বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আরিফ আজাদ লিখিত বই প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ১ম পর্ব এবং ২য় পর্ব এর pdf ফাইল ডাউনলোড করতে নিচে দেওয়া DOWNLOAD বাটনে ক্লিক করুন।
আমি রুমে ঢুকেই দেখি সাজিদ কম্পিউটারের সামনে উবু হয়ে বসে আছে। খটাখট কি যেন টাইপ করছে হয়তাে! আমি জগ থেকে পানি ঢালতে লাগলাম। প্রচন্ড রকম তৃষ্ণার্ত! তৃষ্ণায় বুক ফেটে যাবার জোগাড়! সাজিদ কম্পিউটার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললাে,- ‘কি রে, কিছু হইলাে?’
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ pdf
আমি হতাশ গলায় বললাম,- ‘নাহ।’ তার মানে তােকে একবছর ড্রপ দিতেই হবে?’- সাজিদ জিজ্ঞেস করলাে। আমি বললাম,- ‘কি আর করা। আল্লাহ যা করেন ভালাের জন্যই করেন।’ সাজিদ বললাে,- ‘তােদের এই এক দোষ, বুঝলি? দেখছিস পুওর এ্যাটেন্ডেন্সের জন্য এক বছর ড্রপ খাওয়াচ্ছে, তার মধ্যেও বলছিস, আল্লাহ যা করেন ভালাের জন্যই করেন! ভাই, এইখানে কোন ভালােটা তুই পাইলি, বলতাে?’
সাজিদ সম্পর্কে কিছু বলে নেওয়া দরকার। আমি আর সাজিদ রুমমেট। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রো বায়ােলজিতে পড়ে প্রথম জীবনে খুব ধার্মিক ছিলাে। নামাজকালাম করতাে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কিভাবে কিভাবে যেন এগনােষ্টিক হয়ে পড়ে। আস্তে আস্তে স্রষ্টার উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে এখন পুরােপুরি নাস্তিক হয়ে গেছে। ধর্মকে এখন সে আবর্জনা জ্ঞান করে। তার মতে পৃথিবীতে ধর্ম এনেছে মানুষ। আর ‘ইশ্বর’ ধারনাটাই এইরকম স্বার্থান্বেষী কোন মহলের মস্তিষ্কপ্রসূত।
এরকমও তাে হতে পারতাে, ধর, আমি সারাবছর একদমই পড়াশুনা করলাম না। পরীক্ষায় ফেইল মারলাম। এখন ফেইল করলে আমার এক বছর ড্রপ যেতাে। হয়তাে ফেইলের অপমানটা আমি নিতে পারতাম না। আত্মহত্যা করে বসতাম।’ সাজিদ হা হা হা হা করে হাসা শুরু করলাে। বললাে,- ‘কি বিদঘুটে বিশ্বাস নিয়ে চলিস রে ভাই।’ এই বলে সে আবার হাসা শুরু করলাে। বিদ্রুপাত্মক হাসি।
প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ ২ pdf
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার, যিনি আমাকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্ব দান করেছেন। দরূদ ও সালাম প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি যাকে বিশ্বজাহানের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করা হয়েছে। শাস্তি বর্ষিত হোক তার পরিবার-পরিজন এবং তার সাহাবীদের ওপর যারা ইসলামের জন্য ত্যাগ করেছেন নিজেদের সর্বস্ব। রাযিয়াল্লাহু আনহুম।
এখন চলছে এক উত্তাল সময়। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে মানুষের চিন্তা, চেতনা আর আদর্শ পৌঁছে যাচ্ছে সর্বত্র। একজন যা ভাবছে তা মুহূর্তেই জেনে যাচ্ছে অন্যরা। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের অবাধ সুযোগ এবং ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা যেন ব্যাপারটিকে আরও মোহনিয়া করে তুলেছে।
প্রযুক্তির এই ধারা-ই কাজে লাগিয়েছে ধর্মবিদ্বেষী একদল মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ার অবাধ ব্যবহারের এই সুযোগে ইসলাম, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে ইন্টারনেটে তারা এমন সব কথা ছড়াতে লাগল যা মুখ বুজে সহ্য করা যেকোনো ইমানদার ব্যক্তির জন্য ছিল অত্যন্ত কঠিন। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল অসচেতন মুসলিম তরুণ, যাদের ধর্ম নিয়ে খুব বেশি জানাশোনা ও পড়াশোনা নেই। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের এসকল তরুণদের টার্গেট করে তারা বিভিন্ন ব্লগে ও ফেইসবুকে ছড়াতে থাকে প্রোপাগান্ডা যার সবটাই-জুড়ে থাকে কেবল ইসলাম-বিদ্বেষ।
Paradoxical Sajid pdf
ইসলামের নবী ও তার স্ত্রীগণ এবং অন্যান্য ব্যাপার নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করাই ছিল তাদের প্রধান কাজ। যুবক-যুবতীদের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করিয়ে তাদের ধর্ম থেকে বিমুখ এবং দূরে সরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে তারা আপ্রাণ কাজ করে যাচ্ছে। দুঃখের সাথে বলতে হয়, তাদের এই প্রচেষ্টায় তারা অনেকটাই সফল হতে পেরেছে। তাদের ছড়ানো নীল-জগতের বিষে বিষাক্ত হতে থাকে বেশকিছু বিশ্বাসী তরুণের অন্তর। ধর্ম নিয়ে তাদের মনে ঢুকে পড়ে সীমাহীন সন্দেহ আর অবিশ্বাস। স্রষ্টার অস্তিত্ব এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াতের সত্যতাসহ নানান ব্যাপারে তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগতে থাকে।
চারদিকের এরকম অন্ধকার, অস্থিরতা আর অবিশ্বাসের বিষবাষ্প দেখতে দেখতে বিষিয়ে উঠছিল মন। চোখের সামনে পাল্টে যেতে থাকা মানুষগুলো দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছিলাম। কেমন যেন অদ্ভুত এক অন্ধকার এসে গ্রাস করে নিচ্ছিল সুন্দর এই উপত্যকা।