বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে আজানের জবাব ও আযানের দোয়া এবং এর ফজিলত। রাসুল (সা) বলেছেন, তোমরা যখন মুওয়াজ্জিনকে আযান দিতে শুন, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বল। অতঃপর আমার উপর দুরূদ পাঠ কর। কেননা, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে তার উপর দশবার রহমাত বর্ষণ করেন। অতঃপর আমার জন্যে আল্লাহর কাছে ওয়াসীলাহ প্রার্থনা কর। কেননা, ‘ওয়াসীলাহ’ জান্নাতের একটি সম্মানজনক স্থান। এটা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে একজনকেই দেয়া হবে। আমি আশা করি, আমিই হব সে বান্দা। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আমার জন্যে ওয়াসীলাহ প্রার্থনা করবে তার জন্যে (আমার) শাফাআত ওয়াজিব হয়ে যাবে। (সহীহ মুসলিম হাদিস নং ৭৩৫)
উপরিউক্ত হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে, আজান শোনার পর আমাদের উচিত আযানের জবাবে মুয়াজ্জিন যা বলে তাই বলা। অতঃপর রাসুল (সা) এর উপর দুরুদ পাঠ করা। অতঃপর রাসুল (সা) এর জন্য ওসিলাহ প্রার্থনা করা। আর এগুলো করা আমাদের জন্য সুন্নাত। রাসুল (সা) আমাদেরকে ওসিলাহ প্রার্থনা করতে যে দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন তা আযানের দোয়া নামে পরিচিত। নিচে আজানের জবাব ও আযানের দোয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
Table of Contents
Toggleআজানের জবাব দেওয়ার সঠিক নিয়ম ও ফজিলত
মুয়াযযিনের আযানের জবাবে শ্রোতারা তাই বলবে যা মুয়াযযিন বলে। তবে দুই হাইয়্যা ‘আলা-এর ক্ষেত্রে (لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ) ‘‘লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ’’ বলবে। আর এটা উমার (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসে রয়েছে। আর ফজরের আযানের সময় মুয়াযযিন যখন اَلصَّلَاةُ خَيْرُ مِّنَ النَّوْمِ বলেন তখন এর উত্তরে صَدَّقْتَ وَبَرَرْتَ বলার কোন দলীল পাওয়া যায় না।
হাদিস নং ১
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو جَعْفَرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ جَهْضَمٍ الثَّقَفِيُّ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسَافٍ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا قَالَ الْمُؤَذِّنُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ . فَقَالَ أَحَدُكُمُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ .
ثُمَّ قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ثُمَّ قَالَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ . قَالَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ . ثُمَّ قَالَ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ . قَالَ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ . ثُمَّ قَالَ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ . قَالَ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ . ثُمَّ قَالَ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ . قَالَ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ . ثُمَّ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . مِنْ قَلْبِهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ ” .
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুওয়ায্যিন যখন “আল্ল-হু আকবার, আল্ল-হু আকবার” বলে তখন তোমাদের কোন ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে তার জবাবে বলেঃ “আল্লহু আকবার, আল্ল-হু আকবার”। যখন মুওয়ায্যিন বলেঃ “আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” এর জবাবে সেও বলেঃ “আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ”। অতঃপর মুওয়ায্যিন বলেঃ আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্লা-হ” এর জবাবে সে বলেঃ “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্ল-হ্’। অতঃপর মুওয়ায্যিন বলেঃ “হাইয়্যা ‘আলাস সলা-হ্” এর জবাবে সে বলেঃ “লা-হাওলা ওয়ালা-কুও্ওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ”। অতঃপর মুওয়ায্যিন বলেঃ “হাইয়্যা ‘আলাল ফালা-হ্” এর জবাবে সে বলেঃ ““লা-হাওলা ওয়ালা-কুও্ওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ”। অতঃপর মুওয়ায্যিন বলেঃ “আল্ল-হু আকবার, আল্ল-হু আকবার”এর জবাবে সে বলেঃ “আল্ল-হু আকবর, আল্ল-হু আকবার”। অতঃপর মুওয়ায্যিন বলেঃ “লা-ইলা-হা ইল্লাল-হ” এর জবাবে সে বলেঃ “লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ”। আযানের এ জবাব দেয়ার কারণে সে বেহেশতে যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সহীহ মুসলিম হাদিস নং ৭৩৬, মিশকাত হাদিস নং ৬৫৮
আযানের দোয়া আরবি
اللّهُمَّ رَبَّ هذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ اۤتِ مُحَمَّدَانِ الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودَانِ الَّذِي وَعَدْتَه
আযানের দোয়া বাংলা উচ্চারণ
আল্ল-হুম্মা রব্বা হা-যিহিদ দা’ওয়াতিত তা-ম্মাতি ওয়াস্ সলা-তিল ক্ব-য়িমাতি আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাযী-লাহ, ওয়াব’আস্হু মাক্বা-মাম মাহমূদা-নিল্লাযী ওয়া’আদ্তাহ্।
আযানের দোয়া বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ! এ পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত সালাতের প্রভু! তুমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে দান করো ওয়াসীলা; সুমহান মর্যাদা ও প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও তাঁকে (মাক্বামে মাহমূদে), যার ওয়াদা তুমি তাঁকে দিয়েছ।
আযানের অপর একটি দোয়া
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلهَ اِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيْكَ لَه وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُولُه رَضِيتُ بِاللهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولًا وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا
আশ্হাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারীকা লাহু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রসূলুহূ, রাযিতু বিল্লা-হি রব্বাওঁ ওয়াবি মুহাম্মাদিন রসূলান ওয়াবিল ইসলা-মি দীনান।
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি এক তাঁর কোন শারীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রসূল, আমি আল্লাহকে রব, দ্বীন হিসেবে ইসলাম, রসূল হিসেবে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানি ও মানি এবং এর উপর আমি সন্তুষ্ট।
আযানের দোয়ার ফজিলত
হাদিস নং ১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ حَيْوَةَ، وَسَعِيدِ بْنِ أَبِي أَيُّوبَ، وَغَيْرِهِمَا، عَنْ كَعْبِ بْنِ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ ثُمَّ صَلُّوا عَلَىَّ فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَىَّ صَلاَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا ثُمَّ سَلُوا اللَّهَ لِيَ الْوَسِيلَةَ فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الْجَنَّةِ لاَ تَنْبَغِي إِلاَّ لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ فَمَنْ سَأَلَ لِيَ الْوَسِيلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ ” .
আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ তোমরা যখন মুওয়াজ্জিনকে আযান দিতে শুন, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বল। অতঃপর আমার উপর দুরূদ পাঠ কর। কেননা, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে তার উপর দশবার রহমাত বর্ষণ করেন। অতঃপর আমার জন্যে আল্লাহর কাছে ওয়াসীলাহ প্রার্থনা কর। কেননা, ‘ওয়াসীলাহ’ জান্নাতের একটি সম্মানজনক স্থান। এটা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে একজনকেই দেয়া হবে। আমি আশা করি, আমিই হব সে বান্দা। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আমার জন্যে ওয়াসীলাহ প্রার্থনা করবে তার জন্যে (আমার) শাফাআত ওয়াজিব হয়ে যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সহীহ মুসলিম হাদিস নং ৭৩৫, মিশকাত হাদিস নং ৬৫৭
হাদিস নং ২
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ النِّدَاءَ اللّهُمَّ رَبَّ هذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ اۤتِ مُحَمَّدَانِ الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودَانِ الَّذِي وَعَدْتَه حَلَّتْ لَه شَفَاعَتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ. رَوَاهُ الْبُخَارِىُّ
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আযান শুনে দুআ করেঃ “আল্ল-হুম্মা রব্বা হা-যিহিদ দা’ওয়াতিত তা-ম্মাতি ওয়াস্ সলা-তিল ক্ব-য়িমাতি আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাযী-লাহ, ওয়াব’আস্হু মাক্বা-মাম মাহমূদা-নিল্লাযী ওয়া’আদ্তাহ্” অর্থাৎ “হে আল্লাহ! এ পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত সালাতের প্রভু! তুমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে দান করো ওয়াসীলা; সুমহান মর্যাদা ও প্রশংসিত স্থানে পৌঁছাও তাঁকে (মাক্বামে মাহমূদে), যার ওয়া’দা তুমি তাঁকে দিয়েছ” ক্বিয়ামাতের দিন সে আমার শাফা’আত লাভের অধিকারী হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সহীহ বুখারী হাদিস নং ৬১৪, নাসায়ী ৬৮০, আবূ দাঊদ ৫২৯, ইরওয়া ২৪৩, সহীহ আল জামি‘ ৬৪২৩, তিরমিযী ২১১, ইবনু মাজাহ্ ৭২২, আহমাদ ১৪৮১৭।
হাদিস নং ৩
وَعَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ الْمُؤَذِّنَ أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلهَ اِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيْكَ لَه وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُولُه رَضِيتُ بِاللهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولًا وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا غُفِرَ لَه ذَنْبُه. رَوَاهُ مُسْلِمٌ
সাদ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : যে ব্যক্তি মুয়ায্যিনের আযান শুনে এই দু’আ পড়বে, “আশ্হাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারীকা লাহু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রসূলুহূ, রাযিতু বিল্লা-হি রব্বাওঁ ওয়াবি মুহাম্মাদিন রসূলান ওয়াবিল ইসলা-মি দীনা” (অর্থাৎ- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি এক তাঁর কোন শারীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রসূল, আমি আল্লাহকে রব, দ্বীন হিসেবে ইসলাম, রসূল হিসেবে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানি ও মানি এবং এর উপর আমি সন্তুষ্ট, তাহলে তার সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
সহীহ মুসলিম হাদিস নং ৭৩৭, মিশকাত হাদিস নং ৬৬১, আবূ দাঊদ ৫২৫, নাসায়ী ৬৭৯, তিরমিযী ২১০, ইবনু মাজাহ্ ৭২১, আহমাদ ১৫৬৫, সহীহ ইবনু হিব্বান ১৬৯৩, সহীহ আল জামি‘ ৬৪২২।
আজানের জবাব ও আযানের দোয়ায় বাড়াবাড়ি
আযানের জবাবে কয়েকটি বিষয় বাড়তিভাবে চালু হয়েছে, যা থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেনঃ “যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার নামে মিথ্যারোপ করলো, সে জাহান্নামে তার ঠিকানা করে নিল।” (বুখারী, মিশকাত ১৯৮ ‘ইলম অধ্যায়)
(১) অত্র হাদীসের শেষাংশে ‘ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী’আদ।
(২) বায়হাক্বীতে (১ম খণ্ডের ৪১০ পৃঃ) বর্ণিত আযানের দু’আর শুরুতে ‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আস-আলুকা বি হাক্কি হা-যিহিদ দা’ওয়াতে।
(৩) ইমাম তাহাভীর শারহু মা’আনিল আসার-এ বর্ণিত ‘আ-তি সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদান।
(৪) ইবনুস সুন্নীর ‘ফী ‘আমালিল ইয়াওমি ওয়াল লায়লাহ’ গ্রন্থে ওয়াদ দারাজাতার রাফী’আহ।
(৫) রাফী’ঈ প্রণীত ‘আল মুহাররির গ্রন্থে আযানের দু’আর শেষে বর্ণিত ‘ইয়া আরহামার রা-হিমীন। আযানের জওয়াবে প্রচলিত বাড়তি বিষয়গুলো অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
অতিরিক্ত শব্দগুলো সহীহ সূত্রে প্রমাণিত নয়। (মুহাদ্দিস শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী কৃত ‘ইরওয়াইল গালীল, ১ম খণ্ড ২৬০-২৬১ পৃষ্ঠা হাদীস নং ২৪৩)
(৬) রেডিও ও বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে প্রচারিত দু’আয় ‘ওয়ারযুকনা শা’আতাহূ ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ’ বাক্যটি যা যোগ করা হয়েছে তার কোন ভিত্তি নেই।
(৭) ফজরের আযানের সময় মুয়াযযিন যখন اَلصَّلَاةُ خَيْرُ مِّنَ النَّوْمِ বলেন তখন এর উত্তরে صَدَّقْتَ وَبَرَرْتَ বলার কোন দলীল পাওয়া যায় না।