১. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতের গাছের বর্ণনা
২৫২৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَشَجَرَةً يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّهَا مِائَةَ سَنَةٍ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে এক বিশাল গাছ আছে, যার ছায়াতলে যে কোন যাত্রী একশত বছর ধরে চলতে থাকবে (কিন্তু তা অতিক্রম করে যেতে পারবে না)।
সহীহ : বুখারী (৩২৫২)।
আনাস ও আবূ সা’ঈদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫২৪
حَدَّثَنَا عَبَّاسٌ الدُّورِيُّ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ فِرَاسٍ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ فِي الْجَنَّةِ شَجَرَةٌ يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّهَا مِائَةَ عَامٍ لاَ يَقْطَعُهَا وَقَالَ ذَلِكَ الظِّلُّ الْمَمْدُودُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَبِي سَعِيدٍ .
আবূ সা’ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে এমন একটি গাছ আছে, যার ছায়াতলে যে কোন যাত্রী একশত বছর ধরে চলতে থাকবে কিন্তু তা অতিক্রম করে যেতে পারবে না। আর এটাই হলো (কুরআনে বর্ণিত) ”সম্প্রসারিত ছায়া”। (সূরা ওয়াক্বি’আহ্ ৩০)
সহীহ : বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন : আবূ সা’ঈদ (রাঃ)-এর বর্ণনা হিসেবে হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫২৫
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ الْحَسَنِ بْنِ الْفُرَاتِ الْقَزَّازُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَا فِي الْجَنَّةِ شَجَرَةٌ إِلاَّ وَسَاقُهَا مِنْ ذَهَبٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَبِي سَعِيدٍ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতের প্রতিটি গাছের কাণ্ডই স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত।
সহীহ : তা’লীকুর রাগীব (৪/২৫৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। আবূ সা’ঈদের বর্ণনা হিসেবে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাত ও এর উপকরণাদির বর্ণনা
২৫২৬
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ حَمْزَةَ الزَّيَّاتِ، عَنْ زِيَادٍ الطَّائِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا لَنَا إِذَا كُنَّا عِنْدَكَ رَقَّتْ قُلُوبُنَا وَزَهِدْنَا فِي الدُّنْيَا وَكُنَّا مِنْ أَهْلِ الآخِرَةِ فَإِذَا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِكَ فَآنَسْنَا أَهَالِيَنَا وَشَمَمْنَا أَوْلاَدَنَا أَنْكَرْنَا أَنْفُسَنَا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لَوْ أَنَّكُمْ تَكُونُونَ إِذَا خَرَجْتُمْ مِنْ عِنْدِي كُنْتُمْ عَلَى حَالِكُمْ ذَلِكَ لَزَارَتْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ فِي بُيُوتِكُمْ وَلَوْ لَمْ تُذْنِبُوا لَجَاءَ اللَّهُ بِخَلْقٍ جَدِيدٍ كَىْ يُذْنِبُوا فَيَغْفِرَ لَهُمْ ” . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مِمَّ خُلِقَ الْخَلْقُ قَالَ ” مِنَ الْمَاءِ ” . قُلْنَا الْجَنَّةُ مَا بِنَاؤُهَا قَالَ ” لَبِنَةٌ مِنْ فِضَّةٍ وَلَبِنَةٌ مِنْ ذَهَبٍ وَمِلاَطُهَا الْمِسْكُ الأَذْفَرُ وَحَصْبَاؤُهَا اللُّؤْلُؤُ وَالْيَاقُوتُ وَتُرْبَتُهَا الزَّعْفَرَانُ مَنْ يَدْخُلْهَا يَنْعَمْ وَلاَ يَبْأَسْ وَيُخَلَّدْ وَلاَ يَمُوتْ لاَ تَبْلَى ثِيَابُهُمْ وَلاَ يَفْنَى شَبَابُهُمْ ” . ثُمَّ قَالَ ” ثَلاَثَةٌ لاَ تُرَدُّ دَعْوَتُهُمُ الإِمَامُ الْعَادِلُ وَالصَّائِمُ حِينَ يُفْطِرُ وَدَعْوَةُ الْمَظْلُومِ يَرْفَعُهَا فَوْقَ الْغَمَامِ وَتُفَتَّحُ لَهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَيَقُولُ الرَّبُّ عَزَّ وَجَلَّ وَعِزَّتِي لأَنْصُرَنَّكِ وَلَوْ بَعْدَ حِينٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِذَاكَ الْقَوِيِّ وَلَيْسَ هُوَ عِنْدِي بِمُتَّصِلٍ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ بِإِسْنَادٍ آخَرَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা বললামঃ হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমদের কি হলো যে, আমরা আপনার নিকট থাকাবস্থায় আমাদের অন্তর খুবই নরম হয়ে যায়, আমরা দুনিয়ার প্রতি উদাসীন হয়ে যাই এবং আমাদেরকে পরকালবাসীদের অন্তর্ভুক্ত মনে করতে থাকি। তারপর আপনার কাছ থেকে সরে গিয়ে পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে গিয়ে দুনিয়াবী কাজে জড়িয়ে পড়ি এবং সন্তানাদির সুগন্ধ পেতে থাকি, তখন আমাদের অবস্থা সম্পূর্ণ উল্টো হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা যে অবস্থায় আমার নিকট হতে বেরিয়ে যাও, সবসময় যদি সেই অবস্থায় থাকতে তাহলে ফেরেশতারা তোমাদের বাড়িতে গিয়ে তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করতো। আর তোমরা অপরাধ না করলে আল্লাহ্ তা‘আলা নতুন প্রাণী সৃষ্টি করতেন। যাতে তারা অপরাধ করে আর তিনি তাদেরকে ক্ষমা করেন। আবূ হুরায়রা্ (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলামঃ হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কী দিয়ে প্রানী সৃষ্টি করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ পানি দিয়ে। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, কী দিয়ে জান্নাত তৈরি করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ সোনা-রুপার ইট দিয়ে। একটি রুপার ইট, তারপর একটি সোনার ইট, এভাবে গাঁথা হয়েছে। এর গাঁথুনির উপকরণ (চুন-সুরকি-সিমেন্ট) সুগন্ধি মৃগনাভি এবং কঙ্করসমূহ মণি-মুক্তার ও মাটি হলো জাফ্রান। জান্নাতে প্রবেশকারী লোক অত্যন্ত সুখ-স্বাচ্ছন্দে থাকবে, কোন দুঃখ-কষ্ট ও অভাব-অনটন তাকে স্পর্শ করবে না। সে অনন্তকাল এতে অবস্থান করবে আর মৃত্যুবরণ করবে না। না তার পরনের পোশাক পুরাতন হবে আর না তার যৌবনকাল শেষ হবে (অনন্তযৌবনা হবে)। তিনি পুনরায় বললেনঃ তিনজনের দু’আ ফিরিয়ে দেয়া হয় নাঃ ন্যায়পরায়ণ শাসকের দু’আ, রোযাদারের ইফতারের সময়কালীন দু’আ এবং মাযলুমের দু’আ। আল্লাহ্ তা’আলা একে (মাযলুমের দু’আ) মেঘমালার উপর তুলে নেন, তার জন্য আকাশের দরজাসমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ আমার ইজ্জাত ও সম্মানের শপথ! কিছু দেরিতে হলেও আমি তোমাকে সাহায্য করবো।
“কী দিয়ে প্রাণী সৃষ্টি করা হয়েছে” অংশটুকু ব্যতীত হাদীসটি সহীহ, সহীহাহ (২/৬৯২-৬৯৩), গাইয়াতুল মারাম (৩৭৩)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসের সনদ খুব একটা মজবুত নয়। আর আমার মতে এর সনদসূত্র মুত্তাসিল (পরস্পর সংযুক্ত) নয়। এই হাদীসটি অন্য সনদেও আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতের প্রাসাদসমূহের বিবরণ
২৫২৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَغُرَفًا يُرَى ظُهُورُهَا مِنْ بُطُونِهَا وَبُطُونُهَا مِنْ ظُهُورِهَا ” . فَقَامَ إِلَيْهِ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ لِمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” هِيَ لِمَنْ أَطَابَ الْكَلاَمَ وَأَطْعَمَ الطَّعَامَ وَأَدَامَ الصِّيَامَ وَصَلَّى لِلَّهِ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ هَذَا مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ وَهُوَ كُوفِيٌّ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِسْحَاقَ الْقُرَشِيُّ مَدَنِيٌّ وَهُوَ أَثْبَتُ مِنْ هَذَا .
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতের প্রাসাদগুলো এমন হবে যে, এর ভিতর থেকে বাইরের সবকিছু দেখা যাবে এবং বাইরে থেকে ভিতরের সবকিছু দেখা যাবে। এক বেদুঈন উঠে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলো, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এসব প্রসাদ কাদের জন্য? তিনি বললেনঃ যারা উত্তম ও সুমধুর কথা বলে, ক্ষুধার্তকে খাবার দেয়, প্রায়ই রোযা রাখে এবং লোকেরা রাতে ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় জাগ্রত থেকে আল্লাহ্ তা’আলার জন্য নামায আদায় করে তাদের জন্য।
হাসান : তা’লীকুর রাগীব (২/৪৬), মিশকাত (১২৩৩)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি গারীব। কোন কোন হাদীস বিশারদ ‘আবদুর রাহ্মান ইবনু ইসহাকের স্মৃতিশক্তির সমালোচনা করেছেন। তিনি কূফার বাসিন্দা। অন্যদিকে ‘আবদুর রাহ্মান ইবনু ইসহাক আল-কুরাশী মাদীনার অধিবাসী। ইনি প্রথম ব্যক্তির চাইতে বেশি নির্ভরযোগ্য।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৫২৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ أَبُو عَبْدِ الصَّمَدِ الْعَمِّيُّ، عَنْ أَبِي عِمْرَانَ الْجَوْنِيِّ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ جَنَّتَيْنِ آنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا مِنْ فِضَّةٍ وَجَنَّتَيْنِ آنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا مِنْ ذَهَبٍ وَمَا بَيْنَ الْقَوْمِ وَبَيْنَ أَنْ يَنْظُرُوا إِلَى رَبِّهِمْ إِلاَّ رِدَاءُ الْكِبْرِيَاءِ عَلَى وَجْهِهِ فِي جَنَّةِ عَدْنٍ ” .
وَبِهَذَا الإِسْنَادِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَخَيْمَةً مِنْ دُرَّةٍ مُجَوَّفَةٍ عَرْضُهَا سِتُّونَ مِيلاً فِي كُلِّ زَاوِيَةٍ مِنْهَا أَهْلٌ مَا يَرَوْنَ الآخَرِينَ يَطُوفُ عَلَيْهِمُ الْمُؤْمِنُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو عِمْرَانَ الْجَوْنِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ حَبِيبٍ وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي مُوسَى قَالَ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ لاَ يُعْرَفُ اسْمُهُ . وَأَبُو مُوسَى الأَشْعَرِيُّ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ قَيْسٍ وَأَبُو مَالِكٍ الأَشْعَرِيُّ اسْمُهُ سَعْدُ بْنُ طَارِقِ بْنِ أَشْيَمَ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ক্বাইস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে দু’টি বাগান আছে, যার সকল পাত্রসমূহ ও অন্যান্য সামগ্রী রূপা দিয়ে নির্মিত এবং আরো দু’টি বাগান আছে, যার পাত্রসমূহ ও এতে যা কিছু আছে সবই স্বর্ণ দিয়ে নির্মিত। আর আদন নামক জান্নাতে মানুষ ও তাদের পালনকর্তার সাক্ষাতের মাঝে মহাপরাক্রমশালীর গৌরবের চাদর ছাড়া আর কিছুই অন্তরাল থাকবে না।
সহীহ : ইবনু মা-জাহ (১৮৬), বুখারী, মুসলিম।
একই সনদে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ জান্নাতে মণি-মুক্তা দিয়ে নির্মিত একটি তাঁবুর প্রস্থ ষাট মাইল। এর প্রতিটি কোণে এক একজন করে হুর থাকবে। অন্যরা তাকে দেখতে পাবে না। ঈমানদারগণ তাদের (নিজ নিজ হুরের) নিকট যাতায়াত করবে।
সহীহ : বুখারী (৩২৪৩), মুসলিম (৮/১৪৮)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। আবূ ‘ইমরান আল-জাওনীর নাম ‘আবদুল মালিক ইবনু হাবীব। আহ্মাদ ইবনু হাম্বাল (রাহঃ) বলেন, আবূ বাক্র ইবনু আবূ মূসার নাম অজানা। আবূ মূসা আল-আশ’আরী (রাঃ)-এর নাম ‘আবদুল্লাহ ইবনু কাইস। আবূ মালিক আল-আশ’আরী (রাঃ)-এর নাম সা’দ ইবনু তারিক ইবনু আশইয়াম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতের স্তরসমূহের বিবরণ
২৫২৯
حَدَّثَنَا عَبَّاسٌ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُحَادَةَ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ فِي الْجَنَّةِ مِائَةُ دَرَجَةٍ مَا بَيْنَ كُلِّ دَرَجَتَيْنِ مِائَةُ عَامٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতের একশত স্তর (ধাপ) রয়েছে। প্রত্যেক দু’স্তরের মাঝখানে রয়েছে একশত বছরের ব্যবধান।
সহীহ : সহীহাহ্ (৯২২), মিশকাত (৫৬৩২)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫৩০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ الْبَصْرِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” مَنْ صَامَ رَمَضَانَ وَصَلَّى الصَّلَوَاتِ وَحَجَّ الْبَيْتَ لاَ أَدْرِي أَذَكَرَ الزَّكَاةَ أَمْ لاَ إِلاَّ كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ يَغْفِرَ لَهُ إِنْ هَاجَرَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَوْ مَكَثَ بِأَرْضِهِ الَّتِي وُلِدَ بِهَا ” . قَالَ مُعَاذٌ أَلاَ أُخْبِرُ بِهَذَا النَّاسَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” ذَرِ النَّاسَ يَعْمَلُونَ فَإِنَّ فِي الْجَنَّةِ مِائَةَ دَرَجَةٍ مَا بَيْنَ كُلِّ دَرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ وَالْفِرْدَوْسُ أَعْلَى الْجَنَّةِ وَأَوْسَطُهَا وَفَوْقَ ذَلِكَ عَرْشُ الرَّحْمَنِ وَمِنْهَا تُفَجَّرُ أَنْهَارُ الْجَنَّةِ فَإِذَا سَأَلْتُمُ اللَّهَ فَسَلُوهُ الْفِرْدَوْسَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ هِشَامِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ وَهَذَا عِنْدِي أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ هَمَّامٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ . وَعَطَاءٌ لَمْ يُدْرِكْ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ وَمُعَاذٌ قَدِيمُ الْمَوْتِ مَاتَ فِي خِلاَفَةِ عُمَرَ .
মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক রামাযানের রোযা রেখেছে, নামায আদায় করেছে এবং বাইতুল্লাহ্র হাজ্জ আদায় করেছে, বর্ণনাকারী বলেন, মু’আয (রাঃ) যাকাতের কথা বলেছেন কি-না আমার মনে নেই, তার অপরাধ ক্ষমা করা আল্লাহ্ তা’আলার দায়িত্ব হয়ে যায়, চাই সে আল্লাহ্ তা’আলার রাস্তায় হিজরাত করুক কিংবা আপন জন্মস্থানেই অবস্থান করুক। মু’আয (রাঃ) বলেন, আমি কি মানুষের নিকট এই খবর পৌঁছে দিব না? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ লোকদেরকে ‘আমাল করতে ছেড়ে দাও। কেননা, জান্নাতে একশ স্তর রয়েছে। প্রত্যেক দু’স্তরের মাঝখানে আসমান-যমীনের সমান ব্যবধান বিদ্যমান। আর সর্বোচ্চ ও সর্বোৎকৃষ্ট জান্নাত হচ্ছে ফিরদাউস। এর উপরেই রয়েছে আল্লাহ্ তা’আলার আরশ এবং এখান থেকেই জান্নাতের ঝর্ণাসমূহ প্রবাহমান। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্ তা’আলার নিকট প্রার্থনা করার সময় ফিরদাউসের প্রার্থনা করবে।
সহীহ : সহীহাহ্ (৯২১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি এভাবেই হিশাম ইবনু সা’ঈদ হতে, তিনি যাইদ ইবনু আসলাম হতে, তিনি আতা ইবনু ইয়াসার হতে, তিনি মু’আয ইবনু জাবাল হতে এই সনদে বর্ণিত হয়েছে। আমার মতে এই হাদীসটি অধিক সহীহ। হাম্মামের সূত্রে যাইদ ইবনু আসলাম হতে, তিনি আতা ইবনু ইয়াসার হতে, তিনি ‘উবাদাহ্ ইবনু সামিত হতে এই সনদে বর্ণিত হাদীসের চাইতে। আতা মু’আয ইবনু জাবালের সাক্ষাৎ পাননি। মু’আয ইবনু জাবাল ‘উমার (রাঃ)-এর খিলাফতকালে মৃত্যুবরণ করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫৩১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ فِي الْجَنَّةِ مِائَةُ دَرَجَةٍ مَا بَيْنَ كُلِّ دَرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ وَالْفِرْدَوْسُ أَعْلاَهَا دَرَجَةً وَمِنْهَا تُفَجَّرُ أَنْهَارُ الْجَنَّةِ الأَرْبَعَةُ وَمِنْ فَوْقِهَا يَكُونُ الْعَرْشُ فَإِذَا سَأَلْتُمُ اللَّهَ فَسَلُوهُ الْفِرْدَوْسَ ” .
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، نَحْوَهُ .
‘উবাদাহ্ ইবনুস সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতের একশতটি স্তর রয়েছে। প্রতি দুই স্তরের মাঝে আসমান-যমীনের সমান ব্যবধান বর্তমান। ফিরদাউস হচ্ছে সবচেয়ে উঁচু স্তরের জান্নাত, সেখান থেকেই জান্নাতের চারটি ঝর্ণা প্রবাহিত হয় এবং এর উপরেই (আল্লাহ্ তা’আলার) আরশ স্থাপিত। তোমরা আল্লাহ্ তা’আলার নিকট প্রার্থনা করার সময় ফিরদাউসের প্রার্থনা করবে।
সহীহ : প্রাগুক্ত।
আহমাদ ইবনু মানী-ইয়াযীদ ইবনু হারুন হতে, তিনি হাম্মাম হতে, তিনি যাইদ ইবনু আসলাম (রাহঃ) হতে এই সূত্রেও উপরের হাদীসের সমার্থবোধক হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতী রমণীদের বিবরণ
২৫৩৫
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ فُضَيْلِ بْنِ مَرْزُوقٍ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّ أَوَّلَ زُمْرَةٍ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ضَوْءُ وُجُوهِهِمْ عَلَى مِثْلِ ضَوْءِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ وَالزُّمْرَةُ الثَّانِيَةُ عَلَى مِثْلِ أَحْسَنِ كَوْكَبٍ دُرِّيٍّ فِي السَّمَاءِ لِكُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ عَلَى كُلِّ زَوْجَةٍ سَبْعُونَ حُلَّةً يُرَى مُخُّ سَاقِهَا مِنْ وَرَائِهَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবূ সা’ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে দলটি কিয়ামাত দিবসে সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাদের মুখমণ্ডল হবে পূর্ণিমার রাতের চাঁদের মতো উজ্জ্বল, আর দ্বিতীয় দলের মুখমণ্ডল হবে আকাশে মুক্তার ন্যায় ঝলমলে তারকার মতো উজ্জ্বল। তাদের মধ্যে প্রত্যেক পুরুষের জন্য দু’জন করে স্ত্রী (হুর) থাকবে এবং প্রত্যেক স্ত্রীর সত্তরজোড়া জামা থাকবে। এই জামার ভিতর দিয়েও তার পায়ের জংঘার অস্থিমজ্জা দেখা যাবে।
সহীহ : সহীহাহ্ (১৭৩৬), মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৫৬৩৫), তা’লীকুর রাগীব (২৬১)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতীদের সঙ্গমশক্তি
২৫৩৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، عَنْ عِمْرَانَ الْقَطَّانِ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” يُعْطَى الْمُؤْمِنُ فِي الْجَنَّةِ قُوَّةَ كَذَا وَكَذَا مِنَ الْجِمَاعِ ” . قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَوَيُطِيقُ ذَلِكَ قَالَ ” يُعْطَى قُوَّةَ مِائَةٍ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عِمْرَانَ الْقَطَّانِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে প্রত্যেক মু’মিনকে এত এত পরিমাণ সঙ্গমশক্তি প্রদান করা হবে। প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তারা এমন করতে সক্ষম হবে? তিনি বলেনঃ প্রত্যেককে একশত জনের সমান সঙ্গমশক্তি প্রদান করা হবে।
হাসান সহীহ : মিশকাত (হাঃ ৫৬৩৬)
যাইদ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ গারীব। ‘ইমরান আল-কাত্তান (রাহঃ) ছাড়া কাতাদাহ হতে আনাস (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীস হিসেবে এটি সম্বন্ধে আমাদের জানা নেই।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৭. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতবাসীগণের বৈশিষ্ট্য
২৫৩৭
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَوَّلُ زُمْرَةٍ تَلِجُ الْجَنَّةَ صُورَتُهُمْ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لاَ يَبْصُقُونَ فِيهَا وَلاَ يَمْتَخِطُونَ وَلاَ يَتَغَوَّطُونَ آنِيَتُهُمْ فِيهَا الذَّهَبُ وَأَمْشَاطُهُمْ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَمَجَامِرُهُمْ مِنَ الأَلُوَّةِ وَرَشْحُهُمُ الْمِسْكُ وَلِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ يُرَى مُخُّ سُوقِهِمَا مِنْ وَرَاءِ اللَّحْمِ مِنَ الْحُسْنِ لاَ اخْتِلاَفَ بَيْنَهُمْ وَلاَ تَبَاغُضَ قُلُوبُهُمْ قَلْبُ رَجُلٍ وَاحِدٍ يُسَبِّحُونَ اللَّهَ بُكْرَةً وَعَشِيًّا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَالأَلُوَّةُ هُوَ الْعُودُ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে দলটি সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে, সেই দলের মানুষদের আকৃতি হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল। তারা সেখানে থুথু ফেলবে না, নাকের শিকনিও বের হবে না, প্রস্রাব-পায়খানাও করবে না। তাদের ব্যবহার্য পাত্রসমূহ হবে স্বর্ণের তৈরি আর সোনা–রূপার সংমিশ্রণে তৈরি হবে চিরুনি। চন্দন কাঠ ও আগরবাতি জ্বালানো থাকবে। তাদের শরীরের ঘাম হবে মিশকের মতো সুগন্ধময়। তাদের প্রত্যেকের জন্য দুজন করে স্ত্রী (হুর) থাকবে। সৌন্দর্যের কারণে মাংসের ভিতর দিয়ে তাদের পায়ের জংঘার হাড়ের মজ্জা পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হবে। তাদের মধ্যে না থাকবে ঝগড়া–বিবাদ, আর না থাকবে হিংসা–বিদ্বেষ। তাদের সকলের অন্তর যেন একটি অন্তরে পরিণত হবে। সকাল-বিকাল তারা আল্লাহ্ তা‘আলার পবিত্রতা বর্ণনা করবে।
সহীহঃ বুখারী (৩২৪৫), মুসলিম (৮/১৪৬-১৪৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ। আল উলুওয়াতুঃ চন্দন কাঠ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫৩৮
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لَوْ أَنَّ مَا يُقِلُّ ظُفُرٌ مِمَّا فِي الْجَنَّةِ بَدَا لَتَزَخْرَفَتْ لَهُ مَا بَيْنَ خَوَافِقِ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَلَوْ أَنَّ رَجُلاً مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ اطَّلَعَ فَبَدَا أَسَاوِرُهُ لَطَمَسَ ضَوْءَ الشَّمْسِ كَمَا تَطْمِسُ الشَّمْسُ ضَوْءَ النُّجُومِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ بِهَذَا الإِسْنَادِ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ لَهِيعَةَ . وَقَدْ رَوَى يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ وَقَالَ عَنْ عُمَرَ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি জান্নাতের কোন জিনিসের এক চিমটি পরিমাণও (পৃথিবীতে) আসতে পারতো তাহলে আসমান-যমীন সকল স্হান আলোকিত ও সৌন্দর্যমন্ডিত হয়ে যেতো। কোন জান্নাতী যদি দুনিয়াতে উঁকি দিত এবং তার হস্তালংকার প্রকাশিত হয়ে পড়তো তাহলে তা সূর্যের আলোকে নিস্তেজ করে দিত যেভাবে সূর্যের আলো নক্ষত্রসমূহের আলোকে নিস্তেজ করে দেয়।
সহীহঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৫৬৩৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি গারীব। এই হাদীসটি শুধুমাত্র ইবনু লাহীআর বর্ণনা হিসাবে আমরা জেনেছি। ইয়াহহিয়া ইবনু আইয়ুব এই হাদীসটি ইয়াযীদ ইবনু আবূ হাবীবের সূত্রে বর্ণনা করেছেন এবং (আমির-এর স্থলে) ‘উমার ইবনু সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে, এই সূত্র উল্লেখ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতীদের পোশাকের বর্ণনা
২৫৩৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَأَبُو هِشَامٍ الرِّفَاعِيُّ قَالاَ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَامِرٍ الأَحْوَلِ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَهْلُ الْجَنَّةِ جُرْدٌ مُرْدٌ كُحْلٌ لاَ يَفْنَى شَبَابُهُمْ وَلاَ تَبْلَى ثِيَابُهُمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতীদের শরীরে কোন লোম থাকবে না, দাড়ি–গোঁফ থাকবে না এবং চোখে সুরমা লাগানো থাকবে। কখনো তাদের যৌবন শেষ হবে না, জামাও পুরাতন হবে না।
হাসানঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৫৬৩৮, ৫৬৩৯), তা’লীকুর রাগীব (৪/২৪৫)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি গারীব।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৫৪০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا رِشْدِينُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ دَرَّاجٍ أَبِي السَّمْحِ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِهِ: (وَفُرُشٍ مَرْفُوعَةٍ ) قَالَ ” ارْتِفَاعُهَا لَكَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ مَسِيرَةَ خَمْسِمِائَةِ سَنَةٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ رِشْدِينَ بْنِ سَعْدٍ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي تَفْسِيرِ هَذَا الْحَدِيثِ إِنَّ مَعْنَاهُ الْفُرُشَ فِي الدَّرَجَاتِ وَبَيْنَ الدَّرَجَاتِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা’আলার বাণী “সুউচ্চ বিছানা থাকবে” (সূরাঃ ওয়াকিয়া-৩৪) প্রসঙ্গে বলেন, এর উচ্চতা হবে আসমান-যমিনের উচ্চতার সমান আর তা হবে পাঁচশত বছরের দূরত্বের সমান।
যঈফ, মিশকাত (৫৬৩৪), আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র রিশদীন ইবনু সাদের রিওয়ায়াত হিসাবে এ হাদিস জেনেছি। এ হাদিসের ব্যাখ্যায় কিছু আলিম বলেন, সেই বিছানাসমূহের এক স্তর হতে আরেক স্তরের উচ্চতা হবে আসমান-যমিনের মাঝখানের দূরত্বের সমান।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৯. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতীদের ফলের বর্ণনা
২৫৪১
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ، قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ وَذُكِرَ لَهُ سِدْرَةُ الْمُنْتَهَى قَالَ “ يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّ الْفَنَنِ مِنْهَا مِائَةَ سَنَةٍ أَوْ يَسْتَظِلُّ بِظِلِّهَا مِائَةُ رَاكِبٍ شَكَّ يَحْيَى فِيهَا فَرَاشُ الذَّهَبِ كَأَنَّ ثَمَرَهَا الْقِلاَلُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আসমা বিনতু আবূ বাক্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে সিদরাতুল মুনতাহা (প্রান্তসীমার কুলগাছ) সম্পর্কে আলোচনা করা হলে আমি তাঁকে বলতে শুনেছিঃ সেই গাছের একটি শাখার ছায়াতলে কোন যাত্রী এক শত বছর পর্যন্ত চলতে থাকবে (তবুও তা অতিক্রম করতে পারবে না) অথবা বলেছেনঃ এক শত সাওয়ারী এর ছায়াতলে অবস্থান করবে (ইয়াহ্ইয়া ইবনু ‘আবদুল্লাহ সংশয়ে পতিত হয়েছেন যে, তার উর্ধ্বতন রাবী কোন্ কথাটি বলেছেন)। সে গাছে অসংখ্য সোনার পতঙ্গ আছে এবং এর ফলগুলো মটকার মত বড় বড়।
য’ঈফ; মিশকাত-তাহক্বীক্ব ছানী, হাঃ নং-৫৬৪০; তা’লীকুর রাগী- হাঃনং- ৪/২৫৬
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদিসটি হাসান, সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১০. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতের পাখির বর্ণনা
২৫৪২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا الْكَوْثَرُ قَالَ ” ذَاكَ نَهْرٌ أَعْطَانِيهِ اللَّهُ يَعْنِي فِي الْجَنَّةِ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ وَأَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ فِيهَا طَيْرٌ أَعْنَاقُهَا كَأَعْنَاقِ الْجُزُرِ ” . قَالَ عُمَرُ إِنَّ هَذِهِ لَنَاعِمَةٌ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَكَلَتُهَا أَنْعَمُ مِنْهَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُسْلِمٍ هُوَ ابْنُ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ الزُّهْرِيِّ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُسْلِمٍ قَدْ رَوَى عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাওযে কাওসার প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ তা একটি ঝর্না যা আল্লাহ্ তা‘আলা জান্নাতে আমাকে প্রদান করেছেন। এর পানি দুধের চেয়ে সাদা এবং মধুর চেয়ে মিষ্টি। এতে অনেক পাখি রয়েছে যাদের ঘাড় উটের ঘাড়ের মতো উঁচু। ‘উমার (রাঃ) বলেন, তাহলে তো এগুলা সতেজ হবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যারা এগুলো আহার করবে, তারা আরো সুন্দর ও সুখী হবে।
সহীহঃ মিশকাত (৫৬৪১), সহীহ (২৫১৪)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান গারীব। মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুসলিম হলেন ইবনু শিহাব যুহরীর ভাইয়ের ছেলে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুসলিম ইবনু ‘উমার ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতের ঘোড়ার বর্ণনা
২৫৪৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَاصِمُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا الْمَسْعُودِيُّ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ فِي الْجَنَّةِ مِنْ خَيْلٍ قَالَ ” إِنِ اللَّهُ أَدْخَلَكَ الْجَنَّةَ فَلاَ تَشَاءُ أَنْ تُحْمَلَ فِيهَا عَلَى فَرَسٍ مِنْ يَاقُوتَةٍ حَمْرَاءَ يَطِيرُ بِكَ فِي الْجَنَّةِ حَيْثُ شِئْتَ إِلاَّ فَعَلْتَ ” . قَالَ وَسَأَلَهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ فِي الْجَنَّةِ مِنْ إِبِلٍ قَالَ فَلَمْ يَقُلْ لَهُ مِثْلَ مَا قَالَ لِصَاحِبِهِ قَالَ ” إِنْ يُدْخِلْكَ اللَّهُ الْجَنَّةَ يَكُنْ لَكَ فِيهَا مَا اشْتَهَتْ نَفْسُكَ وَلَذَّتْ عَيْنُكَ ” .
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَابِطٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ الْمَسْعُودِيِّ .
বুরাইদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসূল! জান্নাতে ঘোড়া আছে কি? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা (যদি) তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান এবং তুমি তাতে লাল পদ্মরাগ মনির ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হতে চাও আর তুমি জান্নাতের যেদিকে যেতে ইচ্ছা কর, সেদিকেই উড়িয়ে নিয়ে যাবে। তিনি (রাবী) বলেন, আরেক ব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! জান্নাতে উটও আছে কি? তিনি তার সাথীকে যে উত্তর দিয়েছিলেন তাকেও এরকম উত্তর না দিয়ে বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা যদি তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান, তাহলে তোমার মন যা চাবে এবং চোখে যা ভালো লাগবে সবই পাবে।
সুওয়াইদ-আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক হতে তিনি সুফিয়ান হতে তিনি আলকামা ইবনু মারসাদ হতে তিনি আবদুর রহমান ইবনু সাবিতের সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উক্ত মর্মে উপরের হাদিসের মতই বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি মাসঊদী বর্ণিত হাদিসের চাইতে অনেক বেশী সহীহ।
যঈফ, মিশকাত (৫৬৪২), যঈফা (১৯৮০)
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৫৪৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ بْنِ سَمُرَةَ الأَحْمَسِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ وَاصِلٍ، هُوَ ابْنُ السَّائِبِ عَنْ أَبِي سَوْرَةَ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُحِبُّ الْخَيْلَ أَفِي الْجَنَّةِ خَيْلٌ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنْ أُدْخِلْتَ الْجَنَّةَ أُتِيتَ بِفَرَسٍ مِنْ يَاقُوتَةٍ لَهُ جَنَاحَانِ فَحُمِلْتَ عَلَيْهِ ثُمَّ طَارَ بِكَ حَيْثُ شِئْتَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِالْقَوِيِّ وَلاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ أَبِي أَيُّوبَ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَأَبُو سَوْرَةَ هُوَ ابْنُ أَخِي أَبِي أَيُّوبَ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ ضَعَّفَهُ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ جِدًّا قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يَقُولُ أَبُو سَوْرَةَ هَذَا مُنْكَرُ الْحَدِيثِ يَرْوِي مَنَاكِيرَ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ لاَ يُتَابَعُ عَلَيْهَا .
আবূ আইয়ূব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তো ঘোড়া পছন্দ করি। বেহেশতে ঘোড়া আছে কি? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমাকে যদি বেহেশতে প্রবেশ করানো হয় তাহলে মনি-মুক্তার একটি ঘোড়া তোমাকে দেয়া হবে। এর দু’টি ডানা থাকবে এবং তোমাকে এর পিঠে সওয়ার করানো হবে। তারপর তুমি যেদিকে যেতে চাও, সেটি তোমাকে নিয়ে সেদিকে উড়ে যাবে।
য’ঈফ; মিশকাত-হাঃনং-৫৬৪৩; য’ঈফাহ্
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদিসের সনদ তেমন শক্তিশালী নয়। আমরা কেবল উপরোক্ত সূত্রেই এটিকে আবূ আইয়ূব (রাঃ)-এর রিওয়ায়াত হিসাবে জানতে পেরেছি। আবূ সাওরা হলেন আবূ আইয়ূব (রাঃ)-এর ভ্রাতুষ্পুত্র। তিনি হাদিসশাস্ত্রে দূর্বল। ইয়াহ্ইয়া ইবনু মুঈন তাকে অত্যন্ত দূর্বল রাবী বলে আখ্যায়িত করেছেন। আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসামা’ঈলকে বলতে শুনেছি, এই আবূ সাওরা মুনকার রাবী এবং আবূ আইয়ূব (রাঃ) হতে বহু মুনকার রিওয়ায়াত বর্ণনা করেছেন যার সমর্থনযোগ্য কোন রিওয়ায়াত বিদ্যমান নেই।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১২. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতীদের বয়সের বর্ণনা
২৫৪৫
حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، مُحَمَّدُ بْنُ فِرَاسٍ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا عِمْرَانُ أَبُو الْعَوَّامِ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ غَنْمٍ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ يَدْخُلُ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ جُرْدًا مُرْدًا مُكَحَّلِينَ أَبْنَاءَ ثَلاَثِينَ أَوْ ثَلاَثٍ وَثَلاَثِينَ سَنَةً ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَبَعْضُ أَصْحَابِ قَتَادَةَ رَوَوْا هَذَا عَنْ قَتَادَةَ مُرْسَلاً وَلَمْ يُسْنِدُوهُ .
মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশের সময় তাদের শরীরে লোম থাকবে না, দাড়ি-গোঁফও থাকবে না এবং চোখে সুরমা লাগানো থাকবে। তারা হবে ত্রিশ অথবা তেত্রিশ বছরের যুবক।
হাসানঃ দেখুন হাদীস নং (২৫৩৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান গারীব। উক্ত হাদীসটি কাতাদার কোন কোন শিষ্য তার সুত্রে মুরসালভাবে বর্ণনা করেছেন, মুসনাদরূপে বর্ণনা করেননি।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১৩. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতীদের কাতারসমূহের বর্ণনা
২৫৪৬
حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ يَزِيدَ الطَّحَّانُ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ ضِرَارِ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَهْلُ الْجَنَّةِ عِشْرُونَ وَمِائَةُ صَفٍّ ثَمَانُونَ مِنْهَا مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ وَأَرْبَعُونَ مِنْ سَائِرِ الأُمَمِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً وَمِنْهُمْ مَنْ قَالَ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيهِ وَحَدِيثُ أَبِي سِنَانٍ عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ حَسَنٌ . وَأَبُو سِنَانٍ اسْمُهُ ضِرَارُ بْنُ مُرَّةَ وَأَبُو سِنَانٍ الشَّيْبَانِيُّ اسْمُهُ سَعِيدُ بْنُ سِنَانٍ وَهُوَ بَصْرِيٌّ وَأَبُو سِنَانٍ الشَّامِيُّ اسْمُهُ عِيسَى بْنُ سِنَانٍ هُوَ الْقَسْمَلِيُّ .
বুরাইদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতীদের একশত বিশটি কাতার হবে, তার মধ্যে এই উম্মাতের হবে আশিটি কাতার এবং অন্যান্য সকল উম্মাতের হবে চল্লিশটি।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (৪২৮৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান। এই হাদীসটি আলকামা ইবনু মারসাদ হতে, তিনি সুলাইমান ইবনু বুরাইদাহ হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে মুরসাল হিসেবেও বর্ণিত আছে। বর্ণনাকারীগণের মধ্যে কেউ বলেছেন, সুলাইমান ইবনু বুরাইদাহ হতে তার বাবার সুত্রে বর্ণিত। আবূ সিনান–মুহারিব ইবনু দিসার সুত্রে বর্ণিত হাদীসটি হাসান। আবূ সিনানের নাম যিরার ইবনু মুররাহ এবং আবূ সিনান আশ–শাইবানীর নাম সা’ঈদ ইবনু সিনান, তিনি বাসরাবাসী। আবূ সিনান আশ–শামীর নাম ‘ঈসা ইবনু সিনান আল-কাসমালী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫৪৭
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ عَمْرَو بْنَ مَيْمُونٍ، يُحَدِّثُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قُبَّةٍ نَحْوًا مِنْ أَرْبَعِينَ فَقَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا رُبُعَ أَهْلِ الْجَنَّةِ ” . قَالُوا نَعَمْ . قَالَ ” أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ ” . قَالُوا نَعَمْ . قَالَ ” أَتَرْضَوْنَ أَنْ تَكُونُوا شَطْرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ إِنَّ الْجَنَّةَ لاَ يَدْخُلُهَا إِلاَّ نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ مَا أَنْتُمْ فِي الشِّرْكِ إِلاَّ كَالشَّعْرَةِ الْبَيْضَاءِ فِي جِلْدِ الثَّوْرِ الأَسْوَدِ أَوْ كَالشَّعْرَةِ السَّوْدَاءِ فِي جِلْدِ الثَّوْرِ الأَحْمَرِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা একটি তাঁবুতে প্রায় চল্লিশজন লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন আমাদেরকে বললেনঃ তোমরা কি এই কথায় সন্তুষ্ট যে, তোমরা জান্নাতীদের সংখ্যার এক-চতুর্থাংশ হবে? সমবেত সাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ। তিনি আবার বললেনঃ তোমরা কি এক-তৃতীয়াংশ সংখ্যক হতে খুশি আছো? তারা বললেন, হ্যাঁ। তিনি আবার বললেনঃ তোমরা কি অর্ধেক সংখ্যক হলে খুশি আছো? মুসলিম ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। তোমরা তো মুশরিকদের তুলনায় কালো ষাঁড়ের চামড়ায় সাদা লোমসদৃশ অথবা লাল ষাঁড়ের চামড়ায় কালো লোমসদৃশ।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪২৮৩), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। ‘ইমরান ইবনু হুসাইন ও আবূ সা’ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৪. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতের দরজাসমূহের বর্ণনা
২৫৪৮
حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنُ بْنُ عِيسَى الْقَزَّازُ، عَنْ خَالِدِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ بَابُ أُمَّتِي الَّذِي يَدْخُلُونَ مِنْهُ الْجَنَّةَ عَرْضُهُ مَسِيرَةُ الرَّاكِبِ الْجَوَادَ ثَلاَثًا ثُمَّ إِنَّهُمْ لَيُضْغَطُونَ عَلَيْهِ حَتَّى تَكَادُ مَنَاكِبُهُمْ تَزُولُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . قَالَ سَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَلَمْ يَعْرِفْهُ وَقَالَ لِخَالِدِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ مَنَاكِيرُ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ .
সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতগণ যে দরজা দিয়ে জান্নাতে যাবে, তার প্রস্থ হবে অত্যন্ত দ্রুতগামী অশ্বারোহীর তিন দিনের পথ। তা সত্ত্বেও এতো ভীড় হবে যে, তাদের কাঁধ ঢলে পড়ার উপক্রম হবে।
যঈফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৫৬৪৫)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদিসটি গারীব। তিনি আরও বলেন আমি মুহা্ম্মাদ (বুখারী)-কে এই হাদিস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি অজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেনঃ খালিদ ইবনু আবূ বাকার সালিম ইবনু আব্দুল্লাহর সূত্রে অনেক মুনকার হাদিস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৫. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতের বাজারের বর্ণনা
২৫৪৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ حَبِيبِ بْنِ أَبِي الْعِشْرِينَ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنَا حَسَّانُ بْنُ عَطِيَّةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، أَنَّهُ لَقِيَ أَبَا هُرَيْرَةَ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَسْأَلُ اللَّهَ أَنْ يَجْمَعَ، بَيْنِي وَبَيْنَكَ فِي سُوقِ الْجَنَّةِ . فَقَالَ سَعِيدٌ أَفِيهَا سُوقٌ قَالَ نَعَمْ أَخْبَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَنَّ أَهْلَ الْجَنَّةِ إِذَا دَخَلُوهَا نَزَلُوا فِيهَا بِفَضْلِ أَعْمَالِهِمْ ثُمَّ يُؤْذَنُ فِي مِقْدَارِ يَوْمِ الْجُمُعَةِ مِنْ أَيَّامِ الدُّنْيَا فَيَزُورُونَ رَبَّهُمْ وَيُبْرِزُ لَهُمْ عَرْشَهُ وَيَتَبَدَّى لَهُمْ فِي رَوْضَةٍ مِنْ رِيَاضِ الْجَنَّةِ فَتُوضَعُ لَهُمْ مَنَابِرُ مِنْ نُورٍ وَمَنَابِرُ مِنْ لُؤْلُؤٍ وَمَنَابِرُ مِنْ يَاقُوتٍ وَمَنَابِرُ مِنْ زَبَرْجَدٍ وَمَنَابِرُ مِنْ ذَهَبٍ وَمَنَابِرُ مِنْ فِضَّةٍ وَيَجْلِسُ أَدْنَاهُمْ وَمَا فِيهِمْ مِنْ دَنِيٍّ عَلَى كُثْبَانِ الْمِسْكِ وَالْكَافُورِ وَمَا يُرَوْنَ أَنَّ أَصْحَابَ الْكَرَاسِيِّ بِأَفْضَلَ مِنْهُمْ مَجْلِسًا ” . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَهَلْ نَرَى رَبَّنَا قَالَ ” نَعَمْ قَالَ هَلْ تَتَمَارَوْنَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ وَالْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ ” . قُلْنَا لاَ . قَالَ ” كَذَلِكَ لاَ تَتَمَارَوْنَ فِي رُؤْيَةِ رَبِّكُمْ وَلاَ يَبْقَى فِي ذَلِكَ الْمَجْلِسِ رَجُلٌ إِلاَّ حَاضَرَهُ اللَّهُ مُحَاضَرَةً حَتَّى يَقُولَ لِلرَّجُلِ مِنْهُمْ يَا فُلاَنُ ابْنَ فُلاَنٍ أَتَذْكُرُ يَوْمَ قُلْتَ كَذَا وَكَذَا فَيُذَكِّرُهُ بِبَعْضِ غَدَرَاتِهِ فِي الدُّنْيَا فَيَقُولُ يَا رَبِّ أَفَلَمْ تَغْفِرْ لِي فَيَقُولُ بَلَى فَبِسِعَةِ مَغْفِرَتِي بَلَغْتَ مَنْزِلَتَكَ هَذِهِ . فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى ذَلِكَ غَشِيَتْهُمْ سَحَابَةٌ مِنْ فَوْقِهِمْ فَأَمْطَرَتْ عَلَيْهِمْ طِيبًا لَمْ يَجِدُوا مِثْلَ رِيحِهِ شَيْئًا قَطُّ وَيَقُولُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى قُومُوا إِلَى مَا أَعْدَدْتُ لَكُمْ مِنَ الْكَرَامَةِ فَخُذُوا مَا اشْتَهَيْتُمْ . قَالَ فَنَأْتِي سُوقًا قَدْ حَفَّتْ بِهِ الْمَلاَئِكَةُ فِيهِ مَا لَمْ تَنْظُرِ الْعُيُونُ إِلَى مِثْلِهِ وَلَمْ تَسْمَعِ الآذَانُ وَلَمْ يَخْطُرْ عَلَى الْقُلُوبِ فَيُحْمَلُ لَنَا مَا اشْتَهَيْنَا لَيْسَ يُبَاعُ فِيهَا وَلاَ يُشْتَرَى وَفِي ذَلِكَ السُّوقِ يَلْقَى أَهْلُ الْجَنَّةِ بَعْضُهُمْ بَعْضًا قَالَ فَيُقْبِلُ الرَّجُلُ ذُو الْمَنْزِلَةِ الْمُرْتَفِعَةِ فَيَلْقَى مَنْ هُوَ دُونَهُ وَمَا فِيهِمْ دَنِيٌّ فَيَرُوعُهُ مَا يَرَى عَلَيْهِ مِنَ اللِّبَاسِ فَمَا يَنْقَضِي آخِرُ حَدِيثِهِ حَتَّى يَتَخَيَّلَ إِلَيْهِ مَا هُوَ أَحْسَنُ مِنْهُ وَذَلِكَ أَنَّهُ لاَ يَنْبَغِي لأَحَدٍ أَنْ يَحْزَنَ فِيهَا ثُمَّ نَنْصَرِفُ إِلَى مَنَازِلِنَا فَتَتَلَقَّانَا أَزْوَاجُنَا فَيَقُلْنَ مَرْحَبًا وَأَهْلاً لَقَدْ جِئْتَ وَإِنَّ بِكَ مِنَ الْجَمَالِ أَفْضَلَ مِمَّا فَارَقْتَنَا عَلَيْهِ . فَنَقُولُ إِنَّا جَالَسْنَا الْيَوْمَ رَبَّنَا الْجَبَّارَ وَيَحِقُّنَا أَنْ نَنْقَلِبَ بِمِثْلِ مَا انْقَلَبْنَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَقَدْ رَوَى سُوَيْدُ بْنُ عَمْرٍو عَنِ الأَوْزَاعِيِّ شَيْئًا مِنْ هَذَا الْحَدِيثِ .
সা’ঈদ ইবনুল মুসাইয়্যিব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা তিনি আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সাথে দেখা করলে তিনি বললেন, আমি আল্লাহ তা’আলার নিকটে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আমাকে ও তোমাকে জান্নাতের বাজারে একত্র করেন। সা’ঈদ (রহঃ) প্রশ্ন করেন, জান্নাতে কি বাজারও আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জানিয়েছেন যে, জান্নাতীরা জান্নাতে গিয়ে নিজ নিজ আমলের পরিমাণ ও মর্যাদা অনুযায়ী সেখানে জায়গা (মর্যাদা) পাবে। তারপর দুনিয়ার সময় অনুসারে জুমু’আর দিন তাদেরকে (তাদের রবের দর্শনের) অনুমতি দেয়া হবে এবং তারা তাদের রবকে দেখতে আসবে। তাদের জন্য তাঁর আরশ প্রকাশিত হবে। জান্নাতের কোন এক বাগানে তাদের সামনে তাদের প্রভুর প্রকাশ ঘটবে। তাদের জন্য নূর, মণিমুক্তা, পদ্মরাগ মণি, যমরূদ ও সোনা-রূপা ইত্যাদির মিম্বারসমূহ রাখা হবে। তাদের মধ্যকার সবচাইতে নিম্নস্তরের জান্নাতীও মিশক ও কর্পুরের স্তূপের উপর আসন গ্রহণ করবে। তবে সেখানে কেউ হীন-নীচ হবে না। মিম্বারে আসীন ব্যক্তিগণকে তারা তাদের চাইতে শ্রেষ্ঠ বা উৎকৃষ্ট ভাববে না। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি আমাদের রবকে দেখতে পাব? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। সূর্য বা পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে তোমাদের কি কোন সন্দেহ হয়? আমরা বললাম, না। তিনি বললেনঃ ঠিক সে রকম তোমাদের রবের দেখা্তেও কোন সন্দেহ থাকবে না। আর সে মাজলিসের প্রত্যেক লোক আল্লাহ্ তা’আলার সাথে কথা বলবে। এমনকি তিনি একে একে তাদের নাম ধরে ডেকে বলবেনঃ হে অমুকের পুত্র অমুক! অমুক দিন তুমি এমন কথা বলেছিলে, মনে আছে কি? এভাবে তিনি তাকে দুনিয়ার কিছু নাফরমানী ও বিদ্রোহের কথা মনে করিয়ে দিবেন। লোকটি তখন বলবে, হে আমার রব! আপনি কি আমাকে মাফ করেননি? তিনি বলবেনঃ হ্যাঁ, আমার ক্ষমার বদেৌলতেই তুমি এ জায়গাতে পৌঁছেছ। এই অবস্থায় হঠাৎ তাদের উপর এক খন্ড মেঘ এসে তাদেরকে ছেয়ে ফেলবে এবং তা হতে তাদের উপর সুগন্ধি (বৃষ্টি) বর্ষিত হবে, যেরূপ সুগন্ধ তারা ইতিপূর্বে কখনো কিছুতে পায়নি। আমাদের রব বলবেনঃ উঠো! আমি তোমাদের সম্মানে যে মেহমানদারি প্রস্তুত করেছি সেদিকে অগ্রসর হও এবং যা কিছু পছন্দ হয় তা গ্রহণ কর। তখন আমরা একটি বাজারে এসে হাযির হব, যা ফেরেশতারা ঘিরে রাখবে। সেখানে এরূপ পণ্যসামগ্রী থাকবে, যা না কোন চোখ দেখেছে, না কোন কান শুনেছে এবং না কখনো অন্তরের কল্পনায় ভেসেছে। আমরা সেখানে যা চাইব, তাই তুলে দেয়া হবে। তবে বেচা-কেনা হবে না। আর সে বাজারেই জান্নাতীরা একে অপরের সাথে দেখা করবে। উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন জান্নাতী সামনে এগিয়ে তাঁর চাইতে অল্প মর্যাদাবান জান্নাতীর সাথে দেখা করবে। তবে সেখানে তাদের মধ্যে উঁচু-নীচু বলতে কিছু থাকবে না। তিনি তার পোশাক দেখে অস্থির হয়ে যাবেন। এ কথা শেষ হতে না হতেই তিনি মনে করতে থাকবেন যে, তার গায়ে আগের চাইতে উত্তম পোশাক দেখা যাচ্ছে। আর এরূপ এজন্যই হবে যে, সেখানে কারো দুঃখ-কষ্ট বা দুশ্চিন্তা স্পর্শ করবে না। তারপর আমরা নিজেদের স্থানে ফিরে আসব এবং নিজ নিজ স্ত্রীদের দেখা পাব। তারা তখন বলবে, মারহাবা, স্বাগতম! কি ব্যাপার! যে রূপ-সৌন্দর্য নিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলে, তার চাইতে উত্তম সৌন্দর্য নিয়ে ফিরে এসেছ। আমরা বলব, আজ আমরা আমাদের আল্লাহ্ তা’আলার সাথে মাজলিসে বসেছিলাম। কাজেই এ পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে। আর এটাই ছিল স্বাভাবিক।
যঈফ, ইবনু মাযাহ (৪৩৩৬)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদিসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই এই হাদিস জেনেছি। সুয়াইদ ইবনু আমর আওযাঈর সূত্রে এই হাদীদের অংশ বিশেষ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৫৫০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، وَهَنَّادٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَسُوقًا مَا فِيهَا شِرَاءٌ وَلاَ بَيْعٌ إِلاَّ الصُّوَرَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ فَإِذَا اشْتَهَى الرَّجُلُ صُورَةً دَخَلَ فِيهَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে যে বাজার আছে, তাতে নারী-পুরুষের প্রতিকৃতি ছাড়া আর কিছুর ক্রয়-বিক্রয় হবে না। যখন কেউ কোন প্রতিকৃতির আকাঙ্ক্ষা করবে, সঙ্গে সঙ্গে তা পেয়ে যাবে।
যঈফ, মিশকাত (৫৬৪৬), যঈফা (১৯৮২)
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদিসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৬. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার দীদার (সাক্ষাৎ) লাভ
২৫৫১
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْبَجَلِيِّ، قَالَ كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَنَظَرَ إِلَى الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ فَقَالَ ” إِنَّكُمْ سَتُعْرَضُونَ عَلَى رَبِّكُمْ فَتَرَوْنَهُ كَمَا تَرَوْنَ هَذَا الْقَمَرَ لاَ تُضَامُونَ فِي رُؤْيَتِهِ فَإِنِ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ لاَ تُغْلَبُوا عَلَى صَلاَةٍ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَصَلاَةٍ قَبْلَ غُرُوبِهَا فَافْعَلُوا ” . ثُمَّ قَرَأََ: (سَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ الْغُرُوبِ ) قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ আল-বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা এক পূর্ণিমার রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি চাঁদের দিকে দৃষ্টিপাত করে বললেনঃ তোমাদেরকে খুব শীঘ্রই তোমাদের প্রভুর সামনে উপস্থিত করা হবে। তখন তোমরা অবাধে তাঁর সাক্ষাৎ লাভ করবে, যেমনভাবে এই চাঁদকে দেখতে পাচ্ছো। তাঁকে দেখার মধ্যে কোন রকম সংশয় থাকবে না। তোমরা দুনিয়ার কাজে পরাভূত না হয়ে সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বের নামায অর্থাৎ ফজর ও আসরের নামায আদায় কর। তারপর তিনি এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ “সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে তোমার প্রভুর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর”– (সূরা ক্বাফ ৩৯)।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (১৭৭), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ صُهَيْبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي قَوْلِه: (لِلَّذِينَ أَحْسَنُوا الْحُسْنَى وَزِيَادَةٌ ) قَالَ ” إِذَا دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ نَادَى مُنَادٍ إِنَّ لَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ مَوْعِدًا . قَالُوا أَلَمْ يُبَيِّضْ وُجُوهَنَا وَيُنَجِّنَا مِنَ النَّارِ وَيُدْخِلْنَا الْجَنَّةَ قَالُوا بَلَى . قَالَ فَيُكْشَفُ الْحِجَابُ قَالَ فَوَاللَّهِ مَا أَعْطَاهُمْ شَيْئًا أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِنَ النَّظَرِ إِلَيْهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ إِنَّمَا أَسْنَدَهُ حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ وَرَفَعَهُ . وَرَوَى سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ وَحَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى قَوْلَهُ .
সুহাইব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সুহাইব (রাঃ) হতে আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী “যারা মঙ্গলজনক কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে মঙ্গল এবং আরো অধিক”- (সূরা ইউনুস ২৬) প্রসঙ্গে বর্ণিত। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশের পর একজন আহবানকারী (ফেরেশতা) ডেকে বলবেন, তোমাদের জন্য আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট আরো প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তারা (জান্নাতীরা) বলবে, তিনি কি আমাদের চেহারা উজ্জ্বল করে এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাননি? ফেরেশতারা বলবেন, হ্যাঁ। তারপর পর্দা খুলে যাবে (এবং আল্লাহ্ তা‘আলার সাক্ষাৎ সংঘটিত হবে)। তিনি বলেন, আল্লাহ্র কসম! তিনি মানুষকে তাঁর সাক্ষাতের চেয়ে বেশি পছন্দনীয় ও আকাঙ্ক্ষিত কোন জিনিসই প্রদান করেননি।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (১৮৭), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাম্মাদ ইবনু সালামা (রাহঃ) মুসনাদ ও মারফু হিসাবে বর্ণনা করেছেন। সুলাইমান ইবনুল মুগীরা এই হাদীসটি সাবিত আল-বুনানীর বরাতে ‘আবদুর রাহমান ইবনু আবূ লাইলার বক্তব্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫৫৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنِي شَبَابَةُ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ ثُوَيْرٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ مَنْزِلَةً لَمَنْ يَنْظُرُ إِلَى جِنَانِهِ وَأَزْوَاجِهِ وَنَعِيمِهِ وَخَدَمِهِ وَسُرُرِهِ مَسِيرَةَ أَلْفِ سَنَةٍ وَأَكْرَمَهُمْ عَلَى اللَّهِ مَنْ يَنْظُرُ إِلَى وَجْهِهِ غُدْوَةً وَعَشِيَّةً ” . ثُمَّ قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم: (وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَاضِرَةٌ * إِلَى رَبِّهَا نَاظِرَةٌ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ إِسْرَائِيلَ عَنْ ثُوَيْرٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ مَرْفُوعٌ . وَرَوَاهُ عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبْجَرَ عَنْ ثُوَيْرٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ مَوْقُوفٌ .
وَرَوَى عُبَيْدُ اللَّهِ الأَشْجَعِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ ثُوَيْرٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَوْلَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ حَدَّثَنَا بِذَلِكَ أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ الأَشْجَعِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ ثُوَيْرٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، نَحْوَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একজন সাধারণ মর্যাদাসম্পন্ন জান্নাতীর বাগান, স্ত্রী, আমোদ-প্রমোদের সামগ্রী, খাদিম এবং খাট-পালং ও আসনসমূহ কেউ দেখতে চাইলে তা তার জন্য হাজার বছরের পথ। তাদের মধ্যে আল্লাহ তা’আলার নিকটে সবচাইতে মর্যাদাবান ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর চেহারা দর্শন করবে। তারপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেনঃ “কতক মুখমন্ডল সেদিন উজ্জ্বল হবে এবং তারা তাদের রবের দিকে তাকিয়ে থাকবে”- (সূরা আল-ক্বিয়ামাহ্ঃ ২২-২৩)।
য’ঈফ; য’ঈফাহ্- হাঃনং- ১৯৮৫
আবূ ঈসা বলেনঃ বিভিন্নভাবে এ হাদিসটি ইসরা’ঈল হতে তিনি সুওয়াইর-ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে এ সূত্রে মারফূ’ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। ‘আবদুল মালিক ইবনু আবজার-সুওয়াইর হতে ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর সূত্রে মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ‘উবাইদুল্লাহ আল-আশজা’ঈ (রহঃ) সুফিয়ান হতে তিনি সুওয়াইর হতে তিনি মুজাহিদ হতে তিনি ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে তার বক্তব্য হিসেবে রিওয়ায়াত করেছেন, মারফূ’রূপে বর্ণনা করেননি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৭. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ্র সাক্ষাতে কোন ভিড় হবে না
২৫৫৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ طَرِيفٍ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا جَابِرُ بْنُ نُوحٍ الْحِمَّانِيُّ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” تُضَامُّونَ فِي رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ وَتُضَامُّونَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ ” . قَالُوا لاَ . قَالَ ” فَإِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ كَمَا تَرَوْنَ الْقَمَرَ لَيْلَةَ الْبَدْرِ لاَ تُضَامُّونَ فِي رُؤْيَتِهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَهَكَذَا رَوَى يَحْيَى بْنُ عِيسَى الرَّمْلِيُّ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرَوَى عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَحَدِيثُ ابْنِ إِدْرِيسَ عَنِ الأَعْمَشِ غَيْرُ مَحْفُوظٍ وَحَدِيثُ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَصَحُّ وَهَكَذَا رَوَاهُ سُهَيْلُ بْنُ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ مِثْلُ هَذَا الْحَدِيثِ وَهُوَ حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সাহাবীদেরকে প্রশ্ন করেনঃ পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখতে তোমরা কি কোন প্রকার ভিড় অনুভব করো? সূর্য দেখার মধ্যে কি তোমরা কোন রকম ভিড় অনুভব করো? তারা বললেন, না। তিনি বললেনঃ তোমরা যেমনিভাবে পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে পাও, ঠিক তেমনিভাবে তোমাদের প্রভুকেও দেখতে পাবে। আর এতে কোন ভীড় অনুভব করবে না।
সহীহঃ ইবনু মা-জাহ (১৭৮)। বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব। ইয়াহইয়া ইবনু ‘ঈসা আর-রামলী (রাহঃ) প্রমুখ আ’মাশ হতে, তিনি আবূ সালিহ হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে, এই সুত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইদরীস (রাহঃ) আমাশ হতে, তিনি আবূ সালিহ হতে, তিনি আবূ সা’ঈদ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে বর্ণনা করেছেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইদরীস–আমাশের সুত্রে বর্ণিত হাদীসটি সুরক্ষিত নয়। আবূ সালিহ–আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সুত্রে বর্ণিত হাদীসটি অনেক বেশি সহীহ। সুহাইল ইবনু আবূ সালিহ (রাহঃ) তার বাবা হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একই রকম বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসটি আবূ সা’ঈদ (রাঃ) এর সুত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে ভিন্নভাবে বর্ণিত আছে। এই সূত্রটিও সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮. অনুচ্ছেদঃ
আল্লাহ্ তা‘আলা জান্নাতীদেরকে ডেকে বলবেন
২৫৫৫
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ لأَهْلِ الْجَنَّةِ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ . فَيَقُولُونَ لَبَّيْكَ رَبَّنَا وَسَعْدَيْكَ . فَيَقُولُ هَلْ رَضِيتُمْ فَيَقُولُونَ مَا لَنَا لاَ نَرْضَى وَقَدْ أَعْطَيْتَنَا مَا لَمْ تُعْطِ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ . فَيَقُولُ أَنَا أُعْطِيكُمْ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ . قَالُوا وَأَىُّ شَيْءٍ أَفْضَلُ مِنْ ذَلِكَ قَالَ أُحِلُّ عَلَيْكُمْ رِضْوَانِي فَلاَ أَسْخَطُ عَلَيْكُمْ أَبَدًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ সা’ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা জান্নাতবাসীদেরকে ডেকে বলবেন, হে জান্নাতবাসীগণ! তারা বলবে, “লাব্বাইকা রব্বানা ওয়া সা’দাইকা” (হে প্রভু! আমরা উপস্থিত)। তিনি বলবেন, তোমরা কি খুশি হয়েছো? তারা বলবে, আমরা কেন খুশি হবো না? আপনি তো আমাদেরকে ঐ সমস্ত জিনিস প্রদান করেছেন যা আপনার আর কোন সৃষ্টিকেই দেননি। তিনি বলবেন, আমি তোমাদেরকে এর চেয়েও উত্তম জিনিস প্রদান করবো। তারা বলবে, এর চেয়েও উত্তম জিনিস আর কি আছে? তিনি বলবেন, আমি তোমাদের উপর আমার চির সন্তুষ্টি বর্ষণ করছি, এরপর আর কখনো তোমাদের উপর অসন্তুষ্ট হবো না।
সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতবাসীরা নিজ নিজ বালাখানা (প্রাসাদ) থেকে পরস্পরকে দেখবে
২৫৫৬
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِنَّ أَهْلَ الْجَنَّةِ لَيَتَرَاءَوْنَ فِي الْغُرْفَةِ كَمَا تَتَرَاءَوْنَ الْكَوْكَبَ الشَّرْقِيَّ أَوِ الْكَوْكَبَ الْغَرْبِيَّ الْغَارِبَ فِي الأُفُقِ أَوِ الطَّالِعَ فِي تَفَاضُلِ الدَّرَجَاتِ ” . فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أُولَئِكَ النَّبِيُّونَ . قَالَ ” بَلَى وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ وَأَقْوَامٌ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَصَدَّقُوا الْمُرْسَلِينَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা নিজেদের অট্টালিকা (প্রাসাদ) থেকে সম্মান অনুযায়ী পরস্পরকে দেখতে পাবে, যেভাবে তোমরা পূর্বাকাশে উদয়াচলে ও পশ্চিমাকাশে অস্তাচলে নক্ষত্রসমুহ দেখতে পাও। তারা প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তারা কি নাবীগণ? তিনি বলেন, হ্যাঁ। সেই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন! সেসব ব্যক্তিও উচ্চ সম্মানের আসনে থাকবে যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের প্রতি বিশ্বাস স্হাপন করেছে এবং রাসূলদেরকে সত্য বলে স্বীকার করেছে।
সহীহঃ রাওযুন নাযীর (২/৩৬০-৩৬১), তা’লীকুর রাগীব (৪/২৫১), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২০. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতী ও জাহান্নামীদের চিরস্হায়ী বাসস্হান
২৫৫৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” يَجْمَعُ اللَّهُ النَّاسَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي صَعِيدٍ وَاحِدٍ ثُمَّ يَطَّلِعُ عَلَيْهِمْ رَبُّ الْعَالَمِينَ فَيَقُولُ أَلاَ يَتْبَعُ كُلُّ إِنْسَانٍ مَا كَانُوا يَعْبُدُونَهُ . فَيُمَثَّلُ لِصَاحِبِ الصَّلِيبِ صَلِيبُهُ وَلِصَاحِبِ التَّصَاوِيرِ تَصَاوِيرُهُ وَلِصَاحِبِ النَّارِ نَارُهُ فَيَتْبَعُونَ مَا كَانُوا يَعْبُدُونَ وَيَبْقَى الْمُسْلِمُونَ فَيَطَّلِعُ عَلَيْهِمْ رَبُّ الْعَالَمِينَ فَيَقُولُ أَلاَ تَتَّبِعُونَ النَّاسَ فَيَقُولُونَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْكَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْكَ اللَّهُ رَبُّنَا هَذَا مَكَانُنَا حَتَّى نَرَى رَبَّنَا . وَهُوَ يَأْمُرُهُمْ وَيُثَبِّتُهُمْ ثُمَّ يَتَوَارَى ثُمَّ يَطَّلِعُ فَيَقُولُ أَلاَ تَتَّبِعُونَ النَّاسَ فَيَقُولُونَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْكَ نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْكَ اللَّهُ رَبُّنَا وَهَذَا مَكَانُنَا حَتَّى نَرَى رَبَّنَا . وَهُوَ يَأْمُرُهُمْ وَيُثَبِّتُهُمْ ” . قَالُوا وَهَلْ نَرَاهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” وَهَلْ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ ” . قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ ” فَإِنَّكُمْ لاَ تُضَارُّونَ فِي رُؤْيَتِهِ تِلْكَ السَّاعَةَ ثُمَّ يَتَوَارَى ثُمَّ يَطَّلِعُ فَيُعَرِّفُهُمْ نَفْسَهُ ثُمَّ يَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَاتَّبِعُونِي . فَيَقُومُ الْمُسْلِمُونَ وَيُوضَعُ الصِّرَاطُ فَيَمُرُّونَ عَلَيْهِ مِثْلَ جِيَادِ الْخَيْلِ وَالرِّكَابِ وَقَوْلُهُمْ عَلَيْهِ سَلِّمْ سَلِّمْ . وَيَبْقَى أَهْلُ النَّارِ فَيُطْرَحُ مِنْهُمْ فِيهَا فَوْجٌ ثُمَّ يُقَالُ هَلِ امْتَلأْتِ فَتَقُولُ هَلْ مِنْ مَزِيدٍ . ثُمَّ يُطْرَحُ فِيهَا فَوْجٌ فَيُقَالُ هَلِ امْتَلأْتِ . فَتَقُولُ هَلْ مِنْ مَزِيدٍ . حَتَّى إِذَا أُوعِبُوا فِيهَا وَضَعَ الرَّحْمَنُ قَدَمَهُ فِيهَا وَأُزْوِيَ بَعْضُهَا إِلَى بَعْضٍ ثُمَّ قَالَ قَطْ قَالَتْ قَطْ قَطْ فَإِذَا أَدْخَلَ اللَّهُ أَهْلَ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ وَأَهْلَ النَّارِ النَّارَ قَالَ أُتِيَ بِالْمَوْتِ مُلَبَّبًا فَيُوقَفُ عَلَى السُّورِ الَّذِي بَيْنَ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَأَهْلِ النَّارِ ثُمَّ يُقَالُ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ . فَيَطَّلِعُونَ خَائِفِينَ ثُمَّ يُقَالُ يَا أَهْلَ النَّارِ . فَيَطَّلِعُونَ مُسْتَبْشِرِينَ يَرْجُونَ الشَّفَاعَةَ فَيُقَالُ لأَهْلِ الْجَنَّةِ وَأَهْلِ النَّارِ هَلْ تَعْرِفُونَ هَذَا فَيَقُولُونَ هَؤُلاَءِ وَهَؤُلاَءِ قَدْ عَرَفْنَاهُ هُوَ الْمَوْتُ الَّذِي وُكِّلَ بِنَا . فَيُضْجَعُ فَيُذْبَحُ ذَبْحًا عَلَى السُّورِ الَّذِي بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ ثُمَّ يُقَالُ يَا أَهْلَ الْجَنَّةِ خُلُودٌ لاَ مَوْتَ وَيَا أَهْلَ النَّارِ خُلُودٌ لاَ مَوْتَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . – وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رِوَايَاتٌ كَثِيرَةٌ مِثْلُ هَذَا مَا يُذْكَرُ فِيهِ أَمْرُ الرُّؤْيَةِ أَنَّ النَّاسَ يَرَوْنَ رَبَّهُمْ وَذِكْرُ الْقَدَمِ وَمَا أَشْبَهَ هَذِهِ الأَشْيَاءَ وَالْمَذْهَبُ فِي هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنَ الأَئِمَّةِ مِثْلِ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَمَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَابْنِ عُيَيْنَةَ وَوَكِيعٍ وَغَيْرِهِمْ أَنَّهُمْ رَوَوْا هَذِهِ الأَشْيَاءَ ثُمَّ قَالُوا تُرْوَى هَذِهِ الأَحَادِيثُ وَنُؤْمِنُ بِهَا وَلاَ يُقَالُ كَيْفَ وَهَذَا الَّذِي اخْتَارَهُ أَهْلُ الْحَدِيثِ أَنْ تُرْوَى هَذِهِ الأَشْيَاءُ كَمَا جَاءَتْ وَيُؤْمَنُ بِهَا وَلاَ تُفَسَّرُ وَلاَ تُتَوَهَّمُ وَلاَ يُقَالُ كَيْفَ وَهَذَا أَمْرُ أَهْلِ الْعِلْمِ الَّذِي اخْتَارُوهُ وَذَهَبُوا إِلَيْهِ . وَمَعْنَى قَوْلِهِ فِي الْحَدِيثِ ” فَيُعَرِّفُهُمْ نَفْسَهُ ” . يَعْنِي يَتَجَلَّى لَهُمْ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাত দিবসে আল্লাহ্ তা’আলা সমস্ত মানুষকে একটি ময়দানে একত্রিত করবেন, তারপর রাব্বুল ‘আলামীন তাদের সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলবেনঃ পৃথিবীতে যে যার অনুসরণ করতো, এখন কেন সে তার পদাঙ্ক অনুসরণ করবে না? অতএব, ক্রুশ পূজারীদের জন্য ক্রুশ, মূর্তি পূজারীদের জন্য মূর্তি, অগ্নি উপাসকদের জন্য আগুন উপস্থাপন করা হবে এবং সকলেই নিজ নিজ পূজনীয় মা’বুদদের সাথে চলবে। আর মুসলিমগণ তাদের জায়গাতেই থেকে যাবে। রাববুল ‘আলামীন তাদের সামনে প্রকাশিত হয়ে বলবেনঃ তোমরা কেন ঐসব মানুষদের অনুসরণ করছো না? তারা বলবে, নাঊযুবিল্লাহ মিনকা, নাঊযুবিল্লাহ মিনকা (আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)। আল্লাহ্ তা’আলাই আমাদের প্রভু। আর এটা আমাদের জায়গা। আমরা আমাদের প্রভুর সাক্ষাৎ পাবার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত এ স্থান ছেড়ে যাবো না। তিনি তাদেরকে নির্দেশ দিবেন এবং তাদেরকে নিজ জায়গায় অটল রাখবেন। তারপর আল্লাহ্ তা’আলা অদৃশ্য হয়ে যাবেন। তিনি পুনরায় তাদের সামনে প্রকাশিত হয়ে বলবেন, তোমরা কেন ঐসব মানুষের অনুসরণ করছো না? তারা বলবে, নাঊযুবিল্লাহ মিনকা, নাঊযুবিল্লাহ মিনকা, আল্লাহ্ আমাদের রব এবং এটা আমাদের অবস্থানস্থল। আমরা আমাদের রবের দেখা পাওয়ার পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত এ জায়গা ছেড়ে যাবো না। তিনি তাদেরকে আদেশ দিবেন এবং স্বস্থানে দৃঢ় রাখবেন। সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা কি আমাদের প্রভুর দেখা পাবো? তিনি বললেনঃ তোমাদের কি পূর্ণিমার রাতের চাঁদ দেখতে অন্যদেরকে কষ্ট দিতে হয়? তারা বললেন, না, হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তিনি বললেনঃ অনুরূপভাবে সে সময় তোমরা তাঁকে দেখার জন্য তোমাদের কাউকেও যন্ত্রণা দিতে হবে না। তারপর আল্লাহ্ তা’আলা আড়ালে চলে যাবেন। তিনি পুনরায় তাদের সামনে প্রকাশিত হয়ে নিজের পরিচিতি উপস্থাপন করে বলবেনঃ আমিই তোমাদের প্রভু। তোমরা আমার অনুসরণ কর। মুসলিমগণ উঠে দাঁড়াবে। চলার পথে পুলসিরাত স্থাপন করা হবে। তারা তা খুব সহজেই দ্রুতগামী ঘোড়া ও উটের মতো অতিক্রম করবে এবং এর উপরে তাদের ধ্বনি হবেঃ ‘সাল্লিম সাল্লিম’ (হে আল্লাহ্ আমাদেরকে শান্তিতে রাখো)। জাহান্নামীরা অতিক্রম না করতে পেরে এখানেই থেকে যাবে। তাদের মধ্য হতে একটি দলকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে এবং জাহান্নামকে প্রশ্ন করা হবে, তোর পেট ভরেছে কি? সে বলবে, আরো আছে কি? আবার আরেকটি দলকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে এবং প্রশ্ন করা হবে, তোর পেট ভরেছে কি? সে বলবে, আরো আছে কি? এভাবে সমস্ত জাহান্নামীকে যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, তখন দয়ালু প্ৰভু আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর পা এর উপর রাখবেন এবং এর এক অংশ আরেক অংশের সাথে সংকুচিত হয়ে যাবে। তিনি বলবেন, যথেষ্ট হয়েছে তো? জাহান্নাম বলবে, হ্যাঁ, যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট হয়েছে।
এরপর আল্লাহ্ তা’আলা যখন জান্নাতীদেরকে জান্নাতে এবং জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন, তখন ‘মৃত্যু’-কে গলায় কাপড় বেঁধে টেনে আনা হবে এবং জান্নাতী ও জাহান্নামীদের মাঝখানের প্রাচীরে রাখা হবে। তারপর ডেকে বলা হবে, হে জান্নাতীগণ! তারা ভয়ে ভয়ে আত্মপ্রকাশ করবে। তারপর বলা হবে, হে জাহান্নামীগণ! তারাও সুসংবাদ মনে করে শাফা‘আত লাভের আশায় আত্মপ্রকাশ করবে। তারপর জান্নাতী ও জাহান্নামীদেরকে প্রশ্ন করা হবে, তোমরা কি একে চিনো? জান্নাতী ও জাহান্নামীরা বলবে, হ্যাঁ আমরা একে চিনে ফেলেছি। এটা ‘মৃত্যু’ যা আমাদের উপর নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। তারপর মৃত্যুকে চিৎ করে শোয়ানো হবে এবং জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যকার প্রাচীরের উপর যবেহ করা হবে। তারপর বলা হবে, হে জান্নাতীগণ! তোমরা চিরকাল জান্নাতে থাকবে। এরপর আর মৃত্যু নেই। হে জাহান্নামীগণ! তোমরা চিরকাল জাহান্নামে থাকবে, এরপর আর মৃত্যু নেই।
সহীহ : তাখরীজ তাহাভীয়া (৫৭৬), হাদীসটি বুখারী ও মুসলিমে সংক্ষিপ্তভাবে আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আল্লাহ্ তা’আলার সাক্ষাৎ লাভ বিষয়ক এরকম অনেক হাদীস বর্ণিত আছে। মানুষ আল্লাহ্ তা’আলার সাক্ষাৎ লাভ করবে এবং (তাঁর) পা বা একই রকম বিষয়েরও উল্লেখ আছে। সুফইয়ান সাওরী, মালিক ইবনু আনাস, ইবনু মুবারাক, সুফইয়ান ইবনু উআইনা ও ওয়াকী (রাহঃ) প্রমুখ ইমামগণ এই জাতীয় বিষয় বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, তা বর্ণনা করা যাবে এবং আমরা এগুলোতে বিশ্বাস করি। কিন্তু এগুলো কেমন হবে তা প্রশ্ন করা যাবে না। মুহাদ্দিসগণও এই মতামত গ্রহণ করেছেন যে, যেভাবে এই জাতীয় হাদীস বর্ণিত হয়ে এসেছে, ঠিক সেভাবেই বর্ণনা করা যাবে এবং এই বিষয়ের উপর বিশ্বাসও রাখতে হবে। কিন্তু এর ব্যাখ্যা করা যাবে না এবং সংশয় পোষণও করা যাবে না, তাঁর হাত-পা এগুলো কেমন তাও বলা যাবে না। আলিমগণ এই অভিমতই অবলম্বন করেছেন। আর হাদীসে বর্ণিত হয়েছে “তিনি তাদের সামনে তাঁর পরিচিতি উপস্থাপন করবেন”-এর তাৎপর্য এই যে, তিনি তাদের সামনে নিজের নূরের তাজাল্লী প্রকাশ করবেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫৫৮
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ فُضَيْلِ بْنِ مَرْزُوقٍ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، يَرْفَعُهُ قَالَ “ إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ أُتِيَ بِالْمَوْتِ كَالْكَبْشِ الأَمْلَحِ فَيُوقَفُ بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ فَيُذْبَحُ وَهُمْ يَنْظُرُونَ فَلَوْ أَنَّ أَحَدًا مَاتَ فَرَحًا لَمَاتَ أَهْلُ الْجَنَّةِ وَلَوْ أَنَّ أَحَدًا مَاتَ حَزَنًا لَمَاتَ أَهْلُ النَّارِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি মারফু’ হিসেবে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে মৃত্যুকে উপস্থিত করা হবে সাদা-কালো বর্ণের ভেড়ার আকারে এবং জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে যবেহ করা হবে। আর তারা (জান্নাতী ও জাহান্নামীরা) তা দেখতে থাকবে। কেউ যদি আনন্দ-উল্লাসের কারণে মৃত্যুবরণ করতো, তাহলে জান্নাতবাসীরা (এতে আশ্চর্য হয়ে) মারা যেতো। আর কেউ যদি চিন্তা ও দুঃখের কারণে মৃত্যুবরণ করতো তাহলে জাহান্নামীরা (দুঃখ ও ক্ষোভে) মারা যেতো।
“কেউ যদি মৃত্যুবরণ করতো” এই অংশ ব্যতীত হাদীসটি সহীহ, যঈফাহ (২৬৬৯), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২১. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাত কষ্টদায়ক কার্য দ্বারা এবং জাহান্নাম কু-প্রবৃত্তি ও লালসা দ্বারা বেষ্টিত
২৫৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ، وَثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ حُفَّتِ الْجَنَّةُ بِالْمَكَارِهِ وَحُفَّتِ النَّارُ بِالشَّهَوَاتِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাত দুঃখ-কষ্ট ও শ্রমসাধ্য বিষয় দ্বারা ঘেরা এবং জাহান্নাম কু-প্রবৃত্তি ও লোভ-লালসা দ্বারা ঘেরা।
সহীহ : মুসলিম (৮/১৪২-১৪৩)।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ এবং উপরোক্ত সূত্রে গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫৬০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ الْجَنَّةَ وَالنَّارَ أَرْسَلَ جِبْرِيلَ إِلَى الْجَنَّةِ فَقَالَ انْظُرْ إِلَيْهَا وَإِلَى مَا أَعْدَدْتُ لأَهْلِهَا فِيهَا قَالَ فَجَاءَهَا وَنَظَرَ إِلَيْهَا وَإِلَى مَا أَعَدَّ اللَّهُ لأَهْلِهَا فِيهَا قَالَ فَرَجَعَ إِلَيْهِ قَالَ فَوَعِزَّتِكَ لاَ يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ إِلاَّ دَخَلَهَا . فَأَمَرَ بِهَا فَحُفَّتْ بِالْمَكَارِهِ فَقَالَ ارْجِعْ إِلَيْهَا فَانْظُرْ إِلَى مَا أَعْدَدْتُ لأَهْلِهَا فِيهَا قَالَ فَرَجَعَ إِلَيْهَا فَإِذَا هِيَ قَدْ حُفَّتْ بِالْمَكَارِهِ فَرَجَعَ إِلَيْهِ فَقَالَ وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خِفْتُ أَنْ لاَ يَدْخُلَهَا أَحَدٌ . قَالَ اذْهَبْ إِلَى النَّارِ فَانْظُرْ إِلَيْهَا وَإِلَى مَا أَعْدَدْتُ لأَهْلِهَا فِيهَا . فَإِذَا هِيَ يَرْكَبُ بَعْضُهَا بَعْضًا فَرَجَعَ إِلَيْهِ فَقَالَ وَعِزَّتِكَ لاَ يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ فَيَدْخُلُهَا . فَأَمَرَ بِهَا فَحُفَّتْ بِالشَّهَوَاتِ فَقَالَ ارْجِعْ إِلَيْهَا . فَرَجَعَ إِلَيْهَا فَقَالَ وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيتُ أَنْ لاَ يَنْجُوَ مِنْهَا أَحَدٌ إِلاَّ دَخَلَهَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা জান্নাত-জাহান্নাম সৃষ্টি করার পর জিবরীল (আঃ)-কে জান্নাতের দিকে পাঠিয়ে দিয়ে বলেনঃ জান্নাত এবং আমি এর মধ্যে জান্নাতীদের জন্য যেসব দ্রব্যাদি সৃষ্টি করে রেখেছি, তুমি সেগুলো দেখে এসো। তিনি বলেনঃ তারপর তিনি জান্নাতে গিয়ে আল্লাহ্ তা’আলার সৃষ্টিকৃত সমস্ত দ্রব্যাদি দেখলেন এবং তাঁর নিকট ফিরে এসে বললেন, আপনার সম্মানের শপথ! যে কেউ জান্নাতের সুখ-স্বাচ্ছন্দ প্রসঙ্গে শুনবে, সে-ই তাতে প্রবেশের চেষ্টা করবে। তারপর তিনি আদেশ করলেন। ফলে কষ্ট-মুসীবাতের বস্তু দ্বারা জান্নাতকে ঘেরাও করা হলো। তিনি জিবরীল (আঃ)-কে পুনরায় বললেনঃ তুমি আবার জান্নাতে প্রবেশ কর এবং জান্নাতীদের জন্য আমার তৈরিকৃত সামগ্ৰী দেখে এসো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তারপর তিনি সেখানে ফিরে গিয়ে দেখতে পেলেন যে, তা কষ্ট ও মুসীবাতের বস্তু দ্বারা ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। তিনি আল্লাহ্ তা’আলার নিকট ফিরে এসে বললেন, আপনার সম্মানের শপথ! আমার ভয় হচ্ছে যে, এতে কোন ব্যক্তিই যেতে পারবে না। এবার আল্লাহ্ তা’আলা তাকে বললেনঃ আমি জাহান্নাম এবং জাহান্নামীদের জন্য যে আযাব তৈরি করে রেখেছি তুমি গিয়ে তা দেখে এসো। তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পেলেন যে, এর একাংশ অন্য অংশের উপর চড়াও হচ্ছে (একটি অন্যটিকে গ্রাস করছে)। তিনি তা দেখার পর আল্লাহ্ তা’আলার সামনে ফিরে এসে বললেন, আপনার সম্মানের শপথ! যে ব্যক্তি এর বর্ণনা শুনবে সে এতে প্রবেশ করবে না। তারপর তাঁর নির্দেশে জাহান্নামকে লোভ-লালসা দ্বারা ঘিরে ফেলা হলো। এবার জিবরীল (আঃ)-কে তিনি বললেনঃ তুমি আবার সেখানে যাও (এবং তা দেখে এসো)। তিনি সেখানে আবারো গেলেন এবং ফিরে এসে বললেন, আপনার সম্মানের কসম! আমার তো ধারণা হচ্ছে যে, কেউই এই থেকে মুক্তি পাবে না, সকলেই এতে প্রবেশ করবে।
হাসান সহীহ : তাখরীজুত তানকীল (২/১৭৭)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
২২. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাত ও জাহান্নামের তর্ক-বিতর্ক
২৫৬১
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ احْتَجَّتِ الْجَنَّةُ وَالنَّارُ فَقَالَتِ الْجَنَّةُ يَدْخُلُنِي الضُّعَفَاءُ وَالْمَسَاكِينُ . وَقَالَتِ النَّارُ يَدْخُلُنِي الْجَبَّارُونَ وَالْمُتَكَبِّرُونَ . فَقَالَ لِلنَّارِ أَنْتِ عَذَابِي أَنْتَقِمُ بِكِ مِمَّنْ شِئْتُ . وَقَالَ لِلْجَنَّةِ أَنْتِ رَحْمَتِي أَرْحَمُ بِكِ مَنْ شِئْتُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যে তর্ক-বির্তক হলো। জান্নাত বললো, গরীব-মিসকীন ও দুর্বল ব্যক্তি আমার মধ্যে প্রবেশ করবে। জাহান্নাম বললো, যতো স্বৈরাচারী যালিম ও অহংকারীরা আমার মধ্যে প্রবেশ করবে। আল্লাহ্ তা’আলা জাহান্নামকে বলেনঃ তুই আমার আযাব, আমি তোর দ্বারা যার থেকে ইচ্ছা প্রতিশোধ গ্রহণ করবো। তিনি জান্নাতকে বলেনঃ তুমি আমার রাহমাত, আমি তোমার দ্বারা যাকে ইচ্ছা উপকৃত করবো।
হাসান সহীহ : যিলালুল জান্নাত (৫২৮), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
২৩. অনুচ্ছেদঃ
অতি সাধারণ জান্নাতীর মর্যাদা প্রসঙ্গে
২৫৬২
حَدَّثَنَا سُوَيْدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا رِشْدِينُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ دَرَّاجٍ، عَنْ أَبِي الْهَيْثَمِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ الَّذِي لَهُ ثَمَانُونَ أَلْفَ خَادِمٍ وَاثْنَتَانِ وَسَبْعُونَ زَوْجَةً وَتُنْصَبُ لَهُ قُبَّةٌ مِنْ لُؤْلُؤٍ وَزَبَرْجَدٍ وَيَاقُوتٍ كَمَا بَيْنَ الْجَابِيَةِ إِلَى صَنْعَاءَ ” .
وَبِهَذَا الإِسْنَادِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” مَنْ مَاتَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ مِنْ صَغِيرٍ أَوْ كَبِيرٍ يُرَدُّونَ بَنِي ثَلاَثِينَ فِي الْجَنَّةِ لاَ يَزِيدُونَ عَلَيْهَا أَبَدًا وَكَذَلِكَ أَهْلُ النَّارِ ” . وَبِهَذَا الإِسْنَادِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِنَّ عَلَيْهِمُ التِّيجَانَ إِنَّ أَدْنَى لُؤْلُؤَةٍ مِنْهَا لَتُضِيءُ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ رِشْدِينَ بْنِ سَعْدٍ .
আবূ সা’ঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অতি সাধারণ মর্যাদা সম্পন্ন একজন জান্নাতীরও আশি হাজার খাদিম ও বাহাত্তর জন হূর থাকবে। আর তার জন্য মণিমুক্তা, যমরূদ ও ইয়াকূতের তাঁবু নির্মাণ করা হবে। সেটা এত বড় হবে যে, তা সিরিয়ার অন্তর্গত ‘জাবিয়া’ হতে ইয়ামানের ‘সানআ’ পর্যন্ত সমান জায়গা জুড়ে বিস্তৃত হবে।
যঈফ মিশকাত (৫৬৪৮) যঈফ জামি’ সাগীর (২৬৬)
আর এ সনদেই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ যে জান্নাতী মারা গেছে চাই সে কম বয়সী হোক বা বেশী বয়সী, সে ত্রিশ বছরের যুবক হয়ে জান্নাতে যাবে, এর বেশী বয়স আর হবে না। ঠিক জাহান্নামীদের বয়স ও অনুরূপ হবে। একই সনদে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সাধারণ জান্নাতীদের মাথায় তাজ (মুকুট) পরানো হবে। আর এ তাজের সবচাইতে নিম্নমানের মুক্তা এমন হবে যে, এটা পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত সবকিছু আলোকিত করবে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি গারীব। আমরা শুধুমাত্র রিশদীন ইবনু সাদের রিওয়ায়াত হিসাবে এ হাদিস জেনেছি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৫৬৩
حَدَّثَنَا بُنْدَارٌ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ عَامِرٍ الأَحْوَلِ، عَنْ أَبِي الصِّدِّيقِ النَّاجِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” الْمُؤْمِنُ إِذَا اشْتَهَى الْوَلَدَ فِي الْجَنَّةِ كَانَ حَمْلُهُ وَوَضْعُهُ وَسِنُّهُ فِي سَاعَةٍ كَمَا يَشْتَهِي ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي هَذَا فَقَالَ بَعْضُهُمْ فِي الْجَنَّةِ جِمَاعٌ وَلاَ يَكُونُ وَلَدٌ . هَكَذَا رُوِيَ عَنْ طَاوُسٍ وَمُجَاهِدٍ وَإِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ . وَقَالَ مُحَمَّدٌ قَالَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ فِي حَدِيثِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ” إِذَا اشْتَهَى الْمُؤْمِنُ الْوَلَدَ فِي الْجَنَّةِ كَانَ فِي سَاعَةٍ وَاحِدَةٍ كَمَا يَشْتَهِي ” . وَلَكِنْ لاَ يَشْتَهِي . قَالَ مُحَمَّدٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي رَزِينٍ الْعُقَيْلِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِنَّ أَهْلَ الْجَنَّةِ لاَ يَكُونُ لَهُمْ فِيهَا وَلَدٌ ” . وَأَبُو الصِّدِّيقِ النَّاجِيُّ اسْمُهُ بَكْرُ بْنُ عَمْرٍو وَيُقَالُ بَكْرُ بْنُ قَيْسٍ أَيْضًا .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মু’মিন লোক যদি জান্নাতে সন্তানের আকাঙ্ক্ষা করে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তার স্ত্রী গর্ভধারণ করবে ও সন্তান প্রসব করবে এবং সন্তানটি হবে বয়সে যুবক। তার ইচ্ছা অনুযায়ী মুহুর্তের মধ্যেই এসব হয়ে যাবে।
সহীহ : প্রাগুক্ত।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান গারীব। আলিমদের মধ্যে এই বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ বলেন, জান্নাতে সম্ভোগ হবে কিন্তু সন্তান জন্মগ্রহণ করবে না। তাঊস, মুজাহিদ ও ইবরাহীম নাখঈ প্রমুখ হতে এই রকম বর্ণিত আছে। মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল আল-বুখারী (রাহঃ) বলেন, উক্ত হাদীস প্রসঙ্গে ইসহাক ইবনু ইবরাহীম বলেন যে, মু’মিন লোক জান্নাতে সন্তানের ইচ্ছা করা মাত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে, কিন্তু সে এমন কিছু ইচ্ছা করবে না। মুহাম্মাদ (রাহঃ) আরো বলেন, আবূ রাযীন আল-উকাইলী হতেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে যে, সেখানে কোন জান্নাতীদের কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করবে না। আবূ সিদ্দীক আন নাজীর-এর নাম বাকর ইবনু ‘আমর তাকে বাকর ইবনু কাইসও বলা হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৪. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতের হুরদের কথার বর্ণনা
২৫৬৪
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، وَأَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَمُجْتَمَعًا لِلْحُورِ الْعِينِ يُرَفِّعْنَ بِأَصْوَاتٍ لَمْ يَسْمَعِ الْخَلاَئِقُ مِثْلَهَا قَالَ يَقُلْنَ نَحْنُ الْخَالِدَاتُ فَلاَ نَبِيدُ وَنَحْنُ النَّاعِمَاتُ فَلاَ نَبْأَسُ وَنَحْنُ الرَّاضِيَاتُ فَلاَ نَسْخَطُ طُوبَى لِمَنْ كَانَ لَنَا وَكُنَّا لَهُ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَلِيٍّ حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে আয়াতলোচনা হুরদের সমবেত হওয়ার একটি জায়গা রয়েছে। তারা সেখানে এমন সুরেলা আওয়াজে গান গাইবে, যেমন আওয়াজ কোন মাখলূক ইতিপূর্বে কখনো শুনেনি। তারা এই বলে গান গাইবেঃ আমরা তো চিরঙ্গিনী, আমাদের ধ্বংস নেই। আমরা তো আনন্দ-উল্লাসের জন্যই, দুঃখ-কষ্ট নেই আমাদের। আমরা চির সন্তুষ্ট, আমরা কখনো অসন্তুষ্ট হব না। তাদের কতই না সৌভাগ্য যাদের জন্য আমরা এবং আমাদের জন্য যারা।
যঈফ, যঈফা (১৯৮২)
এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরাইরা, আবূ সাঈদ ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদিস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৫৬৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، فِي قَوْلِهِ عَزَّ وَجَلَّ: (فَهُمْ فِي رَوْضَةٍ يُحْبَرُونَ ) قَالَ السَّمَّاعُ . وَمَعْنَى السَّمَّاعِ مِثْلَ مَا وَرَدَ فِي الْحَدِيثِ أَنَّ الْحُورَ الْعِينَ يُرَفِّعْنَ بِأَصْوَاتِهِنَّ .
ইয়াহইয়া ইবনু কাসীর (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইয়াহইয়া ইবনু কাসীর (রাহঃ) হতে আল্লাহ্ তা’আলার বাণী, “তারা তো বাগানের মধ্যে আনন্দিত থাকবে” (রূমঃ ১৫) আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ তারা গান শুনবে।
সনদ সহিহ মাকতু, হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী গানের অর্থ হল হুরদের উচ্চকণ্ঠে গানের আওয়াজ।
হাদিসের মানঃ সহিহ মাকতু
- সরাসরি
২৫. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতের ঝর্ণাসমূহের বর্ণনা
২৫৬৬
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي الْيَقْظَانِ، عَنْ زَاذَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ ثَلاَثَةٌ عَلَى كُثْبَانِ الْمِسْكِ – أُرَاهُ قَالَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَغْبِطُهُمُ الأَوَّلُونَ وَالآخِرُونَ رَجُلٌ يُنَادِي بِالصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ وَرَجُلٌ يَؤُمُّ قَوْمًا وَهُمْ بِهِ رَاضُونَ وَعَبْدٌ أَدَّى حَقَّ اللَّهِ وَحَقَّ مَوَالِيهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ . وَأَبُو الْيَقْظَانِ اسْمُهُ عُثْمَانُ بْنُ عُمَيْرٍ وَيُقَالُ ابْنُ قَيْسٍ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিন প্রকার লোক কিয়ামতের দিন কস্তুরীর স্তূপের উপর আসন গ্রহণ করবে। পূর্ববর্তী ও পরবর্তীগণ তাদের এ মর্যাদায় ঈর্ষা করবে। ১) যে ব্যক্তি দিন-রাত পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের আযান দেয়; ২) যে ব্যক্তি কোন জাতির নেতৃত্ব করে আর তারা তার উপর সন্তুষ্ট থাকে এবং ৩) যে গোলাম আল্লাহ্ তা’আলার ও তার মনিবের হক আদায় করে।
য’ঈফ; মিশকাত-হাঃনং-৬৬৬, নাকদুত্ তাজ-হাঃনং-১৮৪; তা’লীকুর রাগীব-হাঃনং-১/১১০
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদিসটি হাসান গারীব। আমরা শুধুমাত্র সুফিয়ান সাওরীর সূত্রে এ হাদিস জেনেছি। আবুল ইয়াকযানের নাম ‘উসমান ইবনু ‘উমাইর, মতান্তরে ইবনু ক্বাইস।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৫৬৭
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، يَرْفَعُهُ قَالَ “ ثَلاَثَةٌ يُحِبُّهُمُ اللَّهُ رَجُلٌ قَامَ مِنَ اللَّيْلِ يَتْلُو كِتَابَ اللَّهِ وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ صَدَقَةً بِيَمِينِهِ يُخْفِيهَا أُرَاهُ قَالَ مِنْ شِمَالِهِ وَرَجُلٌ كَانَ فِي سَرِيَّةٍ فَانْهَزَمَ أَصْحَابُهُ فَاسْتَقْبَلَ الْعَدُوَّ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَهُوَ غَيْرُ مَحْفُوظٍ . وَالصَّحِيحُ مَا رَوَى شُعْبَةُ وَغَيْرُهُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ ظَبْيَانَ عَنْ أَبِي ذَرٍّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَأَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ كَثِيرُ الْغَلَطِ .
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা তিন প্রকার লোককে ভালবাসেন। ১) যে ব্যক্তি রাত জেগে (তাহাজ্জুদ) নামাযে কুরআন তিলাওয়াত করে; ২) যে ব্যক্তি ডান হাতে দান-খাইরাত করে আর তার বাঁ হাতও তা টের পায়না এবং ৩) যে ব্যক্তি কোন সেনাবাহিনীতে যুদ্ধরত অবস্থায় থাকে, তার সাথীরা পরাজিত হয়ে গেলেও সে দুশমনের মুকাবিলা করতে থাকে।
য’ঈফ; মিশকাত-তাহক্বীক্ব ছানী, হাঃনং-১৯২১
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ উপরোক্ত সূত্রে এ হাদিসটি গারীব এবং অরক্ষিত। সঠিক হল সে বর্ণনাটি যা শু’বা (রহঃ) প্রমুখ মানসূর হতে তিনি রিব’ঈ ইবনু হিরাশ হতে তিনি যাইদ ইবনু যাব্ইয়ান হতে তিনি আবূ যার (রাঃ) হতে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এ সূত্রে বর্ণনা করেছেন। আবূ বাক্র ইবনু ‘আইয়্যাশ হাদিস বর্ণনায় প্রচুর ভুল করেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৫৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مَنْصُورِ بْنِ الْمُعْتَمِرِ، قَالَ سَمِعْتُ رِبْعِيَّ بْنَ حِرَاشٍ، يُحَدِّثُ عَنْ زَيْدِ بْنِ ظَبْيَانَ، يَرْفَعُهُ إِلَى أَبِي ذَرٍّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ ثَلاَثَةٌ يُحِبُّهُمُ اللَّهُ وَثَلاَثَةٌ يَبْغَضُهُمُ اللَّهُ فَأَمَّا الَّذِينَ يُحِبُّهُمُ اللَّهُ فَرَجُلٌ أَتَى قَوْمًا فَسَأَلَهُمْ بِاللَّهِ وَلَمْ يَسْأَلْهُمْ بِقَرَابَةٍ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُمْ فَمَنَعُوهُ فَتَخَلَّفَ رَجُلٌ بِأَعْقَابِهِمْ فَأَعْطَاهُ سِرًّا لاَ يَعْلَمُ بِعَطِيَّتِهِ إِلاَّ اللَّهُ وَالَّذِي أَعْطَاهُ وَقَوْمٌ سَارُوا لَيْلَتَهُمْ حَتَّى إِذَا كَانَ النَّوْمُ أَحَبَّ إِلَيْهِمْ مِمَّا يُعْدَلُ بِهِ نَزَلُوا فَوَضَعُوا رُءُوسَهُمْ فَقَامَ أَحَدُهُمْ يَتَمَلَّقُنِي وَيَتْلُو آيَاتِي وَرَجُلٌ كَانَ فِي سَرِيَّةٍ فَلَقِيَ الْعَدُوَّ فَهُزِمُوا وَأَقْبَلَ بِصَدْرِهِ حَتَّى يُقْتَلَ أَوْ يُفْتَحَ لَهُ . وَالثَّلاَثَةُ الَّذِينَ يَبْغَضُهُمُ اللَّهُ الشَّيْخُ الزَّانِي وَالْفَقِيرُ الْمُخْتَالُ وَالْغَنِيُّ الظَّلُومُ ” .
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، عَنْ شُعْبَةَ، نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَهَكَذَا رَوَى شَيْبَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، نَحْوَ هَذَا وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা তিন প্রকার লোককে ভালবাসেন এবং তিন প্রকার লোককে ঘৃণা করেন। যাদের আল্লাহ তা’আলা ভালবাসেন তারা হলঃ (১) কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের নিকটে এসে আল্লাহ্ তা’আলার ওয়াস্তে কিছু চাইল, তবে আত্মীয়তার সম্পর্কের দোহাই দিয়ে চায়নি। তারা তাকে কিছুই দিল না। এ সম্প্রদায়ের একটি লোক তাদের হতে আলাদা হয়ে গোপনে তাকে কিছু দান করল এবং তার দান প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা ও গ্রহণকারী ব্যতীত আর কেউ জানতে পারল না। (২) একটি দল সারারাত সফররত থাকল, তারপর সকল কিছুর তুলনায় ঘুম যখন তাদের প্রিয় হয়ে গেল, ফলে সব লোক (বালিশে) মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল; কিন্তু তাদেরই একজন আমার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে নামাযে দাঁড়ায় এবং আমার কুরআনের আয়াত তিলাওয়াত করে। (৩) আর এক ব্যক্তি কোন সেনাবাহিনীতে যোগদান করল। তারপর শত্রুর মুকাবিলা করে তার পক্ষের লোকেরা পরাজিত হল; কিন্তু সে বুক ফুলিয়ে সামনে এগিয়ে গেলো। তারপর সে হয় শহীদ হল কিংবা বিজয়ী হল। আর আল্লাহ তা’আলা যে তিনজনকে ঘৃণা করেন তারা হলঃ (১) বৃদ্ধ যেনাকারী; (২) অহংকারী ভিক্ষুক এবং (৩) অত্যাচারী সম্পদশালী ব্যক্তি।
যঈফ, মিশকাত (১৯২২)
মাহমূদ ইবনু গাইলান-নাযর ইবনু শুমাইল হতে তিনি শুবা (রহঃ) হতে উপরে বর্ণিত হাদিসের সমার্থক হাদিস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদিসটি সহীহ। শাইবান (রহঃ)- ও মানসূরের সূত্রে এরকমই বর্ণনা করেছেন। এই সূত্রে বর্ণিত রিওয়ায়াতটি আবূ বাক্র ইবনু আইয়্যাশের সূত্রে বর্ণিত হাদিসের তুলনায় অনেক বেশী সহীহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৬. অনুচ্ছেদঃ
ফুরাতের ভাণ্ডার
২৫৬৯
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ خُبَيْبِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ جَدِّهِ، حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ يُوشِكُ الْفُرَاتُ يَحْسِرُ عَنْ كَنْزٍ مِنْ ذَهَبٍ فَمَنْ حَضَرَهُ فَلاَ يَأْخُذْ مِنْهُ شَيْئًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফুরাত নদী শীঘ্রই তার স্বর্ণের ভাণ্ডার প্রকাশ করে দিবে। তখন যে লোক সেখানে উপস্থিত থাকবে, সে যেন তা থেকে কিছুই না নেয়।
সহীহ : বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫৭০
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ “ يَحْسِرُ عَنْ جَبَلٍ مِنْ ذَهَبٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উপরোক্ত হাদীসের একই রকম বর্ণনা আছে। তবে এতে তিনি বলেছেনঃ “ফুরাত হতে স্বর্ণের একটি পাহাড় বের হবে ”।
সহীহ : বুখারী, মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭. অনুচ্ছেদঃ
জান্নাতের নদীসমূহের বর্ণনা
২৫৭১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا الْجُرَيْرِيُّ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ مُعَاوِيَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ بَحْرَ الْمَاءِ وَبَحْرَ الْعَسَلِ وَبَحْرَ اللَّبَنِ وَبَحْرَ الْخَمْرِ ثُمَّ تُشَقَّقُ الأَنْهَارُ بَعْدُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَحَكِيمُ بْنُ مُعَاوِيَةَ هُوَ وَالِدُ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ وَالْجُرَيْرِيُّ يُكْنَى أَبَا مَسْعُودٍ وَاسْمُهُ سَعِيدُ بْنُ إِيَاسٍ .
হাকীম ইবনু মু’আবিয়াহ্ (রাহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতের মধ্যে পানি, মধু, দুধ ও মদের সমুদ্র আছে। এগুলো থেকে আরো ঝর্ণা বা নদীসমূহ প্রবাহিত হবে।
সহীহ : মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (৫৬৫০)।
আবূ ‘ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। হাকীম ইবনু মু’আবিয়া হলেন বাহয (রাহঃ)-এর বাবা। আল জুরাইরীর উপনাম আবূ মাস’উদ। তার নাম সা’ঈদ ইবনু ইয়াস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫৭২
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ سَأَلَ اللَّهَ الْجَنَّةَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ قَالَتِ الْجَنَّةُ اللَّهُمَّ أَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ . وَمَنِ اسْتَجَارَ مِنَ النَّارِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ قَالَتِ النَّارُ اللَّهُمَّ أَجِرْهُ مِنَ النَّارِ ” . قَالَ هَكَذَا رَوَى يُونُسُ بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ مَوْقُوفًا أَيْضًا .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক জান্নাতের জন্য আল্লাহ্ তা’আলার নিকট তিনবার প্রার্থনা করলে জান্নাত তখন বলে, হে আল্লাহ্! তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। আর কোন লোক তিনবার জাহান্নাম হতে পানাহ (আশ্রয়) চাইলে জাহান্নাম তখন আল্লাহ্ তা’আলার নিকট বলে, হে আল্লাহ্! তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিন।
সহীহ : মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (২৪৭৮), তা’লীকুর রাগীব (৪/২২২)।
ইউনুস (রাহঃ) এ হাদীসটি আবূ ইসহাক হতে, তিনি বুরাইদ ইবনু আবূ মারইয়াম হতে, তিনি আনাস (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে একই রকম বর্ণনা করেছেন। আবূ ইসহাক হতে বুরাইদ ইবনু আবূ মারইয়াম এর বরাতে আনাস (রাঃ)-এর বক্তব্য হিসেবেও বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস