১. অনুচ্ছেদঃ
রোগভোগের সাওয়াব
৯৬৫
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ يُصِيبُ الْمُؤْمِنَ شَوْكَةٌ فَمَا فَوْقَهَا إِلاَّ رَفَعَهُ اللَّهُ بِهَا دَرَجَةً وَحَطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةً ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ وَأَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي أُمَامَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَنَسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَسَدِ بْنِ كُرْزٍ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَزْهَرَ وَأَبِي مُوسَى . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি কোন মু’মিন ব্যক্তির দেহে কাঁটা বিদ্ধ হয় অথবা সে যদি এর চেয়ে বেশি কিছুতে আক্রান্ত হয় তবে এর বিনিময়ে আল্লাহ্ তা’আলা তাকে তার মর্যাদা এক ধাপ বাড়িয়ে দেন এবং তার একটি গুনাহ মাফ করে দেন।
-সহীহ্, রাওযুন নাযীর (৮১৯), মুসলিম, বুখারী, সংক্ষিপ্ত।
সাদ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস, আবূ উবাইদা ইবনুল জাররাহ, আবূ হুরাইরা, আবূ উমামা, আবূ সাঈদ, আনাস, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, আসাদ ইবনু কুরয, জাবির, ইবনু আব্দুল্লাহ আবদুর রাহমান ইবনু আযহার ও আবূ মূসা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬৬
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَطَاءٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، رضى الله عنه قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَا مِنْ شَيْءٍ يُصِيبُ الْمُؤْمِنَ مِنْ نَصَبٍ وَلاَ حَزَنٍ وَلاَ وَصَبٍ حَتَّى الْهَمُّ يَهُمُّهُ إِلاَّ يُكَفِّرُ اللَّهُ بِهِ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ فِي هَذَا الْبَابِ . قَالَ وَسَمِعْتُ الْجَارُودَ يَقُولُ سَمِعْتُ وَكِيعًا يَقُولُ لَمْ يُسْمَعْ فِي الْهَمِّ أَنَّهُ يَكُونُ كَفَّارَةً إِلاَّ فِي هَذَا الْحَدِيثِ . قَالَ وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضى الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিন ব্যক্তির প্রতি যে কোন ধরণের দুঃখ-কষ্ট, দুশ্চিন্তা ও রোগ, এমনকি তুচ্ছ যেকোন চিন্তাই আসুক না কেন, এর বিনিময়ে আল্লাহ্ তা’আলা তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন।
-হাসান সহীহ, সহীহাহ (২৫০৩), মুসলিম, বুখারী সংক্ষিপ্ত।বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনায় আনহু সায়্যিয়াতিহির পরিবর্তে মিন সায়্যিয়াতিহী উল্লেখ আছে। আর উহাই সংরক্ষিত।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। ওয়াকী বলেছেন, তিনি এই হাদীসটি ছাড়া আরকোন রিওয়ায়াতে দুশ্চিন্তাও যে গুনাহর কাফফারা হয় এমন কথা শুনেননি। আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সূত্রেও এই হাদীসটি কেউ কেউ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
২. অনুচ্ছেদঃ
রুগ্ন ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া
৯৬৭
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ الرَّحَبِيِّ، عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّ الْمُسْلِمَ إِذَا عَادَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ لَمْ يَزَلْ فِي خُرْفَةِ الْجَنَّةِ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَبِي مُوسَى وَالْبَرَاءِ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَنَسٍ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ثَوْبَانَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَرَوَى أَبُو غِفَارٍ وَعَاصِمٌ الأَحْوَلُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ عَنْ ثَوْبَانَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ . وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ مَنْ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ فَهُوَ أَصَحُّ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَأَحَادِيثُ أَبِي قِلاَبَةَ إِنَّمَا هِيَ عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ إِلاَّ هَذَا الْحَدِيثَ فَهُوَ عِنْدِي عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মুসলমান তার কোন (রুগ্ন) মুসলিম ভাইকে দেখতে গেলে সে (যতক্ষণ সেখানে থাকে ততক্ষণ) যেন জান্নাতের ফল আহরণ করতে থাকে।
-সহীহ, মুসলিম (৮/১৩)।
আলী, আবূ মূসা, বারাআ, আবূ হুরাইরা, আনাস ও জাবির (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। সাওবান (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন। এই হাদীসটি আবূ গিফার ও আসিম আল-আহওয়াল (রহঃ) এরকমই বর্ণনা করেছেন আবূ কিলাবা হতে, তিনি আবুল আশআস হতে, তিনি আবূ আসমা হতে, তিনি সাওবান (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে। তিরমিয়ী বলেন, মুহাম্মাদ আল-বুখারী (রহঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি, যারা আবুল আশআস হতে আবূ আসমার সূত্রে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন তাদের সনদসূত্র অধিকতর সহীহ্। মুহাম্মাদ (বুখারী) আরও বলেছেনঃ আবূ কিলাবার হাদীসগুলি আবূ আমরের সূত্রেই বর্ণিত, কিন্তু এই হাদীসটি আবুল আশ্ আসের বরাতে আবূ আসমা হতেই আমি জানতে পেরেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ وَزِيرٍ الْوَاسِطِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ . وَزَادَ فِيهِ قِيلَ مَا خُرْفَةُ الْجَنَّةِ قَالَ “ جَنَاهَا ” .
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ ثَوْبَانَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ حَدِيثِ خَالِدٍ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ وَلَمْ يَرْفَعْهُ .
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(উপরের হাদীসের) এরকমই বর্ণিত আছে। তবে এই বর্ণনাতে আরো আছেঃ প্রশ্ন করা হল, ‘খুরফাতুল জান্নাত কি? তিনি বলেনঃ এটা হচ্ছে জান্নাতের কুড়ানো ফল।
– সহিহ, মুসলিম।
উপরোক্ত হাদীসের মতই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আহ্মদ ইবনু আবদা আয-যাববী (রহঃ)…সাওবান (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত আছে। কিন্তু এই সনদে আবুল-আশআসের উল্লেখ নেই। আবূ ঈসা বলেন, হাম্মাদ ইবনু যাইদ হতেও এই হাদীসকে কেউ কেউ বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তারা মারফূহিসেবে বর্ণনা করেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ ثُوَيْرٍ، هُوَ ابْنُ أَبِي فَاخِتَةَ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ أَخَذَ عَلِيٌّ بِيَدِي قَالَ انْطَلِقْ بِنَا إِلَى الْحَسَنِ نَعُودُهُ . فَوَجَدْنَا عِنْدَهُ أَبَا مُوسَى فَقَالَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ أَعَائِدًا جِئْتَ يَا أَبَا مُوسَى أَمْ زَائِرًا فَقَالَ لاَ بَلْ عَائِدًا . فَقَالَ عَلِيٌّ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَعُودُ مُسْلِمًا غُدْوَةً إِلاَّ صَلَّى عَلَيْهِ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ حَتَّى يُمْسِيَ وَإِنْ عَادَهُ عَشِيَّةً إِلاَّ صَلَّى عَلَيْهِ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ حَتَّى يُصْبِحَ وَكَانَ لَهُ خَرِيفٌ فِي الْجَنَّةِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَلِيٍّ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ مِنْهُمْ مَنْ وَقَفَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ . وَأَبُو فَاخِتَةَ اسْمُهُ سَعِيدُ بْنُ عِلاَقَةَ .
সুওয়াইর (রহঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার হাত ধরে আলী (রাঃ) বললেন, আমার সাথে চল, অসুস্থ হুসাইনকে দেখে আসি। আমরা তার নিকটে গিয়ে মূসা (রাঃ)-কে হাযির পেলাম। আলী (রাঃ) বললেন, হে আবূ মূসা! আপনি কি রোগী দেখতে এসেছেন না এমনি বেড়াতে এসেছেন? তিনি বললেন, না, রোগী দেখতে এসেছি। আলী (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ কোন মুসলমান যদি অন্যকোন মুসলিম রোগীকে সকাল বেলা দেখতে যায় তাহলে সত্তর হাজার ফেরেশতা তার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত দু’আ করতে থাকে। সে যদি সন্ধ্যায় তাকে দেখতে যায় তবে সত্তর হাজার ফেরেশতা ভোর পর্যন্ত তার জন্য দু’আ করতে থাকে এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ফলের বাগান তৈরী হয়।
-সহীহ, তবে হাদীসে বর্ণিত যায়িরাণ শব্দের পরিবর্তে শামিতান শব্দ আছে।-সহীহাহ (১৩৬৭), আর-রা ওয (১১৫৫)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। এটি একাধিকসূত্রে আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। এটিকে মারফু না করে কেউ কেউ মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী আবূ ফাখিতার নাম সাঈদ, পিতার নাম ইলাকা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩. অনুচ্ছেদঃ
মৃত্যু কামনা করা নিষেধ
৯৭০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ حَارِثَةَ بْنِ مُضَرِّبٍ، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى خَبَّابٍ وَقَدِ اكْتَوَى فِي بَطْنِهِ فَقَالَ مَا أَعْلَمُ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَقِيَ مِنَ الْبَلاَءِ مَا لَقِيتُ لَقَدْ كُنْتُ وَمَا أَجِدُ دِرْهَمًا عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَفِي نَاحِيَةٍ مِنْ بَيْتِي أَرْبَعُونَ أَلْفًا وَلَوْلاَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَانَا – أَوْ نَهَى – أَنْ نَتَمَنَّى الْمَوْتَ لَتَمَنَّيْتُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ خَبَّابٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ لاَ يَتَمَنَّيَنَّ أَحَدُكُمُ الْمَوْتَ لِضُرٍّ نَزَلَ بِهِ وَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي .”
হারিসা ইবনু মুযাররিব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা খাববাব (রাঃ)-এর নিকট আমি হাযির হলাম। তখন তার পেটে (গরম কিছু দিয়ে) তিনি সেঁক দিচ্ছিলেন। তিনি বললেন, আমি যত বিপদের সম্মুখীন হয়েছি, জানি না, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আর কোন সাহাবী এত বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন কি-না। একটি দিরহামও আমার নিকটে ছিল না (নিঃস্ব ছিলাম) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে। আর এখন চল্লিশহাজার দিরহাম আমার ঘরের কোণে পড়ে আছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি আমাদেরকে মৃত্যু কামনা করতে নিষেধ না করতেন তবে অবশ্যই আমি মৃত্যু কামনা করতাম।
-সহীহ, আহ্কামুল জানায়িয (৫৯), নাসাঈতে শুধুমাত্র মৃত্যু কামনা নিষেধ বর্ণিত আছে।
আবূ হুরাইরা, আনাস ও জাবির (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। খাববাব (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭১
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে কোন লোক যেন কোন দুঃখ-কষ্টে জড়িয়ে পড়ার কারণে মৃত্যু কামনা না করে। বরং সে যেন বলে, হে আল্লাহ! যে পর্যন্ত বেঁচে থাকা আমার জন্য কল্যাণকর হয় আমাকে সে পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখ এবং আমার জন্য যখন মৃত্যু কল্যাণকর হয় তখন আমাকে মৃত্যু দাও।
-সহীহ, ইবনু মাজাহ (৪২৬৫), বুখারী, মুসলিম।
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন আলী ইবনু হুজ্র ইসমাঈল ইবনু ইবরাহীম হতে, তিনি আব্দুল আযীয ইবনু সুহাইব হতে, তিনি আনাস ইবনু মালিক হতে তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪. অনুচ্ছেদঃ
ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে রোগীর জন্য (আল্লাহ তা’আলার) আশ্রয় প্রার্থনা করা
৯৭২
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ الْبَصْرِيُّ الصَّوَّافُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ جِبْرِيلَ، أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ اشْتَكَيْتَ قَالَ “ نَعَمْ ” . قَالَ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ وَعَيْنِ حَاسِدٍ بِاسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ وَاللَّهُ يَشْفِيكَ .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি কি অসুস্থ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন জিবরীল (আঃ) পাঠ করলেনঃ “আমি আপনাকে আল্লাহ তা’আলার নামে ঝাড়ছি এমন সকল কিছু হতে যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং সকল প্রকার অনিষ্টকর প্রাণী ও সকল হিংসুটে দৃষ্টি হতে। আল্লাহ তা’আলার নামে আমি আপনাকে ঝাড়ছি, আপনাকে আল্লাহ তা’আলা সুস্থতা দান করুন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৫২৩), মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، قَالَ دَخَلْتُ أَنَا وَثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ، عَلَى أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ فَقَالَ ثَابِتٌ يَا أَبَا حَمْزَةَ اشْتَكَيْتُ . فَقَالَ أَنَسٌ أَفَلاَ أَرْقِيكَ بِرُقْيَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَلَى . قَالَ “ اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ الْبَاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شَافِيَ إِلاَّ أَنْتَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَسَأَلْتُ أَبَا زُرْعَةَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقُلْتُ لَهُ رِوَايَةُ عَبْدِ الْعَزِيزِ عَنْ أَبِي نَضْرَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ أَصَحُّ أَوْ حَدِيثُ عَبْدِ الْعَزِيزِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كِلاَهُمَا صَحِيحٌ . وَرَوَى عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ عَنْ أَبِي نَضْرَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَعَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ عَنْ أَنَسٍ .
আবদুল আযীয ইবনু সুহাইব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ও সাবিত আল-বুনানী আনাস (রাঃ)-এর নিকটে গেলাম। সাবিত বললেন, হে আবূ হামযা! আমি অসুস্থ অনুভব করছি। আনাস (রাঃ) বললেন, আমি কি তোমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঝাড়ফুঁকের দু’আ পাঠ করে ঝাড়ব না? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আনাস (রাঃ) বললেনঃ “হে আল্লাহ, মানবজাতির প্রভু! কষ্ট-ক্লেশ বিতাড়নকারী, রোগ হতে আপনি মুক্তি দিন, নিরাময়কারী তো আপনিই, আর কোন সুস্থতা দানকারী নেই আপনি ব্যতীত। এমন সুস্থতা আপনি দান করুন আর কোন রোগ যেন থাকতে না পারে”।
-সহীহ, বুখারী।
আনাস ও আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। তিনি বলেন, আবূ যুরআকে আমি প্রশ্ন করলামঃ বেশি সহীহ্ কোনটি, আবদুল আযীয-আবূ নাযরা হতে তিনি আবূ সাঈদ (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত রিওয়ায়াতটি না আবদুল আযীয-আনাস (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি? তিনি উভয় হাদীসকেই সহীহ্ বলেছেন। আব্দুস সামাদ ইবনু আবদুল ওয়ারিস তার পিতা হতে আবদুল আযীয ইবনু সুহাইব হতে, তিনি আবূ নাযরা হতে, তিনি আবূ সাঈদ হতে এবং আব্দুল আযীয ইবনু সুহাইব হতে, তিনি আনাস (রাঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫. অনুচ্ছেদঃ
ওয়াসিয়াতের জন্য উৎসাহ দেওয়া
৯৭৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَا حَقُّ امْرِئٍ مُسْلِمٍ يَبِيتُ لَيْلَتَيْنِ وَلَهُ شَيْءٌ يُوصِي فِيهِ إِلاَّ وَوَصِيَّتُهُ مَكْتُوبَةٌ عِنْدَهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ أَبِي أَوْفَى . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি ওয়াসিয়াত করার মত সম্পদ কোন মুসলমান ব্যক্তির নিকট থাকে তবে নিজের নিকট ওয়াসিয়াতনামা লিখে না রেখে সেলোক যেন দুই রাতও অতিবাহিত না করে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (২৬৯৯), বুখারী, মুসলিম।
ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু উমার (রাঃ)-এর হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬. অনুচ্ছেদঃ
এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশ সম্পদের ওয়াসিয়াত করা
৯৭৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ سَعْدِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ عَادَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا مَرِيضٌ فَقَالَ ” أَوْصَيْتَ ” . قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ ” بِكَمْ ” . قُلْتُ بِمَالِي كُلِّهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ . قَالَ ” فَمَا تَرَكْتَ لِوَلَدِكَ ” . قُلْتُ هُمْ أَغْنِيَاءُ بِخَيْرٍ . قَالَ ” أَوْصِ بِالْعُشْرِ ” . فَمَا زِلْتُ أُنَاقِصُهُ حَتَّى قَالَ ” أَوْصِ بِالثُّلُثِ وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ ” . قَالَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَنَحْنُ نَسْتَحِبُّ أَنْ يَنْقُصَ مِنَ الثُّلُثِ لِقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَعْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ ” وَالثُّلُثُ كَبِيرٌ ” . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ أَنْ يُوصِيَ الرَّجُلُ بِأَكْثَرَ مِنَ الثُّلُثِ وَيَسْتَحِبُّونَ أَنْ يَنْقُصَ مِنَ الثُّلُثِ . قَالَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ كَانُوا يَسْتَحِبُّونَ فِي الْوَصِيَّةِ الْخُمُسَ دُونَ الرُّبُعِ وَالرُّبُعَ دُونَ الثُّلُثِ وَمَنْ أَوْصَى بِالثُّلُثِ فَلَمْ يَتْرُكْ شَيْئًا وَلاَ يَجُوزُ لَهُ إِلاَّ الثُّلُثُ .
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ، عَنْ سَعْدِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ عَادَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا مَرِيضٌ فَقَالَ ” أَوْصَيْتَ ” . قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ ” بِكَمْ ” . قُلْتُ بِمَالِي كُلِّهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ . قَالَ ” فَمَا تَرَكْتَ لِوَلَدِكَ ” . قُلْتُ هُمْ أَغْنِيَاءُ بِخَيْرٍ . قَالَ ” أَوْصِ بِالْعُشْرِ ” . فَمَا زِلْتُ أُنَاقِصُهُ حَتَّى قَالَ ” أَوْصِ بِالثُّلُثِ وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ ” . قَالَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ وَنَحْنُ نَسْتَحِبُّ أَنْ يَنْقُصَ مِنَ الثُّلُثِ لِقَوْلِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَعْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ ” وَالثُّلُثُ كَبِيرٌ ” . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ أَنْ يُوصِيَ الرَّجُلُ بِأَكْثَرَ مِنَ الثُّلُثِ وَيَسْتَحِبُّونَ أَنْ يَنْقُصَ مِنَ الثُّلُثِ . قَالَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ كَانُوا يَسْتَحِبُّونَ فِي الْوَصِيَّةِ الْخُمُسَ دُونَ الرُّبُعِ وَالرُّبُعَ دُونَ الثُّلُثِ وَمَنْ أَوْصَى بِالثُّلُثِ فَلَمْ يَتْرُكْ شَيْئًا وَلاَ يَجُوزُ لَهُ إِلاَّ الثُّلُثُ .
সা’দ ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি অসুস্থ হলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে এলেন। তিনি বললেনঃ তুমি কি ওয়াসিয়াত করেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কতটুকু? আমি বললাম, আল্লাহ্ তা’আলার রাস্তায় আমার সবটুকু সম্পদ দিয়ে দিয়েছি। তিনি বললেনঃ তোমার সন্তানদের জন্য কি রাখলে? তিনি বললেন, তারা বেশ ধনী। তিনি বললেনঃ দশ ভাগের এক অংশ ওয়াসিয়াত কর। সা’দ (রাঃ) বলেন, আমি বরাবর “তা খুবই কম” বলতে লাগলাম। তিনি শেষে বললেনঃ ওয়াসিয়াত কর তিন ভাগের এক অংশ। আর তিন ভাগের এক অংশও বেশি হয়ে যাচ্ছে।
সহীহ, ইরওয়া (৮৯৯), সহীহ আবূ দাউদ (২৫৫০), বুখারী, মুসলিম দশভাগের একভাগ ওয়াসিয়াত কর এই অংশ বাদে। এ অংশটুকু যঈফ।
আবূ আবদুর রাহমান বলেন, আমরা এক-তৃতীয়াংশের কম ওয়াসিয়াত করাকে মুস্তাহাব মনে করি। কেননা, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এক-তৃতীয়াংশও অনেক বেশি।
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এটি একাধিকসূত্রে বর্ণিত আছে। কোন কোন বর্ণনায় কাবীর” শব্দ এবং কোন কোন বর্ণনায় ‘কাসীর” শব্দের উল্লেখ রয়েছে।
এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করার কথা বলেছেন। তারা এক তৃতীয়াংশের বেশি পরিমাণ ওয়াসিয়াত করাকে জায়িয মনে করেন না, বরং এক তৃতীয়াংশেরও কম সম্পদ ওয়াসিয়াত করাকে মুস্তাহাব মনে করেন। সুফিয়ান সাওরী বলেনঃ এক-চতুর্থাংশের চেয়ে এক-পঞ্চমাংশ এবং এক-তৃতীয়াংশের চেয়ে এক-চতুর্থাংশ ওয়াসিয়াত করাকে পূর্ববর্তী আলিমগণ মুস্তাহাব মনে করতেন। এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ সম্পত্তি যে লোক ওয়াসিয়াত করল সে লোক তো আর কিছু রাখল না। তার জন্য এক-তৃতীয়াংশের বেশি ওয়াসিয়াত করা জায়িয নয়।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
৭. অনুচ্ছেদঃ
অন্তিম সময়ের লোককে তালকীন দেয়া এবং তার জন্য দু’আ করা
৯৭৬
حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عُمَارَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لَقِّنُوا مَوْتَاكُمْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ وَعَائِشَةَ وَجَابِرٍ وَسُعْدَى الْمُرِّيَّةِ وَهِيَ امْرَأَةُ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ .
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের মাঝে অন্তিম সময়ের ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” পাঠ করে শুনাও।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৪৪, ১৪৪৫), মুসলিম।
আবূ হুরাইরা, উম্মু সালামা, আইশা, জাবির ও তালহা ইবনু উবাইদুল্লাহ (রাঃ)-এর স্ত্রী সু’দা আল-মুরিয়্যা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِذَا حَضَرْتُمُ الْمَرِيضَ أَوِ الْمَيِّتَ فَقُولُوا خَيْرًا فَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ يُؤَمِّنُونَ عَلَى مَا تَقُولُونَ ” . قَالَتْ فَلَمَّا مَاتَ أَبُو سَلَمَةَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَبَا سَلَمَةَ مَاتَ . قَالَ ” فَقُولِي اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَلَهُ وَأَعْقِبْنِي مِنْهُ عُقْبَى حَسَنَةً ” . قَالَتْ فَقُلْتُ فَأَعْقَبَنِي اللَّهُ مِنْهُ مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنْهُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى شَقِيقٌ هُوَ ابْنُ سَلَمَةَ أَبُو وَائِلٍ الأَسَدِيُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أُمِّ سَلَمَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ كَانَ يُسْتَحَبُّ أَنْ يُلَقَّنَ الْمَرِيضُ عِنْدَ الْمَوْتِ قَوْلَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا قَالَ ذَلِكَ مَرَّةً فَمَا لَمْ يَتَكَلَّمْ بَعْدَ ذَلِكَ فَلاَ يَنْبَغِي أَنْ يُلَقَّنَ وَلاَ يُكْثَرَ عَلَيْهِ فِي هَذَا . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ لَمَّا حَضَرَتْهُ الْوَفَاةُ جَعَلَ رَجُلٌ يُلَقِّنُهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَكْثَرَ عَلَيْهِ فَقَالَ لَهُ عَبْدُ اللَّهِ إِذَا قُلْتُ مَرَّةً فَأَنَا عَلَى ذَلِكَ مَا لَمْ أَتَكَلَّمْ بِكَلاَمٍ . وَإِنَّمَا مَعْنَى قَوْلِ عَبْدِ اللَّهِ إِنَّمَا أَرَادَ مَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ كَانَ آخِرُ قَوْلِهِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ ” .
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন অসুস্থ বা মৃত লোকের নিকটে তোমরা হাযির হলে তার সম্বন্ধে ভাল কথা বলবে। কেননা, তোমরা যেসব কথা বল সে প্রসঙ্গে ফেরেশতাগণ আমীন বলে থাকেন। উন্মু সালামা (রাঃ) বলেন, আবূ সালামা (রাঃ) মারা যাবার পর আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আবূ সালামা মারা গিয়েছে। তিনি বললেনঃ তুমি বল, “হে আল্লাহ আমাকে এবং তাকে ক্ষমা করে দিন এবং তার পরে আমাকে তার চেয়ে আরও উত্তম পরিণতি দান করুন। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, আমি বুঝতে পারলাম যে, আল্লাহ্ তা’আলা তার পরবর্তীতে আমাকে তার চাইতে উত্তম ব্যক্তি দান করেছেন। তিনি হচ্ছেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৪৭), মুসলিম।
শাকীক হচ্ছেন ইবনু সালামা আবূ ওয়াইল আসাদী। উন্মু সালামা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
মুমূর্য রোগীকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর তালকীন করা মুস্তাহাব। একদল আলিম বলেন, এই কালিমা যদি সে একবার পাঠ করে নেয় তবে পরে অন্যকথা না বললে পুনরায় তাকে তালকীন করা অনুচিত এবং বারবার এই বিষয়ে তাকে চাপ প্রয়োগ করা উচিত নয়। ইবনুল মুবারাকের মৃত্যুর সময় হাযির হলে তাঁকে কোন এক লোক লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর তালকীন করতে থাকে তখন তিনি বললেন, আমি একবার তা বলেছি পরে অন্য কোন কথা না বলা পর্যন্ত আমি এই কথার উপরই প্রতিষ্ঠিত আছি। আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক (রহঃ)-এর এই কথার তাৎপর্য এটাই যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছেঃ “যে লোকের শেষ কথা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ হবে সে লোক জান্নাতে যাবে”।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮. অনুচ্ছেদঃ
মৃত্যু যন্ত্রণা প্রসঙ্গে
৯৭৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ مُوسَى بْنِ سَرْجِسَ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ بِالْمَوْتِ وَعِنْدَهُ قَدَحٌ فِيهِ مَاءٌ وَهُوَ يُدْخِلُ يَدَهُ فِي الْقَدَحِ ثُمَّ يَمْسَحُ وَجْهَهُ بِالْمَاءِ ثُمَّ يَقُولُ ” اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى غَمَرَاتِ الْمَوْتِ ” . أَوْ ” سَكَرَاتِ الْمَوْتِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মুমূর্য অবস্থায় দেখেছি একটি পানি ভর্তি বাটি তার সামনে রাখা ছিল। তিনি সেই বাটিতে তার হাত প্রবেশ করাচ্ছিলেন এবং পানি দিয়ে তার মুখমণ্ডল মলছিলেন আর বলছিলেনঃ “হে আল্লাহু! মৃত্যুকষ্ট ও মৃত্যুযন্ত্রণা হ্রাসে আমায় সহায়তা করুন।”
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৬২৩)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ গারীব।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৯৭৯
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا مُبَشِّرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْحَلَبِيُّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا أَغْبِطُ أَحَدًا بِهَوْنِ مَوْتٍ بَعْدَ الَّذِي رَأَيْتُ مِنْ شِدَّةِ مَوْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ سَأَلْتُ أَبَا زُرْعَةَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ وَقُلْتُ لَهُ مَنْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْعَلاَءِ فَقَالَ هُوَ ابْنُ الْعَلاَءِ بْنِ اللَّجْلاَجِ . وَإِنَّمَا عَرَّفَهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু যন্ত্রণা দেখার পর হতে আমার আর কোন ঈর্ষা হয় না অন্য কোন ব্যক্তির সহজ মৃত্যু হলে।
-সহীহ, মুখতাসার শামায়িল মুহাম্মাদীয়া (৩২৫), বুখারী।
ইমাম তিরমিযী বলেনঃ আমি আবূ যুরআকে এ হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম এবং তাকে বললামঃ আব্দুর রাহমান ইবনুল আ’লা ব্যক্তিটি কে? তিনি বললেনঃ ব্যক্তিটি হলেন আল আলা-ইবনুল লাজলাজ।
এই হাদীসটিকে তিনি শুধুমাত্র উল্লেখিত সূত্রেই জেনেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৮০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ، قَالَ حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنَا حُسَامُ بْنُ الْمِصَكِّ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو مَعْشَرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” إِنَّ نَفْسَ الْمُؤْمِنِ تَخْرُجُ رَشْحًا وَلاَ أُحِبُّ مَوْتًا كَمَوْتِ الْحِمَارِ ” . قِيلَ وَمَا مَوْتُ الْحِمَارِ قَالَ ” مَوْتُ الْفَجْأَةِ ” .
আলকামা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, অবশ্যই মুমিনের আত্মা (মৃত্যুর সময়) ঘামের সাথে বের হয়, আমি গাধার মত মৃত্যুকে পছন্দ করি না, তাকে প্রশ্ন করা হল, গাধার মত মৃত্যু কি? তিনি বললেন, হঠাৎ মৃত্যু।
অত্যন্ত দুর্বল। আল-ইলালুল মুতানাহিয়াহ (১৪৮৮)
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
৯. অনুচ্ছেদঃ
(যার আমলনামায় প্রথমে ও শেষে ভাল কাজ পাওয়া যাবে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে)
৯৮১
حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا مُبَشِّرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ الْحَلَبِيُّ، عَنْ تَمَّامِ بْنِ نَجِيحٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَا مِنْ حَافِظَيْنِ رَفَعَا إِلَى اللَّهِ مَا حَفِظَا مِنْ لَيْلٍ أَوْ نَهَارٍ فَيَجِدُ اللَّهُ فِي أَوَّلِ الصَّحِيفَةِ وَفِي آخِرِ الصَّحِيفَةِ خَيْرًا إِلاَّ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى أُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي مَا بَيْنَ طَرَفَىِ الصَّحِيفَةِ ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন : বান্দার আমল নাম লিপিবদ্ধকারী দু’জন ফেরেশতা দিবারাত্রির যখনই আমল নামা নিয়ে আল্লাহর কাছে পৌছে, আর আল্লাহ তা’আলা আমল নামার প্রথমে ও শেষে কল্যাণ (দেখতে) পান তখন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ তোমাদেরকে এই কথার উপর সাক্ষি রাখছি যে, আমার বান্দার আমল নামার মাঝখানে যা আছে তা আমি ক্ষমা করে দিলাম।
অত্যন্ত দুর্বল,যঈফা (২২৩৯)
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
১০. অনুচ্ছেদঃ
মু’মিনদের মৃত্যুর সময় কপাল ঘামে
৯৮২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنِ الْمُثَنَّى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الْمُؤْمِنُ يَمُوتُ بِعَرَقِ الْجَبِينِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ قَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لا نَعْرِفُ لِقَتَادَةَ سَمَاعًا مِنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ .
আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদা (রাঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কপালের ঘামসহ মু’মিনের মৃত্যু হয়।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৫২)।
ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। একদল মুহাদ্দিস বলেন, কাতাদা (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদা হতে কোন কিছু শুনেছেন বলে আমাদের জানা নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১. অনুচ্ছেদঃ
(মৃত্যুর সময় আল্লাহর নিকট কল্যাণের আশা করা)
৯৮৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي زِيَادٍ الْكُوفِيُّ، وَهَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْبَزَّازُ الْبَغْدَادِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا سَيَّارٌ، هُوَ ابْنُ حَاتِمٍ حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَى شَابٍّ وَهُوَ فِي الْمَوْتِ فَقَالَ ” كَيْفَ تَجِدُكَ ” . قَالَ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَرْجُو اللَّهَ وَإِنِّي أَخَافُ ذُنُوبِي . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ يَجْتَمِعَانِ فِي قَلْبِ عَبْدٍ فِي مِثْلِ هَذَا الْمَوْطِنِ إِلاَّ أَعْطَاهُ اللَّهُ مَا يَرْجُو وَآمَنَهُ مِمَّا يَخَافُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ ثَابِتٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক যুবকের নিকট গেলেন। তখন সে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল। তিনি বললেনঃ তোমার কেমন অনুভব হচ্ছে? যুবকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ, আল্লাহ্ তা’আলার রাহমাতের আশা করছি, কিন্তু আবার ভয়ও পাচ্ছি আমার গুনাহগুলোর কারণে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে বান্দার হৃদয়ে এরকম সময়ে এরূপ দুই বিপরীত জিনিস একত্র হয়, আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই তার কাংক্ষিত জিনিস তাকে দান করেন এবং তাকে তার বিপদাশংকা হতে নিরাপদ রাখেন।
-হাসান, ইবনু মা-জাহ (৪২৬১)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। হাদীসটিকে কোন কোন বর্ণনাকারী মুরসাল হিসেবে সাবিতের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১২. অনুচ্ছেদঃ
মৃত্যুসংবাদ ফলাও করে প্রচার করা মাকরূহ
৯৮৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا حَكَّامُ بْنُ سَلْمٍ، وَهَارُونُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، عَنْ عَنْبَسَةَ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِيَّاكُمْ وَالنَّعْىَ فَإِنَّ النَّعْىَ مِنْ عَمَلِ الْجَاهِلِيَّةِ ” . قَالَ عَبْدُ اللَّهِ وَالنَّعْىُ أَذَانٌ بِالْمَيِّتِ . وَفِي الْبَابِ عَنْ حُذَيْفَةَ .
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সাবধান! তোমরা মৃত্যুর খবর ঘোষণা থেকে নিবৃত্ত থাক। যেহেতু এটা জাহিলী যুগের কাজ। আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন, ‘নাঈ’ শব্দের অর্থ মৃত্যুর খবর ঢালাও করে ঘোষণা করা।
যঈফ, তাখরীজু ইসলাহিল মাসাজিদ (১০৮)
এই অনুচ্ছেদে হুযাইফা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৯৮৫
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْوَلِيدِ الْعَدَنِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، نَحْوَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ وَالنَّعْىُ أَذَانٌ بِالْمَيِّتِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ عَنْبَسَةَ عَنْ أَبِي حَمْزَةَ . وَأَبُو حَمْزَةَ هُوَ مَيْمُونٌ الأَعْوَرُ وَلَيْسَ هُوَ بِالْقَوِيِّ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَدْ كَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ النَّعْىَ وَالنَّعْىُ عِنْدَهُمْ أَنْ يُنَادَى فِي النَّاسِ أَنَّ فُلاَنًا مَاتَ لِيَشْهَدُوا جَنَازَتَهُ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ بَأْسَ أَنْ يُعْلِمَ أَهْلَ قَرَابَتِهِ وَإِخْوَانَهُ . وَرُوِيَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ أَنَّهُ قَالَ لاَ بَأْسَ بِأَنْ يُعْلِمَ الرَّجُلُ قَرَابَتَهُ .
আব্দুল্লাহ ইবনুল ওয়ালীদ থেকে বর্ণিতঃ
সাঈদ ইবনু আব্দুর রহমান আল-মাখযুমী আব্দুল্লাহ ইবনুল ওয়ালীদ হতে তিনি সুফিয়ান সাওরী হতে তিনি আবু হামযাহ হতে তিনি আল-কামা হতে তিনি আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তা মারফুরূপে বর্ণনা করা হয়নি এবং তাতে আন-নাইউ আযানুন বিলমায়্যিত” এই কথারও উল্লেখ নেই।
যঈফ
আবু ঈসা বলেন, আবু হামযা হতে আনবাসার রিওয়ায়াতের তুলনায় এই রিওয়ায়াতটি অনেক বেশী সহীহ। আৰূ হামযার নাম মাইমূন আল-আওয়ার। হাদীস বিশেষজ্ঞগণের মতে তিনি নির্ভরযোগ্য রাবী নন। আবূ ঈসা বলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি গরীব। একদল আলিম ‘নাঈ’ মাকরুহ বলেছেন। তাদের মতে ‘নাঈ’ হল লোকদের মাঝে এই বলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া যে, অমুক ব্যক্তি মারা গেছে। অতএব তারা যেন তার জানাযায় উপস্থিত হয়। কিছু আলিম বলেছেন, মৃতের ভাই-বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনকে তার মৃত্যুর সংবাদ দেয়াতে কোন অপরাধ নেই। ইবরাহীম নাখঈ বলেন, আত্মীয়-স্বজনের মৃত্যুসংবাদ দেয়াতে কোন সমস্যা নেই।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৯৮৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْقُدُّوسِ بْنُ بَكْرِ بْنِ خُنَيْسٍ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ سُلَيْمٍ الْعَبْسِيُّ، عَنْ بِلاَلِ بْنِ يَحْيَى الْعَبْسِيِّ، عَنْ حُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ، قَالَ إِذَا مِتُّ فَلاَ تُؤْذِنُوا بِي أَحَدًا إِنِّي أَخَافُ أَنْ يَكُونَ نَعْيًا فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَى عَنِ النَّعْىِ . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার মৃত্যু হলে এই বিষয়ে তোমরা কোন ঘোষণা দিবে না। আমার ভয় হয় যে, এটা মৃত্যুর সংবাদ প্রচার বলে ধরা হবে। আমি মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিষেধ করতে শুনেছি।
-হাসান, ইবনু মা-জাহ (১৪৭৬)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১৩. অনুচ্ছেদঃ
প্রথম আঘাতেই ধৈর্যধারণ করা
৯৮৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ سِنَانٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الصَّبْرُ فِي الصَّدْمَةِ الأُولَى ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রকৃত ধৈর্য হচ্ছে বিপদের প্রথম ধাক্কাতেই ধৈর্যধারণ করা।
সহীহ, আহকা-মুল জানা-য়িজ (২২ পৃঃ), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা হাদীসটিকে এই সূত্রে গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৮৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الصَّبْرُ عِنْدَ الصَّدْمَةِ الأُولَى ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিপদের প্রথম আঘাতেই ধৈর্য ধরতে হবে।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৪. অনুচ্ছেদঃ
মৃত লোককে চুমা দেয়া
৯৮৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَبَّلَ عُثْمَانَ بْنَ مَظْعُونٍ وَهُوَ مَيِّتٌ وَهُوَ يَبْكِي . أَوْ قَالَ عَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ وَعَائِشَةَ قَالُوا إِنَّ أَبَا بَكْرٍ قَبَّلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مَيِّتٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উসমান ইবনু মাযউন (রাঃ)-কে মৃত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুম্বন করেছিলেন আর কাঁদছিলেন। অথবা বর্ণনাকারী বলেন, তার দু’চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছিল।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৫৬)।
ইবনু আব্বাস, জাবির ও আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মারা যাবার পর আবূ বাকার (রাঃ) তাকে চুমা দিয়েছেন।
আইশা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৫. অনুচ্ছেদঃ
লাশের গোসল দেয়া
৯৯০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا خَالِدٌ، وَمَنْصُورٌ، وَهِشَامٌ، فَأَمَّا خَالِدٌ وَهِشَامٌ فَقَالاَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَحَفْصَةَ وَقَالَ مَنْصُورٌ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ قَالَتْ تُوُفِّيَتْ إِحْدَى بَنَاتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” اغْسِلْنَهَا وِتْرًا ثَلاَثًا أَوْ خَمْسًا أَوْ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ إِنْ رَأَيْتُنَّ وَاغْسِلْنَهَا بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَاجْعَلْنَ فِي الآخِرَةِ كَافُورًا أَوْ شَيْئًا مِنْ كَافُورٍ فَإِذَا فَرَغْتُنَّ فَآذِنَّنِي ” . فَلَمَّا فَرَغْنَا آذَنَّاهُ فَأَلْقَى إِلَيْنَا حِقْوَهُ فَقَالَ ” أَشْعِرْنَهَا بِهِ ” . قَالَ هُشَيْمٌ وَفِي حَدِيثِ غَيْرِ هَؤُلاَءِ وَلاَ أَدْرِي وَلَعَلَّ هِشَامًا مِنْهُمْ قَالَتْ وَضَفَّرْنَا شَعْرَهَا ثَلاَثَةَ قُرُونٍ . قَالَ هُشَيْمٌ أَظُنُّهُ قَالَ فَأَلْقَيْنَاهُ خَلْفَهَا . قَالَ هُشَيْمٌ فَحَدَّثَنَا خَالِدٌ مِنْ بَيْنِ الْقَوْمِ عَنْ حَفْصَةَ وَمُحَمَّدٍ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ قَالَتْ وَقَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَابْدَأْنَ بِمَيَامِنِهَا وَمَوَاضِعِ الْوُضُوءِ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ سُلَيْمٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أُمِّ عَطِيَّةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ أَنَّهُ قَالَ غُسْلُ الْمَيِّتِ كَالْغُسْلِ مِنَ الْجَنَابَةِ . وَقَالَ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ لَيْسَ لِغُسْلِ الْمَيِّتِ عِنْدَنَا حَدٌّ مُؤَقَّتٌ وَلَيْسَ لِذَلِكَ صِفَةٌ مَعْلُومَةٌ وَلَكِنْ يُطَهَّرُ . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ إِنَّمَا قَالَ مَالِكٌ قَوْلاً مُجْمَلاً يُغَسَّلُ وَيُنْقَى وَإِذَا أُنْقِيَ الْمَيِّتُ بِمَاءٍ قَرَاحٍ أَوْ مَاءٍ غَيْرِهِ أَجْزَأَ ذَلِكَ مِنْ غُسْلِهِ وَلَكِنْ أَحَبُّ إِلَىَّ أَنْ يُغْسَلَ ثَلاَثًا فَصَاعِدًا لاَ يُنْقَصُ عَنْ ثَلاَثٍ لِمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” اغْسِلْنَهَا ثَلاَثًا أَوْ خَمْسًا ” . وَإِنْ أَنْقَوْا فِي أَقَلَّ مِنْ ثَلاَثِ مَرَّاتٍ أَجْزَأَ وَلاَ يَرَى أَنَّ قَوْلَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّمَا هُوَ عَلَى مَعْنَى الإِنْقَاءِ ثَلاَثًا أَوْ خَمْسًا وَلَمْ يُؤَقِّتْ . وَكَذَلِكَ قَالَ الْفُقَهَاءُ وَهُمْ أَعْلَمُ بِمَعَانِي الْحَدِيثِ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ وَتَكُونُ الْغَسَلاَتُ بِمَاءٍ وَسِدْرٍ وَيَكُونُ فِي الآخِرَةِ شَيْءٌ مِنْ كَافُورٍ .
উম্মু আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এক কন্যা (যাইনাব) মারা গেলে তিনি বললেনঃ তোমরা বেজোড় সংখ্যায় তিন বার বা পাঁচ বার অথবা প্রয়োজনে এর চেয়েও অধিক বার তাকে গোসল দিতে পার। বরই পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল দাও। আর শেষবার পানিতে কর্পূর বা কিছু পরিমাণ কর্পূর ঢেলে দাও। তোমাদের গোসল করানো শেষ হয়ে গেলে আমাকে জানিয়ে দিও। অতএব, তার গোসল শেষ করে আমরা তাঁকে জানালাম। তিনি তাঁর লুঙ্গি আমাদের দিকে ছুড়ে দিলেন এবং বললেনঃ তাঁর শরীরে এটিকে জড়িয়ে দাও। হুশাইম বলেন, এদের (খালিদ, মানসূর) ব্যতীত অন্যদের, হয়ত হিশামও তাদের একজন, বর্ণনায় আছে যে, উম্মু আতিয়্যা (রাঃ) বলেন, আমরা তাঁর চুলকে তিন ভাগে বিন্যস্ত করলাম। হুশাইম বলেন, আমার ধারণায় তিনি এও বলেছেনঃ তাঁর চুলগুলোকে আমরা তাঁর পিছন দিকে ছেড়ে দিলাম।
হুশাইম বলেন, এদের মধ্যে খালিদ আমাকে হাফসা ও মুহাম্মাদ-উম্মু আতিয়্যা (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বললেনঃ তাঁর ডান পাশ দিযে তার ওযুর স্থানসমূহ হতে গোসল শুরু কর।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৫৮), বুখারী, মুসলিম।
উম্মু সুলাইম (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। উম্মু আতিয়্যা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। ইবরাহীম নাখঈ (রহঃ) বলেন, নাপাক ব্যক্তির গোসলের নিয়মের মতই মৃতের গোসল করানোর নিয়ম। ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন, আমাদের মতে মৃত ব্যক্তির গোসল করানোর ধরাবাধা কোন নিয়ম নেই। আসল কাজ হচ্ছে তাকে পাকসাফ করা। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, মালিক (রহঃ) একটি অস্পষ্ট কথা বলেছেন যে, মৃত ব্যক্তিকে পরিষ্কার পানি বা অন্য কোন পানি দ্বারা গোসল করিয়ে তার দেহ হতে ময়লা দূর করে দিলেই যথেষ্ট। কিন্তু আমার মতে মৃত ব্যক্তিকে তিন বা ততোধিক বার বেজোড় সংখ্যায় গোসল করানো মুস্তাহাব। তবে যেন তিন হতে কম না হয়। কেননা, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাকে তোমরা তিনবার অথবা পাঁচবার গোসল করাও। যদি তিনবারের কমেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায় এবং তাই যথেষ্ট হয়। তবে তাঁর এই বক্তব্য তিন বার বা পাঁচ বার-এর কোন অর্থ হয়না। এই বিষয়ে তিনি কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারিত করে দেননি একথা বলা যায়না। ফকীহগণও এরকম কথা বলেছেন। হাদীসের প্রকৃত মর্ম তারাই হৃদয়ংগম করতে পারেন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ) বলেন, বরই পাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে এবং শেষবারে কর্পূর মিশ্রিত পানি দিয়ে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৬. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির জন্য কস্তুরি ব্যবহার করা
৯৯১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، وَشَبَابَةُ، قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ خُلَيْدِ بْنِ جَعْفَرٍ، سَمِعَ أَبَا نَضْرَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَطْيَبُ الطِّيبِ الْمِسْكُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কস্তুরি সবচাইতে উত্তম সুগন্ধি।
-সহীহ, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৯২
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ وَكِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ خُلَيْدِ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنِ الْمِسْكِ فَقَالَ “ هُوَ أَطْيَبُ طِيبِكُمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ وَقَدْ كَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ الْمِسْكَ لِلْمَيِّتِ . قَالَ وَقَدْ رَوَاهُ الْمُسْتَمِرُّ بْنُ الرَّيَّانِ أَيْضًا عَنْ أَبِي نَضْرَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . قَالَ عَلِيٌّ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْمُسْتَمِرُّ بْنُ الرَّيَّانِ ثِقَةٌ . قَالَ يَحْيَى خُلَيْدُ بْنُ جَعْفَرٍ ثِقَةٌ .
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কস্তুরি প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করা হল। তিনি বললেনঃ তোমাদের সুগন্ধিগুলোর মধ্যে এটা হলো সবচাইতে উত্তম সুগন্ধি।
-সহীহ, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। এই অভিমত আহমাদ ও ইসহাকের। মৃতের জন্য কণ্ডুরি ব্যবহারকে অন্য একদল আলিম মাকরূহ বলেছেন। এই হাদীস আল-মুস্তামির ইবনুর রাইয়্যানও আবূ নাযরা হতে, তিনি আবূ সাঈদ (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। ইয়াহইয়া ইবনু সাইদ বলেন; আল-মুসতামির ইবনুর রাইয়্যান ও খুলাইদ ইবনু জাফর দুজনেই নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৭.অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানোর পর গোসল করা
৯৯৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ الْمُخْتَارِ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مِنْ غُسْلِهِ الْغُسْلُ وَمِنْ حَمْلِهِ الْوُضُوءُ ” . يَعْنِي الْمَيِّتَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ مَوْقُوفًا . وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الَّذِي يُغَسِّلُ الْمَيِّتَ فَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ إِذَا غَسَّلَ مَيِّتًا فَعَلَيْهِ الْغُسْلُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ عَلَيْهِ الْوُضُوءُ . وَقَالَ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ أَسْتَحِبُّ الْغُسْلَ مِنْ غُسْلِ الْمَيِّتِ وَلاَ أَرَى ذَلِكَ وَاجِبًا . وَهَكَذَا قَالَ الشَّافِعِيُّ . وَقَالَ أَحْمَدُ مَنْ غَسَّلَ مَيِّتًا أَرْجُو أَنْ لاَ يَجِبَ عَلَيْهِ الْغُسْلُ وَأَمَّا الْوُضُوءُ فَأَقَلُّ مَا قِيلَ فِيهِ . وَقَالَ إِسْحَاقُ لاَ بُدَّ مِنَ الْوُضُوءِ . قَالَ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ لاَ بَأْسَ أَنْ لاَ يَغْتَسِلَ وَلاَ يَتَوَضَّأَ مَنْ غَسَّلَ الْمَيِّتَ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানোর পর গোসল করতে হবে এবং লাশ বহন করার পর ওযু করতে হবে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৬৩)।
আলী ও আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। এটি মাওকূফ হিসেবেও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। আলিমদের মাঝে লাশকে গোসল করানোর পর গোসল করার বিষয়ে মতের অমিল রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল সাহাবী ও অপরাপর আলিম বলেন, মৃত ব্যক্তিকে কোন লোক গোসল করানোরপরে তাকেও গোসল করতে হবে। কেউ কেউ বলেন, তাকে ওযু করতে হবে। মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানোর পর নিজে গোসল করা মুস্তাহাব, আমি এটাকে বাধ্যতামূলক বলে মনে করি না। একই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈও। ইমাম আহমাদ (রহঃ) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে যে লোক গোসল করাবে আমার ধারণা মতে তার উপর গোসল ওয়াজিব নয়, ওযুই তার জন্য যথেষ্ট হবে। ইসহাক (রহঃ) বলেন, অবশ্যই তাকে ওযু করতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক (রহঃ) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানোর পর গোসলদানকারীর জন্য ওযু বা গোসল কোনটাই ওয়াজিব নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮. অনুচ্ছেদঃ
কাফনের জন্য যেরূপ কাপড় উত্তম
৯৯৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْبَسُوا مِنْ ثِيَابِكُمُ الْبَيَاضَ فَإِنَّهَا مِنْ خَيْرِ ثِيَابِكُمْ وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ سَمُرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ الَّذِي يَسْتَحِبُّهُ أَهْلُ الْعِلْمِ . وَقَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ أَحَبُّ إِلَىَّ أَنْ يُكَفَّنَ فِي ثِيَابِهِ الَّتِي كَانَ يُصَلِّي فِيهَا . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ أَحَبُّ الثِّيَابِ إِلَيْنَا أَنْ يُكَفَّنَ فِيهَا الْبَيَاضُ وَيُسْتَحَبُّ حُسْنُ الْكَفَنِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাদা রঙ্গের পোশাক পর। কেননা, তোমাদের জন্য তা সবচাইতে উত্তম পোশাক। তোমাদের মৃত ব্যক্তিদের এটা দিয়েই কাফন দাও।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৭২)।
সামুরা, ইবনু উমার ও আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আলিমগণও এটাকে মুস্তাহাব বলেছেন। ইবনুল মুবারাক বলেন, যে পোশাক পরিধান করে মৃত ব্যক্তি নামায আদায় করত তাকে তা দিয়ে কাফন দেয়াই আমার নিকট বেশি পছন্দনীয়। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ) বলেন, সাদা কাপড়ে কাফন দেয়াই আমরা পছন্দ করি। উত্তম কাপড় দিয়ে কাফন দেওয়াই মুস্তাহাব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯. অনুচ্ছেদঃ
(উত্তম কাপড় দিয়ে কাফন দেওয়া)
৯৯৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِذَا وَلِيَ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ فَلْيُحَسِّنْ كَفَنَهُ ” . وَفِيهِ عَنْ جَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَقَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ قَالَ سَلاَّمُ بْنُ أَبِي مُطِيعٍ فِي قَوْلِهِ ” وَلْيُحَسِّنْ أَحَدُكُمْ كَفَنَ أَخِيهِ ” قَالَ هُوَ الصِّفَاقُ لَيْسَ بِالْمُرْتَفِعِ .
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি তোমাদের মাঝে কোন লোক তার কোন ভাইয়ের ওয়ালী হয় তবে সে যেন তার জন্য উত্তম কাফনের ব্যবস্থা করে।
-সহীহ, সহীহাহু (১৪২৫), আহকামুল জানা-য়িজ (৫৮), মুসলিম জাবির হতে।
জাবির (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। ইবনুল মুবারাক বলেনঃ “সে যেন তার জন্য উত্তম কাফনের ব্যবস্থা করে” সাল্লাম ইবনু আবূ মুতী এই কথার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে এটা অতি উত্তম হতে হবে, কাফনের কাপড় অধিক মূল্যের হতে হবে তা নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২০. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কি পরিমাণ কাপড় দিয়ে কাফন দেয়া হয়েছিল?
৯৯৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُفِّنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي ثَلاَثَةِ أَثْوَابٍ بِيضٍ يَمَانِيَةٍ لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلاَ عِمَامَةٌ . قَالَ فَذَكَرُوا لِعَائِشَةَ قَوْلَهُمْ فِي ثَوْبَيْنِ وَبُرْدِ حِبَرَةٍ . فَقَالَتْ قَدْ أُتِيَ بِالْبُرْدِ وَلَكِنَّهُمْ رَدُّوهُ وَلَمْ يُكَفِّنُوهُ فِيهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তিনটি ইয়ামানী সাদা কাপড় দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কাফন দেওয়া হয়েছিল। এতে জামা ও পাগড়ী ছিল না। বর্ণনাকারী (উরওয়া) বলেন, লোকেরা আইশা (রাঃ)-কে বলল, কেউ কেউ বলেন, দু’টি কাপড় ও একটি লম্বা রেখাযুক্ত চাদর দ্বারা তাকে কাফন দেওয়া হয়েছে। আইশা (রাঃ) বলেন, একটি চাদর আনা হয়েছিল কিন্তু তাঁরা তা ফিরিয়ে দেন এবং তাঁকে সেটা দিয়ে কাফন দেননি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৬৯),বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৯৭
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ السَّرِيِّ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَقِيلٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَفَّنَ حَمْزَةَ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فِي نَمِرَةٍ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ فِي كَفَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رِوَايَاتٌ مُخْتَلِفَةٌ وَحَدِيثُ عَائِشَةَ أَصَحُّ الأَحَادِيثِ الَّتِي رُوِيَتْ فِي كَفَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَالْعَمَلُ عَلَى حَدِيثِ عَائِشَةَ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ . قَالَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ يُكَفَّنُ الرَّجُلُ فِي ثَلاَثِ أَثْوَابٍ إِنْ شِئْتَ فِي قَمِيصٍ وَلِفَافَتَيْنِ وَإِنْ شِئْتَ فِي ثَلاَثِ لَفَائِفَ وَيُجْزِئُ ثَوْبٌ وَاحِدٌ إِنْ لَمْ يَجِدُوا ثَوْبَيْنِ وَالثَّوْبَانِ يُجْزِيَانِ وَالثَّلاَثَةُ لِمَنْ وَجَدَهَا أَحَبُّ إِلَيْهِمْ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . قَالُوا تُكَفَّنُ الْمَرْأَةُ فِي خَمْسَةِ أَثْوَابٍ .
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
শুধুমাত্র একটি পশমী চাদর দ্বারা হামযা ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাফন দিয়েছিলেন।
-হাসান, আল-আহকাম (৫৯,৬০)।
আলী, ইবনু আব্বাস, আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাফনের প্রসঙ্গে বিভিন্ন রকম হাদীস আছে। আইশ (রাঃ)-এর হাদীস তন্মধ্যে সবচাইতে সহীহ্। এই হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিমগণ আমল করেছেন। সুফিয়ান সাওরী বলেন, পুরুষদেরকে তিনটি কাপড়ে কাফন দেওয়া হবে- দু’টি চাদর ও একটি জামা বা তিনটি চাদরেই কাফন দেওয়া যায়। দু’টো কাপড় না পাওয়া গেলে একটিতেই যথেষ্ট হবে। আর তিনটি না পাওয়া গেলে দুটিই যথেষ্ট। তিনটি পাওয়া গেলে তা বেশি উত্তম। এই অভিমত ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর। তারা বলেন, মহিলাদেরকে পাঁচটি কাপড়ে কাফন দেওয়া হবে।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২১. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির পরিবার-পরিজনদের জন্য খাবার তৈরী করে পাঠানো
৯৯৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ خَالِدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَعْفَرٍ، قَالَ لَمَّا جَاءَ نَعْىُ جَعْفَرٍ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ اصْنَعُوا لأَهْلِ جَعْفَرٍ طَعَامًا فَإِنَّهُ قَدْ جَاءَهُمْ مَا يَشْغَلُهُمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ كَانَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّ أَنْ يُوَجَّهَ إِلَى أَهْلِ الْمَيِّتِ شَيْءٌ لِشُغْلِهِمْ بِالْمُصِيبَةِ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَجَعْفَرُ بْنُ خَالِدٍ هُوَ ابْنُ سَارَةَ وَهُوَ ثِقَةٌ رَوَى عَنْهُ ابْنُ جُرَيْجٍ .
আবদুল্লাহ্ ইবনু জাফর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাফর (রাঃ)-এর শহীদ হওয়ার খবর এলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা জাফরের পরিবারের জন্য খাবার তৈরী কর। কেননা, এমন খবর তাদের নিকটে এসেছে যা তাদেরকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছে।
-হাসান, ইবনু মা-জাহ (১৬১০), মিশকাত (১৭৩৯)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। মৃত ব্যক্তির পরিবারের দুঃখ-কষ্ট জনিত ব্যস্ততার কারণে তাদেরকে কিছু পাঠানোকে একদল আলিম মুস্তাহাব বলেছেন। এই অভিমত ইমাম শাফিঈর। জাফর ইবনু খালিদ হচ্ছেন ইবনু সা-রাহ, তিনি একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী। ইবনু জুরাইজও তার বরাতে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২২. অনুচ্ছেদঃ
বিপদের সময় কপালে হাত চাপড়ানো ও জামার বুক ছেঁড়া নিষেধ
৯৯৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي زُبَيْدٌ الأَيَامِيُّ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لَيْسَ مِنَّا مَنْ شَقَّ الْجُيُوبَ وَضَرَبَ الْخُدُودَ وَدَعَا بِدَعْوَةِ الْجَاهِلِيَّةِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যেসব লোক (মৃত্যুশোকে) জামার বুক ছিড়ে, গাল চাপড়ায় ও জাহিলী যুগের ন্যায় হা-হুতাশ করে সেসব লোক আমাদের দলভুক্ত নয়।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৮৪), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ করে কাঁদা মাকরূহ্
১০০০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا قُرَّانُ بْنُ تَمَّامٍ الأَسَدِيُّ، وَمَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، وَيَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ عُبَيْدٍ الطَّائِيِّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ رَبِيعَةَ الأَسَدِيِّ، قَالَ مَاتَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يُقَالُ لَهُ قَرَظَةُ بْنُ كَعْبٍ فَنِيحَ عَلَيْهِ فَجَاءَ الْمُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةُ فَصَعِدَ الْمِنْبَرَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَقَالَ مَا بَالُ النَّوْحِ فِي الإِسْلاَمِ أَمَا إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ نِيحَ عَلَيْهِ عُذِّبَ بِمَا نِيحَ عَلَيْهِ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَأَبِي مُوسَى وَقَيْسِ بْنِ عَاصِمٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَجُنَادَةَ بْنِ مَالِكٍ وَأَنَسٍ وَأُمِّ عَطِيَّةَ وَسَمُرَةَ وَأَبِي مَالِكٍ الأَشْعَرِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ الْمُغِيرَةِ حَدِيثٌ غَرِيبٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আলী ইবনু রাবীআ আল-আসাদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কারাযা ইবনু কা’ব নামক এক আনসারী মারা গেলে তার জন্য বিলাপ করে কান্নাকাটি শুরু হয়। এমতাবস্থায় মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) এসে মিম্বারে উঠলেন এবং আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পর বললেন, ইসলামে বিলাপ করে কাঁদার বিধান কোথায়? সাবধান! রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তির জন্য বিলাপ করে কাঁদা হয় তাকে বিলাপের কারণে শাস্তি দেওয়া হয়।
-সহীহ, আল আহকাম (২৮, ২৯), বুখারী, মুসলিম।
উমার, আলী, আবূ মূসা, কাইস ইবনু আসিম, আবূ হুরাইয়া, জুনাদা ইবনু মালিক, আনাস, উম্মু আতিয়্যা, সামুরা ও আবূ মালিক আল-আশআরী (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। মুগীরা (রাঃ) হতে বর্ণিত এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০০১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، وَالْمَسْعُودِيُّ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ أَبِي الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَرْبَعٌ فِي أُمَّتِي مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ لَنْ يَدَعَهُنَّ النَّاسُ النِّيَاحَةُ وَالطَّعْنُ فِي الأَحْسَابِ وَالْعَدْوَى أَجْرَبَ بَعِيرٌ فَأَجْرَبَ مِائَةَ بَعِيرٍ مَنْ أَجْرَبَ الْبَعِيرَ الأَوَّلَ وَالأَنْوَاءُ مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا وَكَذَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতদের মাঝে জাহিলী যুগের চারটি (খারাপ) বিষয় আছে। তারা কখনও এগুলো (পুরোপুরি) ছাড়বে না: মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ সহকারে ক্ৰন্দন করা, বংশ তুলে গালি দেওয়া, সংক্রামক রোগ সংক্রমিত হওয়ার ধারণা, একটি উট সংক্রমিত হলে একশ’টি উটে তা সংক্রমিত হওয়া। কিন্তু প্রশ্ন হলো, প্রথমটি কিভাবে সংক্রমিত হল? আর নক্ষত্রের প্রভাব মান্য করা অর্থাৎ অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের উপর বৃষ্টি হলো।
-হাসান, সহীহাহ্ (৭৩৫)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৪. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির জন্য কান্নাকাটি করা মাকরূহ
১০০২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي زِيَادٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْمَيِّتُ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ ” . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ الْبُكَاءَ عَلَى الْمَيِّتِ قَالُوا الْمَيِّتُ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ . وَذَهَبُوا إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ . وَقَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ أَرْجُو إِنْ كَانَ يَنْهَاهُمْ فِي حَيَاتِهِ أَنْ لاَ يَكُونَ عَلَيْهِ مِنْ ذَلِكَ شَيْءٌ .
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তির জন্য তার পরিবারের লোকদের কান্নাকাটির কারণে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৫৯৩), বুখারী, মুসলিম।
ইবনু উমার ও ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীসের ভিত্তিতে একদল আলিম, মৃত ব্যক্তির জন্য কান্নাকাটি করা অপছন্দ করেছেন। তারা বলেন, তাকে তার পরিবারের কান্নাকাটির কারণে শাস্তি দেওয়া হয়। উক্ত হাদীসকে তারা দলীল হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ইবনুল মুবারাক বলেন, আমি আশা করি যদি মৃত ব্যক্তি তার পরিবারের লোকদেরকে তার জীবিতাবস্থায় কাঁদতে বারণ করে যায় তাহলে তাদের কান্নার কারণে তার কিছু হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০০৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي أَسِيدُ بْنُ أَبِي أَسِيدٍ، أَنَّ مُوسَى بْنَ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَا مِنْ مَيِّتٍ يَمُوتُ فَيَقُومُ بَاكِيهِ فَيَقُولُ وَاجَبَلاَهُ وَاسَيِّدَاهُ أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ إِلاَّ وُكِّلَ بِهِ مَلَكَانِ يَلْهَزَانِهِ أَهَكَذَا كُنْتَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর তার জন্য ক্ৰন্দনকারীরা যখন কাঁদে আর বলে, হায় আমাদের পাহাড়! হে আমাদের নেতা বা অনুরূপ কোন কথা, তখন দুইজন ফেরেশতা ঐ মৃত ব্যক্তির জন্য নিয়োগ করা হয়। তারা তার বুকে ঘুষি মারে আর বলতে থাকে, তুমি কি এরূপ ছিলে?
হাসান, ইবনু মা-জাহ (১৫৯৪)
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৫. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তির জন্য কান্নাকাটি করার অনুমতি
১০০৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ عَبَّادٍ الْمُهَلَّبِيُّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” الْمَيِّتُ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ ” . فَقَالَتْ عَائِشَةُ يَرْحَمُهُ اللَّهُ لَمْ يَكْذِبْ وَلَكِنَّهُ وَهِمَ إِنَّمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِرَجُلٍ مَاتَ يَهُودِيًّا ” إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ وَإِنَّ أَهْلَهُ لَيَبْكُونَ عَلَيْهِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَقَرَظَةَ بْنِ كَعْبٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ عَائِشَةَ . وَقَدْ ذَهَبَ أَهْلُ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا وَتَأَوَّلُوا هَذِهِ الآيَةَ (ألَّا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى ) وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তির জন্য তার পরিবারের লোকদের কান্নাকাটির কারণে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়। আইশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্ তা’আলা তাঁকে (ইবনু উমারকে) রহম করুন। তিনি মিথ্যা বলেননি, বরং ভুল বুঝেছেন। এক ব্যক্তি প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, যে ইয়াহুদী অবস্থায় মারা গিয়েছিলঃ মৃত ব্যক্তিকে (তার গুনাহের কারণে) শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, আর তার জন্য তার পরিবারের লোকেরা কাঁদছে।
-সহীহ্, আহকা-মুল জানা-য়িজ (২৮), বুখারী, মুসলিম৷
ইবনু আব্বাস, কারাযা ইবনু কা’ব, আবূ হুরাইরা, ইবনু মাসউদ ও উসামা ইবনু যাইদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এই হাদীস আইশা (রাঃ) হতে একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। এই হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তারা “ওয়ালা তাযিরু ওয়াযিরাতুন বিযরা উখরা” (একজন অপরজনের বোঝা বহন করবে না) আয়াত দলীল হিসাবে উপস্থাপন করেছেন। এই অভিমত ইমাম শাফিঈরও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০০৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخَذَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ فَانْطَلَقَ بِهِ إِلَى ابْنِهِ إِبْرَاهِيمَ فَوَجَدَهُ يَجُودُ بِنَفْسِهِ فَأَخَذَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَوَضَعَهُ فِي حِجْرِهِ فَبَكَى فَقَالَ لَهُ عَبْدُ الرَّحْمَنِ أَتَبْكِي أَوَلَمْ تَكُنْ نَهَيْتَ عَنِ الْبُكَاءِ قَالَ “ لاَ وَلَكِنْ نَهَيْتُ عَنْ صَوْتَيْنِ أَحْمَقَيْنِ فَاجِرَيْنِ صَوْتٍ عِنْدَ مُصِيبَةٍ خَمْشِ وُجُوهٍ وَشَقِّ جُيُوبٍ وَرَنَّةِ شَيْطَانٍ ” . وَفِي الْحَدِيثِ كَلاَمٌ أَكْثَرُ مِنْ هَذَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)-এর হাত ধরে তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ পুত্র ইবরাহীম (রাঃ)-এর নিকটে গেলেন। তাঁকে তিনি মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পেলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে কোলে তুলে নিলেন এবং কাঁদলেন। আবদুর রাহমান (রাঃ) তাকে বললেন, আপনিও কাঁদছেন? আপনি কি কান্না করতে বারণ করেননি? তিনি বললেনঃ না, বরং আমি দুইটি নির্বোধ সুলভ ও পাপাচারমূলক চিৎকার নিষেধ করেছিঃ বিপদের সময় চিৎকার করা, মুখমণ্ডলে আঘাত করা এবং জামার সম্মুখভাগ ছিড়ে ফেলা আর শাইতানের মত (চিৎকার) কান্নাকাটি করা।
-হাসান, হাদীসটিতে আরো অনেক বক্তব্য আছে।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১০০৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، قَالَ وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَمْرَةَ، أَنَّهَا أَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا، سَمِعَتْ عَائِشَةَ، وَذُكِرَ، لَهَا أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، يَقُولُ إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبُكَاءِ الْحَىِّ عَلَيْهِ . فَقَالَتْ عَائِشَةُ غَفَرَ اللَّهُ لأَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَمَا إِنَّهُ لَمْ يَكْذِبْ وَلَكِنَّهُ نَسِيَ أَوْ أَخْطَأَ إِنَّمَا مَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى يَهُودِيَّةٍ يُبْكَى عَلَيْهَا فَقَالَ “ إِنَّهُمْ لَيَبْكُونَ عَلَيْهَا وَإِنَّهَا لَتُعَذَّبُ فِي قَبْرِهَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
আমর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আইশা (রাঃ)-এর নিকট শুনেছেন যে, তার নিকট উল্লেখ করা হল যে, ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, মৃত ব্যক্তিকে জীবিতদের কান্নাকাটির কারণে শাস্তি দেওয়া হয় (এ কথা শুনে) আইশা (রাঃ) বললেন, আবদুর রাহমানের বাবাকে আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করুন। তিনি মিথ্যা বলেননি। তবে তিনি হয়ত ভুলে গেছেন বা সঠিকভাবে বুঝতে পারেননি। (প্রকৃত বিষয় এই যে,) কোন এক ইয়াহুদী নারীর লাশের বা কবরের পাশ দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাচ্ছিলেন। তখন তার জন্য কান্নাকাটি করা হচ্ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেনঃ তার জন্য তো এরা কান্নাকাটি করছে, অথচ তাকে কবরের মাঝে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
-সহীহ, আল-আহকাম (২৮), বুখারী, মুসলিম।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৬. অনুচ্ছেদঃ
জানাযার (লাশের) আগে আগে চলা
১০০৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ يَمْشُونَ أَمَامَ الْجَنَازَةِ .
সালিম (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকর ও উমার (রাঃ)-কে জানাযার আগে আগে চলতে দেখেছি।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৪৮২)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০০৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ مَنْصُورٍ، وَبَكْرٍ الْكُوفِيِّ، وَزِيَادٍ، وَسُفْيَانَ، كُلُّهُمْ يَذْكُرُ أَنَّهُ سَمِعَهُ مِنَ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ يَمْشُونَ أَمَامَ الْجَنَازَةِ .
সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকর ও উমার (রাঃ)-কে জানাযার আগে আগে চলতে দেখেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০০৯
ثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ يَمْشُونَ أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ الزُّهْرِيُّ وَأَخْبَرَنِي سَالِمٌ أَنَّ أَبَاهُ كَانَ يَمْشِي أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ هَكَذَا رَوَاهُ ابْنُ جُرَيْجٍ وَزِيَادُ بْنُ سَعْدٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ نَحْوَ حَدِيثِ ابْنِ عُيَيْنَةَ . وَرَوَى مَعْمَرٌ وَيُونُسُ بْنُ يَزِيدَ وَمَالِكٌ وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنَ الْحُفَّاظِ عَنِ الزُّهْرِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَمْشِي أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ الزُّهْرِيُّ وَأَخْبَرَنِي سَالِمٌ أَنَّ أَبَاهُ كَانَ يَمْشِي أَمَامَ الْجَنَازَةِ . وَأَهْلُ الْحَدِيثِ كُلُّهُمْ يَرَوْنَ أَنَّ الْحَدِيثَ الْمُرْسَلَ فِي ذَلِكَ أَصَحُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ مُوسَى يَقُولُ قَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ حَدِيثُ الزُّهْرِيِّ فِي هَذَا مُرْسَلٌ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ ابْنِ عُيَيْنَةَ . قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ وَأَرَى ابْنَ جُرَيْجٍ أَخَذَهُ عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ زِيَادٍ وَهُوَ ابْنُ سَعْدٍ وَمَنْصُورٍ وَبَكْرٍ وَسُفْيَانَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ . وَإِنَّمَا هُوَ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ رَوَى عَنْهُ هَمَّامٌ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الْمَشْىِ أَمَامَ الْجَنَازَةِ فَرَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّ الْمَشْىَ أَمَامَهَا أَفْضَلُ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ . قَالَ وَحَدِيثُ أَنَسٍ فِي هَذَا الْبَابِ غَيْرُ مَحْفُوظٍ .
যু্হরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকর ও উমার (রাঃ) জানাযার আগে আগে চলতেন। যুহরী বলেন, আমাকে সালিম (রহঃ) জানিয়েছেন যে, তার পিতাও জানাযার আগে আগে যেতেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ।
আনাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, অনেকগুলো সূত্রে ইবনু উমার (রাঃ)-এর হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। যুহরী (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানাযার আগে আগে যেতেন। সালিম (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, তার পিতা জানাযার আগে আগে যেতেন। হাদীস বিশারদগণ সকলেই (যুহরী হতে বৰ্ণিত) মুরসাল হাদীসটিকে বেশি সহী্হ্ বলেছেন। ইবনুল মুবারাক বলেন, এই বিষয়ে ইবনু উয়াইনার হাদীসটি হতে যুহরীর মুরসাল রিওয়ায়াতটি বেশি সহী্হ্। আমার মনে হয় ইবনু উআইনা হতে ইবনু জুরাইয এটিকে গ্রহণ করেছেন
আবূ্ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাম্মাম ইবনু ইয়াহইয়া যিয়াদ হতে এবং মানসূর, বাকর ও সুফিয়ান যুহরী হতে, সালিমের বরাতে তার পিতা হতে বর্ণনা করেছেন।
আলিমদের মাঝে জানাযার আগে আগে চলা প্রসঙ্গে মত পার্থক্য আছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর কিছু সংখ্যক আলিমের মতে জানাযার আগে আগে চলা উত্তম। এই মত ইমাম শাফিঈ ও আহমাদ (রহঃ)-এর।
আবূ ঈসা বলেন, এই অনুচ্ছেদে আনাস (রাঃ)-এর বর্ণিত (পরবর্তী) হাদীস অরক্ষিত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০১০
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ كَانُوا يَمْشُونَ أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى سَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ خَطَأٌ أَخْطَأَ فِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ وَإِنَّمَا يُرْوَى هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ يُونُسَ عَنِ الزُّهْرِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ كَانُوا يَمْشُونَ أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ الزُّهْرِيُّ وَأَخْبَرَنِي سَالِمٌ أَنَّ أَبَاهُ كَانَ يَمْشِي أَمَامَ الْجَنَازَةِ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَهَذَا أَصَحُّ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকার, উমার এবং উসমান (রাঃ) জানাযার আগে আগে চলতেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৪৮৩)।
আবূ ঈসা বলেন, আমি এই হাদীস সম্পর্কে মুহাম্মাদ আল-বুখারীকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু বাকার এ হাদীসের সনদে ভুল করেছেন। মূলতঃ ইউনুস-যুহরীর সূত্রে হাদীসে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকার ও উমার (রাঃ) জানাযার আগে আগে যেতেন। যুহরী বলেন, সালিম আমাকে অবহিত করেছেন যে, তার পিতাও জানাযার আগে আগে যেতেন। মুহাম্মাদ আল-বুখারী বলেন, এটিই হলো বেশি সহীহ্ বর্ণনা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদঃ ২৭
জানাযার পিছে পিছে যাওয়া
১০১১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ يَحْيَى، إِمَامِ بَنِي تَيْمِ اللَّهِ عَنْ أَبِي مَاجِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ سَأَلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْمَشْىِ خَلْفَ الْجَنَازَةِ فَقَالَ “ مَا دُونَ الْخَبَبِ فَإِنْ كَانَ خَيْرًا عَجَّلْتُمُوهُ وَإِنْ كَانَ شَرًّا فَلاَ يُبَعَّدُ إِلاَّ أَهْلُ النَّارِ الْجَنَازَةُ مَتْبُوعَةٌ وَلاَ تَتْبَعُ وَلَيْسَ مِنْهَا مَنْ تَقَدَّمَهَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ يُعْرَفُ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يُضَعِّفُ حَدِيثَ أَبِي مَاجِدٍ هَذَا . وَقَالَ مُحَمَّدٌ قَالَ الْحُمَيْدِيُّ قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ قِيلَ لِيَحْيَى مَنْ أَبُو مَاجِدٍ هَذَا قَالَ طَائِرٌ طَارَ فَحَدَّثَنَا . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ إِلَى هَذَا رَأَوْا أَنَّ الْمَشْىَ خَلْفَهَا أَفْضَلُ . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَإِسْحَاقُ . قَالَ إِنَّ أَبَا مَاجِدٍ رَجُلٌ مَجْهُولٌ لاَ يُعْرَفُ إِنَّمَا يُرْوَى عَنْهُ حَدِيثَانِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ . وَيَحْيَى إِمَامُ بَنِي تَيْمِ اللَّهِ ثِقَةٌ يُكْنَى أَبَا الْحَارِثِ وَيُقَالُ لَهُ يَحْيَى الْجَابِرُ وَيُقَالُ لَهُ يَحْيَى الْمُجْبِرُ أَيْضًا وَهُوَ كُوفِيٌّ رَوَى لَهُ شُعْبَةُ وَسُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَأَبُو الأَحْوَصِ وَسُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ .
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জানাযার পিছে পিছে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলেন : দৌড়ের চেয়ে কিছুটা ধীরে চলবে। যদি সে ভাল ব্যক্তি হয় তাহলে তোমরা তাকে তাড়াতাড়ি তার জায়গায় পৌছে দিলে। সে মন্দ ব্যক্তি হলে তাড়াতাড়ি এক জাহান্নামীকে বিতাড়িত করা হল। লাশের অনুসরণ করা হয়। লাশ কারো অনুসরণ করে না। যে ব্যক্তি লাশের আগে আগে চলে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৪৮৪),
আবূ ঈসা বলেনঃ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি আমরা শুধু উপরোক্ত সূত্রেই জেনেছি। মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল আল-বুখারী আবূ মাযিদ বর্ণিত এ হাদীসটিকে তার কারণে যঈফ বলেছেন। ইয়াহইয়াকে আবু মাযিদ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য করেন, একটি পাখি উড়ে এসে আমাদেরকে হাদীস শুনিয়েছে (রাবী অপরিচিত)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম এ হাদীস অনুসারে আমল করেছেন। তাদের মতে জানাযার পিছে পিছে যাওয়াই অতিশয় ভাল। ইমাম সাওরী ও ইসহাক (রহঃ)-এর এ অভিমত। আবু মাযিদ একজন অখ্যাত ও অপরিচিত রাবী। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) সূত্রে তার দুটি হাদীস বর্ণিত আছে। তাইমুল্লাহ গোত্রের ইমাম ইয়াহইয়া বিশ্বস্ত রাবী। তার উপনাম আবুল হারিস। তাকে ইয়াহইয়া আল-জাবির এবং ইয়াহইয়া আল-মুজবিরও বলা হয়। তিনি ছিলেন কূফার বাসিন্দা। শুবা, সুফিয়ান সাওর, আবুল আহওয়াস ও সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা তার সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
অনুচ্ছেদঃ ২৮
সাওয়ার হয়ে জানাযার পিছে পিছে চলা মাকরূহ
১০১২
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ رَاشِدِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي جَنَازَةٍ فَرَأَى نَاسًا رُكْبَانًا فَقَالَ “ أَلاَ تَسْتَحْيُونَ إِنَّ مَلاَئِكَةَ اللَّهِ عَلَى أَقْدَامِهِمْ وَأَنْتُمْ عَلَى ظُهُورِ الدَّوَابِّ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ثَوْبَانَ قَدْ رُوِيَ عَنْهُ مَوْقُوفًا قَالَ مُحَمَّدٌ الْمَوْقُوفُ مِنْهُ أَصَحُّ .
সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একটি জানাযায় উপস্থিত হওয়ার উদ্দেশে আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে বের হলাম। তিনি কিছু ব্যক্তিকে আরোহী অবস্থায় দেখে বললেন ; তোমাদের কি শরম নেই? আল্লাহ তা’আলার ফেরেশতাগণ পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন আর তোমরা পশুর পিঠে সাওয়ার হয়ে যাচ্ছো!
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৪৮০),
এই অনুচ্ছেদে মুগীরা ইবনু শুবা ও জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সাওবান (রাঃ)-এর হাদীসটি মাওকূফরূপেও বর্ণিত আছে। মুহাম্মাদ (রহঃ) বলেন, মাওকূফ বর্ণনাটিই অনেক বেশী সহীহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯. অনুচ্ছেদঃ
জানাযায় সাওয়ার হয়ে যাওয়ার অনুমতি প্রসঙ্গে
১০১৩
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ، يَقُولُ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي جَنَازَةِ أَبِي الدَّحْدَاحِ وَهُوَ عَلَى فَرَسٍ لَهُ يَسْعَى وَنَحْنُ حَوْلَهُ وَهُوَ يَتَوَقَّصُ بِهِ .
সিমাক ইবনু হারব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ আমরা ইবনুদ দাহ্দাহ-এর জানাযাতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে উপস্থিত ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘোড়ার পিঠে সাওয়ার অবস্থায় ছিলেন। আমরা তাঁর চারপাশে ছিলাম এবং সেটি আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছিলো এবং ঘোড়ার চলার তালে তালে তিনি দুলছিলেন।
-সহীহ, আল আহকাম (৭৫), মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০১৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الصَّبَّاحِ الْهَاشِمِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو قُتَيْبَةَ، عَنِ الْجَرَّاحِ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اتَّبَعَ جَنَازَةَ أَبِي الدَّحْدَاحِ مَاشِيًا وَرَجَعَ عَلَى فَرَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনুদ দাহদাহ-এর জানাযায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পায়ে হেটে যান, কিন্তু ফিরে আসেন ঘোড়ার পিঠে সাওয়ার হয়ে।
-সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০. অনুচ্ছেদঃ
জানাযা (লাশ) নিয়ে তাড়াতাড়ি এগিয়ে যাওয়া
১০১৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، سَمِعَ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ أَسْرِعُوا بِالْجَنَازَةِ فَإِنْ يَكُنْ خَيْرًا تُقَدِّمُوهَا إِلَيْهِ وَإِنْ يَكُنْ شَرًّا تَضَعُوهُ عَنْ رِقَابِكُمْ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জানাযা (লাশ) নিয়ে তোমরা তাড়াতাড়ি এগিয়ে চল। কেননা, সে যদি ভাল লোক হয় তাহলে তোমরা উত্তম পরিণতির দিকে তাকে এগিয়ে দিলে। আর যদি সে খারাপ লোক হয়ে থাকে তাহলে তাকে তোমাদের গর্দান হতে তাড়াতাড়ি নামিয়ে রাখলে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৪৭৭), বুখারী, মুসলিম।
আবূ বাকরা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহী্হ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১. অনুচ্ছেদঃ
উহুদ যুদ্ধের শহীদগণ ও হামযা (রাঃ) প্রসঙ্গে আলোচনা
১০১৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو صَفْوَانَ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ أَتَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى حَمْزَةَ يَوْمَ أُحُدٍ فَوَقَفَ عَلَيْهِ فَرَآهُ قَدْ مُثِّلَ بِهِ فَقَالَ ” لَوْلاَ أَنْ تَجِدَ صَفِيَّةُ فِي نَفْسِهَا لَتَرَكْتُهُ حَتَّى تَأْكُلَهُ الْعَافِيَةُ حَتَّى يُحْشَرَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ بُطُونِهَا ” . قَالَ ثُمَّ دَعَا بِنَمِرَةٍ فَكَفَّنَهُ فِيهَا فَكَانَتْ إِذَا مُدَّتْ عَلَى رَأْسِهِ بَدَتْ رِجْلاَهُ وَإِذَا مُدَّتْ عَلَى رِجْلَيْهِ بَدَا رَأْسُهُ . قَالَ فَكَثُرَ الْقَتْلَى وَقَلَّتِ الثِّيَابُ . قَالَ فَكُفِّنَ الرَّجُلُ وَالرَّجُلاَنِ وَالثَّلاَثَةُ فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ ثُمَّ يُدْفَنُونَ فِي قَبْرٍ وَاحِدٍ فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسْأَلُ عَنْهُمْ ” أَيُّهُمْ أَكْثَرُ قُرْآنًا ” . فَيُقَدِّمُهُ إِلَى الْقِبْلَةِ . قَالَ فَدَفَنَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْهِمْ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مِنْ حَدِيثِ أَنَسٍ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . النَّمِرَةُ الْكِسَاءُ الْخَلَقُ . وَقَدْ خُولِفَ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ فِي رِوَايَةِ هَذَا الْحَدِيثِ فَرَوَى اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . وَرَوَى مَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ ثَعْلَبَةَ عَنْ جَابِرٍ . وَلاَ نَعْلَمُ أَحَدًا ذَكَرَهُ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَنَسٍ إِلاَّ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ . وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ حَدِيثُ اللَّيْثِ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ جَابِرٍ أَصَحُّ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহুদের যুদ্ধের দিন হামযা (রাঃ)-এর লাশের নিকটে এলেন। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি দেখতে পেলেন, তার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে তাকে বিকৃত করা হয়েছে। তিনি বললেনঃ (হামযার বোন) সাফিয়্যা তাঁর মনে আঘাত পাবে এমন ভয় যদি না হতো তাহলে আমি এই অবস্থায়ই তাঁর লাশ ছেড়ে যেতাম। তাকে হিংস্র জীবজন্তু খেয়ে ফেলত এবং সে এদের পেট হতেই কিয়ামাতের দিন বেরিয়ে আসত। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি একটি সাদা-কালো ডোরাযুক্ত চাদর নিয়ে আসতে বললেন এবং সেটা দিয়ে তার কাফন পরান। তা এত ছোট ছিল যে, মাথার দিকে টানলে তার দু’পা বেরিয়ে যেত, আবার তার পায়ের দিকে টানলে তার মাথা বেরিয়ে যেত। বর্ণনাকারী বলেন, নিহতের পরিমাণ ছিল অনেক বেশি কিন্তু কাপড় কম ছিল। তাই এক কাপড়ে একজন, দুইজন, এমনকি তিনজনকেও একসাথে কাফন পরানো হয় এবং একই কবরে দাফন করা হয়। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশ্ন করতেনঃ এদের মধ্যে কার বেশি কুরআন জানা আছে? তাকেই তিনি কিবলার সম্মুখে এগিয়ে রাখতেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লাশগুলোর দাফন সম্পন্ন করলেন, কিন্তু তাদের জানাযা আদায় করেননি।
-সহীহ, আল আহকাম (৫৯, ৬০)।
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। আমরা আনাস (রাঃ)-এর এই হাদীস সম্পর্কে উপরোক্ত সূত্র ব্যতীত আর কোন সূত্রে জানতে পারিনি। হাদীসে বর্ণিত নামিরা অর্থ পুরাতন কাপড়। উসামা ইবনু যাইদের বর্ণনা সম্পর্কে মতভেদ আছে। লাইস ইবনু সা’দ বৰ্ণনা করেছেন ইবনু শিহাব হতে, তিনি আব্দুর রাহমান ইবনু কা’ব ইবনু মালিক হতে, তিনি জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ ইবনু যাইদ হতে, আর মামার বর্ণনা করেছেন যুহরী হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু সালাবা হতে, তিনি জাবির হতে। এই হাদীসটি আনাস (রাঃ) হতে যুহরীর সূত্রে উসামা (রাঃ) ব্যতীত অন্য কেউ বর্ণনা করেননি। লাইস ইবনু সা’দ-ইবনু শিহাব হতে, তিনি আবদুর রাহমান ইবনু কা’ব হতে, তিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ হতে এই সূত্রে বর্ণিত হাদীস সম্বন্ধে মুহাম্মাদ বুখারীকে আমি প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এই সূত্রটি বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩২. অনুচ্ছেদঃ
(জানাযায় শারীক হওয়া)
১০১৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ مُسْلِمٍ الأَعْوَرِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعُودُ الْمَرِيضَ وَيَشْهَدُ الْجَنَازَةَ وَيَرْكَبُ الْحِمَارَ وَيُجِيبُ دَعْوَةَ الْعَبْدِ وَكَانَ يَوْمَ بَنِي قُرَيْظَةَ عَلَى حِمَارٍ مَخْطُومٍ بِحَبْلٍ مِنْ لِيفٍ عَلَيْهِ إِكَافُ لِيفٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مُسْلِمٍ عَنْ أَنَسٍ . وَمُسْلِمٌ الأَعْوَرُ يُضَعَّفُ وَهُوَ مُسْلِمُ بْنُ كَيْسَانَ الْمُلاَئِيُّ تُكُلِّمَ فِيهِ وَقَدْ رَوَى عَنْهُ شُعْبَةُ وَسُفْيَانُ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অসুস্থকে দেখতে যেতেন, জানাযায় উপস্থিত হতেন, গাধার পিঠে সাওয়ার হতেন এবং কেনা গোলামের দাওয়াতও ক্ববুল করতেন। বানূ কুরাইযার (যুদ্ধের) দিন তিনি একটি গাধার পিঠে সাওয়ার ছিলেন। এর লাগাম ও গদি ছিল খেজুর গাছের বাকলের তৈরী।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৪১৭৮)।
আবু ঈসা বলেন, আমরা এ হাদীসটি শুধু মুসলিম হতে আনাস (রাঃ) সূত্রেই জেনেছি। কিন্তু মুসলিম আল-আওয়ার হাদীস শাস্ত্রে যঈফ। তার পিতার নাম কাইসান আল-মুলাঈ। তার সম্পর্কে সমালোচনা করা হয়েছে। শুবা এবং সুফিয়ান মুলাঈ তার নিকট হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর স্থান ও দাফনের স্থান)
১০১৮
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ لَمَّا قُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اخْتَلَفُوا فِي دَفْنِهِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا مَا نَسِيتُهُ قَالَ “ مَا قَبَضَ اللَّهُ نَبِيًّا إِلاَّ فِي الْمَوْضِعِ الَّذِي يُحِبُّ أَنْ يُدْفَنَ فِيهِ ” . ادْفِنُوهُ فِي مَوْضِعِ فِرَاشِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُلَيْكِيُّ يُضَعَّفُ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ فَرَوَاهُ ابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَيْضًا .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পর তার দাফন সম্পর্কে সাহাবীগণের মাঝে মতের অমিল দেখা দেয়। আবূ বাকার (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে আমি কিছু শুনেছি, তা আমি ভুলিনি। তিনি বলেছেনঃ যে স্থানে আল্লাহ তা’আলা তাঁর নাবীকে দাফন হওয়ার ইচ্ছা করেন সে স্থানেই তাঁর মৃত্যু দেন। তোমরা তাঁকে তাঁর শয্যাস্থানে দাফন কর।
-সহীহ্, আল আহকাম (১৩৭, ১৩৮), মুসলিম, মুখতাসার শামায়িল (৩২৬)।
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা গারীব বলেছেন। স্মরণশক্তির দিক হতে আবদুর রাহমান ইবনু আবূ বাকারকে দুর্বল বলা হয়েছে। আরো কয়েকটি সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) এই হাদীসটিকে আবূ বাকার (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
(মৃত ব্যক্তির উত্তম গুণ বর্ণনা করা)
১০১৯
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ هِشَامٍ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ أَنَسٍ الْمَكِّيِّ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ اذْكُرُوا مَحَاسِنَ مَوْتَاكُمْ وَكُفُّوا عَنْ مَسَاوِيهِمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . سَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ عِمْرَانُ بْنُ أَنَسٍ الْمَكِّيُّ مُنْكَرُ الْحَدِيثِ وَرَوَى بَعْضُهُمْ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ عَائِشَةَ . قَالَ وَعِمْرَانُ بْنُ أَبِي أَنَسٍ مِصْرِيٌّ أَقْدَمُ وَأَثْبَتُ مِنْ عِمْرَانَ بْنِ أَنَسٍ الْمَكِّيِّ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের মৃত লোকদের ভালো দিকগুলো আলোচনা কর এবং তাদের খারাপ দিকগুলো আলোচনা থেকে ক্ষান্ত হও।
যঈফ, মিশকাত (১৬৭৮), রাওযুন্ নাযীর (৪৮২)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। আমি মুহাম্মাদ (বুখারী)-কে বলতে শুনেছি যে, ইমরান ইবনু আনাস আল-মাক্কী একজন উপেক্ষিত রাবী অর্থাৎ তার বর্ণিত হাদীস অগ্রাহ্য। কোন কোন রাবী এ হাদীসটি আতা হতে আইশা (রাঃ) সূত্রেও বর্ণনা করেছেন। ইমরান ইবনু আবী আনাস আল-মিসরী এই ইমরান ইবনু আনাস আল-মাক্কীর তুলনায় বেশী উল্লেখযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার পূর্বে বসা
১০২০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عِيسَى، عَنْ بِشْرِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سُلَيْمَانَ بْنِ جُنَادَةَ بْنِ أَبِي أُمَيَّةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اتَّبَعَ الْجَنَازَةَ لَمْ يَقْعُدْ حَتَّى تُوضَعَ فِي اللَّحْدِ فَعَرَضَ لَهُ حَبْرٌ فَقَالَ هَكَذَا نَصْنَعُ يَا مُحَمَّدُ . قَالَ فَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ “ خَالِفُوهُمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَبِشْرُ بْنُ رَافِعٍ لَيْسَ بِالْقَوِيِّ فِي الْحَدِيثِ .
উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন লাশের সাথে যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেতেন তাহলে কবরে তা না রাখা পর্যন্ত তিনি বসতেন না। একদা এক ইয়াহুদী পণ্ডিত তাকে বলল, হে মুহাম্মাদ! আমরাও এরূপ করি। এরপর হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার) আগেই বসতে লাগলেন এবং বললেনঃ তোমরা তাদের বিপরীত কর।
-হাসান, ইবনু মা-জাহ (১৫৪৫)।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা গারীব বলেছেন। হাদীস শাস্ত্রে বিশ্র ইবনু রাফি খুব একটা শক্তিশালী নন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস