বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম নিয়ত দোয়া ও ফজিলত।
সূচিপত্র
Toggleসালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম
বিশেষ কোন বৈধ চাহিদা পূরণের জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে যে দুই রাকাত নফল ছালাত আদায় করা হয়, তাকে ‘সালাতুল হাজত’ বলা হয়। এই সালাত যেকোন সময় ও যেকোন সূরা দিয়ে পড়া যায়।
ইবনে মাজাহ হা/১৩৮৫, ছালাত অধ্যায়-২ অনুচ্ছেদ-১৮৯।
সঙ্গত কোন প্রয়োজন পূরণের জন্য বান্দা স্বীয় প্রভুর নিকট সবর ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করবে।
(বাকারা ২/১৫৩)।
সালাতুল হাজতের নিয়ত করে অর্থাৎ অন্তরে সালাতুল হাজতের সংকল্প করে সাধারণ নফল সালাতের ন্যায় দুই রাকাত সালাত আদায় করতে হবে; তবে শেষ বৈঠকে তাশাহুদের পর সালাম ফিরানোর পূর্বে আশু প্রয়োজনীয় বিষয়ের কথা নিয়তের মধ্যে এনে নিম্নোক্ত সারগর্ভ দোয়া পাঠ করবে।
সালাতুল হাজতের দোয়া
اللّٰهُمَّ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা রব্বানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া হাছানাতাঁও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাঁও ওয়া ক্বিনা আযা-বান্না-র)।
অনুবাদ: হে আল্লাহ! হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতে মঙ্গল দিন ও আখেরাতে মঙ্গল দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব হতে রক্ষা করুন।
হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অধিকাংশ সময় এ দোয়াটিই পড়তেন।
বুখারী হা/৪৫২২, ৬৩৮৯; ঐ, মিশকাত হা/২৪৮৭, মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩।
দোয়াটি সিজদায় পড়লে বলবে, আল্লা-হুম্মা আ-তিনা…।
কেননা রুকু-সিজদায় কুরআনী দো‘আ পড়া চলে না।
মুসলিম, মিশকাত হা/৮৭৩, ছালাত অধ্যায়-৪, রুকু’ অনুচ্ছেদ-১৩; নায়ল ৩/১০৯।
হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন কোন সংকটে পড়তেন, তখন সালাতে রত হতেন।
আবু দাউদ হা/১৩১৯ সালাত অধ্যায়-২, অনুচ্ছেদ-৩১২; ছহীহুল জামে হা/৪৭০৩; মিশকাত হা/১৩১৫।
সালাতুল হাজতের ঘটনা
উক্ত বিষয়ে হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর স্ত্রী সারার ঘটনা স্মরণ করা যেতে পারে। যখন তিনি অপহৃত হয়ে মিশরের লম্পট সম্রাটের নিকট নীত হলেন ও অত্যাচারী সম্রাট তার দিকে এগিয়ে গেল, তখন তিনি ওযূ করে সালাতে রত হয়ে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে বলেছিলেন,
اَللَّهُمَّ لاَ تُسَلِّطْ عَلَىَّ هَذَا الْكَافِرَ
অনুবাদ: হে আল্লাহ! এই কাফেরকে তুমি আমার উপর বিজয়ী করাে না।
সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন এবং উক্ত লম্পটের হাত-পা অবশ হয়ে পড়েছিল। তিন-তিনবার ব্যর্থ হয়ে অবশেষে সে বিবি সারা-কে সসম্মানে মুক্তি দেয় এবং বহুমূল্যবান উপঢৌকনাদি সহ তার খিদমতের জন্য হাজেরাকে তার সাথে ইব্রাহীম এর নিকট পাঠিয়ে দেয়।
বুখারী হা/২২১৭ ক্রয়-বিক্রয় অধ্যায়-৩৪, অনুচ্ছেদ-১০০; আহমাদ হা/৯২৩০, সনদ ছহীহ।