তিরমিজি হজ্জ অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৮৮৯ – ৯৬৪
৫৭. অনুচ্ছেদঃ
মুযদালিফায় যে লোক ইমামকে পেল সে লোক হজ্জ পেয়ে গেল
৮৮৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَعْمَرَ، أَنَّ نَاسًا، مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ أَتَوْا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ بِعَرَفَةَ فَسَأَلُوهُ فَأَمَرَ مُنَادِيًا فَنَادَى “ الْحَجُّ عَرَفَةُ مَنْ جَاءَ لَيْلَةَ جَمْعٍ قَبْلَ طُلُوعِ الْفَجْرِ فَقَدْ أَدْرَكَ الْحَجَّ أَيَّامُ مِنًى ثَلاَثَةٌ فَمَنْ تَعَجَّلَ فِي يَوْمَيْنِ فَلاَ إِثْمَ عَلَيْهِ وَمَنْ تَأَخَّرَ فَلاَ إِثْمَ عَلَيْهِ ” . قَالَ مُحَمَّدٌ وَزَادَ يَحْيَى وَأَرْدَفَ رَجُلاً فَنَادَى.
আবদুর রাহমান ইবনু ইয়ামার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে নাজদবাসী কিছু লোক আসলো। তিনি তখন আরাফাতে অবস্থান করছিলেন। তারা হজ্জ সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করে। এই মর্মে এক ঘোষণাকারীকে তিনি ঘোষণা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেনঃ হজ্জ হচ্ছে আরাফাতে অবস্থান। মুযদালিফার রাতে ফজর উদয় হওয়ার পূর্বেই কোন লোক এখানে পৌঁছতে পারলে সে হজ্জ পেল। তিনটি দিন হচ্ছে মিনায় অবস্থানের। দুই দিন অবস্থান করে কোন লোক তাড়াতাড়ি ফিরে যেতে ইচ্ছা করলে তাতে কোন সমস্যা নেই। আর তিন দিন পর্যন্ত অবস্থানকে কোন লোক বিলম্বিত করলে তাতেও কোন সমস্যা নেই। মুহাম্মাদ আল-বুখারী বলেন, ইয়াহইয়ার বর্ণনায় আরো আছেঃ এক লোককে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পিছনে আরোহণ করালেন। সে লোক তা ঘোষণা দিতে থাকল।
— সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০১৫)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৯০
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَعْمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ . وَقَالَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ قَالَ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ وَهَذَا أَجْوَدُ حَدِيثٍ رَوَاهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَالْعَمَلُ عَلَى حَدِيثِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَعْمَرَ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّهُ مَنْ لَمْ يَقِفْ بِعَرَفَاتٍ قَبْلَ طُلُوعِ الْفَجْرِ فَقَدْ فَاتَهُ الْحَجُّ وَلاَ يُجْزِئُ عَنْهُ إِنْ جَاءَ بَعْدَ طُلُوعِ الْفَجْرِ وَيَجْعَلُهَا عُمْرَةً وَعَلَيْهِ الْحَجُّ مِنْ قَابِلٍ . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَطَاءٍ نَحْوَ حَدِيثِ الثَّوْرِيِّ . قَالَ وَسَمِعْتُ الْجَارُودَ يَقُولُ سَمِعْتُ وَكِيعًا أَنَّهُ ذَكَرَ هَذَا الْحَدِيثَ فَقَالَ هَذَا الْحَدِيثُ أُمُّ الْمَنَاسِكِ .
ইবনু আবী উমার সুফিয়ান থেকে বর্ণিতঃ
পূর্বোক্ত হাদীসের মতই ইবনু আবী উমার সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা হতে, তিনি সুফিয়ান সাওরী হতে, তিনি বুকাইর ইবনু আতা হতে তিনি আবদুর রাহমান ইবনু ইয়ামুর (রাঃ) হতে তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।
– সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস।
সুফিয়ান ইবনু উআইনা বলেন, এটি একটি উত্তম হাদীস যা সুফিয়ান সাওরী বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্য আলিম আবদুর রাহমান ইবনু ইয়ামুরের হাদীস অনুসারে আমল করেন। তাঁরা বলেন, (৯ যিলহজ্জ দিবাগত রাতে) কোন লোক যদি ফজর উদয়ের পূর্বে আরাফাতে হাযির হতে ব্যর্থ হয় তবে তার হজ্জ ছুটে গেল। ফজর উদয়ের পর হাযির হলে তা ধর্তব্য হবে না। সে উমরা করবে এবং পরবর্তী বছর হজ্জ আদায় করবে। এই মত প্রকাশ করেছেন সুফিয়ান সাওরী, সাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক। আবূ ঈসা বলেনঃ শুবা বুকাইর ইবনু আতা হতে সাওরীর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসটি ওয়াকী বর্ণনা করে বলেছেন, হজ্জ সম্পর্কিত হাদীসসমূহের মূল হচ্ছে এই হাদীসটি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৯১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، وَإِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، وَزَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ مُضَرِّسِ بْنِ أَوْسِ بْنِ حَارِثَةَ بْنِ لاَمٍ الطَّائِيِّ، قَالَ أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْمُزْدَلِفَةِ حِينَ خَرَجَ إِلَى الصَّلاَةِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي جِئْتُ مِنْ جَبَلَىْ طَيِّئٍ أَكْلَلْتُ رَاحِلَتِي وَأَتْعَبْتُ نَفْسِي وَاللَّهِ مَا تَرَكْتُ مِنْ حَبْلٍ إِلاَّ وَقَفْتُ عَلَيْهِ فَهَلْ لِي مِنْ حَجٍّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ شَهِدَ صَلاَتَنَا هَذِهِ وَوَقَفَ مَعَنَا حَتَّى نَدْفَعَ وَقَدْ وَقَفَ بِعَرَفَةَ قَبْلَ ذَلِكَ لَيْلاً أَوْ نَهَارًا فَقَدْ أَتَمَّ حَجَّهُ وَقَضَى تَفَثَهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ قَوْلُهُ ” تَفَثَهُ ” . يَعْنِي نُسُكَهُ . قَوْلُهُ ” مَا تَرَكْتُ مِنْ حَبْلٍ إِلاَّ وَقَفْتُ عَلَيْهِ ” . إِذَا كَانَ مِنْ رَمْلٍ يُقَالُ لَهُ حَبْلٌ وَإِذَا كَانَ مِنْ حِجَارَةٍ يُقَالُ لَهُ جَبَلٌ .
উরওয়া ইবনু মুযাররিস ইবনু আওস ইবনু হারিসা ইবনু লাম আত-তাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মুযদালিফায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলাম, তখন তিনি নামাযের উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তাঈ-এর দুই পাহাড় (অঞ্চল) হতে এসেছি। আমার বাহনকেও আমি ক্লান্ত করে ফেলেছি এৰং নিজেকেও খুবই পরিশ্রান্ত করেছি। আল্লাহর শপথ! আমি এমন কোন বালির স্তুপ ছেড়ে যাইনি যেখানে আমি অবস্থান করিনি। আমার কি হজ্জ হবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমাদের এই নামাযে যে লোক শরীক হয়েছে, আমাদের সাথে ফিরে আসা পর্যন্ত অবস্থান করেছে এবং এর পূর্বে রাতে বা দিনে আরাফাতে থেকেছে তার হজ্জ পূর্ণ হয়েছে এবং সেলোক তার অপরিচ্ছন্নতা দূর করে নিয়েছে।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০২৬), বুখারী, মুসলিম।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। তাফাসাহু এর অর্থ তার হজ্জ। বালির স্তুপকে হাবল বলা হয়। পাথরের স্তুপকে জাবাল বলা হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৮. অনুচ্ছেদঃ
রাতেই দুর্বল লোকদের মুযদালিফা হতে (মিনায়) পাঠানো
৮৯২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ثَقَلٍ مِنْ جَمْعٍ بِلَيْلٍ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَأُمِّ حَبِيبَةَ وَأَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ وَالْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ.
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাল-সামানবাহী দলের সাথে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতেই আমাকে মুযদালিফা হতে (মিনায়) পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
– সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০২৬), নাসা-ঈ অনুরূপ।
আইশা, উন্মু হাবীবা, আসমা বিনতু বাকর ও ফাযল ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَدَّمَ ضَعَفَةَ أَهْلِهِ وَقَالَ “ لاَ تَرْمُوا الْجَمْرَةَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لَمْ يَرَوْا بَأْسًا أَنْ يَتَقَدَّمَ الضَّعَفَةُ مِنَ الْمُزْدَلِفَةِ بِلَيْلٍ يَصِيرُونَ إِلَى مِنًى . وَقَالَ أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ بِحَدِيثِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُمْ لاَ يَرْمُونَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ . وَرَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي أَنْ يَرْمُوا بِلَيْلٍ . وَالْعَمَلُ عَلَى حَدِيثِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُمْ لاَ يَرْمُونَ . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ .
. قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ثَقَلٍ حَدِيثٌ صَحِيحٌ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ . وَرَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ مُشَاشٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَدَّمَ ضَعَفَةَ أَهْلِهِ مِنْ جَمْعٍ بِلَيْلٍ . وَهَذَا حَدِيثٌ خَطَأٌ أَخْطَأَ فِيهِ مُشَاشٌ وَزَادَ فِيهِ عَنِ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ . وَرَوَى ابْنُ جُرَيْجٍ وَغَيْرُهُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَطَاءٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنِ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ . وَمُشَاشٌ بَصْرِيٌّ رَوَى عَنْهُ شُعْبَةُ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার পরিবারের মধ্যে দুর্বলদের (মুযদালিফা হতে মিনায়) আগেই পাঠিয়ে দেন। আর তিনি বলে দেনঃ তোমরা সূর্য না উঠা পর্যন্ত (জামরায়) কংকর নিক্ষেপ করবে না।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০২৫)।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম বলেন, রাতে মুযদালিফা হতে দুর্বলদেরকে আগেই মিনায় পাঠিয়ে দেয়াতে কোন সমস্যা নেই। এই হাদীসের ভিত্তিতে বেশিরভাগ আলিম বলেন, সূর্য না উঠা পর্যন্ত কংকর মারবে না। তবে কিছু সংখ্যক আলিম রাতেও কংকর মারার অনুমতি দিয়েছেন। এই অভিমত সুফিয়ান সাওরী ও শাফিঈর। আবূ ঈসা বলেন, “রাতেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাল-পত্রবাহীদের সাথে আমাকে মুযদালিফা হতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন” মর্মে ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি সহীহ। এটি তার বরাতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে।
শুবা হাদীসটি বর্ণনা করেছেন মুশাশ হতে, তিনি আতা হতে, তিনি ইবনু আব্বাস হতে, তিনি ফাযল ইবনু আব্বাস হতে, “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে মুযদালিফা হতে তার পরিবারের দুর্বলদেরকে আগেই (মিনায়) পাঠিয়ে দেন।” এই হাদীসটি ভুল।
বর্ণনাকারী মুশাশ এই হাদীসটি বর্ণনা করতে গিয়ে ভুল করেছেন। এর সনদে তিনি ফাযল ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর নাম ঢুকিয়ে দিয়েছেন।
অথচ আতা হতে ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর সূত্রে এই হাদীসটি ইবনু জুরাইয প্রমুখ বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তারা ফাযল ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর নাম উল্লেখ করেননি। মুশাশ বসরার অধিবাসী, শুবা তার নিকট হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৯. অনুচ্ছেদঃ
কুরবানীর দিন সকাল বেলা কংকর মারা
৮৯৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَرْمِي يَوْمَ النَّحْرِ ضُحًى وَأَمَّا بَعْدَ ذَلِكَ فَبَعْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّهُ لاَ يَرْمِي بَعْدَ يَوْمِ النَّحْرِ إِلاَّ بَعْدَ الزَّوَالِ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুরবানীর দিন (১০ই যিলহজ্জ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকাল বেলা কংকর মেরেছেন এবং এর পরবর্তী দিনগুলোতে সূৰ্য ঢলে যাওয়ার পর কংকর মেরেছেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৫৩), মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। কুরবানীর দিনের পরবর্তী দিনসমূহে তারা দুপুরের পর কংকর মারার কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬০. অনুচ্ছেদঃ
সূর্য উঠার আগেই মুযদালিফা হতে (মিনার উদ্দেশ্যে) রাওয়ানা হওয়া
৮৯৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَفَاضَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَإِنَّمَا كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَنْتَظِرُونَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ يُفِيضُونَ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সূর্য উঠার আগেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মুযদালিফা হতে) যাত্রা করেন।
পরবর্তী হাদীসের সহায়তায় এ হাদীসটি সহীহ।
উমার (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। সূর্য উঠা পর্যন্ত জাহিলী যুগের লোকেরা অপেক্ষা করত, তারপর রাওয়ানা হত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৯৬
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ عَمْرَو بْنَ مَيْمُونٍ، يُحَدِّثُ يَقُولُ كُنَّا وُقُوفًا بِجَمْعٍ فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ إِنَّ الْمُشْرِكِينَ كَانُوا لاَ يُفِيضُونَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ وَكَانُوا يَقُولُونَ أَشْرِقْ ثَبِيرُ . وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَالَفَهُمْ . فَأَفَاضَ عُمَرُ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আমর ইবনু মাইমুন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা মুযদালিফায় অবস্থানরত ছিলাম। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) তখন বললেনঃ সূর্য না উঠা পর্যন্ত মুশরিকরা এখান হতে রাওয়ানা হত না। তারা বলতঃ হে সাবির। আলোকিত হও। কিন্তু তাদের বিপরীত নীতি অনুসরণ করেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। অতঃপর সূর্য উঠার পূর্বেই উমার (রাঃ)-ও রাওয়ানা হন।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০২২), বুখারী
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬১. অনুচ্ছেদঃ
ছোট নুড়ি পাথর নিক্ষেপ (রমী) করতে হবে
