অনুচ্ছেদ-১০
সূরা আত-তাওবাহ্
৩০৮৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، وَابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، وَسَهْلُ بْنُ يُوسُفَ، قَالُوا حَدَّثَنَا عَوْفُ بْنُ أَبِي جَمِيلَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ الْفَارِسِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ، قَالَ قُلْتُ لِعُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ مَا حَمَلَكُمْ أَنْ عَمَدْتُمْ، إِلَى الأَنْفَالِ وَهِيَ مِنَ الْمَثَانِي وَإِلَى بَرَاءَةَ وَهِيَ مِنَ الْمِئِينَ فَقَرَنْتُمْ بَيْنَهُمَا وَلَمْ تَكْتُبُوا بَيْنَهُمَا سَطْرَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ وَوَضَعْتُمُوهُمَا فِي السَّبْعِ الطُّوَلِ مَا حَمَلَكُمْ عَلَى ذَلِكَ فَقَالَ عُثْمَانُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِمَّا يَأْتِي عَلَيْهِ الزَّمَانُ وَهُوَ تَنْزِلُ عَلَيْهِ السُّوَرُ ذَوَاتُ الْعَدَدِ فَكَانَ إِذَا نَزَلَ عَلَيْهِ الشَّىْءُ دَعَا بَعْضَ مَنْ كَانَ يَكْتُبُ فَيَقُولُ ضَعُوا هَؤُلاَءِ الآيَاتِ فِي السُّورَةِ الَّتِي يُذْكَرُ فِيهَا كَذَا وَكَذَا وَإِذَا نَزَلَتْ عَلَيْهِ الآيَةُ فَيَقُولُ ضَعُوا هَذِهِ الآيَةَ فِي السُّورَةِ الَّتِي يُذْكَرُ فِيهَا كَذَا وَكَذَا وَكَانَتِ الأَنْفَالُ مِنْ أَوَائِلِ مَا أُنْزِلَتْ بِالْمَدِينَةِ وَكَانَتْ بَرَاءَةُ مِنْ آخِرِ الْقُرْآنِ وَكَانَتْ قِصَّتُهَا شَبِيهَةً بِقِصَّتِهَا فَظَنَنْتُ أَنَّهَا مِنْهَا فَقُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يُبَيِّنْ لَنَا أَنَّهَا مِنْهَا فَمِنْ أَجْلِ ذَلِكَ قَرَنْتُ بَيْنَهُمَا وَلَمْ أَكْتُبْ بَيْنَهُمَا سَطْرَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ فَوَضَعْتُهَا فِي السَّبْعِ الطُّوَلِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَوْفٍ عَنْ يَزِيدَ الْفَارِسِيِّ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . وَيَزِيدُ الْفَارِسِيُّ قَدْ رَوَى عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ غَيْرَ حَدِيثٍ وَيُقَالُ هُوَ يَزِيدُ بْنُ هُرْمُزَ وَيَزِيدُ الرَّقَاشِيُّ هُوَ يَزِيدُ بْنُ أَبَانَ الرَّقَاشِيُّ وَلَمْ يُدْرِكِ ابْنَ عَبَّاسٍ إِنَّمَا رَوَى عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَكِلاَهُمَا مِنَ التَّابِعِينَ مِنْ أَهْلِ الْبَصْرَةِ وَيَزِيدُ الْفَارِسِيُّ أَقْدَمُ مِنْ يَزِيدَ الرَّقَاشِيِّ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) কে বললাম, শত আয়াতের চাইতে ক্ষুদ্রতম সূরা আল-আনফালকে শত আয়াত সম্বলিত সূরা বারাআতের পূর্বে স্থাপন করতে কিসে আপনাদেরকে উদ্দ্বুদ্ধ করল? যার ফলে আপনারা এই দু’টি সুরাকে একত্রে মিলিয়ে দিলেন, অথচ উভয়ের মাঝখানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ বাক্যটি লিখেননি এবং এটিকে সপ্ত দীর্ঘ সূরার মধ্যে রেখে দিয়েছেন। আপনাদের এরুপ করার কারণ কি? ‘উসমান (রাঃ) বললেন, একই সময়কালে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর অনেকগুলো সূরা অবতীর্ণ হত। অতএব তাঁর উপর কোন আয়াত অবতীর্ণ হলে তিনি লেখকদের কাউকে ডেকে বলতেন, এ আয়াতগুলো অমুক সূরায় যোগ কর যাতে এই বিষয়ের বর্ণনা রয়েছে। অতএব তার উপর আয়াত অবতীর্ণ হলে তিনি বলতেন, ঐ সূরাতে এ আয়াতটি শামিল কর যাতে এই এই বিষয়ের বর্ণনা রয়েছে। সূরা আল-আনফাল ছিল মাদীনায় অবতীর্ণ প্রাথমিক সূরাসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আর বারাআত ছিল (নাযিলের দিক হতে) কুরআনের শেষ দিকের সূরা। সূরা বারাআতের আলোচ্য বিষয় সূরা আল-আনফালের আলোচ্য বিষয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ছিল। তাই আমার ধারণা হল, এটি (বারাআত) তার অন্তর্ভুক্ত। এদিকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুবরণ করেন। অথচ তিনি আমাদের স্পষ্ট করে বলে যাননি যে, এ সূরা (বারাআত) আনফালের অন্তর্ভুক্ত কি না। তাই আমি উভয় সূরাকে একত্রে মিলিয়ে দিয়েছি এবং সূরা দুটোর মাঝখানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম বাক্যও লিখিনি, আর এটিকে সপ্ত দীর্ঘ সূরাসমূহের অন্তর্ভুক্ত করেছি।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আমরা এ হাদীস শুধু ‘আওফ হতে, তিনি ইয়াযীদ আল-ফারিসী হতে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে এই সূত্রেই জেনেছি। ইয়াযীদ আল-ফারেসী বসরাবাসী তাবিঈগণের অন্তর্ভুক্ত। আর ইয়াযীদ ইবনু আবান আর-রাকাশীও বাসরাবাসী তাবিঈগণের অন্তর্ভুক্ত। তবে তিনি পূর্বোক্ত জনের চাইতে কনিষ্ঠ। ইয়াযীদ আর-রাকাশী (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণণা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩০৮৭
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ الْجُعْفِيُّ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ شَبِيبِ بْنِ غَرْقَدَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، حَدَّثَنَا أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ ثُمَّ قَالَ ” أَىُّ يَوْمٍ أَحْرَمُ أَىُّ يَوْمٍ أَحْرَمُ أَىُّ يَوْمٍ أَحْرَمُ ” . قَالَ فَقَالَ النَّاسُ يَوْمُ الْحَجِّ الأَكْبَرِ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ ” فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا أَلاَ لاَ يَجْنِي جَانٍ إِلاَّ عَلَى نَفْسِهِ وَلاَ يَجْنِي وَالِدٌ عَلَى وَلَدِهِ وَلاَ وَلَدٌ عَلَى وَالِدِهِ أَلاَ إِنَّ الْمُسْلِمَ أَخُو الْمُسْلِمِ فَلَيْسَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ إِلاَّ مَا أَحَلَّ مِنْ نَفْسِهِ أَلاَ وَإِنَّ كُلَّ رِبًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعٌ لَكُمْ رُءُوسُ أَمْوَالِكُمْ لاَ تَظْلِمُونَ وَلاَ تُظْلَمُونَ غَيْرَ رِبَا الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَإِنَّهُ مَوْضُوعٌ كُلُّهُ أَلاَ وَإِنَّ كُلَّ دَمٍ كَانَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ مَوْضُوعٌ وَأَوَّلُ دَمٍ أَضَعُ مِنْ دِمَاءِ الْجَاهِلِيَّةِ دَمُ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ كَانَ مُسْتَرْضِعًا فِي بَنِي لَيْثٍ فَقَتَلَتْهُ هُذَيْلٌ أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا فَإِنَّمَا هُنَّ عَوَانٌ عِنْدَكُمْ لَيْسَ تَمْلِكُونَ مِنْهُنَّ شَيْئًا غَيْرَ ذَلِكَ إِلاَّ أَنْ يَأْتِينَ بِفَاحِشَةٍ مُبَيِّنَةٍ فَإِنْ فَعَلْنَ فَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلاَ تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلاً أَلاَ إِنَّ لَكُمْ عَلَى نِسَائِكُمْ حَقًّا وَلِنِسَائِكُمْ عَلَيْكُمْ حَقًّا فَأَمَّا حَقُّكُمْ عَلَى نِسَائِكُمْ فَلاَ يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ مَنْ تَكْرَهُونَ وَلاَ يَأْذَنَّ فِي بُيُوتِكُمْ مَنْ تَكْرَهُونَ أَلاَ وَإِنَّ حَقَّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ أَبُو الأَحْوَصِ عَنْ شَبِيبِ بْنِ غَرْقَدَةَ .
সুলাইমান ইবনু ‘আম্র ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বাবা আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বিদায় হাজ্জে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার প্রশংসা ও তাঁর গুণগান বর্ণনা করলেন, ওয়াজ-নাসীহাত করলেন ও উপদেশ দিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ আমি কোন দিনটির মর্যাদা বর্ণনা করছি, আমি কোন দিনটির মর্যাদা ঘোষণা করছি? বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! হাজ্জের মহান দিনের।তিনি বললেনঃ তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-মাল, তোমাদের ইজ্জত-সম্মানে হস্তক্ষেপ তোমাদের উপর হারাম, যেরূপ তোমাদের এ দিনে এ শহরে ও এ মাসে হারাম। জেনে রেখ! অপরাধীই অপরাধ কর্মের জন্য দায়ী ও দোষী। ছেলের অপরাধের জন্য বাবা এবং বাবার অপরাধের জন্য ছেলে অপরাধী নয়। জেনে রেখ! এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই। কাজেই এক মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের ঐ জিনিসই হালাল যা সে স্বেচ্ছায় তার জন্য হালাল করে (দান করে)। জেনে রেখ! জাহেলী যুগের প্রাপ্য সকল প্রকার সুদ বাতিল ঘোষণা করা হল। তবে তোমাদের মূলধন ফেরত পাবে। তোমরা কারো প্রতি যুলুম করবে না এবং তোমাদের প্রতিও যুলুম করা হবে না। ‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিবের সুদের সকল পাওনা বাতিল ঘোষণা করা হল। জেনে রেখ! জাহিলিয়াতের সকল প্রকার রক্তের দাবি বাতিল করা হল। জাহিলিয়াতের সর্বপ্রথম যার রক্ত আমি বাতিল ঘোষণা করছি সে হচ্ছে হারিস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিবের রক্ত। সে শিশু অবস্থায় বনূ লাইস গোত্রে দুধ পানরত অবস্থায় হুযাইল গোত্র তাকে হত্যা করেছিল। শোন! আমি তোমাদেরকে নারীদের সাথে ভালো ব্যবহারের উপদেশ দিচ্ছি। তারা তোমাদের নিকট বন্দীর মত যুক্ত। তাদের উপর তোমাদের কোন কর্তৃত্ব নেই, যদি না তারা কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। যদি তারা তাই করে তাহলে তোমরা তাদের বিছানা পৃথক করে দাও এবং একান্ত প্রয়োজন হলে হালকাভাবে আঘাত কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়ে যায়, তবে তাদের প্রতি বাড়াবাড়ির পথ অন্বেষণ কর না। জেনে রেখ! তোমাদের যেরূপ অধিকার রয়েছে তোমাদের স্ত্রীদের উপর, তোমাদের স্ত্রীদেরও তদ্রুপ অধিকার রয়েছে তোমাদের উপর (কাজেই উভয়ের প্রতি উভয়ের অধিকার আদায় করা কর্তব্য)। তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের অধিকার এই যে, তারা তোমাদের অপছন্দনীয় লোককে তোমাদের বিছানায় স্থান দিবে না এবং তোমাদের অপছন্দনীয় লোককে তোমাদের ঘরে যাতায়াতের অনুমতি দিবে না। আর তোমাদের উপর তাদের অধিকার এই যে, তোমরা (যথাসম্ভব) তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ ও আহারের সুব্যবস্থা করবে।
হাসান : ইবনু মা-জাহ (১৮৫১)।
আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এটি শাবীব ইবনু গারক্বাদাহ্ হতে আবুল আহ্ওয়াস (রহঃ) বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩০৮৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ بْنِ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ يَوْمِ الْحَجِّ الأَكْبَرِ فَقَالَ “ يَوْمُ النَّحْرِ ” .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাজ্জের মহান দিন প্রসঙ্গে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ কুরবানীর দিন।
সহীহ : (৯৫৭) নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০৮৯
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ يَوْمُ الْحَجِّ الأَكْبَرِ يَوْمُ النَّحْرِ . قَالَ هَذَا الْحَدِيثُ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ لأَنَّهُ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنِ الْحَارِثِ عَنْ عَلِيٍّ مَوْقُوفًا وَلاَ نَعْلَمُ أَحَدًا رَفَعَهُ إِلاَّ مَا رُوِيَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ عَنِ الْحَارِثِ عَنْ عَلِيٍّ مَوْقُوفًا .
আলী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাজ্জের মহান দিন হচ্ছে কুরবানীর দিন।
সহীহ : দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ‘ঈসা বলেন, মুহাম্মাদ আবূ ইসহাকের হাদিসের চাইতে এটি অনেক বেশি সহীহ। কেননা এ হাদীস বিভিন্ন সূত্রে আবূ ইসহাক আল-হারিস হতে, তিনি ‘আলী (রাঃ) হতে এই সূত্রে মাওকূফভাবে বর্ণিত হয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাকের সূত্র ব্যতীত অন্য কেউ এটিকে মারফূভাবে বর্ণনা করেছেন বলে আমার জানা নেই। শু’বাহ্ এ হাদীসটি আবূ ইসহাক হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মুররাহ্ হতে, তিনি আল-হারিস হতে, তিনি ‘আলী হতে মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০৯০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، وَعَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِبَرَاءَةَ مَعَ أَبِي بَكْرٍ ثُمَّ دَعَاهُ فَقَالَ “ لاَ يَنْبَغِي لأَحَدٍ أَنْ يُبَلِّغَ هَذَا إِلاَّ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِي ” . فَدَعَا عَلِيًّا فَأَعْطَاهُ إِيَّاهَا . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বাকর (রাঃ)-কে সূরা বারাআতের প্রাথমিক আয়াতগুলো সহকারে মক্কা মুআজ্জামায় পাঠান। তারপর তাকে ফেরত ডেকে এনে বললেনঃ আমার পরিবারের কোন সদস্য ব্যতীত অন্য কাউকে দিয়ে এটা পাঠানো উচিত নয়। এরপর তিনি ‘আলী (রাঃ)-কে ডাকলেন এবং তাকেই এটি দিলেন।
আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান; আনাস (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত হিসেবে গরীব।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩০৯১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ الْعَوَّامِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ حُسَيْنٍ، عَنِ الْحَكَمِ بْنِ عُتَيْبَةَ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَبَا بَكْرٍ وَأَمَرَهُ أَنْ يُنَادِيَ بِهَؤُلاَءِ الْكَلِمَاتِ ثُمَّ أَتْبَعَهُ عَلِيًّا فَبَيْنَا أَبُو بَكْرٍ فِي بَعْضِ الطَّرِيقِ إِذْ سَمِعَ رُغَاءَ نَاقَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْقَصْوَاءَ فَخَرَجَ أَبُو بَكْرٍ فَزِعًا فَظَنَّ أَنَّهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هُوَ عَلِيٌّ فَدَفَعَ إِلَيْهِ كِتَابَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَمَرَ عَلِيًّا أَنْ يُنَادِيَ بِهَؤُلاَءِ الْكَلِمَاتِ فَانْطَلَقَا فَحَجَّا فَقَامَ عَلِيٌّ أَيَّامَ التَّشْرِيقِ فَنَادَى ذِمَّةُ اللَّهِ وَرَسُولِهِ بَرِيئَةٌ مِنْ كُلِّ مُشْرِكٍ فَسِيحُوا فِي الأَرْضِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَلاَ يَحُجَّنَّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلاَ يَطُوفَنَّ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ وَلاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلاَّ مُؤْمِنٌ وَكَانَ عَلِيٌّ يُنَادِي فَإِذَا عَيِيَ قَامَ أَبُو بَكْرٍ فَنَادَى بِهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বাকর (রাঃ)-কে (আমীরুল হাজ্জ নিয়োগ করে) পাঠান এবং এই বাক্যগুলো ঘোষণার জন্যে তাকে নির্দেশ দেন। তারপর তিনি ‘আলী (রাঃ)-কে পাঠান। আবূ বাকর (রাঃ) পথিমধ্যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উটনী কাস্ওয়ার শব্দ শুনতে পান। আবূ বাকর (রাঃ) সন্ত্রস্ত হয়ে বের হলেন। তিনি ভেবেছিলেন হয়ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসেছেন। কিন্তু তিনি ছিলেন ‘আলী (রাঃ)। ‘আলী (রাঃ) আবূ বাকর (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর লেখা ফরমানটি দিলেন এবং তাতে তাকে এসব বিষয় ঘোষণা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। তারা দু’জনেই গন্তব্যের দিকে এগিয়ে গেলেন এবং হাজ্জ সম্পন্ন করলেন। ‘আলী (রাঃ) আইয়্যামে তাশরিক্বে (কুরবানীর দিন) দাঁড়িয়ে বললেনঃ প্রত্যেক মুশরিকের সাথে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেয়া হল। অতএব তোমরা আর চার মাস দেশে চলাফেরা কর। এ বছরের পর আর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না। নগ্ন অবস্থায় কেউ বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করবে না। শুধু মু’মিন ব্যতীত আর কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। ‘আলী (রাঃ) এভাবে ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়লে আবূ বাকর (রাঃ) দাঁড়িয়ে একই রকম ঘোষণা দিতে থাকেন।
আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত হিসেবে এই সুত্রে হাসান গরীব ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০৯২
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ يُثَيْعٍ، قَالَ سَأَلْنَا عَلِيًّا بِأَىِّ شَيْءٍ بُعِثْتَ فِي الْحَجَّةِ قَالَ بُعِثْتُ بِأَرْبَعٍ أَنْ لاَ يَطُوفَ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ وَمَنْ كَانَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَهْدٌ فَهُوَ إِلَى مُدَّتِهِ وَمَنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ عَهْدٌ فَأَجَلُهُ أَرْبَعَةُ أَشْهُرٍ وَلاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلاَّ نَفْسٌ مُؤْمِنَةٌ وَلاَ يَجْتَمِعُ الْمُشْرِكُونَ وَالْمُسْلِمُونَ بَعْدَ عَامِهِمْ هَذَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ وَهُوَ حَدِيثُ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ وَرَوَاهُ الثَّوْرِيُّ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ بَعْضِ أَصْحَابِهِ عَنْ عَلِيٍّ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
যাইদ ইবনু ইউসাই (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা ‘আলী (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, আপনাকে হাজ্জ উপলক্ষ্যে কোন জিনিস সহকারে পাঠানো হয়েছিল। তিনি বললেন, আমাকে (হাজ্জে) চারটি বিষয় সহকারে পাঠানো হয়েছিল : (১) কোন উলঙ্গ ব্যক্তি বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করতে পারবে না; (২) যাদের সাথে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চুক্তি আছে তা তার নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে আর যাদের সাথে তাঁর কোন চুক্তি নেই তারা চার মাসের অবকাশ পাবে (নিরাপত্তা সহকারে বিচরণ করার); (৩) মু’মিন ব্যতীত কোন ব্যক্তি জান্নাতে যেতে পারবে না; (৪) এ বছরের পর মুসলিমগণ ও মুশরিকরা (হাজ্জে) একত্র হতে পারবে না (এরপর হতে মুশরিকদের জন্য হাজ্জে যোগদান চিরতরে নিষিদ্ধ)।
সহীহ : (৮৭১) নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এটি আবূ ইসহাক হতে আবূ ‘উয়াইনার বর্ণিত হাদীস। সুফ্ইইয়ান সাওরীও এটি আবূ ইসহাক হতে, তিনি তার কোন সহযোগী হতে, তিনি ‘আলী (রাঃ) হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। নাসর ইবনু ‘আলী প্রমুখ- সুফ্ইয়ান ইবনু ‘উয়াইনাহ্ হতে, তিনি আবূ ইসহাক হতে, তিনি যাইদ ইবনু ইউসাই হতে, তিনি ‘আলী (রাঃ) সূত্রে পূবোর্ক্ত হাদীসের মত বর্ণনা করেছেন। ‘আলী ইবনু খাশরাম- সুফ্ইয়ান ইবনু ‘উয়াইনাহ্ হতে, তিনি আবূ ইসহাক হতে, তিনি যাইদ ইবনু উসাই হতে, তিনি ‘আলী (রাঃ) হতে এই সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেন, ইবনু ‘উয়াইনাহ্ উভয় রিওয়ায়াত ইবনু উসাই ও ইবনু ইউসাই উভয়ের সূত্রে বর্ণনা করেছেন। সঠিক হল যাইদ ইবনু উসাই। শুবাহ্ (রহঃ) উক্ত হাদীস ব্যতীত অন্য হাদীস আবূ ইসহাকের সূত্রে বর্ণনা করেছেন এবং তাতে সন্দেহে পতিত হয়েছেন এবং যাইদ ইবনু উসাইল নাম বলেছেন; কিন্তু এ ক্ষেত্রে শু’বাহ্র অনুসরণ করা হয়নি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا رِشْدِينُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ دَرَّاجٍ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِذَا رَأَيْتُمُ الرَّجُلَ يَعْتَادُ الْمَسْجِدَ فَاشْهَدُوا لَهُ بِالإِيمَانِ . قَالَ اللَّهُ تَعَالَى : ( إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ ) . ”
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কোন ব্যক্তিকে মাসজিদে যাতায়াতে অভ্যস্ত দেখলে তার ঈমানের সাক্ষী দিও। আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ “আল্লাহ্ তা’আলার মাসজিদসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ তো তারাই করে যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান এনেছে……” (সূরাঃ আত-তাওবা- ১৮)।
দুর্বল, ২৭৫০নং হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে
ইবনু আবূ উমার-আবদুল্লাহ ইবনু ওয়াহ্ব হতে তিনি আমর ইবনুল হারিস হতে তিনি দাররাজ হতে তিনি আবুল হাইসাম হতে তিনি আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) এর সূত্রেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উপরের হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। তবে তাতে “তোমরা যাকে মাসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করতে দেখ” এরূপ বর্ণিত আছে। দুর্বল, দেখুন পূর্বের হাদীস, আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। আবুল হাইসামের নাম সুলাইমান ইবনু আমর ইবনু আবদুল উতওয়ারী। তিনি ইয়াতীম ছিলেন এবং আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ)-এর পরিবারে লালিত-পালিত হন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩০৯৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ : ( وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ ) قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ فَقَالَ بَعْضُ أَصْحَابِهِ أُنْزِلَ فِي الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ مَا أُنْزِلَ . لَوْ عَلِمْنَا أَىُّ الْمَالِ خَيْرٌ فَنَتَّخِذَهُ فَقَالَ ” أَفْضَلُهُ لِسَانٌ ذَاكِرٌ وَقَلْبٌ شَاكِرٌ وَزَوْجَةٌ مُؤْمِنَةٌ تُعِينُهُ عَلَى إِيمَانِهِ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . سَأَلْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ فَقُلْتَ لَهُ سَالِمُ بْنُ أَبِي الْجَعْدِ سَمِعَ مِنْ ثَوْبَانَ فَقَالَ لاَ . فَقُلْتُ لَهُ مِمَّنْ سَمِعَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ سَمِعَ مِنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَذَكَرَ غَيْرَ وَاحِدٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “যারা সোনা ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে পীড়াদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও’ – (সূরা আত্-তাওবাহ্ : ৩৪), এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার সময় আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ভ্রমণে ছিলাম। কোন কোন সাহাবী বলেন, এ আয়াতটি সোনা ও রূপার সমালোচনায় অবতীর্ণ হয়েছে। কোন্ সম্পদ উৎকৃষ্ট আমরা তা জানতে পারলে তা জমা করতাম। তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন উৎকৃষ্ট সম্পদ হল (আল্লাহ তা’আলার) যিক্রকারী জিহ্বা, কৃতজ্ঞ অন্তর ও ঈমানদার স্ত্রী, যে স্বামীকে দীনদারির ব্যাপারে সহযোগিতা করে।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৮৫৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান । আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈলকে প্রশ্ন করে বললাম, সালিম ইবনু আবুল জা’দ (রহঃ) সাওবান (রাঃ) হতে হাদীস শুনেছেন কি? তিনি বললেন, না। আমি তাকে বললাম, তাহলে তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাহাবীগণের মধ্যে কার নিকটে শুনেছেন? তিনি বললেন, তিনি জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-এর নিকট শুনেছেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর আরো কয়েকজন সাহাবীর নামও তিনি উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০৯৫
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ يَزِيدَ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ السَّلاَمِ بْنُ حَرْبٍ، عَنْ غُطَيْفِ بْنِ أَعْيَنَ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ، قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَفِي عُنُقِي صَلِيبٌ مِنْ ذَهَبٍ . فَقَالَ ” يَا عَدِيُّ اطْرَحْ عَنْكَ هَذَا الْوَثَنَ ” . وَسَمِعْتُهُ يَقْرَأُ فِي سُورَةِ بَرَاءَةََ : ( اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ ) قَالَ ” أَمَا إِنَّهُمْ لَمْ يَكُونُوا يَعْبُدُونَهُمْ وَلَكِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا أَحَلُّوا لَهُمْ شَيْئًا اسْتَحَلُّوهُ وَإِذَا حَرَّمُوا عَلَيْهِمْ شَيْئًا حَرَّمُوهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ السَّلاَمِ بْنِ حَرْبٍ . وَغُطَيْفُ بْنُ أَعْيَنَ لَيْسَ بِمَعْرُوفٍ فِي الْحَدِيثِ .
আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি গলায় স্বর্ণের ক্রুশ পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সামনে এলাম। তিনি বললেনঃ হে ‘আদী! তোমার গলা হতে এই প্রতীমা সরিয়ে ফেল। এই বলে আমি তাঁকে সূরা বারাআতের নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করতে শুনলাম (অনুবাদ) : “তারা আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত তাদের পণ্ডিতগণকে ও সংসারবিরাগীগণকে তাদের প্রভু বানিয়ে নিয়েছে” (সূরা আত্-তাওবাহ্ ৩১)। তারপর তিনি বললেনঃ তারা অবশ্য তাদের পূজা করত না। তবে তারা কোন জিনিসকে যখন তাদের জন্য হালাল বলত তখন সেটাকে তারা হালাল বলে মেনে নিত। আবার তারা কোন জিনিসকে যখন তাদের জন্য হারাম বলত তখন নিজেদের জন্য উহাকে হারাম বলে মেনে নিত।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গরীব। আমরা এ হাদীস শুধু ‘আবদুস সালাম ইবনু হারবের সূত্রে জেনেছি। হাদীস শাস্ত্রে গুতাইফ ইবনু আই’য়ান খুব একটা প্রসিদ্ধ নন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩০৯৬
حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ أَبَا بَكْرٍ، حَدَّثَهُ قَالَ قُلْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ فِي الْغَارِ لَوْ أَنَّ أَحَدَهُمْ يَنْظُرُ إِلَى قَدَمَيْهِ لأَبْصَرَنَا تَحْتَ قَدَمَيْهِ . فَقَالَ “ يَا أَبَا بَكْرٍ مَا ظَنُّكَ بِاثْنَيْنِ اللَّهُ ثَالِثُهُمَا ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا يُعْرَفُ مِنْ حَدِيثِ هَمَّامٍ تَفَرَّدَ بِهِ . وَقَدْ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ حَبَّانُ بْنُ هِلاَلٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ هَمَّامٍ نَحْوَ هَذَا .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বাকর (রাঃ) তাকে বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে (সাওর) গিরিগুহায় অবস্থান কালে বললাম, যদি কাফিরদের কেউ তার পদদ্বয়ের দিকে (নিচের দিকে) তাকায় তাহলে সে নিশ্চিত আমাদেরকে তার পায়ের নিচেই দেখবে। তিনি বললেনঃ হে আবূ বাকর! যে দু’জনের সাথে তৃতীয়জন হিসেবে আল্লাহ তা’আলা আছেন সে দু’জনের ব্যাপারে আপনার কি ধারণা?
সহীহ : তাখরীজু ফিক্বহিস্ সীরাহ্ (১৭৩), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব। এ হাদীসটি হাম্মামের সূত্রেই বর্ণিত আছে। একমাত্র তিনিই এটি বর্ণনা করেছেন। হাব্বান ইবনু হিলাল প্রমুখও হাম্মামের সূত্রে এ হাদীস একই রকম বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০৯৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ لَمَّا تُوُفِّيَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أُبَىٍّ دُعِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِلصَّلاَةِ عَلَيْهِ فَقَامَ إِلَيْهِ فَلَمَّا وَقَفَ عَلَيْهِ يُرِيدُ الصَّلاَةَ تَحَوَّلْتُ حَتَّى قُمْتُ فِي صَدْرِهِ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَعَلَى عَدُوِّ اللَّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُبَىٍّ الْقَائِلِ يَوْمَ كَذَا كَذَا وَكَذَا يَعُدُّ أَيَّامَهُ . قَالَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَتَبَسَّمُ حَتَّى إِذَا أَكْثَرْتُ عَلَيْهِ قَالَ ” أَخِّرْ عَنِّي يَا عُمَرُ . إِنِّي خُيِّرْتُ فَاخْتَرْتُ قَدْ قِيلَ لِي : ( اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لاَ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِينَ مَرَّةً فَلَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ ) لَوْ أَعْلَمُ أَنِّي لَوْ زِدْتُ عَلَى السَّبْعِينَ غُفِرَ لَهُ لَزِدْتُ ” . قَالَ ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهِ وَمَشَى مَعَهُ فَقَامَ عَلَى قَبْرِهِ حَتَّى فُرِغَ مِنْهُ قَالَ فَعَجَبٌ لِي وَجُرْأَتِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَاللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ فَوَاللَّهِ مَا كَانَ إِلاَّ يَسِيرًا حَتَّى نَزَلَتْ هَاتَانِ الآيَتَانِ : (وَلَا تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا وَلاَ تَقُمْ عَلَى قَبْرِهِ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ قَالَ فَمَا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَهُ عَلَى مُنَافِقٍ وَلاَ قَامَ عَلَى قَبْرِهِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি : ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেলে তার জানাযা আদায়ের জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আবেদন করা হয়। তিনি সেখানে যেতে শুরু করলেন। তিনি জানাযার উদ্দেশ্যে দাঁড়ালে আমি ঘুরে গিয়ে তাঁর বুক বরাবর সামনে দাঁড়িয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা’আলার দুশমন ইবনু উবাইর জানাযা কি আপনি আদায় করবেন, যে অমুক দিন এই কথা বলেছে, অমুক দিন এই কথা বলেছে? এভাবে নির্দিষ্ট দিন তারিখ উল্লেখ করে ‘উমার (রাঃ) বলতে লাগলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হাসি দিতে থাকলেন। এমনকি আমি যখন তাঁকে অনেক কিছু বললাম, তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে ‘উমার! আমার সামনে হতে সরে যাও। আমাকে এখতিয়ার দেয়া হয়েছে। কাজেই আমি (জানাযা আদায়ের) এখতিয়ার গ্রহণ করেছি। আমাকে বলা হয়েছে (আয়াতের অর্থ) : “তুমি এদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর বা না কর, এমনকি তুমি যদি সত্তর বারও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, তবুও আল্লাহ তা’আলা তাদের কখনো ক্ষমা করবেন না”-(সূরা আত্-তাওবাহ্ ৮০)। আমি যদি জানতাম তাদের জন্য সত্তর বারের বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা’আলা তাদের ক্ষমা করে দিবেন, তাহলে আমি তাই করতাম। ‘উমার (রাঃ) বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জানাযা আদায় করলেন এবং তার জানাযার সাথে গেলেন। তিনি তার ক্ববরের সামনে দাঁড়ান এবং সকল কাজ শেষ করেন। ‘উমার (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সামনে আমার দুঃসাহসিকতায় আশ্চর্যবোধ হল। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। আল্লাহর শপথ! কিছুক্ষণ পরেই এ দু’টি আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “তাদের কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তুমি কখনো তাদের জানাযা আদায় করবে না এবং তার ক্ববরের পাশে কখনো দাঁড়াবে না। কেননা তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছে এবং পাপাচারী অবস্থায় এদের মৃত্যু হয়েছে’ (সূরা আত-তাওবাহ্ ৮৪)। ‘উমার (রাঃ) বলেনঃ এরপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত আর কোন মুনাফিক্বের জানাযা আদায় করেননি এবং এদের ক্ববরের পাশেও দাঁড়াননি।
সহীহ : আহকা-মুল জানা-য়িয (৯৩, ৯৫)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গরীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০৯৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ جَاءَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُبَىٍّ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حِينَ مَاتَ أَبُوهُ فَقَالَ أَعْطِنِي قَمِيصَكَ أُكَفِّنْهُ فِيهِ وَصَلِّ عَلَيْهِ وَاسْتَغْفِرْ لَهُ . فَأَعْطَاهُ قَمِيصَهُ وَقَالَ ” إِذَا فَرَغْتُمْ فَآذِنُونِي ” . فَلَمَّا أَرَادَ أَنْ يُصَلِّيَ جَذَبَهُ عُمَرُ وَقَالَ أَلَيْسَ قَدْ نَهَى اللَّهُ أَنْ تُصَلِّيَ عَلَى الْمُنَافِقِينَ فَقَالَ ” أَنَا بَيْنَ خِيرَتَيْنِ : (اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لاَ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ ) ” . فَصَلَّى عَلَيْهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ: (وَلَا تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا وَلاَ تَقُمْ عَلَى قَبْرِهِ ) فَتَرَكَ الصَّلاَةَ عَلَيْهِمْ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর বাবা ‘আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা গেলে ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সামনে এসে বলেন, আপনার জামাটি আমাকে দিন, তা দিয়ে তাকে (বাবাকে) কাফন দিব এবং আপনি তার জানাযা আদায় করুন, তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে তাঁর জামা দিলেন এবং বললেনঃ তোমরা (গোসল, কাফন ইত্যাদি হতে) অবসর হলে আমাকে খবর দিও। তিনি নামায আদায়ের প্রস্তুতি নিলে ‘উমার (রাঃ) তাঁকে টেনে ধরে বললেন, আল্লাহ তা’আলা কি আপনাকে মুনাফিক্বদের জানাযা আদায় করতে নিষেধ করেন নি? তিনি বললেনঃ আমাকে দুটো ব্যাপারেই স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে- “তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর বা না কর’। যাই হোক তিনি তার জানাযা আদায় করলেন। আল্লাহ তা’আলা তখন এ আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “তাদের কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তুমি কখনো তার জানাযা আদায় করবে না এবং তার ক্ববরের পাশে কখনো দাঁড়াবে না…’ (সূরা আত-তাওবাহ্ ৮৪)। এরপর তিনি তাদের জানাযা আদায় করা ছেড়ে দেন।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৫২৩), বুখারী (৪৬৭০), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০৯৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ أَبِي أَنَسٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ قَالَ تَمَارَى رَجُلاَنِ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي أُسِّسَ عَلَى التَّقْوَى مِنْ أَوَّلِ يَوْمٍ فَقَالَ رَجُلٌ هُوَ مَسْجِدُ قُبَاءَ وَقَالَ الآخَرُ هُوَ مَسْجِدُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ هُوَ مَسْجِدِي هَذَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ عِمْرَانَ بْنِ أَبِي أَنَسٍ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا عَنْ أَبِي سَعِيدٍ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ رَوَاهُ أُنَيْسُ بْنُ أَبِي يَحْيَى عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ رضى الله عنه .
আবূ সা’ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “যে মাসজিদ প্রথম দিন হতেই তাক্বওয়ার ভিত্তির উপর নির্মিত হয়েছে’ (সূরা আত্-তাওবাহ্ ১০৮), সেই মাসজিদ প্রসঙ্গে দুই ব্যক্তি বিতর্কে লিপ্ত হয়। একজন বলল, তা হচ্ছে মাসজিদে কুবা। অন্যজন বলল, তা হচ্ছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মাসজিদ (মাসজিদে নাববী)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তা আমার এই মাসজিদ।
সহীহ : মুসলিম, এর চেয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে (৩২৩) নং হাদীসে পূর্বে উল্লেখ হয়েছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ‘ইমরান ইবনু আবী আনাসের হাদীস হিসেবে গরীব। আবূ সা’ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতে এটি অন্য সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। হাদীসটি উনাইস ইবনু আবী ইয়াহ্ইয়া তার পিতা হতে, তিনি ‘আবূ সা’ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১০০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ أَبِي مَيْمُونٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ فِي أَهْلِ قُبَاء : (فِيهِ رِجَالٌ يُحِبُّونَ أَنْ يَتَطَهَّرُوا وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِينَ ) ” . قَالَ كَانُوا يَسْتَنْجُونَ بِالْمَاءِ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ فِيهِمْ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ وَمُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুবাবাসীর সম্পর্কেই এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে (অনুবাদ) : “তথায় এমন লোক আছে যারা পবিত্রতা অর্জন করতে ভালোবাসে এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে আল্লাহ তা’আলা ভালোবাসেন’- (সূরা আত্-তাওবাহ্ : ১০৮)। আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) বলেন, এসব লোক পানি দিয়ে ইস্তিনজা করত। তাই তাদের ব্যাপারে উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৩৫৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ সূত্রে হাদীসটি গরীব। আবূ আইয়ূব, আনাস ইবনু মালিক ও মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১০১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الْخَلِيلِ، كُوفِيٌّ عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ سَمِعْتُ رَجُلاً، يَسْتَغْفِرُ لأَبَوَيْهِ وَهُمَا مُشْرِكَانِ فَقُلْتُ لَهُ أَتَسْتَغْفِرُ لأَبَوَيْكَ وَهُمَا مُشْرِكَانِ . فَقَالَ أَوَلَيْسَ اسْتَغْفَرَ إِبْرَاهِيمُ لأَبِيهِ وَهُوَ مُشْرِكٌ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلَتْ : ( مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَنْ يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيهِ .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক ব্যক্তিকে তার (মৃত) মুশরিক পিতা-মাতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে শুনলাম। আমি তাকে বললাম, তোমার মৃত পিতা-মাতার জন্য কি তুমি ক্ষমা প্রার্থনার দু’আ করছ, অথচ তারা ছিল মুশরিক? সে বলল, ইবরাহীম (আঃ) কি তাঁর বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেননি, অথচ তাঁর বাবা ছিল মুশরিক? আমি বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট উল্লেখ করলাম। তখন নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “নাবী ও ঈমানদার লোকদের পক্ষে শোভনীয় নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, তারা তাদের আত্নীয়-স্বজনই হোক না কেন…..’ – (সূরা আত্-তাওবাহ্ : ১১৩)।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৫২৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। সা’ঈদ ইবনুল মুসইয়্যাব (রহঃ) হতে তার বাবার সূত্রে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১০২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمْ أَتَخَلَّفْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةٍ غَزَاهَا حَتَّى كَانَتْ غَزْوَةُ تَبُوكَ إِلاَّ بَدْرًا وَلَمْ يُعَاتِبِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَحَدًا تَخَلَّفَ عَنْ بَدْرٍ إِنَّمَا خَرَجَ يُرِيدُ الْعِيرَ فَخَرَجَتْ قُرَيْشٌ مُغْوِثِينَ لِعِيرِهِمْ فَالْتَقَوْا عَنْ غَيْرِ مَوْعِدٍ كَمَا قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَلَعَمْرِي إِنَّ أَشْرَفَ مَشَاهِدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي النَّاسِ لَبَدْرٌ وَمَا أُحِبُّ أَنِّي كُنْتُ شَهِدْتُهَا مَكَانَ بَيْعَتِي لَيْلَةَ الْعَقَبَةِ حَيْثُ تَوَاثَقْنَا عَلَى الإِسْلاَمِ ثُمَّ لَمْ أَتَخَلَّفْ بَعْدُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى كَانَتْ غَزْوَةُ تَبُوكَ وَهِيَ آخِرُ غَزْوَةٍ غَزَاهَا وَآذَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالرَّحِيلِ . فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ قَالَ فَانْطَلَقْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هُوَ جَالِسٌ فِي الْمَسْجِدِ وَحَوْلَهُ الْمُسْلِمُونَ وَهُوَ يَسْتَنِيرُ كَاسْتِنَارَةِ الْقَمَرِ وَكَانَ إِذَا سُرَّ بِالأَمْرِ اسْتَنَارَ فَجِئْتُ فَجَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ ” أَبْشِرْ يَا كَعْبُ بْنَ مَالِكٍ بِخَيْرِ يَوْمٍ أَتَى عَلَيْكَ مُنْذُ وَلَدَتْكَ أُمُّكَ ” . فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَمِنْ عِنْدِ اللَّهِ أَمْ مِنْ عِنْدِكَ قَالَ ” بَلْ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ ” . ثُمَّ تَلاَ هَؤُلاَءِ الآيَاتِ : ( لَقََدْ تَابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ الْعُسْرَةِ ) حَتَّى بَلَغََّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ ) قَالَ وَفِينَا أُنْزِلَتْ أَيْضًا : ( اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ ) قَالَ قُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ إِنَّ مِنْ تَوْبَتِي أَنْ لاَ أُحَدِّثَ إِلاَّ صِدْقًا وَأَنْ أَنْخَلِعَ مِنْ مَالِي كُلِّهِ صَدَقَةً إِلَى اللَّهِ وَإِلَى رَسُولِهِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” أَمْسِكْ عَلَيْكَ بَعْضَ مَالِكَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ” . فَقُلْتُ فَإِنِّي أُمْسِكُ سَهْمِي الَّذِي بِخَيْبَرَ قَالَ فَمَا أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَىَّ نِعْمَةً بَعْدَ الإِسْلاَمِ أَعْظَمَ فِي نَفْسِي مِنْ صِدْقِي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ صَدَقْتُهُ أَنَا وَصَاحِبَاىَ لاَ نَكُونُ كَذَبْنَا فَهَلَكْنَا كَمَا هَلَكُوا وَإِنِّي لأَرْجُو أَنْ لاَ يَكُونَ اللَّهُ أَبْلَى أَحَدًا فِي الصِّدْقِ مِثْلَ الَّذِي أَبْلاَنِي مَا تَعَمَّدْتُ لِكَذِبَةٍ بَعْدُ وَإِنِّي لأَرْجُو أَنْ يَحْفَظَنِي اللَّهُ فِيمَا بَقِيَ . قَالَ وَقَدْ رُوِيَ عَنِ الزُّهْرِيِّ هَذَا الْحَدِيثُ بِخِلاَفِ هَذَا الإِسْنَادِ وَقَدْ قِيلَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ عَمِّهِ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ كَعْبٍ وَقَدْ قِيلَ غَيْرُ هَذَا وَرَوَى يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ أَبَاهُ حَدَّثَهُ عَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ .
কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যতগুলো যুদ্ধ করেছেন, একমাত্র বদরের যুদ্ধ ব্যতীত অন্য কোন যুদ্ধেই আমি অনুপস্থিত ছিলাম না। এভাবে তাবূকের যুদ্ধ সমুপস্থিত হয়। যারা বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের কোনরূপ ভর্ৎসনা করেননি। কারণ তিনি বের হয়েছিলেন কাফিলা অবরোধের উদ্দেশ্যেই। ওদিকে কুরাইশরাও তাদের কাফিলার সাহায্যার্থে বের হয়েছিল। প্রতিশ্রুত স্থান ব্যতীত উভয় পক্ষ পরস্পর মুকাবিলায় অবতীর্ণ হয়, যেমন আল্লাহ তা’আল বলেছেন। আমার জীবনের শপথ! মানুষদের দৃষ্টিতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উপস্থিতির সর্বোৎকৃষ্ট স্থান হচ্ছে বদরই কিন্তু আমি ‘আক্বাবার রাতে আমার বাই’আতের উপর মর্যাদা দিয়ে তাতে (বদরে) অংশগ্রহণ করাকে পছন্দ করিনি। কারণ সেই লাইলাতুল ‘আক্বাবাতেই আমি বাই’আত করেছি এবং আমরা এখানেই ইসলামের উপর সুদৃঢ হয়ে গিয়েছি। অতঃপর আমি কখনো রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে কোন অভিযান হতে পেছনে ছিলাম না। এভাবে তাবূকের যুদ্ধের পালা আসে। আর তাবূক যুদ্ধই ছিল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নেতৃত্বে পরিচালিত সর্বশেষ যুদ্ধ। যোদ্ধাদের যাত্রা শুরুর জন্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশ দিলেন। তারপর বর্ণনাকারী দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন।
আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট গেলাম। তিনি তখন মাসজিদে বসা ছিলেন। তাঁর আশেপাশে মুসলিমগণ সমবেত ছিল। তাঁর মুখমণ্ডল চাঁদের ন্যায় চমকাচ্ছিল। তিনি কোন বিষয়ে আনন্দিত হলে তাঁর চেহারা মুবারাক দীপ্তিমান হয়ে উঠত। আমি উপস্থিত হয়ে তাঁর সামনে বসে পড়লাম। তিনি বললেনঃ “হে কা’ব ইবনু মালিক! তোমার মা তোমাকে প্রসব করার পর হতে যতগুলো দিন তোমার কাছে এসেছে তার মধ্যে একটি সর্বোৎকৃষ্ট দিনের সুসংবাদ তোমার জন্য। আমি বললাম, হে আল্লাহর নাবী! আল্লাহ তা’আলার পক্ষ হতে না আপনার পক্ষ হতে? তিনি বললেনঃ বরং আল্লাহ তা’আলার পক্ষ হতে। তারপর তিনি এ আয়াতগুলো তিলাওয়াত করলেন (অনুবাদ) : “আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নাবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি, যারা বড় দুঃসময়ে তার অনুসরণ করেছিল, এমনকি যখন তাদের মধ্যকার একদলের হৃদয় বক্র হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তারপর আল্লাহ তা’আলা তাদের মাফ করলেন। তিনি তো তাদের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু এবং অপর তিনজনকে যাদেরকে পিছনে রাখা হয়েছিল, যখন পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গেল এবং তাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠল, তারা বুঝতে পারলো যে আল্লাহ ব্যতীত আর কোন আশ্রয়স্থল নেই, অতঃপর তিনি তাদের প্রতি সদয় হলেন যাতে তারা ফিরে আসে। অবশ্যই আল্লাহ তাওবাহ্ ক্ববুলকারী দয়াময়। (সূরা আত্-তাওবাহ্ ১১৭-১১৮)।
বর্ণাকারী বলেন, এ আয়াতগুলোও আমাদের সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়েছে (অনুবাদ) : “হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও’-(সূরা আত্-তাওবাহ্ ১১৯)। কা’ব (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্র নাবী! আমার তাওবার মধ্যে এও অন্তর্ভুক্ত যে, আমি সর্বদা সত্য কথাই বলব এবং আমি আমার সমস্ত মাল আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উদ্দেশে দান করে দিব। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার কিছু মাল তোমার নিজের জন্য রাখ। এটাই তোমার জন্য ভালো। আমি বললাম, আমি আমার নিজের জন্য খাইবারের অংশটুকু রেখে দিচ্ছি। কা’ব (রাঃ) বলেন, ইসলাম ক্ববুল করার পর হতে আল্লাহ তা’আলা আমাকে যত নি’আমাতে ধন্য করেছেন আমার মতে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নি’আমাত হচ্ছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আমার ও আমার সঙ্গীদ্বয়ের সত্য কথা বলা এবং আমাদের মিথ্যাবাদী না হওয়া। অন্যথায় তারা যেভাবে ধ্বংস হয়েছে আমরাও তদ্রুপ ধ্বংস হতাম। আমি আশা করি সত্য বলার ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা যেন আমার ন্যায় এতো বড় পরীক্ষায় আর কাউকে না ফেলেন। আমি আর কখনো মিথ্যা বলিনি। আমি আরো আশা করি অবশিষ্ট দিনগুলোও যেন আল্লাহ তা’আলা আমাকে হিফাযাত করেন।
সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (১৯১২), বুখারী (৪৬৭৬), মুসলিম।
এ হাদীস উপরোক্ত সনদের বিপরীত সনদে যুহরী (রহঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে। কথিত আছে যে, সনদটি ‘আবদুর রাহমান ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক- তার চাচা ‘উবাইদুল্লাহ হতে, তিনি কা’ব (রাঃ) হতে। আবার কেউ কেউ এ ব্যতীত অন্য সূত্রেও বর্ণনা করেছেন। অনন্তর এ হাদীস যুহরী হতে, তিনি ‘আবদুর রাহমান ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক হতে, তিনি তার বাবা হতে, তিনি কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) হতে এই সূত্রে ইউনুস ইবনু ইযাযীদ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১০৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ السَّبَّاقِ، أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ، حَدَّثَهُ قَالَ بَعَثَ إِلَىَّ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ مَقْتَلَ أَهْلِ الْيَمَامَةِ فَإِذَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ عِنْدَهُ فَقَالَ إِنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَدْ أَتَانِي فَقَالَ إِنَّ الْقَتْلَ قَدِ اسْتَحَرَّ بِقُرَّاءِ الْقُرْآنِ يَوْمَ الْيَمَامَةِ وَإِنِّي لأَخْشَى أَنْ يَسْتَحِرَّ الْقَتْلُ بِالْقُرَّاءِ فِي الْمَوَاطِنِ كُلِّهَا فَيَذْهَبَ قُرْآنٌ كَثِيرٌ وَإِنِّي أَرَى أَنْ تَأْمُرَ بِجَمْعِ الْقُرْآنِ . قَالَ أَبُو بَكْرٍ لِعُمَرَ كَيْفَ أَفْعَلُ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عُمَرُ هُوَ وَاللَّهِ خَيْرٌ فَلَمْ يَزَلْ يُرَاجِعُنِي فِي ذَلِكَ حَتَّى شَرَحَ اللَّهُ صَدْرِي لِلَّذِي شَرَحَ لَهُ صَدْرَ عُمَرَ وَرَأَيْتُ فِيهِ الَّذِي رَأَى قَالَ زَيْدٌ قَالَ أَبُو بَكْرٍ إِنَّكَ شَابٌّ عَاقِلٌ لاَ نَتَّهِمُكَ قَدْ كُنْتَ تَكْتُبُ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْوَحْىَ فَتَتَبَّعِ الْقُرْآنَ . قَالَ فَوَاللَّهِ لَوْ كَلَّفُونِي نَقْلَ جَبَلٍ مِنَ الْجِبَالِ مَا كَانَ أَثْقَلَ عَلَىَّ مِنْ ذَلِكَ قَالَ قُلْتُ كَيْفَ تَفْعَلُونَ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ هُوَ وَاللَّهِ خَيْرٌ . فَلَمْ يَزَلْ يُرَاجِعُنِي فِي ذَلِكَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ حَتَّى شَرَحَ اللَّهُ صَدْرِي لِلَّذِي شَرَحَ صَدْرَهُمَا صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ فَتَتَبَّعْتُ الْقُرْآنَ أَجْمَعُهُ مِنَ الرِّقَاعِ وَالْعُسُبِ وَاللِّخَافِ يَعْنِي الْحِجَارَةَ الرِّقَاقَ وَصُدُورِ الرِّجَالِ فَوَجَدْتُ آخِرَ سُورَةِ بَرَاءَةَ مَعَ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ : ( قَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ * فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইয়ামামার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের শাহাদাতের যমানায় আবূ বাক্র সিদ্দীক্ব (রাঃ) আমায় ডেকে পাঠান। আমি গিয়ে দেখলাম, ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-ও তার নিকট উপস্থিত। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, ‘উমার আমার নিকট এসে বললেন, অসংখ্য কুরআনের ক্বারী (হাফিয) ইয়ামামার যুদ্ধের দিন শহীদ হয়েছেন। আমার আশংকা হচ্ছে, সর্বত্র এভাবে ক্বারীগণ শাহীদ হয়ে গেলে কুরআনের অনেক অংশই বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। আমি মনে করি আপনি কুরআন সংকলনের নির্দেশ দিন। আবূ বকর (রাঃ) ‘উমার (রাঃ)-কে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে যে কাজ করে যাননি আমি কিভাবে তা করতে পারি? ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! এটা খুবই ভালো কাজ। তিনি আমার নিকট বারবার তার কথার পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছিলেন। অবশেষে সেই কাজের জন্য আল্লাহ তা’আলা আমার বক্ষও উন্মুক্ত করে দিলেন, যার জন্য তিনি (আগেই) ‘উমারের বক্ষ উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। আমিও উক্ত কাজে সেই কল্যাণ লক্ষ্য করলাম যা তিনি (আমার আগেই) লক্ষ্য করেছিলেন। যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেন, আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তুমি একজন জ্ঞানবান যুবক। আমি তোমাকে কোন বিষয়ে দোষারোপ করিনি। আর তুমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জীবদ্দশায় কুরআন লিপিবদ্ধ করতে। অতএব তুমি কুরআনের (বিভিন্ন অংশ) অনুসন্ধানে লেগে যাও। যাইদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! তারা যদি আমাকে পর্বতমালার মধ্য হতে কোন পাহাড় স্থানান্তরের কষ্টে নিক্ষেপ করতেন তাও আমার জন্য এ মহা দায়িত্বের তুলনায় এত বেশি ভারবহ হত না। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে যে কাজ করেননি আপনারা তা কিভাবে করতে পারেন? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! এটা খুবই ভালো কাজ। আবু বাক্র ও ‘উমার (রাঃ) উভয়ে ঐ কথার পুনরাবৃত্তি করে যাচ্ছিলেন। অবশেষে আল্লাহ তা’আলা আবূ বাক্র ও ‘উমারের ন্যায় আমার বক্ষও উন্মুক্ত করে দিলেন। অতএব আমি চামড়ার টুকরাসমূহ, খেজুর পত্র, মসৃণ পাথর ও লোকদের অন্তকরণ হতে খুঁজে খুঁজে সম্পূর্ণ কুরআন একত্র করলাম। সূরা বারাআতের শেষ অংশটুকু আমি খুযাইমাহ্ ইবনু সাবিত (রাঃ)-এর নিকট পেলাম। তা হল (অনুবাদ) : “অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছেন। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে তা তাঁর জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের কল্যাণকামী এবং মু’মিনদের প্রতি দয়ার্দ্র ও অত্যন্ত করুণাসক্ত। এতদসত্ত্বেও তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তুমি বল : আল্লাহ তা’আলাই আমার জন্য যথেষ্ট। তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। আমি তার উপরই নির্ভর করি এবং তিনিই মহান আরশের মালিক’ -(সূরা আত্-তাওবাহ্ ১২৮, ১২৯)।
সহীহ বুখারী (৪৬৭৯), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১০৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ حُذَيْفَةَ، قَدِمَ عَلَى عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ وَكَانَ يُغَازِي أَهْلَ الشَّامِ فِي فَتْحِ أَرْمِينِيَّةَ وَأَذْرَبِيجَانَ مَعَ أَهْلِ الْعِرَاقِ فَرَأَى حُذَيْفَةُ اخْتِلاَفَهُمْ فِي الْقُرْآنِ فَقَالَ لِعُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ أَدْرِكْ هَذِهِ الأُمَّةَ قَبْلَ أَنْ يَخْتَلِفُوا فِي الْكِتَابِ كَمَا اخْتَلَفَتِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى فَأَرْسَلَ إِلَى حَفْصَةَ أَنْ أَرْسِلِي إِلَيْنَا بِالصُّحُفِ نَنْسَخُهَا فِي الْمَصَاحِفِ ثُمَّ نَرُدُّهَا إِلَيْكِ فَأَرْسَلَتْ حَفْصَةُ إِلَى عُثْمَانَ بِالصُّحُفِ فَأَرْسَلَ عُثْمَانُ إِلَى زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَسَعِيدِ بْنِ الْعَاصِي وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنِ انْسَخُوا الصُّحُفَ فِي الْمَصَاحِفِ وَقَالَ لِلرَّهْطِ الْقُرَشِيِّينَ الثَّلاَثَةِ مَا اخْتَلَفْتُمْ فِيهِ أَنْتُمْ وَزَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ فَاكْتُبُوهُ بِلِسَانِ قُرَيْشٍ فَإِنَّمَا نَزَلَ بِلِسَانِهِمْ . حَتَّى نَسَخُوا الصُّحُفَ فِي الْمَصَاحِفِ بَعَثَ عُثْمَانُ إِلَى كُلِّ أُفُقٍ بِمُصْحَفٍ مِنْ تِلْكَ الْمَصَاحِفِ الَّتِي نَسَخُوا . قَالَ الزُّهْرِيُّ وَحَدَّثَنِي خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ قَالَ فَقَدْتُ آيَةً مِنْ سُورَةِ الأَحْزَابِ كُنْتُ أَسْمَعُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَؤُهَا : ( مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُمْ مَنْ قَضَى نَحْبَهُ ) فَالْتَمَسْتُهَا فَوَجَدْتُهَا مَعَ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ أَوْ أَبِي خُزَيْمَةَ فَأَلْحَقْتُهَا فِي سُورَتِهَا . قَالَ الزُّهْرِيُّ فَاخْتَلَفُوا يَوْمَئِذٍ فِي التَّابُوتِ وَالتَّابُوهِ فَقَالَ الْقُرَشِيُّونَ التَّابُوتُ . وَقَالَ زَيْدٌ التَّابُوهُ . فَرُفِعَ اخْتِلاَفُهُمْ إِلَى عُثْمَانَ فَقَالَ اكْتُبُوهُ التَّابُوتُ فَإِنَّهُ نَزَلَ بِلِسَانِ قُرَيْشٍ . قَالَ الزُّهْرِيُّ فَأَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ كَرِهَ لِزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ نَسْخَ الْمَصَاحِفِ وَقَالَ يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِينَ أُعْزَلُ عَنْ نَسْخِ كِتَابَةِ الْمُصْحَفِ وَيَتَوَلاَّهَا رَجُلٌ وَاللَّهِ لَقَدْ أَسْلَمْتُ وَإِنَّهُ لَفِي صُلْبِ رَجُلٍ كَافِرٍ يُرِيدُ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ وَلِذَلِكَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ يَا أَهْلَ الْعِرَاقِ اكْتُمُوا الْمَصَاحِفَ الَّتِي عِنْدَكُمْ وَغُلُّوهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ : ( وَمَنْ يَغْلُلْ يَأْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ) فَالْقُوا اللَّهَ بِالْمَصَاحِفِ . قَالَ الزُّهْرِيُّ فَبَلَغَنِي أَنَّ ذَلِكَ كَرِهَهُ مِنْ مَقَالَةِ ابْنِ مَسْعُودٍ رِجَالٌ مِنْ أَفَاضِلِ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ حَدِيثُ الزُّهْرِيِّ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِهِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুযাইফাহ্ (রাঃ) ‘উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)-এর নিকট এসে উপস্থিত হলেন। হুযাইফা (রাঃ) আর্মেনিয়া ও আযারবাইযান অভিযানে ইরাকীদের সঙ্গী হয়ে সিরীয়দের বিরুদ্ধে জিহাদ করছিলেন। তখন হুযাইফাহ্ (রাঃ) তাদের মধ্যে কুরআন নিয়ে মতের অমিল লক্ষ্য করেন। তিনি (ফিরে এসে) ‘উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)-কে বললেন, হে আমিরুল মু’মিনীন! যেভাবে ইয়াহূদী-নাসারাগণ তাদের কিতাব নিয়ে মতভেদে লিপ্ত হয়েছিল, সেরূপ এই উম্মাতের লোকদের নিজেদের কিতাব নিয়ে মতভেদে লিপ্ত হওয়ার পূর্বে তাদের খবর নিন। এরপর ‘উসমান (রাঃ) এই কথা বলে হাফসাহ্ (রাঃ)-এর নিকট লোক পাঠান যে, আপনার নিকট রক্ষিত কুরআনের সহীফাখানি আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিন। আমরা সেটি হতে কপি করার পর তা আপনাকে আবার ফেরত দেব। উম্মুল মু’মিনীন হাফসাহ্ (রাঃ) তার কপি ‘উসমান ইবনু ‘আফ্ফান (রাঃ)-এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন। ‘উসমান (রাঃ) যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ), সা’ঈদ ইবনুল ‘আস (রাঃ), ‘আবদুর রাহমান ইবনুল হারিস ইবনু হিশাম (রাঃ), ‘আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) প্রমুখের নিকট উক্ত সহীফাখানি পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, আপনারা এ সহীফাখানি হতে অনেকগুলো কপি করে নিন। তিনি উক্ত কমিটির তিন কুরাইশ সদস্যকে বললেন, কোন ক্ষেত্রে তোমাদের ও যাইদ ইবনু সাবিতের মধ্যে মতের অমিল হলে তা তোমরা কুরাইশের বাকরীতি মতো লিখবে। কেননা কুরআন তাদের বাকরীতিতে অবতীর্ণ হয়েছে। অবশেষে তারা পূর্ণ কুরআনের কয়েকটি কপি করেন। ‘উসমান (রাঃ) সেগুলোর এক একটি কপি রাজ্যের এক এক এলাকায় পাঠিয়ে দিলেন।
যুহরী (রহঃ) বলেন, খারিজা ইবনু যাইদ (রাঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন; যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেছেন, আমি সূরা আল-আহ্যাবের একটি আয়াত পেলাম না, যেটি আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে তিলাওয়াত করতে শুনতাম। আয়াতটী এই (অনুবাদ) : “মু’মিনদের মধ্যে কিছু লোক আল্লাহ তা’আলার সাথে তাদের কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ শাহাদাত বরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায় রয়েছে। তারা নিজেদের অঙ্গীকারে কোন পরিবর্তন করেনি” (সূরা আল-আহ্যাব ২৩)।
আমি আয়াতটির খোঁজ করছিলাম। অবশেষে তা খুযাইমাহ্ ইবনু সাবিত (রাঃ) বা আবূ খুযাইমাহ্ (রাঃ)-এর নিকট পেলাম। আমি সূরার যথাস্থানে আয়াতটি স্থাপন করলাম। যুহরী (রহঃ) বলেন, তারা ঐ দিন তাবূত ও তাবূহ শবদ নিয়ে মতের অমিল করেন। কুরাইশীরা বলেন, তাবূত, আর যাইদ (রাঃ) বলেন, তাবূহ। তাদের মতের অমিলের বিষয়টি ‘উসমান (রাঃ)-এর নিকট উত্থাপন করা হলে তিনি বললেন, তোমরা তাবূত লিখ। কেননা কুরআন কুরাইশদের ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে।
যুহরী (রহঃ) বলেন, আমাকে ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু উত্বাহ্ খবর দিয়েছেন যে, যাইদ ইবনু সাবিতের কুরআন লিপিবদ্ধ করাকে ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) অপছন্দ করেছেন এবং বলেছেন, হে মুসলিমগণ! কুরআন লিপিবদ্ধ করা হতে আমি বরখাস্ত হবো এবং আর তার দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে এমন ব্যক্তি, যে আমার ইসলাম গ্রহণের সময় এক কাফির পৃষ্ঠদেশে অন্তর্নিহিত ছিল। এ কথা দ্বারা তিনি যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ)-এর প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। তাই ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) বলেনঃ হে ইরাকবাসী! তোমাদের নিকট রক্ষিত কুরআনের লিপিবদ্ধ সংকলন লুকিয়ে রাখ এবং তালাবদ্ধ করে রাখ। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেন, (অনুবাদ) : “এবং কেউ অন্যায়ভাবে কিছু আত্নসাৎ করলে, যা সে অন্যায়ভাবে আত্নসাৎ করেছে ক্বিয়ামাতের দিন সে তা নিয়ে উপস্থিত হবে” – (সূরা আল-‘ইমরান ১৬১)। অতএব তোমরা তোমাদের সংকলনগুলোসহ আল্লাহ তা’আলার সাথে মিলিত হবে। যুহরী (রাঃ) বলেন, আমি জেনেছি যে, ইবনু মাস’উদ (রাঃ)-এর এ উক্তিকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বহু প্রবীণ সাহাবী অপছন্দ করেছেন।
সহীহ : বুখারী (৪৯৮৭, ৪৯৮৮) সহীহ মাকতূ’।
আবূ ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ । এটি যুহরীর রিওয়ায়াত । আমরা এ হাদীস শুধু তার সূত্রেই জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১১
সুরা ইউনুস
৩১০৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ صُهَيْبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّّ : (لِلََّذِينَ أَحْسَنُوا الْحُسْنَى وَزِيَادَةٌ ) قَالَ ” إِذَا دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ نَادَى مُنَادٍ إِنَّ لَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ مَوْعِدًا يُرِيدُ أَنْ يُنْجِزَكُمُوهُ قَالُوا أَلَمْ تُبَيِّضْ وُجُوهَنَا وَتُنَجِّنَا مِنَ النَّارِ وَتُدْخِلْنَا الْجَنَّةَ قَالَ فَيُكْشَفُ الْحِجَابُ . قَالَ فَوَاللَّهِ مَا أَعْطَاهُمُ اللَّهُ شَيْئًا أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنَ النَّظَرِ إِلَيْهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ هَكَذَا رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ مَرْفُوعًا . وَرَوَى سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى قَوْلَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ صُهَيْبٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
সুহাইব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার বানী “ যারা উত্তম কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং আরও বেশি’’ (সুরা ইউনুস ২৬) প্রসঙ্গে বলেনঃ জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশ করার পর একজন আহবানকারী ডেকে বলবে, আল্লাহ তা’আলার কাছে তোমাদের জন্য একটি প্রতিশ্রুতি রয়েছে এবং তিনি সেটা পূর্ণ করতে চান। তারা বলবে, আল্লাহ তা’আলা কি আমাদের মুখ উজ্জল করেননি এবং আমাদেরকে জাহান্নাম হতে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে দাখিল করেননি? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এমন সময় পর্দা উন্মোচিত হবে (এবং তারা আল্লাহ তা’আলাকে দেখতে পাবে)। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহর শপথ! আল্লাহ তা’আলার দর্শন লাভের চাইতে বেশী প্রিয় ও কাঙ্ক্ষিত কোন বস্তুই তিনি তাদেরকে দান করেননি।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৮৭) , মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এটি হাম্মাদ ইবনু সালামার হাদীস। একাধিক বর্ণনাকারী এটি হাম্মাদ ইবনু সালামাহ (রহঃ) হতে ‘মারফু’ ভাবে একই রকম বর্ণনা করেছেন। সুলাইমান ইবনুল মুগীরাহ এ হাদীস সাবিত আল-বুনানী হতে, তিনি ‘আবদুর রাহমান ইবনু আবী লাইলা হতে তার বক্তব্যরুপে বর্ণনা করেছেন এবং তাতে সুহাইব (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ রকম উল্লেখ নেই ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১০৬
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ رَجُلٍ، مِنْ أَهْلِ مِصْرَ قَالَ سَأَلْتُ أَبَا الدَّرْدَاءِ عَنْ هَذِهِ الآيَةِ : ( لَهُمُ الْبُشْرَى، فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ) قَالَ مَا سَأَلَنِي عَنْهَا أَحَدٌ مُنْذُ سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْهَا فَقَالَ “ مَا سَأَلَنِي عَنْهَا أَحَدٌ غَيْرُكَ مُنْذُ أُنْزِلَتْ فَهِيَ الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ يَرَاهَا الْمُسْلِمُ أَوْ تُرَى لَهُ ” .
আতা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
জৈনেক মিসরবাসীর সুত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবুদ দারদা (রাঃ)–কে আল্লাহ তা’আলার বানী “পার্থিব জীবনে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ’’ –(সুরা ইউনুস ৬৪) প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এ আয়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করার পর হতে আজ পর্যন্ত আর কেউ এ প্রসঙ্গে আমার নিকট জানতে চায়নি। আমিও এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেছিলেন : এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়া অবধি তুমি ব্যতীত আর কেউ আমাকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেনি। এটা (বুশরা) হচ্ছে সত্য স্বপ্ন, যা মুসলিম ব্যক্তি দেখে বা তাকে দেখানো হয়।
সহীহ : মুসলিম।
ইবনু আবী ‘উমার-সুফইয়ান হতে, তিনি ‘আবদুল আযীয ইবনু রুফাই হতে, তিনি আবু সালিহ আল সান্মান হতে, তিনি আতা ইবনু ইয়াসার হতে, তিনি মিসরীয় ব্যক্তি হতে, তিনি আবুদ দারদা (রাঃ) হতে এই সুত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন । আহমাদ ইবনু ‘আবদাহ আয-যাব্বী –হান্মাদ ইবনু যাইদ হতে, তিনি ‘আসিম ইবনু বাহদালাহ হতে, তিনি আবু সালিহ হতে, তিনি আবুল দারদা (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রেও পূর্বোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন। অবশ্য তাতে আতা ইবনু ইয়াসার –এর উল্লেখ নেই। ‘উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১০৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مِهْرَانَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لَمَّا أَغْرَقَ اللَّهُ فِرْعَوْنَ قَالَ آمَنْتُ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ الَّذِي آمَنَتْ بِهِ بَنُو إِسْرَائِيلَ فَقَالَ جِبْرِيلُ يَا مُحَمَّدُ فَلَوْ رَأَيْتَنِي وَأَنَا آخُذُ مِنْ حَالِ الْبَحْرِ فَأَدُسُّهُ فِي فِيهِ مَخَافَةَ أَنْ تُدْرِكَهُ الرَّحْمَةُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ফির’আউনকে যখন পানিতে ডুবিয়ে দিলেন তখন সে বললো, ‘‘আমি ঈমান আনলাম বানী ইসরাঈল যার উপর ঈমান এনেছে তার প্রতি। নিশ্চয় তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই’’ –(সুরা ইউনুস ৯০)। জিবরীল (‘আঃ) বললেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি যদি আমাকে ঐ সময় দেখতেন যখন আমি সমুদ্র হতে কালো কাদামাটি তুলে তার মুখে ঢাকছিলাম যাতে আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহ তাকে পরিবেষ্টন না করে।
সহীহ : পরবর্তী হাদীসের সহায়তায়।
আবূ ‘ঈসা বলেন , এ হাদীসটি হাসান ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১০৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّنْعَانِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنِي عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ، وَعَطَاءُ بْنُ السَّائِبِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، ذَكَرَ أَحَدُهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ ذَكَرَ “ أَنَّ جِبْرِيلَ صلى الله عليه وسلم جَعَلَ يَدُسُّ فِي فِي فِرْعَوْنَ الطِّينَ خَشْيَةَ أَنْ يَقُولَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَيَرْحَمَهُ اللَّهُ أَوْ خَشْيَةَ أَنْ يَرْحَمَهُ اللَّهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
ইবনু ‘‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উল্লেখ করেন যে, জিবরীল (‘আঃ) এই আশংকায় ফির’আউনের মুখে কাদামাটি ঠেলে দিচ্ছিল যে, সে “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’’ বলবে ফলে আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি অনুগ্রহ করবেন। অথবা তিনি বলেছেন, ”এই আশংকায় যে, আল্লাহ তার প্রতি অনুগ্রহ করবেন’’।
সনদ সহীহ।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহী , অত্র সুত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১২
সুরা হূদ
৩১০৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ وَكِيعِ بْنِ حُدُسٍ، عَنْ عَمِّهِ أَبِي رَزِينٍ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيْنَ كَانَ رَبُّنَا قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ خَلْقَهُ قَالَ “ كَانَ فِي عَمَاءٍ مَا تَحْتَهُ هَوَاءٌ وَمَا فَوْقَهُ هَوَاءٌ وَخَلَقَ عَرْشَهُ عَلَى الْمَاءِ ” . قَالَ أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ قَالَ يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ الْعَمَاءُ أَىْ لَيْسَ مَعَهُ شَيْءٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا رَوَى حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ وَكِيعُ بْنُ حُدُسٍ وَيَقُولُ شُعْبَةُ وَأَبُو عَوَانَةَ وَهُشَيْمٌ وَكِيعُ بْنُ عُدُسٍ وَهُوَ أَصَحُّ وَأَبُو رَزِينٍ اسْمُهُ لَقِيطُ بْنُ عَامِرٍ قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবূ রাযীন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! জীব সৃষ্টি করার আগে আমাদের প্রতিপালক কোথায় ছিলেন? তিনি বলেনঃ তিনি আমা’ (হালকা মেঘমালা)-এর মধ্যে ছিলেন। এর নিচেও বাতাস ছিল না এবং উপরেও বাতাস ছিল না। তিনি পানির উপর তার আরশ তৈরী করেন।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২৭১),
আহমাদ (রহঃ) বলেনঃ ইয়াযীদ (রাঃ) বলেছেন, ‘আমা’ শব্দের অর্থ, ‘তাঁর সাথে কিছুই ছিল না’ হাম্মাদ ইবনু সালামা ও ওয়াকী ইবনু হুদুস এরকমই বলেন। শুবা, আবূ আওয়ানা ও হুশাইম (রাবীর নামের উচ্চারণ) ওয়াকী ইবনু উদুস বলেছেন। আবূ রাযীন এর নাম লাকীত ইবনু আমির। আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩১১০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يُمْلِي وَرُبَّمَا قَالَ يُمْهِلُ لِلظَّالِمِ حَتَّى إِذَا أَخَذَهُ لَمْ يُفْلِتْهُ ” . ثُمَّ قَرَأَ : ( كَذَلِكَ أَخْذُ رَبِّكَ إِذَا أَخَذَ الْقُرَى ) الآيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رَوَاهُ أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدٍ نَحْوَهُ وَقَالَ يُمْلِي .
আবু মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বারকাতময় আল্লাহ তা’আলা যালিম-অত্যাচারীকে অবকাশ দেন অথবা সুযোগ দেন। অবশেষে তিনি যখন তাকে পাকড়াও করেন তখন আর রেহাই দেন না। তারপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিলাওয়াত করলেন : (অনুবাদ) “ এরূপই তোমার প্রতিপালকের শাস্তি। তিনি জনপদসমুহকে শাস্তি দান করেন যখন তারা সীমা লঙ্ঘন করে। নিশ্চয় তার শাস্তি মর্মন্তুদ , কঠিন’’ -(সূরা হূদ ১০২)।
সহীহ : বুখারী (৪৬৮৬) , মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। আবু উসামাও বুরাইদ হতে একই রকম বর্ণনা করেছেন এবং তাতে ‘ইউমলী’ শব্দ বলেছেন। ইবরাহীম ইবনু সা’ঈদ আল-জাওহারী –আবু-উসামাহ হতে, তিনি বুরাইদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ হতে, তিনি তার দাদা আবু বুরাদাহ হতে, তিনি আবু মূসা (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন । এতে সন্দেহমুক্তভাবে ‘ইউমলী’ শব্দ উল্লেখ আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১১১
حَدَّثَنَا بُنْدَارٌ، مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، هُوَ عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ : ( مِِنْهُمْ شَقِيٌّ وَسَعِيدٌ ) سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ فَعَلَى مَا نَعْمَلُ عَلَى شَيْءٍ قَدْ فُرِغَ مِنْهُ أَوْ عَلَى شَيْءٍ لَمْ يُفْرَغْ مِنْهُ قَالَ ” بَلْ عَلَى شَيْءٍ قَدْ فُرِغَ مِنْهُ وَجَرَتْ بِهِ الأَقْلاَمُ يَا عُمَرُ وَلَكِنْ كُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ ” . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عَمْرٍو .
উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘‘তাদের মধ্যে কেউ হবে হতভাগ্য এবং কেউ হবে ভাগ্যবান’’ (সুরা হূদ ১০৫), এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর নবী! তাহলে আমরা কিসের উপর ‘আমল করব, এমন জিনিসের উপর যে প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে অথবা এমন কোন জিনিষের উপর যে প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইনি? তিনি বলেনঃ হে ‘উমর! না, বরং এমন জিনিষের উপর যা পূর্বেই চূড়ান্ত হয়ে আছে এবং যার সাথে কলম জারী হয়ে গিয়েছে। তবে প্রত্যেকের করনীয় বিষয় সহজসাধ্য করে রাখা হয়েছে, যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
সহীহ : আযযিলাল (১৬১ , ১৬৬)।
আবু ‘‘ঈসা বলেন , এ হাদীসটি এ সুত্রে হাসান গারীব। আমরা এ হাদীস শুধু ‘আবদুল মালিক হতে জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১১২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، وَالأَسْوَدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنِّي عَالَجْتُ امْرَأَةً فِي أَقْصَى الْمَدِينَةِ وَإِنِّي أَصَبْتُ مِنْهَا مَا دُونَ أَنْ أَمَسَّهَا وَأَنَا هَذَا فَاقْضِ فِيَّ مَا شِئْتَ . فَقَالَ لَهُ عُمَرُ لَقَدْ سَتَرَكَ اللَّهُ لَوْ سَتَرْتَ عَلَى نَفْسِكَ . فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا فَانْطَلَقَ الرَّجُلُ فَأَتْبَعَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً فَدَعَاهُ فَتَلاَ عَلَيْهِِمِ : ( أَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ هَذَا لَهُ خَاصَّةً قَالَ ” لاَ بَلْ لِلنَّاسِ كَافَّةً ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَهَكَذَا رَوَى إِسْرَائِيلُ عَنْ سِمَاكٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ وَالأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ وَرَوَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَنْ سِمَاكٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ وَرِوَايَةُ هَؤُلاَءِ أَصَحُّ مِنْ رِوَايَةِ الثَّوْرِيِّ وَرَوَى شُعْبَةُ عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنِ الأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি মাদীনার শেষ প্রান্তে এক মহিলাকে স্পর্শ করেছি এবং আমি তার সাথে সহবাস ব্যতীত সবই করেছি। আমি এখন আপনার নিকট এসেছি। আপনি যা ইচ্ছা আমার ব্যাপারে ফাইসালা করেন। ‘উমার(রাঃ) তাকে বললেন, আল্লাহ তা’আলা তোমার অপরাধ গোপন রেখেছেন, এখন তুমিও যদি তা গোপন রাখতে। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কারো কথায় প্রতিউত্তর করলেন না। লোকটি উঠে চলে যাওয়ার পর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে পাঠিয়ে তাকে ডেকে আনেন এবং এই আয়াত পাঠ করে শুনান (অনুবাদ) : “তুমি নামায কায়েম কর দিনের দুই প্রান্তভাগে এবং রাতের প্রথমাংশে। সৎকাজসমুহ অন্যায় কাজসমূহকে দূর করে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহন করে তাদের জন্য এটা এক উপদেশ’’ (সুরা হূদ ১১৪)। উপস্থিত লোকদের মধ্যে একজন বলল, এটা কি শুধু তার বেলায় প্রযোজ্য? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ না, বরং সকলের জন্য।
হাসান সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৩৯৮), মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটী হাসান সহীহ। এভাবেই ইসরাঈল সিমাক হতে, তিনি ইব্রাহীমে হতে, তিনি আলকামাহ ও আসওয়াদ হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। সুফিইয়ান সাওরী (রহঃ) সিমাক হতে, তিনি ইব্রাহীম হতে, তিনি ‘আবদুর রাহমান ইবনু ইয়াযীদ হতে , তিনি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। সাওরীর রিওয়ায়াত অপেক্ষা এদের রিওয়ায়াত অনেক বেশি সহীহ। এটিকে সিমাক ইবনু হারব-ইব্রাহীম হতে, তিনি আসওয়াদ হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে শু’বাহও একই রকম বর্ণনা করেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াইহিয়া নায়সাবুরী –মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ হতে, তিনি সুফইয়ান সাওরী হতে, তিনি আ’মাশ হতে, তিনি সিমাক হতে, তিনি ইব্রাহিম হতে, তিনি ’আবদুর রাহমান ইবনু ইয়াযীদ হতে, তিনি আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। মাসউদ ইবনু গাইলান –আল –ফাযল ইবনু মুসা হতে, তিনি সুফইয়ান হতে, তিনি সিমাক হতে, তিনি ইব্রাহিম হতে, তিনি ‘আবদুর রাহমান ইবনু ইয়াযীদ হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রেও একই মর্মে একই রকম বর্ণনা করেছেন। উক্ত বর্ণনায় অবশ্য আ’মাশের উল্লেখ নেই। এ হাদীস সুলাইমান আত-তাইমী (রহঃ) আবু ‘উস্মান আন-নাহদী হতে, তিনি ইবনু মাস-উদ (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৩১১৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ الْجُعْفِيُّ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ رَجُلاً لَقِيَ امْرَأَةً وَلَيْسَ بَيْنَهُمَا مَعْرِفَةٌ فَلَيْسَ يَأْتِي الرَّجُلُ شَيْئًا إِلَى امْرَأَتِهِ إِلاَّ قَدْ أَتَى هُوَ إِلَيْهَا إِلاَّ أَنَّهُ لَمْ يُجَامِعْهَا . قَالَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( أَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَىِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ ) فَأَمَرَهُ أَنْ يَتَوَضَّأَ وَيُصَلِّيَ . قَالَ مُعَاذٌ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَهِيَ لَهُ خَاصَّةً أَمْ لِلْمُؤْمِنِينَ عَامَّةً قَالَ “ بَلْ لِلْمُؤْمِنِينَ عَامَّةً ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِمُتَّصِلٍ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي لَيْلَى لَمْ يَسْمَعْ مِنْ مُعَاذٍ وَمُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ مَاتَ فِي خِلاَفَةِ عُمَرَ وَقُتِلَ عُمَرُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي لَيْلَى غُلاَمٌ صَغِيرٌ ابْنُ سِتِّ سِنِينَ وَقَدْ رَوَى عَنْ عُمَرَ وَرَآهُ . وَرَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلٌ .
মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! এক ব্যক্তি এক বেগানা নারীর সাথে যৌন মিলন ছাড়া আর সবই করেছে, তার প্রসঙ্গে আপনার কি মত? তখন আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “তুমি নামায কায়িম কর দিনের দুই প্রান্তভাগে এবং রাতের প্রথমাংশে। সৎ কর্মসমূহ অবশ্যই অসৎ কর্মসমূহ দূর করে দেয়। যারা হিদায়াত গ্রহণ করে তাদের জন্য এটা হিদায়াত”(সূরাঃ হূদ- ১১৪)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ওযূ করে এসে নামায আদায়ের হুকুম দেন। মুআয (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! এই সুযোগ কি শুধু তার জন্যই না সাধারণভাবে সকল মু’মিনের জন্য? তিনি বললেনঃ বরং সাধারণভাবে সকল মু’মিনদের জন্য।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসের সনদসূত্র মুত্তাসিল (পরস্পর সংযুক্ত) নয়। আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা (রহঃ) মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে সরাসরি কিছু শুনেননি। মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) উমার (রাঃ)-এর খিলাফাত কালে ইন্তেকাল করেন। উমর (রাঃ) যখন ইন্তেকাল করেন তখন আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা ছয় বছরের বালক। তিনি উমার (রাঃ) হতে রিওয়ায়াত করেছেন এবং তিনি তাকে দেখেছেন। শুবা (রহঃ) এ হাদীসটি আবদুল মালিক ইবনু উমাইর হতে আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩১১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ رَجُلاً، أَصَابَ مِنَ امْرَأَةٍ قُبْلَةَ حَرَامٍ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ عَنْ كَفَّارَتِهَا فَنَزَلَتْ : ( أَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ) فَقَالَ الرَّجُلُ أَلِيَ هَذِهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ ” لَكَ وَلِمَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ أُمَّتِي ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক লোক এক বেগানা মহিলাকে চুমা দিল, যা তার জন্য হারাম ছিল। সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত হয়ে এর কাফফারা প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করলো। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “ তুমি নামায কায়েম কর দিনের দুই প্রান্তভাগে এবং রাতের প্রথমাংশে। ন্যায় কাজসমুহ অন্যায় কাজসমূহকে দূর করে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহন করে তাদের জন্য এটা উপদেশ’’ (সুরা হূদ ১১৪)। লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এই সুযোগ কি শুধু আমার জন্য? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার জন্যও এবং আমার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যক্তি এরুপ কাজ করে বসে তার জন্যও।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১১৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا قَيْسُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِي الْيَسَرِ، قَالَ أَتَتْنِي امْرَأَةٌ تَبْتَاعُ تَمْرًا فَقُلْتُ إِنَّ فِي الْبَيْتِ تَمْرًا أَطْيَبَ مِنْهُ . فَدَخَلَتْ مَعِي فِي الْبَيْتِ فَأَهْوَيْتُ إِلَيْهَا فَقَبَّلْتُهَا فَأَتَيْتُ أَبَا بَكْرٍ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ قَالَ اسْتُرْ عَلَى نَفْسِكَ وَتُبْ وَلاَ تُخْبِرْ أَحَدًا . فَلَمْ أَصْبِرْ فَأَتَيْتُ عُمَرَ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ اسْتُرْ عَلَى نَفْسِكَ وَتُبْ وَلاَ تُخْبِرْ أَحَدًا . فَلَمْ أَصْبِرْ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ . فَقَالَ لَهُ ” أَخَلَفْتَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فِي أَهْلِهِ بِمِثْلِ هَذَا ” . حَتَّى تَمَنَّى أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ أَسْلَمَ إِلاَّ تِلْكَ السَّاعَةَ حَتَّى ظَنَّ أَنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ . قَالَ وَأَطْرَقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم طَوِيلاً حَتَّى أَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ : (أَقِمِ الصَّلاَةَ طَرَفَىِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ ) إِلَى قَوْلِهِ : (ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ ) . قَالَ أَبُو الْيَسَرِ فَأَتَيْتُهُ فَقَرَأَهَا عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَصْحَابُهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلِهَذَا خَاصَّةً أَمْ لِلنَّاسِ عَامَّةً قَالَ ” بَلْ لِلنَّاسِ عَامَّةً ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَقَيْسُ بْنُ الرَّبِيعِ ضَعَّفَهُ وَكِيعٌ وَغَيْرُهُ وَأَبُو الْيَسَرِ هُوَ كَعْبُ بْنُ عَمْرٍو . قَالَ وَرَوَى شَرِيكٌ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ هَذَا الْحَدِيثَ مِثْلَ رِوَايَةِ قَيْسِ بْنِ الرَّبِيعِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي أُمَامَةَ وَوَاثِلَةَ بْنِ الأَسْقَعِ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ .
আবুল ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা খেজুর ক্রয়ের জন্য আমার নিকট এলে আমি বললাম, ঘরের ভেতর এর চাইতে ভাল খেজুর আছে। অতএব সে আমার সাথে ঘরে প্রবেশ করে। আমি তার প্রতি আকৃষ্ট হলাম এবং তাকে চুমা দিলাম। অতঃপর আমি আবু বকর (রাঃ) এর নিকট এসে ঘটনা তাকে জানালাম। তিনি বললেন , এটা নিজের কাছেই গোপন রাখ, এবং আল্লাহ তা’আলার নিকট তাওবা কর এবং আর কাওকে বল না। কিন্তু আমি ধৈর্য্য ধারন করতে পারলাম না। তাই আমি উমা র (রাঃ) এর নিকট এসে বিষয়টি তার জানালাম। তিনি বললেন, এটা নিজের কাছেই গোপন রাখ, এবং আল্লাহ তা’আলার নিকট তাওবা কর এবং এটা আর কারো নিকট বল না। কিন্তু আমি ধৈর্য্য ধরতে পারলাম না। তাই আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে তার নিকট বিষয়টি প্রকাশ করলাম। তিনি বললেনঃ তুমি কি আল্লাহ তা’আলার রাস্তায় জিহাদে গমনকারী ব্যক্তির অনুপস্হিতিতে তার পরিবারের সাথে এই অপকর্ম করেছ? এ কথায় অনুতপ্ত হয়ে আবুল ইয়াসার আক্ষেপ করে বলেন যে, তিনি যদি ইতিপূর্বে ইসলাম গ্রহন না করে এই মুহূর্তে গ্রহন করতেন। এমনকি তিনি নিজেকে জাহান্নামী বলে ভাবলেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দীর্ঘক্ষণ নীরবে দৃষ্টি অবনমিত করে রইলেন। অবশেষে তার প্রতি ওহী অবতীর্ণ হল : “ তুমি নামায কায়েম কর দিনের দু প্রান্তভাগে এবং রাতের প্রথমাংশে। সৎ কর্মগুলো অসং কর্মগুলো দূর করে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহন করে এটা তাদের জন্য উপদেশ “-(সূরা হূদ -১১৪)। আবুল ইয়াসার (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এলে তিনি আমাকে উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করে শুনান। তখন তাঁর সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! এটা কি তার জন্যই নির্দিষ্ট না সাধারনভাবে সকলের জন্য? তিনি বললেনঃ বরং সাধারণভাবে সকলের জন্য।
আবু ‘ঈসা বলেন এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। ক্বাইস ইবনুর রাবী-কে ওয়াকী প্রমুখ হাদীসশাস্ত্রে দুর্বল বলেছেন। আবুল ইয়াসারের নাম কা’ব ইবনু ‘আমর। শারীক (রহঃ) ’উসমান ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) হতে এ হাদীস ক্বাইস ইবনুর রাবী-র মতই বর্ণনা করেছেন। আবু উমামা, ওয়াসিলা ইবনুল আসক্বা’ ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদ হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৩
সুরা ইউসুফ
৩১১৬
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ الْخُزَاعِيُّ الْمَرْوَزِيُّ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ الْكَرِيمَ بْنَ الْكَرِيمِ بْنِ الْكَرِيمِ بْنِ الْكَرِيمِ يُوسُفُ بْنُ يَعْقُوبَ بْنِ إِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ قَالَ وَلَوْ لَبِثْتُ فِي السِّجْنِ مَا لَبِثَ ثُمَّ جَاءَنِي الرَّسُولُ أَجَبْتُ . ثُمَّ قَرَأََ : ( فَلَمَّا جَاءَهُ الرَّسُولُ قَالَ ارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَاسْأَلْهُ مَا بَالُ النِّسْوَةِ اللاَّتِي قَطَّعْنَ أَيْدِيَهُنَّ ) قَالَ : وَرَحْمَةُ اللَّهِ عَلَى لُوطٍ إِنْ كَانَ لَيَأْوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ إِذْ قَالَ : ( لَوْ أَنَّ لِي بِكُمْ قُوَّةً أَوْ آوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ ) فَمَا بَعَثَ اللَّهُ مِنْ بَعْدِهِ نَبِيًّا إِلاَّ فِي ذِرْوَةٍ مِنْ قَوْمِهِ ” .
আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মর্যাদাবানের পুত্র মর্যাদাবানের পুত্র মর্যাদাবানের পুত্র মর্যাদাবান ইউসুফ ইবনু ইয়াকুব ইবনি ইসহাক্ব ইবনি ইবরাহীম ‘আলাইহিমুস সালাম। তিনি বলেনঃ ইউসুফ (‘আঃ) যত কাল কারাগারে ছিলেন আমি যদি তত কাল কারাগারে থাকতাম এবং অতঃপর রাজদুত আমার নিকট এসে আহবান জানাতো তাহলে আমি তার (তার আহবানে) সাড়া দিতাম। তারপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াত পরেন (অনুবাদ) : “রাজদুত যখন তার নিকট উপস্থিত হল, তখন সে বলল, তুমি তোমার মনিবের নিকট ফিরে যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস কর –যে নারীরা নিজেদের হাত কেটেছিল তাদের অবস্হা কি’’ (সূরা ইউসুফ ৫০)? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ লুত (‘আঃ) –এর উপর আল্লাহ্র রহমত বর্ষিত হোক। তিনি মজবুত দুর্গে আশ্রয় গ্রহনের আকাংখা করতেন। “সে বলল, তোমাদের উপর যদি আমার জোর খাটত অথবা যদি আমি কোন সুদৃঢ় দুর্গে আশ্রয় নিতে পারতাম’’।-(সূরা হূদ ৮০)। তাঁর পরে আল্লাহ ঐ জাতির মর্যাদাবান গোষ্ঠীর মধ্য থেকেই নবীগণকে পাঠিয়েছেন।
যিরওয়াহ , শব্দের পরিবর্তে “সারওয়াহ “ শব্দে বর্ণিত হাদীসটি হাসান : সহীহাহ (১৬১৭, ১৮৬৭) , বুখারী ,মুসলিম।
আবু কুরাইব (রহঃ) ‘আবদাহ ও ‘আবদুর রহীম হতে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমর (রাঃ) সুত্রে আল-ফাযল ইবনু মুসার হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তবে এই বর্ণনায় (যিরওয়াতুন –এর স্হলে) ‘সারওয়াতুন ‘শব্দ উল্লেখ আছে (অর্থ অভিন্ন) । মুহামাদ ইবনু ‘আমর (রাঃ) বলেন, “আস-সারওয়াতু” অর্থ প্রচুর, প্রাচুর্য, প্রতিপত্তি ও ক্ষমতা। এটি আল-ফাযল ইবনু মুসার রিওয়াত অপেক্ষা অধিকতর সহীহ। আবু ‘‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৪
সূরা আর-রা’দ
৩১১৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْوَلِيدِ، وَكَانَ، يَكُونُ فِي بَنِي عِجْلٍ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أَقْبَلَتْ يَهُودُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا أَبَا الْقَاسِمِ أَخْبِرْنَا عَنِ الرَّعْدِ مَا هُوَ قَالَ ” مَلَكٌ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ مُوَكَّلٌ بِالسَّحَابِ مَعَهُ مَخَارِيقُ مِنْ نَارٍ يَسُوقُ بِهَا السَّحَابَ حَيْثُ شَاءَ اللَّهُ ” . فَقَالُوا فَمَا هَذَا الصَّوْتُ الَّذِي نَسْمَعُ قَالَ ” زَجْرُهُ بِالسَّحَابِ إِذَا زَجَرَهُ حَتَّى يَنْتَهِيَ إِلَى حَيْثُ أُمِرَ ” . قَالُوا صَدَقْتَ فَأَخْبِرْنَا عَمَّا حَرَّمَ إِسْرَائِيلُ عَلَى نَفْسِهِ قَالَ ” اشْتَكَى عِرْقَ النَّسَا فَلَمْ يَجِدْ شَيْئًا يُلاَئِمُهُ إِلاَّ لُحُومَ الإِبِلِ وَأَلْبَانَهَا فَلِذَلِكَ حَرَّمَهَا ” . قَالُوا صَدَقْتَ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইয়াহুদীরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে আবুল কাসিম! আমাদেরকে রা’দ (মেঘের গর্জন) প্রসঙ্গে বলুন, এটা কি? তিনি বললেনঃ মেঘমালাকে হাঁকিয়ে নেয়ার জন্য ফেরেশতাদের একজন নিয়োজিত আছে। তার সাথে রয়েছে আগুনের চাবুক। এর সাহায্যে সে মেঘমালাকে সেদিকে পরিচালনা করেন, যেদিকে আল্লাহ তা’আলা চান। তারা বলল, আমরা যে আওয়াজ শুনতে পাই তার তাৎপর্য কি? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এটা হচ্ছে ফেরেশতার হাঁকডাক। এভাবে হাঁকডাক দিয়ে সে মেঘমালাকে তার নির্দেশিত স্হানে নিয়ে যায়। তারা বলল, আপনি সত্য বলেছেন। তারা আবার বলল, আপনি আমাদের বলুন, ইসরাঈল [ইয়াকুব (‘‘আঃ)] কোন জিনিষ নিজের জন্য হারাম করেছিলেন? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তিনি ইরকুন নিসা (স্যায়াটিকা) রোগে আক্রান্ত ছিলেন কিন্তু উটের গোশত ও এর দুধ ছাড়া তার উপযোগী খাদ্য ছিল না। তাই তিনি তা হারাম করে নিয়েছিলেন। তারা বলল, আপনি সত্য বলেছেন।
সহীহ : সহীহাহ (১৮৭২)।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১১৮
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خِدَاشٍ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا سَيْفُ بْنُ مُحَمَّدٍ الثَّوْرِيُّ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : ( وَنُفَضِّلُ بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ فِي الأُكُلِ ) قَالَ ” الدَّقَلُ وَالْفَارِسِيُّ وَالْحُلْوُ وَالْحَامِضُ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رَوَاهُ زَيْدُ بْنُ أَبِي أُنَيْسَةَ عَنِ الأَعْمَشِ نَحْوَ هَذَا . وَسَيْفُ بْنُ مُحَمَّدٍ هُوَ أَخُو عَمَّارِ بْنِ مُحَمَّدٍ وَعَمَّارٌ أَثْبَتُ مِنْهُ وَهُوَ ابْنُ أُخْتِ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ .
আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার বানী “এদের কতককে কতকের উপর আমি শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকি’’ (সূরা রা’দ ৪) প্রসঙ্গে বলেনঃ যেমন নিকৃস্ট খেজুর ও উত্তম খেজুরে এবং মিস্তি ও টকের মধ্যে পার্থক্য।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। যাইদ ইবনু আবী উনাইসাহ (রহঃ) আল-আ’মাশের সুত্রে উপরোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা করেছেন। সাইফ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) আম্মার ইবনু মুহাম্মাদের ভাই। তার তুলনায় আম্মার অধিক শক্তিশালী বর্ণনাকারী। ইনি সুফইয়ান সাওরীর বোনপুত্র।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৫
সুরা ইবরাহীম
৩১১৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ شُعَيْبِ بْنِ الْحَبْحَابِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِقِنَاعٍ عَلَيْهِ رُطَبٌ فَقَالَ ” مَثَلُ كَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ كَشَجَرَةٍ طَيِّبَةٍ أَصْلُهَا ثَابِتٌ وَفَرْعُهَا فِي السَّمَاءِ تُؤْتِي أُكُلَهَا كُلَّ حِينٍ بِإِذْنِ رَبِّهَا قَالَ هِيَ النَّخْلَةُ : ( مَثَلُ كَلِمَةٍ خَبِيثَةٍ كَشَجَرَةٍ خَبِيثَةٍ اجْتُثَّتْ مِنْ فَوْقِ الأَرْضِ مَا لَهَا مِنْ قَرَارٍ ) قَالَ هِيَ الْحَنْظَلُ ” . قَالَ فَأَخْبَرْتُ بِذَلِكَ أَبَا الْعَالِيَةِ فَقَالَ صَدَقَ وَأَحْسَنَ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে টাটকা খেজুরের ছড়া বিতরণ করা হলে তিনি বলেনঃ “সৎ বাক্যের তুলনা তা একটি পবিত্র বৃক্ষের ন্যায় যার শিকড় সুদৃঢ় এবং যার শাখা প্রশাখা উর্দ্ধে উত্থিত। যে বৃক্ষ স্বীয় রবের আদেশে প্রত্যেক মওসুমে তার ফলদান করে। (সূরাঃ ইব্রাহীম- ২৪, ২৫)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তা হল খেজুর গাছ। “আর নাপাক বাক্যের দৃষ্টান্ত হল একটি মন্দ বৃক্ষ, যার মূল ভূপৃষ্ঠ হতে আলাদা, যার কোন স্থায়িত্ব নেই” (সূরাঃ ইব্রাহীম- ২৬)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তা হল (তিক্ত) মাকাল ফলের গাছ। রাবী বলেন, আমি এ প্রসঙ্গে আবুল আলিয়াকে জানালে তিনি বলেন, (তোমার উস্তাদ) সত্য বলেছেন এবং যথার্থ বলেছেন।
মারফু বর্ণনাটি দুর্বল
কুতাইবা-আবূ বাকর ইবনু শুআইব হতে তিনি তার পিতা হতে তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে উক্ত মর্মে একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি এটি মারফূরূপে বর্ণনা করেননি এবং তিনি আবুল আলিয়ার বক্তব্যও উল্লেখ করেননি। হাম্মাদ ইবনু সালামার হাদীসের তুলনায় এটি অনেক বেশি সহীহ। একাধিক রাবী একই রকম মাওকূফ (আনাসের কথা) হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হাম্মাদ ইবনু সালামা ছাড়া আর কেউ এটি মারফূরূপে বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। মামার, হাম্মাদ ইবনু যাইদ (রহঃ) প্রমুখ এটি বর্ণনা করেছেন কিন্তু তাদের কেউ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত এর সনদ পোঁছাননি। মাওকুফ বর্ণনার সনদ সহীহ। আহ্মাদ ইবনু আবদা (রহঃ) হাম্মাদ ইবনু যাইদ হতে তিনি শুআইব ইবনুল হাবহাব হতে তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে কুতাইবার হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন এবং তিনিও মারফূরূপে বর্ণনা করেননি। মাওকুফ বর্ণনাটি সহীহ।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
৩১২০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنِي عَلْقَمَةُ بْنُ مَرْثِدٍ، قَالَ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ عُبَيْدَةَ، يُحَدِّثُ عَنِ الْبَرَاءِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِ اللَّهِ : ( يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ ) قَالَ ” فِي الْقَبْرِ إِذَا قِيلَ لَهُ مَنْ رَبُّكَ وَمَا دِينُكَ وَمَنْ نَبِيُّكَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আল-বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার বাণী “যারা ইমান আনে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে পার্থিব জীবনে ও আখিরাতে শাশ্বত বানীতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন’’ -(সূরা ইবরাহীম ২৭) প্রসঙ্গে বলেনঃ কবরে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখা হবে- যখন তাকে বলা হবে, তোমার প্রভু কে, তোমার দ্বীন কি এবং তোমার নবী কে।
সহীহ : বুখারী (৪৬৯৯) ,মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন , হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১২১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ تَلَتْ عَائِشَةُ هَذِهِ الآيَةَ : ( يَوْمَ تُبَدَّلُ الأَرْضُ غَيْرَ الأَرْضِ ) قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَأَيْنَ يَكُونُ النَّاسُ قَالَ ” عَلَى الصِّرَاطِ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ عَنْ عَائِشَةَ .
মাসরুক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আয়িশাহ (রাঃ) এ আয়াতে তিলাওয়াত করলেন (অনুবাদ) : “যে দিন পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে্ অন্য পৃথিবী হবে—’’ – (সূরা ইবরাহীম ৪৮)। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! সে সময় মানুষ কোথায় থাকবে? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ পুলসিরাতের উপর।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৪২৭৯) , মুসলিম।
আবু ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এটি অন্য সুত্রেও ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৬
সূরা আল-হিজর
৩১২২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا نُوحُ بْنُ قَيْسٍ الْحُدَّانِيُّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَتِ امْرَأَةٌ تُصَلِّي خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – حَسْنَاءُ مِنْ أَحْسَنِ النَّاسِ فَكَانَ بَعْضُ الْقَوْمِ يَتَقَدَّمُ حَتَّى يَكُونَ فِي الصَّفِّ الأَوَّلِ لِئَلاَّ يَرَاهَا وَيَسْتَأْخِرُ بَعْضُهُمْ حَتَّى يَكُونَ فِي الصَّفِّ الْمُؤَخَّرِ فَإِذَا رَكَعَ نَظَرَ مِنْ تَحْتِ إِبْطَيْهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنْكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَأْخِرِينَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِي الْجَوْزَاءِ نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَهَذَا أَشْبَهُ أَنْ يَكُونَ أَصَحَّ مِنْ حَدِيثِ نُوحٍ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক পরমা সুন্দরী মহিলা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পেছনে (মহিলাদের কাতারে) নামায আদায় করত। কিছু লোক প্রথম কাতারে এগিয়ে আসতো, যাতে উক্ত মহিলা দৃষ্টিগোচর না হয়। আবার কিছু লোক পেছনে সরে গিয়ে (মহিলাদের নিকটবর্তী) পেছনের কাতারে দাঁড়াত এবং রুকুতে গিয়ে বগলের নীচ দিয়ে (উক্ত মহিলার প্রতি) তাকাতো। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেন : “ তোমাদের মধ্যকার সামনে অগ্রসর হয়ে যাওয়া লোকদেরও আমি জানি এবং পেছনে পিছিয়ে যাওয়া লোকদেরও আমি জানি “ (সূরা আল-হিজর ২৪)।
সহীহ : সহীহাহ (২৪৭২), আস সামার আল-মুস্তাত্বা-ব।
আবু ‘ঈসা বলেন : জা’ফার ইবনু সুলাইমানও এ হাদীস ‘আমর ইবনু মালিক হতে, তিনি আবুল জাওয়ার সুত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন এবং তাতে বনু ‘আব্বাস (রাঃ) এর উল্লেখ করেননি। আর এটি নূহ –এর রিওয়াত অপেক্ষা সহীহ হওয়ার অনেক বেশী সামঞ্জস্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১২৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ، عَنْ جُنَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لِجَهَنَّمَ سَبْعَةُ أَبْوَابٍ بَابٌ مِنْهَا لِمَنْ سَلَّ السَّيْفَ عَلَى أُمَّتِي أَوْ قَالَ عَلَى أُمَّةِ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم – ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জাহান্নামের সাতটি দরজা আছে (১৫:৪৪ আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত)। তার মধ্যে একটি দরজা সেইসব লোকদের জন্য যারা আমার উম্মতের বিরুদ্ধে অথবা বলেছেনঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উম্মতের বিপক্ষে তলোয়ার চালিয়েছে।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৩৫৩০)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র মালিক ইবনু মিগওয়ালের সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩১২৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَلِيٍّ الْحَنَفِيُّ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْحَمْدُ لِلَّهِ أُمُّ الْقُرْآنِ وَأُمُّ الْكِتَابِ وَالسَّبْعُ الْمَثَانِي ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “আলহামদু লিল্লাহ’’ অর্থাৎ সূরা ফাতিহা হচ্ছে উম্মুল কুরআন (কুরআনের মূল), উম্মুল কিতাব (কিতাবের মূল) ও সাব’উল মাসানী (বারবার পাঠিত সপ্তক)।
সহীহ : সহীহ আবু দাউদ (১৩১) ,বুখারী।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১২৫
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ فِي التَّوْرَاةِ وَلاَ فِي الإِنْجِيلِ مِثْلَ أُمِّ الْقُرْآنِ وَهِيَ السَّبْعُ الْمَثَانِي وَهِيَ مَقْسُومَةٌ بَيْنِي وَبَيْنَ عَبْدِي وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ ” .
উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাওরাত ও ইনজীলে আল্লাহ তা’আলা উম্মুল কুরআনের সমতুল্য কিছু অবতীর্ণ করেননি। আর তা হচ্ছে সাব’উল মাসানী (বারবার পঠিত সপ্তক : সূরা আ-ইজর ৮৭ আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত)। (আল্লাহ তা’আলা বলেন) তা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বন্টিত। আমার বান্দার জন্য তা-ই রয়েছে যা সে চেয়েছে।
সহীহ : তা’লীকুর রাগীব (২/২১৬) , সিফাতুস সালাত।
কুতাইবাহ –“আবদুল ‘আযীয ইবনু মুহাম্মাদ হতে, তিনি ‘আলা ইবনু ‘আবদুর রাহমান হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে এই সুত্রে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উবাই (রাঃ) এর নিকট বের হয়ে এলেন। তখন তিনি নামাযরত ছিলেন…… পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরুপ। আবূ ঈসা বলেন : ‘আব্দুল আযীয ইবনু মুহাম্মাদের হাদীস অনেক বেশী দীর্ঘ ও পুর্ণাঙ্গ এনং এটি ‘আবদুল ‘আবদুল হামীদ ইবনু জাফারের হাদীস অপেক্ষা অনেক বেশি সহীহ। একাধিক বর্ণনাকারী ‘আলা ইবনু ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) হতে একই রকম বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১২৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ لَيْثِ بْنِ أَبِي سُلَيْمٍ، عَنْ بِشْرٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : (ولَنَسْأَلَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ * عَمَّا كَانُوا يَعْمَلُونَ ) قَالَ “ عَنْ قَوْلِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ لَيْثِ بْنِ أَبِي سُلَيْمٍ . وَقَدْ رَوَى عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ عَنْ لَيْثِ بْنِ أَبِي سُلَيْمٍ عَنْ بِشْرٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ نَحْوَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্ তা’আলার বাণী “আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে প্রশ্ন করব তারা যা করে সে বিষয়ে” (সূরাঃ হিজ্র- ৯২-৯৩) প্রসঙ্গে বলেনঃ অর্থাৎ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা প্রসঙ্গে।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র লাইস ইবনু আবূ সুলাইমের সূত্রে এ হাদীস জেনেছি। আবদুল্লাহ ইবনু ইদরীসও এ হাদীস লাইস ইবনু আবূ সুলাইম হতে তিনি বিশ্র হতে তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন তবে মারফূরূপে বর্ণনা করেননি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩১২৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ أَبِي الطَّيِّبِ، حَدَّثَنَا مُصْعَبُ بْنُ سَلاَّمٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ قَيْسٍ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” اتَّقُوا فِرَاسَةَ الْمُؤْمِنِ فَإِنَّهُ يَنْظُرُ بِنُورِ اللَّهِ ” . ثُمَّ قَرَأَ : ( إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِلْمُتَوَسِّمِينَ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي تَفْسِيرِ هَذِهِ الآيَةِ : ( إِنَّ فِي ذَلِكَ لآيَاتٍ لِلْمُتَوَسِّمِينَ ) قَالَ لِلْمُتَفَرِّسِينَ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা মু’মিনের দূরদৃষ্টি সম্পর্কে সজাগ থাক। কারণ সে আল্লাহ্ তা’আলার নূরের সাহায্যে দেখে। তারপর তিনি পাঠ করেনঃ “নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন লোকদের জন্য” (সূরাঃ আল-হিজর- ৭৫)
যঈফ, যঈফা (১৮২১)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই এ হাদীস জেনেছি। কোন কোন তাফসীরকার আয়াতে উদ্ধৃত “মুতাওয়াসসিমীন” শব্দের অর্থ করেছেন “মুতাফাররিসীন” (দূরদৃষ্টি বা অন্তরদৃষ্টি সম্পন্ন লোক)।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৭
সুরা আন-নাহল
৩১২৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَاصِمٍ، عَنْ يَحْيَى الْبَكَّاءِ، حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَرْبَعٌ قَبْلَ الظُّهْرِ بَعْدَ الزَّوَالِ تُحْسَبُ بِمِثْلِهِنَّ فِي صَلاَةِ السَّحَرِ ” . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَلَيْسَ مِنْ شَيْءٍ إِلاَّ وَهُوَ يُسَبِّحُ اللَّهَ تِلْكَ السَّاعَةَ ” . ثُمَّ قَرَأَ : ( يَتَفَيَّأُ ظِلاَلُهُ عَنِ الْيَمِينِ وَالشَّمَائِلِ سُجَّدًا لِلَّهِ ) الآيَةَ كُلَّهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَلِيِّ بْنِ عَاصِمٍ .
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যুহরের (ফরযের) পূর্বে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর যে চার রাক’আত নামায (আদায় করা হয়, সাওয়াবের দিক হতে) তা শেষ রাতের চার রাক’আত নামাযের মত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এমন কোন জিনিষ নেই যা ঐ সময় আল্লাহ্ তা’আলার গুণগান করে না। তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করেনঃ “এর ছায়া ডানে ও বাঁয়ে ঢলে পড়ে আল্লাহ্ তা’আলার প্রতি বিনীতভাবে সিজদাবনত হয়….” (সূরাঃ আন-নাহল- ৪৮-৫০) …. আয়াতের শেষ পর্যন্ত।
যঈফ, সহীহা (১৪৩১) নং হাদীসের অধীনে
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আলী ইবনু আসিমের সূত্র ব্যতীত এটি প্রসঙ্গে আমরা কিছু জানি না।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩১২৯
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنْ عِيسَى بْنِ عُبَيْدٍ، عَنِ الرَّبِيعِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، قَالَ حَدَّثَنِي أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ أُصِيبَ مِنَ الأَنْصَارِ أَرْبَعَةٌ وَسِتُّونَ رَجُلاً وَمِنَ الْمُهَاجِرِينَ سِتَّةٌ فِيهِمْ حَمْزَةُ فَمَثَّلُوا بِهِمْ فَقَالَتِ الأَنْصَارُ لَئِنْ أَصَبْنَا مِنْهُمْ يَوْمًا مِثْلَ هَذَا لَنُرْبِيَنَّ عَلَيْهِمْ قَالَ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ فَتْحِ مَكَّةَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ ( وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوا بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُمْ بِهِ وَلَئِنْ صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِلصَّابِرِينَ ) فَقَالَ رَجُلٌ لاَ قُرَيْشَ بَعْدَ الْيَوْمِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” كُفُّوا عَنِ الْقَوْمِ إِلاَّ أَرْبَعَةً ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ .
উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উহুদের যুদ্ধে চৌষট্টিজন আনসার ও ছয়জন মুহাজির শাহাদাত বরণ করেন। তাদের মধ্যে হামযাহ্ (রাঃ)-ও ছিলেন। কাফিররা তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তন করে লাশ বিকৃত করেছিল। আনসারগণ বলেন, আমরা যদি এসব কাফিরকে কোনদিন কাবু করতে পারি তাহলে তাদের উপর এর দ্বিগুণ বদলা নেব। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর যখন মক্কা বিজয়ের দিন আসলো তখন আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) : “যদি তোমরা শাস্তি দাওই তবে ঠিক ততখানি শাস্তি দিবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর তবে ধৈর্যশীলদের জন্য তাইতো উত্তম”- (সূরা আন্-নাহ্ল ১২৬)। তখন এক ব্যক্তি বলল, আজকের পর হতে কুরাইশদের নাম থাকবে না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ চার ব্যক্তি ব্যতীত অন্য লোকদের হত্যা করা হতে তোমরা বিরত থাক।
সনদ: হাসান সহীহ।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান এবং উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত হিসেবে গারীব।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৮
সূরা বানী ইসরাঈল
৩১৩০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ حِينَ أُسْرِيَ بِي لَقِيتُ مُوسَى . قَالَ فَنَعَتُّهُ فَإِذَا رَجُلٌ حَسِبْتُهُ قَالَ مُضْطَرِبٌ رَجِلُ الرَّأْسِ كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شُنُوءَةَ قَالَ وَلَقِيتُ عِيسَى . قَالَ فَنَعَتُّهُ قَالَ رَبْعَةٌ أَحْمَرُ كَأَنَّمَا خَرَجَ مِنْ دِيمَاسٍ يَعْنِي الْحَمَّامَ وَرَأَيْتُ إِبْرَاهِيمَ . قَالَ وَأَنَا أَشْبَهُ وَلَدِهِ بِهِ قَالَ وَأُتِيتُ بِإِنَاءَيْنِ أَحَدُهُمَا لَبَنٌ وَالآخَرُ خَمْرٌ فَقِيلَ لِي خُذْ أَيَّهُمَا شِئْتَ . فَأَخَذْتُ اللَّبَنَ فَشَرِبْتُهُ فَقِيلَ لِيَ هُدِيتَ الْفِطْرَةَ أَوْ أَصَبْتَ الْفِطْرَةَ أَمَا إِنَّكَ لَوْ أَخَذْتَ الْخَمْرَ غَوَتْ أُمَّتُكَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে রাতে আমাকে (ঊর্ধ্বজগতে) ভ্রমণ করানো হয় সে রাতে আমি মূসা (‘‘আঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করি। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মূসা (‘আঃ)-এর দৈহিক গঠনাকৃতির বর্ণনা দেন। (তিনি বলেনঃ ) তিনি এমন এক ব্যক্তি যাঁর দেহ মধ্যমাকৃতির, তাঁর চুল মধ্যম গোছেন, খুব কোঁকড়ানোও নয়, আবার একেবারে সোজাও নয়। মনে হয় তিনি শানূআহ বংশের লোক। তিনি আরো বলেনঃ ‘ঈসা (‘আঃ)-এর সাথেও আমি সাক্ষাৎ করলাম। বর্ণনাকারী বলেন, তাঁর চেহারারও বর্ণনা দিলেন তিনি। তাঁর দেহের গড়ন মধ্যম, শরীরের রং লাল এবং মনে হয় তিনি এইমাত্র গোসলখানা হতে বের হয়েছেন। ইব্রাহীম (‘আঃ)-কেও আমি দেখেছি। তাঁর বংশধরের মধ্যে আমিই তাঁর দৈহিক আকৃতিতে সর্বাধিক সদৃশ। আমার সামনে দু’টি পানপাত্র পেশ করা হয় : একটি দুধের এবং অন্যটি মদের। আমাকে বলা হল, আপনি এ দু’টির মধ্যে যেটা পান করতে চান সেটা নিন। আমি দুধের পাত্রটি নিয়ে তা পান করলাম। তারপর আমাকে বলা হল, আপনাকে ফিতরাতের (ইসলামের) পথ দেখানো হয়েছে বা আপনি ফিতরাতকে পেয়ে গেছেন। আপনি যদি মদের পাত্র নিতেন তবে আপনার উম্মত পথভ্রষ্ট হয়ে যেত।
সহীহ : বুখারী (৪৭০৯), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৩১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ بِالْبُرَاقِ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ مُلْجَمًا مُسْرَجًا فَاسْتَصْعَبَ عَلَيْهِ فَقَالَ لَهُ جِبْرِيلُ أَبِمُحَمَّدٍ تَفْعَلُ هَذَا فَمَا رَكِبَكَ أَحَدٌ أَكْرَمُ عَلَى اللَّهِ مِنْهُ قَالَ “ فَارْفَضَّ عَرَقًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَلاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ الرَّزَّاقِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে (মিরাজে) ভ্রমণ করানো হয় সে রাতে তাঁর সামনে জিনপোষ আঁটা ও লাগাম বাঁধা একটি বোরাক আনা হয়। বোরাক তার পিঠে সাওয়ার হওয়াটা তাঁর জন্য অসম্ভব করে তুললে জিবরীল (‘আঃ) তাকে বললেন, তুমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে কেন এ রকম আচরণ করছ? অথচ আল্লাহ তা‘আলার সমীপে তাঁর চেয়ে বেশি সম্মানিত কেউ তোমর পিঠে সওয়ার হয়নি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এতে বোরাক ঘর্মাক্ত হয়ে যায়।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এটিকে আমরা শুধুমাত্র ‘আবদুর রাজ্জাকের বর্ণিত হাদীস হিসেবেই জানি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৩২
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو تُمَيْلَةَ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ جُنَادَةَ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لَمَّا انْتَهَيْنَا إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ قَالَ جِبْرِيلُ بِإِصْبَعِهِ فَخَرَقَ بِهِ الْحَجَرَ وَشَدَّ بِهِ الْبُرَاقَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদাহ্ (রহঃ) হতে তার বাবা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমরা যখন বাইতুল মাক্বদিসে পৌঁছলাম, তখন জিবরীল (‘আঃ) তাঁর আঙ্গুল দিয়ে পাথর ফাটান এবং তার সাথে বোরাক বাঁধেন।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৩৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لَمَّا كَذَّبَتْنِي قُرَيْشٌ قُمْتُ فِي الْحِجْرِ فَجَلاَ اللَّهُ لِي بَيْتَ الْمَقْدِسِ فَطَفِقْتُ أُخْبِرُهُمْ عَنْ آيَاتِهِ وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَيْهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي ذَرٍّ وَابْنِ مَسْعُودٍ .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কুরাইশরা যখন আমাকে মিথ্যা মনে করল (এবং বলল, আপনার মিরাজে যাওয়ার দাবি সত্য হলে বাইতুল মাক্বদিসের একটি বর্ণনা দিন)। আমি হাজারে (হাতীমে) দাঁড়ালাম এবং আল্লাহ তা‘আলা আমার সামনে বাইতুল মাক্বদিসের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরলেন। আমি তাদের সামনে এর নিদর্শনসমূহের বর্ননা দিলাম। মনে হল আমি যেন বাইতুল মাক্বদিসকেই দেখছি।
সহীহ : তাখরীজু ফিকহিস্ সীরাহ্ (১৪৫), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। মালিক ইবনু সা’সাহ্, আবূ সা‘ঈদ ও ইবনু ‘‘আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৩৪
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي قَوْلِهِ: ( ومَا جَعَلْنَا الرُّؤْيَا الَّتِي أَرَيْنَاكَ إِلاَّ فِتْنَةً لِلنَّاسِ ) قَالَ هِيَ رُؤْيَا عَيْنٍ أُرِيَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ إِلَى بَيْتِ الْمَقْدِسِ . قَالَ : (وَالشَّجَرَةَ الْمَلْعُونَةَ فِي الْقُرْآنِ ) هِيَ شَجَرَةُ الزَّقُّومِ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা‘আলার বানী : “তোমাকে আমরা চাক্ষুষভাবে যা দেখালাম তা এই লোকদের জন্য একটি পরীক্ষার বস্তু বানিয়ে রেখেছি”- (সূরা বানী ইসরাঈল ৬০)। আয়াতে উল্লেখিত “রুইয়া” প্রসঙ্গে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এটা ছিল চাক্ষুস দর্শন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে রাতের বেলা (মিরাজের সময়) বাইতুল মাক্বদিসে নিয়ে গিয়ে তা (যাবতীয় নিদর্শন) দেখানো হয়েছিল। বর্ণনাকারী বলেন, “কুরআনে উল্লেখিত অভিশপ্ত গাছটি”- (সূরা বানী ইসরাঈল ৬০) হল যাক্কুম গাছ।
সহীহ : বুখারী (৪৭১০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৩৫
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ أَسْبَاطِ بْنِ مُحَمَّدٍ، – قُرَشِيٌّ كُوفِيٌّ حَدَّثَنَا أَبِي، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : ( وَقُرْآنَ الْفَجْرِ إِنَّ قُرْآنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُودًا ) قَالَ ” تَشْهَدُهُ مَلاَئِكَةُ اللَّيْلِ وَمَلاَئِكَةُ النَّهَارِ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা‘আলার বানী : ‘আর ফজরে কুরআন পাঠের স্থায়ী নীতি অবলম্বন কর। কেননা ফজরের কুরআন পাঠে উপস্থিত থাকা হয়”- (সূরা বানী ইসরাঈল ৭৮)। এ আয়াত প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এ সময় রাতের ফেরেশতারা এবং দিনের ফেরেশতারা উপস্থিত হয়।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীরটি ‘আলী ইবনু মুসহির আ’মাশ হতে, তিনি আবূ সালিহ হতে তিনি আবূ হুরাইরাহ্ ও আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) হতে তারা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। এটি ‘আলী ইবনু হুজ্র ‘আলী ইবনু মুস্হির হতে, তিনি আ‘মাশ হতে …… অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৩৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِ اللَّهِ : ( يَوْمَ نَدْعُو كُلَّ أُنَاسٍ بِإِمَامِهِمْ ) قَالَ “ يُدْعَى أَحَدُهُمْ فَيُعْطَى كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ وَيُمَدُّ لَهُ فِي جِسْمِهِ سِتُّونَ ذِرَاعًا وَيُبَيَّضُ وَجْهُهُ وَيُجْعَلُ عَلَى رَأْسِهِ تَاجٌ مِنْ لُؤْلُؤٍ يَتَلأْلأُ فَيَنْطَلِقُ إِلَى أَصْحَابِهِ فَيَرَوْنَهُ مِنْ بَعِيدٍ فَيَقُولُونَ اللَّهُمَّ ائْتِنَا بِهَذَا وَبَارِكْ لَنَا فِي هَذَا حَتَّى يَأْتِيَهُمْ فَيَقُولُ أَبْشِرُوا لِكُلِّ رَجُلٍ مِنْكُمْ مِثْلُ هَذَا . قَالَ وَأَمَّا الْكَافِرُ فَيُسَوَّدُ وَجْهُهُ وَيُمَدُّ لَهُ فِي جِسْمِهِ سِتُّونَ ذِرَاعًا عَلَى صُورَةِ آدَمَ فَيُلْبَسُ تَاجًا فَيَرَاهُ أَصْحَابُهُ فَيَقُولُونَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ شَرِّ هَذَا اللَّهُمَّ لاَ تَأْتِنَا بِهَذَا . قَالَ فَيَأْتِيهِمْ فَيَقُولُونَ اللَّهُمَّ اخْزِهِ . فَيَقُولُ أَبْعَدَكُمُ اللَّهُ فَإِنَّ لِكُلِّ رَجُلٍ مِنْكُمْ مِثْلَ هَذَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَالسُّدِّيُّ اسْمُهُ إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ “সেদিন আমরা সব মানুষকে তাদের নেতাসহ আহ্বান করব” (সূরাঃ বাণী ইসরাঈল- ৭১), এ আয়াত প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ (মুসলিম নেতাদের) একজনকে ডাকা হবে। তার কিতাব (আমলনামা বা কার্যবিবরণী) তার ডান হাতে দেয়া হবে। তার দেহ ষাট গজ লম্বা করা হবে। তার মুখমন্ডল সাদা (আকর্ষণীয়) করা হবে। তার মাথায় মণিমুক্তার টুপি পরানো হবে এবং তা ঝিলকাতে থাকবে। সে তার সঙ্গীদের কাছে আসবে। তারা দূর হতেই তাকে দেখতে পাবে। তারা বলবে, “হে আল্লাহ্! আমাদেরকেও এরূপ দান কর এবং এর মাধ্যমে বারকাত দান কর।” ইতিমধ্যে সে তাদের নিকটে পৌঁছে যাবে এবং তাদেরকে বলবে, তোমাদের জন্য সুসংবাদ। তোমাদের প্রত্যেকের জন্য এরূপ পুরস্কার আছে। অপর দিকে কাফিরদের নেতার শরীরের রং কালো হবে। তার দেহ আদম আলাইহিস সালাম-এর মতই ষাট গজ লম্বা করা হবে। তাকেও একটি টুপি পরানো হবে। তার সঙ্গীরা দূর হতে তাকে দেখে বলবে, “আমরা এর অনিষ্ট থেকে আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ্! তাকে আমাদের নিকট ফিরিয়ে দিও না। এমতাবস্থায় সে তাদের নিকট এসে যাবে, আর তারা বলতে থাকবে, তুমি তাকে লাঞ্ছিত কর।” তারপর সে বলবে, আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদেরকে অপমান করুন। কেননা তোমাদের প্রত্যেককে এভাবেই লাঞ্ছিত করা হবে।
সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। সুদ্দীর নাম ইসমাঈল ইবনু আবদুর রহমান।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩১৩৭
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ يَزِيدَ الزَّعَافِرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : ( عَسَى أَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودًا ) سُئِلَ عَنْهَا قَالَ ” هِيَ الشَّفَاعَةُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَدَاوُدُ الزَّعَافِرِيُّ هُوَ دَاوُدُ الأَوْدِيُّ ابْنُ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَهُوَ عَمُّ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ إِدْرِيسَ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আল্লাহ তা‘আলার বানী (অনুবাদ) “আশা করা যায় যে, তোমার প্রতিপালন কোমাকে মাক্বামে মাহমূদে পৌঁছে দিবেন”- (সূরা বানী ইসরাঈল ৭৯) প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হল। তিনি বললেনঃ এটা শাফা‘আত।
সহীহ : সহীহাহ্ (২৬৩৯, ২৩৭০), আয্ যিলা-ল (৭৮৪)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। দাঊদ আয-যা‘আফিরী হলেন দাঊদ আল-আওদী, ইবনু ইয়াযীদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইদরীসের চাচা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৩৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ دَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَكَّةَ عَامَ الْفَتْحِ وَحَوْلَ الْكَعْبَةِ ثَلاَثُمِائَةٍ وَسِتُّونَ نُصُبًا فَجَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَطْعَنُهَا بِمِخْصَرَةٍ فِي يَدِهِ وَرُبَّمَا قَالَ بِعُودٍ وَيَقُولُ : (جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا ) : (جَاءَ الْحَقُّ وَمَا يُبْدِئُ الْبَاطِلُ وَمَا يُعِيدُ ) . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَفِيهِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ .
ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের বছর মক্কায় প্রবেশ করলেন। তখন কা‘বার চারপশে তিন শত ষাটটি মূর্তি স্থাপিত ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাতের লাঠি বা কাঠ দিয়ে মূতিগুলোর গায়ে আঘাত করে সেগুলোকে ভূপাতিত করছিলেন আর বলছিলেন : ‘সত্য সমাগত, মিথ্যা অপসৃত। আর বাতিলের বিলুপ্তি অবশ্যম্ভাবী”- (সূরা বানী ইসরাঈল ৮১)। “সত্য সমাগত এবং অসত্য কিছুই সৃজন করতে পারে না এবং তা পুনরাবৃত্তিও করতে পারে না”- (সূরা সাবা ৪৯)।
সহীহ : বুখারী (৪৭২০), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৩৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ قَابُوسِ بْنِ أَبِي ظَبْيَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمَكَّةَ ثُمَّ أُمِرَ بِالْهِجْرَةِ فَنَزَلَتْ عَلَيْهِ : ( قُلْ رَبِّ أَدْخِلْنِي مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِي مُخْرَجَ صِدْقٍ وَاجْعَلْ لِي مِنْ لَدُنْكَ سُلْطَانًا نَصِيرًا ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় অবস্থান করছিলেন। তারপর তাঁকে (মাদীনায়) হিজরাতের হুকুম দেয়া হয়। তখন তাঁর উপর এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “আর বলুনঃ হে আমার রব! আমাকে দাখিল করাও কল্যাণের সাথে এবং আমাকে বের করাও কল্যাণের সাথে এবং তোমার পক্ষ হতে আমাকে দান কর সাহায্যকারী শক্তি” (সূরাঃ বাণী ইসরাঈল- ৮০)।
সনদ দুর্বল।
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩১৪০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَتْ قُرَيْشٌ لِيَهُودَ اعْطُونَا شَيْئًا نَسْأَلُ عَنْهُ هَذَا الرَّجُلَ فَقَالَ سَلُوهُ عَنِ الرُّوحِ قَالَ فَسَأَلُوهُ عَنِ الرُّوحِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( يَسْأَلُونَكَ عَنِ الرُّوحِ قُلِ الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتِيتُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِلاَّ قَلِيلاً ) قَالُوا أُوتِينَا عِلْمًا كَثِيرًا التَّوْرَاةُ وَمَنْ أُوتِيَ التَّوْرَاةَ فَقَدْ أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا فَأُنْزِلَتْْ: ( قُلْ لَوْ كَانَ الْبَحْرُ مِدَادًا لِكَلِمَاتِ رَبِّي لَنَفِدَ الْبَحْرُ ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুরাইশরা ইয়াহূদীদের বলল, তোমরা আমাদেরকে এমন কিছু শিখিয়ে দাও যে প্রসঙ্গে আমরা এই ব্যক্তিকে (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে) প্রশ্ন করতে পারি। ইয়াহূদীরা বলল, তোমরা ‘রূহ’ প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন কর। বর্ণনাকারী বলেনঃ তারা রূহ (বা প্রাণ) বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করল। তখন আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন : “লোকেরা রূহ প্রসঙ্গে তোমরা নিকট প্রশ্ন করে। বল, রূহ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত। জ্ঞানের খুব সামান্যই তোমাদেরকে প্রদান করা হয়েছে”- (সূরা বানী ইসরাঈল ৮৫)। ইয়াহূদীরা বলল, ‘আমাদের বিরাট বা প্রচুর জ্ঞান দান করা হয়েছে। আমাদেরকে তাওরাত কিতাব দেয়া হয়েছে। আর যাদেরকে তাওরাত গ্রন্থ দেয়া হয়েছে তাদেরকে প্রভূত কল্যাণ দেয়া হয়েছে। এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াত অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) : “বল, আমার প্রতিপালকের কথাগুলো লেখার জন্য সমুদ্রের সমস্তু পানি যদি কালি হয়ে যায় তবুও তা আমার প্রভুর কথাগুলো লিখে শেষ করার পূর্বেই নিঃশেষ হয়ে যাবে। আমরা যদি আবার একই রকম কালি নিয়ে আসি তবুও তা যথেষ্ট হবে না”- (সূরা বানী ইসরাঈল ১০৯)।
সহীহ : আত্তা’লীকাত আস-হাস্সান (৯৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, উল্লেখিত সনদসূত্রে এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৪১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنْتُ أَمْشِي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي حَرْثٍ بِالْمَدِينَةِ وَهُوَ يَتَوَكَّأُ عَلَى عَسِيبٍ فَمَرَّ بِنَفَرٍ مِنَ الْيَهُودِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لَوْ سَأَلْتُمُوهُ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ تَسْأَلُوهُ فَإِنَّهُ يُسْمِعُكُمْ مَا تَكْرَهُونَ . فَقَالُوا لَهُ يَا أَبَا الْقَاسِمِ حَدِّثْنَا عَنِ الرُّوحِ . فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَاعَةً وَرَفَعَ رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ يُوحَى إِلَيْهِ حَتَّى صَعِدَ الْوَحْىُ ثُمَّ قَالَ : (الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتِيتُمْ مِنَ الْعِلْمِ إِلاَّ قَلِيلاً ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে মাদীনায় একটি কৃষি খামারে যাচ্ছিলাম। তিনি খেজুর গাছের ডালে ভর দিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে তিনি একদল ইয়াহূদীদেরকে অতিক্রম করলেন। তাদের কিছু লোক বলল, তোমরা যদি তাঁকে প্রশ্ন করতে? তাদের অপর কতক বলল, তাঁকে প্রশ্ন করো না। অন্যথায় তিনি এমন কিছু শুনিয়ে দিবেন যা তোমাদের মনোপূত হবে না। তারা বলল, হে আবুল কাসিম! আমাদেরকে রূহ (প্রাণ) প্রসঙ্গে বলুন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুক্ষণ দাঁড়ালেন। তিনি তাঁর মাথা আসমানের দিকে উঠালেন। আমি বুঝে ফেললাম যে, তাঁর উপর ওয়াহী অবতীর্ণ হচ্ছে। ওয়াহী অবতরণ শেষে তিনি বললেনঃ “রূহ আমার প্রতিপালকের হুকুম মাত্র। তোমাদেরকে জ্ঞানের খুব অল্পই প্রদান করা হয়েছে”।
সহীহ : বুখারী (৪৭২১), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৪২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى، وَسُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَوْسِ بْنِ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثَلاَثَةَ أَصْنَافٍ صِنْفًا مُشَاةً وَصِنْفًا رُكْبَانًا وَصِنْفًا عَلَى وُجُوهِهِمْ ” . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكَيْفَ يَمْشُونَ عَلَى وُجُوهِهِمْ قَالَ ” إِنَّ الَّذِي أَمْشَاهُمْ عَلَى أَقْدَامِهِمْ قَادِرٌ عَلَى أَنْ يُمْشِيَهُمْ عَلَى وُجُوهِهِمْ أَمَا إِنَّهُمْ يَتَّقُونَ بِوُجُوهِهِمْ كُلَّ حَدَبٍ وَشَوْكٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى وُهَيْبٌ عَنِ ابْنِ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا مِنْ هَذَا .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিন লোকদেরকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করে উঠানো হবে। একদল লোক পায়ে হেঁটে, দ্বিতীয় দল সাওয়ারী অবস্থায় এবং তৃতীয় দল অধঃমুখে (এবং পা উপরে তুলে) হাযির হবে। প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহ্র রাসূল! এরা মুখমন্ডলে ভর করে চলবে কিভাবে? তিনি বললেনঃ যে মহান সত্তা তাদেরকে পায়ের সাহায্যে হাঁটিয়ে ছিলেন, তিনি তাদেরকে মুখমন্ডলে ভর করে হাঁটাতেও সক্ষম। এরা নিজেদের মুখের দ্বারা প্রতিটি উচু-নীচু ও কাটা উপেক্ষা করে রাস্তা পার হবে।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৫৫৪৬), তা’লীকুর রাগীব (৪/১৯৪),
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। উহাইব (রহঃ) ইবনু তাঊসের সূত্রে, তিনি তার পিতা হতে আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩১৪৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا بَهْزُ بْنُ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّكُمْ مَحْشُورُونَ رِجَالاً وَرُكْبَانًا وَيُجَرُّونَ عَلَى وُجُوهِهِمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
বাহ্য ইবনু হাকীম (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (দাদা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাত দিবসে তোমাদেরকে পদব্রজে ও সওয়ারী অবস্থায় সমবেত করা হবে এবং কতককে মুখের উপর (উপুড় করে) হেঁচড়িয়ে হাযির করা হবে।
হাসান : আ‘লীকুর রাগীব।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩১৪৪
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، وَيَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، وَأَبُو الْوَلِيدِ، وَاللَّفْظُ، لَفْظُ يَزِيدَ وَالْمَعْنَى وَاحِدٌ عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلِمَةَ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ عَسَّالٍ الْمُرَادِيِّ، أَنَّ يَهُودِيَّيْنِ، قَالَ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِهِ اذْهَبْ بِنَا إِلَى هَذَا النَّبِيِّ نَسْأَلُهُ فَقَالَ لاَ تَقُلْ لَهُ نَبِيٌّ فَإِنَّهُ إِنْ سَمِعَنَا نَقُولُ نَبِيٌّ كَانَتْ لَهُ أَرْبَعَةُ أَعْيُنٍ فَأَتَيَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلاَهُ عَنْ قَوْلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ : ( وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى تِسْعَ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ ) فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ تُشْرِكُوا بِاللَّهِ شَيْئًا وَلاَ تَزْنُوا وَلاَ تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ تَسْرِقُوا وَلاَ تَسْحَرُوا وَلاَ تَمْشُوا بِبَرِيءٍ إِلَى سُلْطَانٍ فَيَقْتُلَهُ وَلاَ تَأْكُلُوا الرِّبَا وَلاَ تَقْذِفُوا مُحْصَنَةً وَلاَ تَفِرُّوا مِنَ الزَّحْفِ شَكَّ شُعْبَةُ وَعَلَيْكُمُ الْيَهُودَ خَاصَّةً أَنْ لاَ تَعْدُوا فِي السَّبْتِ ” . فَقَبَّلاَ يَدَيْهِ وَرِجْلَيْهِ وَقَالاَ نَشْهَدُ أَنَّكَ نَبِيٌّ . قَالَ ” فَمَا يَمْنَعُكُمَا أَنْ تُسْلِمَا ” . قَالاَ إِنَّ دَاوُدَ دَعَا اللَّهَ أَنْ لاَ يَزَالَ فِي ذُرِّيَّتِهِ نَبِيٌّ وَإِنَّا نَخَافُ إِنْ أَسْلَمْنَا أَنْ تَقْتُلَنَا الْيَهُودُ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সাফওয়ান ইবনু আসসাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ কোন এক সময় দুই ইয়াহূদীর একজন অপরজনকে বলল, চল আমরা এই নবীর কাছে গিয়ে তাঁকে কিছু প্রশ্ন করি। অপরজন বললঃ তাঁকে নবী বল না। কেননা সে যদি এটা শুনে ফেলে যে, তুমি (ইয়াহূদীরাও) তাঁকে নবী বলছ, তার চার চোখ হয়ে যাবে। তারা উভয়ে তাঁর নিকটে এসে তাঁকে আল্লাহ্ তা’আলার নিম্নোক্ত বাণী প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেঃ “আমরা মূসাকে নয়টি নিদর্শন দান করেছিলাম” (সূরাঃ বাণী ইসরাঈল- ১০১)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সেই নয়টি নিদর্শন (নির্দেশ) হচ্ছেঃ (১) তোমরা আল্লাহ্ তা’আলার সাথে কোন কিছু অংশীদার করো না, (২) যেনা-ব্যভিচার করো না, (৩) যাকে হত্যা করা আল্লাহ্ তা’আলা নিষিদ্ধ করেছেন ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া তার জীবন সংহার করো না, (৪) চুরি করো না, (৫) যাদুটোনা করো না, (৬) কোন নিরপরাধ লোককে সরকারের কাছে অপরাধী বানিয়ে খুন করতে নিয়ে যেও না, (৭) সুদ খেও না, (৮)কোন সতী-সাধ্বী মহিলার বিরুদ্ধে যেনার মিথ্যা অপবাদ দিও না এবং (৯) যুদ্ধক্ষেত্র হতে পালিয়ে যেও না। হে ইয়াহূদী সম্প্রদায়! বিশেষ করে তোমরা শনিবারের বাধ্যবাধকতা অতিক্রম করো না। তারপর ইয়াহূদী শ্রোতা দু’জন তাঁর পা দুটিতে ও হাত দুটিতে চুমা দিয়ে বললঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিঃসন্দেহে আপনি নবী। তিনি বললেনঃ তাহলে তোমাদের দু’জনকে ইসলাম গ্রহনে কিসে বাধা দিচ্ছে? তারা উভয়ে বললঃ দাঊদ আলাইহিস সালাম আল্লাহ্ তা’আলার নিকটে দু’আ করেছিলেন তিনি যেন বারবার তাঁর বংশধরদের মধ্য হতেই নবী পাঠান। অনন্তর আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে, আমরা যদি ইসলাম ক্ববূল করি তাহলে ইয়াহূদীরা আমাদেরকে মেরে ফেলবে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩৭০৫)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩১৪৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، وَلَمْ يَذْكُرْ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَهُشَيْمٍ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ : (وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ ) قَالَ نَزَلَتْ بِمَكَّةَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ صَوْتَهُ بِالْقُرْآنِ سَبَّهُ الْمُشْرِكُونَ وَمَنْ أَنْزَلَهُ وَمَنْ جَاءَ بِهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : (وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ ) فَيَسُبُّوا الْقُرْآنَ وَمَنْ أَنْزَلَهُ وَمَنْ جَاءَ بِهِ : (وَلاَ تُخَافِتْ بِهَا ) عَنْ أَصْحَابِكَ بِأَنْ تُسْمِعَهُمْ حَتَّى يَأْخُذُوا عَنْكَ الْقُرْآنَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলার বাণী : “তোমরা নামাযে স্বর (ক্বিরাআত) উচ্চ করো না এবং অতিশয় ক্ষীণও করো না”- (সূরা বানী ইসরাঈল ১১০) মক্কায় অবতীর্ণ হয়। রাসূলুল্রাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উচ্চ স্বরে কুরআন তিলাওয়াত করলে মুশরিকরা কুরআনকে গালি দিত এবং এর অবতীর্ণকারী (আল্লাহ তা‘আলা) ও এর বাহককেও (জিবরীলকে) গালি দিত। তারপর আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন : “তোমরা নামাযের ক্বিরাআত উচ্চৈঃস্বরে পাঠ করো না” অর্থাৎ আপনি উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করবেন না, অন্যথায় কুরআন, এর অবতরণকারী ও এর বাহককে গালি দেয়া হবে। “এবং তা ক্ষীণস্বরেও পড়বে না”, তাহলে আপনার সাথীরা শুনতে পাবে না, (বরং মধ্যম আওয়াজে তা পাঠ করুন) যাতে তারা আপনার নিকট হতে কুরআন শিখতে পারে।
সহীহ : বুখারী (৪৭২২), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৪৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، حَدَّثَنَا أَبُو بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي قَوْلِهِ : (وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ وَلاَ تُخَافِتْ بِهَا وَابْتَغِ بَيْنَ ذَلِكَ سَبِيلاً ) قَالَ نَزَلَتْ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مُخْتَفٍ بِمَكَّةَ وَكَانَ إِذَا صَلَّى بِأَصْحَابِهِ رَفَعَ صَوْتَهُ بِالْقُرْآنِ فَكَانَ الْمُشْرِكُونَ إِذَا سَمِعُوهُ شَتَمُوا الْقُرْآنَ وَمَنْ أَنْزَلَهُ وَمَنْ جَاءَ بِهِ فَقَالَ اللَّهُ لِنَبِيِّهِ : (وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ ) أَىْ بِقِرَاءَتِكَ فَيَسْمَعَ الْمُشْرِكُونَ فَيَسُبُّوا الْقُرْآنَ : (وَلاَ تُخَافِتْ بِهَا ) عَنْ أَصْحَابِكَ : ( وَابْتَغِ بَيْنَ ذَلِكَ سَبِيلاً ) . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলার বাণী : “তোমার নামাযের ক্বিরাআত না উচ্চৈঃস্বরে পড়বে, আন না নিম্ন স্বরে, এ দুইয়ের মধ্যবর্তী মাত্রার আওয়াজ অবলম্বন কর”- (সূরা বানী ইসরাঈল ১১০) অবতীর্ণ হওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্বায় আত্মগোপন করে ছিলেন। তিনি তার সাহাবীদের নিয়ে নামায আদায়ের সময় উচ্চস্বরে কিরা‘আত পাঠ করতেন। মুশরিকরা তা শুনতে পেয়ে কুরআনকে এর অবতরণকারীকে এবং এর বাহককে গালি দিত। অতএব আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নাবীকে বললেনঃ “তোমারা নামাযে উচ্চৈঃস্বরে ক্বিরাআত পাঠ করো না”, কারণ মুশরিকরা তা শুন কুরআনকে গালি দেয়। “আবার এত নীচু স্বরেও পড়বে না”, যাতে তোমরা সাহাবীদেরকে শুনতে অসুবিধা হয় বরং “এই দুইয়ের মদ্যবর্তী মাত্রার আওয়ারজ অবলম্বন কর”।
সহীহ : বুখারী (৪৭২২), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৪৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مِسْعَرٍ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ أَبِي النَّجُودِ، عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ، قَالَ قُلْتُ لِحُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ أَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي بَيْتِ الْمَقْدِسِ قَالَ لاَ . قُلْتُ بَلَى . قَالَ أَنْتَ تَقُولُ ذَاكَ يَا أَصْلَعُ بِمَا تَقُولُ ذَلِكَ قُلْتُ بِالْقُرْآنِ بَيْنِي وَبَيْنَكَ الْقُرْآنُ . فَقَالَ حُذَيْفَةُ مَنِ احْتَجَّ بِالْقُرْآنِ فَقَدْ أَفْلَحَ قَالَ سُفْيَانُ يَقُولُ فَقَدِ احْتَجَّ . وَرُبَّمَا قَالَ قَدْ فَلَجَ فَقَالَ : (سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلاً مِنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الأَقْصَى ) قَالَ أَفَتَرَاهُ صَلَّى فِيهِ قُلْتُ لاَ . قَالَ لَوْ صَلَّى فِيهِ لَكُتِبَ عَلَيْكُمْ فِيهِ الصَّلاَةُ كَمَا كُتِبَتِ الصَّلاَةُ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ قَالَ حُذَيْفَةُ قَدْ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِدَابَّةٍ طَوِيلَةِ الظَّهْرِ مَمْدُودَةٍ هَكَذَا خَطْوُهُ مَدُّ بَصَرِهِ فَمَا زَايَلاَ ظَهْرَ الْبُرَاقِ حَتَّى رَأَيَا الْجَنَّةَ وَالنَّارَ وَوَعْدَ الآخِرَةِ أَجْمَعَ ثُمَّ رَجَعَا عَوْدَهُمَا عَلَى بَدْئِهِمَا قَالَ وَيَتَحَدَّثُونَ أَنَّهُ رَبَطَهُ لِمَ أَيَفِرُّ مِنْهُ وَإِنَّمَا سَخَّرَهُ لَهُ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যির ইবনু হুবাইশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ)- কে প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বাইতুল মাক্বদিসে নামায আদায় করেছেন? তিনি বলেলেন, না। আমি বললাম, হ্যাঁ তিনি নামায আদায় করেছেন। তিনি বললেন, হে টেকো! তুমি এ ধরনের কথা বলছ, তা কিসের ভিত্তিতে বলছ? আমি বললাম, কুরআনের ভিত্তিতে। কুরআন আমার ও আপনার মাঝে ফাইসালা করবে। হুজাইফা (রাঃ) বললেন, কুরআন হতে যে ব্যক্তি দলীল গ্রহণ করল যে কৃতকার্য হল। সুফইয়ান (রহঃ) বলেন, তিনি (মিসআর) কখনো “কাদ ইহতাজ্জা” আবার কখনো “কাদ ফালাজা” বলেছেন। তারপর তিনি (যির) এই আয়াত তিলাওয়াত করেন : “পবিত্র মহান সেই সত্তা, যিনি এক রাতে তাঁর বান্দাকে মাসজিদুল হারাম হতে দূরবর্তী মাসজিদে নিয়ে গেলেন”- (বানী ইসরাঈল ১)। হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, এ আয়াতের মাধ্যমে কি তুমি প্রমাণ করতে চাও, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে নামায আদায় করেছেন? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, সেখানে যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নামায আদায় করতেন, তাহলে তোমাদের উপরও সেখানে নামায আদায় করা বাধ্যতামূলক হত, যেমন মাসজিদুল হারামে নামায আদায় করা তোমাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হুজাইফাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট একটি পশু আনা হল। এর পিঠ ছিল দীর্ঘ এবং (চলার সময়) এর পা দৃষ্টির সীমায় পতিত হয়। তাঁরা দু’জন (মহানাবী ও জিবরীল) জান্নাত, জাহান্নাম এবং আখিরাতের প্রতিশ্রুত বিষয়সমূহ দেখার পূর্ব পর্যন্ত বোরাকের পিঠ হতে নামেননি। তারপর তাঁরা দু’জন প্রত্যাবর্তন করেন। তারা যেভাবে গিয়েছিলেন অনুরূপভাবেই ফিরে আসেন (অর্থাৎ সওয়ারী অবস্থায়ই ফিরে আসেন)। হুজাইফাহ (রাঃ) বলেন, লোকেরা বলাবলি করে, তিনি বোরাককে বেঁধেছিলেন। কেন এটি তার নিকট হতে পালিয়ে যাবে। অথচ গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছু জানার মালিক (আল্লাহ তা‘আলা) বোরাককে তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন করে দিয়েছিলেন।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩১৪৮
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ فَخْرَ وَبِيَدِي لِوَاءُ الْحَمْدِ وَلاَ فَخْرَ وَمَا مِنْ نَبِيٍّ يَوْمَئِذٍ آدَمُ فَمَنْ سِوَاهُ إِلاَّ تَحْتَ لِوَائِي وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الأَرْضُ وَلاَ فَخْرَ قَالَ فَيَفْزَعُ النَّاسُ ثَلاَثَ فَزَعَاتٍ فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ أَنْتَ أَبُونَا آدَمُ فَاشْفَعْ لَنَا إِلَى رَبِّكَ . فَيَقُولُ إِنِّي أَذْنَبْتُ ذَنْبًا أُهْبِطْتُ مِنْهُ إِلَى الأَرْضِ وَلَكِنِ ائْتُوا نُوحًا . فَيَأْتُونَ نُوحًا فَيَقُولُ إِنِّي دَعَوْتُ عَلَى أَهْلِ الأَرْضِ دَعْوَةً فَأُهْلِكُوا وَلَكِنِ اذْهَبُوا إِلَى إِبْرَاهِيمَ . فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ فَيَقُولُ إِنِّي كَذَبْتُ ثَلاَثَ كَذَبَاتٍ ” . ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا مِنْهَا كَذْبَةٌ إِلاَّ مَاحَلَ بِهَا عَنْ دِينِ اللَّهِ وَلَكِنِ ائْتُوا مُوسَى . فَيَأْتُونَ مُوسَى فَيَقُولُ إِنِّي قَدْ قَتَلْتُ نَفْسًا وَلَكِنِ ائْتُوا عِيسَى . فَيَأْتُونَ عِيسَى فَيَقُولُ إِنِّي عُبِدْتُ مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلَكِنِ ائْتُوا مُحَمَّدًا قَالَ فَيَأْتُونَنِي فَأَنْطَلِقُ مَعَهُمْ ” . قَالَ ابْنُ جُدْعَانَ قَالَ أَنَسٌ فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” فَآخُذُ بِحَلْقَةِ بَابِ الْجَنَّةِ فَأُقَعْقِعُهَا فَيُقَالُ مَنْ هَذَا فَيُقَالُ مُحَمَّدٌ . فَيَفْتَحُونَ لِي وَيُرَحِّبُونَ فَيَقُولُونَ مَرْحَبًا فَأَخِرُّ سَاجِدًا فَيُلْهِمُنِي اللَّهُ مِنَ الثَّنَاءِ وَالْحَمْدِ فَيُقَالُ لِي ارْفَعْ رَأْسَكَ سَلْ تُعْطَ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ وَقُلْ يُسْمَعْ لِقَوْلِكَ وَهُوَ الْمَقَامُ الْمَحْمُودُ الَّذِي قَالَ اللَّهُ : ( عَسَى أَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودًا ) ” . قَالَ سُفْيَانُ لَيْسَ عَنْ أَنَسٍ إِلاَّ هَذِهِ الْكَلِمَةُ ” فَآخُذُ بِحَلْقَةِ بَابِ الْجَنَّةِ فَأُقَعْقِعُهَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي نَضْرَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ .
আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আহাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি ক্বিয়ামাতের দিবসে সকল আদম সন্তানের নেতা হব। এতে গর্বের কিছু নেই। আমার হাতেই হামদের (প্রশংসার) পতাকা থাকবে। এতেও গর্বের কিছু নেই। সেদিন আমার পতাকার নিচেই আদম (‘আঃ) এবং অন্য সকল নবী একত্রিত হবেন। আমিই প্রথম ব্যক্তি যার জন্য যামীন বিদীর্ণ করা হবে (অর্থাৎ আমাকেই সর্বপ্রথম উত্থিত করা হবে)। এতেও গর্বের কিছু নেই। লোকেরা তিনবার ভীতসন্ত্রস্ত হবে। তারপর আদম (‘আঃ)- এর নিকট এসে তারা বলবে, আপনি আমাদের পিতা আদম। আমাদের জন্য আপনার প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করুন। তিনি বলবেন, আমি এমন এক অপরাধ করেছিলাম যার পরিণতিতে আমাকে পৃথিবীতে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তোমরা বরং নূহ (‘আঃ)- নিকট যাও। তারা নূহ (‘আঃ)- নিকট এলে তিনি বলবেন, পৃথিবীর অধিবাসীদেরকে আমি এমন বদ দু‘আ করেছিলাম, যার কারণে তারা ধ্বংস হয়েছে (আমি এর কারণে লজ্জিত)। অতএব তোমরা ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট যাও। তারা ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট এলে তিনি বলবেন, আমি তিনটি মিথ্যা বলেছিলাম। (বর্ণনাকারী বলেন) তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তিনি প্রতিটি মিথ্যাকে কৌশল হিসেবে গ্রহণ করে আল্লাহ তা‘আলার দীনকে হিফাজাত করেছেন। [ইবরাহীম (‘‘আঃ) বলবেন] তোমরা বরং মূসা (‘আঃ)-এর নিকট যাও। তারা মূসা (‘আঃ)- এর নিকট এলে তিনি বলবেন, আমি এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছি। অতএব তোমরা ‘ঈসা (‘আঃ)- এর নিকট যাও। তারা ‘ঈসা (‘আঃ)- এর নিকট এলে তিনি বলবেন, আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে আমার ‘ইবাদাত করা হয়েছে। আমাকে মা’বূদ বানানো হয়েছে। তোমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যাও। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তারা আমার নিকট আসবে এবং আমি তাদের সাথে যাব। ইবনু জুদ‘আন বলেন, আনাস (রাঃ) বলেছেন, আমি যেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি তাকিয়ে আছি, আর তিনি বলেছেনঃ আমি জান্নাতের দরজার শিকল ধরে তাতে খটখট আওয়াজ করব। ভেতর হতে বলা হবে, কে? বলা হবে, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। ভেতরের অধিবাসীরা সাথে সাথে আমার সৌজন্যে দরজা খুলে দিবে এবং আমাকে মারহাবা মারহাবা বলে অভিনন্দন জানাবে। তখন আমি সিজদায় পতিত হব। এ অবস্থায় আল্লাহ তা‘আলা আমার প্রতি বিশেষ হামদ ও সানা (প্রশংসা ও স্তুতিবাক্য) ইলহাম করবেন (গোপনে শিখিয়ে দিবেন এবং আমি তা পাঠ করতে থাকব)। আমাকে বলা হবে, মাথা তোল, প্রার্থনা কর দেয়া হবে, সুপারিশ কর ক্ববূল করা হবে এবং বল, তোমার কথা শুনা হবে। (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন) এটাই হল সেই ‘মাক্বামে মাহমূদ’ (উচ্চ প্রশংসিত মর্যাদা), যার কথা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ “আশা করা যায় তোমার প্রভূ তোমাকে মাক্বামে মাহমূদে সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন’- (সূরা বানী ইসরাঈল ৭৯)। সুফইয়ান (রহঃ) বলেন, শুধু মাত্র এই কথাটুকুই আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করা হয়েছে : “আমি জান্নাতের দরজার শিকল ধরে খটখট আওয়াজ করব”।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৪৩০৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। এ হাদীসটি কয়েকজন বর্ণনাকারী আবূ নাযরাহ হতে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে এই সূত্রে দীর্ঘাকারে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদ-১৯
সূরা আল-কাহফ
৩১৪৯
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ قُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ إِنَّ نَوْفًا الْبِكَالِيَّ يَزْعُمُ أَنَّ مُوسَى صَاحِبَ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَيْسَ بِمُوسَى صَاحِبِ الْخَضِرِ قَالَ كَذَبَ عَدُوُّ اللَّهِ سَمِعْتُ أُبَىَّ بْنَ كَعْبٍ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” قَامَ مُوسَى خَطِيبًا فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ فَسُئِلَ أَىُّ النَّاسِ أَعْلَمُ فَقَالَ أَنَا أَعْلَمُ . فَعَتَبَ اللَّهُ عَلَيْهِ إِذْ لَمْ يَرُدَّ الْعِلْمَ إِلَيْهِ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ أَنَّ عَبْدًا مِنْ عِبَادِي بِمَجْمَعِ الْبَحْرَيْنِ هُوَ أَعْلَمُ مِنْكَ قَالَ مُوسَى أَىْ رَبِّ فَكَيْفَ لِي بِهِ فَقَالَ لَهُ احْمِلْ حُوتًا فِي مِكْتَلٍ فَحَيْثُ تَفْقِدُ الْحُوتَ فَهُوَ ثَمَّ فَانْطَلَقَ وَانْطَلَقَ مَعَهُ فَتَاهُ وَهُوَ يُوشَعُ بْنُ نُونٍ وَيُقَالُ يُوسَعُ فَحَمَلَ مُوسَى حُوتًا فِي مِكْتَلٍ فَانْطَلَقَ هُوَ وَفَتَاهُ يَمْشِيَانِ حَتَّى إِذَا أَتَيَا الصَّخْرَةَ فَرَقَدَ مُوسَى وَفَتَاهُ فَاضْطَرَبَ الْحُوتُ فِي الْمِكْتَلِ حَتَّى خَرَجَ مِنَ الْمِكْتَلِ فَسَقَطَ فِي الْبَحْرِ قَالَ وَأَمْسَكَ اللَّهُ عَنْهُ جِرْيَةَ الْمَاءِ حَتَّى كَانَ مِثْلَ الطَّاقِ وَكَانَ لِلْحُوتِ سَرَبًا وَكَانَ لِمُوسَى وَلِفَتَاهُ عَجَبًا فَاَنْطَلَقَا بَقِيَّةَ يَوْمِهِمَا وَلَيْلَتِهِمَا وَنُسِّيَ صَاحِبُ مُوسَى أَنْ يُخْبِرَهُ فَلَمَّا أَصْبَحَ مُوسَى قَالَ لِفَتَاهُ: (آتِنَا غَدَاءَنَا لَقَدْ لَقِينَا مِنْ سَفَرِنَا هَذَا نَصَبًا ) قَالَ وَلَمْ يَنْصَبْ حَتَّى جَاوَزَ الْمَكَانَ الَّذِي أُمِرَ بِهِ : (قَالَ أَرَأَيْتَ إِذْ أَوَيْنَا إِلَى الصَّخْرَةِ فَإِنِّي نَسِيتُ الْحُوتَ وَمَا أَنْسَانِيهُ إِلاَّ الشَّيْطَانُ أَنْ أَذْكُرَهُ وَاتَّخَذَ سَبِيلَهُ فِي الْبَحْرِ عَجَبًا ) قَالَ مُوسَى : ( ذَلِكَ مَا كُنَّا نَبْغِ فَارْتَدَّا عَلَى آثَارِهِمَا قَصَصًا ) قَالَ فَكَانَا يَقُصَّانِ آثَارَهُمَا . قَالَ سُفْيَانُ يَزْعُمُ نَاسٌ أَنَّ تِلْكَ الصَّخْرَةَ عِنْدَهَا عَيْنُ الْحَيَاةِ وَلاَ يُصِيبُ مَاؤُهَا مَيِّتًا إِلاَّ عَاشَ . قَالَ وَكَانَ الْحُوتُ قَدْ أُكِلَ مِنْهُ فَلَمَّا قَطَرَ عَلَيْهِ الْمَاءُ عَاشَ . قَالَ فَقَصَّا آثَارَهُمَا حَتَّى أَتَيَا الصَّخْرَةَ فَرَأَى رَجُلاً مُسَجًّى عَلَيْهِ بِثَوْبٍ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ مُوسَى فَقَالَ أَنَّى بِأَرْضِكَ السَّلاَمُ قَالَ أَنَا مُوسَى . قَالَ مُوسَى بَنِي إِسْرَائِيلَ قَالَ نَعَمْ . قَالَ يَا مُوسَى إِنَّكَ عَلَى عِلْمٍ مِنْ عِلْمِ اللَّهِ عَلَّمَكَهُ اللَّهُ لاَ أَعْلَمُهُ وَأَنَا عَلَى عِلْمٍ مِنْ عِلْمِ اللَّهِ عَلَّمَنِيهِ لاَ تَعْلَمُهُ فَقَالَ مُوسَى : ( هَلْ أَتَّبِعُكَ عَلَى أَنْ تُعَلِّمَنِي مِمَّا عُلِّمْتَ رُشْدًا * قَالَ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا * وَكَيْفَ تَصْبِرُ عَلَى مَا لَمْ تُحِطْ بِهِ خُبْرًا * قَالَ سَتَجِدُنِي إِنْ شَاءَ اللَّهُ صَابِرًا وَلاَ أَعْصِي لَكَ أَمْرًا ) قَالَ لَهُ الْخَضِرُ : (فَإِنِ اتَّبَعْتَنِي فَلاَ تَسْأَلْنِي عَنْ شَيْءٍ حَتَّى أُحْدِثَ لَكَ مِنْهُ ذِكْرًا ) قَالَ نَعَمْ فَانْطَلَقَ الْخَضِرُ وَمُوسَى يَمْشِيَانِ عَلَى سَاحِلِ الْبَحْرِ فَمَرَّتْ بِهِمَا سَفِينَةٌ فَكَلَّمَاهُ أَنْ يَحْمِلُوهُمَا فَعَرَفُوا الْخَضِرَ فَحَمَلُوهُمَا بِغَيْرِ نَوْلٍ فَعَمَدَ الْخَضِرُ إِلَى لَوْحٍ مِنْ أَلْوَاحِ السَّفِينَةِ فَنَزَعَهُ فَقَالَ لَهُ مُوسَى قَوْمٌ حَمَلُونَا بِغَيْرِ نَوْلٍ عَمَدْتَ إِلَى سَفِينَتِهِمْ فَخَرَقْتَهَا : ( لِتُغْرِقَ أَهْلَهَا لَقَدْ جِئْتَ شَيْئًا إِمْرًا * قَالَ أَلَمْ أَقُلْ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا * قَالَ لاَ تُؤَاخِذْنِي بِمَا نَسِيتُ وَلاَ تُرْهِقْنِي مِنْ أَمْرِي عُسْرًا ) ثُمَّ خَرَجَا مِنَ السَّفِينَةِ فَبَيْنَمَا هُمَا يَمْشِيَانِ عَلَى السَّاحِلِ وَإِذَا غُلاَمٌ يَلْعَبُ مَعَ الْغِلْمَانِ فَأَخَذَ الْخَضِرُ بِرَأْسِهِ فَاقْتَلَعَهُ بِيَدِهِ فَقَتَلَهُ فَقَالَ لَهُ مُوسَى : ( أَقَتَلْتَ نَفْسًا زَكِيَّةً بِغَيْرِ نَفْسٍ لَقَدْ جِئْتَ شَيْئًا نُكْرًا * قَالَ أَلَمْ أَقُلْ لَكَ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا ) قَالَ وَهَذِهِ أَشَدُّ مِنَ الأُولَى : ( قَالَ إِنْ سَأَلْتُكَ عَنْ شَيْءٍ بَعْدَهَا فَلاَ تُصَاحِبْنِي قَدْ بَلَغْتَ مِنْ لَدُنِّي عُذْرًا * فَانْطَلَقَا حَتَّى إِذَا أَتَيَا أَهْلَ قَرْيَةٍ اسْتَطْعَمَا أَهْلَهَا فَأَبَوْا أَنْ يُضَيِّفُوهُمَا فَوَجَدَا فِيهَا جِدَارًا يُرِيدُ أَنْ يَنْقَضَّ ) يَقُولُ مَائِلٌ فَقَالَ الْخَضِرُ بِيَدِهِ هَكَذَا : ( فَأَقَامَهُ ) فَقَالَ لَهُ مُوسَى قَوْمٌ أَتَيْنَاهُمْ فَلَمْ يُضَيِّفُونَا وَلَمْ يُطْعِمُونَا : ( إِنْ شِئْتَ لاَتَّخَذْتَ عَلَيْهِ أَجْرًا * قَالَ هَذَا فِرَاقُ بَيْنِي وَبَيْنِكَ سَأُنَبِّئُكَ بِتَأْوِيلِ مَا لَمْ تَسْتَطِعْ عَلَيْهِ صَبْرًا ) قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَرْحَمُ اللَّهُ مُوسَى لَوَدِدْنَا أَنَّهُ كَانَ صَبَرَ حَتَّى يَقُصَّ عَلَيْنَا مِنْ أَخْبَارِهِمَا ” . قَالَ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” الأُولَى كَانَتْ مِنْ مُوسَى نِسْيَانٌ – قَالَ وَجَاءَ عُصْفُورٌ حَتَّى وَقَعَ عَلَى حَرْفِ السَّفِينَةِ ثُمَّ نَقَرَ فِي الْبَحْرِ فَقَالَ لَهُ الْخَضِرُ مَا نَقَصَ عِلْمِي وَعِلْمُكَ مِنْ عِلْمِ اللَّهِ إِلاَّ مِثْلَ مَا نَقَصَ هَذَا الْعُصْفُورُ مِنَ الْبَحْرِ ” . قَالَ سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ وَكَانَ يَعْنِي ابْنَ عَبَّاسٍ يَقْرَأُ وَكَانَ أَمَامَهُمْ مَلِكٌ يَأْخُذُ كُلَّ سَفِينَةٍ صَالِحَةٍ غَصْبًا وَكَانَ يَقْرَأُ وَأَمَّا الْغُلاَمُ فَكَانَ كَافِرًا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَرَوَاهُ الزُّهْرِيُّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ رَوَاهُ أَبُو إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ أَبَا مُزَاحِمٍ السَّمَرْقَنْدِيَّ يَقُولُ سَمِعْتُ عَلِيَّ بْنَ الْمَدِينِيِّ يَقُولُ حَجَجْتُ حَجَّةً وَلَيْسَ لِي هِمَّةٌ إِلاَّ أَنْ أَسْمَعَ مِنْ سُفْيَانَ يَذْكُرُ فِي هَذَا الْحَدِيثِ الْخَبَرَ حَتَّى سَمِعْتُهُ يَقُولُ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ وَقَدْ كُنْتُ سَمِعْتُ هَذَا مِنْ سُفْيَانَ مِنْ قَبْلِ ذَلِكَ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ الْخَبَرَ .
সা‘ঈদ ইবনু জুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)- কে বললাম, নাওফ আল-বিকালী মনে করেন যে, খাযিরের সাথে যে মূসার সাক্ষাৎ হয়েছিল, তিনি বানী ইসরাঈলের নবী মূসা (‘আঃ) নন (এরা দু’জন ভিন্ন ব্যক্তি)। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর দুশমন মিথ্যা বলছে। উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি, তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছি : বানী ইসরাঈলের জনগণের সামনে মূসা (‘আঃ) বক্তৃতা দিতে দাঁড়ান। তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে, কে সবচেয়ে বড় জ্ঞানী? তিনি বলেন, আমি সবচেয়ে বড় জ্ঞানী। এতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর উপর অসন্তুষ্ট হন। কেননা তিনি আল্লাহ তা‘আলার সাথে জ্ঞানকে সম্পৃক্ত করেননি (অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা সবচাইতে বড় জ্ঞানী এ কথা বলেননি)। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিকট ওয়াহী পাঠান, আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত এক বান্দা দুই সমুদ্রের সংগমস্থলে আছে। সে তোমার চাইতে বেশি জ্ঞানী। মূসা (‘আঃ) বললেনঃ হে আমার প্রতিপালক! আমি কি উপায়ে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করব? আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ তুমি থলেতে একটি মাছ লও। মাছটি যেখানে হারিয়ে ফেলবে, সেখানেই সে আছে। অতএব তিনি রওয়ানা হলেন এবং ইউশা ইবনু নূন নামক তাঁর যুবক শাগরিদও তাঁর সফরসঙ্গী হলেন। মূসা (‘আঃ) থলের মধ্যে একটি মাছ ভরে নিলেন। তাঁরা দু’জনে পায়ে হেঁটে চলতে চলতে একটি প্রকান্ড পাথরের নিকট (সমুদ্রের তীরে) এসে পৌঁছেন। এখানে দু’জনই শুয়ে বিশ্রাম নিলেন। থলের মধ্যকার মাছটি নড়াচড়া করতে করতে তা হয়ে সমুদ্রে পতিত হল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা মাছটি দিয়ে পানির স্রোতধারা বন্ধ করে দিলেন। ফলে তা প্রাচীরবৎ হয়ে গেল এবং মাছটির জন্য এভাবে একটি পথের ব্যবস্থা হল। মূসা (‘আঃ) ও তাঁর যুবক সঙ্গীর নিকট এটা খুবই আশ্চর্যজনক মনে হচ্ছিল। তাঁরা দিনের অবশিষ্ট সময় ও রাতে অগ্রসর হতে থাকলেন। তাঁর সঙ্গী মাছের অবস্থা সম্পর্কে তাঁকে জানাতে ভুলে গেল। ভোর হলে মূসা (‘আঃ) তাঁর সঙ্গীকে বললেন, “আমাদের সকালের নাশতা নাও। আজকের সফরে আমরা অত্যধিক ক্লান্ত হয়ে পড়েছি”-(সূরা কাহফ ৬২)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তাদেরকে যে স্থানে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, সেখান পর্যন্ত পৌঁছতে তাঁরা ক্লান্ত হননি। কিন্তু নির্দেশিত স্থান পার হওয়ার পরই তাঁদেরকে ক্লান্তিতে পেয়ে বসে। “যুবক বলল, আমরা যখন সেই প্রস্তরময় প্রান্তরে আশ্রয় নিয়েছিলাম, তখন কি ঘটনা ঘটেছে তা কি আপনি লক্ষ্য করেননি? মাছের প্রতি আমার কোন আমার কোন লক্ষ্য ছিল না। আর শাইতান আমাকে এমনভাবে ভুলিয়ে দিয়েছে যে, আমি আপনার নিকট তা উল্লেখ করতেও ভুলে গেছি। মাছ তো আশ্চর্য রকমভাবে বের হয়ে সমুদ্রে চলে গেছে। মূসা বললেন, আমরা তো এটাই চেয়েছিলাম”- (সূরা কাহাফ ৬৪)। তাঁরা দু’জনেই তাঁদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে এলেন।
সুফইয়ান সাওরী (রহঃ) বলেন, কিছু লোকের ধারণা যে, এই প্রস্তরময় ময়দানে (বা সমুদ্র তীরেই) আবে হায়াতের ঝর্ণা রয়েছে। এই পানি মৃত ব্যাক্তির উপর ছিটিয়ে দিলে সে জীবিত হয়ে উঠে। এই মাছের কিছু অংশ খাওয়াও হয়েছিল। ঐ ঝর্ণার পানির ফোঁটা মাছের গায়ে পড়লে সাথে সাথে মাছটি জীবিত হয়ে গেল।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তাঁরা উভয়ে তাদের পায়ের চিহ্ন ধরে অগ্রসর হতে হতে পূর্বের সেই প্রান্তরে এসে পৌছালেন। তাঁরা দেখতে পেলেন, এক ব্যক্তি চাদর লম্বা করে গায়ে দিয়ে মুখ ঢেকে শুয়ে আছেন। মূসা (‘আঃ) তাঁকে সালাম দিলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, তোমাদের এ জায়গায় তো সালামের প্রচলন নেই (তুমি মনে হয় একজন আগন্তুক)? তিনি বললেন, আমি মূসা (‘আঃ)। তিনি প্রশ্ন করলেন, বানী ইসরাঈলের মূসা? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আপনার নিকট আল্লাহ তা‘আলার দানকৃত এক বিশেষ জ্ঞান আছে। আমি তা জানি না। আর আল্লাহ তা‘আলা আমাকেও এক বিশেষ জ্ঞান দিয়েছেন যা আপনি জানেন না। মূসা (‘আঃ) বললেনঃ “আপনাকে যে জ্ঞান শিক্ষা দেয়া হয়েছে, তা শিখার উদ্দেশে কি আমি আপনার সাথে থাকতে পারি? তিনি বললেনঃ আপনি আমার সাথে ধৈর্য ধরে থাকতে পারবেন না। আর যে বিষয়ে আপনার কিছুই জানা নেই, সে বিষয়ে আপনি কেমন করেই বা ধৈর্য ধারণ করতে পারেন? তিনি বললেন, ইনশা আল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্যশীলই পাবেন। কোন ব্যপারেই আমি আপনার নির্দেশের বিরোধিতা করব না”।– (সূরা কাহফ ৬৬-৬৯)। খাযির (‘আঃ) তাকে বললেন, “ঠিক আছে, আপনি যদি আমার সাথে চলতে থাকেন, তাহলে আপনি আমার নিকট কোন বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারবেন না, যতক্ষণ আমি আপনাকে তা না বলি”- (সূরা কাহফ ৭০)। তিনি (মূসা) বললেন, হ্যাঁ ঠিক আছে। খাযির ও মূসা (‘আঃ) সমুদ্রের তীর ধরে পায়ে হেঁটে চলতে থাকলেন। তাদের সামনে দিয়ে একটি নৌকা অতিক্রম করছিল। তাঁরা উভয়ে তাদের সাথে কথা বললেন এবং তাঁদেরকে নৌকায় তুলে নেয়ার জন্য অনুরোধ করলেন। তারা খাযিরকে চিনে ফেলল এবং কোন ভাড়া ছাড়াই তাদের দু’জনকে নৌকায় তুলে নিল। খাযির নৌকার একটি তক্তা খুলে নিলেন। মূসা (‘আঃ) তাঁকে বললেন, লোকেরা আমাদেরকে ভাড়া ছাড়াই নৌকায় তুলে নিল, আর আপনি নৌকাটির ক্ষতি সাধন করলেন! আপনি কি তাদের ডুবিয়ে দিতে চান? “আপনার এ কাজটি খুবই আপত্তিকর। খাযির বললেন, আমি কি তোমাকে বলিনি যে, তুমি আমার সাথে ধৈর্য ধরে থাকতে পারবে না? মূসা বললেন, আমার ভুলের জন্য আপনি আমাকে পাকড়াও করবেন না। আমার ব্যাপারে আপনি অতটা কড়াকড়ি করবেন না”- (সূরা কাহফ ৭১-৭৩)। তারা নৌকা হতে নেমে সমুদ্রের তীর ধরে এগিয়ে যেতে থাকেন। পথিমধ্যে দেখা গেল, একটি বালক অপর কয়েকটি বালকের সাথে খেলাধূলা করছে। খাযির (‘আঃ) নিজের হাতে ছেলেটির মাথা ধরে তা ঘাড় হতে বিচ্ছিন্ন করে দিলেন এবং এভাবে তাকে হত্যা করেন। মূসা (‘আঃ) তাঁকে বললেন, “একটা নিষ্পাপ বালককে আপনি মেরে ফেললেন! অথচ সে তো কাউকে হত্যা করেনি? আপনি তো একটা বড় অন্যায় করে ফেলেছেন। খাযির বললেন, আমি কি তোমাকে বলিনি, তুমি আমার সাথে ধৈর্য ধরে চলতে পারবে না” – (সূরা কাহফ ৭৪-৭৫)? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ পূর্বের কথার চেয়ে এ কথাটা বেশি শক্ত ছিল। মূসা (‘আঃ) বললেন, “অতঃপর আমি যদি আপনার নিকট কোন প্রশ্ন করি, তাহলে আপনি আমাকে আর সঙ্গে রাখবেন না। আমাকে প্রত্যাখ্যান করার মত ত্রুটি আপনি আমার মধ্যে পেয়েছেন। পুনরায় তাঁরা দু’জনে সামনে এগিয়ে গেলেন এবং যেতে যেতে একটি জনপদে এসে পৌঁছলেন এবং সেখানকার মানুষদের নিকট খাবার চাইলেন। কিন্তু তারা মেহমান হিসেবে তাদের মেনে নিতে রাজী হয়নি। তাঁরা সেখানে একটি দেয়াল দেখতে পেলেন, যা পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল”- (সূরা কাহফ ৭৬-৭৭)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ দেয়ালটি ঝুঁকে পড়েছিল। খাযির তাঁর হাত দিয়ে দেয়ালটি ঠিক করে দিলেন। মূসা (‘আঃ) তাঁকে বললেনঃ আমরা এমন এক সম্প্রদায়ের নিকট আসলাম, যারা আমাদেরকে মেহমান হিসেবেও গ্রহণ করেনি বা আহারও করায়নি। “আপনি ইচ্ছা করলে এই কাজের জন্য মজুরী নিতে পারতেন। খাযির বললেন, বাস! এখানেই তোমার ও আমার একত্রে ভ্রমন শেষ। তুমি যেসব বিষয়ে ধৈর্য ধারণ করতে পারনি, এখন আমি তোমাকে সেসব বিষয়ের তাৎপর্য বলে দিব”- (সূরা কাহফ ৭৭-৭৮)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা মূসা (‘আঃ)- এর উপর রাহমাত অবতীর্ণ করুন। আমাদের আশা ছিল যে, তিনি যদি ধৈর্য ধারণ করতেন তাহলে আমাদেরকে তাদের এসব বিষয়ের তথ্য জানানো হত! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ মূসা (‘আঃ) শর্তের কথা ভুলে যাওয়ার কারণেই প্রথম প্রশ্নটি করেছেন। তিনি আরো বলেনঃ একটি চড়ুই পাখি এসে তাদের নৌকার কিনারে বসে, তারপর তা সমুদ্রে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। খাযির তাঁকে বললেন, এই চড়ুই পাখি সমুদ্রের পানি যতটুকু কমিয়েছে, আমার ও আপনার জ্ঞান আল্লাহ তা‘আলার জ্ঞানভান্ডার হতে ঠিক ততটুকুই কমিয়েছে।
সাঈদ ইবনু জুবাইর (রহঃ) বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) পাঠ করতেন : “তাদের সামনে ছিল এক বাদশাহ যে প্রতিটি নিখুঁত নৌকা জোরপূর্বক কেড়ে নিত”। তিনি আরো পাঠ করতেন : “আর বালকটি ছিল কাফির”।
সহীহ : বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। যুহরী (রহঃ) এ হাদীস উবাইদুল্লাহ ইবনু আব্দিল্লাহ ইবনু ‘উতবাহ ইবনু ‘আব্বাস হতে, তিনি উবাই ইবনু কা’ব হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি আবূ ইসহাক্ব আল-হামদানী (রহঃ) সা‘ঈদ ইবনু জুবাইর হতে, তিনি ইবনু ‘আব্বাস হতে, তিনি উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন। আবূ মুযাহিম আস-সামারকান্দী বলেন, ‘আলী ইবনুল মাদানী বলেছেন, আমি হাজ্জে গিয়েছিলাম। আমার হাজ্জের সফরের উদ্দেশ্যই ছিল সুফইয়ান সাওরীকে এ হাদীস বর্ণনা করতে শুনব। তিনি এ হাদীসে একটি বিষয় বর্ণনা করতেন। সুতরাং আমি তাকে বলতে শুনেছি, এ হাদীস ‘আমর ইবনু দীনার আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন। ইতোপূর্বে আমি এ হাদীস সুফইয়ানকে বর্ণনা করতে শুনেছি, কিন্তু তিনি উক্ত বিষয় এতে বর্ণনা করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৫০
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا أَبُو قُتَيْبَةَ، سَلْمُ بْنُ قُتَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْجَبَّارِ بْنُ الْعَبَّاسِ الْهَمْدَانِيُّ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الْغُلاَمُ الَّذِي قَتَلَهُ الْخَضِرُ طُبِعَ يَوْمَ طُبِعَ كَافِرًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ছেলেটিকে খাযির (‘আঃ) হত্যা করেন, সে আল্লাহ তা‘আলার নির্ধারিত তাক্বদীর মতো (সৃষ্টির সূচনাতেই) কাফির ছিল।
সহীহ : যিলা-লুল জান্নাত (১৯৪,১৯৫), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৫১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّمَا سُمِّيَ الْخَضِرَ لأَنَّهُ جَلَسَ عَلَى فَرْوَةٍ بَيْضَاءَ فَاهْتَزَّتْ تَحْتَهُ خَضْرَاءَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ খাযিরের নাম এজন্যই খাযির (সবুজ) রাখা হয়েছে যে, একদা তিনি শুকনা সাদা মাটির উপর বসলে তাঁর নীচের মাটিতে সবুজ, শ্যামলিমার উদগম হয়।
সহীহ : বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৫২
حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ فُضَيْلٍ الْجَزَرِيُّ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ يُوسُفَ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ : ( وَكَانَ تَحْتَهُ كَنْزٌ لَهُمَا ) قَالَ ” ذَهَبٌ وَفِضَّةٌ ” .
আবুদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার বাণী, “এই প্রাচীরের নীচে এই ছেলে দু’টির জন্য একটি সম্পদ রক্ষিত আছে” (সূরাঃ আল-কাহফ- ৮২)। এই আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এখানে ‘কান্য’ অর্থ সোনা-রূপা।
অত্যন্ত দুর্বল, আর রাওযুন নাযীর (৯৪০), হাসান ইবনু আলী আল-খাল্লাল-সাফওয়ান ইবনু সালিহ-ওয়ালীদ ইবনু মুসলিম-ইয়াযীদ ইবনু ইউসুফ আস-সানআনী-ইয়াযীদ ইবনু জাবীর-মাকহূল (রহঃ) হতে এই সনদে উপরের হাদীসের মতই বর্ণিত হয়েছে।
আবূ ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
৩১৫৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، – الْمَعْنَى وَاحِدٌ وَاللَّفْظُ لاِبْنِ بَشَّارٍ قَالُوا حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَبِي رَافِعٍ عَنْ حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي السَّدِّ قَالَ “ يَحْفِرُونَهُ كُلَّ يَوْمٍ حَتَّى إِذَا كَادُوا يَخْرِقُونَهُ قَالَ الَّذِي عَلَيْهِمُ ارْجِعُوا فَسَتَخْرِقُونَهُ غَدًا فَيُعِيدُهُ اللَّهُ كَأَمْثَلِ مَا كَانَ حَتَّى إِذَا بَلَغَ مُدَّتَهُمْ وَأَرَادَ اللَّهُ أَنْ يَبْعَثَهُمْ عَلَى النَّاسِ قَالَ الَّذِي عَلَيْهِمُ ارْجِعُوا فَسَتَخْرِقُونَهُ غَدًا إِنْ شَاءَ اللَّهُ وَاسْتَثْنَى . قَالَ فَيَرْجِعُونَ فَيَجِدُونَهُ كَهَيْئَتِهِ حِينَ تَرَكُوهُ فَيَخْرِقُونَهُ فَيَخْرُجُونَ عَلَى النَّاسِ فَيَسْتَقُونَ الْمِيَاهَ وَيَفِرُّ النَّاسُ مِنْهُمْ فَيَرْمُونَ بِسِهَامِهِمْ فِي السَّمَاءِ فَتَرْجِعُ مُخَضَّبَةً بِالدِّمَاءِ فَيَقُولُونَ قَهَرْنَا مَنْ فِي الأَرْضِ وَعَلَوْنَا مَنْ فِي السَّمَاءِ قَسْوَةً وَعُلُوًّا . فَيَبْعَثُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ نَغَفًا فِي أَقْفَائِهِمْ فَيَهْلِكُونَ قَالَ فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ إِنَّ دَوَابَّ الأَرْضِ تَسْمَنُ وَتَبْطَرُ وَتَشْكَرُ شَكْرًا مِنْ لُحُومِهِمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِثْلَ هَذَا .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ইয়াজূয-মাজূযের) প্রাচীর প্রসঙ্গে বলেনঃ এরা প্রত্যেকদিন বাঁধার প্রাচীর খনন করতে থাকে। যখন তারা এটাকে চৌচির করে ভেদ করার কাছাকাছি এসে যায়, তখন তাদের সরদার বলে, ফিরে চলো, কাল সকালে এটাকে সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে ফেলব। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা প্রাচীরটিকে পূর্বের ন্যায় পূর্ণাঙ্গ করে দেন। তারা প্রতিদিন এভাবে এই প্রাচীর খুঁড়তে থাকে। অবশেষে যখন তাদের বন্দীত্বের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এবং আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে জনবসতিতে পাঠানোর ইচ্ছা করবেন তখন ইয়াজূয-মাজূযদের সরদার বলবে, আজ চলো। আল্লাহ তা‘আলা চাইলে আগামী কাল সকালে আমরা এই দেয়াল ভেঙ্গে ফেলব। সে তার কথার সাথে ‘ইনশাআল্লাহ’ বলবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তারা ফিরে যাবে। গতকাল দেয়ালটিকে তারা যে অবস্থায় ছেড়ে গিয়েছিল, এবার ফিরে এসে ঠিক সেই অবস্থায়ই পাবে। এরা দেয়াল ভেদ করে জনপদে ছড়িয়ে পড়বে এবং সমস্ত পানি পান করে শেষ করে ফেলবে। মানুষজন এদের ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পালিয়ে যাবে। এরা আকাশের দিকে নিজেদের তীর ছুঁড়বে। তাদের তীরগুলোকে রক্ত-রঞ্জিত করে ফিরিয়ে দেয়া হবে। এরা বলবে, পৃথিবীর বাসিন্দাদের উপর আমরা প্রতিশোধ নিয়েছি এবং আকাশবাসীদের উপরও আধিপত্য বিস্তার করে তাদের অধীনস্ত করে নিয়েছি। আল্লাহ তা‘আলা এদের গলদেশে কীট সৃষ্টি করবেন। ফলে এরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! যমীনের কীট-পতঙ্গ ও জীব-জন্তু এদের গোশত খেয়ে খুব মোটাতাজা হবে, খুব পরিতৃপ্ত হবে এবং এগুলোর দেহে বেশ চর্বি জমবে।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৪০৮০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধু উপর্যুক্ত সনদেই অনুরূপভাবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১৫৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ الْبُرْسَانِيُّ، عَنْ عَبْدِ الْحَمِيدِ بْنِ جَعْفَرٍ، أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنِ ابْنِ مِينَاءَ، عَنْ أَبِي سَعْدِ بْنِ أَبِي فَضَالَةَ الأَنْصَارِيِّ، وَكَانَ، مِنَ الصَّحَابَةِ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِذَا جَمَعَ اللَّهُ النَّاسَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ لِيَوْمٍ لاَ رَيْبَ فِيهِ نَادَى مُنَادٍ مَنْ كَانَ أَشْرَكَ فِي عَمَلٍ عَمِلَهُ لِلَّهِ أَحَدًا فَلْيَطْلُبْ ثَوَابَهُ مِنْ عِنْدِ غَيْرِ اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ بَكْرٍ .
আবূ সা‘ঈদ ইবনু আবী ফাযালাহ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি : আল্লাহ তা‘আলা যখন ক্বিয়ামত দিবসে, যে দিনের আগমন প্রসঙ্গে কোন সন্দেহ নেই, মানুষদেরকে একত্র করবেন, তখন একজন ঘোষক ঘোষণা করবে : আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যে ব্যক্তি কাজ করতে এর মধ্যে কাউকে শারীক করেছে, সে যেন গাইরুল্লাহর নিকট নিজের সাওয়াব চেয়ে নেয়। কেননা আল্লাহ তা‘আলা শারীকদের শিরক হতে সম্পূর্ণ মুক্ত।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (৪২০৩)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীস শুধু মুহাম্মাদ ইবনু বাকর-এর সূত্রে জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস