তিরমিজি সদ্ব্যবহার ও পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখা অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ১৮৯৭ – ১৯৭০
১. অনুচ্ছেদঃ
বাবা-মায়ের সাথে উত্তম আচরণ
১৮৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، أَخْبَرَنَا بَهْزُ بْنُ حَكِيمٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ جَدِّي، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَبَرُّ قَالَ ” أُمَّكَ ” . قَالَ قُلْتُ ثُمَّ مَنْ قَالَ ” أُمَّكَ ” . قَالَ قُلْتُ ثُمَّ مَنْ قَالَ ” أُمَّكَ ” . قَالَ قُلْتُ ثُمَّ مَنْ قَالَ ” ثُمَّ أَبَاكَ ثُمَّ الأَقْرَبَ فَالأَقْرَبَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَبَهْزُ بْنُ حَكِيمٍ هُوَ ابْنُ مُعَاوِيَةَ بْنِ حَيْدَةَ الْقُشَيْرِيُّ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ تَكَلَّمَ شُعْبَةُ فِي بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ وَهُوَ ثِقَةٌ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ وَرَوَى عَنْهُ مَعْمَرٌ وَالثَّوْرِيُّ وَحَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنَ الأَئِمَّةِ .
বাহ্য ইবনু হাকীমের দাদা [মু‘আবিয়া ইবনু হাইদা (রাঃ)] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! কোন্ ব্যক্তির সাথে আমি উত্তম আচরণ করব? তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সাথে। আমি প্রশ্ন করলাম, এরপর কার সাথে? তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সাথে। আমি আবার প্রশ্ন করলাম, এরপর কার সাথে? তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সাথে। আমি আবার প্রশ্ন করলাম, এরপর কার সাথে? তিনি বললেনঃ তারপর তোমার বাবার সাথে, তারপর নিকটাত্মীয়তার ক্রমানুসারে উত্তম আচরণ করবে।
হাসান, মিশকাত (৪৯২৯)।
আবূ হুরাইরা, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, আইশা ও আবুদ দারদা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, বাহয ইবনু হাকীমের অপর নাম আবূ মুআবিয়া ইবনু হাইদা। এ হাদীসটি হাসান। শুবা (রহঃ) বাহ্য ইবনু হাকীমের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু হাদীস পারদর্শীদের মতে তিনি একজন সিকাহ বর্ণনাকারী। তার নিকট হতে মা’মার, সুফিয়ান সাওরী, হাম্মাদ ইবনু সালামা প্রমুখ হাদীসের ইমামগণ হাদীস বর্ননা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২. অনুচ্ছেদঃ
( সবচাইতে উত্তম কাজ )
১৮৯৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ الْعَيْزَارِ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ ” الصَّلاَةُ لِمِيقَاتِهَا ” . قُلْتُ ثُمَّ مَاذَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” بِرُّ الْوَالِدَيْنِ ” . قُلْتُ ثُمَّ مَاذَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ” . ثُمَّ سَكَتَ عَنِّي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلَوِ اسْتَزَدْتُهُ لَزَادَنِي . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . رَوَاهُ الشَّيْبَانِيُّ وَشُعْبَةُ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ الْعَيْزَارِ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ أَبِي عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ . وَأَبُو عَمْرٍو الشَّيْبَانِيُّ اسْمُهُ سَعْدُ بْنُ إِيَاسٍ .
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! কোন্ কাজ সবচাইতে উত্তম? তিনি বললেনঃ নামায তার নির্ধারিত সময়ে আদায় করা। আমি আবার প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ বাবা-মায়ের সাথে উত্তম আচরণ করা। আমি আবারো প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! তারপর কোন্টি? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলার পথে জিহাদ করা। এরপর আমাকে কিছু বলা হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নীরব থাকেন। আমি তাঁকে আরো প্রশ্ন করলে নিশ্চয়ই আমাকে তিনি আরো জানাতেন।
সহীহ, সহীহা (১৪৮৯) , বুখারী, মুসলিম।
আবূ আমরের নাম সা’দ ইবনু ইয়াস। এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এ হাদীসটি আল-ওয়ালীদ ইবনুল আইযার হতে আশ-শাইবানী ও শুবা-সহ একাধিক বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন। আবূ আমর আশ-শাইবানী-ইবনু মাউঊদ (রাঃ) হতে একাধিকসূত্রে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩. অনুচ্ছেদঃ
বাবা-মায়ের সন্তুষ্টির ফযীলত
১৮৯৯
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ رِضَا الرَّبِّ فِي رِضَا الْوَالِدِ وَسَخَطُ الرَّبِّ فِي سَخَطِ الْوَالِدِ ” .
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، نَحْوَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ وَهَذَا أَصَحُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَكَذَا رَوَى أَصْحَابُ شُعْبَةَ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو مَوْقُوفًا وَلاَ نَعْلَمُ أَحَدًا رَفَعَهُ غَيْرَ خَالِدِ بْنِ الْحَارِثِ عَنْ شُعْبَةَ . وَخَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ ثِقَةٌ مَأْمُونٌ . قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ الْمُثَنَّى يَقُولُ مَا رَأَيْتُ بِالْبَصْرَةِ مِثْلَ خَالِدِ بْنِ الْحَارِثِ وَلاَ بِالْكُوفَةِ مِثْلَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ إِدْرِيسَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ .
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বাবার সন্তুষ্টির মধ্যেই আল্লাহ্ তা‘আলার সন্তুষ্টি এবং বাবার অসন্তুষ্টির মধ্যেই আল্লাহ্ তা‘আলার অসন্তুষ্টি রয়েছে।
সহীহ, সহীহা (৫১৫)।
উপরোক্ত হাদীসের মতো হাদীস মুহাম্মদ ইবনু বাশশার-মুহাম্মাদ ইবনু জাফর হতে, তিনি শুবা হতে, তিনি ইয়ালা ইবনু আতা হতে, তিনি তার পিতা-আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতে এই সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। এটাকে তিনি মারফু হাদীস হিসেবে বর্ণনা করেননি এবং এটাই অনেক বেশি সহীহ।
আবু ঈসা বলেন, এটিকে শুবার সঙ্গীগণ একইভাবে মাওকূফ হিসেবে শুবা হতে, তিনি ইয়ালা ইবনু আতা হতে, তিনি তার পিতা-আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এটা শুবার সূত্রে মারফূ (রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী) হিসাবে শুধু খালিদ ইবনুল হারিস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। খালিদ ইবনুল হারিস একজন সিকাহ ও বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী। মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না বলেন, আমি বসরায় খালিদের সমতুল্য এবং কূফায় আবদুল্লাহ ইবনু ইদরীসের মতো যোগ্য কোন ব্যক্তিকে দেখিনি। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীসটি বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯০০
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ الْهُجَيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، أَنَّ رَجُلاً، أَتَاهُ فَقَالَ إِنَّ لِي امْرَأَةً وَإِنَّ أُمِّي تَأْمُرُنِي بِطَلاَقِهَا . قَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ الْوَالِدُ أَوْسَطُ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ فَإِنْ شِئْتَ فَأَضِعْ ذَلِكَ الْبَابَ أَوِ احْفَظْهُ ” . قَالَ وَقَالَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ وَرُبَّمَا قَالَ سُفْيَانُ إِنَّ أُمِّي وَرُبَّمَا قَالَ أَبِي . وَهَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ حَبِيبٍ .
আবুদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তার কাছে একজন লোক এসে বলল, আমার এক স্ত্রী আছে। আমার মা আমাকে নির্দেশ দিচ্ছেন তাকে তালাক দেয়ার জন্য। আবুদ দারদা (রাঃ) বললেন, রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ জান্নাতের সর্বোত্তম দরজা হচ্ছে বাবা। তুমি ইচ্ছা করলে এটা ভেঙ্গে ফেলতে পার অথবা এর রক্ষণাবেক্ষণও করতে পার।
সহীহ্, সহীহা (৯১০) , মিশকাত, তাহকীক ছানী (৪৯২৮)।
ইবনু আবী উমার বলেনঃ সুফিয়ান কখনো মায়ের কথা বলেছেন আবার কখনো বাবার কথা বলেছেন। এ হাদীসটি সহীহ। আবূ আবদুর রাহমান আস-সুলামীর নাম আবদুল্লাহ ইবনু হাবীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪. অনুচ্ছেদঃ
বাবা-মায়ের অবাধ্য হওয়া কাবীরা গুনাহ
১৯০১
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا الْجُرَيْرِيُّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَلاَ أُحَدِّثُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِرِ ” . قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ ” الإِشْرَاكُ بِاللَّهِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ ” . قَالَ وَجَلَسَ وَكَانَ مُتَّكِئًا فَقَالَ ” وَشَهَادَةُ الزُّورِ أَوْ قَوْلُ الزُّورِ ” . فَمَا زَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُهَا حَتَّى قُلْنَا لَيْتَهُ سَكَتَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو بَكْرَةَ اسْمُهُ نُفَيْعُ بْنُ الْحَارِثِ .
আবদুর রাহমান ইবনু আবী বাকরা (রাঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (আবূ বাকরা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি কি তোমাদেরকে সর্বাধিক কাবীরা গুনাহের ব্যাপারে জানিয়ে দিবো না? সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! অবশ্যই জানিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ আল্লা্হ্ তা‘আলার সাথে অংশীদারিত্ব স্থাপন করা এবং বাবা-মায়ের অবাধ্য হওয়া। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। তিনি সোজা হয়ে বসেন এবং বলেনঃ এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া ও মিথ্যা বলা। একথাটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবিরতভাবে বলতে থাকেন। আমরা (মনে মনে) বলতে লাগলাম, আহা! তিনি যদি থামতেন, চুপ করতেন!
সহীহ্, গাইয়াতুল মারাম (২৭৭) , বুখারী, মুসলিম।
আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবূ বাকরার নাম নুফাই, পিতা আল-হারিস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯০২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مِنَ الْكَبَائِرِ أَنْ يَشْتُمَ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ ” . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَهَلْ يَشْتُمُ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ قَالَ ” نَعَمْ يَسُبُّ أَبَا الرَّجُلِ فَيَشْتُمُ أَبَاهُ وَيَشْتُمُ أُمَّهُ فَيَسُبُّ أُمَّهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি কর্তৃক তার বাবা-মাকে গালিগালাজ করা কাবীরা গুনাহ্। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! কেউ কি তার মা-বাবাকে গালিগালাজ করতে পারে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কোন লোক অন্য কারো বাবাকে গালি দেয়। এর উত্তরে সেও তার বাবাকে গালি দেয়। সে অন্য কারো মাকে গালি দেয়। এর উত্তরে ঐ ব্যক্তিও তার মাকে গালি দেয়।
সহীহ্, তা’লীকুর রাগীব (৩/২২১)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫. অনুচ্ছেদঃ
বাবার বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি সম্মান দেখানো
১৯০৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، أَخْبَرَنِي الْوَلِيدُ بْنُ أَبِي الْوَلِيدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِنَّ أَبَرَّ الْبِرِّ أَنْ يَصِلَ الرَّجُلُ أَهْلَ وُدِّ أَبِيهِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي أَسِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا إِسْنَادٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ ابْنِ عُمَرَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ সর্বাধিক সাওয়াবের কাজ হচ্ছে বাবার বন্ধু-বান্ধবদের সাথেও সম্পর্ক বজায় রাখা।
সহীহ্, যঈফা (২০৮৯) , মুসলিম।
আবূ উসাইদ (রাঃ) হতেও অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসের সনদ সহীহ্। এ হাদীসটি ইবনু উমার (রাঃ) হতে অন্যান্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬. অনুচ্ছেদঃ
খালার সাথে উত্তম আচরণ করা
১৯০৪
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ إِسْرَائِيلَ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ، وَهُوَ ابْنُ مَدُّويَهْ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، وَاللَّفْظُ، لِحَدِيثِ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيِّ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الْخَالَةُ بِمَنْزِلَةِ الأُمِّ ” . وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ طَوِيلَةٌ . وَهَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سُوقَةَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَفْصِ بْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ . وَأَبُو بَكْرِ بْنُ حَفْصٍ هُوَ ابْنُ عُمَرَ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ .
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سُوقَةَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَفْصٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَجُلاً، أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَصَبْتُ ذَنْبًا عَظِيمًا فَهَلْ لِي مِنْ تَوْبَةٍ قَالَ ” هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ ” . قَالَ لاَ . قَالَ ” هَلْ لَكَ مِنْ خَالَةٍ ” . قَالَ نَعَمْ . قَالَ ” فَبِرَّهَا ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَالْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ .
বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ খালা হলো মাতৃস্থানীয়।
সহীহ্, ইরওয়া (২১৯০) , বুখারী, মুসলিম।
এ হাদীসের সাথে একটি দীর্ঘ ঘটনা রয়েছে। এ হাদীসটি সহীহ্।
ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একজন লোক এসে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! আমি একটি কাবীরা গুনাহ্ করে ফেলেছি। আমার তাওবাহ করার সুযোগ আছে কি? তিনি প্রশ্ন করেনঃ তোমার মা কি বেঁচে আছেন? সে বলল, না। তিনি আবার প্রশ্ন করেনঃ তোমার খালা কি বেঁচে আছেন? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তার সাথে উত্তম আচরণ কর। সহীহ্, তা’লীকুর রাগীব (৩/২১৮)।
আলী এবং বারাআ ইবনু আ’-যিব (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ হাদীস ইবনু আবী উমার-সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা হতে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনু সূকা হতে, তিনি আবূ বাক্র ইবনু হাফস হতে এই সূত্রেও বর্ণিত আছে। এ সূত্রে ইবনু উমার (রাঃ)-এর কথা উল্লেখ নেই। এই সূত্রটি পূর্বোল্লেখিত মু‘আবিয়ার সুত্রের চাইতে অনেক বেশি সহীহ্। আবূ বাকর ইবনু হাফস হলেন ইবনু উমার ইবনু সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭. অনুচ্ছেদঃ
(সন্তানের প্রতি) বাবা-মায়ের দু’আ
১৯০৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ هِشَامٍ الدَّسْتَوَائِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ ثَلاَثُ دَعَوَاتٍ مُسْتَجَابَاتٌ لاَ شَكَّ فِيهِنَّ دَعْوَةُ الْمَظْلُومِ وَدَعْوَةُ الْمُسَافِرِ وَدَعْوَةُ الْوَالِدِ عَلَى وَلَدِهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رَوَى الْحَجَّاجُ الصَّوَّافُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ نَحْوَ حَدِيثِ هِشَامٍ . وَأَبُو جَعْفَرٍ الَّذِي رَوَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ يُقَالُ لَهُ أَبُو جَعْفَرٍ الْمُؤَذِّنُ وَلاَ نَعْرِفُ اسْمَهُ وَقَدْ رَوَى عَنْهُ يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ غَيْرَ حَدِيثٍ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিন প্রকারের দু’আ অবশ্যই মঞ্জুর করা হয়, তাতে কোন রকম সন্দেহ নেই। নির্যাতিত ব্যক্তির দু’আ, মুসাফিরের দু’আ এবং সন্তানের প্র্রতি বাবার বদ-দু’আ।
হাসান, ইবনু মা-জাহ (৩৮৬২)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবী কাসীরের সূত্রে হাজ্জাজ আস-সাওয়াফ হিশামের রিওয়ায়াতের মতোই বর্ণনা করেছেন। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে যে আবূ জাফার হাদীসটি বর্ণনা করেন তিনি হলেন আবূ জাফার আল-মআযযিন। তার নাম সম্পর্কে আমরা অজ্ঞ। ইয়াহইয়া ইবনু আবী কাসীরও তার সূত্রে একাধিক হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৮. অনুচ্ছেদঃ
বাবা-মায়ের অধিকার
১৯০৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى، أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ يَجْزِي وَلَدٌ وَالِدًا إِلاَّ أَنْ يَجِدَهُ مَمْلُوكًا فَيَشْتَرِيَهُ فَيُعْتِقَهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ . وَقَدْ رَوَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ هَذَا الْحَدِيثَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লা্ল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সন্তান কোন অবস্থাতেই তার বাবার সম্পূর্ণ অধিকার আদায়ে সক্ষম নয়। কিন্তু সে তার বাবাকে গোলাম অবস্থায় পেলে এবং তাকে কিনে মুক্ত করে দিলে তবে সামান্য অধিকার আদায় হয়।
সহীহ্, ইবনু মাজাহ (৩৬৫৯) , মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আমরা এ হাদীস বিষয়ে শুধুমাত্র সুহাইল ইবনু আবূ সালিহ-এর সূত্রেই জানতে পেরেছি। এ হাদীসটি সুহাইল ইবনু সালিহ-এর সূত্রে সুফিয়ান সাওরী ও একাধিক বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯. অনুচ্ছেদঃ
রক্ত সম্পর্কের আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা
১৯০৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، وَسَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، قَالَ اشْتَكَى أَبُو الرَّدَّادِ اللَّيْثِيُّ فَعَادَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ فَقَالَ خَيْرُهُمْ وَأَوْصَلُهُمْ مَا عَلِمْتُ أَبَا مُحَمَّدٍ . فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ قَالَ اللَّهُ أَنَا اللَّهُ وَأَنَا الرَّحْمَنُ خَلَقْتُ الرَّحِمَ وَشَقَقْتُ لَهَا مِنَ اسْمِي فَمَنْ وَصَلَهَا وَصَلْتُهُ وَمَنْ قَطَعَهَا بَتَتُّهُ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ أَبِي أَوْفَى وَعَامِرِ بْنِ رَبِيعَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَجُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سُفْيَانَ عَنِ الزُّهْرِيِّ حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَرَوَى مَعْمَرٌ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ رَدَّادٍ اللَّيْثِيِّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَمَعْمَرٌ كَذَا يَقُولُ قَالَ مُحَمَّدٌ وَحَدِيثُ مَعْمَرٍ خَطَأٌ .
আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবুর রাদ্দাদ (রাঃ) একবার অসুস্থ হলে তাঁকে আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ) দেখতে আসেন। আবুর রাদ্দাদ (রাঃ) বলেন, আমার জানামতে সবচেয়ে উত্তম ও সর্বাধিক আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রক্ষাকারী ব্যক্তি হলেন আবূ মুহাম্মাদ (আবদুর রাহমান)। আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ পরিপূর্ণ কল্যাণ ও প্রাচুর্যের অধিকারী আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ ‘আমিই আল্লাহ্ এবং আমিই রাহমান। আত্মীয়তার সম্পর্ককে আমিই সৃষ্টি করেছি এবং আমার নাম হতে নির্গত করে এই নাম (রাহমান হতে রেহেম) রেখেছি। যে ব্যক্তি এই সম্পর্ক বহাল রাখবে আমিও তার সাথে (রাহমাতের) সম্পর্ক বহাল রাখব। আর এই সম্পর্ক যে ব্যক্তি ছিন্ন করবে আমিও তার হতে (রাহমাতের) সম্পর্ক ছিন্ন করব”।
সহীহ, সহীহাহ্ (৫২০)।
আবূ সাঈদ, ইবনু আবী আওফা, আমির ইবনু রাবীআ, আবূ হুরাইরা ও জুবাইর ইবনু মুতঈম (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, যুহরীর সূত্রে আবূ সুফিয়ান কতৃক বর্ণিত হাদীসটি সহীহ। মা’মার এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন যুহ্রী হতে, তিনি আবূ সালামা হতে, তিনি রাদ্দাদ আল লাইসী হতে, তিনি আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)-এর সূত্রে। মুহাম্মাদ বলেন, মা’মার বর্ণিত রিওয়ায়াতটিতে ভুল আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০. অনুচ্ছেদঃ
আত্মীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখা
১৯০৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا بَشِيرٌ أَبُو إِسْمَاعِيلَ، وَفِطْرُ بْنُ خَلِيفَةَ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لَيْسَ الْوَاصِلُ بِالْمُكَافِئِ وَلَكِنَّ الْوَاصِلَ الَّذِي إِذَا انْقَطَعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ سَلْمَانَ وَعَائِشَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ .
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সমানুরুপ ব্যবহারের মনোভাব নিয়ে সম্পর্ক রক্ষাকারী আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী নয়, বরং কেউ কোন ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক নষ্ট করলেও সে যদি তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে তবে সে-ই হচ্ছে প্রকৃত সম্পর্ক স্থাপনকারী।
সহীহ, গাইয়াতুল মারাম (৪০৪) , সহীহ আবূ দাঊদ (১৪৮৯) , বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। সালমান, আইশা ও আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯০৯
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، وَنَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، وَسَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعٌ ” . قَالَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ قَالَ سُفْيَانُ يَعْنِي قَاطِعَ رَحِمٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
মুহাম্মাদ ইবনু জুবাইর (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (জুবাইর) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কর্তনকারী (আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী) জান্নাতে যেতে পারবে না।
সহীহ, গাইয়াতুল মারাম (৪০৮) , সহীহ আবূ দাঊদ (১৪৮৮) , বুখারী, মুসলিম।
ইবনু আবী উমার বলেন, সুফিয়ান বলেছেন, অর্থাৎ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১. অনুচ্ছেদঃ
সন্তানদের প্রতি ভালোবাসা
১৯১০
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مَيْسَرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي سُوَيْدٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ، يَقُولُ زَعَمَتِ الْمَرْأَةُ الصَّالِحَةُ خَوْلَةُ بِنْتُ حَكِيمٍ قَالَتْ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ وَهُوَ مُحْتَضِنٌ أَحَدَ ابْنَىِ ابْنَتِهِ وَهُوَ يَقُولُ “ إِنَّكُمْ لَتُبَخِّلُونَ وَتُجَبِّنُونَ وَتُجَهِّلُونَ وَإِنَّكُمْ لَمِنْ رَيْحَانِ اللَّهِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَالأَشْعَثِ بْنِ قَيْسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُيَيْنَةَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مَيْسَرَةَ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِهِ . وَلاَ نَعْرِفُ لِعُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ سَمَاعًا مِنْ خَوْلَةَ .
উমার ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খাওলা বিনতি হাকীম (রাঃ) একজন সৎকর্মশীলা মহিলা। তিনি বলেছেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কন্যা ফাতিমা (রাঃ)–এর দুই ছেলের একজনকে কোলে করে বাহিরে এলেন। তখন তিনি বলেনঃ (সন্তানের মুহাব্বতে) তোমারাই কৃপণতা, কাপুরুষতা ও অজ্ঞতার কারণ হও। তোমরা হলে আল্লাহ্ তা‘আলার বাগানের সুগন্ধি ফুল।
যঈফ, যঈফা (৩২১৪)।
এ অনুচ্ছেদে ইবনু উমার ও আশআস ইবনু কাইস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন , শুধু উল্লেখিত সনদসূত্রেই আমরা এ হাদিসটি জেনেছি। খাওলা বিনতি হাকীম (রাঃ) হতে উমার ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) সরাসরি শুনেছেন বলে আমাদের জানা নেই।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১২. অনুচ্ছেদঃ
সন্তানদের প্রতি দয়া-অনুগ্রহ করা
১৯১১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، وَسَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَبْصَرَ الأَقْرَعُ بْنُ حَابِسٍ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُقَبِّلُ الْحَسَنَ قَالَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ الْحُسَيْنَ أَوِ الْحَسَنَ فَقَالَ إِنَّ لِي مِنَ الْوَلَدِ عَشَرَةً مَا قَبَّلْتُ أَحَدًا مِنْهُمْ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّهُ مَنْ لاَ يَرْحَمْ لاَ يُرْحَمْ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল-আকরা ইবনু হাবিস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখলেন যে, তিনি হাসানকে চুমু খাচ্ছেন। ইবনু আবী উমার তার বর্ণনায় উল্লেখ করেছেন যে, তিনি হাসান অথবা হুসাইনকে চুমু খেয়েছেন। আল-আকরা (রাঃ) বলেন, আমার দশটি সন্তান আছে কিন্তু আমি তাদের কাউকে কখনো চুমু দেইনি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি দয়া-অনুগ্রহ করে না সে দয়া-অনুগ্রহপ্রাপ্ত হয় না।
সহীহ, তাখরীজ “মুশকিলাতুল ফাক্র” (১০৮) , বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, আনাস ও আইশা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ সালামার নাম আবদুল্লাহ, পিতা আবদুর রাহমান। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৩. অনুচ্ছেদঃ
মেয়ে সন্তান ও বোনদের উদ্দেশ্যে খরচ করা
১৯১২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَكُونُ لأَحَدِكُمْ ثَلاَثُ بَنَاتٍ أَوْ ثَلاَثُ أَخَوَاتٍ فَيُحْسِنُ إِلَيْهِنَّ إِلاَّ دَخَلَ الْجَنَّةَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ وَأَنَسٍ وَجَابِرٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ اسْمُهُ سَعْدُ بْنُ مَالِكِ بْنِ سِنَانٍ وَسَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ هُوَ سَعْدُ بْنُ مَالِكِ بْنِ وُهَيْبٍ . وَقَدْ زَادُوا فِي هَذَا الإِسْنَادِ رَجُلاً .
আবূ সাঈদ আল–খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যারই তিনটি মেয়ে অথবা তিনটি বোন আছে, সে তাদের সাথে স্নেহপূর্ণ ব্যবহার করলে জান্নাতে যাবে।
যঈফ, দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে আইশা, উকবা ইবনু আমীর আনাস, জাবির, ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ সাঈদ আল–খুদরী–এর নাম সা’দ ইবনু মালিক ইবনু সিনান। সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)–এর পিতা মালিক ইবনু উহাইব। কোন কোন রাবী এ সনদে একজন রাবীকে যোগ করেছেন। (তিনি হলেন সাঈদ ইবনু আবদুর রহমান ও আবূ সাঈদ (রাঃ)–এর মাঝখানে আইউব ইবনু বাশীর)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৯১৩
حَدَّثَنَا الْعَلاَءُ بْنُ مَسْلَمَةَ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَجِيدِ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنِ ابْتُلِيَ بِشَيْءٍ مِنَ الْبَنَاتِ فَصَبَرَ عَلَيْهِنَّ كُنَّ لَهُ حِجَابًا مِنَ النَّارِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার মেয়ে সন্তানদের জন্য কোনরকম পরীক্ষার সম্মুখীন হয় (বিপদগ্রস্ত হয়) , সে তাদের ব্যাপারে ধৈর্য ধরলে তার জন্য তারা জাহান্নাম হতে আবরণ (প্রতিবন্ধক) হবে।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ وَزِيرٍ الْوَاسِطِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ، هُوَ الطَّنَافِسِيُّ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ الرَّاسِبِيُّ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ دَخَلْتُ أَنَا وَهُوَ الْجَنَّةَ كَهَاتَيْنِ ” . وَأَشَارَ بِأَصْبُعَيْهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رَوَى مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ غَيْرَ حَدِيثٍ بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَنَسٍ وَالصَّحِيحُ هُوَ عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক দুটি মেয়ে সন্তানকে লালান-পালন করবে, আমি এবং সে এভাবে একসাথে পাশাপাশি জান্নাতে যাব। এই বলে তিনি নিজের হাতের দুটি আঙ্গুল একত্র করে ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন।
সহীহ, সহীহাহ্ (২৯৭) , মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই সূত্রে হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯১৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ دَخَلَتِ امْرَأَةٌ مَعَهَا ابْنَتَانِ لَهَا فَسَأَلَتْ فَلَمْ تَجِدْ عِنْدِي شَيْئًا غَيْرَ تَمْرَةٍ فَأَعْطَيْتُهَا إِيَّاهَا فَقَسَمَتْهَا بَيْنَ ابْنَتَيْهَا وَلَمْ تَأْكُلْ مِنْهَا ثُمَّ قَامَتْ فَخَرَجَتْ فَدَخَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ مَنِ ابْتُلِيَ بِشَيْءٍ مِنْ هَذِهِ الْبَنَاتِ كُنَّ لَهُ سِتْرًا مِنَ النَّارِ ” . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একজন মহিলা তার দুই মেয়েসহ আমার নিকটে এল এবং আমার কাছে কিছু চাইল। কিন্তু একটি খেজুর ব্যতীত আমার নিকটে আর কিছুই ছিল না। আমি সেটিই তাকে দিলাম। সে খেজুরটিকে ভাগ করে তার দুই মেয়ের হাতে দিল এবং নিজে মোটেও খেল না। তারপর সে উঠে চলে গেল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে আসার পর আমি বিষয়টি তাঁকে অবহিত করলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে লোক মেয়ে সন্তানদের নিয়ে এ ধরনের পরীক্ষার (বিপদের) সম্মুখীন হয়, তারা তার জন্য জাহান্নামের প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে।
সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (৩/৮৩) , মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই সনদ সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনু উবাইদ মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুল আযীয হতে একাধিক হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি তার বর্ণনায় বর্ণনাকারীর নাম আবূ বাকর ইবনু উবাইদুল্লাহ ইবনু আনাস উল্লেখ করেছেন। সঠিক হল উবাইদুল্লাহ ইবনু আবী বাকর ইবনু আনাস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯১৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَيُّوبَ بْنِ بَشِيرٍ، عَنْ سَعِيدٍ الأَعْشَى، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ كَانَ لَهُ ثَلاَثُ بَنَاتٍ أَوْ ثَلاَثُ أَخَوَاتٍ أَوِ ابْنَتَانِ أَوْ أُخْتَانِ فَأَحْسَنَ صُحْبَتَهُنَّ وَاتَّقَى اللَّهَ فِيهِنَّ فَلَهُ الْجَنَّةُ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আবূ সাঈদ আল–খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যার তিনটি মেয়ে অথবা তিনটি বোন আছে, অথবা দু’টি মেয়ে অথবা দু’টি বোন আছে, সে তাদের প্রতি ভাল ব্যবহার করলে এবং তাদের (অধিকার) সম্পর্কে আল্লাহ্ তা‘আলাকে ভয় করলে তার জন্য জান্নাত নির্ধারিত আছে।
বর্ণিত শব্দে হাদীসটি যঈফ, সাহীহা (২৯৪)। আবূ ঈসা বলেছেন হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৪. অনুচ্ছেদঃ
ইয়াতীমের প্রতি দয়া প্রদর্শন এবং তার লালন-পালন
১৯১৭
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَعْقُوبَ الطَّالْقَانِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي يُحَدِّثُ، عَنْ حَنَشٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ قَبَضَ يَتِيمًا بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ إِلَى طَعَامِهِ وَشَرَابِهِ أَدْخَلَهُ اللَّهُ الْجَنَّةَ الْبَتَّةَ إِلاَّ أَنْ يَعْمَلَ ذَنْبًا لاَ يُغْفَرُ لَهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ مُرَّةَ الْفِهْرِيِّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي أُمَامَةَ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَنَشٌ هُوَ حُسَيْنُ بْنُ قَيْسٍ وَهُوَ أَبُو عَلِيٍّ الرَّحَبِيُّ وَسُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ يَقُولُ حَنَشٌ وَهُوَ ضَعِيفٌ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি মুসলমানদের কোন ইয়াতীমকে এনে নিজের পানাহারে শরীক করলে আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন , যদি সে ক্ষমার অযোগ্য কোন গুনাহ না করে।
যঈফ, তা’লিকুর রাগীব (৩/২৩০), যঈফা (৫৩৪৫)।
এ অনুচ্ছেদে মুররা আল-ফিহ্রী, আবূ হুরাইরা, আবূ উমামা, সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেনঃ হানাশের নাম হুসাইন ইবনু কাইস, উপনাম আবূ আলী আর-রাহবী। সুলাইমান আত-তাইমী বলেছেন, হাদীস বিশারদদের মতে হানাশ হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৯১৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عِمْرَانَ أَبُو الْقَاسِمِ الْمَكِّيُّ الْقُرَشِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَنَا وَكَافِلُ الْيَتِيمِ فِي الْجَنَّةِ كَهَاتَيْنِ ” . وَأَشَارَ بِأُصْبُعَيْهِ يَعْنِي السَّبَّابَةَ وَالْوُسْطَى . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সাহ্ল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি ও ইয়াতীমের তত্ত্বাবধানকারী এই দুই আঙ্গুলের অনুরুপ একসাথে জান্নাতে বসবাস করব। এই কথা বলে তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে দেখান।
সহীহ্, সহীহাহ্ (৮০০) , বুখারী।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৫. অনুচ্ছেদঃ
শিশুদের প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করা।
১৯১৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَرْزُوقٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ وَاقِدٍ، عَنْ زَرْبِيٍّ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ جَاءَ شَيْخٌ يُرِيدُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَبْطَأَ الْقَوْمُ عَنْهُ أَنْ يُوَسِّعُوا لَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَيُوَقِّرْ كَبِيرَنَا ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي أُمَامَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَزَرْبِيٌّ لَهُ أَحَادِيثُ مَنَاكِيرُ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَغَيْرِهِ .
যারবী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ একজন বয়স্ক লোক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে আসে। লোকেরা তার জন্য পথ ছাড়তে বিলম্ব করে। (তা দেখে) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে লোক আমাদের শিশুদের আদর করে না এবং আমাদের বড়দের প্রতি সন্মান প্রদর্শন করে না সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সহীহ, সহীহাহ্ (২১৯৬)
আবদুল্লাহ ইবনু আমর, আবূ হুরাইরা, ইবনু আব্বাস ও আবূ উমামা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আনাস (রাঃ) এবং অন্যান্য সাহাবী হতেও যারবীর বেশ কিছু মুনকার হাদীস রয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯২০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَيَعْرِفْ شَرَفَ كَبِيرِنَا ” .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، نَحْوَهُ إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ ” وَيَعْرِفْ حَقَّ كَبِيرِنَا ” .
আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পযার্য়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (দাদা) বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক আমাদের শিশুদের আদর করে না এবং আমাদের বড়দের সন্মানের প্রতি খেয়াল রাখে না সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (১/১৬)
এ হাদীসটি হান্নাদ আবদাহ্ হতে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক হতে এই সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে এবং তাতে রয়েছেঃ “বড়দের অধিকার জ্ঞান রাখে না”।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯২১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ شَرِيكٍ، عَنْ لَيْثٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَيُوَقِّرْ كَبِيرَنَا وَيَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَ عَنِ الْمُنْكَرِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَحَدِيثُ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ أَيْضًا . – قَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مَعْنَى قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ” لَيْسَ مِنَّا ” . يَقُولُ لَيْسَ مِنْ سُنَّتِنَا يَقُولُ لَيْسَ مِنْ أَدَبِنَا . وَقَالَ عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ كَانَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ يُنْكِرُ هَذَا التَّفْسِيرَ لَيْسَ مِنَّا يَقُولُ لَيْسَ مِثْلَنَا .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ছোটদের স্নেহ করে না বড়দের সম্মান করে না, সৎকাজের নির্দেশ দেয় না এবং অসৎ কাজে বাধা দেয় না সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
যঈফ, মিশকাত (৪৯৭০), তা’লিকুর রাগীব (৩/১৭৩)।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমর ইবনু শুয়াইবের সূত্রে মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাকের হাদীসটি সাহীহ। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর হতেও হাদীসটি অন্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। একদল বিশেষজ্ঞ আলিম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর বাণী ‘লাইসা মিন্না’-এর অর্থ বলেছেন, “আমাদের নিয়ম-নীতি ও শিষ্টাচারের অনুসারী নয়”। সুফিয়ান সাওরী লাইসা মিন্না–এর অর্থ ‘লাইসা মিসলানা’ (আমাদের মত নয়) করা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, এর অর্থ হল- আমাদের দলভুক্ত নয়।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৬. অনুচ্ছেদঃ
মানুষের প্রতি দয়া-অনুগ্রহ করা
১৯২২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ لاَ يَرْحَمُ النَّاسَ لاَ يَرْحَمُهُ اللَّهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو .
জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক মানুষের প্রতি দয়া-অনুগ্রহ প্রদর্শন করে না তাকে আল্লাহ্ তা‘আলাও দয়া করেন না।
সহীহ-তাখরীজু মুশকিলাতিল ফাকর (১০৮) , বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবদুর রাহমান ইবনু আওফ, আবূ সাঈদ, ইবনু উমার, আবূ হুরাইরা ও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯২৩
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، قَالَ كَتَبَ بِهِ إِلَىَّ مَنْصُورٌ وَقَرَأْتُهُ عَلَيْهِ سَمِعَ أَبَا عُثْمَانَ مَوْلَى الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ لاَ تُنْزَعُ الرَّحْمَةُ إِلاَّ مِنْ شَقِيٍّ ” . قَالَ وَأَبُو عُثْمَانَ الَّذِي رَوَى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ لاَ يُعْرَفُ اسْمُهُ وَيُقَالُ هُوَ وَالِدُ مُوسَى بْنِ أَبِي عُثْمَانَ الَّذِي رَوَى عَنْهُ أَبُو الزِّنَادِ وَقَدْ رَوَى أَبُو الزِّنَادِ عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عُثْمَانَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غَيْرَ حَدِيثٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবুল কাসিম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ শুধুমাত্র হৃদয়হীন, নিষ্ঠুর ও দুর্ভাগা মানুষের কাছ থেকেই রাহমাত ছিনিয়ে নেয়া হয়।
হাসান, মিশকাত তাহকীক ছানী (৪৯৬৮)।
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণনাকারী আবূ উসমানের নাম অজ্ঞাত। বর্ণিত আছে যে, তিনি মূসা ইবনু আবূ উসমানের বাবা, যার নিকট হতে আবুয যিনাদ হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবুয যিনাদ (রহঃ) মূসা ইবনু আবী উসমান হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সূত্রে একাধিক হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১৯২৪
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي قَابُوسَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الرَّاحِمُونَ يَرْحَمُهُمُ الرَّحْمَنُ ارْحَمُوا مَنْ فِي الأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ الرَّحِمُ شُجْنَةٌ مِنَ الرَّحْمَنِ فَمَنْ وَصَلَهَا وَصَلَهُ اللَّهُ وَمَنْ قَطَعَهَا قَطَعَهُ اللَّهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা দয়ালুদের উপর দয়া ও অনুগ্রহ করেন। যারা যমীনে বসবাস করছে তাদের প্রতি তোমরা দয়া কর, তাহলে যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। দয়া রাহমান হতে উদগত। যে লোক দয়ার সম্পর্ক বজায় রাখে আল্লাহ্ তা‘আলাও তার সাথে নিজ সম্পর্ক বজায় রাখেন। যে লোক দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করে, আল্লাহ্ তা‘আলাও তার সাথে দয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করেন।
সহীহ, সহীহাহ্ (৯২২)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৭. অনুচ্ছেদঃ
উপদেশ দেয়া বা কল্যাণ কামনা
১৯২৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ بَايَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى إِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে নামায বাস্তবায়ন, যাকাত আদায় এবং প্রত্যেক মুসলমানের কল্যাণ কামনার শপথ (বাই‘আত) করেছি।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯২৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنِ الْقَعْقَاعِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” الدِّينُ النَّصِيحَةُ ” . ثَلاَثَ مِرَارٍ . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَنْ قَالَ ” لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَتَمِيمٍ الدَّارِيِّ وَجَرِيرٍ وَحَكِيمِ بْنِ أَبِي يَزِيدَ عَنْ أَبِيهِ وَثَوْبَانَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ধর্ম হচ্ছে কল্যাণ কামনার নাম। একথাটি তিনি তিনবার বললেন। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! কার কল্যাণ কামনা করা? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্, তাঁর গ্রন্থের, মুসলমানদের নেতৃবর্গের এবং মুসলমান সবর্সাধারণের।
সহীহ, ইরওয়া (৯২৬) , গাইয়াতুল মারাম (৩৩২) , মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। ইবনু উমার, তামীম আদ-দারী, জারীর, হাকীম ইবনু আবী ইয়াযীদ তার পিতার সূত্রে এবং সাওবান (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮. অনুচ্ছেদঃ
মুসলমানের পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা পোষণ
১৯২৭
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ أَسْبَاطِ بْنِ مُحَمَّدٍ الْقُرَشِيُّ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ هِشَامِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ لاَ يَخُونُهُ وَلاَ يَكْذِبُهُ وَلاَ يَخْذُلُهُ كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ عِرْضُهُ وَمَالُهُ وَدَمُهُ التَّقْوَى هَا هُنَا بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْتَقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَبِي أَيُّوبَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক মুসলমান অন্য মুসলমানের ভাই। সে তার সাথে কোনরকম বিশ্বাসঘাতকতা করবে না, তার প্রসঙ্গে মিথ্যা বলবে না, তাকে অপমান করবে না। প্রত্যেক মুসলমানের মান-সম্মান, ধন-সম্পদ ও রক্তের (জীবনের) উপর হস্তক্ষেপ করা অপর মুসলমানের উপর হারাম। তাক্বওয়া এখানে (অন্তরে)। কেউ মন্দ বলে প্রমাণিত হওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, সে তার অপর মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ জ্ঞান করে।
সহীহ, ইরওয়া (৮/৯৯-১০০), মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব । আলী ও আবূ আইইয়্যূব (রঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯২৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ جَدِّهِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْمُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ يَشُدُّ بَعْضُهُ بَعْضًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ মূসা আল-আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একজন মু’মিন ব্যক্তি অন্য মু’মিনের জন্য একটি সুদৃঢ় প্রাসাদস্বরূপ, যার একটি অংশ অপর অংশকে শক্তিশালী করে।
সহীহ, মিশকাত (১০৪) , আল-ঈমান ইবনু আবী শাইবা (৯০) , বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯২৯
حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ أَحَدَكُمْ مِرْآةُ أَخِيهِ فَإِنْ رَأَى بِهِ أَذًى فَلْيُمِطْهُ عَنْهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَيَحْيَى بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ ضَعَّفَهُ شُعْبَةُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকেই নিজ মুসলিম ভাইয়ের আয়নাস্বরূপ। অতএব সে যদি তার মধ্যে কোন দাগ (ত্রুটি) লক্ষ্য করে, তবে তা যেন দূর করে দেয়।
খুবই দুর্বল, যঈফা (১৮৮৯)।
আবূ ঈসা বলেনঃ শুবা (রহঃ) ইয়াহইয়া ইবনু উবাইদুল্লাহকে হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল বলেছেন। এ অনুচ্ছেদে আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
১৯. অনুচ্ছেদঃ
মুসলমানের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা
১৯৩০
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ أَسْبَاطِ بْنِ مُحَمَّدٍ الْقُرَشِيُّ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ حُدِّثْتُ عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنْيَا نَفَّسَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَمَنْ يَسَّرَ عَلَى مُعْسِرٍ فِي الدُّنْيَا يَسَّرَ اللَّهُ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَمَنْ سَتَرَ عَلَى مُسْلِمٍ فِي الدُّنْيَا سَتَرَ اللَّهُ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ وَاللَّهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيهِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى أَبُو عَوَانَةَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ حُدِّثْتُ عَنْ أَبِي صَالِحٍ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক কোন মুসলমান লোকের দুনিয়াবী বিপদাপদের মধ্যে একটি বিপদও দূর করে দেয়, আল্লাহ্ তা‘আলা তার পরকালের বিপদাপদের কোন একটি বিপদ দূর করে নিবেন। যে লোক দুনিয়াতে অন্য কারো অভাব দূর করে দেয়, তার দুনিয়া ও আখিরাতের অসুবিধাগুলোকে আল্লাহ্ তা‘আলা সহজ করে দিবেন। যে লোক দুনিয়ায় কোন মুসলমানের দোষ-ক্রটিকে গোপন রাখে, আল্লাহ্ তা‘আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ক্রটি গোপন রাখবেন। যে পর্যন্ত বান্দাহ তার ভাইয়ের সাহায্য-সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকে, সে পর্যন্ত আল্লাহ্ তা‘আলাও তাঁর সাহায্য-সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১২২৫) , মুসলিম।
ইবনু উমার ও উকবা আমির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীসটি বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীসের মতো হাদীস আবূ আওয়ানা এবং বর্ণনাকারী আমাশ হতে, তিনি আবূ সালিহ হতে, তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তবে তারা এই সনদে “হুদ্দিসতু আন আবী সালিহ” কথাটুকু উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২০. অনুচ্ছেদঃ
কোন মুসলমানের মানসম্মানের উপর আসন্ন আক্রমণ প্রতিহত করা
১৯৩১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ أَبِي بَكْرٍ النَّهْشَلِيِّ، عَنْ مَرْزُوقٍ أَبِي بَكْرٍ التَّيْمِيِّ، عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ رَدَّ عَنْ عِرْضِ أَخِيهِ رَدَّ اللَّهُ عَنْ وَجْهِهِ النَّارَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ يَزِيدَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবুদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক তার কোন ভাইয়ের মান-সম্মানের উপর আঘাত প্রতিরোধ করে, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ্ তা‘আলা তার মুখমন্ডল হতে জাহান্নামের আগুন প্রতিরোধ করবেন।
সহীহ, গাইয়াতুল মারাম (৪৩১)।
আসমা বিনতু ইয়াযীদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীসটি বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২১. অনুচ্ছেদঃ
মুসলিম ভাইয়ের সাথে কথা-বার্তা ও মেলামেশা পরিত্যাগ করা নিষেধ
১৯৩২
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الأَنْصَارِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثٍ يَلْتَقِيَانِ فَيَصُدُّ هَذَا وَيَصُدُّ هَذَا وَخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلاَمِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَأَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَهِشَامِ بْنِ عَامِرٍ وَأَبِي هِنْدٍ الدَّارِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ আইয়্যূব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মুসলমান ব্যক্তির জন্য তিনদিনের বেশি সময় ধরে তার ভাইয়ের সাথে কথা-বার্তা ও মেলামেশা ত্যাগ করা জায়িয নয়। তাদের দুজনের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ হয়, অথচ একজন এদিকে এবং অন্যজন আরেক দিকে মুখ সরিয়ে নেয়। তাদের দুজনের মধ্যে যে ব্যক্তি প্রথমে সালাম দেয় সে-ই উত্তম।
সহীহ, ইরওয়া (২০২৯) , বুখারী, মুসলিম।
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ, আনাস, আবূ হুরাইরা, হিশাম ইবনু আমির ও আবূ হিন্দ আদ-দারী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২. অনুচ্ছেদঃ
ভাইয়ের প্রতি সহানুভূতি দেখানো
১৯৩৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ لَمَّا قَدِمَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ الْمَدِينَةَ آخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُ وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ فَقَالَ لَهُ هَلُمَّ أُقَاسِمْكَ مَالِي نِصْفَيْنِ وَلِي امْرَأَتَانِ فَأُطَلِّقُ إِحْدَاهُمَا فَإِذَا انْقَضَتْ عِدَّتُهَا فَتَزَوَّجْهَا . فَقَالَ بَارَكَ اللَّهُ لَكَ فِي أَهْلِكَ وَمَالِكَ دُلُّونِي عَلَى السُّوقِ . فَدَلُّوهُ عَلَى السُّوقِ فَمَا رَجَعَ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ وَمَعَهُ شَيْءٌ مِنْ أَقِطٍ وَسَمْنٍ قَدِ اسْتَفْضَلَهُ فَرَآهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ ذَلِكَ وَعَلَيْهِ وَضَرٌ مِنْ صُفْرَةٍ فَقَالَ ” مَهْيَمْ ” . قَالَ تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنَ الأَنْصَارِ . قَالَ ” فَمَا أَصْدَقْتَهَا ” . قَالَ نَوَاةً . قَالَ حُمَيْدٌ أَوْ قَالَ وَزْنَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ . فَقَالَ ” أَوْلِمْ وَلَوْ بِشَاةٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ وَزْنُ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ وَزْنُ ثَلاَثَةِ دَرَاهِمَ وَثُلُثٍ . وَقَالَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ وَزْنُ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ وَزْنُ خَمْسَةِ دَرَاهِمَ . سَمِعْتُ إِسْحَاقَ بْنَ مَنْصُورٍ يَذْكُرُ عَنْهُمَا هَذَا .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ) মাদীনায় পৌছানোর পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার এবং সা’দ ইবনুর রাবী (রাঃ)-এর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন স্থাপন করে দেন। সা’দ (রাঃ) তাকে বললেন, আসুন আমার সম্পদ উভয়ে অর্ধেক অর্ধেক ভাগ করে নিই। আমার দু’জন স্ত্রী আছে। আমি তাদের একজনকে তালাক দেই এবং সে তার ইদ্দাত পূর্ণ করলে আপনি তাকে বিয়ে করে ফেলুন। আবদুর রাহমান (রাঃ) বললেন, আপনাকে আপনার ধন-দৌলতে ও পরিবার-পরিজনে আল্লাহ্ তা‘আলা বারকাত দান করুন। আপনারা আমাকে বাজারের পথটি দেখিয়ে দিন। তারা তাকে বাজারের পথটি দেখিয়ে দিলেন। সেদিন বাজার হতে তিনি লাভস্বরূপ কিছু পনির ও ঘি নিয়ে ফিরে আসেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন তাঁর শরীরে হলুদ রং-এর চিহ্ন দেখে বললেন, কি ব্যাপার? তিনি বললেন, আমি একজন আনসার মহিলাকে বিয়ে করেছি। তিনি আবার প্রশ্ন করলেনঃ মোহরানা হিসেবে কি দিয়েছ? তিনি বললেন, খেজুর বীচি (পরিমাণ স্বর্ণ)। হুমাইদ বলেনঃ অথবা তিনি বললেন, এক খেজুর বীচি পরিমাণ স্বর্ণ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ বিবাহ ভোজের ব্যবস্থা কর তা একটি ছাগল দিয়ে হলেও।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৯০৭) , বুখারী, মুসলীম। তবে তাতে সা’দ ও আব্দুর রাহমানের ঘটনার উল্লেখ নেই।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। ইমাম আহ্মাদ (রাহ) বলেন, একটি খেজুর বীচির সমপরিমাণ স্বর্ণের ওজন হচ্ছে সোয়া তিন দিরহাম। ইমাম ইসহাক (রহঃ) বলেন, একটি খেজুর বীচির সমপরিমাণ স্বর্ণের ওজন হচ্ছে পাঁচ দিরহাম। আমি এই তথ্যটি পেয়েছি ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাক (রহঃ) হতে ইসহাক ইবনু মানসূরের মধ্যস্থতায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩. অনুচ্ছেদঃ
গীবত (অনুপস্থিতিতে পরনিন্দা) প্রসঙ্গে
১৯৩৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الْغِيبَةُ قَالَ ” ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ ” . قَالَ أَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِيهِ مَا أَقُولُ قَالَ ” إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدِ اغْتَبْتَهُ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدْ بَهَتَّهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَرْزَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বলা হল, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! গীবত কি? তিনি বললেন? তোমরা ভাইয়ের প্রসঙ্গে তোমার এমন ধরনের কথা-বার্তা বলা যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্নকারী বলল, আমি যে কথাগুলো বলি তা প্রকৃতপক্ষেই তার মধ্যে নিহিত থাকলে, এক্ষেত্রে আপনার কি মত? তিনি বললেনঃ তুমি যে কথাগুলো বল তা প্রকৃতই তার মধ্যে নিহিত থাকলে তবেই তো তুমি তার গীবত করলে। তুমি যা বল তার মধ্যে যদি সেগুলো না থাকে তাহলে তুমি তাকে মিথ্যা অপবাদ দিলে।
সহীহ, গাইয়াতুল মারাম (৪২৬) , নাকদুল কাত্তাণী (৩৬) , সহীহাহ্ (২৬৬৭) , মুসলিম।
আবূ বারযা, ইবনু উমার ও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৪. অনুচ্ছেদঃ
হিংসা-বিদ্বেষ
১৯৩৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْجَبَّارِ بْنُ الْعَلاَءِ الْعَطَّارُ، وَسَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ تَقَاطَعُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَحَاسَدُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا وَلاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ وَالزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা একজন অন্যজনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করো না, পরস্পরে শত্রুতা পোষণ করো না, পরস্পরকে ঘৃণা করো না, পরস্পর হিংসা করো না, বরং আল্লাহ্ তা‘আলার বান্দাহগণ! পরস্পর ভাই হয়ে থাকো। কোন মুসলমান ব্যক্তির পক্ষেই বৈধ নয় তার ভাইকে তিনদিনের অধিক সময় ধরে ত্যাগ করে থাকা।
সহীহ ইরওয়া (৭/৯৩) , বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূ বাক্র সিদ্দীক, যুবাইর ইবনুল আওয়াম, ইবনু মাসউদ, ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯৩৬
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً فَهُوَ يُنْفِقُ مِنْهُ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ الْقُرْآنَ فَهُوَ يَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوُ هَذَا .
সালিম (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শুধু দুই প্রকারের লোকই হিংসাযোগ্য। (এক) যে লোককে আল্লাহ্ তা‘আলা ধন-সম্পদ দান করেছেন এবং সে তা হতে দিন-রাত আল্লাহ্ তা‘আলার পথে ব্যয় করে। (দুই) যাকে আল্লাহ্ তা‘আলা কুরআনের জ্ঞান দিয়েছেন এবং সে দিন-রাত এর বাস্তবায়নে নিযুক্ত থাকে।
সহীহ্, রাওযুন নাযীর (৮৯৭) , বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। ইবনু মাসঊদ ও আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫. অনুচ্ছেদঃ
পরস্পরের বিরুদ্ধে হিংসা ও শক্রতা পোষণ করা
১৯৩৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ يَئِسَ أَنْ يَعْبُدَهُ الْمُصَلُّونَ وَلَكِنْ فِي التَّحْرِيشِ بَيْنَهُمْ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَسُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ عَنْ أَبِيهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَأَبُو سُفْيَانَ اسْمُهُ طَلْحَةُ بْنُ نَافِعٍ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নামায আদায়কারী কখনো শাইতানের পূজা করবে (সাজদা দিবে) এ বিষয়ে সে নিরাশ হয়ে গেছে। কিন্তু সে তাদের মধ্যে একজনকে অন্যজনের বিরুদ্ধে উস্কানি দিতে নিরাশ হয়নি।
সহীহ্, সহীহাহ (১৬০৬) , মুসলিম।
আনাস ও সুলাইমান ইবনু আমর ইবনু আহওয়াহ (রাঃ) হতে তাঁর পিতার সূত্রে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূ সুফিয়ানের নাম তালহা, পিতা নাফি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৬. অনুচ্ছেদঃ
পরস্পরের মাঝে সংশোধন করা
১৯৩৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أُمِّهِ أُمِّ كُلْثُومٍ بِنْتِ عُقْبَةَ، قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ لَيْسَ بِالْكَاذِبِ مَنْ أَصْلَحَ بَيْنَ النَّاسِ فَقَالَ خَيْرًا أَوْ نَمَى خَيْرًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
উম্মু কুলসুম বিনতু উকবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি লোকদের মাঝে সংশোধন করার চেষ্টা করে সে মিথ্যাবাদী নয়। সে (যা বলেছে) ভাল বলেছে অথবা ভালকাজের অগ্রগতি ঘটিয়েছে।
সহীহ্, রাওযুন নাযীর (১১৯৬) , সহীহাহ্ (৫৪৫) , মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯৩৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ السَّرِيِّ، وَأَبُو أَحْمَدَ قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ يَزِيدَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ يَحِلُّ الْكَذِبُ إِلاَّ فِي ثَلاَثٍ يُحَدِّثُ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ لِيُرْضِيَهَا وَالْكَذِبُ فِي الْحَرْبِ وَالْكَذِبُ لِيُصْلِحَ بَيْنَ النَّاسِ ” . وَقَالَ مَحْمُودٌ فِي حَدِيثِهِ ” لاَ يَصْلُحُ الْكَذِبُ إِلاَّ فِي ثَلاَثٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ أَسْمَاءَ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ خُثَيْمٍ .
وَرَوَى دَاوُدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ، هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ أَسْمَاءَ . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ أَبُو كُرَيْبٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ .
আসমা বিনতু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনটি ক্ষেত্র ব্যতীত মিথ্যা বলা বৈধ নয়। (এক) স্ত্রীকে খুশি করার উদ্দেশ্যে তার সাথে স্বামীর কিছু বলা, (দুই) যুদ্ধের সময় এবং (তিন) লোকদের পরস্পরের মাঝে সংশোধন করার জন্য মিথ্যা কথা বলা। অধঃস্তন রাবী মাহমূদ তার হাদীসে বলেছেন, তিনটি ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য কোথাও মিথ্যা বলা ঠিক নয়।
সহীহ, সহীহাহ্ (৫৪৫) , মুসলিম।
“স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করার জন্য” এই অংশ ব্যতীত হাদীসটি অনুরূপ বর্ণনা করেছেন উম্মু কুলসুম হতে।
এ হাদীসটি হাসান। ইবনু খুসাইমের সূত্র ব্যতীত আসমা (রাঃ) বর্ণিত এ হাদীস আমরা অন্য কোন সূত্রে অবহিত নই। দাঊদ ইবনু আবূ হিন্দ-শাহ্র ইবনু হাওশাবের বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তাতে আসমা (রাঃ)-এর উল্লেখ নেই। মুহাম্মাদ ইবনুল আলা-ইবনু আবূ যাইদা-দাঊদ সূত্রে উক্ত হাদীস আমার নিকট এ রকম বর্ণনা করেছেন। এ অনুচ্ছেদে আবূ বাক্র (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭. অনুচ্ছেদঃ
বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণা
১৯৪০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، عَنْ لُؤْلُؤَةَ، عَنْ أَبِي صِرْمَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ ضَارَّ ضَارَّ اللَّهُ بِهِ وَمَنْ شَاقَّ شَاقَّ اللَّهُ عَلَيْهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ .
আবূ সিরমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক অন্য কারো ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ্ তা‘আলা তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে লোক অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন।
হাসান, ইরওয়া (৮৯৬)।
আবূ বাক্র (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১৯৪১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ الْعُكْلِيُّ، حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ الْكِنْدِيُّ، حَدَّثَنَا فَرْقَدٌ السَّبَخِيُّ، عَنْ مُرَّةَ بْنِ شَرَاحِيلَ الْهَمْدَانِيِّ، وَهُوَ الطَّيِّبُ – عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَلْعُونٌ مَنْ ضَارَّ مُؤْمِنًا أَوْ مَكَرَ بِهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আবূ বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন মু’মিনের ক্ষতিসাধন করে অথবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সে অভিশপ্ত।
যঈফ, যঈফা (১৯০৩)। আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৮. অনুচ্ছেদঃ
প্রতিবেশীর হক বা অধিকার
১৯৪২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي بَكْرٍ، هُوَ ابْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ – عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَا زَالَ جِبْرِيلُ يُوصِينِي بِالْجَارِ حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিবেশীর অধিকারের ব্যাপারে জিবরাঈল (আঃ) আমাকে অবিরত উপদেশ দিতে থাকেন। এতে আমার ধারণা হল যে, হয়ত শীঘ্রই তাকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবে।
সহীহ, প্রাগুক্ত, বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯৪৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ شَابُورَ، وَبَشِيرٍ أَبِي إِسْمَاعِيلَ، عَنْ مُجَاهِدٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، ذُبِحَتْ لَهُ شَاةٌ فِي أَهْلِهِ فَلَمَّا جَاءَ قَالَ أَهْدَيْتُمْ لِجَارِنَا الْيَهُودِيِّ أَهْدَيْتُمْ لِجَارِنَا الْيَهُودِيِّ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَا زَالَ جِبْرِيلُ يُوصِينِي بِالْجَارِ حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ وَالْمِقْدَادِ بْنِ الأَسْوَدِ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ وَأَبِي شُرَيْحٍ وَأَبِي أُمَامَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ عَائِشَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَيْضًا .
মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)-এর জন্য তার পরিবারে একটি ছাগল যবেহ করা হল। তিনি এসে বললেন, তোমরা কি আমাদের ইয়াহুদী প্রতিবেশীকে (গোশত) উপহার পাঠিয়েছ? আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ প্রতিবেশীর অধিকার প্রসঙ্গে জিবরাঈল (আঃ) আমাকে অবিরত উপদেশ দিতে থাকেন। এমনকি আমার ধারণা হল যে, হয়ত শীঘ্রই প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবে।
সহীহ, ইরওয়া (৮১১) , বুখারী।
এ অনুচ্ছেদে আইশা, ইবনু আব্বাস, আবূ হুরাইরা, আনাস, মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ, উকবা ইবনু আমির, আবূ শুরাইহ্ ও আবূ উমামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং উল্লেখিত সনদসূত্রে গারীব। এ হাদীসটি-আইশা ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯৪৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ حَيْوَةَ بْنِ شُرَيْحٍ، عَنْ شُرَحْبِيلَ بْنِ شَرِيكٍ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ خَيْرُ الأَصْحَابِ عِنْدَ اللَّهِ خَيْرُهُمْ لِصَاحِبِهِ وَخَيْرُ الْجِيرَانِ عِنْدَ اللَّهِ خَيْرُهُمْ لِجَارِهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَأَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ .
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট সঙ্গীদের মাঝে উত্তম সঙ্গী হল সেই ধরনের ব্যক্তি যে তার নিজ সঙ্গীর নিকট উত্তম। আল্লাহ্ তা‘আলার দৃষ্টিতে প্রতিবেশীদের মাঝে উত্তম হল সেই ধরনের প্রতিবেশী যে তার নিজের প্রতিবেশীর নিকট উত্তম।
সহীহ, সহীহাহ (১০৩০) , মিশকাত (৪৯৮৭)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবূ আব্দুর রাহমান আল-হুবুলীর নাম আব্দুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯. অনুচ্ছেদঃ
খাদিমদের সাথে উত্তম আচরণ করা
১৯৪৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ وَاصِلٍ، عَنِ الْمَعْرُورِ بْنِ سُوَيْدٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِخْوَانُكُمْ جَعَلَهُمُ اللَّهُ فِتْيَةً تَحْتَ أَيْدِيكُمْ فَمَنْ كَانَ أَخُوهُ تَحْتَ يَدِهِ فَلْيُطْعِمْهُ مِنْ طَعَامِهِ وَلْيُلْبِسْهُ مِنْ لِبَاسِهِ وَلاَ يُكَلِّفْهُ مَا يَغْلِبُهُ فَإِنْ كَلَّفَهُ مَا يَغْلِبُهُ فَلْيُعِنْهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأُمِّ سَلَمَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এরা তোমাদের ভাই, এদেরকে আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদের অধীনস্থ করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তির এরূপ ভাই (গোলাম, বাঁদী, খাদিম) তার অধীনে আছে, সে যেন তার খাদ্য হতে তাকে খেতে দেয় এবং তার পোশাক-পরিচ্ছদ হতে তাকে পরতে দেয়। সে এরূপ কাজের বোঝা যেন তার উপর না চাপায় যা করতে সে সমর্থ নয়। সে তার উপর সাধ্যাতীত কোন কাজের বোঝা চাপিয়ে দিলে সে যেন তাকে সহযোগিতা করে।
সহীহ, বুখারী, মুসলিম।
আলী, উম্মু সালামা, ইবনু উমার ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯৪৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ يَحْيَى، عَنْ فَرْقَدٍ السَّبَخِيِّ، عَنْ مُرَّةَ الطَّيِّبِ، عَنْ أَبِي بَكْرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ سَيِّئُ الْمَلَكَةِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ تَكَلَّمَ أَيُّوبُ السَّخْتِيَانِيُّ وَغَيْرُ وَاحِدٍ فِي فَرْقَدٍ السَّبَخِيِّ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
আবূ বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অধীনস্থদের সাথে দুর্ব্যবহারকারী জান্নাতে যেতে পারবে না।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩৬৯১)।
আবূ ঈসা বলেছেন, এ হাদীসটি গারীব। আইউব সাখতিয়ানী প্রমুখ হাদীস বিশারদ ফারকাদের স্মৃতিশক্তির সমালোচনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩০. অনুচ্ছেদঃ
খাদিমকে প্রহার করা এবং গালি দেয়া নিষধ
১৯৪৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ فُضَيْلِ بْنِ غَزْوَانَ، عَنِ ابْنِ أَبِي نُعْمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم نَبِيُّ التَّوْبَةِ “ مَنْ قَذَفَ مَمْلُوكَهُ بَرِيئًا مِمَّا قَالَ لَهُ أَقَامَ عَلَيْهِ الْحَدَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ كَمَا قَالَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَابْنُ أَبِي نُعْمٍ هُوَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي نُعْمٍ الْبَجَلِيُّ يُكْنَى أَبَا الْحَكَمِ . وَفِي الْبَابِ عَنْ سُوَيْدِ بْنِ مُقَرِّنٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাওবাহকারী আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ যদি তার নির্দোষ গোলামের বিরুদ্ধে (যিনার) অপবাদ আরোপ করে তবে আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামাত দিবসে তার উপর হদ্দ (নির্ধারিত শাস্তি) প্রতিষ্ঠিত করবেন। তবে গোলামটি যদি প্রকৃতপক্ষেই সেরকমের হয় তাহলে ভিন্ন কথা।
সহীহ, রাওযুন নাযীর (১১৪৬) , বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। ইবনু আবী নুম-এর নাম আবদুর রাহমান ইবনু আবী নুম আল-বাজালী, উপনাম আবুল হাকাম। সুওয়াইদ ইবনু মুক্বাররিন ও আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীসটি বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯৪৮
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا مُؤَمَّلٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ كُنْتُ أَضْرِبُ مَمْلُوكًا لِي فَسَمِعْتُ قَائِلاً مِنْ خَلْفِي يَقُولُ ” اعْلَمْ أَبَا مَسْعُودٍ اعْلَمْ أَبَا مَسْعُودٍ ” . فَالْتَفَتُّ فَإِذَا أَنَا بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” لَلَّهُ أَقْدَرُ عَلَيْكَ مِنْكَ عَلَيْهِ ” . قَالَ أَبُو مَسْعُودٍ فَمَا ضَرَبْتُ مَمْلُوكًا لِي بَعْدَ ذَلِكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَإِبْرَاهِيمُ التَّيْمِيُّ هُوَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ يَزِيدَ بْنِ شَرِيكٍ .
আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময় আমি আমার এক গোলামকে প্রহার করছিলাম। তখন আমার পিছন হতে একজন লোককে আমি বলতে শুনলাম, আবূ মাসঊদ, জেনে রাখ, আবূ মাসঊদ, জেনে রাখ! আমি পিছনে তাকানো মাত্রই দেখতে পাই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তিনি বললেনঃ তুমি এর উপর যে পরিমাণ ক্ষমতার অধিকারী, তোমার উপর আল্লাহ্ তা‘আলা এরচাইতে অনেক বেশি ক্ষমতার অধিকারী। আবূ মাসঊদ (রাঃ) বলেন, এরপর হতে আমি আমার কোন গোলামকে আর কখনো মারিনি।
সহীহ, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। ইবরাহীম আত-তাইমীর পিতা ইয়াযীদ ইবনু শারীক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১. অনুচ্ছেদঃ
খাদিমকে ক্ষমা করা
১৯৪৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا رِشْدِينُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِي هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيِّ، عَنْ عَبَّاسٍ الْحَجَرِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَمْ أَعْفُو عَنِ الْخَادِمِ فَصَمَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَمْ أَعْفُو عَنِ الْخَادِمِ فَقَالَ “ كُلَّ يَوْمٍ سَبْعِينَ مَرَّةً ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَاهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ عَنْ أَبِي هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيِّ نَحْوًا مِنْ هَذَا . وَالْعَبَّاسُ هُوَ ابْنُ جُلَيْدٍ الْحَجَرِيُّ الْمِصْرِيُّ .
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ أَبِي هَانِئٍ الْخَوْلاَنِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ . وَرَوَى بَعْضُهُمْ، هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ وَهْبٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، .
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একজন লোক এসে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! আমি খাদিমের অপরাধ কতবার ক্ষমা করব? তার কথা শুনে রাসূলু্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নীরব থাকলেন। সে আবার বললঃ হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! আমি খাদিমের অপরাধ কতবার ক্ষমা করব? তিনি বললেনঃ প্রতিদিন সত্তরবার।
সহীহ, সহীহাহ্ (৪৮৮)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব (তিরমিযীর কোন কোন নোসখায় হাসান সহীহ্)। এ হাদীসটি আবূ হানী আল-খাওলানী হতে উক্ত সনদে আবদুল্লাহ ইবনু ওয়াহ্ব অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আব্বাসের বাবার নাম জুলাইদ আল-হাজারী আল-মিসরী। কুতাইবা-আবদুল্লাহ ইবনু ওয়াহ্ব হতে, তিনি আবূ হানী হতে এই সূত্রে একইরকম বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি কয়েকজন বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইবনু ওয়াহ্বের সূত্রে বর্ণনা করেছেন এবং তারা “আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতে” উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩২. অনুচ্ছেদঃ
খাদেমের অপরাধ ক্ষমা করা এবং তাদের প্রতি উদার হওয়া
১৯৫০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي هَارُونَ الْعَبْدِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا ضَرَبَ أَحَدُكُمْ خَادِمَهُ فَذَكَرَ اللَّهَ فَارْفَعُوا أَيْدِيَكُمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَبُو هَارُونَ الْعَبْدِيُّ اسْمُهُ عُمَارَةُ بْنُ جُوَيْنٍ . قَالَ قَالَ أَبُو بَكْرٍ الْعَطَّارُ قَالَ عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ ضَعَّفَ شُعْبَةُ أَبَا هَارُونَ الْعَبْدِيَّ . قَالَ يَحْيَى وَمَا زَالَ ابْنُ عَوْنٍ يَرْوِي عَنْ أَبِي هَارُونَ حَتَّى مَاتَ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন তার খাদিমকে মারে এবং সে (খাদিম) আল্লাহ্ তা‘আলার দোহাই দেয়, তখন তোমাদের হাত তুলে নাও (মারধর বন্ধ কর)।
যঈফ, যঈফা (১৪৪১)।
আবূ ঈসা বলেনঃ আবূ হারূন আল-আবদীর নাম উমারা ইবনু জুওয়াইন। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ বলেছেন, শুবা আবূ হারূন আল-আবদীকে দুর্বল রাবী বলে উল্লেখ করেছেন। ইয়াহ্ইয়া বলেছেন, ইবনু আওন আমৃত্যু আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
সন্তানদের শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া
১৯৫১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَعْلَى، عَنْ نَاصِحٍ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لأَنْ يُؤَدِّبَ الرَّجُلُ وَلَدَهُ خَيْرٌ مِنْ أَنْ يَتَصَدَّقَ بِصَاعٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَنَاصِحٌ هُوَ ابْنُ الْعَلاَءِ كُوفِيٌّ لَيْسَ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ بِالْقَوِيِّ وَلاَ يُعْرَفُ هَذَا الْحَدِيثُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَنَاصِحٌ شَيْخٌ آخَرُ بَصْرِيٌّ يَرْوِي عَنْ عَمَّارِ بْنِ أَبِي عَمَّارٍ وَغَيْرِهِ هُوَ أَثْبَتُ مِنْ هَذَا .
জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিজের সন্তানকে শিষ্টাচার ও আদব-কায়দা শিক্ষা দেয়া এক ‘সা’ পরিমাণ বস্তু দান-খাইরাত করার চেয়েও উত্তম।
যঈফ, যঈফা (১৮৮৭)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। হাদীস বিশারদদের মতে নাসিহ আবূল আলা আল-কূফী খুব একটা মজবুত রাবী নন। উল্লেখিত হাদীসটি শুধুমাত্র এই সূত্রেই জানা গেছে। বসরাবাসী শাইখ নাসিহ- যিনি আম্মার ইবনু আবী আম্মার এবং অন্যান্য শাইখ হতে হাদীস বর্ণনা করেন, এই কুফী নাসীহ-এর তুলনায় বেশী শক্তিশালী।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৯৫২
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا عَامِرُ بْنُ أَبِي عَامِرٍ الْخَزَّازُ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ مُوسَى، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَا نَحَلَ وَالِدٌ وَلَدًا مِنْ نَحْلٍ أَفْضَلَ مِنْ أَدَبٍ حَسَنٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَامِرِ بْنِ أَبِي عَامِرٍ الْخَزَّازِ وَهُوَ عَامِرُ بْنُ صَالِحِ بْنِ رُسْتُمَ الْخَزَّازُ وَأَيُّوبُ بْنُ مُوسَى هُوَ ابْنُ عَمْرِو بْنِ سَعِيدِ بْنِ الْعَاصِي . وَهَذَا عِنْدِي حَدِيثٌ مُرْسَلٌ .
আইউব ইবনু মূসা (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন পিতা তার সন্তানকে উত্তম শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়ার চেয়ে বেশী উত্তম কোন জিনিস দিতে পারে না।
যঈফ, যঈফা (১১২১) নাকদুল কাত্তানী পৃঃ (২০)। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধু আমির ইবনু আবূ আমির আল-খায্যায-এর সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। আমিরের পিতা সালিহ ইবনু রুসতুম। আইউব ইবনু মূসা হলেন ইবনু আমর ইবনু সাঈদ আল-আসী। আমার মতে এটি মুরসাল হাদীস।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
উপহার আদান-প্রদান
১৯৫৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَكْثَمَ، وَعَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْبَلُ الْهَدِيَّةَ وَيُثِيبُ عَلَيْهَا . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ وَابْنِ عُمَرَ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عِيسَى بْنِ يُونُسَ عَنْ هِشَامٍ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপহার নিতেন এবং বিনিময়ে উপহার প্রদান করতেন।
সহীহ, ইরওয়া (১৬০৩) , বুখারী।
আবূ হুরাইরা, আনাস, ইবনু উমার ও জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ এবং উল্লেখিত সনদসূত্রে গারীব। এটা মারফূ হিসাবে শুধু ঈসা ইবনু ইউনুস হতে হিশামের সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
১৯৫৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ لاَ يَشْكُرِ النَّاسَ لاَ يَشْكُرِ اللَّهَ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষের প্রতি যে লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, আল্লাহ্ তা‘আলার প্রতিও সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
সহীহ, মিশকাত (৩০২৫) , সহীহাহ্ (৪১৭) , তা’লীকুর রাগীব (২/৫৬)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯৫৫
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، ح وَحَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الرُّؤَاسِيُّ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ لَمْ يَشْكُرِ النَّاسَ لَمْ يَشْكُرِ اللَّهَ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَالأَشْعَثِ بْنِ قَيْسٍ وَالنُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মানুষের প্রতি যে লোক কৃতজ্ঞ নয় আল্লাহ্ তা‘আলার প্রতিও সে কৃতজ্ঞ নয়।
পূর্বের হাদীসের সহায়তায় হাদীসটি সহীহ, প্রাগুক্ত।
আবূ হুরাইরা, আশআস ইবনু ক্বাইস ও নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৬. অনুচ্ছেদঃ
কল্যাণকর কাজ ও আচরণ
১৯৫৬
حَدَّثَنَا عَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْعَظِيمِ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُرَشِيُّ الْيَمَامِيُّ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو زُمَيْلٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ تَبَسُّمُكَ فِي وَجْهِ أَخِيكَ لَكَ صَدَقَةٌ وَأَمْرُكَ بِالْمَعْرُوفِ وَنَهْيُكَ عَنِ الْمُنْكَرِ صَدَقَةٌ وَإِرْشَادُكَ الرَّجُلَ فِي أَرْضِ الضَّلاَلِ لَكَ صَدَقَةٌ وَبَصَرُكَ لِلرَّجُلِ الرَّدِيءِ الْبَصَرِ لَكَ صَدَقَةٌ وَإِمَاطَتُكَ الْحَجَرَ وَالشَّوْكَةَ وَالْعَظْمَ عَنِ الطَّرِيقِ لَكَ صَدَقَةٌ وَإِفْرَاغُكَ مِنْ دَلْوِكَ فِي دَلْوِ أَخِيكَ لَكَ صَدَقَةٌ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَجَابِرٍ وَحُذَيْفَةَ وَعَائِشَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَأَبُو زُمَيْلٍ اسْمُهُ سِمَاكُ بْنُ الْوَلِيدِ الْحَنَفِيُّ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ এবং তোমার অসৎকাজ হতে বিরত থাকার নির্দেশ তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ। পথহারা লোককে পথের সন্ধান দেয়া তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ, স্বল্প দৃষ্টি সম্পন্ন লোককে সঠিক দৃষ্টি দেয়া তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ। পথ হতে পাথর, কাঁটা ও হাড় সরানো তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ। তোমার বালতি দিয়ে পানি তুলে তোমার ভাইয়ের বালতিতে ঢেলে দেয়া তোমার জন্য সাদকাস্বরূপ।
সহীহ, সহীহাহ (৫৭২)।
ইবনু মাসঊদ, জাবির, হুযাইফা, আইশা ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবূ যুমাইলের নাম সিমাক, পিতা আল-ওয়ালীদ আল-হানাফী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৭. অনুচ্ছেদঃ
দান প্রসঙ্গে
১৯৫৭
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ يُوسُفَ بْنِ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْسَجَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” مَنْ مَنَحَ مَنِيحَةَ لَبَنٍ أَوْ وَرِقٍ أَوْ هَدَى زُقَاقًا كَانَ لَهُ مِثْلُ عِتْقِ رَقَبَةٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَقَدْ رَوَى مَنْصُورُ بْنُ الْمُعْتَمِرِ وَشُعْبَةُ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ هَذَا الْحَدِيثَ . وَفِي الْبَابِ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ . وَمَعْنَى قَوْلِهِ ” مَنْ مَنَحَ مَنِيحَةَ وَرِقٍ ” . إِنَّمَا يَعْنِي بِهِ قَرْضَ الدَّرَاهِمِ قَوْلُهُ ” أَوْ هَدَى زُقَاقًا ” . يَعْنِي بِهِ هِدَايَةَ الطَّرِيقِ .
বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি একবার দোহন করা দুধ দান করে অথবা টাকা-পয়সা ধার দেয় অথবা পথ হারিয়ে যাওয়া লোককে সঠিক পথের সন্ধান দেয়, তার জন্য রয়েছে একটি গোলাম মুক্ত করে দেয়ার সম-পরিমাণ সাওয়াব।
সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (২/৩৪,২৪১) , মিশকাত (১৯১৭)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং আবূ ইসহাক-তালহা ইবনু মুসাররিফের সূত্রে গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র এই সূত্রেই জেনেছি। এ হাদীসটি তালহা ইবনু মুসাররিফের সূত্রে মানসূর ইবনুল মু’তামির ও শুবা (রহঃ) বর্ণনা করেছেন। নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। “মানাহা মানীহাতা ওয়ারিকিন” অর্থ টাকা-পয়সা ধার দেয়া। “হাদা যুকাকান” অর্থ সঠিক পথের সন্ধান দেয়া।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৮. অনুচ্ছেদঃ
চলাচলের পথ হতে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা
১৯৫৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمْشِي فِي طَرِيقٍ إِذْ وَجَدَ غُصْنَ شَوْكٍ فَأَخَّرَهُ فَشَكَرَ اللَّهُ لَهُ فَغَفَرَ لَهُ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَرْزَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي ذَرٍّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন এক সময় একজন লোক পথ দিয়ে চলাকালে একটি কাঁটাযুক্ত ডাল দেখতে পেল। সে তা তুলে ফেলে দিল। আল্লাহ্ তা‘আলা তার এ কাজকে ক্ববূল করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন।
সহীহ, বুখারী ও মুসলিম।
আবূ বারযা, ইবনু আব্বাস ও আবূ যার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯. অনুচ্ছেদঃ
বৈঠকের আলাপ-আলোচনা আমানতস্বরূপ
১৯৫৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَطَاءٍ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ جَابِرِ بْنِ عَتِيكٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا حَدَّثَ الرَّجُلُ الْحَدِيثَ ثُمَّ الْتَفَتَ فَهِيَ أَمَانَةٌ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ وَإِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ .
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক কোন কথা বলার পর আশেপাশে তাকালে তার উক্ত কথা (শ্রবণকারীর জন্য) আমানাত বলে গণ্য।
হাসান, সহীহাহ (১০৮৯)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র ইবনু আবী যিব-এর বর্ণনার মাধ্যমেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৪০. অনুচ্ছেদঃ
দানশীলতা
১৯৬০
حَدَّثَنَا أَبُو الْخَطَّابِ، زِيَادُ بْنُ يَحْيَى الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ وَرْدَانَ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ، قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ لَيْسَ لِي مِنْ شَيْءٍ إِلاَّ مَا أَدْخَلَ عَلَىَّ الزُّبَيْرُ أَفَأُعْطِي قَالَ “ نَعَمْ وَلاَ تُوكِي فَيُوكَى عَلَيْكِ ” . يَقُولُ لاَ تُحْصِي فَيُحْصَى عَلَيْكِ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَرَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ بِهَذَا الإِسْنَادِ عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ عَنْ عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ رضى الله عنهما وَرَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا عَنْ أَيُّوبَ وَلَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ .
বিনতু আবূ বাক্র তনয়া আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! যুবাইর (রাঃ) আমাকে যা কিছু দেন তা ব্যতীত আমার কাছে কিছু নেই। আমি কি তা হতে দান করব? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তুমি থলের ফিতা বেঁধে রাখবে না, অন্যথায় তোমার জন্যও (আল্লাহ্ তা‘আলার পক্ষ হতে) বেঁধে রাখা হবে (তোমার রিযিকের থলে)।
সহীহ্; সহীহ্ আবূ দাউদ (১৪৯০) , বুখারী ও মুসলীম।
অপর বর্ণনায় আছে, গুনে গুনে খরচ কর না, অন্যথায় তোমাকেও গুনে গুনে দেয়া হবে।
আইশা ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীসটি উপরোক্ত সনদে কয়েকজন বর্ণনাকারী ইবনু আবূ মুলাইকা হতে, তিনি আব্বাদ ইবনু আবদুল্লাহ-ইবনুয যুবাইর হতে, তিনি আসমা বিনতু আবী বাক্র (রাঃ) হতে এইসূত্রে বর্ণনা করেছেন। এটি আইয়্যূবের সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তারা এতে আব্বাদ ইবনু আবদুল্লাহর উল্লেখ করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯৬১
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَرَفَةَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْوَرَّاقُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ السَّخِيُّ قَرِيبٌ مِنَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِنَ الْجَنَّةِ قَرِيبٌ مِنَ النَّاسِ بَعِيدٌ مِنَ النَّارِ وَالْبَخِيلُ بَعِيدٌ مِنَ اللَّهِ بَعِيدٌ مِنَ الْجَنَّةِ بَعِيدٌ مِنَ النَّاسِ قَرِيبٌ مِنَ النَّارِ وَلَجَاهِلٌ سَخِيٌّ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ عَابِدٍ بَخِيلٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنِ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ سَعِيدِ بْنِ مُحَمَّدٍ . وَقَدْ خُولِفَ سَعِيدُ بْنُ مُحَمَّدٍ فِي رِوَايَةِ هَذَا الْحَدِيثِ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ إِنَّمَا يُرْوَى عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَائِشَةَ شَيْءٌ مُرْسَلٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দানশীল ব্যক্তি আল্লাহ্ তা‘আলার নিকটবর্তী, জান্নাতের নিকতবর্তী, মানুষের নিকটবর্তী এবং জাহান্নাম হতে দূরবর্তী। কৃপণ ব্যক্তি আল্লাহ্ তা‘আলা হতে দূরবর্তী, জান্নাত হতে দূরবর্তী, মানুষের নিকট হতেও দূরবর্তী, কিন্তু জাহান্নামের নিকটবর্তী। আল্লাহ্ তা‘আলার নিকটে কৃপণ আলেম ব্যক্তির চেয়ে মূর্খ দানশীল ব্যক্তি বেশী প্রিয়।
খুবই দুর্বল, যঈফা (১৫৪)।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। শুধু সাঈদ ইবনু মুহাম্মাদের বরাতেই আমরা ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ-আল-আ’রাজ হতে আবূ হুরাইরা (রাঃ) সূত্রে এ হাদীস জেনেছি। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ হতে এই হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে সাঈদ ইবনু মুহাম্মাদের ব্যাপারে মতের অমিল করা হয়েছে। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ-আইশা (রাঃ) সূত্রে এই বিষয়ে কিছু মুরসাল হাদীসও বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
৪১. অনুচ্ছেদঃ
কৃপণতা
১৯৬২
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ أَخْبَرَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ غَالِبٍ الْحُدَّانِيُّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ خَصْلَتَانِ لاَ تَجْتَمِعَانِ فِي مُؤْمِنٍ الْبُخْلُ وَسُوءُ الْخُلُقِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ صَدَقَةَ بْنِ مُوسَى . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিন ব্যক্তির মধ্যে দু’টি স্বভাবের (চারিত্রিক দোষ) সমাবেশ হতে পারে নাঃ কৃপণতা ও চরিত্রহীনতা।
যঈফ, যঈফা (১১১৯) নাকদুল কাত্তানী (৩৩/৩৩)।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। শুধু সাদাকা ইবনু মূসার সূত্রে আমরা এ হাদীস জেনেছি। এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৯৬৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ مُوسَى، عَنْ فَرْقَدٍ السَّبَخِيِّ، عَنْ مُرَّةَ الطَّيِّبِ، عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ خِبٌّ وَلاَ مَنَّانٌ وَلاَ بَخِيلٌ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতারক-ধোঁকাবাজ, কৃপণ ও উপকার করে তার খোটা দানকারী জান্নাতে যেতে পারবে না।
যঈফ (বেচা-কেনা সংক্রান্ত হাদীস)। আবূ ঈসা বলেছেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৯৬৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ بِشْرِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْمُؤْمِنُ غِرٌّ كَرِيمٌ وَالْفَاجِرُ خِبٌّ لَئِيمٌ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিন ব্যক্তি চিন্তাশীল, গম্ভীর ও ভদ্র হয়ে থাকে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি প্রতারক, ধোঁকাবাজ, কৃপণ, নীচ ও অসভ্য হয়ে থাকে।
হাসান, সহীহাহ্ (৯৩২)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র উল্লেখিত সনদসূত্রে জেনেছি।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৪২. অনুচ্ছেদঃ
পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণ
১৯৬৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ نَفَقَةُ الرَّجُلِ عَلَى أَهْلِهِ صَدَقَةٌ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَعَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ الضَّمْرِيِّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ মাসঊদ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যক্তির ধন-সম্পদ ব্যয় সাদকারূপে গণ্য।
সহীহ্, সহীহা (৯৮২) , বুখারী ও মুসলিম।
আবদুল্লাহ ইবনু আমর, আমর ইবনু উমাইয়্যা ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯৬৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ ثَوْبَانَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ أَفْضَلُ الدِّينَارِ دِينَارٌ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ عَلَى عِيَالِهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ عَلَى دَابَّتِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ عَلَى أَصْحَابِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ” . قَالَ أَبُو قِلاَبَةَ بَدَأَ بِالْعِيَالِ . ثُمَّ قَالَ فَأَىُّ رَجُلٍ أَعْظَمُ أَجْرًا مِنْ رَجُلٍ يُنْفِقُ عَلَى عِيَالٍ لَهُ صِغَارٍ يُعِفُّهُمُ اللَّهُ بِهِ وَيُغْنِيهِمُ اللَّهُ بِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক তার দীনারগুলোর মধ্যে যেটি তার পরিবারের জন্য ব্যয় করে, যে দীনারটি সে আল্লাহ্ তা‘আলার পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে তার পশুর জন্য ব্যয় করে এবং যে দীনারটি সে আল্লাহ্ তা‘আলার পথে তার মুজাহিদ সঙ্গীর জন্য ব্যয় করে, তা-ই সর্বোত্তম দীনার। আবূ কিলাবা তার বর্ণনায় বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বক্তব্য শুরু করেন পরিবার-পরিজন হতে। তারপর তিনি বলেনঃ যে লোক তার নিজের ছোট ছোট সন্তানদের জন্য ব্যয় করে, বিরাট সাওয়াবের ব্যাপারে তাঁর চেয়ে বেশি বড় আর কে আছে? আল্লাহ্ তার মাধ্যমে এদের মান-ইজ্জাত ও সম্মান-সম্ভ্রম রক্ষা করেন এবং তার ওয়াসীলায় এদের স্বনির্ভর করেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৭৬০) , মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৩. অনুচ্ছেদঃ
মেহমানদারী ও এর সময়সীমা
১৯৬৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْعَدَوِيِّ، أَنَّهُ قَالَ أَبْصَرَتْ عَيْنَاىَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَسَمِعَتْهُ أُذُنَاىَ حِينَ تَكَلَّمَ بِهِ قَالَ ” مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ جَائِزَتَهُ ” . قَالُوا وَمَا جَائِزَتُهُ قَالَ ” يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ وَالضِّيَافَةُ ثَلاَثَةُ أَيَّامٍ وَمَا كَانَ بَعْدَ ذَلِكَ فَهُوَ صَدَقَةٌ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَسْكُتْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ শুরাইহ্ আল ‘আদাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার উভয় চোখ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছে এবং আমার উভয় কান তাঁকে বলতে শুনেছে। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ্ ও আখিরাতের প্রতি যে লোক ঈমান রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে, তাকে জা-ইযা দেয়। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, জা-ইযা কি? তিনি বলেনঃ একদিন ও একরাতের পাথেয় সাথে দেয়া। তিনি আরো বলেনঃ মেহমানদারী তিনদিন পর্যন্ত। এর অতিরিক্তটুকু সাদকারূপে গণ্য। আল্লাহ্ তা‘আলা ও আখিরাতের উপর সে লোক ঈমান রাখে যে যেন উত্তম কথা বলে, আর না হয় চুপ থাকে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৬৭৫) , বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯৬৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْكَعْبِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” الضِّيَافَةُ ثَلاَثَةُ أَيَّامٍ وَجَائِزَتُهُ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ وَمَا أُنْفِقَ عَلَيْهِ بَعْدَ ذَلِكَ فَهُوَ صَدَقَةٌ وَلاَ يَحِلُّ لَهُ أَنْ يَثْوِيَ عِنْدَهُ حَتَّى يُحْرِجَهُ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . وَقَدْ رَوَاهُ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ وَاللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيُّ هُوَ الْكَعْبِيُّ وَهُوَ الْعَدَوِيُّ اسْمُهُ خُوَيْلِدُ بْنُ عَمْرٍو . وَمَعْنَى قَوْلِهِ ” لاَ يَثْوِي عِنْدَهُ ” . يَعْنِي الضَّيْفَ لاَ يُقِيمُ عِنْدَهُ حَتَّى يَشْتَدَّ عَلَى صَاحِبِ الْمَنْزِلِ وَالْحَرَجُ هُوَ الضِّيقُ إِنَّمَا قَوْلُهُ ” حَتَّى يُحْرِجَهُ ” . يَقُولُ حَتَّى يُضَيِّقَ عَلَيْهِ .
আবূ শুরাইহ আল-কা‘বী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মেহমানদারী তিনদিন পর্যন্ত এবং জা-ইযা হল একদিন ও একরাতের পাথেয় প্রদান। এরপর তার জন্য যা ব্যয় করা হবে তা সাদকারূপে গণ্য। অতিথিসেবক বিরক্ত হতে পারে-কোন মেহমানের পক্ষেই এতটা সময় সেখানে থাকা বৈধ নয়।
সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (৩/২৪২) , বুখারী ও মুসলিম।
আইশা ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি সাঈদ আল-মাকবুরীর সূত্রে মালিক ইবনু আনাস ও লাইস (রহঃ) বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আবূ শুরাইহ্ আল-খুযাঈ হলেন আল-কা’বী। আর তিনিই আল-আদাবী, তার নাম খুওয়াইলিদ, পিতা আমর। “লা ইয়াসবী ইনদাহু” কথার মর্ম এই যে, মেহমানের এত দিন কোন পরিবারে থাকা যুক্তিসঙ্গত নয় যাতে তারা কষ্টের মধ্যে পতিত হয় এবং বিরক্তির কারণ হতে পারে। “হারাজ” অর্থ সংকট। “হাত্তা ইউহ্রিজাহু” কথার অর্থ এই যে, অনেকদিন থেকে সংশ্লিষ্ট পরিবারের জন্য মেহমান সংকট তৈরী করল।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪. অনুচ্ছেদঃ
ইয়াতীম ও বিধবাদের ভরণ-পোষণের চেষ্টা সাধন
১৯৬৯
حَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، يَرْفَعُهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ السَّاعِي عَلَى الأَرْمَلَةِ وَالْمِسْكِينِ كَالْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَوْ كَالَّذِي يَصُومُ النَّهَارَ وَيَقُومُ اللَّيْلَ ” .
حَدَّثَنَا الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ زَيْدٍ الدِّيلِيِّ، عَنْ أَبِي الْغَيْثِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ ذَلِكَ . وَهَذَا الْحَدِيثُ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو الْغَيْثِ اسْمُهُ سَالِمٌ مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُطِيعٍ وَثَوْرُ بْنُ زَيْدٍ مَدَنِيٌّ وَثَوْرُ بْنُ يَزِيدَ شَامِيٌّ .
সাফওয়ান ইবনু সুলাইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিধবা ও মিসকীনদের ভরণ-পোষণের জন্য চেষ্টা সাধনকারী আল্লাহ্ তা‘আলার পথে জিহাদকারী অথবা সারাদিন রোযা পালনকারী ও সারারাত নামায আদায়কারী সমান সাওয়াবের অধিকারী।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৪০) , বুখারী ও মুসলিম।
আল-আনসারী-মা’ন হতে, তিনি মালিক হতে, তিনি সাওর ইবনু যাইদ হতে, তিনি আবুল গাইস হতে, তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে (উপরের) হাদীসের ন্যায় বর্ণনা করেছেন।
এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ্। আবুল গাইস-এর নাম সালিম, আবদুল্লাহ ইবনু মুতী’র মুক্তদাস। সাওর ইবনু যাইদ মাদীনার অধিবাসী এবং সাওর ইবনু ইয়াযীদ সিরিয়ার অধিবাসী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫. অনুচ্ছেদঃ
সহাস্য মুখ ও প্রশস্ত মন (নিয়ে কারো সাথে সাক্ষাৎ করা)
১৯৭০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا الْمُنْكَدِرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ كُلُّ مَعْرُوفٍ صَدَقَةٌ وَإِنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ أَنْ تَلْقَى أَخَاكَ بِوَجْهٍ طَلْقٍ وَأَنْ تُفْرِغَ مِنْ دَلْوِكَ فِي إِنَاءِ أَخِيكَ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي ذَرٍّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিটি ভালকাজই সাদকারূপে গণ্য। তোমার ভাইয়ের সাথে সহাস্য মুখে দেখা-সাক্ষাৎ করা এবং তোমার বালতির পানি দিয়ে তোমার ভাইয়ের পাত্র ভর্তি করে দেয়াও ভাল কাজের অন্তুর্ভূক্ত।
সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (৩/২৬৪)।
আবূ যার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস