১৮/১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর পথে জিহাদ করার ফযীলত
২৭৫৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَعَدَّ اللَّهُ لِمَنْ خَرَجَ فِي سَبِيلِهِ لاَ يُخْرِجُهُ إِلاَّ جِهَادٌ فِي سَبِيلِي وَإِيمَانٌ بِي وَتَصْدِيقٌ بِرُسُلِي فَهُوَ عَلَىَّ ضَامِنٌ أَنْ أُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ أَوْ أَرْجِعَهُ إِلَى مَسْكَنِهِ الَّذِي خَرَجَ مِنْهُ نَائِلاً مَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ أَوْ غَنِيمَةٍ ” . ثُمَّ قَالَ ” وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى الْمُسْلِمِينَ مَا قَعَدْتُ خِلاَفَ سَرِيَّةٍ تَخْرُجُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَبَدًا وَلَكِنْ لاَ أَجِدُ سَعَةً فَأَحْمِلَهُمْ وَلاَ يَجِدُونَ سَعَةً فَيَتَّبِعُونِي وَلاَ تَطِيبُ أَنْفُسُهُمْ فَيَتَخَلَّفُونَ بَعْدِي وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَوَدِدْتُ أَنْ أَغْزُوَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَأُقْتَلَ ثُمَّ أَغْزُوَ فَأُقْتَلَ ثُمَّ أَغْزُوَ فَأُقْتَلَ ” .
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় বের হয়, আমার রাস্তায় জিহাদ, আমার উপর ঈমান এবং আমার রাসুলগণকে সত্যবাদী বলে মেনে নেয়াই তাকে এ পথে বের করে, তার জন্য আমার যিম্মাদারি এই যে, আমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো অথবা তাকে তার বের হওয়ার স্থান অর্থাৎ তার আবাসে তাকে সওয়াব ও গণীমাতসহ ফিরিয়া আনবো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি মুসলমানদের জন্য কষ্টসাধ্য মনে না করলে তারা আল্লাহর রাস্তায় যে যুদ্ধেই যায় আমি পেছনে থেকে যেতাম না। কিন্তু আমার এতোটুকু সঙ্গতি নাই যে, আমি তাদের প্রত্যেকের জন্য সওয়ারীর ব্যবস্থা করে দিবো এবং তাদেরও সঙ্গতি নেই যে, প্রতিটি যুদ্ধে তারা আমার সাথে যাবে। আমি তাদেরকে আমার সাথে না নিয়ে গেলে তাদেরও দুশ্চিন্তা হবে। সেই সত্তার শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে শহীদ হই, তারপর আবার জিহাদ করে শহীদ হই, তারপর আবার জিহাদ করে শহীদ হই। [২৭৫৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৫৩] সহীহুল বুখারী ৩৬, ২৭৯৭, ২৯৭২, ৩১২৩, ৭২২৬, ৭২৬৭, ৭২২৭, মুসলিম ১৮৭৬, নাসায়ী ৩০৯৮, ৩১২২, ৩১২৩, ৩১২৪, ৩১৫১, ৩১৫২, ৫০২৯, ৫০৩০, আহমাদ ৭১১৭, ৭২৯৮, ২৭৩৪৭, ৮৭৫৭, ২৭৫০৯, ৯১৯২, ৯৭৭৬, ১০০৩৫, ১০১৪৫, মুয়াত্তা মালেক ৯৭৪, ৯৯৯, ১০১২, দারেমী ২৬৯১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনু মাঈন তাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৫৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ فِرَاسٍ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الْمُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مَضْمُونٌ عَلَى اللَّهِ إِمَّا أَنْ يَكْفِتَهُ إِلَى مَغْفِرَتِهِ وَرَحْمَتِهِ وَإِمَّا أَنْ يَرْجِعَهُ بِأَجْرٍ وَغَنِيمَةٍ وَمَثَلُ الْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ الصَّائِمِ الْقَائِمِ الَّذِي لاَ يَفْتُرُ حَتَّى يَرْجِعَ ” .
আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তাঁর রাস্তায় জিহাদকারীর জিম্মাদার। হয় তিনি তাকে তার ক্ষমা ও রহমাতে ধন্য করে উঠিয়ে নিবেন অথবা তাকে সওয়াব ও গণীমাতসহ ফিরিয়ে আনবেন। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী সেই ব্যক্তির ন্যায় যে অক্লান্তভাবে (দিনভর) সিয়াম রাখে এবং (রাতভর) নামায পড়ে জিহাদ থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত। [২৭৫৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৫৪]হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ফিস সুনান ৯/৪২, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৭৯। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ফিরাস (বিন ইয়াহইয়া) সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল ও আহমাদ বিন শু’আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭১২, ২৩/১৫২ নং পৃষ্ঠা) ২. আতিয়্যাহ সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন শু’আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ইমাম যাহাবী ও ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৫৬, ২০/১৪৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮/২. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল বা একটি বিকাল অতিবাহিত করার ফযীলত
২৭৫৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ غَدْوَةٌ أَوْ رَوْحَةٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا ” .
আবু হুরায়রা(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল বা একটি বিকাল অতিবাহিত করা দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছু থেকে উত্তম। [২৭৫৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৫৫] সহীহুল বুখারী ২৭৯৩, আহমাদ ১০৫০২, ১০৫১৯, বায়হাকী ফিস সুনান ৭/৩০৯, ইরওয়া ৫/৩। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী আবু খালিদ আল আহমার সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনু আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সালেহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ ও ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৫৬
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا بْنُ مَنْظُورٍ، حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ غَدْوَةٌ أَوْ رَوْحَةٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا ” .
সাহল বিন সাদ আস-সাইদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল বা একটি বিকাল অতিবাহিত করা দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছু থেকে কল্যাণকর। [২৭৫৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৫৬]সহীহুল বুখারী ২৭৯৪, ২৮৯২, ৬৪১৫, মুসলিম ১৮৮১, ১৮৮২, তিরমিযী ১৬৪৮, নাসায়ী ৩১১৮, আহমাদ ১৫৫৩২, ২২৩৩৭, দারেমী ২৩৯৮, ইরওয়া ৫/৩। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী যাকারিয়্যা বিন মানসুর সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু আহমাদ আল-আসকারী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আবু বিশর আদ-দাওলাবী বলেন, তিনি সিকাহ নয়। আহমাদ বিন শু’আয়ব আন-নাসায়ী ও ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৯৯৬, ৯/৩৬৯ নং পৃষ্ঠা)
উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু যাকারিয়্যা বিন মানসুর এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২৩৫ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ২৭৯২, ২৭৯৪, ২৭৯৬, ২৮৯২, ৬৫৬৮, মুসলিম ১৮৮৩-১৮৮৬, তিরমিযি ১৬৪৮, ১৬৪৯, ১৬৫১, দারিমী ২৩৯৮, আহমাদ ২৭৭৭৬, ১০৫০২, ১০৫১৯, ১২০২৮, ১২১৪৬, ১২৭৪৯, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৯৫৪৩, ৯৫৪৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৫৭
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لَغَدْوَةٌ أَوْ رَوْحَةٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا ” .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর রাস্তায় একটি সকাল অথবা একটি বিকাল ব্যয় করা দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছু থেকে কল্যাণকর। [২৭৫৭]
তাহকীক আলবানী : সহীহ।
[২৭৫৭]সহীহুল বুখারী ২৭৯২, মুসলিম ১৮১০, তিরমিযী ১৬৫১, আহমাদ ১১৯৪১, ১২০২৮, ১২১৪৬, ১২১৯১, ১২৭৪৯, ১৩৩৬৮, বায়হাকী ফিশ শুআব ৪২৫৬, বায়হাকী ফিস সুনান ৩/১৮৭, ইবনু হিব্বান ৪৬০২, ৭৩৯৮, ইরওয়া ১১৮২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮/৩. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি কোন যোদ্ধাকে জিহাদের সরঞ্জাম যোগাড় করে দেয়
২৭৫৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْهَادِ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ أَبِي الْوَلِيدِ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سُرَاقَةَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ جَهَّزَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ حَتَّى يَسْتَقِلَّ كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ حَتَّى يَمُوتَ أَوْ يَرْجِعَ ” .
উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি কোন গাযীকে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের সরঞ্জামের ব্যবস্থা করে দেয় যাতে সে যুদ্ধ করতে সক্ষম হয়, এতে তার সেই যোদ্ধার অনুরূপ সওয়াব হতে থাকে যতক্ষণ না সে মৃত্যুবরণ করে (বা নিহত হয়) অথবা ফিরে আসে। [২৭৫৮]
তাহকীক আলবানী : দঈফ।
[২৭৫৮] আহমাদ ২৭৮, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৫৭, তাখরীজুর মুখতার ২৩৪-২৩৭, যইফ আল-জামি’ ৫৫৪৭। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী আল ওয়ালীদ বিন আবুল ওয়ালীদ সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি কিছু হাদিসের ব্যাপারে সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তার মাঝে ভালোগুন রয়েছে। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৪৫, ৩১/১০৭ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৭৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ جَهَّزَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَجْرِ الْغَازِي شَيْئًا ” .
যায়দ বিন খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় কোন গাযীকে (যুদ্ধের) সরঞ্জাম সংগ্রহ করে দেয়, তার সেই গাযীর সমপরিমাণ সওয়াব হয় এবং এতে গাযীর সওয়াব থেকে মোটেও কমানো হয় না। [২৭৫৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৫৯] সহীহুল বুখারী ২৮৪৩, মুসলিম ১৮৯৫, তিরমিযী ১৬২৮, ১৬২৯, ১৬৩১, নাসায়ী ৩১৮০, ৩১৮১, আবূ দাউদ ২৫০৯, আহমাদ ১৬৫৯১, ১৬৫৯৬, ১৬৬০৮, ২১১৬৮, ২১১৭৩, দারেমী ২৪১৯, বায়হাকী ফিস সুনান ৯/১৪৯, আল-হাকিম ফিল মুসতদারাক ২/৮৬, রাওদুন নাদীর ৩২২, আত-তালীকুর রাগীব ২/৯৬। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮/৪. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার ফযীলাত
২৭৬০
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مُوسَى اللَّيْثِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَفْضَلُ دِينَارٍ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ دِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى عِيَالِهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى فَرَسٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ عَلَى أَصْحَابِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ” .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকে যে দীনারগুলো (অর্থ-সম্পদ) খরচ করে তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম দীনার হলো- যা সে তার পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করে, যা সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের ঘোড়া প্রতিপালনে ব্যয় করে এবং যা সে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী সহ-যোদ্ধাদের জন্য খরচ করে। [২৭৬০]
তাহকীক আলবানী : সহীহ।
[২৭৬০]মুসলিম ৯৯৪, ১৯৬৬, আহমাদ ২১৮৭৫, ২১৯০০, ২১৯৪৭, ইবনু হিব্বান ৪২৪২, ৪৬৪৬, বায়হাকী ফিস সুনান ৪/১৭৮, বায়হাকী ফিশ শুআব ৩৪২২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৬১
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْحَمَّالُ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، عَنِ الْخَلِيلِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، وَأَبِي الدَّرْدَاءِ، وَأَبِي، هُرَيْرَةَ وَأَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَعِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ كُلُّهُمْ يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ” مَنْ أَرْسَلَ بِنَفَقَةٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَأَقَامَ فِي بَيْتِهِ فَلَهُ بِكُلِّ دِرْهَمٍ سَبْعُمِائَةِ دِرْهَمٍ وَمَنْ غَزَا بِنَفْسِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَأَنْفَقَ فِي وَجْهِ ذَلِكَ فَلَهُ بِكُلِّ دِرْهَمٍ سَبْعُمِائَةِ أَلْفِ دِرْهَمٍ ” . ثُمَّ تَلاَ هَذِهِ الآيَةَ {وَاللَّهُ يُضَاعِفُ لِمَنْ يَشَاءُ} .
আবূ দারদা’, আবদুল্লাহ বিন উমার, আবূ হুরাইরা, আবূ উমামা আল-বাহিলী, আবদুল্লাহ বিন আমর থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের খরচ বহন করে এবং সে নিজ আবাসে থেকে যায়, সে তার প্রতিটি দিরহামের বিনিময়ে সাত শত দিরহামের সওয়াব লাভ করে। আর যে ব্যক্তি সশরীরে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে এবং এর খরচ বহন করে, তার প্রতিটি দিরহামের বিনিময়ে সে সাত লাখ দিরহামের সওয়াব পায়। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেন (অনুবাদ) : “আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেন” (সূরা বাকারাঃ ২৬১)। [২৭৬১]
তাহকীক আলবানী : দঈফ।
[২৭৬১] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত ৩৮৫৭, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৫৭। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী আল-খালীল বিন আবদুল্লাহ সম্পর্কে ইবনু হাজার আল-আসকালানী ও ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ইবনু আবদুল হাদী ও ইমাম যাহাবী বলেন, তার পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৭২৯, ৮/৩৩৮ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৮/৫. অধ্যায়ঃ
জিহাদ পরিত্যাগ করার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সতর্কবাণী
২৭৬২
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ الْحَارِثِ الذِّمَارِيُّ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ لَمْ يَغْزُ أَوْ يُجَهِّزْ غَازِيًا أَوْ يَخْلُفْ غَازِيًا فِي أَهْلِهِ بِخَيْرٍ أَصَابَهُ اللَّهُ سُبْحَانَهُ بِقَارِعَةٍ قَبْلَ يَوْمِ الْقِيَامَةِ ” .
আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি জিহাদ করে না বা জিহাদকারীর সরঞ্জাম প্রস্তুত করে দেয় না অথবা জিহাদকারী (যুদ্ধে) যাওয়ার পর তার পরিবার-পরিজনের উত্তমরূপে খোঁজ–খবর নেয় না, মহান আল্লাহ তাকে কিয়ামতের পূর্বে ভীষণ বিপদে নিক্ষেপ করবেন। [২৭৬২]
তাহকীক আলবানী :হাসান।
[২৭৬২] আবূ দাউদ ২৫০৩, দারেমী ২৪১৮, সহীহ আবু দাউদ ২২৬১। তাহকীক আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী কাসিম (বিন আবদুর রহমান) সম্পর্কে আল-আজালী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি সিকাহ নন। ইমাম তিরমিযি তাকে সিকাহ বলেছেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে অপরিচিত। মুফাদদাল বিন গাসসান বলেন, তিনি কুফুরী নয় এমন কওলী বা আমলীগত ফিসক এর সাথে জড়িত। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৮০০, ২৩/৩৮৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৭৬৩
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا أَبُو رَافِعٍ، – هُوَ إِسْمَاعِيلُ بْنُ رَافِعٍ – عَنْ سُمَىٍّ، – مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ – عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ لَقِيَ اللَّهَ وَلَيْسَ لَهُ أَثَرٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَقِيَ اللَّهَ وَفِيهِ ثُلْمَةٌ ”
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে এমতাবস্থায় সাক্ষাত করবে যে, তার মধ্যে আল্লাহর রাস্তায় (জিহাদের) কোন চিহ্ন নাই সে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে। [২৭৬৩]
তাহকীক আলবানী : দইফ।
[২৭৬৩] তিরমিযী ১৬৬৬, বায়হাকী ফিস সুনান ৪/৮, আল-হাকিম ফিল মুসতদারাক ৪/৩৪৮, আত-তালীকুর রাগীব ২/২০০, মিশকাত ৩৮৩৫। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী আবু রাফি (ইসমাইল বিন রাফি) সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবুল আরব আল-কিরওয়ানী ও আবু জা’ফার আল-উকায়লী তাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শু’আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে জড়িত। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার হিফয শক্তি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৪২, ৩/৮৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৮/৬. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি ওজরবশত জিহাদ থেকে বিরত থাকে
২৭৬৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ لَمَّا رَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَزْوَةِ تَبُوكَ فَدَنَا مِنَ الْمَدِينَةِ قَالَ ” إِنَّ بِالْمَدِينَةِ لَقَوْمًا مَا سِرْتُمْ مِنْ مَسِيرٍ وَلاَ قَطَعْتُمْ وَادِيًا إِلاَّ كَانُوا مَعَكُمْ فِيهِ ” . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَهُمْ بِالْمَدِينَةِ قَالَ ” وَهُمْ بِالْمَدِينَةِ حَبَسَهُمُ الْعُذْرُ ”
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাবুকের যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করে মদীনার নিকটবর্তী হয়ে বলেনঃ মদীনায় এমন কতক লোক আছে যে, তোমরা যেখানেই গিয়েছো এবং যে উপত্যকাই অতিক্রম করেছো, তারা তোমাদের সাথেই ছিল। সাহাবাগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তারা মদীনায় থেকেও (আমাদের সাথে ছিলেন) ! তিনি বলেনঃ তারা মদীনায় থেকেও, তাদের অক্ষমতা তাদের প্রতিরোধ করে রেখেছে। [২৭৬৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৬৪] সহীহুল বুখারী ২৮৩৯, ৪৪২৩, সহীহ আবু দাউদ ২২৬৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৬৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ بِالْمَدِينَةِ رِجَالاً مَا قَطَعْتُمْ وَادِيًا وَلاَ سَلَكْتُمْ طَرِيقًا إِلاَّ شَرِكُوكُمْ فِي الأَجْرِ حَبَسَهُمُ الْعُذْرُ ” . قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ بْنُ مَاجَهْ أَوْ كَمَا قَالَ كَتَبْتُهُ لَفْظًا .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মদীনায় এমন কতক লোক আছে যে, তোমরা যে উপত্যকাই অতিক্রম করেছো এবং যে পথই চলেছো তারা সওয়াবে তোমাদের সাথে শরীক আছে, প্রতিবন্ধকতা তাদের আটকে রেখেছে। আবূ আবদুল্লাহ ইবনু মাজা (রহঃ) বলেন, আহমাদ বিন সিনান অনুরূপ কিছু বলেছেন। আমি তার মূল পাঠ লিখে নিয়েছি। [২৭৬৫]
তাহকীক আলবানী : সহীহ।
[২৭৬৫] মুসলিম ১৯১১, আহমাদ ১৪২৬৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮/৭ অধ্যায়ঃ
আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দেয়ার ফযীলাত
২৭৬৬
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، قَالَ خَطَبَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ النَّاسَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي سَمِعْتُ حَدِيثًا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَمْنَعْنِي أَنْ أُحَدِّثَكُمْ بِهِ إِلاَّ الضِّنُّ بِكُمْ وَبِصَحَابَتِكُمْ فَلْيَخْتَرْ مُخْتَارٌ لِنَفْسِهِ أَوْ لِيَدَعْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ رَابَطَ لَيْلَةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ سُبْحَانَهُ كَانَتْ كَأَلْفِ لَيْلَةٍ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا ” .
আবদুল্লাহ ইবনুয যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উসমান বিন আফ্ফান (রাঃ) লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি বলেন, হে জনগণ! আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট একটি হাদীস শুনেছি। সেটি তোমাদের নিকট বর্ণনা করা থেকে আমাকে বিরত রেখেছে তোমাদের সাহচর্যের প্রতি আমার কৃপণতা। অতএব কেউ চাইলে তা নিজের জন্য গ্রহণ করতে পারে অথবা পরিহারও করতে পারে। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার রাস্তায় এক রাত সীমান্ত অঞ্চলে পাহারা দেয়, তা এক হাজার দিন সিয়াম রাখা এবং এক হাজার রাত জেগে নামায পড়ার সমতুল্য। [২৭৬৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৬৬] তিরমিযী ১৬৬৭, নাসায়ী ৩১৬৯, ৩১৬০, আহমাদ ৪৪৪, ৪৬৫, ৪৭২, ৪৭৯, দারেমী ২৪২৪, বায়হাকী ফিস সুনান ৩/৫, ৯/৩৯, বায়হাকী ফিশ শুআব ৬২৮৪, সহীহাহ ২৯২১, সহীহ আল-জামি’ আস-সগীর ৫২৩। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী আবদুর রহমান বিন যায়দ বিন আসলাম সম্পর্কে আবুল ফারাজ ইবনুল জাওযী বলেন, তার দুর্বলতার ব্যাপারে সকলে একমত। আবুল কাসিম বিন বিশকাওয়াল বলেন, তার ভাই তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী ও ইমাম তিরমিযি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮২০, ১৭/১১৪ নং পৃষ্ঠা)
উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু আবদুর রহমান বিন যায়দ বিন আসলাম এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ১৭২ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ১১ টি জাল, ৪৭ টি খুবই দুর্বল, ৫৭ টি দুর্বল, ২২ টি হাসান, ৩৫ টি সহিহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ মুসলিম ১৯১৬, তিরমিযি ১৬৬৫, ১৬৬৭, দারিমী ২৪২৪, আহমাদ ৪৪৪, ৪৭২, ৪৭৯, ৫৫৯, ৬৬১৫, ৮৯৯১, ২৩২১৪, ২৩২১৫, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৯৬১৭, ৯৬১৮, ৯৬১৯, মু’জামুল আওসাত ৩১২৩, ৪০৪৯, ৪৮২১, ৪৮২৫, ৫৬৭২, ৮০৫৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৬৭
حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي اللَّيْثُ، عَنْ زُهْرَةَ بْنِ مَعْبَدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ مَاتَ مُرَابِطًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَجْرَى عَلَيْهِ أَجْرَ عَمَلِهِ الصَّالِحِ الَّذِي كَانَ يَعْمَلُ وَأَجْرَى عَلَيْهِ رِزْقَهُ وَأَمِنَ مِنَ الْفَتَّانِ وَبَعَثَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ آمِنًا مِنَ الْفَزَعِ ” .
আবু হুরায়রাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কোন ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় সীমান্ত অঞ্চল পাহারাদানরত অবস্থায় মারা গেলে আল্লাহ তার জন্য সেইসব নেক আমলের সওয়াব প্রদান অব্যাহত রাখবেন যা সে করতো, জান্নাতে তাকে রিযিক দান করবেন, কবরের বিপর্যয়কর অবস্থা থেকে নিরাপদ রাখবেন এবং কিয়ামতের ভয়ভীতি থেকে মুক্ত অবস্থায় উঠাবেন। [২৭৬৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৬৭] আহমাদ ৮৯৯১, রাওদুন নাদীর ১০১৩, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৫১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ سَمُرَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَعْلَى السُّلَمِيُّ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ صُبْحٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لَرِبَاطُ يَوْمٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مِنْ وَرَاءِ عَوْرَةِ الْمُسْلِمِينَ مُحْتَسِبًا مِنْ غَيْرِ شَهْرِ رَمَضَانَ أَعْظَمُ أَجْرًا مِنْ عِبَادَةِ مِائَةِ سَنَةٍ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا وَرِبَاطُ يَوْمٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مِنْ وَرَاءِ عَوْرَةِ الْمُسْلِمِينَ مُحْتَسِبًا مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ أَفْضَلُ عِنْدَ اللَّهِ وَأَعْظَمُ أَجْرًا – أُرَاهُ قَالَ – مِنْ عِبَادَةِ أَلْفِ سَنَةٍ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا فَإِنْ رَدَّهُ اللَّهُ إِلَى أَهْلِهِ سَالِمًا لَمْ تُكْتَبْ عَلَيْهِ سَيِّئَةٌ أَلْفَ سَنَةٍ وَتُكْتَبُ لَهُ الْحَسَنَاتُ وَيُجْرَى لَهُ أَجْرُ الرِّبَاطِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةَ ” .
উবায় বিন কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমাদান মাস ব্যতীত অন্য মাসে সওয়াবের আশায় মুসলমানদের জন্য আল্লাহর রাস্তায় সীমান্ত চৌকিতে একদিন পাহারা দেয়া একশত বছরের ইবাদত, সিয়াম ও (নফল) নামায অপেক্ষা অধিক সওয়াবের কাজ। আর রমাদান মাসে সওয়াবের আশায় আল্লাহর রাস্তায় মুসলমানদের নিরাপত্তার জন্য এক দিন পাহারা দেয়া আল্লাহর নিকট এক হাজার বছরের বছরের ইবাদত, সিয়াম ও নামায অপেক্ষা অধিক সওয়াবের কাজ। আল্লাহ যদি তাকে নিরাপদে তার পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরিয়ে আনেন তবে এক হাজার বছর পর্যন্ত তার কোন গুনাহ লেখা হবে না, তার জন্য নেকী লেখা হবে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য সীমান্ত চৌকিতে পাহারাদানের সওয়াব অব্যাহতভাবে লিপিবদ্ধ হতে থাকবে। [২৭৬৮]
তাহকীক আলবানীঃ বানোয়াট।
[২৭৬৮] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ফিস সুনান ৪/২৫০। আত-তালীকুর রাগীব ২/১৫১, দঈফ আল-জামি ৩০৮৫।
উক্ত হাদীসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইয়া’লা আস-সুলামী সম্পর্কে আবূ আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তার হাদীসের অনুসরণ করা যাবে না। আবূ বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবূ হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মিথ্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসায়ী বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল।(তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৭১৩, ২৭/৪৫ নং পৃষ্ঠা) ২. উমার বিন সুবহ সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবূ বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসায়ী বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ইসহাক বিন রাহওয়ায় তাকে মিথ্যুক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য।(তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪২৫৯, ২১/৩৯৬ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ জাল হাদিস
- সরাসরি
১৮/৮. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর রাস্তায় পাহারাদান ও তাকবীর ধ্বনির ফযীলাত
২৭৬৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، أَنْبَأَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ صَالِحِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ زَائِدَةَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ الْجُهَنِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ رَحِمَ اللَّهُ حَارِسَ الْحَرَسِ ” .
উকবাহ বিন আমির আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তায়ালা নিরাপত্তামূলক পাহারাদানকারীদের উপর রহমত বর্ষণ করুন। [২৭৬৯]
তাহকীক আলবানীঃ দইফ।
২৭৬৯] দারেমী ২৪০৯, যইফাহ ৩৬৪১, যইফ আল-জামি’ ৩১০৮। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী সালিহ বিন মুহাম্মাদ বিন যায়িদাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তার হাদিস নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য ছিলেন না। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৮৩৫, ১৩/৮৪ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৭৭০
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ شَابُورَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ خَالِدِ بْنِ أَبِي الطَّوِيلِ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ حَرْسُ لَيْلَةٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَفْضَلُ مِنْ صِيَامِ رَجُلٍ وَقِيَامِهِ فِي أَهْلِهِ أَلْفَ سَنَةٍ السَّنَةُ ثَلاَثُمِائَةٍ وَسِتُّونَ يَوْمًا وَالْيَوْمُ كَأَلْفِ سَنَةٍ ” .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহর রাস্তায় একরাত পাহারা দেয়া কোন লোকের নিজ পরিবারে অবস্থানরত থেকে এক হাজার বছর সিয়াম রাখা ও নামাজ পড়ার চেয়ে অধিক উত্তম। এক বছর হলো তিন শত ষাট দিনে, যার প্রতিটি দিন এক হাজার বছরের সমান। [২৭৭০]
তাহকীক আলবানীঃ বানোয়াট।
[২৭৭০] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। দইফাহ ১২৩৪, আত-তা‘লিকুর রাগীব ২/১৫৪, দইফ আল-জামি‘ আস-সগীর ২৭০৫।
উক্ত হাদীসের রাবী ১.ঈসা বিন য়ূনুস আর-রামলী সম্পর্কে আবূ হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবূ হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আবূ দাউদ আস সাজিসতানী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদীস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ইমাম যাহাবী তাকে সিকাহ বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৬৭২, ২৩/৬০ নং পৃষ্ঠা) ২. সাঈদ বিন খালিদ বিন আবুত- তাবীল সম্পর্কে আবূ জা‘ফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদীসের অনুসরণ করা যাবে না। আবূ যূরআহ আর রাযী বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি কুফরী নয় এমন কওলী বা আমালীগত ফিসক এর সাথে জড়িত।(তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২২৫৭, ১০/৪০২ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ জাল হাদিস
- সরাসরি
২৭৭১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِرَجُلٍ “ أُوصِيكَ بِتَقْوَى اللَّهِ وَالتَّكْبِيرِ عَلَى كُلِّ شَرَفٍ ”
আবূ হুরায়রাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বলেনঃ আল্লাহভীতি অবলম্বনের এবং প্রতিটি উঁচু স্থানে আরোহণকালে তাকবীর ধ্বনি করার জন্য আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি। [২৭৭১]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
[২৭৭১]
তিরমিযী ৩৪৪৫, আত-তালীকু আলা ইবনু খুযায়মাহ ২৫৬১, সহীহাহ ১৭৩০। তাহকীক আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী উসামাহ বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনু হিব্বান তাকে সিকাহ উল্লেখ করে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল-আজালী তাকে সিকাহ বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে দলীল হিসেবে নয়। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৭, ২/৩৪৭ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১৮/৯. অধ্যায়ঃ
সামরিক বাহিনীর সাথে যুদ্ধে রওয়ানা হওয়া
২৭৭২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ، أَنْبَأَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ ذُكِرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ كَانَ أَحْسَنَ النَّاسِ وَكَانَ أَجْوَدَ النَّاسِ وَكَانَ أَشْجَعَ النَّاسِ وَلَقَدْ فَزِعَ أَهْلُ الْمَدِينَةِ لَيْلَةً فَانْطَلَقُوا قِبَلَ الصَّوْتِ فَتَلَقَّاهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ سَبَقَهُمْ إِلَى الصَّوْتِ وَهُوَ عَلَى فَرَسٍ لأَبِي طَلْحَةَ عُرْىٍ مَا عَلَيْهِ سَرْجٌ فِي عُنُقِهِ السَّيْفُ وَهُوَ يَقُولُ ” يَا أَيُّهَا النَّاسُ لَنْ تُرَاعُوا ” . يَرُدُّهُمْ ثُمَّ قَالَ لِلْفَرَسِ ” وَجَدْنَاهُ بَحْرًا ” . أَوْ ” إِنَّهُ لَبَحْرٌ ” . قَالَ حَمَّادٌ وَحَدَّثَنِي ثَابِتٌ أَوْ غَيْرُهُ قَالَ كَانَ فَرَسًا لأَبِي طَلْحَةَ يُبَطَّأُ فَمَا سُبِقَ بَعْدَ ذَلِكَ الْيَوْمِ .
আনাস বিন মালিক(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন, তিনি ছিলেন মানুষের মধ্যে সর্বাধিক সুন্দর, সর্বাধিক দানশীল এবং সর্বাধিক সাহসী বীর পুরুষ। এক রাতে মদীনাবাসী সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লো। তারা একটি বিকট শব্দ শুনে সেদিকে ছুটলো। পথিমধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সাথে মিলিত হলেন। অবশ্য তিনি তাদের আগেই সেই বিকট শব্দের কারণ অনুসন্ধানে গিয়েছিলেন। তিনি আবূ তালহা(রাঃ) -র ঘোড়ার গদিহীন খালি পিঠে সওয়ার ছিলেন। তাঁর ঘাড়ে তরবারি ঝুলানো ছিল। তিনি বলছিলেনঃ হে জনগণ! তোমরা সন্ত্রস্ত হয়ো না। এই বলে তিনি তাদের ফিরিয়ে আনছিলেন। অতঃপর তিনি ঘোড়া সম্পর্কে মন্তব্য করেনঃ আমি এটিকে সমুদ্রের ন্যায় পেয়েছি অথবা এটি যেন একটি সমুদ্র। রাবী হাম্মাদ (রহঃ) বলেন, সাবিত (রহঃ) বা অপর কেউ আমাকে বলেছেন যে, আবূ তালহা (রাঃ) -র ঘোড়াটি ছিল মন্থর গতিসম্পন্ন। কিন্তু এ দিনের পর থেকে কোন ঘোড়াই দৌড় প্রতিযোগিতায় একে অতিক্রম করতে পারেনি। [২৭৭২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৭২] সহীহুল বুখারী ২৬৬৭, ২৮৬০, ২৮৫৭, ২৮৬২, ২৮৬৬, ২৮৬৭, ২৯০৮, ২৯৬৮, ৩০৪০, ৬০৩৩, ৬২১২, মুসলিম ২৩০৭, তিরমিযী ১৬৮৫, ১৬৮৬, ১৬৮৭, আবূ দাউদ ৪৯৮৮, আহমাদ ১২৬৬৬, ১২৪৪০, ১২৫১১, ১৩৪৯৩, বায়হাকী ফিস সুনান ৬/৮৮, ১০/২৫, ইরওয়া ২৪৪৮। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৭৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ بَكَّارِ بْنِ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ الْوَلِيدِ بْنِ بُسْرِ بْنِ أَبِي أَرْطَاةَ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنِي شَيْبَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا اسْتُنْفِرْتُمْ فَانْفِرُوا ” .
ইবনু আব্বাস(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদেরকে জিহাদে যোগদানের আহবান জানানো হলে তোমরা বেরিয়ে পড়বে। [২৭৭৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৭৩] সহীহুল বুখারী ২৭৮৩, ২৮২৫, ৩০৭৭, ৩১৮৯, মুসলিম ১৩৫৩, তিরমিযী ১৫৯০, নাসায়ী ৪১৭০, আবূ দাউদ ২৪৮০, আহমাদ ১৯৯২, ২৩৯২, ২৮৯১, ৩৩২৫, দারেমী ২৫১২, ইবনু হিব্বান ৪৫৯০, ৪৫৯২, বায়হাকী ফিস সুনান ৫/১৯৫, ৯/১৬। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৭৪
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ حُمَيْدِ بْنِ كَاسِبٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، – مَوْلَى آلِ طَلْحَةَ – عَنْ عِيسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَجْتَمِعُ غُبَارٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَدُخَانُ جَهَنَّمَ فِي جَوْفِ عَبْدٍ مُسْلِمٍ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহর পথে ধুলা এবং জাহান্নামের ধোঁয়া কোনো মুসলমান বান্দার পেটে একত্র হতে পারবে না। [২৭৭৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৭৪]তিরমিযী ১২৩৩, নাসায়ী ৩১০৭, ৩১০৮, ৩১০৯, ৩১১০, ৩১১১, ৩১১২, ৩১১৩, ৩১১৪, ৩১১৫, ইবনু হিব্বান ৩২৫১, আল-হাকিম ফিল মুসতদারাক ২/২৭, বায়হাকী ফিশ শুআব ৭৯৮, ৮০০, রাওদুন নাদীর ১১৮০, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৬৬, মিশকাত ৩৮২৮। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. ইয়াকুব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবু জা’ফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৮৬, ৩২/৩১৮ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৭৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ التُّسْتَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ شَبِيبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ رَاحَ رَوْحَةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَانَ لَهُ بِمِثْلِ مَا أَصَابَهُ مِنَ الْغُبَارِ مِسْكًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” .
আনাস বিন মালিক(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে একটি বিকাল চললো, তাতে সে যতোটা ধূলিমলিন হলো, তা কিয়ামতের দিন তার জন্য এর সমপরিমাণ কস্তরীতে পরিণত হবে। [২৭৭৫]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
২৭৭৫] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সহীহাহ ২৩৩৮। তাহকীক আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী শাবীব সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৬৮৯, ১২/৩৫৯ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১৮/১০. অধ্যায়ঃ
নৌযুদ্ধের ফযীলাত
২৭৭৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنِ ابْنِ حَبَّانَ، – هُوَ مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ – عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ خَالَتِهِ أُمِّ حَرَامٍ بِنْتِ مِلْحَانَ، أَنَّهَا قَالَتْ نَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا قَرِيبًا مِنِّي ثُمَّ اسْتَيْقَظَ يَبْتَسِمُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَضْحَكَكَ قَالَ ” نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا عَلَىَّ يَرْكَبُونَ ظَهْرَ هَذَا الْبَحْرِ كَالْمُلُوكِ عَلَى الأَسِرَّةِ ” . قَالَتْ فَادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ . قَالَ فَدَعَا لَهَا ثُمَّ نَامَ الثَّانِيَةَ فَفَعَلَ مِثْلَهَا ثُمَّ قَالَتْ مِثْلَ قَوْلِهَا فَأَجَابَهَا مِثْلَ جَوَابِهِ الأَوَّلِ . قَالَتْ فَادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ قَالَ ” أَنْتِ مِنَ الأَوَّلِينَ ” . قَالَ فَخَرَجَتْ مَعَ زَوْجِهَا عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ غَازِيَةً أَوَّلَ مَا رَكِبَ الْمُسْلِمُونَ الْبَحْرَ مَعَ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ فَلَمَّا انْصَرَفُوا مِنْ غَزَاتِهِمْ قَافِلِينَ فَنَزَلُوا الشَّامَ فَقُرِّبَتْ إِلَيْهَا دَابَّةٌ لِتَرْكَبَ فَصَرَعَتْهَا فَمَاتَتْ .
উম্মু হারাম বিনতু মিলহান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক দিন আমার ঘরে ঘুমালেন। তিনি হাসতে হাসতে জাগ্রত হলেন। আমি বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকে কে হাসালো? তিনি বলেনঃ আমার উম্মতের কতক লোককে সমুদ্রপৃষ্ঠে উপবিষ্ট অবস্থায় আমার সামনে পেশ করা হয়েছে, যেভাবে বাদশাহ সিংহাসনে উপবিষ্ট থাকে। উম্মু হারাম(রাঃ) বলেন, আপনি আল্লাহর নিকট দোয়া করুন যাতে তিনি আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। আনাস(রাঃ) বলেন, তিনি তার জন্য দোয়া করলেন। তিনি পুনরায় ঘুমিয়ে পড়লেন, অতঃপর পূর্বের ন্যায় জাগ্রত হলেন। উম্মু হারাম(রাঃ) জিজ্ঞাসা করলে রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পূর্বানুরুপ জবাব দেন। থাকে। উম্মু হারাম(রাঃ) বলেন, আপনি আল্লাহর নিকট দোয়া করুন যাতে তিনি আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তুমি প্রথম দলের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আনাস(রাঃ) বলেন, মুসলমানগণ মুআবিয়া বিন আবূ সুফিয়ান (রাঃ) -র নেতৃত্বে সর্বপ্রথম নৌযুদ্ধে রওয়ানা হলে উম্মু হারাম (রাঃ) ও তার স্বামী উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) -এর সাথে জিহাদে রওয়ানা হলেন। তারা জিহাদ থেকে ফিরে এসে সিরিয়ায় অবতরণ করেন। আরোহণের জন্য তার নিকট একটি জন্তুযান আনা হলো। জন্তুটি তাকে ছুড়ে ফেলে দিলে তিনি তাতে নিহত হন। [২৭৭৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৭৬] সহীহুল বুখারী ২৮০০, ২৮৯৫, ২৯৬৪, মুসলিম ১৯১২, নাসায়ী ৩১৭২, আবূ দাউদ ২৪৯০, দারেমী ২৪২১, সহীহ আবু দাউদ ২২৪৯-২২৫০, বায়হাকী ফিস সুনান ১০/১২২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৭৭
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ يَحْيَى، عَنْ لَيْثِ بْنِ أَبِي سُلَيْمٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبَّادٍ، عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ غَزْوَةٌ فِي الْبَحْرِ مِثْلُ عَشْرِ غَزَوَاتٍ فِي الْبَرِّ وَالَّذِي يَسْدَرُ فِي الْبَحْرِ كَالْمُتَشَحِّطِ فِي دَمِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ سُبْحَانَهُ ” .
আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, একটি নৌযুদ্ধ দশটি স্থলযুদ্ধের সমতুল্য। আর সমুদ্রে যার মাথাঘুরানি হবে সে মহান আল্লাহর রাস্তায় রক্তে রঞ্জিত (নিহত) ব্যক্তির সমতুল্য। [২৭৭৭]
তাহকীক আলবানীঃ দইফ।
২৭৭৭]
হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। যইফাহ ১২৩০। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. মুআবিয়াহ বিন ইয়াহইয়া সম্পর্কে আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী, আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবুল কাসিম আল-বাগাবী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬০৬৯, ২৮/২২৪ নং পৃষ্ঠা) ২. লায়স বিন আবু সুলায়ম সম্পর্কে ইমাম বুখারী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন, আবু যুরআহ ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০১৭, ২৪/২৭৯ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৭৭৮
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ الْجُبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْكِنْدِيُّ، حَدَّثَنَا عُفَيْرُ بْنُ مَعْدَانَ الشَّامِيُّ، عَنْ سُلَيْمِ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ شَهِيدُ الْبَحْرِ مِثْلُ شَهِيدَىِ الْبَرِّ وَالْمَائِدُ فِي الْبَحْرِ كَالْمُتَشَحِّطِ فِي دَمِهِ فِي الْبَرِّ وَمَا بَيْنَ الْمَوْجَتَيْنِ كَقَاطِعِ الدُّنْيَا فِي طَاعَةِ اللَّهِ وَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ وَكَلَ مَلَكَ الْمَوْتِ بِقَبْضِ الأَرْوَاحِ إِلاَّ شَهِيدَ الْبَحْرِ فَإِنَّهُ يَتَوَلَّى قَبْضَ أَرْوَاحِهِمْ وَيَغْفِرُ لِشَهِيدِ الْبَرِّ الذُّنُوبَ كُلَّهَا إِلاَّ الدَّيْنَ وَلِشَهِيدِ الْبَحْرِ الذُّنُوبَ وَالدَّيْنَ ” .
আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি; একজন শহীদ নৌযোদ্ধার মর্যাদা দু’জন শহীদ স্থলযোদ্ধার সমান। আর নৌ-পথে যার মাথাঘুরানি হয়, তার মর্যাদা স্থলযুদ্ধে শহীদের মর্যাদার সমান। আর দু’টি ঢেউয়ের মধ্যবর্তী দূরত্ব অতিক্রমকারীর মর্যাদা আল্লাহ্র আনুগত্যে সারা দুনিয়া সফরকারীর সমান। আল্লাহ তাআলা মৃত্যুদূতকে নৌযোদ্ধা ব্যতীত সকলের রূহ হরণ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। স্বয়ং আল্লাহ নৌযোদ্ধার রূহ নিয়ে নেন। তিনি যুদ্ধে শহীদের সকল গুনাহ মাফ করেন তার ঋণ ব্যতিত, কিন্তু নৌ-যুদ্ধে শহীদের সকল গুনাহ এবং ঋণও মাফ করেন। [২৭৭৮]
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল।
[২৭৭৮] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইরওয়া ১১৯৫। তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবী গুফায়র বিন মা’দান আশ-শামী সম্পর্কে আবু জা’ফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম তিরমিযি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম যাহাবী তাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৬৫, ২০/১৭৬ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
১৮/১১. অধ্যায়ঃ
দায়লামের বিবরণ এবং কাযবীনের ফযীলাত
২৭৭৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ الْوَاسِطِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، ح وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمُنْذِرِ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، كُلُّهُمْ عَنْ قَيْسٍ، عَنْ أَبِي حُصَيْنٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لَوْ لَمْ يَبْقَ مِنَ الدُّنْيَا إِلاَّ يَوْمٌ لَطَوَّلَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ حَتَّى يَمْلِكَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي يَمْلِكُ جَبَلَ الدَّيْلَمِ وَالْقُسْطَنْطِينِيَّةَ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দুনিয়ার একটি মাত্র দিনও যদি অবশিষ্ট থাকে তবে মহামহিম আল্লাহ সেই দিনটিকে দীর্ঘায়িত করবেন, যে পর্যন্ত না আমার আহলে বাইত-এর এক ব্যক্তি দায়লামের পাহাড় এবং কুসতুনতিয়ার কন্সট্যান্টিনোপলের অধিপতি হবে। [২৭৭৯]
তাহকীক আলবানীঃ দঈফ।
[২৭৭৯]হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। যইফাহ ৪৩৬১। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আলী ইবনুল মুনযির সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী ও সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শীয়া মতাবলম্বী। ইবনু হিব্বান তার সিকাহ গ্রন্থে তার নাম উল্লেখ করেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৪০, ২১/১৪৫ নং পৃষ্ঠা) ২. ইসহাক বিন মানসুর সম্পর্কে আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ তবে তিনি শীয়া মতাবলম্বী। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার শীয়া মতাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮৪, ১/১০৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৭৮০
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ الْمُحَبَّرِ، أَنْبَأَنَا الرَّبِيعُ بْنُ صَبِيحٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبَانَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ سَتُفْتَحُ عَلَيْكُمُ الآفَاقُ وَسَتُفْتَحُ عَلَيْكُمْ مَدِينَةٌ يُقَالُ لَهَا قَزْوِينُ مَنْ رَابَطَ فِيهَا أَرْبَعِينَ يَوْمًا أَوْ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً كَانَ لَهُ فِي الْجَنَّةِ عَمُودٌ مِنْ ذَهَبٍ عَلَيْهِ زَبَرْجَدَةٌ خَضْرَاءُ عَلَيْهَا قُبَّةٌ مِنْ يَاقُوتَةٍ حَمْرَاءَ لَهَا سَبْعُونَ أَلْفَ مِصْرَاعٍ مِنْ ذَهَبٍ عَلَى كُلِّ مِصْرَاعٍ زَوْجَةٌ مِنَ الْحُورِ الْعِينِ ” .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, অচিরেই তোমরা বেশ কয়েকটি দেশ এবং কাযবীন নামক শহর জয় করবে। যে ব্যক্তি তথায় চল্লিশ দিন অথবা চল্লিশ রাত প্রতিরক্ষামূলক পাহারা দিবে, জান্নাতে তার জন্য স্বর্ণের গম্বুজবিশিষ্ট পীত বর্ণের মনি-মুক্তার স্তম্ভসমূহের বালাখানা থাকবে। এতে সোনার তৈরি সত্তর হাজার দরজা থাকবে এবং প্রতিটি দরজায় থাকবে একজন করে আয়তলোচনা হূর। [২৭৮০]
তাহকীক আলবানীঃ বানোয়াট।
[২৭৮০] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। যইফাহ ৩৭১। তাহকীক আলবানীঃ বানোয়াট। উক্ত হাদিসের রাবী দাউদ ইবনুল মুহাব্বার সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করতেন। আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবুল ফারাজ ইবনুল জাওযী বলেন, তিনি জাল (বানিয়ে) হাদিস বর্ণনা করেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৭৮৪, ৮/৪৪৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ জাল হাদিস
- সরাসরি
১৮/১২. অধ্যায়ঃ
পিতা-মাতা জীবিত থাকতে কারো জিহাদে গমন
২৭৮১
حَدَّثَنَا أَبُو يُوسُفَ، مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ الرَّقِّيُّ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْحَرَّانِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ طَلْحَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ جَاهِمَةَ السُّلَمِيِّ، قَالَ أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي كُنْتُ أَرَدْتُ الْجِهَادَ مَعَكَ أَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ وَالدَّارَ الآخِرَةَ . قَالَ ” وَيْحَكَ أَحَيَّةٌ أُمُّكَ ” . قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ ” ارْجِعْ فَبَرَّهَا ” . ثُمَّ أَتَيْتُهُ مِنَ الْجَانِبِ الآخَرِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي كُنْتُ أَرَدْتُ الْجِهَادَ مَعَكَ أَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ وَالدَّارَ الآخِرَةَ . قَالَ ” وَيْحَكَ أَحَيَّةٌ أُمُّكَ ” . قُلْتُ نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” فَارْجِعْ إِلَيْهَا فَبَرَّهَا ” . ثُمَّ أَتَيْتُهُ مِنْ أَمَامِهِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي كُنْتُ أَرَدْتُ الْجِهَادَ مَعَكَ أَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ وَالدَّارَ الآخِرَةَ . قَالَ ” وَيْحَكَ أَحَيَّةٌ أُمُّكَ ” . قُلْتُ نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ ” وَيْحَكَ الْزَمْ رِجْلَهَا فَثَمَّ الْجَنَّةُ ” .
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْحَمَّالُ حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ طَلْحَةَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ عَنْ أَبِيهِ طَلْحَةَ عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ جَاهِمَةَ السُّلَمِيِّ أَنَّ جَاهِمَةَ أَتَى النَّبِيَّ ﷺ فَذَكَرَ نَحْوَهُ قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ بْن مَاجَةَ هَذَا جَاهِمَةُ بْنُ عَبَّاسِ بْنِ مِرْدَاسٍ السُّلَمِيُّ الَّذِي عَاتَبَ النَّبِيَّ ﷺ يَوْمَ حُنَيْنٍ
মুআবিয়াহ বিন জাহিমাহ আস-সুলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর সন্তোষ লাভের এবং আখেরাতে জান্নাত প্রাপ্তির আশায় আমি আপনার সাথে জিহাদে যেতে চাই। তিনি বলেনঃ তোমার জন্য দুঃখ হয়, তোমার মা কি জীবিত আছে? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেনঃ ফিরে গিয়ে তার সেবাযত্ন করো। এরপর আমি অপর পাশ থেকে তাঁর নিকট এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং আখেরাতে জান্নাত লাভের আশায় আপনার সাথে জিহাদে যেতে চাই। তিনি বলেনঃ তোমার জন্য দুঃখ হয়, তোমার মা কি জীবিত আছে? আমি বললাম,ইয়া রাসূলাল্লাহ! হাঁ। তিনি বলেন, তুমি ফিরে যাও এবং তার সেবাযত্ন করো। এরপর আমি সম্মুখভাগে এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং আখেরাতে জান্নাত লাভের আশায় আমি আপনার সাথে জিহাদে যেতে চাই। তিনি বলেনঃ তোমার জন্য দুঃখ হয়, তোমার মা কি জীবিত আছে? আমি বললাম, হাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বলেনঃ তোমার জন্য আফসোস! তার পায়ের কাছে পড়ে থাকো, সেখানেই জান্নাত। [২৭৮১]
[উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হয়েছে, অপর সানাদটি হলোঃ]
———
২/২৭৮১(১) . মুআবিয়া বিন জাহিমাহ আস-সুলামী(রাঃ) , জাহিমাহ(রাঃ) নবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এলেন… পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ। আবূ আবদুল্লাহ ইবনু মাজাহ (রহঃ) বলেন, ইনি হলেন জাহিমাহ বিন আব্বাস বিন মিরদাস আস-সুলামী যিনি হুনায়ন যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ভর্ৎসনা করেছিলেন (পরে ইসলাম গ্রহণ করেন)। [২৭৮১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৮১] নাসায়ী ৩১০৪, ইরওয়া ৫/২০-২১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৮২
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا الْمُحَارِبِيُّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ أَتَى رَجُلٌ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي جِئْتُ أُرِيدُ الْجِهَادَ مَعَكَ أَبْتَغِي وَجْهَ اللَّهِ وَالدَّارَ الآخِرَةَ وَلَقَدْ أَتَيْتُ وَإِنَّ وَالِدَىَّ لَيَبْكِيَانِ . قَالَ “ فَارْجِعْ إِلَيْهِمَا فَأَضْحِكْهُمَا كَمَا أَبْكَيْتَهُمَا ” .
আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং আখেরাতে জান্নাত লাভের আশায় আপনার সাথে জিহাদে যাওয়ার ইচ্ছা নিয়ে এসেছি। আমি আমার পিতা- মাতাকে কাঁদিয়ে এসেছি। তিনি বলেনঃ তাদের নিকট ফিরে যাও এবং তাদের মুখে হাসি ফুটাও, যেভাবে তুমি তাদেরকে কাঁদিয়ে এসেছো। [২৭৮২]
তাহকীক আলবানীঃসহীহ।
[২৭৮২] সহীহুল বুখারী ৩০০৪, মুসলিম ২৫৪৯, তিরমিযী ১৬৭১, নাসায়ী ৩১০৩, আবূ দাউদ ২৫২৮, ২৫২৯, আহমাদ ৬৫০৮, ৬৭২৬, ৬৭৭২, ৬৮১৯, ৭০২২, আত-তালীকুর রাগীব ৩/২১৩, সহীহ আবু দাউদ ২২৮১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী আতা ইবনুস সায়িব সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় পরিবর্তন করেছেন। আয়্যুব বিন আবু তামিমাহ আস-সাখতিয়ানী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৩৪, ২০/৮৬ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮/১৩. অধ্যায়ঃ
জিহাদের সংকল্প
২৭৮৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الرَّجُلِ يُقَاتِلُ شَجَاعَةً وَيُقَاتِلُ حَمِيَّةً وَيُقَاتِلُ رِيَاءً فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ قَاتَلَ لِتَكُونَ كَلِمَةُ اللَّهِ هِيَ الْعُلْيَا فَهُوَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ” .
আবূ মুসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, সে জিহাদ করে বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য, সে জিহাদ করে জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং সে জিহাদ করে প্রদর্শনীর জন্য। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে আল্লাহর কলেমা (দীন) সমুন্নত করার জন্য জিহাদ করে সে-ই হলো আল্লাহর পথে (জিহাদরত)। [২৭৮৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৮৩] সহীহুল বুখারী ১২৩, ২৮১০, ৩১২৬, ৭৪৫৮, মুসলিম ১৯০৪, তিরমিযী ১৬৪৬, নাসায়ী ৩১৩৬, আবূ দাউদ ২৫১৭, আহমাদ ১৮৯৯৯, ১৯০৪৯, ১৯০৯৯, ১৯১৩৪, ১৯২০০, ইবনু হিব্বান ৪৬৩৬, বায়হাকী ফিশ শুআব ৪২৩৬, বায়হাকী ফিস সুনান ৯/১৬৮, ১০/৩০, আল-হাকিম ফিল মুসতদরাক ২/১৯২, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৮০, সহীহ আবু দাউদ ২২৭৩, ২২৭৪। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৮৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ الْحُصَيْنِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عُقْبَةَ، عَنْ أَبِي عُقْبَةَ، – وَكَانَ مَوْلًى لأَهْلِ فَارِسَ – قَالَ شَهِدْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ فَضَرَبْتُ رَجُلاً مِنَ الْمُشْرِكِينَ فَقُلْتُ خُذْهَا مِنِّي وَأَنَا الْغُلاَمُ الْفَارِسِيُّ . فَبَلَغَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ “ أَلاَ قُلْتَ خُذْهَا مِنِّي وَأَنَا الْغُلاَمُ الأَنْصَارِيُّ ” .
আবূ উকবাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ছিলেন পারস্যবাসীর মুক্ত দাস। তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে উহুদ যুদ্ধের দিন হাজির ছিলাম। আমি এক মুশরিককে তরবারির আঘাত হেনে বললাম, নে এটা আমার পক্ষ থেকে, আর আমি হলাম পারস্য যুবক। ঘটনাটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানতে পেরে বলেনঃ তুমি কেন বললে না, নে এটা আমার পক্ষ থেকে, আর আমি হলাম আনসারী যুবক। [২৭৮৪]
তাহকীক আলবানীঃ দঈফ।
২৭৮৪] আবূ দাউদ ৫১২৩, আহমাদ ২২০০৯। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনুল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৭৮৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنَا حَيْوَةُ، أَخْبَرَنِي أَبُو هَانِئٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيَّ، يَقُولُ إِنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَا مِنْ غَازِيَةٍ تَغْزُو فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيُصِيبُوا غَنِيمَةً إِلاَّ تَعَجَّلُوا ثُلُثَىْ أَجْرِهِمْ فَإِنْ لَمْ يُصِيبُوا غَنِيمَةً تَمَّ لَهُمْ أَجْرُهُمْ ” .
আবদুল্লাহ বিন আমর(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি নবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যে সেনাদল আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে গনীমাতের মাল লাভ করলো, তারা তাদের দু’তৃতীয়াংশ সওয়াব সাথে সাথে পেয়ে গেলো। আর গনীমাতের মাল না পেলে তারা (আখেরাতে) পূর্ণ সওয়াব লাভ করবে। [২৭৮৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৮৫] মুসলিম ১৯০৬, নাসায়ী ৩১২৫, আবূ দাউদ ২৬৯৭, আহমাদ ৬৫৪১, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৮৩, সহীহ আবু দাউদ ২২৫৬। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮/১৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর পথে (জিহাদের উদ্দেশে) ঘোড়া প্রতিপালন
২৭৮৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ شَبِيبِ بْنِ غَرْقَدَةَ، عَنْ عُرْوَةَ الْبَارِقِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْخَيْرُ مَعْقُودٌ بِنَوَاصِي الْخَيْلِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ” .
উরওয়াহ আল-বারিকী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঘোড়ার কপালে কিয়ামত পর্যন্ত কল্যাণ ও প্রাচুর্য বাঁধা থাকবে। [২৭৮৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৮৬] সহীহুল বুখারী ২৮৫০, ২৮৫২, ৩১১৯, মুসলিম ১৮৭৩, তিরমিযী ১৬৯৪, নাসায়ী ৩৫৭৪, ৩৫৭৫, ৩৫৭৬, ৩৫৭৭, আহমাদ ১৮৮৬৫, ১৮৮৬৯, দারেমী ২৪২৬, ইবনু হিব্বান ৪১৪০, বায়হাকী ফিস সুনান ৬/৩১৯। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৮৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ الْخَيْلُ فِي نَوَاصِيهَا الْخَيْرُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ” .
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কিয়ামত পর্যন্ত ঘোড়ার কপালে কল্যাণ ও প্রাচুর্য যুক্ত থাকবে। [২৭৮৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৮৭] সহীহুল বুখারী ২৮৪৯, ৩৬৪৪, মুসলিম ১৮৬১, নাসায়ী ৩৫৭৩, আহমাদ ৪৬০২, ৪৮০১, ৫০৮৩, ৫১৭৮, ৫৭৩৪, ৫৭৪৯, ৫৮৮২, মুয়াত্তা মালেক ১০১৬। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৮৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ الْمُخْتَارِ، حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْخَيْلُ فِي نَوَاصِيهَا الْخَيْرُ – أَوْ قَالَ الْخَيْلُ مَعْقُودٌ فِي نَوَاصِيهَا قَالَ سُهَيْلٌ أَنَا أَشُكُّ الْخَيْرُ – إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ الْخَيْلُ ثَلاَثَةٌ فَهِيَ لِرَجُلٍ أَجْرٌ وَلِرَجُلٍ سِتْرٌ وَعَلَى رَجُلٍ وِزْرٌ فَأَمَّا الَّذِي هِيَ لَهُ أَجْرٌ فَالرَّجُلُ يَتَّخِذُهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَيُعِدُّهَا لَهُ فَلاَ تُغَيِّبُ شَيْئًا فِي بُطُونِهَا إِلاَّ كُتِبَ لَهُ أَجْرٌ وَلَوْ رَعَاهَا فِي مَرْجٍ مَا أَكَلَتْ شَيْئًا إِلاَّ كُتِبَ لَهُ بِهَا أَجْرٌ وَلَوْ سَقَاهَا مِنْ نَهَرٍ جَارٍ كَانَ لَهُ بِكُلِّ قَطْرَةٍ تُغَيِّبُهَا فِي بُطُونِهَا أَجْرٌ – حَتَّى ذَكَرَ الأَجْرَ فِي أَبْوَالِهَا وَأَرْوَاثِهَا – وَلَوِ اسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ كُتِبَ لَهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ تَخْطُوهَا أَجْرٌ . وَأَمَّا الَّذِي هِيَ لَهُ سِتْرٌ فَالرَّجُلُ يَتَّخِذُهَا تَكَرُّمًا وَتَجَمُّلاً وَلاَ يَنْسَى حَقَّ ظُهُورِهَا وَبُطُونِهَا فِي عُسْرِهَا وَيُسْرِهَا . وَأَمَّا الَّذِي هِيَ عَلَيْهِ وِزْرٌ فَالَّذِي يَتَّخِذُهَا أَشَرًا وَبَطَرًا وَبَذَخًا وَرِياءً لِلنَّاسِ فَذَلِكَ الَّذِي هِيَ عَلَيْهِ وِزْرٌ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঘোড়ার কপালে বাঁধা রয়েছে কল্যাণ ও বরকত অথবা তিনি বলেছেনঃ কিয়ামত পর্যন্ত ঘোড়ার কপালে কল্যাণ ও বরকত বাঁধা থাকবে। ঘোড়া তিন ধরনেরঃ একজনের জন্য তা সওয়াব বয়ে আনে, একজনের জন্য তা পর্দাস্বরূপ; আরেকজনের জন্য তা পাপের কারণ হয়। ঘোড়া তার জন্য সওয়াব বয়ে আনেঃ যে লোক আল্লাহর পথে জিহাদ করার জন্য তা পোষে এবং একে সেজন্য প্রস্তুত করে রাখে। সেই ঘোড়ার পেটে যা কিছু যায় তার জন্যও তার আমলনামায় সওয়াব লেখা হয়। যদি তার ঘোড়া চারণভূমিতে চরায় তবে ঘোড়া যা কিছুই খায় তার বিনিময়ে তার আমলনামায় সওয়াব লেখা হয়। সে যদি ঘোড়াকে বহমান নদীর পানি পান করায় তবে তার পেটে যাওয়া প্রতিটি ফোঁটা পানির বিনিময়েও তার আমলনামায় একটি করে সওয়াব লেখা হয়। এমনকি তিনি ঘোড়ার পেশাব ও গোবরের বিনিময়েও সওয়াব হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। আর তা যদি একটি বা দু’টি টিলা অতিক্রম করে তবে তার প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে তার আমলনামায় সওয়াব লেখা হয়। আর যে লোক ঘোড়া পোষে সম্মান ও সৌন্দর্যের উপকরণস্বরূপ তা তার জন্য আবরণ। অবশ্য সে তার ঘোড়ার সহজ বা কঠিন কর্তব্য বিস্মৃত হয় না। আর ঘোড়া যার জন্য পাপের কারণঃ যে লোক ঘোড়া পোষে অহংকারবশে ও প্রদর্শনীর উদ্দেশ্যে, তা তার জন্য পাপের কারণ হয়, তার জন্য ঘোড়া শাস্তিস্বরূপ। [২৭৮৮]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৮৮] সহীহুল বুখারী ২৩৭১, ২৮৫৩, মুসলিম ৯৭৯৮৭, তিরমিযী ১৬৩৬, নাসায়ী ৩৫৬২, ৩৫৬৩, ৩৫৮২, আহমাদ ৭৫০৯, ৮৭৫৪, মুয়াত্তা মালেক ৯৭৫, ইবনু হিব্বান ৪৬৭১, ৪৬৭২, বায়হাকী ফিশ শুআব ৪৩৫০, বায়হাকী ফিস সুনান ৯/১৫৬, ১০/১৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী সুহায়ল বিন আবু সালিহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ। সুফইয়ান বিন উয়াইনাহ বলেন, সাবত। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার বর্ণিত হাদিস সহিহ নয়। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনু আদী বলেন, তার খবর মাকবুল বা গ্রহণযোগ্য। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৬২৯, ১২/২২৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৮৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ أَيُّوبَ، يُحَدِّثُ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ عُلَىِّ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ خَيْرُ الْخَيْلِ الأَدْهَمُ الأَقْرَحُ الْمُحَجَّلُ الأَرْثَمُ طَلْقُ الْيَدِ الْيُمْنَى فَإِنْ لَمْ يَكُنْ أَدْهَمَ فَكُمَيْتٌ عَلَى هَذِهِ الشِّيَةِ ” .
আবূ কাতাদা আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কালো রং-এর ঘোড়া সর্বোত্তম যার কপাল ও উপরের ওষ্ঠ সাদা। অতঃপর যে ঘোড়ার ডান পা ও কপাল ব্যতীত অবশিষ্ট পাগুলো সাদা। যদি কালো ঘোড়া না পাওয়া যায় তবে লাল- কালো মিশ্রিত বর্ণের ঘোড়া উত্তম। [২৭৮৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৮৯] তিরমিযী ১৬৯৭, আহমাদ ২২০৫৫, দারেমী ২৪২৮, ইবনু হিব্বান ৪৬৮৭, বায়হাকী ফিস সুনান ৬/৩৩০, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৬২, মিশকাত ৩৮৭৭। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ইয়াহইয়া বিন আয়্যুব সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি তার মুখস্ত হাদিস থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন, কিন্তু তার কিতাবে লিখিত হাদিস থেকে বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আবু বকর আল-ইসমাইলী বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আবু মুহাম্মাদ বিন হাযম বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৯২, ৩১/২৩৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৯০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ سَلْمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ النَّخَعِيِّ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَكْرَهُ الشِّكَالَ مِنَ الْخَيْلِ .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিকাল ঘোড়া (অর্থাৎ তিন পা সাদা এবং এক পা শরীরের রং-বিশিষ্ট) অপছন্দ করেছেন। [২৭৯০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৯০] মুসলিম ১৮৭৫, তিরমিযী ১৬৯৮, নাসায়ী ৩৫৬৬, ৩৫৬৭, আবূ দাউদ ২৫৪৭, আহমাদ ৭৩৬০, ৯৩৪৩, ২৭৬০৩, ২৭৭৯৫, ৯৮০৪, সহীহ আবু দাউদ ২২৯৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৯১
حَدَّثَنَا أَبُو عُمَيْرٍ، عِيسَى بْنُ مُحَمَّدٍ الرَّمْلِيُّ حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يَزِيدَ بْنِ رَوْحٍ الدَّارِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عُقْبَةَ الْقَاضِي، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنِ ارْتَبَطَ فَرَسًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ عَالَجَ عَلَفَهُ بِيَدِهِ كَانَ لَهُ بِكُلِّ حَبَّةٍ حَسَنَةٌ ” .
তামীম আদ-দারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে (জিহাদের উদ্দেশ্যে) একটি ঘোড়া পোষে, অতঃপর স্বহস্তে একে ঘাস ও শস্যদানা খাওয়ায়, তার আমলনামায় প্রতিটি দানার বিনিময়ে একটি করে সওয়াব লেখা হয়। [২৭৯১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৯১] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ফিস সুনান ৫/৫১৫, রাওদুন নাদীর ১৮৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আহমাদ বিন ইয়াযীদ বিন রাওহ আদ-দারী সম্পর্কে ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার বিষয় সম্পর্কে অজ্ঞাত। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত, কেউ তাকে তাওসীক করেনি। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১২৮, ১/৫২১ নং পৃষ্ঠা) ২. মুহাম্মাদ বিন উকবাহ আল-কাদী সম্পর্কে ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৭১, ২৬/১২৭ নং পৃষ্ঠা) ৩. উকবাহ সম্পর্কে ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৬৫৭, ২/৩৯৬ নং পৃষ্ঠা)
উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু আহমাদ বিন ইয়াযীদ বিন রাওহ আদ-দারী ও মুহাম্মাদ বিন উকবাহ আল-কাদী এবং উকবাহ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৫৯ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২ টি জাল, ১১ টি খুবই দুর্বল, ৪২ টি দুর্বল, ২ টি হাসান, ২ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ২৮৫৩, আহমাদ ৮৬৪৯, ১৬৫০৭, ২৬৯৩৪, মুজামুল আওসাত ১১৩৩, ১১৭২, শারহুস সুন্নাহ ২৬৪৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮/১৫. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর পথে জিহাদ করা
২৭৯২
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ يُخَامِرَ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ قَاتَلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ رَجُلٍ مُسْلِمٍ فُوَاقَ نَاقَةٍ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ ” .
মুআয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন, কোন মুসলমান ব্যক্তি মহামহিম আল্লাহর পথে একটি উষ্ট্রী দোহনের সময় পরিমাণ যুদ্ধ করলে তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়। [২৭৯২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৯২] তিরমিযী ১৬৫৭, ইবনু হিব্বান ৪৬১৮, ৩১৮৫, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ২/৭৭, বায়হাকী ফিস সুনান ৯/১৭০, বায়হাকী ফিশ শুআব ৪২৪৯, ৪২৫০, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৭৯, সহীহ আবু দাউদ ২২৯১। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী বিশর বিন আদম সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী ও ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৭, ৪/৯০ নং পৃষ্ঠা) ২. সুলায়মান বিন মুসা সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি একজন ফকীহ ছিলেন। আতা বিন আবু রাবাহ বলেন, তিনি শামের যুবকদের নেতা ছিলেন। ইমাম বুখারী তাকে মুনকার বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭১, ১২/৯২ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا دَيْلَمُ بْنُ غَزْوَانَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ حَضَرْتُ حَرْبًا فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَوَاحَةَ يَا نَفْسِ أَلاَ أَرَاكِ تَكْرَهِينَ الْجَنَّهْ أَحْلِفُ بِاللَّهِ لَتَنْزِلِنَّهْ طَائِعَةً أَوْ لَتُكْرَهِنَّهْ
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি এক যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম। আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহাহ (রাঃ) বললেন, “হে আত্মা! আমি কি দেখছি না যে, তুমি জান্নাতকে অপছন্দ করছো! আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, তোমাকে অবশ্যই জান্নাতে যেতে হবে আনন্দে হোক বা নিরানন্দে”। [২৭৯৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৯৩] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৯৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَعْلَى بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ دِينَارٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ ذَكْوَانَ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ عَبَسَةَ، قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ الْجِهَادِ أَفْضَلُ قَالَ “ مَنْ أُهْرِيقَ دَمُهُ وَعُقِرَ جَوَادُهُ ” .
আমর বিন আবাসাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন জিহাদ উত্তম? তিনি বলেনঃ যে যুদ্ধে মুজাহিদের রক্ত প্রবাহিত হয় এবং তার ঘোড়াও আহত হয়। [২৭৯৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৯৪] আহমাদ ১৬৫৭৯, ১৮৯৪০, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৭৮, ১৯১, ১৯২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. মুহাম্মাদ বিন যাকওয়ান সম্পর্কে আবু বাকর আল-বাযযার বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আহমাদ বিন শু’আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে না, তিনি সিকাহ নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫২০৫, ২৫/১৮০ নং পৃষ্ঠা) ২. শাহর বিন হাওশাব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান এবং আল-আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। শু’বাহ ইবনুল হাজ্জাজ তাকে বর্জন করেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, কোন সমস্যা নেই। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৭৮১, ১২/৫৭৮ নং পৃষ্ঠা)
উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু মুহাম্মাদ বিন যাকওয়ান এর কারণে সানাদটি দুর্বল। তাছাড়া শাহর বিন হাওশাব আমর বিন আবাসাহ থেকে হাদিসটি শ্রবন করেননি। হাদিসটির ৩৪ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২ টি জাল, ৮ টি খুবই দুর্বল, ১৪ টি দুর্বল, ১ টি হাসান, ৯ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ দারিমী ২৩৯২, আহমাদ ১৩৭৯৮, ১৩৮২১, ১৪৩১৭, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪৮৪৪, মুজামুল আওসাত ১২২৫, ২১০৬, ৪৪৪৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৯৫
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ آدَمَ، وَأَحْمَدُ بْنُ ثَابِتٍ الْجَحْدَرِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَجْلاَنَ، عَنِ الْقَعْقَاعِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَا مِنْ مَجْرُوحٍ يُجْرَحُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ – وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِمَنْ يُجْرَحُ فِي سَبِيلِهِ – إِلاَّ جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَجُرْحُهُ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ جُرِحَ وَاللَّوْنُ لَوْنُ دَمٍ وَالرِّيحُ رِيحُ مِسْكٍ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলে, রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহর পথে আহত ব্যক্তি, আল্লাহই ভালো জানেন কে তার পথে আহত হয়, কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উঠবে যে, তার ক্ষতস্থান আহত হওয়ার দিনের মত দগদগে তাজা থাকবে, তার রং হবে রক্তিম বর্ণ এবং তার ঘ্রাণ হবে কস্তরীর মত সুগন্ধে ভরপুর। [২৭৯৫]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
[২৭৯৫] সহীহুল বুখারী ২৩৭, ২৮০৩, ৫৫৩৩৩, মুসলিম ১৮৭৬, বায়হাকী ফিস সুনান ৯/১৬৪, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৮০। তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী বিশর বিন আদম সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী ও ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৭, ৪/৯০ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
২৭৯৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا يَعْلَى بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي أَوْفَى، يَقُولُ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الأَحْزَابِ فَقَالَ “ اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ سَرِيعَ الْحِسَابِ اهْزِمِ الأَحْزَابَ اللَّهُمَّ اهْزِمْهُمْ وَزَلْزِلْهُمْ ” .
আবদুল্লাহ বিন আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাফের বাহিনীসমুহকে বদদোয়া করে বলেনঃ “হে কিতাব নাযিলকারী, দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী আল্লাহ! আপনি বাহিনীসমুহকে পরাস্ত করুন। হে আল্লাহ! আপনি তাদের পরাস্ত করুন এবং তাদের ভীত-কম্পিত করুন। [২৭৯৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৯৬] সহীহুল বুখারী ২৯৩৩, ২৯৬৬, ৩০২৪, ৪১১৫, ৪৩৯২, ৭৮৯, মুসলিম ১৭৪২, তিরমিযী ১৬৭৮, আবূ দাউদ ২৬৩১, আহমাদ ১৮৬২৮, ১৮৬৫০, সহীহ আবু দাউদ ২৩৬৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭৯৭
حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، وَأَحْمَدُ بْنُ عِيسَى الْمِصْرِيَّانِ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي أَبُو شُرَيْحٍ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ شُرَيْحٍ، أَنَّ سَهْلَ بْنَ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ سَأَلَ اللَّهَ الشَّهَادَةَ بِصِدْقٍ مِنْ قَلْبِهِ بَلَّغَهُ اللَّهُ مَنَازِلَ الشُّهَدَاءِ وَإِنْ مَاتَ عَلَى فِرَاشِهِ ” .
সাহল বিন হুনায়ফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি সর্বান্তঃকরণে সত্যিকারভাবে আল্লাহর নিকট শাহাদাত কামনা করবে, আল্লাহ তাকে শহীদদের মর্যাদা দান করবেন, যদিও সে তার বিছানায় মারা যায়। [২৭৯৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৯৭] মুসলিম ১৯০৯, তিরমিযী ১৬৫৩, নাসায়ী ৩১৬২, আবূ দাউদ ১৫২০, দারেমী ২৪০৭, ইবনু হিব্বান ৩১৯২, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ২/৭৭, বায়হাকী ফিস সুনান ৯/১৭০, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৬৯, সহীহ আবু দাউদ ১৩৬০। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮/১৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর পথে শহীদ হওয়ার ফযিলাত
২৭৯৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ أَبِي زَيْنَبَ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ذُكِرَ الشُّهَدَاءُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ “ لاَ تَجِفُّ الأَرْضُ مِنْ دَمِ الشَّهِيدِ حَتَّى تَبْتَدِرَهُ زَوْجَتَاهُ كَأَنَّهُمَا ظِئْرَانِ أَضَلَّتَا فَصِيلَيْهِمَا فِي بَرَاحٍ مِنَ الأَرْضِ وَفِي يَدِ كُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا حُلَّةٌ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট শহীদদের বিষয় উল্লেখ করা হলে তিনি বলেনঃ শহীদের রক্ত মাটিতে শুকিয়ে যাবার আগেই তার দু’জন স্ত্রী (জান্নাতের হূর) এসে তাকে এমনভাবে তুলে নেয়, যেন তারা স্তন্যদানকারিনী, যারা তাদের দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে জঙ্গলে হারিয়ে ফেলেছে। তাদের দু’জনের প্রত্যেকের হাতে থাকবে একটি করে চাদর যা দুনিয়া ও তার মধ্যকার সব কিছুর চেয়ে উত্তম। [২৭৯৮]
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল।
[২৭৯৮] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। আত-তালীকুর রাগীব ২/১৯৬, যইফ আল-জামি’ ৬১৯৭। তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবী হিলাল বিন আবু যায়নাব সম্পর্কে ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। আবু হাতিম বিন হিব্বান তার সিকাহ গ্রন্থে তার নাম উল্লেখ করেছেন। ইমাম যাহাবী তাকে সিকাহ বললেও যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি দুর্বল। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তার হাদিস সহীহ নয়। আহমাদ বিন হাম্বল তাকে দুর্বল বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৬২০, ৩০/৩৩৬ নং পৃষ্ঠা) ২. শাহর বিন হাওশাব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান এবং আল-আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। শু’বাহ ইবনুল হাজ্জাজ তাকে বর্জন করেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, কোন সমস্যা নেই। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৭৮১, ১২/৫৭৮ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
২৭৯৯
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنِي بَحِيرُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيكَرِبَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لِلشَّهِيدِ عِنْدَ اللَّهِ سِتُّ خِصَالٍ يُغْفَرُ لَهُ فِي أَوَّلِ دَفْعَةٍ مِنْ دَمِهِ وَيُرَى مَقْعَدَهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَيُجَارُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَيَأْمَنُ مِنَ الْفَزَعِ الأَكْبَرِ وَيُحَلَّى حُلَّةَ الإِيمَانِ وَيُزَوَّجُ مِنَ الْحُورِ الْعِينِ وَيُشَفَّعُ فِي سَبْعِينَ إِنْسَانًا مِنْ أَقَارِبِهِ ” .
মিকদাম বিন মা’দীকারিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ শহীদের জন্য আল্লাহর নিকট ছয়টি বৈশিষ্ট্য রয়েছেঃ (১) তার দেহের রক্তের প্রথম ফোঁটাটি বের হতেই তিনি তাকে ক্ষমা করেন এবং জান্নাতে তার ঠিকানা তাকে দেখানো হয়, (২) কবরের আযাব থেকে তাকে রক্ষা করা হয়, (৩) (কিয়ামতের) ভয়ংকর ত্রাস থেকে সে নিরাপদ থাকবে; (৪) তাকে ঈমানের চাদর পড়ানো হবে; (৫) আয়তলোচনা হুরের সাথে তার বিবাহ দেয়া হবে এবং (৬) তার নিকট আত্মীয়দের মধ্য থেকে সত্তরজনের পক্ষে তাকে শাফাআত করার অনুমতি দেয়া হবে। [২৭৯৯]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৭৯৯] তিরমিযী ১৬৬৩, আহমাদ ১৬৭৩০, বায়হাকী ফিস সুনান ৯/১৬৪, বায়হাকী ফিশ শুআব ১০৮২৩, ১০৮২৪, আল-আহকাম ৩৬ নং পৃষ্ঠা, মিশকাত ৩৮৩৪, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৯৪। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনুল মাদীনী, ইবনু আবু শায়বাহ, আমর ইবনুল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭২, ৩/১৬৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮০০
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ الْحَرَامِيُّ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَرَامِيُّ الأَنْصَارِيُّ، سَمِعْتُ طَلْحَةَ بْنَ خِرَاشٍ، سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ لَمَّا قُتِلَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرِو بْنِ حَرَامٍ يَوْمَ أُحُدٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَا جَابِرُ أَلاَ أُخْبِرُكَ مَا قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لأَبِيكَ ” . قُلْتُ بَلَى . قَالَ ” مَا كَلَّمَ اللَّهُ أَحَدًا إِلاَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ وَكَلَّمَ أَبَاكَ كِفَاحًا . فَقَالَ يَا عَبْدِي تَمَنَّ عَلَىَّ أُعْطِكَ . قَالَ يَا رَبِّ تُحْيِينِي فَأُقْتَلُ فِيكَ ثَانِيَةً . قَالَ إِنَّهُ سَبَقَ مِنِّي أَنَّهُمْ إِلَيْهَا لاَ يُرْجَعُونَ . قَالَ يَا رَبِّ فَأَبْلِغْ مَنْ وَرَائِي . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَذِهِ الآيَةَ {وَلاَ تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا} ” . الآيَةَ كُلَّهَا .
জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উহুদের যুদ্ধের দিন আবদুল্লাহ বিন ‘আমর বিন হারাম (রাঃ) শহীদ হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হে জাবির! মহামহিম আল্লাহ তোমার পিতাকে যা বলেছেন তা কি আমি তোমাকে অবহিত করবো না? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তায়ালা যার সাথেই কথা বলেছেন, পর্দার অন্তরাল থেকে বলেছেন, কিন্তু তোমার পিতার সাথে সামনা সামনি কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, হে আমার বান্দা! তুমি আকাঙ্ক্ষা করো, আমি তোমাকে দিবো। সে বললো, হে প্রভু! আমাকে জীবিত করুন আমি পুনরায় আপনার রাস্তায় শহীদ হবো। তিনি বলেন, আমার পক্ষ থেকে পূর্বেই এটা সাব্যস্ত হয়ে গেছে যে, এখানে আসার পর তারা আর প্রত্যাবর্তন করবে না। সে বললো, প্রভু! আমার পক্ষ থেকে আমার পশ্চাতের (পৃথিবীর) লোকেদের সুসংবাদ পৌঁছে দিন। তখন মহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন (অনুবাদ) : “যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে তোমরা কখনও মৃত মনে করো না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে তারা জীবিকাপ্রাপ্ত….” (সূরা আল ইমরানঃ ১৬৯-১৭১)। [২৮০০]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
[২৮০০] সহীহুল বুখারী ৭৪৪০, তিরমিযী ২৩১০, দারেমী ২৮২২। তাহকীক আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী মুসা বিন ইবরাহীম আল-হারামী আল-আনসারী সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, যারা হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন তিনি তাদের একজন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইমাম যাহাবী তাকে সিকাহ বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬২৩৪, ২৯/২০ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৮০১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، فِي قَوْلِهِ {وَلاَ تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ} قَالَ أَمَا إِنَّا سَأَلْنَا عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ ” أَرْوَاحُهُمْ كَطَيْرٍ خُضْرٍ تَسْرَحُ فِي الْجَنَّةِ فِي أَيِّهَا شَاءَتْ ثُمَّ تَأْوِي إِلَى قَنَادِيلَ مُعَلَّقَةٍ بِالْعَرْشِ فَبَيْنَمَا هُمْ كَذَلِكَ إِذِ اطَّلَعَ عَلَيْهِمْ رَبُّكَ اطِّلاَعَةً فَيَقُولُ سَلُونِي مَا شِئْتُمْ . قَالُوا رَبَّنَا وَمَاذَا نَسْأَلُكَ وَنَحْنُ نَسْرَحُ فِي الْجَنَّةِ فِي أَيِّهَا شِئْنَا فَلَمَّا رَأَوْا أَنَّهُمْ لاَ يُتْرَكُونَ مِنْ أَنْ يَسْأَلُوا قَالُوا نَسْأَلُكَ أَنْ تَرُدَّ أَرْوَاحَنَا فِي أَجْسَادِنَا إِلَى الدُّنْيَا حَتَّى نُقْتَلَ فِي سَبِيلِكَ . فَلَمَّا رَأَى أَنَّهُمْ لاَ يَسْأَلُونَ إِلاَّ ذَلِكَ تُرِكُوا ” .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলার নিম্মোক্ত বাণী সম্পর্কে বর্ণিতঃ “যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে তোমরা কখনো মৃত মনে করো না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে তারা রিযিকপ্রাপ্ত” (সূরা আল ইমরানঃ ১৬৯)। তিনি বলেন, আমরা উক্ত আয়াতের তাৎপর্য জিজ্ঞেস করলে মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ শহীদগণের রূহ সবুজ পাখির ন্যায় স্বাধীনভাবে জান্নাতে যত্রতত্র উড়ে বেড়ায় এবং আরশের সাথে ঝুলন্ত ফানুসের মধ্যে বিশ্রাম গ্রহণ করে। একদা তাদের রূহসমূহ ঐ অবস্থায় থাকাকালে তোমার প্রতিপালক তাদের নিকট উদ্ভাসিত হয়ে বলেন, তোমরা যা ইছা আমার নিকট চাও। তারা বললো, আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার নিকট আর কি চাবো! আমরা তো স্বাধীনভাবে জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা ঘুড়ে বেড়াই। তারা যখন দেখলো যে, কিছু না চাওয়া পর্যন্ত তাদেরকে ছাড়া হচ্ছে না, তখন তারা বললো, আমরা আপনার নিকট চাই যে, আপনি আমাদের দেহে আমাদের রূহ ফেরত দিয়ে আমাদেরকে দুনিয়াতে পাঠাবেন, যাতে আমরা আপনার রাস্তায় জিহাদ করতে পারি। আল্লাহ যখন দেখলেন যে, তারা এটাই চাচ্ছে, তখন তাদেরকে (স্ব স্ব অবস্থায়) ত্যাগ করা হলো। [২৮০১]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ
[২৮০১] মুসলিম ১৮৮৭, তিরমিযী ৩০১১, দারেমী ২৮২২, সহীহাহ ২৬৩৩। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮০২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، وَبِشْرُ بْنُ آدَمَ، قَالُوا حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، أَنْبَأَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَجْلاَنَ، عَنِ الْقَعْقَاعِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَا يَجِدُ الشَّهِيدُ مَسَّ الْقَتْلِ إِلاَّ كَمَا يَجِدُ أَحَدُكُمْ مَسَّ الْقَرْصَةِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, শহীদ ব্যক্তি নিহত হওয়ার সময় কোন কষ্টই অনুভব করে না, শুধু এতটুকু যে, তোমাদের কাউকে পিঁপড়ায় দংশন করলে সে যতটুকু ব্যাথা অনুভব করে। [২৮০২]
তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ।
[২৮০২] তিরমিযী ১৬৬৮, নাসায়ী ৩১৬১, আহমাদ ৭৮৯৩, দারেমী ২৪০৮, বায়হাকী ফিস সুনান ৫/১৫২, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৯২, সহীহাহ ৯৬০। তাহকীক আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী বিশর বিন আদম সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী ও ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৭, ৪/৯০ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
১৮/১৭ অধ্যায়ঃ
যার জন্যে শহীদের মর্যাদা আশা করা যায় (শহীদের শ্রেণীবিভাগ)
২৮০৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ أَبِي الْعُمَيْسِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَابِرِ بْنِ عَتِيكٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّهُ مَرِضَ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَعُودُهُ فَقَالَ قَائِلٌ مِنْ أَهْلِهِ إِنْ كُنَّا لَنَرْجُو أَنْ تَكُونَ وَفَاتُهُ قَتْلَ شَهَادَةٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ شُهَدَاءَ أُمَّتِي إِذًا لَقَلِيلٌ الْقَتْلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ شَهَادَةٌ وَالْمَطْعُونُ شَهَادَةٌ وَالْمَرْأَةُ تَمُوتُ بِجُمْعٍ شَهَادَةٌ – يَعْنِي الْحَامِلَ – وَالْغَرِقُ وَالْحَرِقُ وَالْمَجْنُوبُ – يَعْنِي ذَاتَ الْجَنْبِ – شَهَادَةٌ ” .
জাবর বিন আতীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখতে আসেন। জাবর (রাঃ) -এর পরিবারের কেউ বললো, আমরা আশা করতাম যে, সে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়ে মৃত্যু বরণ করবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তাহলে আমার উম্মাতের শহীদের সংখ্যা তো খুব কম হয়ে যাবে। আল্লাহর পথে নিহত হলে শহীদ, মহামারীতে নিহত হলে শহীদ, যে মহিলা গর্ভাবস্থায় মারা যায় সে শহীদ এবং পানিতে ডুবে, আগুনে পুড়ে ও ক্ষয়রোগে মৃত্যুবরণকারী শহীদ। [২৮০৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৮০৩] নাসায়ী ১৮৪৬, ৩১৯৪, আবূ দাউদ ৩১১১, আহমাদ ২৩২৪১, মুয়াত্তা মালেক ৫৫২, আল-আহকাম ৩৯-৪০ নং পৃষ্ঠা, আত-তালীকুর রাগীব ২/২০২। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮০৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ الْمُخْتَارِ، حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ” مَا تَقُولُونَ فِي الشَّهِيدِ فِيكُمْ ” . قَالُوا الْقَتْلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ . قَالَ ” إِنَّ شُهَدَاءَ أُمَّتِي إِذًا لَقَلِيلٌ مَنْ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيدٌ وَمَنْ مَاتَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيدٌ وَالْمَبْطُونُ شَهِيدٌ وَالْمَطْعُونُ شَهِيدٌ ” .
قَالَ سُهَيْلٌ وَأَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مِقْسَمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، وَزَادَ، فِيهِ “ وَالْغَرِقُ شَهِيدٌ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের মধ্যে কাদের তোমরা শহীদ মনে করো? সাহাবীগণ বলেন, আল্লাহর পথে যারা নিহত হয়। তিনি বলেনঃ তাহলে তো আমার উম্মাতের শহীদের সংখ্যা কম হবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে নিহত হয়, সে শহীদ, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মারা যায় সে শহীদ, যে ব্যক্তি পেটের পীড়ায় মারা যায় সে শহীদ এবং যে ব্যক্তি মহামারীতে মারা যায় সেও শহীদ। আবূ হুরায়রাহ(রাঃ) , (সুহায়ল) বলেন, এ সুত্রে আমাকে অবহিত করেন যে, তিনি তাঁর রিওয়ায়াতে আরো উল্লেখ করেছেনঃ পানিতে ডুবে মরা ব্যক্তিও শহীদ। [২৮০৪]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৮০৪]সহীহুল বুখারী ৬৫৪, মুসলিম ১৯১৪, তিরমিযী ১০৬৩, ১৯৫৮, আ৫২৪৫, আহমাদ ১০৩৮৩, ২৭৩২৯, মুয়াত্তা মালেক ২৯৫, ইবনু হিব্বান ৩১৭৭, ২/৩২৪, ৩২৫, বায়হাকী ফিস সুনান ৯/১৬৪, আল-আহকাম ৩৬,৩৮। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী সুহায়ল বিন আবু সালিহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ। সুফইয়ান বিন উয়াইনাহ বলেন, সাবত। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার বর্ণিত হাদিস সহিহ নয়। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনু আদী বলেন, তার খবর মাকবুল বা গ্রহণযোগ্য। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৬২৯, ১২/২২৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮/১৮ অধ্যায়ঃ
সমরাস্ত্র
২৮০৫
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، وَسُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ مَكَّةَ يَوْمَ الْفَتْحِ وَعَلَى رَأْسِهِ الْمِغْفَرُ .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন শিরস্ত্রাণ পরিহিত অবস্থায় মক্কায় প্রবেশ করেন। [২৮০৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৮০৫] সহীহুল বুখারী ১৮৪৬, ৩০৪৪, ৪২৮৬, ৫৮০৮, ৭৩৪৫, মুসলিম ১৩৫৭, তিরমিযী ১৬৯৩, নাসায়ী ২৮৬৭, আবূ দাউদ ২৬৮৫, আহমাদ ১১৬৫৭, ১২২৭০, ১২৪৪১, ১২৫২১, ১২৯৩২, ১৩০৪০, ১৩০২৪, ১৩১০৬, মুয়াত্তা মালেক ৯৬৪, দারেমী ১৯৬৮, ২৪৫৬, বায়হাকী ফিস সুনান ৮/২৭২, মুখতাসারুশ শামাইল ৯১, সহীহ আবু দাউদ ২৪০৬। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮০৬
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ خُصَيْفَةَ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، إِنْ شَاءَ اللَّهُ تَعَالَى . أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ أَخَذَ دِرْعَيْنِ كَأَنَّهُ ظَاهَرَ بَيْنَهُمَا .
সাইব বিন ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহুদের যুদ্ধের দিন দুটি লৌহবর্ম একটির উপর অপরটি পরিধান করেন। [২৮০৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৮০৬] আবূ দাউদ ২৫৯০, আহমাদ ১৫২৯৫, সহীহ আবু দাউদ ২৩৩২, মুখতাসারুশ শামাইল ৯০। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮০৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ حَبِيبٍ، قَالَ دَخَلْنَا عَلَى أَبِي أُمَامَةَ فَرَأَى فِي سُيُوفِنَا شَيْئًا مِنْ حِلْيَةِ فِضَّةٍ فَغَضِبَ وَقَالَ لَقَدْ فَتَحَ الْفُتُوحَ قَوْمٌ مَا كَانَ حِلْيَةُ سُيُوفِهِمْ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلَكِنِ الآنُكُ وَالْحَدِيدُ وَالْعَلاَبِيُّ . قَالَ أَبُو الْحَسَنِ الْقَطَّانُ الْعَلاَبِيُّ الْعَصَبُ .
সুলায়মান বিন হাবীব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা আবূ উমমাহ(রাঃ) এর নিকট প্রবেশ করলাম। তিনি আমাদের তরবারিতে রূপার অলঙ্করণ দেখতে পেয়ে অসন্তুষ্ট হন এবং বলেন, (আগেকার) লোকেরা বহু বিজয় অর্জন করেছিলো। কিন্তু তাদের তরবারি সোনা বা রূপা দ্বারা অলঙ্কৃত ছিলো না, বরং শিশা, লোহা বা উটের রগ দ্বারা অলংকৃত ছিল। আবুল হাসান আল-কাত্তান(রহঃ) বলেন, হাদীসে উল্লিখিত শব্দ “আলাবী” এর অর্থ ‘রগ’। [২৮০৭]
তাহকীক আলবানীঃ সানাদটি সহীহ।
[২৮০৭] সহীহুল বুখারী ২৯০৯। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮০৮
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ الصَّلْتِ، عَنِ ابْنِ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَنَفَّلَ سَيْفَهُ ذَا الْفِقَارِ يَوْمَ بَدْرٍ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ‘যুল-ফাকার’ নামক তরবারি বদরের যুদ্ধের দিন গনীমতস্বরূপ গ্রহণ করেন। [২৮০৮]
তাহকীক আলবানীঃ সানাদটি হাসান।
[২৮০৮] তিরমিযী ১৫৬১, আহমাদ ২৪৪১, বায়হাকী ফিস সুনান ৯/২০। তাহকীক আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী আবুয যিনাদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট হাফিয নয়। আবুল কাশিম বিন বিশকাওয়াল বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হবে না। আবু যুরআহ আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শু’আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮১৬, ১৭/৯৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৮০৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ سَمُرَةَ، أَنْبَأَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الْخَلِيلِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ كَانَ الْمُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةَ إِذَا غَزَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَمَلَ مَعَهُ رُمْحًا فَإِذَا رَجَعَ طَرَحَ رُمْحَهُ حَتَّى يُحْمَلَ لَهُ . فَقَالَ لَهُ عَلِيٌّ لأَذْكُرَنَّ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ “ لاَ تَفْعَلْ فَإِنَّكَ إِنْ فَعَلْتَ لَمْ تُرْفَعْ ضَالَّةٌ ” .
আলী বিন আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মুগীরাহ বিন শু‘বাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে জিহাদ করতে গেলে সাথে একটা বর্শা নিতেন। ফিরে এসে তিনি বর্শাটি ফেলে দিতেন। শেষে কেউ তা তুলে এনে তাকে দিতো। ‘আলী (রাঃ) তাকে বলেন, আমি অবশ্যই এটা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলবো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এটা করো না। কেননা তুমি যদি এরূপ করো তবে কেউ আর কোন পড়ে থাকা জিনিস কুড়িয়ে নিয়ে ফেরত দিবে না। [২৮০৯]
তাহকীক আলবানীঃ সানাদটি দঈফ।
[২৮০৯] আহমাদ ১২৭৫। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী আবুল খালীল সম্পর্কে ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাকবুল। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সিকাহ। ইমাম বুখারী যায়দ বিন আরকাম থেকে বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩২৪৭, ১৪/৪৫৭ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৮১০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ سَمُرَةَ، أَنْبَأَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ أَشْعَثَ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُسْرٍ، عَنْ أَبِي رَاشِدٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ كَانَتْ بِيَدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَوْسٌ عَرَبِيَّةٌ فَرَأَى رَجُلاً بِيَدِهِ قَوْسٌ فَارِسِيَّةٌ فَقَالَ “ مَا هَذِهِ أَلْقِهَا وَعَلَيْكُمْ بِهَذِهِ وَأَشْبَاهِهَا وَرِمَاحِ الْقَنَا فَإِنَّهُمَا يَزِيدُ اللَّهُ بِهِمَا فِي الدِّينِ وَيُمَكِّنُ لَكُمْ فِي الْبِلاَدِ ” .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হতে একটি আরবীয় ধনুক ছিল। তিনি এক ব্যক্তির হতে একটি পারসিক ধনুক দেখে বলেনঃ এটা কি? এটা ফেলে দাও। তোমরা এটার অনুরূপ ধনুক রাখো এবং বর্শাও রাখো। কেননা আল্লাহ তা’আলা এই ধনুক ও বর্শা দ্বারা তোমাদের দ্বীনের সাহায্য করবেন এবং তোমাদের দ্বারা বিভিন্ন দেশ জয় করাবেন। [২৮১০]
তাহকীক আলবানীঃ সানাদ দুর্বল।
[২৮১০] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। যইফ আল-জামি’ ৫২৩১, যইফাহ ৪৪৯৯। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী আশআস বিন সাঈদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বাযযার বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫২৩, ৩/২৬১ নং পৃষ্ঠা) ২. আবদুল্লাহ বিন বুসর সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইমাম তিরমিযি বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী তাকে দুর্বল বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৮১, ১৪/৩৫৫ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৮/১৯ অধ্যায়ঃ
আল্লাহর রাস্তায় তীরন্দাজী
২৮১১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَنْبَأَنَا هِشَامٌ الدَّسْتَوَائِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلاَّمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الأَزْرَقِ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ الْجُهَنِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِنَّ اللَّهَ لَيُدْخِلُ بِالسَّهْمِ الْوَاحِدِ الثَّلاَثَةَ الْجَنَّةَ صَانِعَهُ يَحْتَسِبُ فِي صَنْعَتِهِ الْخَيْرَ وَالرَّامِيَ بِهِ وَالْمُمِدَّ بِهِ ” . وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” ارْمُوا وَارْكَبُوا وَأَنْ تَرْمُوا أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ تَرْكَبُوا وَكُلُّ مَا يَلْهُو بِهِ الْمَرْءُ الْمُسْلِمُ بَاطِلٌ إِلاَّ رَمْيَهُ بِقَوْسِهِ وَتَأْدِيبَهُ فَرَسَهُ وَمُلاَعَبَتَهُ امْرَأَتَهُ فَإِنَّهُنَّ مِنَ الْحَقِّ ” .
উকবাহ বিন আমির আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ একটা তীরের উপলক্ষে তিন ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেনঃ (১) তীর নির্মাতা যে তা নির্মাণকালে কল্যাণের আশা করে, (২) (জিহাদে) এই তীর নিক্ষেপ কারী এবং (৩) যে তা নিক্ষেপে সাহায্য করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা তীরন্দাজী করো এবং ঘোড়দৌড় শিক্ষা করো। তবে তোমার ঘোড়দৌড় শেখার তুলনায় তীরন্দাজী শিক্ষা করা আমার কাছে অধিক প্রিয়। মুসলিম ব্যক্তির সকল ক্রীড়া-কৌতুকই বৃথা। তবে তাঁর ধনুক দ্বারা তীর নিক্ষেপ, তার ঘোড়াকে প্রশিক্ষন দান এবং স্ত্রীর সাথে তাঁর ক্রীড়া-কৌতুক বৃথা নয়। কারন এগুলো উপকারী ও বিধিসম্মত। [২৮১১]
তাহকীক আলবানীঃ “মুসলিম ব্যক্তির সকল ক্রীড়াকৌতুক বৃথা। তবে তাঁর ধনুক দ্বারা তীর নিক্ষেপ, তার ঘোড়াকে প্রশিক্ষন দান এবং স্ত্রীর সাথে তাঁর ক্রীড়াকৌতুক বৃথা নয়”। এই কথা ব্যাতীত হাদীসটি দঈফ। “কারন এগুলো উপকারী ও বিধিসম্মত।“ এই বাক্যটি দুর্বল।
[২৮১১]তিরমিযী ১৬৩৮, বায়হাকী ফিস সুনান ১০/১৪, তাখরীজুল ফিকহুস সায়রাহ ২২৫, যইফ আবু দাউদ ২৩২, সহীহাহ ৩১৫। তাহকীক আলবানীঃ “মুসলিম ব্যক্তির সকল ক্রীড়া-কৌতুকই বৃথা। তবে তার ধনুক দ্বারা তীর নিক্ষেপ, তার ঘোড়াকে প্রশিক্ষণ দান এবং তার স্ত্রীর সাথে তার ক্রীড়া-কৌতুক বৃথা নয়।” এ কথা ব্যাতিত হাদিসটি যইফ। “কারণ এগুলো উপকারী ও বিধিসম্মত।” এই বাক্যটি দুর্বল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৮১২
حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ عَبَسَةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ رَمَى الْعَدُوَّ بِسَهْمٍ فَبَلَغَ سَهْمُهُ الْعَدُوَّ أَصَابَ أَوْ أَخْطَأَ فَيَعْدِلُ رَقَبَةً ” .
আমর বিন আবাসাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি শত্রুবাহিনীর প্রতি একটি তীর নিক্ষেপ করলো, অতঃপর তা শত্রুবাহিনী পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছে লক্ষ্যে আঘাত হানুক বা লক্ষ্যভ্রষ্ঠ হোক, তা একটি গোলাম আযাদ করার সমান। [২৮১২]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৮১২] তিরমিযী ১৬৩৮, বায়হাকী ফিস সুনান ১০/২৭২, বায়হাকী ফিশ শুআব ৪৩৪১, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ২/১২১, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৭১, তাখরীজু ফিকহুস সায়রাহ ২২৫। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী কাসিম বিন আবদুর রহমান সম্পর্কে আল-আজালী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি সিকাহ নয়। ইমাম তিরমিযি তাকে সিকাহ বলেছেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে অপরিচিত। মুফাদদাল বিন গাসসান বলেন, তিনি কুফুরী নয় এমন কওলী বা আমলীগত ফিসক এর সাথে জড়িত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮১৩
حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، أَنْبَأَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي عَلِيٍّ الْهَمْدَانِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ الْجُهَنِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ عَلَى الْمِنْبَرِ ” {وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ} أَلاَ وَإِنَّ الْقُوَّةَ الرَّمْىُ ” ثَلاَثَ مَرَّاتٍ
উকবাহ বিন আমির আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে তিলাওয়াত করতে শুনেছি (অনুবাদ) : “তোমরা দুশমনের বিরুদ্ধে যথাসাধ্য শক্তি সঞ্চয় করো” (সূরা আনফালঃ ৬০)। জেনে রেখো! এই শক্তি হলো তীরন্দাজী। কথাটি তিনি তিনবার বলেন। [২৮১৩]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ
[২৮১৩] মুসলিম ১৯১৭, তিরমিযী ৩০৮৩, আবূ দাউদ ২৫১৪, আহমাদ ১৬৯৭৯, দারেমী ২৪০৪, ইরওয়া ১৫০০, গায়াতুল মারাম ৩৮০, তাখরীজুল ফিকহুস সায়রাহ ২২৪। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮১৪
حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى الْمِصْرِيُّ، أَنْبَأَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ نُعَيْمٍ الرُّعَيْنِيِّ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ نَهِيكٍ، أَنَّهُ سَمِعَ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ الْجُهَنِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ تَعَلَّمَ الرَّمْىَ ثُمَّ تَرَكَهُ فَقَدْ عَصَانِي ” .
উকবাহ বিন আমির আল-জুহানী(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি তীরন্দাজী শিক্ষা করার পর তা ত্যাগ করলো সে আমার নাফরমানী করলো। [২৮১৪]
তাহকীক আলবানীঃ [আরবী] শব্দে সহীহ।
২৮১৪] মুসলিম ১৯১৯, নাসায়ী ৩৫৭৮, আবূ দাউদ ২৫১৩, আহমাদ ১৬৮৪৯, ১৬৮৭০, ১৬৮৮৪, দারেমী ২৪০৫, আত-তালীকুর রাগীব ২/১৭২, রাওদুন নাদীর ১১৪৫। তাহকীক আলবানীঃ “ফালাইসা মিন্না” শব্দে সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. ইবনু লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করেছেন তা দুর্বল। আবু কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। বিশর ইবনুস সারী বলেন, যদি তার সাথে আমার সাক্ষাৎ হত তবে আমি তার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করতাম না। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা) ২. উসমান বিন নুআয়ম আর-রুআয়নী সম্পর্কে ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ইমাম যাহবী তাকে সালিহ বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮৬৭, ১৯/৫০০ নং পৃষ্ঠা) ৩. মুগীরাহ বিন নাহীক সম্পর্কে ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ইমাম যাহাবী বলেন, তার থেকে উসমান ছাড়া অন্য কাউকে হাদিস বর্ণনা করতে দেখিনি। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৪৫, ২৮/৪০৭ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮১৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَنْبَأَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ زِيَادِ بْنِ الْحُصَيْنِ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ مَرَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِنَفَرٍ يَرْمُونَ فَقَالَ “ رَمْيًا بَنِي إِسْمَاعِيلَ فَإِنَّ أَبَاكُمْ كَانَ رَامِيًا ” .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদল লোকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন যারা তীরন্দাজী করছিল। তিনি বলেন, হে ইসমাঈলের বংশধর! তোমরা তীরন্দাজী করো। কেননা তোমাদের পিতা ছিলেন তীরন্দাজ। [২৮১৫]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ
[২৮১৫] আহমাদ ৩৪৩৪, গায়াতুল মারাম ৩৭৯। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮/২০ অধ্যায়ঃ
বড় পতাকা ও ক্ষুদ্র পতাকা
২৮১৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ حَسَّانَ، قَالَ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَائِمًا عَلَى الْمِنْبَرِ وَبِلاَلٌ قَائِمٌ بَيْنَ يَدَيْهِ مُتَقَلِّدٌ سَيْفًا وَإِذَا رَايَةٌ سَوْدَاءُ فَقُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا هَذَا عَمْرُو بْنُ الْعَاصِ قَدِمَ مِنْ غَزَاةٍ .
আল হারিস বিন হাসসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি মদীনায় পৌঁছে দেখলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে আছেন এবং বিলাল (রাঃ) তার গলায় তরবারি ঝুলিয়ে তাঁর সামনে দন্ডায়মান। আরো ছিল একটি কালো পতাকা। আমি বললাম, এই লোক কে? লোকেরা বললো, আমর ইবনুল আস (রাঃ)। তিনি একটি যুদ্ধ থেকে ফিরে এসেছেন। [২৮১৬]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৮১৬]তিরমিযী ৩২৭৩, সহীহাহ ২১০০। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী আসিম বিন আবদুল আযীয বিন আসিম সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। আবু যুরআহ আর-রাযী, ইমাম দারাকুতনী ও আহমাদ বিন শু’আয়ব আন-নাসায়ী তারা সকলে বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ইমাম বুখারী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না তাকে সিকাহ বলেছেন। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩০১৩, ১৩/৪৯৯ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮১৭
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، وَعَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا شَرِيكٌ، عَنْ عَمَّارٍ الدُّهْنِيِّ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ مَكَّةَ يَوْمَ الْفَتْحِ وَلِوَاؤُهُ أَبْيَضُ .
জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের দিন মক্কায় প্রবেশ করেন এবং তাঁর পতাকাটি ছিল সাদা রং-এর। [২৮১৭]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
[২৮১৭] তিরমিযী ১৬৭৯, নাসায়ী ২৮৬৬, আবূ দাউদ ২৫৯২, বায়হাকী ফিস সুনান ৩/১০৪, ৯/৬৯, ইবনু হিব্বান ৪৭৪৩, সহীহ আবু দাউদ ২৩৩৪। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী আম্মার আদ-দুহানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শীয়া মতাবলম্বী। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৭১, ২১/২০৮ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮১৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِسْحَاقَ الْوَاسِطِيُّ النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ حَيَّانَ، سَمِعْتُ أَبَا مِجْلَزٍ، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَايَةَ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَتْ سَوْدَاءَ وَلِوَاؤُهُ أَبْيَضُ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বড় পতাকাটি ছিল কালো রং-এর এবং ক্ষুদ্র পতাকাটি ছিল সাদা রং-এর। [২৮১৮]
তাহকিক আলবানীঃ হাসান।
[২৮১৮] তিরমিযী ১৬৮১, আস-সহীহ ২৩৩৩। তাহকীক আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী ইয়াযীদ বিন হায়্যান সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক সিংমিশ্রন করেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৯৮১, ৩২/১১৩ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১৮/২১ অধ্যায়ঃ
যুদ্ধক্ষেত্রে রেশমী বস্ত্র পরিধান
২৮১৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ حَجَّاجٍ، عَنْ أَبِي عُمَرَ، – مَوْلَى أَسْمَاءَ – عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ، أَنَّهَا أَخْرَجَتْ جُبَّةً مُزَرَّرَةً بِالدِّيبَاجِ فَقَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَلْبَسُ هَذِهِ إِذَا لَقِيَ الْعَدُوَّ .
আসমা’ বিনতু আবূ বাকর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি একটি সোনার বোতামযুক্ত জামা বের করে বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শত্রুবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার সময় এটি পরিধান করতেন।[২৮১৯]
তাহকীক আলবানীঃ দঈফ।
[২৮১৯] আহমাদ ২৬৪০৪, ২৬৪৫৩। তাহকীক আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী হাজ্জাজ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়, অন্যত্র তিনি তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সা’দ তাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শু’আয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৮২০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ عُمَرَ، أَنَّهُ كَانَ يَنْهَى عَنِ الْحَرِيرِ، وَالدِّيبَاجِ، إِلاَّ مَا كَانَ هَكَذَا ثُمَّ أَشَارَ بِإِصْبَعِهِ ثُمَّ الثَّانِيَةِ ثُمَّ الثَّالِثَةِ ثُمَّ الرَّابِعَةِ وَقَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَانَا عَنْهُ .
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রেশমী পোশাক পরিধান করতে নিষেধ করতেন, কিন্তু এতটুকু পরিমাণ হলে (দোষ নেই)। অতঃপর তাঁর আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করলেন, তারপর দ্বিতীয় আঙ্গুল দিয়ে, তারপর তৃতীয় আঙ্গুল দিয়ে, তারপর চতুর্থ আঙ্গুল দিয়ে, অতঃপর বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের তা পরিধান করতে নিষেধ করতেন। [২৮২০]
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ
[২৮২০] সহীহুল বুখারী ৫৮২৮, মুসলিম ২০৬৯, নাসায়ী ৫৩১২, ৫৩১৩, আহমাদ ৯৩, ৩০৩, ৩২৩, ৩৫৮, ৩৬৭। তাহকীক আলবানীঃ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস