বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে ইতিকাফ শব্দের অর্থ কি, ইতিকাফের ফজিলত, ইতিকাফের নিয়ম এবং ইতিকাফ সম্পর্কিত আরো অনেক কিছু।
Table of Contents
Toggleইতিকাফ শব্দের অর্থ কি
ইতিকাফ আরবি শব্দ আকফ মূলধাতু থেকে নির্গত। ইতিকাফের আভিধানিক অর্থ হল কোন জিনিসকে আঁকড়ে ধরা এবং তাতে নিজেকে আবদ্ধ রাখা (রত থাকা, মগ্ন থাকা, লিপ্ত থাকা); সে জিনিস ভালো হোক অথবা মন্দ।
মহান আল্লাহ বলেন,
(ইব্রাহিম তার পিতা ও সম্প্রদায়কে বলল,) যে মুর্তিগুলোর পূজায় তোমরা রত আছ, (বা যাদের পূজারী হয়ে বসে আছ) সেগুলো কি?
কুরআন ২১/৫২
শরীয়তের পরিভাষায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় বিশেষ ব্যক্তির মসজিদের মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রেখে সেখানে অবস্থান করা; তথা সকল মানুষ ও সংসারের সকল কাজ কর্ম থেকে দূরে থাকা এবং সওয়াবের কাজ; নামায, যিকির ও কুরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি ইবাদতের জন্য একমন হওয়াকে ইতিকাফ বলা হয়।
ইতিকাফের গুরুত্ব ও ফজিলত
রমজান মাসে করণীয় যে সব সওয়াবের কর্ম বিশেষভাবে তাকীদ প্রাপ্ত, তার মধ্যে ইতিকাফ অন্যতম; ইতিকাফ সেই সকল সুন্নাহর একটি, যা প্রত্যেক বছরের এই রমজান মাসে বিশেষ করে এর শেষ দশকে মহানবী সঃ বরাবর করে গেছেন। এ সব কথার দলীল নিম্নরূপঃ
১। মহান আল্লাহ বলেন, (আর আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে অঙ্গীকারবদ্ধ করলাম যে,) তোমরা উভয়ে আমার (কাবা) গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী, রুকু ও সেজদা কারীদের জন্য পবিত্র রাখ।
কুরআন ২/১২৫
তিনি অন্যত্র বলেন, আর মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় তােমরা স্ত্রী-গমন করাে না।
কুরআন ২/১৮৭
২। আবু হুরাইরা রাঃ বলেন, নবী সঃ প্রত্যেক রমজানের ১০ দিন ইতিকাফ করতেন; কিন্তু তার ইন্তেকালের বছরে তিনি ২০ দিন ইতিকাফ করেন।
বুখারী ২০৪৪
৩। আয়েশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল সঃ প্রত্যেক রমযানে ইতিকাফ করতেন; ফজরের নামাজ পড়ে তিনি তার ইতিকাফগাহে প্রবেশ করতেন।
বুখারী ২০৪১, মুসলিম ১১৭৩
৪। আয়েশা রাঃ বলেন, নবী সঃ তার ইন্তেকাল অবধি রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করে গেছেন; তার পরে তার স্ত্রীগণ ও ইতিকাফ করেছেন।
বুখারী ২০২৬, মুসলিম ১১৭২
৫। মহানবী সঃ ইতিকাফ করেছেন এবং তাঁর সাহাবাগণ ও তাঁর সাথে এতেকাফ করেছেন।
বুখারী ২০১৬, মুসলিম ১১৬৭
ইতিকাফ কত প্রকার
ইতিকাফ দুই প্রকার; ওয়াজিব ও সুন্নত।
সুন্নত হল সেই ইতিকাফ, যা বান্দা আল্লাহর নৈকট্য ও সওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে রাসূল সঃ -এর অনুকরণ করে স্বেচ্ছায় করে থাকে। আর এই ইতিকাফ রমজান মাসের শেষ দশকে করাই হল তাকীদপ্রাপ্ত; যেমন এ কথা পূর্বে বলা হয়েছে।
ওয়াজিব হল সেই ইতিকাফ, যা বান্দা খােদ নিজের জন্য ওয়াজিব করে নিয়েছে; চাহে তা সাধারণ নযর মেনে অথবা শর্ত ভিত্তিক বিলম্বিত নযর মেনে হােক; যেমন কেউ যদি বলে, আমি আল্লাহর ওয়াস্তে ইতিকাফ করার নযর মানলাম অথবা আল্লাহ আমার রোগীকে আরোগ্য দান করলে আমি তার জন্য ইতিকাফ করব; তাহলে সে ইতিকাফ পালন করা ওয়াজিব।
মহানবী সঃ বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্য (ইবাদত) করার নযর মানে, সে যেন তা পালন করে।
বুখারী ৬৬৯৬
একদা উমার রাঃ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি জাহেলী যুগে মসজিদুল হারামে এক রাত্রি ইতিকাফ করার নযর মেনেছি। মহানবী সঃ বললেন, তুমি তোমার নযর পুরা কর।
বুখারী ২০৩২
ইতিকাফের সময়
ওয়াজিব ইতিকাফ ঠিক সেই সময় মত আদায় করা জরুরী, যে সময় নযর-ওয়ালা তার নযরে উল্লেখ করেছে। সে যদি এক দিন বা তার বেশি ইতিকাফ করার নযর মানে, তাহলে তাকে তাই পালন করা ওয়াজিব হবে, যা তার নযরে উল্লেখ করেছে।
আর সুন্নাত ইতিকাফের জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। এমন ইতিকাফ নিয়ত করে মসজিদে অবস্থান করলেই বাস্তবায়ন হয়; চাহে সে সময় লম্বা হােক অথবা সংক্ষিপ্ত। মসজিদে অবস্থানকাল পর্যন্ত সওয়াব লাভ হবে। মসজিদ থেকে বের হয়ে গিয়ে পুনরায় ফিরে এসে ইতিকাফ করার ইচ্ছা করলে নিয়ত নবায়ন করতে হবে।
মহানবী সঃ ১০ দিন ইতিকাফ করেছেন; আর শেষ জীবনে তিনি ২০ দিন ইতিকাফ করেছিলেন। অনুরূপ তিনি রমজানের প্রথম দশকে, অতঃপর মধ্যম দশকে অতঃপর শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন।
বুখারী ২০১৬ মুসলিম ১১৬৭
ইতিকাফের সময়সীমা
পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মুস্তাহাব ইতিকাফের জন্য কোন ধরাবাধা সময় নেই। সুতরাং ইতিকাফকারী যখনই মসজিদে প্রবেশ করবে এবং সেখানে অবস্থান করে আল্লাহর নৈকট্য লাভের নিয়ত করবে, তখনই সে সেখান থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত ইতিকাফকারী বলে গণ্য হবে। কিন্তু সে যদি রমযানের শেষ দশকে ইতেকাফ করতে চায়, তাহলে (২১শের) রাত্রি আসার (২০শের সূর্য ডোবার) পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করবে।
কারণ, মহানবী সঃ বলেন, যে ব্যক্তি আমার সাথে ইতিকাফ করতে চায়, সে যেন শেষ দশকে ইতিকাফ করে।
বুখারী ২০২৭
এখানে শেষ দশক বলতে শেষ দশটি রাতকে বুঝিয়েছেন। আর শেষ দশ রাতের প্রথম রাত হল ২১শের রাত।
পক্ষান্তরে সহীহাইনে প্রমাণিত যে, মহানবী সঃ ফজরের নামাজ পড়ে তার ইতিকাফ-গাহে প্রবেশ করলেন। বুখারী ২০৪১, মুসলিম ১১৭৩
এর অর্থ এই যে, ঐ সময় তিনি মসজিদের ভিতরে ইতিকাফের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় প্রবেশ করলেন। যেহেতু তিনি মসজিদের ভিতরে বিশেষ এক জায়গায় ইতিকাফ করতেন। যেমন সহীহ মুসলিমে বর্ণিত যে, তিনি পশম নির্মিত তুর্কী ছােট এক তাবুর ভিতরে ইতিকাফ করেছেন।
মুসলিম ১১৬৭
কিন্তু ইতিকাফের জন্য তার মসজিদে প্রবেশ করার সময় ছিল রাতের প্রথমাংশ।
যে ব্যক্তি রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করবে, সে মসজিদ থেকে বের হবে মাসের শেষ দিনের সূর্য অস্ত যাওয়ার পর।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি এক রাত অথবা নির্দিষ্ট কয়েক রাত ইতিকাফ করার নযর মেনেছে, সে ব্যক্তি পরিপূর্ণরূপে সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে আগে ই’তিকাফ-গাহে প্রবেশ করবে এবং স্পষ্টরূপে ফজর উদয় হওয়ার পরে সেখান থেকে বের হবে।
ইতিকাফের শর্ত
ইতিকাফ শুদ্ধ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে।
১. ইতিকাফ মসজিদে হতে হবে।
যেহেতু মহান আল্লাহ বলেন,
অর্থাৎ, আর মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় তোমরা স্ত্রী-গমন করাে না।
কুরআন ২/১৮৭
বলা বাহুল্য, তিনি ইতিকাফের স্থান হিসাবে মসজিদের কথা উল্লেখ করেছেন। অতএব মসজিদ ছাড়া অন্য কোন স্থানে ই’তিকাফ শুদ্ধ হলে আয়াতে তার উল্লেখ আসত না।
অতঃপর জানার কথা যে, ইতিকাফ ব্যাপকভাবে যে কোন মসজিদে বসেই করা যায়। কিন্তু এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মাহাত্ম্যপূর্ণ ৩টি মসজিদ; অর্থাৎ মসজিদুল হারাম, মসজিদে নববী এবং মসজিদুল আকসাতে ইতিকাফ করা সবচেয়ে উত্তম। যেমন উক্ত ৩টি মসজিদে নামায পড়া অন্যান্য মসজিদের তুলনায় বহুগুণ উত্তম।
মসজিদের শর্ত হল, সেটা যেন জামে মসজিদ হয়।
আয়েশা (রাঃ) বলেন, ইতিকাফকারীর জন্য সুন্নত হল, সে কোন রোগীকে দেখতে যাবে না। আর জামে মসজিদ ছাড়া অন্য কোন মসজিদে ইতিকাফ নেই।
সহীহ আদাবুল মুফরাদ ২১৬০
জ্ঞাতব্য যে, মহিলার জন্য তার বাড়ির মসজিদে (যেখানে সে ৫ ওয়াক্ত নামায পড়ে সেখানে) ইতিকাফ শুদ্ধ নয়। কারণ, তা আসলে কোন অর্থেই মসজিদ নয়।
২। ইতিকাফকারীকে (বীর্যপাত, মাসিক বা নেফাস-জনিত কারণে ঘটিত) বড় নাপাকি থেকে পবিত্র থাকতে হবে।
পক্ষান্তরে সবচেয়ে উত্তম হল রমজানের শেষ দশকেই ইতিকাফ করা; যেমন এ কথা পূর্বে আলোচিত হয়েছে।
ইতিকাফের নিয়ত
প্রত্যেক ইবাদাতের জন্য নিয়ত করা ফরজ। নিয়ত মানে হচ্ছে মনের সংকল্প। আর তার স্থান হল অন্তর; মুখ নয়। মহানবী সঃ ও তার সাহাবীদের কেউই কোন নির্দিষ্ট শব্দ মুখে উচ্চারণ করতেন না; তাই তা মুখে উচ্চারণ করা বিদআত; তাছাড়া নিয়তের জন্য কোন বাধা-ধরা শব্দাবলীও নেই; যেকোন ইবাদাতের জন্য মনে মনে সংকল্প করলেই নিয়ত হয়ে যাবে; মুখে কিছু উচ্চারণের প্রয়োজন নেই।
ইতিকাফকারীর জন্য যা করা মুস্তাহাব
১। ইতিকাফকারীর জন্য বেশি বেশি নফল ইবাদত করা, নিজেকে নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির, ইস্তিগফার, দরূদ ও সালাম, দুয়া ইত্যাদি ইবাদতে মশগুল রাখা মুস্তাহাব; যে ইবাদত দ্বারা বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে এবং মুসলিম তার মহান সৃষ্টিকর্তার সাথে সম্পর্ক কায়েম করতে পারে।
২। মসজিদের ভিতরে একটি জায়গা নির্দিষ্ট করে সেখানে অবস্থান করবে। নাফে বলেন, আব্দুল্লাহ বিন উমর রাঃ মসজিদের সেই জায়গাটা দেখিয়েছেন, যে জায়গায় আল্লাহর রাসূল সঃ ইতিকাফ করতেন।
মুসলিম ১১৭১
ইতিকাফকারীর জন্য যা করা বৈধ
১। অতি প্রয়োজনীয় ব্যাপারে ইতিকাফকারী মসজিদ থেকে বের হতে পারে। যেমন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে পানাহার করতে, পরনের কাপড় বা শীতের ঢাকা আনতে এবং পেশাব পায়খানা করতে বের হওয়া বৈধ। তদনুরূপ শরয়ী প্রয়োজনে; যেমন নাপাকীর গোসল করতে অথবা ওযু করতে মসজিদের বাইরে যাওয়া অবৈধ নয়।
মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, (ইতিকাফের সময়) নবী সঃ ব্যক্তিগত প্রয়োজন ছাড়া ঘরে আসতেন না।
তিনি আরো বলেন, ইতিকাফকারীর জন্য সুন্নত হল, সে কোন রোগীকে দেখতে যাবে না, কোন জানাযায় অংশগ্রহণ করবে না, স্ত্রী-স্পর্শ, কোলাকুলি, বা সঙ্গম করবে না, আর অতি প্রয়োজন ছাড়া মসজিদ থেকে বের হবে না।
সহীহ আদাবুল মুফরাদ ২১৬০
২। মসজিদের ভিতরে ইতিকাফকারী পানাহার করতে ও ঘুমাতে পারে। তবে মসজিদের পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার খেয়াল অবশ্যই রাখতে হবে। তা নিজের অথবা অন্যের প্রয়োজনে বৈধ কথা বলতে পারে।
৩। মাথা আঁচড়ানো, লম্বা নখ কাটা, দৈহিক পরিচ্ছন্নতার খেয়াল রাখা, সুন্দর পোশাক পরা, আতর ব্যবহার করা ইত্যাদি কর্ম ইতিকাফকারীর জন্য বৈধ।
মহানবী সঃ ইতিকাফ অবস্থায় নিজের মাথাকে মসজিদ থেকে বের করে হুজরায় আয়েশার সামনে ঝুঁকিয়ে দিতেন এবং তিনি মাসিক অবস্থাতেও তার মাথা ধুয়ে দিতেন এবং আঁচড়ে দিতেন।
বুখারী ২০২৮, ২০৩০, মুসলিম ২৯৭
৪। ইতিকাফ অবস্থায় যদি পরিবারের কেউ ইতিকাফ কারীর সাথে মসজিদে দেখা করতে আসে, তাহলে তাকে আগিয়ে বিদায় দেওয়ার জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ। হযরত সাফিয়্যাহ মহানবী সঃ এর সাথে দেখা করতে এলে তিনি এরূপ করেছিলেন।
বুখারী ২০৩৫, মুসলিম ২১৭৫
ইতিকাফ অবস্থায় মোবাইল ব্যবহার করা যাবে কিনা
ইতেকাফ অবস্থায় মোবাইল ব্যবহার করা যাবে যদি তার মাধ্যমে ইবাদত বন্দেগী করা হয়; যেমন কুরআন তেলাওয়াত করা, হাদিস পাঠ করা, কুরআন তেলাওয়াত শোনা ইত্যাদি। কিন্তু দুনিয়াবী কোন কাজে ইতিকাফ অবস্থায় মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না। যেহেতু ইতিকাফের উদ্দেশ্য হচ্ছে দুনিয়াবী সকল কাজ থেকে বিরত থেকে বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদতে ব্যস্ত থেকে তার সন্তুষ্টি অর্জন করা।
ইতিকাফ ভঙ্গের কারণ
১। অতি প্রয়োজন ছাড়া মসজিদ থেকে সামান্য ক্ষণের জন্যও ইচ্ছাকৃত বের হলে ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যায়; যেহেতু মসজিদে অবস্থান করা ইতিকাফের জন্য অন্যতম শর্ত অথবা রুকন।
২। স্ত্রী-সহবাস করে ফেললে ইতিকাফ বাতিল। কারণ মহান আল্লাহ বলেন,
আর মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় তোমরা স্ত্রী-গমন করাে না। এ হল আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। অতএব তার নিকটবর্তী হয়ো না।
কুরআন ২/১৮৭
৩। জ্ঞানশূন্য হয়ে গেলে ইতিকাফ বাতিল হয়ে যায়। কারণ তাতে মানুষের ভালো-মন্দের তমিজ থাকে না।
৪। মহিলাদের মাসিক বা নেফাস শুরু হলে ইতিকাফ বাতিল হয়ে যায়। কারণ, পবিত্রতা একটি শর্ত।
৫। কোন কথা বা কর্মের মাধ্যমে শিরক, কুফর করলে বা মুরতাদ হয়ে গেলে ইতিকাফ বাতিল হয়ে যায়।
মহান আল্লাহ বলেন, তুমি শিরক করলে তােমার আমল পন্ড হয়ে যাবে।
কুরআন ৩৯/৬৫
ইতিকাফ ভঙ্গ এবং তার কাযা করা
ইতিকাফকারী যতটা সময় ইতিকাফ করার নিয়ত করেছিল ততটা সময় পূর্ণ হওয়ার আগে সে তা ভঙ্গ করতে পারে। একদা রসুলুল্লাহ তার স্ত্রীদের ইতিকাফের তাঁবু তৈরী করতে দেখে তা ভেঙ্গে ফেলতে আদেশ করলেন এবং নিয়ত করার পর তাদের সাথে নিজেও ইতিকাফ ত্যাগ করলেন। অতঃপর তিনি সেই ইতিকাফ শাওয়াল মাসের প্রথম দশকে কাযা করেন।
বুখারী ২০৩৩, মুসলিম ১১৭৩
উক্ত হাদীস অনুসারে যে ব্যক্তি নফল ইতিকাফ শুরু করার পর ভঙ্গ করে তার জন্য তা কাযা করা মুস্তাহাব। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি নযরের ইতিকাফ শুরু করার পর কোন অসুবিধার কারনে ভঙ্গ করে, সুযোগ ও সামর্থ্য হলে তার জন্য তা কাযা করা ওয়াজিব। কিন্তু তা কাযা করার পূর্বেই সে যদি মারা যায়, তাহলে তার তরফ থেকে তার নিকটবর্তী ওয়ারেস কাযা করবে।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিষয়গুলি সঠিকভাবে বুঝার ও আমল করার তাওফীক দান করুক। আল্লাহুম্মা আমীন।