তিরমিজি তাফসীরুল কুরআন অধ্যায় ৬ষ্ঠ ভাগ হাদিস নং ৩৩০২ – ৩৩৬৯
অনুচ্ছেদ-৬০
সূরা আল-হাশ্র
৩৩০২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، رضى الله عنهما قَالَ حَرَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَخْلَ بَنِي النَّضِيرِ وَقَطَّعَ وَهِيَ الْبُوَيْرَةُ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (ما قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا فَبِإِذْنِ اللَّهِ وَلِيُخْزِيَ الْفَاسِقِينَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বানূ নাযীরের আল-বুওয়াইরা নামক খেজুর বাগানটি অগ্নিসংযোগ করে পুড়ে ফেলেন এবং কেটে ফেলেন। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেনঃ “যে খেজুর গাছগুলো তোমরা কেটেছ এবং যেগুলো তাদের কাণ্ডের উপর স্থির রেখে দিয়েছ তা তো আল্লাহ তা’আলার আদেশানুসারেই এবং এ কারণে যে, তিনি পাপাচারী ও অন্যায়কারীদেরকে লাঞ্ছিত করবেন”-(সূরা হাশ্র ৫)।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ২৮৪৪), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩০৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ : (ما قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا ) . قَالَ اللِّينَةُ النَّخْلَةُِيُخْزِيَ الْفَاسِقِينَ ) قَالَ اسْتَنْزَلُوهُمْ مِنْ حُصُونِهِمْ قَالَ وَأَمَرُوا بِقَطْعِ النَّخْلِ فَحَكَّ فِي صُدُورِهِمْ . فَقَالَ الْمُسْلِمُونَ قَدْ قَطَعْنَا بَعْضًا وَتَرَكْنَا بَعْضًا فَلَنَسْأَلَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ لَنَا فِيمَا قَطَعْنَا مِنْ أَجْرٍ وَهَلْ عَلَيْنَا فِيمَا تَرَكْنَا مِنْ وِزْرٍ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : (ما قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا ) . الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “যে খেজুর গাছগুলো তোমরা কেটেছ এবং তার কাণ্ডের উপর যেগুলো স্থির রেখে দিয়েছ” এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আল-লীনাহ অর্থঃ খেজুর গাছ। “এবং এ কারণে যে, তিনি পাপাচারী ও অন্যায়কারীদেরকে লাঞ্ছিত করবেন” আয়াতটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অর্থাৎ মুসলমানরা তাদেরকে তাদের দুর্গগুলো হতে বহিষ্কার করে দেয়। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) আরো বলেন, যখন তাদেরকে খেজুর গাছগুলো কেটে ফেলার আদেশ দেয়া হয় সে সময় তাদের মনে ধারণা (সন্দেহ) হয়। মুসলমানরা বলেন, আমরা কিছু বৃক্ষ কেটে ফেলেছি এবং কিছু বৃক্ষ বহাল রেখেছি। এ বিষয়ে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমরা প্রশ্ন করবো যে, যে গাছগুলো আমরা কেটেছি তার কারণে আমাদেরকে সাওয়াব প্রদান করা হবে কি এবং যে বৃক্ষগুলো বহাল রেখেছি তার জন্য আমাদের কোন গুনাহ হবে কি? তখন আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেনঃ “যে খেজুর গাছগুলো তোমরা কেটেছ এবং তাদের কাণ্ডের উপর যেগুলো স্থির রেখে দিয়েছ তা তো আল্লাহ তা’আলার অনুমতিক্রমেই”- (সূরা হাশ্র ৫)।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটির হাসান গারীব। এ হাদীসটি কিছু বর্ণনাকারী হাফ্স ইবনু গিয়াস হতে, তিনি হাবীব ইবনু আবী ‘আমরাহ্ হতে, তিনি সা’ঈদ ইবনু জুবাইর (রহঃ) হতে এই সূত্রে মুরসালরূপে রিওয়ায়াত করেছেন এবং তার মধ্যে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর উল্লেখ করেননি। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুর রহমান-হারূন ইবনু মু’আবিয়াহ্ হতে, তিনি হাফ্স ইবনু গিয়াস হতে, তিনি হাবীব ইবনু আবী ‘আমরাহ্ হতে, তিনি সা’ঈদ ইবনু জুবাইর (রহঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে মুরসালরূপে উক্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল আমার কাছে শুনেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩০৪
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ فُضَيْلِ بْنِ غَزْوَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَجُلاً، مِنَ الأَنْصَارِ بَاتَ بِهِ ضَيْفٌ فَلَمْ يَكُنْ عِنْدَهُ إِلاَّ قُوتُهُ وَقُوتُ صِبْيَانِهِ فَقَالَ لاِمْرَأَتِهِ نَوِّمِي الصِّبْيَةَ وَأَطْفِئِي السِّرَاجَ وَقَرِّبِي لِلضَّيْفِ مَا عِنْدَكِ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُُ : ( ويؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ ) هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক রাতে আনসার লোকের এখানে একজন মেহমান আসে। তার কাছে তার ও তার সন্তানদের খাবার ছাড়া অতিরিক্ত খাবার ছিল না। তার সহধর্মিণীকে তিনি বলেন, বাচ্চাদের ঘুম পারিয়ে দাও, আলো নিভিয়ে ফেল এবং তোমার কাছে যে খাবার রয়েছে তা মেহমানের সম্মুখে পরিবেশন কর। এই পরিপ্রেক্ষিতে অবতীর্ণ হয়ঃ “আর নিজেদের উপর অন্যকে তারা অগ্রাধিকার দেয়, নিজেরা অভাবপীড়িত হয়েও”- (সূরা হাশ্র ৯)।
সহীহঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ৩২৭২), বুখারী ও মুসলিম আরও পূর্ণাঙ্গরূপে বর্ণনা করেছেন।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৬১
সূরা আল-মুমতাহিনাহ
৩৩০৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ مُحَمَّدٍ، هُوَ ابْنُ الْحَنَفِيَّةِ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ، يَقُولُ بَعَثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَا وَالزُّبَيْرَ وَالْمِقْدَادَ بْنَ الأَسْوَدِ فَقَالَ ” انْطَلِقُوا حَتَّى تَأْتُوا رَوْضَةَ خَاخٍ فَإِنَّ بِهَا ظَعِينَةً مَعَهَا كِتَابٌ فَخُذُوهُ مِنْهَا فَائْتُونِي بِهِ ” . فَخَرَجْنَا تَتَعَادَى بِنَا خَيْلُنَا حَتَّى أَتَيْنَا الرَّوْضَةَ فَإِذَا نَحْنُ بِالظَّعِينَةِ فَقُلْنَا أَخْرِجِي الْكِتَابَ . فَقَالَتْ مَا مَعِي مِنْ كِتَابٍ . فَقُلْنَا لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَتُلْقِيَنَّ الثِّيَابَ . قَالَ فَأَخْرَجَتْهُ مِنْ عِقَاصِهَا . قَالَ فَأَتَيْنَا بِهِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هُوَ مِنْ حَاطِبِ بْنِ أَبِي بَلْتَعَةَ إِلَى نَاسٍ مِنَ الْمُشْرِكِينَ بِمَكَّةَ يُخْبِرُهُمْ بِبَعْضِ أَمْرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” مَا هَذَا يَا حَاطِبُ ” . قَالَ لاَ تَعْجَلْ عَلَىَّ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي كُنْتُ امْرَأً مُلْصَقًا فِي قُرَيْشٍ وَلَمْ أَكُنْ مِنْ أَنْفُسِهَا وَكَانَ مَنْ مَعَكَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ لَهُمْ قَرَابَاتٌ يَحْمُونَ بِهَا أَهْلِيهِمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِمَكَّةَ فَأَحْبَبْتُ إِذْ فَاتَنِي ذَلِكَ مِنْ نَسَبٍ فِيهِمْ أَنْ أَتَّخِذَ فِيهِمْ يَدًا يَحْمُونَ بِهَا قَرَابَتِي وَمَا فَعَلْتُ ذَلِكَ كُفْرًا وَلاَ ارْتِدَادًا عَنْ دِينِي وَلاَ رِضًا بِالْكُفْرِ بَعْدَ الإِسْلاَمِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” صَدَقَ ” . فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رضى الله عنه دَعْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّهُ قَدْ شَهِدَ بَدْرًا فَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ اللَّهَ اطَّلَعَ عَلَى أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ اعْمَلُوا مَا شِئْتُمْ فَقَدْ غَفَرْتُ لَكُمْ ” . قَالَ وَفِيهِ أُنْزِلَتْ هَذِهِ السُّورَةُ : (يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ ) السُّورَةَ . قَالَ عَمْرُو وَقَدْ رَأَيْتُ ابْنَ أَبِي رَافِعٍ وَكَانَ كَاتِبًا لِعَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِيهِ عَنْ عُمَرَ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . وَرَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ هَذَا الْحَدِيثَ نَحْوَ هَذَا وَذَكَرُوا هَذَا الْحَرْفَ فَقَالُوا لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَتُلْقِيَنَّ الثِّيَابَ . وَقَدْ رُوِيَ أَيْضًا عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ نَحْوُ هَذَا الْحَدِيثِ . وَذَكَرَ بَعْضُهُمْ فِيهِ فَقَالَ لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَنُجَرِّدَنَّكِ .
‘উবাইদুল্লাহ ইবনু আবূ রাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবূ ত্বালিব-এর পুত্র ‘আলী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে অর্থাৎ আমাকে, যুবাইরকে ও মিক্বদাদ ইবনুল আসওয়াদকে (চিঠি উদ্ধারের জন্য) পাঠিয়ে বললেনঃ তোমরা রাওনা হয়ে ‘রাওযা খাখ” নামক জায়গায় পৌঁছে যাও, সেখানে (মাক্কার লক্ষ্যে) গমনরত এক নারীকে পাওয়া যাবে। তার নিকট একটি পত্র আছে। তোমরা তার নিকট হতে সেই পত্র উদ্ধার করে তা সরাসরি আমার নিকট নিয়ে আসবে। অতঃপর আমরা রাওনা হয়ে গেলাম। আমাদেরকে নিয়ে আমাদের ঘোড়া অতীব দ্রুত গতিতে এগিয়ে গেল এবং আমরা সেই ‘রাওযা খাখ’ নামক জায়গায় গিয়ে পৌঁছলাম। আমরা সেই নারীকে সেখানে পেয়ে গেলাম। আমরা তাকে বললাম, পত্রটি বের করে দাও। সে বলল, আমার সঙ্গে কোন পত্র নেই। আমরা বললাম, অবশ্যই তুমি পত্রটি বের করে দাও, তা না হলে তোমার পরিধেয় পোশাক ত্যাগ কর। ‘আলী (রাঃ) বলেন, সে তার চুলের খোঁপা হতে অবশেষে পত্রটি বের করে দিল এবং তা নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আমরা হাযির হলাম। দেখা গেল যে, এটি মক্কার কিছু সংখ্যক মুশরিকের লক্ষ্যে লিখিত হাতিব ইবনু আবী বালতা’আর পত্র। তিনি এই পত্রের মাধ্যমে তাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু পদক্ষেপ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে হাতিব! এ কি? হাতিব (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সম্পর্কে তাড়াতাড়ি করে কোন পদক্ষেপ নিবেন না। আমি কুরাইশদের সঙ্গে বসবাস করতাম, কিন্তু আমি তাদের সম্প্রদায়ের লোক নই। যে সকল মুহাজির আপনার সঙ্গে রয়েছেন মক্কায় তাদের আত্বীয়-স্বজন রয়েছে, যাদের সহযোগীতায় তারা তাদের মক্কাস্থ পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে। আমি চিন্তা করলাম, মক্কায় আমার কোন আত্বীয়-স্বজন নেই। যদি আমি তাদের প্রতি কোন রকম উপকার করতে পারি তবে তার বিনিময়ে তারা আমার আত্বীয়-স্বজনকে সাহায্য-সহযোগীতা করবে। আমি কাফির হয়ে কিংবা আমার ধর্ম ছেড়ে দিয়ে বা কুফরীর প্রতি খুশী হয়ে এ কাজ করিনি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে সত্য কথা বলেছে। ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে অনুমতি দিন, আমি এ মুনাফিক্বের ঘাড় উড়িয়ে দেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে বদ্রের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। তুমি কি জান! নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা বদ্রের মুজাহিদদের প্রতি উঁকি মেরেছেন এবং বলেছেনঃ “তোমরা যা চাও কর, আমি তোমাদেরকে মাফ করে দিয়েছি”। ‘আলী (রাঃ) বলেন, উক্ত বিষয়েই এই সূরা অবতীর্ণ হয়েছেঃ “হে মু’মিনগণ! তোমরা আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুর মতো করে গ্রহণ করো না। তোমরা তাদের নিকট বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও; অথচ তারা তোমাদের নিকট যে সত্য এসেছে তা স্বীকার করেনি……”। ‘আম্র (রহঃ) বলেন, আমি ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু আবী রাফী’কে দেখেছি। তিনি ‘আলী (রাঃ)-এর সচিব ছিলেন।
সহীহঃ সহীহ আবূ দাঊদ (হাঃ ২৩৮১), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে ‘উমার ও জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। সুফ্ইয়ান ইবনু উয়াইনাহ্ হতেও একাধিক বর্ণনাকারী একই অর্থে হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন। তাতে এ কথা রয়েছেঃ “তোমাকে পত্র বের করে দিতে হবে, তা না হলে তোমার বস্ত্র ত্যাগ করতে হবে”। এ হাদীসটি ‘আবদুর রাহ্মান আস-সুলামীর সূত্রে ‘আলী (রাঃ) হতে একই রকম বর্ণিত হয়েছে। কেউ কেউ এ কথাগুলো উল্লেখ করেছেনঃ “তোমাকে অবশ্যই পত্রটি বের করে দিতে হবে, নতুবা তোমাকে আমরা উলঙ্গ করব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩০৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَمْتَحِنُ إِلاَّ بِالآيَةِ الَّتِي قَالَ اللَّهُ : (إذَا جَاءَكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ ) الآيَةَ .
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আয়াতটির জন্য লোকদের পরীক্ষা করতেন (অনুবাদ)ঃ “হে নাবী! মু’মিন মহিলারা তোমার নিকট এসে এই মর্মে যদি বাই’আত করে যে, তারা আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে কোন শরীক স্থির করবে না, চুরি করবে না, যিনা করবে না…..”-(সূরা মুমতাহিনাহ্ ১২)। মা’মার (রহঃ) বলেন, ইবনু তাঊস তার বাবার সূত্রে আমার কাছে রিওয়ায়াত করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাত নিজস্ব মালিকানাধীন স্ত্রীলোক ব্যতীত অপর কারো হাত স্পর্শ করেনি।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৮৯১), মুসলিম (হাঃ ৬/২৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩০৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الشَّيْبَانِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ شَهْرَ بْنَ حَوْشَبٍ، قَالَ حَدَّثَتْنَا أُمُّ سَلَمَةَ الأَنْصَارِيَّةُ، قَالَتْ قَالَتِ امْرَأَةٌ مِنَ النِّسْوَةِ مَا هَذَا الْمَعْرُوفُ الَّذِي لاَ يَنْبَغِي لَنَا أَنْ نَعْصِيَكَ فِيهِ قَالَ “ لاَ تَنُحْنَ ” . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ بَنِي فُلاَنٍ قَدْ أَسْعَدُونِي عَلَى عَمِّي وَلاَ بُدَّ لِي مِنْ قَضَائِهِنَّ فَأَبَى عَلَىَّ فَعَاتَبْتُهُ مِرَارًا فَأَذِنَ لِي فِي قَضَائِهِنَّ فَلَمْ أَنُحْ بَعْدُ عَلَى قَضَائِهِنَّ وَلاَ غَيْرِهِ حَتَّى السَّاعَةِ وَلَمْ يَبْقَ مِنَ النِّسْوَةِ امْرَأَةٌ إِلاَّ وَقَدْ نَاحَتْ غَيْرِي . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَفِيهِ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رضى الله عنها . قَالَ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ أُمُّ سَلَمَةَ الأَنْصَارِيَّةُ هِيَ أَسْمَاءُ بِنْتُ يَزِيدَ بْنِ السَّكَنِ .
উম্মু সালামাহ্ আল-আনসারিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মহিলাদের মধ্য থেকে একজন প্রশ্ন করল, ‘মা’রূফ’ বলতে কি বুঝায়, যাতে আপনার নাফরমানী করা আমাদের জন্য বৈধ নয়? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা বিলাপ করো না। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! অমুক সম্প্রদায়ের নারীরা আমার চাচার বিলাপে আমাকে সাহায্য করেছে। কাজেই তাদের প্রতিদান দেয়া আমারও কর্তব্য। আমার কথায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একমত হলেন না। অতঃপর আমি পর্যায়ক্রমে তার নিকট অনুমতি চাইলে তিনি আমাকে তাদের প্রতিদান দেয়ার অনুমতি দিলেন। আমি তাদের বিলাপের প্রতিদান দেয়ার পর ক্বিয়ামাত পর্যন্ত আর কোন দিন বিলাপ করব না। কিন্তু আমি ব্যতীত অপর সব মহিলাই পরবর্তীতে বিলাপ করেছে।
হাসানঃ তা’লীক আ’লা ইবনু মাজাহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গারীব। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় উম্মু ‘আতিয়াহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। ‘আব্দ ইবনু হুমাইদ (রহঃ) বলেন, উম্মু সালামাহ্ আল-আনসারিয়্যাহ্ (রাঃ)-এর নাম আসমা বিনতু ইয়াযীদ ইবনুস সাকান।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩৩০৮
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ الْفِرْيَابِيُّ، حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنِ الأَغَرِّ بْنِ الصَّبَّاحِ، عَنْ خَلِيفَةَ بْنِ حُصَيْنٍ، عَنْ أَبِي نَصْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي قَوْلِهِ تَعَالَى : ( إذَا جَاءَكُمُ الْمُؤْمِنَاتُ مُهَاجِرَاتٍ فَامْتَحِنُوهُنَّ ) قَالَ كَانَتِ الْمَرْأَةُ إِذَا جَاءَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لِتُسْلِمَ حَلَّفَهَا بِاللَّهِ مَا خَرَجْتُ مِنْ بُغْضِ زَوْجِي مَا خَرَجْتُ إِلاَّ حُبًّا لِلَّهِ وَلِرَسُولِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তোমাদের নিকট মু’মিন নারীরা হিযরাত করে এলে তোমরা তাদের পরীক্ষা কর” ( সূরাঃ আল-মুমতাহানাহ-১০) শীর্ষক আল্লাহর বাণী প্রসঙ্গে তিনি বলেনঃ কোন স্ত্রীলোক ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশ্যে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হাযির হলে তিনি তাকে আল্লাহ্ তা’আলার নামে শপথ করাতেনঃ আমি আমার স্বামীর প্রতি বিরাগভাজন হয়ে চলে আসিনি, আমি শুধু আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূলের প্রতি ভালোবাসায় জাগ্রত হয়েই চলে এসেছি।
যঈফ, বিচ্ছিন্ন , ইতহাফুল খাইরাহ আল মাহরাহ্ (৮/১৭৪)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৬২
সূরা আস্-সাফ্
৩৩০৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ، قَالَ قَعَدْنَا نَفَرٌ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَذَاكَرْنَا فَقُلْنَا لَوْ نَعْلَمُ أَىَّ الأَعْمَالِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ لَعَمِلْنَاهُ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : ( سبَّحَ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ * يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لاَ تَفْعَلُونَ ) قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلاَمٍ فَقَرَأَهَا عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبُو سَلَمَةَ فَقَرَأَهَا عَلَيْنَا ابْنُ سَلاَمٍ . قَالَ يَحْيَى فَقَرَأَهَا عَلَيْنَا أَبُو سَلَمَةَ . قَالَ ابْنُ كَثِيرٍ فَقَرَأَهَا عَلَيْنَا الأَوْزَاعِيُّ . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ فَقَرَأَهَا عَلَيْنَا ابْنُ كَثِيرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ خُولِفَ مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ فِي إِسْنَادِ هَذَا الْحَدِيثِ عَنِ الأَوْزَاعِيِّ . وَرَوَى ابْنُ الْمُبَارَكِ عَنِ الأَوْزَاعِيِّ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ هِلاَلِ بْنِ أَبِي مَيْمُونَةَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ أَوْ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ . وَرَوَى الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الأَوْزَاعِيِّ نَحْوَ رِوَايَةِ مُحَمَّدِ بْنِ كَثِيرٍ .
আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কতক সংখ্যক সাহাবী একসাথে বসে নিজেদের মাঝে আলোচনা করতে গিয়ে বললাম যে, আল্লাহ তা’আলার নিকট কোন কাজ সবচেয়ে প্রিয় তা জানতে পারলে সেই কাজটি করতে আমরা ব্রতী হতাম। সে সময় আল্লাহ তা’আলা এ আয়াতটি অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) ঃ “আকাশ ও যমীনে বিদ্যমান সমস্ত কিছুই আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করে, তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। হে ঈমানদারগণ! তোমরা এরূপ কথা কেন বল যা কার্যকর করো না”- (সূরা সাফ্ ১-২)? ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াতটি পাঠ করে আমাদেরকে শুনান।
আবূ সালামাহ্ (রহঃ) বলেনঃ এ আয়াত ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) আমাদেরকে পাঠ করে শুনান। ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) বলেন, এ আয়াত আবূ সালামাহ্ (রহঃ) আমাদেরকে পাঠ করে শুনান। ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন, এ আয়াত আমাদেরকে আওযা’ঈ (রহঃ) পাঠ করে শুনান। ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ইবনু কাসীর (রহঃ) আমাদেরকে এ আয়াতটি পাঠ করে শুনান।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীস মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর কর্তৃক আওযা’ঈর সূত্রে রিওয়ায়াতের প্রসঙ্গে মতের অমিল আছে। ‘আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহঃ) আওযা’ঈ হতে, তিনি ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবী কাসীর হতে, তিনি হিলাল ইবনু আবী মাইমূনাহ্ হতে, তিনি ‘আতা ইবনু ইয়াসার হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) কিংবা আবূ সালামাহ্ হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) হতে এই সূত্রে এ হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন। আর ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম এ হাদীসটি আওযাঈর সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর বর্ণিত হাদীসের একই রকম রিওয়ায়াত করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৬৩
সূরা আল-জুমু’আহ্
৩৩১০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنِ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنِي ثَوْرُ بْنُ زَيْدٍ الدِّيلِيُّ، عَنْ أَبِي الْغَيْثِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ أُنْزِلَتْ سُورَةُ الْجُمُعَةِ فَتَلاَهَا فَلَمَّا بَلَغَ : ( وآخَرِينَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوا بِهِمْ ) قَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ هَؤُلاَءِ الَّذِينَ لَمْ يَلْحَقُوا بِنَا فَلَمْ يُكَلِّمْهُ قَالَ وَسَلْمَانُ الْفَارِسِيُّ فِينَا قَالَ فَوَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ عَلَى سَلْمَانَ فَقَالَ ” وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ كَانَ الإِيمَانُ بِالثُّرَيَّا لَتَنَاوَلَهُ رِجَالٌ مِنْ هَؤُلاَءِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ . وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ هُوَ وَالِدُ عَلِيِّ بْنِ الْمَدِينِيِّ ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ . ثَوْرُ بْنُ زَيْدٍ مَدَنِيٌّ وَثَوْرُ بْنُ يَزِيدَ شَامِيٌّ وَأَبُو الْغَيْثِ اسْمُهُ سَالِمٌ مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُطِيعٍ مَدَنِيٌّ ثِقَةٌ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ সূরা আল-জুমু’আহ্ অবতীর্ণ হওয়াকালে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটেই ছিলাম। তিনি তা পাঠ করলেন। “আর তিনি তাদের জন্যও (রাসূল) যারা এখনো তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি”- (সূরা জুমু’আহ্ ৩) পর্যন্ত পৌঁছলে এক লোক তাঁকে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এখনো যারা আমাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি তারা কারা? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কথায় জবাব দিলেন না। বর্ণনাকারী বলেন, তখন সালমান (রাঃ) আমাদের সঙ্গেই ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালমান (রাঃ)-এর উপর তাঁর হাত রেখে বললেনঃ সেই মহান সত্তার ক্বসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! যদি ঈমান সুরাইয়্যাহ্ নক্ষত্রেও থাকে তবুও তাদের মাঝের কিছু লোক তা নিয়ে আসবে।
সহীহঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ১০১৭), বুখারী ও মুসলিম।
সাওর ইবনু যাইদ হলেন মাদানী ও সাওর ইবনু ইয়াযীদ হলেন শামী (সিরীয়)। আবুল গাইসের নাম সালিম, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুতী’র মুক্তদাস। তিনি মাদীনার অধিবাসী একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। ‘আবদুল্লাহ ইবনু জা’ফার হলেন ‘আলী ইবনুল মাদীনীর বাবা, ইয়াহ্ইয়া ইবনু মা’ঈন তাকে যঈফ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩১১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا حُصَيْنٌ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ بَيْنَمَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ قَائِمًا إِذْ قَدِمَتْ عِيرٌ الْمَدِينَةَ فَابْتَدَرَهَا أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى لَمْ يَبْقَ مِنْهُمْ إِلاَّ اثْنَا عَشَرَ رَجُلاً فِيهِمْ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَنَزَلَتِ الآيَةُ : ( وإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوا إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَائِمًا ) . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা জুমু’আহ্র সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে খুতবাহ্ দিচ্ছিলেন। সে সময় মাদীনাহর একটি (ব্যবসায়ী) কাফিলা এসে হাযির হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের মাঝ হতে আবূ বাক্র ও ‘উমার (রাঃ)-সহ বারজন ব্যতীত প্রত্যেকেই সেদিকে তাড়াতাড়ি চলে যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে অবতীর্ণ হয়ঃ “যখন তারা দেখল ব্যবসায় বা কৌতুক, সে সময় আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে গেল”- (সূরা জুমু’আহ্ ১১)।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। আহ্মাদ ইবনু মানী’ হুশাইম হতে, তিনি হুসাইন হতে, তিনি সালিম ইবনু আবিল জা’দ হতে, তিনি জাবির (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে উপর্যুক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ বর্ণনাটিও হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৬৪
সূরা আল-মুনাফিকুন
৩৩১২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، قَالَ كُنْتُ مَعَ عَمِّي فَسَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىِّ ابْنَ سَلُولَ، يَقُولُ لأَصْحَابِهِ : ( لا تُنْفِقُوا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ حَتَّى يَنْفَضُّوا ) و (لئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ ) فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَمِّي فَذَكَرَ ذَلِكَ عَمِّي لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَدَعَانِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَحَدَّثْتُهُ فَأَرْسَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُبَىٍّ وَأَصْحَابِهِ فَحَلَفُوا مَا قَالُوا فَكَذَّبَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَصَدَّقَهُ فَأَصَابَنِي شَيْءٌ لَمْ يُصِبْنِي قَطُّ مِثْلُهُ فَجَلَسْتُ فِي الْبَيْتِ فَقَالَ عَمِّي مَا أَرَدْتَ إِلاَّ أَنْ كَذَّبَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمَقَتَكَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : ( إذا جَاءَكَ الْمُنَافِقُونَ ) فَبَعَثَ إِلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهَا ثُمَّ قَالَ ” إِنَّ اللَّهَ قَدْ صَدَّقَكَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যাইদ ইবনু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার চাচার সঙ্গে ছিলাম। ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালূলকে আমি তার সঙ্গীদের উদ্দেশে বলতে শুনলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গীদের জন্য তোমরা আর অর্থ খরচ করবে না, তারা যতক্ষণ পর্যন্ত না (তার হতে) আলাদা হয়ে যায়। আমরা মাদীনায় ফিরে গেলে তখন অবশ্যই সেখানে প্রবলরা হীনদেরকে বহিষ্কার করবে। এ কথা আমি আমার চাচাকে জানালে তা তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানান। আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডাকেন এবং তাঁর নিকট আমি ঘটনাটি ব্যক্ত করি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ও তার সঙ্গীদেরকে ডেকে পাঠান। শপথ করে তারা বলে যে, তারা (এ কথা) বলেনি। সে সময় রাসূলু্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে মিথ্যাবাদী ও তাকে সত্যবাদী ধারণা করলেন। এতে আমার এত কষ্ট লাগল যে, আগে কখনও এ রকম কষ্ট হয়নি। আমি ভারাক্রান্ত মনে ঘরে বসে রইলাম। আমার চাচা বললেন, তুমি এমন ব্যাপারে কেন জড়িত হতে গেলে যার কারণে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তুমি মিথ্যাবাদী হলে ও তাঁর অসন্তুষ্টির কারণ হলে? এ পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা যখন “মুনাফিক্বরা যখন তোমার নিকট আসে” (অর্থাৎ সূরা আল-মুনাফিকূন) অবতীর্ণ করেন। তখন আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডেকে পাঠান এবং তিনি উক্ত সূরা তিলাওয়াত করেন, তারপর বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমার সত্যবাদিতার সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯০০, ৪৯০৪), মুসলিম (হাঃ৮/১১৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩১৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الأَزْدِيِّ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَرْقَمَ، قَالَ غَزَوْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ مَعَنَا أُنَاسٌ مِنَ الأَعْرَابِ فَكُنَّا نَبْتَدِرُ الْمَاءَ وَكَانَ الأَعْرَابُ يَسْبِقُونَّا إِلَيْهِ فَسَبَقَ أَعْرَابِيٌّ أَصْحَابَهُ فَسَبَقَ الأَعْرَابِيُّ فَيَمْلأُ الْحَوْضَ وَيَجْعَلُ حَوْلَهُ حِجَارَةً وَيَجْعَلُ النَّطْعَ عَلَيْهِ حَتَّى يَجِيءَ أَصْحَابُهُ . قَالَ فَأَتَى رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ أَعْرَابِيًّا فَأَرْخَى زِمَامَ نَاقَتِهِ لِتَشْرَبَ فَأَبَى أَنْ يَدَعَهُ فَانْتَزَعَ قِبَاضَ الْمَاءِ فَرَفَعَ الأَعْرَابِيُّ خَشَبَتَهُ فَضَرَبَ بِهَا رَأْسَ الأَنْصَارِيِّ فَشَجَّهُ فَأَتَى عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ رَأْسَ الْمُنَافِقِينَ فَأَخْبَرَهُ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِهِ فَغَضِبَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ ثُمَّ قَالَ : (لا تُنْفِقُوا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ حَتَّى يَنْفَضُّوا ) مِنْ حَوْلِهِ . يَعْنِي الأَعْرَابَ وَكَانُوا يَحْضُرُونَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ الطَّعَامِ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ إِذَا انْفَضُّوا مِنْ عِنْدِ مُحَمَّدٍ فَائْتُوا مُحَمَّدًا بِالطَّعَامِ فَلْيَأْكُلْ هُوَ وَمَنْ عِنْدَهُ ثُمَّ قَالَ لأَصْحَابِهِ لَئِنْ رَجَعْتُمْ إِلَى الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ . قَالَ زَيْدٌ وَأَنَا رِدْفُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَسَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ فَأَخْبَرْتُ عَمِّي فَانْطَلَقَ فَأَخْبَرَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَلَفَ وَجَحَدَ . قَالَ فَصَدَّقَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَذَّبَنِي قَالَ فَجَاءَ عَمِّي إِلَىَّ فَقَالَ مَا أَرَدْتَ إِلاَّ أَنْ مَقَتَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَذَّبَكَ وَالْمُسْلِمُونَ . قَالَ فَوَقَعَ عَلَىَّ مِنَ الْهَمِّ مَا لَمْ يَقَعْ عَلَى أَحَدٍ . قَالَ فَبَيْنَمَا أَنَا أَسِيرُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ قَدْ خَفَقْتُ بِرَأْسِي مِنَ الْهَمِّ إِذْ أَتَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَرَكَ أُذُنِي وَضَحِكَ فِي وَجْهِي فَمَا كَانَ يَسُرُّنِي أَنَّ لِي بِهَا الْخُلْدَ فِي الدُّنْيَا . ثُمَّ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ لَحِقَنِي فَقَالَ مَا قَالَ لَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ مَا قَالَ شَيْئًا إِلاَّ أَنَّهُ عَرَكَ أُذُنِي وَضَحِكَ فِي وَجْهِي . فَقَالَ أَبْشِرْ . ثُمَّ لَحِقَنِي عُمَرُ فَقُلْتُ لَهُ مِثْلَ قَوْلِي لأَبِي بَكْرٍ فَلَمَّا أَصْبَحْنَا قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُورَةَ الْمُنَافِقِينَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যাইদ ইবনু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে যুদ্ধে গেলাম। কিছু সংখ্যক বেদুঈনও আমাদের সঙ্গে ছিল। আমরা পানির উৎসের দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের পূর্বেই বেদুঈনরা পানির উৎসে গিয়ে পৌঁছায়। এক বেদুঈন তার সঙ্গীদের পূর্বে পৌঁছে। সে হাউয (চৌবাচ্চা) সম্পূর্ণ করে তার চতুর্দিকে পাথর রেখে দিত এবং তার উপর চামড়া বিছিয়ে দিয়ে তা ঢেকে দিত, যাতে তার সাথী এসে যায় (এবং অন্যরা পানি নিতে না পারে)। উক্ত বেদুঈনের কাছে এসে এক আনসারী লোক তার উটকে পানি পান করানোর জন্য এর লাগাম (নাসারন্দ্রের দড়ি) হালকা করে ছেড়ে দিল, কিন্তু বেদুঈন তার উটকে পানি পান করতে বাধা দেয়। এতে আনসারী ব্যক্তি (ক্রুদ্ধ হয়ে) পানির উৎসগুলো সরিয়ে ফেলে। সে সময় একটি কাষ্ঠ খণ্ড তুলে নিয়ে বেদুঈন আনসারীর মাথায় জোড়ে আঘাত করে এবং এর ফলে তার মাথা ফেটে যায়। উক্ত আনসারী মুনাফিক্ব সরদার ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাইর নিকট গিয়ে তাকে ঘটনা সম্পর্কে জানায়। আনসারী তার দলেরই লোক ছিল। ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, যে বেদুঈনরা আল্লাহ তা’আলার রাসূলের সঙ্গে রয়েছে তাদেরকে সহায়তাদান বন্ধ করে দাও। তবেই তাঁর চারপাশ হতে তারা আলাদা হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আহার করার সময় তাঁর নিকট বেদুঈনরা হাযির হত (এবং তাঁর সঙ্গে আহার করত)। তাই ‘আবদুল্লাহ বলল, যে সময় বেদুঈনরা মুহাম্মাদের নিকট হতে অন্যত্র চলে যাবে তাঁর নিকট তখন খাবার উপস্থিত করবে; যাতে তিনি ও তাঁর নিকট উপস্থিত (অন্যরা) তা আহার করেন। তারপর ‘আবদুল্লাহ তার সাথীদেরকে আরো বলল, আমরা যদি মাদীনায় ফিরে যেতে পারি তবে সম্মানিতরা তোমাদের মাঝের হীনদেরকে তাড়িয়ে দিবে। যাইদ ইবনু আরক্বাম (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে একই সওয়ারীতে ছিলাম। ‘আবদুল্লাহর কথা আমি শুনে ফেললাম এবং আমার চাচাকে জানালাম। তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে গিয়ে তা অবহিত করলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে (‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই-কে) ডেকে পাঠান। সে শপথ করে এবং অস্বীকার করে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বিশ্বাস করলেন এবং আমাকে অবিশ্বাস করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমার চাচা আমার নিকট এসে বললেন, এটাই তো তুমি চেয়েছিলে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হোন এবং তিনি ও মুসলমানগণ তোমাকে মিথ্যুক বলে আখ্যায়িত করুন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি এতটাই ভারাক্রান্ত হলাম যতটা কখনো কেউ হয়নি। তিনি আরো বলেন, তারপর আমি ভারাক্রান্ত হয়ে মাথা নত করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গেই সফর অব্যাহত রাখলাম। এ পরিস্থিতিতে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট এসে আমার কান মললেন এবং আমার সম্মুখে হেসে দিলেন। যদি আমি চিরস্থায়ী জীবন (বা জান্নাত) লাভ করতাম তবুও এতটা খুশী হতাম না। তারপর আবূ বকর (রাঃ) এসে আমার সঙ্গে দেখা করে প্রশ্ন করলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাকে কি বলেছেন? আমি বললাম, আমাকে তিনি কিছুই বলেননি; তিনি কেবল আমার কান মলেছেন এবং আমার দিকে তাকিয়ে হেসেছেন। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তোমার জন্য সুখবর। অতঃপর আমার সঙ্গে ‘উমার (রাঃ) এসে দেখা করেন। যে কথা আমি আবূ বকর (রাঃ)-কে বলেছিলাম তাঁকেও তাই বললাম। অতঃপর আমরা ভোরে উপনিত হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা আল-মুনাফিকূন পাঠ করলেন।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ হাদীস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَدِيٍّ، أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ بْنِ عُتَيْبَةَ، قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ كَعْبٍ الْقُرَظِيَّ، مُنْذُ أَرْبَعِينَ سَنَةً يُحَدِّثُ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، رضى الله عنه أَنَّ عَبْدَ، اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ قَالَ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ : (لئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ ) قَالَ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَحَلَفَ مَا قَالَهُ فَلاَمَنِي قَوْمِي وَقَالُوا مَا أَرَدْتَ إِلَى هَذِهِ فَأَتَيْتُ الْبَيْتَ وَنِمْتُ كَئِيبًا حَزِينًا فَأَتَانِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوْ أَتَيْتُهُ فَقَالَ ” إِنَّ اللَّهَ قَدْ صَدَّقَكَ ” . قَالَ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُُ : ( هم الَّذِينَ يَقُولُونَ لاَ تُنْفِقُوا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ حَتَّى يَنْفَضُّوا ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আল-হাকাম ইবনু ‘উতাইবাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু কা’ব আল-কুরাযীকে আমি চল্লিশ বছর আগে যাইদ ইবনু আরক্বাম (রাঃ)-এর মাধ্যমে রিওয়ায়াত করতে শুনেছি যে, তাবূক যু্দ্ধ চলাকালীন সময়ে ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই বলল, আমরা মাদীনায় ফিরে যেতে পারলে সেখান হতে সম্মানিতরা অবশ্যই হীন লোকদেরকে বের করে দিবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে তাঁকে বিষয়টি জানালাম। কিন্তু সে এ কথা বলেনি বলে শপথ করে। এতে আমার গোত্রের লোকেরা আমাকে দোষারোপ করে এবং বলে, তুমি কি এটাই চেয়েছিলে? আমি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়ীতে ফিরে এসে অসার হয়ে শুয়ে রইলাম। আমার নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে বলেন বা আমি তাঁর নিকট গেলে তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাকে সত্যবাদী ঘোষনা করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, (এই পরিপ্রেক্ষিতে) এ আয়াত অবতীর্ণ হয়(অনুবাদ)ঃ “এরা সেই লোক যারা বলে, রাসূলের সঙ্গী-সাথীদের জন্য তোমরা অর্থব্যয় বন্ধ করে দাও, যার ফলে তারা আলাদা হয়ে যায়”-(সূরা মুনাফিকুন ৭)।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯০২)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩১৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ كُنَّا فِي غَزَاةٍ قَالَ سُفْيَانُ يَرَوْنَ أَنَّهَا غَزْوَةُ بَنِي الْمُصْطَلِقِ فَكَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ الْمُهَاجِرِيُّ يَا لَلْمُهَاجِرِينَ وَقَالَ الأَنْصَارِيُّ يَا لَلأَنْصَارِ فَسَمِعَ ذَلِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” مَا بَالُ دَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ ” . قَالُوا رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ كَسَعَ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” دَعُوهَا فَإِنَّهَا مُنْتِنَةٌ ” . فَسَمِعَ ذَلِكَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ ابْنُ سَلُولَ فَقَالَ أَوَقَدْ فَعَلُوهَا وَاللَّهِ (لئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِينَةِ لَيُخْرِجَنَّ الأَعَزُّ مِنْهَا الأَذَلَّ ) فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُولَ اللَّهِ دَعْنِي أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” دَعْهُ لاَ يَتَحَدَّثُ النَّاسُ أَنَّ مُحَمَّدًا يَقْتُلُ أَصْحَابَهُ ” . وَقَالَ غَيْرُ عَمْرٍو فَقَالَ لَهُ ابْنُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَاللَّهِ لاَ تَنْقَلِبُ حَتَّى تُقِرَّ أَنَّكَ الذَّلِيلُ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْعَزِيزُ . فَفَعَلَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আম্র ইবনু দীনার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন, একটি যুদ্ধে আমরা উপস্থিত ছিলাম। সুফ্ইয়ান বলেন, তা বনী মুসতালিক্বের যুদ্ধ ছিল। এক মুহাজির এক আনসারীর নিতম্বে আঘাত করলে মুহাজির লোক ডাকেন, হে মুহাজির ভাইয়েরা। আনসারী লোকটিও ডাকেন, হে আনসার ভাইয়েরা। তা শুনতে পেয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জাহিলী যুগের ডাকাডাকি হচ্ছে কেন? লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এক মুহাজির এক আনসারীর নিতম্বে আঘাত করেছে। তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এ ডাকাডাকি বন্ধ কর, কারণ এটা ঘৃনিত ডাক। বিষয়টি ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালূলের কানে পৌঁছলে সে বলল, এত বড় সাহস! এ কাজ তারা করেছে? আল্লাহ্র ক্বসম! যদি আমরা মাদীনায় ফিরে যেতে পারি তাহলে অবশ্যই সেখান হতে সম্মানিতরা হীনদেরকে বিতাড়িত করবে। ‘উমার (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাকে অনুমতি দিন, এই মুনাফিক্বের ঘাড় আমি উড়িয়ে দেই। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তাকে এড়িয়ে চল। লোকেরা যেন বলতে না পারে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সঙ্গীদের খুন করেন। ‘আম্র ইবনু দীনার (রহঃ) ছাড়া অপর এক বর্ণনাকারী বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাইর ছেলে ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) (তার বাবাকে) বলেন, আল্লাহ্র ক্বসম! আপনি এ কথা যতক্ষণ স্বীকার না করবেন যে, “আপনিই হীন আর রাসূলু্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হলেন মহাসম্মানিত”, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি মাদীনায় ফিরে যেতে পারবেন না। তারপর সে তা স্বীকার করে।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩১৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو جَنَابٍ الْكَلْبِيُّ، عَنِ الضَّحَّاكِ بْنِ مُزَاحِمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما قَالَ مَنْ كَانَ لَهُ مَالٌ يُبَلِّغُهُ حَجَّ بَيْتِ رَبِّهِ أَوْ تَجِبُ عَلَيْهِ فِيهِ الزَّكَاةُ فَلَمْ يَفْعَلْ سَأَلَ الرَّجْعَةَ عِنْدَ الْمَوْتِ . فَقَالَ رَجُلٌ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ اتَّقِ اللَّهَ إِنَّمَا سَأَلَ الرَّجْعَةَ الْكُفَّارُ قَالَ سَأَتْلُو عَلَيْكَ بِذَلِكَ قُرْآنًا : ( يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تُلْهِكُمْ أَمْوَالُكُمْ وَلاَ أَوْلاَدُكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ ) : (وأَنْفِقُوا مِمَّا رَزَقْنَاكُمْ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ ) إِلَى قَوْلِهِ : ( واللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ ) قَالَ فَمَا يُوجِبُ الزَّكَاةَ قَالَ إِذَا بَلَغَ الْمَالُ مِائَتَىْ دِرْهَمٍ فَصَاعِدًا . قَالَ فَمَا يُوجِبُ الْحَجَّ قَالَ الزَّادُ وَالْبَعِيرُ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যার নিকটে তার রবের (প্রতিপালকের) ঘর (কা’বা) যিয়ারাতের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ আছে অথচ হাজ্জ করে না, অথবা এতটা সম্পদ আছে যাতে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হয় কিন্তু যাকাত আদায় করে না, সে মৃত্যুর সময় দুনিয়াতে আবার ফিরে আসার আরজ করবে। তখন এক ব্যক্তি বললেন, হে ইবনু আব্বস! আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করুন, দুনিয়াতে ফিরে আসার আর্জি তো শুধু কাফিররাই করবে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমি এখনই তোমাকে কুরাআন পাঠ করে শুনাচ্ছিঃ “ হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি যেন তোমাদেরকে আল্লাহ তা’আলার স্মরণ থেকে গাফিল না করে, যারা গাফিল হবে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। আমি তোমাদেরকে যে জীবিকা দিয়েছি, তা হতে খরচ কর তোমাদের কারো মৃত্যু আসার পূর্বে। অন্যথায় (মৃত্যু আসলে) সে বলবে, হে আমার রব! আমাকে তুমি আরো কিছুকালের জন্য ছাড় দিলে আমি দান-খাইরাত করতাম এবং সৎকর্মপরায়ণ লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। কিন্তু যখন কারো নির্ধারিতকাল (মৃত্যু) চলে আসবে, তখন আল্লাহ তা’আলা তাকে কিছুই ছাড় দিবেন না। তোমরা যা কর আল্লাহ তা’আলা সে প্রসঙ্গে পূর্ণ অবগত’’ ( সূরাঃ আল-মুনাফিকুন-৯-১১)। লোকটি বলল, কি পরিমাণ সম্পদে যাকাত ওয়াজিব হয়? তিনি বললেন, দুই শত দিরহাম বা ততোধিক মালে। সে বলল, কিসে হাজ্জ ওয়াজিব হয়? তিনি বললেনঃ পাথেয় ও যানবাহন থাকলে।
সনদ দুর্বল
আবদু ইবনু হুমাইদ- আবদুর রায্যাক হতে তিনি সুফিয়ান সাওরী হতে তিনি ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ হাইয়্যা হতে তিনি দাহ্হাক হতে তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। ইবনু উয়াইনা প্রমুখ এ হাদীস আবূ জানাব হতে তিনি দাহ্হাক হতে তিনি ইবনু আব্বাস (রঃ) সূত্রে তার বিবৃতরূপে একই রকম বর্ণনা করেছেন এবং মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেননি। আবদুর রায্যাকের রিওয়ায়াতের তুলনায় এটি ( মাওকূফ বর্ণনাটি) অনেক বেশি সহীহ। আবূ জানাবের নাম ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ হাইয়্যা এবং তিনি হাদীসশাস্ত্রে তেমন মজবুত নন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৬৫
সূরা আত-তাগাবূন
৩৩১৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، حَدَّثَنَا سِمَاكُ بْنُ حَرْبٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَسَأَلَهُ، رَجُلٌ عَنْ هَذِهِ الآيَةِ، ( يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ وَأَوْلاَدِكُمْ عَدُوًّا لَكُمْ فَاحْذَرُوهُمْ ) قَالَ هَؤُلاَءِ رِجَالٌ أَسْلَمُوا مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ وَأَرَادُوا أَنْ يَأْتُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَبَى أَزْوَاجُهُمْ وَأَوْلاَدُهُمْ أَنْ يَدَعُوهُمْ أَنْ يَأْتُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا أَتَوْا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَأَوُا النَّاسَ قَدْ فَقِهُوا فِي الدِّينِ هَمُّوا أَنْ يُعَاقِبُوهُمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَل َّ: ( يا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ وَأَوْلاَدِكُمْ عَدُوًّا لَكُمْ فَاحْذَرُوهُمْ ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক লোক তাঁর নিকট নিম্নোক্ত আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করে (অনুবাদ) : “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের সহধর্মিণী ও সন্তান-সন্তুতিদের মাঝে কেউ কেউ তোমাদের দুশমন। অতএব তাদের ব্যাপারে তোমরা সাবধান থাকবে”- (সূরা তাগাবূন-১৪)। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, এরা হল মাক্কাবাসীদের মাঝ হতে ইসলাম গ্রহণকারী, এরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে (হিজরত করে) চলে আসতে চাচ্ছিল, কিন্তু তাদের স্ত্রী ও সন্তানরা তাদের বাধা দিচ্ছিল যেন তারা তাদেরকে ছেড়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট চলে না আসে। পরে তারা (হিজরত করে) যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এখানে (মাদীনায়) চলে এসে প্রত্যক্ষ করেন যে, লোকেরা (তাদের আগে আগত ব্যক্তিগণ) দ্বীন বিষয়ে প্রচুর জ্ঞান লাভ করেছে, তখন তারা তাদের স্ত্রীগণ ও সন্তানদের সাজা দেয়ার প্রতিজ্ঞা করে। আল্লাহ তা’আলা তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ)ঃ “হে মুমিনগণ! তোমাদের সহধর্মিণী ও সন্তানদের মাঝে কেউ কেউ তোমাদের দুশমন…………” (সূরা তাগাবূন ১৪)।
হাদীসটি হাসান।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৬৬
সূরা আত-তাহরীম
৩৩১৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي ثَوْرٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما يَقُولُ لَمْ أَزَلْ حَرِيصًا أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ عَنِ الْمَرْأَتَيْنِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم اللَّتَيْنِ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّْ : (إن تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَا ) حَتَّى حَجَّ عُمَرُ وَحَجَجْتُ مَعَهُ فَصَبَبْتُ عَلَيْهِ مِنَ الإِدَاوَةِ فَتَوَضَّأَ فَقُلْتُ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ مَنِ الْمَرْأَتَانِ مِنْ أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم اللَّتَانِ قَالَ اللَّهُْ : ( إن تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَا وَإِنْ تَظَاهَرَا عَلَيْهِ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ مَوْلاَهُ ) فَقَالَ لِي وَاعَجَبًا لَكَ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ قَالَ الزُّهْرِيُّ وَكَرِهَ وَاللَّهِ مَا سَأَلَهُ عَنْهُ وَلَمْ يَكْتُمْهُ فَقَالَ لِي هِيَ عَائِشَةُ وَحَفْصَةُ قَالَ ثُمَّ أَنْشَأَ يُحَدِّثُنِي الْحَدِيثَ فَقَالَ كُنَّا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ نَغْلِبُ النِّسَاءَ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ وَجَدْنَا قَوْمًا تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ فَطَفِقَ نِسَاؤُنَا يَتَعَلَّمْنَ مِنْ نِسَائِهِمْ فَتَغَضَّبْتُ عَلَى امْرَأَتِي يَوْمًا فَإِذَا هِيَ تُرَاجِعُنِي فَأَنْكَرْتُ أَنْ تُرَاجِعَنِي فَقَالَتْ مَا تُنْكِرُ مِنْ ذَلِكَ فَوَاللَّهِ إِنَّ أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيُرَاجِعْنَهُ وَتَهْجُرُهُ إِحْدَاهُنَّ الْيَوْمَ إِلَى اللَّيْلِ . قَالَ قُلْتُ فِي نَفْسِي قَدْ خَابَتْ مَنْ فَعَلَتْ ذَلِكَ مِنْهُنَّ وَخَسِرَتْ . قَالَ وَكَانَ مَنْزِلِي بِالْعَوَالِي فِي بَنِي أُمَيَّةَ وَكَانَ لِي جَارٌ مِنَ الأَنْصَارِ كُنَّا نَتَنَاوَبُ النُّزُولَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَيَنْزِلُ يَوْمًا فَيَأْتِينِي بِخَبَرِ الْوَحْىِ وَغَيْرِهِ وَأَنْزِلُ يَوْمًا فَآتِيهِ بِمِثْلِ ذَلِكَ . قَالَ وَكُنَّا نُحَدِّثُ أَنَّ غَسَّانَ تُنْعِلُ الْخَيْلَ لِتَغْزُوَنَا . قَالَ فَجَاءَنِي يَوْمًا عِشَاءً فَضَرَبَ عَلَىَّ الْبَابَ فَخَرَجْتُ إِلَيْهِ فَقَالَ حَدَثَ أَمْرٌ عَظِيمٌ . قُلْتُ أَجَاءَتْ غَسَّانُ قَالَ أَعْظَمُ مِنْ ذَلِكَ طَلَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نِسَاءَهُ . قَالَ قُلْتُ فِي نَفْسِي قَدْ خَابَتْ حَفْصَةُ وَخَسِرَتْ قَدْ كُنْتُ أَظُنُّ هَذَا كَائِنًا قَالَ فَلَمَّا صَلَّيْتُ الصُّبْحَ شَدَدْتُ عَلَىَّ ثِيَابِي ثُمَّ انْطَلَقْتُ حَتَّى دَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ فَإِذَا هِيَ تَبْكِي فَقُلْتُ أَطَلَّقَكُنَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ لاَ أَدْرِي هُوَ ذَا مُعْتَزِلٌ فِي هَذِهِ الْمَشْرُبَةِ . قَالَ فَانْطَلَقْتُ فَأَتَيْتُ غُلاَمًا أَسْوَدَ فَقُلْتُ اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ . قَالَ فَدَخَلَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَىَّ . قَالَ قَدْ ذَكَرْتُكَ لَهُ فَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا . قَالَ فَانْطَلَقْتُ إِلَى الْمَسْجِدِ فَإِذَا حَوْلَ الْمِنْبَرِ نَفَرٌ يَبْكُونَ فَجَلَسْتُ إِلَيْهِمْ ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ فَأَتَيْتُ الْغُلاَمَ فَقُلْتُ اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ . فَدَخَلَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَىَّ فَقَالَ قَدْ ذَكَرْتُكَ لَهُ فَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا . قَالَ فَانْطَلَقْتُ إِلَى الْمَسْجِدِ أَيْضًا فَجَلَسْتُ ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَجِدُ فَأَتَيْتُ الْغُلاَمَ فَقُلْتُ اسْتَأْذِنْ لِعُمَرَ . فَدَخَلَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَىَّ فَقَالَ قَدْ ذَكَرْتُكَ لَهُ فَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا . قَالَ فَوَلَّيْتُ مُنْطَلِقًا فَإِذَا الْغُلاَمُ يَدْعُونِي فَقَالَ ادْخُلْ فَقَدْ أُذِنَ لَكَ فَدَخَلْتُ فَإِذَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُتَّكِئٌ عَلَى رَمْلٍ حَصِيرٍ قَدْ رَأَيْتُ أَثَرَهُ فِي جَنْبِهِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَطَلَّقْتَ نِسَاءَكَ قَالَ لاَ . قُلْتُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَقَدْ رَأَيْتُنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَنَحْنُ مَعْشَرَ قُرَيْشٍ نَغْلِبُ النِّسَاءَ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ وَجَدْنَا قَوْمًا تَغْلِبُهُمْ نِسَاؤُهُمْ فَطَفِقَ نِسَاؤُنَا يَتَعَلَّمْنَ مِنْ نِسَائِهِمْ فَتَغَضَّبْتُ يَوْمًا عَلَى امْرَأَتِي فَإِذَا هِيَ تُرَاجِعُنِي فَأَنْكَرْتُ ذَلِكَ فَقَالَتْ مَا تُنْكِرُ فَوَاللَّهِ إِنَّ أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيُرَاجِعْنَهُ وَتَهْجُرُهُ إِحْدَاهُنَّ الْيَوْمَ إِلَى اللَّيْلِ . قَالَ فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ أَتُرَاجِعِينَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ نَعَمْ وَتَهْجُرُهُ إِحْدَانَا الْيَوْمَ إِلَى اللَّيْلِ . فَقُلْتُ قَدْ خَابَتْ مَنْ فَعَلَتْ ذَلِكَ مِنْكُنَّ وَخَسِرَتْ أَتَأْمَنُ إِحْدَاكُنَّ أَنْ يَغْضَبَ اللَّهُ عَلَيْهَا لِغَضَبِ رَسُولِهِ فَإِذَا هِيَ قَدْ هَلَكَتْ فَتَبَسَّمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ لاَ تُرَاجِعِي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ تَسْأَلِيهِ شَيْئًا وَسَلِينِي مَا بَدَا لَكِ وَلاَ يَغُرَّنَّكِ أَنْ كَانَتْ صَاحِبَتُكِ أَوْسَمَ مِنْكِ وَأَحَبَّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ فَتَبَسَّمَ أُخْرَى فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَسْتَأْنِسُ قَالَ ” نَعَمْ ” . قَالَ فَرَفَعْتُ رَأْسِي فَمَا رَأَيْتُ فِي الْبَيْتِ إِلاَّ أَهَبَةً ثَلاَثَةً . قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يُوَسِّعَ عَلَى أُمَّتِكَ فَقَدْ وَسَّعَ عَلَى فَارِسَ وَالرُّومِ وَهُمْ لاَ يَعْبُدُونَهُ . فَاسْتَوَى جَالِسًا فَقَالَ ” أَوَفِي شَكٍّ أَنْتَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ أُولَئِكَ قَوْمٌ عُجِّلَتْ لَهُمْ طَيِّبَاتُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ” . قَالَ وَكَانَ أَقْسَمَ أَنْ لاَ يَدْخُلَ عَلَى نِسَائِهِ شَهْرًا فَعَاتَبَهُ اللَّهُ فِي ذَلِكَ وَجَعَلَ لَهُ كَفَّارَةَ الْيَمِينِ .
উবাইদুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু আবী সাওর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি, আমি উমার (রাঃ)-এর নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সেই দু’জন সহধর্মিণী প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতে চাচ্ছিলাম যাদের প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ “যদি তোমরা দু’জন অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ তায়ালার দিকে রুজু হও তবে তা ভাল, কারণ তোমাদের দু’জনের মন ঝুঁকে পড়েছে”- (সূরা তাহরীম ৪)। অবশেষে উমার (রাঃ) হাজ্জে গেলেন এবং আমিও তার সঙ্গে হাজ্জে গেলাম। পাত্র হতে আমি পানি ঢেলে দিলাম এবং তিনি উযূ করলেন। আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সেই দু’জন স্ত্রী কে যাদের প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেনঃ “যদি তোমরা দু’জন অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ তা’য়ালার দিকে রুজু হও তবে ভাল, কেননা তোমাদের দু’জনের মন ঝুঁকে পড়েছে”- (সূরা তাহরীম ৪)। উমার (রাঃ) বলেন, হে ইবনু আব্বাস! আশ্চর্য (তুমি এটুকুও জান না)! যুহরী (রহঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! এ কথায় প্রশ্ন করা তার নিকট মন্দ লেগেছে, কিন্তু তিনি তা লুকিয়ে রাখেননি। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, তিনি আমাকে বললেন, তারা দু’জন ‘আয়িশাহ ও হাফসাহ।
তারপর তিনি ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিতে আরম্ভ করেন। তিনি বলেন, আমরা কুরাইশগণ মহিলাদের উপর প্রভাবশালী ছিলাম। কিন্তু মাদীনায় পৌঁছে আমরা দেখলাম, এখানকার পুরুষদের উপর মহিলাদের প্রাধান্য বিস্তার করে আছে। সুতরাং আমাদের মহিলারা এখানকার মহিলাদের অভ্যাস আয়ত্ত করে। একদিন আমি আমার সহধর্মিণীর উপর রাগ করলে সে আমার কথার প্রত্যুত্তর করে। কিন্তু তার প্রত্যুত্তর করাটাকে আমি অপছন্দ করলাম। সে বলল, এতে আপনার মন্দ লাগার কি আছে। আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণীগণও তাঁর কথার প্রত্যুত্তর করেন এবং সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কেউ কেউ তো তাঁর সংস্পর্শ থেকে চলে যান। উমার (রাঃ) বলেন, আমি মনে মনে বললাম, যে তাদের মাঝে তা করে সে তো বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হল। উমার (রাঃ) বলেন, আমার বসতি ছিল মাদীনার উচ্চভূমিতে বনূ উমাইয়ার এলাকায়। আমার এক আনসারী প্রতিবেশী ছিল। পর্যায়ক্রমে আমরা দু’জনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাজলিসে আসা-যাওয়া করতাম। তদনুযায়ী একদিন সে তাঁর মাজলিসে গিয়ে ওয়াহী ও অন্যান্য বিষয়ের খবর নিয়ে এসে তা আমাকে জানাত এবং একদিন আমি তথায় গিয়ে (ফিরে এসে) তাকে একই রকম খবর দিতাম। উমার (রাঃ) বলেন, আমাদের মাঝে আলোচনা হচ্ছিল যে, আমাদের বিপক্ষে গাসসানীরা যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য তাদের ঘোড়াগুলো তৈরী করছে।
একদা রাতের বেলা সে আমার দরজায় এসে করাঘাত করলে আমি তার নিকটে বেরিয়ে এলাম। সে বলল, একটি মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে। আমি বললাম, গাসসানীরা কি এসে গেছে? সে বলল, তার তুলনায়ও আরো মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন। উমার (রাঃ) বলেন, আমি মনে মনে বললাম, হাফসা হতভাগিনী ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি পূর্বেই ভাবছিলাম এমন একটা কিছু ঘটবে। তিনি বলেন, আমি ফজরের নামাজ আদায় করে কাপড়-চোপড় পরিধান করে রওয়ানা হলাম এবং হাফসার কক্ষে দিয়ে প্রত্যক্ষ করলাম যে, সে কাঁদছে। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে তালাক দিয়েছেন কি? হাফসা (রাঃ) বলেন, আমি জানি না, তবে তিনি ঐ উপরের কুঠরিতে নির্জনতা অবলম্বন করেছেন। তিনি বলেন, তারপর ওখান হতে আমি বের হয়ে এক কৃষ্ণাঙ্গ গোলামের কাছে এসে বললাম, ‘উমারের জন্য ঢোকার অনুমতি চাও। ‘উমার (রাঃ) বলেন, তখন সে ভিতরে ঢুকল, তারপর আমার কাছে ফিরে এসে বলল, তাঁর নিকট আমি আপনার কথা বলেছি কিন্তু তিনি নিশ্চুপ ছিলেন। উমার (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি মাসজিদে চলে এলাম। সেখানে আমি মিম্বারের আশেপাশে কিছু সংখ্যক লোককে কান্নারত দেখলাম। তাদের নিকট আমিও বসলাম, কিন্তু আমার অস্থিরতা বেড়ে গেল। তাই আমি পুনরায় ঐ দাসের নিকট এসে বললাম, তুমি ‘উমারের জন্য ঢোকার অনুমতি চাও। অতঃপর সে ভিতর বাড়িতে প্রবেশ করে আবার ফিরে এসে বলল, আপনার কথা আমি তাঁকে বলেছি কিন্তু তিনি কিছুই বলেননি। আমি পুনরায় মসজিদে ফিরে এলাম এবং বসে পড়লাম, কিন্তু আমাকে একই চিন্তা চিন্তান্বিত করে তুলল। তাই আমি সেই গোলামের নিকট গিয়ে বললাম, উমারের জন্য ঢোকার অনুমতি চাও। সে ভিতরে ঢুকে ফিরে এসে বলল, আপনার কথা আমি তাকে বলেছি কিন্তু তিনি কিছুই বলেননি। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি ফিরে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ দাসটি আমাকে ডেকে বলল, ভিতরে প্রবেশ করুন। তিনি আপনাকে ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন।
তারপর ভিতরে প্রবেশ করে আমি প্রত্যক্ষ করলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাটাইয়ের উপর হেলাম দিয়ে শুয়ে আছেন এবং তাঁর প্রত্যেক বাহুতে চাটাইয়ের দাগ পড়ে আছে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আপনার স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন কি? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম, আল্লাহু আকবার (আল্লাহ মহান)। হে আল্লাহর রাসূল! আপনি দেখুন, আমরা কুরাইশগণ মহিলাদের উপরে প্রভাব বিস্তার করে রাখতাম। কিন্তু মদীনায় পৌঁছে আমরা দেখলাম যে, একদল ব্যক্তিদের উপর তাদের নারীরাই প্রভাব বিস্তার করে রেখেছে। আমাদের মহিলারা তাদের নারীগণের এ অভ্যাস আয়ত্ত করে নিয়েছে। একদিন আমি আমার স্ত্রীর উপর রাগান্বিত হলাম, কিন্তু সে আমার প্রতিটি কথার প্রত্যুত্তর করল। আমি তার এমন আচরণকে অতীব মন্দ মনে করলাম। সে বলল, কেন এটা আপনি পছন্দ করছেন না। আল্লাহর শপথ! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীগণও তো তাঁর কথার প্রত্যুত্তর করেন, এমনকি তাদের কেউ কেউ সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করে কাটান। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি হাফসাকে প্রশ্ন করলাম, তুমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সাথে কি কথা কাটাকাটি কর? সে বলল, হ্যাঁ, আর আমাদের কেউ কেউ তো সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করে কাটিয়ে দেয়। আমি বললাম, তোমাদের মাঝে যে এমন করেছে সে তো হতভাগিনী ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সম্পর্কে তোমাদের কেউ কি নিরাপদ হয়ে গেছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের কারো প্রতি নাখোশ হওয়ার কারণে আল্লাহ তা’য়ালাও তার উপর নাখোশ হবেন এবং ফলে সে ধ্বংস হবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অল্প হাসলেন। উমার (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি হাফসাকে বললাম, তুমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ঝগড়া করবেন না এবং তাঁর নিকট কোন কিছুর বায়না ধরবে না। যা কিছুর তোমার দরকার হয় আমার কাছে চাইবে। আর তুমি ধোঁকা খেও না, তোমার সতীন তোমার তুলনায় সুন্দরী এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খুব বেশী প্রিয়। উমার (রাঃ) বলেন, (এ কথা শুনে) তিনি আবার মুচকি হাসি দিলেন। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার সঙ্গে আরো কিছু সময় কাটাই? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। উমার (রাঃ) বলেন, মাথা তুলে ঘরের মাঝে তাকিয়ে আমি কেবল তিনটি চামড়া ব্যতীত আর কিছুই দেখিন। তাই আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আপনার উম্মাতের আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য আল্লাহ তা’আলার নিকট দু’আ করুন। তিনি তো পারস্য ও রোমের বসবাসকারীদেরকে প্রাচুর্য দান করেছেন, অথচ তারা আল্লাহ তাআলার ইবাদাত করে না। (এ কথায়) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেনঃ হে খাত্তাবের ছেলে! তুমি এখনো সন্দেহের মাঝে আছ কি? এরা তো এরূপ লোক যাদেরকে নিজস্ব সৎকর্মের প্রতিদান পার্থিব জীবনেই দেয়া হয়েছে। উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একমাস তাঁর সহধর্মিণীদের সঙ্গে মেলামেশা না করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। এজন্য আল্লাহ তা’আলা তাঁর উপর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের কাফফারার (ক্ষতিপূরণ) বন্দোবস্ত করেন।
যুহরী (রহঃ) বলেন, উরওয়াহ (রহঃ) আমার নিকট ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর সূত্রে রিওয়ায়াত করেছেন যে, তিনি বলেছেন, ঊনত্রিশ দিন পার হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বপ্রথমে আমার নিকট আসেন। তিনি বলেনঃ হে ‘আয়িশাহ! আমি তোমার নিকট একটি বিষয় উল্লেখ করছি, তোমার পিতা-মাতার সঙ্গে তুমি এ প্রসঙ্গে আলোচনা না করেই তাড়াহুড়া করে জবাব দিবে না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, অতঃপর এ আয়াতটি তিনি পাঠ করেন (অনুবাদ)ঃ “হে নাবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে বলুন, যদি তোমরা পার্থিব জীবন ও তার সৌন্দর্য কামনা কর…” (সূরা আহযাব ২৮)। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! তিনি অবগত যে, আমার পিতা-মাতা আমাকে তাঁর হতে আলাদা হওয়ার অনুমতি দিবেন না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, এ প্রসঙ্গে আমার পিতা-মাতার কি পরামর্শ চাইব? আমি তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং আখিরাতের বাসস্থান প্রত্যাশা করি।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
মামার (রহঃ) বলেন, আইউব আমাকে জানান যে, ‘‘আয়িশাহ (রাঃ) তাঁকে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি যে আপনাকেই বেছে নিয়েছি তা আপনার অন্যান্য স্ত্রীকে জানাবেন না। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)বললেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা আমাকে মুবাল্লিগ (প্রচারক) হিসেবে পাঠিয়েছেন, কষ্ট-কাঠিন্যে নিক্ষেপকারী হিসেবে নয়।
হাসানঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ১৫১৬), মুসলিম জাবির (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। এ হাদীস ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে একাধিক সূত্রে উল্লেখ রয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৬৭
সূরা নূন ওয়াল ক্বালাম
৩৩১৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ سُلَيْمٍ، قَالَ قَدِمْتُ مَكَّةَ فَلَقِيتُ عَطَاءَ بْنَ أَبِي رَبَاحٍ فَقُلْتُ لَهُ يَا أَبَا مُحَمَّدٍ إِنَّ أُنَاسًا عِنْدَنَا يَقُولُونَ فِي الْقَدَرِ . فَقَالَ عَطَاءٌ لَقِيتُ الْوَلِيدَ بْنَ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِنَّ أَوَّلَ مَا خَلَقَ اللَّهُ الْقَلَمَ فَقَالَ لَهُ اكْتُبْ فَجَرَى بِمَا هُوَ كَائِنٌ إِلَى الأَبَدِ ” . وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَفِيهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
আবদুল ওয়াহিদ ইবনু সুলাইম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আত্বা ইবনু আবী রাবাহ (রহঃ)-এর সঙ্গে আমি মক্কায় পৌঁছে দেখা করলাম। তাকে আমি বললাম, হে আবূ মুহাম্মাদ! এখানে আমাদের কিছু লোক তাক্বদীর স্বীকার করে না। আত্বা (রহঃ) বলেন, ওয়ালীদ ইবনু উবাদাহ ইবনুস সামিত (রহঃ) এর সঙ্গে দেখা করলে তিনি বলেন, আমার বাবা আমার নিকট রিওয়ায়াত করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ সর্বপ্রথম আল্লাহ তা’আলা কলম সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি কলমকে বললেন, লিখ। তখন কলম লিখতে শুরু করে এবং অনন্তকাল পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে তা লিপিবদ্ধ করে।
সহীহঃ ২১৫৫ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। হাদীসে সংশ্লিষ্ট একটি ঘটনা রয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এটি হাসান সহীহ গারীব হাদীস। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অ্নুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৬৮
সূরা আল-হাক্কা
৩৩২০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي قَيْسٍ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمِيرَةَ، عَنِ الأَحْنَفِ بْنِ قَيْسٍ، عَنِ الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، قَالَ زَعَمَ أَنَّهُ كَانَ جَالِسًا فِي الْبَطْحَاءِ فِي عِصَابَةٍ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ فِيهِمْ إِذْ مَرَّتْ عَلَيْهِمْ سَحَابَةٌ فَنَظَرُوا إِلَيْهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” هَلْ تَدْرُونَ مَا اسْمُ هَذِهِ ” . قَالُوا نَعَمْ هَذَا السَّحَابُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَالْمُزْنُ ” . قَالُوا وَالْمُزْنُ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَالْعَنَانُ ” . قَالُوا وَالْعَنَانُ . ثُمَّ قَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” هَلْ تَدْرُونَ كَمْ بُعْدُ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ ” . فَقَالُوا لاَ وَاللَّهِ مَا نَدْرِي . قَالَ ” فَإِنَّ بُعْدَ مَا بَيْنَهُمَا إِمَّا وَاحِدَةٌ وَإِمَّا اثْنَتَانِ أَوْ ثَلاَثٌ وَسَبْعُونَ سَنَةً وَالسَّمَاءُ الَّتِي فَوْقَهَا كَذَلِكَ ” . حَتَّى عَدَّدَهُنَّ سَبْعَ سَمَوَاتٍ كَذَلِكَ ثُمَّ قَالَ ” فَوْقَ السَّمَاءِ السَّابِعَةِ بَحْرٌ بَيْنَ أَعْلاَهُ وَأَسْفَلِهِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ إِلَى السَّمَاءِ وَفَوْقَ ذَلِكَ ثَمَانِيَةُ أَوْعَالٍ بَيْنَ أَظْلاَفِهِنَّ وَرُكَبِهِنَّ مَا بَيْنَ سَمَاءٍ إِلَى سَمَاءٍ ثُمَّ فَوْقَ ظُهُورِهِنَّ الْعَرْشُ بَيْنَ أَسْفَلِهِ وَأَعْلاَهُ مَا بَيْنَ سَمَاءٍ إِلَى سَمَاءٍ وَاللَّهُ فَوْقَ ذَلِكَ ” . قَالَ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ مَعِينٍ يَقُولُ أَلاَّ يُرِيدُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَعْدٍ أَنْ يَحُجَّ حَتَّى نَسْمَعَ مِنْهُ هَذَا الْحَدِيثَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى الْوَلِيدُ بْنُ أَبِي ثَوْرٍ عَنْ سِمَاكٍ نَحْوَهُ وَرَفَعَهُ . وَرَوَى شَرِيكٌ عَنْ سِمَاكٍ بَعْضَ هَذَا الْحَدِيثِ وَأَوْقَفَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ هُوَ ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعْدٍ الرَّازِيُّ .
আল-আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একদল লোকের সাথে আল-বাতহা নামক কংকরময় জায়গায় বসা ছিলেন এবং রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের মধ্যে বসা ছিলেন। তখন তাঁদের মাথার উপর দিয়ে এক খন্ড মেঘ উড়ে যাচ্ছিল। তাঁরা সে দিকে তাকালে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা এর নাম জান কি? তারা বললঃ হ্যাঁ, এক খন্ড মেঘ। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল-মুযনু। সাহাবাগণ বললেন, আল-মুযনু? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, আনান (মেঘ)-ও। তাঁরা বললেনঃ আল-আনান। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা কি জান, আকাশ ও যমিনের মাঝের ব্যবধান কত? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহর শপথ! আমরা জানি না। তিনি বললেনঃ এতদুভয়ের মধ্যে একাত্তর বা বাহাত্তর বা তিয়াত্তর বছরের দূরত্ব। এক আকাশের উপর অপর যে আকাশ রয়েছে তার ব্যবধানও অনুরূপ। এভাবে তিনি সপ্তম আকাশ পর্যন্ত দূ্রত্বের বর্ণনা দেন। তারপর তিনি বললেনঃ সপ্তম আকাশের উপর একটি সমুদ্র আছে, যার উপর ও তলদেশের মধ্যকার দূরত্ব (গভীরতা) এক আকাশ থেকে অপর আকাশের দূরত্বের সমান। আর এই সমুদ্রের উপর বন্য ছাগল অনুরূপ আটজন ফেরেশতা আছেন, যাদের পদতল ও হাঁটুর মধ্যবর্তী ব্যবধান এক আকাশ থেকে অপর আকাশের ব্যবধানের সমান। এদের পিঠের উপর আল্লাহর ‘আরশ’ অবস্হিত, যার উপরিভাগ ও নিম্নভাগের দূরত্ব (উচ্চতা) এক আকাশ হতে অপর আকাশের দূরত্বের সমান। আল্লাহ তার উপর (উপবিষ্ট)।
যঈফ, ইবনু মাজাহ(১৯৩)
আবদু ইবনু হুমাইদ (রহঃ) বলেন, আমি ইয়াহইয়া ইবনু মাঈনকে বলতে শুনেছি, আবদুর রহমান কি হাজ্জে যাবেন না (অবশ্য যাবেন), যাতে তাঁর নিকট আমরা এ হাদীস শুনতে পারি। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান গারীব। ওয়ালীদ ইবনু আবূ সাওর (রহঃ) সিমাকের সূত্রে এ হাদীস মারফূরূপে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। শারীক এ হাদীসের অংশবিশেষ সিমাকের সুত্রে মাওকূফরূপে বর্ণনা করেছেন, মারফূরূপে নয়। রাবী আব্দুর রহমান হলেন, ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু সা’দ আল-রাবী।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৩২১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ وَالِدِهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعْدٍ، . حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعْدٍ الرَّازِيُّ، وَهُوَ الدَّشْتَكِيُّ أَنَّ أَبَاهُ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَاهُ رَحِمَهُ اللَّهُ أَخْبَرَهُ كَذَا، قَالَ أَخْبَرَهُ قَالَ رَأَيْتُ رَجُلاً بِبُخَارَى عَلَى بَغْلَةٍ وَعَلَيْهِ عِمَامَةٌ سَوْدَاءُ وَيَقُولُ كَسَانِيهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
ইয়াহইয়া ইবনু মূসা-আবদুর রহমান ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু সা’দ আর-রাযী থেকে বর্ণিতঃ
ইয়াহইয়া ইবনু মূসা-আবদুর রহমান ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু সা’দ আর-রাযী-তাঁর পিতা সূত্রে বলেনঃ আমি বুখারায় এক ব্যক্তিকে কলো পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় একটি খচ্চরের পিঠে বসা দেখলাম। তিনি বলছিলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এ পাগড়ী পরিয়ে দিয়েছেন।
সনদ দুর্বল
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৬৯
সূরা সাআলা সাইল (আল-মাআরিজ)
৩৩২২
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا رِشْدِينُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ دَرَّاجٍ أَبِي السَّمْحِ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : ( كالْمُهْلِ ) قَالَ “ كَعَكَرِ الزَّيْتِ فَإِذَا قَرَّبَهُ إِلَى وَجْهِهِ سَقَطَتْ فَرْوَةُ وَجْهِهِ فِيهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ رِشْدِينَ .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র বাণী “কালমুহ্লি” (বিগলিত ধাতুর মত)-এর ব্যাখ্যায় বলেছেনঃ অর্থাৎ (যাইতুন) তেলের গাদের মত হয়ে যাবে। কাফির ব্যক্তি তা মুখের নিকটে আনামাত্র তার মুখের চামড়া তাতে (গাদের মধ্যে) খসে পড়ে যাবে।
যইফ,পূর্বের ২৭০৭ নং হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু রিশদীন ইবনু সা’দের রিওয়াত হিসেবে এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭০
সূরা আল-জিন্ন
৩২২৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنِي أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما قَالَ مَا قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْجِنِّ وَلاَ رَآهُمُ انْطَلَقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي طَائِفَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ عَامِدِينَ إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ وَقَدْ حِيلَ بَيْنَ الشَّيَاطِينِ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ وَأُرْسِلَتْ عَلَيْهِمُ الشُّهُبُ فَرَجَعَتِ الشَّيَاطِينُ إِلَى قَوْمِهِمْ فَقَالُوا مَا لَكُمْ قَالُوا حِيلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ وَأُرْسِلَتْ عَلَيْنَا الشُّهُبُ . فَقَالُوا مَا حَالَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ إِلاَّ مِنْ أَمْرٍ حَدَثَ فَاضْرِبُوا مَشَارِقَ الأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا فَانْظُرُوا مَا هَذَا الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ قَالَ فَانْطَلَقُوا يَضْرِبُونَ مَشَارِقَ الأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا يَبْتَغُونَ مَا هَذَا الَّذِي حَالَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ فَانْصَرَفَ أُولَئِكَ النَّفَرُ الَّذِينَ تَوَجَّهُوا إِلَى نَحْوِ تِهَامَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ بِنَخْلَةَ عَامِدًا إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ وَهُوَ يُصَلِّي بِأَصْحَابِهِ صَلاَةَ الْفَجْرِ فَلَمَّا سَمِعُوا الْقُرْآنَ اسْتَمَعُوا لَهُ فَقَالُوا هَذَا وَاللَّهِ الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ . قَالَ فَهُنَالِكَ رَجَعُوا إِلَى قَوْمِهِمْ فَقَالُوا يَا قَوْمَنَا : ( إنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا * يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا ) فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى نَبِيِّهِ : ( قلْ أُوحِيَ إِلَىَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ ) وَإِنَّمَا أُوحِيَ إِلَيْهِ قَوْلُ الْجِنِّ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জিনদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) না কিছু (কুরআন) পাঠ করে শুনিয়েছেন আর না তাদেরকে প্রত্যক্ষ করেছেন। (বরং ঘটনা এই যে, একদিন) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার একদল সাহাবীকে সঙ্গে নিয়ে উকায নামক বাজারে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হন। ইতোমধ্যে আকাশের সংবাদ শোনার বিষয়ে জিনদের জন্য বাধা হয়ে দাড়ায় এবং তাদের বিরুদ্ধে উল্কাপিন্ড নিক্ষিপ্ত হয়। অতঃপর শাইতান জিনেরা নিজেদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসলে তখন তাদের অপরাপর জিনেরা প্রশ্ন করে, কি বিষয়! তারা বলে, আকাশের সংবাদ সংগ্রহ করতে আমাদের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা হচ্ছে এবং আমাদের প্রতি উল্কাপিন্ড নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। তারা বলল, অবশ্যই নতুন কিছু ঘটার কারণে আমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধার সৃষ্টি হয়েছ। পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম সব জায়গায় তোমরা ঘুরে দেখ, কি ব্যাপার ঘটেছে যার কারণে তোমাদের ও আকাশের সংবাদের মাঝে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং পৃথিবীর পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত তারা তাদের আকাশের সংবাদের মাঝে বাধার কারণ বের করার জন্য বেরিয়ে পড়ল। যারা তিহামার উদ্দেশে বেরিয়েছিল তারা “নাখলা” নামক জায়গায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট হাযির হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উকাযের বাজারে যাওয়ার পথে এখানে অবস্থান করছিলেন। সে সময় সাহাবীদেরকে নিয়ে তিনি ফাজরের নামায আদায় করছিলেন। জিনদের ঐ দলটি কুরআন মাজীদের তিলাওয়াত শুনতে পেয়ে গভীর মনোযোগের সাথে তা শুনে। তারা বলল, আল্লাহর ক্বসম! এইটা সেই জিনিস যা তোমাদের ও আকাশের খবরের মধ্যে বাধার কারণ ঘটিয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, সে সময় তারা তাদের গোত্রে ফিরে গিয়ে বলল, হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা এক বিস্ময়কর কুরআন শুনেছি, আমাদেরকে যা কল্যাণের পথ দেখায়। তাই তার উপর আমরা ঈমান এনেছি। আর কখনো আমরা আমাদের প্রভুর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করব না। আল্লাহ তাআলা তাঁর নাবীর নিকট আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ)ঃ “আপনি বলুন, আমার নিকট ওয়াহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, জিনদের একদল মনোযোগ সহকারে (কুরআন) শুনেছে”- (সূরা জিন ১)। এভাবে ওয়াহী দ্বারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিনদের আলাপচারিতা প্রসঙ্গে জানানো হয়।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯২১), মুসলিম (হাঃ ২/৩৫, ৩৬)।
একই সনদে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে আরো বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ এটাও জিনদের কথা যা তারা তাদের গোত্রকে বলেছিল, “আল্লাহ তা’আলার বান্দা যখন তাঁকে ডাকার জন্য দৃঢ়বদ্ধ হয় সে সময় তারা তার নিকট ভিড় জমায়”- (সূরা জিন ১৯)। আর যখন এই জিনেরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নামায আদায় করতে ও তাঁর সাহাবীদেরও তাঁর সঙ্গে নামায আদায় করতে দেখে সে সময়েই তারা তাঁর প্রতি সাহাবীদের এ আনুগত্যে অবিভূত হয়। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলে, আল্লাহ তা’আলার বান্দা যখন তাঁকে (আল্লাহ তা’আলাকে) ডাকার জন্য দৃঢ়বদ্ধ হয় তখন তারা তার নিকট জড়ো হয়”।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩২৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ الْجِنُّ يَصْعَدُونَ إِلَى السَّمَاءِ يَسْتَمِعُونَ الْوَحْىَ فَإِذَا سَمِعُوا الْكَلِمَةَ زَادُوا فِيهَا تِسْعًا فَأَمَّا الْكَلِمَةُ فَتَكُونُ حَقًّا وَأَمَّا مَا زَادُوهُ فَيَكُونُ بَاطِلاً فَلَمَّا بُعِثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُنِعُوا مَقَاعِدَهُمْ فَذَكَرُوا ذَلِكَ لإِبْلِيسَ وَلَمْ تَكُنِ النُّجُومُ يُرْمَى بِهَا قَبْلَ ذَلِكَ فَقَالَ لَهُمْ إِبْلِيسُ مَا هَذَا إِلاَّ مِنْ أَمْرٍ قَدْ حَدَثَ فِي الأَرْضِ فَبَعَثَ جُنُودَهُ فَوَجَدُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَائِمًا يُصَلِّي بَيْنَ جَبَلَيْنِ أُرَاهُ قَالَ بِمَكَّةَ فَأَتَوْهُ فَأَخْبَرُوهُ فَقَالَ هَذَا الَّذِي حَدَثَ فِي الأَرْضِ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ঊর্ধ্ব জগতে জিনেরা যাতায়াত করত আকাশের সংবাদ সংগ্রহের জন্য। একটি কথা শুনতে পেলে তার সঙ্গে তারা নিজেদের পক্ষ হতে আরো নয়টি কথা সংযুক্ত করত। যার কারণে সেই একটি কথা সত্য হত এবং বাকি নয়টি কথা হত মিথ্যা। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নবূওয়াতপ্রাপ্ত হলে ঊর্ধ্ব জগতে তাদের উপবেশনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। সুতরাং (জিনেরা) এ ব্যাপারটি তারা ইবলিসকে অবহিত করে। আর ইতোপূর্বে কখনো তাদের প্রতি উল্কাপিণ্ড নিক্ষিপ্ত হয়নি। ইবলিস তাদেরকে বলল, পৃথিবীতে অবশ্যই নতুন কিছু ঘটেছে, যার কারণে এই প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং ইবলিস তার দলকে প্রেরণ করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তারা দু’টি পাহাড়ের মাঝামাঝিতে নামায আদায় করতে দেখে। (ইমাম তিরমিযী বলেন,) আমার ধারণা হয় মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহইয়া বলেছেন, মাক্কায় (নামায আদায় করতে দেখে)। তারপর তারা ইবলিসের সঙ্গে দেখা করে তাকে ব্যাপারটি জানায়। সে বলল, সেই নতুন ঘটনা এটাই যা দুনিয়াতে ঘটেছে।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭১
সূরা আল-মুদ্দাসসির
৩৩২৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، رضى الله عنهما قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُحَدِّثُ عَنْ فَتْرَةِ الْوَحْىِ فَقَالَ فِي حَدِيثِهِ ” بَيْنَمَا أَنَا أَمْشِي سَمِعْتُ صَوْتًا مِنَ السَّمَاءِ فَرَفَعْتُ رَأْسِي فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِي جَاءَنِي بِحِرَاءَ جَالِسٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ فَجُثِثْتُ مِنْهُ رُعْبًا فَرَجَعْتُ فَقُلْتُ زَمِّلُونِي زَمِّلُونِي . فَدَثَّرُونِي فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ : ( يا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ * قُمْ فَأَنْذِرْ ) إِلَى قَوْلِهِ : ( والرُّجْزَ فَاهْجُرْ ) قَبْلَ أَنْ تُفْرَضَ الصَّلاَةُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ جَابِرٍ أَبُو سَلَمَةَ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ .
জাবির ইবনু আবদিল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি সাময়িকভাবে ওয়াহী বন্ধ থাকার বিষয়ের রিওয়ায়াত প্রসঙ্গে বলতে শুনেছিঃ আমি পথ চলছিলাম। এ সময়ে আমি ঊর্ধ্ব জগত হতে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। আমি মাথা তুলতেই প্রত্যক্ষ করলাম, হেরা গুহায় যে ফেরেশতারা আমার নিকট এসেছিলেন তিনি আকাশ ও যমীনের মধ্যবর্তী জায়গায় একটি চেয়ারে বসে আছেন। তাকে দেখে আমি খুব ভীত হয়ে গেলাম। (ঘরে) ফিরে এসে আমি বললামঃ আমাকে তোমরা চাদরে ঢেকে দাও! আমাকে চাদর জড়িয়ে দাও। অতঃপর তারা আমাকে চাদর দিয়ে জড়িয়ে দিল। সে সময় আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেনঃ “হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! উঠো, আর সাবধান করো …. আর পৌত্তলিকতা পরিত্যাগ করো”- (সূরা মুদ্দাসসির ১-৫)। এটা নামায ফরয হওয়ার পূর্বেকার ঘটনা।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। হাদীসটি ইয়াহইয়া ইবনু আবী কাসীর (রহঃ) আবূ সালামাহ ইবনু আবদুর রহমানের সূত্রে জাবির (রাঃ) হতে রিওয়ায়াত করেছেন। আবূ সালামাহর নাম আবদুল্লাহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩২৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى، عَنِ ابْنِ لَهِيعَةَ، عَنْ دَرَّاجٍ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الصَّعُودُ جَبَلٌ مِنْ نَارٍ يَتَصَعَّدُ فِيهِ الْكَافِرُ سَبْعِينَ خَرِيفًا ثُمَّ يَهْوِي بِهِ كَذَلِكَ فِيهِ أَبَدًا ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا مِنْ حَدِيثِ ابْنِ لَهِيعَةَ . وَقَدْ رُوِيَ شَيْءٌ مِنْ هَذَا عَنْ عَطِيَّةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَوْلُهُ مَوْقُوفٌ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সাঊদ হল জাহান্নামের একটি পাহাড়। জাহান্নামীরা সত্তর বছর ধরে তার চূড়ায় আরোহণ করবে এবং তারপর সেখান থেকে সত্তর বছরে গড়িয়ে পড়বে। এভাবে তারা তাতে চিরকাল ধরে উঠবে ও নামবে।
যঈফ, ২৭০২ নং হাদীসে পূর্বে বর্ণিত হয়েছে
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদিসটি গারীব। আমরা শুধু ইবনু লাহীআর হাদীস হিসেবে এটিকে মারফূ হিসেবে জেনেছি। আর এ হাদীসের মতই আত্যিয়া আবূ সাঈদ (রাঃ) সূত্রেও মাওকূফ হিসেবে বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৩২৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُجَالِدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ نَاسٌ مِنَ الْيَهُودِ لأُنَاسٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَلْ يَعْلَمُ نَبِيُّكُمْ كَمْ عَدَدُ خَزَنَةِ جَهَنَّمَ قَالُوا لاَ نَدْرِي حَتَّى نَسْأَلَ نَبِيَّنَا . فَجَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ غُلِبَ أَصْحَابُكَ الْيَوْمَ . قَالَ ” وَبِمَ غُلِبُوا ” . قَالَ سَأَلَهُمْ يَهُودُ هَلْ يَعْلَمُ نَبِيُّكُمْ كَمْ عَدَدُ خَزَنَةِ جَهَنَّمَ قَالَ ” فَمَا قَالُوا ” . قَالَ قَالُوا لاَ نَدْرِي حَتَّى نَسْأَلَ نَبِيَّنَا . قَالَ ” أَفَغُلِبَ قَوْمٌ سُئِلُوا عَمَّا لاَ يَعْلَمُونَ فَقَالُوا لاَ نَعْلَمُ حَتَّى نَسْأَلَ نَبِيَّنَا لَكِنَّهُمْ قَدْ سَأَلُوا نَبِيَّهُمْ فَقَالُوا أَرِنَا اللَّهَ جَهْرَةً عَلَىَّ بِأَعْدَاءِ اللَّهِ إِنِّي سَائِلُهُمْ عَنْ تُرْبَةِ الْجَنَّةِ وَهِيَ الدَّرْمَكُ ” . فَلَمَّا جَاءُوا قَالُوا يَا أَبَا الْقَاسِمِ كَمْ عَدَدُ خَزَنَةِ جَهَنَّمَ قَالَ ” هَكَذَا وَهَكَذَا ” . فِي مَرَّةٍ عَشْرَةٌ وَفِي مَرَّةٍ تِسْعٌ . قَالُوا نَعَمْ . قَالَ لَهُمُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” مَا تُرْبَةُ الْجَنَّةِ ” . قَالَ فَسَكَتُوا هُنَيْهَةً ثُمَّ قَالُوا خُبْزَةٌ يَا أَبَا الْقَاسِمِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” الْخُبْزُ مِنَ الدَّرْمَكِ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ مُجَالِدٍ .
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ কিছু সংখ্যক ইয়াহূদী রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কয়েকজন সাহাবীর নিকটে প্রশ্ন করল, জাহান্নামের দারোগার সংখ্যা কত তা কী তোমাদের নবী জানেন? তাঁরা বললেন, আমরা তা তাঁর নিকটে জিজ্ঞেস না করে বলতে পারি না। এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললঃ হে মুহাম্মাদ! আজ আপনার সঙ্গীরা হেরে গেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কেন তারা হেরে গেছে? সে বলল, ইয়াহূদীরা তাদের নিকটে প্রশ্ন করেছিল, তোমাদের রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি জানেন জাহান্নামের দারোগার সংখ্যা কত? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তারা কি জবাব দিয়েছে? সে বললঃ তারা বলেছে, আমরা আমাদের নাবীকে জিজ্ঞেস না করে বলতে পারি না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সেই জাতি কি হেরে যায়, যাদের কাছে এমন ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয় যা তারা জানে না, তারপর তারা বলে, এ ব্যাপারে আমাদের নাবীর নিকটে জিজ্ঞেস না করে আমরা বলতে পারি না? বরং ইয়াহূদীরা তো তাদের নাবীর কাছে অযাচিত আবদার ধরেছিল, “আমাদেরকে প্রকাশ্যে আল্লাহ্ তা’আলাকে দেখান”। আল্লাহ্ তা’আলার শত্রুদেরকে আমার নিকট নিয়ে এসো। আমি আল্লাহ্র এই শত্রুদেরকে জান্নাতের মাটি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করব। আর তা হল ময়দা। তারপর ইয়াহূদীরা এসে বলল, হে আবুল কাসিম! জাহান্নামের দারোগার সংখ্যা কত? তিনি বললেনঃ এত এতজন (এক হাতের আঙ্গুলের ইশারায়) দশজন এবং (অপর হাতের ইশারায়) নয়জন। তারা বলল, হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন। এবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে প্রশ্ন করলেনঃ জান্নাতের মাটি কিসের? রাবী বলেন, তারা কিছু সময় ছুপ থাকার পর বলল, হে আবুল কাসিম! তা হল রুটি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ময়দার রুটি।
যঈফ, যঈফা (৩৩৪৮), মুসলিম (৮/১৯১)। আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইবনু সাঈদকে বললেনঃ জান্নাতের মাটি কেমন? তিনি বললেনঃ সাদা ময়দা মিসকের মত সুগন্ধি। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সত্য বলেছে।
আবূ ঈসা বলেনঃ আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র এই সনদে মুজালিদের রিওয়ায়াত হিসেবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৩২৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَزَّارُ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ حُبَابٍ، أَخْبَرَنَا سُهَيْلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْقُطَعِيُّ، وَهُوَ أَخُو حَزْمِ بْنِ أَبِي حَزْمٍ الْقُطَعِيِّ عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ فِي هَذِهِ الْآيَةَ ( هُوَ أَهْلُ التَّقْوَى وَأَهْلُ الْمَغْفِرَةِ ) قَالَ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنَا أَهْلٌ أَنْ أُتَّقَى فَمَنْ اتَّقَانِي فَلَمْ يَجْعَلْ مَعِي إِلَهًا فَأَنَا أَهْلٌ أَنْ أَغْفِرَ لَهُ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَسُهَيْلٌ لَيْسَ بِالْقَوِيِّ فِي الْحَدِيثِ وَقَدْ تَفَرَّدَ بِهَذَا الْحَدِيثِ عَنْ ثَابِتٍ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “তিনিই সেই সত্তা যাকে ভয় করা উচিত। আর তিনিই বান্দার পাপ মার্জনা করার অধিকারী” (সূরাঃ আল-মুদ্দাচ্ছির – ৫৬)। এই আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ আমিই কেবল মাত্র (বান্দার জন্য) ভয়ের যোগ্য। সুতরাং যে ব্যক্তি আমাকে ভয় করে, আমার সাথে কাউকে অংশীদার স্থির করে না, তাকে মাফ করার যথার্থ অধিকারী আমিই।
যঈফ, ইবনু মাজাহ ( ৪২৯৯)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। হাদীস শাস্ত্রবিদগণের দৃষ্টিতে সুহাইল তেমন মজবুত রাবী নন। সাবিত হতে এ হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে তিনি একাকী।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭২
সূরা আল-ক্বিয়ামাহ
৩৩২৯
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أُنْزِلَ عَلَيْهِ الْقُرْآنُ يُحَرِّكُ بِهِ لِسَانَهُ يُرِيدُ أَنْ يَحْفَظَهُ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( لا تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ ) قَالَ فَكَانَ يُحَرِّكُ بِهِ شَفَتَيْهِ وَحَرَّكَ سُفْيَانُ شَفَتَيْهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ عَلِيٌّ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ أَثْنَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَلَى مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ خَيْرًا .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর কুরআন অবতীর্ণ হত তখন তিনি তা মুখস্থ করে নেয়ার জন্য (ফেরেশতার সঙ্গে সঙ্গে) জিহ্বা নাড়াতেন। এ অবস্থায় আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেনঃ “তাড়াতাড়ি ওয়াহী মুখস্থ করার জন্য তুমি তোমার জিহ্বা সঞ্চালন করো না ………” (সূরা ক্বিয়ামাহ ১৬-২১)। অধঃস্থন বর্ণনাকারী মূসা তার ঠোট দু’টি নেড়ে দেখাতেন।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
সুফইয়ানও তার ঠোঁট দু’টো নাড়তেন।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল কাত্তান বলেছেন, সুফইয়ান আস সাওরী (রহঃ) মূসা ইবনু আবী ‘আয়িশাহর খুব সুনাম করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩৩০
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنِي شَبَابَةُ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ ثُوَيْرٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً لَمَنْ يَنْظُرُ إِلَى جِنَانِهِ وَأَزْوَاجِهِ وَخَدَمِهِ وَسُرُرِهِ مَسِيرَةَ أَلْفِ سَنَةٍ وَأَكْرَمَهُمْ عَلَى اللَّهِ مَنْ يَنْظُرُ إِلَى وَجْهِهِ غُدْوَةً وَعَشِيَّةً ” . ثُمَّ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : (وجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَاضِرَةٌ * إِلَى رَبِّهَا نَاظِرَةٌ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ قَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ إِسْرَائِيلَ مِثْلَ هَذَا مَرْفُوعًا . وَرَوَى عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبْجَرَ عَنْ ثُوَيْرٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَوْلَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
সুওয়াইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি ইবনু উমার (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একজন সাধারণ মর্যাদাসম্পন্ন জান্নাতীর উদ্যানসমূহ, বিবিগণ, চাকরগণ এবং খাট-পালংকসমূহ কেউ দেখতে চাইলে তা তার জন্য হাজার বছরের রাস্তা। তাদের মধ্যে আল্লাহ্ তা’আলার নিকট সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর চেহারা দেখার সৌভাগ্য লাভ করবেন। তারপর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই আয়াত পাঠ করেনঃ “কিছু মুখমণ্ডল সেদিন উজ্জ্বল হবে এবং তারা তাদের রবের দিকে তাকিয়ে থাকবে” ( সূরাঃ আল-ক্বিয়ামাহ-২২-২৩)।
যঈফ, যঈফা (১৯৮৫)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। একাধিক বর্ণনাকারী ইসরাঈলের সূত্রে হাদীসটি একইভাবে মারফূ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আবদুল মালিক ইবনু আব্জার (রহঃ) সুওয়াইর হতে তিনি (মুজাহিদ) ইবনু উমার (রাঃ) সুত্রে এটিকে তার কথা হিসেবে (মাওকূফ হিসেবে) বর্ণনা করেছেন, মারফূ হিসেবে নয়। আল-আশজাঈ (রহঃ) সুফিয়ান হতে তিনি সুওয়াইর হতে তিনি মুজাহিদ হতে তিনি ইবনু উমার (রাঃ) সূত্রে তার কথারূপে বর্ণনা করেছেন এবং মারফূরূপে বর্ণনা করেননি। আবূ ঈসা বলেন, আমাদের জানামতে এ হাদীসের সনদে সুফিয়ান ব্যতীত অন্য কেউ মুজাহিদের উল্লেখ করেননি। সুওয়াইর-এর ডাকনাম আবূ জাহম। আবূ ফাখি তার নাম সাঈদ ইবনু ইলাকা।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭৩
সূরা আবাসা
৩৩৩১
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأُمَوِيُّ، حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، هَذَا مَا عَرَضْنَا عَلَى هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ أُنْزِلَ : ( عبَسَ وَتَوَلَّى ) فِي ابْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ الأَعْمَى أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يَقُولُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرْشِدْنِي وَعِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ مِنْ عُظَمَاءِ الْمُشْرِكِينَ فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُعْرِضُ عَنْهُ وَيُقْبِلُ عَلَى الآخَرِ وَيَقُولُ أَتَرَى بِمَا أَقُولُ بَأْسًا فَيُقَالُ لاَ . فَفِي هَذَا أُنْزِلَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ أُنْزِلََ : ( عبَسَ وَتَوَلَّى ) فِي ابْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ عَائِشَةَ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “আবাসা ওয়া তাওয়াল্লা” সূরাটি অন্ধ সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনু উম্মু মাকতূম (রাঃ) প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে তিনি বলতে লাগলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে দ্বীনের সঠিক পথ বলে দিন। সে সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাজলিসে মুশরিকদের এক নেতৃস্থানীয় লোক হাযির ছিল। তাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে এড়িয়ে চলেন এবং উক্ত নেতার প্রতি মনোযোগ দেন। ইবনু উম্মু মাকতুম (রাঃ) বলেন, আপনি কি মনে করেন-আমি যা বলছি তা মন্দ? তিনি বলতে থাকেনঃ না। এ প্রসঙ্গে সূরাটি অবতীর্ণ হয়।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গরীব। এ হাদীস কিছু বর্ণনাকারী হিশাম ইবনু উরওয়াহ হতে, তার বাবার সূত্রে রিওয়ায়াত করেছেন। তিনি বলেন, “আবাসাহ ওয়া তাওয়াল্লা” সূরাটি ইবনু উম্মু মাকতূম (রাঃ) প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি এ সনদে ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩৩২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ، حَدَّثَنَا ثَابِتُ بْنُ يَزِيدَ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” تُحْشَرُونَ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلاً ” . فَقَالَتِ امْرَأَةٌ أَيُبْصِرُ أَوْ يَرَى بَعْضُنَا عَوْرَةَ بَعْضٍ قَالَ ” يَا فُلاَنَةُُ: (لكلِّ امْرِئٍ مِنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ ) ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ قَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَوَاهُ سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ أَيْضًا . وَفِيهِ عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদেরকে ক্বিয়ামাতের দিন নগ্নপদে, নগ্নশরীরে ও খাতনাহীন অবস্থায় উঠানো হবে। এক মহিলা [আয়িশা (রাঃ)] বলেন, তবে কি আমাদের একে অন্যের গুপ্তস্থান দেখতে পাবে! তিনি বললেন, হে অমুক! “সেদিন তাদের সবার এরূপ গুরুতর পরিনতি হবে যা তাকে সম্পূর্ণরূপে ব্যতিব্যস্ত রাখবে”- (সূরা আবাসা ৩৭)।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসটি একাধিক সনদে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। এটি সাঈদ ইবনু জুবাইরও বর্ণনা করেছেন। এ অনুচ্ছেদে ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭৪
সূরা আত-তাকবীর
৩৩৩৩
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَحِيرٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَهُوَ ابْنُ يَزِيدَ الصَّنْعَانِيُّ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُ رَأْىُ عَيْنٍ فَلْيَقْرَأْ ( إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ ) و (إِذَا السَّمَاءُ انْفَطَرَتْ ) وَ (إذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ ) ” . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ وَغَيْرُهُ هَذَا الْحَدِيثَ بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُ رَأْىُ عَيْنٍ فَلْيَقْرَأْ (إذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ ) وَلَمْ يَذْكُرْ و (إِذَا السَّمَاءُ انْفَطَرَتْ ) وَ (إذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ ).
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দৃশ্যাবলী যে লোক চাক্ষুষভাবে প্রত্যক্ষ করতে উৎসাহী সে যেন “ইযাশ-শামসু কুব্বিরাত”, “ইযাস সামাউন ফাত্বারাত” ও “ইযাস সামাউন শাক্বক্বাত” এ তিনটি সূরা পাঠ করে।
সহীহঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ১০৮১)।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান গারীব। হিশাম ইবনু ইউসুফ প্রমুখ বর্ণনাকারীগণ হাদীসটি উক্ত সনদে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রত্যক্ষভাবে ক্বিয়ামাত দিবস অবলোকন করতে পছন্দ করে সে যেন “ইযাশ শামসু কুববিরাত” পাঠ করে। এ বর্ণনায় “ইযাস সামাউন ফাতারাত” এবং “ইযাস সামাউন শাক্বক্বাত” উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭৫
সূরা আল-মুতাফফিফীন
৩৩৩৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنِ الْقَعْقَاعِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا أَخْطَأَ خَطِيئَةً نُكِتَتْ فِي قَلْبِهِ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ فَإِذَا هُوَ نَزَعَ وَاسْتَغْفَرَ وَتَابَ سُقِلَ قَلْبُهُ وَإِنْ عَادَ زِيدَ فِيهَا حَتَّى تَعْلُوَ قَلْبَهُ وَهُوَ الرَّانُ الَّذِي ذَكَرَ اللَّهُ : ( كلاَّ بَلْ رَانَ عَلَى قُلُوبِهِمْ مَا كَانُوا يَكْسِبُونَ ) ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বান্দা যখন একটি গুনাহ করে তখন তার অন্তরের মধ্যে একটি কালো চিহ্ন পড়ে। অতঃপর যখন সে গুনাহর কাজ পরিহার করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং তাওবা করে তার অন্তর তখন পরিষ্কার ও দাগমুক্ত হয়ে যায়। সে আবার পাপ করলে তার অন্তরে দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং তার পুরো অন্তর এভাবে কালো দাগে ঢেকে যায়। এটাই সেই মরিচা আল্লাহ তা’আলা যার বর্ণনা করেছেনঃ “কখনো নয়, বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের মনে জং (মরিচা) ধরিয়েছে” – (সূরা মুত্বাফফিফীন ১৪)।
হাসানঃ আত-তা’লীকুর রাগীব (হাঃ ২/২৬৮)।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩৩৩৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ دُرُسْتَ، – بَصْرِيٌّ – حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ حَمَّادٌ هُوَ عِنْدَنَا مَرْفُوعٌ : (يوْمَ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ ) قَالَ يَقُومُونَ فِي الرَّشْحِ إِلَى أَنْصَافِ آذَانِهِمْ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাম্মাদ (রহঃ) বলেন, আমাদের মতে এটি মারফূ হাদীস (মহানবীর বানী)। “সকল মানুষ যে দিন রাব্বুল আলামীনের সামনে দণ্ডায়মান হবে” – (সূরা মুতাফফিফীন ৬) আয়াতের বর্ণনা সম্পর্কে তিনি বলেনঃ লোকেরা (ক্বিয়ামাতের মায়দানে) সেদিন কানের লতিকা পর্যন্ত ঘামে ডুবন্ত অবস্থায় দণ্ডায়মান থাকবে।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম, এটি ২৪২২ নং হাদীসের পুনরুল্লেখ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩৩৬
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمْ : ( يومَ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ ) قَالَ ” يَقُومُ أَحَدُهُمْ فِي الرَّشْحِ إِلَى أَنْصَافِ أُذُنَيْهِ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“সকল মানুষ যেদিন বিশ্বপ্রভুর সম্মুখে দণ্ডায়মান থাকবে” – (সূরা মুতাফফিফীন ৬) আয়াত প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মানুষ তার কানের লতিকা পর্যন্ত ঘামে দণ্ডায়মান থাকবে।
সহীহঃ দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭৬
সূরা আল-ইনশিক্বাক্ব
৩৩৩৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ الأَسْوَدِ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” مَنْ نُوقِشَ الْحِسَابَ هَلَكَ ” . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَقُولَُ : (فأمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ ) إِلَى قَوْلِهِ : ( خبِيرًا ) قَالَ ” ذَلِكَ الْعَرْضُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আমি বলতে শুনেছিঃ ক্বিয়ামাতের দিন নিখুঁতভাবে যার হিসাব নেয়া হবে সে তো বিলিন হয়ে যাবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা’আলা তো বলেছেনঃ “যাকে তার আমল নামা ডান হাতে দেয়া হবে, তার হিসাব-নিকাশ অতি সহজেই হবে “-(সূরা আল-ইনশিক্বাক্ব ৭-৮)। তিনি বললেনঃ সে তো নামমাত্র হাযির করা।
সহীহঃ বুখারি ও মুসলিম, ২৪২৬ নং হাদীস পূর্বেও বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। সুয়াইদ ইবনু নাসর ‘আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক হতে, তিনি ‘উসমান ইবনু আস্ওয়াদ হতে, উক্ত সনদে অনুরূপ বর্ণিত করেছেন। মুহাম্মদ ইবনু আবান প্রমুখ-আবদুল ওয়াহ্হাব আস-সাক্বাফী হতে, তিনি আইয়ুব হতে, তিনি ইবনু আবী মুলাইকাহ্ হতে, তিনি আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে এই সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণান করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ حُوسِبَ عُذِّبَ ” . قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যার হিসাব নেয়া হবে সে তো আযাবপ্রাপ্ত হবে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু ক্বাতাদাহ্ সূত্রে আনাস (রাঃ) এর বরাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে এই সূত্রে হাদীসটি আবগত হয়েছি।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭৭
সূরা আল-বুরূজ
৩৩৩৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ مُوسَى بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ خَالِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْيَوْمُ الْمَوْعُودُ يَوْمُ الْقِيَامَةِ وَالْيَوْمُ الْمَشْهُودُ يَوْمُ عَرَفَةَ وَالشَّاهِدُ يَوْمُ الْجُمُعَةِ وَمَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ وَلاَ غَرَبَتْ عَلَى يَوْمٍ أَفْضَلَ مِنْهُ فِيهِ سَاعَةٌ لاَ يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُؤْمِنٌ يَدْعُو اللَّهَ بِخَيْرٍ إِلاَّ اسْتَجَابَ اللَّهُ لَهُ وَلاَ يَسْتَعِيذُ مِنْ شَرٍّ إِلاَّ أَعَاذَهُ اللَّهُ مِنْهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مُوسَى بْنِ عُبَيْدَةَ . وَمُوسَى بْنُ عُبَيْدَةَ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ وَغَيْرُهُ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “আল ইয়াউমুল মাও’ঊদ”- (সূরা বুরূজ ২) অর্থ-ক্বিয়ামাতের দিন; “আল-ইয়াউমুল মাশ্হুদ “-(সূরা হূদ ১০৩) অর্থ-‘আরাফাতে (উপস্থিতির) দিন এবং “আশ্-শাহিদ (সূরা বুরূজ ৩) অর্থ- জুমু’আর দিন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেনঃ যে সমস্ত দিন সূর্য উদিত হয় ও অস্ত যায় তার মাঝে জুমু’আর দিনের তুলনায় বেশি ভালো কোন দিন নেই। এ দিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে, ঠিক সে সময় কোন মু’মিন বান্দা আল্লাহ তা’আলার নিকট প্রার্থনা করলে তার প্রার্থনা তিনি ক্ববূল করেন এবং যে বস্তু (অনিষ্ট) হতে সে আশ্রয় প্রার্থনা করে তা হতে তিনি তাকে আশ্রয় দান করেন।
হাসানঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (হাঃ ১৩৬২), সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ১৫০২)
‘আলী ইবনু হুজর-কুররান ইবনু তাম্মাম আল-আসাদী হতে, তিনি মূসা ইবনু ‘উবাইদাহ্ র সনদে উপরোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন। মূসা ইবনু ‘উবাইদাহ্ আর-রাবাযীর উপনাম আবূ ‘আবদুল ‘আযীয। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ আল-কাত্তান প্রমুখ তার স্মরনশক্তির দুর্বলতার সমালোচলা করেছেন। অবশ্য শু’বাহ্, সুফ্ইয়ান আস্- সাওরী প্রমুখ ইমামগন মূসা ইবনু ‘উবাইদাহ্ হতে হাদীস হাদীস রিওয়ায়াত করেছেন।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
এ হাদীস কেবল মূসা ইবনু ‘উবাইদাহ্ র সনদেই আমরা অবগত হয়েছি। হাদীসশাস্ত্রে মূসা ইবনু ‘উবাইদাকে দুর্বল আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সা’ঈদ প্রমুখ তাকে তার স্মৃতিশক্তির দিক হতে কমজোড় বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩৩৪০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، – الْمَعْنَى وَاحِدٌ قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ صُهَيْبٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى الْعَصْرَ هَمَسَ – وَالْهَمْسُ فِي قَوْلِ بَعْضِهِمْ تَحَرُّكُ شَفَتَيْهِ كَأَنَّهُ يَتَكَلَّمُ فَقِيلَ لَهُ إِنَّكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِذَا صَلَّيْتَ الْعَصْرَ هَمَسْتَ قَالَ . ” إِنَّ نَبِيًّا مِنَ الأَنْبِيَاءِ كَانَ أُعْجِبَ بِأُمَّتِهِ فَقَالَ مَنْ يَقُولُ لِهَؤُلاَءِ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ أَنْ خَيِّرْهُمْ بَيْنَ أَنْ أَنْتَقِمَ مِنْهُمْ وَبَيْنَ أَنْ أُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوَّهُمْ فَاخْتَارَ النِّقْمَةَ فَسَلَّطَ عَلَيْهِمُ الْمَوْتَ فَمَاتَ مِنْهُمْ فِي يَوْمٍ سَبْعُونَ أَلْفًا ” . قَالَ وَكَانَ إِذَا حَدَّثَ بِهَذَا الْحَدِيثِ حَدَّثَ بِهَذَا الْحَدِيثِ الآخَرِ . قَالَ ” كَانَ مَلِكٌ مِنَ الْمُلُوكِ وَكَانَ لِذَلِكَ الْمَلِكِ كَاهِنٌ يَكْهَنُ لَهُ فَقَالَ الْكَاهِنُ انْظُرُوا لِيَ غُلاَمًا فَهِمًا أَوْ قَالَ فَطِنًا لَقِنًا فَأُعَلِّمُهُ عِلْمِي هَذَا فَإِنِّي أَخَافُ أَنْ أَمُوتَ فَيَنْقَطِعَ مِنْكُمْ هَذَا الْعِلْمُ وَلاَ يَكُونُ فِيكُمْ مَنْ يَعْلَمُهُ . قَالَ فَنَظَرُوا لَهُ عَلَى مَا وَصَفَ فَأَمَرَهُ أَنْ يَحْضُرَ ذَلِكَ الْكَاهِنَ وَأَنْ يَخْتَلِفَ إِلَيْهِ فَجَعَلَ يَخْتَلِفُ إِلَيْهِ وَكَانَ عَلَى طَرِيقِ الْغُلاَمِ رَاهِبٌ فِي صَوْمَعَةٍ ” . قَالَ مَعْمَرٌ أَحْسِبُ أَنَّ أَصْحَابَ الصَّوَامِعِ كَانُوا يَوْمَئِذٍ مُسْلِمِينَ قَالَ ” فَجَعَلَ الْغُلاَمُ يَسْأَلُ ذَلِكَ الرَّاهِبَ كُلَّمَا مَرَّ بِهِ فَلَمْ يَزَلْ بِهِ حَتَّى أَخْبَرَهُ فَقَالَ إِنَّمَا أَعْبُدُ اللَّهَ ” . قَالَ ” فَجَعَلَ الْغُلاَمُ يَمْكُثُ عِنْدَ الرَّاهِبِ وَيُبْطِئُ عَلَى الْكَاهِنِ فَأَرْسَلَ الْكَاهِنُ إِلَى أَهْلِ الْغُلاَمِ إِنَّهُ لاَ يَكَادُ يَحْضُرُنِي فَأَخْبَرَ الْغُلاَمُ الرَّاهِبَ بِذَلِكَ فَقَالَ لَهُ الرَّاهِبُ إِذَا قَالَ لَكَ الْكَاهِنُ أَيْنَ كُنْتَ فَقُلْ عِنْدَ أَهْلِي . وَإِذَا قَالَ لَكَ أَهْلُكَ أَيْنَ كُنْتَ فَأَخِبِرْهُمْ أَنَّكَ كُنْتَ عِنْدَ الْكَاهِنِ ” . قَالَ ” فَبَيْنَمَا الْغُلاَمُ عَلَى ذَلِكَ إِذْ مَرَّ بِجَمَاعَةٍ مِنَ النَّاسِ كَثِيرٍ قَدْ حَبَسَتْهُمْ دَابَّةٌ ” . فَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّ تِلْكَ الدَّابَّةَ كَانَتْ أَسَدًا قَالَ ” فَأَخَذَ الْغُلاَمُ حَجَرًا قَالَ اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ مَا يَقُولُ الرَّاهِبُ حَقًّا فَأَسْأَلُكَ أَنْ أَقْتُلَهَا . قَالَ ثُمَّ رَمَى فَقَتَلَ الدَّابَّةَ . فَقَالَ النَّاسُ مَنْ قَتَلَهَا قَالُوا الْغُلاَمُ فَفَزِعَ النَّاسُ وَقَالُوا لَقَدْ عَلِمَ هَذَا الْغُلاَمُ عِلْمًا لَمْ يَعْلَمْهُ أَحَدٌ . قَالَ فَسَمِعَ بِهِ أَعْمَى فَقَالَ لَهُ إِنْ أَنْتَ رَدَدْتَ بَصَرِي فَلَكَ كَذَا وَكَذَا . قَالَ لَهُ لاَ أُرِيدُ مِنْكَ هَذَا وَلَكِنْ أَرَأَيْتَ إِنْ رَجَعَ إِلَيْكَ بَصَرُكَ أَتُؤْمِنُ بِالَّذِي رَدَّهُ عَلَيْكَ قَالَ نَعَمْ . قَالَ فَدَعَا اللَّهَ فَرَدَّ عَلَيْهِ بَصَرَهُ فَآمَنَ الأَعْمَى فَبَلَغَ الْمَلِكَ أَمْرُهُمْ فَبَعَثَ إِلَيْهِمْ فَأُتِيَ بِهِمْ فَقَالَ لأَقْتُلَنَّ كُلَّ وَاحِدٍ مِنْكُمْ قِتْلَةً لاَ أَقْتُلُ بِهَا صَاحِبَهُ فَأَمَرَ بِالرَّاهِبِ وَالرَّجُلِ الَّذِي كَانَ أَعْمَى فَوَضَعَ الْمِنْشَارَ عَلَى مَفْرِقِ أَحَدِهِمَا فَقَتَلَهُ وَقَتَلَ الآخَرَ بِقِتْلَةٍ أُخْرَى . ثُمَّ أَمَرَ بِالْغُلاَمِ فَقَالَ انْطَلِقُوا بِهِ إِلَى جَبَلِ كَذَا وَكَذَا فَأَلْقُوهُ مِنْ رَأْسِهِ فَانْطَلَقُوا بِهِ إِلَى ذَلِكَ الْجَبَلِ فَلَمَّا انْتَهَوْا بِهِ إِلَى ذَلِكَ الْمَكَانِ الَّذِي أَرَادُوا أَنْ يُلْقُوهُ مِنْهُ جَعَلُوا يَتَهَافَتُونَ مِنْ ذَلِكَ الْجَبَلِ وَيَتَرَدَّوْنَ حَتَّى لَمْ يَبْقَ مِنْهُمْ إِلاَّ الْغُلاَمُ ” . قَالَ ” ثُمَّ رَجَعَ فَأَمَرَ بِهِ الْمَلِكُ أَنْ يَنْطَلِقُوا بِهِ إِلَى الْبَحْرِ فَيُلْقُونَهُ فِيهِ فَانْطُلِقَ بِهِ إِلَى الْبَحْرِ فَغَرَّقَ اللَّهُ الَّذِينَ كَانُوا مَعَهُ وَأَنْجَاهُ فَقَالَ الْغُلاَمُ لِلْمَلِكِ إِنَّكَ لاَ تَقْتُلُنِي حَتَّى تَصْلُبَنِي وَتَرْمِيَنِي وَتَقُولَ إِذَا رَمَيْتَنِي بِسْمِ اللَّهِ رَبِّ هَذَا الْغُلاَمِ . قَالَ فَأَمَرَ بِهِ فَصُلِبَ ثُمَّ رَمَاهُ فَقَالَ بِسْمِ اللَّهِ رَبِّ هَذَا الْغُلاَمِ . قَالَ فَوَضَعَ الْغُلاَمُ يَدَهُ عَلَى صُدْغِهِ حِينَ رُمِيَ ثُمَّ مَاتَ . فَقَالَ أُنَاسٌ لَقَدْ عَلِمَ هَذَا الْغُلاَمُ عِلْمًا مَا عَلِمَهُ أَحَدٌ فَإِنَّا نُؤْمِنُ بِرَبِّ هَذَا الْغُلاَمِ . قَالَ فَقِيلَ لِلْمَلِكِ أَجَزِعْتَ أَنْ خَالَفَكَ ثَلاَثَةٌ فَهَذَا الْعَالَمُ كُلُّهُمْ قَدْ خَالَفُوكَ . قَالَ فَخَدَّ أُخْدُودًا ثُمَّ أَلْقَى فِيهَا الْحَطَبَ وَالنَّارَ ثُمَّ جَمَعَ النَّاسَ فَقَالَ مَنْ رَجَعَ عَنْ دِينِهِ تَرَكْنَاهُ وَمَنْ لَمْ يَرْجِعْ أَلْقَيْنَاهُ فِي هَذِهِ النَّارِ فَجَعَلَ يُلْقِيهِمْ فِي تِلْكَ الأُخْدُودِ . قَالَ يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى : (قتِلَ أَصْحَابُ الأُخْدُودِ * النَّارِ ذَاتِ الْوَقُودِ ) حَتَّى بَلَغَ : (العَزِيزِ الْحَمِيدِ ) ” . قَالَ ” فَأَمَّا الْغُلاَمُ فَإِنَّهُ دُفِنَ ” . قَالَ فَيُذْكَرُ أَنَّهُ أُخْرِجَ فِي زَمَنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَأُصْبُعُهُ عَلَى صُدْغِهِ كَمَا وَضَعَهَا حِينَ قُتِلَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
সুহাইব ইবনু সিনান আর-রূমী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আসরের নামায আদায় করার পর নিঃশব্দে কিছু তিলাওয়াত করতেন। কারো মতে ‘হামস’ অর্থ ‘ঠোঁট নাড়ানো’। যেন তিনি কথা বলছেন। তাই তাঁকে প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! আসরের নামায আদায় করার পর আপনি ঠোঁট নেড়ে থাকেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তা’আলার একজন নবী তাঁর উম্মাতের (সংখ্যাধিক্যের) জন্য অধিক খুশী হন। তাই তিনি মনে মনে বলেন, কারা তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে! সে সময় আল্লাহ তা’আলা তাঁর নিকট ওয়াহী পাঠানঃ ‘তাদেরকে দু’টি বিষয়ের যে কোন একটি গ্রহণের এখতিয়ার দাওঃ হয় তাদের উপর আমি প্রতিশোধ নিব কিংবা শত্রুবাহিনীকে তাদের উপর আধিপত্য দান করব। তারা প্রতিশোধ নেয়াকে এখতিয়ার করল। অতঃপর তাদের উপর আল্লাহ তা’আলা মৃত্যু চাপিয়ে দিলেন, ফলে এক দিনেই তাদের সত্তর হাজার লোক মারা গেল।
সহীহঃ তাখরীজ আল-কালিমুত্ তাইয়্যিব (হাঃ ১২৫/৮৩)
বর্ণনাকারী বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ঘটনা উদ্বৃত করতেন সে সময় এর সঙ্গে তিনি আরো একটি ঘটনা বলতেন। তিনি বলেনঃ জনৈক বাদশার এক যাদুকর ছিল। বাদশাকে সে ভবিষ্যদ্বাণী শুনাত। যাদুকরটি লোকদেরকে বলল, আমাকে তোমরা একটি বুদ্ধিমান, সাবধানী ও ধিশক্তি সম্পন্ন বালক এনে দাও। আমি তাকে আমার জ্ঞান শিখিয়ে দিব। কারন আমার মনে হচ্ছে যে, আমি মারা গেলে আমার এ বিদ্যা হতে তোমরা বঞ্চিত হবে। তোমাদের মাঝে এই সম্পন্ন আর কেউ থাকবে না। তিনি বলেনঃ লোকেরা (যাদুকরের) কথামত একটি বুদ্ধিমান ছেলে খুঁজে বের করে এবং তাকে সেই যাদুকরের নিকট প্রত্যহ যাতায়াতের ও তার সাহচর্য লাভের আদেশ দেয়। ছেলেটি সেই যাদুকরের নিকট যাতায়াত করতে থাকে। ছেলেটির যাওয়া-আসার পথে একটি গীর্জায় এক পাদরী (রাহেব) অবস্থানরত ছিল। বর্ণনাকারী মা’মার বলেন, আমার বিশ্বাস সে সময় গীর্জার পাদরীগন তাওহীদের বিশ্বাসী মুসলমান ছিলেন। সে এ পাদরীর কাছ দিয়ে যাতায়াতকালে তার নিকট (দীন প্রসঙ্গে) প্রশ্ন করত। অবশেষে সে বলল, আমি আল্লাহ তা’আলার ইবাদত করি। তারপর পাদরীর নিকট ছেলেটি অবস্থান করতে শুরু করে এবং যাদুকরের নিকট বিলম্বে উপস্থিত হয়। যাদুকর ছেলের অভিভাবকে বলে পাঠায় যে আমার আশঙ্কা হয় সে আমার নিকট আসবে না। বালক পাদরীকে এ বিষয়টি অবহিত করলে তিনি তাকে বলেন, তুমি কোথায় ছিলে যাদুকর তোমাকে এ প্রশ্ন করলে তুমি বলবে, আমি বাড়ীতে ছিলাম। আর তোমাকে অভিভাবকরা প্রশ্ন করলে তুমি বলবে, আমি যাদুকরের নিকট ছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ এভাবে বেশ কিছু দিন বালকটির কেটে গেল। একদিন সে এক বিরাট সংখ্যক লোকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের পথে একটি হিংস্র জন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কেউ কেউ বললেন, ঐ জন্তুটি ছিল বাঘ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ বালকটি একটি পাথর তুলে নিয়ে বলে, হে আল্লাহ! পাদরী যা বলে তা যদি সত্য হয় তাহলে আমি আপনার নিকট চাই যে, এ জন্তুটিকে আমি হত্যা করি। এ কথা বলে সে পাথরটি ছুড়ে মারল এবং জন্তুটি হত্যা করল। লোকেরা বলল, জন্তুটি কে হত্যা করেছে? লোকেরা বলল, এ বালকটি। লোকেরা বিমর্ষ হয়ে বলল, এমন জ্ঞান সে আয়ত্ত করেছে যা আর কারো নিকটে নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ এক অন্ধ লোক এ ঘটনা শুনতে পেয়ে তাকে বলল, যদি তুমি আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পার তবে তোমাকে আমি এই এই পরিমান সম্পদ দিব। বালকটি তাকে বলল, তোমার নিকট আমি তা চাই না। তবে যদি তোমার দৃষ্টিশক্তি তুমি ফিরিয়ে পাও তাহলে যিনি তোমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিবে তাঁর উপর কি তুমি ইমান আনবে? অন্ধ বলল, হ্যাঁ। তারপর আল্লাহ তা’আলার নিকট ছেলেটি দু’আ করল এবং আল্লাহ তা’আলা তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলেন। অন্ধ ব্যক্তিও ইমান আনল।
বিষয়টি বাদশার কানে গিয়ে পৌঁছলে সে তাদের ডেকে পাঠায়। তার নিকট তাদেরকে হাযির করা হলে সে বলল, তোমাদের প্রত্যেককে আমি এক এক নতুন পন্থায় হত্যা করব যে পন্থায় তার সঙ্গীকে হত্যা করব না। সে পাদরী ও অন্ধ লোকটিকে হত্যার হুকুম দিল এবং সে অনুযায়ী এদের একজনের মাথার উপর করাত চালিয়ে হত্যা করা হয় এবং অন্যজনকে আরেকভাবে হত্যা করা হয়। তারপর বালকটি প্রসঙ্গে বাদশা বলল, একে ঐ পর্বতে নিয়ে যাও এবং তার চূড়া হতে তাকে ফেলে দাও। অতঃপর তারা তাকে নিয়ে সেই পর্বতে গেল। যখন তারা পাহাড়ের সেই নির্দিষ্ট জায়গা হতে তাকে ফেলে দিতে প্রস্তুত হল তখন একে একে তারা সকলে পড়ে মারা গেল এবং বালকটি ব্যতীত কেউই বাকি থাকল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ সে ফিরে এলে বাদশা তাকে নিয়ে নদীতে ডুবিয়ে মারার জন্য লোকদেরকে হুকুম দিল। তারপর তাকে নদীতে নিয়ে যাওয়া হল। আল্লাহ তা’আলা বালকটির সাথী সকলকে ডুবিয়ে হত্যা করলেন এবং তাকে বাঁচিয়ে রাখলেন। পরবর্তীতে ছেলেটিই বাদশাকে বলল, আমাকে তুমি হত্যা করতে পারবে না। তবে আমাকে তুমি শূলে চড়িয়ে “এ বালকের প্রতিপালকের নামে “বলে তীর নিক্ষেপ করলেই কেবল আমাকে হত্যা করতে পারবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন ঃতার কথামত বাদশা হুকুম দিল এবং অতঃপর তাকে শূলে চড়িয়ে “এই বালকের প্রতিপালকের নামে “বলে তীর নিক্ষেপ করল, ছেলেটি তার হাত তাঁর কান ও মাথার মাঝের জায়গায় স্থাপন করল এবং মারা গেল।
লোকেরা বলল, এমন জ্ঞান বালকটি লাভ করেছে যা আর কেউই লাভ করতে পারেনি। কাজেই এই বালকের প্রতিপালকের উপর আমরাও ঈমান আনলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ বাদশাকে বলা হল, আপনি তো তিন ব্যক্তির বিরোধিতায় ভয় পেয়ে গেলেন। এখন সারা দুনিয়াই তো আপনার বিরোধী হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ সে সময় বাদশা একটি সুদীর্ঘ র্গত খুঁড়ে তাতে কাঠ দিয়ে আগুন ধরায়, তারপর লোকদেরকে একসঙ্গে বলে, “যে তার র্ধম হতে ফিরে আসবে তাকে ছেড়ে দিব এবং যে র্ধম হতে না ফিরবে তাকে আমি এ আগুনে নিক্ষেপ করব”। ঈমানদার লোকদেরকে সে আগুনের গর্তে নিপতিত করতে লাগল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ এ প্রেক্ষিতেই আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, “গর্তের অধিপতিরা ধ্বংস হয়েছে,যে গর্তে আগুন প্রজ্জ্বলিত ছিল। যখন ওরা ঐ গর্তের পাশে বসা ছিল, আর ওরা ঈমানদারদের সঙ্গে যা করছিল তা প্রত্যক্ষ করছিল। তারা তাদেরকে যুলম করছিল কেবল এ কারণে যে, তারা মহাশক্তিমান ও প্রশংসিত আল্লাহ তা’আলার প্রতি ঈমান এনেছিল”- (সূরা বুরূজ ৪-৮)। বর্ণনাকারী বলেন, বালকটিকে দাফন করা হয়েছিল।
রাবী বলেন, উল্লেখিত আছে যে, ঐ বালকের লাশ ‘উমার (রাঃ)-এর খিলাফতকালে তোলা হয়েছিল। মারা যাওয়ার সময় তার হাত যেভাবে তার কান ও মাথার মধ্যবর্তী জায়গায় রাখা ছিল সেভাবেই তাকে পাওয়া যায়। সহীহঃ মুসলিম (৮/২২৯-২৩১)আয়াতের উল্লেখ ব্যতীত। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭৮
সূরা আল-গাশিয়াহ
৩৩৪১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَإِذَا قَالُوهَا عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّهَا وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ ” . ثُمَّ قَرَأَ : ( إنَّمَا أَنْتَ مُذَكِّرٌ * لَسْتَ عَلَيْهِمْ بِمُسَيْطِرٍ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আমি প্রেরিত হয়েছি যতক্ষণ না তারা “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ “(আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই) বলে। এ কথা তারা মনে-প্রাণে স্বীকার করে নিলে তাদের জান-মাল আমার হতে নিরাপদ করে নিল। কিন্তু ইসলামের বিধান (অপরাধের জন্য) প্রযোজ্য থাকবে। আর তাদের চূড়ান্ত হিসাব আল্লাহ তা’আলার উপর অর্পিত। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ আয়াত পাঠ করেনঃ (অনুবাদ) “আপনি তো একজন উপদেশদাতা মাত্র। আপনি তাদের কর্ম নিয়ন্ত্রক নন”- (সূরা গাশিয়াহ্ ২১-২২)।
সহীহ মুতাওয়াতিরঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ৭১)
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭৯
সূরা আল-ফাজর
৩৩৪২
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، وَأَبُو دَاوُدَ قَالاَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ عِصَامٍ، عَنْ رَجُلٍ، مِنْ أَهْلِ الْبَصْرَةِ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنِ الشَّفْعِ وَالْوَتْرِ فَقَالَ “ هِيَ الصَّلاَةُ بَعْضُهَا شَفْعٌ وَبَعْضُهَا وَتْرٌ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ قَتَادَةَ . وَقَدْ رَوَاهُ خَالِدُ بْنُ قَيْسٍ الْحُدَّانِيُّ عَنْ قَتَادَةَ أَيْضًا .
ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) “জোড় ও বেজোড়” (সূরাঃ আল- ফাজর-৩) প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসিত হয়ে বলেনঃ তা নামায, যার (রাক’আত সংখ্যা) কিছু জোড় এবং কিছু বেজোড়।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু কাতাদার রিওয়ায়াত হিসেবে এ হাদীস জেনেছি। খালিন ইবনু কাইসও কাতাদা হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮০
সূরা শামস্
৩৩৪৩
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَمْعَةَ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا يَذْكُرُ النَّاقَةَ وَالَّذِي عَقَرَهَا فَقَالَ ”ِ : (إذ انْبَعَثَ أَشْقَاهَا ) انْبَعَثَ لَهَا رَجُلٌ عَارِمٌ عَزِيزٌ مَنِيعٌ فِي رَهْطِهِ مِثْلُ أَبِي زَمْعَةَ ” . ثُمَّ سَمِعْتُهُ يَذْكُرُ النِّسَاءَ فَقَالَ ” إِلاَمَ يَعْمِدُ أَحَدُكُمْ فَيَجْلِدُ امْرَأَتَهُ جَلْدَ الْعَبْدِ وَلَعَلَّهُ أَنْ يُضَاجِعَهَا مِنْ آخِرِ يَوْمِهِ ” . قَالَ ثُمَّ وَعَظَهُمْ فِي ضَحِكِهِمْ مِنَ الضَّرْطَةِ فَقَالَ ” إِلاَمَ يَضْحَكُ أَحَدُكُمْ مِمَّا يَفْعَلُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু যাম’আহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (সামূদ জাতির প্রতি প্রেরিত) উষ্ট্রী ও তার হত্যাকারী প্রসঙ্গে কথোকথন করতে শুনেছি। তিনি পাঠ করেনঃ “এদের মাঝে যে সবচেয়ে হতভাগ্য সে যখন তৎপর হল “-(সূরা আশ্-শামস্ ১২)। তারপর তিনি বলেনঃ উষ্ট্রীকে খুন করতে সেই জাতির সর্বাধিক শক্তিশালী, নিষ্ঠুর, বিদ্রোহী ও দুর্ভাগা লোক উঠেছিল, সে আবূ যাম’আহ্‘র মত প্রভাবশালী ও শক্তিধর ছিল। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি মহিলাদের প্রসঙ্গেও তাঁকে আলোচনা করতে শুনলাম। তিনি বলেনঃ এমন লোকও তোমাদের মাঝে আছে যে তার সহধর্মিনীকে দাসীর ন্যায় চাবুক মারে কিন্তু আবার ঐ দিন শেষে রাতের বেলা তার সঙ্গে মিলিত হয়। এটা কতই না মন্দ ও জঘন্য বিষয়! অতঃপর বায়ু নিঃসরন করে হাসি দেয়া প্রসঙ্গে উপদেশ প্রদান পূর্বক তিনি বলেনঃ নিজেই যে কাজ করে সে কাজে তোমাদের কারো কি হাসা উচিত?
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ১৯৮৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮১
সূরা আল-লাইল
৩৩৪৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ بْنُ قُدَامَةَ، عَنْ مَنْصُورِ بْنِ الْمُعْتَمِرِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ عَلِيٍّ، رضى الله عنه قَالَ كُنَّا فِي جَنَازَةٍ فِي الْبَقِيعِ فَأَتَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَجَلَسَ وَجَلَسْنَا مَعَهُ وَمَعَهُ عُودٌ يَنْكُتُ بِهِ فِي الأَرْضِ فَرَفَعَ رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ فَقَالَ ” مَا مِنْ نَفْسٍ مَنْفُوسَةٍ إِلاَّ قَدْ كُتِبَ مَدْخَلُهَا ” . فَقَالَ الْقَوْمُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَإِنَّهُ يَعْمَلُ لِلسَّعَادَةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الشَّقَاءِ فَإِنَّهُ يَعْمَلُ لِلشَّقَاءِ قَالَ ” بَلِ اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ أَمَّا مَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَإِنَّهُ يُيَسَّرُ لِعَمَلِ السَّعَادَةِ وَأَمَّا مَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الشَّقَاءِ فَإِنَّهُ يُيَسَّرُ لِعَمَلِ الشَّقَاءِ ” . ثُمَّ قَرَأَ : (فأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى * وَصَدَّقَ بِالْحُسْنَى * فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْيُسْرَى * وَأَمَّا مَنْ بَخِلَ وَاسْتَغْنَى * وَكَذَّبَ بِالْحُسْنَى * فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرَى ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাক্বী’তে একটি জানাযার আমার হাযির ছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও এসে বসলেন এবং তাঁর সঙ্গে আমরাও বসলাম। তাঁর সঙ্গে একটি কাঠ ছিল যা দিয়ে তিনি যমীন খুঁড়ছিলেন। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মাথা তুলে বলেনঃ কোন সৃষ্টিই এরূপ নেই যার বাসস্থান লিখিত হয়নি। লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তবে আমাদের সেই লেখার উপর আমরা কি নির্ভর করব না? যে আমাদের মাঝে ভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত সে তো সৌভাগ্যসুলভ কাজই করবে, আর যে হতভাগ্যদের দলভুক্ত সে তো দুর্ভাগ্যের কর্মই করবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ বরং তোমরা ‘আমাল করতে থাক। কারণ যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে সেটাই তার জন্য সহজসুলভ করে দেয়া হয়েছে। যে লোক ভাগ্যবানদের দলভুক্ত তার জন্য সৌভাগ্যসুলভ ‘আমালই সহজতর করা হয়েছে এবং যে লোক হতভাগ্যদের দলভুক্ত তার জন্য দুর্ভাগ্যজনক কাজই সহজতর করা হয়েছে। অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করেনঃ “সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা ভাল তা সঠিক মনে করে গ্রহণ করলে তার জন্য আমি সুগম করে দিব সহজ পথ। আর কেউ কৃপণতা করলে ও নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, আর যা ভাল তা অস্বীকার করলে আমি তার জন্য সুগম করে দিব কঠোর পথ “-(সূরা লাইল ৫-১০)
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম, ২১৩৬ নং হাদীস পূর্বে সংক্ষেপে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮২
সূরা আয্-যুহা
৩৩৪৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ جُنْدَبٍ الْبَجَلِيِّ، قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي غَارٍ فَدَمِيَتْ أُصْبُعُهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” هَلْ أَنْتِ إِلاَّ إِصْبَعٌ دَمِيتِ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا لَقِيتِ ” . قَالَ وَأَبْطَأَ عَلَيْهِ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ فَقَالَ الْمُشْرِكُونَ قَدْ وُدِّعَ مُحَمَّدٌ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى : ( ما وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَى ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ شُعْبَةُ وَالثَّوْرِيُّ عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ .
জুনদাব আল-বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে আমি এক গুহার মাঝে ছিলাম। সে সময় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আঙ্গুল হতে রক্তক্ষরণ হলে তিনি বলেনঃ তুই একটি আঙ্গুল মাত্র। তোর মাঝ হতে রক্ত বের হল। যা তোর উপর দিয়ে ঘটল তা আল্লাহ তা’আলার রাস্তাই। বর্ণনাকারী বলেন, জিবরীল (‘আঃ) কিছু দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট না এলে মুশরিকরা বলল, মুহাম্মাদ পরিত্যক্ত হয়েছে। সে সময় আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেনঃ “তোমার প্রভু তোমাকে ত্যাগও করেননি বা তোমার প্রতি নাখোশও হননি “- (সূরা আয্-যুহা ৩)।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীস শু’বাহ্ ও সাওরী (রহঃ)আল-আসওয়াদ ইবনু ক্বাইস হতে রিওয়ায়াত করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮৩
সূরা ইন্-শিরাহ
৩৩৪৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، وَابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ، رَجُلٌ مِنْ قَوْمِهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” بَيْنَمَا أَنَا عِنْدَ الْبَيْتِ بَيْنَ النَّائِمِ وَالْيَقْظَانِ إِذْ سَمِعْتُ قَائِلاً يَقُولُ أَحَدٌ بَيْنَ الثَّلاَثَةِ فَأُتِيتُ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ فِيهَا مَاءُ زَمْزَمَ فَشَرَحَ صَدْرِي إِلَى كَذَا وَكَذَا ” . قَالَ قَتَادَةُ قُلْتُ يَعْنِي قُلْتُ لأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ مَا يَعْنِي قَالَ ” إِلَى أَسْفَلِ بَطْنِي فَاسْتُخْرِجَ قَلْبِي فَغُسِلَ قَلْبِي بِمَاءِ زَمْزَمَ ثُمَّ أُعِيدَ مَكَانَهُ ثُمَّ حُشِيَ إِيمَانًا وَحِكْمَةً ” . وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ طَوِيلَةٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ هِشَامٌ الدَّسْتَوَائِيُّ وَهَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ . وَفِيهِ عَنْ أَبِي ذَرٍّ .
মালিক ইবনু সা’সা’আহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ একদিন বাইতুল্লাহর নিকট আমি ঘুম ঘুম ভাব অবস্থায় অবস্থানরত ছিলাম। এমন সময় আমি এক বক্তাকে বলতে শুনলামঃ তিনজনের মধ্যে একজন। তারপর একখানা সোনার পেয়ালা আমার নিকট আনা হল যার মাঝে যমযমের পানি ছিল। তারপর আমার বক্ষদেশ তারা এই এই পর্যন্ত উন্মুক্ত বা বিদীর্ণ করে। ক্বাতাদাহ্ (রহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে বললাম, কোন পর্যন্ত? তিনি বললেনঃ (তিনি বলেছেন) আমার পেটের নিম্নদেশ পর্যন্ত। অতঃপর আমার অন্তঃকরণ বের করে যমযমের পানি দ্বারা ধুয়ে আবার স্ব-স্থানে স্থাপন করা হয়। এরপর তা ঈমান ও হিকমত দ্বারা পরিপূর্ণ করা হয়। হাদীসে সুদীর্ঘ ঘটনা বিদ্যমান।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮৪
সূরা আত-তীন
৩৩৪৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أُمَيَّةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَجُلاً، بَدَوِيًّا أَعْرَابِيًّا يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَرْوِيهِ يَقُولُ مَنْ قَرَأَ : (والتِّينِ وَالزَّيْتُونِ ) فَقَرَأ : ( ألََيْسَ اللَّهُ بِأَحْكَمِ الْحَاكِمِينَ ) فَلْيَقُلْ بَلَى وَأَنَا عَلَى ذَلِكَ مِنَ الشَّاهِدِينَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ إِنَّمَا يُرْوَى بِهَذَا الإِسْنَادِ عَنْ هَذَا الأَعْرَابِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَلاَ يُسَمَّى .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে ব্যক্তি সূরা ওয়াত-তীন ওয়ায–যাইতুন পাঠ করে সে যেন “ আলাইসাল্লাহু বিআহ্কামিল হাকীমিন” (আল্লাহ তা’আলা কি সকল বিচারকের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিচারক নন) পাঠের পর বলেঃ “বালা ওয়া আনা আলা যালিকা মিনাশ-শাহিদীন (হ্যাঁ, অবশ্যই আমিও এ কথার সাক্ষ্যদানকারীদের অন্তর্ভুক্ত)।
যঈফ, যঈফ আবূ দাউদ (১৫৬)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি যে আরব বিদুইন আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন তার নাম পরিচিত।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮৫
সূরা আল-‘আলাক্ব
৩৩৪৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ الْجَزَرِيِّ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما : ( سنَدْعُ الزَّبَانِيَةَ ) قَالَ قَالَ أَبُو جَهْلٍ لَئِنْ رَأَيْتُ مُحَمَّدًا يُصَلِّي لأَطَأَنَّ عَلَى عُنُقِهِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” لَوْ فَعَلَ لأَخَذَتْهُ الْمَلاَئِكَةُ عِيَانًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“আমিও শাস্তি প্রদানকারী ফেরেশতাদের আহ্বান করব “-(সূরা ‘আলাক্ব ১৮) আয়াতের বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আবূ জাহল বলল, যদি মুহাম্মদকে আমি নামাযরত অবস্থায় পাই তবে তার ঘাড় পদদলিত করব। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যদি তাই করতে সে প্রস্তুত হত তাহলে ফেরেশতারা তখনই তাকে আটক করত।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯৫৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩৪৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فَجَاءَ أَبُو جَهْلٍ فَقَالَ أَلَمْ أَنْهَكَ عَنْ هَذَا أَلَمْ أَنْهَكَ عَنْ هَذَا أَلَمْ أَنْهَكَ عَنْ هَذَا فَانْصَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَزَبَرَهُ فَقَالَ أَبُو جَهْلٍ إِنَّكَ لَتَعْلَمُ مَا بِهَا نَادٍ أَكْثَرُ مِنِّي فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( فلْيَدْعُ نَادِيَهُ * سَنَدْعُ الزَّبَانِيَةَ ) فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَوَاللَّهِ لَوْ دَعَا نَادِيَهُ لأَخَذَتْهُ زَبَانِيَةُ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ . وَفِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায আদায় করছিলেন। আবূ জাহল তখন এসে বলল, আমি কি তোমাকে এ কাজ করতে বারণ করিনি, আমি তোমাকে এ কাজ করতে কি বারণ করিনি, আমি তোমাকে এ কাজ করতে কি বারণ করিনি? নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায সমাপ্ত করে তাকে ভর্ৎসনা করলেন। আবূ জাহল বলল, তুমি নিশ্চয়ই জান যে, মক্কায় আমার তুলনায় বেশি সংখ্যক সমর্থক আর কারো নেই (আমার ডাকে যত লোক সাড়া দেয় তত লোক আর কারো ডাকে সাড়া দেয় না)। সে সময় আল্লাহ তা’আলা অবর্তীণ করেনঃ “সে তার সহযোগীদের ডাকুক। আমি ডাকব জাহান্নামের প্রহরীদের “-(সূরা ‘আলাক্ব ১৭-১৮)। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‘র শপথ! যদি আবূ জাহল তার সহযোগীদের ডাকত, তাহলে আল্লাহ তা’আলার প্রহরীগণ (ফেরেশতাগন) তাকে অবশ্যই গ্রেপ্তার করত।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান, সহীহ গারীব। এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮৬
সূরা আল-ক্বাদর
৩৩৫০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ الْفَضْلِ الْحُدَّانِيُّ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ قَامَ رَجُلٌ إِلَى الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ بَعْدَ مَا بَايَعَ مُعَاوِيَةَ فَقَالَ سَوَّدْتَ وُجُوهَ الْمُؤْمِنِينَ . أَوْ يَا مُسَوِّدَ وُجُوهِ الْمُؤْمِنِينَ . فَقَالَ لاَ تُؤَنِّبْنِي رَحِمَكَ اللَّهُ فَإِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أُرِيَ بَنِي أُمَيَّةَ عَلَى مِنْبَرِهِ فَسَاءَهُ ذَلِكَ فَنَزَلَتْ : ( إنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ ) يَا مُحَمَّدُ يَعْنِي نَهْرًا فِي الْجَنَّةِ وَنَزَلَتْ : ( إنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ * وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ * لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ ) يَمْلِكُهَا بَعْدَكَ بَنُو أُمَيَّةَ يَا مُحَمَّدُ . قَالَ الْقَاسِمُ فَعَدَدْنَاهَا فَإِذَا هِيَ أَلْفُ شَهْرٍ لاَ يَزِيدُ يَوْمٌ وَلاَ يَنْقُصُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ الْقَاسِمِ بْنِ الْفَضْلِ . وَقَدْ قِيلَ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ الْفَضْلِ عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَازِنٍ . وَالْقَاسِمُ بْنُ الْفَضْلِ الْحُدَّانِيُّ هُوَ ثِقَةٌ وَثَّقَهُ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ وَيُوسُفُ بْنُ سَعْدٍ رَجُلٌ مَجْهُولٌ وَلاَ نَعْرِفُ هَذَا الْحَدِيثَ عَلَى هَذَا اللَّفْظِ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
ইউসুফ ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন হাসান (রাঃ) মুআবিয়া (রাঃ)-এর নিকট বাই’আত গ্রহণের পর তাঁর সামনে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলেনঃ আপনি (মুআবিয়ার নিকট বায়’আত গ্রহণ করে) মু’মিনদের চেহারা কলঙ্কিত করেছেন। এতে তিনি বললেনঃ তুমি আমাকে অভিযুক্ত করো না। আল্লাহ তা’আলা তোমার প্রতি রাহমাত করুন। যেহেতু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (স্বপ্নে) উমাইয়্যা বংশীয়দেরকে তাঁর মিম্বারের উপর দেখানো হয়েছে। বিষয়টি তাঁর নিকট খারাপ লাগে। তখন অবতীর্ণ হয়ঃ “আমি অবশ্যই তোমাকে কাওসার (ঝরণা) দান করেছি” (সূরাঃ আল-কাওসার-১) অর্থাৎ হে মুহাম্মাদ! আমি জান্নাতে তোমাকে কাওসার নামক ঝরণা দান করেছি। আরো অবতীর্ণ হয়ঃ “নিশ্চয় আমি এ কুরআন মহিমান্বিত রাতে অবতীর্ণ করেছি। আর মহিমান্বিত রাত প্রসঙ্গে আপনি কি জানেন? মহিমান্বিত রাত হাজার মাস হতেও উত্তম” (সূরাঃ আল-ক্বাদর-১-৩)। হে মুহাম্মাদ! আপনার পরে বানী উমাইয়্যা অত মাস শাসন করবে। কাসিম (রহঃ) বলেনঃ আমরা গণনা করে দেখেছি বানী উমাইয়্যাদের শাসনকাল ছিল পূর্ণ ‘এক হাজার মাস’,এর এক দিন কম বা বেশি নয়।
সনদ দুর্বল ও অস্থির, মতন মুনকার
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু কাসিম ইব্নুল ফাযলের হাদীস হিসেবে এটি জেনেছি। কথিত আছে যে, কাসিম ইবনুল ফাযল (রহঃ) ইউসুফ ইবনু মাযিনের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।কাসিম ইবনুল ফাযল আল-হুদ্দানী সিকাহ রাবী। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ ও আব্দুর রহমান ইবনু মাহ্দী তাকে বিশ্বাসযোগ্য বলেছেন। ইউসুফ ইবনু সা’দ অপরিচিত ব্যক্তি, আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রেই একই রকম শব্দে এ হাদীস বর্ণিত পেয়েছি।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
৩৩৫১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدَةَ بْنِ أَبِي لُبَابَةَ، وَعَاصِمٍ، هُوَ ابْنُ بَهْدَلَةَ سَمِعَا زِرَّ بْنَ حُبَيْشٍ، وَزِرُّ بْنُ حُبَيْشٍ يُكْنَى أَبَا مَرْيَمَ يَقُولُ قُلْتُ لأُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ إِنَّ أَخَاكَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ يَقُولُ مَنْ يَقُمِ الْحَوْلَ يُصِبْ لَيْلَةَ الْقَدْرِ فَقَالَ يَغْفِرُ اللَّهُ لأَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ لَقَدْ عَلِمَ أَنَّهَا فِي الْعَشَرَةِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ وَأَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ وَلَكِنَّهُ أَرَادَ أَنْ لاَ يَتَّكِلَ النَّاسُ ثُمَّ حَلَفَ لاَ يَسْتَثْنِي أَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ . قُلْتُ لَهُ بِأَىِّ شَيْءٍ تَقُولُ ذَلِكَ يَا أَبَا الْمُنْذِرِ قَالَ بِالآيَةِ الَّتِي أَخْبَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَوْ بِالْعَلاَمَةِ أَنَّ الشَّمْسَ تَطْلُعُ يَوْمَئِذٍ لاَ شُعَاعَ لَهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ عَنْ عَاصِمِ بْنِ بَهْدَلَةَ قَالَ كَانَ أَبُو وَائِلٍ شَقِيقُ بْنُ سَلَمَةَ لاَ يَتَكَلَّمُ مَا دَامَ زِرُّ بْنُ حُبَيْشٍ جَالِسًا . قَالَ عَاصِمُ بْنُ بَهْدَلَةَ وَكَانَ زِرُّ بْنُ حُبَيْشٍ رَجُلاً فَصِيحًا وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ يَسْأَلُهُ عَنِ الْعَرَبِيَّةِ . حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ مِهْرَانَ الْكُوفِيُّ حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ عَنْ عَاصِمِ بْنِ بَهْدَلَةَ قَالَ مَرَّ رَجُلٌ عَلَى زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ وَهُوَ يُؤَذِّنُ فَقَالَ يَا أَبَا مَرْيَمَ أَتُؤَذِّنُ إِنِّي لأَرْغَبُ بِكَ عَنِ الأَذَانِ . فَقَالَ زِرٌّ أَتَرْغَبُ عَنِ الأَذَانِ وَاللَّهِ لاَ أُكَلِّمُكَ أَبَدًا .
যির ইবনু হুবাইশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) কে বললাম, আপনার ভাই ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, সারা বছর যে লোক রাত জেগে ‘ইবাদত করবে সে ক্বাদরের রাত লাভ করবে। উবাই (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূ ‘আবদুর রহমানকে মাফ করুন! নিশ্চয়ই তিনি জানেন যে, ক্বাদরের রাত রমাযানের শেষ দশ দিনে এবং তা সাতাশে রামাযানের রাতেই তবু তার এ কথা বলার লক্ষ্য হল লোকেরা যেন (সাতাশ তারিখের) নির্ভর করে বসে না থাকে। তারপর কোন প্রকার ব্যতিক্রম না করেই উবাই (রাঃ) ক্বসম করে বলেন, সাতাশের রাত ক্বাদরের রাত। বর্ণনাককারী বলেন, আমি বললাম, হে আবুল মুনযির! এ কথা আপনি কিসের পরিপ্রক্ষিতে বলছেন? তিনি বললেন, সেই আলামত বা নিদর্শনের প্রেক্ষিতে যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে জানিয়েছেন। তা হলঃ ঐ দিন সকালে সূর্য এরূপভাবে উদিত হয় যে, তার মাঝে প্রখর রশ্মি থাকে না।
হাসান সহীহঃ ৭৮৬ নং হাদীসেও পূর্বে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮৭
সূরা বাইয়্যিনাহ্
৩৩৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَجُلٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَا خَيْرَ الْبَرِيَّةِ . قَالَ “ ذَلِكَ إِبْرَاهِيمُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এক লোক ইয়া খাইরাল বারিয়্যাহ্ (হে সৃষ্টির সেরা) বলে ডাকলে তিনি বললেনঃ সৃষ্টির সেরা হলেন ইবরাহীম (‘আঃ)।
সহীহঃ মুসলিম (হাঃ ৭/৯৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮৮
সূরা ইযা যুলযিলাত (আয-যিল্যাল)
৩৩৫৩
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَذِهِ الآيَةَ : ( يوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا ) قَالَ ” أَتَدْرُونَ مَا أَخْبَارُهَا ” . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ ” فَإِنَّ أَخْبَارَهَا أَنْ تَشْهَدَ عَلَى كُلِّ عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ بِمَا عَمِلَ عَلَى ظَهْرِهَا تَقُولُ عَمِلَ يَوْمَ كَذَا كَذَا وَكَذَا فَهَذِهِ أَخْبَارُهَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “সেই দিন দুনিয়া তার যাবতীয় সংবাদ ব্যক্ত করবে” (সূরাঃ আল-যিলযাল-৪)। তিনি বললেনঃ তোমরা কি জান দুনিয়ার সংবাদ কি? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই বেশি জানেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার সংবাদ হল-তার বুকে প্রত্যেক নর-নারী যা কিছু করেছে সে তার সাক্ষ্য দিবে। সে (দুনিয়া) বলবে, সে তো অমুক অমুক দিন এই এই কাজ করেছে। এটাই হল যমীনের সংবাদ।
সনদ দুর্বল, ২৫৪৬ নং হাদীসে পূর্বে বর্ণিত হয়েছে
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান, সহীহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮৯
সূরা আত্-তাকাসুর
৩৩৫৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الشِّخِّيرِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ انْتَهَى إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَقْرَأُ ( أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ ) قَالَ ” يَقُولُ ابْنُ آدَمَ مَالِي مَالِي وَهَلْ لَكَ مِنْ مَالِكَ إِلاَّ مَا تَصَدَّقْتَ فَأَمْضَيْتَ أَوْ أَكَلْتَ فَأَفْنَيْتَ أَوْ لَبِسْتَ فَأَبْلَيْتَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
মুতাররিফ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনুশ শিখ্খীর (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলেন। তিনি তখন (সূরা তাকাসুর) “তোমাদেরকে সম্পদের প্রাচুর্যের মোহ আল্লাহ তা’আলা হতে উদাসীন করে ফেলেছে “-(সূরা তাকাসুর ১) পাঠ করছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আদম সন্তান বলে, আমার মাল; আমার সম্পত্তি। কিন্তু যে জিনিস তুমি দান-খাইরাত করেছ (আল্লাহ তা’আলার খাতায়) তা জমা রেখেছ, যা খেয়ে শেষ করেছ কিংবা যা পরিধান করে পুরাতন করেছ, এগুলো ব্যতীত তোমার সম্পদ বলতে কিছু নেই।
সহীহঃ মুসলিম, ২৩২৯ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩৫৫
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا حَكَّامُ بْنُ سَلْمٍ الرَّازِيُّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي قَيْسٍ، عَنِ الْحَجَّاجِ، عَنِ الْمِنْهَالِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ، عَنْ عَلِيٍّ، رضى الله عنه قَالَ مَا زِلْنَا نَشُكُّ فِي عَذَابِ الْقَبْرِ حَتَّى نَزَلَتْْ : (ألهَاكُمُ التَّكَاثُرُ ) قَالَ أَبُو كُرَيْبٍ مَرَّةً عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي قَيْسٍ هُوَ رَازِيٌّ وَعَمْرُو بْنُ قَيْسٍ الْمُلاَئِيُّ كُوفِيٌّ عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى عَنِ الْمِنْهَالِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমরা কবরের আযাব প্রসঙ্গে সংশয়ে ছিলাম। সেই প্রেক্ষাপটে সূরা আলহাকুমুত-তাকাসুর অবতীর্ণ হয়।
সনদ দুর্বল
আবূ কুরাইব কখনো আমর ইবনু আবূ কাইস হতে তিনি ইবনু আবী লাইলা হতে তিনি আল-মিনহাল হতে তিনি এভাবে বর্ণনা করেছেন। আমর ইবনু আবূ কাইস হলেন আর-রাযী এবং আমর ইবনু আবূ কাইস আল-মালাঈ হলেন কূফার বাসিন্দা। আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৩৫৬
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَلْقَمَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حَاطِبٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتَّْ : (ثم لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيمِ، ) قَالَ الزُّبَيْرُ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَأَىُّ النَّعِيمِ نُسْأَلُ عَنْهُ وَإِنَّمَا هُمَا الأَسْوَدَانِ التَّمْرُ وَالْمَاءُ . قَالَ ” أَمَا إِنَّهُ سَيَكُونُ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর ইবনুল ‘আওওয়াম (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন অবতীর্ণ হলঃ “তারপর তোমাদেরকে সেদিন অবশ্যই নি’আমাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে”-(সূরা তাকাসুর ৮) সে সময় যুবাইর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‘র রাসূল! আমাদেরকে কোন্ নি’আমাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে? আমাদের নিকট তো শুধুমাত্র দু’ধরনের জিনিস রয়েছে; খেজুর ও পানি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে (সম্পত্তি) তো অদূর ভবিষ্যতে অর্জিত হবে।
হাদীসটির সানাদ হাসান।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩৩৫৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : (ثمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيمِ ) قَالَ النَّاسُ يَا رَسُولَ اللَّهِ عَنْ أَىِّ النَّعِيمِ نُسْأَلُ وَإِنَّمَا هُمَا الأَسْوَدَانِ وَالْعَدُوُّ حَاضِرٌ وَسُيُوفُنَا عَلَى عَوَاتِقِنَا . قَالَ ” إِنَّ ذَلِكَ سَيَكُونُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ ابْنِ عُيَيْنَةَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو عِنْدِي أَصَحُّ مِنْ هَذَا . سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ أَحْفَظُ وَأَصَحُّ حَدِيثًا مِنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন “তারপর তোমাদেরকে সেদিন নি‘আমাত সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে”- (সূরা তাকাসুর ৮) আয়াত অবতীর্ণ হয় সে সময় লোকেরা বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদেরকে কোন্ সমস্ত নি‘আমাত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হবে? আমাদের নিকট তো শুধু দু’টি কালো জিনিস (খেজুর ও পানি) রয়েছে; আর সর্বদা দুশমন প্রস্তুত রয়েছে এবং আমাদের তরবারিগুলো আমাদের কাঁধে ঝুলন্ত রয়েছে? তিনি বললেনঃ এটা অদূর ভবিষ্যতে হবে।
পূর্বের হাদীসের সহায়তায় এটি হাসান।
আবূ ‘ঈসা (রহঃ) বলেন, এ হাদীসের চাইতে মুহাম্মাদ ইবনু ‘আম্রের সূত্রে ইবনু ‘উয়াইনাহ্ (রহঃ) বর্ণিত হাদীসটি আমার দৃষ্টিতে বেশি বিশুদ্ধ। সুফ্ইয়ান ইবনু ‘উয়াইনাহ্ (রহঃ) আবূ বাক্র ইবনু আইয়্যাশের চেয়ে বেশি স্মরণশক্তি সম্পন্ন ও অনেক বিশুদ্ধ।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩৩৫৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْعَلاَءِ، عَنِ الضَّحَّاكِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَرْزَمٍ الأَشْعَرِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ أَوَّلَ مَا يُسْأَلُ عَنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَعْنِي الْعَبْدَ مِنَ النَّعِيمِ أَنْ يُقَالَ لَهُ أَلَمْ نُصِحَّ لَكَ جِسْمَكَ وَنُرْوِيكَ مِنَ الْمَاءِ الْبَارِدِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَالضَّحَّاكُ هُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَرْزَبٍ وَيُقَالُ ابْنُ عَرْزَمٍ وَابْنُ عَرْزَمٍ أَصَحُّ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন বান্দার নিকট সর্বপ্রথম যে নি‘আমাত প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সে প্রসঙ্গে তাকে বলা হবে, আমি তোমার শরীর কি সুস্থ রাখিনি এবং সুশীতল পানির মাধ্যমে তোমাকে তৃপ্ত করিনি?
সহীহঃ সহীহাহ্ (হাঃ ৫৩৯) মিশকাত (৫১৯৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি গারীব। আয্-যাহ্হাক হলেন ইবনু ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আরযাব। ইবনু ‘আরযাব-কে ইবনু ‘আরযামও বলা হয়, আর ইবনু ‘আরযামই অনেক বেশী সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৯০
সূরা আল-কাওসার
৩৩৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ : ( إناَّ، أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ ) أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” هُوَ نَهْرٌ فِي الْجَنَّةِ ” . قَالَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” رَأَيْتُ نَهْرًا فِي الْجَنَّةِ حَافَتَاهُ قِبَابُ اللُّؤْلُؤِ قُلْتُ مَا هَذَا يَا جِبْرِيلُ قَالَ هَذَا الْكَوْثَرُ الَّذِي قَدْ أَعْطَاكَهُ اللَّهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“অবশ্যই আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি”- (সূরা কাওসার ১) আয়াত প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কাওসার হল জান্নাতের একটি ঝর্ণা। বর্ণনাকারী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেনঃ জান্নাতে আমি এমন একটি প্রস্রবণ দেখলাম যার প্রত্যেক তীরে মুক্তার তাঁবু খাটানো রয়েছে। আমি বললামঃ হে জিবরীল! এটা কি? তিনি বললেনঃ এটা সেই “কাওসারঃ আল্লাহ তা‘আলা যা আপনাকে দান করেছেন।
-সহিহ, বুখারী (হাঃ ৪৯৬৪)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩৬০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ بَيْنَا أَنَا أَسِيرُ فِي الْجَنَّةِ إِذْ عَرَضَ لِي نَهْرٌ حَافَّتَاهُ قِبَابُ اللُّؤْلُؤِ . قُلْتُ لِلْمَلَكِ مَا هَذَا قَالَ هَذَا الْكَوْثَرُ الَّذِي أَعْطَاكَهُ اللَّهُ قَالَ ثُمَّ ضَرَبَ بِيَدِهِ إِلَى طِينَةٍ فَاسْتَخْرَجَ مِسْكًا ثُمَّ رُفِعَتْ لِي سِدْرَةُ الْمُنْتَهَى فَرَأَيْتُ عِنْدَهَا نُورًا عَظِيمًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَنَسٍ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (মিরাজের রাতে) যখন আমি জান্নাতের মাঝে ভ্রমণ করতে করতে এক নহরের সম্মুখে পৌঁছে গেলাম, যার প্রত্যেক তীরে মুক্তার তাঁবু খাটানো রয়েছে, ফেরেশতাকে আমি প্রশ্ন করলাম, এটা কি? তিনি বললেন, এটা সেই কাওসার যা আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে দান করেছেন। অতঃপর জিবরীল তার হাত দিয়ে এর মাটি তোলেন। তা ছিল কস্তুরী। অতঃপর আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় তোলা হয়। তার নিকট আমি একটা বিরাটকায় নূর প্রত্যক্ষ করলাম।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৬৫৮১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীস আনাস (রাঃ) হতে একাধিকভাবে বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩৬১
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْكَوْثَرُ نَهْرٌ فِي الْجَنَّةِ حَافَّتَاهُ مِنْ ذَهَبٍ وَمَجْرَاهُ عَلَى الدُّرِّ وَالْيَاقُوتِ تُرْبَتُهُ أَطْيَبُ مِنَ الْمِسْكِ وَمَاؤُهُ أَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ وَأَبْيَضُ مِنَ الثَّلْجِ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতের একটি প্রস্রবণের নাম কাওসার, যার প্রত্যেক তীর সোনার এবং যার পানি মুক্তা ও ইয়াকূতের উপর দিয়ে প্রবাহমান। এর যমীন কস্তুরীর তুলনায় অধিক সুগন্ধসম্পন্ন, এর পানি মধুর তুলনায় অধিক মিষ্ট এবং বরফের তুলনায় অধিক সাদা।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (হাঃ ৪৩৩৪)
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৯১
সূরা আন্-নাস্র
৩৩৬২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما قَالَ كَانَ عُمَرُ يَسْأَلُنِي مَعَ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ أَتَسْأَلُهُ وَلَنَا بَنُونَ مِثْلُهُ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ إِنَّهُ مِنْ حَيْثُ تَعْلَمُ فَسَأَلَهُ عَنْ هَذِهِ الآيَةِ : ( إذا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ ) فَقُلْتُ إِنَّمَا هُوَ أَجَلُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَعْلَمَهُ إِيَّاهُ وَقَرَأَ السُّورَةَ إِلَى آخِرِهَا فَقَالَ لَهُ عُمَرُ وَاللَّهِ مَا أَعْلَمُ مِنْهَا إِلاَّ مَا تَعْلَمُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের উপস্থিতিতে ‘উমার (রাঃ) আমার নিকট অনেক বিষয় প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেন। তাকে ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) বলেন, আপনি তার নিকট প্রশ্ন করেন, অথচ আমাদেরও তার ন্যায় সন্তান-সন্ততি আছে। রাবী বলেন, ‘উমার (রাঃ) তাকে বললেন, তার নিকট প্রশ্ন করার কারণ আপনি জানেন। তারপর তিনি তাকে “যখন আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য ও বিজয় আসবে”- (সূরা নাস্র ১) এ আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন। আমি বললাম, এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর ইন্তিকালের খবর যে বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে অবগত করেছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত সূরাটি তিলাওয়াত করলেন। তারপর ‘উমার (রাঃ) তাকে বলেন, আল্লাহর শপথ! এর যে ব্যাখ্যা আপনি জানেন আমিও তাই জানি।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯৬৯, ৪৯৭০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ। এ সনদে মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার-মুহাম্মাদ ইবনু জা‘ফার হতে, তিনি শু‘বাহ্ হতে, তিনি আবূ বিশ্র (রহঃ) হতে উপরের হাদীসের একই রকশ বর্ণনা করেছেন। তবে এ বর্ণনায় বর্ণনাকারী বলেন, তারপর ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) তাকে বলেন, আপনি এ ছেলের নিকট মাসআলাহ্ প্রশ্ন করেছেন, অথচ আমাদেরও এমন ছেলে রয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৯২
সূরা লাহাব
৩৩৬৩
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، وَأَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ صَعِدَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ عَلَى الصَّفَا فَنَادَى ” يَا صَبَاحَاهُ ” . فَاجْتَمَعَتْ إِلَيْهِ قُرَيْشٌ فَقَالَ ” إِنِّي نَذِيرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَىْ عَذَابٍ شَدِيدٍ أَرَأَيْتُمْ لَوْ أَنِّي أَخْبَرْتُكُمْ أَنَّ الْعَدُوَّ مُمَسِّيكُمْ أَوْ مُصَبِّحُكُمْ أَكُنْتُمْ تُصَدِّقُونِي ” . فَقَالَ أَبُو لَهَبٍ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا تَبًّا لَكَ . فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( تبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন সাফা পাহাড়ের উপর উঠে “ইয়া সাবাহা” (হে ভোরের বিপদ) বলে উচ্চকণ্ঠে ডাকলেন। ফলে কুরাইশ গোত্রের লোকেরা তাঁর নিকট একত্রিত হয়। তিনি বললেনঃ তোমাদেরকে আমি এক কঠিন শাস্তির ভয় দেখাচ্ছি। তোমাদের কি মত, যদি আমি তোমাদেরকে বলি যে, সকাল বা সন্ধ্যায় শত্রু বাহিনী তোমাদেরকে আক্রমণ করার জন্য আসছে, তাহলে আমাকে কি তোমরা বিশ্বাস করবে? সে সময় আবূ লাহাব বলল, তোমার ধ্বংস হোক! এজন্য কি তুমি আমাদেরকে একত্রিত করেছ? সে সময় আল্লাহ তা‘আলা “তাব্বাত ইয়াদা আবী লাহাব” সূরা অবতীর্ণ করেন।
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯৭১, ৪৯৭২), মুসলিম (হাঃ ১/১৩৪)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৯৩
সূরা আল-ইখলাস
৩৩৬৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو سَعْدٍ، هُوَ الصَّغَانِيُّ عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ الرَّازِيِّ، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، أَنَّ الْمُشْرِكِينَ، قَالُوا لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم انْسُبْ لَنَا رَبَّكَ . فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( قلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ * اللَّهُ الصَّمَدُ ) فَالصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ لأَنَّهُ لَيْسَ شَيْءٌ يُولَدُ إِلاَّ سَيَمُوتُ وَلَيْسَ شَيْءٌ يَمُوتُ إِلاَّ سَيُورَثُ وَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لاَ يَمُوتُ وَلاَ يُورَثُ : ( لَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ ) قَالَ ” لَمْ يَكُنْ لَهُ شَبِيهٌ وَلاَ عِدْلٌ وَلَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ ” .
উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মুশরিকরা রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, আমাদেরকে আপনার প্রভুর বংশ বৃত্তান্ত দিন। এরই জবাবে মহান আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেনঃ কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুস্ সামাদ (“আপনি বলুন, তিনিই আল্লাহ” যিনি এক ও অদ্বিতীয়। আল্লাহ তা‘আলা কারো মুখাপেক্ষী নন)। আর সামাদ (অমুখাপেক্ষী) তিনিই, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। কেননা যে কারো ঔরসজাত হবে সে মারা যাবে এবং তার উত্তরাধিকারীও হবে। অথচ আল্লাহ তা‘আলা মৃত্যুবরণ করবেন না এবং তাঁর উত্তরাধিকারীও কেউ নেই। “এবং তার সমান কেউ নেই।” রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাঁর কোন সদৃশ ও সমকক্ষ নেই। “কোন কিছুই তার সদৃশ নয়।” (সূরা শুরা ১)
“আর সামাদ তিনিই” অংশ বাদে হাদীসটি হাসান, যিলালুল জান্নাহ।” (তাহক্বীক্ব সানী (হাঃ ৬৬৩)
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩৩৬৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ الرَّازِيِّ، عَنِ الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ذَكَرَ آلِهَتَهُمْ فَقَالُوا انْسُبْ لَنَا رَبَّكَ . قَالَ فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ بِهَذِهِ السُّورَةِ : ( قلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ) . فَذَكَرَ نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي سَعْدٍ وَأَبُو سَعْدٍ اسْمُهُ مُحَمَّدُ بْنُ مُيَسَّرٍ وَأَبُو جَعْفَرٍ الرَّازِيُّ اسْمُهُ عِيسَى وَأَبُو الْعَالِيَةِ اسْمُهُ رُفَيْعٌ وَكَانَ عَبْدًا أَعْتَقَتْهُ امْرَأَةٌ صَابِئَةٌ .
আবুল আলিয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুশরিকদের দেবতাদের প্রসঙ্গে আলোচনা করলে তারা বললঃ আপনি আপনার প্রভুর বংশধারা আমাদেরকে জানিয়ে দিন। তখন জিবরাঈল (আঃ) কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ সূরাটি নিয়ে আসেন…… উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ। এ সনদে উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-এর উল্লেখ নেই।
দুর্বল, প্রাগুক্ত
সূত্রটি আবূ সা’দের সনদ হতে বিশুদ্ধতর। আর আবূ সা’দের নাম মুহাম্মাদ ইবনু মুইয়াস্সার। আবূ জা’ফর-এর নাম ঈসা, আবুল আ’লিয়াহ্-এর নাম রুফাই। তিনি ক্রীতদাস ছিলেন, একজন সাবিয়াহ মহিলা তাঁকে মুক্ত করেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৯৪
৯৪ সূরা ফালাক্ব ও নাস (আস-মুআওবিযাতাইন)
৩৩৬৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو الْعَقَدِيُّ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَظَرَ إِلَى الْقَمَرِ فَقَالَ “ يَا عَائِشَةُ اسْتَعِيذِي بِاللَّهِ مِنْ شَرِّ هَذَا فَإِنَّ هَذَا الْغَاسِقُ إِذَا وَقَبَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ হে ‘আয়িশাহ্! আল্লাহ তা‘আলার নিকট এর ক্ষতি হতে আশ্রয় প্রার্থনা কর। কেননা এটাই হল গাসিক (অন্ধকার) যখন তা গাঢ় হয়।
হাসান সহীহঃ সহীহ হাদীস সিরিজ (হাঃ ৩৭২), মিশকাত (হাঃ ২৪৭৫)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৩৩৬৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، حَدَّثَنِي قَيْسٌ، وَهُوَ ابْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ الْجُهَنِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” قَدْ أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَىَّ آيَاتٍ لَمْ يُرَ مِثْلُهُنَّ : ( قلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ) إِلَى آخِرِ السُّورَةِ وَ : (قلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ ) إِلَى آخِرِ السُّورَةِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
উক্ববাহ্ ইবনু ‘আমির আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমার উপর আল্লাহ তা‘আলা এমন কিছু সংখ্যক আয়াত অবতীর্ণ করেছেন যার মত আর কখনও দেখা যায় না। তা হলঃ “কুল আ‘ঊযু বিরাব্বিন নাস” ও “কুল আ‘ঊযু বিরাব্বিল ফালাক্ব” সূরাদ্বয়।
সহীহঃ ২৯০২ নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৯৫
[আদাম (‘আঃ)-এর বয়সের কিছু অংশ দাঊদ (‘আঃ)-কে প্রদান]
৩৩৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا الْحَارِثُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي ذُبَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ وَنَفَخَ فِيهِ الرُّوحَ عَطَسَ فَقَالَ الْحَمْدُ لِلَّهِ فَحَمِدَ اللَّهَ بِإِذْنِهِ فَقَالَ لَهُ رَبُّهُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ يَا آدَمُ اذْهَبْ إِلَى أُولَئِكَ الْمَلاَئِكَةِ إِلَى مَلإٍ مِنْهُمْ جُلُوسٍ فَقُلِ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ . قَالُوا وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ . ثُمَّ رَجَعَ إِلَى رَبِّهِ فَقَالَ إِنَّ هَذِهِ تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ بَنِيكَ بَيْنَهُمْ . فَقَالَ اللَّهُ لَهُ وَيَدَاهُ مَقْبُوضَتَانِ اخْتَرْ أَيَّهُمَا شِئْتَ قَالَ اخْتَرْتُ يَمِينَ رَبِّي وَكِلْتَا يَدَىْ رَبِّي يَمِينٌ مُبَارَكَةٌ . ثُمَّ بَسَطَهَا فَإِذَا فِيهَا آدَمُ وَذُرِّيَّتُهُ فَقَالَ أَىْ رَبِّ مَا هَؤُلاَءِ فَقَالَ هَؤُلاَءِ ذُرِّيَّتُكَ فَإِذَا كُلُّ إِنْسَانٍ مَكْتُوبٌ عُمْرُهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ فَإِذَا فِيهِمْ رَجُلٌ أَضْوَؤُهُمْ أَوْ مِنْ أَضْوَئِهِمْ . قَالَ يَا رَبِّ مَنْ هَذَا قَالَ هَذَا ابْنُكَ دَاوُدُ قَدْ كَتَبْتُ لَهُ عُمْرَ أَرْبَعِينَ سَنَةً . قَالَ يَا رَبِّ زِدْهُ فِي عُمْرِهِ . قَالَ ذَاكَ الَّذِي كَتَبْتُ لَهُ . قَالَ أَىْ رَبِّ فَإِنِّي قَدْ جَعَلْتُ لَهُ مِنْ عُمْرِي سِتِّينَ سَنَةً قَالَ أَنْتَ وَذَاكَ . قَالَ ثُمَّ أُسْكِنَ الْجَنَّةَ مَا شَاءَ اللَّهُ ثُمَّ أُهْبِطَ مِنْهَا فَكَانَ آدَمُ يَعُدُّ لِنَفْسِهِ . قَالَ فَأَتَاهُ مَلَكُ الْمَوْتِ فَقَالَ لَهُ آدَمُ قَدْ عَجِلْتَ قَدْ كُتِبَ لِي أَلْفُ سَنَةٍ . قَالَ بَلَى وَلَكِنَّكَ جَعَلْتَ لاِبْنِكَ دَاوُدَ سِتِّينَ سَنَةً فَجَحَدَ فَجَحَدَتْ ذُرِّيَّتُهُ وَنَسِيَ فَنَسِيَتْ ذُرِّيَّتُهُ . قَالَ فَمِنْ يَوْمِئِذٍ أُمِرَ بِالْكِتَابِ وَالشُّهُودِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ رِوَايَةِ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তা‘আলা আদম (‘আঃ)-কে সৃষ্টি করে তাঁর মাঝে রূহ (আত্মা) সঞ্চার করেন সে সময় তাঁর হাঁচি আসে এবং তিনি ‘আলহামদু লিল্লাহ’ বলেন। তিনি আল্লাহ তা‘আলার অনুমতি নিয়েই তাঁর প্রশংসা করেন। তারপর তাঁর উদ্দেশে আল্লাহ তা‘আলা “ইয়ারহামুকাল্লাহ” (তোমার উপর আল্লাহ তা‘আলায় সদয় হোন) বলেন এবং আরো বলেনঃ হে আদম! তুমি ঐসব ফেরেশতার নিকট যাও যারা সমবেত অবস্থায় ওখানে বসে আছে। অতঃপর তিনি গিয়ে ‘আস-সালামু আলাইকুম’ বললেন। ফেরেশতাগণ জবাবে ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ’ বললেন। তারপর তিনি তাঁর প্রভুর নিকট এলে তিনি বললেনঃ এটাই তোমার ও তোমার সন্তানদের পারস্পরিক অভিবাদন। এবার আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দু’টি হাত মুষ্টিবদ্ধ করে তাঁকে বললেনঃ দু’টি হাতের মাঝে যেটি ইচ্ছা বেছে নাও। তিনি বললেনঃ আমার রবের ডান হাত আমি বেছে নিলাম। আর আমার রবের প্রত্যেক হাতই ডান হাত এবং বারাকাতময়, অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মুষ্টিবদ্ধ হাত খুললে দেখা গেল যে, তাতে আদম (‘আঃ) এবং তাঁর সন্তানরা রয়েছে। আদম (‘আঃ) বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা! এরা কারা? আল্লাহ তা‘আলা বললেনঃ এরা তোমার বংশধর। তাদের সকলের দুই চক্ষুর মধ্যখানে তাদের আয়ুষ্কাল লেখা ছিল। তাদের মাঝে একজন অত্যুজ্জ্বল চেহারার ছিল। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! কে এই লোক? তিনি বলেনঃ সে তোমার সন্তান দাঊদ (‘আঃ)। আমি তার চল্লিশ বছর বয়স নির্ধারণ করেছি। আদম (‘আঃ) বললেনঃ হে আল্লাহ! তার আয়ুষ্কাল আপনি আরো বাড়িয়ে দিন। তিনি বললেনঃ আমি তার আয়ুষ্কাল এটাই নির্ধারণ করেছি। আদম (‘আঃ) বললেনঃ হে প্রভু! আমার আয়ুষ্কাল হতে ষাট বছর আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। আল্লাহ তা‘আলা বললেনঃ এটা তার প্রতি তোমার বদান্যতা। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা যত দিন চাইলেন তিনি জান্নাতে থাকলেন, তারপর তাঁকে সেখান হতে (পৃথিবীতে) নামানো হল। আদম (‘আঃ) নিজের বয়সের গণনা করতে থাকলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আদম (‘আঃ)-এর নিকট মালাকুল মাউত (মুত্যুদূত) এসে হাযির হলে তিনি তাকে বললেনঃ আমার জন্য ধার্যকৃত বয়স তো হাজার বছর, যথাসময়ের আগেই তুমি এসেছ। মৃত্যুদূত বললেন, হ্যাঁ, তবে আপনি আপনার বয়স হতে ষাট বছর আপনার বংশধর দাঊদ (‘আঃ)-কে দান করেছেন। আদম (‘আঃ) তা (ভুলে গিয়ে) অস্বীকার করলেন। এজন্য তার সন্তানরাও অস্বীকার করে থাকে। আর তিনি ভুলে গিয়েছিলেন তার তার সন্তানরাও ভুলে যায়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সেদিন হতেই লিখে রাখা ও সাক্ষী রাখার হুকুম দেয়া হয়।
হাসান সহীহঃ মিশকাত (হাঃ ৪৬৬২), যিলালুল জান্নাহ (হাঃ ২০৪-২০৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সূত্রে হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীস আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর বরাতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অন্যসূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আর ঐ সূত্রে যাইদ ইবনু আসলাম আবূ সালিহ হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এভাবে উল্লেখ আছে।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৩৩৬৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا الْعَوَّامُ بْنُ حَوْشَبٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ الأَرْضَ جَعَلَتْ تَمِيدُ فَخَلَقَ الْجِبَالَ فَعَادَ بِهَا عَلَيْهَا فَاسْتَقَرَّتْ فَعَجِبَتِ الْمَلاَئِكَةُ مِنْ شِدَّةِ الْجِبَالِ قَالُوا يَا رَبِّ هَلْ مِنْ خَلْقِكَ شَيْءٌ أَشَدُّ مِنَ الْجِبَالِ قَالَ نَعَمِ الْحَدِيدُ . قَالُوا يَا رَبِّ فَهَلْ مِنْ خَلْقِكَ شَيْءٌ أَشَدُّ مِنَ الْحَدِيدِ قَالَ نَعَمِ النَّارُ . فَقَالُوا يَا رَبِّ فَهَلْ مِنْ خَلْقِكَ شَيْءٌ أَشَدُّ مِنَ النَّارِ قَالَ نَعَمِ الْمَاءُ . قَالُوا يَا رَبِّ فَهَلْ مِنْ خَلْقِكَ شَيْءٌ أَشَدُّ مِنَ الْمَاءِ قَالَ نَعَمْ الرِّيحُ قَالُوا يَا رَبِّ فَهَلْ مِنْ خَلْقِكَ شَيْءٌ أَشَدُّ مِنَ الرِّيحِ قَالَ نَعَمِ ابْنُ آدَمَ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ بِيَمِينِهِ يُخْفِيهَا مِنْ شِمَالِهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা যখন দুনিয়া সৃষ্টি করেন তখন তা দুলতে থাকে। তাই তিনি পর্বতমালা সৃষ্টি করে তাকে দুনিয়ার উপর স্থাপন করেন। ফলে দুনিয়া শান্ত হয়। পর্বতমালার শক্ত কাঠামোতে ফেরেশতাগণ বিস্মিত হয়ে বলেনঃ হে প্রতিপালক! আপনার সৃষ্টির মধ্যে পর্বতমালা হতেও কঠিন কোন কিছু আছে কি? আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ হ্যাঁ, লোহা। তাঁরা বললেনঃ হে রব! আপনার সৃষ্টির মধ্যে লোহা হতেও শক্ত ও মজবুত কোন কিছু আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, আগুন।তারা বললেনঃ হে প্রতিপালক! “আগুন হতেও আপনার সৃষ্টির মধ্যে শক্তিমান ও কঠিন অন্য কিছু আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, পানি। তাঁরা বললেনঃ প্রভু হে! আপনার সৃষ্টির মধ্যে পানি হতেও শক্তিশালী কিছু আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, বায়ু। অবশেষে ফেরেশতাগণ বললেনঃ হে প্রতিপালক! বায়ু হতেও বেশি কঠিন ও শক্তিশালী আপনার সৃষ্টির মধ্যে কিছু আছে কি? আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ হ্যাঁ, সেই আদম সন্তান, যে ডান হাতে দান-খাইরাত করলে তার বাম হাতের কাছে অজানা থাকে।
যইফ, মিশকাত (১৯২৩), তা’লীকুর রাগীব (২/৩১)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রে এ হাদীস মারফু হিসেবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস