৩৯. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের জীবন-যাপন
২৩৬৫
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُجَالِدِ بْنِ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ بَيَانٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، قَالَ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ أَبِي وَقَّاصٍ، يَقُولُ إِنِّي لأَوَّلُ رَجُلٍ أَهْرَاقَ دَمًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَإِنِّي لأَوَّلُ رَجُلٍ رَمَى بِسَهْمٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَقَدْ رَأَيْتُنِي أَغْزُو فِي الْعِصَابَةِ مِنْ أَصْحَابِ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم مَا نَأْكُلُ إِلاَّ وَرَقَ الشَّجَرِ وَالْحُبُلَةِ حَتَّى إِنَّ أَحَدَنَا لَيَضَعُ كَمَا تَضَعُ الشَّاةُ أَوِ الْبَعِيرُ وَأَصْبَحَتْ بَنُو أَسَدٍ يُعَزِّرُونِي فِي الدِّينِ لَقَدْ خِبْتُ إِذًا وَضَلَّ عَمَلِي . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ بَيَانٍ .
কাইস (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি : আমিই প্রথম ব্যক্তি যে আল্লাহ্ তা’আলার পথে রক্ত ঝরিয়েছে এবং আমিই প্রথম ব্যক্তি যে আল্লাহ্ তা’আলার রাস্তায় তীর ছুড়েছে। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের সাথে এক যুদ্ধাভিযানে যোগদান করি। তখন খাবারের জন্য আমরা গাছের পাতা ও বাবলা গাছের ফল ব্যতিত আর কিছুই পাইনি। ফলে আমাদের এক একজন ছাগল ও উটের বিষ্ঠার ন্যায় পায়খানা করত। কিন্তু বর্তমানে আসাদ বংশের জনগণ দ্বীনের ব্যাপারে আমাকে তিরস্কার করছে। তাহলে তো আমি ব্যর্থ হলাম এবং আমার সব আমলও বাতিল হয়ে গেল।
সহীহ্ , মুখতাসার শামাইল (১১৪), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। তবে এটি বাইয়ানের বর্ণনা সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، حَدَّثَنَا قَيْسٌ، قَالَ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ إِنِّي أَوَّلُ رَجُلٍ مِنَ الْعَرَبِ رَمَى بِسَهْمٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَقَدْ رَأَيْتُنَا نَغْزُو مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمَا لَنَا طَعَامٌ إِلاَّ الْحُبُلَةَ وَهَذَا السَّمُرَ حَتَّى إِنَّ أَحَدَنَا لَيَضَعُ كَمَا تَضَعُ الشَّاةُ ثُمَّ أَصْبَحَتْ بَنُو أَسَدٍ يُعَزِّرُونِي فِي الدِّينِ لَقَدْ خِبْتُ إِذًا وَضَلَّ عَمَلِي . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عُتْبَةَ بْنِ غَزْوَانَ .
কাইস (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা’দ ইবনু মালিক (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি, আরবের মধ্যে আমিই প্রথম ব্যক্তি যে আল্লাহ্ তা’আলার পথে তীর নিক্ষেপ করেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা নিজেরা জিহাদ করেছি। তখন খাবারের জন্য বাবলা গাছের ফল আর বুনো জাম ছাড়া আমাদের সাথে আর কিছু ছিল না। আমাদের এক একজন তা খেয়ে ছাগলের বিষ্ঠার ন্যায় পায়খানা করত। অথচ বর্তমানে আসাদ বংশের জনগণ ধর্মের ব্যাপারে আমাকে তিরস্কার করছে। তাই যদি হয়, তাহলে তো আমি ব্যর্থ হয়েছি এবং আমার আমলও বিনষ্ট হয়ে গেল।
সহীহ্ , দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। উতবা ইবনু গাযওয়ান (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَلَيْهِ ثَوْبَانِ مُمَشَّقَانِ مِنْ كَتَّانٍ فَتَمَخَّطَ فِي أَحَدِهِمَا ثُمَّ قَالَ بَخٍ بَخٍ يَتَمَخَّطُ أَبُو هُرَيْرَةَ فِي الْكَتَّانِ لَقَدْ رَأَيْتُنِي وَإِنِّي لأَخِرُّ فِيمَا بَيْنَ مِنْبَرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَحُجْرَةِ عَائِشَةَ مِنَ الْجُوعِ مَغْشِيًّا عَلَىَّ فَيَجِيءُ الْجَائِي فَيَضَعُ رِجْلَهُ عَلَى عُنُقِي يُرَى أَنَّ بِيَ الْجُنُونَ وَمَا بِي جُنُونٌ وَمَا هُوَ إِلاَّ الْجُوعُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ
مِنْ هَذَا الْوَجْهِ.
মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন আমরা আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি গোলাপী রংয়ের দুটি কাতান কাপড় পড়ে ছিলেন। তিনি একটি কাপড় দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন এবং বললেন, বেশ, বেশ, আবূ হুরাইরা আজ কাতান কাপড় দিয়ে নাক পরিষ্কার করছে! অথচ আমার অবস্থা এরূপ ছিল যে, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মিম্বার ও আইশা (রাঃ)-এর ঘরের মাঝখানে ক্ষুধার তাড়নায় কাতর হয়ে পড়ে থাকতাম। এ পথে কেউ এসে আমার ঘাড়ের উপর পা রাখত এবং মনে করত যে, আমি পাগল হয়ে গেছি। অথচ আমার মধ্যে কোন পাগলামী ছিল না, বরং ক্ষুধার যন্ত্রণায় আমার এরূপ অবস্থা হতো।
সহীহ্ , বুখারী (৭৩২৪)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং এই সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬৮
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيُّ، أَنَّ أَبَا عَلِيٍّ، عَمْرَو بْنَ مَالِكٍ الْجَنْبِيَّ أَخْبَرَهُ عَنْ فَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا صَلَّى بِالنَّاسِ يَخِرُّ رِجَالٌ مِنْ قَامَتِهِمْ فِي الصَّلاَةِ مِنَ الْخَصَاصَةِ وَهُمْ أَصْحَابُ الصُّفَّةِ حَتَّى تَقُولَ الأَعْرَابُ هَؤُلاَءِ مَجَانِينُ أَوْ مَجَانُونَ فَإِذَا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم انْصَرَفَ إِلَيْهِمْ فَقَالَ “ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا لَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ لأَحْبَبْتُمْ أَنْ تَزْدَادُوا فَاقَةً وَحَاجَةً ” . قَالَ فَضَالَةُ وَأَنَا يَوْمَئِذٍ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ফাযালা ইবনু উবাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন লোকদের সাথে নিয়ে জামা‘আতে নামায় আদায় করতেন, তখন কিছু লোক অসহনীয় ক্ষুধার যন্ত্রনায় নামাযের মধ্যেই দাঁড়ানো অবস্থা হতে পড়ে যেতেন। তারা ছিলেন সুফ্ফার সদস্য। তাদের এ অবস্থা দেখে বেদুঈনরা বলত, এরা পাগল নাকি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায শেষ করে তাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলতেন : আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট তোমাদের যে কি মর্যাদা রয়েছে তা তোমরা জানলে আরো ক্ষুধার্ত, আরো অভাব-অনটনে থাকতে পছন্দ করতে। ফাযালা (রাঃ) বলেন, সে সময়ে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম।
সহীহ্ , তা’লীকুর রাগীব (৪/১২০)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي سَاعَةٍ لاَ يَخْرُجُ فِيهَا وَلاَ يَلْقَاهُ فِيهَا أَحَدٌ فَأَتَاهُ أَبُو بَكْرٍ فَقَالَ ” مَا جَاءَ بِكَ يَا أَبَا بَكْرٍ ” . فَقَالَ خَرَجْتُ أَلْقَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنْظُرُ فِي وَجْهِهِ وَالتَّسْلِيمَ عَلَيْهِ . فَلَمْ يَلْبَثْ أَنْ جَاءَ عُمَرُ فَقَالَ ” مَا جَاءَ بِكَ يَا عُمَرُ ” . قَالَ الْجُوعُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَأَنَا قَدْ وَجَدْتُ بَعْضَ ذَلِكَ ” . فَانْطَلَقُوا إِلَى مَنْزِلِ أَبِي الْهَيْثَمِ بْنِ التَّيِّهَانِ الأَنْصَارِيِّ وَكَانَ رَجُلاً كَثِيرَ النَّخْلِ وَالشَّاءِ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ خَدَمٌ فَلَمْ يَجِدُوهُ فَقَالُوا لاِمْرَأَتِهِ أَيْنَ صَاحِبُكِ فَقَالَتِ انْطَلَقَ يَسْتَعْذِبُ لَنَا الْمَاءَ . فَلَمْ يَلْبَثُوا أَنْ جَاءَ أَبُو الْهَيْثَمِ بِقِرْبَةٍ يَزْعَبُهَا فَوَضَعَهَا ثُمَّ جَاءَ يَلْتَزِمُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَيُفَدِّيهِ بِأَبِيهِ وَأُمِّهِ ثُمَّ انْطَلَقَ بِهِمْ إِلَى حَدِيقَتِهِ فَبَسَطَ لَهُمْ بِسَاطًا ثُمَّ انْطَلَقَ إِلَى نَخْلَةٍ فَجَاءَ بِقِنْوٍ فَوَضَعَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” أَفَلاَ تَنَقَّيْتَ لَنَا مِنْ رُطَبِهِ ” . فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَرَدْتُ أَنْ تَخْتَارُوا أَوْ قَالَ تَخَيَّرُوا مِنْ رُطَبِهِ وَبُسْرِهِ . فَأَكَلُوا وَشَرِبُوا مِنْ ذَلِكَ الْمَاءِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” هَذَا وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ مِنَ النَّعِيمِ الَّذِي تُسْأَلُونَ عَنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ظِلٌّ بَارِدٌ وَرُطَبٌ طَيِّبٌ وَمَاءٌ بَارِدٌ ” . فَانْطَلَقَ أَبُو الْهَيْثَمِ لِيَصْنَعَ لَهُمْ طَعَامًا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” لاَ تَذْبَحَنَّ ذَاتَ دَرٍّ ” . قَالَ فَذَبَحَ لَهُمْ عَنَاقًا أَوْ جَدْيًا فَأَتَاهُمْ بِهَا فَأَكَلُوا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” هَلْ لَكَ خَادِمٌ ” . قَالَ لاَ . قَالَ ” فَإِذَا أَتَانَا سَبْىٌ فَائْتِنَا ” . فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِرَأْسَيْنِ لَيْسَ مَعَهُمَا ثَالِثٌ فَأَتَاهُ أَبُو الْهَيْثَمِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” اخْتَرْ مِنْهُمَا ” . فَقَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ اخْتَرْ لِي . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ الْمُسْتَشَارَ مُؤْتَمَنٌ خُذْ هَذَا فَإِنِّي رَأَيْتُهُ يُصَلِّي وَاسْتَوْصِ بِهِ مَعْرُوفًا ” . فَانْطَلَقَ أَبُو الْهَيْثَمِ إِلَى امْرَأَتِهِ فَأَخْبَرَهَا بِقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتِ امْرَأَتُهُ مَا أَنْتَ بِبَالِغٍ مَا قَالَ فِيهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ أَنْ تَعْتِقَهُ قَالَ فَهُوَ عَتِيقٌ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ اللَّهَ لَمْ يَبْعَثْ نَبِيًّا وَلاَ خَلِيفَةً إِلاَّ وَلَهُ بِطَانَتَانِ بِطَانَةٌ تَأْمُرُهُ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَاهُ عَنِ الْمُنْكَرِ وَبِطَانَةٌ لاَ تَأْلُوهُ خَبَالاً وَمَنْ يُوقَ بِطَانَةَ السُّوءِ فَقَدْ وُقِيَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন সময় ঘর হতে বের হলেন, যে সময়ে তিনি সচরাচর বের হন না এবং এ সময় কেউ তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতেও আসতো না। (এ মুহূর্তে) আবূ বকর (রাঃ) এসে উপস্থিত হলেন। তিনি প্রশ্ন করলেন : হে আবূ বাক্র! আপনি কি মনে করে এলেন? তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে দেখা করতে, তাঁর বারকাতময় মুখমন্ডল দেখতে ও তাঁকে সালাম প্রদানের উদ্দেশ্যে এসেছি। ইতোমধ্যে উমার (রাঃ)-ও এসে উপস্থিত হলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশ্ন করলেন : হে উমার! আপনার এ সময় আসার কারণ কি? তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! ক্ষুধার তাড়নায়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমিও এরূপ কিছু অনুভব করছি। এই বলে তাঁরা আবুল হাইসাম ইবনু আত্তাইহান আল-আনসারী (রাঃ)-এর বাড়ীর দিকে যাত্রা শুরু করলেন। আর তিনি ছিলেন প্রচুর খেজুরগাছ ও বকরীর মালিক, কিন্তু তার কোন খাদিম ছিল না। তাঁরা তাকে বাড়ীতে না পেয়ে তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার সাথী কোথায়? তিনি বললেন, তিনি আমাদের জন্য মিঠা পানি আনতে গেছেন। ইতোমধ্যে আবুল হাইসাম (রাঃ) পানিভর্তি মশক নিয়ে ফিরে এলেন এবং সেটা রেখেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জড়িয়ে ধরলেন এবং বললেন, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! তারপর তিনি তাঁদেরকে নিয়ে তাঁর বাগানে গেলেন এবং তাদের জন্য বিছানা বিছিয়ে দিলেন। তারপর তিনি খেজুরগাছ হতে কয়েক গুচ্ছ খেজুর নামিয়ে এনে তাঁদের সামনে রাখলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেনঃ আমাদের জন্য পাকা খেজুর বেছে আলাদা করে নিয়ে আসলে না কেন? তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি ভাবলাম যে, আপনারা নিজেদের ইচ্ছামতো তাজা কিংবা পাকা খেজুর বেছে খাবেন, (এজন্য দুরকম খেজুরই পেশ করলাম)। তারপর তাঁরা খেজুর খেয়ে সেই পানি পান করলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যাঁর হাতে আমার প্রাণ সেই মহান সত্তার শপথ! কিয়ামাত দিবসে এসব নিয়ামাত প্রসঙ্গেও তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে। এই সুশীতল ছায়া, সুস্বাদু কাঁচা-পাকা খেজুর ও ঠান্ডা পানি (কতই না সুন্দর নিয়ামাত)। এরপর আবুল হাইসাম (রাঃ) তাঁদের জন্য খাবার তৈরী করতে চলে গেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বলে দিলেন : কোন অবস্থাতেই দুধেল পশু যবাহ করবে না। কাজেই তিনি নবীন একটি নর ছাগল যবাহ করলেন এবং রান্না করে তাঁদের জন্য নিয়ে এলেন। তাঁরা তা খেলেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে প্রশ্ন করলেন : তোমার কি কোন খাদিম আছে? তিনি বললেন, না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যখন আমার নিকট বন্দী আসবে তুমি তখন এসো। পরে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট দুটি গোলাম আসে। তাদের সাথে তৃতীয় কোন গোলাম ছিল না। আবুল হাইসাম (রাঃ) তাঁর নিকট এলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ এদের মধ্যে যেটা ভালো লাগে বেছে নাও। তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনিই আমাকে একটি পছন্দ করে দিন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যার কাছে পরামর্শ চাওয়া হয় তাকে আমানাতদার হতে হয়। ঠিক আছে, তুমি এটাই নাও। কেননা, আমি একে নামায আদায় করতে দেখেছি। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি তার সাথে উত্তম আচরণ করার জন্য। আবুল হাইসাম (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপদেশ প্রসঙ্গে তাঁর স্ত্রীর নিকট গিয়ে তাকে জানিয়ে দেন। তার স্ত্রী বললেন, একে মুক্ত করা ব্যতীত আপনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বক্তব্যের মর্ম পর্যন্ত পৌছ্তে পারবেন না। তিনি বললেন, ঠিক আছে, সে এখন মুক্ত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা যত নবী ও খলীফা প্রেরণ করেছেন, তাদের সকলকেই দুজন করে একান্ত পরামর্শক দিয়েছেন। একজন সাথী তো তাকে ভালো কাজের আদেশ দিতে থাকে এবং অন্যায় কাজে প্রতিহত করে। আর অন্যজন তাকে ধ্বংস করার কোন সুযোগই ছাড়ে না। যাকে এই অসৎ পরামর্শক হতে হিফাযাত করা হয়েছে তাকেই বাঁচানো হয়েছে।
সহীহ্ , সহীহাহ্ (১৬৪১), মুখতাসার শামাইল (১১৩)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৭০
حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ يَوْمًا وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ فَذَكَرَ نَحْوَ هَذَا الْحَدِيثِ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَحَدِيثُ شَيْبَانَ أَتَمُّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي عَوَانَةَ وَأَطْوَلُ . وَشَيْبَانُ ثِقَةٌ عِنْدَهُمْ صَاحِبُ كِتَابٍ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَيْضًا .
আবূ সালামা ইবনু আবদুর রাহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাক্র ও উমার (রাঃ) বের হলেন….। তারপর তিনি উক্ত মর্মে পূর্বোক্ত হাদীসের মতোই হাদীস বর্ণনা করেছেন। এই সনদে আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর উল্লেখ নেই।
সহীহ্ , দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ আওয়ানার রিওয়ায়াতের চাইতে শাইবানের রিওয়ায়াত দীর্ঘ ও বেশি পূর্ণাঙ্গ। হাদীস বিশারদদের মতে শাইবান বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী এবং তার সংকলনও আছে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে উপরোক্ত হাদীসটি ভিন্ন সুত্রেও বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর সূত্রেও হাদীসটি বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৭১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي زِيَادٍ، حَدَّثَنَا سَيَّارُ بْنُ حَاتِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي مَنْصُورٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي طَلْحَةَ، قَالَ شَكَوْنَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْجُوعَ وَرَفَعْنَا عَنْ بُطُونِنَا عَنْ حَجَرٍ حَجَرٍ فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ حَجَرَيْنِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আবূ তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে অনাহারের অভিযোগ করলাম এবং নিজেদের পেটের কাপড় উঠিয়ে একটা পাথর (বাঁধা) দেখালাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও তাঁর পেটের কাপড় উঠিয়ে আমাদেরকে দু’টি পাথর বাঁধা দেখালেন।
যঈফ, মুখতাসার শামায়িল (১১২)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৩৭২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ، يَقُولُ أَلَسْتُمْ فِي طَعَامٍ وَشَرَابٍ مَا شِئْتُمْ لَقَدْ رَأَيْتُ نَبِيَّكُمْ صلى الله عليه وسلم وَمَا يَجِدُ مِنَ الدَّقَلِ مَا يَمْلأُ بَطْنَهُ . قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى أَبُو عَوَانَةَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ نَحْوَ حَدِيثِ أَبِي الأَحْوَصِ . وَرَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ سِمَاكٍ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ عَنْ عُمَرَ .
সিমাক ইবনু হারব (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি : এখন তোমরা কি নিজেদের খুশি মতো পানাহার করতে পারছো না? অথচ আমি তোমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি যে, তিনি এই নিকৃষ্ট ও শুকনো খেজুরও পেতেন না, যা দ্বারা তাঁর পেট ভরতে পারেন।
সহীহ্ , মুখতাসার শামা-ইল (১১০), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্। সিমাক ইবনু হারব (রাহঃ) হতে আবূ আওয়ানা এবং আরও অনেকে আবুল আহওয়াস বর্ণিত হাদীসের সমার্থক হাদীস বর্ণনা করেছেন। শুবা (রাহঃ) সিমাক হতে, তিনি নুমান ইবনু বশীর হতে, তিনি উমার (রাঃ) হতে এই সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০. অনুচ্ছেদঃ
মনের ঐশ্বর্যই আসল ঐশ্বর্য
২৩৭৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ بُدَيْلِ بْنِ قُرَيْشٍ الْيَامِيُّ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لَيْسَ الْغِنَى عَنْ كَثْرَةِ الْعَرَضِ وَلَكِنِ الْغِنَى غِنَى النَّفْسِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو حَصِينٍ اسْمُهُ عُثْمَانُ بْنُ عَاصِمٍ الأَسَدِيُّ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পার্থিব সম্পদের আধিক্য থাকলেই ঐশ্বর্যশালী হওয়া যায় না। মনের ঐশ্বর্যই আসল ঐশ্বর্য।
সহীহ্ , ইবনু মা-জাহা (৪১৩৭), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূ হাসীনের নাম উসমান, পিতা আসিম আল-আসাদী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪১. অনুচ্ছেদঃ
নিজের সম্পদ গ্রহণ করা
২৩৭৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي الْوَلِيدِ، قَالَ سَمِعْتُ خَوْلَةَ بِنْتَ قَيْسٍ، وَكَانَتْ، تَحْتَ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ تَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِنَّ هَذَا الْمَالَ خَضِرَةٌ حُلْوَةٌ مَنْ أَصَابَهُ بِحَقِّهِ بُورِكَ لَهُ فِيهِ وَرُبَّ مُتَخَوِّضٍ فِيمَا شَاءَتْ بِهِ نَفْسُهُ مِنْ مَالِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ لَيْسَ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلاَّ النَّارُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو الْوَلِيدِ اسْمُهُ عُبَيْدُ سَنُوطَى.
হামযা ইবনু আবদুল মুত্তালিবের স্ত্রী খাওলা বিনতু কাইস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : এ পার্থিব ধন-সম্পদ হলো সবুজ-শ্যামল, মনোরম ও মধুময়। যে লোক সঠিক পন্থায় তার প্রয়োজন মুতাবিক তা গ্রহণ করে তার জন্য তাতে বারকাত দেয়া হয়। এমন অনেক লোক আছে, যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দেয়া এই সম্পদ নিজেদের খুশি মুতাবিক ভোগ-ব্যবহার করে। কিয়ামাত দিবসে তাদের জন্য জাহান্নাম ব্যতীত আর কিছুই নেই।
সহীহ্ , সহীহাহ্ (১৫৯২), মিশকাত, তাহকীক ছানী (৪০১৭)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবুল ওয়ালীদের নাম উবাইদ সানুতা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২. অনুচ্ছেদঃ
দিরহাম ও দীনারের দাসগণ অভিশপ্ত
২৩৭৫
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ الصَّوَّافُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لُعِنَ عَبْدُ الدِّينَارِ لُعِنَ عَبْدُ الدِّرْهَمِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَيْضًا أَتَمَّ مِنْ هَذَا وَأَطْوَلَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দীনার ও দিরহামের দাসগণ অভিশপ্ত।
আবূ ঈসা বলেনঃ উপরোক্ত বর্ণনায় হাদীসটি হাসান গারীব। এই হাদীসটি অন্য সূত্রেও আবূ সালিহ হতে তিনি আবূ হুরাইরা হতে তিনি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপভাবে আরও পূর্ণ ও দীর্ঘ বর্ণিত হয়েছে।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৫১৮০)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৪৩. অনুচ্ছেদঃ
সম্পদ ও প্রতিপত্তির মোহ মানুষকে পথভ্রষ্ট করে
২৩৭৬
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَعْدِ بْنِ زُرَارَةَ، عَنِ ابْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَا ذِئْبَانِ جَائِعَانِ أُرْسِلاَ فِي غَنَمٍ بِأَفْسَدَ لَهَا مِنْ حِرْصِ الْمَرْءِ عَلَى الْمَالِ وَالشَّرَفِ لِدِينِهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَيُرْوَى فِي هَذَا الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلاَ يَصِحُّ إِسْنَادُهُ .
কা’ব ইবনু মালিক আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দুটি ক্ষুধার্ত নেকড়ে বাঘকে ছাগলের পালে ছেড়ে দেয়া হলে পরে তা যতটুকু না ক্ষতিসাধন করে, কারো সম্পদ ও প্রতিপত্তির লোভ এর চেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন করে তার ধর্মের।
সহীহ্ , রাওযুন নাযীর (৫-৭)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। ইবনু উমার (রাঃ) হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সূত্রেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। তবে তার সনদসূত্র সহীহ্ নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪. অনুচ্ছেদঃ
পার্থিব জীবন ছায়ার মতো ক্ষণস্থায়ী
২৩৭৭
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْكِنْدِيُّ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ، أَخْبَرَنِي الْمَسْعُودِيُّ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ نَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى حَصِيرٍ فَقَامَ وَقَدْ أَثَّرَ فِي جَنْبِهِ فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوِ اتَّخَذْنَا لَكَ وِطَاءً . فَقَالَ “ مَا لِي وَمَا لِلدُّنْيَا مَا أَنَا فِي الدُّنْيَا إِلاَّ كَرَاكِبٍ اسْتَظَلَّ تَحْتَ شَجَرَةٍ ثُمَّ رَاحَ وَتَرَكَهَا ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন একসময় খেজুর পাতার মাদুরে শুয়েছিলেন। তিনি ঘুম হতে জাগ্রত হয়ে দাঁড়ালে দেখা গেল তাঁর গায়ে মাদুরের দাগ পড়ে গেছে। আমরা বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা আপনার জন্য যদি একটি নরম বিছানার (তোষক) ব্যবস্থা করতাম। তিনি বললেনঃ দুনিয়ার সাথে আমার কি সম্পর্ক? দুনিয়াতে আমি এমন একজন পথচারী মুসাফির ছাড়া তো আর কিছুই নই, যে একটি গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিল, তারপর তা ছেড়ে দিয়ে গন্তব্যের দিকে চলে গেল।
সহীহ্ , ইবনু মা-জাহ (৪১০৯)।
ইবনু উমার ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫. অনুচ্ছেদঃ
ভেবে-চিন্তে বন্ধু নির্বাচন করবে
২৩৭৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، وَأَبُو دَاوُدَ قَالاَ حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنِي مُوسَى بْنُ وَرْدَانَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الرَّجُلُ عَلَى دِينِ خَلِيلِهِ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষ তার বন্ধুর ধ্যান-ধারণার অনুসারী হয়ে থাকে। সুতরাং তোমাদের সকলেরই খেয়াল রাখা উচিত সে কার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে।
হাসান , সহীহাহ্ (৯২৭), মিশকাত (৫০১৯)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৪৬. অনুচ্ছেদঃ
আদম সন্তান ও তার পরিবার পরিজন, সম্পদ ও কর্মের উদাহরন
২৩৭৯
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، هُوَ ابْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ الأَنْصَارِيُّ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ يَتْبَعُ الْمَيِّتَ ثَلاَثٌ فَيَرْجِعُ اثْنَانِ وَيَبْقَى وَاحِدٌ يَتْبَعُهُ أَهْلُهُ وَمَالُهُ وَعَمَلُهُ فَيَرْجِعُ أَهْلُهُ وَمَالُهُ وَيَبْقَى عَمَلُهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনটি জিনিস মৃতের অনুসরণ করে, তারপর দুটি চলে আসে এবং একটি (তার সাথে) রয়ে যায়। তার সাথে যায় তার পরিবার-পরিজন, সম্পদ ও কৃতকর্ম। তারপর তার পরিজন ও সম্পদ ফিরে আসে এবং তার কৃতকর্ম (তার সাথে) থেকে যায়।
সহীহ্ , বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৭. অনুচ্ছেদঃ
অতি ভোজন নিন্দনীয়
২৩৮০
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ الْحِمْصِيُّ، وَحَبِيبُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ جَابِرٍ الطَّائِيِّ، عَنْ مِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيكَرِبَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَا مَلأَ آدَمِيٌّ وِعَاءً شَرًّا مِنْ بَطْنٍ بِحَسْبِ ابْنِ آدَمَ أُكُلاَتٌ يُقِمْنَ صُلْبَهُ فَإِنْ كَانَ لاَ مَحَالَةَ فَثُلُثٌ لِطَعَامِهِ وَثُلُثٌ لِشَرَابِهِ وَثُلُثٌ لِنَفَسِهِ ” .
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَرَفَةَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، نَحْوَهُ . وَقَالَ الْمِقْدَامُ بْنُ مَعْدِيكَرِبَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
মিকদাম ইবনু মা’দীকারিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : মানুষ পেট হতে অধিক নিকৃষ্ট কোন পাত্র পূর্ণ করে না। মেরুদন্ড সোজা রাখতে পারে এমন কয়েক গ্রাস খাবারই আদম সন্তানের জন্য যথেষ্ট। তার চেয়েও বেশি প্রয়োজন হলে পাকস্থলীর এক-তৃতীয়াংশ খাদ্যের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য এবং এক তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য রাখবে।
সহীহ্ , ইবনু মা-জাহ (৩৩৪৯)।
উপরোক্ত হাদীসের সমার্থবোধক হাদীস আল-হাসান ইবনু আরাফা-ইসমাঈল ইবনু আইয়্যাশ (রাহঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তবে এই সনদে মিকদাম ইবনু মা’দীকারিব (রাঃ) হতে “আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি” স্থলে “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন” উল্লেখ আছে।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৮. অনুচ্ছেদঃ
প্রদর্শনেচ্ছা ও খ্যাতির আকাঙ্ক্ষা
২৩৮১
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ فِرَاسٍ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ يُرَائِي يُرَائِي اللَّهُ بِهِ وَمَنْ يُسَمِّعْ يُسَمِّعِ اللَّهُ بِهِ ” . قَالَ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ لاَ يَرْحَمُ النَّاسَ لاَ يَرْحَمُهُ اللَّهُ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ جُنْدَبٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে আমল করবে, আল্লাহ্ তা‘আলাও তাকে তা-ই দেখাবেন (অর্থাৎ সে প্রদর্শনীমূলক আমল করলে তা প্রচার করে দেখানো হবে) এবং সুনাম-সুখ্যাতির অন্বেষণের উদ্দেশ্যে যে লোক আমল করবে, আল্লাহ্ তা‘আলাও তার আমল (দোষ-ক্রুটিগুলো) প্রচার করে দেবেন।
সহীহ্ , ইবনু মা-জাহ (৪২০৬)।
বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেনঃ মানুষকে যে ব্যক্তি দয়া করে না, আল্লাহ্ও তাকে দয়া করেন না।
সহীহ্ , তাখরীজুল মুশকিলাহ (১০৮), সহীহাহ্ (৪৮৩), বুখারী, মুসলিম অনুরুপ।
জুনদাব ও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও এ অনু্চ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্, তবে উপরোক্ত সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৮২
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، أَخْبَرَنِي الْوَلِيدُ بْنُ أَبِي الْوَلِيدِ أَبُو عُثْمَانَ الْمَدَنِيُّ، أَنَّ عُقْبَةَ بْنَ مُسْلِمٍ، حَدَّثَهُ أَنَّ شُفَيًّا الأَصْبَحِيَّ حَدَّثَهُ أَنَّهُ، دَخَلَ الْمَدِينَةَ فَإِذَا هُوَ بِرَجُلٍ قَدِ اجْتَمَعَ عَلَيْهِ النَّاسُ فَقَالَ مَنْ هَذَا فَقَالُوا أَبُو هُرَيْرَةَ . فَدَنَوْتُ مِنْهُ حَتَّى قَعَدْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ وَهُوَ يُحَدِّثُ النَّاسَ فَلَمَّا سَكَتَ وَخَلاَ قُلْتُ لَهُ أَنْشُدُكَ بِحَقٍّ وَبِحَقٍّ لَمَا حَدَّثْتَنِي حَدِيثًا سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَقَلْتَهُ وَعَلِمْتَهُ . فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَفْعَلُ لأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَقَلْتُهُ وَعَلِمْتُهُ . ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً فَمَكَثَ قَلِيلاً ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ لأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي هَذَا الْبَيْتِ مَا مَعَنَا أَحَدٌ غَيْرِي وَغَيْرُهُ . ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً أُخْرَى ثُمَّ أَفَاقَ فَمَسَحَ وَجْهَهُ فَقَالَ لأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا وَهُوَ فِي هَذَا الْبَيْتِ مَا مَعَنَا أَحَدٌ غَيْرِي وَغَيْرُهُ . ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً أُخْرَى ثُمَّ أَفَاقَ وَمَسَحَ وَجْهَهُ فَقَالَ أَفْعَلُ لأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا مَعَهُ فِي هَذَا الْبَيْتِ مَا مَعَهُ أَحَدٌ غَيْرِي وَغَيْرُهُ . ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً شَدِيدَةً ثُمَّ مَالَ خَارًّا عَلَى وَجْهِهِ فَأَسْنَدْتُهُ عَلَىَّ طَوِيلاً ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ حَدَّثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ يَنْزِلُ إِلَى الْعِبَادِ لِيَقْضِيَ بَيْنَهُمْ وَكُلُّ أُمَّةٍ جَاثِيَةٌ فَأَوَّلُ مَنْ يَدْعُو بِهِ رَجُلٌ جَمَعَ الْقُرْآنَ وَرَجُلٌ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَرَجُلٌ كَثِيرُ الْمَالِ فَيَقُولُ اللَّهُ لِلْقَارِئِ أَلَمْ أُعَلِّمْكَ مَا أَنْزَلْتُ عَلَى رَسُولِي قَالَ بَلَى يَا رَبِّ . قَالَ فَمَاذَا عَمِلْتَ فِيمَا عُلِّمْتَ قَالَ كُنْتُ أَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ . فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ كَذَبْتَ وَتَقُولُ لَهُ الْمَلاَئِكَةُ كَذَبْتَ وَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ بَلْ أَرَدْتَ أَنْ يُقَالَ إِنَّ فُلاَنًا قَارِئٌ فَقَدْ قِيلَ ذَاكَ . وَيُؤْتَى بِصَاحِبِ الْمَالِ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ أَلَمْ أُوَسِّعْ عَلَيْكَ حَتَّى لَمْ أَدَعْكَ تَحْتَاجُ إِلَى أَحَدٍ قَالَ بَلَى يَا رَبِّ . قَالَ فَمَاذَا عَمِلْتَ فِيمَا آتَيْتُكَ قَالَ كُنْتُ أَصِلُ الرَّحِمَ وَأَتَصَدَّقُ . فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ كَذَبْتَ وَتَقُولُ لَهُ الْمَلاَئِكَةُ كَذَبْتَ وَيَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى بَلْ أَرَدْتَ أَنْ يُقَالَ فُلاَنٌ جَوَادٌ فَقَدْ قِيلَ ذَاكَ . وَيُؤْتَى بِالَّذِي قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ فِي مَاذَا قُتِلْتَ فَيَقُولُ أُمِرْتُ بِالْجِهَادِ فِي سَبِيلِكَ فَقَاتَلْتُ حَتَّى قُتِلْتُ . فَيَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى لَهُ كَذَبْتَ وَتَقُولُ لَهُ الْمَلاَئِكَةُ كَذَبْتَ وَيَقُولُ اللَّهُ بَلْ أَرَدْتَ أَنْ يُقَالَ فُلاَنٌ جَرِيءٌ فَقَدْ قِيلَ ذَاكَ ” . ثُمَّ ضَرَبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى رُكْبَتِي فَقَالَ ” يَا أَبَا هُرَيْرَةَ أُولَئِكَ الثَّلاَثَةُ أَوَّلُ خَلْقِ اللَّهِ تُسَعَّرُ بِهِمُ النَّارُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . وَقَالَ الْوَلِيدُ أَبُو عُثْمَانَ فَأَخْبَرَنِي عُقْبَةُ بْنُ مُسْلِمٍ أَنَّ شُفَيًّا هُوَ الَّذِي دَخَلَ عَلَى مُعَاوِيَةَ فَأَخْبَرَهُ بِهَذَا . قَالَ أَبُو عُثْمَانَ وَحَدَّثَنِي الْعَلاَءُ بْنُ أَبِي حَكِيمٍ أَنَّهُ كَانَ سَيَّافًا لِمُعَاوِيَةَ فَدَخَلَ عَلَيْهِ رَجُلٌ فَأَخْبَرَهُ بِهَذَا عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ فَقَالَ مُعَاوِيَةُ قَدْ فُعِلَ بِهَؤُلاَءِ هَذَا فَكَيْفَ بِمَنْ بَقِيَ مِنَ النَّاسِ ثُمَّ بَكَى مُعَاوِيَةُ بُكَاءً شَدِيدًا حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ هَالِكٌ وَقُلْنَا قَدْ جَاءَنَا هَذَا الرَّجُلُ بِشَرٍّ ثُمَّ أَفَاقَ مُعَاوِيَةُ وَمَسَحَ عَنْ وَجْهِهِ وَقَالَ صَدَقَ اللَّهُ وَرَسُولُهُْ : (مَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيهَا وَهُمْ فِيهَا لاَ يُبْخَسُونَ * أُولَئِكَ الَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الآخِرَةِ إِلاَّ النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوا فِيهَا وَبَاطِلٌ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
শুফাই আল-আসবাহী (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন একদিন তিনি মাদীনায় পৌঁছে দেখতে পেলেন যে, একজন লোককে ঘিরে জনতার ভিড় লেগে আছে। তিনি প্রশ্ন করেন, ইনি কে? উপস্থিত লোকেরা তাকে বলল, ইনি আবূ হুরাইরা (রাঃ)। (শুফাই বলেন), আমি কাছে গিয়ে তার সামনে বসলাম। তখন লোকদের তিনি হাদীস শুনাচ্ছিলেন। তারপর তিনি যখন নীরব ও একাকী হলেন, আমি তাকে বললাম, আমি সত্যিকারভাবে আপনার নিকট এই আবেদন করছি যে, আপনি আমাকে এমন একটি হাদীস শুনাবেন, যা আপনি সরাসরি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট শুনেছেন, ভালোভাবে বুঝেছেন এবং জেনেছেন।
আবূ হুরাইরা (রাঃ) বললেন, আমি তাই করব, আমি এমন একটি হাদীস তোমার কাছে বর্ণনা করব যা সরাসরি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন এবং আমি তা বুঝেছি ও জেনেছি। আবূ হুরাইরা (রাঃ) একথা বলার পর কেমন যেন তন্ময়গ্রস্ত হয়ে পড়েন। অল্প সময় এভাবে থাকলেন। তারপর তন্ময়ভাব চলে গেলে তিনি বললেন, আমি এমন একটি হাদীস তোমার কাছে বর্ণনা করব যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই ঘরের মধ্যে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। তখন আমি ও তিনি ব্যতীত আমাদের সাথে আর কেউ ছিল না। আবূ হুরাইরা (রাঃ) পুনরায় আরো গভীরভাবে তন্ময়গ্রস্ত হয়ে পড়েন। তিনি চেতনা ফিরে পেয়ে মুখমন্ডল মুছলেন, তারপর বললেন, আমি তোমার নিকট অবশ্যই এরূপ হাদীস বর্ণনা করব যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। তখন এই ঘরে তিনি ও আমি ব্যতীত আমাদের সাথে আর কেউ ছিল না। আবূ হুরাইরা আবার বেহুশ হয়ে গেলেন; তিনি পুনরায় হুশে ফিরে এসে তার মুখমন্ডল মুছলেন এবং বললেন, আমি তা করব। আমি অবশ্যই তোমার নিকট এরূপ হাদীস বর্ণনা করব যাহা তিনি আমাকে বর্ণনা করেছেন। আমি তখন তার সাথে এই ঘরে ছিলাম। আমি আর তিনি ব্যতীত তখন আর কেউ ছিলনা। আবূ হুরাইরা (রাঃ) পুনরায় আরো গভীরভাবে তন্ময়াভিভূত হয়ে পড়েন এবং বেহুশ হয়ে উপুড় হয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন। আমি অনেকক্ষণ তাকে ঠেস দিযে রাখলাম। তারপর হুঁশ ফিরে এলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা বান্দাদের মাঝে ফায়সালা করার জন্য কিয়ামাত দিবসে তাদের সামনে হাযির হবেন। সকল উম্মাতই তখন নতজানু অবস্থায় থাকবে। তারপর হিসাব-নিকাশের জন্য সর্বপ্রথম যে ব্যক্তিদের ডাকা হবে তারা হলো কুরআনের হাফিয, আল্লাহ্ তা‘আলার পথের শহীদ এবং প্রচুর ধনৈশ্বর্যের মালিক। সেই ক্বারী (কুরআন পাঠক)-কে আল্লাহ্ তা‘আলা প্রশ্ন করবেন, আমি আমার রাসূলের নিকট যা প্রেরণ করেছি তা কি তোমাকে শিখাইনি? সে বলবে, হে রব! হ্যাঁ, শিখিয়েছেন। তিনি বলবেন, তুমি যা শিখেছ সে অনুযায়ী কোন কোন আমল করেছ? সে বলবে, আমি রাত-দিন তা তিলাওয়াত করেছি। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছ, ফেরেশতারাও বলবে, তুমি মিথ্যা বলেছ। আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে আরো বলবেন, বরং তুমি ইচ্ছাপোষণ করেছিলে যে, তোমাকে বড় ক্বারী (হাফিয) ডাকা হোক। আর তা তো ডাকা হয়েছে। তারপর সম্পদওয়ালা ব্যক্তিকে হাযির করা হবে। অতঃপর আল্লাহ্ তাকে বলবেন, আমি কি তোমাকে সম্পদশালী বানাইনি? এমনকি তুমি কারো মুখাপেক্ষী ছিলেনা? সে বলবে, হে রব! হ্যাঁ, তা বানিয়েছেন। তিনি বলবেন, আমার দেয়া সম্পদ হতে তুমি কোন কোন (সৎ) আমল করেছ? সে বলবে, আমি এর দ্বারা আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রেখেছি এবং দান-খাইরাত করেছি। আল্লাহ্ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছ, ফেরেশতারাও বলবে, তুমি মিথ্যাবাদী। আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলবেন, তুমি ইচ্ছাপোষণ করেছিলে যে, মানুষের নিকট তোমার দানশীল-দানবীর নামের প্রসার হোক। আর এরূপ তো হয়েছেই। তারপর যে লোক আল্লাহ্ তা‘আলার রাস্তায় শাহাদাৎ বরণ করেছে তাকে হাযির করা হবে। আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে প্রশ্ন করবেন, তুমি কিভাবে নিহত হয়েছ? সে বলবে, আমি তো আপনার পথে জিহাদ করতে আদিষ্ট ছিলাম। কাজেই আমি জিহাদ করতে করতে শাহাদাৎ বরণ করেছি। আল্লাহ্ তা‘আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছ, আর ফেরেশতারাও তাকে বলবে তুমি মিথ্যাবাদী। আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলবেন, তুমি ইচ্ছাপোষণ করেছিলে লোকমুখে একথা প্রচার হোক যে, অমুক ব্যক্তি খুব সাহসী বীর। আর তাতো বলাই হয়েছে। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার হাঁটুতে হাত মেরে বললেনঃ হে আবূ হুরাইরা! কিয়ামাত দিবসে আল্লাহ্ তা‘আলার সৃষ্টির মধ্য হতে এ তিনজন দ্বারাই প্রথমে জাহান্নামের আগুন প্রজ্বলিত করা হবে।
ওয়ালীদ অর্থাৎ আবূ উসমান আল-মাদাইনী বলেন, উকবা ইবনু আমাকে বলেছেন যে, উক্ত শুফাই (শাফী) এ হাদীসটি মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে বর্ণনা করেন। আবূ উসমান আরো বরেন, আলা ইবনু আবূ হাকীম আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, সে (শাফী) ছিল মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর তলোয়ারবাহক। সে বলেছে যে, জনৈক ব্যক্তি মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর নিকট এসে উক্ত হাদীসটি আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন। তখন মু‘আবিয়া (রাঃ) বলেন, যদি তাদের সাথে এমনটি করা হয় তাহলে অন্যসব লোকের কি অবস্থা হবে? তারপর মু‘আবিয়া (রাঃ) খুব বেশি কাঁন্না করলেন। এমনকি আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি কাঁদতে কাঁদতে মারা যাবেন। আমরা বলাবলি করতে লাগলাম, এই লোকটিই আমাদের এখানে অনিষ্ট নিয়ে এসেছে (অর্থাৎ সে এই হাদীসটি বর্ণনা না করলে এ দুর্ঘটনা ঘটত না)। ইতিমধ্যে মু‘আবিয়া (রাঃ) হুঁশ ফিরে পেলেন এবং তার চেহারা মুছলেন, তারপর বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্যই বলেছেন। (এই বলে তিনি নিম্নোক্ত আয়াত তিলাওয়াত করেন) :
“যে কেউ পার্থিব জীবন ও এর সৌন্দর্য কামনা করে, আমি দুনিয়াতে তাদের কর্মের পূর্ণ ফল প্রদান করে থাকি এবং সেখানে তাদেরকে কর্ম প্রদান করা হবে না। তাদের জন্য পরকালে জাহান্নাম ব্যতীত আর কিছু নেই এবং তারা যা করে আখিরাতে তা নিষ্ফল হবে এবং তারা যা করে থাকে তা বিফলে যাবে” (সূরা : হূদ-১৫,১৬)।
সহীহ্ , তা’লীকুর রাগীব (১/২৯-৩০), তা’লীক আলা ইবনে খুযাইমাহ (২৪৮২)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৮৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنِي الْمُحَارِبِيُّ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ سَيْفٍ الضَّبِّيِّ، عَنْ أَبِي مُعَانٍ الْبَصْرِيِّ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ جُبِّ الْحُزْنِ ” . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا جُبُّ الْحُزْنِ قَالَ ” وَادٍ فِي جَهَنَّمَ تَتَعَوَّذُ مِنْهُ جَهَنَّمُ كُلَّ يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ ” . قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَنْ يَدْخُلُهُ قَالَ ” الْقُرَّاءُ الْمُرَاءُونَ بِأَعْمَالِهِمْ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ.
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ‘জুব্বুল হুযন’ হতে আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা কর। তারা প্রশ্ন করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ‘জুব্বুল হুযন’ কি? তিনি বললেনঃ তা জাহান্নামের মধ্যকার একটি উপত্যকা, যা থেকে স্বয়ং জাহান্নামও দৈনিক শতবার আশ্রয় প্রার্থনা করে। প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহ্র রাসূল! তাতে কে প্রবেশ করবে? তিনি বললেনঃ যেসব কুরআন পাঠক লোক দেখানো আমল করে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২৫৬)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৪৯. অনুচ্ছেদঃ
একান্ত গোপনে আমল করা
২৩৮৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا أَبُو سِنَانٍ الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ الرَّجُلُ يَعْمَلُ الْعَمَلَ فَيُسِرُّهُ فَإِذَا اطُّلِعَ عَلَيْهِ أَعْجَبَهُ ذَلِكَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لَهُ أَجْرَانِ أَجْرُ السِّرِّ وَأَجْرُ الْعَلاَنِيَةِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رَوَاهُ الأَعْمَشُ وَغَيْرُهُ عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً وَأَصْحَابُ الأَعْمَشِ لَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ فَسَّرَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ هَذَا الْحَدِيثَ فَقَالَ إِذَا اطُّلِعَ عَلَيْهِ فَأَعْجَبَهُ فَإِنَّمَا مَعْنَاهُ أَنْ يُعْجِبَهُ ثَنَاءُ النَّاسِ عَلَيْهِ بِالْخَيْرِ لِقَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ” أَنْتُمْ شُهَدَاءُ اللَّهِ فِي الأَرْضِ ” . فَيُعْجِبُهُ ثَنَاءُ النَّاسِ عَلَيْهِ لِهَذَا لِمَا يَرْجُو بِثَنَاءِ النَّاسِ عَلَيْهِ فَأَمَّا إِذَا أَعْجَبَهُ لِيَعْلَمَ النَّاسُ مِنْهُ الْخَيْرَ لِيُكْرَمَ عَلَى ذَلِكَ وَيُعَظَّمَ عَلَيْهِ فَهَذَا رِيَاءٌ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا اطُّلِعَ عَلَيْهِ فَأَعْجَبَهُ رَجَاءَ أَنْ يُعْمَلَ بِعَمَلِهِ فَيَكُونَ لَهُ مِثْلُ أُجُورِهِمْ فَهَذَا لَهُ مَذْهَبٌ أَيْضًا .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন লোক খুবই গোপনে কোন আমল করে কিন্তু অন্যরা তা জেনে ফেললে তাতেও তার আনন্দ লাগে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার জন্য দ্বিগুণ সাওয়াব, একটি গোপনে আমল করার জন্য এবং অপরটি প্রকাশ হয়ে পড়ার জন্য।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৪২২৬)
আবূ ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান গারীব। আ’মাশ প্রমুখ হাবীব ইবনু আবী ছাবিত হতে তিনি আবূ সালিহ হতে তিনি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে মুর্সালরূপে বর্ণনা করেছেন। আ’মাশের সাথীগণ আবূ হুরাইরার উল্লেখ করেন নাই।
আবূ ঈসা বলেনঃ অন্যরা জেনে ফেললে তাতেও তার আনন্দ লাগে এর ব্যাখ্যায় কতক মনিষী বলেনঃ এর অর্থ হচ্ছে ভাল কাজের জন্য প্রশংসা করায় সে আনন্দ লাভ করে, এই জন্য যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরাই পৃথিবীতে আল্লাহর সাক্ষী তবে তার আনন্দের কারণ যদি এটা হয় যে, মানুষ তাকে ভাল মনে করে তাকে সম্মান করবে তা হলে এটা লোক দেখানোর পর্যায়ভুক্ত হয়ে যাবে। কিছু মনিষী বলেছেনঃ তার আনন্দ হওয়ার কারণ হল, অন্যরাও তার অনুকরণে আমল করলে তাতে সে সাওয়াব পাবে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৫০. অনুচ্ছেদঃ
যে যাকে ভালোবাসে (কিয়ামাত দিবসে) সে তার সাথী হবে
২৩৮৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّهُ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَتَى قِيَامُ السَّاعَةِ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى الصَّلاَةِ فَلَمَّا قَضَى صَلاَتَهُ قَالَ ” أَيْنَ السَّائِلُ عَنْ قِيَامِ السَّاعَةِ ” . فَقَالَ الرَّجُلُ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ ” مَا أَعْدَدْتَ لَهَا ” قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَعْدَدْتُ لَهَا كَبِيرَ صَلاَةٍ وَلاَ صَوْمٍ إِلاَّ أَنِّي أُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ وَأَنْتَ مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ ” . فَمَا رَأَيْتُ فَرِحَ الْمُسْلِمُونَ بَعْدَ الإِسْلاَمِ فَرَحَهُمْ بِهَذَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একজন লোক এসে প্রশ্ন করল, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কিয়ামাত কখন সংঘটিত হবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাযে দাঁড়িযে গেলেন। নামায সমাপ্তির পর তিনি প্রশ্ন করেন : কিয়ামাত সংঘটিত হওয়ার প্রসঙ্গে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়? সে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এই যে আমি। তিনি জিজ্ঞেস করলেন : তুমি কিয়ামাতের জন্য কি প্রস্তুতি নিয়েছ? সে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি অবশ্য তেমন লম্বা (নাফল) নামাযও পড়িনি, রোযাও (নাফল) রাখিনি, তবে আমি নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে লোক যাকে ভালোবাসে, কিয়ামাত দিবসে সে তার সাথেই অবস্থান করবে। তুমিও যাকে ভালোবাস তার সাথেই অবস্থান করবে। বর্ণনাকারী বলেন, তারা এ কথায় এতই সন্তুষ্ট হলেন যে, ইসলাম গ্রহণের পর মুসলমানদের আর কোন বিষয়ে এত খুশি হতে দেখিনি।
সহীহ্ , রাওযুন নাযীর (১০৪), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৮৬
حَدَّثَنَا أَبُو هِشَامٍ الرِّفَاعِيُّ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنْ أَشْعَثَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ وَلَهُ مَا اكْتَسَبَ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَصَفْوَانَ بْنِ عَسَّالٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي مُوسَى . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ الْحَسَنِ الْبَصْرِيِّ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক যাকে ভালোবাসে, (কিয়ামাত দিবসে) সে তার সাথেই অবস্থান করবে এবং সে যা অর্জন করেছে তা-ই পাবে। তুমি যাকে ভালবাস তার সাথেই থাকবে, তুমি যা নিয়্যাত করেছ তাই পাবে এই অর্থে হাদীসটি সহীহ্।
সহীহাহ্ (৩২৫৩)।
আলী, আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ, সাফওয়ান ইবনু আসসাল, আবূ হুরাইরা ও আবূ মূসা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং হাসান বাসরী-আনাস (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্রাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে গারীব। হাদীসটি একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৮৭
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ عَسَّالٍ، قَالَ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ جَهْوَرِيُّ الصَّوْتِ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ الرَّجُلُ يُحِبُّ الْقَوْمَ وَلَمَّا يَلْحَقْ بِهِمْ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ زِرٍّ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ عَسَّالٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ حَدِيثِ مَحْمُودٍ .
সাফওয়ান ইবনু আসসাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উচ্চ আওয়াজধারী জনৈক বেদুঈন এসে বলল, হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কোন একজন ব্যক্তি একটি সম্প্রদায়কে ভালোবাসে; কিন্তু সে তাদের সাথে গিয়ে মিলিত হতে পারেনি (অর্থাৎ তাদের পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে (কিয়ামাত দিবসে) সে তার সাথেই অবস্থান করবে।
হাসান , আর রাওয (৩৬০)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আহমাদ ইবনু আবদা আয-যাব্বী-হাম্মাদ ইবনু যাইদ হতে, তিনি আসিম হতে, তিনি যির ইবনু হুবাইশ হতে, তিনি সাফওয়ান ইবনু আসসাল (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে মাহমূদ বর্ণিত হাদীসের মতোই হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৫১. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার সম্পর্কে সুধারণা পোষণ
২৩৮৮
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ بُرْقَانَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ الأَصَمِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي فِيَّ وَأَنَا مَعَهُ إِذَا دَعَانِي ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ বান্দাহ আমার সম্বন্ধে যেরকম ধারণা পোষণ করে আমি তার সাথে সে অনুযায়ী আচরণ করি। সে আমাকে ডাকলে আমি তার সাথেই থাকি।
সহীহ্ , মুসলিম (৮/৬৬), বুখারী (৭৪০৫), আমাকে স্বরণ করলে এই অর্থে।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫২. অনুচ্ছেদঃ
গুনাহ ও সাওয়াবের কাজ প্রসঙ্গে
২৩৮৯
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْكِنْدِيُّ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ الْحَضْرَمِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّوَّاسِ بْنِ سَمْعَانَ، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْبِرِّ وَالإِثْمِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ الْبِرُّ حُسْنُ الْخُلُقِ وَالإِثْمُ مَا حَاكَ فِي نَفْسِكَ وَكَرِهْتَ أَنْ يَطَّلِعَ عَلَيْهِ النَّاسُ ” .
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ، نَحْوَهُ إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
নাওয়াস ইবনু সাম’আন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একজন লোক গুনাহের কাজ ও সাওয়াবের কাজ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সৎকাজ বা সাওয়াবের কাজ হলো সদাচার এবং গুনাহের কাজ হলো যা তোমার অন্তরে সংশয় সৃষ্টি করে, আর সেটা মানুষ জানতে পারুক তা তুমি অপছন্দ কর।
সহীহ্ , মুসলিম (৮/৭)।
উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ মুহাম্মাদ ইবনু বাশ্শার-আবদুর রাহমান ইবনু মাহ্দী হতে, তিনি মু‘আবিয়া ইবনু সালিহ (রাহঃ) হতেও বর্ণিত আছে। তবে এই সূত্রে “এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল” -এর স্থলে “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করলাম” উল্লেখ আছে।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৩. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার জন্যই ভালোবাসা
২৩৯০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ بُرْقَانَ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ أَبِي مَرْزُوقٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي مُسْلِمٍ الْخَوْلاَنِيِّ، حَدَّثَنِي مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ الْمُتَحَابُّونَ فِي جَلاَلِي لَهُمْ مَنَابِرُ مِنْ نُورٍ يَغْبِطُهُمُ النَّبِيُّونَ وَالشُّهَدَاءُ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَعُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي مَالِكٍ الأَشْعَرِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو مُسْلِمٍ الْخَوْلاَنِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ ثُوَبَ .
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ আমার মর্যাদা ও পরাক্রমের টানে যারা পরস্পরকে ভালোবাসে, তাদের জন্য রয়েছে আলোর মিম্বার (মঞ্চ)। নবী ও শাহীদগণ পর্যন্ত তাদের সাথে (মর্যাদা দর্শনে) ঈর্ষা করবে।
সহীহ্ , মিশকাত, তাহকীক ছানী (৫০১১), তা’লীকুর রাগীব (৪/৪৭)।
আবুদ দারদা, ইবনু মাসঊদ, উবাদা ইবনুস সামিত, আবূ হুরাইরা ও আবূ মালিক আল-আশআরী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূ মুসলিম আল-খাওলানীর নাম আবদুল্লাহ, পিতা সাওব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৯১
حَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَوْ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ إِمَامٌ عَادِلٌ وَشَابٌّ نَشَأَ بِعِبَادَةِ اللَّهِ وَرَجُلٌ كَانَ قَلْبُهُ مُعَلَّقًا بِالْمَسْجِدِ إِذَا خَرَجَ مِنْهُ حَتَّى يَعُودَ إِلَيْهِ وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ فَاجْتَمَعَا عَلَى ذَلِكَ وَتَفَرَّقَا وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ حَسَبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهَكَذَا رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ مِثْلَ هَذَا وَشَكَّ فِيهِ وَقَالَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَوْ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ رَوَاهُ عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَلَمْ يَشُكَّ فِيهِ يَقُولُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
حَدَّثَنَا سَوَّارُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْعَنْبَرِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، حَدَّثَنِي خُبَيْبٌ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ حَدِيثِ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ بِمَعْنَاهُ إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ ” كَانَ قَلْبُهُ مُعَلَّقًا بِالْمَسَاجِدِ ” . وَقَالَ ” ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
حَدَّثَنَا بُنْدَارٌ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، أَخْبَرَنَا ثَوْرُ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيكَرِبَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا أَحَبَّ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ فَلْيُعْلِمْهُ إِيَّاهُ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي ذَرٍّ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ الْمِقْدَامِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَالْمِقْدَامُ يُكْنَى أَبَا كَرِيمَةَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) অথবা আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা (কিয়ামাত দিবসে) সাত প্রকারের লোককে তাঁর (আরশের) ছায়াতলে আশ্রয় প্রদান করবেন, যেদিন তাঁর (আরশের) ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়াই (আশ্রয়) অবশিষ্ট থাকবে না। (তারা হলো): (১) ন্যায়পরায়ণ শাসক, (২) যে যুবক আল্লাহ্ তা‘আলার ইবাদাতের মধ্যে বড় হয়েছে, (৩) যে ব্যক্তি মাসজিদ হতে বেরিয়ে গেলেও তার অন্তর এর সাথে সম্পৃক্ত থাকে, যে পর্যন্ত না সে আবার সেখানে ফিরে আসে, (৪) এমন দুব্যক্তি যারা আল্লাহ্ তা‘আলার জন্য পরস্পর ভালোবাসা স্থাপন করেছে, এই সম্পর্কেই একত্র থাকে এবং বিচ্ছিন্ন হয়, (৫) যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহ্ তা‘আলাকে স্মরণ করেছে এবং তার দুচোখ বেয়ে পানি পড়েছে, (৬) এমন ব্যক্তি যাকে কোন অভিজাত পরিবারের সুন্দরী রূপসী নারী (অশ্লীল কাজে) আহ্ববান করেছে কিন্তু সে তাকে এই বলে প্রত্যাখ্যান করেছে : আমি আল্লাহ্ তা‘আলাকে ভয় করি এবং (৭) এমন ব্যক্তি যে এত গোপনে দান-খাইরাত করেছে যে, তার বাম হাতও জানতে পারেনি যে, তার ডান হাত কি দান করেছে।
সহীহ্ , ইরওয়া (৮৮৭), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদীসটি অনুরূপভাবে মালিক ইবনু আনাস (রাহঃ)-এর বরাতে ভিন্ন সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে এবং এক্ষেত্রে সন্দেহবশতঃ আবূ হুরাইরা (রাঃ) অথবা আবূ সাঈদ (রাঃ) বলা হয়েছে। কিন্তু এই হাদীসটি খুবাইব (হাবীব) ইবনু আবদুর রাহমানের সূত্রে সন্দেহমুক্তভাবে আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার বর্ণনা করেছেন। মালিক ইবনু আনাসের বর্ণিত হাদীসের একইরকম হাদীস সাওয়ার ইবনু আবদুল্লাহ আল-আনসারী ও মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না-ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ হতে, তিনি উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার হতে, তিনি খুবাইব (রাহাবীব) ইবনু আবদুর রাহমান হতে, তিনি হাফ্স ইবনু আসিম হতে, তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে বর্ণিত আছে। তবে তাতে আছে : “কানা কালবুহু মুআল্লাকান বিল-মাসাজিদ” (যার অন্তর মাসজিদসমূহের সাথে সংযুক্ত) এবং “যাতু হাসাবিন” (উচ্চবংশীয়া) এর স্থলে “যাতু মানসাবিন ওয়া জামালিন” (মর্যাদাসম্পন্ন ও সুন্দরী) বাক্যাংশের উল্লখ আছে। এ বর্ণনাটিও হাসান সহীহ্। সহীহ্ , দেখুন র্পূবের হাদীস।
——————-
৫৩/২. অনুচ্ছেদঃ ভালোবাসার কথা অবহিত করা
২৩৯১/২। মিকদাম ইবনু মা‘দীকারিব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ তার কোন (মুসলিম) ভাইকে ভালোবাসলে সে যেন অবশ্যই তাকে তা অবহিত করে।
সহীহ্ , সহীহাহ্ (৪১৭, ২৫১৫)।
আবূ ঈসা বলেন, মিকদাম (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। আবূ যার ও আনাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। মিকদামের উপনাম আবূ কারীমাহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৯২
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، وَقُتَيْبَةُ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ مُسْلِمٍ الْقَصِيرِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ سَلْمَانَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ نُعَامَةَ الضَّبِّيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا آخَى الرَّجُلُ الرَّجُلَ فَلْيَسْأَلْهُ عَنِ اسْمِهِ وَاسْمِ أَبِيهِ وَمِمَّنْ هُوَ فَإِنَّهُ أَوْصَلُ لِلْمَوَدَّةِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَلاَ نَعْرِفُ لِيَزِيدَ بْنِ نُعَامَةَ سَمَاعًا مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَيُرْوَى عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوُ هَذَا وَلاَ يَصِحُّ إِسْنَادُهُ .
ইয়াযীদ ইবনু নুআমা আয–যাব্বী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি কারো সাথে ভাইয়ের সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইলে সে যেন তার নাম, পিতার নাম ও গোত্র বা বংশের নাম জিজ্ঞেস করে নেয়। কেননা তা ভালোবাসার সম্পর্ক ঠিক রাখার জন্য খুব বেশী কার্যকরী হয়।
যঈফ, যঈফা (১৭২৬)
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই হাদিসটি জেনেছি। ইয়াযীদ ইবনু নুআমা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট সরাসরি কিছু শুনেছেন মনে আমাদের জানা নেই। ইবনু উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে এই হাদীসের অনুরূপ বিষয়বস্তু সম্বলিত হাদীস বর্ণিত আছে। কিন্তু এটির সনদসূত্রও তেমন সহীহ নয়।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৫৪. অনুচ্ছেদঃ
চাটুকারিতা ও চাটুকার নিন্দনীয়
২৩৯৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ قَامَ رَجُلٌ فَأَثْنَى عَلَى أَمِيرٍ مِنَ الأُمَرَاءِ فَجَعَلَ الْمِقْدَادُ يَحْثُو فِي وَجْهِهِ التُّرَابَ وَقَالَ أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ نَحْثُوَ فِي وُجُوهِ الْمَدَّاحِينَ التُّرَابَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى زَائِدَةُ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي زِيَادٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَحَدِيثُ مُجَاهِدٍ عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ أَصَحُّ . وَأَبُو مَعْمَرٍ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَخْبَرَةَ وَالْمِقْدَادُ بْنُ الأَسْوَدِ هُوَ الْمِقْدَادُ بْنُ عَمْرٍو الْكِنْدِيُّ وَيُكْنَى أَبَا مَعْبَدٍ وَإِنَّمَا نُسِبَ إِلَى الأَسْوَدِ بْنِ عَبْدِ يَغُوثَ لأَنَّهُ كَانَ قَدْ تَبَنَّاهُ وَهُوَ صَغِيرٌ .
আবূ মা’মার (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন একদিন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে কোন এক প্রশাসকের সামনেই তার প্রশংসা করতে শুরু করে। এতে মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ (রাঃ) তার মুখমন্ডলে ধুলাবালি নিক্ষেপ করতে থাকেন এবং বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা যেন চাটুকারের মুখে ধুলাবালি নিক্ষেপ করি।
সহীহ্ , ইবনু মা-জাহ (৩৭৪২), মুসলিম।
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদীসটি ইয়াযীদ ইবনু আবূ যিয়াদ-মুজাহিদ হতে, তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে এই সূত্রে যাইদা (রাহঃ) বর্ণনা করেছন। মুজাহিদ-আবূ মা‘মার হতে এই সনদসূত্রটি অনেক বেশি সহীহ্। আবূ মা‘মারের নাম আবদুল্লাহ, পিতা সাখবারাহ। আর মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ (রাহঃ) হলেন মিকদাদ ইবনু আমর আল-কিন্দী, তার উপনাম আবূ মা‘বাদ। আসওয়াদ ইবনু আবদি ইয়াগূস তাকে শৈশব অবস্থায় পালকপুত্ররূপে গ্রহণ করেন বলে তাকে আসওয়াদের সাথে সম্পর্কিত করে মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ বলা হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৯৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ سَالِمٍ الْخَيَّاطِ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ نَحْثُوَ فِي أَفْوَاهِ الْمَدَّاحِينَ التُّرَابَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, চাটুকারদের মুখে ধুলাবালি নিক্ষেপ করার জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সহীহ্ , দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৫. অনুচ্ছেদঃ
ঈমানদার লোকের সংসর্গে থাকা
২৩৯৫
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ حَيْوَةَ بْنِ شُرَيْحٍ، حَدَّثَنِي سَالِمُ بْنُ غَيْلاَنَ، أَنَّ الْوَلِيدَ بْنَ قَيْسٍ التُّجِيبِيَّ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، قَالَ سَالِمٌ أَوْ عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، – أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ لاَ تُصَاحِبْ إِلاَّ مُؤْمِنًا وَلاَ يَأْكُلْ طَعَامَكَ إِلاَّ تَقِيٌّ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন : তুমি ঈমানদার লোক ব্যতীত অন্য কারো সঙ্গী হয়ো না এবং আল্লাহ্ভীরু মুত্তাক্বী লোক ছাড়া কেউ যেন তোমার খাদ্য না খায়।
হাসান , মিশকাত (৫০১৮)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান। আমরা হাদীসটি শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৫৬. অনুচ্ছেদঃ
বিপদে ধৈর্যধারণ
২৩৯৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ سِنَانٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِعَبْدِهِ الْخَيْرَ عَجَّلَ لَهُ الْعُقُوبَةَ فِي الدُّنْيَا وَإِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِعَبْدِهِ الشَّرَّ أَمْسَكَ عَنْهُ بِذَنْبِهِ حَتَّى يُوَفَّى بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” .
وَبِهَذَا الإِسْنَادِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِنَّ عِظَمَ الْجَزَاءِ مَعَ عِظَمِ الْبَلاَءِ وَإِنَّ اللَّهَ إِذَا أَحَبَّ قَوْمًا ابْتَلاَهُمْ فَمَنْ رَضِيَ فَلَهُ الرِّضَا وَمَنْ سَخِطَ فَلَهُ السَّخَطُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা যখন তাঁর কোন বান্দার কল্যাণ সাধন করতে চান তখন তাড়াতাড়ি দুনিয়াতে তাকে বিপদে নিক্ষেপ করেন। আর যখন তিনি তাঁর কোন বান্দার অকল্যাণ সাধন করতে চান তখন তাকে তার অপরাধের শাস্তি প্রদান হতে বিরত থাকেন। তারপর কিয়ামাতের দিন তিনি তাকে পুরাপুরি শাস্তি দেন।
সহীহ্ , সহীহাহ্ (১২২০), মিশকাত (১৫৬৫)।
এ সনদেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ বিপদ যত মারাত্মক হবে, প্রতিদানও তত মহান হবে। আল্লাহ্ তা‘আলা যখন কোন জাতিকে ভালোবাসেন তখন তাদেরকে (বিপদে ফেলে) পরীক্ষা করেন। যে লোক তাতে (বিপদে) সন্তুষ্ট থাকে, তার জন্য (আল্লাহ্ তা‘আলার) সন্তুষ্টি বিদ্যমান। আর যে লোক তাতে অসন্তুষ্ট হয় তার জন্য (আ্ল্লাহ তা‘আলার) অসন্তুষ্টি বিদ্যমান।
হাসান , ইবনু মা-জাহ (৪০৩১)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
২৩৯৭
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ، يَقُولُ قَالَتْ عَائِشَةُ مَا رَأَيْتُ الْوَجَعَ عَلَى أَحَدٍ أَشَدَّ مِنْهُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অসুস্থতাজনিত কষ্টের তুলনায় বেশি কষ্ট আমি আর কোন ব্যক্তির হতে দেখিনি।
সহীহ্ , ইবনু মা-জাহ (১৬২২), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ্ হাদীস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৯৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ بَهْدَلَةَ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ النَّاسِ أَشَدُّ بَلاَءً قَالَ “ الأَنْبِيَاءُ ثُمَّ الأَمْثَلُ فَالأَمْثَلُ فَيُبْتَلَى الرَّجُلُ عَلَى حَسَبِ دِينِهِ فَإِنْ كَانَ دِينُهُ صُلْبًا اشْتَدَّ بَلاَؤُهُ وَإِنْ كَانَ فِي دِينِهِ رِقَّةٌ ابْتُلِيَ عَلَى حَسَبِ دِينِهِ فَمَا يَبْرَحُ الْبَلاَءُ بِالْعَبْدِ حَتَّى يَتْرُكَهُ يَمْشِي عَلَى الأَرْضِ مَا عَلَيْهِ خَطِيئَةٌ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأُخْتِ حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ أَيُّ النَّاسِ أَشَدُّ بَلَاءً قَالَ الْأَنْبِيَاءُ ثُمَّ الْأَمْثَلُ فَالْأَمْثَلُ.
মুস‘আব ইবনু সা’দ (রাহঃ) হতে তার বাবার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (সা’দ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! মানুষের মাঝে কার বিপদের পরীক্ষা সবচেয়ে কঠিন হয়? তিনি বললেনঃ নাবীদের বিপদের পরীক্ষা, তারপর যারা নেককার তাদের, এরপর যারা নেককার তাদের বিপদের পরীক্ষা। মানুষকে তার ধর্মানুরাগের অনুপাত অনুসারে পরীক্ষা করা হয়। তুলনামূলকভাবে যে লোক বেশি ধার্মিক তার পরীক্ষাও সে অনুপাতে কঠিন হয়ে থাকে। আর যদি কেউ তার দ্বীনের ক্ষেত্রে শিথিল হয়ে থাকে তাহলে তাকে সে মোতাবিক পরীক্ষা করা হয়। অতএব, বান্দার উপর বিপদাপদ লেগেই থাকে, অবশেষে তা তাকে এমন অবস্থায় ছেড়ে দেয় যে, সে যমীনে চলাফেরা করে অথচ তার কোন গুনাহ্ই থাকে না।
হাসান, সহীহ্ , ইবনু মা-জাহ (৪০২৩)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূ হুরাইরা ও হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ)-এর বোন থেকেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করা হল : কোন ব্যক্তি সবচাইতে বেশি বিপদগ্রস্ত হয়? তিনি বললেন : নাবীগণ, তার পর যারা নেককার তাদের।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
২৩৯৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَا يَزَالُ الْبَلاَءُ بِالْمُؤْمِنِ وَالْمُؤْمِنَةِ فِي نَفْسِهِ وَوَلَدِهِ وَمَالِهِ حَتَّى يَلْقَى اللَّهَ وَمَا عَلَيْهِ خَطِيئَةٌ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিন নারী-পুরুষের উপর, তার সন্তানের উপর ও তার ধন-সম্পদের উপর অনবরত বিপদাপদ লেগেই থাকে। সবশেষে আল্লাহ্ তা‘আলার সাথে সে গুনাহমুক্ত অবস্থায় মিলিত হয়।
হাসান সহীহ্ , সহীহাহ্ (২২৮০)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৫৭ . অনুচ্ছেদঃ
দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলা
২৪০০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْجُمَحِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا أَبُو ظِلاَلٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ إِذَا أَخَذْتُ كَرِيمَتَىْ عَبْدِي فِي الدُّنْيَا لَمْ يَكُنْ لَهُ جَزَاءٌ عِنْدِي إِلاَّ الْجَنَّةَ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَأَبُو ظِلاَلٍ اسْمُهُ هِلاَلٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ আমি দুনিয়াতে যখন কোন বান্দার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেই, তখন তার জন্য একমাত্র জান্নাত ব্যতীত আমার নিকট আর কোন প্রতিদান থাকে না।
সহীহ্ , তা’লীকুর রাগীব (৪/১৫৫, ১৫৬), বুখারী অনুরূপ।
আবূ হুরাইরা ও যাইদ ইবনু আকরাম (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব। আবূ যিলালের নাম হিলাল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৪০১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رَفَعَهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ مَنْ أَذْهَبْتُ حَبِيبَتَيْهِ فَصَبَرَ وَاحْتَسَبَ لَمْ أَرْضَ لَهُ ثَوَابًا دُونَ الْجَنَّةِ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মহামহিম আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেনঃ আমি যে ব্যক্তির দুটি প্রিয় চোখ কেড়ে নিয়েছি; অতঃপর সে ধৈর্য ধারণ করেছে এটা আল্লাহ্র পক্ষ হতে হয়েছে বলে মনে করে এবং সাওয়াবের আশা করে, আমি তাকে জান্নাত ব্যতীত অন্য কোন কিছু প্রতিদান দিয়ে সন্তুষ্ট হব না।
সহীহ্ , তা‘লীকুর রাগীব (৪/১৫৬)।
ইরবায ইবনু সারিয়া (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৮. অনুচ্ছেদঃ
বিপদে ধৈর্য ধারণের সাওয়াব প্রসঙ্গে
২৪০২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ، وَيُوسُفُ بْنُ مُوسَى الْقَطَّانُ الْبَغْدَادِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَغْرَاءَ أَبُو زُهَيْرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ يَوَدُّ أَهْلُ الْعَافِيَةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حِينَ يُعْطَى أَهْلُ الْبَلاَءِ الثَّوَابَ لَوْ أَنَّ جُلُودَهُمْ كَانَتْ قُرِضَتْ فِي الدُّنْيَا بِالْمَقَارِيضِ ” . وَهَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ بِهَذَا الإِسْنَادِ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ عَنْ مَسْرُوقٍ قَوْلَهُ شَيْئًا مِنْ هَذَا .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে বিপদে পতিত (ধৈর্যধারী) মানুষদের যখন প্রতিদান দেয়া হবে, তখন (পৃথিবীতে) বিপদমুক্ত মানুষেরা আকাঙ্ক্ষা (পরিতাপ) করবে, হায়! দুনিয়াতে যদি কাঁচি দ্বারা তাদের শরীরের চামড়া কেটে টুকরা টুকরা করে দেয়া হতো।
হাসান , সহীহাহ্ (২২০৬), তা’রীকুর রাগীব (৪/১৪৬), মিশকাত (১৫৭০)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা এই সনদে উক্তভাবে রিওয়ায়াত ব্যতীত আর কিছুই জানি না। এ হাদীসটি আমাশ-তালহা ইবনু মুসাররিফ হতে, তিনি মাসরূক (রাহঃ) হতে তার বক্তব্য হিসাবে কোন কোন বর্ণনাকারী এর কিছু বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৪০৩
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ، سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا مِنْ أَحَدٍ يَمُوتُ إِلاَّ نَدِمَ ” . قَالُوا وَمَا نَدَامَتُهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” إِنْ كَانَ مُحْسِنًا نَدِمَ أَنْ لاَ يَكُونَ ازْدَادَ وَإِنْ كَانَ مُسِيئًا نَدِمَ أَنْ لاَ يَكُونَ نَزَعَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَيَحْيَى بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ قَدْ تَكَلَّمَ فِيهِ شُعْبَةُ وَهُوَ يَحْيَى بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ مَدَنِيٌّ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে কোন ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর অনুতপ্ত হবে। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! কিসের জন্য অনুতপ্ত হবে? তিনি বললেনঃ মৃত লোকটি সৎকর্মশীল হলে সে এই বলে অনুতপ্ত হবে যে, সে আরও বেশী (আমল) করল না কেন। আর সে অন্যায়কারী (পাপী) হলে এই বলে অনুতপ্ত হবে যে, সে কেন অন্যায় থেকে বিরত থাকলো না।
খুবই দুর্বল, মিশকাত (৫৫৪৫)
আবূ ঈসা বলেন, এ সূত্রেই আমরা হাদিসটি জেনেছি। শুবা (রহঃ) এই হাদীসের রাবী ইয়াহ্ইয়া ইবনু উবায়দুল্লাহ্ ইবনু মাওহাবের সমালোচনা করেছেন। তিনি মদীনাবাসী।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
৫৯. অনুচ্ছেদঃ
একদল লোক পার্থিব স্বার্থে ধর্মকে প্রতারণার উপায় বানাবে। এদের মুখে মিষ্টি বুলি অন্তরে বিষ
২৪০৪
حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ، سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ يَخْرُجُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ رِجَالٌ يَخْتِلُونَ الدُّنْيَا بِالدِّينِ يَلْبَسُونَ لِلنَّاسِ جُلُودَ الضَّأْنِ مِنَ اللِّينِ أَلْسِنَتُهُمْ أَحْلَى مِنَ السُّكَّرِ وَقُلُوبُهُمْ قُلُوبُ الذِّئَابِ يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَبِي يَغْتَرُّونَ أَمْ عَلَىَّ يَجْتَرِئُونَ فَبِي حَلَفْتُ لأَبْعَثَنَّ عَلَى أُولَئِكَ مِنْهُمْ فِتْنَةً تَدَعُ الْحَلِيمَ مِنْهُمْ حَيْرَانًا ” . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শেষ জামানায় কিছু লোকের উদ্ভব হবে যারা পার্থিব স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ধর্মকে প্রতারণার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করবে। তারা জনগণের সামনে ভেড়ার চামড়ার মত কোমল পোশাক পরবে। তাদের মুখের ভাষা হবে চিনির চেয়ে মিষ্টি; কিন্তু তাদের হৃদয় হবে নেকড়ে বাঘের মত হিংস্র। আল্লাহ্ তা’আলা তাদের বলবেনঃ তোমরা কি আমার বিষয়ে ধোঁকায় পড়ে আছ, নাকি আমার প্রতি ধৃষ্টতা দেখাচ্ছ? আমার শপথ! আমি তাদের উপর তাদের মধ্য হতেই এমন বিপর্যয় আপতিত করব, যা তাদের খুবই সহনশীল ব্যক্তিদের পর্যন্ত হতবুদ্ধি ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে ছাড়বে।
খুবই দুর্বল, তা’লীকুর রাগীব (১/৩২)
আবূ ঈসা বলেন, এ অনুচ্ছেদে ইবনু উমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
২৪০৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، أَخْبَرَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، أَخْبَرَنَا حَمْزَةُ بْنُ أَبِي مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى قَالَ لَقَدْ خَلَقْتُ خَلْقًا أَلْسِنَتُهُمْ أَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ وَقُلُوبُهُمْ أَمَرُّ مِنَ الصَّبِرِ فَبِي حَلَفْتُ لأُتِيحَنَّهُمْ فِتْنَةً تَدَعُ الْحَلِيمَ مِنْهُمْ حَيْرَانًا فَبِي يَغْتَرُّونَ أَمْ عَلَىَّ يَجْتَرِءُونَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عُمَرَ لَا نَعْرِفُهُ إِلَّا مِنْ هَذَا الْوَجْهِ.
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ “আমি এমন মাখলুকও সৃষ্টি করেছি, যাদের মুখের ভাষা মধুর চাইতে মিষ্টি; কিন্তু তাদের হৃদয় তেতো ফলের চাইতেও তিক্ত। আমার সত্তার শপথ! আমি তাদেরকে এমন এক মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে ছেড়ে দেব যে, তা তাদের অধিক সহনশীল ব্যক্তিকেও কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে ছাড়বে। তারা কি আমার সাথে প্রতারণা করছে নাকি আমার প্রতি ধৃষ্টতা প্রদর্শন করছে?
যঈফ, প্রাগুক্ত
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান এবং ইবনু উমার (রাঃ)–এর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৬০. অনুচ্ছেদঃ
রসনা সংযত রাখা বা সংযতবাক হওয়া
২৪০৬
حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، ح وَحَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَيُّوبَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ زَحْرٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا النَّجَاةُ قَالَ “ أَمْسِكْ عَلَيْكَ لِسَانَكَ وَلْيَسَعْكَ بَيْتُكَ وَابْكِ عَلَى خَطِيئَتِكَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! মুক্তির উপায় কি? তিনি বললেনঃ তুমি তোমার রসনা সংযত রাখ, তোমার বাসস্থান যেন তোমার জন্য প্রশস্ত হয় (অর্থাৎ তুমি তোমার বাড়ীতে অবস্থান কর) এবং তোমার গুনাহের জন্য ক্রন্দন কর।
সহীহ্ , সহীহাহ্ (৮৮৮)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৪০৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُوسَى الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي الصَّهْبَاءِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، رَفَعَهُ قَالَ “ إِذَا أَصْبَحَ ابْنُ آدَمَ فَإِنَّ الأَعْضَاءَ كُلَّهَا تُكَفِّرُ اللِّسَانَ فَتَقُولُ اتَّقِ اللَّهَ فِينَا فَإِنَّمَا نَحْنُ بِكَ فَإِنِ اسْتَقَمْتَ اسْتَقَمْنَا وَإِنِ اعْوَجَجْتَ اعْوَجَجْنَا ” .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ، نَحْوَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ وَقَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ وَلَمْ يَرْفَعُوهُ .
حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي الصَّهْبَاءِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ أَحْسَبُهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ نَحْوَهُ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষ সকালে ঘুম হতে উঠার সময় তার সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিনীতভাবে জিহবাকে বলে, তুমি আমাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় কর। আমরা তো তোমার সাথে সম্পৃক্ত। তুমি যদি সোজা পথে দৃঢ় থাক তাহলে আমরাও দৃঢ় থাকতে পারি। আর তুমি যদি বাঁকা পথে যাও তাহলে আমরাও বাঁকা পথে যেতে বাধ্য।
হাসান , মিশকাত, তাহকীক ছানী (৪৮৩৮)।
হান্নাদ-আবু উসামা হতে, তিনি হাম্মাদ ইবনু যাইদের সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের একই রকমভাবে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে এই সূত্রটি মারফূভাবে বর্ণিত হয়নি। এটি মুহাম্মাদ ইবনু মূসার রিওয়ায়াতের চাইতে অনেক বেশি সহীহ্। আবূ ঈসা বলেন, আমরা এই হাদীসটি শুধুমাত্র হাম্মাদ ইবনু যাইদের সূত্রেই জেনেছি। এই হাদীসটি একাধিক বর্ণনাকারী ইবনু যাইদের সূত্রে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু মারফূভাবে নয়। সালিহ ইবনু আবদুল্লাহ-হাম্মাদ ইবনু যাইদ হতে, তিনি আবুস সাহবা হতে, তিনি সাঈদ ইবনু জুবাইর হতে, তিনি আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সূত্রে উক্ত হাদীসের মতোই উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৪০৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّنْعَانِيُّ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ الْمُقَدَّمِيُّ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ يَتَكَفَّلُ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَتَكَفَّلُ لَهُ بِالْجَنَّةِ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَهْلٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ .
সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার দুই ঠোঁটের মাঝখানের বস্তু (জিহ্বা) ও দুই পায়ের মাঝখানের বস্তুর (লজ্জাস্থানের) যামিন হতে পারে (অপব্যবহার হতে সংযত রাখবে), আমি তার জন্য জান্নাতের যামিন হবো।
সহীহ্ , তা’লীকুর রাগীব (৩/১৯৭), যঈফা (২৩০২), বুখারী অনুরূপ।
আবূ হুরাইরা ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সাহ্ল (রাঃ) বর্ণিত এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং এই সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৪০৯
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ وَقَاهُ اللَّهُ شَرَّ مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَشَرَّ مَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى أَبُو حَازِمٍ الَّذِي رَوَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ اسْمُهُ سَلْمَانُ مَوْلَى عَزَّةَ الأَشْجَعِيَّةِ وَهُوَ كُوفِيٌّ وَأَبُو حَازِمٍ الَّذِي رَوَى عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ هُوَ أَبُو حَازِمٍ الزَّاهِدُ مَدَنِيٌّ وَاسْمُهُ سَلَمَةُ بْنُ دِينَارٍ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা যে ব্যক্তিকে তার জিহবা ও লজ্জাস্থানের অকল্যাণ হতে মুক্ত করেছেন, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
হাসান, সহীহ্ , সহীহাহ্ (৫১০)।
আবূ ঈসা বলেন, যে আৰূ হাযিম আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন তার নাম সালমান, আযযা আল-আশজাইয়্যার মুক্তদাস এবং কূফার অধিবাসী। আর যে আবূ হাযিম সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন তিনি হলেন আবূ হাযিম আয-যাহিদ, মাদীনার অধিবাসী এবং তার নাম সালামা ইবনু দীনার। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
২৪১০
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مَاعِزٍ، عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الثَّقَفِيِّ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ حَدِّثْنِي بِأَمْرٍ أَعْتَصِمُ بِهِ . قَالَ ” قُلْ رَبِّيَ اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقِمْ ” . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَخْوَفُ مَا تَخَافُ عَلَىَّ فَأَخَذَ بِلِسَانِ نَفْسِهِ ثُمَّ قَالَ ” هَذَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الثَّقَفِيِّ .
সুফিয়ান ইবনু আবদুল্লাহ আস-সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাকে এমন একটি কথা বলুন, যা আমি ধারণ করতে পারি। তিনি বললেনঃ তুমি বল, আল্লাহ্ই আমার রব (প্রভু) তারপর এতে সুদৃঢ় থাকো। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, আমি আবার বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনার দৃষ্টিতে আমার জন্য সর্বাধিক আশংকাজনক বস্তু কোনটি? তিনি স্বীয় জিহবা ধরে বললেনঃ এই যে, এটি।
সহীহ্ , ইবনু মা-জাহ (৩৯৭২), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদীসটি সুফিয়ান ইবনু আব্দুল্লাহ আস-সাকাফী (রাঃ) হতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬১. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ্র যিকিরশুন্য কথায় অন্তর কঠিন হয়ে যায়
২৪১১
حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ، مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي ثَلْجٍ الْبَغْدَادِيُّ صَاحِبُ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَاطِبٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ تُكْثِرُوا الْكَلاَمَ بِغَيْرِ ذِكْرِ اللَّهِ فَإِنَّ كَثْرَةَ الْكَلاَمِ بِغَيْرِ ذِكْرِ اللَّهِ قَسْوَةٌ لِلْقَلْبِ وَإِنَّ أَبْعَدَ النَّاسِ مِنَ اللَّهِ الْقَلْبُ الْقَاسِي ” .
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي النَّضْرِ، حَدَّثَنِي أَبُو النَّضْرِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَاطِبٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَاطِبٍ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার যিকির ছাড়া বেশী কথা বলো না। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলার যিকির ছাড়া বেশী কথা বললে অন্তর কঠিন হয়ে যায়। আর নিঃসন্দেহে কঠিন অন্তরের লোকই আল্লাহ্ তা’আলা থেকে সবচেয়ে বেশী দূরে থাকে।
যঈফ, যঈফা (৯২০), মিশকাত, তাহকীক ছানী (২২৭৬)
আবূ বাকর ইবনু আবুন নাযর–আবুন নাযর হতে তিনি ইবরাহীম ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু হাতিব হতে তিনি আবদুল্লাহ ইবনু দীনার হতে তিনি ইবনু উমার (রাঃ) হতে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উপরোক্ত হাদীসের মতই হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। ইবরাহীম ইবনু আব্দিল্লাহ ইবনু হাতিবের সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদিস জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৬২. অনুচ্ছেদঃ
উপকারী কথাই লাভজনক
২৪১২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَزِيدَ بْنِ خُنَيْسٍ الْمَكِّيُّ، قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ حَسَّانَ الْمَخْزُومِيَّ، قَالَ حَدَّثَتْنِي أُمُّ صَالِحٍ، عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ شَيْبَةَ، عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ كُلُّ كَلاَمِ ابْنِ آدَمَ عَلَيْهِ لاَ لَهُ إِلاَّ أَمْرٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ نَهْىٌ عَنْ مُنْكَرٍ أَوْ ذِكْرُ اللَّهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ خُنَيْسٍ .
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মানুষের প্রতিটি কথা তার জন্য অপকারী, উপকারী নয়। তবে সৎকাজের আদেশ, অসৎকাজের নিষেধ এবং আল্লাহ্ তা’আলার যিকিরই তার জন্য লাভজনক।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩৯৭৪)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। আমরা শুধুমাত্র মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াযীদ ইবনু খুনাইসের রিওয়ায়াত হিসাবে এ হাদীসটি জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৬৩. অনুচ্ছেদঃ
প্রত্যেক দাবিদারের দাবি পূরণ করতে হবে
২৪১৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الْعُمَيْسِ، عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ آخَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ سَلْمَانَ وَبَيْنَ أَبِي الدَّرْدَاءِ فَزَارَ سَلْمَانُ أَبَا الدَّرْدَاءِ فَرَأَى أُمَّ الدَّرْدَاءِ مُتَبَذِّلَةً فَقَالَ مَا شَأْنُكِ مُتَبَذِّلَةً قَالَتْ إِنَّ أَخَاكَ أَبَا الدَّرْدَاءِ لَيْسَ لَهُ حَاجَةٌ فِي الدُّنْيَا . قَالَ فَلَمَّا جَاءَ أَبُو الدَّرْدَاءِ قَرَّبَ إِلَيْهِ طَعَامًا فَقَالَ كُلْ فَإِنِّي صَائِمٌ . قَالَ مَا أَنَا بِآكِلٍ حَتَّى تَأْكُلَ . قَالَ فَأَكَلَ فَلَمَّا كَانَ اللَّيْلُ ذَهَبَ أَبُو الدَّرْدَاءِ لِيَقُومَ فَقَالَ لَهُ سَلْمَانُ نَمْ . فَنَامَ ثُمَّ ذَهَبَ يَقُومُ فَقَالَ لَهُ نَمْ . فَنَامَ فَلَمَّا كَانَ عِنْدَ الصُّبْحِ قَالَ لَهُ سَلْمَانُ قُمِ الآنَ فَقَامَا فَصَلَّيَا فَقَالَ إِنَّ لِنَفْسِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَلِرَبِّكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَلِضَيْفِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لأَهْلِكَ عَلَيْكَ حَقًّا فَأَعْطِ كُلَّ ذِي حَقٍّ حَقَّهُ . فَأَتَيَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَا ذَلِكَ فَقَالَ لَهُ “ صَدَقَ سَلْمَانُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو الْعُمَيْسِ اسْمُهُ عُتْبَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَهُوَ أَخُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمَسْعُودِيِّ .
আবূ জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালমান (ফারসী) ও আবুদ দারদা (রাঃ)-এর মধ্যে ভাইয়ের সম্পর্ক তৈরী করে দেন। কোন একদিন আবুদ দারদা (রাঃ)-এর সাথে সালমান (রাঃ) দেখা করতে আসেন। তখন তিনি তার স্ত্রী উম্মুদ দারদাকে খুবই সাধারণ জামা-কাপড় পরে থাকাবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রশ্ন করেন, আপনি এরূপ সাধারণ পোশাকে কেন? তিনি বললেন, আপনার ভাই আবুদ দারদার তো দুনিয়ার কিছু প্রয়োজন নেই। বর্ণনাকারী বলেন, আবুদ দারদা (রাঃ) এরই মধ্যে বাড়ী ফিরে আসলেন এবং তার (মেহমানের) সামনে খাবার পরিবেশন করে বললেন, আপনি খেয়ে নিন, আমি রোযা রেখেছি। তিনি বললেন, আপনি না খাওয়া পর্যন্ত আমি খাব না। তারপর তিনি খাবার খেলেন। রাত গভীর হলে আবুদ দারদা (রাঃ) নামায আদায় করার জন্য উঠেন। সালমান (রাঃ) তাকে বললেন, এখন ঘুমান। সুতরাং তিনি ঘুমালেন। কিছুক্ষণ পর তিনি পুনরায় নামায আদায় করতে উঠলে এবারো তিনি বললেন, ঘুমিয়ে থাকুন (রাত অনেক বাকী)। কাজেই তিনি ঘুমিয়ে গেলেন। তারপর ফজরের সময় ঘনিয়ে এলে সালমান (রাঃ) তাকে বললেন, এখন উঠুন। তারপর দু’জনেই উঠে (তাহাজ্জুদ) নামায আদায় করলেন। তারপর তিনি বললেন, আপনার উপর আপনার দেহের প্রাপ্য (অধিকার) আছে এবং আপনার রবের প্রাপ্য (অধিকার) আছে, মেহমানের প্রাপ্য (অধিকার) আছে এবং আপনার পরিবারের (অধিকার) আছে। অতএব, প্রত্যেক হাকদারকে তার প্রাপ্য (অধিকার) প্রদান করুন। তারপর তারা এ ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন। তিনি বললেনঃ সালমান ঠিকই বলেছে।
সহীহ্ , মুখতাসার বুখারী (৯৬৫), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্। আবুল উমাইস-এর নাম উতবা ইবনু আবদুল্লাহ। তিনি আবদুর রাহমান ইবনু আবদুল্লাহ আল-মাসঊদীর ভাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪. অনুচ্ছেদঃ
আইশা ও মুআবিয়া (রাঃ)-এর পত্রালাপ
২৪১৪
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ عَبْدِ الْوَهَّابِ بْنِ الْوَرْدِ، عَنْ رَجُلٍ، مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ قَالَ كَتَبَ مُعَاوِيَةُ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ رضى الله عنها أَنِ اكْتُبِي إِلَىَّ كِتَابًا تُوصِينِي فِيهِ وَلاَ تُكْثِرِي عَلَىَّ . فَكَتَبَتْ عَائِشَةُ رضى الله عنها إِلَى مُعَاوِيَةَ سَلاَمٌ عَلَيْكَ أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنِ الْتَمَسَ رِضَاءَ اللَّهِ بِسَخَطِ النَّاسِ كَفَاهُ اللَّهُ مُؤْنَةَ النَّاسِ وَمَنِ الْتَمَسَ رِضَاءَ النَّاسِ بِسَخَطِ اللَّهِ وَكَلَهُ اللَّهُ إِلَى النَّاسِ ” . وَالسَّلاَمُ عَلَيْكَ .
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا كَتَبَتْ إِلَى مُعَاوِيَةَ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِمَعْنَاهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
জনৈক মাদীনাবাসী থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময় উম্মুল মু’মিনীন আইশা (রাঃ)-কে মু’আবিয়া (রাঃ) লিখে পাঠান : আমাকে লিখিতভাবে কিছু উপদেশ দিন, তবে তা যেন দীর্ঘ না হয়। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, আইশা (রাঃ) মু’আবিয়া (রাঃ)-কে লিখলেন : আপনাকে সালাম। তারপর এই যে, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তা’আলার সন্তুষ্টি আকাঙ্খা করে তা মানুষের অসন্তুষ্টি হলেও, মানুষের দুঃখ-কষ্ট হতে বাঁচানোর জন্য আল্লাহ্ তা’আলাই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। আর যে ব্যক্তি মানুষের সন্তুষ্টি আশা করে আল্লাহ্ তা’আলাকে অসন্তুষ্ট করে হলেও, আল্লাহ্ তা’আলা তাকে মানুষের দায়িত্বে ছেড়ে দেন। আপনাকে আবারো সালাম।
সহীহ্ , সহীহাহ্ (২৩১১), তাখরীজ তাহাভীয়া (২৭৮)।
মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহ্ইয়া-মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ হতে, তিনি সুফিয়ান সাওরী হতে, তিনি হিশাম ইবনু উরওয়া হতে, তিনি উরওয়া হতে, তিনি আইশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি মু’আবিয়াকে চিঠি লিখলেন.. উপরোক্ত হাদীসের মতোই, তবে তা মারফূ হিসাবে নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস