১. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ” বলে, তার উপর হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা
৩৯২৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَحَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَإِذَا قَالُوهَا عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّهَا وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি যাবত না তারা বলে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” (আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই)। তারা এটা বললে আমার থেকে তাদের জানমালের নিরাপত্তা লাভ করলো। কিন্তু দ্বীন ইসলামের অধিকারের বিষয়টি স্বতন্ত্র। তাদের চূড়ান্ত হিসাব গ্রহণের ভার আল্লাহর উপর ন্যস্ত। [৩২৫৯]
[৩২৫৯] বুখারী ১৪০০, ২৯৪৬, ৬৯২৪, ৭২৮৫; মুসলিম ২০, ২১/১-৩; তিরমিযী ২৬০৬-৭, নাসায়ী ২৪৪৩, ৩০৯০-৯৩, ৩০৯৫, ৩৯৭০-৭৮; আবূ দাউদ ২৬৪০, আহমাদ ৬৮, ১১৮, ৩৩৭, ২৭৩৮০, ৮৩৩৯, ৮৬৮৭, ৯১৯০
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯২৮
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَإِذَا قَالُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّهَا وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ ” .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” না বলা পর্যন্ত আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি। তারা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বললে আমার থেকে তাদের জান-মালের নিরাপত্তা লাভ করলো। কিন্তু দ্বীন ইসলামের অধিকারের বিষয়টি স্বতন্ত্র। তাদের চূড়ান্ত হিসাব গ্রহণের বিষয়টি আল্লাহর উপর ন্যস্ত। [৩২৬০]
[৩২৬০] মুসলিম ২১, নাসায়ী ৩৯৭৭, আহমাদ ১৩৭৯৭, ১৪৮১৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯২৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَكْرٍ السَّهْمِيُّ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ أَبِي صَغِيرَةَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَالِمٍ، أَنَّ عَمْرَو بْنَ أَوْسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَاهُ أَوْسًا أَخْبَرَهُ قَالَ إِنَّا لَقُعُودٌ عِنْدَ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَهُوَ يَقُصُّ عَلَيْنَا وَيُذَكِّرُنَا إِذْ أَتَاهُ رَجُلٌ فَسَارَّهُ فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” اذْهَبُوا بِهِ فَاقْتُلُوهُ ” . فَلَمَّا وَلَّى الرَّجُلُ دَعَاهُ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ ” هَلْ تَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ” . قَالَ نَعَمْ قَالَ ” اذْهَبُوا فَخَلُّوا سَبِيلَهُ فَإِنَّمَا أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَإِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ حَرُمَ عَلَىَّ دِمَاؤُهُمْ وَأَمْوَالُهُمْ ” .
আওস বিন হুযায়ফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি আমাদেরকে (অতীতের) ঘটনাবলী উল্লেখপূর্বক উপদেশ দিচ্ছিলেন। ইত্যবসরে এক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে তাঁর সাথে একান্তে কিছু বললো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করো। লোকটি ফিরে গেলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, “আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই”? সে বললো, হাঁ। তিনি বলেনঃ যাও, তোমরা তাকে তার পথে ছেড়ে দাও। কারণ লোকেরা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” না বলা পর্যন্ত আমাকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা তাই করলে তাদের জান-মালে হস্তক্ষেপ আমার জন্য হারাম হয়ে গেলো। [৩২৬১]
[৩২৬১] নাসায়ী ৩৯৭৯, ৩৯৮২, ৩৯৮৩, আহমাদ ১৫৭২৭, দারিমী ২৪৪৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৩০
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنِ السُّمَيْطِ بْنِ السُّمَيْرِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ، قَالَ أَتَى نَافِعُ بْنُ الأَزْرَقِ وَأَصْحَابُهُ فَقَالُوا هَلَكْتَ يَا عِمْرَانُ . قَالَ مَا هَلَكْتُ . قَالُوا بَلَى . قَالَ مَا الَّذِي أَهْلَكَنِي قَالُوا قَالَ اللَّهُ {وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ} . قَالَ قَدْ قَاتَلْنَاهُمْ حَتَّى نَفَيْنَاهُمْ فَكَانَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ إِنْ شِئْتُمْ حَدَّثْتُكُمْ حَدِيثًا سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . قَالُوا وَأَنْتَ سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . قَالَ نَعَمْ شَهِدْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ وَقَدْ بَعَثَ جَيْشًا مِنَ الْمُسْلِمِينَ إِلَى الْمُشْرِكِينَ فَلَمَّا لَقُوهُمْ قَاتَلُوهُمْ قِتَالاً شَدِيدًا فَمَنَحُوهُمْ أَكْتَافَهُمْ فَحَمَلَ رَجُلٌ مِنْ لُحْمَتِي عَلَى رَجُلٍ مِنَ الْمُشْرِكِينَ بِالرُّمْحِ فَلَمَّا غَشِيَهُ قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ إِنِّي مُسْلِمٌ فَطَعَنَهُ فَقَتَلَهُ فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْتُ قَالَ ” وَمَا الَّذِي صَنَعْتَ ” . مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ فَأَخْبَرَهُ بِالَّذِي صَنَعَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” فَهَلاَّ شَقَقْتَ عَنْ بَطْنِهِ فَعَلِمْتَ مَا فِي قَلْبِهِ ” . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ شَقَقْتُ بَطْنَهُ أَكُنْتُ أَعْلَمُ مَا فِي قَلْبِهِ قَالَ ” فَلاَ أَنْتَ قَبِلْتَ مَا تَكَلَّمَ بِهِ وَلاَ أَنْتَ تَعْلَمُ مَا فِي قَلْبِهِ ” . قَالَ فَسَكَتَ عَنْهُ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَلَمْ يَلْبَثْ إِلاَّ يَسِيرًا حَتَّى مَاتَ فَدَفَنَّاهُ فَأَصْبَحَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ فَقَالُوا لَعَلَّ عَدُوًّا نَبَشَهُ فَدَفَنَّاهُ ثُمَّ أَمَرْنَا غِلْمَانَنَا يَحْرُسُونَهُ فَأَصْبَحَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ فَقُلْنَا لَعَلَّ الْغِلْمَانَ نَعَسُوا فَدَفَنَّاهُ ثُمَّ حَرَسْنَاهُ بِأَنْفُسِنَا فَأَصْبَحَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ فَأَلْقَيْنَاهُ فِي بَعْضِ تِلْكَ الشِّعَابِ .
ইমরান বিন হুসায়ন (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাফে ইবনুল আযরাক (রাঃ) ও তার সাথীরা (আমার নিকট) এসে বললো, হে ইমরান! তুমি ধ্বংস হয়ে গেছো। তিনি বলেন, আমি ধ্বংস হইনি। তারা বলেন, আল্লাহ বলেছেনঃ “তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে থাকো যতক্ষণ না ফেতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দ্বীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়” (৮:৩৯)। তিনি বলেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে এতটা যুদ্ধ করেছি যে, তাদেরকে নির্বাসিত করেছি। ফলে আল্লাহর দ্বীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তোমরা চাইলে আমি তোমাদের নিকট একটি হাদীস বর্ণনা করতে পারি, যা আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট শুনেছি। তারা বলেন, আপনি কি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তা শুনেছেন? তিনি বলেন, হা, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি একটি সামরিক বাহিনী মুশরিকদের বিরুদ্ধে পাঠালেন। মুসলমানরা তাদের মোকাবিলায় অবতীর্ণ হয়ে ঘোরতর যুদ্ধে লিপ্ত হলো। মুশরিকরা পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করলো। আমার এক বন্ধু যুদ্ধে লিপ্ত হলো। মুশরিকের উপর বর্শা দ্বারা হামলা করলো, তিনি তাকে পাকড়াও করলে সে বলতে লাগলো, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ। নিশ্চয় আমি একজন মুসলিম। তিনি তাকে ভৎসনা করলেন এবং তাকে হত্যা করলেন। অতঃপর তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে একবার বা দু’বার বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। অতঃপর তিনি যা করেছেন তা তার নিকট বর্ণনা করলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেনঃ তুমি তার পেট চিরে দেখলে না কেন? তাহলে তো তুমি তার অন্তরের খবর জানতে পারতে তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তার পেট চিরে ফেললেও তার অন্তরের খবর জানতে পারতাম না। তিনি বলেনঃ তাহলে তুমি তার উচ্চারিত স্বীকারোক্তি কেন কবুল করলে না, অথচ তুমি তার অন্তরের খবর জানতে না? ইমরান (রাঃ) বলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন। অবশেষে লোকটি মারা গেলে আমরা তাকে দাফন করলাম। ভোরে উঠে আমরা দেখলাম যে, তার লাশ কবরের বাইরে যমীনের উপরে পড়ে আছে। তারা বললেন, হয়ত কোন শক্র কবর খুঁড়ে একে বের করে তুলে রেখেছে। অতঃপর আমরা তাকে আবার দাফন করলাম এবং আমাদের যুবকদের তার কবর পাহারা দিতে নির্দেশ দিলাম। আমরা পরদিন ভোরবেলা দেখতে পেলাম যে, তার লাশ কবরের বাইরে যমীনের উপর পড়ে আছে। আমরা বললাম, হয়ত প্রহরীরা তন্দ্রাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। আমরা পুনরায় তাকে দাফন করলাম এবং নিজেরাই প্রহরায় রত হলাম। প্রত্যুষে আমরা দেখলাম, সে কবরের বাইরে যমীনের উপর পড়ে আছে। অবশেষে আমরা তাকে এক গিরিসংকটে নিক্ষেপ করলাম।
উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হয়েছে, অপর সানাদটি হলোঃ
৫/৩৯৩০(১) ইমরান বিন হুসায়ন (রাঃ) তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে এক ক্ষুদ্র সামরিক অভিযানে পাঠান, তাতে এক মুসলমান এক মুশরিকের উপর চড়াও হলো। অতঃপর তিনি পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করেন ..। এ বর্ণনায় আরো আছেঃ যমীন তাকে উৎক্ষিপ্ত করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে খবর দেয়া হলো। তিনি বলেনঃ যমীন তো অবশ্যি তার চেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তিকেও গ্রহণ করে। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তোমাদের দেখাতে চান যে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর মর্যাদা ও মাহাত্ন্য কত বেশী।[৩২৬২]
তাহকীক আলবানীঃ ইমরান এর [আরবী] কথাটি হাসান; যা পরবর্তী হাদীস ৩৯৩১ নং এর মাঝে আসবে। এবং ইমরান এর [আরবী] এ কথাটি ও হাসান যা পূর্ববর্তী হাদীস ৩৯২৯ নং হাদীসে অতিবাহিত হয়েছে।
[৩২৬২] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
২. অধ্যায়ঃ
মুমিন ব্যক্তির জান-মালের নিরাপত্তা
৩৯৩১
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي حِجَّةِ الْوَدَاعِ ” أَلاَ إِنَّ أَحْرَمَ الأَيَّامِ يَوْمُكُمْ هَذَا أَلاَ وَإِنَّ أَحْرَمَ الشُّهُورِ شَهْرُكُمْ هَذَا أَلاَ وَإِنَّ أَحْرَمَ الْبَلَدِ بَلَدُكُمْ هَذَا أَلاَ وَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا أَلاَ هَلْ بَلَّغْتُ ” . قَالُوا نَعَمْ . قَالَ ” اللَّهُمَّ اشْهَدْ ” .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায় হাজে বলেছেনঃ সাবধান! তোমাদের এই দিন সর্বাপেক্ষা সম্মানিত দিন। সাবধান! তোমাদের এই মাস সর্বাপেক্ষা সম্মানিত মাস। সাবধান! তোমাদের এই শহর সর্বাপেক্ষা সম্মানিত শহর। সাবধান তোমাদের জীবন, তোমাদের ধনসম্পদ ও তোমাদের উজ্জত-আবরু তোমাদের পরস্পরের জন্য পবিত্র, যেমন এই দিন, এই মাস ও এই শহর। শোন! আমি কি (আল্লাহর পয়গাম) পৌছে দিয়েছি? সমবেত জনমণ্ডলী বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাকো। [৩২৬৩]
[৩২৬৩] আহমাদ ১১৩৫৩ ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৩২
حَدَّثَنَا أَبُو الْقَاسِمِ بْنُ أَبِي ضَمْرَةَ، نَصْرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ سُلَيْمَانَ الْحِمْصِيُّ حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي قَيْسٍ النَّصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَطُوفُ بِالْكَعْبَةِ وَيَقُولُ “ مَا أَطْيَبَكِ وَأَطْيَبَ رِيحَكِ مَا أَعْظَمَكِ وَأَعْظَمَ حُرْمَتَكِ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَحُرْمَةُ الْمُؤْمِنِ أَعْظَمُ عِنْدَ اللَّهِ حُرْمَةً مِنْكِ مَالِهِ وَدَمِهِ وَأَنْ نَظُنَّ بِهِ إِلاَّ خَيْرًا ” .
আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে কাবা ঘর তাওয়াফ করতে দেখলাম এবং তিনি বলছিলেনঃ কত উত্তম তুমি হে কাবা! আকর্ষণীয় তোমার খোশবু, কত উচ্চ মর্যাদা তোমার (হে কাবা)! কত মহান সম্মান তোমার। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! আল্লাহর নিকট মুমিন ব্যক্তির জান-মাল ও ইজ্জতের মর্যাদা তোমার চেয়ে অনেক বেশী। আমরা মুমিন ব্যক্তি সম্পর্কে সুধারণাই পোষণ করি। [৩২৬৪]
[৩২৬৪] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। গায়াতুল মারাম ৪৩৫, দঈফাহ ৫৩০৯, দঈফ আল-জামি‘ ৫০০৬।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৯৩৩
حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نَافِعٍ، وَيُونُسُ بْنُ يَحْيَى، جَمِيعًا عَنْ دَاوُدَ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَامِرِ بْنِ كُرَيْزٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ ”
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-বলেনঃ প্রত্যেক মুসলামনের জান-মাল ও মান-সম্মানে হস্তক্ষেপ করা অপর মুসলামনের জন্য হারাম। [৩২৬৫]
৩২৬৫. মুসলিম ২৫৬৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৩৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ السَّرْحِ الْمِصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ أَبِي هَانِئٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَالِكٍ الْجَنْبِيِّ، أَنَّ فَضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ، حَدَّثَهُ أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ الْمُؤْمِنُ مَنْ أَمِنَهُ النَّاسُ عَلَى أَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ الْخَطَايَا وَالذُّنُوبَ ” .
ফাদালাহ বিন উবায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মুমিন সেই ব্যক্তি যার হস্তক্ষেপ থেকে মানুষের জান-মাল নিরাপদ থাকে এবং মুহাজির সেই ব্যক্তি, যে মন্দ কাজ ও গুনাহ ত্যাগ করেছে। [৩২৬৬]
[৩২৬৬] আহমাদ ২৩৪৪৫। সহীহাহ ৫৪৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩. অধ্যায়ঃ
লুট-তরাজ ও ছিনতাই নিষিদ্ধ
৩৯৩৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ مَنِ انْتَهَبَ نُهْبَةً مَشْهُورَةً فَلَيْسَ مِنَّا ” .
জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে লুটতরাজ ও ছিনতাই করলো সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। [৩২৬৭]
[৩২৬৭] তিরমিযী ১৪৪৮, আবূ দাউদ ৪৩৯১, ৪৩৯২।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৯৩৬
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ حَمَّادٍ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ لاَ يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِينَ يَشْرَبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَسْرِقُ السَّارِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ أَبْصَارَهُمْ حِينَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যেনাকারী যখন যেনায় লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে না। মদ্যপ যখন মদ পানে লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে না। চোর যখন চৌর্যবৃত্তিতে লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে না। আর লুটতরাজ ও ছিনতাইকারী যখন লুটতরাজ ও ছিনতাই করে এবং লোকজন তার দিকে চোখ তুলে তাকায়, তখন সে মুমিন থাকে না। [৩২৬৮]
[৩২৬৮] সহীহুল বুখারী ২৪৭৫, ৫৫৭৮, ৬৭৭২, ৬৮১০, মুসলিম ৫৭, তিরমিযী ২৬২৫, নাসায়ী ৪৮৭০, ৪৮৭১, ৪৮৭২, ৫৬৫৯, ৫৬৬০, আবূ দাউদ ৪৬৮৯, আহমাদ ২৭৪১৯, ৮৬৮৭, ৮৭৮১, ৯৮৫৯,
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৩৭
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ مَنِ انْتَهَبَ نُهْبَةً فَلَيْسَ مِنَّا ” .
ইমরান ইবনুল হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি ছিনতাই ও লুটতরাজ করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। [৩২৬৯]
[৩২৬৯] তিরমিযী ১১২৩। মিশকাত ২৯৪৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৩৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ ثَعْلَبَةَ بْنِ الْحَكَمِ، قَالَ أَصَبْنَا غَنَمًا لِلْعَدُوِّ فَانْتَهَبْنَاهَا فَنَصَبْنَا قُدُورَنَا فَمَرَّ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِالْقُدُورِ فَأَمَرَ بِهَا فَأُكْفِئَتْ ثُمَّ قَالَ “ إِنَّ النُّهْبَةَ لاَ تَحِلُّ ” .
সা‘লাবাহ ইবনুল হাকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা শক্রপক্ষের মেষপালের নাগাল পেয়ে তা লুট করলাম। অতঃপর আমরা সেগুলোর গোশত পাতিলে করে রান্না করছিলাম। এমতাবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাতিলগুলো অতিক্রমকালে (সেগুলো উল্টে) ফেলে দেয়ার নির্দেশ দিলে তা উল্টে ফেলে দেয়া হলো। অতঃপর তিনি বলেনঃ লুটতরাজ করা হালাল নয়। [৩২৭০]
[৩২৭০] হাদীসটি ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সহীহাহ ১৬৭৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪. অধ্যায়ঃ
মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী এবং তাকে হত্যা করা কুফরী
৩৯৩৯
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ ” .
আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী এবং তাকে হত্যা করা কুফরী। [৩২৭১]
[৩২৭১] সহীহুল বুখারী ৪৮, মুসলিম ৬৪, তিরমিযী ১৯৮৩, ২৬৩৪, ২৬৩৫, নাসায়ী ৪১০৮, ৪১০৯, ৪১১০, ৪১১১, ৪১১২, ৪১১৩, আহমাদ ৩৬৩৯, ৩৮৯৩, ৩৯৪৭, ৪১১৫, ৪১৬৭, ৪২৫০, ৪৩৩২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৪০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْحَسَنِ الأَسَدِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو هِلاَلٍ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী এবং তাকে হত্যা করা কুফরী। [৩২৭২]
[৩২৭২] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৩৯৪১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شَرِيكٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ سَعْدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ ” .
সা’দ (বিন আবূ ওয়াক্কাস) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী এবং তাকে হত্যা করা কুফরী। [৩২৭৩]
[৩২৭৩] আহমাদ ১৫২২, ১৫৪০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫. অধ্যায়ঃ
আমার পরে তোমরা পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে কুফরীতে ফিরে যেও না
৩৯৪২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُدْرِكٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ بْنَ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، يُحَدِّثُ عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ فِي حِجَّةِ الْوَدَاعِ ” اسْتَنْصِتِ النَّاسَ ” . فَقَالَ ” لاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ ” .
জাবীর বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- বিদায় হাজ্জে লোকেদেরকে নীরব নিস্তব্ধ করিয়ে বলেনঃ আমার পরে তোমরা পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে কুফরীতে ফিরে যেও না। [৩২৭৪]
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৪৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، أَخْبَرَنِي عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ وَيْحَكُمْ – أَوْ وَيْلَكُمْ – لاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ ” .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-বলেনঃ তোমাদের জন্য আপসোস! তোমাদের জন্য দুর্ভাগ্য! আমার পরে তোমরা পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে কুফরীতে ফিরে যেও না। [৩২৭৫]
[৩২৭৫] সহীহুল বুখারী ৬১৬৬, ৬৮৬৮, ৭০৭৭, মুসলিম ৬৬, নাসায়ী ৪১২৫, ৪১২৬, ৪১২৭, আবূ দাউদ ৪৬৮৬, আহমাদ ৫৫৫৩, ৫৫৭২, ৫৭৭৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৪৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي وَمُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ قَيْسٍ، عَنِ الصُّنَابِحِ الأَحْمَسِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ أَلاَ إِنِّي فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ وَإِنِّي مُكَاثِرٌ بِكُمُ الأُمَمَ فَلاَ تَقْتَتِلُنَّ بَعْدِي ” .
আস সুনাবিহ আল-আহমাসী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সাবধান! আমি হাওযে কাওসারে তোমাদের আগেই উপস্থিত থকেবো এবং আমি অন্যান্য উম্মাতদের উপর তোমাদের সংখ্যাধিক্যের গৌরব প্রকাশ করবো। সুতরাং তোমরা আমার পরে পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হয়ো না। [৩২৭৬]
[৩২৭৬] আহমাদ ১৮৫৯০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬. অধ্যায়ঃ
মুসলমানগণ মহামহিমান্বিত আল্লাহর যিম্মায় থাকে
৩৯৪৫
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ بْنِ سَعِيدِ بْنِ كَثِيرِ بْنِ دِينَارٍ الْحِمْصِيُّ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ خَالِدٍ الْوَهْبِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي سَلَمَةَ الْمَاجِشُونُ، عَنْ عَبْدِ الْوَاحِدِ بْنِ أَبِي عَوْنٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ حَابِسٍ الْيَمَانِيِّ، عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ مَنْ صَلَّى الصُّبْحَ فَهُوَ فِي ذِمَّةِ اللَّهِ فَلاَ تُخْفِرُوا اللَّهَ فِي عَهْدِهِ فَمَنْ قَتَلَهُ طَلَبَهُ اللَّهُ حَتَّى يَكُبَّهُ فِي النَّارِ عَلَى وَجْهِهِ ” .
আবূ বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের নামায পড়লো, সে আল্লাহর যিম্মায় থাকলো। অতএব তোমরা আল্লাহর যিম্মাদারিকে নষ্ট করো না। যে ব্যক্তি তাকে হত্যা করবে, আল্লাহ তাকে তলব করে এনে উল্টো মুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। [৩২৭৭]
[৩২৭৭] হাদীসটি ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। আত তা‘লীকুর রাগীব ১/১৫৫, ১৬৩, সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ৪৬১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৪৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا أَشْعَثُ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ مَنْ صَلَّى الصُّبْحَ فَهُوَ فِي ذِمَّةِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ” .
সামুরাহ বিন জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ পড়লো সে মহান আল্লাহর যিম্মায় রইলো। [৩২৭৮]
[৩২৭৮] আহমাদ ১৯৬০৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৪৭
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو الْمُهَزِّمِ، يَزِيدُ بْنُ سُفْيَانَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ الْمُؤْمِنُ أَكْرَمُ عَلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ بَعْضِ مَلاَئِكَتِهِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুমিন ব্যক্তি মহান আল্লাহর নিকট তাঁর কোন কোন ফেরেশতার চেয়েও অধিক মর্যাদাবান। [৩২৭৯]
[৩২৭৯] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত 5733।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৭. অধ্যায়ঃ
গোত্রবাদ
৩৯৪৮
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ الصَّوَّافُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ زِيَادِ بْنِ رِيَاحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ مَنْ قَاتَلَ تَحْتَ رَايَةٍ عِمِّيَّةٍ يَدْعُو إِلَى عَصَبِيَّةٍ أَوْ يَغْضَبُ لِعَصَبِيَّةٍ فَقِتْلَتُهُ جَاهِلِيَّةٌ ” .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লোকেদেরকে গোত্রবাদের দিকে আহবান করে অথবা গোত্রবাদে উন্মত্ত হয়ে ভ্রষ্টতার পতাকাতলে যুদ্ধ করে নিহত হলে সে জাহিলিয়াতের মৃত্যুবরণ করলো। [৩২৮০]
[৩২৮০] মুসলিম ১৮৪৮, নাসায়ী ৪১১৪, আহমাদ ৭৮৮৪, ৮০০০, ৯৯৬০। সহীহাহ ৪৩৩, ৯৮৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৪৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الرَّبِيعِ الْيُحْمِدِيُّ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ كَثِيرٍ الشَّامِيِّ، عَنِ امْرَأَةٍ، مِنْهُمْ يُقَالَ لَهَا فُسَيْلَةُ قَالَتْ سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ، سَأَلْتُ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمِنَ الْعَصَبِيَّةِ أَنْ يُحِبَّ الرَّجُلُ قَوْمَهُ قَالَ “ لاَ وَلَكِنْ مِنَ الْعَصَبِيَّةِ أَنْ يُعِينَ الرَّجُلُ قَوْمَهُ عَلَى الظُّلْمِ ” .
ওয়াসিলাহ ইবনুল আসকা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ফুসায়লাহ থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে (ওয়াসিলাহ ইবনুল আসকা`) বলতে শুনেছি, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর বাসূল! নিজ গোত্রের প্রতি ভালোবাসা কি গোত্রেবাদের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বলেনঃ না। তবে নিজ গোত্রকে অন্যের উপর অত্যাচারে সহায়তা করা গোত্রবাদের অন্তর্ভুক্ত। [৩২৮১]
[৩২৮১] আবূ দাউদ 5119। গায়াতুল মারাম 305।
উক্ত হাদীসের রাবী আব্বাদ বিন কাসীর আশ-শামী সম্পর্কে আবূ হাতিম আর রাযী বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তার হাদীস বর্ণনায় আমার নিকট কোন সমস্যা নেই। আবূ যুরআহ আর রাযী বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং 3091, 14/150 নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৮. অধ্যায়ঃ
সর্ববৃহৎ দল
৩৯৫০
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ عُثْمَانَ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا مُعَانُ بْنُ رِفَاعَةَ السَّلاَمِيُّ، حَدَّثَنِي أَبُو خَلَفٍ الأَعْمَى، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ “ إِنَّ أُمَّتِي لَنْ تَجْتَمِعَ عَلَى ضَلاَلَةٍ فَإِذَا رَأَيْتُمُ اخْتِلاَفًا فَعَلَيْكُمْ بِالسَّوَادِ الأَعْظَمِ ” .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ আমার উম্মাত পথভ্রষ্টতার উপর ঐক্যবদ্ধ হবে না। তোমরা মতভেদ দেখতে পেলে অবশ্যই সর্ববৃহৎ দলের সাথে থাকবে। [৩২৮২]
তাহকীক আলবানীঃ প্রথম বাক্যটি ব্যতীত খুবই দুর্বল কারণ প্রথম বাক্যটি সহীহ।
[৩২৮২] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত ১৭৩-১৭৪, দঈফাহ ২৮৯৬, সহীহ আল-জামি‘ ১৮৪৮
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
৯. অধ্যায়ঃ
যেসব বিপর্যয় সংঘটিত হবে
৩৯৫১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ رَجَاءٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَدَّادِ بْنِ الْهَادِ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَوْمًا صَلاَةً فَأَطَالَ فِيهَا فَلَمَّا انْصَرَفَ قُلْنَا – أَوْ قَالُوا – يَا رَسُولَ اللَّهِ أَطَلْتَ الْيَوْمَ الصَّلاَةَ قَالَ “ إِنِّي صَلَّيْتُ صَلاَةَ رَغْبَةٍ وَرَهْبَةٍ سَأَلْتُ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لأُمَّتِي ثَلاَثًا فَأَعْطَانِي اثْنَتَيْنِ وَرَدَّ عَلَىَّ وَاحِدَةً سَأَلْتُهُ أَنْ لاَ يُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ فَأَعْطَانِيهَا وَسَأَلْتُهُ أَنْ لاَ يُهْلِكَهُمْ غَرَقًا فَأَعْطَانِيهَا وَسَأَلْتُهُ أَنْ لاَ يَجْعَلَ بَأْسَهُمْ بَيْنَهُمْ فَرَدَّهَا عَلَىَّ ” .
মুআয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত আদায় করলেন। তিনি অবসর হলে আমরা বললাম, বা তারা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আজ আপনি নামায দীর্ঘায়িত করেছেন। তিনি বলেনঃ আমি আশাব্যঞ্জক ও ভীতিজনক নামায পড়েছি। আমি মহামহিমান্বিত আল্লাহর নিকট আমার উম্মাতের জন্য তিনটি জিনিস প্রার্থনা করেছি। তিনি আমাকে দু’টি দান করেছেন এবং একটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমি তাঁর নিকট প্রার্থনা করলাম যে, তাদের ব্যতীত তাদের শত্রুপক্ষ যেন আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে। তিনি আমাকে এটা দান করলেন। আমি তাঁর নিকট আরো প্রার্থনা করলাম যে, আমার গোটা উম্মাতকে যেন পানিতে ডুবিয়ে মারা না হয়। তিনি এটাও আমাকে দান করেছেন। আমি তাঁর নিকট আরো প্রার্থনা করলাম যে, আমার উম্মাত যেন পরস্পর যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে। তিনি আমার এ প্রার্থনা আমাকে ফেরত দিলেন। [৩২৮৩]
[৩২৮৩] আহমাদ ২১৫৭৭, ২১৬০৩, ২১৬২০। সহীহাহ ১৭২৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫২
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ شَابُورَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّهُ حَدَّثَهُمْ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ الْجَرْمِيِّ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ الرَّحَبِيِّ، عَنْ ثَوْبَانَ، مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ زُوِيَتْ لِيَ الأَرْضُ حَتَّى رَأَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا وَأُعْطِيتُ الْكَنْزَيْنِ الأَصْفَرَ – أَوِ الأَحْمَرَ – وَالأَبْيَضَ – يَعْنِي الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ – وَقِيلَ لِي إِنَّ مُلْكَكَ إِلَى حَيْثُ زُوِيَ لَكَ وَإِنِّي سَأَلْتُ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ ثَلاَثًا أَنْ لاَ يُسَلِّطَ عَلَى أُمَّتِي جُوعًا فَيُهْلِكَهُمْ بِهِ عَامَّةً وَأَنْ لاَ يَلْبِسَهُمْ شِيَعًا وَيُذِيقَ بَعْضَهُمْ بَأْسَ بَعْضٍ وَإِنَّهُ قِيلَ لِي إِذَا قَضَيْتُ قَضَاءً فَلاَ مَرَدَّ لَهُ وَإِنِّي لَنْ أُسَلِّطَ عَلَى أُمَّتِكَ جُوعًا فَيُهْلِكَهُمْ فِيهِ وَلَنْ أَجْمَعَ عَلَيْهِمْ مَنْ بَيْنَ أَقْطَارِهَا حَتَّى يُفْنِيَ بَعْضُهُمْ بَعْضًا وَيَقْتُلَ بَعْضُهُمْ بَعْضًا . وَإِذَا وُضِعَ السَّيْفُ فِي أُمَّتِي فَلَنْ يُرْفَعَ عَنْهُمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَإِنَّ مِمَّا أَتَخَوَّفُ عَلَى أُمَّتِي أَئِمَّةً مُضِلِّينَ وَسَتَعْبُدُ قَبَائِلُ مِنْ أُمَّتِي الأَوْثَانَ وَسَتَلْحَقُ قَبَائِلُ مِنْ أُمَّتِي بِالْمُشْرِكِيِنَ وَإِنَّ بَيْنَ يَدَىِ السَّاعَةِ دَجَّالِينَ كَذَّابِينَ قَرِيبًا مِنْ ثَلاَثِينَ كُلُّهُمْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ وَلَنْ تَزَالَ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي عَلَى الْحَقِّ مَنْصُورِينَ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ” . قَالَ أَبُو الْحَسَنِ لَمَّا فَرَغَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ مِنْ هَذَا الْحَدِيثِ قَالَ مَا أَهْوَلَهُ .
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মুক্তদাস সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার জন্য পৃথিবীকে গুটিয়ে দেয়া হলো। ফলে আমি তার পূর্ব-পশ্চিম সবদিক দেখতে পেলাম। আমাকে হরিদ্রাভ বা লাল এবং সাদা বর্ণের দু’টি খনিজ ভাণ্ডার অর্থাৎ সোনা-রূপার ভাণ্ডার দেয়া হয়েছে। আমাকে বলা হলো, পৃথিবীর যতখানি তোমার জন্য গুটানো হয়েছিল, তোমার রাজত্ব সেই সীমা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। অতঃপর আমি মহান আল্লাহর নিকট তিনটি জিনিস প্রার্থনা করলামঃ আমার উম্মাত যেন ব্যাপকভাবে দুর্ভিক্ষের শিকার হয়ে তার দ্বারা ধ্বংস না হয়। তাদেরকে দলে উপদলে বিচ্ছিন্ন করে তাদের এক দলকে অপর দলের সশস্ত্র সংঘর্ষের স্বাদ আস্বাদন না করানোর আবেদন করলাম। আমাকে বলা হলো, “আমি কোন ফয়সালা করলে তা মোটেও পরিবর্তিত হওয়ার নয়। তবে আমি তোমার উম্মাতকে দুর্ভিক্ষপীড়িত করে তাদের ধ্বংস করবো না এবং তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সকল বিরোধী শক্তিকে যুগপৎ একত্র করবো না, যতক্ষণ না তারা পরস্পরকে ধ্বংস করে এবং একে অপরকে হত্যা করে”। আমার উম্মাতের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হলে কিয়ামত পর্যন্ত আর অস্ত্রবিরতি হবে না। আমি আমার উম্মাতের ব্যাপারে অধিক ভয় করছি পথভ্রষ্ট নেতৃবৃন্দের। অচিরেই আমার উম্মাতের কোন কোন গোত্র বা সম্প্রদায় প্রতিমা পূজায় লিপ্ত হবে এবং আমার উম্মাতের কতক গোত্র মুশরিকদের সাথে যোগ দিবে। অচিরেই কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে ত্রিশজন মিথ্যাবাদী দাজ্জালের আবির্ভাব হবে। তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নবী দাবি করবে। আমার উম্মাতের একটি দল সর্বদা সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে, মহান আল্লাহর চূড়ান্ত নির্দেশ (কিয়ামত) না আসা পর্যন্ত। তাদের বিরুদ্ধবাদীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আবূ হাসান (রাঃ) বলেন, অতঃপর আবূ আবদুল্লাহ (রাঃ) এ হাদীস বর্ণনা শেষে বললেন, কতই না ভয়াবহ এ হাদীস। [৩২৮৪]
[৩২৮৪] মুসলিম ৩৫৪৪, ৫১৪৪, তিরমিযী ২১৭৬, ২২২৯, আবূ দাঊদ ৪২৫২, আহমাদ ২১৮৮৮, ২১৮৯৭, ২১৯৪৬, দারিমী ২০৯। রাওদুন নাদীর ৬১, ১১৭০, সহীহাহ ৪/২৫২, ১৯৫৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫৩
دَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ زَيْنَبَ ابْنَةِ أُمِّ سَلَمَةَ، عَنْ حَبِيبَةَ، عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ، عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ، أَنَّهَا قَالَتِ اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مِنْ نَوْمِهِ وَهُوَ مُحْمَرٌّ وَجْهُهُ وَهُوَ يَقُولُ ” لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَيْلٌ لِلْعَرَبِ مِنْ شَرٍّ قَدِ اقْتَرَبَ فُتِحَ الْيَوْمَ مِنْ رَدْمِ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ ” . وَعَقَدَ بِيَدَيْهِ عَشَرَةً . قَالَتْ زَيْنَبُ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَهْلِكُ وَفِينَا الصَّالِحُونَ قَالَ ” إِذَا كَثُرَ الْخَبَثُ ” .
যায়নাব বিনতু জাহশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রক্তিমাভ মুখমণ্ডল নিয়ে ঘুম থেকে জাগ্রত হলেন এবং তিনি বলছিলেনঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই), ঘনিয়ে আশা দুর্যোগে আরবের দুর্ভাগ্য। ইয়াজূজ-মাজূজের প্রাচীর এতোটুকু ফাঁক হয়ে গেছে। তিনি তাঁর হাতের আঙ্গুল দিয়ে দশ সংখ্যার বৃত্ত করে দেখান। যায়নাব (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে নেককার লোক থাকা অবস্থায় কি আমরা ধ্বংস হবো? তিনি বলেনঃ (হাঁ) যখন পাপাচারের বিস্তার ঘটবে। [৩২৮৫]
[৩২৮৫] সহীহুল বূখারী ৩৩৪৬, মুসলিম ২২৮০, তিরমিযী ২১৮৭, আহমাদ ২৬৮৬৭, ২৬৮৭০। সহীহাহ ৯৮৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫৪
حَدَّثَنَا رَاشِدُ بْنُ سَعِيدٍ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ سُلَيْمَانَ بْنِ أَبِي السَّائِبِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ الْقَاسِمِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ سَتَكُونُ فِتَنٌ يُصْبِحُ الرَّجُلُ فِيهَا مُؤْمِنًا وَيُمْسِي كَافِرًا إِلاَّ مَنْ أَحْيَاهُ اللَّهُ بِالْعِلْمِ ” .
আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অচিরেই বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়বে যখন সকাল বেলা মানুষ মুমিন থাকবে, বিকেল বেলা কাফের হয়ে যাবে। তবে আল্লাহ যাকে দ্বীনের জ্ঞানের বদৌলতে জীবিত রাখবেন তার কথা স্বতন্ত্র। [৩২৮৬]
তাহকীক আলবানীঃ খুবই দুর্বল, তবে (আরবী) শব্দ ব্যতীত হাদীসটি সহীহ যা ৩৯৬১ নং হাদীসের মাঝে আসবে।
[৩২৮৬] দারিমী 338। দঈফাহ 3696।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
৩৯৫৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَأَبِي، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ عُمَرَ فَقَالَ أَيُّكُمْ يَحْفَظُ حَدِيثَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي الْفِتْنَةِ قَالَ حُذَيْفَةُ فَقُلْتُ أَنَا . قَالَ إِنَّكَ لَجَرِيءٌ قَالَ كَيْفَ قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ “ فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَوَلَدِهِ وَجَارِهِ تُكَفِّرُهَا الصَّلاَةُ وَالصِّيَامُ وَالصَّدَقَةُ وَالأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْىُ عَنِ الْمُنْكَرِ ” . فَقَالَ عُمَرُ لَيْسَ هَذَا أُرِيدُ إِنَّمَا أُرِيدُ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ الْبَحْرِ . فَقَالَ مَالَكَ وَلَهَا يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ إِنَّ بَيْنَكَ وَبَيْنَهَا بَابًا مُغْلَقًا . قَالَ فَيُكْسَرُ الْبَابُ أَوْ يُفْتَحُ قَالَ لاَ بَلْ يُكْسَرُ . قَالَ ذَاكَ أَجْدَرُ أَنْ لاَ يُغْلَقَ . قُلْنَا لِحُذَيْفَةَ أَكَانَ عُمَرُ يَعْلَمُ مَنِ الْبَابُ قَالَ نَعَمْ كَمَا يَعْلَمُ أَنَّ دُونَ غَدٍ اللَّيْلَةَ إِنِّي حَدَّثْتُهُ حَدِيثًا لَيْسَ بِالأَغَالِيطِ . فَهِبْنَا أَنْ نَسْأَلَهُ مَنِ الْبَابُ فَقُلْنَا لِمَسْرُوقٍ سَلْهُ فَسَأَلَهُ فَقَالَ عُمَرُ .
হুযায়ফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা উমার (রাঃ)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিপর্যয় সম্পর্কে যেসব কথা বলে গেছেন, তোমাদের মধ্যে কে সেগুলো অধিক স্মরণ রাখতে পেরেছে? হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, আমি। উমার (রাঃ) বলেন, তুমি তো অবশ্যই বাহাদুর ছিলে। তিনি আরও বলেন, তা কিরূপ? তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ কোন ব্যক্তির পরিবার-পরিজনে, সন্তান ও প্রতিবেশীর ক্ষেত্রে যে বিপদ অর্থাৎ ত্রুটিবিচ্যুতি হয়, এগুলোর কাফফারা হলো নামায, রোযা, দান-খয়রাত, ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে বাধা প্রদান। উমার (রাঃ) বলেন, আমি এ ফিতনা সম্পর্কে জানতে চাইনি। আমি সেই ফিতনা সম্পর্কে জানতে চাই যা সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় মাথা তুলে আসবে। হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! এই ফিতনা ও আপনার মধ্যে কী সম্পর্ক? আপনার ও সেই ফিতনার মাঝখানে একটি বন্ধ দরজা আছে। উমার (রাঃ) বলেন, সে দরজাটি কি ভাঙ্গা হবে, না খুলে দেয়া হবে? হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, না, বরং তা ভাঙ্গা হবে। উমার (রাঃ) বলেন, অতঃপর তা তো আর বন্ধ হওয়ার নয়। শাকীক (রাঃ) বলেন, আমরা হুযায়ফা (রাঃ)কে বললাম, উমার (রাঃ) কি সেই দরজা সম্পর্কে জানতেন? তিনি বলেন, হাঁ, এতটা জানতেন যেমনিভাবে আগামী কালকের দিন গত হওয়ার পর রাত আসা সম্পর্কে জানতেন। আমি তার নিকট একটি হাদীস বর্ণনা করেছি, যা ছিল নির্ভূল। অতঃপর আমরা হুযায়ফা (রাঃ) কে সেই দরজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে ভয় পাচ্ছিলাম। আমরা মাসরূক (রাঃ) কে বললাম, আপনি তাকে জিজ্ঞেস করুন। তিনি হুযায়ফা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সেই দরজাটি ছিল উমার (রাঃ)। [৩২৮৭]
[৩২৮৭] সহীহুল বূখারী ৫২৫, মুসলিম ১৪৪, তিরমিযী ২২৫৮, আহমাদ ২২৭৬৯, ২২৯০৩, ২২৯৩০। তাখরীজু ফিকহুস সায়রাহ ৬৪৩।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫৬
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ الْمُحَارِبِيُّ، وَوَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ رَبِّ الْكَعْبَةِ، قَالَ انْتَهَيْتُ إِلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ وَهُوَ جَالِسٌ فِي ظِلِّ الْكَعْبَةِ وَالنَّاسُ مُجْتَمِعُونَ عَلَيْهِ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ بَيْنَا نَحْنُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي سَفَرٍ إِذْ نَزَلَ مَنْزِلاً فَمِنَّا مَنْ يَضْرِبُ خِبَاءَهُ وَمِنَّا مَنْ يَنْتَضِلُ وَمِنَّا مَنْ هُوَ فِي جَشَرِهِ إِذْ نَادَى مُنَادِيهِ الصَّلاَةُ جَامِعَةٌ فَاجْتَمَعْنَا فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَخَطَبَنَا فَقَالَ “ إِنَّهُ لَمْ يَكُنْ نَبِيٌّ قَبْلِي إِلاَّ كَانَ حَقًّا عَلَيْهِ أَنْ يَدُلَّ أُمَّتَهُ عَلَى مَا يَعْلَمُهُ خَيْرًا لَهُمْ وَيُنْذِرَهُمْ مَا يَعْلَمُهُ شَرًّا لَهُمْ وَإِنَّ أُمَّتَكُمْ هَذِهِ جُعِلَتْ عَافِيَتُهَا فِي أَوَّلِهَا وَإِنَّ آخِرَهُمْ يُصِيبُهُمْ بَلاَءٌ وَأُمُورٌ تُنْكِرُونَهَا ثُمَّ تَجِيءُ فِتَنٌ يُرَقِّقُ بَعْضُهَا بَعْضًا فَيَقُولُ الْمُؤْمِنُ هَذِهِ مُهْلِكَتِي ثُمَّ تَنْكَشِفُ ثُمَّ تَجِيءُ فِتْنَةٌ فَيَقُولُ الْمُؤْمِنُ هَذِهِ مُهْلِكَتِي . ثُمَّ تَنْكَشِفُ فَمَنْ سَرَّهُ أَنْ يُزَحْزَحَ عَنِ النَّارِ وَيُدْخَلَ الْجَنَّةَ فَلْتُدْرِكْهُ مَوْتَتُهُ وَهُوَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَلْيَأْتِ إِلَى النَّاسِ الَّذِي يُحِبُّ أَنْ يَأْتُوا إِلَيْهِ وَمَنْ بَايَعَ إِمَامًا فَأَعْطَاهُ صَفْقَةَ يَمِينِهِ وَثَمَرَةَ قَلْبِهِ فَلْيُطِعْهُ مَا اسْتَطَاعَ فَإِنْ جَاءَ آخَرُ يُنَازِعُهُ فَاضْرِبُوا عُنُقَ الآخَرِ ” . قَالَ فَأَدْخَلْتُ رَأْسِي مِنْ بَيْنِ النَّاسِ فَقُلْتُ أَنْشُدُكَ اللَّهَ أَنْتَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ فَأَشَارَ بِيَدِهِ إِلَى أُذُنَيْهِ فَقَالَ سَمِعَتْهُ أُذُنَاىَ وَوَعَاهُ قَلْبِي .
আবদুর রহমান বিন আবদে রব্বিল কা‘বাহ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রাঃ)-এর নিকট পৌঁছে দেখলাম, তিনি কাবা ঘরের ছায়ায় উপবিষ্ট এবং তার চারপাশে জনতার ভীড়। আমি তাকে বলতে শুনলাম, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সফরে ছিলাম। তিনি এক স্থানে যাত্রাবিরতি করলেন। আমাদের কেউ তাঁবু টানাচ্ছিলাম, কেউ তীর-ধনুক ঠিক করছিলো এবং কেউ পশুপাল চরাতে গেলো। এই অবস্থায় তাঁর মুয়াজ্জিন সলাতের জন্য সমবেত হতে ডাক দিলেন। আমরা সমবেত হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাষণ দিতে দাঁড়িয়ে আমাদের উদ্দেশ্যে বলেনঃ আমার পূর্বে যে নবীই অতিক্রান্ত হয়েছেন, তিনিই তাঁর উম্মাতের জন্য কল্যাণকর বিষয় বলে দিয়েছেন এবং তাদের জন্য ক্ষতিকর বিষয়ে লিপ্ত হতে তাদের নিষেধ করেছেন। আর তোমাদের এই উম্মাতের প্রথম পর্যায়ে রয়েছে নিরাপত্তা এবং শেষ পর্যায়ে বালা-মুসীবত আসতে থাকবে এবং তোমাদের জ্ঞাত অন্যায় কার্যকলাপের প্রসার ঘটবে। তারপর এমনভাবে বিপদ আসতে থাকবে যে, একটি অপরটির (পরেরটির) চেয়ে লঘুতর মনে হবে। মুমিন ব্যক্তি বলতে থাকবে, এই বিপদে আমার ধ্বংস অনিবার্য। অতঃপর সে বিপদ কেটে যাবে এবং আরেকটি বিপদ এসে পতিত হবে। তখন মুমিন ব্যাক্তি বলবে, হায়! এ বিপদে আমার ধ্বংস অনিবার্য। অতঃপর সেই বিপদও দূরীভূত হবে। অতএব যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে নাজাত পেয়ে এবং জান্নাতে প্রবেশ লাভ করে আনন্দিত হতে চায় সে যেন আল্লাহর প্রতি ও আখেরাত দিবসের প্রতি ঈমানদার অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে এবং লোকেদের সাথে এমন ব্যবহার করে, যেমনটি সে নিজের জন্য কামনা করে। যে ব্যক্তি ইমামের নিকট আনুগত্যের বায়আত করলো এবং প্রতিশ্রুতি দিলো, সে যেন যথাসাধ্য তার আনুগত্য করে। পরে অপর কেউ নেতৃত্ব দখলে তার সাথে বিবাদে লিপ্ত হলে এই শেষোক্ত জনকে হত্যা করো। আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন, আমি (একথা শুনে) লোকেদের ভীড় থেকে আমার মাথা বের করলাম এবং আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) কে বললাম, আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ করে বলছি, আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এ হাদীস শুনেছেন? তিনি তার হাত দ্বারা তার দু’ কানের দিকে ইশারা করে বলেন, আমার দু’ কান তাঁর নিকট এ হাদীস শুনেছে এবং আমার অন্তর তা সংরক্ষণ করেছে। [৩২৮৮]
[৩২৮৮] মুসলিম ১৮৪৪, নাসায়ী ৪১৯১, আবূ দাঊদ ৪২৪৮, আহমাদ ৬৪৬৫, ৬৭৫৪। সহীহাহ ২৪১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০. অধ্যায়ঃ
নৈরাজ্য ও বিপর্যয় চলাকালে অবিচল থাকা
৩৯৫৭
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ حَزْمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ” كَيْفَ بِكُمْ وَبِزَمَانٍ يُوشِكُ أَنْ يَأْتِيَ يُغَرْبَلُ النَّاسُ فِيهِ غَرْبَلَةً وَتَبْقَى حُثَالَةٌ مِنَ النَّاسِ قَدْ مَرِجَتْ عُهُودُهُمْ وَأَمَانَاتُهُمْ فَاخْتَلَفُوا وَكَانُوا هَكَذَا ” . وَشَبَّكَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ قَالُوا كَيْفَ بِنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِذَا كَانَ ذَلِكَ قَالَ ” تَأْخُذُونَ بِمَا تَعْرِفُونَ وَتَدَعُونَ مَا تُنْكِرُونَ وَتُقْبِلُونَ عَلَى خَاصَّتِكُمْ وَتَذَرُونَ أَمْرَ عَوَامِّكُمْ ” .
আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ অচিরেই এমন যুগ আসবে যখন উত্তম লোকেদেরকে ছাঁটাই করা হবে এবং নিকৃষ্ট লোকেরা বহাল থাকবে, তাদের অংগীকার, প্রতিশ্রুতি ও আমানত বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তারা মতবিরোধে লিপ্ত হবে, তখন তোমাদের কী অবস্থা হবে? তিনি এই বলে তার আঙ্গুলগুলো পরস্পরের ফাঁকে ঢুকালেন। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যখন অবস্থা এরূপ হবে তখন আমরা কী করবো? তিনি বলেনঃ যেসব বিষয় তোমরা উত্তম দেখবে তা গ্রহণ করবে এবং যা কিছু কদর্য লক্ষ্য করবে তা বর্জন করবে, নিজেদের ব্যাপারে চিন্তা-ফিকির করবে এবং সাধারণের কার্যকলাপ বর্জন করবে। [৩২৮৯]
[৩২৮৯] আবূ দাঊদ ৪৩৪২, সহীহাহ ২০৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ الْجَوْنِيِّ، عَنِ الْمُشَعَّثِ بْنِ طَرِيفٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الصَّامِتِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” كَيْفَ أَنْتَ يَا أَبَا ذَرٍّ وَمَوْتًا يُصِيبُ النَّاسَ حَتَّى يُقَوَّمَ الْبَيْتُ بِالْوَصِيفِ ” . يَعْنِي الْقَبْرَ قُلْتُ مَا خَارَ اللَّهُ لِي وَرَسُولُهُ – أَوْ قَالَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ – قَالَ ” تَصَبَّرْ ” . قَالَ ” كَيْفَ أَنْتَ وَجُوعًا يُصِيبُ النَّاسَ حَتَّى تَأْتِيَ مَسْجِدَكَ فَلاَ تَسْتَطِيعَ أَنْ تَرْجِعَ إِلَى فِرَاشِكَ وَلاَ تَسْتَطِيعَ أَنْ تَقُومَ مِنْ فِرَاشِكَ إِلَى مَسْجِدِكَ ” . قَالَ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ أَوْ – مَا خَارَ اللَّهُ لِي وَرَسُولُهُ – قَالَ ” عَلَيْكَ بِالْعِفَّةِ ” . ثُمَّ قَالَ ” كَيْفَ أَنْتَ وَقَتْلاً يُصِيبُ النَّاسَ حَتَّى تُغْرَقَ حِجَارَةُ الزَّيْتِ بِالدَّمِ ” . قُلْتُ مَا خَارَ اللَّهُ لِي وَرَسُولُهُ . قَالَ ” الْحَقْ بِمَنْ أَنْتَ مِنْهُ ” . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ آخُذُ بِسَيْفِي فَأَضْرِبَ بِهِ مَنْ فَعَلَ ذَلِكَ قَالَ ” شَارَكْتَ الْقَوْمَ إِذًا وَلَكِنِ ادْخُلْ بَيْتَكَ ” . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَإِنْ دُخِلَ بَيْتِي قَالَ ” إِنْ خَشِيتَ أَنْ يَبْهَرَكَ شُعَاعُ السَّيْفِ فَأَلْقِ طَرَفَ رِدَائِكَ عَلَى وَجْهِكَ فَيَبُوءَ بِإِثْمِهِ وَإِثْمِكَ فَيَكُونَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ ” .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হে আবূ যার! যখন মানুষ মরতে থাকবে, এমনকি একটি কবরের মূল্য হবে এবং গোলামের মূল্যের সমান, তখন তোমার অবস্থা কী হবে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আমার জন্য যা পছন্দ করেন অথবা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই অধিক অবগত। তিনি বলেনঃ তুমি ধৈর্য ধারণ করবে। পুনরায় তুমি তোমার মসজিদে (নামাজ পড়তে) এসে (নামায শেষে) নিজের বিছানায় ফিরে আসার শক্তি হারিয়ে ফেলবে অথবা তুমি তোমার বিছানা থেকে উঠে মসজিদের যেতে সক্ষম হবে না, তখন তোমার কী অবস্থা হবে? তিনি বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক অবগত অথবা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আমার জন্য যা ভালো মনে করেন। তিনি বলেনঃ তখন তুমি অবশ্যই হারাম থেকে দূরে থাকবে। পুনরায় তিনি বলেনঃ যখন ব্যাপক গণহত্যা চলবে, এমনকি “হিজারাতুয যাইত” রক্তে প্লাবিত হবে, তখন তোমার অবস্থা কী হবে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আমার জন্য যা পছন্দ করেন। তিনি বলেনঃ তুমি যাদের (মদীনাবাসী) সাথে আছো তাদের দলে যুক্ত থেকো। আবূ যার (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যারা গণহত্যা করবে, আমি কি তরবারির আঘাতে তাদের হত্যা করবো না? তিনি বলেনঃ তুমি যদি তাই করো, তাহলে তুমিও বিপর্যয়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। বরং তুমি নিজের ঘরে আশ্রয় নিবে। আমি বললাম, যদি আমার ঘরে ঢুকে পড়ে? তিনি বলেনঃ যদি তুমি তরবারির চাকচিক্যে ভীত হও তবে তোমার চাদর নিয়ে তোমার মুখমণ্ডল ঢেকে রাখবে। (তুমি নিহত হলে হত্যাকারী তার ও তোমার গুনাহের বোঝা বহন করবে এবং জাহান্নামের বাসিন্দা হবে। [৩২৯০]
[৩২৯০] আবূ দাঊদ ৪২৬১, আহমাদ ২১০৪৯। ইরওয়া’ ২৪৫১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا عَوْفٌ، عَنِ الْحَسَنِ، حَدَّثَنَا أَسِيدُ بْنُ الْمُتَشَمِّسِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” إِنَّ بَيْنَ يَدَىِ السَّاعَةِ لَهَرْجًا ” . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الْهَرْجُ قَالَ ” الْقَتْلُ ” . فَقَالَ بَعْضُ الْمُسْلِمِينَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا نَقْتُلُ الآنَ فِي الْعَامِ الْوَاحِدِ مِنَ الْمُشْرِكِينَ كَذَا وَكَذَا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” لَيْسَ بِقَتْلِ الْمُشْرِكِينَ وَلَكِنْ يَقْتُلُ بَعْضُكُمْ بَعْضًا حَتَّى يَقْتُلَ الرَّجُلُ جَارَهُ وَابْنَ عَمِّهِ وَذَا قَرَابَتِهِ ” . فَقَالَ بَعْضُ الْقَوْمِ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَعَنَا عُقُولُنَا ذَلِكَ الْيَوْمَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” لاَ تُنْزَعُ عُقُولُ أَكْثَرِ ذَلِكَ الزَّمَانِ وَيَخْلُفُ لَهُ هَبَاءٌ مِنَ النَّاسِ لاَ عُقُولَ لَهُمْ ” . ثُمَّ قَالَ الأَشْعَرِيُّ وَايْمُ اللَّهِ إِنِّي لأَظُنُّهَا مُدْرِكَتِي وَإِيَّاكُمْ وَايْمُ اللَّهِ مَا لِي وَلَكُمْ مِنْهَا مَخْرَجٌ إِنْ أَدْرَكَتْنَا فِيمَا عَهِدَ إِلَيْنَا نَبِيُّنَا ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِلاَّ أَنْ نَخْرُجَ كَمَا دَخَلْنَا فِيهَا .
আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বললেনঃ কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে “হারজ” হবে। রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! “হারজ” কী? তিনি বলেনঃ ব্যাপক গণহত্যা। কতক মুসলমান বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা এখন এই এক বছরে এত মুশরিককে হত্যা করেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তা মুশরিকদের হত্যা করা নয়, বরং তোমরা পরস্পরকে হত্যা করবে; এমনকি কোন ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে, চাচাতো ভাইকে এবং নিকট আত্মীয়-স্বজনকে পর্যন্ত হত্যা করবে। কতক লোক বললো, হে আল্লাহর রাসূল! তখন কি আমাদের বিবেক-বুদ্ধি লোপ পাবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ অধিকাংশ লোকের জ্ঞান লোপ পাবে এবং অবশিষ্ট থাকবে নির্বোধ ও মুর্খ। অতঃপর আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি ধারণা করেছিলাম যে, হয়তো এ যুগ তোমাদেরকে ও আমাকে পেতো, তাহলে তা থেকে আমার ও তোমাদের বের হয়ে আসা মুশকিল হয়ে যেতো, যেমন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, আমরা ঐ অনাচারে যতো সহজে জড়িয়ে পড়বো তা থেকে আমাদের নিষ্ক্রমণ ততোধিক দুষ্কর হবে। [৩২৯১]
[৩২৯১] আহমাদ ১৯২১৮। সহীহাহ ১৬৮২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُبَيْدٍ، مُؤَذِّنُ مَسْجِدِ جُرْدَانَ قَالَ حَدَّثَتْنِي عُدَيْسَةُ بِنْتُ أُهْبَانَ، قَالَتْ لَمَّا جَاءَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ هَاهُنَا الْبَصْرَةَ دَخَلَ عَلَى أَبِي فَقَالَ يَا أَبَا مُسْلِمٍ أَلاَ تُعِينُنِي عَلَى هَؤُلاَءِ الْقَوْمِ قَالَ بَلَى . قَالَ فَدَعَا جَارِيَةً لَهُ فَقَالَ يَا جَارِيَةُ أَخْرِجِي سَيْفِي . قَالَ فَأَخْرَجَتْهُ فَسَلَّ مِنْهُ قَدْرَ شِبْرٍ فَإِذَا هُوَ خَشَبٌ فَقَالَ إِنَّ خَلِيلِي وَابْنَ عَمِّكَ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَهِدَ إِلَىَّ إِذَا كَانَتِ الْفِتْنَةُ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ فَأَتَّخِذُ سَيْفًا مِنْ خَشَبٍ فَإِنْ شِئْتَ خَرَجْتُ مَعَكَ . قَالَ لاَ حَاجَةَ لِي فِيكَ وَلاَ فِي سَيْفِكَ .
উহবান বিন সয়ফী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(উদায়সাহ) বলেন, আলী বিন আবূ তালিব (রাঃ) এখানে বসরায় আসেন এবং আমার পিতার সাথে সাক্ষাত করেন। তিনি বলেন, হে আবূ মুসলিম! তুমি কি এই গোষ্ঠীর (সিরীয়দের) বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করবে না? আবূ মুসলিম বলেন, হাঁ (করবো)। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি তার এক দাসীকে ডেকে বলেন, হে দাসী! আমার তরবারিটা বের করো। রাবী বলেন, সে তরবারিটা বের করলো। আবূ মুসলিম তা খাপের মধ্য থেকে এক বিঘত পরিমাণ বের করেলেন। দেখা গেলো যে, তা এক খণ্ড কাঠ। আবূ মুসলিম বলেন, আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু ও তোমার চাচাতো ভাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এই উপদেশ দেন যে, “মুসলমানদের মধ্যে বিবাদ-বিশৃংখলা চলাকালে তুমি একটি কাঠের তরবারি ধারণ করবে”। এখন আপনি চাইলে আমি আপনার সাথে রওয়ানা হতে পারি। আলী (রাঃ) বলেন, তোমাকেও আমার প্রয়োজন নেই এবং তোমার তরবারিও নয়। [৩২৯২]
[৩২৯২] তিরমিযী ২২০৩। সহীহাহ ১৬৮০।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৩৯৬১
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مُوسَى اللَّيْثِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جُحَادَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ ثَرْوَانَ، عَنْ هُزَيْلِ بْنِ شُرَحْبِيلَ، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ إِنَّ بَيْنَ يَدَىِ السَّاعَةِ فِتَنًا كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ يُصْبِحُ الرَّجُلُ فِيهَا مُؤْمِنًا وَيُمْسِي كَافِرًا وَيُمْسِي مُؤْمِنًا وَيُصْبِحُ كَافِرًا الْقَاعِدُ فِيهَا خَيْرٌ مِنَ الْقَائِمِ وَالْقَائِمُ فِيهَا خَيْرٌ مِنَ الْمَاشِي وَالْمَاشِي فِيهَا خَيْرٌ مِنَ السَّاعِي فَكَسِّرُوا قِسِيَّكُمْ وَقَطِّعُوا أَوْتَارَكُمْ وَاضْرِبُوا بِسُيُوفِكُمُ الْحِجَارَةَ فَإِنْ دُخِلَ عَلَى أَحَدٍ مِنْكُمْ فَلْيَكُنْ كَخَيْرِ ابْنَىْ آدَمَ ” .
আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে অন্ধকার রাতের টুকরার ন্যায় চরম বিপর্যয় আসতে থাকবে। ঐ সময় সকাল বেলা যে ব্যক্তি মুমিন থাকবে সে সন্ধ্যাবেলা কাফের হয়ে যাবে এবং সন্ধ্যাবেলা যে ব্যক্তি মুমিন থাকবে সে সকাল বেলা কাফের হয়ে যাবে। এ সময় উপবিষ্ট ব্যক্তি দণ্ডায়মান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হবে, দণ্ডায়মান ব্যক্তি চলমান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হবে এবং চলমান ব্যক্তি দ্রুত ধাবমান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হবে। এ সময় তোমরা তোমাদের ধনুক ভেঙ্গে ফেলো, ধনুকের ছিলা কেটে ফেলো এবং তোমাদের তরবারিগুলো পাথরের উপর আঘাত করে ভেঙ্গে ফেলো। তোমাদের কারো ঘরে বিপর্য়য় ঢুকে পড়লে সে যেন আদম আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু’ পুত্রের মধ্যে উত্তম জনের (হাবিল) ন্যায় হয়ে যায়। [৩২৯৩]
[৩২৯৩] আবূ দাঊদ ৪২৫৯। ইরওয়া’ ২৪৫১, সহীহাহ ১৫৩৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، – أَوْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ شَكَّ أَبُو بَكْرٍ – عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى مُحَمَّدِ بْنِ مَسْلَمَةَ فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ إِنَّهَا سَتَكُونُ فِتْنَةٌ وَفُرْقَةٌ وَاخْتِلاَفٌ فَإِذَا كَانَ كَذَلِكَ فَأْتِ بِسَيْفِكَ أُحُدًا فَاضْرِبْهُ حَتَّى يَنْقَطِعَ ثُمَّ اجْلِسْ فِي بَيْتِكَ حَتَّى تَأْتِيَكَ يَدٌ خَاطِئَةٌ أَوْ مَنِيَّةٌ قَاضِيَةٌ ” . فَقَدْ وَقَعَتْ وَفَعَلْتُ مَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ .
মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(আবূ বুরদাহ) বলেন, আমি মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাত করলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অচিরেই কলহ, অনৈক্য, বিচ্ছিন্নতা ও বিরোধ ছড়িয়ে পড়বে। এ অবস্থা চলাকালে তুমি তোমার তরবারিসহ উহুদ পাহাড়ে আসো, তা তাতে আঘাত করো, যাতে তা ভেঙ্গে যায়। অতঃপর তুমি তোমার ঘরে বসে থাকো, যতক্ষণ না কোন বিদ্রোহী বা অনিষ্টকারী তোমাকে হত্যা করে বা তোমার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। মুহাম্মাদ বিন মাসলামা (রাঃ) বলেন, সেই বিপর্যয় এসে গেছে এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা বলেছেন আমি তাই করেছি। [৩২৯৪]
[৩২৯৪] আহমাদ ১৭৫২১। রাওদুন নাদীর ৮৫১, সহীহাহ ১৩৮০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১. অধ্যায়ঃ
দু’ মুসলমান পরস্পর সংঘাতে লিপ্ত হলে
৩৯৬৩
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا مُبَارَكُ بْنُ سُحَيْمٍ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ مَا مِنْ مُسْلِمَيْنِ الْتَقَيَا بِأَسْيَافِهِمَا إِلاَّ كَانَ الْقَاتِلُ وَالْمَقْتُولُ فِي النَّارِ ” .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ দু’জন মুসলমান পরস্পর সশস্ত্র সংঘর্ষে লিপ্ত হলে হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়ে জাহান্নামে যাবে। [৩২৯৫]
[৩২৯৫] হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। গায়াতুল মারাম ২৫৬ নং পৃষ্ঠা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، وَسَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” إِذَا الْتَقَى الْمُسْلِمَانِ بِسَيْفَيْهِمَا فَالْقَاتِلُ وَالْمَقْتُولُ فِي النَّارِ ” . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ هَذَا الْقَاتِلُ فَمَا بَالُ الْمَقْتُولِ قَالَ ” إِنَّهُ أَرَادَ قَتْلَ صَاحِبِهِ ” .
আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’ মুসলমান তাদের তরবারিসহ পরস্পর সংঘাতে লিপ্ত হলে হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়ে জাহান্নামে যাবে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে তো হত্যাকারী, কিন্তু নিহত ব্যক্তির কী হলো? তিনি বলেনঃ সেও তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যা করতে উদ্যত ছিলো। [৩২৯৬]
[৩২৯৬] নাসায়ী ৪১১৮, ৪১১৯, ৪১২৪, আহমাদ ১৯১৭৭।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ إِذَا الْمُسْلِمَانِ حَمَلَ أَحَدُهُمَا عَلَى أَخِيهِ السِّلاَحَ فَهُمَا عَلَى جُرُفِ جَهَنَّمَ فَإِذَا قَتَلَ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ دَخَلاَهَا جَمِيعًا ” .
আবূ বাকরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ দু’ মুসলমান পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে তাদের একজন অপরজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র বহন (ধারণ) করলে তারা উভয়ে জাহান্নামের পাদদেশে উপনীত হবে। অতঃপর তাদের একজন তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যা করলে উভয়ে সম্পূর্ণরূপে জাহান্নামে যাবে। [৩২৯৭]
[৩২৯৭] মুসলিম ২৮৮৮, নাসায়ী ৪১১৭, আহমাদ ১৯৯১১ । সহীহাহ ১২৩১ ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৬
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، عَنْ عَبْدِ الْحَكَمِ السَّدُوسِيِّ، حَدَّثَنَا شَهْرُ بْنُ حَوْشَبٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ مِنْ شَرِّ النَّاسِ مَنْزِلَةً عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَبْدٌ أَذْهَبَ آخِرَتَهُ بِدُنْيَا غَيْرِهِ ” .
আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি অপরের পার্থিব স্বার্থে আখেরাত বরবাদ করেছে, কিয়ামতের দিন সে হবে আল্লাহর নিকট সর্বপেক্ষা নিকৃষ্ট ব্যক্তি। [৩২৯৮]
[৩২৯৮] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। দঈফাহ ১৯১৫ ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১২. অধ্যায়ঃ
কলহ-বিপর্যয় চলাকালে রসনা সংযত রাখা
৩৯৬৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْجُمَحِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ لَيْثٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنْ زِيَادٍ، سِيمِينْ كُوشْ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ تَكُونُ فِتْنَةٌ تَسْتَنْظِفُ الْعَرَبَ قَتْلاَهَا فِي النَّارِ اللِّسَانُ فِيهَا أَشَدُّ مِنْ وَقْعِ السَّيْفِ ” .
আবদুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: এমন এক ফিতনার উদ্ভব হবে, যা সমগ্র আরবকে গ্রাস করবে। এই ফিতনায় নিহত ব্যক্তিরা হবে জাহান্নামী। তখন জিহ্বা হবে তরবারির চেয়েও মারাত্মক। [৩২৯৯]
[৩২৯৯] তিরমিযী ২১৭৮, আবূ দাউদ ৪২৬৫, আহমাদ ৬৯৪১। দঈফাহ ৩২২৯, দঈফ আল-জামি’ ২৪৭৫।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْبَيْلَمَانِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ إِيَّاكُمْ وَالْفِتَنَ فَإِنَّ اللِّسَانَ فِيهَا مِثْلُ وَقْعِ السَّيْفِ ” .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমরা কলহ-বিপর্যয় থেকে অবশ্যই দূরে থাকবে। কেননা তাতে রসনা হবে তরবারির ন্যায় ধারালো। [৩৩০০]
[৩৩০০] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। দঈফাহ ২৪৭৯।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
৩৯৬৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، عَلْقَمَةَ بْنِ وَقَّاصٍ قَالَ مَرَّ بِهِ رَجُلٌ لَهُ شَرَفٌ فَقَالَ لَهُ عَلْقَمَةُ إِنَّ لَكَ رَحِمًا وَإِنَّ لَكَ حَقًّا وَإِنِّي رَأَيْتُكَ تَدْخُلُ عَلَى هَؤُلاَءِ الأُمَرَاءِ وَتَتَكَلَّمُ عِنْدَهُمْ بِمَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ تَتَكَلَّمَ بِهِ وَإِنِّي سَمِعْتُ بِلاَلَ بْنَ الْحَارِثِ الْمُزَنِيَّ صَاحِبَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ إِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ رِضْوَانِ اللَّهِ مَا يَظُنُّ أَنْ تَبْلُغَ مَا بَلَغَتْ فَيَكْتُبُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُ بِهَا رِضْوَانَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ سَخَطِ اللَّهِ مَا يَظُنُّ أَنْ تَبْلُغَ مَا بَلَغَتْ فَيَكْتُبُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْهِ بِهَا سَخَطَهُ إِلَى يَوْمِ يَلْقَاهُ ” . قَالَ عَلْقَمَةُ فَانْظُرْ وَيْحَكَ مَاذَا تَقُولُ وَمَاذَا تَكَلَّمُ بِهِ فَرُبَّ كَلاَمٍ – قَدْ – مَنَعَنِي أَنْ أَتَكَلَّمَ بِهِ مَا سَمِعْتُ مِنْ بِلاَلِ بْنِ الْحَارِثِ .
বিলাল ইবনুল হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(আলকামাহ) বলেন যে, তার নিকট দিয়ে একজন শরীফ লোক যাচ্ছিলেন। আলকামা (রাঃ) তাকে বলেন, তোমার সাথে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে এবং অন্যবিধ অধিকারও আছে। আমি লক্ষ্য করছি যে, তুমি এসব আমীর-ওমরার নিকট যাতায়াত করো এবং তাদের সাথে তাদের মর্জিমাফিক কথাবার্তা বলো। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী বিলাল ইবনুল হারিস আল-মুযানী (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমাদের কেউ অবশ্যই আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক কথা বলে, অথচ তার প্রতিদিন সম্পর্কে সে জ্ঞাত নয়। আল্লাহ তা’য়ালা এই কথার বিনিময়ে তার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর সন্তোষ লিখে দেন। পক্ষান্তরে তোমাদের কেউ আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক কথা বলে, যার পরিণতি সম্পর্কে সে বেখবর। আল্লাহ এই কথার বিনিময়ে তার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর অসন্তুষ্টি লিখে দেন। আলকামা (রাঃ) বলেন, লক্ষ্য করো, ভেবে দেখ, তুমি কি বলছো এবং মুখ থেকে কি কথা বের করছো। বিলাল ইবনুল হারিস (রাঃ)-র নিকট আমি যে হাদীস শুনেছি তা আমাকে অনেক কথাই বলতে বাধা দেয়। [৩৩০১]
[৩৩০১] তিরমিযী ২৩১৯, আহমাদ ১৫৪২৫, মুওয়াত্তা’ মালিক ১৮৪৮। সহীহাহ ৮৮৬, রাওদুন নাদীর ১৭২, আত তা’লীকুর রাগীব ৩/১৫১, ১৫২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭০
حَدَّثَنَا أَبُو يُوسُفَ الصَّيْدَلاَنِيُّ، مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ الرَّقِّيُّ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ إِنَّ الرَّجُلَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ سَخَطِ اللَّهِ لاَ يَرَى بِهَا بَأْسًا فَيَهْوِي بِهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ سَبْعِينَ خَرِيفًا ” .
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: মানুষ আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক কথা বলে এবং তাকে দূষণীয় মনে করে না। অথচ এই কথার দরুন সত্তর বছর ধরে সে জাহান্নামে পতিত হতে থাকবে। [৩৩০২]
[৩৩০২] সহীহুল বূখারী ৬৪৭৭, মুসলিম ২৯৮৮, তিরমিযী ২৩১৪, আহমাদ ৭১৭৪, ৭৮৯৮, ৮২০৬, ৮৪৪৪, ৮৭০৩, ৮৯৬৭, ১০৫১৪, মুওয়াত্তা’ মালিক ১৮৪৯। সহীহাহ ৫৪০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَسْكُتْ ” .
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের উপর ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অন্যথা নীরব থাকে। [৩৩০৩]
[৩৩০৩] সহীহুল বূখারী ৬০১৮, ৬১৩৬, ৬১৩৮, মুসলিম ৪৭, তিরমিযী ২৫০০, আবূ দাঊদ ৫১৫৪, আহমাদ ৭৫৭১, ৯৩১২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭২
حَدَّثَنَا أَبُو مَرْوَانَ، مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ الْعُثْمَانِيُّ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مَاعِزٍ الْعَامِرِيِّ، أَنَّ سُفْيَانَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ الثَّقَفِيَّ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ حَدِّثْنِي بِأَمْرٍ أَعْتَصِمُ بِهِ . قَالَ ” قُلْ رَبِّيَ اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقِمْ ” . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَكْثَرُ مَا تَخَافُ عَلَىَّ فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِلِسَانِ نَفْسِهِ ثُمَّ قَالَ ” هَذَا ” .
সুফইয়ান বিন আবদুল্লাহ আস-সাকাফী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি বিষয় বলে দিন, যাকে আমি দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকবো। তিনি বলেন: তুমি বলো, “আল্লাহ আমার প্রভু” এবং এর উপর অবিচল থাকো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার ব্যপারে আপনি কোন জিনিসের অধিক ভয় করেন? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিজের জিহ্বা ধরে বলেন: এটির। [৩৩০৪]
[৩৩০৪] মুসলিম ৩৮, তিরমিযী ২৪১০. আহমাদ ১৪৯৯০, ১৮৯৩৮, দারিমী ২৭১০। আয যিলাল ২১-২২।
উক্ত হাদীসের রাবী আবু মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল-উলমানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় ভূল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদীস বর্ণনা করেন। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদীস বর্ণনায় ভূল করেন। ইমাম বুখারী তাকে সত্যবাদী বলেছেন। (তাহযীবুল কামাল: রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
- সরাসরি
৩৯৭৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ الْعَدَنِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ أَبِي النَّجُودِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فِي سَفَرٍ فَأَصْبَحْتُ يَوْمًا قَرِيبًا مِنْهُ وَنَحْنُ نَسِيرُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ يُدْخِلُنِي الْجَنَّةَ وَيُبَاعِدُنِي مِنَ النَّارِ . قَالَ ” لَقَدْ سَأَلْتَ عَظِيمًا وَإِنَّهُ لَيَسِيرٌ عَلَى مَنْ يَسَّرَهُ اللَّهُ عَلَيْهِ تَعْبُدُ اللَّهَ لاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ وَتَصُومُ رَمَضَانَ وَتَحُجُّ الْبَيْتَ ” . ثُمَّ قَالَ ” أَلاَ أُدُلُّكَ عَلَى أَبْوَابِ الْجَنَّةِ الصَّوْمُ جُنَّةٌ وَالصَّدَقَةُ تُطْفِئُ الْخَطِيئَةَ كَمَا يُطْفِئُ النَّارَ الْمَاءُ وَصَلاَةُ الرَّجُلِ فِي جَوْفِ اللَّيْلِ ” . ثُمَّ قَرَأَ {تَتَجَافَى جُنُوبُهُمْ عَنِ الْمَضَاجِعِ} حَتَّى بَلَغَ {جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ} ثُمَّ قَالَ ” أَلاَ أُخْبِرُكَ بِرَأْسِ الأَمْرِ وَعَمُودِهِ وَذُرْوَةِ سَنَامِهِ الْجِهَادُ ” . ثُمَّ قَالَ ” أَلاَ أُخْبِرُكَ بِمِلاَكِ ذَلِكَ كُلِّهِ ” . قُلْتُ بَلَى . فَأَخَذَ بِلِسَانِهِ فَقَالَ ” تَكُفُّ عَلَيْكَ هَذَا ” . قُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ وَإِنَّا لَمُؤَاخَذُونَ بِمَا نَتَكَلَّمُ بِهِ قَالَ ” ثَكِلَتْكَ أُمُّكَ يَا مُعَاذُ وَهَلْ يَكُبُّ النَّاسَ عَلَى وُجُوهِهِمْ فِي النَّارِ إِلاَّ حَصَائِدُ أَلْسِنَتِهِمْ ” .
মুআয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক সফরে নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ছিলাম। একদিন ভোরবেলা আমি তাঁর সাথে পথ অতিক্রমকালে তাকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি কাজের কথা বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং জাহান্নাম থেকে দুরে রাখবে। তিনি বলেন: তুমি এক কঠিন প্রশ্ন করলে। তবে বিষয়টি যার জন্য আল্লাহ সহজ করেন তার জন্য সহজ। তুমি আল্লাহর ইবাদত করো, তার সাথে অন্য কিছু শরীক করবে না। নামায কায়েম করো, যাকাত দাও, রমাদান মাসের রোযা রাখো এবং আল্লাহর ঘরের হাজ্জ করো। অত:পর তিনি বলেন: আমি কি তোমাকে কল্যাণের পথসমূহ বলে দিবো না? (তাহলো) রোযা ঢালস্বরূপ, যাকাত পাপরাশি মুছে দেয়, যেমন পানি আগুন নিভিয়ে দেয় এবং মানুষের গভীর রাতের নামায। অত:পর তিনি তিলাওয়াত করেন: “তারা শয্যা ত্যাগ করে তাদের প্রতিপালককে ডাকে আশা ও ভয়ে এবং আমি তাদেরকে সে জীবনোপকরণ দান করেছি, তা থেকে তারা খরচ করে। কেউই জানে না তাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর কী লুক্কায়িত রাখা হয়েছে, তাদের কৃতকর্মের পুরষ্কার স্বরুপ” (সূরা আস-সাজদা: ১৬-১৭)। অত:পর তিনি বলেন: আমি কি তোমাকে কাজের মূল, তার স্বম্ভ ও শীর্ষ চূড়া সম্পর্কে অবহিত করবো না? তা হলো জিহাদ। তারপর তিনি বলেন: আমি কি তোমাকে এই সব কাজের নির্যাস সম্পর্কে অবহিত করবো না? আমি বললাম, হাঁ। তিনি তাঁর জিহ্বা ধরে বলেন: তুমি এটা সংযত রাখো। আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! আমরা যা কিছু বলি সেজন্য কি পাকড়াও হবো? তিনি বলেন: হে মুআয! তোমার মা তোমার জন্য কাঁদুক। মানুষ তো তার অসংযত কথাবার্তার কারণেই অধোমুখে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।[৩৩০৫]
[৩৩০৫] তিরমিযী ২৬১৬। ইরওয়া’ ৪১৩, আত তা’লীকুর রাগীব ৪/৫-৬, তাখরীজুল ঈমান লি ইবনু আবূ শায়বাহ ১-২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَزِيدَ بْنِ خُنَيْسٍ الْمَكِّيُّ، قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ حَسَّانَ الْمَخْزُومِيَّ، قَالَ حَدَّثَتْنِي أُمُّ صَالِحٍ، عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ شَيْبَةَ، عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ كَلاَمُ ابْنِ آدَمَ عَلَيْهِ لاَ لَهُ إِلاَّ الأَمْرَ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْىَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَذِكْرَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ” .
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ এবং মহান আল্লাহর যিকর ব্যতীত মানুষের প্রতিটি কথা তার জন্য ক্ষতির কারণ হবে।[৩৩০৬]
[৩৩০৬] তিরমিযী ২৪১২। আত তা’লীকুর রাগীব ৪/১০।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا خَالِي، يَعْلَى عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي الشَّعْثَاءِ، قَالَ قِيلَ لاِبْنِ عُمَرَ إِنَّا نَدْخُلُ عَلَى أُمَرَائِنَا فَنَقُولُ الْقَوْلَ فَإِذَا خَرَجْنَا قُلْنَا غَيْرَهُ . قَالَ كُنَّا نَعُدُّ ذَلِكَ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ النِّفَاقَ .
আবুশ শা’সা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু উমার (রাঃ) কে বলা হলো, আমরা আমাদের শাসকবর্গের নিকট যাতায়াত করি এবং তাদের সাথে কথাবার্তা বলি, কিন্তু আমরা সেখান থেকে বের হয়ে এসে উল্টো কথা বলি। তিনি বলেন, আমরা তো রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে এরুপ আচরণকে মোনাফিকী গণ্য করতাম। [৩৩০৭]
[৩৩০৭] সহীহুল বূখারী ৭১৭৮, আহমাদ ৫৭৯৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৬
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ شَابُورَ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنْ قُرَّةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حَيْوَئِيلَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ مِنْ حُسْنِ إِسْلاَمِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَا لاَ يَعْنِيهِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: মানুষের জন্য ইসলামের সৌন্দর্য হচ্ছে তার অনর্থক কথাবার্তা পরিহার করা। [৩৩০৮]
[৩৩০৮] তিরমিযী ২৩১৭। রাওদুন নাদীর ২৯৩, ৩২১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৩. অধ্যায়ঃ
নির্জনতা অবলম্বন
৩৯৭৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ بَعْجَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بَدْرٍ الْجُهَنِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ خَيْرُ مَعَايِشِ النَّاسِ لَهُمْ رَجُلٌ مُمْسِكٌ بِعِنَانِ فَرَسِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَيَطِيرُ عَلَى مَتْنِهِ كُلَّمَا سَمِعَ هَيْعَةً أَوْ فَزْعَةً طَارَ عَلَيْهِ إِلَيْهَا يَبْتَغِي الْمَوْتَ أَوِ الْقَتْلَ مَظَانَّهُ وَرَجُلٌ فِي غُنَيْمَةٍ فِي رَأْسِ شَعَفَةٍ مِنْ هَذِهِ الشِّعَافِ أَوْ بَطْنِ وَادٍ مِنْ هَذِهِ الأَوْدِيَةِ يُقِيمُ الصَّلاَةَ وَيُؤْتِي الزَّكَاةَ وَيَعْبُدُ رَبَّهُ حَتَّى يَأْتِيَهُ الْيَقِينُ لَيْسَ مِنَ النَّاسِ إِلاَّ فِي خَيْرٍ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের উদ্দেশ্যে ঘোড়ার লাগাম ধরে প্রস্তুত থাকে তার জীবনযাত্রাই সর্বোত্তম। যখনই শত্রুর উপস্থিতি বা শত্রুর দিকে ধাবমান হওয়ার শব্দ শুনতে পায় তখন সে ঘোড়ার পিঠে আরোহন করে দ্রুত বের হয়ে পড়ে এবং যথাস্থানে পৌছে শত্রু নিধন ও শহীদ হওয়ার মর্যাদা সন্ধান করে। অথবা যে ব্যক্তি তার মেষপাল নিয়ে কোন পাহাড় চূড়ায় বা (নির্জন) উপত্যকায় বাস করে যথারীতি নামায কায়েম করে, যাকাত পরিশোধ করে এবং আমৃত্যু তার প্রভুর ইবাদতে লিপ্ত থাকে তার জীবেনযাত্রাই সর্বোত্তম। এই ধরনের লোক সর্বদা কল্যাণের মধ্যে থাকে। [৩৩০৯]
[৩৩০৯] মুসলিম ১৮৮৯, আহমাদ ৮৮৯৭, ৯৪৩০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৮
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، حَدَّثَنَا الزُّبَيْدِيُّ، حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَجُلاً، أَتَى النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ أَىُّ النَّاسِ أَفْضَلُ قَالَ ” رَجُلٌ مُجَاهِدٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ ” . قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ ” ثُمَّ امْرُؤٌ فِي شِعْبٍ مِنَ الشِّعَابِ يَعْبُدُ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ وَيَدَعُ النَّاسَ مِنْ شَرِّهِ ” .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিতঃ এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললো, কোন্ লোক অধিক উত্তম? তিনি বলেন: জান-মালসহ আল্লাহর পথে জিহাদকারী। সে বললো, তারপর কে? তিনি বলেন: যে ব্যক্তি কোন গিরিসংকটে অবস্থান করে মহান আল্লাহর ইবাদতে রত থাকে এবং মানুষের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকে। [৩৩১০]
[৩৩১০] সহীহুল বূখারী ২৭৮৬, ৬৪৯৪, মুসলিম ১৮৮৮, তিরমিযী ১৬৬০, নাসায়ী ৩১০৫, আবূ দাঊদ ২৪৮৫, আহমাদ ১০৭৪১, ১০৯২৯, ১১১৪১, ১১৪২৮। ইরওয়া’ ১১৯৩, সহীহাহ ১৫৩১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ، حَدَّثَنِي بُسْرُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنِي أَبُو إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” يَكُونُ دُعَاةٌ عَلَى أَبْوَابِ جَهَنَّمَ مَنْ أَجَابَهُمْ إِلَيْهَا قَذَفُوهُ فِيهَا ” . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ صِفْهُمْ لَنَا قَالَ ” هُمْ قَوْمٌ مِنْ جِلْدَتِنَا يَتَكَلَّمُونَ بِأَلْسِنَتِنَا ” . قُلْتُ فَمَا تَأْمُرُنِي إِنْ أَدْرَكَنِي ذَلِكَ قَالَ ” فَالْزَمْ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِينَ وَإِمَامَهُمْ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلاَ إِمَامٌ فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا وَلَوْ أَنْ تَعَضَّ بِأَصْلِ شَجَرَةٍ حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ كَذَلِكَ ” .
হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: জাহান্নামের দরজাসমূহে আহবানকারী ফেরেশতাগণ থাকবে। যারা তাদের আহবানে সাড়া দিবে তাদেরকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের নিকট তাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করুন। তিনি বলেন: তারা আমাদের মধ্য থেকে হবে এবং আমাদের ভাষায় কথা বলবে। আমি বললাম, তারা যদি আমাকে পায় তবে আপনি আমাকে কী নির্দেশ দেন? তিনি বিলেন: তুমি অপরিহার্যরূপে মুসলমানদের সংঘভুক্ত থাকবে এবং তাদের ইমামের আনুগত্য করবে। যদি মুসলমানগণ ঐক্যবদ্ধ না থাকে এবং তাদের ইমামও না থাকে তাহলে তুমি তাদের সকল বিচ্ছিন্ন দল থেকে দুরে থাকো এবং কোন গাছের কান্ড আঁকড়ে ধরো এবং সেই অবস্থায় যেন তোমার মৃত্যু হয়। [৩৩১১]
[৩৩১১] সহীহুল বূখারী ৩৬০৬, মুসলিম ১৮৪৭, আবূ দাঊদ ৪২৪৪, আহমাদ ২২৯৩৯। সহীহাহ ২৭৩৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ يُوشِكُ أَنْ يَكُونَ خَيْرَ مَالِ الْمُسْلِمِ غَنَمٌ يَتْبَعُ بِهَا شَعَفَ الْجِبَالِ وَمَوَاقِعَ الْقَطْرِ يَفِرُّ بِدِينِهِ مِنَ الْفِتَنِ ” .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: অচিরেই মুসলমানদের সর্বাপেক্ষা উত্তম সম্পদ হবে মেষ-বকরী। তারা ফিতনা-ফাসাদ থেকে তাদের দ্বীন ও জীবন বাঁচাতে সেগুলো নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে এবং পানির উৎস সমৃদ্ধ চারণভূমিতে পলায়ন করবে। [৩৩১২]
[৩৩১২] সহীহুল বূখারী ১৯, ৩৩০০, ৩৬০০, ৬৪৯৫, ৭০৮৮, নাসায়ী ৫০৩৬, আবূ দাঊদ ৪২৬৭, আহমাদ ১০৬৪৯, ১০৮৬১, ১০৯৯৮, ১১১৪৮, মুওয়াত্তা’ মালিক ১৮১১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُمَرَ بْنِ عَلِيٍّ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَامِرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْخَزَّازُ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلاَلٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ قُرْطٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ تَكُونُ فِتَنٌ عَلَى أَبْوَابِهَا دُعَاةٌ إِلَى النَّارِ فَأَنْ تَمُوتَ وَأَنْتَ عَاضٌّ عَلَى جِذْلِ شَجَرَةٍ خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ تَتْبَعَ أَحَدًا مِنْهُمْ ” .
হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: অচিরেই এমন কতক নৈরাজ্যকর বিপর্যয় সৃষ্ঠি হবে, যার সম্মুখভাগে থাকবে জাহান্নামের দিকে আহবানকারীরা। এমন পরিস্থিতিতে তুমি যদি বৃক্ষের কান্ড আঁকড়ে ধরে থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতে পারো তবে তা তোমার জন্য ওদের কারো আহবানে সাড়া দেওয়া থেকে উত্তম। [৩৩১৩]
[৩৩১৩] সহীহুল বূখারী ৩৬০৬, মুসলিম ১৮৪৭, আবূ দাঊদ ৪২৪৪, আহমাদ ২২৯৩৯। সহীহাহ ১৭৯১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْحَارِثِ الْمِصْرِيُّ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ لاَ يُلْدَغُ الْمُؤْمِنُ مِنْ جُحْرٍ مَرَّتَيْنِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: মুমিন ব্যক্তি একই গর্ত থেকে দুইবার দংশিত হয় না। [৩৩১৪]
[৩৩১৪] সহীহুল বূখারী ৬১৩৩, মুসলিম ৬৯৯৮, আবূ দাঊদ ৪৯৬২, আহমাদ ৮৭০৯, দারিমী ২৭৮১। সহীহাহ ১১৭৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮৩
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا زَمْعَةُ بْنُ صَالِحٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ لاَ يُلْدَغُ الْمُؤْمِنُ مِنْ جُحْرٍ مَرَّتَيْنِ ” .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: মুমিন ব্যক্তি একই গর্ত থেকে দু’বার দংশিত হয় না। [৩৩১৫]
[৩৩১৫] আহমাদ ৫৯২৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৪. অধ্যায়ঃ
সন্দেহজনক বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকা
৩৯৮৪
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ، يَقُولُ عَلَى الْمِنْبَرِ وَأَهْوَى بِإِصْبَعَيْهِ إِلَى أُذُنَيْهِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ “ الْحَلاَلُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَعْلَمُهَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ فَمَنِ اتَّقَى الشُّبُهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ وَمَنْ وَقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ وَقَعَ فِي الْحَرَامِ كَالرَّاعِي حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يَرْتَعَ فِيهِ أَلاَ وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى أَلاَ وَإِنَّ حِمَى اللَّهِ مَحَارِمُهُ أَلاَ وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلُحَتْ صَلُحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ أَلاَ وَهِيَ الْقَلْبُ ” .
নু’মান বিন বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(শা’বী) বলেন, আমি নু’মান বিন বশীর (রাঃ) কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে তার হাতের দু’ আঙ্গুলে দু’ কানের দিকে ইশারা করে বলতে শুনেছি, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি: হালালও সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট, এতদুভয়ের মাঝখানে কতক সন্দেহজনক বিষয় আছে, যে সম্পর্কে অধিকাংশ লোক অজ্ঞাত। যে ব্যেক্তি সন্দেহজনক বিষয় সমূহ থেকে বিরত থাকলো, সে তাঁর দ্বীন ও সম্ভ্রমকে পবিত্র রাখলো। আর যে ব্যেক্তি সন্দেহজনক বিষয়সমূহে জড়িয়ে পড়লো সে হারাম বিষয়ের মধ্যে পতিত হলো। যেমন কোন রাখাল রাষ্ট্রের সংরক্ষিত চারণভূমির আশেপাশে তার পশুপাল চড়ালে সেগুলো তাতে ঢুকে পড়ার আশংকা থাকে। জেনে রাখো, প্রত্যেক শাসকের একটি সংরক্ষিত চারণ ভূমি থাকে। জেনে রাখো, আল্লাহর চারণভূমি হচ্ছে তার হারামকৃত বিষয়সমূহ। জেনে রাখো! দেহের মধ্যে একখন্ড মাংসপিন্ড আছে। যখন তা সুস্থ থাকে তখন সারা দেহও সুস্থ থাকে। যখন তা নষ্ট হয় তখন সারা দেহই নষ্ট হয়ে যায়, জেনে রাখো! সেটাই হচ্ছে কলব (অন্তর) [৩৩১৬]
[৩৩১৬] সহীহুল বূখারী ৫২, ২০৫১, মুসলিম ১৫৯৯, তিরমিযী ১২০৫, নাসায়ী ৪৪৫৩, ৫৭১০, আবূ দাঊদ ৩৩২৯, আহমাদ ১৭৮৮৩, ১৭৯০৩, ২৭৬৩৮, ১৭৯১৭, ১৭৯৫১, দারিমী ২৫৩১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮৫
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنِ الْمُعَلَّى بْنِ زِيَادٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ، عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ الْعِبَادَةُ فِي الْهَرْجِ كَهِجْرَةٍ إِلَىَّ ” .
মা’কিল বিন ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: কলহ ও বিপর্যয়কর পরিস্থিতি বিরাজমান কালে ইবাদতে লিপ্ত থাকা আমার কাছে হিজরত করে চলে আসার সমতুল্য। [৩৩১৭]
[৩৩১৭] মুসলিম ২৯৪৮, তিরমিযী ২২০১, আহমাদ ১৯৭৮৭, ১৯৮০০। রাওদুন নাদীর ৮৬৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৫. অধ্যায়ঃ
অপরিচিত অবস্থায় ইসলামের সূচনা হয়েছে
৩৯৮৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَيَعْقُوبُ بْنُ حُمَيْدِ بْنِ كَاسِبٍ، وَسُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْفَزَارِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ كَيْسَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ بَدَأَ الإِسْلاَمُ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবস্থায় ইসলামের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। অচিরেই তা নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করবে। অতএব নিঃসঙ্গ ও অপরিচিতদের জন্য মোবারকবাদ (স্বাগতম)। [৩৩১৮]
[৩৩১৮] মুসলিম ১৪৫, আহমাদ ৮৮১২। রাওদুন নাদীর ৩৫০, সহিহাহ ১২৭৩।
উক্ত হাদীসের রাবী ১. ইয়া’কূব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবূ জা’ফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদীসের অনুসরণ করা যাবে না। আবূ হাতিম আর-রাবী বলেন, তিনি হাদীস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, (তিনি সত্যবাদী তবে হাদীস বর্ণনায় ভূল করেন) (তাহযীবুল কামাল: রাবী নং ৭০৮৬, ৩২/৩১৮ নং পৃষ্ঠা) ২. ইয়াযীদ বিন কায়সান সম্পর্কে আবূ আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট হাফিয নয়। আবূ আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন,আমি আশা করি তার হাদীস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসায়ী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদীস বর্ণনায় ভূল করেন। (তাহযীবুল কামাল: রাবী নং ৭০৪১, ৩২/২৩০ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
- সরাসরি
৩৯৮৭
حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَنْبَأَنَا عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، وَابْنُ، لَهِيعَةَ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ سِنَانِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ “ إِنَّ الإِسْلاَمَ بَدَأَ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ ” .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবসথায় ইসলামের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। অচিরেই তা নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করে। অতএব নিঃসঙ্গ ও অপরিচিতদের জন্য মোবারকবাদ (স্বাগতম)। [৩৩১৯]
[৩৩১৯] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৩৯৮৮
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ إِنَّ الإِسْلاَمَ بَدَأَ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ ” . قَالَ قِيلَ وَمَنِ الْغُرَبَاءُ قَالَ النُّزَّاعُ مِنَ الْقَبَائِلِ .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবস্থায় ইসলামের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। অচিরেই তা নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করবে। অতএব নিঃসঙ্গ ও অপরিচিতদের জন্য মোবারকবাদ (স্বাগতম)। [৩৩২০]
তাহকীক আলবানীঃ (আরবী) শব্দ ব্যতীত সহীহ। সহীহাহ ৩/২৬৯।
[৩৩২০] তিরমিযী ২৬২৯, আহমাদ ৩৭৭৫, দারিমী ২৭৫৫। উক্ত হাদীসের রাবী সুফইয়ান বিন ওয়াকী’ সম্পর্কে ইমাম বুখারী মন্তব্য করেছেন। ইমাম নাসায়ী বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইবনু হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবূ হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই বাছাই ছাড়া হাদীস গ্রহণ করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবূ দাঊদ আস সাজিসতানী তার হাদীস বর্জন করেছেন। ইমাম যাহাবী তাকে দুর্বল বলেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৪১৮, ১১/২০০ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
১৬. অধ্যায়ঃ
যার জন্য অনাচার থেকে নিরাপদ থাকার আশা করা যায়
৩৯৮৯
حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ عِيسَى بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، أَنَّهُ خَرَجَ يَوْمًا إِلَى مَسْجِدِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَوَجَدَ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ قَاعِدًا عِنْدَ قَبْرِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَبْكِي فَقَالَ مَا يُبْكِيكَ قَالَ يُبْكِينِي شَىْءٌ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ “ إِنَّ يَسِيرَ الرِّيَاءِ شِرْكٌ وَإِنَّ مَنْ عَادَى لِلَّهِ وَلِيًّا فَقَدْ بَارَزَ اللَّهَ بِالْمُحَارَبَةِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الأَبْرَارَ الأَتْقِيَاءَ الأَخْفِيَاءَ الَّذِينَ إِذَا غَابُوا لَمْ يُفْتَقَدُوا وَإِنْ حَضَرُوا لَمْ يُدْعَوْا وَلَمْ يُعْرَفُوا قُلُوبُهُمْ مَصَابِيحُ الْهُدَى يَخْرُجُونَ مِنْ كُلِّ غَبْرَاءَ مُظْلِمَةٍ ” .
মুআয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(উমার (রাঃ)) এক দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মসজিদে গিয়ে মুআয বিন জাবাল (রাঃ) কে মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কবরের পাশে উপবিষ্ট অবস্থiয় কান্নারত দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করেন, তুমি কাঁদছো কেন? তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শ্রুত কিছু বিষয় আমাকে কাঁদাচ্ছে। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ সামান্যতম কপটতাও শিরক। যে ব্যক্তি আল্লাহর কোন বন্ধুর (ওলী) সাথে শত্রুতা করলো, সে যেন আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো। নিশ্চয় আল্লাহ ভালোবাসেন সৎকর্মপরায়ণ আল্লাহভীরু আত্মগোপনকারী বান্দাদের, যারা দৃষ্টির অন্তরাল হলে কেউ তাদের খোঁজ করে না, সামনে উপস্থিত থাকলে কেউ তাদের আপ্যায়ন করে না এবং তাদের পরিচয়ও নেয় না। তাদের অন্তরসমূহ হেদায়াতের আলোকবর্তিকা। তারা সব ধরনের অন্ধকারাচ্ছন্ন কদর্যতা থেকে নিরাপদে বের হয়ে যাবে। [৩৩২১]
[৩৩২১] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত ৫৩২৮, রাওদুন নাদীর ৮৬৩, দঈফাহ ২৯৭৫।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯০
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ الدَّرَاوَرْدِيُّ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ النَّاسُ كَإِبِلِ مِائَةٍ لاَ تَكَادُ تَجِدُ فِيهَا رَاحِلَةً ” .
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষ শত উটের মত,যার মধ্যে তুমি হয়ত একটিও ভারবাহী (দায়িত্ব বহনে সক্ষম) লোক পাবে না। [৩৩২২]
[৩৩২২] সহীহুল বূখারী ৬৪৯৮, মুসলিম ২৫৪৭, তিরমিযী ২৮৭২, আহমাদ ৫০০৯, ৫৩৬৪, ৫৫৮৭, ৫৮৪৮, ৫৯৯৪, ৬০১৩, ৬২০১। রাওদুন নাদীর ৫০২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৭. অধ্যায়ঃ
উম্মাতের বিচ্ছিন্নতা ও বিভেদ
৩৯৯১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ تَفَرَّقَتِ الْيَهُودُ عَلَى إِحْدَى وَسَبْعِينَ فِرْقَةً وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইহূদী জাতি একাত্তর ফেরকায় (উপদলে) ভিক্ত হয়েছে এবং আমার উম্মাত তিয়াত্তর ফেরকায় বিভক্ত হবে। [৩৩২৩]
[৩৩২৩] তিরমিযী ২৪৬০, আবূ দাঊদ ৪৫৯৬, আহমাদ ২৭৫১০। রাওদুন নাদীর ৫০, সহীহাহ ২০৩, আত তা’লীকু আলাত তানকীল ২/৫৩।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৩৯৯২
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ بْنِ سَعِيدِ بْنِ كَثِيرِ بْنِ دِينَارٍ الْحِمْصِيُّ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ رَاشِدِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” افْتَرَقَتِ الْيَهُودُ عَلَى إِحْدَى وَسَبْعِينَ فِرْقَةً فَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ وَافْتَرَقَتِ النَّصَارَى عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً فَإِحْدَى وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ وَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَتَفْتَرِقَنَّ أُمَّتِي عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً فَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَثِنْتَانِ وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ ” . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ هُمْ قَالَ ” الْجَمَاعَةُ ” .
আওফ বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ইহূদী জাতি একাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হয়েছে। তার মধ্যে একটি ফেরকা জান্নাতী এবং অবশিষ্ট সত্তর ফেরকা জাহান্নামী। খৃস্টানরা বাহাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হয়েছে। তার মধ্যে একাত্তর ফেরকা জাহান্নামী এবং একটি ফেরকা জান্নাতী। সেই মহান সত্তার শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! অবশ্যই আমার উম্মাত তিয়াত্তর ফেরকায় বিভক্ত হবে। তার মধ্যে একটি মাত্র ফেরকা হবে জান্নাতী এবং অবশিষ্ট বাহাত্তরটি হবে জাহান্নামী। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! কোন ফেরকাটি জান্নাতী। তিনি বলেনঃ জামাআত (একতাবদ্ধ দলটি)। [৩৩২৪]
[৩৩২৪] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। আয যিলাল ৬৩, সহীহাহ ১৪৯২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৩
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَمْرٍو، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ إِنَّ بَنِي إِسْرَائِيلَ افْتَرَقَتْ عَلَى إِحْدَى وَسَبْعِينَ فِرْقَةً وَإِنَّ أُمَّتِي سَتَفْتَرِقُ عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً كُلُّهَا فِي النَّارِ إِلاَّ وَاحِدَةً وَهِيَ الْجَمَاعَةُ ” .
আনাস মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বনী ইসরাঈল একাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হয়েছিল। আর আমার উম্মাত বাহাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হবে। একটি ফেরকা ব্যতীত সকলেই হবে জাহান্নামী। সেটি হচ্ছে জামাআত। [৩৩২৫]
[৩৩২৫] আহমাদ ১১৭৯৮, ১২০৭০। আয যিলাল ৬৪, সহীহাহ ২০৪, ১৪৯২।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” لَتَتَّبِعُنَّ سُنَّةَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ بَاعًا بِبَاعٍ وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ وَشِبْرًا بِشِبْرٍ حَتَّى لَوْ دَخَلُوا فِي جُحْرِ ضَبٍّ لَدَخَلْتُمْ فِيهِ ” . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى قَالَ ” فَمَنْ إِذًا ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা (পথভ্রষ্ট হয়ে) তোমাদের পূর্ববতীদের রীতিনীতি অনুসরণ করবে বাহুতে বাহুতে, হাতে হাতে, বিঘতে বিঘতে। এমনটি তারা যদি গুই সাপের গর্তেও ঢোকে, তবে তোমরাও অবশ্যই তাতে ঢোকবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! (পূর্ববর্তীগণ কি) ইহুদী-খৃস্টান জাতি? তিনি বলেনঃ তবে আর কারা! [৩৩২৬]
[৩৩২৬] সহীহুল বুখারী ৭৩১৯, আহমাদ ৮১০৯, ৮১৪০, ৮২২৮, ৮৫৮৭, ২৭২২৭, ১০২৬৩, ১০৪৪৬। আয যিলাল ৭২, ৭৪, ৭৫। তাখরীজু ইসলাহিল মাসাজিদ ৩৮।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
১৮. অধ্যায়ঃ
ধন-সম্পদ সৃষ্ট বিপর্যয়
৩৯৯৫
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ حَمَّادٍ الْمِصْرِيُّ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَخَطَبَ فَقَالَ ” لاَ وَاللَّهِ مَا أَخْشَى عَلَيْكُمْ أَيُّهَا النَّاسُ إِلاَّ مَا يُخْرِجُ اللَّهُ لَكُمْ مِنْ زَهْرَةِ الدُّنْيَا ” . فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَأْتِي الْخَيْرُ بِالشَّرِّ فَصَمَتَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ سَاعَةً ثُمَّ قَالَ ” كَيْفَ قُلْتَ ” . قَالَ قُلْتُ وَهَلْ يَأْتِي الْخَيْرُ بِالشَّرِّ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” إِنَّ الْخَيْرَ لاَ يَأْتِي إِلاَّ بِخَيْرٍ أَوَخَيْرٌ هُوَ إِنَّ كُلَّ مَا يُنْبِتُ الرَّبِيعُ يَقْتُلُ حَبَطًا أَوْ يُلِمُّ إِلاَّ آكِلَةَ الْخَضِرِ أَكَلَتْ حَتَّى إِذَا امْتَلأَتْ خَاصِرَتَاهَا اسْتَقْبَلَتِ الشَّمْسَ فَثَلَطَتْ وَبَالَتْ ثُمَّ اجْتَرَّتْ فَعَادَتْ فَأَكَلَتْ فَمَنْ يَأْخُذُ مَالاً بِحَقِّهِ يُبَارَكُ لَهُ وَمَنْ يَأْخُذُ مَالاً بِغَيْرِ حَقِّهِ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ الَّذِي يَأْكُلُ وَلاَ يَشْبَعُ ” .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে লোকেদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। তিনি বলেনঃ না, আল্লাহর শপথ, হে জনগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য যে মোহনীয় পার্থিব ধন-সম্পদ নির্গত করবেন, তার অনিষ্ট ছাড়া তোমাদের ব্যাপারে আমি অন্য কিছুর আশংকা করি না। এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল! সম্পদের প্রাচূর্য কি বিপর্যয় ডেকে আনবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্ষণিক নীরব খাকলেন, অতঃপর বলেনঃ তুমি কী বলেছিলে? সে বললো, আমি বলেছিলাম যে, সম্পদের প্রাচূর্য কি বিপর্যয় ডেকে আনবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কল্যাণ তো কল্যাণই বয়ে আনে। কল্যাণ (মাল) কি সম্পূর্ণই কল্যাণকর? নিশ্চয় বসন্ত ঋতু যা কিছু (ঘাসপাতা) উৎপন্ন করে তা (অপরিমিত ভোজে) মৃত্যু ঘটায় বা মৃতপ্রায় করে দেয়। কিন্তু যে তৃণভোজী পশু তা ভক্ষণ করে এবং উদর পূর্ণ হলে সূর্যের দিকে মুখ করে (জাবর কাটে), মলমূত্র তাগ করে এবং পুনরায় চরতে শুরু করে (তার ক্ষতি করে না)। যে ব্যক্তি সঙ্গত পন্থায় সম্পদ অর্জন করে তাকে বরকত দান করা হয়। আর যে ব্যক্তি অসঙ্গত পন্থায় সম্পদ অর্জন করে সে এমন ব্যক্তির ন্যয় যে আহার করে কিন্তু তৃপ্ত হয় না। [৩৩২৭]
[৩৩২৭] সহীহুল বূখারী ৬৪২৭, মুসলিম ১০৫২, নাসায়ী ২৫৮১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৬
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ الْمِصْرِيُّ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَنْبَأَنَا عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، أَنَّ بَكْرَ بْنَ سَوَادَةَ، حَدَّثَهُ أَنَّ يَزِيدَ بْنَ رَبَاحٍ حَدَّثَهُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّهُ قَالَ ” إِذَا فُتِحَتْ عَلَيْكُمْ خَزَائِنُ فَارِسَ وَالرُّومِ أَىُّ قَوْمٍ أَنْتُمْ ” . قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ نَقُولُ كَمَا أَمَرَنَا اللَّهُ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” أَوْ غَيْرَ ذَلِكَ تَتَنَافَسُونَ ثُمَّ تَتَحَاسَدُونَ ثُمَّ تَتَدَابَرُونَ ثُمَّ تَتَبَاغَضُونَ أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ ثُمَّ تَنْطَلِقُونَ فِي مَسَاكِينِ الْمُهَاجِرِينَ فَتَجْعَلُونَ بَعْضَهُمْ عَلَى رِقَابِ بَعْضٍ ” .
আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন পারস্য ও রোমের ধনভাণ্ডার তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে, তখন তোমাদের কী অবস্থা হবে! আবদুর রহমান বিন আওফ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ আমাদের যেরূপ নির্দেশ দিবেন আমরা তদ্রুপ বলবো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ অন্য কিছু বলবে না? তখন তোমরা পরস্পরকে ঈর্ষা করবে, তারপর হিংসা করবে, তারপর সম্পর্ক ছিন্ন করবে, তারপর শত্রুতা পোষণ করবে অথবা অনুরূপ কিছু করবে। অতঃপর তোমরা দরিদ্র মুহাজিরদের নিকট যাবে, তারপর তাদের কতককে কতকের উপর শাসক নিয়োগ করবে। [৩৩২৮]
[৩৩২৮] মুসলিম ২৯৬২। সহীহাহ ২৬৬৫।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৭
حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الْمِصْرِيُّ، أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، . أَنَّ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ، أَخْبَرَهُ عَنْ عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ، – وَهُوَ حَلِيفُ بَنِي عَامِرِ بْنِ لُؤَىٍّ وَكَانَ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ – أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بَعَثَ أَبَا عُبَيْدَةَ بْنَ الْجَرَّاحِ إِلَى الْبَحْرَيْنِ يَأْتِي بِجِزْيَتِهَا وَكَانَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ هُوَ صَالَحَ أَهْلَ الْبَحْرَيْنِ وَأَمَّرَ عَلَيْهِمُ الْعَلاَءَ بْنَ الْحَضْرَمِيِّ فَقَدِمَ أَبُو عُبَيْدَةَ بِمَالٍ مِنَ الْبَحْرَيْنِ فَسَمِعَتِ الأَنْصَارُ بِقُدُومِ أَبِي عُبَيْدَةَ فَوَافَوْا صَلاَةَ الْفَجْرِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ انْصَرَفَ فَتَعَرَّضُوا لَهُ فَتَبَسَّمَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ حِينَ رَآهُمْ ثُمَّ قَالَ ” أَظُنُّكُمْ سَمِعْتُمْ أَنَّ أَبَا عُبَيْدَةَ قَدِمَ بِشَىْءٍ مِنَ الْبَحْرَيْنِ ” . قَالُوا أَجَلْ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ ” أَبْشِرُوا وَأَمِّلُوا مَا يَسُرُّكُمْ فَوَاللَّهِ مَا الْفَقْرَ أَخْشَى عَلَيْكُمْ وَلَكِنِّي أَخْشَى عَلَيْكُمْ أَنْ تُبْسَطَ الدُّنْيَا عَلَيْكُمْ كَمَا بُسِطَتْ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ فَتَنَافَسُوهَا كَمَا تَنَافَسُوهَا فَتُهْلِكَكُمْ كَمَا أَهْلَكَتْهُمْ ” .
আমর বিন আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আমির বিন লুয়াই-এর মিত্র ছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ উবায়দা ইবনুল জাররাহ (রাঃ) কে বাহরাইনে জিয্য়া আদায় করার জন্য পাঠান। তিনি বাহরাইনবাসীদের সাথে সন্ধিচুক্তি করেছিলেন এবং আলা ইবনুল হাদরামী (রাঃ) কে তাদের শাসক নিযুক্ত করেছিলেন। আবূ উবায়দা (রাঃ) বাহরাইন থেকে ধন-সম্পদ নিয়ে (মদীনায়) ফিরে আসেন। আনসারগণ তার আগমনের কথা শুনতে পেলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামাযান্তে ঘুরে বসলে তারা তাঁর সামনে হাযির হন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে দেখে মুচকি হাসি দিয়ে বলেনঃ আমার মনে হয় তোমরা শুনতে পেয়েছো যে, আবূ উবায়দা বাহরাইন থেকে কিছু নিয়ে ফিরে এসেছে। তারা বলেন, হাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বলেনঃ তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো এবং তা তোমাদেরকে আনন্দিত করবে এই আশা রাখো। আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের ব্যাপারে দারিদ্র্যের ভয় করি না। আমি তোমাদের ব্যাপারে আশংকা করি যে, তোমাদের পূর্বকালের লোকেদের জন্য পৃথিবী যেমনিভাবে প্রশস্ত হয়ে গিয়েছিলো, তদ্রূপ তা তোমাদের জন্যও প্রশস্ত হবে। অতঃপর তোমরাও তাদের মত (সম্পদের) প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে পড়বে। অবশেষে এই প্রতিযোগিতা তাদের মত তোমাদেরও ধ্বংস ডেকে আনবে। [৩৩২৯]
[৩৩২৯] সহীহুল বূখারী ৩১৫৮, মুসলিম ২৯৬১, তিরমিযী ২৪৬২, আহমাদ ১৬৭৮৩। ইরওয়া’ ৫/৮৯,৯০।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯. অধ্যায়ঃ
নারীদের সৃষ্ট বিপর্যয়
৩৯৯৮
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ الصَّوَّافُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، ح وَحَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ مَا أَدَعُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنَ النِّسَاءِ ” .
উসামাহ বিন যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি আমার পরে পুরুষদের জন্য নারীদের চেয়ে অধিক বিপর্যয়কর আর কিছু রেখে যাবো না। [৩৩৩০]
[৩৩৩০] সহীহুল বূখারী ৫০৯৬, মুসলিম ২৮৪০, ২৮৪১, তিরমিযী ২৮৮০, আহমাদ ২১২৩৯, ২১৩২২। সহীহাহ ২৭০১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ خَارِجَةَ بْنِ مُصْعَبٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ مَا مِنْ صَبَاحٍ إِلاَّ وَمَلَكَانِ يُنَادِيَانِ وَيْلٌ لِلرِّجَالِ مِنَ النِّسَاءِ وَوَيْلٌ لِلنِّسَاءِ مِنَ الرِّجَالِ ” .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন ভোর হয় তখন দু’জন ফেরেশতা ঘোষণা দেন যে, নারীদের কারণে পুরুষদের ধ্বংস অনিবার্য এবং পুরুষদের কারণে নারীদের ধ্বংস অনিবার্য। [৩৩৩১]
[৩৩৩১] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। দঈফাহ ২০১৮, দঈফ আল-জামি’ ৫১৮৬।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
৪০০০
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مُوسَى اللَّيْثِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَامَ خَطِيبًا فَكَانَ فِيمَا قَالَ “ إِنَّ الدُّنْيَا خَضِرَةٌ حُلْوَةٌ وَإِنَّ اللَّهَ مُسْتَخْلِفُكُمْ فِيهَا فَنَاظِرٌ كَيْفَ تَعْمَلُونَ أَلاَ فَاتَّقُوا الدُّنْيَا وَاتَّقُوا النِّسَاءَ ” .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাষণ দিতে দাঁড়ালেন। তিনি তাঁর ভাষণে বলেনঃ নিশ্চয় দুনিয়া সবুজ-শ্যামল ও লোভনীয়। আল্লাহ তা’আলা দুনিয়াতে তোমাদেরকে খলীফা (শাসক) বানিয়েছেন। তিনি দেখবেন যে, তোমরা কেমন কাজ করো। সাবধান! দুনিয়া সম্পর্কে সতর্ক হও এবং নারীদের সম্পর্কেও সতর্ক হও। [৩৩৩২]
[৩৩৩২] মুসলিম ২৭৪২, তিরমিযী ২১৯১, আহমাদ ১০৬৫১, ১০৭৫৯, ১০৭৮৫, ১১০৩৬, ১১১৯৩, ১১৩৮৪। আর রাদ্দু আলাল বালীক ৮৬।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৪০০১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ مُوسَى بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ مُدْرِكٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ بَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ جَالِسٌ فِي الْمَسْجِدِ إِذْ دَخَلَتِ امْرَأَةٌ مِنْ مُزَيْنَةَ تَرْفُلُ فِي زِينَةٍ لَهَا فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ النَّبِيُّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ يَا أَيُّهَا النَّاسُ انْهَوْا نِسَاءَكُمْ عَنْ لُبْسِ الزِّينَةِ وَالتَّبَخْتُرِ فِي الْمَسْجِدِ فَإِنَّ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَمْ يُلْعَنُوا حَتَّى لَبِسَ نِسَاؤُهُمُ الزِّينَةَ وَتَبَخْتَرْنَ فِي الْمَسَاجِدِ ” .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মসজিদে বসা ছিলেন। ইতোমধ্যে মুযায়না গোত্রের এক নারী মোহনীয় সাজে সজ্জিত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হে লোকসকল! তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের জৌলুসপূর্ণ ও চোখ ধাঁধানো পোশাক পরিহিত অবস্থায় মাসজিদে আসতে নিষেধ করো। কেননা বনী ইসরাঈলের নারীরা জৌলুসপূর্ণ সাজে সজ্জিত হয়ে মসজিদে না আসা পর্যন্ত তাদের উপর অভিশাপ বর্ষিত হয়নি। [৩৩৩৩]
[৩৩৩৩] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। দঈফাহ ৪৮২১, দঈফ আল-জামি’ ৬৩৮৫।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৪০০২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ مَوْلَى أَبِي رُهْمٍ، – وَاسْمُهُ عُبَيْدٌ – أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، لَقِيَ امْرَأَةً مُتَطَيِّبَةً تُرِيدُ الْمَسْجِدَ فَقَالَ يَا أَمَةَ الْجَبَّارِ أَيْنَ تُرِيدِينَ قَالَتِ الْمَسْجِدَ قَالَ وَلَهُ تَطَيَّبْتِ قَالَتْ نَعَمْ . قَالَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ “ أَيُّمَا امْرَأَةٍ تَطَيَّبَتْ ثُمَّ خَرَجَتْ إِلَى الْمَسْجِدِ لَمْ تُقْبَلْ لَهَا صَلاَةٌ حَتَّى تَغْتَسِلَ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক নারীকে সুগন্ধি মেখে মসজিদে যেতে দেখলেন। তিনি বললেন, হে মহাপরাক্রমশালীর বান্দী! কোথায় যাচ্ছো? সে বললো, মসজিদে। তিনি বললেন, সেজন্য সুগন্ধি মেখেছ? সে বললো, হাঁ। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ যে নারী সুগন্ধি মেখে মসজিদে যায় তার নামায কবুল হয় না, যাবত না সে (তা) ধুয়ে ফেলে। [৩৩৩৪]
[৩৩৩৪] আবূ দাঊদ ৪১৭৪, আত তা’লীকু আলা ইবনু খুযায়মাহ ১৬৮২, আত তা’লীকুর রাগীব ৩/৯৪, সহীহাহ ১০৩১।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৪০০৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَنْبَأَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنَّهُ قَالَ ” يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ وَأَكْثِرْنَ مِنَ الاِسْتِغْفَارِ فَإِنِّي رَأَيْتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ ” . فَقَالَتِ امْرَأَةٌ مِنْهُنَّ جَزْلَةٌ وَمَا لَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ قَالَ ” تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ وَتَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ مَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَغْلَبَ لِذِي لُبٍّ مِنْكُنَّ ” . قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا نُقْصَانُ الْعَقْلِ وَالدِّينِ قَالَ ” أَمَّا نُقْصَانُ الْعَقْلِ فَشَهَادَةُ امْرَأَتَيْنِ تَعْدِلُ شَهَادَةَ رَجُلٍ فَهَذَا مِنْ نُقْصَانِ الْعَقْلِ وَتَمْكُثُ اللَّيَالِيَ مَا تُصَلِّي وَتُفْطِرُ فِي رَمَضَانَ فَهَذَا مِنْ نُقْصَانِ الدِّينِ ” .
আবদুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হে নারী সমাজ! তোমরা অধিক পরিমাণে দান-খয়রাত করো এবং অধিক সংখ্যায় ক্ষমা প্রার্থনা করো। কেননা আমি তোমাদের বহু নারীকে জাহান্নামবাসী দেখেছি। তাদের মধ্যকার এক বুদ্ধিমতী নারী বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কী কসুর যে, আমাদের অধিক সংখ্যক দোযখবাসী হবে? তিনি বলেনঃ তোমরা বেশী বেশী অভিশাপ দাও এবং স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়ে থাকো। আমি তোমাদের স্বল্পবুদ্ধ ও দ্বীনের ব্যাপারে সংকীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বুদ্ধিমান বিচক্ষণ পুরুষদের উপর বিজয়ী হতে পারঙ্গম আর কাউকে দেখিনি। মহিলা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! বিবেক-বুদ্ধি ও দ্বীনের ব্যাপারে কমতি কী? তিনি বলেনঃ বুদ্ধির স্বল্পতা এই যে, তোমাদের দু’জন নারীর সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান। আর তোমাদের দ্বীনের স্বল্পতা এই যে, তোমরা কয়েক দিন নামায থেকে বিরত থাকো এবং রমাদান মাসের কায়েক দিন রোযা থেকে বিরত থাকো। [৩৩৩৫]
[৩৩৩৫] মুসলিম ৮০, আবূ দাঊদ ৪৬৭৯, আহমাদ ৫৩২১। ইরওয়া’ ১৯০, আয যিলাল ৯৫৫, ৯৫৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২০. অধ্যায়ঃ
সৎকাজের নির্দেশদান এবং অসৎকাজে বাধাদান করা
৪০০৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ عُثْمَانَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ عُثْمَانَ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ “ مُرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَانْهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ قَبْلَ أَنْ تَدْعُوا فَلاَ يُسْتَجَابَ لَكُمْ ” .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা সৎকাজের আদেশ দিবে এবং মন্দ কাজে বাধা দিবে এমন সময় আসার পূর্বে যখন তোমরা দুআ’ করবে কিন্তু তা কবূল হবে না। [৩৩৩৬]
[৩৩৩৬] আহমাদ ২৪৭২৭। আত তা’লীকুর রাগীব ৩/১৭২, আর রাদ্দু আলাল বালীক ৩২১। তাহকীক আলবানীঃ হাসান।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৪০০৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، قَالَ قَامَ أَبُو بَكْرٍ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّكُمْ تَقْرَءُونَ هَذِهِ الآيَةَ {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ أَنْفُسَكُمْ لاَ يَضُرُّكُمْ مَنْ ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ} وَإِنَّا سَمِعْنَا رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ ” إِنَّ النَّاسَ إِذَا رَأَوُا الْمُنْكَرَ لاَ يُغَيِّرُونَهُ أَوْشَكَ أَنْ يَعُمَّهُمُ اللَّهُ بِعِقَابِهِ ” . قَالَ أَبُو أُسَامَةَ مَرَّةً أُخْرَى فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ .
কায়স বিন আবূ হাযিম থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) দাঁড়ালেন, আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করলেন, অতপর বলেন, হে লোকসকল! তোমরা তো এই আয়াত তিলাওয়াত করো (অনুবাদ): “হে ঈমানদারগণ! আত্মসংশোধন করাই তোমাদের কর্তব্য, তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও, তবে যে পথভ্রষ্ট হয়েছে সে তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না” (সূরা মাইদাঃ ১০৫)। আমরা রাসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ লোকেরা মন্দ কাজ করতে দেখে তা পরিবর্তনের চেষ্ট না করলে অচিরেই আল্লাহ তাদের উপর ব্যাপকভাবে শাস্তি পাঠান। আবূ উসামা (রাঃ)-এর অপর সনদে এভাবে উক্ত হয়েছেঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি। [৩৩৩৭]
[৩৩৩৭] তিরমিযী ২১৬৮। মিশকাত ৫১৪২, তাখরীজুল মুখতার ৫৪-৫৮। সহীহাহ ১৫৬৪।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ بَذِيمَةَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” إِنَّ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَمَّا وَقَعَ فِيهِمُ النَّقْصُ كَانَ الرَّجُلُ يَرَى أَخَاهُ عَلَى الذَّنْبِ فَيَنْهَاهُ عَنْهُ فَإِذَا كَانَ الْغَدُ لَمْ يَمْنَعْهُ مَا رَأَى مِنْهُ أَنْ يَكُونَ أَكِيلَهُ وَشَرِيبَهُ وَخَلِيطَهُ فَضَرَبَ اللَّهُ قُلُوبَ بَعْضِهِمْ بِبَعْضٍ وَنَزَلَ فِيهِمُ الْقُرْآنُ فَقَالَ {لُعِنَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى لِسَانِ دَاوُدَ وَعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ} حَتَّى بَلَغَ {وَلَوْ كَانُوا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالنَّبِيِّ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مَا اتَّخَذُوهُمْ أَوْلِيَاءَ وَلَكِنَّ كَثِيرًا مِنْهُمْ فَاسِقُونَ } ” . قَالَ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مُتَّكِئًا فَجَلَسَ وَقَالَ ” لاَ حَتَّى تَأْخُذُوا عَلَى يَدَىِ الظَّالِمِ فَتَأْطِرُوهُ عَلَى الْحَقِّ أَطْرًا ” .
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، – أَمْلاَهُ عَلَىَّ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي الْوَضَّاحِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ بَذِيمَةَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِمِثْلِهِ .
আবূ উবায়দাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বনী ইসরাঈলের মধ্যে এভাবে পাপাচারের সূচনা হয় যে, কোন ব্যক্তি তার (মুসলিম) ভাইকে পাপাচারে লিপ্ত দেখলে সে তাকে তা থেকে বারন করতো। কিন্ত পরদিন সে তাকে পাপাচারে লিপ্ত দেখে নিষেধ করতো না, বরং তার সাথে মেলামেশা ও উঠাবসা করতো এবং তার সাথে পানাহারে অংশগ্রহণ করতো। ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের পরস্পরের অন্তরকে মৃত্যুদান করেন। তাদের সম্পর্কে তিনি কুরআন মাজীদে আয়াত নাযিল করেন। তিনি বলেনঃ “বনী ইসররাঈলের মধ্যে যারা কুফরী করেছিল তারা দাউদ ও মরিয়ম-তনয় ঈসা কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল। তা এজন্য যে, তারা ছিল অবাধ্য ও সীমালংঘনকারী। তারা যেসব গর্হিত কাজ করতো তা থেকে তারা একে অপরকে বারণ করতো না। তারা যা করতো তা কতই না নিকৃষ্ট। তাদের অনেককে তুমি কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবে। কত নিকৃষ্ট তাদের কৃতকর্ম যে কারণে আল্লাহ তাদের প্রতি ক্রোধান্বিত হয়েছেন। তাদের শাস্তি ভোগ স্থায়ী হবে। তারা আল্লাহর প্রতি, নবীর প্রতি এবং যা তার প্রতি নাযিল হয়েছে তাতে বিশ্বাসী হলে তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতো না। কিন্তু তাদের অনেকেই সত্যত্যাগী” (সূরা মাইদাঃ ৭৮-৮১)। রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। তিনি সোজা হয়ে বসে বলেনঃ না! তোমরা জালেমের হাত ধরে তাকে জোরপূর্বক সত্যের উপর দাঁড় করিয়ে দিবে।
[উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সনদের ১টি বর্ণত হয়েছে, অপর সনদটি হলো:]
৪/৪০০৬(১). আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত আছে। [৩৩৩৮]
[৩৩৩৮] তিরমিযী ৩০৪৭, আবূ দাঊদ ৪৩৩৬। মিশকাত ৫১৪৮।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৪০০৭
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مُوسَى، أَنْبَأَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَامَ خَطِيبًا فَكَانَ فِيمَا قَالَ “ أَلاَ لاَ يَمْنَعَنَّ رَجُلاً هَيْبَةُ النَّاسِ أَنْ يَقُولَ بِحَقٍّ إِذَا عَلِمَهُ ” . قَالَ فَبَكَى أَبُو سَعِيدٍ وَقَالَ قَدْ وَاللَّهِ رَأَيْنَا أَشْيَاءَ فَهِبْنَا .
আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাষণ দিতে দাঁড়ালেন এবং তাঁর ভাষণে বলেনঃ সাবধান! মানুষের ভয় যেন কোন ব্যক্তিকে সজ্ঞানে সত্য কথা বলতে বিরত না রাখে। রাবী বলেন (এ হাদিস বর্ণনাকালে) আবু সাঈদ (রাঃ) কেঁদে দিলেন এবং বললেন, আল্লাহর শপথ! আমরা বহু কিছু লক্ষ্য করেছি কিন্তু বলতে ভয় পাচ্ছি। [৩৩৩৯]
[৩৩৩৯] তিরমিযী ২১৯১। রাওদুন নাদীর ১০০১, সহীহাহ ১৬৮।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০৮
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ أَبِي الْبَخْتَرِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” لاَ يَحْقِرْ أَحَدُكُمْ نَفْسَهُ ” . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ يَحْقِرُ أَحَدُنَا نَفْسَهُ قَالَ ” يَرَى أَمْرًا لِلَّهِ عَلَيْهِ فِيهِ مَقَالٌ ثُمَّ لاَ يَقُولُ فِيهِ فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَقُولَ فِي كَذَا وَكَذَا فَيَقُولُ خَشْيَةُ النَّاسِ . فَيَقُولُ فَإِيَّاىَ كُنْتَ أَحَقَّ أَنْ تَخْشَى ” .
আবু সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন নিজেকে অপমানিত না করে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের কেউ নিজেকে কিভাবে অপমানিত করতে পারে? তিনি বলেনঃ সে কোন বিষয়ে আল্লাহর বিধান অবহিত থাকা সত্ত্বেও তার পরিপন্থী কিছু হতে দেখেও সে সম্পর্কে কিছুই বললো না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে বলবেনঃ অমুক অমুক ব্যাপারে কথা বলতে তোমাকে কিসে বাধা দিয়েছিলো? সে বলবে, মানুষের ভয়। তখন আল্লাহ বলবেনঃ আমাকেও তো তোমার ভয় করা উচিত ছিলো। [৩৩৪০]
[৩৩৪০] (আহমাদ ১১০৪৮,১১৩০২,১১৪৫৫। আত তা’লীকুর রাগীব ৩/১৬৯, দঈফ আল-জামি’ ৬৩৩২।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৪০০৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ مَا مِنْ قَوْمٍ يُعْمَلُ فِيهِمْ بِالْمَعَاصِي هُمْ أَعَزُّ مِنْهُمْ وَأَمْنَعُ لاَ يُغَيِّرُونَ إِلاَّ عَمَّهُمُ اللَّهُ بِعِقَابٍ ” .
জারীর বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে পাপাচার হতে থাকে এবং তাদের প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তাদের পাপাচারীদের বাধা দেয় না, তখন আল্লাহ তাআলা তাদের উপর ব্যাপকভাবে শাস্তি পাঠান। [৩৩৪১]
[৩৩৪১] আবু দাউদ ৪৩৩৯, আহমাদ ১৮৭৩১,১৮৭৬৮। আত তা’লীকুর রাগীব ৩/১৭০।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৪০১০
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ لَمَّا رَجَعَتْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مُهَاجِرَةُ الْبَحْرِ قَالَ ” أَلاَ تُحَدِّثُونِي بِأَعَاجِيبِ مَا رَأَيْتُمْ بِأَرْضِ الْحَبَشَةِ ” . قَالَ فِتْيَةٌ مِنْهُمْ بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ بَيْنَا نَحْنُ جُلُوسٌ مَرَّتْ بِنَا عَجُوزٌ مِنْ عَجَائِزِ رَهَابِينِهِمْ تَحْمِلُ عَلَى رَأْسِهَا قُلَّةً مِنْ مَاءٍ فَمَرَّتْ بِفَتًى مِنْهُمْ فَجَعَلَ إِحْدَى يَدَيْهِ بَيْنَ كَتِفَيْهَا ثُمَّ دَفَعَهَا فَخَرَّتْ عَلَى رُكْبَتَيْهَا فَانْكَسَرَتْ قُلَّتُهَا فَلَمَّا ارْتَفَعَتِ الْتَفَتَتْ إِلَيْهِ فَقَالَتْ سَوْفَ تَعْلَمُ يَا غُدَرُ إِذَا وَضَعَ اللَّهُ الْكُرْسِيَّ وَجَمَعَ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ وَتَكَلَّمَتِ الأَيْدِي وَالأَرْجُلُ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ فَسَوْفَ تَعْلَمُ كَيْفَ أَمْرِي وَأَمْرُكَ عِنْدَهُ غَدًا . قَالَ يَقُولُ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” صَدَقَتْ صَدَقَتْ كَيْفَ يُقَدِّسُ اللَّهُ أُمَّةً لاَ يُؤْخَذُ لِضَعِيفِهِمْ مِنْ شَدِيدِهِمْ ” .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সমুদ্রের মুহাজিরগণ (হাবশায় হিজরতকারী প্রথম দল) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট প্রত্যাবর্তন করলে, তিনি বলেনঃ তোমার হাবশায় যেসব অনিষ্ঠজনক বিষয় প্রত্যক্ষ করেছো তা কি আমার নিকট ব্যক্ত করবে না? তাদের মধ্য থেকে এক যুবক বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল! একদা আমরা বসা ছিলাম, আমাদের সামনে দিয়ে সেখানকার এক বৃদ্ধা রমণী মাথায় পানি ভর্তি কলসসহ যাচ্ছিল। সে তাদের এক যুবককে অতিক্রমকালে সে তার কাঁধে তার এক হাত রেখে তাকে ধাক্কা দিলে সে উপুড় হয়ে মাটিতে পড়ে যায় এবং এর ফলে তার কলসটি ভেঙ্গে যায়। সে উঠে দাঁড়িয়ে যুবকের দিকে তাকিলে বললো, “হে দাগাবাজ! তুমি অচিরেই জানতে পারবে যখন আল্লাহ তাআলা ইনসাফের আসনে উপবিষ্ট হয়ে পূর্বাপর সকল মানুষকে সমবেত করবেন এবং হাত-পাগুলো তাদের কৃতকর্মের বিবরন দিবে তখন তুমিও জানতে পারবে সেদিন তোমার ও আমার অবস্থা কি হবে। জাবির(রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এই বৃদ্ধা সত্য কথাই বলেছে, সত্য কথাই বলেছে। আল্লাহ তাআলা সেই উম্মাতকে কিভাবে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন, যাদের সবলদের থেকে দুর্বলদের প্রাপ্য আদায় করে দেয়া হয় না।” [৩৩৪২]
[৩৩৪২] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মুখতাসারুল উলু ৫৯/৪৬।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৪০১১
حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ دِينَارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مُصْعَبٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَادَةَ الْوَاسِطِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، أَنْبَأَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جُحَادَةَ، عَنْ عَطِيَّةَ الْعَوْفِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ أَفْضَلُ الْجِهَادِ كَلِمَةُ عَدْلٍ عِنْدَ سُلْطَانٍ جَائِرٍ ” .
আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যালেম শাসকের সামনে সত্য কথা বলা অধিক উত্তম জিহাদ। [৩৩৪৩]
[৩৩৪৩] তিরমিযী ২১৭৪। মিশকাত ৩৭০৫-৩৭০৬, রাওদুন নাদীর ৯০৯, সহীহাহ ৪৯১।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১২
حَدَّثَنَا رَاشِدُ بْنُ سَعِيدٍ الرَّمْلِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي غَالِبٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، قَالَ عَرَضَ لِرَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ رَجُلٌ عِنْدَ الْجَمْرَةِ الأُولَى فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ الْجِهَادِ أَفْضَلُ فَسَكَتَ عَنْهُ فَلَمَّا رَأَى الْجَمْرَةَ الثَّانِيَةَ سَأَلَهُ فَسَكَتَ عَنْهُ فَلَمَّا رَمَى جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ وَضَعَ رِجْلَهُ فِي الْغَرْزِ لِيَرْكَبَ قَالَ ” أَيْنَ السَّائِلُ ” . قَالَ أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” كَلِمَةُ حَقٍّ عِنْدَ ذِي سُلْطَانٍ جَائِرٍ ” .
আবু উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জামরাতুল উলাতে এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট জিজ্ঞাসা করলো, হে আল্লাহর রাসুল! কোন জিহাদ অধিক উত্তম? তিনি তাকে কিছু না বলে নীরব থাকলেন। অতঃপর তিনি দ্বিতীয় জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপকালে সে পুনরায় একই প্রশ্ন করলো। তিনি এবারও নিশ্চুপ থাকলেন। তিনি জামরাতুল আকাবাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করার পর বাহনে আরোহণের জন্য পাদানিতে পা রেখে জিজ্ঞাসা করলেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়? সে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! এই যে আমি। তিনি বলেনঃ যালেম শাসকের সামনে সত্য কথা বলা(উত্তম জিহাদ)। [৩৩৪৪]
[৩৩৪৪] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। রাওদুন নাদীর ৯০৯, সহীহাহ ৪৯১।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৪০১৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَعَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ أَخْرَجَ مَرْوَانُ الْمِنْبَرَ فِي يَوْمِ عِيدٍ فَبَدَأَ بِالْخُطْبَةِ قَبْلَ الصَّلاَةِ فَقَالَ رَجُلٌ يَا مَرْوَانُ خَالَفْتَ السُّنَّةَ أَخْرَجْتَ الْمِنْبَرَ فِي هَذَا الْيَوْمِ وَلَمْ يَكُنْ يُخْرَجُ وَبَدَأْتَ بِالْخُطْبَةِ قَبْلَ الصَّلاَةِ وَلَمْ يَكُنْ يُبْدَأُ بِهَا . فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ أَمَّا هَذَا فَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ “ مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَاسْتَطَاعَ أَنْ يُغَيِّرَهُ بِيَدِهِ فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ ” .
আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মারওয়ান ঈদের দিন ঈদের মাঠে মিম্বার বের (স্থাপন) করলো এবং ঈদের সালাতের পূর্বে খুতবা দিলো। এক ব্যাক্তি বলল, হে মারওয়ান! তুমি সুন্নাতের বিপরীত করেছো, তুমি আজকের এই দিনে মিম্বার বের (স্থাপন) করছো, অথচ এই দিন তা বের করা (ঈদের মাঠে মিম্বার নেয়া) হতো না। উপরন্তু তুমি সালাতের আগে খুতবা শুরু করছো, অথচ সালাতের পূর্বে খুতবা দেয়া হতো না। আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, এই ব্যাক্তি তার দায়িত্ব পালন করেছে। আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের মধ্যে কেউ অন্যায় কাজ হতে দেখলে এবং তার দৈহিক শক্তি দিয়ে প্রতিহত করার সামর্থ্য থাকলে সে যেন তা সেভাবেই প্রতিহত করে। তার সেই সামর্থ্য না থাকলে সে যেন মুখের কথা দ্বারা তা প্রতিহত করে। তার সেই সামর্থ্য না থাকলে সে যেন মনে মনে ঘৃণা করে। তা হলো সবচেয়ে দুর্বল ঈমান। [৩৩৪৫]
[৩৩৪৫] সহীহুল বূখারী ৯৫৬, মুসলিম ৪৯, তিরমিযী ২১৭২, নাসায়ী ৫০০৮, ৫০০৯, আবূ দাঊদ ১১৪০, ৪৩৪০, আহমাদ ১০৬৮৯, ১০৭৬৬, ১১০৬৮, ১১১০০, ১১১২২, ১১৪৬৬।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বানীঃ “আত্মসংশোধনই তোমাদের কর্তব্য”
৪০১৪
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنِي عُتْبَةُ بْنُ أَبِي حَكِيمٍ، حَدَّثَنِي عَمِّي، عَمْرُو بْنُ جَارِيَةَ عَنْ أَبِي أُمَيَّةَ الشَّعْبَانِيِّ، قَالَ أَتَيْتُ أَبَا ثَعْلَبَةَ الْخُشَنِيَّ قَالَ قُلْتُ كَيْفَ تَصْنَعُ فِي هَذِهِ الآيَةِ قَالَ أَيَّةُ آيَةٍ قُلْتُ {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ أَنْفُسَكُمْ لاَ يَضُرُّكُمْ مَنْ ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ} قَالَ سَأَلْتَ عَنْهَا خَبِيرًا سَأَلْتُ عَنْهَا رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ فَقَالَ ” بَلِ ائْتَمِرُوا بِالْمَعْرُوفِ وَتَنَاهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ حَتَّى إِذَا رَأَيْتَ شُحًّا مُطَاعًا وَهَوًى مُتَّبَعًا وَدُنْيَا مُؤْثَرَةً وَإِعْجَابَ كُلِّ ذِي رَأْىٍ بِرَأْيِهِ وَرَأَيْتَ أَمْرًا لاَ يَدَانِ لَكَ بِهِ فَعَلَيْكَ خُوَيْصَّةَ نَفْسِكَ وَدَعْ أَمْرَ الْعَوَامِّ فَإِنَّ مِنْ وَرَائِكُمْ أَيَّامَ الصَّبْرِ الصَّبْرُ فِيهِنَّ مِثْلُ قَبْضٍ عَلَى الْجَمْرِ لِلْعَامِلِ فِيهِنَّ مِثْلُ أَجْرِ خَمْسِينَ رَجُلاً يَعْمَلُونَ بِمِثْلِ عَمَلِهِ ” .
আবু উমায়্যাহ আশ-শা’বানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু সা’লাবাহ আল-খুশানী (রাঃ) এর নিকট এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, এই আয়াত সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? তিনি বলেন, কোন আয়াত? আমি বললাম, এই আয়াত (আনুবাদ): “হে মুমিনগণ! আত্মসংশোধন করাই তোমাদের কর্তব্য। তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও তবে যে পথভ্রষ্ট হয়েছে সে তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না”(সুরা মাইদাঃ ১০৫)। তিনি বলেন, আমি এ আয়াত সম্পর্কে অধিক অবহিত ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করেছি। আমি এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করেছি। তিনি বলেনঃ বরং তোমরা সৎ কাজের আদেশ ও অন্যায় কাজে নিষেধ করতে থাকো। শেষে এমন এক যুগ আসবে যখন তুমি লোকদেরকে কৃপণতার আনুগত্য করতে, প্রবৃত্তির অনুসরণ করতে, পার্থিব স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে এবং প্রত্যেক বুদ্ধিমান ব্যক্তিকে নিজের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে অহংকার করতে দেখবে। আর তুমি এমন সব গর্হিত কাজ হতে দেখবে যা প্রতিহত করার সামর্থ্য তোমার থাকবে না। এরূপ পরিস্থিতিতে তুমি নিজের হেফাজত করো এবং সর্বসাধারণের চিন্তা ছেড়ে দাও। তোমাদের পরে আসবে কঠিন ধৈর্যের পরীক্ষার যুগ। তখন ধৈর্যধারণ করাটা জ্বলন্ত অঙ্গার হাতের মুঠোয় রাখার মত কঠিন হবে। সে যুগে কেউ নেক আমল করলে তার সমকক্ষ পঞ্ছাশ ব্যক্তির সওয়াব তাকে দান করা হবে। [৩৩৪৬]
[৩৩৪৬] তিরমিযী ৩০৫৮, আবু দাউদ ৪৩৪১। মিশকাত ৫১৪৪, সহীহাহ ৪৯৪।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৪০১৫
حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ الْوَلِيدِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ عُبَيْدٍ الْخُزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا الْهَيْثَمُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَيْدٍ، حَفْصُ بْنُ غَيْلاَنَ الرُّعَيْنِيُّ عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَتَى نَتْرُكُ الأَمْرَ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْىَ عَنِ الْمُنْكَرِ قَالَ ” إِذَا ظَهَرَ فِيكُمْ مَا ظَهَرَ فِي الأُمَمِ قَبْلَكُمْ ” . قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا ظَهَرَ فِي الأُمَمِ قَبْلَنَا قَالَ ” الْمُلْكُ فِي صِغَارِكُمْ وَالْفَاحِشَةُ فِي كِبَارِكُمْ وَالْعِلْمُ فِي رُذَالَتِكُمْ ” . قَالَ زَيْدٌ تَفْسِيرُ مَعْنَى قَوْلِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” وَالْعِلْمُ فِي رُذَالَتِكُمْ ” . إِذَا كَانَ الْعِلْمُ فِي الْفُسَّاقِ .
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করা কখন ত্যাগ করবো? তিনি বলেনঃ যখন তোমাদের মাঝে সেই সব বিষয় প্রকাশ পাবে, যা তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতদের মাঝে প্রকাশ পেয়েছিলো। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের পূর্বেকার উম্মাতগনের যুগে কী কী বিষয় প্রকাশ পেয়েছিলো? তিনি বলেনঃ তোমাদের মধ্যকার নিকৃষ্ট তরুণদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা চলে যাবে। বয়স্ক লোক অশ্লীল কার্যকলাপে লিপ্ত হবে এবং নিকৃষ্ট লোক জ্ঞানের অধিকারী হবে। রাবী যায়েদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণীঃ “নিকৃষ্ট ও নীচ ব্যক্তিরা জ্ঞানের অধিকারী হবে”, এর তাৎপর্য হলোঃ পাপাচারীরা জ্ঞানের বাহক হবে।[৩৩৪৭]
তাহকীক আলবানীঃ মাখহুলের আন আন সুত্রে বর্ণনার কারণে সানাদটি দুর্বল।
[৩৩৪৭] আহমাদ ১২৫৩১।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৪০১৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ جُنْدُبٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ” لاَ يَنْبَغِي لِلْمُؤْمِنِ أَنْ يُذِلَّ نَفْسَهُ ” . قَالُوا وَكَيْفَ يُذِلُّ نَفْسَهُ قَالَ ” يَتَعَرَّضُ مِنَ الْبَلاَءِ لِمَا لاَ يُطِيقُهُ ” .
হুযায়ফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুমিন ব্যাক্তির নিজেকে অপমান করা সমীচীন নয়। লোকেরা বললো, কিভাবে সে নিজেকে অপমানিত করতে পারে? তিনি বলেনঃ যে বিপদ সহ্য করতে সে সক্ষম নয় তাতে তার লিপ্ত হওয়া। [৩৩৪৮]
[৩৩৪৮] তিরমিযী ২২৫৪। সহীহাহ ৬১৩।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৪০১৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَبُو طُوَالَةَ، حَدَّثَنَا نَهَارٌ الْعَبْدِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ “ إِنَّ اللَّهَ لَيَسْأَلُ الْعَبْدَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يَقُولَ مَا مَنَعَكَ إِذْ رَأَيْتَ الْمُنْكَرَ أَنْ تُنْكِرَهُ فَإِذَا لَقَّنَ اللَّهُ عَبْدًا حُجَّتَهُ قَالَ يَا رَبِّ رَجَوْتُكَ وَفَرِقْتُ مِنَ النَّاسِ ” .
আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন অবশ্যই বান্দাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন, শেষে বলবেনঃ তুমি অন্যায় কাজ হতে দেখে তা প্রতিহত করোনি কেন? (সে জবাব দানে অসমর্থ হলে) আল্লাহ তাকে তার যথাযথ উত্তর শিখিয়ে দিবেন। তখন বান্দা বলবে, হে প্রভু! আমি তোমার রহমাতের প্রত্যাশী হয়ে লোকেদেরকে তাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দিয়েছি। [৩৩৪৯]
[৩৩৪৯] আহমাদ ১১৩২৬। সহীহাহ ৯২৯।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস