বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে মেরাজ শব্দের অর্থ কি, শবে মেরাজ কবে, শবে মেরাজ ২০২৪ কত তারিখে, শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম, নিয়ত, আমল, রোজা, গুরুত্ব, ফজিলত ইত্যাদি।
Table of Contents
Toggleমিরাজ শব্দের অর্থ কি
মিরাজ শব্দটি আরবি। এর অর্থ যার দ্বারা আরোহণ করা হয়। এটা উরজুন শব্দ হতে এসেছে। অভিধানে যার অর্থ হল, সিঁড়ি, সোপান, ধাপ, উর্ধ্বগমন ইত্যাদি। কামুসুল ফিকহ প্রণেতা এ অর্থ করেছেন। মিরাজ শব্দটি ইসমে আলার সীগাহ। যার অর্থ উপরের দিকে উঠার যন্ত্র (মাধ্যম)। সিড়ি যেহেতু উপরের দিকে উঠার মাধ্যম তাই সিঁড়ি কে মিরাজ বলে।
শারঈ অর্থে বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে যে অলৌকিক সিঁড়ির মাধ্যমে রাসূল (সা) কে সাত আকাশের উপরে আরশের নিকটে আল্লাহর সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়া হয় সেই সিড়িকে মিরাজ বলা হয়।
পরিভাষায়, মসজিদে আকসা থেকে সাত আকাশ, সিদরাতুল মুনতাহা ইত্যাদি ভ্রমণকে মিরাজ বলা হয়।
মহান আল্লাহর নির্দেশে মহানবী (সা) মানব জ্ঞানের সীমা পেরিয়ে ঊর্ধ্বজগতে আরোহণ করে আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্য লাভ ও বাক্যালাপ করেন; আর এই ঘটনাকে বলা হয় মেরাজ।
এক রাতের কিছু অংশে রাসূল (সা) মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সাত আকাশ পর্যন্ত ভ্রমণ করেন; আর এটাই মেরাজ। মক্কা থেকে জেরুজালেম পর্যন্ত দ্রুতগামী উটে যাবার সময় ছিল ১ মাস এবং ফেরার সময় ছিল ১ মাস।
হিজরতের পূর্বে একটি বিশেষ রাতের শেষ প্রহরে বায়তুল্লাহ হতে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত বুরাকে ভ্রমণ, সেখান থেকে অলৌকিক সিড়ির মাধ্যমে সাত আঁকাশ পেরিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে গমন ও পুনরায় রায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে বুরাকে আরােহণ করে প্রভাতের পূর্বেই মক্কায় নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তনের ঘঁটনাকে মিরাজ বলে।
উল্লেখ্য, সূরা বনী-ইসরাঈলের প্রথম আয়াত দ্বারা ইসরার এবং সূরা, নাজমের (১৩-১৮) আয়াত দ্বারা মিরাজের প্রমাণ পাওয়া যায়।
শবে মেরাজ কবে
রাসূলুল্লাহ সঃ এর মেরাজ যখন হয়েছিল তখন সাল ও তারিখ লেখার চর্চা ছিল না বলে মিরাজ সংঘটনের সঠিক সাল ও তারিখ নিয়ে বহু মতভেদ রয়েছে। হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী বলেন, এ ব্যাপারে ১০ টিরও বেশি অভিমত আছে। (ফাতহুল বারী, ৭ম খণ্ড, ২০৩ পৃষ্ঠা) তা হলঃ
১. কারো মতে হিজরতের ছয় মাস আগে।
২. ইমাম ইবনুল জাওযীর মতে নবুয়তের ১২ সনের ২৭ রজবের রাতে। সীরাতে সাইয়িদুল আম্বিয়া, ২৬৮ পৃষ্ঠা।
৩. ইবনে সাদ এর বর্ণনায় আছে, হিজরতের এক বছর আগে ১৭ই রবিউল আওয়ালে রাসূল সা-এর মিরাজ হয়েছিল।
৪. তার অন্য বর্ণনায় মিরাজ সংঘটিত হয় হিজরতে মদিনার আঠারো মাস আগে সতেরই (১৭) রমজান শনিবার রাতে। ত্ববাক্কা-তু ইবনে-সাদ, ১ম খন্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠা।
৫. আল্লামা ইবনে আব্দুল বার প্রমুখ বলেন, মিরাজ ও হিজরতের মাঝে চৌদ্দ মাসের ব্যবধান ছিল। যা-দুল মাআদ, ৩য় খন্ড, ৩৭ পৃষ্ঠা।
৬. ইব্রাহিম হারবির মতে, হিজরতের এগারো মাস আগে।
৭. ইবনে ফারিস বলেন, পনের মাস আগে।
৮. আল্লামা সুদ্দী বলেন, সতের মাস আগে।
৯. ইবনে কুতাইবার বর্ণনায় আঠার মাস আগে।
১০. ইবনুল আসীর এর মতে, হিজরতের তিন বছর আগে।
১১. কাযী ইয়ায ও কুরতুবী এবং ইমাম নববী প্রমুখ যুহর থেকে বর্ণনা করেছেন; হিজরতের পাঁচ বছর আগে মিরাজ সংঘটিত হয়েছিল। ফাতহুল বারী, ৭ম খণ্ড, ২০৩ পৃষ্ঠা।
শবে মেরাজ ২০২৪ কত তারিখে
আল্লামা কাযী সুলাইমান মনসূরপুরীর জ্ঞানে মিরাজ সংঘটিত হয়েছিল নবুওয়াতের দশম সনে সাতাশে রজবের রাতে। রাহমাতুল্লিল আলামীন, ৭০ পৃষ্ঠা। ইংরেজি তারিখ ছিল ৬২০ খ্রিস্টাব্দের ৮ই মার্চ তথা হিজরতের দু’বছর আগে ২৭ শে রজবের রাতে। পয়গম্বরে আজম ওয়া আখের ৩৪৫ পৃষ্ঠা। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ মনে করে ঐ রাতটা ছিল ২৭ শে রজবের রাত এবং সালটা ছিল নবুয়তের ১০ম সন। সেই হিসাবে বাংলাদেশে ২০২৪ সালের শবে মেরাজ হচ্ছে ৮ই ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত। কিন্তু এটার কোন সহীহ দলীল প্রমাণ নেই এবং মেরাজ ঠিক কবে সংঘটিত হয়েছিল তা স্পষ্ট নয়। আর এ ব্যাপারে সঠিক দিনটি জানা আমাদের জন্য জরুরি কোন বিষয় নয়। আমরা শুধু অতটুকু বিশ্বাস করি যে, রাসুল সা এর মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল এবং সেটা স্বশরীরে। এতটুকুই আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ। শবে মেরাজের দিনটি উদযাপনের কোন প্রয়োজন নেই বরং সেটা বিদআত। আর প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা যার পরিণাম জাহান্নাম।
শবে মেরাজের গুরুত্ব ফজিলত আমল রোজা নামাজের নিয়ম ও নিয়ত
মহানবী (সা) এর জীবনের সবচেয়ে বিস্ময়কর, তাৎপর্যপূর্ণ ও অলৌকিক ঘটনা হল মিরাজ। এই রাতে যেসব আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটেছে তা অন্য কোনো রাতে ঘটেনি। এজন্য এ রাত অতি মূল্যবান। এর অর্থ এই নয় যে, এই রাতে বিশেষ ইবাদাত করতে হবে, উৎসব করতে হবে, মজলিস করতে হবে ইত্যাদি।
নবী (সা) এর সাহাবীরা এ রাতে কোনো উৎসব করেননি অথবা এই রাতকে তারা বিশেষ মর্যাদাও দেননি। তাই এই রাতে কোনো বিশেষ ইবাদাত করা, উৎসব করা, মজলিস করা ইত্যাদি শরী’আত সম্মত নয়।
কোনো কোনো বইতে ঐ রাতে বিশেষ নামায পড়ার কথা বলা হয়েছে। যেমন প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১০০ বার আয়াতুল কুরসী এবং ২য় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১০০ বার সূরা ইখলাস পড়তে হবে। যে ব্যক্তি ঐভাবে ২ রাকাত নামায আদায় করবে তার জন্য জান্নাতে নির্ধারিত স্থানটি না দেখা পর্যন্ত তার মৃত্যু হবে না।
বিশিষ্ট আলিম আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (র) বলেন, ঐরূপ বিশেষ নামাযের কোনো দলীল পাওয়া যায় না। তা ভিত্তিহীন নামাজ।
নামাজ হলো মুমিনের মেরাজ। এটা সনদহীন বহুল প্রচলিত জাল হাদীস। এ ধরনের কথা হতে বিরত থাকতে হবে। নামায সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস আছে, সেসব বলতে হবে।
মি’রাজের রাত ইবাদাতের জন্য নির্দিষ্ট করা, ঐরাতে ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠান করা, জিকির-আযকার করা, শবীনা খতম ও দোয়া অনুষ্ঠান করা, মিলাদ ও ওয়াজ মাহফিল করা (সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম করা), শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা, সরকারী ছুটি ঘোষণা (এতে জাতীয় অর্থনীতির বিশাল ক্ষতি হয়), উদ্ভট গল্পবাজী, আতশবাজি, আলোকসজ্জা, কবর জিয়ারত, দান-সদকা করা, এ মাসে অধিক সওয়াবের আশায় ওমরাহ করা ইত্যাদি সুস্পষ্ট বিদআত।
এছাড়া মি’রাজের রাত নিয়ে বহু মতভেদ রয়েছে। এ ব্যাপারে মুসলিমদের ইজমা সংঘটিত হয়নি। বাজারে যেসব বইতে ২৭শে রজব এর কথা পাওয়া যায় এর বিশুদ্ধ কোনো প্রমাণ নেই (এ বর্ণনাটি রাসুল (সা) থেকেও নেই)।
উমর (রা) দেখলেন, একদল লোক রজব মাসে গুরুত্বসহ রোজা রাখছে। তিনি তাদের ধরে আনলেন এবং বললেন, তোমরা আমার সামনে খাও এবং প্রমাণ করো তোমরা রোযা নেই। উমর (রা) স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, শরয়ী দলীল ব্যতীত কোনো কিছুই (বিদ’আত) গ্রহণযোগ্য নয়।
শায়েখ আব্দুল্লাহ বিন বায (র) বলেন, মি’রাজের তারিখ মানুষকে ভুলিয়ে দেয়ার মধ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিরাট রহস্য রয়েছে। এর তারিখ যদি নির্ধারিতও থাকত, তবুও সে তারিখে মুসলিমদের বিশেষ কোন ইবাদত এবং অনুষ্ঠান জায়েয হতো না। কেননা নবী ও তাঁর সাহাবীরা এর জন্য কোনো অনুষ্ঠান করেননি এবং এ উপলক্ষে কোনো কিছু উদযাপনের জন্য নির্ধারিত করেননি। অতএব বোঝা গেল, শবে মেরাজের আনুষ্ঠানিকতা ও তার মর্যাদা জ্ঞাপন করা ইসলামের অন্তর্ভুক্ত নয়।
প্রফেসর ড. হাফেজ এ.বি.এম হিজবুল্লাহ সহ আরো অনেকে বলেন, প্রতিবছরই আমাদের মাঝে রজব মাস আসে। আমরা প্রত্যক্ষ করি একদল মুসলমান রাসূল (সা) এর মিরাজ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। রজবের ২৭ এর রাতে বিভিন্ন রীতি নীতি ও ইবাদত পালন করে যেগুলো সম্পর্কে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো অনুমোদন নেই। এ ধরনের ইবাদত রাসূল (সা) ও সাহাবীরা পালন করেননি।
প্রফেসর ড. মোঃ আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘রজব মাসের ফজিলত এই যে, এটি চারটি সম্মানিত মাসের অন্যতম। বাকী তিনটি হল, জিলকদ, যিলহজ্জ ও মুহাররম। এ চার মাসে মারামারি, খুনাখুনি নিষিদ্ধ। জাহেলী আরবরাও এ চার মাসের সম্মানে আপোষে ঝগড়া-ফাসাদ ও যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ রাখতো। ইসলামেও তা বহাল রাখা হয়েছে। (তাওবা, ৩৬)
অতএব এ মাসের সম্মানে মারামারি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে দূরে থাকা বড় নেকীর কাজ। উল্লেখ্য যে, জাহেলী যুগে আরবরা রজব মাসের বরকত হাসিলের জন্য তার প্রথম দশকে তাদের দেব- দেবীর নামে একটি করে কুরবানী করতো। আতিরাহ বা রাজাবিয়াহ বলা হতো। ইমাম তিরমিযী বলেন, রজব মাসের সম্মানে তারা এ কুরবানী দিতো। কেননা এটি চারটি নিরাপদ ও সম্মানিত মাসের প্রথম মাস। কেউ কেউ তাদের পালিত পশুর প্রথম বাহুর দেব- দেবীর নামে কুরবানী করতো তাদের মালে প্রবৃদ্ধি লাভের উদ্দেশ্যে, যাকে ফারা বলা হত। রাসূল এসব নিষেধ করে দেন। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত)।
দুর্ভাগ্য আজকের মুসলিমরা জাহেলী আরবদের অনুসরণে রজব মাসের নামে হরেক রকমের বিদ’আত করছে, অথচ আল্লাহর হুকুম মেনে তার সম্মানে আপোষে হানাহানি ও যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধ রাখতে পারেনি।
সালাতুর রাগায়েব: অনেকে রজব মাসের প্রথম জুমার দিনে সালাতুর রাগায়েব আদায় করে থাকেন। ইমাম গাজ্জালী (র) ও বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (র) বর্ণনা করেছেন যে, রজব মাসের প্রথম জুমার দিন মাগরিব ও এশার মাঝখানে কেউ যদি ১২ রাকাত নামাজ (তাদের বর্ণিত বিশেষ ঢঙে) আদায় করে তাহলে আল্লাহ তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন। যদিও তা সমুদ্রের ফেনা, গাছের পাতা ও বালুকারাশির মতো অসংখ্য হয়।
এ নামায সম্পর্কে নবাব সিদ্দিক হাসান খান বলেন, এ নামায কোনো সহীহ, কিংবা হাসান, অথবা যয়ীফ হাদীস দ্বারাও প্রমাণিত নেই। বরং মুহাদ্দিসগণ একে বিদআত বলেছেন। মুহাদ্দিস আবু শামাহ বলেন, এহইয়াতে নামাজের বর্ণনা থাকায় অনেকে ধোঁকায় পড়েছেন। কিন্তু হাদীসের হাফেজগণ এ সংক্রান্ত হাদীসগুলোকে জাল বলেছেন। হাফিজ আব্দুল খাত্তাব বলেন, সালাতুর রাগায়েব এর হাদীসটি জাল করার অপবাদ আলী ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে জাহযামের উপর দেয়া হয়।
আল্লামা সুয়ূতী বলেন, এ হাদীসটিও জাল হাদীস। আল্লামা শামী বলেন, এ নামাযটি বিদ’আত। মুরয়্যার দুই ব্যাখ্যাকার বলেন, এ ব্যাপারে যা যা বর্ণিত আছে সে সবই জাল হাদীস। এ নামাযটি ৪৮০ হিজরির পরে আবিষ্কৃত হয়েছে। হাফিজ ইবনে হাজার, হাফিয যাহাবী, আল্লামা ইরাকী, ইবনুল জাওযী, ইবনে তাইমিয়া, ইমাম নববী ও সুয়ূতী (র) উক্ত হাদিসকে জাল বলেছেন।
মেরাজের রজনীতে ৩০ হাজার ইলম আল্লাহ নবীর কলবে আমানত রাখেন। নবী (সাঃ) তাঁর অত্যাধিক প্রিয় সাহাবী এবং আসহাবে সুফফা ব্যতীত অন্য কোনো সাধারণ লোকের নিকট সেই আমানত ব্যক্ত করেননি। কথাগুলো আল্লাহ ও রাসূলের বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যা। এ থেকে বিরত থাকতে হবে।
নবীজী (সাঃ) মেরাজে আল্লাহর আরশে গিয়ে জুতা খোলেন। এ ধরনের কথা শোনা যায়। এটাও সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। এ থেকে বিরত থাকতে হবে।
মি’রাজ অস্বীকারের ফলে পুরুষ নারীতে পরিণত হয়েছে। এটাও সম্পূর্ণ জাল মিথ্যা কথা। এ থেকে বিরত থাকতে হবে।
মেরাজে তাশাহুদ (আত্তাহিয়াতু) লাভ হয়েছে বলা হয়। এটাও সঠিক নয়।
মুহূর্তের মধ্যে মিরাজ সংঘটিত হয়েছে বলা হয়। এটাও সঠিক নয়।
২৭শে রজব অনেকে ইবাদতের কথা বলে। এসবই বিদ’আত।
শেষ কথা
মহানবী (সা) এর জীবনের শ্রেষ্ঠ মুজিযা হলো মিরাজ। মসজিদে হারাম হতে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ ইসরা এবং পৃথিবী থেকে আকাশের দিকে ভ্রমণ মিরাজ। পবিত্র কুরআনের আয়াত ও অনেক মুতাওয়াতির হাদীস এবং গতি বিজ্ঞান (Dynamics) প্রমাণ করেছে নবীজী (সা) এর মিরাজ দৈহিকভাবে সংঘটিত হয়েছে। নবীজী (সাঃ) মেরাজের রাতে আল্লাহ তাআলার নূর দেখেছেন। (মুসলিম, মিশকাত)। আল্লাহ তাআলাকে স্বরূপে দেখেননি। (আর রাহীক্ব)। আল্লাহর অনেক নিদর্শন দেখেছেন। (সূরা নাজম, ১৮ ও ত্বাহা, ২৩)। জিবরাইলকে দেখেছেন। (বুখারী, মুসলিম)
মেরাজের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার হল, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত। এ সালাতের ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে। মিরাজকে কেন্দ্র করে অনেক বিদআত সৃষ্টি হয়েছে। যেসব নবীজী (সা) ও সাহাবীরা করেননি। এসব বিদআত হতে বিরত থাকতে হবে। কারণ সব বিদআত প্রত্যাখ্যাত। (মুসলিম)। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সর্বক্ষেত্রে সুন্নাত আঁকড়িয়ে ধরা এবং বিদআত পরিত্যাগ করার তাওফিক দান করুন। আমীন।