মুসলিম জিহাদ ও এর নীতিমালা অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ৪৪১১ – ৪৫০০
১. অধ্যায়ঃ
যে সকল কাফিরদের কাছে ইসলামের দা’ওয়াত পৌঁছেছে, তাদের বিরুদ্ধে পূর্ব ঘোষণা ব্যতীত যুদ্ধের বৈধতা
৪৪১১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، حَدَّثَنَا سُلَيْمُ بْنُ أَخْضَرَ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، قَالَ كَتَبْتُ إِلَى نَافِعٍ أَسْأَلُهُ عَنِ الدُّعَاءِ، قَبْلَ الْقِتَالِ قَالَ فَكَتَبَ إِلَىَّ إِنَّمَا كَانَ ذَلِكَ فِي أَوَّلِ الإِسْلاَمِ قَدْ أَغَارَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى بَنِي الْمُصْطَلِقِ وَهُمْ غَارُّونَ وَأَنْعَامُهُمْ تُسْقَى عَلَى الْمَاءِ فَقَتَلَ مُقَاتِلَتَهُمْ وَسَبَى سَبْيَهُمْ وَأَصَابَ يَوْمَئِذٍ – قَالَ يَحْيَى أَحْسِبُهُ قَالَ – جُوَيْرِيَةَ – أَوْ قَالَ الْبَتَّةَ – ابْنَةَ الْحَارِثِ وَحَدَّثَنِي هَذَا الْحَدِيثَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ وَكَانَ فِي ذَاكَ الْجَيْشِ
ইবনে ‘আওন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাফি’ (রহঃ) -কে এ কথা জানতে চেয়ে পত্র লিখলাম যে, যুদ্ধের পূর্বে বিধর্মীদের প্রতি দ্বীনের দা‘ওয়াত দেয়া প্রয়োজন কি-না? ইবনু ‘আওন বলেন, তখন তিনি আমাকে লিখলেন যে, এ (প্রথা) ইসলামের প্রারম্ভিক যুগে ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বানূ মুসতালিকের উপর অতর্কিত আক্রমণ করলেন এমন অবস্থায় যে, তাদের পশুদের পানি পান করানো হচ্ছিল। তিনি তাদের যোদ্ধাদের হত্যা করলেন এবং বাকীদের বন্দী করলেন। আর সেদিনেই তাঁর হস্তগত হয়েছিল- ইয়াহইয়া বলেন যে, আমার মনে হয় তিনি বলেছেন – ‘জুওয়াইরিয়াহ্’ কিংবা নিশ্চিতরূপে বলেছেন ‘হারিসের কন্যা’। বর্ণনাকারী বলেন, এ হাদীস আমাকে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। তিনি তখন সে সেনাদলের মধ্যে ছিলেন। (ই.ফা. ৪৩৭০, ই.সে. ৪৩৭০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪১২
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَهُ وَقَالَ جُوَيْرِيَةَ بِنْتَ الْحَارِثِ . وَلَمْ يَشُكَّ .
ইবনু ‘আওন (রহঃ) হতে এ একই সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
উল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি জুওয়াইরিয়াহ্ বিনতু হারিস এর নাম উল্লেখ করেছেন তাতে সন্দেহ পোষণ করেননি। (ই.ফা. ৪৩৭১, ই.সে. ৪৩৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২. অধ্যায়ঃ
খলীফা কর্তৃক সেনাদলের জন্য আমীর নির্বাচিত করা এবং যুদ্ধের নিয়ম-নীতি ও বিভিন্ন নির্দেশিকা সম্পর্কে তাদের উপদেশ প্রদান করা।
৪৪১৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعُ بْنُ الْجَرَّاحِ، عَنْ سُفْيَانَ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ أَمْلاَهُ عَلَيْنَا إِمْلاَءً
সুফইয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সুফইয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন যে, হাদীসটি আমাদের সামনে লিখিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪১৪
وَحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ هَاشِمٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ، – يَعْنِي ابْنَ مَهْدِيٍّ – حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَمَّرَ أَمِيرًا عَلَى جَيْشٍ أَوْ سَرِيَّةٍ أَوْصَاهُ فِي خَاصَّتِهِ بِتَقْوَى اللَّهِ وَمَنْ مَعَهُ مِنَ الْمُسْلِمِينَ خَيْرًا ثُمَّ قَالَ “ اغْزُوا بِاسْمِ اللَّهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ قَاتِلُوا مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ اغْزُوا وَ لاَ تَغُلُّوا وَلاَ تَغْدِرُوا وَلاَ تَمْثُلُوا وَلاَ تَقْتُلُوا وَلِيدًا وَإِذَا لَقِيتَ عَدُوَّكَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ فَادْعُهُمْ إِلَى ثَلاَثِ خِصَالٍ – أَوْ خِلاَلٍ – فَأَيَّتُهُنَّ مَا أَجَابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَكُفَّ عَنْهُمْ ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى الإِسْلاَمِ فَإِنْ أَجَابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَكُفَّ عَنْهُمْ ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى التَّحَوُّلِ مِنْ دَارِهِمْ إِلَى دَارِ الْمُهَاجِرِينَ وَأَخْبِرْهُمْ أَنَّهُمْ إِنْ فَعَلُوا ذَلِكَ فَلَهُمْ مَا لِلْمُهَاجِرِينَ وَعَلَيْهِمْ مَا عَلَى الْمُهَاجِرِينَ فَإِنْ أَبَوْا أَنْ يَتَحَوَّلُوا مِنْهَا فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّهُمْ يَكُونُونَ كَأَعْرَابِ الْمُسْلِمِينَ يَجْرِي عَلَيْهِمْ حُكْمُ اللَّهِ الَّذِي يَجْرِي عَلَى الْمُؤْمِنِينَ وَلاَ يَكُونُ لَهُمْ فِي الْغَنِيمَةِ وَالْفَىْءِ شَىْءٌ إِلاَّ أَنْ يُجَاهِدُوا مَعَ الْمُسْلِمِينَ فَإِنْ هُمْ أَبَوْا فَسَلْهُمُ الْجِزْيَةَ فَإِنْ هُمْ أَجَابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَكُفَّ عَنْهُمْ فَإِنْ هُمْ أَبَوْا فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ وَقَاتِلْهُمْ . وَإِذَا حَاصَرْتَ أَهْلَ حِصْنٍ فَأَرَادُوكَ أَنْ تَجْعَلَ لَهُمْ ذِمَّةَ اللَّهِ وَذِمَّةَ نَبِيِّهِ فَلاَ تَجْعَلْ لَهُمْ ذِمَّةَ اللَّهِ وَلاَ ذِمَّةَ نَبِيِّهِ وَلَكِنِ اجْعَلْ لَهُمْ ذِمَّتَكَ وَذِمَّةَ أَصْحَابِكَ فَإِنَّكُمْ أَنْ تُخْفِرُوا ذِمَمَكُمْ وَذِمَمَ أَصْحَابِكُمْ أَهْوَنُ مِنْ أَنْ تُخْفِرُوا ذِمَّةَ اللَّهِ وَذِمَّةَ رَسُولِهِ . وَإِذَا حَاصَرْتَ أَهْلَ حِصْنٍ فَأَرَادُوكَ أَنْ تُنْزِلَهُمْ عَلَى حُكْمِ اللَّهِ فَلاَ تُنْزِلْهُمْ عَلَى حُكْمِ اللَّهِ وَلَكِنْ أَنْزِلْهُمْ عَلَى حُكْمِكَ فَإِنَّكَ لاَ تَدْرِي أَتُصِيبُ حُكْمَ اللَّهِ فِيهِمْ أَمْ لاَ ” . قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ هَذَا أَوْ نَحْوَهُ وَزَادَ إِسْحَاقُ فِي آخِرِ حَدِيثِهِ عَنْ يَحْيَى بْنِ آدَمَ قَالَ فَذَكَرْتُ هَذَا الْحَدِيثَ لِمُقَاتِلِ بْنِ حَيَّانَ – قَالَ يَحْيَى يَعْنِي أَنَّ عَلْقَمَةَ يَقُولُهُ لاِبْنِ حَيَّانَ – فَقَالَ حَدَّثَنِي مُسْلِمُ بْنُ هَيْصَمٍ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ مُقَرِّنٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
সুলাইমান ইবনু বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন কোন সেনাবাহিনী কিংবা সেনাদলের উপর আমীর নিযুক্ত করতেন তখন বিশেষতঃ তাকে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে চলার উপদেশ দিতেন এবং তাঁর সঙ্গী মুসলিমদের প্রতি আদেশ করতেন তারা যেন ভালভাবে চলে। আর (বিদায়লগ্নে) বলতেন, যুদ্ধ করো আল্লাহর নামে, আল্লাহর পথে। লড়াই করো তাদের বিরুদ্ধে যারা আল্লাহর সঙ্গে কুফরী করেছে। যুদ্ধ চালিয়ে যাও, তবে গনীমাতের মালের খিয়ানত করবে না, চু্ক্তি ভঙ্গ করবে না, শত্রু পক্ষের অঙ্গ বিকৃতি সাধন করবে না। শিশুদেরকে হত্যা করবে না। যখন তুমি মুশরিক শত্রুর সম্মুখীন হবে, তখন তাকে তিনটি বিষয় বা আচরণের প্রতি আহবান জানাবে। তারা এগুলোর মধ্য থেকে যেটিই গ্রহণ করে, তুমি তাদের পক্ষে থেকে তা মেনে নিবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে সরে দাঁড়াবে। প্রথমে তাদের ইসলামের দিকে দাওয়াত দিবে। যদি তারা তোমার এ আহ্বানে সাড়া দেয়, তবে তুমি তাদের পক্ষ থেকে তা মেনে নিবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা থেকে সরে দাঁড়াবে। এরপর তুমি তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে মুহাজিরদের এলাকায় (মাদীনায়) চলে যাওয়ার আহ্বান জানাবে। এবং তাদের জানিয়ে দিবে যে, যদি তারা তা কার্যকরী করে, তবে মুহাজিরদের জন্য যেসব উপকার ও দায়-দায়িত্ব রয়েছে, তা তাদের উপর কার্যকরী হবে। আর যদি তারা বাড়ি-ঘর ছেড়ে যেতে অস্বীকার করে, তবে তাদের জানিয়ে দেবে যে, তারা সাধারণ বেদুঈন মুসলিমদের মত গণ্য হবে। তাদের উপর আল্লাহর সে বিধান কার্যকরী হবে, যা মু’মিনদের উপর কার্যকরী হয় এবং তারা গনীমাত ও ফাই [৩২] থেকে কিছুই পাবে না। অবশ্য মুসলিমদের সঙ্গে শামিল হয়ে যুদ্ধ করলে তার অংশীদার হবে। আর যদি ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করে , তাদের কাছে ‘জিযয়াহ’ প্রদানের দাবী জানাবে। যদি তারা তা গ্রহণ করে নেয়, তবে তুমি তাদের পক্ষ থেকে তা মেনে নিবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকবে। আর যদি তারা এ দাবী না মানে তবে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে। আর যদি তুমি কোন দুর্গবাসীকে অবরোধ করো এবং তারা যদি তোমার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের যিম্মাদারী চায়, তবে তুমি তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রসূলের যিম্মাদারী মেনে নিবে না। বরং তাদেরকে তোমার এবং তোমার সাথীদের যিম্মাদারীতে রাখবে। কেননা তারা যদি তোমার ও তোমার সাথীদের যিম্মাদার ভঙ্গ করে, তবে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের যিম্মাদারী ভঙ্গের চাইতে কম গুরুতর। আর যদি তোমরা কোন দুর্গের অধিবাসীদের অবরোধ করো, তখন যদি তারা তোমাদের কাছে আল্লাহর নির্দেশ মুতাবিক নেমে আসতে চায়, তবে তোমরা তাদেরকে আল্লাহর হুকুমের উপর নেমে আসতে দিবে না, বরং তুমি তাদেরকে তোমার সিদ্ধান্তের উপর নেমে আসতে দেবে। কেননা তোমার জানা নেই যে, তুমি তাদের মাঝে আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়িত করতে পারবে কি-না?
‘আবদুর রহমান (রহঃ) এ হাদীস কিংবা এ হাদীসের অনুরূপ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইসহাক্ (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসের শেষাংশে ইয়াহইয়া ইবনু আদম (রহঃ) সূত্রে কিছু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি এ হাদীসটি মুকাতিল ইবনু হাইয়্যান (রহঃ) -এর কাছে বর্ণনা করেছি। তখন তিনি ইয়াহইয়া (রহঃ) অর্থাৎ-‘আলকামাহ (রহঃ) -এর কথা উল্লেখ করে বলেন যে, তিনি তা বর্ণনা করেছেন ইবনু হাইয়্যানের উদ্দেশ্যে। অতএব তিনি বলেন যে, মুসলিম ইবনু হায়সাম (রহঃ), নু‘মান ইবনু মুকাররিন (রহঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৩৭২, ই.সে. ৪৩৭২)
[৩২] যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ ছাড়া শত্রুবাহিনীর ফেলে যাওয়া মালকে মালে ফাই বলে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪১৫
وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنِي عَلْقَمَةُ بْنُ مَرْثَدٍ، أَنَّ سُلَيْمَانَ بْنَ بُرَيْدَةَ، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا بَعَثَ أَمِيرًا أَوْ سَرِيَّةً دَعَاهُ فَأَوْصَاهُ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ سُفْيَانَ .
বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন কোন সেনাপতিকে অথবা সেনাবাহিনীকে প্রেরণ করতেন, তখন তাঁকে ডেকে কিছু উপদেশ দিতেন। ….. অতঃপর তিনি সুফ্ইয়ান (রহঃ) -এর বর্ণিত হাদীসের মর্মার্থ অনুসারে অবশিষ্ট হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪৩৭৩, ই.সে. ৪৩৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪১৬
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ الْفَرَّاءُ، عَنِ الْحُسَيْنِ بْنِ الْوَلِيدِ، عَنْ شُعْبَةَ، بِهَذَا .
শু‘বাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৩৭৪, ই.সে. ৪৩৭৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩. অধ্যায়ঃ
কাজ-কর্মে সহজ পন্থা অবলম্বন ও ঘৃণা-বিদ্বেষ না ছড়ানোর নির্দেশনা
৪৪১৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ – وَاللَّفْظُ لأَبِي بَكْرٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا بَعَثَ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِهِ فِي بَعْضِ أَمْرِهِ قَالَ “ بَشِّرُوا وَلاَ تُنَفِّرُوا وَيَسِّرُوا وَلاَ تُعَسِّرُوا ” .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন তাঁর কোন সাহাবীকে কোন কাজে পাঠাতেন, তখন তাঁকে এ কথা বলতেন যে, তোমরা লোকদেরকে শুভ সংবাদ দেবে; ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়াবে না, সহজ করবে; কঠিন করবে না। (ই.ফা. ৪৩৭৫, ই.সে. ৭৩৭৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪১৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَهُ وَمُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ “ يَسِّرَا وَلاَ تُعَسِّرَا وَبَشِّرَا وَلاَ تُنَفِّرَا وَتَطَاوَعَا وَلاَ تَخْتَلِفَا ” .
সা‘ঈদ ইবনু আবূ বুরদাহ্ (রহঃ) তার দাদা থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে এবং মু‘আয (রাঃ) -কে যখন ইয়ামানে পাঠান তখন উপদেশ দিলেন তোমরা উভয়েই (সেখানে) সহজ পথ অবলম্বন করবে, কঠিন পথ গ্রহণ করবে না, সুসংবাদ দেবে, ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়াবে না, সম্মিলিতভাবে কাজ করবে এবং মতবিরোধ করবে না। (ই.ফা. ৪৩৭৬, ই.সে. ৪৩৭৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪১৯
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ أَبِي خَلَفٍ عَنْ زَكَرِيَّاءَ بْنِ عَدِيٍّ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، كِلاَهُمَا عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . نَحْوَ حَدِيثِ شُعْبَةَ وَلَيْسَ فِي حَدِيثِ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ “ وَتَطَاوَعَا وَلاَ تَخْتَلِفَا ” .
সা’ঈদ ইবনু আবূ বুরদাহ (রহঃ) -এর দাদার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে উল্লেখিত শু‘বাহ্ (রহঃ) -এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। কিন্তু যায়দ ইবনু আবূ উনাইসাহ্ (রাঃ) -এর হাদীসে “এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করবে, মতবিরোধ করবে না” এ অংশটুকু উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ৪৩৭৭, ই.সে. ৪৩৭৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪২০
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، عَنْ أَنَسٍ، ح. وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ، الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، كِلاَهُمَا عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ يَسِّرُوا وَلاَ تُعَسِّرُوا وَسَكِّنُوا وَلاَ تُنَفِّرُوا ”.
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি শুনেছি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, সহজভাবে কাজ করবে, কঠিনতা আরোপ করবে না, স্বস্তি (আরাম) প্রদান করবে এবং ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়াবে না। (ই.ফা. ৪৩৭৮, ই.সে. ৪৩৭৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪. অধ্যায়ঃ
চুক্তিভঙ্গ হারাম
৪৪২১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ، بْنُ حَرْبٍ وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ – يَعْنِي أَبَا قُدَامَةَ السَّرَخْسِيَّ – قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، – وَهُوَ الْقَطَّانُ – كُلُّهُمْ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا جَمَعَ اللَّهُ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرْفَعُ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ فَقِيلَ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلاَنِ بْنِ فُلاَنٍ ” .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: যখন আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাত দিবসে পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সকলকে একত্রিত করবেন, তখন প্রত্যেক প্রতারকের জন্য পৃথক পৃথক পতাকা উড্ডীন করা হবে এবং বলা হবে যে, এটি অমুকের পুত্র অমুকের প্রতারণার চিহ্ন। (ই.ফা. ৪৩৭৯, ই.সে. ৪৩৭৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪২২
حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الْعَتَكِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ، الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا صَخْرُ بْنُ جُوَيْرِيَةَ، كِلاَهُمَا عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৩৮০, ই.সে. ৪৩৮০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪২৩
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنْ عَبْدِ، اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ الْغَادِرَ يَنْصِبُ اللَّهُ لَهُ لِوَاءً يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُقَالُ أَلاَ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلاَنٍ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: নিশ্চয়ই প্রতারণাকারীর জন্য আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা উড্ডীন করবেন। তখন বলা হবে যে, এটি অমুকের ধোঁকাবাজির পতাকা। (ই.ফা. ৪৩৮১, ই.সে. ৪৩৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪২৪
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حَمْزَةَ، وَسَالِمٍ، ابْنَىْ عَبْدِ اللَّهِ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক প্রতারণাকারীর জন্য কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা থাকবে। (ই.ফা. ৪৩৮২, ই.সে. ৪৩৮২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪২৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، ح وَحَدَّثَنِي بِشْرُ، بْنُ خَالِدٍ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدٌ، – يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ – كِلاَهُمَا عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُقَالُ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلاَنٍ ” .
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর জন্য কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা থাকবে। তখন বলা হবে যে, এটি অমুকের প্রতারণার পতাকা। (ই.ফা. ৪৩৮৩, ই.সে. ৪৩৮৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪২৬
وَحَدَّثَنَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، ح وَحَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ، بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، جَمِيعًا عَنْ شُعْبَةَ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ . وَلَيْسَ فِي حَدِيثِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ “ يُقَالُ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلاَنٍ ” .
শু‘বাহ (রাঃ) থেকে একই সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
শু‘বাহ (রাঃ) থেকে একই সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর ‘আবদুর রহমান (রাঃ) -এর হাদীসে “এটি অমুকের বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক” এ কথাটির উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ৪৩৮৪, ই.সে. ৪৩৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪২৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُعْرَفُ بِهِ يُقَالُ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلاَنٍ ” .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: প্রত্যেক অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর জন্য কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা থাকবে, যদদ্বারা তাকে চেনা যাবে। আর বলা হবে যে, এটি অমুকের বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক। (ই.ফা. ৪৩৮৫, ই.সে. ৪৩৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪২৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُعْرَفُ بِهِ ” .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: প্রত্যেক অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর জন্য কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা থাকবে, যেটা দিয়ে তাকে চেনা যাবে। (ই.ফা. ৪৩৮৬, ই.সে. ৪৩৮৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪২৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ خُلَيْدٍ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ عِنْدَ اسْتِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: কিয়ামাত দিবসে প্রত্যেক অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর নিতম্বের (পাছা) পার্শ্বে একটি পতাকা থাকবে। (ই.ফা. ৪৩৮৭, ই.সে. ৪৩৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৩০
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا الْمُسْتَمِرُّ بْنُ الرَّيَّانِ، حَدَّثَنَا أَبُو نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرْفَعُ لَهُ بِقَدْرِ غَدْرِهِ أَلاَ وَلاَ غَادِرَ أَعْظَمُ غَدْرًا مِنْ أَمِيرِ عَامَّةٍ ” .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
প্রত্যেক ধোঁকাবাজের জন্য কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা থাকবে আর তা তার বিশ্বাসঘাতকতার পরিমাণ অনুযায়ী উঁচু করা হবে। সাবধান! জনগণের শাসক হয়ে যে বিশ্বাসঘাতকতা করে, তার চেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক আর নেই। (ই.ফা. ৪৩৮৮, ই.সে. ৪৩৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫. অধ্যায়ঃ
যুদ্ধের মধ্যে শত্রুকে ধোঁকা দেয়ার বৈধতা
৪৪৩১
وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ السَّعْدِيُّ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، – وَاللَّفْظُ لِعَلِيٍّ وَزُهَيْرٍ – قَالَ عَلِيٌّ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ سَمِعَ عَمْرٌو، جَابِرًا يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْحَرْبُ خَدْعَةٌ ” .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: যুদ্ধ কৌশল ও ছলনারই নাম। (ই.ফা. ৪৩৮৯, ই.সে. ৪৩৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৩২
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَهْمٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “الْحَرْبُ خُدْعَةٌ ” .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: যুদ্ধ কুটকৌশলেরই নাম। (ই.ফা. ৪৩৯০, ই.সে. ৪৩৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬. অধ্যায়ঃ
শত্রুর সাথে সম্মুখ যুদ্ধের আকাঙ্খা করা নিষেধ; তবে যুদ্ধের মুখোমুখির বেলায় ধৈর্যধারণ করার নির্দেশ
৪৪৩৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، عَنِ الْمُغِيرَةِ، – وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِزَامِيُّ – عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي، هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ تَمَنَّوْا لِقَاءَ الْعَدُوِّ فَإِذَا لَقِيتُمُوهُمْ فَاصْبِرُوا” .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: তোমরা শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার আকাঙ্খা করো না আর যখন মুখোমুখি হয়ে পড়ো তখন ধৈর্যধারণ করবে। (ই.ফা. ৪৩৯১, ই.সে. ৪৩৯১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৩৪
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي مُوسَى، بْنُ عُقْبَةَ عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ كِتَابِ، رَجُلٍ مِنْ أَسْلَمَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُقَالُ لَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي أَوْفَى فَكَتَبَ إِلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ حِينَ سَارَ إِلَى الْحَرُورِيَّةِ يُخْبِرُهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ فِي بَعْضِ أَيَّامِهِ الَّتِي لَقِيَ فِيهَا الْعَدُوَّ يَنْتَظِرُ حَتَّى إِذَا مَالَتِ الشَّمْسُ قَامَ فِيهِمْ فَقَالَ ” يَا أَيُّهَا النَّاسُ لاَ تَتَمَنَّوْا لِقَاءَ الْعَدُوِّ وَاسْأَلُوا اللَّهَ الْعَافِيَةَ فَإِذَا لَقِيتُمُوهُمْ فَاصْبِرُوا وَاعْلَمُوا أَنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ ظِلاَلِ السُّيُوفِ ” . ثُمَّ قَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ ” اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ وَمُجْرِيَ السَّحَابِ وَهَازِمَ الأَحْزَابِ اهْزِمْهُمْ وَانْصُرْنَا عَلَيْهِمْ ” .
আবূ নাযর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাহাবাদের মধ্য থেকে আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তির যার নাম ছিল আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা-চিঠি থেকে বর্ণনা করেছেন। এ চিঠি তিনি লিখেছিলেন উমার ইবনু উবাইদুল্লাহ (রাঃ)-এর নিকট, যখন তিনি হারূরিয়্যাহ (খারিজীদের বিরুদ্ধে) অভিযানে যাচ্ছিলেন। এতে তিনি তাঁকে অবহিত করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যেসব যুদ্ধে শত্রু বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিলেন তার কোন একযুদ্ধে অপেক্ষা করতে লাগলেন। অবশেষে যখন সূর্য ঢলে পড়ল তখন তিনি সঙ্গীদের মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেনঃহে লোকজন! তোমরা শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার আকাঙ্খা করো না। বরং আল্লাহর কাছে নিরাপত্তার প্রার্থনা করো। আর যখন তোমরা শত্রুর সামনা-সামনি হয়ে যাও তখন ধৈর্য ধারণ করবে। আর জেনে রেখো যে, জান্নাত তরবারির ছায়াতলে। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়িয়ে দুআ করলেন, ইয়া আল্লাহ! কিতাব অবতীর্ণকারী, মেঘমালা পরিচালনাকারী এবং শত্রুদলকে পরাস্তকারী। তুমি তাদের পরাস্ত করো এবং তাদের উপর আমাদেরকে সাহায্য করো। (ই.ফা. ৪৩৯২, ই.সে. ৪৩৯২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭. অধ্যায়ঃ
শত্রুর সাথে যুদ্ধের সময় (আল্লাহর কাছে বিজয়ের জন্য সাহায্য) প্রার্থনা করা মুস্তাহাব
৪৪৩৫
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى، قَالَ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الأَحْزَابِ فَقَالَ “ اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ سَرِيعَ الْحِسَابِ اهْزِمِ الأَحْزَابَ اللَّهُمَّ اهْزِمْهُمْ وَزَلْزِلْهُمْ ” .
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে (খন্দকের যুদ্ধে) এভাবে দুআ করলেন যে, হে আল্লাহ! কিতাব নাযিলকারী, দ্রুত হিসেব গ্রহণকারী, তুমি সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করে দাও। হে আল্লাহ! তুমি তাদের পরাজিত করে দাও এবং তাদের কম্পমান করে দাও। (ই.ফা. ৪৩৯৩, ই.সে. ৪৩৯৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৩৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعُ بْنُ الْجَرَّاحِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي، خَالِدٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي أَوْفَى، يَقُولُ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . بِمِثْلِ حَدِيثِ خَالِدٍ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ ” هَازِمَ الأَحْزَابِ ” . وَلَمْ يَذْكُرْ قَوْلَهُ ” اللَّهُمَّ ” .
ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এভাবে দু’আ করলেন …… পরবর্তী অংশ উল্লিখিত খালিদের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি এ (আরবী) বাক্যের পরিবর্তে (আরবী) বাক্যটি এনেছেন অর্থ শত্রু সৈন্যদের পরাস্তকারী। আর তিনি আল্লাহুম্মা “হে আল্লাহ!” শব্দটির উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৩৯৪, ই.সে. ৪৩৯৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৩৭
وَحَدَّثَنَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ فِي رِوَايَتِهِ “ مُجْرِيَ السَّحَابِ ” .
ইসমা’ঈল (রহঃ) উক্ত সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
তবে ইবনু আবূ ‘উমার (রহঃ) তাঁর বর্ণনায় (আরবী) “মেঘমালা পরিচালনাকারী” বাক্যটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৩৯৫, ই.সে. ৪৩৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৩৮
وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ يَوْمَ أُحُدٍ “ اللَّهُمَّ إِنَّكَ إِنْ تَشَأْ لاَ تُعْبَدْ فِي الأَرْضِ ” .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উহূদের যুদ্ধের দিন বলেছিলেন, হে আল্লাহ! তুমি যদি চাও পৃথিবীতে তোমার ইবাদাত করা হবে না। [৩৩] (ই.ফা. ৪৩৯৬, ই.সে. ৪৩৯৬)
[৩৩] এ প্রার্থনায় আল্লাহ তা’আলার ফয়সালায় নিজেদের সপে দেয়া ফুটে উঠেছে। অন্য বর্ণনায় এ দু’আটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাদর দিবসে করেছিলেন বলে রয়েছে। সম্ভবত বাদর ও উহুদ উভয় যুদ্ধে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ দু’আ করেছিলেন। (সহীহ মুসলিম- মুখতাসার শারহে নাবাবী, আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান ৫ম খণ্ড, ৭ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮. অধ্যায়ঃ
যুদ্ধে নারী ও শিশুদের হত্যা করা হারাম
৪৪৩৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَمُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ، سَعِيدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ امْرَأَةً، وُجِدَتْ، فِي بَعْضِ مَغَازِي رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَقْتُولَةً فَأَنْكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَتْلَ النِّسَاءِ وَالصِّبْيَانِ.
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কোন এক যুদ্ধে একজন মহিলাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। তিনি তখন নারী ও শিশুদের হত্যা করতে বারণ করেছিলেন। (ই.ফা. ৪৩৯৭, ই.সে. ৪৩৯৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৪০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ قَالاَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ، اللَّهِ بْنُ عُمَرَ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ وُجِدَتِ امْرَأَةٌ مَقْتُولَةً فِي بَعْضِ تِلْكَ الْمَغَازِي فَنَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ قَتْلِ النِّسَاءِ وَالصِّبْيَانِ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন এক মহিলাকে কোন এক যুদ্ধ ক্ষেত্রে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নারী ও শিশুদের হত্যা করতে নিষেধ করেছিলেন। (ই.ফা. ৪৩৯৮, ই.সে. ৪৩৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯. অধ্যায়ঃ
রাতের আকস্মিক হামলায় অনিচ্ছাকৃতভাবে নারী ও শিশু হত্যায় দোষ নেই
৪৪৪১
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَسَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ الصَّعْبِ، بْنِ جَثَّامَةَ قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الذَّرَارِيِّ مِنَ الْمُشْرِكِينَ يُبَيَّتُونَ فَيُصِيبُونَ مِنْ نِسَائِهِمْ وَذَرَارِيِّهِمْ . فَقَالَ “ هُمْ مِنْهُمْ ” .
সা’ব ইবনু জাসসামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, মুশরিকদের শিশু সন্তান সম্পর্কে যখন রাতের অন্ধকারে আকস্মিক হামলা করা হয়, তখন তাদের নারী ও শিশুরাও আক্রান্ত হয়। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃতারাও তাদের (মুশরিক যোদ্ধাদের) অন্তর্ভুক্ত। [৩৪] (ই.ফা. ৪৩৯৯, ই.সে. ৪৩৯৯)
[৩৪] রাতের আঁধারে তাদের আলাদা করা যায় না বিধায় দুনিয়ার হিসেবে তারা পুরুষ যোদ্ধাদের মধ্যে শামিল। তবে পরকালে কাফিরদের সন্তানদের অবস্থা কি হবে সে ব্যাপারে ভিন্নতর মতামত রয়েছে। বিশুদ্ধ মত হলো তারা জান্নাতী। দ্বিতীয় মত হলো, তারা জাহান্নামী। তৃতীয় মত হলো, জানা নেই। (শারাহে মুসলিম-ইমাম নাবাবী, ২য় খণ্ড, ৮৪ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৪২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ، اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ الصَّعْبِ بْنِ جَثَّامَةَ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا نُصِيبُ فِي الْبَيَاتِ مِنْ ذَرَارِيِّ الْمُشْرِكِينَ قَالَ “ هُمْ مِنْهُمْ ” .
সা’ব ইবনু জাসসামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমরা রাতের অন্ধকারে আকস্মিক হামলায় মুশরিকদের শিশুদের উপরও আঘাত করে ফেলি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তারাও তাদের (মুশরিক যোদ্ধাদের) মধ্যে গণ্য। (ই.ফা. ৪৪০০, ই.সে. ৪৪০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৪৩
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو، بْنُ دِينَارٍ أَنَّ ابْنَ شِهَابٍ، أَخْبَرَهُ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ الصَّعْبِ بْنِ جَثَّامَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قِيلَ لَهُ لَوْ أَنَّ خَيْلاً أَغَارَتْ مِنَ اللَّيْلِ فَأَصَابَتْ مِنْ أَبْنَاءِ الْمُشْرِكِينَ قَالَ “ هُمْ مِنْ آبَائِهِمْ ” .
সা’ব ইবনু জাসসামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, যদি অশ্বারোহীগণ রাতের অন্ধকারে হামলা চালায় এবং তাতে মুশরিকদের শিশু সন্তান নিহত হয়, (তবে এর হুকুম কী)? তিনি বললেনঃতারাও তাদের পিতা ও দাদার মধ্যে গণ্য। (ই.ফা. ৪৪০১, ই.সে. ৪৪০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০. অধ্যায়ঃ
কাফিরদের গাছ-পালা কাটা ও জ্বালিয়ে দেয়া বৈধ
৪৪৪৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَمُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ، سَعِيدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَرَّقَ نَخْلَ بَنِي النَّضِيرِ وَقَطَعَ وَهِيَ الْبُوَيْرَةُ . زَادَ قُتَيْبَةُ وَابْنُ رُمْحٍ فِي حَدِيثِهِمَا فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { مَا قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا فَبِإِذْنِ اللَّهِ وَلِيُخْزِيَ الْفَاسِقِينَ}
‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাযীর গোত্রের খেজুর বাগান জ্বালিয়ে দিলেন এবং কেটে দিলেন। বুওয়াইরাহ ছিল সে বাগানের নাম।
কুতাইবাহ এবং ইবনু রুমহ (রহঃ) উভয়েই তাঁদের হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। এরপর মহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন: “তোমরা যেসব খেজুর বৃক্ষ কেটে ফেলেছো কিংবা তার কাণ্ডের উপর খাড়া রেখেছ, সবই ছিল আল্লাহর নির্দেশে, যাতে তিনি পাপাচারীদের অপদস্থ করেন।” (ই.ফা. ৪৪০২, ই.সে. ৪৪২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৪৫
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَهَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ مُوسَى، بْنِ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَطَعَ نَخْلَ بَنِي النَّضِيرِ وَحَرَّقَ وَلَهَا يَقُولُ حَسَّانُ وَهَانَ عَلَى سَرَاةِ بَنِي لُؤَىٍّ حَرِيقٌ بِالْبُوَيْرَةِ مُسْتَطِيرُ وَفِي ذَلِكَ نَزَلَتْ { مَا قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا} الآيَةَ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাযীর গোত্রের খেজুর বাগান কেটেছিলেন এবং জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। এ সম্পর্কে কবি হাসসান (রাঃ) বলেন, “বনী লুওয়াই (অর্থাৎ-কুরায়শ) এর নেতাদের কাছে বুওয়াইরায় আগুনের লেলিহান শিখা খুব সহজ হয়ে গেছে।” আর এ সম্পর্কেই নাযিল হয়েছে এ আয়াত : (অর্থ) “তোমরা যেসব খেজুর গাছ কেটেছো অথবা তা কাণ্ডের উপর রেখে দিয়েছ” আয়াতটির শেষ পর্যন্ত। (ই.ফা. ৪৪০৩, ই.সে. ৪৪০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৪৬
وَحَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ عُثْمَانَ، أَخْبَرَنِي عُقْبَةُ بْنُ خَالِدٍ السَّكُونِيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ حَرَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَخْلَ بَنِي النَّضِيرِ.
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাযীর গোত্রের খেজুর বাগান জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। (ই.ফা. ৪৪০৪, ই.সে. ৪৪০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১. অধ্যায়ঃ
‘বিশেষভাবে এ উম্মাত’ এর জন্য গনীমাত হালাল
৪৪৪৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ مَعْمَرٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ، بْنُ رَافِعٍ – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ غَزَا نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ فَقَالَ لِقَوْمِهِ لاَ يَتْبَعْنِي رَجُلٌ قَدْ مَلَكَ بُضْعَ امْرَأَةٍ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يَبْنِيَ بِهَا وَلَمَّا يَبْنِ وَلاَ آخَرُ قَدْ بَنَى بُنْيَانًا وَلَمَّا يَرْفَعْ سُقُفَهَا وَلاَ آخَرُ قَدِ اشْتَرَى غَنَمًا أَوْ خَلِفَاتٍ وَهُوَ مُنْتَظِرٌ وِلاَدَهَا . قَالَ فَغَزَا فَأَدْنَى لِلْقَرْيَةِ حِينَ صَلاَةِ الْعَصْرِ أَوْ قَرِيبًا مِنْ ذَلِكَ فَقَالَ لِلشَّمْسِ أَنْتِ مَأْمُورَةٌ وَأَنَا مَأْمُورٌ اللَّهُمَّ احْبِسْهَا عَلَىَّ شَيْئًا . فَحُبِسَتْ عَلَيْهِ حَتَّى فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِ – قَالَ – فَجَمَعُوا مَا غَنِمُوا فَأَقْبَلَتِ النَّارُ لِتَأْكُلَهُ فَأَبَتْ أَنْ تَطْعَمَهُ فَقَالَ فِيكُمْ غُلُولٌ فَلْيُبَايِعْنِي مِنْ كُلِّ قَبِيلَةٍ رَجُلٌ . فَبَايَعُوهُ فَلَصِقَتْ يَدُ رَجُلٍ بِيَدِهِ فَقَالَ فِيكُمُ الْغُلُولُ فَلْتُبَايِعْنِي قَبِيلَتُكَ . فَبَايَعَتْهُ – قَالَ – فَلَصِقَتْ بِيَدِ رَجُلَيْنِ أَوْ ثَلاَثَةٍ فَقَالَ فِيكُمُ الْغُلُولُ أَنْتُمْ غَلَلْتُمْ – قَالَ – فَأَخْرَجُوا لَهُ مِثْلَ رَأْسِ بَقَرَةٍ مِنْ ذَهَبٍ – قَالَ – فَوَضَعُوهُ فِي الْمَالِ وَهُوَ بِالصَّعِيدِ فَأَقْبَلَتِ النَّارُ فَأَكَلَتْهُ . فَلَمْ تَحِلَّ الْغَنَائِمُ لأَحَدٍ مِنْ قَبْلِنَا ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى رَأَى ضَعْفَنَا وَعَجْزَنَا فَطَيَّبَهَا لَنَا ” .
হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে যে সকল হাদীস আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন, এর মধ্যে এটিও যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: নাবীগণের মধ্যে কোন এক নবী [ইউশা’ ইবনু নূন (‘আঃ) যিনি লাম (বাহরাইন) দেশে মূসা (‘আঃ)-এর প্রতিনিধি ছিলেন] জিহাদে রওনা দিলেন। তিনি তাঁর লোকদের বললেন, এমন লোক যেন আমার সাথে অভিযানে না আসে, যে ব্যক্তি সদ্য বিবাহ করেছে এবং বাসর যাপনে ইচ্ছুক; কিন্তু এখনো তা সম্পন্ন হয়নি। সে ব্যক্তি যেন না আসে যে গৃহ নির্মাণ করেছে এবং এখনো তার ছাদ দেয়নি এবং সে ব্যক্তি যেন না আসে যে গর্ভবতী ছাগল বা উটনী ক্রয় করেছে এবং সেগুলোর বাচ্চা প্রসবের অপক্ষায় আছে। রাবী বলেন, তারপর তিনি জিহাদে গমন করেন এবং ‘আসরের সালাতের সময় যুদ্ধ ক্ষেত্রে নিকটবর্তী এক গ্রামে পৌঁছেন। তখন তিনি সূর্যকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমিও আদিষ্ট এবং আমিও আদিষ্ট। ইয়া আল্লাহ! তুমি একে আমার জন্য কিছুক্ষণ থামিয়ে রাখো (সূর্যাস্তের পূর্বেই বিজয় পাওয়ার জন্য)। সূর্যকে থামিয়ে দেয়া হলো। অবশেষে আল্লাহ তা’আলা তাঁকে বিজয় প্রদান করলেন। রাবী বলেন, তারা গনীমাতের মাল একত্রিত করল। তখন তা খাওয়ার জন্য আগুন এগিয়ে এলো। কিন্তু অগ্নি তা খেতে অস্বীকার করল। [৩৫] তখন সে নবী (‘আঃ) বললেন, তোমাদের মধ্যে আত্মসাৎকারী রয়েছে। কাজেই তোমাদের প্রত্যেক গোত্র থেকে একজন করে আমার কাছে বাই’আত করবে। সুতরাং তারা তাঁর কাছে বাই’আত করল। এতে এক ব্যক্তির হাত নবীর হাতের সাথে লেগে গেল। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে আত্মসাৎকারী রয়েছে। কাজেই তোমাদের গোত্রের লোকেরা আমার কাছে বাই’আত করুক। অতঃপর তার ঐ গোত্রের লোকেরা বাই’আত করল। রাবী বলেন, তখন নবী (‘আঃ)-এর হাত দু’ বা তিন ব্যক্তির হাতের সাথে লেগে গেল। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে আত্মসাৎকারী রয়েছে। তোমরা আত্মসাৎ করেছ। রাবী বলেন, তারপর তারা নাবীর কাছে একটি গাভীর মাথার পরিমাণ স্বর্ণখন্ড বের করে দিলো। আর তারা সেটিও ঐ সম্পদের সাথে রাখল। তারপর আগুন এগিয়ে এসে তা খেয়ে ফেলল। আমাদের পূর্বে কারো জন্য গনীমাতের মাল হালাল ছিল না। আল্লাহ তা’আলা আমাদের দুর্বলতা ও অক্ষমতা দেখে আমাদের জন্য গনীমাতের মাল হালাল করে দিলেন। (ই.ফা. ৪৪০৫, ই.সে. ৪৪০৫)
[৩৫] পূর্বযুগে যুদ্ধলব্ধ মাল যোদ্ধাগণের জন্য হালাল ছিল না। আকাশ থেকে আগুন এসে পুড়িয়ে যাওয়ার নিয়ম চালু ছিল। শর্ত তাতে আত্মসাৎ না থাকলে। অন্যথায় আগুন এসে তা গ্রহণ করতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২. অধ্যায়ঃ
গনীমাতের মালের বর্ণনা
৪৪৪৮
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ أَخَذَ أَبِي مِنَ الْخُمْسِ سَيْفًا فَأَتَى بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ هَبْ لِي هَذَا . فَأَبَى فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { يَسْأَلُونَكَ عَنِ الأَنْفَالِ قُلِ الأَنْفَالُ لِلَّهِ وَالرَّسُولِ}
মাস’আব ইবনু সা’দ (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
আমার পিতা যুদ্ধলব্ধ সম্পদের এক পঞ্চমাংশ হতে কিছু বস্তু নিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এসে বলেন, এটি আমাকে উপঢৌকন প্রদান করুন। তিনি অস্বীকার করেন। তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেন : “তারা আপনার কাছে যুদ্ধলব্ধ দ্রব্য সম্ভার সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করে, আপনি বলে দিন, যুদ্ধলব্ধ দ্রব্য সম্ভার আল্লাহ ও রসূলের ” আয়াতটি শেষ পর্যন্ত নাযিল হলো। (ই.ফা. ৪৪০৬, ই.সে. ৪৪০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৪৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ، بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ نَزَلَتْ فِيَّ أَرْبَعُ آيَاتٍ أَصَبْتُ سَيْفًا فَأَتَى بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ نَفِّلْنِيهِ . فَقَالَ ” ضَعْهُ ” . ثُمَّ قَامَ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” ضَعْهُ مِنْ حَيْثُ أَخَذْتَهُ ” . ثُمَّ قَامَ فَقَالَ نَفِّلْنِيهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ . فَقَالَ ” ضَعْهُ ” . فَقَامَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ نَفِّلْنِيهِ أَأُجْعَلُ كَمَنْ لاَ غَنَاءَ لَهُ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” ضَعْهُ مِنْ حَيْثُ أَخَذْتَهَ ” . قَالَ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ { يَسْأَلُونَكَ عَنِ الأَنْفَالِ قُلِ الأَنْفَالُ لِلَّهِ وَالرَّسُولِ}
মুস’আব বিন সা’দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমার সম্বন্ধে চারটি আয়াত নাযিল হয়েছে। আমি একটি তলোয়ার পেলাম। এরপর সেটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে নিয়ে এসে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এটি আমাকে দান করুন। তিনি বললেনঃতুমি এটি রেখে দাও। তারপর আবার দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এটি আমাকে প্রদান করুন। তখনও তিনি বললেন, এটি যেখান থেকে নিয়েছো সেখানে রেখে দাও। তারপর তিনি আবার দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এটি আমাকে দিয়ে দিন। আমাকে কি সে ব্যক্তির মতো গণ্য করা হলো যার এটার দরকার নেই? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি এটি যেখান থেকে নিয়েছ সেখানে রেখে দাও। এরপর এ আয়াত নাযিল হয়: (অর্থ) “তারা আপনাকে যুদ্ধলব্ধ দ্রব্যসম্ভার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি বলুন, যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ ও রসূলের জন্য”…….। (ই.ফা. ৪৪০৭, ই.সে. ৪৪০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৫০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً وَأَنَا فِيهِمْ قِبَلَ نَجْدٍ فَغَنِمُوا إِبِلاً كَثِيرَةً فَكَانَتْ سُهْمَانُهُمُ اثْنَى عَشَرَ بَعِيرًا أَوْ أَحَدَ عَشَرَ بَعِيرًا وَنُفِّلُوا بَعِيرًا بَعِيرًا .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা একটি সেনাদল নাজদের দিকে পাঠান। আমিও তার মধ্যে ছিলাম। তাঁরা সেখানে অনেক উট গনীমাত হিসেবে লাভ করলেন। প্রত্যেকের অংশে বারটি করে অথবা এগারটি করে উট পড়ল এবং প্রত্যেককেই একটি করে বাড়তি উট প্রদান করা হলো। (ই.ফা. ৪৪০৮, ই.সে. ৪৪০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৫১
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ سَرِيَّةً قِبَلَ نَجْدٍ وَفِيهِمُ ابْنُ عُمَرَ وَأَنَّ سُهْمَانَهُمْ بَلَغَتِ اثْنَىْ عَشَرَ بَعِيرًا وَنُفِّلُوا سِوَى ذَلِكَ بَعِيرًا فَلَمْ يُغَيِّرْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসুলা্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাজদের দিকে একটি সেনাদল পাঠান এবং তাদের মধ্যে ইবনু ‘উমার (রাঃ)-ও ছিলেন। যুদ্ধলব্দ সম্পদের বন্টনে তাদের ভাগে পড়ল বারটি করে উট। আর তা ছাড়া বাড়তি একটি করে উট দেয়া হলো। আর রসুলা্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরূপ বন্টন সমর্থন করলে পরিবর্তন করেননি। (ই.ফা. ৪৪০৯ , ই.সে. ৪৪০৯ )
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৫২
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، وَعَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً إِلَى نَجْدٍ فَخَرَجْتُ فِيهَا فَأَصَبْنَا إِبِلاً وَغَنَمًا فَبَلَغَتْ سُهْمَانُنَا اثْنَىْ عَشَرَ بَعِيرًا وَنَفَّلَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعِيرًا بَعِيرًا .
ইবনু ‘উমার ( রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসুলা্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাজদের দিকে একটি সেনাদল প্রেরন করেন। আর আমিও এতে গিয়েছিলাম। আমরা বহু উট এবং ছাগল পেলাম। আমাদের প্রত্যেক জনের ভাগে বারটি করে উট পরল এবং রসুলা্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেককে আরো একটি করে অতিরিক্ত উট প্রদান করলেন। ( ই.ফা. ৪৪১০, ই.সে. ৪৪১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৫৩
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، – وَهُوَ الْقَطَّانُ – عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ .
‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) থেকে উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ সানাদে হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪৪১১, ই.সে. ৪৪১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৫৪
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو الرَّبِيعِ، وَأَبُو كَامِلٍ قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، قَالَ كَتَبْتُ إِلَى نَافِعٍ أَسْأَلُهُ عَنِ النَّفَلِ، فَكَتَبَ إِلَىَّ أَنَّ ابن عمر كان في سرية وَحَدَّثَنَا ابْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي مُوسَى، ح وَحَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ، كُلُّهُمْ عَنْ نَافِعٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَ حَدِيثِهِمْ .
ইবনু ‘আওন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নফল সম্পর্কে জানতে চেয়ে নাফি’ (রহঃ)-এর কাছে লিখলাম। তিনি উত্তরে আমাকে লিখলেন যে, ইবনু ‘উমার (রাঃ) একটি সেনাদলে ছিলেন। ইবনু রাফি’ ও হারুন ইবনু সা’ঈদ আঈলি (রহঃ) তারা সকলেই নাফি’ (রহঃ)- এর সূত্রে উক্ত সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ননা করেন। (ই.ফা. ৪৪১২, ই.সে. ৪৪১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৫৫
وَحَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، – وَاللَّفْظُ لِسُرَيْجٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ، اللَّهِ بْنُ رَجَاءٍ عَنْ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ نَفَّلَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَفَلاً سِوَى نَصِيبِنَا مِنَ الْخُمْسِ فَأَصَابَنِي شَارِفٌ وَالشَّارِفُ الْمُسِنُّ الْكَبِيرُ
সালিম তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের অংশ পঞ্চমাংশ ছাড়াও বাড়তি দান করলেন। অতএব আমাদের ভাগে একটি ‘শারিফ’ মিললো। ‘শারিফ’ মানে বড় ধরনের বয়স্ক উট। (ই.ফা.৪৪১৩, ই.সে. ৪৪১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৫৬
وَحَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، ح وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، كِلاَهُمَا عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ بَلَغَنِي عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ نَفَّلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً بِنَحْوِ حَدِيثِ ابْنِ رَجَاءٍ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ক্ষুদ্র সেনাদলের মাঝে যুদ্ধলব্ধ মালামাল বন্টণের ব্যাপারে ইবনু ‘উমার থেকে আমার নিকট ইবনু রাজা কতৃক বর্ণিত হাদীসের মতো একটি হাদীস এসেছে। ( ই.ফা. ৪৪১৪, ই.সে. ৪৪১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৫৭
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ اللَّيْثِ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ جَدِّي، قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلُ، بْنُ خَالِدٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ كَانَ يُنَفِّلُ بَعْضَ مَنْ يَبْعَثُ مِنَ السَّرَايَا لأَنْفُسِهِمْ خَاصَّةً سِوَى قَسْمِ عَامَّةِ الْجَيْشِ وَالْخُمْسُ فِي ذَلِكَ وَاجِبٌ كُلِّهِ .
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্ষুদ্র সেনাদলে যেসব সৈনিককে প্রেরণ করতেন, তাদের কোন কোন সময় সাধারন সৈনিকদের অংশের চেয়েও কিছু অতিরিক্ত বিশেষভাবে প্রদান করতেন। আর সকল অর্জিত গনীমাতের মালের উপরেই এক পঞ্চমাংশ বের করা ওয়াজিব। (ই.ফা. ৪৪১৫, ই.সে. ৪৪১৫ )
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৩. অধ্যায়ঃ
নিহত শত্রু থেকে সম্পদ হত্যাকারী মুজাহিদের প্রাপ্য
৪৪৫৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ، كَثِيرِ بْنِ أَفْلَحَ عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ الأَنْصَارِيِّ، وَكَانَ، جَلِيسًا لأَبِي قَتَادَةَ قَالَ قَالَ أَبُو قَتَادَةَ وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ .
আবু মুহাম্মদ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ছিলেন আবূ কাতাদার সহচর। তিনি বলেন, আবু কাতাদাহ বলেন, …… এরপর এতদসংক্রান্ত বিস্তৃত একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। ( ই.ফা. ৪৪১৬, ই. সে. ৪৪১৬ )
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৫৯
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ، مَوْلَى أَبِي قَتَادَةَ أَنَّ أَبَا قَتَادَةَ، قَالَ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ .
আবু কাতাদাহ (রাঃ)-এর আযাদকৃত দাস আবূ মুহাম্মাদ থেকে বর্ণিতঃ
আবু কাতাদাহ (রাঃ) বলেন ……… অতঃপর পূর্ণ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৪১৬, ই.সে. ৪৪১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৬০
وَحَدَّثَنَا أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ مَالِكَ بْنَ أَنَسٍ، يَقُولُ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ كَثِيرِ بْنِ أَفْلَحَ، عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ، مَوْلَى أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَامَ حُنَيْنٍ فَلَمَّا الْتَقَيْنَا كَانَتْ لِلْمُسْلِمِينَ جَوْلَةٌ . قَالَ فَرَأَيْتُ رَجُلاً مِنَ الْمُشْرِكِينَ قَدْ عَلاَ رَجُلاً مِنَ الْمُسْلِمِينَ فَاسْتَدَرْتُ إِلَيْهِ حَتَّى أَتَيْتُهُ مِنْ وَرَائِهِ فَضَرَبْتُهُ عَلَى حَبْلِ عَاتِقِهِ وَأَقْبَلَ عَلَىَّ فَضَمَّنِي ضَمَّةً وَجَدْتُ مِنْهَا رِيحَ الْمَوْتِ ثُمَّ أَدْرَكَهُ الْمَوْتُ فَأَرْسَلَنِي فَلَحِقْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ فَقَالَ مَا لِلنَّاسِ فَقُلْتُ أَمْرُ اللَّهِ . ثُمَّ إِنَّ النَّاسَ رَجَعُوا وَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ ” مَنْ قَتَلَ قَتِيلاً لَهُ عَلَيْهِ بَيِّنَةٌ فَلَهُ سَلَبُهُ ” . قَالَ فَقُمْتُ فَقُلْتُ مَنْ يَشْهَدُ لِي ثُمَّ جَلَسْتُ ثُمَّ قَالَ مِثْلَ ذَلِكَ فَقَالَ فَقُمْتُ فَقُلْتُ مَنْ يَشْهَدُ لِي ثُمَّ جَلَسْتُ ثُمَّ قَالَ ذَلِكَ الثَّالِثَةَ فَقُمْتُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا لَكَ يَا أَبَا قَتَادَةَ ” . فَقَصَصْتُ عَلَيْهِ الْقِصَّةَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ صَدَقَ يَا رَسُولَ اللَّهِ سَلَبُ ذَلِكَ الْقَتِيلِ عِنْدِي فَأَرْضِهِ مِنْ حَقِّهِ . وَقَالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ لاَهَا اللَّهِ إِذًا لاَ يَعْمِدُ إِلَى أَسَدٍ مِنْ أُسُدِ اللَّهِ يُقَاتِلُ عَنِ اللَّهِ وَعَنْ رَسُولِهِ فَيُعْطِيكَ سَلَبَهُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” صَدَقَ فَأَعْطِهِ إِيَّاهُ ” . فَأَعْطَانِي قَالَ فَبِعْتُ الدِّرْعَ فَابْتَعْتُ بِهِ مَخْرَفًا فِي بَنِي سَلِمَةَ فَإِنَّهُ لأَوَّلُ مَالٍ تَأَثَّلْتُهُ فِي الإِسْلاَمِ . وَفِي حَدِيثِ اللَّيْثِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ كَلاَّ لاَ يُعْطِيهِ أُضَيْبِعَ مِنْ قُرَيْشٍ وَيَدَعُ أَسَدًا مِنْ أُسُدِ اللَّهِ . وَفِي حَدِيثِ اللَّيْثِ لأَوَّلُ مَالٍ تَأَثَّلْتُهُ .
আবু কাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুনায়নের যুদ্ধের সময় আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে বের হলাম। আমরা যখন শত্রুদের মুখোমুখি হলাম তখন মুসলিমদের মধ্যে ছুটাছুটি আরম্ভ হলো। এ সময় আমি একজন মুশরিককে দেখতে পেলাম যে, সে একজন মুসলিম এর উপর চড়াও করেছে। তখন আমি একটু ঘুরে এসে পিছন দিক দিয়ে তার কাঁধের উপর আঘাত করলাম। তখন সে আমার দিকে অগ্রসর হয়ে আমাকে এমনভাবে চেপে ধরলো যে, আমি এতে মৃত্যুর গন্ধ পেলাম। এরপর সে মৃত্যুমুখে ঢলে পরল এবং আমাকে ছেড়ে দিলো। এরপর আমি ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-এর সঙ্গে একত্রিত হলাম। তিনি বললেন, লোকদের কি হয়েছে? আমি বললাম, এ আল্লাহর ব্যাপার (ইচ্ছে)। তারপর (পলায়নপর) লোকেরা ফিরে এলো। রসুলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন (যুদ্ধক্ষেত্রে) বসেছিলেন। তিনি বললেন, যে মুসলিম সৈন্য অপর কোন শত্রু সৈন্যকে হত্যা করেছে এবং এতে তার প্রমান আছে, তাহলে তার সম্পদ তারই (হত্যাকারী মুজাহিদেরই প্রাপ্য)। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি দাঁড়ালাম এবং বললাম, আমার জন্য কেউ সাক্ষ্য দেবে? তারপর আমি বসে পড়লাম। তিনি আবারও সেরূপ কথা বললেন, আমি দাঁড়ালাম এবং বললাম কেউ আমার জন্য সাক্ষ্য দেবে? এবং আমি বসে পড়লাম। তিনি তৃতীয়বারও ঐরূপ বলেন। তা শুনে আমি (আবার) দন্ডায়মান হলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার কি হয়েছে? হে আবু কাতাদা্হ! আমি তাঁর কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম। তখন এক ব্যাক্তি বললো, হে আল্লাহর রসূল! তিনি (আবূ কাতাদা্হ) সত্য বলেছেন। ঐ নিহত ব্যাক্তির (পরিত্যক্ত) সম্পদ আমার কাছে রক্ষিত আছে। আপনি তার হক আমাকে দেয়ার ব্যাপারে তাঁকে রাজি করিয়ে দিন। তখন আবু বাকর সিদ্দিক (রাঃ) বললেন, না, আল্লাহর কসম! তা হতে পারে না। আল্লাহর সিংহসমূহের মধ্য হতে কোনো এক সিংহ (যোদ্ধা) যিনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন, আর তার প্রাপ্য সম্পদ যিনি তোমাকে প্রদান করবেন এমন হতে পারে। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ (আবূ বাকর) ঠিকই বলেছেন। সুতরাং তিনি তাকে (আবু কাতাদাহকেই) তা প্রদানের নির্দেশ দিলেন এবং তিনি তা আমাকেই দিলেন। আবূ কাতাদাহ (রাঃ) বলেন, আমি তা থেকে লৌহ বর্মটি বিক্রি করলাম এবং তা দিয়ে বানী সালামার মহল্লায় একটি ফলের বাগান খরিদ করলাম। এ ছিল আমার ইসলামী জীবনের প্রথম অর্জিত সম্পদ।
লায়স (রহঃ) এর বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ আছে যে, আবূ বাকর (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর সিংহসমূহের মধ্য থেকে কোন এক সিংহকে বাদ দিয়ে তা কুরায়শের কোনো শৃগালকে (কাপুরুসকে) প্রদান করেন না।
লায়স (রহঃ) এর বর্ণনায় রয়েছে এটিই আমার প্রথম সম্পদ যা আমি সংগ্রহ করেছি। (ই.ফা. ৪৪১৬, ই.সে. ৪৪১৮ )
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৬১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا يُوسُفُ بْنُ الْمَاجِشُونِ، عَنْ صَالِحِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، أَنَّهُ قَالَ بَيْنَا أَنَا وَاقِفٌ، فِي الصَّفِّ يَوْمَ بَدْرٍ نَظَرْتُ عَنْ يَمِينِي، وَشِمَالِي، فَإِذَا أَنَا بَيْنَ، غُلاَمَيْنِ مِنَ الأَنْصَارِ حَدِيثَةٍ أَسْنَانُهُمَا تَمَنَّيْتُ لَوْ كُنْتُ بَيْنَ أَضْلَعَ مِنْهُمَا فَغَمَزَنِي أَحَدُهُمَا . فَقَالَ يَا عَمِّ هَلْ تَعْرِفُ أَبَا جَهْلٍ قَالَ قُلْتُ نَعَمْ وَمَا حَاجَتُكَ إِلَيْهِ يَا ابْنَ أَخِي قَالَ أُخْبِرْتُ أَنَّهُ يَسُبُّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَئِنْ رَأَيْتُهُ لاَ يُفَارِقُ سَوَادِي سَوَادَهُ حَتَّى يَمُوتَ الأَعْجَلُ مِنَّا . قَالَ فَتَعَجَّبْتُ لِذَلِكَ فَغَمَزَنِي الآخَرُ فَقَالَ مِثْلَهَا – قَالَ – فَلَمْ أَنْشَبْ أَنْ نَظَرْتُ إِلَى أَبِي جَهْلٍ يَزُولُ فِي النَّاسِ فَقُلْتُ أَلاَ تَرَيَانِ هَذَا صَاحِبُكُمَا الَّذِي تَسْأَلاَنِ عَنْهُ قَالَ فَابْتَدَرَاهُ فَضَرَبَاهُ بِسَيْفَيْهِمَا حَتَّى قَتَلاَهُ ثُمَّ انْصَرَفَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَاهُ . فَقَالَ ” أَيُّكُمَا قَتَلَهُ ” . فَقَالَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا أَنَا قَتَلْتُ . فَقَالَ ” هَلْ مَسَحْتُمَا سَيْفَيْكُمَا ” . قَالاَ لاَ . فَنَظَرَ فِي السَّيْفَيْنِ فَقَالَ ” كِلاَكُمَا قَتَلَهُ ” . وَقَضَى بِسَلَبِهِ لِمُعَاذِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْجَمُوحِ وَالرَّجُلاَنِ مُعَاذُ بْنُ عَمْرِو بْنِ الْجَمُوحِ وَمُعَاذُ ابْنُ عَفْرَاءَ .
‘আবদুর রাহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বদরের দিন যুদ্ধ সারিতে অবস্হান করছিলাম। এমন সময় আমি ডান ও বাম দিকে তাকিয়ে দেখি যে, আমি দু’জন আনসারী বালকের মাঝখানে আছি। আমি আশা করেছিলাম, যদি আমি দু’জন শক্তিশালী যুবকের মাঝে থাকতে পেতাম। এমন সময় তাদের একজন আমাকে ইঙ্গিতে বললো, হে আমার চাচা! আপনি কি আবূ জাহেল কে চিনেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। আর তাকে তোমার প্রয়োজন কী হে ভ্রাতুস্পুত্র! সে বলল, আমি সংবাদ জেনেছি যে, সে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে গালাগালি করে। সেই আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার জীবন, যদি আমি তাকে দেখতে পাই তবে অবশ্যই তাকে ছেড়ে দিব না, যতক্ষন না আমাদের দু’জনের থেকে যার মৃত্যু পূর্বে হওয়া অবধারিত তার মৃত্যু হয়। বর্ণনাকারী বলেন, কিশোরের এ কথা শুনে আমি আশ্চর্যান্বিত হলাম। তারপর অপর কিশোর আমার দিকে ইঙ্গিত করে অনুরূপ কথা বলল। পরে বেশি সময় অতিবাহিত হয়নি, হঠাৎ আমি দেখলাম, আবূ জাহল লোকদের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। আমি তখন বালক দু’জনকে বললাম, তোমরা কি দেখছ না এ ব্যাক্তিকে যার ব্যাপারে তোমরা জানতে চাচ্ছ। উভয়ে দৌড়ে গিয়ে তাদের তলোয়ার দ্বারা তাকে আঘাত করলো এবং হত্যা করে ফেললো। অতঃপর উভয়েই ফিরে এসে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এই ঘটনার সংবাদ দিলো। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের মধ্যে তাকে কে হত্যা করেছে? তাঁদের প্রত্যেকে বললো, আমি তাকে হত্যা করেছি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের তলোয়ার কি পরিস্কার করে ফেলেছো? তাঁরা বলল, না। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উভয়ের তলোয়ার পরীক্ষা করে দেখলেন। তারপর বললেন, তোমরা উভয়েই তাকে হত্যা করেছ। অতএব রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মু’আয ইবনু ‘আমর ইবনু জামূহকে খুলে নেয়া সম্পদ প্রদানের নির্দেশ দেন। আর সে দু’বালক হলো, মু’আয ইবনু ‘আমর ইবনু জামূহ এবং মু’আয ইবনু ‘আফরা (রাঃ)। ( ই.ফা. ৪৪১৭, ই.সে. ৪৪১৯ )
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৬২
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَتَلَ رَجُلٌ مِنْ حِمْيَرَ رَجُلاً مِنَ الْعَدُوِّ فَأَرَادَ سَلَبَهُ فَمَنَعَهُ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ وَكَانَ وَالِيًا عَلَيْهِمْ فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَوْفُ بْنُ مَالِكٍ فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ لِخَالِدٍ ” مَا مَنَعَكَ أَنْ تُعْطِيَهُ سَلَبَهُ ” . قَالَ اسْتَكْثَرْتُهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ ” ادْفَعْهُ إِلَيْهِ ” . فَمَرَّ خَالِدٌ بِعَوْفٍ فَجَرَّ بِرِدَائِهِ ثُمَّ قَالَ هَلْ أَنْجَزْتُ لَكَ مَا ذَكَرْتُ لَكَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَمِعَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتُغْضِبَ فَقَالَ ” لاَ تُعْطِهِ يَا خَالِدُ لاَ تُعْطِهِ يَا خَالِدُ هَلْ أَنْتُمْ تَارِكُونَ لِي أُمَرَائِي إِنَّمَا مَثَلُكُمْ وَمَثَلُهُمْ كَمَثَلِ رَجُلٍ اسْتُرْعِيَ إِبِلاً أَوْ غَنَمًا فَرَعَاهَا ثُمَّ تَحَيَّنَ سَقْيَهَا فَأَوْرَدَهَا حَوْضًا فَشَرَعَتْ فِيهِ فَشَرِبَتْ صَفْوَهُ وَتَرَكَتْ كَدَرَهُ فَصَفْوُهُ لَكُمْ وَكَدَرُهُ عَلَيْهِمْ ” .
‘আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুমাইর গোত্রের এক ব্যাক্তি শত্রু পক্ষের এক ব্যাক্তিকে হত্যা করল এবং তার যুদ্ধলব্ধ সম্পদ নিতে চাইল। কিন্তু তাদের সেনাপতি খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) তাকে নিষেধ করলেন। তারপর ‘আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলেন এবং ঐ ঘটনার সংবাদ দিলেন। তখন তিনি খালিদ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, কেন তুমি (নিহত ব্যাক্তির) সম্পদ তাকে প্রদান করলে না? খালিদ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি তার প্রচুর সম্পদ পেয়েছি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাকে তা দিয়ে দাও। তারপর খালিদ (রাঃ) ‘আওফ (রাঃ)-এর কাছে দিয়ে গেলেন এবং ‘আওফ (রাঃ) তার চাদর ধরে টান দিয়ে বললেন, আমি তো আগেই বলেছিলাম ব্যাপারটি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে পৌছাবো। তাই কি হয়নি? অতএব রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা শুনতে পেলেন। এতে তিনি রাগাম্বিত হলেন। এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে খালিদ! তুমি তাকে তা দেবে না! হে খালিদ! তুমি তাকে তা দেবে না ! তোমরা কি আমার নেতাদের পরিত্যাগ করবে? নিশ্চয় তোমাদের এবং তাদের দৃষ্টান্ত এমন, যেমন কোন ব্যাক্তি উট কিংবা ছাগল চড়াতে মনস্থ করলো। এবং মাঠে নিয়ে চড়াল। তারপর পিপাসার সময় পানি পান করানোর জন্য জলাশয়ে নিয়ে গেল। পরিস্কার পানি পান করতে শুরু করল এবং ঘোলাটে পানি পরিত্যাগ করল। অতঃপর এমনিভাবে পরিস্কারটা তোমাদের জন্য এবং অপরিষ্কারটা তোমাদের নেতাদের জন্য। ( ই.ফা. ৪৪১৮, ই.সে. ৪৪২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৬৩
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ عَبْدِ، الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، قَالَ خَرَجْتُ مَعَ مَنْ خَرَجَ مَعَ زَيْدِ بْنِ حَارِثَةَ فِي غَزْوَةِ مُؤْتَةَ وَرَافَقَنِي مَدَدِيٌّ مِنَ الْيَمَنِ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . بِنَحْوِهِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ فِي الْحَدِيثِ قَالَ عَوْفٌ فَقُلْتُ يَا خَالِدُ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَضَى بِالسَّلَبِ لِلْقَاتِلِ قَالَ بَلَى وَلَكِنِّي اسْتَكْثَرْتُهُ .
‘আওফ ইবনু মালিক আশজা’ঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যায়দ ইবনু হারিসাহ (রাঃ)- এর সঙ্গে যারা মুতার যুদ্ধে গিয়েছিল, তন্মধ্যে আমিও ছিলাম। ইয়ামানের একজন সাহায্যকারীও আমার সাথি হলো। এরপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে উল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। তবে তিনি হাদীসে বলেছেন যে, ‘আওফ (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি বললাম, হে খালিদ! তুমি কি জাননা যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শত্রু থেকে ছিনিয়ে নেয়া লব্ধ সম্পদ হত্যাকারী মুজাহিদ ব্যাক্তির প্রাপ্য বলে নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, কিন্তু এই সম্পদ আমার কাছে অধিক মনে হলো। ( তাই আমি নিষেধ করেছিলাম।) ( ই.ফা. ৪৪১৯, ই.সে. ৪৪২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৬৪
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي إِيَاسُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنِي أَبِي سَلَمَةُ بْنُ الأَكْوَعِ، قَالَ غَزَوْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَوَازِنَ فَبَيْنَا نَحْنُ نَتَضَحَّى مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ جَاءَ رَجُلٌ عَلَى جَمَلٍ أَحْمَرَ فَأَنَاخَهُ ثُمَّ انْتَزَعَ طَلَقًا مِنْ حَقَبِهِ فَقَيَّدَ بِهِ الْجَمَلَ ثُمَّ تَقَدَّمَ يَتَغَدَّى مَعَ الْقَوْمِ وَجَعَلَ يَنْظُرُ وَفِينَا ضَعْفَةٌ وَرِقَّةٌ فِي الظَّهْرِ وَبَعْضُنَا مُشَاةٌ إِذْ خَرَجَ يَشْتَدُّ فَأَتَى جَمَلَهُ فَأَطْلَقَ قَيْدَهُ ثُمَّ أَنَاخَهُ وَقَعَدَ عَلَيْهِ فَأَثَارَهُ فَاشْتَدَّ بِهِ الْجَمَلُ فَاتَّبَعَهُ رَجُلٌ عَلَى نَاقَةٍ وَرْقَاءَ . قَالَ سَلَمَةُ وَخَرَجْتُ أَشْتَدُّ فَكُنْتُ عِنْدَ وَرِكِ النَّاقَةِ . ثُمَّ تَقَدَّمْتُ حَتَّى كُنْتُ عِنْدَ وَرِكِ الْجَمَلِ ثُمَّ تَقَدَّمْتُ حَتَّى أَخَذْتُ بِخِطَامِ الْجَمَلِ فَأَنَخْتُهُ فَلَمَّا وَضَعَ رُكْبَتَهُ فِي الأَرْضِ اخْتَرَطْتُ سَيْفِي فَضَرَبْتُ رَأْسَ الرَّجُلِ فَنَدَرَ ثُمَّ جِئْتُ بِالْجَمَلِ أَقُودُهُ عَلَيْهِ رَحْلُهُ وَسِلاَحُهُ فَاسْتَقْبَلَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ مَعَهُ فَقَالَ ” مَنْ قَتَلَ الرَّجُلَ ” . قَالُوا ابْنُ الأَكْوَعِ . قَالَ ” لَهُ سَلَبُهُ أَجْمَعُ ” .
আবু সালামাহ ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হাওয়াযিন গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ছিলাম। একদা আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে সকালের খাওয়ায় শামিল ছিলাম। এমন সময় এক ব্যাক্তি লাল রঙের উটে চড়ে এসে উটটিকে বসাল এবং তার কোমর থেকে একটি চামড়ার রশি বের করে এর দ্বারা সেটিকে বাধঁলো। এরপর সে এসে লোকদের সাথে সকালের নাস্তা খেতে লাগল এবং এদিক-সেদিক তাকাতে লাগলো (সে ছিলো গুপ্তচর) আমাদের মধ্যে দুর্বলতাও ছিল। সওয়ারীও কম ছিল। আমাদের কেউ কেউ পায়ে হেটেঁ চলছিল। এমন সময় সে ব্যাক্তি দ্রুত গতিতে নিজের উটের কাছে এসে এর রশি খুললো। এরপর উটটিকে বসিয়ে এর উপর সওয়ার হয়ে হাঁকালো এবং উট তাকে নিয়ে ছুটলো। তখন এক ব্যাক্তি একটি ধুসর বর্ণের উটনীর উপর আরোহণ করে তার পশ্চাদ্ধাবন করল।
সালামাহ (রাঃ) বলেন, আমি বের হয়ে দৌড় দিলাম। অতঃপর আরও অগ্রসর হয়ে আমি উটনীর লাগাম ধরে ফেললাম। এবং আমি তাকে বসালাম। যখন উটটি তার হাঁটু মাটিতে রাখল, তখন আমি তলোয়ার বের করে লোকটির মাথায় আঘাত করলাম। সে মাটিতে লুটিয়ে পরল। এরপর আমি উটটি টেনে নিয়ে এলাম। এর উপর ঐ ব্যাক্তির আসবাবপত্র ও অস্ত্রশস্ত্র বোঝাই ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোক জনসহ আমাকে এগিয়ে নিলেন। তিনি বললেন, কে এই লোকটিকে হত্যা করেছে? লোকেরা বললো, ইবনু আকওয়া। তিনি বললেন, (নিহত ব্যাক্তির) থেকে খুলে আনা সমুদয় সম্পদ আকওয়ার পুত্র সালামার জন্য। (ই.ফা. ৪৪২০, ই.সে. ৪৪২২ )
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৪. অধ্যায়ঃ
নফল ( অতিরিক্ত) প্রদান এবং আটকে পড়া বন্দীদের বিনিময়ে মুসলিমদের মুক্তি করা
৪৪৬৫
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي إِيَاسُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، غَزَوْنَا فَزَارَةَ وَعَلَيْنَا أَبُو بَكْرٍ أَمَّرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْنَا فَلَمَّا كَانَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ الْمَاءِ سَاعَةٌ أَمَرَنَا أَبُو بَكْرٍ فَعَرَّسْنَا ثُمَّ شَنَّ الْغَارَةَ فَوَرَدَ الْمَاءَ فَقَتَلَ مَنْ قَتَلَ عَلَيْهِ وَسَبَى وَأَنْظُرُ إِلَى عُنُقٍ مِنَ النَّاسِ فِيهِمُ الذَّرَارِيُّ فَخَشِيتُ أَنْ يَسْبِقُونِي إِلَى الْجَبَلِ فَرَمَيْتُ بِسَهْمٍ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ الْجَبَلِ فَلَمَّا رَأَوُا السَّهْمَ وَقَفُوا فَجِئْتُ بِهِمْ أَسُوقُهُمْ وَفِيهِمُ امْرَأَةٌ مِنْ بَنِي فَزَارَةَ عَلَيْهَا قِشْعٌ مِنْ أَدَمٍ – قَالَ الْقِشْعُ النِّطَعُ – مَعَهَا ابْنَةٌ لَهَا مِنْ أَحْسَنِ الْعَرَبِ فَسُقْتُهُمْ حَتَّى أَتَيْتُ بِهِمْ أَبَا بَكْرٍ فَنَفَّلَنِي أَبُو بَكْرٍ ابْنَتَهَا فَقَدِمْنَا الْمَدِينَةَ وَمَا كَشَفْتُ لَهَا ثَوْبًا فَلَقِيَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي السُّوقِ فَقَالَ ” يَا سَلَمَةُ هَبْ لِي الْمَرْأَةَ ” . فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَاللَّهِ لَقَدْ أَعْجَبَتْنِي وَمَا كَشَفْتُ لَهَا ثَوْبًا ثُمَّ لَقِيَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْغَدِ فِي السُّوقِ فَقَالَ لِي ” يَا سَلَمَةُ هَبْ لِي الْمَرْأَةَ لِلَّهِ أَبُوكَ ” . فَقُلْتُ هِيَ لَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَوَاللَّهِ مَا كَشَفْتُ لَهَا ثَوْبًا فَبَعَثَ بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَهْلِ مَكَّةَ فَفَدَى بِهَا نَاسًا مِنَ الْمُسْلِمِينَ كَانُوا أُسِرُوا بِمَكَّةَ .
সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা ফাযারাহ গোত্রের সাথে যুদ্ধ করছিলাম। আবূ বাকর (রাঃ) ছিলেন, আমাদের আমীর। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে আমাদের আমীর নিযুক্ত করেছিলেন। যখন আমাদের এবং পানির স্হানের মাঝে একঘন্টা সময়ের ব্যবধান ছিল, তখন আবূ বাকর (রাঃ) আমাদেরকে (রাতের শেষের দিকে সেখানে অবতরণের) নির্দেশ দিলেন। সুতরাং আমরা রাতের শেষাংশেই সেখানে অবতরণ করলাম। এরপর বিভিন্ন দিক দিয়ে অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে পানির নিকট পৌঁছলেন। আর যাদেরকে তার বিরুদ্ধে পেলেন হত্যা এবং বন্দী করলেন। আমি লোকদের একটি দলকে দেখতে পাচ্ছি যাদের মধ্যে শিশু ও নারী রয়েছে। আমি আশংকা করছিলাম যে, তারা হয়তোবা আমার আগেই পাহাড়ে পৌঁছে যাবে। অতএব আমি তাদের ও পাহাড়ের মাঝে তীর নিক্ষেপ করলাম। তারা তখন তীর দেখতে পেয়ে থেমে গেলো। তখন আমি তাদের হাঁকিয়ে নিয়ে এলাম। তাদের মাঝে চামড়ার পোষাক পরিহিত বানী ফাযারার একজন মহিলাও ছিল এবং (রাবী বলেন) তার সঙ্গে এক কন্যা ছিল। সে ছিলো আরবের সব চেয়ে সুন্দরী। আমি সকলকেই হাঁকিয়ে আবূ বাকর (রাঃ)-এর কাছে নিয়ে এলাম। আবূ বাকর (রাঃ) মহিলার কন্যাটি আমাকে নফল হিসেবে প্রদান করলেন। এরপর আমি মাদীনায় ফিরে এলাম। আমি তখনও তার বস্ত্র উঠাইনি। পরে বাজারে আমার সাথে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাক্ষাৎ হলে তিনি বললেন হে সালামাহ! তুমি মহিলাটি আমাকে দিয়ে দাও। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহ তা’আলার কসম, তাকে আমার অত্যাধিক পছন্দ হয়েছে এবং এখনও আমি তার বস্ত্র উঠাইনি। পরের দিন আবারও বাজারে আমার সাথে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাক্ষাৎ হলো। তখন তিনি বললেন, হে সালামাহ! তুমি মহিলাটি আমাকে দিয়ে দাও। “আল্লাহ তোমার পিতার কল্যান করুন।” তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহর কসম! সে আপনার জন্যই। আমি তার বস্ত্র উন্মোচন করিনি। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওই কন্যাটিকে মাক্কায় পাঠিয়ে দিয়ে তার বিনিময়ে কয়েকজন মুসলিম বন্দীকে মুক্ত করে আনলেন, যারা মাক্কায় ইতোপূর্বে বন্দী ছিল। ( ই.ফা. ৪৪২১, ই.সে. ৪৪২৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৫. অধ্যায়ঃ
ফাই বা বিনা যুদ্ধলব্ধ সম্পদের হুকুম
৪৪৬৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَيُّمَا قَرْيَةٍ أَتَيْتُمُوهَا وَأَقَمْتُمْ فِيهَا فَسَهْمُكُمْ فِيهَا وَأَيُّمَا قَرْيَةٍ عَصَتِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ خُمُسَهَا لِلَّهِ وَلِرَسُولِهِ ثُمَّ هِيَ لَكُمْ ” .
হাম্মান ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে আবূ হুরায়রা (রাঃ) যেসব হাদীস আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন তন্মধ্যে একটি হলো, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমরা যে কোন জনপদে এসে অবস্হান করবে, সেখান থেকে ( প্রাপ্ত ফাই-এর ) এক অংশ পাবে। আর যে কোনো জনপদের অধিবাসীরা আল্লাহ ও তার রসূলের অবাধ্যতা করবে, (অর্থাৎ- যুদ্ধ করবে) তবে তার (সম্পদের) এক পঞ্চমাংশ আল্লাহ ও তার রসূলের জন্য। অতঃপর অবশিষ্ট সম্পদ তোমাদের জন্য। (ই.ফা. ৪৪২২, ই.সে. ৪৪২৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৬৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ أَبِي شَيْبَةَ – قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرُونَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسٍ، عَنْ عُمَرَ، قَالَ كَانَتْ أَمْوَالُ بَنِي النَّضِيرِ مِمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِمَّا لَمْ يُوجِفْ عَلَيْهِ الْمُسْلِمُونَ بِخَيْلٍ وَلاَ رِكَابٍ فَكَانَتْ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم خَاصَّةً فَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِهِ نَفَقَةَ سَنَةٍ وَمَا بَقِيَ يَجْعَلُهُ فِي الْكُرَاعِ وَالسِّلاَحِ عُدَّةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ .
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বানী নাযীর গোত্রের সম্পদ এমন সম্পদ যা আল্লাহ তা’আলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বিনাযুদ্ধে প্রদান করেন। সেখানে মুসলিমরা ঘোড়া এবং উট হাঁকিয়ে যুদ্ধ করেনি। অতএব এ সম্পদ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য নির্দিষ্ট ছিল। সুতরাং তিনি তা থেকে স্বীয় পরিবারের এক বছরের ভরণ-পোষণে খরচ করতেন এবং অবশিষ্ট সম্পদ আল্লাহর পথে যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য ঘোড়া ও অস্ত্র ক্রয় খাতে রেখে দিতেন এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করতেন। (ই.ফা. ৪৪২৩, ই.সে. ৪৪২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৬৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ .
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উল্লিখিত হাদীস একই সূত্রে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৪২৪, ই.সে. ৪৪২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৬৯
وَحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ الضُّبَعِيُّ، حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَنَّ مَالِكَ بْنَ أَوْسٍ، حَدَّثَهُ قَالَ أَرْسَلَ إِلَىَّ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَجِئْتُهُ حِينَ تَعَالَى النَّهَارُ – قَالَ – فَوَجَدْتُهُ فِي بَيْتِهِ جَالِسًا عَلَى سَرِيرٍ مُفْضِيًا إِلَى رِمَالِهِ مُتَّكِئًا عَلَى وِسَادَةٍ مِنْ أَدَمٍ . فَقَالَ لِي يَا مَالُ إِنَّهُ قَدْ دَفَّ أَهْلُ أَبْيَاتٍ مِنْ قَوْمِكَ وَقَدْ أَمَرْتُ فِيهِمْ بِرَضْخٍ فَخُذْهُ فَاقْسِمْهُ بَيْنَهُمْ – قَالَ – قُلْتُ لَوْ أَمَرْتَ بِهَذَا غَيْرِي قَالَ خُذْهُ يَا مَالُ . قَالَ فَجَاءَ يَرْفَا فَقَالَ هَلْ لَكَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ فِي عُثْمَانَ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَالزُّبَيْرِ وَسَعْدٍ فَقَالَ عُمَرُ نَعَمْ . فَأَذِنَ لَهُمْ فَدَخَلُوا ثُمَّ جَاءَ . فَقَالَ هَلْ لَكَ فِي عَبَّاسٍ وَعَلِيٍّ قَالَ نَعَمْ . فَأَذِنَ لَهُمَا فَقَالَ عَبَّاسٌ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ اقْضِ بَيْنِي وَبَيْنَ هَذَا الْكَاذِبِ الآثِمِ الْغَادِرِ الْخَائِنِ . فَقَالَ الْقَوْمُ أَجَلْ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ فَاقْضِ بَيْنَهُمْ وَأَرِحْهُمْ . فَقَالَ مَالِكُ بْنُ أَوْسٍ يُخَيَّلُ إِلَىَّ أَنَّهُمْ قَدْ كَانُوا قَدَّمُوهُمْ لِذَلِكَ – فَقَالَ عُمَرُ اتَّئِدَا أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ أَتَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ” . قَالُوا نَعَمْ . ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى الْعَبَّاسِ وَعَلِيٍّ فَقَالَ أَنْشُدُكُمَا بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ أَتَعْلَمَانِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَاهُ صَدَقَةٌ ” . قَالاَ نَعَمْ . فَقَالَ عُمَرُ إِنَّ اللَّهَ جَلَّ وَعَزَّ كَانَ خَصَّ رَسُولَهُ صلى الله عليه وسلم بِخَاصَّةٍ لَمْ يُخَصِّصْ بِهَا أَحَدًا غَيْرَهُ قَالَ { مَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْ أَهْلِ الْقُرَى فَلِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ} مَا أَدْرِي هَلْ قَرَأَ الآيَةَ الَّتِي قَبْلَهَا أَمْ لاَ . قَالَ فَقَسَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَكُمْ أَمْوَالَ بَنِي النَّضِيرِ فَوَاللَّهِ مَا اسْتَأْثَرَ عَلَيْكُمْ وَلاَ أَخَذَهَا دُونَكُمْ حَتَّى بَقِيَ هَذَا الْمَالُ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْخُذُ مِنْهُ نَفَقَةَ سَنَةٍ ثُمَّ يَجْعَلُ مَا بَقِيَ أُسْوَةَ الْمَالِ . ثُمَّ قَالَ أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ أَتَعْلَمُونَ ذَلِكَ قَالُوا نَعَمْ . ثُمَّ نَشَدَ عَبَّاسًا وَعَلِيًّا بِمِثْلِ مَا نَشَدَ بِهِ الْقَوْمَ أَتَعْلَمَانِ ذَلِكَ قَالاَ نَعَمْ . قَالَ فَلَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبُو بَكْرٍ أَنَا وَلِيُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجِئْتُمَا تَطْلُبُ مِيرَاثَكَ مِنَ ابْنِ أَخِيكَ وَيَطْلُبُ هَذَا مِيرَاثَ امْرَأَتِهِ مِنْ أَبِيهَا فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ” . فَرَأَيْتُمَاهُ كَاذِبًا آثِمًا غَادِرًا خَائِنًا وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّهُ لَصَادِقٌ بَارٌّ رَاشِدٌ تَابِعٌ لِلْحَقِّ ثُمَّ تُوُفِّيَ أَبُو بَكْرٍ وَأَنَا وَلِيُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَوَلِيُّ أَبِي بَكْرٍ فَرَأَيْتُمَانِي كَاذِبًا آثِمًا غَادِرًا خَائِنًا وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنِّي لَصَادِقٌ بَارٌّ رَاشِدٌ تَابِعٌ لِلْحَقِّ فَوَلِيتُهَا ثُمَّ جِئْتَنِي أَنْتَ وَهَذَا وَأَنْتُمَا جَمِيعٌ وَأَمْرُكُمَا وَاحِدٌ فَقُلْتُمَا ادْفَعْهَا إِلَيْنَا فَقُلْتُ إِنْ شِئْتُمْ دَفَعْتُهَا إِلَيْكُمَا عَلَى أَنَّ عَلَيْكُمَا عَهْدَ اللَّهِ أَنْ تَعْمَلاَ فِيهَا بِالَّذِي كَانَ يَعْمَلُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخَذْتُمَاهَا بِذَلِكَ قَالَ أَكَذَلِكَ قَالاَ نَعَمْ . قَالَ ثُمَّ جِئْتُمَانِي لأَقْضِيَ بَيْنَكُمَا وَلاَ وَاللَّهِ لاَ أَقْضِي بَيْنَكُمَا بِغَيْرِ ذَلِكَ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ فَإِنْ عَجَزْتُمَا عَنْهَا فَرُدَّاهَا إِلَىَّ .
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মালিক ইবনু আওস (রাঃ) তাকে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন। বেলা উঠে গেলে আমি তাঁর নিকট এলাম। তখন আমি তাঁকে তাঁর ঘরে খাটের উপর বসা অবস্থায় দেখলাম। তাতে বিছানা ছিল চাটাইয়ের। তিনি চামড়ার একটি বালিশের উপর হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। তখন তিনি আমাকে বললেন, হে মাল! (অর্থাৎ- হে মালিক) তোমার সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবারের লোকজন আমার কাছে দ্রুত এলো, আমি তাদেরকে কিছু দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তুমি তা গ্রহন করো এবং তাদের মধ্যে বন্টন করে দাও। অতএব আমি বললাম, আপনি যদি এর নির্দেশ আমাকে ব্যতীত অন্য কাউকে দিতেন, তাহলে ভাল হত। তখন তিনি বললেন, হে মাল! (অর্থাৎ হে মালিক) তুমি তা গ্রহন করো। এমন সময় ইয়ারফা’ (রহঃ) তাঁর কাছে উপস্থিত হয়ে বলল, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনার সাথে সাক্ষাৎ করতে চান ‘উসমান, ‘আবদূর রহমান ইবনু ‘আওফ, যুবায়র এবং সা’দ। তখন ‘উমার বললেন, হ্যাঁ, তাদেরকে আসতে দাও। তখন সকলেই প্রবেশ করলেন। এরপর পুনরায় ইয়ারফা’ এসে বলল, ‘আব্বাস এবং ‘আলী (রাঃ) আপনার সাথে সাক্ষাৎ করতে চান। তখন তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাদেরকেও আসতে দাও। এরপর ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! আমার মধ্যে এবং এ মিথ্যাবাদী, পাপী, প্রতারক ও বিশ্বাসঘাতকের মধ্যে মীমাংসা করে দিন। [৩৬] তখন লোকেরা বলল, হ্যাঁ, হে আমীরুল মু’মিনীন! তাঁদের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিন এবং তাদেরকে এ থেকে স্বস্তি দিন। অতএব মালিক ইবনু আওস (রাঃ) বললেন, আমার ধারনা হলো যে, তাঁরা দু’জন অর্থাৎ- ‘আলী এবং ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁদেরকে পূর্বাহ্নে পাঁঠিয়ে ছিলেন এ ব্যাপারটির জন্যেই, যেন তাঁরা ‘উমারকে ব্যাপারটি বুঝিয়ে ফায়সালা করে দেন।
‘উমার বললেন, আপনারা একটু অপেক্ষা করুন। আমি আপনাদের সে মহান আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, যার নির্দেশে আকাশ এবং পৃথিবী যথাস্থানে অবস্থিত। আপনাদের কি জানা নেই যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমরা (নাবীগণ) কাউকে ওয়ারিস বানিয়ে যাই না, আমরা যা রেখে যাই তা হবে সদাকাহ। তখন তাঁরা বললেন, হ্যাঁ, আমরা তা জানি। এবার তিনি ‘আলী এবং ‘আব্বাস (রাঃ)- এর দিকে লক্ষ্য করে বললেন, আমি আপনাদের উভয়কেই সে মহান আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, যাঁর নির্দেশে আকাশ এবং পৃথিবী যথাস্থানে অবস্থিত। আপনারা কি জানেন না যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমরা (নাবী সম্প্রদায়) কাউকে উত্তরাধিকার করে যাই না। আমরা যা রেখে যাই, তা হবে সদাকাহ। তখন তাঁরা উভয়েই বললেন, হ্যাঁ। আমরা তা জানি। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহ তা’আলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য প্রদান করেছেন, যা তাকে ছাড়া অন্য কাউকে প্রদান করেননি। তিনি বলেন, “আল্লাহ তা’আলা জনপদ বা নগরবাসীর নিকট থেকে মালে ফাই [৩৭] হিসেবে স্বীয় রসূলকে যা প্রদান করেছেন- তা আল্লাহ ও তদীয় রসূলের জন্য নির্দিষ্ট। আমার জানা নেই যে, তিনি এ পঠিত আয়াতের পূর্বেও কোন আয়াত পাঠ করছিলেন কি-না? অতঃপর ‘উমার (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো তোমাদেরকে বানী নাযীর গোত্র থেকে প্রাপ্ত সম্পদ বন্টন করে দিয়েছেন। আল্লাহর শপথ! তিনি সম্পদকে নিজের জন্যে জমা করে রেখে যাননি। আর তিনি এমনও করেননি যে, নিজে সম্পদ নিয়েছেন এবং তোমাদেরকে তা দেননি। পরিশেষে যে সম্পদ রইল তা থেকে আপন পরিবারের এক বছরের ভরণ পোষণের খরচ রেখে অবশিষ্ট সম্পদ বাইতুল মালে জমা দেন। এরপর ‘উমার (রাঃ) বললেন, আপনাদেরকে সে মহান আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, যার নির্দেশে আকাশ ও পৃথিবী যথাস্থানে অবস্থিত। আপনারা কি সেসব কথা অবগত আছেন। তখন তাঁরা বলেন, হ্যাঁ, আমরা তা জানি। এরপর তিনি ‘আব্বাস এবং ‘আলী (রাঃ) উভয়কে অনুরূপ শপথ প্রদান করলেন, যেরূপ তিনি ইতোপূর্বে আগত সম্প্রদায়ের লোকদেরকে শপথ প্রদান করেছিলেন। তিনি বললেন, আপনারা উভয়ই কি এসব কথা জানেন? তখন তাঁরা উভয়েই বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর ‘উমার (রাঃ) বললেন, যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ইনতিকাল হলো তখন আবূ বাকর (রাঃ) বললেন যে, আমিই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওয়ালী। আর আপনারা উভয়েই এসেছেন, আপনি আপনার ভাতিজা থেকে মীরাস দাবী করতে। আর আপনি এসেছেন, আপনার স্ত্রীর (ফাতিমার) পিতা থেকে মীরাস গ্রহন করতে। এরপর আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাদের নাবীগনের সম্পত্তিতে কোন উত্তরাধিকারিত্ব নেই। আমরা যা রেখে যাই- তা হয় সদাকাহ। আপনারা উভয়েই তো তাকে মিথ্যাবাদী, অপরাধী, বিশ্বাসঘাতক এবং খিয়ানতকারী মনে করবেন। অতঃপর প্রকৃতপক্ষে নিশ্চয়ই তিনি [আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)] সত্যবাদী, পুণ্যবান, সত্তপথ প্রদর্শক এবং সত্যের অনুসারী যা আল্লাহ জানেন। অতঃপর আবূ বাকর (রাঃ) মৃত্যুবরণ করলেন। তখন আমি ওয়ালী হলাম রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ও আবূ বাকর (রাঃ)-এর। সুতরাং আপনারা উভয়েই আমাকেও তার মত মিথ্যাবাদী, পাপী, বিশ্বাসঘাতক এবং খিয়ানতকারী মনে করছেন। আল্লাহ অবগত আছেন যে, নিশ্চয়ই আমি সত্যবাদী, পুণ্যবান, সত্য পথ-প্রদর্শক এবং সত্যের অনুসারী। আমি সে সম্পদেরও ওলী ও অভিভাবক। অতঃপর আপনি এবং ইনি এসেছেন। আপনারা উভয়েই এক এবং আপনাদের দাবীও এক। সুতরাং আপনারা বলছেন যে, এসব আমাদের কাছে দিয়ে দিন।
আমি বলি- যদি আপনারা চান, তবে আমি তা আপনাদেরকে দিয়ে দেব- এ শর্তে যে, আপনারা এ সম্পদ দ্বারা সে কাজ করবেন, যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করতেন। অতএব আপনারা এ শর্তে আমার নিকট থেকে তা গ্রহন করেছেন। এরপর ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমার কথা কি যথার্থ? তখন উভয়েই বললেন, হ্যাঁ। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তারপরও আপনারা দুজন আমার কাছে এসেছেন, আপনাদের মাঝে (সম্পদের) মীমাংসা করে দেয়ার জন্য। আল্লাহর কসম! আমি আপনাদের উভয়ের মাঝে এটা ছাড়া আর কোন মীমাংসা করতে পারবো না কিয়ামাত পর্যন্ত। আর যদি আপনারা সে মালের দায়িত্ব পালনে অপারগ হন, তবে তা আপনারা আমার কাছে ফেরত দিয়েছেন। (ই.ফা. ৪৪২৫, ই.সে. ৪৪২৭)
[৩৬] এখানে এ শব্দগুলোর প্রকৃত অর্থ উদ্দেশ্য নয়। বরং রূপক অর্থে এ শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে। ‘আলী (রাঃ) -কে ধমক দেয়ার জন্যই ‘আব্বাস (রাঃ) এ কথা বলেছেন।
[৩৭] যুদ্ধবিহীন প্রাপ্ত সম্পদকে মালে ফাই বলে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৭০
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، – قَالَ ابْنُ رَافِعٍ حَدَّثَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، – أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ، بْنِ الْحَدَثَانِ قَالَ أَرْسَلَ إِلَىَّ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَقَالَ إِنَّهُ قَدْ حَضَرَ أَهْلُ أَبْيَاتٍ مِنْ قَوْمِكَ . بِنَحْوِ حَدِيثِ مَالِكٍ . غَيْرَ أَنَّ فِيهِ، فَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِهِ مِنْهُ سَنَةً وَرُبَّمَا قَالَ مَعْمَرٌ يَحْبِسُ قُوتَ أَهْلِهِ مِنْهُ سَنَةً ثُمَّ يَجْعَلُ مَا بَقِيَ مِنْهُ مَجْعَلَ مَالِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ .
মালিক ইবনু আওস ইবনু হাদসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন। এরপর বললেন, তোমার সম্প্রদায়ের কতিপয় পরিবারের লোক আমার কাছে উপস্থিত হলো। … … তারপর মালিক (রাঃ) – এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তাছাড়া তাঁর হাদীসে রয়েছে যে, “তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পরিবারের জন্য তা থেকে এক বছরের খরচ দিতেন। অনেক সময় মামার (রহঃ) বলেছেন যে, তাঁর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিবারের জন্য তা থেকে এক বছরের খোরাকী রেখে দিতেন। এরপর অবশিষ্ট সম্পদ বাইতুল মালে জমা দিতেন। (ই.ফা. ৪৪২৬, ই.সে. ৪৪২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৬. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বানী- আমরা (নাবীগন) কাউকে উত্তরাধিকারী রেখে যাই না, আমরা যা কিছু রেখে যাই সবই সদাকাহ (বাইতুল মাল)
৪৪৭১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ إِنَّ أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حِينَ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَرَدْنَ أَنْ يَبْعَثْنَ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ فَيَسْأَلْنَهُ مِيرَاثَهُنَّ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ عَائِشَةُ لَهُنَّ أَلَيْسَ قَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا فَهُوَ صَدَقَةٌ ” .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ইন্তিকাল হলো, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সহধর্মিণীগন ‘উসমান (রাঃ) -কে আবূ বাকর (রাঃ) এর নিকট পাঠাতে মনস্থ করলেন, যেন তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছ থেকে তাঁদের মীরাস তলব করেন। তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ) তাঁদের বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি এ কথা বলে যাননি যে, আমরা (নাবীগণ) সম্পত্তিতে কাউকে ওয়ারিস রেখে যাই না। আমরা যা রেখে যাই তা হবে সদাকাহ সর্বসাধারনের জন্য। (ই.ফা. ৪৪২৭, ই.সে. ৪৪২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৭২
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، أَخْبَرَنَا حُجَيْنٌ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَرْسَلَتْ إِلَى أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ تَسْأَلُهُ مِيرَاثَهَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَيْهِ بِالْمَدِينَةِ وَفَدَكٍ وَمَا بَقِيَ مِنْ خُمْسِ خَيْبَرَ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ إِنَّمَا يَأْكُلُ آلُ مُحَمَّدٍ – صلى الله عليه وسلم – فِي هَذَا الْمَالِ ” . وَإِنِّي وَاللَّهِ لاَ أُغَيِّرُ شَيْئًا مِنْ صَدَقَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ حَالِهَا الَّتِي كَانَتْ عَلَيْهَا فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلأَعْمَلَنَّ فِيهَا بِمَا عَمِلَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَبَى أَبُو بَكْرٍ أَنْ يَدْفَعَ إِلَى فَاطِمَةَ شَيْئًا فَوَجَدَتْ فَاطِمَةُ عَلَى أَبِي بَكْرٍ فِي ذَلِكَ – قَالَ – فَهَجَرَتْهُ فَلَمْ تُكَلِّمْهُ حَتَّى تُوُفِّيَتْ وَعَاشَتْ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سِتَّةَ أَشْهُرٍ فَلَمَّا تُوُفِّيَتْ دَفَنَهَا زَوْجُهَا عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ لَيْلاً وَلَمْ يُؤْذِنْ بِهَا أَبَا بَكْرٍ وَصَلَّى عَلَيْهَا عَلِيٌّ وَكَانَ لِعَلِيٍّ مِنَ النَّاسِ وِجْهَةٌ حَيَاةَ فَاطِمَةَ فَلَمَّا تُوُفِّيَتِ اسْتَنْكَرَ عَلِيٌّ وُجُوهَ النَّاسِ فَالْتَمَسَ مُصَالَحَةَ أَبِي بَكْرٍ وَمُبَايَعَتَهُ وَلَمْ يَكُنْ بَايَعَ تِلْكَ الأَشْهُرَ فَأَرْسَلَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ أَنِ ائْتِنَا وَلاَ يَأْتِنَا مَعَكَ أَحَدٌ – كَرَاهِيَةَ مَحْضَرِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ – فَقَالَ عُمَرُ لأَبِي بَكْرٍ وَاللَّهِ لاَ تَدْخُلْ عَلَيْهِمْ وَحْدَكَ . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَمَا عَسَاهُمْ أَنْ يَفْعَلُوا بِي إِنِّي وَاللَّهِ لآتِيَنَّهُمْ . فَدَخَلَ عَلَيْهِمْ أَبُو بَكْرٍ . فَتَشَهَّدَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ ثُمَّ قَالَ إِنَّا قَدْ عَرَفْنَا يَا أَبَا بَكْرٍ فَضِيلَتَكَ وَمَا أَعْطَاكَ اللَّهُ وَلَمْ نَنْفَسْ عَلَيْكَ خَيْرًا سَاقَهُ اللَّهُ إِلَيْكَ وَلَكِنَّكَ اسْتَبْدَدْتَ عَلَيْنَا بِالأَمْرِ وَكُنَّا نَحْنُ نَرَى لَنَا حَقًّا لِقَرَابَتِنَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَلَمْ يَزَلْ يُكَلِّمُ أَبَا بَكْرٍ حَتَّى فَاضَتْ عَيْنَا أَبِي بَكْرٍ فَلَمَّا تَكَلَّمَ أَبُو بَكْرٍ قَالَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَرَابَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَحَبُّ إِلَىَّ أَنْ أَصِلَ مِنْ قَرَابَتِي وَأَمَّا الَّذِي شَجَرَ بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ مِنْ هَذِهِ الأَمْوَالِ فَإِنِّي لَمْ آلُ فِيهِ عَنِ الْحَقِّ وَلَمْ أَتْرُكْ أَمْرًا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُهُ فِيهَا إِلاَّ صَنَعْتُهُ . فَقَالَ عَلِيٌّ لأَبِي بَكْرٍ مَوْعِدُكَ الْعَشِيَّةُ لِلْبَيْعَةِ . فَلَمَّا صَلَّى أَبُو بَكْرٍ صَلاَةَ الظُّهْرِ رَقِيَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَتَشَهَّدَ وَذَكَرَ شَأْنَ عَلِيٍّ وَتَخَلُّفَهُ عَنِ الْبَيْعَةِ وَعُذْرَهُ بِالَّذِي اعْتَذَرَ إِلَيْهِ ثُمَّ اسْتَغْفَرَ وَتَشَهَّدَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ فَعَظَّمَ حَقَّ أَبِي بَكْرٍ وَأَنَّهُ لَمْ يَحْمِلْهُ عَلَى الَّذِي صَنَعَ نَفَاسَةً عَلَى أَبِي بَكْرٍ وَلاَ إِنْكَارًا لِلَّذِي فَضَّلَهُ اللَّهُ بِهِ وَلَكِنَّا كُنَّا نَرَى لَنَا فِي الأَمْرِ نَصِيبًا فَاسْتُبِدَّ عَلَيْنَا بِهِ فَوَجَدْنَا فِي أَنْفُسِنَا فَسُرَّ بِذَلِكَ الْمُسْلِمُونَ وَقَالُوا أَصَبْتَ . فَكَانَ الْمُسْلِمُونَ إِلَى عَلِيٍّ قَرِيبًا حِينَ رَاجَعَ الأَمْرَ الْمَعْرُوفَ .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ফাতিমাহ বিনতু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বাকর-এর নিকট লোক পাঠালেন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সম্পদে তাঁর মীরাস এর দাবী করে, যা আল্লাহ তা’আলা তাকে মাদীনাহ ও ফিদাক-এর ফাই এবং খাইবারের অবশিষ্ট এক পঞ্চমাংশ থেকে প্রদান করেছেন। তখন আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলে গিয়েছেন- আমরা আমাদের (নাবীগনের) পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে কাউকে ওয়ারিস রেখে যাই না। আমরা যা রেখে যাই তা হয় সদাকাহ (বাইতুল মাল)। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারবর্গ তা থেকে জীবিকা গ্রহন করবেন। আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়কালে সদাকাহর যে অবস্থা চালু ছিল, তা আমি পরিবর্তন করব না। আর এতে আমি নিশ্চয়ই সে কাজ করবো, যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করে গিয়েছেন। অতএব, আবূ বাকর (রাঃ) ফাতিমাহ (রাঃ)-কে তা থেকে কিছু প্রদান করতে অস্বীকার করলেন। সুতরাং ফাতিমাহ (রাঃ) এতে রাগান্বিত হয়ে তাঁকে পরিত্যাগ করলেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে কোন কথা বলেননি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের পর তিনি ছয় মাস জীবিত ছিলেন। এরপর যখন তিনি ইন্তিকাল করলেন, তখন তার স্বামী ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) তাকে রাতে দাফন করলেন এবং ফাতিমাহ-এর মৃত্যু সংবাদ পর্যন্ত আবূ বাকর (রাঃ)-কে দেননি। ‘আলী (রাঃ) তাঁর জানাযার সলাত আদায় করলেন। ফাতিমাহ (রাঃ)-এর জীবিতকাল পর্যন্ত ‘আলী (রাঃ)-এর প্রতি জনগণের বিশেষ মর্যাদাবোধ ছিল। এরপর যখন তাঁর ইন্তিকাল হলো তখন তিনি লোকের চেহারায় অপছন্দনীয় ভাব দেখতে পেলেন। অতএব তিনি আবূ বাকর (রাঃ)-এর সঙ্গে ফায়সালা করে তাঁর বাই’আতের প্রার্থনা করলেন। কেননা তিনি ঐ মাসগুলোতে তার বাই’আত গ্রহন করেননি। তারপর ‘আলী (রাঃ) আবূ বাকর (রাঃ)-এর নিকট লোক পাঁঠিয়ে সংবাদ দিলেন যে, আপনি একাকী আমার সাথে সাক্ষাৎ করুন। আপনার সাথে অন্য কাউকে আনবেন না। কেননা, তিনি ‘উমার (রাঃ)-এর আগমন কে অপছন্দ করছিলেন। ‘উমার (রাঃ) আবূ বাকরকে বললেন, আল্লাহর কসম! আপনি একাকী তাঁদের কাছে যাবেন না। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, আমি আশংকা করিনি যে, তাঁরা আমার সাথে কিছু করবেন। আল্লাহর কসম! আমি একাকীই যাব। পরিশেষে আবূ বাকর (রাঃ) তাঁদের কাছে গেলেন। এরপর ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) তাশাহহুদ [তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য বাণী] পাঠ করলেন, তারপর বললেন, হে আবূ বাকর! আপনার মর্যাদা এবং আল্লাহ তা’আলা আপনাকে যে সম্মান প্রদান করেছেন, তা আমরা জানি। আর আল্লাহ তা’আলা আপনাকে যে নি’আমাত প্রদান করেছেন, তাতে আমাদের কোন হিংসা নেই। কিন্তু আপনি আমাদের উপেক্ষা করে খিলাফাতের দায়িত্বভার গ্রহন করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আত্মীয়ের কারণে আমরা মনে করতাম যে, আমাদেরও অধিকার আছে। আবূ বাকরের সঙ্গে তিনি এভাবে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পরিশেষে আবূ বাকর (রাঃ)-এর দু’চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হলো। এরপর যখন আবূ বাকর (রাঃ) কথা বলতে শুরু করলেন, তখন তিনি বললেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ করে বলছি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আত্মীয়ের প্রতি উত্তম আচরণ করা আমার কাছে অধিক প্রিয় আমার নিজ আত্মীয়ের প্রতি ভাল আচরণের চেয়েও। তবে আমার এবং আপনাদের মধ্যে এ সম্পদ নিয়ে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে তাতে আমি সত্য পরিহার করব না। আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এতে যা করতে দেখেছি তা আমি পরিত্যাগ করব না। এরপর ‘আলী (রাঃ) আবূ বাকর (রাঃ)-কে বললেন যে, আমি বাই’আতের জন্য আপনাকে আজ বিকাল বেলায় কথা দিলাম। যখন আবূ বাকর (রাঃ) যুহরের সলাত শেষ করলেন তখন তিনি মিম্বারে আরোহণ করলেন এবং তাশাহহুদ পাঠ করলেন। এরপর তিনি ‘আলী (রাঃ)-এর ঘটনা বর্ণনা করেন এবং তাঁর বাই’আত গ্রহণে বিলম্ব ও এ বিষয়ে তাঁর ওযর বর্ণনা করেন, যা তার কাছে বর্ণনা করা হয়েছিল। এরপর তিনি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তারপর ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) তাশাহহুদ পাঠ করলেন এবং আবূ বাকর (রাঃ)-এর মহত্ত্ব বর্ণনা করলেন। আর তিনি ব্যক্ত করলেন যে, তিনি যা করেছেন, তা আবূ বাকর (রাঃ)-এর প্রতি হিংসা পোষণ করে নয়। আর না আছে আমাদের প্রতি আল্লাহ প্রদত্ত কোন সম্মান ও নি’আমাতের অস্বীকৃতি। বরং আমরা মনে করতাম যে, খিলাফাতের মধ্যে আমাদেরও অংশ আছে। কিন্তু আবূ বাকর (রাঃ) আমাদের উপেক্ষা করে এ কাজের দায়িত্বভার গ্রহন করেন। এতে আমরা মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছি। এ কথা শুনে মুসলিমগণ আনন্দিত হলেন এবং তাঁরা বললেন যে, আপনি তা ঠিক বলেছেন। তখন তিনি কল্যাণের প্রতি ফিরে এলেন অর্থাৎ- তখন মনোমালিন্যের অবসান হলো এবং আবূ বাকর (রাঃ) এর বাই’আত গ্রহন করা হলো, তখন থেকে মুসলিমগণ ‘আলী (রাঃ)-এর সংস্পর্শে আসতে লাগলেন। (ই.ফা. ৪৪২৮, ই.সে. ৪৪৩০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৭৩
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَ مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ قَالَ ابْنُ رَافِعٍ حَدَّثَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّصلى الله عليه وسلم وَهُمَا حِينَئِذٍ يَطْلُبَانِ أَرْضَهُ مِنْ فَدَكٍ وَسَهْمَهُ مِنْ خَيْبَرَ . فَقَالَ لَهُمَا أَبُو بَكْرٍ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمِثْلِ مَعْنَى حَدِيثِ عُقَيْلٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ ثُمَّ قَامَ عَلِيٌّ فَعَظَّمَ مِنْ حَقِّ أَبِي بَكْرٍ وَذَكَرَ فَضِيلَتَهُ وَسَابِقَتَهُ ثُمَّ مَضَى إِلَى أَبِي بَكْرٍ فَبَايَعَهُ فَأَقْبَلَ النَّاسُ إِلَى عَلِيٍّ فَقَالُوا أَصَبْتَ وَأَحْسَنْتَ . فَكَانَ النَّاسُ قَرِيبًا إِلَى عَلِيٍّ حِينَ قَارَبَ الأَمْرَ الْمَعْرُوفَ .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ফাতিমাহ এবং ‘আব্বাস (রাঃ) উভয়েই আবূ বাকর (রাঃ)-এর নিকট আগমন করলেন, তখন তারা উভয়ে ফেদাকের ভূমি ও খাইবারের প্রাপ্য অংশ দাবী করলেন। তখন আবূ বাকর (রাঃ) উভয়কেই বললেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি… এরপর যুহরী (রহঃ) হতে ‘উকায়ল কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের মর্মার্থের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করলেন। কিন্তু তিনি তাছাড়া এতে বর্ণনা করলেন যে, এরপর ‘আলী (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং আবূ বাকর (রাঃ) এর যোগ্যতা ও মর্যাদা বর্ণনা করলেন এবং তার সর্বকাজে উল্লেখ করলেন। এরপর তিনি আবূ বাকর (রাঃ)-এর কাছে গেলেন এবং তার অগ্রগামীরা বাই’আত গ্রহন করলেন। তারপর জনগন ‘আলী (রাঃ) এর নিকট এসে বললেন, আপনি ঠিকই করেছেন, আপনি ভালই করেছেন। যখন ‘আলী (রাঃ) কল্যাণকর ব্যবস্থার নিকটবর্তী হলেন, তখন লোকজনও তার সংস্পর্শে আসতে লাগলো। (ই.ফা. ৪৪২৯, ই.সে. ৪৪৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৭৪
وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَالْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ قَالاَ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، – وَهُوَ ابْنُ إِبْرَاهِيمَ – حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَأَلَتْ أَبَا بَكْرٍ بَعْدَ وَفَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَقْسِمَ لَهَا مِيرَاثَهَا مِمَّا تَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَيْهِ . فَقَالَ لَهَا أَبُو بَكْرٍ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ” . قَالَ وَعَاشَتْ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سِتَّةَ أَشْهُرٍ وَكَانَتْ فَاطِمَةُ تَسْأَلُ أَبَا بَكْرٍ نَصِيبَهَا مِمَّا تَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ خَيْبَرَ وَفَدَكٍ وَصَدَقَتِهِ بِالْمَدِينَةِ فَأَبَى أَبُو بَكْرٍ عَلَيْهَا ذَلِكَ وَقَالَ لَسْتُ تَارِكًا شَيْئًا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْمَلُ بِهِ إِلاَّ عَمِلْتُ بِهِ إِنِّي أَخْشَى إِنْ تَرَكْتُ شَيْئًا مِنْ أَمْرِهِ أَنْ أَزِيغَ فَأَمَّا صَدَقَتُهُ بِالْمَدِينَةِ فَدَفَعَهَا عُمَرُ إِلَى عَلِيٍّ وَعَبَّاسٍ فَغَلَبَهُ عَلَيْهَا عَلِيٌّ وَأَمَّا خَيْبَرُ وَفَدَكُ فَأَمْسَكَهُمَا عُمَرُ وَقَالَ هُمَا صَدَقَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَتَا لِحُقُوقِهِ الَّتِي تَعْرُوهُ وَنَوَائِبِهِ وَأَمْرُهُمَا إِلَى مَنْ وَلِيَ الأَمْرَ قَالَ فَهُمَا عَلَى ذَلِكَ إِلَى الْيَوْمِ .
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কন্যা ফাতিমাহ (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ইন্তিকালের পর আবূ বাকর (রাঃ) এর নিকট রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পরিত্যক্ত সম্পত্তির যা আল্লাহ তাকে দিয়েছেন নিজের প্রাপ্য অংশ দাবী করেন। তখন আবূ বাকর (রাঃ) তাকে বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমরা (নবীগণ) সম্পত্তিতে কাউকে উত্তরাধিকার রেখে যাই না। আমরা যা রেখে যাই তা হবে সদাকাহ।
‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ইন্তিকালের পর ফাতিমাহ (রাঃ) ছয় মাস জীবিত ছিলেন। ফাতিমাহ (রাঃ) আবূ বাকর (রাঃ) এর নিকট তার সে প্রাপ্য অংশ চেয়েছিলেন- যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাইবার, ফিদাক, এবং মাদীনার (সদাকাহ) দান করে রেখে গিয়েছেন। আবূ বাকর (রাঃ) তাকে তা প্রদান করতে অস্বীকার করলেন এবং বললেন, আমি এমন কোন কাজ ছেড়ে দেব না যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করতেন। কেননা, আমি ভয় করি যে, যদি তার কোন কাজ পরিত্যাগ করি, তবে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবো। তবে হ্যাঁ, মাদীনার (সদাকার ) দানের মাল উমার (রাঃ) তার সময়ে ‘আলী এবং ‘আব্বাসকে প্রদান করেছিলেন। কিন্তু ‘আলী (রাঃ) একাকীই সে সম্পদ অধিকার করে নেন। আর খাইবার এবং ফিদাকের সম্পদ ‘উমার (রাঃ) নিজের দায়িত্বে রাখলেন এবং বললেন, এ ছিল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রয়োজন মেটানোর জন্য এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যয়ের জন্য। এ দুটো সম্পদের দায়িত্ব থাকে মুসলিমদের ‘আমীরের উপর। বর্ণনাকারী বলেন, এ উভয় সম্পদের বন্টন ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত তদ্রূপই আছে। (ই.ফা. ৪৪৩০, ই.সে. ৪৪৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৭৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَقْتَسِمُ وَرَثَتِي دِيِنَارًا مَا تَرَكْتُ بَعْدَ نَفَقَةِ نِسَائِي وَمَئُونَةِ عَامِلِي فَهُوَ صَدَقَةٌ ” .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পরিত্যক্ত সম্পদের এক দিনারও বন্টিত হবে না। আমি যা রেখে যাই তা থেকে আমার স্ত্রীগনের ব্যয় নির্বাহ এবং রাষ্ট্রীয় পরিচালকের বেতন ভাতার পর যা অবশিষ্ট থাকবে, তা হবে সদাকাহ বা দান। (ই.ফা. ৪৪৩১,ই.সে. ৪৪৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৭৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . نَحْوَهُ .
আবূ যিনাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪৪৩২, ই.সে. ৪৪৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৭৭
وَحَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ عَدِيٍّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ” .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমরা কাউকে উত্তরাধিকারী করে যাই না। আমরা যা রেখে যাই তা হবে সদাকাহ বা দান। (ই.ফা. ৪৪৩৩, ই.সে. ৪৪৩৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৭. অধ্যায়ঃ
উপস্থিত মুজাহিদের মাঝে গনীমাত (যুদ্ধলব্ধ)সম্পদের বন্টন পদ্ধতি
৪৪৭৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَأَبُو كَامِلٍ فُضَيْلُ بْنُ حُسَيْنٍ كِلاَهُمَا عَنْ سُلَيْمٍ، قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا سُلَيْمُ بْنُ أَخْضَرَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، حَدَّثَنَا نَافِعٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَسَمَ فِي النَّفَلِ لِلْفَرَسِ سَهْمَيْنِ وَلِلرَّجُلِ سَهْمًا .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুদ্ধলব্ধ সম্পদের মধ্যে অশ্বারোহী সৈনিকের জন্য দু’ভাগ এবং পদাতিক সৈনিকের জন্য এক ভাগ হিসেবে বন্টন করেন। (ই.ফা. ৪৪৩৪, ই.সে. ৪৪৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৭৯
حَدَّثَنَاهُ ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِي النَّفَلِ .
ইবনু নুমায়র (রহঃ) এ একই সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
উল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। কিন্তু তিনি (আরবী) (গনীমাতের সম্পদে) এ কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৪৩৫, ই.সে. ৪৪৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮. অধ্যায়ঃ
বদর যুদ্ধে ফেরেশতা দ্বারা সাহায্যে এবং গনীমাতের মাল বৈধ হওয়া
৪৪৮০
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي سِمَاكٌ، الْحَنَفِيُّ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، يَقُولُ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ ح وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ الْحَنَفِيُّ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ حَدَّثَنِي أَبُو زُمَيْلٍ – هُوَ سِمَاكٌ الْحَنَفِيُّ – حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ قَالَ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ نَظَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْمُشْرِكِينَ وَهُمْ أَلْفٌ وَأَصْحَابُهُ ثَلاَثُمِائَةٍ وَتِسْعَةَ عَشَرَ رَجُلاً فَاسْتَقْبَلَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْقِبْلَةَ ثُمَّ مَدَّ يَدَيْهِ فَجَعَلَ يَهْتِفُ بِرَبِّهِ ” اللَّهُمَّ أَنْجِزْ لِي مَا وَعَدْتَنِي اللَّهُمَّ آتِ مَا وَعَدْتَنِي اللَّهُمَّ إِنْ تَهْلِكْ هَذِهِ الْعِصَابَةُ مِنْ أَهْلِ الإِسْلاَمِ لاَ تُعْبَدْ فِي الأَرْضِ ” . فَمَازَالَ يَهْتِفُ بِرَبِّهِ مَادًّا يَدَيْهِ مُسْتَقْبِلَ الْقِبْلَةِ حَتَّى سَقَطَ رِدَاؤُهُ عَنْ مَنْكِبَيْهِ فَأَتَاهُ أَبُو بَكْرٍ فَأَخَذَ رِدَاءَهُ فَأَلْقَاهُ عَلَى مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ الْتَزَمَهُ مِنْ وَرَائِهِ . وَقَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ كَذَاكَ مُنَاشَدَتُكَ رَبَّكَ فَإِنَّهُ سَيُنْجِزُ لَكَ مَا وَعَدَكَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي مُمِدُّكُمْ بِأَلْفٍ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ مُرْدِفِينَ} فَأَمَدَّهُ اللَّهُ بِالْمَلاَئِكَةِ . قَالَ أَبُو زُمَيْلٍ فَحَدَّثَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ بَيْنَمَا رَجُلٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يَوْمَئِذٍ يَشْتَدُّ فِي أَثَرِ رَجُلٍ مِنَ الْمُشْرِكِينَ أَمَامَهُ إِذْ سَمِعَ ضَرْبَةً بِالسَّوْطِ فَوْقَهُ وَصَوْتَ الْفَارِسِ يَقُولُ أَقْدِمْ حَيْزُومُ . فَنَظَرَ إِلَى الْمُشْرِكِ أَمَامَهُ فَخَرَّ مُسْتَلْقِيًا فَنَظَرَ إِلَيْهِ فَإِذَا هُوَ قَدْ خُطِمَ أَنْفُهُ وَشُقَّ وَجْهُهُ كَضَرْبَةِ السَّوْطِ فَاخْضَرَّ ذَلِكَ أَجْمَعُ . فَجَاءَ الأَنْصَارِيُّ فَحَدَّثَ بِذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” صَدَقْتَ ذَلِكَ مِنْ مَدَدِ السَّمَاءِ الثَّالِثَةِ ” . فَقَتَلُوا يَوْمَئِذٍ سَبْعِينَ وَأَسَرُوا سَبْعِينَ . قَالَ أَبُو زُمَيْلٍ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَلَمَّا أَسَرُوا الأُسَارَى قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ ” مَا تَرَوْنَ فِي هَؤُلاَءِ الأُسَارَى ” . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ يَا نَبِيَّ اللَّهِ هُمْ بَنُو الْعَمِّ وَالْعَشِيرَةِ أَرَى أَنْ تَأْخُذَ مِنْهُمْ فِدْيَةً فَتَكُونُ لَنَا قُوَّةً عَلَى الْكُفَّارِ فَعَسَى اللَّهُ أَنْ يَهْدِيَهُمْ لِلإِسْلاَمِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا تَرَى يَا ابْنَ الْخَطَّابِ ” . قُلْتُ لاَ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَرَى الَّذِي رَأَى أَبُو بَكْرٍ وَلَكِنِّي أَرَى أَنْ تُمَكِّنَّا فَنَضْرِبَ أَعْنَاقَهُمْ فَتُمَكِّنَ عَلِيًّا مِنْ عَقِيلٍ فَيَضْرِبَ عُنُقَهُ وَتُمَكِّنِّي مِنْ فُلاَنٍ – نَسِيبًا لِعُمَرَ – فَأَضْرِبَ عُنُقَهُ فَإِنَّ هَؤُلاَءِ أَئِمَّةُ الْكُفْرِ وَصَنَادِيدُهَا فَهَوِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا قَالَ أَبُو بَكْرٍ وَلَمْ يَهْوَ مَا قُلْتُ فَلَمَّا كَانَ مِنَ الْغَدِ جِئْتُ فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ قَاعِدَيْنِ يَبْكِيَانِ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي مِنْ أَىِّ شَىْءٍ تَبْكِي أَنْتَ وَصَاحِبُكَ فَإِنْ وَجَدْتُ بُكَاءً بَكَيْتُ وَإِنْ لَمْ أَجِدْ بُكَاءً تَبَاكَيْتُ لِبُكَائِكُمَا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَبْكِي لِلَّذِي عَرَضَ عَلَىَّ أَصْحَابُكَ مِنْ أَخْذِهِمُ الْفِدَاءَ لَقَدْ عُرِضَ عَلَىَّ عَذَابُهُمْ أَدْنَى مِنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ ” . شَجَرَةٍ قَرِيبَةٍ مِنْ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَكُونَ لَهُ أَسْرَى حَتَّى يُثْخِنَ فِي الأَرْضِ} إِلَى قَوْلِهِ { فَكُلُوا مِمَّا غَنِمْتُمْ حَلاَلاً طَيِّبًا} فَأَحَلَّ اللَّهُ الْغَنِيمَةَ لَهُمْ .
‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাদরের যুদ্ধের দিনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুশরিকদের দিকে তাকালেন, দেখলেন যে, তারা সংখ্যায় এক হাজার ছিল। আর তাঁর সাহাবী ছিলেন তিনশ’ তের জন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিবলামুখী হলেন, এরপর দু’হাত উঁচু করে আওয়াজ করে আপন প্রভুর কাছে দু’আ অরতে লাগলেন, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে যে ওয়াদা দিয়েছ আমার জন্য তা পূরণ করো। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে যা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়াছ, তা দাও। হে আল্লাহ! যদি মুসলিমদের এ ক্ষুদ্র সেনাদল ধ্বংস করে দাও তবে পৃথিবীতে তোমার ‘ইবাদাত করার মত আর কেউ থাকবে না। তিনি এমনিভাবে দু’হাত উঁচু করে কিবলামুখী হয়ে প্রভুর কাছে উচ্চৈঃস্বরে দু’আ করে যাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে তাঁর কাঁধ থেকে চাদর পড়ে গেল। তখন আবূ বাকর (রাঃ) তাঁর কাছে এসে চাদরটি তাঁর কাঁধে পুনরায় তুলে দিলেন। তারপর তাঁর পিছন দিক থেকে তাঁকে জড়িয়ে ধরে বললেন, হে আল্লাহর নাবী! আপনার এতটুকু দু’আই যথেষ্ট আপনার প্রভুর কাছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা আপনার সঙ্গে যে ওয়াদা’
করেছেন, তা অচিরেই পূর্ণ করবেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেন-[আরবি] –“ স্মরণ করো, যখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করেছিলে; তখন তিনি তা কবুল করেছিলেন এবং বলেছিলেন, আমি তোমাদেরকে এক হাজার ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করব যারা একের পর এক আসবে।” ( সুরা আনফাল ৮ : ৯)
অতঃপর আল্লাহ তা’আআ ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করলেন। আবু যুমায়ল বর্ণনা করেন যে, আমার নিকট ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন যে, সেদিন একজন মুসলিম সৈনিক তার সামনের একজন মুশরিকের পিছনে ধাওয়া করেছিলেন। এমন সময় তিনি তাঁর উপর দিক থেকে বেত্রাঘাতের শব্দ শুনতে পেলেন এবং তার উপর দিকে অশ্বারোহীর এরু ধ্বনি শুনতে পেলেন। তিনি বলতেছিলেন, হে হায়যুম (ফেরেশতার ঘোড়ার নাম) সামনের দিকে অগ্রসর হও। তখন তিনি তার সামনের এক মুশরিক ব্যক্তিকে দেখলেন যে, সে চিৎ হয়ে পড়ে আছে। আরো দেখেন যে, তার নাক-ক্ষতযুক্ত এবং তার মুখমণ্ডল আঘাতপ্রাপ্ত। যেন কেউ তাকে বেত্রাঘাত করেছে। আহত স্হানগুলো সবুজ বর্ণ ধারণ করেছে। (বেত্রের বিষাক্ততায়)। এরপর আনসারী ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে যাবতীয় ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, তুমি ঠিকই বলেছ। এ সাহায্য তৃতীয় আকাশ থেকে এসেছে। পরিশেষে সেদিন মুসলিমগণ সত্তর জন কাফিরকে হত্যা এবং সত্তর জনকে বন্দী করলেন।
আবূ যুমায়ল বলেন যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, যখন যুদ্ধ বন্দীদেরকে আটক করা হলো, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐসব যুদ্ধবন্দী সম্পর্কে আবূ বাকর (রাঃ) এবং ‘উমর (রাঃ) এর সাথে কথা বললেন, “এ সকল যুদ্ধবন্দীদের ব্যাপারে আপনারা কি মত দিচ্ছেন”। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর নাবী! তারা তো আমাদের চাচাতো ভাই এবং স্বগোত্রীয়। আমি উচিত মনে করি যে, তাদের নিকট থেকে আপনি মুক্তিপণ (আরবি) গ্রহন করুন। এতে কাফিরদের উপর আমাদের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। আশা করা যায় আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ইসলামের হিদায়াত দিবেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে ইবনুল খাত্তাব! এ ব্যাপারে আপনি কী বলছেন? ‘উমার (রাঃ) বললেন, তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম! হে আল্লাহর রাসুল! আবূ বাকর যা উচিত মনে করেন আমি তা উচিত মনে করি না। আমি উচিত মনে করি যে, আপনি তাদেরকে আমাদের হস্তগত করুন। আমরা তাদের গর্দান উড়িয়ে দেব। আর আকিল–কে আলী এর হস্তগত করুন। তিনি তার শিরোচ্ছেদ করবেন। আর আমার বংশের অমুককে আমার কাছে অর্পণ করুন, আমি তার শিরোচ্ছেদ করবো। কেননা তারা হল কাফিরদের মর্যাদাশালী নেতৃস্হানীয় ব্যক্তিবর্গ। অতএব আবূ বাকর (রাঃ) যা বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটাই পছন্দ করলেন এবং আমি যা বললাম তা তিনি পছন্দ করলেন না। পরের দিন যখন আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এলাম, তখন দেখি যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং আবূ বাকর (রাঃ) উভয়য়েই বসে কাঁদছেন। আমি বললাম , হে আল্লাহর রসূল! আমাকে বলুন, আপনি এবং আপনার সাথি কেন কাঁদছেন? আমার কান্না আসলে আমিও কাঁদবো। আর যদি আমার কান্না না আসে তবে আপনাদের কাঁদার কারণে আমিও কান্নার ভান করবো (প্রচেষ্টা চালাবো)। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, মুক্তিপণ গ্রহনের কারণে তোমার সাথীদের উপর সমাগত বিপদের কথা স্মরণ করে আমি কাঁদছি। আমার নিকট তাদের শাস্তি পেশ করা হল—এ বৃক্ষ থেকেও নিকটে। বৃক্ষটি ছিল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটবর্তী। (একটি বৃক্ষের দিকে লক্ষ করে বললেন, এ বৃক্ষের চাইতেও কাছে তোমাদের উপর সমাগত আযাব আমাকে দেখান হয়েছিল।) অতঃপর আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন। (আরবি)
“ দেশে ব্যাপকভাবে শত্রুকে পরাস্ত না করা পর্যন্ত বন্দী কোন নাবীর জন্য সঙ্গত নয় —-যুদ্ধে যা তোমরা লাভ করেছ তা বৈধ ও উত্তম বলে তোমরা ভোগ কর “ —( সুরা আল-আনফাল ৮ ঃ ৬৭-৬০)। এর ফলে আল্লাহ তা’আলা তাদের জন্য মালে গনীমাত হালাল করে দেন। ( ই. ফা. ৪৪৪৬, ই.সে. ৪৪৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯. অধ্যায়ঃ
যুদ্ধবন্দীদেরকে আটক করা, গ্রেফতার করা এবং বিনা মুক্তিপণে ছেড়ে দেয়া বৈধ
৪৪৮১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَيْلاً قِبَلَ نَجْدٍ فَجَاءَتْ بِرَجُلٍ مِنْ بَنِي حَنِيفَةَ يُقَالُ لَهُ ثُمَامَةُ بْنُ أُثَالٍ سَيِّدُ أَهْلِ الْيَمَامَةِ . فَرَبَطُوهُ بِسَارِيَةٍ مِنْ سَوَارِي الْمَسْجِدِ فَخَرَجَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” مَاذَا عِنْدَكَ يَا ثُمَامَةُ ” . فَقَالَ عِنْدِي يَا مُحَمَّدُ خَيْرٌ إِنْ تَقْتُلْ تَقْتُلْ ذَا دَمٍ وَإِنْ تُنْعِمْ تُنْعِمْ عَلَى شَاكِرٍ وَإِنْ كُنْتَ تُرِيدُ الْمَالَ فَسَلْ تُعْطَ مِنْهُ مَا شِئْتَ . فَتَرَكَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى كَانَ بَعْدَ الْغَدِ فَقَالَ ” مَا عِنْدَكَ يَا ثُمَامَةُ ” . قَالَ مَا قُلْتُ لَكَ إِنْ تُنْعِمْ تُنْعِمْ عَلَى شَاكِرٍ وَإِنْ تَقْتُلْ تَقْتُلْ ذَا دَمٍ وَإِنْ كُنْتَ تُرِيدُ الْمَالَ فَسَلْ تُعْطَ مِنْهُ مَا شِئْتَ . فَتَرَكَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى كَانَ مِنَ الْغَدِ فَقَالَ ” مَاذَا عِنْدَكَ يَا ثُمَامَةُ ” . فَقَالَ عِنْدِي مَا قُلْتُ لَكَ إِنْ تُنْعِمْ تُنْعِمْ عَلَى شَاكِرٍ وَإِنْ تَقْتُلْ تَقْتُلْ ذَا دَمٍ وَإِنْ كُنْتَ تُرِيدُ الْمَالَ فَسَلْ تُعْطَ مِنْهُ مَا شِئْتَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَطْلِقُوا ثُمَامَةَ ” . فَانْطَلَقَ إِلَى نَخْلٍ قَرِيبٍ مِنَ الْمَسْجِدِ فَاغْتَسَلَ ثُمَّ دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَقَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ . يَا مُحَمَّدُ وَاللَّهِ مَا كَانَ عَلَى الأَرْضِ وَجْهٌ أَبْغَضَ إِلَىَّ مِنْ وَجْهِكَ فَقَدْ أَصْبَحَ وَجْهُكَ أَحَبَّ الْوُجُوهِ كُلِّهَا إِلَىَّ وَاللَّهِ مَا كَانَ مِنْ دِينٍ أَبْغَضَ إِلَىَّ مِنْ دِينِكَ فَأَصْبَحَ دِينُكَ أَحَبَّ الدِّينِ كُلِّهِ إِلَىَّ وَاللَّهِ مَا كَانَ مِنْ بَلَدٍ أَبْغَضَ إِلَىَّ مِنْ بَلَدِكَ فَأَصْبَحَ بَلَدُكَ أَحَبَّ الْبِلاَدِ كُلِّهَا إِلَىَّ وَإِنَّ خَيْلَكَ أَخَذَتْنِي وَأَنَا أُرِيدُ الْعُمْرَةَ فَمَاذَا تَرَى فَبَشَّرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَمَرَهُ أَنْ يَعْتَمِرَ فَلَمَّا قَدِمَ مَكَّةَ قَالَ لَهُ قَائِلٌ أَصَبَوْتَ فَقَالَ لاَ وَلَكِنِّي أَسْلَمْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ وَاللَّهِ لاَ يَأْتِيكُمْ مِنَ الْيَمَامَةِ حَبَّةُ حِنْطَةٍ حَتَّى يَأْذَنَ فِيهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিছু সংখ্যক অশ্বারোহী সৈন্যকে ‘নাযদ’—এর দিকে পাঠান। অতঃপর বানূ হানীফা গোত্রের এক ব্যক্তিকে তাঁরা ধরে নিয়ে এলো। তার নাম ছিল সুমামাহ ইবনু উসাল। তিনি ইয়ামামাবাসীদের সরদার ছিলেন। তাঁরা মাসজিদের একটি খুঁটির সাথে তাকে বেঁধে রাখলেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার কাছে আসলেন এবং বললেন, হে সুমামাহ! তোমার কাছে কেমন মনে হচ্ছে? সে উত্তর দিল, আমার কাছে তো ভালই মনে হচ্ছে। আপনি যদি আমাকে হত্যা করেন, তাহলে খুনী ব্যক্তিকেই হত্যা করলেন। আর যদি আপনি অনুগ্রহ করেন, তবে আপনার অনুগ্রহ হবে কৃতজ্ঞ ব্যক্তির উপর। আর যদি আপনি সম্পদ চান, তবে আপনাকে তাই দেয়া হবে, আপনি যা চাইবেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে যথাবস্থায় রেখে দিলেন। তারপর পরের দিনও তিনি বললেন, হে সুমামাহ! তোমার কাছে কেমন মনে হচ্ছে? তিনি বললেন, আমার নিকট তাই মনে হচ্ছে যা আপনার কাছে বলে দিয়েছি। যদি আপনি অনুগ্রহ করেন, তবে আপনার অনুগ্রহ হবে একজন কৃতজ্ঞ ব্যক্তির উপর। আর যদি আপনি হত্যা করেন, তবে আপনি একজন খুনী ব্যক্তিকেই হত্যা করবেন। আর যদি আপনি সম্পদ চান তবে আপনাকে তাই দেয়া হবে আপনি যা চাবেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরের দিন পর্যন্ত তাকে ঐভাবে রাখলেন। তিনি বললেন, হে সুমামাহ! তোমার নিকট কেমন লাগছে? তিনি বললেন, আমার নিকট তাই যা আমি আপনাকে ইতিপূর্বে বলেছি। যদি আপনি অনুগ্রহ করেন, তবে আপনি অনুগ্রহ করবেন একজন কৃতজ্ঞ ব্যক্তির উপর। আর যদি আপনি আমাকে হত্যা করেন, তবে হত্যার উপযুক্ত ব্যাক্তিকেই হত্যা করবেন। আর যদি আপনি সম্পদ চান, তবে বলুন তাই দেয়া হবে যা আপনি চাইবেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা সুমামাহকে ছেড়ে দাও। তারপর তিনি মাসজিদের নিকটবর্তী একটি খেজুর গাছের নিকট গেলেন। সেখানে তিনি গোসল করলেন। এরপর মাসজিদে প্রবেশ করে বললেন, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ, (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার বান্দা ও রসূল। হে মুহাম্মাদ! আল্লাহর শপথ! পৃথিবীতে আমার নিকট আপনার চেহারার চেয়ে খারাপ চেহারা আর ছিল না। আর এখন সকল মানুষের চেহারা থেকে আপনার চেহারাই আমার নিকট অধিক প্রিয়। আল্লাহর শপথ! আপনার ধর্ম থেকে অধিক খারাপ ধর্ম আমার কাছে আর ছিল না। আর এখন আপনার ধর্মই আমার নিকট সকল ধর্ম থেকে অধিক প্রিয়। আল্লাহর কসম! আপনার জনপদ থেকে অধিক নিকৃষ্ট জনপদ আমার কাছে আর ছিল না। আর এখন আপনার জনপদই আমার নিকট সকল জনপদের চেয়ে অধিক প্রিয়। আপনার অশ্বারোহী সৈনিকরা আমাকে ধরে নিয়ে এসেছে। অথচ আমি তখন ‘উমরাহ করার ইচ্ছা করেছিলাম। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী? এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে সুসংবাদ দিলেন এবং ‘উমরাহ করার নির্দেশ দিলেন। এরপর যখন তিনি মাক্কায় ফিরে এলেন, তখন এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, তুমি কি ধর্মান্তরিত হয়েছ? তখন তিনি বললেন, না। বরং আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ইসলাম গ্রহন করেছি। আল্লাহর কসম! ইয়ামামা ত্থেকে একটি গমের দানাও তোমাদের কাছে পৌঁছাবে না। যতক্ষন না রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাতে সম্মতি দেন। ( ই.ফা. ৪৪৩৭, ই.সে.৪৪৩৯ )
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৮২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَيْلاً لَهُ نَحْوَ أَرْضِ نَجْدٍ فَجَاءَتْ بِرَجُلٍ يُقَالُ لَهُ ثُمَامَةُ بْنُ أُثَالٍ الْحَنَفِيُّ سَيِّدُ أَهْلِ الْيَمَامَةِ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمِثْلِ حَدِيثِ اللَّيْثِ إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ إِنْ تَقْتُلْنِي تَقْتُلْ ذَا دَمٍ .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদল অশ্বারোহী সৈনিক প্রেরণ করলেন ‘নাজদ’ প্রদেশের দিকে। তারা এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে এলো, যার নাম ছিল সুমামাহ ইবনু উসাল আল-হানাফী। তিনি ছিলেন ইয়ামামাবাসীদের নেতা। এরপর তিনি লায়স (রহঃ) –এর অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, সে বলেছে , যদি আপনি আমাকে হত্যা করনে, তবে খুনের উপযুক্ত ব্যক্তিকেই হত্যা করবেন। ( ই.ফা. ৪৪৩৮, ই.সে. ৪৪৪০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২০. অধ্যায়ঃ
হিজায রাজ্য থেকে ইয়াহূদীদেরকে বহিষ্কার করা
৪৪৮৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي، هُرَيْرَةَ أَنَّهُ قَالَ بَيْنَا نَحْنُ فِي الْمَسْجِدِ إِذْ خَرَجَ إِلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” انْطَلِقُوا إِلَى يَهُودَ ” . فَخَرَجْنَا مَعَهُ حَتَّى جِئْنَاهُمْ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَادَاهُمْ فَقَالَ ” يَا مَعْشَرَ يَهُودَ أَسْلِمُوا تَسْلَمُوا ” . فَقَالُوا قَدْ بَلَّغْتَ يَا أَبَا الْقَاسِمِ . فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” ذَلِكَ أُرِيدُ أَسْلِمُوا تَسْلَمُوا ” . فَقَالُوا قَدْ بَلَّغْتَ يَا أَبَا الْقَاسِمِ . فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” ذَلِكَ أُرِيدُ ” . فَقَالَ لَهُمُ الثَّالِثَةَ فَقَالَ ” اعْلَمُوا أَنَّمَا الأَرْضُ لِلَّهِ وَرَسُولِهِ وَأَنِّي أُرِيدُ أَنْ أُجْلِيَكُمْ مِنْ هَذِهِ الأَرْضِ فَمَنْ وَجَدَ مِنْكُمْ بِمَالِهِ شَيْئًا فَلْيَبِعْهُ وَإِلاَّ فَاعْلَمُوا أَنَّ الأَرْضَ لِلَّهِ وَرَسُولِهِ ” .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা মাসজিদে বসা ছিলাম। হঠাৎ আমাদের দিকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে এলেন। তারপর তিনি বললেন, তোমরা ইয়াহুদীদের দিকে যাও। সুতরাং আমরা তাঁর সঙ্গে বের হলাম। পরিশেষে তাদের কাছে এলাম। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়ালেন এবং তাদেরকে (ধর্মের দিকে) আহবান করে বললেন, হে ইয়াহুদী সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম গ্রহন কর, তাহলে শান্তিতে থাকতে পারবে। তখন তারা বলল, হে আবুল কাসেম! নিশ্চয়ই আপনি (আল্লাহর নির্দেশ) প্রচার করছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বললেনঃ আমি এ কথাই শুনতে চেয়েছি। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বললেন। তোমরা ইসলাম গ্রহন কর, তাহলে শান্তিতে থাকতে পারবে। তখন তারা বলল, হে আবুল কাসেম! নিশ্চয়ই আপনি প্রচার করছেন। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি তাই চেয়েছিলাম। এরপর তৃতীয়বার তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা জেনে রেখো! নিশ্চয়ই পৃথিবী আল্লাহ ও তাঁর রসূলের। আর আমার ইচ্ছা যে, তোমাদেরকে আমি এ ভূখণ্ড থেকে বহিস্কার করবো। অতএব তোমাদের মধ্যে হতে যদি কারো কিছু মালামাল থাকে তাহলে সে যেন তা বিক্রি করে দেয়। নতুবা জেনে রেখো যে, সমগ্র ভু-মণ্ডল আল্লাহ ও তাঁর রসূলের। ( ই.ফা. ৪৪৩৯, ই. সে. ৪৪৪১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৮৪
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالَ ابْنُ رَافِعٍ حَدَّثَنَا وَقَالَ، إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّالله عليه وسلم فَأَجْلَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَنِي النَّضِيرِ وَأَقَرَّ قُرَيْظَةَ وَمَنَّ عَلَيْهِمْ حَتَّى حَارَبَتْ قُرَيْظَةُ بَعْدَ ذَلِكَ فَقَتَلَ رِجَالَهُمْ وَقَسَمَ نِسَاءَهُمْ وَأَوْلاَدَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ إِلاَّ أَنَّ بَعْضَهُمْ لَحِقُوا بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَآمَنَهُمْ وَأَسْلَمُوا وَأَجْلَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَهُودَ الْمَدِينَةِ كُلَّهُمْ بَنِي قَيْنُقَاعَ – وَهُمْ قَوْمُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ – وَيَهُودَ بَنِي حَارِثَةَ وَكُلَّ يَهُودِيٍّ كَانَ بِالْمَدِينَةِ .
ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বানু নাযীর এবং বানু কুরাইযাহ গোত্র দুটির ইয়াহূদীরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বানূ নাযীরকে দেশান্তর করেন। এবং বনূ কুরাইযাকে সেখানে থাকার অনুমতি দিলেন এবং তিনি তাদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করলেন। পরিশেষে বানূ কুরাইযাও যুদ্ধ করল। ফলে তিনি তাদের পুরুষদেরকে হত্যা করলেন এবং তাদের নারী, শিশু ও সম্পদসমূহ মুসলিমদের মাঝে বন্টন করে দিলেন। কিন্তু তাদের কিছু সংখ্যক লোক যারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে মিলিত হয়েছিল তাদেরকে তিনি নিরাপত্তা প্রদান করেন। তখন তারা মুসলিম হয়ে গিয়েছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনায় সকল ইয়াহূদীকে দেশান্তর করেন। বানূ কায়নুকা’ গোত্রের ইয়াহূদী (‘আবদুল্লাহ ইবনু সালামের ইয়াহুদী গোত্র) , বানু হারিসাহর ‘ইয়াহুদী এবং মাদীনায় বসবাসরত সকল ইয়াহূদীকেই দেশ থেকে বহিষ্কার করেন। ( ই.ফা. ৪৪৪০, ই. সে. ৪৪৪২ )।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৮৫
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي حَفْصُ بْنُ مَيْسَرَةَ، عَنْ مُوسَى، بِهَذَا الإِسْنَادِ هَذَا الْحَدِيثَ وَحَدِيثُ ابْنُ جُرَيْجٍ أَكْثَرُ وَأَتَمُّ .
মুসা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে এ হাদীসটি বর্ণনা করেন। আর ইবনু জুরাইজ (রহঃ) –এর হাদীসটি অনেক সুত্রে বর্ণিত এবং সেটিই পুর্ণাঙ্গ। (ই.ফ. ৪৪৪১, ই.সে. ৪৪৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২১. অধ্যায়ঃ
ইয়াহূদী ও নাসারাদের আরব উপ-দ্বীপ থেকে বের করে দেয়া
৪৪৮৬
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ أَخْبَرَنِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ لأُخْرِجَنَّ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى مِنْ جَزِيرَةِ الْعَرَبِ حَتَّى لاَ أَدَعَ إِلاَّ مُسْلِمًا ” .
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ، ح وَحَدَّثَنِي سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَعْيَنَ، حَدَّثَنَا مَعْقِلٌ، – وَهُوَ ابْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ – كِلاَهُمَا عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমার কাছে ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয়ই আমি ইয়াহূদী ও খ্রীষ্টান সম্প্রদায়কে আরব উপ-দ্বীপ থেকে বের করে দেবো। তারপর মুসলিম ব্যতীত অন্য কাউকে এখানে থাকতে দেবো না। (ই,ফা, ৪৪৪২, ই সে, ৪৪৪৪)
যুহায়র ইবনু হারব ও সালামাহ ইবনু শাবীব (রহঃ) — উভয়েই আবূ যুবায়র (রহঃ) থেকে এ সানাদ অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ( ই. ফা. ৪৪৪২, ই. সে. ৪৪৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি চুক্তি ভঙ্গ করে তাকে হত্যা করা বৈধ হওয়া এবং দুর্গের অধিবাসীদের কোন ন্যায়পরায়ণ ক্ষমতা প্রদত্ত বিচারকের নির্দেশে অবতরণ বৈধ হওয়া
৪৪৮৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ – وَأَلْفَاظُهُمْ مُتَقَارِبَةٌ – قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، – عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ بْنَ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ، الْخُدْرِيَّ قَالَ نَزَلَ أَهْلُ قُرَيْظَةَ عَلَى حُكْمِ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فَأَرْسَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى سَعْدٍ فَأَتَاهُ عَلَى حِمَارٍ فَلَمَّا دَنَا قَرِيبًا مِنَ الْمَسْجِدِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِلأَنْصَارِ ” قُومُوا إِلَى سَيِّدِكُمْ – أَوْ خَيْرِكُمْ ” . ثُمَّ قَالَ ” إِنَّ هَؤُلاَءِ نَزَلُوا عَلَى حُكْمِكَ ” . قَالَ تَقْتُلُ مُقَاتِلَتَهُمْ وَتَسْبِي ذُرِّيَّتَهُمْ . قَالَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” قَضَيْتَ بِحُكْمِ اللَّهِ – وَرُبَّمَا قَالَ – قَضَيْتَ بِحُكْمِ الْمَلِكِ ” . وَلَمْ يَذْكُرِ ابْنُ الْمُثَنَّى وَرُبَّمَا قَالَ ” قَضَيْتَ بِحُكْمِ الْمَلِكِ ” .
আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বানূ কুরাইযার অবরুদ্ধ লোকেরা সা’দ ইবনু মু’আয (রাঃ)-এর নির্দেশ মেনে নিতে সম্মত হলো। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সা’দ (রাঃ)-এর নিকট লোক পাঠালেন। সুতরাং তিনি একটি গাধার উপর আরোহণ করে আসলেন। যখন তিনি মাসজিদের কাছাকাছি আসলেন তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের বললেনঃ তোমরা তোমাদের নেতার অথবা বললেন, উত্তম ব্যক্তির দিকে উঠে যাও। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ সমস্ত অবরুদ্ধ দুর্গবাসীরা তোমার নির্দেশ মান্য করতে সম্মত হয়েছে। তখন তিনি বললেন, তাদের মধ্যেকার যুদ্ধের উপযুক্ত (যুবক) লোকদেরকে হত্যা করা হোক এবং তাদের নারী ও শিশুদেরকে বন্দী করা হোক। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী বিচার করেছো। বর্ণনাকারী কখনো বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তুমি রাজাবিরাজ আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী বিচার করেছ। বর্ণনাকারী ইবনু মুসান্না (রহঃ) কোন কোন সময় তিনি বলেছেনঃ ‘তুমি রাজাধিরাজ আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী বিচার করেছো’ কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৪৪৪, ই.সে. ৪৪৪৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৮৮
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ فِي حَدِيثِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لَقَدْ حَكَمْتَ فِيهِمْ بِحُكْمِ اللَّهِ ” . وَقَالَ مَرَّةً ” لَقَدْ حَكَمْتَ بِحُكْمِ الْمَلِكِ ” .
.শু’বাহ (রহঃ) -এর কাছ থেকে এ সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
আর তিনি এ কথাটুকু তাঁর হাদীসে বর্ণনা করেছেন যে, “রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই তুমি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী বিচার করেছ।” আর একবার বলেছেন, “তুমি রাজাধিরাজ আল্লাহর হুকুমনুযায়ী বিচার করেছ।” (ই.ফা. ৪৪৪৫, ই.সে. ৪৪৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৮৯
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيُّ، كِلاَهُمَا عَنِ ابْنِ نُمَيْرٍ، قَالَ ابْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ أُصِيبَ سَعْدٌ يَوْمَ الْخَنْدَقِ رَمَاهُ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ يُقَالُ لَهُ ابْنُ الْعَرِقَةِ . رَمَاهُ فِي الأَكْحَلِ فَضَرَبَ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَيْمَةً فِي الْمَسْجِدِ يَعُودُهُ مِنْ قَرِيبٍ فَلَمَّا رَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْخَنْدَقِ وَضَعَ السِّلاَحَ فَاغْتَسَلَ فَأَتَاهُ جِبْرِيلُ وَهُوَ يَنْفُضُ رَأْسَهُ مِنَ الْغُبَارِ فَقَالَ وَضَعْتَ السِّلاَحَ وَاللَّهِ مَا وَضَعْنَاهُ اخْرُجْ إِلَيْهِمْ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ فَأَيْنَ ” . فَأَشَارَ إِلَى بَنِي قُرَيْظَةَ فَقَاتَلَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلُوا عَلَى حُكْمِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْحُكْمَ فِيهِمْ إِلَى سَعْدٍ قَالَ فَإِنِّي أَحْكُمُ فِيهِمْ أَنْ تُقْتَلَ الْمُقَاتِلَةُ وَأَنْ تُسْبَى الذُّرِّيَّةُ وَالنِّسَاءُ وَتُقْسَمَ أَمْوَالُهُمْ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন সা’দ (রাঃ) আঘাতপ্রাপ্ত হন। কুরায়শের ইবনুল আরিকা নামক এক ব্যক্তি তাঁর শিরায় তীর নিক্ষেপ করেছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সা’দ (রাঃ)-এর জন্য মাসজিদে একটি তাঁবু স্থাপন করে দিলেন, যেন নিকট থেকে তাঁকে দেখাশোনা করা যায়। যখন তিনি (রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ) খন্দকের যুদ্ধ থেকে ফিরে অস্ত্র রেখে সবেমাত্র গোসলের কাজ সমাপ্ত করেছেন এমন সময় জিবরাঈল (আঃ) স্বীয় মাথা থেকে ধূলিবালি ঝাড়তে ঝাড়তে আগমন করলেন। এরপর বললেন, আপনি অস্ত্র রেখে দিয়েছেন? আল্লাহর শপথ! আমরা তো অস্ত্র রাখিনি। তাদের দিকে গমন করুন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কোন্ দিকে? তখন তিনি বানূ কুরাইযার দিকে ইঙ্গিত করলেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সাথে যুদ্ধ করলেন। তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর নির্দেশে দূর্গ থেকে অবতরণ করলো। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বিচারের ভার (তাদের নেতা) সা’দ (রাঃ) এর উপর অর্পণ করলেন। সা’দ (রাঃ) বললেনঃ তাদের মধ্যে যুদ্ধের উপযুক্ত (যুবক) লোকদেরকে হত্যা করা হোক, নারী ও শিশুদেরকে বন্দী করা হোক এবং তাদের সম্পদগুলো ভাগ করা হোক। (ই.ফা. ৪৪৪৬, ই.সে. ৪৪৪৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৯০
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ قَالَ أَبِي فَأُخْبِرْتُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لَقَدْ حَكَمْتَ فِيهِمْ بِحُكْمِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ” .
হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার পিতা বলেছেন, আমাকে খবর দেয়া হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই তুমি তাদের সম্পর্কে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী বিচার করেছো।” (ই.ফা. ৪৪৪৭, ই.সে. ৪৪৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৯১
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ هِشَامٍ، أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ سَعْدًا، قَالَ وَتَحَجَّرَ كَلْمُهُ لِلْبُرْءِ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنَّكَ تَعْلَمُ أَنْ لَيْسَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَىَّ أَنْ أُجَاهِدَ فِيكَ مِنْ قَوْمٍ كَذَّبُوا رَسُولَكَ صلى الله عليه وسلم وَأَخْرَجُوهُ اللَّهُمَّ فَإِنْ كَانَ بَقِيَ مِنْ حَرْبِ قُرَيْشٍ شَىْءٌ فَأَبْقِنِي أُجَاهِدْهُمْ فِيكَ اللَّهُمَّ فَإِنِّي أَظُنُّ أَنَّكَ قَدْ وَضَعْتَ الْحَرْبَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ فَإِنْ كُنْتَ وَضَعْتَ الْحَرْبَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ فَافْجُرْهَا وَاجْعَلْ مَوْتِي فِيهَا . فَانْفَجَرَتْ مِنْ لَبَّتِهِ فَلَمْ يَرُعْهُمْ – وَفِي الْمَسْجِدِ مَعَهُ خَيْمَةٌ مِنْ بَنِي غِفَارٍ – إِلاَّ وَالدَّمُ يَسِيلُ إِلَيْهِمْ فَقَالُوا يَا أَهْلَ الْخَيْمَةِ مَا هَذَا الَّذِي يَأْتِينَا مِنْ قِبَلِكُمْ فَإِذَا سَعْدٌ جُرْحُهُ يَغِذُّ دَمًا فَمَاتَ مِنْهَا .
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা’দ (রাঃ) বলেছেন, তাঁর আঘাত শুকিয়ে গেল এবং তিনি ক্রমান্বয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেন। তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আপনি জানেন, আমার নিকট আপনার রসূলকে যে সম্প্রদায় অস্বীকার করেছে, তাঁকে দেশ থেকে বের করে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আপনার পথে যুদ্ধ করার চাইতে অধিক পছন্দনীয় বিষয় আর নেই। হে আল্লাহ! যদি কুরায়শদের সাথে যুদ্ধ করা এখনও বাকী থাকে তবে আপনি আমাকে জীবিত রাখুন, যেন আমি আপনার পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারি। হে আল্লাহ! আমি মনে করি যে, আমাদের এবং তাদের মধ্যে আপনি যুদ্ধ সমাপ্ত করেছেন। যদি তাই হয়, তবে আপনি আমার ক্ষতস্থান উন্মুক্ত করে দিন এবং এতেই আমাকে শাহাদাত নসীব করুন। অতঃপর তাঁর ক্ষতস্থান থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে লাগল। মাসজিদে বানূ গিফারের একটি তাঁবু ছিল। তাদের দিকে রক্ত প্রবাহের কারণে তারা ঘাবড়িয়ে গেল। তখন তারা বলল, হে তাঁবুবাসী! তোমাদের দিক থেকে এ কী আসছে? আশ্চর্যের ব্যাপার যে, সা’দ (রাঃ) – এর ক্ষতস্থান থেকে তখন রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল এবং এতেই তিনি ইন্তিকাল করেন। ( ই.ফা. ৪৪৪৮, ই.সে. ৪৪৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৯২
وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ سُلَيْمَانَ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ فَانْفَجَرَ مِنْ لَيْلَتِهِ فَمَازَالَ يَسِيلُ حَتَّى مَاتَ وَزَادَ فِي الْحَدِيثِ قَالَ فَذَاكَ حِينَ يَقُولُ الشَّاعِرُ أَلاَ يَا سَعْدُ سَعْدَ بَنِي مُعَاذٍ فَمَا فَعَلَتْ قُرَيْظَةُ وَالنَّضِيرُ لَعَمْرُكَ إِنَّ سَعْدَ بَنِي مُعَاذٍ غَدَاةَ تَحَمَّلُوا لَهُوَ الصَّبُورُ تَرَكْتُمْ قِدْرَكُمْ لاَ شَىْءَ فِيهَا وَقِدْرُ الْقَوْمِ حَامِيَةٌ تَفُورُ وَقَدْ قَالَ الْكَرِيمُ أَبُو حُبَابٍ أَقِيمُوا قَيْنُقَاعُ وَلاَ تَسِيرُوا وَقَدْ كَانُوا بِبَلْدَتِهِمْ ثِقَالاً كَمَا ثَقُلَتْ بِمَيْطَانَ الصُّخُورُ
হিশাম (রহঃ) হতে একই সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি এটুকু ব্যতিক্রম বলেছেন যে, “সে রাত থেকেই রক্ত প্রবাহিত হতে লাগলো। এভাবে নিরবিচ্ছিন্নভাবে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল। অবশেষে তিনি মারা যান। তিনি (হিশাম) তাঁর হাদীসে আরো কিছু বাড়তি বর্ণনা করেছেন। এ সম্পর্কে একজন কবি বলেনঃ
“ হে সা’দ ইবনু মু’আয!
তোমার ব্যাপারে বানূ কুরাইযাহ ও বানূ নাযীর কী করেছে?
তোমার জীবনের শপথ! নিশ্চয় সা’দ ইবনু মু’আয যে প্রভাতে
তোমরা তার জন্য কষ্টানুভব করছিলে, সে আজ নিশ্চুপ।
(হে আওস সম্প্রদায়) তোমরা তোমাদের হাঁড়িগুলো খালি রেখে দিয়েছ,
তাতে আজ কোন কিছু নেই, অর্থাৎ-তোমাদের অধঃপতন হয়েছে।
অথচ তোমাদের বিপক্ষের (খাজরাজ) সম্প্রদায়ের ডেগগুলো গরম, তা টগবগ করছে অর্থাৎ- তারা আজ প্রভাবশালী ধনী।
আর একজন সম্ভ্রান্ত আবূ হুবাব বলেছিলেন,
তোমরা বানূ কাইনূকা গোত্রকে অবস্থান করতে দাও, তাদেরকে যেতে দিও না।
আর তারা তাদের শহরে ছিল ধনাঢ্য
যেমন গেড়ে থাকে মায়তান অর্থাৎ বঞ্চিত নিস্তব্ধ পাথর।” (ই.ফা. ৪৪৪৯, ই.সে. ৪৪৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩. অধ্যায়ঃ
যুদ্ধে তাড়াতাড়ি করা এবং দু’টি জরুরী কাজের মধ্যে একটিকে অগ্রাধিকার দেয়া
৪৪৯৩
وَحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ الضُّبَعِيُّ، حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ نَادَى فِينَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ انْصَرَفَ عَنِ الأَحْزَابِ “ أَنْ لاَ يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ الظُّهْرَ إِلاَّ فِي بَنِي قُرَيْظَةَ ” . فَتَخَوَّفَ نَاسٌ فَوْتَ الْوَقْتِ فَصَلُّوا دُونَ بَنِي قُرَيْظَةَ . وَقَالَ آخَرُونَ لاَ نُصَلِّي إِلاَّ حَيْثُ أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَإِنْ فَاتَنَا الْوَقْتُ قَالَ فَمَا عَنَّفَ وَاحِدًا مِنَ الْفَرِيقَيْنِ .
’আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহযাবের যুদ্ধ থেকে ফিরে আসলেন- তখন তিনি আমাদের মাঝে ঘোষণা দিলেন যে, কেউ যেন যুহরের সলাত আদায় না করে, যতক্ষণ না বানী কুরাইযার মহল্লায় গিয়ে পৌঁছবে। তখন কিছু সংখ্যক লোক যুহরের সলাতের সময় চলে যাওয়ার ভয় করলেন এবং তারা বানূ কুরাইযাহ্ গোত্রে পৌঁছার পূর্বেই সলাত আদায় করলেন। আর অন্যান্যরা বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে যে স্থানে সলাত আদায় করতে বলেছেন, সে স্থান ব্যাতীত আমরা সলাত আদায় করব না, যদিও সময় চলে যায়। রাবী বলেন, এ ঘটনা শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ দু’দলের কারো প্রতি রাগান্বিত হননি। (ই.ফা. ৪৪৫০ ই.সে. ৪৪৫২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৪. অধ্যায়ঃ
গনীমাত সম্পদ দ্বারা মুহাজিরগণ অভাবমুক্ত হওয়ায় আনসার কর্তৃক প্রদত্ত গাছ ও ফলমূলের বাগানসমূহ তাদেরকে ফেরত দেয়া
৪৪৯৪
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ، شِهَابٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ لَمَّا قَدِمَ الْمُهَاجِرُونَ مِنْ مَكَّةَ الْمَدِينَةَ قَدِمُوا وَلَيْسَ بِأَيْدِيهِمْ شَىْءٌ وَكَانَ الأَنْصَارُ أَهْلَ الأَرْضِ وَالْعَقَارِ فَقَاسَمَهُمُ الأَنْصَارُ عَلَى أَنْ أَعْطَوْهُمْ أَنْصَافَ ثِمَارِ أَمْوَالِهِمْ كُلَّ عَامٍ وَيَكْفُونَهُمُ الْعَمَلَ وَالْمَئُونَةَ وَكَانَتْ أُمُّ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَهْىَ تُدْعَى أُمَّ سُلَيْمٍ – وَكَانَتْ أُمَّ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ كَانَ أَخًا لأَنَسٍ لأُمِّهِ – وَكَانَتْ أَعْطَتْ أُمُّ أَنَسٍ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِذَاقًا لَهَا فَأَعْطَاهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أُمَّ أَيْمَنَ مَوْلاَتَهُ أُمَّ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ . قَالَ ابْنُ شِهَابٍ فَأَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا فَرَغَ مِنْ قِتَالِ أَهْلِ خَيْبَرَ وَانْصَرَفَ إِلَى الْمَدِينَةِ رَدَّ الْمُهَاجِرُونَ إِلَى الأَنْصَارِ مَنَائِحَهُمُ الَّتِي كَانُوا مَنَحُوهُمْ مِنْ ثِمَارِهِمْ – قَالَ – فَرَدَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى أُمِّي عِذَاقَهَا وَأَعْطَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أُمَّ أَيْمَنَ مَكَانَهُنَّ مِنْ حَائِطِهِ . قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَكَانَ مِنْ شَأْنِ أُمِّ أَيْمَنَ أُمِّ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ أَنَّهَا كَانَتْ وَصِيفَةً لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَكَانَتْ مِنَ الْحَبَشَةِ فَلَمَّا وَلَدَتْ آمِنَةُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ مَا تُوُفِّيَ أَبُوهُ فَكَانَتْ أُمُّ أَيْمَنَ تَحْضُنُهُ حَتَّى كَبِرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَعْتَقَهَا ثُمَّ أَنْكَحَهَا زَيْدَ بْنَ حَارِثَةَ ثُمَّ تُوُفِّيَتْ بَعْدَ مَا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِخَمْسَةِ أَشْهُرٍ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন মুহাজিরগণ মক্কা থেকে মাদীনায় প্রবেশ করেন তখন কোন কিছুই তাদের হাতে ছিল না। (তাঁরা ছিলেন তখন সম্পূর্ণ নিঃস্ব) আর আনসারগণ ছিলেন জমা-জমির স্বত্বাধিকারী। তখন আনসারগণ মুহাজিরদেরকে তাদের খেজুর বাগানের অর্ধেক এ শর্তে ভাগ করে দেন যে, প্রতি বছর বাগানে মুহাজিরগণ পরিশ্রম ও পরিচর্যা করে উৎপাদিত ফসলের অর্ধেক তাদেরকে দেবেন। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) -এর মাতা উম্মু সুলায়ম, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ তালহার মাতা ছিলেন। আর ‘আবদুল্লাহ ছিলেন আনাসের বৈপিত্রেয় ভাই। আনাসের মাতা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর একটি খেজুর গাছ দান করেন এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটা দিলেন তাঁর আযাদকৃত দাসী উম্মু আইমানকে যিনি উসামাহ্ ইবনু যায়দের মাতা ছিলেন।
ইবনু শিহাব (রাঃ) বলেন, আমাকে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) খবর দিয়েছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন খাইবারের যুদ্ধ শেষে মাদীনায় প্রত্যাবর্তন করলেন তখন মুহাজিরগণ আনসারদেরকে তাদের দানকৃত ফলের বাগানসমূহ ফিরিয়ে দেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও আমার মাতাকে তাঁর দানকৃত বাগান ফেরত দেন এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু আইমানকে তার পরিবর্তে নিজের বাগানের এক অংশ প্রদান করেন।
ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন যে উম্মু আইমান- যিনি উসামাহ্ ইবনু যায়দের মাতা ছিলেন, তিনি ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিবের দাসী ছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পিতার ইন্তিকালের পর আমিনাহ্র গর্ভ হতে যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভূমিষ্ট হন তখন উম্মু আইমান তাঁকে বড় হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করেন। এরপর তিনি তাঁকে আযাদ করে দেন। পরবর্তীতে যায়দ ইবনু হারিসাহ্র সঙ্গে তাঁকে বিয়ে দিয়ে দেন। তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের পাঁচ মাস পর ইন্তিকাল করেন। (ই.ফা. ৪৪৫১, ই.সে. ৪৪৫৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৯৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَحَامِدُ بْنُ عُمَرَ الْبَكْرَاوِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، الْقَيْسِيُّ كُلُّهُمْ عَنِ الْمُعْتَمِرِ، – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ أَبِي شَيْبَةَ – حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَجُلاً، – وَقَالَ حَامِدٌ وَابْنُ عَبْدِ الأَعْلَى أَنَّ الرَّجُلَ، – كَانَ يَجْعَلُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم النَّخَلاَتِ مِنْ أَرْضِهِ . حَتَّى فُتِحَتْ عَلَيْهِ قُرَيْظَةُ وَالنَّضِيرُ فَجَعَلَ بَعْدَ ذَلِكَ يَرُدُّ عَلَيْهِ مَا كَانَ أَعْطَاهُ . قَالَ أَنَسٌ وَإِنَّ أَهْلِي أَمَرُونِي أَنْ آتِيَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَسْأَلَهُ مَا كَانَ أَهْلُهُ أَعْطَوْهُ أَوْ بَعْضَهُ وَكَانَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أَعْطَاهُ أُمَّ أَيْمَنَ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَعْطَانِيهِنَّ فَجَاءَتْ أُمُّ أَيْمَنَ فَجَعَلَتِ الثَّوْبَ فِي عُنُقِي وَقَالَتْ وَاللَّهِ لاَ نُعْطِيكَاهُنَّ وَقَدْ أَعْطَانِيهِنَّ . فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ يَا أُمَّ أَيْمَنَ اتْرُكِيهِ وَلَكِ كَذَا وَكَذَا ” . وَتَقُولُ كَلاَّ وَالَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ . فَجَعَلَ يَقُولُ كَذَا حَتَّى أَعْطَاهَا عَشْرَةَ أَمْثَالِهِ أَوْ قَرِيبًا مِنْ عَشْرَةِ أَمْثَالِهِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনায় আগমন করেন) তখন এক এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিজ ভূমির কিছু খেজুর দান করেন। যখন বানূ কুরাইযাহ্ এবং বানূ নাযীর গোত্রদ্বয়ের উপর (মুসলিমগণ) বিজয়ী হলেন, তখন সে ব্যক্তি যা দিয়েছিল তিনি তা ফিরিয়ে দিলেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমার পরিবারের লোকজন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে যা দিয়েছিলেন তা অথবা তার অংশবিশেষ তাঁর নিকট হতে চেয়ে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দিলেন। অথচ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু আইমানকে তা দিয়ে দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় আমি তাঁর কাছে এসে যখন তা চাইলাম, তখন তিনি তা আমাকে দিয়ে দিলেন। এ সময় উম্মু আইমান (রাঃ) সেখানে এলেন এবং আমার গলায় কাপড় দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন ও বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তোমাকে তা দেবো না। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে উম্মু আইমান! আপনি তাকে ছেড়ে দিন। আমি আপনাকে এই এই সম্পদ দিচ্ছি। তখন তিনি বললেন, কক্ষনো না। সেই আল্লাহর শপথ! যিনি ব্যাতীত আর কোন ইলাহ নেই। তখনও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছিলেন, আপনাকে এই এই সম্পদ প্রদান করছি (আপনি তাকে ছেড়ে দিন)। পরিশেষে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু আইমানকে ঐ সম্পদের দশগুণ কিংবা দশগুণের কাছাকাছি প্রদান করেন। (ই.ফা. ৪৪৫২, ই.সে. ৪৪৫৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫. অধ্যায়ঃ
‘দারুল হার্বে’ (বিধর্মী শত্রু রাজ্য) গনীমাত হিসেবে প্রাপ্ত খাদ্যদ্রব্য খাওয়া জায়িয
৪৪৯৬
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، – يَعْنِي ابْنَ الْمُغِيرَةِ – حَدَّثَنَا حُمَيْدُ، بْنُ هِلاَلٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ، قَالَ أَصَبْتُ جِرَابًا مِنْ شَحْمٍ يَوْمَ خَيْبَرَ – قَالَ – فَالْتَزَمْتُهُ فَقُلْتُ لاَ أُعْطِي الْيَوْمَ أَحَدًا مِنْ هَذَا شَيْئًا – قَالَ – فَالْتَفَتُّ فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُتَبَسِّمًا .
’আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্ফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি খাইবার যুদ্ধের সময় চর্বি ভর্তি একটি চামড়ার থলে পেলাম। আমি তা তুলে নিলাম এবং বললাম, এর থেকে আমি কাউকে কিছু দেব না। তিনি বললেন, আমি হঠাৎ পিছন ফিরে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে দেখতে পেলাম, (আমার কথা শুনে) তিনি মৃদু হাসছেন। (ই.ফা. ৪৪৫৩, ই.সে. ৪৪৫৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ الْعَبْدِيُّ، حَدَّثَنَا بَهْزُ بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنِي حُمَيْدُ، بْنُ هِلاَلٍ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مُغَفَّلٍ، يَقُولُ رُمِيَ إِلَيْنَا جِرَابٌ فِيهِ طَعَامٌ وَشَحْمٌ يَوْمَ خَيْبَرَفَوَثَبْتُ لآخُذَهُ قَالَ فَالْتَفَتُّ فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَحْيَيْتُ مِنْهُ .
’আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্ফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাইবার যুদ্ধের সময় আমাদের দিকে কে যেন একটি থলে নিক্ষেপ করল, তাতে খাদ্য ও চর্বি ভর্তি ছিল। আমি তা তুলে নেয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়লাম। পিছন ফিরে হঠাৎ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পেলাম। আমি তাঁকে দেখে লজ্জিত হলাম। ( ই.ফা. ৪৪৫৪, ই.সে. ৪৪৫৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪৯৮
وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ جِرَابٌ مِنْ شَحْمٍ وَلَمْ يَذْكُرِ الطَّعَامَ .
মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) হতে একই সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
কিন্তু তিনি (আরবী) (চর্বির থলে) কথাটি বলেন এবং (আরবী) (খাদ্যের) কথা উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৪৫৫, ই.সে. ৪৪৫৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৬. অধ্যায়ঃ
বাদশাহ হিরাক্ল-এর নিকট ইসলামের দা’ওয়াত দিয়ে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পত্র
৪৪৯৯
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَعَبْدُ بْنُ، حُمَيْدٍ – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ رَافِعٍ – قَالَ ابْنُ رَافِعٍ وَابْنُ أَبِي عُمَرَ حَدَّثَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ أَبَا سُفْيَانَ، أَخْبَرَهُ مِنْ، فِيهِ إِلَى فِيهِ قَالَ انْطَلَقْتُ فِي الْمُدَّةِ الَّتِي كَانَتْ بَيْنِي وَبَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَبَيْنَا أَنَا بِالشَّأْمِ إِذْ جِيءَ بِكِتَابٍ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى هِرَقْلَ يَعْنِي عَظِيمَ الرُّومِ – قَالَ – وَكَانَ دِحْيَةُ الْكَلْبِيُّ جَاءَ بِهِ فَدَفَعَهُ إِلَى عَظِيمِ بُصْرَى فَدَفَعَهُ عَظِيمُ بُصْرَى إِلَى هِرَقْلَ فَقَالَ هِرَقْلُ هَلْ هَا هُنَا أَحَدٌ مِنْ قَوْمِ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ قَالُوا نَعَمْ – قَالَ – فَدُعِيتُ فِي نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ فَدَخَلْنَا عَلَى هِرَقْلَ فَأَجْلَسَنَا بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ أَيُّكُمْ أَقْرَبُ نَسَبًا مِنْ هَذَا الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ فَقُلْتُ أَنَا . فَأَجْلَسُونِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَأَجْلَسُوا أَصْحَابِي خَلْفِي ثُمَّ دَعَا بِتَرْجُمَانِهِ فَقَالَ لَهُ قُلْ لَهُمْ إِنِّي سَائِلٌ هَذَا عَنِ الرَّجُلِ الَّذِي يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ فَإِنْ كَذَبَنِي فَكَذِّبُوهُ . قَالَ فَقَالَ أَبُو سُفْيَانَ وَايْمُ اللَّهِ لَوْلاَ مَخَافَةَ أَنْ يُؤْثَرَ عَلَىَّ الْكَذِبُ لَكَذَبْتُ . ثُمَّ قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ سَلْهُ كَيْفَ حَسَبُهُ فِيكُمْ قَالَ قُلْتُ هُوَ فِينَا ذُو حَسَبٍ قَالَ فَهَلْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قُلْتُ لاَ . قَالَ فَهَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ قُلْتُ لاَ . قَالَ وَمَنْ يَتَّبِعُهُ أَشْرَافُ النَّاسِ أَمْ ضُعَفَاؤُهُمْ قَالَ قُلْتُ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ . قَالَ أَيَزِيدُونَ أَمْ يَنْقُصُونَ قَالَ قُلْتُ لاَ بَلْ يَزِيدُونَ . قَالَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَ فِيهِ سَخْطَةً لَهُ قَالَ قُلْتُ لاَ . قَالَ فَهَلْ قَاتَلْتُمُوهُ قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ فَكَيْفَ كَانَ قِتَالُكُمْ إِيَّاهُ قَالَ قُلْتُ تَكُونُ الْحَرْبُ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُ سِجَالاً يُصِيبُ مِنَّا وَنُصِيبُ مِنْهُ . قَالَ فَهَلْ يَغْدِرُ قُلْتُ لاَ . وَنَحْنُ مِنْهُ فِي مُدَّةٍ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ صَانِعٌ فِيهَا . قَالَ فَوَاللَّهِ مَا أَمْكَنَنِي مِنْ كَلِمَةٍ أُدْخِلُ فِيهَا شَيْئًا غَيْرَ هَذِهِ . قَالَ فَهَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قَالَ قُلْتُ لاَ . قَالَ لِتَرْجُمَانِهِ قُلْ لَهُ إِنِّي سَأَلْتُكَ عَنْ حَسَبِهِ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ فِيكُمْ ذُو حَسَبٍ وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْعَثُ فِي أَحْسَابِ قَوْمِهَا . وَسَأَلْتُكَ هَلْ كَانَ فِي آبَائِهِ مَلِكٌ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ . فَقُلْتُ لَوْ كَانَ مِنْ آبَائِهِ مَلِكٌ قُلْتُ رَجُلٌ يَطْلُبُ مُلْكَ آبَائِهِ . وَسَأَلْتُكَ عَنْ أَتْبَاعِهِ أَضُعَفَاؤُهُمْ أَمْ أَشْرَافُهُمْ فَقُلْتَ بَلْ ضُعَفَاؤُهُمْ وَهُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ . وَسَأَلْتُكَ هَلْ كُنْتُمْ تَتَّهِمُونَهُ بِالْكَذِبِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ مَا قَالَ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ . فَقَدْ عَرَفْتُ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ لِيَدَعَ الْكَذِبَ عَلَى النَّاسِ ثُمَّ يَذْهَبَ فَيَكْذِبَ عَلَى اللَّهِ . وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَرْتَدُّ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ دِينِهِ بَعْدَ أَنْ يَدْخُلَهُ سَخْطَةً لَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ . وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ إِذَا خَالَطَ بَشَاشَةَ الْقُلُوبِ . وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَزِيدُونَ أَوْ يَنْقُصُونَ فَزَعَمْتَ أَنَّهُمْ يَزِيدُونَ وَكَذَلِكَ الإِيمَانُ حَتَّى يَتِمَّ . وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَاتَلْتُمُوهُ فَزَعَمْتَ أَنَّكُمْ قَدْ قَاتَلْتُمُوهُ فَتَكُونُ الْحَرْبُ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ سِجَالاً يَنَالُ مِنْكُمْ وَتَنَالُونَ مِنْهُ . وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ تُبْتَلَى ثُمَّ تَكُونُ لَهُمُ الْعَاقِبَةُ وَسَأَلْتُكَ هَلْ يَغْدِرُ فَزَعَمْتَ أَنَّهُ لاَ يَغْدِرُ . وَكَذَلِكَ الرُّسُلُ لاَ تَغْدِرُ . وَسَأَلْتُكَ هَلْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ فَزَعَمْتَ أَنْ لاَ . فَقُلْتُ لَوْ قَالَ هَذَا الْقَوْلَ أَحَدٌ قَبْلَهُ قُلْتُ رَجُلٌ ائْتَمَّ بِقَوْلٍ قِيلَ قَبْلَهُ . قَالَ ثُمَّ قَالَ بِمَ يَأْمُرُ كُمْ قُلْتُ يَأْمُرُنَا بِالصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ وَالصِّلَةِ وَالْعَفَافِ قَالَ إِنْ يَكُنْ مَا تَقُولُ فِيهِ حَقًّا فَإِنَّهُ نَبِيٌّ وَقَدْ كُنْتُ أَعْلَمُ أَنَّهُ خَارِجٌ وَلَمْ أَكُنْ أَظُنُّهُ مِنْكُمْ وَلَوْ أَنِّي أَعْلَمُ أَنِّي أَخْلُصُ إِلَيْهِ لأَحْبَبْتُ لِقَاءَهُ وَلَوْ كُنْتُ عِنْدَهُ لَغَسَلْتُ عَنْ قَدَمَيْهِ وَلَيَبْلُغَنَّ مُلْكُهُ مَا تَحْتَ قَدَمَىَّ . قَالَ ثُمَّ دَعَا بِكِتَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهُ فَإِذَا فِيهِ ” بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللَّهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ أَسْلِمْ تَسْلَمْ وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ وَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ وَ { يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ} فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَةِ الْكِتَابِ ارْتَفَعَتِ الأَصْوَاتُ عِنْدَهُ وَكَثُرَ اللَّغْطُ وَأَمَرَ بِنَا فَأُخْرِجْنَا . قَالَ فَقُلْتُ لأَصْحَابِي حِينَ خَرَجْنَا لَقَدْ أَمِرَ أَمْرُ ابْنِ أَبِي كَبْشَةَ إِنَّهُ لَيَخَافُهُ مَلِكُ بَنِي الأَصْفَرِ – قَالَ – فَمَا زِلْتُ مُوقِنًا بِأَمْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ سَيَظْهَرُ حَتَّى أَدْخَلَ اللَّهُ عَلَىَّ الإِسْلاَمَ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ) তাঁকে সামনা-সামনি খবর দিয়েছেন, আমি তথায় (শাম দেশে) যাত্রা করলাম। যখন আমার মধ্যে এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে (হুদাইবিয়ার) সন্ধির সময়কাল কার্যকর ছিল (ষষ্ঠ হিজরীতে)। যখন আমি শাম দেশে উপস্থিত হলাম, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রেরিত একটা পত্র হিরাক্ল (হিরাক্লিয়াস) বাদশাহ্র নিকট পৌঁছল। দিহ্ইয়াতুল কালবী (রাঃ) (দূত) এ পত্র নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সে পত্র বসরার এক নেতাকে প্রদান করেন। এরপর বসরার সে নেতা, হিরাক্ল বাদশাহ্র নিকট পত্রটি হস্তান্তর করেন। তখন হিরাক্ল বাদশাহ বললেন, এখানে ঐ লোকটির (মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর) সম্প্রদায়ের কোন লোক আছে কি, যিনি নিজেকে নবী বলে দাবী করছেন? তারা বলল, হ্যাঁ। তখন কুরায়শের এক দল লোকের মধ্যে আমাকেও ডাকা হল। এরপর আমরা হিরাক্ল বাদশাহর দরবারে প্রবেশ করলাম। আমাদেরকে তার সম্মুখেই বসান হল। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, যিনি নবী দাবী করছেন তাঁর সাথে আত্মীয়তার দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কে অধিক নিকটবর্তী? তখন আবূ সুফ্ইয়ান বললেন, আমি। তখন তারা আমাকে বাদশাহর সামনেই বসালেন এবং আমার সঙ্গীদেরকে আমার পিছনে বসালেন। এরপর তিনি তাঁর দোভাষীকে ডাকলেন এবং তাকে বললেন, “আপনি তাদেরকে আমার পক্ষ হতে বলে দিন যে, আমি তাঁকে (আবূ সুফ্ইয়ানকে) ঐ লোকটি সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করব নবী বলে যিনি দাবী করছেন। যদি তিনি (আবূ সুফ্ইয়ান) আমার নিকট মিথ্যা কথা বলেন, তবে আপনারাও তাকে মিথ্যাবাদী বলে ঘোষণা দেবেন। তখন আবূ সুফ্ইয়ান বললেন, আল্লাহর শপথ! যদি আমার এ ভয় না হত যে, মিথ্যা বললে তা আমার বরাতে বর্ণিত হতে থাকবে তবে নিশ্চয়ই (তাঁর সম্পর্কে) মিথ্যা কথা বলতাম। অতঃপর বাদশাহ তাঁর দোভাষীকে বললেন, আপনি তাঁকে (আবূ সুফ্ইয়ানকে) জিজ্ঞেস করুন, আপনাদের মাঝে ঐ লোকটির বংশ পরিচয় কেমন? আমি প্রতি উত্তরে বললাম, তিনি আমাদের মাঝে সম্ভ্রান্ত বংশীয়। এরপর জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর পূর্ব পুরুষদের মধ্যে কেউ কি কখনও বাদশাহ ছিলেন? আমি বললাম, না। এরপর জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা কি কখনও তাঁকে এ কথা বলার পূর্বে, যা তিনি বলেছেন, মিথ্যা বলার অভিযোগ করেছেন? আমি বললাম, না। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন,সমাজের কোন শ্রেনীর লোক তাঁর অনুসরণ করে? সম্ভ্রান্ত প্রভাবশালীরা, না দুর্বলেরা? আমি বললাম, সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা নয়; বরং দুর্বল শ্রেনীর লোকেরা।
তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর অনুগামীর সংখ্যা কি বৃদ্ধি পাচ্ছে, না কমছে? আমি বললাম, কমছে না, বরং দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, যেসব লোক তাঁর ধর্মে দীক্ষিত হচ্ছে তারা কি পরবর্তীতে তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে সে ধর্ম থেকে ফিরে আসছে? আমি বললাম, না। এরপর তিনি বললেন, আপনারা কি কখনও তাঁর সাথে কোন যুদ্ধ করেছেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আপনাদের এবং তাঁর মাঝে সংঘটিত যুদ্ধের ফলাফল কিরূপ? আমি বললাম, আমাদের এবং তাঁর মাঝে যুদ্ধের অবস্থা পালাবদল হচ্ছে। কখনও তিনি বিজয়ী হন এবং কখনও বা আমরা বিজয়ী হই। সম্রাট হিরাক্ল আবার জিজ্ঞেস করলেন, তিনি কি কখনও সন্ধির শর্ত ভঙ্গ করেছেন? আমি বললাম, না। কিন্তু আমরা বর্তমানে তাঁর সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ আছি। আমরা জানি না যে, পরিশেষে তিনি তাতে কী করেন। আবূ সুফ্ইয়ান বললেন, আল্লাহর শপথ! প্রশ্ন উত্তরে আমার পক্ষ হতে এ কথাটি ছাড়া অন্য কোন অতিরিক্ত কথা সংযোগ করা সম্ভব হয়নি। এরপর সম্রাট হিরাক্ল বললেন, (আপনাদের দেশে) তাঁর নবূওয়াত দাবীর পূর্বে কি কোন ব্যক্তি কখনো এরূপ দাবী করেছে? আমি বললাম, না। এরপর সম্রাট হিরাক্ল তাঁর দোভাষীকে বললেন, আপনি তাঁকে (আবূ সুফ্ইয়ানকে) বলে দিন যে, আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তাঁর (মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর) বংশ পরিচয় সম্পর্কে। আপনি তখন উত্তর দিয়েছিলেন যে, তিনি সম্ভ্রান্ত বংশীয়। এমনিভাবে রসূলগণ স্বীয় সম্প্রদায়ের উত্তম বংশে প্রেরিত হয়ে থাকেন। এরপরে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তাঁর পিতৃপুরুষদের মধ্যে কি কেউ বাদশাহ ছিলেন? আপনি এর উত্তরে বলেছিলেন, না। আমি এ কথা বলেছিলাম এ কারণে যে, যদি তাঁর পিতৃপুরুষদের মধ্যে কেউ বাদশাহ থাকতেন, তবে আমি মনে করতাম যে, হয়ত বা তিনি তাঁর পিতৃপুরুষদের রাজ্য পুনরুদ্ধার করতে চান। তারপর আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তাঁর অনুসারীগণ কি সমাজের দুর্বল শ্রেনীর লোক, না সম্ভ্রান্ত শ্রেণীর লোক? আপনি উত্তরে বলেছিলেন, দুর্বল শ্রেনীর লোক তাঁর অনুসারী হয়ে থাকে। এরপর আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, যে তিনি (নুবূওয়াতের) যে কথা বলেছেন এর পূর্বে কি আপনারা তাঁকে কখনও মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন? প্রতি উত্তরে আপনি বলেছিলেন যে ,না। এতে আমি বুঝতে পারলাম, যে ব্যক্তি জাগতিক ব্যাপারে মিথ্যা বলেন না, তিনি কি কারণে আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করতে যাবেন? এরপর আমি আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম যে, কোন ব্যক্তি কি তাঁর ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে তাঁর ধর্ম পরিত্যাগ করেছে? আপনি উত্তরে বলেছিলেন, না। ঈমানের প্রকৃত অবস্থা এটাই। যখন অন্তরের অন্তঃস্থলে একবার তা প্রবেশ করে তখন সেখানেই স্থায়ীভাবে অবস্থান করে। এরপর আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তাঁর অনুগামীদের সংখ্যা কি দিন দিন বাড়ছে, না কমছে? প্রতি উত্তরে আপনি বলেছিলেন, তারা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটাই হল ঈমানের প্রকৃর অবস্থা। তা বৃদ্ধি পেতে পেতে অবশেষে পূর্ণত্ব লাভ করে।
এরপর আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনারা কি তাঁর সাথে কোন যুদ্ধ করেছেন? উত্তরে আপনি বলেছেন যে, হ্যাঁ, আপনারা তাঁর সাথে যুদ্ধ করেছেন। তবে আপনাদের মাঝে ও তাঁর মাঝে যুদ্ধের অবস্থা হল পালাবদলের মত। কখনও তিনি বিজয়ী হন, আবার কখনও আপনারা বিজয়ী হন। এভাবে রসূলগনকে পরীক্ষার সম্মুখীন করা হয়। পরিণামে তাঁরাই বিজয়ী হয়ে থাকেন। এরপর আমি আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম, তিনি কি কখনও কোন সন্ধির চুক্তিভঙ্গ করেছেন? প্রতি উত্তরে আপনি বলছেন, তিনি কোন চুক্তিভঙ্গ করেননি! এভাবে রসূলগণ কখনও চুক্তি ভঙ্গ করেন না। আর আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তাঁর এ কথা (নুবূওয়াতের কথা) বলার পূর্বে কি কোন ব্যক্তি অনুরূপ কথা বলেছেন? আপনি বলেছিলেন যে, না। আমি তা এ কারণে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, যদি তাঁর পূর্বে কেউ এরূপ দাবী করে থাকতো, তবে আমি মনে করতাম যে, সে ব্যক্তি তার পূর্বে যে কথা বলা হয়েছে তার অনুকরণ করেছে। রাবী বলেন, এরপর হিরাক্ল জিজ্ঞেস করলেন, তিনি আমাদেরকে সলাত আদায় করতে, যাকাত দিতে, নিকট আত্মীয় ও হকদার ব্যক্তিদের প্রতি সদ্ব্যবহার করতে এবং অবৈধ ও অসৌজন্যমূলক কাজ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়ে থাকেন। বাদশাহ হিরাক্ল বললেন, তিনি আপনাদেরকে কী কাজের নির্দেশ দিয়ে থাকেন? আমি তাকে বললাম আপনি তাঁর সম্পর্কে যা বললেন তাঁর অবস্থা যদি ঠিক তাই হয় তবে তিনি অবশ্যই নাবী। আমি জানতাম যে, একজন নাবীর আবির্ভাব ঘটবে। কিন্তু আমি ধারণা করিনি যে, তিনি আপনাদের থেকে হবেন। যদি আমি জানতাম যে, আমি তাঁর নিকট নির্বিঘ্নে পৌঁছতে পারবো তবে নিশ্চয়ই আমি তাঁর মুবারক পদদ্বয় ধুয়ে দিতাম। (জেনে রেখো) নিশ্চয়ই তাঁর রাজত্ব আমার দু’পায়ের নীচ পর্যন্ত পৌঁছবে।
এরপর তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চিঠিটি তলব করেলন এবং তা পাঠ করলেন। এতে ছিল- “বিস্মিল্লা-হির রহ্মান-নির রহীম! এটা মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পক্ষ হতে রোমের মহান ব্যাক্তি হিরাক্ল-এর প্রতি। শান্তি ধারা সে ব্যক্তির উপর, যিনি সঠিক পথ অনুসরণ করেন। অতঃপর, নিশ্চয়ই আমি আপনাকে ইসলামের আহবান জানাচ্ছি। ইসলাম গ্রহন করুন, নিরাপত্তা লাভ করুন। আপনি মুসলিম হোন, আল্লাহ আপনাকে দ্বিগুণ পুরস্কার দান করবেন। আর যদি আপনি (ইসলাম থেকে) মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে নিশ্চয়ই প্রজাদের অপরাধ আপনার উপর আরোপিত হবে। “হে আহলে কিতাব! তোমরা এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই; যেন আমরা আল্লাহ ব্যাতীত অন্য কারও ‘ইবাদাত না করি, কোন কিছুকেই তাঁর শরীক না করি…তবে বল, তোমরা সাক্ষী থাক আমরা মুসলিম” পর্যন্ত। এরপর তিনি পত্র পাঠ শেষ করলে তাঁর নিকটে শোরগোল এবং অযথা কথাবার্তা হতে লাগল। এদিকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসার নির্দেশ দেয়া হল। আমরা বেরিয়ে এলাম। আবূ সুফ্ইয়ান বলেন, আমরা যখন বেরিয়ে এলাম তখন আমি আমার সঙ্গীদের বললাম, আবূ কাবশার [৩৮] পুত্রের মর্যাদা অনেক বেড়ে গেছে। রোমীয়দের বাদশাহ্ও তাঁকে ভয় করছে।
তিনি আরও বলেন, সেদিন থেকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর ব্যাপারে আমার দৃঢ় প্রত্যয় হল যে, নিশ্চয়ই তিনি বিজয়ী হবেন। অবশেষে আল্লাহ্ তা’আলা আমার অন্তরে ইসলাম প্রবেশ করিয়ে দিলেন। (ই.ফা. ৪৪৫৬, ই.সে. ৪৪৫৮)
[৩৮] আবূ কাবশাহ্ আরবের একজন ভিন্নমতাবলম্বী ছিল। কারো মতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নানা, আবার কারও মতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুধমাতা হালিমার স্বামীর নাম। (বস্তুত কথাটি ব্যঙ্গাত্মক হিসেবে বলা হয়েছে) (মুখতাসার শারহে মুসলিম, আল্লামা ওয়াহিদুজ্জামানঃ ৫ম খন্ড, ৪৮ পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫০০
عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ فِي الْحَدِيثِ وَكَانَ قَيْصَرُ لَمَّا كَشَفَ اللَّهُ عَنْهُ جُنُودَ فَارِسَ مَشَى مِنْ حِمْصَ إِلَى إِيلِيَاءَ شُكْرًا لِمَا أَبْلاَهُ اللَّهُ . وَقَالَ فِي الْحَدِيثِ ” مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ ” . وَقَالَ ” إِثْمَ الْيَرِيسِيِّينَ ” . وَقَالَ ” بِدَاعِيَةِ الإِسْلاَمِ ” .
ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ একই সূত্রে উল্লিখিত হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এ হাদীসে বাড়িয়ে বর্ণনা করেছেন, “যখন আল্লাহ তা’আলা রোম সম্রাট (কায়সার) দ্বারা পারস্যের সেনাদলকে পরাজিত করলেন, তখন তিনি এ বিজয়ের জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে ‘হিম্স’ থেকে ‘ঈলিয়া’ (বাইতুল মুকাদ্দাস) পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যান আর তিনি তাঁর হাদীসে “এ পত্র মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূলের পক্ষ হতে” এবং (আরবি) শব্দের পরিবর্তে (আরবি) শব্দ বলেছেন। আর তিনি (আরবি) শব্দের পরিবর্তে (আরবি) শব্দ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৪৫৭, ই.সে. ৪৪৫৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস