বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে জুমার নামাজ কত রাকাত এবং জুম্মার নামাজ ফরজ না ওয়াজিব।
Table of Contents
Toggleজুমার নামাজ কত রাকাত
জুমার সালাত দুই রাকাত। জুমার পূর্বে নির্দিষ্ট কোন সুন্নাত সালাত নেই। মুছল্লী কেবল তাহিয়াতুল মাসজিদ’ দু’রাকআত পড়ে বসবে। অতঃপর সময় পেলে খত্বীব মিম্বরে বসার আগ পর্যন্ত যত খুশি নফল সালাত আদায় করবে। জুমআর ছালাতের পরে মসজিদে চার রাকআত অথবা বাড়ীতে দু’রাকআত সুন্নাত আদায় করবে। তবে মসজিদেও চার বা দুই কিংবা দুই ও চার মােট ছয় রাকাত সুন্নত ও নফল পড়া যায়।
মুসলিম, মিশকাত হা/১১৬৬ ‘সুন্নাত ছালাত সমূহ ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-৩০; তিরমিযী হা/৫২২-২৩ ‘জুম’আ অধ্যায়-৪, অনুচ্ছেদ-২৪; মির আত ২/১৪৮; ঐ, ৪/১৪২-৪৩।
ইবনু উমর (রাঃ) চার রাকাত সুন্নত এক সালামে পড়তেন। তবে দুই সালামেও পড়া যায়।
মিরআত ৪/২৫৭-৫৮।
জুমআর (খুতবার) পূর্বে এক সালামে চার রাকাত পড়ার হাদীসটি যঈফ।
ইবনু মাজাহ হা/১১২৯ ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, ‘জুমার পূর্বে সালাত’ অনুচ্ছেদ-৯৪।
জুমার নামাজ ফরজ না ওয়াজিব
জুমার সালাত প্রত্যেক বালেগ মুসলিমের উপর ফরযে আইন। জুমার সালাত ফরজ হওয়া কুরআন এবং হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।
এক- কুরআন দ্বারা প্রমাণ:
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
হে বিশ্বাসীগণ! যখন জুমআর নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা কেনাবেচা বন্ধ করে আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও। এটা তোমাদের নিজেদের কল্যাণের জন্যেই, যদি তোমরা বুঝতে।
সূরা আল জুমা আয়াত নং ৯
আল্লাহ তাআলা মানুষকে জুমার দিন আযানের পর আল্লাহর জিকিরের দিকে ছুটার নির্দেশ দেন। আল্লাহর নির্দেশ পালন করা ওয়াজিব। সুতরাং, জুমার দিন আযানের পর জুমার সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদে গমন অবশ্যই ফরয। আল্লাহ তাআলা জুমার দিন আযানের পর বেচা-কেনা করতে নিষেধ করেছেন যাতে জুমার সালাত ছুটে না যায়। যদি জুমার সালাত ফরজ না হত, তাহলে তিনি বেচা-কেনা করতে নিষেধ করতেন না।
দুই- হাদিস দ্বারা প্রমাণ:
প্রথম হাদিস
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যারা জুম’আর সালাত থেকে বিরত থাকে, তাদের সম্পর্কে বলেন, “আমার ইচ্ছে হয়, একজনকে সালাতের দায়িত্ব দেই যাতে সে মুসল্লিদের নিয়ে সালাত আদায় করে। অত:পর আমি যারা জুমার সালাত থেকে বিরত থাকে তাদের বাড়ি ঘর জালিয়ে দেই।
মুসলিম, হাদিস: ৬৫২, ২৫৪; আহমদ, হাদিস: ৩৮১৬
দ্বিতীয় হাদিস
আবু হুরাইরা ও আব্দুল্লাহ ওমর উভয় সাহাবী থেকে বর্ণিত, তারা দুই জন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কাঠের মিম্বরের উপর আরোহন করে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন, “লোকেরা হয়তো জুমু’আর সালাত পড়া থেকে বিরত থাকবে, অথবা আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। ফলে তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
মুসলিম, হাদিস: ৮৬৫; আহমদ, হাদিস: ২২৯০; নাসায়ী, হাদিস: ১৩৭০
তৃতীয় হাদিস
আবুল জাআদ আদ-দামরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে অলসতা বসত তিনটি জুমু’আ ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তা’আলা তার অন্তরের উপর মোহর মেরে দেয়।
আহমদ, হাদিস: ১৫৪৯৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১১২৫; আবু দাউদ, হাদীস: ১০৫২
চতুর্থ হাদিস
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জুমআর সালাতে উপস্থিত হওয়া প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক বালেগ ব্যক্তির উপর ফরয।
নাসায়ী, হাদিস: ১৩৭১; আবু দাউদ, হাদিস: ৩৪২; ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ১৭২১