বিয়ে করা কি ফরজ নাকি সুন্নত, বিয়ে করা কি ফরজ না সুন্নত, মেয়েদের বিয়ে করা কি ফরজ, ইসলামে বিয়ে করা কি ফরজ, বিয়ে কি ফরজ, biye kora ki foroj, biye kora foroj naki sunnot
বিয়ে করা কি ফরজ নাকি সুন্নত?
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে বিয়ে করা কি ফরজ নাকি সুন্নত। এবং বিবাহ করার গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা।
বিয়ে করা কি ফরজ নাকি সুন্নত
বিয়ে করা কখনো ফরজ, কখনো সন্নত, কখনো হারাম। ব্যক্তির অবস্থাভেদে বিবাহের বিধান নির্ধারণ হয়ে থাকে। নিম্নোক্ত হাদিসগুলো থেকে বিষয়গুলো স্পষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।
হাদিস নং ১
হযরত আবুনাজি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বিয়ের সামর্থ রাখে অথচ বিয়ে করে না তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। (তারগিব)।
হাদিস নং ২
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন কোন বান্দা বিয়ে করলো তখন তার দীনদারী (ধর্মপালনের) অর্ধেক পূর্ণ করলো। এখন বাকি অর্ধেকের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় পাওয়া প্রয়োজন। (তারগিব)।
হাদিস নং ৩
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে যুবকগণ! তোমাদের মধ্যে যে স্ত্রীর ভরণপোষণ দানে সক্ষম তার বিয়ে করে নেয়া উচিত। কেননা বিয়ে দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থান পবিত্র রাখে। আর যে ভরণপোষণ দানে সক্ষম নয় সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা তার জন্য পৌরষহীনতার মতো (উত্তেজনা প্রশমিত করে)। (মেশকাত, ইমদাদুল ফতোয়া: খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৫৮)।
হাদিস নং ৪
হযরত আবুনাজি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুখাপেক্ষী! মুখাপেক্ষী! ওই পুরুষ যার স্ত্রী নেই। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করেন, যদি তার অনেক সম্পদ থাকে তবুও কি সে মুখাপেক্ষী? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদিও তার অনেক সম্পদ থাকে তবুও সে মুখাপেক্ষী।
তিনি আরো বলেন, মুখাপেক্ষী! মুখাপেক্ষী! ওই নারী যার স্বামী নেই। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করেন, যদি তার অনেক সম্পদ থাকে তবুও কি সে মুখাপেক্ষী ? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদিও তার অনেক সম্পদ থাকে তবুও সে মুখাপেক্ষী। (রাজিন)
কেননা সম্পদের উপকারিতা, প্রশান্তি বা পার্থিব চিন্তামুক্ত থাকা সেই পুরুষের ভাগ্যে জুটে না যার স্ত্রী নেই। সেই নারীর ভাগ্যে জুটে না যার স্বামী নেই। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায়, বিয়েতে জাগতিক ও পরকালীন অনেক বড় বড় উপকার রয়েছে। (হায়াতুল মুসলিমিন; পৃষ্ঠা: ১৮৭)
বিয়ে আল্লাহর বিশেষ দান বা উপহার। বিয়ের দ্বারা জাগতিক ও ধর্মীয় জীবন দুটোই ঠিক হয়ে যায়। মন্দ চিন্তা ও অস্থিরতা থাকে না। সবচেয়ে বড়ো উপকার হলো, অঢেল পুণ্য অর্জন। কেননা স্বামী-স্ত্রী একত্রে বসে ভালোবাসার কথা বলা, খুনসুটি করা নফল নামাজ পড়ার চেয়ে পুণ্যময়।
হাদিস নং ৫
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নারীকে বিয়ে করো; সে তোমার জন্য সম্পদ টেনে আনবে।
সম্পদ টেনে আনার অর্থ হলো, স্বামী-স্ত্রী দু’জনই জ্ঞানসম্পন্ন এবং একে অপরের কল্যাণকামী হয়ে থাকে। স্বামী এ কথা স্মরণ রাখে- আমার দায়িত্বে খরচ বেড়ে গেছে; তখন বেশি-বেশি উপার্জন করার চেষ্টা করে। নারীও এমন কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করে যা পুরুষ গ্রহণ করতে পারে না। ফলে তারা প্রশান্তি ও চিন্তামুক্ত হতে পারে। আর সম্পদের মূল উদ্দেশ্যই এটি। (হায়াতুল মুসলিমীন)
হাদিস নং ৬
হজরত মাকাল ইবনে ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা অধিক সন্তান প্রসবকারী নারীকে বিয়ে করো। কেননা আমি তোমাদের অধিক্যতা দ্বারা অন্যান্য উম্মতের উপর গর্ব করবো যে, আমার উম্মত এতো বেশি! (আবু দাউদ, নাসায়ী, হায়াতুল মুসলিমীন: পৃষ্ঠা: ১৮৯)
হাদিস নং ৭
হজরত আবুজর গিফারী [রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে একটি দীর্ঘ হাদীসে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আক্কাফ রাদিয়াল্লাহু আনহু কে বলেন, হে আক্কাফ! তোমার স্ত্রী আছে? তিনি বলেন, না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার কি সম্পদ ও সচ্ছলতা আছে? সে বলল, আমার সম্পদ ও সচ্ছলতা আছে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি এখন শয়তানের ভাইদের দলভুক্ত! যদি তুমি খ্রিস্টান হতে তবে তাদের রাহেব (পাদ্রী) হতে! নিঃসন্দেহে বিয়ে করা আমাদের ধর্মের রীতি! তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ঐ ব্যক্তি যে অবিবাহিত! মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে নিকৃষ্ট ব্যক্তি যে অবিবাহিত! তোমরা কি শয়তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাও? শয়তানের কাছে নারীর চেয়ে ভয়ংকর কোনো অস্ত্র নেই! যা ধর্মভীরু মানুষের উপর কার্যকর! তারা নারী সংক্রান্ত ফেতনায় জড়িয়ে পড়ে! কিন্তু যারা বিয়ে করেছে তারা নারীর ফেতনা থেকে পবিত্র! নোংরামি থেকে মুক্ত! এরপর বলেন, আক্কাফ! তোমার ধ্বংস হোক। তুমি বিয়ে করো নয়তো তুমি পশ্চাৎপদ মানুষের মধ্যে থেকে যাবে।
মুসনাদে আহমাদ, জামিউল ফাওয়ায়েদ, ইমদাদুল ফতোয়া: খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৫৯
উপরিউক্ত হাদিসগুলো থেকে বুঝা যায় যে, যার আর্থিক ও শারিরিক সক্ষমতা আছে এবং বিবাহ না করলে হারাম কাজে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার জন্য বিবাহ করা ফরজ। আর যে ব্যক্তি হারাম থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে তার জন্য বিবাহ করা সুন্নাত। এবং যার আর্থিক ও শারিরিক সক্ষমতা নেই তার জন্য বিবাহ করা হারাম।
বিয়ে করা কি ফরজ নাকি সুন্নত?
বিয়ে করা কি ফরজ নাকি সুন্নত, বিয়ে করা কি ফরজ না সুন্নত, মেয়েদের বিয়ে করা কি ফরজ, ইসলামে বিয়ে করা কি ফরজ, বিয়ে করা কি সুন্নত নাকি ফরজ, বিয়ে করা কি সুন্নত, বিয়ে করা কি বাধ্যতামূলক, মেয়েদের জন্য বিয়ে কি ফরজ, বিয়ে কি ফরজ না সুন্নত, বিয়ে কি ফরজ নাকি সুন্নত, বিবাহ করা কি, বিবাহ করা কি ফরজ না সুন্নত, বিবাহ কি ফরজ, biye kora ki foroj, biye kora foroj naki sunnot, biye ki foroj
প্রশ্ন : বিয়ে করা কি সুন্নাত নাকি ফরজ
পুরুষের ওপর কখন বিয়ে করা ফরজ?
প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর জন্য বিয়ে করা কি ফরজ, সুন্নত না ওয়াজিব?