Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

বর্তমানে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরজ হয়?

বর্তমানে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরজ হয়? Info

বর্তমানে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরজ হয়? Description

বর্তমানে-কত-টাকা-থাকলে-যাকাত-ফরজ-হয়

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে বর্তমানে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরজ হয় বা কোন কোন সম্পদ কি পরিমাণ থাকলে যাকাত ফরজ হয়।

কোন কোন সম্পদের উপর যাকাত ফরজ

আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদেরকে ধন-সম্পদ দান করেছেন এবং সেই সম্পদের কিছু অংশ গরীবদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। তবে তিনি সকল সম্পদের উপর যাকাত ফরয করেননি। বরং চার প্রকার সম্পদের যাকাত আদায় করার নির্দেশ এসেছে। যা নিম্নরূপ-

(১) স্বর্ণ, রৌপ্য, চলমান মুদ্রা ও ব্যবসায়িক মাল

(২) গৃহপালিত পশু

(৩) শস্য ও ফল

(৪) খনিজ ও মাটির ভিতরে লুকায়িত সম্পদ

যে কোন স্বাধীন মুসলিম উক্ত চার প্রকার সম্পদের মধ্যে যেকোন এক প্রকার সম্পদ নিসাব পরিমাণের মালিক হলে তার উপর যাকাত ফরজ।

(১) স্বর্ণ, রৌপ্য, চলমান মুদ্রা ও ব্যবসায়িক মালের যাকাত

কারো নিকট এক চান্দ্র বছর সময়কাল নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ বা রৌপ্য থাকলে অথবা এর বাজারদর সমপরিমাণ চলমান মুদ্রা থাকলে অথবা এর সমপরিমাণ ব্যবসায়িক মাল থাকলে তার উপর যাকাত ফরয। আবার যদি এই চারটি একত্রিত করে নিসাব পরিমাণ হয় তবুও তার উপর যাকাত ফরজ। উল্লেখ্য যে, ব্যক্তির যদি ঋণ থাকে তবে তা মোট সম্পত্তি থেকে বাদ দিয়ে তারপর যদি সেটা নিসাব পরিমাণ হয় তখন তার যাকাত দিতে হবে।

স্বর্ণ ও রৌপ্যের যাকাত

নিসাব পরিমাণ হলে স্বর্ণ ও রৌপ্যের উপর যাকাত ফরজ। আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তির সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের অগ্নিতে তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্বদেশ ও পৃষ্ঠদেশে দাগ দেওয়া হবে। সেদিন বলা হবে, এটা তাই, যা তোমরা নিজেদের জন্য সঞ্চয় করতে। সুতরাং তোমরা যা সঞ্চয় করেছিলে তা আস্বাদন কর। (তওবা ৯/৩৪-৩৫)।

হাদীসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, প্রত্যেক স্বর্ণ ও রৌপ্যের মালিক যে তার হক (যাকাত) আদায় করে না, নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন তার জন্য আগুনের বহু পাত তৈরি করা হবে এবং সে সমুদয়কে জাহান্নামের আগুনে গরম করা হবে এবং তার পাঁজর, কপাল ও পিঠে দাগ দেওয়া হবে। যখনই তা ঠাণ্ডা হয়ে যাবে তখন পুনরায় তাকে গরম করা হবে (তার সাথে এরূপ করা হবে) সে দিন, যার পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। (তার এ শাস্তি চলতে থাকবে) যতদিন না বান্দাদের বিচার নিষ্পত্তি হয়। অতঃপর সে তার পথ ধরবে, হয় জান্নাতের দিকে, না হয় জাহান্নামের দিকে।

মুসলিম হা/৯৮৭; মিশকাত হা/১৭৭৩, বঙ্গানুবাদ মিশকাত (এমদাদিয়া) ৪/১২৩ পৃঃ।

ব্যবহৃত অলংকারের যাকাত

ব্যবসায়িক স্বর্ণ অর্থাৎ যে স্বর্ণ ব্যবসার উদ্দেশ্যে গচ্ছিত রাখা হয়েছে সে স্বর্ণের যাকাত ফরয এবং হারাম কাজে ব্যবহৃত স্বর্ণ যেমন পুরুষের ব্যবহৃত স্বর্ণ এবং কোন প্রাণীর আকৃতিতে বানানো নারীর অলংকার যা ব্যবহার করা হারাম, এরূপ ব্যবহৃত স্বর্ণেরও যাকাত ফরজ। এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরাম ঐক্যমত পোষণ করেছেন। কারণ স্বর্ণের এরূপ ব্যবহার অপ্রয়োজনীয়। পক্ষান্তরে বৈধ পন্থায় নারীর ব্যবহৃত অলংকারের যাকাত ফরয কি-না? এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। তবে ছহীহ মত হল, নারীর ব্যবহৃত স্বর্ণ ও রৌপ্যের অলংকারের যাকাত ফরয। নারীর ব্যবহার্য অলংকারের যাকাত সম্পর্কে হাদীসে এসেছে,

আমর ইবনে শুআইব (রাঃ) হতে বর্ণিত, এক মহিলা তার কন্যাসহ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট আসলেন। তার কন্যার হাতে মোটা দুটি স্বর্ণের বালা ছিল। তিনি তাকে বললেন, তুমি কি এর যাকাত দাও? মহিলাটি বললেন, না। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তুমি কি পছন্দ কর যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা এর পরিবর্তে তোমাকে এক জোড়া আগুনের বালা পরিধান করান? রাবী বলেন, একথা শুনে মেয়েটি তার হাত থেকে তা খুলে নবী (ছাঃ)-এর সামনে রেখে দিয়ে বলল, এ দু’টি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য।

আবু দাউদ হা/১৫৬৩, ‘যাকাত’ অধ্যায়, ‘গচ্ছিত সম্পদ ও অলংকারের যাকাত’ অনুচ্ছেদ, সনদ হাসান।

অন্য হাদীছে বর্ণিত আছে, মা আয়েশা (রাঃ) বলেন,

একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমার নিকট উপস্থিত হয়ে আমার হাতে রূপার বড় বড় আংটি দেখতে পান এবং বলেন, হে আয়েশা! এটা কি? আমি বললাম, হে রাসূল (ছাঃ)! আপনার উদ্দেশ্যে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য তা তৈরি করেছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি এর যাকাত দাও? আমি বললাম, না অথবা আল্লাহর যা ইচ্ছা ছিল। তিনি বললেন, তোমাকে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট।

আবু দাউদ হা/১৫৬৫, সনদ ছহীহ।

চলমান মুদ্রার যাকাত

প্রাথমিক যুগের মানুষ নগদ অর্থ বলতে কিছুই জানত না। তারা পণ্যের বিনিময়ে পণ্য লেনদেন করত। তারপর ধীরে ধীরে নগদ অর্থের ব্যবহার শুরু হয়েছে। সাথে সাথে স্বর্ণ ও রৌপ্য বিশেষ বস্তু হিসাবে গৃহীত হয়েছে। যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রেরিত হলেন, তৎকালীন আরব সমাজ স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করত। স্বর্ণ দিয়ে তৈরি হত ‘দিনার’, ও রৌপ্য দিয়ে তৈরি হত ‘দিরহাম’। কিন্তু তা ছোট ও বড় হওয়ায় ওজনের তারতম্য হত। এই কারণে জাহেলী যুগে মক্কার লোকেরা তা গণনার ভিত্তিতে ব্যবহার করত না, বরং তারা ওজনের ভিত্তিতে ব্যবহার করত। মূলত এই কারণেই স্বর্ণ ও রৌপ্যের নিসাব যথাক্রমে ২০ দিনার ও ২০০ দিরহামের ওজনের ভিত্তিতে ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ ও ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্য ধার্য করা হয়েছে। অতএব বর্তমান চলমান মুদ্রাই স্বর্ণ বা রৌপ্যের স্থলাভিষিক্ত হবে।

ব্যবসায়িক মালের যাকাত

যে সকল মাল লাভের আশায় ক্রয়-বিক্রয় করা হয় সে সকল মালের যাকাত ফরয।

আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি যা ভূমি হতে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দেই তার মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর এবং এর নিকৃষ্ট বস্তু ব্যয় করার সংকল্প কর না; অথচ তোমরা তা গ্রহণ করবে না, যদি না তোমরা চোখ বন্ধ করে থাক। আর জেনে রেখো যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত। (বাক্বারাহ ২/২৬৭)।

অত্র আয়াতে বর্ণিত : ‘তোমরা যা উপার্জন কর’ দ্বারা ব্যবসায়িক মালকে বুঝানো হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, বিক্রয় করা হবে না এমন কোন জিনিস দোকানে থাকলে তার যাকাত আদায় করতে হবে না। যেমন ফ্রিজ যা পণ্যকে ঠাণ্ডা রাখার জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। অনুরূপভাবে দোকানের আসবাবপত্র যা বিক্রয় করা হয় না, তার যাকাত আদায় করতে হবে না।

(১) স্বর্ণ, রৌপ্য, চলমান মুদ্রা ও ব্যবসায়িক মালের যাকাতের নিসাব

কারো নিকট এক চান্দ্র বছর সময়কাল ইসলামী শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ বা রৌপ্য থাকলে অথবা এর বাজারদর সমপরিমাণ চলমান মুদ্রা থাকলে অথবা এর সমপরিমাণ ব্যবসায়িক মাল থাকলে তার উপর যাকাত ফরয। আবার যদি এই চারটি একত্রিত করে নিসাব পরিমাণ হয় তবুও তার উপর যাকাত ফরজ। উল্লেখ্য যে, ব্যক্তির যদি ঋণ থাকে তবে তা মোট সম্পত্তি থেকে বাদ দিয়ে তারপর যদি সেটা নিসাব পরিমাণ হয় তখন তার যাকাত দিতে হবে। উক্ত দুটি ধাতুর নিসাব নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ

স্বর্ণের নিসাব

এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, বিশ দিনার এর কম স্বর্ণের যাকাত ফরজ নয়। যদি কোন ব্যক্তির নিকট ২০ দীনার পরিমাণ স্বর্ণ এক বছর যাবৎ থাকে তবে এর জন্য অর্ধ দিনার যাকাত দিতে হবে। এরপর যা বৃদ্ধি পাবে তার হিসাব ঐভাবেই হবে।

আবু দাউদ হা/১৫৭৩, ‘যাকাত’ অধ্যায়, আলবানী, সনদ ছহীহ।

উল্লেখ্য যে, হাদীসে বর্ণিত ১ দীনার সমান ৪.২৫ গ্রাম স্বর্ণ। অতএব ২০ দিনার সমান ২০ × ৪.২৫ = ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ। ১ ভরি সমান ১১.৬৬ গ্রাম হলে, ৮৫ ÷ ১১.৬৬ = ৭.২৯ ভরি বা ৭ ভরি ৫ আনা ৫ রতি স্বর্ণ। অর্থাৎ কারো নিকটে উল্লিখিত পরিমাণ স্বর্ণ এক বছর যাবৎ থাকলে তার উপর উক্ত স্বর্ণের বর্তমান বিক্রয় মূল্যের হিসাবে মোট সম্পদের ২.৫০% যাকাত দেওয়া ফরয।

খাদ সহ স্বর্ণের নিসাব

বর্তমান বাজারে স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ের সময় খাদ বাদ দিয়ে ওজন করা হয় না; বরং খাদ সহ ওজন করা হয়। অতএব খাদ সহ স্বর্ণ নিসাব পরিমাণ হলে তার উপর যাকাত ফরয।

রৌপ্যের নিসাব

রৌপ্যের নিসাব উল্লেখ করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘পাঁচ উকিয়ার কম পরিমাণ রৌপ্যের যাকাত নেই’।

বুখারী হা/১৪৮৪, ‘যাকাত’ অধ্যায়, মুসলিম হা/৯৭৯; মিশকাত হা/১৭৯৪।

উল্লেখ্য, ১ উকিয়া সমান ৪০ দিরহাম। অতএব ৫ উকিয়া সমান ৪০×৫=২০০ দিরহাম।

অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,

তোমরা প্রতি ৪০ দিরহামে ১ দিরহাম যাকাত আদায় করবে। ২০০ দিরহাম পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের প্রতি কিছুই ফরয নয়। ২০০ দিরহাম পূর্ণ হলে এর যাকাত হবে পাঁচ দিরহাম এবং এর অতিরিক্ত হলে তার যাকাত উপরোক্ত হিসাব অনুযায়ী প্রদান করতে হবে।

আবু দাউদ হা/১৫৭২, ‘যাকাত’ অধ্যায়, আলবানী, সনদ ছহীহ।

অত্র হাদীসে বর্ণিত ২০০ দিরহাম সমান ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্য। ১ ভরি সমান ১১.৬৬ গ্রাম হলে ৫৯৫ গ্রাম সমান ৫৯৫ ÷ ১১.৬৬ = ৫১.০২ ভরি রৌপ্য হয়। উক্ত পরিমাণ রৌপ্য কারো নিকটে এক বছর যাবৎ থাকলে তার উপর বর্তমান বিক্রয় মূল্যের হিসাবে মোট সম্পদের ২.৫০% যাকাত আদায় করা ফরয।

চলমান মুদ্রার নিসাব

বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ যে মুদ্রার মাধ্যমে লেনদেন করছে সেটা দিরহাম, দীনার, ডলার, টাকা যাই হোক না কেন, তা যদি স্বর্ণ বা রৌপ্যের নিসাব মূল্যে পৌছে এবং ঐ মুদ্রার উপর এক বৎসর সময়কাল অতিবাহিত হয়, তাহলে তার উপর যাকাত ফরয। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানায় এক দীনার সমান দশ দিরহাম হত। সুতরাং বিশ দিনার স্বর্ণ ও দুইশত দিরহাম রৌপ্যের মান সমান ছিল। যার কারণে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বর্ণ ও রৌপ্যের নিসাব যথাক্রমে বিশ দিনার ও দুইশত দিরহাম বলে উল্লেখ করেছেন।

ব্যবসায়িক পণ্যের নিসাব

ব্যবসায়িক পণ্যের যাকাতের নিসাব হল, ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ অথবা ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্যের মূল্যের সমপরিমাণ।

স্বর্ণের নিসাবে টাকার পরিমাণ

হাদীসে বর্ণিত ১ দীনার সমান ৪.২৫ গ্রাম স্বর্ণ। অতএব ২০ দিনার সমান ২০ × ৪.২৫ = ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ। ১ ভরি সমান ১১.৬৬ গ্রাম হলে, ৮৫ গ্রামে হয় ৮৫ ÷ ১১.৬৬ = ৭.২৯ ভরি বা ৭ ভরি ৫ আনা ৫ রতি স্বর্ণ। স্বর্ণের বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী ১ গ্রাম = ৫,৮০০ টাকা। অতএব ৮৫ গ্রাম = ৪,৯৩,০০০ টাকা।

রৌপ্যের নিসাবে টাকার পরিমাণ

হাদীসে বর্ণিত ২০০ দিরহাম সমান ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্য। ১ ভরি সমান ১১.৬৬ গ্রাম হলে ৫৯৫ গ্রাম সমান ৫৯৫ ÷ ১১.৬৬ = ৫১.০২ ভরি রৌপ্য। রৌপ্যের বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী ১ গ্রাম = ৯০ টাকা। অতএব ৫৯৫ গ্রাম = ৫৩,৫৫০ টাকা।

নিসাব নির্ধারণ করব স্বর্ণ দ্বারা নাকি রৌপ্য দ্বারা

বর্তমান বিশ্বে নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ ও রৌপ্যের মানে বড় পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। এখন আমরা কি নগদ চলমান মুদ্রা ও ব্যবসায়িক পণ্যের নিসাব স্বর্ণের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করব, না রৌপ্যের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করব? এ ব্যাপারে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। স্বর্ণের মূল্যমান রূপা অপেক্ষা স্থিতিশীল এবং বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য বিধায় অধিকাংশ বিদ্বান স্বর্ণের হিসাব অনুযায়ী যাকাত দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। তবে যেহেতু যাকাত সম্পদ পবিত্র ও পরিশুদ্ধ হওয়ার মাধ্যম তাই রৌপ্যের হিসাবেও নগদ চলমান মুদ্রা ও ব্যবসায়িক পণ্যের যাকাত প্রদান করা যেতে পারে।

(১) স্বর্ণ, রৌপ্য, চলমান মুদ্রা ও ব্যবসায়িক মালের যাকাতের পরিমাণ

স্বর্ণ, রৌপ্য, চলমান মুদ্রা ও ব্যবসায়িক পণ্যের যাকাত বের করার জন্য উক্ত স্বর্ণ ও রৌপ্যের বর্তমান বিক্রয় মূল্য, গচ্ছিত পণ্যের বর্তমান বাজার মূল্য (বর্তমান ক্রয়মূল্য) এবং নগদ মুদ্রা একত্রিত করে মোট সম্পদের ২.৫০% যাকাত দেওয়া ফরয অর্থাৎ সমস্ত সম্পদ কে ৪০ দ্বারা ভাগ করে এক ভাগ বা মোট সম্পদের ২.৫০% যাকাত দিতে হবে। আর এটাই স্বর্ণ-রৌপ্য ও এর হুকুমে যা আসে তার যাকাত। যেমন কারো নিকট স্বর্ণ, রৌপ্য, চলমান মুদ্রা ও ব্যবসায়িক পণ্য একত্রে ৪,০০,০০০ টাকার সমপরিমাণ রয়েছে। উক্ত টাকার যাকাত বের করার নিয়ম হল, ৪,০০,০০০ ÷ ৪০ = ১০,০০০ টাকা। উল্লেখিত পদ্ধতিতে ৪,০০,০০০ টাকা থেকে যাকাত হিসাবে ১০,০০০ টাকা দান করতে হবে।

Rate the Post

Latest Book

Latest Post

Latest Post

Scroll to Top