রাকাত কি কি, তারাবির নামাজ ৮ রাকাত পড়া যাবে কি, তারাবির নামাজ ৮ না ২০ রাকাত, তারাবির নামাজ ৮ রাকাত, তারাবির নামাজ ৮ রাকাত নাকি ২০ রাকাত, তারাবির নামাজ 8 রাকাত না 20 রাকাত

তারাবির নামাজ কত রাকাত সহীহ হাদিস. Tarabi Namaz koto Rakat

tarabi namaz koto rakat, tarabi namaz koy rakat, tarabi namaz koy rakat bangla, tarabi namaj koy rakat, tarabi namaz koto rakat bangla, tarabi namaz koto rakat kore porte hoy, tarabi namaz rakat bangla, tarabi koto rakat, tarabi namaj koto rakat, tarabir namaj koto rakat, tarabir namaz koy rakat, tarabir namaj koy rakat, tarabir namaj koi rakat, tarabir namaz koto rakat, how many rakats in taraweeh, taraweeh namaz rakat, how many rakat in taraweeh, taraweeh rakat

তারাবির নামাজের দোয়া ও মোনাজাত. Tarabi namaz dua munajat

তারাবির নামাজের নিয়ম কানুন ও তারাবি নামাজের নিয়ত

তারাবির নামাজের সময় কতক্ষণ থাকে বা তারাবির নামাজের ওয়াক্ত কয়টা পর্যন্ত?

তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল? Tarabi namaz sunnat naki nofol?

তারাবির নামাজের ফজিলত ও তারাবির নামাজের গুরুত্ব

তারাবিহ শব্দের অর্থ কি? Tarabi meaning in Bengali

তারাবির নামাজ ৮ নাকি ২০ রাকাত? – Somoy Tv

তারাবিহের নামাজ কত রাকাত? – Dhaka Post

তারাবীর নামাযের রাকাত সংখ্যা – ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব