আবু দাউদ সালাত (নামাজ) অধ্যায় ৬ষ্ঠ ভাগ হাদিস নং ৯০৩ – ১০০০
৯০৩
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، عَنْ وَكِيعٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ زِيَادِ بْنِ صُبَيْحٍ الْحَنَفِيِّ، قَالَ صَلَّيْتُ إِلَى جَنْبِ ابْنِ عُمَرَ فَوَضَعْتُ يَدَىَّ عَلَى خَاصِرَتَىَّ فَلَمَّا صَلَّى قَالَ هَذَا الصَّلْبُ فِي الصَّلاَةِ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَى عَنْهُ .
যিয়াদ ইবনু সুবাইহ আল-হানাফী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি ইবনু ‘উমারের পাশে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করি এবং আমি আমার কোমরের দু’ পার্শ্বের উপর দু’ হাতের ভর করি। সালাত শেষে তিনি আমাকে বললেনঃ এটা হচ্ছে সালাতের শূলী। এমনটি করতে রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
৯০৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ سَلاَّمٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، – يَعْنِي ابْنَ هَارُونَ – أَخْبَرَنَا حَمَّادٌ، – يَعْنِي ابْنَ سَلَمَةَ – عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي وَفِي صَدْرِهِ أَزِيزٌ كَأَزِيزِ الرَّحَى مِنَ الْبُكَاءِ صلى الله عليه وسلم .
মুত্বাররিফ (রহঃ) হতে তার পিতার থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি দেখেছি রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আদায় করছিলেন এবং সে সময় তাঁর বুক থেকে যাঁতা পেষার আওয়াজের ন্যায় কান্নার আওয়াজ হচ্ছিল।
৯০৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، – يَعْنِي ابْنَ سَعْدٍ – عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ لاَ يَسْهُو فِيهِمَا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ” .
যায়িদ ইবনু খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ উত্তমরূপে উযু করে নির্ভুলভাবে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করলে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।
৯০৬
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيِّ، عَنْ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ الْحَضْرَمِيِّ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَا مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ الْوُضُوءَ وَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ يُقْبِلُ بِقَلْبِهِ وَوَجْهِهِ عَلَيْهِمَا إِلاَّ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ ” .
‘উক্ববাহ ইবনু ‘আমির আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ উত্তমরূপে উযু করে একাগ্রচিত্তে খালিস অন্তরে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।
সহীহ্ : মুসলিম।
৯০৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، وَسُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدِّمَشْقِيُّ، قَالاَ أَخْبَرَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، عَنْ يَحْيَى الْكَاهِلِيِّ، عَنِ الْمُسَوَّرِ بْنِ يَزِيدَ الْمَالِكِيِّ، – أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَحْيَى وَرُبَّمَا قَالَ – شَهِدْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الصَّلاَةِ فَتَرَكَ شَيْئًا لَمْ يَقْرَأْهُ فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ تَرَكْتَ آيَةَ كَذَا وَكَذَا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ هَلاَّ أَذْكَرْتَنِيهَا ” . قَالَ سُلَيْمَانُ فِي حَدِيثِهِ قَالَ كُنْتُ أُرَاهَا نُسِخَتْ .
وَقَالَ سُلَيْمَانُ قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ كَثِيرٍ الأَزْدِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا الْمِسْوَرُ بْنُ يَزِيدَ الأَسَدِيُّ الْمَالِكِيُّ.
মিসওয়ার ইবনু ইয়াযীদ আল-মালিকী (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
একদা আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে সালাত আদায় করি। সালাতের ক্বিরাআতে তাঁর পঠিত আয়াতের অংশ বিশেষ ভুলবশত ছুটে গেলে সালাত শেষে এক ব্যক্তি তাঁকে বললো, হে আল্লাহর রসূল ! আপনি অমুক অমুক আয়াত ছেড়ে দিয়েছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, তুমি আমাকে তা স্মরণ করিয়ে দাওনি কেন? সুলাইমানের বর্ণনায় রয়েছঃ আমি ভেবে ছিলাম, তা মানসূখ হয়ে গেছে।
হাসান।
ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন এক সালাতে ক্বিরাআত পাঠে আটকে গেলেন। সালাত শেষে তিনি উবাই ইবনু কা‘বকে বললেন, তুমি কি আমাদের সাথে সালাত আদায় করেছো? তিনি বললেন, হাঁ। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাকে কিসে বাঁধা দিয়েছে (আমাকে আয়াত মনে করিয়ে দিতে)?
সহীহ।
৯০৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ نَجْدَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ الْفِرْيَابِيُّ، عَنْ يُونُسَ بْنِ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، – رضى الله عنه – قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ يَا عَلِيُّ لاَ تَفْتَحْ عَلَى الإِمَامِ فِي الصَّلاَةِ ” . قَالَ أَبُو دَاوُدَ أَبُو إِسْحَاقَ لَمْ يَسْمَعْ مِنَ الْحَارِثِ إِلاَّ أَرْبَعَةَ أَحَادِيثَ لَيْسَ هَذَا مِنْهَا .
আলী (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হে ‘আলী! তুমি সালাতের মধ্যে ইমামের ভুল শোধরাবে না। [৯০৮]
দুর্বল।
ইমাম আবূ দাউদ (রহ:) বলেন হারীসের কাছ থেকে ইসহাক্ব কেবল চারটি হাদীস শুনেছেন। তাতে এ হাদীসটি নেই।
৯০৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الأَحْوَصِ، يُحَدِّثُنَا فِي مَجْلِسِ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ قَالَ قَالَ أَبُو ذَرٍّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ يَزَالُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ مُقْبِلاً عَلَى الْعَبْدِ وَهُوَ فِي صَلاَتِهِ مَا لَمْ يَلْتَفِتْ فَإِذَا الْتَفَتَ انْصَرَفَ عَنْهُ ” .
আবূ যার (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সালাতের মধ্যে বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত এদিক সেদিক না তাকায়, ততক্ষণ পর্যন্ত মহান আল্লাহর দৃষ্টি তার দিকে থাকে (বা আল্লাহ তার সামনেই থাকেন)। পক্ষান্তরে যখন সে এদিক সেদিক তাকায়, তখন মহান আল্লাহ তার থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন। [৯০৯]
৯১০
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنِ الأَشْعَثِ، – يَعْنِي ابْنَ سُلَيْمٍ – عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، – رضى الله عنها – قَالَتْ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْتِفَاتِ الرَّجُلِ فِي الصَّلاَةِ فَقَالَ “ إِنَّمَا هُوَ اخْتِلاَسٌ يَخْتَلِسُهُ الشَّيْطَانُ مِنْ صَلاَةِ الْعَبْدِ ” .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে সালাতের মধ্যে এদিক সেদিক তাকানোর বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ এটাতো শাইত্বানের ছোঁ মারা, সে বান্দার সালাতের কিছু অংশ ছোবল মেরে নিয়ে যায়।
সহীহ: বুখারী।
৯১১
حَدَّثَنَا مُؤَمَّلُ بْنُ الْفَضْلِ، حَدَّثَنَا عِيسَى، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رُئِيَ عَلَى جَبْهَتِهِ وَعَلَى أَرْنَبَتِهِ أَثَرُ طِينٍ مِنْ صَلاَةٍ صَلاَّهَا بِالنَّاسِ . قَالَ أَبُو عَلِيٍّ هَذَا الْحَدِيثُ لَمْ يَقْرَأْهُ أَبُو دَاوُدَ فِي الْعَرْضَةِ الرَّابِعَةِ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
একদা লোকদেরকে নিয়ে জামা‘আতে সালাত আদায়ের পর রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কপালে ও নাকে মাটি লেগে থাকতে দেখা যায়।
সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।
৯১২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، – وَهَذَا حَدِيثُهُ وَهُوَ أَتَمُّ – عَنِ الأَعْمَشِ، عَنِ الْمُسَيَّبِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ تَمِيمِ بْنِ طَرَفَةَ الطَّائِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، – قَالَ عُثْمَانُ – قَالَ دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَسْجِدَ فَرَأَى فِيهِ نَاسًا يُصَلُّونَ رَافِعِي أَيْدِيهِمْ إِلَى السَّمَاءِ – ثُمَّ اتَّفَقَا – فَقَالَ “ لَيَنْتَهِيَنَّ رِجَالٌ يَشْخَصُونَ أَبْصَارَهُمْ إِلَى السَّمَاءِ – قَالَ مُسَدَّدٌ فِي الصَّلاَةِ – أَوْ لاَ تَرْجِعُ إِلَيْهِمْ أَبْصَارُهُمْ ” .
জাবির ইবনু সামুরাহ (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে প্রবেশ করে দেখলেন যে, কিছু লোক আকাশের দিকে দু’ হাত উঁচু করে সালাত আদায় করছে। এ দৃশ্য দেখে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে সব লোক আকাশের দিকে তাকিয়ে সালাত আদায় করে তারা যেন এরূপ করা হতে বিরত থাকে। অন্যথায় তাদের দৃষ্টিশক্তি তাদের নিকট আর ফিরে আসবে না।
সহীহ : মুসলিম।
৯১৩
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، حَدَّثَهُمْ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا بَالُ أَقْوَامٍ يَرْفَعُونَ أَبْصَارَهُمْ فِي صَلاَتِهِمْ ” . فَاشْتَدَّ قَوْلُهُ فِي ذَلِكَ فَقَالَ ” لَيَنْتَهُنَّ عَنْ ذَلِكَ أَوْ لَتُخْطَفَنَّ أَبْصَارُهُمْ ” .
আনাস ইবনু মালিক (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকদের কি হলো যে, তারা সালাতের অবস্থায় তাদের চোখ (আকাশের দিকে) উঁচু করছে?
অত:পর তিনি এ বিষয়ে কঠোর ভাষায় বললেনঃ তাদেরকে এরূপ কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের দৃষ্টি ছিনিয়ে নেয়া হবে।
সহীহ : বুখারী।
৯১৪
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي خَمِيصَةٍ لَهَا أَعْلاَمٌ فَقَالَ “ شَغَلَتْنِي أَعْلاَمُ هَذِهِ اذْهَبُوا بِهَا إِلَى أَبِي جَهْمٍ وَأْتُونِي بِأَنْبِجَانِيَّتِهِ ” .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নক্শা করা কাপড় পরিধান করে সালাত আদায়ের পর বললেনঃ এ কাপড়ের কারুকার্য আমাকে সালাত থেকে অমনোযাগী করেছে। তোমরা এ কাপড়খানা আবূ জাহ্মের নিকট নিয়ে যাও এবং আমার জন্য কারুকার্যবিহীন চাদর নিয়ে এসো।
সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।
৯১৫
حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، – يَعْنِي ابْنَ أَبِي الزِّنَادِ – قَالَ سَمِعْتُ هِشَامًا، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، بِهَذَا الْخَبَرِ قَالَ وَأَخَذَ كُرْدِيًّا كَانَ لأَبِي جَهْمٍ فَقِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ الْخَمِيصَةُ كَانَتْ خَيْرًا مِنَ الْكُرْدِيِّ .
‘আয়িশাহ (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ জাহমের কাছ থেকে কুরদী চাদর নিলেন। অত:পর বলা হলো, হে আল্লাহর রসূল ! আপনার নকশা খচিত চাদরটি হে কুরদী চাদরের চাইতে উত্তম ছিলো।
৯১৬
حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ بْنُ نَافِعٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ، – يَعْنِي ابْنَ سَلاَّمٍ – عَنْ زَيْدٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا سَلاَّمٍ، قَالَ حَدَّثَنِي السَّلُولِيُّ، – هُوَ أَبُو كَبْشَةَ – عَنْ سَهْلِ ابْنِ الْحَنْظَلِيَّةِ، قَالَ ثُوِّبَ بِالصَّلاَةِ – يَعْنِي صَلاَةَ الصُّبْحِ – فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي وَهُوَ يَلْتَفِتُ إِلَى الشِّعْبِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَكَانَ أَرْسَلَ فَارِسًا إِلَى الشِّعْبِ مِنَ اللَّيْلِ يَحْرُسُ .
সাহল ইবনু হানযালিয়্যাহ (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
একদা ফজর সালাতের ইক্বামাত দেয়া হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আদায় করতে লাগলেন এবং সালাতের অবস্থায়ই তিনি গিরি পথের দিকে তাকাচ্ছিলেন।
ইমাম আবূ দাউদ (রহ:) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গিরিপথ পাহারা দেয়ার জন্য রাতে এক অশ্বারোহীকে সেখানে প্রেরণ করেছিলেন। (সেজন্যই তিনি সেখানে দৃষ্টি ফিরাচ্ছিলেন)।
৯১৭
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي وَهُوَ حَامِلٌ أُمَامَةَ بِنْتَ زَيْنَبَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا سَجَدَ وَضَعَهَا وَإِذَا قَامَ حَمَلَهَا .
আবু ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় কন্যা যাইনাবের মেয়ে উমামাহকে কাঁধে নিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাজদাহর সময় তাকে নামিয়ে রাখতেন এবং দাঁড়ানোর সময় তাকে উঠিয়ে নিতেন।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
৯১৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، – يَعْنِي ابْنَ سَعِيدٍ – حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا قَتَادَةَ، يَقُولُ بَيْنَا نَحْنُ فِي الْمَسْجِدِ جُلُوسٌ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَحْمِلُ أُمَامَةَ بِنْتَ أَبِي الْعَاصِ بْنِ الرَّبِيعِ وَأُمُّهَا زَيْنَبُ بِنْتُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهِيَ صَبِيَّةٌ يَحْمِلُهَا عَلَى عَاتِقِهِ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهِيَ عَلَى عَاتِقِهِ يَضَعُهَا إِذَا رَكَعَ وَيُعِيدُهَا إِذَا قَامَ حَتَّى قَضَى صَلاَتَهُ يَفْعَلُ ذَلِكَ بِهَا .
আবু ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা আমরা মসজিদে বসা ছিলাম। এমন সমায় (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় কন্যা যাইনাবের মেয়ে উমামাহ বিনতু আবুল ‘আস ইবনু রবী’ কে নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। তখন উমামাহ শিশু ছিলেন, রাসুলুল্ললাহ তাকে কাঁধে নিয়ে সালাত আদায় করেন। তিনি রুকু করার সময় তাকে নামিয়ে রাখতেন এবং দাঁড়ানোর সময় আবার কাঁধে উঠিয়ে নিতেন। এভাবে তিনি সালাত আদায় শেষ করেন।
সহীহ: বুখারী সংক্ষেপে
৯১৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ مَخْرَمَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ الأَنْصَارِيَّ، يَقُولُ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي لِلنَّاسِ وَأُمَامَةُ بِنْتُ أَبِي الْعَاصِ عَلَى عُنُقِهِ فَإِذَا سَجَدَ وَضَعَهَا . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَلَمْ يَسْمَعْ مَخْرَمَةُ مِنْ أَبِيهِ إِلاَّ حَدِيثًا وَاحِدًا .
আমর ইবনু সুলাইমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু ক্বাতাদাহ কে বলতে শুনেছি, (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমামাহ বিনতু আবুল ‘আস কে কাঁধে নিয়ে লোকদের সালাত ইমামতি করেছেন। তিনি যখন সাজদাহ করতেন তখন তাকে নামিয়ে রাখতেন।
সহীহঃ মুসলিম
ইমাম আবু দাউদ (রাঃ) বলেন, মাখরামাহ তার পিতা থেকে কেবল একটি হাদিস শুনেছেন।
৯২০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، – يَعْنِي ابْنَ إِسْحَاقَ – عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، صَاحِبِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ نَنْتَظِرُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِلصَّلاَةِ فِي الظُّهْرِ أَوِ الْعَصْرِ وَقَدْ دَعَاهُ بِلاَلٌ لِلصَّلاَةِ إِذْ خَرَجَ إِلَيْنَا وَأُمَامَةُ بِنْتُ أَبِي الْعَاصِ بِنْتُ ابْنَتِهِ عَلَى عُنُقِهِ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي مُصَلاَّهُ وَقُمْنَا خَلْفَهُ وَهِيَ فِي مَكَانِهَا الَّذِي هِيَ فِيهِ قَالَ فَكَبَّرَ فَكَبَّرْنَا قَالَ حَتَّى إِذَا أَرَادَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَرْكَعَ أَخَذَهَا فَوَضَعَهَا ثُمَّ رَكَعَ وَسَجَدَ حَتَّى إِذَا فَرَغَ مِنْ سُجُودِهِ ثُمَّ قَامَ أَخَذَهَا فَرَدَّهَا فِي مَكَانِهَا فَمَا زَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ بِهَا ذَلِكَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ حَتَّى فَرَغَ مِنْ صَلاَتِهِ .
রাসুলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সহাবী আবূ ক্বাতাদাহ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা যুহর কিংবা আসরের সালাত আদায়ের জন্য রাসুলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অপেক্ষায় ছিলাম। বিলাল (রাঃ) তাকে সালাতের জন্য আহবান করলে তিনি উমামা বিনতু আবুল ‘আসকে নিয়ে আমাদের নিকট আসেন। অতঃপর তিনি ইমামতির জন্য তার জায়গায় দাঁড়ালেন এবং আমরা তার পিছনে দাঁড়ালাম। উমামাহ তখন তার কাঁধেই ছিলো। অতঃপর তিনি (রাঃ) তাকবির বললে আমরাও তাকবির বললাম। বর্ননাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকুর ইচ্ছা করলে তাকে নিচে নামিয়ে রুকু ও সাজদাহ করতেন। অতঃপর সাজদাহ থেকে উঠার সময় তাকে পুনরায় কাঁধে উঠিয়ে নিতেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি রাকাতেই এরূপ করেন এবং এভাবেই তিনি সালাত শেষ করেন। [৯২০]
৯২১
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ ضَمْضَمِ بْنِ جَوْسٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ اقْتُلُوا الأَسْوَدَيْنِ فِي الصَّلاَةِ الْحَيَّةَ وَالْعَقْرَبَ ” .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা সালাতেরত অবস্থাতেও কালো সাপ ও কালো বিচ্ছু কে হত্যা করবে।
৯২২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، وَمُسَدَّدٌ، – وَهَذَا لَفْظُهُ – قَالَ حَدَّثَنَا بِشْرٌ، – يَعْنِي ابْنَ الْمُفَضَّلِ – حَدَّثَنَا بُرْدٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – قَالَ أَحْمَدُ – يُصَلِّي وَالْبَابُ عَلَيْهِ مُغْلَقٌ فَجِئْتُ فَاسْتَفْتَحْتُ – قَالَ أَحْمَدُ – فَمَشَى فَفَتَحَ لِي ثُمَّ رَجَعَ إِلَى مُصَلاَّهُ . وَذَكَرَ أَنَّ الْبَابَ كَانَ فِي الْقِبْلَةِ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে দরজা বন্ধ করে সালাত আদায় করছিলেন। এমন অবস্থয় আমি এসে দরজা খুলতে বললে তিনি হেটে গিয়ে দরজা খুলে পুনরায় সালাতে রত হলেন। হাদিসে একথাও রয়েছে যে, দরজাটি কিবলার দিকে ছিলো।
৯২৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا نُسَلِّمُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي الصَّلاَةِ فَيَرُدُّ عَلَيْنَا فَلَمَّا رَجَعْنَا مِنْ عِنْدِ النَّجَاشِيِّ سَلَّمْنَا عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْنَا وَقَالَ “ إِنَّ فِي الصَّلاَةِ لَشُغْلاً ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে রত অবস্থায়ই আমরা তাঁকে সালাম দিলে তিনি এর জবাব দিলেন। পরবর্তীতে আমরা বাদশা নাজ্জাশীর কাছ থেকে ফিরে এসে তাঁকে সালাতের অবস্থায় সালাম দিলে তিনি এর জবাব না দিয়ে (সালাত শেষে) বললেনঃ সালাতের মধ্যে অবশ্যই জরুরী কাজ আছে।
সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।
৯২৪
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبَانُ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا نُسَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ وَنَأْمُرُ بِحَاجَتِنَا فَقَدِمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُصَلِّي فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَىَّ السَّلاَمَ فَأَخَذَنِي مَا قَدُمَ وَمَا حَدُثَ فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصَّلاَةَ قَالَ “ إِنَّ اللَّهَ يُحْدِثُ مِنْ أَمْرِهِ مَا يَشَاءُ وَإِنَّ اللَّهَ جَلَّ وَعَزَّ قَدْ أَحْدَثَ مِنْ أَمْرِهِ أَنْ لاَ تَكَلَّمُوا فِي الصَّلاَةِ ” . فَرَدَّ عَلَىَّ السَّلاَمَ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা সালাতের অবস্থায়ই সালাম দিতাম এবং আমাদের জরুরী কথাবার্তাও বলতাম। পরবর্তীতে আমি হাবশা থেকে ফিরে আসার পর তাঁকে সালাতের অবস্থায় সালাম করলে তিনি এর জবাব দিলেন না। ফলশ্রুতিতে আমার মনে নতুন ও পুরাতন বহু চিন্তার উদ্ভব হলো। অতঃপর সালাত শেষে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “মহান আল্লাহ্ যখন ইচ্ছে নতুন নির্দেশ প্রদান করেন। মহান আল্লাহ্র নতুন নির্দেশ হচ্ছে, সালাতের অবস্থায় কথা বলা যাবে না।” অতঃপর তিনি আমার সালামের জবাব দেন।
৯২৫
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ خَالِدِ بْنِ مَوْهَبٍ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، أَنَّ اللَّيْثَ، حَدَّثَهُمْ عَنْ بُكَيْرٍ، عَنْ نَابِلٍ، صَاحِبِ الْعَبَاءِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ صُهَيْبٍ، أَنَّهُ قَالَ مَرَرْتُ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُصَلِّي فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَرَدَّ إِشَارَةً . قَالَ وَلاَ أَعْلَمُهُ إِلاَّ قَالَ إِشَارَةً بِأُصْبُعِهِ وَهَذَا لَفْظُ حَدِيثِ قُتَيْبَةَ .
সুহাইব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতেরত অবস্থায় আমি তাঁর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে সালাম করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাতের ইশারায় সালামের জবাব দেন।
৯২৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ أَرْسَلَنِي نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى بَنِي الْمُصْطَلِقِ فَأَتَيْتُهُ وَهُوَ يُصَلِّي عَلَى بَعِيرِهِ فَكَلَّمْتُهُ فَقَالَ لِي بِيَدِهِ هَكَذَا ثُمَّ كَلَّمْتُهُ فَقَالَ لِي بِيَدِهِ هَكَذَا وَأَنَا أَسْمَعُهُ يَقْرَأُ وَيُومِئُ بِرَأْسِهِ فَلَمَّا فَرَغَ قَالَ “ مَا فَعَلْتَ فِي الَّذِي أَرْسَلْتُكَ فَإِنَّهُ لَمْ يَمْنَعْنِي أَنْ أُكَلِّمَكَ إِلاَّ أَنِّي كُنْتُ أُصَلِّي ” .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বনু মুসত্বালিক্ব গোত্রের কাছে প্রেরণ করলেন। সেখান থেকে ফেরার পর আমি তাঁকে উঠের পিঠে সালাত আদায় করতে দেখে তাঁকে সম্বোধন করে কথা বললে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাতের ইশারায় আমার কথার জবাব দিলেন। আমি পুনরায় কথা বললে তখনও হাতের ইশারায় জবাব দিলেন। আমি তাঁকে কুরআন পড়তে শুনছিলাম। তিনি রুকু ও সাজদাহ ইশারায় আদায় করছিলেন। অতঃপর সালাত শেষে তিনি আমাকে বললেনঃ আমি তোমাকে যে কাজে প্রেরণ করেছিলাম সেটার খবর কি? আমি সালাতের অবস্থায় ছিলাম বিধায় তোমার সাথে কথা বলি নাই।
সহীহ : মুসলিম
৯২৭
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ عِيسَى الْخُرَاسَانِيُّ الدَّامَغَانِيُّ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا نَافِعٌ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، يَقُولُ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى قُبَاءَ يُصَلِّي فِيهِ – قَالَ – فَجَاءَتْهُ الأَنْصَارُ فَسَلَّمُوا عَلَيْهِ وَهُوَ يُصَلِّي . قَالَ فَقُلْتُ لِبِلاَلٍ كَيْفَ رَأَيْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَرُدُّ عَلَيْهِمْ حِينَ كَانُوا يُسَلِّمُونَ عَلَيْهِ وَهُوَ يُصَلِّي قَالَ يَقُولُ هَكَذَا وَبَسَطَ كَفَّهُ . وَبَسَطَ جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ كَفَّهُ وَجَعَلَ بَطْنَهُ أَسْفَلَ وَجَعَلَ ظَهْرَهُ إِلَى فَوْقٍ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আদায়ের জন্য কুবার মাসজিদে আসলেন। এমতাবস্থায় আনসারগণ এসে তাঁর সালাতের অবস্থায়ই তাঁকে সালাম দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি বিলালকে বললাম, আপনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– কে সালাতের অবস্থায় তাদের সালামের জবাব কিভাবে প্রদান করতে দেখেছেন? বিলাল (রাঃ) বললেন, এভাবে। বর্ণনাকারী জা’ফার ইবনু ‘আওন তার হাতের তালু নীচের দিকে এবং পিঠ উপরের দিকে করে তা দেখিয়ে দিলেন।
৯২৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ غِرَارَ فِي صَلاَةٍ وَلاَ تَسْلِيمٍ ” . قَالَ أَحْمَدُ يَعْنِي فِيمَا أُرَى أَنْ لاَ تُسَلِّمَ وَلاَ يُسَلَّمَ عَلَيْكَ وَيُغَرِّرُ الرَّجُلُ بِصَلاَتِهِ فَيَنْصَرِفُ وَهُوَ فِيهَا شَاكٌّ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ সালাত এবং সালামে কোন লোকসান নেই।
ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন, আমার মতে এর অর্থ হচ্ছেঃ তুমি কাউকে সালাম প্রদান করলে সে এর জবাব না দিলেও তোমার কোন ক্ষতি বা লোকসান নেই। বরং ধোঁকা বা ক্ষতি হলো কোন ব্যক্তির সন্দিহান মন নিয়ে সালাত শেষ করা।
৯২৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، أَخْبَرَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي مَالِكٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ – أُرَاهُ رَفَعَهُ – قَالَ “ لاَ غِرَارَ فِي تَسْلِيمٍ وَلاَ صَلاَةٍ ” . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَرَوَاهُ ابْنُ فُضَيْلٍ عَلَى لَفْظِ ابْنِ مَهْدِيٍّ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণনাকারী বলেন, এ হাদীসটি মারফূ। তিনি বলেন, সালাম এবং সালাত কোন লোকসান নেই।
সহীহ।
ইমাম আবূ দাউদ (রাঃ) বলেন, ইবনু ফুযাইল এটি ইবনু মাহদীর শব্দে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি এটিকে মারফু’ করেননি।
৯৩০
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، ح وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، – الْمَعْنَى – عَنْ حَجَّاجٍ الصَّوَّافِ، حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ أَبِي مَيْمُونَةَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ الْحَكَمِ السُّلَمِيِّ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَطَسَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فَقُلْتُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ فَرَمَانِي الْقَوْمُ بِأَبْصَارِهِمْ فَقُلْتُ وَاثُكْلَ أُمِّيَاهُ مَا شَأْنُكُمْ تَنْظُرُونَ إِلَىَّ فَجَعَلُوا يَضْرِبُونَ بِأَيْدِيهِمْ عَلَى أَفْخَاذِهِمْ فَعَرَفْتُ أَنَّهُمْ يُصَمِّتُونِي – فَقَالَ عُثْمَانُ – فَلَمَّا رَأَيْتُهُمْ يُسَكِّتُونِي لَكِنِّي سَكَتُّ قَالَ فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – بِأَبِي وَأُمِّي – مَا ضَرَبَنِي وَلاَ كَهَرَنِي وَلاَ سَبَّنِي ثُمَّ قَالَ ” إِنَّ هَذِهِ الصَّلاَةَ لاَ يَحِلُّ فِيهَا شَىْءٌ مِنْ كَلاَمِ النَّاسِ هَذَا إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ ” . أَوْ كَمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا قَوْمٌ حَدِيثُ عَهْدٍ بِجَاهِلِيَّةٍ وَقَدْ جَاءَنَا اللَّهُ بِالإِسْلاَمِ وَمِنَّا رِجَالٌ يَأْتُونَ الْكُهَّانَ . قَالَ ” فَلاَ تَأْتِهِمْ ” . قَالَ قُلْتُ وَمِنَّا رِجَالٌ يَتَطَيَّرُونَ . قَالَ ” ذَاكَ شَىْءٌ يَجِدُونَهُ فِي صُدُورِهِمْ فَلاَ يَصُدُّهُمْ ” . قُلْتُ وَمِنَّا رِجَالٌ يَخُطُّونَ . قَالَ ” كَانَ نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ يَخُطُّ فَمَنْ وَافَقَ خَطَّهُ فَذَاكَ ” . قَالَ قُلْتُ جَارِيَةٌ لِي كَانَتْ تَرْعَى غُنَيْمَاتٍ قِبَلَ أُحُدٍ وَالْجَوَّانِيَّةِ إِذِ اطَّلَعْتُ عَلَيْهَا إِطْلاَعَةً فَإِذَا الذِّئْبُ قَدْ ذَهَبَ بِشَاةٍ مِنْهَا وَأَنَا مِنْ بَنِي آدَمَ آسَفُ كَمَا يَأْسَفُونَ لَكِنِّي صَكَكْتُهَا صَكَّةً فَعَظَّمَ ذَاكَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ أَفَلاَ أُعْتِقُهَا قَالَ ” ائْتِنِي بِهَا ” . قَالَ فَجِئْتُهُ بِهَا فَقَالَ ” أَيْنَ اللَّهُ ” . قَالَتْ فِي السَّمَاءِ . قَالَ ” مَنْ أَنَا ” . قَالَتْ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ . قَالَ ” أَعْتِقْهَا فَإِنَّهَا مُؤْمِنَةٌ ” .
মু‘আবিয়াহ ইবনুল হাকাম আস-সুলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে সালাত আদায় করি। সালাতের অবস্থায় লোকজনের মধ্যকার এক ব্যক্তি হাঁচি দিলে জবাবে আমি ইয়ারহামুকাল্লাহ বলায় সকলেই আমার প্রতি (রাগের) দৃষ্টিতে তাকালো। তখন আমি মনে মনে বললাম, তোমাদের মাতা তোমাদেরকে হারাক। তোমরা আমার দিকে এভাবে দৃষ্টি নিক্ষেপ করছো কেন? মু’আবিয়াহ বলেন, সকলেই রানের উপর সজোরে হাত মেরে শব্দ করতে থাকলে আমি বুঝতে পারি যে, তারা আমাকে চুপ করাতে চাইছে। বর্ণনাকারী ‘উসমানের বর্ণনায় রয়েছেঃ আমি যখন দেখলাম যে, তারা আমাকে চুপ করাতে চাচ্ছিলো, তখন (অনিচ্ছা সত্ত্বেও) আমি চুপ হলাম। অতঃপর রসূলুল্ললাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত শেষ করলেন। আমার পিতা-মাতা তাঁর জন্য কুরবান হোক ! তিনি আমাকে প্রহার করলেন না, রাগ করলেন না এবং গালিও দিলেন না। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সালাতের অবস্থায় তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন তিলাওয়াত ব্যতীত কোন কথা বলা মানুষের জন্য বৈধ নয়। অথবা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেরূপ বলার বললেন। অতঃপর আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল ! আমি সদ্য জাহিলিয়্যাত ছেড়ে আসা একটি সম্প্রদায়। আল্লাহ্ আমাদেরকে ইসলাম গ্রহণের তওফিক দিয়েছেন। আমাদের মধ্যেকার কতিপয় ব্যক্তি গণকের নিকট যায়। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা তাদের নিকট যাবে না। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আমাদের মধ্যেকার কতিপয় লোক পাখি উড়িয়ে ভাগ্য নির্ণয় করে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটা তাদের মনগড়া কাজ, এরূপ (কুসংস্কার) যেন তাদেরকে তাদের কাজ থেকে বিরত না রাখে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আমাদের মধ্যেকার এমনও কিছু লোক আছে যারা রেখা টেনে ভাগ্য নির্ণয় করে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নাবীগণের মধ্যেকার একজন নবী রেখা টানতেন। সুতরাং কারো রেখা তাঁর (নাবীর) মত হলে সঠিক হতে পারে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, আমার এক দাসী উহুদ ও জাওয়ানিয়ার আশেপাশে বকরী চরাচ্ছিলো। আমি দেখলাম, বাঘ এসে সেখান থেকে একটি বকরী নিয়ে গেছে। আমিও তো আদম সন্তান। কাজেই আমিও তাদের মত দুঃখ পাই। কিন্তু আমি তাকে জোরে একটি থাপ্পড় দিলাম। এ কথাটি রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে গুরুত্ববহ মনে হওয়ায় আমি তাঁকে বললাম, আমি কি তাকে মুক্ত করে দিবো? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাকে আমার কাছে নিয়ে আসো। আমি তাকে নিয়ে আসলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ আল্লাহ্ কোথায়? সে জবাবে বলল, আকাশে। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি কে? সে জবাবে বলল, আপনি আল্লাহ্র রসূল! তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- বললেন, তাকে আযাদ করে দাও। কারণ সে ঈমানদার মহিলা।
৯৩১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُونُسَ النَّسَائِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ الْحَكَمِ السُّلَمِيِّ، قَالَ لَمَّا قَدِمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عُلِّمْتُ أُمُورًا مِنْ أُمُورِ الإِسْلاَمِ فَكَانَ فِيمَا عُلِّمْتُ أَنْ قَالَ لِي ” إِذَا عَطَسْتَ فَاحْمَدِ اللَّهَ وَإِذَا عَطَسَ الْعَاطِسُ فَحَمِدَ اللَّهَ فَقُلْ يَرْحَمُكَ اللَّهُ ” . قَالَ فَبَيْنَمَا أَنَا قَائِمٌ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الصَّلاَةِ إِذْ عَطَسَ رَجُلٌ فَحَمِدَ اللَّهَ فَقُلْتُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ رَافِعًا بِهَا صَوْتِي فَرَمَانِي النَّاسُ بِأَبْصَارِهِمْ حَتَّى احْتَمَلَنِي ذَلِكَ فَقُلْتُ مَا لَكُمْ تَنْظُرُونَ إِلَىَّ بِأَعْيُنٍ شُزْرٍ قَالَ فَسَبَّحُوا فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصَّلاَةَ قَالَ ” مَنِ الْمُتَكَلِّمُ ” . قِيلَ هَذَا الأَعْرَابِيُّ فَدَعَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِي ” إِنَّمَا الصَّلاَةُ لِقِرَاءَةِ الْقُرْآنِ وَذِكْرِ اللَّهِ جَلَّ وَعَزَّ فَإِذَا كُنْتَ فِيهَا فَلْيَكُنْ ذَلِكَ شَأْنَكَ ” . فَمَا رَأَيْتُ مُعَلِّمًا قَطُّ أَرْفَقَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
মু’আবিয়াহ ইবনুল হাকাম আস-সুলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট আসার পর আমাকে ইসলামের কিছু বিষয় শেখানো হলো। আমাকে তখন এটাও শেখানো হয়েছিল যে, তুমি হাঁচি দিলে “আলহামদুলিল্লাহ” বলবে। আর অন্য কাউকে হাঁচি দেয়ার পর ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলতে শুনলে তুমি বলবে “ইয়ারহামুকাল্লাহ” (অর্থঃ আল্লাহ্ তোমার প্রতি রহম করুন)। তিনি বলেন, একবার আমি রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আদায় করছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি হাঁচি দিল এবং “আলহামদুলিল্লাহ” বললো। আমি উচ্চস্বরে বললাম, “ইয়ারহামুকাল্লাহ”। এতে উপস্থিত সকলেই আমার দিকে রাগত দৃষ্টিতে তাকালো। তাতে আমিও রাগান্বিত হলাম। আমি তাদেরকে বললাম, তোমরা আমার দিকে এভাবে চোখ ঘুরিয়ে দেখছো কেন? বর্ণনাকারী বলেন, তখন তারা সুবহানাল্লাহ বললো। সালাত আদায় শেষে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, (সালাতের মধ্যে) কে কথাবার্তা বলেছে? বলা হলো, এই গ্রাম্য লোকটি। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ডেকে নিয়ে বললেন, সালাত কুরআন পাঠ ও আল্লাহ্র স্মরণ করা হয়। কাজেই সালাতেরত অবস্থায় তোমার তা-ই করা উচিত। বর্ণনাকারী বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর চাইতে অধিক নম্র ও বিনয়ী শিক্ষক আর কখনো দেখিনি। [৯৩১]
৯৩২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سَلَمَةَ، عَنْ حُجْرٍ أَبِي الْعَنْبَسِ الْحَضْرَمِيِّ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَرَأَ { وَلاَ الضَّالِّينَ } قَالَ “ آمِينَ ” . وَرَفَعَ بِهَا صَوْتَهُ .
ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (সালাত আদায়কালে সূরাহ ফাতিহার শেষে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন “ওয়ালাদদোয়াল্লীন” পড়তেন তখন তিনি সশব্দে আমীন বলতেন।
৯৩৩
حَدَّثَنَا مَخْلَدُ بْنُ خَالِدٍ الشَّعِيرِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ حُجْرِ بْنِ عَنْبَسٍ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، أَنَّهُ صَلَّى خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَهَرَ بِآمِينَ وَسَلَّمَ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ حَتَّى رَأَيْتُ بَيَاضَ خَدِّهِ .
ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে সালাত আদায় করেছেন। তাতে তিনি সশব্দে আমীন বলেছেন। তিনি ডানে ও বামে এভাবে সালাম ফিরিয়েছেন যে, আমি তাঁর গালের শুভ্রতা দেখেছি।
৯৩৪
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، أَخْبَرَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، عَنْ بِشْرِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ ابْنِ عَمِّ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا تَلاَ { غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ } قَالَ ” آمِينَ ” . حَتَّى يَسْمَعَ مَنْ يَلِيهِ مِنَ الصَّفِّ الأَوَّلِ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সালাত আদায়কালে সূরাহ ফাতিহার শেষে) যখন “গাইরিল মাগদূবি ‘আলাইহিম ওয়ালাদদোয়াল্লীন” পড়তেন তখন এমন জোরে আমীন বলতেন যে, প্রথম কাতারে তাঁর নিকটবর্তী লোকেরা তাঁর এ “আমীন” বলা শুনতে পেতো।[৯৩৪]
৯৩৫
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ سُمَىٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ السَّمَّانِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِذَا قَالَ الإِمَامُ { غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ } فَقُولُوا ” آمِينَ ” . فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ” .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সালাতে ইমাম যখন পড়বে “গাইরিল মাগদূবি ‘আলাইহিম ওয়ালাদদোয়াল্লীন” তখন তোমরা “আমীন” বলবে। কেননা যার কথা (আমীন বলা) ফেরেশতার কথার সাথে উচ্চারিত হবে তার পূর্বেকার গুনাহসমুহ মাফ করে দেয়া হবে।
সহীহ : বুখারী ও মুসলিম।
৯৩৬
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَأَبِي، سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُمَا أَخْبَرَاهُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِذَا أَمَّنَ الإِمَامُ فَأَمِّنُوا فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ تَأْمِينُهُ تَأْمِينَ الْمَلاَئِكَةِ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ” . قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” آمِينَ ” .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (সালাত সূরাহ ফাতিহা পাঠের পর) ইমাম যখন “আমীন” বলবে তখন তোমরাও “আমীন” বলবে। কেননা যে ব্যক্তির (আমীন বলা) মালায়িকাহ (ফেরেশতার) “আমীন” বলার সাথে মিলবে তার পূর্বেকার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। ইবনু শিহাব(রাঃ) বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সূরাহ ফাতিহার শেষে) আমীন বলতেন।
সহীহ : বুখারী ও মুসলিম
৯৩৭
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ رَاهَوَيْهِ، أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ بِلاَلٍ، أَنَّهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ لاَ تَسْبِقْنِي “ بِآمِينَ ”
বিলাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল ! আপনি আমার আগে “আমীন” বলবেন না। (রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সূরাহ ফাতিহা পাঠ শেষ হয়ে যেতো অথচ তখনও বিলালের (রাঃ) পড়া শেষ হত না। তাই তিনি এ কথা বলতেন)। [৯৩৭]
আহমাদ (৬/১২, ১৫), বায়হাক্কি ‘সুনান’ (২/২৩), হাকিম (১/২১৯) বামাম হাকিম বলেন, এই হাদিসটি বুখারি ও মুসলিমের শর্তে সহিহ। তবে তাঁরা এটি বর্ণনা করেননি। যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করেছেন। ডঃ সাইয়্যিম মুহাম্মাদ সাইয়্যিদ বলেনঃ বরং সনদটি দুর্বল। সনদে ইনকিতা (বিচ্ছিনতা) হয়েছে। আবু’ উসমান হাদিসটি বিলাল হতে শুনেননি।
৯৩৮
حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ عُتْبَةَ الدِّمَشْقِيُّ، وَمَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا الْفِرْيَابِيُّ، عَنْ صُبَيْحِ بْنِ مُحْرِزٍ الْحِمْصِيِّ، حَدَّثَنِي أَبُو مُصْبِحٍ الْمَقْرَائِيُّ، قَالَ كُنَّا نَجْلِسُ إِلَى أَبِي زُهَيْرٍ النُّمَيْرِيِّ – وَكَانَ مِنَ الصَّحَابَةِ – فَيَتَحَدَّثُ أَحْسَنَ الْحَدِيثِ فَإِذَا دَعَا الرَّجُلُ مِنَّا بِدُعَاءٍ قَالَ اخْتِمْهُ بِآمِينَ فَإِنَّ آمِينَ مِثْلُ الطَّابَعِ عَلَى الصَّحِيفَةِ . قَالَ أَبُو زُهَيْرٍ أُخْبِرُكُمْ عَنْ ذَلِكَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ لَيْلَةٍ فَأَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ قَدْ أَلَحَّ فِي الْمَسْأَلَةِ فَوَقَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَسْتَمِعُ مِنْهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” أَوْجَبَ إِنْ خَتَمَ ” . فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ بِأَىِّ شَىْءٍ يَخْتِمُ قَالَ ” بِآمِينَ فَإِنَّهُ إِنْ خَتَمَ بِآمِينَ فَقَدْ أَوْجَبَ ” . فَانْصَرَفَ الرَّجُلُ الَّذِي سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَتَى الرَّجُلَ فَقَالَ اخْتِمْ يَا فُلاَنُ بِآمِينَ وَأَبْشِرْ . وَهَذَا لَفْظُ مَحْمُودٍ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ الْمَقْرَاءُ قَبِيلٌ مِنْ حِمْيَرَ .
আবু মুসাব্বিহ আল-মাকরাই (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সহাবী আবু যুহাইর আন-নুমাইরী (রাঃ) এর নিকট বসতাম। তিনি সুন্দর সুন্দর হাদিস শুনাতেন। একবার আমাদের মধ্যকার এক ব্যাক্তি দু‘আ করতে থাকলে তিনি বললেন, তুমি আমীন বলে দু‘আ শেষ করবে। কেননা (দু‘আ শেষে) ‘আমীন’ বলা (গ্রন্থ বা) চিঠিতে সীলমোহর করার মত। অতঃপর আবু যুহাইর (রাঃ) বলেন, এ বিষয়ে আমি তোমাদের নিকট একটি ঘটনা জানাতে চাই। এক রাতে আমরা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে বের হই। অতঃপর আমরা এমন এক ব্যাক্তির কাছে উপস্থিত হই যিনি কাকুতি-মিনতি করে দু‘আ করছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থামলেন এবং তার দু‘আ শুনলেন, অতঃপর বললেন, যদি সে শেষ করে তবে তার জন্য (জান্নাত) অবধারিত। উপস্থিত লোকদের একজন বললো, কিসের দ্বারা সে দু‘আ শেষ করবে? নবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আমীন’ বলে। কেননা যদি সে ‘আমীন’ বলার উপর দু‘আ শেষ কহে তাহলে তার দু‘আ কবূল হয় (অথবা সে নিজের জন্য জান্নাত অবধারিত করে নেয়)। এরপর নবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্নকারী লোকটি দু‘আরত ব্যাক্তির নিকট গিয়ে বলল, হে অমুক ! তুমি আমীন বলে দু‘আ শেষ কর এবং জান্নাত লাভের ও দু‘আ কবুলের) সুসংবাদ গ্রহণ করো। ইমাম আবু দাউদ(রহঃ) বলেন, আল-মাকরাই হলো হিময়ারের একটি গোত্র। [৯৩৮]
৯৩৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ التَّسْبِيحُ لِلرِّجَالِ وَالتَّصْفِيقُ لِلنِّسَاءِ ” .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (সালাত আদায়কালে ইমামের কোন ভূল পরিলক্ষিত হলে) পুরুষ (মুক্তাদীরা) সুবহানআল্লাহ বলবে আর নারী (মুক্তাদীরা) হাতের উপর হাত মেরে শব্দ করবে।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
৯৪০
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي حَازِمِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَهَبَ إِلَى بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ لِيُصْلِحَ بَيْنَهُمْ وَحَانَتِ الصَّلاَةُ فَجَاءَ الْمُؤَذِّنُ إِلَى أَبِي بَكْرٍ – رضى الله عنه – فَقَالَ أَتُصَلِّي بِالنَّاسِ فَأُقِيمَ قَالَ نَعَمْ . فَصَلَّى أَبُو بَكْرٍ فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ فِي الصَّلاَةِ فَتَخَلَّصَ حَتَّى وَقَفَ فِي الصَّفِّ فَصَفَّقَ النَّاسُ وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ لاَ يَلْتَفِتُ فِي الصَّلاَةِ فَلَمَّا أَكْثَرَ النَّاسُ التَّصْفِيقَ الْتَفَتَ فَرَأَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَشَارَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنِ امْكُثْ مَكَانَكَ فَرَفَعَ أَبُو بَكْرٍ يَدَيْهِ فَحَمِدَ اللَّهَ عَلَى مَا أَمَرَهُ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ ذَلِكَ ثُمَّ اسْتَأْخَرَ أَبُو بَكْرٍ حَتَّى اسْتَوَى فِي الصَّفِّ وَتَقَدَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ ” يَا أَبَا بَكْرٍ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَثْبُتَ إِذْ أَمَرْتُكَ ” . قَالَ أَبُو بَكْرٍ مَا كَانَ لاِبْنِ أَبِي قُحَافَةَ أَنْ يُصَلِّيَ بَيْنَ يَدَىْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا لِي رَأَيْتُكُمْ أَكْثَرْتُمْ مِنَ التَّصْفِيحِ مَنْ نَابَهُ شَىْءٌ فِي صَلاَتِهِ فَلْيُسَبِّحْ فَإِنَّهُ إِذَا سَبَّحَ الْتُفِتَ إِلَيْهِ وَإِنَّمَا التَّصْفِيحُ لِلنِّسَاءِ ” . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهَذَا فِي الْفَرِيضَةِ .
সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বানী ‘আমর ইবনু ‘আওফ গোত্রের বিবাদ মীমাংসার জন্য সেখানে যান। এমতাবস্থায় সালাতের ওয়াক্ত হলে মুয়াযযিন আবু বকর (রাঃ) এর নিকট এসে বললেন, আপনি কি লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করবেন? আবু বকর (রাঃ) স্বীকৃতি দেয়ায় সালাতের ইকামাত দেয়া হলো এবং আবু বকর (রাঃ) সালাত শুরু করলেন। ইতিমধ্যে লোকদের সালাতেরত অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে পৌঁছালেন এবং কাতার ভেদ করে সামনের কাতারে দাঁড়ালেন। এমতাবস্থায় লোকেরা হাততালি দিয়ে শব্দ করতে লাগলো। কিন্তু আবু বকর সালাতেরত অবস্থায় কোন দিকেই খেয়াল করতেন না। অতঃপর যখন লোকদের হাততালি অধিক হলো আবু বকর (রাঃ) খেয়াল করলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দেখতে পেলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইশারা করে তাকে স্বীয় স্থানে থাকতে বললেন। কিন্তু আবু বকর(রাঃ) দু’ হাত উঠিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর এই নির্দেশের জন্য আল্লাহ্র প্রশংসা করেন এবং পিছনে সরে কাতারে শামিল হন। ফলে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অগ্রসর হয়ে সালাত আদায় করালেন। সালাত শেষে তিনি আবু বকর (রাঃ) কে বললেন, হে আবু বকর! আমি নির্দেশ দেয়ার পরও তুমি সালাতের ইমামাত করলে না কেন? জবাবে আবু বকর (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপস্থিতিতে আবু কুহাফার পুত্রের ইমামাত শোভনীয় নয়। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের বললেন, কি ব্যাপার ! আমি দেখলাম, তোমরা সকলেই হাতের উপর হাত মেরে অধিক শব্দ করেছো। সালাত কিছু ঘটলে (ইমামের কোন ভুল পরিলক্ষিত হলে) ‘সুবহানআল্লাহ’ বলা উচিত। কেননা কেও ‘‘সুবহানআল্লাহ’ বললে ইমাম সেদিকে লক্ষ্য করবে। আর হাততালি দেয়াতা মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য।
সহীহঃ বুখারি ও মুসলিম।
ইমাম আবু দাউদ (রাঃ) বলেন, এ নিয়ম শুধু ফরয সালাতের বেলায় প্রযোজ্য।
৯৪১
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ كَانَ قِتَالٌ بَيْنَ بَنِي عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَتَاهُمْ لِيُصْلِحَ بَيْنَهُمْ بَعْدَ الظُّهْرِ فَقَالَ لِبِلاَلٍ ” إِنْ حَضَرَتْ صَلاَةُ الْعَصْرِ وَلَمْ آتِكَ فَمُرْ أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ” . فَلَمَّا حَضَرَتِ الْعَصْرُ أَذَّنَ بِلاَلٌ ثُمَّ أَقَامَ ثُمَّ أَمَرَ أَبَا بَكْرٍ فَتَقَدَّمَ قَالَ فِي آخِرِهِ ” إِذَا نَابَكُمْ شَىْءٌ فِي الصَّلاَةِ فَلْيُسَبِّحِ الرِّجَالُ وَلْيُصَفِّحِ النِّسَاءُ ” .
সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে বানী ‘আমর ইবনু ‘আওফ গোত্রের লোকদের সংঘর্ষের সংবাদ পৌঁছালে তিনি তাদের মধ্যে আপোষ-মীমাংসার জন্য যুহর সালাতের পর সেখানে যান। তিনি বিলাল(রাঃ) কে বললেন, আমার ফিরে আসার পূর্বেই ‘আসর সালাতের ওয়াক্ত হয়ে গেলে আবু বাকর কে লোকদের সালাতের ইমামাত করতে বলবে। অতঃপর ‘আসর সালাতের ওয়াক্ত হলে বিলাল (রাঃ) আযান দিলেন। এরপর ইকামাত দিয়ে আবু বাকরকে (ইমামাত করার) আদেশ করলে আবু বকর সামনে অগ্রসর হলেন। বর্ণনাকারী হাদিসের শেষাংশে বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সালাত কোন কিছু ঘটলে পুরুষরা ‘সুবহানআল্লাহ’ বলবে এবং নারীরা হাততালি দিবে।
সহীহঃ বুখারী।
৯৪২
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنْ عِيسَى بْنِ أَيُّوبَ، قَالَ قَوْلُهُ “ التَّصْفِيحُ لِلنِّسَاءِ ” . تَضْرِبُ بِأُصْبُعَيْنِ مِنْ يَمِينِهَا عَلَى كَفِّهَا الْيُسْرَى .
ঈসা ইবনু আইয়ুব (রহ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “নারীদের হাততালি দেয়া” কথাটির অর্থ হল, তারা ডান হাতের দুই আঙ্গুল বাম হাতের তালুর উপর মারবে।
৯৪৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ شَبُّويَةَ الْمَرْوَزِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُشِيرُ فِي الصَّلاَةِ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতেরত অবস্থায় ইশারা করতেন।
৯৪৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَعْقُوبَ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ الأَخْنَسِ، عَنْ أَبِي غَطَفَانَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” التَّسْبِيحُ لِلرِّجَالِ ” . يَعْنِي فِي الصَّلاَةِ ” وَالتَّصْفِيقُ لِلنِّسَاءِ مَنْ أَشَارَ فِي صَلاَتِهِ إِشَارَةً تُفْهَمُ عَنْهُ فَلْيَعُدْ لَهَا ” . يَعْنِي الصَّلاَةَ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ هَذَا الْحَدِيثُ وَهَمٌ .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (সালাত ইমামের ককন ত্রুটি হলে) পুরুষরা ‘সুবহানআল্লাহ’ বলবে এবং মহিলারা হাততালি দিবে। কেও যদি সালাতরত অবস্থায় এরূপ ইশারা করে যা দ্বারা নির্দিষ্ট কোন অর্থ বুঝায় তবে সে উক্ত সালাত পুনরায় আদায় করবে।
দুর্বল।
ইমাম আবু দাউদ (রাঃ) বলেন, হে হাদীসটি সন্দেহমূলক।[৯৪৪]
৯৪৫
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، – شَيْخٍ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ – أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا ذَرٍّ، يَرْوِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ إِلَى الصَّلاَةِ فَإِنَّ الرَّحْمَةَ تُوَاجِهُهُ فَلاَ يَمْسَحِ الْحَصَى ” .
আবু যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ সালাত দাঁড়ালে তার সামনে আল্লাহ্র রহমত থাকে। সুতরাং এ সময় মুসল্লি যেন পাথর কুচি সরাতে ব্যস্ত না হয়।
দুর্বল।
৯৪৬
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ مُعَيْقِيبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ تَمْسَحْ وَأَنْتَ تُصَلِّي فَإِنْ كُنْتَ لاَ بُدَّ فَاعِلاً فَوَاحِدَةً تَسْوِيَةَ الْحَصَى ” .
মু’আইক্বীব (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সালাতরত অবস্থায় তুমি পাথরকুচি সরাবে না। যদি সরাতেই হয় তবে কেবল একবার পাথরকুচি সরিয়ে জায়গা সমান করতে পারো।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
৯৪৭
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ كَعْبٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الاِخْتِصَارِ فِي الصَّلاَةِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ يَعْنِي يَضَعُ يَدَهُ عَلَى خَاصِرَتِهِ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আদায়কালে কোমরে হাত রাখতে নিষেধ করেছেন। ইমাম আবূ দাউদ (রাঃ) বলেন, এর অর্থ হলো, পেটের পার্শ্বদেশে হাত রাখা।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
৯৪৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ السَّلاَمِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْوَابِصِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ حُصَيْنِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ يِسَافٍ، قَالَ قَدِمْتُ الرَّقَّةَ فَقَالَ لِي بَعْضُ أَصْحَابِي هَلْ لَكَ فِي رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قُلْتُ غَنِيمَةٌ فَدَفَعْنَا إِلَى وَابِصَةَ قُلْتُ لِصَاحِبِي نَبْدَأُ فَنَنْظُرُ إِلَى دَلِّهِ فَإِذَا عَلَيْهِ قَلَنْسُوَةٌ لاَطِئَةٌ ذَاتُ أُذُنَيْنِ وَبُرْنُسُ خَزٍّ أَغْبَرُ وَإِذَا هُوَ مُعْتَمِدٌ عَلَى عَصًا فِي صَلاَتِهِ فَقُلْنَا بَعْدَ أَنْ سَلَّمْنَا . فَقَالَ حَدَّثَتْنِي أُمُّ قَيْسٍ بِنْتُ مِحْصَنٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا أَسَنَّ وَحَمَلَ اللَّحْمَ اتَّخَذَ عَمُودًا فِي مُصَلاَّهُ يَعْتَمِدُ عَلَيْهِ .
হিলাল ইবনু ইয়াসাফ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি যখন (শাম দেশের) রাক্কাহ নামক শহরে যাই তখন আমার বন্ধুদের একজন আমাকে বললেন, আপনি কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কোন সহাবীর সাক্ষাত পেতে আগ্রহী? আমি বললাম, এটা তো আমার জন্য গনীমাতস্বরূপ। অতঃপর আমাদেরকে ওয়াবিসাহ (রাঃ)-এর নিকট নিয়ে যাওয়া হলো। আমি আমার সাথীকে বললাম, প্রথমে আমরা তাঁর বেশভূষা দেখবো। আমরা দেখলাম, তিনি মাথার সাথে লেপটে থাকা দুই কানাবিশিষ্ট একটি টুপি এবং রেশম ও পশমের তৈরি ধূসর রংয়ের কাপড় পরিধান করেছেন। তিনি লাঠিতে ভর দিয়ে সালাত আদায় করছিলেন। আমরা সালাম দেওয়ার পর তাকে (লাঠিতে ভর দিয়ে সালাত আদায় সম্পর্কে) জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, উম্মু-ক্বাইস বিনতে মিহ্সান (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বয়স বেশী হলো এবং তাঁর শরীরের গোশত ঢিলা হয়ে গেল তখন তিনি তাঁর সালাতের স্থানে একটি লাঠি রাখতেন এবং তার উপর ভর করে সালাত আদায় করতেন।
৯৪৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ شُبَيْلٍ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، قَالَ كَانَ أَحَدُنَا يُكَلِّمُ الرَّجُلَ إِلَى جَنْبِهِ فِي الصَّلاَةِ فَنَزَلَتْ { وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ } فَأُمِرْنَا بِالسُّكُوتِ وَنُهِينَا عَنِ الْكَلاَمِ .
যায়িদ ইবনু আরক্বাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের কেউ সালাত আদায় অবস্থায়ই তার পাশের ব্যক্তির সাথে কথা বলতো। অতঃপর এ আয়াত নাযিল হয়ঃ “তোমরা আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে (সালাত) দাঁড়াও” (সূরাহ আল-বাক্বারাহঃ ২৩৮)। এ আয়াতে আমাদেরকে সালাত চুপ থাকতে আদেশ দেয়া হয় এবং কথাবার্তা বলতে নিষেধ করা হয়।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
৯৫০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ قُدَامَةَ بْنِ أَعْيَنَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ هِلاَلٍ، – يَعْنِي ابْنَ يِسَافٍ – عَنْ أَبِي يَحْيَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ حُدِّثْتُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” صَلاَةُ الرَّجُلِ قَاعِدًا نِصْفُ الصَّلاَةِ ” . فَأَتَيْتُهُ فَوَجَدْتُهُ يُصَلِّي جَالِسًا فَوَضَعْتُ يَدَىَّ عَلَى رَأْسِي فَقَالَ مَا لَكَ يَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو قُلْتُ حُدِّثْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنَّكَ قُلْتَ ” صَلاَةُ الرَّجُلِ قَاعِدًا نِصْفُ الصَّلاَةِ ” . وَأَنْتَ تُصَلِّي قَاعِدًا قَالَ ” أَجَلْ وَلَكِنِّي لَسْتُ كَأَحَدٍ مِنْكُمْ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার নিকট বর্ণনা করা হয় যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন ব্যক্তি বসে (নফল) সালাত আদায় করলে তা অর্ধেক সালাত আদায় হিসেবে ধর্তব্য। অতঃপর আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গিয়ে দেখলাম তিনি বসে সালাত আদায় করছেন। এ দৃশ্য দেখে আমি আমার মাথায় হাত রাখলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর’ ! তোমার কি হয়েছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ! আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করা হয়েছিল যে, আপনি বলেছেন, কোন ব্যক্তি বসে (সালাত) আদায় করলে তা (দঁড়িয়ে) অর্ধেক সালাত আদায়ের সমতূল্য। অথচ আপনি বসে সালাত আদায় করছেন। রসুলূল্লাহ (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, আমি তাই বলেছি। কিন্তু আমি তোমাদের কারো মত নই।
সহীহঃ মুসলিম।
৯৫১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّهُ سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنْ صَلاَةِ الرَّجُلِ قَاعِدًا فَقَالَ “ صَلاَتُهُ قَائِمًا أَفْضَلُ مِنْ صَلاَتِهِ قَاعِدًا وَصَلاَتُهُ قَاعِدًا عَلَى النِّصْفِ مِنْ صَلاَتِهِ قَائِمًا وَصَلاَتُهُ نَائِمًا عَلَى النِّصْفِ مِنْ صَلاَتِهِ قَاعِدًا ” .
‘ইমরান ইবনুল হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কারো বসে সালাত আদায় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন, তার বসে সালাত আদায়ের চাইতে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় উত্তম। তার বসে সালাত আদায় দাঁড়িয়ে সালাত আদায়ের অর্ধেক এবং তার শুয়ে সালাত আদায় বসে সালাত আদায়ের অর্ধেক।
সহীহঃ বুখারী।
৯৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ طَهْمَانَ، عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ كَانَ بِيَ النَّاصُورُ فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ “ صَلِّ قَائِمًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ ” .
‘ইমরান ইবনুল হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার পাজঁরে ব্যথাজনিত রোগ ছিল। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, তুমি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে, তাতে সক্ষম না হলে বসে আদায় করবে এবং তাতেও সক্ষম না হলে শুয়ে সালাত আদায় করবে।
সহীহঃ বুখারী।
৯৫৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي شَىْءٍ مِنْ صَلاَةِ اللَّيْلِ جَالِسًا قَطُّ حَتَّى دَخَلَ فِي السِّنِّ فَكَانَ يَجْلِسُ فِيهَا فَيَقْرَأُ حَتَّى إِذَا بَقِيَ أَرْبَعُونَ أَوْ ثَلاَثُونَ آيَةً قَامَ فَقَرَأَهَا ثُمَّ سَجَدَ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রাতের সালাত কখনও বসে ক্বিরাআত করতে দেখিনি। অবশেষে বৃদ্ধ বয়সে পৌছলে তিনি রাতের সালাত বসে ক্বিরাআত করতেন এবং চল্লিশ কিংবা ত্রিশ আয়াত বাকী থাকতে উঠে দাঁড়িয়ে তা পাঠ সম্পন্ন করে সিজদায় যেতেন।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
৯৫৪
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ، وَأَبِي النَّضْرِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي جَالِسًا فَيَقْرَأُ وَهُوَ جَالِسٌ وَإِذَا بَقِيَ مِنْ قِرَاءَتِهِ قَدْرُ مَا يَكُونُ ثَلاَثِينَ أَوْ أَرْبَعِينَ آيَةً قَامَ فَقَرَأَهَا وَهُوَ قَائِمٌ ثُمَّ رَكَعَ ثُمَّ سَجَدَ ثُمَّ يَفْعَلُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ مِثْلَ ذَلِكَ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَاهُ عَلْقَمَةُ بْنُ وَقَّاصٍ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসে সালাত আদায়কালে ক্বিরাআতও বসে পড়তেন। যখন ক্বিরাআতের ত্রিশ বা চল্লিশ আয়াত বাকী থাকতো তখন উঠে দাঁড়িয়ে তা পাঠ করতেন, এরপর রুকূ’ ও সাজদাহ্ করতেন এবং দ্বিতীয় রাক‘আতেও অনুরূপ করতেন।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
ইমাম আবূ দাউদ (রাঃ) বলেন, এ হাদীসটি ‘আলক্বামাহ ইবনু ওয়াক্কাস (রহঃ) ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
৯৫৫
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، قَالَ سَمِعْتُ بُدَيْلَ بْنَ مَيْسَرَةَ، وَأَيُّوبَ، يُحَدِّثَانِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي لَيْلاً طَوِيلاً قَائِمًا وَلَيْلاً طَوِيلاً قَاعِدًا فَإِذَا صَلَّى قَائِمًا رَكَعَ قَائِمًا وَإِذَا صَلَّى قَاعِدًا رَكَعَ قَاعِدًا .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে কখনো দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে এবং কখনো দীর্ঘ সময় বসে সালাত আদায় করতেন। তিনি দাঁড়িয়ে সালাত আদায়কালে দাঁড়িয়ে রুকূ’ করতেন এবং বসে সালাত আদায়কালে বসে রুকূ’ করতেন।
সহীহঃ মুসলিম।
৯৫৬
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا كَهْمَسُ بْنُ الْحَسَنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ السُّورَةَ فِي رَكْعَةٍ قَالَتِ الْمُفَصَّلَ . قَالَ قُلْتُ فَكَانَ يُصَلِّي قَاعِدًا قَالَتْ حِينَ حَطَمَهُ النَّاسُ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি এক রাক‘আতে কয়েকটি সূরাহ পড়তেন? তিনি বললেন, তিনি ‘মুফাস্সাল’ (দীর্ঘ) সূরাহ পড়তেন। তিনি বলেন, আমি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি কি বসে সালাত আদায় করতেন? ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, যখন তাঁর বয়স অধিক হয়ে যায় (তখন তিনি বসে সালাত আদায় করতেন)।
সহীহঃ এর দ্বিতীয় অংশ।
৯৫৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، قَالَ قُلْتُ لأَنْظُرَنَّ إِلَى صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَيْفَ يُصَلِّي فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ فَكَبَّرَ فَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى حَاذَتَا بِأُذُنَيْهِ ثُمَّ أَخَذَ شِمَالَهُ بِيَمِينِهِ فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ رَفَعَهُمَا مِثْلَ ذَلِكَ – قَالَ – ثُمَّ جَلَسَ فَافْتَرَشَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُسْرَى وَحَدَّ مِرْفَقَهُ الأَيْمَنَ عَلَى فَخِذِهِ الْيُمْنَى وَقَبَضَ ثِنْتَيْنِ وَحَلَّقَ حَلَقَةً وَرَأَيْتُهُ يَقُولُ هَكَذَا وَحَلَّقَ بِشْرٌ الإِبْهَامَ وَالْوُسْطَى وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ .
ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি (মনে মনে) বললাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে সালাত আদায় করেন আমি তা অবশ্যই দেখবো। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত দাঁড়িয়ে ক্বিবলামূখী হয়ে তাকবীর বলে দুই হাত কান বরাবর উত্তোলন করলেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাত আকঁড়ে ধরলেন। তারপর যখন রুকূ’তে যাওয়ার ইচ্ছা করলেন তখনও অনুরূপভাবে দু’হাত উত্তোলন করলেন। বর্ণনাকারী (ওয়াইল ইবনু হুজর) বলেন, অতঃপর তিনি বাম পা বিছিয়ে বসলেন, বাম হাত বাম পায়ের ঊরুর উপর রাখলেন এবং ডান কনুই ডান ঊরু হতে পৃথক রাখলেন। তারপর দু’ আঙ্গুল গুটিয়ে বৃত্তাকার করলেন এবং তাঁকে আমি এভাবে বলতে দেখলাম। বর্ণনাকারী বিশর (রহঃ) বৃদ্ধাংগুলিকে মধ্যমার সাথে মিলিয়ে বৃত্ত করলেন এবং শাহাদাত অংগুলি দ্বারা ইশারা করে দেখালেন।
৯৫৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ سُنَّةُ الصَّلاَةِ أَنْ تَنْصِبَ، رِجْلَكَ الْيُمْنَى وَتَثْنِيَ رِجْلَكَ الْيُسْرَى .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালাতের সুন্নাত হচ্ছে, (বসার সময়) তোমার ডান পা খাড়া রাখা এবং বাম পা বিছিয়ে দেয়া।
৯৫৯
حَدَّثَنَا ابْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى، قَالَ سَمِعْتُ الْقَاسِمَ، يَقُولُ أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، يَقُولُ مِنْ سُنَّةِ الصَّلاَةِ أَنْ تُضْجِعَ رِجْلَكَ الْيُسْرَى وَتَنْصِبَ الْيُمْنَى .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সালাতের সুন্নাত হলো, (বসার সময়) তোমার বাম পা বিছিয়ে রাখা এবং ডান পা খাড়া করে রাখা।
৯৬০
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ يَحْيَى، بِإِسْنَادِهِ مِثْلَهُ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ يَحْيَى، أَيْضًا مِنَ السُّنَّةِ كَمَا قَالَ جَرِيرٌ .
ইয়াহিয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এই সানাদে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত আছে।
৯৬১
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، أَنَّ الْقَاسِمَ بْنَ مُحَمَّدٍ، أَرَاهُمُ الْجُلُوسَ فِي التَّشَهُّدِ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ .
ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল-ক্বাসিম ইবনু মুহাম্মদ তাদেরকে তাশাহহুদে বসার নিয়ম দেখান। অতঃপর হাদীসটি বর্ণনা করেন।
৯৬২
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، عَنْ وَكِيعٍ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ عَدِيٍّ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا جَلَسَ فِي الصَّلاَةِ افْتَرَشَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى حَتَّى اسْوَدَّ ظَهْرُ قَدَمِهِ .
ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত (তাশাহুদে বসার সময়) তাঁর বাম পা বিছিয়ে দিতেন। ফলে তাঁর পায়ের পাতার উপরিভাগ কালো হয়ে গিয়েছিল।[৯৬২]
৯৬৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ، – يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ – حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ سَمِعْتُهُ فِي، عَشْرَةٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – وَقَالَ أَحْمَدُ قَالَ أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا حُمَيْدٍ السَّاعِدِيَّ فِي عَشْرَةٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ أَبُو قَتَادَةَ – قَالَ أَبُو حُمَيْدٍ أَنَا أَعْلَمُكُمْ بِصَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالُوا فَاعْرِضْ . فَذَكَرَ الْحَدِيثَ . قَالَ وَيَفْتَحُ أَصَابِعَ رِجْلَيْهِ إِذَا سَجَدَ ثُمَّ يَقُولُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَيَرْفَعُ وَيَثْنِي رِجْلَهُ الْيُسْرَى فَيَقْعُدُ عَلَيْهَا ثُمَّ يَصْنَعُ فِي الأُخْرَى مِثْلَ ذَلِكَ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ . قَالَ حَتَّى إِذَا كَانَتِ السَّجْدَةُ الَّتِي فِيهَا التَّسْلِيمُ أَخَّرَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَقَعَدَ مُتَوَرِّكًا عَلَى شِقِّهِ الأَيْسَرِ . زَادَ أَحْمَدُ قَالُوا صَدَقْتَ هَكَذَا كَانَ يُصَلِّي وَلَمْ يَذْكُرَا فِي حَدِيثِهِمَا الْجُلُوسَ فِي الثِّنْتَيْنِ كَيْفَ جَلَسَ
মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমর ইবনু ‘আত্বা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আবূ হুমাইদ আস-সাইদী (রাঃ) কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দশজন সহাবীর উপস্থিতিতে বলতে শুনেছি, যাদের মধ্যে আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ)-ও ছিলেন। আবূ হুমাইদ (রাঃ) বললেন, আমি তোমাদের মধ্যে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সালাত সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। তারা বললেন, তাহলে আপনি বর্ণনা করুন। তখন তিনি হাদীস বর্ণনা করেন। তাতে তিনি এও বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাজদাহ্র সময় দুই পায়ের আঙ্গুলগুলো খোলা রাখতেন। অতঃপর “আল্লাহু আকবার” বলে মাথা উঠাতেন এবং বাম পা বিছিয়ে তার উপর বসতেন। অতঃপর দ্বিতীয় রাক‘আতেও তিনি অনুরূপভাবে আদায় করতেন। এরপর তিনি হাদীসের অবশিষ্ট অংশ বর্ণনা করেন যে, সবশেষে তিনি সালাম ফিরানোর পূর্বের সাজদাহ্ শেষ করে বাম পা বাইরের দিকে বের করে বাম পাশের নিতম্বের উপর বসতেন। ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বলের বর্ণনায় আরো রয়েছে, এভাবে হাদীস বর্ণনার পর উপস্থিত সাহাবীগণ বললেন, হাঁ, আপনি সত্যই বলেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এভাবেই সালাত আদায় করতেন। কিন্তু ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল ও মুসাদ্দাদ তাদের বর্ণিত হাদীসে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দ্বিতীয় রাক‘আতে কিরূপে বসতেন তা বর্ণনা করেননি।
৯৬৪
حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْمِصْرِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنِ اللَّيْثِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ مُحَمَّدٍ الْقُرَشِيِّ، وَيَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَلْحَلَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، أَنَّهُ كَانَ جَالِسًا مَعَ نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ وَلَمْ يَذْكُرْ أَبَا قَتَادَةَ قَالَ فَإِذَا جَلَسَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ جَلَسَ عَلَى رِجْلِهِ الْيُسْرَى فَإِذَا جَلَسَ فِي الرَّكْعَةِ الأَخِيرَةِ قَدَّمَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَجَلَسَ عَلَى مَقْعَدَتِهِ .
মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমর ইবনু আত্বা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল সহাবীর সাথে বসা ছিলেন। তখন পূর্বোক্ত হাদীসটি আলোচিত হয়। অবশ্য তাতে সহাবী আবূ ক্বাতাদাহর নাম উল্লেখ নেই। তিনি বর্ণনা করলেন, তিনি যখন দুই রাক‘আত সম্পন্ন করে বসতেন তখন বাম পা বাইরের দিকে ছড়িয়ে নিতম্বের উপর বসলেন।
৯৬৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَلْحَلَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو الْعَامِرِيِّ، قَالَ كُنْتُ فِي مَجْلِسٍ بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالَ فِيهِ فَإِذَا قَعَدَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ قَعَدَ عَلَى بَطْنِ قَدَمِهِ الْيُسْرَى وَنَصَبَ الْيُمْنَى فَإِذَا كَانَتِ الرَّابِعَةُ أَفْضَى بِوَرِكِهِ الْيُسْرَى إِلَى الأَرْضِ وَأَخْرَجَ قَدَمَيْهِ مِنْ نَاحِيَةٍ وَاحِدَةٍ .
মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমর আল-’আমিরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যে মাজলিসে এ হাদীসটি আলোচিত হচ্ছিল সেখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম। বর্ণনাকারী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন দুই রাক‘আত শেষে বসতেন তখন বাম পায়ের তালুর ওপর ভর করে বসতেন, এ সময় তাঁর নিতম্ব মাটিতে লাগিয়ে রাখতেন এবং উভয় পা একদিকে বের করে দিতেন।
৯৬৬
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبُو بَدْرٍ، حَدَّثَنِي زُهَيْرٌ أَبُو خَيْثَمَةَ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الْحُرِّ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ عَبَّاسِ، – أَوْ عَيَّاشِ – بْنِ سَهْلٍ السَّاعِدِيِّ أَنَّهُ كَانَ فِي مَجْلِسٍ فِيهِ أَبُوهُ فَذُكِرَ فِيهِ قَالَ فَسَجَدَ فَانْتَصَبَ عَلَى كَفَّيْهِ وَرُكْبَتَيْهِ وَصُدُورِ قَدَمَيْهِ وَهُوَ جَالِسٌ فَتَوَرَّكَ وَنَصَبَ قَدَمَهُ الأُخْرَى ثُمَّ كَبَّرَ فَسَجَدَ ثُمَّ كَبَّرَ فَقَامَ وَلَمْ يَتَوَرَّكْ ثُمَّ عَادَ فَرَكَعَ الرَّكْعَةَ الأُخْرَى فَكَبَّرَ كَذَلِكَ ثُمَّ جَلَسَ بَعْدَ الرَّكْعَتَيْنِ حَتَّى إِذَا هُوَ أَرَادَ أَنْ يَنْهَضَ لِلْقِيَامِ قَامَ بِتَكْبِيرٍ ثُمَّ رَكَعَ الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ فَلَمَّا سَلَّمَ سَلَّمَ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ لَمْ يَذْكُرْ فِي حَدِيثِهِ مَا ذَكَرَ عَبْدُ الْحَمِيدِ فِي التَّوَرُّكِ وَالرَّفْعِ إِذَا قَامَ مِنْ ثِنْتَيْنِ .
‘আব্বাস অথবা ‘আইয়াশ ইবনু সাহ্ল আস-সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি এমন একটি মাজলিসে ছিলেন যেখানে তাঁর পিতাও উপস্থিত ছিলেন। অতঃপর তিনি হাদীস বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাজদাহ্রত অবস্থায় দুই হাতের তালু, দুই হাঁটু এবং দুই পায়ের পাতার উপর ভর করলেন। তিনি বসার সময় নিতম্বের উপর বসলেন এবং অপর পা খাড়া করে রাখলেন, অতঃপর তাকবীর বলে সাজদাহ্ করলেন, এরপর আবার তাকবীর বলে না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর পূর্বের নিয়মেই তাকবীর বলে পরবর্তী রাক‘আতের রুকূ’ করলেন। অতঃপর দু’ রাক‘আত শেষে বসলেন। এরপর তিনি ক্বিয়ামের মনস্থ করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং পরবর্তী দু’ রাক‘আত আদায় করলেন। অতঃপর শেষ বৈঠকে প্রথমে ডান দিক এবং পরে বাম দিকে সালাম ফিরালেন।
দুর্বল।
ইমাম আবু দাউদ (রাঃ) বলেন, আবদুল হামীদ কর্তৃক বর্ণিত নিতম্বের উপর বসা এবং দুই রাক’আতের পর দাঁড়ানোর সময় হাত উঠানোর কথাটি তার হাদীসে উল্লেখ নেই। [৯৬৬]
৯৬৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو، أَخْبَرَنِي فُلَيْحٌ، أَخْبَرَنِي عَبَّاسُ بْنُ سَهْلٍ، قَالَ اجْتَمَعَ أَبُو حُمَيْدٍ وَأَبُو أُسَيْدٍ وَسَهْلُ بْنُ سَعْدٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ فَذَكَرَ هَذَا الْحَدِيثَ وَلَمْ يَذْكُرِ الرَّفْعَ إِذَا قَامَ مِنْ ثِنْتَيْنِ وَلاَ الْجُلُوسَ قَالَ حَتَّى فَرَغَ ثُمَّ جَلَسَ فَافْتَرَشَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَأَقْبَلَ بِصَدْرِ الْيُمْنَى عَلَى قِبْلَتِهِ .
‘আব্বাস ইবনু সাহল (রা:) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুমাইদ, আবূ ইসাইদ, সাহ্ল ইবনু সা’দ ও মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ) এক জায়গায় সমবেত হলেন। তখন তিনি এ হাদীসটি বর্ণনা করলেন। কিন্তু তাতে দ্বিতীয় রাকা’আতের পর দাঁড়ানোর সময় হাত উঠানো এবং (ক্ষনিক) বসার কথা উল্লেখ নাই। বরং তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত শেষান্তে বসার সময় বাম পা বিছিয়ে দিয়ে দান পায়ের আঙ্গুলগুলো ক্বিবলাহমুখী করে বসলেন।
৯৬৮
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى، عَنْ سُلَيْمَانَ الأَعْمَشِ، حَدَّثَنِي شَقِيقُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ كُنَّا إِذَا جَلَسْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الصَّلاَةِ قُلْنَا السَّلاَمُ عَلَى اللَّهِ قَبْلَ عِبَادِهِ السَّلاَمُ عَلَى فُلاَنٍ وَفُلاَنٍ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ تَقُولُوا السَّلاَمُ عَلَى اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّلاَمُ وَلَكِنْ إِذَا جَلَسَ أَحَدُكُمْ فَلْيَقُلِ التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ فَإِنَّكُمْ إِذَا قُلْتُمْ ذَلِكَ أَصَابَ كُلَّ عَبْدٍ صَالِحٍ فِي السَّمَاءِ وَالأَرْضِ – أَوْ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ – أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ثُمَّ لْيَتَخَيَّرْ أَحَدُكُمْ مِنَ الدُّعَاءِ أَعْجَبَهُ إِلَيْهِ فَيَدْعُو بِهِ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা যখন সালাত রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে তাশাহহুদের বৈঠক বসতাম তখন বলতাম, “বান্দাদের পূর্বে আল্লাহর প্রতি সালাম, তারপর অমুক ও অমুকের প্রতি সালাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা “আল্লাহর প্রতি সালাম বর্ষিত হোক” এরূপ বলো না। কেননা আল্লাহ নিজেই সালাম বা শান্তিদাতা। বরং তোমরা সালাতের তাশাহহুদের বৈঠকে বসে বলবে, “আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্সলাওয়াতু ওয়াত্-ত্বায়্যিবাতু। আস্সালামু ‘আলাইকা আইউহান্ নাবীয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্সালামু ‘আলাইনা ওয়া ‘আলা ‘ইবাদিল্লাহিস সালিহীন”-(অর্থঃ আমাদের সব সালাম ও অভিবাদন, সালাত ও দু‘আ এবং পবিত্রতা মহান আল্লাহর জন্য। হে নাবী! আপনার উপর সালাম, আল্লাহর রহমত ও কল্যান বর্ষিত হোক। আমাদের ও আল্লাহর সকল নেক বান্দার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)। কেননা তোমরা যখন এটা পাঠ করবে তখন তা আসমান ও যমীন অথবা আসমান ও যমীনের মাঝে আল্লাহর যত নেক বান্দা আছে সবার নিকটেই পৌছে যাবে। “আশ্হাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু ওয়া রসূলুহু”-(অর্থঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নাই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা ও রসূল। এরপর তোমরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী দু‘আ পাঠ করবে।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
৯৬৯
حَدَّثَنَا تَمِيمُ بْنُ الْمُنْتَصِرِ، أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ، – يَعْنِي ابْنَ يُوسُفَ – عَنْ شَرِيكٍ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا لاَ نَدْرِي مَا نَقُولُ إِذَا جَلَسْنَا فِي الصَّلاَةِ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ عَلِمَ فَذَكَرَ نَحْوَهُ .
قَالَ شَرِيكٌ وَحَدَّثَنَا جَامِعٌ، – يَعْنِي ابْنَ شَدَّادٍ – عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، بِمِثْلِهِ قَالَ وَكَانَ يُعَلِّمُنَا كَلِمَاتٍ وَلَمْ يَكُنْ يُعَلِّمُنَاهُنَّ كَمَا يُعَلِّمُنَا التَّشَهُّدَ “ اللَّهُمَّ أَلِّفْ بَيْنَ قُلُوبِنَا وَأَصْلِحْ ذَاتَ بَيْنِنَا وَاهْدِنَا سُبُلَ السَّلاَمِ وَنَجِّنَا مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَجَنِّبْنَا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَبَارِكْ لَنَا فِي أَسْمَاعِنَا وَأَبْصَارِنَا وَقُلُوبِنَا وَأَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا وَتُبْ عَلَيْنَا إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ وَاجْعَلْنَا شَاكِرِينَ لِنِعْمَتِكَ مُثْنِينَ بِهَا قَابِلِيهَا وَأَتِمَّهَا عَلَيْنَا ” .
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সালাত তাশাহহুদের বৈঠকে আমরা কি পাঠ করবো প্রথমে তা জানতাম না। এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানতেন। এরপর তিনি পূর্বানুরূপে হাদীস বর্ণনা করেন।
সহীহ।
শারীক (রহঃ) জামি’ ইবনু শাদ্দাদের মাধ্যমে এবং আবূ ওয়াইল ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ হতেও অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে। তিনি বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে কিছু কথা শিখিয়ে দিলেন, তবে তাশাহুদ শিক্ষার মত করে নয়। তা হলোঃ “আল্লাহুম্মা বাইনা কুলূবিনা ওয়া আসলিহ্ যাতা বাইনিনা ওয়াহদিনা সুবুলাস্-সালামী ওয়া নাজ্জিনা মিনায্ যুলুমাতি ইলান্নূর। ওয়া জাননিব্নাল ফাওয়াহিশা মা যাহারা মিন্হা মা বাতানা ওয়া বারিক লানা ফী আসমাইনা ওয়া আবসারিনা ও ক্বালুবিনা ওয়া আযওয়াজিনা ওয়া যুররিয়্যাতিনা ওয়া তুব ‘আলাইনা ইন্নাকা আন্তাত তাওওয়াবুর রহীম। ওয়াজ্’আলনা শাকিরীনা লিনি’মাতিকা মুসনীনা বিহা ক্বাবিলীহা ওয়া আতিম্মাহা ‘আলাইনা”।
দূর্বল।
৯৭০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الْحُرِّ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُخَيْمِرَةَ، قَالَ أَخَذَ عَلْقَمَةُ بِيَدِي فَحَدَّثَنِي أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ أَخَذَ بِيَدِهِ وَأَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَخَذَ بِيَدِ عَبْدِ اللَّهِ فَعَلَّمَهُ التَّشَهُّدَ فِي الصَّلاَةِ فَذَكَرَ مِثْلَ دُعَاءِ حَدِيثِ الأَعْمَشِ “ إِذَا قُلْتَ هَذَا أَوْ قَضَيْتَ هَذَا فَقَدْ قَضَيْتَ صَلاَتَكَ إِنْ شِئْتَ أَنْ تَقُومَ فَقُمْ وَإِنْ شِئْتَ أَنْ تَقْعُدَ فَاقْعُدْ ” .
আল-ক্বাসিম ইবনু মুখায়মিরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আলক্বামাহ (রাঃ) আমার হাত ধরে বলেন, একবার ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) তার হাত ধরে বললেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুল্লাহর হাত ধরে সালাতের তাশাহুদের পাঠ শিখিয়েছেন। অতঃপর তিনি আ’মাশ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত হাদীসে উল্লেখিত দু‘আর আনুরূপ দু‘আ শিক্ষা দেন। অতঃপর বললেন, যখন তুমি এ দু‘আ পড়বে অথবা পড়া শেষ করবে তখন তোমার সালাত শেষ হবে। এরপর তুমি উঠে যেতে চাইলে উঠে যাবে নতুবা বসে থাকতে চাইলে বসে থাকবে।
শায, এটুকু অতিরিক্ত যোগেঃ “যখন তুমি হে দু‘আ পড়বে….”। সঠিক হচ্ছে এটি ইবনু মাসউদের নিজস্ব বক্তব্য।
৯৭১
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، سَمِعْتُ مُجَاهِدًا، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي التَّشَهُّدِ ” التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ الصَّلَوَاتُ الطَّيِّبَاتُ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ” . قَالَ قَالَ ابْنُ عُمَرَ زِدْتُ فِيهَا وَبَرَكَاتُهُ . ” السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ” . قَالَ ابْنُ عُمَرَ زِدْتُ فِيهَا وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ . ” وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ” .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তাশাহুদ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণনা করেনঃ “আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্-সলাওয়াতু ওয়াত ত্বায়্যিবাতু। আস্সালামূ ‘আলাইকা আয়্যুহান্ নাবীয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”। বর্ণনাকারী বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার বলেন, “বারাকাতুহু” শব্দটি আমি নিজে সংযোজিত করেছি। “আস্সালামু ‘আলাইনা ওয়া ‘আলা ‘ইবাদিল্লাহিস সালিহীন, আশ্হাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার বলেন, এখানে ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহু” কথাটি আমি যোগ করেছি। “ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু ওয়া রসূলুহু ”।
৯৭২
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، ح وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ يُونُسَ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ حِطَّانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الرَّقَاشِيِّ، قَالَ صَلَّى بِنَا أَبُو مُوسَى الأَشْعَرِيُّ فَلَمَّا جَلَسَ فِي آخِرِ صَلاَتِهِ قَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ أُقِرَّتِ الصَّلاَةُ بِالْبِرِّ وَالزَّكَاةِ . فَلَمَّا انْفَتَلَ أَبُو مُوسَى أَقْبَلَ عَلَى الْقَوْمِ فَقَالَ أَيُّكُمُ الْقَائِلُ كَلِمَةَ كَذَا وَكَذَا فَأَرَمَّ الْقَوْمُ فَقَالَ أَيُّكُمُ الْقَائِلُ كَلِمَةَ كَذَا وَكَذَا فَأَرَمَّ الْقَوْمُ قَالَ فَلَعَلَّكَ يَا حِطَّانُ أَنْتَ قُلْتَهَا . قَالَ مَا قُلْتُهَا وَلَقَدْ رَهِبْتُ أَنْ تَبْكَعَنِي بِهَا . قَالَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ أَنَا قُلْتُهَا وَمَا أَرَدْتُ بِهَا إِلاَّ الْخَيْرَ . فَقَالَ أَبُو مُوسَى أَمَا تَعْلَمُونَ كَيْفَ تَقُولُونَ فِي صَلاَتِكُمْ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَطَبَنَا فَعَلَّمَنَا وَبَيَّنَ لَنَا سُنَّتَنَا وَعَلَّمَنَا صَلاَتَنَا فَقَالَ ” إِذَا صَلَّيْتُمْ فَأَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ ثُمَّ لْيَؤُمَّكُمْ أَحَدُكُمْ فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا قَرَأَ { غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ } فَقُولُوا آمِينَ يُجِبْكُمُ اللَّهُ وَإِذَا كَبَّرَ وَرَكَعَ فَكَبِّرُوا وَارْكَعُوا فَإِنَّ الإِمَامَ يَرْكَعُ قَبْلَكُمْ وَيَرْفَعُ قَبْلَكُمْ ” . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” فَتِلْكَ بِتِلْكَ وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ فَقُولُوا اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ يَسْمَعِ اللَّهُ لَكُمْ فَإِنَّ اللَّهَ تَعَالَى قَالَ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ وَإِذَا كَبَّرَ وَسَجَدَ فَكَبِّرُوا وَاسْجُدُوا فَإِنَّ الإِمَامَ يَسْجُدُ قَبْلَكُمْ وَيَرْفَعُ قَبْلَكُمْ ” . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” فَتِلْكَ بِتِلْكَ فَإِذَا كَانَ عِنْدَ الْقَعْدَةِ فَلْيَكُنْ مِنْ أَوَّلِ قَوْلِ أَحَدِكُمْ أَنْ يَقُولَ التَّحِيَّاتُ الطَّيِّبَاتُ الصَّلَوَاتُ لِلَّهِ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ” . لَمْ يَقُلْ أَحْمَدُ ” وَبَرَكَاتُهُ ” . وَلاَ قَالَ ” وَأَشْهَدُ ” . قَالَ ” وَأَنَّ مُحَمَّدًا ” .
হিত্তান ইবনু ‘আবদুল্লাহ আর-রাক্বাশী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আবূ মূসা আল-আশ’আরী (রাঃ) আমাদের সালাত পড়ালেন। সালাতের শেষ দিকে তিনি যখন বসলেন, তখন দলের একজন বললো, নেকী ও পবিত্রতা অর্জনের জন্যই সালাত। সালাত শেষে আবূ মূসা (রাঃ) লোকদের দিকে মুখ ফিরিয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে উপস্থিত লোকজন নীরব রইলো। তিনি পুনরায় বললেন, তোমাদের মধ্যকার কে এরূপ কথা বলেছে। বর্ণনাকারী বলেন, তখনও লোকেরা চুপ রইলো। হিত্তান বললেন, তিনি আমাকে বললেন, হে হিত্তান! সম্ভবত তুমিই একথাগুলো বলেছো। হিত্তান বললেন, না, আমি বলি নাই। অবশ্য আমি ভয় পাচ্ছিলাম যে, এজন্য আমাকে শাস্তি দিবেন। হিত্তান বললেন, এক ব্যক্তি বললো, কথাগুলো আমিই বলেছি এবং শুধু ভাল উদ্দেশেই বলেছি। আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, সালাতের মধ্যে কি বলতে হয় তাকি তোমরা অবহিত নও? একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সামনে খুত্ববাহ দিলেন। তাতে তিনি আমাদেরকে সালাতের পদ্ধতি ও সালাত শিক্ষা দিলেন। তিনি বললেনঃ তোমরা সালাত আদায়ের ইচ্ছা করলে প্রথমে কাতারসমূহ ঠিক করে নিবে। অতঃপর তোমাদের একজন ইমামতি করবে। ইমাম তাকবীর বললে, তোমরাও তাকবীর বলবে, ইমাম যখন “গাইরিল্ মাগ্দুবি ‘আলাইহিম ওয়ালাদ্দোয়ালীন” পড়বে তোমরা “আমীন” বলবে। তবেই আল্লাহ তা কবুল করবেন। ইমাম তাকবীর বলে রুকূ’ করলে তোমরাও তাকবীর বলে রুকূ’ করবে। কারণ ইমাম তোমাদের পূর্বে রুকূ’তে যাবে এবং তোমাদের পূর্বেই রুকূ’ হতে মাথা উঠাবে। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটা তার বিকল্প। ইমাম “সামি’আল্লাহু লিমান হামিদাহ্” বললে তোমরা তখন বলবে “আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল্ হাম্দ”। আল্লাহ তোমাদের একথা শুনবেন। কেননা মহান আল্লাহ তাঁর নাবীর যবানীতে বলেছেনঃ “সামি’ আল্লাহু লিমান হামিদাহ্”। অতঃপর ইমাম যখন তাকবীর বলে সাজদাহ্ইয় যাবে তখন তোমরাও তাকবীর বলে সাজদাহ্ করবে। ইমাম তোমাদের আগে তাকবীর বলবে এবং আগে সাজদাহ্ করবে। একথা বলার পর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটা সেটার বিকল্প। তাশাহহুদের বৈঠকে তোমাদের সর্বপ্রথম পড়তে হবেঃ “আত্তাহিয়্যাতু তায়্যিবাতুস সাল্লাওয়াতু লিল্লাহি; আস্সালামু ‘আলাইকা আয়্যুহান্ নাবীয়্যু ওয়া রহমাতুলাহি ও বারাকাতুহু। আস্সালামু ‘আলাইনা ওয়া ‘আলা ‘ইবাদিল্লাহিস সালিহীন। আশ্হাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহু ওয়া রসূলুহু”। ইমাম আহমাদ (রাঃ) স্বীয় বর্ণনাতে “বারাকাতুহু” ও “আশহাদু” শব্দদ্বয় উল্লেখ করেননি। তিনি “আন্না মুহাম্মাদান” কথাটি উল্লেখ করেছেন।
সহীহঃ মুসলিম।
৯৭৩
حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ النَّضْرِ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَبِي غَلاَّبٍ، يُحَدِّثُهُ عَنْ حِطَّانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الرَّقَاشِيِّ، بِهَذَا الْحَدِيثِ زَادَ ” فَإِذَا قَرَأَ فَأَنْصِتُوا ” . وَقَالَ فِي التَّشَهُّدِ بَعْدَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ زَادَ ” وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ ” . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَقَوْلُهُ ” فَأَنْصِتُوا ” . لَيْسَ بِمَحْفُوظٍ لَمْ يَجِئْ بِهِ إِلاَّ سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ فِي هَذَا الْحَدِيثِ .
হিত্তান ইবনু ‘আবদুল্লাহ আর-রাক্বাশী থেকে বর্ণিতঃ
উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তার বর্ণনায় আরো রয়েছে, ইমাম যখন ক্বিরাআত পড়বে তখন তোমরা চুপ করে থাকবে। বর্ণনাকারী তাশাহুদের “আশ্হাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” এর পরে “ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু” কথাটি বৃদ্ধি করেছেন।
সহীহঃ মুসলিম।
ইমাম আবূ দাউদ (রাঃ) বলেন, “আনসিতু” (চুপ করে থাকবে) কথাটি সংরক্ষিত নয়। এ হাদীসে বর্ণনাকারী সুলায়মান আত্-তাইমী ছাড়া অন্য কেউ তা উল্লেখ করেননি।
৯৭৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، وَطَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُعَلِّمُنَا التَّشَهُّدَ كَمَا يُعَلِّمُنَا الْقُرْآنَ وَكَانَ يَقُولُ “ التَّحِيَّاتُ الْمُبَارَكَاتُ الصَّلَوَاتُ الطَّيِّبَاتُ لِلَّهِ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে কুরআন শিক্ষার মত করেই তাশাহুদ শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেনঃ আত্তাহিয়্যাতুল মুবারাকাতুস সলাওয়াতুত ত্বায়্যিবাতু লিল্লাহি। আল্সালামু ‘আলাইকা আয়্যুহান নাবীয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্সালামু ‘আলাইনা ওয়া ‘আলা ‘ইবাদিল্লাহিস সলিহীন। ওয়া আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ।
সহীহঃ মুসলিম।
৯৭৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ دَاوُدَ بْنِ سُفْيَانَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ مُوسَى أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سَعْدِ بْنِ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، حَدَّثَنِي خُبَيْبُ بْنُ سُلَيْمَانَ بْنِ سَمُرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، سُلَيْمَانَ بْنِ سَمُرَةَ عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، أَمَّا بَعْدُ أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ فِي وَسَطِ الصَّلاَةِ أَوْ حِينَ انْقِضَائِهَا فَابْدَءُوا قَبْلَ التَّسْلِيمِ فَقُولُوا “ التَّحِيَّاتُ الطَّيِّبَاتُ وَالصَّلَوَاتُ وَالْمُلْكُ لِلَّهِ ثُمَّ سَلِّمُوا عَلَى الْيَمِينِ ثُمَّ سَلِّمُوا عَلَى قَارِئِكُمْ وَعَلَى أَنْفُسِكُمْ ” . قَالَ أَبُو دَاوُدَ سُلَيْمَانُ بْنُ مُوسَى كُوفِيُّ الأَصْلِ كَانَ بِدِمَشْقَ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ دَلَّتْ هَذِهِ الصَّحِيفَةُ عَلَى أَنَّ الْحَسَنَ سَمِعَ مِنْ سَمُرَةَ .
সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, সালাতের মধ্যভাগে (দ্বিতীয় রাক‘আতের তাশাহহুদ বৈঠকে) অথবা সালাতের শেষ দিকে সালাম ফিরানোর পূর্বে তোমরা পাঠ করবেঃ “আত্তাহিয়্যাতুত্ ত্বায়্যিবাতু ওয়াস্-সলাওয়াতু ওয়াল মুল্কু লিল্লাহি”। এরপর ডান দিকে সালাম ফিরাবে। অতঃপর ইমাম ও নিজেদের সালাম দিবে।
দুর্বল।
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, সুলায়মান ইবনু মূসা কূফার অধিবাসী ছিলেন। তিনি দামেশ্ক শহরে বসবাস করতেন। ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) আরো বলেন, সুলায়মান ইবনু মূসার এ সহীফাহ প্রমাণ করে, আল-হাসান সামুরাহ (রহ:) ইবনু জুনদুব (রাঃ) এর কাছে হাদীস শুনেছেন। [৯৭৫]
৯৭৬
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ، قَالَ قُلْنَا أَوْ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمَرْتَنَا أَنْ نُصَلِّيَ عَلَيْكَ وَأَنْ نُسَلِّمَ عَلَيْكَ فَأَمَّا السَّلاَمُ فَقَدْ عَرَفْنَاهُ فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ قَالَ “ قُولُوا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ” .
কা‘ব ইবনু ‘উজরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা বললাম অথবা লোকজন বললো, হে আল্লাহর রসূল ! আপনি আমাদেরকে আপনার উপর দরুদ ও সালাম পড়ার আদেশ করেছেন। সালাম পাঠের নিয়ম আমরা জানতে পেরেছি। কিন্তু আপনার উপর দরূদ কিভাবে পাঠ করবো? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা বলো- “আল্লাহুম্মা সল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলি মুহাম্মাদিন কামা সল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ”- (অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি মুহাম্মাদ, তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষন করুন যেরূপ রহমত বর্ষন করেছেন ইবরাহীমের উপর। আপনি ইবরাহীমকে যেমন বরকত দান করেছেন তেমনি মুহাম্মাদ ও তাঁর বংশধরদের বরকত দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মহান।)
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
৯৭৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالَ “ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ ” .
শু’বাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
শু’বাহ (রহঃ) বর্ণিত হাদীসে আছেঃ “সল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা ‘আলি মুহাম্মাদিন কামা সল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা”।
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
৯৭৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، حَدَّثَنَا ابْنُ بِشْرٍ، عَنْ مِسْعَرٍ، عَنِ الْحَكَمِ، بِإِسْنَادِهِ بِهَذَا قَالَ ” اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ” . قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَاهُ الزُّبَيْرُ بْنُ عَدِيٍّ عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى كَمَا رَوَاهُ مِسْعَرٌ إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ ” كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ ” . وَسَاقَ مِثْلَهُ .
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাম্মাদ ইবনুল ‘আলা তার সানাদে ইবনু বিশ্র ও মিস্’আরের মাধ্যমে হাকাম হতে হাদীসটি বর্ণনার পর দরূদ পাঠ সম্পর্কে বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “আল্লাহুম্মা সল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা ‘আলি মুহাম্মাদিন কামা সল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ইন্নাকা হামিদুম্ মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা ‘আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।”
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, হাদীসটি যুবাইর ইবনু ‘আদী (রহঃ) ইবনু আবূ লায়লাহ (রহঃ) হতে মিস্’আরের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে সেখানে শুধু “কামা সল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা” এর স্থলে “কামা সল্লাইতা ‘আলা ‘আলি ইবরাহীমা” কথাটি উল্লেখ করেছেন। হাদীসের অবশিষ্ট অংশ মিস্’আর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।
৯৭৯
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ السَّرْحِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ، أَنَّهُ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو حُمَيْدٍ السَّاعِدِيُّ، أَنَّهُمْ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ قَالَ “ قُولُوا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ” .
আবূ হুমাইদ আস-সাইদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
লোকেরা জিজ্ঞাসা করলো, হে আল্লাহর রসূল ! আমরা আপনার উপর কিভাবে দরূদ পড়বো? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা বলোঃ “আল্লাহুম্মা সল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আয্ওয়াজিহি ওয়া যুররিয়াতিহি কামা সল্লাইতা ‘আলা ‘আলি ইবরাহীমা ওয়া বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আযওয়াজিহি ওয়া যুররিয়াতিহি কামা বারাকতা ‘আলা ‘আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ”। (অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি মুহাম্মাদ, তাঁর স্ত্রীগণ ও সন্তান-সন্তদির উপর রহমত বর্ষণ করুন যেমনি ইবরাহীমের অনুসারী ও বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। এবং আপনি মুহাম্মাদ, তাঁর স্ত্রীগণ ও সন্তান-সন্তদির উপর বরকত নাযিল করুন যেমনি ইবরাহীমের অনুসারী ও বংশধরদের উপর বরকত নাযিল করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মহান।)
সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
৯৮০
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نُعَيْمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمُجْمِرِ، أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، – وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ هُوَ الَّذِي أُرِيَ النِّدَاءَ بِالصَّلاَةِ – أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّهُ قَالَ أَتَانَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي مَجْلِسِ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ فَقَالَ لَهُ بَشِيرُ بْنُ سَعْدٍ أَمَرَنَا اللَّهُ أَنْ نُصَلِّيَ عَلَيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَكَيْفَ نُصَلِّي عَلَيْكَ فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى تَمَنَّيْنَا أَنَّهُ لَمْ يَسْأَلْهُ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” قُولُوا ” . فَذَكَرَ مَعْنَى حَدِيثِ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ زَادَ فِي آخِرِهِ ” فِي الْعَالَمِينَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ” .
আবূ মাস’উদ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ (রাঃ) এর মাজলিসে আমাদের নিকট আসলেন। তখন বাশীর ইবনু সা’দ (রাঃ) তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রসূল ! আল্লাহ আমাদেরকে আপনার উপর দরূদ পাঠের আদেশ করেছেন। আমরা কিভাবে আপনার উপর দরূদ পড়বো? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন। এমনকি আমরা আক্ষেপ করতে ছিলাম যে, তাঁকে প্রশ্নটি না করাই ভাল ছিল। পরে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা বলো…… অতঃপর বর্ণনাকারী কা‘ব ইবনু ‘উজরাহ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ উল্লেখ করেন। তবে হাদীসের শেষাংশে শুধু “ফিল আলামীনা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ” কথাটি বৃদ্ধি করেছেন।
সহীহঃ মুসলিম।
৯৮১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَمْرٍو، بِهَذَا الْخَبَرِ قَالَ “ قُولُوا اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ ” .
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আহমাদ ইবনু ইউসুফ, যুহাইর, মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক্ব, মুহাম্মাদ ইবনু ইবরাহীম ইবনুল হারিস এবং মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদের মাধ্যমে ‘উক্ববাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা বলোঃ “আল্লাহুম্মা সল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন নাবীইল উম্মীয়ি ওয়া ‘আলা ‘আলি মুহাম্মাদিন।”
৯৮২
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حِبَّانُ بْنُ يَسَارٍ الْكِلاَبِيُّ، حَدَّثَنِي أَبُو مُطَرِّفٍ، عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ كَرِيزٍ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيٍّ الْهَاشِمِيُّ، عَنِ الْمُجْمِرِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَكْتَالَ بِالْمِكْيَالِ الأَوْفَى إِذَا صَلَّى عَلَيْنَا أَهْلَ الْبَيْتِ فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ وَأَزْوَاجِهِ أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِينَ وَذُرِّيَّتِهِ وَأَهْلِ بَيْتِهِ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ ” .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কেউ যদি আমাদের আহলি বাইতের উপর দরূদ পড়ার পুরো সওয়াব পেতে চায় সে যেন এভাবে বলেঃ “আল্লাহুম্মা সল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিনিন নাবীয়্যি ওয়া আয্ওয়াজিহি উম্মাহাতিল মু’মিনীনা ওয়া যুর্রিয়াতিহি ওয়া আহলি বাইতিহি কামা সল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ”। (অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি নবী মুহাম্মাদ, তাঁর স্ত্রী উম্মাতাহিল মু’মিনীন, তাঁর সন্তানাদি ও আহলি বাইতের উপর রহমাত বর্ষণ করুন যেমনি রহমাত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীমের উপর। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মহান।” [৯৮২]
৯৮৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي حَسَّانُ بْنُ عَطِيَّةَ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَائِشَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا فَرَغَ أَحَدُكُمْ مِنَ التَّشَهُّدِ الآخِرِ فَلْيَتَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنْ أَرْبَعٍ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ شَرِّ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ ” .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহুদ পাঠ শেষ করবে তখন সে যেন আল্লাহর নিকট চারটি বস্তু হতে আশ্রয় প্রার্থনা করে। (তা হলো): জাহান্নামের আযাব হতে, কবরের আযাব হতে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনাহ হতে এবং মাসীহ দাজ্জালের অনিষ্ট হতে।
সহীহঃ মুসলিম।
৯৮৪
حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ، أَخْبَرَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ الْيَمَامِيُّ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ بَعْدَ التَّشَهُّدِ “ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ ” .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত তাশাহুদের পর বলতেনঃ “আল্লাহুম্মা ইন্নি আ’উযুবিকা মিন ‘আযাবি জাহান্নাম, ওয়া আ’উযুবিকা মিন ‘আযাবিল ক্বাবরি, ওয়া আ’উযুবিকা মিন ফিতনাতিদ দাজ্জাল, ওয়া আ’উযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি”। (অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি জাহান্নামের আযাব হতে, আশ্রয় প্রার্থনা করছি কবরের আযাব হতে, আশ্রয় প্রার্থনা করছি দাজ্জালের ফিতনাহ হতে এবং আশ্রয় প্রার্থনা করছি জীবন ও মৃত্যুর ফিতনাহ হতে)।
৯৮৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو أَبُو مَعْمَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ الْمُعَلِّمُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ حَنْظَلَةَ بْنِ عَلِيٍّ، أَنَّ مِحْجَنَ بْنَ الأَدْرَعِ، حَدَّثَهُ قَالَ دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَسْجِدَ فَإِذَا هُوَ بِرَجُلٍ قَدْ قَضَى صَلاَتَهُ وَهُوَ يَتَشَهَّدُ وَهُوَ يَقُولُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ يَا اللَّهُ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ أَنْ تَغْفِرَ لِي ذُنُوبِي إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ . قَالَ فَقَالَ “ قَدْ غُفِرَ لَهُ قَدْ غُفِرَ لَهُ ” . ثَلاَثًا
মিহজান ইবনুল আদরা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে প্রবেশ করে দেখলেন, এক ব্যক্তি সালাত শেষে তাশাহুদ পড়ছে এবং সে এটাও পড়ছে যে, “হে আল্লাহ, হে একক ও অমুখাপেক্ষী আল্লাহ, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি, তাঁর সমকক্ষও কেউ নেই, আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করছি, আপনি আমার গুনাহ ক্ষমা করে দিন। আপনি ক্ষমাশীল ও মেহেরবান।” মিহজান (রাঃ) বলেন, লোকটির এ দু‘আ শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে, তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। তিনি একথা তিনবার বললেন।
৯৮৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ الْكِنْدِيُّ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، – يَعْنِي ابْنَ بُكَيْرٍ – عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الأَسْوَدِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ مِنَ السُّنَّةِ أَنْ يُخْفَى التَّشَهُّدُ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাশাহুদ আস্তে পড়া সুন্নাত।
৯৮৭
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ مُسْلِمِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُعَاوِيِّ، قَالَ رَآنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ وَأَنَا أَعْبَثُ بِالْحَصَى فِي الصَّلاَةِ فَلَمَّا انْصَرَفَ نَهَانِي وَقَالَ اصْنَعْ كَمَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ . فَقُلْتُ وَكَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ قَالَ كَانَ إِذَا جَلَسَ فِي الصَّلاَةِ وَضَعَ كَفَّهُ الْيُمْنَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُمْنَى وَقَبَضَ أَصَابِعَهُ كُلَّهَا وَأَشَارَ بِأُصْبُعِهِ الَّتِي تَلِي الإِبْهَامَ وَوَضَعَ كَفَّهُ الْيُسْرَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُسْرَى .
‘আলী ইবনু ‘আবদুর রহমান আল-মু’আবী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) আমাকে সালাতের মধ্যে নুড়ি পাথর দিয়ে অনর্থক নাড়াচাড়া করতে দেখলেন। অতঃপর যখন তার সালাত শেষ হলো তিনি আমাকে এরূপ করতে নিষেধ করলেন এবং বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে যা করতেন তুমিও তাই করবে। আমি বললাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত কি করতেন? তিনি বললেন, সালাতেরত অবস্থায় তিনি যখন বসতেন তখন তাঁর ডান হাতের তালু ডান উরুর উপর রাখতেন এবং সব আঙ্গুল বন্ধ করে রাখতেন আর বৃদ্ধাঙ্গুলির পাশের (শাহাদাত) অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করতেন, আর বাম হাতের তালু বাম পায়ের উরুর উপর রাখতেন।
সহীহঃ মুসলিম।
৯৮৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ الْبَزَّازُ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ حَكِيمٍ، حَدَّثَنَا عَامِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَعَدَ فِي الصَّلاَةِ جَعَلَ قَدَمَهُ الْيُسْرَى تَحْتَ فَخِذِهِ الْيُمْنَى وَسَاقِهِ وَفَرَشَ قَدَمَهُ الْيُمْنَى وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُسْرَى وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُمْنَى وَأَشَارَ بِأُصْبُعِهِ . وَأَرَانَا عَبْدُ الْوَاحِدِ وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ .
‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে (তাশাহুদ) বৈঠকে তাঁর বাম পা ডান উরু ও নলার নীচে রাখতেন এবং ডান পা বিছিয়ে দিতেন, বাম হাত বাম হাটুর উপর এবং ডান হাত ডান উরুর উপর রাখতেন ও (শাহাদাত) আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। বর্ণনাকারী ‘আফ্ফান বলেন, ‘আবদুল ওয়াহিদ ইবনু যিয়াদ আমাদেরকে শাহাদাত আঙুল দ্বারা ইশারা করে দেখিয়েছেন।
সহীহঃ মুসলিম।
৯৮৯
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْحَسَنِ الْمِصِّيصِيُّ، حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ زِيَادٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ ذَكَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُشِيرُ بِأُصْبُعِهِ إِذَا دَعَا وَلاَ يُحَرِّكُهَا . قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ وَزَادَ عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عَامِرٌ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَدْعُو كَذَلِكَ وَيَتَحَامَلُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ الْيُسْرَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُسْرَى .
‘আবদুল্লাহ ইব্নুয যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত দু‘আ পাঠকালে আঙুল দ্বারা ইশারা করতেন, অবশ্য আঙুল নাড়তেন না।
দুর্বল।
ইবনু জুরাইজ বলেন, ‘আমর ইবনু দীনারের বর্ণনায় একথাও আছে যে, ‘আমির তাকে জানান যে, তার পিতা ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দু‘আর সময় আঙুল দ্বারা ইশারা করতে দেখেছেন এবং তখন তিনি তাঁর বাম হাত বাম উরুর উপর রাখতেন।
সহীহ।
৯৯০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا ابْنُ عَجْلاَنَ، عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ أَبِيهِ، بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالَ لاَ يُجَاوِزُ بَصَرُهُ إِشَارَتَهُ . وَحَدِيثُ حَجَّاجٍ أَتَمُّ .
‘আমির ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রহঃ) তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
এ হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দৃষ্টি (শাহাদাত আঙুলের) ইশারাকে অতিক্রম করতো না। আর হাজ্জাজ বর্ণিত হাদীসটি অধিক পরিপূর্ণ।
৯৯১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ، – يَعْنِي ابْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ – حَدَّثَنَا عِصَامُ بْنُ قُدَامَةَ، – مِنْ بَنِي بُجَيْلَةَ – عَنْ مَالِكِ بْنِ نُمَيْرٍ الْخُزَاعِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَاضِعًا ذِرَاعَهُ الْيُمْنَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُمْنَى رَافِعًا أُصْبُعَهُ السَّبَّابَةَ قَدْ حَنَاهَا شَيْئًا .
মালিক ইবনু নুমাইর আল-খুযাঈ (রহঃ) তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সালাত তাঁর ডান হাত ডান উরুর উপর রেখে শাহাদাত আঙুল অর্ধনমিত অবস্থায় উচিয়ে রাখতে দেখেছি।[৯৯১]
৯৯২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ شَبُّويَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ الْغَزَّالُ، قَالُوا حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أُمَيَّةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – قَالَ – أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ – أَنْ يَجْلِسَ الرَّجُلُ فِي الصَّلاَةِ وَهُوَ مُعْتَمِدٌ عَلَى يَدِهِ . وَقَالَ ابْنُ شَبُّويَةَ نَهَى أَنْ يَعْتَمِدَ الرَّجُلُ عَلَى يَدِهِ فِي الصَّلاَةِ . وَقَالَ ابْنُ رَافِعٍ نَهَى أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ وَهُوَ مُعْتَمِدٌ عَلَى يَدِهِ . وَذَكَرَهُ فِي بَابِ الرَّفْعِ مِنَ السُّجُودِ . وَقَالَ ابْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ نَهَى أَنْ يَعْتَمِدَ الرَّجُلُ عَلَى يَدَيْهِ إِذَا نَهَضَ فِي الصَّلاَةِ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইমাম আহ্মাদ ইবনু হাম্বাল (রহঃ) এর বর্ণনা অনুযায়ী রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন ব্যক্তি সালাত হাতের উপর ঠেস দিয়ে বসতে নিষেধ করেছেন। ইবনু শাব্বুয়াহ এর বর্ণনায় রয়েছে, তিনি সালাত কাউকে হাতের উপর ঠেস দিতে নিষেধ করেছেন। ইবনু রাফি’ এর বর্ণনায় রয়েছে, তিনি কাউকে হাতের উপর ঠেস দিয়ে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। তিনি হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, “আর-রাফ্’উ মিনাস্-সুজুদ” অনুচ্ছেদে। ইবনু ‘আবদুল মালিক বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে সালাত উঠার সময় হাতের উপর ভর করতে নিষেধ করেছেন।
সহীহঃ তবে শেষ অংশটুকু বাদে। কেননা তা মুনকার।
৯৯৩
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أُمَيَّةَ، سَأَلْتُ نَافِعًا عَنِ الرَّجُلِ، يُصَلِّي وَهُوَ مُشَبِّكٌ يَدَيْهِ قَالَ قَالَ ابْنُ عُمَرَ تِلْكَ صَلاَةُ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ .
ইসমাঈল ইবনু উমাইয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাফি’ (র)-কে এক হাতের আঙ্গুল অপর হাতে প্রবেশ করিয়ে সালাত আদায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেনঃ ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, এটা হলো অভিশপ্ত লোকদের সালাত।
৯৯৪
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَبِي الزَّرْقَاءِ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، – وَهَذَا لَفْظُهُ – جَمِيعًا عَنْ هِشَامِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ رَأَى رَجُلاً يَتَّكِئُ عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى وَهُوَ قَاعِدٌ فِي الصَّلاَةِ – وَقَالَ هَارُونُ بْنُ زَيْدٍ سَاقِطًا عَلَى شِقِّهِ الأَيْسَرِ ثُمَّ اتَّفَقَا – فَقَالَ لَهُ لاَ تَجْلِسْ هَكَذَا فَإِنَّ هَكَذَا يَجْلِسُ الَّذِينَ يُعَذَّبُونَ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি এক ব্যক্তিকে সালাত বসা অবস্থায় তার বাম হাতের উপর ভর করে থাকতে দেখলেন। হারুন ইবনু যায়িদ বর্ণনা করেন, সে বাম পাশে পড়ে আছে। হাদীসের বাকী অংশ উভয়ে একইরূপে বর্ণনা করেছেন। (তা হলো): ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) লোকটিকে বললেন, এভাবে বসবে না। কারণ যাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে তারাই এভাবে বসে।
৯৯৫
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ فِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ كَأَنَّهُ عَلَى الرَّضْفِ . قَالَ قُلْتُ حَتَّى يَقُومَ قَالَ حَتَّى يَقُومَ .
আবূ ‘উবায়দাহ (রহঃ) তার পিতা (ইবনু মাস’উদ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে বর্ণনা করেন যে, তিনি সালাতের প্রথম দুই রাকা’আতে এরূপে বসতেন যেন গরম পাথরের উপর বসেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, তিনি দাঁড়ানো পর্যন্ত? তিনি বললেন, হাঁ, দাঁড়ানো পর্যন্ত।
৯৯৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، ح وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، ح وَحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْمُحَارِبِيُّ، وَزِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، قَالاَ حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ عُبَيْدٍ الطَّنَافِسِيُّ، ح وَحَدَّثَنَا تَمِيمُ بْنُ الْمُنْتَصِرِ، أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ، – يَعْنِي ابْنَ يُوسُفَ – عَنْ شَرِيكٍ، ح وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، كُلُّهُمْ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، وَقَالَ، إِسْرَائِيلُ عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، وَالأَسْوَدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُسَلِّمُ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ حَتَّى يُرَى بَيَاضُ خَدِّهِ “ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ ” . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهَذَا لَفْظُ حَدِيثِ سُفْيَانَ وَحَدِيثُ إِسْرَائِيلَ لَمْ يُفَسِّرْهُ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَرَوَاهُ زُهَيْرٌ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ وَيَحْيَى بْنُ آدَمَ عَنْ إِسْرَائِيلَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الأَسْوَدِ عَنْ أَبِيهِ وَعَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ شُعْبَةُ كَانَ يُنْكِرُ هَذَا الْحَدِيثَ – حَدِيثَ أَبِي إِسْحَاقَ – أَنْ يَكُونَ مَرْفُوعًا .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আস্সালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহ্মাতুল্লাহ” বলে ডান দিকে এবং “আস্সালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ” বলে বাম দিকে সালাম ফিরাতেন। এ সময় তাঁর গালের শুভ্রতা দেখা যেতো।
সহীহঃ মুসলিম সংক্ষেপে।
ইমাম আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, শু’বাহ (রহঃ) আবূ ইসহাক্বের বর্ণনাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস হওয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
৯৯৭
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ قَيْسٍ الْحَضْرَمِيُّ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ وَائِلٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَانَ يُسَلِّمُ عَنْ يَمِينِهِ ” السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ” . وَعَنْ شِمَالِهِ ” السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ ” .
‘আলক্বামাহ ইবনু ওয়াইল (রহঃ) তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সালাত আদায় করেছি। তিনি ডান দিকে সালাম ফিরানোর সময় বলতেন “আস্ সালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু” এবং বাঁ দিকে সালাম ফিরানোর সময় বলতেন “আস্ সালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ”।
সহীহঃ মুসলিম।
৯৯৮
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا، وَوَكِيعٌ، عَنْ مِسْعَرٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ ابْنِ الْقِبْطِيَّةِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَلَّمَ أَحَدُنَا أَشَارَ بِيَدِهِ مِنْ عَنْ يَمِينِهِ وَمِنْ عَنْ يَسَارِهِ فَلَمَّا صَلَّى قَالَ ” مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يَرْمِي بِيَدِهِ كَأَنَّهَا أَذْنَابُ خَيْلٍ شُمْسٍ إِنَّمَا يَكْفِي أَحَدَكُمْ – أَوْ أَلاَ يَكْفِي أَحَدَكُمْ – أَنْ يَقُولَ هَكَذَا ” . وَأَشَارَ بِأُصْبُعِهِ ” يُسَلِّمُ عَلَى أَخِيهِ مَنْ عَنْ يَمِينِهِ وَمَنْ عَنْ شِمَالِهِ ” .
জাবির ইরনু সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে সালাত আদায়কালে আমাদের কেউ সালাম ফিরাতো এবং হাত দ্বারা তার ডানে ও বামে ইশারা করতো। সালাত শেষে তিনি বললেনঃ তোমাদের কোন এক ব্যক্তির কি হলো যে, সে সালাম ফিরাতে এরূপে হাতের ইশারা করে, যেন তা দুষ্ট ঘোড়ার লেজ। এটাই তোমাদের প্রত্যেকের জন্য যথেষ্ট অথবা এটাই কি তোমাদের প্রত্যেকের জন্য যথেষ্ট নয় যে, সে তার ডান ও বাম দিকের ভাইকে এভাবে সালাম বলবে। তিনি আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে দেখালেন।
সহীহঃ মুসলিম।
৯৯৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، عَنْ مِسْعَرٍ، بِإِسْنَادِهِ وَمَعْنَاهُ قَالَ “ أَمَا يَكْفِي أَحَدَكُمْ – أَوْ أَحَدَهُمْ – أَنْ يَضَعَ يَدَهُ عَلَى فَخِذِهِ ثُمَّ يُسَلِّمُ عَلَى أَخِيهِ مَنْ عَنْ يَمِينِهِ وَمَنْ عَنْ شِمَالِهِ ” .
মিস’আর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একই সানাদে অনুরূপ অর্থবোধক হাদীস মিস’আর (রহঃ) হতেও বর্ণিত হয়েছে। নবী (সাঃ) বললেনঃ তোমাদের কারো জন্য কি যথেষ্ট নয় অথবা তাঁদের কারো জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, সে উরুর উপর হাত রেখে তার ডান ও বাম দিকের ভাইদের সালাম করবে?
সহীহঃ মুসলিম।
১০০০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنِ الْمُسَيَّبِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ تَمِيمٍ الطَّائِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ دَخَلَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ رَافِعُو أَيْدِيهِمْ – قَالَ زُهَيْرٌ أُرَاهُ قَالَ – فِي الصَّلاَةِ فَقَالَ “ مَا لِي أَرَاكُمْ رَافِعِي أَيْدِيكُمْ كَأَنَّهَا أَذْنَابُ خَيْلٍ شُمْسٍ اسْكُنُوا فِي الصَّلاَةِ ” .
জাবির ইবনু সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট আসলেন। এ সময় লোকেরা হাত উত্তেলিত অবস্থায় ছিল। আ’মাশের বর্ণনায় রয়েছেঃ “সালাতরত অবস্থায়”। নবী বললেনঃ কি ব্যাপার ! আমি তোমাদের দুষ্ট ঘোড়ার লেজের ন্যায় হাত উঠানো অবস্থায় দেখছি। তোমরা সালাত ধীরস্থির থাকো।
সহীহঃ মুসলিম।