১. অনুচ্ছেদঃ
মু’মিন ব্যক্তির স্বপ্ন নাবূয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ
২২৭০
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا اقْتَرَبَ الزَّمَانُ لَمْ تَكَدْ رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ تَكْذِبُ وَأَصْدَقُهُمْ رُؤْيَا أَصْدَقُهُمْ حَدِيثًا وَرُؤْيَا الْمُسْلِمِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَالرُّؤْيَا ثَلاَثٌ فَالرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ بُشْرَى مِنَ اللَّهِ وَالرُّؤْيَا مِنْ تَحْزِينِ الشَّيْطَانِ وَالرُّؤْيَا مِمَّا يُحَدِّثُ بِهَا الرَّجُلُ نَفْسَهُ فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُمْ وَلْيَتْفُلْ وَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا النَّاسَ قَالَ وَأُحِبُّ الْقَيْدَ فِي النَّوْمِ وَأَكْرَهُ الْغُلَّ الْقَيْدُ ثَبَاتٌ فِي الدِّينِ ” . قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাত নিকটবর্তী সময়ে মু’মিনদের স্বপ্ন খুব কমই মিথ্যা হবে। তাদের মধ্যে বেশি সত্যবাদীর স্বপ্নও তদনুরূপ সত্য হবে। মু’মিনের স্বপ্ন হলো নাবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ। আর স্বপ্ন তিন প্রকারঃ (১) ভাল স্বপ্ন হলো আল্লাহ্ তা’আলার নিকট হতে সুসংবাদস্বরূপ। (২) আরেক প্রকার স্বপ্ন হলো শাইতানের নিকট হতে মু’মিনের জন্য দুশ্চিন্তাস্বরূপ। (৩) আরেক প্রকার স্বপ্ন হলো মানুষের মনের চিন্তা-ভাবনা (সে যা চিন্তা করে তা-ই স্বপ্নে দেখে)। অতএব, তোমাদের কেউ যদি অপছন্দনীয় স্বপ্ন দেখে তাহলে সে যেন উঠে যায় এবং (বাম দিকে) থুথু ফেলে এবং তা লোকের নিকট না বলে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি স্বপ্নে (পায়ে) শৃঙ্খল দেখা পছন্দ করি; কিন্তু (গলদেশে) শৃঙ্খল দেখা অপছন্দ করি। (পায়ে) শিকলের তাৎপর্য হলো ধর্মের উপর স্থিতিশীল।
সহীহ্ঃ বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৭১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسًا، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي رَزِينٍ الْعُقَيْلِيِّ وَأَبِي سَعِيدٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَعَوْفِ بْنِ مَالِكٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَنَسٍ . قَالَ وَحَدِيثُ عُبَادَةَ حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিন ব্যক্তির স্বপ্ন হলো নাবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা, আবূ রাযীন আল-উকাইলী, আবূ সাঈদ, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, আওফ ইবনু মালিক, ইবনু উমার ও আনাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। উবাদা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২. অনুচ্ছেদঃ
নাবূওয়াতের ধারা সমাপ্ত হয়ে গেছে এবং সুসংবাদ প্রদানের ধারা অব্যাহত আছে
২২৭২
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ يَعْنِي ابْنَ زِيَادٍ، حَدَّثَنَا الْمُخْتَارُ بْنُ فُلْفُلٍ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ الرِّسَالَةَ وَالنُّبُوَّةَ قَدِ انْقَطَعَتْ فَلاَ رَسُولَ بَعْدِي وَلاَ نَبِيَّ ” . قَالَ فَشَقَّ ذَلِكَ عَلَى النَّاسِ فَقَالَ ” لَكِنِ الْمُبَشِّرَاتُ ” . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا الْمُبَشِّرَاتُ قَالَ ” رُؤْيَا الْمُسْلِمِ وَهِيَ جُزْءٌ مِنْ أَجْزَاءِ النُّبُوَّةِ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَحُذَيْفَةَ بْنِ أَسِيدٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأُمِّ كُرْزٍ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রিসালাত ও নাবূওয়াতের ধারাবাহিকতা অবশ্যই সমাপ্ত হয়ে গেছে। অতএব, আমার পরে আর কোন রাসূলও প্রেরিত হবে না এবং নাবীও আসবে না। বর্ণনাকারী বলেন, বিষয়টি জনগণের নিকট কঠিন মনে হলো। তারপর তিনি বললেনঃ তবে মুবাশশিরাত অব্যাহত থাকবে। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! মুবাশশিরাত কি? তিনি বললেন, মুসলমানের স্বপ্ন। আর তা নাবূওয়াতের অংশসমূহের একটি অংশ।
সনদ সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা, হুযাইফা ইবনু আসীদ, ইবনু আব্বাস উম্মু কুরয ও আবূ আসীদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সিহীহ, তবে এ সূত্রে মূখতার ইবনু ফুলফুলের রিওয়ায়াত হিসাবে গরিব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ পার্থিব জীবনে তাদের জন্য আছে সুসংবাদ
২২৭৩
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ رَجُلٍ، مِنْ أَهْلِ مِصْرَ قَالَ سَأَلْتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ عَنْ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: (لَهُمُ الْبُشْرَى فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ) فَقَالَ مَا سَأَلَنِي عَنْهَا أَحَدٌ غَيْرَكَ إِلاَّ رَجُلٌ وَاحِدٌ مُنْذُ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” مَا سَأَلَنِي عَنْهَا أَحَدٌ غَيْرَكَ مُنْذُ أُنْزِلَتْ هِيَ الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ يَرَاهَا الْمُسْلِمُ أَوْ تُرَى لَهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
জনৈক মিসরীয় ব্যাক্তি থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবুদ দারদা (রাঃ) কে আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ “দুনিয়াবী জীবনে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ” (সূরাঃ ইউনুস-৬৪) প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করার পর হতে আজ পর্যন্ত তুমি ও অপর এক ব্যক্তি ব্যতীত আর কেউ আমাকে প্রশ্ন করেনি। আমি এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেনঃ এই আয়াত নাযিলের পর হতে আজ পর্যন্ত আমাকে তুমি ব্যতীত আর কোন ব্যক্তি এ বিষয়ে প্রশ্ন করেনি। আর তা (বুশরা) হল সত্য স্বপ্ন যা মুসলিম ব্যক্তি দেখে বা তাঁকে দেখানো হয়।
সহীহ, সহীহাহ্ (১৭৮৬), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৭৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ دَرَّاجٍ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم “ أَصْدَقُ الرُّؤْيَا بِالأَسْحَارِ ”
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ভোর রাতের স্বপ্নই বেশী সত্য হয়।
যঈফ, যঈফা (১৭৩২)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২২৭৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا حَرْبُ بْنُ شَدَّادٍ، وَعِمْرَانُ الْقَطَّانُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ نُبِّئْتُ عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ قَوْلِهِ (لَهُمُ الْبُشْرَى فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ) قَالَ ” هِيَ الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ يَرَاهَا الْمُؤْمِنُ أَوْ تُرَى لَهُ ” . قَالَ حَرْبٌ فِي حَدِيثِهِ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ “দুনিয়াবী জীবনে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ” প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেনঃ তা হলো সৎ স্বপ্ন, যা মু’মিন ব্যক্তি দেখে বা তাঁকে দেখানো হয়।
সহীহ, সহীহাহ্ (১৭৮৬)।
বর্ণনাকারী হারব তার সনদ সূত্রে এভাবে বলেছেনঃ ইয়াহইয়া ইবনু কাসীর আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র বাণী, যে ব্যক্তি স্বপ্নে আমাকে দেখেছে সে আমাকেই দেখেছে।
২২৭৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ رَآنِي فِي الْمَنَامِ فَقَدْ رَآنِي فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لاَ يَتَمَثَّلُ بِي ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي قَتَادَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَجَابِرٍ وَأَنَسٍ وَأَبِي مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ عَنْ أَبِيهِ وَأَبِي بَكْرَةَ وَأَبِي جُحَيْفَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি স্বপ্নের মধ্যে আমাকে দেখতে পেয়েছে সে আমাকেই দেখতে পেয়েছে। কেননা, শাইতান আমার রূপ (সাদৃশ্য) ধারণ করতে পারে না।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯০০)।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা, আবূ কাতাদা, ইবনু আব্বাস, আবূ সাঈদ, জাবির, আনাস, আবূ মালিক আল-আশজাঈ তার পিতার সূত্রে, আবূ বাকরা ও আবূ জুহাইফা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫. অনুচ্ছেদঃ
কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখলে তার করণীয়
২২৭৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُهُ فَلْيَنْفُثْ عَنْ يَسَارِهِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَبِي سَعِيدٍ وَجَابِرٍ وَأَنَسٍ . قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আসে আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ হতে এবং মন্দ স্বপ্ন আসে শাইতানের পক্ষ হতে। কাজেই কেউ যদি স্বপ্নে অপছন্দীয় কিছু দেখতে পায় তাহলে সে যেন তার বামদিকে তিনবার থুথু ফেলে এবং এর অকল্যাণ হতে আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে। তাহলে তাতে তার কোন ক্ষতি হবে না।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনু আমর, আবূ সাঈদ, জাবির ও আনাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬. অনুচ্ছেদঃ
স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে
২২৭৮
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي يَعْلَى بْنُ عَطَاءٍ، قَالَ سَمِعْتُ وَكِيعَ بْنَ عُدُسٍ، عَنْ أَبِي رَزِينٍ الْعُقَيْلِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ أَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَهِيَ عَلَى رِجْلِ طَائِرٍ مَا لَمْ يَتَحَدَّثْ بِهَا فَإِذَا تَحَدَّثَ بِهَا سَقَطَتْ ” . قَالَ وَأَحْسَبُهُ قَالَ ” وَلاَ يُحَدِّثُ بِهَا إِلاَّ لَبِيبًا أَوْ حَبِيبًا ” .
আবূ রাযীন আল-উকাইলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নাবূওয়াতের চল্লিশ ভাগের একভাগ। স্বপ্নের ব্যাপারে যে পর্যন্ত আলোচনা করা না হয় সে পর্যন্ত এটা পাখির পায়ে (ঝুলে) থাকা জিনিসের মতো। আলোচনা করার সাথে সাথে তা যেন পা হতে পড়ে গেল। বর্ণনাকারী বলেন, আমার মনে হয়, তিনি এ কথাটুকুও বলেছেনঃ আর স্বপ্ন দ্রষ্টা ব্যক্তি যেন জ্ঞানী ব্যক্তি অথবা পছন্দীয় ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারো নিকট স্বপ্নের ব্যাপারে আলোচনা না করে।
সহীহ, সহীহাহ্ (১২০), মিশকাত তাহকীক ছানী (৪৬২২)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৭৯
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ وَكِيعِ بْنِ عُدُسٍ، عَنْ عَمِّهِ أَبِي رَزِينٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ رُؤْيَا الْمُسْلِمِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَهِيَ عَلَى رِجْلِ طَائِرٍ مَا لَمْ يُحَدِّثْ بِهَا فَإِذَا حَدَّثَ بِهَا وَقَعَتْ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو رَزِينٍ الْعُقَيْلِيُّ اسْمُهُ لَقِيطُ بْنُ عَامِرٍ . وَرَوَى حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ فَقَالَ عَنْ وَكِيعِ بْنِ حُدُسٍ وَقَالَ شُعْبَةُ وَأَبُو عَوَانَةَ وَهُشَيْمٌ عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ عَنْ وَكِيعِ بْنِ عُدُسٍ وَهَذَا أَصَحُّ .
আবূ রাযীন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলমানের স্বপ্ন নাবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ। স্বপ্নদ্রষ্টা এ প্রসঙ্গে (কারো সাথে) আলোচনা না করা পর্যন্ত তা পাখির পায়ে ঝুলন্ত জিনিসের অনুরূপ। আর যখনই সে এটা আলোচনা করে তখনই তা ছিটকে পড়ে যায়।
সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূ রাযীন আল-উকাইলী (রাঃ)-এর নাম লাকীত ইবনু আমির। এ হাদীসটি ইয়ালা ইবনু আতার সূত্রে হাম্মাদ ইবনু সালামা বর্ণনা করতে গিয়ে ওয়াকীর বাবার নাম ‘হুদুস’ উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ইয়ালা ইবনু আতার সূত্রে শুবা, আবূ আওয়ানা ও দুশাইম (রাহঃ) বর্ণনা করতে গিয়ে তার বাবার নাম “উদুস” উল্লেখ করেছেন এবং এটিই অনেক বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭. অনুচ্ছেদঃ
পছন্দনীয় ও অপছন্দনীয় স্বপ্ন প্রসঙ্গে
২২৮০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ أَبِي عُبَيْدِ اللَّهِ السَّلِيمِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” الرُّؤْيَا ثَلاَثٌ فَرُؤْيَا حَقٌّ وَرُؤْيَا يُحَدِّثُ بِهَا الرَّجُلُ نَفْسَهُ وَرُؤْيَا تَحْزِينٌ مِنَ الشَّيْطَانِ فَمَنْ رَأَى مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ ” . وَكَانَ يَقُولُ ” يُعْجِبُنِي الْقَيْدُ وَأَكْرَهُ الْغُلَّ الْقَيْدُ ثَبَاتٌ فِي الدِّينِ ” . وَكَانَ يَقُولُ ” مَنْ رَآنِي فَإِنِّي أَنَا هُوَ فَإِنَّهُ لَيْسَ لِلشَّيْطَانِ أَنْ يَتَمَثَّلَ بِي ” . وَكَانَ يَقُولُ ” لاَ تُقَصُّ الرُّؤْيَا إِلاَّ عَلَى عَالِمٍ أَوْ نَاصِحٍ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَأَبِي بَكْرَةَ وَأُمِّ الْعَلاَءِ وَابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ وَأَبِي مُوسَى وَجَابِرٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ স্বপ্ন তিন প্রকারঃ (১) সত্য স্বপ্ন, (২) বান্দার মনের চিন্ত-ভাবনা (যা চিন্তা করে তাই স্বপ্নে দেখে) ও (৩) শাইতানের পক্ষ হতে ভীতি প্রদর্শনমূলক কিছু। অতএব, কেউ যদি অপছন্দনীয় কোন কিছু স্বপ্নে দেখে তাহলে সে যেন ঘুম হতে জেগে নামায আদায় করে। আর তিনি বলতেন, স্বপ্নে (পায়ে) শৃংখল দেখা আমার পছন্দনীয় এবং (গলায়) শৃংখল দেখা অপছন্দনীয়। (পায়ে) শৃংখলের ভাবার্থ হচ্ছে দ্বীনের উপর সুদৃঢ় থাকার ইঙ্গিত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলতেনঃ যে আমাকে স্বপ্নে দেখলো তা সত্যিই আমি। কেননা, শাইতান আমার রূপ (সাদৃশ্য) ধারণ করতে পারে না। তিনি আরো বলতেনঃ জ্ঞানী ব্যক্তি অথবা শুভাকাংখী ব্যক্তি ব্যতীত আর কোন ব্যক্তির কাছে স্বপ্নের কথা প্রকাশ করবে না।
সহীহ, সহীহাহ্ (১১৯, ১২০, ১৩৪১), রাওযুন নাযীর (১১৬২)।
আবূ ঈসা বলেন, আনাস, আবূ বাকরা, উম্মুল আলা, ইবনু উমার, আইশা, আবূ মূসা, জাবির, আবূ সাঈদ, ইবনু আব্বাস ও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও এ অনুছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮. অনুচ্ছেদঃ
কেউ যদি মনগড়া (মিথ্যা) স্বপ্ন বলে
২২৮১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ أُرَاهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ كَذَبَ فِي حُلْمِهِ كُلِّفَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَقْدَ شَعِيرَةٍ ” .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আমি বর্ণনা করছি যে, তিনি বলেছেনঃ মনগড়া (মিথ্যা) স্বপ্ন বর্ণনাকারীকে কিয়ামতের দিন যবের দানায় গিঁট লাগাতে বাধ্য করা হবে।
সহীহ, সহীহাহ্ (২৩৫৯)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৮২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنِ عَلِيٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي شُرَيْحٍ وَوَاثِلَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا أَصَحُّ مِنَ الْحَدِيثِ الأَوَّلِ .
উপরোল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ কুতাইবা–আবূ আওয়ানা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আবদুল আলা হতে, তিনি আবূ আবদুর রাহমান আস-সুলামী হতে, তিনি আলী (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি হাসান। ইবনু আব্বাস, আবূ হুরাইরা, আবূ শুরাইহ ও ওয়াসিলা ইবনুল আসকা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদ হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা বলেন, পূর্বোক্ত হাদীসের সনদসূত্রের চেয়ে এই সনদসূত্রটি অনেক বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২২৮৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ تَحَلَّمَ كَاذِبًا كُلِّفَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَنْ يَعْقِدَ بَيْنَ شَعِيرَتَيْنِ وَلَنْ يَعْقِدَ بَيْنَهُمَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মনগড়া (মিথ্যা) স্বপ্ন বর্ণনাকারীকে কিয়ামাতের দিন দুটি যবের দানায় গিঁট লাগাতে বাধ্য করা হবে; আর সে তাতে গিঁট লাগাতে সক্ষম হবে না।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯১৬), বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯. অনুচ্ছেদঃ
স্বপ্নে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র দুধপান ও জামা দর্শন
২২৮৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” بَيْنَمَا أَنَا نَائِمٌ إِذْ أُتِيتُ بِقَدَحِ لَبَنٍ فَشَرِبْتُ مِنْهُ ثُمَّ أَعْطَيْتُ فَضْلِي عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ” . قَالُوا فَمَا أَوَّلْتَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” الْعِلْمَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي بَكْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ وَخُزَيْمَةَ وَالطُّفَيْلِ بْنِ سَخْبَرَةَ وَسَمُرَةَ وَأَبِي أُمَامَةَ وَجَابِرٍ . قَالَ حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ কোন এক সময় আমি ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলাম, এ সময় আমার সামনে এক পেয়ালা দুধ নিয়ে আসা হলো। আমি তা হতে পান করলাম এবং বাকী টুকু উমার ইবনুল খাত্তাবকে দিলাম। লোকেরা প্রশ্ন করল, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি এর কি তাবীর (ব্যাখ্যা) করেন? তিনি বললেনঃ জ্ঞান।
সহীহ, তা’লীকাত আল-হাস্সান (৬৮১৫, ৬৮৩৯), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা, আবূ বাক্রা, ইবনু আব্বাস, আবদুল্লাহ ইবনু সালাম, খুযাইমা, তুফাইল ইবনু সাখবারা, আবূ উমামা ও জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু উমার (রাঃ)-এর বর্নিত হাদীসটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৮৫
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُرَيْرِيُّ الْبَلْخِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، عَنْ بَعْضِ، أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” بَيْنَمَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُ النَّاسَ يُعْرَضُونَ عَلَىَّ وَعَلَيْهِمْ قُمُصٌ مِنْهَا مَا يَبْلُغُ الثُّدِيَّ وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ أَسْفَلَ مِنْ ذَلِكَ فَعُرِضَ عَلَىَّ عُمَرُ وَعَلَيْهِ قَمِيصٌ يَجُرُّهُ ” . قَالُوا فَمَا أَوَّلْتَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” الدِّينَ ” .
আবূ উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-র জনৈক সাহাবীর সূত্রে বর্ণিত আছে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন একদিন আমি ঘুমন্ত অবস্থায় (স্বপ্নে) দেখতে পাই যে, জামা পরিহিত লোকদেরকে আমার সামনে হাযির করা হচ্ছে। তাদের কারো জামা বুক পর্যন্ত এবং কারো জামা তার নীচে পর্যন্ত। তখন উমারকে আমার সামনে হাযির করা হলো এবং তার পরনে ছিলো লম্বা পোশাক, যা সে হেঁচড়িয়ে চলছিল। লোকেরা প্রশ্ন করল, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি এর কি তাবীর (ব্যাখ্যা) করেন? তিনি বললেনঃ এর দ্বারা দ্বীন বুঝানো হয়েছে।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৮৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ بْنِ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ . قَالَ وَهَذَا أَصَحُّ .
পূর্বোক্ত হাদীসের মতো হাদীস আব্দ ইবনু হুমাইদ-ইয়াকূব ইবনু ইবরাহীম ইবনু সা’দ থেকে বর্ণিতঃ
পূর্বোক্ত হাদীসের মতো হাদীস আব্দ ইবনু হুমাইদ-ইয়াকূব ইবনু ইবরাহীম ইবনু সা’দ হতে, তিনি তার বাবা হতে, তিনি সালিহ ইবনু কাইসান হতে, তিনি যুহ্রী হতে, তিনি আবূ উমামা হতে, তিনি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন এবং এই সনদসূত্রটি অনেক বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০. অনুচ্ছেদঃ
স্বপ্নে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দাঁড়িপাল্লা ও বালতি দর্শন
২২৮৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا أَشْعَثُ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ذَاتَ يَوْمٍ “ مَنْ رَأَى مِنْكُمْ رُؤْيَا ” . فَقَالَ رَجُلٌ أَنَا رَأَيْتُ كَأَنَّ مِيزَانًا نَزَلَ مِنَ السَّمَاءِ فَوُزِنْتَ أَنْتَ وَأَبُو بَكْرٍ فَرَجَحْتَ أَنْتَ بِأَبِي بَكْرٍ وَوُزِنَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ فَرَجَحَ أَبُو بَكْرٍ وَوُزِنَ عُمَرُ وَعُثْمَانُ فَرَجَحَ عُمَرُ ثُمَّ رُفِعَ الْمِيزَانُ . فَرَأَيْنَا الْكَرَاهِيَةَ فِي وَجْهِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ বাকর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন একদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশ্ন করলেন, তোমাদের মধ্যে কে স্বপ্ন দেখেছে? জনৈক ব্যক্তি বলল, আমি স্বপ্নে দেখি যে, আকাশ হতে একটি দাঁড়িপাল্লা নেমে এলো। তারপর আপনাকে ও আবূ বাকরকে ওজন করা হলো। আবূ বাকরের চেয়ে আপনার ওজন ভারী হলো। তারপর আবূ বাকর ও উমারকে ওজন দেয়া হলো এবং তাতে আবূ বাকরের ওজন বেশি হলো। তারপর উমার ও উসমানকে ওজন দেয়া হলো এবং তাতে উমারের ওজন বেশি হলো। তারপর দাঁড়িপাল্লা উঠিয়ে নেয়া হলো। এমন সময় আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চেহারায় অসন্তুষ্টির ভাব লক্ষ্য করলাম।
সহীহ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৬০৫৭)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৮৮
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنِي عُثْمَانُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ وَرَقَةَ فَقَالَتْ لَهُ خَدِيجَةُ إِنَّهُ كَانَ صَدَّقَكَ وَلَكِنَّهُ مَاتَ قَبْلَ أَنْ تَظْهَرَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أُرِيتُهُ فِي الْمَنَامِ وَعَلَيْهِ ثِيَابٌ بَيَاضٌ وَلَوْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَكَانَ عَلَيْهِ لِبَاسٌ غَيْرُ ذَلِكَ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَعُثْمَانُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ لَيْسَ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ بِالْقَوِيِّ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ওয়ারাকা ইবনু নাওফল প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয় (তিনি কি জন্নাতী না জাহান্নামী)। খাদিজা (রাঃ) তাঁকে বলেন, তিনি তো আপনাকে সত্য বলে সমর্থন করেছিলেন এবং আপনার নবুওয়াত প্রকাশের পূর্বেই মারা যান। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমি তাকে সাদা পোশাক পরে থাকা অবস্থায় স্বপ্নে দেখেছি। তিনি জাহান্নামী হলে তার পরিধানে অন্য রংয়ের পোশাক থাকত।
যঈফ, মিশকাত (৪৬২৩), আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আর হাদীস বিশারদদের মতে উসমান ইবনু আবদুর রহমান খুব একটা মজবুত রাবী নন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২২৮৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ رُؤْيَا النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ قَالَ “ رَأَيْتُ النَّاسَ اجْتَمَعُوا فَنَزَعَ أَبُو بَكْرٍ ذَنُوبًا أَوْ ذَنُوبَيْنِ فِيهِ ضَعْفٌ وَاللَّهُ يَغْفِرُ لَهُ ثُمَّ قَامَ عُمَرُ فَنَزَعَ فَاسْتَحَالَتْ غَرْبًا فَلَمْ أَرَ عَبْقَرِيًّا يَفْرِي فَرِيَّهُ حَتَّى ضَرَبَ النَّاسُ بِعَطَنٍ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . وَهَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عُمَرَ .
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বকর (রাঃ) ও উমার (রাঃ) এর সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্বপ্ন দেখা প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আমি জনগণকে সমবেত হতে দেখলাম। আবূ বাকর এক বালতি কি দুই বালতি পানি তুললো। তার মধ্যে সামান্য দুর্বলতা ছিল। আল্লাহ্ তা’আলা তাকে ক্ষমা করুন। তারপর উমার দাঁড়ালো এবং পানি তুলতে লাগল। বালতিটি বেশ বিরাট আকার ধারণ করল। তার মতো করে কোন শক্তিশালী ব্যক্তিকে আমি কাজ করতে দেখিনি। আর সে এত পানি তুললো যে, লোকেরা তাদের উটের পানির চৌবাচ্চা পূর্ণ করে নিল।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি সহীহ্, তবে ইবনু উমার (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৯০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ رُؤْيَا النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم قَالَ “ رَأَيْتُ امْرَأَةً سَوْدَاءَ ثَائِرَةَ الرَّأْسِ خَرَجَتْ مِنَ الْمَدِينَةِ حَتَّى قَامَتْ بِمَهْيَعَةَ وَهِيَ الْجُحْفَةُ وَأَوَّلْتُهَا وَبَاءَ الْمَدِينَةِ يُنْقَلُ إِلَى الْجُحْفَةِ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্বপ্ন দর্শন প্রসঙ্গে তিনি বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ আমি এলোমেলো চুল ওয়ালা এক কালো মহিলাকে মাদীনা হতে বের হয়ে মাহ্ইয়াআহ-তে গিয়ে দাঁড়াতে দেখেছি। মাহ্ইয়াআহ হলো জুহ্ফা। তারপর আমি এর ব্যাখ্যা করেছি যে, মাদীনার মহামারী জুহ্ফাতে স্থানান্তরিত হলো।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯২৪), বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্ গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৯১
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” فِي آخِرِ الزَّمَانِ لاَ تَكَادُ رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ تَكْذِبُ وَأَصْدَقُهُمْ رُؤْيَا أَصْدَقُهُمْ حَدِيثًا وَالرُّؤْيَا ثَلاَثٌ الْحَسَنَةُ بُشْرَى مِنَ اللَّهِ وَالرُّؤْيَا يُحَدِّثُ الرَّجُلُ بِهَا نَفْسَهُ وَالرُّؤْيَا تَحْزِينٌ مِنَ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يَكْرَهُهَا فَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا أَحَدًا وَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ ” . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ” يُعْجِبُنِي الْقَيْدُ وَأَكْرَهُ الْغُلَّ الْقَيْدُ ثَبَاتٌ فِي الدِّينِ ” . قَالَ وَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” رُؤْيَا الْمُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رَوَى عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَيُّوبَ مَرْفُوعًا وَرَوَاهُ حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوبَ وَوَقَفَهُ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শেষ যামানায় মু’মিনের স্বপ্ন খুব কমই মিথ্যা হবে। তাদের মধ্যে অধিক সত্যবাদীর স্বপ্নই বেশি সত্য হবে। স্বপ্ন তিন প্রকারঃ (১) ভাল স্বপ্ন, যা আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ হতে সুসংবাদ, (২) স্বপ্নের আকারে ব্যক্তির মনের চিন্তা-ভাবনা ও (৩) শাইতানের পক্ষ হতে দুশ্চিন্তায় ফেলার স্বপ্ন। কাজেই তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যদি অপছন্দনীয় কিছু স্বপ্নে দেখে তাহলে সে যেন তা অন্যের নিকট প্রকাশ না করে বরং সে যেন তখন উঠে গিয়ে নামায আদায় করে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, (স্বপ্নে পায়ে) শৃংখল দেখা আমার পছন্দনীয় এবং গলায় শৃংখল দেখা অপছন্দনীয়। (পায়ে) শৃংখল দেখা হলো দ্বীনের উপর সুদৃঢ়তার প্রতীক। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নাবূওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ।
সহীহ, দেখুন ২২৮০ নং হাদীস।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি আবদুল ওয়াহ্হাব আস-সাকাফী (রহঃ) আইয়্যূব (রহঃ) হতে মারফূরূপে বর্ণনা করেছেন। আর তা হাম্মাদ ইবনু যাইদ (রহঃ) আইয়্যূব (রহঃ) হতে মাওকূফরূপে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৯২
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعِيدٍ الْجَوْهَرِيُّ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، عَنْ شُعَيْبٍ، وَهُوَ ابْنُ أَبِي حَمْزَةَ عَنِ ابْنِ أَبِي حُسَيْنٍ، وَهُوَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي حُسَيْنٍ عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ رَأَيْتُ فِي الْمَنَامِ كَأَنَّ فِي يَدَىَّ سِوَارَيْنِ مِنْ ذَهَبٍ فَهَمَّنِي شَأْنُهُمَا فَأُوحِيَ إِلَىَّ أَنْ أَنْفُخَهُمَا فَنَفَخْتُهُمَا فَطَارَا فَأَوَّلْتُهُمَا كَاذِبَيْنِ يَخْرُجَانِ مِنْ بَعْدِي يُقَالُ لأَحَدِهِمَا مُسَيْلِمَةُ صَاحِبُ الْيَمَامَةِ وَالْعَنْسِيُّ صَاحِبُ صَنْعَاءَ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি কোন একদিন স্বপ্নে দেখলাম যে, আমার হাতে যেন দুটি স্বর্ণের চুড়ি। বিষয়টি আমাকে চিন্তিত করে তুললো। তারপর আমার নিকট ওয়াহী প্রেরিত হলো যে, আমি যেন ঐ দুটিতে ফুঁ দেই। আমি দুটিতে ফুঁ দেয়ার পর তা উড়ে চলে গেল। আমি চুড়ি দুটির এই ব্যাখ্যা করলাম যে, আমার পরে দুইজন মিথ্যাবাদী (নাবূওয়াতের দাবিদার) আত্মপ্রকাশ করবে। তারা হলোঃ মুসাইলামা নামে ইয়ামামার অধিবাসী এবং আল-আনাসী নামে সানআর (ইয়ামানের রাজধানী) অধিবাসী।
সহীহ, বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্ হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৯৩
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ أَنَّ رَجُلاً، جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنِّي رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ ظُلَّةً يَنْطِفُ مِنْهَا السَّمْنُ وَالْعَسَلُ وَرَأَيْتُ النَّاسَ يَسْتَقُونَ بِأَيْدِيهِمْ فَالْمُسْتَكْثِرُ وَالْمُسْتَقِلُّ وَرَأَيْتُ سَبَبًا وَاصِلاً مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ وَأَرَاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخَذْتَ بِهِ فَعَلَوْتَ ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ بَعْدَكَ فَعَلاَ ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ بَعْدَهُ فَعَلاَ ثُمَّ أَخَذَ بِهِ رَجُلٌ فَقُطِعَ بِهِ ثُمَّ وُصِلَ لَهُ فَعَلاَ بِهِ . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ أَىْ رَسُولَ اللَّهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي وَاللَّهِ لَتَدَعَنِّي أَعْبُرْهَا فَقَالَ ” اعْبُرْهَا ” . فَقَالَ أَمَّا الظُّلَّةُ فَظُلَّةُ الإِسْلاَمِ وَأَمَّا مَا يَنْطِفُ مِنَ السَّمْنِ وَالْعَسَلِ فَهُوَ الْقُرْآنُ لِينُهُ وَحَلاَوَتُهُ وَأَمَّا الْمُسْتَكْثِرُ وَالْمُسْتَقِلُّ فَهُوَ الْمُسْتَكْثِرُ مِنَ الْقُرْآنِ وَالْمُسْتَقِلُّ مِنْهُ وَأَمَّا السَّبَبُ الْوَاصِلُ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ فَهُوَ الْحَقُّ الَّذِي أَنْتَ عَلَيْهِ فَأَخَذْتَ بِهِ فَيُعْلِيكَ اللَّهُ ثُمَّ يَأْخُذُ بِهِ بَعْدَكَ رَجُلٌ آخَرُ فَيَعْلُو بِهِ ثُمَّ يَأْخُذُ بِهِ بَعْدَهُ رَجُلٌ آخَرُ فَيَعْلُو بِهِ ثُمَّ يَأْخُذُ رَجُلٌ آخَرُ فَيَنْقَطِعُ بِهِ ثُمَّ يُوصَلُ لَهُ فَيَعْلُو أَىْ رَسُولَ اللَّهِ لَتُحَدِّثَنِّي أَصَبْتُ أَوْ أَخْطَأْتُ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” أَصَبْتَ بَعْضًا وَأَخْطَأْتَ بَعْضًا ” قَالَ أَقْسَمْتُ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي لَتُخْبِرَنِّي مَا الَّذِي أَخْطَأْتُ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” لاَ تُقْسِمْ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হাদীস বর্ণনা করতেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে কোন একজন লোক এসে বলল, আমি আজ রাতে একটি ছায়াযুক্ত মেঘ স্বপ্নে দেখতে পেয়েছি এবং তা হতে ঘি ও মধু ঝরে পড়ছে। লোকদের দেখলাম যে, তারা হাতে তুলে তা পান করছে। কেউ বেশি পাচ্ছে এবং কেউ অল্প। আমি আরো দেখতে পেলাম যে, আকাশ হতে মাটি পর্যন্ত একটি রশি ঝুলছে। হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনাকে দেখলাম যে, আপনি সেটা ধরে উপরে উঠে গেছেন, তারপর আরেকজন সেটা ধরে উঠে গেছে, তারপর আরেকজন ধরল এবং সেও উঠে গেল। তারপর অপর একজন ধরলে সেটা ছিড়ে গেল। আবার সেটা জোড়া লেগে গেল এবং সেও তা ধরে উঠে গেল। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমার পিতা-মাতা আপনার প্রতি কুরবান হোক! আল্লাহ্র শপথ! আমাকে এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে দিন। তিনি বললেনঃ ঠিক আছে, এর তাবীর (ব্যাখ্যা) কর। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, ছায়াযুক্ত মেঘ হলো ইসলামের ছায়া, পতিত ঘি ও মধু হলো কুরআনের কোমলতা, সুমিষ্টতা ও মাধুর্য। আর বেশি ও কম লাভকারী হল কুরআন হতে বেশি ও কম লাভকারী। আকাশ হতে যমীন পর্যন্ত ঝুলন্ত রশি হলো সেই মহাসত্য যার উপর আপনি প্রতিষ্ঠিত। আপনি তা ধরে আছেন, আপনাকে এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তা’আলা উপরে তুলে নিয়েছেন। তারপর সেটা আরেকজন ধারণ করবেন এবং তিনিও উপরে উঠে যাবেন। তারপর আরেকজন তা ধরবেন এবং তিনিও উপরে উঠে যাবেন। তারপর আরেকজন তা ধরবেন এবং রশি ছিঁড়ে যাবে। আবার তা জোড়া লাগবে এবং তিনিও উপরে উঠে যাবেন। হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! বলুন, আমি সঠিক বলেছি না তাতে ভুল করেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সামান্য তো সঠিকই বলেছ আর সামান্য ভুল বলেছ। তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহ্র কসম! আপনার প্রতি আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। আপনি আমাকে বলুন আমি কোথায় ভুল করেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কসম দিয়ে বলো না।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯১৮), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বললেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২৯৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي رَجَاءٍ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا صَلَّى بِنَا الصُّبْحَ أَقْبَلَ عَلَى النَّاسِ بِوَجْهِهِ وَقَالَ “ هَلْ رَأَى أَحَدٌ مِنْكُمُ اللَّيْلَةَ رُؤْيَا ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَيُرْوَى هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ عَوْفٍ وَجَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ عَنْ أَبِي رَجَاءٍ عَنْ سَمُرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قِصَّةٍ طَوِيلَةٍ . قَالَ وَهَكَذَا رَوَى مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ وَهْبِ بْنِ جَرِيرٍ مُخْتَصَرًا .
সামুরা ইবনু জুনদাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামায আদায়ের পর লোকদের দিকে মুখ ফিরিয়ে প্রশ্ন করতেনঃ আজ রাতে তোমাদের মধ্যে কেউ কোন স্বপ্ন দেখেছে কি?
সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (১/১৯৮-১৯৯), বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। কিন্তু এ হাদীসটি আওফ ও জারীর ইবনু হাযিম হতে আবূ রাজা এ সূত্রে সামুরা (রাঃ) এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে দীর্ঘ আকারে বর্ণিত আছে। মুহাম্মাদ ইবনু বাশ্শার (রহঃ) ওয়াহব ইবনু জারীর (রহঃ) হতে সংক্ষিপ্ত আকারে আমাদের নিকট এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস