বুখারী মাগাযী অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৪০৩৭ – ৪০৯৬

৬৪/১৫. অধ্যায়ঃ

কা‘ব ইব্‌নু আশরাফ [২০] –এর হত্যা

[২০] কা‘ব ইব্‌নু আশরাফ বনী কুরায়যা গোত্রের একজন কবি ও নেতা ছিল যে বিভিন্ন সময় রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নামে বিদ্রুপাত্মক কথা প্রচার করতো। এমনকি সম্ভ্রান্ত মুসলিমদের স্ত্রী কন্যাদের সম্পর্কেও কুৎসিত অশালীন উদ্ভট কথা রচনা করতো। এসকল কর্মকাণ্ডে ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে অবশেষে তৃতীয় হিজরী সনের রবীউল আওয়াল মাসে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহকে নির্দেশ দেন তাকে যেন হত্যা করা হয়। এবং সে আদেশ মতে তাকে হত্যা করা হয়।

৪০৩৭

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ لِكَعْبِ بْنِ الْأَشْرَفِ فَإِنَّهُ قَدْ آذَى اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَقَامَ مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَتُحِبُّ أَنْ أَقْتُلَهُ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَأْذَنْ لِيْ أَنْ أَقُوْلَ شَيْئًا قَالَ قُلْ فَأَتَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ فَقَالَ إِنَّ هَذَا الرَّجُلَ قَدْ سَأَلَنَا صَدَقَةً وَإِنَّهُ قَدْ عَنَّانَا وَإِنِّيْ قَدْ أَتَيْتُكَ أَسْتَسْلِفُكَ قَالَ وَأَيْضًا وَاللهِ لَتَمَلُّنَّهُ قَالَ إِنَّا قَدْ اتَّبَعْنَاهُ فَلَا نُحِبُّ أَنْ نَدَعَهُ حَتَّى نَنْظُرَ إِلَى أَيِّ شَيْءٍ يَصِيْرُ شَأْنُهُ وَقَدْ أَرَدْنَا أَنْ تُسْلِفَنَا وَسْقًا أَوْ وَسْقَيْنِ و حَدَّثَنَا عَمْرٌو غَيْرَ مَرَّةٍ فَلَمْ يَذْكُرْ وَسْقًا أَوْ وَسْقَيْنِ أَوْ فَقُلْتُ لَهُ فِيْهِ وَسْقًا أَوْ وَسْقَيْنِ فَقَالَ أُرَى فِيْهِ وَسْقًا أَوْ وَسْقَيْنِ فَقَالَ نَعَمِ ارْهَنُوْنِيْ قَالُوْا أَيَّ شَيْءٍ تُرِيْدُ قَالَ ارْهَنُوْنِيْ نِسَاءَكُمْ قَالُوْا كَيْفَ نَرْهَنُكَ نِسَاءَنَا وَأَنْتَ أَجْمَلُ الْعَرَبِ قَالَ فَارْهَنُوْنِيْ أَبْنَاءَكُمْ قَالُوْا كَيْفَ نَرْهَنُكَ أَبْنَاءَنَا فَيُسَبُّ أَحَدُهُمْ فَيُقَالُ رُهِنَ بِوَسْقٍ أَوْ وَسْقَيْنِ هَذَا عَارٌ عَلَيْنَا وَلَكِنَّا نَرْهَنُكَ اللَّأْمَةَ قَالَ سُفْيَانُ يَعْنِي السِّلَاحَ فَوَاعَدَهُ أَنْ يَأْتِيَهُ فَجَاءَهُ لَيْلًا وَمَعَهُ أَبُوْ نَائِلَةَ وَهُوَ أَخُوْ كَعْبٍ مِنْ الرَّضَاعَةِ فَدَعَاهُمْ إِلَى الْحِصْنِ فَنَزَلَ إِلَيْهِمْ فَقَالَتْ لَهُ امْرَأَتُهُ أَيْنَ تَخْرُجُ هَذِهِ السَّاعَةَ فَقَالَ إِنَّمَا هُوَ مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ وَأَخِيْ أَبُوْ نَائِلَةَ وَقَالَ غَيْرُ عَمْرٍو قَالَتْ أَسْمَعُ صَوْتًا كَأَنَّهُ يَقْطُرُ مِنْهُ الدَّمُ قَالَ إِنَّمَا هُوَ أَخِيْ مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ وَرَضِيْعِيْ أَبُوْ نَائِلَةَ إِنَّ الْكَرِيْمَ لَوْ دُعِيَ إِلَى طَعْنَةٍ بِلَيْلٍ لَأَجَابَ قَالَ وَيُدْخِلُ مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ مَعَهُ رَجُلَيْنِ قِيْلَ لِسُفْيَانَ سَمَّاهُمْ عَمْرٌو قَالَ سَمَّى بَعْضَهُمْ قَالَ عَمْرٌو جَاءَ مَعَهُ بِرَجُلَيْنِ وَقَالَ غَيْرُ عَمْرٍو أَبُوْ عَبْسِ بْنُ جَبْرٍ وَالْحَارِثُ بْنُ أَوْسٍ وَعَبَّادُ بْنُ بِشْرٍ قَالَ عَمْرٌو جَاءَ مَعَهُ بِرَجُلَيْنِ فَقَالَ إِذَا مَا جَاءَ فَإِنِّيْ قَائِلٌ بِشَعَرِهِ فَأَشَمُّهُ فَإِذَا رَأَيْتُمُوْنِي اسْتَمْكَنْتُ مِنْ رَأْسِهِ فَدُوْنَكُمْ فَاضْرِبُوْهُ وَقَالَ مَرَّةً ثُمَّ أُشِمُّكُمْ فَنَزَلَ إِلَيْهِمْ مُتَوَشِّحًا وَهُوَ يَنْفَحُ مِنْهُ رِيْحُ الطِّيْبِ فَقَالَ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ رِيْحًا أَيْ أَطْيَبَ وَقَالَ غَيْرُ عَمْرٍو قَالَ عِنْدِيْ أَعْطَرُ نِسَاءِ الْعَرَبِ وَأَكْمَلُ الْعَرَبِ قَالَ عَمْرٌو فَقَالَ أَتَأْذَنُ لِيْ أَنْ أَشُمَّ رَأْسَكَ قَالَ نَعَمْ فَشَمَّهُ ثُمَّ أَشَمَّ أَصْحَابَهُ ثُمَّ قَالَ أَتَأْذَنُ لِيْ قَالَ نَعَمْ فَلَمَّا اسْتَمْكَنَ مِنْهُ قَالَ دُوْنَكُمْ فَقَتَلُوْهُ ثُمَّ أَتَوْا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرُوْهُ

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কা‘ব ইব্‌নু আশরাফের হত্যা করার জন্য কে প্রস্তুত আছ? কেননা সে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দিয়েছে। মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ (রাঃ) দাঁড়ালেন, এবং বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি কি চান যে, আমি তাকে হত্যা করি? তিনি বললেন, হাঁ। তখন মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, তাহলে আমাকে কিছু প্রতারণাময় কথা বলার অনুমতি দিন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হাঁ বল। এরপর মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ (রাঃ) কা‘ব ইব্‌নু আশরাফের নিকট গিয়ে বললেন, এ লোকটি [রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] সদাকাহ চায় এবং সে আমাদেরকে বহু কষ্টে ফেলেছে। তাই আমি আপনার নিকট কিছু ঋণের জন্যে এসেছি। কা‘ব ইব্‌নু আশরাফ বলল, আল্লাহ্‌র কসম পরে সে তোমাদেরকে আরো বিরক্ত করবে এবং আরো অতিষ্ঠ করে তুলবে। মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, আমরা তাঁর অনুসরণ করছি। পরিণাম কী দাঁড়ায় তা না দেখে এখনই তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করা ভাল মনে করছি না। এখন আমি আপনার কাছে এক ওসাক বা দুই ওসাক খাদ্য ধার চাই। বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান বলেন, ‘আমর (রহঃ) আমার নিকট হাদীসটি কয়েকবার বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি এক ওসাক বা দুই ওসাকের কথা উল্লেখ করেননি। আমি তাকে বললাম, এ হাদীসে তো এক ওসাক বা দুই ওসাকের কথাটি বর্ণিত আছে, তিনি বললেন, মনে হয় হাদীসে এক ওসাক বা দুই ওসাকের কথাটি বর্ণিত আছে। কা‘ব ইব্‌নু আশরাফ বলল, ধার তো পাবে তবে কিছু বন্ধক রাখ। মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, কী জিনিস আপনি বন্ধক চান। সে বলল, তোমাদের স্ত্রীদেরকে বন্ধক রাখ। মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, আপনি আরবের একজন সুশ্রী ব্যক্তি, আপনার নিকট কীভাবে, আমাদের স্ত্রীদের বন্ধক রাখব? তখন সে বলল, তাহলে তোমাদের ছেলে সন্তানদেরকে বন্ধক রাখ। তিনি বললেন, আমাদের পুত্র সন্তানদেরকে আপনার নিকট কী করে বন্ধক রাখি? তাদেরকে এ বলে সমালোচনা করা হবে যে, মাত্র এক ওসাক বা দুই ওসাকের বিনিময়ে বন্ধক রাখা হয়েছে। এটা তো আমাদের জন্য খুব লজ্জাজনক বিষয়। তবে আমরা আপনার নিকট অস্ত্রশস্ত্র বন্ধক রাখতে পারি। রাবী সুফ্ইয়ান বলেন, লামা শব্দের মানে হচ্ছে অস্ত্রশস্ত্র। শেষে তিনি (মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ) তার কাছে আবার যাওয়ার ওয়াদা করে চলে আসলেন। এরপর তিনি কা‘ব ইব্‌নু আশরাফের দুধ ভাই আবূ নাইলাকে সঙ্গে করে রাতের বেলা তার নিকট গেলেন। কা‘ব তাদেরকে দূর্গের মধ্যে ডেকে নীল এবং সে নিজে উপর তলা থেকে নিচে নেমে আসার জন্য প্রস্তুত হল। তখন তার স্ত্রী বলল, এ সময় তুমি কোথায় যাচ্ছ? সে বলল, এই তো মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ এবং আমার ভাই আবূ নাইলা এসেছে। ‘আমর ব্যতীত বর্ণনাকারীগণ বলেন যে, কা’বের স্ত্রী বলল, আমি তো এমনই একটি ডাক শুনতে পাচ্ছি যার থেকে রক্তের ফোঁটা ঝরছে বলে আমার মনে হচ্ছে। কা‘ব ইব্‌নু আশরাফ বলল, মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ এবং দুধ ভাই আবূ নাইলা, (অপরিচিত কোন লোক তো নয়) ভদ্র মানুষকে রাতের বেলা বর্শা বিদ্ধ করার জন্য ডাকলে তার যাওয়া উচিত। (বর্ণনাকারী বলেন) মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ (রাঃ) সঙ্গে আরো দুই ব্যক্তিকে নিয়ে সেখানে গেলেন। সুফ্ইয়ানকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, ‘আমর কি তাদের দু’জনের নাম উল্লেখ করেছিলেন? উত্তরে সুফ্ইয়ান বললেন, একজনের নাম উল্লেখ করেছিলেন। ‘আমর বর্ণনা করেন যে, তিনি আরো দু’জন মানুষ সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, যখন সে (কা‘ব ইব্‌নু আশরাফ) আসবে। ‘আমর ব্যতীত অন্যান্য রাবীগণ (মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামার সাথীদের সম্পর্কে) বলেছেন যে (তারা হলেন) আবূ আবস্ ইব্‌নু জাব্র ইব্‌নু আওস এবং আব্বাদ ইব্‌নু বিশর। ‘আমর বলেছেন, তিনি অপর দুই লোককে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন এবং তাদেরকে বলেছিলেন, যখন সে আসবে তখন আমি তার মাথার চুল ধরে শুঁকতে থাকব। যখন তোমরা আমাকে দেখবে যে, খুব শক্তভাবে আমি তার মাথা আঁকড়িয়ে ধরেছি, তখন তোমরা তরবারি দ্বারা তাকে আঘাত করবে। তিনি (মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ) একবার বলেছিলেন যে, আমি তোমাদেরকেও শুঁকাব। সে (কা‘ব) চাদর নিয়ে নিচে নেমে আসলে তার শরীর থেকে সুঘ্রাণ বের হচ্ছিল। তখন মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, আজকের মত এতো উত্তম সুগন্ধি আমি আর কখনো দেখিনি। ‘আমর ব্যতীত অন্যান্য রাবীগণ বর্ণনা করেছেন যে, কা‘ব বলল, আমার নিকট আরবের সম্ভ্রান্ত ও মর্যাদাসম্পন্ন সুগন্ধী ব্যাবহারকারী মহিলা আছে। ‘আমর বলেন, মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ (রাঃ) বললেন, আমাকে আপনার মাথা শুঁকতে অনুমতি দেবেন কি? সে বলল, হাঁ। এরপর তিনি তার মাথা শুঁকলেন এবং এরপর তার সাথীদেরকে শুঁকালেন। তারপর তিনি আবার বললেন, আমাকে আবার শুঁকবার অনুমতি দেবেন কি? সে বলল, হাঁ। এরপর তিনি তাকে কাবু করে ধরে সাথীদেরকে বললেন, তোমরা তাকে হত্যা কর। তাঁরা তাকে হত্যা করলেন। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে এ খবর দিলেন।

 

[২৫১০; মুসলিম ৩২/৪৩, হাঃ ১৮০১] (আ.প্র. ৩৭৩৫, ই.ফা. ৩৭৩৯)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/১৬. অধ্যায়ঃ

আবূ রাফি‘ ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু আবুল হুকায়কের হত্যা

তাকে সাললাম ইব্‌নু আবুল হুকায়কও বলা হত। সে খায়বারের অধিবাসী ছিল। কেউ কেউ বলেছেন, হিজায ভুমিতে তার একটি দূর্গ ছিল।

যুহরী (রহঃ) বর্ণনা করেছেন যে, তার হত্যার ঘটনা কা‘ব ইব্‌নু আশরাফের হত্যার পর ঘটেছিল।

৪০৩৮

إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ زَائِدَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ بَعَثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَهْطًا إِلَى أَبِيْ رَافِعٍ فَدَخَلَ عَلَيْهِ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَتِيْكٍ بَيْتَهُ لَيْلًا وَهُوَ نَائِمٌ فَقَتَلَهُ

বারাআ ইব্‌নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দশ জনের কম একটি দলকে আবূ রাফির উদ্দেশ্যে পাঠালেন (তাদের একজন) ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু আতীক (রাঃ) রাতের বেলা তার ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে খুন করেন।

 

[৩০২২] (আ.প্র. ৩৭৩৬, ই.ফা. ৩৭৪০)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৩৯

يُوْسُفُ بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ بَعَثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَبِيْ رَافِعٍ الْيَهُوْدِيِّ رِجَالًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَتِيْكٍ وَكَانَ أَبُوْ رَافِعٍ يُؤْذِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَيُعِيْنُ عَلَيْهِ وَكَانَ فِيْ حِصْنٍ لَهُ بِأَرْضِ الْحِجَازِ فَلَمَّا دَنَوْا مِنْهُ وَقَدْ غَرَبَتْ الشَّمْسُ وَرَاحَ النَّاسُ بِسَرْحِهِمْ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ لِأَصْحَابِهِ اجْلِسُوْا مَكَانَكُمْ فَإِنِّيْ مُنْطَلِقٌ وَمُتَلَطِّفٌ لِلْبَوَّابِ لَعَلِّيْ أَنْ أَدْخُلَ فَأَقْبَلَ حَتَّى دَنَا مِنَ الْبَابِ ثُمَّ تَقَنَّعَ بِثَوْبِهِ كَأَنَّهُ يَقْضِيْ حَاجَةً وَقَدْ دَخَلَ النَّاسُ فَهَتَفَ بِهِ الْبَوَّابُ يَا عَبْدَ اللهِ إِنْ كُنْتَ تُرِيْدُ أَنْ تَدْخُلَ فَادْخُلْ فَإِنِّيْ أُرِيْدُ أَنْ أُغْلِقَ الْبَابَ فَدَخَلْتُ فَكَمَنْتُ فَلَمَّا دَخَلَ النَّاسُ أَغْلَقَ الْبَابَ ثُمَّ عَلَّقَ الْأَغَالِيْقَ عَلَى وَتَدٍ قَالَ فَقُمْتُ إِلَى الْأَقَالِيْدِ فَأَخَذْتُهَا فَفَتَحْتُ الْبَابَ وَكَانَ أَبُوْ رَافِعٍ يُسْمَرُ عِنْدَهُ وَكَانَ فِيْ عَلَالِيَّ لَهُ فَلَمَّا ذَهَبَ عَنْهُ أَهْلُ سَمَرِهِ صَعِدْتُ إِلَيْهِ فَجَعَلْتُ كُلَّمَا فَتَحْتُ بَابًا أَغْلَقْتُ عَلَيَّ مِنْ دَاخِلٍ قُلْتُ إِنِ الْقَوْمُ نَذِرُوْا بِيْ لَمْ يَخْلُصُوْا إِلَيَّ حَتَّى أَقْتُلَهُ فَانْتَهَيْتُ إِلَيْهِ فَإِذَا هُوَ فِيْ بَيْتٍ مُظْلِمٍ وَسْطَ عِيَالِهِ لَا أَدْرِيْ أَيْنَ هُوَ مِنَ الْبَيْتِ فَقُلْتُ يَا أَبَا رَافِعٍ قَالَ مَنْ هَذَا فَأَهْوَيْتُ نَحْوَ الصَّوْتِ فَأَضْرِبُهُ ضَرْبَةً بِالسَّيْفِ وَأَنَا دَهِشٌ فَمَا أَغْنَيْتُ شَيْئًا وَصَاحَ فَخَرَجْتُ مِنَ الْبَيْتِ فَأَمْكُثُ غَيْرَ بَعِيْدٍ ثُمَّ دَخَلْتُ إِلَيْهِ فَقُلْتُ مَا هَذَا الصَّوْتُ يَا أَبَا رَافِعٍ فَقَالَ لِأُمِّكَ الْوَيْلُ إِنَّ رَجُلًا فِي الْبَيْتِ ضَرَبَنِيْ قَبْلُ بِالسَّيْفِ قَالَ فَأَضْرِبُهُ ضَرْبَةً أَثْخَنَتْهُ وَلَمْ أَقْتُلْهُ ثُمَّ وَضَعْتُ ظِبَةَ السَّيْفِ فِيْ بَطْنِهِ حَتَّى أَخَذَ فِيْ ظَهْرِهِ فَعَرَفْتُ أَنِّيْ قَتَلْتُهُ فَجَعَلْتُ أَفْتَحُ الْأَبْوَابَ بَابًا بَابًا حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى دَرَجَةٍ لَهُ فَوَضَعْتُ رِجْلِيْ وَأَنَا أُرَى أَنِّيْ قَدْ انْتَهَيْتُ إِلَى الْأَرْضِ فَوَقَعْتُ فِيْ لَيْلَةٍ مُقْمِرَةٍ فَانْكَسَرَتْ سَاقِيْ فَعَصَبْتُهَا بِعِمَامَةٍ ثُمَّ انْطَلَقْتُ حَتَّى جَلَسْتُ عَلَى الْبَابِ فَقُلْتُ لَا أَخْرُجُ اللَّيْلَةَ حَتَّى أَعْلَمَ أَقَتَلْتُهُ فَلَمَّا صَاحَ الدِّيْكُ قَامَ النَّاعِيْ عَلَى السُّوْرِ فَقَالَ أَنْعَى أَبَا رَافِعٍ تَاجِرَ أَهْلِ الْحِجَازِ فَانْطَلَقْتُ إِلَى أَصْحَابِيْ فَقُلْتُ النَّجَاءَ فَقَدْ قَتَلَ اللهُ أَبَا رَافِعٍ فَانْتَهَيْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَحَدَّثْتُهُ فَقَالَ ابْسُطْ رِجْلَكَ فَبَسَطْتُ رِجْلِيْ فَمَسَحَهَا فَكَأَنَّهَا لَمْ أَشْتَكِهَا قَطُّ

বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আতীককে আমীর বানিয়ে তার নেতৃত্বে আনসারদের কয়েকজন সাহাবীকে ইয়াহূদী আবূ রাফির (হত্যার) উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন। আবূ রাফি‘ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কষ্ট দিত এবং এ ব্যাপারে লোকদের সাহায্য করত। হিজায ভূমিতে তার একটি দূর্গ ছিল (যেখানে সে বাস করত)। তারা যখন তার দূর্গের কাছে গিয়ে পৌছলেন তখন সূর্য ডুবে গেছে এবং লোকজন নিজেদের পশু পাল নিয়ে রওয়ানা হয়েছে (নিজ নিজ গৃহে) ‘আবদুল্লাহ (ইব্‌নু আতীক) তার সাথীদেরকে বললেন, তোমরা তোমাদের স্থানে বসে থাক। আমি চললাম, ভিতরে প্রবেশ করার জন্য দ্বার রক্ষীর সঙ্গে আমি কৌশল দেখাই। এরপর তিনি সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে দরজার কাছে পৌছলেন এবং কাপড় দ্বারা নিজেকে এমনভাবে ঢাকলেন যেন তিনি প্রাকৃতিক প্রয়োজনে রত আছেন। তখন সবাই ভিতরে প্রবেশ করলে দারোয়ান তাকে ডেকে বলল, ওহে ‘আবদুল্লাহ! ভিতরে ঢুকতে চাইলে ঢুকে পড়। আমি এখনই দরজা বন্ধ করে দেব। আমি তখন ভিতরে প্রবেশ করলাম এবং আত্মগোপন করে থাকলাম। সকলে ভিতরে প্রবেশ করার পর সে দরজা বন্ধ করে দিল এবং একটি পেরেকের সঙ্গে চাবিটা লটকিয়ে রাখল। [‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আতীক (রাঃ) বলেন] এরপর আমি চাবিটার দিকে এগিয়ে গেলাম এবং চাবিটা নিয়ে দরজাটি খুললাম। আবূ রাফি‘র নিকট রাতের বেলা গল্পের আসর বসত, এ সময় সে তার উপর তলার কামরায় অবস্থান করছিল। গল্পের আসরে আগত লোকজন চলে গেলে, আমি সিঁড়ি বেয়ে তার কাছে গিয়ে পৌছলাম। এ সময় আমি একটি করে দরজা খুলছিলাম এবং ভিতর দিক থেকে তা আবার বন্ধ করে দিয়ে যাচ্ছিলাম, যাতে লোকজন আমার ব্যাপারে জানতে পারলেও হত্যা না করা পর্যন্ত আমার নিকট পৌছতে না পারে। আমি তার কাছে গিয়ে পৌছলাম। এ সময় সে একটি অন্ধকার কক্ষে ছেলেমেয়েদের মাঝে শুয়েছিল। কক্ষের কোন অংশে সে শুয়ে আছে আমি তা বুঝতে পারছিলাম না। তাই আবূ রাফি‘ বলে ডাক দিলাম। সে বলল, কে আমাকে ডাকছ? আমি তখন আওয়াজটি লক্ষ্য করে এগিয়ে গিয়ে তরবারি দ্বারা প্রচণ্ড জোরে আঘাত করলাম। আমি তখন কাঁপছিলাম। এ আঘাতে আমি তার কোন কিছুই করতে পারলাম না। সে চিৎকার করে উঠলে আমি কিছুক্ষণের জন্য বাইরে চলে আসলাম। এরপর পুনরায় ঘরে প্রবেশ করে (কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করতঃ তার আপন লোকের ন্যায়) জিজ্ঞেস করলাম, আবূ রাফি‘ এ আওয়াজ হল কিসের? সে বলল, তোমার মায়ের সর্বনাশ হোক! একটু আগে ঘরের ভিতর কে যেন আমাকে তরবারি দ্বারা আঘাত করেছে। ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আতীক (রাঃ) বলেন, তখন আমি আবার তাকে ভীষণ আঘাত করলাম এবং মারাত্মকভাবে ক্ষত বিক্ষত করে ফেললাম। কিন্তু তাকে হত্যা করতে পারিনি। তাই তরবারির ধারাল দিকটি তার পেটের উপর চেপে ধরলাম এবং পিঠ পাড় করে দিলাম। এবার আমি নিশ্চিতরূপে বুঝলাম যে, এখন আমি তাকে হত্যা করতে পেরেছি। এরপর আমি এক এক করে দরজা খুলে নিচে নামতে শুরু করলাম। নামতে নামতে সিঁড়ির শেষ প্রান্তে এসে পৌছলাম। পূর্ণিমার রাত্র ছিল। (চাঁদের আলোতে তাড়াহুড়ার মধ্যে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে না পেরে) আমি মনে করলাম, (সিঁড়ির সকল ধাপ অতিক্রম করে) আমি মাটির নিকটে এসে পড়েছি। (কিন্তু তখনও একটি ধাপ অবশিষ্ট ছিল) তাই নিচে পা রাখতেই আমি পড়ে গেলাম। অমনিই আমার পায়ের গোছার হাড় ভেঙ্গে গেল। আমি আমার মাথা পাগড়ি দিয়ে পা খানা বেঁধে নিলাম এবং একটু হেঁটে গিয়ে দরজার সামনে বসে রইলাম। মনে মনে স্থির করলাম, তার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে আজ রাতে আমি এখান থেকে যাব না। ভোর রাতে মোরগের ডাক আরম্ভ হলে মৃত্যু ঘোষণাকারী প্রাচীরের উপরে উঠে ঘোষণা করল, হিজায অধিবাসীদের অন্যতম ব্যবসায়ী আবূ রাফির মৃত্যুর সংবাদ শুন। তখন আমি আমার সাথীদের নিকট গিয়ে বললাম, তাড়াতাড়ি চল, আল্লাহ্ আবূ রাফিকে হত্যা করেছেন। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলাম এবং সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম। তিনি বললেন, তোমার পা লম্বা করে দাও। আমি আমার পা লম্বা করে দিলে তিনি তাতে স্বীয় হাত বুলিয়ে দিলেন। (তাতে এমন সুস্থ হলাম) যেন আমি কোন আঘাতই পায়নি।

 

[৩০২২] (আ.প্র. ৩৭৩৭, ই.ফা. ৩৭৪১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৪০

أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ حَدَّثَنَا شُرَيْحٌ هُوَ ابْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَعَثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَبِيْ رَافِعٍ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَتِيْكٍ وَعَبْدَ اللهِ بْنَ عُتْبَةَ فِيْ نَاسٍ مَعَهُمْ فَانْطَلَقُوْا حَتَّى دَنَوْا مِنَ الْحِصْنِ فَقَالَ لَهُمْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَتِيْكٍ امْكُثُوْا أَنْتُمْ حَتَّى أَنْطَلِقَ أَنَا فَأَنْظُرَ قَالَ فَتَلَطَّفْتُ أَنْ أَدْخُلَ الْحِصْنَ فَفَقَدُوْا حِمَارًا لَهُمْ قَالَ فَخَرَجُوْا بِقَبَسٍ يَطْلُبُوْنَهُ قَالَ فَخَشِيْتُ أَنْ أُعْرَفَ قَالَ فَغَطَّيْتُ رَأْسِيْ وَجَلَسْتُ كَأَنِّيْ أَقْضِيْ حَاجَةً ثُمَّ نَادَى صَاحِبُ الْبَابِ مَنْ أَرَادَ أَنْ يَدْخُلَ فَلْيَدْخُلْ قَبْلَ أَنْ أُغْلِقَهُ فَدَخَلْتُ ثُمَّ اخْتَبَأْتُ فِيْ مَرْبِطِ حِمَارٍ عِنْدَ بَابِ الْحِصْنِ فَتَعَشَّوْا عِنْدَ أَبِيْ رَافِعٍ وَتَحَدَّثُوْا حَتَّى ذَهَبَتْ سَاعَةٌ مِنْ اللَّيْلِ ثُمَّ رَجَعُوْا إِلَى بُيُوْتِهِمْ فَلَمَّا هَدَأَتْ الْأَصْوَاتُ وَلَا أَسْمَعُ حَرَكَةً خَرَجْتُ قَالَ وَرَأَيْتُ صَاحِبَ الْبَابِ حَيْثُ وَضَعَ مِفْتَاحَ الْحِصْنِ فِيْ كَوَّةٍ فَأَخَذْتُهُ فَفَتَحْتُ بِهِ بَابَ الْحِصْنِ قَالَ قُلْتُ إِنْ نَذِرَ بِي الْقَوْمُ انْطَلَقْتُ عَلَى مَهَلٍ ثُمَّ عَمَدْتُ إِلَى أَبْوَابِ بُيُوْتِهِمْ فَغَلَّقْتُهَا عَلَيْهِمْ مِنْ ظَاهِرٍ ثُمَّ صَعِدْتُ إِلَى أَبِيْ رَافِعٍ فِيْ سُلَّمٍ فَإِذَا الْبَيْتُ مُظْلِمٌ قَدْ طَفِئَ سِرَاجُهُ فَلَمْ أَدْرِ أَيْنَ الرَّجُلُ فَقُلْتُ يَا أَبَا رَافِعٍ قَالَ مَنْ هَذَا قَالَ فَعَمَدْتُ نَحْوَ الصَّوْتِ فَأَضْرِبُهُ وَصَاحَ فَلَمْ تُغْنِ شَيْئًا قَالَ ثُمَّ جِئْتُ كَأَنِّيْ أُغِيْثُهُ فَقُلْتُ مَا لَكَ يَا أَبَا رَافِعٍ وَغَيَّرْتُ صَوْتِيْ فَقَالَ أَلَا أُعْجِبُكَ لِأُمِّكَ الْوَيْلُ دَخَلَ عَلَيَّ رَجُلٌ فَضَرَبَنِيْ بِالسَّيْفِ قَالَ فَعَمَدْتُ لَهُ أَيْضًا فَأَضْرِبُهُ أُخْرَى فَلَمْ تُغْنِ شَيْئًا فَصَاحَ وَقَامَ أَهْلُهُ قَالَ ثُمَّ جِئْتُ وَغَيَّرْتُ صَوْتِيْ كَهَيْئَةِ الْمُغِيْثِ فَإِذَا هُوَ مُسْتَلْقٍ عَلَى ظَهْرِهِ فَأَضَعُ السَّيْفَ فِيْ بَطْنِهِ ثُمَّ أَنْكَفِئُ عَلَيْهِ حَتَّى سَمِعْتُ صَوْتَ الْعَظْمِ ثُمَّ خَرَجْتُ دَهِشًا حَتَّى أَتَيْتُ السُّلَّمَ أُرِيْدُ أَنْ أَنْزِلَ فَأَسْقُطُ مِنْهُ فَانْخَلَعَتْ رِجْلِيْ فَعَصَبْتُهَا ثُمَّ أَتَيْتُ أَصْحَابِيْ أَحْجُلُ فَقُلْتُ انْطَلِقُوْا فَبَشِّرُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَإِنِّيْ لَا أَبْرَحُ حَتَّى أَسْمَعَ النَّاعِيَةَ فَلَمَّا كَانَ فِيْ وَجْهِ الصُّبْحِ صَعِدَ النَّاعِيَةُ فَقَالَ أَنْعَى أَبَا رَافِعٍ قَالَ فَقُمْتُ أَمْشِيْ مَا بِيْ قَلَبَةٌ فَأَدْرَكْتُ أَصْحَابِيْ قَبْلَ أَنْ يَأْتُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَبَشَّرْتُهُ

বারাআ বিন আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ রাফি’র হত্যার উদ্দেশ্যে ‘আবদুল্লাহ ইবনু আতীক ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু উতবাহকে একদল লোকসহ প্রেরণ করেন। যেতে যেতে তারা দূর্গের কাছে গিয়ে পৌছলে ‘আবদুল্লাহ ইবনু আতীক (রাঃ) তাদেরকে বললেন, তোমরা অপেক্ষা কর। আমি যাই, দেখি কীভাবে সুযোগ করা যায়। আবদুল্লাহ ইবনু আতীক (রাঃ) বলেন, দূর্গের ভিতরে প্রবেশ করার জন্য আমি কৌশল করলাম। ইতোমধ্যে তারা একটি গাধা হারিয়ে ফেলল এবং একটি আলো নিয়ে এর খোঁজে বের হল। তিনি বললেন, আমাকে চিনে ফেলবে এ আশংকা করছিলাম। তাই আমি আমার মাথা ও পা ঢেকে ফেললাম এবং এমনভাবে বসে রইলাম যেন আমি প্রাকৃতিক প্রয়োজনে মলমূত্র ত্যাগ করার জন্য বসেছি। এরপর দারোয়ান ডাক দিয়ে বলল, কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে দরজা বন্ধ করার আগে ভিতরে ঢুকে পড়ুন। আমি প্রবেশ করলাম এবং দূর্গের দরজার পার্শ্বে গাধা বাঁধার জায়গায় আত্মগোপন করে থাকলাম। আবূ রাফি’র নিকট সবাই বসে রাতের খানা খেয়ে গল্প গুজব করল। এভাবে রাতের কিছু অংশ কেটে যাওয়ার পর সকলেই নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেল। যখন হৈ চৈ থেমে গেল এবং কোন নড়াচড়া শুনতে পাচ্ছিলাম না তখন আমি বের হলাম। ‘আবদুল্লাহ ইবনু আতীক (রাঃ) বলেন, দূর্গের চাবি যে ছিদ্রপথে রাখা হয়েছিল তা আমু পূর্বেই দেখেছিলাম। তাই রক্ষিত স্থান থেকে চাবিটি নিয়ে আমি দূর্গের দরজা খুললাম। তিনি বলেন, আমি মনে মনে ভাবলাম, কাওমের লোকেরা যদি আমাকে দেখে নেয় তাহলে সহজেই আমি পালিয়ে যেতে পারব। এরপর দূর্গের ভিতরে তাদের যত ঘর ছিল সবগুলোর দরজা আমি বাইরে থেকে বন্ধ করে দিলাম। এরপর সিঁড়ি বেয়ে আবূ রাফি’র কক্ষে উঠলাম। বাতি নিভিয়ে দেয়া হয়েছিল বলে ঘরটি ছিল খুবই অন্ধকার। লোকটি কোথায়, কিছুতেই আমি তা বুঝতে পারছিলাম না। সুতরাং আমি তাকে ডাকলাম, হে আবূ রাফি’। সে বলল, কে ডাকছ? তিনি বললেন, আওয়াজটি লক্ষ্য করে আমি একটু এগিয়ে গেলাম এবং তাকে আঘাত করলাম। সে চিৎকার করে উঠল। এ আঘতে কোন কাজই হয়নি। অরঃপর আবার আমি তার কাছে গেলাম, যেন আমি তাকে সাহায্য করব। আমি এবার স্বর বদল করে বললাম, হে আবূ রাফি’! তোমার কি হয়েছে? সে বলল, কী আশ্চর্য ব্যাপার, তার মায়ের সর্বনাশ হোক, এই তো এক ব্যক্তি আমার ঘরে ঢুকে আমাকে তরবারি দ্বারা আঘাত করেছে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু আতীক বলেন, তাকে লক্ষ্য করে আবার আমি আঘাত করলাম এবারও কোন কাজ হল না। সে চিৎকার করলে তার পরিবারের সবাই জেগে উঠল। তারপর আবার আমি সাহায্যকারীর ভান করে আওয়াজ বদল করে তার দিকে এগিয়ে গেলাম। এ সময় সে পিঠের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে ছিল। আমি তরবারির অগ্রভাগ তার পেটের উপর রেখে এমন জোরে চাপ দিলাম যে, আমি তার হাড়ের আওয়াজ শুনতে পেলাম। এরপর আমি কাঁপতে কাঁপতে সিঁড়ির নিকট এসে পৌছলাম। ইচ্ছে ছিল নেমে যাব। কিন্তু আছাড় খেয়ে পড়ে গেলাম এবং এতে আমার পা খানা ভেঙ্গে গেল। সঙ্গে সঙ্গে (পাগড়ি দিয়ে) আমি তা বেঁধে ফেললাম এবং আস্তে আস্তে হেঁটে সাথীদের নিকট চলে এলাম। এরপর বললাম, তোমরা যাও এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সুসংবাদ দাও। আমি তার মৃত্যুর সংবাদ না শুনে আসব না। প্রত্যুষে মৃত্যু ঘোষণাকারী প্রাচীরে উঠে বলল, আমি আবূ রাফি’র মৃত্যুর সংবাদ ঘোষণা করছি। আবদুল্লাহ ইবনু আতীক (রাঃ) বলেন, এরপর আমি উঠে চলতে লাগলাম, এ সময় আমার কোন ব্যথাই ছিল না। আমার সাথীরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পৌছার আগেই আমি তাদেরকে পেয়ে গেলাম এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তার মৃত্যুর সুসংবাদ দিতাম।

 

[২১] [৩০২২] (আ.প্র. ৩৭৩৮, ই.ফা. ৩৭৪২)

  •  
  •  
  •  
  •  

[২১] দেশের মুসলিম শাসকের অনুমতি ছাড়া এরূপ গেরিলা হত্যা বৈধ নয়- এটাই হাদীসটি হতে প্রমাণিত হলো।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/১৭. অধ্যায়ঃ

উহূদ যুদ্ধ

মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “[হে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)!] আর স্মরণ কর, যখন তুমি পরিজনদের নিকট হতে ভোরবেলায় বের হয়ে মুমিনদের যুদ্ধের জন্য ঘাঁটিতে বিন্যস্ত করছিলেন, আর আল্লাহ্‌ তা’আলা তো সব শোনেন, সব জানেন”- (সূরা আলে ইমরান ৩:১২১)। আল্লাহ্‌র বাণীঃ আর তোমরা সাহস হারিয়ো না এবং দুঃখও কর না, তোমরাই পরিণামে বিজয়ী হবে, যদি তোমরা প্রকৃত মু’মিন হও। আর যদি তোমাদের আঘাত লেগে থাকে তবে অনুরূপ আঘাত তো তাদেরও লেগেছিল। আর এ দিনগুলোকে আমি মানুষের মাঝে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত করি। যাতে আল্লাহ্‌ জানতে পারেন কারা ঈমান এনেছে এবং যাতে তিনি তোমাদের মধ্য থেকে কতক শাহিদরূপে গ্রহণ করতে পারেন। আল্লাহ্‌ যালিমদের ভালবাসেন না। এবং যাতে আল্লাহ্‌ নির্মল করতে পারেন মু’মিনদের আর নিপাত করতে পারেন কাফিরদের। তোমরা কি ধারণা কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, অথচ এখনও আল্লাহ্‌ প্রকাশ করেননি তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্যশীল? আর তোমরা তো মরণ কামনা করতে মৃত্যুর সম্মুখীন হওয়ার পূর্বেই। এখন তো তোমরা তা স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছ”- (সূরা আলে- ইমরান ৩:১৩৯-১৪৩)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “আর আল্লাহ্‌ তাঁর প্রতিশ্রুতি তোমাদের সত্যে পরিণত করে দেখিয়েছেন যখন তোমরা কাফিরদের খতম করেছিলে তাঁরই আদেশে। তারপর তোমরা সাহস হারিয়ে ফেললে এবং পরস্পর মতবিরোধ করলে নির্দেশ পালনে, আর যা তোমরা ভালবাস তা তোমাদের দেখবার পরও তোমরা অবাধ্য হলে। তোমাদের মাঝে কতক এরূপ আছে যারা কামনা করেছিল দুনিয়া এবং কতক কামনা করেছিল আখিরাত। তারপর পরীক্ষা করার জন্য তিনি তাদের থেকে তোমাদের ফিরিয়ে দিলেন। বস্তুতঃ তিনি তোমাদের ক্ষমা করেছে। আর আল্লাহ্‌ তো মু’মিনদের প্রতি অত্যন্ত অনুগ্রহশীল”- (সূরা আলে ইমরান ৩:১৫২)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ যারা আল্লাহ্‌র পথে নিহত হয় তোমরা কখনও তাদের মৃত ধারণা কর না। বরং তারা তাদের রবে কাছে আছে জীবিত এবং জীবিকাপ্রাপ্ত”- (সূরা আলে ইমরান ৩:১৬৯)

৪০৪১

إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ هَذَا جِبْرِيْلُ آخِذٌ بِرَأْسِ فَرَسِهِ عَلَيْهِ أَدَاةُ الْحَرْبِ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহূদের দিন [২২] বলেছেন, এই তো জিবরীল, তার ঘোড়ার মস্তকে হাত রেখে আছেন; তার পরিধানে আছে যুদ্ধাস্ত্র।

 

[৩৯৯৫] (আ.প্র. ৩৭৩৯, ই.ফা. ৩৭৪৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

[২২] ইবনু হাজার আসকালানী অত্র হাদীসের ব্যাপারে স্বীয় ফতহুল বারীতে লিখেছেনঃ

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৪২

مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ عَدِيٍّ أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ حَيْوَةَ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ حَبِيْبٍ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ صَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى قَتْلَى أُحُدٍ بَعْدَ ثَمَانِيْ سِنِيْنَ كَالْمُوَدِّعِ لِلْأَحْيَاءِ وَالأَمْوَاتِ ثُمَّ طَلَعَ الْمِنْبَرَ فَقَالَ إِنِّيْ بَيْنَ أَيْدِيْكُمْ فَرَطٌ وَأَنَا عَلَيْكُمْ شَهِيْدٌ وَإِنَّ مَوْعِدَكُمُ الْحَوْضُ وَإِنِّيْ لَأَنْظُرُ إِلَيْهِ مِنْ مَقَامِيْ هَذَا وَإِنِّيْ لَسْتُ أَخْشَى عَلَيْكُمْ أَنْ تُشْرِكُوْا وَلَكِنِّيْ أَخْشَى عَلَيْكُمْ الدُّنْيَا أَنْ تَنَافَسُوْهَا قَالَ فَكَانَتْ آخِرَ نَظْرَةٍ نَظَرْتُهَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم

উকবাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আট বছর পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহূদের শহীদদের জন্য (কবরস্থানে) এমনভাবে দু’আ করলেন যেমন কোন বিদায় গ্রহণকারী জীবিত ও মৃতদের জন্য দু’আ করেন। তারপর তিনি (ফিরে এসে) মিম্বারে উঠে বললেন, আমি তোমাদের অগ্রে প্রেরিত এবং আমি তোমাদের সাক্ষীদাতা। এরপর (কাউসার) হাউযের ধারে তোমাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ ঘটবে। আমার এ স্থান থেকেই আমি হাউয দেখতে পাচ্ছি। তোমরা শিরকে জড়িয়ে যাবে আমি এ ভয় করি না। তবে আমার আশঙ্কা হয় যে, তোমরা দুনিয়ায় সুখ-শান্তি লাভে প্রতিযোগিতা করবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমর এ দর্শনই ছিল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শেষবারের মতো দর্শন।

 

(১৩৪৪, ৩৫৯৬, ৪০৮৫, ৬৪২৬, ৬৫৯০) [মুসলিম ৪৩/৯, হাঃ ২২৯৬, আহমদ ১৭৩৪৯] (আ.প্র. ৩৭৪০, ই.ফা. ৩৭৪৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

আবূল ওয়াক্ত ও আসীলির বর্ণনাতে সেখানে ‘উকবাহ বিন ‘আমিরের পূর্বে ইবনু আব্বাস থেকে বর্ণিত হয়েছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহূদের যুদ্ধে বলেছিলেনঃ সেহেতু তার মতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উক্ত কথাটি বাদরের দিন বলেছিলেন। এই তো জিবরীল, তার ঘোড়ার মস্তকে হাত রেখে আছেন।………. হাদীসের শেষ পর্যন্ত। হাদীসটিতে দুটি কারনে পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রথমতঃ হাদীসটি সনদ ও মতন সহ অধ্যায়ে অতিবাহিত হয়েছে। ফলে এখানে আবূ যর ও বুখারীর অন্য কোন গ্রহণযোগ্য বর্ণনাকারীদের কেউই এটি বর্ণনা করেননি। ইমাম ইসমা’ঈলী ও আবূ না’ঈম কেউ এটিকে বর্ণনা করেননি। দ্বিতীয়তঃ এটি প্রসিদ্ধ যে, অত্র হাদীসের মতনে বাদ্‌র যুদ্ধের বর্ণনাটিই অধিক পরিচিত, উহূদ যুদ্ধ নয়। আল্লাহ্ সাহায্যকারী।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৪৩

عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَقِيْنَا الْمُشْرِكِيْنَ يَوْمَئِذٍ وَأَجْلَسَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم جَيْشًا مِنْ الرُّمَاةِ وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ عَبْدَ اللهِ وَقَالَ لَا تَبْرَحُوْا إِنْ رَأَيْتُمُوْنَا ظَهَرْنَا عَلَيْهِمْ فَلَا تَبْرَحُوْا وَإِنْ رَأَيْتُمُوْهُمْ ظَهَرُوْا عَلَيْنَا فَلَا تُعِيْنُوْنَا فَلَمَّا لَقِيْنَا هَرَبُوْا حَتَّى رَأَيْتُ النِّسَاءَ يَشْتَدِدْنَ فِي الْجَبَلِ رَفَعْنَ عَنْ سُوْقِهِنَّ قَدْ بَدَتْ خَلَاخِلُهُنَّ فَأَخَذُوْا يَقُوْلُوْنَ الْغَنِيْمَةَ الْغَنِيْمَةَ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ عَهِدَ إِلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ لَا تَبْرَحُوْا فَأَبَوْا فَلَمَّا أَبَوْا صُرِفَ وُجُوْهُهُمْ فَأُصِيْبَ سَبْعُوْنَ قَتِيْلًا وَأَشْرَفَ أَبُوْ سُفْيَانَ فَقَالَ أَفِي الْقَوْمِ مُحَمَّدٌ فَقَالَ لَا تُجِيْبُوْهُ فَقَالَ أَفِي الْقَوْمِ ابْنُ أَبِيْ قُحَافَةَ قَالَ لَا تُجِيْبُوْهُ فَقَالَ أَفِي الْقَوْمِ ابْنُ الْخَطَّابِ فَقَالَ إِنَّ هَؤُلَاءِ قُتِلُوْا فَلَوْ كَانُوْا أَحْيَاءً لَأَجَابُوْا فَلَمْ يَمْلِكْ عُمَرُ نَفْسَهُ فَقَالَ كَذَبْتَ يَا عَدُوَّ اللهِ أَبْقَى اللهُ عَلَيْكَ مَا يُخْزِيْكَ قَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ اعْلُ هُبَلُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَجِيْبُوْهُ قَالُوْا مَا نَقُوْلُ قَالَ قُوْلُوا اللهُ أَعْلَى وَأَجَلُّ قَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ لَنَا الْعُزَّى وَلَا عُزَّى لَكُمْ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَجِيْبُوْهُ قَالُوْا مَا نَقُوْلُ قَالَ قُوْلُوا اللهُ مَوْلَانَا وَلَا مَوْلَى لَكُمْ قَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ يَوْمٌ بِيَوْمِ بَدْرٍ وَالْحَرْبُ سِجَالٌ وَتَجِدُوْنَ مُثْلَةً لَمْ آمُرْ بِهَا وَلَمْ تَسُؤْنِي

বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহূদ যুদ্ধের দিন আমরা মুখোমুখি অবতীর্ণ হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুল্লাহ [ইবনু যুবায়র (রাঃ)]-কে তীরন্দাজ বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করে তাদেরকে (নির্দিষ্ট এক স্থানে) মোতায়েন করলেন এবং বললেন, যদি তোমরা আমাদেরকে দেখ যে, আমরা তাদের উপর বিজয় লাভ করেছি, তাহলেও তোমরা এখান থেকে নড়বে না। আর যদি তোমরা তাদেরকে দেখ যে, তারা আমাদের উপর বিজয় লাভ করেছে, তবুও তোমরা এই স্থান ত্যাগ করে আমাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে না। এরপর আমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করলে তারা পালাতে আরম্ভ করল। এমনকি আমরা দেখতে যে, মহিলারা দ্রুত দৌড়ে পর্বতে আশ্রয় নিচ্ছে। তারা পায়ের গোছা থেকে কাপড় টেনে তুলেছে, ফলে পায়ের অলঙ্কারগুলো পর্যন্ত বেরিয়ে পড়ছে। এ সময় তারা (তীরন্দাজরা) বলতে লাগলেন, গানীমাত-গানীমাত! তখন আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, তোমরা যাতে এ স্থান ত্যাগ না কর এ ব্যাপার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। তারা অগ্রাহ্য করল। যখন তারা অগ্রাহ্য করল, তখন তাদের মুখ ফিরিয়ে দেয়া হলো এবং তাদের সত্তর জন শাহীদ হলেন। আবূ সুফইয়ান একটি উঁচু স্থানে উঠে বলল, কাওমের মধ্যে মুহাম্মাদ জীবিত আছে কি? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা তার কোন উত্তর দিও না। সে আবার বলল, কাওমের মধ্যে ইবনু আবূ কুহাফা জীবিত আছে কি? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা তার কোন জবাব দিও না। সে আবার বলল, কাওমের মধ্যে ইবনুল খাত্তাব বেঁচে আছে কি? তারপর সে বলল, এরা সকলেই নিহত হয়েছে। বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই জবাব দিত। এ সময় উমার (রাঃ) নিজেকে সামলাতে না পেরে বললেন, হে আল্লাহ্‌র দুশমন, তুমি মিথ্যা কথা বলছ। যে জিনিসে তোমাকে অপমানিত করবে আল্লাহ্ তা বাকী রেখেছেন। আবূ সুফইয়ান বলল, হুবালের জয়। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীগণকে বললেন, তোমরা তার উত্তর দাও। তারা বললেন, আমরা কী বলব? তিনি বললেন, তোমরা বল, আল্লাহ্‌র সমুন্নত ও মহান। আবূ সুফইয়ান বলল, আমাদের উযযা আছে, তোমাদের উযযা নেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা তার জবাব দাও। তারা বললেন, আমরা কী জবাব দেব? তিনি বললেন, বল-আল্লাহ্‌র আমাদের অভিভাবক, তোমাদের তো কোন অভিভাবক নেই। শেষে আবূ সুফইয়ান বলল, আজ বদর যুদ্ধের বিনিময়ের দিন। যুদ্ধ কূপ থেকে পানি উঠানোর পাত্রের মতো (অর্থাৎ একবার এ হাতে আরেবকার ও হাতে) তোমরা নাক-কান কাতা কিছু লাশ দেখতে পাবে। আমি এরূপ করতে নির্দেশ দেইনি। অবশ্য তাতে আমি নাখোশও নই।

 

[৩০৩৯] (আ.প্র. ৩৭৪১, ই.ফা. ৩৭৪৫)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৪৪

أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ جَابِرٍ قَالَ اصْطَبَحَ الْخَمْرَ يَوْمَ أُحُدٍ نَاسٌ ثُمَّ قُتِلُوْا شُهَدَاءَ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহূদের যুদ্ধের দিন কতক সাহাবী সকাল বেলা মদ পান করেছিলেন। [২৩] অতঃপর তারা শাহাদাত লাভ করেন।

 

[২৮১৫] (আ.প্র. ৩৭৪২, ই.ফা. নেই)

  •  
  •  
  •  
  •  

[২৩] তখন পর্যন্ত মদ পান করা হারাম হয়নি।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৪৫

عَبْدَانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ أَبِيْهِ إِبْرَاهِيْمَ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ أُتِيَ بِطَعَامٍ وَكَانَ صَائِمًا فَقَالَ قُتِلَ مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ وَهُوَ خَيْرٌ مِنِّيْ كُفِّنَ فِيْ بُرْدَةٍ إِنْ غُطِّيَ رَأْسُهُ بَدَتْ رِجْلَاهُ وَإِنْ غُطِّيَ رِجْلَاهُ بَدَا رَأْسُهُ وَأُرَاهُ قَالَ وَقُتِلَ حَمْزَةُ وَهُوَ خَيْرٌ مِنِّيْ ثُمَّ بُسِطَ لَنَا مِنْ الدُّنْيَا مَا بُسِطَ أَوْ قَالَ أُعْطِيْنَا مِنْ الدُّنْيَا مَا أُعْطِيْنَا وَقَدْ خَشِيْنَا أَنْ تَكُوْنَ حَسَنَاتُنَا عُجِّلَتْ لَنَا ثُمَّ جَعَلَ يَبْكِيْ حَتَّى تَرَكَ الطَّعَامَ

সা’দ ইবনু ইবরাহীমের পিতা ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুর রহমান ইব্‌ন আওফ (রাঃ)-এর নিকট কিছু খানা আনা হল। তিনি তখন সায়েম ছিলেন। তিনি বললেন, মুস’আব ইবনু উমায়র (রাঃ) ছিলেন আমার চেয়েও উত্তম ব্যক্তি। তিনি শাহাদাত লাভ করেছেন। তাকে এমন একটি চাদরে কাফন দেয়া হয়েছিল যে, তা দিয়ে মাথা ধাক্লে পা বের হয়ে যেত, আর পা ঢাকলে মাথা বের হয়ে যেত। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে হয় তিনি এ কথাও বলেছিলেন যে, হামযাহ (রাঃ) আমার চেয়েও উত্তম লোক ছিলেন। তিনি শাহাদাত লাভ করেছেন। এরপর দুনিয়ার আমাদেরকে অনেক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দেয়া হয়েছে অথবা বলেছেন যথেষ্ট পরিমাণে দুনিয়ার ধন-মাল দেয়া হয়েছে। আমার ভয় হচ্ছে হয়তো আমাদের নেকীর বদলা এখানেই দিয়ে দেয়া হচ্ছে। এরপর তিনি কাঁদতে লাগলেন, এমনকি খাদ্য পরিহার করলেন।

 

[১২৭৪] (আ.প্র. ৩৭৪৩, ই.ফা. ৩৭৪৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৪৬

عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ أَرَأَيْتَ إِنْ قُتِلْتُ فَأَيْنَ أَنَا قَالَ فِي الْجَنَّةِ فَأَلْقَى تَمَرَاتٍ فِيْ يَدِهِ ثُمَّ قَاتَلَ حَتَّى قُتِلَ

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি উহূদের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, আমি যদি শাহীদ হয়ে যাই তাহলে আমি কোথায় থাকব বলে আপনি মনে করেন? তিনি বললেন, জান্নাতে। তখন ঐ ব্যক্তি হাতের খেজুরগুলো ছুঁড়ে ফেললেন, এরপর তিনি লড়াই করলেন, এমনকি শাহীদ হয়ে গেলেন।

 

[মুসলিম ৩৩/৪১, হাঃ ১৮৯৯, আহমদ ১৪৩১৮] (আ.প্র. ৩৭৪৪, ই.ফা. ৩৭৪৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৪৭

أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ شَقِيْقٍ عَنْ خَبَّابِ بْنِ الْأَرَتِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ هَاجَرْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَبْتَغِيْ وَجْهَ اللهِ فَوَجَبَ أَجْرُنَا عَلَى اللهِ وَمِنَّا مَنْ مَضَى أَوْ ذَهَبَ لَمْ يَأْكُلْ مِنْ أَجْرِهِ شَيْئًا كَانَ مِنْهُمْ مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ قُتِلَ يَوْمَ أُحُدٍ لَمْ يَتْرُكْ إِلَّا نَمِرَةً كُنَّا إِذَا غَطَّيْنَا بِهَا رَأْسَهُ خَرَجَتْ رِجْلَاهُ وَإِذَا غُطِّيَ بِهَا رِجْلَاهُ خَرَجَ رَأْسُهُ فَقَالَ لَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم غَطُّوْا بِهَا رَأْسَهُ وَاجْعَلُوْا عَلَى رِجْلِهِ الإِذْخِرَ أَوْ قَالَ أَلْقُوْا عَلَى رِجْلِهِ مِنَ الإِذْخِرِ وَمِنَّا مَنْ قَدْ أَيْنَعَتْ لَهُ ثَمَرَتُهُ فَهُوَ يَهْدِبُهَا

খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা কেবল আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যেই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে হিজরত করেছিলাম। ফলে আল্লাহ্‌র কাছে আমাদের পুরস্কার লিখিত হয়ে গেছে। আমাদের কতক দুনিয়াতে কোন পুরস্কার ভোগ না করেই অতীত হয়ে গেছেন এবং চলে গেছেন। মাস’আব ইবনু ‘উমায়র (রাঃ) তাদের একজন। তিনি উহূদের যুদ্ধে শাহাদাত লাভ করেন। তিনি একটি পাড় বিশিষ্ট পশমী বস্ত্র ব্যতীত আর কিছু রেখে যাননি। এ দিয়ে আমরা তার মাথা ঢাকলে পা বের হয়ে যেত এবং পা ঢাকলে মাথা বের হয়ে যেত। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ কাপড় দিয়ে তার মাথা ঢেকে দাও এবং পায়ের উপর দাও ইযখির অথবা তিনি বললেন, ইযখির দ্বারা তার পা ঢেকে দাও। আমাদের কতক এমনও আছেন, যাদের ফল পেকেছে এবং তিনি এখন তা সংগ্রহ করছেন।

 

[১২৭৬] (আ.প্র. ৩৭৪৫, ই.ফা. ৩৭৪৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৪৮

أَخْبَرَنَا حَسَّانُ بْنُ حَسَّانَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَلْحَةَ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ عَمَّهُ غَابَ عَنْ بَدْرٍ فَقَالَ غِبْتُ عَنْ أَوَّلِ قِتَالِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَئِنْ أَشْهَدَنِي اللهُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيَرَيَنَّ اللهُ مَا أُجِدُّ فَلَقِيَ يَوْمَ أُحُدٍ فَهُزِمَ النَّاسُ فَقَالَ اللهُمَّ إِنِّيْ أَعْتَذِرُ إِلَيْكَ مِمَّا صَنَعَ هَؤُلَاءِ يَعْنِي الْمُسْلِمِيْنَ وَأَبْرَأُ إِلَيْكَ مِمَّا جَاءَ بِهِ الْمُشْرِكُوْنَ فَتَقَدَّمَ بِسَيْفِهِ فَلَقِيَ سَعْدَ بْنَ مُعَاذٍ فَقَالَ أَيْنَ يَا سَعْدُ إِنِّيْ أَجِدُ رِيْحَ الْجَنَّةِ دُوْنَ أُحُدٍ فَمَضَى فَقُتِلَ فَمَا عُرِفَ حَتَّى عَرَفَتْهُ أُخْتُهُ بِشَامَةٍ أَوْ بِبَنَانِهِ وَبِهِ بِضْعٌ وَثَمَانُوْنَ مِنْ طَعْنَةٍ وَضَرْبَةٍ وَرَمْيَةٍ بِسَهْمٍ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, তার চাচা [আনাস ইবনু নযর (রাঃ)] বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি [আনাস ইবনু নযর (রাঃ)] বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সর্বপ্রথম যুদ্ধে তার সঙ্গে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। যদি আল্লাহ্ তা’আলা আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কোন যুদ্ধে শারীক করেন তাহলে অবশ্যই আল্লাহ্ দেখবেন, আমি কত প্রাণপণে লড়াই করি। এরপর তিনি উহূদ যুদ্ধের দিন সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার পর লোকেরা পরাজিত হলে তিনি বলেন, হে আল্লাহ্‌র! এ সব লোক অর্থাৎ মুসলিমগণ যা করলেন, আমি এর জন্য আপনার নিকট ওযর পেশ করছি এবং মুশরিকগণ যা করল তা থেকে আমি আমার সম্পর্কহীনতা প্রকাশ করছি। এরপর তিনি তলোয়ার নিয়ে এগিয়ে গেলেন। এ সময় সা’দ ইবনু মু’আয (রাঃ)-এর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হল, তিনি বললেন, তুমি কোথায় যাচ্ছ হে সা’দ? আমি উহূদের অপর প্রান্ত হতে জান্নাতের খোশবু পাচ্ছি। এরপর তিনি যুদ্ধ করে শাহাদাত লাভ করলেন। তাকে চেনা যাচ্ছিল না। অবশেষে তার বোন তার শরীরের একটি তিল অথবা আঙ্গুলের মাথা দেখে তাকে চিনলেন। তার শরীরে আশিটিরও বেশী বর্শা, তরবারি ও তীরের আঘাত ছিল।

 

[২৮০৫] (আ.প্র. ৩৭৪৬, ই.ফা. ৩৭৪৯)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৪৯

مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ أَخْبَرَنِيْ خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَنَّهُ سَمِعَ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ فَقَدْتُ آيَةً مِنَ الْأَحْزَابِ حِيْنَ نَسَخْنَا الْمُصْحَفَ كُنْتُ أَسْمَعُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ بِهَا فَالْتَمَسْنَاهَا فَوَجَدْنَاهَا مَعَ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ {الْأَنْصَارِيِّ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ رِجَالٌ صَدَقُوْا مَا عَاهَدُوا اللهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُمْ مَّنْ قَضٰى نَحْبَه” وَمِنْهُمْ مَنْ يَّنْتَظِرُ} فَأَلْحَقْنَاهَا فِيْ سُوْرَتِهَا فِي الْمُصْحَفِ

যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা কুরআন মাজীদকে গ্রন্থের আকারে লিপিবদ্ধ করার সময় সূরা আহযাবের একটি আয়াত আমি হারিয়ে ফেলি, যা আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পাঠ করতে শুনতাম। তাই আমরা উক্ত আয়াতটি খুঁজতে লাগলাম। অবশেষে তা পেলাম খুযায়মা ইবনু সাবিত আনসারী (রাঃ)-এর কাছে। আয়াতটি হলঃ “মু’মিনদের মধ্যে কতক আল্লাহ্‌র সঙ্গে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে”- [২৪] সুরাহ আল আহযাব ৩৩:২৩)। এরপর এ আয়াতটিকে আমরা কুরআন মাজীদের ঐ সূরাতে যুক্ত করে নিলাম।

 

[২৮০৭] (আ.প্র. ৩৭৪৭, ই.ফা. ৩৭৫০)

  •  
  •  
  •  
  •  

[২৪] আনাস ইবনু নযর বাদ্‌র যুদ্ধে অংশ নিতে না পারায় অনেক অনুতপ্ত হয়েছিলেন। কারণ এ যুদ্ধের মাধ্যমে মুসলিমদের অর্জন যেমন ছিল বিরাট সফলতার তেমনি অংশগ্রহণকারীদের মর্যাদা ছিল অপরিসীম। তাই তিনি সংকল্প করেছিলেন যে, ভবিষ্যতে কাফিরদের সঙ্গে কোন যুদ্ধ সংগঠিত হলে জান বাজী রেখে লড়াই করবেন, উহূদের যুদ্ধে তিনি তার ইচ্ছা পূর্ণ করেন এবং তা প্রমাণ করে দেখিয়ে দেন। অতঃপর সে যুদ্ধেই তিনি শাহাদাতের স্বর্গীয় সুধা পানে ধন্য হন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৫০

أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ يَزِيْدَ يُحَدِّثُ عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى أُحُدٍ رَجَعَ نَاسٌ مِمَّنْ خَرَجَ مَعَهُ وَكَانَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِرْقَتَيْنِ فِرْقَةً تَقُوْلُ نُقَاتِلُهُمْ وَفِرْقَةً تَقُوْلُ لَا نُقَاتِلُهُمْ فَنَزَلَتْ {فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنٰفِقِيْنَ فِئَتَيْنِ وَاللهُ أَرْكَسَهُمْ بِمَا كَسَبُوْا} وَقَالَ إِنَّهَا طَيْبَةُ تَنْفِي الذُّنُوْبَ كَمَا تَنْفِي النَّارُ خَبَثَ الْفِضَّةِ

যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহূদের উদ্দেশে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলে যারা তাঁর সঙ্গে বের হয়েছিল, তাদের কিছু সংখ্যক লোক ফিরে এলো। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহাবীগণ তাদের ব্যাপারে দু’দলে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এরপর বললেন, আমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব। অপর দল বললেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না। এ সময় অবতীর্ণ হয় আয়াতটি-

 

فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِيْنَ فِئَتَيْنِ وَاللهُ أَرْكَسَهُمْ بِمَا كَسَبُوْا

 

‘‘তোমাদের কী হল যে, তোমরা মুনাফিকদের সম্বন্ধে দু’দল হয়ে গেলে? অথচ আল্লাহ্ তাদেরকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন তাদের কৃতকর্মের দরুন’’- (সূরাহ আন নিসা ৪/৮৮)। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা পবিত্র স্থান। আগুন যেমন রুপার ময়লা দূরে করে, তেমনি মদিনা্ও গুনাহকে দূর করে দেয়।

 

[১৮৮৪] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৪৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৫১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/১৮. অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নেই

যখন তোমাদের মধ্যে দু’দলের সাহস হারাবার উপক্রম হয়েছিল এবং আল্লাহ উভয়ের সহায়ক ছিলেন। আল্লাহ্‌র প্রতিই যেন মু’মিনগণ নির্ভর করে। (সূরা আলু ‘ইমরান ৩/১২২)

৪০৫১

مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ ابْنِ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرٍو عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ فِيْنَا {إِذْ هَمَّتْ طَّآئِفَتَانِ مِنْكُمْ أَنْ تَفْشَلَا} بَنِيْ سَلِمَةَ وَبَنِيْ حَارِثَةَ وَمَا أُحِبُّ أَنَّهَا لَمْ تَنْزِلْ وَاللهُ يَقُوْلُ {وَاللهُ وَلِيُّهُمَا}

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, إِذْ هَمَّتْ طَائِفَتَانِ مِنْكُمْ أَنْ تَفْشَلَا ‘‘যখন তোমাদের মধ্যে দু’দলের সাহস হারাবার উপক্রম হয়েছিল’’ আয়াতটি আমাদের সম্পর্কে তথা বনূ সালিমাহ এবং বনু হারিসাহ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। আয়াতটি অবতীর্ণ না হোক তা আমি চাইনি। কেননা এ আয়াতেই আল্লাহ বলেছেন, ‘‘আল্লাহ উভয় দলেরই সাহায্যকারী’’।

 

[৪৫৫৮; মুসলিম ৪৪/৪৩, হাঃ ২৫০৫] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৪৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৫২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৫২

قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ أَخْبَرَنَا عَمْرٌو عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ نَكَحْتَ يَا جَابِرُ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ مَاذَا أَبِكْرًا أَمْ ثَيِّبًا قُلْتُ لَا بَلْ ثَيِّبًا قَالَ فَهَلَّا جَارِيَةً تُلَاعِبُكَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ أَبِيْ قُتِلَ يَوْمَ أُحُدٍ وَتَرَكَ تِسْعَ بَنَاتٍ كُنَّ لِيْ تِسْعَ أَخَوَاتٍ فَكَرِهْتُ أَنْ أَجْمَعَ إِلَيْهِنَّ جَارِيَةً خَرْقَاءَ مِثْلَهُنَّ وَلَكِنْ امْرَأَةً تَمْشُطُهُنَّ وَتَقُوْمُ عَلَيْهِنَّ قَالَ أَصَبْتَ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে জাবির! তুমি বিয়ে করেছ কি? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, কেমন, কুমারী না অকুমারী? আমি বললাম, না, বরং অকুমারী। তিনি বললেন, কোন কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না কেন? সে তো তোমার সঙ্গে আমোদ-ফূর্তি করত। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার আব্বা উহূদের যুদ্ধে শাহাদাত লাভ করেছেন। রেখে গেছেন নয়টি মেয়ে। এখন আমার নয় বোন। এ কারণে আমি তাদের সঙ্গে তাদেরই মতো একজন আনাড়ি মেয়েকে এনে একত্রিত করা পছন্দ করিনি। বরং এমন একটি মহিলাকে (পছন্দ করলাম) যে তাদের চুল আঁচড়ে দিতে পারবে এবং তাদের দেখাশোনা করতে পারবে। তিনি বললেন, ঠিক করেছ।

 

[৪৪৩] (আ.প্র. ৩৭৫০, ই.ফা. ৩৭৫৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৫৩

أَحْمَدُ بْنُ أَبِيْ سُرَيْجٍ أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ فِرَاسٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ قَالَ حَدَّثَنِيْ جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ أَبَاهُ اسْتُشْهِدَ يَوْمَ أُحُدٍ وَتَرَكَ عَلَيْهِ دَيْنًا وَتَرَكَ سِتَّ بَنَاتٍ فَلَمَّا حَضَرَ جِزَازُ النَّخْلِ قَالَ أَتَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ قَدْ عَلِمْتَ أَنَّ وَالِدِيْ قَدْ اسْتُشْهِدَ يَوْمَ أُحُدٍ وَتَرَكَ دَيْنًا كَثِيْرًا وَإِنِّيْ أُحِبُّ أَنْ يَرَاكَ الْغُرَمَاءُ فَقَالَ اذْهَبْ فَبَيْدِرْ كُلَّ تَمْرٍ عَلَى نَاحِيَةٍ فَفَعَلْتُ ثُمَّ دَعَوْتُهُ فَلَمَّا نَظَرُوْا إِلَيْهِ كَأَنَّهُمْ أُغْرُوْا بِيْ تِلْكَ السَّاعَةَ فَلَمَّا رَأَى مَا يَصْنَعُوْنَ أَطَافَ حَوْلَ أَعْظَمِهَا بَيْدَرًا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ جَلَسَ عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ ادْعُ لِيْ أَصْحَابَكَ فَمَا زَالَ يَكِيْلُ لَهُمْ حَتَّى أَدَّى اللهُ عَنْ وَالِدِيْ أَمَانَتَهُ وَأَنَا أَرْضَى أَنْ يُؤَدِّيَ اللهُ أَمَانَةَ وَالِدِيْ وَلَا أَرْجِعَ إِلَى أَخَوَاتِيْ بِتَمْرَةٍ فَسَلَّمَ اللهُ الْبَيَادِرَ كُلَّهَا وَحَتَّى إِنِّيْ أَنْظُرُ إِلَى الْبَيْدَرِ الَّذِيْ كَانَ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كَأَنَّهَا لَمْ تَنْقُصْ تَمْرَةً وَاحِدَةً

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উহূদের দিন তার পিতা ছয়টি মেয়ে ও কিছু ঋণ তার উপর রেখে শাহাদাত লাভ করেন। এরপর যখন খেজুর কাটার সময় এল (তিনি বলেন) তখন আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললাম, আপনি জানেন যে, আমার পিতা উহূদ যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন এবং বিশাল ঋণ ভার রেখে গেছেন। এখন আমি চাই, ঋণদাতাগণ আপনাকে দেখুক। তখন তিনি বললেন, তুমি যাও এবং বাগানের এক কোণে সব খেজুর কেটে জমা কর। [জাবির (রাঃ) বলেন] আমি তাই করলাম। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ডেকে আনলাম। যখন তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলেন, সে সময় তারা আমার উপর আরো রাগান্বিত হলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের আচরণ দেখে বাগানের বড় গাদাটির চারপার্শ্বে তিনবার ঘুরে এসে এর উপর বসে বললেন, তোমার ঋণদাতাদেরকে ডাক। তিনি তাদেরকে মেপে মেপে দিতে লাগলেন। অবশেষে আল্লাহ তা’আলা আমার পিতার আমানাত আদায় করে দিলেন। আমিও চাচ্ছিলাম যে, একটি খেজুর নিয়ে আমি আমার বোনদের নিকট না যেতে পারলেও আল্লাহ তা’আলা যেন আমার পিতার আমানত আদায় করে দেন। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা খেজুরের সবকটি গাদাই অবশিষ্ট রাখলেন। এমনকি আমি দেখলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে গাদায় উপবিষ্ট ছিলেন তার থেকে যেন একটি খেজুরও কমেনি।

 

[২১২৭] (আ.প্র. ৩৭৫১, ই.ফা. ৩৭৫৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৫৪

عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِيْ وَقَّاصٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ وَمَعَهُ رَجُلَانِ يُقَاتِلَانِ عَنْهُ عَلَيْهِمَا ثِيَابٌ بِيْضٌ كَأَشَدِّ الْقِتَالِ مَا رَأَيْتُهُمَا قَبْلُ وَلَا بَعْدُ

সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহূদের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আমি আরো দু’ ব্যক্তিকে দেখলাম, যারা সাদা পোশাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষে তুমুল যুদ্ধ করছে। আমি তাদেরকে আগেও দেখিনি আর পরেও দেখিনি।

 

[৫৮২৬; মুসলিম ৪৩/১০, হাঃ ২৩০৬] (আ.প্র. ৩৭৫২, ই.ফা. ৩৭৫৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৫৫

عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ هَاشِمٍ السَّعْدِيُّ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ يَقُوْلُ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ أَبِيْ وَقَّاصٍ يَقُوْلُ نَثَلَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كِنَانَتَهُ يَوْمَ أُحُدٍ فَقَالَ ارْمِ فِدَاكَ أَبِيْ وَأُمِّي

সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহূদের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার জন্য তাঁর তীরাধার খুলে দিয়ে বললেন, তোমার জন্য আমার মাতা-পিতা কুরবান হোক; তুমি তীর চালাতে থাক।

 

[৩৭২৫] (আ.প্র. ৩৭৫৩, ই.ফা. ৩৭৫৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৫৬

مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ قَالَ سَمِعْتُ سَعْدًا يَقُوْلُ جَمَعَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَبَوَيْهِ يَوْمَ أُحُدٍ

সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহূদের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার উদ্দেশ্যে তাঁর পিতা-মাতাকে এক সঙ্গে উল্লেখ করেছেন।

 

[৩৭২৫] (আ.প্র. ৩৭৫৪, ই.ফা. ৩৭৫৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৫৭

قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ ابْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ قَالَ قَالَ سَعْدُ بْنُ أَبِيْ وَقَّاصٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ لَقَدْ جَمَعَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ أَبَوَيْهِ كِلَيْهِمَا يُرِيْدُ حِيْنَ قَالَ فِدَاكَ أَبِيْ وَأُمِّيْ وَهُوَ يُقَاتِلُ

সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহূদের দিন আমার জন্য তাঁর পিতা-মাতা উভয়কে একসঙ্গে উল্লেখ করেছেন। এ কথা বলে তিনি বোঝাতে চান যে, তিনি লড়াই করছিলেন এমন সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বলেছেন, তোমার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক।

 

[৩৭২৫] (আ.প্র. ৩৭৫৫ ই.ফা. ৩৭৫৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৫৮

أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ عَنْ سَعْدٍ عَنْ ابْنِ شَدَّادٍ قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ مَا سَمِعْتُ النَّبِيَ صلى الله عليه وسلم يَجْمَعُ أَبَوَيْهِ لِأَحَدٍ غَيْرَ سَعْدٍ.

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সা’দ (রাঃ) ব্যতীত অন্য কারো জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর পিতা-মাতার নাম একত্রে উল্লেখ করতে আমি শুনিনি।

 

[২৯০৫] (আ.প্র. ৩৭৫৬, ই.ফা. ৩৭৫৯)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৫৯

يَسَرَةُ بْنُ صَفْوَانَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شَدَّادٍ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ مَا سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم جَمَعَ أَبَوَيْهِ لِأَحَدٍ إِلَّا لِسَعْدِ بْنِ مَالِكٍ فَإِنِّيْ سَمِعْتُهُ يَقُوْلُ يَوْمَ أُحُدٍ يَا سَعْدُ ارْمِ فِدَاكَ أَبِيْ وَأُمِّي

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সা’দ ইবনু মালিক (রাঃ) ব্যতীত অন্য কারো জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর পিতা-মাতার নাম একত্রে উল্লেখ করতে আমি শুনিনি। উহূদ যুদ্ধের দিন আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, তুমি তীর চালিয়ে যাও, আমার পিতা-মাতা তোমার জন্য কুরবান হোক। [২৫]

 

[২৯০৫] (আ.প্র. ৩৭৫৭, ই.ফা. ৩৭৬০)

  •  
  •  
  •  
  •  

[২৫] এটি একটি আরবীয় বাকরীতি। কারো প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশের উদ্দেশ্যে এ ধরনের বাকধারা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৬০

مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ مُعْتَمِرٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ زَعَمَ أَبُوْ عُثْمَانَ أَنَّهُ لَمْ يَبْقَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَعْضِ تِلْكَ الْأَيَّامِ الَّتِيْ يُقَاتِلُ فِيْهِنَّ غَيْرُ طَلْحَةَ وَسَعْدٍ عَنْ حَدِيْثِهِمَا

আবূ ‘উসমান (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে দিনগুলোতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুদ্ধ করেছেন তার কোন এক সময়ে ত্বলহা এবং সা‘দ (রাঃ) ব্যতীত অন্য কেউ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলেন না। হাদীসটি আবূ ‘উসমান (রাঃ) তাদের উভয়ের নিকট থেকে শুনে বর্ণনা করেছেন।

 

[৩৭২২, ৩৭২৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৫৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৬১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৬১

مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ مُعْتَمِرٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ زَعَمَ أَبُوْ عُثْمَانَ أَنَّهُ لَمْ يَبْقَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَعْضِ تِلْكَ الْأَيَّامِ الَّتِيْ يُقَاتِلُ فِيْهِنَّ غَيْرُ طَلْحَةَ وَسَعْدٍ عَنْ حَدِيْثِهِمَا

আবূ ‘উসমান (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে দিনগুলোতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুদ্ধ করেছেন তার কোন এক সময়ে ত্বলহা এবং সা‘দ (রাঃ) ব্যতীত অন্য কেউ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলেন না। হাদীসটি আবূ ‘উসমান (রাঃ) তাদের উভয়ের নিকট থেকে শুনে বর্ণনা করেছেন।

 

[৩৭২২, ৩৭২৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৫৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৬১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়

  •  সরাসরি

৪০৬২

عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِي الْأَسْوَدِ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يُوْسُفَ قَالَ سَمِعْتُ السَّائِبَ بْنَ يَزِيْدَ قَالَ صَحِبْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ وَطَلْحَةَ بْنَ عُبَيْدِ اللهِ وَالْمِقْدَادَ وَسَعْدًا رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ فَمَا سَمِعْتُ أَحَدًا مِنْهُمْ يُحَدِّثُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَّا أَنِّيْ سَمِعْتُ طَلْحَةَ يُحَدِّثُ عَنْ يَوْمِ أُحُدٍ

সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আউফ, ত্বলহা ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ, মিকদাদ এবং সা’দ (রাঃ)-এর সাহচর্য পেয়েছি। তাদের কাউকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণনা করতে শুনিনি, তবে কেবল ত্বলহা (রাঃ)-কে উহূদ যুদ্ধ সম্পর্কে বর্ণনা করতে শুনেছি।

 

[২৮০৫] (আ.প্র. ৩৭৫৯, ই.ফা. ৩৭৬২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৬৩

عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا وَكِيْعٌ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ قَيْسٍ قَالَ رَأَيْتُ يَدَ طَلْحَةَ شَلَّاءَ وَقَى بِهَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ

ক্বায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ত্বলহা (রাঃ)-এর হাত অবশ দেখেছি। উহূদের দিন তিনি এ হাত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতিরক্ষায় লাগিয়েছিলেন।

 

[৩৭২৪] (আ.প্র. ৩৭৬০, ই.ফা. ৩৭৬৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৬৪

أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمَ أُحُدٍ انْهَزَمَ النَّاسُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبُوْ طَلْحَةَ بَيْنَ يَدَيْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُجَوِّبٌ عَلَيْهِ بِحَجَفَةٍ لَهُ وَكَانَ أَبُوْ طَلْحَةَ رَجُلًا رَامِيًا شَدِيْدَ النَّزْعِ كَسَرَ يَوْمَئِذٍ قَوْسَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا وَكَانَ الرَّجُلُ يَمُرُّ مَعَهُ بِجَعْبَةٍ مِنْ النَّبْلِ فَيَقُوْلُ انْثُرْهَا لِأَبِيْ طَلْحَةَ قَالَ وَيُشْرِفُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَنْظُرُ إِلَى الْقَوْمِ فَيَقُوْلُ أَبُوْ طَلْحَةَ بِأَبِيْ أَنْتَ وَأُمِّيْ لَا تُشْرِفْ يُصِيْبُكَ سَهْمٌ مِنْ سِهَامِ الْقَوْمِ نَحْرِيْ دُوْنَ نَحْرِكَ وَلَقَدْ رَأَيْتُ عَائِشَةَ بِنْتَ أَبِيْ بَكْرٍ وَأُمَّ سُلَيْمٍ وَإِنَّهُمَا لَمُشَمِّرَتَانِ أَرَى خَدَمَ سُوْقِهِمَا تُنْقِزَانِ الْقِرَبَ عَلَى مُتُوْنِهِمَا تُفْرِغَانِهِ فِيْ أَفْوَاهِ الْقَوْمِ ثُمَّ تَرْجِعَانِ فَتَمْلَآَنِهَا ثُمَّ تَجِيئَانِ فَتُفْرِغَانِهِ فِيْ أَفْوَاهِ الْقَوْمِ وَلَقَدْ وَقَعَ السَّيْفُ مِنْ يَدَيْ أَبِيْ طَلْحَةَ إِمَّا مَرَّتَيْنِ وَإِمَّا ثَلَاثًا

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহূদের দিন লোকেরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ছেড়ে যেতে লাগলেও আবূ ত্বলহা (রাঃ) ঢাল হাতে নিয়ে তাঁকে আড়াল করে রাখলেন। আবূ ত্বলহা (রাঃ), ধনুক খুব জোরে টেনে তীর ছুঁড়লেন। সেদিন তিনি দু’টি অথবা তিনটি ধনুক ভেঙ্গে ছিলেন। সেদিন যে কেউ তীরাধার নিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিল তাকেই তিনি বলেছেন, তীরগুলো খুলে আবূ ত্বলহার জন্য রেখে দাও। বর্ণনাকারী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা উঁচু করে যেমনই শত্রুদের প্রতি তাকাতেন, তখনই আবূ ত্বলহা (রাঃ) বলতেন, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনি মাথা উঁচু করবেন না। তাদের নিক্ষিপ্ত তীরের কোনটি আপনার শরীরে লেগে যেতে পারে। আপনার বক্ষের পরিবর্তে আছে আমার বক্ষ। [আনাস (রাঃ) বলেন] সেদিন আমি ‘আয়িশা বিনত আবূ বাকর এবং উম্মু সুলায়ম (রাঃ)কে দেখেছি, তাঁরা দু’জনেই পায়ের কাপড় গুটিয়ে নিয়েছিলেন। আমি তাঁদের পায়ের তলা দেখতে পেয়েছি। তারা মশক ভর্তি করে পিঠে পানি বয়ে আনতেন এবং (আহত) লোকেদের মুখে ঢেলে দিতেন। আবার ফিরে যেতেন এবং মশক ভর্তি পানি এনে লোকেদের মুখে ঢেলে দিতেন। সেদিন আবূ ত্বলহা (রাঃ)-এর হাত থেকে দু’বার কিংবা তিনবার তরবারিটি পড়ে গিয়েছিল।

 

[২৮৮০] (আ.প্র. ৩৭৬১, ই.ফা. ৩৭৬৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৬৫

عُبَيْدُ اللهِ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ لَمَّا كَانَ يَوْمَ أُحُدٍ هُزِمَ الْمُشْرِكُوْنَ فَصَرَخَ إِبْلِيْسُ لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِ أَيْ عِبَادَ اللهِ أُخْرَاكُمْ فَرَجَعَتْ أُوْلَاهُمْ فَاجْتَلَدَتْ هِيَ وَأُخْرَاهُمْ فَبَصُرَ حُذَيْفَةُ فَإِذَا هُوَ بِأَبِيْهِ الْيَمَانِ فَقَالَ أَيْ عِبَادَ اللهِ أَبِيْ أَبِيْ قَالَ قَالَتْ فَوَاللهِ مَا احْتَجَزُوْا حَتَّى قَتَلُوْهُ فَقَالَ حُذَيْفَةُ يَغْفِرُ اللهُ لَكُمْ قَالَ عُرْوَةُ فَوَاللهِ مَا زَالَتْ فِيْ حُذَيْفَةَ بَقِيَّةُ خَيْرٍ حَتَّى لَحِقَ بِاللهِ عَزَّ وَجَلَّ بَصُرْتُ عَلِمْتُ مِنَ الْبَصِيْرَةِ فِي الْأَمْرِ وَأَبْصَرْتُ مِنْ بَصَرِ الْعَيْنِ وَيُقَالُ بَصُرْتُ وَأَبْصَرْتُ وَاحِد

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহূদ যুদ্ধে মুশরিকরা যখন পরাস্ত হল তখন অভিশপ্ত ইবলিস চীৎকার করে বলল, হে আল্লাহর বান্দারা! তোমাদের পেছনে আরেকটি দল আসছে। তখন অগ্রসেনারা পেছনে ফিরলে তাদের ও পশ্চাদভাগের মধ্যে পরস্পর সংঘর্ষ হল। হুযাইফাহ (রাঃ) দেখতে পেলেন যে, তাঁর পিতা ইয়ামন (রাঃ)-এর সম্মুখীন। তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহর বান্দারা! (ইনি তো) আমার পিতা। বর্ণনাকারী (‘আয়িশাহ) বলেন, আল্লাহর কসম! এতে তাঁরা তাকে হত্যা না করা পর্যন্ত ক্ষান্ত হল না। তখন হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, আল্লাহ আপনাদেরকে ক্ষমা করে দিন। (বর্ণনাকারী) ‘উরওয়াহ (রহ.) বলেন, আল্লাহর কসম! আল্লাহর সঙ্গে মিলনের পূর্ব পর্যন্ত হুযাইফাহ (রাঃ)-এর মনে এ ঘটনার অনুতাপ বাকী ছিল।

 

ইমাম বুখারী (রহ.) বলেছেনঃ بَصُرْتُ শব্দটি بَصِيْرَةِ শব্দ থেকে উৎপন্ন যার অর্থ হল কোন কিছু জানা। যেমন বলা হয় بَصِيْرَةِ فِي الْأَمْرِ আবার أَبْصَرْتُ শব্দটির অর্থ হল চোখ দিয়ে দেখা। কেউ কেউ আবার بَصُرْتُ ও أَبْصَرْتُ শব্দদ্বয়কে সমার্থক বলে উল্লেখ করেছেন।

 

[৩২৯০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৬২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৬৫)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/১৯. অধ্যায়ঃ

মহান আল্লাহর বাণীঃ

যেদিন উভয় দল পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিল, সেদিন তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, তারা তো ছিল এমন, যাদের শয়তান পদঙ্খলন ঘটিয়েছিল তাদের কৃতকর্মের দরুন। অবশ্য আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম সহনশীল। (আলু ‘ইমরান ৩/১৫৫)

৪০৬৬

عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا أَبُوْ حَمْزَةَ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ مَوْهَبٍ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ حَجَّ الْبَيْتَ فَرَأَى قَوْمًا جُلُوْسًا فَقَالَ مَنْ هَؤُلَاءِ الْقُعُوْدُ قَالُوْا هَؤُلَاءِ قُرَيْشٌ قَالَ مَنْ الشَّيْخُ قَالُوا ابْنُ عُمَرَ فَأَتَاهُ فَقَالَ إِنِّيْ سَائِلُكَ عَنْ شَيْءٍ أَتُحَدِّثُنِيْ قَالَ أَنْشُدُكَ بِحُرْمَةِ هَذَا الْبَيْتِ أَتَعْلَمُ أَنَّ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ فَرَّ يَوْمَ أُحُدٍ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَتَعْلَمُهُ تَغَيَّبَ عَنْ بَدْرٍ فَلَمْ يَشْهَدْهَا قَالَ نَعَمْ قَالَ فَتَعْلَمُ أَنَّهُ تَخَلَّفَ عَنْ بَيْعَةِ الرِّضْوَانِ فَلَمْ يَشْهَدْهَا قَالَ نَعَمْ قَالَ فَكَبَّرَ قَالَ ابْنُ عُمَرَ تَعَالَ لِأُخْبِرَكَ وَلِأُبَيِّنَ لَكَ عَمَّا سَأَلْتَنِيْ عَنْهُ أَمَّا فِرَارُهُ يَوْمَ أُحُدٍ فَأَشْهَدُ أَنَّ اللهَ عَفَا عَنْهُ وَأَمَّا تَغَيُّبُهُ عَنْ بَدْرٍ فَإِنَّهُ كَانَ تَحْتَهُ بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَتْ مَرِيْضَةً فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ لَكَ أَجْرَ رَجُلٍ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا وَسَهْمَهُ وَأَمَّا تَغَيُّبُهُ عَنْ بَيْعَةِ الرِّضْوَانِ فَإِنَّهُ لَوْ كَانَ أَحَدٌ أَعَزَّ بِبَطْنِ مَكَّةَ مِنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ لَبَعَثَهُ مَكَانَهُ فَبَعَثَ عُثْمَانَ وَكَانَتْ بَيْعَةُ الرِّضْوَانِ بَعْدَمَا ذَهَبَ عُثْمَانُ إِلَى مَكَّةَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ الْيُمْنَى هَذِهِ يَدُ عُثْمَانَ فَضَرَبَ بِهَا عَلَى يَدِهِ فَقَالَ هَذِهِ لِعُثْمَانَ اذْهَبْ بِهَذَا الْآنَ مَعَكَ

উসমান ইবনু মাওহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হাজ্জ পালনের উদ্দেশে এক ব্যক্তি বাইতুল্লাহ্য় এসে সেখানে একদল লোককে উপবিষ্ট অবস্থায় দেখে জিজ্ঞেস করলেন, এ উপবিস্ট লোকগুলো কে? তারা বললেন, এরা হচ্ছেন কুরাইশ গোত্রের লোক। লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলেন, এ বৃদ্ধ লোকটি কে? তারা বললেন, ইনি হচ্ছেন ইবনু ‘উমার (রাঃ)। তখন লোকটি তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, আমি আপনাকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করব, আপনি আমাকে বলে দিবেন কি? এরপর লোকটি বললেন, আমি আপনাকে এই ঘরের সম্মানের কসম দিয়ে বলছি, উহূদের দিন ‘উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) পালিয়েছিলেন, এ কথা আপনি কি জানেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। লোকটি আবার বললেন, তিনি বায়আতে রিদওয়ানেও অনুপস্থিত ছিলেন- এ কথাও কি আপনি জানেন? তিনি বললে্ন হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি তখন আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করল। তখন ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, এসো, এখন আমি তোমাকে সব ব্যাপারে জানিয়ে দেই এবং তোমার প্রশ্নগুলোর উত্তর খুলে বলি। (১) উহূদের দিন তাঁর পালানোর ব্যাপার সম্বন্ধে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। (২) বদর থেকে তাঁর অনুপস্থিত থাকার কারণ এই যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা (রুকাইয়া) তাঁর স্ত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন অসুস্থ। তাই তাঁকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদের মতোই তুমি সাওয়াব পাবে এবং গানীমাতের অংশ পাবে। (৩) বায়’আতে রিদওয়ান থেকে তাঁর অনুপস্থিতির কারণ হল, মাক্কাহ্ উপত্যকায় ‘উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) থেকে অধিক মর্যাদাবান কোন ব্যক্তি থাকলে অবশ্যই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে তাঁর স্থলে মক্কা পাঠাতেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ জন্য ‘উসমান (রাঃ)-কে পাঠালেন। ‘উসমান (রাঃ)-এর মক্কা গমনের পরই বাই’আতে রিদওয়ান সংঘটিত হয়েছিল। তাই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ডান হাতখানা অপর হাতের উপর রেখে বলেছিলেন, এটাই উসমানের হাত। [২৬] এরপর তিনি (‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার) বললেন, এই হল ‘উসমান (রাঃ)-এর অনুপস্থিতির কারণ। এখন তুমি এ কথাগুলো তোমার সঙ্গে নিয়ে যাও।

 

[৩১৩০] (আ.প্র. ৩৭৬৩, ই.ফা. ৩৭৬৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

[২৬] হিজরী ৬ সনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ১৪০০ সাহাবীসহ উমরাহ’র জন্য মাক্কাহ্‌ আসলে হুদাইবিয়া নামক স্থানে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। এরই মাঝে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, ‘উসমান (রাঃ)-কে মাক্কাহ্তে হত্যা করা হয়েছে। অন্যায় হত্যার প্রতিশোধ স্পৃহা চরমে উঠলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি বাবলা বৃক্ষের নিচে সকল সাহাবীদের নিকট হতে প্রতিশোধ গ্রহনের জন্য বাই’আত গ্রহণ করেন। এ বাই’আতকেই বাই’আতে রিযওয়ান বলা হয়। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উসমান (রাঃ)-এর মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন না আর তাকে এ বাই’আতের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করা পছন্দ করলেন না। তাই তিনি ‘উসমানের পক্ষ হতে স্বীয় ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বাই’আত নিয়ে বললেন, এটিই ‘উসমানের হাত।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/২০. অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নেই

“স্মরণ কর, যখন তোমরা উপরের দিকে পালাচ্ছিলে এবং পেছনে ফিরে কারো প্রতি তাকাচ্ছিলে না, অথচ রসূল পেছন দিক থেকে তোমাদের ডাকছিল। ফলে তিনি তোমাদের দিলেন দুঃখের উপর দুঃখ, যাতে তোমরা দুঃখ না কর যা তোমরা হারিয়েছ তার জন্য, আর না সে বিপদের জন্য যা তোমাদের উপর আপতিত হয়েছে। আর আল্লাহ পূর্ণ অবহিত সে বিষয়ে যা তোমরা কর।” (সূরা আলূ ‘ইমরান ৩/১৫৩)

৪০৬৭

عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ جَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الرَّجَّالَةِ يَوْمَ أُحُدٍ عَبْدَ اللهِ بْنَ جُبَيْرٍ وَأَقْبَلُوْا مُنْهَزِمِيْنَ فَذَاكَ إِذْ يَدْعُوْهُمْ الرَّسُوْلُ فِيْ أُخْرَاهُمْ

বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহূদের দিন ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ)-কে পদাতিক বাহিনীর অধিনায়ক নিযুক্ত করেছিলেন। কিন্তু তারা পরাস্ত হয়ে (মাদীনাহর পানে) ছুটে গিয়েছিলেন। এটাই হচ্ছে, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তাদেরকে পেছন থেকে ডাক দেয়া।

 

[৩০৩৯] (আ.প্র. ৩৭৬৪, ই.ফা. ৩৭৬৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/২১. অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ

তারপর তিনি তোমাদের উপর দুঃখের পর প্রশান্তি অবতীর্ণ করলেন তন্দ্রারুপে, যা তোমাদের একদলকে আচ্ছন্ন করেছিল। আর একদল ছিল যাদের বিব্রত করে রেখেছিল তাদের প্রাণের চিন্তা, তারা আল্লাহর প্রতি জাহিলী যুগের ধারণার মত অবাস্তব ধারণা করেছিল। তারা বলছিলঃ এ ব্যাপারে আমাদের হাতে কি কিছু করার নেই? বলুনঃ নিশ্চয় যাবতীয় বিষয় একমাত্র আল্লাহরই হাতে। তারা নিজেদের মনে গোপন রাখে যা আপনার কাছে প্রকাশ করে না। তারা বলেঃ যদি আমাদের হাতে এ ব্যাপারে কিছু করার থাকত তাহলে আমরা এখানে নিহত হতাম না। বলুনঃ যদি তোমরা নিজেদের ঘরেও থাকতে, তবুও যাদের নিহত হওয়া নির্ধারিত ছিল তারা বেরিয়ে পড়ত নিজেদের মৃত্যুর স্থানের দিকে। এসব এজন্য যে, আল্লাহ তোমাদের মনে যা আছে তা পরীক্ষা করবেন এবং তোমাদের অন্তরে যা আছে তা নির্মল করবেন। মনের গোপন বিষয় আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। (সুরাহ আলু ‘ইমরান ৩/১৫৪)

৪০৬৮

و قَالَ لِيْ خَلِيْفَةُ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنْ أَبِيْ طَلْحَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كُنْتُ فِيْمَنْ تَغَشَّاهُ النُّعَاسُ يَوْمَ أُحُدٍ حَتَّى سَقَطَ سَيْفِيْ مِنْ يَدِيْ مِرَارًا يَسْقُطُ وَآخُذُهُ وَيَسْقُطُ فَآخُذُهُ

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

খলীফা (রহঃ) আমার নিকট …… আবূ ত্বলহা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, উহূদ যুদ্ধের দিন যারা তন্দ্রায় আচ্ছন্ন [১] হয়েছিলেন তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম একজন। এমনকি আমার তলোয়ারটি আমার হাত থেকে কয়েক দফা পড়েও গিয়েছিল। তলোয়ারটি পড়ে যেত, আমি তা তুলে নিতাম, আবার পড়ে যেত, আমি আবার তা তুলে নিতাম।

 

[৪৫৬২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ অনুচ্ছেদ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ অনুচ্ছেদ)

  •  
  •  
  •  
  •  

[১] উহূদ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুসলিম সৈনিকদের জন্য তন্দ্রাচ্ছন্ন হওয়াটা ছিল এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা। আবূ তালহা (রাঃ)-ও তাদের মধ্য হতে একজন ছিলেন যিনি তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/২২. অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নেই

“আপনার কিছু করণীয় নেই এ ব্যাপারে যে, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন অথবা শাস্তি দেবেন। কারণ তারা তো যালিম।” (সুরাহ আলূ ‘ইমরান ৩/১২৮)

 

হুমায়দ এবং সাবিত (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, উহূদের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তখন তিনি বললেন, যারা তাদের নাবীকে আঘাত করে তারা কী করে সফল হবে। এ কথার প্রেক্ষাপটেই অবতীর্ণ হয়-

৪০৬৯

يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ السُّلَمِيُّ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِيْ سَالِمٌ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ الرُّكُوْعِ مِنْ الرَّكْعَةِ الآخِرَةِ مِنَ الْفَجْرِ يَقُوْلُ اللهُمَّ الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا وَفُلَانًا بَعْدَ مَا يَقُوْلُ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ فَأَنْزَلَ اللهُ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّهُمْ ظَالِمُوْنَ}

আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ফাজরের সলাতের শেষ রাকআতে রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ বলার পর বলতে শুনেছেন, হে আল্লাহ! আপনি অমুক, অমুক এবং অমুকের উপর লা’নাত বর্ষণ করুন। তখন আল্লাহ অবতীর্ণ করলেন, তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদেরকে শাস্তি দেবেন, এ বিষয়ে আপনার কিছুই নেই। কারণ তারা যালিম।

 

[৪০৭০, ৪৫৫৯, ৭৩৪৬] (আ.প্র. ৩৭৬৫, ই.ফা. ৩৭৬৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৭০

وَعَنْ حَنْظَلَةَ بْنِ أَبِيْ سُفْيَانَ سَمِعْتُ سَالِمَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يَقُوْلُ كَانَ رَسُوْلُ الله صلى الله عليه وسلم يَدْعُوْ عَلَى صَفْوَانَ بْنِ أُمَيَّةَ وَسُهَيْلِ بْنِ عَمْرٍو وَالْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ فَنَزَلَتْ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّهُمْ ظَالِمُوْنَ}

সালিম ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাফওয়ান ইবনু উমাইয়া, সুহায়ল ইবনু আমর এবং হারিস ইবনু হিশামের জন্য বদদু’আ করতেন। এ ব্যাপারেই অবতীর্ণ হয়েছে- “তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদেরকে শাস্তি দেবেন, এ বিষয়ে আপনার করনীয় কিছুই নেই। কারণ তারা যালিম।”

 

[৪০৬৯] (আ.প্র. ৩৭৬৫, ই.ফা. ৩৭৬৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/২৩. অধ্যায়ঃ

উম্মু সালীত্বের [২৮] মর্যাদা সম্পর্কিত আলোচনা

[২৮] সালীত্বের পিতা হিজরাতের পূর্বে মারা গেলে সালীত্বের মা অর্থাৎ উম্মু সালীত্ব মালিক ইবনু সিনানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তাঁর গর্ভেই বিখ্যাত সাহাবী আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) জন্মলাভ করেন।

৪০৭১

يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يُوْنُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ وَقَالَ ثَعْلَبَةُ بْنُ أَبِيْ مَالِكٍ إِنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَسَمَ مُرُوْطًا بَيْنَ نِسَاءٍ مِنْ نِسَاءِ أَهْلِ الْمَدِيْنَةِ فَبَقِيَ مِنْهَا مِرْطٌ جَيِّدٌ فَقَالَ لَهُ بَعْضُ مَنْ عِنْدَهُ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ أَعْطِ هَذَا بِنْتَ رَسُوْلِ اللهِ الَّتِيْ عِنْدَكَ يُرِيْدُوْنَ أُمَّ كُلْثُوْمٍ بِنْتَ عَلِيٍّ فَقَالَ عُمَرُ أُمُّ سَلِيْطٍ أَحَقُّ بِهِ وَأُمُّ سَلِيْطٍ مِنْ نِسَاءِ الْأَنْصَارِ مِمَّنْ بَايَعَ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ عُمَرُ فَإِنَّهَا كَانَتْ تُزْفِرُ لَنَا الْقِرَبَ يَوْمَ أُحُدٍ

সা’লাবাহ্ ইবনু আবূ মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) কতকগুলো চাদর মাদীনাহবাসী মহিলাদের মধ্যে বন্টন করলেন। পরে একটি সুন্দর চাদর বাকী থেকে গেল। তার নিকট উপস্থিত লোকদের একজন বলে উঠলেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! এ চাদরখানা আপনার স্ত্রী রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নাতনি ‘আলী (রাঃ)-এর কন্যা উম্মে কুলসুম (রাঃ)-কে দিয়ে দিন। ‘উমার (রাঃ) বললেন, উম্মু সালীত্ব (রাঃ)তার চেয়েও অধিক হাকদার। উম্মু সালীত্ব (রাঃ)আনসারী মহিলা। তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেছেন। ‘উমার (রাঃ) বললেন, উহূদের দিন এ মহিলা আমাদের জন্য মশ্ক ভরে পানি এনেছিলেন।

 

[২৮৮১] (আ.প্র. ৩৭৬৬, ই.ফা. ৩৭৬৯)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/২৪. অধ্যায়ঃ

হামযাহ [২৯] (রাঃ)-এর শাহাদাত

[২৯] আমীর হামযাহ (রাঃ) ছিলেন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রাণপ্রিয় চাচা যিনি ছায়ার মত আল্লাহর রসূলকে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আবূ সূফইয়ান (রাঃ)-এর স্ত্রী হিনদা (রাঃ) ইসলাম গ্রহনের পূর্বে ওয়াহশী নামক গোলামকে দিয়ে তীরবিদ্ধ করে হামযাহ (রাঃ)-কে শহীদ করেন।

৪০৭২

أَبُوْ جَعْفَرٍ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا حُجَيْنُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْفَضْلِ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ الضَّمْرِيِّ قَالَ خَرَجْتُ مَعَ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ الْخِيَارِ فَلَمَّا قَدِمْنَا حِمْصَ قَالَ لِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَدِيٍّ هَلْ لَكَ فِيْ وَحْشِيٍّ نَسْأَلُهُ عَنْ قَتْلِ حَمْزَةَ قُلْتُ نَعَمْ وَكَانَ وَحْشِيٌّ يَسْكُنُ حِمْصَ فَسَأَلْنَا عَنْهُ فَقِيْلَ لَنَا هُوَ ذَاكَ فِيْ ظِلِّ قَصْرِهِ كَأَنَّهُ حَمِيْتٌ قَالَ فَجِئْنَا حَتَّى وَقَفْنَا عَلَيْهِ بِيَسِيْرٍ فَسَلَّمْنَا فَرَدَّ السَّلَامَ قَالَ وَعُبَيْدُ اللهِ مُعْتَجِرٌ بِعِمَامَتِهِ مَا يَرَى وَحْشِيٌّ إِلَّا عَيْنَيْهِ وَرِجْلَيْهِ فَقَالَ عُبَيْدُ اللهِ يَا وَحْشِيُّ أَتَعْرِفُنِيْ قَالَ فَنَظَرَ إِلَيْهِ ثُمَّ قَالَ لَا وَاللهِ إِلَّا أَنِّيْ أَعْلَمُ أَنَّ عَدِيَّ بْنَ الْخِيَارِ تَزَوَّجَ امْرَأَةً يُقَالُ لَهَا أُمُّ قِتَالٍ بِنْتُ أَبِي الْعِيْصِ فَوَلَدَتْ لَهُ غُلَامًا بِمَكَّةَ فَكُنْتُ أَسْتَرْضِعُ لَهُ فَحَمَلْتُ ذَلِكَ الْغُلَامَ مَعَ أُمِّهِ فَنَاوَلْتُهَا إِيَّاهُ فَلَكَأَنِّيْ نَظَرْتُ إِلَى قَدَمَيْكَ قَالَ فَكَشَفَ عُبَيْدُ اللهِ عَنْ وَجْهِهِ ثُمَّ قَالَ أَلَا تُخْبِرُنَا بِقَتْلِ حَمْزَةَ قَالَ نَعَمْ إِنَّ حَمْزَةَ قَتَلَ طُعَيْمَةَ بْنَ عَدِيِّ بْنِ الْخِيَارِ بِبَدْرٍ فَقَالَ لِيْ مَوْلَايَ جُبَيْرُ بْنُ مُطْعِمٍ إِنْ قَتَلْتَ حَمْزَةَ بِعَمِّيْ فَأَنْتَ حُرٌّ قَالَ فَلَمَّا أَنْ خَرَجَ النَّاسُ عَامَ عَيْنَيْنِ وَعَيْنَيْنِ جَبَلٌ بِحِيَالِ أُحُدٍ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ وَادٍ خَرَجْتُ مَعَ النَّاسِ إِلَى الْقِتَالِ فَلَمَّا أَنْ اصْطَفُّوْا لِلْقِتَالِ خَرَجَ سِبَاعٌ فَقَالَ هَلْ مِنْ مُبَارِزٍ قَالَ فَخَرَجَ إِلَيْهِ حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ يَا سِبَاعُ يَا ابْنَ أُمِّ أَنْمَارٍ مُقَطِّعَةِ الْبُظُوْرِ أَتُحَادُّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ صلى الله عليه وسلم قَالَ ثُمَّ شَدَّ عَلَيْهِ فَكَانَ كَأَمْسِ الذَّاهِبِ قَالَ وَكَمَنْتُ لِحَمْزَةَ تَحْتَ صَخْرَةٍ فَلَمَّا دَنَا مِنِّيْ رَمَيْتُهُ بِحَرْبَتِيْ فَأَضَعُهَا فِيْ ثُنَّتِهِ حَتَّى خَرَجَتْ مِنْ بَيْنِ وَرِكَيْهِ قَالَ فَكَانَ ذَاكَ الْعَهْدَ بِهِ فَلَمَّا رَجَعَ النَّاسُ رَجَعْتُ مَعَهُمْ فَأَقَمْتُ بِمَكَّةَ حَتَّى فَشَا فِيْهَا الإِسْلَامُ ثُمَّ خَرَجْتُ إِلَى الطَّائِفِ فَأَرْسَلُوْا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَسُوْلًا فَقِيْلَ لِيْ إِنَّهُ لَا يَهِيْجُ الرُّسُلَ قَالَ فَخَرَجْتُ مَعَهُمْ حَتَّى قَدِمْتُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا رَآنِيْ قَالَ آنْتَ وَحْشِيٌّ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ أَنْتَ قَتَلْتَ حَمْزَةَ قُلْتُ قَدْ كَانَ مِنَ الْأَمْرِ مَا بَلَغَكَ قَالَ فَهَلْ تَسْتَطِيْعُ أَنْ تُغَيِّبَ وَجْهَكَ عَنِّيْ قَالَ فَخَرَجْتُ فَلَمَّا قُبِضَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَخَرَجَ مُسَيْلِمَةُ الْكَذَّابُ قُلْتُ لَأَخْرُجَنَّ إِلَى مُسَيْلِمَةَ لَعَلِّيْ أَقْتُلُهُ فَأُكَافِئَ بِهِ حَمْزَةَ قَالَ فَخَرَجْتُ مَعَ النَّاسِ فَكَانَ مِنْ أَمْرِهِ مَا كَانَ قَالَ فَإِذَا رَجُلٌ قَائِمٌ فِيْ ثَلْمَةِ جِدَارٍ كَأَنَّهُ جَمَلٌ أَوْرَقُ ثَائِرُ الرَّأْسِ قَالَ فَرَمَيْتُهُ بِحَرْبَتِيْ فَأَضَعُهَا بَيْنَ ثَدْيَيْهِ حَتَّى خَرَجَتْ مِنْ بَيْنِ كَتِفَيْهِ قَالَ وَوَثَبَ إِلَيْهِ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَضَرَبَهُ بِالسَّيْفِ عَلَى هَامَتِهِ.

قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ الْفَضْلِ فَأَخْبَرَنِيْ سُلَيْمَانُ بْنُ يَسَارٍ أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ يَقُوْلُ فَقَالَتْ جَارِيَةٌ عَلَى ظَهْرِ بَيْتٍ وَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ قَتَلَهُ الْعَبْدُ الْأَسْوَدُ

জা’ফার ইবনু ‘আমর ইবনু ‘উমাইয়া যামরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু আদী ইবনু খিয়ার (রহঃ)-এর সঙ্গে ভ্রমণে বের হলাম। আমার যখন হিমস-এ পৌছালাম তখন ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) আমাকে বললেন, ওয়াহ্শীর কাছে হামযাহ (রাঃ)-এর শাহাদাত অর্জনের ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে চাও কি? আমি বললাম, হ্যাঁ। ওয়াহশী তখন হিমসে বসবাস করছিলেন। আমরা তার সম্পর্কে (লোকেদেরকে) জিজ্ঞেস করলাম। আমাদেরকে বলা হল, ঐ তো তিনি তার প্রাসাদের ছায়ায় (বসে আছেন) যেন পশমহীন মশক। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা গিয়ে তার থেকে সামান্য কিছু দূরে থাকলাম এবং তাকে সালাম করলাম। তিনি আমাদের সালামের জবাব দিলেন। জা’ফার (রহঃ) বর্ণনা করেন, তখন ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) এমনভাবে পাগড়ি পরিহিত ছিলেন যে, ওয়াহ্শী তার দু’ চোখ এবং দু’ পা ব্যতীত আর কিছুই দেখতে পাচ্ছিলেন না। এ অবস্থায় ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) ওয়াহ্শীকে বললেন, হে ওয়াহ্শী! আপনি আমাকে চিনেন কি? বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তখন তাঁর দিকে তাকালেন, অতঃপর বললেন, না, আল্লাহর কসম! আমি আপনাকে চিনি না। তবে এটুকু জানি যে, আদী ইবনু খিয়ার উম্মু কিতাল বিনতু আবুল ঈস নাম্নী এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। মাক্কার তার একটি সন্তান জন্মিলে আমি তার ধাত্রী খোঁজ করছিলাম, তখন ঐ বাচ্চাকে নিয়ে তার মায়ের সঙ্গে গিয়ে ধাত্রীমাতার কাছে তাকে সোপর্দ করলাম। সে বাচ্চার পা দু’টির মতো আপনার পা দু’টি দেখতে পাচ্ছি। বর্ণনাকারী বলেন, তখন ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) তার মুখের আবরণ সরিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হামযাহ (রাঃ)-এর শাহাদাত সম্পর্কে আমাদেরকে বলবেন কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বদর যুদ্ধে হামযাহ (রাঃ) তুআইমা ইবনু ‘আদী ইবনু খিয়ারকে হত্যা করেছিলেন। তাই আমার মনিব জুবায়র ইবনু মুতঈম আমাকে বললেন, তুমি যদি আমার চাচার বদলা হিসেবে হামযাকে হত্যা করতে পার তাহলে তুমি মুক্ত। রাবী বলেন, যে বছর উহূদ পর্বত সংলগ্ন আইনাইন পর্বতের উপত্যকায় যুদ্ধ হয়েছিল সে যুদ্ধে আমি সবার সঙ্গে বেরিয়ে যাই। এরপর লড়াইয়ের জন্য সকলে সারিবদ্ধ হলে সিবা নামক এক ব্যক্তি ময়দানে এসে বলল, দ্বন্দ্ব যুদ্ধের জন্য কেউ প্রস্তুত আছ কি? ওয়াহ্শী বলেন, তখন হামযাহ ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) তার সামনে গিয়ে বললেন, ওহে মেয়েদের খতনাকারিণী উম্মু আনমারের পোলা সিবা! তুমি কি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সঙ্গে দুশমনী করছ? বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি তার উপর প্রচন্ড আঘাত করলেন, যার ফলে সে বিগত দিনের মতো গত হয়ে গেল। ওয়াহ্শী বলেন, আমি হামযাহ (রাঃ)-কে কতল করার উদ্দেশ্যে একটি পাথরের নিচে আত্মগোপন করে ওত পেতে বসেছিলাম। যখন তিনি আমার নিকটবর্তী হলেন আমি আমার বর্শা এমন জোরে নিক্ষেপ করলাম যে, তার মূত্রথলি ভেদ করে নিতম্বের মাঝখান দিয়ে তা বেরিয়ে গেল। ওয়াহ্শী বলেন, এটাই হল তাঁর শাহাদাতের মূল ঘটনা। এরপর সবাই ফিরে এলে আমিও তাদের সঙ্গে ফিরে এসে মাক্কার অবস্থান করতে লাগলাম। এরপর মাক্কার ইসলাম প্রসারিত হলে আমি তায়েফ চলে গেলাম। কিছুদিনের মধ্যে তায়েফবাসীগণ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে দূত প্রেরণের ব্যবস্থা করলে আমাকে বলা হল যে, তিনি দূতদের প্রতি উত্তেজিত হন না। তাই আমি তাদের সঙ্গে রওয়ানা হলাম এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে গিয়ে হাযির হলাম। তিনি আমাকে দেখে বললেন, তুমিই কি ওয়াহ্শী? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তুমিই কি হামযাকে কতল করেছিলে? আমি বললাম, আপনার কাছে যে সংবাদ পৌছেছে ব্যাপার তাই। তিনি বললেন, আমার সামনে থেকে তোমার চেহারা কি সরিয়ে রাখতে পার? ওয়াহ্শী বলেন, তখন আমি চলে আসলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের পর মুসাইলামাতুল কাযযাব [৩০] আবির্ভূত হলে আমি বললাম, আমি অবশ্যই মুসাইলামার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হব এবং তাকে হত্যা করে হামযাহ (রাঃ)-কে হত্যা করার ক্ষতিপূরণ করব। ওয়াহ্শী বলেন, এক সময় আমি দেখলাম যে, হালকা কালো বর্ণের উটের মত উস্কখুষ্ক চুলবিশিষ্ট এক ব্যক্তি একটি ভগ্ন দেয়ালের আড়ালে দাঁড়িয়ে আছে। তখন সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার বর্শা দ্বারা তার উপর আঘাত করলাম এবং তার বুকের উপর এমনভাবে বসিয়ে দিলাম যে, তা তার দু’ কাঁধের মাঝ দিয়ে বেরিয়ে গেল। এরপর আনসারী এর সাহাবী এসে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন এবং তলোয়ার দিয়ে তার মাথার খুলিতে প্রচণ্ড আঘাত করলেন।

 

‘আবদুল্লাহ ইবনু ফাযল (রহঃ) বর্ণনা করেছেন যে, সুলাইমান ইবনু ইয়াসির (রহঃ) আমাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন যে, ঘরের ছাদে একটি বালিকা বলছিল, হায়, হায়, আমীরুল মু’মিনীন (মুসাইলামাহ)-কে এক কৃষ্ণকায় গোলাম হত্যা করল।

 

(আ.প্র. ৩৭৬৭, ই.ফা. ৩৭৭০)

  •  
  •  
  •  
  •  

[৩০] রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের পর কতিপয় লোক নবুওয়াতের মিথ্যা দাবী করেছিল যাদের মধ্যে মুসাইলামাহ কাযযাব ছিল অন্যতম। আবূ বাকর তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং এই যুদ্ধেই ওয়াহ্শী মুসাইলামাহ্কে হত্যা করেন এবং হামযাহ (রাঃ)-কে হত্যার কাফফারা আদায় করেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/২৫. অধ্যায়ঃ

উহূদের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আঘাতপ্রাপ্ত [৩১] হওয়ার ঘটনা

[৩১] উহূদের যুদ্ধে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তরবারির দ্বারা সত্তরটিরও বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন কিন্তু মহান আল্লাহর খাস রহমাতে তিনি বেঁচে যান। এটি শক্তিশালী মুরসাল সুত্রে বর্ণিত হয়েছে। (ফতহুল বারী ৪০৭৩ নং হাদীসের টীকা দ্রষ্টব্য)

৪০৭৩

إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ هَمَّامٍ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَلَى قَوْمٍ فَعَلُوْا بِنَبِيِّهِ يُشِيْرُ إِلَى رَبَاعِيَتِهِ اشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَلَى رَجُلٍ يَقْتُلُهُ رَسُوْلُ اللهِ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দন্তের প্রতি ইশারা করে বলছেন, যে সম্প্রদায় তাদের নাবীর সঙ্গে এরূপ আচরণ করেছে তাদের প্রতি আল্লাহর গযব অত্যন্ত ভয়াবহ এবং যে ব্যক্তিকে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর পথে হত্যা করেছে তার প্রতিও আল্লাহর গযব অত্যন্ত ভয়ানক।

 

(আ.প্র. ৩৭৬৮, ই.ফা. ৩৭৭১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৭৪

مَخْلَدُ بْنُ مَالِكٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ الْأُمَوِيُّ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ اشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَلَى مَنْ قَتَلَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَبِيْلِ اللهِ اشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَلَى قَوْمٍ دَمَّوْا وَجْهَ نَبِيِّ اللهِ صلى الله عليه وسلم

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর পথে হত্যা করেছে, তার জন্য আল্লাহর গযব ভয়াবহ। আর যে সম্প্রদায় আল্লাহর নাবীর চেহারাকে রক্তাক্ত করেছে তাদের প্রতিও আল্লাহর গযব ভয়াবহ।

 

[৪০৭৬; মুসলিম ৩২/৩৮, হাঃ ১৭৯৩, আহমাদ ৮২২১] (আ.প্র. ৩৭৬৯, ই.ফা. ৩৭৭২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৭৫

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ أَنَّهُ سَمِعَ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ وَهُوَ يُسْأَلُ عَنْ جُرْحِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَمَا وَاللهِ إِنِّيْ لَأَعْرِفُ مَنْ كَانَ يَغْسِلُ جُرْحَ رَسُوْلِ اللهِ وَمَنْ كَانَ يَسْكُبُ الْمَاءَ وَبِمَا دُوْوِيَ قَالَ كَانَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَام بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَغْسِلُهُ وَعَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ يَسْكُبُ الْمَاءَ بِالْمِجَنِّ فَلَمَّا رَأَتْ فَاطِمَةُ أَنَّ الْمَاءَ لَا يَزِيْدُ الدَّمَ إِلَّا كَثْرَةً أَخَذَتْ قِطْعَةً مِنْ حَصِيْرٍ فَأَحْرَقَتْهَا وَأَلْصَقَتْهَا فَاسْتَمْسَكَ الدَّمُ وَكُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ يَوْمَئِذٍ وَجُرِحَ وَجْهُهُ وَكُسِرَتْ الْبَيْضَةُ عَلَى رَأْسِهِ

সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আহত হওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন। উত্তরে তিনি বলেছেন, আল্লাহর শপথ! আমি ভালভাবেই জানি কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জখম ধুয়ে দিচ্ছিলেন এবং কে পানি ঢালছিলেন আর কী দিয়ে তার চিকিৎসা করা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা ফাতিমাহ (রাঃ)তা ধুয়ে দিচ্ছিলেন এবং ‘আলী (রাঃ) ঢালে করে পানি এনে ঢালছিলেন। ফাতিমাহ (রাঃ)যখন দেখলেন যে, পানি রক্ত পড়া বন্ধ না করে কেবল তা বৃদ্ধি করছে, তখন তিনি এক টুকরা চাটাই নিয়ে তা পুড়িয়ে লাগিয়ে দিলেন। তখন রক্ত বন্ধ হয়ে গেল। সেদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ডান দিকের একটি দাঁত ভেঙ্গে [৩২] গিয়েছিল, চেহারা জখম হয়েছিল এবং লৌহ শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে মস্তকে বিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল।

 

[২৪৩] (আ.প্র. ৩৭৭০, ই.ফা. ৩৭৭৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

[৩২] যে ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আঘাত করে তাঁর দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছিল তার নাম হচ্ছে উতবা ইবনু আবূ ওয়াককাস। সে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নীচের ঠোঁটও রক্তাক্ত করেছিল।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৭৬

عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَاصِمٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ اشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَلَى مَنْ قَتَلَهُ نَبِيٌّ وَاشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَلَى مَنْ دَمَّى وَجْهَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর গযব অত্যন্ত ভয়াবহ ঐ ব্যক্তির জন্য, যাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হত্যা করেছেন [৩৩] এবং আল্লাহর গযব অত্যন্ত ভয়াবহ ঐ ব্যক্তির জন্যও যে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেহারাকে রক্তাক্ত করেছে।

 

[৪০৭৪] (আ.প্র. ৩৭৭১, ই.ফা. ৩৭৭৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

[৩৩] উবাই ইবনু খালাফ জাহমীকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহূদ যুদ্ধে নিজ হাতে হত্যা করেছিলেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/২৬. অধ্যায়ঃ

“যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছেন।”

৪০৭৭

مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ مُعَاوِيَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا {اَلَّذِيْنَ اسْتَجَابُوْا لِلهِ وَالرَّسُوْلِ مِنْم بَعْدِ مَآ أَصَابَهُمُ الْقَرْحُ ط ؁ لِلَّذِيْنَ أَحْسَنُوْا مِنْهُمْ وَاتَّقَوْا أَجْرٌ عَظِيْمٌ ج (172)} قَالَتْ لِعُرْوَةَ يَا ابْنَ أُخْتِيْ كَانَ أَبَوَاكَ مِنْهُمْ الزُّبَيْرُ وَأَبُوْ بَكْرٍ لَمَّا أَصَابَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَصَابَ يَوْمَ أُحُدٍ وَانْصَرَفَ عَنْهُ الْمُشْرِكُوْنَ خَافَ أَنْ يَرْجِعُوْا قَالَ مَنْ يَذْهَبُ فِيْ إِثْرِهِمْ فَانْتَدَبَ مِنْهُمْ سَبْعُوْنَ رَجُلًا قَالَ كَانَ فِيْهِمْ أَبُوْ بَكْرٍ وَالزُّبَيْرُ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি উরওয়াহ (রাঃ)-কে বললেন, হে ভাগ্নে জান? “জখম হওয়ার পর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন, তাদের মধ্যে যারা সৎকাজ করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য আছে বিরাট পুরস্কার।” (এ আয়াতটিতে যাদের কথা বলা হয়েছে) তাদের মধ্যে তোমার পিতা যুবায়র (রাঃ) এবং আবূ বকর (রাঃ)-ও ছিলেন। উহূদের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বহু দুঃখ কষ্ঠে আপতিত হয়েছিলেন। মুশরিকগন চলে গেলে তিনি আশঙ্কা করলেন যে, তারা আবারও ফিরে আসতে পারে। তিনি বললেন, কে এদের পশ্চাদ্ধাবনের জন্য প্রস্তুত আছে। এতে সত্তরজন সাহাবী সাড়া দিয়ে প্রস্তুত হলেন। ‘উরওয়াহ (রাঃ) বলেন, তাদের মধ্যে আবূ বকর ও যুবায়র (রাঃ) ও ছিলেন। [৩৪]

 

(আ.প্র. ৩৭৭২, ই.ফা. ৩৭৭৫)

  •  
  •  
  •  
  •  

[৩৪] উহূদ যুদ্ধে মুসলিমদের আনুগত্যহীনতা ও শৃংখলা ভঙ্গের জন্য চরম মূল্য দিতে হয়েছিল। এমন এক পর্যায় এসেছিল যে, মুশরিকরা মুসলিমদেরকে ধ্বংস করার সুযোগ পেয়েছিল যা মুশরিকরা কয়েক মনযিল দুরে গিয়ে বুঝতে পারল। পরে তারা এক স্থানে একত্রিত হয়ে পুনরায় মাদীনাহ আক্রমনের পরিকল্পনা করে যদিও তারা পরে তা বাস্তবায়িত করেনি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন আক্রমনের আশংকা করলে উহূদ যুদ্ধের পরদিন সকাল বেলায়ই মুসলিমদেরকে ডেকে কাফিরদের পিছু ধাওয়া করার আহ্বান জানান। অবস্থা ছিল ও অত্যন্ত ভয়াবহ ও সংকটাপন্ন তথাপিও সত্যিকারের মুসলিমগন আল্লাহর রসূলের এ ডাকে সাড়া দিলেন এবং মাদীনাহ থেকে দশ কিলোমিটার দূরে হামরাউল আসাদ পর্যন্ত পৌছেন। অত্র হাদীসে সে ঘটনারই বর্ণনা এসেছে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/২৭. অধ্যায়ঃ

যে সব মুসলিম উহূদ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন তাদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন

হামযাহ ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব, (হুযাইফাহ্র পিতা) ইয়ামান, আনাস ইবনু নাসর এবং মুস’আব ইবনু ‘উমায়র (রাঃ)।

৪০৭৮

عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ قَتَادَةَ قَالَ مَا نَعْلَمُ حَيًّا مِنْ أَحْيَاءِ الْعَرَبِ أَكْثَرَ شَهِيْدًا أَعَزَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنَ الْأَنْصَارِ.

قَالَ قَتَادَةُ وَحَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّهُ قُتِلَ مِنْهُمْ يَوْمَ أُحُدٍ سَبْعُوْنَ وَيَوْمَ بِئْرِ مَعُوْنَةَ سَبْعُوْنَ وَيَوْمَ الْيَمَامَةِ سَبْعُوْنَ قَالَ وَكَانَ بِئْرُ مَعُوْنَةَ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَيَوْمُ الْيَمَامَةِ عَلَى عَهْدِ أَبِيْ بَكْرٍ يَوْمَ مُسَيْلِمَةَ الْكَذَّابِ

ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ক্বিয়ামতের দিন আরবের কোন মানবগোষ্ঠীই আনসারদের তুলনায় অধিক সংখ্যায় শাহীদ এবং অধিক মর্যাদার অধিকারী হবে বলে আমরা জানি না।

 

ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) আমাকে বলেছেন, উহূদের দিন তাদের সত্তর জন শহীদ হয়েছেন, বি‘রে মাউনার দিন সত্তর জন শহীদ হয়েছেন এবং ইয়ামামার যুদ্ধের দিন সত্তর জন শহীদ হয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন যে, বি‘রে মাউনা ঘটেছিল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশায় এবং ইয়ামামার যুদ্ধ হয়েছিল মুসাইলামাতুল কাযযাবের বিরুদ্ধে আবূ বকর (রাঃ)-এর খিলাফতকালে।

 

(আ.প্র. ৩৭৭৩, ই.ফা. ৩৭৭৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৭৯

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ فِيْ ثَوْبٍ وَاحِدٍ ثُمَّ يَقُوْلُ أَيُّهُمْ أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ فَإِذَا أُشِيْرَ لَهُ إِلَى أَحَدٍ قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ وَقَالَ أَنَا شَهِيْدٌ عَلَى هَؤُلَاءِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَأَمَرَ بِدَفْنِهِمْ بِدِمَائِهِمْ وَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْهِمْ وَلَمْ يُغَسَّلُوْا

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহূদ যুদ্ধের শাহীদগণের দু‘জনকে একই কাপড়ে দাফন করেছিলেন। জড়ানোর পর জিজ্ঞেস করতেন, এদের মধ্যে কে অধিক কুরআন জানে, যখন কোন একজনের প্রতি ইশারা করা হত তখন তিনি তাকেই কবরে আগে নামাতেন এবং বলতেন, ক্বিয়ামাতের দিন আমি তাদের জন্য সাক্ষী হব। সেদিন তিনি তাদেরকে তাদের রক্তসহ দাফন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তাদের জানাযাও পড়ানো হয়নি এবং তাদেরকে গোসলও দেয়া হয়নি।

 

[১৩৪৩] (আ.প্র. ৩৭৭৪, ই.ফা. ৩৭৭৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৮০

وَقَالَ أَبُو الْوَلِيْدِ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ ابْنِ الْمُنْكَدِرِ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ قَالَ لَمَّا قُتِلَ أَبِيْ جَعَلْتُ أَبْكِيْ وَأَكْشِفُ الثَّوْبَ عَنْ وَجْهِهِ فَجَعَلَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَنْهَوْنِيْ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَنْهَ وَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَا تَبْكِيْهِ أَوْ مَا تَبْكِيْهِ مَا زَالَتِ الْمَلَائِكَةُ تُظِلُّهُ بِأَجْنِحَتِهَا حَتَّى رُفِعَ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমার পিতা শাহীদ হলে আমি কাঁদতে লাগলাম এবং তার চেহারা থেকে কাপড় সরিয়ে দিচ্ছিলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগন আমাকে নিষেধ করছিলেন। তবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেননি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (‘আবদুল্লাহ্‌র ফুফুকে বললেন) তোমরা তার জন্য কাঁদছ! অথচ জানাযা না উঠানো পর্যন্ত মালায়িকাহ তাদের ডানা দিয়ে তার উপর ছায়া করে রেখেছিল।

 

[১২৪৪] (আ.প্র. ৩৭৭৪. ই.ফা. ৩৭৭৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৮১

مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ جَدِّهِ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أُرَى عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَأَيْتُ فِيْ رُؤْيَايَ أَنِّيْ هَزَزْتُ سَيْفًا فَانْقَطَعَ صَدْرُهُ فَإِذَا هُوَ مَا أُصِيْبَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ أُحُدٍ ثُمَّ هَزَزْتُهُ أُخْرَى فَعَادَ أَحْسَنَ مَا كَانَ فَإِذَا هُوَ مَا جَاءَ بِهِ اللهُ مِنَ الْفَتْحِ وَاجْتِمَاعِ الْمُؤْمِنِيْنَ وَرَأَيْتُ فِيْهَا بَقَرًا وَاللهُ خَيْرٌ فَإِذَا هُمُ الْمُؤْمِنُوْنَ يَوْمَ أُحُدٍ

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি একটি তরবারি আন্দোলিত করলাম, অমনি এর মধ্যস্থলে ভেঙ্গে গেল। (বুঝলাম) এটা হল উহূদ যুদ্ধে মু‘মিনদের উপর আপতিত বিপদেরই স্বপ্ন রূপ। এরপর ওটিকে আবার আন্দোলিত করলাম। এতে ওটা আগের চেয়েও সুন্দর হয়ে গেল। এটা হল যে, বিজয় আল্লাহ এনে দিয়েছিলেন এবং মু‘মিনদের একতাবদ্ধ হওয়া এবং স্বপ্নে আমি একটি গরুও দেখেছিলাম। উহূদ যুদ্ধে মু‘মিনদের শাহাদাত লাভ হচ্চে এর ব্যাখ্যা। আল্লাহর সকল কাজ কল্যাণময়।

 

[৩৬২২] (আ.প্র. ৩৭৭৫, ই.ফা. ৩৭৭৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৮২

أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ شَقِيْقٍ عَنْ خَبَّابٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ هَاجَرْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ نَبْتَغِيْ وَجْهَ اللهِ فَوَجَبَ أَجْرُنَا عَلَى اللهِ فَمِنَّا مَنْ مَضَى أَوْ ذَهَبَ لَمْ يَأْكُلْ مِنْ أَجْرِهِ شَيْئًا كَانَ مِنْهُمْ مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ قُتِلَ يَوْمَ أُحُدٍ فَلَمْ يَتْرُكْ إِلَّا نَمِرَةً كُنَّا إِذَا غَطَّيْنَا بِهَا رَأْسَهُ خَرَجَتْ رِجْلَاهُ وَإِذَا غُطِّيَ بِهَا رِجْلَاهُ خَرَجَ رَأْسُهُ فَقَالَ لَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم غَطُّوْا بِهَا رَأْسَهُ وَاجْعَلُوْا عَلَى رِجْلَيْهِ الإِذْخِرَ أَوْ قَالَ أَلْقُوْا عَلَى رِجْلَيْهِ مِنَ الإِذْخِرِ وَمِنَّا مَنْ أَيْنَعَتْ لَهُ ثَمَرَتُهُ فَهُوَ يَهْدِبُهَا

খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে হিজরত করেছিলাম। এতে আমরা চেয়েছি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহর কাছে আমাদের প্রতিদান নির্ধারিত হয়ে গেছে। আমাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ গত হয়েছেন বা চলে গেছেন। অথচ প্রতিদান তিনি কিছুই ভোগ করতে পারেননি। মুস‘আব ইবনু ‘উমায়র (রাঃ) ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। উহূদের দিন তিনি পা দু‘খানা বেরিয়ে যেত এবং পা দু‘খানা আবৃত করলে মাথা বেরিয়ে যেত। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বললেন, ওটা দিয়ে তার মাথা ঢেকে দাও এবং উভয় পা ইযখির দ্বারা আবৃত করে দাও। অথবা বললেন, (বর্ণনাকারীর সন্দেহ), তাঁর উভয় পায়ের উপর ইযখির দিয়ে দাও। আর আমাদের মধ্যে কেউ এমনও আছেন, যার ফল ভালভাবে পেকেছে, আর তা তিনি ভোগ করছেন।

 

[১২৭৬] (আ.প্র. ৩৭৭৬, ই, ফা. ৩৭৭৯)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/২৮. অধ্যায়ঃ

উহূদ (পাহাড়) আমাদেরকে ভালবাসে

‘আব্বাস ইবনু সাহল (রহঃ) আবূ হুমায়দ (রাঃ)এর বাচনিক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৪০৮৩

نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ قُرَّةَ بْنِ خَالِدٍ عَنْ قَتَادَةَ سَمِعْتُ أَنَسًا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ هَذَا جَبَلٌ يُحِبُّنَا وَنُحِبُّهُ

ক্বাতাদাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) এর নিকট থেকে শুনেছি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এ (উহূদ) পর্বত আমাদেরকে ভালবাসে আর আমরাও একে ভালবাসি।

 

{৩৭১} (আ.প্র. ৩৭৭৭, ই.ফা. ৩৭৮০)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৮৪

عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ عَمْرٍو مَوْلَى الْمُطَّلِبِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم طَلَعَ لَهُ أُحُدٌ فَقَالَ هَذَا جَبَلٌ يُحِبُّنَا وَنُحِبُّهُ اللهُمَّ إِنَّ إِبْرَاهِيْمَ حَرَّمَ مَكَّةَ وَإِنِّيْ حَرَّمْتُ مَا بَيْنَ لَابَتَيْهَا

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উহূদ পর্বত রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি বললেন, এ পর্বত আমাদেরকে ভালবাসে এবং আমরাও একে ভালবাসি। হে আল্লাহ ইবরাহীম (আ. ) মাক্কাহ্কে হারাম হিসেবে ঘোষনা করেছিলেন এবং আমি দু‘টি কঙ্করময় স্থানের মধ্যবর্তী জায়গাকে (মাদীনাহ্কে) হারাম হিসেবে ঘোষনা করছি।

 

[৩৭১] (আ.প্র. ৩৭৭৮, ই.ফা. ৩৭৮১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৮৫

عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ حَبِيْبٍ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ عُقْبَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ يَوْمًا فَصَلَّى عَلَى أَهْلِ أُحُدٍ صَلَاتَهُ عَلَى الْمَيِّتِ ثُمَّ انْصَرَفَ إِلَى الْمِنْبَرِ فَقَالَ إِنِّيْ فَرَطٌ لَكُمْ وَأَنَا شَهِيْدٌ عَلَيْكُمْ وَإِنِّيْ لَأَنْظُرُ إِلَى حَوْضِي الآنَ وَإِنِّيْ أُعْطِيْتُ مَفَاتِيْحَ خَزَائِنِ الْأَرْضِ أَوْ مَفَاتِيْحَ الْأَرْضِ وَإِنِّيْ وَاللهِ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمْ أَنْ تُشْرِكُوْا بَعْدِيْ وَلَكِنِّيْ أَخَافُ عَلَيْكُمْ أَنْ تَنَافَسُوْا فِيْهَا

উকবাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন, এবং উহূদের শাহীদগণের জন্য জানাযার সালাতের মতো সালাত আদায় করলেন। এরপর মিম্বরের দিকে ফিরে এসে বললেন, আমি তোমাদের অগ্রগামী ব্যক্তি এবং আমি তোমাদের সাক্ষ্যদাতা। আমি এ মূহূর্তে আমার হাউয (কাউসার) দেখতে পাচ্ছি। আমাকে পৃথিবীর ধনভান্ডারের চাবি দেয়া হয়েছে অথবা বললেন (বর্ণনাকারীর সন্দেহ), আমাকে পৃথিবীর চাবি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর কসম! আমার ইন্তিকালের পর তোমরা র্শিকে লিপ্ত হবে-তোমাদের ব্যাপারে আমার এ ধরনের আশঙ্কা নেই। তবে আমি তোমাদের ব্যাপারে আশঙ্কা করি যে, তোমরা পৃথিবীতে পরস্পর বিবাদে লিপ্ত হবে।

 

[১৩৪৪] (আ.প্র. ৩৭৭৯, ই.ফা. ৩৭৮২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৪/২৯. অধ্যায়ঃ

রাজী, রিল, যাক্ওয়া, বি‘রে মাউনার যুদ্ধ এবং আযাল, কারাহ, আসিম ইবনু সাবিত, খুবায়ইব (রাঃ) ও তার সঙ্গীদের ঘটনা

ইবনু ইসহাক (রহঃ) বলেন, আসিম ইবনু ‘উমার (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাজীর যুদ্ধ হয়েছিল উহূদের পর।

৪০৮৬

إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِيْ سُفْيَانَ الثَّقَفِيِّ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً عَيْنًا وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ عَاصِمَ بْنَ ثَابِتٍ وَهُوَ جَدُّ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَانْطَلَقُوْا حَتَّى إِذَا كَانَ بَيْنَ عُسْفَانَ وَمَكَّةَ ذُكِرُوْا لِحَيٍّ مِنْ هُذَيْلٍ يُقَالُ لَهُمْ بَنُوْ لَحْيَانَ فَتَبِعُوْهُمْ بِقَرِيْبٍ مِنْ مِائَةِ رَامٍ فَاقْتَصُّوْا آثَارَهُمْ حَتَّى أَتَوْا مَنْزِلًا نَزَلُوْهُ فَوَجَدُوْا فِيْهِ نَوَى تَمْرٍ تَزَوَّدُوْهُ مِنَ الْمَدِيْنَةِ فَقَالُوْا هَذَا تَمْرُ يَثْرِبَ فَتَبِعُوْا آثَارَهُمْ حَتَّى لَحِقُوْهُمْ فَلَمَّا انْتَهَى عَاصِمٌ وَأَصْحَابُهُ لَجَئُوْا إِلَى فَدْفَدٍ وَجَاءَ الْقَوْمُ فَأَحَاطُوْا بِهِمْ فَقَالُوْا لَكُمُ الْعَهْدُ وَالْمِيْثَاقُ إِنْ نَزَلْتُمْ إِلَيْنَا أَنْ لَا نَقْتُلَ مِنْكُمْ رَجُلًا فَقَالَ عَاصِمٌ أَمَّا أَنَا فَلَا أَنْزِلُ فِيْ ذِمَّةِ كَافِرٍ اللهُمَّ أَخْبِرْ عَنَّا نَبِيَّكَ فَقَاتَلُوْهُمْ حَتَّى قَتَلُوْا عَاصِمًا فِيْ سَبْعَةِ نَفَرٍ بِالنَّبْلِ وَبَقِيَ خُبَيْبٌ وَزَيْدٌ وَرَجُلٌ آخَرُ فَأَعْطَوْهُمُ الْعَهْدَ وَالْمِيْثَاقَ فَلَمَّا أَعْطَوْهُمُ الْعَهْدَ وَالْمِيْثَاقَ نَزَلُوْا إِلَيْهِمْ فَلَمَّا اسْتَمْكَنُوْا مِنْهُمْ حَلُّوْا أَوْتَارَ قِسِيِّهِمْ فَرَبَطُوْهُمْ بِهَا فَقَالَ الرَّجُلُ الثَّالِثُ الَّذِيْ مَعَهُمَا هَذَا أَوَّلُ الْغَدْرِ فَأَبَى أَنْ يَصْحَبَهُمْ فَجَرَّرُوْهُ وَعَالَجُوْهُ عَلَى أَنْ يَصْحَبَهُمْ فَلَمْ يَفْعَلْ فَقَتَلُوْهُ وَانْطَلَقُوْا بِخُبَيْبٍ وَزَيْدٍ حَتَّى بَاعُوْهُمَا بِمَكَّةَ فَاشْتَرَى خُبَيْبًا بَنُو الْحَارِثِ بْنِ عَامِرِ بْنِ نَوْفَلٍ وَكَانَ خُبَيْبٌ هُوَ قَتَلَ الْحَارِثَ يَوْمَ بَدْرٍ فَمَكَثَ عِنْدَهُمْ أَسِيْرًا حَتَّى إِذَا أَجْمَعُوْا قَتْلَهُ اسْتَعَارَ مُوْسًى مِنْ بَعْضِ بَنَاتِ الْحَارِثِ لِيَسْتَحِدَّ بِهَا فَأَعَارَتْهُ

قَالَتْ فَغَفَلْتُ عَنْ صَبِيٍّ لِيْ فَدَرَجَ إِلَيْهِ حَتَّى أَتَاهُ فَوَضَعَهُ عَلَى فَخِذِهِ فَلَمَّا رَأَيْتُهُ فَزِعْتُ فَزْعَةً عَرَفَ ذَاكَ مِنِّيْ وَفِيْ يَدِهِ الْمُوْسَى فَقَالَ أَتَخْشَيْنَ أَنْ أَقْتُلَهُ مَا كُنْتُ لِأَفْعَلَ ذَاكِ إِنْ شَاءَ اللهُ وَكَانَتْ تَقُوْلُ مَا رَأَيْتُ أَسِيْرًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ خُبَيْبٍ لَقَدْ رَأَيْتُهُ يَأْكُلُ مِنْ قِطْفِ عِنَبٍ وَمَا بِمَكَّةَ يَوْمَئِذٍ ثَمَرَةٌ وَإِنَّهُ لَمُوْثَقٌ فِي الْحَدِيْدِ وَمَا كَانَ إِلَّا رِزْقٌ رَزَقَهُ اللهُ فَخَرَجُوْا بِهِ مِنَ الْحَرَمِ لِيَقْتُلُوْهُ فَقَالَ دَعُوْنِيْ أُصَلِّيْ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ انْصَرَفَ إِلَيْهِمْ فَقَالَ لَوْلَا أَنْ تَرَوْا أَنَّ مَا بِيْ جَزَعٌ مِنَ الْمَوْتِ لَزِدْتُ فَكَانَ أَوَّلَ مَنْ سَنَّ الرَّكْعَتَيْنِ عِنْدَ الْقَتْلِ هُوَ ثُمَّ قَالَ اللهُمَّ أَحْصِهِمْ عَدَدًا ثُمَّ قَالَ

مَا أُبَالِيْ حِيْنَ أُقـْتـَلُ مُسْـلِـمًا عَلَى أَيِّ شِـقٍّ كَانَ لِلهِ مَصْـرَعِـي

وَذَلِـكَ فِيْ ذَاتِ الإِلَـهِ وَإِنْ يَـشَأْ يُبَارِكْ عَلَى أَوْصَالِ شِلْـوٍ مُـمَـزَّعِ

ثُمَّ قَامَ إِلَيْهِ عُقبَةُ بْنُ الْحَارِثِ فَقَتَلَهُ وَبَعَثَتْ قُرَيْشٌ إِلَى عَاصِمٍ لِيُؤْتَوْا بِشَيْءٍ مِنْ جَسَدِهِ يَعْرِفُوْنَهُ وَكَانَ عَاصِمٌ قَتَلَ عَظِيْمًا مِنْ عُظَمَائِهِمْ يَوْمَ بَدْرٍ فَبَعَثَ اللهُ عَلَيْهِ مِثْلَ الظُّلَّةِ مِنْ الدَّبْرِ فَحَمَتْهُ مِنْ رُسُلِهِمْ فَلَمْ يَقْدِرُوْا مِنْهُ عَلَى شَيْءٍ

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসিম ইবনু ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ)এর নানা আসিম ইবনু সাবিত আনসারী (রাঃ) এর নেতৃত্বে একটি গোয়েন্দা দল প্রেরণ করলেন। যেতে যেতে তারা ‘উসফান ও মাক্কার মধ্যবর্তী স্থানে পৌছলে হুযায়ল গোত্রের একটি শাখা বানী লিহ্ইয়ানের নিকট তাঁদের আগমনের কথা জানিয়ে দেয়া হল। এ সংবাদ পাওয়ার পর বানী লিহ্ইয়ানের প্রায় একশ’ তীরন্দাজ তাদের ধাওয়া করল। দলটি তাদের (মুসলিম গোয়েন্দা দলের) পদচিহ্ন অনুসরণ করে এমন এক স্থানে গিয়ে পৌছল, যে স্থানে অবতরণ করে সাহাবীগন খেজুর খেয়েছিলেন। তারা সেখানে খেজুরের আঁটি দেখতে পেল যা সাহাবীগন মাদীনাহ থেকে পাথেয়রূপে এনেছিলেন। তখন তারা বলল, এগুলো তো ইয়াসরিবের খেজুর (এর আঁটি)। এর পর তারা পদচিহ্ন ধরে খুঁজতে খুঁজতে শেষ পর্যন্ত তাঁদেরকে ধরে ফেলল। আসিম ও তাঁর সাথীগণ বুঝতে পেরে ফাদফাদ নামক টিলায় উঠে আশ্রয় নিলেন। এবার শত্র“দল এসে তাঁদেরকে ঘিরে ফেলল এবং বলল, আমরা তোমাদেরকে প্রতিশ্র“তি দিচ্ছি, যদি তোমরা নেমে আস তাহলে আমরা তোমাদের একজনকেও হত্যা করব না। আসিম (রাঃ) বললেন, আমি কোন কাফেরের প্রতিশ্র“তিতে আশ্বস্ত হয়ে এখান থেকে অবতরণ করব না। হে আল্লাহ! আমাদের এ সংবাদ আপনার রসূলের নিকট পৌছিয়ে দিন। এর পর তারা মুসলিম গোয়েন্দা দলের প্রতি আক্রমন করল এবং তীর বর্ষন করতে শুরু করল। এভাবে তারা আসিম (রাঃ) সহ সাতজনকে তীর নিক্ষেপ করে শহীদ করে দিল। এখন শুধু বাকী থাকলেন খুবায়ব (রাঃ), যায়দ (রাঃ) এবং অপর একজন (‘আবদুল্লাাহ ইবনু তারিক) সাহাবী (রাঃ)। পুনরায় তারা তাদেরকে ওয়াদা দিল। এই ওয়াদায় আশ্বস্ত হয়ে তাঁরা তাদের কাছে নেমে এলেন। এবার তারা তাঁদেরকে কাবু করে ফেলার পর নিজেদের ধনুকের তার খুলে এর দ্বারা তাঁদেরকে বেঁধে ফেলল। এ দেখে তাঁদের সাথী তৃতীয় সাহাবী (‘আবদুল্লাহ ইবনু তারিক) (রাঃ) বললেন, এটাই প্রথম বিশ্বাসঘাতকতা। তাই তিনি সঙ্গে যেতে অস্বীকার করলেন। তারা তাঁকে তাদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য বহু টানা-হেঁচড়া করল এবং বহু চেষ্টা করল। কিন্তু তিনি তাতে রাযী হলেন না। অবশেষে কাফিররা তাঁকে শহীদ করে দিল এবং খুবায়ব ও যায়দ (রাঃ) কে মক্কার বাজারে নিয়ে বিক্রি করে দিল। বানী হারিস ইবনু আমির ইবনু নাওফল গোত্রের লোকেরা খুবায়ব (রাঃ) কে কিনে নিল। কেননা বদর যুদ্ধের দিন খুবায়ব (রাঃ) হারিসকে হত্যা করেছিলেন। তাই তিনি তাদের নিকট বেশ কিছু দিন বন্দী অবস্থায় কাটান। অবশেষে তারা তাকে তাঁকে হত্যা করার দৃঢ় সংকল্প করলে তিনি নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করার জন্য হারিসের কোন এক কন্যার নিকট থেকে একখানা ক্ষুর চাইলেন। সে তাঁকে তা দিল। (পরবর্তীকালে মুসলিম হওয়ার পর) হারিসের উক্ত কন্যা বর্ণনা করেছেন যে, আমি আমার একটি শিশু বাচ্চা সম্পর্কে অসাবধান থাকায় সে পায়ে হেঁটে তাঁর কাছে চলে যায় এবং তিনি তাকে স্বীয় উরুর উপর বসিয়ে রাখেন। এ সময় তাঁর হাতে ছিল সেই ক্ষুর। এ দেখে আমি অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি। খুবায়ব (রাঃ) তা বুঝতে পেরে বললেন, তাকে মেরে ফেলব বলে তুমি কি ভয় পাচ্ছ? ইনশাআল্লাহ আমি তা করার নই। সে (হারিসের কন্যা) বলত, আমি খুবায়ব (রাঃ) থেকে উত্তম বন্দী আর কখনও দেখেনি। আমি তাকে আঙ্গুরের থোকা থেকে আঙ্গুর খেতে দেখেছি। অথচ তখন মাক্কার কোন ফলই ছিল না। অধিকন্তু তিনি তখন লোহার শিকলে আবদ্ধ ছিলেন। এ আঙ্গুর তার জন্য আল্লাহর তরফ থেকে প্রদত্ত রিযিক ব্যতীত আর কিছুই নয়। এরপর তারা তাঁকে হত্যা করার জন্য হারামের বাইরে নিয়ে গেল। তিনি তাদেরকে বললেন, আমাকে দু’রাকাত সালাত আদায় করার সুযোগ দাও। (সালাত আদায় করে) তিনি তাদের কাছে ফিরে এসে বললেন, আমি মৃত্যুর ভয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছি, তোমরা যদি এ কথা মনে না করতে তাহলে আমি (সালাতকে) আরো দীর্ঘায়িত করতাম। হত্যার পূর্বে দু‘রাকআত সালাত আদায়ের সুন্নাত প্রবর্তন করেছেন তিনিই। এরপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ! তাদেরকে এক এক করে গুনে রাখুন। এরপর তিনি দুটি পংক্তি আবৃত্তি করলেন-

 

“যেহেতু আমি মুসলিম হিসেবে মৃত্যুবরণ করছি তাই আমার শঙ্কা নেই,

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশে যে কোন পার্শ্বে আমি ঢলে পড়ি।

আমি যেহেতু আল্লাহর পথেই মৃত্যুবরণ করছি তাই ইচ্ছা করলে,

আল্লাহ ছিন্নভিন্ন প্রতিটি অঙ্গে বারাকাত দান করতে পারেন।”

 

এরপর ‘উকবাহ ইবনু হারিস তাঁর দিকে এগিয়ে গেল এবং তাঁকে শহীদ করে দিল। কুরায়শ গোত্রের লোকেরা আসিম (রাঃ)-এ শাহাদাতের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁর মৃতদেহ থেকে কিছু অংশ নিয়ে আসার জন্য লোক পাঠিয়েছিল। কারণ আসিম (রাঃ) বদর যুদ্ধের দিন তাদের একজন বড় নেতাকে হত্যা করেছিলেন। তখন আল্লাহ মেঘের মতো এক ঝাঁক মৌমাছি পাঠিয়ে দিলেন, যা তাদের প্রেরিত লোকদের হাত থেকে আসিম (রাঃ)-কে রক্ষা করল। ফলে তাঁরা তাঁর দেহ থেকে কোন অংশ নিতে সক্ষম হল না।

 

[৩০৪৫] (আ.প্র. ৩৭৮০, ই.ফা. ৩৭৮৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৮৭

عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو سَمِعَ جَابِرًا يَقُوْلُ الَّذِيْ قَتَلَ خُبَيْبًا هُوَ أَبُوْ سِرْوَعَةَ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, খুবায়ব (রাঃ) এর হত্যাকারী হল আবূ সিরওয়া (উকবাহ ইবনু হারিস)।

 

(আ.প্র. ৩৭৮১, ই, ফা. ৩৭৮৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৮৮

أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَبْعِيْنَ رَجُلًا لِحَاجَةٍ يُقَالُ لَهُمُ الْقُرَّاءُ فَعَرَضَ لَهُمْ حَيَّانِ مِنْ بَنِيْ سُلَيْمٍ رِعْلٌ وَذَكْوَانُ عِنْدَ بِئْرٍ يُقَالُ لَهَا بِئْرُ مَعُوْنَةَ فَقَالَ الْقَوْمُ وَاللهِ مَا إِيَّاكُمْ أَرَدْنَا إِنَّمَا نَحْنُ مُجْتَازُوْنَ فِيْ حَاجَةٍ لِلنَّبِيِّ فَقَتَلُوْهُمْ فَدَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ شَهْرًا فِيْ صَلَاةِ الْغَدَاةِ وَذَلِكَ بَدْءُ الْقُنُوْتِ وَمَا كُنَّا نَقْنُتُ قَالَ عَبْدُ الْعَزِيْزِ وَسَأَلَ رَجُلٌ أَنَسًا عَنِ الْقُنُوْتِ أَبَعْدَ الرُّكُوْعِ أَوْ عِنْدَ فَرَاغٍ مِنَ الْقِرَاءَةِ قَالَ لَا بَلْ عِنْدَ فَرَاغٍ مِنَ الْقِرَاءَةِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক প্রয়োজনে সত্তরজন সাহাবীকে পাঠালেন, যাদের ক্বারী বলা হত। বানী সুলায়ম গোত্রের দুটি শাখা-রিল ও যাকওয়ান বি’রে মাউনা নামক একটি কুপের নিকট তাদেরকে আক্রমন করলে তাঁরা বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা তোমাদের সঙ্গে লড়াই করার উদ্দেশে আসিনি। আমরা তো কেবল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নির্দেশিত একটি কাজের জন্য এ পথ দিয়ে যাচ্ছি। তখন তারা তাদেরকে তাদেরকে হত্যা করে ফেলল। তাই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাস পর্যন্ত ফজরের সলাতে তাদের জন্য বদদু‘আ করলেন। এভাবেই কুনূত পড়া শুরু হয়। এর পূর্বে আমরা কুনূত পড়িনি। ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) বলেন, এক ব্যক্তি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, কুনূত কি রুকূর পর পড়তে হবে, না কিরাআত শেষ করে পড়তে হবে? উত্তরে তিনি বললেন, না বরং কিরাআত শেষ করে পড়তে হবে।

 

[১০০০] (আ.প্র. ৩৭৮২, ই.ফা. ৩৭৮৫)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৮৯

مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَنَتَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم شَهْرًا بَعْدَ الرُّكُوْعِ يَدْعُوْ عَلَى أَحْيَاءٍ مِنَ الْعَرَبِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাস ব্যাপী আরবের কতিপয় গোত্রের প্রতি বদদু‘আ করার জন্য সলাতে রুকুর পর কুনূত পাঠ করেছেন।

 

[৩৫] [১০০০] (আ.প্র. ৩৭৮৩, ই.ফা. ৩৭৮৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

[৩৫] কুনূতে নাযিলার ক্ষেত্রে রুকুর পরেই কুনুত করতে হবে তবে বিতরের ক্ষেত্রে রুকুর পুর্বে ও পরে কুনূত করা উভয়ই দলীল সিদ্ধ। তবে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বিতরের ক্ষেত্রে রুকুর পূর্বে কুনূত করার বেশি প্রমান পাওয়া যায়। সংক্ষিপ্ত কনূতের ক্ষেত্রে রুকুর পুর্বে আর দীর্ঘ দু‘আর ক্ষেত্রে রুকু‘র পরে কনূত করতে হবে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৯০

عَبْدُ الْأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رِعْلًا وَذَكْوَانَ وَعُصَيَّةَ وَبَنِيْ لَحْيَانَ اسْتَمَدُّوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى عَدُوٍّ فَأَمَدَّهُمْ بِسَبْعِيْنَ مِنَ الْأَنْصَارِ كُنَّا نُسَمِّيْهِمُ الْقُرَّاءَ فِيْ زَمَانِهِمْ كَانُوْا يَحْتَطِبُوْنَ بِالنَّهَارِ وَيُصَلُّوْنَ بِاللَّيْلِ حَتَّى كَانُوْا بِبِئْرِ مَعُوْنَةَ قَتَلُوْهُمْ وَغَدَرُوْا بِهِمْ فَبَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَنَتَ شَهْرًا يَدْعُوْ فِي الصُّبْحِ عَلَى أَحْيَاءٍ مِنْ أَحْيَاءِ الْعَرَبِ عَلَى رِعْلٍ وَذَكْوَانَ وَعُصَيَّةَ وَبَنِيْ لَحْيَانَ قَالَ أَنَسٌ فَقَرَأْنَا فِيْهِمْ قُرْآنًا ثُمَّ إِنَّ ذَلِكَ رُفِعَ بَلِّغُوْا عَنَّا قَوْمَنَا أَنَّا لَقِيْنَا رَبَّنَا فَرَضِيَ عَنَّا وَأَرْضَانَا

وَعَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ حَدَّثَهُ أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَنَتَ شَهْرًا فِيْ صَلَاةِ الصُّبْحِ يَدْعُوْ عَلَى أَحْيَاءٍ مِنْ أَحْيَاءِ الْعَرَبِ عَلَى رِعْلٍ وَذَكْوَانَ وَعُصَيَّةَ وَبَنِيْ لِحْيَانَ زَادَ خَلِيْفَةُ

حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ قَتَادَةَ حَدَّثَنَا أَنَسٌ أَنَّ أُوْلَئِكَ السَّبْعِيْنَ مِنَ الْأَنْصَارِ قُتِلُوْا بِبِئْرِ مَعُوْنَةَ قُرْآنًا كِتَابًا نَحْوَهُ

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রি‘ল, যাকওয়ান, উসায়্যা ও বনূ লিহ্ইয়ানের লোকেরা শত্রুর মুকাবালা করার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সাহায্য চাইলে সত্তরজন আনসার সহাবী পাঠিয়ে তিনি তদেরকে সাহায্য করলেন। সেকালে আমরা তাদেরকে ক্বারী নামে অভিহিত করতাম। তারা দিনে লাকড়ি জুটাতেন এবং রাতে সালাতে কাটাতেন। যেতে যেতে তাঁরা বি‘রে মাউনার নিকট পৌঁছলে তারা (ঐ গোত্রগুলির লোকেরা) তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং তাঁদেরকে শহীদ করে দেয়। এ সংবাদ নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে পৌঁছলে তিনি এক মাস পর্যন্ত ফাজরের সালাতে আরবের কতিপয় গোত্র যথা রিল, যাকওয়ান, উসায়্যাহ এবং বনূ লিহ্ইয়ানের প্রতি বদদু‘আ করে কুনূত পাঠ করেন। আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, তাদের সম্পর্কিত কিছু আয়াত আমরা পাঠ করতাম। অবশ্য পরে এর তিলাওয়াত রহিত হয়ে যায়। (একটি আয়াত ছিল) ………… অর্থাৎ আমাদের কাওমের লোকদেরকে জানিয়ে দাও। আমরা আমাদের প্রভুর সান্নিধ্যে পৌঁছে গেছি। তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং আমাদেরকেও সন্তুষ্ট করেছেন।

 

ক্বাতাদাহ (রহ.) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি তাঁকে বলেছেন, আল্লাহর নাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মাস পর্যন্ত ফাজরের সালাতে আরবের কতিপয় গোত্র- তথা রি‘ল, যাকওয়ান, উসায়্যা এবং বনূ লিহ্ইয়ানের প্রতি বদদু‘আ করে কুনূত পাঠ করেছেন।

 

[ইমাম বুখারী (রহ.)-এর উস্তাদ] খলীফা (রহ.) এতটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, ইবনু যুরায় (রহ.) ও সা‘ঈদ ও ক্বাতাদাহ (রহ.)-এর মাধ্যমে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তাঁরা সত্তরজন সকলেই ছিলেন আনসার। তাঁদেরকে বি‘রে মাউনা নামক স্থানে শাহীদ করা হয়েছিল। [ইমাম বুখারী (রহ.)] বলেন, এখানে قُرْآنًا শব্দটি কিতাব বা অনুরূপ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

 

[১০০১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৮৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৮৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৯১

مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ طَلْحَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَنَسٌ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ خَالَهُ أَخٌ لِأُمِّ سُلَيْمٍ فِيْ سَبْعِيْنَ رَاكِبًا وَكَانَ رَئِيْسَ الْمُشْرِكِيْنَ عَامِرُ بْنُ الطُّفَيْلِ خَيَّرَ بَيْنَ ثَلَاثِ خِصَالٍ فَقَالَ يَكُوْنُ لَكَ أَهْلُ السَّهْلِ وَلِيْ أَهْلُ الْمَدَرِ أَوْ أَكُوْنُ خَلِيْفَتَكَ أَوْ أَغْزُوْكَ بِأَهْلِ غَطَفَانَ بِأَلْفٍ وَأَلْفٍ فَطُعِنَ عَامِرٌ فِيْ بَيْتِ أُمِّ فُلَانٍ فَقَالَ غُدَّةٌ كَغُدَّةِ الْبَكْرِ فِيْ بَيْتِ امْرَأَةٍ مِنْ آلِ فُلَانٍ ائْتُوْنِيْ بِفَرَسِيْ فَمَاتَ عَلَى ظَهْرِ فَرَسِهِ فَانْطَلَقَ حَرَامٌ أَخُوْ أُمِّ سُلَيْمٍ وَهُوَ رَجُلٌ أَعْرَجُ وَرَجُلٌ مِنْ بَنِيْ فُلَانٍ قَالَ كُوْنَا قَرِيْبًا حَتَّى آتِيَهُمْ فَإِنْ آمَنُوْنِيْ كُنْتُمْ وَإِنْ قَتَلُوْنِيْ أَتَيْتُمْ أَصْحَابَكُمْ فَقَالَ أَتُؤْمِنُوْنِيْ أُبَلِّغْ رِسَالَةَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يُحَدِّثُهُمْ وَأَوْمَئُوْا إِلَى رَجُلٍ فَأَتَاهُ مِنْ خَلْفِهِ فَطَعَنَهُ قَالَ هَمَّامٌ أَحْسِبُهُ حَتَّى أَنْفَذَهُ بِالرُّمْحِ قَالَ اللهُ أَكْبَرُ فُزْتُ وَرَبِّ الْكَعْبَةِ فَلُحِقَ الرَّجُلُ فَقُتِلُوْا كُلُّهُمْ غَيْرَ الْأَعْرَجِ كَانَ فِيْ رَأْسِ جَبَلٍ فَأَنْزَلَ اللهُ عَلَيْنَا ثُمَّ كَانَ مِنَ الْمَنْسُوْخِ إِنَّا قَدْ لَقِيْنَا رَبَّنَا فَرَضِيَ عَنَّا وَأَرْضَانَا فَدَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ ثَلَاثِيْنَ صَبَاحًا عَلَى رِعْلٍ وَذَكْوَانَ وَبَنِيْ لَحْيَانَ وَعُصَيَّةَ الَّذِيْنَ عَصَوْا اللهَ وَرَسُوْلَهُ صلى الله عليه وسلم

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মামা উম্মু সুলায়ম-এর ভাই [হারাম ইবনু মিলহান(রা;) কে সত্তরজন অশ্বারোহীসহ (আমির ইবনু তুফাইলের নিকট) পাঠালেন। মুশরিকদের দলপতি আমির ইবনু তুফায়ল (পূর্বে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তিনটি বিষয়ের যে কোন একটি গ্রহন করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল। সে বলেছিল, পল্লী এলাকায় আপনার কর্তৃত্ব থাকবে এবং শহর এলাকায় আমার কর্তৃত্ব থাকবে। অথবা আমি আপনার খলীফা হব বা গাতফান গোত্রের দুই হাজার সৈন্য নিয়ে আমি আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। এরপর আমির উম্মু ফুলানোর গৃহে মহামারিতে আক্তান্ত হল। সে বলল, অমুক গোত্রের মহিলার বাড়িতে উটের যেমন ফোঁড়া হয় আমারও তেমন ফোঁড়া হয়েছে। তোমরা আমার ঘোড়া নিয়ে আস। তারপর ঘোড়ার পিঠেই সে মারা যায়। উম্মু সুলায়ম (রাঃ) এর ভাই হারাম [ইবনু মিলহান (রাঃ)] এক খোঁড়া ব্যক্তি ও কোন এক গোত্রের অপর ব্যক্তি সহ সে এলাকার দিকে রওয়ানা করলেন। [হারাম ইবনু মিলহান (রাঃ)] তার দুই সঙ্গীকে লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা নিকটেই অবস্থান কর। আমিই তাদের নিকট যাচ্ছি। তারা যদি আমাকে নিরাপত্তা দেয়, তাহলে তোমরা এখানেই থাকবে। আর যদি তারা আমাকে শাহীদ করে দেয় তাহলে তোমরা তোমাদের সঙ্গীদের কাছে চলে যাবে। এরপর তিনি (তাদের নিকট গিয়ে) বললেন, তোমরা (আমাকে) নিরাপত্তা দিবে কি? দিলে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি পয়গাম তোমাদের কাছে পৌছিয়ে দিতাম। তিনি তাদের সঙ্গে এ ধরনের আলাপ- আলোচনা করছিলেন। এমন সময় তারা এক ব্যক্তিকে ইশারা করলে সে পেছন থেকে এসে তাঁকে বর্শা দ্বারা আঘাত করল। হাম্মাম (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয় আমার শায়খ (ইসহাক (রহঃ)] বলেছিলেন যে, বর্শা দ্বারা আঘাত করে এপার ওপার করে দিয়েছিল। (আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে) হারাম ইবনু মিলহান (রাঃ) বললেন, আল্লাহু আকবার, কাবার প্রভুর শপথ! আমি সফলকাম হয়েছি। এরপর উক্ত (হারামের সঙ্গী) লোকটি ব্যতীত সকলেই নিহত হলেন। খোঁড়া লোকটি ছিলেন পর্বতের চুড়ায়। এরপর আল্লাহ তা‘আলা আমাদের প্রতি (একখানা) আয়াত অবতীর্ণ করলেন যা পরে মানসূখ হয়ে যায়। আয়াতটি ছিল এইঃ…………. “আমরা আমাদের প্রতিপালকের সান্নিধ্যে পৌছে গেছি। তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ঠ হয়েছেন এবং আমাদেরকেও সন্তুষ্ঠ করেছেন।” তাই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ত্রিশ দিন পর্যন্ত ফজরের সলাতে রি‘ল, যাকওয়ান, বনূ লিহ্ইয়ান এবং উসায়্যা গোত্রের জন্য বদদু‘আ করেছেন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের অবাধ্য হয়েছিল।

 

[১০০০] (আ. প্র ৩৭৮৫, ই.ফা. ৩৭৮৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৯২

حِبَّانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ قَالَ حَدَّثَنِيْ ثُمَامَةُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَنَسٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ لَمَّا طُعِنَ حَرَامُ بْنُ مِلْحَانَ وَكَانَ خَالَهُ يَوْمَ بِئْرِ مَعُوْنَةَ قَالَ بِالدَّمِ هَكَذَا فَنَضَحَهُ عَلَى وَجْهِهِ وَرَأْسِهِ ثُمَّ قَالَ فُزْتُ وَرَبِّ الْكَعْبَةِ

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মামা হারাম ইবনু মিলহান (রাঃ)-কে বি‘রে মাউনার দিন বর্শা বিদ্ধ করা হলে তিনি এভাবে দু‘হাতে রক্ত নিয়ে নিজের চেহারা ও মাথায় মেখে বললেন, কা‘বার প্রভুর কসম, আমি সফলকাম হয়েছি।

 

[১০০০] (আ.প্র. ৩৭৮৬, ই.ফা. ৩৭৮৯)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৯৩

عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ اسْتَأْذَنَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَبُوْ بَكْرٍ فِي الْخُرُوْجِ حِيْنَ اشْتَدَّ عَلَيْهِ الْأَذَى فَقَالَ لَهُ أَقِمْ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَتَطْمَعُ أَنْ يُؤْذَنَ لَكَ فَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ إِنِّيْ لَأَرْجُوْ ذَلِكَ قَالَتْ فَانْتَظَرَهُ أَبُوْ بَكْرٍ فَأَتَاهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ ظُهْرًا فَنَادَاهُ فَقَالَ أَخْرِجْ مَنْ عِنْدَكَ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ إِنَّمَا هُمَا ابْنَتَايَ فَقَالَ أَشَعَرْتَ أَنَّهُ قَدْ أُذِنَ لِيْ فِي الْخُرُوْجِ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ الصُّحْبَةَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الصُّحْبَةَ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ عِنْدِيْ نَاقَتَانِ قَدْ كُنْتُ أَعْدَدْتُهُمَا لِلْخُرُوْجِ فَأَعْطَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم إِحْدَاهُمَا وَهِيَ الْجَدْعَاءُ فَرَكِبَا فَانْطَلَقَا حَتَّى أَتَيَا الْغَارَ وَهُوَ بِثَوْرٍ فَتَوَارَيَا فِيْهِ فَكَانَ عَامِرُ بْنُ فُهَيْرَةَ غُلَامًا لِعَبْدِ اللهِ بْنِ الطُّفَيْلِ بْنِ سَخْبَرَةَ أَخُوْ عَائِشَةَ لِأُمِّهَا وَكَانَتْ لِأَبِيْ بَكْرٍ مِنْحَةٌ فَكَانَ يَرُوْحُ بِهَا وَيَغْدُوْ عَلَيْهِمْ وَيُصْبِحُ فَيَدَّلِجُ إِلَيْهِمَا ثُمَّ يَسْرَحُ فَلَا يَفْطُنُ بِهِ أَحَدٌ مِنْ الرِّعَاءِ فَلَمَّا خَرَجَ خَرَجَ مَعَهُمَا يُعْقِبَانِهِ حَتَّى قَدِمَا الْمَدِيْنَةَ فَقُتِلَ عَامِرُ بْنُ فُهَيْرَةَ يَوْمَ بِئْرِ مَعُوْنَةَ

وَعَنْ أَبِيْ أُسَامَةَ قَالَ قَالَ هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ فَأَخْبَرَنِيْ أَبِيْ قَالَ لَمَّا قُتِلَ الَّذِيْنَ بِبِئْرِ مَعُوْنَةَ وَأُسِرَ عَمْرُوْ بْنُ أُمَيَّةَ الضَّمْرِيُّ قَالَ لَهُ عَامِرُ بْنُ الطُّفَيْلِ مَنْ هَذَا فَأَشَارَ إِلَى قَتِيْلٍ فَقَالَ لَهُ عَمْرُوْ بْنُ أُمَيَّةَ هَذَا عَامِرُ بْنُ فُهَيْرَةَ فَقَالَ لَقَدْ رَأَيْتُهُ بَعْدَ مَا قُتِلَ رُفِعَ إِلَى السَّمَاءِ حَتَّى إِنِّيْ لَأَنْظُرُ إِلَى السَّمَاءِ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْأَرْضِ ثُمَّ وُضِعَ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَبَرُهُمْ فَنَعَاهُمْ فَقَالَ إِنَّ أَصْحَابَكُمْ قَدْ أُصِيْبُوْا وَإِنَّهُمْ قَدْ سَأَلُوْا رَبَّهُمْ فَقَالُوْا رَبَّنَا أَخْبِرْ عَنَّا إِخْوَانَنَا بِمَا رَضِيْنَا عَنْكَ وَرَضِيْتَ عَنَّا فَأَخْبَرَهُمْ عَنْهُمْ وَأُصِيْبَ يَوْمَئِذٍ فِيْهِمْ عُرْوَةُ بْنُ أَسْماءَ بْنِ الصَّلْتِ فَسُمِّيَ عُرْوَةُ بِهِ وَمُنْذِرُ بْنُ عَمْرٍو سُمِّيَ بِهِ مُنْذِرًا

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (মাক্কার কাফিরদের) অত্যাচার চরম আকার ধারণ করলে আবূ বকর (রাঃ) (মক্কা ছেড়ে) বেরিয়ে যাওয়ার জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে অনুমতি চাইলে তিনি তাঁকে বললেন, অবস্থান কর। তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি কামনা করেন যে, আপনাকে অনুমতি দেয়া হোক?তিনি বললেন, আমি তো তাই আশা করি। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আবূ বকর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য অপেক্ষা করলেন। একদিন যুহরের সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এসে তাঁকে ডেকে বললেন, তোমার কাছে যারা আছে তাদেরকে সরিয়ে দাও। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, এরা তো আমার দু’ মেয়ে। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি জান আমাকে চলে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে?আবূ বকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি আপনার সঙ্গে যেতে পারব? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ আমার সঙ্গে যেতে পারবে। আবূ বকর বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার কাছে দু‘টি উটনী আছে। এখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্যই ্এ দুটিকে আমি প্রস্তুক করে রেখেছি। এর পর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দু‘টি উটের একটি প্রদান করলেন। এ উটটি ছিল কান-নাক কাটা। তাঁরা উভয়ে সওয়ার হয়ে রওয়ানা হলেন এবং সওর পর্বতের গুহায় পৌছে তাতে লুকিয়ে থাকলেন। ‘আয়িশা (রাঃ) এর বৈমাত্রেয় ভাই ‘আমির ইবনু ফুহাইরাহ ছিলেন ‘আবদুল্লাহ ইবনু তুফাইল ইবনু সাখ্বারার গোলাম। আবূ বকর (রাঃ) এর একটি দুধের গাভী ছিল। তিনি (আমির ইবনু ফুহাইরা ) সেটিকে সন্ধ্যাবেলা চরাতে নিয়ে গিয়ে রাতের অন্ধকারে তাদের দু‘জনের কাছে নিয়ে যেতেন এবং ভোরবেলা তাঁদের (কাফিরের) কাছে নিয়ে যেতেন। কোন রাখালই এ বিষয়টি বুঝতে পারত না। তাঁরা দু‘জন গারে সওর থেকে বের হলে তিনিও তাদের সঙ্গে রওয়ানা হলেন। তাঁরা মাদীনাহ পৌছে যান। ‘আমির ইবনু ফুহাইরাহ পরবর্তীকালে বি‘রে মাউনার দুর্ঘটনায় শাহাদাত লাভ করেন।

 

(অন্য সনদে) আবূ উসামাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হিশাম ইবনু ‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, আমার পিতা আমাকে বলেছেন, বি‘রে মাউনা গমনকারীরা শাহীদ হলে ‘আমর ইবনু উমাইয়া যামরী বন্দী হলেন। তাঁকে আমির ইবনু তুফায়ল এক নিহত ব্যক্তির লাশ দেখিয়ে জিজ্ঞেস করল, এ ব্যক্তি কে? আমর ইবনু উমাইয়া বললেন, ইনি হচ্ছেন ‘আমির ইবনু ফুহাইরাহ। তখন সে (আমির ইবনু তুফায়ল) বলল, আমি দেখলাম, নিহত হওয়ার পর তার লাশ আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। এমনকি আমি তার লাশ আসমানে যমীনের মাঝে দেখেছি। এরপর তা (যমীনের উপর) রেখে দেয়া হল। এ সংবাদ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পৌছলে তিনি সাহাবীগনকে তাদের শাহাদাতের সংবাদ জানিয়ে বললেন, তোমাদের সাথীদেরকে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুর পূর্বে তারা তাদের প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট এবং আপনিও আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট-এ সংবাদ আমাদের ভাইদের কাছে পৌছে দিন। তাই মহান আল্লাহ তাঁদের এ সংবাদ মুসলিমদের কাছে পৌছিয়ে দিলেন। ঐ দিনের নিহতদের মধ্যে ‘উরওয়াহ ইবনু আসমা ইবনু সাল্লাত (রাঃ) ও ছিলেন। তাই এ নামেই ‘উরওয়াহ (ইবনু যুবায়রের )-এর নামকরণ করা হয়েছে। আর মুনযির ইবনু ‘আমর (রাঃ) ও এ দিন শাহাদাত লাভ করেছিলেন। তাই এ নামেই মুনযির-এর নামকরণ করা হয়েছে।

 

[৪৭৬] (আ.প্র. ৩৭৮৭. ই.ফা. ৩৭৯০)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৯৪

مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ عَنْ أَبِيْ مِجْلَزٍ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَنَتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ الرُّكُوْعِ شَهْرًا يَدْعُوْ عَلَى رِعْلٍ وَذَكْوَانَ وَيَقُوْلُ عُصَيَّةُ عَصَتْ اللهَ وَرَسُوْلَهُ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাস ব্যাপী সলাতে রুকুর পরে কুনূত পাঠ পড়েছেন। এতে তিনি রি‘ল, যাকওয়ান গোত্রের জন্য বদদু‘আ করেছেন। তিনি বলেন, উসায়্যা গোত্র আল্লাহ ও তাঁর রসুলের অবাধ্যতা করেছে।

 

[১০০০] (আ. প্র ৩৭৮৮ ই.ফা. ৩৭৯১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৯৫

يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ دَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الَّذِيْنَ قَتَلُوْا يَعْنِيْ أَصْحَابَهُ بِبِئْرِ مَعُوْنَةَ ثَلَاثِيْنَ صَبَاحًا حِيْنَ يَدْعُوْ عَلَى رِعْلٍ وَلَحْيَانَ وَعُصَيَّةَ عَصَتْ اللهَ وَرَسُوْلَهُ قَالَ أَنَسٌ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى لِنَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الَّذِيْنَ قُتِلُوْا أَصْحَابِ بِئْرِ مَعُوْنَةَ قُرْآنًا قَرَأْنَاهُ حَتَّى نُسِخَ بَعْدُ بَلِّغُوْا قَوْمَنَا فَقَدْ لَقِيْنَا رَبَّنَا فَرَضِيَ عَنَّا وَرَضِيْنَا عَنْهُ

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যারা বি‘রে মাউনার নিকট নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীগণকে শহীদ করেছিল সে হত্যাকারী রি‘ল, যাকওয়ান, বানী লিহ্ইয়ান এবং উসায়্যা গোত্রের প্রতি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ত্রিশদিন ব্যাপী ফাজরের সালাতে বদ‘দুআ করেছেন। তারা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের নাফরমানী করেছে। আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, বি‘রে মাউনা নামক স্থাানে যারা শাহাদাত লাভ করেছেন তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাঁর নাবীর প্রতি আয়াত অবতীর্ণ করেছিলেন। আমরা তা পাঠ করতাম। অবশ্য পরে এর তিলাওয়াত রহিত হয়ে গেছে। (আয়াতটি হল)…….. অর্থাৎ আমাদের কাছে এ খবর পৌছিয়ে দাও যে, আমরা আমাদের প্রতিপালকের সান্নিধ্যে পৌছে গেছি। তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং আমরাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছি।

 

[১০০০] (আ.প্র. ৩৭৮৯, ই.ফা. ৩৭৯২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪০৯৬

مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا عَاصِمٌ الْأَحْوَلُ قَالَ سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ الْقُنُوْتِ فِي الصَّلَاةِ فَقَالَ نَعَمْ فَقُلْتُ كَانَ قَبْلَ الرُّكُوْعِ أَوْ بَعْدَهُ قَالَ قَبْلَهُ قُلْتُ فَإِنَّ فُلَانًا أَخْبَرَنِيْ عَنْكَ أَنَّكَ قُلْتَ بَعْدَهُ قَالَ كَذَبَ إِنَّمَا قَنَتَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ الرُّكُوْعِ شَهْرًا أَنَّهُ كَانَ بَعَثَ نَاسًا يُقَالُ لَهُمْ الْقُرَّاءُ وَهُمْ سَبْعُوْنَ رَجُلًا إِلَى نَاسٍ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ وَبَيْنَهُمْ وَبَيْنَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَهْدٌ قِبَلَهُمْ فَظَهَرَ هَؤُلَاءِ الَّذِيْنَ كَانَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ رَسُوْلِ اللهِ عَهْدٌ فَقَنَتَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ الرُّكُوْعِ شَهْرًا يَدْعُوْ عَلَيْهِمْ

আসিমুল আহ্ওয়াল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কে সলাতে (দু‘আ) কুনুত পড়তে হবে কি না-এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বললেন, হ্যাঁ পড়তে হবে। আমি বললাম, রুকুর আগে পড়তে হবে, না পরে? তিনি বললেন, রুকুর আগে। আমি বললাম, অমুক ব্যক্তি আপনার সূত্রে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, আপনি রুকুর পর কুনূত পাঠ করার কথা বলেছেন। তিনি বললেন, সে মিথ্যা বলেছে। কেননা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাত্র একমাস ব্যাপী রুকুর পর কুনূত পাঠ করেছেন। এর কারণ ছিল এই যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্তরজন কারীর একটি দলকে মুশরিকদের নিকট কোন এক কাজে পাঠিয়েছিলেন। এ সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাদের মধ্যে চুক্তি ছিল। আক্রমণকারীরা বিজয়ী হল। তাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের প্রতি বদদু‘আ করে সলাতে রুকুর পর এক মাস ব্যাপী কুনূত পাঠ করেছেন।

 

[১০০০] (আ.প্র. ৩৭৯০, ই.ফা. ৩৭৯৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস