Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

জুমার নামাজের নিয়ত ও জুম্মার নামাজের নিয়ম

জুমার-নামাজের-নিয়ত-ও-জুম্মার-নামাজের-নিয়ম

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম; আজকে আমার আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে জুমার নামাজের নিয়ত ও জুম্মার নামাজের নিয়ম।

জুমুআ শব্দটি আরবি; যার অর্থ একত্রিত হওয়া। মুসলিমরা প্রতি সপ্তাহে এ দিনে আল্লাহর মহান আদেশ পালনের উদ্দেশ্যে মসজিদে একত্র হয়ে থাকেন। তাই এ দিনকে জুমু’আ বলা হয়। আল্লাহ তা’আলা মুমিনদের আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে এ দিন একত্র হওয়ার নির্দেশ দেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও।

জুমার নামাজের নিয়ত

প্রত্যেক ইবাদাতের জন্য নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত মানে হচ্ছে মনের সংকল্প। আর তার স্থান হল অন্তর; মুখ নয়। মহানবী সঃ ও তার সাহাবীদের কেউই কোন নির্দিষ্ট শব্দ মুখে উচ্চারণ করতেন না; তাই তা মুখে উচ্চারণ করা বিদআত; তাছাড়া নিয়তের জন্য কোন বাধা-ধরা শব্দাবলীও নেই; যেকোন ইবাদাতের জন্য মনে মনে সংকল্প করলেই নিয়ত হয়ে যাবে; মুখে কিছু উচ্চারণের প্রয়োজন নেই।

মহান আল্লাহ বলেন,

তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর এবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম।

কুরআন ৯৮/৫

আলক্বামাহ ইবনে ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন,

আমি উমর ইব্নুল খাত্তাব (রাঃ)-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছিঃ আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ কাজ (এর প্রাপ্য হবে) নিয়ত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। তাই যার হিজরত হবে ইহকাল লাভের অথবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে- তবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে, যে জন্য সে হিজরত করেছে।

সহীহ বুখারী হাদিস নং ১

নিয়ত প্রসঙ্গে একটি সতর্কতা জরুরী এই যে, প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ওয়াজিব হল, আল্লাহর প্রতি ঈমান, তার সওয়াবের আশা এবং কেবল তারই সন্তুষ্টি বিধানের উদ্দেশ্যে কোন ইবাদত করা। কাউকে দেখানোর বা শােনানোর উদ্দেশ্যে, অথবা কেবলমাত্র লোকের দেখাদেখি অন্ধ অনুকরণ করে, অথবা দেশ বা পরিবারের পরিবেশের অনুকরণ করে কোন ইবাদত করা শিরক।

জুমার নামাজের নিয়ম

এক- জুমার সালাত দুই রাকাত। উভয় রাকাতে কেরাত বড় আওয়াজে তেলাওয়াত করবে। আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জবানে জুমার সালাত দুই রাকাত, ঈদুল ফিতরের সালাত দুই রাকাত, ঈদুল আজহার সালাত দুই রাকাত, সফর অবস্থায় সালাত দুই রাকাত, পূর্ণ, তাতে কোন কছর নাই। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বক্তব্য দ্বারা এটা সাব্যস্ত হয়েছে।

নাসায়ী হাদিস: ১৪২০; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১০৬৪; আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেন।

দুই- জুম’আর সালাতের প্রতি রাকাতে সূরা আল-ফাতিহা পড়বে এবং তারপর যে কোন একটি সূরা পাঠ করবে। তবে সুন্নত হল, প্রথম রাকাতে সূরা আল-ফাতিহার পর সূরা আল জুমা এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা আল মুনাফিকুন পড়া অথবা প্রথম রাকাতে সূরা আল আ’লা এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা আল-গাশিয়াহ পড়া।

আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার দিন ফজরের সালাতে ‘আলিফ মিম তানজিল’ এবং সূরা আদ-দাহার’ পড়তেন এবং জুমার সালাতে সূরা আল জুমুআ এবং সূরাতুল মুনাফিকুন পড়তেন।

মুসলিম, হাদিস: ৩০৯৬; নাসায়ী হাদিস: ১৪২১; বাইহাকী: ৫৭২৭

তিন- জুমার সালাতের পূর্বে কোন সুন্নাত সালাত নেই। তবে নফল সালাত যত চায় পড়তে পারবে। আর জুমআর সালাতে পর সুন্নত সালাত দুই রাকাত বা চার রাকাত।

আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

যখন তোমাদের কেউ জুমার সালাত আদায় করে, সে যেন তারপর চার রাকআত সালাত আদায় করে।

মুসলিম, হাদিস: ৮৮১ নাসায়ী, হাদিস: ১৪২৬; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১১৩২

অপর একটি হাদিসে আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

রাসূল রাদিয়াল্লাহু আনহু জুম’আর সালাত আদায় করার পর কোন সালাত আদায় করতেন না। তিনি চলে যেতেন এবং তারপর দুই রাকআত সালাত আদায় করতেন।

অপর একটি হাদিসে আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার সালাত আদায় করার পর স্বীয় ঘরে দুই রাকআত সালাত আদায় করতেন।

বুখারি, হাদিস: ৯৩৭; মুসলিম, হাদিস: ৮৮২; নাসায়ী, হাদিস: ১৪২৮; আবু দাউদ, হাদিস: ১১৩২; ইবনে মাযা, হাদিস: ১১৩১, তিরমিজি, হাদিস: ৫২১।

সুন্নাত হল, ফরয সালাত শেষ করার সাথে সাথে কোন প্রকার কথা-বার্তা বলা ও স্থান পরিবর্তন করা ছাড়া সুন্নাত সালাত আদায়ের জন্য না দাঁড়ানো। ফরজ ও সুন্নাতের মাঝখানে স্থান পরিবর্তন বা কথা-বার্তা বলে বিরত নেয়া সুন্নাত।

ওমর বিন আতা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাফে বিন জুবাইর তাকে সায়েব এর নিকট পাঠালেন, যাতে সে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে সালাতে যা করতে দেখছেন সে সম্পর্কে সংবাদ দেন। তখন তিনি বললেন, আমি তার সাথে মাকসুরা মসজিদে নির্মিত ছোট কামরা-তে জুমার সালাত আদায় করি। ইমাম সালাম ফেরানোর পর আমি আমার স্বীয় স্থানে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করি। তারপর যখন তিনি সালাত শেষ করেন, তখন স্বীয় ঘরে প্রবেশ করে আমাকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, এমন কাজ তুমি দ্বিতীয় বার করবে না। যখন তুমি জুমার সালাত আদায় কর, তখন তুমি কথা-বার্তা বলা ছাড়া অথবা মসজিদ থেকে বের হওয়া ছাড়া কোন সালাত আদায় করবে না। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের এ বিষয়ে নির্দেশ দেন যে, আমরা যেন কোন কথা-বার্তা বলা বা মসজিদ থেকে বের হওয়া ছাড়া ফরজ এর সাথে মিলিয়ে কোন সালাত আদায় না করি।

মুসলিম, হাদিস: ৮৮৩।

Share the Post

Rate the Post

Rating Summary

0.0
0.0 out of 5 stars (based on 0 reviews)
Excellent0%
Very good0%
Average0%
Poor0%
Terrible0%

Latest Reviews

There are no reviews yet. Be the first one to write one.

Latest Post