বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে তারাবিহ শব্দের অর্থ কি বা তারাবীর নামাজ কাকে বলে।
তারাবিহ শব্দের অর্থ কি
কিয়ামে রমজান বা রমজানের কিয়ামকে সালাতুত তারাবীহ বা তারাবির নামাজ বলা হয়। তারাবীহ মানে হল আরাম করা। যেহেতু রাসুল সঃ ৪ রাকাত নামাজ পড়ে বিরতির সাথে বসে একটু আরাম করে নিতেন, অতঃপর আবার ৪ রাকাআত নামাজ পড়তেন তাই তার নাম হয়েছে তারাবীহর নামায। আর ৪ রাকাআত পরপর আরাম করার দলীল হল মা আয়েশার হাদিস।
আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করেন, রমযান মাসে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত কেমন ছিল? তিনি বললেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযান মাসে এবং অন্যান্য সময় (রাতে) এগার রাকআতের অধিক সালাত আদায় করতেন না। তিনি চার রাকআত সালাত আদায় করতেন। তুমি সেই সালাতের সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। তারপর চার রাকআত সালাত আদায় করতেন, এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে আমাকে প্রশ্ন করো না। অতঃপর তিনি তিন রাকআত (বিত্র) সালাত আদায় করতেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, (একদা) আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সঃ আপনি কি বিত্রের পূর্বে ঘুমিয়ে থাকেন? তখন তিনি ইরশাদ করলেনঃ আমার চোখ দুটি ঘুমায়, কিন্তু আমার হৃদয় ঘুমায় না।
সহিহ বুখারী হাদিস নং ১১৪৭
উক্ত হাদিসের মানে হল, তিনি প্রথম ৪ রাকআত নামাযকে এক সময়ে একটানা পড়েছেন। অর্থাৎ, তিনি ২ রাকআত নামায পড়ার পর সাথে সাথেই আবার ২ রাকআত নামায পড়তেন। অতঃপর বসে বিরতি নিতেন। অতঃপর তিনি উঠে পুনরায় ২ রাকআত নামায পড়ার পর সাথে সাথে আবার ২ রাকআত পড়তেন। অতঃপর আবার বসে একটু জিরিয়ে নিতেন এবং সবশেষে ৩ রাকআত বিতর পড়তেন। এখান থেকেই সালাফগণ ১১ রাকআত নামাযের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন এবং তাই তারা প্রথমে ২ সালামে ৪ রাকআত নামাজ পড়ে একটু আরাম করে নেন। অতঃপর আবার ২ সালামে ৪ রাকআত নামাজ পড়ে পরিশেষে ৩ রাকআত বিতর পড়েন।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিষয়গুলি সঠিকভাবে বুঝার ও সঠিকভাবে তারাবীর নামাজ আদায় করার তাওফীক দান করুক। আল্লাহুম্মা আমীন।