Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

ঈমানের মৌলিক বিষয় কয়টি ও কী কী? ঈমানের স্তম্ভ কয়টি কি কি?

ঈমানের মৌলিক বিষয় কয়টি ও কী কী? ঈমানের স্তম্ভ কয়টি কি কি? Info

ঈমানের মৌলিক বিষয় কয়টি ও কী কী? ঈমানের স্তম্ভ কয়টি কি কি? Description

ঈমানের-মৌলিক-বিষয়-কয়টি-ও-কী-কী-ঈমানের-স্তম্ভ-কয়টি-কি-কি

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে ঈমানে মুফাসসাল বা ঈমানের মৌলিক বিষয় কয়টি ও কী কী বা ঈমানের স্তম্ভ কয়টি ও কি কি।

ঈমানে মুফাসসাল

امنت بالله وملئكته وكتبه ورسله واليوم الاخر والقدر خيره وشره

উচ্চারণ: আমানতু বিল্লাহি, ওয়া মালায়িকাতিহি, ওয়া কুতুবিহি, ওয়া রুসুলিহি, ওয়াল ইয়াওমিল আখিরি, ওয়াল কাদরি খায়রিহি ওয়া শাররিহি।

অর্থ: আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসুলগণের প্রতি, আখিরাতের প্রতি; ভাগ্যের ভালো-মন্দের প্রতি।

ঈমানের মৌলিক বিষয় কয়টি ও কী কী

ঈমানের মৌলিক বিষয় বা স্তম্ভ সমূহ ৬ টি। যথাঃ

১. আল্লাহ তাআলা

২. তাঁর ফিরিশতাগণ

৩. তার কিতাবসমূহ

৪. তার রাসূলগণ

৫. আখিরাত এবং

৬. তাকদীরের ভালো মন্দ।

এ প্রসংগে আল্লাহ তা’আলা বলেন,

“বরং প্রকৃতপক্ষে সৎকাজ হলো, যে ঈমান আনবে আল্লাহর ওপর, কিয়ামত দিবসের ওপর, ফিরিশতাদের ওপর এবং সমস্ত নবী রাসূলগণের ওপর।“ [সূরা আল বাকারা, আয়াত: ১৭৭]

তিনি আরো বলেন,

“সবাই ঈমান রাখে, আল্লাহর ওপর, তাঁর ফিরিশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবের প্রতি এবং তাঁর নবীদের ওপর, তারা বলে আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোনো তারতম্য করি না।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৫]

তিনি আরো বলেন,

“আমরা প্রত্যেক বস্তুকে তাকদীর মোতাবেক সৃষ্টি করেছি।” [সূরা আল-কামার, আয়াত: ৪৯]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

“ঈমান হচ্ছে, তুমি আল্লাহ, তাঁর ফিরিশতাগণ, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ ও শেষ দিবসের (আখিরাতের) প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। আরো বিশ্বাস রাখবে তাকদীরের ভালো মন্দের প্রতি।” (সহীহ মুসলিম)

১. আল্লাহ তায়ালা

আল্লাহর প্রতি ঈমান সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন-

“আর মুমিনরা প্রত্যেকেই আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে।” (সূরা আল-বাকারা : ২৫৮)

আরও বলা হয়েছে-

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করো। (সূরা আন নিসা : ১৩৬)

আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাঃ বলেছেন-

যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ এ সাক্ষ্য না দেবে যে, ‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো যোগ্য ইলাহ নেই’, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে আদিষ্ট হয়েছি। কাজেই যে ব্যক্তি স্বীকার করে নেবে যে, ‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো যোগ্য ইলাহ নেই’ সে আমার থেকে তার জীবন ও সম্পদকে নিরাপদ করে নিল। তবে শরীআহসম্মত কোনো কারণ ঘটলে ভিন্ন কথা। আর তার (কৃতকর্মের) হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছেই রয়েছে।”(সহীহ আল বুখারী-১৩৯৯ ও সহীহ মুসলিম-২০)

২. ফেরেশতাগণ

ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান : দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করা যে, আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য ফেরেশতা রয়েছেন। তিনি তাদেরকে নূর (জ্যোতি) হতে সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টিগতভাবে তারা আল্লাহর অনুগত। তারা কখনও আল্লাহর আদেশের অবাধ্য হন না, বরং যা আদিষ্ট হয় তা তাৎক্ষণিক পালন করেন। তারা দিবা রাত্রি আল্লাহর তাসবীহ (পবিত্রতা) বর্ণনায় রত, কখনও ক্লান্ত হন না। তাদের সংখ্যা আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত কেউ জানে না। আল্লাহ তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার (কর্মের) দায়িত্ব অপর্ণ করেছেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

সকলেই বিশ্বাস রাখেন আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তার গ্রন্থসমূহের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি। (সূরা আল বাকারা- আয়াত : ২৮৫)

জিবরাঈল আঃ-এর প্রসিদ্ধ হাদীসে আল্লাহর রাসূল সাঃ বলেন-

ঈমান হল আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণ ও পুনরুত্থান দিবসের প্রতি এবং ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। (বুখারী-৫০, মুসলিম-১০)

৩. আসমানী কিতাবসমূহ

ঈমানের তৃতীয় শাখা হচ্ছে- আল্লাহ প্রদত্ত কিতাবসমূহের উপর ঈমান আনা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

এবং সকল মুমিন- আল্লাহ, ফেরেশতা, কিতাবসমূহ এবং নবীদের উপর ঈমান আনে। (সূরা আল বাকারা : আয়াত-২৮৫)

উমর ইবনে খাত্তাব রাঃ কর্তৃক বর্ণিত হাদীস- যা হাদীসে জিবরাঈল নামে পরিচিত- যেখানে জিবরাঈল আঃ এর এক প্রশ্নের জবাবে বলা হয়েছে-

ঈমান হচ্ছে- আল্লাহ, ফেরেশতা, তাঁর কিতাবসমূহ ও রাসূলগণের উপর ঈমান আনয়ন। (বুখারী-৪৭৭৭)

কিতাবসমূহের উপর ঈমান আনার সাথে সাথে আল-কুরআনের উপর ঈমান আনাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে-

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনো এবং সেই কিতাবের (কুরআনের) প্রতিও যা তাঁর রাসূলের উপর নাযিল করেছেন। সেই সাথে আগে যেসব কিতাব নাযিল হয়েছিল সেগুলোর প্রতিও। (সূরা আন-নিসা, আয়াত-১৩৬)

৪. রাসূলগণ

ইহা ঈমানের রুকনসমূহের একটি রুকন, যার প্রতি ঈমান আনা ছাড়া কোন ব্যক্তির ঈমান পরিপূর্ণ হবে না।

রাসূলগণের প্রতি ঈমান হলো মনে প্রাণে এ দৃঢ় বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ পৃথিবীতে অনেক রাসূল প্রেরণ করেছেন। যাদেরকে তিনি তাঁর রিসালাত প্রচারের জন্য নির্বাচন করেছিলেন। তারা তার রিসালাত পৌছানোর ব্যাপারে যথাযথ দায়িত্ব পালন করে গেছেন। কোন ত্রুটি ও কোন প্রকার অবহেলা করেন নি। যারা তাঁদের অনুসরণ করবে, তারা হিদায়াত (সঠিক পথ) পাবে। আর যারা তাঁদের অনুসরণ করবে না তারা পথভ্রষ্ট হবে। তারা স্বীয় উম্মাতকে কল্যাণের উপদেশ দিয়েছেন। যা সহ প্রেরিত হয়েছেন তার কোন অংশ পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও গোপন না করে স্বজাতির উপর হুজ্জাত (পক্ষ-বিপক্ষের দলীল) কায়েম করেছেন। আমরা যাদের নাম জেনেছি আর যাদের নাম জানতে পারি নাই সকলের প্রতি ঈমান আনব।

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

তোমরা বল: আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীদেরকে তাঁদের পালনকর্তার পক্ষ হতে যা দান করা হয়েছে, তৎসমূদয়ের উপর। আমরা তাঁদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী। (সূরা বাকারা আয়াত : ১৩৬)

৫. আখিরাত

আখিরাত বা পরকালের ব্যাপারে বিশ্বাস রাখাও ঈমানের অংশ, এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন-

তোমরা তাদের সাথে জিহাদ কর, যারা আল্লাহ ও পরকালকে বিশ্বাস করে না। (সূরা আত তাওবা : আয়াত- ২৯)

হুলাইমী বলেন, অবশ্যই একদিন এই দুনিয়া শেষ হয়ে যাবে। একদিন একদিন করে মূলত পৃথিবী সেই দিনটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যা হঠাৎ করে এসে হাজির হবে। সেই দিনটিকে পাশ কাটানোর কোনো উপায়ই নেই। সহীহ আল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী করীম সাঃ বলেছেন, ‘যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ তার শপথ! কিয়ামত অবশ্যই সংঘটিত হবে। দোকানদার ও খরিদ্দার কাপড় দর দাম করে মূল্য পরিশোধের আগেই তা সংঘটিত হয়ে যাবে।

৬. তাকদীরের ভালো মন্দ

ভালো হোক কিংবা মন্দ হোক, সবকিছুই যে আল্লাহর পক্ষ থেকে পূর্ব নির্ধারিত এ কথার উপর ঈমান রাখা! আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন।

বলুন, সবকিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে।’ (সূরা আন নিসা আয়াত: ৭৮) সহীহ আল-বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাঃ কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, “নবী করীম সাঃ বলেছেন, একবার আদম আঃ ও মূসা আঃ এর মধ্যে বিতর্ক হয়েছিল। মূসা আঃ বললেন, হে আদম! আপনি আমাদের পিতা। আমাদেরকে বঞ্চিত করেছেন এবং জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছেন। আদম বললেন, আপনি তো মূসা! আল্লাহ তাআলা আপনার সাথে কথা বলে আপনাকে সম্মানিত করেছেন। লিখিত কিতাব (তাওরাত) দিয়েছেন। আপনি কি এমন বিষয়ে আমাকে তিরস্কার করেছেন যা আল্লাহ আমাকে সৃষ্টি করার চল্লিশ বছর আগে নির্ধারণ করে রেখেছিলেন? আদম আঃ মূসা আঃ-এর উপর বিতর্কে বিজয়ী হলেন। (হাদীসটি সহীহ আল বুখারী ও সহীহ মুসলিমে তাকদীর অধ্যায়ে ‘আদম ও মূসা-এর বিতর্ক শিরোনামে উল্লেখ আছে)

আল্লাহর রাসূল সাঃ বলেন-

ঈমান হল আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণ ও পুনরুত্থান দিবসের প্রতি এবং ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। (বুখারী-৫০, মুসলিম-১০)

Rate the Post

Latest Book

Latest Post

Latest Post

Scroll to Top