Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম. Salatul Tasbeeh Namaz

সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম. Salatul Tasbeeh Namaz Info

সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম. Salatul Tasbeeh Namaz বিবরণ

সালাতুত-তাসবিহ-নামাজের-নিয়ম.-Salatul-Tasbeeh-Namaz

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম ও ফজিলত।

সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম

অধিক তাসবিহ পাঠের কারণে এই সালাতকে সালাতুত তাসবিহ বলা হয়। এটি ঐচ্ছিক সালাত সমূহের অন্তর্ভুক্ত। এ বিষয়ে কোন ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়নি। বরং আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত এ সম্পর্কিত হাদীসকে কেউ মুরসাল কেউ মওকুফ কেউ যঈফ কেউ মওযু বা জাল বলেছেন। সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া কমিটি লাজনা দায়েমাহ এই সালাতকে বিদআত বলে ফতোয়া দিয়েছে। যদিও শায়খ আলবানী (রহঃ) উক্ত হাদীছের যঈফ সূত্র সমূহ পরস্পরকে শক্তিশালী করে মনে করে তাকে সহীহ বলেছেন এবং ইবনে হাজার আসকালানী ও ছাহেবে মিরয়াত একে হাসান স্তরে উন্নীত বলেছেন। তবুও এরূপ বিতর্কিত, সন্দেহযুক্ত ও দুর্বল ভিত্তির উপর কোন ইবাদত বিশেষ করে সালাত প্রতিষ্ঠা করা যায় না বলে মনে করেন অনেকেই।

প্রিয় পাঠক! জেনে রাখুন যে, সালাতুত তাসবীহ এর হাদীসের ব্যাপারে উলামাদের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে, একদল উলামা সেটাকে যঈফ বলেছেন, তাদের মধ্যে আল উক্বায়লী, ইবনুল আরাবী, ইবনু তাইমিয়্যাহ, ইবনু আকিল হাদী, আল মাজী, হাফিয আসক্বালানী। আসক্বালানী (রহঃ) আত তালখিসে যঈফ বলেছেন এবং ইবনুল জাওযী এ হাদীসকে জাল হাদীসের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেছেনঃ (আত তালখিস গ্রন্থে) প্রকৃত সত্য হলো আলোচ্য হাদীসের প্রতি সূত্রই যঈফ।

যদিও ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান স্তরের কাছাকাছি, তারপরও তা শায বা বিরল এবং তার মুতাবা ও অন্য সূত্রে তার কোন শাহীদ বা সাক্ষী হাদীসও নেই এবং সালাতুত তাসবীহ পদ্ধতিটি অন্যান্য সালাতের পরিপন্থী।

উক্ত হাদিসের রাবী মুসা বিন উবায়দাহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হুজ্জাহ নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে হাদিস বর্ণনা করা উচিত নয়। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, মুনকারুল হাদিস। সুওয়ায়াদ বিন আবু সাঈদ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ قَالَ: لِلْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ: «يَا عَبَّاسُ يَا عَمَّاهُ أَلَا أُعْطِيكَ؟ أَلَا أَمْنَحُكَ؟ أَلا أحبوك؟ أَلَا أَفْعَلُ بِكَ عَشْرَ خِصَالٍ إِذَا أَنْتَ فَعَلْتَ ذلِكَ غَفَرَ اللّهُ لَكَ ذَنْبَكَ أَوَّلَه وَاخِرَه قَدِيمَه وَحَدِيثَه خَطَأَه وَعَمْدَه صَغِيرَه وَكَبِيرَه سِرَّه وَعَلَانِيَتَه: أَنْ تُصَلِّيَ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ تَقْرَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ فَاتِحَةَ الْكِتَابِ وَسُورَةً

فَإِذَا فَرَغْتَ مِنَ الْقِرَاءَةِ فِي أَوَّلِ رَكْعَةٍ وَأَنْتَ قَائِمٌ قُلْتَ سُبْحَانَ اللّهِ وَالْحَمْدُ لِلّهِ وَلَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَاللّهُ أَكْبَرُ خَمْسَ عَشْرَةَ مَرَّةً ثُمَّ تَرْكَعُ فَتَقُولُهَا وَأَنْتَ رَاكِعٌ عَشْرًا ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ مِنَ الرُّكُوعِ فَتَقُولُهَا عَشْرًا ثُمَّ تَهْوِي سَاجِدًا فَتَقُولُهَا وَأَنْتَ سَاجِدٌ عَشْرًا ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ مِنَ السُّجُودِ فَتَقُولُهَا عَشْرًا ثُمَّ تَسْجُدُ فَتَقُولُهَا عَشْرًا ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ فَتَقُولُهَا عَشْرًا فَذَلِكَ خَمْسٌ وَسَبْعُونَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ تَفْعَلُ ذلِكَ فِي أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ إِنِ اسْتَطَعْت أَن تصليها فِي كل يَوْم فَافْعَلْ فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِي كُلِّ جُمُعَةٍ مَرَّةً فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِي كُلِّ شَهْرٍ مَرَّةً فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِىْ كُلِّ سَنَةٍ مَرَّةً فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِىْ عُمْرِكَ مَرَّةً». رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي الدَّعْوَات الْكَبِير

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিবকে বললেন, হে আব্বাস! হে আমার চাচাজান! আমি কি আপনাকে দান করব না? আমি কি আপনাকে দান করব না, আমি কি আপনাকে বলে দেব না? আপনাকে কি দশটি অভ্যাসের অধিপতি বানিয়ে দেব না? আপনি যদি এগুলো আমল করেন তাহলে আল্লাহ আপনাকে পূর্বের, পরের, পুরানো ও নতুন, ইচ্ছাকৃত অথবা ভুলক্রমের, ছোট কি বড়, প্রকাশ্য কি গোপন সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।

আর সেটা হলো আপনি চার রাকআত সালাত আদায় করবেন। প্রতি রাকআতে ফাতিহাতুল কিতাব ও সঙ্গে একটি সূরা। প্রথম রাকআতে ক্বিরাআত পড়া শেষ হলে দাঁড়ানো অবস্থায় পনের বার এ তাসবীহ পড়বেনঃ “সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াল হাম্‌দু লিল্লা-হি, ওয়ালা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু আল্লা-হু আকবার”। তারপর রুকুতে যাবেন। রুকুতে এ তাসবীহটি দশবার পড়বেন। তারপর রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে এ তাসবীহ আবার দশবার পড়বেন। তারপর সাজদাহ করবেন। সাজদায় এ তাসবীহ দশবার পড়বেন। তারপর সাজদাহ হতে মাথা উঠাবেন। সেখানেও এ তাসবীহ দশবার পড়বেন। তারপর দ্বিতীয় সাজদায় যাবেন। এ তাসবীহ দশবার এখানেও পড়বেন। সর্বমোট এ তাসবীহ এক রাকআতে পঁচাত্তর বার হবে। চার রাকআতে এরকম পড়ে যেতে হবে।

আপনি যদি প্রতিদিন এ সালাত এরকম পড়তে পারেন তাহলে প্রতিদিনই পড়বেন। প্রতিদিন পড়তে না পারলে সপ্তাহে একদিন পড়বেন। সপ্তাহে একদিন পড়তে না পারলে প্রতি মাসে একদিন পড়বেন। যদি প্রতিমাসে একদিন পড়তে না পারেন, বছরে একবার পড়বেন। যদি বছরেও একবার পড়তে না পারেন, জীবনে একবার অবশ্যই পড়বেন।

আবূ দাঊদ ১২৯৭, ইবনু মাজাহ্ ১৩৮৭, ইবনু খুযায়মাহ্ ১২১৬, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১১৯২, সহীহ আত্ তারগীব ৬৭৭, সহীহ আল জামি‘ ৭৯৩৭, আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর ৪৪৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪৯১৬।

যদিও এর সানাদে মূসা ইবনু আবদুল আযীয দুর্বল রাবী থাকায় এ সানাদটি দুর্বল কিন্তু এর একাধিক শাহিদমূলক বর্ণনা রয়েছে যা হাদীসটিকে সহীহ লিগায়রিহী এর স্তরে উন্নীত করেছে।

কেউ বলেছেন, দিনে কিংবা রাতে হোক সালাতুত তাসবিহ চার রাকআত এক সালামে আদায় করতে হবে। কেউ বলেছেন, দিনের বেলায় এক সালামে ও রাতের বেলায় দু সালামে আদায় করতে হবে। কেউ বলেছেন, একবার এক সালামে ও অন্যবার দু সালামে আদায় করতে হবে।

তবে সালাতুত তাসবীহ সূর্য ঢলে পড়ার পর যুহরের পূর্বে আদায় করতে হবে, যা আবূ দাঊদ তার সুনান গ্রন্থে আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে মারফূভাবে বর্ণনা করেছেন, যখন দিন গড়ে যায় তখন দাঁড়াও এবং চার রাকআত সালাত অর্থাৎ নামাজ আদায় করো। কেউ বলেছেন সালাতুল তাসবীহতে কখনো সূরা যিলযাল, আল আদিয়াত, আল ফাতহ, আল ইখলাস পড়বে। আবার কেউ বলেছেন সালাতুত তাসবীহের চার রাকআতে সূরা আল হাদীদ, আল হাশর, আস সাফ ও আত তাগাবুন পড়া উত্তম। (আল্লাহ তাআলা ভাল জানেন)।

Rate the Post

Related posts

Scroll to Top