Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

সাহু সিজদার নিয়ম ও সাহু সিজদা কখন দিতে হয়

সাহু-সিজদার-নিয়ম-ও-সাহু-সিজদা-কখন-দিতে-হয়

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে সাহু সিজদার নিয়ম ও সাহু সিজদা কখন দিতে হয়।

সাহু সিজদা কখন দিতে হয়

সালাতে ভুলক্রমে কোন ‘ওয়াজিব’ তরক হয়ে গেলে শেষ বৈঠকের তাশাহুদ শেষে সালাম ফিরানোর পূর্বে ‘সিজদায়ে সাহু’ দিতে হয়। রাক’আত গণনায় ভুল হলে বা সন্দেহ হলে বা কম বেশি হয়ে গেলে বা ১ম বৈঠকে না বসে দাঁড়িয়ে গেলে ইত্যাদি কারণে এবং মুক্তাদীগণ এর মাধ্যমে ভুল সংশোধন হলে ‘সিজদায়ে সাহু’ আবশ্যক হয়। শাওকানী বলেন, ওয়াজিব তরক হলে ‘সিজদায়ে সাহু’ ওয়াজিব হবে এবং সুন্নাত তরক হলে ‘সিজদায়ে সাহু’ সুন্নাত হবে।

শাওকানী, আস-সায়লুল জাররা (বৈরূত: দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, তাবি) ১/২৭৪ পৃঃ।

অতএব ছালাতে ক্বিরাআত ভুল হলে বা সেররী সালাতে ভুলবশত ক্বিরাআত জোরে বা তার বিপরীত হয়ে গেলে সাহু সিজদার প্রয়োজন নেই।

সাহু সিজদার নিয়ম

(১) যদি ইমাম সালাতরত অবস্থায় নিজের ভুল সম্পর্কে নিশ্চিত হন কিংবা সরবে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলার মাধ্যমে লোকমা দিয়ে মুক্তাদীগণ ভুল ধরিয়ে দেন, তবে তিনি শেষ বৈঠকের তাশাহুদ শেষে তাকবীর দিয়ে পরপর দুটি ‘সিজদায়ে সাহু’ দিবেন। অতঃপর সালাম ফিরাবেন।

মুসলিম, মিশকাত হা/১০১৫; মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১০১৮ ‘সাহু’ অনুচ্ছেদ-২০।

(২) যদি রাকাত বেশি পড়ে সালাম ফিরিয়ে দেন, অতঃপর ভুল ধরা পড়ে, তখন (পূর্বের ন্যায় বসে) তাকবীর দিয়ে ‘সিজদায়ে সাহু’ করে সালাম ফিরাবে।

মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১০১৬ ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘সাহু’ অনুচ্ছেদ-২০।

(৩) যদি রাক’আত কম করে সালাম ফিরিয়ে দেন। তখন তাকবীর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বাকী সালাত আদায় করবেন ও সালাম ফিরাবেন। অতঃপর (তাকবীর সহ) দুটি ‘সিজদায়ে সাহু’ দিয়ে পুনরায় সালাম ফিরাবেন।

মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১০১৭; মুসলিম, মিশকাত হা/১০২১।

(৪) সালাতের কম বেশি যাই হোক সালামের আগে বা পরে দু’টি ‘সিজদায়ে সাহু’ দিবেন।

মুসলিম হা/১২৮৭ (৫৭২), ‘সাহু’ অনুচ্ছেদ-১৯; নায়লুল আওত্বার ৩/৪১১ পৃঃ।

সতর্কতা

মোট কথা ‘সিজদায়ে সাহু’ সালামের পূর্বে ও পরে দু’ভাবে জায়েজ আছে। কিন্তু তাশাহুদ শেষে কেবল ডাইনে একটি সালাম দিয়ে দু’টি ‘সিজদায়ে সাহু’ করে পুনরায় তাশাহুদ ও দুরুদ পড়ে দুই দিকে সালাম ফিরানোর প্রচলিত প্রথার কোন ভিত্তি নেই।

মিরআতুল মাফাতীহ ২/৩২-৩৩ পৃঃ ; ঐ, ৩/৪০৭, হা/১০২৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য।

সিজদায়ে সাহুর পর ‘তাশাহুদ’ পড়ার বিষয়ে ইমরান বিন হুসাইন (রাঃ) হতে যে হাদীসটি এসেছে, সেটা ‘যঈফ।

তিরমিযী, আবু দাউদ, ইরওয়াউল গালীল হা/৪০৩, ২/১২৮-২৯ পৃঃ।

এছাড়া একই রাবী কর্তৃক বর্ণিত বুখারী ও মুসলিমের সহীহ হাদীসের বিরোধী। কেননা সেখানে তাশাহহুদের কথা নেই।

মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১০১৭ ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘সাহু’ অনুচ্ছেদ-২০।

ইমামের ভুল হলে পুরুষ মুক্তাদী সরবে ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ বলে এবং মহিলা মুক্তাদী হাতের পিঠে হাত মেরে শব্দ করে ‘লোকমা’ দিবে (কুরতুবী)।

মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৯৮৮ ‘ছালাত সিদ্ধ ও অসিদ্ধ কর্ম সমূহ’ অনুচ্ছেদ-১৯; মিরআত ৩/৩৫৭ ৷

অর্থাৎ ভুল স্মরণ করিয়ে দিবে। এখানে নারী ও পুরুষের লোকমা দানের পৃথক পদ্ধতির কারণ হল এই যে, নারীর কণ্ঠস্বরটাও লজ্জার অন্তর্ভুক্ত। যা প্রকাশ পেলে পুরুষের মধ্যে ফিতনা সৃষ্টি হতে পারে। বস্তুত: একারণেই নারীদের উচ্চ কন্ঠে আযান দিতে নিষেধ করা হয়েছে।

মিরআত ৩/৩৫৭-৫৮, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১০৯ ‘বিবাহ’ অধ্যায়-১৩, আহযাব ৩৩/৩২।

Post a Comment

মন্তব্য করুন

Favourite Books

Favourite Tafsirs