আল্লাহ শব্দের অর্থ কি? আল্লাহ নামের অর্থ কি?

আল্লাহ শব্দের অর্থ কি? আল্লাহ নামের অর্থ কি?

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে আল্লাহ শব্দের অর্থ কি এবং আল্লাহ নামের অর্থ কি।

আল্লাহ শব্দের অর্থ কি বা আল্লাহ নামের অর্থ কি

আল্লাহ শব্দটি একটি বিশেষ্য; এটি একটি নামবাচক শব্দ; অন্য কোন শব্দ থেকে আল্লাহ শব্দের উৎপত্তি হয়নি; সুতরাং এই নাম তিনি ছাড়া অন্য করো জন্য উপযুক্ত নয়। আল্লাহ শব্দের আলিফ লাম দূর করা বৈধ নয়; যেমন আর রহমান, আর রহিম প্রভৃতি নামের আলিফ লাম দূর করা যায়।

মতান্তরে, আল্লাহ শব্দটি ইলাহ ছিল। পরবর্তিতে তার হামযার স্থলে আলিফ লাম প্রয়োগ করা হয়েছে। কেউকেউ আবার বলেছেন অলাহা শব্দটি থেকে আল্লাহ শব্দ এসেছে।

‘আল্লাহ’ তার সবচেয়ে মহান নাম। এই নামের মাঝেই আছে যাবতীয় সুন্দর নাম। এই নামেই আছে যাবতীয় উচ্চ গুণ।

সকল সৃষ্টি যার উলুহিয়্যাত মেনে চলে, তিনিই আল্লাহ।

বিশ্ব চরাচরের প্রতিটি জিনিস যার ইবাদাত করে, তিনিই আল্লাহ।

বিপদে আপদে বালা মুসিবতে যাকে আহবান করা হয়, তিনিই আল্লাহ।

সকল সৃষ্টির যিনি আশা ভরসা, তিনিই আল্লাহ।

বাঞ্ছনায় যার নিকট প্রার্থণা করা হয়, তিনিই আল্লাহ।

সারা সৃষ্টি যার মুখাপেক্ষী, তিনিই আল্লাহ।

আল্লাহ সেই সত্ত্বার নাম, যিনি পূর্ব থেকেই ছিলেন, যখন কেউ ছিল না, যিনি আছেন এবং চিরকাল থাকবেন।

আল্লাহ সেই সত্ত্বার নাম, যিনি আরশে সমাসীন। যিনি সবকিছুকে পরিচালনা করেন। এবং যিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।

আল্লাহ্ সেই সত্ত্বার নাম, যিনি সবকিছুর ধারক। যার রাজত্ব থেকে কেউ পলায়ন করতে পারবে না।

আল্লাহ সেই সত্ত্বার নাম, যিনি সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে আছেন। কোন জ্ঞান যাকে পরিবেষ্টন করতে পারে না।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ইন্নানি আনাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনা ফা-বুদানি ওয়া আকিমিস সলাতি লি যিকরি অর্থাৎ আমিই আল্লাহ, আমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর। (সূরা ত্বহা: আয়াত নং-১৪)

তিনি আরো বলেন,

উত্তম নামসমূহ আল্লাহরই। সুতরাং তোমরা সেসব নামেই তাকে ডাকো। আর যারা তার নাম সম্বন্ধে বক্রপথ অবলম্বন করে তাদেরকে বর্জন কর। তাদের কৃতকর্মের ফল তাদেরকে দেয়া হবে। (সুরা আরাফ: আয়াত নং-১৮০)

সুতরাং আল্লাহর যে সমস্ত সুন্দর নাম ও গুণাবলী রয়েছে সেগুলোর মধ্যেই আল্লাহর ‘আল্লাহ’ নামের নিগুঢ় তত্ত্ব বিদ্যমান রয়েছে। তাই আমাদেরকে আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সমূহকে ভালভাবে জানতে হবে।

কেউকেউ বলেছেন, আল্লাহ শব্দের আসল ছিল ‘হু’। যার অর্থ তিনি। সেই সত্ত্বার দিকে ইঙ্গিত করে প্রথমে তাকে ‘হু’ বলা হয়। অতঃপর তাকে সবকিছুর স্রষ্টা ও মালিক জেনে ঐ শব্দের পূর্বে সম্বন্ধ করার ‘লাম’ বাড়ানো হয়। সুতরাং বলা হয় লাহু। অর্থাৎ সবকিছুই তার। অতঃপর তাযীমের জন্য তার উপর আলিফ লাম বাড়ানো হয়, হয়ে যায় আল্লাহু।

সবচেয়ে সঠিক কথা এই যে, আল্লাহ শব্দটি একটি বিশেষ্য। তার আলিফ লামও মূল শব্দের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর দলিল এই যে, এই শব্দের পূর্বে ইয়া হরফে নিদা লাগিয়ে বলা হয় ইয়া আল্লাহ। পক্ষান্তরে, যে শব্দের পূর্বে আলিফ লাম থাকে তার পূর্বে ইয়া হরফে নিদা লাগিয়ে ইয়া আর রহমান, ইয়া আর রহিম, ইয়া আল কারিম বলা হয় না।

অনুরুপভাবে বলা হয় যে, আর রহমান আল্লাহর একটি নাম; কিন্তু এ কথা বলা হয় না যে, আল্লাহ আর রহমানের একটি নাম।

জ্ঞাতব্য যে, ‘আল্লাহ’ নামটি কুরআন মাজীদে ২৬৯৭ বার এসেছে। সুরা তাওবাহ ছাড়া প্রত্যেক সুরার প্রথমে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’ ধরলে সর্বমোট ২৮১০ বার হয়।

Share the Post

Rate the Post

Rating Summary

0.0
0.0 out of 5 stars (based on 0 reviews)
Excellent0%
Very good0%
Average0%
Poor0%
Terrible0%

Latest Reviews

There are no reviews yet. Be the first one to write one.

Latest Book

Scroll to Top