২৭. অধ্যায়ঃ
বিধর্মী শাসকদের নিকট মহামহিম আল্লাহর প্রতি আহবান জানিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পত্রাবলী
৪৫০১
حَدَّثَنِي يُوسُفُ بْنُ حَمَّادٍ الْمَعْنِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَتَبَ إِلَى كِسْرَى وَإِلَى قَيْصَرَ وَإِلَى النَّجَاشِيِّ وَإِلَى كُلِّ جَبَّارٍ يَدْعُوهُمْ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى وَلَيْسَ بِالنَّجَاشِيِّ الَّذِي صَلَّى عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘কিসরা’ (পারস্যের সম্রাট), ‘কায়সার’ (রোমের সম্রাট) ও নাজাশী এবং অন্যান্য প্রভাবশালী শাসকগণের নিকট পত্র লিখেন, যাতে তিনি তাদের আল্লাহর দিকে দা’ওয়াত দেন। ইনি সে নাজাশী নন, যাঁর জানাযার সলাত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আদায় করেছিলেন। (ই.ফা. ৪৪৫৮, ই.সে. ৪৪৬০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫০২
وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الرُّزِّيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَطَاءٍ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . بِمِثْلِهِ وَلَمْ يَقُلْ وَلَيْسَ بِالنَّجَاشِي الَّذِي صَلَّى عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি এ কথা বলেননি যে, “তিনি সে নাজাশী নন, যাঁর জানাযার সলাত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আদায় করেছিলেন।” (ই.ফা. ৪৪৫৯, ই.সে. ৪৪৬১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫০৩
وَحَدَّثَنِيهِ نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، أَخْبَرَنِي أَبِي، حَدَّثَنِي خَالِدُ بْنُ قَيْسٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، وَلَمْ يَذْكُرْ وَلَيْسَ بِالنَّجَاشِيِّ الَّذِي صَلَّى عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উল্লিখিত হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি এ কথা উল্লেখ করেননি যে, “তিনি সে নাজাশী নন, যাঁর জানাযার সলাত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আদায় করেছিলেন।” (ই.ফা. ৪৪৬০, ই.সে. ৪৪৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮. অধ্যায়ঃ
হুনায়ন যুদ্ধ
৪৫০৪
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي كَثِيرُ بْنُ عَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، قَالَ قَالَ عَبَّاسٌ شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ حُنَيْنٍ فَلَزِمْتُ أَنَا وَأَبُو سُفْيَانَ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ نُفَارِقْهُ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى بَغْلَةٍ لَهُ بَيْضَاءَ أَهْدَاهَا لَهُ فَرْوَةُ بْنُ نُفَاثَةَ الْجُذَامِيُّ فَلَمَّا الْتَقَى الْمُسْلِمُونَ وَالْكُفَّارُ وَلَّى الْمُسْلِمُونَ مُدْبِرِينَ فَطَفِقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَرْكُضُ بَغْلَتَهُ قِبَلَ الْكُفَّارِ قَالَ عَبَّاسٌ وَ أَنَا آخِذٌ بِلِجَامِ بَغْلَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَكُفُّهَا إِرَادَةَ أَنْ لاَ تُسْرِعَ وَأَبُو سُفْيَانَ آخِذٌ بِرِكَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَىْ عَبَّاسُ نَادِ أَصْحَابَ السَّمُرَةِ ” . فَقَالَ عَبَّاسٌ وَكَانَ رَجُلاً صَيِّتًا فَقُلْتُ بِأَعْلَى صَوْتِي أَيْنَ أَصْحَابُ السَّمُرَةِ قَالَ فَوَاللَّهِ لَكَأَنَّ عَطْفَتَهُمْ حِينَ سَمِعُوا صَوْتِي عَطْفَةُ الْبَقَرِ عَلَى أَوْلاَدِهَا . فَقَالُوا يَا لَبَّيْكَ يَا لَبَّيْكَ – قَالَ – فَاقْتَتَلُوا وَالْكُفَّارَ وَالدَّعْوَةُ فِي الأَنْصَارِ يَقُولُونَ يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ قَالَ ثُمَّ قُصِرَتِ الدَّعْوَةُ عَلَى بَنِي الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ فَقَالُوا يَا بَنِي الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ يَا بَنِي الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ . فَنَظَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى بَغْلَتِهِ كَالْمُتَطَاوِلِ عَلَيْهَا إِلَى قِتَالِهِمْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” هَذَا حِينَ حَمِيَ الْوَطِيسُ ” . قَالَ ثُمَّ أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَصَيَاتٍ فَرَمَى بِهِنَّ وُجُوهَ الْكُفَّارِ ثُمَّ قَالَ ” انْهَزَمُوا وَرَبِّ مُحَمَّدٍ ” . قَالَ فَذَهَبْتُ أَنْظُرُ فَإِذَا الْقِتَالُ عَلَى هَيْئَتِهِ فِيمَا أَرَى – قَالَ – فَوَاللَّهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ رَمَاهُمْ بِحَصَيَاتِهِ فَمَا زِلْتُ أَرَى حَدَّهُمْ كَلِيلاً وَأَمْرَهُمْ مُدْبِرًا .
’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হুনায়নের যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। আমি এবং আবূ সুফ্ইয়ান ইবনু হারিস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর একেবারে সঙ্গেই ছিলাম। আমরা কখনও তাঁর থেকে আলাদা হইনি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি সাদা বর্ণের খচ্চরের উপর আরোহণ করেছিলেন। সে খচ্চরটি ফারওয়াহ্ ইবনু নুফাসাহ্ হুযামী তাঁকে হাদ্ইয়্যাহ্ স্বরূপ দিয়েছিলেন। (তাকে দুলদুল নামে ডাকা হতো।) যখন মুসলিম এবং কাফির পরস্পর সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হল তখন মুসলিমগণ (যুদ্ধের এক পর্যায়ে) পেছনের দিকে পলায়ন করতে লাগলেন। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় পায়ের গোড়ালি দিয়ে নিজের খচ্চরকে আঘাত করে কাফিরদের দিকে ধাবিত করছিলেন। ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি তাঁর খচ্চরের লাগাম ধরে রেখেছিলাম এবং একে থামিয়ে রাখার চেষ্টা করছিলাম যেন দ্রুত গতিতে অগ্রসর হতে না পারে। আর আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ) তাঁর খচ্চরের ‘রেকাব’ (হাউদাজের বন্ধনের পট্টি) ধরে রেখেছিলেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে ‘আব্বাস! আসহাবে সামুরাকে আহবান করো। ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন- আর তিনি ছিলেন উচ্চ আওয়াজের অধিকারী ব্যক্তি-তখন আমি উচ্চৈঃস্বরে আওয়াজ দিয়ে বললাম, হে আসহাবে সামুরাহ্! তোমরা কোথায় যাচ্ছ? তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! তা শুনামাত্র তারা এমনভাবে প্রত্যাবর্তন করতে শুরু করলেন যেমনভাবে গাভী তার বাচ্চার আওয়াজ শুনে দ্রুত দৌড়ে আসে। এবং তারা বলতে লাগল, আমরা আপনার নিকট হাযির, আমরা আপনার নিকট হাযির। রাবী বলেন, এরপর তারা কাফিরদের সাথে পুনরায় যুদ্ধে লিপ্ত হন। তিনি আনসারদেরকেও এমনিভাবে আহবান করলেন যে, হে আনসারগণ! রাবী বলেন, এরপর আহবান সমাপ্ত করা হলো বানী হারিস ইবনু খাযরাজের মাধ্যমে। (তাঁরা আহবান করলেন, হে বানী হারিস ইবনুল খাযরাজ।) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় খচ্চরের উপর আরোহিত অবস্থায় আপন ঘাড় উচুঁ করে তাদের যুদ্ধের অবস্থা দেখেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটাই হল যুদ্ধের উত্তেজনাপূর্ণ চরম মুহূর্ত। রাবী বলেন, এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়েকটি পাথরের টুকরা হাতে নিলেন এবং এগুলো তিনি বিধর্মীদের মুখের উপর ছুঁড়ে মারলেন। এরপর বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর রবের কসম! তারা পরাজিত হয়েছে। ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধের অবস্থান পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখলাম যে, যথারীতি যুদ্ধ চলছে। এমন সময় তিনি পাথরের টুকরাগুলো নিক্ষেপ করলেন। আল্লাহর শপথ! তখন হঠাৎ দেখি যে, কাফিরদের শক্তি নিস্তেজ হয়ে গেল এবং তাদের যুদ্ধের মোড় ঘুরে গেল। (ই.ফা. ৪৪৬১, ই.সে. ৪৪৬৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫০৫
وَحَدَّثَنَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، جَمِيعًا عَنْ عَبْدِ، الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . نَحْوَهُ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ فَرْوَةُ بْنُ نُعَامَةَ الْجُذَامِيُّ . وَقَالَ “ انْهَزَمُوا وَرَبِّ الْكَعْبَةِ انْهَزَمُوا وَرَبِّ الْكَعْبَةِ ” . وَزَادَ فِي الْحَدِيثِ حَتَّى هَزَمَهُمُ اللَّهُ قَالَ وَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَرْكُضُ خَلْفَهُمْ عَلَى بَغْلَتِهِ .
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই সূত্রে উল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি ‘ফারওয়াহ্ ইবনু নু’আমাহ্ জুযামী’ কথাটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন যে, তারা পরাজিত হয়েছে, কা’বার রবের কসম! তারা পরাজিত হয়েছে কা’বার রবের কসম!” তিনি তাঁর হাদীসে এ কথাটিও বাড়তি বর্ণনা করেছেন যে, “অবশেষে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে পরাজিত করলেন”।
রাবী বলেন, আমি যেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে তাদের পিছন থেকে দেখলাম যে, তিনি স্বীয় খচ্চরের উপর থেকে নিজ পায়ের গোড়ালি দিয়ে একে প্রহার করছিলেন। (দ্রুত গতিতে চলার জন্য।) (ই.ফা. ৪৪৬২, ই.সে. ৪৪৬৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫০৬
’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি হুনায়নের যুদ্ধের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে ছিলাম। …এরপর তিনি উল্লিখিত হাদীসটি বর্ণনা করেন। তবে ইউনুস এবং মা’মার (রাঃ) বর্ণিত হাদীস বর্ণনার দিক দিয়ে অধিক বিস্তারিত ও পরিপূর্ণ। (ই.ফা. ৪৪৬৩, ই.সে. ৪৪৬৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫০৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو خَيْثَمَةَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ لِلْبَرَاءِ يَا أَبَا عُمَارَةَ أَفَرَرْتُمْ يَوْمَ حُنَيْنٍ قَالَ لاَ وَاللَّهِ مَا وَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلَكِنَّهُ خَرَجَ شُبَّانُ أَصْحَابِهِ وَأَخِفَّاؤُهُمْ حُسَّرًا لَيْسَ عَلَيْهِمْ سِلاَحٌ أَوْ كَثِيرُ سِلاَحٍ فَلَقُوا قَوْمًا رُمَاةً لاَ يَكَادُ يَسْقُطُ لَهُمْ سَهْمٌ جَمْعَ هَوَازِنَ وَبَنِي نَصْرٍ فَرَشَقُوهُمْ رَشْقًا مَا يَكَادُونَ يُخْطِئُونَ فَأَقْبَلُوا هُنَاكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى بَغْلَتِهِ الْبَيْضَاءِ وَأَبُو سُفْيَانَ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ يَقُودُ بِهِ فَنَزَلَ فَاسْتَنْصَرَ وَقَالَ “ أَنَا النَّبِيُّ لاَ كَذِبْ أَنَا ابْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبْ ” . ثُمَّ صَفَّهُمْ .
আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বারা (রাঃ) –কে বললেন, হে আবূ ‘উমারাহ! আপনারা কি হুনায়নের যুদ্ধে পলায়ন করেছিলেন? তিনি বললেন, না। আল্লাহর কসম! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পলায়ন করেননি। বরং তাঁর কয়েকজন হালকা পাতলা, চালাক-চতুর তরুণ সাথী, অস্ত্র-শস্ত্র ও বেশী হাতিয়ার বিহীন তাঁরা সরে পড়েন। তাঁরা এমন একদল তীরন্দাযের মুকাবিলা করছিলেন, যাদের তীরের লক্ষ্যস্থল ব্যর্থ হবার নয়। তারা ছিল হাওয়াযিন ও নাযর গোত্রের লোক। তারা এমনভাবে তীর ছুঁড়ছিল যে, লক্ষ্যস্থল ব্যর্থ হওয়ার ছিল না। তখন তাঁরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর দিকে এগিয়ে এলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে সময় তাঁর সাদা রঙ্গের খচ্চরের উপর ছিলেন। আর আবূ সুফইয়ান ইবনু হারিস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) একে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি নামলেন এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেন। রাবী বলেন, যেন তিনি বলেছিলেনঃ “আমি অবশ্যই নাবী, এ কথা মিথ্যা নয়। আমি ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব”। তারপর তিনি স্বীয় সেনাদলকে শ্রেণীবদ্ধ করলেন। (ই.ফা. ৪৪৬৪, ই.সে. ৪৪৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫০৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ جَنَابٍ الْمِصِّيصِيُّ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ زَكَرِيَّاءَ، عَنْ أَبِي، إِسْحَاقَ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى الْبَرَاءِ فَقَالَ أَكُنْتُمْ وَلَّيْتُمْ يَوْمَ حُنَيْنٍ يَا أَبَا عُمَارَةَ فَقَالَ أَشْهَدُ عَلَى نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا وَلَّى وَلَكِنَّهُ انْطَلَقَ أَخِفَّاءُ مِنَ النَّاسِ وَحُسَّرٌ إِلَى هَذَا الْحَىِّ مِنْ هَوَازِنَ وَهُمْ قَوْمٌ رُمَاةٌ فَرَمَوْهُمْ بِرِشْقٍ مِنْ نَبْلٍ كَأَنَّهَا رِجْلٌ مِنْ جَرَادٍ فَانْكَشَفُوا فَأَقْبَلَ الْقَوْمُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو سُفْيَانَ بْنُ الْحَارِثِ يَقُودُ بِهِ بَغْلَتَهُ فَنَزَلَ وَدَعَا وَاسْتَنْصَرَ وَهُوَ يَقُولُ “ أَنَا النَّبِيُّ لاَ كَذِبْ أَنَا ابْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبْ اللَّهُمَّ نَزِّلْ نَصْرَكَ ” . قَالَ الْبَرَاءُ كُنَّا وَاللَّهِ إِذَا احْمَرَّ الْبَأْسُ نَتَّقِي بِهِ وَإِنَّ الشُّجَاعَ مِنَّا لَلَّذِي يُحَاذِي بِهِ . يَعْنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বারা (রাঃ) –এর নিকট এসে বলল, আপনারা কি হুনায়নের দিনে পলায়ন করেছিলেন? তখন তিনি বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পলায়ন করেননি। কিন্তু কিছু সংখ্যক চালাকচতুর হালকাপাতলা লোক ‘হাওয়াযিন’ গোত্রের দিকে গিয়েছিল। আর তারা ছিল তীরন্দাজ সম্প্রদায়। তারা তাদের প্রতি তীর ছুঁড়লো, যেন সেগুলো পঙ্গপালের পায়ের মত। তখন তারা পিছন দিকে হটে গেল। আর লোকেরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর কাছে এগিয়ে এলো। আবূ সুফইয়ান ইবনু হারিস (রাঃ) তাঁর খচ্চর টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি অবতরণ করলেন এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে দু’আ করলেন এবং তিনি বললেনঃ আমি অবশ্যই আল্লাহর নাবী, এ কথা মিথ্যে নয়। আমি ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব। “ইয়া আল্লাহ্! আপনার সাহায্য অবতীর্ণ করুন”।
বারা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! যুদ্ধের উত্তেজনা যখন ঘোরতর হয়ে উঠত, তখন আমরা তাঁর মাধ্যমে আত্মরক্ষা করতাম। নিশ্চয়ই আমাদের মাঝে বীরপুরুষ তিনিই যাঁকে যুদ্ধে তাঁর সামনে রাখা হয়, অর্থাৎ- নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। (ই.ফা. ৪৪৬৫, ই.সে. ৪৪৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫০৯
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ، بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ، وَسَأَلَهُ، رَجُلٌ مِنْ قَيْسٍ أَفَرَرْتُمْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ حُنَيْنٍ فَقَالَ الْبَرَاءُ وَلَكِنْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَفِرَّ وَكَانَتْ هَوَازِنُ يَوْمَئِذٍ رُمَاةً وَإِنَّا لَمَّا حَمَلْنَا عَلَيْهِمُ انْكَشَفُوا فَأَكْبَبْنَا عَلَى الْغَنَائِمِ فَاسْتَقْبَلُونَا بِالسِّهَامِ وَلَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى بَغْلَتِهِ الْبَيْضَاءِ وَإِنَّ أَبَا سُفْيَانَ بْنَ الْحَارِثِ آخِذٌ بِلِجَامِهَا وَهُوَ يَقُولُ “ أَنَا النَّبِيُّ لاَ كَذِبْ أَنَا ابْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبْ ” .
আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বারা (রাঃ)–এর কাছে শুনেছি, বানী কায়সের এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিল, আপনারা কি হুনায়নের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে পলায়ন করেছিলেন? তখন বারা (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবশ্য পলায়ন করেননি। (তবে ব্যাপার এই ছিল যে,) ‘হাওয়াযিন গোত্রের লোকেরা দক্ষ তীরন্দাজ ছিল। আমরা যখন তাদের উপর আক্রমণ করলাম তখন তারা পলায়ন করল। এমন সময় আমরা গনীমাতের মালের দিকে ঝুঁকে পড়লাম। তখন তারা ফিরে এসে আমাদের উপর অতর্কিতে তীর ছুঁড়তে শুরু করল। আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে তাঁর সাদা বর্ণের খচ্চরের উপর দেখতে পেলাম। আর আবূ সুফইয়ান ইবনু হারিস (রাঃ) খচ্চরের লাগাম ধরে রেখেছিলেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেনঃ “আমি অবশ্যই নাবী, এ কথা মিথ্যে নয়। আমি ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব”। (ই.ফা. ৪৪৬৬, ই.সে. ৪৪৬৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫১০
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ خَلاَّدٍ قَالُوا حَدَّثَنَا يَحْيَى، بْنُ سَعِيدٍ عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ قَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا أَبَا عُمَارَةَ . فَذَكَرَ الْحَدِيثَ وَهُوَ أَقَلُّ مِنْ حَدِيثِهِمْ وَهَؤُلاَءِ أَتَمُّ حَدِيثًا .
বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাঁকে এক ব্যক্তি বলল, হে আবূ ‘উমারাহ! …. তারপর অবশিষ্ট হাদীস বর্ণনা করেন। এ হাদীস ছিল তাঁদের বর্ণিত হাদীস থেকে সংক্ষিপ্ত। আর তাঁদের হাদীস ছিল পূর্ণ। (ই.ফা. ৪৪৬৭, ই.সে. ৪৪৬৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫১১
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي إِيَاسُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، غَزَوْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حُنَيْنًا فَلَمَّا وَاجَهْنَا الْعَدُوَّ تَقَدَّمْتُ فَأَعْلُو ثَنِيَّةً فَاسْتَقْبَلَنِي رَجُلٌ مِنَ الْعَدُوِّ فَأَرْمِيهِ بِسَهْمٍ فَتَوَارَى عَنِّي فَمَا دَرَيْتُ مَا صَنَعَ وَنَظَرْتُ إِلَى الْقَوْمِ فَإِذَا هُمْ قَدْ طَلَعُوا مِنْ ثَنِيَّةٍ أُخْرَى فَالْتَقَوْا هُمْ وَصَحَابَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَوَلَّى صَحَابَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَرْجِعُ مُنْهَزِمًا وَعَلَىَّ بُرْدَتَانِ مُتَّزِرًا بِإِحْدَاهُمَا مُرْتَدِيًا بِالأُخْرَى فَاسْتَطْلَقَ إِزَارِي فَجَمَعْتُهُمَا جَمِيعًا وَمَرَرْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُنْهَزِمًا وَهُوَ عَلَى بَغْلَتِهِ الشَّهْبَاءِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لَقَدْ رَأَى ابْنُ الأَكْوَعِ فَزَعًا ” . فَلَمَّا غَشُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَزَلَ عَنِ الْبَغْلَةِ ثُمَّ قَبَضَ قَبْضَةً مِنْ تُرَابٍ مِنَ الأَرْضِ ثُمَّ اسْتَقْبَلَ بِهِ وُجُوهَهُمْ فَقَالَ ” شَاهَتِ الْوُجُوهُ ” . فَمَا خَلَقَ اللَّهُ مِنْهُمْ إِنْسَانًا إِلاَّ مَلأَ عَيْنَيْهِ تُرَابًا بِتِلْكَ الْقَبْضَةِ فَوَلَّوْا مُدْبِرِينَ فَهَزَمَهُمُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَقَسَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غَنَائِمَهُمْ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ .
সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা হুনায়নের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সঙ্গে থেকে যুদ্ধ করেছি। যখন আমরা শত্রুদের সম্মুখীন হলাম, তখন এ পর্যায়ে আমি অগ্রসর হয়ে একটি টিলার উপর উঠলাম। তখন শত্রুদের এক ব্যক্তি আমার মুকাবিলায় অগ্রসর হলো। আমি একটি তীর নিক্ষেপ করলাম, তখন সে আমার থেকে আত্মগোপন করল। আমি তখন বুঝতে পারিনি তার ব্যাপারটি কী হয়েছে। তারপর যখন শত্রুদলের প্রতি লক্ষ্য করলাম, তখন দেখতে পেলাম যে, তারা অপর এক টিলায় আরোহণ করেছে। তারপর তারা এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সাথীরা সামনা-সামনি হলো। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সাহাবাগণ পিছনে সরে পড়ল। আমি পরাজিত অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করলাম। তখন আমার পরিধানে ছিল দু’টি চাদর। তন্মধ্যে একটি চাদর ছিল বাঁধা অবস্থায় এবং অপরটি ছিল খোলা। এক পর্যায়ে আমার লুঙ্গিটি খুলে গেল। তখন আমি সে দু’টি একত্র করলাম এবং পরাজিত অবস্থায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর কাছ দিয়ে গমন করলাম। আর তিনি তখন তাঁর সাদা রং-এর খচ্চরের উপর আরোহিত অবস্থায় ছিলেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইবনুল আকওয়া সন্ত্রস্ত অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করেছে। এরপর শত্রুরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে ঘিরে ফেললো। তখন তিনি স্বীয় খচ্চর থেকে অবতরণ করলেন। তারপর এক মুষ্টি মাটি যমীন থেকে তুলে নিলেন। এরপর তাদের মুখমণ্ডলে তা নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, তাদের মুখমণ্ডল বিকৃত হয়ে গেছে। এরপর তাদের সকল মানুষের দু’চোখ-ই সে এক মুষ্টি মাটির ধূলায় ভরে গেল। তারা পশ্চাৎ দিকে পলায়ন করলো। আল্লাহ্ তা’আলা এ দ্বারাই তাদেরকে পরাস্ত করলেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গনীমাতের সম্পদ মুসলিমদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। (ই.ফা. ৪৪৬৮, ই.সে. ৪৪৭০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯. অধ্যায়ঃ
তায়িফের যুদ্ধ
৪৫১২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ جَمِيعًا عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي الْعَبَّاسِ الشَّاعِرِ الأَعْمَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، بْنِ عَمْرٍو قَالَ حَاصَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَهْلَ الطَّائِفِ فَلَمْ يَنَلْ مِنْهُمْ شَيْئًا فَقَالَ ” إِنَّا قَافِلُونَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ ” . قَالَ أَصْحَابُهُ نَرْجِعُ وَلَمْ نَفْتَتِحْهُ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” اغْدُوا عَلَى الْقِتَالِ ” . فَغَدَوْا عَلَيْهِ فَأَصَابَهُمْ جِرَاحٌ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّا قَافِلُونَ غَدًا ” . قَالَ فَأَعْجَبَهُمْ ذَلِكَ فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তায়িফবাসীকে অবরোধ করলেন এবং এতে তিনি তাদের কাছ থেকে কিছু পেলেন না। এরপর তিনি বললেন, ইনশাআল্লাহ্ আমরা ফিরে যাবো। তখন তাঁর সাহাবীগণ বললেন, আমরা কি প্রত্যাবর্তন করবো অথচ আমরা তায়িফ জয় করলাম না। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বললেন, আগামীকাল সকালে তোমরা যুদ্ধ কর। সুতরাং তারা পরবর্তী দিন সকালে যুদ্ধ করল এবং অনেকেই আহত হলো। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমরা আগামীকাল প্রত্যাবর্তন করবো। রাবী বলেন, এতে তাঁরা খুশি হলেন। ফলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেসে দিলেন। (ই.ফা. ৪৪৬৯, ই.সে. ৪৪৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০. অধ্যায়ঃ
বদরের যুদ্ধ
৪৫১৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَاوَرَ حِينَ بَلَغَهُ إِقْبَالُ أَبِي سُفْيَانَ قَالَ فَتَكَلَّمَ أَبُو بَكْرٍ فَأَعْرَضَ عَنْهُ ثُمَّ تَكَلَّمَ عُمَرُ فَأَعْرَضَ عَنْهُ فَقَامَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ فَقَالَ إِيَّانَا تُرِيدُ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ أَمَرْتَنَا أَنْ نُخِيضَهَا الْبَحْرَ لأَخَضْنَاهَا وَلَوْ أَمَرْتَنَا أَنْ نَضْرِبَ أَكْبَادَهَا إِلَى بَرْكِ الْغِمَادِ لَفَعَلْنَا – قَالَ – فَنَدَبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم النَّاسَ فَانْطَلَقُوا حَتَّى نَزَلُوا بَدْرًا وَوَرَدَتْ عَلَيْهِمْ رَوَايَا قُرَيْشٍ وَفِيهِمْ غُلاَمٌ أَسْوَدُ لِبَنِي الْحَجَّاجِ فَأَخَذُوهُ فَكَانَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُونَهُ عَنْ أَبِي سُفْيَانَ وَأَصْحَابِهِ . فَيَقُولُ مَا لِي عِلْمٌ بِأَبِي سُفْيَانَ وَلَكِنْ هَذَا أَبُو جَهْلٍ وَعُتْبَةُ وَشَيْبَةُ وَأُمَيَّةُ بْنُ خَلَفٍ . فَإِذَا قَالَ ذَلِكَ ضَرَبُوهُ فَقَالَ نَعَمْ أَنَا أُخْبِرُكُمْ هَذَا أَبُو سُفْيَانَ . فَإِذَا تَرَكُوهُ فَسَأَلُوهُ فَقَالَ مَا لِي بِأَبِي سُفْيَانَ عِلْمٌ وَلَكِنْ هَذَا أَبُو جَهْلٍ وَعُتْبَةُ وَأُمَيَّةُ بْنُ خَلَفٍ فِي النَّاسِ . فَإِذَا قَالَ هَذَا أَيْضًا ضَرَبُوهُ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَائِمٌ يُصَلِّي فَلَمَّا رَأَى ذَلِكَ انْصَرَفَ قَالَ ” وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَتَضْرِبُوهُ إِذَا صَدَقَكُمْ وَتَتْرُكُوهُ إِذَا كَذَبَكُمْ ” . قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” هَذَا مَصْرَعُ فُلاَنٍ ” . قَالَ وَيَضَعُ يَدَهُ عَلَى الأَرْضِ هَا هُنَا وَهَا هُنَا قَالَ فَمَا مَاطَ أَحَدُهُمْ عَنْ مَوْضِعِ يَدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর কাছে যখন আবূ সুফইয়ানের (মাদীনায়) অগ্রাভিযানের সংবাদ পৌঁছল তখন তিনি সাহাবীদের সাথে এ নিয়ে পরামর্শ করলেন। আবূ বাকর (রাঃ) এ ব্যাপারে কথা বললেন, কিন্তু তিনি তাঁর কথার উত্তর দিলেন না। এরপর ‘উমার (রাঃ) কথা বললেন। তিনি তার কথারও কোন উত্তর দিলেন না। পরিশেষে সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ (রাঃ) দণ্ডায়মান হলেন। এরপর তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি আমাদের জবাব আশা করেন? সে আল্লাহর শপথ! যাঁর হাতে আমার জীবন, যদি আপনি আমাদেরকে আমাদের ঘোড়া নিয়ে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়তে বলেন, তবে নিশ্চয়ই আমরা সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ব। আর যদি আপনি আমাদেরকে নির্দেশ দেন, সওয়ারী হাঁকিয়ে ‘বারকুল গামাদ’ পর্যন্ত পৌঁছার জন্য তবে নিশ্চয়ই আমরা তাই করবো। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুসলিমদেরকে আহ্বান করলেন। তখন সকলেই রওয়ানা হলেন এবং বাদর নামক স্থানে উপনীত হলেন। আর সাহাবীগণের সামনে সেখানে কুরায়শের সাথীগণও উপনীত হল। তাদের মধ্যে বানী হাজ্জাজের একজন কৃষ্ণকায় দাস ছিল। সাহাবীগণ তাকে পাকড়াও করলেন। তারপর তাকে আবূ সুফইয়ান এবং তার সাথীদের সম্পর্কে তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। তখন সে বলতে লাগলো, আবূ সুফইয়ান সম্পর্কে আমার কোন কিছু জানা নেই। তবে আবূ জাহল, ‘উতবাহ, শাইবাহ এবং উমাইয়াহ ইবনু খালাফ তো-উপস্থিত আছে। যখন সে এরূপ বলল তখন তাঁরা তাকে প্রহার করতে লাগলেন। এমতাবস্থায় সে বলল, হ্যাঁ, আমি আবূ সুফইয়ান সম্পর্কে খবর দিচ্ছি। তখন তাঁরা তাকে ছেড়ে দিলেন। এরপর যখন তারা পুনরায় আবূ সুফইয়ান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন, তখন সে বলল, আবূ সুফইয়ান জনগণের মাঝে উপস্থিত আছেন। যখন সে পুনরায় এ একই কথা বলল, তখন তাঁরা আবার তাকে প্রহার করতে লাগলেন। সে সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাতে দণ্ডায়মান ছিলেন। অতএব যখন তিনি এ অবস্থা দেখলেন, তখন সলাত সমাপ্ত করার পর বললেন, সে আল্লাহর শপথ! যাঁর হাতে আমার জান, যখন সে তোমাদের কাছে সত্য কথা বলে তখন তোমরা তাকে প্রহার করো, আর যখন সে মিথ্যে কথা বলে তখন তোমরা তাকে ছেড়ে দাও।
এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভূমির উপর স্বীয় হাত রেখে বললেন, এ স্থান অমুক বিধর্মীয় ধরাশায়ী হওয়ার স্থান বা মৃত্যুস্থল। বর্ণনাকারী বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে স্থানে যে বিধর্মীর নাম নিয়ে হাত রেখেছিলেন, সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে, এর সামান্যও ব্যতিক্রম হয়নি। (ই.ফা. ৪৪৭০, ই.সে. ৪৪৭২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১. অধ্যায়ঃ
মাক্কাহ বিজয়
৪৫১৪
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ وَفَدَتْ وُفُودٌ إِلَى مُعَاوِيَةَ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ فَكَانَ يَصْنَعُ بَعْضُنَا لِبَعْضٍ الطَّعَامَ فَكَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ مِمَّا يُكْثِرُ أَنْ يَدْعُوَنَا إِلَى رَحْلِهِ فَقُلْتُ أَلاَ أَصْنَعُ طَعَامًا فَأَدْعُوَهُمْ إِلَى رَحْلِي فَأَمَرْتُ بِطَعَامٍ يُصْنَعُ ثُمَّ لَقِيتُ أَبَا هُرَيْرَةَ مِنَ الْعَشِيِّ فَقُلْتُ الدَّعْوَةُ عِنْدِي اللَّيْلَةَ فَقَالَ سَبَقْتَنِي . قُلْتُ نَعَمْ . فَدَعَوْتُهُمْ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَلاَ أُعْلِمُكُمْ بِحَدِيثٍ مِنْ حَدِيثِكُمْ يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ ثُمَّ ذَكَرَ فَتْحَ مَكَّةَ فَقَالَ أَقْبَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى قَدِمَ مَكَّةَ فَبَعَثَ الزُّبَيْرَ عَلَى إِحْدَى الْمُجَنِّبَتَيْنِ وَبَعَثَ خَالِدًا عَلَى الْمُجَنِّبَةِ الأُخْرَى وَبَعَثَ أَبَا عُبَيْدَةَ عَلَى الْحُسَّرِ فَأَخَذُوا بَطْنَ الْوَادِي وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي كَتِيبَةٍ – قَالَ – فَنَظَرَ فَرَآنِي فَقَالَ ” أَبُو هُرَيْرَةَ ” . قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ . فَقَالَ ” لاَ يَأْتِينِي إِلاَّ أَنْصَارِيٌّ ” . زَادَ غَيْرُ شَيْبَانَ فَقَالَ ” اهْتِفْ لِي بِالأَنْصَارِ ” . قَالَ فَأَطَافُوا بِهِ وَوَبَّشَتْ قُرَيْشٌ أَوْبَاشًا لَهَا وَأَتْبَاعًا . فَقَالُوا نُقَدِّمُ هَؤُلاَءِ فَإِنْ كَانَ لَهُمْ شَىْءٌ كُنَّا مَعَهُمْ . وَإِنْ أُصِيبُوا أَعْطَيْنَا الَّذِي سُئِلْنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” تَرَوْنَ إِلَى أَوْبَاشِ قُرَيْشٍ وَأَتْبَاعِهِمْ ” . ثُمَّ قَالَ بِيَدَيْهِ إِحْدَاهُمَا عَلَى الأُخْرَى ثُمَّ قَالَ ” حَتَّى تُوَافُونِي بِالصَّفَا ” . قَالَ فَانْطَلَقْنَا فَمَا شَاءَ أَحَدٌ مِنَّا أَنْ يَقْتُلَ أَحَدًا إِلاَّ قَتَلَهُ وَمَا أَحَدٌ مِنْهُمْ يُوَجِّهُ إِلَيْنَا شَيْئًا – قَالَ – فَجَاءَ أَبُو سُفْيَانَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أُبِيحَتْ خَضْرَاءُ قُرَيْشٍ لاَ قُرَيْشَ بَعْدَ الْيَوْمِ . ثُمَّ قَالَ ” مَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ ” . فَقَالَتِ الأَنْصَارُ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ أَمَّا الرَّجُلُ فَأَدْرَكَتْهُ رَغْبَةٌ فِي قَرْيَتِهِ وَرَأْفَةٌ بِعَشِيرَتِهِ . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ وَجَاءَ الْوَحْىُ وَكَانَ إِذَا جَاءَ الْوَحْىُ لاَ يَخْفَى عَلَيْنَا فَإِذَا جَاءَ فَلَيْسَ أَحَدٌ يَرْفَعُ طَرْفَهُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى يَنْقَضِيَ الْوَحْىُ فَلَمَّا انْقَضَى الْوَحْىُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ ” . قَالُوا لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” قُلْتُمْ أَمَّا الرَّجُلُ فَأَدْرَكَتْهُ رَغْبَةٌ فِي قَرْيَتِهِ ” . قَالُوا قَدْ كَانَ ذَاكَ . قَالَ ” كَلاَّ إِنِّي عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ هَاجَرْتُ إِلَى اللَّهِ وَإِلَيْكُمْ وَالْمَحْيَا مَحْيَاكُمْ وَالْمَمَاتُ مَمَاتُكُمْ ” . فَأَقْبَلُوا إِلَيْهِ يَبْكُونَ وَيَقُولُونَ وَاللَّهِ مَا قُلْنَا الَّذِي قُلْنَا إِلاَّ الضِّنَّ بِاللَّهِ وَبِرَسُولِهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُصَدِّقَانِكُمْ وَيَعْذِرَانِكُمْ ” . قَالَ فَأَقْبَلَ النَّاسُ إِلَى دَارِ أَبِي سُفْيَانَ وَأَغْلَقَ النَّاسُ أَبْوَابَهُمْ – قَالَ – وَأَقْبَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَقْبَلَ إِلَى الْحَجَرِ فَاسْتَلَمَهُ ثُمَّ طَافَ بِالْبَيْتِ – قَالَ – فَأَتَى عَلَى صَنَمٍ إِلَى جَنْبِ الْبَيْتِ كَانُوا يَعْبُدُونَهُ – قَالَ – وَفِي يَدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَوْسٌ وَهُوَ آخِذٌ بِسِيَةِ الْقَوْسِ فَلَمَّا أَتَى عَلَى الصَّنَمِ جَعَلَ يَطْعُنُهُ فِي عَيْنِهِ وَيَقُولُ ” جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ ” . فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ طَوَافِهِ أَتَى الصَّفَا فَعَلاَ عَلَيْهِ حَتَّى نَظَرَ إِلَى الْبَيْتِ وَرَفَعَ يَدَيْهِ فَجَعَلَ يَحْمَدُ اللَّهَ وَيَدْعُو بِمَا شَاءَ أَنْ يَدْعُوَ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ রাবাহ (রহঃ) বলেন, আমি একটি প্রতিনিধি দলের সাথে [যার মধ্যে আবূ হুরায়রা (রাঃ) –ও ছিলেন] রমাযান মাসে মু’আবিয়াহ (রাঃ) –এর কাছে গেলাম। তখন তাঁরা একে অন্যের জন্য খানা পাকাতেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) অধিকাংশ সময় আমাদেরকে তাঁর বাসস্থানে দা’ওয়াত করতেন। সুতরাং একদিন আমি তাঁকে বললাম, আমিও খানা তৈরী করবো এবং সকলকেই আমার বাসস্থানে দা’ওয়াত করবো। আমি খানা তৈরীর নির্দেশ দিলাম। এরপর আবূ হুরায়রা (রাঃ)–এর সঙ্গে আমি বিকালে দেখা করলাম এবং বললাম, আজ রাত আমার বাসায় আপনার দা’ওয়াত। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, আপনি আজ আমার পূর্বেই দা’ওয়াত দিয়ে দিলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ। আমি সকলকেই দা’ওয়াত করলাম। তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, হে আনসার সম্প্রদায়! আমি কি তোমাদের সম্পর্কে একটি হাদীস বর্ণনা করবো না?
তারপর তিনি মাক্কাহ বিজয়ের ঘটনার বিবরণ দিতে শুরু করলেন। তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাক্কার দিকে অগ্রসর হলেন এবং পরিশেষে তিনি তথায় উপনীত হলেন। এরপর যুবায়রকে মাক্কার একদিকে এবং খালিদ ইবনু ওয়ালীদকে অপর দিকে প্রেরণ করলেন। আর আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ) –কে সেসব লোকদের উপর নেতা বানিয়ে পাঠালেন যাদের কাছে লৌহ বর্ম ছিলনা। তাঁরা উপত্যকার ভিতরের পথ অবলম্বন করে চললেন। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন একটি ছোট সেনাদলের মধ্যে। তিনি তাকালেন এবং আমাকে দেখে বললেন, হে আবূ হুরায়রা! আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি উপস্থিত। এরপর তিনি বললেনঃ আমার নিকট আনসার ছাড়া আর কেউ যেন না আসে। শাইবান ব্যতীত অন্য বর্ণনাকারী অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, তারপর তিনি বললেনঃ আনসারদেরকে আহ্বান করো। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আনসারগণ তাঁর চারপাশে জমায়েত হলেন। এদিকে কুরায়শগণও তাদের বিভিন্ন গোত্রের লোক এবং অনুগতদেরকে একত্রিত করলো। এরপর তারা বলল, আমরা তাদেরকে আগে প্রেরণ করব। যদি তাদের ভাগে কিছু জুটে, তবে আমরাও তো তাদের সঙ্গেই আছি। আর যদি তারা বিপদের সম্মুখীন হয় তবে তারা আমাদের কাছে যা চাইবে, তাই দিয়ে দেব। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীগণকে বললেন, তোমরা কি কুরায়শের বিভিন্ন গোত্রের লোক এবং তাদের অনুগতদেরকে দেখতে পাচ্ছ? এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর একহাত অপর হাতের উপর রেখে ইঙ্গিত করলেন, (মাক্কার পথে যারা তোমাদের বাধা দেয় তোমরা তাদের খতম করে দিবে।) এরপর বললেন, অবশেষে সাফা পাহাড়ে তোমরা আমার সঙ্গে মিলিত হবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা অগ্রসর হতে লাগলাম। আমাদের মধ্য হতে কেউ যাকে হত্যা করতে চেয়েছে তাকে হত্যা করেছে। তাই তাদের মধ্য হতে কেউই আমাদের উপর আক্রমণ করতে সাহস পায়নি। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আবূ সুফইয়ান এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আজ কুরায়শ সম্প্রদায়ের রক্ত হালাল করে দেয়া হয়েছে। আজকের পরে আর কোন কুরায়শের অস্তিত্ব থাকবে না। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোষণা দিলেন, যে ব্যক্তি আবূ সুফইয়ানের ঘরে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। সুতরাং আনসারগণ একে অপরের সাথে বলাবলি করত লাগলো যে, লোকটিকে (রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে) স্বদেশের অনুরাগ এবং আত্মীয়-স্বজনের প্রেমে পেয়ে বসেছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন যে, তখনই ওয়াহী অবতীর্ণ হলো। যখন ওয়াহী অবতীর্ণ হতো তখন তা আমাদের নিকট গোপন থাকত না। ঐ সময় কারো সাধ্য হতো না যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর দিকে চোখ তুলে দেখে যতক্ষণ না ওয়াহী শেষ হতো। এরপর যখন ওয়াহী শেষ হলো, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আনসার সম্প্রদায়! তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা আপনার কাছে হাজির। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা কি বলেছ যে, “লোকটিকে স্বদেশের অনুপ্রেরণায় পেয়ে বসেছে”। তখন তারা বললেন, এ রকম কিছু হয়েছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কখনও না। নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর প্রেরিত রসূল। আমি আল্লাহর উদ্দেশে স্বদেশ ত্যাগ করে তোমাদের কাছে গিয়েছি। আমার জীবন ও মরণ তোমাদের সাথে। তারা কাঁদতে কাঁদতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর দিকে অগ্রসর হলেন এবং বলতে লাগলেন, আল্লাহর শপথ! আমরা যা বলেছিলাম, তা ছিল আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও দুর্বলতার কারণে। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল তোমাদের বক্তব্য বিশ্বাস করেন এবং তোমাদের ওজর গ্রহণ করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর মাক্কার জনগণ আবূ সুফইয়ানের বাড়ীর দিকে চলে গেল (জীবন রক্ষার জন্যে) আর অন্যান্য মানুষ আপন ঘরে দরজা বন্ধ করে বসে রইল। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাজর ‘আসওয়াদ’–এর নিকটবর্তী হয়ে তাকে চুম্বন করলেন এবং বাইতুল্লাহ শারীফের তাওয়াফ করলেন। এরপর তিনি বাইতুল্লাহর কাছে থাকা একটি মূর্তির নিকটবর্তী হলেন, যাকে তারা উপাসনা করতো। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর হাতে তখন একটি ধনুক ছিল, তিনি এর এক প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন। যখন তিনি মূর্তিটির নিকটবর্তী হলেন তখন তিনি তা দ্বারা এর চোখে খুঁচাতে লাগলেন এবং বললেন, “সত্য আগমন করেছে এবং বাতিল (মিথ্যা) চলে গেছে।” এরপর বাইতুল্লাহর তাওয়াফ শেষে তিনি সাফা পাহাড়ের দিকে গেলেন। এরপর তাতে আরোহণ করে বায়তুল্লাহর দিকে চেয়ে দেখলেন এবং দু’হাত উঁচু করে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন এবং তাঁর যা প্রার্থনা করার ছিল তাই প্রার্থনা করলেন। (ই.ফা. ৪৪৭১, ই.সে. ৪৪৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫১৫
وَحَدَّثَنِيهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ هَاشِمٍ، حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ فِي الْحَدِيثِ ثُمَّ قَالَ بِيَدَيْهِ إِحْدَاهُمَا عَلَى الأُخْرَى ” احْصُدُوهُمْ حَصْدًا ” . وَقَالَ فِي الْحَدِيثِ قَالُوا قُلْنَا ذَاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” فَمَا اسْمِي إِذًا كَلاَّ إِنِّي عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ ” .
সুলাইমান ইবনু মুগীরাহ (রাঃ) থেকে উক্ত সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
তবে তার হাদীসে অতিরিক্ত এ কথা উল্লেখ রয়েছে যে, তারপর তিনি তার এক হাত অপর হাতের উপর রেখে ইঙ্গিত করে বললেন, তোমরা তাদেরকে শেষ করে দাও। এতে আরো উল্লেখ রয়েছে যে, তখন তারা বললেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা এ রকম কিছু বলেছি। তখন তিনি বললেন, তাহলে আমার নামের কী আর থাকবে। সুতরাং এমনটি কখনো হবে না। আমিতো আল্লাহর বান্দা ও রসূল। (ই.ফা. ৪৪৭২, ই.সে. ৪৪৭৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫১৬
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ، بْنُ سَلَمَةَ أَخْبَرَنَا ثَابِتٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ، قَالَ وَفَدْنَا إِلَى مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ وَفِينَا أَبُو هُرَيْرَةَ فَكَانَ كُلُّ رَجُلٍ مِنَّا يَصْنَعُ طَعَامًا يَوْمًا لأَصْحَابِهِ فَكَانَتْ نَوْبَتِي فَقُلْتُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ الْيَوْمُ نَوْبَتِي . فَجَاءُوا إِلَى الْمَنْزِلِ وَلَمْ يُدْرِكْ طَعَامُنَا فَقُلْتُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ لَوْ حَدَّثْتَنَا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى يُدْرِكَ طَعَامُنَا فَقَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْفَتْحِ فَجَعَلَ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيدِ عَلَى الْمُجَنِّبَةِ الْيُمْنَى وَجَعَلَ الزُّبَيْرَ عَلَى الْمُجَنِّبَةِ الْيُسْرَى وَجَعَلَ أَبَا عُبَيْدَةَ عَلَى الْبَيَاذِقَةِ وَبَطْنِ الْوَادِي فَقَالَ ” يَا أَبَا هُرَيْرَةَ ادْعُ لِي الأَنْصَارَ ” . فَدَعَوْتُهُمْ فَجَاءُوا يُهَرْوِلُونَ فَقَالَ ” يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ هَلْ تَرَوْنَ أَوْبَاشَ قُرَيْشٍ ” . قَالُوا نَعَمْ . قَالَ ” انْظُرُوا إِذَا لَقِيتُمُوهُمْ غَدًا أَنْ تَحْصِدُوهُمْ حَصْدًا ” . وَأَخْفَى بِيَدِهِ وَوَضَعَ يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ وَقَالَ ” مَوْعِدُكُمُ الصَّفَا ” . قَالَ فَمَا أَشْرَفَ يَوْمَئِذٍ لَهُمْ أَحَدٌ إِلاَّ أَنَامُوهُ – قَالَ – وَصَعِدَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصَّفَا وَجَاءَتِ الأَنْصَارُ فَأَطَافُوا بِالصَّفَا فَجَاءَ أَبُو سُفْيَانَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أُبِيدَتْ خَضْرَاءُ قُرَيْشٍ لاَ قُرَيْشَ بَعْدَ الْيَوْمِ . قَالَ أَبُو سُفْيَانَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ دَخَلَ دَارَ أَبِي سُفْيَانَ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ أَلْقَى السِّلاَحَ فَهُوَ آمِنٌ وَمَنْ أَغْلَقَ بَابَهُ فَهُوَ آمِنٌ ” . فَقَالَتِ الأَنْصَارُ أَمَّا الرَّجُلُ فَقَدْ أَخَذَتْهُ رَأْفَةٌ بِعَشِيرَتِهِ وَرَغْبَةٌ فِي قَرْيَتِهِ . وَنَزَلَ الْوَحْىُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” قُلْتُمْ أَمَّا الرَّجُلُ فَقَدْ أَخَذَتْهُ رَأْفَةٌ بِعَشِيرَتِهِ وَرَغْبَةٌ فِي قَرْيَتِهِ . أَلاَ فَمَا اسْمِي إِذًا – ثَلاَثَ مَرَّاتٍ – أَنَا مُحَمَّدٌ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ هَاجَرْتُ إِلَى اللَّهِ وَإِلَيْكُمْ فَالْمَحْيَا مَحْيَاكُمْ وَالْمَمَاتُ مَمَاتُكُمْ ” . قَالُوا وَاللَّهِ مَا قُلْنَا إِلاَّ ضِنًّا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ . قَالَ ” فَإِنَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُصَدِّقَانِكُمْ وَيَعْذِرَانِكُمْ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু রাবাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা ভ্রমণ করে মু’আবিয়াহ ইবনু আবূ সুফইয়ান (রাঃ)–এর নিকট গেলাম। আমাদের মধ্যে তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) –ও ছিলেন। প্রত্যেকেই একদিন তাঁর সাথীর জন্য খানা তৈরী করতেন। একদিন আমার পালা আসল। তখন আমি বললাম, হে আবূ হুরায়রা! আজতো আমার পালা। অতএব সকলেই আমার বাসস্থানে এলেন, তখনও খানা রান্না করা শেষ হয়নি। তখন আমি বললাম, হে আবূ হুরায়রা! আপনি যদি আমাদেরকে খানা তৈরীর পূর্ব পর্যন্ত রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর কোন হাদীস বর্ণনা করতেন! (তবে ভাল হতো) অতএব তিনি বললেন, আমরা মাক্কাহ বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সঙ্গে ছিলাম। তখন খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ)–কে ডানদিকের বাহিনীর এবং যুবায়র (রাঃ)–কে বাম দিকের বাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করলেন। আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ)–কে পদাতিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত করলেন প্রান্তর অতিক্রম করার জন্য। এরপর তিনি বললেন, হে আবূ হুরায়রা! আনসারদেরকে আমার কাছে আসার জন্য আহ্বান কর। অতএব আমি তাদেরকে আহ্বান করলাম। এরপর তাঁরা দ্রুত আসলেন। তখন তিনি বললেন, হে আনসার সম্প্রদায়! তোমরা কুরায়শদের বিভিন্ন গোত্রের বিরাট জমায়েত কি দেখতে পাচ্ছ, তারা সবাই বলল হ্যাঁ। অতএব তিনি বললেন, আগামীকাল যখন তোমরা (যুদ্ধক্ষেত্রে) তাদের মুকাবিলা করবে তখন তাদেরকে সম্পূর্ণ নির্মূল করে দেবে। তারপর তাঁর ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে ইঙ্গিতে বললেনঃ তাদেরকে সমূলে বিনষ্ট করে দেবে। তারপর বললেনঃ আমার সাথে তোমাদের একসাথে হওয়ার জায়গা সাফা পাহাড়। বর্ণনাকারী বলেন, সেদিন যে কোন বিধর্মী আনসারদের লক্ষ্যস্থলে পড়েছে, তাকেই তারা নির্মূল করেছে। এরপরে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাফা পাহাড়ের উপর আরোহণ করলেন। তখন আনসারগণ তথায় উপনীত হয়ে সাফা পাহাড় ঘিরে ফেললো। ইত্যবসরে আবূ সুফইয়ান এলেন এবং বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! কুরায়শদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আজ থেকে আর কোন কুরায়শের অস্তিত্ব থাকবে না। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যে ব্যক্তি আবূ সুফইয়ানের বাড়িতে প্রবেশ করবে সে নিরাপত্তা পাবে। যে অস্ত্র ফেলে দিবে সেও নিরাপদ এবং যে স্বীয় গৃহের দরজা বন্ধ করে রাখবে সেও নিরাপত্তা পাবে। তখন আনসারগণ বলাবলি করছিল যে, এ লোকটিকে (রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে) স্বীয় গোত্রের ভালোবাসা এবং স্বদেশের অনুরাগে পেয়ে বসেছে। এমতাবস্থায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর উপর ওয়াহী নাযিল হলো। এরপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমরাই কি বলেছিলে যে, “এ লোকটিকে (মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে) স্বীয় গোত্রের ভালোবাসা এবং স্বদেশের অনুরাগে পেয়ে বসেছে।” সাবধান! তোমরা কি জান আমার নাম কী? এ কথাটি তিনি তিনবার বলেছেন। আমি হলাম মুহাম্মাদ, আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রসূল। আমি আল্লাহর নির্দেশেই তোমাদের কাছে হিজরত করেছি। আমার জীবন ও মরণ তোমাদের জীবন ও মরণের সাথে সম্পৃক্ত। তখন তাঁরা বলল, আল্লাহর শপথ! আমরা এ কথা বলেছিলাম আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের প্রতি দুর্বলতার কারণে। (যেন তিনি আমাদেরকে ছেড়ে না যান।) নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল তোমাদের সত্য বলে গ্রহণ করেছেন এবং তোমাদের ওজর কবুল করেছেন। (ই.ফা. ৪৪৭৩, ই.সে. ৪৪৭৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩২. অধ্যায়ঃ
কা’বার চারপাশ থেকে মূর্তিসমূহ দূরীকরণ
৪৫১৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ أَبِي شَيْبَةَ – قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ دَخَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَكَّةَ وَحَوْلَ الْكَعْبَةِ ثَلاَثُمِائَةٍ وَسِتُّونَ نُصُبًا فَجَعَلَ يَطْعُنُهَا بِعُودٍ كَانَ بِيَدِهِ وَيَقُولُ ” { جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا} { جَاءَ الْحَقُّ وَمَا يُبْدِئُ الْبَاطِلُ وَمَا يُعِيدُ} زَادَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ يَوْمَ الْفَتْحِ .
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর হাতে একটি ছড়ি (কাঠি) ছিল তিনি তা দিয়ে মূর্তিগুলোকে খোঁচা দিচ্ছিলেন এবং বলছিলেনঃ “সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে; মিথ্যাতো বিলুপ্ত হবারই” – (সূরা বানী ইসরাঈল ১৭ : ৮১)। “সত্য এসেছে এবং অসত্য না পারে নতুন কিছু সৃজন করতে না পারে পুনরাবৃত্তি করতে” – (সূরা সাবা ৩৪ : ৪৯)। ইবনু আবূ ‘উমার (আরবি) (বিজয়ের দিন) কথাটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৪৭৪, ই.সে. ৪৪৭৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫১৮
وَحَدَّثَنَاهُ حَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا الثَّوْرِيُّ، عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ إِلَى قَوْلِهِ زَهُوقًا . وَلَمْ يَذْكُرِ الآيَةَ الأُخْرَى وَقَالَ بَدَلَ نُصُبًا صَنَمًا .
ইবনু আবূ নাজীহ হতে এ সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
উল্লিখিত হাদীস, আয়াতের শেষ (আরবি) (বিলুপ্ত হবারই) পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি অপর আয়াতটি বর্ণনা করেননি। আর তিনি (আরবি) (মূর্তি, পূজার বেদী) শব্দের পরিবর্তে (আরবি) (মূর্তি) শব্দ ব্যবহার করেছেন। (ই.ফা. ৪৪৭৫, ই.সে. ৪৪৭৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩. অধ্যায়ঃ
বিজয়ের পর কুরায়শদের ধর্মত্যাগের অপরাধে কতল করা হবে না
৪৫১৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، وَوَكِيعٌ، عَنْ زَكَرِيَّاءَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُطِيعٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ “ لاَ يُقْتَلُ قُرَشِيٌّ صَبْرًا بَعْدَ هَذَا الْيَوْمِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মুতী’ (রহঃ) –এর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে মাক্কাহ বিজয়ের দিন বলতে শুনেছি যে, আজকের দিনের পর কিয়ামাত পর্যন্ত কুরায়শগণকে (ধর্মত্যাগের অপরাধে ও যুদ্ধে) হত্যা করা হবে না। [৩৯] (ই.ফা. ৪৪৭৬, ই.সে. ৪৪৭৮)
[৩৯] ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, এর অর্থ হলো এরপর আর কোন কুরায়শ অমুসলিম থাকবে না। (মুখতাসার শারহে মুসলিম লিন নাবাবী, আল্লামা ওয়াহিদুজ্জামান; ৫ম খণ্ড, ৬১ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫২০
حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . وَزَادَ قَالَ وَلَمْ يَكُنْ أَسْلَمَ أَحَدٌ مِنْ عُصَاةِ قُرَيْشٍ غَيْرَ مُطِيعٍ كَانَ اسْمُهُ الْعَاصِي فَسَمَّاهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُطِيعًا .
যাকারিয়্যা (রহঃ) হতে এ সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
উল্লিখিত হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, কুরায়শদের মধ্য থেকে কোন ‘আসী ইসলাম গ্রহণ করেনি, মুতী’ ব্যতীত, তার নাম ছিল ‘আসী (অবাধ্য)। কিন্তু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নাম রাখলেন মুতী’ (অনুগত)। (ই.ফা. ৪৪৭৭, ই.সে. ৪৪৭৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৪. অধ্যায়ঃ
হুদাইবিয়ার সন্ধি সম্পর্কে
৪৫২১
حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ، يَقُولُ كَتَبَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ الصُّلْحَ بَيْنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَبَيْنَ الْمُشْرِكِينَ يَوْمَ الْحُدَيْبِيَةِ فَكَتَبَ ” هَذَا مَا كَاتَبَ عَلَيْهِ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ” . فَقَالُوا لاَ تَكْتُبْ رَسُولُ اللَّهِ فَلَوْ نَعْلَمُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ لَمْ نُقَاتِلْكَ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِعَلِيٍّ ” امْحُهُ ” . فَقَالَ مَا أَنَا بِالَّذِي أَمْحَاهُ . فَمَحَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ قَالَ وَكَانَ فِيمَا اشْتَرَطُوا أَنْ يَدْخُلُوا مَكَّةَ فَيُقِيمُوا بِهَا ثَلاَثًا وَلاَ يَدْخُلُهَا بِسِلاَحٍ إِلاَّ جُلُبَّانَ السِّلاَحِ . قُلْتُ لأَبِي إِسْحَاقَ وَمَا جُلُبَّانُ السِّلاَحِ قَالَ الْقِرَابُ وَمَا فِيهِ .
বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘হুদাইবিয়াহ দিবসে’ ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং মুশরিকদের মধ্যে সন্ধিপত্র লিপিবদ্ধ করলেন, “এ সন্ধিটি লিখিয়েছেন মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তখন তারা বলল, ‘রসূলুল্লাহ’ কথাটি লেখবেন না। যদি আমরা বিশ্বাস করতাম যে, আপনি আল্লাহর রসূল, তবে তো আপনার সাথে আমরা যুদ্ধ করতাম না। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী (রাঃ)–কে বললেন, এ অংশটি কেটে দাও। তখন ‘আলী বললেন, আমি তা কেটে দেয়ার লোক নই। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–ই নিজ হাতে তা কেটে দেন। বর্ণনাকারী বলেন, সন্ধির একটি শর্ত এই ছিল যে, তারা মাক্কায় প্রবেশ করে তিন দিন অবস্থান করতে পারবে এবং তখন তারা কোন অস্ত্র নিয়ে ঢুকতে পারবে না। কিন্তু কোষবদ্ধ তলোয়ার নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।
আমি আবূ ইসহাককে জিজ্ঞেস করলাম, (আরবি) এর অর্থ কী? তখন তিনি বলেন, এর অর্থ খাপ এবং এর মধ্যে যা থাকে। (ই.ফা. ৪৪৭৮, ই.সে. ৪৪৮০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫২২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ، يَقُولُ لَمَّا صَالَحَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَهْلَ الْحُدَيْبِيَةِ كَتَبَ عَلِيٌّ كِتَابًا بَيْنَهُمْ قَالَ فَكَتَبَ ” مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ ” ثُمَّ ذَكَرَ بِنَحْوِ حَدِيثِ مُعَاذٍ غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ يَذْكُرْ فِي الْحَدِيثِ ” هَذَا مَا كَاتَبَ عَلَيْهِ ” .
বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুদাইবিয়াবাসীদের মধ্যে সন্ধি করলেন, ‘আলী (রাঃ) উভয়ের মধ্যে একটি সন্ধিপত্র লিখলেন। তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) লিখলেন, মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ, তারপর মু’আয বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি তার হাদীসে (আরবি) কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৪৭৯, ই.সে. ৪৪৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫২৩
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، وَأَحْمَدُ بْنُ جَنَابٍ الْمِصِّيصِيُّ، جَمِيعًا عَنْ عِيسَى بْنِ يُونُسَ، – وَاللَّفْظُ لإِسْحَاقَ – أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّاءُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ لَمَّا أُحْصِرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ الْبَيْتِ صَالَحَهُ أَهْلُ مَكَّةَ عَلَى أَنْ يَدْخُلَهَا فَيُقِيمَ بِهَا ثَلاَثًا وَلاَ يَدْخُلَهَا إِلاَّ بِجُلُبَّانِ السِّلاَحِ السَّيْفِ وَقِرَابِهِ . وَلاَ يَخْرُجَ بِأَحَدٍ مَعَهُ مِنْ أَهْلِهَا وَلاَ يَمْنَعَ أَحَدًا يَمْكُثُ بِهَا مِمَّنْ كَانَ مَعَهُ . قَالَ لِعَلِيٍّ ” اكْتُبِ الشَّرْطَ بَيْنَنَا بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ ” . فَقَالَ لَهُ الْمُشْرِكُونَ لَوْ نَعْلَمُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ تَابَعْنَاكَ وَلَكِنِ اكْتُبْ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ . فَأَمَرَ عَلِيًّا أَنْ يَمْحَاهَا فَقَالَ عَلِيٌّ لاَ وَاللَّهِ لاَ أَمْحَاهَا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَرِنِي مَكَانَهَا ” . فَأَرَاهُ مَكَانَهَا فَمَحَاهَا وَكَتَبَ ” ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ ” . فَأَقَامَ بِهَا ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ فَلَمَّا أَنْ كَانَ يَوْمُ الثَّالِثِ قَالُوا لِعَلِيٍّ هَذَا آخِرُ يَوْمٍ مِنْ شَرْطِ صَاحِبِكَ فَأْمُرْهُ فَلْيَخْرُجْ . فَأَخْبَرَهُ بِذَلِكَ فَقَالَ ” نَعَمْ ” . فَخَرَجَ . وَقَالَ ابْنُ جَنَابٍ فِي رِوَايَتِهِ مَكَانَ تَابَعْنَاكَ بَايَعْنَاكَ .
বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন বাইতুল্লাহ শারীফের নিকট বাধাগ্রস্ত হলেন, তখন মাক্কাবাসীরা এ মর্মে তাঁর সঙ্গে সন্ধি করলো যে, (পরবর্তী বছর) তিনি মাক্কায় প্রবেশ করবেন এবং সেখানে তিনদিন অবস্থান করবেন এবং কোষবদ্ধ তরবারি ছাড়া আর কিছু নিয়ে সেখানে প্রবেশ করবেন না এবং কোন মাক্কাবাসী কাউকে নিয়ে মাক্কাহ থেকে বেরিয়ে যেতে পারবেন না। পক্ষান্তরে তাঁর সাথীদের কেউ যদি সেখানে থেকে যেতে চায়, তবে তাকে বারণ করবেন না। তখন তিনি ‘আলী (রাঃ)–কে বললেনঃ আমাদের মধ্যকার শর্তগুলো এভাবে লিখে নাওঃ বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম ….. এ হচ্ছে সেই সন্ধি যা মুহাম্মাদ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চূড়ান্ত করেছেন। তখন মুশরিকরা তাঁকে বলল, আমরা যদি আপনাকে আল্লাহর রসূলই জানতাম তবে আপনার অনুসরণই করতাম, বরং লিখুন, মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ। তখন তিনি ‘আলী (রাঃ) –কে তা মুছে ফেলতে নির্দেশ দিলেন। ‘আলী (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তা মুছতে পারব না। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে আমাকেই সে স্থান দেখিয়ে দাও। তিনি সে স্থান দেখিয়ে দিলেন আর তিনি তা (স্বহস্তে) মুছে ফেললেন এবং লিখালেন মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ। তারপর (পরের বছর তিনি সাহাবাদের নিয়ে তাশরীফ আনলেন) সেখানে তিনি তিনদিন অবস্থান করলেন। যখন তৃতীয়দিন সমাগত হলো, তখন তারা ‘আলী (রাঃ) –কে বললেন এটা হচ্ছে তোমার সাথীর শর্তের স্থিরীকৃত শেষ দিবস। তাঁকে বেরিয়ে যেতে বলে দাও। তখন তিনি তাঁকে এ সম্পর্কে অবহিত করলেন। তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর তিনি বেরিয়ে গেলেন।
ইবনু জানাব (আরবি) স্থলে (আরবি) বলে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৪৮০, ই.সে. ৪৪৮২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫২৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ قُرَيْشًا، صَالَحُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِيهِمْ سُهَيْلُ بْنُ عَمْرٍو فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِعَلِيٍّ ” اكْتُبْ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ” . قَالَ سُهَيْلٌ أَمَّا بِاسْمِ اللَّهِ فَمَا نَدْرِي مَا بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ وَلَكِنِ اكْتُبْ مَا نَعْرِفُ بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ فَقَالَ ” اكْتُبْ مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللَّهِ ” . قَالُوا لَوْ عَلِمْنَا أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ لاَتَّبَعْنَاكَ وَلَكِنِ اكْتُبِ اسْمَكَ وَاسْمَ أَبِيكَ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” اكْتُبْ مِنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ” . فَاشْتَرَطُوا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ مَنْ جَاءَ مِنْكُمْ لَمْ نَرُدَّهُ عَلَيْكُمْ وَمَنْ جَاءَكُمْ مِنَّا رَدَدْتُمُوهُ عَلَيْنَا فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَكْتُبُ هَذَا قَالَ ” نَعَمْ إِنَّهُ مَنْ ذَهَبَ مِنَّا إِلَيْهِمْ فَأَبْعَدَهُ اللَّهُ وَمَنْ جَاءَنَا مِنْهُمْ سَيَجْعَلُ اللَّهُ لَهُ فَرَجًا وَمَخْرَجًا ” .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কুরায়শরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাথে সন্ধি করল। তাদের মধ্যে সুহায়ল ইবনু ‘আমরও ছিল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী (রাঃ) –কে বললেনঃ লিখ ‘বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম’। সুহায়ল বলল, কি বিসমিল্লা-হ্? আমরা তো জানি না বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম কী? তবে আমরা জানি বি ইসমিকা আল্লাহুমা, তাই লিখ। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ লিখ, মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর পক্ষ থেকে। তখন তারা বলে উঠলো, আমরা যদি আপনাকে আল্লাহর রসূলই জানতাম, তাহলে তো আমরা আপনার অনুসরণই করতাম। বরং আপনি আপনার নাম এবং আপনার পিতার নাম লিখুন।” তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ লিখ, মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহর পক্ষ থেকে। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর উপর এ মর্মে শর্ত আরোপ করলো যে, যারা আপনাদের নিকট থেকে চলে আসবে, আমরা তাকে ফেরত পাঠাবো না, কিন্তু আমাদের কেউ যদি আপনাদের নিকট চলে যায়, তবে আপনারা তাকে অবশ্যই ফিরিয়ে দেবেন। তখন সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি এরূপ লিখবো? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি তাদের কাছে যায় তবে আল্লাহ্ই তাকে (রহমাত থেকে) সরিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের মধ্য থেকে যে আমাদের কাছে আসবে (তাকে ফেরত দিলেও) আল্লাহ্ অচিরেই তার কোন ব্যবস্থা ও পথ বের করে দেবেন। (ই.ফা. ৪৪৮১, ই.সে. ৪৪৮৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫২৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، – وَتَقَارَبَا فِي اللَّفْظِ – حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ سِيَاهٍ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، قَالَ قَامَ سَهْلُ بْنُ حُنَيْفٍ يَوْمَ صِفِّينَ فَقَالَ أَيُّهَا النَّاسُ اتَّهِمُوا أَنْفُسَكُمْ لَقَدْ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْحُدَيْبِيَةِ وَلَوْ نَرَى قِتَالاً لَقَاتَلْنَا وَذَلِكَ فِي الصُّلْحِ الَّذِي كَانَ بَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَبَيْنَ الْمُشْرِكِينَ فَجَاءَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَسْنَا عَلَى حَقٍّ وَهُمْ عَلَى بَاطِلٍ قَالَ ” بَلَى ” . قَالَ أَلَيْسَ قَتْلاَنَا فِي الْجَنَّةِ وَقَتْلاَهُمْ فِي النَّارِ قَالَ ” بَلَى ” . قَالَ فَفِيمَ نُعْطِي الدَّنِيَّةَ فِي دِينِنَا وَنَرْجِعُ وَلَمَّا يَحْكُمِ اللَّهُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ فَقَالَ ” يَا ابْنَ الْخَطَّابِ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ وَلَنْ يُضَيِّعَنِي اللَّهُ أَبَدًا ” . قَالَ فَانْطَلَقَ عُمَرُ فَلَمْ يَصْبِرْ مُتَغَيِّظًا فَأَتَى أَبَا بَكْرٍ فَقَالَ يَا أَبَا بَكْرٍ أَلَسْنَا عَلَى حَقٍّ وَهُمْ عَلَى بَاطِلٍ قَالَ بَلَى . قَالَ أَلَيْسَ قَتْلاَنَا فِي الْجَنَّةِ وَقَتْلاَهُمْ فِي النَّارِ قَالَ بَلَى . قَالَ فَعَلاَمَ نُعْطِي الدَّنِيَّةَ فِي دِينِنَا وَنَرْجِعُ وَلَمَّا يَحْكُمِ اللَّهُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ فَقَالَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ إِنَّهُ رَسُولُ اللَّهِ وَلَنْ يُضَيِّعَهُ اللَّهُ أَبَدًا . قَالَ فَنَزَلَ الْقُرْآنُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْفَتْحِ فَأَرْسَلَ إِلَى عُمَرَ فَأَقْرَأَهُ إِيَّاهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَوَفَتْحٌ هُوَ قَالَ ” نَعَمْ ” . فَطَابَتْ نَفْسُهُ وَرَجَعَ .
আবুল ওয়ায়িল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাঃ) সিফফীন দিবসে উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, “হে লোক সকল! তোমরা নিজেদের অভিযুক্ত মনে করবে। আমরা হুদাইবিয়ার দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সাথে ছিলাম। আমরা এটিকে যুদ্ধ মনে করলে সেদিন অবশ্যই আমরা যুদ্ধ করতাম। এটি হচ্ছে সেই সন্ধির কথা যা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং মুশরিকদের মধ্যে হয়েছিল। তখন ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর নিকট এসে বললেন, “হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি সত্যের উপর নই, আর তারা বাতিলের উপর নয়”? তিনি বললেনঃ “হ্যাঁ, তাই।” তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের নিহতরা কি জান্নাতী এবং তাদের নিহতরা কি জাহান্নামী নয়?” তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, তাহলে কী কারণে আমরা দ্বীনের ব্যাপারে লাঞ্ছনা মেনে নিয়ে ফিরে যাবো, অথচ এখনো এ ব্যাপারে তাদের ও আমাদের মধ্যে আল্লাহর কোন ফায়সালা আসেনি? তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে খাত্তাব পুত্র! নিঃসন্দেহে আমি আল্লাহর রসূল। আর তিনি অবশ্যই কখনো আমাকে ধ্বংস করবেন না। রাবী বলেন, তখন ‘উমার (রাঃ) চলে গেলেন। তিনি ক্রোধে ধৈর্যধারণ করতে পারছিলেন না। তাই তিনি আবূ বাকরের কাছে এলেন এবং তাঁকে বললেন, হে আবূ বাকর! আমরা কি হকের উপর এবং তারা কি বাতিলের উপর নয়? তিনি বললেন, অবশ্যই। আবার তিনি বললেন, “আমাদের নিহতরা কি জান্নাতী এবং তাদের নিহতরা কি জাহান্নামী নয়? তিনি বললেন, নিশ্চয়ই। তখন তিনি বললেন, “তাহলে কী কারণে আমরা দ্বীনের ব্যাপারে লাঞ্ছনা মেনে নিয়ে ফিরে যাবো, অথচ এখনো এ ব্যাপারে আমাদের এবং তাদের মধ্যে আল্লাহ কোন ফায়সালা দেননি? তখন তিনি বললেন, হে খাত্তাব তনয়! নিশ্চয়ই তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। আল্লাহ্ কখনও তাঁর বিনাশ করবেন না। রাবী বলেন, এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর প্রতি বিজয়ের সুসংবাদ নিয়ে কুরআন অবতীর্ণ হলো। তখন তিনি ‘উমারকে ডেকে পাঠালেন এবং তাঁর সম্মুখে তা পাঠ করলে তখন তিনি বললেন, “হে আল্লাহর রসূল! এ কি বিজয়?” তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন তাঁর অন্তর শান্ত হলো এবং তিনি ফিরে গেলেন। (ই.ফা. ৪৪৮২, ই.সে. ৪৪৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫২৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، قَالَ سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ حُنَيْفٍ، يَقُولُ بِصِفِّينَ أَيُّهَا النَّاسُ اتَّهِمُوا رَأْيَكُمْ وَاللَّهِ لَقَدْ رَأَيْتُنِي يَوْمَ أَبِي جَنْدَلٍ وَلَوْ أَنِّي أَسْتَطِيعُ أَنْ أَرُدَّ أَمْرَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَرَدَدْتُهُ وَاللَّهِ مَا وَضَعْنَا سُيُوفَنَا عَلَى عَوَاتِقِنَا إِلَى أَمْرٍ قَطُّ إِلاَّ أَسْهَلْنَ بِنَا إِلَى أَمْرٍ نَعْرِفُهُ إِلاَّ أَمْرَكُمْ هَذَا . لَمْ يَذْكُرِ ابْنُ نُمَيْرٍ إِلَى أَمْرٍ قَطُّ .
শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সিফফীন দিবসে সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাঃ) –কে আমি বলতে শুনেছি, হে লোক সকল! তোমাদের নিজেদের অভিমতকে অভিযুক্ত মনে করবে। আল্লাহর কসম! আমি আবূ জান্দালের সে দিনটি দেখেছি। যদি আমার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর আদেশ প্রত্যাখ্যান করার সাধ্য থাকতো, তবে অবশ্যই তা প্রত্যাখ্যান করতাম। আল্লাহর কসম! আমরা আমাদের তরবারি স্বীয় গর্দানে উঠাতাম না যতক্ষণ না আমাদের কোন বিষয় বোধগম্য ছিল। কিন্তু তোমাদের এ ব্যাপারটির কথা তার বিপরীত।
ইবনু নুমায়র তাঁর বর্ণনায় (আরবি) (কোন ব্যাপারে) কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৪৮৩, ই.সে. ৪৪৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫২৭
وَحَدَّثَنَاهُ عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ، جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، ح وَحَدَّثَنِي أَبُو سَعِيدٍ، الأَشَجُّ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، كِلاَهُمَا عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . وَفِي حَدِيثِهِمَا إِلَى أَمْرٍ يُفْظِعُنَا.
আ’মাশ (রহঃ) হতে উক্ত সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
তবে তাদের হাদীসে (আরবী) (আমাদের ঘাবড়িয়ে দেয়) উল্লেখ রয়েছে। (ই.ফা. ৪৪৮৪, ই.সে. ৪৪৮৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫২৮
وَحَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعِيدٍ الْجَوْهَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، قَالَ سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ حُنَيْفٍ، بِصِفِّينَ يَقُولُ اتَّهِمُوا رَأْيَكُمْ عَلَى دِينِكُمْ فَلَقَدْ رَأَيْتُنِي يَوْمَ أَبِي جَنْدَلٍ وَلَوْ أَسْتَطِيعُ أَنْ أَرُدَّ أَمْرَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – مَا فَتَحْنَا مِنْهُ فِي خُصْمٍ إِلاَّ انْفَجَرَ عَلَيْنَا مِنْهُ خُصْمٌ .
আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাঃ)-কে সিফ্ফীনে বলতে শুনেছি, “তোমরা তোমাদের নিজেদের মতকে তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে অভিযুক্ত মনে করবে। কারণ আমি আবূ জান্দালের দিনটি প্রত্যক্ষ করেছি। যদি আমার সেদিন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করার সামর্থ্য থাকত (তবে তাই করতাম, এখন ব্যপার এত সঙ্গীন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে,) আমরা এক দিকের ছিদ্র বন্ধ করলে ওপর দিকের ছিদ্র খুলে যায়। (ই.ফা. ৪৪৮৫, ই.সে. ৪৪৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫২৯
وَحَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي، عَرُوبَةَ عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، حَدَّثَهُمْ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ { إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ فَتْحًا مُبِينًا * لِيَغْفِرَ لَكَ اللَّهُ} إِلَى قَوْلِهِ { فَوْزًا عَظِيمًا} مَرْجِعَهُ مِنَ الْحُدَيْبِيَةِ وَهُمْ يُخَالِطُهُمُ الْحُزْنُ وَالْكَآبَةُ وَقَدْ نَحَرَ الْهَدْىَ بِالْحُدَيْبِيَةِ فَقَالَ ” لَقَدْ أُنْزِلَتْ عَلَىَّ آيَةٌ هِيَ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنَ الدُّنْيَا جَمِيعًا ” .
কাতাদাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) তাঁদের বলেছেন, হুদাইবিয়াহ্ থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় যখন এ আয়াত নাযিল হলোঃ “নিশ্চয় আমি তোমাকে দিয়েছি সুস্পষ্ট বিজয়, যেন আল্লাহ্ তোমার ত্রুটিসমূহ মার্জনা করেন ….. মহা সাফল্য” পর্যন্ত (সূরা ফাতহ্ ৪৮ : ১-৪), তখন তাঁদের সব দুঃখ বেদনা ক্ষোভে পূর্ণ ছিল। আর হুদাইবিয়াতেই (কুরবানীর) পশুগুলো কুরবানী করা হয়েছিল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার প্রতি এমন আয়াত নাযিল হয়েছে, যা সমগ্র দুনিয়া থেকে আমার কাছে অধিক প্রিয়। (ই.ফা. ৪৪৮৬, ই.সে. ৪৪৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৩০
وَحَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ النَّضْرِ التَّيْمِيُّ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، جَمِيعًا عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، نَحْوَ حَدِيثِ ابْنِ أَبِي عَرُوبَةَ .
ইবনু মুসান্না, আব্দ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু আরূবাহ্ (রহঃ)-এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ৪৪৮৭, ই.সে. ৪৪৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৫. অধ্যায়ঃ
প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করা
৪৫৩১
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ جُمَيْعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الطُّفَيْلِ حَدَّثَنَا حُذَيْفَةُ بْنُ الْيَمَانِ، قَالَ مَا مَنَعَنِي أَنْ أَشْهَدَ، بَدْرًا إِلاَّ أَنِّي خَرَجْتُ أَنَا وَأَبِي – حُسَيْلٌ – قَالَ فَأَخَذَنَا كُفَّارُ قُرَيْشٍ قَالُوا إِنَّكُمْ تُرِيدُونَ مُحَمَّدًا فَقُلْنَا مَا نُرِيدُهُ مَا نُرِيدُ إِلاَّ الْمَدِينَةَ . فَأَخَذُوا مِنَّا عَهْدَ اللَّهِ وَمِيثَاقَهُ لَنَنْصَرِفَنَّ إِلَى الْمَدِينَةِ وَلاَ نُقَاتِلُ مَعَهُ فَأَتَيْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْنَاهُ الْخَبَرَ فَقَالَ “ انْصَرِفَا نَفِي لَهُمْ بِعَهْدِهِمْ وَنَسْتَعِينُ اللَّهَ عَلَيْهِمْ ” .
হুযাইফাহ্ ইবনু ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে বদর যুদ্ধে যোগদান থেকে এছাড়া অন্য কিছু বিরত রাখেনি যে, আমি এবং আমার পিতা হুসায়ল ঘর থেকে বেড়িয়েছিলাম। এমন সময় কুরায়শ কাফির আমাদের ধরে বসে এবং বলে যে, তোমরা অবশ্যই মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে যেতে মনস্থ করেছো। জবাবে আমরা বললাম, আমরা তাঁর কাছে যেতে চাইনা বরং আমরা মাদীনায় (ফিরে) যেতে চাই। তখন তারা আল্লাহ্র নামে আমাদের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিল যে, আমরা অবশ্যই মাদীনায় ফিরে যাব এবং তাঁর সাথে যুদ্ধ করবো না। তারপর আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলাম এবং সে সংবাদ তাঁকে জানালাম। তখন তিনি বললেন, ফিরে যাও। আমরা তাদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করবো এবং তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহ্র সাহায্য চাইব। (ই.ফা. ৪৪৮৮, ই.সে. ৪৪৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৬. অধ্যায়ঃ
আহযাবের (খন্দকের) যুদ্ধ
৪৫৩২
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ حُذَيْفَةَ فَقَالَ رَجُلٌ لَوْ أَدْرَكْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَاتَلْتُ مَعَهُ وَأَبْلَيْتُ فَقَالَ حُذَيْفَةُ أَنْتَ كُنْتَ تَفْعَلُ ذَلِكَ لَقَدْ رَأَيْتُنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ الأَحْزَابِ وَأَخَذَتْنَا رِيحٌ شَدِيدَةٌ وَقُرٌّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينِي بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ ثُمَّ قَالَ ” أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ ثُمَّ قَالَ ” أَلاَ رَجُلٌ يَأْتِينَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ جَعَلَهُ اللَّهُ مَعِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . فَسَكَتْنَا فَلَمْ يُجِبْهُ مِنَّا أَحَدٌ فَقَالَ ” قُمْ يَا حُذَيْفَةُ فَأْتِنَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ ” . فَلَمْ أَجِدْ بُدًّا إِذْ دَعَانِي بِاسْمِي أَنْ أَقُومَ قَالَ ” اذْهَبْ فَأْتِنِي بِخَبَرِ الْقَوْمِ وَلاَ تَذْعَرْهُمْ عَلَىَّ ” . فَلَمَّا وَلَّيْتُ مِنْ عِنْدِهِ جَعَلْتُ كَأَنَّمَا أَمْشِي فِي حَمَّامٍ حَتَّى أَتَيْتُهُمْ فَرَأَيْتُ أَبَا سُفْيَانَ يَصْلِي ظَهْرَهُ بِالنَّارِ فَوَضَعْتُ سَهْمًا فِي كَبِدِ الْقَوْسِ فَأَرَدْتُ أَنْ أَرْمِيَهُ فَذَكَرْتُ قَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَلاَ تَذْعَرْهُمْ عَلَىَّ ” . وَلَوْ رَمَيْتُهُ لأَصَبْتُهُ فَرَجَعْتُ وَأَنَا أَمْشِي فِي مِثْلِ الْحَمَّامِ فَلَمَّا أَتَيْتُهُ فَأَخْبَرْتُهُ بِخَبَرِ الْقَوْمِ وَفَرَغْتُ قُرِرْتُ فَأَلْبَسَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ فَضْلِ عَبَاءَةٍ كَانَتْ عَلَيْهِ يُصَلِّي فِيهَا فَلَمْ أَزَلْ نَائِمًا حَتَّى أَصْبَحْتُ فَلَمَّا أَصْبَحْتُ قَالَ ” قُمْ يَا نَوْمَانُ ” .
ইব্রাহীম তাইমীর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, আমরা হুযাইফাহ্ (রাঃ)-এর কাছে ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল। “হায়, আমি যদি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পেতাম, তবে তাঁর সাথে মিলে একত্রে যুদ্ধ করতাম এবং তাতে কোনরূপ পিছপা হতাম না।” হুযাইফাহ্ (রাঃ) বললেন, হয়তো তুমি তা করতে, কিন্তু আমি তো আহ্যাবের রাতে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম (সে রাতে) প্রচণ্ড বায়ু ও তীব্র শীত আমাদের কাবু করে ফেলেছিল। এমনি সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোষণা করলেন, “ওহে! এমন কেউ আছে কি যে আমাকে শত্রুর খবর এনে দেবে, আল্লাহ্ তা’আলা তাকে কিয়ামতের দিন আমার সঙ্গে (মর্যাদার আসনে) রাখবেন?” আমরা তখন চুপ করে রইলাম এবং আমাদের মধ্যে কেউ তাঁর সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তিনি আবার বললেন, “ওহে! এমন কোন ব্যক্তি আছে কি যে আমাকে শত্রুপক্ষের খবর এনে দেবে, আল্লাহ্ তা’আলা তাকে কিয়ামাতের দিন আমার সঙ্গে রাখবেন?” এবারও আমরা চুপ রইলাম আর আমাদের মধ্যে কেউ তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তিনি আবার ঘোষণা করলেন, “ওহে! এমন কেউ আছে কি যে আমাকে শত্রুপক্ষের খবর এনে দেবে, আল্লাহ্ তা’আলা কিয়ামতের দিন তাকে আমার সঙ্গে রাখবেন?” এবারও আমরা চুপ করে রইলাম এবং আমাদের মধ্যে কেউ তাঁর আহ্বানে সাড়া দেয়নি। এবার তিনি বললেন, হে হুযাইফাহ্! ওঠো এবং তুমি শত্রুদের খবরাদি আমাকে এনে দাও। রসূলু (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন এবার আমার নাম ধরেই ডাক দিলেন, তাই উঠা ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিল না। এবার তিনি বললেন, “শত্রুপক্ষের খবর আমাকে এনে দাও, কিন্তু সাবধান, তাদের আমার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করো না। তারপর আমি যখন তাঁর নিকট থেকে প্রস্থান করলাম, তখন মনে হচ্ছিল আমি যেন উষ্ণ আবহাওয়ার মধ্য দিয়ে চলেছি। এভাবে আমি তাদের (শত্রুপক্ষের) নিকটে পৌঁছে গেলাম। তখন আমি লক্ষ্য করলাম, আবূ সুফ্ইয়ান আগুনের দ্বারা তাঁর পিঠে ছেঁক দিচ্ছে। আমি তখন একটি তীর তুলে ধনুকে সংযোজন করলাম এবং তা নিক্ষেপ করতে মনস্থ করলাম। এমন সময় আমার মনে পড়ে গেল যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলে দিয়েছেন, “তাদেরকে আমার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলো না।” আমি যদি তখন তীর নিক্ষেপ করতাম তবে তীর নির্ঘাত লক্ষ্যভেদ করতো, অগত্যা আমি ফিরে আসলাম এবং ফিরে আসার সময়ও উষ্ণতার মধ্য দিয়ে অতিক্রমের মতো উষ্ণতা অনুভব করলাম। তারপর যখন ফিরে এলাম, তখন প্রতিপক্ষের খবর তাঁকে প্রদান করলাম। আমার দায়িত্ব পালন করে অবসর হতেই আবার আমি শীতের তীব্রতা অনুভব করলাম। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর অতিরিক্ত একটি কম্বল দিয়ে আমাকে আবৃত করে দিলেন, যা তিনি সাধারণতঃ সলাত আদায়ের সময় গায়ে দিতেন। তারপর আমি ভোর পর্যন্ত একটানা নিদ্রায় বিভোর রইলাম। যখন ভোর হল তখন তিনি বললেন, “হে গভীর নিদ্রামগ্ন! এখন উঠে পড়ো (ই.ফা. ৪৪৮৯, ই.সে. ৪৪৯১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৭. অধ্যায়ঃ
উহুদ যুদ্ধ
৪৫৩৩
وَحَدَّثَنَا هَدَّابُ بْنُ خَالِدٍ الأَزْدِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، وَثَابِتٍ، الْبُنَانِيِّ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أُفْرِدَ يَوْمَ أُحُدٍ فِي سَبْعَةٍ مِنَ الأَنْصَارِ وَرَجُلَيْنِ مِنْ قُرَيْشٍ فَلَمَّا رَهِقُوهُ قَالَ ” مَنْ يَرُدُّهُمْ عَنَّا وَلَهُ الْجَنَّةُ أَوْ هُوَ رَفِيقِي فِي الْجَنَّةِ ” . فَتَقَدَّمَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقَاتَلَ حَتَّى قُتِلَ ثُمَّ رَهِقُوهُ أَيْضًا فَقَالَ ” مَنْ يَرُدُّهُمْ عَنَّا وَلَهُ الْجَنَّةُ أَوْ هُوَ رَفِيقِي فِي الْجَنَّةِ ” . فَتَقَدَّمَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقَاتَلَ حَتَّى قُتِلَ فَلَمْ يَزَلْ كَذَلِكَ حَتَّى قُتِلَ السَّبْعَةُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِصَاحِبَيْهِ ” مَا أَنْصَفْنَا أَصْحَابَنَا ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন উহুদ যুদ্ধের দিন কেবল সাতজন আনসার ও দু’জন কুরায়শ (মুহাজির) সাথীসহ (শত্রুবাহিনী কর্তৃক) অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এবং তা তাঁকে (চতুর্দিক থেকে) বেষ্টন করে ফেলে, তিনি বললেন, কে আমার পক্ষ থেকে শত্রুদের প্রতিহত করবে, তার জন্য রয়েছে জান্নাত। অথবা বললেন, সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে? তখন আনসারদের মধ্যকার একব্যক্তি অগ্রসর হয়ে যুদ্ধ শুরু করলেন এবং পরিশেষে শহীদ হলেন। তারপর পুনরায় তারা তাঁকে ঘেরাও করে ফেললো এবং অনুরূপভাবে লড়াই করতে করতে তাঁদের সাতজনই শহীদ হলেন। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সঙ্গীদ্বয়কে লক্ষ্য করে বললেন, আমরা (কুরায়শরা) সঙ্গীদের প্রতি সুবিচার করিনি। (আমরা বেঁচে রইলাম, অথচ আনসাররা শহীদ হলেন।) (ই.ফা. ৪৪৯০, ই.সে. ৪৪৯২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৩৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ، يُسْأَلُ عَنْ جُرْحِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ فَقَالَ جُرِحَ وَجْهُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ وَهُشِمَتِ الْبَيْضَةُ عَلَى رَأْسِهِ فَكَانَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَغْسِلُ الدَّمَ وَكَانَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ يَسْكُبُ عَلَيْهَا بِالْمِجَنِّ فَلَمَّا رَأَتْ فَاطِمَةُ أَنَّ الْمَاءَ لاَ يَزِيدُ الدَّمَ إِلاَّ كَثْرَةً أَخَذَتْ قِطْعَةَ حَصِيرٍ فَأَحْرَقَتْهُ حَتَّى صَارَ رَمَادًا ثُمَّ أَلْصَقَتْهُ بِالْجُرْحِ فَاسْتَمْسَكَ الدَّمُ .
সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁকে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উহুদ যুদ্ধের দিন আহত হওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (পবিত্র) মুখমণ্ডল যখম করা হয়, তাঁর ‘রুবাই’ [৪০] দাঁত ভেঙ্গে দেয়া হয় এবং তাঁর মাথায় লৌহ শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে ঢুকে যায়। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা ফাতিমাহ্ (রাঃ) রক্ত ধুইয়ে দিচ্ছিলেন এবং আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) ঢাল দিয়ে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন। ফাতিমাহ্ (রাঃ) যখন দেখলেন যে, তাতে রক্তপড়া আরো বেশী বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন তিনি একটি মাদুর খণ্ড পোড়ালেন এবং ছাই হয়ে গেলে তা যখমের উপর চেপে ধরলেন। এতে রক্তপাত বন্ধ হয়ে গেল। (ই.ফা. ৪৪৯১, ই.সে. ৪৪৯৩)
[৪০] সামনের দু’দাঁতের পার্শ্ববর্তী ডান ও বামের দাঁত ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৩৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، – يَعْنِي ابْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْقَارِيَّ – عَنْ أَبِي حَازِمٍ، أَنَّهُ سَمِعَ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ، وَهُوَ يُسْأَلُ عَنْ جُرْحِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَمَ وَاللَّهِ إِنِّي لأَعْرِفُ مَنْ كَانَ يَغْسِلُ جُرْحَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ كَانَ يَسْكُبُ الْمَاءَ . وَبِمَاذَا دُووِيَ جُرْحُهُ . ثُمَّ ذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ عَبْدِ الْعَزِيزِ غَيْرَ أَنَّهُ زَادَ وَجُرِحَ وَجْهُهُ وَقَالَ مَكَانَ هُشِمَتْ كُسِرَتْ .
কুতাইবাহ্ ইবনু সা’ঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সাহ্ল ইবনু সা’ঈদ (রাঃ)-কে যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আহত হওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়, তখন তিনি বললেন, আল্লাহ্র কসম! আমি অবশ্যই জানি, কে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যখম ধুয়ে দিচ্ছিলেন, কে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন এবং কিসের দ্বারা তাঁর চিকিৎসা করা হয়েছিল। তারপর তিনি ‘আবদুল ‘আযীযের মাধ্যমে বর্ণিত পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। অবশ্য তাঁর বর্ণনায় এ পার্থক্য রয়েছে : “তাঁর মুখমণ্ডল যখম করা হয় এবং (আরবী) এর স্থলে (আরবী) শব্দ ব্যবহার করেছেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আহত হওয়া সংক্রান্ত সাহ্ল ইবনু সা’দ (রাঃ)-এর এ বর্ণনাটি সামান্য শাব্দিক পরিবর্তনসহ অন্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ৪৪৯২, ই.সে. ৪৪৯৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৩৬
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ، أَبِي عُمَرَ جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، ح وَحَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ الْعَامِرِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ، وَهْبٍ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِلاَلٍ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ سَهْلٍ التَّمِيمِيُّ، حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، – يَعْنِي ابْنَ مُطَرِّفٍ – كُلُّهُمْ عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ، بْنِ سَعْدٍ . بِهَذَا الْحَدِيثِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . فِي حَدِيثِ ابْنِ أَبِي هِلاَلٍ أُصِيبَ وَجْهُهُ . وَفِي حَدِيثِ ابْنِ مُطَرِّفٍ جُرِحَ وَجْهُهُ .
আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ্, যুহায়র ইবনু হারব, ইসহাক্ ইবনু ইব্রাহীম, ইবনু আবূ ‘উমার সকলেই ইবনু উয়াইনাহ্ থেকে এবং ‘আমর ইবনু সাও্ওয়াদ ‘আমিরী, মুহাম্মদ ইবনু সাহল তামীমী সকলেই আবূ হাযিম সূত্রে সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইবনু আবূ হিলাল-এর হাদীসে আছে, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুখমণ্ডলে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। আর মুতার্রফ-এর হাদীসে আছে তাঁর মুখমণ্ডলে যখম হয়েছিল। (ই.ফা. ৪৪৯৩, ই.সে. ৪৪৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৩৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ يَوْمَ أُحُدٍ وَشُجَّ فِي رَأْسِهِ فَجَعَلَ يَسْلُتُ الدَّمَ عَنْهُ وَيَقُولُ ” كَيْفَ يُفْلِحُ قَوْمٌ شَجُّوا نَبِيَّهُمْ وَكَسَرُوا رَبَاعِيَتَهُ وَهُوَ يَدْعُوهُمْ إِلَى اللَّهِ ” . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَىْءٌ}
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ওহুদ দিবসে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রুবা’ইয়াত দাঁত ভেঙ্গে দেয়া হয়, তাঁর মাথায় আঘাত করা হয় এবং তিনি তাঁর শরীর থেকে রক্ত মুছতে মুছতে বলছিলেন, সে জাতি কিভাবে সাফল্য অর্জন করবে, যারা তাদের নাবীকে আহত করলো এবং তাঁর সম্মুখের দু’টি দাঁত ভেঙ্গে দিল অথচ তিনি তাদের আল্লাহ্র দিকে আহব্বান জানাচ্ছিলেন? তখন আল্লাহ্ তা’আলা আয়াত নাযিল করলেন : “হে রসূল! এ ব্যাপারে আপনার করণীয় কিছুই নেই”- (সূরা আ-লি ইমরান : ১২৮। (ই.ফা. ৪৪৯৪, ই.সে. ৪৪৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَحْكِي نَبِيًّا مِنَ الأَنْبِيَاءِ ضَرَبَهُ قَوْمُهُ وَهُوَ يَمْسَحُ الدَّمَ عَنْ وَجْهِهِ وَيَقُولُ “ رَبِّ اغْفِرْ لِقَوْمِي فَإِنَّهُمْ لاَ يَعْلَمُونَ ” .
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি যেন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পাচ্ছি যে, তিনি এমন একজন নাবীর কথা কাহিনীরূপে বর্ণনা করছেন, যাঁকে তাঁর সম্প্রদায়ের লোকজন আঘাত করেছে। আর তিনি তাঁর নিজের কপাল থেকে রক্ত মুছছেন এবং বলছেন, “প্রভু! আমার সম্প্রদায়কে ক্ষমা কর, কেন না তারা বুঝে না।” আ’মাশ (রহঃ) থেকে সামান্য পার্থক্য সহ অন্য সূত্রেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ৪৪৯৫, ই.সে. ৪৪৯৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৩৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَمُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ فَهُوَ يَنْضِحُ الدَّمَ عَنْ جَبِينِهِ .
আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর বর্ণনায় রয়েছে যে, তিনি তাঁর কপাল থেকে রক্ত মুছছিলেন। (ই.ফা. ৪৪৯৬, ই.সে. ৪৪৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৮. অধ্যায়ঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাকে হত্যা করেন তার উপর আল্লাহ্র ভয়াবহ গযব
৪৫৪০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” اشْتَدَّ غَضَبُ اللَّهِ عَلَى قَوْمٍ فَعَلُوا هَذَا بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” . وَهُوَ حِينَئِذٍ يُشِيرُ إِلَى رَبَاعِيَتِهِ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” اشْتَدَّ غَضَبُ اللَّهِ عَلَى رَجُلٍ يَقْتُلُهُ رَسُولُ اللَّهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ” .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে যে সব হাদীস বর্ণনা করেছেন এর মধ্যে তিনি এটিও বর্ণনা করেছেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “সে সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহ্র গযব ভয়াবহ হয়, যারা আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি এরূপ আচরণ করে”। এ কথা বলতে বলতে তিনি তার সম্মুখের দু’টি (ভগ্ন) দাঁতের দিকে ইঙ্গিত করছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেন, মহামহিম আল্লাহ্র গযব তার উপরও ভয়াবহ হয়, যাকে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র পথে হত্যা করেন। (ই.ফা. ৪৪৯৭, ই.সে. ৪৪৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯. অধ্যায়ঃ
মুশরিক ও মুনাফিকদের হাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুঃখ-যাতনা
৪৫৪১
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ أَبَانَ الْجُعْفِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ، – يَعْنِي ابْنَ سُلَيْمَانَ – عَنْ زَكَرِيَّاءَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ الأَوْدِيِّ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ بَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي عِنْدَ الْبَيْتِ وَأَبُو جَهْلٍ وَأَصْحَابٌ لَهُ جُلُوسٌ وَقَدْ نُحِرَتْ جَزُورٌ بِالأَمْسِ فَقَالَ أَبُو جَهْلٍ أَيُّكُمْ يَقُومُ إِلَى سَلاَ جَزُورِ بَنِي فُلاَنٍ فَيَأْخُذُهُ فَيَضَعُهُ فِي كَتِفَىْ مُحَمَّدٍ إِذَا سَجَدَ فَانْبَعَثَ أَشْقَى الْقَوْمِ فَأَخَذَهُ فَلَمَّا سَجَدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَضَعَهُ بَيْنَ كَتِفَيْهِ قَالَ فَاسْتَضْحَكُوا وَجَعَلَ بَعْضُهُمْ يَمِيلُ عَلَى بَعْضٍ وَأَنَا قَائِمٌ أَنْظُرُ . لَوْ كَانَتْ لِي مَنَعَةٌ طَرَحْتُهُ عَنْ ظَهْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَاجِدٌ مَا يَرْفَعُ رَأْسَهُ حَتَّى انْطَلَقَ إِنْسَانٌ فَأَخْبَرَ فَاطِمَةَ فَجَاءَتْ وَهِيَ جُوَيْرِيَةُ فَطَرَحَتْهُ عَنْهُ . ثُمَّ أَقْبَلَتْ عَلَيْهِمْ تَشْتِمُهُمْ فَلَمَّا قَضَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صَلاَتَهُ رَفَعَ صَوْتَهُ ثُمَّ دَعَا عَلَيْهِمْ وَكَانَ إِذَا دَعَا دَعَا ثَلاَثًا . وَإِذَا سَأَلَ سَأَلَ ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ ” اللَّهُمَّ عَلَيْكَ بِقُرَيْشٍ ” . ثَلاَثَ مَرَّاتٍ فَلَمَّا سَمِعُوا صَوْتَهُ ذَهَبَ عَنْهُمُ الضِّحْكُ وَخَافُوا دَعْوَتَهُ ثُمَّ قَالَ ” اللَّهُمَّ عَلَيْكَ بِأَبِي جَهْلِ بْنِ هِشَامٍ وَعُتْبَةَ بْنِ رَبِيعَةَ وَشَيْبَةَ بْنِ رَبِيعَةَ وَالْوَلِيدِ بْنِ عُقْبَةَ وَأُمَيَّةَ بْنِ خَلَفٍ وَعُقْبَةَ بْنِ أَبِي مُعَيْطٍ ” . وَذَكَرَ السَّابِعَ وَلَمْ أَحْفَظْهُ فَوَالَّذِي بَعَثَ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم بِالْحَقِّ لَقَدْ رَأَيْتُ الَّذِينَ سَمَّى صَرْعَى يَوْمَ بَدْرٍ ثُمَّ سُحِبُوا إِلَى الْقَلِيبِ قَلِيبِ بَدْرٍ . قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ الْوَلِيدُ بْنُ عُقْبَةَ غَلَطٌ فِي هَذَا الْحَدِيثِ .
ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাইতুল্লাহিল হারামের নিকট সলাত আদায় করছিলেন। আবূ জাহল ও তার সাথীরা অদূরে উপবিষ্ট ছিল। পূর্বদিন সেখানে একটি উট নহর করা হয়েছিল। আবূ জাহল বলল, কে অমুক গোত্রের উটের (নাড়ি-ভূড়িসহ) জরায়ুকে নিয়ে আসবে এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সিজদারত হবে, তখন তার দু’কাঁধের মাঝখানে তা রেখে দেবে? তখন সম্প্রদায়ের সবচাইতে হতভাগা দূরাচার লোকটি উঠে দাঁড়াল এবং তা নিয়ে আসলো এবং যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সিজ্দায় গেলেন তখন তাঁর দু’কাঁধের মাঝখানে তা রেখে দিল। তখন তারা হাসাহাসি করতে লাগল এবং একে অপরের গায়ের উপর ঢলে পড়তে লাগল, আর আমি তখন দাঁড়িয়ে তা দেখলাম। যদি আমার প্রতিরোধের সাধ্য থাকতো তবে আমি তা অবশ্যই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিঠ থেকে ফেলে দিতাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সিজ্দায় রইলেন এবং তিনি মাথা উঠাতে পারছিলেন না। অবশেষে এক ব্যক্তি গিয়ে ফাতিমাহ্কে খবর দিল। ফাতিমাহ্ সাথে সাথে আসলেন। আর তিনি তখন বালিকা। তিনি তা তাঁর উপর থেকে ফেলে দিলেন। তারপর তাদের দিকে মুখ করে তাদেরকে মন্দাচারের বিষয়ে বলছিলেন। তারপর যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত সম্পন্ন করলেন তখন উচ্চৈঃস্বরে তাদেরকে বদদু’আ দিলেন আর তিনি যখন দু’আ করতেন (সাধারণতঃ) তিনবার করতেন এবং যখন কিছু প্রার্থনা করতেন তখন তিনি তিনবার করতেন। তারপর তিনি তিন তিনবার বললেন “ইয়া আল্লাহ্! তোমার উপরেই কুরায়শদের বিচারের ভার ন্যাস্ত করলাম। যখন তারা তাঁর আওয়াজ শুনতে পেল তখন তাদের হাসি চলে গেল এবং তারা তাঁর বদ দু’আয় ভয় পেয়ে গেল। তারপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ্! আবূ জাহ্ল ইবনু হিশাম, উত্বাহ্ ইবনু রাবী’আহ্, শাইবাহ্ ইবনু রাবী’আহ্, ওয়ালিদ ইবনু উক্বাহ্, উমাইয়াহ্ ইবনু খালাফ ও উক্বাহ্ ইবনু আবূ মুআ’য়তের শাস্তির ভার তোমার উপর ন্যস্ত। রাবী বলেন, তিনি সপ্তম আরেকজনের কথা উল্লেখ করেছিলেন। আমি তা স্মরণ রাখতে পারিনি। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যে পবিত্র সত্তা সত্যসহ রসূলরূপে প্রেরণ করেছেন, তাঁর কসম! তিনি যাদের নাম সেদিন উচ্চারণ করেছিলেন বাদ্রের দিন তাদের পতিত লাশ আমি দেখেছি। তারপর তাদের হেঁচড়িয়ে বাদ্রের একটি নোংরা কূপে নিক্ষেপ করা হয়। আবূ ইসহাক্ বলেন, ওয়ালিদ ইবনু উকবার নাম এখানে ভুলে হয়েছে। (ই.ফা. ৪৪৯৮, ই.সে. ৪৫০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৪২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ، يُحَدِّثُ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ بَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَاجِدٌ وَحَوْلَهُ نَاسٌ مِنْ قُرَيْشٍ إِذْ جَاءَ عُقْبَةُ بْنُ أَبِي مُعَيْطٍ بِسَلاَ جَزُورٍ فَقَذَفَهُ عَلَى ظَهْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَرْفَعْ رَأْسَهُ فَجَاءَتْ فَاطِمَةُ فَأَخَذَتْهُ عَنْ ظَهْرِهِ وَدَعَتْ عَلَى مَنْ صَنَعَ ذَلِكَ فَقَالَ “ اللَّهُمَّ عَلَيْكَ الْمَلأَ مِنْ قُرَيْشٍ أَبَا جَهْلِ بْنَ هِشَامٍ وَعُتْبَةَ بْنَ رَبِيعَةَ وَعُقْبَةَ بْنَ أَبِي مُعَيْطٍ وَشَيْبَةَ بْنَ رَبِيعَةَ وَأُمَيَّةَ بْنَ خَلَفٍ أَوْ أُبَىَّ بْنَ خَلَفٍ ” . شُعْبَةُ الشَّاكُّ قَالَ فَلَقَدْ رَأَيْتُهُمْ قُتِلُوا يَوْمَ بَدْرٍ فَأُلْقُوا فِي بِئْرٍ غَيْرَ أَنَّ أُمَيَّةَ أَوْ أُبَيًّا تَقَطَّعَتْ أَوْصَالُهُ فَلَمْ يُلْقَ فِي الْبِئْرِ .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সিজ্দারত ছিলেন এবং তাঁর আশেপাশে কুরায়শের কিছু লোকজন জড়ো ছিল। এমন সময় উক্বাহ্ ইবনু আবূ মু’আয়ত (উটনীর নাড়ি-ভুড়িসহ) জরায়ু নিয়ে এলো এবং তা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিঠে নিক্ষেপ করলো। তিনি মাথা উঠাতে পারছিলেন না। তারপর ফাতিমাহ্ আসলেন এবং তা তাঁর পিঠ থেকে সরিয়ে দিলেন এবং যে ব্যক্তি তা করেছে, তাকে বদদু’আ করলেন। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইয়া আল্লাহ্! তোমার উপরই কুরায়শ সম্প্রদায়ের আবূ জাহ্ল ইবনু হিশাম, উত্বাহ্ ইবনু রাবী’আহ্, শাইবাহ্ ইবনু রাবীআ’, উক্বাহ্ ইবনু আবূ মু’আইত, উমাইয়াহ্ ইবনু খালাফ অথবা উবাই ইবনু খালাফ এদের চিনে নাও। তবে রাবী শু’বাহ্ (শেষের দু’ নামের) কোন্টি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, সে ব্যাপারে) সন্দেহ করেছেন। রাবী বলেন, এরপর আমি বাদ্রের দিন তাদের দেখেছি যে, তারা সকলে নিহত হয়েছে এবং একটি কূপে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। কেবল উমাইয়াহ্ বা উবাই এর লাশ বাদ ছিল। কেননা, তার লাশ জোড়ায় জোড়ায় কেটে ফেলা হয়েছিল বিধায় কূপে নিক্ষেপ করা হয়নি। (ই.ফা. ৪৪৯৯, ই.সে. ৪৫০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৪৩
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي، إِسْحَاقَ بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ وَزَادَ وَكَانَ يَسْتَحِبُّ ثَلاَثًا يَقُولُ “ اللَّهُمَّ عَلَيْكَ بِقُرَيْشٍ اللَّهُمَّ عَلَيْكَ بِقُرَيْشٍ اللَّهُمَّ عَلَيْكَ بِقُرَيْشٍ ” . ثَلاَثًا وَذَكَرَ فِيهِمُ الْوَلِيدَ بْنَ عُتْبَةَ وَأُمَيَّةَ بْنَ خَلَفٍ وَلَمْ يَشُكَّ . قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ وَنَسِيتُ السَّابِعَ .
আবূ ইস্হাক (রহঃ) হতে উক্ত সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। রাবী সুফ্ইয়ান (রহঃ) বাড়িয়ে বলেছেন, “এবং তিনি তিনবার বলা পছন্দ করতেন। তিনি বলেছিলেন, ইয়া আল্লাহ্! কুরায়শের (এদের) বিচারের ভার তোমার উপর ন্যাস্ত। ইয়া আল্লাহ্! কুরায়শদের বিচারের ভার তোমার উপর ন্যস্ত। ইয়া আল্লাহ্! কুরায়শের বিচারের ভার তোমার উপরই ন্যাস্ত। এভাবে তিনবার তিনি বলেন, এবং এদের মধ্যে ওয়ালীদ ইবনু উত্বাহ্ ও উমাইয়াহ্ ইবনু খালাফের কথা তিনি উল্লেখ করেন এবং তাতে কোনরূপ সন্দেহ প্রকাশ করেননি। রাবী আবূ ইসহাক্ বলেন, আমি সপ্তম (অভিশপ্ত) ব্যক্তির নাম ভুলে গেছি। (ই.ফা. ৪৫০০, ই.সে. ৪৫০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৪৪
وَحَدَّثَنِي سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَعْيَنَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ اسْتَقْبَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْبَيْتَ فَدَعَا عَلَى سِتَّةِ نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ . فِيهِمْ أَبُو جَهْلٍ وَأُمَيَّةُ بْنُ خَلَفٍ وَعُتْبَةُ بْنُ رَبِيعَةَ وَشَيْبَةُ بْنُ رَبِيعَةَ وَعُقْبَةُ بْنُ أَبِي مُعَيْطٍ فَأُقْسِمُ بِاللَّهِ لَقَدْ رَأَيْتُهُمْ صَرْعَى عَلَى بَدْرٍ . قَدْ غَيَّرَتْهُمُ الشَّمْسُ وَكَانَ يَوْمًا حَارًّا .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা বাইতুল্লাহর দিকে মুখ করে কুরায়শের ছয় ব্যক্তির জন্য বদদু’আ করলেন। তাদের মধ্যে আবূ জাহ্ল, উমাইয়াহ্ ইবনু খালাফ, উত্বাহ্ ইবনু রাবী’আহ্, শাইবাহ্ ইবনু রাবী’আহ্, উক্বাহ্ ইবনু আবূ মু’আয়ত রয়েছে। আল্লাহ্র কসম করে বলছি, আমি তাদের কর্তিত মৃত লাশগুলো বাদ্রে দেখেছি। সূর্যতাপ তাদের বিকৃত করে ফেলেছিল। আর সেদিনটিও ছিল অত্যন্ত গরমের। (ই.ফা. ৪৫০১, ই.সে. ৪৫০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৪৫
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ وَحَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى وَعَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ الْعَامِرِيُّ – وَأَلْفَاظُهُمْ مُتَقَارِبَةٌ – قَالُوا حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، حَدَّثَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَدَّثَتْهُ أَنَّهَا قَالَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ أَتَى عَلَيْكَ يَوْمٌ كَانَ أَشَدَّ مِنْ يَوْمِ أُحُدٍ فَقَالَ ” لَقَدْ لَقِيتُ مِنْ قَوْمِكِ وَكَانَ أَشَدَّ مَا لَقِيتُ مِنْهُمْ يَوْمَ الْعَقَبَةِ إِذْ عَرَضْتُ نَفْسِي عَلَى ابْنِ عَبْدِ يَالِيلَ بْنِ عَبْدِ كُلاَلٍ فَلَمْ يُجِبْنِي إِلَى مَا أَرَدْتُ فَانْطَلَقْتُ وَأَنَا مَهْمُومٌ عَلَى وَجْهِي فَلَمْ أَسْتَفِقْ إِلاَّ بِقَرْنِ الثَّعَالِبِ فَرَفَعْتُ رَأْسِي فَإِذَا أَنَا بِسَحَابَةٍ قَدْ أَظَلَّتْنِي فَنَظَرْتُ فَإِذَا فِيهَا جِبْرِيلُ فَنَادَانِي فَقَالَ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ سَمِعَ قَوْلَ قَوْمِكَ لَكَ وَمَا رَدُّوا عَلَيْكَ وَقَدْ بَعَثَ إِلَيْكَ مَلَكَ الْجِبَالِ لِتَأْمُرَهُ بِمَا شِئْتَ فِيهِمْ قَالَ فَنَادَانِي مَلَكُ الْجِبَالِ وَسَلَّمَ عَلَىَّ . ثُمَّ قَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّ اللَّهَ قَدْ سَمِعَ قَوْلَ قَوْمِكَ لَكَ وَأَنَا مَلَكُ الْجِبَالِ وَقَدْ بَعَثَنِي رَبُّكَ إِلَيْكَ لِتَأْمُرَنِي بِأَمْرِكَ فَمَا شِئْتَ إِنْ شِئْتَ أَنْ أُطْبِقَ عَلَيْهِمُ الأَخْشَبَيْنِ ” . فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” بَلْ أَرْجُو أَنْ يُخْرِجَ اللَّهُ مِنْ أَصْلاَبِهِمْ مَنْ يَعْبُدُ اللَّهَ وَحْدَهُ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا ”
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সহধর্মিণী আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন, “হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনার জীবনে কি উহুদ দিবসের চেয়েও অধিকতর কঠিন কোন দিন এসেছে? তিনি বললেন, তোমার সম্প্রদায়ের হাতে আকাবার দিন যে নির্যাতনের শিকার হয়েছি, তা এর চেয়েও অধিকতর কঠিন ছিল। যখন আমি (আল্লাহ্র পানে দাওয়াত দিতে গিয়ে) ইবনু আব্দে ইয়ালীল ইবনু আব্দে কিলালের কাছে নিজেকে পেশ করেছিলাম। কিন্তু সে আমার কাঙ্ক্ষিত ডাকে সাড়া দেয়নি। তখন আমি অত্যন্ত বিষণ্ণ অবস্থায় সম্মুখের দিকে চলতে লাগলাম এবং কারনুস সা’আলিব নামক স্থানে না পৌঁছা পর্যন্ত আমি সম্বিৎ ফিরে পাইনি। তারপর যখন আমি মাথা উঠালাম তখন দেখি, একখণ্ড মেঘ আমাকে ছায়াপাত করছে এবং এর মধ্যে জিবরাঈল (আঃ)-কে দেখতে পেলাম। তিনি আমাকে ডাক দিয়ে বললেন, মহা মহিমান্বিত আল্লাহ্ আপনার প্রতি আপনার সম্প্রদায়ের উক্তি এবং আপনার বিরুদ্ধে তাদের উত্তরও শুনেছেন এবং তিনি আপনার নিকট পাহাড়ের ফেরেশ্তাকে পাঠিয়েছেন, যেন আপনি আপনার সম্প্রদায়ের লোকজনের ব্যাপারে যেরূপ ইচ্ছা সেরূপ আদেশ তাঁকে করেন। তখন পাহাড়ের ফেরেশ্তাও আমাকে ডাক দিলেন এবং আমাকে সালাম দিলেন। তারপর বললেন, “হে মুহাম্মাদ! আপনার প্রতি আপনার সম্প্রদায়ের লোকজনের উক্তি আল্লাহ্ তা’আলা শুনেছেন আর আমি হলাম পাহাড়ের (তত্ত্বাবধানকারী) ফেরেশ্তা। আপনার রব আপনার কাছে আমাকে এজন্যে পাঠিয়েছেন যেন আপনি আপনার ইচ্ছামত আমাকে নির্দেশ দেন। (আপনি বললে) আমি এ পাহাড় দু’টিকে তাদের উপর চাপা দিয়ে দিব। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি বরং আশা করি যে, আল্লাহ্ তা’আলা হয়তো এদের ঔরস থেকেই এমন ব্যক্তি বের করে আনবেন, যারা তাঁর সঙ্গে কিছুকে শরীক না করে এক আল্লাহ্র ইবাদাত করবে। (ই.ফা. ৪৫০২, ই.সে. ৪৫০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৪৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، كِلاَهُمَا عَنْ أَبِي عَوَانَةَ، قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ جُنْدُبِ بْنِ سُفْيَانَ، قَالَ دَمِيَتْ إِصْبَعُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي بَعْضِ تِلْكَ الْمَشَاهِدِ فَقَالَ “ هَلْ أَنْتِ إِلاَّ إِصْبَعٌ دَمِيتِ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا لَقِيتِ ” .
জুন্দুব ইবনু সুফ্ইয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি আঙ্গুলি কোন একটি অভিযানে রক্তাক্ত হয়। তখন তিনি (উক্ত আঙ্গুলিকে লক্ষ্য করে) বললেন, তুমি তো আঙ্গুলি ছাড়া কিছু নও, তুমি আহত হয়েছ এবং তুমি যে কষ্ট পেয়েছ, তা আল্লাহ্র পথেই গণ্য। (ই.ফা. ৪৫০৩, ই.সে. ৪৫০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৪৭
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَارٍ فَنُكِبَتْ إِصْبَعُهُ .
আসওয়াদ ইবনু কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাতে বর্ণনাকারী আরও বলেছেন: রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কোন এক গুহায় ছিলেন, তখন তাঁর আঙ্গুলে যখম হয়। (ই.ফা. ৪৫০৪, ই.সে. ৪৫০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৪৮
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ، أَنَّهُ سَمِعَ جُنْدُبًا، يَقُولُ أَبْطَأَ جِبْرِيلُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ الْمُشْرِكُونَ قَدْ وُدِّعَ مُحَمَّدٌ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { وَالضُّحَى * وَاللَّيْلِ إِذَا سَجَى * مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَى}
আসওয়াদ ইবনু কায়স থেকে বর্ণিতঃ
তিনি জুন্দুব (রহঃ) -কে বলতে শুনেছেন যে, জিবরাঈল (‘আঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসতে বিলম্ব করেন। এতে মুশরিকরা বলতে লাগলো, মুহাম্মাদ পরিত্যক্ত হয়েছেন। তখন আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করলেন, “শপথ পূর্বাহ্নের,শপথ রজনীর! যখন তা হয় নিঝুম, তোমার প্রতিপালক তোমাকে ছেড়ে দেননি এবং তোমার প্রতি নারাজও হননি।” (ই.ফা. ৪৫০৫, ই.সে. ৪৫০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৪৯
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ رَافِعٍ – قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ ابْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ، قَالَ سَمِعْتُ جُنْدُبَ بْنَ سُفْيَانَ، يَقُولُ اشْتَكَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَقُمْ لَيْلَتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا فَجَاءَتْهُ امْرَأَةٌ فَقَالَتْ يَا مُحَمَّدُ إِنِّي لأَرْجُو أَنْ يَكُونَ شَيْطَانُكَ قَدْ تَرَكَكَ لَمْ أَرَهُ قَرِبَكَ مُنْذُ لَيْلَتَيْنِ أَوْ ثَلاَثٍ قَالَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { وَالضُّحَى * وَاللَّيْلِ إِذَا سَجَى * مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَى}
আসওয়াদ ইবনু কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জুনদুব ইবনু সুফ্ইয়ান (রহঃ) –কে বলতে শুনেছি, একবার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পীড়িত হন বিধায় দুই বা তিন রাত্রি জাগতে পারেননি (তাহাজ্জুদের জন্যে)। তখন একটি মহিলা এসে বলল, “মুহাম্মাদ, আশা করি, এবার তোমার শাইতান তোমাকে ছেড়ে দিয়েছে। কেননা, দুই বা তিন রাত যাবৎ তোমার নিকটে আগমন লক্ষ্য করছি না।” তখন আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করলেন, “শপথ পূর্বাহ্নের, শপথ রজনীর! যখন তা হয় নিঝ্ঝুম, তোমার প্রতিপালক তোমাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্টও হননি।” (ই.ফা. ৪৫০৬, ই.সে. ৪৫০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৫০
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالُوا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ، بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ شُعْبَةَ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا الْمُلاَئِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، كِلاَهُمَا عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَ حَدِيثِهِمَا .
আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ্, মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না ও ইবনু বাশ্শার (রহঃ) শু‘বাহ (রহঃ) হতে এবং ইসহাক্ ইবনু ইব্রাহীম (রহঃ) …সুফ্ইয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উভয়ে উক্ত সানাদে আসওয়াদ ইবনু কায়স (রহঃ) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৫০৭, ই.সে. ৪৫০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০. অধ্যায়ঃ
মুনাফিকদের প্রদত্ত কষ্টে আল্লাহর নিকট নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দু‘আ ও ধৈর্যধারণ
৪৫৫১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ رَافِعٍ – قَالَ ابْنُ رَافِعٍ حَدَّثَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَكِبَ حِمَارًا عَلَيْهِ إِكَافٌ تَحْتَهُ قَطِيفَةٌ فَدَكِيَّةٌ وَأَرْدَفَ وَرَاءَهُ أُسَامَةَ وَهُوَ يَعُودُ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ فِي بَنِي الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ وَذَاكَ قَبْلَ وَقْعَةِ بَدْرٍ حَتَّى مَرَّ بِمَجْلِسٍ فِيهِ أَخْلاَطٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُشْرِكِينَ عَبَدَةِ الأَوْثَانِ وَالْيَهُودِ فِيهِمْ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ وَفِي الْمَجْلِسِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَوَاحَةَ فَلَمَّا غَشِيَتِ الْمَجْلِسَ عَجَاجَةُ الدَّابَّةِ خَمَّرَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ أَنْفَهُ بِرِدَائِهِ ثُمَّ قَالَ لاَ تُغَبِّرُوا عَلَيْنَا . فَسَلَّمَ عَلَيْهِمُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ وَقَفَ فَنَزَلَ فَدَعَاهُمْ إِلَى اللَّهِ وَقَرَأَ عَلَيْهِمُ الْقُرْآنَ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ أَيُّهَا الْمَرْءُ لاَ أَحْسَنَ مِنْ هَذَا إِنْ كَانَ مَا تَقُولُ حَقًّا فَلاَ تُؤْذِنَا فِي مَجَالِسِنَا وَارْجِعْ إِلَى رَحْلِكَ فَمَنْ جَاءَكَ مِنَّا فَاقْصُصْ عَلَيْهِ . فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَوَاحَةَ اغْشَنَا فِي مَجَالِسِنَا فَإِنَّا نُحِبُّ ذَلِكَ . قَالَ فَاسْتَبَّ الْمُسْلِمُونَ وَالْمُشْرِكُونَ وَالْيَهُودُ حَتَّى هَمُّوا أَنْ يَتَوَاثَبُوا فَلَمْ يَزَلِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُخَفِّضُهُمْ ثُمَّ رَكِبَ دَابَّتَهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ فَقَالَ “ أَىْ سَعْدُ أَلَمْ تَسْمَعْ إِلَى مَا قَالَ أَبُو حُبَابٍ – يُرِيدُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ – قَالَ كَذَا وَكَذَا ” . قَالَ اعْفُ عَنْهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَاصْفَحْ فَوَاللَّهِ لَقَدْ أَعْطَاكَ اللَّهُ الَّذِي أَعْطَاكَ وَلَقَدِ اصْطَلَحَ أَهْلُ هَذِهِ الْبُحَيْرَةِ أَنْ يُتَوِّجُوهُ فَيُعَصِّبُوهُ بِالْعِصَابَةِ فَلَمَّا رَدَّ اللَّهُ ذَلِكَ بِالْحَقِّ الَّذِي أَعْطَاكَهُ شَرِقَ بِذَلِكَ فَذَلِكَ فَعَلَ بِهِ مَا رَأَيْتَ . فَعَفَا عَنْهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم .
উসামাহ্ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি গাধায় আরোহণ করলেন যার উপর জীন (বসার গদি) ছিল এবং তার নীচে একটি ফদকী মখমল বিছানো ছিল। তিনি তার পশ্চাতে উসামাহ্ (রাঃ)-কে বসালেন। বানী হারিস ইবনু খাযরাজ গোত্রের এলাকায় তিনি সা‘দ ইবনু ‘উবাদাহ্ (রাঃ)-কে (অসু্স্হ অবস্থায়) দেখতে যাচ্ছিলেন। এটি ছিল বদর যুদ্ধের পূর্বের ঘটনা। তিনি এমন একটি মাজলিস অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, যেখানে মুসলিম, মুশরিক পৌত্তলিক ও ইয়াহূদীরা একত্রে বসা ছিল। তাদের মধ্যে ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাইও ছিল এবং মাজলিসে ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)-ও ছিলেন। যখন মাজলিসটি সাওয়ারীর ধূলায় আচ্ছন্ন হয়ে গেল, তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই তার নাক চাদর দিয়ে ঢেকে নিল। এরপর বলল, আপনারা আমাদের উপর ধূলি উঠাবেন না। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সালাম দিলেন। তারপর তিনি সেখানে থামলেন এবং নামলেন। আর তাদের আল্লাহর পথে দা‘ওয়াত দিলেন এবং তাদের সম্মুখে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করলেন। তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই বলে উঠলো, ওহে লোক! আপনি যা বলছেন তা যদি সত্য হয় তবে এর চাইতে উত্তম আর কিছু নয়, তবে আমার মাজলিসে এসে আপনি আমাদের কষ্ট দিবেন না। আপনি আপনার বাসস্থানে ফিরে যান। সেখানে আমাদের মধ্যকার যে ব্যক্তি যায় তার কাছে আপনি এসব উপদেশ পরিবেশন করবেন।
তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) বলে উঠলেন, “(হে আল্লাহ্র রসূল!)” আমাদের মাজলিসে (যতখুশি ইচ্ছা) ধূলি উড়াবেন। কেননা, আমরা তা পছন্দ করি। তখন মুসলিম, মুশরিক, ইয়াহূদীরা পরস্পরে বাদানুবাদ ও গালগালিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এমনকি রীতিমত একটি দাঙ্গা বাধার উপক্রম হয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের নিবৃত করতে লাগলেন। তারপর তাঁর বাহনে সাওয়ার হয়ে সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ্ (রাঃ)-এর বাড়ীতে গিয়ে প্রবেশ করলেন এবং বললেন, আয় সা‘দ! তুমি কি শোননি আবূ হুবাব অর্থাৎ ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই কী বলেছে? সে এরূপ এরূপ কথা বলেছে। সা‘দ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! ওকে ক্ষমা করে দিন এবং উপেক্ষা করুন। আল্লাহর কসম! আল্লাহ আপনাকে যে মর্যাদা দিয়েছেন, তা তো দিয়েছেনই। (কিন্তু তার ব্যাপার?) এ জনপদের লোকজন স্থির করেছিল যে, তাকে রাজ মুকুট ও পাগড়ী পরাবে। (অর্থাৎ -তাকে তাদের বাদশাহ্ বানাবে) কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে যে সত্য দান করেছেন,তা দিয়ে যখন আল্লাহ তা‘আলা তার চাওয়া পাওয়াকে রুদ্ধ করে দিলেন, তাতে বিদ্বেষপ্রবণ হয়ে পড়ে। তাই সে এরূপ আচরণ করেছে যা আপনি প্রত্যক্ষ করেছেন। এতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে মার্জনা করে দিলেন। (ই.ফা. ৪৫০৮, ই.সে. ৪৫১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৫২
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا حُجَيْنٌ، – يَعْنِي ابْنَ الْمُثَنَّى – حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ بِمِثْلِهِ وَزَادَ وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ عَبْدُ اللَّهِ .
ইবনু শিহাব (রহঃ) -এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন, তবে তাতে এতটুকু বর্ধিত অংশ উল্লেখ করেছেন, এটি ‘আবদুল্লাহর (বাহ্যতঃ) ইসলাম গ্রহণের পূর্বের কথা। (ই.ফা. ৪৫০৯, ই.সে. ৪৫১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৫৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الْقَيْسِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قِيلَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَوْ أَتَيْتَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ قَالَ فَانْطَلَقَ إِلَيْهِ وَرَكِبَ حِمَارًا وَانْطَلَقَ الْمُسْلِمُونَ وَهِيَ أَرْضٌ سَبِخَةٌ فَلَمَّا أَتَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِلَيْكَ عَنِّي فَوَاللَّهِ لَقَدْ آذَانِي نَتْنُ حِمَارِكَ . قَالَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ وَاللَّهِ لَحِمَارُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَطْيَبُ رِيحًا مِنْكَ – قَالَ – فَغَضِبَ لِعَبْدِ اللَّهِ رَجُلٌ مِنْ قَوْمِهِ – قَالَ – فَغَضِبَ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا أَصْحَابُهُ – قَالَ – فَكَانَ بَيْنَهُمْ ضَرْبٌ بِالْجَرِيدِ وَبِالأَيْدِي وَبِالنِّعَالِ – قَالَ – فَبَلَغَنَا أَنَّهَا نَزَلَتْ فِيهِمْ { وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا} .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলা হলো, (হে আল্লাহ্র রসূল!) যদি আপনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাইর কাছে যেতেন! তিনি তখন একটি গাধায় চড়ে তার কাছে রওনা হলেন। একদল মুসলিমও তাঁর সঙ্গে গেলেন। তাদের পথে পড়লো একটি লোনা ঊষর ভূমি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন তার কাছে উপস্থিত হলেন, তখন সে বলল, আমার কাছ থেকে দূরে থাকবেন। আল্লাহর কসম! আপনার গাধার দুর্গন্ধ আমাকে বিরক্ত করেছে। রাবী বলেন, তখন আনসারদের একজন উঠে (তৎক্ষণাৎ) জবাব দিলেন, “আল্লাহর কসম! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর গাধার গন্ধ তোমার দুর্গন্ধের চেয়ে অনেক উত্তম।” রাবী বলেন, তখন ‘আবদুল্লাহর সম্প্রদায়ের একব্যক্তি ক্ষেপে গেল। রাবী বলেন, তারপর উভয় পক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো। রাবী বলেন, তখন তাদের মধ্যে লাঠি, হাত ও জুতার দ্বারা মারামারি লেগে গেল। তারপর আমরা জানতে পারলাম তাদের উদ্দেশে কুরআনের আয়াত “যদি ঈমানদারদের দু‘টি দল পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হয়, তবে তাদের মধ্যে সমঝোতা করে দাও”-(সূরা হুজুরাত ৪৯:৯) নাযিল হয়েছে। (ই.ফা. ৪৫১০, ই.সে. ৪৫১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪১. অধ্যায়ঃ
আবূ জাহ্লের নিধন
৪৫৫৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ السَّعْدِيُّ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ، – يَعْنِي ابْنَ عُلَيَّةَ – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، التَّيْمِيُّ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ يَنْظُرُ لَنَا مَا صَنَعَ أَبُو جَهْلٍ ” . فَانْطَلَقَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَوَجَدَهُ قَدْ ضَرَبَهُ ابْنَا عَفْرَاءَ حَتَّى بَرَكَ – قَالَ – فَأَخَذَ بِلِحْيَتِهِ فَقَالَ آنْتَ أَبُو جَهْلٍ فَقَالَ وَهَلْ فَوْقَ رَجُلٍ قَتَلْتُمُوهُ – أَوْ قَالَ – قَتَلَهُ قَوْمُهُ قَالَ وَقَالَ أَبُو مِجْلَزٍ قَالَ أَبُو جَهْلٍ فَلَوْ غَيْرُ أَكَّارٍ قَتَلَنِي .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (বাদ্র যুদ্ধের দিন) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃআবূ জাহ্লের কী হলো, কে আমাদের জানাবে? তখন ইবনু মাস‘ঊদ বেরিয়ে গেলেন এবং (যুদ্ধক্ষেত্রে) গিয়ে দেখলেন, আফরা-এর দু’পুত্র তাকে এমনি আঘাত করেছে যে, সে ঠান্ডা হয়ে গেছে। রাবী বলেন, তখন ইবনু মাস‘ঊদ তার দাড়ি ধরে বললেন, তুমিই কি আবূ জাহ্ল? সে বলল, তার চাইতেও উত্তম কাউকে তোমরা হত্যা করেছ? অথবা সে বলল, “যাকে তার সম্প্রদায়ের লোকেরা হত্যা করেছে?” রাবী বলেন, আবূ মিজলায (রহঃ) বলেছেন, আবূ জাহ্ল বলেছে, হায়! চাষা ছাড়া অন্য কেউ যদি আমাকে হত্যা করতো। (ই.ফা. ৪৫১১, ই.সে. ৪৫১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৫৫
حَدَّثَنَا حَامِدُ بْنُ عُمَرَ الْبَكْرَاوِيُّ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ يَعْلَمُ لِي مَا فَعَلَ أَبُو جَهْلٍ ” . بِمِثْلِ حَدِيثِ ابْنِ عُلَيَّةَ وَقَوْلِ أَبِي مِجْلَزٍ كَمَا ذَكَرَهُ إِسْمَاعِيلُ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাতে তিনি বলেন, আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, “আবূ জাহ্ল কি করলো, তা কে আমার পক্ষ থেকে জেনে আসবে? অতঃপর তিনি ইবনু ‘উলাইয়্যাহ্ ও আবূ মিজলায (রহঃ)-এর অনুরূপ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, যেমন ইসমা‘ঈল (রহঃ) বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৫১২, ই.সে. ৪৫১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২. অধ্যায়ঃ
ইয়াহূদী নেতা কা‘ব ইবনু আশরাফের হত্যা
৪৫৫৬
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْمِسْوَرِ، الزُّهْرِيُّ كِلاَهُمَا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، – وَاللَّفْظُ لِلزُّهْرِيِّ – حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، سَمِعْتُ جَابِرًا، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ لِكَعْبِ بْنِ الأَشْرَفِ فَإِنَّهُ قَدْ آذَى اللَّهَ وَرَسُولَهُ ” . فَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَتُحِبُّ أَنْ أَقْتُلَهُ قَالَ ” نَعَمْ ” . قَالَ ائْذَنْ لِي فَلأَقُلْ قَالَ ” قُلْ ” . فَأَتَاهُ فَقَالَ لَهُ وَذَكَرَ مَا بَيْنَهُمَا وَقَالَ إِنَّ هَذَا الرَّجُلَ قَدْ أَرَادَ صَدَقَةً وَقَدْ عَنَّانَا . فَلَمَّا سَمِعَهُ قَالَ وَأَيْضًا وَاللَّهِ لَتَمَلُّنَّهُ . قَالَ إِنَّا قَدِ اتَّبَعْنَاهُ الآنَ وَنَكْرَهُ أَنْ نَدَعَهُ حَتَّى نَنْظُرَ إِلَى أَىِّ شَىْءٍ يَصِيرُ أَمْرُهُ – قَالَ – وَقَدْ أَرَدْتُ أَنْ تُسْلِفَنِي سَلَفًا قَالَ فَمَا تَرْهَنُنِي قَالَ مَا تُرِيدُ . قَالَ تَرْهَنُنِي نِسَاءَكُمْ قَالَ أَنْتَ أَجْمَلُ الْعَرَبِ أَنَرْهَنُكَ نِسَاءَنَا قَالَ لَهُ تَرْهَنُونِي أَوْلاَدَكُمْ . قَالَ يُسَبُّ ابْنُ أَحَدِنَا فَيُقَالُ رُهِنَ فِي وَسْقَيْنِ مِنْ تَمْرٍ . وَلَكِنْ نَرْهَنُكَ اللأْمَةَ – يَعْنِي السِّلاَحَ – قَالَ فَنَعَمْ . وَوَاعَدَهُ أَنْ يَأْتِيَهُ بِالْحَارِثِ وَأَبِي عَبْسِ بْنِ جَبْرٍ وَعَبَّادِ بْنِ بِشْرٍ قَالَ فَجَاءُوا فَدَعَوْهُ لَيْلاً فَنَزَلَ إِلَيْهِمْ قَالَ سُفْيَانُ قَالَ غَيْرُ عَمْرٍو قَالَتْ لَهُ امْرَأَتُهُ إِنِّي لأَسْمَعُ صَوْتًا كَأَنَّهُ صَوْتُ دَمٍ قَالَ إِنَّمَا هَذَا مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ وَرَضِيعُهُ وَأَبُو نَائِلَةَ إِنَّ الْكَرِيمَ لَوْ دُعِيَ إِلَى طَعْنَةٍ لَيْلاً لأَجَابَ . قَالَ مُحَمَّدٌ إِنِّي إِذَا جَاءَ فَسَوْفَ أَمُدُّ يَدِي إِلَى رَأْسِهِ فَإِذَا اسْتَمْكَنْتُ مِنْهُ فَدُونَكُمْ قَالَ فَلَمَّا نَزَلَ نَزَلَ وَهُوَ مُتَوَشِّحٌ فَقَالُوا نَجِدُ مِنْكَ رِيحَ الطِّيبِ قَالَ نَعَمْ تَحْتِي فُلاَنَةُ هِيَ أَعْطَرُ نِسَاءِ الْعَرَبِ . قَالَ فَتَأْذَنُ لِي أَنْ أَشُمَّ مِنْهُ قَالَ نَعَمْ فَشُمَّ . فَتَنَاوَلَ فَشَمَّ ثُمَّ قَالَ أَتَأْذَنُ لِي أَنْ أَعُودَ قَالَ فَاسْتَمْكَنَ مِنْ رَأْسِهِ ثُمَّ قَالَ دُونَكُمْ . قَالَ فَقَتَلُوهُ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃকা‘ব ইবনু আশরাফের (নিধনের) জন্য কে আছ? কেননা, সে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে কষ্ট দিয়েছে। তখন মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ্ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি কি চান যে, আমি তাকে হত্যা করি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তবে আমাকে (প্রয়োজনমত যা ইচ্ছা) বলার অনুমতি দিন। তিনি বললেন, বলো। তারপর তিনি তার কাছে এলেন। তিনি (কথা প্রসঙ্গে তাদের পূর্বেকার) পারস্পরিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করলেন এবং বললেন, “এ ব্যক্তি তো (অর্থাৎ -নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) সদাকাহ্ উসূল করতে চায় এবং সে আমাদের অতিষ্ঠ করে তুলেছে।” সে যখন তা শুনতে পেলো, তখন বললো, আরো অপেক্ষা কর। আল্লাহর কসম, সে তোমাদের কষ্ট দেবেই। তখন তিনি বললেন, আমরা সবেমাত্র তারঁ অনুসারী হয়েছি। তাই ব্যাপারটি শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা না দেখে এ মুহূর্তেই তাকে ছেড়ে যাওয়াটা ঠিক মনে করছি না। এখন আমি চাই তুমি আমাকে কিছু ধার দাও। সে বলল, তুমি আমার কাছে কিছু বন্ধক রাখবে? তিনি বললেন, তুমি কী চাও? সে বলল, তোমাদের রমণীদের আমার কাছে বন্ধক রাখ। তিনি বললেন, “তুমি হলে আরবের সবচাইতে সুন্দর পুরুষ। তোমার কাছে বন্ধক রাখব আমাদের রমণীদের?” তখন সে বলল, ‘তাহলে তোমাদের সন্তানদের আমার কাছে বন্ধক রাখ।’ জবাবে তিনি বললেন, “আমাদের কারো সন্তানকে এ বলে গালি দেয়া হবে যে, তাকে মাত্র দু‘ওসাক (৫ মণ আড়াই সের পরিমাণ) খেজুরের বিনিময়ে বন্ধক রাখা হয়েছিল। আমরা বরং তোমাদের কাছে যুদ্ধাস্ত্র বন্ধক রাখবো। সে বলল, “ঠিক আছে।” তখন তার সাথে ওয়া‘দাবদ্ধ হলেন যে, হারিস, আবূ আবস ইবনু জাব্র ও ‘আব্বাদ ইবনু বিশ্রসহ তার কাছে আসবেন। তারপর রাতের বেলা তাঁরা তার কাছে আসলেন এবং তাকে ডাকলেন। সে তাদের কাছে নেমে এল। রাবী সুফ্ইয়ান (রহঃ) বলেন, রাবী ‘আম্র ব্যতীত অন্য রাবী বলেন, তখন তার স্ত্রী তাকে বলল, আমি এমন একটি আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি তা যেন খুনের স্বর। সে বলল, এ হচ্ছে মুহাম্মাদ আর তার দুধভাই আবূ নায়িলাহ্। সম্ভ্র্রান্ত লোককে যদি রাতের বেলা বর্শাবিদ্ধ হওয়ার দিকে ডাকা হয় তবুও সে ডাকে সে সাড়া দেয়। মুহাম্মাদ (তার সঙ্গীদের) বললেন, সে যখন আসবে, তখন আমি তার মাথা লক্ষ্য করে আমার হাত বাড়াবো। যখন আমি তা ভালমতো ধরে নেবো, তখন তোমরা তোমাদের কাজ সেরে নেবে। তিনি বলেন, তারপর সে গায়ে চাদর জড়িয়ে নীচে নেমে এল। তাঁরা বললেন, আমরা তোমার নিকট থেকে অতি সুঘ্রাণ পাচ্ছি। সে বলল, হ্যাঁ, আমার স্ত্রী অমুক হচ্ছে আরবের সর্বাধিক সুগন্ধ-পছন্দ মহিলা। তখন তিনি বললেন, “আমাকে তা থেকে একটু সুবাস নিতে অনুমতি দিবেন?” তখন সে বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি তার মাথা শুঁকলেন। তারপর আবার শুঁকলেন। এরপর পুনরায় বললেন, আমাকে কি আবারও একটু ঘ্রাণ নিতে দিবেন? এ কথা বলে তিনি তার মাথা শক্ত করে ধরে সাথীদের বললেন, তোমরা সেরে ফেল। তিনি বলেন, তখন তাঁরা তাকে হত্যা করে ফেললো। (ই.ফা. ৪৫১৩, ই.সে. ৪৫১৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৩. অধ্যায়ঃ
খাইবার যুদ্ধ
৪৫৫৭
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – يَعْنِي ابْنَ عُلَيَّةَ – عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ، بْنِ صُهَيْبٍ عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غَزَا خَيْبَرَ قَالَ فَصَلَّيْنَا عِنْدَهَا صَلاَةَ الْغَدَاةِ بِغَلَسٍ فَرَكِبَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَرَكِبَ أَبُو طَلْحَةَ وَأَنَا رَدِيفُ أَبِي طَلْحَةَ فَأَجْرَى نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي زُقَاقِ خَيْبَرَ وَإِنَّ رُكْبَتِي لَتَمَسُّ فَخِذَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَانْحَسَرَ الإِزَارُ عَنْ فَخِذِ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَإِنِّي لأَرَى بَيَاضَ فَخِذِ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا دَخَلَ الْقَرْيَةَ قَالَ “ اللَّهُ أَكْبَرُ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِينَ ” . قَالَهَا ثَلاَثَ مِرَارٍ قَالَ وَقَدْ خَرَجَ الْقَوْمُ إِلَى أَعْمَالِهِمْ فَقَالُوا مُحَمَّدٌ – قَالَ عَبْدُ الْعَزِيزِ وَقَالَ بَعْضُ أَصْحَابِنَا – وَالْخَمِيسَ قَالَ وَأَصَبْنَاهَا عَنْوَةً .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবারের যুদ্ধে যাত্রা করেন। আমরা সেদিন তাঁর সঙ্গে সকালের সলাত (ফাজ্র) অন্ধকারে আদায় করি। তারপর আল্লাহর -নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বাহনে আরোহণ করলেন এবং আবূ তালহাহ্ (রাঃ)–ও তাঁর সওয়ারীতে আরোহণ করলেন। আর আমি (আরোহী) ছিলাম আবূ তালহার পশ্চাতে। আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবারের গলিপথে চললেন। (আমরা এত পাশাপাশি পথ চলছিলাম যে) আমার হাঁটু আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উরু স্পর্শ করেছিল। এমন সময় আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর লুঙ্গি তাঁর উরুদেশ থেকে সরে গেল। আর আমি আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উরুর শুভ্রতা দেখতে পেলাম। তিনি যখন খাইবারের জনপদে প্রবেশ করলেন, তখন বললেনঃআল্লাহু আকবার, খাইবার ধ্বংস হলো। আমরা যখন কোন কাওমের আঙ্গিনায় পৌঁছি, তখন যাদের সতর্ক করা হয়েছে, তাদের প্রভাত অশুভ হয়ে যায়। তিনি এ কথা তিনবার বললেন। রাবী বলেন, লোকজন তাদের কাজ- কর্মে বেরিয়ে গেল। তারা বলে উঠলো, “মুহাম্মাদ (এসে পড়েছেন দেখছি)”। রাবী ‘আবদুল ‘আযীয বলেন, আমাদের কোন কোন সঙ্গী বললেন, আর তাঁর পঞ্চভুজবিশিষ্ট বাহিনীও। রাবী বলেন, আমরা প্রভাব বিস্তার করে তা জয় করে নিলাম। (ই.ফা. ৪৫১৪, ই.সে. ৪৫১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৫৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كُنْتُ رِدْفَ أَبِي طَلْحَةَ يَوْمَ خَيْبَرَ وَقَدَمِي تَمَسُّ قَدَمَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَأَتَيْنَاهُمْ حِينَ بَزَغَتِ الشَّمْسُ وَقَدْ أَخْرَجُوا مَوَاشِيَهُمْ وَخَرَجُوا بِفُئُوسِهِمْ وَمَكَاتِلِهِمْ وَمُرُورِهِمْ فَقَالُوا مُحَمَّدٌ وَالْخَمِيسَ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ خَرِبَتْ خَيْبَرُ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِينَ ” . قَالَ فَهَزَمَهُمُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,খাইবারের যুদ্ধের দিন আমি আবূ তালহার পিছনে (একই ঘোড়ার পিঠে সওয়ার) ছিলাম। আমার দু’পা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পদদ্বয়কে স্পর্শ করছিল। রাবী বলেন, সূর্যোদয়ের সময়ে আমরা সেখানে এলাম। তখন লোকজন তাদের পশুগুলো সবেমাত্র ঘর থেকে বের করেছে এবং তারা তাদের কোদাল কুড়াল, রশি –জাম্বিল নিয়ে (কাজের জন্য) বেরিয়ে পড়েছে। তখন তারা (সবিষ্ময়ে) বলল, “মুহাম্মাদ এবং পঞ্চভুজবিশিষ্ট বাহিনী!” রাবী বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃখাইবার ধ্বংস হলো। আমরা যখন কোন কাওমের আঙ্গিনায় অবতরণ করি তখন সতর্ককৃতদের প্রভাত অশুভ হয়ে যায়। রাবী বলেন, মহান আল্লাহ তা‘আলা তাদের ধ্বংস করে দিলেন। (ই.ফা. ৪৫১৫, ই.সে. ৪৫১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৫৯
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ لَمَّا أَتَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ قَالَ “ إِنَّا إِذَا نَزَلْنَا بِسَاحَةِ قَوْمٍ فَسَاءَ صَبَاحُ الْمُنْذَرِينَ ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন খাইবারে এলেন, তখন বললেন, আমরা যখন কোন কাওমের আঙ্গিনায় পৌঁছি, তখন সতর্ককৃতদের প্রভাত অশুভ হয়ে যায়। (ই.ফা. ৪৫১৬, ই.সে. ৪৫১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৬০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ عَبَّادٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، – وَهُوَ ابْنُ إِسْمَاعِيلَ – عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ، مَوْلَى سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى خَيْبَرَ فَتَسَيَّرْنَا لَيْلاً فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ لِعَامِرِ بْنِ الأَكْوَعِ أَلاَ تُسْمِعُنَا مِنْ هُنَيْهَاتِكَ وَكَانَ عَامِرٌ رَجُلاً شَاعِرًا فَنَزَلَ يَحْدُو بِالْقَوْمِ يَقُولُ اللَّهُمَّ لَوْلاَ أَنْتَ مَا اهْتَدَيْنَا وَلاَ تَصَدَّقْنَا وَلاَ صَلَّيْنَا فَاغْفِرْ فِدَاءً لَكَ مَا اقْتَفَيْنَا وَثَبِّتِ الأَقْدَامَ إِنْ لاَقَيْنَا وَأَلْقِيَنْ سَكِينَةً عَلَيْنَا إِنَّا إِذَا صِيحَ بِنَا أَتَيْنَا وَبِالصِّيَاحِ عَوَّلُوا عَلَيْنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ هَذَا السَّائِقُ ” . قَالُوا عَامِرٌ . قَالَ ” يَرْحَمُهُ اللَّهُ ” . فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ وَجَبَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْلاَ أَمْتَعْتَنَا بِهِ . قَالَ فَأَتَيْنَا خَيْبَرَ فَحَصَرْنَاهُمْ حَتَّى أَصَابَتْنَا مَخْمَصَةٌ شَدِيدَةٌ ثُمَّ قَالَ ” إِنَّ اللَّهَ فَتَحَهَا عَلَيْكُمْ ” . قَالَ فَلَمَّا أَمْسَى النَّاسُ مَسَاءَ الْيَوْمِ الَّذِي فُتِحَتْ عَلَيْهِمْ أَوْقَدُوا نِيرَانًا كَثِيرَةً فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا هَذِهِ النِّيرَانُ عَلَى أَىِّ شَىْءٍ تُوقِدُونَ ” . فَقَالُوا عَلَى لَحْمٍ . قَالَ ” أَىُّ لَحْمٍ ” . قَالُوا لَحْمُ حُمُرِ الإِنْسِيَّةِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَهْرِيقُوهَا وَاكْسِرُوهَا ” . فَقَالَ رَجُلٌ أَوْ يُهَرِيقُوهَا وَيَغْسِلُوهَا فَقَالَ ” أَوْ ذَاكَ ” . قَالَ فَلَمَّا تَصَافَّ الْقَوْمُ كَانَ سَيْفُ عَامِرٍ فِيهِ قِصَرٌ فَتَنَاوَلَ بِهِ سَاقَ يَهُودِيٍّ لِيَضْرِبَهُ وَيَرْجِعُ ذُبَابُ سَيْفِهِ فَأَصَابَ رُكْبَةَ عَامِرٍ فَمَاتَ مِنْهُ قَالَ فَلَمَّا قَفَلُوا قَالَ سَلَمَةُ وَهُوَ آخِذٌ بِيَدِي قَالَ فَلَمَّا رَآنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَاكِتًا قَالَ ” مَا لَكَ ” . قُلْتُ لَهُ فِدَاكَ أَبِي وَأُمِّي زَعَمُوا أَنَّ عَامِرًا حَبِطَ عَمَلُهُ قَالَ ” مَنْ قَالَهُ ” . قُلْتُ فُلاَنٌ وَفُلاَنٌ وَأُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ الأَنْصَارِيُّ فَقَالَ ” كَذَبَ مَنْ قَالَهُ إِنَّ لَهُ لأَجْرَيْنِ ” . وَجَمَعَ بَيْنَ إِصْبَعَيْهِ ” إِنَّهُ لَجَاهِدٌ مُجَاهِدٌ قَلَّ عَرَبِيٌّ مَشَى بِهَا مِثْلَهُ ” . وَخَالَفَ قُتَيْبَةُ مُحَمَّدًا فِي الْحَدِيثِ فِي حَرْفَيْنِ وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ عَبَّادٍ وَأَلْقِ سَكِينَةً عَلَيْنَا .
সালামাহ্ ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে খাইবার অভিযানে বের হলাম। আমরা রাতের বেলা (এ অভিযানে) বেরিয়েছিলাম। তখন এক ব্যক্তি (আমার ভাই) ‘আমির ইবনু আকওয়া (রাঃ)-কে বললোঃ “ওহে! তুমি কি তোমার রণ সঙ্গীত থেকে আমাদেরকে কিছু শুনাবে না?” ‘আমির (রাঃ) ছিলেন একজন কবি। তখন তিনি সওয়ারী থেকে অবতরণ করে সকলকে শুনিয়ে শুনিয়ে তাঁর হুদী সঙ্গীত আবৃত্তি করতে করতে লোকদেরকে হাঁকিয়ে নিয়ে চললেন: “ইয়া আল্লাহ! আপনি না হলে আমরা হিদায়াত পেতাম না, আমরা সদাকাহ্ ও সলাত আদায় করতাম না। আপনার জন্য আমাদের জান কুরবান, আমাদের পিছনের সকল অপরাধ আপনি ক্ষমা করে দিন, যতদিন আমরা আপনার আনুগত্য করব।
শক্রুর সম্মুখীন হলে আমাদের পা অটল রাখুন।
আমাদের উপর শান্তি বর্ষণ করুন।
যখন আমাদের ডাকা হয় আমরা উপস্হিত হই।
এবং তারাই চীৎকার দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লোক জমা করে।”
তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “এ চালকটি কে?” সাহাবীগণ বললেন, ‘আমির’। তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তার প্রতি রহমাত করুন।’ তখন গোত্রের এক ব্যক্তি বলল, “তাঁর জন্য তো শাহাদাত অবধারিত হয়ে গেছে, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। আমাদের যদি তাঁর দ্বারা আরো উপকৃত করতেন, (তবে ভাল হত)। রাবী বলেন, তারপর আমরা খাইবারে এসে তাদের ঘেরাও করলাম। (অবরোধ দীর্ঘ হল) এমনকি আমাদের দারুন খাদ্যভাব দেখা দিল। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃনিঃসন্দেহে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে তাদের বিজয় দান করেছেন। তারপর বিজয়ের দিন যখন লোকদের সন্ধ্যা হলো তখন তারা বহু স্থানে আগুন জ্বালালো। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ আগুন কিসের? কিসের উপর (কী রান্না করার জন্যে) লোকজন এ আগুন জ্বালাচ্ছে? তারা বললেন, গোশ্ত। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: কিসের গোশ্ত? তারা বললেন, গৃহপালিত গাধার গোশ্ত। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃএগুলো ফেলে দাও আর রান্নাপাত্রগুলো ভেঙ্গে ফেল। এক ব্যক্তি বলল, তারা কি এগুলো ফেলে দেবে এবং রান্নার পাত্রগুলো ধুয়ে ফেলবে? তিনি বললেনঃতা হতে পারে। রাবী বলেন, এরপর যখন লোকজন (যুদ্ধের জন্য) সারিবদ্ধ হল, ‘আমিরের তরবারিখানা ছিল খাটো। তিনি জনৈক ইয়াহূদীর পায়ের নলা লক্ষ্য করে যে আঘাত করলেন সে আঘাত ফিরে এসে ‘আমিরের হাটুতে লাগে, এতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তারপর যখন লোকজন (খাইবার থেকে) ফিরে এলো, তখন সালামাহ্ আমার হাত ধরে বললেন, (রাবী বললেন) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন আমাকে নির্বাক অবস্থায় দেখতে পেলেন, তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কী হয়েছে? আমি বললাম, “আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! লোকজনের ধারণা ‘আমির (আত্মহত্যা) করে তাঁর (সারা জীবনের) ‘আমাল বরবাদ করে দিয়েছেন।” তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তা কে বলেছে? আমি বললাম, অমুক অমুক এবং উসায়দ ইবনু হুযায়র আনসারী। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃযে এরূপ বলেছে, সে মিথ্যা বলেছে। অবশ্যই তার (‘আমিরের) জন্য দ্বিগুণ পুরস্কার রয়েছে। তখন তিনি তাঁর দু’টি আঙ্গুল একত্রিত করলেন (এবং বললেন), সে (আল্লাহর রাস্তায়) সত্যিকার যোদ্ধা ও মুজাহিদ। খুব কম আরবই তাঁর মতো চলেছে (বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেছে)। কুতাইবাহ্ এ হাদীস বর্ণনায় মুহাম্মাদের সাথে দু’টি শব্দে দ্বিমত করেছেন। ইবনু ‘আব্বাদ (রহঃ)-এর রিওয়ায়াতে আছে (আরবি)। (ই.ফা. ৪৫১৭, ই.সে. ৪৫১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৬১
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ، – وَنَسَبَهُ غَيْرُ ابْنِ وَهْبٍ فَقَالَ ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ – أَنَّ سَلَمَةَ، بْنَ الأَكْوَعِ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ خَيْبَرَ قَاتَلَ أَخِي قِتَالاً شَدِيدًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَارْتَدَّ عَلَيْهِ سَيْفُهُ فَقَتَلَهُ فَقَالَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ذَلِكَ وَشَكُّوا فِيهِ رَجُلٌ مَاتَ فِي سِلاَحِهِ . وَشَكُّوا فِي بَعْضِ أَمْرِهِ . قَالَ سَلَمَةُ فَقَفَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ خَيْبَرَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ائْذَنْ لِي أَنْ أَرْجُزَ لَكَ . فَأَذِنَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ أَعْلَمُ مَا تَقُولُ قَالَ فَقُلْتُ وَاللَّهِ لَوْلاَ اللَّهُ مَا اهْتَدَيْنَا وَلاَ تَصَدَّقْنَا وَلاَ صَلَّيْنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” صَدَقْتَ ” . وَأَنْزِلَنَّ سَكِينَةً عَلَيْنَا وَثَبِّتِ الأَقْدَامَ إِنْ لاَقَيْنَا وَالْمُشْرِكُونَ قَدْ بَغَوْا عَلَيْنَا قَالَ فَلَمَّا قَضَيْتُ رَجَزِي قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ قَالَ هَذَا ” . قُلْتُ قَالَهُ أَخِي فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَرْحَمُهُ اللَّهُ ” . قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ نَاسًا لَيَهَابُونَ الصَّلاَةَ عَلَيْهِ يَقُولُونَ رَجُلٌ مَاتَ بِسِلاَحِهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَاتَ جَاهِدًا مُجَاهِدًا ” . قَالَ ابْنُ شِهَابٍ ثُمَّ سَأَلْتُ ابْنًا لِسَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ فَحَدَّثَنِي عَنْ أَبِيهِ مِثْلَ ذَلِكَ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ – حِينَ قُلْتُ إِنَّ نَاسًا يَهَابُونَ الصَّلاَةَ عَلَيْهِ – فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” كَذَبُوا مَاتَ جَاهِدًا مُجَاهِدًا فَلَهُ أَجْرُهُ مَرَّتَيْنِ ” . وَأَشَارَ بِإِصْبَعَيْهِ .
সালামাহ্ ইবনু আক্ওয়া‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাইবারের যুদ্ধের দিন আমার ভাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সঙ্গে থেকে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন। তাঁর তরবারি ফিরে এসে স্বয়ং তাঁকেই নিহত করে। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাহাবীগণ তাঁর ব্যাপারে নানা মন্তব্য করতে থাকেন এবং তাঁর শাহাদাতের ব্যাপারে সন্দেহ করেন। তাঁরা বলাবলি করেন যে, সে এমন লোক যে তার নিজ অস্ত্রের আঘাতে মারা গেছে। আর তাঁরা তাঁর কোন কোন ব্যাপারেও সন্দেহ করেন। সালামাহ্ বলেন, তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবার থেকে ফিরলে আমি বললাম, “হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তাঁর কবিতার কয়েকটি পংক্তি আবৃতি করি।” রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে অনুমতি দিলেন। ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) তখন বলে উঠলেন, আমি জানি, তুমি কী বলবে। রাবী বলেন, তারপর আমি আবৃত্তি করলাম:
“হে আল্লাহ! আপনি না করলে, আমরা হিদায়াত পেতাম না, আমরা সদাকাহ্ দিতাম না এবং সলাত আদায় করতাম না।” তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতুমি যর্থাথই বলেছো। তখন আমি আবৃত্তি করে চললাম:“আমাদের প্রশান্তি দান করুন এবং শক্রুর সম্মুখীন হলে আমাদের পা অটল রাখুন। মুশরিকরা আমাদের প্রতি বিদ্রোহী হল।”
যখন আমি আমার কবিতা আবৃত্তি শেষ করলাম, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃএ কবিতাটি কে রচনা করেছে? আমি বললাম, আমার ভাই। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃআল্লাহ তাঁর প্রতি সদয় হোন। তখন আমি বললাম, “হে আল্লাহর রসূল! কিছু লোক তাঁর প্রতি আল্লাহর রহমাত বর্ষণে দ্বিধাগ্রস্ত! তাঁরা বলেন, সে এমন লোক যে তার নিজ অস্ত্রের আঘাতে মারা গেছে। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃসে জিহাদ করতে করতে মুজাহিদের মত মরেছে।
রাবী ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, তারপর আমি সালামার এক পুত্রকে প্রশ্ন করলে তিনি আমাকে তাঁর পিতার সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। তবে ব্যতিক্রম এতটুকু যে, তিনি বলেন, আমি যখন বললাম, কিছু কিছু লোক তাঁর প্রতি দু‘আ করতে দ্বিধাগ্রস্ত, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃতারা মিথ্যা বলেছে। সে জিহাদ করতে করতে মুজাহিদের মত মারা গেছে। তার দু’টি পুরস্কার এজন্যে নির্ধারিত রয়েছে। এবং তিনি তখন তাঁর দু’টি অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করলেন। (ই.ফা. ৪৫১৮, ই.সে. ৪৫২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪. অধ্যায়ঃ
আহযাব বা খন্দকের যুদ্ধ
৪৫৬২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ، بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الأَحْزَابِ يَنْقُلُ مَعَنَا التُّرَابَ وَلَقَدْ وَارَى التُّرَابُ بَيَاضَ بَطْنِهِ وَهُوَ يَقُولُ ” وَاللَّهِ لَوْلاَ أَنْتَ مَا اهْتَدَيْنَا وَلاَ تَصَدَّقْنَا وَلاَ صَلَّيْنَا فَأَنْزِلَنْ سَكِينَةً عَلَيْنَا إِنَّ الأُلَى قَدْ أَبَوْا عَلَيْنَا ” . قَالَ وَرُبَّمَا قَالَ ” إِنَّ الْمَلاَ قَدْ أَبَوْا عَلَيْنَا إِذَا أَرَادُوا فِتْنَةً أَبَيْنَا ” . وَيَرْفَعُ بِهَا صَوْتَهُ .
বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খন্দকের যুদ্ধের দিন আমাদের সঙ্গে একত্রে মাটি বহন করেন। মাটি তাঁর পেটের শুভ্রতাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। আর তখন তিনি আবৃত্তি করছিলেন:
“আল্লাহর কসম! আপনি না করলে আমরা হিদায়াত পেতাম না, সদাকাহ্ দিতাম না এবং সলাতও আদায় করতাম না। আমাদের প্রতি প্রশান্তি দান করুন, আর তারাতো (মাক্কাবাসীরা) আমাদেরকে মেনে নিলো না।”
আবার কখনোও কখনোও বলছিলেন: “সে দলটি আমাদের মানতে অস্বীকার করল, তারা যখন ফিতনা (শিরক ও কুফরী) চাইল, তখন আমরা অস্বীকার করলাম।”
আর তা উচ্চারণের সময় তিনি তাঁর স্বর উচ্চ করছিলেন। (ই.ফা. ৪৫১৯, ই.সে. ৪৫২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৬৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ، . فَذَكَرَ مِثْلَهُ إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ “ إِنَّ الأُلَى قَدْ بَغَوْا عَلَيْنَا ” .
আবূ ইসহাক্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বারা (রাঃ)-কে অনুরূপ বলতে শুনেছি। তবে তিনি বলেন যে, সর্দারেরা আমাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল। (ই.ফা. ৪৫২০, ই.সে. ৪৫২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৬৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ جَاءَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ نَحْفِرُ الْخَنْدَقَ وَنَنْقُلُ التُّرَابَ عَلَى أَكْتَافِنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ اللَّهُمَّ لاَ عَيْشَ إِلاَّ عَيْشُ الآخِرَةِ فَاغْفِرْ لِلْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارِ ” .
সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে এলেন, আমরা তখন পরিখা (খন্দক) খনন করছিলাম এবং কাঁধে করে মাটি একস্হান থেকে অন্যস্হানে ফেলছিলাম। তিনি বললেন, “হে আল্লাহ! আখিরাতের সূখ ছাড়া সূখ নেই, মুহাজির ও আনসারদেরকে ক্ষমা করুন।” (ই.ফা. ৪৫২১, ই.সে. ৪৫২৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৬৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ، جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ اللَّهُمَّ لاَ عَيْشَ إِلاَّ عَيْشُ الآخِرَهْ فَاغْفِرْ لِلأَنْصَارِ وَالْمُهَاجِرَهْ ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, “হে আল্লাহ! আখিরাতের সূখ ছাড়া সূখ নেই। আপনি ক্ষমা করে দিন আনসার মুহাজিদেরকে”। (ই.ফা. ৪৫২২, ই.সে. ৪৫২৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৬৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ اللَّهُمَّ إِنَّ الْعَيْشَ عَيْشُ الآخِرَةِ قَالَ شُعْبَةُ أَوْ قَالَ اللَّهُمَّ لاَ عَيْشَ إِلاَّ عَيْشُ الآخِرَهْ فَأَكْرِمِ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَهْ
আনাস (রাঃ) -এর অন্য রিওয়ায়াত থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছিলেন: “হে আল্লাহ! সুখতো (কেবল) আখিরাতের সূখই। শু’বাহ (রাঃ) বলেন, অথবা তিনি বলেছেন: ইয়া আল্লাহ! আখিরাতের সুখ ছাড়া কোন সুখ নেই। আনসার ও মুহাজিরদেরকে সম্মানিত করুন”। (ই.ফা. ৪৫২৩, ই.সে. ৪৫২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৬৭
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَشَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا وَقَالَ، شَيْبَانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ كَانُوا يَرْتَجِزُونَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَعَهُمْ وَهُمْ يَقُولُونَ اللَّهُمَّ لاَ خَيْرَ إِلاَّ خَيْرُ الآخِرَهْ فَانْصُرِ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَهْ وَفِي حَدِيثِ شَيْبَانَ بَدَلَ فَانْصُرْ فَاغْفِرْ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাঁরা (সেদিন) সমবেত সুরে গাইতে ছিলেন এবং তাঁদের সঙ্গে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন। তাঁরা বলছিলেন : “হে আল্লাহ! প্রকৃত কল্যাণ তো আখিরাতে। আনসার ও মুহাজিরদের সাহায্য করুন। আর শাইবানের হাদীস (আরবি) এর পরিবর্তে (আরবি) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।” ( ই.ফা. ৪৫২৪, ই.সে. ৪৫২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৬৮
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ أَصْحَابَ، مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم كَانُوا يَقُولُونَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ نَحْنُ الَّذِينَ بَايَعُوا مُحَمَّدًا عَلَى الإِسْلاَمِ مَا بَقِينَا أَبَدًا أَوْ قَالَ عَلَى الْجِهَادِ . شَكَّ حَمَّادٌ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ اللَّهُمَّ إِنَّ الْخَيْرَ خَيْرُ الآخِرَهْ فَاغْفِرْ لِلأَنْصَارِ وَالْمُهَاجِرَهْ ” .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীগণ খন্দকের দিন বলেছিলেন : আমরা সে লোক যারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট বাই’আত হয়েছি। আর ইসলামের উপরই আছি। রাবি মুহাম্মাদ (রহঃ) সন্দেহ করে বলেন, অথবা বলেছিল : জিহাদের উপরই আছি সর্বদা। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছিলেন : “ হে আল্লাহ! আসল তো আখিরাতের কল্যাণ। আনসারদের এবং মুহাজিরদের ক্ষমা করুন।” (ই.ফা. ৪৫২৫, ই.সে. ৪৫২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫. অধ্যায়ঃ
যী-কারাদ ও অন্যান্য যুদ্ধ
৪৫৬৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، – يَعْنِي ابْنَ إِسْمَاعِيلَ – عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي، عُبَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ سَلَمَةَ بْنَ الأَكْوَعِ، يَقُولُ خَرَجْتُ قَبْلَ أَنْ يُؤَذَّنَ، بِالأُولَى وَكَانَتْ لِقَاحُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَرْعَى بِذِي قَرَدٍ – قَالَ – فَلَقِيَنِي غُلاَمٌ لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ فَقَالَ أُخِذَتْ لِقَاحُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ مَنْ أَخَذَهَا قَالَ غَطَفَانُ قَالَ فَصَرَخْتُ ثَلاَثَ صَرَخَاتٍ يَا صَبَاحَاهْ . قَالَ فَأَسْمَعْتُ مَا بَيْنَ لاَبَتَىِ الْمَدِينَةِ ثُمَّ انْدَفَعْتُ عَلَى وَجْهِي حَتَّى أَدْرَكْتُهُمْ بِذِي قَرَدٍ وَقَدْ أَخَذُوا يَسْقُونَ مِنَ الْمَاءِ فَجَعَلْتُ أَرْمِيهِمْ بِنَبْلِي وَكُنْتُ رَامِيًا وَأَقُولُ أَنَا ابْنُ الأَكْوَعِ وَالْيَوْمَ يَوْمُ الرُّضَّعِ فَأَرْتَجِزُ حَتَّى اسْتَنْقَذْتُ اللِّقَاحَ مِنْهُمْ وَاسْتَلَبْتُ مِنْهُمْ ثَلاَثِينَ بُرْدَةً – قَالَ – وَجَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ إِنِّي قَدْ حَمَيْتُ الْقَوْمَ الْمَاءَ وَهُمْ عِطَاشٌ فَابْعَثْ إِلَيْهِمُ السَّاعَةَ فَقَالَ “ يَا ابْنَ الأَكْوَعِ مَلَكْتَ فَأَسْجِحْ ” . – قَالَ – ثُمَّ رَجَعْنَا وَيُرْدِفُنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى نَاقَتِهِ حَتَّى دَخَلْنَا الْمَدِينَةَ .
সালামাহ্ ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ফাজ্রের আযানের আগেই বের হয়ে পড়লাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দুধের উট্নী তখন যীকারাদের (চারণ ভূমিতে) চরছিল। তখন ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ)-এর গোলাম আমার সাথে সাক্ষাৎ করে বলল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দুধের উট্নীসমূহকে নিয়ে গেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কে সেগুলো নিয়ে গেছে? সে বলল, গাফ্তান গোত্রের লোকেরা। রাবী বলেন, তখন আমি উচ্চৈঃস্বরে তিনবার আওয়াজ দিলাম; সাহায্য চাই, সাহায্য চাই। রাবী (সালামাহ্ ইবনু আক্ওয়া’) বলেন, মাদীনার উভয় প্রান্তের মধ্যবর্তী সবাইকে আমি আমার সে আওয়াজ শুনালাম তারপর বের হয়ে গেলাম। যী-কারাদে গিয়ে তাদের (লুটেরাদের)-কে পেলাম। তখন তারা তাদের পশুদেরকে পানি পান করাচ্ছিল। তখন আমি তীর নিক্ষেপ করতে শুরু করলাম। আমি ছিলাম একজন দক্ষ তীরন্দাজ। আর তখন আমি বীরত্বসূচক কবিতা আবৃত্তি করছিলাম, “আমি আক্ওয়া’র পুত্র, আজ দুষ্টদের ধ্বংসের দিন।” (কিংবা আজ তার দিন যে শৈশব থেকে যুদ্ধের স্তন্য পান করেছে)।
আমি আমার তীর নিক্ষেপ ও বীরত্বব্যঞ্জক কবিতা আবৃত্তি করতে থাকলাম। অবশেষে আমি দুধের উট্নীসমূহ মুক্ত করলাম এমনকি আমি তাদের ত্রিশটি চাদরও ছিনিয়ে নিলাম। এমন সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও লোকজন এসে পড়লেন। তখন আমি বললাম, “হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! আমি তাদের পানির পথ রুদ্ধ করে রেখেছি, তাই তারা পিপাসার্ত। এবার আপনি একটি বাহিনী প্রেরণ করুন। তখন তিনি (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আকওয়া’, এ সময় যা নেয়ার ছিল তুমি তা নিয়েছ। এবার ছেড়ে দাও। রাবী বলেন, তারপর আমরা ফিরে এলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁরই উট্নির পিছনে বসিয়ে নিলেন। তারপর আমরা মাদীনায় পৌঁছলাম। (ই.ফা. ৪৫২৬, ই.সে. ৪৫২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৭০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ، إِبْرَاهِيمَ أَخْبَرَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، كِلاَهُمَا عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ عَمَّارٍ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ، عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ – وَهَذَا حَدِيثُهُ – أَخْبَرَنَا أَبُو عَلِيٍّ الْحَنَفِيُّ، عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ، – وَهُوَ ابْنُ عَمَّارٍ – حَدَّثَنِي إِيَاسُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، قَدِمْنَا الْحُدَيْبِيَةَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ أَرْبَعَ عَشْرَةَ مِائَةً وَعَلَيْهَا خَمْسُونَ شَاةً لاَ تُرْوِيهَا – قَالَ – فَقَعَدَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى جَبَا الرَّكِيَّةِ فَإِمَّا دَعَا وَإِمَّا بَسَقَ فِيهَا – قَالَ – فَجَاشَتْ فَسَقَيْنَا وَاسْتَقَيْنَا . قَالَ ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَعَانَا لِلْبَيْعَةِ فِي أَصْلِ الشَّجَرَةِ . قَالَ فَبَايَعْتُهُ أَوَّلَ النَّاسِ ثُمَّ بَايَعَ وَبَايَعَ حَتَّى إِذَا كَانَ فِي وَسَطٍ مِنَ النَّاسِ قَالَ ” بَايِعْ يَا سَلَمَةُ ” . قَالَ قُلْتُ قَدْ بَايَعْتُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فِي أَوَّلِ النَّاسِ قَالَ ” وَأَيْضًا ” . قَالَ وَرَآنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَزِلاً – يَعْنِي لَيْسَ مَعَهُ سِلاَحٌ – قَالَ فَأَعْطَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَجَفَةً أَوْ دَرَقَةً ثُمَّ بَايَعَ حَتَّى إِذَا كَانَ فِي آخِرِ النَّاسِ قَالَ ” أَلاَ تُبَايِعُنِي يَا سَلَمَةُ ” . قَالَ قُلْتُ قَدْ بَايَعْتُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فِي أَوَّلِ النَّاسِ وَفِي أَوْسَطِ النَّاسِ قَالَ ” وَأَيْضًا ” . قَالَ فَبَايَعْتُهُ الثَّالِثَةَ ثُمَّ قَالَ لِي ” يَا سَلَمَةُ أَيْنَ حَجَفَتُكَ أَوْ دَرَقَتُكَ الَّتِي أَعْطَيْتُكَ ” . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَقِيَنِي عَمِّي عَامِرٌ عَزِلاً فَأَعْطَيْتُهُ إِيَّاهَا – قَالَ – فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ ” إِنَّكَ كَالَّذِي قَالَ الأَوَّلُ اللَّهُمَّ أَبْغِنِي حَبِيبًا هُوَ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ نَفْسِي ” . ثُمَّ إِنَّ الْمُشْرِكِينَ رَاسَلُونَا الصُّلْحَ حَتَّى مَشَى بَعْضُنَا فِي بَعْضٍ وَاصْطَلَحْنَا . قَالَ وَكُنْتُ تَبِيعًا لِطَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ أَسْقِي فَرَسَهُ وَأَحُسُّهُ وَأَخْدُمُهُ وَآكُلُ مِنْ طَعَامِهِ وَتَرَكْتُ أَهْلِي وَمَالِي مُهَاجِرًا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَلَمَّا اصْطَلَحْنَا نَحْنُ وَأَهْلُ مَكَّةَ وَاخْتَلَطَ بَعْضُنَا بِبَعْضٍ أَتَيْتُ شَجَرَةً فَكَسَحْتُ شَوْكَهَا فَاضْطَجَعْتُ فِي أَصْلِهَا – قَالَ – فَأَتَانِي أَرْبَعَةٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ فَجَعَلُوا يَقَعُونَ فِي رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَبْغَضْتُهُمْ فَتَحَوَّلْتُ إِلَى شَجَرَةٍ أُخْرَى وَعَلَّقُوا سِلاَحَهُمْ وَاضْطَجَعُوا فَبَيْنَمَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ نَادَى مُنَادٍ مِنْ أَسْفَلِ الْوَادِي يَا لَلْمُهَاجِرِينَ قُتِلَ ابْنُ زُنَيْمٍ . قَالَ فَاخْتَرَطْتُ سَيْفِي ثُمَّ شَدَدْتُ عَلَى أُولَئِكَ الأَرْبَعَةِ وَهُمْ رُقُودٌ فَأَخَذْتُ سِلاَحَهُمْ . فَجَعَلْتُهُ ضِغْثًا فِي يَدِي قَالَ ثُمَّ قُلْتُ وَالَّذِي كَرَّمَ وَجْهَ مُحَمَّدٍ لاَ يَرْفَعُ أَحَدٌ مِنْكُمْ رَأْسَهُ إِلاَّ ضَرَبْتُ الَّذِي فِيهِ عَيْنَاهُ . قَالَ ثُمَّ جِئْتُ بِهِمْ أَسُوقُهُمْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – قَالَ – وَجَاءَ عَمِّي عَامِرٌ بِرَجُلٍ مِنَ الْعَبَلاَتِ يُقَالُ لَهُ مِكْرَزٌ . يَقُودُهُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى فَرَسٍ مُجَفَّفٍ فِي سَبْعِينَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ فَنَظَرَ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” دَعُوهُمْ يَكُنْ لَهُمْ بَدْءُ الْفُجُورِ وَثِنَاهُ ” فَعَفَا عَنْهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنْزَلَ اللَّهُ { وَهُوَ الَّذِي كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنْكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُمْ بِبَطْنِ مَكَّةَ مِنْ بَعْدِ أَنْ أَظْفَرَكُمْ عَلَيْهِمْ} الآيَةَ كُلَّهَا . قَالَ ثُمَّ خَرَجْنَا رَاجِعِينَ إِلَى الْمَدِينَةِ فَنَزَلْنَا مَنْزِلاً بَيْنَنَا وَبَيْنَ بَنِي لَحْيَانَ جَبَلٌ وَهُمُ الْمُشْرِكُونَ فَاسْتَغْفَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِمَنْ رَقِيَ هَذَا الْجَبَلَ اللَّيْلَةَ كَأَنَّهُ طَلِيعَةٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابِهِ – قَالَ سَلَمَةُ – فَرَقِيتُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا ثُمَّ قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِظَهْرِهِ مَعَ رَبَاحٍ غُلاَمِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا مَعَهُ وَخَرَجْتُ مَعَهُ بِفَرَسِ طَلْحَةَ أُنَدِّيهِ مَعَ الظَّهْرِ فَلَمَّا أَصْبَحْنَا إِذَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ الْفَزَارِيُّ قَدْ أَغَارَ عَلَى ظَهْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَاقَهُ أَجْمَعَ وَقَتَلَ رَاعِيَهُ قَالَ فَقُلْتُ يَا رَبَاحُ خُذْ هَذَا الْفَرَسَ فَأَبْلِغْهُ طَلْحَةَ بْنَ عُبَيْدِ اللَّهِ وَأَخْبِرْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّ الْمُشْرِكِينَ قَدْ أَغَارُوا عَلَى سَرْحِهِ – قَالَ – ثُمَّ قُمْتُ عَلَى أَكَمَةٍ فَاسْتَقْبَلْتُ الْمَدِينَةَ فَنَادَيْتُ ثَلاَثًا يَا صَبَاحَاهْ . ثُمَّ خَرَجْتُ فِي آثَارِ الْقَوْمِ أَرْمِيهِمْ بِالنَّبْلِ وَأَرْتَجِزُ أَقُولُ أَنَا ابْنُ الأَكْوَعِ وَالْيَوْمَ يَوْمُ الرُّضَّعِ فَأَلْحَقُ رَجُلاً مِنْهُمْ فَأَصُكُّ سَهْمًا فِي رَحْلِهِ حَتَّى خَلَصَ نَصْلُ السَّهْمِ إِلَى كَتِفِهِ – قَالَ – قُلْتُ خُذْهَا وَأَنَا ابْنُ الأَكْوَعِ وَالْيَوْمُ يَوْمُ الرُّضَّعِ قَالَ فَوَاللَّهِ مَا زِلْتُ أَرْمِيهِمْ وَأَعْقِرُ بِهِمْ فَإِذَا رَجَعَ إِلَىَّ فَارِسٌ أَتَيْتُ شَجَرَةً فَجَلَسْتُ فِي أَصْلِهَا ثُمَّ رَمَيْتُهُ فَعَقَرْتُ بِهِ حَتَّى إِذَا تَضَايَقَ الْجَبَلُ فَدَخَلُوا فِي تَضَايُقِهِ عَلَوْتُ الْجَبَلَ فَجَعَلْتُ أُرَدِّيهِمْ بِالْحِجَارَةِ – قَالَ – فَمَا زِلْتُ كَذَلِكَ أَتْبَعُهُمْ حَتَّى مَا خَلَقَ اللَّهُ مِنْ بَعِيرٍ مِنْ ظَهْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ خَلَّفْتُهُ وَرَاءَ ظَهْرِي وَخَلَّوْا بَيْنِي وَبَيْنَهُ ثُمَّ اتَّبَعْتُهُمْ أَرْمِيهِمْ حَتَّى أَلْقَوْا أَكْثَرَ مِنْ ثَلاَثِينَ بُرْدَةً وَثَلاَثِينَ رُمْحًا يَسْتَخِفُّونَ وَلاَ يَطْرَحُونَ شَيْئًا إِلاَّ جَعَلْتُ عَلَيْهِ آرَامًا مِنَ الْحِجَارَةِ يَعْرِفُهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ حَتَّى أَتَوْا مُتَضَايِقًا مِنْ ثَنِيَّةٍ فَإِذَا هُمْ قَدْ أَتَاهُمْ فُلاَنُ بْنُ بَدْرٍ الْفَزَارِيُّ فَجَلَسُوا يَتَضَحَّوْنَ – يَعْنِي يَتَغَدَّوْنَ – وَجَلَسْتُ عَلَى رَأْسِ قَرْنٍ قَالَ الْفَزَارِيُّ مَا هَذَا الَّذِي أَرَى قَالُوا لَقِينَا مِنْ هَذَا الْبَرْحَ وَاللَّهِ مَا فَارَقَنَا مُنْذُ غَلَسٍ يَرْمِينَا حَتَّى انْتَزَعَ كُلَّ شَىْءٍ فِي أَيْدِينَا . قَالَ فَلْيَقُمْ إِلَيْهِ نَفَرٌ مِنْكُمْ أَرْبَعَةٌ . قَالَ فَصَعِدَ إِلَىَّ مِنْهُمْ أَرْبَعَةٌ فِي الْجَبَلِ – قَالَ – فَلَمَّا أَمْكَنُونِي مِنَ الْكَلاَمِ – قَالَ – قُلْتُ هَلْ تَعْرِفُونِي قَالُوا لاَ وَمَنْ أَنْتَ قَالَ قُلْتُ أَنَا سَلَمَةُ بْنُ الأَكْوَعِ وَالَّذِي كَرَّمَ وَجْهَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم لاَ أَطْلُبُ رَجُلاً مِنْكُمْ إِلاَّ أَدْرَكْتُهُ وَلاَ يَطْلُبُنِي رَجُلٌ مِنْكُمْ . فَيُدْرِكَنِي قَالَ أَحَدُهُمْ أَنَا أَظُنُّ . قَالَ فَرَجَعُوا فَمَا بَرِحْتُ مَكَانِي حَتَّى رَأَيْتُ فَوَارِسَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَتَخَلَّلُونَ الشَّجَرَ – قَالَ – فَإِذَا أَوَّلُهُمُ الأَخْرَمُ الأَسَدِيُّ عَلَى إِثْرِهِ أَبُو قَتَادَةَ الأَنْصَارِيُّ وَعَلَى إِثْرِهِ الْمِقْدَادُ بْنُ الأَسْوَدِ الْكِنْدِيُّ – قَالَ – فَأَخَذْتُ بِعِنَانِ الأَخْرَمِ – قَالَ – فَوَلَّوْا مُدْبِرِينَ قُلْتُ يَا أَخْرَمُ احْذَرْهُمْ لاَ يَقْتَطِعُوكَ حَتَّى يَلْحَقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ . قَالَ يَا سَلَمَةُ إِنْ كُنْتَ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَتَعْلَمُ أَنَّ الْجَنَّةَ حَقٌّ وَالنَّارَ حَقٌّ فَلاَ تَحُلْ بَيْنِي وَبَيْنَ الشَّهَادَةِ . قَالَ فَخَلَّيْتُهُ فَالْتَقَى هُوَ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ – قَالَ – فَعَقَرَ بِعَبْدِ الرَّحْمَنِ فَرَسَهُ وَطَعَنَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ فَقَتَلَهُ وَتَحَوَّلَ عَلَى فَرَسِهِ وَلَحِقَ أَبُو قَتَادَةَ فَارِسُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِعَبْدِ الرَّحْمَنِ فَطَعَنَهُ فَقَتَلَهُ فَوَالَّذِي كَرَّمَ وَجْهَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم لَتَبِعْتُهُمْ أَعْدُو عَلَى رِجْلَىَّ حَتَّى مَا أَرَى وَرَائِي مِنْ أَصْحَابِ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم وَلاَ غُبَارِهِمْ شَيْئًا حَتَّى يَعْدِلُوا قَبْلَ غُرُوبِ الشَّمْسِ إِلَى شِعْبٍ فِيهِ مَاءٌ يُقَالُ لَهُ ذُو قَرَدٍ لِيَشْرَبُوا مِنْهُ وَهُمْ عِطَاشٌ – قَالَ – فَنَظَرُوا إِلَىَّ أَعْدُو وَرَاءَهُمْ فَحَلَّيْتُهُمْ عَنْهُ – يَعْنِي أَجْلَيْتُهُمْ عَنْهُ – فَمَا ذَاقُوا مِنْهُ قَطْرَةً – قَالَ – وَيَخْرُجُونَ فَيَشْتَدُّونَ فِي ثَنِيَّةٍ – قَالَ – فَأَعْدُو فَأَلْحَقُ رَجُلاً مِنْهُمْ فَأَصُكُّهُ بِسَهْمٍ فِي نُغْضِ كَتِفِهِ . قَالَ قُلْتُ خُذْهَا وَأَنَا ابْنُ الأَكْوَعِ وَالْيَوْمَ يَوْمُ الرُّضَّعِ قَالَ يَا ثَكِلَتْهُ أُمُّهُ أَكْوَعُهُ بُكْرَةَ قَالَ قُلْتُ نَعَمْ يَا عَدُوَّ نَفْسِهِ أَكْوَعُكَ بُكْرَةَ – قَالَ – وَأَرْدَوْا فَرَسَيْنِ عَلَى ثَنِيَّةٍ قَالَ فَجِئْتُ بِهِمَا أَسُوقُهُمَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – قَالَ – وَلَحِقَنِي عَامِرٌ بِسَطِيحَةٍ فِيهَا مَذْقَةٌ مِنْ لَبَنٍ وَسَطِيحَةٍ فِيهَا مَاءٌ فَتَوَضَّأْتُ وَشَرِبْتُ ثُمَّ أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى الْمَاءِ الَّذِي حَلَّيْتُهُمْ عَنْهُ فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أَخَذَ تِلْكَ الإِبِلَ وَكُلَّ شَىْءٍ اسْتَنْقَذْتُهُ مِنَ الْمُشْرِكِينَ وَكُلَّ رُمْحٍ وَبُرْدَةٍ وَإِذَا بِلاَلٌ نَحَرَ نَاقَةً مِنَ الإِبِلِ الَّذِي اسْتَنْقَذْتُ مِنَ الْقَوْمِ وَإِذَا هُوَ يَشْوِي لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ كَبِدِهَا وَسَنَامِهَا – قَالَ – قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ خَلِّنِي فَأَنْتَخِبُ مِنَ الْقَوْمِ مِائَةَ رَجُلٍ فَأَتَّبِعُ الْقَوْمَ فَلاَ يَبْقَى مِنْهُمْ مُخْبِرٌ إِلاَّ قَتَلْتُهُ – قَالَ – فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى بَدَتْ نَوَاجِذُهُ فِي ضَوْءِ النَّارِ فَقَالَ ” يَا سَلَمَةُ أَتُرَاكَ كُنْتَ فَاعِلاً ” . قُلْتُ نَعَمْ وَالَّذِي أَكْرَمَكَ . فَقَالَ ” إِنَّهُمُ الآنَ لَيُقْرَوْنَ فِي أَرْضِ غَطَفَانَ ” . قَالَ فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ غَطَفَانَ فَقَالَ نَحَرَ لَهُمْ فُلاَنٌ جَزُورًا فَلَمَّا كَشَفُوا جِلْدَهَا رَأَوْا غُبَارًا فَقَالُوا أَتَاكُمُ الْقَوْمُ فَخَرَجُوا هَارِبِينَ . فَلَمَّا أَصْبَحْنَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” كَانَ خَيْرَ فُرْسَانِنَا الْيَوْمَ أَبُو قَتَادَةَ وَخَيْرَ رَجَّالَتِنَا سَلَمَةُ ” . قَالَ ثُمَّ أَعْطَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَهْمَيْنِ سَهْمُ الْفَارِسِ وَسَهْمُ الرَّاجِلِ فَجَمَعَهُمَا لِي جَمِيعًا ثُمَّ أَرْدَفَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَرَاءَهُ عَلَى الْعَضْبَاءِ رَاجِعِينَ إِلَى الْمَدِينَةِ – قَالَ – فَبَيْنَمَا نَحْنُ نَسِيرُ قَالَ وَكَانَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ لاَ يُسْبَقُ شَدًّا – قَالَ – فَجَعَلَ يَقُولُ أَلاَ مُسَابِقٌ إِلَى الْمَدِينَةِ هَلْ مِنْ مُسَابِقٍ فَجَعَلَ يُعِيدُ ذَلِكَ – قَالَ – فَلَمَّا سَمِعْتُ كَلاَمَهُ قُلْتُ أَمَا تُكْرِمُ كَرِيمًا وَلاَ تَهَابُ شَرِيفًا قَالَ لاَ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ بِأَبِي وَأُمِّي ذَرْنِي فَلأُسَابِقَ الرَّجُلَ قَالَ ” إِنْ شِئْتَ ” . قَالَ قُلْتُ اذْهَبْ إِلَيْكَ وَثَنَيْتُ رِجْلَىَّ فَطَفَرْتُ فَعَدَوْتُ – قَالَ – فَرَبَطْتُ عَلَيْهِ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ أَسْتَبْقِي نَفَسِي ثُمَّ عَدَوْتُ فِي إِثْرِهِ فَرَبَطْتُ عَلَيْهِ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ ثُمَّ إِنِّي رَفَعْتُ حَتَّى أَلْحَقَهُ – قَالَ – فَأَصُكُّهُ بَيْنَ كَتِفَيْهِ – قَالَ – قُلْتُ قَدْ سُبِقْتَ وَاللَّهِ قَالَ أَنَا أَظُنُّ . قَالَ فَسَبَقْتُهُ إِلَى الْمَدِينَةِ قَالَ فَوَاللَّهِ مَا لَبِثْنَا إِلاَّ ثَلاَثَ لَيَالٍ حَتَّى خَرَجْنَا إِلَى خَيْبَرَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَجَعَلَ عَمِّي عَامِرٌ يَرْتَجِزُ بِالْقَوْمِ تَاللَّهِ لَوْلاَ اللَّهُ مَا اهْتَدَيْنَا وَلاَ تَصَدَّقْنَا وَلاَ صَلَّيْنَا وَنَحْنُ عَنْ فَضْلِكَ مَا اسْتَغْنَيْنَا فَثَبِّتِ الأَقْدَامَ إِنْ لاَقَيْنَا وَأَنْزِلَنْ سَكِينَةً عَلَيْنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ هَذَا ” . قَالَ أَنَا عَامِرٌ . قَالَ ” غَفَرَ لَكَ رَبُّكَ ” . قَالَ وَمَا اسْتَغْفَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لإِنْسَانٍ يَخُصُّهُ إِلاَّ اسْتُشْهِدَ . قَالَ فَنَادَى عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَهُوَ عَلَى جَمَلٍ لَهُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ لَوْلاَ مَا مَتَّعْتَنَا بِعَامِرٍ . قَالَ فَلَمَّا قَدِمْنَا خَيْبَرَ قَالَ خَرَجَ مَلِكُهُمْ مَرْحَبٌ يَخْطِرُ بِسَيْفِهِ وَيَقُولُ قَدْ عَلِمَتْ خَيْبَرُ أَنِّي مَرْحَبُ شَاكِي السِّلاَحِ بَطَلٌ مُجَرَّبُ إِذَا الْحُرُوبُ أَقْبَلَتْ تَلَهَّبُ قَالَ وَبَرَزَ لَهُ عَمِّي عَامِرٌ فَقَالَ قَدْ عَلِمَتْ خَيْبَرُ أَنِّي عَامِرٌ شَاكِي السِّلاَحِ بَطَلٌ مُغَامِرٌ قَالَ فَاخْتَلَفَا ضَرْبَتَيْنِ فَوَقَعَ سَيْفُ مَرْحَبٍ فِي تُرْسِ عَامِرٍ وَذَهَبَ عَامِرٌ يَسْفُلُ لَهُ فَرَجَعَ سَيْفُهُ عَلَى نَفْسِهِ فَقَطَعَ أَكْحَلَهُ فَكَانَتْ فِيهَا نَفْسُهُ . قَالَ سَلَمَةُ فَخَرَجْتُ فَإِذَا نَفَرٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُونَ بَطَلَ عَمَلُ عَامِرٍ قَتَلَ نَفْسَهُ قَالَ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا أَبْكِي فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ بَطَلَ عَمَلُ عَامِرٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ قَالَ ذَلِكَ ” . قَالَ قُلْتُ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِكَ . قَالَ ” كَذَبَ مَنْ قَالَ ذَلِكَ بَلْ لَهُ أَجْرُهُ مَرَّتَيْنِ ” . ثُمَّ أَرْسَلَنِي إِلَى عَلِيٍّ وَهُوَ أَرْمَدُ فَقَالَ ” لأُعْطِيَنَّ الرَّايَةَ رَجُلاً يُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أَوْ يُحِبُّهُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ ” . قَالَ فَأَتَيْتُ عَلِيًّا فَجِئْتُ بِهِ أَقُودُهُ وَهُوَ أَرْمَدُ حَتَّى أَتَيْتُ بِهِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَبَسَقَ فِي عَيْنَيْهِ فَبَرَأَ وَأَعْطَاهُ الرَّايَةَ وَخَرَجَ مَرْحَبٌ فَقَالَ قَدْ عَلِمَتْ خَيْبَرُ أَنِّي مَرْحَبُ شَاكِي السِّلاَحِ بَطَلٌ مُجَرَّبُ إِذَا الْحُرُوبُ أَقْبَلَتْ تَلَهَّبُ فَقَالَ عَلِيٌّ أَنَا الَّذِي سَمَّتْنِي أُمِّي حَيْدَرَهْ كَلَيْثِ غَابَاتٍ كَرِيهِ الْمَنْظَرَهْ أُوفِيهِمُ بِالصَّاعِ كَيْلَ السَّنْدَرَهْ قَالَ فَضَرَبَ رَأْسَ مَرْحَبٍ فَقَتَلَهُ ثُمَّ كَانَ الْفَتْحُ عَلَى يَدَيْهِ .
ইয়াস ইবনু সালামাহ্ (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে হুদাইবিয়ায় পৌঁছলাম। তখন আমাদের সংখ্যা ছিল চৌদ্দশ’। তদুপরি সেখানে ছিল পঞ্চাশটি বকরী, যাদের পানি পানের জন্য পর্যাপ্ত পানি ছিল না। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কূয়ার কিনারায় বসলেন এবং দু’আ করলেন অথবা তাতে থুতু দিলেন। রাবী বলেন, আর অমনি পানি উথ্লে উঠলো। তখন আমরাও পানি পান করলাম এবং (পশুদেরকেও) পানি পান করালাম। রাবী বলেন, তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বাই’আতের জন্য বৃক্ষমূলে ডাকলেন। রাবী বলেন, তারপর লোকদের মধ্যে আমি সর্বাগ্রে বাই’আত হলাম। তারপর একে একে অন্যান্য লোকেরাও বাই’আত হলো। তিনি যখন বাই’আত গ্রহণ করতে করতে লোকজনের মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছলেন, তখন বললেন, হে সালামাহ্! তুমি বাই’আত হও। রাবী বলেন, তখন আমি বললাম, আমি তো, লোকদের মধ্যে প্রথমেই বাই’আত হয়েছি, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেনঃ আবারও হও না? রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন আমাকে ঢাল দিয়ে বাই’আত করতে করতে লোকদের শেষ প্রান্তে পৌঁছলেন এবং বললেন, তুমি কি আমার কাছে বাই’আত হবে না, হে সালামাহ্! রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি তো লোকদের মধ্যে প্রথমভাগে এবং মধ্যভাগে (দু দু’বার) আপনার কাছে বাই’আত হয়েছি। তিনি বললেনঃ আবারও হও না। তখন আমি তৃতীয় বার বাই’আত গ্রহণ করলাম। এরপর তিনি আমাকে বললেন, হে সালামাহ্! তোমার সে বড় ঢালটি বা ছোট ঢালটি কোথায়, যা আমি তোমাকে দিয়েছিলাম? রাবী (সালামাহ্) বলেন, আমি বললাম : হে আল্লাহর রসূল! আমার চাচা আমির আমার সাথে অস্ত্রবিহীন অবস্থায় দেখা করেছিলেন। তখন আমি তাঁকে তা দিয়ে দিয়েছি। রাবী বলেন, এতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেসে দিলেন এবং বললেনঃ তুমি দেখছি পূর্ববর্তীযুগের সে লোকের মত, যে বলেছিল, হে আল্লাহ! আমি এমন একজন বন্ধু চাই, যে আমার প্রানের চাইতেও আমার নিকট বেশি প্রিয় হবে।” এরপরে মুশরিকরা আমাদের কাছে প্রস্তাব পাঠালো। আমাদের একপক্ষের লোকজন অন্যপক্ষের শিবিরে যাতায়াত করতে লাগলো এবং শেষ পর্যন্ত আমরা উভয়পক্ষ পরস্পরে সন্ধিবদ্ধ হলাম। রাবী (সালামাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি তালহাহ্ ইবনু ‘উবাইদুল্লাহর খিদমাতে নিয়োজিত ছিলাম। আমি তার ঘোড়াকে পানি পান করাতাম এবং তার পিঠ মালিশ করতাম এবং তাঁর অন্যান্য খিদমাতও করতাম। আমি তাঁর ওখানে খাওয়া-দাওয়া করতাম। নিজের পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ পরিত্যাগ করে আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রসূলের রাহে মুহাজির হয়েছি। রাবী বলেন, তারপর যখন আমরা ও মক্কাবাসীরা সন্ধিতে আবদ্ধ হলাম এবং আমাদের একপক্ষ অপরপক্ষের সাথে মিলেমিশে থাকতে লাগলাম। আমি একটি গাছ তলায় গিয়ে তার নীচের কাঁটা প্রভৃতি পরিষ্কার করে তার গোড়ায় একটু শুয়ে পড়ি। এমন সময় মাক্কাবাসী চারজন মুশরিক এসে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলতে লাগলো। আমার কাছে ওদের কথাবার্তা অত্যন্ত খারাপ লাগলো এবং আমি স্থান পরিবর্তন করে আর একটি গাছের তলায় চলে গেলাম। তারা তাদের অস্ত্রাদি গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখে শুয়ে পড়লো।
এমন সময় প্রান্তরের নিম্নাঞ্চল থেকে কে যেন চীৎকার করে বললো, হে মুহাজিরগণ! ইবনু যুনায়মকে কতল কর। আমি তৎক্ষণাৎ আমার তরবারি উঠিয়ে ধরলাম এবং ঐ চারজনের উপর ধাবিত হলাম। তখন তারা ঘুমিয়ে ছিল। আমি তাদের অস্ত্রগুলো হস্তগত করলাম এবং তা আঁটি বেঁধে আমার হাতে নিলাম। তিনি বলেন, এরপর আমি বললাম, যে মহান সত্তা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে সম্মানিত করেছেন তাঁর কসম! তোমাদের মধ্যে কেউ যদি মাথা তোলো, তবে তার সে অঙ্গে আঘাত করব যেখানে তার চোখ দু’টো রয়েছে। রাবী বলেন, তারপর তাদেরকে আমি হাঁকিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট পর্যন্ত নিয়ে গেলাম। তিনি বলেন, এমন সময় আমার চাচা আ’মির ‘আবালাত’ গোত্রের একজনকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট নিয়ে এসেছে। তাকে বলা হতো মিকরিয। সে ছিল বর্ম সজ্জিত একটি ঘোড়ায় আসীন। আর তার সাথে সত্তর জন মুশরিক। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের দিকে তাকালেন এবং বললেনঃ “ওদেরকে ছেড়ে দাও, যাতে আক্রমণ ওদের পক্ষ থেকেই হয় এবং দ্বিতীয়বার তারাই অপরাধী প্রতিপন্ন হয়”। এ কথা বলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের ক্ষমা করে দিলেন। তখন আল্লাহ তা’আলা নাযিল করলেন : “সে পবিত্র সত্তা যিনি তাদের হাতকে তোমাদের উপর থেকে এবং তোমাদের হাতকে তাদের উপর থেকে মক্কাপ্রান্তরে তাদের উপর তোমাদের বিজয়ী করার পর বিরত রেখেছেন”-(সূরা আন্ নূর ২৪ : ৪৮) আয়াতের শেষ পর্যন্ত।
রাবী বলেন, তারপর মাদীনায় প্রত্যাবর্তনের জন্য বেরিয়ে পড়লাম। পথে এমন একটি মানযিলে আমরা অবতরণ করলাম যেখানে আমাদের ও লেহিয়ান গোত্রের মধ্যে কেবল একটি পাহাড়ের ব্যবধান ছিল। আর তারা ছিল মুশরিক। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে ব্যক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে দু’আ করলেন, যে ব্যক্তি রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীদের পক্ষ থেকে পাহারা দেয়ার জন্য পাহাড়ের উপর আরোহণ করবে। সালামাহ্ বলেন, সে রাতে আমি দুই কি তিনবার ঐ পাহাড়ে আরোহণ করেছিলাম। তারপর আমরা মাদীনায় এলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর গোলাম রাবাহ্কে দিয়ে তাঁর উটসমূহ পাঠালেন। আর আমিও তালহার ঘোড়ায় চড়ে তাঁর সাথে সাথে উটগুলো হাঁকিয়ে চারণ ভূমির দিকে নিয়ে গেলাম। যখন আমাদের ভোর হলো ‘আবদুর রহমান ফাজারী চড়াও হয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সমস্ত উট ছিনিয়ে নিয়ে গেল এবং পশুপালের রাখালকে হত্যা করলো। আমি তখন রাবাহ্কে বললাম, হে রাবাহ্! লও এ ঘোড়া নিয়ে তুমি তালহাহ্ ইবনু ‘উবাইদুল্লাহকে পৌঁছে দিও আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে সংবাদ দাও যে, মুশরিকরা তাঁর উটগুলো লুটে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, তখন আমি একটি টিলার উপর দাঁড়ালাম। তারপর মাদীনার দিকে মুখ করে তিনবার চিৎকার দিলাম, ইয়া সাবাহা! তারপর আমি লুটেরাদের পিছু ধাওয়া করলাম ও তাদের উপর তীর নিক্ষেপ করতে লাগলাম। আর আমি মুখে এ চরণ উচ্চারণ করছিলাম,
“আমি আকওয়া’র পুত্র, আজ সেদিন, আজকে মায়ের দুধ (কতখানি খেয়েছো তা) স্মরণের দিন।”
তখন আমি তাদের যে কাউকে পেয়েছি, তার উপর এ রকমভাবে তীর নিক্ষেপ করেছি যে, তীরের অগ্রভাগ তার কাঁধ ছেদ করে বেরিয়েছে। তিনি বলেন, আমি বলতে লাগলাম,
“এ আঘাত নাও, আমি আকওয়া’র পুত্র, আজ দুধপান স্মরণের দিন।”
তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! আমি তীর নিক্ষেপ করতে থাকলাম এবং ঘায়েল করতে লাগলাম এবং যখনই কোন ঘোড় সওয়ার আমার দিকে ফিরত তখনই আমি গাছের আড়ালে এসে তার গোড়ায় বসে তার প্রতি তীর নিক্ষেপ করতাম। আর তাকে যখম করে ফেলতাম। অবশেষে যখন তারা পাহাড়ের সংকীর্ণ পথে আসে এবং তারা সে সংকীর্ণ পথে ঢোকে আমি তখন পাহাড়ের উপর উঠে সেখান থেকে অবিরাম তাদের উপর পাথর নিক্ষেপ করতে থাকলাম। তিনি বলেন, এভাবে আমি তাদের পশ্চাদ্ধাবন করতে থাকলাম যে পর্যন্ত না আল্লাহর সৃষ্ট উটগুলো যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাওয়ারী হিসেবে ছিল তা আমার পেছনে রেখে না যাই। তারা এগুলো আমার আওতায় ফেলে চলে গেল। তারপরও আমি তাদের অনুসরণ করে তাদের উপর তীর নিক্ষেপ করতে থাকলাম। এমনিকি তারা ত্রিশটির বেশী চাদর এবং ত্রিশটি বল্লম নিজের বোঝা হালকা করার উদ্দেশ্যে ফেলে গেল। তারা যেসব বস্তু ফেলে যাচ্ছিল আমি তার প্রত্যেকটিকে পাথর দ্বারা চিহ্নিত করে যাচ্ছিলাম যাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণ তা দেখে চিনতে পারেন। অবশেষে তারা পাহাড়ের একটি সংকীর্ণ স্থানে গিয়ে পৌঁছলো। এমন সময় বাদ্র ফাজারীর অমুক পুত্র এসে তাদের সাথে মিলিত হলো। এবার তারা সকলে মিলে সকালের খাবার খেতে বসলো। আমি পাহাড়ের একটি শৃঙ্গে বসে পড়লাম। তখন সে ফাজারী বললো, ঐ যে লোকটিকে দেখছি সে কে? তারা বলল, লোকটির হাতে আমরা অনেক দুর্ভোগ পোহায়েছি। আল্লাহর কসম! রাতের আধাঁর থেকে নিয়ে এ পর্যন্ত লোকটি আমাদের পিছন থেকে সরছে না, সে আমাদের প্রতি অবিরত তীর নিক্ষেপ করছে, এমনকি আমাদের যথাসর্বস্ব সে কেড়ে নিয়েছে। তখন সে বলল, তোমাদের মধ্যকার চারজন উঠে গিয়ে তার উপর চড়াও হও। তখন তাদের চার ব্যক্তি পাহাড়ে উঠে আমার দিকে এগিয়ে এলো। তারপর তারা যখন আমার কথা শোনার মত নিকটবর্তী স্থানে এসে পৌঁছলো, তিনি বলেন, তখন আমি বললাম, তোমরা কি আমাকে চেন? তারা বলল, না। তিনি বলেন, আমি বললাম, আমি সালামাহ্ ইবনু আকওয়া’। কসম সে পবিত্র সত্তার, যিনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্মানিত করেছেন! আমি তোমাদের যাকেই পাই তাকে ধরে ফেলব। কিন্তু তোমাদের কেউ চাইলেই আমাকে ধরতে পারবে না। তখন তাদের একজন বলল, আমিও তাই মনে করি। তিনি বলেন, তারপর তারা ফিরে গেল। আর আমি সে স্থানেই বসে রইলাম। অবশেষে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর অশ্বারোহীদের গাছ-গাছালির মাঝ দিয়ে অগ্রসর হতে দেখলাম। তিনি বলেন, তাদের মধ্যে সর্বাগ্রে ছিলেন আখরাম আসাদী। তাঁর পিছনে আবু কাতাদাহ্ আনসারী। তাঁর পিছনে মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ কিন্দী। তিনি বলেন, আমি তখন আখরামের ঘোড়ার লাগাম ধরলাম। তিনি বলেন, তখন লুটেরা (শত্রুরা) পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পালিয়ে গেল। আমি বললাম, হে আখরাম! ওদের থেকে সতর্ক থাকবে। তারা যেন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণ এসে মিলিত হওয়ার পূর্বেই তোমাদের বিচ্ছিন্ন করে না ফেলে। আখরাম বললেন, হে সালামাহ্! তুমি যদি আল্লাহ ও কিয়ামাতের দিনের প্রতি বিশ্বাসী হও এবং জান্নাত ও জাহান্নামকে সত্য মনে কর তবে আমার এবং শাহাদাতের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করো না। সালামাহ্ বলেন, তখন আমি তার পথ ছেড়ে দিলাম। তিনি তখন ‘আবদুর রহমানের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হলেন। আখরাম ‘আবদুর রহমানের ঘোড়াকে আহত করলেন। আর ‘আবদুর রহমান বর্শার আঘাতে তাকে কতল করে দিল এবং আখরামের ঘোড়ার উপর চড়ে বসলো। ইতোমধ্যে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘোড়সাওয়ার আবু কাতাদাহ্ (রাঃ) এসে পৌঁছলেন। তিনি ‘আবদুর রহমানকে বর্শার আঘাতে হত্যা করলেন। সে পবিত্র সত্তার কসম! যিনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মর্যাদামন্ডিত করেছেন, আমি তখন এতই দ্রুতগতিতে তাদের পিছু ধাওয়া করে যাচ্ছিলাম যে, আর পিছনে (অনেক দূর পর্যন্ত) মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কোন সাহাবীকেই দেখতে পেলাম না, এমনকি তাদের ঘোড়ার খুরের ধূলিও আমার দৃষ্টিগোচর হলো না। এভাবে চলতে চলতে সূর্যাস্তের প্রাক্কালে তারা এমন একটি গিরিপথে উপনীত হল যেখানে যু-কারাদ নামক একটি প্রস্রবণ রয়েছে। অত্যন্ত তৃষ্ণার্ত অবস্থায় তারা পানি পান করতে অবতরণ করলো। তখন তারা আমাকে তাদের পিছু ধাওয়া করে দৌড়ে আসতে দেখতে পেলো। এক জায়গায় পানি পান করার পূর্বেই আমি সেখান থেকে তাদের তাড়িয়ে দিলাম। তখন তারা পাহাড়ের একটি ঢালু উপত্যকার দিকে দৌড়াতে লাগলো আর আমিও তাদের পিছু ধাওয়া করতে লাগলাম। আমি তাদের যে কোন একজনের নিকটবর্তী হতাম তার কাঁধের অস্থিতে তীর নিক্ষেপ করে বললাম, “আমি আকওয়া’র পুত্র, আজ দুধ স্মরণের দিন”। সে তখন বলল, তার মা তার জন্য কাঁদুক-তুমি কি সে আকওয়া যে আমাদের সেই ভোর থেকে অতিষ্ঠ করে রেখেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ, তোমার জানের দুশমন, আমি সেই তোমার ভোরবেলার আকওয়া। তিনি বলেন, অতঃপর তারা দু’টি ক্লান্ত ঘোড়া উপত্যকায় ছেড়ে চলে গেল। তিনি বলেন, তখন আমি ঐ দু’টোকে হাঁকিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট নিয়ে এলাম। তিনি বলেন, সেখানে একটি “সাতীহা’ (চামড়ার পাত্র) এবং একটি পানি ভর্তি সাতীহা নিয়ে এসে ‘আমির’ আমার সাথে মিলিত হলেন। আমি তখন ওযূ করলাম এবং (দুধ) পান করলাম। তারপর এমন অবস্থায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এলাম, যখন তিনি ঐ পানির কাছে ছিলেন যা থেকে আমি ওদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম।
এদিকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ সমস্ত উট ও মুশরিকদের নিকট থেকে আমার ছিনিয়ে আনা বর্শা ও চাদর প্রভৃতি হস্তগত করেছেন। তখন বিলাল ঐ লোকদের কাছ থেকে আমার উদ্ধারকৃত একটি উট জবাই করে তার কলিজা এবং কুঁজ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য ভুনা করছিলেন। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে সুযোগ দিন, আমি আমাদের লোকদের থেকে একশ’ জনকে বাছাই করে নিয়ে সে দুশমনের পিছু ধাওয়া করি যাতে তাদের সকলকে এমনিভাবে হত্যা করব যে, তাদের খবর বয়ে নিয়ে যাবার মত একটি লোকও অবশিষ্ট থাকবে না। তিনি বলেন, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনভাবে হাসলেন যে, চুলোর আগুনের আভায় তাঁর চোয়ালের দাঁতগুলো প্রকাশ পেলো। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে সালামাহ্! আমি বললাম, হ্যাঁ, পবিত্র সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সম্মানিত করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেনঃ এতক্ষণে তো তারা গাত্ফান পল্লীতে আতিথ্য ভোগ করছে। তিনি বলেন, এমন সময় গাত্ফান গোত্রের একটি লোক এল। সে বলল, অমুক তাদের জন্য একটি উট যাবাহ করেছে। তারা যখন তাঁর চামড়া খসাচ্ছিল তখন তাঁরা ধুলো রাশি উড়তে দেখতে পায়। তখন তার বলে উঠলো ওরা (আকওয়া’ ও তাঁর বাহিনী) তোমাদের নিকট এসে পড়েছে। তখন তারা পালিয়ে যায়। এরপর আমাদের ভোর হলো। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমাদের আজকে সেরা অশ্বারোহী হচ্ছে আবু কাতাদাহ্ আর আমাদের সেরা পদাতিক হচ্ছে সালামাহ্। তিনি বলেন, তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে অশ্বারোহী ও পদাতিক হিসেবে গনীমাতের দু’ অংশ দিলেন। আমাকে তিনি একত্রে দু’ অংশ দিলেন। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাদীনায় ফিরে আসার কালে আমাকে তাঁর সাথে তাঁর উট্নী আয্বার পিছনে বসিয়ে নিলেন। তিনি বলেন, তারপর যখন আমরা পথ অতিক্রম করছিলাম, এমন সময় আনসারের এমন এক ব্যক্তি-যাকে পদব্রজে চলার ব্যাপারে কেউ পরাজিত করতে পারতো না-বলতে লাগলো-কেউ কি আছে যে, মাদীনায় সর্বাগ্রে পৌঁছার ব্যাপারে প্রতিযোগিতা করবে? এ কথাটি সে বারবার বলছিল। তিনি বলেন, যখন আমি তার এ (চ্যালেঞ্জমূলক) কথাটি শুনলাম তখন বললাম, তুমি কি কোন সম্মানিত লোককে সম্মান দিতে জাননা বা কোন ভদ্রলোককেই পরোয়া করবে না? সে বলল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ব্যতীত অন্য কারো নয়। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার উপর কুরবান, আপনি আমায় অনুমতি দিন যেন আমি ওই ব্যক্তির সাথে প্রতিযোগিতা করি। তখন তিনি বললেনঃ তোমার ইচ্ছা হলে। তিনি বলেন, তখন আমি বললাম, ওহে! আমি তোমার দিকে আসছি। তারপর আমি লাফ দিয়ে নিচে দৌড়ালাম। তারপর এক বা দু’ টিলা অতিক্রম করার দূরত্বে রইলাম তখন পর্যন্ত আমার দম বন্ধ রেখে তার পিছু পিছু দৌড় দিলাম। আরও দু’ এক টিলা পর্যন্ত ধীরগতিতে চলার পর সজোরে দৌড় দিয়ে তার নিকট পৌঁছে গেলাম। এবং তার দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে একটি ঘুষি মেরে বললাম, ওহে! আল্লাহর কসম! তুমি হেরে গেছ। তখন সে বলল, আমিও তাই মনে করছি। তিনি বলেন, অতএব আমি তার পূর্বেই মাদীনায় পৌঁছে গেলাম। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! এরপর আমরা তিনরাতের অধিক মাদীনায় থাকতে পারিনি। এমনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে আমরা খাইবারের দিকে বেড়িয়ে পড়লাম। তিনি বলেন, তখন আমার চাচা ‘আমির (রাঃ) উৎসাহমূলক কবিতা আবৃত্তি করতে লাগলেন :
“আল্লাহর কসম! আল্লাহর অনুগ্রহ না হলে আমরা হিদায়াত পেতাম না।
সদাকাহ্ও দিতাম না আর সলাতও আদায় করতাম না।
আমরা আপনার অনুগ্রহ থেকে কখনো বেপরওয়া হতে পারি না,
তাই আপনি আমাদের কদম দৃঢ় রাখুন, যখন আমরা শত্রুদের সম্মুখীন হই
এবং আপনি আমাদের প্রতি প্রশান্তি বর্ষণ করুন।”
তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, আমি ‘আমির। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “তোমার রব তোমাকে ক্ষমা করুন।” রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন যার জন্য বিশেষভাবে ক্ষমার দু’আ করতেন সে শহীদ হতো। তিনি বলেন, তখন স্বীয় উটের উপর আসীন ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) চীৎকার করে বললেন, ইয়া নবী আল্লাহ! ‘আমিরকে দিয়ে আমাদের আরো উপকৃত করলেন না কেন? তিনি বলেন, তারপর যখন আমরা খাইবারে উপস্থিত হলাম, তখন খাইবার অধিপতি মারহাব তরবারি দোলাতে দোলাতে বেরিয়ে এলো এবং বলল,
“খাইবার জানে যে, আমি মুরাহ্হাব, পূর্ণ অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত, অভিজ্ঞতাপূর্ণ এক বীরপুরুষ
যখন যুদ্ধ বিগ্রহ ঘনীভূত হয় তখন সে তরবারিসমূহ চমকাতে থাকে।”
রাবী বলেন, আমার চাচা ‘আমির (রাঃ) কবিতা আবৃত্তি করতে করতে বললেন-
“খাইবার জানে যে, আমি ‘আমির অস্ত্রে-শস্ত্রে সুসজ্জিত যুদ্ধে অবতীর্ণ।
এক বীর বাহাদুর ভয়হীন ব্যক্তি।”
রাবী বলেন, তারপর তাদের মধ্যে আঘাত বিনিময় হলো। ‘আমির (রাঃ) নীচে থেকে যখন তাকে আঘাত করতে চাইলেন, তখন তা ফিরে এসে তাঁর নিজের উপরই পতিত হলো, আর তাতে তাঁর পায়ের গোছার সংযোগশিরা কেটে গিয়ে মৃত্যু হল।
(রাবী) সালামাহ্ (রাঃ) বলেন, তখন আমি বের হলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কয়েকজন সাহাবীকে বলাবলি করতে শুনলাম যে, ‘আমিরের ‘আমাল বরবাদ হয়ে গেছে, সে আত্মহত্যা করেছে। তখন আমি কাঁদতে কাঁদতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! ‘আমিরের ‘আমালগুলো বরবাদ হয়ে গেল? তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ (এ-কথা)-কে বলেছে? রাবী বলেন, আমি বললাম, আপনারই কয়েকজন সাহাবী। তিনি বললেন, যারা এরূপ বলেছে তারা মিথ্যা বলেছে এবং তার প্রতিদান সে দু’বার পাবে। তারপর তিনি আমাকে ‘আলী (রাঃ) -এর নিকট পাঠালেন। তখন তিনি চক্ষুরোগে আক্রান্ত ছিলেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি এমন এক ব্যক্তিকে (আজ) পতাকা সমর্পণ করবো, যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলও তাঁকে ভালবাসেন। তিনি বলেন, তারপর আমি আলী (রাঃ) -এর কাছে গেলাম এবং তাকে নিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম। আর তখন তাঁর চোখ ব্যাথাগ্রস্ত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চোখে থুথু দিলেন। আর (তাতেই) তিনি সুস্থ হলেন। তখন তিনি তাঁর হাতে পতাকা দিলেন। এবারো মারহাব বেরিয়ে এলো এবং কবিতা আওড়াতে লাগল-
“খাইবার জানে যে, আমি মারহাব, যুদ্ধের অস্ত্রে সজ্জিত এক অভিজ্ঞতাপূর্ণ বীর বাহাদুর ব্যক্তি।“
তখন ‘আলী (রাঃ) বললেন-
“আমি সে ব্যক্তি যাকে আমার মা ‘হায়দার’ নামে ডাকে,
যার দর্শন বন্য সিংহের মত ভীতিপ্রদ, আমি দুশমনের প্রতিদান দেই বিরাট পরিমাণের পাত্র দিয়ে অর্থাৎ- তাদের নির্দ্বিধায় হত্যা করি”।
এরপর তিনি মারহাবের মাথায় তলোয়ার মারলেন এবং তাকে হত্যা করলেন। তারপর তাঁরই হাতে (খাইবার) বিজয় হলো। (ই.ফা. ৪৫২৭, ই.সে. ৪৫২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৭১
قَالَ إِبْرَاهِيمُ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، عَنْ عِكْرِمَةَ، بْنِ عَمَّارٍ بِهَذَا الْحَدِيثِ بِطُولِهِ
‘ইকরামাহ ইবনু আম্মার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ইকরামাহ ইবনু আম্মার (রাঃ) -এর সূত্রেও এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৫২৭, ই.সে. ৪৫৩০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৭২
وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُوسُفَ الأَزْدِيُّ السُّلَمِيُّ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ، عَمَّارٍ بِهَذَا .
‘ইকরামাহ ইবনু ‘আম্মার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ইকরামাহ ইবনু ‘আম্মার (রাঃ) -এর সূত্রে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা ৪৫২৮, ই.সে. ৪৫৩০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৬. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণী : “তিনি সে সত্তা যিনি তাদের হাতকে তোমাদের উপর থেকে দূরে রেখেছেন”
৪৫৭৩
حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ مُحَمَّدٍ النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ ثَمَانِينَ، رَجُلاً مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ هَبَطُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ جَبَلِ التَّنْعِيمِ مُتَسَلِّحِينَ يُرِيدُونَ غِرَّةَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابِهِ فَأَخَذَهُمْ سَلَمًا فَاسْتَحْيَاهُمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { وَهُوَ الَّذِي كَفَّ أَيْدِيَهُمْ عَنْكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ عَنْهُمْ بِبَطْنِ مَكَّةَ مِنْ بَعْدِ أَنْ أَظْفَرَكُمْ عَلَيْهِمْ}
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মাক্কাবাসীদের মধ্য থেকে সশস্ত্র আশি ব্যক্তি একদা অতর্কিতে তান্’ঈম পাহাড় থেকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দিকে অবতরণ অরে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণের অসতর্কতার সুযোগ গ্রহণ। তিনি তাদের বিনা যুদ্ধে বন্দী করলেন, এরপর তাদের জীবিত ছেড়ে দিলেন। তখন আল্লাহ তা’আলা নাযিল করলেন : (অর্থ) “তিনি সে পবিত্র সত্তা, যিনি মক্কা প্রান্তরে তাদের হাতকে তোমাদের উপর থেকে এবং তোমাদের হাতকে তাদের উপর থেকে বিরত রেখেছেন-তাদের উপর তোমাদের বিজয়ী করার পর”-(সুরা ফাত্হ ৪৮ : ২৪)। (ই.ফা. ৪৫২৯, ই.সে. ৪৫৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৭. অধ্যায়ঃ
পুরুষদের সাথে যুদ্ধে স্ত্রীলোকদের অংশগ্রহণ
৪৫৭৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ أُمَّ سُلَيْمٍ، اتَّخَذَتْ يَوْمَ حُنَيْنٍ خِنْجَرًا فَكَانَ مَعَهَا فَرَآهَا أَبُو طَلْحَةَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَذِهِ أُمُّ سُلَيْمٍ مَعَهَا خَنْجَرٌ فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا هَذَا الْخَنْجَرُ ” . قَالَتِ اتَّخَذْتُهُ إِنْ دَنَا مِنِّي أَحَدٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ بَقَرْتُ بِهِ بَطْنَهُ . فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَضْحَكُ قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ اقْتُلْ مَنْ بَعْدَنَا مِنَ الطُّلَقَاءِ انْهَزَمُوا بِكَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَا أُمَّ سُلَيْمٍ إِنَّ اللَّهَ قَدْ كَفَى وَأَحْسَنَ ”
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(তাঁর মা) উম্মু সুলায়ম হুনায়নের যুদ্ধের দিন একটি ছোরা ধারণ করেছিলেন, যা তার সঙ্গে থাকত। (তার স্বামী) আবূ তালহাহ্ তা দেখতে পেয়ে বলেন, হে আল্লাহর রসূল! ইনি উম্মু সুলায়ম। আর তার সাথে একটি ছোরা রয়েছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেনঃ এ ছোরা কিসের জন্য? তিনি বললেন, এটি এজন্য নিয়েছি যদি কোন বিধর্মী মুশরিক আমার কাছাকাছি আসে, তবে এ দিয়ে আমি তার পেট চিরে ফেলবো। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসতে লাগলেন। তখন তিনি (উম্মু সুলায়ম) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! (মক্কা বিজয়ের দিন) আমাদের ছাড়া যারা ছাড়া পেয়ে গেছে এবং পরাজয়ের মুখে ইসলাম গ্রহণ করেছে, তাদের হত্যা করে ফেলুন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে উম্মু সুলায়ম! আল্লাহই (মুশরিকদের বিরুদ্ধে) যথেষ্ট। তিনি (আমাদের প্রতি) সদয় রয়েছেন। (ই.ফা. ৪৫৩০, ই.সে. ৪৫৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৭৫
وَحَدَّثَنِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ، عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، فِي قِصَّةِ أُمِّ سُلَيْمٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ حَدِيثِ ثَابِتٍ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মু সুলায়মের কাহিনী বর্ণনা প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে পূর্বে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৫৩০, ই.সে. ৪৫৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৭৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَغْزُو بِأُمِّ سُلَيْمٍ وَنِسْوَةٍ مِنَ الأَنْصَارِ مَعَهُ إِذَا غَزَا فَيَسْقِينَ الْمَاءَ وَيُدَاوِينَ الْجَرْحَى .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু সুলায়ম ও আনসারের কতিপয় মহিলাকে তাঁর সাথে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যেতেন। তারা আর্তদের পানি পান করাতেন এবং আহতদের শুশ্রুষা করতেন। (ই.ফা. ৪৫৩১, ই.সে. ৪৫৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৭৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو، – وَهُوَ أَبُو مَعْمَرٍ الْمِنْقَرِيُّ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، – وَهُوَ ابْنُ صُهَيْبٍ – عَنْ أَنَسِ، بْنِ مَالِكٍ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ انْهَزَمَ نَاسٌ مِنَ النَّاسِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو طَلْحَةَ بَيْنَ يَدَىِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُجَوِّبٌ عَلَيْهِ بِحَجَفَةٍ – قَالَ – وَكَانَ أَبُو طَلْحَةَ رَجُلاً رَامِيًا شَدِيدَ النَّزْعِ وَكَسَرَ يَوْمَئِذٍ قَوْسَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا – قَالَ – فَكَانَ الرَّجُلُ يَمُرُّ مَعَهُ الْجَعْبَةُ مِنَ النَّبْلِ فَيَقُولُ انْثُرْهَا لأَبِي طَلْحَةَ . قَالَ وَيُشْرِفُ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْظُرُ إِلَى الْقَوْمِ فَيَقُولُ أَبُو طَلْحَةَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي لاَ تُشْرِفْ لاَ يُصِبْكَ سَهْمٌ مِنْ سِهَامِ الْقَوْمِ نَحْرِي دُونَ نَحْرِكَ قَالَ وَلَقَدْ رَأَيْتُ عَائِشَةَ بِنْتَ أَبِي بَكْرٍ وَأُمَّ سُلَيْمٍ وَإِنَّهُمَا لَمُشَمِّرَتَانِ أَرَى خَدَمَ سُوقِهِمَا تَنْقُلاَنِ الْقِرَبَ عَلَى مُتُونِهِمَا ثُمَّ تُفْرِغَانِهِ فِي أَفْوَاهِهِمْ ثُمَّ تَرْجِعَانِ فَتَمْلآنِهَا ثُمَّ تَجِيئَانِ تُفْرِغَانِهِ فِي أَفْوَاهِ الْقَوْمِ وَلَقَدْ وَقَعَ السَّيْفُ مِنْ يَدَىْ أَبِي طَلْحَةَ إِمَّا مَرَّتَيْنِ وَإِمَّا ثَلاَثًا مِنَ النُّعَاسِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, উহুদ যুদ্ধের দিন যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে কতিপয় লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আড়াল করে রেখেছিলেন। আর আবূ তালহাহ্ (রাঃ) ছিলেন একজন অতি দক্ষ তীরন্দাজ। সেদিন (যুদ্ধে) তিনি দু’ বা তিনটি ধনুক ভেঙ্গে ফেলেন। রাবী বলেন, যখনই কোন ব্যক্তি তীর নিয়ে তার পাশ দিয়ে গমন করতো, তখনই তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেন, এগুলো আবূ তালহার জন্য রেখে যাও। রাবী বলেন, যখনই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা তুলে লোকজনের প্রতি তাকাতেন, তখনই আবূ তালহাহ্ (রাঃ) বলে উঠতেন, হে আল্লাহর নাবী! আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান! আপনি মাথা উঠাবেন না; এমন না হয় শত্রুপক্ষের তীর এসে আপনার গায়ে লাগে। আপনার বক্ষ রক্ষার্থে আমার বক্ষ নিবেদিত। আবূ তালহাহ্ বলেন, আমি (সেদিন) আবু বাক্র কন্যা ‘আয়িশাহ্ ও উম্মু সুলায়মকে এমন অবস্থায় দেখেছি, তাঁরা তাঁদের পিঠে পানির মশক বয়ে আনছিলেন। তখন তাঁরা এমনভাবে কাপড় গুছিয়ে চলছিলেন যে, আমি তাদের পায়ে পরিহিত অলংকার দেখতে পাচ্ছিলাম। তাঁরা আহতদের মুখে পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন। তাঁরা আবার গিয়ে মশক ভরে পানি এনে আহতদের মুখে পানি দিচ্ছিলেন। আবূ তালহার হাত থেকে সেদিন তন্দ্রার ঘোরে দু’বার বা তিনবার তলোয়ার পড়ে যায়। (ই.ফা. ৪৫৩২, ই.সে. ৪৫৩৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৮. অধ্যায়ঃ
জিহাদ অভিযানে অংশগ্রহণকারী মহিলাদের জন্য গনীমাতের কোন অংশ নেই, তবে স্বেচ্ছায় তাদের কিছু দেয়া এবং শত্রুপক্ষের শিশুদের হত্যা করা নিষিদ্ধ
৪৫৭৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ بْنِ قَعْنَبٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، – يَعْنِي ابْنَ بِلاَلٍ – عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ هُرْمُزَ، أَنَّ نَجْدَةَ، كَتَبَ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ يَسْأَلُهُ عَنْ خَمْسِ، خِلاَلٍ . فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لَوْلاَ أَنْ أَكْتُمَ، عِلْمًا مَا كَتَبْتُ إِلَيْهِ . كَتَبَ إِلَيْهِ نَجْدَةُ أَمَّا بَعْدُ فَأَخْبِرْنِي هَلْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَغْزُو بِالنِّسَاءِ وَهَلْ كَانَ يَضْرِبُ لَهُنَّ بِسَهْمٍ وَهَلْ كَانَ يَقْتُلُ الصِّبْيَانَ وَمَتَى يَنْقَضِي يُتْمُ الْيَتِيمِ وَعَنِ الْخُمْسِ لِمَنْ هُوَ فَكَتَبَ إِلَيْهِ ابْنُ عَبَّاسٍ كَتَبْتَ تَسْأَلُنِي هَلْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَغْزُو بِالنِّسَاءِ وَقَدْ كَانَ يَغْزُو بِهِنَّ فَيُدَاوِينَ الْجَرْحَى وَيُحْذَيْنَ مِنَ الْغَنِيمَةِ وَأَمَّا بِسَهْمٍ فَلَمْ يَضْرِبْ لَهُنَّ وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَكُنْ يَقْتُلُ الصِّبْيَانَ فَلاَ تَقْتُلِ الصِّبْيَانَ وَكَتَبْتَ تَسْأَلُنِي مَتَى يَنْقَضِي يُتْمُ الْيَتِيمِ فَلَعَمْرِي إِنَّ الرَّجُلَ لَتَنْبُتُ لِحْيَتُهُ وَإِنَّهُ لَضَعِيفُ الأَخْذِ لِنَفْسِهِ ضَعِيفُ الْعَطَاءِ مِنْهَا فَإِذَا أَخَذَ لِنَفْسِهِ مِنْ صَالِحِ مَا يَأْخُذُ النَّاسُ فَقَدْ ذَهَبَ عَنْهُ الْيُتْمُ وَكَتَبْتَ تَسْأَلُنِي عَنِ الْخُمْسِ لِمَنْ هُوَ وَإِنَّا كُنَّا نَقُولُ هُوَ لَنَا . فَأَبَى عَلَيْنَا قَوْمُنَا ذَاكَ .
ইয়াযীদ ইবনু হুরমুয (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাজদাহ্ (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) -কে পাঁচটি ব্যাপারে প্রশ্ন করে পত্র লিখলেন। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, যদি আমি ‘ইল্ম গোপনকারী হওয়ার আশংকা না করতাম তাহলে আমি তার কাছে জবাব লিখতাম না। নাজ্দাহ সে পত্রে তাঁকে লিখেছিলেন, হাম্দ ও সালাতের পর আমাকে অবহিত করুন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি মহিলাদেরকে নিয়ে যুদ্ধযাত্রা করতেন? তিনি তাদেরকে কি গনীমাতের ভাগ দিতেন? তিনি কি শত্রুপক্ষের শিশুদের হত্যা করতেন? আর কখন ইয়াতীমের ইয়াতীম অবস্থার সমাপ্তি হয়? আর গনীমাতের এক পঞ্চমাংশের হকদার কারা? জবাবে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) লিখলেন, তুমি আমাকে লিখিত প্রশ্ন করেছো যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি মহিলাদেরকে নিয়ে যুদ্ধযাত্রা করতেন? হ্যাঁ, তিনি তাদেরকে নিয়ে যুদ্ধ যাত্রা করতেন এবং তাঁরা আহতদের সেবা-শুশ্রুষা করতেন এবং গনীমাতের মাল থেকে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হতো, কিন্তু গনীমাতের ভাগ তাদের জন্য বরাদ্দ করা হতো না। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনও শিশুদের হত্যা করতেন না। সুতরাং তুমিও শিশুদেরকে হত্যা করবে না। আর তোমার চিঠিতে আমাকে এও প্রশ্ন করেছ যে, কখন ইয়াতীমের ইয়াতীম অবস্থা সমাপ্ত হয়? আমার জীবনের শপথ! অনেক সময় কোন ব্যক্তির দাড়ি গজিয়ে যায়; অথচ সে তার নিজের হক গ্রহণে দুর্বল থাকে এবং অন্য কারো হক প্রদানের বেলায়ও দুর্বল থাকে। সুতরাং যখন সে লোকদের মতো নিজের অধিকার বুঝে নিতে পারে তখনই তার ইয়াতীম অবস্থার সমাপ্তি হয়। আর তুমি লিখেছ, গনীমাতের এক পঞ্চমাংশ কাদের প্রাপ্য? আমরা বলি, তা আমাদের (আহলে বায়তদের) জন্যই, কিন্তু আমাদের গোত্রের লোকেরা (বানূ উমাইয়াহ্) তা অস্বীকার করছে। (ই.ফা. ৪৫৩৩, ই.সে. ৪৫৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৭৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، كِلاَهُمَا عَنْ حَاتِمِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ هُرْمُزَ، أَنَّ نَجْدَةَ، كَتَبَ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ يَسْأَلُهُ عَنْ خِلاَلٍ، . بِمِثْلِ حَدِيثِ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ غَيْرَ أَنَّ فِي، حَدِيثِ حَاتِمٍ وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَكُنْ يَقْتُلُ الصِّبْيَانَ فَلاَ تَقْتُلِ الصِّبْيَانَ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ تَعْلَمُ مَا عَلِمَ الْخَضِرُ مِنَ الصَّبِيِّ الَّذِي قَتَلَ . وَزَادَ إِسْحَاقُ فِي حَدِيثِهِ عَنْ حَاتِمٍ وَتُمَيِّزَ الْمُؤْمِنَ فَتَقْتُلَ الْكَافِرَ وَتَدَعَ الْمُؤْمِنَ .
ইবনূ হুরমু্য (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাজদাহ্ (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) -কে কয়েকটি ব্যাপারে প্রশ্ন করে পত্র লিখেন। পরবর্তী অংশ সুলাইমান ইবনু বিলালের হাদীসের অনুরূপ। তবে হাতিমের এ হাদীসে রয়েছে যে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিশুদেরকে হত্যা করতেন না। সুতরাং তুমিও বালকদেরকে হত্যা করবে না। তবে যদি তুমি তা জানতে পারো, যা ‘খিযির’ সেই বালক সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন, যাকে তিনি হত্যা করেছিলেন, তবে স্বতন্ত্র কথা। এ হাদীসের একজন রাবী ইসহাক্ (রহঃ) তাঁর বর্ণনায় হাদীসের সূত্রে এতটুকু বাড়িয়েছেন-আর যদি তুমি বেছে বের করতে পারো মু’মিনকে, তবে তুমি কাফিরকে হত্যা করবে এবং মু’মিনকে ছেড়ে দিবে। (ই.ফা. ৪৫৩৪, ই.সে. ৪৫৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৮০
وَحَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أُمَيَّةَ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ كَتَبَ نَجْدَةُ بْنُ عَامِرٍ الْحَرُورِيُّ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ يَسْأَلُهُ عَنِ الْعَبْدِ، وَالْمَرْأَةِ يَحْضُرَانِ الْمَغْنَمَ هَلْ يُقْسَمُ لَهُمَا وَعَنْ قَتْلِ الْوِلْدَانِ وَعَنِ الْيَتِيمِ مَتَى يَنْقَطِعُ عَنْهُ الْيُتْمُ وَعَنْ ذَوِي الْقُرْبَى مَنْ هُمْ فَقَالَ لِيَزِيدَ اكْتُبْ إِلَيْهِ فَلَوْلاَ أَنْ يَقَعَ فِي أُحْمُوقَةٍ مَا كَتَبْتُ إِلَيْهِ اكْتُبْ إِنَّكَ كَتَبْتَ تَسْأَلُنِي عَنِ الْمَرْأَةِ وَالْعَبْدِ يَحْضُرَانِ الْمَغْنَمَ هَلْ يُقْسَمُ لَهُمَا شَىْءٌ وَإِنَّهُ لَيْسَ لَهُمَا شَىْءٌ إِلاَّ أَنْ يُحْذَيَا وَكَتَبْتَ تَسْأَلُنِي عَنْ قَتْلِ الْوِلْدَانِ وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَقْتُلْهُمْ وَأَنْتَ فَلاَ تَقْتُلْهُمْ إِلاَّ أَنْ تَعْلَمَ مِنْهُمْ مَا عَلِمَ صَاحِبُ مُوسَى مِنَ الْغُلاَمِ الَّذِي قَتَلَهُ وَكَتَبْتَ تَسْأَلُنِي عَنِ الْيَتِيمِ مَتَى يَنْقَطِعُ عَنْهُ اسْمُ الْيُتْمِ وَإِنَّهُ لاَ يَنْقَطِعُ عَنْهُ اسْمُ الْيُتْمِ حَتَّى يَبْلُغَ وَيُؤْنَسَ مِنْهُ رُشْدٌ وَكَتَبْتَ تَسْأَلُنِي عَنْ ذَوِي الْقُرْبَى مَنْ هُمْ وَإِنَّا زَعَمْنَا أَنَّا هُمْ فَأَبَى ذَلِكَ عَلَيْنَا قَوْمُنَا .
ইয়াযীদ ইবনু হুরমুয (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, নাজদাহ্ ইবনু ‘আম্র হারূরী ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) -এর নিকট পত্র লিখে জানতে চাইলেন, জিহাদে উপস্থিত গোলাম ও মহিলাদের গনীমাতের অংশ দেয়া হবে কি? আর (শত্রুপক্ষের) শিশুদের হত্যা সম্পর্কে এবং ইয়াতীম সম্পর্কে যে, কখন তার ইয়াতীম অবস্থার সমাপ্তি ঘটে? এবং ‘যাবিল কুরবা’ বা নিকটাত্মীয় কারা? তখন তিনি ইয়াযীদকে বললেন, তুমি তাকে লিখ, তার নির্বুদ্ধিতায় পতিত হবার আশঙ্কা না থাকলে আমি তাকে পত্র লিখাতাম না। লিখ, তুমি আমাকে লিখেছো এ প্রশ্ন করে যে, যারা জিহাদে যোগ দিয়েছে এমন নারী এবং গোলামকে কি গনীমাতের কিছু দেয়া হবে? তাদের (নির্ধারিত) কিছুই দেয়া হবে না। তবে সবার কাছ থেকে কিছু কিছু নিয়ে (বখ্শিশরূপে) দেয়া হবে। তুমি আমকে প্রশ্ন করে লিখেছ শিশুদের হত্যা সম্পর্কে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনও তাদেরকে হত্যা করেন নি এবং তুমিও তাদেরকে হত্যা করবে না। তবে (তা স্বতন্ত্র কথা) যদি তুমি তাদের ব্যাপারে তা জানতে পারো যা মূসা (‘আঃ)-এর সঙ্গী [খিযির (আঃ)] জানতে পেরেছিলেন, যে ছেলেটিকে তিনি হত্যা করেছিলেন তার সম্পর্কে। তার ইয়াতীম নাম ঘুচবে না যতক্ষণ না সে বালিগ হবে এবং তার মধ্যে বুদ্ধিমত্তা পরিলক্ষিত হবে। আর তুমি আমাকে ‘যাবিল কুরবা’ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে লিখেছ যে, তারা কারা? আমরা মনে করি, আমরাই তাঁরা। কিন্তু আমাদের লোকেরা তা অস্বীকার করেছে। (ই.ফা. ৪৫৩৫, ই.সে. ৪৫৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৮১
وَحَدَّثَنَاهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ بِشْرٍ الْعَبْدِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أُمَيَّةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ كَتَبَ نَجْدَةُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمِثْلِهِ . قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، بِهَذَا الْحَدِيثِ بِطُولِهِ
ইয়াযীদ ইবনু হুরমু্য (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন নাজদাহ্ (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে পত্র লিখেন এবং অনুরূপ হাদীস বর্ননা করেন।
আবূ ইসহাক্ বলেন, সুফ্ইয়ান (রহঃ) অনুরূপ হাদীস বিস্তারিত বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪৫৩৬, ই.সে. ৪৫৩৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৮২
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ، حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ قَيْسًا، يُحَدِّثُ عَنْ يَزِيدَ بْنِ هُرْمُزَ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – قَالَ حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، حَدَّثَنِي قَيْسُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ كَتَبَ نَجْدَةُ بْنُ عَامِرٍ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ فَشَهِدْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ حِينَ قَرَأَ كِتَابَهُ وَحِينَ كَتَبَ جَوَابَهُ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَاللَّهِ لَوْلاَ أَنْ أَرُدَّهُ عَنْ نَتْنٍ يَقَعُ فِيهِ مَا كَتَبْتُ إِلَيْهِ وَلاَ نُعْمَةَ عَيْنٍ قَالَ فَكَتَبَ إِلَيْهِ إِنَّكَ سَأَلْتَ عَنْ سَهْمِ ذِي الْقُرْبَى الَّذِي ذَكَرَ اللَّهُ مَنْ هُمْ وَإِنَّا كُنَّا نَرَى أَنَّ قَرَابَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هُمْ نَحْنُ فَأَبَى ذَلِكَ عَلَيْنَا قَوْمُنَا وَسَأَلْتَ عَنِ الْيَتِيمِ مَتَى يَنْقَضِي يُتْمُهُ وَإِنَّهُ إِذَا بَلَغَ النِّكَاحَ وَأُونِسَ مِنْهُ رُشْدٌ وَدُفِعَ إِلَيْهِ مَالُهُ فَقَدِ انْقَضَى يُتْمُهُ وَسَأَلْتَ هَلْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْتُلُ مِنْ صِبْيَانِ الْمُشْرِكِينَ أَحَدًا فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَكُنْ يَقْتُلُ مِنْهُمْ أَحَدًا وَأَنْتَ فَلاَ تَقْتُلْ مِنْهُمْ أَحَدًا إِلاَّ أَنْ تَكُونَ تَعْلَمُ مِنْهُمْ مَا عَلِمَ الْخَضِرُ مِنَ الْغُلاَمِ حِينَ قَتَلَهُ وَسَأَلْتَ عَنِ الْمَرْأَةِ وَالْعَبْدِ هَلْ كَانَ لَهُمَا سَهْمٌ مَعْلُومٌ إِذَا حَضَرُوا الْبَأْسَ فَإِنَّهُمْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ سَهْمٌ مَعْلُومٌ إِلاَّ أَنْ يُحْذَيَا مِنْ غَنَائِمِ الْقَوْمِ
কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইয়াযীদ ইবনু হুরমুযকে আমি এ হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ইয়াযীদ ইবনু হুরমুয হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাজদাহ্ ইবনু ‘আমির ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) -কে পত্র লিখেন। রাবী বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) যখন তাঁর পত্রখানি পাঠ করেন এবং যখন তিনি তার জবাব লিখেন তখন আমি তাঁর (ইবনু ‘আব্বাস) সামনেই উপস্থিত ছিলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, যদি সে নাপাকীতে (অজ্ঞানতা প্রসূত কথাবার্তায়) পতিত হবে বলে আশংকা না করতাম তবে আমি তার কাছে জবাব লিখতাম না। তার চোখ কোন দিন না জুড়াক (অর্থাৎ আল্লাহ তাকে খুশী না রাখুক, তার বাতিল ‘আকীদার দরুন এ বদদু’আ করলেন)। রাবী (ইয়াযীদ) বলেন, তারপর তিনি তাকে লিখলেন, তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করেছ, আল্লাহ (গনীমাতের অংশ সংক্রান্ত আয়াতে) যাদের সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ঘনিষ্ঠজন কারা? আমরা মনে করি, আমরাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সে ঘনিষ্ঠজন। কিন্তু আমাদের গোত্রের লোকেরা তা অস্বীকার করে। আর তুমি ইয়াতীম সম্পর্কে প্রশ্ন করেছ যে, কখন তার ইয়াতীম অবস্থার সমাপ্তি ঘটে? যখন সে বিবাহযোগ্য হয়, তার মধ্যে বুদ্ধি বিবেচনা পরিলক্ষিত হয় এবং তার সম্পদ তার কাছে প্রত্যর্পণ করা হয়, তখন তার ইয়াতীম অবস্থার অবসান ঘটে। আর তুমি প্রশ্ন করেছ, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি মুশরিকদের কোন শিশুকে হত্যা করতেন? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোনদিন তাদের শিশুদের কাউকে হত্যা করেন নি। সুতরাং তুমিও তাদের কাউকে হত্যা করবে না। অবশ্য তুমি যদি অবগত হও, যা অবগত হয়েছিলেন খিযির (‘আঃ) সে বালকটির সম্পর্কে যখন তিনি তাকে হত্যা করেন। আর তুমি প্রশ্ন করেছ, নারী ও গোলাম সম্পর্কে, যখন তারা যুদ্ধে উপস্থিত থাকে, তাদের জন্য নির্ধারিত অংশ নেই। তবে লোকদের গনীমাতের মাল থেকে তারা উপঢৌকন হিসেবে পায়। (ই.ফা. ৪৫৩৭, ই.সে. ৪৫৪০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৮৩
وَحَدَّثَنِي أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ الأَعْمَشُ، عَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ صَيْفِيٍّ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ كَتَبَ نَجْدَةُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ . فَذَكَرَ بَعْضَ الْحَدِيثِ وَلَمْ يُتِمَّ الْقِصَّةَ كَإِتْمَامِ مَنْ ذَكَرْنَا حَدِيثَهُمْ .
ইয়াযীদ ইবনু হুরমুয (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাজদাহ্ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে লিখেছিলেন, বর্ণনাকারী এ হাদীসের কিয়দংশ রিওয়ায়াত করেছেন। তবে তাঁদের হাদীসসমূহের মতো তিনি ঘটনা হুবহু বর্ননা করেননি। (ই.ফা. ৪৫৩৮, ই.সে. ৪৫৪১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৮৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ حَفْصَةَ، بِنْتِ سِيرِينَ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ الأَنْصَارِيَّةِ، قَالَتْ غَزَوْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَبْعَ غَزَوَاتٍ أَخْلُفُهُمْ فِي رِحَالِهِمْ فَأَصْنَعُ لَهُمُ الطَّعَامَ وَأُدَاوِي الْجَرْحَى وَأَقُومُ عَلَى الْمَرْضَى
উম্মু ‘আতিয়্যাহ্ আন্সারীয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সাতটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আমি তাঁদের শিবিরের পশ্চাতে অবস্থান করতাম, তাদের খাবার তৈরী করতাম, আহতদের চিকিৎসা করতাম, এবং রোগীদের সেবাশুশ্রূষা করতাম। (ই.ফা. ৪৫৩৯, ই.সে. ৪৫৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৮৫
وَحَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ حَسَّانَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ .
হিশাম ইবনু হাস্সান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৫৪০, ই.সে. ৪৫৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৯. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর যুদ্ধসমূহের সংখ্যা
৪৫৮৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ، بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ يَزِيدَ، خَرَجَ يَسْتَسْقِي بِالنَّاسِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ اسْتَسْقَى قَالَ فَلَقِيتُ يَوْمَئِذٍ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ – وَقَالَ – لَيْسَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ غَيْرُ رَجُلٍ أَوْ بَيْنِي وَبَيْنَهُ رَجُلٌ – قَالَ – فَقُلْتُ لَهُ كَمْ غَزَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ تِسْعَ عَشْرَةَ فَقُلْتُ كَمْ غَزَوْتَ أَنْتَ مَعَهُ قَالَ سَبْعَ عَشْرَةَ غَزْوَةً – قَالَ – فَقُلْتُ فَمَا أَوَّلُ غَزْوَةٍ غَزَاهَا قَالَ ذَاتُ الْعُسَيْرِ أَوِ الْعُشَيْرِ .
আবূ ইসহাক্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) লোকজনকে নিয়ে ইস্তিকার (বৃষ্টি প্রার্থনার) সলাত আদায়ের উদ্দেশ্যে বের হলেন। তিনি দু’রাক’আত সলাত আদায় করলেন, এরপর বৃষ্টির জন্যে দু’আ করলেন। রাবী বলেন, সেদিন আমি যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) -এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। তিনি বলেন, আমার এবং তাঁর মাঝে একজন ছাড়া কোন লোক ছিল না। অথবা তিনি বলেছেন, আমার এবং তাঁর মাঝে কেবল একজন লোক ছিল, আমি তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কতগুলো যুদ্ধ করেছেন? তিনি বললেন, ঊনিশটি। তখন আমি বললাম, আপনি তাঁর সঙ্গে কতটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন? তিনি বললেন, সতেরটি যুদ্ধে। রাবী বলেন, তখন আমি প্রশ্ন করলাম, সর্বপ্রথম তিনি কোন্ যুদ্ধটি করেছেন? তিনি বললেন, যাতুল-উসায়র বা যাতুল-উশায়র। (ই.ফা. ৪৫৪১, ই.সে. ৪৫৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৮৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، سَمِعَهُ مِنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غَزَا تِسْعَ عَشْرَةَ غَزْوَةً وَحَجَّ بَعْدَ مَا هَاجَرَ حَجَّةً لَمْ يَحُجَّ غَيْرَهَا حَجَّةَ الْوَدَاعِ .
যায়দ ইবনু আকরাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনিশটি যুদ্ধ করেছেন। হিজরাতের পর একবার মাত্র হাজ্জ করেছিলেন, যেটি ছাড়া আর কোন হাজ্জ করেননি- তা হল বিদায় হাজ্জ। (ই.ফা. ৪৫৪২, ই.সে. ৪৫৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৮৮
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ، أَخْبَرَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ غَزَوْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تِسْعَ عَشْرَةَ غَزْوَةً – قَالَ جَابِرٌ – لَمْ أَشْهَدْ بَدْرًا وَلاَ أُحُدًا مَنَعَنِي أَبِي فَلَمَّا قُتِلَ عَبْدُ اللَّهِ يَوْمَ أُحُدٍ لَمْ أَتَخَلَّفْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةٍ قَطُّ .
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে উনিশটি যুদ্ধ করেছি।
জাবির (রাঃ) বলেন, আমি বাদর ও উহুদ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। আমার পিতা আমাকে তা থেকে বাধা দিয়েছিলেন। তারপর যখন উহুদ যুদ্ধে (আমার পিতা) ‘আবদুল্লাহ নিহত হলেন, তারপর থেকে আমি আর কখনো কোন যুদ্ধে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে পশ্চাৎপদ হইনি। (ই.ফা. ৪৫৪৩, ই.সে. ৪৫৪৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৮৯
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، ح وَحَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، الْجَرْمِيُّ حَدَّثَنَا أَبُو تُمَيْلَةَ، قَالاَ جَمِيعًا حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ وَاقِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، . قَالَ غَزَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تِسْعَ عَشْرَةَ غَزْوَةً قَاتَلَ فِي ثَمَانٍ مِنْهُنَّ . وَلَمْ يَقُلْ أَبُو بَكْرٍ مِنْهُنَّ . وَقَالَ فِي حَدِيثِهِ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ .
বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উনিশটি যুদ্ধে শরীক হন। তন্মধ্যে আটটিতে তিনি সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ করেন।
রাবী আবূ বাক্র ‘তন্মধ্যে’ শব্দটি বলেননি বরং তিনি তাঁর বর্ণনায় ‘আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদাহ্ আমার কাছে বর্ণনা করেছেন’ বলে উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ৪৫৪৪, ই.সে. ৪৫৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৯০
وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ كَهْمَسٍ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ قَالَ غَزَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سِتَّ عَشْرَةَ غَزْوَةً .
বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে ষোলটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। (ই.ফা. ৪৫৪৫, ই.সে. ৪৫৪৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৯১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، – يَعْنِي ابْنَ إِسْمَاعِيلَ – عَنْ يَزِيدَ، – وَهُوَ ابْنُ أَبِي عُبَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ سَلَمَةَ، يَقُولُ غَزَوْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَبْعَ غَزَوَاتٍ وَخَرَجْتُ فِيمَا يَبْعَثُ مِنَ الْبُعُوثِ تِسْعَ غَزَوَاتٍ مَرَّةً عَلَيْنَا أَبُو بَكْرٍ وَمَرَّةً عَلَيْنَا أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ .
সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সঙ্গে সাতটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। তিনি যতগুলো অভিযানে সৈন্য প্রেরণ করেছেন তার মধ্যে নয়টিতে আমি অংশগ্রহণ করি। একবার আমাদের সেনাপতি ছিলেন আবূ বকর (রাঃ) আর একবার আমাদের সেনাপতি ছিলেন উসামাহ্ ইবনু যায়দ (রাঃ)। (ই.ফা. ৪৫৪৬, ই.সে. ৪৫৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫৯২
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ فِي كِلْتَيْهِمَا سَبْعَ غَزَوَاتٍ .
হাতিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ হাদীসটি উল্লেখিত সুত্রে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি তাঁর বর্ণনায় উভয় ধরনের সাতটি অভিযানের সংখ্যা বলেছেন। (ই.ফা. ৪৫৪৭, ই.সে. ৪৫৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫০. অধ্যায়ঃ
যাতুর রিকা’যুদ্ধ
৪৫৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَرَّادٍ الأَشْعَرِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيُّ، – وَاللَّفْظُ لأَبِي عَامِرٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزَاةٍ وَنَحْنُ سِتَّةُ نَفَرٍ بَيْنَنَا بَعِيرٌ نَعْتَقِبُهُ – قَالَ – فَنَقِبَتْ أَقْدَامُنَا فَنَقِبَتْ قَدَمَاىَ وَسَقَطَتْ أَظْفَارِي فَكُنَّا نَلُفُّ عَلَى أَرْجُلِنَا الْخِرَقَ فَسُمِّيَتْ غَزْوَةَ ذَاتِ الرِّقَاعِ لِمَا كُنَّا نُعَصِّبُ عَلَى أَرْجُلِنَا مِنَ الْخِرَقِ . قَالَ أَبُو بُرْدَةَ فَحَدَّثَ أَبُو مُوسَى بِهَذَا الْحَدِيثِ ثُمَّ كَرِهَ ذَلِكَ . قَالَ كَأَنَّهُ كَرِهَ أَنْ يَكُونَ شَيْئًا مِنْ عَمَلِهِ أَفْشَاهُ . قَالَ أَبُو أُسَامَةَ وَزَادَنِي غَيْرُ بُرَيْدٍ وَاللَّهُ يَجْزِي بِهِ .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একটি যুদ্ধাভিযানে বের হলাম। আমাদের প্রতি ছয়জনের মধ্যে ছিল একটি উট, যার উপর আমরা পর্যায়ক্রমে সওয়ার হতাম। তিনি বলেন, এতে আমাদের পা ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। আমার দু’পা এতই বিক্ষত হয়েছিল যে, পায়ের নখগুলো উপড়ে পড়ে যায়। তাই আমরা আমাদের পায়ে পট্টি বেঁধেছিলাম। এ কারণে এ অভিজান ‘যাতুর-রিকা’ বা পট্টি যুদ্ধ নামে অভিহিত হয়। কেননা আমরা আমাদের পায়ে পট্টি বেঁধেছিলাম।
আবূ বুরদাহ্ (রাঃ) বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) এ হাদীসটি একবার বর্ণনা করার পর পুনরায় বর্ণনা করা পছন্দ করেননি। রাবী বলেন, এ দ্বারা তাঁর ‘আমালের প্রকাশ পায় বলে তিনি তা উল্লেখ করা পছন্দ করেননি। আবূ উসামাহ্ বলেন, বুরায়দ (রাঃ) ছাড়া এ হাদীসের অন্য রাবী এ কথা অতিরিক্ত বলেছেন, “আল্লাহ তার প্রতিদান দিবেন”। (ই.ফা. ৪৫৪৮, ই.সে. ৪৫৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫১. অধ্যায়ঃ
যুদ্ধ অভিযানে কাফিরদের সাহায্য গ্রহণ মাকরূহ
৪৫৯৪
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ مَالِكٍ، ح وَحَدَّثَنِيهِ أَبُو الطَّاهِرِ – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنِ الْفُضَيْلِ بْنِ أَبِي، عَبْدِ اللَّهِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نِيَارٍ الأَسْلَمِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهَا قَالَتْ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قِبَلَ بَدْرٍ فَلَمَّا كَانَ بِحَرَّةِ الْوَبَرَةِ أَدْرَكَهُ رَجُلٌ قَدْ كَانَ يُذْكَرُ مِنْهُ جُرْأَةٌ وَنَجْدَةٌ فَفَرِحَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ رَأَوْهُ فَلَمَّا أَدْرَكَهُ قَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جِئْتُ لأَتَّبِعَكَ وَأُصِيبَ مَعَكَ قَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ” . قَالَ لاَ قَالَ ” فَارْجِعْ فَلَنْ أَسْتَعِينَ بِمُشْرِكٍ ” . قَالَتْ ثُمَّ مَضَى حَتَّى إِذَا كُنَّا بِالشَّجَرَةِ أَدْرَكَهُ الرَّجُلُ فَقَالَ لَهُ كَمَا قَالَ أَوَّلَ مَرَّةٍ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كَمَا قَالَ أَوَّلَ مَرَّةٍ قَالَ ” فَارْجِعْ فَلَنْ أَسْتَعِينَ بِمُشْرِكٍ ” . قَالَ ثُمَّ رَجَعَ فَأَدْرَكَهُ بِالْبَيْدَاءِ فَقَالَ لَهُ كَمَا قَالَ أَوَّلَ مَرَّةٍ ” تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ” . قَالَ نَعَمْ . فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” فَانْطَلِقْ ” .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদর অভিমুখে রওয়ানা হলেন। যখন তিনি ওয়াবারাহ্ প্রান্তরে পৌঁছলেন, তখন এমন এক ব্যক্তি এসে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করলো, যে পূর্ব থেকে তাঁর শৌর্য-বীর্য ও সাহসিকতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাহাবীগণ তাঁকে দেখতে পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হলেন। সে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলল, আমি আপনার সঙ্গে যেতে এবং আপনার সঙ্গে (গনীমাত) পেতে এসেছি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তুমি কি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান রাখ? সে বলল, না। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাহলে তুমি ফিরে যাও, আমি কোন মুশরিকের সাহায্য গ্রহণ করব না। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন লোকটি চলে গেল। যখন আমরা ‘শাজারায়’ উপনীত হলাম, তখন সে ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে দেখা করলো এবং তাঁর পূর্বের কথাই পুনরায় বললো, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও তাঁর পূর্বের কথা পুনরায় বললেন, আরও বললেন, তুমি ফিরে যাও, আমি কোন মুশরিকের সাহায্য গ্রহণ করব না। এবারও সে চলে গেল। তারপর সে আবার ‘বায়দা’তে তাঁর (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) সঙ্গে সাক্ষাৎ করলো। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে প্রথমবারের মত জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান রাখ? সে বলল, জ্বী-হ্যাঁ। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, এখন (আমাদের সাথে) চল। (ই.ফা. ৪৫৪৯, ই.সে. ৪৫৫২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস