Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

তারাবির নামাজের সময় কতক্ষণ থাকে বা ওয়াক্ত কয়টা পর্যন্ত?

তারাবির নামাজের সময় কতক্ষণ থাকে বা ওয়াক্ত কয়টা পর্যন্ত?

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে তারাবির নামাজের সময় কতক্ষণ থাকে বা তারাবির নামাজের ওয়াক্ত কয়টা পর্যন্ত।

তারাবির নামাজের সময়

তারাবির সালাত বা রাতের সালাত রাতের প্রথম ভাগ, মধ্যভাগ বা শেষ ভাগে আদায় করা বৈধ, তবে উত্তম হচ্ছে রাতের শেষ ভাগে আদায় করা।

মহানবী সঃ প্রথম রাত্রে রাতের প্রথম ভাগে শুরু করে রাতের এক-তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়া পর্যন্ত নামায পড়েছিলেন। দ্বিতীয় রাতেও তার প্রথম ভাগে শুরু করে রাতের অর্ধেকাংশ অতিবাহিত হওয়া পর্যন্ত নামায পড়েছিলেন। এবং তৃতীয় রাত্রে তার প্রথম ভাগে শুরু করে শেষ রাত অবধি নামায পড়েছিলেন।

মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ২/৯০/২

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য একটি ছালাতকে বৃদ্ধি করেছেন। তা হল বিতর। অতএব তোমরা এশা ও ফজর ছালাতের মধ্যবর্তী সময়ে উহা আদায় করাে। তবে সম্ভব হলে শেষ রাতে রাত্রির সালাত আদায় করা উত্তম।

আহমাদ, হা/২৩৯০২, তাবারানী, হা/২১৬৭; তাহাবী, হা/৩৮৫৩।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, শেষ রাতে (ঘুম থেকে) জাগতে না পারার কেউ আশংকা করলে সে যেন রাতের প্রথম অংশেই বিতর পড়ে নেয়। আর যে শেষ রাতে জাগতে আগ্রহী, সে যেন শেষ রাতেই বিতর পড়ে। কেননা শেষ রাত্রির ছালাতে ফেরেশতাগণ উপস্থিত হন। আর এটাই সর্বোত্তম।

মুসলিম, হা/৭৫৫, মুসাফিরের সালাত অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২১;

ইবনু মাজাহ, হা/১১৮৭, সালাত প্রতিষ্ঠা করা অধ্যায়-৫, অনুচ্ছেদ-১২১;

সিলসিলা ছহীহাহ, হা/২৬১০।

আমর ইবনে আস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,

তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: রাতের শেষ ভাগে বান্দা তার রবের সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়, যদি তুমি সে সময়ে আল্লাহর জিকিরকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পার, তাহলে তাদের অন্তর্ভুক্ত হও।

তিরমিযী, হাদীস নং ৩৫৭৯; আবু দাউদ, হাদীস নং ১২৭৭; নাসাঈ, হাদীস নং ৫৭২, আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। দেখুন: সুনান তিরমিযী: (৩/১৮৩)।

এ বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয় আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীস দ্বারা, তিনি বলেন,

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদের রব প্রতি রাতে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন, যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকি থাকে। অতঃপর তিনি বলেন, কে আমাকে আহ্বান করবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব? কে আমার নিকট প্রার্থনা করবে, আমি তাকে প্রদান করব? কে আমার নিকট ইস্তেগফার করবে, আমি তাকে ক্ষমা করব? ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত অনুরূপ বলতে থাকেন।

সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৫৮।

জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,

নিশ্চয় রাতে এমন একটি সময় রয়েছে, সে সময় যদি বান্দা আল্লাহর নিকট দুনিয়া ও আখিরাতের কোনাে কল্যাণ প্রার্থনা করে, তাকে অবশ্যই তা প্রদান করা হয়। আর এটা প্রত্যেক রাতে হয়।

সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৫৭।

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কোন আমল রাসূলুল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশি প্রিয় ছিল? তিনি বলেন, নিয়মতান্ত্রিকতা। আমি বললাম: তিনি কখন দাঁড়াতেন? তিনি বললেন: যখন মুরগির ডাক শুনতেন, তিনি দাঁড়াতেন।

সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১১৩২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৪১।

তার থেকে অপর হাদিসে এসেছে:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ রাতে জাগিয়ে দিতেন, তার অজিফা শেষ করার আগে সেহরির সময় হত না।

আবু দাউদ হাদীস নং ১৩১৬, আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। দেখুন: সহীহ সুনানে আবু দাউদ: (১/২৪৪)।

প্রথম রাতে জামাতের সাথে এবং শেষ রাতে একাকী আদায়ের মাঝখানে যখন রাতের সালাত আবর্তিত হবে, তখন তা জামাতে আদায় করাই হবে সর্বোত্তম। কারণ জামাতে রাতের সালাত আদায়কারীর জন্য একটি পূর্ণ রাত সালাত আদায় করা হিসেবে গণ্য করা হয় (অর্থাৎ পুরা রাত ছালাত আদায়ের নেকী লিপিবদ্ধ করা হয়)। এর ওপর ভিত্তি করেই উমার (রাঃ)-এর যুগে সাহাবীদের আমল জারি ছিল।

আব্দুর রহমান বিন আব্দুল কারী বলেন,

আমি রমজানের এক রাতে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-এর সাথে মসজিদে নববীর দিকে বের হলাম। তখন লোকেরা খণ্ড খণ্ড জামাআতে বিভক্ত ছিল। কেউ একাকী সালাত আদায় করছিল আর কারো পিছনে একদল লোক সালাত আদায় করছিল। উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, ভাবছি এই লােকদেরকে আমি যদি একজন ইমামের পিছনে একত্রিত করতে পারি, তবে সেটা উত্তম হবে। অতঃপর তিনি এ ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে তাদেরকে উবাই বিন কা’ব (রাঃ)-এর পিছনে একত্রিত করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, পরে আর এক রাত্রে আমি তাঁর (উমার) সাথে বের হলাম। তখন লোকজন তাদের ইমামের সাথে (জামাতে) সালাত আদায় করছিল। (এ দৃশ্য দেখে) উমার (রাঃ) বললেন, কতই না সুন্দর এই নতুন ব্যবস্থা! তারা রাতের যে অংশে ঘুমিয়ে থাকে তা রাতের ঐ অংশ অপেক্ষা উত্তম, যে অংশে তারা ছালাত আদায় করে। এর দ্বারা তিনি শেষ রাত বুঝিয়েছেন। কেননা তখন লোকজন রাতের প্রথমভাগে (তারাবীহ) সালাত আদায় করত।

বুখারী, হা/২০১০, ‘তারাবীর সালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/৩৭৮, ‘তারাবির বর্ণনা অনুচ্ছেদ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বিষয়গুলো সঠিকভাবে বুঝার ও আমল করার তাওফীক দান করুক। আল্লাহুম্মা আমীন।

Share the Post

Rate the Post

Rating Summary

0.0
0.0 out of 5 stars (based on 0 reviews)
Excellent0%
Very good0%
Average0%
Poor0%
Terrible0%

Latest Reviews

There are no reviews yet. Be the first one to write one.

Latest Post