৮৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَرْمِي الْجِمَارَ بِمِثْلِ حَصَى الْخَذْفِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ عَنْ أُمِّهِ وَهِيَ أُمُّ جُنْدُبٍ الأَزْدِيَّةُ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَالْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عُثْمَانَ التَّيْمِيِّ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مُعَاذٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ الَّذِي اخْتَارَهُ أَهْلُ الْعِلْمِ أَنْ تَكُونَ الْجِمَارُ الَّتِي يُرْمَى بِهَا مِثْلَ حَصَى الْخَذْفِ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি ছোট কংকর দিয়ে জামরায় নিক্ষেপ করতে দেখেছি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০২৩), মুসলিম।
সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস তার মাতা উম্মু জুনদুব আল-আযদিয়া হতে এবং ইবনু আব্বাস, ফাদল ইবনু আব্বাস, আবদুর রাহমান ইবনু উসমান আত-তাইনী ও আবদুর রাহমান ইবনু মুআয (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ বলেন, রমী করার পাথর হবে ছোট আকৃতির।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬২. অনুচ্ছেদঃ
সূৰ্য ঢলে পড়ার পর রমী (কংকর নিক্ষেপ) করা
৮৯৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ الْحَجَّاجِ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَرْمِي الْجِمَارَ إِذَا زَالَتِ الشَّمْسُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সূর্য ঢলে পড়ার পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কংকর নিক্ষেপ করতেন।
-জাবির (রাঃ) বর্ণিত ৯০১ নং হাদীসের সহায়তায় হাদীসটি সহীহ।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৩. অনুচ্ছেদঃ
আরোহী বা হাঁটা অবস্থায় রমী করা
৮৯৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، أَخْبَرَنَا الْحَجَّاجُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَمَى الْجَمْرَةَ يَوْمَ النَّحْرِ رَاكِبًا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَقُدَامَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَأُمِّ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَاخْتَارَ بَعْضُهُمْ أَنْ يَمْشِيَ إِلَى الْجِمَارِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَمْشِي إِلَى الْجِمَارِ . وَوَجْهُ هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَنَا أَنَّهُ رَكِبَ فِي بَعْضِ الأَيَّامِ لِيُقْتَدَى بِهِ فِي فِعْلِهِ وَكِلاَ الْحَدِيثَيْنِ مُسْتَعْمَلٌ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুরবানীর দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরোহী অবস্থায় জামরায় কংকর মেরেছেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৩৪), মুসলিম, জাবির হতে দেখুন হাদীস নং (৮৮৭)।
জাবির, কুদামা ইবনু আবদুল্লাহ ও উম্মু সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। হেঁটে রমী বা পাথর নিক্ষেপ করাকে অন্য একদল আলিম পছন্দনীয় বলেছেন। ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, কংকর নিক্ষেপের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেঁটে গিয়েছেন। আমাদের মতে এই হাদীসের তাৎপর্য হলঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন কোন সময় কার্যক্রম অনুসরণের সুযোগ প্রদানের জন্য আরোহী অবস্থায় কংকর মেরেছেন। আলিমগণের নিকট উভয় প্রকার হাদীসই গ্রহণযোগ্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯০০
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا رَمَى الْجِمَارَ مَشَى إِلَيْهَا ذَاهِبًا وَرَاجِعًا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ وَلَمْ يَرْفَعْهُ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَقَالَ بَعْضُهُمْ يَرْكَبُ يَوْمَ النَّحْرِ وَيَمْشِي فِي الأَيَّامِ الَّتِي بَعْدَ يَوْمَ النَّحْرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَكَأَنَّ مَنْ قَالَ هَذَا إِنَّمَا أَرَادَ اتِّبَاعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي فِعْلِهِ لأَنَّهُ إِنَّمَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ رَكِبَ يَوْمَ النَّحْرِ حَيْثُ ذَهَبَ يَرْمِي الْجِمَارَ وَلاَ يَرْمِي يَوْمَ النَّحْرِ إِلاَّ جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কংকর মারার উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জামরায় পায়ে হেঁটে যেতেন এবং পায়ে হেঁটে ফিরে আসতেন।
-সহীহ, সহীহা (২০৭২), সহীহ আবূ দাউদ (১৭১৮)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। হাদীসটিকে মারফূ না করে কেউ কেউ উবাইদুল্লাহ হতে বর্ণনা করেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী বেশিরভাগ আলিম আমল করেছেন। কেউ কেউ বলেন, কুরবানীর দিন সাওয়ার হয়ে এবং এর পরবর্তী দিনগুলোতে হেটে কংকর মারবে। আবূ ঈসা বলেন, যারা এই কথা বলেছেন তারা মূলতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আমলের হুবহু অনুসরণার্থে তা বলেছেন। কেননা, কুরবানীর দিন কংকর মারার উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জামরায় সাওয়ারী অবস্থায় গিয়েছেন। আর শুধুমাত্র জামরা আকাবাতেই কুরবানীর দিন কংকর মারা হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪. অনুচ্ছেদঃ
জামরায় কিভাবে কংকর মারতে হবে
৯০১
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا الْمَسْعُودِيُّ، عَنْ جَامِعِ بْنِ شَدَّادٍ أَبِي صَخْرَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ لَمَّا أَتَى عَبْدُ اللَّهِ جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ اسْتَبْطَنَ الْوَادِيَ وَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ وَجَعَلَ يَرْمِي الْجَمْرَةَ عَلَى حَاجِبِهِ الأَيْمَنِ ثُمَّ رَمَى بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ يُكَبِّرُ مَعَ كُلِّ حَصَاةٍ ثُمَّ قَالَ وَاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ مِنْ هَا هُنَا رَمَى الَّذِي أُنْزِلَتْ عَلَيْهِ سُورَةُ الْبَقَرَةِ .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ عُمَرَ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَخْتَارُونَ أَنْ يَرْمِيَ الرَّجُلُ مِنْ بَطْنِ الْوَادِي بِسَبْعِ حَصَيَاتٍ يُكَبِّرُ مَعَ كُلِّ حَصَاةٍ . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِنْ لَمْ يُمْكِنْهُ أَنْ يَرْمِيَ مِنْ بَطْنِ الْوَادِي رَمَى مِنْ حَيْثُ قَدَرَ عَلَيْهِ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِي بَطْنِ الْوَادِي .
আবদুর রাহমান ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জামরা আকাবায় যখন আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) আসলেন তখন উপত্যকার মাঝে দাঁড়ালেন, কিবলামুখী হলেন এবং বরাবর ডান ভ্রু উচু করে কংকর মারতে শুরু করলেন। তিনি সাতটি কংকর মারলেন এবং প্রতিটি কংকর মারার সময় আল্লাহু আকবার বললেন। এরপর তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ! যিনি ব্যতীত আর কোন মা’বুদ নেই, যার উপর সূরা বাকারা নাযিল হয়েছে তিনি এখান হতেই কংকর মেরেছেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৩০), বুখারী, মুসলিম।
হান্নাদ ওয়াকী হতে, তিনি মাসউদী হতে উক্ত সনদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ফাযল ইবনু আব্বাস, ইবনু উমার ও জাবির (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। তাদের মতে সাতটি কংকর উপত্যকার মধ্য হতে মারা এবং প্রতিটি কংকর মারার সময় তাকবীর বলা পছন্দনীয়। কিছু সংখ্যক আলিম এই সুযোগ রেখেছেন যে, যদি উপত্যকার মধ্য হতে কংকর মারা সম্ভব না হয় তাহলে যেখান হতে সম্ভব সেখান হতেই তা মারা যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯০২
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، وَعَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي زِيَادٍ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّمَا جُعِلَ رَمْىُ الْجِمَارِ وَالسَّعْىُ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ لإِقَامَةِ ذِكْرِ اللَّهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার যিকির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই জামরায় কংকর ছুড়া এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সাঈ করার নিয়ম রাখা হয়েছে।
যঈফ, মিশকাত (২৬২৪), যঈফ আবূ দাঊদ (৩২৮)
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৬৫. অনুচ্ছেদঃ
জামরায় কংকর মারার সময় লোকদের হাঁকিয়ে সরিয়ে দেয়া নিষেধ
৯০৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، عَنْ أَيْمَنَ بْنِ نَابِلٍ، عَنْ قُدَامَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَرْمِي الْجِمَارَ عَلَى نَاقَةٍ لَيْسَ ضَرْبٌ وَلاَ طَرْدٌ وَلاَ إِلَيْكَ إِلَيْكَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَنْظَلَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ قُدَامَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَإِنَّمَا يُعْرَفُ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَهُوَ حَدِيثُ أَيْمَنَ بْنِ نَابِلٍ وَهُوَ ثِقَةٌ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ .
কুদামা ইবনু আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে উষ্ট্রীতে সাওয়ার হয়ে জামরায় কংকর মারতে দেখেছি। সেখানে কোন রকম মারপিট, কোন ধাক্কাধাক্কি এবং সরে যাও সরে যাও ইত্যাদি কিছু ছিল না।
-সহীহ ইবনু মা-জাহ (৩০৩৫)।
আবদুল্লাহ ইবনু হানযালা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। কুদামা ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। হাদীসটি শুধুমাত্র এই সূত্রেই পরিচিত। আর উহা আইমান ইবনু নাবিল (রহঃ) হতে বর্ণিত হাদীস। হাদীস বিশেষজ্ঞগণের মত অনুযায়ী আইমান ইবনু নাবিল একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৬. অনুচ্ছেদঃ
উট ও গরু কুরবানীতে শরীক হওয়া প্রসঙ্গে
৯০৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ نَحَرْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ الْبَقَرَةَ عَنْ سَبْعَةٍ وَالْبَدَنَةَ عَنْ سَبْعَةٍ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ يَرَوْنَ الْجَزُورَ عَنْ سَبْعَةٍ وَالْبَقَرَةَ عَنْ سَبْعَةٍ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ الْبَقَرَةَ عَنْ سَبْعَةٍ وَالْجَزُورَ عَنْ عَشَرَةٍ . وَهُوَ قَوْلُ إِسْحَاقَ وَاحْتَجَّ بِهَذَا الْحَدِيثِ . وَحَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ وَجْهٍ وَاحِدٍ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হুদাইবিয়ার (সন্ধির) বছর একটি গরু সাতজনের পক্ষ হতে এবং একটি উটও সাতজনের পক্ষ হতে কুরবানী করেছি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩১৩২), মুসলিম।
ইবনু উমার, আবূ হুরাইরা, আইশা ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। জাবির (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিমগণ আমল করেছেন। একটি উট সাতজনের পক্ষ হতে এবং একটি গুরুও সাতজনের পক্ষ হতে কুরবানী করাকে তারা জায়িয মনে করেন। এই অভিমত সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ ও আহমাদ (রহঃ)-এর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর বরাতে বর্ণিত আছে যে, একটি গরু সাতজনের পক্ষ হতে এবং একটি উট দশজনের পক্ষ হতে কুরবানী করা যায়। এই অভিমত ইসহাক (রহঃ)-এর। শুধুমাত্র একটি সূত্রেই আমরা ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯০৫
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ حُسَيْنِ بْنِ وَاقِدٍ، عَنْ عِلْبَاءَ بْنِ أَحْمَرَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ . فَحَضَرَ الأَضْحَى فَاشْتَرَكْنَا فِي الْبَقَرَةِ سَبْعَةً وَفِي الْجَزُورِ عَشَرَةً . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَهُوَ حَدِيثُ حُسَيْنِ بْنِ وَاقِدٍ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সফরে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। এমতাবস্থায় কুরবানীর ঈদ আসলে আমরা একটি গরুতে সাতজন এবং একটি উটে দশজন করে শরীক হই।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩১৩১)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। এটি হুসাইন ইবনু ওয়াকিদ (রহঃ) বর্ণিত হাদীস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৭. অনুচ্ছেদঃ
(হারাম শারীফ এলাকায় কুরবানীর জন্য পাঠানো) উটে চিহ্ন লাগানো
৯০৬
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ هِشَامٍ الدَّسْتَوَائِيِّ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي حَسَّانَ الأَعْرَجِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَلَّدَ نَعْلَيْنِ وَأَشْعَرَ الْهَدْىَ فِي الشِّقِّ الأَيْمَنِ بِذِي الْحُلَيْفَةِ وَأَمَاطَ عَنْهُ الدَّمَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو حَسَّانَ الأَعْرَجُ اسْمُهُ مُسْلِمٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ يَرَوْنَ الإِشْعَارَ . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ يُوسُفَ بْنَ عِيسَى يَقُولُ سَمِعْتُ وَكِيعًا يَقُولُ حِينَ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ قَالَ لاَ تَنْظُرُوا إِلَى قَوْلِ أَهْلِ الرَّأْىِ فِي هَذَا فَإِنَّ الإِشْعَارَ سُنَّةٌ وَقَوْلَهُمْ بِدْعَةٌ . قَالَ وَسَمِعْتُ أَبَا السَّائِبِ يَقُولُ كُنَّا عِنْدَ وَكِيعٍ فَقَالَ لِرَجُلٍ عِنْدَهُ مِمَّنْ يَنْظُرُ فِي الرَّأْىِ أَشْعَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَيَقُولُ أَبُو حَنِيفَةَ هُوَ مُثْلَةٌ . قَالَ الرَّجُلُ فَإِنَّهُ قَدْ رُوِيَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ أَنَّهُ قَالَ الإِشْعَارُ مُثْلَةٌ . قَالَ فَرَأَيْتُ وَكِيعًا غَضِبَ غَضَبًا شَدِيدًا وَقَالَ أَقُولُ لَكَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتَقُولُ قَالَ إِبْرَاهِيمُ مَا أَحَقَّكَ بِأَنْ تُحْبَسَ ثُمَّ لاَ تَخْرُجَ حَتَّى تَنْزِعَ عَنْ قَوْلِكَ هَذَا .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুল-হুলাইফা নামক জায়গায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানীর পশুর গলায় একজোড়া জুতা ঝুলিয়ে দিলেন এবং এর কুঁজের ডান দিকে চিরে রক্ত প্রবাহিত করলেন।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৯৭), মুসলিম।
মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। আবূ হাসসান আল-আরাজের নাম মুসলিম। এই হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী ও অন্যান্য আলিমগণ আমল করেছেন। কুরবানীর উট বা গরুর কুঁজের ডান বা বাম দিক দিয়ে চিরে দেয়া তাদের মতে সুন্নাত। এই অভিমত সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর।
ইউসুফ ইবনু ঈসা বলেন, এই হাদীস বর্ণনার সময় আমি ওয়াকীকে বলতে শুনেছি, আহলুর রায়ের কথার প্রতি এই বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ করবে না। কারণ, কুঁজ চিরা হলো সুন্নাত এবং আহলুর রায়ের কথা হলো বিদ’আত। আমি আবূস সাইবকে বলতে শুনেছি, আমরা ওয়াকীর নিকট বসা ছিলাম। একজন আহলুর রায়কে লক্ষ্য করে তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরবানীর পশুর কুঁজ চিরেছেন। আর আবূ হানীফা বলেন যে, তা মুসলা বা অঙ্গ বিকৃতকরণ। ঐ ব্যক্তি বলল, ইবরাহীম নাখঈ বলেছেন, এটা হলো মুসলা। আবূস সাঈব বলেন, আমি দেখতে পেলাম ওয়াকী ভীষণভাবে রেগে গেলেন এবং বললেন, আমি বলছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আর তুমি বলছ ইবরাহীম বলেছেন। তোমাকে কারারুদ্ধ করা উচিত। তুমি যে পর্যন্ত না এই বক্তব্য প্রত্যাহার করছ সে পর্যন্ত তোমাকে কারামুক্ত করা অনুচিত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৮. অনুচ্ছেদঃ
(কুরবাণীর পশু ক্রয় প্রসঙ্গে)
৯০৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ الْيَمَانِ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اشْتَرَى هَدْيَهُ مِنْ قُدَيْدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ الثَّوْرِيِّ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ يَحْيَى بْنِ الْيَمَانِ . وَرُوِيَ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ اشْتَرَى هَدْيَهُ مِنْ قُدَيْدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا أَصَحُّ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুদাইদ নামক জায়গা হতে তাঁর কুরবাণীর পশু কেনেন।
সনদ দুর্বল, ইব্ন মাজাহ (৩১০২)। বুখারী বর্ণনা করেছেন মাওকূফভাবে
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি গারীব। ইয়াহ্ইয়া ইবনুল ইয়ামানের সূত্রেই শুধু উপরোক্ত হাদীস প্রসঙ্গে জানা যায়। নাফি (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, ইবনু উমার (রাঃ) কুদাইদ হতে তা কেনেন। আবূ ঈসা বলেন, এই রিওয়াত অনেক বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৬৯. অনুচ্ছেদঃ
কুরবানীর পশুর গলাতে মুকীমের জন্য মালা পরানো
৯০৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ فَتَلْتُ قَلاَئِدَ هَدْىِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ لَمْ يُحْرِمْ وَلَمْ يَتْرُكْ شَيْئًا مِنَ الثِّيَابِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا إِذَا قَلَّدَ الرَّجُلُ الْهَدْىَ وَهُوَ يُرِيدُ الْحَجَّ لَمْ يَحْرُمْ عَلَيْهِ شَيْءٌ مِنَ الثِّيَابِ وَالطِّيبِ حَتَّى يُحْرِمَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا قَلَّدَ الرَّجُلُ هَدْيَهُ فَقَدْ وَجَبَ عَلَيْهِ مَا وَجَبَ عَلَى الْمُحْرِمِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদয়ির (কুরবানীর পশুর) গলায় মালা পরানোর রশি পাকিয়ে দিয়েছি। এরপরও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহরামও বাধেননি এবং সাধারণ জামাকাপড়ও পরিবর্তন করেননি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৯৮), বুখারী, মুসলিম৷
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। একদল আলিম বলেন, যদি কোন ব্যক্তি হজ্জের ইচ্ছা করে কুরবানীর পশুর গলায় মালা পরিয়ে দেয় এবং ইহরাম না বাধে তাহলে সেলোকের জন্য যে কোন পোশাক পরা ও সুগন্ধি ব্যবহার হারাম হবে না। অপর কিছু সংখ্যক আলিমগণ বলেন, ইহরামধারী লোকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধিনিষেধ কুরবানীর পশুর গলায় মালা পরিয়ে দেয়া ব্যক্তির প্রতিও প্রযোজ্য হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭০. অনুচ্ছেদঃ
কুরবানীর মেষ-বকরীর গলায় মালা পরানো
৯০৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُنْتُ أَفْتِلُ قَلاَئِدَ هَدْىِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كُلَّهَا غَنَمًا ثُمَّ لاَ يُحْرِمُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ يَرَوْنَ تَقْلِيدَ الْغَنَمِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কুরবানীর পশুর গলায় মালা পরানোর রশি পাকিয়ে দিতাম। এগুলোর সবই ছিল মেষ ও বকরী। এরপরও তিনি ইহরাম বাঁধেননি।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (১৫৪০), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্য আলিমগণ আমল করেছেন এবং কুরবানীর মেষ-বকরী ইত্যাদির গলায় মালা পরানো বৈধ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭১. অনুচ্ছেদঃ
কুরবানীর পশু পথ চলতে না পারলে যা করতে হবে
৯১০
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ نَاجِيَةَ الْخُزَاعِيِّ، صَاحِبِ بُدْنِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ أَصْنَعُ بِمَا عَطِبَ مِنَ الْبُدْنِ قَالَ “ انْحَرْهَا ثُمَّ اغْمِسْ نَعْلَهَا فِي دَمِهَا ثُمَّ خَلِّ بَيْنَ النَّاسِ وَبَيْنَهَا فَيَأْكُلُوهَا ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ ذُؤَيْبٍ أَبِي قَبِيصَةَ الْخُزَاعِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ نَاجِيَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا فِي هَدْىِ التَّطَوُّعِ إِذَا عَطِبَ لاَ يَأْكُلُ هُوَ وَلاَ أَحَدٌ مِنْ أَهْلِ رُفْقَتِهِ وَيُخَلَّى بَيْنَهُ وَبَيْنَ النَّاسِ يَأْكُلُونَهُ وَقَدْ أَجْزَأَ عَنْهُ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالُوا إِنْ أَكَلَ مِنْهُ شَيْئًا غَرِمَ بِقَدْرِ مَا أَكَلَ مِنْهُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا أَكَلَ مِنْ هَدْىِ التَّطَوُّعِ شَيْئًا فَقَدْ ضَمِنَ الَّذِي أَكَلَ .
নাজিয়া আল-খুযাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কুরবানীর পশু পথ চলতে না পারলে এবং এর মৃত্যুর আশংকা দেখা দিলে আমি কি করব? তিনি বললেনঃ এটিকে যবাহ কর, এর (গলায় বাঁধা) জুতা তার রক্তে ডুবিয়ে দাও, এরপর মানুষের জন্য তা রেখে দাও যেন তারা তা খেতে পারে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩১০৬)।
যুওয়াইব আবূ কাবীসা আল-খুযাঈ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। নাজিয়া (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করার অভিমত দিয়েছেন। তারা বলেন, নফল কুরবানীর ক্ষেত্রে পশুটি চলতে না পারলে (যবাহ করার পর) সে নিজে বা তার সঙ্গীরা এর গোশত খেতে পারবে না, বরং লোকদের জন্য তা ফেলে রাখবে তারা যাতে উহা খেতে পারে। আর তার জন্য কুরবানী হিসাবে এটি যথেষ্ট হবে। এই অভিমত ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকের। তারা বলেন, যদি মালিক তা হতে কিছু খেয়ে থাকে তাহলে যতটুকু খেয়েছে সেই পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অপর একদল আলিম বলেন, নফল কুরবানীর পশু হতে যদি সে কিছু খায় তাহলে তার বিনিময়ে আরেকটি কুরবানী দিতে হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২. অনুচ্ছেদঃ
কুরবানীর উটে আরোহণ করা
৯১১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَأَى رَجُلاً يَسُوقُ بَدَنَةً فَقَالَ لَهُ ” ارْكَبْهَا ” . فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهَا بَدَنَةٌ . قَالَ لَهُ فِي الثَّالِثَةِ أَوْ فِي الرَّابِعَةِ ” ارْكَبْهَا وَيْحَكَ ” . أَوْ ” وَيْلَكَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَخَّصَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ فِي رُكُوبِ الْبَدَنَةِ إِذَا احْتَاجَ إِلَى ظَهْرِهَا . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ يَرْكَبُ مَا لَمْ يُضْطَرَّ إِلَيْهَا .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তিকে তার কুরবানীর উট হাকিয়ে নিয়ে যেতে দেখে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি এর পিঠে আরোহণ কর। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটা তো কুরবানীর উট। তিনি তৃতীয় বা চতুর্থ বারে তাকে বললেনঃ আরে দুর্ভাগা! এতে আরোহণ কর।
-সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
আলী, আবূ হুরাইরা ও জাবির (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। প্রয়োজনে কুরবানীর উটের উপর আরোহণ করার প্রতি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল সাহাবী ও অন্যান্য আলিমগণ অনুমতি দিয়েছেন। এই অভিমত ইমাম, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকের। কোন কোন আলিম বলেন, একান্ত বাধ্য না হলে কুরবানীর উটে আরোহণ করা উচিত নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩. অনুচ্ছেদঃ
মাথার কোন পাশ দিয়ে চুল মুড়ানো শুরু করবে
৯১২
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ لَمَّا رَمَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْجَمْرَةَ نَحَرَ نُسُكَهُ ثُمَّ نَاوَلَ الْحَالِقَ شِقَّهُ الأَيْمَنَ فَحَلَقَهُ فَأَعْطَاهُ أَبَا طَلْحَةَ ثُمَّ نَاوَلَهُ شِقَّهُ الأَيْسَرَ فَحَلَقَهُ فَقَالَ “ اقْسِمْهُ بَيْنَ النَّاسِ ” .
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ هِشَامٍ، نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জামরায় কংকর মারার পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পশু কুরবানী করলেন, এরপর তার মাথার ডান দিক নাপিতের দিকে বাড়িয়ে দিলেন এবং সে তা মুণ্ডন করল। আবূ তালহা (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ চুলগুলো দিলেন। এরপর তিনি বাম দিক বাড়িয়ে দিলে সে তা মুণ্ডন করল। তিনি (আবূ তালহাকে) বলেনঃ লোকজনের মাঝে এগুলো বণ্টন করে দাও।
-সহীহ, ইরওয়া, সহীহ আবূ দাউদ (১০৮৫, ১৭৩০), মুসলিম।
একই রকম হাদীস ইবনু আবী উমার (রহঃ)……হিশাম (রহঃ) হতেও বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৪. অনুচ্ছেদঃ
চুল কেটে ফেলা অথবা ছেটে ফেলা
৯১৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ حَلَقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَحَلَقَ طَائِفَةٌ مِنْ أَصْحَابِهِ وَقَصَّرَ بَعْضُهُمْ . قَالَ ابْنُ عُمَرَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” رَحِمَ اللَّهُ الْمُحَلِّقِينَ ” . مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ قَالَ ” وَالْمُقَصِّرِينَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ أُمِّ الْحُصَيْنِ وَمَارِبَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي مَرْيَمَ وَحُبْشِيِّ بْنِ جُنَادَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَخْتَارُونَ لِلرَّجُلِ أَنْ يَحْلِقَ رَأْسَهُ وَإِنْ قَصَّرَ يَرَوْنَ أَنَّ ذَلِكَ يُجْزِئُ عَنْهُ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার সাহাবীদের একদল মাথা মুণ্ডন করলেন এবং কতিপয় সাহাবী চুল খাট করলেন। ইবনু উমার (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মাথা মুণ্ডনকারীদের উপর আল্লাহ্ তা’আলা অনুগ্রহ করুন। একবার কি দুইবার তিনি এ কথাটি বললেন, তারপর বললেনঃ চুল ছোট করে কর্তনকারীদের উপরও।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৪৪), বুখারী, মুসলিম।
ইবনু আব্বাস, ইবনু উম্মুল হুসাইন, মারিব, আবূ সাঈদ, আবূ মারইয়াম, হুবশী ইবনু জুনাদা ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। বিশেষজ্ঞ আলিমগণ এই হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। পুরুষদের মাথা মুণ্ডন করা উত্তম বলে তারা মত দিয়েছেন, তবে চুল ছোট করে ছাটলেও তা যথেষ্ট হবে। এই অভিমত ইমাম সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকের।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫. অনুচ্ছেদঃ
মহিলাদের মাথা মুন্ডন করা মাকরূহ
৯১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُوسَى الْجُرَشِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ خِلاَسِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ تَحْلِقَ الْمَرْأَةُ رَأْسَهَا .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহিলাদেরকে তাদের মাথা কামিয়ে ফেলতে মানা করেছেন।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (২৬৫৩)। যঈফ (৬৭৮)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৯১৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ خِلاَسٍ، نَحْوَهُ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ عَلِيٍّ، . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ فِيهِ اضْطِرَابٌ . وَرُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى أَنْ تَحْلِقَ الْمَرْأَةُ رَأْسَهَا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ عَلَى الْمَرْأَةِ حَلْقًا وَيَرَوْنَ أَنَّ عَلَيْهَا التَّقْصِيرَ .
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার আবূ দাঊদ হতে তিনি হাম্মাম হতে তিনি খিলাস থেকে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার আবূ দাঊদ হতে তিনি হাম্মাম হতে তিনি খিলাস হতে এই সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের মতই বর্ণিত আছে। কিন্তু এই সূত্রে আলী (রাঃ)- এর নাম উল্লেখ নেই। আবূ ঈসা বলেন, আলী (রাঃ) বর্ণিত এই হাদীসটিতে অস্থিরতা আছে। এই হাদীসটি হাম্মাদ হতে কাতাদার সূত্রে আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে বিদ্বানগণের মতে মহিলাদের মাথা কামাতে হবে না তাদের মাথার চুল ছাটতে হবে।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
- সরাসরি
৭৬. অনুচ্ছেদঃ
কুরবানীর পূর্বে মাথা মুণ্ডন বা কংকর মারার পূর্বে কুরবানী করে ফেললে
৯১৬
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عِيسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ حَلَقْتُ قَبْلَ أَنْ أَذْبَحَ فَقَالَ ” اذْبَحْ وَلاَ حَرَجَ ” . وَسَأَلَهُ آخَرُ فَقَالَ نَحَرْتُ قَبْلَ أَنْ أَرْمِيَ قَالَ ” ارْمِ وَلاَ حَرَجَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَجَابِرٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأُسَامَةَ بْنِ شَرِيكٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا قَدَّمَ نُسُكًا قَبْلَ نُسُكٍ فَعَلَيْهِ دَمٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এক লোক প্রশ্ন করল, যবাহ (কুরবানী) করার পূর্বে আমি মাথা মুণ্ডন করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ যবাহ কর, এতে কোন সমস্যা নেই। অন্য আরেকজন প্রশ্ন করল, আমি কংকর মারার আগে কুরবানী করেছি। তিনি বললেনঃ কংকর মেরে নাও, এতে কোন সমস্যা নেই।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৫১),বুখারী, মুসলিম৷
আলী, জাবির, ইবনু আব্বাস, ইবনু উমার ও উসামা ইবনু শরীক (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ আলিমের মতও তাই। অনুরূপ মত দিয়েছেন ইমাম আহমাদ ও ইসহাক। কিছু সংখ্যক আলিম বলেন, হজ্জের অনুষ্ঠানসমূহের ক্রমিক ধারা নিয়ম-কানুন ভঙ্গ করলে দম (পশু কুরবানী) দিতে হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৭. অনুচ্ছেদঃ
তাওয়াফে যিয়ারাতের পূর্বে ইহরামমুক্ত হওয়ার সময় সুগন্ধি ব্যবহার
৯১৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا مَنْصُورٌ يَعْنِي ابْنَ زَاذَانَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ طَيَّبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَبْلَ أَنْ يُحْرِمَ وَيَوْمَ النَّحْرِ قَبْلَ أَنْ يَطُوفَ بِالْبَيْتِ بِطِيبٍ فِيهِ مِسْكٌ . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ يَرَوْنَ أَنَّ الْمُحْرِمَ إِذَا رَمَى جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ يَوْمَ النَّحْرِ وَذَبَحَ وَحَلَقَ أَوْ قَصَّرَ فَقَدْ حَلَّ لَهُ كُلُّ شَيْءٍ حَرُمَ عَلَيْهِ إِلاَّ النِّسَاءَ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أَنَّهُ قَالَ حَلَّ لَهُ كُلُّ شَيْءٍ إِلاَّ النِّسَاءَ وَالطِّيبَ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ قَوْلُ أَهْلِ الْكُوفَةِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইহরাম বাঁধার পূর্বে এবং কুরবানীর দিন বাইতুল্লাহ তাওয়াফের পূর্বে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি কস্তুরী মিশ্রিত সুগন্ধি লাগিয়ে দিয়েছি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৯২৬), বুখারী, মুসলিম।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত রয়েছে। আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ সাহাবী ও বিশেষজ্ঞ আলিমদের মতে কুরবানীর দিন যখন ইহরামধারী ব্যক্তি জামরা আকাবায় কংকর মারবে, কুরবানী করবে এবং মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেটে নিবে তখন হতেই তার জন্য যা (ইহরামের কারণে) হারাম ছিল তা হালাল হয়ে যাবে, তবে স্ত্রীসহবাস হালাল হবে না। এই অভিমত ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকের। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, স্ত্রীসম্ভোগ ও সুগন্ধি ব্যতীত আর সবকিছু তার জন্য হালাল হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু সংখ্যক সাহাবী ও অপরাপর আলিম এই মত গ্রহণ করেছেন। এই মত কুফাবাসী আলিমদেরও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৮. অনুচ্ছেদঃ
কখন হতে হজ্জে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করা হবে
৯১৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أَرْدَفَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ جَمْعٍ إِلَى مِنًى فَلَمْ يَزَلْ يُلَبِّي حَتَّى رَمَى الْجَمْرَةَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ الْفَضْلِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّ الْحَاجَّ لاَ يَقْطَعُ التَّلْبِيَةَ حَتَّى يَرْمِيَ الْجَمْرَةَ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
ফাযল ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুযদালিফা হতে মিনা পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তার বাহনের পিছনে বসিয়ে এনেছেন। জামরা আকাবায় কংকর মারা পর্যন্ত তিনি অনবরত তালবিয়া পাঠ করেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৪০), বুখারী, মুসলিম।
আলী, ইবনু মাসউদ ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিমদের মতে, হজ্জ পালনকারী জামরা আকাবায় কংকর মারা শেষ না করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ বন্ধ করবে না। এই অভিমত ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকের।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৯. অনুচ্ছেদঃ
উমরার ক্ষেত্রে তালবিয়া পাঠ কখন বন্ধ করতে হবে
৯১৯
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، يَرْفَعُ الْحَدِيثَ أَنَّهُ كَانَ يُمْسِكُ عَنِ التَّلْبِيَةِ، فِي الْعُمْرَةِ إِذَا اسْتَلَمَ الْحَجَرَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا لاَ يَقْطَعُ الْمُعْتَمِرُ التَّلْبِيَةَ حَتَّى يَسْتَلِمَ الْحَجَرَ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِذَا انْتَهَى إِلَى بُيُوتِ مَكَّةَ قَطَعَ التَّلْبِيَةَ . وَالْعَمَلُ عَلَى حَدِيثِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমরার বেলায় হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করা মাত্র তালবিয়া পাঠ বন্ধ করতেন।
যঈফ, ইরওয়া (১০৯৯), যঈফ আবূ দাঊদ (৩১৬)
বর্ণনাটি ইবনু আব্বাসের নিজস্ব কথা আর ইহাই সহীহ. এই অনুচ্ছেদে আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন , ইব্নু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। বেশিরভাগ আলিম এই হাদীস অনুসারে বলেছেন, উমরা পালনকারী হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ না করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ বন্ধ করবে না। কোন কোন আলিম বলেন, মক্কার জনপদের সীমায় পৌঁছেই তালবিয়া পাঠ বন্ধ করে দিবে। (তিরমিযী বলেন) তবে উক্ত হাদীস অনুযায়ীই আমল করতে হবে। সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকের এই অভিমত।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৮০. অনুচ্ছেদঃ
রাতের বেলা তাওয়াফে যিয়ারাত করা
৯২০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَعَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَخَّرَ طَوَافَ الزِّيَارَةِ إِلَى اللَّيْلِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي أَنْ يُؤَخَّرَ طَوَافُ الزِّيَارَةِ إِلَى اللَّيْلِ وَاسْتَحَبَّ بَعْضُهُمْ أَنْ يَزُورَ يَوْمَ النَّحْرِ وَوَسَّعَ بَعْضُهُمْ أَنْ يُؤَخَّرَ وَلَوْ إِلَى آخِرِ أَيَّامِ مِنًى .
ইবনু আব্বাস ও আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাওয়াফে যিয়ারাতরাত পর্যন্ত বিলম্ব করেছেন।
শাজ, ইবনু মাজাহ (৩০৫৯)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। একদল বিশেষজ্ঞ আলিম রাত অবধি দেরি করে তাওয়াফে যিয়ারাত করার সম্মতি দিয়েছেন। আরেক দল আলিম কুরবানীর দিন তা করা মুস্তাহাব বলেছেন। অন্য একদল আলিম মিনায় থাকতে শেষ দিন পর্যন্ত তা দেরি করার সম্মতি প্রকাশ করেছেন।
হাদিসের মানঃ শায
- সরাসরি
৮১. অনুচ্ছেদঃ
আবতাহ নামক জায়গায় অবতরণ করা
৯২১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ يَنْزِلُونَ الأَبْطَحَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَأَبِي رَافِعٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ صَحِيحٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّزَّاقِ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ . وَقَدِ اسْتَحَبَّ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ نُزُولَ الأَبْطَحِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَرَوْا ذَلِكَ وَاجِبًا إِلاَّ مَنْ أَحَبَّ ذَلِكَ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَنُزُولُ الأَبْطَحِ لَيْسَ مِنَ النُّسُكِ فِي شَيْءٍ إِنَّمَا هُوَ مَنْزِلٌ نَزَلَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবতাহ নামক জায়গায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং আবূ বাকর, উমার ও উসমান (রাঃ) অবতরণ করতেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৬৯), মুসলিম, বুখারী সংক্ষেপে।
আইশা, আবূ রাফি ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ গারীব বলেছেন। আমরা এই হাদীসটি শুধুমাত্র আবদুর রাযযাক হতে উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ)-এর সূত্রেই জেনেছি। আবতাহ-এ অবতরণ করাকে একদল বিশেষজ্ঞ আলিম মুস্তাহাব বলেছেন, তবে ওয়াজিব নয়। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, আবতাহে অবতরণ করা হজ্জের অনুষ্ঠানের কোন অঙ্গ নয়। এটি হল একটি স্থান যেখানে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবতরণ করেছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯২২
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَيْسَ التَّحْصِيبُ بِشَيْءٍ إِنَّمَا هُوَ مَنْزِلٌ نَزَلَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى التَّحْصِيبُ نُزُولُ الأَبْطَحِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাসসাব নামক জায়গায় অবতরণ কোন (জরুরী) বিষয় নয়। এতো একটি স্থান, যে জায়গায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবতরণ করেছিলেন।
-সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, ‘তাহসীব” অর্থ আবতাহে অবতরণ করা (দুটি একই স্থান)। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮২. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তি আবতাহ নামক জায়গায় অবতরণ করেছেন
৯২৩
ب مَنْ نَزَلَ الأَبْطَحَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا حَبِيبٌ الْمُعَلِّمُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ إِنَّمَا نَزَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الأَبْطَحَ لأَنَّهُ كَانَ أَسْمَحَ لِخُرُوجِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، نَحْوَهُ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এজন্য আবতাহে অবতরণ করেন যে, সেখান হতে (মাদীনার উদ্দেশ্যে) বেরিয়ে যাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ ছিল।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (১৭৫২), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। ইবনু আবী উমার হতে হিশাম ইবনু উরওয়া (রহঃ) এর সূত্রেও এরূপ বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৩. অনুচ্ছেদঃ
শিশুদের হজ্জ
৯২৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَرِيفٍ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سُوقَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ رَفَعَتِ امْرَأَةٌ صَبِيًّا لَهَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلِهَذَا حَجٌّ قَالَ “ نَعَمْ وَلَكِ أَجْرٌ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে তার এক শিশু সন্তানকে উচিয়ে ধরে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এর জন্য কি হজ্জ আছে? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ, আর এর প্রতিদান তোমার।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৯১০), মুসলিম।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। জাবির (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯২৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يُوسُفَ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ حَجَّ بِي أَبِي مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ وَأَنَا ابْنُ سَبْعِ سِنِينَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বিদায় হজ্জে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমার পিতা আমাকে নিয়ে হজ্জ আদায় করেছেন। তখন আমি সাত বছরের বালক ছিলাম।
-সহীহ, আলহাজ্জুল কাবীর, বুখারী।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯২৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا قَزَعَةُ بْنُ سُوَيْدٍ الْبَاهِلِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ . يَعْنِي حَدِيثَ مُحَمَّدِ بْنِ طَرِيفٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً . وَقَدْ أَجْمَعَ أَهْلُ الْعِلْمِ أَنَّ الصَّبِيَّ إِذَا حَجَّ قَبْلَ أَنْ يُدْرِكَ فَعَلَيْهِ الْحَجُّ إِذَا أَدْرَكَ لاَ تُجْزِئُ عَنْهُ تِلْكَ الْحَجَّةُ عَنْ حَجَّةِ الإِسْلاَمِ وَكَذَلِكَ الْمَمْلُوكُ إِذَا حَجَّ فِي رِقِّهِ ثُمَّ أُعْتِقَ فَعَلَيْهِ الْحَجُّ إِذَا وَجَدَ إِلَى ذَلِكَ سَبِيلاً وَلاَ يُجْزِئُ عَنْهُ مَا حَجَّ فِي حَالِ رِقِّهِ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদির থেকে বর্ণিতঃ
কুতাইবা কাযায়া ইবনু সুয়াইদ আল-বাহিলী হতে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদির হতে, তিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
-সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদিরের বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে মুর্সাল রূপেও বর্ণিত আছে।
এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আলিমগণ একমত যে, যদি নাবালেগ শিশু হজ্জ আদায় করে তাহলে আবার বালেগ হওয়ার পর (হজ্জ ফরয হলে) তাকে হজ্জ আদায় করতে হবে। ফরয হজ্জের জন্য শিশুকালের হজ্জ যথেষ্ট হবে না। অনুরূপভাবে হজ্জ করার পর যদি কোন দাস আযাদ হয় তাহলে হজ্জের সামর্থ হলে আবার তাকে হজ্জ আদায় করতে হবে। তার ফরয হজ্জের জন্য দাস অবস্থার হজ্জ যথেষ্ট হবে না। এই মত সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকের।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৪. অনুচ্ছেদঃ
(শিশুদের হাজ্জ)
৯২৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْوَاسِطِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ نُمَيْرٍ، عَنْ أَشْعَثَ بْنِ سَوَّارٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ كُنَّا إِذَا حَجَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكُنَّا نُلَبِّي عَنِ النِّسَاءِ وَنَرْمِي عَنِ الصِّبْيَانِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ أَجْمَعَ أَهْلُ الْعِلْمِ عَلَى أَنَّ الْمَرْأَةَ لاَ يُلَبِّي عَنْهَا غَيْرُهَا بَلْ هِيَ تُلَبِّي عَنْ نَفْسِهَا وَيُكْرَهُ لَهَا رَفْعُ الصَّوْتِ بِالتَّلْبِيَةِ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে যখন হাজ্জ করতাম তখন মেয়েদের পক্ষ হতে তালবিয়া পাঠ করতাম এবং বালকদের পক্ষ হতে রমী (কঙ্কর নিক্ষেপ) করতাম।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩০৩৮)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি গারীব। শুধু উপরোক্ত সূত্রেই এটি আমরা জেনেছি। এই প্রসঙ্গে আলিমগণ একমত যে, মেয়েরা নিজেদের তালবিয়া পাঠ করবে। তাদের হয়ে অন্য কেঊ তালবিয়া পাঠ করলে তা হবে না। তবে তাদের উচ্চ কন্ঠে তালবিয়া পাঠ করা মাকরূহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৮৫. অনুচ্ছেদঃ
অতি বৃদ্ধ ও মৃত ব্যক্তির পক্ষে হজ্জ আদায় করা
৯২৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ يَسَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ امْرَأَةً، مِنْ خَثْعَمٍ قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَبِي أَدْرَكَتْهُ فَرِيضَةُ اللَّهِ فِي الْحَجِّ وَهُوَ شَيْخٌ كَبِيرٌ لاَ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَسْتَوِيَ عَلَى ظَهْرِ الْبَعِيرِ . قَالَ “ حُجِّي عَنْهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَبُرَيْدَةَ وَحُصَيْنِ بْنِ عَوْفٍ وَأَبِي رَزِينٍ الْعُقَيْلِيِّ وَسَوْدَةَ بِنْتِ زَمْعَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ حُصَيْنِ بْنِ عَوْفٍ الْمُزَنِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَيْضًا عَنْ سِنَانِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْجُهَنِيِّ عَنْ عَمَّتِهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذِهِ الرِّوَايَاتِ فَقَالَ أَصَحُّ شَيْءٍ فِي هَذَا الْبَابِ مَا رَوَى ابْنُ عَبَّاسٍ عَنِ الْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ مُحَمَّدٌ وَيَحْتَمِلُ أَنْ يَكُونَ ابْنُ عَبَّاسٍ سَمِعَهُ مِنَ الْفَضْلِ وَغَيْرِهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ رَوَى هَذَا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَرْسَلَهُ وَلَمْ يَذْكُرِ الَّذِي سَمِعَهُ مِنْهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ صَحَّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي هَذَا الْبَابِ غَيْرُ حَدِيثٍ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَبِهِ يَقُولُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ يَرَوْنَ أَنْ يُحَجَّ عَنِ الْمَيِّتِ . وَقَالَ مَالِكٌ إِذَا أَوْصَى أَنْ يُحَجَّ عَنْهُ حُجَّ عَنْهُ . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُهُمْ أَنْ يُحَجَّ عَنِ الْحَىِّ إِذَا كَانَ كَبِيرًا أَوْ بِحَالٍ لاَ يَقْدِرُ أَنْ يَحُجَّ . وَهُوَ قَوْلُ ابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ .
ফাযল ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খাসআম গোত্রের এক মহিলা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতার উপর আল্লাহ নির্ধারিত হজ্জ ফরয হয়েছে, কিন্তু তিনি খুবই বৃদ্ধ হয়ে পড়েছেন। উটের পিঠে বসার সামর্থ্যও তার নেই। তিনি বললেনঃ তার পক্ষে তুমি হজ্জ আদায় কর।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৯০৯), বুখারী, মুসলিম।
আলী, বুরাইদা, হুসাইন ইবনু আওফ, আবূ রামীন আল-উকাইলী, সাওদা বিনতু যামআ ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ফাযল ইবনু আব্বাসের হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই বিষয়ে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে হুসাইন ইবনু আওফ আল-মুযানী (রহঃ)-এর এই সনদে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণিত আছে। এই বিষয়ে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে সিনান ইবনু আবদিল্লাহ আল-জুহানী-তার ফুফুর সূত্রেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাসের সূত্রেও নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণিত আছে। এই রিওয়ায়াতগুলি প্রসঙ্গে মুহাম্মাদ আল-বুখারীকে আমি প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহীহ হল ইবনু আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক ফাযল ইবনু আব্বাসের সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত রিওয়ায়াতটি। মুহাম্মাদ আল-বুখারী আরো বলেন, হয়ত ফাযল ইবনু আব্বাস এবং অন্যদের সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হাদীসটি শুনেছেন, পরে তা মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন এবং যার নিকট হতে শুনেছেন তার নাম উল্লেখ করেননি। আবূ ঈসা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই বিষয়ে একাধিক সহীহ হাদীস বর্ণিত আছে।
এই হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবা ও অপরাপর আলিমগণ আমল করেছেন। এই মত পোষণ করেন সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক। মৃত ব্যক্তির পক্ষে হজ্জ আদায় করাকে তারা জায়িয মনে করেন। ইমাম মালিক বলেন, যদি মৃত ব্যক্তি ওয়াসিয়াত করে যায় তবে তার পক্ষ হতে হজ্জ আদায় করা যাবে। একদল আলিমের মতে, যদি জীবিত ব্যক্তি বৃদ্ধ হয় এবং হজ্জ আদায়ের (দৈহিক) সামর্থ না থাকে তাহলে তার পক্ষে হজ্জ আদায় করা যাবে। এই মত ইবনুল মুবারাক ও শাফিঈর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৬. অনুচ্ছেদঃ
(মৃত ব্যক্তির পক্ষে হজ্জ আদায় করা)
৯২৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَطَاءٍ، . قَالَ وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَلَمْ تَحُجَّ أَفَأَحُجُّ عَنْهَا قَالَ “ نَعَمْ حُجِّي عَنْهَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
বুরাইদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক মহিলা এসে বলল, আমার মা মৃত্যুবরণ করেছেন, কিন্তু তিনি হজ্জ আদায় করেননি। তার পক্ষে কি আমি হজ্জ আদায় করব? তিনি বললেনঃ হ্যা, তার পক্ষে তুমি হজ্জ আদায় কর।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (২৫৬১), মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৭. অনুচ্ছেদঃ
(অন্যের পক্ষ হতে উমরা আদায় করা)
৯৩০
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَالِمٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَوْسٍ، عَنْ أَبِي رَزِينٍ الْعُقَيْلِيِّ، أَنَّهُ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَبِي شَيْخٌ كَبِيرٌ لاَ يَسْتَطِيعُ الْحَجَّ وَلاَ الْعُمْرَةَ وَلاَ الظَّعْنَ . قَالَ “ حُجَّ عَنْ أَبِيكَ وَاعْتَمِرْ ” قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَإِنَّمَا ذُكِرَتِ الْعُمْرَةُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي هَذَا الْحَدِيثِ أَنْ يَعْتَمِرَ الرَّجُلُ عَنْ غَيْرِهِ . وَأَبُو رَزِينٍ الْعُقَيْلِيُّ اسْمُهُ لَقِيطُ بْنُ عَامِرٍ .
আবূ রাযীন আল-উকাইলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার পিতা খুবই বৃদ্ধ। তিনি হজ্জ, উমরা, এমনকি সফর করতেও সক্ষম নন। তিনি বললেনঃ তোমার পিতার পক্ষে তুমি হজ্জ ও উমরা আদায় কর।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৯০৬)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস হতেই জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্যের পক্ষ হতে উমরা করার অনুমতি দিয়েছেন। আবূ রাযীন আল-উকাইলী (রাঃ)-এর নাম লাকীত, পিতা আমির।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৮. অনুচ্ছেদঃ
উমরা ওয়াজিব কি না ?
৯৩১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّنْعَانِيُّ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنِ الْحَجَّاجِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنِ الْعُمْرَةِ أَوَاجِبَةٌ هِيَ قَالَ “ لاَ وَأَنْ تَعْتَمِرُوا هُوَ أَفْضَلُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ قَوْلُ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا الْعُمْرَةُ لَيْسَتْ بِوَاجِبَةٍ . وَكَانَ يُقَالُ هُمَا حَجَّانِ الْحَجُّ الأَكْبَرُ يَوْمَ النَّحْرِ وَالْحَجُّ الأَصْغَرُ الْعُمْرَةُ . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ الْعُمْرَةُ سُنَّةٌ لاَ نَعْلَمُ أَحَدًا رَخَّصَ فِي تَرْكِهَا وَلَيْسَ فِيهَا شَيْءٌ ثَابِتٌ بِأَنَّهَا تَطَوُّعٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِإِسْنَادٍ وَهُوَ ضَعِيفٌ لاَ تَقُومُ بِمِثْلِهِ الْحُجَّةُ وَقَدْ بَلَغَنَا عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ كَانَ يُوجِبُهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى كُلُّهُ كَلاَمُ الشَّافِعِيِّ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে প্রশ্ন করা হলো উমরা করা কি ওয়াজিব? তিনি বললেনঃ না, তবে তোমরা উমরা করলে তা অতিশয় ভাল।
সনদ দুর্বল।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ্। কোন কোন আলিমের মতে উমরা ওয়াজিব নয়। এ কথাও বলা হত যে, হাজ্জ হলো দু’টি। কুরবানীর দিন হলো বড় হাজ্জ এবং উমরা হলো ছোট হাজ্জ। ইমাম শাফিঈ বলেন, উমরা হলো সুন্নাত (প্রতিষ্ঠিত ইবাদাত)। আমার জানামতে তা ছেড়ে দেয়ার সুযোগ কেউ দেননি। এতি নফল হওয়া প্রসঙ্গেও কোন গ্রহণযোগ্য প্রমাণ নেই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এটি নফল বলে যে হাদীস বর্ণিত আছে তা যঈফ, তা দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা জেনেছি যে, ইবনু আব্বাস (রাঃ) উমরা পালন ওয়াজিব মনে করতেন। আবূ ঈসা বলেন, এর পুরোটাই ইমাম শাফিঈর বক্তব্য।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৮৯. অনুচ্ছেদঃ
(উমরা আদায় ওয়াজিব কি না)
৯৩২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي زِيَادٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” دَخَلَتِ الْعُمْرَةُ فِي الْحَجِّ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سُرَاقَةَ بْنِ مَالِكِ بْنِ جُعْشُمٍ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ أَنْ لاَ بَأْسَ بِالْعُمْرَةِ فِي أَشْهُرِ الْحَجِّ . وَهَكَذَا قَالَ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ أَهْلَ الْجَاهِلِيَّةِ كَانُوا لاَ يَعْتَمِرُونَ فِي أَشْهُرِ الْحَجِّ فَلَمَّا جَاءَ الإِسْلاَمُ رَخَّصَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي ذَلِكَ فَقَالَ ” دَخَلَتِ الْعُمْرَةُ فِي الْحَجِّ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ” . يَعْنِي لاَ بَأْسَ بِالْعُمْرَةِ فِي أَشْهُرِ الْحَجِّ . وَأَشْهُرُ الْحَجِّ شَوَّالٌ وَذُو الْقَعْدَةِ وَعَشْرٌ مِنْ ذِي الْحِجَّةِ لاَ يَنْبَغِي لِلرَّجُلِ أَنْ يُهِلَّ بِالْحَجِّ إِلاَّ فِي أَشْهُرِ الْحَجِّ . وَأَشْهُرُ الْحُرُمِ رَجَبٌ وَذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ . هَكَذَا قَالَ غَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাত পর্যন্ত হজ্জের মধ্যে উমরাও অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (১৫৭১), মুসলিম।
সুরাকা ইবনু জুশুম ও জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
ইবনু আব্বাসের হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। এই হাদীসের তাৎপর্য হল, হজ্জের মাসসমূহে উমরা করায় কোন সমস্যা নেই। অনুরূপ ব্যাখ্যাই করেছেন ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক। এই হাদীসের তাৎপর্য হল, হজ্জের মাসসমূহে জাহিলী যুগের লোকেরা উমরা আদায় করত না। ইসলামের আবির্ভাবের পর এই বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুমতি দেন এবং বলেন, কিয়ামাত পর্যন্ত উমরাও হজ্জের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে অর্থাৎ হজ্জের মাসসমূহে উমরা করাতে কোন সমস্যা নেই। হজ্জের মাস হলঃ শাওয়াল, যুলকাদা ও যুলহিজ্জার প্রথম দশদিন। হজ্জের মাসগুলি ব্যতীত অন্য মাসে হজ্জের ইহরাম বাধা উচিত নয়। আর হারাম মাসগুলো হলোঃ রজব, যুলকাদা, যুলহিজ্জা ও মুহাররাম। অনুরূপ মত ব্যক্ত করেছেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একাধিক সাহাবী ও অপরাপর অনেক আলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯০. অনুচ্ছেদঃ
উমরার ফযিলত
৯৩৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ تُكَفِّرُ مَا بَيْنَهُمَا وَالْحَجُّ الْمَبْرُورُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক উমরা অপর উমরা পর্যন্ত সংঘটিত গুনাহসমূহের কাফফারা স্বরূপ। ক্ববূল হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নেই।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৮৮৮), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯১. অনুচ্ছেদঃ
তানঈম হতে উমরাহ করা
৯৩৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَوْسٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِي بَكْرٍ أَنْ يُعْمِرَ عَائِشَةَ مِنَ التَّنْعِيمِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুর রাহমান ইবনু আবূ বাকর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে নির্দেশ দিলেন তিনি যেন আইশা (রাঃ)-কে তানঈম হতে (ইহরাম করে) উমরা করান।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৯৯৯), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯২. অনুচ্ছেদঃ
জি’রানা হতে উমরা করা
৯৩৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ مُزَاحِمِ بْنِ أَبِي مُزَاحِمٍ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ مُحَرِّشٍ الْكَعْبِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ مِنَ الْجِعْرَانَةِ لَيْلاً مُعْتَمِرًا فَدَخَلَ مَكَّةَ لَيْلاً فَقَضَى عُمْرَتَهُ ثُمَّ خَرَجَ مِنْ لَيْلَتِهِ فَأَصْبَحَ بِالْجِعْرَانَةِ كَبَائِتٍ فَلَمَّا زَالَتِ الشَّمْسُ مِنَ الْغَدِ خَرَجَ مِنْ بَطْنِ سَرِفَ حَتَّى جَاءَ مَعَ الطَّرِيقِ طَرِيقِ جَمْعٍ بِبَطْنِ سَرِفَ فَمِنْ أَجْلِ ذَلِكَ خَفِيَتْ عُمْرَتُهُ عَلَى النَّاسِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَلاَ نَعْرِفُ لِمُحَرِّشٍ الْكَعْبِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غَيْرَ هَذَا الْحَدِيثِ .
মুহাররিশ আল-কাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উমরার উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে (ইহরাম বেঁধে) জিরানা হতে বের হন এবং রাতেই মক্কায় যান। উমরা পালন করে তিনি ঐ রাতেই ফিরে আসেন। জিরানাতেই তার ভোর হয়। মনে হল তিনি যেন এখানেই রাতযাপন করেছেন। পরের দিন তিনি সূর্য ঢলে পড়ার পর বাতনে সারিফের উদ্দেশ্যে রাওয়ানা হন এবং মুযদালিফার পথে সেখানে পৌছে যান। এই কারণে তাঁর এই উমরার খবর মানুষের নিকট অজ্ঞাত থেকে যায়।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (১৭৪২)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। এই হাদীস ছাড়া মুহারিশ আল-কাবী (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আর কোন হাদীস বর্ণিত আছে কি-না তা আমাদের জানা নেই। বলা হয়ে থাকে যে, “জা-আ মাআত তারিক” অর্থাৎ মাও সূলের পথে আগমন করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৩. অনুচ্ছেদঃ
রজব মাসের উমরাহ
৯৩৬
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ عُرْوَةَ، قَالَ سُئِلَ ابْنُ عُمَرَ فِي أَىِّ شَهْرٍ اعْتَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ فِي رَجَبٍ . قَالَ فَقَالَتْ عَائِشَةُ مَا اعْتَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ وَهُوَ مَعَهُ تَعْنِي ابْنَ عُمَرَ وَمَا اعْتَمَرَ فِي شَهْرِ رَجَبٍ قَطُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . سَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ حَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ .
উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু উমার (রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হল, কোন মাসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমরা করেছেন? তিনি বললেন, রজব মাসে। উরওয়া বলেন, তখন আইশা (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন কোন উমরা করেননি যাতে তিনি অর্থাৎ ইবনু উমার (রাঃ) তাঁর সাথে ছিলেন না। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো কখনও রজব মাসে উমরা করেননি।
-সহীহ, ইবনু মাজাহ (২৯৯৭, ২৯৯৮), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা গারীব বলেছেন। মুহাম্মাদ আল-বুখারীকে আমি বলতে শুনেছি, উরওয়া ইবনুয যুবাইর (রহঃ) হতে হাবীব ইবনু আবী সাবিত কখনও কিছু শুনেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৩৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اعْتَمَرَ أَرْبَعًا إِحْدَاهُنَّ فِي رَجَبٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বমোট চারবার উমরা করেছেন, এর মধ্যে একটি করেছেন রজব মাসে।
-সহীহ, (হাদীসটি পূর্বের হাদীসের সংক্ষিপ্তরূপ, তাতে আইশা (রাঃ) রজব মাসের উমরাহকে অস্বীকার করেছেন।)
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৪. অনুচ্ছেদঃ
যুলকাদা মাসের উমরাহ
৯৩৮
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، هُوَ السَّلُولِيُّ الْكُوفِيُّ عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اعْتَمَرَ فِي ذِي الْقَعْدَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুলকাদা মাসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমরাহ করেছেন।
-সহীহ, বুখারী।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৫. অনুচ্ছেদঃ
রমযান মাসের উমরা
৯৩৯
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ أُمِّ مَعْقِلٍ، عَنْ أُمِّ مَعْقِلٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” عُمْرَةٌ فِي رَمَضَانَ تَعْدِلُ حَجَّةً ” . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ وَوَهْبِ بْنِ خَنْبَشٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَيُقَالُ هَرَمُ بْنُ خَنْبَشٍ . قَالَ بَيَانٌ وَجَابِرٌ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنْ وَهْبِ بْنِ خَنْبَشٍ . وَقَالَ دَاوُدُ الأَوْدِيُّ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنْ هَرَمِ بْنِ خَنْبَشٍ . وَوَهْبٌ أَصَحُّ . وَحَدِيثُ أُمِّ مَعْقِلٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ قَدْ ثَبَتَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ عُمْرَةً فِي رَمَضَانَ تَعْدِلُ حَجَّةً . قَالَ إِسْحَاقُ مَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ مِثْلُ مَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ” مَنْ قَرَأَْ : ( قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ) فَقَدْ قَرَأَ ثُلُثَ الْقُرْآنِ ” .
উম্মু মাকিল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমযান মাসের উমরা হজ্জের সমতুল্য।
-সহীহ, ইবনু মাজাহ (২৯৯৩)।
ইবনু আব্বাস, জাবির, আবূ হুরাইরা, আনাস ও ওয়াহব ইবনু খানবাশ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেনঃ ওয়াহব ইবনু খানবাশকে হারিম ইবনু খানবাশও বলা হয়। (রাবী) বায়ান ও জাবির বলেছেন শাবী হতে, তিনি ওয়াহব ইবনু খানবাশ হতে। আর দাউদ আল আওদী বলেছেন শাবী হতে, তিনি হারিম ইবনু খানবাশ হতে। তার নাম ওয়াহব এটিই অধিক সহীহ। উন্মু মাকিলের হাদীসটি এই সূত্রে হাসান গারীব। আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে সঠিকভাবে বর্ণিত আছে যে, রমযান মাসের উমরা হজ্জের সমতুল্য। ইসহাক বলেন, এ হাদীসের তাৎপর্য সূরা ইখলাস প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত হাদীসটির তাৎপর্যের অনুরূপ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক “কুল হুআল্লাহু আহাদ সূরা তিলাওয়াত করল সে যেন কুরআন মাজীদের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করল”।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬. অনুচ্ছেদঃ
হজ্জের ইহরাম বাঁধার পর কোন ব্যক্তির শরীরের কোন অঙ্গ ভেঙ্গে গেলে বা সে খোঁড়া হয়ে গেলে
৯৪০
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ الصَّوَّافُ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي الْحَجَّاجُ بْنُ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ كُسِرَ أَوْ عَرِجَ فَقَدْ حَلَّ وَعَلَيْهِ حَجَّةٌ أُخْرَى ” . فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالاَ صَدَقَ .
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيُّ، عَنِ الْحَجَّاجِ، مِثْلَهُ . قَالَ وَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . هَكَذَا رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الْحَجَّاجِ الصَّوَّافِ نَحْوَ هَذَا الْحَدِيثِ . وَرَوَى مَعْمَرٌ وَمُعَاوِيَةُ بْنُ سَلاَّمٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَافِعٍ عَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ عَمْرٍو عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَذَا الْحَدِيثَ . وَحَجَّاجٌ الصَّوَّافُ لَمْ يَذْكُرْ فِي حَدِيثِهِ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ رَافِعٍ . وَحَجَّاجٌ ثِقَةٌ حَافِظٌ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ . وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ رِوَايَةُ مَعْمَرٍ وَمُعَاوِيَةَ بْنِ سَلاَّمٍ أَصَحُّ .
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَافِعٍ، عَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
হাজ্জাজ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কারো দেহের কোন অঙ্গ ভেঙ্গে গেলে বা সে খোঁড়া হয়ে গেলে হালাল (ইহরামমুক্ত) হয়ে যাবে এবং তাকে আরেকবার হজ্জ আদায় করতে হবে। ইকরামা বলেন, আমি এই হাদীস প্রসঙ্গে আবূ হুরাইরা ও ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলে তারা উভয়ে বলেন, হাজ্জাজ সত্য বলেছেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৭৭)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। হাজ্জাজ আস-সাওওয়াফ হতেও একাধিক বর্ণনাকারী এই হাদীসের মতই রিওয়ায়াত করেছেন। এই হাদীস মামার ও মুআবিয়া ইবনু সাল্লাম বর্ণনা করেছেন ইয়াহইয়া ইবনু আবী কাসীর হতে, তিনি ইকরামা হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু রাফি হতে, তিনি হাজ্জাজ ইবনু আমর হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে। কিন্তু হাজ্জাজ আস-সাওওয়াফ তার সনদে আবদুল্লাহ ইবনু রাফি-এর উল্লেখ করেননি। হাদীস বিশেষজ্ঞগণের মতে হাজ্জাজ একজন (হাদীসের) হাফিজ ও বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী। মুহাম্মদ আল-বুখারীকে আমি বলতে শুনেছি, মামার ও মুআবিয়া ইবনু সাল্লামের রিওয়ায়াতটি এই হাদীসের ক্ষেত্রে বেশি সহীহ। উপরোক্ত হাদীসের মতই অন্য একটি সূত্রেও বর্ণিত আছে। সূত্রটি এই আবদু ইবনু হুমাইদ আবদুর রাজ্জাক হতে, তিনি মা’মার হতে, তিনি ইয়াহইয়া ইবনু কাসীর হতে, তিনি ইকরিমা হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু রাফি হতে, তিনি হাজ্জাজ ইবনু আমর হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭. অনুচ্ছেদঃ
হজ্জের মধ্যে শর্ত আরোপ করা
৯৪১
حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ عَوَّامٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ ضُبَاعَةَ بِنْتَ الزُّبَيْرِ، أَتَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُرِيدُ الْحَجَّ أَفَأَشْتَرِطُ قَالَ ” نَعَمْ ” . قَالَتْ كَيْفَ أَقُولُ قَالَ ” قُولِي لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ مَحِلِّي مِنَ الأَرْضِ حَيْثُ تَحْبِسُنِي ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَرَوْنَ الاِشْتِرَاطَ فِي الْحَجِّ وَيَقُولُونَ إِنِ اشْتَرَطَ فَعَرَضَ لَهُ مَرَضٌ أَوْ عُذْرٌ فَلَهُ أَنْ يَحِلَّ وَيَخْرُجَ مِنْ إِحْرَامِهِ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَلَمْ يَرَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ الاِشْتِرَاطَ فِي الْحَجِّ وَقَالُوا إِنِ اشْتَرَطَ فَلَيْسَ لَهُ أَنْ يَخْرُجَ مِنْ إِحْرَامِهِ . وَيَرَوْنَهُ كَمَنْ لَمْ يَشْتَرِطْ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুবাআ বিনতুয যুবাইর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি হজ্জ আদায় করতে চাচ্ছি। আমি কি কোন শর্ত আরোপ করতে পারি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। যুবাআ বললেন, আমি কিভাবে বলব। তিনি বললেনঃ তুমি বলবে, আমি উপস্থিত, হে আল্লাহ। আমি উপস্থিত। হে আল্লাহ! তুমি যেখানে আমাকে বাধাগ্রস্ত করে দিবে সেখানেই আমি ইহরামমুক্ত হব।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৯৩৮), মুসলিম।
জাবির, আসমা বিনতু আবূ বাকর ও আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। তাদের মতে হজ্জের ক্ষেত্রে এইরূপ শর্তারোপ করা যায়। তারা বলেন, যদি কোন ইহরামধারী এইরূপ শর্ত করার পর বাঁধার সম্মুখীন হয় অথবা অপারগ হয়ে পড়ে তাহলে সেলোক ইহরামমুক্ত হয়ে যেতে পারবে। এই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক। হজ্জের ক্ষেত্রে শর্তারোপ করা আরেক দল আলিমের মতে সঠিক নয়। তারা বলেন, কোন লোক শর্তারোপ করলেও ইহরামমুক্ত হতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে তাকে কোন শর্তারোপ না করা ব্যক্তির মতই গণ্য করা হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৮. অনুচ্ছেদঃ
(যারা হজ্জের মধ্যে শর্তারোপ করা বৈধ মনে করেন না)
৯৪২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنِي مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ كَانَ يُنْكِرُ الاِشْتِرَاطَ فِي الْحَجِّ وَيَقُولُ أَلَيْسَ حَسْبُكُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি হজ্জে কোন রকম শর্তারোপ করা প্রত্যাখ্যান করতেন এবং বলতেন, তোমাদের জন্য কি তোমাদের নাবীর সুন্নাতই যথেষ্ট নয়?
-সহীহ (১৮১০), বুখারী।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
ইবনু উমারের কথার তাৎপর্য হল, যখন কোন ব্যক্তি হজ্জের জন্য ইহরাম বাধবে অতঃপর কা’বা পর্যন্ত পৌছতে বাধা গ্রস্থ হয় তাহলে সে হজ্জের নিয়্যাত ভঙ্গ করবে। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরকমই করেছেন যখন তাঁকে কাফিরগণ বাধা দিয়েছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৯. অনুচ্ছেদঃ
কোন মহিলার তাওয়াফে যিয়ারাত শেষে মাসিক ঋতু হলে
৯৪৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ ذَكَرْتُ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّ صَفِيَّةَ بِنْتَ حُيَىٍّ حَاضَتْ فِي أَيَّامِ مِنًى . فَقَالَ ” أَحَابِسَتُنَا هِيَ ” . قَالُوا إِنَّهَا قَدْ أَفَاضَتْ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” فَلاَ إِذًا ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ الْمَرْأَةَ إِذَا طَافَتْ طَوَافَ الزِّيَارَةِ ثُمَّ حَاضَتْ فَإِنَّهَا تَنْفِرُ وَلَيْسَ عَلَيْهَا شَيْءٌ . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আমি বললামঃ মিনায় অবস্থানের দিনগুলিতে সাফিয়্যা বিনতু হুওয়াই (রাঃ) হায়েযগ্রস্তা হয়ে পড়েছেন। তিনি বললেনঃ সে আমাদের প্রতিবন্ধক হবে নাকি? লোকেরা বলল, তিনি তাওয়াফে যিয়ারাত করেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে কোন সমস্যা নেই।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৭২,৩০৭৩), বুখারী, মুসলিম।
ইবনু উমার ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ মত দিয়েছেন। তাওয়াফে যিয়ারাত সম্পন্ন করার পর কোন মহিলা হায়েযগ্রস্তা হলে সে (মিনা হতে) চলে আসতে পারে। এতে তার উপর অন্য কিছু বর্তাবে না। এই অভিমত সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৪৪
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ مَنْ حَجَّ الْبَيْتَ فَلْيَكُنْ آخِرُ عَهْدِهِ بِالْبَيْتِ إِلاَّ الْحُيَّضَ وَرَخَّصَ لَهُنَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে লোক বাইতুল্লাহর হজ্জ করে তার শেষ কাজ যেন বাইতুল্লাহর তাওয়াফ হয়। তবে ঋতুবতী মহিলা এর ব্যতিক্রম। কারণ, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের জন্য (চলে আসার) অনুমতি দিয়েছেন।
-সহীহ, বুখারী (১৭৬১), অনুমতির বাক্য সহ ইরওয়া (৪/২৮৯)।
ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০০. অনুচ্ছেদঃ
হজ্জের কোন কোন অনুষ্ঠান ঋতুবতী মহিলা পালন করবে?
৯৪৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ، عَنْ جَابِرٍ، وَهُوَ ابْنُ يَزِيدَ الْجُعْفِيُّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الأَسْوَدِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ حِضْتُ فَأَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَقْضِيَ الْمَنَاسِكَ كُلَّهَا إِلاَّ الطَّوَافَ بِالْبَيْتِ . قَالَ أَبُو عِيسَى الْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ الْحَائِضَ تَقْضِي الْمَنَاسِكَ كُلَّهَا مَا خَلاَ الطَّوَافَ بِالْبَيْتِ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ عَائِشَةَ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ أَيْضًا .
حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ شُجَاعٍ الْجَزَرِيُّ، عَنْ خُصَيْفٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، وَمُجَاهِدٍ، وَعَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رَفَعَ الْحَدِيثَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَنَّ النُّفَسَاءَ وَالْحَائِضَ تَغْتَسِلُ وَتُحْرِمُ وَتَقْضِي الْمَنَاسِكَ كُلَّهَا غَيْرَ أَنْ لاَ تَطُوفَ بِالْبَيْتِ حَتَّى تَطْهُرَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হায়েযগ্রস্তা হয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ছাড়া হজ্জের বাকী সব অনুষ্ঠান পালন করার জন্য আমাকে নির্দেশ দিলেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৯৬৩), বুখারী, মুসলিম।
————
৯৪৫/২. ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই হাদীস মারফূরূপে বর্ণনা করেছেন। হায়েযগ্রস্তা ও নিফাসগ্রস্তা মহিলারা গোসল করে ইহরাম বাধবে এবং হজ্জের সকল অনুষ্ঠান পালন করবে, কিন্তু পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত বাইতুল্লাহ্ তাওয়াফ করবে না।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (১৫৩১, ১৮১৮)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। তাদের মতে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ছাড়া হজ্জের বাকী সকল অনুষ্ঠান ঋতুবতী মহিলা পালন করবে। এই হাদীসটি আইশা (রাঃ) হতে আরও কয়েকটি সূত্রে বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০১. অনুচ্ছেদঃ
হজ্জ বা উমরা পালনকারীর শেষ আমল যেন বাইতুল্লায় সম্পর্কযুক্ত হয়
৯৪৬
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُحَارِبِيُّ، عَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ أَرْطَاةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ الْمُغِيرَةِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْبَيْلَمَانِيِّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَوْسٍ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَوْسٍ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ حَجَّ هَذَا الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلْيَكُنْ آخِرُ عَهْدِهِ بِالْبَيْتِ ” . فَقَالَ لَهُ عُمَرُ خَرَرْتَ مِنْ يَدَيْكَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ تُخْبِرْنَا بِهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَوْسٍ حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَهَكَذَا رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الْحَجَّاجِ بْنِ أَرْطَاةَ مِثْلَ هَذَا وَقَدْ خُولِفَ الْحَجَّاجُ فِي بَعْضِ هَذَا الإِسْنَادِ .
হারিস ইবনু আব্দুল্লাহ্ ইবনু আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি এই ঘরের হাজ্জ বা উমরা করবে তার শেষ কাজ যেন বাইতুল্লায় সম্পর্কযুক্ত হয়।
এই বর্ণনাটি মুনকার, তবে “উমরা করবে” এই শব্দ ব্যতীত হাদীসের অর্থ সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (১৭৪৯), যঈফা (৪৫৮৫)
উমার (রাঃ) তখন তাকে (হারিস ইবনু আব্দুল্লাহ্ কে) বলেন, তোমর শরম হওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে তুমি এই বিষয়টি শুনেছ অথচ আজো আমাদেরকে তা জানাওনি।
এই অনুচ্ছেদে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, হারিস ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু আওস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি গারীব। হাজ্জাজ ইবনু আরতাহ হতেও একাধিক রাবী একইরকম বর্ণনা করেছেন। এই সনদের কোন কোন অংশে হাজ্জাজের উল্টো বর্ণনা করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
১০২. অনুচ্ছেদঃ
হজ্জ ও উমরার জন্য কিরান হজ্জকারী এক তাওয়াফই করবে
৯৪৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الْحَجَّاجِ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَرَنَ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَطَافَ لَهُمَا طَوَافًا وَاحِدًا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ قَالُوا الْقَارِنُ يَطُوفُ طَوَافًا وَاحِدًا . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ يَطُوفُ طَوَافَيْنِ وَيَسْعَى سَعْيَيْنِ . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একসাথে হজ্জ ও উমরা আদায় করেছেন (কিরান হজ্জ করেছেন) এবং হজ্জ ও উমরার জন্য একটি মাত্র তাওয়াফই করেছেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৯৭১, ২৯৭৪)।
ইবনু উমার ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু সংখ্যক বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্য আলিমগণ আমল করেছেন। তারা বলেন, কিরান হজ্জ পালনকারী একটি তাওয়াফই করবে। এই অভিমত ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অপর কিছু সংখ্যক বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্য আলিমগণ বলেন, কিরান হজ্জ পালনকারী দুটি তাওয়াফ ও দুটি সাঈ করবে (একটি হজ্জের জন্য ও একটি উমরার জন্য)। এই অভিমত ইমাম সাওরী ও কুফাবাসী আলিমদের।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৪৮
حَدَّثَنَا خَلاَّدُ بْنُ أَسْلَمَ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ أَحْرَمَ بِالْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ أَجْزَأَهُ طَوَافٌ وَاحِدٌ وَسَعْىٌ وَاحِدٌ عَنْهُمَا حَتَّى يَحِلَّ مِنْهُمَا جَمِيعًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ تَفَرَّدَ بِهِ الدَّرَاوَرْدِيُّ عَلَى ذَلِكَ اللَّفْظِ . وَقَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ وَلَمْ يَرْفَعُوهُ . وَهُوَ أَصَحُّ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হজ্জ ও উমরার ইহরাম যে লোক একত্রে বাঁধবে এই দুইটির ক্ষেত্রে সে লোকের জন্য এক তাওয়াফ ও এক সাঈ যথেষ্ট হবে এবং সে একই সাথে উভয়টি হতে ইহরামমুক্ত হয়ে যাবে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৯৭৫)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ গারীব বলেছেন। কেননা, দারাওয়ারদী এককভাবে এই শব্দে হাদীস বর্ণনা করেছেন। একাধিক রাবী উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার (রহঃ) হতে এটি বর্ণনা করেছেন, কিন্তু এটিকে তারা মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেননি এবং এটাই অনেক বেশি সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০৩. অনুচ্ছেদঃ
মুহাজিরগণ মিনা হতে ফেরার পর মক্কাতে তিন দিন থাকবে
৯৪৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حُمَيْدٍ، سَمِعَ السَّائِبَ بْنَ يَزِيدَ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ الْحَضْرَمِيِّ يَعْنِي مَرْفُوعًا، قَالَ “ يَمْكُثُ الْمُهَاجِرُ بَعْدَ قَضَاءِ نُسُكِهِ بِمَكَّةَ ثَلاَثًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ بِهَذَا الإِسْنَادِ مَرْفُوعًا .
মারফূভাবে আলী ইবনুল হাযরামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মারফূভাবে আলী ইবনুল হাযরামী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, মুহাজিরগণ হজ্জের সকল অনুষ্ঠান পালনের পর মক্কাতে তিন দিন থাকতে পারেন।
-সহীহ ইবনু মা-জাহ (১০৭৩), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এটি এই সনদে মারফূ হিসেবে অন্যভাবেও বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০৪. অনুচ্ছেদঃ
হজ্জ ও উমরা শেষে ফেরার সময় যা বলবে
৯৫০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَفَلَ مِنْ غَزْوَةٍ أَوْ حَجٍّ أَوْ عُمْرَةٍ فَعَلاَ فَدْفَدًا مِنَ الأَرْضِ أَوْ شَرَفًا كَبَّرَ ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ “ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ آيِبُونَ تَائِبُونَ عَابِدُونَ سَائِحُونَ لِرَبِّنَا حَامِدُونَ صَدَقَ اللَّهُ وَعْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَهَزَمَ الأَحْزَابَ وَحْدَهُ ” . وَفِي الْبَابِ عَنِ الْبَرَاءِ وَأَنَسٍ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিহাদ, হজ্জ বা উমরা আদায়ের পর ফেরার সময় যখনই কোন টিলা বা উঁচু জায়গায় উঠতেন তখন তিনবার “আল্লাহু আকবার” বলতেন, তারপর পাঠ করতেনঃ “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শারীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য, তিনি সকল বিষয়ের উপর শক্তিশালী। তাঁর নিকটেই আমরা প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাকারী, তাঁরই ইবাদতকারী, তাঁর পথে ভ্ৰমণকারী, আমরা আমাদের প্রভুর প্রশংসাকারী। আল্লাহ্ তার প্রতিশ্রুতি সত্যে পরিণত করেছেন, তার বান্দাহকে সাহায্য করেছেন এবং সম্মিলিত বাহিনীকে একাই পরাস্ত করেছেন।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (২৪৭৫), বুখারী, মুসলিম।
বারাআ, আনাস ও জাবির (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০৫. অনুচ্ছেদঃ
ইহরামরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে
৯৫১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَرَأَى رَجُلاً قَدْ سَقَطَ عَنْ بَعِيرِهِ فَوُقِصَ فَمَاتَ وَهُوَ مُحْرِمٌ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ اغْسِلُوهُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَكَفِّنُوهُ فِي ثَوْبَيْهِ وَلاَ تُخَمِّرُوا رَأْسَهُ فَإِنَّهُ يُبْعَثُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُهِلُّ أَوْ يُلَبِّي ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا مَاتَ الْمُحْرِمُ انْقَطَعَ إِحْرَامُهُ وَيُصْنَعُ بِهِ كَمَا يُصْنَعُ بِغَيْرِ الْمُحْرِمِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সফরে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম। তিনি দেখতে পেলেন এক লোক তার উটের পিঠ হতে পড়ে গিয়ে ঘাড় ভেঙ্গে মারা গেছে। সে লোক ইহরাম পরিহিত অবস্থায় ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ বরই পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে তাকে গোসল করাও এবং তাকে তার (ইহরামের) দুই কাপড়েই কাফন পরাও, কিন্তু তার মাথা ঢেকে দিও না। কিয়ামাতের দিন অবশ্যই তাকে ইহরাম অথবা তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠানো হবে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৮৪), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। কিছু সংখ্যক আলিমগণ এই হাদীসানুযায়ী আমল করেছেন। এই কথা বলেছেন সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক। আর কিছু সংখ্যক আলিমগণ বলেন, ইহরামধারী লোক মারা গেলে তার ইহরাম শেষ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় যে লোকের ইহরাম নেই সে লোকের ক্ষেত্রে যেই বিধান এই লোকের ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০৬. অনুচ্ছেদঃ
ইহরামধারী ব্যক্তির চক্ষু উঠলে তাতে ঘৃতকুমারীর রস দেওয়া
৯৫২
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ مُوسَى، عَنْ نُبَيْهِ بْنِ وَهْبٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْمَرٍ، اشْتَكَى عَيْنَيْهِ وَهُوَ مُحْرِمٌ فَسَأَلَ أَبَانَ بْنَ عُثْمَانَ فَقَالَ اضْمِدْهُمَا بِالصَّبِرِ فَإِنِّي سَمِعْتُ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ، يَذْكُرُهَا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ اضْمِدْهُمَا بِالصَّبِرِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ بَأْسًا أَنْ يَتَدَاوَى الْمُحْرِمُ بِدَوَاءٍ مَا لَمْ يَكُنْ فِيهِ طِيبٌ .
নুবাইহ ইবনু ওয়াহব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনু উবাইদুল্লাহ ইবনু মামার-এর চক্ষুরোগ হয়। তিনি ইহরামধারী ছিলেন। তিনি আবান ইবনু উসমানকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, চোখে ঘৃতকুমারীর রস দাও। কারণ, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)-কে বর্ণনা করতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ চোখে ঘৃতকুমারীর রস দাও।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (১৬১২), মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুসারে বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। তারা বলেন, ঔষধে সুগন্ধি না থাকলে তা ব্যবহার করতে ইহরামধারী ব্যক্তির কোন সমস্যা নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০৭. অনুচ্ছেদঃ
ইহরামে থাকাবস্থায় মাথা মুণ্ডন করলে কী করতে হবে?
৯৫৩
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ، وَابْنِ أَبِي نَجِيحٍ، وَحُمَيْدٍ الأَعْرَجِ، وَعَبْدِ الْكَرِيمِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِهِ وَهُوَ بِالْحُدَيْبِيَةِ قَبْلَ أَنْ يَدْخُلَ مَكَّةَ وَهُوَ مُحْرِمٌ وَهُوَ يُوقِدُ تَحْتَ قِدْرٍ وَالْقَمْلُ يَتَهَافَتُ عَلَى وَجْهِهِ فَقَالَ ” أَتُؤْذِيكَ هَوَامُّكَ هَذِهِ ” . فَقَالَ نَعَمْ . فَقَالَ ” احْلِقْ وَأَطْعِمْ فَرَقًا بَيْنَ سِتَّةِ مَسَاكِينَ ” . وَالْفَرَقُ ثَلاَثَةُ آصُعٍ ” أَوْ صُمْ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ أَوِ انْسُكْ نَسِيكَةً ” . قَالَ ابْنُ أَبِي نَجِيحٍ ” أَوِ اذْبَحْ شَاةً ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّ الْمُحْرِمَ إِذَا حَلَقَ رَأْسَهُ أَوْ لَبِسَ مِنَ الثِّيَابِ مَا لاَ يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَلْبَسَ فِي إِحْرَامِهِ أَوْ تَطَيَّبَ فَعَلَيْهِ الْكَفَّارَةُ بِمِثْلِ مَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
কা’ব ইবনু উজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হুদাইবিয়াতে তিনি ইহরাম অবস্থায় থাকাকালে এবং মক্কায় আসার পূর্বে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। এই সময় তিনি হাড়ির নীচে (চুলায়) আগুন জ্বালাচ্ছিলেন, আর তার চেহারায় উকুন গড়িয়ে পড়ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তোমাকে কি তোমার এই পোকাগুলো কষ্ট দিচ্ছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে মাথা মুণ্ডন কর এবং এক ফারাক” খাদ্যদ্রব্য ছয়জন মিসকীনকে দান কর (তিন সা”-তে এক ফারাক) অথবা তিনদিন রোযা রাখ অথবা একটি পশু কুরবানী কর। ইবনু আবী নাজীহ-এর বর্ণনায় আছেঃ অথবা একটি বকরী যবাহ কর।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৭৯, ৩০৮০), নাসা-ঈ।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিমগণ আমল করেছেন। যদি কোন মুহরিম লোক মাথা মুণ্ডন করে বা যে ধরণের পোশাক ইহরামে পরা উচিত নয় কোন লোক যদি সেই ধরণের পোশাক পরে বা সুগন্ধি ব্যবহার করে তাহলে এই হাদীসে বর্ণিত নিয়মে তার উপর কাফফারা প্রদান করা অপরিহার্য হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০৮. অনুচ্ছেদঃ
রাখালদের জন্য একদিন কংকর মেরে অপরদিনে তা বাদ দেওয়ার সুযোগ আছে
৯৫৪
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي الْبَدَّاحِ بْنِ عَدِيٍّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَرْخَصَ لِلرِّعَاءِ أَنْ يَرْمُوا يَوْمًا وَيَدَعُوا يَوْمًا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا رَوَى ابْنُ عُيَيْنَةَ . وَرَوَى مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي الْبَدَّاحِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عَدِيٍّ عَنْ أَبِيهِ . وَرِوَايَةُ مَالِكٍ أَصَحُّ . وَقَدْ رَخَّصَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ لِلرِّعَاءِ أَنْ يَرْمُوا يَوْمًا وَيَدَعُوا يَوْمًا وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ .
আবূল বাদাহ ইবনু আদী (রাঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাখালদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন (জামরাতুল আকাবায়) কংকর মারতে এবং আরেকদিন তা বাদ দিতে অনুমতি দিয়েছেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৩৬)।
আবূ ঈসা বলেন, ইবনু উআইনা এরকমই বর্ণনা করেছেন। আর মালিক ইবনু আনাস আবদুল্লাহ ইবনু আবূ বাকর হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি আবূল বাদাহ ইবনু আসিম ইবনু আদী (রাঃ) হতে, তিনি তার পিতা হতে এটিকে বর্ণনা করেছেন। মালিক (রহঃ)-এর এই বর্ণনাটি অনেক বেশি সহীহ। একদল আলিম এই হাদীসের ভিত্তিতে রাখালদের জন্য একদিন জামরায় কংকর মারার এবং অন্যদিন তা বাদ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এই মত ইমাম শাফিঈ (রহঃ)-এর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৫৫
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي الْبَدَّاحِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عَدِيٍّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَخَّصَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِرِعَاءِ الإِبِلِ فِي الْبَيْتُوتَةِ أَنْ يَرْمُوا يَوْمَ النَّحْرِ ثُمَّ يَجْمَعُوا رَمْىَ يَوْمَيْنِ بَعْدَ يَوْمِ النَّحْرِ فَيَرْمُونَهُ فِي أَحَدِهِمَا . قَالَ مَالِكٌ ظَنَنْتُ أَنَّهُ قَالَ فِي الأَوَّلِ مِنْهُمَا ثُمَّ يَرْمُونَ يَوْمَ النَّفْرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَهُوَ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عُيَيْنَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ .
আসিম ইবনু আদী (রাঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উটের রাখালদের (মিনায়) রাত্রি যাপন না করার এবং কুরবানীর দিন কংকর মেরে পরবর্তী দুইদিনের কংকর কোন একদিন একত্রে মারার অনুমতি দিয়েছেন। মালিক বলেন, আমার মনে হয় আবদুল্লাহ ইবনু আবী বাকর তার বর্ণনায় বলেছেন, দুই দিনের কংকর প্রথম দিন একত্রে এবং মিনা হতে যাত্রার শেষদিন কংকর মারবে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩০৩৭)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীসটি ইবনু উআইনা হতে আবদুল্লাহ ইবনু আবূ বাকরের সূত্রে বর্ণিত হাদীস অপেক্ষা অনেক বেশি সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৫৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ بْنِ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا سَلِيمُ بْنُ حَيَّانَ، قَالَ سَمِعْتُ مَرْوَانَ الأَصْفَرَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ عَلِيًّا، قَدِمَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْيَمَنِ فَقَالَ ” بِمَ أَهْلَلْتَ ” . قَالَ أَهْلَلْتُ بِمَا أَهَلَّ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ ” لَوْلاَ أَنَّ مَعِي هَدْيًا لأَحْلَلْتُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আলী (রাঃ) ইয়ামান হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এলে তিনি তাকে বললেনঃ তুমি কিসের ইহরাম বেঁধেছ? আলী (রাঃ) বললেন, যে নিয়্যাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহরাম বেঁধেছেন আমিও সেই ইহরাম বেঁধেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমার সাথে হাদী (কুরবানীর পশু) না থাকলে আমি (উমরা করে) হালাল (ইহরামমুক্ত) হয়ে যেতাম।
-সহীহ, ইরওয়া, আল-হাজ্জুল কাবীর (১০০৬), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা উপরোক্ত সনদে হাসান সহীহ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১০. অনুচ্ছেদঃ
হজ্জের বড় (মহিমান্বিত) দিন প্রসঙ্গে
৯৫৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ بْنِ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ يَوْمِ الْحَجِّ الأَكْبَرِ فَقَالَ “ يَوْمُ النَّحْرِ ” .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হজ্জের বড় (মহান) দিন প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ তা হচ্ছে কুরবানীর দিন।
-সহীহ, ইরওয়া, সহীহ আবূ দাউদ (১৭০০, ১৭০১)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৫৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ يَوْمُ الْحَجِّ الأَكْبَرِ يَوْمُ النَّحْرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَلَمْ يَرْفَعْهُ وَهَذَا أَصَحُّ مِنَ الْحَدِيثِ الأَوَّلِ وَرِوَايَةُ ابْنِ عُيَيْنَةَ مَوْقُوفًا أَصَحُّ مِنْ رِوَايَةِ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ مَرْفُوعًا . هَكَذَا رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ مِنَ الْحُفَّاظِ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنِ الْحَارِثِ عَنْ عَلِيٍّ مَوْقُوفًا . وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ قَالَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ عَنِ الْحَارِثِ عَنْ عَلِيٍّ مَوْقُوفًا .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
৯৫৮. আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, হজ্জের বড় দিন হলো কুরবানীর দিন।
-সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ঈসা বলেন, এটি আলী (রাঃ) মারফূভাবে বর্ণনা করেননি। প্রথমোক্ত হাদীস হতে এই হাদীসটি অনেক বেশি সহীহ। মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাকের মারফূহিসেবে বর্ণিত হাদীস অপেক্ষা ইবনু উআইনার মাওকূফহিসেবে বর্ণিত হাদীসটি অনেক বেশি সহীহ। আবূ ঈসা বলেন, আবূ ইসহাক-হারিস হতে, তিনি আলী (রাঃ)-এর সূত্রে এই হাদীসটিকে হাদীসের একাধিক হাফিয বর্ণনাকারী মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
শুবা আবূ ইসহাক হতে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু মুররা হতে, তিনি আল-হারিস হতে, তিনি আলী (রাঃ) হতে মাওকূফ রূপে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১১. অনুচ্ছেদঃ
দুই রুকন (হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানী) স্পর্শ করা
৯৫৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنِ ابْنِ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، كَانَ يُزَاحِمُ عَلَى الرُّكْنَيْنِ زِحَامًا مَا رَأَيْتُ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَفْعَلُهُ . فَقُلْتُ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنَّكَ تُزَاحِمُ عَلَى الرُّكْنَيْنِ زِحَامًا مَا رَأَيْتُ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُزَاحِمُ عَلَيْهِ . فَقَالَ إِنْ أَفْعَلْ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” إِنَّ مَسْحَهُمَا كَفَّارَةٌ لِلْخَطَايَا ” . وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ ” مَنْ طَافَ بِهَذَا الْبَيْتِ أُسْبُوعًا فَأَحْصَاهُ كَانَ كَعِتْقِ رَقَبَةٍ ” . وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ ” لاَ يَضَعُ قَدَمًا وَلاَ يَرْفَعُ أُخْرَى إِلاَّ حَطَّ اللَّهُ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةً وَكَتَبَ لَهُ بِهَا حَسَنَةً ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ عَنِ ابْنِ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ نَحْوَهُ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ أَبِيهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
উমাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ভীড় ঠেলে হলেও ইবনু উমার (রাঃ) হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানীর নিকটে যেতেন (তা ম্পর্শ করার জন্য)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অন্য কোন সাহাবীকে আমি এরূপ করতে দেখিনাই। আমি বললাম, হে আবূ আবদুর রাহমান! আপনি ভীড় ঠেলে হলেও এই দুই রুকনে গিয়ে পৌছেন, কিন্তু আমি তো ভীড় ঠেলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অন্যকোন সাহাবীকে সেখানে যেতে দেখিনি। তিনি বললেন, আমি এরূপ কেন করব না? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ এই দুইটি রুকন স্পর্শ করলে গুনাহসমূহের কাফফারা হয়ে যায়।
-সহীহ, তালিকুল রাগীব (২/১২০)। আমি তাকে আরো বলতে শুনেছিঃ সঠিকভাবে যদি কোন লোক বাইতুল্লাহ সাতবার তাওয়াফ করে তাহলে তার একটি ক্রীতদাস আযাদ করার সমান সাওয়াব হয়। -সহীহ ইবনু মা-জাহ (২৯৫৬) তাকে আমি আরো বলতে শুনেছিঃ যখনই কোন ব্যক্তি তাওয়াফ করতে গিয়ে এক পা রাখে এবং অপর পা তোলে আল্লাহ তখন তার একটি করে গুনাহ মাফ করে দেন এবং একটি করে-সাওয়াব লিখে দেন। -সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (২/১২০), মিশকাত (২৫৮০)।
আবূ ঈসা বলেন, একইরকম হাদীস ইবনু উমার (রাঃ) হতে অপর এক সূত্রে বর্ণিত.আছে। কিন্তু সেই সনদে উমাইরের উল্লেখ নেই। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১২. অনুচ্ছেদঃ
তাওয়াফকালে কথাবার্তা বলা
৯৬০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الطَّوَافُ حَوْلَ الْبَيْتِ مِثْلُ الصَّلاَةِ إِلاَّ أَنَّكُمْ تَتَكَلَّمُونَ فِيهِ فَمَنْ تَكَلَّمَ فِيهِ فَلاَ يَتَكَلَّمَنَّ إِلاَّ بِخَيْرٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِي هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ ابْنِ طَاوُسٍ وَغَيْرِهِ عَنْ طَاوُسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ مَوْقُوفًا . وَلاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ أَنْ لاَ يَتَكَلَّمَ الرَّجُلُ فِي الطَّوَافِ إِلاَّ لَحَاجَةٍ أَوْ بِذِكْرِ اللَّهِ تَعَالَى أَوْ مِنَ الْعِلْمِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বাইতুল্লাহর চারদিকে তাওয়াফ করা নামায আদায়ের অনুরূপ। তবে তোমরা এতে (তাওয়াফকালে) কথা বলতে পার। সুতরাং তাওয়াফকালে যে ব্যক্তি কথা বলে সে যেন ভাল কথা বলে।
-সহীহ, ইরওয়া (১২১), মিশকাত (২৫৭৬), তা’লীকুর রাগীব (২/১২১), তা’লীক আলা ইবনু খুযাইমাহ (২৭৩৯)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর সূত্রে ইবনু তাউস প্রমুখ হতে মাওকুফ হিসেবেও বর্ণিত আছে। এটি আতা ইবনুস সাইব ছাড়া অন্যকোন সূত্রে মারফূভাবে বর্ণিত আছে বলে আমাদের জানা নেই। এই হাদীস অনুযায়ী বেশিরভাগ আলিম আমল করার কথা বলেছেন। তারা বলেন, বিশেষ কোন প্রয়োজনীয় কথা, আল্লাহর যিকির ও ইলম প্রসঙ্গিয় আলোচনা ব্যতীত তাওয়াফের সময় অন্য কোন কথা না বলা মুস্তাহাব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১৩. অনুচ্ছেদঃ
হাজরে আসওয়াদ প্রসঙ্গে
৯৬১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ جَرِيرٍ، عَنِ ابْنِ خُثَيْمٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْحَجَرِ “ وَاللَّهِ لَيَبْعَثَنَّهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَهُ عَيْنَانِ يُبْصِرُ بِهِمَا وَلِسَانٌ يَنْطِقُ بِهِ يَشْهَدُ عَلَى مَنِ اسْتَلَمَهُ بِحَقٍّ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাজরে আসওয়াদ প্রসঙ্গে বলেছেনঃ আল্লাহর শপথ। এই পাথরকে আল্লাহ তা’আলা কিয়ামাতের দিন এমন অবস্থায় উঠাবেন যে, এর দুটি চোখ থাকবে যা দিয়ে সে দেখবে এবং একটি জিহবা থাকবে যা দিয়ে সে কথা বলবে। যেলোক সত্য হৃদয়ে একে স্পর্শ করবে তার সম্বন্ধে এই পাথর আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে সাক্ষ্য দিবে।
-সহীহ, মিশকাত (২৫৭৮), তা’লীকুর রাগীব (২/১২২), তা’লীক আলা ইবনু খুযাইমা (২৭৩৫)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১৪. অনুচ্ছেদঃ
(ইহ্রাম অবস্থায় তৈল ব্যবহার করা)
৯৬২
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ فَرْقَدٍ السَّبَخِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَدَّهِنُ بِالزَّيْتِ وَهُوَ مُحْرِمٌ غَيْرَ الْمُقَتَّتِ . قَالَ أَبُو عِيسَى الْمُقَتَّتُ الْمُطَيَّبُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ فَرْقَدٍ السَّبَخِيِّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ . وَقَدْ تَكَلَّمَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ فِي فَرْقَدٍ السَّبَخِيِّ وَرَوَى عَنْهُ النَّاسُ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহ্রাম অবস্থায় সুগন্ধিহীন তেল ব্যবহার করতেন।
সনদ দুর্বল।
আবূ ঈসা বলেন, ‘মুত্তাকাত’ অর্থ সুগন্ধযুক্ত। তিনি আরও বলেন, এই হাদিসটি গারীব। ফারকাদ আস-সাবাখী হতে সাঈদ ইবনু জুবাইর-এর সূত্রেই শুধু মাত্র আমরা এই হাদীস প্রসঙ্গে জেনেছি। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ) ফারকাদ আস-সাবাখীর সমালোচনা করেছেন। কিন্তু তার বরাতে লোকেরা হাদীস বর্ণনা করেছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১১৫. অনুচ্ছেদঃ
(যমযমের পানি বহন করা প্রসঙ্গে)
৯৬৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا خَلاَّدُ بْنُ يَزِيدَ الْجُعْفِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها أَنَّهَا كَانَتْ تَحْمِلُ مِنْ مَاءِ زَمْزَمَ وَتُخْبِرُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَحْمِلُهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি যমযমের পানি সাথে করে নিয়ে আসতেন, আর বলতেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা বহন করে আনতেন।
-সহীহ, সহীহাহ (৮৮৩)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গরীব বলেছেন। আমরা এই হাদীস প্রসঙ্গে শুধু উপরোক্ত সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১৬. অনুচ্ছেদঃ
(৮ই জিলহজ্জ মিনায় জুহরের নামায পড়া প্রসঙ্গে)
৯৬৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْوَزِيرِ الْوَاسِطِيُّ الْمَعْنَى، وَاحِدٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ يُوسُفَ الأَزْرَقُ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ رُفَيْعٍ، قَالَ قُلْتُ لأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ حَدِّثْنِي بِشَيْءٍ، عَقَلْتَهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَيْنَ صَلَّى الظُّهْرَ يَوْمَ التَّرْوِيَةِ قَالَ بِمِنًى . قَالَ قُلْتُ فَأَيْنَ صَلَّى الْعَصْرَ يَوْمَ النَّفْرِ قَالَ بِالأَبْطَحِ . ثُمَّ قَالَ افْعَلْ كَمَا يَفْعَلُ أُمَرَاؤُكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ يُسْتَغْرَبُ مِنْ حَدِيثِ إِسْحَاقَ بْنِ يُوسُفَ الأَزْرَقِ عَنِ الثَّوْرِيِّ .
আবদুল আযীয ইবনু রুফাই (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে বললাম, ইয়াওমুত-তারবিয়ায় (৮ই যুলহিজ্জায়) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোথায় যুহরের নামায আদায় করেছেন? আপনি এই প্রসঙ্গে যা জানেন তা আমাকে বলুন। তিনি বললেন, মিনায়। আমি বললাম, তিনি ইয়াওমুন নাফরে (১৩ই যুলহিজ্জায়) আসরের নামায কোথায় আদায় করেছেন? তিনি বলেন, আবতাহ (বাতহা) নামক জায়গায়। এরপর তিনি বললেন, তোমার আমীরগণ যা করবে তুমিও সেইভাবে কর (যেখানে তারা নামায আদায় করে সেখানে তুমিও আদায় কর)।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাউদ (১৬৭০) বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। কিন্তু সুফিয়ান সাওরীর সূত্রে ইসহাক ইবনু ইউসুফ আল-আযরাকের বর্ণনাটি গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস