৯৭/৩৬. অধ্যায়ঃ
ক্বিয়ামাতের দিনে নবী ও অপরাপরের সঙ্গে মহান আল্লাহ্র কথাবার্তা
৭৫০৯
يُوسُفُ بْنُ رَاشِدٍ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ عَنْ حُمَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ شُفِّعْتُ فَقُلْتُ يَا رَبِّ أَدْخِلْ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ خَرْدَلَةٌ فَيَدْخُلُونَ ثُمَّ أَقُولُ أَدْخِلْ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ أَدْنَى شَيْءٍ فَقَالَ أَنَسٌ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى أَصَابِعِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আমি বলতে শুনেছি যে, ক্বিয়ামাতের দিন যখন আমাকে সুপারিশ করার অনুমতি দেয়া হবে তখন আমি বলব, হে আমার রব্ব! যার অন্তরে এক সরিষা পরিমাণ ঈমান আছে, তাকে তুমি জান্নাতে প্রবেশ করাও। তারপর তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। তারপর আমি বলব, তাকেও জান্নাতে প্রবেশ করাও, যার অন্তরে সামান্য ঈমানও আছে। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাতের আঙুলগুলো যেন এখনো দেখছি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫১০
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ حَدَّثَنَا مَعْبَدُ بْنُ هِلاَلٍ الْعَنَزِيُّ قَالَ اجْتَمَعْنَا نَاسٌ مِنْ أَهْلِ الْبَصْرَةِ فَذَهَبْنَا إِلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَذَهَبْنَا مَعَنَا بِثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ إِلَيْهِ يَسْأَلُهُ لَنَا عَنْ حَدِيثِ الشَّفَاعَةِ فَإِذَا هُوَ فِي قَصْرِهِ فَوَافَقْنَاهُ يُصَلِّي الضُّحَى فَاسْتَأْذَنَّا فَأَذِنَ لَنَا وَهُوَ قَاعِدٌ عَلَى فِرَاشِهِ فَقُلْنَا لِثَابِتٍ لاَ تَسْأَلْهُ عَنْ شَيْءٍ أَوَّلَ مِنْ حَدِيثِ الشَّفَاعَةِ فَقَالَ يَا أَبَا حَمْزَةَ هَؤُلاَءِ إِخْوَانُكَ مِنْ أَهْلِ الْبَصْرَةِ جَاءُوكَ يَسْأَلُونَكَ عَنْ حَدِيثِ الشَّفَاعَةِ فَقَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ مَاجَ النَّاسُ بَعْضُهُمْ فِي بَعْضٍ فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ اشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ فَيَقُولُ لَسْتُ لَهَا وَلَكِنْ عَلَيْكُمْ بِإِبْرَاهِيمَ فَإِنَّهُ خَلِيلُ الرَّحْمَنِ فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ فَيَقُولُ لَسْتُ لَهَا وَلَكِنْ عَلَيْكُمْ بِمُوسَى فَإِنَّهُ كَلِيمُ اللهِ فَيَأْتُونَ مُوسَى فَيَقُولُ لَسْتُ لَهَا وَلَكِنْ عَلَيْكُمْ بِعِيسَى فَإِنَّهُ رُوحُ اللهِ وَكَلِمَتُهُ فَيَأْتُونَ عِيسَى فَيَقُولُ لَسْتُ لَهَا وَلَكِنْ عَلَيْكُمْ بِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم فَيَأْتُونِي فَأَقُولُ أَنَا لَهَا فَأَسْتَأْذِنُ عَلَى رَبِّي فَيُؤْذَنُ لِي وَيُلْهِمُنِي مَحَامِدَ أَحْمَدُهُ بِهَا لاَ تَحْضُرُنِي الْآنَ فَأَحْمَدُهُ بِتِلْكَ الْمَحَامِدِ وَأَخِرُّ لَهُ سَاجِدًا فَيَقُولُ يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وَقُلْ يُسْمَعْ لَكَ وَسَلْ تُعْطَ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَقُولُ يَا رَبِّ أُمَّتِي أُمَّتِي فَيَقُولُ انْطَلِقْ فَأَخْرِجْ مِنْهَا مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ شَعِيرَةٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَنْطَلِقُ فَأَفْعَلُ ثُمَّ أَعُودُ فَأَحْمَدُهُ بِتِلْكَ الْمَحَامِدِ ثُمَّ أَخِرُّ لَهُ سَاجِدًا فَيُقَالُ يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وَقُلْ يُسْمَعْ لَكَ وَسَلْ تُعْطَ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَقُولُ يَا
رَبِّ أُمَّتِي أُمَّتِي فَيَقُولُ انْطَلِقْ فَأَخْرِجْ مِنْهَا مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ أَوْ خَرْدَلَةٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجْهُ فَأَنْطَلِقُ فَأَفْعَلُ ثُمَّ أَعُودُ فَأَحْمَدُهُ بِتِلْكَ الْمَحَامِدِ ثُمَّ أَخِرُّ لَهُ سَاجِدًا فَيَقُولُ يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وَقُلْ يُسْمَعْ لَكَ وَسَلْ تُعْطَ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَقُولُ يَا رَبِّ أُمَّتِي أُمَّتِي فَيَقُولُ انْطَلِقْ فَأَخْرِجْ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ أَدْنَى أَدْنَى أَدْنَى مِثْقَالِ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجْهُ مِنْ النَّارِ فَأَنْطَلِقُ فَأَفْعَلُ فَلَمَّا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِ أَنَسٍ قُلْتُ لِبَعْضِ أَصْحَابِنَا لَوْ مَرَرْنَا بِالْحَسَنِ وَهُوَ مُتَوَارٍ فِي مَنْزِلِ أَبِي خَلِيفَةَ فَحَدَّثْنَاهُ بِمَا حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ فَأَتَيْنَاهُ فَسَلَّمْنَا عَلَيْهِ فَأَذِنَ لَنَا فَقُلْنَا لَهُ يَا أَبَا سَعِيدٍ جِئْنَاكَ مِنْ عِنْدِ أَخِيكَ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ فَلَمْ نَرَ مِثْلَ مَا حَدَّثَنَا فِي الشَّفَاعَةِ فَقَالَ هِيهْ فَحَدَّثْنَاهُ بِالْحَدِيثِ فَانْتَهَى إِلَى هَذَا الْمَوْضِعِ فَقَالَ هِيهْ فَقُلْنَا لَمْ يَزِدْ لَنَا عَلَى هَذَا فَقَالَ لَقَدْ حَدَّثَنِي وَهُوَ جَمِيعٌ مُنْذُ عِشْرِينَ سَنَةً فَلاَ أَدْرِي أَنَسِيَ أَمْ كَرِهَ أَنْ تَتَّكِلُوا قُلْنَا يَا أَبَا سَعِيدٍ فَحَدِّثْنَا فَضَحِكَ وَقَالَ خُلِقَ الإِنْسَانُ عَجُولاً مَا ذَكَرْتُهُ إِلاَّ وَأَنَا أُرِيدُ أَنْ أُحَدِّثَكُمْ حَدَّثَنِي كَمَا حَدَّثَكُمْ بِهِ قَالَ ثُمَّ أَعُودُ الرَّابِعَةَ فَأَحْمَدُهُ بِتِلْكَ الْمَحَامِدِ ثُمَّ أَخِرُّ لَهُ سَاجِدًا فَيُقَالُ يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ وَقُلْ يُسْمَعْ وَسَلْ تُعْطَهْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ فَأَقُولُ يَا رَبِّ ائْذَنْ لِي فِيمَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ فَيَقُولُ وَعِزَّتِي وَجَلاَلِي وَكِبْرِيَائِي وَعَظَمَتِي لأُخْرِجَنَّ مِنْهَا مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ
মা‘বাদ ইব্ন হিলাল আনাযী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা বসরাবাসী কিছু লোক একত্রিত হয়ে আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) -এর কাছে গেলাম। আমাদের সঙ্গে সাবিত (রাঃ) -কে নিলাম, যাতে তিনি আমাদের কাছে আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত শাফাআত সম্পর্কিত হাদীস জিজ্ঞেস করেন। আমরা তাঁকে তাঁর মহলেই চাশতের সালাতরত পেলাম। তাঁর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলে তিনি আমাদেরকে অনুমতি দিলেন। তখন তিনি তাঁর বিছানায় উপবিষ্ট অবস্থায় আছেন। অতঃপর আমরা সাবিত (রাঃ) -কে অনুরোধ করলাম, তিনি যেন শাফাআতের হাদীসটি জিজ্ঞেস করার পূর্বে অন্য কিছু জিজ্ঞেস না করেন। তখন সাবিত (রাঃ) বললেন, হে আবূ হামযাহ! এরা বস্রাবাসী আপনার ভাই, তারা শাফাআতের হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে এসেছে। অতঃপর আনাস (রাঃ) বললেন, আমাদের নিকট মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদীস বর্ণণা করেছেন যে, ক্বিয়ামাতের দিন মানুষ সমুদ্রের ঢেউয়ের মত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে। তাই তারা আদাম (আঃ) -এর কাছে এসে বলবে, আমাদের জন্য আপনার রব্বের নিকট সুপারিশ করুন। তিনি বলবেনঃ এ কাজের জন্য আমি নই। বরং তোমরা ইব্রাহীম (আঃ) -এর কাছে যাও। কারণ, তিনি হলেন আল্লাহ্র খলীল। তখন তারা ইব্রাহীম (আঃ) -এর কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি এ কাজের জন্য নই। তবে তোমরা মূসা (আঃ) -এর কাছে যাও। কারণ তিনি আল্লাহ্র সঙ্গে কথা বলেছেন। তখন তারা মূসা (আঃ) -এর কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তো এ কাজের জন্য নই। তোমরা ‘ঈসা (আঃ) -এর কাছে যাও। কারণ তিনিই আল্লাহ্র রূহ ও বাণী। তারা তখন ‘ঈসা (আঃ) -এর কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি তো এ কাজের জন্য নই। তোমরা বরং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে যাও। এরপর তারা আমার কাছে আসবে। আমি বলব, আমিই এ কাজের জন্য। আমি তখন আমার রব্বের নিকট অনুমতি চাইব। আমাকে অনুমতি দেয়া হবে। আমাকে প্রশংসাসূচক বাক্য ইল্হাম করা হবে যা দিয়ে আমি আল্লাহ্র প্রশংসা করব, যেগুলো এখন আমার জানা নেই। আমি সেসব প্রশংসা বাক্য দিয়ে প্রশংসা করব এবং সাজদাহ্য় পড়ে যাবো। তখন আমাকে বলা হবে, ইয়া মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও। তুমি বল, তোমার কথা শোনা হবে। চাও, দেয়া হবে। সুপারিশ কর, গ্রহণ করা হবে। তখন আমি বলবো, হে আমার প্রতিপালক! আমার উম্মাত! আমার উম্মাত! বলা হবে, যাও, যাদের হৃদয়ে যবের দানা পরিমাণ ঈমান আছে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে দাও। আমি গিয়ে এমনই করব। তারপর আমি ফিরে আসব এবং পুনরায় সেসব প্রশংসা বাক্য দ্বারা আল্লাহর প্রশংসা করবো এবং সাজদাহ্য় পড়ে যাবো। তখন বলা হবে, হে মুহাম্মদ! মাথা উঠাও। তোমার কথা শোনা হবে। চাও, দেয়া হবে। সুপারিশ কর, গ্রহণ করা হবে। তখনো আমি বলব, হে আমার রব্ব! আমার উম্মাত! আমার উম্মাত! তখন বলা হবে, যাও, যাদের এক অণু কিংবা সরিষা পরিমাণ ঈমান আছে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের কর। আমি গিয়ে তাই করব। আমি আবার ফিরে আসব এবং সেসব প্রশংসা বাক্য দিয়ে আল্লাহ্র প্রশংসা করবো। আর সাজদাহ্য় পড়ে যাবো। আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও। বল, তোমার কথা শোনা হবে। চাও, দেয়া হবে। সুপারিশ কর, গ্রহণ করা হবে। আমি তখন বলবো, হে আমার রব্ব, আমার উম্মাত! আমার উম্মাত! এরপর আল্লাহ্ বলবেন, যাও, যাদের অন্তরে সরিষার দানার চেয়েও অতি ক্ষুদ্র পরিমাণও ঈমান আছে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে আন। আমি যাবো এবং তাই করবো। আমরা যখন আনাস (রাঃ) -এর নিকট থেকে বের হয়ে আসছিলাম, তখন আমি আমার সঙ্গীদের কোন একজনকে বললাম, আমরা যদি আবূ খলীফার বাড়িতে নিজেকে গোপনে রাখা হাসান বস্রীর কাছে গিয়ে আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) -এর বর্ণিত হাদীসটি তাঁর কাছে বর্ণনা করতাম। এরপর আমরা হাসান বস্রীর কাছে এসে তাঁর কাছে অনুমতি চাওয়ার সালাম দিলাম। তিনি আমাদেরকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। আমরা তাঁকে বললাম, হে আবূ সা‘ঈদ! আমরা আপনারই ভাই আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর নিকট হতে আপনার কাছে আসলাম। শাফাআত বিষয়ে তিনি যেমন বর্ণনা দিয়েছেন, তেমন বর্ণনা করতে আমরা আর কাউকে দেখেনি। তিনি বললেন, আমার কাছে সেটি বর্ণনা কর। আমরা তাঁকে হাদীসটি বর্ণনা করে শোনালাম। এরপর আমরা শেষখানে এসে বর্ণনা শেষ করলাম। তিনি বললেন, আরো বর্ণনা কর। আমরা বললাম, তিনি তো এর অধিক আমাদের কাছে বর্ণনা দেননি। তিনি বললেন, জানিনা, তিনি কি ভুলেই গেলেন, না তোমরা নির্ভরশীল হয়ে পড়বে বলে বাকীটুকু বর্ণনা করতে অপছন্দ করলেন। বিশ বছর আগে যখন তিনি শক্তি সামর্থ্যে ও স্মরণশক্তিতে দৃঢ় ছিলেন, তখন আমার কাছেও হাদীসটি বর্ণনা করেছিলেন। আমরা বললাম, হে আবূ সা‘ঈদ! আমাদের কাছে হাদীসটি বর্ণনা করুন। তিনি হাসলেন এবং বললেন, মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে, খুব বেশি সত্বরতা প্রিয় করে। আমি তো বর্ণনার উদ্দ্যেশেই তোমাদের কাছে বিষয়টি উল্লেখ করলাম। তিনি তোমাদের কাছে যা বর্ণনা করেছেন, আমার কাছেও তা বর্ণনা করেছেন, তবে পরে এটুকুও বলেছিলেন, আমি চতুর্থবার ফিরে আসবো এবং সেসব প্রশংসা বাক্য দিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করব এবং সাজদাহ্য় পড়ে যাবো। তখন বলা হবে, হে মুহাম্মদ! মাথা উঠাও। বল, তোমার কথা শোনা হবে। চাও, দেয়া হবে। শাফাআত কর, গ্রহণ করা হবে। আমি বলব, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে তাদের সম্পর্কে শাফাআত করার অনুমতি দান কর, যারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলেছে। তখন আল্লাহ্ বলবেন, আমার ইয্যত , আমার পরাক্রম, আমার বড়ত্ব ও আমার মহত্ত্বের শপথ! যারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলেছে, আমি অবশ্য অবশ্যই তাদের সবাইকে জাহান্নাম থেকে বের করব। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫১১
مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى عَنْ إِسْرَائِيلَ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَبِيدَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ آخِرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولاً الْجَنَّةَ وَآخِرَ أَهْلِ النَّارِ خُرُوجًا مِنْ النَّارِ رَجُلٌ يَخْرُجُ حَبْوًا فَيَقُولُ لَهُ رَبُّهُ ادْخُلْ الْجَنَّةَ فَيَقُولُ رَبِّ الْجَنَّةُ مَلْأَى فَيَقُولُ لَهُ ذَلِكَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَكُلُّ ذَلِكَ يُعِيدُ عَلَيْهِ الْجَنَّةُ مَلْأَى فَيَقُولُ إِنَّ لَكَ مِثْلَ الدُّنْيَا عَشْرَ مِرَارٍ
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সবশেষে জান্নাতে প্রবেশকারী এবং জাহান্নাম থেকে সর্বশেষে পরিত্রান পাওয়া লোকটি জাহান্নাম থেকে হামাগুড়ি দিয়ে বের হয়ে আসবে। তার রব্ব তাকে বলবেন, তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর। সে বলবে, হে আমার রব্ব! জান্নাত তো পরিপূর্ণ! আল্লাহ্ এভাবে তাকে তিনবার বলবেন। প্রত্যেকবারই সে উত্তর দিবে, জান্নাত তো পরিপূর্ণ। পরিশেষে আল্লাহ্ তাকে বলবেন, তোমার জন্য আছে এ পৃথিবীর চেয়ে দশ গুণ (বড়)। [৬৫৭১; মুসলিম ১/৮৪, হাঃ ১৯৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫১২
عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ خَيْثَمَةَ عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا مِنْكُمْ أَحَدٌ إِلاَّ سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ تُرْجُمَانٌ فَيَنْظُرُ أَيْمَنَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إِلاَّ مَا قَدَّمَ مِنْ عَمَلِهِ وَيَنْظُرُ أَشْأَمَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إِلاَّ مَا قَدَّمَ وَيَنْظُرُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَلاَ يَرَى إِلاَّ النَّارَ تِلْقَاءَ وَجْهِهِ فَاتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ قَالَ الأَعْمَشُ وَحَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ عَنْ خَيْثَمَةَ مِثْلَهُ وَزَادَ فِيهِ وَلَوْ بِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ
আদী ইব্নু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে তার রবব অতি সত্বর কথা বলবেন। তার ও আল্লাহর মাঝখানে কোন তর্জমাকারী থাকবে না। এরপর সে তাকাবে ডান দিকে, তখন তার আগের ‘আমাল ব্যতীত সে আর কিছু দেখবে না। আবার তাকাবে বাম দিকে, তখনো আগের ‘আমাল ব্যতীত আর কিছু সে দেখবে না। আর সামনে তাকাবে তখন সে জাহান্নাম ব্যতীত আর কিছুই দেখতে পাবে না। কাজেই জাহান্নামকে ভয় কর এক টুকরো খেজুরের বিনিময়ে হলেও।
বর্ণনাকারী আ‘মাশ (রহ.)……খায়সামা (রহ.) থেকে অনুরূপই বর্ণনা দিয়েছেন। তবে তিনি وَلَوْ بِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ ‘‘যদি পবিত্র কথার বদলেও হয়’’ কথাটুকু যোগ করেছেন। [১৪১৩; মুসলিম ১২/১৯, হাঃ ১০১৬, আহমাদ ১৮২৭৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫১৩
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَبِيدَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ جَاءَ حَبْرٌ مِنْ الْيَهُودِ فَقَالَ إِنَّهُ إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ جَعَلَ اللهُ السَّمَوَاتِ عَلَى إِصْبَعٍ وَالأَرَضِينَ عَلَى إِصْبَعٍ وَالْمَاءَ وَالثَّرَى عَلَى إِصْبَعٍ وَالْخَلاَئِقَ عَلَى إِصْبَعٍ ثُمَّ يَهُزُّهُنَّ ثُمَّ يَقُولُ أَنَا الْمَلِكُ أَنَا الْمَلِكُ فَلَقَدْ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَضْحَكُ حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ تَعَجُّبًا وَتَصْدِيقًا لِقَوْلِهِ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم{وَمَا قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِهِ} إِلَى قَوْلِهِ {يُشْرِكُونَ}
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ইয়াহূদী বিদ্বান নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললো, ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ আসমানসমূহকে এক আঙ্গুলে, পৃথিবীকে এক আঙ্গুলে, পানি ও কাদামাটি এক আঙ্গুলে এবং বাকী সৃষ্টিকে এক আঙ্গুলে উঠিয়ে ঝাঁকুনি দিয়ে বলবেন, আমিই রাজাধিরাজ, আমিই রাজাধিরাজ। আমি তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখলাম, তিনি তার কথার সমর্থনে তাজ্জব হয়ে এমনভাবে হাসলেন যে, তাঁর মাড়ির দাঁতগুলো প্রকাশিত হয়ে পড়ল। অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনের বাণী পড়লেনঃ وَمَا قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِهِ ‘‘তারা আল্লাহর যথাযোগ্য মর্যাদা উপলব্ধি করেনি’’- (সূরাহ আন‘আম ৬/৯১)। وَالْأَرْضُ جَمِيعاً قَبْضَتُهُ ……. عَمَّا يُشْرِكُونَ ‘‘ক্বিয়ামাতের দিন সমগ্র পৃথিবী তাঁর হাতের মুষ্ঠিতে থাকবে, আর আকাশমন্ডলী থাকবে ভাঁজ করা অবস্থায় তাঁর ডান হাতে। মাহাত্ম্য তাঁরই, তারা যাদেরকে তাঁর শারীক করে তিনি তাদের বহু ঊর্ধ্বে।’’- (সূরাহ আয্ যুমার ৩৯/৬৭)। [৪৮১১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫১৪
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ صَفْوَانَ بْنِ مُحْرِزٍ أَنَّ رَجُلاً سَأَلَ ابْنَ عُمَرَ كَيْفَ سَمِعْتَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي النَّجْوَى قَالَ يَدْنُو أَحَدُكُمْ مِنْ رَبِّهِ حَتَّى يَضَعَ كَنَفَهُ عَلَيْهِ فَيَقُولُ أَعَمِلْتَ كَذَا وَكَذَا فَيَقُولُ نَعَمْ وَيَقُولُ عَمِلْتَ كَذَا وَكَذَا فَيَقُولُ نَعَمْ فَيُقَرِّرُهُ ثُمَّ يَقُولُ إِنِّي سَتَرْتُ عَلَيْكَ فِي الدُّنْيَا وَأَنَا أَغْفِرُهَا لَكَ الْيَوْمَ وَقَالَ آدَمُ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ حَدَّثَنَا صَفْوَانُ عَنْ ابْنِ عُمَرَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم
সাফওয়ান ইব্নু মুহরিয (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক লোক ইব্নু ‘উমার (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করল, আল্লাহ্র সঙ্গে বান্দার গোপন কথাবার্তা সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আপনি কী বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, তোমাদের কেউ তার রব্বের নিকটবর্তী হলে তিনি তাঁর ওপর রহমতের ছায়া বিস্তার করে জিজ্ঞেস করবেন, তুমি কি এ কাজ করেছ? সে বলল, হ্যাঁ। আল্লাহ্ আবারো জিজ্ঞেস করবেন, তুমি কি এ কাজ করেছ? সে তখনো বলবে, হ্যাঁ। আল্লাহ্ এভাবে তার স্বীকারোক্তি নেবেন। তারপর আল্লাহ্ বলবেন, আমি দুনিয়ায় তোমার ওসব কাজ গোপন রেখেছিলাম। আমি আজকেও তোমার জন্য তা ক্ষমা করে দিলাম। [২৪৪১]
আদাম (রহঃ) ……. ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে শুনেছি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৩৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ এবং মুসা (আঃ) এর সঙ্গে আল্লাহ্ সরাসরি বাক্যালাপ করেছিলেন। (সূরা আন্-নিসা ৪/১৬৪)
৭৫১৫
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنَا عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ احْتَجَّ آدَمُ وَمُوسَى فَقَالَ مُوسَى أَنْتَ آدَمُ الَّذِي أَخْرَجْتَ ذُرِّيَّتَكَ مِنْ الْجَنَّةِ قَالَ آدَمُ أَنْتَ مُوسَى الَّذِي اصْطَفَاكَ اللهُ بِرِسَالاَتِهِ وَكَلاَمِهِ ثُمَّ تَلُومُنِي عَلَى أَمْرٍ قَدْ قُدِّرَ عَلَيَّ قَبْلَ أَنْ أُخْلَقَ فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্নিত যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আদাম ও মূসা (আঃ) বিতর্ক করলেন। মূসা (আঃ) বললেন, আপনি সেই আদাম, যিনি নিজ সন্তানদের জান্নাত থেকে বের করে দিলেন। আদাম (আঃ) বললেন, আপনি হচ্ছেন সেই মূসা , যাকে আল্লাহ রিসালাত দিয়ে সম্মানিত করলেন এবং যার সঙ্গে কথা বলে তাঁর মর্যাদাকে বাড়িয়ে দিলেন। আপনি এমন একটি ব্যাপারে কেন আমাকে অভিযুক্ত করছেন, আমাকে পয়দা করারও আগে যেটি নির্ধারিত হয়ে গেছে। এভাবে আদাম (আঃ) মূসা (আঃ) -এর ওপর বিজয়ী হলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫১৬
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُجْمَعُ الْمُؤْمِنُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُولُونَ لَوْ اسْتَشْفَعْنَا إِلَى رَبِّنَا فَيُرِيحُنَا مِنْ مَكَانِنَا هَذَا فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ لَهُ أَنْتَ آدَمُ أَبُو الْبَشَرِ خَلَقَكَ اللهُ بِيَدِهِ وَأَسْجَدَ لَكَ الْمَلاَئِكَةَ وَعَلَّمَكَ أَسْمَاءَ كُلِّ شَيْءٍ فَاشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّنَا حَتَّى يُرِيحَنَا فَيَقُولُ لَهُمْ لَسْتُ هُنَاكُمْ فَيَذْكُرُ لَهُمْ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন ঈমানদারদেরকে একত্রিত করা হবে। তখন তারা বলবে, আমরা যদি আমাদের রব্বের কাছে সুপারিশ নিয়ে যাই তাহলে তিনি আমাদেরকে এ জায়গাটি থেকে স্বস্তি দিবেন। তখন তারা আদাম (আঃ) -এর কাছে এসে আবেদন জানাবে, আপনি মানব বংশের পিতা আদাম। আল্লাহ্ আপনাকে সৃষ্টি করেছেন আপন কুদরতের হাতে। এবং তাঁর ফেরেশ্তাদের দিয়ে আপনাকে সাজদাহ্ করিয়েছেন। আর সব জিনিসের নাম আপনাকে শিখিয়েছেন। তাই আপনি আমাদের রব্বের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন, তিনি যেন আমাদের স্বস্তি দেন। তখন আদাম (আঃ) তাদেরকে বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। তারপর তিনি তাদের কাছে নিজের সে ভুলের কথা বলবেন, যা তিনি করেছিলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫১৭
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ عَنْ شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّهُ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُولُ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ مَسْجِدِ الْكَعْبَةِ أَنَّهُ جَاءَهُ ثَلاَثَةُ نَفَرٍ قَبْلَ أَنْ يُوحَى إِلَيْهِ وَهُوَ نَائِمٌ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ فَقَالَ أَوَّلُهُمْ أَيُّهُمْ هُوَ فَقَالَ أَوْسَطُهُمْ هُوَ خَيْرُهُمْ فَقَالَ آخِرُهُمْ خُذُوا خَيْرَهُمْ فَكَانَتْ تِلْكَ اللَّيْلَةَ فَلَمْ يَرَهُمْ حَتَّى أَتَوْهُ لَيْلَةً أُخْرَى فِيمَا يَرَى قَلْبُهُ وَتَنَامُ عَيْنُهُ وَلاَ يَنَامُ قَلْبُهُ وَكَذَلِكَ الأَنْبِيَاءُ تَنَامُ أَعْيُنُهُمْ وَلاَ تَنَامُ قُلُوبُهُمْ فَلَمْ يُكَلِّمُوهُ حَتَّى احْتَمَلُوهُ فَوَضَعُوهُ عِنْدَ بِئْرِ زَمْزَمَ فَتَوَلاَّهُ مِنْهُمْ جِبْرِيلُ فَشَقَّ جِبْرِيلُ مَا بَيْنَ نَحْرِهِ إِلَى لَبَّتِهِ حَتَّى فَرَغَ مِنْ صَدْرِهِ وَجَوْفِهِ فَغَسَلَهُ مِنْ مَاءِ زَمْزَمَ بِيَدِهِ حَتَّى أَنْقَى جَوْفَهُ ثُمَّ أُتِيَ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ فِيهِ تَوْرٌ مِنْ ذَهَبٍ مَحْشُوًّا إِيمَانًا وَحِكْمَةً فَحَشَا بِهِ صَدْرَهُ وَلَغَادِيدَهُ يَعْنِي عُرُوقَ حَلْقِهِ ثُمَّ أَطْبَقَهُ ثُمَّ عَرَجَ بِهِ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَضَرَبَ بَابًا مِنْ أَبْوَابِهَا فَنَادَاهُ أَهْلُ السَّمَاءِ مَنْ هَذَا فَقَالَ جِبْرِيلُ قَالُوا وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مَعِيَ مُحَمَّدٌ قَالَ وَقَدْ بُعِثَ قَالَ نَعَمْ قَالُوا فَمَرْحَبًا بِهِ وَأَهْلاً فَيَسْتَبْشِرُ بِهِ أَهْلُ السَّمَاءِ لاَ يَعْلَمُ أَهْلُ السَّمَاءِ بِمَا يُرِيدُ اللهُ بِهِ فِي الأَرْضِ حَتَّى يُعْلِمَهُمْ فَوَجَدَ فِي السَّمَاءِ الدُّنْيَا آدَمَ فَقَالَ لَهُ جِبْرِيلُ هَذَا أَبُوكَ آدَمُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ وَرَدَّ عَلَيْهِ آدَمُ وَقَالَ مَرْحَبًا وَأَهْلاً بِابْنِي نِعْمَ الِابْنُ أَنْتَ فَإِذَا هُوَ فِي السَّمَاءِ الدُّنْيَا بِنَهَرَيْنِ يَطَّرِدَانِ فَقَالَ مَا هَذَانِ النَّهَرَانِ يَا جِبْرِيلُ قَالَ هَذَا النِّيلُ وَالْفُرَاتُ عُنْصُرُهُمَا ثُمَّ مَضَى بِهِ فِي السَّمَاءِ فَإِذَا هُوَ بِنَهَرٍ آخَرَ عَلَيْهِ قَصْرٌ مِنْ لُؤْلُؤٍ وَزَبَرْجَدٍ فَضَرَبَ يَدَهُ فَإِذَا هُوَ مِسْكٌ أَذْفَرُ قَالَ مَا هَذَا يَا جِبْرِيلُ قَالَ هَذَا الْكَوْثَرُ الَّذِي خَبَأَ لَكَ رَبُّكَ
ثُمَّ عَرَجَ بِهِ إِلَى السَّمَاءِ الثَّانِيَةِ فَقَالَتْ الْمَلاَئِكَةُ لَهُ مِثْلَ مَا قَالَتْ لَهُ الْأُولَى مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ قَالُوا وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم قَالُوا وَقَدْ بُعِثَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ قَالُوا مَرْحَبًا بِهِ وَأَهْلاً ثُمَّ عَرَجَ بِهِ إِلَى السَّمَاءِ الثَّالِثَةِ وَقَالُوا لَهُ مِثْلَ مَا قَالَتْ الْأُولَى وَالثَّانِيَةُ ثُمَّ عَرَجَ بِهِ إِلَى الرَّابِعَةِ فَقَالُوا لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ عَرَجَ بِهِ إِلَى السَّمَاءِ الْخَامِسَةِ فَقَالُوا مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ عَرَجَ بِهِ إِلَى السَّمَاءِ السَّادِسَةِ فَقَالُوا لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ عَرَجَ بِهِ إِلَى السَّمَاءِ السَّابِعَةِ فَقَالُوا لَهُ مِثْلَ ذَلِكَ كُلُّ سَمَاءٍ فِيهَا أَنْبِيَاءُ قَدْ سَمَّاهُمْ فَأَوْعَيْتُ مِنْهُمْ إِدْرِيسَ فِي الثَّانِيَةِ وَهَارُونَ فِي الرَّابِعَةِ وَآخَرَ فِي الْخَامِسَةِ لَمْ أَحْفَظْ اسْمَهُ وَإِبْرَاهِيمَ فِي السَّادِسَةِ وَمُوسَى فِي السَّابِعَةِ بِتَفْضِيلِ كَلاَمِ اللهِ فَقَالَ مُوسَى رَبِّ لَمْ أَظُنَّ أَنْ يُرْفَعَ عَلَيَّ أَحَدٌ ثُمَّ عَلاَ بِهِ فَوْقَ ذَلِكَ بِمَا لاَ يَعْلَمُهُ إِلاَّ اللهُ حَتَّى جَاءَ سِدْرَةَ الْمُنْتَهَى وَدَنَا لِلْجَبَّارِ رَبِّ الْعِزَّةِ فَتَدَلَّى حَتَّى كَانَ مِنْهُ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى فَأَوْحَى اللهُ فِيمَا أَوْحَى إِلَيْهِ خَمْسِينَ صَلاَةً عَلَى أُمَّتِكَ كُلَّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ ثُمَّ هَبَطَ حَتَّى بَلَغَ مُوسَى فَاحْتَبَسَهُ مُوسَى فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ مَاذَا عَهِدَ إِلَيْكَ رَبُّكَ قَالَ عَهِدَ إِلَيَّ خَمْسِينَ صَلاَةً كُلَّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ قَالَ إِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تَسْتَطِيعُ ذَلِكَ فَارْجِعْ فَلْيُخَفِّفْ عَنْكَ رَبُّكَ وَعَنْهُمْ فَالْتَفَتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى جِبْرِيلَ كَأَنَّهُ يَسْتَشِيرُهُ فِي ذَلِكَ فَأَشَارَ إِلَيْهِ جِبْرِيلُ أَنْ نَعَمْ إِنْ شِئْتَ فَعَلاَ بِهِ إِلَى الْجَبَّارِ فَقَالَ وَهُوَ مَكَانَهُ يَا رَبِّ خَفِّفْ عَنَّا فَإِنَّ أُمَّتِي لاَ تَسْتَطِيعُ هَذَا فَوَضَعَ عَنْهُ عَشْرَ صَلَوَاتٍ ثُمَّ رَجَعَ إِلَى مُوسَى فَاحْتَبَسَهُ فَلَمْ يَزَلْ يُرَدِّدُهُ مُوسَى إِلَى رَبِّهِ حَتَّى صَارَتْ إِلَى خَمْسِ صَلَوَاتٍ ثُمَّ احْتَبَسَهُ مُوسَى عِنْدَ الْخَمْسِ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ وَاللهِ لَقَدْ رَاوَدْتُ بَنِي إِسْرَائِيلَ قَوْمِي عَلَى أَدْنَى مِنْ هَذَا فَضَعُفُوا فَتَرَكُوهُ فَأُمَّتُكَ أَضْعَفُ أَجْسَادًا وَقُلُوبًا وَأَبْدَانًا وَأَبْصَارًا وَأَسْمَاعًا فَارْجِعْ فَلْيُخَفِّفْ عَنْكَ رَبُّكَ كُلَّ ذَلِكَ يَلْتَفِتُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى جِبْرِيلَ لِيُشِيرَ عَلَيْهِ وَلاَ يَكْرَهُ ذَلِكَ جِبْرِيلُ فَرَفَعَهُ عِنْدَ الْخَامِسَةِ فَقَالَ يَا رَبِّ إِنَّ أُمَّتِي ضُعَفَاءُ أَجْسَادُهُمْ وَقُلُوبُهُمْ وَأَسْمَاعُهُمْ وَأَبْصَارُهُمْ وَأَبْدَانُهُمْ فَخَفِّفْ عَنَّا فَقَالَ الْجَبَّارُ يَا مُحَمَّدُ قَالَ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ قَالَ إِنَّهُ لاَ يُبَدَّلُ الْقَوْلُ لَدَيَّ كَمَا فَرَضْتُهُ عَلَيْكَ فِي أُمِّ الْكِتَابِ قَالَ فَكُلُّ حَسَنَةٍ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا فَهِيَ خَمْسُونَ فِي أُمِّ الْكِتَابِ وَهِيَ خَمْسٌ عَلَيْكَ فَرَجَعَ إِلَى مُوسَى فَقَالَ كَيْفَ فَعَلْتَ فَقَالَ خَفَّفَ عَنَّا أَعْطَانَا بِكُلِّ حَسَنَةٍ عَشْرَ أَمْثَالِهَا قَالَ مُوسَى قَدْ وَاللهِ رَاوَدْتُ بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى أَدْنَى مِنْ ذَلِكَ فَتَرَكُوهُ ارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَلْيُخَفِّفْ عَنْكَ أَيْضًا قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَا مُوسَى قَدْ وَاللهِ اسْتَحْيَيْتُ مِنْ رَبِّي مِمَّا اخْتَلَفْتُ إِلَيْهِ قَالَ فَاهْبِطْ بِاسْمِ اللهِ قَالَ وَاسْتَيْقَظَ وَهُوَ فِي مَسْجِدِ الْحَرَامِ
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে এক রাতে কা‘বার মসজিদ থেকে সফর করানো হয়। বিবরণটি হচ্ছে, নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এ বিষয়ে ওয়াহী পাঠানোর আগে তাঁর কাছে তিনজন ফেরেশ্তার একটা জামা‘আত আসল। অথচ তখন তিনি মাসজিদুল হারামে ঘুমিয়ে ছিলেন। এদের প্রথম জন বলল, তিনি কে? মধ্যের জন্য বলল, তিনি এদের সব চেয়ে ভাল লোক। সর্বশেষ জন বলল, তা হলে তাদের সবচেয়ে ভাল লোকটিকেই নিয়ে চল। সে রাতের ঘটনা এতটুকুই। এ জন্য তিনি আর তাদেরকে দেখেননি। শেষে তারা অন্য এক রাতে আসলেন, যা তিনি অন্তর দ্বারা দেখছিলেন। তাঁর চোখ ঘুমায়, অন্তর ঘুমায় না। সে রকম অন্য নবীগণের (আঃ) চোখ ঘুমিয়ে থাকে, অন্তর ঘুমায় না। এ রাতে তারা তাঁর সঙ্গে কোন কথা না বলে তাঁকে উঠিয়ে নিয়ে যমযম কুপের কাছে রাখলেন। জিব্রীল (আঃ) তাঁর সাথীদের থেকে নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দায়িত্ব নিলেন। জিব্রীল (আঃ) তাঁর গলায় নিচ হতে বুক পর্যন্ত বিদীর্ণ করলেন এবং তাঁর বুক ও পেট থেকে সবকিছু নেড়েচেড়ে যমযমের পানি দ্বারা নিজ হাতে ধৌত করেন। সেগুলোকে পরিষ্কার করলেন, তারপর সোনার একটি তশ্তরী আনা হল। এবং তাতে ছিল একটি সোনার পাত্র যা পরিপূর্ণ ছিল ঈমান ও হিক্মাতে। তাঁর বুক ও গলার রগগুলো এর দ্বারা পূর্ণ করলেন। তারপর সেগুলো যথাস্থানে রেখে বন্ধ করে দিলেন। তারপর তাঁকে নিয়ে পৃথিবীর আসমানের দিকে উঠলেন। আসমানের দরজাগুলো হতে একটি দরজাতে নাড়া দিলেন। ফলে আসমানবাসীগণ তাঁকে ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এ কে? তিনি উত্তরে বললেন, জিব্রীল। তারা আবার জিজ্ঞেস করলেন, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, আমার সঙ্গে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর কাছে কি দূত পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন তাঁরা বললেন, মারহাবান ওয়া আহলান (আপনাকে ধন্যবাদ, আপনি আপনজনের মধ্যে এসেছেন)। তাঁর আগমনে আসমানবাসীরা খুবই আনন্দিত। আল্লাহ্ যমীনে কী করতে চাচ্ছেন, তা আসমানবাসীদেরকে না জানানো পর্যন্ত তারা জানতে পারে না। দুনিয়ার আসমানে তিনি আদাম (আঃ)-কে পেলেন। জিব্রীল (আঃ) তাঁকে দেখিয়ে বললেন, তিনি আপনার পিতা, তাঁকে সালাম দিন। নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে সালাম দিলেন। আদাম (আঃ) তাঁর সালামের উত্তর দিলেন এবং বললেন, মারহাবান ওয়া আহলান হে আমার পুত্র! তুমি আমার কতইনা উত্তম পুত্র। নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘টি প্রবহমান নদী দুনিয়ার আসমানে দেখলেন। জিজ্ঞেস করলেন, এ নদী দু‘টি কোন নদী হে জিব্রীল! জিব্রীল (আঃ) বললেন, এ দু‘টি হলো নীল ও ফুরাতের মূল। এরপর জিব্রীল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে সঙ্গে নিয়ে এ আসমানে ঘুরে বেড়ালেন। তিনি আরো একটি নদী দেখলেন। এর ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল মোতি ও জাবারজাদের তৈরী একটি প্রাসাদ। নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নদীতে হাত মারলেন। সেটা ছিল অতি উন্নতমানের মিস্ক। তিনি বললেন, হে জিব্রীল! এটি কী? জিব্রীল (আঃ) বললেন, হাউযে কাউসার। যা আপনার রব আপনার জন্য সংরক্ষিত রেখেছেন। তারপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে সঙ্গে করে দ্বিতীয় আসমানে গেলেন। প্রথম আসমানের ফেরেশ্তাগণ তাঁকে যা বলেছিলেন এখানেও তা বললেন। তারা জানতে চাইল, তিনি কে? তিনি বললেন, জিব্রীল! তাঁরা বললেন, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তাঁরা বললেন, তাঁর কাছে কি দূত পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তাঁরা বললেন, মারহাবান ওয়া আহলান। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে সঙ্গে করে তিনি তৃতীয় আসমানের দিকে গেলেন। প্রথম ও দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতারা যা বলেছিলেন, তৃতীয় আসমানের ফেরেশ্তারাও তাই বললেন। তারপর তাঁকে সঙ্গে করে তিনি চতুর্থ আসমানের দিকে গেলেন। তাঁরাও তাঁকে আগের মতই বললেন। তারপর তাঁকে নিয়ে তিনি পঞ্চম আসমানে গমন করলেন। তাঁরাও পূর্বের মতো বললেন। এরপর তিনি তাঁকে নিয়ে ষষ্ঠ আসমানের দিকে গেলেন। সেখানেও ফেরেশ্তারা আগের মতই বললেন। সর্বশেষে তিনি নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে নিয়ে সপ্তম আসমানে গেলে সেখানেও ফেরেশ্তারা তাঁকে আগের ফেরেশ্তাদের মতো বললেন। প্রত্যেক আসমানেই নবীগণ রয়েছেন। নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাম উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে আমি সংরক্ষিত করেছি যে, দ্বিতীয় আসমানে উদ্রীস (আঃ), চতুর্থ আসমানে হারুন (আঃ), পঞ্চম আসমানে অন্য একজন নবী যার নাম আমি স্মরণ রাখতে পারিনি। ষষ্ঠ আসমানে রয়েছে ইব্রাহীম (আঃ) এবং আল্লাহ্র সঙ্গে কথা বলার মর্যাদার কারণে মূসা (আঃ) আছেন সপ্তম আসমানে। সে সময় মূসা বললেন, হে আমার রব্ব। আমি তো ধারণা করিনি আমার ওপর কাউকে উচ্চমর্যাদা দান করা হবে। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে এত উপরে উঠানো হলো, যে ব্যাপারে আল্লাহ্ ব্যতীত আর কেউই জানে না। শেষে তিনি ‘সিদ্রাতুল মুনতাহায়’ পৌঁছলেন। এখানে প্রবল পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তাঁর নিকটবর্তী হলেন। অতি নিকটবর্তীর ফলে তাঁদের মাঝে দু‘ধনুকের ফারাক রইল অথবা তারও কম। তখন আল্লাহ্ তাঁর প্রতি ওয়াহী পাঠালেন। অর্থাৎ তাঁর উম্মাতের উপর রাত ও দিনে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের কথা ওয়াহীযোগে পাঠানো হলো। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামলেন। আর মূসার কাছে আসলে মূসা (আঃ) তাঁকে আটকিয়ে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আপনার রব্ব আপনাকে কী নির্দেশ দিলেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, রাত ও দিনে পঞ্চাশ বার সালাত আদায়ের। তখন মূসা (আঃ) বললেন, আপনার উম্মাত তা আদায় করতে পারবে না। কাজেই আপনি ফিরে যান, তাহলে আপনার রব্ব আপনার এবং আপনার উম্মাত হতে এ আদেশটি সহজ করে দেবেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরাঈলের (আঃ) দিকে এমনভাবে তাকালেন যেন তিনি এ ব্যাপারে তাঁর থেকে পরামর্শ চাচ্ছিলেন। জিবরাঈল (আঃ) তাঁকে ইশারায় বললেন হ্যাঁ, আপনি ইচ্ছে করলে তা হতে পারে। তাই তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে নিয়ে প্রথমে আল্লাহ্র কাছে গেলেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যথাস্থানে থেকে বললেন, হে আমার রব্ব! আমার উম্মাত এটি আদায় করতে পারবে না। তখন আল্লাহ্ দশ ওয়াক্ত ,লাত কমিয়ে দিলেন। এরপর মূসা (আঃ) -এর কাছে ফিরে আসলে তিনি তাঁকে থামালেন। এভাবেই মূসা তাঁকে তাঁর রব্বের কাছে পাঠাতে থাকলেন। শেষে পাঁচ ওয়াক্ত বাকী থাকল। পাঁচ সংখ্যায়ও মূসা (আঃ) তাঁকে থামিয়ে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি আমার বানী ইসরাঈল কাওমের কাছে এটা হতেও সামান্য কিছু পেতে চেয়েছি। তবু তারা দুর্বল হয়েছে এবং পরিত্যাগ করেছে। অথচ আপনার উম্মাত শারীরিক, মানসিক, দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি সব দিক দিয়ে আরো দুর্বল। কাজেই আপনি আবার যান এবং আপনার রব্ব থেকে আদেশটি আরো সহজ করে আনুন। প্রতিবারই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরামর্শের জন্য জিব্রাঈলের দিকে তাকাতেন। পঞ্চমবারেও জিব্রীল তাঁকে নিয়ে যাত্রা করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আমার রব্ব! আমার উম্মাতের শরীর, মন, শ্রবণশক্তি ও দেহ খুবই দুর্বল। তাই আদেশটি আমাদের থেকে আরো সহজ করে দিন। এরপর পরাক্রমশালী আল্লাহ্ বলেলেনঃ মুহাম্মাদ! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি আপনার নিকট উপস্থিত, বারবার উপস্থিত। আল্লাহ্ বললেন, আমার কথার কোন পরিবর্তন পরিবর্ধন হয় না। আমি তোমাদের উপর যা ফরয করেছি তা ‘উম্মুল কিতাব’ তথা লাওহে মাহ্ফুযে সংরক্ষিত আছে। প্রতিটি নেক আমলের দশটি নেকী রয়েছে। উম্মুল কিতাবে সালাত পঞ্চাশ ওয়াক্তই লেখা আছে। তবে আপনার ও আপনার উম্মাতের জন্য তা পাঁচ ওয়াক্ত করা হলো। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মূসার কাছে ফিরে আসলে মূসা (আঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কী ব্যবস্থা নিয়ে এসেছেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্ আমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে প্রতিটি নেক আমলে বদলে দশটি সাওয়াব নির্ধারিত করেছেন। তখন মূসা (আঃ) বললেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি বানী ইসরাঈলের নিকট হতে এর চেয়েও অল্প জিনিসের আশা করেছি। কিন্তু তারা তাও আদায় করেনি। আপনার রব্বের কাছে আপনি আবার ফিরে যান, যেন তিনি আরো একটু কমিয়ে দেন। এবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে মূসা, আল্লাহর শপথ! আমি আমার রব্বের কাছে বারবার গেছি। আবার যেতে লজ্জাবোধ করছি, যেন তাঁর সঙ্গে মতভেদ করছি। এরপর মূসা (আঃ) বললেন, নামতে পারেন আল্লাহ্র নামে। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাগ্রত হলেন, দেখলেন, তিনি মাসজিদে হারামে আছেন। [৩৫৭০; মুসলিম ১/৭৪, হাঃ ১৬২, আহমাদ ১২৫০৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৩৮. অধ্যায়ঃ
জান্নাতবাসীদের সঙ্গে রবের কথাবার্তা।
৭৫১৮
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ يَقُولُ لِأَهْلِ الْجَنَّةِ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ فَيَقُولُونَ لَبَّيْكَ رَبَّنَا وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ فِي يَدَيْكَ فَيَقُولُ هَلْ رَضِيتُمْ فَيَقُولُونَ وَمَا لَنَا لاَ نَرْضَى يَا رَبِّ وَقَدْ أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ فَيَقُولُ أَلاَ أُعْطِيكُمْ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ فَيَقُولُونَ يَا رَبِّ وَأَيُّ شَيْءٍ أَفْضَلُ مِنْ ذَلِكَ فَيَقُولُ أُحِلُّ عَلَيْكُمْ رِضْوَانِي فَلاَ أَسْخَطُ عَلَيْكُمْ بَعْدَهُ أَبَدًا
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ জান্নাতবাসীদেরকে বলবেন, হে জান্নাতীগণ! তখন জান্নাতীগণ বলবেন, হে আমাদের রব্ব! আমরা উপস্থিত, আপনার কাছে উপস্থিত হতে পেরে আমরা ভাগ্যবান। আপনার হাতেই কল্যাণ। আল্লাহ্ বলবেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট? তারা বলবেন হে আমাদের রব্ব! আমরা কেন সন্তুষ্ট হব না? আপনি আর কোন সৃষ্টিকে যা দান করেননি, তা আমাদেরকে দান করেছেন। তখন আল্লাহ্ বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়েও উত্তম বস্তু দান করব না? তারা বলবেন, হে রব্ব! এর চেয়ে উত্তম বস্তু কোনটি? আল্লাহ্ বলবেন, তোমাদের ওপর আমার সন্তুষ্টি বিধিবদ্ধ করলাম। অতঃপর আমি তোমাদের উপর কক্ষনো অসন্তুষ্ট হবো না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫১৯
مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ حَدَّثَنَا هِلاَلٌ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَوْمًا يُحَدِّثُ وَعِنْدَهُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ أَنَّ رَجُلاً مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ اسْتَأْذَنَ رَبَّهُ فِي الزَّرْعِ فَقَالَ لَهُ أَوَلَسْتَ فِيمَا شِئْتَ قَالَ بَلَى وَلَكِنِّي أُحِبُّ أَنْ أَزْرَعَ فَأَسْرَعَ وَبَذَرَ فَتَبَادَرَ الطَّرْفَ نَبَاتُهُ وَاسْتِوَاؤُهُ وَاسْتِحْصَادُهُ وَتَكْوِيرُهُ أَمْثَالَ الْجِبَالِ فَيَقُولُ اللهُ تَعَالَى دُونَكَ يَا ابْنَ آدَمَ فَإِنَّهُ لاَ يُشْبِعُكَ شَيْءٌ فَقَالَ الأَعْرَابِيُّ يَا رَسُولَ اللهِ لاَ تَجِدُ هَذَا إِلاَّ قُرَشِيًّا أَوْ أَنْصَارِيًّا فَإِنَّهُمْ أَصْحَابُ زَرْعٍ فَأَمَّا نَحْنُ فَلَسْنَا بِأَصْحَابِ زَرْعٍ فَضَحِكَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার আলোচনায় রত ছিলেন। তখন তাঁর নিকট একজন গ্রাম্য লোকও উপস্থিত ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছিলেন, একজন জান্নাতবাসী অনুমতি চাইবে কৃষিকাজ করার জন্য। আল্লাহ তাকে বলবেন, তুমি যা চাও তা কি পাওনি? সে বলবে, হ্যাঁ, পেয়েছি। তবে আমি কৃষিকাজ করতে ভালবাসি। অতি সত্বর ব্যবস্থা করা হবে। এই বীজ বোনা হবে। তক্ষুনি নিমিষে চারা গজাবে, সোজা হয়ে দাঁড়াবে এবং তা কাটা হবে আর তা পাহাড় সমান স্তুপ করা হবে। আল্লাহ তখন বলবেন, হে আদাম সন্তান! লও। কারণ, তোমাকে কোন কিছুই পরিতৃপ্ত করবে না। তখন বেদুঈন লোকটি বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! ঐ লোকটিকে আপনি কুরাইশী কিংবা আনসারী পাবেন। কারণ, তাঁরা হলেন কৃষিজীবি। আর আমরা কৃষিজীবি নই! এতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেসে দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৩৯. অধ্যায়ঃ
আদেশ দেয়ার মাধ্যমে আল্লাহ্ কর্তৃক বান্দাকে স্মরণ করা এবং দু‘আ, মিনতি, বার্তা ও বাণী প্রচারের মাধ্যমে বান্দা কর্তৃক আল্লাহ্কে স্মরণ করা।
আল্লাহর বাণীঃ কাজেই তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব। (সূরা আল-বাক্বারাহ ২/১৫২) তাদেরকে নূহের কাহিনী শোনাও। যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার অবস্থিতি আর আল্লাহ্র আয়াত দ্বারা তোমাদের প্রতি আমার উপদেশ দান যদি তোমাদের নিকট অসহ্য মনে হয় (তাতে আমার কোন পরোয়া নেই) কারণ আমি ভরসা করি আল্লাহ্র উপর। তোমরা তোমাদের শরীকদেরকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কর, পরে তোমাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তোমাদের মাঝে যেন অস্পষ্টতা না থাকে, অতঃপর আমার উপর তা কার্যকর কর আর আমাকে কোন অবকাশই দিও না। আর যদি তোমরা (আমার আহবান থেকে) মুখ ফিরিয়ে নাও (তাতে আমর কোন ক্ষতি হবে না), আমি তো তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাচ্ছি না, আমার পারিশ্রমিক আছে কেবল আল্লাহ্রই নিকট, আমাকে আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে শামিল হওয়ারই আদেশ দেয়া হয়েছে। (সূরা ইউনুস ১০/৭১-৭২)
(—) এর অর্থ বিপদ, সঙ্কট। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, (—)(—) এর ভাবার্থ হচ্ছে- তোমরা আমার নিকট পেশ কর তোমাদের মনে যা কিছু আছে। আরবীতে বলা হয়, (—) -তুমি স্পষ্ট করে বল, তবে আমি ফায়সালা দেব। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, (—)(—) এর ভাবার্থ হচ্ছে, কোন ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এসে তাঁর অথবা কুরআনের বাণী শুনতে চাইলে সে নিরাপদ স্থানে গিয়ে পৌঁছা পর্যন্ত নিরাপত্তা ও আশ্রয়প্রাপ্ত বলে স্বীকৃত। (—) এর অর্থ আল-কুরআন, (—) এর অর্থ দুনিয়ায় হক (কথা) বলেছে এবং এতে (নেক) ‘আমাল করেছে।
৯৭/৪০. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ সুতরাং জেনে শুনে কাউকেও আল্লাহ্র সমকক্ষ দাঁড় করো না। (সূরা আল-বাক্বারাহ ২/২২)
এবং তোমরা তাঁর সমকক্ষ দাঁড় করতে চাও? তিনি তো জগতসমূহের প্রতিপালক- (সূরা আল-বাক্বারাহ ২/৯)। এবং তারা আল্লাহ্র সঙ্গে কোন ইলাহ্কে ডাকে না- (সূরা আল-ফুরক্বান ২৫/৬৮)। কিন্তু তোমার কাছে আর তোমাদের পূর্ববর্তীদের কাছে ওয়াহী করা হয়েছে যে, তুমি যদি (আল্লাহ্র) শরীক স্থির কর, তাহলে তোমার কর্ম অবশ্য অবশ্যই নিষ্ফল হয়ে যাবে, আর তুমি অবশ্য অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে। না, বরং আল্লাহ্র ‘ইবাদাত কর, আর শুক্রগুজারদের অন্তর্ভূক্ত হও। (সূরা আয্ যুমার ৩৯/৬৫-৬৬)।
এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইক্রিমাহ (রহঃ) বলেন, তাদের অধিকাংশ আল্লাহ্তে বিশ্বাস করে, কিন্তু তাঁর শরীক করে- (সূরা ইউছুফ ১২/১০৬)। যদি তাদেরকে তুমি জিজ্ঞেস কর, আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছে কে ? তারা বলবে, আল্লাহ! এটিই তাদের বিশ্বাস। অথচ তারা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যের ‘ইবাদাত করছে। বান্দার কর্ম ও অর্জন সবই সৃষ্টির অন্তর্ভূক্ত। কারণ আল্লাহ্ ইরশাদ করেছেন। (—)(—) তিনি সমস্ত কিছু যথার্য পরিমাণে সৃষ্টি করেছেন যথাযথ অনুপাতে- (সূরা আল-ফুরক্বান ২৫/২)।
মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, আমি ফেরেশ্তাগণকে পাঠাই না হক ব্যতীত …… (সূরা হিজর ১৫/৮)। এখানে ‘হক’ শব্দের অর্থ রিসালাত ও আযাব। সত্যবাদীদের তাদের সত্যবাদিতা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করার জন্য- (সূরা আল-আহযাব ৩৩/৮)। এখানে (—) শব্দের অর্থ মানুষের কাছে যেসব রসূল আল্লাহ্র বাণী পৌছান। এবং আমিই এর সংরক্ষক- (সুরাহ হিজর ১৫/৯)। আমাদের কাছে আছে এর সংরক্ষণকারিগণ। (—) যারা সত্য এনেছে- (সূরা আয্ যুমার ৩৯/৩৩)। এখানে (—) এর অর্থ কুরআন, (—) এর অর্থ ঈমানদার। ক্বিয়ামাতের দিন ঈমানদার বলবে, আপনি আমাকে যা দিয়েছিলেন, আমি সে মোতাবেক ‘আমাল করেছি।
৭৫২০
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُرَحْبِيلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الذَّنْبِ أَعْظَمُ عِنْدَ اللهِ قَالَ أَنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ قُلْتُ إِنَّ ذَلِكَ لَعَظِيمٌ قُلْتُ ثُمَّ أَيُّ قَالَ ثُمَّ أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ تَخَافُ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ قُلْتُ ثُمَّ أَيُّ قَالَ ثُمَّ أَنْ تُزَانِيَ بِحَلِيلَةِ جَارِكَ
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর কাছে কোন গুনাহ্টি সবচেয়ে বড়? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সঙ্গে শারীক করা। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম, এটি অবশ্যই বড় গুনাহ্। এরপর কোন্টি? তিনি বললেনঃ তোমার সন্তান তোমার সঙ্গে খাবে এ ভয়ে তাকে হত্যা করা। আমি বললাম, এরপর কোন্টি? তিনি বললেন, এরপর তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে যিনা করা। [৪৪৭৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৪১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ (দুনিয়ায় নিজেদের শরীরের অংশগুলোকে তোমরা) এই ভেবে গোপন করতে না যে, না তোমাদের কান, না তোমাদের চোখ আর না তোমাদের চামড়া তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে। বরং তোমরা মনে করতে যে, তোমরা যা কর তার অধিকাংশই আল্লাহ জানেন না। (সূরা ফুস্সিলাত ৪১/২২)
৭৫২১
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا مَنْصُورٌ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ اجْتَمَعَ عِنْدَ الْبَيْتِ ثَقَفِيَّانِ وَقُرَشِيٌّ أَوْ قُرَشِيَّانِ وَثَقَفِيٌّ كَثِيرَةٌ شَحْمُ بُطُونِهِمْ قَلِيلَةٌ فِقْهُ قُلُوبِهِمْ فَقَالَ أَحَدُهُمْ أَتَرَوْنَ أَنَّ اللهَ يَسْمَعُ مَا نَقُولُ قَالَ الآخَرُ يَسْمَعُ إِنْ جَهَرْنَا وَلاَ يَسْمَعُ إِنْ أَخْفَيْنَا وَقَالَ الْآخَرُ إِنْ كَانَ يَسْمَعُ إِذَا جَهَرْنَا فَإِنَّهُ يَسْمَعُ إِذَا أَخْفَيْنَا فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى وَمَا كُنْتُمْ تَسْتَتِرُونَ أَنْ يَشْهَدَ عَلَيْكُمْ سَمْعُكُمْ وَلاَ أَبْصَارُكُمْ وَلاَ جُلُودُكُمْ الْآيَةَ
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন বায়তুল্লাহ্র নিকট একত্রিত হলো দু‘জন সাকাফী ও একজন কুরাইশী অথবা দু‘জন কুরাইশী ও একজন সাকাফী। তাদের পেটে চর্বি ছিল বেশি, কিন্তু তাদের অন্তরে বুঝার ক্ষমতা ছিল কম। তাদের একজন বলল, তোমাদের অভিমত কী? আমরা যা বলছি আল্লাহ্ কি সবই শুনতে পান? দ্বিতীয় ব্যক্তি বলল, হ্যাঁ শোনেন, যদি আমরা উচ্চৈঃস্বরে বলি। আমরা চুপি চুপি বললে তিনি শোনেন না। তৃতীয় জন বলল, যদি তিনি উচ্চৈঃস্বরে বললে শোনেন, তবে নিচু স্বরে বললেও শুনবেন। এরই প্রক্ষিতে আল্লাহ্ নিম্মোক্ত আয়াত নাযিল করলেনঃ “(দুনিয়ায় নিজেদের শরীরের অংশগুলোকে তোমরা) এই ভেবে গোপন করতে না যে, না তোমাদের কান, না তোমাদের চোখ আর না তোমাদের চামড়া তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে….”(সূরাহ ফুস্সিলাত ৪১/২২)। [৪৮১৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৪২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ তিনি সর্বক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত- (সূরা আর রহমান ৫৫/২৯)।
যখনই তাদের কাছে দয়াময়ের নিকট হতে কোন নতুন নাসীহত আসে- (সূরা আশ্ শু‘আরা ২৬/৫)। হয়ত আল্লাহ্ এরপর কোন উপায় করে দেবেন- (সূরা আত্ ত্বালাক ৬৫/১)। এভাবেই তিনি তোমাদের বংশধারা বিস্তৃত করেন, কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়, তিনি সব শোনেন, সব দেখেন। (সূরা আশ্ শু‘আরা ৪২/১১)।
ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ্ তা‘আলা নতুন কিছু নির্দেশ দানের ইচ্ছা করলে তা করেন। এ নতুন নির্দেশের মধ্যে এটিও যে, তোমরা সলাতের মধ্যে কথা বলো না।
৭৫২২
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ وَرْدَانَ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَيْفَ تَسْأَلُونَ أَهْلَ الْكِتَابِ عَنْ كُتُبِهِمْ وَعِنْدَكُمْ كِتَابُ اللهِ أَقْرَبُ الْكُتُبِ عَهْدًا بِاللهِ تَقْرَءُونَهُ مَحْضًا لَمْ يُشَبْ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমরা আহ্লে কিতাবদেরকে তাদের কিতাব সম্পর্কে কেমন করে প্রশ্ন করতে পার? অথচ তোমাদের কাছে আল্লাহ্র কিতাব আছে যা অন্যান্য আসমানী কিতাবের তুলনায় আল্লাহ্র নিকট অগ্রগণ্য, যা তোমরা (হর-হামেশা) পাঠ করছ, যা পরিপূর্ণ খাঁটি, যাতে ভেজালের লেশ মাত্র নেই।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫২৩
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ قَالَ يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِينَ كَيْفَ تَسْأَلُونَ أَهْلَ الْكِتَابِ عَنْ شَيْءٍ وَكِتَابُكُمْ الَّذِي أَنْزَلَ اللهُ عَلَى نَبِيِّكُمْ صلى الله عليه وسلم أَحْدَثُ الأَخْبَارِ بِاللهِ مَحْضًا لَمْ يُشَبْ وَقَدْ حَدَّثَكُمْ اللهُ أَنَّ أَهْلَ الْكِتَابِ قَدْ بَدَّلُوا مِنْ كُتُبِ اللهِ وَغَيَّرُوا فَكَتَبُوا بِأَيْدِيهِمْ الْكُتُبَ قَالُوا هُوَ مِنْ عِنْدِ اللهِ لِيَشْتَرُوا بِذَلِكَ ثَمَنًا قَلِيلاً أَوَلاَ يَنْهَاكُمْ مَا جَاءَكُمْ مِنْ الْعِلْمِ عَنْ مَسْأَلَتِهِمْ فَلاَ وَاللهِ مَا رَأَيْنَا رَجُلاً مِنْهُمْ يَسْأَلُكُمْ عَنْ الَّذِي أُنْزِلَ عَلَيْكُمْ
আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে মুসলিম সমাজ! তোমরা কী করে আহলে কিতাবদেরকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞেস কর? অথচ তোমাদের যে কিতাব যেটি আল্লাহ্ তোমাদের নবীর ওপর নাযিল করেছেন, তা আল্লাহ্র কিতাবগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা উপযোগী। যা সনাতন ও নির্ভেজাল। অথচ আল্লাহ্ তোমাদেরকে বলে দিয়েছেন, আহলে কিতাবগণ আল্লাহ্র কিতাবগুলোকে বদলে ফেলেছে, পাল্টে দিয়েছে এবং এরা নিজ হাতে লিখে দাবি করছে এগুলো আল্লাহ্র পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। এর দ্বারা তারা তুচ্ছ সুবিধা লুটতে চায়। তোমাদের কাছে যে ইল্ম আছে, তা কি তোমাদেরকে তাদের কাছে কিছু জিজ্ঞেস করা থেকে বাধা দিচ্ছে না? আল্লাহ্র শপথ! তাদের কাউকে তোমাদের ওপর নাযিলকৃত বিষয় সম্পর্কে কখনো জিজ্ঞেস করতে আমি দেখি না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৪৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার উদ্দেশ্যে তুমি তোমার জিহ্বা দ্রুততার সঙ্গে সঞ্চালন করো না- (সূরা আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৬)।
ওহী অবতীর্ণ হওয়ার সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনটি করেছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ্ বলেন, আমি আমার বান্দার সাথে ততক্ষণ পর্যন্ত থাকি, যতক্ষণ সে আমাকে স্মরণ করে এবং আমার জন্য তার ঠোঁট দু’টো নাড়াচাড়া করে।
৭৫২৪
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ فِي قَوْلِهِ تَعَالَى {لاَ تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ} قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُعَالِجُ مِنْ التَّنْزِيلِ شِدَّةً وَكَانَ يُحَرِّكُ شَفَتَيْهِ فَقَالَ لِي ابْنُ عَبَّاسٍ فَأَنَا أُحَرِّكُهُمَا لَكَ كَمَا كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُحَرِّكُهُمَا فَقَالَ سَعِيدٌ أَنَا أُحَرِّكُهُمَا كَمَا كَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يُحَرِّكُهُمَا فَحَرَّكَ شَفَتَيْهِ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {لاَ تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ إِنَّ عَلَيْنَا جَمْعَهُ وَقُرْآنَهُ} قَالَ جَمْعُهُ فِي صَدْرِكَ ثُمَّ تَقْرَؤُهُ فَإِذَا قَرَأْنَاهُ فَاتَّبِعْ قُرْآنَهُ قَالَ فَاسْتَمِعْ لَهُ وَأَنْصِتْ {ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا} أَنْ تَقْرَأَهُ قَالَ فَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَاهُ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَم اسْتَمَعَ فَإِذَا انْطَلَقَ جِبْرِيلُ قَرَأَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كَمَا أَقْرَأَهُ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর বাণীঃ ‘‘কুরআনের কারণে আপনার জিহবা নাড়াচাড়া করবেন না’, এ আয়াত প্রসঙ্গে বলেন, ওয়াহী নাযিল হওয়া শুরু হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই কষ্টের অবস্থার সম্মুখীন হতেন, যে কারণে তিনি তার ঠোঁট দুটি নাড়াতেন। বর্ণনাকারী বলেন, ইবনু ‘আববাস (রাঃ) আমাকে বললেন, আমি তোমাকে বোঝানোর জন্য ঠোঁট দু’টি সেভাবে নাড়ছি, যেভাবে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে দু’টো নেড়েছিলেন। এরপর বর্ণনাকারী সা‘ঈদ (রহ.) বললেন, আমিও ঠোঁট দু’টি তেমনি নেড়ে দেখাচ্ছি, যেমনি ইবনু ‘আববাস (রাঃ) নেড়ে আমাকে দেখিয়েছিলেন। তিনি তাঁর ঠোঁট দু’টি নাড়লেন। এ অবস্থায় আল্লাহ্ নাযিল করলেনঃ ‘‘তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তুমি তোমার জিহবা দ্রুততার সঙ্গে চালিত করো না, এর সংরক্ষণ ও পাঠ করাবার দায়িত্ব আমারই’’- (সূরাহ আল-ক্বিয়ামহ ৭৫/১৬-১৭)।
তিনি বলেন, جَمْعُهُ -এর অর্থ আপনার বুকে এভাবে সংরক্ষণ করা, যেন পরে তা পড়তে সক্ষম হন। সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর- (সূরাহ আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৮)। এর অর্থ হচ্ছে আপনি তা শুনুন এবং চুপ থাকুন। এরপর আপনি কুরআন পাঠ করবেন সে দায়িত্ব আমাদের উপর। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে জিব্রীল (আঃ) যখন আসতেন, তিনি তখন মনোযোগ সহকারে তা শুনতেন। জিব্রীল (আঃ) চলে গেলে তিনি ঠিক তেমনি পাঠ করতেন, যেমনি তাঁকে পাঠ করানো হয়েছিল। [৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৪৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ তোমরা তোমাদের কথা চুপেচাপেই বল আর উচ্চৈঃস্বরেই বল, তিনি (মানুষের) অন্তরের গোপন কথা সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত। যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনিই কি জানেন না? তিনি অতি সূক্ষদর্শী, ওয়াকিফহাল।- (সূরা আল-মূল্ক ৬৭/১৩-১৪)।
{يَتَخَافَتُونَ} يَتَسَارُّونَ.
يَتَخَافَتُوْنَ -এর অর্থ يَتَسَارَّوْنَ (চুপে চুপে পড়ে)।
৭৫২৫
عَمْرُو بْنُ زُرَارَةَ عَنْ هُشَيْمٍ أَخْبَرَنَا أَبُو بِشْرٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ فِي قَوْلِهِ تَعَالَى {وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ وَلاَ تُخَافِتْ بِهَا} قَالَ نَزَلَتْ وَرَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مُخْتَفٍ بِمَكَّةَ فَكَانَ إِذَا صَلَّى بِأَصْحَابِهِ رَفَعَ صَوْتَهُ بِالْقُرْآنِ فَإِذَا سَمِعَهُ الْمُشْرِكُونَ سَبُّوا الْقُرْآنَ وَمَنْ أَنْزَلَهُ وَمَنْ جَاءَ بِهِ فَقَالَ اللهُ لِنَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم {وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ} أَيْ بِقِرَاءَتِكَ فَيَسْمَعَ الْمُشْرِكُونَ فَيَسُبُّوا الْقُرْآنَ {وَلاَ تُخَافِتْ بِهَاْ} عَنْ أَصْحَابِكَ فَلاَ تُسْمِعُهُمْ {وَابْتَغِ بَيْنَ ذَلِكَ سَبِيلاً}
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর বাণীঃ তোমার সালাতে স্বর উচ্চ করো না, আর তা খুব নীচুও করো না….. (সূরাহ ইসরা ১৭/১১০)। এ প্রসঙ্গে বলেন, এ আদেশ যখন নাযিল হল তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় গোপনে অবস্থান করতেন। অথচ তিনি যখন সহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করতেন, কুরআন উচ্চৈঃস্বরে পড়তেন। মুশরিক্রা এ কুরআন শুনলে কুরআন, কুরআনের নাযিলকারী আর যিনি এনেছেন সবাইকে গালমন্দ করত। এ প্রেক্ষাপটে আল্লাহ্ তাঁর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলে দিলেন, وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ আপনার সালাতকে এমন উচ্চৈঃস্বরে করবেন না অর্থাৎ আপনার কিরাআতকে। তাহলে মুশরিক্রা শুনতে পেয়ে কুরআন সম্পর্কে গালমন্দ করবে। আর এ কুরআন আপনার সহাবীদের কাছে এত ক্ষীণ শব্দেও পড়বেন না, যাতে আপনার কিরাআত তারা শুনতে না পায়। বরং এ দু’য়ের মাঝামাঝি পথ অবলম্বন করুন। [৪৭২২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫২৬
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ وَلاَ تُخَافِتْ بِهَا} فِي الدُّعَاءِ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “তোমার সলাতে স্বর উচ্চ করো না, আর তা খুব নীচুও করো না” এ আয়াতটি দু‘আ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫২৭
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَتَغَنَّ بِالْقُرْآنِ وَزَادَ غَيْرُهُ يَجْهَرُ بِهِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক সুন্দর আওয়াজে কুরআন পড়ে না, সে আমাদের নয়। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) ব্যতীত অন্যরা يَجْهَرُ بِهِ ‘উচ্চৈঃস্বরে কুরআন পড়ে না’ কথাটুকু বৃদ্ধি করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৪৫. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বাণীঃ এক ব্যক্তিকে আল্লাহ্ কুরআন দান করেছেন। সে রাতদিন তা পাঠ করছে।
আরেক ব্যক্তি বলে, এ ব্যক্তিকে যা দেয়া হয়েছে, আমাকে যদি তা দেয়া হতো, আমিও তেমন করতাম যেমন সে করছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ্ স্পষ্ট করে বলেন, লোকটির কুরআনের সঙ্গে কায়িম থাকার অর্থ তার কুরআন তিলাওয়াত করা এবং তিনি বললেন, তাঁর নিদর্শনের মধ্যে হল, আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বিভিন্নতা- (সূরা আর-রূম ৩০/২২)। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিলাওয়াত করলেন (—)(—)(—) সৎকর্ম কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার- (সুরাহ হাজ্জ ২২/৭৭)।
৭৫২৮
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تَحَاسُدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ الْقُرْآنَ فَهُوَ يَتْلُوهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ فَهُوَ يَقُولُ لَوْ أُوتِيتُ مِثْلَ مَا أُوتِيَ هَذَا لَفَعَلْتُ كَمَا يَفْعَلُ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللهُ مَالاً فَهُوَ يُنْفِقُهُ فِي حَقِّهِ فَيَقُولُ لَوْ أُوتِيتُ مِثْلَ مَا أُوتِيَ عَمِلْتُ فِيهِ مِثْلَ مَا يَعْمَلُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’টি বিষয় ব্যতীত হিংসা করা যায় না। এক ব্যক্তি হচ্ছে, আল্লাহ্ যাকে কুরআন দান করেছেন, আর সে দিনরাত তা তিলাওয়াত করে। অন্য লোকটি বলে, এ লোকটিকে যা দেয়া হয়েছে, আমাকে যদি তেমন দেয়া হতো, তাহলে আমিও তেমন করতাম, সে যেমন করছে। আরেক লোক হচ্ছে সে, যাকে আল্লাহ্ ধন-সম্পদ দিয়েছেন। ফলে সে তা যথাযথভাবে ব্যয় করছে। তখন অন্য লোক বলে , একে যা দেয়া হয়েছে, আমাকেও যদি তেমন দেয়া হতো, আমিও তাই করতাম, যা সে করছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫২৯
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ الزُّهْرِيُّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللهُ الْقُرْآنَ فَهُوَ يَتْلُوهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللهُ مَالاً فَهُوَ يُنْفِقُهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ سَمِعْتُ سُفْيَانَ مِرَارًا لَمْ أَسْمَعْهُ يَذْكُرُ الْخَبَرَ وَهُوَ مِنْ صَحِيحِ حَدِيثِهِ
সালিম তার পিতা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, একমাত্র দু’টি বিষয়েই হিংসা করা যায়। একজন হচ্ছে, যাকে আল্লাহ্ কুরআন দান করেছেন, আর সে তা রাতদিন তিলাওয়াত করে, আরেকজন হল, যাকে আল্লাহ্ সম্পদ দিয়েছেন আর সে রাতদিন তা ব্যয় করে। [৫০২৫; মুসলিম ৬/৪৭, হাঃ ৮১৫, আহমাদ ৪৫৫০]
আমি সুফ্ইয়ান (রহ.) হতে কয়েকবার শুনেছি কিন্তু তাকে الْخَبَرَ উল্লেখ করতে শুনিনি। অর্থাৎ এটি তার বিশুদ্ধ হাদীসগুলোর অন্তর্ভুক্ত। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৪৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ হে রসুল! তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর, যদি না কর তাহলে তুমি তাঁর বার্তা পৌছানোর দায়িত্ব পালন করলে না। (সূরা আল-মায়িদাহ ৫/৬৭)
যুহ্রী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্র পক্ষ থেকে হচ্ছে বার্তা পাঠানো আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দায়িত্ব হলো পৌছে দেয়া (মানুষের কাছে) আর আমাদের দায়িত্ব হলো মেনে নেয়া। আল্লাহ্ বলেনঃ রসূলগণ তাঁদের প্রতিপালকের বাণী পৌছে দিয়েছেন কিনা তা জানার জন্য- (সূরা জ্বিন ৭২/২৮)। তিনি আরো বলেনঃ আমি তোমাদের কাছে আল্লাহ্র বার্তাসমূহ পৌছে দিচ্ছি। কাব ইব্নু মালিক (রাঃ) যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে (তাবূক যুদ্ধ) থেকে পিছনে রয়ে গেলেন, তখন আল্লাহ্ বলেনঃ আল্লাহ্ তো তোমাদের কাজকর্ম দেখবেন এবং তাঁর রসূল ও মু‘মিনগণও- (সূরা আত্ তাওবাহ ৯/১০৫)। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, কারো ভালো কাজে তোমাকে আনন্দিত করলে বলো, ‘আমাল কর, তোমার এ ‘আমাল আল্লাহ্, আল্লাহ্র রসূল, সমস্ত মু‘মিন দেখবেন। আর তোমাকে কেউ যেন বিচলিত করতে না পারে।
মা‘মার (রহঃ) বলেন, (—) এর অর্থ এ কুরআন, (—) -এর অর্থ বর্ণনা করা ও পথ দেখানো। আল্লাহ্র এ বাণীর মত (—) এর অর্থ এটি আল্লাহ্র হুকুম। (—) এর অর্থ এতে কোন সন্দেহ নেই। (—)(—) অর্থাৎ এগুলো কুরআনের নিদর্শন। এর দৃষ্টান্ত আল্লাহ্রই বাণীঃ যখন তোমরা নৌকায় অবস্থান করো আর চলতে থাকে সেগুলো তাদের নিয়ে। এখানে (—) এর অর্থ (—) অর্থাৎ তোমাদের নিয়ে। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মামা হারমকে তাঁর কাওমের কাছে পাঠালেন। তিনি সেখানে গিয়ে বললেন, তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর কি? আমি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি। এই বলে তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন
৭৫৩০
الْفَضْلُ بْنُ يَعْقُوبَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ جَعْفَرٍ الرَّقِّيُّ حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ الثَّقَفِيُّ حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْمُزَنِيُّ وَزِيَادُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ حَيَّةَ عَنْ جُبَيْرِ بْنِ حَيَّةَ قَالَ الْمُغِيرَةُ أَخْبَرَنَا نَبِيُّنَا صلى الله عليه وسلم عَنْ رِسَالَةِ رَبِّنَا أَنَّهُ مَنْ قُتِلَ مِنَّا صَارَ إِلَى الْجَنَّةِ
মুগীরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে আমাদের রবের বার্তা সম্পর্কে জানিয়েছেন যে আমাদের মধ্য থেকে যে, নিহত হবে, সে জান্নাতে চলে যাবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৩১
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ إِسْمَاعِيلَ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ مَنْ حَدَّثَكَ أَنَّ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم كَتَمَ شَيْئًا وَقَالَ مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ مَنْ حَدَّثَكَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَتَمَ شَيْئًا مِنْ الْوَحْيِ فَلاَ تُصَدِّقْهُ إِنَّ اللهَ تَعَالَى يَقُولُ {يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ}
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমাকে যে বলবে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ওয়াহীর) কিছু বিষয় গোপন করেছেন। মুহাম্মদ (রহঃ) বলেন, ………’আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, যে লোক তোমার কাছে বলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওয়াহীর কোন কিছু গোপন করেছেন, তাকে তুমি সত্যবাদী মনে করো না। আল্লাহ্ বলেনঃ হে রসূল! তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর-(সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৬৭)। [৩১৫৯] (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৩২
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُرَحْبِيلَ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهِ أَيُّ الذَّنْبِ أَكْبَرُ عِنْدَ اللهِ قَالَ أَنْ تَدْعُوَ لِلَّهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ قَالَ ثُمَّ أَيْ قَالَ ثُمَّ أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ مَخَافَةَ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ قَالَ ثُمَّ أَيْ قَالَ أَنْ تُزَانِيَ حَلِيلَةَ جَارِكَ فَأَنْزَلَ اللهُ تَصْدِيقَهَا وَالَّذِينَ {لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ} الْآيَةَ
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক লোক বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্র কাছে কোন্ গুনাহ্টি সব চেয়ে বড়? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্র বিপরীতে কাউকে ডাকা অথচ তিনিই (আল্লাহ্) তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সে বলল, এরপর কোন্টি? তিনি বললেনঃ এরপর তোমার সঙ্গে আহার করবে এ ভয়ে (তোমার) সন্তানকে হত্যা করা। সে বলল, এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ এরপর তোমাদের প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে যিনা করা। এরই সমর্থনে আল্লাহ্ নাযিল করলেনঃ তারা আল্লাহ্র সাথে অন্য কোন ইলাহ্কে ডাকে না। আর যথার্থতা ব্যতীত কোন প্রাণ হত্যা করে না যা আল্লাহ্ নিষিদ্ধ করেছেন আর তারা ব্যভিচার করে না। আর যে এগুলো করে সে শাস্তির সাক্ষাৎ লাভ করবে। তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে ……….. (সূরাহ আল-ফুরক্বান ২৫/৬৮)। [৪৪৭৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৪৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ বল, তোমরা সত্যবাদী হলে তাওরাত আন এবং পাঠ কর। (সূরা আল্ ইমরান ৩/৯৩)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বাণীঃ তাওরাত ওয়ালাদেরকে তাওরাত দেয়া হলে তারা সে মোতাবেক ‘আমাল করল। ইনজিল ওয়ালাদেরকে ইনজিল দেয়া হলে তারাও সে মোতাবেক ‘আমাল করল। তোমাদেরকে দেয়া হলো কুরআন, সুতরাং তোমরা এ মোতাবেক ‘আমাল কর।
আবূ রাযীন (রহঃ) বলেন (—) এর অর্থ তাঁর হুকুমকে যথাযথভাবে পালন করার মাধ্যমে অনুসরণ করা। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (রহঃ) বলেন, (—) অর্থ। (—) পাঠ করা হয়। (—)(—) অর্থাৎ কুরআন সুন্দরভাবে পাঠ করা। (—)(—) -এর অর্থ কুরআনের স্বাদ ও উপাকারিতা কুরআনের বিশ্বাসীদের ছাড়া না পাওয়া। কুরআনের উপর সঠিক আস্থা স্থাপনকারী ছাড়া কেউই তা যথাযথভাবে বহন করতে পারবে না। কেননা, আল্লাহ্ বলেনঃ যাদের উপর তাওরাতের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছিল, অতঃপর তা তারা বহন করেনি (অর্থাৎ তারা তাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালন করেনি) তাদের দৃষ্টান্ত হল গাধার মত, যে বহু কিতাবের বোঝা বহন করে (কিন্তু তা বুঝে না)। যে সম্প্রদায় আল্লাহ্র আয়াতগুলোকে অস্বীকার করে, তাদের দৃষ্টান্ত কতইনা নিকৃষ্ট! যালিম সম্প্রদায়কে আল্লাহ সঠিক পথে পরিচালিত করেন না। (সূরা আল- জুমু‘আহ ৬২/৫)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইসলাম, ঈমান ও সালাতকে ‘আমাল নামে আখ্যায়িত করেছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিলাল (রাঃ) কে বললেনঃ ইসলামে থাকা অবস্থায় যেটি দ্বারা তুমি মুক্তির বেশী আশাবাদী, আমাকে তুমি সে ‘আমালটি সম্পর্কে জানাও। বিলাল (রাঃ) বললেন, আমার মতে মুক্তির বেশী আশা রাখতে পারি যে ‘আমাল দ্বারা, তা হচেছ আমি যখনই ওযু করেছি, তখন সালাত আদায় করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করা হলো- কোন্ ‘আমালটি সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনা, এরপর জিহাদ, এরপর কবূল হওয়া হাজ্জ।
৭৫৩৩
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي سَالِمٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّمَا بَقَاؤُكُمْ فِيمَنْ سَلَفَ مِنْ الْأُمَمِ كَمَا بَيْنَ صَلاَةِ الْعَصْرِ إِلَى غُرُوبِ الشَّمْسِ أُوتِيَ أَهْلُ التَّوْرَاةِ التَّوْرَاةَ فَعَمِلُوا بِهَا حَتَّى انْتَصَفَ النَّهَارُ ثُمَّ عَجَزُوا فَأُعْطُوا قِيرَاطًا قِيرَاطًا ثُمَّ أُوتِيَ أَهْلُ الإِنْجِيلِ الإِنْجِيلَ فَعَمِلُوا بِهِ حَتَّى صُلِّيَتْ الْعَصْرُ ثُمَّ عَجَزُوا فَأُعْطُوا قِيرَاطًا قِيرَاطًا ثُمَّ أُوتِيتُمْ الْقُرْآنَ فَعَمِلْتُمْ بِهِ حَتَّى غَرَبَتْ الشَّمْسُ فَأُعْطِيتُمْ قِيرَاطَيْنِ قِيرَاطَيْنِ فَقَالَ أَهْلُ الْكِتَابِ هَؤُلاَءِ أَقَلُّ مِنَّا عَمَلاً وَأَكْثَرُ أَجْرًا قَالَ اللهُ هَلْ ظَلَمْتُكُمْ مِنْ حَقِّكُمْ شَيْئًا قَالُوا لاَ قَالَ فَهُوَ فَضْلِي أُوتِيهِ مَنْ أَشَاءُ
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পূর্বের উম্মাতদের তুলনায় তোমাদের অবস্থানকালের দৃষ্টান্ত হচ্ছে, ‘আসরের সালাত এবং সূর্যাস্তের মাঝের সময়টুকু। তাওরাতধারীদেরকে তাওরাত দেয়া হলে তারা সে মোতাবেক ‘আমাল করল। এ ভাবে দুপুর হয়ে গেল এবং তারাও দুর্বল হয়ে পড়ল। তাদেরকে এক কীরাত করে মজুরী দেয়া হল। তারপর ইনজিল ধারীদেরকে ইনজিল দেয়া হলে তারা সে মোতাবেক ‘আমাল করল। এ অবস্থায় ‘আসরের সালাত আদায় করা হল। তারাও ক্লান্ত হয়ে গেল। তারপর তাদেরকেও এক কীরাত করে দেয়া হল। শেষে তোমাদেরকে কুরআন দেয়া হয়। তোমরা সে মোতাবেক ‘আমাল করেছ। এ অবস্থায় সূর্য ডুবে গেল। আর তোমাদেরকে দেয়া হল দু‘কীরাত করে। ফলে কিতাবীগণ বলল, এরা তো আমাদের তুলনায় কাজ করল কম, অথচ মজুরী পেল বেশী। এতে আল্লাহ্ বললেন, তোমাদের হকের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কোন যুলুম করা হয়েছে কি? এরা বলবে, না। আল্লাহ্ বললেনঃ এটা আমার অনুগ্রহ, তা আমি যাকে চাই তাকে দিয়ে থাকি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৪৮. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাযকে ‘আমাল বলেছেন।
তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নামাযে সূরা ফাতিহা পড়ল না , তার সালাত আদায় হল না।
৭৫৩৪
سُلَيْمَانُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ الْوَلِيدِ ح و حَدَّثَنِي عَبَّادُ بْنُ يَعْقُوبَ الأَسَدِيُّ أَخْبَرَنَا عَبَّادُ بْنُ الْعَوَّامِ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ الْوَلِيدِ بْنِ الْعَيْزَارِ عَنْ أَبِي عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ عَنْ ابْنِ مَسْعُودٍ أَنَّ رَجُلاً سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ الصَّلاَةُ لِوَقْتِهَا وَبِرُّ الْوَالِدَيْنِ ثُمَّ الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللهِ
ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক লোক (সহাবী) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ ‘আমালটি সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেনঃ যথা সময়ে সালাত আদায় করা, মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার, অতঃপর আল্লাহ্র রাস্তায় জিহাদ করা।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৪৯. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে খুবই অস্থির-মনা করে, বিপদ তাকে স্পর্শ করলে সে হয় উৎকন্ঠিত, কল্যাণ তাকে স্পর্শ করলে সে হয়ে পড়ে অতি কৃপণ। (সূরা মা‘আরিজ ৭০/১৯-২৯)
৭৫৩৫
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ عَنْ الْحَسَنِ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ تَغْلِبَ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مَالٌ فَأَعْطَى قَوْمًا وَمَنَعَ آخَرِينَ فَبَلَغَهُ أَنَّهُمْ عَتَبُوا فَقَالَ إِنِّي أُعْطِي الرَّجُلَ وَأَدَعُ الرَّجُلَ وَالَّذِي أَدَعُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ الَّذِي أُعْطِي أُعْطِي أَقْوَامًا لِمَا فِي قُلُوبِهِمْ مِنْ الْجَزَعِ وَالْهَلَعِ وَأَكِلُ أَقْوَامًا إِلَى مَا جَعَلَ اللهُ فِي قُلُوبِهِمْ مِنْ الْغِنَى وَالْخَيْرِ مِنْهُمْ عَمْرُو بْنُ تَغْلِبَ فَقَالَ عَمْرٌو مَا أُحِبُّ أَنَّ لِي بِكَلِمَةِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حُمْرَ النَّعَمِ
আম্র ইব্নু তাগলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে কিছু মাল এল। এ থেকে তিনি এক দলকে দিলেন। অন্য দলটিকে দিলেন না। অতঃপর তাঁর কাছে এ খবর পৌঁছল যে, যারা পেলো না তারা অসন্তুষ্ট হয়েছে। এতে তিনি বললেনঃ আমি একজনকে দেই আবার অন্য জনকে দেই না। কিন্তু যাকে আমি দেই না, সে-ই আমার কাছে বেশী প্রিয় যাকে দেই তার থেকে। এমন কিছু কাওমকে আমি দেই, যাদের হৃদয়ে আছে অস্থিরতা ও দ্বন্দ। আর কিছু কাওমকে আমি মাল না দিয়ে তাদের হৃদয়ে আল্লাহ্ যে অমুখাপেক্ষিতা ও কল্যাণ রেখেছেন তার উপর সোর্পদ করি। এদেরই একজন হলেন, আম্র ইব্নু তাগলিব (রাঃ)। ‘আম্র (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর এ কথার বিনিময়ে আমি একপাল লাল রং এর উটের মালিক হওয়াও অধিক পছন্দ করি না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৫০. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক তাঁর রবের থেকে রিওয়ায়াতের বর্ণনা।
৭৫৩৬
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ حَدَّثَنَا أَبُو زَيْدٍ سَعِيدُ بْنُ الرَّبِيعِ الْهَرَوِيُّ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَرْوِيهِ عَنْ رَبِّهِ قَالَ إِذَا تَقَرَّبَ الْعَبْدُ إِلَيَّ شِبْرًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا وَإِذَا تَقَرَّبَ مِنِّي ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ مِنْهُ بَاعًا وَإِذَا أَتَانِي مَشْيًا أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ আমার বান্দা যখন আমার দিকে এক বিঘত নিকটবর্তী হয়, আমি তখন তার দিকে এক হাত নিকটবর্তী হই। আর সে যখন আমার দিকে এক হাত নিকটবর্তী হয়, আমি তখন তার দিকে দু‘হাত নিকটবর্তী হই। সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৩৭
مُسَدَّدٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ التَّيْمِيِّ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ رُبَّمَا ذَكَرَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا تَقَرَّبَ الْعَبْدُ مِنِّي شِبْرًا تَقَرَّبْتُ مِنْهُ ذِرَاعًا وَإِذَا تَقَرَّبَ مِنِّي ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ مِنْهُ بَاعًا أَوْ بُوعًا وَقَالَ مُعْتَمِرٌ سَمِعْتُ أَبِي سَمِعْتُ أَنَسًا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَرْوِيهِ عَنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিকবার বর্ণনা করেছেন যে, (আল্লাহ্ বলেন) : আমার বান্দা যদি আমার দিকে এক বিঘত নিকটবর্তী হয়, আমি তার দিকে এক হাত নিকটবর্তী হই। আর সে যদি আমার দিকে এক হাত নিকটবর্তী হয়, আমি তার দিকে দু হাত নিকটবর্তী হই। বর্ণনাকারী এখানে بَاعًا কিংবা بُوعًا বলেছেন। মুতামির (রহ.) বলেন, আমি আমার পিতা থেকে শুনেছি, তিনি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেন, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) কর্তৃক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। আর তিনি তাঁর প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেছেন। [৭৪০৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৩৮
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ زِيَادٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَرْوِيهِ عَنْ رَبِّكُمْ قَالَ لِكُلِّ عَمَلٍ كَفَّارَةٌ وَالصَّوْمُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ وَلَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: প্রতিটি আমলের কাফ্ফারা রয়েছে, সে সব আমলের ত্রুটি দূর করার জন্য। কিন্তু সওম আমার জন্যই, এতে লোক দেখানোর কিছু নেই, তাই আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব। সওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ্র কাছে মিস্কের চেয়েও বেশী সুগন্ধময়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৩৯
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ ح و قَالَ لِي خَلِيفَةُ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ عَنْ سَعِيدٍ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيمَا يَرْوِيهِ عَنْ رَبِّهِ قَالَ لاَ يَنْبَغِي لِعَبْدٍ أَنْ يَقُولَ إِنَّهُ خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى وَنَسَبَهُ إِلَى أَبِيهِ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর প্রতিপালকের নিকট হতে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ বলেন: কোন বান্দার জন্য এ দাবী করা শোভনীয় নয় যে, সে ইউনুস ইব্নু মাত্তার চেয়ে ভাল। এখানে ইউনুস (আঃ) -কে তাঁর পিতার দিকে সম্পর্কযুক্ত করা হয়েছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৪০
أَحْمَدُ بْنُ أَبِي سُرَيْجٍ أَخْبَرَنَا شَبَابَةُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُغَفَّلٍ الْمُزَنِيِّ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْفَتْحِ عَلَى نَاقَةٍ لَهُ يَقْرَأُ سُورَةَ الْفَتْحِ أَوْ مِنْ سُورَةِ الْفَتْحِ قَالَ فَرَجَّعَ فِيهَا قَالَ ثُمَّ قَرَأَ مُعَاوِيَةُ يَحْكِي قِرَاءَةَ ابْنِ مُغَفَّلٍ وَقَالَ لَوْلاَ أَنْ يَجْتَمِعَ النَّاسُ عَلَيْكُمْ لَرَجَّعْتُ كَمَا رَجَّعَ ابْنُ مُغَفَّلٍ يَحْكِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ لِمُعَاوِيَةَ كَيْفَ كَانَ تَرْجِيعُهُ قَالَ آ آ آ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ
আবদুল্লাহ্ ইব্নু মুগাফ্ফাল আলমুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মাক্কাহ বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে তাঁর উঠনীর উপর বসা অবস্থায় সূরা ফাত্হ কিংবা সূরা ফাতহের কিছু অংশ পড়তে দেখেছি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তারজীসহ তা পাঠ করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, মু’আবিয়া (রাঃ) ইবনুল মুগাফ্ফালের কিরাআত নকল করে পড়ছিলেন। তিনি বললেন, যদি তোমাদের কাছে লোকের ভিড় করার ভয় না হত, তাহলে আমিও তারজী করে ঠিক ঐভাবে পাঠ করতাম, যেভাবে ইব্নুল মুগাফ্ফাল (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কিরাআত নকল করে তারজীসহ পাঠ করেছিলেন। তারপর আমি মু’আবীয়াহ (রাঃ) -কে বললাম, তাঁর তারজী কেমন ছিল? তিনি বললেন, আ, আ, আ, তিনবার। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৫১. অধ্যায়ঃ
তাওরাত ও অন্যান্য আসমানী কিতাব আরবী ইত্যাদি ভাষায় ব্যাখ্যা করা বৈধ। কেননা, আল্লাহ্র বাণী: তোমরা তাওরাত নিয়ে এসো, এবং তা পাঠ কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। (সূরা আল ‘ইমরান ৩/৯৩)
৭৫৪১
وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَخْبَرَنِي أَبُو سُفْيَانَ بْنُ حَرْبٍ أَنَّ هِرَقْلَ دَعَا تَرْجُمَانَهُ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللهِ وَرَسُولِهِ إِلَى هِرَقْلَ وَ {يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ} الآيَةَ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সুফ্ইয়ান ইবনু হারব (রাঃ) আমাকে এ খবর দিয়েছেন, হিরাক্লিয়াস তাঁর তর্জমাকারীকে ডাকলেন। তারপর তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চিঠিখানা আনার জন্য হুকুম করলেন এবং তা পড়লেন। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম- আল্লাহর বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে হিরাক্লিয়াসের প্রতি এ চিঠি পাঠানো হল। তাতে আরও লেখা ছিল يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ (হে আহলে কিতাব! এমন এক কথার দিকে আসো, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই,)। [৭] (আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৪২
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ كَانَ أَهْلُ الْكِتَابِ يَقْرَءُونَ التَّوْرَاةَ بِالْعِبْرَانِيَّةِ وَيُفَسِّرُونَهَا بِالْعَرَبِيَّةِ لِأَهْلِ الإِسْلاَمِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تُصَدِّقُوا أَهْلَ الْكِتَابِ وَلاَ تُكَذِّبُوهُمْ {قُولُوا آمَنَّا بِاللهِ وَمَا أُنْزِلَ} الْآيَةَ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আহলে কিতাব তাওরাত হিব্রু ভাষায় পাঠ করত, আর মুসলিমদের জন্য আরবী ভাষায় এর ব্যাখ্যা করত। এ প্রেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ঃ কিতাবধারীদেরকে তোমার বিশ্বাস করো না আবার তাদেরকে মিথ্যেবাদী সাব্যস্তও করো না। বরং তোমরা আল্লাহর এ বাণীটি قُولُوا آمَنَّا بِاللهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا (তোমরা বল, ‘আমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি এবং যা আমাদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে) বল। (সূরাহ বাকারাহ ২/১৩৬) [৪৪৮৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৪৩
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ أُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِرَجُلٍ وَامْرَأَةٍ مِنْ الْيَهُودِ قَدْ زَنَيَا فَقَالَ لِلْيَهُودِ مَا تَصْنَعُونَ بِهِمَا قَالُوا نُسَخِّمُ وُجُوهَهُمَا وَنُخْزِيهِمَا قَالَ {فَأْتُوا بِالتَّوْرَاةِ فَاتْلُوهَا إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ} فَجَاءُوا فَقَالُوا لِرَجُلٍ مِمَّنْ يَرْضَوْنَ يَا أَعْوَرُ اقْرَأْ فَقَرَأَ حَتَّى انْتَهَى إِلَى مَوْضِعٍ مِنْهَا فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَيْهِ قَالَ ارْفَعْ يَدَكَ فَرَفَعَ يَدَهُ فَإِذَا فِيهِ آيَةُ الرَّجْمِ تَلُوحُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّ عَلَيْهِمَا الرَّجْمَ وَلَكِنَّا نُكَاتِمُهُ بَيْنَنَا فَأَمَرَ بِهِمَا فَرُجِمَا فَرَأَيْتُهُ يُجَانِئُ عَلَيْهَا الْحِجَارَةَ
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দু’জন ইয়াহূদী নারী-পুরুষকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে আনা হলো। তারা যিনা করেছিল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতোমরা ইয়াহূদীর এদের সাথে কী আচরন করে থাক? তারা বলল, আমরা এদের মুখ কালো করি ও লাঞ্ছিত করি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতোমরা তাওরাত নিয়ে এসো, এবং তা পাঠ কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। তারা তাওরাত নিয়ে আসল এবং তাদেরই ইচ্ছেমত এক লোককে ডেকে বলল, হে আওয়ার! তুমি পাঠ কর। সে পাঠ করতে লাগল, শেষে এক স্থানে এসে সে তাতে আপন হাত রেখে দিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতোমার হাতটি উঠাও। সে হাত উঠাল। তখন যিনার শাস্তি পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা আয়াতটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। তিলাওয়াতকারী বলল, হে মুহাম্মাদ! এদের মাঝে শাস্তি আসলে রজমই, কিন্তু আমরা তা গোপন করছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে রজম করার হুকুম দিলে তাদেরকে রজম করা হল। বর্ণনাকারী বলেন, যিনাকারী পুরুষটিকে স্ত্রী লোকটির উপর ঝুঁকে পড়ে তাকে পাথর থেকে রক্ষার চেষ্টা করতে দেখেছি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৫২. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বাণী: কুরআন সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তি জান্নাতে সন্মানিত পূত-পবিত্র কাতিব ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। অতএব, তোমাদের (সুললিত) কন্ঠ দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর।
৭৫৪৪
إِبْرَاهِيمُ بْنُ حَمْزَةَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ يَزِيدَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مَا أَذِنَ اللهُ لِشَيْءٍ مَا أَذِنَ لِنَبِيٍّ حَسَنِ الصَّوْتِ بِالْقُرْآنِ يَجْهَرُ بِهِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছেন। তিনি বলেছেন: আল্লাহ্ উচ্চৈঃস্বরে সুমধুর কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াতকারী নবীর প্রতি যত সন্তোষ প্রকাশ করেন, অন্য কোন কিছুর প্রতি তত সন্তোষ প্রকাশ করেন না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৪৫
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يُونُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ وَسَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ وَعَلْقَمَةُ بْنُ وَقَّاصٍ وَعُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ حَدِيثِ عَائِشَةَ حِينَ قَالَ لَهَا أَهْلُ الإِفْكِ مَا قَالُوا وَكُلٌّ حَدَّثَنِي طَائِفَةً مِنْ الْحَدِيثِ قَالَتْ فَاضْطَجَعْتُ عَلَى فِرَاشِي وَأَنَا حِينَئِذٍ أَعْلَمُ أَنِّي بَرِيئَةٌ وَأَنَّ اللهَ يُبَرِّئُنِي وَلَكِنِّي وَاللهِ مَا كُنْتُ أَظُنُّ أَنَّ اللهَ يُنْزِلُ فِي شَأْنِي وَحْيًا يُتْلَى وَلَشَأْنِي فِي نَفْسِي كَانَ أَحْقَرَ مِنْ أَنْ يَتَكَلَّمَ اللهُ فِيَّ بِأَمْرٍ يُتْلَى وَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ عُصْبَةٌ مِنْكُمْ} الْعَشْرَ الْآيَاتِ كُلَّهَا
ইব্নু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে ‘উরওয়াহ ইব্নু যুবায়র, সা’ঈদ ইব্নু মুসাইয়্যাব, ‘আলক্বামাহ ইব্নু ওয়াক্কাস, ‘উবাইদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ), ‘আয়িশাহ (রাঃ) -এর হাদীস সম্পর্কে বলেছেন। অপবাদকারীরা যখন তার উপর অপবাদ দিয়েছিল। ইব্নু শিহাব (রহঃ) বলেন, বর্ণনাকারীদের একেকজন সে সম্পর্কে আমার কাছে হাদীসের একেক অংশের বর্ণনা দিয়েছেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, এর ফলে আমি আমার বিছানায় শুয়ে পড়লাম। অথচ আমি তখন জানি, আমি নির্দোষ পবিত্র এবং আল্লাহ্ আমাকে নির্দোষ বলে প্রমান করবেন। আল্লাহ্র শপথ! কিন্তু আমার মর্যাদা আমার কাছে এমন যোগ্য ছিল না যে, এ ব্যাপারে ওয়াহীই অবতীর্ণ করবেন যা তিলাওয়াত করা হবে। আমার মর্যাদা আমার কাছে এর চেয়ে তুচ্ছ ছিল যে, আল্লাহ্ আমার সম্পর্কে এমন কোন কালাম করবেন যা তিলাওয়াত করা হবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ্ নাযিল করলেন: যারা এমন জঘন্য অপবাদ এনেছে……..পুরো দশটি আয়াত (সূরা আন্-নূর ২৪/১১-২০)। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৪৬
أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ أُرَاهُ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الْعِشَاءِ {وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ} فَمَا سَمِعْتُ أَحَدًا أَحْسَنَ صَوْتًا أَوْ قِرَاءَةً مِنْهُ
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এশার সালাতে সূরা وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ পড়তে শুনেছি। স্বর কিংবা কিরআতের দিক থেকে তার চেয়ে সুন্দর আমি আর কাউকে দেখিনি। [৭৬৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৪৭
حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ عَنْ أَبِي بِشْرٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُتَوَارِيًا بِمَكَّةَ وَكَانَ يَرْفَعُ صَوْتَهُ فَإِذَا سَمِعَ الْمُشْرِكُونَ سَبُّوا الْقُرْآنَ وَمَنْ جَاءَ بِهِ فَقَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لِنَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم {وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ وَلاَ تُخَافِتْ بِهَا}
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় লুকিয়ে থাকতেন। আর তিনি উচ্চৈঃস্বরে (তিলাওয়াত) করতেন। যখন তা মুশরিক্রা শুনল, তারা কুরআন ও তাঁর বাহককে গালমন্দ করল। এ অবস্থায় আল্লাহ্ তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জানিয়ে দিলেন, আপনি আপনার সালাতে কুরআন উচ্চৈঃস্বরেও পড়বেন না এবং খুব চুপে চুপেও পড়বেন না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৪৮
إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ لَهُ إِنِّي أَرَاكَ تُحِبُّ الْغَنَمَ وَالْبَادِيَةَ فَإِذَا كُنْتَ فِي غَنَمِكَ أَوْ بَادِيَتِكَ فَأَذَّنْتَ لِلصَّلاَةِ فَارْفَعْ صَوْتَكَ بِالنِّدَاءِ فَإِنَّهُ لاَ يَسْمَعُ مَدَى صَوْتِ الْمُؤَذِّنِ جِنٌّ وَلاَ إِنْسٌ وَلاَ شَيْءٌ إِلاَّ شَهِدَ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
আবূ সা’ঈদ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আবদুর রহমান ইব্নু আবূস’স’আহ (রহঃ) -কে বললেন, আমি তোমাকে দেখেছি, তুমি বক্রীপাল ও ময়দানকে ভালবাস। সুতরাং তুমি যখন বক্রীর পাল কিংবা ময়দানে থাকবে, তখন সালাতের জন্য উচ্চৈঃস্বরে আযান দেবে। কারণ মুআয্যিনের আযানের স্বর যতদূর পৌছবে, তত দূরের জ্বিন, ইনসান, অন্যান্য জিনিস যারাই শুনবে, ক্বিয়ামতের দিন তারা তার স্বপক্ষে সাক্ষ্য দেবে। আবূ সা’ঈদ (রাঃ) বলেন, আমি এটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৩৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৪৯
قَبِيصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ أُمِّهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَرَأْسُهُ فِي حَجْرِي وَأَنَا حَائِضٌ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কুরআন পড়তেন তখন তাঁর মাথা থাকত আমার কোলে যদিও আমি থাকতাম ঋতুবতী।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৫৩. অধ্যায়ঃ
৯৭/৫৩. অধ্যায়ঃ
৭৫৫০
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ حَدَّثَنِي عُرْوَةُ أَنَّ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَبْدٍ الْقَارِيَّ حَدَّثَاهُ أَنَّهُمَا سَمِعَا عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ يَقُولُ سَمِعْتُ هِشَامَ بْنَ حَكِيمٍ يَقْرَأُ سُورَةَ الْفُرْقَانِ فِي حَيَاةِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَمَعْتُ لِقِرَاءَتِهِ فَإِذَا هُوَ يَقْرَأُ عَلَى حُرُوفٍ كَثِيرَةٍ لَمْ يُقْرِئْنِيهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَكِدْتُ أُسَاوِرُهُ فِي الصَّلاَةِ فَتَصَبَّرْتُ حَتَّى سَلَّمَ فَلَبَبْتُهُ بِرِدَائِهِ فَقُلْتُ مَنْ أَقْرَأَكَ هَذِهِ السُّورَةَ الَّتِي سَمِعْتُكَ تَقْرَأُ قَالَ أَقْرَأَنِيهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ كَذَبْتَ أَقْرَأَنِيهَا عَلَى غَيْرِ مَا قَرَأْتَ فَانْطَلَقْتُ بِهِ أَقُودُهُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ إِنِّي سَمِعْتُ هَذَا يَقْرَأُ سُورَةَ الْفُرْقَانِ عَلَى حُرُوفٍ لَمْ تُقْرِئْنِيهَا فَقَالَ أَرْسِلْهُ اقْرَأْ يَا هِشَامُ فَقَرَأَ الْقِرَاءَةَ الَّتِي سَمِعْتُهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَذَلِكَ أُنْزِلَتْ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اقْرَأْ يَا عُمَرُ فَقَرَأْتُ الَّتِي أَقْرَأَنِي فَقَالَ كَذَلِكَ أُنْزِلَتْ إِنَّ هَذَا الْقُرْآنَ أُنْزِلَ عَلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ فَاقْرَءُوا مَا تَيَسَّرَ مِنْهُ
মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রহঃ) ও ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আবদুল ক্বারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা উভয়ে ‘উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) -কে বলতে শুনেছেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জীবিত অবস্থায় আমি হিশাম ইব্নু হাকীম (রাঃ) -কে (সালাতে) সূরায়ে ফুরকান তিলাওয়াত করতে শুনেছি। আমি একাগ্রমনে তাঁর তিলাওয়াত শুনছিলাম। তিনি এমন অনেকগুলো শব্দ তিলাওয়াত করছিলেন, যেগুলো রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিলাওয়াত করাননি। এতে আমি তাঁকে সালাতের অবস্থায় ধরে ফেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সালাম ফেরানো অবধি আমি ধৈর্য ধরলাম। তারপর আমি তাঁর চাদর দিয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরলাম। আর বললাম, আমি তোমাকে যে সূরা পাঠ করতে শুনলাম, তা তোমাকে কে শিখিয়েছে? তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। আমি বললাম, তুমি মিথ্যে বলেছ, তিনি আমাকে শিখিয়েছেন, তবে তোমার কিরাআতের মত নয়। তারপর আমি তাঁকে টেনে টেনে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে নিয়ে চললাম। এরপর আমি বললাম, আমি শুনলাম একে ভিন্ন শব্দ দ্বারা সূরা ফুরকান পাঠ করতে, যা আপনি আমাকে শিখাননি। তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ] বললেনঃ আচ্ছা তাঁকে ছেড়ে দাও। তুমি পড়, হে হিশাম! এরপর আমি যেমন কিরাআত শুনেছিলাম তিনি তেমন কিরাআত পড়লেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কুরআন এভাবেই নাযিল হয়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে ‘উমর! তুমি পড়। আমি সেভাবে পড়লাম যেভাবে আমাকে শিখানো হয়েছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কুরআন এভাবেই নাযিল হয়েছে। এ কুরআন সাত হরফে (কিরাআতে) নাযিল করা হয়েছে। কাজেই যেভাবে সহজ হয়, সেভাবে তা পাঠ কর। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৫৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ আমি কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, উপদেশ গ্রহণের কেউ আছে কি? (সূরা আল-ক্বামার ৪৫/৩২)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক ব্যক্তি যাকে যে কাজের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে কাজ সহজ করে দেয়া হয়। (—) অর্থ প্রস্তুতকৃত। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, (—) –এর অর্থ আমি কুরআন পাঠ আপনার জন্য সহজ করে দিয়েছি।
৭৫৫১
أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ قَالَ يَزِيدُ حَدَّثَنِي مُطَرِّفُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ عِمْرَانَ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ فِيمَا يَعْمَلُ الْعَامِلُونَ قَالَ كُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ
ইমরান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! ‘আমলকারীরা কিসে ‘আমল করছে? তিনি বললেন, যাকে যে কাজ করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে কাজ করা সহজ করে দেয়া হয়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৫২
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مَنْصُورٍ وَالأَعْمَشِ سَمِعَا سَعْدَ بْنَ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَلِيٍّ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ فِي جَنَازَةٍ فَأَخَذَ عُودًا فَجَعَلَ يَنْكُتُ فِي الأَرْضِ فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ أَوْ مِنْ الْجَنَّةِ قَالُوا أَلاَ نَتَّكِلُ قَالَ اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى الْآيَةَ}
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একবার কোন জানাযায় ছিলেন। তারপর তিনি একটি কাঠের টুকরা হাতে নিয়ে তা দিয়ে মাটি খোঁচাচ্ছিলেন এবং বলছিলেন, তোমাদে র মধ্যে এমন কেউ নেই যার ঠিকানা জাহান্নাম কিংবা জান্নাতে নির্দিষ্ট করা হয়নি। সহাবীগণ বললেন, তা হলে আমরা কি এর উপর নির্ভর করব না? তিনি বললেনঃ তোমরা ‘আমাল করতে থাক। প্রত্যেকের জন্য সহজ করে দেয়া হয়। (অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ …..فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى। সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে…..। [১৩৬২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৫৫. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণী : বস্তুত এটি সম্মানিত কুরআন, সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ- (সূরা বুরুজ ৮৫/২১-২২)। শপথ তূর পর্বতের। শপথ কিতাবের, যা লিখিত আছে- (সূরা আত্ তূর ৫২/১-২)।
ক্বাতাদাহ (রহ:) বলেন, (—) অর্থ লিপিবদ্ধ (—) অর্থ তারা লিখছে (—)। অর্থাৎ কিতাবের স্তর ও মূল (—) অর্থ যা কিছু বলা হয়, তা লিপিবদ্ধ হয়। এর ব্যাখ্যায় ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, ভালমন্দ সব লিপিবদ্ধ করা হয়। (—) এর অর্থ পরিবর্তন করা। এমন কেউ নেই, যে আল্লাহ্র কোন কিতাবের শব্দ পরিবর্তন করতে পারে। তবে তারা তাহরীফ তথা অপব্যাখ্যা করতে পারে। (—) অর্থ তাদের তিলাওয়াত, (—) অর্থ সংরক্ষণকারী, (—) অর্থ তা সংরক্ষণ করে। এবং এ কুরআন আমার কাছে পাঠানো হয়েছে, যেন তোমাদেরকে এর দ্বারা আমি সতর্ক করি- (সূরা আন’আম ৬/১৯)। অর্থাৎ মক্কাবাসী এবং যাদের কাছে এ কুরআন প্রচারিত হবে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের জন্যে সতর্ককারী। ( এই অধ্যায়টা লিখা ছিল না। আমি লিখে দিলাম। চেক করে নেবেন। navim )
৭৫৫৩
و قَالَ لِي خَلِيفَةُ بْنُ خَيَّاطٍ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ سَمِعْتُ أَبِي عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَبِي رَافِعٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَمَّا قَضَى اللهُ الْخَلْقَ كَتَبَ كِتَابًا عِنْدَهُ غَلَبَتْ أَوْ قَالَ سَبَقَتْ رَحْمَتِي غَضَبِي فَهُوَ عِنْدَهُ فَوْقَ الْعَرْشِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ যখন তাঁর মাখলূকাত সৃষ্টি করলেন, তাঁর কাছে একটি কিতাব লিপিবদ্ধ রাখলেন। “আমার গযবের উপর আমার রহমত অগ্রগামী হয়েছে’ এটি তাঁর কাছে আরশের ওপর আছে।(আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৫৪
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي غَالِبٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ أَنَّ أَبَا رَافِعٍ حَدَّثَهُ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِنَّ اللهَ كَتَبَ كِتَابًا قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ الْخَلْقَ إِنَّ رَحْمَتِي سَبَقَتْ غَضَبِي فَهُوَ مَكْتُوبٌ عِنْدَهُ فَوْقَ الْعَرْشِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টিকে সৃষ্টি করার আগে একটি লেখা লিখে রেখেছেন। তা হলো “আমার গযবের উপর আমার রহমত অগ্রগামী হয়েছে”, এটি তাঁরই নিকটে আরশের ওপর লেখা আছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৫৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ্ই সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে আর তোমরা যা তৈরী কর সেগুলোকেও- (সূরা আস সফ্ফাত ৩৭/৯৬)। আমি সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে। (সূরা আল ক্বামার ৫৪/৪৯)।
ছবি নির্মাতাদের বলা হবে, তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে জীবন দাও। তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্ যিনি ছয় দিনে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন , অতঃপর আরশে সমুন্নত হয়েছেন। দিনকে তিনি রাতের পর্দা দিয়ে ঢেকে দেন, তারা একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে এবং সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি তাঁরই আজ্ঞাবহ। জেনে রেখ, সৃষ্টি তাঁর, হুকুমও (চলবে) তাঁর, মহীয়ান, গরীয়ান আল্লাহ্ বিশ্বজগতের প্রতিপালক। (সূরা আল-আরাফ ৭/৫৪)।
ইবনু ‘উয়াইনাহ (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ সৃষ্টিকে হুকুম থেকে পৃথক করে বর্ণনা করেছেন। কেননা তার বাণী হলোঃ …………………… জেনে রাখ সৃষ্টি ও হুকুম তাঁরই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈমানকেও ‘আমল বলে উল্লেখ করেছেন। আবূ যার (রহঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করা হল, কোন ‘আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনা, তাঁর পথে জিহাদ করা। মহান আল্লাহ্ বলেনঃ …………… এটা তাদের কাজেরই প্রতিদান। আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে বললেন, আমাদের কিছু সংক্ষিপ্ত বিষয়ের নির্দেশ দিন , যেগুলো মেনে চললে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি তাদের আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা,রাসুলের রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান, সালাত কায়িম করা এবং যাকাত আদায়ের হুকুম দিলেন। এ সবকেই তিনি ‘আমলরূপে উল্লেখ করেছেন।
৭৫৫৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، وَالْقَاسِمِ التَّمِيمِيِّ، عَنْ زَهْدَمٍ، قَالَ كَانَ بَيْنَ هَذَا الْحَىِّ مِنْ جُرْمٍ وَبَيْنَ الأَشْعَرِيِّينَ وُدٌّ وَإِخَاءٌ، فَكُنَّا عِنْدَ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ فَقُرِّبَ إِلَيْهِ الطَّعَامُ فِيهِ لَحْمُ دَجَاجٍ، وَعِنْدَهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَيْمِ اللَّهِ كَأَنَّهُ مِنَ الْمَوَالِي، فَدَعَاهُ إِلَيْهِ فَقَالَ إِنِّي رَأَيْتُهُ يَأْكُلُ شَيْئًا فَقَذِرْتُهُ، فَحَلَفْتُ لاَ آكُلُهُ. فَقَالَ هَلُمَّ فَلأُحَدِّثْكَ عَنْ ذَاكَ، إِنِّي أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي نَفَرٍ مِنَ الأَشْعَرِيِّينَ نَسْتَحْمِلُهُ قَالَ ” وَاللَّهِ لاَ أَحْمِلُكُمْ وَمَا عِنْدِي مَا أَحْمِلُكُمْ ”. فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِنَهْبِ إِبِلٍ فَسَأَلَ عَنَّا فَقَالَ ” أَيْنَ النَّفَرُ الأَشْعَرِيُّونَ ”. فَأَمَرَ لَنَا بِخَمْسِ ذَوْدٍ غُرِّ الذُّرَى، ثُمَّ انْطَلَقْنَا قُلْنَا مَا صَنَعْنَا حَلَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يَحْمِلُنَا، وَمَا عِنْدَهُ مَا يَحْمِلُنَا، ثُمَّ حَمَلَنَا، تَغَفَّلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَمِينَهُ، وَاللَّهِ لاَ نُفْلِحُ أَبَدًا، فَرَجَعْنَا إِلَيْهِ فَقُلْنَا لَهُ فَقَالَ ” لَسْتُ أَنَا أَحْمِلُكُمْ، وَلَكِنَّ اللَّهَ حَمَلَكُمْ، إِنِّي وَاللَّهِ لاَ أَحْلِفُ عَلَى يَمِينٍ فَأَرَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا، إِلاَّ أَتَيْتُ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ مِنْهُ، وَتَحَلَّلْتُهَا ”.
যাহদাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জারমের এ কাওমটির সঙ্গে আশ’আরী কাওমের গভীর ভালবাসা ও ভ্রাতৃভাব ছিল। এক সময় আমরা আবু মুসা আশ’আরী (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। তাঁর কাছে খাদ্য আনা হল। এতে মুরগীর গোশতও ছিল। এ সময় তাঁর নিকট বানী তায়মুল্লাহ্র এক লোক ছিল। সে (দেখতে) যেন আযাদকৃত গোলাম। তাকেও আবূ মুসা (রাঃ) খেতে ডাকলেন। সে বলল, আমি এ মুরগীকে এমন কিছু জিনিস খেতে দেখেছি, যার ফলে এটি খেতে আমি খেতে ঘৃনা করি। এ জন্য শপথ করেছি, আমি তা খাব না। আবূ মুসা (রাঃ) বললেন, তুমি এদিকে এসো, এ ব্যাপারে আমি তোমাকে একটি হাদীস শোনাব। আমি এক সময় আশ’আরী কওমের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য গেলাম। তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের বাহন দেব না। আর তোমাদের দেয়ার মত আমার কাছে বাহন নেই। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে গনীমতের কিছু উট আনা হলে তিনি আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন এবং বললেন, আশ’আরীদের দলটি কোথায়? তারপর তিনি পাঁচটি মোজা তাজা ও উৎকৃষ্ট উট আমাদের দেয়ার জন্য হুকুম করলেন। আমরা এগুলো নিয়ে রওনা দেয়ার সময় বললাম, আমরা কী কর্মটি করলাম! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শপথ করে বললেন, আমাদের বাহন দেবেন না এবং তাঁর কাছে দেয়ার মত বাহন নেই। তারপরও তো তিনি আমাদের বাহন দিয়ে দিলেন। হয়ত আমরা তাঁকে তাঁর শপথ সম্পর্কে বেখেয়াল করে দিয়েছি। আল্লাহর শপথ! আমরা কক্ষনো সফলকাম হবো না। তাই আমরা তাঁর কাছে আবার গেলাম এবং তা তাঁকে বললাম। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে বাহন দেইনি, বরং দিয়েছেন আল্লাহ্ ! আল্লাহর শপথ! আমি কোন বিষয়ে শপথ করি আর যদি তার বিপরীতে কল্যাণ দেখতে পাই, তবে তাতেই ফিরে আসি এবং (কাফ্ফারা আদায় করে) তা বৈধ করে নেই। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৫৬
عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا أَبُو جَمْرَةَ الضُّبَعِيُّ قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ قَدِمَ وَفْدُ عَبْدِ الْقَيْسِ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا إِنَّ بَيْنَنَا وَبَيْنَكَ الْمُشْرِكِينَ مِنْ مُضَرَ وَإِنَّا لاَ نَصِلُ إِلَيْكَ إِلاَّ فِي أَشْهُرٍ حُرُمٍ فَمُرْنَا بِجُمَلٍ مِنْ الأَمْرِ إِنْ عَمِلْنَا بِهِ دَخَلْنَا الْجَنَّةَ وَنَدْعُو إِلَيْهَا مَنْ وَرَاءَنَا قَالَ آمُرُكُمْ بِأَرْبَعٍ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ آمُرُكُمْ بِالإِيمَانِ بِاللهِ وَهَلْ تَدْرُونَ مَا الإِيمَانُ بِاللهِ شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَإِقَامُ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ وَتُعْطُوا مِنْ الْمَغْنَمِ الْخُمُسَ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ لاَ تَشْرَبُوا فِي الدُّبَّاءِ وَالنَّقِيرِ وَالظُّرُوفِ الْمُزَفَّتَةِ وَالْحَنْتَمَةِ
আবূ জামরাহ দুবায়ী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) কে বললাম। তিনি বললেন ‘আবদুল কায়সের প্রতিনিধিদল রসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে বলল, আমাদের এবং আপনাদের মাঝখানে মুযার গোত্রের মুশরিকরা আছে। সে কারনে আমরা সম্মানিত মাস (আশহুরে হুরুম) ব্যতীত আর কোন সময় আপনার কাছে আসতে পারি না। কাজেই আমাদেরকে সংক্ষিপ্ত কিছু বিষয়ের হুকুম দিন, যার উপর আমল করলে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করব এবং আমরা যাদের রেখে এসেছি তাদেরও এ পথে আহ্বান জানাতে পারব। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি তোমাদেরকে চারটি বিষয়ের হুকুম করছি। আর চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করেছি। আমি তোমাদেরকে হুকুম দিচ্ছি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার। আর তোমরা জান কি, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা কাকে বলে? তা হলো, সাক্ষ্য দেয়া যে আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই, সালাত কায়িম করা, যাকাত দেয়া, গনীমতের মালের এক পঞ্চমাংশ দেয়া। তোমাদের চারটি বিষয় হতে নিষেধ করছি, লাউয়ের খোল দিয়ে তৈরী পাত্রে, খেজুর গাছের মূল খোদাই করে তৈরী পাত্রে, আলকাতরা ইত্যাদি দিয়ে প্রলেপ দেয়া পাত্রে, এবং মাটির সবুজ ঘটিতে তোমরা পান করবে না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৫৭
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ أَصْحَابَ هَذِهِ الصُّوَرِ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيُقَالُ لَهُمْ أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এসব ছবি নির্মাতাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে। তখন তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হবে তোমরা যা বানিয়েছ ,তা জীবিত কর। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৫৮
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أَصْحَابَ هَذِهِ الصُّوَرِ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيُقَالُ لَهُمْ أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ
ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এসব ছবি নির্মাতাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে। তাদেরকে বলা হবে, যা তোমরা সৃষ্টি করেছ, তাকে জীবিত কর। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৫৯
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ عَنْ عُمَارَةَ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذَهَبَ يَخْلُقُ كَخَلْقِي فَلْيَخْلُقُوا ذَرَّةً أَوْ لِيَخْلُقُوا حَبَّةً أَوْ شَعِيرَةً
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ্ বলেছেনঃ তাদের চেয়ে বড় যালিম আর কে আছে যে আমার সৃষ্টির মত সৃষ্টি করার জন্য প্রস্তুত হয়েছে? তা হলে তারা একটা অণু কিংবা শস্যদানা কিংবা যব তৈরী করুক। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৫৭. অধ্যায়ঃ
পাপী ও মুনাফিকের কিরাআত, তাদের স্বর ও তাদের কিরাআত কন্ঠনালী অতিক্রম করে না।
৭৫৬০
هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ حَدَّثَنَا أَنَسٌ عَنْ أَبِي مُوسَى عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَثَلُ الْمُؤْمِنِ الَّذِي يَقْرَأُ الْقُرْآنَ كَالْأُتْرُجَّةِ طَعْمُهَا طَيِّبٌ وَرِيحُهَا طَيِّبٌ وَمَثَلُ الَّذِي لاَ يَقْرَأُ كَالتَّمْرَةِ طَعْمُهَا طَيِّبٌ وَلاَ رِيحَ لَهَا وَمَثَلُ الْفَاجِرِ الَّذِي يَقْرَأُ الْقُرْآنَ كَمَثَلِ الرَّيْحَانَةِ رِيحُهَا طَيِّبٌ وَطَعْمُهَا مُرٌّ وَمَثَلُ الْفَاجِرِ الَّذِي لاَ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ كَمَثَلِ الْحَنْظَلَةِ طَعْمُهَا مُرٌّ وَلاَ رِيحَ لَهَا
আবূ মুসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুরআন তিলাওয়াতকারী ঈমানদারের দৃষ্টান্ত উত্রুজ্জার (কমলালেবু) মত। এর স্বাদও উৎকৃষ্ট এবং সুগন্ধও উৎকৃষ্ট। আর যে মু‘মিন কুরআন তিলাওয়াত করে না তার দৃষ্টান্ত যেন খেজুরের মত। এটি খেতে সুস্বাদু বটে, তবে তার কোন সুঘ্রাণ নেই। কুরআন তিলাওয়াতকারী পাপী ব্যক্তিটি সুগন্ধি ফুলের মত। এর সুগন্ধ আছে বটে, তবে স্বাদে তিক্ত। আর যে অতি পাপী হয়ে আবার কুরআনও তিলাওয়াত করে না সে মাকাল ফলের মত। এ ফল স্বাদেও তিক্ত আর এর কোন সুগন্ধ নেই।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৬১
عَلِيٌّ حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ ح و حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِي يَحْيَى بْنُ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنَّهُ سَمِعَ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ قَالَتْ عَائِشَةُ سَأَلَ أُنَاسٌ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْكُهَّانِ فَقَالَ إِنَّهُمْ لَيْسُوا بِشَيْءٍ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَإِنَّهُمْ يُحَدِّثُونَ بِالشَّيْءِ يَكُونُ حَقًّا قَالَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم تِلْكَ الْكَلِمَةُ مِنْ الْحَقِّ يَخْطَفُهَا الْجِنِّيُّ فَيُقَرْقِرُهَا فِي أُذُنِ وَلِيِّهِ كَقَرْقَرَةِ الدَّجَاجَةِ فَيَخْلِطُونَ فِيهِ أَكْثَرَ مِنْ مِائَةِ كَذْبَةٍ
আ’য়িশা (রা.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লোকজন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জ্যোতিষদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করল। তিনি বললেন, তারা মূলত কিছুই নয়। তারা জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! কখনো কখনো তারা তো এমন কিছু কথাও বলে ফেলে যা সত্য হয়। এতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এসব কথা সত্য। জ্বিনেরা এসব কথা প্রথম শোনে, (মনে রেখে) পরে এদের দোসরদের কানে মুরগির মত করকর রবে নিক্ষেপ করে দেয়। এরপর এসব জ্যোতিষী সামান্য সত্যের সাথে শত মিথ্যার মিশ্রণ ঘটায়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৬২
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا مَهْدِيُّ بْنُ مَيْمُونٍ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ سِيرِينَ يُحَدِّثُ عَنْ مَعْبَدِ بْنِ سِيرِينَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَخْرُجُ نَاسٌ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ وَيَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنْ الدِّينِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنْ الرَّمِيَّةِ ثُمَّ لاَ يَعُودُونَ فِيهِ حَتَّى يَعُودَ السَّهْمُ إِلَى فُوقِهِ قِيلَ مَا سِيمَاهُمْ قَالَ سِيمَاهُمْ التَّحْلِيقُ أَوْ قَالَ التَّسْبِيدُ
আবূ সাঈদ খুদ্রী (রা.) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পূর্বাঞ্চল থেকে একদল লোকের অভ্যুদয় ঘটবে। তারা কুরআন পাঠ করবে, তবে তাদের এ পাঠ তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে, যেভাবে শিকার (ধনুক) থেকে তীর বেরিয়ে যায়। তারা আর ফিরে আসবে না, যে পর্যন্ত তীর ধনুকের ছিলায় না আসে। বলা হল, তাদের আলামত কি? তিনি বললেন, তাদের আলামত হল মাথা মুণ্ডন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৫২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭/৫৮. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা’আলার বানীঃ কিয়ামত দিবসে আমি স্থাপন করব ন্যায়বিচারের মানদণ্ড (২১:৪৭)।
আদম সন্তানদের আমল ও কথা পরিমাপ করা হবে। মুজাহিদ (র.) বলেন, রুমীদের (ইটালীয়দের) ভাষায় ……. … অর্থ ন্যায় ও ইনসাফ। ……. ….. শব্দমূল হল …… … অর্থ ন্যায়পরায়ন। অপর পক্ষে ……. …. -এর অর্থ (কিন্তু) জালিম।
৭৫৬৩
أَحْمَدُ بْنُ إِشْكَابٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كَلِمَتَانِ حَبِيبَتَانِ إِلَى الرَّحْمَنِ خَفِيفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ ثَقِيلَتَانِ فِي الْمِيزَانِ سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيمِ
আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’টি কলেমা (বাণী) রয়েছে, যেগুলো দয়াময় আল্লাহ্র কাছে অতি প্রিয়, উচ্চারনে খুবই সহজ (আমলের) পাল্লায় অত্যন্ত ভারী। (বাণী দু’টি হচ্ছে), সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহান্নাল্লাহিল আযীম’—আমরা আল্লাহ্ তা’আলার প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি, মহান আল্লাহ্ অতীব পবিত্র।(আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৫৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস