আবু দাউদ কর ফাই ও প্রশাসক অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ২৯২৮ – ৩০০৫
অনুচ্ছেদ-১
নাগরিক অধিকার সংরক্ষণে রাষ্ট্রপ্রধাণের দায়িত্ব
২৯২৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ أَلاَ كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ فَالأَمِيرُ الَّذِي عَلَى النَّاسِ رَاعٍ عَلَيْهِمْ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْهُمْ وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْهُمْ وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ بَعْلِهَا وَوَلَدِهِ وَهِيَ مَسْئُولَةٌ عَنْهُمْ وَالَعَبْدُ رَاعٍ عَلَى مَالِ سَيِّدِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْهُ فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ ” .
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ সাবধান! তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হতে হবে। জনগণের শাসক তাদের দায়িত্বশীল। তাকে তাদের সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। পরিবারের কর্তা তার পরিবারের সদস্যদের দায়িত্বশীল। তাকে তাদের সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। স্ত্রী তার স্বামীর সংসার ও সস্তানদের দায়িত্বশীল। তাকে এর রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হতে হবে। ক্রীতদাস তার মনিবের সম্পদের রাখাল, তাকে এ সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। সুতরাং তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হতে হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ–২
নেতৃত্ব চাওয়া
২৯২৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَزَّازُ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، وَمَنْصُورٌ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ قَالَ لِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ سَمُرَةَ لاَ تَسْأَلِ الإِمَارَةَ فَإِنَّكَ إِذَا أُعْطِيتَهَا عَنْ مَسْأَلَةٍ وُكِلْتَ فِيهَا إِلَى نَفْسِكَ وَإِنْ أُعْطِيتَهَا عَنْ غَيْرِ مَسْأَلَةٍ أُعِنْتَ عَلَيْهَا ” .
আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেনঃ হে ‘আবদুর রহমান ইবনু সামুরাহ! রাষ্ট্রীয় পদ চেয়ে নিবে না। কারণ তোমার চাওয়ার কারণে তোমাকে পদ দেয়া হলে এর দায়-দায়িত্ব তোমার উপরই বর্তাবে (তুমি আল্লাহর সাহায্য পাবে না)। আর চাওয়া ছাড়া তোমাকে নেতৃত্ব পদ দেয়া হলে তুমি দায়িত্ব পালনে (আল্লাহর পক্ষ হতে) সাহায্য পাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৩০
حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ أَخِيهِ، عَنْ بِشْرِ بْنِ قُرَّةَ الْكَلْبِيِّ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ انْطَلَقْتُ مَعَ رَجُلَيْنِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَتَشَهَّدَ أَحَدُهُمَا ثُمَّ قَالَ جِئْنَا لِتَسْتَعِينَ بِنَا عَلَى عَمَلِكَ . وَقَالَ الآخَرُ مِثْلَ قَوْلِ صَاحِبِهِ . فَقَالَ “ إِنَّ أَخْوَنَكُمْ عِنْدَنَا مَنْ طَلَبَهُ ” . فَاعْتَذَرَ أَبُو مُوسَى إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ لَمْ أَعْلَمْ لِمَا جَاءَا لَهُ . فَلَمْ يَسْتَعِنْ بِهِمَا عَلَى شَىْءٍ حَتَّى مَاتَ .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি দুইজন লোকের সাথে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট যাই। তাদের একজন তাশাহহুদ পড়ার পর বললো, আমরা আপনার কাছে এ উদ্দেশ্যে এসেছি যে আপনি আমাদেরকে আপনার প্রশাসনে কর্মচারী নিযুক্ত করে আমাদের সাহায্য করবেন। দ্বিতীয় ব্যক্তিও তার সাথীর অনুরূপ বললো। তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে ঐ লোক আমাদের দৃষ্টিতে বড় খিয়ানাতকারী যে পদ চেয়ে নেয়। অতঃপর আবূ মূসা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বললেন, তারা আপনার নিকট এ উদ্দেশ্যে এসেছে তা আমি জানতাম না। বর্ণনাকারী বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ইন্তেকালের পূর্ব পর্যন্ত এদের কাছ থেকে কোনরূপ সহযোগিতা নেননি।
হাদিসের মানঃ মুনকার
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৩
অন্ধ ব্যক্তির নেতৃত্ব সম্পর্কে
২৯৩১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْمُخَرِّمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا عِمْرَانُ الْقَطَّانُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اسْتَخْلَفَ ابْنَ أُمِّ مَكْتُومٍ عَلَى الْمَدِينَةِ مَرَّتَيْنِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবনু উম্মু মাকতূম (রাঃ)-কে দুইবার মাদীনাহ্তে নিজের প্রতিনিধি নিযুক্ত করেছিলেন।
সহীহঃ অনুরূপ গত হয়েছে (৫৯৫)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৪
মন্ত্রী নিয়োগ সম্পর্কে
২৯৩২
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عَامِرٍ الْمُرِّيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِالأَمِيرِ خَيْرًا جَعَلَ لَهُ وَزِيرَ صِدْقٍ إِنْ نَسِيَ ذَكَّرَهُ وَإِنْ ذَكَرَ أَعَانَهُ وَإِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِهِ غَيْرَ ذَلِكَ جَعَلَ لَهُ وَزِيرَ سُوءٍ إِنْ نَسِيَ لَمْ يُذَكِّرْهُ وَإِنْ ذَكَرَ لَمْ يُعِنْهُ ” .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ কোন রাষ্ট্রপ্রধানের কল্যাণের ইচ্ছা করলে তার জন্য একজন সৎপন্থী মন্ত্রীর ব্যবস্থা করেন। রাষ্ট্রপ্রধান ভুল করলে সে তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর তার স্মরণ থাকলে মন্ত্রী তাকে সহযোগিতা করেন। আর আল্লাহ তার অকল্যাণ চাইলে একজন খারাপ লোককে তার মন্ত্রী নিযুক্ত করেন। সে (আল্লাহর নির্দেশ) ভুলে গেলে মন্ত্রী তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয় না, আর তার স্মরণ থাকলে সে তাকে সহযোগিতা করে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৫
সমাজপতি সম্পর্কে
২৯৩৩
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، سُلَيْمَانَ بْنِ سُلَيْمٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ جَابِرٍ، عَنْ صَالِحِ بْنِ يَحْيَى بْنِ الْمِقْدَامِ، عَنْ جَدِّهِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيكَرِبَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ضَرَبَ عَلَى مَنْكِبِهِ ثُمَّ قَالَ لَهُ “ أَفْلَحْتَ يَا قُدَيْمُ إِنْ مُتَّ وَلَمْ تَكُنْ أَمِيرًا وَلاَ كَاتِبًا وَلاَ عَرِيفًا ” .
আল-মিক্বদাদ ইবনু মা’দিকারিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার কাঁধে হাত রেখে বললেনঃ হে কুদাইম! তুমি যদি মৃত্যু পর্যন্ত শাসক, সচিব এবং সমাজপতি না হও তাহলে তুমি নাজাত পাবে।
দুর্বলঃ যঈফ আল-জামি’উস সাগীর (১০৫৫), মিশকাত (৩৭০২)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৩৪
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا غَالِبٌ الْقَطَّانُ، عَنْ رَجُلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّهُمْ كَانُوا عَلَى مَنْهَلٍ مِنَ الْمَنَاهِلِ فَلَمَّا بَلَغَهُمُ الإِسْلاَمُ جَعَلَ صَاحِبُ الْمَاءِ لِقَوْمِهِ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ عَلَى أَنْ يُسْلِمُوا فَأَسْلَمُوا وَقَسَمَ الإِبِلَ بَيْنَهُمْ وَبَدَا لَهُ أَنْ يَرْتَجِعَهَا مِنْهُمْ فَأَرْسَلَ ابْنَهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهُ ائْتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْ لَهُ إِنَّ أَبِي يُقْرِئُكَ السَّلاَمَ وَإِنَّهُ جَعَلَ لِقَوْمِهِ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ عَلَى أَنْ يُسْلِمُوا فَأَسْلَمُوا وَقَسَمَ الإِبِلَ بَيْنَهُمْ وَبَدَا لَهُ أَنْ يَرْتَجِعَهَا مِنْهُمْ أَفَهُوَ أَحَقُّ بِهَا أَمْ هُمْ فَإِنْ قَالَ لَكَ نَعَمْ أَوْ لاَ فَقُلْ لَهُ إِنَّ أَبِي شَيْخٌ كَبِيرٌ وَهُوَ عَرِيفُ الْمَاءِ وَإِنَّهُ يَسْأَلُكَ أَنْ تَجْعَلَ لِيَ الْعِرَافَةَ بَعْدَهُ . فَأَتَاهُ فَقَالَ إِنَّ أَبِي يُقْرِئُكَ السَّلاَمَ . فَقَالَ ” وَعَلَيْكَ وَعَلَى أَبِيكَ السَّلاَمُ ” . فَقَالَ إِنَّ أَبِي جَعَلَ لِقَوْمِهِ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ عَلَى أَنْ يُسْلِمُوا فَأَسْلَمُوا وَحَسُنَ إِسْلاَمُهُمْ ثُمَّ بَدَا لَهُ أَنْ يَرْتَجِعَهَا مِنْهُمْ أَفَهُوَ أَحَقُّ بِهَا أَمْ هُمْ فَقَالَ ” إِنْ بَدَا لَهُ أَنْ يُسْلِمَهَا لَهُمْ فَلْيُسْلِمْهَا وَإِنْ بَدَا لَهُ أَنْ يَرْتَجِعَهَا فَهُوَ أَحَقُّ بِهَا مِنْهُمْ فَإِنْ هُمْ أَسْلَمُوا فَلَهُمْ إِسْلاَمُهُمْ وَإِنْ لَمْ يُسْلِمُوا قُوتِلُوا عَلَى الإِسْلاَمِ ” . فَقَالَ إِنَّ أَبِي شَيْخٌ كَبِيرٌ وَهُوَ عَرِيفُ الْمَاءِ وَإِنَّهُ يَسْأَلُكَ أَنْ تَجْعَلَ لِيَ الْعِرَافَةَ بَعْدَهُ . فَقَالَ ” إِنَّ الْعِرَافَةَ حَقٌّ وَلاَ بُدَّ لِلنَّاسِ مِنَ الْعُرَفَاءِ وَلَكِنَّ الْعُرَفَاءَ فِي النَّارِ ” .
গালিব আল-কাত্তান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি পর্যায়ক্রমে জনৈক ব্যক্তি, তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন, তারা কোন এক ঝর্ণার পাশে বাস করতো। তাদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌছলে ঝর্ণার মালিক তার অধীনস্থ লোকদেরকে বললেন, তারা যদি ইসলাম কবুল করে তাহলে তিনি তাদেরকে একশো উট দিবেন। তারা ইসলাম কবুল করলো। ওয়াদা মোতাবেক তিনি তাদের মধ্যে উট বন্টন করে দিলেন। অতঃপর তিনি তাদের কাছ থেকে উটগুলো ফেরত নেয়ার ইচ্ছা করলেন। তিনি তার ছেলেকে ডেকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট পাঠালেন। তিনি তাকে বলে দিলেন, তুমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট গিয়ে তাঁকে বলবে, আমার পিতা আপনাকে সালাম জানিয়েছেন। তিনি তার সম্প্রদায়ের লোকদেরকে ইসলাম কবুলের শর্তে একশো উট প্রদানের ওয়াদা করেছিলেন। তারা ইসলাম কবুল করলে তিনি উটগুলো তাদের মধ্যে বণ্টন করে দেন। তিনি এখন তাদের কাছ থেকে উটগুলো ফেরত নিতে চাইছেন। তিনি কি এগুলো ফেরত নিতে পারেন, নাকি সেগুলো তাদেরই প্রাপ্য? তিনি তোমাকে হাঁ কিংবা না বললে তাঁকে আবার বলবে, আমার পিতা খুব বৃদ্ধ এবং তিনিই ঐ কূপের তত্ত্বাবধায়ক। তিনি আপনার নিকট আবেদন করেছেন তার মৃত্যুর পর আমাকে সেখানকার তত্ত্বাবধায়ক বানাতে। আর সে (ছেলেটি) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এসে বললো, আমার পিতা আপনাকে সালাম জানিয়েছেন। তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তোমার এবং তোমার পিতার প্রতি সালাম! সে বললো, আমার পিতা তার গোত্রের লোকদের ইসলাম কবুলের শর্তে একশো উট প্রদানের ওয়াদা করেন। অতঃপর তারা ইসলাম কবুল করে তাদের ইসলামী জীবনকে সুন্দর করেছে। এখন তিনি উটগুলো তাদের কাছ থেকে ফেরত নিতে চাইছেন। সুতরাং তিনি এসবের হকদার নাকি তারা? তিনি বললেনঃ সে যদি উটগুলো তাদেরকেই দিয়ে দিতে চায় তবে তাই করুক। আর ফিরিয়ে নিতে চাইলে সে তাদের চেয়ে এর অধিক হকদার। তারা ইসলাম কবুল করে এর উপকারিতা তারাই পাবে। তারা যদি ইসলাম গ্রহণ না করতো তবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদেরকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করা হতো। সে পুনরায় বললো, আমার পিতা খুব বৃদ্ধ। তিনিই ওখানকার ঝর্ণার তত্ত্বাবধায়ক। তিনি তার অবর্তমানে আমাকে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করতে আপনার নিকট আবেদন জানিয়েছেন। জবাবে তিনি বললেনঃ নিশ্চয় তত্ত্বাবধায়ক দরকার আছে। জনসাধারণের তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া চলে না। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক (পক্ষপাতিত্বের কারণে) জাহান্নামে যাবে।
দুর্বলঃ মিশকাত (৩৬৯৯)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৬
সচিব নিয়োগ করা
২৯৩৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا نُوحُ بْنُ قَيْسٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ السِّجِلُّ كَاتِبٌ كَانَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আস্সিজিল্ল নামক এক সচিব ছিল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৭
যাকাত আদায়কারীর সওয়াব সম্পর্কে
২৯৩৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الأَسْبَاطِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ لَبِيدٍ، عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ الْعَامِلُ عَلَى الصَّدَقَةِ بِالْحَقِّ كَالْغَازِي فِي سَبِيلِ اللَّهِ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَى بَيْتِهِ ” .
রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ সততার সাথে যাকাত আদায়কারী আল্লাহর পথে জিহাদকারী সমতুল্য যতক্ষণ না সে তার বাড়িতে ফিরে আসে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৩৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ شِمَاسَةَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ صَاحِبُ مَكْسٍ ” .
উক্ববাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ খাজনা আদায়কারীরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।
দুর্বলঃ যঈফ আল-জামি’উস সাগীর (৬৩৪১), মিশকাত (৩৭০৩)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْقَطَّانُ، عَنِ ابْنِ مَغْرَاءَ، عَنِ ابْنِ إِسْحَاقَ، قَالَ الَّذِي يَعْشُرُ النَّاسَ يَعْنِي صَاحِبَ الْمَكْسِ .
ইবনু ইসহাক্ব (রহঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনগণের নিকট থেকে খাজনা আদায়কারীকে তহসিলদার বলা হয়।
হাদিসের মানঃ মাক্বতু
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-৮
রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক তার পরবর্তী খলীফাহ নিয়োগ
২৯৩৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ دَاوُدَ بْنِ سُفْيَانَ، وَسَلَمَةُ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ عُمَرُ إِنِّي إِنْ لاَ أَسْتَخْلِفْ فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَسْتَخْلِفْ وَإِنْ أَسْتَخْلِفْ فَإِنَّ أَبَا بَكْرٍ قَدِ اسْتَخْلَفَ . قَالَ فَوَاللَّهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ ذَكَرَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا بَكْرٍ فَعَلِمْتُ أَنَّهُ لاَ يَعْدِلُ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَحَدًا وَأَنَّهُ غَيْرُ مُسْتَخْلِفٍ .
ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমর (রাঃ) বললেন, আমি খলীফাহ নিযুক্ত করবো না। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম খলীফাহ নিযুক্ত করে যাননি। তবে আমি খলীফাহ নিয়োগ করতে পারি। যেহেতু আবূ বকর (রাঃ) খলীফাহ নিযুক্ত করে গিয়েছিলেন। ইবনু ‘উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! ‘উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) এর কথা উল্লেখ করাতে আমি বুঝতে পারি, তিনি ‘উমার (রাঃ) কাউকে রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমকক্ষ মনে করার মত মানুষ নন এবং তিনি কাউকে খলীফাহ বানাবেন না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ -৯
বাই’আত সম্পর্কে
২৯৪০
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كُنَّا نُبَايِعُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ وَيُلَقِّنُنَا فِيمَا اسْتَطَعْتَ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট শ্রবণ এবং আনুগত্যের বাই’আত করেছি। তিনি আমাদেরকে বলতেন, “তোমাদের সামর্থ্য অনুপাতে”।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৪১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، رضى الله عنها أَخْبَرَتْهُ عَنْ بَيْعَةِ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم النِّسَاءَ قَالَتْ مَا مَسَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدَ امْرَأَةٍ قَطُّ إِلاَّ أَنْ يَأْخُذَ عَلَيْهَا فَإِذَا أَخَذَ عَلَيْهَا فَأَعْطَتْهُ قَالَ “ اذْهَبِي فَقَدْ بَايَعْتُكِ ” .
উরওয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আয়িশাহ (রাঃ) তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক নারীদের বাই’আত গ্রহণের পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন নারীকে নিজ হাতে স্পর্শ করতেন না, শুধু তাদের থেকে ওয়াদা নিতেন। তিনি কোন নারী থেকে ওয়াদা নিলে এবং সে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করলে তিনি বলতেনঃ তোমার কাছ থেকে বায়’আত নিয়েছি, কাজেই এখন তুমি যেতে পারো।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৪২
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ مَيْسَرَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي أَيُّوبَ، حَدَّثَنِي أَبُو عَقِيلٍ، زُهْرَةُ بْنُ مَعْبَدٍ عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ هِشَامٍ، قَالَ وَكَانَ قَدْ أَدْرَكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَذَهَبَتْ بِهِ أُمُّهُ زَيْنَبُ بِنْتُ حُمَيْدٍ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ بَايِعْهُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ هُوَ صَغِيرٌ ” . فَمَسَحَ رَأْسَهُ .
আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগ পান। তার মা যাইনাব বিনতু হুমাইদ (রাঃ) তাকে নিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট গিয়ে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এর বাই’আত নিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ সে তো ছোট, পরে তিনি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১০
সরকারী কর্মচারীদের রেশন ব্যবস্থা করা
২৯৪৩
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَخْزَمَ أَبُو طَالِبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ عَبْدِ الْوَارِثِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنِ اسْتَعْمَلْنَاهُ عَلَى عَمَلٍ فَرَزَقْنَاهُ رِزْقًا فَمَا أَخَذَ بَعْدَ ذَلِكَ فَهُوَ غُلُولٌ ” .
বুরাইদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আমরা কাউকে সরকারী পদে নিযুক্ত করলে তার আহার ব্যবস্থাও আমার দায়িত্বে। পরে সে অতিরিক্ত কিছু নিলে তবে তা আত্মসাৎ হিসাবে গণ্য হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৪৪
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الأَشَجِّ، عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنِ ابْنِ السَّاعِدِيِّ، قَالَ اسْتَعْمَلَنِي عُمَرُ عَلَى الصَّدَقَةِ فَلَمَّا فَرَغْتُ أَمَرَ لِي بِعُمَالَةٍ فَقُلْتُ إِنَّمَا عَمِلْتُ لِلَّهِ . قَالَ خُذْ مَا أُعْطِيتَ فَإِنِّي قَدْ عَمِلْتُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَمَّلَنِي .
ইবনুল সাঈদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) আমাকে যাকাত আদায়ের জন্য নিযুক্ত করলেন। আমি কাজ সমাপ্ত করলে তিনি আমাকে বেতন প্রদানের নির্দেশ দেন। আমি বললাম, আমি আল্লাহর জন্যই এ কাজ করেছি। তিনি বললেন, যা দেয়া হচ্ছে তা নাও। আমিও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়ে সরকারী দায়িত্বে ছিলাম। তিনি আমাকে পারিশ্রমিক প্রদান করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৪৫
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ مَرْوَانَ الرَّقِّيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعَافَى، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، عَنِ الْمُسْتَوْرِدِ بْنِ شَدَّادٍ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” مَنْ كَانَ لَنَا عَامِلاً فَلْيَكْتَسِبْ زَوْجَةً فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ خَادِمٌ فَلْيَكْتَسِبْ خَادِمًا فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ مَسْكَنٌ فَلْيَكْتَسِبْ مَسْكَنًا ” . قَالَ قَالَ أَبُو بَكْرٍ أُخْبِرْتُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” مَنِ اتَّخَذَ غَيْرَ ذَلِكَ فَهُوَ غَالٌّ أَوْ سَارِقٌ ” .
আল-মুসতাওরিদ ইবনু শাদ্দাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ যে আমাদের কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়েছে সে যেন (সরকারী খরচে) একজন স্ত্রী সংগ্রহ করে। খাদেম না থাকলে সে যেন একটি খাদেম সংগ্রহ করে এবং বাসস্থান না থাকলে সে যেন একটি বাসস্থান সংগ্রহ করে। যে ব্যক্তি এর অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করবে সে প্রতারক বা চোর গণ্য হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ -১১
সরকারী কর্মচারীদের উপটৌকন গ্রহণ
২৯৪৬
حَدَّثَنَا ابْنُ السَّرْحِ، وَابْنُ أَبِي خَلَفٍ، – لَفْظُهُ – قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ السَّاعِدِيِّ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اسْتَعْمَلَ رَجُلاً مِنَ الأَزْدِ يُقَالُ لَهُ ابْنُ اللُّتْبِيَّةِ – قَالَ ابْنُ السَّرْحِ ابْنُ الأُتْبِيَّةِ – عَلَى الصَّدَقَةِ فَجَاءَ فَقَالَ هَذَا لَكُمْ وَهَذَا أُهْدِيَ لِي . فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْمِنْبَرِ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَقَالَ ” مَا بَالُ الْعَامِلِ نَبْعَثُهُ فَيَجِيءُ فَيَقُولُ هَذَا لَكُمْ وَهَذَا أُهْدِيَ لِي . أَلاَّ جَلَسَ فِي بَيْتِ أُمِّهِ أَوْ أَبِيهِ فَيَنْظُرَ أَيُهْدَى لَهُ أَمْ لاَ لاَ يَأْتِي أَحَدٌ مِنْكُمْ بِشَىْءٍ مِنْ ذَلِكَ إِلاَّ جَاءَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنْ كَانَ بَعِيرًا فَلَهُ رُغَاءٌ أَوْ بَقَرَةً فَلَهَا خُوَارٌ أَوْ شَاةً تَيْعَرُ ” . ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى رَأَيْنَا عُفْرَةَ إِبْطَيْهِ ثُمَّ قَالَ ” اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ ” .
আবূ হুমাইদ আস-সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয্দ গোত্রের এক লোককে যাকাত আদায়কারী নিয়োগ করেন। তার নাম ইবনুল লুতবিয়্যাহ। তবে ইবনুস সারহ বলেছেন তার নাম ইবনুল উতবিয়্যাহ। সে কর্মস্থল হতে মাদীনাহ্তে প্রত্যাবর্তন করে রাসূলুল্লাহকে বললো, এগুলো আপনাদের, আর এগুলো আমাকে উপঢৌকন দেয়া হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বারে দাঁড়িয়ে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করে বললেনঃ কর্মচারীর কি হলো! আমরা তাকে দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করি। আর সে ফিরে এসে বলে, এটা আপনাদের আর এটা আমাকে হাদিয়া দেয়া হয়েছে। সে তার পিতা-মাতার ঘরে বসে থেকে দেখুক তাকে কেউ উপঢৌকন দেয় কিনা? তোমাদের মধ্যকার যে-ই এভাবে কোন কিছু গ্রহণ করবে সে তা নিয়ে ক্বিয়ামাতের দিন উপস্থিত হবে। যদি সেটা উট, গাভী কিংবা বকরী হয়, তা চিৎকার করবে। অতঃপর তিনি তাঁর দু’ হাত এতোটা উঁচু করেন যে, আমরা তার বগলের শুভ্রতা দেখলাম। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আমি কি পৌছে দিয়েছি, হে আল্লাহ! আমি কি পৌছে দিয়েছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১২
যাকাতের মাল আত্নসাৎ করা
২৯৪৭
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنْ أَبِي الْجَهْمِ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ بَعَثَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَاعِيًا ثُمَّ قَالَ ” انْطَلِقْ أَبَا مَسْعُودٍ وَلاَ أُلْفِيَنَّكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تَجِيءُ عَلَى ظَهْرِكَ بَعِيرٌ مِنْ إِبِلِ الصَّدَقَةِ لَهُ رُغَاءٌ قَدْ غَلَلْتَهُ ” . قَالَ إِذًا لاَ أَنْطَلِقُ . قَالَ ” إِذًا لاَ أُكْرِهُكَ ” .
আবূ মাস’ঊদ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে যাকাত আদায়ের জন্য নিয়োগ দিলেন। তিনি বললেনঃ আবু মাস’ঊদ যাও। তবে এমনটি যেন না হয় যে, ক্বিয়ামাতের দিন তুমি আত্নসাৎ করা যাকাতের উট পিঠে বহন করে উপস্হিত হবে আর তা চিৎকার করতে থাকবে। এমনটি হলে আমি তোমার কোন কাজে আসবো না। আবু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, তবে আমি এ দায়িত্ব গ্রহন করবো না। তিনি বললেনঃ আমিও তোমাকে চাপ প্রয়োগ করবো না।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৩
নাগরিকদের প্রয়োজনকালে ইমামের দায়িত্ব এবং তাদের থেকে তার বিচ্ছিন্ন থাকা
২৯৪৮
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَنَّ الْقَاسِمَ بْنَ مُخَيْمِرَةَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا مَرْيَمَ الأَزْدِيَّ أَخْبَرَهُ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى مُعَاوِيَةَ فَقَالَ مَا أَنْعَمَنَا بِكَ أَبَا فُلاَنٍ . وَهِيَ كَلِمَةٌ تَقُولُهَا الْعَرَبُ فَقُلْتُ حَدِيثًا سَمِعْتُهُ أُخْبِرُكَ بِهِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ وَلاَّهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ شَيْئًا مِنْ أَمْرِ الْمُسْلِمِينَ فَاحْتَجَبَ دُونَ حَاجَتِهِمْ وَخَلَّتِهِمْ وَفَقْرِهِمُ احْتَجَبَ اللَّهُ عَنْهُ دُونَ حَاجَتِهِ وَخَلَّتِهِ وَفَقْرِهِ ” . قَالَ فَجَعَلَ رَجُلاً عَلَى حَوَائِجِ النَّاسِ .
আবু মারইয়াম আল-আযদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি মু’আবিয়াহ (রাঃ) এর নিকট গেলে তিনি বলেন, হে অমুক, আমার নিকট তোমার আগমন সুস্বাগতম! এটা আরবদের বাকরীতি। আমি বললাম, আমি একটি হাদীস শুনেছি যা আপনাকে জানাবো। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ মহান আল্লাহ কোন ব্যক্তিকে মুসলিমদের কোন দায়িত্বে নিয়োগ করলে যদি সে তাদের প্রয়োজন পূরণ ও অভাবের সময় দূরে আড়ালে থাকে তখন মহান আল্লাহও তার প্রয়োজন পূরণ ও অভাব-অনটন দূর করা হতে দূরে থাকবেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর মু’আবিয়াহ (রাঃ) জনসাধারণের প্রয়োজন পূরণের জন্য এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৪৯
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا بِهِ أَبُو هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَا أُوتِيكُمْ مِنْ شَىْءٍ وَمَا أَمْنَعُكُمُوهُ إِنْ أَنَا إِلاَّ خَازِنٌ أَضَعُ حَيْثُ أُمِرْتُ ” .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি তোমাদেরকে আমার ইচ্ছামত কোন জিনিস দেই না এবং আমার ইচ্ছামত তোমাদেরকে তা থেকে বঞ্চিত করি না। আমি তো কেবল কোষাধ্যক্ষ বা বন্টনকারী। আমাকে যেখানে ব্যয়ের নির্দেশ দেয়া হয় সেখানেই ব্যয় করি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৫০
حَدَّثَنَا النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ بْنِ الْحَدَثَانِ، قَالَ ذَكَرَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يَوْمًا الْفَىْءَ فَقَالَ مَا أَنَا بِأَحَقَّ، بِهَذَا الْفَىْءِ مِنْكُمْ وَمَا أَحَدٌ مِنَّا بِأَحَقَّ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ أَنَّا عَلَى مَنَازِلِنَا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَقَسْمِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَالرَّجُلُ وَقِدَمُهُ وَالرَّجُلُ وَبَلاَؤُهُ وَالرَّجُلُ وَعِيَالُهُ وَالرَّجُلُ وَحَاجَتُهُ .
মালিক ইবনু আওস ইবনুল হাদাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) ফাই সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ফাই প্রাপ্তির বিষয়ে আমি তোমাদের চাইতে অগ্রাধিকারী নই এবং এ বিষয়ে আমাদের কেউই কারোর চাইতে অগ্রাধিকারী নয়। বরং মহান আল্লাহর কিতাব ও তার রাসূলের পদ্ধতি মোতাবেক আমরা নিজ নিজ অবস্থানে রয়েছি। সুতরাং ব্যক্তি ও তার প্রাচীনত্ব, ব্যক্তি ও তার বীরত্ব, ব্যক্তি ও তার সন্তান এবং ব্যক্তি ও তার প্রয়োজন এসব বিবেচনা করে তা বন্টন হবে।
হাদিসের মানঃ হাসান মাওকুফ
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৪
ফাইলব্ধ মাল বন্টন করা
২৯৫১
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَبِي الزَّرْقَاءِ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، دَخَلَ عَلَى مُعَاوِيَةَ فَقَالَ حَاجَتُكَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ فَقَالَ عَطَاءُ الْمُحَرَّرِينَ فَإِنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَوَّلَ مَا جَاءَهُ شَىْءٌ بَدَأَ بِالْمُحَرَّرِينَ .
যায়িদ ইবনু আসলাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) মু’আবিয়াহ (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত হলেন। মু‘আবিয়াহ (রাঃ) বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আপনার প্রয়োজন বলুন। তিনি বললেন, আযাদকৃত গোলামদের ভাগ প্রদানের ব্যবস্থা করুন। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি, তাঁর কাছে ফাইলব্ধ সম্পদ এলে প্রথমে আযাদকৃত গোলামদের অংশ দিতেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৯৫২
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى الرَّازِيُّ، أَخْبَرَنَا عِيسَى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نِيَارٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عَنْهَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ بِظَبْيَةٍ فِيهَا خَرَزٌ فَقَسَمَهَا لِلْحُرَّةِ وَالأَمَةِ . قَالَتْ عَائِشَةُ كَانَ أَبِي رضى الله عنه يَقْسِمُ لِلْحُرِّ وَالْعَبْدِ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট একটি আংটির থলে আনা হলে তিনি দাসত্বমুক্ত নারী ও বাঁদীদের মধ্যে তা বন্টন করেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আমার পিতা (রাঃ) দাসত্বমুক্ত পুরুষ লোক ও ক্রীতদাসদের মাঝে ফাই বণ্টন করে দিতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৫৩
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُصَفَّى، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الْمُغِيرَةِ، جَمِيعًا عَنْ صَفْوَانَ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَتَاهُ الْفَىْءُ قَسَمَهُ فِي يَوْمِهِ فَأَعْطَى الآهِلَ حَظَّيْنِ وَأَعْطَى الْعَزَبَ حَظًّا . زَادَ ابْنُ الْمُصَفَّى فَدُعِينَا وَكُنْتُ أُدْعَى قَبْلَ عَمَّارٍ فَدُعِيتُ فَأَعْطَانِي حَظَّيْنِ وَكَانَ لِي أَهْلٌ ثُمَّ دُعِيَ بَعْدِي عَمَّارُ بْنُ يَاسِرٍ فَأَعْطَى لَهُ حَظًّا وَاحِدًا .
আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে ফাইলব্ধ সম্পদ আসতো তিনি ঐদিনই তা বন্টন করতেন। তিনি বিবাহিতদের দু’ভাগ এবং অবিবাহিতদের এক ভাগ দিতেন। ইবনুল মুসাফফারের বর্ণনায় রয়েছে, আমাদেরকে ডাকা হলো, আর আমাকে ‘আম্মারের পূর্বে ডাকা হলো। আমাকে ডেকে তিনি দুই ভাগ দিলেন। কেননা আমার পরিবার ছিল। আমার পর ‘আম্মার ইবনু ইয়াসিরের ডাক ডাকা হলো। (অবিবাহিত বলে) তাকে এক ভাগ দেয়া হলো।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৫
মুসলিমদের সন্তানদের খোরাকী প্রদান করা
২৯৫৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ أَنَا أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ مَنْ تَرَكَ مَالاً فَلأَهْلِهِ وَمَنْ تَرَكَ دَيْنًا أَوْ ضَيَاعًا فَإِلَىَّ وَعَلَىَّ ” .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ আমি মুমিনদের পক্ষে তাদের নিজেদের চেয়ে অধিক নিকটবর্তী। কেউ সম্পদ রেখে গেলে তা তার পরিজনের জন্য। কেউ ঋন অথবা পোষ্য রেখে গেলে তার দায়দায়িত্ব আমার উপর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৫৫
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَرَكَ مَالاً فَلِوَرَثَتِهِ وَمَنْ تَرَكَ كَلاًّ فَإِلَيْنَا ” .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ সম্পদ রেখে গেলে সেটা তার ওয়ারিসদের জন্য। আর কেউ অসহায় সন্তান রেখে গেলে তা আমার যিম্মায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৫৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ “ أَنَا أَوْلَى بِكُلِّ مُؤْمِنٍ مِنْ نَفْسِهِ فَأَيُّمَا رَجُلٍ مَاتَ وَتَرَكَ دَيْنًا فَإِلَىَّ وَمَنْ تَرَكَ مَالاً فَلِوَرَثَتِهِ ” .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ আমি প্রত্যেক মুমিনের পক্ষে তার নিজের চেয়েও অধিক নিকটবর্তী। কেউ ঋন রেখে মারা গেলে তা পরিশোধের দায়িত্ব আমার। আর কেউ সম্পদ রেখে গেলে তা তার ওয়ারিসদের জন্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৬
কত বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগদান করা যায়
২৯৫৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عُرِضَهُ يَوْمَ أُحُدٍ وَهُوَ ابْنُ أَرْبَعَ عَشْرَةَ فَلَمْ يُجِزْهُ وَعُرِضَهُ يَوْمَ الْخَنْدَقِ وَهُوَ ابْنُ خَمْسَ عَشْرَةَ سَنَةً فَأَجَازَهُ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাকে উহুদ যুদ্ধের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সম্মুখে উপস্থিত করা হলো। তখন তার বয়স চৌদ্দ বছর। তিনি তাকে যুদ্ধে অংশ গ্রহণের অনুমতি দেননি। অতঃপর খন্দকের যুদ্ধের সময় পনের বছর বয়সে তাকে আবারো তাঁর সামনে পেশ করা হলে তিনি তাকে অনুমতি দিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৭
শেষ যামানায় অসৎ উদ্দেশ্যে হাদিয়া প্রদান
২৯৫৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ أَبِي الْحَوَارِيِّ، حَدَّثَنَا سُلَيْمُ بْنُ مُطَيْرٍ، – شَيْخٌ مِنْ أَهْلِ وَادِي الْقُرَى – قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي مُطَيْرٌ أَنَّهُ خَرَجَ حَاجًّا حَتَّى إِذَا كَانَ بِالسُّوَيْدَاءِ إِذَا أَنَا بِرَجُلٍ قَدْ جَاءَ كَأَنَّهُ يَطْلُبُ دَوَاءً وَحُضُضًا فَقَالَ أَخْبَرَنِي مَنْ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ وَهُوَ يَعِظُ النَّاسَ وَيَأْمُرُهُمْ وَيَنْهَاهُمْ فَقَالَ “ يَا أَيُّهَا النَّاسُ خُذُوا الْعَطَاءَ مَا كَانَ عَطَاءً فَإِذَا تَجَاحَفَتْ قُرَيْشٌ عَلَى الْمُلْكِ وَكَانَ عَنْ دِينِ أَحَدِكُمْ فَدَعُوهُ ” . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَرَوَاهُ ابْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ سُلَيْمِ بْنِ مُطَيْرٍ .
সুলাইম ইবনু মুতাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার কাছে আমার পিতা মুতাইর আলোচনা করেছেন যে, তিনি হাজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। তিনি আস-সুয়াইদাহ নামক জায়গাতে পৌছলে এক লোক ঔষধের খোঁজে তার কাছে এলো। সে বললো, আমাকে এমন এক ব্যক্তি অবহিত করেছেন, যিনি বিদায় হাজ্জে রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে শুনেছেন। এ সময় তিনি লোকদের সমাবেশ নসীহত করছিলেন। তিনি তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ করছিলেন। তিনি বলেছিলেনঃ হে জনগণ! উপঢৌকন যদি উপঢৌকনের পর্যায়ে থাকে তবেই তা গ্রহন করো। যখন কুরাইশরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল নিয়ে মতবিরোধে লিপ্ত হবে, তখন দান কর্জে পরিণত হবে, কাজেই তোমরা তা পরিত্যাগ করবে।
দুর্বলঃ তাখরীজ মুশকিলাতুল ফিক্বর (৫)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৫৯
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمُ بْنُ مُطَيْرٍ، – مِنْ أَهْلِ وَادِي الْقُرَى – عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ حَدَّثَهُ قَالَ سَمِعْتُ رَجُلاً، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ فَأَمَرَ النَّاسَ وَنَهَاهُمْ ثُمَّ قَالَ ” اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ ” . قَالُوا اللَّهُمَّ نَعَمْ . ثُمَّ قَالَ ” إِذَا تَجَاحَفَتْ قُرَيْشٌ عَلَى الْمُلْكِ فِيمَا بَيْنَهَا وَعَادَ الْعَطَاءُ أَوْ كَانَ رُشًا فَدَعُوهُ ” . فَقِيلَ مَنْ هَذَا قَالُوا هَذَا ذُو الزَّوَائِدِ صَاحِبُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
সুলাইম ইবনু মুতাইর (রহঃ) হতে তার পিতার থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে বলতে শুনেছি, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বিদায় হাজ্জের ভাষণে বলতে শুনেছিঃ তিনি লোকদেরকে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার পর বললেনঃ হে আল্লাহ! আমি কি পৌছে দিয়েছি? লোকেরা বলল, হে আল্লাহ! হ্যাঁ (তিনি পৌছে দিয়েছেন)। অতঃপর তিনি বললেনঃ কুরাইশরা যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্বে লিপ্ত হবে এবং উপঢৌকন ঘুষে পরিণত হবে তখন তোমরা এ জাতীয় উপঢৌকন গ্রহণ করবে না। বলা হলো, কে এ ব্যক্তি? লোকেরা বললো, ইনি রাসূলুল্লাহ্র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবী যুল-যাইয়িদ (রাঃ)।
দুর্বলঃ তাখরীজ মুশকিলাতুল ফিক্বর(৫)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৮
দান প্রাপ্ত ব্যক্তিদের তালিকা করা
২৯৬০
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، – يَعْنِي ابْنَ سَعْدٍ – حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّ جَيْشًا، مِنَ الأَنْصَارِ كَانُوا بِأَرْضِ فَارِسَ مَعَ أَمِيرِهِمْ وَكَانَ عُمَرُ يُعْقِبُ الْجُيُوشَ فِي كُلِّ عَامٍ فَشُغِلَ عَنْهُمْ عُمَرُ فَلَمَّا مَرَّ الأَجَلُ قَفَلَ أَهْلُ ذَلِكَ الثَّغْرِ فَاشْتَدَّ عَلَيْهِمْ وَتَوَاعَدَهُمْ وَهُمْ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا عُمَرُ إِنَّكَ غَفَلْتَ عَنَّا وَتَرَكْتَ فِينَا الَّذِي أَمَرَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ إِعْقَابِ بَعْضِ الْغَزِيَّةِ بَعْضًا .
আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা আনসারদের সমন্বয়ে গঠিত যোদ্ধাদল তাদের দলনেতার সাথে পারস্যে অবস্থান করছিলো। ‘উমার (রাঃ) প্রতি বছর সেনাবাহিনী স্থানান্তর করতেন। একবার তিনি কোন কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে স্থানান্তরের পদক্ষেপ নিতে পারেননি। সময় অতিবাহিত হওয়ায় সীমান্তের সেনাদল ফিরে আসে। এতে ‘উমার (রাঃ) তাদের প্রতি কঠোর মনোভাব প্রদর্শন করে তাদেরকে ধমকালেন। অথচ তারা সবাই রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবী ছিলেন। তারা বললেন, হে ‘উমার! আপনি আমাদের ব্যাপারে উদাসীন হয়ে পড়েছেন। আপনি আমাদের বিষয়ে রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনুসৃত নীতি পরিহার করেছেন। রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ হলোঃ এক বাহিনীর পিছনে অপর বাহিনী প্রেরণ এবং পরবর্তী বাহিনীর তদস্থলে অবস্থান গ্রহণ।
সানাদ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৬১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَائِذٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنِي فِيمَا، حَدَّثَهُ ابْنٌ لِعَدِيِّ بْنِ عَدِيٍّ الْكِنْدِيِّ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ، كَتَبَ إِنَّ مَنْ سَأَلَ عَنْ مَوَاضِعِ الْفَىْءِ، فَهُوَ مَا حَكَمَ فِيهِ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رضى الله عنه فَرَآهُ الْمُؤْمِنُونَ عَدْلاً مُوَافِقًا لِقَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم “ جَعَلَ اللَّهُ الْحَقَّ عَلَى لِسَانِ عُمَرَ وَقَلْبِهِ ” . فَرَضَ الأَعْطِيَةَ وَعَقَدَ لأَهْلِ الأَدْيَانِ ذِمَّةً بِمَا فُرِضَ عَلَيْهِمْ مِنَ الْجِزْيَةِ لَمْ يَضْرِبْ فِيهَا بِخُمُسٍ وَلاَ مَغْنَمٍ .
আদী আল-কিন্দীর (রহঃ) এক পুত্রের থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) কর্মচারীদের প্রতি লিখেন, কেউ ফাই-এর খাত সম্পর্কে জানতে চাইলে তাকে ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) নির্দেশিত নীতি অনুসরণ করতে বলবে। কেননা মুমিনগণ তার অনুসৃত নীতিকে সঠিক এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণীর সাথে সামঞ্জাস্যপূর্ন পেয়েছে। মহান আল্লাহ ‘উমারের (রাঃ) মুখ ও অন্তর দ্বারা সত্যের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তিনি উপঢৌকন প্রবর্তন ও নির্ধারণ করেছেন। জিয্য়া প্রদানের বিনিময়ে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করেছেন। তিনি আরো বলেছেনঃ জিয্য়াতে এক-পঞ্চমাংশ নেই বা এটা গনীমাতের মত নয়।
সানাদ দুর্বল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৬২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ غُضَيْفِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِنَّ اللَّهَ وَضَعَ الْحَقَّ عَلَى لِسَانِ عُمَرَ يَقُولُ بِهِ ” .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ ‘উমারের মুখে সত্যকে স্থাপন করেছেন। তিনি ন্যায়নিষ্ঠার সাথেই কথা বলতেন।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১০৮)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৯
গনীমাতের মালে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিশেষ অংশ (সাফী)
২৯৬৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ الْمَعْنَى، قَالاَ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ الزَّهْرَانِيُّ، حَدَّثَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ بْنِ الْحَدَثَانِ، قَالَ أَرْسَلَ إِلَىَّ عُمَرُ حِينَ تَعَالَى النَّهَارُ فَجِئْتُهُ فَوَجَدْتُهُ جَالِسًا عَلَى سَرِيرٍ مُفْضِيًا إِلَى رِمَالِهِ فَقَالَ حِينَ دَخَلْتُ عَلَيْهِ يَا مَالُ إِنَّهُ قَدْ دَفَّ أَهْلُ أَبْيَاتٍ مِنْ قَوْمِكَ وَإِنِّي قَدْ أَمَرْتُ فِيهِمْ بِشَىْءٍ فَاقْسِمْ فِيهِمْ . قُلْتُ لَوْ أَمَرْتَ غَيْرِي بِذَلِكَ . فَقَالَ خُذْهُ . فَجَاءَهُ يَرْفَأُ فَقَالَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ هَلْ لَكَ فِي عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَالزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ وَسَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ نَعَمْ . فَأَذِنَ لَهُمْ فَدَخَلُوا ثُمَّ جَاءَهُ يَرْفَأُ فَقَالَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ هَلْ لَكَ فِي الْعَبَّاسِ وَعَلِيٍّ قَالَ نَعَمْ . فَأَذِنَ لَهُمْ فَدَخَلُوا فَقَالَ الْعَبَّاسُ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ اقْضِ بَيْنِي وَبَيْنَ هَذَا – يَعْنِي عَلِيًّا – فَقَالَ بَعْضُهُمْ أَجَلْ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ اقْضِ بَيْنَهُمَا وَارْحَمْهُمَا . قَالَ مَالِكُ بْنُ أَوْسٍ خُيِّلَ إِلَىَّ أَنَّهُمَا قَدَّمَا أُولَئِكَ النَّفَرَ لِذَلِكَ . فَقَالَ عُمَرُ رَحِمَهُ اللَّهُ اتَّئِدَا . ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى أُولَئِكَ الرَّهْطِ فَقَالَ أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ هَلْ تَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ” . قَالُوا نَعَمْ . ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى عَلِيٍّ وَالْعَبَّاسِ رضى الله عنهما فَقَالَ أَنْشُدُكُمَا بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ هَلْ تَعْلَمَانِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ” . فَقَالاَ نَعَمْ . قَالَ فَإِنَّ اللَّهَ خَصَّ رَسُولَهُ صلى الله عليه وسلم بِخَاصَّةٍ لَمْ يَخُصَّ بِهَا أَحَدًا مِنَ النَّاسِ فَقَالَ اللَّهُ تَعَالَى { وَمَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْهُمْ فَمَا أَوْجَفْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ خَيْلٍ وَلاَ رِكَابٍ وَلَكِنَّ اللَّهَ يُسَلِّطُ رُسُلَهُ عَلَى مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ } وَكَانَ اللَّهُ أَفَاءَ عَلَى رَسُولِهِ بَنِي النَّضِيرِ فَوَاللَّهِ مَا اسْتَأْثَرَ بِهَا عَلَيْكُمْ وَلاَ أَخَذَهَا دُونَكُمْ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْخُذُ مِنْهَا نَفَقَةَ سَنَةٍ أَوْ نَفَقَتَهُ وَنَفَقَةَ أَهْلِهِ سَنَةً وَيَجْعَلُ مَا بَقِيَ أُسْوَةَ الْمَالِ . ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى أُولَئِكَ الرَّهْطِ فَقَالَ أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ هَلْ تَعْلَمُونَ ذَلِكَ قَالُوا نَعَمْ . ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى الْعَبَّاسِ وَعَلِيٍّ رضى الله عنهما فَقَالَ أَنْشُدُكُمَا بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ هَلْ تَعْلَمَانِ ذَلِكَ قَالاَ نَعَمْ . فَلَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبُو بَكْرٍ أَنَا وَلِيُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجِئْتَ أَنْتَ وَهَذَا إِلَى أَبِي بَكْرٍ تَطْلُبُ أَنْتَ مِيرَاثَكَ مِنِ ابْنِ أَخِيكَ وَيَطْلُبُ هَذَا مِيرَاثَ امْرَأَتِهِ مِنْ أَبِيهَا فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ رَحِمَهُ اللَّهُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ” . وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّهُ لَصَادِقٌ بَارٌّ رَاشِدٌ تَابِعٌ لِلْحَقِّ فَوَلِيَهَا أَبُو بَكْرٍ فَلَمَّا تُوُفِّيَ أَبُو بَكْرٍ قُلْتُ أَنَا وَلِيُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَوَلِيُّ أَبِي بَكْرٍ فَوَلِيتُهَا مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ أَلِيَهَا فَجِئْتَ أَنْتَ وَهَذَا وَأَنْتُمَا جَمِيعٌ وَأَمْرُكُمَا وَاحِدٌ فَسَأَلْتُمَانِيهَا فَقُلْتُ إِنْ شِئْتُمَا أَنْ أَدْفَعَهَا إِلَيْكُمَا عَلَى أَنَّ عَلَيْكُمَا عَهْدَ اللَّهِ أَنْ تَلِيَاهَا بِالَّذِي كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَلِيهَا فَأَخَذْتُمَاهَا مِنِّي عَلَى ذَلِكَ ثُمَّ جِئْتُمَانِي لأَقْضِيَ بَيْنَكُمَا بِغَيْرِ ذَلِكَ وَاللَّهِ لاَ أَقْضِي بَيْنَكُمَا بِغَيْرِ ذَلِكَ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ فَإِنْ عَجَزْتُمَا عَنْهَا فَرُدَّاهَا إِلَىَّ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ إِنَّمَا سَأَلاَهُ أَنْ يَكُونَ يُصَيِّرُهُ بَيْنَهُمَا نِصْفَيْنِ لاَ أَنَّهُمَا جَهِلاَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ” . فَإِنَّهُمَا كَانَا لاَ يَطْلُبَانِ إِلاَّ الصَّوَابَ . فَقَالَ عُمَرُ لاَ أُوقِعُ عَلَيْهِ اسْمَ الْقَسْمِ أَدَعُهُ عَلَى مَا هُوَ عَلَيْهِ .
মালিক ইবনু আওস ইবনুল হাদাসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা দিনের কিছু অংশ অতিবাহিত হওয়ার পর ‘উমার (রাঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি তার কাছে গিয়ে দেখি, তিনি খেজুরের ছোবরার তৈরি একটি তক্তপোষের উপর বসে আছেন। আমি তার কাছে উপস্থিত হলে তিনি বললেন, হে মালিক! তোমার সম্প্রদায়ের কিছু লোক আমার কাছে এসেছে। আমি কিছু জিনিস তাদেরকে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। সেগুলো তুমি তাদের মধ্যে বন্টন করে দিবে। আমি বললাম, আপনি যদি আমি ছাড়া অন্য কাউকে বন্টনের দায়িত্ব দিতেন। তিনি বললেন, এটা নাও (বন্টন করো)। খাদেম ইয়ারফা এসে বললো, হে আমীরুল মুমিনীন! ‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ), ‘আব্দুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ), যুবাইর ইবনুল ‘আওয়াম (রাঃ) এবং সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) আপনার সাক্ষাত প্রার্থী। তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাদেরকে আসতে বলো। সুতরাং তারা এলেন। ইয়ারফা আবার এসে বললো, হে আমীরুল মুমিনীন! আল-‘আব্বাস ও ‘আলী (রাঃ) ভিতরে আসার অনুমতি প্রার্থী। তিনি বললেন, হ্যাঁ তাদেরকে আসতে দাও। তারাও প্রবেশ করলেন। আল-‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আমার ও ‘আলীর মাঝে ফায়সালা করুন এবং তাদের শান্তির বিধান করুন। মালিক ইবনু আওস (রাঃ) বলেন, আমার মনে হলো; তারা দু’জনে এজন্যই ‘উসমান(রাঃ) ও তার সঙ্গীদের এখানে আগে পাঠিয়েছেন। ‘উমার (রাঃ) বললেন, ধৈর্য ধরো, শান্ত হও। অতঃপর তিনি উপস্থিত লোকদের লক্ষ্য করে বললেন, আমি আপনাদের সেই মহান আল্লাহর শপথ দিচ্ছি, যাঁর নির্দেশে আসমান-যমীন সুপ্রতিষ্ঠিত। আপনাদের কি জানা আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “আমরা (নাবীগণ) কোন উত্তরাধিকার রেখে যাই না, আমরা যা রেখে যাই তা সদাক্বাহ গণ্য”? তারা সকলে বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি ‘আলী ও আল-‘আব্বাসকে বললেন, আপনাদের উভয়কে সেই মহান আল্লাহর শপথ করে জিজ্ঞেস করছি, যাঁর নির্দেশে আসমান-যমীন অস্তিত্বমান! আপনারা কি জানেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “আমাদের (নাবীদের) কোন উত্তরাধীকার নাই, আমারা যা রেখে যাই তা সদাক্বাহ গণ্য”? ‘উমার(রাঃ) বলেন, মহান আল্লাহ রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বিশেষ বৈশিষ্ট্য দিয়েছেন, যা অন্য কাউকে দেননি। মহান আল্লাহ বলেন, “আর যা কিছু আল্লাহ তাদের (ইহূদীদের) থেকে তাঁর রাসূলের নিকট ফিরিয়ে দিয়েছেন, তার জন্য তোমরা ঘোড়া ও উট পরিচালিত করোনি। বরং আল্লাহ তাঁর রাসূলদেরকে যার উপর ইচ্ছা কর্তৃত্ব দান করেন। আর আল্লাহ প্রতিটি বিষয়ের উপরই ক্ষমতাবান” (সূরাহ আল-হাশরঃ ৬)। মহান আল্লাহ তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বনু নাযীর গোত্রের সম্পদ ফাই হিসেবে দান করেন। আল্লাহর শপথ! এ সম্পদের ব্যাপারে তিনি তোমাদের উপর কাউকে অগ্রাধিকার দেননি এবং তিনি তোমাদের বাদ দিয়ে অন্য কাউকেও দেননি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ সম্পদ থেকে তাঁর পরিবারের এক বছরের ভরণপোষণের পরিমাণ নিতেন এবং অবশিষ্ট সম্পদ মুসলিমদের কল্যাণে ব্যয় করতেন। ‘উমার (রাঃ) উপস্থিত লোকদেরকে আবার বললেন, আমি আপনাদেরকে সেই মহান আল্লাহর শপথ দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, যাঁর নির্দেশে আসমান-যমীন সুপ্রতিষ্ঠিত! আপনারা কি এসব জানেন? তারা বললেন, হ্যাঁ, অতঃপর তিনি আল-‘আব্বাস ও আলী (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বললেন, আমি আপনাদের উভয়কে আল্লাহর শপথ দিয়ে বলছি, যাঁর নির্দেশে আসমান-যমীন সুপ্রতিষ্ঠিত! আপনাদের কি এসব বিষয় জানা আছে? তারা উভয়ে বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তেকাল করেন, আবূ বকর (রাঃ) বললেন, এখন আমি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতিনিধি। আপনি এবং ইনি (‘আলী) আবূ বাক্রের (রাঃ) নিকট আসলেন। আপনি আপনার ভ্রাতুষ্পুত্রের পরিত্যক্ত সম্পদে আপনার মীরাস দাবি করলেন এবং ইনি তার শশুরের সম্পদের স্ত্রীর মীরাস দাবি করলেন। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “আমাদের (নাবীদের) কোন ওয়ারিস নাই, আমরা যা রেখে যাই তা সদাক্বাহ হিসাবে গণ্য”। আল্লাহ জানেন, আবূ বাক্র ছিলেন সত্যবাদী, কল্যাণকামী, হেদায়াতপ্রাপ্ত ও সত্যের অনুসারী। তিনি উক্ত সম্পদের মুতাওয়াল্লী হন। পরবর্তীতে আবূ বাকর (রাঃ) মারা গেলে আমি বললাম, আমি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরসুরি এবং আবূ বাক্রের (রাঃ) প্রতিনিধি। আল্লাহর ইচ্ছায় আমি এখন এ সম্পদের তত্ত্বাবধায়। আপনি এবং ইনি আমার নিকট এসেছেন। আপনাদেরকে উভয়ের উদ্দেশ্য ও কথা একই। আমি আপনাদের কাছে তা অর্পণ করতে পারি। শর্ত হলো, আপনারা আল্লাহর ওয়াদা মেনে চলবেন এবং এ সম্পদের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুসৃত নীতি অনুসরণ করবেন। উক্ত শর্তে সেগুলো আপনারা আমার কাছ থেকে নিয়েছিলেন। পরে আবার আমার নিকট এসেছেন। আপনারা চাচ্ছেন, এখন আমি পূর্বের ফায়সালার বিপরীত ফায়সালা প্রদান করি। আল্লাহর শপথ! ক্বিয়ামাত পর্যন্ত আমি এর বিপরীত করবো না। আপনারা এ দায়িত্ব পালনে অপারগ হলে এর দায়িত্ব আমার উপর ন্যস্ত করুন।
আবূ দাউদ (রহঃ) বলেন, আল-‘আব্বাস (রাঃ) ও ‘আলী (রাঃ) এ সম্পত্তির দায়িত্বভার তাদের উভয়ের মধ্যে বন্টন করতে ‘উমারের (রাঃ) নিকট আবেদন করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণী, “আমরা যা রাখে যাই তাতে উত্তরাধিকার হবে না। বরং তা সদাক্বাহ হিসাবে গণ্য”। এ হাদীস তাদের উভয়ের অজানা ছিল না। বরং তারাও সত্যের অনুসন্ধানী ছিলেন, এজন্যই ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমি এ সম্পদ ভাগ করবো না, বরং একে এর পূর্বাবস্থায়ই রাখবো।
সহীহঃ মুখতাসার শামায়িল(৩৪১)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৬৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ ثَوْرٍ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسٍ، بِهَذِهِ الْقِصَّةِ قَالَ وَهُمَا – يَعْنِي عَلِيًّا وَالْعَبَّاسَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – يَخْتَصِمَانِ فِيمَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْ أَمْوَالِ بَنِي النَّضِيرِ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ أَرَادَ أَنْ لاَ يُوقِعَ عَلَيْهِ اسْمَ قَسْمٍ .
মালিক ইবনু আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি উক্ত ঘটনা সম্পর্কে বলেন, তারা উভয়ে অর্থাৎ ‘আলী ও ‘আব্বাস (রাঃ) খায়বারের ফাইলব্ধ সম্পদ নিয়ে বিবাদে লিপ্ত হলেন-যা বনু নাযীর গোত্রের কাছ থেকে আল্লাহ তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দান করেছিলেন। আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘উমারের (রাঃ) ইচ্ছা ছিল এ সম্পদের উপর বন্টনের নামও নেয়া যাবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৬৫
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ، – الْمَعْنَى – أَنَّ سُفْيَانَ بْنَ عُيَيْنَةَ، أَخْبَرَهُمْ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ بْنِ الْحَدَثَانِ، عَنْ عُمَرَ، قَالَ كَانَتْ أَمْوَالُ بَنِي النَّضِيرِ مِمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِمَّا لَمْ يُوجِفِ الْمُسْلِمُونَ عَلَيْهِ بِخَيْلٍ وَلاَ رِكَابٍ كَانَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَالِصًا يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ – قَالَ ابْنُ عَبْدَةَ يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِهِ قُوتَ سَنَةٍ – فَمَا بَقِيَ جُعِلَ فِي الْكُرَاعِ وَعُدَّةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ قَالَ ابْنُ عَبْدَةَ فِي الْكُرَاعِ وَالسِّلاَحِ .
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বনু নাযীর গোত্রের সম্পদ আল্লাহ তাঁর রাসূলকে দান করেন। এগুলো অর্জন করতে মুসলিমদের ঘোড়া বা উট চালাতে হয়নি। এ সম্পদ রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্য নির্দিষ্ট ছিল। এর থেকে তিনি তাঁর পরিবারের সারা বছরের ভরণপোষণের ব্যয়ভার বহন করতেন। আর অবশিষ্ট অংশ দিয়ে ঘোড়া ও আল্লাহর পথে যুদ্ধের সরঞ্জাম সংগ্রহ করতেন। ইবনু ‘আবদাহ (রহঃ) বলেন, তা ব্যয় করা হতো ঘোড়া ও অস্ত্র সংগ্রহের জন্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৬৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا أَيُّوبُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ قَالَ عُمَرُ { وَمَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْهُمْ فَمَا أَوْجَفْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ خَيْلٍ وَلاَ رِكَابٍ } . قَالَ الزُّهْرِيُّ قَالَ عُمَرُ هَذِهِ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَاصَّةً قُرَى عُرَيْنَةَ فَدَكَ وَكَذَا وَكَذَا { مَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْ أَهْلِ الْقُرَى فَلِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ } وَ لِلْفُقَرَاءِ الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ وَأَمْوَالِهِمْ وَالَّذِينَ تَبَوَّءُوا الدَّارَ وَالإِيمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ . وَالَّذِينَ جَاءُوا مِنْ بَعْدِهِمْ فَاسْتَوْعَبَتْ هَذِهِ الآيَةُ النَّاسَ فَلَمْ يَبْقَ أَحَدٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ إِلاَّ لَهُ فِيهَا حَقٌّ . قَالَ أَيُّوبُ أَوْ قَالَ حَظٌّ إِلاَّ بَعْضَ مَنْ تَمْلِكُونَ مِنْ أَرِقَّائِكُمْ .
আয-যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, (মহান আল্লাহর বাণী), “আর যা কিছু আল্লাহ তাদের (ইহুদীদের) থেকে তাঁর রাসূলের নিকট ফিরিয়ে দিয়েছেন, তার জন্য তোমরা ঘোড়া ও উট পরিচালিত করোনি। বরং আল্লাহ তাঁর রাসূলদেরকে যার উপর ইচ্ছা কর্তৃত্ব দান করেন। আর আল্লাহ প্রতিটি বিষয়ের উপরই ক্ষমতাবান” (সূরাহ আল-হাশরঃ ৬)। আয-যুহরী (রহঃ) বলেন ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, উরাইনাহ, ফাদাক ইত্যাদি এলাকা রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্য নির্দিষ্ট ছিল। যেমন অন্য আয়াতে বলা হয়েছেঃ “যা কিছুই আল্লাহ এ জনপদের লোকদের থেকে তাঁর রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তা আল্লাহ, রাসূল এবং আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, মিসকিন ও পথিকদের জন্য। ঐসব মুহাজিরের জন্যও, যারা নিজেদের ঘর-বাড়ি ও সম্পদ থেকে বিতারিত ও বহিষ্কৃত। এবং যারা এ মুহাজিরদের আসার আগে ঈমান এনে দারুল হিজরাতেই বসবাসকারী ছিল এবং যারা তাদের পরে হিজরাত করে তাদের কাছে এসেছে (তাদের জন্যও)…” (সূরাহ আল-হাশরঃ ৭-১০)। এ আয়াতগুলো সকল লোককে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এমন কোন মুসলিম নেই যার যুদ্ধলব্ধ সম্পদে অধিকার নেই। আইয়ূব (রহঃ) বলেন, অথবা বর্ণনাকারী ‘অধিকার’ এর স্থলে ‘অংশ’ শব্দ বলেছেন। হ্যাঁ, তোমাদের কতিপয় কৃতদাস এ থেকে বাদ পড়েছে।
সহীহঃ ইরওয়া (৫/৮৩-৮৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৬৭
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، ح وَحَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْمَهْرِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، ح وَحَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، – وَهَذَا لَفْظُ حَدِيثِهِ – كُلُّهُمْ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ بْنِ الْحَدَثَانِ، قَالَ كَانَ فِيمَا احْتَجَّ بِهِ عُمَرُ رضى الله عنه أَنَّهُ قَالَ كَانَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثُ صَفَايَا بَنُو النَّضِيرِ وَخَيْبَرُ وَفَدَكُ فَأَمَّا بَنُو النَّضِيرِ فَكَانَتْ حُبْسًا لِنَوَائِبِهِ وَأَمَّا فَدَكُ فَكَانَتْ حُبْسًا لأَبْنَاءِ السَّبِيلِ وَأَمَّا خَيْبَرُ فَجَزَّأَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَةَ أَجْزَاءٍ جُزْءَيْنِ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ وَجُزْءًا نَفَقَةً لأَهْلِهِ فَمَا فَضَلَ عَنْ نَفَقَةِ أَهْلِهِ جَعَلَهُ بَيْنَ فُقَرَاءِ الْمُهَاجِرِينَ .
মালিক ইবনু আওস ইবনুল হাদাসান (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) নিজের বক্তব্যের অনুকূলে যুক্তি পেশ করে বললেন, কেবলমাত্র রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্য ফাই-এর সম্পদে তিনটি বিশষ অংশ ছিলঃ বনু নাযীর, খায়বার ও ফাদাক। বনু নাযীর এলাকা থেকে প্রাপ্ত আয় দৈনন্দিনের প্রয়োজন পূরণে ব্যয় করা হতো। ফাদাক থেকে অর্জিত আয় পথিকদের জন্য ব্যয় করা হতো। খায়বার এলাকার আয়কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিন ভাগে ভাগ করেছেন। দুই অংশ মুসলিমদের সার্বিক কল্যাণে ব্যয় করা হতো এবং অপর অংশ দ্বারা তাঁর পরিবারের ব্যয়ভার বহন করা হতো। আর অবশিষ্ট অংশ গরীব মুহাজিরদের মাঝে বন্টন করা হতো।
সানাদ হাসানঃ অনুরূপ আসছে সামনে হা/০৯৭৭।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৯৬৮
حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ خَالِدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عُقَيْلِ بْنِ خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَرْسَلَتْ إِلَى أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ رضى الله عنه تَسْأَلُهُ مِيرَاثَهَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَيْهِ بِالْمَدِينَةِ وَفَدَكَ وَمَا بَقِيَ مِنْ خُمُسِ خَيْبَرَ . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ إِنَّمَا يَأْكُلُ آلُ مُحَمَّدٍ مِنْ هَذَا الْمَالِ ” . وَإِنِّي وَاللَّهِ لاَ أُغَيِّرُ شَيئًا مِنْ صَدَقَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ حَالِهَا الَّتِي كَانَتْ عَلَيْهِ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلأَعْمَلَنَّ فِيهَا بِمَا عَمِلَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَبَى أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه أَنْ يَدْفَعَ إِلَى فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلاَمُ مِنْهَا شَيْئًا .
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘উরওয়াহ ইবনুয যুবাইর (রহঃ)-কে জানান যে, রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মেয়ে ফাত্বিমাহ (রাঃ) আবূ বাক্র সিদ্দীকের (রাঃ) নিকট লোক পাঠালেন। তিনি তার কাছে রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিত্যক্ত সম্পদে তার ওয়ারিসীস্বত্ব দাবি করলেন। উক্ত সম্পদ আল্লাহ তাঁর রাসূলকে মদিনায় ও ফাদাকে ফাই হিসাবে এবং খায়বারে গনীমাতের এক-পঞ্চমাংশ হিসাবে দান করেন। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “আমাদের কোন ওয়ারিস নাই, আমাদের পরিত্যক্ত জিনিস সদাক্বাহ গণ্য”। মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পরিবার এ সম্পদ থেকে কেবল ভরণপোষণের পরিমাণ গ্রহন করবে। আল্লাহর শপথ! রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবদ্দশায় তাঁর এ সদাক্বাহর যে বৈশিষ্ট ছিল আমি তার কিছুমাত্র পরিবর্তন করবো না। এ সম্পদের ব্যাপারে আমি ঐ নীতিই অনুসরণ করবো যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করেছেন। আবূ বাকর (রাঃ) উক্ত সম্পদের অংশ ফাত্বিমাহর (রাঃ) নিকট হস্তান্তর করতে অসম্মতি জানান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৬৯
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ الْحِمْصِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعَيْبُ بْنُ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، حَدَّثَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ، زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ بِهَذَا الْحَدِيثِ قَالَ وَفَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلاَمُ حِينَئِذٍ تَطْلُبُ صَدَقَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الَّتِي بِالْمَدِينَةِ وَفَدَكَ وَمَا بَقِيَ مِنْ خُمُسِ خَيْبَرَ . قَالَتْ عَائِشَةُ رضى الله عنها فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ وَإِنَّمَا يَأْكُلُ آلُ مُحَمَّدٍ فِي هَذَا الْمَالِ ” . يَعْنِي مَالَ اللَّهِ لَيْسَ لَهُمْ أَنْ يَزِيدُوا عَلَى الْمَأْكَلِ .
উরওয়াহ ইবনুয যুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) তাকে এ হাদীসটি অবহিত করেন। তিনি বলেন, ফাত্বিমাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনাহয় পরিত্যক্ত সদাক্বাহ, ফাদাকের ফাই ও খায়বারের এক-পঞ্চমাংশ সম্পদের নিজের উত্তরাধিকার দাবি করেন। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “আমাদের কোন ওয়ারিস নাই, আমরা যা রেখে যাই তা সদাক্বাহ গণ্য”। আল্লাহর দেয়া এ সম্পদ থেকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)—এর পরিবার তাদের ভরণপোষণের পরিমাণ গ্রহণ করবে।
সহীহঃ সহীহাহ (০০৩৮)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৭০
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ أَبِي يَعْقُوبَ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ، رضى الله عنها أَخْبَرَتْهُ بِهَذَا الْحَدِيثِ، قَالَ فِيهِ فَأَبَى أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه عَلَيْهَا ذَلِكَ وَقَالَ لَسْتُ تَارِكًا شَيْئًا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْمَلُ بِهِ إِلاَّ عَمِلْتُ بِهِ إِنِّي أَخْشَى إِنْ تَرَكْتُ شَيْئًا مِنْ أَمْرِهِ أَنْ أَزِيغَ فَأَمَّا صَدَقَتُهُ بِالْمَدِينَةِ فَدَفَعَهَا عُمَرُ إِلَى عَلِيٍّ وَعَبَّاسٍ رضى الله عنهم فَغَلَبَهُ عَلِيٌّ عَلَيْهَا وَأَمَّا خَيْبَرُ وَفَدَكُ فَأَمْسَكَهُمَا عُمَرُ وَقَالَ هُمَا صَدَقَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَتَا لِحُقُوقِهِ الَّتِي تَعْرُوهُ وَنَوَائِبِهِ وَأَمْرُهُمَا إِلَى مَنْ وَلِيَ الأَمْرَ . قَالَ فَهُمَا عَلَى ذَلِكَ إِلَى الْيَوْمِ .
‘উরওয়াহ (রহঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
‘আয়িশাহ (রাঃ) তাকে এ হাদীস অবহিত করেন। ‘উরওয়াহ এ ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, আবূ বাকর (রাঃ) ফাত্বিমাহ (রাঃ)-কে এ সম্পদের অংশ দিতে অসম্মতি জানালেন। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন নীতিই বর্জন করবো না। তিনি যেটা যেভাবে করেছেন আমি ঠিক সেভাবেই তা করবো। আমার আশঙ্কা হচ্ছে, আমি তাঁর হুকুমের সামান্য ব্যতিক্রম করলে আমি বাঁকা পথে চলে যাবো। বর্ণনাকারী বলেন, মাদীনাহতে অবস্থিত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সদাক্বাহর সম্পত্তি ‘উমার (রাঃ) ‘আলী ও ‘আব্বাসের (রাঃ) কাছে অর্পণ করলেন। পরে ‘আলী (রাঃ) একাই তা দখল করে নেন। খায়বার ও ফাদাকের সম্পত্তি ‘উমার (রাঃ) নিজের তত্ত্বাবধানে রাখেন। তিনি বললেন, এ দু’টি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সদাক্বাহর মাল। তাঁর প্রয়োজন পুরণের জন্য এটি খরচ হতো। তিনি এ সম্পদ রাষ্ট্রপ্রাধানের তত্ত্বাবধানে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, ঐ সময় পর্যন্ত তা এভাবেই ছিল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৭১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ ثَوْرٍ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، فِي قَوْلِهِ { فَمَا أَوْجَفْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ خَيْلٍ وَلاَ رِكَابٍ } قَالَ صَالَحَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَهْلَ فَدَكَ وَقُرًى قَدْ سَمَّاهَا لاَ أَحْفَظُهَا وَهُوَ مُحَاصِرٌ قَوْمًا آخَرِينَ فَأَرْسَلُوا إِلَيْهِ بِالصُّلْحِ قَالَ { فَمَا أَوْجَفْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ خَيْلٍ وَلاَ رِكَابٍ } يَقُولُ بِغَيْرِ قِتَالٍ قَالَ الزُّهْرِيُّ وَكَانَتْ بَنُو النَّضِيرِ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم خَالِصًا لَمْ يَفْتَحُوهَا عَنْوَةً افْتَتَحُوهَا عَلَى صُلْحٍ فَقَسَمَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ الْمُهَاجِرِينَ لَمْ يُعْطِ الأَنْصَارَ مِنْهَا شَيْئًا إِلاَّ رَجُلَيْنِ كَانَتْ بِهِمَا حَاجَةٌ .
আয-যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর বাণীঃ “তা অর্জনের জন্য তোমরা ঘোড়া বা উট দৌঁড়াওনি……” এ সম্পর্কে বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাদাক এবং আরেকটি গ্রামের লোকদের সাথে সন্ধি করেন। (যুহরী) গ্রামের নাম উল্লেখ করলেও আমি (মা’মার) তা স্মরণ রাখিনি। তিনি এ সময় আরেকটি জনপদ অবরোধ করেন। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সন্ধির প্রস্তাব করে। মহান আল্লাহ বললেনঃ “তা অর্জনের জন্য তোমরা ঘোড়া বা উট হ্যাঁকাওনি”। অর্থাৎ তা বিনা যুদ্ধে অর্জিত। যুহুরী বলেন, বনু নাযীর গোত্রের এলাকাও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ইচ্ছাধীন ছিল। তারা এ এলাকাটি বল প্রয়োগে জয় করেননি, বরং জয় করেছেন সন্ধির মাধ্যমে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ সম্পদ মুজাহিরদের মাঝে বন্টন করেন এবং আনসারদের এ থেকে কিছুই দেননি। অব্যশ্য দু’জনকে দিয়েছেন। কারণ তাদের খুবই প্রয়োজন ছিল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৭২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْجَرَّاحِ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الْمُغِيرَةِ، قَالَ جَمَعَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بَنِي مَرْوَانَ حِينَ اسْتُخْلِفَ فَقَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَتْ لَهُ فَدَكُ فَكَانَ يُنْفِقُ مِنْهَا وَيَعُودُ مِنْهَا عَلَى صَغِيرِ بَنِي هَاشِمٍ وَيُزَوِّجُ مِنْهَا أَيِّمَهُمْ وَإِنَّ فَاطِمَةَ سَأَلَتْهُ أَنْ يَجْعَلَهَا لَهَا فَأَبَى فَكَانَتْ كَذَلِكَ فِي حَيَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى مَضَى لِسَبِيلِهِ فَلَمَّا أَنْ وَلِيَ أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه عَمِلَ فِيهَا بِمَا عَمِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي حَيَاتِهِ حَتَّى مَضَى لِسَبِيلِهِ فَلَمَّا أَنْ وَلِيَ عُمَرُ عَمِلَ فِيهَا بِمِثْلِ مَا عَمِلاَ حَتَّى مَضَى لِسَبِيلِهِ ثُمَّ أَقْطَعَهَا مَرْوَانُ ثُمَّ صَارَتْ لِعُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ قَالَ – يَعْنِي عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ – فَرَأَيْتُ أَمْرًا مَنَعَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلاَمُ لَيْسَ لِي بِحَقٍّ وَأَنَا أُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ رَدَدْتُهَا عَلَى مَا كَانَتْ يَعْنِي عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَلِيَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ الْخِلاَفَةَ وَغَلَّتُهُ أَرْبَعُونَ أَلْفَ دِينَارٍ وَتُوُفِّيَ وَغَلَّتُهُ أَرْبَعُمِائَةِ دِينَارٍ وَلَوْ بَقِيَ لَكَانَ أَقَلَّ .
আল-মুগীরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন ‘উমার ইবনু ‘আব্দুল ‘আযীযকে (রহঃ) খলীফাহ নিযুক্ত করা হলে তিনি মারওয়ানের পুত্রদেরকে ডেকে একত্রে করে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাদাকের সম্পদের অধিকারী ছিলেন। এর থেকে তিনি তাঁর পরিবারের ভরণপোষণ করতেন, গরীবদের সাহায্য করতেন, হাশিম গোত্রের নাবালক শিশুদের দান করতেন এবং তাদের বিধবাদের বিবাহে খরচ করতেন। তাঁর কন্যা ফাত্বিমাহ (রাঃ) তাঁর নিকট এ সম্পদ চাইলে তিনি তা দিতে অসম্মতি জানান। রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবদ্দশায় তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তা এভাবেই রয়ে যায়। পরে আবূ বকর (রাঃ) খলিফাহ হলে তিনি তার জীবদ্দশায় এ সম্পদের ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নীতি অনুসরন করলেন। ‘উমারও (রাঃ) খলীফাহ হওয়ার পর মৃত্যুর পর্যন্ত উভয় পূর্বসূরীর নীতি অনুসরণ করলেন। অতঃপর মারওয়ান এ সম্পদ জায়গীর হিসাবে দখল করেন। এখন ‘উমার ইবনু ‘আবদুল আযীয(রহঃ) এর মালিক। ‘উমার ইবনু ‘আবদুল আযীয (রহঃ) বললেন, আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করছি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সম্পদ ফাত্বিমাহকে(রাঃ) দেননি তা আমার জন্য কীভাবে বৈধ হবে! এতে আমার কোন অধিকার নাই। আমি তোমাদের সাক্ষী রেখে বলছি, আমি অবশ্যই এ সম্পদ ঐ অবস্থায় নিব যেরূপ রাসূলুল্লাহর(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুগে ছিল।
আবূ দাঊদ(রহঃ) বলেন, ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয(রহঃ) যখন খলীফাহ নিযুক্ত হন তখন ঐ সম্পদের মূল্য ছিল চল্লিশ হাজার দীনার এবং তাঁর মৃত্যুর সময় এর মূল্য দাঁড়ায় চার হাজার দীনার। তিনি জীবিত থাকলে এর মূল্য আরো কমতো।
দুর্বলঃ মিশকাত (৪০৬৩)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৭৩
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفُضَيْلِ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ جُمَيْعٍ، عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ، قَالَ جَاءَتْ فَاطِمَةُ رضى الله عنها إِلَى أَبِي بَكْرٍ رضى الله عنه تَطْلُبُ مِيرَاثَهَا مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلاَمُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ إِذَا أَطْعَمَ نَبِيًّا طُعْمَةً فَهِيَ لِلَّذِي يَقُومُ مِنْ بَعْدِهِ ” .
আবুত তুফাইল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ফাত্বিমাহ (রাঃ) আবূ বাকরের (রাঃ) নিকট এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সম্পদে তার মীরাস দাবি করেন। বর্ণনাকারী বলেন, আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ কোন নাবীকে জীবন ধারণের ব্যবস্থা করে দিলে তাঁর পরবর্তীতে তাঁর স্থলাভিষিক্ত ব্যক্তি এর হকদার।
হাসানঃ ইরওয়া(১২৪১)।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৯৭৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ تَقْتَسِمُ وَرَثَتِي دِينَارًا مَا تَرَكْتُ بَعْدَ نَفَقَةِ نِسَائِي وَمُؤْنَةِ عَامِلِي فَهُوَ صَدَقَةٌ ” . قَالَ أَبُو دَاوُدَ ” مُؤْنَةِ عَامِلِي ” . يَعْنِي أَكَرَةَ الأَرْضِ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমার ওয়ারিসগণ আমার পরিত্যক্ত একটি দীনারও বন্টন করবে না। আমার স্ত্রীদের ভরণপোষণ এবং শ্রমিকদের বেতন দেয়ার পর যা থাকবে তা সদাক্বাহ গণ্য হবে। আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘আমার কর্মচারী’ অর্থাৎ কৃষি শ্রমিক।
সহীহঃ মুখতাসার শামায়িল(৩৪০)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৭৫
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مَرْزُوقٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ أَبِي الْبَخْتَرِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ حَدِيثًا، مِنْ رَجُلٍ فَأَعْجَبَنِي فَقُلْتُ اكْتُبْهُ لِي فَأَتَى بِهِ مَكْتُوبًا مُذَبَّرًا دَخَلَ الْعَبَّاسُ وَعَلِيٌّ عَلَى عُمَرَ وَعِنْدَهُ طَلْحَةُ وَالزُّبَيْرُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ وَسَعْدٌ وَهُمَا يَخْتَصِمَانِ فَقَالَ عُمَرُ لِطَلْحَةَ وَالزُّبَيْرِ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ وَسَعْدٍ أَلَمْ تَعْلَمُوا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ كُلُّ مَالِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صَدَقَةٌ إِلاَّ مَا أَطْعَمَهُ أَهْلَهُ وَكَسَاهُمْ إِنَّا لاَ نُورَثُ ” . قَالُوا بَلَى . قَالَ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُنْفِقُ مِنْ مَالِهِ عَلَى أَهْلِهِ وَيَتَصَدَّقُ بِفَضْلِهِ ثُمَّ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَوَلِيَهَا أَبُو بَكْرٍ سَنَتَيْنِ فَكَانَ يَصْنَعُ الَّذِي كَانَ يَصْنَعُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . ثُمَّ ذَكَرَ شَيْئًا مِنْ حَدِيثِ مَالِكِ بْنِ أَوْسٍ .
আবুল বাখতারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক লোকের নিকট একটি হাদীস শুনি, তা আমার পছন্দ হয়। আমি বললাম, আমাকে তা লিখে দিন। তিনি তা পরিষ্কারভাবে লিখে নিয়ে আসলেনঃ ‘আব্বাস (রাঃ) ও ‘আলী (রাঃ) ‘উমারের (রাঃ) নিকট গেলেন। তখন তার কাছে ত্বালহা (রাঃ), যুবাইর (রাঃ), সা’দ (রাঃ) ও ‘আবদুর রহমান (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন। ‘আব্বাস ও ‘আলী বিবাদে লিপ্ত ছিলেন। ত্বালহা (রাঃ), যুবাইর (রাঃ), ‘আবদুর রহমান (রাঃ) ও সা’দ (রাঃ)-কে ‘উমার (রাঃ) বললেন, আপনারা কি জানেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সম্পদ সদাক্বাহ হিসাবে গণ্য, কেবলমাত্র তাঁর পরিবারের ভরণপোষনের জন্য যতটুকু ব্যয় হয় তা ব্যতীত। আমাদের কোন উত্তরাধিকারী নাই” তারা বললেন, হ্যাঁ জানি। ‘উমার (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সম্পদ থেকে নিজ পরিবারের জন্য খরচ করতেন এবং বাকী অংশ দান করতেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তেকাল করলেন। আবূ বাকর(রাঃ) দুই বছর তাঁর সম্পত্তির মোতাওয়াল্লী থাকলেন রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ সম্পত্তির আয় যেসব খাতে ব্যয় করতেন, আবূ বাকরও তাই করলেন। আবুল বাখতারী হাদীসের অংশ বিশেষ মালিক ইবনু আওস(রাঃ) হতে বর্ণনা করেন।
সহীহঃ সহীহাহ(২০৩৮)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৭৬
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ إِنَّ أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حِينَ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَرَدْنَ أَنْ يَبْعَثْنَ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ فَيَسْأَلْنَهُ ثُمُنَهُنَّ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ لَهُنَّ عَائِشَةُ أَلَيْسَ قَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا فَهُوَ صَدَقَةٌ ” .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তেকালের পর তাঁর স্ত্রীগণ সিদ্ধান্ত নিলেন, ‘উস্মান ইবনু ‘আফফানকে (রাঃ) আবূ বাকর সিদ্দীকের (রাঃ) নিকট পাঠিয়ে তার মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পরিত্যক্ত সম্পদে তাদের এক-অষ্টমাংশ ওয়ারিসী স্বত্ব দাবি করবেন। ‘আয়িশাহ(রাঃ) তাদেরকে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেননিঃ “আমাদের (নাবীদের) কোন ওয়ারিস নাই। আমরা যা রেখে যাই তা সদাক্বাহ গণ্য”।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৭৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ حَمْزَةَ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، بِإِسْنَادِهِ نَحْوَهُ قُلْتُ أَلاَ تَتَّقِينَ اللَّهَ أَلَمْ تَسْمَعْنَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا فَهُوَ صَدَقَةٌ وَإِنَّمَا هَذَا الْمَالُ لآلِ مُحَمَّدٍ لِنَائِبَتِهِمْ وَلِضَيْفِهِمْ فَإِذَا مِتُّ فَهُوَ إِلَى مَنْ وَلِيَ الأَمْرَ مِنْ بَعْدِي ” .
ইবনু শিহাব (রঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তার সানাদ পরম্পরায় অনুরুপ হাদিস বর্ণনা করেন। এতে রয়েছেঃ আমি (‘আয়িশাহ) বলি, তোমরা কি আল্লাহকে ভয় কর না? তোমরা কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনোনিঃ “আমাদের (নবীদের) কোন ওয়ারিস নাই। আমরা যা রেখে যাই তা সাদক্বাহ হিসাবে গণ্য। এ সম্পদ মুহাম্মাদের পরিবারের খরচা ও মেহমানদের আপ্যায়নের জন্য। আমার ইন্তেকালের পর যে বেক্তি খলিফাহ হবে, এ সম্পদ তার তত্তাবধানে থাকবে”।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ¬-২০
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গনিমতের মাল থেকে যে এক-পঞ্চমাংশ নিতেন তা কোথায় ব্যয় করতেন এবং নিকটাত্মীয়দের অংশ সম্পর্কে
২৯৭৮
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ مَيْسَرَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ، عَنْ يُونُسَ بْنِ يَزِيدَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، أَخْبَرَنِي جُبَيْرُ بْنُ مُطْعِمٍ، أَنَّهُ جَاءَ هُوَ وَعُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ يُكَلِّمَانِ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِيمَا قَسَمَ مِنَ الْخُمُسِ بَيْنَ بَنِي هَاشِمٍ وَبَنِي الْمُطَّلِبِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَسَمْتَ لإِخْوَانِنَا بَنِي الْمُطَّلِبِ وَلَمْ تُعْطِنَا شَيْئًا وَقَرَابَتُنَا وَقَرَابَتُهُمْ مِنْكَ وَاحِدَةٌ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّمَا بَنُو هَاشِمٍ وَبَنُو الْمُطَّلِبِ شَىْءٌ وَاحِدٌ ” . قَالَ جُبَيْرٌ وَلَمْ يَقْسِمْ لِبَنِي عَبْدِ شَمْسٍ وَلاَ لِبَنِي نَوْفَلٍ مِنْ ذَلِكَ الْخُمُسِ كَمَا قَسَمَ لِبَنِي هَاشِمٍ وَبَنِي الْمُطَّلِبِ . قَالَ وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يَقْسِمُ الْخُمُسَ نَحْوَ قَسْمِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ يُعْطِي قُرْبَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُعْطِيهِمْ . قَالَ وَكَانَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يُعْطِيهِمْ مِنْهُ وَعُثْمَانُ بَعْدَهُ .
জুবাইর ইবনু মুত্ব’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা তিনি এবং ‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ) গনীমাতের এক-পঞ্চমাংশ বণ্টন সম্পর্কে আলাপ করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আসলেন, যা তিনি হাশিম ও মুত্তালিব বংশের মধ্যে বণ্টন করেছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের ভাই বনু মুত্তালিবের মধ্যে এক-পঞ্চমাংশ বণ্টন করলেন, আর আমাদের কিছুই দিলেন না। অথচ আপনার সাথে আত্মীয়তার বন্ধনের দিক থেকে তারা এবং আমরা একই পর্যায়ভুক্ত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিব একই। জুবাইর (রাঃ) বলেন, তিনি বনু ‘আবদে শামস ও বনু নাওফাল বংশীয়দের তা প্রদান করেন। বর্ণনাকারী বলেন, আবু বকরও (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটাত্মীয়দেরকে এক-পঞ্চমাংশ থেকে দেননি, যেভাবে তিনি বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবদেরকে তা দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আবু বকর (রাঃ)এক-পঞ্চমাংশ বিষয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নীতি অনুসরণ করতেন। ব্যতিক্রম ছিল, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটাত্মীয়দেরকে এক-পঞ্চমাংশ থেকে ভাগ দিতেন না, যদিও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে দিতেন। কিন্তু ‘উমার (রাঃ) এবং পরে ‘উসমান (রাঃ) তাদেরকে তা থেকে দিয়েছেন।
সহীহঃ ইরওয়া (১২৪২)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৭৯
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، حَدَّثَنَا جُبَيْرُ بْنُ مُطْعِمٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَقْسِمْ لِبَنِي عَبْدِ شَمْسٍ وَلاَ لِبَنِي نَوْفَلٍ مِنَ الْخُمُسِ شَيْئًا كَمَا قَسَمَ لِبَنِي هَاشِمٍ وَبَنِي الْمُطَّلِبِ . قَالَ وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ يَقْسِمُ الْخُمُسَ نَحْوَ قَسْمِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غَيْرَ أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ يُعْطِي قُرْبَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَمَا كَانَ يُعْطِيهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ عُمَرُ يُعْطِيهِمْ وَمَنْ كَانَ بَعْدَهُ مِنْهُمْ .
জুবাইর ইবনু মুত্ব’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবকে যেভাবে গনীমাতের এক-পঞ্চমাংশ থেকে প্রদান করেন, বনু ‘আবদে শামস ও বনু নাওফালকে তা থেকে দেননি। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেভাবে গনীমাতের এক-পঞ্চমাংশ বণ্টন করেছিলেন, আবু বকরও (রাঃ) ঠিক সেভাবেই বণ্টন করেছেন। তবে ব্যতিক্রম ছিল, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকটাত্মীয়দেরকে যেভাবে দিয়েছেন, তিনি তাদেরকে (ধনী হওয়ার কারনে) সেভাবে দেননি। কিন্তু ‘উমার (রাঃ) এবং তার পরবর্তী খলিফাহ তাদেরকে এক-পঞ্চমাংশ থেকে দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৮০
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، أَخْبَرَنِي جُبَيْرُ بْنُ مُطْعِمٍ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ خَيْبَرَ وَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَهْمَ ذِي الْقُرْبَى فِي بَنِي هَاشِمٍ وَبَنِي الْمُطَّلِبِ وَتَرَكَ بَنِي نَوْفَلٍ وَبَنِي عَبْدِ شَمْسٍ فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَعُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ حَتَّى أَتَيْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ هَؤُلاَءِ بَنُو هَاشِمٍ لاَ نُنْكِرُ فَضْلَهُمْ لِلْمَوْضِعِ الَّذِي وَضَعَكَ اللَّهُ بِهِ مِنْهُمْ فَمَا بَالُ إِخْوَانِنَا بَنِي الْمُطَّلِبِ أَعْطَيْتَهُمْ وَتَرَكْتَنَا وَقَرَابَتُنَا وَاحِدَةٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَنَا وَبَنُو الْمُطَّلِبِ لاَ نَفْتَرِقُ فِي جَاهِلِيَّةٍ وَلاَ إِسْلاَمٍ وَإِنَّمَا نَحْنُ وَهُمْ شَىْءٌ وَاحِدٌ ” . وَشَبَّكَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ .
জুবাইর ইবনু মুত্ব’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বার বিজয়ের দিন তাঁর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবের আত্মীয়দের মধ্যে গনীমাত বণ্টন করেন কিন্তু নাওফাল ও ‘আবদে শামস বংশীয়দেরকে দেননি। আমি ও ‘উসমান ইবনু ‘আফফান (রাঃ) রওয়ানা হয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা হাশিম বংশীয়দের মর্যাদা অস্বীকার করি না। কেননা আল্লাহ আপনাকে এ বংশে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু মুত্তালিব গোত্রের ভাইদের জন্য কি করা হলো। তাদেরকে গনীমাতের অংশ দিলেন, অথচ আমাদেরকে বঞ্চিত করলেন। আত্মীয়তার সম্পর্কের দিক থেকে আমরা ও তারা একই পর্যায়ের। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘আমরা ও বনু মুত্তালিব না জাহিলিয়াতের যুগে সম্পর্ক ছিন্ন করেছি, আর না ইসলামী যুগে। আমরা এবং তারা একই।’ এ বলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার এক হাতের আঙুল অন্য হাতের আঙুলের ফাঁকে প্রবেশ করান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৮১
حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ الْعِجْلِيُّ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ صَالِحٍ، عَنِ السُّدِّيِّ، فِي ذِي الْقُرْبَى قَالَ هُمْ بَنُو عَبْدِ الْمُطَّلِبِ .
আস-সুদ্দী (রঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘যিল-কুরবা’-এর ব্যখ্যায় বলেন, এখানে নিকটাত্মীয় বলতে বনু মুত্তালিব লোকদেরকে বুঝানো হয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল মাকতু
- সরাসরি
২৯৮২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي يَزِيدُ بْنُ هُرْمُزَ، أَنَّ نَجْدَةَ الْحَرُورِيَّ، حِينَ حَجَّ فِي فِتْنَةِ ابْنِ الزُّبَيْرِ أَرْسَلَ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ يَسْأَلُهُ عَنْ سَهْمِ ذِي الْقُرْبَى وَيَقُولُ لِمَنْ تَرَاهُ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لِقُرْبَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَسَمَهُ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ كَانَ عُمَرُ عَرَضَ عَلَيْنَا مِنْ ذَلِكَ عَرْضًا رَأَيْنَاهُ دُونَ حَقِّنَا فَرَدَدْنَاهُ عَلَيْهِ وَأَبَيْنَا أَنْ نَقْبَلَهُ .
ইয়াযীদ ইবনু হুরযুম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আব্দুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) বিদ্রোহের বছর হাজ্জ করতে আসে। তিনি নিকটাত্মীয়ের অংশ জানার জন্য ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)এর নিকট চিঠি বা লোক পাঠান। তিনি লিখলেন, এ বিষয়ে আপনার অভিমত জানাবেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, (আয়াতে নিকটাত্মীয় বলতে) রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটাত্মীয়দের বুঝানো হয়েছে। তিনি নিজের নিকটাত্মীয়দের মধ্যে এক-পঞ্চমাংশ বণ্টন করেছেন। (খলিফাহ) ‘উমার (রাঃ) আমাদেরকে প্রাপ্য অংশ থেকে কম দিলে আমরা লক্ষ্য করি যে, আমাদের অধিকার খর্ব হয়েছে। কাজেই আমরা তাকে তা ফেরত দিলাম এবং তা গ্রহন করতে অসম্মতি জানালাম।
সহীহঃ নাসায়ী (৪১৩৩)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৮৩
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو جَعْفَرٍ الرَّازِيُّ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا، يَقُولُ وَلاَّنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خُمُسَ الْخُمُسِ فَوَضَعْتُهُ مَوَاضِعَهُ حَيَاةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَحَيَاةَ أَبِي بَكْرٍ وَحَيَاةَ عُمَرَ فَأُتِيَ بِمَالٍ فَدَعَانِي فَقَالَ خُذْهُ . فَقُلْتُ لاَ أُرِيدُهُ . قَالَ خُذْهُ فَأَنْتُمْ أَحَقُّ بِهِ . قُلْتُ قَدِ اسْتَغْنَيْنَا عَنْهُ فَجَعَلَهُ فِي بَيْتِ الْمَالِ .
আব্দুর রহমান ইবনু আবূ লায়লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে এক-পঞ্চমাংশের মোতওয়াল্লী বানান। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবু বাক্র (রাঃ) এবং উমারের (রাঃ) জীবদ্দশায় এ মাল তার নির্ধারিত খাতে খরচ করতে থাকি। অতঃপর ‘উমারের (রাঃ) নিকট কিছু সম্পদ এলে ‘উমার আমাকে ডেকে বললেন, এগুলো গ্রহন করো। আমি বললাম, আমি এগুলো চাই না। পুনরায় তিনি বললেন, এগুলো গ্রহন করো, কারন তুমিই এর অধিক হকদার। আমি বললাম, আমি এর মুখাপেক্ষী নই। অবশেষে তিনি তা বাইতুল-মালে জমা করলেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৮৪
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ الْبَرِيدِ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ مَيْمُونٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا، عَلَيْهِ السَّلاَمُ يَقُولُ اجْتَمَعْتُ أَنَا وَالْعَبَّاسُ، وَفَاطِمَةُ، وَزَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ، عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنْ رَأَيْتَ أَنْ تُوَلِّيَنِي حَقَّنَا مِنْ هَذَا الْخُمُسِ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَأَقْسِمَهُ حَيَاتَكَ كَىْ لاَ يُنَازِعَنِي أَحَدٌ بَعْدَكَ فَافْعَلْ . قَالَ فَفَعَلَ ذَلِكَ – قَالَ – فَقَسَمْتُهُ حَيَاةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ وَلاَّنِيهِ أَبُو بَكْرٍ رضى الله عنه حَتَّى إِذَا كَانَتْ آخِرُ سَنَةٍ مِنْ سِنِي عُمَرَ رضى الله عنه فَإِنَّهُ أَتَاهُ مَالٌ كَثِيرٌ فَعَزَلَ حَقَّنَا ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَىَّ فَقُلْتُ بِنَا عَنْهُ الْعَامَ غِنًى وَبِالْمُسْلِمِينَ إِلَيْهِ حَاجَةٌ فَارْدُدْهُ عَلَيْهِمْ فَرَدَّهُ عَلَيْهِمْ ثُمَّ لَمْ يَدْعُنِي إِلَيْهِ أَحَدٌ بَعْدَ عُمَرَ فَلَقِيتُ الْعَبَّاسَ بَعْدَ مَا خَرَجْتُ مِنْ عِنْدِ عُمَرَ فَقَالَ يَا عَلِيُّ حَرَمْتَنَا الْغَدَاةَ شَيْئًا لاَ يُرَدُّ عَلَيْنَا أَبَدًا وَكَانَ رَجُلاً دَاهِيًا .
আব্দুর রহমান ইবনু আবু লায়লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আমি, ‘আব্বাস (রাঃ), ফাত্বিমাহ (রাঃ) এবং যায়িদ ইবনু হারিসাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট সমবেত হই। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! মহান আল্লাহর কিতাবে আমাদের জন্য গনীমাতের এক-পঞ্চমাংশে যে অংশ নির্ধারিত হয়েছে, আপনি যদি ভাল মনে করেন আপনার জীবদ্দশায়ই আমাকে তার মোতাওয়াল্লী বানান। আমি তা এমনভাবে বণ্টন করবো, আপনার মৃত্যুর পর কেউ যেন আমার সাথে ঝগড়া না করে। ‘আলী (রাঃ) বলেন, তিনি তাই করলেন। ‘আলী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবদ্দশায় তা বণ্টন করি। অতঃপর আবূ বাক্রও (রাঃ) আমাকে এর মোতওয়াল্লী রাখেন এবং ‘উমারের খিলাফতকাল পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। তার শাসনামলের শেষের বছর প্রচুর সম্পদ আসে। তিনি তা থেকে আমাদের অংশ আলাদা করে তা নিতে আমার নিকট সংবাদ পাঠান। আমি বললাম, এ বছর এ সম্পদের অংশ আমাদের দরকার নাই, বরং অন্যান্য মুসলিমদের দরকার আছে। কাজেই তাদেরকে দিন। তিনি সেগুলো তাদেরকে দিলেন। ‘উমারের পর আর কেউই আমাকে এ সম্পদ নিতে ডাকেনি। ‘উমারের (রাঃ) কাছ থেকে বেরিয়ে এসে আমি ‘আব্বাসের (রাঃ) সাথে সাক্ষাত করি। তিনি বললেন, হে ‘আলী! আজ তুমি আমাদেরকে এমন বস্তু থেকে বঞ্চিত করলে, যা আমাদেরকে কোন দিন দেবে না। ‘আব্বাস (রাঃ) খুবই জ্ঞানী লোক ছিলেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৮৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ نَوْفَلٍ الْهَاشِمِيُّ، أَنَّ عَبْدَ الْمُطَّلِبِ بْنَ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَاهُ رَبِيعَةَ بْنَ الْحَارِثِ وَعَبَّاسَ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ قَالاَ لِعَبْدِ الْمُطَّلِبِ بْنِ رَبِيعَةَ وَلِلْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ ائْتِيَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُولاَ لَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ بَلَغْنَا مِنَ السِّنِّ مَا تَرَى وَأَحْبَبْنَا أَنْ نَتَزَوَّجَ وَأَنْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَبَرُّ النَّاسِ وَأَوْصَلُهُمْ وَلَيْسَ عِنْدَ أَبَوَيْنَا مَا يُصْدِقَانِ عَنَّا فَاسْتَعْمِلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ عَلَى الصَّدَقَاتِ فَلْنُؤَدِّ إِلَيْكَ مَا يُؤَدِّي الْعُمَّالُ وَلْنُصِبْ مَا كَانَ فِيهَا مِنْ مِرْفَقٍ . قَالَ فَأَتَى إِلَيْنَا عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ وَنَحْنُ عَلَى تِلْكَ الْحَالِ فَقَالَ لَنَا إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ وَاللَّهِ لاَ نَسْتَعْمِلُ مِنْكُمْ أَحَدًا عَلَى الصَّدَقَةِ ” . فَقَالَ لَهُ رَبِيعَةُ هَذَا مِنْ أَمْرِكَ قَدْ نِلْتَ صِهْرَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ نَحْسُدْكَ عَلَيْهِ . فَأَلْقَى عَلِيٌّ رِدَاءَهُ ثُمَّ اضْطَجَعَ عَلَيْهِ فَقَالَ أَنَا أَبُو حَسَنٍ الْقَرْمُ وَاللَّهِ لاَ أَرِيمُ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَيْكُمَا ابْنَاكُمَا بِجَوَابِ مَا بَعَثْتُمَا بِهِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَالْفَضْلُ إِلَى بَابِ حُجْرَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى نُوَافِقَ صَلاَةَ الظُّهْرِ قَدْ قَامَتْ فَصَلَّيْنَا مَعَ النَّاسِ ثُمَّ أَسْرَعْتُ أَنَا وَالْفَضْلُ إِلَى بَابِ حُجْرَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَوْمَئِذٍ عِنْدَ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ فَقُمْنَا بِالْبَابِ حَتَّى أَتَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخَذَ بِأُذُنِي وَأُذُنِ الْفَضْلِ ثُمَّ قَالَ أَخْرِجَا مَا تُصَرِّرَانِ ثُمَّ دَخَلَ فَأَذِنَ لِي وَلِلْفَضْلِ فَدَخَلْنَا فَتَوَاكَلْنَا الْكَلاَمَ قَلِيلاً ثُمَّ كَلَّمْتُهُ أَوْ كَلَّمَهُ الْفَضْلُ – قَدْ شَكَّ فِي ذَلِكَ عَبْدُ اللَّهِ – قَالَ كَلَّمَهُ بِالأَمْرِ الَّذِي أَمَرَنَا بِهِ أَبَوَانَا فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَاعَةً وَرَفَعَ بَصَرَهُ قِبَلَ سَقْفِ الْبَيْتِ حَتَّى طَالَ عَلَيْنَا أَنَّهُ لاَ يَرْجِعُ إِلَيْنَا شَيْئًا حَتَّى رَأَيْنَا زَيْنَبَ تَلْمَعُ مِنْ وَرَاءِ الْحِجَابِ بِيَدِهَا تُرِيدُ أَنْ لاَ تَعْجَلاَ وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي أَمْرِنَا ثُمَّ خَفَّضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَأْسَهُ فَقَالَ لَنَا ” إِنَّ هَذِهِ الصَّدَقَةَ إِنَّمَا هِيَ أَوْسَاخُ النَّاسِ وَإِنَّهَا لاَ تَحِلُّ لِمُحَمَّدٍ وَلاَ لآلِ مُحَمَّدٍ ادْعُوا لِي نَوْفَلَ بْنَ الْحَارِثِ ” . فَدُعِيَ لَهُ نَوْفَلُ بْنُ الْحَارِثِ فَقَالَ ” يَا نَوْفَلُ أَنْكِحْ عَبْدَ الْمُطَّلِبِ ” . فَأَنْكَحَنِي نَوْفَلٌ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” ادْعُوا لِي مَحْمِيَةَ بْنَ جَزْءٍ ” . وَهُوَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي زُبَيْدٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَعْمَلَهُ عَلَى الأَخْمَاسِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِمَحْمِيَةَ ” أَنْكِحِ الْفَضْلَ ” . فَأَنْكَحَهُ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” قُمْ فَأَصْدِقْ عَنْهُمَا مِنَ الْخُمُسِ كَذَا وَكَذَا ” . لَمْ يُسَمِّهِ لِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحَارِثِ .
আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস ইবনু নাওফাল আল-হাশিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল মুত্তালিব ইবনু রবী’আহ আল-হারিস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব তাকে জানান যে, তার পিতা রবী’আহ ইবনুল হারিস এবং ‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) ‘আবদুল মুত্তালিব ইবনু রবী’আহ ও ফাদল ইবনু ‘আব্বাসকে বলেন, তোমরা দু’জনে রাসূলুল্লাহ র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট গিয়ে বলো, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে, আমাদের বয়স হয়েছে। আমরা বিবাহ করতে চাই। হে আল্লাহর রাসুল! আপনি সকলের চেয়ে অধিক কল্যাণকামী এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী। আমাদের উভয়ের পিতার সামর্থ্য নেই যে, মোহরানা আদায় করে আমাদের বিবাহ করাবে। হে আল্লাহর রাসূল! আমাদেরকে সদাক্বাহ’র কর্মচারী নিয়োগ করুন। অপরাপর কর্মচারীরা আপনাকে যা দেয় আমরাও আপনাকে তাই দিবো এবং সদাক্বাহ থেকে আমরা নির্ধারিত অংশ (বেতন স্বরূপ) পাবো। ‘আবদুল মুত্তালিব ইবনু রবী’আহ বলেন, আমরা এ আলোচনায় করছিলাম এমন সময় ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) এসে আমাদের নিকট উপস্থিত হন। তিনি আমাদের বললেন, আল্লাহর শপথ! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের মধ্য হতে কাউকে সদাক্বাহ বিভাগে নিয়োগ দিবেন না। রবী’আহ তাকে বললেন, এটা আপনি নিজের মত বলছেন। আপনি তো রাসূলুল্লাহ র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জামাতা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। আমরা আপনার প্রতি হিংসা রাখি না। একথা শুনামাত্র ‘আলী (রাঃ) তার গায়ের চাঁদর বিছিয়ে তাতে শুয়ে পড়েন। অতঃপর তিনি বলেন, আমি হাসানের পিতা যার সিদ্ধান্তকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। আল্লাহর শপথ! যে উদ্দেশ্যে তোমরা তোমাদের পুত্রদ্বয়কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট প্রেরন করছো, তারা এতে নিরাশ হয়ে তোমাদের নিকট না ফেরা পর্যন্ত আমি এখান থেকে যাবো না। ‘আবদুল মুত্তালিব বলেন, আমি ও ফাদল বের হলাম। পৌঁছে দেখি যুহরের সলাত আরম্ভ হচ্ছে। আমরা লোকদের সাথে সালাত আদায় করি। অতঃপর আমি এবং ফাদল জলদি করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হুজরার দরজার নিকট যাই। তখন তিনি যাইনাব বিনতু জাহশের ঘরে অবস্থান করেছিলেন। আমরা দরজার কাছে দাঁড়িয়ে রইলাম। ইতিমধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে আমার ও ফাদলের কান ধরে বললেনঃ তোমাদের মতলবটা কি বলতো? এ বলে তিনি ঘরে ঢুকলেন এবং আমাকে ও ফাদলকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। আমরা ভিতরে ঢুকে একে অন্যকে কথা শুরু করতে বলি। অতঃপর আমি বা ফাদল তাঁর কাছে বললাম- যেজন্য আমাদের উভয়ের পিতা আমাদের আদেশ করেছেন। আমাদের কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুক্ষন নীরব থাকলেন। তিনি ঘরের ছাদের দিকে তাকালেন এবং দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন। মনে হলো তিনি আমাদের কথার জবাব দিবেন না। এমন সময় দেখি, যাইনাব (রাঃ) পর্দার আড়াল থেকে হাতের ইশারায় আমাদেরকে বললেন, তাড়াহুড়া করো না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মাথা নিচু করে আমাদেরকে বললেনঃ এ সদাক্বাহ হচ্ছে মানুষের (সম্পদের) আবর্জনা। এটা মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদের পরিবারের জন্য হালাল নয়। নাওফাল ইবনুল হারিসকে আমার কাছে ডেকে আনো। তাকে ডেকে আনা হলে তিনি বললেনঃ হে নাওফাল! ‘আবদুল মুত্তালিবকে বিবাহ করাও (তোমার কন্যাকে তার কাছে বিয়ে দাও)। অতঃপর নাওফাল আমাকে বিবাহ করালেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মাহমিয়্যাহ ইবনু জাযইকে আমার কাছে ডেকে আনো। সে ছিলো যুবাইদ গোত্রীয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে এক-পঞ্চমাংশ আদায়ের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাহমিয়্যাহকে বললেনঃ ফাদলকে (তোমার মেয়ের সাথে) বিয়ে দাও। ফলে তিনি তাকে বিয়ে দিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাহমিয়্যাহকে বললেনঃ উঠো! উভয়ের পক্ষ হতে এক-পঞ্চমাংশ তহবিল থেকে এতো এতো সম্পদ মোহর বাবদ দিয়ে দাও। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনুল হারিস আমার নিকট মোহরের পরিমান উল্লেখ করেননি।
সহীহঃ ইরওয়া (৮৭৯)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৮৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ، أَنَّ حُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ، أَخْبَرَهُ أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ قَالَ كَانَتْ لِي شَارِفٌ مِنْ نَصِيبِي مِنَ الْمَغْنَمِ يَوْمَ بَدْرٍ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَعْطَانِي شَارِفًا مِنَ الْخُمُسِ يَوْمَئِذٍ فَلَمَّا أَرَدْتُ أَنْ أَبْنِيَ بِفَاطِمَةَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَاعَدْتُ رَجُلاً صَوَّاغًا مِنْ بَنِي قَيْنُقَاعَ أَنْ يَرْتَحِلَ مَعِي فَنَأْتِيَ بِإِذْخِرٍ أَرَدْتُ أَنْ أَبِيعَهُ مِنَ الصَّوَّاغِينَ فَأَسْتَعِينَ بِهِ فِي وَلِيمَةِ عُرْسِي فَبَيْنَا أَنَا أَجْمَعُ لِشَارِفَىَّ مَتَاعًا مِنَ الأَقْتَابِ وَالْغَرَائِرِ وَالْحِبَالِ – وَشَارِفَاىَ مُنَاخَانِ إِلَى جَنْبِ حُجْرَةِ رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ – أَقْبَلْتُ حِينَ جَمَعْتُ مَا جَمَعْتُ فَإِذَا بِشَارِفَىَّ قَدِ اجْتُبَّتْ أَسْنِمَتُهُمَا وَبُقِرَتْ خَوَاصِرُهُمَا وَأُخِذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا فَلَمْ أَمْلِكْ عَيْنَىَّ حِينَ رَأَيْتُ ذَلِكَ الْمَنْظَرَ فَقُلْتُ مَنْ فَعَلَ هَذَا قَالُوا فَعَلَهُ حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَهُوَ فِي هَذَا الْبَيْتِ فِي شَرْبٍ مِنَ الأَنْصَارِ غَنَّتْهُ قَيْنَةٌ وَأَصْحَابَهُ فَقَالَتْ فِي غِنَائِهَا أَلاَ يَا حَمْزُ لِلشُّرُفِ النِّوَاءِ فَوَثَبَ إِلَى السَّيْفِ فَاجْتَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا وَأَخَذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا . قَالَ عَلِيٌّ فَانْطَلَقْتُ حَتَّى أَدْخُلَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدَهُ زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ قَالَ فَعَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي لَقِيتُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَا لَكَ ” . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ عَدَا حَمْزَةُ عَلَى نَاقَتَىَّ فَاجْتَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا وَهَا هُوَ ذَا فِي بَيْتٍ مَعَهُ شَرْبٌ فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِرِدَائِهِ فَارْتَدَاهُ ثُمَّ انْطَلَقَ يَمْشِي وَاتَّبَعْتُهُ أَنَا وَزَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ حَتَّى جَاءَ الْبَيْتَ الَّذِي فِيهِ حَمْزَةُ فَاسْتَأْذَنَ فَأُذِنَ لَهُ فَإِذَا هُمْ شَرْبٌ فَطَفِقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَلُومُ حَمْزَةَ فِيمَا فَعَلَ فَإِذَا حَمْزَةُ ثَمِلٌ مُحْمَرَّةٌ عَيْنَاهُ فَنَظَرَ حَمْزَةُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى رُكْبَتَيْهِ ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى سُرَّتِهِ ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى وَجْهِهِ ثُمَّ قَالَ حَمْزَةُ وَهَلْ أَنْتُمْ إِلاَّ عَبِيدٌ لأَبِي فَعَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ ثَمِلٌ فَنَكَصَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى عَقِبَيْهِ الْقَهْقَرَى فَخَرَجَ وَخَرَجْنَا مَعَهُ .
আলী ইবনু আবু ত্বালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বদর যুদ্ধের দিন গনীমাত হিসেবে ভাগে একটি মোটাতাজা উষ্ট্রী পাই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেদিন অবশিষ্ট এক-পঞ্চমাংশ হতে আমাকে আরেকটা মোটাতাজা উষ্ট্রী দেন। তখন আমি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যা ফাত্বিমাহর সঙ্গে বাসর যাপনের ইচ্ছা করি। এজন্য আমি বাইনুকা গোত্রের এক স্বর্ণকারকে আমার সঙ্গে নিয়ে ইযাখার নামক সুগন্ধি ঘাস আনার মনস্থ করি। ইচ্ছা ছিল ওগুলো স্বর্ণকারদের নিকট বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে আমার বিবাহভোজে কিছুটা সাহায্য হবে। আমি আমার উষ্ট্রী, হাওদা, ঘাসের জাল, দড়ি ইত্যাদি সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। উষ্ট্রী দু’টি এক আনসারীর ঘরের পাশে শোয়া ছিল। সব কিছু সংগ্রহ করে ফিরে এসে দেখি আমার উষ্ট্রী দু’টির কুঁজ কেটে ফেলা হয়েছে এবং পেট ফেঁড়ে কলিজা বের করা হয়েছে। এ দৃশ্য দেখে আমি আমার অশ্রু সংবরণ করতে পারলাম না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কে এ নিষ্ঠুর কাজ করেছে? লোকেরা বলল, হামযাহ ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব এ অপকর্ম করেছে। সে আনসারদের কতিপয় মদ্যপায়ীর সাথে এ ঘরে রয়েছে। তাকে ও তাঁর সঙ্গীদের এক ক্রীতদাসী গান গেয়ে শুনিয়েছে। সে তার গানের মধ্যে বলেছে, ‘সাবধান হে হামযাহ! মোটাতাজা উষ্ট্রীর দিকে লক্ষ্য করো’। এতে উত্তেজিত হয়ে তিনি তার তরবারির দিকে ছুটে উষ্ট্রী দুটির কুজ কাটেন এবং পেট ফেড়ে কলিজা বের করেন। ‘আলী (রাঃ) বলেন, আমি সেখান থেকে সোজা রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট গিয়ে উপস্থিত হই। তখন তাঁর নিকট যায়িদ ইবনু হারিসাহ (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার চেহারা দেখেই বুঝে ফেললেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার কী হয়েছে? ‘আলী (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমার জন্য আজকের দিনের মত দুর্দিন আর কখনো আসেনি। হামযাহ আমার উষ্ট্রী দু’টিকে অত্যাচার করেছে। সে এর কুজ কেটেছে এবং পেটের দু’পাশ ফেড়ে কলিজা বের করে নিয়েছে। সে এখনও একটি ঘরের মধ্যে মদ্যপায়ীদের সাথে মত্ত রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাঁদর চেয়ে তা গায়ে জড়িয়ে রওয়ানা হলেন। আমি এবং যায়িদ ইবনু হারিসাহ তার অনুসরন করি। হামযাহ যে ঘরে অবস্থান করছিলেন তিনি সেখানে পৌঁছলে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তাঁকে অনুমতি দেয়া হলে ঘরে ঢুকে তিনি লোকদেরকে মাতাল অবস্থায় পেলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হামযাহকে তাঁর কৃতকর্মের জন্য র্ভৎসনা করতে লাগলেন। তখন হামযাহ ছিলেন নেশায় বিভোর, নেশার কারনে তার চোখ লাল হয়ে ছিলো। তিনি রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে তার হাটুদয়ের প্রতি তাকালেন, কিছুক্ষন পর আবার দৃষ্টি সরিয়ে তাঁর নাভির দিকে লক্ষ্য করলেন; পুনরায় দৃষ্টি সরিয়ে তাঁর চেহারার দিকে তাকালেন; অতঃপর বললেন, তোমরা আমার পিতার গোলাম ছাড়া কিছু নও। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বুঝতে পারলেন, হামযাহ এখন নেশাগ্রস্থ। মাতাল অবস্থায় তার ক্রোধ আরো বাড়তে পারে আশঙ্কায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখান থেকে ফিরে গেলেন। ফলে আমরাও তার সাথে বেরিয়ে আসি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৮৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي عَيَّاشُ بْنُ عُقْبَةَ الْحَضْرَمِيُّ، عَنِ الْفَضْلِ بْنِ الْحَسَنِ الضَّمْرِيِّ، أَنَّ أُمَّ الْحَكَمِ، أَوْ ضُبَاعَةَ ابْنَتَىِ الزُّبَيْرِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ حَدَّثَتْهُ عَنْ إِحْدَاهُمَا أَنَّهَا قَالَتْ أَصَابَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَبْيًا فَذَهَبْتُ أَنَا وَأُخْتِي وَفَاطِمَةُ بِنْتُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَشَكَوْنَا إِلَيْهِ مَا نَحْنُ فِيهِ وَسَأَلْنَاهُ أَنْ يَأْمُرَ لَنَا بِشَىْءٍ مِنَ السَّبْىِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ سَبَقَكُنَّ يَتَامَى بَدْرٍ لَكِنْ سَأَدُلُّكُنَّ عَلَى مَا هُوَ خَيْرٌ لَكُنَّ مِنْ ذَلِكَ تُكَبِّرْنَ اللَّهَ عَلَى أَثَرِ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ تَكْبِيرَةً وَثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ تَسْبِيحَةً وَثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ تَحْمِيدَةً وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ ” . قَالَ عَيَّاشٌ وَهُمَا ابْنَتَا عَمِّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আল-ফাদল ইবনুল হাসান আদ-দামরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুবাইর ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিবের (রাঃ) দুই কন্যা উম্মুল হাকাম অথবা দবা’আহ (রাঃ) হতে একজন এ বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে কিছু যুদ্ধবন্দী আসলো। আমি, আমার বোন এবং রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যা ফাত্বিমাহ (রাঃ) তাঁর নিকট গিয়ে আমাদের দরিদ্রতার কথা জানিয়ে কিছু যুদ্ধবন্দী আমাদেরকে দেয়ার জন্য হুকুম করতে আবেদন করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ বদর যুদ্ধে (পিতাহারা) ইয়াতীমগণ তোমাদের চেয়ে অগ্রাধিকার প্রাপ্য। বরং আমি তোমাদেরকে এর চেয়ে উত্তম বস্তু বলে দিচ্ছি, যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর হবে। তোমরা প্রত্যেক সলাতের পর ৩৩ বার ‘আল্লাহু আকবার’, ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার ‘আলহামদু লিল্লাহ’ এবং ১ বার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মূলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শায়ইন কাদীর’ এ তাসবীহ পাঠ করবে। আইয়াশ (রহঃ) বলেন, ঐ দুই মহিলা ছিলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চাচাতো বোন।
সহীহঃ সহীহাহ (১৮৮০)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৮৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، عَنْ سَعِيدٍ، – يَعْنِي الْجُرَيْرِيَّ – عَنْ أَبِي الْوَرْدِ، عَنِ ابْنِ أَعْبُدَ، قَالَ قَالَ لِي عَلِيٌّ رضى الله عنه أَلاَ أُحَدِّثُكَ عَنِّي وَعَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَتْ مِنْ أَحَبِّ أَهْلِهِ إِلَيْهِ قُلْتُ بَلَى . قَالَ إِنَّهَا جَرَّتْ بِالرَّحَى حَتَّى أَثَّرَ فِي يَدِهَا وَاسْتَقَتْ بِالْقِرْبَةِ حَتَّى أَثَّرَ فِي نَحْرِهَا وَكَنَسَتِ الْبَيْتَ حَتَّى اغْبَرَّتْ ثِيَابُهَا فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَدَمٌ فَقُلْتُ لَوْ أَتَيْتِ أَبَاكِ فَسَأَلْتِيهِ خَادِمًا فَأَتَتْهُ فَوَجَدَتْ عِنْدَهُ حُدَّاثًا فَرَجَعَتْ فَأَتَاهَا مِنَ الْغَدِ فَقَالَ ” مَا كَانَ حَاجَتُكِ ” . فَسَكَتَتْ فَقُلْتُ أَنَا أُحَدِّثُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ جَرَّتْ بِالرَّحَى حَتَّى أَثَّرَتْ فِي يَدِهَا وَحَمَلَتْ بِالْقِرْبَةِ حَتَّى أَثَّرَتْ فِي نَحْرِهَا فَلَمَّا أَنْ جَاءَكَ الْخَدَمُ أَمَرْتُهَا أَنْ تَأْتِيَكَ فَتَسْتَخْدِمَكَ خَادِمًا يَقِيهَا حَرَّ مَا هِيَ فِيهِ . قَالَ ” اتَّقِي اللَّهَ يَا فَاطِمَةُ وَأَدِّي فَرِيضَةَ رَبِّكِ وَاعْمَلِي عَمَلَ أَهْلِكِ فَإِذَا أَخَذْتِ مَضْجَعَكِ فَسَبِّحِي ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَاحْمَدِي ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ وَكَبِّرِي أَرْبَعًا وَثَلاَثِينَ فَتِلْكَ مِائَةٌ فَهِيَ خَيْرٌ لَكِ مِنْ خَادِمٍ ” . قَالَتْ رَضِيتُ عَنِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَعَنْ رَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু আ’বুদা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) আমাকে বললেন, আমি কি তোমাকে আমার ও রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যা ফাত্বিমাহর পক্ষ হতে হাদীস বর্ণনা করবো না? আমি বললাম, হ্যাঁ, বলুন। তিনি বললেন, তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ফাত্বিমাহ (রাঃ)-ই ছিল তাঁর নিকট সর্বাপেক্ষা আদরের। (অথচ) যাঁতা ঘুরানোর কারণে ফাত্বিমাহর হাতে ফোসকা পড়ে গেছে এবং কলসে করে পানি টানার কারণে তার কাঁধে দাগ পড়ে এবং ঘরে ঝাড়ু দেয়ার কারণে তার পরনের কাপড় নোংরা হয়ে যেতো। এক সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে কিছু সংখ্যক খাদেম আসলে আমি ফাত্বিমাহকে বলি, তুমি তোমার পিতার কাছে গিয়ে একটি খাদেম চেয়ে নাও! সেখানে গিয়ে তাঁর কাছে লোকেরা বসে কথা বলছে দেখে ফাত্বিমাহ ফিরে আসলো। পরদিন সকালে তিনি ফাত্বিমাহর ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি আমার কাছে কি দরকারে গিয়েছিলে? ফাত্বিমাহ চুপ রইলো। আমি (‘আলী) বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি বলছি। যাঁতা পিষতে পিষতে তার হাতে ফোসকা পড়ে গেছে, এবং কলসে করে পানি টানার কারণে তার কাঁধে দাগ পড়ে গেছে। আপনার নিকট কিছু সংখ্যক খাদেম আসলে আমি তাকে নির্দেশ করি যেন, আপনার কাছে গিয়ে খাদেম চেয়ে নেয়। যাতে তার কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে ফাত্বিমাহ! আল্লাহকে ভয় করো, তোমার রব্বের নির্ধারিত ফরয আদায় করো এবং নিজের ঘরের কাজ নিজেই করো। আর যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে তখন ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদু লিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করবে। এভাবে একশো পূর্ণ হবে। এটা তোমার জন্য খাদেমের চেয়েও উত্তম। ফাত্বিমাহ (রাঃ) বললেন, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি সন্তুষ্ট।
দুর্বলঃ যঈফাহ (১৭৮৭)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৮৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْمَرْوَزِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ، بِهَذِهِ الْقِصَّةِ قَالَ وَلَمْ يُخْدِمْهَا .
ইমাম যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আলী ইবনু হুসাইনের কাছ থেকে উক্ত ঘটনা বর্ণনা করেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি ফাত্বিমাহকে খাদেম দেননি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৯০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ بْنُ عَبْدِ الْوَاحِدِ الْقُرَشِيُّ، قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ – يَعْنِي ابْنَ عِيسَى – كُنَّا نَقُولُ إِنَّهُ مِنَ الأَبْدَالِ قَبْلَ أَنْ نَسْمَعَ أَنَّ الأَبْدَالَ مِنَ الْمَوَالِي قَالَ حَدَّثَنِي الدَّخِيلُ بْنُ إِيَاسِ بْنِ نُوحِ بْنِ مُجَّاعَةَ عَنْ هِلاَلِ بْنِ سِرَاجِ بْنِ مُجَّاعَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ مُجَّاعَةَ أَنَّهُ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَطْلُبُ دِيَةَ أَخِيهِ قَتَلَتْهُ بَنُو سَدُوسٍ مِنْ بَنِي ذُهْلٍ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” لَوْ كُنْتُ جَاعِلاً لِمُشْرِكٍ دِيَةً جَعَلْتُ لأَخِيكَ وَلَكِنْ سَأُعْطِيكَ مِنْهُ عُقْبَى ” . فَكَتَبَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمِائَةٍ مِنَ الإِبِلِ مِنْ أَوَّلِ خُمُسٍ يَخْرُجُ مِنْ مُشْرِكِي بَنِي ذُهْلٍ فَأَخَذَ طَائِفَةً مِنْهَا وَأَسْلَمَتْ بَنُو ذُهْلٍ فَطَلَبَهَا بَعْدُ مُجَّاعَةُ إِلَى أَبِي بَكْرٍ وَأَتَاهُ بِكِتَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَتَبَ لَهُ أَبُو بَكْرٍ بِاثْنَىْ عَشَرَ أَلْفَ صَاعٍ مِنْ صَدَقَةِ الْيَمَامَةِ أَرْبَعَةِ آلاَفٍ بُرًّا وَأَرْبَعَةِ آلاَفٍ شَعِيرًا وَأَرْبَعَةِ آلاَفٍ تَمْرًا وَكَانَ فِي كِتَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لِمُجَّاعَةَ ” بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ هَذَا كِتَابٌ مِنْ مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ لِمُجَّاعَةَ بْنِ مُرَارَةَ مِنْ بَنِي سُلْمَى إِنِّي أَعْطَيْتُهُ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ مِنْ أَوَّلِ خُمُسٍ يَخْرُجُ مِنْ مُشْرِكِي بَنِي ذُهْلٍ عُقْبَةً مِنْ أَخِيهِ ” .
মুজ্জা‘আহ থেকে বর্ণিতঃ
একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে তার ভাইয়ের রক্তমূল্য চাইতে আসেন। যাকে যুহল গোত্রের সাদূস উপগোত্রের লোকেরা হত্যা করেছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি কোন মুশরিকের দিয়্যাত দিলে তোমার ভাইয়ের দিয়্যাত অবশ্যই দিতাম। তবে আমি তোমার জন্য এর বিনিময়ের ব্যবস্থা করছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জন্য একশো উট দেয়ার একটা ফরমান লিখে দেন। যা থেকে সে কিছু উট গ্রহন করে। পরবর্তীতে যুহল গোত্রের মুশরিকরা ইসলাম গ্রহণ করে। অতঃপর আবূ বাক্রের (রাঃ) খিলাফাতকালে মুজ্জা‘আহ তার নিকট অবশিষ্ট উট দাবি করে এবং সাথে রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরমানও নিয়ে আসে। আবূ বকর (রাঃ) ইয়ামেন প্রদেশে ধার্যকৃত সদাক্বাহ থেকে তার জন্য বার হাজার সা’ খাদ্যশস্য প্রদানের নির্দেশ দেন। চার হাজার সা’ আটা, চার হাজার সা’ বার্লি এবং চার হাজার সা’ খেজুর দিয়ে তা পরিশোধ করা হবে। মুজ্জা‘আহকে লিখিত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ফরমানের বিবরণ ছিল এরূপঃ “বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম। এ পত্র নবী মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পক্ষ হতে বনূ সুলমাহ গোত্রের মুজ্জা‘আহ ইবনু মুরারাহর জন্য লিখিত। তার ভাইয়ের রক্তপণের বিনিময়ে আমি তাকে একশো উট দিবো। বনু যুহলের মুশরিকদের কাছ থেকে যে গনীমাত পাওয়া যাবে তার এক-পঞ্চমাংশ হতে সর্বপ্রথম এ দাবি পূরণ করবে।”
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-২১
গনীমাতের মালে সেনাপতির অংশ
২৯৯১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنْ عَامِرٍ الشَّعْبِيِّ، قَالَ كَانَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سَهْمٌ يُدْعَى الصَّفِيَّ إِنْ شَاءَ عَبْدًا وَإِنْ شَاءَ أَمَةً وَإِنْ شَاءَ فَرَسًا يَخْتَارُهُ قَبْلَ الْخُمُسِ .
আমির আশ-শা’বী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য (গনীমাতে) বিশেষ অংশ ছিল। যা সাফী নামে আখ্যায়িত। তিনি ইচ্ছা করলে তা কৃতদাস, বাঁদী, ঘোড়া যাই হোক, গনীমাত থেকে এক-পঞ্চমাংশ পৃথক করার পূর্বেই নিতেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৯২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، وَأَزْهَرُ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ، قَالَ سَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ سَهْمِ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم وَالصَّفِيِّ قَالَ كَانَ يُضْرَبُ لَهُ بِسَهْمٍ مَعَ الْمُسْلِمِينَ وَإِنْ لَمْ يَشْهَدْ وَالصَّفِيُّ يُؤْخَذُ لَهُ رَأْسٌ مِنَ الْخُمُسِ قَبْلَ كُلِّ شَىْءٍ .
ইবনে ‘আওন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মুহাম্মাদকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাধারণ অংশ ও বিশেষ অংশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তিনি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করলেও মুসলিমদের সাথে তাঁকেও একটি অংশ দেয়া হতো। তাঁর বিশেষ অংশ খুমুস বের করার পূর্বেই পৃথক করে রাখা হতো।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৯৩
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ السُّلَمِيُّ، حَدَّثَنَا عُمَرُ، – يَعْنِي ابْنَ عَبْدِ الْوَاحِدِ – عَنْ سَعِيدٍ، – يَعْنِي ابْنَ بَشِيرٍ – عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا غَزَا كَانَ لَهُ سَهْمٌ صَافٍ يَأْخُذُهُ مِنْ حَيْثُ شَاءَهُ فَكَانَتْ صَفِيَّةُ مِنْ ذَلِكَ السَّهْمِ وَكَانَ إِذَا لَمْ يَغْزُ بِنَفْسِهِ ضُرِبَ لَهُ بِسَهْمِهِ وَلَمْ يُخَيَّرْ .
ক্বাতাদাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করলে তাঁর জন্য বিশেষ অংশ নির্ধারিত থাকতো। তিনি যেখান থেকে ইচ্ছা করতেন, সেখান থেকে পছন্দমত গ্রহণ করতেন। সাফিয়্যাহ (রাঃ) এরূপ অংশেই ছিলেন। আর তিনি সশরীরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করলে তাঁর জন্য সাধারণ একটি অংশ থাকতো কিন্ত সেটা তাঁর পছন্দ নির্ভর অংশ ছিলো না।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯৯৪
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَتْ صَفِيَّةُ مِنَ الصَّفِيِّ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাফিয়্যাহ (রাঃ) সাফীর (বিশেষ অংশের) অন্তর্ভুক্ত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৯৫
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي عَمْرٍو، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَدِمْنَا خَيْبَرَ فَلَمَّا فَتَحَ اللَّهُ تَعَالَى الْحِصْنَ ذُكِرَ لَهُ جَمَالُ صَفِيَّةَ بِنْتِ حُيَىٍّ وَقَدْ قُتِلَ زَوْجُهَا وَكَانَتْ عَرُوسًا فَاصْطَفَاهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِنَفْسِهِ فَخَرَجَ بِهَا حَتَّى بَلَغْنَا سُدَّ الصَّهْبَاءِ حَلَّتْ فَبَنَى بِهَا .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা খায়বারে আক্রমন করি। মহান আল্লাহ যখন এ দুর্গ জয় করালেন তখন হুয়াইয়ের কন্যা সাফিয়্যাহর (রাঃ) সৌন্দর্যের কথা রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে বর্ণনা করা হয়। তিনি সদ্য বিবাহিতা ছিলেন এবং তার স্বামী এ যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে নিজের জন্য পছন্দ করলেন। অতঃপর তাকে নিয়ে সেখান থেকে ‘রওয়ানা হলেন। আমরা সাদ্দুস-সাহবা নামক জায়গাতে পৌঁছলে তিনি মাসিক ঋতু থেকে পবিত্র হন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সাথে নির্জনবাস করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৯৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ صَارَتْ صَفِيَّةُ لِدِحْيَةَ الْكَلْبِيِّ ثُمَّ صَارَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাফিয়্যাহ (রাঃ) প্রথমে দিহ্য়া আল-কালবীর (রাঃ) অংশে ছিলেন। অতঃপর তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অধীনে আসেন।
সহীহঃ ইবনু মাজাহ (১৯৫৭)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَلاَّدٍ الْبَاهِلِيُّ، حَدَّثَنَا بَهْزُ بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، أَخْبَرَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ وَقَعَ فِي سَهْمِ دِحْيَةَ جَارِيَةٌ جَمِيلَةٌ فَاشْتَرَاهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِسَبْعَةِ أَرْؤُسٍ ثُمَّ دَفَعَهَا إِلَى أُمِّ سُلَيْمٍ تَصْنَعُهَا وَتُهَيِّئُهَا قَالَ حَمَّادٌ وَأَحْسِبُهُ قَالَ وَتَعْتَدُّ فِي بَيْتِهَا صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَىٍّ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দিহ্য়া আল-কালবীর (রাঃ) অংশে একটি সুন্দরী দাসী পড়ে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে সাতটি গোলামের বিনিময়ে ক্রয় করেন। তিনি তাকে বধূবেশে সাজানোর জন্য উম্মু সুলাইমের (রাঃ) নিকট সোপর্দ করলেন। হাম্মাদ (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয়, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সাফিয়্যাহ বিনতু হুয়াই উম্মু সুলাইমের ঘরে অবস্থান করে ইদ্দাত পূর্ণ করবে।
সহীহ : কিন্তু তার কথা : “আমার মনে হয়,… ” এতে প্রশ্ন রয়েছে। কেননা ইতিপূর্বে গত হয়েছে যে, সাদ্দুস সাহবা নামক জায়গাতে পৌছলে তিনি পবিত্র হন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সাথে নির্জনবাস করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৯৮
حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، ح وَحَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، – الْمَعْنَى – قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ جُمِعَ السَّبْىُ – يَعْنِي بِخَيْبَرَ – فَجَاءَ دِحْيَةُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَعْطِنِي جَارِيَةً مِنَ السَّبْىِ . قَالَ ” اذْهَبْ فَخُذْ جَارِيَةً ” . فَأَخَذَ صَفِيَّةَ بِنْتَ حُيَىٍّ فَجَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَعْطَيْتَ دِحْيَةَ – قَالَ يَعْقُوبُ – صَفِيَّةَ بِنْتَ حُيَىٍّ سَيِّدَةَ قُرَيْظَةَ وَالنَّضِيرِ – ثُمَّ اتَّفَقَا – مَا تَصْلُحُ إِلاَّ لَكَ . قَالَ ” ادْعُوهُ بِهَا ” . فَلَمَّا نَظَرَ إِلَيْهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهُ ” خُذْ جَارِيَةً مِنَ السَّبْىِ غَيْرَهَا ” . وَإِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَعْتَقَهَا وَتَزَوَّجَهَا .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খায়বার যুদ্ধ শেষে বন্দীদেরকে একত্র করা হলে দিহ্য়া আল-কালবী (রাঃ) এসে বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাকে যুদ্ধ বন্দীদের মধ্য হতে একটি বন্দিনী দিন। তিনি বললেনঃ যাও, একটি দাসী নিয়ে যাও। তিনি সাফিয়্যাহ বিনতু হুয়াইকে বেছে নিলেন। অপর এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে এসে বললো, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি সাফিয়্যাহ বিনতু হুয়াইকে দিহ্য়াকে দিলেন। অথচ তিনি কেবল আপনারই উপযুক্ত। কেননা হুয়াই কন্যা বনু কুরাইযাহ ও বনু নাযীর গোত্রের নেতার কন্যা। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সাফিয়্যাহ সহ দিহ্য়াকে ডেকে আনো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাফিয়্যার দিকে তাকিয়ে দিহ্য়াকে বললেনঃ এর বদলে তুমি বন্দীদের মধ্য হতে অন্য কোন দাসী নাও। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে আযাদ করে বিয়ে করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯৯৯
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا قُرَّةُ، قَالَ سَمِعْتُ يَزِيدَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا بِالْمِرْبَدِ فَجَاءَ رَجُلٌ أَشْعَثُ الرَّأْسِ بِيَدِهِ قِطْعَةُ أَدِيمٍ أَحْمَرَ فَقُلْنَا كَأَنَّكَ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ . فَقَالَ أَجَلْ . قُلْنَا نَاوِلْنَا هَذِهِ الْقِطْعَةَ الأَدِيمَ الَّتِي فِي يَدِكَ فَنَاوَلَنَاهَا فَقَرَأْنَاهَا فَإِذَا فِيهَا “ مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللَّهِ إِلَى بَنِي زُهَيْرِ بْنِ أُقَيْشٍ إِنَّكُمْ إِنْ شَهِدْتُمْ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَأَقَمْتُمُ الصَّلاَةَ وَآتَيْتُمُ الزَّكَاةَ وَأَدَّيْتُمُ الْخُمُسَ مِنَ الْمَغْنَمِ وَسَهْمَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَسَهْمَ الصَّفِيِّ أَنْتُمْ آمِنُونَ بِأَمَانِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ ” . فَقُلْنَا مَنْ كَتَبَ لَكَ هَذَا الْكِتَابَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
ইয়াযীদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আল-মিরবাদ নামক জায়গায় ছিলাম। তখন এলোমেলো চুলবিশিষ্ট এক ব্যক্তি এলো, তার হাতে এক টুকরা লাল রংয়ের চামড়া ছিল। আমরা বললাম, তুমি সম্ভবত জংঙ্গলের বাসিন্দা। লোকটি বললো, হাঁ। আমরা বললাম, তোমার হাতের লাল চামড়ার টুকরাটি আমাদেরকে দাও। সে আমাদের তা দিলে আমরা সেটির উপরের লেখাগুলো পাঠ করি। তাতে লেখা ছিল : “মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পক্ষ হতে বনু যুহাইর ইবনু ‘উক্বাইস গোত্রের লোকদের প্রতি। তোমরা যদি এ সাক্ষ্য প্রদান করো, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্র রাসূল, সলাত ক্বায়িম করো, যাকাত দাও এবং গনীমাতের সম্পদ হতে এক-পঞ্চমাংশ দান করো, তা থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অংশ এবং নেতার অংশ (সাফী) আদায় করো, তাহলে তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ হতে নিরাপত্তা পাবে।” আমরা জিজ্ঞেস করি, এ ফরমান তোমার কাছে কে লিখে পাঠিয়েছে? সে বললো, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-২২
মাদীনাহ্ থেকে ইয়াহুদীদের কিভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে
৩০০০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ، أَنَّ الْحَكَمَ بْنَ نَافِعٍ، حَدَّثَهُمْ قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، – وَكَانَ أَحَدَ الثَّلاَثَةِ الَّذِينَ تِيبَ عَلَيْهِمْ – وَكَانَ كَعْبُ بْنُ الأَشْرَفِ يَهْجُو النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَيُحَرِّضُ عَلَيْهِ كُفَّارَ قُرَيْشٍ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَدِمَ الْمَدِينَةَ وَأَهْلُهَا أَخْلاَطٌ مِنْهُمُ الْمُسْلِمُونَ وَالْمُشْرِكُونَ يَعْبُدُونَ الأَوْثَانَ وَالْيَهُودُ وَكَانُوا يُؤْذُونَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابَهُ فَأَمَرَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ نَبِيَّهُ بِالصَّبْرِ وَالْعَفْوِ فَفِيهِمْ أَنْزَلَ اللَّهُ { وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِنْ قَبْلِكُمْ } الآيَةَ فَلَمَّا أَبَى كَعْبُ بْنُ الأَشْرَفِ أَنْ يَنْزِعَ عَنْ أَذَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَعْدَ بْنَ مُعَاذٍ أَنْ يَبْعَثَ رَهْطًا يَقْتُلُونَهُ فَبَعَثَ مُحَمَّدَ بْنَ مَسْلَمَةَ وَذَكَرَ قِصَّةَ قَتْلِهِ فَلَمَّا قَتَلُوهُ فَزِعَتِ الْيَهُودُ وَالْمُشْرِكُونَ فَغَدَوْا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا طُرِقَ صَاحِبُنَا فَقُتِلَ . فَذَكَرَ لَهُمُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الَّذِي كَانَ يَقُولُ وَدَعَاهُمُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَنْ يَكْتُبَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُمْ كِتَابًا يَنْتَهُونَ إِلَى مَا فِيهِ فَكَتَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُ وَبَيْنَهُمْ وَبَيْنَ الْمُسْلِمِينَ عَامَّةً صَحِيفَةً .
‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) ছিলেন ঐ তিনজনের অন্যতম যাদের তওবাহ কবুল হয়। কা’ব ইবনু আশরাফ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিরুদ্ধে কুরাইশ কাফিরদের উত্তেজিত করতো এবং উসকানি দিতো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর পরিবার যখন হিজরাত করে মদিনায় আসেন, তখন সেখানে সব ধরনের লোকেরা বসবাস করতো। তাদের মধ্যে কিছু ছিল মুসলিম, কিছু মূর্তিপূজারী মুশরিক এবং কিছু ইয়াহুদী সম্প্রদায়ভুক্ত। ইয়াহুদীরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীদের কষ্ট দিতো। মহান আল্লাহ্ তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে ধৈর্য ধারণ ও উদারতা প্রদর্শনের নির্দেশ দেন। তাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ আয়াত অবতীর্ণ করেন : “তোমরা আহলে কিতাব ও মুশরিকদের কাছে থেকে বহু কষ্টদায়ক কথা শুনতে পাবে” (সূরাহ আলে ‘ইমরান : ১৮৬)। কা’ব ইবনু আশরাফ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকতে অস্বীকার করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে হত্যা করতে সা’দ ইবনু মু’য়ায (রাঃ) কে একটি দল প্রেরণের নির্দেশ দেন। অতঃপর বর্ণনাকারী তার হত্যার ঘটনা বর্ণনা করেন : কা’ব ইবনু আশরাফকে হত্যা করা হলে ইয়াহুদী ও মুশরিকরা ভীত হয়ে পড়লো। সকালবেলা তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে বললো, রাতের বেলা কিছু লোক আমাদের সাথীর কাছে এসে তাকে হত্যা করেছে। কা’ব ইবনু আশরাফ যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতো তিনি তাদেরকে তা জানান। তারপর ইয়াহুদী ও মুশরিকদেরকে তাদের বিরোধী আচরণ বর্জনের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মধ্যে ও তাদের মধ্যে একটি চুক্তি করতে আহবান জানালেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের, তাদের ও সকল মুসলিমের পক্ষ হতে একটি চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন।
সানাদ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০০১
حَدَّثَنَا مُصَرِّفُ بْنُ عَمْرٍو الأَيَامِيُّ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، – يَعْنِي ابْنَ بُكَيْرٍ – قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي مُحَمَّدٍ، مَوْلَى زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، وَعِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَمَّا أَصَابَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُرَيْشًا يَوْمَ بَدْرٍ وَقَدِمَ الْمَدِينَةَ جَمَعَ الْيَهُودَ فِي سُوقِ بَنِي قَيْنُقَاعَ فَقَالَ ” يَا مَعْشَرَ يَهُودَ أَسْلِمُوا قَبْلَ أَنْ يُصِيبَكُمْ مِثْلُ مَا أَصَابَ قُرَيْشًا ” . قَالُوا يَا مُحَمَّدُ لاَ يَغُرَّنَّكَ مِنْ نَفْسِكَ أَنَّكَ قَتَلْتَ نَفَرًا مِنْ قُرَيْشٍ كَانُوا أَغْمَارًا لاَ يَعْرِفُونَ الْقِتَالَ إِنَّكَ لَوْ قَاتَلْتَنَا لَعَرَفْتَ أَنَّا نَحْنُ النَّاسُ وَأَنَّكَ لَمْ تَلْقَ مِثْلَنَا . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي ذَلِكَ { قُلْ لِلَّذِينَ كَفَرُوا سَتُغْلَبُونَ } قَرَأَ مُصَرِّفٌ إِلَى قَوْلِهِ { فِئَةٌ تُقَاتِلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ } بِبَدْرٍ { وَأُخْرَى كَافِرَةٌ } .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদর যুদ্ধে কুরাইশদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়ে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করে বনূ কাইনুকা গোত্রের বাজারে ইয়াহুদীদের একত্র করে বললেনঃ হে ইয়াহুদীরা! কুরাইশদের অনুরূপ পরিণতির সম্মুখীন হওয়ার আগেই ইসলাম কবুল করো। তারা বললো, হে মুহাম্মাদ! আপনি নিজেই ধোঁকায় পড়বেন না। কারণ আপনি কুরাইশদের এমন এক দলের সাথে যুদ্ধ করেছেন যারা যুদ্ধ ও যুদ্ধকৌশল জানে না। আপনি আমাদের সাথে যুদ্ধ করলে টের পেতেন আমরা কেমন যুদ্ধবাজ! আপনি তো আমাদের মতো লোকের মোকাবিলা করেননি। তখন মহান আল্লাহ্ এই আয়াত অবতীর্ণ করেন : “(হে মুহাম্মাদ)! যারা আপনার দাওয়াত কবুল করতে অস্বীকার করেছে তাদেরকে বলে দিন, অচিরেই তোমরা পরাজিত হবে এবং জাহান্নামে একত্রিত হবে।” (সূরাহ আলে ‘ইমরান : ১২-১৩)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩০০২
حَدَّثَنَا مُصَرِّفُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا يُونُسُ، قَالَ ابْنُ إِسْحَاقَ حَدَّثَنِي مَوْلًى، لِزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ حَدَّثَتْنِي ابْنَةُ مُحَيِّصَةَ، عَنْ أَبِيهَا، مُحَيِّصَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ ظَفِرْتُمْ بِهِ مِنْ رِجَالِ يَهُودَ فَاقْتُلُوهُ ” . فَوَثَبَ مُحَيِّصَةُ عَلَى شَبِيبَةَ رَجُلٍ مِنْ تُجَّارِ يَهُودَ كَانَ يُلاَبِسُهُمْ فَقَتَلَهُ وَكَانَ حُوَيِّصَةُ إِذْ ذَاكَ لَمْ يُسْلِمْ وَكَانَ أَسَنَّ مِنْ مُحَيِّصَةَ فَلَمَّا قَتَلَهُ جَعَلَ حُوَيِّصَةُ يَضْرِبُهُ وَيَقُولُ يَا عَدُوَّ اللَّهِ أَمَا وَاللَّهِ لَرُبَّ شَحْمٍ فِي بَطْنِكَ مِنْ مَالِهِ .
মুহাইয়্যাসাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমরা কোন ইয়াহুদী পুরুষকে নাগালের মধ্যে পেলেই হত্যা করবে। মুহাইয়্যাসাহ (রাঃ) ইয়াহুদী ব্যবসায়ী শুবাইবার উপর ঝাপিয়ে পড়ে তাকে হত্যা করেন। এ সময় মুহাইয়্যাসাহ (রাঃ) ইয়াহুদীদের সাথে একই এলাকায় বসবাস করতেন। তার বড় ভাই হুয়াইআসাহ তখনো মুসলিম হয়নি। তিনি শুবাইবাকে হত্যা করায় হুয়াইআসাহ তাকে প্রহার করতেন আর বলতেন, হে আল্লাহ্র দুশমন, আল্লাহ্র শপথ! তোর পেটের চর্বিতো আমার সম্পদে তৈরি হয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩০০৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ بَيْنَا نَحْنُ فِي الْمَسْجِدِ إِذْ خَرَجَ إِلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” انْطَلِقُوا إِلَى يَهُودَ ” . فَخَرَجْنَا مَعَهُ حَتَّى جِئْنَاهُمْ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَادَاهُمْ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ يَهُودَ أَسْلِمُوا تَسْلَمُوا ” . فَقَالُوا قَدْ بَلَّغْتَ يَا أَبَا الْقَاسِمِ . فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَسْلِمُوا تَسْلَمُوا ” . فَقَالُوا قَدْ بَلَّغْتَ يَا أَبَا الْقَاسِمِ . فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” ذَلِكَ أُرِيدُ ” . ثُمَّ قَالَهَا الثَّالِثَةَ ” اعْلَمُوا أَنَّمَا الأَرْضُ لِلَّهِ وَرَسُولِهِ وَإِنِّي أُرِيدُ أَنْ أُجْلِيَكُمْ مِنْ هَذِهِ الأَرْضِ فَمَنْ وَجَدَ مِنْكُمْ بِمَالِهِ شَيْئًا فَلْيَبِعْهُ وَإِلاَّ فَاعْلَمُوا أَنَّمَا الأَرْضُ لِلَّهِ وَرَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم ” .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা মাসজিদে উপস্থিত ছিলাম, তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে বেরিয়ে এসে বললেনঃ ইয়াহুদীদের এলাকায় চলো। আমরা তাঁর সাথে বের হয়ে সেখানে গিয়ে পৌছলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে তাদেরকে ডেকে বললেনঃ হে ইয়াহুদী সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম কবুল করো শান্তিতে থাকবে। তারা বললো, হে আবুল ক্বাসিম! আপনি পৌছে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বললেনঃ এ দাওয়াত পৌছে দেয়াই আমার উদ্দেশ্য ছিল। তৃতীয় বারও তিনি একই কথার পুনরাবৃত্তি করে বললেনঃ জেনে রাখো! এ ভূখণ্ডের মালিকানা আল্লাহ্ ও তার রাসূলের। আমি তোমাদের এ ভূখণ্ড হতে বিতাড়িত করতে চাই। সুতরাং তোমরা কোন জিনিস বিক্রি করতে সক্ষম হলে বিক্রি করো। অন্যথায় জেনে রাখো! এ ভূখণ্ডের মালিক আল্লাহ্ ও তার রাসূল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ–২৩
বনূ নাযীরের ঘটনা প্রসঙ্গে
৩০০৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ دَاوُدَ بْنِ سُفْيَانَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ رَجُلٍ، مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ كُفَّارَ قُرَيْشٍ كَتَبُوا إِلَى ابْنِ أُبَىٍّ وَمَنْ كَانَ يَعْبُدُ مَعَهُ الأَوْثَانَ مِنَ الأَوْسِ وَالْخَزْرَجِ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَئِذٍ بِالْمَدِينَةِ قَبْلَ وَقْعَةِ بَدْرٍ إِنَّكُمْ آوَيْتُمْ صَاحِبَنَا وَإِنَّا نُقْسِمُ بِاللَّهِ لَتُقَاتِلُنَّهُ أَوْ لَتُخْرِجُنَّهُ أَوْ لَنَسِيرَنَّ إِلَيْكُمْ بِأَجْمَعِنَا حَتَّى نَقْتُلَ مُقَاتِلَتَكُمْ وَنَسْتَبِيحَ نِسَاءَكُمْ . فَلَمَّا بَلَغَ ذَلِكَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أُبَىٍّ وَمَنْ كَانَ مَعَهُ مِنْ عَبَدَةِ الأَوْثَانِ اجْتَمَعُوا لِقِتَالِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا بَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَقِيَهُمْ فَقَالَ ” لَقَدْ بَلَغَ وَعِيدُ قُرَيْشٍ مِنْكُمُ الْمَبَالِغَ مَا كَانَتْ تَكِيدُكُمْ بِأَكْثَرَ مِمَّا تُرِيدُونَ أَنْ تَكِيدُوا بِهِ أَنْفُسَكُمْ تُرِيدُونَ أَنْ تُقَاتِلُوا أَبْنَاءَكُمْ وَإِخْوَانَكُمْ ” . فَلَمَّا سَمِعُوا ذَلِكَ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَفَرَّقُوا فَبَلَغَ ذَلِكَ كُفَّارَ قُرَيْشٍ فَكَتَبَتْ كُفَّارُ قُرَيْشٍ بَعْدَ وَقْعَةِ بَدْرٍ إِلَى الْيَهُودِ إِنَّكُمْ أَهْلُ الْحَلْقَةِ وَالْحُصُونِ وَإِنَّكُمْ لَتُقَاتِلُنَّ صَاحِبَنَا أَوْ لَنَفْعَلَنَّ كَذَا وَكَذَا وَلاَ يَحُولُ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَدَمِ نِسَائِكُمْ شَىْءٌ – وَهِيَ الْخَلاَخِيلُ – فَلَمَّا بَلَغَ كِتَابُهُمُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَجْمَعَتْ بَنُو النَّضِيرِ بِالْغَدْرِ فَأَرْسَلُوا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اخْرُجْ إِلَيْنَا فِي ثَلاَثِينَ رَجُلاً مِنْ أَصْحَابِكَ وَلْيَخْرُجْ مِنَّا ثَلاَثُونَ حَبْرًا حَتَّى نَلْتَقِيَ بِمَكَانِ الْمَنْصَفِ فَيَسْمَعُوا مِنْكَ . فَإِنْ صَدَّقُوكَ وَآمَنُوا بِكَ آمَنَّا بِكَ فَقَصَّ خَبَرَهُمْ فَلَمَّا كَانَ الْغَدُ غَدَا عَلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْكَتَائِبِ فَحَصَرَهُمْ فَقَالَ لَهُمْ ” إِنَّكُمْ وَاللَّهِ لاَ تَأْمَنُونَ عِنْدِي إِلاَّ بِعَهْدٍ تُعَاهِدُونِي عَلَيْهِ ” . فَأَبَوْا أَنْ يُعْطُوهُ عَهْدًا فَقَاتَلَهُمْ يَوْمَهُمْ ذَلِكَ ثُمَّ غَدَا الْغَدُ عَلَى بَنِي قُرَيْظَةَ بِالْكَتَائِبِ وَتَرَكَ بَنِي النَّضِيرِ وَدَعَاهُمْ إِلَى أَنْ يُعَاهِدُوهُ فَعَاهَدُوهُ فَانْصَرَفَ عَنْهُمْ وَغَدَا عَلَى بَنِي النَّضِيرِ بِالْكَتَائِبِ فَقَاتَلَهُمْ حَتَّى نَزَلُوا عَلَى الْجَلاَءِ فَجَلَتْ بَنُو النَّضِيرِ وَاحْتَمَلُوا مَا أَقَلَّتِ الإِبِلُ مِنْ أَمْتِعَتِهِمْ وَأَبْوَابِ بُيُوتِهِمْ وَخَشَبِهَا فَكَانَ نَخْلُ بَنِي النَّضِيرِ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَاصَّةً أَعْطَاهُ اللَّهُ إِيَّاهَا وَخَصَّهُ بِهَا فَقَالَ { وَمَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْهُمْ فَمَا أَوْجَفْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ خَيْلٍ وَلاَ رِكَابٍ } يَقُولُ بِغَيْرِ قِتَالٍ فَأَعْطَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَكْثَرَهَا لِلْمُهَاجِرِينَ وَقَسَمَهَا بَيْنَهُمْ وَقَسَمَ مِنْهَا لِرَجُلَيْنِ مِنَ الأَنْصَارِ وَكَانَا ذَوِي حَاجَةٍ لَمْ يَقْسِمْ لأَحَدٍ مِنَ الأَنْصَارِ غَيْرَهُمَا وَبَقِيَ مِنْهَا صَدَقَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الَّتِي فِي أَيْدِي بَنِي فَاطِمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا .
‘আবদুর রহমান ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রহঃ) হতে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জনৈক সাহাবীর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
কুরাইশ কাফিররা ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই এবং তার মূর্তিপূজক সহযোগী আওস ও খাযরাজ গোত্রের লোকদের প্রতি পত্র প্রেরণ করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন মদিনায় ছিলেন। এটি বদর যুদ্ধের পূর্বের ঘটনা। (চিঠিতে লিখা ছিল) : “আমাদের এক ব্যক্তিকে (নাবী) তোমরা আশ্রয় দিয়েছ। আমরা আল্লাহ্র শপথ করে বলছি, তোমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরো বা বহিষ্কার করো। অন্যথায় আমরা সম্মিলিতভাবে তোমাদেরকে আক্রমণ করবো, তোমাদের যুদ্ধবাজ লোকদের হত্যা করবো এবং তোমাদের নারীদেরকে বন্দী করবো।” চিঠিটি ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ও তার মূর্তিপূজক সঙ্গীদের নিকট পৌছলে তারা রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য ঐক্যবদ্ধ হলো। এ সংবাদ পেয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সাথে সাক্ষাত করে বললেনঃ তোমাদের কাছে কুরাইশদের চরমপত্র এসেছে। আসলে তারা তোমাদের ততটা ক্ষতি করতে পারবে না – যতটা ক্ষতি তোমরা নিজেরা নিজেদের জন্য ডেকে আনবে। কেননা তোমরা নিজেদের ভাই-বন্ধু ও সন্তানদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চাইছো। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এ কথা শুনে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লো। এ কথা কুরাইশ কাফিরদের নিকট পৌছলে বদর যুদ্ধের পর কুরাইশ কাফিররা ইয়াহুদীদের প্রতি লিখলো : তোমরা অস্ত্রে সুসজ্জিত ও দুর্গের অধিকারী ব্যক্তি। তোমরা আমাদের সাথীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, নতুবা আমরা এই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। তখন আমাদের ও তোমাদের নারীদের দাসী বানানোর মাঝে কোন প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। ইয়াহুদীদেরকে লেখা এ পত্রের কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবহিত হলেন। বনূ নাযীর গোত্রের লোকেরা বিশ্বাসঘাতকতা করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লোক পাঠিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললো, আপনি আপনার তিরিশজন সাহাবীকে সাথে নিয়ে বের হন এবং আমরাও আমাদের তিরিশজন আলিম সাথে নিয়ে বের হই। আমরা উভয়ের মধ্যবর্তী স্থানে মিলিত হবো। তারা আপনার (ধর্মের) কথা শুনবে। তারা আপনার কথা শুনে আপনার প্রতি ঈমান আনলে আমরাও আপনার প্রতি ঈমান আনবো।
তিনি সাহাবীদেরকে তাদের এ প্রস্তাবের কথা জানালেন। পরের দিন সকালে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদল সৈন্যসহ তাদের নিকট গিয়ে তাদেরকে অবরোধ করে বললেনঃ আল্লাহ্র শপথ! তোমরা আমার সাথে চুক্তিবদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমি তোমাদের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হবো না। কিন্তু তারা চুক্তিবদ্ধ হতে রাজি না হওয়ায় সেদিনই তিনি তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেন। পরের দিন তিনি সৈন্যবাহিনী নিয়ে বনূ নাযীরকে ছেড়ে বনূ কুরাইয়াকে অবরোধ করে তাদেরকে সন্ধির জন্য আহবান করেন। তারা তাঁর সাথে চুক্তিবদ্ধ হলো। অতঃপর সেখান থেকে ফিরে পরের দিন তিনি সৈন্যবাহিনী নিয়ে বনূ নাযীরের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলেন। তারা দেশত্যাগ করতে সম্মত হয়ে দেশত্যাগ করে। তাদের উটের পিঠে ঘরের দরজা, চৌকাঠ ইত্যাদি যতটা মালামাল নেয়া সম্ভব নিলো।
বনূ নাযীরের বাগান রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মালিকানায় এলো। আল্লাহ্ তাঁকে বিশেষভাবে এ বাগানটি দান করলেন এবং শুধু তাঁর জন্যই নির্দিষ্ট করলেন। মহান আল্লাহ্ তা’আলা : “আল্লাহ্ যে সম্পদ তাদের দখল থেকে বের করে তাঁর রাসূলকে ফিরিয়ে দিয়েছেন, তার জন্য তোমরা ঘোড়া বা উট হাঁকাওনি” (সূরাহ আল-হাশর : ৬)
এ সম্পদ বিনা যুদ্ধে অর্জিত হয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ সম্পদের অধিকাংশই মুহাজিরদের মধ্যে বন্টন করে দিলেন। দু’জন অভাবী আনসারকেও তিনি এর অংশ দিলেন, তবে অন্য আনসারদের এর অংশ দেননি। সম্পত্তির বাকী অংশ রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সদাক্বাহর খাতে অন্তর্ভুক্ত করেন। এ অংশ ফাত্বিমাহ্র (রাঃ) বংশধরদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
সানাদ সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০০৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ فَارِسٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ يَهُودَ بَنِي النَّضِيرِ، وَقُرَيْظَةَ، حَارَبُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَجْلَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَنِي النَّضِيرِ وَأَقَرَّ قُرَيْظَةَ وَمَنَّ عَلَيْهِمْ حَتَّى حَارَبَتْ قُرَيْظَةُ بَعْدَ ذَلِكَ فَقَتَلَ رِجَالَهُمْ وَقَسَمَ نِسَاءَهُمْ وَأَوْلاَدَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ إِلاَّ بَعْضَهُمْ لَحِقُوا بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَمَّنَهُمْ وَأَسْلَمُوا وَأَجْلَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَهُودَ الْمَدِينَةِ كُلَّهُمْ بَنِي قَيْنُقَاعَ وَهُمْ قَوْمُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ وَيَهُودَ بَنِي حَارِثَةَ وَكُلَّ يَهُودِيٍّ كَانَ بِالْمَدِينَةِ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বনূ কুরাইযা ও বনূ নাযীর ইয়াহুদী গোত্রদ্বয় রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বনূ নাযীরকে উচ্ছেদ করলেন এবং বনূ কুরাইযার প্রতি অনুগ্রহ করে তাদেরকে উচ্ছেদ করেননি। অতঃপর বনূ কুরাইযা সংঘর্ষে অবতীর্ণ হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে হত্যা করলেন এবং তাদের স্ত্রীলোক, সন্তানাদি ও সম্পদ মুসলিমদের মাঝে বন্টন করলেন। কিন্তু তাদের কিছু লোক রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে মিলিত হলে তিনি তাদেরকে নিরাপত্তা দিলেন এবং তারা ইসলাম কবুল করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদিনায় বসবাসকারী সমস্ত ইয়াহুদী গোত্রকে উচ্ছেদ করলেন। যেমন মদিনায় বসবাসকারী অন্যান্য ইয়াহুদীদেরকে তিনি মাদীনাহ্ থেকে বিতাড়িত করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস