জান্নাত শব্দের অর্থ কি এবং জান্নাত কাকে বলে?

জান্নাত শব্দের অর্থ কি এবং জান্নাত কাকে বলে?

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে জান্নাত শব্দের অর্থ কি এবং জান্নাত কাকে বলে।

জান্নাত শব্দের অর্থ কি

(جنّة) জান্নাত শব্দটি আরবি; যার অর্থ বাগান। ব্যাপক অর্থে জান্নাত অর্থ খেজুর গাছ ও অন্যান্য গাছ বিশিষ্ট বাগান।

জান্নাত কাকে বলে

পারিভাষিক অর্থে জান্নাত বলতে এমন স্থানকে বুঝায়, যা আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন তার অনুগত বান্দাদের জন্য নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। যা দিগন্ত বিস্তৃত নানা রকম ফুলে ফুলে সুশোভিত সুরম্য অট্টালিকা সম্বলিত মনোমুগ্ধকর বাগান; যার পাশ দিয়ে প্রবাহমান বিভিন্ন ধরনের নদী-নালা ও ঝর্ণাধারা। যেখানে চির বসন্ত বিরাজমান।

আমরা জান্নাতকে বেহেশতও বলে থাকি। বেহেশত ফারসি শব্দ। এখানে আমরা আরবী শব্দটিই ব্যবহার করবো।

জান্নাতের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

জান্নাত চির শান্তির জায়গা। সেখানে আরাম- আয়েশ, সুখ-শান্তি, আমোদ-প্রমোদ, চিত্ত বিনোদন ও আনন্দ-আহলাদের চরম ও পরম ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে ভোগ-বিলাস ও পানাহারের আতিশয্য। জান্নাতীরা যা কামনা করবে কিংবা কোনো কিছু পাওয়ার আহবান জানাবে, সকল কিছু পাবে। সেখানে সবাই যুবক হয়ে বাস করবে। শরীরে কোনো রোগ-শোক, জরাজীর্ণতা, মন্দা, বার্ধক্য, দুর্বলতা ও অপারগতা থাকবে না। যত ধরনের ফল- ফলাদি, খাদ্য-খাবার, পানীয়, দুধ, মধু সুস্বাদু খাবার সব খেতে পারবে। ভোগ-বিলাসের সকল উপায়-উপকরণ বিদ্যমান। সেগুলো স্বাদ ও গন্ধে অপূর্ব। আমোদ-প্রমোদ, ভ্রমণ-বিহার, খেলাধুলা, বেড়ানো, বাজার করা ও শুভেচ্ছা-স্বাগত জানাতে পারবে। প্রাচুর্যের কোনো অভাব হবে না। দ্রুতগামী যানবাহন সহ মনের ইচ্ছা চোখের নিমিষে পূরণ করতে পারবে।

নারীদের জন্য থাকবে নয়নাভিরাম স্বামী এবং স্বামীদের জন্য থাকবে নয়নাভিরাম স্ত্রী ও রূপবতী লাবণ্যময়ী হুর। তারা সেখানে সুখী-সুন্দর দাম্পত্য জীবন-যাপন করবে। মানুষ সেখানে পেশাব- পায়খানা, নাকের শ্লেষ্মা থেকে মুক্ত এবং নারীরা ঋতু মুক্ত হবে।

এক কথায়, পরম ও চরম শান্তি বলতে যা বুঝায়, তা সবই জান্নাতে পাওয়া যাবে। দুনিয়ার সুখ-শান্তির যত ব্যবস্থা আছে, জান্নাতের সুখ-শান্তির তুলনায় তা কিছুই না। বরং তা দুনিয়ার সকল আরাম-আয়েশকে হার মানাবে। মানুষ সুখ পেতে চায়। তাই পরম সুখ লাভের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়া উচিত।

জান্নাতের ব্যাপক পরিচিতি সম্পর্কে সংক্ষেপে এক বর্ণনায় মহান আল্লাহ বলেন:

‘কেউ জানে না তার জন্য কৃতকর্মের কি কি নয়নাভিরাম বিনিময় লুকায়িত আছে।” (সূরা সাজদাহ: ১৭)

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন,

“আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমন নেয়ামত তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চক্ষু দেখেনি, কোনো কান শুনেনি এবং এমনকি কোনো মানুষ তা কল্পনাও করতে পারে না। এরপর তিনি বলেন, যদি তোমরা চাও, তাহলে নিম্নোক্ত আয়াতটি পড়ো। যার অর্থ হলো: “কেউ জানে না, তার জন্য কি কি নয়নাভিরাম বিনিময় লুকায়িত আছে।” (বুখারী, ৩২৪৪; মুসলিম, ২৮২৪)

জান্নাত

Related Posts