বুখারী আযান অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৬৭১ – ৭৪০ আযান সব বুখারী হাদিস by admin - নভেম্বর 8, 2021নভেম্বর 10, 20210 Table of Contents - সূচিপত্র ১০/৪২. অধ্যায়ঃ৬৭১৬৭২৬৭৩৬৭৪১০/৪৩. অধ্যায়ঃ৬৭৫১০/৪৪. অধ্যায়ঃ৬৭৬১০/ ৪৫. অধ্যায়ঃ৬৭৭১০/৪৬. অধ্যায়ঃ৬৭৮৬৭৯৬৮০৬৮১৬৮২১০/৪৭. অধ্যায়ঃ৬৮৩১০/৪৮. অধ্যায়ঃ৬৮৪১০/৪৯. অধ্যায়ঃ৬৮৫১০/৫০. অধ্যায়ঃ৬৮৬১০/৫১. অধ্যায়ঃ৬৮৭৬৮৮৬৮৯১০/৫২. অধ্যায়ঃ৬৯০১০/৫৩. অধ্যায়ঃ৬৯১১০/৫৪. অধ্যায়ঃ৬৯২৬৯৩১০/৫৫. অধ্যায়ঃ৬৯৪১০/৫৬. অধ্যায়ঃ৬৯৫৬৯৬১০/৫৭. অধ্যায়ঃ৬৯৭১০/৫৮. অধ্যায়ঃ৬৯৮১০/৫৯. অধ্যায়ঃ৬৯৯১০/৬০. অধ্যায়ঃ৭০০৭০১১০/৬১. অধ্যায়ঃ৭০২১০/৬২. অধ্যায়ঃ৭০৩১০/৬৩. অধ্যায়ঃ৭০৪৭০৫১০/৬৪. অধ্যায়ঃ৭০৬১০/৬৫. অধ্যায়ঃ৭০৭৭০৮৭০৯৭১০১০/৬৬. অধ্যায়ঃ৭১১১০/৬৭ অধ্যায়:৭১২১০/৬৮. অধ্যায়ঃ৭১৩১০/৬৯. অধ্যায়ঃ৭১৪৭১৫১০/৭০. অধ্যায়ঃ৭১৬১০/৭১. অধ্যায়ঃ৭১৭৭১৮১০/৭২. অধ্যায়ঃ৭১৯১০/৭৩. অধ্যায়ঃ৭২০৭২১১০/৭৪. অধ্যায়ঃ৭২২৭২৩১০/৭৫. অধ্যায়ঃ৭২৪১০/৭৬. অধ্যায়ঃ৭২৫১০/৭৭. অধ্যায়ঃ৭২৬১০/৭৮. অধ্যায়ঃ৭২৭১০/৭৯. অধ্যায়ঃ৭২৮১০/৮০. অধ্যায়ঃ৭২৯১০/৮১. অধ্যায়ঃ৭৩০৭৩১১০/৮২. অধ্যায়ঃ৭৩২৭৩৩৭৩৪১০/৮৩. অধ্যায়ঃ৭৩৫১০/৮৪. অধ্যায়ঃ৭৩৬৭৩৭১০/৮৫. অধ্যায়ঃ৭৩৮১০/৮৬. অধ্যায়ঃ৭৩৯১০/৮৭. অধ্যায়ঃ৭৪০ ১০/৪২. অধ্যায়ঃ খাবার উপস্থিত হবার পর যদি সালাতের ইক্বামাত হয় । ইব্নু ‘উমর (রাঃ) (সালাতের) পূর্বে রাতের খাবার খেয়ে নিতেন। আবূ দারদা (রাঃ) বলেছেন, জ্ঞানীর পরিচয় হল, প্রথমে নিজের প্রয়োজন মেটানো, যাতে নিশ্চিতভাবে সালাতে মনোনিবেশ করতে পারে। ৬৭১ حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ إِذَا وُضِعَ الْعَشَاءُ وَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَابْدَءُوا بِالْعَشَاءِ ”. ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রাতের খাবার উপস্থিত করা হয়, আর সে সময় সালাতের ইক্বামাত হয়ে যায়, তখন প্রথমে খাবার খেয়ে নাও। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৭২ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا قُدِّمَ الْعَشَاءُ فَابْدَءُوا بِهِ قَبْلَ أَنْ تُصَلُّوا صَلاَةَ الْمَغْرِبِ، وَلاَ تَعْجَلُوا عَنْ عَشَائِكُمْ ”. আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিকেলের খাবার পরিবেশন করা হলে মাগরিবের সালাতের পূর্বে তা খেয়ে নিবে। খাওয়া রেখে সালাতে তাড়াহুড়া করবে না। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৭৩ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ أَبِي أُسَامَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا وُضِعَ عَشَاءُ أَحَدِكُمْ وَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَابْدَءُوا بِالْعَشَاءِ، وَلاَ يَعْجَلْ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْهُ ”. وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يُوضَعُ لَهُ الطَّعَامُ وَتُقَامُ الصَّلاَةُ فَلاَ يَأْتِيهَا حَتَّى يَفْرُغَ، وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ قِرَاءَةَ الإِمَامِ. ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারো সামনে রাতের খাবার এসে পড়ে, অপরদিকে সালাতের ইক্বামাত হয়ে যায়। তখন পূর্বে খাবার খেয়ে নিবে। খাওয়া রেখে সালাতে তাড়াহুড়া করবেনা। [নাফি’ (রহঃ) বলেন] ইব্নু ‘উমর (রাঃ) এর জন্য খাবার পরিবেশন করা হত, সে সময় সালাতের ইক্বামাত দেওয়া হত, তিনি খাবার শেষ না করে সালাতে আসতেন না। অথচ তিনি ইমামের কিরাআত শুনতে পেতেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৭৪ وَقَالَ زُهَيْرٌ وَوَهْبُ بْنُ عُثْمَانَ عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا كَانَ أَحَدُكُمْ عَلَى الطَّعَامِ فَلاَ يَعْجَلْ حَتَّى يَقْضِيَ حَاجَتَهُ مِنْهُ، وَإِنْ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ ”. رَوَاهُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ عَنْ وَهْبِ بْنِ عُثْمَانَ، وَوَهْبٌ مَدِينِيٌّ. ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন খাবার খেতে থাক, তখন সালাতের ইক্বামাত হয়ে গেলেও খাওয়া শেষ না করে তাড়াহুড়া করবেনা। আবু ‘আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, আমাকে ইবরাহীম ইব্নু মুনযির (রহঃ) এ হাদীসটি ওয়াহব ইব্নু উসমান (রহঃ) হতে বর্ণনা করেছেন এবং ওয়াহব হলেন মদীনাবাসী। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৪৩. অধ্যায়ঃ খাবার হাতে থাকা অবস্থায় ইমামকে সালাতের দিকে আহবান করলে । ৬৭৫ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي جَعْفَرُ بْنُ عَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ، أَنَّ أَبَاهُ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْكُلُ ذِرَاعًا يَحْتَزُّ مِنْهَا، فَدُعِيَ إِلَى الصَّلاَةِ فَقَامَ فَطَرَحَ السِّكِّينَ، فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ. আমর ইব্নু উমাইয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে (বকরীর) সামনের রানের গোশ্ত কেটে খেতে দেখতে পেলাম, এমনসময় তাঁকে সালাতের জন্য ডাকা হলে তিনি ছুরি রেখে দিয়ে উঠে গেলেন ও নতুন উযূ না করেই সালাত আদায় করলেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৪৪. অধ্যায়ঃ ঘরের কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় ইক্বামাত হলে, সালাতের জন্য বের হয়ে যাবে । ৬৭৬ حَدَّثَنَا آدَمُ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا الْحَكَمُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ مَا كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ فِي بَيْتِهِ قَالَتْ كَانَ يَكُونُ فِي مِهْنَةِ أَهْلِهِ ـ تَعْنِي خِدْمَةَ أَهْلِهِ ـ فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ خَرَجَ إِلَى الصَّلاَةِ. আসওয়াদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে থাকা অবস্থায় কী করতেন? তিনি বললেন, ঘরের কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন। অর্থাৎ পরিবারবর্গের সহায়তা করতেন। আর সালাতের সময় হলে সালাতের জন্য চলে যেতেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/ ৪৫. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কেবলমাত্র আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত ও তাঁর নিয়ম-নীতি শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেন । ৬৭৭ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، قَالَ جَاءَنَا مَالِكُ بْنُ الْحُوَيْرِثِ فِي مَسْجِدِنَا هَذَا فَقَالَ إِنِّي لأُصَلِّي بِكُمْ، وَمَا أُرِيدُ الصَّلاَةَ، أُصَلِّي كَيْفَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي. فَقُلْتُ لأَبِي قِلاَبَةَ كَيْفَ كَانَ يُصَلِّي قَالَ مِثْلَ شَيْخِنَا هَذَا. قَالَ وَكَانَ شَيْخًا يَجْلِسُ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ قَبْلَ أَنْ يَنْهَضَ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى. আবূ কিলাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একবার মালিক ইব্নু হুওয়াইরিস (রাঃ) আমাদের এ মসজিদে এলেন। তিনি বললেন, আমি অবশ্যিই তোমাদের নিয়ে সালাত আদায় করবো, বস্তুত আমার উদ্দেশ্য সালাত আদায় করা নয় বরং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছি, তা তোমাদের দেখানোই আমার উদ্দেশ্য। [আইয়ূব (রহঃ) বলেন] আমি আবূ কিলাবা (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কিরূপে সালাত আদায় করতেন? তিনি বললেন, আমাদের এই শাইখের মত আর শাইখ প্রথম রাক’আতের সিজদা শেষ করে যখন মাথা উত্তোলন করতেন, তখন দাঁড়ানোর আগে একটু বসতেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৪৬. অধ্যায়ঃ বিজ্ঞ ও মর্যাদাশীল ব্যক্তিই ইমামতের অধিক যোগ্য। ৬৭৮ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ مَرِضَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَاشْتَدَّ مَرَضُهُ فَقَالَ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ”. قَالَتْ عَائِشَةُ إِنَّهُ رَجُلٌ رَقِيقٌ، إِذَا قَامَ مَقَامَكَ لَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ. قَالَ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ” فَعَادَتْ فَقَالَ ” مُرِي أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ، فَإِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ ”. فَأَتَاهُ الرَّسُولُ فَصَلَّى بِالنَّاسِ فِي حَيَاةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অসুস্থ হয়ে পড়লেন, ক্রমে তাঁর অসুস্থতা তীব্রতর হলে তিনি বললেন, আবূ বক্রকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বল। ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, তিনি তো কোমল হৃদয়ের লোক, যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন তিনি লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে পারবেন না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেন, আবূ বক্রকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে। ‘আয়িশা (রাঃ) আবার সে কথা বললেন। তখন তিনি আবার বললেন, আবূ বকর (রাঃ) -কে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে। তোমরা ইউসুফের (‘আঃ) সাথী মহিলাদের মতোই। অতঃপর একজন সংবাদদাতা আবূ বকর (রাঃ)-এর নিকট সংবাদ নিয়ে আসলেন এবং তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশাতেই লোকদেরকে সঙ্গে নিয়ে সালাত আদায় করলেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৭৯ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّهَا قَالَتْ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فِي مَرَضِهِ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ ”. قَالَتْ عَائِشَةُ قُلْتُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ الْبُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ. فَقَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ قُولِي لَهُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ الْبُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ. فَفَعَلَتْ حَفْصَةُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَهْ، إِنَّكُنَّ لأَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ ”. فَقَالَتْ حَفْصَةُ لِعَائِشَةَ مَا كُنْتُ لأُصِيبَ مِنْكِ خَيْرًا. উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্তিম রোগে আক্রান্ত অবস্থায় বললেন, আবূ বকর (রাঃ) -কে বল সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, আবূ বকর (রাঃ) যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন তাঁর কান্নার দরুন লোকেরা তাঁর কিছু্ই শুনতে পাবে না। কাজেই ‘উমর (রাঃ) -কে লোকদের নিয়ে সালাত আদায়ের নির্দেশ দিন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি হাফ্সা (রাঃ) -কে বললাম, তুমিও আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বল যে, আবূ বকর (রাঃ) আপনার স্থানে দাঁড়ালে কান্নার জন্য লোকেরা কিছুই শুনতে পাবে না। তাই ‘উমর (রাঃ) -কে লোকদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করার নির্দেশ দিন। হাফ্সা (রাঃ) তাই করলেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, থামো, তোমরা ইউসুফ (‘আঃ)-এর সঙ্গী মহিলাদের মত। আবূ বকর (রাঃ) -কে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বল। তখন হাফ্সা (রাঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) -কে বললেন, আমি তোমার কাছ থেকে কখনও ভাল কিছু পেলাম না। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৮০ حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ الأَنْصَارِيُّ ـ وَكَانَ تَبِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَخَدَمَهُ وَصَحِبَهُ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ كَانَ يُصَلِّي لَهُمْ فِي وَجَعِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الَّذِي تُوُفِّيَ فِيهِ، حَتَّى إِذَا كَانَ يَوْمُ الاِثْنَيْنِ وَهُمْ صُفُوفٌ فِي الصَّلاَةِ، فَكَشَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سِتْرَ الْحُجْرَةِ يَنْظُرُ إِلَيْنَا، وَهْوَ قَائِمٌ كَأَنَّ وَجْهَهُ وَرَقَةُ مُصْحَفٍ، ثُمَّ تَبَسَّمَ يَضْحَكُ، فَهَمَمْنَا أَنْ نَفْتَتِنَ مِنَ الْفَرَحِ بِرُؤْيَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، فَنَكَصَ أَبُو بَكْرٍ عَلَى عَقِبَيْهِ لِيَصِلَ الصَّفَّ، وَظَنَّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَارِجٌ إِلَى الصَّلاَةِ، فَأَشَارَ إِلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَتِمُّوا صَلاَتَكُمْ، وَأَرْخَى السِّتْرَ، فَتُوُفِّيَ مِنْ يَوْمِهِ. আনাস ইব্নু মালিক আনসারী (রাঃ) যিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুসারী, খাদিম এবং সাহাবী ছিলেন থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্তিম রোগে পীড়িত অবস্থায় আবূ বকর (রাঃ) সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করতেন। অবশেষে যখন সোমবার এল এবং লোকেরা সালাতের জন্য কাতারে দাঁড়াল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুজরার পর্দা উঠিয়ে আমাদের দিকে তাকালেন। তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাঁর চেহারা যেন কুরআনে করীমের পৃষ্ঠা (এর ন্যায় ঝলমল করছিল)। তিনি মুচকি হাসলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখতে পেয়ে খুশীতে প্রায় আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম এবং আবূ বকর (রাঃ) কাতারে দাঁড়ানোর জন্য পিছন দিকে সরে আসছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হয়তো সালাতে বেরিয়ে আসবেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে ইশারায় জানালেন যে, তোমরা তোমাদের সালাত পূর্ণ করে নাও। অতঃপর তিনি পর্দা ছেড়ে দিলেন। সে দিনই তাঁর ওফাত হয়। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৮১ حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ لَمْ يَخْرُجِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثًا، فَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ، فَذَهَبَ أَبُو بَكْرٍ يَتَقَدَّمُ فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْحِجَابِ فَرَفَعَهُ، فَلَمَّا وَضَحَ وَجْهُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَا نَظَرْنَا مَنْظَرًا كَانَ أَعْجَبَ إِلَيْنَا مِنْ وَجْهِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حِينَ وَضَحَ لَنَا، فَأَوْمَأَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ إِلَى أَبِي بَكْرٍ أَنْ يَتَقَدَّمَ، وَأَرْخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْحِجَابَ، فَلَمْ يُقْدَرْ عَلَيْهِ حَتَّى مَاتَ. আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, (রোগাক্রান্ত থাকায়) তিনদিন পর্যন্ত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাইরে আসেননি। এমতাবস্থায় একসময় সালাতের ইক্বামাত দেয়া হল। আবূ বকর (রাঃ) ইমামত করার জন্য অগ্রসর হচ্ছিলেন। এমন সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরের পর্দা ধরে উঠালেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেহারা যখন আমাদের সম্মুখে প্রকাশ পেল, তাঁর চেহারার চেয়ে সুন্দর দৃশ্য আমরা আর কথনো দেখিনি। যখন তাঁর চেহারা আমাদের সম্মুখে প্রকাশ পেল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাতের ইঙ্গিতে আবূ বকর (রাঃ) -কে (ইমামতের জন্য) এগিয়ে যেতে বললেন এবং পর্দা ফেলে দিলেন। তারপর মৃত্যুর আগে তাঁকে আর দেখতে পাইনি। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৮২ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمَّا اشْتَدَّ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجَعُهُ قِيلَ لَهُ فِي الصَّلاَةِ فَقَالَ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ”. قَالَتْ عَائِشَةُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ رَقِيقٌ، إِذَا قَرَأَ غَلَبَهُ الْبُكَاءُ. قَالَ ” مُرُوهُ فَيُصَلِّي ” فَعَاوَدَتْهُ. قَالَ ” مُرُوهُ فَيُصَلِّي، إِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ ”. تَابَعَهُ الزُّبَيْدِيُّ وَابْنُ أَخِي الزُّهْرِيِّ وَإِسْحَاقُ بْنُ يَحْيَى الْكَلْبِيُّ عَنِ الزُّهْرِيِّ. وَقَالَ عُقَيْلٌ وَمَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ حَمْزَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রোগ যখন খুব বেড়ে গেল, তখন তাঁকে সালাতের জামা’আত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেন, আবূ বক্রকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে নেয়। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, আবূ বকর (রাঃ) অত্যস্ত কোমল মনের লোক। কির’আতের সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়বেন। তিনি বললেন, তাঁকেই সালাত আদায় করতে বল। ‘আয়িশা (রাঃ) সে কথার পুনরাবৃত্তি করলেন। তিনি আবার বললেন, তাঁকেই সালাত আদায় করতে বল। তোমরা ইউসুফ (‘আঃ)-এর সাথী মহিলাদের মতো। এ হাদীসটি যুহরী (রহঃ) হতে বর্ণনা করার ক্ষেত্রে যুবাইদী, যুহরীর ভাতিজা ও ইসহাক ইব্নু ইয়াহ্ইয়া কালবী (রহঃ) ইউনুস (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন। এবং মা’মার ও উকাইল (রহঃ) যুহরী (রহঃ)-এর মাধ্যমে হামযা (রাঃ)-এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীসটি (মুরসাল হিসেবে) বর্ণনা করেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৪৭. অধ্যায়ঃ কারণবশত ইমামের পাশে দাঁড়ানো। ৬৮৩ حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ يَحْيَى، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ فِي مَرَضِهِ، فَكَانَ يُصَلِّي بِهِمْ. قَالَ عُرْوَةُ فَوَجَدَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي نَفْسِهِ خِفَّةً، فَخَرَجَ فَإِذَا أَبُو بَكْرٍ يَؤُمُّ النَّاسَ، فَلَمَّا رَآهُ أَبُو بَكْرٍ اسْتَأْخَرَ، فَأَشَارَ إِلَيْهِ أَنْ كَمَا أَنْتَ، فَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِذَاءَ أَبِي بَكْرٍ إِلَى جَنْبِهِ، فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ يُصَلُّونَ بِصَلاَةِ أَبِي بَكْرٍ. ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, অস্তিম রোগে আক্রান্ত অবস্থায় আল্লাহর রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর (রাঃ) -কে লোকদের নিয়ে সলাত আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাই তিনি লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। ‘উরওয়া (রহঃ) বর্ণনা করেন, ইতিমধ্যে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটু সুস্থতা বোধ করলেন এবং সালাতের জন্য বেরিয়ে আসলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) লোকদের ইমামত করছিলেন। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দেখে পিছিয়ে আসতে চাইলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে ইঙ্গিত করলেন যে, যেভাবে আছ সেভাবেই থাক। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর (রাঃ)-এর বরাবর তাঁর পাশ বসে গেলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে অনুসরণ করে সালাত আদায় করছিলেন আর লোকেরা আবূ বকর (রাঃ) -কে অনুসরণ করে সালাত আদায় করছি। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৪৮. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি লোকদের ইমামত করার জন্য অগ্রসর হলে যদি পূর্ব (নির্ধারিত) ইমাম এসে যান তা’হলে তিনি পিছে সরে আসুন বা না আসুন উভয় অবস্থায় তাঁর সালাত আদায় হয়ে যাবে। এ মর্মে আয়িশা (রাঃ) থেকে একটি হাদীস বর্ণিত আছে। ৬৮৪ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي حَازِمِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَهَبَ إِلَى بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ لِيُصْلِحَ بَيْنَهُمْ فَحَانَتِ الصَّلاَةُ فَجَاءَ الْمُؤَذِّنُ إِلَى أَبِي بَكْرٍ فَقَالَ أَتُصَلِّي لِلنَّاسِ فَأُقِيمَ قَالَ نَعَمْ. فَصَلَّى أَبُو بَكْرٍ، فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ فِي الصَّلاَةِ، فَتَخَلَّصَ حَتَّى وَقَفَ فِي الصَّفِّ، فَصَفَّقَ النَّاسُ ـ وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ لاَ يَلْتَفِتُ فِي صَلاَتِهِ ـ فَلَمَّا أَكْثَرَ النَّاسُ التَّصْفِيقَ الْتَفَتَ فَرَأَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَأَشَارَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنِ امْكُثْ مَكَانَكَ، فَرَفَعَ أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ يَدَيْهِ، فَحَمِدَ اللَّهَ عَلَى مَا أَمَرَهُ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ ذَلِكَ، ثُمَّ اسْتَأْخَرَ أَبُو بَكْرٍ حَتَّى اسْتَوَى فِي الصَّفِّ، وَتَقَدَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ ” يَا أَبَا بَكْرٍ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَثْبُتَ إِذْ أَمَرْتُكَ ”. فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ مَا كَانَ لاِبْنِ أَبِي قُحَافَةَ أَنْ يُصَلِّيَ بَيْنَ يَدَىْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا لِي رَأَيْتُكُمْ أَكْثَرْتُمُ التَّصْفِيقَ مَنْ رَابَهُ شَىْءٌ فِي صَلاَتِهِ فَلْيُسَبِّحْ، فَإِنَّهُ إِذَا سَبَّحَ الْتُفِتَ إِلَيْهِ، وَإِنَّمَا التَّصْفِيقُ لِلنِّسَاءِ ”. সাহ্ল ইব্নু সা’দ সা’ঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমর ইব্নু আওফ গোত্রের এক বিবাদ মীমাংসার জন্য সেখানে যান। ইতিমধ্যে (আসরের) সালাতের সময় হয়ে গেলে, মুয়ায্যিন আবূ বকর (রাঃ)-এর নিকট এসে বললেন, আপনি কি লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে নেবেন? তা হলে ইক্বামাত দেই? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আবূ বকর (রাঃ) সালাত আরম্ভ করলেন। লোকেরা সালাতরত অবস্থাতেই আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসলেন এবং তিনি সারিগুলো ভেদ করে প্রথম সারিতে গিয়ে দাঁড়ালেন। তখন সাহাবীগণ হাতে তালি দিতে লাগলেন। আবূ বকর (রাঃ) সালাতে আর কোন দিকে তাকাতেন না। কিন্তু সাহাবীগণ যখন অধিক করে হাতে তালি দিতে লাগলেন, তখন তিনি তাকালেন এবং আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখতে পেলেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর প্রতি ইঙ্গিত করলেন- নিজের জায়গায় থাক। তখন আবূ বকর (রাঃ) দু’হাত উঠিয়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশের জন্য আল্লাহর প্রশংসা করে পিছিয়ে গেলেন এবং কাতারের বরাবর দাঁড়ালেনন। আর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সামনে এগিয়ে সলাত আদায় করলেন। সালাত শেষ করে তিনি বললেন, হে আবূ বক্র! আমি তোমাকে নির্দেশ দেয়ার পর কিসে তোমাকে বাধা দিয়েছিল? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আবূ কুহাফার পুত্রের জন্যে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা শোভনীয় নয়। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি তোমাদের এক হাতে তালি দিতে দেখলাম। কারণ কী? শোন! সালাতের কারো কিছু ঘটলে সুবহানাল্লাহ বলবে। সুবহানাল্লাহ্ বললেই তার প্রতি দৃষ্টি দেয়া হবে। আর হাতে তালি দেয়া তো মহিলাদের জন্য। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৪৯. অধ্যায়ঃ কয়েক ব্যক্তি কিরা’আত পাঠে সমান হলে, তাদের মধ্যে বয়সে বড় ব্যক্তি ইমাম হবেন। ৬৮৫ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ، قَالَ قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ شَبَبَةٌ، فَلَبِثْنَا عِنْدَهُ نَحْوًا مِنْ عِشْرِينَ لَيْلَةً، وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَحِيمًا فَقَالَ “ لَوْ رَجَعْتُمْ إِلَى بِلاَدِكُمْ فَعَلَّمْتُمُوهُمْ، مُرُوهُمْ فَلْيُصَلُّوا صَلاَةَ كَذَا فِي حِينِ كَذَا، وَصَلاَةَ كَذَا فِي حِينِ كَذَا، وَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَلْيُؤَذِّنْ لَكُمْ أَحَدُكُمْ، وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ ”. মালিক ইব্নু হুওয়ায়রিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমরা একদল যুবক একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খেদমতে উপস্থিত হলাম এবং প্রায় বিশ রাত্রি আমরা সেখানে থাকলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু। তাই তিনি আমাদের বললেনঃ তোমরা যখন নিজ দেশে ফিরে গিয়ে লোকদের দ্বীন শিক্ষা দিবে, তখন তাদের এ সময়ে অমুক সালাত আদায় করতে বলবে এবং ঐ সময়ে অমুক সালাত আদায় করতে বলবে। অতঃপর যখন সালাতের সময় হয় তখন তোমাদের একজন আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে বয়সে বড় ব্যক্তি ইমামত করবে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৫০. অধ্যায়ঃ ইমাম অন্য লোকদের নিকট উপস্থিত হলে, তাদের ইমামত করতে পারেন। ৬৮৬ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ أَسَدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي مَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ، قَالَ سَمِعْتُ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ الأَنْصَارِيَّ، قَالَ اسْتَأْذَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَذِنْتُ لَهُ فَقَالَ “ أَيْنَ تُحِبُّ أَنْ أُصَلِّيَ مِنْ بَيْتِكَ ”. فَأَشَرْتُ لَهُ إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي أُحِبُّ، فَقَامَ وَصَفَفْنَا خَلْفَهُ ثُمَّ سَلَّمَ وَسَلَّمْنَا. ইতবান ইব্নু মালিক আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (আমার গৃহে প্রবেশের) অনুমতি চাইলে তাঁকে অনুমতি দিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার ঘরের কোন জায়গাটি আমার সালাত আদায়ের জন্য তুমি পছন্দ কর। আমি আমার পছন্দসই একটি স্থান ইঙ্গিত করে দেখালে তিনি সেখানে সালাতের জন্য দাঁড়ালেন, আমরা তাঁর পিছনে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ালাম। অতঃপর তিনি সালাম ফিরালেন এবং আমরা সালাম ফিরালাম। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৫১. অধ্যায়ঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় অনুসরণ করার জন্য। যে রোগে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওফাত হয়, সে সময় তিনি বসে বসে লোকদের ইমামত করেছেন। ইব্নু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, কেউ যদি ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তাহলে ফিরেগিয়ে ততটুকু সময় বিলম্ব করবে, যতটুকু সময় মাথা উঠিয়ে রেখেছিল। অতঃপর ইমামকে অনুসরণ করবে। হাসান বাসরী (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে রুকু’ সহ দু’রাক’আত সালাত আদায় করে, কিন্তু সিজদা দিতে পারে না, সে শেষ রাক’আতের জন্য দু’সিজদা করবে এবং প্রথম রাক’আত সিজদাসহ পুনরায় আদায় করবে। আর যে ব্যক্তি ভুলক্রমে এক সিজদা না দিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে, সে (পরের রাক’আতে) সে সিজদা করে নিবে। ৬৮৭ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، قَالَ حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَقُلْتُ أَلاَ تُحَدِّثِينِي عَنْ مَرَضِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ بَلَى، ثَقُلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” أَصَلَّى النَّاسُ ”. قُلْنَا لاَ، هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ. قَالَ ” ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ ”. قَالَتْ فَفَعَلْنَا فَاغْتَسَلَ فَذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ صلى الله عليه وسلم ” أَصَلَّى النَّاسُ ”. قُلْنَا لاَ، هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ. قَالَ ” ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ ”. قَالَتْ فَقَعَدَ فَاغْتَسَلَ، ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ ” أَصَلَّى النَّاسُ ”. قُلْنَا لاَ، هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ. فَقَالَ ” ضَعُوا لِي مَاءً فِي الْمِخْضَبِ ”، فَقَعَدَ فَاغْتَسَلَ، ثُمَّ ذَهَبَ لِيَنُوءَ فَأُغْمِيَ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ ” أَصَلَّى النَّاسُ ”. فَقُلْنَا لاَ، هُمْ يَنْتَظِرُونَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ـ وَالنَّاسُ عُكُوفٌ فِي الْمَسْجِدِ يَنْتَظِرُونَ النَّبِيَّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ لِصَلاَةِ الْعِشَاءِ الآخِرَةِ ـ فَأَرْسَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَبِي بَكْرٍ بِأَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ، فَأَتَاهُ الرَّسُولُ فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْمُرُكَ أَنْ تُصَلِّيَ بِالنَّاسِ. فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ ـ وَكَانَ رَجُلاً رَقِيقًا ـ يَا عُمَرُ صَلِّ بِالنَّاسِ. فَقَالَ لَهُ عُمَرُ أَنْتَ أَحَقُّ بِذَلِكَ. فَصَلَّى أَبُو بَكْرٍ تِلْكَ الأَيَّامَ، ثُمَّ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَجَدَ مِنْ نَفْسِهِ خِفَّةً فَخَرَجَ بَيْنَ رَجُلَيْنِ أَحَدُهُمَا الْعَبَّاسُ لِصَلاَةِ الظُّهْرِ، وَأَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ، فَلَمَّا رَآهُ أَبُو بَكْرٍ ذَهَبَ لِيَتَأَخَّرَ فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِأَنْ لاَ يَتَأَخَّرَ. قَالَ ” أَجْلِسَانِي إِلَى جَنْبِهِ ”. فَأَجْلَسَاهُ إِلَى جَنْبِ أَبِي بَكْرٍ. قَالَ فَجَعَلَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي وَهْوَ يَأْتَمُّ بِصَلاَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ بِصَلاَةِ أَبِي بَكْرٍ، وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَاعِدٌ. قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ فَدَخَلْتُ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ فَقُلْتُ لَهُ أَلاَ أَعْرِضُ عَلَيْكَ مَا حَدَّثَتْنِي عَائِشَةُ عَنْ مَرَضِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ هَاتِ. فَعَرَضْتُ عَلَيْهِ حَدِيثَهَا، فَمَا أَنْكَرَ مِنْهُ شَيْئًا، غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ أَسَمَّتْ لَكَ الرَّجُلَ الَّذِي كَانَ مَعَ الْعَبَّاسِ قُلْتُ لاَ. قَالَ هُوَ عَلِيٌّ. উবাইদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ ইব্নু উত্বা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ) এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে বললাম, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (অন্তিম কালের) অসুস্থতা সম্পর্কে কি আপনি আমাকে কিছু শুনাবেন? তিনি বললেন, অবশ্যই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মারাত্মকভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্র রসূল! তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পানি দাও। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করলেন। অতঃপর একটু উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর একটু হুঁশ ফিরে পেলে আবার তিনি জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করলেন। আবার উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হুঁশ ফিরে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি বললেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ। অতঃপর তিনি উঠে বসলেন, এবং গোসল করলেন। এবং উঠতে গিয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হুঁশ ফিরে পেলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, লোকেরা কি সালাত আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষারত। ওদিকে সাহাবীগণ ‘ইশার সালাতের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অপেক্ষায় মাসজিদে বসে ছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর (রাঃ)-এর নিকট এ মর্মে লোক পাঠালেন যে, তিনি যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে নেন। সংবাদ বাহক আবূ বকর (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলরেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনাকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। আবূ বকর (রাঃ) অত্যস্ত কোমল মনের লোক ছিলেন, তাই তিনি ‘উমর (রাঃ) -কে বললেন, হে ‘উমর! আপনি সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করে নিন। ‘উমর (রাঃ) বললেন, আপনিই এর অধিক যোগ্য। তাই আবূ বকর (রাঃ) সে কয়দিন সালাত আদায় করলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটু নিজে হাল্কাবোধ করলেন এবং দু’জন লোকের কাঁধে ভর করে যুহরের সালাতের জন্য বের হলেন। সে দু’জনের একজন ছিলেন ‘আব্বাস (রাঃ)। আবূ বকর (রাঃ) তখন সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। তিনি যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখতে পেলেন, পিছনে সরে আসতে চাইলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে পিছিয়ে না আসার জন্য ইঙ্গিত করলেন এবং বললেন, তোমরা আমাকে তাঁর পাশে বসিয়ে দাও। তাঁরা তাঁকে আবূ বকর (রাঃ)-এর পাশে বসিয়ে দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আবূ বকর (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাতের ইক্তিদা করে সালাত আদায় করতে লাগলেন। আর সাহাবীগণ আবূ বকর (রাঃ)-এর সালাতের ইক্তিদা করতে লাগলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন উপবিষ্ট ছিলেন। ‘উবাইদুল্লাহ্ বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অন্তিম কালের অসুস্থতা সম্পর্কে ‘আয়িশা (রাঃ) আমাকে যে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তা কি আমি আপনার নিকট বর্ণনা করব না? তিনি বললেন, করুন। তাই আমি তাঁকে সে হাদীস শুনালাম। তিনি এ বর্ণনার কোন অংশেই আপত্তি করলেন না, তবে তাঁকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন যে, ‘আব্বাস (রাঃ)-এর সাথে যে অপর এক সাহাবী ছিলেন,’আয়িশা (রাঃ) কি আপনার নিকট তাঁর নাম বলেছেন? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তিনি ‘আলী (রাঃ)। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৮৮ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، أَنَّهَا قَالَتْ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي بَيْتِهِ وَهْوَ شَاكٍ، فَصَلَّى جَالِسًا وَصَلَّى وَرَاءَهُ قَوْمٌ قِيَامًا، فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَنِ اجْلِسُوا، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ “ إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا، وَإِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا ”. উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একবার অসুস্থ থাকার কারণে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজগৃহে সালাত আদায় করেন এবং বসে সালাত আদায় করছিলেন, একদল সাহাবী তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন। তিনি তাদের প্রতি ইঙ্গিত করলেন যে, বসে যাও। সালাত শেষ করার পর তিনি বললেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁর ইক্তিদা করার জন্য। কাজেই সে যখন রুকূ’ করে তোমরাও রুকূ’ করবে এবং সে যখন রুকূ’ হতে মাথা উঠায় তখন তোমরাও মাথা উঠাবে, আর সে যখন বসে সালাত আদায় করে, তখন তোমরা সবাই বসে সালাত আদায় করবে। [১] [১] এ হুকুম পরে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু রোগের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রহিত হয়ে গেছে। কাজেই ইমাম বসে সালাত আদায় করলেও সক্ষম মুক্তাদী দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৮৯ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَكِبَ فَرَسًا فَصُرِعَ عَنْهُ، فَجُحِشَ شِقُّهُ الأَيْمَنُ، فَصَلَّى صَلاَةً مِنَ الصَّلَوَاتِ وَهْوَ قَاعِدٌ، فَصَلَّيْنَا وَرَاءَهُ قُعُودًا، فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ ” إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا صَلَّى قَائِمًا فَصَلُّوا قِيَامًا، فَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ. وَإِذَا صَلَّى قَائِمًا فَصَلُّوا قِيَامًا، وَإِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا أَجْمَعُونَ ”. قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ قَالَ الْحُمَيْدِيُّ قَوْلُهُ ” إِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا ”. هُوَ فِي مَرَضِهِ الْقَدِيمِ، ثُمَّ صَلَّى بَعْدَ ذَلِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم جَالِسًا وَالنَّاسُ خَلْفَهُ قِيَامًا، لَمْ يَأْمُرْهُمْ بِالْقُعُودِ، وَإِنَّمَا يُؤْخَذُ بِالآخِرِ فَالآخِرِ مِنْ فِعْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ একবার আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোড়ায় সওয়ার হন অতঃপর তিনি তা হতে পড়ে যান, এতে তার ডান পাশে একটু আঘাত লাগে। তিনি কোন এক ওয়াক্তের সালাত বসে আদায় করছিলেন, আমরাও তাঁর পিছনে বসে সালাত আদায় করলাম। সালাত শেষ করার পর তিনি বললেন, ইমাম নির্ধারণই করা হয় তাঁর ইক্তিদা করার জন্য। কাজেই ইমাম যখন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে তখন তোমরাও দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করবে, সে যখন রুকূ’ করে থাকে তোমরাও রুকূ’ করবে, সে যখন উঠে, তখন তোমরাও উঠবে, আর সে যখন سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলে তখন তোমরা ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ বলবে। আর সে যখন বসে সালাত আদায় করে, তখন তোমরা সবাই বসে সালাত আদায় করবে। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন, হুমাইদী (রহঃ) বলেছেন যে, “যখন ইমাম বসে সালাত আদায় করে, তখন তোমরাও বসে সালাত আদায় করবে। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এ নির্দেশ ছিলো পূর্বে অসুস্থকালীন। অতঃপর তিনি বসে সালাত আদায় করেন এবং সাহাবীগণ তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন, কিন্তু তিনি তাদের বসতে নির্দেশ দেননি। আর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ‘আমলের মধ্যে সর্বশেষ ‘আমলই গ্রহণ করতে হবে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৫২. অধ্যায়ঃ মুক্তাদীগণ কখন সিজদাতে যাবেন? আনাস (রাঃ) বলেন, যখন ইমাম সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে। ৬৯০ حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو إِسْحَاقَ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، قَالَ حَدَّثَنِي الْبَرَاءُ ـ وَهْوَ غَيْرُ كَذُوبٍ ـ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. لَمْ يَحْنِ أَحَدٌ مِنَّا ظَهْرَهُ حَتَّى يَقَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَاجِدًا، ثُمَّ نَقَعُ سُجُودًا بَعْدَهُ. حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، نَحْوَهُ بِهَذَا. বারা’আ (রাঃ) তিনি মিথ্যাবাদী নন [১] থেকে বর্ণিতঃ যিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলার পর যতক্ষণ পর্যন্ত না সিজদায় না যেতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ পিঠ বাঁকা করতেন না। তিনি সিজদায় যাওয়ার পর আমরা সিজদায় যেতাম। সুফিয়ান (রহঃ) সূত্রে আবূ ইসহাক (রহঃ) হতে এ রকমই বর্ণনা করেছেন। [১] ‘هُوَ غَيرُ كُذوُبٍ’ ‘তিনি মিথ্যাবাদী নন’ একথা বলে হযরত বারা’আ (রা.) – এর সত্যবাদীতার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৫৩. অধ্যায়ঃ ইমামের পূর্বে মাথা উঠানো গুনাহ। ৬৯১ حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ أَمَا يَخْشَى أَحَدُكُمْ ـ أَوْ لاَ يَخْشَى أَحَدُكُمْ ـ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ قَبْلَ الإِمَامِ أَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ رَأْسَهُ رَأْسَ حِمَارٍ أَوْ يَجْعَلَ اللَّهُ صُورَتَهُ صُورَةَ حِمَارٍ ”. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ তা’আলা তার মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, তার আকৃতি গাধার আকৃতি করে দেবেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৫৪. অধ্যায়ঃ গোলাম, আযাদকৃত গোলাম, অবৈধ সন্তান, বেদুঈন ও অপ্রাপ্ত বয়স্কের ইমামত। ‘আয়িশা (রাঃ) এর গোলাম যাকওয়ান কুরআন দেখে কিরাআত পড়ে ‘আয়িশা (রাঃ)-এর ইমামত করতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাদের মধ্যে যে আল্লাহর কিতাব সম্বন্ধে অধিক জানে সে তাদের ইমামত করবে। [ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন,] বিনা কারণে গোলামকে জামা’আতে উপস্থিত হতে বাধা দেয়া যাবে না]। ৬৯২ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ لَمَّا قَدِمَ الْمُهَاجِرُونَ الأَوَّلُونَ الْعُصْبَةَ ـ مَوْضِعٌ بِقُبَاءٍ ـ قَبْلَ مَقْدَمِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَؤُمُّهُمْ سَالِمٌ مَوْلَى أَبِي حُذَيْفَةَ، وَكَانَ أَكْثَرَهُمْ قُرْآنًا. ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (মদীনায়) আগমনের পূর্বে মুহাজিরগণের প্রথম দল যখন কুবা এলাকার কোন এক স্থানে এলেন, তখন আবূ হুযাইফা (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম সালিম (রাঃ) তাঁদের ইমামত করতেন। তাঁদের মধ্যে তিনি কুর’আন সম্পর্কে অধিক অভিজ্ঞ ছিলেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৯৩ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو التَّيَّاحِ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ اسْمَعُوا وَأَطِيعُوا، وَإِنِ اسْتُعْمِلَ حَبَشِيٌّ كَأَنَّ رَأْسَهُ زَبِيبَةٌ ”. আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা শোন ও আনুগত্য কর, যদিও তোমাদের উপর এমন কোন হাবশীকে নেতা নিযুক্ত করা হয়-যার মাথা কিসমিসের মতো। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৫৫. অধ্যায়ঃ যদি ইমাম সালাত সম্পূর্ণভাবে আদায় না করেন আর মুক্তাদীগণ তা সম্পূর্ণভাবে আদায় করেন। ৬৯৪ حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ سَهْلٍ، قَالَ حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى الأَشْيَبُ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ يُصَلُّونَ لَكُمْ، فَإِنْ أَصَابُوا فَلَكُمْ، وَإِنْ أَخْطَئُوا فَلَكُمْ وَعَلَيْهِمْ ”. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তারা তোমাদের ইমামত করে। যদি তারা সঠিকভাবে আদায় করে তাহলে তার সওয়াব তোমরা পাবে। আর যদি তারা ভুল করে, তাহলে তোমাদের জন্য সওয়াব আছে, আর ভুলত্রুটির দায়িত্ব তাদের (ইমামের) উপরই বর্তাবে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৫৬. অধ্যায়ঃ ফিত্নাবাজ ও বিদ্’আতীর ইমামত। হাসান (রহঃ) বলেন, তাঁর পিছনেও সালাত আদায় করে নিবে। তবে বিদ’আতের গুনাহ তার উপরই বর্তাবে। ৬৯৫ قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ وَقَالَ لَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ خِيَارٍ، أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ ـ رضى الله عنه ـ وَهْوَ مَحْصُورٌ فَقَالَ إِنَّكَ إِمَامُ عَامَّةٍ، وَنَزَلَ بِكَ مَا تَرَى وَيُصَلِّي لَنَا إِمَامُ فِتْنَةٍ وَنَتَحَرَّجُ. فَقَالَ الصَّلاَةُ أَحْسَنُ مَا يَعْمَلُ النَّاسُ، فَإِذَا أَحْسَنَ النَّاسُ فَأَحْسِنْ مَعَهُمْ، وَإِذَا أَسَاءُوا فَاجْتَنِبْ إِسَاءَتَهُمْ. وَقَالَ الزُّبَيْدِيُّ قَالَ الزُّهْرِيُّ لاَ نَرَى أَنْ يُصَلَّى خَلْفَ الْمُخَنَّثِ إِلاَّ مِنْ ضَرُورَةٍ لاَ بُدَّ مِنْهَا. আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী রহঃ) বলেন, আমাকে মুহাম্মাদ ইব্নু ইউসুফ (রহঃ) ‘উবাইদুল্লাহ ইব্নু আদী ইব্নু খিয়ার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি ‘উসমান ইব্নু ‘আফ্ফান (রাঃ) অবরুদ্ধ থাকার সময় তাঁর নিকট গিয়ে বললেন, আসলে আপনিই জনগণের ইমাম। আর আপনার বিপদ কী তা নিজেই বুঝতে পারছেন। আর আমাদের ইমামত করছে বিদ্রোহীদের নেতা। ফলে আমরা গুনাহগার হবার ভয় করছি। তিনি বললেন, মানুষের ‘আমলের মধ্যে সালাতই সবোর্ত্তম। কাজেই লোকেরা যখন উত্তম কাজ করে, তখন তুমিও তাদের সাথে উত্তম কাজে অংশ নিবে, আর যখন তারা মন্দ কাজে লিপ্ত হয়, তখন তাদের মন্দ কাজ হতে বেঁচে থাকবে। যুবাইদী (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, যুহরী (রহঃ) বলেছেন, যারা ইচ্ছে করে হিজড়া সাজে, তাদের পিছনে বিশেষ জরুরী ছাড়া সালাত আদায় করা উচিত বলে মনে করি না। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৬৯৬ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لأَبِي ذَرٍّ “ اسْمَعْ وَأَطِعْ، وَلَوْ لِحَبَشِيٍّ كَأَنَّ رَأْسَهُ زَبِيبَةٌ ”. আনাস (ইব্নু মালিক) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ যার (রাঃ) -কে বলেন, শোন এবং আনুগত্য কর, যদিও কোন হাবশী আমীর হয় যার মাথা কিস্মিসের মতো। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৫৭. অধ্যায়ঃ দু’জন সালাত আদায় করলে, মুক্তাদী ইমামের ডানপাশে সোজাসুজি দাঁড়াবে। ৬৯৭ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ بِتُّ فِي بَيْتِ خَالَتِي مَيْمُونَةَ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْعِشَاءَ، ثُمَّ جَاءَ فَصَلَّى أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ ثُمَّ نَامَ، ثُمَّ قَامَ فَجِئْتُ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ، فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ، فَصَلَّى خَمْسَ رَكَعَاتٍ، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ نَامَ حَتَّى سَمِعْتُ غَطِيطَهُ ـ أَوْ قَالَ خَطِيطَهُ ـ ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الصَّلاَةِ. ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা আমি আমার খালা মায়মুনা (রাঃ) এর ঘরে রাত কাটালাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সালাত আদায় করে আসলেন এবং চার রাক’আত সালাত আদায় করে শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর উঠে সালাতে দাঁড়ালেন। তখন আমিও তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমাকে তাঁর ডানপাশে নিয়ে নিলেন এবং পাঁচ রাক’আত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর আরও দু’রাক’আত সালাত আদায় করে নিদ্রা গেলেন। এমনকি আমি তাঁর নাক ডাকার শব্দ শুনতে পেলাম। তারপর তিনি (ফজরের) সালাতের জন্য বের হলেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৫৮. অধ্যায়ঃ যদি কেউ ইমামের বাম পাশে দাঁড়ায় এবং ইমাম তাকে ডান পাশে নিয়ে আসেন, তবে কারো সালাত নষ্ট হয় না । ৬৯৮ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَمْرٌو، عَنْ عَبْدِ رَبِّهِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ مَخْرَمَةَ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ نِمْتُ عِنْدَ مَيْمُونَةَ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَهَا تِلْكَ اللَّيْلَةَ، فَتَوَضَّأَ ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي، فَقُمْتُ عَلَى يَسَارِهِ، فَأَخَذَنِي فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ، فَصَلَّى ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً، ثُمَّ نَامَ حَتَّى نَفَخَ ـ وَكَانَ إِذَا نَامَ نَفَخَ ـ ثُمَّ أَتَاهُ الْمُؤَذِّنُ، فَخَرَجَ فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ. قَالَ عَمْرٌو فَحَدَّثْتُ بِهِ بُكَيْرًا فَقَالَ حَدَّثَنِي كُرَيْبٌ بِذَلِكَ. ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি (আমার খালা) মাইমুনা (রাঃ) এর ঘরে ঘুমালাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে রাতে তাঁর নিকট ছিলেন। তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উযূ করলেন। অতঃপর সালাতে দাঁড়ালেন। আমিও তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিমি আমাকে ধরে তাঁর ডানপাশে নিয়ে আসলেন। আর তিনি তের রাক’আত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন, এমনকি তাঁর নাক ডাকতে শুরু করল এবং তিনি যখন ঘুমাতেন তাঁর নাক ডাকত। অতঃপর তাঁর নিকট মুয়াজ্জিন এলেন, তিনি বেরিয়ে গিয়ে ফজরের সালাত আদায় করলেন এবং (নতুন) উযূ করেননি। ‘আম্র (রাঃ) বলেন, এ হাদীস আমি বুকায়র (রাঃ) কে শুনালে তিনি বলেন, কুরায়ব (রহঃ)-ও এ হাদীস আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৫৯. অধ্যায়ঃ যদি ইমাম ইমামাতের নিয়্যত না করেন এবং পরে কিছু লোক এসে শামিল হয় এবং তিনি তাদের ইমামাত করেন । ৬৯৯ حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ، فَقُمْتُ أُصَلِّي مَعَهُ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ، فَأَخَذَ بِرَأْسِي فَأَقَامَنِي عَنْ يَمِينِهِ. ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা আমি আমার খালা মায়মুনা (রাঃ) এর নিকট রাত্রি যাপন করলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের সালাতে দাঁড়ালেন, আমিও তাঁর সাথে সালাত আদায় করতে দাঁড়ালাম। আমি তাঁর বামপাশে দাড়িয়ে ছিলাম, তিনি আমার মাথা ধরে তাঁর ডানপাশে দাঁড় করালেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৬০. অধ্যায়ঃ যদি ইমাম সালাত দীর্ঘ করেন এবং কেউ প্রয়োজনবশতঃ (জামা’আত হতে) বেরিয়ে এসে (একাকী) সালাত আদায় করে । ৭০০ حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ، كَانَ يُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ يَرْجِعُ فَيَؤُمُّ قَوْمَهُ. জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ মু’আয ইব্নু জাবাল (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করার পর ফিরে গিয়ে নিজ গোত্রের ইমামাত করতেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭০১ وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرٍو، قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كَانَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ يُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ يَرْجِعُ فَيَؤُمُّ قَوْمَهُ، فَصَلَّى الْعِشَاءَ فَقَرَأَ بِالْبَقَرَةِ، فَانْصَرَفَ الرَّجُلُ، فَكَأَنَّ مُعَاذًا تَنَاوَلَ مِنْهُ، فَبَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” فَتَّانٌ فَتَّانٌ فَتَّانٌ ” ثَلاَثَ مِرَارٍ أَوْ قَالَ ” فَاتِنًا فَاتِنًا فَاتِنٌ ” وَأَمَرَهُ بِسُورَتَيْنِ مِنْ أَوْسَطِ الْمُفَصَّلِ. قَالَ عَمْرٌو لاَ أَحْفَظُهُمَا. জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন যে, মু’আয ইব্নু জাবাল (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করার পর ফিরে গিয়ে নিজ গোত্রের সাথে ইমামাত করতেন। একদা তিনি ‘ইশার সালাতে সূরা বাক্বারা পাঠ করেন। এতে এক ব্যক্তি জামা’আত হতে বেরিয়ে যায়। এজন্য মু’আয (রাঃ) তাঁর সমালোচনা করেন। এ খবর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে পৌঁছলে তিনি তিনবার ‘فَتّاَنُ’ (ফিতনাহ সৃষ্টিকারী) অথবা ‘فاَتِناً’ (বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী) শব্দটি বললেন। এবং তিনি তাকে আওসাতে মুফাস্সালের দু’টি সূরা পাঠের নির্দেশ দেন। ‘আম্র (রাঃ) বলেন, কোন দু’টি সূরার কথা তিনি বলেছিলেন, তা আমার স্মরণ নেই। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৬১. অধ্যায়ঃ ইমাম কর্তৃক সালাতে কিয়াম সংক্ষিপ্ত করা এবং রুকু’ ও সিজদা পূর্ণভাবে আদায় করা ৭০২ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، قَالَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ سَمِعْتُ قَيْسًا، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو مَسْعُودٍ، أَنَّ رَجُلاً، قَالَ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي لأَتَأَخَّرُ عَنْ صَلاَةِ الْغَدَاةِ مِنْ أَجْلِ فُلاَنٍ مِمَّا يُطِيلُ بِنَا. فَمَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي مَوْعِظَةٍ أَشَدَّ غَضَبًا مِنْهُ يَوْمَئِذٍ ثُمَّ قَالَ “ إِنَّ مِنْكُمْ مُنَفِّرِينَ، فَأَيُّكُمْ مَا صَلَّى بِالنَّاسِ فَلْيَتَجَوَّزْ، فَإِنَّ فِيهِمُ الضَّعِيفَ وَالْكَبِيرَ وَذَا الْحَاجَةِ ”. আবূ মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক সাহাবী এসে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্র শপথ! আমি অমূকের কারনে ফজরের সালাতে অনুপস্থিত থাকি। তিনি (জাম’আতে) সালাতকে খুব দীর্ঘ করেন। আবূ মাস’উদ (রাঃ) বলেন, আমি আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে নসীহাত করতে গিয়ে সে দিনের ন্যায় এতও অধিক রাগান্বিত হতে আর কোনদিন দেখিনি। তিনি বলেন, তোমাদের মাঝে বিতৃষ্ণা সৃষ্টিকারী রয়েছে। তোমাদের মধ্যে যে কেউ অন্য লোক দিয়ে সালাত আদায় করে, সে যেন সংক্ষেপ করে। কেননা, তাদের মধ্য দুর্বল, বৃদ্ধ ও হাজতওয়ালা লোকও থাকে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৬২. অধ্যায়ঃ একাকী সালাত আদায় করলে ইচ্ছানুযায়ী দীর্ঘায়িত করতে পারে । ৭০৩ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ لِلنَّاسِ فَلْيُخَفِّفْ، فَإِنَّ مِنْهُمُ الضَّعِيفَ وَالسَّقِيمَ وَالْكَبِيرَ، وَإِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ لِنَفْسِهِ فَلْيُطَوِّلْ مَا شَاءَ ”. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে, তখন যেন সে সংক্ষেপ করে। কেননা, তাদের মাঝে দুর্বল, অসুস্থ ও বৃর্দ্ধ রয়েছে। আর কেউ যদি একাকী সালাত আদায় করে, তখন ইচ্ছামত দীর্ঘ করতে পারে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৬৩. অধ্যায়ঃ ইমাম সালাত দীর্ঘায়িত করলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা । আবূ উসাইদ (রহঃ) তাঁর ছেলেকে বলেছিলেন, বেটা! তুমি আমাদের সালাত দীর্ঘায়িত করে ফেলেছ । ৭০৪ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي لأَتَأَخَّرُ عَنِ الصَّلاَةِ فِي الْفَجْرِ مِمَّا يُطِيلُ بِنَا فُلاَنٌ فِيهَا. فَغَضِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا رَأَيْتُهُ غَضِبَ فِي مَوْضِعٍ كَانَ أَشَدَّ غَضَبًا مِنْهُ يَوْمَئِذٍ ثُمَّ قَالَ “ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ مِنْكُمْ مُنَفِّرِينَ، فَمَنْ أَمَّ النَّاسَ فَلْيَتَجَوَّزْ، فَإِنَّ خَلْفَهُ الضَّعِيفَ وَالْكَبِيرَ وَذَا الْحَاجَةِ ”. আবূ মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, এক সাহাবী এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! অমুক ব্যক্তির জন্য আমি ফজরের সালাতে অনুপস্থিত থাকি। কেননা, তিনি আমাদের সালাত খুব দীর্ঘায়িত করেন। এ শুনে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাগান্বিত হলেন। আবূ মাস’উদ (রাঃ) বলেন, নসীহাত করতে গিয়ে সে দিন তিনি যেমন রাগান্বিত হয়েছিলেন, সে দিনের মত রাগান্বিত হতে তাঁকে আর কোন দিন দেখিনি। অতঃপর তিনি বললেনঃ হে লোকেরা! তোমাদের মধ্যে বিতৃষ্ণা সৃষ্টিকারী রয়েছে। তোমাদের মধ্যে যে কেউ লোকদের ইমামাত করে, সে যেন সংক্ষেপ করে। কেননা, তার পিছনে দুর্বল, বৃদ্ধ ও হাজতওয়ালা লোকেরা রয়েছে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭০৫ حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا مُحَارِبُ بْنُ دِثَارٍ، قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيَّ، قَالَ أَقْبَلَ رَجُلٌ بِنَاضِحَيْنِ وَقَدْ جَنَحَ اللَّيْلُ، فَوَافَقَ مُعَاذًا يُصَلِّي، فَتَرَكَ نَاضِحَهُ وَأَقْبَلَ إِلَى مُعَاذٍ، فَقَرَأَ بِسُورَةِ الْبَقَرَةِ أَوِ النِّسَاءِ، فَانْطَلَقَ الرَّجُلُ، وَبَلَغَهُ أَنَّ مُعَاذًا نَالَ مِنْهُ، فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَشَكَا إِلَيْهِ مُعَاذًا، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ يَا مُعَاذُ أَفَتَّانٌ أَنْتَ ـ أَوْ فَاتِنٌ ثَلاَثَ مِرَارٍ ـ فَلَوْلاَ صَلَّيْتَ بِسَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ، وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا، وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى، فَإِنَّهُ يُصَلِّي وَرَاءَكَ الْكَبِيرُ وَالضَّعِيفُ وَذُو الْحَاجَةِ ”. أَحْسِبُ هَذَا فِي الْحَدِيثِ. قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ وَتَابَعَهُ سَعِيدُ بْنُ مَسْرُوقٍ وَمِسْعَرٌ وَالشَّيْبَانِيُّ. قَالَ عَمْرٌو وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مِقْسَمٍ وَأَبُو الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ قَرَأَ مُعَاذٌ فِي الْعِشَاءِ بِالْبَقَرَةِ. وَتَابَعَهُ الأَعْمَشُ عَنْ مُحَارِبٍ. জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, জনৈক সাহাবী দু’টি উটের পিঠে পানি নিয়ে আসছিলেন। রাতের অন্ধকার তখন ঘনীভূত হয়ে এসেছিল। এ সময় তিনি মু’আয (রাঃ) কে সালাত আদায়রত পান, তিনি তার উট দু’টি বসিয়ে মু’আয (রাঃ)-এর দিকে (সালাত আদায় করতে) এগিয়ে গেলেন। মু’আয (রাঃ) সূরা বাক্বারা বা সূরা আন-নিসা পড়তে শুরু করেন। এতে তিনি সাহাবী (জামা’আত ছেড়ে) চলে যান। পরে তিনি জানতে পারেন যে, মু’আয (রাঃ) এ জন্য তার সমালোচনা করেছেন। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে মু’আয (রাঃ)- এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে মু’আয! তুমি কি লোকদের ফিত্নায় ফেলতে চাও? বা তিনি বলেছিলেন, তুমি কি ফিত্না সৃষ্টিকারী? তিনি একথা তিনবার বলেন। অতঃপর তিনি বলেন, তুমি سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ, وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا এবং وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَىٰ (সূরা) দ্বারা সালাত আদায় করলে না কেন? কারণ, তোমার পিছনে দুর্বল, বৃদ্ধ ও হাজতওয়ালা লোক সালাত আদায় করে থাকে। [শু’বাহ (রহঃ) বলেন] আমার ধারনা শেষোক্ত বাক্যটিও হাদীসের অংশ। সায়ীদ ইব্নু মাসরূক, মিসওআর এবং শাইবানী (রহঃ) ও অনুরূপ রিওয়ায়াত করেছেন। ‘আমর, ‘উবাইদুল্লাহ্ ইব্নু মিকসাম এবং আবূ যুবাইর (রহঃ) জাবির (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, মু’আয (রাঃ) ‘ইশার সালাতে সূরা বাকারাহ পাঠ করেছিলেন। আ’মাশ (রহঃ) ও মুহারিব (রহঃ) সূত্রে এরূপই রিওয়ায়াত করেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৬৪. অধ্যায়ঃ সালাত সংক্ষেপে এবং পূর্ণভাবে আদায় করা । ৭০৬ حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُوجِزُ الصَّلاَةَ وَيُكْمِلُهَا. আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত সংক্ষেপে এবং পূর্ণভাবে আদায় করতেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৬৫. অধ্যায়ঃ শিশুর কান্নাকাটির কারণে সালাত সংক্ষেপ করা । ৭০৭ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، قَالَ أَخْبَرَنَا الْوَلِيدُ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنِّي لأَقُومُ فِي الصَّلاَةِ أُرِيدُ أَنْ أُطَوِّلَ فِيهَا، فَأَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ، فَأَتَجَوَّزُ فِي صَلاَتِي كَرَاهِيَةَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمِّهِ ”. تَابَعَهُ بِشْرُ بْنُ بَكْرٍ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَبَقِيَّةُ عَنِ الأَوْزَاعِيِّ. আবু ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি অনেক সময দীর্ঘ করে সালাত আদায়ের ইচ্ছা নিয়ে দাঁড়াই। পরে শিশুর কান্নাকাটি শুনে সালাত সংক্ষেপ করি। কারণ শিশুর মাকে কষ্টে ফেলা আমি পছন্দ করি না। বিশ্র ইব্নু বক্র, বাকিয়্যাহ ও ইব্নু মুবারাক আওযায়ী (রহঃ) হতে হাদীস বর্ণনায় ওয়ালীদ ইব্নু মুসলিম (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭০৮ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شَرِيكُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ مَا صَلَّيْتُ وَرَاءَ إِمَامٍ قَطُّ أَخَفَّ صَلاَةً وَلاَ أَتَمَّ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، وَإِنْ كَانَ لَيَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ فَيُخَفِّفُ مَخَافَةَ أَنْ تُفْتَنَ أُمُّهُ. আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেয়ে সংক্ষিপ্ত এবং পূর্ণাঙ্গ সালাত আর কোন ইমামের পিছনে আদায় করিনি। আর তা এজন্য যে, তিনি শিশুর কান্না শুনতে পেতেন এবং তার মায়ের ফিত্নায় পড়ার আশংকায় সংক্ষেপ করতেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭০৯ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، قَالَ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، حَدَّثَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنِّي لأَدْخُلُ فِي الصَّلاَةِ وَأَنَا أُرِيدُ إِطَالَتَهَا، فَأَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ، فَأَتَجَوَّزُ فِي صَلاَتِي مِمَّا أَعْلَمُ مِنْ شِدَّةِ وَجْدِ أُمِّهِ مِنْ بُكَائِهِ ”. আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি দীর্ঘ করার ইচ্ছা নিয়ে সালাত শুরু করি। কিন্তু পরে শিশুর কান্না শুনে আমার সালাত সংক্ষেপ করে ফেলি। কেননা, শিশু কাঁদলে মায়ের মন যে খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে তা আমি জানি। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭১০ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنِّي لأَدْخُلُ فِي الصَّلاَةِ فَأُرِيدُ إِطَالَتَهَا، فَأَسْمَعُ بُكَاءَ الصَّبِيِّ، فَأَتَجَوَّزُ مِمَّا أَعْلَمُ مِنْ شِدَّةِ وَجْدِ أُمِّهِ مِنْ بُكَائِهِ ”. وَقَالَ مُوسَى حَدَّثَنَا أَبَانُ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ. আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি দীর্ঘ করার ইচ্ছা নিয়ে সালাত শুরু করি এবং শিশুর কান্না শুনে আমার সালাত সংক্ষেপ করে ফেলি। কেননা, আমি জানি শিশু কান্না করলে মায়ের মন খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। আনাস (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৬৬. অধ্যায়ঃ নিজের সালাত আদায় করার পর অন্য লোকের ইমামাত করা। ৭১১ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، وَأَبُو النُّعْمَانِ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ كَانَ مُعَاذٌ يُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ يَأْتِي قَوْمَهُ فَيُصَلِّي بِهِمْ. জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, মু’আয (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সালাত আদায় করে নিজ গোত্রে ফিরে গিয়ে তাদের ইমামাত করতেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৬৭ অধ্যায়: লোকদেরকে ইমামের তাকবীর শোনান । ৭১২ حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ لَمَّا مَرِضَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَرَضَهُ الَّذِي مَاتَ فِيهِ أَتَاهُ بِلاَلٌ يُؤْذِنُهُ بِالصَّلاَةِ فَقَالَ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ ”. قُلْتُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ، إِنْ يَقُمْ مَقَامَكَ يَبْكِي فَلاَ يَقْدِرُ عَلَى الْقِرَاءَةِ. قَالَ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ ”. فَقُلْتُ مِثْلَهُ فَقَالَ فِي الثَّالِثَةِ أَوِ الرَّابِعَةِ ” إِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ ”. فَصَلَّى وَخَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُهَادَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ، كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْهِ يَخُطُّ بِرِجْلَيْهِ الأَرْضَ، فَلَمَّا رَآهُ أَبُو بَكْرٍ ذَهَبَ يَتَأَخَّرُ، فَأَشَارَ إِلَيْهِ أَنْ صَلِّ، فَتَأَخَّرَ أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ وَقَعَدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى جَنْبِهِ، وَأَبُو بَكْرٍ يُسْمِعُ النَّاسَ التَّكْبِيرَ. تَابَعَهُ مُحَاضِرٌ عَنِ الأَعْمَشِ. ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অন্তিম রোগে আক্রান্ত থাকাকালে একবার বিলাল (রাঃ) তাঁর নিকট এসে সালাতের (সময় হওয়ার) সংবাদ দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃআবূ বক্রকে বল, যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে। [‘আয়িশা (রাঃ) বললেন] আমি বললাম, আবূ বকর (রাঃ) কোমল হৃদয়ের লোক, তিনি আপনার স্থানে দাঁড়ালে কেঁদে ফেলবেন এবং কিরাআত পড়তে পারবেন না। তিনি আবার বললেনঃআবূ বকরকে বল, সালাত আদায় করতে। আমি আবারও সেকথা বললাম। তখন তৃতীয় বা চতুর্থবারে তিনি বললেন, তোমরা তো ইউসুফের (আঃ)–সাথী রমণীদেরই মত। আবূ বকর (রাঃ) কে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে। আবূ বকর (রাঃ) লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে লাগলেন, ইতিমধ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’জন লোকের কাঁধে ভর করে বের হলেন। [‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ] আমি যেন এখনও সে দৃশ্য দেখতে পাই, তিনি দু’পা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়িয়ে যান। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে দেখতে পেয়ে পিছনে সরে আসতে লাগলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইঙ্গিতে তাঁকে সালাত আদায় করতে বললেন, (তবুও) আবূ বকর (রাঃ) পিছনে সরে আসলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পাশে বসলেন, আবূ বকর (রাঃ) তাকবীর শুনাতে লাগলেন। মুহাযির (রহঃ) আমাশ (রহঃ) হতে হাদীস বর্ণনায় ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু দাউদ (রহঃ) –এর অনুসরণ করেছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৬৮. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তির ইমামের অনুসরণ করা এবং অন্যদের সেই মুক্তাদীর ইক্তিদা করা। বর্ণিত আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আমার অনুসরণ করবে, তোমাদের পিছনের লোকেরা যেন তোমাদের ইকতিদা করে । ৭১৩ حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَمَّا ثَقُلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَاءَ بِلاَلٌ يُؤْذِنُهُ بِالصَّلاَةِ فَقَالَ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ ”. فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ، وَإِنَّهُ مَتَى مَا يَقُمْ مَقَامَكَ لاَ يُسْمِعُ النَّاسَ، فَلَوْ أَمَرْتَ عُمَرَ. فَقَالَ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ ”. فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ قُولِي لَهُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ، وَإِنَّهُ مَتَى يَقُمْ مَقَامَكَ لاَ يُسْمِعِ النَّاسَ، فَلَوْ أَمَرْتَ عُمَرَ. قَالَ ” إِنَّكُنَّ لأَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ أَنْ يُصَلِّيَ بِالنَّاسِ ”. فَلَمَّا دَخَلَ فِي الصَّلاَةِ وَجَدَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي نَفْسِهِ خِفَّةً، فَقَامَ يُهَادَى بَيْنَ رَجُلَيْنِ، وَرِجْلاَهُ يَخُطَّانِ فِي الأَرْضِ حَتَّى دَخَلَ الْمَسْجِدَ، فَلَمَّا سَمِعَ أَبُو بَكْرٍ حِسَّهُ ذَهَبَ أَبُو بَكْرٍ يَتَأَخَّرُ، فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى جَلَسَ عَنْ يَسَارِ أَبِي بَكْرٍ، فَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يُصَلِّي قَائِمًا، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي قَاعِدًا، يَقْتَدِي أَبُو بَكْرٍ بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ مُقْتَدُونَ بِصَلاَةِ أَبِي بَكْرٍ رضى الله عنه. ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন (রোগে) পীড়িত হয়ে পড়েছিলেন, বিলাল (রাঃ) এসে সালাতের কথা বললেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আবূ বক্রকে বল, লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আবূ বকর (রাঃ) অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের লোক। তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শুনাতে পারবেন না। যদি আপনি ‘উমর (রাঃ)-কে এ নির্দেশ দেন (তবে ভাল হয়)। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেনঃ লোকদের নিয়ে আবূ বকর (রাঃ)-কে সালাত আদায় করতে বল। আমি হাফ্সাহ (রাঃ) কে বললাম, তুমি তাঁকে একটু বল যে, আবূ বকর (রাঃ) অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের লোক। তিনি যখন আপনার বদলে সে স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শোনাতে পারবেন না। যদি আপনি ‘উমর (রাঃ)-কে এ নির্দেশ দিতেন (তবে ভালো হতো)। এ শুনে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা ইউসুফের সাথী নারীদেরই মতো। আবূ বক্রকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বল। আবূ বকর (রাঃ) লোকদের নিয়ে সালাত শুরু করলেন। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে একটু সুস্থবোধ করলেন এবং দু’জন সাহাবীর কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মসজিদে গেলেন। তাঁর দু’পা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। আবূ বকর (রাঃ) যখন তাঁর আগমন টের পেলেন, পিছনে সরে যেতে উদ্যত হলেন। আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার প্রতি ইঙ্গিত করলেন (স্বস্থানে থাকার জন্য)। অতঃপর তিনি এসে আবূ বকর (রাঃ)-এর বামপাশে বসে গেলেন। অবশেষে আবূ বকর (রাঃ) দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন। আর সাহাবীগণ আবূ বকর (রাঃ) এর সালাতের অনুসরণ করছিল। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৬৯. অধ্যায়ঃ ইমামের সন্দেহ হলে মুক্তাদীদের মত গ্রহণ করা । ৭১৪ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ أَبِي تَمِيمَةَ السَّخْتِيَانِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم انْصَرَفَ مِنَ اثْنَتَيْنِ، فَقَالَ لَهُ ذُو الْيَدَيْنِ أَقَصُرَتِ الصَّلاَةُ أَمْ نَسِيتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَصَدَقَ ذُو الْيَدَيْنِ ”. فَقَالَ النَّاسُ نَعَمْ. فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى اثْنَتَيْنِ أُخْرَيَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ، ثُمَّ كَبَّرَ فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ রাক’আত আদায় করে সালাত শেষ করে ফেললেন। যূল-ইয়াদাইন (রাঃ) তাঁকে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! সালাত কি কম করা হয়েছে, না আপনি ভুলে গেছেন? আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (অন্যদের লক্ষ্য করে) বললেনঃ যূল-ইয়াদাইন কি ঠিক বলছে? সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ালেন এবং আরও দু’ রাক’আত সালাত আদায় করলেন, অতঃপর সালাম ফিরালেন এবং তাকবীর বলে স্বাভাবিক সিজদার মতো অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সিজদা করলেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭১৫ حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ، فَقِيلَ صَلَّيْتَ رَكْعَتَيْنِ. فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সালাত দু’ রাক’আত আদায় করলেন। তাঁকে বলা হল, আপনি দু’ রাক’আত সালাত আদায় করেছেন। তখন তিনি আরও দু’রাক’আত সালাত আদায় করলেন এবং সালাম ফিরানোর পর দু’টি (সাহু) সিজদা করলেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৭০. অধ্যায়ঃ সালাতে ইমাম কেঁদে ফেললে । ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু শাদ্দাদ (রহঃ) বলেন, আমি পিছনের কাতার হতে ‘উমার (রাঃ)-এর চাপা কান্নার আওয়ায শুনেছি। তিনি তখন {إِنَّمَا أَشْكُو بَثِّي وَحُزْنِي إِلَى اللَّهِ} ‘(আমি আমার দুঃখ ও বেদনার অভিযোগ একমাত্র আল্লাহর নিকটই পেশ করছি’’ (সূরাহ্ ইউসুফ ১২/১৮)-এ আয়াত তিলাওয়াত করছিলেন। ৭১৬ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فِي مَرَضِهِ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ ”. قَالَتْ عَائِشَةُ قُلْتُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ الْبُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ. فَقَالَ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ ”. قَالَتْ عَائِشَةُ لِحَفْصَةَ قُولِي لَهُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ الْبُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ. فَفَعَلَتْ حَفْصَةُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَهْ، إِنَّكُنَّ لأَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ ”. قَالَتْ حَفْصَةُ لِعَائِشَةَ مَا كُنْتُ لأُصِيبَ مِنْكِ خَيْرًا. উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (অন্তিম) রোগে আক্রান্ত অবস্থায় বললেনঃআবূ বক্রকে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করতে বল। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি তাঁকে বললাম, আবূ বকর (রাঃ) যখন আপনার স্থালে দাঁড়াবেন, তখন কান্নার কারণে সাহাবীগণকে কিছুই শুনাতে পারবেন না। কাজেই ‘উমর (রাঃ) কে লোকদিন নিয়ে সালাত আদায় করতে নির্দেশ দিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেনঃ আবূ বক্রকে বল লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে দিতে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন আমি হাফ্সাহ (রাঃ) কে বললাম, তুমি তাকেঁ বল যে, আবূ বকর (রাঃ) যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন কান্নার কারণে সাহাবীগণকে কিছুই শুনাতে পারবেন না। কাজেই ‘উমর (রাঃ) কে বলুন তিনি যেন সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত আদায় করেন। হাফ্সা (রাঃ) তাই করলেন। তখন আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ থামো! তোমরা ইউসুফের সাথী মহিলাদেরই মতো। আবূ বক্রকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করে। এতে হাফসা (রাঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) কে (দুঃখ করে) বললেন, তোমার কাছ হতে আমি কখনো ভাল কিছু পাইনি। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৭১. অধ্যায়ঃ ইক্বামাতের সময় এবং এর পরে কাতার সোজা করা । ৭১৭ حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، هِشَامُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، قَالَ سَمِعْتُ سَالِمَ بْنَ أَبِي الْجَعْدِ، قَالَ سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ، يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ لَتُسَوُّنَّ صُفُوفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللَّهُ بَيْنَ وُجُوهِكُمْ ”. নু’মান ইব্নু বশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করে নিবে, তা না হলে আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করে দিবেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭১৮ حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ أَقِيمُوا الصُّفُوفَ فَإِنِّي أَرَاكُمْ خَلْفَ ظَهْرِي ”. আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা কাতার সোজা করে নিবে। কেননা, আমি আমার পিছনে তোমাদেরকে দেখতে পাই। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৭২. অধ্যায়ঃ কাতার সোজা করার সময় মুক্তাদীগণের প্রতি ইমামের ফিরে দেখা । ৭১৯ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ أَبِي رَجَاءٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو، قَالَ حَدَّثَنَا زَائِدَةُ بْنُ قُدَامَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، قَالَ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَأَقْبَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِوَجْهِهِ فَقَالَ “ أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ وَتَرَاصُّوا، فَإِنِّي أَرَاكُمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِي ”. আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, সালাতের ইক্বামাত হচ্ছে, এমন সময় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দিকে মুখ করে তাকালেন এবং বললেনঃ তোমাদের কাতারগুলো সোজা করে নাও আর মিলে দাঁড়াও। কেননা, আমি আমার পিছনে তোমাদেরকে দেখতে পাই। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৭৩. অধ্যায়ঃ প্রথম কাতার । ৭২০ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” الشُّهَدَاءُ الْغَرِقُ وَالْمَطْعُونُ وَالْمَبْطُونُ وَالْهَدْمُ ”. وَقَالَ ” وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي التَّهْجِيرِ لاَسْتَبَقُوا {إِلَيْهِ} وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي الْعَتَمَةِ وَالصُّبْحِ لأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا، وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي الصَّفِّ الْمُقَدَّمِ لاَسْتَهَمُوا ”. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পানিতে ডুবে, কলেরায়, প্লেগে এবং ভূমিধসে বা চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তিরা শহীদ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭২১ وَقَالَ وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي التَّهْجِيرِ لَاسْتَبَقُوا وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي الْعَتَمَةِ وَالصُّبْحِ لَأَتَوْهُمَا وَلَوْ حَبْوًا وَلَوْ يَعْلَمُونَ مَا فِي الصَّفِّ الْمُقَدَّمِ لَاسْتَهَمُوا. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ যদি লোকেরা জানত যে, আওয়াল ওয়াক্তে সালাত আদায়ের কী ফযীলত, তাহলে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করে আগেভাগে আসার চেষ্টা করতো। আর ‘ইশা ও ফজরের জামা’আতের কী ফযীলত যদি তারা জানত তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে উপস্থিত হতো। এবং সামনের কাতারের কী ফযীলত তা যদি জানত, তাহলে এর জন্য তারা কুর’আ ব্যবহার করতো। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৭৪. অধ্যায়ঃ কাতার সোজা করা সালাতের পূর্ণতার অঙ্গ। ৭২২ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ فَلاَ تَخْتَلِفُوا عَلَيْهِ، فَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا، وَإِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا أَجْمَعُونَ، وَأَقِيمُوا الصَّفَّ فِي الصَّلاَةِ، فَإِنَّ إِقَامَةَ الصَّفِّ مِنْ حُسْنِ الصَّلاَةِ ”. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ অনুসরণ করার জন্যই ইমাম নির্ধারণ করা হয়। কাজেই তার বিরুদ্ধাচরণ করবে না। তিনি যখন রুকূ’ করেন তখন তোমরাও রুকু’ করবে। তিনি যখন ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলেন , তখন তোমরা ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ বলবে। তিনি যখন সিজদা করবেন তখন তোমরাও সিজদা করবে। তিনি যখন বসে সালাত আদায় করেন, তখন তোমরাও সবাই বসে সালাত আদায় করবে। আর তোমরা সালাতে কাতার সোজা করে নিবে, কেননা কাতার সোজা করা সালাতের সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭২৩ حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ سَوُّوا صُفُوفَكُمْ فَإِنَّ تَسْوِيَةَ الصُّفُوفِ مِنْ إِقَامَةِ الصَّلاَةِ ”. আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা তোমাদের কাতারগুলো সোজা করে নিবে, কেননা কাতার সোজা করা সালাতের সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৭৫. অধ্যায়ঃ কাতার সোজা না করা গুনাহ।[১] [১] জামা‘আতে দাঁড়াবার সময় পায়ের গিটের সাথে পার্শ্ববর্তী মুসল্লীর পায়ের গিট মিলিয়ে এবং কাঁধের সাথে কাঁধ মিলিয়ে পার্শ্ববর্তী মুসল্লীর বাহু মিলিয়ে কাতারবন্দী হয়ে সালাত আদায় করতে হবে। দুই মুসল্লীর মাঝখানে ফাঁক ফাঁক করে দাঁড়ানোর কথা কোন হাদীসে নাই । আবূ দাউদে আছেঃ ——————— আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা তোমাদের কাতারসমূহের মধ্যে পরস্পর মিলে দাঁড়াও এবং কাতারসমূহের মধ্যে তোমরা পরস্পর নিকটবর্তী হও। এবং তোমাদের ঘাড়সমূহকে সমপর্যায়ে সোজা রাখ। সেই মহান সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! আমি শয়তানকে দেখি সে কাতারের ফাঁকসমূহে প্রবেশ করে যেন কালো কালো ভেড়ার বাচ্চা। (দেখুন বুখারী শরীফ ১০০ পৃষ্ঠা; মুসলিম শরিফ ১৮২ পৃষ্ঠা। আবুদাউদ ৯৭ পৃষ্ঠা, তিরমিযী ৫৩পৃষ্ঠা, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ ৭১ পৃষ্ঠা। দারকুৎনী ১ম খণ্ড ২৮৩ পৃষ্ঠা, মেশকাত ৯৮ পৃষ্ঠা, বুখারী শরীফ আযীযুল হক, ১ম খণ্ড হাদীস নং ৪২৭। বুখারী শরীফ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড অনুচ্ছেদসহ হাদীস নং ৬৮২, ৬৮৬, ৬৮৭। মুসলিম শরীফ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৮৫১। আবু দাউদ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ৬৬২,৬৬৬। তিরমিযী শরীফ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২২৭। মেশকাত নূর মোহাম্মদ আযমী ৩য় খণ্ড ও মেশকাত মাদরাসা পাঠ্য ২য় খণ্ড হাদীস নং ১০১৭, ১০১৮, ১০২০, ১০২৫, ১০৩৩, ১০৩৪। বুলুগুল মারাম ১২৪ পৃষ্ঠা ।) ৭২৪ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ أَسَدٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، قَالَ أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ عُبَيْدٍ الطَّائِيُّ، عَنْ بُشَيْرِ بْنِ يَسَارٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ قَدِمَ الْمَدِينَةَ فَقِيلَ لَهُ مَا أَنْكَرْتَ مِنَّا مُنْذُ يَوْمِ عَهِدْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا أَنْكَرْتُ شَيْئًا إِلاَّ أَنَّكُمْ لاَ تُقِيمُونَ الصُّفُوفَ. وَقَالَ عُقْبَةُ بْنُ عُبَيْدٍ عَنْ بُشَيْرِ بْنِ يَسَارٍ قَدِمَ عَلَيْنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ الْمَدِينَةَ بِهَذَا. আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ একবার তিনি (আনাস) মদীনায় আসলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগের তুলনায় আপনি আমাদের সময়ের অপছন্দনীয় কী দেখতে পাচ্ছেন? তিনি বললেন, অন্য কোন কাজ তেমন অপছন্দনীয় মনে হচ্ছে না। তবে তোমরা (সালাতে) কাতার ঠিকমত সোজা কর না। ‘উক্বাহ ইব্নু ‘উবাইদ (রহঃ) বুশাইর ইব্নু ইয়াসার (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) আমাদের নিকট মদীনায় এলেন……… বাকী অংশ অনুরূপ। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৭৬. অধ্যায়ঃ কাতারে কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলানো । নু’মান ইব্নু বশীর (রহঃ) বলেন, আমাদের কাউকে দেখেছি পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির টাখ্নুর সাথে টাখ্নু মিলাতে । ৭২৫ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ خَالِدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ فَإِنِّي أَرَاكُمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِي ”. وَكَانَ أَحَدُنَا يُلْزِقُ مَنْكِبَهُ بِمَنْكِبِ صَاحِبِهِ وَقَدَمَهُ بِقَدَمِهِ. আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা তোমাদের কাতার সোজা করে নাও। কেননা, আমি আমার পিছন হতেও তোমাদের দেখতে পাই। আনাস (রাঃ) বলেন আমাদের প্রত্যেকেই তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলাতাম। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৭৭. অধ্যায়ঃ কেউ ইমামের বামপাশে দাঁড়ালে ইমাম তাকে পিছনে ঘুরিয়ে ডানপাশে দাঁড় করালে সালাত আদায় হবে । ৭২৬ حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا دَاوُدُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ لَيْلَةٍ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ، فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِرَأْسِي مِنْ وَرَائِي، فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ، فَصَلَّى وَرَقَدَ فَجَاءَهُ الْمُؤَذِّنُ، فَقَامَ وَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ. ইব্নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, কোন একরাতে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সংগে সালাত আদায় করতে গিয়ে তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথার পিছনের দিক ধরে তাঁর ডানপাশে নিয়ে আসলেন। অতঃপর সালাত আদায় করে শুয়ে পড়লেন। পরে তাঁর নিকট মুয়াজ্জিন এলে তিনি উঠে সালাত আদায় করলেন, কিন্তু (নতুনভাবে) উযূ করলান না। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৭৮. অধ্যায়ঃ মহিলা একজন হলেও ভিন্ন কাতারে দাঁড়াবে । ৭২৭ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِسْحَاقَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ صَلَّيْتُ أَنَا وَيَتِيمٌ، فِي بَيْتِنَا خَلْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأُمِّي أُمُّ سُلَيْمٍ خَلْفَنَا. আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন একবার আমাদের ঘরে আমি ও একটি ইয়াতীম ছেলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পিছনে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করলাম। আর আমার মা উম্মু সুলাইম (রাঃ) আমাদের পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৭৯. অধ্যায়ঃ মসজিদ ও ইমামের ডানদিক । ৭২৮ حَدَّثَنَا مُوسَى، حَدَّثَنَا ثَابِتُ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قُمْتُ لَيْلَةً أُصَلِّي عَنْ يَسَارِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَخَذَ بِيَدِي أَوْ بِعَضُدِي حَتَّى أَقَامَنِي عَنْ يَمِينِهِ، وَقَالَ بِيَدِهِ مِنْ وَرَائِي. ইব্নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একরাতে আমি সালাত আদায়ের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার হাত বা বাহু ধরে তাঁর ডানপাশে দাঁড় করালেন এবং তিনি তাঁর হাতের ইঙ্গিতে বললেন, আমার পিছনের দিক দিয়ে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৮০. অধ্যায়ঃ ইমাম ও মুক্তাদীর মধ্যে দেয়াল বা সুতরা থাকলে । হাসান (রহঃ) বলেন, তোমার ও ইমামের মধ্যে নহর থাকলেও ইকতিদা করতে অসুবিধা নেই। আবূ মিজলায (রহঃ) বলেন, যদি ইমামের তাকবীর শোনা যায় তাহলে ইমাম ও মুকতাদীর মধ্যে রাস্তা বা দেয়াল থাকলেও ইকতিদা করা যায় । ৭২৯ حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ فِي حُجْرَتِهِ، وَجِدَارُ الْحُجْرَةِ قَصِيرٌ، فَرَأَى النَّاسُ شَخْصَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَامَ أُنَاسٌ يُصَلُّونَ بِصَلاَتِهِ، فَأَصْبَحُوا فَتَحَدَّثُوا بِذَلِكَ، فَقَامَ لَيْلَةَ الثَّانِيَةِ، فَقَامَ مَعَهُ أُنَاسٌ يُصَلُّونَ بِصَلاَتِهِ، صَنَعُوا ذَلِكَ لَيْلَتَيْنِ أَوْ ثَلاَثَةً، حَتَّى إِذَا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ جَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَخْرُجْ، فَلَمَّا أَصْبَحَ ذَكَرَ ذَلِكَ النَّاسُ فَقَالَ “ إِنِّي خَشِيتُ أَنْ تُكْتَبَ عَلَيْكُمْ صَلاَةُ اللَّيْلِ ”. ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের সালাত তাঁর নিজ কামরায় আদায় করতেন। কামরার দেওয়ালটি ছিল নীচু। ফলে একদা সাহাবীগণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর শরীর দেখতে পেলেন এবং (দেয়ালের অন্য পাশে) সাহাবীগণ দাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। সকালে তাঁরা এ কথা বলাবলি করছিলেন। দ্বিতীয় রাতে তিনি (সালাতে) দাঁড়ালেন। সাহাবীগণ দাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলেন। দু’ বা তিন রাত তাঁরা এরূপ করলেন। এরপরে (রাতে) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসে থাকলেন, আর বের হলেন না। ভোরে সাহাবীগণ এ বিষয়ে আলোচনা করলেন। তখন তিনি বললেনঃ আমার আশংকা হচ্ছিল যে, রাতের সালাত তোমাদের উপর ফরয করে দেয়া হতে পারে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৮১. অধ্যায়ঃ রাতের সালাত । ৭৩০ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لَهُ حَصِيرٌ يَبْسُطُهُ بِالنَّهَارِ، وَيَحْتَجِرُهُ بِاللَّيْلِ، فَثَابَ إِلَيْهِ نَاسٌ، فَصَلَّوْا وَرَاءَهُ. ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি চাটাই ছিল। তিনি তা দিনের বেলায় বিছিয়ে রাখতেন এবং রাতের বেলা তা দিয়ে কামরা বানিয়ে নিতেন। সাহাবীগণ তাঁর পিছনে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান এবং তাঁর পিছনে সালাত আদায় করেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭৩১ حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، قَالَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ سَالِمٍ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اتَّخَذَ حُجْرَةً ـ قَالَ حَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ ـ مِنْ حَصِيرٍ فِي رَمَضَانَ فَصَلَّى فِيهَا لَيَالِيَ، فَصَلَّى بِصَلاَتِهِ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَلَمَّا عَلِمَ بِهِمْ جَعَلَ يَقْعُدُ، فَخَرَجَ إِلَيْهِمْ فَقَالَ “ قَدْ عَرَفْتُ الَّذِي رَأَيْتُ مِنْ صَنِيعِكُمْ، فَصَلُّوا أَيُّهَا النَّاسُ فِي بُيُوتِكُمْ، فَإِنَّ أَفْضَلَ الصَّلاَةِ صَلاَةُ الْمَرْءِ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ الْمَكْتُوبَةَ ”. قَالَ عَفَّانُ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا مُوسَى، سَمِعْتُ أَبَا النَّضْرِ، عَنْ بُسْرٍ، عَنْ زَيْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. যায়দ ইব্নু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযান মাসে একটি ছোট কামরা বানালেন। তিনি (বুস্র ইব্নু সায়ীদ) (রহঃ) বলেন, মনে হয়, যায়দ ইব্নু সাবিত (রাঃ) কামরাটি চাটাই দিয়ে তৈরি ছিল বলে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি সেখানে কয়েক রাত সালাত আদায় করেন। আর তাঁর সাহাবীগণের মধ্যে কিছু সাহাবীও তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করেন। তিনি যখন তাঁদের সম্বন্ধে জানতে পারলেন, তখন তিনি বসে থাকলেন। পরে তিনি তাঁদের নিকট এসে বললেন, তোমাদের কার্যকলাপ দেখে আমি বুঝতে পেরেছি। হে লোকেরা! তোমরা তোমাদের ঘরেই সালাত আদায় কর। কেননা, ফরয সালাত ছাড়া লোকেরা ঘরে যে সালাত আদায় করে তা-ই উত্তম। ‘আফফান (রহঃ) যায়দ ইব্নু সাবিত (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একই রকম বলেছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৮২. অধ্যায়ঃ ফরয তাকবীর বলা ও সালাত শুরু করা । ৭৩২ حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ الأَنْصَارِيُّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَكِبَ فَرَسًا، فَجُحِشَ شِقُّهُ الأَيْمَنُ، قَالَ أَنَسٌ ـ رضى الله عنه ـ فَصَلَّى لَنَا يَوْمَئِذٍ صَلاَةً مِنَ الصَّلَوَاتِ وَهْوَ قَاعِدٌ، فَصَلَّيْنَا وَرَاءَهُ قُعُودًا، ثُمَّ قَالَ لَمَّا سَلَّمَ “ إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا صَلَّى قَائِمًا فَصَلُّوا قِيَامًا، وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا، وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ ”. আনাস ইব্নু মালিক আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ একবার আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোড়ায় চড়েন। ফলে তাঁর ডান পাঁজরে আঁচড় লাগে। আনাস (রাঃ) বলেন এ সময় কোন এক সালাত আমাদের নিয়ে তিনি বসে আদায় করেন। আমরাও তাঁর পিছনে বসে সালাত আদায় করি। সালাম ফিরানোর পর তিনি বললেনঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁকে অনুসরণ করার জন্যই। তাই তিনি যখন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করেন তখন তোমরাও দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে। আর তিনি যখন রুকূ’ করেন তখন তোমারাও রুকূ’ করবে। তিনি যখন সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে। তিনি যখন “سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه” বলেন, তখন তোমরা “رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ” বলবে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭৩৩ حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ قَالَ خَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ فَرَسٍ فَجُحِشَ فَصَلَّى لَنَا قَاعِدًا فَصَلَّيْنَا مَعَهُ قُعُودًا، ثُمَّ انْصَرَفَ فَقَالَ “ إِنَّمَا الإِمَامُ ـ أَوْ إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ ـ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا، وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا رَفَعَ فَارْفَعُوا، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ. وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا ”. আনাস ইব্নু মালিক আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোড়া হতে পড়ে গিয়ে আহত হন। তাই তিনি আমাদের নিয়ে বসে সালাত আদায় করেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে বসে সালাত আদায় করি। অতঃপর তিনি ফিরে বললেনঃ ইমাম অনুসরণের জন্যই বা তিনি বলেছিলেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁর অনুসরণের জন্য। তাই যখন তিনি তাকবীর বলেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে, যখন রুকূ’ করেন তখন তোমরাও রুকূ’ করবে। যখন তিনি উঠেন তখন তোমরাও উঠবে। তিনি যখন ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলেন,তখন তোমরা ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ বলবে এবং তিনি যখন সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭৩৪ حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا، وَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَقُولُوا رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ. وَإِذَا سَجَدَ فَاسْجُدُوا، وَإِذَا صَلَّى جَالِسًا فَصَلُّوا جُلُوسًا أَجْمَعُونَ ”. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁর অনুসরণের জন্য। তাই যখন তিনি তাকবীর বলেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলবে, যখন তিনি রুকূ’ করেন তখন তোমরাও রুকূ’ করবে। যখন ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলেন তখন তোমরা বলবে ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ আর তিনি যখন সিজদা করেন তখন তোমরাও সিজদা করবে। যখন তিনি বসে সালাত আদায় করেন তখন তোমরাও বসে সালাত আদায় করবে। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৮৩. অধ্যায়ঃ সালাত শুরু করার সময় প্রথম তাকবীরের সাথে সাথে উভয় হাত উঠানো । ৭৩৫ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ إِذَا افْتَتَحَ الصَّلاَةَ، وَإِذَا كَبَّرَ لِلرُّكُوعِ، وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ رَفَعَهُمَا كَذَلِكَ أَيْضًا وَقَالَ “ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ ”. وَكَانَ لاَ يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي السُّجُودِ. ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত শুরু করতেন, তখন উভয় হাত তাঁর কাঁধ বরাবর উঠাতেন। আর যখন রুকূ’তে যাওয়ার জন্য তাকবীর বলতেন এবং রুকূ’ হতে মাথা উঠাতেন তখনও একই ভাবে দু’হাত উঠাতেন এবং ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ ও ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ বলতেন। কিন্তু সিজদার সময় এরুপ করতেন না। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৮৪. অধ্যায়ঃ তাকবীরে তাহরীমা, রুকূ’তে যাওয়া এবং রুকূ’ হতে উঠার সময় উভয় হাত উঠানো । ৭৩৬ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، رضى الله عنهما قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ فِي الصَّلاَةِ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يَكُونَا حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ، وَكَانَ يَفْعَلُ ذَلِكَ حِينَ يُكَبِّرُ لِلرُّكُوعِ، وَيَفْعَلُ ذَلِكَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ وَيَقُولُ “ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ”. وَلاَ يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي السُّجُودِ. ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দেখেছি, তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এবং যখন তিনি রুকূ’র জন্য তাকবীর বলতেন তখনও এ রকম করতেন। আবার যখন রুকূ’ হতে মাথা উঠাতেন তখনও এমন করতেন এবং ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলতেন।তবে সিজদার সময় এরূপ করতেন না। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ৭৩৭ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ الْوَاسِطِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، أَنَّهُ رَأَى مَالِكَ بْنَ الْحُوَيْرِثِ إِذَا صَلَّى كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ رَفَعَ يَدَيْهِ، وَحَدَّثَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَنَعَ هَكَذَا. আবূ কিলাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি মালিক ইব্নু হুওয়ায়রিস (রাঃ)-কে দেখেছেন, তিনি যখন সালাত আদায় করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং তাঁর দু’হাত উঠাতেন। আর যখন রুকু’ করার ইচ্ছা করতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উঠাতেন, আবার যখন রু’কু হতে মাথা উঠাতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং তিনি বর্ণনা করেন যে, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করেছেন। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৮৫. অধ্যায়ঃ উভয় হাত কতটুকু উঠাবে । আবূ হুমাইদ (রহঃ) তাঁর সাথীদের বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাঁধ বরাবর হাত উঠাতেন । ৭৩৮ حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنَا سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم افْتَتَحَ التَّكْبِيرَ فِي الصَّلاَةِ، فَرَفَعَ يَدَيْهِ حِينَ يُكَبِّرُ حَتَّى يَجْعَلَهُمَا حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ، وَإِذَا كَبَّرَ لِلرُّكُوعِ فَعَلَ مِثْلَهُ، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. فَعَلَ مِثْلَهُ وَقَالَ “ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ ”. وَلاَ يَفْعَلُ ذَلِكَ حِينَ يَسْجُدُ وَلاَ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ. ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে তাকবীর দিয়ে সালাত শুরু করতে দেখেছি, তিনি যখন তাকবীর বলতেন তখন তাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং কাঁধ বরাবর করতেন। আর যখন রুকূ’র তাকবীর বলতেন তখনও এ রকম করতেন। আবার যখন ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলতেন,তখনও এরূপ করতেন এবং ‘رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ’ বলতেন। কিন্তু সিজদায় যেতে এরূপ করতেন না। আর সিজদার থেকে মাথা উঠাবার সময়ও এরূপ করতেন না। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৮৬. অধ্যায়ঃ দু’ রাক’আত আদায় করে দাঁড়াবার সময় দু’ হাত উঠানো। ৭৩৯ حَدَّثَنَا عَيَّاشٌ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، قَالَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، كَانَ إِذَا دَخَلَ فِي الصَّلاَةِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا رَكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. رَفَعَ يَدَيْهِ، وَإِذَا قَامَ مِنَ الرَّكْعَتَيْنِ رَفَعَ يَدَيْهِ. وَرَفَعَ ذَلِكَ ابْنُ عُمَرَ إِلَى نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. رَوَاهُ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. وَرَوَاهُ ابْنُ طَهْمَانَ عَنْ أَيُّوبَ وَمُوسَى بْنِ عُقْبَةَ مُخْتَصَرًا. নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) যখন সালাত শুরু করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং দু’হাত উঠাতেন আর যখন রুকু’ করতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন। এরপর যখন ‘سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه’ বলতেন তখনও দু’ হাত উঠাতেন এবং দু’রাক’আত আদায়ের পর যখন দাঁড়াতেন তখনও দু’হাত উঠাতেন। এ সমস্ত আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত বলে ইব্নু ‘উমর (রাঃ) বলেছেন। এ হাদীসটি হাম্মাদ ইব্নু সালাম ইব্নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। ইব্নু তাহমান, আইয়ূব ও মূসা ইব্নু ‘উক্বাহ (রহঃ) হতে এ হাদীসটি সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন। [১] [১] আধুনিক প্রকাশনীর ৬৯৫ নং হাদীসের বিশাল এক টীকা লেখা হয়েছে বহু মারফু’ হাদীসকে প্রত্যাখ্যান করে মাযহাবী রসম রেওয়াজ চালু রাখার জন্য। হানাফী মাযহাবে তাক্বীরে তাহরীমা ছাড়া কোথাও রাফ’উল ইয়াদাঈন হয় না অথচ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আজীবন সালাতে তাক্বীরে তাহরীমাহ ছাড়াও রাফ’উল ইয়াদাঈন বা হাত উত্তোলন করেছেন। নিম্নের হাদীস তার জ্বলন্ত প্রমাণঃ আবদুল্লাহ ইবনে ‘উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দেখেছি তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এবং যখন তিনি রূকু’র জন্য তাকবীর বলতেন তখনও এরূপ করতেন। এবং যখন রূকু’ হতে মাথা উঠাতেন তখনও এরূপ করতেন। ইমাম বুখারী এটা বর্ণনা করেছেন। তাঁর অপর বর্ণনায় এটাও আছে যে, যখন তিনি [রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] দ্বিতীয় রাক’আত হতে (তৃতীয় রাক’আতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও দু’হাত (কাঁধ বরাবর) উঠাতেন । (বুখারী ১ম খণ্ড ১০২ পৃষ্ঠা। মুসলিম ১৬৮ পৃষ্ঠা। আবু দাউদ ১ম খণ্ড ১০৪, ১০৫ পৃষ্ঠা। তিরমিযী ১ম খণ্ড ৫৯ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪১, ১৫৮, ১৬২ পৃষ্ঠা। ইব্নু খুযায়মাহ ৯৫, ৯৬। মেশকাত ৭৫ পৃষ্ঠা। ইবনে মাজাহ ১৬৩ পৃষ্ঠা। যাদুল মা’আদ ১ম খণ্ড ১৩৭, ১৩৮, ১৫০ পৃষ্ঠা। হিদায়া দিরায়াহ ১১৩-১১৫ পৃষ্ঠা। কিমিয়ায়ে সায়াদাত ১ম খণ্ড ১৯০ পৃষ্ঠা। বুখারী আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৬৯২, ৬৯৩, ৬৯৫। বুখারী আযীযুল হক ১ম খণ্ড হাদীস নং ৪৩২-৪৩৪। বুখারী ইসলামীক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ৬৯৭-৭০১ অনুচ্ছেদসহ। মুসলিম ইসলামীক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭৪৫-৭৫০। আবূ দাউদ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ৮৪২-৮৪৪। তিরমিযী ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ২৫৫। মেশকাত নূর মোহাম্মদ আযমী ও মাদরাসা পাঠ্য ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭৩৮-৭৩৯, ৭৪১, ৭৪৫। বুলূগুল মারাম ৮১ পৃষ্ঠা। ইসলামিয়াত বি-এ. হাদীস পর্ব ১২৬-১২৯ পৃষ্ঠা) ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত শুরু করতেন, যখন রুকু’ করতেন এবং যখন রুকু’ থেকে মাথা উঠাতেন তখন হস্তদ্বয় উত্তোলন করতেন কিন্তু সিজদার মধ্যে হস্তদ্বয় উত্তোলন করতেন না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহান আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাৎ অর্থাৎ তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত সর্বদাই তাঁর সালাত এরূপ করতেন। (বায়হাকি, হেদায়াহ দেরায়াহ ১ম খণ্ড ১১৪ পৃষ্ঠা) ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) বলেন, রফ’উল ইয়াদাঈন হল সালাতের সৌন্দর্য, রুকু’তে যাবার সময় ও রুকু’ হতে উঠার সময় কেউ রফ’উল ইয়াদাঈন না করলে তিনি তাকে ছোট পাথর ছুঁড়ে মারতেন। (নায়লুল আওত্বার ৩/১২, ফাতহুল বারী ২/২৫৭) হাদীস জগতের শ্রেষ্ঠ ইমাম ইসমা’ঈল বুখারী জুযউর রফ’ইল ইয়াদাইন নামক একটি স্বতন্ত্র হাদীস গ্রন্থই রচনা করেছেন। যার মধ্যে ১৯৮টি হাদীস বিদ্যমান। (ছাপা তাওহীদ পাবলিকেশন্স, ঢাকা) যুগ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী তাঁর সিফাতু সলাতুন্নবী গ্রন্থে বুখারী ও মুসলিমের হাদীস “তিনি রুকু’ থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সময় দু’হাত উঠাতেন” উল্লেখ করে টীকায় লিখেছেন- এ হস্ত উত্তোলন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে মুতাওয়াতির সূত্রে সাব্যেস্ত। কিছু সংখ্যক হানাফী আলেম সহ বেশীরভাগ আলিম হাত উঠানোর পক্ষে মত পোষণ করেন । রফ’উল ইয়াদাইন ও খোলাফায়ে রাশিদ্বীন এবং আশরা মুবাশ্শারীনঃ ইমাম যায়লা’ঈ হানাফী (রহঃ) , আল্লামা আবদুল হাই লক্ষ্ণৌবী হানাফী (রহঃ), আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী হানাফী (রহঃ) এবং হাফিয ইব্নু হাজার আসকালানী (রহঃ) সবাই ইমাম হাকেম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেনঃ ইমাম হাকিম (রহঃ) বলেছেনঃ “রফয়ে য়াদাইন ব্যতীত অন্য কোন সুন্নাতের বর্ণনার ক্ষেত্রে খোলাফায়ে রাশেদ্বীন, আশরা মোবাশ্শারা (জান্নাতের শুভসংবাদ প্রাপ্ত দশজন সাহাবা) এবং বড় বড় সাহাবীগণ (তাদের দূর দেশে ছড়িয়ে পড়ার পরও) একত্রিত হয়েছেন বলে আমার জানা নেই। (নাসবুর রায়াহ ১/৪১৮ পৃষ্ঠা, নাইলুল ফারকাদাইন পৃষ্ঠা ২৬, তালখীছ আলহাবীর ১/৮২) শায়খ আবদুল কাদের জীলানী ও রফ’উল ইয়াদাইনঃ শায়খ আবদুল কাদের জীলানী (রহঃ) সালাতের সুন্নাতসমূহ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেনঃ “সালাত শুরু করার সময়, রুকু’তে যাওয়ার সময় এবং রুকু’ থেকে উঠার সময় রফ’উল ইয়াদাইন করা সুন্নাত ।” (গুনইয়াতুত ত্বালিবীন পৃষ্ঠা ১০) হানাফী ‘আলিমগণ ও রফ’উল ইয়াদাইনঃ শায়খ আবুত্বলিব মাক্কী হানাফী (রহঃ) তাঁর কূতুল কূলুব নামক গ্রন্থে সালাতের সুন্নাত সমূহ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেনঃ “রুকু’তে যাওয়ার সময় রফ’উল ইয়াদাইন করা এবং তাকবীর বলা সুন্নাত। তারপর ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলে রফ’উল ইয়াদাইন করা সুন্নাত ।” (কূতুল কূলুব ৩/১৩৯) কাযী ছানাউল্লাহ পানিপত্তি (রহঃ) বলেনঃ “বর্তমান সময়ের অধিকাংশ আলেমের দৃষ্টিতে রফয়ে ইয়াদাইন সুন্নাত। অধিকাংশ ফকীহ এবং মুহাদ্দিসগণ একে প্রমাণ করে থাকেন ।” (মালা বুদ্দা মিনহু পৃষ্ঠা ৪২, ৪৪) ইমাম আবু ইউসুফ-এর শীষ্য ইছাম ও রফ’উল ইয়াদাইনঃ আল্লামা ‘আবদুল হাই লাখনোভী বলেনঃ “এছাম ইব্নু আবু ইউসুফ ইমাম আবু ইউসুফ (রহঃ)-এর শাগরিদ ছিলেন এবং হানাফী ছিলেন । তিনি রুকু’তে যাওয়ার সময় এবং রুকু’ থেকে উঠার সময় দু’হাত উঠাতেন ।” (আল ফাওয়ায়েদুল বাহিয়্যাহ ১১৬ নূর মোহাম্মদ প্রেস) ‘আবদুল্লাহ ইব্নুল মোবারক, সুফিয়ান ছাওরী এবং শু’বাহ বলেনঃ “এছাম ইবনূ ইউসুফ মুহাদ্দিছ ছিলেন তাই তিনি রফউল ইয়াদাইন করতেন ।” (আল ফাওয়ায়েদুল বাহিয়্যাহ ১১৬ নূর মোহাম্মদ প্রেস) আল্লামা আবদুল হাই লক্ষ্ণৌবী (রহঃ) বলেনঃ “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে রফয়ে ইয়াদাইন এর প্রমাণ বেশী এবং অগ্রাধিকার যোগ্য ।” (আত্তা’লীকুল মুমাজ্জাদ ৯১ পৃষ্ঠা) তিনি আরও বলেনঃ “সত্য কথা হলো রুকু’তে যাওয়া এবং রুকু’ থেকে মাথা উঠানোর সময় ‘রফ’উল ইয়াদাইন’ করা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং অনেক সাহাবী (রাঃ) থেকে শক্তিশালী সনদ এবং ছহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত ।” (আসসিয়ায়াহ ১/২১৩) রুকু’তে যাওয়া ও রুকু’ হতে উঠার সময় রফ’উল ইয়াদাঈন করা সম্পর্কে চার খলীফাহ সহ প্রায় ২৫জন সাহাবী থেকে বর্ণিত সহীহ হাদীস বিদ্যমান। একটি হিসাব মতে রফ’উল ইয়াদাইন-এর হাদীসের রাবী সংখ্যা আশারায়ে মুবাশ্শরাহ সহ অন্যূন ৫০ জন সাহাবী- (ফিকহুস সুন্নাহ ১/১০৭, ফাতহুল বারী ২/২৫৮) এবং সর্বমোট সহীহ হাদীস আসারের সংখ্যা অন্যূন ৪০০ শত। ইমাম সুয়ূতী রফ’উল ইয়াদাঈন এর হাদীসকে মুতাওয়াতির পর্যায়ের বলে মন্তব্য করেছেন । কতিপয় নির্বোধ লোকের কথা আছে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময় যারা নতুন ঈমান এনেছিলেন তারা নাকি তাঁদের পুরাতন আচরণের বশবর্তী হয়ে বগলে পুতুল রাখতেন এবং এটা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানতে পারলে তিনি রফ’উল ইয়াদাঈনের নির্দেশ দেন। পরে তাঁদের ঈমান মজবুত হয়ে গেলে রফ’উল ইয়াদাঈন করার নির্দেশ মনসুখ হয়ে যায়। এ কথাটি নিতান্তই আল্লাহ্র রসূলের (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদের ঈমানের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ। কারণ তাঁদের ঈমান আমাদের ঈমান অপেক্ষা অনেক দৃঢ় ও মজবুত ছিল। তাছাড়া এ কথাটি সাহাবীদের উপর মিথ্যা অপবাদেরই নামান্তর । রফ’উল ইয়াদাঈন সম্পর্কে সাহাবী ‘আবদুল্লাহ ইব্নু মাস’উদের হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয় রফ’উল ইয়াদাঈন করা যাবে না। কিন্তু মুহাদ্দীসিনে কিরামের নিকট এ কথাটি প্রসিদ্ধ যে, তাঁর শেষ বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে স্মৃতি ভ্রম ঘটে, ফলে হতে পারে এ হাদীসটিও সে সবের অন্তর্ভুক্ত। কারণ তিনি কয়েকটি বিষয়ে সকল সাহাবীগণের বিপরীতে কথা বলেছেন। যেমনঃ (১) মুয়াব্বিযাতাইন- সূরা নাস ও ফালাক সূরাদ্বয় কুরআনের অংশ নয় মনে করতেন। (২) তাত্বীক- রুকু’তে তাত্বীক বা দু’হাতকে জোড় করে হাঁটু দ্বারা চেপে রাখতে বলতেন। (৩) দু’জন সালাতে দাঁড়ালে কিভাবে দাঁড়াবে। (৪) আরাফাহ্র ময়দানে কীভাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ওয়াক্ত একসাথে আদায় করেছেন। (৫) হাত বিছিয়ে সিজদা করা। (৬) —– কিভাবে পড়েছেন। (৭) রফ’উল ইয়াদাঈন একবার করেছেন। [নাসবুর রাইয়াহ (ইমাম যাইলায়ী) ৩৯৭-৪০১ পৃষ্ঠা, ফিকহুল সুন্নাহ ১/১৩৪] হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস সরাসরি ১০/৮৭. অধ্যায়ঃ সালাতে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা । ৭৪০ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُونَ أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ الْيَدَ الْيُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ الْيُسْرَى فِي الصَّلاَةِ. قَالَ أَبُو حَازِمٍ لاَ أَعْلَمُهُ إِلاَّ يَنْمِي ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. قَالَ إِسْمَاعِيلُ يُنْمَى ذَلِكَ. وَلَمْ يَقُلْ يَنْمِي. সাহল ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, লোকদের নির্দেশ দেয়া হত যে, সালাতে প্রত্যেকে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখবে। [১] আবূ হাযিম (রহঃ) বলেন, সাহল (রহঃ) এ হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করতেন বলেই জানি। ইসমাঈল (রহঃ) বলেন, এ হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতেই বর্ণনা করা হতো। তবে তিনি এমন বলেননি যে, সাহল (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করতেন। [১] ওয়ালিল বিন হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সালাত আদায় করেছি। তিনি তাঁর বুকে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতেন । বুখারীর হাদীসের আরবী ইবারতে —- শব্দের অর্থ করেছেন হাতের কব্জি। কিন্তু এমন কোন অভিধান নেই যেখানে —- অর্থ কব্জি করা হয়েছে। আরবী অভিধানগুলিতে —- শব্দের অর্থ পূর্ণ একগজ বিশিষ্ট হাত। অনুবাদক শুধুমাত্র সহীহ হাদীসকে ধামাচাপা দিয়ে মাযহাবী মতকে অগ্রাধীকার দেয়ার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে অনুবাদে পূর্ণ হাতের পরিবর্তে কব্জি উল্লেখ করেছেন। তথাপিও সংশয় নিরসনের লক্ষে এ সম্পর্কে খানিকটা বিশদ আলোচনা উদ্ধৃত করা হলঃ ওয়াইল বিন হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সালাত আদায় করেছি। (আমি দেখেছি) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর রাখলেন । (বুখারী ১০২ পৃষ্ঠা। সহীহ ইব্নু খুযায়মাহ ২০ পৃষ্ঠা। মুসলিম ১৭৩ পৃষ্ঠা। আবু দাউদ ১ম খণ্ড ১১০, ১২১, ১২৮ পৃষ্ঠা। তিরমিযী ৫৯ পৃষ্ঠা। নাসাঈ ১৪১ পৃষ্ঠা। ইব্নু মাজাহ, ৫৮, ৫৯ পৃষ্ঠা, মেশকাত ৭৫ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মালিক ১৭৪ পৃষ্ঠা। মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ১৬০ পৃষ্ঠা। যাদুল মায়াদ ১২৯ পৃষ্ঠা। হিদায়া দিরায়াহ ১০১ পৃষ্ঠা। কিমিয়ায়ে সাআদাত ১ম খণ্ড ১৮৯ পৃষ্ঠা। বুখারী আযীযুল হক ১ম খণ্ড হাদীস নং ৪৩৫। বুখারী আধুনিক প্রকাশনী ১ম খণ্ড হাদীস নং ৬৯৬। বুখারী ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭০২; মুসলিম ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ২য় খণ্ড হাদীস নং ৮৫১। আবু দাউদ ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ৭৫৯, তিরমিযী ইসলামিক ফাউণ্ডেশন ১ম খণ্ড হাদীস নং ২৫২, মেশকাত নূর মোহাম্মদ আযমী ২য় খণ্ড ও মাদ্রাসা পাঠ্য ২য় খণ্ড হাদীস নং ৭৪১, ৭৪২। বুলুগুল মারাম বাংলা ৮২ পৃষ্ঠা) বুকের উপর হাত বাঁধা সম্বন্ধে একটি হাদীস বর্ণিত হলঃ সীনা বা বুকের উপর এরূপভাবে হাত বাঁধতে হবে যেন ডান হাত উপরে এবং বাম হাত নিচে থাকে। (মুসলিম, আহমাদ, ও ইব্নু খুযাইমাহ) হাত বাঁধার দু’টি নিয়মঃ প্রথম নিয়মঃ ডান হাতের কব্জি বাম হাতের কব্জির জোড়ের উপর থাকবে। (ইব্নু খুযাইমাহ) দ্বিতীয় নিয়মঃ ডান হাতের আঙ্গুলগুলি বাম হাতের কনুই-এর উপর থাকবে, অর্থাৎ সমস্ত ডান হাত বাম হাতের উপর থাকবে। (বুখারী) এটাই যিরা’আহর উপর যিরা’আহ রাখার পদ্ধতি । বুকে হাত বাঁধা সম্পর্কে আলোচনাঃ কে হাত বাঁধা সম্পর্কে আল্লামা হায়াত সিন্ধী একখানা আরবী রিসালা লিখে তাতে তিনি প্রমাণিত করেছেন যে, সালাতে সীনার উপর হাত বাঁধতে হবে। তাঁর পুস্তিকার নাম “ফতহুল গফূর ফী তাহকীকে ওযয়িল ইয়াদায়নে আলাস সদূর”। পুস্তিকা খানা ৮ পৃষ্ঠায় সমাপ্ত। তা হতে কয়েকটি দলিল উদ্ধৃত করছিঃ ১। ইমাম আহমাদ স্বীয় মসনদে কবীসহা বিন হোল্ব- তিনি স্বীয় পিতা (হোল্ব) হতে রিওয়ায়াত করেছেন যে, তিনি (হোল্ব) বলেন যে, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (সালাত হতে ফারেগ হতে মুসল্লিদের দিকে) ডান ও বাম দিকে ফিরতে দেখেছি, আর দেখেছি তাঁকে স্বীয় সীনার উপর হাত বাঁধতে। উক্ত হাদীসে ‘ইয়াহইয়া’ নামক রাবী স্বীয় দক্ষিণ হস্ত বাম হস্তের কব্জির উপর রেখে দেখালেন। আল্লামা হায়াত সিন্ধী বলেন যে, আমি ‘তাহকীক’ কিতাবে —- তিনি স্বীয় সীনার উপর হাত রাখলেন, এ কথা দেখেছি। আর আমরা বলছি যে, হাফিয আবূ উমর ইব্নু আবদুল বর স্বীয় “আল ইসতিআব ফী মাআরিফাতিল আসহাব” কিতাবে উক্ত হাদীস ‘হোলব’ সাহাবী হতে তাঁর পুত্র কবীসা রিওয়ায়াত করেছেন এ কথা উল্লেখ করে উক্ত হাদীস সহীহ বলেছেন। (২য় খণ্ড, ৬০০ পৃঃ) ২। ইমাম আবূ দাউদ তাউস (তাবিঈ) হতে সীনার উপর হাত বাঁধার হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। ৩। ইমাম ইব্নু ‘আবদুল বর “আত তামহীদ লিমা ফীল মুয়াত্তা মিনাল মাআনী ওয়াল আসানীদ” কিতাবে উক্ত ‘তাউস’ তাবি’ঈর হাদীস উল্লেখ করে সীনার উপর হাত বাঁধার কথা বলেছেন। এতদ্ব্যতীত ওয়ায়েল বিন হুজর হতেও সীনার উপর হাত বাঁধার হাদীস উল্লেখ করেছেন । ৪। ইমাম বাইহাকী ‘আলী “ফাসল্লি লি রাব্বিকা ওয়ান্হার”, এর অর্থ এরূপ বর্ণনা করেছেনঃ তুমি নামায পড়ার সময় ডান হাত বাম হাতের উপর রাখ। (জওহারুন্ নকীসহ সুনানে কুবরা ২৪-৩২ পৃঃ) ৫। ইমাম বুখারী স্বীয় ‘তারীখে’ ‘উকবাহ বিন সহবান, তিনি (‘উকবাহ) ‘আলী (রাঃ) হতে রিওয়ায়াত করেছেন যে, ‘আলী (রাঃ) বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে (হস্তদ্বয়) সীনার উপর বেঁধে “ফাসল্লি লি রব্বিকা ওয়ানহার” (আয়াতের) অর্থ বুঝালেন। অর্থাৎ উক্ত আয়াতের অর্থ ‘তুমি সীনার উপর হাত বেঁধে সালাতে যাও’। এর বাস্তব রূপ তিনি [‘আলী (রাঃ)} সীনার উপর হাত বেঁধে দেখালেন। উক্ত আয়াতের অর্থ ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। এখন নাভীর নীচে হাত বাঁধার কোন হাদীস আছে কিনা তা-ই দেখা যাক । নাভীর নিচে হাত বাঁধাঃ ইমাম বাইহাকী ‘আলী হতে নাভীর নিচে হাত বাঁধার একটি হাদীস উল্লেখ করে তাকে যঈফ বলেছেন । নাভীর নিচে হাত বাঁধার কোন সহীহ হাদীস নেইঃ আল্লামা সিন্ধী হানাফী বিদ্বানগণের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, যদি তুমি বল যে, ইব্নু আবী শায়বার ‘মুসান্নাফ’ (হাদীসের কিতাবের নাম) হতে শায়খ কাসিম বিন কাতলুবাগা ‘তাখরীজু আহাদিসিল এখতিয়ার’ কিতাবে ‘ওকী’ মুসা বিন ওমায়রাহ হতে, মূসা আলকামা বিন ওয়ায়িল বিন হুজর হতে যে রিয়ায়াত করেছেন তাতে ‘নাভীর নিচে’ হাত বাঁধার কথা উল্লেখ আছে। তবে আমি (আল্লামা সিন্ধী) বলি যে, ‘নাভির নীচে’ হাত বাঁধার হাদীস ভুল। ‘মুসান্নাফ’ এর সহীহ গ্রন্থে উক্ত সনদের উল্লেখ আছে। কিন্তু ‘নাভীর নিচে’ এই শব্দের উল্লেখ নেই। উক্ত হাদীস পরে (ইবরাহীম) ‘নখয়ী’ এর আসার (সাহাবা ও তাবিঈদের উক্তি ও আচরণকে ‘আসার’ বলে) উল্লেখ আছে। উক্ত ‘আসার’ ও হাদীসের উক্তি প্রায় নিকটবর্তী। উক্ত ‘আসার’-এর শেষ ভাগে ‘ফিস্সালাতে তাহ্তাস সুররাহ’ অর্থাৎ নামাযের মধ্যে নাভীর নিচে (হাত বাঁধার উল্লেখ আছে)। মনে হয় লেখকের লক্ষ্য এক লাইন হতে অন্য লাইনে চলে যাওয়ায় ‘মওকুফ’ (হাদিসকে) ‘মরফু’ লিখে দিয়েছেন। (যে হাদীসের সম্বন্ধ-সাহাবার সাথে হয় তাকে ‘মওকুফ’ আর যার সম্বন্ধ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে হয় তাকে ‘মরফু’ হাদীস বলে)। আর আমি যা কিছু বললাম আমার কথা হতে এটাই প্রকাশ পায় যে, ‘মুসান্নাফ’ এর সব খণ্ড মিলিতভাবে নাভীর নিচে হাত বাঁধা বিষয়ে এক নয় অর্থাৎ সবগুলোতে নাভীর নীচে হাত বাঁধার কথাটি উল্লেখ নাই। তাছাড়া বহু আহলে হাদীস (মুহাদ্দিস) উক্ত হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। অথচ ‘নাভির নীচে’ এর কেউই উল্লেখ করেননি। আর আমি তাঁদের মধ্যেকার কোন ব্যক্তি হতে শুনিওনি। কেবল ‘কাসেম বিন কাতলুবাগা ঐ কথার (নাভির নীচে) উল্লেখ করেছেন। তিনি ‘তাম্হীদ’ কিতাবের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন যে, (আহলে হাদীসদের মধ্যে প্রথম) ইব্নু আব্দিল বর উক্ত কিতাবে বলেছেন যে, সওরী ও আবূ হানীফা নাভির নীচের কথা বলেছেন। আর সেটা ‘আলী ও ইব্রাহীম নখঈ হতে বর্ণিত হয়ে থাকে বটে, কিন্তু ঐ দু’জন (‘আলী ও নখঈ) হতে সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। যদি সেটা হাদীস হতো তাহলে ইব্নু ‘আবদুল বর ‘মুসান্নাফ’ হতে ওটা অবশ্য উল্লেখ করতেন। কেননা হাত বাঁধা সম্বন্ধে ইব্নু আবী শায়বা হতে তিনি বহু রিওয়ায়াত এনেছেন। ২য় ইব্নু হজর আসকালানী, (আহলে হাদীস) ৩য় মুজদুদ্দ্বীন ফিরোজাবাদী (আহলে হাদীস) ৪র্থ আল্লামা সৈয়ূতী, (আহলে হাদীস) ৫ম আল্লামা যয়লয়ী, (মুহাক্কিক) ৬ষ্ঠ আল্লামা আয়নী (আহলে তাহ্কীক) ও ৭ম ইব্নু আমীরিল হাজ্জ (আহলে হাদীস) প্রভৃতির উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন যে, যদি “নাভির নীচে”-এর কথা থাকত তাহলে সকলেই তা উল্লেখ করতেন। কেননা তাঁদের সকলের কিতাব ইব্নু আবী শায়বার বর্ণিত হাদীস দ্বারা পূর্ণ। তিনি এ সম্পর্কিত হাদীসদ্বয়ের আলোচনা করে বুকে হাত বাঁধাকে ওয়াজিব বলেছেন। সিন্ধী সাহেব উপসংহারে লিখেছেন “জেনে রাখ যে, ‘নাভির নীচে’-এ কথা প্রমাণের দিক দিয়ে না ‘কত্য়ী’ (অকাট্য), না ‘যন্নী’ (বলিষ্ঠ ধারণামূলক)। বরং প্রমাণের দিক দিয়ে ‘মওহূম’ (কল্পনা প্রসূত) আর যা মওহূম তদ্দ্বারা শরীয়তের হুকুম প্রমাণিত হয় না। …….কাজেই শুধু শুধু কল্পনা করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিকে কোন বস্তুর সম্বন্ধ করা জায়েজ নয়। অর্থাৎ শুধু কল্পনার উপর নির্ভর করে নাভীর নীচে হাত রাখার নিয়মকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত করা জায়েজ নয়। যখন উপরিউক্ত আলোচনা হতে স্পষ্টভাবে প্রকাশ হয়ে গেল যে, নামাযের মধ্যে সীনার উপর হাত বাঁধা নয় যে, ওটা হতে মুখ ফিরিয়ে নেন। আর ঐ বস্তু হতে কিরূপ মুখ ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে প্রমাণিত হয়েছে। কেননা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, আমি যা এনেছি (অর্থাৎ আল্লাহ্র ব্যবস্থা), যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের মধ্যে কেউ তার প্রবৃত্তিকে তার অনুগামী না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না। অতএব, প্রত্যেক মুসলমান (স্ত্রী-পুরুষের) উচিত তাঁর উপর আমল করা, আর কখনো কখনো এই দু’আ করা- প্রভু হে, যে বিষয়ে মতভেদ করা হয়েছে তাতে আমাদেরকে সত্য পথের সন্ধান দাও। কেননা তুমিই তো যাকে ইচ্ছা ‘সিরাতে মুস্তাকীমের’ পথ দেখিয়ে থাক”। (উক্ত কিতাব ২-৮ পৃঃ ও ইবকারুল মিনান ৯৭-১১৫ পৃঃ) আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী তাঁর সীফাত গ্রন্থে হাত বাঁধা সম্পর্কে লিখতে গিয়ে শিরোনাম এসেছেনঃ —- বুকের উপর দু’হাত রাখা। অতঃপর তিনি হাদীস উল্লেখ করে নিচে টীকা লিখেছেন। যা বন্ধনীর মধ্যে দেখানো হল। “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাম হাতের পিঠ, কব্জি ও বাহুর উপর হাত রাখতেন ।” [আবূ দাউদ, নাসাঈ, ১/৪/২ সহীহ সনদে, আর ইবনু হিব্বানও সহীহ আখ্যা দিয়েছেন। ৪৮৫ ] “এ বিষয়ে স্বীয় সাহাবাগণকেও আদেশ প্রদান করেছেন ।” (মালিক, বিখারী ও আবূ আওয়ানাহ) তিনি কখনো ডান হাত দ্বারা বাম হাত আঁকড়ে ধরতেন ।” (নাসাঈ, দারাকুত্বনী, সহীহ সনদ সহকারে। এ হাদীস প্রমাণ করছে যে, হাত বাঁধা সুন্নাত। আর প্রথম হাদীস প্রমাণ করছে যে, হাত রাখা সুন্নাত। অতএব উভয়টাই সুন্নাত। কিন্তু হাত বাঁধা ও হাত রাখার মধ্যে সমন্বয় বিধান করতে গিয়ে পরবর্তী হানাফী ‘আলিমগণ যে পদ্ধতি পছন্দ করেছেন তা হচ্ছে বিদআত; যার রূপ তারা এভাবে উল্লেখ করেছেন যে, ডান হাতকে বাম হাতের উপর কনিষ্ঠ ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা আঁকড়ে ধরবে এবং অপর তিন আঙ্গুলি বিছিয়ে রাখবে (ইব্নু আবিদ্বীন কর্তৃক দুররে মুখতারের টীকা (১/৪৫৪)। এতএব, হে পাঠক! পরবর্তীদের (মনগড়া) এ কথা যেন আপনাকে ধোঁকায় না ফেলে । “তিনি হস্তদ্বয়কে বুকের উপর রাখতেন ।” [আবু দাউদ, ইব্নু খুযাইমাহ স্বীয় সহীহ গ্রন্থে (১/৫৪/২) আহমাদ, আবুশ্ শাইখ স্বীয় “তারীখু আছবাহান” গ্রন্থে (পৃষ্ঠা ১২৫) ইমাম তিরমিযীর একটি সনদকে হাসান বলেছেন। গভীরভাবে চিন্তা করলে এর বক্তব্য মুওয়াত্তা ইমাম মালিক এবং বুখারীতে পাওয়া যাবে। আলবানী বলেন, এ হাদীসের বিভিন্ন বর্ণনাসুত্রে নিয়ে আমি —- কিতাবের (১১৮) পৃষ্ঠায় বিস্তারিত আলোচনা করেছি । জ্ঞাতব্যঃ বুকের উপর হাত রাখাটাই সহীহ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত। এছাড়া অন্য কোথাও রাখার হাদীস হয় দুর্বল আর না হয় ভিত্তিহীন। এই সুন্নাতের উপর ইমাম ইসহাক বিন রাহভিয়া ‘আমল করেছেন। মারওয়াযী — গ্রন্থে ২২২ পৃষ্ঠাতে বলেন, ইসহাক আমাদেরকে নিয়ে বিত্রের সালাত পড়তেন এবং তিনি কুনূতে হাত উঠাতেন আর রুকু’র পূর্বে কুনূত পড়তেন। তিনি বক্ষদেশ উপর বা নীচে হাত রাখতেন। কাযী ‘ইয়াযও —কিতাবের ১৫ পৃষ্ঠায় (রিবাত্ব তৃতীয় সংস্করণ) এ —- সালাতের মুস্তাহাব কাজ বর্ণনার ক্ষেত্রে অনুরূপ কথা বলেছেন, ডান হাতকে বাম হাতের পৃষ্ঠের উপর বুকে রাখা। ‘আবদুল্লাহ ইব্নু আহমাদের বক্তব্যও এর কাছাকাছি, তিনি তাঁর —- এর ৬২ পৃষ্ঠায় বলেনঃ আমার পিতাকে দেখেছি যখন তিনি সালাত পড়তেন তখন তাঁর এক হাতকে অপর হাতের উপর নাভির উপরস্থলে রাখতেন, দেখুন —- (৩৫৩)।] (দেখুন নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী কৃত সিফাতু সলাতুন্নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস Post Views: 7