Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল? Tarabi namaz sunnat naki nofol?

তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল Tarabi namaz sunnat naki nofol

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; আজকে আলোচনা করতে চায় তারাবির নামাজের বিধান সম্পর্কে অর্থাৎ তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল সে সম্পর্কে।

তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল

ইসলামের বিধান মূলত দুই প্রকার; একটি হলো ফরজ আর অপরটি হলো নফল।

১. ফরজঃ কুরআনে ও হাদিসে যে বিষয়ে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং পালন না করলে শাস্তির কথা উল্লেখ আছে তাই ফরজ।

২. নফলঃ ফরজ ছাড়া যা ‍কিছু রাসুল সঃ করেছেন, করতে বলেছেন, উৎসাহিত করেছেন তাই নফল; নফল ইবাদাত পালন না করলে কেউ গুনাহগার হয় না কিন্তু পালন করলে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়।

প্রত্যেক ফরজ ইবাদাতের গুরুত্ব যেমন এক নয় তেমন প্রত্যেক নফল ইবাদাতের গুরুত্বও এক নয়; এক এক নফল ইবাদতের গুরুত্ব এক এক রকম; কোন ইবাদাতের গুরুত্ব কতটুকু সেটা জানতে প্রথমে দেখতে হবে কুরআনে সে বিষয়ে কি বর্ণিত হয়েছে; তারপর দেখতে হবে সে বিষয়ে হাদিসে কি বর্ণিত হয়েছে; অর্থাৎ রাসুল সঃ সেটাতে কেমন গুরুত্ব দিয়েছেন; গুরুত্বের দিক বিবেচনা করে কোন নফল ইবাদাতের বৈশিষ্ট্যগত একটি নাম আলেমগণ ব্যবহার করে থাকেন; যেমন সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, সুন্নাতে যায়িদা, মুস্তাহাব ইত্যাদি; সাধারণ মুসলিমরা শুধু এতটুকু জেনেই ক্ষ্যান্ত হয়ে যায়; তারা বুঝতে চায় না যে কেন এই নামকরণ করা হলো।

রাসুল সঃ এই মর্মে কি করেছেন বা কি বলেছেন. তারা কুরআন ও হাদিস জানতে আগ্রহী নয়; তারা ফতুয়া পেলেই খুশি; কিন্তু বিষয়টা এতো সহজ নয়। এভাবে অবহেলা করাটা কাম্য নয়; আলেমদের নির্ধারিত ফতোয় না দেখে কুরআন ও হাদিসে কি বর্ণিত হয়েছে সেটা দেখে নিজে বুঝতে হবে যেকোন ইবাদাতের গুরুত্ব কতটুকু; তাহলে ইবাদাতের প্রতি আগ্রহ বেশি হবে; যেমনটা সাহাবায়ে কেরাম রাঃ রাসুল সঃ থেকে হাদিস শুনতেন এবং আমল করতেন; তাই আজকে আমরা তারাবির নামাজের ব্যাপারে কুরআন ও হাদিসে কি বর্ণিত হয়েছে সেটা দেখবো ইনশাআল্লাহ।

মহান আল্লাহ বলেন,

আর রাতের কিছু অংশ কুরআন পাঠ সহ জাগ্রত থাকুন এটা আপনার জন্য অতিরিক্ত। আশা করা যায় আপনার রব আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংশিত স্থানে।

সূরা বনী ইসরাইল আয়াত নং ৭৯

উক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা রাতের কিছু অংশে সালাত আদায় করা রাসুল সঃ এর জন্য নফল ঘোষণা করেছেন। আর তাই রাসুল সঃ রমযানে ও রমযানের বাইরে অর্থাৎ সারা বছর রাতে নফল সালাত আদায় করতেন। রমযানের রাতের সালাতকে তারাবীহ ও রমযানের বাইরে রাতের সালাতকে তাহাজ্জুদ নামে নামকরণ করা হয়েছে।

এবার আমরা দেখবো তারাবীহ সালাত সম্পর্কে হাদিসে কি বর্ণিত হয়েছে।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় তারাবীর সালাতে দাঁড়াবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। হাদীসের রাবী ইব্নু শিহাব (রহঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইনতিকাল করেন এবং তারাবীর ব্যাপারটি এভাবেই চালু ছিল। এমনকি আবু বকর (রাঃ) এর খিলাফতকালে ও উমর (রাঃ) এর খিলাফতের প্রথমভাগে এরূপই ছিল।

সহিহ বুখারী হাদিস নং ২০০৯

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গভীর রাতে বের হয়ে মসজিদে সালাত আদায় করেন, কিছু সংখ্যক পুরুষ তাঁর পিছনে সালাত আদায় করেন। সকালে লোকেরা এ সম্পর্কে আলোচনা করেন, ফলে লোকেরা অধিক সংখ্যায় সমবেত হন। তিনি সালাত আদায় করেন এবং লোকেরা তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করেন। সকালে তাঁরা এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। তৃতীয় রাতে মসজিদে মুসল্লীর সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। এরপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে সালাত আদায় করেন ও লোকেরা তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করেন।

চতুর্থ রাতে মসজিদে মুসল্লীর সংকুলান হল না, কিন্তু তিনি রাতে আর বের না হয়ে ফজরের সালাতে বেরিয়ে আসলেন এবং সালাত শেষে লোকদের দিকে ফিরে প্রথমে তাওহীদ ও রিসালতের সাক্ষ্য দেয়ার পর বললেনঃ শোন! তোমাদের (গতরাতের) অবস্থান আমার অজানা ছিল না, কিন্তু আমি এই সালাত তোমাদের উপর ফরয হয়ে যাবার আশংকা করছি (বিধায় বের হই নাই) কেননা তোমরা তা আদায় করায় অপারগ হয়ে পড়তে। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ওফাত হলো আর ব্যাপারটি এভাবেই থেকে যায়।

সহীহ বুখারী হাদিস নং ২০১২

উক্ত হাদিসগুলি থেকে বুঝা যায় যে তারাবির নামাজের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। এবং রাসুল সঃ নিজে তারাবির নামাজ পড়তেন এবং সাহাবীদেরকে উৎসাহিত করতেন। রাসুল সঃ তিনদিন সাহাবীদেরকে নিয়ে জামাতের সাথে তারাবির নামাজ পড়লেন কিন্তু তিনি আশংকা করছিলেন এটি ফরজ করে দেওয়া হতে পারে আর উম্মত তা পালন করতে সক্ষম হবে না; এই জন্য তিনি জামাতের সাথে সাহাবীদেরকে নিয়ে তারাবি পড়া ত্যাগ করলেন। আর সেট ফরজ করা হলো না। রাসুল সঃ এর ইন্তেকালের পরে সাহাবীগণ এটাকে আবার জামাতের সাথে আদায় করা শুরু করলেন কারন তখন আর ফরজ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তারাবির নামাজ নফল ইবাদত হলেও এর বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব রয়েছে। আর একারনেই আলেমগণ এটাকে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ বলেছেন। তাই আমাদের উচিত রমজানে তারাবির সালাত আদায় করা।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিষয়গুলি সঠিকভাবে বুঝার ও আমল করার তাওফীক দান করুক। আল্লাহুম্মা আমীন।

Share the Post

Rate the Post

Rating Summary

0.0
0.0 out of 5 stars (based on 0 reviews)
Excellent0%
Very good0%
Average0%
Poor0%
Terrible0%

Latest Reviews

There are no reviews yet. Be the first one to write one.

Latest Post