Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

রোজার কাফফারা ও কাযা এবং রোজা না রাখার শাস্তি

রোজার-কাফফারা-ও-কাযা-এবং-রোজা-না-রাখার-শাস্তি

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে রোজার কাফফারা ও কাযা এবং রোজা না রাখার শাস্তি।

রোজার কাফফারা ও কাযার বিধান

অনিচ্ছাকৃত বা ওজরবশত ছুটে যাওয়া সাওমের বদলে কাযা, আর ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সহবাসের মাধ্যমে ভঙ্গ করা সাওমের বদলে কাযার সঙ্গে দিতে হয় কাফফারা। কাজা হলে সম পরিমাণ সাওম আদায় করতে হয়। আর কাফ্ফারা হলে, সাওম না রাখার কারণে সুনির্দিষ্ট কিছু কর্তব্য পালন করতে হয়। কাফফারা তিন ধরনের। (১) গোলাম আযাদ করা, আর তা সম্ভব না হলে (২) একাধারে ৬০টি রোজা রাখা, আর সেটিও সম্ভব না হলে (৩) ৬০ জন মিসকিনকে একবেলা খানা খাওয়ানো।

দিনের বেলায় সহবাসের কারণে সিয়াম ভঙ্গ হলে এজন্য তাকে কাযাও করতে হবে এবং কাফফারাও দিতে হবে। এ দু’টিই তার জন্য ফরয? সহবাসের কারণে যে রোজা ভঙ্গ হয় ঐ একটা রোজার বদলে একাধারে ষাট দিন রোজা রাখতে হবে। এবং এর মাঝখানে সঙ্গত কারণ ছাড়া কোন বিরতি দেয়া যাবে না। যদি মাঝখানে বিরতি দেয়া হয় তাহলে এরপর থেকে আবার নতুন করে ষাট দিন বিরতিহীনভাবে সিয়াম পালন করতে হবে।

যে ব্যক্তি বিনা ওজরে বিনা করণে অতীতে সিয়াম ভঙ্গ করেছে সে কিভাবে কাযা ও কাফফারা আদায় করবে?

এক রমযানের সাওম তাকে পরবর্তী রমজানের আগে আদায় করতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তবে সারা জীবনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা কাযা করে নিতে হবে। এবং প্রতি রোজার বদলে একটি রোজা পালন করতে হবে। আর তা রাখতে শারীরিকভাবে অক্ষম হলে একজন মিসকিনকে একবেলা খানা খাওয়াতে হবে।

একটি রোজা ভাঙ্গার কারণে ষাটটি রোজা রাখা, তাও আবার বিরতিহীনভাবে এভাবে আদায় করতে যদি কেউ অক্ষম বা অপারগ হয় তাহলে ৬০ জন অভাবী মানুষকে একবেলা খানা খাওয়াবে। প্রতিজনের খাবারের পরিমাণ হবে কমপেক্ষ ৫১০ গ্রাম।

কাউকে চুমু দেয়ার কারণে বা স্ত্রী বা কোন মেয়ের গা স্পর্শ হওয়ার কারণে অনিচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত হয়ে গেলে সাধারণ নিয়মেই এক সাওমের বিপরীতে এক সাওম হিসেবে কাযা করবে।

ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে অধিকাংশ আলেমদের মতে শুধু কাযা করবে। অর্থাৎ এক রোজার বদলে একটি রোযা পালন করবে। তবে কোন কোন আলেমের মতে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়ে যাবে। অর্থাৎ ১ রোজার বদলে বিরতিহীনভাবে মোট ৬১ টি রোজা পালন করবে।

কোন কোন কারণে রোজা ভঙ্গ হলে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়?

১। স্ত্রীকে চুম্বন/স্পর্শ করার কারণে বীর্যপাত ঘটলে। ২। ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করলে ৩। পাথর, লোহার, টুকরা, ফলের আঁটি ইত্যাদি গিলে ফেললে ৪। ভুলক্রমে কিছু খেতে আরম্ভ করে রোজা ভঙ্গ হয়েছে মনে করে পুনরায় আহার করলে। ৫। কুলি করার সময় পেটে পানি চলে গেলে ৬। মুখে বমি এলে পুনরায় তা পেটে প্রবেশ করালে ৭। দাঁতের ফাঁক থেকে খাদ্য কণা খেয়ে ফেললে ৮। রোজার নিয়ত না করে ভুল করে রোজা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে পানাহার করলে।

রমজানের রোজা কাজা করার হুকুম কি? কেউ যদি একাধিক রোজা ভঙ্গ করে তবে সে কি এগুলো একাধারে কাযা করবে?

ধারাবাহিকভাবে কাযা করা মুস্তাহাব। তবে পৃথক পৃথকভাবে কাযা করা জায়েয আছে। পরবর্তী রমজান আসার পূর্বে করা উত্তম। তবে যে কোন সময়ে তা করতে পারবে।

আল্লাহ তা’আলা বলেন, অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করে নেবে। (বাকারা : ১৮৪)

এক রমযানের কাযা আদায়ের পূর্বে অন্য রমজান আগমন করলে কী করবে?

এমতাবস্থায় চলতি রমজানের রোজা আদায় করার পর পূর্বের রোযাগুলোর কাযা পালন করবে।

রোজা না রাখার শাস্তি

যারা বিনা ওজরে সিয়াম ভঙ্গ করে তারা ভীষণ শাস্তির সম্মুখীন হবে। এ বিষয়ে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কয়েকটি হাদিস নিম্নে উল্লেখ করা হল :

[১] আবু উমামা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, একদিন আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, একটি সম্প্রদায় উল্টোভাবে ঝুলছে। তাদের গালটি ফাড়া। তা থেকে রক্ত ঝরছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম এরা কারা? বলা হল, এরা ঐসব ব্যক্তি যারা বিনা ওজরে রমজান মাসের সিয়াম ভঙ্গ করেছিল। (সহীহ ইবনে খুযাইমাহ)

[২] যে ব্যক্তি (রমজানের) এ মোবারক মাসেও আল্লাহকে রাজী করাতে পারল না, সে বড়ই দুর্ভাগা। (ইবনে হিব্বান)

[৩] যে ব্যক্তি শরীয়তী ওযর ছাড়া এ (রমজান) মাসে একটি রোযাও ছেড়ে দেবে, সে যদি এর বদলে সারা জীবনও সিয়াম পালন করে তবু তার পাপের খেসারত হবে না। (বুখারী)

Share the Post

Rate the Post

Rating Summary

0.0
0.0 out of 5 stars (based on 0 reviews)
Excellent0%
Very good0%
Average0%
Poor0%
Terrible0%

Latest Reviews

There are no reviews yet. Be the first one to write one.

Latest Post