৬৪/৩৮. অধ্যায়ঃ
যাতুল কারাদের যুদ্ধ
খাইবার যুদ্ধের তিনদিন আগে মুশরিকরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুধেল উটগুলো লুট করে নেয়ার সময়ে এ যুদ্ধ হয়েছিল।
৪১৯৪
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا حَاتِمٌ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ عُبَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ سَلَمَةَ بْنَ الْأَكْوَعِ يَقُوْلُ خَرَجْتُ قَبْلَ أَنْ يُؤَذَّنَ بِالْأُوْلَى وَكَانَتْ لِقَاحُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَرْعَى بِذِيْ قَرَدَ قَالَ فَلَقِيَنِيْ غُلَامٌ لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ فَقَالَ أُخِذَتْ لِقَاحُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ مَنْ أَخَذَهَا قَالَ غَطَفَانُ قَالَ فَصَرَخْتُ ثَلَاثَ صَرَخَاتٍ يَا صَبَاحَاهْ قَالَ فَأَسْمَعْتُ مَا بَيْنَ لَابَتَيْ الْمَدِيْنَةِ ثُمَّ انْدَفَعْتُ عَلَى وَجْهِيْ حَتَّى أَدْرَكْتُهُمْ وَقَدْ أَخَذُوْا يَسْتَقُوْنَ مِنَ الْمَاءِ فَجَعَلْتُ أَرْمِيْهِمْ بِنَبْلِيْ وَكُنْتُ رَامِيًا وَأَقُوْلُ :
أَنَــا ابْـنُ الْأَكْــوَعْ وَالْـيَـوْمُ يَـوْمُ الـرُّضّـَعْ
وَأَرْتَجِزُ حَتَّى اسْتَنْقَذْتُ اللِّقَاحَ مِنْهُمْ وَاسْتَلَبْتُ مِنْهُمْ ثَلَاثِيْنَ بُرْدَةً قَالَ وَجَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللهِ قَدْ حَمَيْتُ الْقَوْمَ الْمَاءَ وَهُمْ عِطَاشٌ فَابْعَثْ إِلَيْهِمْ السَّاعَةَ فَقَالَ يَا ابْنَ الْأَكْوَعِ مَلَكْتَ فَأَسْجِحْ قَالَ ثُمَّ رَجَعْنَا وَيُرْدِفُنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى نَاقَتِهِ حَتَّى دَخَلْنَا الْمَدِيْنَةَ
সালামাহ ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (একদা) আমি ফাজ্রের সলাতের আযানের আগে বাইরে বের হলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুধেল উটগুলোকে যি-কারাদ জায়গায় চরানো হতো। সালামাহ (রাঃ) বলেন, তখন আমার সঙ্গে ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ)-এর গোলামের দেখা হলো। সে বলল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুধেল উটগুলো লুট করা হয়েছে। জিজ্ঞেস করলাম, কে ওগুলো লুট করেছে? সে বলল, গাতফানের লোকেরা। তিনি বলেন, তখন আমি ইয়া সাবাহা বলে তিনবার উচ্চৈঃস্বরে চীৎকার করলাম। আর মাদীনাহ্র দুই পর্বতের মাঝে অবস্থিত মানুষদের কানে আমার আওয়াজ শুনিয়ে দিলাম। তারপর দ্রুত অগ্রসর হয়ে তাদেরকে পেয়ে গেলাম। এ সময়ে তারা উটগুলোকে পানি পান করাতে শুরু করেছিল। তখন তাদের দিকে তীর নিক্ষেপ করলাম, আমি ছিলাম একজন দক্ষ তীরন্দাজ আর বললাম, আমি হলাম আকওয়া’-এর পুত্র, আজকের দিনটি তোমাদের সবচেয়ে খারাপ দিন। এভাবে আমি তাদের নিকট হতে উটগুলোকে কেড়ে নিলাম এবং তাদের ত্রিশখানা চাদরও কেড়ে নিলাম। তিনি বলেন, এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও অন্যান্য লোক সেখানে আসলে আমি বললাম, হে আল্লাহ্র নাবী! লোক কটি পিপাসার্ত ছিল, আমি তাদেরকে পানি পান করতেও দেইনি। আপনি এখনই এদের পিছু ধাওয়া করার জন্য সৈন্য পাঠিয়ে দিন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন,
হে ইবনুল আকওয়া’!
তুমি (হারানো উট দখল করতে) সক্ষম হয়েছে, এখন একটু বিশ্রাম নাও।
সালামাহ (রাঃ) বলেন, এরপর আমরা ফিরে আসলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর উটনীর পেছনে বসিয়ে নিলেন, এভাবে মদিনায় প্রবেশ করলাম। [৩০৪১] (আ.প্র. ৩৮৭৪, ই.ফা. ৩৮৭৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৩৯. অধ্যায়ঃ
খাইবার [৪৭]-এর যুদ্ধ
[৪৭] সপ্তম হিজরী, মুহাররম মাস। খাইবার ছিল সিরিয়া প্রান্তরে এক বিশাল শ্যামল ভূখণ্ডের নাম। এটা মাদীনাহ হতে তিন মঞ্জিলের (প্রায় এক শ’ মাইল) পথ। ক্ষুদ্র বৃহৎ বহু দুর্গ দ্বারা এই স্থানটি সুরক্ষিত ছিল। মাদীনার বানু কানুইকা ও বানু নাযীর গোত্রের ইয়াহূদীরা এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হুদাইবিয়ার সফর হতে ফিরে আসা অল্প দিন মাত্র (এক মাসেরও কম) গত হয়েছে। এমন সময় শোনা গেল যে, খাইবারের ইয়াহূদীরা মাদীনার উপর আক্রমণ চালাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে-(তবকাতে কাবীর, ইবনু সাদ, ৭ পৃষ্ঠা) । তারা আহযাবের যুদ্ধে অকৃতকার্যতার প্রতিশোধ গ্রহণ এবং নিজেদের হারানো সাময়িক মর্যাদা ও শক্তিকে গোটা রাজ্যে পুনর্বহাল করার জন্য এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
তারা বানু গাফতান গোত্রের চার হাজার জঙ্গী বীর পুরুষকেও নিজেদের সাথে যুক্ত করে নিয়েছে। তারা এ চুক্তি করেছে যে, যদি মাদীনাহ বিজিত হয় তাহলে খাইবারের উৎপাদিত শস্যের অর্ধাংশ তারা বানু গাফতানকে চিরস্থায়ীভাবে দিতে থাকবে।
ইতোপূর্বে আহযাবের যুদ্ধে মুসলিমদেরকে খাইবারের দুর্গ অবরোধ করতে যে কঠিন বেগ পেতে হয়েছিল তা তারা ভুলেনি। সুতরাং সবাই এ ব্যাপারে এক মত হলেন যে, এই আক্রমণেচ্ছুক শত্রুদেরকে সামনে অগ্রসর হয়ে প্রতিরোধ করতে হবে।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু মাত্র ঐ সাহাবীদেরকে এই যুদ্ধে গমনের অনুমতি দান করেছিলেন যাদেরকে শুভ সংবাদ দিতে গিয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নিম্নোক্ত আয়াতটি নাযিল করেনঃ (لقد رضى الله عن المؤ منين اذ يبا يعو نك تحت الشجرة فعلم ما فى قلو بهم (سو ر ة الفتح:١٨
“আল্লাহ অবশ্যই মু’মিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা গাছের নীচে তোমার কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেছে, তাদের অন্তরে যা আছে আল্লাহ তা জানেন।” (সূরাহ্হ্ ফাত্হ ৪৮/১৮)
আর যাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ (وعد كم الله مغا نم كثيرة تا خذو نها (سو ر ة الفتح:٢٥
“আল্লাহ তোমাদের সাথে বড় বড় বিজয়ের ও গানীমাতের ওয়াদা করেছেন যা তোমরা লাভ করবে। ” (সূরাহ্ ফাত্হ ৪৮/২০)
তারা সংখ্যায় চৌদ্দ’শ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে দু’শজন ছিলেন আশ্বারোহী।
সেনাবাহিনীর সম্মুখ ভাগের নেতা বা সেনাপতি ছিলেন উকাশাহ্ ইবনু মুহসিন আসাদী (রাঃ) [উকাশাহ্ ইবনু মুহসিন (রাঃ) মর্যাদা সম্পন্ন সহাবীদের অন্যতম ছিলেন। তার সম্পর্কে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুসংবাদ দান করেছিলেন যে, তিনি বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবেন। বাদ্র, উহূদ, খন্দক এবং অন্যান্য যুদ্ধে তিনি হাযির হন। সিদ্দীকে আকবার (রাঃ)-এর খেলাফাতকালে ৪৫ বছর বয়সে তিনি শহীদ হন।] ডান দিকের সেনাবাহিনীর সরদার ছিলেন ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-(মাদারিজুন নুবুওয়াহ, ২৯০ পৃষ্ঠা।) বাম দিকের সেনাবাহিনীর নেতা অন্য একজন সাহাবী (রাঃ) ছিলেন। বিশজন মহিলাও (রাযিয়াল্লাহু আনহুম্মা) সেনাবাহিনীর মধ্যে ছিলেন যারা রুগ্ন ও আহতদের দেখাশুনা ও সেবা শশ্রুষা করার জন্য সাথে এসেছিলেন।
ইসলামের সেনাবাহিনী রাত্রিকালে খাইবারের বসতি সংলগ্ন জায়গায় পৌঁছে গেল। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কল্যাণময় অভ্যাস এই ছিল যে, তিনি রাত্রে যুদ্ধ শুরু করতেন না-[বুখারী, আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত]। এজন্যে ইসলামের সেনাবাহিনী ময়দানে শিবির স্থাপন করে। যুদ্ধের জন্য এ স্থানটি যুদ্ধ অভিজ্ঞ ব্যক্তি হাব্বাব ইবনুল মুনযির (রাঃ) নির্বাচন করেছিলেন। এ জায়গাটি খাইবারবাসী ও বানু গাফতান গোত্রের মধ্যস্থলে ছিল। এই কৌশল অবলম্বনের উপকার এই ছিল যে, বানু গাফতান গোত্র যখন খাইবারের ইয়াহূদীদের সাহায্যের জন্য বের হয় তখন তারা ইসলামের সেনাবাহিনীকে প্রতিবন্ধকরূপে পায়। এ কারণে তারা চুপচাপ নিজেদের বাড়ীতে ফিরে যায়।
রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুকুম দেন যে, সেনাবাহিনী বড় ক্যাম্প এখানেই থাকবে এবং আক্রমণমুখী সৈন্যদের দল এই ক্যাম্প থেকে যেতে থাকবে। সৈন্যদের মাঝে তৎক্ষণাৎ মাসজিদ নির্মাণ করে নেয়া হয়। আর যুদ্ধের ফাঁকে ফাঁকে ইসলামের তাবলীগের ধারাও জারী রাখা হয়।
‘উসমান (রাঃ) ঐ ক্যাম্পের প্রধান দায়িত্বশীল নির্বাচিত হন।
খাইবারের জন বসতির ডানে-বামে যে দূর্গ অবস্থিত ছিল ঐগুলি সংখ্যায় ছিল দশটি। ঐ দূর্গগুলোর মধ্যে দশ হাজার করে বীর যোদ্ধা অবস্থান করতো।
খাইবারে জনবসতি ডানে-বামে দু’টি ভাগে বিভক্ত ছিল। একভাগে ছিল নিতাত দূর্গ নামে পরিচিত চারটি দূর্গ-(১) নায়িম (২) নিতাত (৩) সা’আব ইবনু মু’আয (৪) কিল’আতুয যুবায়র এবং শান্না দূর্গ নামে পরিচিত তিনটি দূর্গ-(১) শান্না (২) বার (৩) উবাই। অপর পাশে ছিল আরও তিনটি দূর্গ যা কুতাইবাহ দূর্গ নামে পরিচিত ছিল। তা হচ্ছে-(১) কামূস তাবারী (২) অতীহ (৩) সালিম বা নাবউইন হাকীক।
মাহমুদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) পাঁচ দিন পর্যন্ত ক্রমাগত আক্রমণ চালাতে থাকেন। কিন্তু দূর্গ বিজিত হলো না। পঞ্চম বা ষষ্ঠ দিনের বর্ণনা এই যে, মাহমুদ (রাঃ) যুদ্ধ ক্ষেত্রের প্রখরতায় ক্লান্ত হয়ে দূর্গ প্রাচীরের ছায়ায় কিছু সময় বিশ্রাম গ্রহণের জন্য শুয়ে পড়েন। ইত্যবসরে কিনানাহ্ ইবনু হাকীক নামক এক ইয়াহূদী তাকে গাফেল দেখে তার মাথায় এক পাথর মেরে দেয়। এতেই তিনি শহীদ হয়ে যান। সেনাবাহিনীর পতাকা মাহমুদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ)-এর ভাই মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) ধারণ করেন এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত অত্যন্ত বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করতে থাকেন। মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) এই মত প্রদান করেন যে, ইয়াহূদীদের খেজুর বাগানের খেজুর গাছগুলি কেটে ফেলা হোক। কেননা, তাদের নিকট এক একটি খেজুর গাছ এক একটি ছেলের মতই প্রিয়। এই কৌশল অবলম্বন করলে দূর্গবাসীর উপর প্রভাব ফেলা যাবে। এই কৌশলের উপর কাজ শুরু হয়েই গিয়েছিল। এমন সময় আবু বাক্র (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমাতে হাযির হয়ে আরয করলেনঃ “এ এলাকা নিশ্চিতরূপে মুসলিমদের হাতে বিজিত হতে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা এটাকে নিজেদের হাতে নষ্ট করবো কেন? রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবু বাক্রের (রাঃ) এই মতকে পছন্দ করলেন এবং ইবনু মাসলামাহ (রাঃ)-এর নিকট খেজুর গাছগুলি কেটে ফেলার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা পাঠিয়ে দিলেন। সন্ধ্যার সময় মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) স্বীয় ভ্রাতার নিষ্ঠুরভাবে শহীদ হওয়ার ঘটনাটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমাতে এসে বর্ণনা করেন।
রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বলেনঃ [আরবী]
“আগামী দিন পতাকা ঐ ব্যক্তিকে প্রদান করা হবে (অথবা ঐ ব্যক্তি পতাকা গ্রহণ করবে) আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভালবাসেন এবং তার হাতে আল্লাহ বিজয় দান করবেন। “
এটা এমন এক প্রশংসা ছিল, যা শুনে বড় বড় বীর পুরুষ আগামী দিনের পতাকা লাভের আশায় আশান্বিত হয়ে থাকলেন।
ঐ রাত্রে সেনাবাহিনীর পাহারা দেয়ার দায়িত্ব ‘উমার ইবনুল খাত্তাবের (রাঃ) উপর অর্পিত হয়েছিল। তিনি চক্কর দিতে দিতে একজন ইয়াহূদীকে গ্রেফতার করেন। তৎক্ষণাৎ তিনি তাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমাতে আনয়ন করেন। ঐ সময় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাহাজ্জুদের সলাতে ছিলেন। সলাত শেষে তিনি ইয়াহূদীর সাথে কথোপকথন করেন। ইয়াহূদী বললঃ “যদি আমাকে এবং দূর্গে অবস্থানরত আমার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিরাপত্তা দান করা হয় তাহলে আমি সামরিক গোপন বিষয়ের বহু কিছু প্রকাশ করে দিতে পারি। ” ঐ ইয়াহূদীর সাথে নিরাপত্তা ওয়াদা করা হলে সে বলতে শুরু করেঃ “নিতাত দূর্গের ইয়াহূদীরা আজ রাত্রে তাদের স্ত্রী ও শিশু সন্তানদেরকে শান দূর্গে পাঠাচ্ছে এবং তাদের মালধন ও টাকা পয়সা নিতাত দূর্গের মধ্যে প্রোথিত করছে। ঐ জায়গা আমার জানা আছে। যখন মুসলিমরা নিতাত দূর্গদখল করে নিবেন তখন আমি ঐ জায়গাটি দেখিয়ে দিবো। শান্না দূর্গের নীচে ভূগর্ভে নির্মিত কুঠরিতে বহু মূল্যবান অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। যখন মুসলমানরা শান্না দূর্গ জয় করে নিবেন তখন আমি তাদের কে ভূগর্ভে নির্মিত ঐ কুঠরিটিও দেখিয়ে দিবো। “
‘আলী (রাঃ) নায়েম দূর্গের উপর আক্রমণের সূত্রপাত করলেন। মুকাবালার জন্যে দূর্গের বিখ্যাত সরদার মুরাহ্হাব ময়দানে বেরিয়ে এলো। সে নিজেকে হাজার বীরের সমান মনে করতো।
মুরাহ্হাব তাকে তরবারী দ্বারা আঘাত করে। আ’মির (রাঃ) ওটাকে ঢাল দ্বারা প্রতিহত করেন এবং মুরাহ্হাবের দেহের নিম্নভাগে আঘাত করেন। কিন্তু তার তরবারিটি যা দৈর্ঘ্যে ছোট ছিল, তার নিজেরই হাঁটুতে লেগে যায়, যার ফলে অবশেষে তিনি শহীদ হয়ে যান। অতঃপর ‘আলী (রাঃ) বেরিয়ে আসেন।
আলী মুরতযা (রাঃ) এক হাতেই এমন জোরে তরবারীর আঘাত করেন যে, মুরাহ্হাবের শিরস্ত্রাণ কেটে পাগড়ী কর্তন করতঃ মাথাকে দু টুকরো করে গর্দান পর্যন্ত পৌঁছে যায়। মুরাহ্হাবের ভাই বেরিয়ে আসলে যুবায়ের ইবনুল আওয়াম (রাঃ) তাকে মাটিতে শুইয়ে দেন। এরপর ‘আলী (রাঃ)-এর সাধারণ আক্রমণের মাধ্যমে নায়েম দূর্গটি বিজিত হয়।
ঐ দিনই সাআব দূর্গটি হাব্বাব মুনযির (রাঃ) অবরোধ করে তৃতীয় দিনে জয় করে নেন। সাআব দূর্গটি জয় করার ফলে মুসলিমরা প্রচুর পরিমাণে যব, খেজুর, মাখন, রওগণ, যায়তুন এবং চর্বি লাভ করেন। এর ফলে মুসলিমদের ঐ কষ্ট দূরীভূত হয় যে কষ্ট তারা রসদের স্বল্পতার কারণে ভোগ করছিলেন। এই দূর্গ হতেই তারা বড় বড় গুপ্ত অস্ত্র লাভ করেন যার খবর ইয়াহূদী গুপ্তচর তাদের কে প্রদান করেছিল। এর পূর্বদিন নিতাত দূর্গ বিজিত হয়েছিল। এখন যুবায়ের দূর্গ, যা একটি পাহাড়ী টিলার উপর অবস্থিত ছিল এবং যুবায়েরের নামে যার নামকরণ করা হয়েছিল, ওর উপর আক্রমণ করা হয়। দু’দিন পর একজন ইয়াহূদী ইসলামের সৈন্যদের মধ্যে আসে। সে বলেঃ “এ দূর্গটি তো এক মাস পর্যন্ত চেষ্টা চালালেও জয় করতে পারবেন না। আমি একটি গোপন কথা বলে দিচ্ছি। “এ দূর্গের মাটির নিচের নালা পথে পানি এসে থাকে। যদি পানির পথ বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে বিজয় সম্ভব। ” তার এ কথা শুনে মুসলিমরা পানির উপর অধিকার লাভ করে নেন। তখন দূর্গবাসী দূর্গ হতে বের হয়ে খোলা ময়দানে এসে যুদ্ধ করে এবং মুসলিমরা তাদেরকে পরাজিত করেন।
তারপর উবাই দূর্গের উপর আক্রমণ করা শুরু হয়। এই দূর্গবাসীরা কঠিন ভাবে প্রতিরোধ করে। তাদের মধ্যে গাযওয়ান নামক একটি লোক ছিল। সে দ্বন্দ্ব যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে আসে। হাব্বাব (রাঃ) তার সাথে মুকাবালার জন্য এগিয়ে যান। গায্ওয়ানের বাহু কেটে যায়। সে দূর্গের দিকে পালাতে থাকে। হাব্বাব (রাঃ) তার পশ্চাদ্ধাবন করেন। সে পড়ে যায় এবং তাকে হত্যা করা হয়।
দূর্গ হতে আর একজন যোদ্ধা বেরিয়ে আসে। একজন মুসলিম তার মুকাবালা করেন। কিন্তু মুসলিমটি তার হাতে শহীদ হয়ে যান। অতঃপর আবূ দাজনা (রাঃ) বেরিয়ে আসেন। তিনি এসেই তার পা কেটে দেন এবং পরে তাকে হত্যা করে ফেলেন।
ইয়াহূদীরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকে। আবূ দাজনা (রাঃ) সামনে অগ্রসর হন। মুসলিমরা তার সঙ্গী হন। তারা তাকবীর পাঠ করতে করতে দূর্গের প্রাচীরের উপর চড়ে যান এবং দূর্গ জয় করে নেন। দূর্গবাসীরা পালিয়ে যায়। এই দূর্গ হতে প্রচুর বকরী, কাপড় এবং আসবাবপত্র পাওয়া যায়।
এবার মুসলিমরা বার দূর্গ আক্রমণ করেন। এখানে দূর্গরক্ষীরা মুসলিমদের উপর এত তীর ও পাথর বর্ষণ করেন যে, তাদের মুকাবালা করার জন্য মুসলিমদেরকেও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করতে হয় যে অস্ত্র তারা সাআব দূর্গ হতে গানীমাত স্বরূপ লাভ করেছিলেন। এই ভারী অস্ত্র দ্বারা এ দূর্গের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে তা জয় করা হয়। (রহমাতুল লিল ‘আলামীন-আল্লামা কাযী মুহাম্মাদ সুলাইমনা মানসূর পূরী)
৪১৯৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ بُشَيْرِ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ سُوَيْدَ بْنَ النُّعْمَانِ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ خَرَجَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَامَ خَيْبَرَ حَتَّى إِذَا كُنَّا بِالصَّهْبَاءِ وَهِيَ مِنْ أَدْنَى خَيْبَرَ صَلَّى الْعَصْرَ ثُمَّ دَعَا بِالأَزْوَادِ فَلَمْ يُؤْتَ إِلَّا بِالسَّوِيْقِ فَأَمَرَ بِهِ فَثُرِّيَ فَأَكَلَ وَأَكَلْنَا ثُمَّ قَامَ إِلَى الْمَغْرِبِ فَمَضْمَضَ وَمَضْمَضْنَا ثُمَّ صَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ
সুওয়াইদ ইবনু নু’মান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (সুওয়াইদ ইবনু নু’মান) খাইবার অভিযানের বছর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বেরিয়েছিলেন। [তিনি বলেন] যখন আমরা খাইবারের নীচু এলাকায় ‘সাহ্বা’ নামক স্থানে পৌঁছলাম, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আসরের সলাত আদায় করলেন। তারপর তিনি পাথেয় পরিবেশন করতে হুকুম দিলেন। কিন্তু ছাতু ব্যতীত কিছুই দেয়া গেল না। তিনি ছাতু গুলতে বললেন। ছাতু গুলা হলো। তখন তিনিও খেলেন, আমরাও খেলাম। তারপর তিনি মাগরিবের সলাতের জন্য উঠে পড়লেন এবং কুল্লি করলেন। আমরাও কুল্লি করলাম। তারপর তিনি সলাত আদায় করলেন আর সেজন্য নতুনভাবে ‘উযূ করলেন না। [২০৯] (আ.প্র. ৩৮৭৫, ই.ফা. ৩৮৭৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪১৯৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الْأَكْوَعِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى خَيْبَرَ فَسِرْنَا لَيْلًا فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ لِعَامِرٍ يَا عَامِرُ أَلَا تُسْمِعُنَا مِنْ هُنَيْهَاتِكَ وَكَانَ عَامِرٌ رَجُلًا شَاعِرًا فَنَزَلَ يَحْدُوْ بِالْقَوْمِ يَقُوْلُ :
اللهُمَّ لَوْلَا أَنْـتَ مَا اهْتَدَيْنـَا وَلَا تَصَدَّقْنَا وَلَا صَلَّيْنَـا
فَاغْفِرْ فِدَاءً لَـكَ مَا أَبْقَيْـنَا وَأَلْقِيَنْ سَكِيْنَـةً عَلَـيْـنَا
وَثَبِّتْ الْأَقْـدَامَ إِنْ لَاقَـيْـنَا إِنَّا إِذَا صِيْحَ بِنَـا أَبَـيْنَـا
وَبِالصِّيَاحِ عَوَّلُوْا عَلَيْنَا
فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ هَذَا السَّائِقُ قَالُوْا عَامِرُ بْنُ الْأَكْوَعِ قَالَ يَرْحَمُهُ اللهُ قَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ وَجَبَتْ يَا نَبِيَّ اللهِ لَوْلَا أَمْتَعْتَنَا بِهِ فَأَتَيْنَا خَيْبَرَ فَحَاصَرْنَاهُمْ حَتَّى أَصَابَتْنَا مَخْمَصَةٌ شَدِيْدَةٌ ثُمَّ إِنَّ اللهَ تَعَالَى فَتَحَهَا عَلَيْهِمْ فَلَمَّا أَمْسَى النَّاسُ مَسَاءَ الْيَوْمِ الَّذِيْ فُتِحَتْ عَلَيْهِمْ أَوْقَدُوْا نِيْرَانًا كَثِيْرَةً فَقَالَ النَّبِيُّ مَا هَذِهِ النِّيرَانُ عَلَى أَيِّ شَيْءٍ تُوْقِدُوْنَ قَالُوْا عَلَى لَحْمٍ قَالَ عَلَى أَيِّ لَحْمٍ قَالُوْا لَحْمِ حُمُرِ الإِنْسِيَّةِ قَالَ النَّبِيُّ أَهْرِيْقُوْهَا وَاكْسِرُوْهَا فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَوْ نُهَرِيْقُهَا وَنَغْسِلُهَا قَالَ أَوْ ذَاكَ فَلَمَّا تَصَافَّ الْقَوْمُ كَانَ سَيْفُ عَامِرٍ قَصِيْرًا فَتَنَاوَلَ بِهِ سَاقَ يَهُوْدِيٍّ لِيَضْرِبَهُ وَيَرْجِعُ ذُبَابُ سَيْفِهِ فَأَصَابَ عَيْنَ رُكْبَةِ عَامِرٍ فَمَاتَ مِنْهُ قَالَ فَلَمَّا قَفَلُوْا قَالَ سَلَمَةُ رَآنِيْ رَسُوْلُ اللهِ وَهُوَ آخِذٌ بِيَدِيْ قَالَ مَا لَكَ قُلْتُ لَهُ فَدَاكَ أَبِيْ وَأُمِّيْ زَعَمُوْا أَنَّ عَامِرًا حَبِطَ عَمَلُهُ قَالَ النَّبِيُّ كَذَبَ مَنْ قَالَهُ إِنَّ لَهُ لَأَجْرَيْنِ وَجَمَعَ بَيْنَ إِصْبَعَيْهِ إِنَّهُ لَجَاهِدٌ مُجَاهِدٌ قَلَّ عَرَبِيٌّ مَشَى بِهَا مِثْلَهُ حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا حَاتِمٌ قَالَ نَشَأَ بِهَا
সালামাহ ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে খাইবার অভিযানে বেরোলাম। আমরা রাতের বেলা চলছিলাম, তখন দলের এক ব্যক্তি ‘আমির (রাঃ)-কে বলল, হে ‘আমির! তোমার সমর সঙ্গীত থেকে আমাদের কিছু শোনাবে না কি? ‘আমির (রাঃ) ছিলেন একজন কবি। তখন তিনি সওয়ারী থেকে নামলেন এবং সঙ্গীতের তালে তালে কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে চললেন। তিনি গাইলেনঃ
হে আল্লাহ! তুমি না হলে আমরা হিদায়াত লাভ করতাম না,
সদাকাহ দিতাম না সলাত আদায় করতাম না।
তাই আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন, যতদিন আপনার প্রতি সমর্পিত হয়ে থাকব।
আমাদের উপর শান্তি বর্ষণ করুন এবং শত্রুর মুকাবালায় আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখুন।
আমাদেরকে যখন (কুফরের দিকে) ডাকা হয় আমরা তখন তা প্রত্যাখ্যান করি।
আর এ কারণে তারা চীৎকার করে আমাদের বিরুদ্ধে লোক-লস্কর জমা করে।
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ সঙ্গীতের গায়ক কে? তাঁরা বললেন, ‘আমির ইবনুল আকওয়া’। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ তাকে রহম করুন। কাফেলার একজন বললঃ হে আল্লাহ্র নাবী! তার (শাহাদাত) নিশ্চিত হয়ে গেল। (হায়) আমাদেরকে যদি তার নিকট হতে আরো উপকার লাভের সুযোগ দিতেন! অতঃপর আমরা খাইবারে পৌঁছলাম এবং তাদেরকে অবরোধ করলাম। এক সময় আমরা ভীষণ ক্ষুধায় আক্রান্ত হলাম। কিন্তু পরেই মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করলেন। বিজয়ের দিন সন্ধ্যায় মুসলিমগণ (রান্নার জন্য) অনেক আগুন জ্বালালেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ এ সব কিসের আগুন? তোমরা কী রান্না করছ? তারা জানালেন, গোশত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ কিসের গোশত? লোকেরা বললেন, গৃহপালিত গাধার গোশত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এগুলি ঢেলে দাও এবং ডেকচিগুলো ভেঙ্গে ফেল। একজন বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! গোশ্তগুলো ঢেলে দিয়ে যদি পাত্রগুলো ধুয়ে নেই? তিনি বললেন, তাও করতে পার। এরপর যখন সবাই যুদ্ধের জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেলেন, আর ‘আমির ইবনুল আকওয়া’ (রাঃ)-এর তলোয়ারটা ছিল ছোট, তা দিয়ে তিনি জনৈক ইয়াহূদীর পায়ের গোছায় আঘাত করলে তরবারির তীক্ষ্ণ ভাগ ঘুরে এসে তাঁর নিজের হাঁটুতে লেগে যায়। এতে তিনি মারা যান। সালামাহ ইবনুল ‘আকওয়া’ (রাঃ) বলেনঃ তারপর লোকেরা খাইবার থেকে ফিরতে শুরু করলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখে আমার হাত ধরে বললেন, কী খবর? আমি বললামঃ আমার পিতামাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক। লোকজন ধারণা করছে, (নিজ আঘাতে মারা যাওয়ায়) ‘আমির (রাঃ)-এর ‘আমাল নষ্ট হয়ে গেছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ কথা যে বলেছে সে মিথ্যা বলেছে। বরং ‘আমিরের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দু’টি আঙ্গুল একত্রিত করে দেখালেন। অবশ্যই সে একজন সচেষ্ট ব্যক্তি ও আল্লাহ্র রাস্তায় জিহাদকারী। তাঁর মত গুণের অধিকারী আরাব খুব কমই আছে। আমাদের নিকট হাতিম কুতাইবাহ্র মাধ্যমে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ৩৮৭৬, ই. ফা ৩৮৭৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪১৯৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيْلِ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَتَى خَيْبَرَ لَيْلًا وَكَانَ إِذَا أَتَى قَوْمًا بِلَيْلٍ لَمْ يُغِرْ بِهِمْ حَتَّى يُصْبِحَ فَلَمَّا أَصْبَحَ خَرَجَتْ الْيَهُوْدُ بِمَسَاحِيْهِمْ وَمَكَاتِلِهِمْ فَلَمَّا رَأَوْهُ قَالُوْا مُحَمَّدٌ وَاللهِ مُحَمَّدٌ وَالْخَمِيْسُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِيْنَ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাত্রিকালে খাইবারে পৌঁছলেন। আর তিনি (কোন অভিযানে) কোন গোত্রের এলাকায় রাত্রিকালে গিয়ে পৌঁছলে, সকাল না হওয়া পর্যন্ত তাদের উপর আক্রমণ চালাতেন না। সকাল হলে ইয়াহূদীরা তাদের কৃষি সরঞ্জাম ও টুকরি নিয়ে বাইরে আসল, আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পেল, তখন তারা (ভয়ে) বলতে লাগল, মুহাম্মাদ, আল্লাহ্র কসম, মুহাম্মাদ তার দলবল নিয়ে এসে পড়েছে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, খাইবার ধ্বংস হয়েছে। আমরা যখনই কোন গোত্রের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হই তখন সেই সতর্ক করা গোত্রের সকাল হয় মন্দভাবে। [৩৭১] (আ.প্র. ৩৮৭৭, ই.ফা. ৩৮৮০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪১৯৮
أَخْبَرَنَا صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيْرِيْنَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ صَبَّحْنَا خَيْبَرَ بُكْرَةً فَخَرَجَ أَهْلُهَا بِالْمَسَاحِيْ فَلَمَّا بَصُرُوْا بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالُوْا مُحَمَّدٌ وَاللهِ مُحَمَّدٌ وَالْخَمِيْسُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اللهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِيْنَ فَأَصَبْنَا مِنْ لُحُوْمِ الْحُمُرِ فَنَادَى مُنَادِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ يَنْهَيَانِكُمْ عَنْ لُحُوْمِ الْحُمُرِ فَإِنَّهَا رِجْسٌ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খুব সকালে খাইবারে গিয়ে পৌঁছলাম। তখন সেখানকার লোকেরা কৃষির সরঞ্জাম নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। তারা যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পেল তখন বলল, মুহাম্মাদ, আল্লাহ্র কসম, মুহাম্মাদ তার দলবল নিয়ে এসে পড়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করে বললেন, খাইবার ধংস হয়েছে। আমরা যখনই কোন গোত্রের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হই, তখন সেই সতর্ক করা গোত্রের সকাল হয় মন্দভাবে। [আনাস (রাঃ) বলেন] এ যুদ্ধে আমরা গাধার গোশত লাভ করেছিলাম (আর তা পাক করা হচ্ছিল)। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘোষণাকারী ঘোষণা করলেন, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। কারণ তা নাপাক। [৩৭১] (আ.প্র. ৩৮৭৮, ই.ফা. ৩৮৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪১৯৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم جَاءَهُ جَاءٍ فَقَالَ أُكِلَتْ الْحُمُرُ فَسَكَتَ ثُمَّ أَتَاهُ الثَّانِيَةَ فَقَالَ أُكِلَتْ الْحُمُرُ فَسَكَتَ ثُمَّ أَتَاهُ الثَّالِثَةَ فَقَالَ أُفْنِيَتْ الْحُمُرُ فَأَمَرَ مُنَادِيًا فَنَادَى فِي النَّاسِ إِنَّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ يَنْهَيَانِكُمْ عَنْ لُحُوْمِ الْحُمُرِ الْأَهْلِيَّةِ فَأُكْفِئَتْ الْقُدُوْرُ وَإِنَّهَا لَتَفُوْرُ بِاللَّحْمِ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে একজন আগন্তুক এসে বলল, (গানীমাতের) গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ রইলেন। এরপর লোকটি দ্বিতীয়বার এসে বলল, গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখনো চুপ থাকলেন। লোকটি তৃতীয়বার এসে বলল, গাধাগুলো খতম করে দেওয়া হচ্ছে। তখন তিনি একজন ঘোষণাকারীকে হুকুম দিলেন। সে লোকজনের সামনে গিয়ে ঘোষণা দিলঃ আল্লাহ এবং তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। তখন ডেকচিগুলো উল্টে দেয়া হল। অথচ ডেকচিগুলোতে গোশ্ত তখন টগবগ করে ফুটছিল। [৩৭১০] (আ.প্র. ৩৮৭৯, ই.ফা. ৩৮৮২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২০০
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الصُّبْحَ قَرِيْبًا مِنْ خَيْبَرَ بِغَلَسٍ ثُمَّ قَالَ اللهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِيْنَ فَخَرَجُوْا يَسْعَوْنَ فِي السِّكَكِ فَقَتَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمُقَاتِلَةَ وَسَبَى الذُّرِّيَّةَ وَكَانَ فِي السَّبْيِ صَفِيَّةُ فَصَارَتْ إِلَى دَحْيَةَ الْكَلْبِيِّ ثُمَّ صَارَتْ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ عِتْقَهَا صَدَاقَهَا فَقَالَ عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ صُهَيْبٍ لِثَابِتٍ يَا أَبَا مُحَمَّدٍ آنْتَ قُلْتَ لِأَنَسٍ مَا أَصْدَقَهَا فَحَرَّكَ ثَابِتٌ رَأْسَهُ تَصْدِيْقًا لَهُ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবারের নিকটে সকালে কিছু অন্ধকার থাকতেই ফাজ্রের সলাত আদায় করলেন। তারপর আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করে বললেন, খাইবার ধ্বংস হয়েছে। আমরা যখনই কোন গোত্রের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হই তখনই সতর্ক করা গোত্রের সকালটি হয় মন্দরূপে। এ সময়ে খাইবারের অধিবাসীরা অলি-গলিতে গিয়ে আশ্রয় নিতে আরম্ভ করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের মধ্যকার যোদ্ধাদেরকে হত্যা করলেন। আর শিশু ও নারীদেরকে বন্দী করলেন। বন্দীদের মধ্যে ছিলেন সফিয়্যাহ। প্রথমে তিনি দাহ্ইয়াতুল কালবীর অংশে এবং পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অংশে বন্টিত হন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মুক্তিদানকে (বিবাহের) মাহর হিসেবে গণ্য করেন। ‘আবদুল ‘আযীয ইবনু সুহাইব (রহঃ) সাবিত (রহঃ)-কে বললেন, হে আবূ মুহাম্মাদ! আপনি কি আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর [সফিয়্যাহ (রাঃ)-এর] মোহর কী ধার্য করেছিলেন? তখন সাবিত (রহঃ) ‘হ্যাঁ’ বুঝানোর জন্য মাথা নাড়লেন। [৩৭১] (আ.প্র. ৩৮৮০, ই.ফা. ৩৮৮৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২০১
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيْزِ بْنِ صُهَيْبٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ سَبَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صَفِيَّةَ فَأَعْتَقَهَا وَتَزَوَّجَهَا فَقَالَ ثَابِتٌ لِأَنَسٍ مَا أَصْدَقَهَا قَالَ أَصْدَقَهَا نَفْسَهَا فَأَعْتَقَهَا
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাফিয়্যা (রাঃ)-কে বন্দী করেছিলেন। পরে তিনি তাঁকে আযাদ করে বিয়ে করেছিলেন। সাবিত (রহঃ) আবাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মোহর কত নির্দিষ্ট করেছিলেন? আনাস (রাঃ) বললেনঃ স্বয়ং সাফিয়্যা (রাঃ)-কেই মোহর ধার্য করেছিলেন এবং তাঁকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। [৩৭১] (আ.প্র. ৩৮৮১, ই.ফা. ৩৮৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২০২
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى الْأَشْعَرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا غَزَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ أَوْ قَالَ لَمَّا تَوَجَّهَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَشْرَفَ النَّاسُ عَلَى وَادٍ فَرَفَعُوْا أَصْوَاتَهُمْ بِالتَّكْبِيْرِ اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ارْبَعُوْا عَلَى أَنْفُسِكُمْ إِنَّكُمْ لَا تَدْعُوْنَ أَصَمَّ وَلَا غَائِبًا إِنَّكُمْ تَدْعُوْنَ سَمِيْعًا قَرِيْبًا وَهُوَ مَعَكُمْ وَأَنَا خَلْفَ دَابَّةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَسَمِعَنِيْ وَأَنَا أَقُوْلُ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ فَقَالَ لِيْ يَا عَبْدَ اللهِ بْنَ قَيْسٍ قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى كَلِمَةٍ مِنْ كَنْزٍ مِنْ كُنُوْزِ الْجَنَّةِ قُلْتُ بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ فَدَاكَ أَبِيْ وَأُمِّيْ قَالَ لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ
আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন খাইবার যুদ্ধের জন্য বের হলেন কিংবা রাবী বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন খাইবারের দিকে যাত্রা করলেন, তখন সাথী লোকজন একটি উপত্যকায় পৌঁছে এই বলে উচ্চৈঃস্বরে তাকবীর দিতে শুরু করল-আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। (আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ ব্যতীত কোন প্রকৃত ইলাহ নেই)। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা নিজেদের প্রতি দয়া কর। কারণ তোমরা এমন কোন সত্তাকে ডাকছ না যিনি বধির বা অনুপস্থিত। বরং তোমরা তো ডাকছ সেই সত্তাকে যিনি শ্রবণকারী ও অতি নিকটে অবস্থানকারী, যিনি তোমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। [আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) বলেন] আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাওয়ারীর পেছনে ছিলাম। তিনি আমাকে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলতে শুনে বললেন, হে ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! আমি বললাম, আমি উপস্থিত হে আল্লাহ্র রসূল! তিনি বললেন, আমি তোমাকে এমন একটি কথা শিখিয়ে দেব কি যা জান্নাতের ভাণ্ডারসমূহের মধ্যে একটি ভাণ্ডার? আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহ্র রসূল। আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান হোক। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তা হল ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ [২৯৯২] (আ.প্র. ৩৮৮৪, ই.ফা. ৩৮৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২০৩
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْتَقَى هُوَ وَالْمُشْرِكُوْنَ فَاقْتَتَلُوْا فَلَمَّا مَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَسْكَرِهِ وَمَالَ الْآخَرُوْنَ إِلَى عَسْكَرِهِمْ وَفِيْ أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ لَا يَدَعُ لَهُمْ شَاذَّةً وَلَا فَاذَّةً إِلَّا اتَّبَعَهَا يَضْرِبُهَا بِسَيْفِهِ فَقِيْلَ مَا أَجْزَأَ مِنَّا الْيَوْمَ أَحَدٌ كَمَا أَجْزَأَ فُلَانٌ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَا إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ أَنَا صَاحِبُهُ قَالَ فَخَرَجَ مَعَهُ كُلَّمَا وَقَفَ وَقَفَ مَعَهُ وَإِذَا أَسْرَعَ أَسْرَعَ مَعَهُ قَالَ فَجُرِحَ الرَّجُلُ جُرْحًا شَدِيْدًا فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ فَوَضَعَ سَيْفَهُ بِالأَرْضِ وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَى سَيْفِهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَخَرَجَ الرَّجُلُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُوْلُ اللهِ قَالَ وَمَا ذَاكَ قَالَ الرَّجُلُ الَّذِيْ ذَكَرْتَ آنِفًا أَنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَأَعْظَمَ النَّاسُ ذَلِكَ فَقُلْتُ أَنَا لَكُمْ بِهِ فَخَرَجْتُ فِيْ طَلَبِهِ ثُمَّ جُرِحَ جُرْحًا شَدِيْدًا فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ فَوَضَعَ نَصْلَ سَيْفِهِ فِي الْأَرْضِ وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَيْهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ عِنْدَ ذَلِكَ إِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فِيْمَا يَبْدُوْ لِلنَّاسِ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ النَّارِ فِيْمَا يَبْدُوْ لِلنَّاسِ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ
সাহ্ল ইবনু সা’দ সা’ঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(খাইবারের যুদ্ধে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং মুশরিকরা মুখোমুখী হলেন। পরস্পরের মধ্যে তুমুল লড়াই হল। (দিনের শেষে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সেনা ছাউনিতে ফিরে আসলেন আর অন্যপক্ষও তাদের ছাউনিতে ফিরে গেল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি ছিলেন, যিনি তার তরবারি থেকে একাকী কিংবা দলবদ্ধ কোন শত্রু সৈন্যকেই রেহাই দেননি। বরং পিছু ধাওয়া করে তাকে তরবারির আঘাতে হত্যা করেছেন। তাদের কেউ বললেন, অমুক ব্যক্তি আজ যা করেছে আমাদের মধ্যে আর অন্য কেউ তা করতে সক্ষম হয়নি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কিন্তু সে তো জাহান্নামী। সাহাবীগণের একজন বললেন, (ব্যাপারটা দেখার জন্য) আমি তার সঙ্গী হব। সাহ্ল ইবনু সা’দ সা’ঈদী (রাঃ) বলেন, পরে তিনি ঐ লোকটির সঙ্গে বের হলেন, লোকটি থামলে তিনিও থামতেন, লোকটি দ্রুত চললে তিনিও দ্রুত চলতেন। বর্ণনাকারী বলেন, এক সময়ে লোকটি ভীষণভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হল এবং (যন্ত্রণার চোটে) শীঘ্র মৃত্যু কামনা করল। তাই সে তার তরবারির গোড়ার অংশ মাটিতে রেখে এর ধারালো দিক বুকের মাঝে রাখল। এরপর সে তরবারির উপর নিজেকে জোরে চেপে ধরে আত্মহত্যা করল। তখন লোকটি (অনুসরণকারী সহাবী) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহ্র রসূল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ব্যাপার কী? তিনি বললেন, একটু আগে আপনি যে লোকটির কথা বলেছিলেন যে, লোকটি জাহান্নামী, তাতে লোকেরা আশ্চর্যান্বিত হয়েছিল। তখন আমি তাদেরকে বলেছিলাম, আমি লোকটির পিছু নিয়ে দেখব। কাজেই আমি ব্যাপারটির খোঁজে বেরিয়ে পড়ি। এক সময় লোকটি মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হল এবং শীঘ্র মৃত্যু কামনা করল, তাই সে তার তরবারির হাতলের দিক মাটিতে বসিয়ে এর তীক্ষ্ম ভাগ নিজের বুকের মাঝে রাখল। এরপর নিজেকে তার উপর জোরে চেপে ধরে আত্মহত্যা করল। এ সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, অনেক সময় মানুষ জান্নাতীদের মত ‘আমাল করতে থাকে, যা দেখে অন্যরা তাকে জান্নাতীই মনে করে। অথচ সে জাহান্নামী। আবার অনেক সময় মানুষ জাহান্নামীদের মতো ‘আমাল করতে থাকে যা দেখে লোকজনও সেরূপই মনে করে থাকে, অথচ সে জান্নাতী। [২৯০২] (আ.প্র. ৩৮৮২, ই.ফা. ৩৮৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২০৪
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ شَهِدْنَا خَيْبَرَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِرَجُلٍ مِمَّنْ مَعَهُ يَدَّعِي الإِسْلَامَ هَذَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَلَمَّا حَضَرَ الْقِتَالُ قَاتَلَ الرَّجُلُ أَشَدَّ الْقِتَالِ حَتَّى كَثُرَتْ بِهِ الْجِرَاحَةُ فَكَادَ بَعْضُ النَّاسِ يَرْتَابُ فَوَجَدَ الرَّجُلُ أَلَمَ الْجِرَاحَةِ فَأَهْوَى بِيَدِهِ إِلَى كِنَانَتِهِ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهَا أَسْهُمًا فَنَحَرَ بِهَا نَفْسَهُ فَاشْتَدَّ رِجَالٌ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَدَّقَ اللهُ حَدِيْثَكَ انْتَحَرَ فُلَانٌ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَقَالَ قُمْ يَا فُلَانُ فَأَذِّنْ أَنَّهُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا مُؤْمِنٌ إِنَّ اللهَ يُؤَيِّدُ الدِّيْنَ بِالرَّجُلِ الْفَاجِرِ تَابَعَهُ مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খাইবার যুদ্ধে গিয়েছিলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাঁর সঙ্গীদের মধ্য থেকে মুসলিম হওয়ার দাবীদার এক ব্যক্তি সম্পর্কে বললেন, লোকটি জাহান্নামী। এরপর যুদ্ধ আরম্ভ হলে লোকটি ভীষণভাবে যুদ্ধ চালিয়ে গেল, এমন কি তার দেহ বিক্ষত হয়ে গেল। এতে কারো কারো [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভবিষ্যদ্বাণীর উপর] সন্দেহ সৃষ্টি হল। অতঃপর লোকটি আঘাতের যন্ত্রণায় অসহ্য হয়ে তূণীরের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে সেখান থেকে তীর বের করে আনল। আর তীরটি নিজের বক্ষদেশে ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করল। তা দেখে কতিপয় মুসলিম দ্রুত ছুটে এসে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ আপনার কথাকে সত্য প্রমাণিত করেছেন। ঐ লোকটি নিজেই নিজের বক্ষে আঘাত করে আত্মহত্যা করেছে। তখন তিনি বললেন, হে অমুক! দাঁড়াও এবং ঘোষণা দাও যে, মু’মিন ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। অবশ্য আল্লাহ ফাসিক ব্যক্তি দ্বারাও দ্বীনের সাহায্য করে থাকেন। মা’মার (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে উপরোক্ত হাদীস বর্ণনায় শু’আয়ব (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন। [২৮৯৮, ৩০৬২] (আ.প্র. ৩৮৮৩, ই.ফা. ৩৮৮৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২০৫
وَقَالَ شَبِيْبٌ عَنْ يُوْنُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِي ابْنُ الْمُسَيَّبِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبٍ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ شَهِدْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حُنَيْنًا وَقَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ يُوْنُسَ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَابَعَهُ صَالِحٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ وَقَالَ الزُّبَيْدِيُّ أَخْبَرَنِي الزُّهْرِيُّ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ كَعْبٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ عُبَيْدَ اللهِ بْنَ كَعْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ مَنْ شَهِدَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ قَالَ الزُّهْرِيُّ وَأَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ وَسَعِيْدٌ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে খাইবার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম ……। (‘আবদুল্লাহ) ইবনু মুবারাক হাদীসটি ইউনুস-‘যুহরী-সা’ঈদ [ইবনুল মুসাইয়্যাব (রহঃ)] সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। সালিহ (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে ইবনু মুবারাক (রাঃ)-এর মতই বর্ণনা করেছেন। আর যুবাইদী (রহঃ) যুহরী, ‘আবদুর রহমান ইবনু কা’ব, ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু কা’ব (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে খাইবারে অংশগ্রহণকারী জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেছেন। (যুবাইদী আরো বলেন) যুহরী (রহঃ) এ হাদীসটিকে ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ এবং সা’ঈদ (ইবনুল মুসাইয়্যাব) (রহঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। [৩০৬২] (আ.প্র. ৩৮৮৩, ই.ফা. ৩৮৮৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২০৬
ইয়াযীদ ইবনু আবূ ‘উবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সালামাহ (ইবনু আকওয়া) (রাঃ)-এর পায়ের নলায় আঘাতের চিহ্ন দেখে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আবূ মুসলিম! এ আঘাতটি কিসের? তিনি বললেন, এ আঘাত আমি খাইবার যুদ্ধে পেয়েছিলাম। লোকজন বলাবলি করল, সালামাহ মারা যাবে। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম। তিনি ক্ষতটিতে তিনবার ফুঁ দিলেন। ফলে আজ পর্যন্ত এসে কোন ব্যথা অনুভব করিনি। (আ.প্র. ৩৮৮৫, ই.ফা ৩৮৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২০৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ سَهْلٍ قَالَ الْتَقَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَالْمُشْرِكُوْنَ فِيْ بَعْضِ مَغَازِيْهِ فَاقْتَتَلُوْا فَمَالَ كُلُّ قَوْمٍ إِلَى عَسْكَرِهِمْ وَفِي الْمُسْلِمِيْنَ رَجُلٌ لَا يَدَعُ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ شَاذَّةً وَلَا فَاذَّةً إِلَّا اتَّبَعَهَا فَضَرَبَهَا بِسَيْفِهِ فَقِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا أَجْزَأَ أَحَدٌ مَا أَجْزَأَ فُلَانٌ فَقَالَ إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَقَالُوْا أَيُّنَا مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ إِنْ كَانَ هَذَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ لَأَتَّبِعَنَّهُ فَإِذَا أَسْرَعَ وَأَبْطَأَ كُنْتُ مَعَهُ حَتَّى جُرِحَ فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ فَوَضَعَ نِصَابَ سَيْفِهِ بِالأَرْضِ وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَيْهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَجَاءَ الرَّجُلُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُوْلُ اللهِ فَقَالَ وَمَا ذَاكَ فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ إِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ فِيْمَا يَبْدُوْ لِلنَّاسِ وَإِنَّهُ لَمِنْ أَهْلِ النَّارِ وَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ فِيْمَا يَبْدُوْ لِلنَّاسِ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ
সাহ্ল (ইব্নু সা’দ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক যুদ্ধে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং মুশরিকরা মুখোমুখী হলেন। তাদের মধ্যে তুমুল লড়াই হল। (শেষে) সকলেই আপন আপন সেনা ছাউনীতে ফিরে গেল। মুসলিম সৈন্যদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি ছিল, যে মুশরিকদের কোন একাকী কিংবা দলবদ্ধ কোন শত্রুকেই রেহাই দেয়নি বরং তাড়িয়ে নিয়ে তরবারি দ্বারা হত্যা করেছে। তখন বলা হল “হে আল্লাহ্র রসূল! অমুক লোক আজ যতটা ‘আমাল করেছে অন্য কেউ ততটা করতে পারেনি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে ব্যক্তি জাহান্নামী। তারা বলল, তা হলে আমাদের মধ্যে আর কে জান্নাতী হবে যদি এ ব্যক্তিই জাহান্নামী হয়? তখন কাফেলার মধ্য থেকে একজন বলল, অবশ্যই আমি তাকে অনুসরণ করে দেখব (তিনি বলেন) লোকটির দ্রুত গতিতে বা ধীর গতিতে আমি তার সঙ্গে থাকতাম। শেষে, লোকটি আঘাতপ্রাপ্ত হলে যন্ত্রণার চোটে সে দ্রুত মৃত্যু কামনা করে তার তরবারির বাঁট মাটিতে রাখলো এবং ধারালো দিক নিজের বুকের মাঝে রেখে এর উপর সজোরে চেপে ধরে আত্মহত্যা করল। তখন (অনুসরণকারী) সহাবী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহ্র রসূল। তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)]জিজ্ঞেস করলেন,কী ব্যাপার? তিনি তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সব ঘটনা জানালেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কেউ কেউ জান্নাতবাসীদের মতো ‘আমাল করতে থাকে আর লোকজন তাকে তেমনই মনে করে থাকে অথচ সে জাহান্নামী। আবার কেউ কেউ জাহান্নামীর মতো ‘আমাল করে থাকে আর লোকজনও তাকে তাই মনে করে অথচ সে জান্নাতী। [২৮৯৮] (আ.প্র. ৩৮৮৬, ই.ফা. ৩৮৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২০৮
مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيْدٍ الْخُزَاعِيُّ حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيْعِ عَنْ أَبِيْ عِمْرَانَ قَالَ نَظَرَ أَنَسٌ إِلَى النَّاسِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَرَأَى طَيَالِسَةً فَقَالَ كَأَنَّهُمْ السَّاعَةَ يَهُوْدُ خَيْبَرَ
আবূ ‘ইমরান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক জুমু’আহ্র দিনে আনাস (রাঃ) লোকজনের দিকে তাকিয়ে দেখলেন তাদের (মাথায়) তায়ালিসাহ [৪৮] চাদর। তখন তিনি বললেন, এ মুহূর্তে এদেরকে খাইবারের ইয়াহূদীদের মতো দেখাচ্ছে। (আ.প্র. ৩৮৮৭, ই.ফা. ৩৮৯০)
[৪৮] এক প্রকারের চাদরকে ত্বয়ালিসাহ বলা হয়। খায়বারে ইয়াহূদ সম্প্রদায় এগুলো অধিক ব্যবহার করতো। তাই আনাস (রাঃ) বসরায় আগমনের পর খুতবায় দাঁড়িয়ে মুসল্লীগণকে তয়ালিসাহ চাদর পরা অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্বীয় অনুভূতি ব্যক্ত করলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২০৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا حَاتِمٌ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ عَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ تَخَلَّفَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ خَيْبَرَ وَكَانَ رَمِدًا فَقَالَ أَنَا أَتَخَلَّفُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَحِقَ بِهِ فَلَمَّا بِتْنَا اللَّيْلَةَ الَّتِيْ فُتِحَتْ قَالَ لَأُعْطِيَنَّ الرَّايَةَ غَدًا أَوْ لَيَأْخُذَنَّ الرَّايَةَ غَدًا رَجُلٌ يُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُوْلُهُ يُفْتَحُ عَلَيْهِ فَنَحْنُ نَرْجُوْهَا فَقِيْلَ هَذَا عَلِيٌّ فَأَعْطَاهُ فَفُتِحَ عَلَيْهِ
সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, চক্ষু রোগ হওয়ায় ‘আলী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর থেকে খাইবার অভিযানে পেছনে পড়ে গিয়েছিলেন। [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনাহ থেকে রওয়ানা হয়ে এসে পড়লে] ‘আলী (রাঃ) বলেন, আমি পেছনে বসে থাকব। সুতরাং তিনি গিয়ে তাঁর সঙ্গে মিলিত হলেন। [সালামাহ (রাঃ) বলেন] খাইবার বিজিত হওয়ার আগের রাতে তিনি [নাবী (সা.] বললেন, আগামীকাল সকালে আমি এমন ব্যক্তির হাতে পতাকা তুলে দেব অথবা তিনি বলেছেন, আগামীকাল সকালে এমন এক ব্যক্তি পতাকা গ্রহণ করবে যাকে আল্লাহ এবং তাঁর রসূল ভালবাসেন। আর তার হাতেই খাইবার বিজিত হবে। কাজেই আমরা সবাই সেটি কামনা করছিলাম। তখন বলা হল, এই তো ‘আলী। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে পতাকা প্রদান করলেন এবং তাঁর হাতেই খাইবার বিজিত হল। [২৯৭৫] (আ.প্র. ৩৮৮৮, ই.ফা. ৩৮৯১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২১০
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَوْمَ خَيْبَرَ لَأُعْطِيَنَّ هَذِهِ الرَّايَةَ غَدًا رَجُلًا يَفْتَحُ اللهُ عَلَى يَدَيْهِ يُحِبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَيُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُوْلُهُ قَالَ فَبَاتَ النَّاسُ يَدُوْكُوْنَ لَيْلَتَهُمْ أَيُّهُمْ يُعْطَاهَا فَلَمَّا أَصْبَحَ النَّاسُ غَدَوْا عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم كُلُّهُمْ يَرْجُوْ أَنْ يُعْطَاهَا فَقَالَ أَيْنَ عَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ فَقِيْلَ هُوَ يَا رَسُوْلَ اللهِ يَشْتَكِيْ عَيْنَيْهِ قَالَ فَأَرْسَلُوْا إِلَيْهِ فَأُتِيَ بِهِ فَبَصَقَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ عَيْنَيْهِ وَدَعَا لَهُ فَبَرَأَ حَتَّى كَأَنْ لَمْ يَكُنْ بِهِ وَجَعٌ فَأَعْطَاهُ الرَّايَةَ فَقَالَ عَلِيٌّ يَا رَسُوْلَ اللهِ أُقَاتِلُهُمْ حَتَّى يَكُوْنُوْا مِثْلَنَا فَقَالَ انْفُذْ عَلَى رِسْلِكَ حَتَّى تَنْزِلَ بِسَاحَتِهِمْ ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى الإِسْلَامِ وَأَخْبِرْهُمْ بِمَا يَجِبُ عَلَيْهِمْ مِنْ حَقِّ اللهِ فِيْهِ فَوَاللهِ لَأَنْ يَهْدِيَ اللهُ بِكَ رَجُلًا وَاحِدًا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُوْنَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ
সাহ্ল ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খাইবারের যুদ্ধে একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আগামীকাল সকালে আমি এমন এক লোকের হাতে ঝাণ্ডা তুলে দেব যার হাতে আল্লাহ খাইবারে বিজয় দান করবেন যে আল্লাহ এবং তাঁর রসূলকে ভালবাসে এবং যাকে আল্লাহ এবং তাঁর রসূল ভালবাসেন। সাহ্ল (রাঃ) বলেন, মুসলিমগণ এ জল্পনায় রাত কাটালো যে, তাদের মধ্যে কাকে দেয়া হবে এ ঝাণ্ডা। সকালে সবাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলেন, আর প্রত্যেকেই তা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করছিলেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) কোথায়? সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! তিনি তো চক্ষুরোগে আক্রান্ত। তিনি বললেন, তার কাছে লোক পাঠাও। সে মতে তাঁকে আনা হল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার উভয় চোখে থুথু লাগিয়ে তার জন্য দু’আ করলেন। ফলে চোখ এমন ভাল হয়ে গেল যেন কখনো চোখে কোন রোগই ছিল না। এরপর তিনি তার হাতে ঝাণ্ডা প্রদান করলেন। তখন ‘আলী (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! তারা আমাদের মতো (মুসলিম) না হওয়া পর্যন্ত আমি তাদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাব। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি বর্তমান অবস্থায়ই তাদের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে হাজির হও, এরপর তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের প্রতি আহবান করো, আল্লাহ্র অধিকার প্রদানে তাদের প্রতি যে দায়িত্ব বর্তায় সে সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত কর। কারণ আল্লাহ্র কসম! তোমার দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ যদি মাত্র একজন মানুষকেও হিদায়াত দেন তাহলে তা তোমার জন্য লাল রঙের (মূল্যবান) উটের [৪৯] মালিক হওয়ার চেয়ে উত্তম। [২৯৪২] (আ.প্র. ৩৮৮৯, ই.ফা. ৩৮৯২)
[৪৯] আরবীয় উটের যত প্রকার আছে তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর, অভিজাত, আকর্ষণীয় ও মূল্যবান উট হচ্ছে লাল রঙের উট।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২১১
عَبْدُ الْغَفَّارِ بْنُ دَاوُدَ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ح و حَدَّثَنِيْ أَحْمَدُ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ يَعْقُوْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الزُّهْرِيُّ عَنْ عَمْرٍو مَوْلَى الْمُطَّلِبِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَدِمْنَا خَيْبَرَ فَلَمَّا فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِ الْحِصْنَ ذُكِرَ لَهُ جَمَالُ صَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَيِّ بْنِ أَخْطَبَ وَقَدْ قُتِلَ زَوْجُهَا وَكَانَتْ عَرُوْسًا فَاصْطَفَاهَا النَّبِيُّ لِنَفْسِهِ فَخَرَجَ بِهَا حَتَّى بَلَغْنَا سَدَّ الصَّهْبَاءِ حَلَّتْ فَبَنَى بِهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ صَنَعَ حَيْسًا فِيْ نِطَعٍ صَغِيْرٍ ثُمَّ قَالَ لِيْ آذِنْ مَنْ حَوْلَكَ فَكَانَتْ تِلْكَ وَلِيْمَتَهُ عَلَى صَفِيَّةَ ثُمَّ خَرَجْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُحَوِّيْ لَهَا وَرَاءَهُ بِعَبَاءَةٍ ثُمَّ يَجْلِسُ عِنْدَ بَعِيْرِهِ فَيَضَعُ رُكْبَتَهُ وَتَضَعُ صَفِيَّةُ رِجْلَهَا عَلَى رُكْبَتِهِ حَتَّى تَرْكَبَ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খাইবারে এসে পৌঁছলাম। এরপর যখন আল্লাহ তাঁকে খাইবার দূর্গের বিজয় দান করলেন তখন তাঁর কাছে (ইয়াহূদী দলপতি) হুয়াঈ ইবনু আখতারের কন্যা সফিয়্যাহ (রাঃ)-এর সৌন্দর্যের ব্যাপারে আলোচনা করা হল। তার স্বামী (এ যুদ্ধে) নিহত হয়। সে ছিল নববধূ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে নিজের জন্য মনোনীত করেন এবং তাকে সঙ্গে করে (খাইবার থেকে) যাত্রা করেন। এরপর আমরা যখন সাদ্দুস সাহবা নামক স্থানে গিয়ে পৌঁছলাম তখন সফিয়্যাহ (রাঃ) তাঁর মাসিক ঋতুস্রাব থেকে মুক্ত হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সঙ্গে বাসর করলেন। তারপর একটি ছোট দস্তরখানে (খেজুর-ঘি ও ছাতু মিশ্রিত) হায়স নামক খানা সাজিয়ে আমাকে বললেন, তোমার আশেপাশে যারা আছে সবাইকে ডাক। আর এটিই ছিল সফিয়্যাহ (রাঃ)-এর সঙ্গে বিয়ের ওয়ালীমা। তারপর আমরা মাদীনাহ্র দিকে রওয়ানা হলাম, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর সাওয়ারীর পেছনে সফিয়্যাহ (রাঃ)-এর জন্য একটি চাদর বিছাতে দেখেছি। এরপর তিনি তাঁর সাওয়ারীর ওপর হাঁটুদ্বয় মেলে বসতেন এবং সফিয়্যাহ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাঁটুর উপর পা রেখে সাওয়ারীতে উঠতেন। [৩৭১] (আ.প্র. ৩৮৯০, ই.ফা. ৩৮৯৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২১২
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَخِيْ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ يَحْيَى عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيْلِ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَقَامَ عَلَى صَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَيٍّ بِطَرِيْقِ خَيْبَرَ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ حَتَّى أَعْرَسَ بِهَا وَكَانَتْ فِيْمَنْ ضُرِبَ عَلَيْهَا الْحِجَابُ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবার থেকে ফেরার পথে সফিয়্যাহ (রাঃ) বিন্তে হুয়াঈ-এর কাছে তিনদিন অবস্থান করে তার সঙ্গে বাসর যাপন করেছেন। আর (রাঃ) ছিলেন তাদের একজন যাদের জন্য পর্দার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। [৫০] [৩৭১] (আ.প্র. ৩৮৯১, ই.ফা. ৩৮৯৪)
[৫০] ইসলামী শরী’আহ্তে ক্রীতদাসীর জন্য পর্দার হুকুম পালন করতে হতো না। কিন্তু স্বাধীন নারীদের জন্য পর্দা করতে হতো। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাফিয়া (রাঃ)-এর জন্য পর্দার ব্যবস্থা করায় বুঝা গেল তিনি তাকে ক্রীতদাসী নয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২১৩
سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ أَبِيْ كَثِيْرٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ حُمَيْدٌ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسًا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ أَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ خَيْبَرَ وَالْمَدِيْنَةِ ثَلَاثَ لَيَالٍ يُبْنَى عَلَيْهِ بِصَفِيَّةَ فَدَعَوْتُ الْمُسْلِمِيْنَ إِلَى وَلِيْمَتِهِ وَمَا كَانَ فِيْهَا مِنْ خُبْزٍ وَلَا لَحْمٍ وَمَا كَانَ فِيْهَا إِلَّا أَنْ أَمَرَ بِلَالًا بِالأَنْطَاعِ فَبُسِطَتْ فَأَلْقَى عَلَيْهَا التَّمْرَ وَالأَقِطَ وَالسَّمْنَ فَقَالَ الْمُسْلِمُوْنَ إِحْدَى أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ أَوْ مَا مَلَكَتْ يَمِيْنُهُ قَالُوْا إِنْ حَجَبَهَا فَهِيَ إِحْدَى أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ وَإِنْ لَمْ يَحْجُبْهَا فَهِيَ مِمَّا مَلَكَتْ يَمِيْنُهُ فَلَمَّا ارْتَحَلَ وَطَّأَ لَهَا خَلْفَهُ وَمَدَّ الْحِجَابَ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবার ও মাদীনাহ্র মাঝে একস্থানে তিনদিন অবস্থান করেছিলেন যাতে তিনি সফিয়্যাহ (রাঃ)-এর সঙ্গে বাসর করেছেন। আমি মুসলিমদেরকে ওয়ালীমার জন্য দাওয়াত দিলাম। অবশ্য এ ওয়ালীমাতে গোশতও ছিল না, রুটিও ছিল না। কেবল এতটুকু ছিল যে, তিনি বিলাল (রাঃ)-কে দস্তরখান বিছাতে বললেন। তা বিছানো হল। এরপর তাতে কিছু খেজুর, পনির ও ঘি রাখা হল। এ অবস্থা দেখে মুসলিমগণ পরস্পর বলাবলি করতে লাগল যে, তিনি [সফিয়্যাহ (রাঃ)] কি উম্মাহাতুল মু’মিনীনের একজন, না ক্রীতদাসীদের একজন? তাঁরা (আরো) বললেন, যদি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জন্য পর্দার ব্যবস্থা করেন তাহলে তিনি উম্মাহাতুল মু’মিনীনেরই একজন বোঝা যাবে। আর পর্দার ব্যবস্থা না করলে তিনি দাসীদের অন্তর্ভুক্ত। এরপর যখন তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] রওয়ানা হলেন তখন তিনি নিজের পেছনে সফিয়্যাহ (রাঃ)-এর জন্য বসার জায়গা করে দিয়ে পর্দা খাটিয়ে দিলেন। [৩৭১] (আ.প্র. ৩৮৯২, ই.ফা. ৩৮৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২১৪
أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ح و حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَهْبٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلَالٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُغَفَّلٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا مُحَاصِرِيْ خَيْبَرَ فَرَمَى إِنْسَانٌ بِجِرَابٍ فِيْهِ شَحْمٌ فَنَزَوْتُ لِآخُذَهُ فَالْتَفَتُّ فَإِذَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَحْيَيْتُ
‘আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্ফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খাইবারের দূর্গ অবরোধ করে রাখলাম, এমন সময় এক লোক একটি থলে ছুঁড়ে ফেলল। তাতে ছিল চর্বি। আমি সেটি নেয়ার জন্য দ্রুত এগিয়ে গেলাম, হঠাৎ পেছনে ফিরে দেখি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। এতে আমি লজ্জিত হয়ে গেলাম। (আ.প্র. ৩৮৯৩, ই.ফা. ৩৮৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২১৫
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ أَبِيْ أُسَامَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ وَسَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى يَوْمَ خَيْبَرَ عَنْ أَكْلِ الثُّوْمِ وَعَنْ لُحُوْمِ الْحُمُرِ الْأَهْلِيَّةِ
نَهَى عَنْ أَكْلِ الثُّوْمِ هُوَ عَنْ نَافِعٍ وَحْدَهُ وَلُحُوْمِ الْحُمُرِ الْأَهْلِيَّةِ عَنْ سَالِمٍ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খাইবার যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রসুন ও গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। রসূন খেতে নিষেধ করেছেন কথাটি এক্ষেত্রে নাফি’ থেকে বর্ণিত হয়েছে, আর গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন কথাটি সালিম [ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)] হতে বর্ণিত হয়েছে। [৮৫৩] (আ.প্র. ৩৮৯৪, ই.ফা. ৩৮৯৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২১৬
يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ وَالْحَسَنِ ابْنَيْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ عَنْ أَبِيْهِمَا عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ مُتْعَةِ النِّسَاءِ يَوْمَ خَيْبَرَ وَعَنْ أَكْلِ لُحُوْمِ الْحُمُرِ الإِنْسِيَّةِ
‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবার যুদ্ধের দিন মহিলাদের মুত’আহ [৫১] করা থেকে এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। [৫১১৫, ৫৫২৩, ৬৯৬১; মুসলিম ১৬/২, হাঃ ১৪০৭] (আ.প্র. ৩৮৯৫, ই.ফা. ৩৮৯৮)
[৫১] নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াকে মুত’আহ বিবাহ বলা হয়। ইসলামের প্রাথমিক যুগে ক্ষেত্র বিশেষে যেমন যুদ্ধ চলাকালীন সময় ও সফরে বৈধ ছিল। কিন্তু তখনও সাধারণতঃ এভাবে বিবাহ বৈধ ছিল না। পরে খায়বারের যুদ্ধে এ ধরনের বিবাহকে হারাম ঘোষণা করা হয়। অতঃপর অষ্টম হিজরীতে মাক্কাহ বিজয়ের সময় মাত্র তিন দিনের জন্য তা বৈধ করা হয়েছিল। এরপর তা চিরতরে হারাম করা হয়। কিন্তু শিয়া মতাবলম্বীদের মতে মুত’আহ বিবাহ অদ্যাবধি বৈধ এবং পুণ্যের কাজ। এবং মুত’আহকারী ব্যক্তি বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। (না’উযুবিল্লাহ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২১৭
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى يَوْمَ خَيْبَرَ عَنْ لُحُوْمِ الْحُمُرِ الْأَهْلِيَّةِ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবার যুদ্ধের দিন গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। [৮৫৩] (আ. প্র ৩৮৯৬, ই.ফা. ৩৮৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২১৮
إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ وَسَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَكْلِ لُحُوْمِ الْحُمُرِ الْأَهْلِيَّةِ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। [৮৫৩] (আ. প্র ৩৮৯৭, ই.ফা. ৩৯০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২১৯
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ عَمْرٍو عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ خَيْبَرَ عَنْ لُحُوْمِ الْحُمُرِ الْأَهْلِيَّةِ وَرَخَّصَ فِي الْخَيْلِ
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবারের যুদ্ধের দিন (গৃহপালিত) গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন এবং ঘোড়ার গোশত খেতে অনুমতি দিয়েছেন। [৫৫২০-৫৫২৪; মুসলিম ৩৪/৬. হাঃ ১৯৪১, আহমাদ ১৪৮৯৬] (আ.প্র. ৩৮৯৮, ই.ফা. ৩৯০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২২০
سَعِيْدُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا عَبَّادٌ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَصَابَتْنَا مَجَاعَةٌ يَوْمَ خَيْبَرَ فَإِنَّ الْقُدُوْرَ لَتَغْلِيْ قَالَ وَبَعْضُهَا نَضِجَتْ فَجَاءَ مُنَادِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَا تَأْكُلُوْا مِنْ لُحُوْمِ الْحُمُرِ شَيْئًا وَأَهْرِقُوْهَا قَالَ ابْنُ أَبِيْ أَوْفَى فَتَحَدَّثْنَا أَنَّهُ إِنَّمَا نَهَى عَنْهَا لِأَنَّهَا لَمْ تُخَمَّسْ وَقَالَ بَعْضُهُمْ نَهَى عَنْهَا الْبَتَّةَ لِأَنَّهَا كَانَتْ تَأْكُلُ الْعَذِرَةَ
ইবনু আবী আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(তিনি বলেন) খাইবারের দিন আমরা ভীষণ ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছিলাম, আর তখন আমাদের পাতিলগুলোতে (গাধার গোশত) টগবগ করে ফুটছিল। রাবী বলেন, কোন কোন পাতিলের গোশত পাকানো হয়ে গিয়েছিল। এমন সময়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘোষণাকারী এসে ঘোষণা দিলেন, তোমরা (গৃহপালিত) গাধার গোশত থেকে একটুও খাবে না এবং তা ঢেলে দেবে। ইবনু আবী আওফা (রাঃ) বলেন, ঘোষণা শুনে আমরা পরস্পর বলাবলি করলাম যে, যেহেতু গাধাগুলো থেকে খুমুস (এক-পঞ্চমাংশ) বের করা হয়নি এ কারণেই তিনি সেগুলো খেতে নিষেধ করেছেন। কেউ কেউ বললেন, তিনি চিরদিনের জন্যই গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। কেননা গাধা অপবিত্র জিনিস খেয়ে থাকে। [৩১৫৫] (আ.প্র. ৩৮৯৯, ই.ফা. ৩৯০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২২১
حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ عَنِ الْبَرَاءِ وَعَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ أَنَّهُمْ كَانُوْا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَصَابُوْا حُمُرًا فَطَبَخُوْهَا فَنَادَى مُنَادِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَكْفِئُوا الْقُدُوْرَ
বারাআ এবং ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(খাইবার যুদ্ধে) তাঁরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা গাধার গোশত পেলেন। তাঁরা তা রান্না করলেন। এমন সময়ে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘোষণাকারী ঘোষণা করলেন, ডেকচিগুলো উল্টে ফেল। [৩১৫৫, ৪২২৩, ৪২২৫, ৪২২৬, ৫৫২৫; মুসলিম ৩৪/৫, হাঃ ১৯৩৮, আহমাদ ১৮৬৪৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯০০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২২২
حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ عَنِ الْبَرَاءِ وَعَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ أَنَّهُمْ كَانُوْا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَصَابُوْا حُمُرًا فَطَبَخُوْهَا فَنَادَى مُنَادِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَكْفِئُوا الْقُدُوْرَ
বারাআ এবং ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(খাইবার যুদ্ধে) তাঁরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা গাধার গোশত পেলেন। তাঁরা তা রান্না করলেন। এমন সময়ে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘোষণাকারী ঘোষণা করলেন, ডেকচিগুলো উল্টে ফেল। [৩১৫৫, ৪২২৩, ৪২২৫, ৪২২৬, ৫৫২৫; মুসলিম ৩৪/৫, হাঃ ১৯৩৮, আহমাদ ১৮৬৪৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯০০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২২৩
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ وَابْنَ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ يُحَدِّثَانِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ يَوْمَ خَيْبَرَ وَقَدْ نَصَبُوا الْقُدُوْرَ أَكْفِئُوا الْقُدُوْرَ
আদী ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(তিনি বলেন) আমি বারাআ এবং ইবনু আবূ আওফা (রাঃ)-কে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, খাইবারের দিন তাঁরা গাধার গোশত রান্না করার জন্য ডেকচি বসিয়েছিলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ডেকচিগুলো উল্টে ফেল। [৩১৫৩, ৩৩৫৫] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯০১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২২৪
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ وَابْنَ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ يُحَدِّثَانِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ يَوْمَ خَيْبَرَ وَقَدْ نَصَبُوا الْقُدُوْرَ أَكْفِئُوا الْقُدُوْرَ
আদী ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(তিনি বলেন) আমি বারাআ এবং ইবনু আবূ আওফা (রাঃ)-কে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, খাইবারের দিন তাঁরা গাধার গোশত রান্না করার জন্য ডেকচি বসিয়েছিলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ডেকচিগুলো উল্টে ফেল। [৩১৫৩, ৩৩৫৫] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯০১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২২৫
مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ غَزَوْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে খাইবারে অভিযানে গিয়েছিলাম…….। তিনি উপরোল্লিখিত বর্ণনার অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। [৪২২১] (আ.প্র. ৩৯০২, ই.ফা. ৩৯০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২২৬
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِيْ زَائِدَةَ أَخْبَرَنَا عَاصِمٌ عَنْ عَامِرٍ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَمَرَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَزْوَةِ خَيْبَرَ أَنْ نُلْقِيَ الْحُمُرَ الْأَهْلِيَّةَ نِيئَةً وَنَضِيْجَةً ثُمَّ لَمْ يَأْمُرْنَا بِأَكْلِهِ بَعْدُ
বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাইবার যুদ্ধের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে কাঁচা ও রান্না করা গৃহপালিত গাধার গোশত ফেলে দিতে হুকুম করেছেন। এরপরে আর কখনো তা খাওয়ার অনুমতি দেননি। [৪২২১] (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ৩৯০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২২৭
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي الحُسَيْنِ حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ عَامِرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَا أَدْرِيْ أَنَهَى عَنْهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَجْلِ أَنَّهُ كَانَ حَمُوْلَةَ النَّاسِ فَكَرِهَ أَنْ تَذْهَبَ حَمُوْلَتُهُمْ أَوْ حَرَّمَهُ فِيْ يَوْمِ خَيْبَرَ لَحْمَ الْحُمُرِ الْأَهْلِيَّةِ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জানি না, গৃহপালিত গাধাগুলো মানুষের মালপত্র বহন করে, কাজেই তার গোশত খেলে মানুষের বোঝা বহনকারী পশু নিঃশেষ হয়ে যাবে, এজন্য রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা খেতে নিষেধ করেছিলেন, না খাইবারের দিনে এর গোশত স্থায়ীভাবে হারাম ঘোষণা করেছেন। [মুসলিম ৩৪/৫, হাঃ ১৯৩৯] (আ.প্র. ৩৯০৩, ই.ফা. ৩৯০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২২৮
الْحَسَنُ بْنُ إِسْحَاقَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَابِقٍ حَدَّثَنَا زَائِدَةُ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَسَمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ خَيْبَرَ لِلْفَرَسِ سَهْمَيْنِ وَلِلرَّاجِلِ سَهْمًا قَالَ فَسَّرَهُ نَافِعٌ فَقَالَ إِذَا كَانَ مَعَ الرَّجُلِ فَرَسٌ فَلَهُ ثَلَاثَةُ أَسْهُمٍ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ فَرَسٌ فَلَهُ سَهْمٌ
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাইবার যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোড়ার দুই অংশ এবং পদাতিক সৈন্যের জন্য এক অংশ হিসেবে (গানীমাতের) মাল বণ্টন করেছেন। বর্ণনাকারী [‘উবাদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রহঃ)] বলেন, নাফি’ হাদীসটির ব্যাখ্যা করে বলেছেন, (যুদ্ধে) যার সঙ্গে ঘোড়া থাকে সে পাবে তিন অংশ এবং যার সঙ্গে ঘোড়া থাকে না, সে পাবে এক অংশ। [২৮৬৩] (আ.প্র.৩৯০৪, ই.ফা. ৩৯০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২২৯
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يُوْنُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّ جُبَيْرَ بْنَ مُطْعِمٍ أَخْبَرَهُ قَالَ مَشَيْتُ أَنَا وَعُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْنَا أَعْطَيْتَ بَنِي الْمُطَّلِبِ مِنْ خُمْسِ خَيْبَرَ وَتَرَكْتَنَا وَنَحْنُ بِمَنْزِلَةٍ وَاحِدَةٍ مِنْكَ فَقَالَ إِنَّمَا بَنُوْ هَاشِمٍ وَبَنُو الْمُطَّلِبِ شَيْءٌ وَاحِدٌ قَالَ جُبَيْرٌ وَلَمْ يَقْسِمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِبَنِيْ عَبْدِ شَمْسٍ وَبَنِيْ نَوْفَلٍ شَيْئًا
যুবায়র ইবনু মুত’ঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এবং ‘উসমান ইবনু আফ্ফান (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গিয়ে বললাম, আপনি খাইবারের প্রাপ্ত খুমুস থেকে বানু মুত্তালিবকে অংশ দিয়েছেন, আমাদেরকে দেননি। অথচ আমরা ও তারা সম্পর্কের দিক থেকে আপনার কাছে একই পর্যায়ের। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নিঃসন্দেহে বানী হাশিম এবং বানু মুত্তালিব সম-মর্যাদার অধিকারী। যুবায়র (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বানু ‘আবদে শাম্স ও বানু নাওফিলকে (খাইবার যুদ্ধের খুমুস থেকে) কিছুই বণ্টন করেননি। [৩১৪০] (আ.প্র.৩৯০৫, ই.ফা. ৩৯০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৩০
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا بُرَيْدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَلَغَنَا مَخْرَجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ بِالْيَمَنِ فَخَرَجْنَا مُهَاجِرِيْنَ إِلَيْهِ أَنَا وَأَخَوَانِ لِيْ أَنَا أَصْغَرُهُمْ أَحَدُهُمَا أَبُوْ بُرْدَةَ وَالْآخَرُ أَبُوْ رُهْمٍ إِمَّا قَالَ بِضْعٌ وَإِمَّا قَالَ فِيْ ثَلَاثَةٍ وَخَمْسِيْنَ أَوْ اثْنَيْنِ وَخَمْسِيْنَ رَجُلًا مِنْ قَوْمِيْ فَرَكِبْنَا سَفِيْنَةً فَأَلْقَتْنَا سَفِيْنَتُنَا إِلَى النَّجَاشِيِّ بِالْحَبَشَةِ فَوَافَقْنَا جَعْفَرَ بْنَ أَبِيْ طَالِبٍ فَأَقَمْنَا مَعَهُ حَتَّى قَدِمْنَا جَمِيْعًا فَوَافَقْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ افْتَتَحَ خَيْبَرَ وَكَانَ أُنَاسٌ مِنْ النَّاسِ يَقُوْلُوْنَ لَنَا يَعْنِيْ لِأَهْلِ السَّفِيْنَةِ سَبَقْنَاكُمْ بِالْهِجْرَةِ وَدَخَلَتْ أَسْمَاءُ بِنْتُ عُمَيْسٍ وَهِيَ مِمَّنْ قَدِمَ مَعَنَا عَلَى حَفْصَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم زَائِرَةً وَقَدْ كَانَتْ هَاجَرَتْ إِلَى النَّجَاشِيِّ فِيْمَنْ هَاجَرَ فَدَخَلَ عُمَرُ عَلَى حَفْصَةَ وَأَسْمَاءُ عِنْدَهَا فَقَالَ عُمَرُ حِيْنَ رَأَى أَسْمَاءَ مَنْ هَذِهِ قَالَتْ أَسْمَاءُ بِنْتُ عُمَيْسٍ قَالَ عُمَرُ الْحَبَشِيَّةُ هَذِهِ الْبَحْرِيَّةُ هَذِهِ قَالَتْ أَسْمَاءُ نَعَمْ قَالَ سَبَقْنَاكُمْ بِالْهِجْرَةِ فَنَحْنُ أَحَقُّ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْكُمْ فَغَضِبَتْ وَقَالَتْ كَلَّا وَاللهِ كُنْتُمْ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُطْعِمُ جَائِعَكُمْ وَيَعِظُ جَاهِلَكُمْ وَكُنَّا فِيْ دَارِ أَوْ فِيْ أَرْضِ الْبُعَدَاءِ الْبُغَضَاءِ بِالْحَبَشَةِ وَذَلِكَ فِي اللهِ وَفِيْ رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم وَايْمُ اللهِ لَا أَطْعَمُ طَعَامًا وَلَا أَشْرَبُ شَرَابًا حَتَّى أَذْكُرَ مَا قُلْتَ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ كُنَّا نُؤْذَى وَنُخَافُ وَسَأَذْكُرُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَسْأَلُهُ وَاللهِ لَا أَكْذِبُ وَلَا أَزِيْغُ وَلَا أَزِيْدُ عَلَيْهِ
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা ইয়ামানে থাকা অবস্থায় আমাদের কাছে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হিজরতের খবর পৌঁছল। তাই আমি ও আমার দু’ভাই আবূ বুরদা ও আবূ রুহম এবং আমাদের কাওমের আরো মোট বায়ান্ন কি তিপ্পান্ন কিংবা আনেরা কিছু লোকজনসহ আমরা হিজরতের উদ্দেশে বের হলাম। আমি ছিলাম আমার অপর দু’ভাইয়ের চেয়ে বয়সে ছোট। আমরা একটি জাহাজে উঠলাম। জাহাজটি আমাদেরকে আবিসিনিয়া দেশের (বাদশাহ্) নাজ্জাশীর নিকট নিয়ে গেল। সেখানে আমরা জা’ফর ইবনু আবূ তালিবের সাক্ষাৎ পেলাম এবং তাঁর সঙ্গেই আমরা থেকে গেলাম। অবশেষে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খাইবার বিজয়ের সময় সকলে এক যোগে (মদিনায়) এসে তাঁর সঙ্গে মিলিত হলাম। এ সময়ে মুসলিমদের কেউ কেউ আমাদেরকে অর্থাৎ জাহাজে আগমনকারীদেরকে বলল, হিজরতের ব্যাপারে আমরা তোমাদের চেয়ে অগ্রগামী। আমাদের সঙ্গে আগমনকারী আসমা বিন্ত উমাইস একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী হাফসাহ্র সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। তিনিও (তাঁর স্বামী জা’ফরসহ) নাজ্জাশীর দেশে হিজরাতকারীদের সঙ্গে হিজরাত করেছিলেন। আসমা (রাঃ) হাফসাহ্র কাছেই ছিলেন। এ সময়ে ‘উমার (রাঃ) তাঁর ঘরে প্রবেশ করলেন। ‘উমার (রাঃ) আসমাকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, ইনি কে? হাফসাহ্ (রাঃ) বললেন, তিনি আসমা বিন্ত উমাইস (রাঃ)। ‘উমার (রাঃ) বললেন, ইনি হাবশায় হিজরাতকারিণী আসমা? ইনিই কি সমুদ্রগামিনী? আসমা (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ! তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, হিজরাতের ব্যাপারে আমরা তোমাদের চেয়ে আগে আছি। সুতরাং তোমাদের তুলনায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি আমাদের হক অধিক। এতে আসমা (রাঃ) রেগে গেলেন এবং বললেন, কখনো হতে পারে ন। আল্লাহ্র কসম! আপনারা তো রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলেন, তিনি আপনাদের ক্ষুধার্তদের খাবারের ব্যবস্থা করতেন, আপনাদের অবুঝ লোকদেরকে নাসীহাত করতেন। আর আমরা ছিলাম এমন এক এলাকার অথবা তিনি বলেছেন এমন এক দেশে যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বহুদূরে এবং সর্বদা শত্রু বেষ্টিত হাবশা দেশে। আল্লাহ ও তাঁর রসূলের উদ্দেশেই ছিল আমাদের এ হিজরাত আল্লাহ্র কসম! আমি কোন খাবার খাবো না, পানিও পান করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি যা বলেছেন তা আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে না জানাব। সেখানে আমাদেরকে কষ্ট দেয়া হত, ভয় দেখানো হত। শীঘ্রই আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এসব কথা বলল এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করব। তবে আল্লাহ্র কসম! আমি মিথ্যা বলব না, পেঁচিয়ে বলব না, বাড়িয়েও কিছু বলব না। [৩১৩৬] (আ.প্র. ৩৯০৬, ই.ফা. ৩৯১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৩১
فَلَمَّا جَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ يَا نَبِيَّ اللهِ إِنَّ عُمَرَ قَالَ كَذَا وَكَذَا قَالَ فَمَا قُلْتِ لَهُ قَالَتْ قُلْتُ لَهُ كَذَا وَكَذَا قَالَ لَيْسَ بِأَحَقَّ بِيْ مِنْكُمْ وَلَهُ وَلِأَصْحَابِهِ هِجْرَةٌ وَاحِدَةٌ وَلَكُمْ أَنْتُمْ أَهْلَ السَّفِيْنَةِ هِجْرَتَانِ قَالَتْ فَلَقَدْ رَأَيْتُ أَبَا مُوْسَى وَأَصْحَابَ السَّفِيْنَةِ يَأْتُوْنِيْ أَرْسَالًا يَسْأَلُوْنِيْ عَنْ هَذَا الْحَدِيْثِ مَا مِنْ الدُّنْيَا شَيْءٌ هُمْ بِهِ أَفْرَحُ وَلَا أَعْظَمُ فِيْ أَنْفُسِهِمْ مِمَّا قَالَ لَهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبُوْ بُرْدَةَ قَالَتْ أَسْمَاءُ فَلَقَدْ رَأَيْتُ أَبَا مُوْسَى وَإِنَّهُ لَيَسْتَعِيْدُ هَذَا الْحَدِيْثَ مِنِّي
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
এরপর যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলেন, তখন আসমা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর নাবী! ‘উমার (রাঃ) এই কথা বলেছেন, তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কী উত্তর দিয়েছ? আসমা (রাঃ) বললেনঃ আমি তাঁকে এই এই বলেছি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, (এ ব্যাপারে) তোমাদের চেয়ে ‘উমার (রাঃ) আমার প্রতি অধিক হক রাখে না। কারণ ‘উমার (রাঃ) এবং তাঁর সাথীরা একটি হিজরাত লাভ করেছে, আর তোমরা যারা জাহাজে হিজরাতকারী ছিলে তারা দু’টি হিজরাত লাভ করেছ। আসমা (রাঃ) বলেন, এ ঘটনার পর আমি আবূ মূসা (রাঃ) এবং জাহাজযোগে হিজরাতকারী অন্যদেরকে দেখেছি যে, তাঁরা সদলবলে এসে আমার নিকট থেকে এ হাদীসখানা শুনতেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের সম্পর্কে যে কথাটি বলেছিলেন সে কথাটির চেয়ে তাঁদের কাছে দুনিয়ার অন্য কোন জিনিস অধিকতর প্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। আবূ বুরদাহ (রাঃ) বলেন যে, আসমা (রাঃ) বলেছেন, আমি আবূ মূসা [আশ‘আরী (রাঃ)]-কে দেখেছি, তিনি বারবার আমার নিকট হতে এ হাদীসটি শুনতে চাইতেন। [মুসলিম ৪৪/৪১, হাঃ ২৫০২, ২৫০৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯০৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৩২
قَالَ أَبُوْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنِّيْ لَأَعْرِفُ أَصْوَاتَ رُفْقَةِ الْأَشْعَرِيِّيْنَ بِالْقُرْآنِ حِيْنَ يَدْخُلُوْنَ بِاللَّيْلِ وَأَعْرِفُ مَنَازِلَهُمْ مِنْ أَصْوَاتِهِمْ بِالْقُرْآنِ بِاللَّيْلِ وَإِنْ كُنْتُ لَمْ أَرَ مَنَازِلَهُمْ حِيْنَ نَزَلُوْا بِالنَّهَارِ وَمِنْهُمْ حَكِيْمٌ إِذَا لَقِيَ الْخَيْلَ أَوْ قَالَ الْعَدُوَّ قَالَ لَهُمْ إِنَّ أَصْحَابِيْ يَأْمُرُوْنَكُمْ أَنْ تَنْظُرُوْهُم
আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে আরো বর্ণনা করেনে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আশ’আরী গোত্রের লোকেরা রাতের বেলায় এলেও আমি তাদেরকে তাদের কুরআন তিলাওয়াতের আওয়াজ দিয়েই চিনতে পারি এবং রাতের বেলায় তাদের কুরআন তিলাওয়াতের আওয়াজ শুনেই আমি তাদের বাড়িঘর চিনতি পারি। যদিও আমি দিবাভাগে তাদেরকে নিজ নিজ গৃহে অবস্থান করতে দেখিনি। হাকীম ছিলেন আশ’আরীদের একজন। যন তিনি কোন দল কিংবা (বর্ণনাকারী বলেছেন) কোন দুশমনের মুখোমুখী হতেন তখন তিনি তাদেরকে বলতেন, আমার সাথীরা তোমাদের বলেছেন, যেন তোমরা তাঁদের জন্য অপেক্ষা কর। [মুসলিম ৪৪/৩১, হাঃ ২৪৯৯] (আ.প্র ৩৯০৬, ই.ফা. ৩৯১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৩৩
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ سَمِعَ حَفْصَ بْنَ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا بُرَيْدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى قَالَ قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ أَنْ افْتَتَحَ خَيْبَرَ فَقَسَمَ لَنَا وَلَمْ يَقْسِمْ لِأَحَدٍ لَمْ يَشْهَدْ الْفَتْحَ غَيْرَنَا.
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাইবার বিজয়ের পরে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গিয়ে পৌঁছলাম। তিনি আমাদের জন্য গানীমাতের মাল বণ্টন করেছেন। আমাদের ব্যতীত বিজয়ে অংশ নেয়নি এমন কারোর জন্য তিনি (খাইবারের গানীমাত) বণ্টন করেননি। [৩১৩৬] (আ.প্র. ৩৯০৭, ই.ফা. ৩৯১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৩৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ ثَوْرٌ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَالِمٌ مَوْلَى ابْنِ مُطِيْعٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ افْتَتَحْنَا خَيْبَرَ وَلَمْ نَغْنَمْ ذَهَبًا وَلَا فِضَّةً إِنَّمَا غَنِمْنَا الْبَقَرَ وَالإِبِلَ وَالْمَتَاعَ وَالْحَوَائِطَ ثُمَّ انْصَرَفْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى وَادِي الْقُرَى وَمَعَهُ عَبْدٌ لَهُ يُقَالُ لَهُ مِدْعَمٌ أَهْدَاهُ لَهُ أَحَدُ بَنِي الضِّبَابِ فَبَيْنَمَا هُوَ يَحُطُّ رَحْلَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ جَاءَهُ سَهْمٌ عَائِرٌ حَتَّى أَصَابَ ذَلِكَ الْعَبْدَ فَقَالَ النَّاسُ هَنِيئًا لَهُ الشَّهَادَةُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَلْ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ إِنَّ الشَّمْلَةَ الَّتِيْ أَصَابَهَا يَوْمَ خَيْبَرَ مِنَ الْمَغَانِمِ لَمْ تُصِبْهَا الْمَقَاسِمُ لَتَشْتَعِلُ عَلَيْهِ نَارًا فَجَاءَ رَجُلٌ حِيْنَ سَمِعَ ذَلِكَ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِشِرَاكٍ أَوْ بِشِرَاكَيْنِ فَقَالَ هَذَا شَيْءٌ كُنْتُ أَصَبْتُهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم شِرَاكٌ أَوْ شِرَاكَانِ مِنْ نَارٍ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাইবার যুদ্ধে আমরা জয়ী হয়েছি কিন্তু গানীমাত হিসেবে আমরা সোনা, রূপা কিছুই পাইনি। আমরা গানীমাত হিসেবে পেয়েছিলাম গরু, উট, বিভিন্ন দ্রব্য-সামগ্রী এবং ফলের বাগান। (যুদ্ধ শেষে) আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ওয়াদিউল কুরা পর্যন্ত ফিরে এরাম। তাঁর [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] সঙ্গে ছিল মিদআম নামে তাঁর একট গোলাম। বানী যিবাব (রাঃ)-এর এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এটি হাদিয়া দিয়েছিল। এক সময়ে সে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাওদা নামানোর কাজে ব্যস্ত ছিল ঠিক সেই মুহূর্তে অজ্ঞাত একটি তীর ছুটে এসে তার গায়ে পড়ল। তাতে গোলামটি মারা গেল। তখন লোকেরা বলতে লাগল, কী আনন্দদায়ক তার এ শাহাদাত! তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আচ্ছা? সেই মহান সত্তার কসম! তাঁর হাতে আমার প্রাণ, বণ্টনের আগে খাইবারের গানীমাত থেকে যে চাদরখানা তুলে নিয়েছিল সেটি আগুন হয়ে অবশ্যই তাকে দগ্ধ করবে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এ কথা শুনে আরেক লোক একটি অথবা দু’টি জুতার ফিতা নিয়ে এসে বলল, এ জিনিসটি আমি বণ্টনের আগেই নিয়েছিলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ একটি অথবা দু’টি ফিতাও হয়ে যেত আগুনের (ফিতা)। [৫২] [৬৭০৭; মুসলিম ১/৪৯, হাঃ ১১৫] (আ.প্র ৩৯০৮, ই.ফা. ৩৯১২)
[৫২] গানীমাতের মাল সব একত্র করা হবে এবং সেখান থেকে বণ্টন করা হবে। বণ্টিত ব্যতীত গানীমাতের কোন মাল হস্তগত করা বা চুরি করা মারাত্মক রকমের খিয়ানাত। কুরআন মাজীদের সূর আলু ‘ইমরানের ১৬১ আয়াতে এ ব্যাপারে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে যা বলা হয়েছে অত্র হাদীসটি তারই ব্যাখ্যা স্বরূপ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৩৫
سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ زَيْدٌ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ سَمِعَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ أَمَا وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَوْلَا أَنْ أَتْرُكَ آخِرَ النَّاسِ بَبَّانًا لَيْسَ لَهُمْ شَيْءٌ مَا فُتِحَتْ عَلَيَّ قَرْيَةٌ إِلَّا قَسَمْتُهَا كَمَا قَسَمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ وَلَكِنِّيْ أَتْرُكُهَا خِزَانَةً لَهُمْ يَقْتَسِمُوْنَهَا.
উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মনে রেখ! সেই সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যদি পরবর্তী বংশধরদের নিঃস্ব ও রিক্ত-হস্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা না থাকত তা হলে আমি আমার সকল বিজিত এলাকা ঐভাবে বণ্টন করে দিতাম যেভাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবার বণ্টন করে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি তা তাদের জন্য গচ্ছিত রেখে যাচ্ছি যেন পরবর্তী বংশধরগণ তা নিজেদের মধ্যে বণ্টন করে নিতে পারে। [২৩৩৪] (আ.প্র. ৩৯০৯, ই.ফা. ৩৯১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৩৬
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَوْلَا آخِرُ الْمُسْلِمِيْنَ مَا فُتِحَتْ عَلَيْهِمْ قَرْيَةٌ إِلَّا قَسَمْتُهَا كَمَا قَسَمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ.
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, পরবর্তী মুসলিমদের উপর আমার আশঙ্কা না থাকলে আমি তাদের (মুজাহিদগণের) বিজিত এলাকাগুলো তাদেঁর মধ্যে সেভাবে বণ্টন করে দিতাম যেভাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবার বণ্টন করে দিয়েছিলেন। [২৩৩৪] (আ.প্র. ৩৯১০, ই.ফা. ৩৯১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৩৭
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ سَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ وَسَأَلَهُ إِسْمَاعِيْلُ بْنُ أُمَيَّةَ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَنْبَسَةُ بْنُ سَعِيْدٍ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ قَالَ لَهُ بَعْضُ بَنِيْ سَعِيْدِ بْنِ الْعَاصِ لَا تُعْطِهِ فَقَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ هَذَا قَاتِلُ ابْنِ قَوْقَلٍ فَقَالَ وَا عَجَبَاهْ لِوَبْرٍ تَدَلَّى مِنْ قَدُوْمِ الضَّأْنِ
আমবাসা ইবনু সা’ঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে (খাইবার যুদ্ধের গানীমাতের) অংশ চাইলেন। তখন বনূ সা’ঈদ ইবনু আস গোত্রের জনৈক ব্যক্তি বলে উঠল, না, তাকে (অংশ) দিবেন না। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, এ লোক তো ইবনু কাওকালের হত্যাকারী। কথাটি শুনে সে ব্যক্তি বলল, পাহাড়ের চূড়া থেকে লাফিয়ে পড়া (উড়ে এসে জুড়ে বসা) বুনো বিড়ালের কথায় আশ্চর্যবোধ করছি। [২৮২৭] (আ.প্র. ৩৯১১, ই.ফা. ৩৯১৫ প্রথমাংশ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৩৮
وَيُذْكَرُ عَنْ الزُّبَيْدِيِّ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَنْبَسَةُ بْنُ سَعِيْدٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يُخْبِرُ سَعِيْدَ بْنَ الْعَاصِ قَالَ بَعَثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَبَانَ عَلَى سَرِيَّةٍ مِنَ الْمَدِيْنَةِ قِبَلَ نَجْدٍ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ فَقَدِمَ أَبَانُ وَأَصْحَابُهُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِخَيْبَرَ بَعْدَ مَا افْتَتَحَهَا وَإِنَّ حُزْمَ خَيْلِهِمْ لَلِيْفٌ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَا تَقْسِمْ لَهُمْ قَالَ أَبَانُ وَأَنْتَ بِهَذَا يَا وَبْرُ تَحَدَّرَ مِنْ رَأْسِ ضَأْنٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَا أَبَانُ اجْلِسْ فَلَمْ يَقْسِمْ لَهُمْ. قَالَ أبو عبد الله الضَّال : السِّدْرُ.
যুবাইদী-যুহরী-‘আমবাসাহ ইবনু সা’ঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি সা’ঈদ ইবনু আস (রাঃ)-কে সংবাদ দিচ্ছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবান [ইবনু সা’ঈদ (রাঃ)]-এর নেতৃত্বে একটি সৈন্যদল মাদীনাহ থেকে নাজদের দিকে পাঠিয়েছিলেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবার বিজয়ের পর সেখানে অবস্থঅনকালে আবান (রাঃ) এ তাঁর সঙ্গীগণ সেখানে এসে তাঁর [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর] সঙ্গে মিলিত হলেন। তাদের ঘোড়াগুলোর লাগাম ছিল খেজুরের ছালের তৈরি। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! তাদেরকে কোন অংশ দিবেন না। তখন আবান (রাঃ) বরলেন, পাহাড়ের চূড়া থেকে লাফিয়ে পড়া বুনো বিড়াল, তোমাকেই দেয়া হবে না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আবান! বস। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে (আবান ও তার সঙ্গীদেরকে) অংশ দিলেন না। [২৮২৭] (আ.প্র. ৩৯১১, ই.ফা. ৩৯১৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৩৯
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ جَدِّيْ أَنَّ أَبَانَ بْنَ سَعِيْدٍ أَقْبَلَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَقَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذَا قَاتِلُ ابْنِ قَوْقَلٍ وَقَالَ أَبَانُ لِأَبِيْ هُرَيْرَةَ وَاعَجَبًا لَكَ وَبْرٌ تَدَأْدَأَ مِنْ قَدُوْمِ ضَأْنٍ يَنْعَى عَلَيَّ امْرًَا أَكْرَمَهُ اللهُ بِيَدِيْ وَمَنَعَهُ أَنْ يُهِيْنَنِيْ بِيَدِهِ.
আম্র ইবনু ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ইদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার দাদা [সা’ঈদ ইবনু আমর ইবনু সা’ঈদ ইবনুল আস (রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, আবান ইবনু সা’ঈদ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে সালাম দিলেন। তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! এ তো ইবনু কাওকাল (রাঃ)-এর হত্যাকারী! তখন আবান (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে বললেন, দান পর্বতের চূড়া থেকে হঠাৎ নেমে আসা বুনো বিড়ালের কথায় আশ্চর্য হচ্ছি! সে এমন এক লোকের ব্যাপারে আমাকে দোষারাপ করছে যাকে আল্লাহ আমার হাত দিয়ে সম্মানিত করেছেন (শাহাদাত দান করেছেন)। আর তাঁর হাত দিয়ে লাঞ্ছিত হওয়া থেকে আমাকে রক্ষা করেছেন [৫৩]। [২৮২৭] (আ.প্র. ৩৯১২, ই.ফা. ৩৯১৬)
[৫৩] কারণ উহুদের যুদ্ধের সময় তিনি কাফির হয়ে মারা গেলে চিরকাল তাকে জাহান্নামে লাঞ্ছিত হয়ে থাকতে হত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৪০
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَام بِنْتَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَرْسَلَتْ إِلَى أَبِيْ بَكْرٍ تَسْأَلُهُ مِيْرَاثَهَا مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَيْهِ بِالْمَدِيْنَةِ وَفَدَكٍ وَمَا بَقِيَ مِنْ خُمُسِ خَيْبَرَ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا نُوْرَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ إِنَّمَا يَأْكُلُ آلُ مُحَمَّدٍ فِيْ هَذَا الْمَالِ وَإِنِّيْ وَاللهِ لَا أُغَيِّرُ شَيْئًا مِنْ صَدَقَةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ حَالِهَا الَّتِيْ كَانَ عَلَيْهَا فِيْ عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَأَعْمَلَنَّ فِيْهَا بِمَا عَمِلَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَبَى أَبُوْ بَكْرٍ أَنْ يَدْفَعَ إِلَى فَاطِمَةَ مِنْهَا شَيْئًا فَوَجَدَتْ فَاطِمَةُ عَلَى أَبِيْ بَكْرٍ فِيْ ذَلِكَ فَهَجَرَتْهُ فَلَمْ تُكَلِّمْهُ حَتَّى تُوُفِّيَتْ وَعَاشَتْ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سِتَّةَ أَشْهُرٍ فَلَمَّا تُوُفِّيَتْ دَفَنَهَا زَوْجُهَا عَلِيٌّ لَيْلًا وَلَمْ يُؤْذِنْ بِهَا أَبَا بَكْرٍ وَصَلَّى عَلَيْهَا وَكَانَ لِعَلِيٍّ مِنْ النَّاسِ وَجْهٌ حَيَاةَ فَاطِمَةَ فَلَمَّا تُوُفِّيَتْ اسْتَنْكَرَ عَلِيٌّ وُجُوْهَ النَّاسِ فَالْتَمَسَ مُصَالَحَةَ أَبِيْ بَكْرٍ وَمُبَايَعَتَهُ وَلَمْ يَكُنْ يُبَايِعُ تِلْكَ الْأَشْهُرَ فَأَرْسَلَ إِلَى أَبِيْ بَكْرٍ أَنْ ائْتِنَا وَلَا يَأْتِنَا أَحَدٌ مَعَكَ كَرَاهِيَةً لِمَحْضَرِ عُمَرَ فَقَالَ عُمَرُ لَا وَاللهِ لَا تَدْخُلُ عَلَيْهِمْ وَحْدَكَ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ وَمَا عَسَيْتَهُمْ أَنْ يَفْعَلُوْا بِيْ وَاللهِ لآتِيَنَّهُمْ فَدَخَلَ عَلَيْهِمْ أَبُوْ بَكْرٍ فَتَشَهَّدَ عَلِيٌّ فَقَالَ إِنَّا قَدْ عَرَفْنَا فَضْلَكَ وَمَا أَعْطَاكَ اللهُ وَلَمْ نَنْفَسْ عَلَيْكَ خَيْرًا سَاقَهُ اللهُ إِلَيْكَ وَلَكِنَّكَ اسْتَبْدَدْتَ عَلَيْنَا بِالأَمْرِ وَكُنَّا نَرَى لِقَرَابَتِنَا مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَصِيْبًا حَتَّى فَاضَتْ عَيْنَا أَبِيْ بَكْرٍ فَلَمَّا تَكَلَّمَ أَبُوْ بَكْرٍ قَالَ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَقَرَابَةُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ أَصِلَ مِنْ قَرَابَتِيْ وَأَمَّا الَّذِيْ شَجَرَ بَيْنِيْ وَبَيْنَكُمْ مِنْ هَذِهِ الْأَمْوَالِ فَلَمْ آلُ فِيْهَا عَنِ الْخَيْرِ وَلَمْ أَتْرُكْ أَمْرًا رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ يَصْنَعُهُ فِيْهَا إِلَّا صَنَعْتُهُ فَقَالَ عَلِيٌّ لِأَبِيْ بَكْرٍ مَوْعِدُكَ الْعَشِيَّةَ لِلْبَيْعَةِ فَلَمَّا صَلَّى أَبُوْ بَكْرٍ الظُّهْرَ رَقِيَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَتَشَهَّدَ وَذَكَرَ شَأْنَ عَلِيٍّ وَتَخَلُّفَهُ عَنِ الْبَيْعَةِ وَعُذْرَهُ بِالَّذِي اعْتَذَرَ إِلَيْهِ ثُمَّ اسْتَغْفَرَ وَتَشَهَّدَ عَلِيٌّ فَعَظَّمَ حَقَّ أَبِيْ بَكْرٍ وَحَدَّثَ أَنَّهُ لَمْ يَحْمِلْهُ عَلَى الَّذِيْ صَنَعَ نَفَاسَةً عَلَى أَبِيْ بَكْرٍ وَلَا إِنْكَارًا لِلَّذِيْ فَضَّلَهُ اللهُ بِهِ وَلَكِنَّا نَرَى لَنَا فِيْ هَذَا الْأَمْرِ نَصِيْبًا فَاسْتَبَدَّ عَلَيْنَا فَوَجَدْنَا فِيْ أَنْفُسِنَا فَسُرَّ بِذَلِكَ الْمُسْلِمُوْنَ وَقَالُوْا أَصَبْتَ وَكَانَ الْمُسْلِمُوْنَ إِلَى عَلِيٍّ قَرِيْبًا حِيْنَ رَاجَعَ الْأَمْرَ الْمَعْرُوْفَ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা ফাতেমাহ (রাঃ) আবূ বাকর (রাঃ)-এর নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিত্যক্ত সম্পত্তি মদিনা্ ও ফাদাক-এ অবস্থিত ফাই (বিনা যুদ্ধে প্রাপ্ত সম্পদ) এবং খাইবারের খুমুসের (পঞ্চমাংশ) অবশিষ্ট থেকে মিরাসী স্বত্ব চেয়ে পাঠালেন। তখন আবূ বাকর (রাঃ) উত্তরে বললেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন, আমাদের (নাবীদের) কোন ওয়ারিশ হয় না, আমরা যা ছেড়ে যাব তা সদাকাহ হিসেবে গণ্য হবে। অবশ্য মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধরগণ এ সম্পত্তি থেকে ভরণ-পোষণ চালাতে পারবেন। আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সদাকাহ তাঁর জীবদ্দশায় যে অবস্থায় ছিল আমি সে অবস্থা থেকে এতটুকুও পরিবর্তন করব না। এ ব্যাপারে তিনি যেভাবে ব্যবহার করে গেছেন আমিও ঠিক সেভাবেই ব্যবহার করব। এ কথা বলে আবূ বাকর (রাঃ) ফাতেমাহ (রাঃ)-কে এ সম্পদ থেকে কিছু দিতে অস্বীকার করলেন। এতে ফাতিমাহ (রাঃ) (মানবোচিত কারণে) আবূ বাকর (রাঃ)-এর উপর নাখোশ হলেন এবং তাঁর থেকে সম্পর্কহীন থাকলেন। তাঁর মৃত্যু অবধি তিনি আবূ বাকর (রাঃ)-এর সঙ্গে কথা বলেননি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পর তিনি ছয় মাস জীবিত ছিলেন। তিনি ইন্তিকাল করলে তাঁর স্বামী ‘আলী (রাঃ) রাতের বেলা তাঁকে দাফন করেন। আবূ বাকর (রাঃ)-কেও এ খবর দিলেন না এবং তিনি তার জানাযার সালাত আদায় করে নেন।[১] ফাতেমাহ (রাঃ)-এর জীবিত অবস্থায় লোকজনের মনে ‘আলী (রাঃ)-এর মর্যাদা ছিল। ফাতিমাহ (রাঃ) ইন্তিকাল করলে ‘আলী (রাঃ) লোকজনের চেহারায় অসন্তুষ্টির চিহ্ন দেখতে পেলেন। তাই তিনি আবূ বাকর (রাঃ)-এর সঙ্গে সমঝোতা ও তাঁর কাছে বাইআতের ইচ্ছা করলেন। এ ছয় মাসে তাঁর পক্ষে বাই‘আত গ্রহণের সুযোগ হয়নি। তাই তিনি আবূ বাকর (রাঃ)-এর কাছে লোক পাঠিয়ে জানালেন যে, আপনি আমার কাছে আসুন। (এটা জানতে পেরে) ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আপনি একা একা তাঁর কাছে যাবেন না। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, তাঁরা আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করবে বলে তোমরা আশঙ্কা করছ? আল্লাহর কসম! আমি তাঁদের কাছে যাব। তারপর আবূ বাকর (রাঃ) তাঁদের কাছে গেলেন। ‘আলী (রাঃ) তাশাহুদ পাঠ করে বললেন, আমরা আপনার মর্যাদা এবং আল্লাহ আপনাকে যা কিছু দান করেছেন সে সম্পর্কে ওয়াকেবহাল। আর যে কল্যাণ (অর্থাৎ খিলাফাত) আল্লাহ আপনাকে দান করেছেন সে ব্যাপারেও আমরা আপনার উপর হিংসা পোষণ করি না। তবে খিলাফাতের ব্যাপারে আপনি আমাদের উপর নিজস্ব মতামতের প্রাধান্য দিচ্ছেন অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটাত্মীয় হিসেবে খিলাফাতের কাজে আমাদেরও কিছু পরামর্শ দেয়ার অধিকার আছে। এ কথায় আবূ বাকর (রাঃ)-এর চোখ থেকে অশ্রু উপচে পড়ল। এরপর তিনি যখন আলোচনা আরম্ভ করলেন তখন বললেন, সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমার কাছে আমার নিকটাত্মীয় চেয়েও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আত্মীয়বর্গ অধিক প্রিয়। আর এ সম্পদগুলোতে আমার এবং আপনাদের মধ্যে যে মতবিরোধ হয়েছে সে ব্যাপারেও আমি কল্যাণকর পথ অনুসরণে পিছপা হইনি। বরং এ ক্ষেত্রেও আমি কোন কাজ পরিত্যাগ করিনি যা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে করতে দেখেছি। তারপর ‘আলী (রাঃ) আবূ বাকর (রাঃ)-কে বললেনঃ যুহরের পর আপনার হাতে বাই‘আত গ্রহণের ওয়াদা রইল। যুহরের সালাত আদায়ের পর আবূ বাকর (রাঃ) মিম্বারে বসে তাশাহুদ পাঠ করলেন, তারপর ‘আলী (রাঃ)-এর বর্তমান অবস্থা এবং বাই‘আত গ্রহণে তার দেরি করার কারণ ও তাঁর পেশকৃত আপত্তিগুলো তিনি বর্ণনা করলেন। এরপর ‘আলী (রাঃ) দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাশাহুদ পাঠ করলেন এবং আবূ বাকর (রাঃ)-এর মর্যাদার কথা উল্লেখ করে বললেন, তিনি যা কিছু করেছেন তা আবূ বাকর (রাঃ)-এর প্রতি হিংসা কিংবা আল্লাহ প্রদত্ত তাঁর মর্যাদাকে অস্বীকার করার জন্য করেননি। (তিনি বলেন) তবে আমরা ভেবেছিলাম যে, এ ব্যাপারে আমাদেরও পরামর্শ দেয়ার অধিকার থাকবে। অথচ তিনি [আবূ বাকর (রাঃ)] আমাদের পরামর্শ ত্যাগ করে স্বাধীন মতের উপর রয়ে গেছেন। তাই আমরা মানসিক কষ্ট পেয়েছিলাম। মুসলিমগণ আনন্দিত হয়ে বললেন, আপনি ঠিকই করেছেন। এরপর ‘আলী (রাঃ) আমর বিল মা‘রূফ-এর পানে ফিরে আসার কারণে মুসলিমগণ আবার তাঁর নিকটবর্তী হতে শুরু করলেন। [৩০৯২, ৩০৯৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯১৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯১৭)
[১] ফাতিমাহ (রাঃ) মৃত্যুর পূর্বে ওয়াসিয়াত করেন যে, তার মৃত্যু হলে যেন অনতিবিলম্বে দাফন করা হয়। লোকজন ডাকাডাকি করলে তাতে পর্দার ব্যাঘাত ঘটবে, সেজন্য ‘আলী (রাঃ) রাতের ভিতরেই সব কাজ সমাধা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৪১
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَام بِنْتَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَرْسَلَتْ إِلَى أَبِيْ بَكْرٍ تَسْأَلُهُ مِيْرَاثَهَا مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَيْهِ بِالْمَدِيْنَةِ وَفَدَكٍ وَمَا بَقِيَ مِنْ خُمُسِ خَيْبَرَ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا نُوْرَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ إِنَّمَا يَأْكُلُ آلُ مُحَمَّدٍ فِيْ هَذَا الْمَالِ وَإِنِّيْ وَاللهِ لَا أُغَيِّرُ شَيْئًا مِنْ صَدَقَةِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ حَالِهَا الَّتِيْ كَانَ عَلَيْهَا فِيْ عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَأَعْمَلَنَّ فِيْهَا بِمَا عَمِلَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَبَى أَبُوْ بَكْرٍ أَنْ يَدْفَعَ إِلَى فَاطِمَةَ مِنْهَا شَيْئًا فَوَجَدَتْ فَاطِمَةُ عَلَى أَبِيْ بَكْرٍ فِيْ ذَلِكَ فَهَجَرَتْهُ فَلَمْ تُكَلِّمْهُ حَتَّى تُوُفِّيَتْ وَعَاشَتْ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سِتَّةَ أَشْهُرٍ فَلَمَّا تُوُفِّيَتْ دَفَنَهَا زَوْجُهَا عَلِيٌّ لَيْلًا وَلَمْ يُؤْذِنْ بِهَا أَبَا بَكْرٍ وَصَلَّى عَلَيْهَا وَكَانَ لِعَلِيٍّ مِنْ النَّاسِ وَجْهٌ حَيَاةَ فَاطِمَةَ فَلَمَّا تُوُفِّيَتْ اسْتَنْكَرَ عَلِيٌّ وُجُوْهَ النَّاسِ فَالْتَمَسَ مُصَالَحَةَ أَبِيْ بَكْرٍ وَمُبَايَعَتَهُ وَلَمْ يَكُنْ يُبَايِعُ تِلْكَ الْأَشْهُرَ فَأَرْسَلَ إِلَى أَبِيْ بَكْرٍ أَنْ ائْتِنَا وَلَا يَأْتِنَا أَحَدٌ مَعَكَ كَرَاهِيَةً لِمَحْضَرِ عُمَرَ فَقَالَ عُمَرُ لَا وَاللهِ لَا تَدْخُلُ عَلَيْهِمْ وَحْدَكَ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ وَمَا عَسَيْتَهُمْ أَنْ يَفْعَلُوْا بِيْ وَاللهِ لآتِيَنَّهُمْ فَدَخَلَ عَلَيْهِمْ أَبُوْ بَكْرٍ فَتَشَهَّدَ عَلِيٌّ فَقَالَ إِنَّا قَدْ عَرَفْنَا فَضْلَكَ وَمَا أَعْطَاكَ اللهُ وَلَمْ نَنْفَسْ عَلَيْكَ خَيْرًا سَاقَهُ اللهُ إِلَيْكَ وَلَكِنَّكَ اسْتَبْدَدْتَ عَلَيْنَا بِالأَمْرِ وَكُنَّا نَرَى لِقَرَابَتِنَا مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَصِيْبًا حَتَّى فَاضَتْ عَيْنَا أَبِيْ بَكْرٍ فَلَمَّا تَكَلَّمَ أَبُوْ بَكْرٍ قَالَ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَقَرَابَةُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ أَصِلَ مِنْ قَرَابَتِيْ وَأَمَّا الَّذِيْ شَجَرَ بَيْنِيْ وَبَيْنَكُمْ مِنْ هَذِهِ الْأَمْوَالِ فَلَمْ آلُ فِيْهَا عَنِ الْخَيْرِ وَلَمْ أَتْرُكْ أَمْرًا رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ يَصْنَعُهُ فِيْهَا إِلَّا صَنَعْتُهُ فَقَالَ عَلِيٌّ لِأَبِيْ بَكْرٍ مَوْعِدُكَ الْعَشِيَّةَ لِلْبَيْعَةِ فَلَمَّا صَلَّى أَبُوْ بَكْرٍ الظُّهْرَ رَقِيَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَتَشَهَّدَ وَذَكَرَ شَأْنَ عَلِيٍّ وَتَخَلُّفَهُ عَنِ الْبَيْعَةِ وَعُذْرَهُ بِالَّذِي اعْتَذَرَ إِلَيْهِ ثُمَّ اسْتَغْفَرَ وَتَشَهَّدَ عَلِيٌّ فَعَظَّمَ حَقَّ أَبِيْ بَكْرٍ وَحَدَّثَ أَنَّهُ لَمْ يَحْمِلْهُ عَلَى الَّذِيْ صَنَعَ نَفَاسَةً عَلَى أَبِيْ بَكْرٍ وَلَا إِنْكَارًا لِلَّذِيْ فَضَّلَهُ اللهُ بِهِ وَلَكِنَّا نَرَى لَنَا فِيْ هَذَا الْأَمْرِ نَصِيْبًا فَاسْتَبَدَّ عَلَيْنَا فَوَجَدْنَا فِيْ أَنْفُسِنَا فَسُرَّ بِذَلِكَ الْمُسْلِمُوْنَ وَقَالُوْا أَصَبْتَ وَكَانَ الْمُسْلِمُوْنَ إِلَى عَلِيٍّ قَرِيْبًا حِيْنَ رَاجَعَ الْأَمْرَ الْمَعْرُوْفَ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা ফাতেমাহ (রাঃ) আবূ বাকর (রাঃ)-এর নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিত্যক্ত সম্পত্তি মদিনা্ ও ফাদাক-এ অবস্থিত ফাই (বিনা যুদ্ধে প্রাপ্ত সম্পদ) এবং খাইবারের খুমুসের (পঞ্চমাংশ) অবশিষ্ট থেকে মিরাসী স্বত্ব চেয়ে পাঠালেন। তখন আবূ বাকর (রাঃ) উত্তরে বললেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন, আমাদের (নাবীদের) কোন ওয়ারিশ হয় না, আমরা যা ছেড়ে যাব তা সদাকাহ হিসেবে গণ্য হবে। অবশ্য মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধরগণ এ সম্পত্তি থেকে ভরণ-পোষণ চালাতে পারবেন। আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সদাকাহ তাঁর জীবদ্দশায় যে অবস্থায় ছিল আমি সে অবস্থা থেকে এতটুকুও পরিবর্তন করব না। এ ব্যাপারে তিনি যেভাবে ব্যবহার করে গেছেন আমিও ঠিক সেভাবেই ব্যবহার করব। এ কথা বলে আবূ বাকর (রাঃ) ফাতেমাহ (রাঃ)-কে এ সম্পদ থেকে কিছু দিতে অস্বীকার করলেন। এতে ফাতিমাহ (রাঃ) (মানবোচিত কারণে) আবূ বাকর (রাঃ)-এর উপর নাখোশ হলেন এবং তাঁর থেকে সম্পর্কহীন থাকলেন। তাঁর মৃত্যু অবধি তিনি আবূ বাকর (রাঃ)-এর সঙ্গে কথা বলেননি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পর তিনি ছয় মাস জীবিত ছিলেন। তিনি ইন্তিকাল করলে তাঁর স্বামী ‘আলী (রাঃ) রাতের বেলা তাঁকে দাফন করেন। আবূ বাকর (রাঃ)-কেও এ খবর দিলেন না এবং তিনি তার জানাযার সালাত আদায় করে নেন।[১] ফাতেমাহ (রাঃ)-এর জীবিত অবস্থায় লোকজনের মনে ‘আলী (রাঃ)-এর মর্যাদা ছিল। ফাতিমাহ (রাঃ) ইন্তিকাল করলে ‘আলী (রাঃ) লোকজনের চেহারায় অসন্তুষ্টির চিহ্ন দেখতে পেলেন। তাই তিনি আবূ বাকর (রাঃ)-এর সঙ্গে সমঝোতা ও তাঁর কাছে বাইআতের ইচ্ছা করলেন। এ ছয় মাসে তাঁর পক্ষে বাই‘আত গ্রহণের সুযোগ হয়নি। তাই তিনি আবূ বাকর (রাঃ)-এর কাছে লোক পাঠিয়ে জানালেন যে, আপনি আমার কাছে আসুন। (এটা জানতে পেরে) ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আপনি একা একা তাঁর কাছে যাবেন না। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, তাঁরা আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করবে বলে তোমরা আশঙ্কা করছ? আল্লাহর কসম! আমি তাঁদের কাছে যাব। তারপর আবূ বাকর (রাঃ) তাঁদের কাছে গেলেন। ‘আলী (রাঃ) তাশাহুদ পাঠ করে বললেন, আমরা আপনার মর্যাদা এবং আল্লাহ আপনাকে যা কিছু দান করেছেন সে সম্পর্কে ওয়াকেবহাল। আর যে কল্যাণ (অর্থাৎ খিলাফাত) আল্লাহ আপনাকে দান করেছেন সে ব্যাপারেও আমরা আপনার উপর হিংসা পোষণ করি না। তবে খিলাফাতের ব্যাপারে আপনি আমাদের উপর নিজস্ব মতামতের প্রাধান্য দিচ্ছেন অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটাত্মীয় হিসেবে খিলাফাতের কাজে আমাদেরও কিছু পরামর্শ দেয়ার অধিকার আছে। এ কথায় আবূ বাকর (রাঃ)-এর চোখ থেকে অশ্রু উপচে পড়ল। এরপর তিনি যখন আলোচনা আরম্ভ করলেন তখন বললেন, সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমার কাছে আমার নিকটাত্মীয় চেয়েও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আত্মীয়বর্গ অধিক প্রিয়। আর এ সম্পদগুলোতে আমার এবং আপনাদের মধ্যে যে মতবিরোধ হয়েছে সে ব্যাপারেও আমি কল্যাণকর পথ অনুসরণে পিছপা হইনি। বরং এ ক্ষেত্রেও আমি কোন কাজ পরিত্যাগ করিনি যা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে করতে দেখেছি। তারপর ‘আলী (রাঃ) আবূ বাকর (রাঃ)-কে বললেনঃ যুহরের পর আপনার হাতে বাই‘আত গ্রহণের ওয়াদা রইল। যুহরের সালাত আদায়ের পর আবূ বাকর (রাঃ) মিম্বারে বসে তাশাহুদ পাঠ করলেন, তারপর ‘আলী (রাঃ)-এর বর্তমান অবস্থা এবং বাই‘আত গ্রহণে তার দেরি করার কারণ ও তাঁর পেশকৃত আপত্তিগুলো তিনি বর্ণনা করলেন। এরপর ‘আলী (রাঃ) দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাশাহুদ পাঠ করলেন এবং আবূ বাকর (রাঃ)-এর মর্যাদার কথা উল্লেখ করে বললেন, তিনি যা কিছু করেছেন তা আবূ বাকর (রাঃ)-এর প্রতি হিংসা কিংবা আল্লাহ প্রদত্ত তাঁর মর্যাদাকে অস্বীকার করার জন্য করেননি। (তিনি বলেন) তবে আমরা ভেবেছিলাম যে, এ ব্যাপারে আমাদেরও পরামর্শ দেয়ার অধিকার থাকবে। অথচ তিনি [আবূ বাকর (রাঃ)] আমাদের পরামর্শ ত্যাগ করে স্বাধীন মতের উপর রয়ে গেছেন। তাই আমরা মানসিক কষ্ট পেয়েছিলাম। মুসলিমগণ আনন্দিত হয়ে বললেন, আপনি ঠিকই করেছেন। এরপর ‘আলী (রাঃ) আমর বিল মা‘রূফ-এর পানে ফিরে আসার কারণে মুসলিমগণ আবার তাঁর নিকটবর্তী হতে শুরু করলেন। [৩০৯২, ৩০৯৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯১৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯১৭)
[১] ফাতিমাহ (রাঃ) মৃত্যুর পূর্বে ওয়াসিয়াত করেন যে, তার মৃত্যু হলে যেন অনতিবিলম্বে দাফন করা হয়। লোকজন ডাকাডাকি করলে তাতে পর্দার ব্যাঘাত ঘটবে, সেজন্য ‘আলী (রাঃ) রাতের ভিতরেই সব কাজ সমাধা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৪২
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا حَرَمِيٌّ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُمَارَةُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ لَمَّا فُتِحَتْ خَيْبَرُ قُلْنَا الْآنَ نَشْبَعُ مِنْ التَّمْرِ.
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাইবার বিজয়ের পর আমরা বলাবলি করলাম, এখন আমরা পরিতৃপ্তির সঙ্গে খেজুর খেতে পারব। (আ.প্র. ৩৯১৪, ই.ফা. ৩৯১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৪৩
الْحَسَنُ حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ حَبِيْبٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ مَا شَبِعْنَا حَتَّى فَتَحْنَا خَيْبَرَ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাইবার বিজয় করার পূর্ব পর্যন্ত আমরা তৃপ্ত হয়ে খেতে পাইনি [৫৫]। (আ.প্র. ৩৯১৫, ই.ফা. ৩৯১৯)
[৫৫] খাইবার বিজয়ের পূর্ব পর্যন্ত নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ পরিবারকে নিয়ে অত্যন্ত দুঃখ কষ্ট সহ্য করেছেন। এমনকি পেট পুরে খাবার মত খেজুরও তাদের ভাগ্যে জোটেনি। ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য সহাবীগণও অনুরূপ কষ্ট সহ্য করেছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৪০. অধ্যায়ঃ
খাইবারবাসীদের জন্য নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক প্রশাসক নিযুক্তি
৪২৪৪
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ الْمَجِيْدِ بْنِ سُهَيْلٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ وَأَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَعْمَلَ رَجُلًا عَلَى خَيْبَرَ فَجَاءَهُ بِتَمْرٍ جَنِيْبٍ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَكُلُّ تَمْرِ خَيْبَرَ هَكَذَا فَقَالَ لَا وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّا لَنَأْخُذُ الصَّاعَ مِنْ هَذَا بِالصَّاعَيْنِ بِالثَلَاثَةِ فَقَالَ لَا تَفْعَلْ بِعْ الْجَمْعَ بِالدَّرَاهِمِ ثُمَّ ابْتَعْ بِالدَّرَاهِمِ جَنِيْبًا
আবূ সা‘ঈদ খুদরী ও আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাইবারের অধিবাসীদের জন্য এক ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ করলেন। এক সময়ে তিনি উন্নত জাতের কিছু খেজুর নিয়ে আসলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, খাইবারের সব খেজুরই কি এ রকম? প্রশাসক জবাব দিলেন, জ্বী না, আল্লাহর শপথ, হে আল্লাহর রাসূল! তবে আমরা এ রকম খেজুরের এক সা’ সাধারণ খেজুরের দু’ সা’র বদলে কিংবা এ রকম খেজুরের দু’ সা’ সাধারণ খেজুরের তিন সা’র বদলে গ্রহণ করে থাকি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এমন করো না। দিরহামের বদলে সব খেজুর বিক্রি করে দিবে। তারপর দিরহাম দিয়ে উত্তম খেজুর কিনে নিবে।[১] [২২০১, ২২০২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯১৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯২০ প্রথমাংশ)
[১] খেজুরের বিনিময়ে খেজুর বেচাকেনা সম পরিমাণে না হলে সুদে পরিণত হয়ে যাবে। যে কোন শস্যের ক্ষেত্রে একই বিধান। তবে অর্থের মাধ্যমে কেনাবেচা করলে হারামে জড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৪৫
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ الْمَجِيْدِ بْنِ سُهَيْلٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ وَأَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَعْمَلَ رَجُلًا عَلَى خَيْبَرَ فَجَاءَهُ بِتَمْرٍ جَنِيْبٍ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَكُلُّ تَمْرِ خَيْبَرَ هَكَذَا فَقَالَ لَا وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّا لَنَأْخُذُ الصَّاعَ مِنْ هَذَا بِالصَّاعَيْنِ بِالثَلَاثَةِ فَقَالَ لَا تَفْعَلْ بِعْ الْجَمْعَ بِالدَّرَاهِمِ ثُمَّ ابْتَعْ بِالدَّرَاهِمِ جَنِيْبًا
আবূ সা‘ঈদ খুদরী ও আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাইবারের অধিবাসীদের জন্য এক ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ করলেন। এক সময়ে তিনি উন্নত জাতের কিছু খেজুর নিয়ে আসলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, খাইবারের সব খেজুরই কি এ রকম? প্রশাসক জবাব দিলেন, জ্বী না, আল্লাহর শপথ, হে আল্লাহর রাসূল! তবে আমরা এ রকম খেজুরের এক সা’ সাধারণ খেজুরের দু’ সা’র বদলে কিংবা এ রকম খেজুরের দু’ সা’ সাধারণ খেজুরের তিন সা’র বদলে গ্রহণ করে থাকি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এমন করো না। দিরহামের বদলে সব খেজুর বিক্রি করে দিবে। তারপর দিরহাম দিয়ে উত্তম খেজুর কিনে নিবে।[১] [২২০১, ২২০২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯১৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯২০ প্রথমাংশ)
[১] খেজুরের বিনিময়ে খেজুর বেচাকেনা সম পরিমাণে না হলে সুদে পরিণত হয়ে যাবে। যে কোন শস্যের ক্ষেত্রে একই বিধান। তবে অর্থের মাধ্যমে কেনাবেচা করলে হারামে জড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৪৬
وَقَالَ عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ مُحَمَّدٍ عَنْ عَبْدِ الْمَجِيْدِ عَنْ سَعِيْدٍ أَنَّ أَبَا سَعِيْدٍ وَأَبَا هُرَيْرَةَ حَدَّثَاهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ أَخَا بَنِيْ عَدِيٍّ مِنَ الْأَنْصَارِ إِلَى خَيْبَرَ فَأَمَّرَهُ عَلَيْهَا
وَعَنْ عَبْدِ الْمَجِيْدِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ وَأَبِيْ سَعِيْدٍ مِثْلَهُ.
সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সা‘ঈদ ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) তাঁকে বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের বানী আদী গোত্রের এক ব্যক্তিকে খাইবার পাঠিছিলেন এবং তাঁকে সেখানকার অধিবাসীদের প্রশাসক নিযুক্ত করেছিলেন। অন্য সনদে আবদুল মাজীদ-আবূ সালিহ সাম্মান (রহ.)-আবূ হুরায়রা ও আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে এভাবেই বর্ণনা করেছেন। [২২০১, ২২০২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯১৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৪৭
وَقَالَ عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ مُحَمَّدٍ عَنْ عَبْدِ الْمَجِيْدِ عَنْ سَعِيْدٍ أَنَّ أَبَا سَعِيْدٍ وَأَبَا هُرَيْرَةَ حَدَّثَاهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ أَخَا بَنِيْ عَدِيٍّ مِنَ الْأَنْصَارِ إِلَى خَيْبَرَ فَأَمَّرَهُ عَلَيْهَا
وَعَنْ عَبْدِ الْمَجِيْدِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ وَأَبِيْ سَعِيْدٍ مِثْلَهُ.
সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সা‘ঈদ ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) তাঁকে বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের বানী আদী গোত্রের এক ব্যক্তিকে খাইবার পাঠিছিলেন এবং তাঁকে সেখানকার অধিবাসীদের প্রশাসক নিযুক্ত করেছিলেন। অন্য সনদে আবদুল মাজীদ-আবূ সালিহ সাম্মান (রহ.)-আবূ হুরায়রা ও আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে এভাবেই বর্ণনা করেছেন। [২২০১, ২২০২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯১৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৪১.অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক খাইবার অধিবাসীদের কৃষি ভূমির বন্দোবস্ত প্রদান
৪২৪৮
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَعْطَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ الْيَهُوْدَ أَنْ يَعْمَلُوْهَا وَيَزْرَعُوْهَا وَلَهُمْ شَطْرُ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবারের ভূমি সেখানকার ইয়াহূদীদেরকে এ চুক্তিতে প্রদান করেছিলেন যে, তারা চাষাবাদ করবে আর উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক লাভ করবে [৫৭]। [২২৮৫] (আ.প্র. ৩৯১৭, ই.ফা. ৩৯২১)
[৫৭] জিহাদে পরাজিত শত্রুর সমস্ত সম্পদই গানীমাত নয়। শুধুমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাপ্ত সম্পদই গানীমাত। আর ভূসম্পত্তি ও ঘর-বাড়ী ‘ফাই’ এর অন্তর্ভুক্ত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৪২. অধ্যায়ঃ
খাইবারে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য বিষ মিশ্রিত বাক্রীর (হাদিয়া পাঠানোর) বর্ণনা
‘উরওয়াহ (রাঃ) ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
৪২৪৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ سَعِيْدٌ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا فُتِحَتْ خَيْبَرُ أُهْدِيَتْ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم شَاةٌ فِيْهَا سُمٌّ.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন খাইবার বিজিত হলো তখন (ইয়াহূদীদের পক্ষ থেকে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একটি বাক্রী হাদিয়া দেয়া হয়। যাতে বিষ মেশানো ছিল। [৫৮] [৩১৬৯] (আ.প্র. ৩৯১৮, ই.ফা. ৩৯২২)
[৫৮] সেই বিষপ্রয়োগকৃত গোশত খেয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন ক্ষতি না হলেও সহাবী বারা ইব্নু মা’রূর বিষক্রিয়ায় ইন্তেকাল করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৪৩. অধ্যায়ঃ
যায়দ ইবনু হারিসাহ (রাঃ)-এর অভিযান
৪২৫০
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَمَّرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُسَامَةَ عَلَى قَوْمٍ فَطَعَنُوْا فِيْ إِمَارَتِهِ فَقَالَ إِنْ تَطْعَنُوْا فِيْ إِمَارَتِهِ فَقَدْ طَعَنْتُمْ فِيْ إِمَارَةِ أَبِيْهِ مِنْ قَبْلِهِ وَايْمُ اللهِ لَقَدْ كَانَ خَلِيْقًا لِلْإِمَارَةِ وَإِنْ كَانَ مِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ وَإِنَّ هَذَا لَمِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ بَعْدَهُ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উসামাহ (ইবনু যায়দ) (রাঃ)-কে একটি বাহিনীর অধিনায়ক নিযুক্ত করেছিলেন। লোকজন তাঁর অধিনায়ক নিযুক্তির সমালোচনা করলে তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেন, আজ তোমরা তার অধিনায়ক নিযুক্তির সমালোচনা করছ, এর পূর্বেও তোমরা তার পিতার অধিনায়ক নিযুক্তিতে সমালোচনা করেছিলে। আল্লাহ্র কসম! সে (উসামার পিতা) ছিল অধিনায়ক হওয়ার জন্য যথোপযুক্ত এবং আমার সবচেয়ে প্রিয়পাত্র। তার মৃত্যুর পর এ হচ্ছে আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয়পাত্র। [৩৭৩০] (আ.প্র. ৩৯১৯, ই.ফা. ৩৯২৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৪৪. অধ্যায়ঃ
‘উমরাহ্ কাযার বর্ণনা
আনাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে তা বর্ণনা করেছেন।
৪২৫১
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا اعْتَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ ذِي الْقَعْدَةِ فَأَبَى أَهْلُ مَكَّةَ أَنْ يَدَعُوْهُ يَدْخُلُ مَكَّةَ حَتَّى قَاضَاهُمْ عَلَى أَنْ يُقِيْمَ بِهَا ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فَلَمَّا كَتَبُوا الْكِتَابَ كَتَبُوْا هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ قَالُوْا لَا نُقِرُّ لَكَ بِهَذَا لَوْ نَعْلَمُ أَنَّكَ رَسُوْلُ اللهِ مَا مَنَعْنَاكَ شَيْئًا وَلَكِنْ أَنْتَ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ فَقَالَ أَنَا رَسُوْلُ اللهِ وَأَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ ثُمَّ قَالَ لِعَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ امْحُ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ عَلِيٌّ لَا وَاللهِ لَا أَمْحُوْكَ أَبَدًا فَأَخَذَ رَسُوْلُ اللهِ الْكِتَابَ وَلَيْسَ يُحْسِنُ يَكْتُبُ فَكَتَبَ هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ لَا يُدْخِلُ مَكَّةَ السِّلَاحَ إِلَّا السَّيْفَ فِي الْقِرَابِ وَأَنْ لَا يَخْرُجَ مِنْ أَهْلِهَا بِأَحَدٍ إِنْ أَرَادَ أَنْ يَتْبَعَهُ وَأَنْ لَا يَمْنَعَ مِنْ أَصْحَابِهِ أَحَدًا إِنْ أَرَادَ أَنْ يُقِيْمَ بِهَا فَلَمَّا دَخَلَهَا وَمَضَى الْأَجَلُ أَتَوْا عَلِيًّا فَقَالُوْا قُلْ لِصَاحِبِكَ اخْرُجْ عَنَّا فَقَدْ مَضَى الْأَجَلُ فَخَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَتَبِعَتْهُ ابْنَةُ حَمْزَةَ تُنَادِيْ يَا عَمِّ يَا عَمِّ فَتَنَاوَلَهَا عَلِيٌّ فَأَخَذَ بِيَدِهَا وَقَالَ لِفَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَام دُوْنَكِ ابْنَةَ عَمِّكِ حَمَلَتْهَا فَاخْتَصَمَ فِيْهَا عَلِيٌّ وَزَيْدٌ وَجَعْفَرٌ قَالَ عَلِيٌّ أَنَا أَخَذْتُهَا وَهِيَ بِنْتُ عَمِّيْ وَقَالَ جَعْفَرٌ ابْنَةُ عَمِّيْ وَخَالَتُهَا تَحْتِيْ وَقَالَ زَيْدٌ ابْنَةُ أَخِيْ فَقَضَى بِهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِخَالَتِهَا وَقَالَ الْخَالَةُ بِمَنْزِلَةِ الْأُمِّ وَقَالَ لِعَلِيٍّ أَنْتَ مِنِّيْ وَأَنَا مِنْكَ وَقَالَ لِجَعْفَرٍ أَشْبَهْتَ خَلْقِيْ وَخُلُقِيْ وَقَالَ لِزَيْدٍ أَنْتَ أَخُوْنَا وَمَوْلَانَا وَقَالَ عَلِيٌّ أَلَا تَتَزَوَّجُ بِنْتَ حَمْزَةَ قَالَ إِنَّهَا ابْنَةُ أَخِيْ مِنْ الرَّضَاعَةِ.
বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যিলকা’দা মাসে ‘উমরাহ্ আদায়ের উদ্দ্যেশে রওয়ানা করেন। মক্কাবাসীরা তাঁকে মক্কায় প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানাল। অবশেষে তাদের সঙ্গে চুক্তি হল যে, (আগামী বছর ‘উমরাহ্ পালন হেতু) তিনি তিনদিন মক্কায় অবস্থান করবেন। মুসলিমগণ সন্ধিপত্র লেখার সময় এভাবে লিখেছিলেন, আল্লাহ্র রসূল মুহাম্মদ আমাদের সঙ্গে এ চুক্তি সম্পাদন করেছেন। ফলে তারা (মক্কার কুরাইশরা) বলল, আমরা তো এ কথা স্বীকার করিনি। যদি আমরা আপনাকে আল্লাহ্র রসূল বলেই জানতাম তা হলে মাক্কাহ প্রবেশে মোটেই বাধা দিতাম না। বরং আপনি তো মুহাম্মদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ। তখন তিনি বললেন, আমি আল্লাহ্র রসূল এবং মুহাম্মদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ। তারপর তিনি ‘আলী (রাঃ)-কে বললেন, রসূলুল্লাহ শব্দটি মুছে ফেল। ‘আলী (রাঃ) উত্তর করলেন, আল্লাহ্র কসম! আমি কখনো এ কথা মুছতে পারব না। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন চুক্তিপত্রটি হাতে নিলেন। তিনি লিখতে জানতেন না, তবুও তিনি লিখে দিলেন [৫৯] যে, মুহাম্মদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ এ চুক্তিপত্র সম্পাদন করলেন যে, তিনি কোষবদ্ধ তরবারি ব্যতীত অন্য কোন অস্ত্র নিয়ে মক্কায় প্রবেশ করবেন না। মক্কাবাসীদের কেউ তাঁর সঙ্গে যেতে চাইলেও তিনি তাকে বের করে নিয়ে যাবেন না। তাঁর সাথীদের কেউ মক্কায় থেকে যেতে চাইলে তিনি তাকে বাধা দিবেন না। (পরবর্তী বছর) যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় প্রবেশ করলেন এবং নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হল তখন মুশরিকরা ‘আলীর কাছে এসে বলল, আপনার সাথী [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)]-কে বলুন যে, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেছে। তাই তিনি যেন আমাদের নিকট থেকে চলে যান। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে মতে বেরিয়ে আসলেন। এ সময় হামযাহ (রাঃ)-এর কন্যা চাচা চাচা বলে ডাকতে ডাকতে তাঁর পেছনে ছুটল। ‘আলী (রাঃ) তার হাত ধরে তুলে নিয়ে ফাতেমাহ (রাঃ)-কে দিয়ে বললেন, তোমার চাচার কন্যাকে নাও। ফাতেমাহ (রাঃ) বাচ্চাটিকে উঠিয়ে নিলেন। (মদিনায় পৌঁছলে) বাচ্চাটি নিয়ে ‘আলী, যায়দ (ইবনু হারিসাহ) ও জা’ফার [ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ)]-এর মধ্যে ঝগড়া বেধে গেল। ‘আলী (রাঃ) বললেন, আমি তাকে তুলে নিয়েছি আর সে আমার চাচার মেয়ে! জা’ফর বললেন, সে আমার চাচার মেয়ে আর তার খালা হল আমার স্ত্রী। যায়দ [ইবনু হারিসা (রাঃ)] বললেন, সে আমার ভাইয়ের মেয়ে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মেয়েটিকে তার খালার জন্য ফায়সালা দিয়ে বললেন খালা তো মায়ের মর্যাদার। এরপর তিনি ‘আলীকে বললেন, তুমি আমার এবং আমি তোমার। জা’ফর (রাঃ)-কে বললেন, তুমি আকৃতি-প্রকৃতিতে আমার মতো। আর যায়িদ (রাঃ)-কে বললেন, তুমি আমাদের ভাই ও আযাদকৃত গোলাম। ‘আলী (রাঃ) [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে] বললেন, আপনি হামযাহ’র মেয়েটিকে বিয়ে করছেন না কেন? তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেন, সে আমার দুধ ভাই-এর মেয়ে [৬০]। [১৭৮১] (আ.প্র. ৩৯২০, ই.ফা. ৩৯২৪)
৫৯] হুদাইবিয়ার সন্ধিপত্রে যখন লেখা হলো “আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং কুরায়শদের মধ্যে এই সন্ধি” তক্ষনি তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন সুহায়ল বলে উঠলঃ থামো, থামো, মুহাম্মদ যে আল্লাহ্র রসূল, এ কথা যদি আমরা মেনেই নিবো তাহলে আর যুদ্ধ বিগ্রহ কিসের জন্য। ও কথা লিখতে পারবে না। ‘আল্লাহ্র রসূল মুহাম্মদ’ কথাটি কেটে দিয়ে শুধু লিখোঃ “আবদুল্লাহ্র পুত্র মুহাম্মদ” মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন হেসে বললেন, “বেশ তাই হবে। আমি যে আবদুল্লাহর পুত্র এ কথাও তো মিথ্যা নয়। আলী (রাঃ) ‘রসূলুল্লাহ’ শব্দটি কাটতে অস্বীকার করলে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেই তা মিটিয়ে দিলেন।
এই সুহায়লই যিনি এই পবিত্র নামের সাথে ‘রসূলুল্লাহ’ লিখার বিরোধিতা করেছিলেন, কয়েক বছর পরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুসলিম হয়ে যান। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তেকালের পর মাক্কাহ মু’আযযামাহ্য় তিনি ইসলামের সত্যতার উপর এমন এক হৃদয়গ্রাহী ভাষণ প্রদান করেন যা হাজার হাজার মুসলিমের জন্য ঈমানের দৃঢ়তা ও নবায়নের কারণ হয়েছিল।
[৬০] রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও হামযাহ (রাঃ) একই সাথে এক মহিলার দুধ পান করেছিলেন। সেই বিচারে তারা পরস্পরের দুধ-ভাই। ইসলামে যাদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম তার মধ্যে শর্ত সাপেক্ষে বুকের দুধ পানের কারণও অন্তর্ভুক্ত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৫২
مُحَمَّدُ بْنُ هُوْا رَافِعٍ حَدَّثَنَا سُرَيْجٌ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ ح و حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ مُعْتَمِرًا فَحَالَ كُفَّارُ قُرَيْشٍ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْبَيْتِ فَنَحَرَ هَدْيَهُ وَحَلَقَ رَأْسَهُ بِالْحُدَيْبِيَةِ وَقَاضَاهُمْ عَلَى أَنْ يَعْتَمِرَ الْعَامَ الْمُقْبِلَ وَلَا يَحْمِلَ سِلَاحًا عَلَيْهِمْ إِلَّا سُيُوْفًا وَلَا يُقِيْمَ بِهَا إِلَّا مَا أَحَبُّوْا فَاعْتَمَرَ مِنَ الْعَامِ الْمُقْبِلِ فَدَخَلَهَا كَمَا كَانَ صَالَحَهُمْ فَلَمَّا أَنْ أَقَامَ بِهَا ثَلَاثًا أَمَرُوْهُ أَنْ يَخْرُجَ فَخَرَجَ.
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উমরাহ পালনের উদ্দ্যেশে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রওয়ানা করলে কুরাইশী কাফিররা তাঁর এবং বাইতুল্লাহর মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ালো। কাজেই তিনি হুদাইবিয়াহ নামক স্থানেই কুরবানীর জন্তু যবহ করলেন এবং মাথা মুণ্ডন করলেন আর তিনি তাদের সঙ্গে এই মর্মে চুক্তি সম্পাদন করলেন যে, আগামী বছর তিনি ‘উমরাহ্ পালনের জন্য আসবেন কিন্তু তরবারি ব্যতীত অন্য কোন অস্ত্র সঙ্গে আনবেন না এবং মক্কাবাসীরা যে ক’দিন ইচ্ছা করবে তার অধিক তিনি সেখানে অবস্থান করবেন না। সে মতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরবর্তী বছর ‘উমরাহ পালন করলেন এবং সম্পাদিত চুক্তিনামা অনুসারে মক্কায় প্রবেশ করলেন। তারপর তিনদিন অবস্থান করলে মক্কাবাসীরা তাঁকে চলে যেতে বলল। তাই তিনি চলে গেলেন। [২৭০১] (আ.প্র. ৩৯২১, ই.ফা. ৩৯২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৫৩
عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ دَخَلْتُ أَنَا وَعُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ الْمَسْجِدَ فَإِذَا عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا جَالِسٌ إِلَى حُجْرَةِ عَائِشَةَ ثُمَّ قَالَ كَمْ اعْتَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَرْبَعًا إِحْداهُنَّ في رجب.
মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এবং ‘উরওয়াহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) মাসজিদে নাববীতে প্রবেশ করেই দেখলাম ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর হুজরার পাশেই বসে আছেন। ‘উরওয়াহ (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক’টি ‘উমরাহ্ আদায় করেছিলেন? উত্তরে তিনি বললেন, চারটি। এ সময় আমরা (ঘরের ভিতরে) ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর মিসওয়াক করার আওয়াজ শুনতে পেলাম। [১৭৭৫] (আ.প্র. ৩৯২২, ই.ফা. ৩৯২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৫৪
ثُمَّ سَمِعْنَا اسْتِنَانَ عَائِشَةَ قَالَ عُرْوَةُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِيْنَ أَلَا تَسْمَعِيْنَ مَا يَقُوْلُ أَبُوْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اعْتَمَرَ أَرْبَعَ عُمَرٍ إِحْدهُنٌَفي رخب فَقَالَتْ مَا اعْتَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عُمْرَةً إِلَّا وَهُوَ شَاهِدُهُ وَمَا اعْتَمَرَ فِيْ رَجَبٍ قَطُّ.
উরওয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হে উম্মুল মু’মিনীন! আবূ আবদুর রহমান [ইবনু ‘উমার (রাঃ)] কী বলেছেন, তা আপনি শুনেছেন কি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চারটি ‘উমরাহ করেছেন? ‘আয়িশাহ (রাঃ) উত্তর দিলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন কোন ‘উমরাহ্ করেননি যাতে তিনি (ইবনু ‘উমার) তাঁর সঙ্গে ছিলেন না। তবে তিনি রাজাব মাসে কখনো ‘উমরাহ্ আদায় করেননি। [১৭৭৬] (আ.প্র. ৩৯২২, ই.ফা. ৩৯২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৫৫
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ سَمِعَ ابْنَ أَبِيْ أَوْفَى يَقُوْلُ لَمَّا اعْتَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم سَتَرْنَاهُ مِنْ غِلْمَانِ الْمُشْرِكِيْنَ وَمِنْهُمْ أَنْ يُؤْذُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ‘উমরাহ্তুল কাযা আদায় করছিলেন তখন আমরা তাঁকে মুশরিক ও তাদের যুবকদের থেকে আড়াল করে রেখেছিলাম যাতে তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কোন প্রকার কষ্ট দিতে না পারে। [১৬০০] (আ.প্র. ৩৯২৩, ই.ফা. ৩৯২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৫৬
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ هُوَ ابْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَدِمَ رَسُوْلُ اللَّه صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ فَقَالَ الْمُشْرِكُوْنَ إِنَّهُ يَقْدَمُ عَلَيْكُمْ وَفْدٌ وَهَنَهُمْ حُمَّى يَثْرِبَ وَأَمَرَهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَرْمُلُوا الْأَشْوَاطَ الثَلَاثَةَ وَأَنْ يَمْشُوْا مَا بَيْنَ الرُّكْنَيْنِ وَلَمْ يَمْنَعْهُ أَنْ يَأْمُرَهُمْ أَنْ يَرْمُلُوا الْأَشْوَاطَ كُلَّهَا إِلَّا الإِبْقَاءُ عَلَيْهِمْ قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ وَزَادَ ابْنُ سَلَمَةَ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ لَمَّا قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِعَامِهِ الَّذِي اسْتَأْمَنَ قَالَ ارْمُلُوْا لِيَرَى الْمُشْرِكُوْنَ قُوَّتَهُمْ وَالْمُشْرِكُوْنَ مِنْ قِبَلِ قُعَيْقِعَانَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সাহাবীগণ (‘উমরাহ্তুল কাযা আদায়ের জন্য) আগমন করলে মুশরিকরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল যে, তোমাদের সামনে একদল লোক আসছে, ইয়াসরিবের জ্বর [৬১] যাদেরকে দুর্বল করে দিয়েছে। এজন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীগণকে প্রথম চক্করে হেলে দুলে চলার জন্য এবং দু’ রুকনের মধ্যবর্তী স্থানে স্বাভাবিক গতিতে চলতে নির্দেশ দেন। অবশ্য তিনি তাঁদেরকে সবকটি চক্করেই হেলে দুলে চলার আদেশ করতেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি তাঁর অনুভূতিই কেবল তাঁকে এ হুকুম দেয়া থেকে বিরত রেখেছিল। [১৬০২]
অন্য এক সানাদে ইবনু সালামাহ (রহঃ) আইয়ুব ও সা’ঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ)-এর মাধ্যমে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, (সন্ধি সম্পাদনের মাধ্যমে) নিরাপত্তা প্রাপ্ত বছরে যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মক্কায়) আগমন করলেন তখন বললেন, তোমরা মুশরিকদেরকে তোমাদের শক্তিমত্তা দেখানোর জন্য হেলে দুলে তাওয়াফ করো। এ সময় মুশরিকরা কুআয়কিআন পর্বতের দিক থেকে মুসলিমদেরকে দেখছিল। (আ.প্র. ৩৯২৪, ই.ফা. ৩৯২৮)
[৬১] মাদীনাহকেই ইয়াসরিব বলা হতো। মুশরিকরা মনে করেছিল মাদীনার জ্বরে মুসলিমরা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই মুসলিমদের দুর্বল বা হীনবল হয়ে না পড়াটা প্রকাশের জন্য নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের শরীর হেলিয়ে দুলিয়ে বীরত্ব সহকারে তাওয়াফ করার নির্দেশ দেন। একেই রামল বলা হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৫৭
مُحَمَّدٌ عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرٍو عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ إِنَّمَا سَعَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ لِيُرِيَ الْمُشْرِكِيْنَ قُوَّتَهُ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাইতুল্লাহ এবং সাফা ও মারওয়া-এর মধ্যখানে এ জন্যই সা’য়ী করেছিলেন, যেন মুশরিকদেরকে তাঁর শৌর্য-বীর্য দেখাতে পারেন। [১৬৪৯] (আ.প্র. ৩৯২৫, ই.ফা. ৩৯২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৫৮
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ تَزَوَّجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَيْمُوْنَةَ وَهُوَ مُحْرِمٌ وَبَنَى بِهَا وَهُوَ حَلَالٌ وَمَاتَتْ بِسَرِفَ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহরাম অবস্থায় মাইমূনাহ (রাঃ)-কে বিয়ে করেছেন এবং (ইহরাম খোলার পরে) হালাল অবস্থায় তিনি তাঁর সঙ্গে বাসর যাপন করেছেন। মাইমূনাহ (রাঃ) (মক্কার নিকটেই) সারিফ নামক স্থানে ইন্তিকাল করেছেন। [১৮৩৭] (আ.প্র. ৩৯২৬, ই.ফা. ৩৯৩০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৫৯
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ وَزَادَ ابْنُ إِسْحَاقَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِيْ نَجِيْحٍ وَأَبَانُ بْنُ صَالِحٍ عَنْ عَطَاءٍ وَمُجَاهِدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ تَزَوَّجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَيْمُوْنَةَ فِيْ عُمْرَةِ الْقَضَاءِ.
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
[ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন] অপর একটি সানাদে ইবনু ইসহাক-ইবনু আবূ নাজীহ ও আবান ইবনু সালিহ-‘আত্বা ও মুজাহিদ (রহ.)-ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘উমরাহ্তুল কাযা আদায়ের সফরে মায়মূনাহ (রাঃ)-কে বিয়ে করেছিলেন। [১৮৩৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯২৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৩০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৪৫. অধ্যায়ঃ
সিরিয়া ভূমিতে সংঘটিত মূতার যুদ্ধের ঘটনা
৪২৬০
أَحْمَدُ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ عَنْ عَمْرٍو عَنْ ابْنِ أَبِيْ هِلَالٍ قَالَ وَأَخْبَرَنِيْ نَافِعٌ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ وَقَفَ عَلَى جَعْفَرٍ يَوْمَئِذٍ وَهُوَ قَتِيْلٌ فَعَدَدْتُ بِهِ خَمْسِيْنَ بَيْنَ طَعْنَةٍ وَضَرْبَةٍ لَيْسَ مِنْهَا شَيْءٌ فِيْ دُبُرِهِ يَعْنِيْ فِيْ ظَهْرِهِ.
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সেদিন (মূতার যুদ্ধের দিন) তিনি শাহাদাত প্রাপ্ত জা’ফার ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ)-এর লাশের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। (তিনি বলেন) আমি জা’ফার (রাঃ)-এর দেহে তখন বর্শা ও তরবারীর পঞ্চাশটি আঘাতের চিহ্ন গুনেছি। তার মধ্যে কোনটাই তাঁর পশ্চাৎ দিকে ছিল না। [৪২৬১] (আ.প্র. ৩৯২৭, ই.ফা. ৩৯৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৬১
أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ حَدَّثَنَا مُغِيْرَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَمَّرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَزْوَةِ مُؤْتَةَ زَيْدَ بْنَ حَارِثَةَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنْ قُتِلَ زَيْدٌ فَجَعْفَرٌ وَإِنْ قُتِلَ جَعْفَرٌ فَعَبْدُ اللهِ بْنُ رَوَاحَةَ قَالَ عَبْدُ اللهِ كُنْتُ فِيْهِمْ فِيْ تِلْكَ الْغَزْوَةِ فَالْتَمَسْنَا جَعْفَرَ بْنَ أَبِيْ طَالِبٍ فَوَجَدْنَاهُ فِي الْقَتْلَى وَوَجَدْنَا مَا فِيْ جَسَدِهِ بِضْعًا وَتِسْعِيْنَ مِنْ طَعْنَةٍ وَرَمْيَةٍ.
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মূতার যুদ্ধে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যায়দ ইবনু হারিসাহ (রাঃ)-কে (সেনাপতি নিযুক্ত করে) বলেছিলেন, যদি যায়দ (রাঃ) শহীদ হয়ে যায় তাহলে জা’ফার ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) (সেনাপতি হবে)। যদি জা’ফার (রাঃ)-ও শহীদ হয়ে যায় তাহলে ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) (সেনাপতি হবে)। ‘আবদুল্লাহ [ইবনু ‘উমার (রাঃ)] বলেন, ঐ যুদ্ধে তাদের সঙ্গে আমিও ছিলাম। (যুদ্ধ শেষে) আমরা জা’ফার ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ)-কে তালাশ করলে তাকে শহীদগণের মধ্যে পেলাম। তখন আমরা তার দেহে বর্শা ও তীরের নব্বইটিরও বেশি আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। [৬২] [৪২৬০] (আ.প্র. ৩৯২৮, ই.ফা. ৩৯৩২)
[৬২] পূর্বোক্ত হাদীসের পঞ্চাশটি আঘাতের চিহ্নের কথা বলা হয়েছিল যা কেবল বর্শা ও তরবারির আঘাত গণনা করা হয়েছে। অত্র হাদীসে তীর, বর্শা ও তরবারী সকল আঘাত চিহ্নের গণনা হয়েছে। পূর্বের হাদীসে তীর বাদ দিয়ে গণনা করার কারনে তারতম্য হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে উভয় হাদীসের মধ্যে কোনরূপ বিরোধ নেই। (ফতহুল বারী)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৬২
أَحْمَدُ بْنُ وَاقِدٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلَالٍ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَعَى زَيْدًا وَجَعْفَرًا وَابْنَ رَوَاحَةَ لِلنَّاسِ قَبْلَ أَنْ يَأْتِيَهُمْ خَبَرُهُمْ فَقَالَ أَخَذَ الرَّايَةَ زَيْدٌ فَأُصِيْبَ ثُمَّ أَخَذَ جَعْفَرٌ فَأُصِيْبَ ثُمَّ أَخَذَ ابْنُ رَوَاحَةَ فَأُصِيْبَ وَعَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ حَتَّى أَخَذَ الرَّايَةَ سَيْفٌ مِنْ سُيُوْفِ اللهِ حَتَّى فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِمْ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মুসলিমদের নিকট খবর এসে পৌঁছার পূর্বেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে যায়দ, জা’ফার ও ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)-এর (শাহাদাতের) কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, যায়দ (রাঃ) পতাকা হাতে এগিয়ে গেলে তাঁকে শহীদ করা হয়। অতঃপর জা’ফার (রাঃ) পতাকা হাতে এগিয়ে গেলে তাকেও শহীদ করা হয়। অতঃপর ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) পতাকা হাতে নিলে তাকেও শহীদ করা হল। এ সময় তাঁর দু’চোখ থেকে অশ্রু ঝরছিল। (তিনি বললেন) শেষে আল্লাহ্র তলোয়ারদের মধ্য হতে আল্লাহ্র এক তলোয়ার (খালিদ বিন ওয়ালীদ) পতাকা ধারণ করল। ফলে আল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে বিজয় দান করলেন। [১২৪৬] (আ.প্র. ৩৯২৯, ই.ফা. ৩৯৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৬৩
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ قَالَ أَخْبَرَتْنِيْ عَمْرَةُ قَالَتْ سَمِعْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا تَقُوْلُ لَمَّا جَاءَ قَتْلُ ابْنِ حَارِثَةَ وَجَعْفَرِ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ وَعَبْدِ اللهِ بْنِ رَوَاحَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ جَلَسَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُعْرَفُ فِيْهِ الْحُزْنُ قَالَتْ عَائِشَةُ وَأَنَا أَطَّلِعُ مِنْ صَائِرِ الْبَابِ تَعْنِيْ مِنْ شَقِّ الْبَابِ فَأَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ أَيْ رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ نِسَاءَ جَعْفَرٍ قَالَ وَذَكَرَ بُكَاءَهُنَّ فَأَمَرَهُ أَنْ يَنْهَاهُنَّ قَالَ فَذَهَبَ الرَّجُلُ ثُمَّ أَتَى فَقَالَ قَدْ نَهَيْتُهُنَّ وَذَكَرَ أَنَّهُ لَمْ يُطِعْنَهُ قَالَ فَأَمَرَ أَيْضًا فَذَهَبَ ثُمَّ أَتَى فَقَالَ وَاللهِ لَقَدْ غَلَبْنَنَا فَزَعَمَتْ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ فَاحْثُ فِيْ أَفْوَاهِهِنَّ مِنْ التُّرَابِ قَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ أَرْغَمَ اللهُ أَنْفَكَ فَوَاللهِ مَا أَنْتَ تَفْعَلُ وَمَا تَرَكْتَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْعَنَاءِ.
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যায়িদ ইবনু হারিসাহ, জা’ফার ইবনু আবূ ত্বলিব ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)-এর শাহাদাতের সংবাদ পৌঁছলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসে পড়লেন। তাঁর চেহারায় শোক-চিহ্ন পরিলক্ষিত হচ্ছিল। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি তখন দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলাম, এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! জা’ফার (রাঃ)-এর পরিবারের মেয়েরা কান্নাকাটি করছে। তখন তিনি [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] মহিলাদেরকে বারণ করার জন্য লোকটিকে আদেশ করলেন। লোকটি ফিরে গেল। তারপর আবার এসে বলল, আমি তাদেরকে নিষেধ করেছি। কিন্তু তারা তা শোনেনি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এবারও রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে পুনঃ হুকুম করলেন। লোকটি গেল কিন্তু আবার ফিরে আসল এবং বলল, আমি তাদেরকে নিষেধ করেছি কিন্তু তারা আমার কথা মানছে না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তিনি লোকটিকে আবার যেতে বললেন, কাজেই সে গেল, অতঃপর ফিরে আসল এবং বলল, আল্লাহ্র শপথ! আমি তাদের কাছে পরাস্ত হয়ে গেলাম। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, (তারপর) সম্ভবত রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, তা হলে তাদের মুখের উপর মাটি ছুঁড়ে মার। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি লোকটিকে বললাম, আল্লাহ তোমার নাককে ধূলি ধূসরিত করুন। আল্লাহ্র শপথ! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাকে যে কাজ করতে বলেছেন তা তুমি করতেও পারছ না অথচ তাঁকে কষ্ট দিতেও ছাড়ছ না। [১২৯৯] ( আ.প্র. ৩৯৩০, ই.ফা. ৩৯৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৬৪
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ عَنْ عَامِرٍ قَالَ كَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَا حَيَّا ابْنَ جَعْفَرٍ قَالَ السَّلَامُ عَلَيْكَ يَا ابْنَ ذِي الْجَنَاحَيْنِ.
আমির (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু ‘উমার (রাঃ) যখনই জা’ফর ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ)-এর পুত্র (‘আবদুল্লাহ)-কে সালাম দিতেন তখনই তিনি বলতেন, তোমার প্রতি সালাম, হে দু’ডানাওয়ালার পুত্র।[৬৩] [৩৭০৯] (আ.প্র. ৩৯৩১, ই.ফা. ৩৯৩৫)
[৬৩] মুতার যুদ্ধে কাফিরদের তীরের আঘাতে জা’ফার ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ)-এর হাত দুটো দেহ হতে পৃথক হয়ে যায় এবং তিনি শহীদ হয়ে যান। পরে আল্লাহ তা’আলা তার ঐ দু’বাহুর বদলে জান্নাতে দু’টি ডানা প্রদান করেন। যা দ্বারা তিনি জান্নাতে মালায়িকার সঙ্গে বিচরণ করেন। যা তিনি স্বপ্নযোগে বা ওয়াহীর মাধ্যমে জানতে পারেন। (ফাতহুল বারী ৭ম খণ্ড ৯৬ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৬৫
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِيْ حَازِمٍ قَالَ سَمِعْتُ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيْدِ يَقُوْلُ لَقَدْ انْقَطَعَتْ فِيْ يَدِيْ يَوْمَ مُؤْتَةَ تِسْعَةُ أَسْيَافٍ فَمَا بَقِيَ فِيْ يَدِيْ إِلَّا صَفِيْحَةٌ يَمَانِيَةٌ.
কায়স ইবনু আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি খালিদ ইবনু ওয়ালিদ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, মূতার যুদ্ধে আমার হাতে নয়টি তরবারি ভেঙ্গে গিয়েছিল। শেষে আমার হাতে একটি প্রশস্ত ইয়ামানী তলোয়ার ব্যতীত আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। [৪২৬৬] (আ.প্র. ৩৯৩২, ই.ফা. ৩৯৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৬৬
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيْلَ قَالَ حَدَّثَنِيْ قَيْسٌ قَالَ سَمِعْتُ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيْدِ يَقُوْلُ لَقَدْ دُقَّ فِيْ يَدِيْ يَوْمَ مُؤْتَةَ تِسْعَةُ أَسْيَافٍ وَصَبَرَتْ فِيْ يَدِيْ صَفِيْحَةٌ لِيْ يَمَانِيَةٌ.
ক্বায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, মূতার যুদ্ধে আমার হাতে নয়খানা তরবারি ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে গিয়েছিল। (পরিশেষে) আমার হাতে আমার একটি প্রশস্ত ইয়ামানী তরবারিই টিকেছিল। [৪২৬৫] (আ.প্র. ৩৯৩৩, ই.ফা. ৩৯৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৬৭
عِمْرَانُ بْنُ مَيْسَرَةَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ عَامِرٍ عَنْ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أُغْمِيَ عَلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ رَوَاحَةَ فَجَعَلَتْ أُخْتُهُ عَمْرَةُ تَبْكِيْ وَا جَبَلَاهْ وَا كَذَا وَا كَذَا تُعَدِّدُ عَلَيْهِ فَقَالَ حِيْنَ أَفَاقَ مَا قُلْتِ شَيْئًا إِلَّا قِيْلَ لِيْ آنْتَ كَذَلِكَ.
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সময় ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) বেহুশ হয়ে পড়লে তাঁর বোন ‘আমরা [বিনত রাওয়াহা (রাঃ)] হায়, হায় পর্বতের মতো আমার ভাই, হায়রে অমুকের মতো, তমুকের মতো ইত্যাদি গুন-বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে কান্নাকাটি শুরু করল। এরপর জ্ঞান ফিরলে তিনি তাঁর বোনকে বললেন, তুমি যেসব কথা বলে কান্নাকাটি করেছিলে সেসব কথা উল্লেখ করে আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে, তুমি কি সত্যই এরূপ? (আ.প্র. ৩৯৩৪, ই.ফা. ৩৯৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২৬৮
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْثَرُ عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيْرٍ قَالَ أُغْمِيَ عَلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ رَوَاحَةَ بِهَذَا فَلَمَّا مَاتَ لَمْ تَبْكِ عَلَيْهِ.
নু’মান ইবনু বাশীর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক সময় ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) বেহুশ হয়ে পড়লেন বলে তা বর্ণনা করলেন যেভাবে উপরোক্ত হাদীসে বর্ণনা করা হয়েছে। (তারপর তিনি বলেছেন) অতঃপর তিনি [‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)] শহীদ হলে তাঁর বোন মোটেই কান্নাকাটি করেনি। [৬৪] [৪২৬৭] (আ.প্র. ৩৯৩৫, ই.ফা. ৩৯৩৯)
[৬৪] ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) যিনি যুদ্ধের পূর্বের কোন এক সময়কার ঘটনায় বেহুঁশ হয়ে পড়লে তার বোন আসমা বিনতু রাওয়াহা তার বহুবিধ গুণ বর্ণনা করে কান্নাকাটি করলে তিনি তাঁর বোনকে নিষেধ করেছিলেন । তিনি যখন মূতা’-এর যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন তখন সে খবর পেয়ে মোটেও কাঁদেননি । এ হাদীসে সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস