১. অনুচ্ছেদঃ
সন্দেহজনক জিনিস পরিহার করা
১২০৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، أَنْبَأَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ مُجَالِدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهُ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ الْحَلاَلُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَ ذَلِكَ أُمُورٌ مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَدْرِي كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ أَمِنَ الْحَلاَلِ هِيَ أَمْ مِنَ الْحَرَامِ فَمَنْ تَرَكَهَا اسْتِبْرَاءً لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ فَقَدْ سَلِمَ وَمَنْ وَاقَعَ شَيْئًا مِنْهَا يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَ الْحَرَامَ كَمَا أَنَّهُ مَنْ يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَهُ أَلاَ وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى أَلاَ وَإِنَّ حِمَى اللَّهِ مَحَارِمُهُ ” .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ .
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ হালালও সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট এবং এ দুটির মাঝে অনেক সন্দেহজনক বিষয় আছে। তা হালাল হবে না হারাম হবে সেটা অনেকেই জানে না। যে লোক এই সন্দেহজনক বিষয়গুলো নিজের দ্বীন এবং মান-ইজ্জাতের হিফাযাতের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেবে সে নিরাপদ হল। যে লোক এর কিছুতে লিপ্ত হল তার হারাম কাজে লিপ্ত হওয়ারও সংশয় থেকে গেল। (উদাহরণস্বরূপ) নিষিদ্ধ এলাকার আশেপাশে যে লোক পশু চড়ায়, তার এতে প্রবেশের ভয় আছে। জেনে রাখ! প্রতিটি সরকারেরই কিছু সংরক্ষিত এলাকা থাকে। সাবধান! আল্লাহ তা’আলার সংরক্ষিত এলাকা হল ‘তাঁর হারাম করা বিষয়গুলো’।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৩৯৮৪), বুখারী, মুসলিম
হান্নাদ ওয়াকী হতে, তিনি যাকারিয়া ইবনু আবী যাইদা হতে, তিনি শা’বী হতে, তিনি নু’মান ইবনু বাশীর হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ অর্থে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। একাধিক বর্ণনাকারী নুমান (রাঃ)-এর সূত্রে একই বিষয়বস্তু সম্বলিত হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২. অনুচ্ছেদঃ
সূদ গ্রহণ প্রসঙ্গে
১২০৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَكَاتِبَهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَجَابِرٍ وَأَبِي جُحَيْفَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
. ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –সূদখোর, সূদ দাতা সূদের সাক্ষীদ্বয় ও সূদের (চুক্তি বা হিসাব) লেখককে অভিসম্পাত করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৭৭)
উমার, আলী, জাবির ও আবূ জুহাইফা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩. অনুচ্ছেদঃ
মিথ্যা ও প্রতারণা ইত্যাদির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি
১২০৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّنْعَانِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ شُعْبَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْكَبَائِرِ قَالَ “ الشِّرْكُ بِاللَّهِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ وَقَتْلُ النَّفْسِ وَقَوْلُ الزُّورِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ وَأَيْمَنَ بْنِ خُرَيْمٍ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কাবীরা গুনাহ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার সাথে অংশী স্থাপন করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, মানুষকে মেরে ফেলা এবং মিথ্যা কথা বলা (কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত)।
সহীহ্, গাইয়াতুল মারাম (২৭৭), বুখারী, মুসলিম
আবূ বাক্রা, আইমান ইবনু খুরাইম ও ইবনু উমর (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪. অনুচ্ছেদঃ
ব্যবসায়ীদের প্রসঙ্গে এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের এই নামকরণ করেন
১২০৮
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي غَرَزَةَ، قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ نُسَمَّى السَّمَاسِرَةَ فَقَالَ “ يَا مَعْشَرَ التُّجَّارِ إِنَّ الشَّيْطَانَ وَالإِثْمَ يَحْضُرَانِ الْبَيْعَ فَشُوبُوا بَيْعَكُمْ بِالصَّدَقَةِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ وَرِفَاعَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ قَيْسِ بْنِ أَبِي غَرَزَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . رَوَاهُ مَنْصُورٌ وَالأَعْمَشُ وَحَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي غَرَزَةَ . وَلاَ نَعْرِفُ لِقَيْسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غَيْرَ هَذَا .
কাইস ইবনু আবী গারাযা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন। আমাদেরকে ‘সামাসিরাহ’ (দালাল) বলা হত। তিনি বললেনঃ হে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়! শাইতান ও গুনাহ ব্যবসায়িক লেনদেনের সময় এসে হাযির হয়। অতএব, ব্যবসায়ের সাথে তোমরা দান-খায়রাতও যুক্ত কর।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৪৫)
বারাআ ইবনু আযিব ও রিফাআ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। কাইস ইবনু আবী গাযারা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। মানসূর, আ’মাশ, হাবীব ইবনু আবী সাবিত, এবং আরও অনেকে আবূ ওয়াইল-এর সূত্রে কাইস ইবনু গারাযা হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই একটি হাদীসই বর্ণনা করেছেন বলে আমরা জানি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপরোক্ত হাদীসের মত হাদীস হান্নাদ হতে, তিনি আবূ মুআবিয়া হতে, তিনি আ’মাশ হতে, তিনি শাকীক হতে, তিনি কাইস ইবনু আবূ গারাযা (রাঃ) হতে এই সনদেও বর্ণিত আছে। এ সূত্রটিও সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২০৯
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ التَّاجِرُ الصَّدُوقُ الأَمِينُ مَعَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ الثَّوْرِيِّ عَنْ أَبِي حَمْزَةَ . وَأَبُو حَمْزَةَ اسْمُهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَابِرٍ وَهُوَ شَيْخٌ بَصْرِيٌّ .
আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীরা (আখিরাতে) নাবীগণ, সিদ্দীকগণ (সত্যবাদীগণ) ও শহীদগণের সাথে থাকবে।
যঈফ, গায়াতুল মারাম (১৬৭) (বেচা-কেনার হাদীস)
আবূ ঈসা বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান। শুধুমাত্র উপরোক্ত (সুফিয়ান-আবূ হামযা) সূত্রেই আমরা হাদীসটি অবগত হয়েছি। আবূ হামযার নাম আবদুল্লাহ, পিতা জাবির। তিনি বসরার বয়স্ক আলিম ছিলেন। সুওয়াইদ-ইবনুল মুবারাক হতে, তিনি সুফিয়ান হতে, তিনি আবূ হামযা (রাহঃ) হতে এই সনদেও উপরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১২১০
حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ، يَحْيَى بْنُ خَلَفٍ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُثْمَانَ بْنِ خُثَيْمٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ عُبَيْدِ بْنِ رِفَاعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّهُ خَرَجَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْمُصَلَّى فَرَأَى النَّاسَ يَتَبَايَعُونَ فَقَالَ ” يَا مَعْشَرَ التُّجَّارِ ” . فَاسْتَجَابُوا لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَرَفَعُوا أَعْنَاقَهُمْ وَأَبْصَارَهُمْ إِلَيْهِ فَقَالَ ” إِنَّ التُّجَّارَ يُبْعَثُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فُجَّارًا إِلاَّ مَنِ اتَّقَى اللَّهَ وَبَرَّ وَصَدَقَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَيُقَالُ إِسْمَاعِيلُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ رِفَاعَةَ أَيْضًا .
ইসমাঈল ইবনু উবাইদ ইবনু রিফাআ (রাঃ) হতে পালাক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (রিফাআ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ঈদের মাঠে রাওয়ানা হলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের কেনা-বেচায় জড়িত দেখে বলেনঃ হে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়! তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ডাকে সাড়া দিল এবং নিজেদের ঘাড় ও চোখ উঠিয়ে তাঁর দিকে তাকালো। তিনি বললেনঃ কিয়ামাতের দিন ব্যবসায়ীদের ফাসিক বা গুনাহগাররূপে উঠানো হবে, কিন্তু যেসব ব্যবসায়ী আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় করে, নির্ভুলভাবে কাজ করে এবং সততা ধারণ করে তারা এর ব্যতিক্রম।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২১৪৬), আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। ইসমাঈলের পিতাকে উবাইদুল্লাহও বলা হয়।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৫. অনুচ্ছেদঃ
নিজের পণ্য প্রসঙ্গে যে লোক মিথ্যা শপথ করে
১২১১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ مُدْرِكٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ بْنَ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، يُحَدِّثُ عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” ثَلاَثَةٌ لاَ يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ” . قُلْتُ مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَدْ خَابُوا وَخَسِرُوا فَقَالَ ” الْمَنَّانُ وَالْمُسْبِلُ إِزَارَهُ وَالْمُنْفِقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي أُمَامَةَ بْنِ ثَعْلَبَةَ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَمَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي ذَرٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা কিয়ামাতের দিবসে তিন শ্রেণীর লোকের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না, উপরন্তু তাদের জন্য রয়েছে ভয়ানক শাস্তি। আমরা প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল। এরা কারা? এরা তো ব্যর্থ ও ধ্বংস হল। তিনি বললেনঃ (তারা হল) উপকার করার পর তার খোঁটাদানকারী, পায়ের গোড়ালির নিচে কাপড় পরিধানকারী এবং নিজের পণ্যদ্রব্য মিথ্যা শপথ করে বিক্রয়কারী।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২০৮)
ইবনু মাসঊদ, আবূ হুরাইরা, আবূ উমামা ইবনু সা’লাবা, ইমরান ইবনু হুসাইন ও মা’কিল ইবনু ইয়াসার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আবূ যার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬. অনুচ্ছেদঃ
সকালে ব্যবসায়ের কাজে বের হওয়া
১২১২
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، حَدَّثَنَا يَعْلَى بْنُ عَطَاءٍ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ حَدِيدٍ، عَنْ صَخْرٍ الْغَامِدِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ اللَّهُمَّ بَارِكْ لأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا ” . قَالَ وَكَانَ إِذَا بَعَثَ سَرِيَّةً أَوْ جَيْشًا بَعَثَهُمْ أَوَّلَ النَّهَارِ وَكَانَ صَخْرٌ رَجُلاً تَاجِرًا وَكَانَ إِذَا بَعَثَ تِجَارَةً بَعَثَهُمْ أَوَّلَ النَّهَارِ فَأَثْرَى وَكَثُرَ مَالُهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَبُرَيْدَةَ وَأَنَسٍ وَابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ صَخْرٍ الْغَامِدِيِّ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَلاَ نَعْرِفُ لِصَخْرٍ الْغَامِدِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم غَيْرَ هَذَا الْحَدِيثِ . وَقَدْ رَوَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ يَعْلَى بْنِ عَطَاءٍ هَذَا الْحَدِيثَ .
সাখ্র আল-গামিদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “হে আল্লাহ্! আমার উন্মাতের ভোর বেলার মধ্যে তাদেরকে বারকাত ও প্রাচুর্য দান করুন।” বর্ণনাকারী বলেন, যখন তিনি কোথাও কোন ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতেন, তখন তাদেরকে দিনের প্রথম অংশেই পাঠাতেন। সাখ্র (রাঃ) ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার ব্যবসায়ীদের পাঠাতে ইচ্ছা করলে তাদেরকে দিনের প্রথম অংশেই পাঠাতেন। ফলে তিনি অনেক সম্পদের মালিক হন।
সহীহ্, ‘তিনি ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ বাহিনী দিনের প্রথম অংশেই প্রেরণ করতেন’ অংশটুকু যঈফ রাওযুন নাযীর (৪৯০), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২৩৪৫), বেচা-কেনার হাদীস, যঈফা (৪১৭৮)
আলী, ইবনু মাসঊদ, বুরাইদা, আনাস, ইবনু উমার, ইবনু আব্বাস ও জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সাখ্র আল-গামিদী (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই একটি মাত্র হাদীসই আমরা সাখ্র (রাঃ)-এর নিকট হতে জেনেছি। এ হাদীসটি সুফিয়ান সাওরী শুবা হতে, তিনি ইয়া’লা ইবনু আতা হতে পরম্পরায় বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭. অনুচ্ছেদঃ
নির্দিষ্ট মেয়াদে মূল্য পরিশোধের শর্তে বাকীতে ক্রয়-বিক্রয়ের অনুমতি
১২১৩
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، أَخْبَرَنَا عُمَارَةُ بْنُ أَبِي حَفْصَةَ، أَخْبَرَنَا عِكْرِمَةُ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَوْبَانِ قِطْرِيَّانِ غَلِيظَانِ فَكَانَ إِذَا قَعَدَ فَعَرِقَ ثَقُلاَ عَلَيْهِ فَقَدِمَ بَزٌّ مِنَ الشَّامِ لِفُلاَنٍ الْيَهُودِيِّ . فَقُلْتُ لَوْ بَعَثْتَ إِلَيْهِ فَاشْتَرَيْتَ مِنْهُ ثَوْبَيْنِ إِلَى الْمَيْسَرَةِ . فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ فَقَالَ قَدْ عَلِمْتُ مَا يُرِيدُ إِنَّمَا يُرِيدُ أَنْ يَذْهَبَ بِمَالِي أَوْ بِدَرَاهِمِي . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ كَذَبَ قَدْ عَلِمَ أَنِّي مِنْ أَتْقَاهُمْ لِلَّهِ وَآدَاهُمْ لِلأَمَانَةِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَنَسٍ وَأَسْمَاءَ بِنْتِ يَزِيدَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ شُعْبَةُ أَيْضًا عَنْ عُمَارَةَ بْنِ أَبِي حَفْصَةَ . قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ فِرَاسٍ الْبَصْرِيَّ يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا دَاوُدَ الطَّيَالِسِيَّ يَقُولُ سُئِلَ شُعْبَةُ يَوْمًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَقَالَ لَسْتُ أُحَدِّثُكُمْ حَتَّى تَقُومُوا إِلَى حَرَمِيِّ بْنِ عُمَارَةَ بْنِ أَبِي حَفْصَةَ فَتُقَبِّلُوا رَأْسَهُ . قَالَ وَحَرَمِيٌّ فِي الْقَوْمِ . قَالَ أَبُو عِيسَى أَىْ إِعْجَابًا بِهَذَا الْحَدِيثِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরনের দু’টি মোটা কিতরী কাপড় ছিল। যখন তিনি বসতেন তখন তাঁর দেহের ঘামে কাপড় দু’টি ভিজে ভারী হয়ে যেত। একবার কোন এক ইয়াহূদীর সিরিয়া হতে কাপড়ের চালান এলে আমি বললাম, আপনি যদি তার নিকট হতে সুবিধামত সময়ে মূল্য পরিশোধের শর্তে লোক পাঠিয়ে একজোড়া কাপড় কিনে নিতেন। তিনি তার নিকট লোক পাঠালেন। ইয়াহূদী বলল, আমি জানি সে (মুহাম্মদ) কি করতে চায়। সে আমার মাল অথবা নগদ অর্থ হস্তগত করার পরিকল্পনা করছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে মিথ্যা বলেছে। তার ভাল করেই জানা আছে যে, তাদের মধ্যে আমি বেশি আল্লাহ ভীরু এবং সবচেয়ে বেশি আমানাত ফিরতদাতা।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
ইবনু আব্বাস, আনাস ও ইয়াযীদের কন্যা আসমা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। এ হাদীসটি শুবা উমারা ইবনু আবী হাফসা হতে বর্ণনা করেছেন। আবূ দাউদ তায়ালিসী বলেন, এই হাদীস প্রসঙ্গে শুবাকে একদিন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি তোমাদের নিকট এই হাদীস বর্ণনা করব না যে পর্যন্ত না তোমরা উঠে গিয়ে হারামী ইবনু উমারার মাথায় চুমা দিচ্ছ। তখন তারা তার মাথায় চুম্বন করল। উক্ত মাজলিসেই হারামী (রহঃ) হাযির ছিলেন। আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসের বর্ণনাকারী হারামীর প্রতি সম্মান দেখানো ছিল এই কথার উদ্দেশ্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، وَعُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ تُوُفِّيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَدِرْعُهُ مَرْهُونَةٌ بِعِشْرِينَ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ أَخَذَهُ لأَهْلِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মারা যাবার সময় তাঁর লৌহবর্ম বিশ সা’ খাদ্যশস্যের বিনিময়ে বন্ধক রাখা ছিল। তা তিনি নিজ পরিবারের জন্য নিয়েছিলেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৩৯)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২১৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ هِشَامٍ الدَّسْتَوَائِيِّ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، ح قَالَ مُحَمَّدٌ وَحَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ مَشَيْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِخُبْزِ شَعِيرٍ وَإِهَالَةٍ سَنِخَةٍ وَلَقَدْ رُهِنَ لَهُ دِرْعٌ عِنْدَ يَهُودِيٍّ بِعِشْرِينَ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ أَخَذَهُ لأَهْلِهِ وَلَقَدْ سَمِعْتُهُ ذَاتَ يَوْمٍ يَقُولُ “ مَا أَمْسَى فِي آلِ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم صَاعُ تَمْرٍ وَلاَ صَاعُ حَبٍّ ” . وَإِنَّ عِنْدَهُ يَوْمَئِذٍ لَتِسْعُ نِسْوَةٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গেলাম যবের রুটি ও বাসী চর্বি নিয়ে। তখন এক ইয়াহূদীর নিকট বিশ সা’ খাদ্যশস্যের বিনিময়ে তাঁর লৌহবর্মটি বন্ধক ছিল। তিনি তাঁর পরিবারের লোকদের জন্য তা নিয়েছিলেন। আমি একদিন তাঁকে বলতে শুনলামঃ মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের) পরিবার-পরিজনের নিকট কোন রাতে না এক সা’ পরিমাণ খেজুর আর না এক সা’ পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুদ ছিল। এ সময় তার নয়জন স্ত্রী ছিল।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৪৩৭), বুখারী।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮. অনুচ্ছেদঃ
লেনদেনের শর্তাবলী লিপিবদ্ধ করা
১২১৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، أَخْبَرَنَا عَبَّادُ بْنُ لَيْثٍ، صَاحِبُ الْكَرَابِيسِيِّ الْبَصْرِيُّ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْمَجِيدِ بْنُ وَهْبٍ، قَالَ قَالَ لِي الْعَدَّاءُ بْنُ خَالِدِ بْنِ هَوْذَةَ أَلاَ أُقْرِئُكَ كِتَابًا كَتَبَهُ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ قُلْتُ بَلَى . فَأَخْرَجَ لِي كِتَابًا “ هَذَا مَا اشْتَرَى الْعَدَّاءُ بْنُ خَالِدِ بْنِ هَوْذَةَ مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اشْتَرَى مِنْهُ عَبْدًا أَوْ أَمَةً لاَ دَاءَ وَلاَ غَائِلَةَ وَلاَ خِبْثَةَ بَيْعَ الْمُسْلِمِ الْمُسْلِمَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبَّادِ بْنِ لَيْثٍ وَقَدْ رَوَى عَنْهُ هَذَا الْحَدِيثَ غَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْحَدِيثِ .
আবদুল মাজীদ ইবনু ওয়াহ্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল-আদ্দা ইবনু খালিদ ইবনু হাওযা (রাঃ) আমাকে বললেন, যে চুক্তিপত্র রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে লিখে দেন তা কি তোমাকে পড়ে শুনাব? আমি বললাম, হ্যাঁ। আমার সামনে তিনি একটি পত্র বের করলেন। তাতে লিখা ছিলঃ “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে আল-আদ্দা ইবনু খালিদ ইবনু হাওযা একটি গোলাম বা দাসী কিনলো (এটি তার দলীল), যার কোন অসুখ নেই, যা পলায়নপর নয় এবং চরিত্রহীনও নয়। এ হলো এক মুসলমানের সাথে অন্য মুসলমানের ক্রয়-বিক্রয়”।
হাসান, ইবনু মা-জাহ (২২৫১)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গারীব বলেছেন। আমরা এই হাদীসটি শুধু আব্বাদ ইবনু লাইসের সূত্রেই জেনেছি। একাধিক হাদীস বিশারদ তার নিকট হতে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৯. অনুচ্ছেদঃ
ওজনপাত্র ও পরিমাপপাত্র প্রসঙ্গে
১২১৭
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَعْقُوبَ الطَّالْقَانِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْوَاسِطِيُّ، عَنْ حُسَيْنِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لأَصْحَابِ الْمِكْيَالِ وَالْمِيزَانِ “ إِنَّكُمْ قَدْ وُلِّيتُمْ أَمْرَيْنِ هَلَكَتْ فِيهِ الأُمَمُ السَّالِفَةُ قَبْلَكُمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ حُسَيْنِ بْنِ قَيْسٍ . وَحُسَيْنُ بْنُ قَيْسٍ يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا بِإِسْنَادٍ صَحِيحٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ مَوْقُوفًا .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওজন ও পরিমাপকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেনঃ তোমাদের উপর (ওজন ও পরিমাপ করার)এমন দু’টি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যাতে (ত্রুটি করার অপরাধে) তোমাদের আগেকার অনেক জাতি ধ্বংস হয়েছে।
যঈফ, সহীহ কথা হল হাদীসটি মাওকূফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (২৮৯০), বেচা কেনার হাদীস।
আবূ ঈসা বলেন, আমরা এই হাদীসটি শুধুমাত্র হুসাইন ইবনু কাইসের সূত্রেই মারফূ হিসাবে জেনেছি। হুসাইন কে হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই হাদীসটি সহীহ সনদে ইবনু আব্বাস(রা) হতে মাওকূফ হিসেবেও বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
১০. অনুচ্ছেদঃ
যে অধিক মূল্য প্রস্তাব করে তার নিকটে বিক্রয় করা (নিলাম ডাক)
১২১৮
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ شُمَيْطِ بْنِ عَجْلاَنَ، حَدَّثَنَا الأَخْضَرُ بْنُ عَجْلاَنَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ الْحَنَفِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَاعَ حِلْسًا وَقَدَحًا وَقَالَ ” مَنْ يَشْتَرِي هَذَا الْحِلْسَ وَالْقَدَحَ ” . فَقَالَ رَجُلٌ أَخَذْتُهُمَا بِدِرْهَمٍ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ يَزِيدُ عَلَى دِرْهَمٍ مَنْ يَزِيدُ عَلَى دِرْهَمٍ ” فَأَعْطَاهُ رَجُلٌ دِرْهَمَيْنِ فَبَاعَهُمَا مِنْهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ الأَخْضَرِ بْنِ عَجْلاَنَ . وَعَبْدُ اللَّهِ الْحَنَفِيُّ الَّذِي رَوَى عَنْ أَنَسٍ هُوَ أَبُو بَكْرٍ الْحَنَفِيُّ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ لَمْ يَرَوْا بَأْسًا بِبَيْعِ مَنْ يَزِيدُ فِي الْغَنَائِمِ وَالْمَوَارِيثِ . وَقَدْ رَوَى الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْحَدِيثِ عَنِ الأَخْضَرِ بْنِ عَجْلاَنَ هَذَا الْحَدِيثَ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (উটের পিঠে বিছানোর) একটি ছালা (বা মোটা কাপড়) এবং একটি কাঠের পাত্র বেচার প্রস্তাব করেন এবং তিনি বলেনঃ কে এই ছালা ও পাত্রটি কিনবে? এক লোক বলল, আমি এ দু’টি এক দিরহামে কিনতে চাই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কে এক দিরহামের বেশী দিবে, কে এক দি্রহামের বেশী দিবে? এক ব্যক্তি তাঁকে দুই দিরহাম দিয়ে তাঁর নিকট হতে জিনিস দু’টি কিনলো।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২১৯৮)
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান। আমরা শুধুমাত্র আখযারের সূত্রেই এ হাদীসটি অবগত হয়েছি। আব্দুল্লাহ হানাফী যিনি আনাস (রাঃ) হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন তাঁর উপনাম আবূ বাক্র। একদল বিশেষজ্ঞ আলিম এই হাদীস অনুযায়ী আমল করার মত দিয়েছেন। তাদের মতে গানীমাত ও ওয়ারিসী সম্পত্তি নিলাম ডাকের মাধ্যমে বিক্রয় করাতে কোন সমস্যা নেই। মুতামির-সহ একাধিক রাবী উক্ত হাদীস আখযারের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১১. অনুচ্ছেদঃ
মোদাব্বার গোলাম বিক্রয়
১২১৯
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ رَجُلاً، مِنَ الأَنْصَارِ دَبَّرَ غُلاَمًا لَهُ فَمَاتَ وَلَمْ يَتْرُكْ مَالاً غَيْرَهُ فَبَاعَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَاشْتَرَاهُ نُعَيْمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ النَّحَّامِ . قَالَ جَابِرٌ عَبْدًا قِبْطِيًّا مَاتَ عَامَ الأَوَّلِ فِي إِمَارَةِ ابْنِ الزُّبَيْرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ لَمْ يَرَوْا بِبَيْعِ الْمُدَبَّرِ بَأْسًا . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَكَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ بَيْعَ الْمُدَبَّرِ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَمَالِكٍ وَالأَوْزَاعِيِّ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আনসার বংশের এক লোক মৃত্যুবরণ করল তার গোলামকে মুদাব্বার করার পর। সে লোকটি আর কোন সম্পদ রেখে যায়নি ঐ গোলামটি ব্যতীত। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একে বিক্রয় করলেন। তাকে কিনলেন নুআইম ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নাহহাম (রাঃ)। জাবির (রাঃ) বলেন, সে ছিল কিবতী বংশোদ্ভূত গোলাম। সে ইবনু যুবাইর (রাঃ)-এর খিলাফাতের প্রথম বছর মৃত্যুবরণ করেন।
সহীহ্, ইরওয়া (১২৮৮), বেচা-কেনার হাদীস, বুখারী, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এটা বিভিন্ন সূত্রে জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম আমল করেছেন। তারা মুদাব্বার গোলাম বিক্রয়ে কোন সমস্যা আছে বলে মনে করেন না। এই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক । মুদাব্বার গোলাম বিক্রয় করাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অপর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম মাকরূহ্ বলেছেন। এই মত দিয়েছেন সুফিয়ান সাওরী, মালিক ও আওযাঈ। মালিক মৃত্যুবরণ করার পর গোলাম আযাদ হবে, এই শর্তে কোন গোলাম আযাদ করাকে “মোদাব্বার” বলা হয়। -অনুবাদক
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২. অনুচ্ছেদঃ
বাজারে পৌঁছার পূর্বে শহরের বাইরে গিয়ে পণ্যদ্রব্য কেনা নিষেধ
১২২০
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ نَهَى عَنْ تَلَقِّي الْبُيُوعِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عُمَرَ وَرَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পণ্যদ্রব্য আমদানী করে আনা কাফিলার দিকে এগিয়ে গিয়ে পণ্য ক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৮০), মুসলিম
আলী, ইবনু আব্বাস, আবূ হুরাইরা, আবূ সাঈদ, ইবনু উমার (রাঃ)-সহ আরো একজন সাহাবী হতে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২২১
حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ الرَّقِّيُّ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو الرَّقِّيُّ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى أَنْ يُتَلَقَّى الْجَلَبُ فَإِنْ تَلَقَّاهُ إِنْسَانٌ فَابْتَاعَهُ فَصَاحِبُ السِّلْعَةِ فِيهَا بِالْخِيَارِ إِذَا وَرَدَ السُّوقَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَيُّوبَ وَحَدِيثُ ابْنِ مَسْعُودٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ تَلَقِّيَ الْبُيُوعِ وَهُوَ ضَرْبٌ مِنَ الْخَدِيعَةِ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَغَيْرِهِ مِنْ أَصْحَابِنَا .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বাজারে পণ্যদ্রব্য নিয়ে আসা লোকের সামনে এগিয়ে গিয়ে তাদের নিকট হতে পণ্য ক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন। (ব্যবসায়ীদের) কোন ব্যক্তি যদি এগিয়ে গিয়ে তার পণ্যদ্রব্য কিনে, তবে বাজারে পৌঁছার পর বিক্রেতা বিক্রয় বাতিল করার স্বাধীনতা পাবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৭৮), মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, আইয়্যূবের বর্ণিত হাদীস হিসেবে হাদীসটি হাসান গারীব। আর ইবনু মাসঊদের হাদীসটি হাসান সহীহ্। পণ্যদ্রব্য বাজারে আসার আগেই বাজারের বাইরে গিয়ে তা কেনাকে একদল বিশেষজ্ঞ আলিম মাকরূহ্ বলেছেন। তারা মনে করেন এটা এক প্রকারের প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি। এই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈ ও অন্যান্য আলিমগণ ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৩. অনুচ্ছেদঃ
শহরের লোকেরা গ্রামাঞ্চলের লোকদের পণ্যদ্রব্য বিক্রয় করবে না
১২২২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ قُتَيْبَةُ يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَبِيعُ حَاضِرٌ لِبَادٍ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ طَلْحَةَ وَجَابِرٍ وَأَنَسٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَحَكِيمِ بْنِ أَبِي يَزِيدَ عَنْ أَبِيهِ وَعَمْرِو بْنِ عَوْفٍ الْمُزَنِيِّ جَدِّ كَثِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَرَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শহরাঞ্চলের লোকেরা গ্রামাঞ্চলের লোকদের পণ্যদ্রব্য বিক্রয় করবে না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৭৫), নাসা-ঈ
তালহা, জাবির, আনাস, ইবনু আব্বাস, হাকীম ইবনু আবূ ইয়াযীদ তার পিতার সূত্রে, আমর ইবনু আওফ (রাঃ) এবং আরো একজন সাহাবী হতে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২২৩
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، وَأَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ يَبِيعُ حَاضِرٌ لِبَادٍ دَعُوا النَّاسَ يَرْزُقُ اللَّهُ بَعْضَهُمْ مِنْ بَعْضٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَحَدِيثُ جَابِرٍ فِي هَذَا هُوَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ أَيْضًا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ كَرِهُوا أَنْ يَبِيعَ حَاضِرٌ لِبَادٍ . وَرَخَّصَ بَعْضُهُمْ فِي أَنْ يَشْتَرِيَ حَاضِرٌ لِبَادٍ . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ يُكْرَهُ أَنْ يَبِيعَ حَاضِرٌ لِبَادٍ وَإِنْ بَاعَ فَالْبَيْعُ جَائِزٌ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শহরের মানুষগণ গ্রামের মানুষদের পণ্যদ্রব্য বিক্রয় করবে না। লোকদেরকে তাদের স্বাভাবিক অবস্থার উপর ছেড়ে দাও। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা এক দলের মাধ্যমে অন্য দলের রিযিকের ব্যবস্থা করেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৭৬), বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। আর জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিও হাসান সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম আমল করেছেন। গ্রাম-গঞ্জের লোকের পক্ষে শহরে বসবাসকারীদের বিক্রয় করাকে তারা মাকরূহ্ বলেছেন। তাদের মধ্যে আবার কেউ কেউ এ ধরণের বিক্রয়ের অনুমতি দিয়েছেন। এ ধরণের বিক্রয় করাকে ইমাম শাফিঈ মাকরূহ্ বলেছেন। তবে কেউ যদি তা বিক্রয় করে তবে তা জায়িয হবে বলে মত ব্যক্ত করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৪. অনুচ্ছেদঃ
মুহাকালা ও মুযাবানা ধরণের ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ
১২২৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الإِسْكَنْدَرَانِيُّ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ وَسَعْدٍ وَجَابِرٍ وَرَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْمُحَاقَلَةُ بَيْعُ الزَّرْعِ بِالْحِنْطَةِ . وَالْمُزَابَنَةُ بَيْعُ الثَّمَرِ عَلَى رُءُوسِ النَّخْلِ بِالتَّمْرِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا بَيْعَ الْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাকালা ও মুযাবানা ধরণের ক্রয়-বিক্রয়কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষিদ্ধ করেছেন।
সহীহ্, ইরওয়া (২৩৫৪)
ইবনু উমার, ইবনু আব্বাস, যাইদ ইবনু সাবিত, সা’দ, জাবির, রাফি ইবনু খাদীজ ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। মুহাকালা বলা হয় ক্ষেতের ফসলকে সংগৃহীত গমের বিনিময়ে বিক্রয়কে। আর মুযাবানা বলা হয় শুকনো খেজুরের বিনিময়ে গাছের (অসংগৃহীত) খেজুর বিক্রয়কে। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। তারা মাকরূহ্ বলে মত দিয়েছেন মুহাকালা ও মুযাবানা ধরণের ক্রয়-বিক্রয় করাকে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২২৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ، أَنَّ زَيْدًا أَبَا عَيَّاشٍ، سَأَلَ سَعْدًا عَنِ الْبَيْضَاءِ، بِالسُّلْتِ فَقَالَ أَيُّهُمَا أَفْضَلُ قَالَ الْبَيْضَاءُ . فَنَهَى عَنْ ذَلِكَ . وَقَالَ سَعْدٌ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُسْأَلُ عَنِ اشْتِرَاءِ التَّمْرِ بِالرُّطَبِ فَقَالَ لِمَنْ حَوْلَهُ “ أَيَنْقُصُ الرُّطَبُ إِذَا يَبِسَ ” . قَالُوا نَعَمْ . فَنَهَى عَنْ ذَلِكَ .
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ زَيْدٍ أَبِي عَيَّاشٍ، قَالَ سَأَلْنَا سَعْدًا فَذَكَرَ نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَصْحَابِنَا .
আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ আইয়্যাশ যাইদ (রহঃ) বার্লির বিনিময়ে গম বিক্রয় করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি সা’দ (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলেনঃ তখন তিনি (সা’দ) বললেন, এ দু’টির মধ্যে কোনটি অপেক্ষাকৃত উত্তম? তিনি (যাইদ) বললেন, গম। তারপর তিনি (সা’দ) এ ধরণের বিক্রয় করা নিষেধ করলেন তিনি আরও বললেন, আমি তাজা খেজুরকে শুকনো খেজুরের বিনিময়ে বিক্রয় করা যায় কি-না সেই প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনেছি। তিনি তাঁর পাশের লোকদের প্রশ্ন করলেন যে, খেজুর শুকালে কি (ওজনে) কমে যায়? তারা বললেন, হ্যাঁ। তারপর এ ধরণের বিক্রয়কে তিনি নিষিদ্ধ করে দিলেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৬৪)
হান্নাদ বর্ণনা করেছেন ওয়াকী হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ হতে, তিনি যাইদ আবূ আইয়্যাশ (রহঃ) হতে, তিনি বলেন, সা’দ (রাঃ)-কে আমরা প্রশ্ন করলাম….উপরের হাদীসের মত।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। এই মত দিয়েছেন ইমাম শাফিঈ এবং আমাদের সাথীরাও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৫. অনুচ্ছেদঃ
ফল পরিপুষ্ট বা ব্যবহারের উপযোগী হওয়ার পূর্বে বিক্রয় করা নিষেধ
১২২৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ النَّخْلِ حَتَّى يَزْهُوَ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
খেজুরের লাল বা হলুদ বর্ণ না আসা পর্যন্ত তা বিক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারণ করেছেন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২২৭
وَبِهَذَا الإِسْنَادِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ السُّنْبُلِ حَتَّى يَبْيَضَّ وَيَأْمَنَ الْعَاهَةَ نَهَى الْبَائِعَ وَالْمُشْتَرِيَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَعَائِشَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَزَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ كَرِهُوا بَيْعَ الثِّمَارِ قَبْلَ أَنْ يَبْدُوَ صَلاَحُهَا . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
একই সনদ সূত্রে আরো বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শীষ জাতীয় ফসল (ধান, গম ইত্যাদি) বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন যতক্ষণ তা পেকে সাদা না হয়।
সহীহ্, প্রাগুক্ত
আনাস, আইশা, আবূ হুরাইরা, ইবনু আব্বাস, জাবির, আবূ সাঈদ ও যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, ইবনু উমার (রাঃ)-এর হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিম অমল করেছেন। ফল পরিপক্ক হওয়ার আগেই বিক্রয় করা তাদের মতে মাকরূহ্। এই মত পোষণ করেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২২৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، وَعَفَّانُ، وَسُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ الْعِنَبِ حَتَّى يَسْوَدَّ وَعَنْ بَيْعِ الْحَبِّ حَتَّى يَشْتَدَّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কাল রং ধারণ না করা পর্যন্ত আঙ্গুরকে এবং হৃষ্টপুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত শস্যকে বিক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২১৭)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এটাকে শুধু হাম্মাদ ইবনু সালামার সূত্রেই মারফু হিসেবে জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৬. অনুচ্ছেদঃ
পশুর গর্ভস্থিত বাচ্চার বাচ্চা বিক্রয় করা নিষেধ
১২২৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ حَبَلِ الْحَبَلَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَحَبَلُ الْحَبَلَةِ نِتَاجُ النِّتَاجِ وَهُوَ بَيْعٌ مَفْسُوخٌ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ مِنْ بُيُوعِ الْغَرَرِ . وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ . وَرَوَى عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ وَغَيْرُهُ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ وَنَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَهَذَا أَصَحُّ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(পশুর) গর্ভস্থিত বাচ্চার বাচ্চা বিক্রি করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৯৭), মুসলিম, বুখারী
আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস ও আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীস মোতাবিক অভিজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। ‘হাবলুল হাবল’ বলতে বাচ্চার বাচ্চা বুঝায়। এভাবে বিক্রয় করাটা আলিমদের মতে বাতিল বলে গণ্য হবে। এটা ক্রয়-বিক্রয়ে এক প্রকারের প্রতারণা। শুবা-আইয়্যূব হতে, তিনি সাঈদ ইবনু জুবাইর হতে, তিনি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর সূত্রে উল্লেখিত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনু উমারের এ হাদীসটি আবূল ওয়াহ্হাব আস-সাকাফী এবং অন্যান্যরা আইয়্যূব হতে, তিনি সাঈদ ইবনু জুবাইর হতে, তিনি নাফি হতে, তিনি ইবনু উমার হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন এবং এ সূত্রটি অনেক বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৭. অনুচ্ছেদঃ
প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ
১২৩০
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، أَنْبَأَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعِ الْغَرَرِ وَبَيْعِ الْحَصَاةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا بَيْعَ الْغَرَرِ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَمِنْ بُيُوعِ الْغَرَرِ بَيْعُ السَّمَكِ فِي الْمَاءِ وَبَيْعُ الْعَبْدِ الآبِقِ وَبَيْعُ الطَّيْرِ فِي السَّمَاءِ وَنَحْوُ ذَلِكَ مِنَ الْبُيُوعِ . وَمَعْنَى بَيْعِ الْحَصَاةِ أَنْ يَقُولَ الْبَائِعُ لِلْمُشْتَرِي إِذَا نَبَذْتُ إِلَيْكَ بِالْحَصَاةِ فَقَدْ وَجَبَ الْبَيْعُ فِيمَا بَيْنِي وَبَيْنَكَ . وَهَذَا شَبِيهٌ بِبَيْعِ الْمُنَابَذَةِ وَكَانَ هَذَا مِنْ بُيُوعِ أَهْلِ الْجَاهِلِيَّةِ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয় করতে এবং কাঁকর নিক্ষেপে ক্রয়-বিক্রয় নির্ধারিত করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৯৪), মুসলিম
ইবনু উমার, ইবনু আব্বাস, আবূ সাঈদ ও আনাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। তারা প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয় করাকে নিষিদ্ধ বলেছেন। ইমাম শাফিঈ বলেছেন, প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে রয়েছে পানির মধ্যের মাছ, পলাতক গোলাম, শূন্যে উড়ন্ত পাখি বা অনুরূপ পর্যায়ের কোন কিছুর ক্রয়-বিক্রয়। কাঁকর নিক্ষেপে বিক্রয়ের ধরণ হলঃ যদি বিক্রেতা ক্রেতাকে বলে, তোমার দিকে আমি যখন কোন কাঁকর ছুড়ে মারবো তখন তোমার ও আমার মাঝে বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে ক্রয়-বিক্রয় করাটা। এটা মুনাবাযা ধরণের ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এটাও জাহিলী যুগের প্রথা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮. অনুচ্ছেদঃ
একই বিক্রয়ে দুই প্রকারের শর্ত নিষেধ
১২৩১
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعَتَيْنِ فِي بَيْعَةٍ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَابْنِ عُمَرَ وَابْنِ مَسْعُودٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ وَقَدْ فَسَّرَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالُوا بَيْعَتَيْنِ فِي بَيْعَةٍ . أَنْ يَقُولَ أَبِيعُكَ هَذَا الثَّوْبَ بِنَقْدٍ بِعَشَرَةٍ وَبِنَسِيئَةٍ بِعِشْرِينَ وَلاَ يُفَارِقُهُ عَلَى أَحَدِ الْبَيْعَيْنِ فَإِذَا فَارَقَهُ عَلَى أَحَدِهِمَا فَلاَ بَأْسَ إِذَا كَانَتِ الْعُقْدَةُ عَلَى وَاحِدٍ مِنْهُمَا . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَمِنْ مَعْنَى نَهْىِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعَتَيْنِ فِي بَيْعَةٍ أَنْ يَقُولَ أَبِيعُكَ دَارِي هَذِهِ بِكَذَا عَلَى أَنْ تَبِيعَنِي غُلاَمَكَ بِكَذَا فَإِذَا وَجَبَ لِي غُلاَمُكَ وَجَبَ لَكَ دَارِي . وَهَذَا يُفَارِقُ عَنْ بَيْعٍ بِغَيْرِ ثَمَنٍ مَعْلُومٍ وَلاَ يَدْرِي كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَلَى مَا وَقَعَتْ عَلَيْهِ صَفْقَتُهُ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দুই ধরণের বিক্রয় ব্যবস্থার মাধ্যমে (দুই ধরনের শর্তে) একই জিনিসের বিক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, মিশকাত (২৮৬৮), ইরওয়া (৫/১৪৯)
আবদুল্লাহ ইবনু আমর, ইবনু উমার ও ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেন। “বাইআতাইনে ফী বাইআতিন”-এর ব্যাখ্যায় একদল বিশেষজ্ঞ আলিম বলেছেনঃ ক্রেতাকে বিক্রেতা বলল, এই কাপড়টি দশ টাকায় যদি নগদ মূল্যে ক্রয় করা হয়, তবে বাকীতে ক্রয় করলে বিশ টাকা। এই দুটি বিক্রয় প্রস্তাবের মধ্যে কোন একটিকে কোন পক্ষই নাকচ করল না। কিন্তু কোন একটি প্রস্তাব যদি গ্রহণ করে নেয় এবং সে অনুযায়ী চুক্তি হয় তবে তাতে কোন সমস্যা নেই।
ইমাম শাফিঈ বলেছেন, একই বিক্রয়ে দুই ধরণের বিক্রয় অন্তর্ভুক্ত করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। তার দৃষ্টান্ত হলঃ কোন লোক বলল, আমি তোমার নিকট এত টাকায় আমার এই ঘর বিক্রয় করব এই শর্তে যে, আমার নিকট তোমার গোলামটিও এত টাকায় বিক্রয় করতে হবে। তোমার গোলাম যখন আমার অধীনে আসবে আমার ঘরও তখন তোমার অধীনে চলে যাবে। এই প্রকারের ক্রয়-বিক্রয় ঐ ক্রয়-বিক্রয় হতে ভিন্ন যেখানে পণ্যের মধ্যে কোনটিরই মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি বিধায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে বিক্রিত দ্রব্যের মূল্য সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯. অনুচ্ছেদঃ
যে জিনিস আয়ত্তে নেই তার অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ
১২৩২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَأْتِينِي الرَّجُلُ يَسْأَلُنِي مِنَ الْبَيْعِ مَا لَيْسَ عِنْدِي أَبْتَاعُ لَهُ مِنَ السُّوقِ ثُمَّ أَبِيعُهُ قَالَ “ لاَ تَبِعْ مَا لَيْسَ عِنْدَكَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ .
হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট জানার জন্য বললাম, আমার নিকট এসে কোন লোক এমন জিনিস কিনতে চায় যা আমার নিকট নেই। আমি এভাবে বিক্রয় করতে পারি কি যে, তা বাজার হতে ক্রয় করে এনে তাকে দিব? তিনি বলেনঃ যা তোমার অধিকারে নেই তা তুমি বিক্রয় কর না।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৮৭)
আব্দুল্লাহ ইবনু উমার হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২৩৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ نَهَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَبِيعَ مَا لَيْسَ عِنْدِي . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . قَالَ إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ قُلْتُ لأَحْمَدَ مَا مَعْنَى نَهَى عَنْ سَلَفٍ وَبَيْعٍ قَالَ أَنْ يَكُونَ يُقْرِضُهُ قَرْضًا ثُمَّ يُبَايِعُهُ عَلَيْهِ بَيْعًا يَزْدَادُ عَلَيْهِ وَيَحْتَمِلُ أَنْ يَكُونَ يُسْلِفُ إِلَيْهِ فِي شَيْءٍ فَيَقُولُ إِنْ لَمْ يَتَهَيَّأْ عِنْدَكَ فَهُوَ بَيْعٌ عَلَيْكَ . قَالَ إِسْحَاقُ يَعْنِي ابْنَ رَاهَوَيْهِ كَمَا قَالَ قُلْتُ لأَحْمَدَ وَعَنْ بَيْعِ مَا لَمْ تَضْمَنْ قَالَ لاَ يَكُونُ عِنْدِي إِلاَّ فِي الطَّعَامِ مَا لَمْ تَقْبِضْ . قَالَ إِسْحَاقُ كَمَا قَالَ فِي كُلِّ مَا يُكَالُ أَوْ يُوزَنُ . قَالَ أَحْمَدُ إِذَا قَالَ أَبِيعُكَ هَذَا الثَّوْبَ وَعَلَىَّ خِيَاطَتُهُ وَقَصَارَتُهُ فَهَذَا مِنْ نَحْوِ شَرْطَيْنِ فِي بَيْعٍ وَإِذَا قَالَ أَبِيعُكَهُ وَعَلَىَّ خِيَاطَتُهُ فَلاَ بَأْسَ بِهِ أَوْ قَالَ أَبِيعُكَهُ وَعَلَىَّ قَصَارَتُهُ فَلاَ بَأْسَ بِهِ إِنَّمَا هُوَ شَرْطٌ وَاحِدٌ . قَالَ إِسْحَاقُ كَمَا قَالَ .
হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার হাতে নেই এমনসব বস্তু বিক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। ইসহাক ইবনু মানসূর বলেন, ইমাম আহ্মাদকে আমি প্রশ্ন করলাম, “ঋণ ও বিক্রয় একত্রে জায়িয নয়” এ কথার অর্থ কি? তিনি বললেন, কোন লোককে ঋণও প্রদান করলে এবং এর সাথে সাথে তার নিকট তোমার পণ্যও চড়া দামে বিক্রয় করলে। অথবা এরূপও হতে পারে যে, কোন জিনিস (বন্ধক রেখে) তাকে ঋণ দিয়ে বললে, তোমার এটা (বন্ধক) এতো দামে বিক্রীত বলে গণ্য হবে যদি ঐটা পরিশোধ করতে না পার। ইসহাক আরও বলেন, আমি ইমাম আহ্মাদকে পুনরায় বললাম, “লোকসানের দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত বিক্রয় হয় না” কথার অর্থ কি? তিনি বললেন, আমার মতে শুধু খাদ্যদ্রব্যের বেলায় এটা প্রযোজ্য হবে অর্থাৎ যতক্ষণ এটা তোমার হস্তগত না হবে ততক্ষণ তা বিক্রয় করতে পারবে না। ইসহাক বলেন, পরিমাপ যন্ত্র বা পাত্র দিয়ে যা মাপা হয় সেই সব ক্ষেত্রে এই নীতি প্রযোজ্য। ইমাম আহ্মাদ বলেন, যদি এভাবে বলা হয়ঃ আমি এ কাপড় তোমার নিকট বিক্রয় করলাম এবং এর সেলাই ও ধোয়ার কাজ আমার দায়িত্বে, তবে একই বিক্রয়ের মধ্যে এটাও দু’টি শর্তারোপের একটি উদাহরণ। সে যদি এরূপ বলেঃ এটা তোমার নিকট বিক্রয় করলাম এবং আমিই এটা ধুয়েও দিব, তবে এতে কোন সমস্যা নেই। কেননা, একটি শর্ত করা হয়েছে (দুটি নয়)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২৩৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِيهِ، حَتَّى ذَكَرَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَحِلُّ سَلَفٌ وَبَيْعٌ وَلاَ شَرْطَانِ فِي بَيْعٍ وَلاَ رِبْحُ مَا لَمْ يُضْمَنْ وَلاَ بَيْعُ مَا لَيْسَ عِنْدَكَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ قَدْ رُوِيَ عَنْهُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ . رَوَى أَيُّوبُ السَّخْتِيَانِيُّ وَأَبُو بِشْرٍ عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى هَذَا الْحَدِيثَ عَوْفٌ وَهِشَامُ بْنُ حَسَّانَ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَهَذَا حَدِيثٌ مُرْسَلٌ إِنَّمَا رَوَاهُ ابْنُ سِيرِينَ عَنْ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ .
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঋণ ও বিক্রয় একত্রে জায়িয নয় এবং দুই প্রকারের শর্তও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে জুড়ে দেয়া জায়িয নয়, মুনাফা গ্রহণও জায়িয নয় যতক্ষণনা লোকসানের দায়িত্ব না নেয়া হয়, তোমার আয়ত্তে নেই এমন বস্তু বিক্রয় করাও জায়িয নয়।
হাসান সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৮৮)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। একাধিক সূত্রে হাকীম (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটি বর্ণিত আছে। আইয়ূব সাখতিয়ানী ও আবূ বিশর বর্ণনা করেছেন, ইউসুফ ইবনু মাহিক হতে, তিনি হাকীম ইবনু হিযাম হতে। আউফ এবং হিশাম ইবনু হাস্সান বর্ণনা করেছেন, ইবনু সীরীন হতে, তিনি হাকীম ইবনু হিযাম হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে। এর পরবর্তী বর্ণনাটি মুরসাল। প্রকৃত পক্ষে ইবনু সীরীন বর্ণনা করেছেন, আইয়ুব সাখতিয়ানী হতে, তিনি ইউসুফ ইবনু মাহাক হতে, তিনি হাকীম ইবনু হিযাম হতে।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
১২৩৫
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، وَعَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْخُزَاعِيُّ الْبَصْرِيُّ أَبُو سَهْلٍ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ نَهَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَبِيعَ مَا لَيْسَ عِنْدِي . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى وَكِيعٌ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ يَزِيدَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ وَرِوَايَةُ عَبْدِ الصَّمَدِ أَصَحُّ . وَقَدْ رَوَى يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ يَعْلَى بْنِ حَكِيمٍ عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عِصْمَةَ عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا أَنْ يَبِيعَ الرَّجُلُ مَا لَيْسَ عِنْدَهُ .
হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে নিষেধ করেছেন আমার কাছে নেই এমন জিনিস বিক্রয় করতে।
সহীহ্, দেখুন হাদীস নং (১২৩২, ১২৩৩)
আবূ ঈসা বলেন, ওয়াকী এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, ইয়াযীদ ইবনু ইবরাহীম হতে, তিনি ইবনু সীরীন হতে, তিনি আইয়্যূব হতে, তিনি হাকীম ইবনু হিযাম হতে। এতে ওয়াকী ইউসুফ ইবনু মাহাকের উল্লেখ করেননি। আব্দুস সামাদের সনদ সূত্রটি অনেক বেশি সহীহ্। ইয়াহইয়া ইবনু কাসীর এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইয়া’লা ইবনু হাকীম হতে, তিনি ইউসুফ ইবনু মাহাক হতে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু ইসমাহ হতে, তিনি হাকীম ইবনু হিযাম হতে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসায়াম হতে। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেন। তারা হস্তগতহীন জিনিসের ক্রয়-বিক্রয়কে মাকরূহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২০. অনুচ্ছেদঃ
‘ওয়ালা’র স্বত্ব বিক্রয় অথবা হেবা করা মাকরূহ
১২৩৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، وَشُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ الْوَلاَءِ وَهِبَتِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَقَدْ رَوَى يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ نَهَى عَنْ بَيْعِ الْوَلاَءِ وَهِبَتِهِ . وَهُوَ وَهَمٌ وَهِمَ فِيهِ يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ . وَرَوَى عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَهَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ يَحْيَى بْنِ سُلَيْمٍ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ওয়ালা’ স্বত্ব বিক্রয় করতে অথবা তা দান করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৭৪৭,২৭৪৮)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। আমরা এ হাদীসটি শুধু আব্দুল্লাহ ইবনু দীনারের সূত্রেই ইবনু উমার হতে জেনেছি। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। উপরোক্ত হাদীসটি ইবনু উমার (রাঃ) হতে অন্য একটি সূত্রেও বর্ণিত আছে, কিন্তু তার সনদে বিপত্তি আছে [উবাইদুল্লাহ ও আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর মাঝে নাফি (রহঃ)-এর নাম যোগ করার]। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সুলাইম এই ভুল করেছেন। আবদুল ওয়াহ্হাব আস-সাকাকী, আবদুল্লাহ ইবনু নুমাইর এবং আরও অনেকে উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার হতে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু দীনার হতে, তিনি ইবনু উমার হতে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সনদ সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এই সনদসূত্রটি ইয়াহ্ইয়া ইবনু সুলাইমের সনদের চেয়ে অনেক বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২১. অনুচ্ছেদঃ
পশুর বিনিময়ে পশু ধারে বিক্রয় করা নিষেধ
১২৩৭
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ مُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ الْحَيَوَانِ بِالْحَيَوَانِ نَسِيئَةً . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَمُرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَسَمَاعُ الْحَسَنِ مِنْ سَمُرَةَ صَحِيحٌ هَكَذَا قَالَ عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ وَغَيْرُهُ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ فِي بَيْعِ الْحَيَوَانِ بِالْحَيَوَانِ نَسِيئَةً وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ فِي بَيْعِ الْحَيَوَانِ بِالْحَيَوَانِ نَسِيئَةً وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَإِسْحَاقَ .
সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
পশুর বিনিময়ে পশু ধারে (করজে) বিক্রয় করতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৭০)
ইবনু আব্বাস, জাবির ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সামুরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। আলী ইবনুল মাদীনী ও অন্যান্যের মতে সামুরা (রাঃ)-এর নিকট হাসান (রহঃ) সরাসরি হাদীস শ্রবণ করেছেন। এ হাদীস মোতাবিক রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ সাহাবী ও অন্যান্য আলিমগন আমল করেছেন। তাদের মতে, পশুর বিনিময়ে পশু ধারে বিক্রয় করা জায়িয নয়। এই মত দিয়েছেন সুফিয়ান সাওরী ও কূফাবাসী আলিমগণ। ইমাম আহ্মাদও একই রকম মত দিয়েছেন। পশুর বিনিময়ে পশু ধারে বিক্রয় করার পক্ষে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অপর একদল সাহাবী ও অন্যান্য আলিমগন সন্মতি দিয়েছেন। এই মত ইমাম শাফিঈ ও ইসহাকের।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২৩৮
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنِ الْحَجَّاجِ، وَهُوَ ابْنُ أَرْطَاةَ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْحَيَوَانُ اثْنَانِ بِوَاحِدٍ لاَ يَصْلُحُ نَسِيئًا وَلاَ بَأْسَ بِهِ يَدًا بِيَدٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’টি পশুর বদলে একটি পশু ধারে (করজে) বিক্রয় করা জায়িয নয়, কিন্তু উপস্থিত (নগদ) লেনদেন হলে কোন সমস্যা নেই।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৭১)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২. অনুচ্ছেদঃ
দু’টি গোলামের বিনিময়ে একটি গোলাম ক্রয়-বিক্রয় করা
১২৩৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ جَاءَ عَبْدٌ فَبَايَعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْهِجْرَةِ وَلاَ يَشْعُرُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ عَبْدٌ فَجَاءَ سَيِّدُهُ يُرِيدُهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ بِعْنِيهِ ” . فَاشْتَرَاهُ بِعَبْدَيْنِ أَسْوَدَيْنِ ثُمَّ لَمْ يُبَايِعْ أَحَدًا بَعْدُ حَتَّى يَسْأَلَهُ أَعَبْدٌ هُوَ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّهُ لاَ بَأْسَ بِعَبْدٍ بِعَبْدَيْنِ يَدًا بِيَدٍ . وَاخْتَلَفُوا فِيهِ إِذَا كَانَ نَسِيئًا .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট একজন ক্রিতদাস এসে হিজরাতের উদ্দেশ্যে তাঁর নিকট শপথ করে। সে যে ক্রীতদাস রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটা জানতেন না। তার মালিক এসে উপস্থিত হল তাকে ফেরত নেয়ার জন্য। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি একে আমার নিকট বিক্রয় করে দাও। তিনি তাকে কিনলেন দুইটি হাবশী গোলামের বিনিময়ে। এরপর হতে কারো বাইআত গ্রহণের পূর্বে তিনি প্রশ্ন করে নিতেন, সে ক্রীতদাস কি না।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম
আনাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা ৰলেন, জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। আলিমগণ এ হাদীস মোতাবিক আমল করেন। তাদের মতে দুটো গোলামের বিনিময়ে একটি গোলাম কেনাতে কোন সমস্যা নেই, তবে নগদ লেন-দেন হতে হবে। বাকীর মাধ্যমে এ জাতীয় লেনদেন সম্পাদন প্রসঙ্গে তাদের মধ্যে মতের অমিল আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩. অনুচ্ছেদঃ
গমের বিনিময়ে সমপরিমাণ গম বেচা-কেনা করতে হবে, অতিরিক্ত দেয়া-নেয়া নিষেধ
১২৪০
حَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ نَصْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ مِثْلاً بِمِثْلٍ فَمَنْ زَادَ أَوِ ازْدَادَ فَقَدْ أَرْبَى بِيعُوا الذَّهَبَ بِالْفِضَّةِ كَيْفَ شِئْتُمْ يَدًا بِيَدٍ وَبِيعُوا الْبُرَّ بِالتَّمْرِ كَيْفَ شِئْتُمْ يَدًا بِيَدٍ وَبِيعُوا الشَّعِيرَ بِالتَّمْرِ كَيْفَ شِئْتُمْ يَدًا بِيَدٍ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَبِلاَلٍ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عُبَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ خَالِدٍ بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ ” بِيعُوا الْبُرَّ بِالشَّعِيرِ كَيْفَ شِئْتُمْ يَدًا بِيَدٍ ” . وَرَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ خَالِدٍ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ عَنْ عُبَادَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْحَدِيثَ وَزَادَ فِيهِ قَالَ خَالِدٌ قَالَ أَبُو قِلاَبَةَ ” بِيعُوا الْبُرَّ بِالشَّعِيرِ كَيْفَ شِئْتُمْ ” فَذَكَرَ الْحَدِيثَ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَرَوْنَ أَنْ يُبَاعَ الْبُرُّ بِالْبُرِّ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ فَإِذَا اخْتَلَفَ الأَصْنَافُ فَلاَ بَأْسَ أَنْ يُبَاعَ مُتَفَاضِلاً إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ . وَهَذَا قَوْلُ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَالْحُجَّةُ فِي ذَلِكَ قَوْلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ” بِيعُوا الشَّعِيرَ بِالْبُرِّ كَيْفَ شِئْتُمْ يَدًا بِيَدٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ تُبَاعَ الْحِنْطَةُ بِالشَّعِيرِ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ . وَهُوَ قَوْلُ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ .
উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সমপরিমাণ স্বর্ণের পরিবর্তে সমপরিমাণ স্বর্ণ হতে হবে; সমপরিমাণ রূপার পরিবর্তে সমপরিমাণ রূপা হতে হবে; সমপরিমাণ খেজুরের পরিবর্তে সমপরিমাণ খেজুর হতে হবে; সমপরিমাণ গমের পরিবর্তে সমপরিমাণ গম হতে হবে; সমপরিমাণ লবণের পরিবর্তে সমপরিমাণ লবণ হতে হবে এবং সমপরিমাণ যবের পরিবর্তে সমপরিমাণ যব হতে হবে। যে লোক এ সবের লেনদেনে বেশি পরিমাণ দিবে অথবা নিবে সে সূদে লেনদেনকারী বলে বিবেচিত হবে। তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী রূপার পরিমাণের পরিবর্তে স্বর্ণের পরিমাণ নির্ধারণ করে নগদ বিক্রয় করতে পার। তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী খেজুরের পরিমাণের পরিবর্তে গমের পরিমাণ নির্ধারণ করে নগদ বিক্রয় করতে পার। তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী খেজুরের পরিমাণের পরিবর্তে যবের পরিমাণ ঠিক করে নগদ বিক্রয় করতে পার।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৫৪), মুসলিম
আবূ সাঈদ, আবূ হুরাইরা, বিলাল ও আনাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। উবাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। উল্লেখিত হাদীসের অপর এক বর্ণনায় আছেঃ “তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী গমের পরিমাণের পরিবর্তে যবের পরিমাণ নির্ধারণ করে নগদ বিক্রয় করতে পার”। আর এক বর্ণনায় আছেঃ “তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী বার্লির পরিমাণের পরিবর্তে গমের পরিমাণ নির্ধারণ করে (পরিমাণে কম-বেশি করে) নগদ বিক্রয় করতে পার”। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। তাদের মতে, সমপরিমাণ গমের পরিবর্তে সমপরিমাণ গম এবং সমপরিমাণ যবের পরিবর্তে সম-পরিমাণ যব বিক্রয় করতে কোন সমস্যা নেই। বিনিময়ের বস্তু দুটি যদি একই প্রজাতির না হয় তাহলে পরিমাণে কম-বেশি হলে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু সেই ক্ষেত্রে নগদ আদান-প্রদান হতে হবে। এই মত প্রকাশ করেছেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈ। সুফিয়ান সাওরী, আহ্মাদ ও ইসহাকেরও এই মত। শাফিঈ বলেন, এ কথার দলীল হল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ “তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী গমের পরিমাণের পরিবর্তে যবের পরিমাণ ঠিক করে নগদ বিক্রয় করতে পার”। একদল আলিমের মতে যবের পরিবর্তে গমের পরিমাণ বেশি নির্ধারণ করে বিক্রয় করা মাকরূহ্, উভয়ের পরিমাণ সমান থাকতে হবে। ইমাম মালিক এই মত পোষণ করেন। কিন্তু প্রথম মতই অনেক বেশি সহীহ্ ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৪. অনুচ্ছেদঃ
মুদ্রার বিনিময়
১২৪১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، أَخْبَرَنَا حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ نَافِعٍ، قَالَ انْطَلَقْتُ أَنَا وَابْنُ، عُمَرَ إِلَى أَبِي سَعِيدٍ فَحَدَّثَنَا أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ سَمِعَتْهُ أُذُنَاىَ هَاتَانِ يَقُولُ “ لاَ تَبِيعُوا الذَّهَبَ بِالذَّهَبِ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالْفِضَّةَ بِالْفِضَّةِ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ لاَ يُشَفُّ بَعْضُهُ عَلَى بَعْضٍ وَلاَ تَبِيعُوا مِنْهُ غَائِبًا بِنَاجِزٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَهِشَامِ بْنِ عَامِرٍ وَالْبَرَاءِ وَزَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ وَفَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ وَأَبِي بَكْرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ وَبِلاَلٍ . قَالَ وَحَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الرِّبَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ إِلاَّ مَا رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ كَانَ لاَ يَرَى بَأْسًا أَنْ يُبَاعَ الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ مُتَفَاضِلاً وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ مُتَفَاضِلاً إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ . وَقَالَ إِنَّمَا الرِّبَا فِي النَّسِيئَةِ . وَكَذَلِكَ رُوِيَ عَنْ بَعْضِ أَصْحَابِهِ شَيْءٌ مِنْ هَذَا وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ رَجَعَ عَنْ قَوْلِهِ حِينَ حَدَّثَهُ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ لَيْسَ فِي الصَّرْفِ اخْتِلاَفٌ .
নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ সাঈদ (রাঃ)-এর নিকট আমি ও ইবনু উমার (রাঃ) গেলাম। তিনি আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, আমার দুটো কানই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেঃ তোমরা স্বর্ণের পরিবর্তে স্বর্ণ বিক্রয় কর না পরিমাণে সমান না রেখে। একইভাবে তোমরা রূপার পরিবর্তে রূপা বিক্রয় কর না পরিমাণে সমান সমান না রেখে। একটি অন্যটি হতে পরিমাণে কম-বেশি করা যাবে না। উপস্থিত বস্তুর পরিবর্তে অনুপস্থিত বস্তু বিক্রয় কর না।
সহীহ্, ইরওয়া (৫/১৮৯), বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ
আবূ বাকার, উমার, উসমান, আবূ হুরাইরা, হিশাম ইবনু আমির, বারাআ, যাইদ ইবনু আরকাম, ফাযালী ইবনু উবাইদ, আবূ বাক্রা, ইবনু উমার, আবূ দারদা ও বিলাল (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, সূদের অনুচ্ছেদে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আবূ সাঈদ কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্।
এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈগণ আমল করেছেন।
তবে ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছেঃ “স্বর্ণের পরিবর্তে স্বর্ণ এবং রূপার পরিবর্তে রূপা নগদ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে পরিমাণে কম-বেশি করাতে তিনি কোন সমস্যা মনে করেন না। তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র ধার-কর্জের ক্ষেত্রেই (কম-বেশি করলে) সূদ হয়।”
অন্য কতিপয় সাহাবী হতেও একইরকম বর্ণিত আছে। কিন্তু এও বর্ণিত আছে যে, তাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই হাদীসটি আবূ সাঈদ (রাঃ) শুনানোর পর তিনি (ইবনু আব্বাস) তার উপরোক্ত বক্তব্য বাতিল করেন। (আবূ ঈসা বলেন), উল্লেখিত দুটি মতের মধ্যে প্রথম মতই অনেক বেশি সহীহ্ ।
আবূ সাঈদের হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। এই মত সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাকেরও। ইবনুল মুবারাক বলেন, মুদ্রার বিনিময় জায়িয হওয়া প্রসঙ্গে কোন দ্বিমত নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২৪২
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كُنْتُ أَبِيعُ الإِبِلَ بِالْبَقِيعِ فَأَبِيعُ بِالدَّنَانِيرِ فَآخُذُ مَكَانَهَا الْوَرِقَ وَأَبِيعُ بِالْوَرِقِ فَآخُذُ مَكَانَهَا الدَّنَانِيرَ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدْتُهُ خَارِجًا مِنْ بَيْتِ حَفْصَةَ فَسَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ “ لاَ بَأْسَ بِهِ بِالْقِيمَةِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . وَرَوَى دَاوُدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ مَوْقُوفًا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ لاَ بَأْسَ أَنْ يَقْتَضِيَ الذَّهَبَ مِنَ الْوَرِقِ وَالْوَرِقَ مِنَ الذَّهَبِ . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَدْ كَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ ذَلِكَ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বাকি নামক বাজারে উটের ব্যবসা করতাম। আমি কখনও স্বর্ণ মুদ্রার বদলে উট বিক্রয় করতাম কিন্তু দাম নেয়ার সময় রৌপ্যমুদ্রা নিতাম। আবার কখনও রৌপ্য মুদ্রার বদলে তা বিক্রয় করতাম এবং দাম নেয়ার সময় স্বর্ণ মুদ্রা নিতাম। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে এসে তাঁকে হাফসা (রাঃ)-এর ঘর হতে বেরিয়ে আসতে দেখলাম। আমি এ সম্পর্কে তাঁকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেনঃ এরূপ দাম গ্রহণ করায় কোন সমস্যা নাই।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২২৬২)
আবূ ঈসা বলেন, সিমাক ইবনু হারবের সূত্রেই আমরা এই হাদীসটি মারফূ হিসাবে জেনেছি। কিন্তু দাঊদ ইবনু আবূ হিন্দ সাইদ ইবনু জুবাইরের সূত্রে ইবনু উমারের এ হাদীসটি মাওকূফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। একদল বিশেষজ্ঞ আলিম এই হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাদের মতে স্বর্ণ মুদ্রার পরিবর্তে রৌপ্যমুদ্রা অথবা রৌপ্যমুদ্রার পরিবর্তে স্বর্ণ মুদ্রা নিতে কোন সমস্যা নেই। ইমাম আহমাদ ও ইসহাকের এই মত। একদল সাহাবী ও তাবিঈর মতে এরুপ করা মাকরূহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১২৪৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ بْنِ الْحَدَثَانِ، أَنَّهُ قَالَ أَقْبَلْتُ أَقُولُ مَنْ يَصْطَرِفُ الدَّرَاهِمَ فَقَالَ طَلْحَةُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ وَهُوَ عِنْدَ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ أَرِنَا ذَهَبَكَ ثُمَّ ائْتِنَا إِذَا جَاءَ خَادِمُنَا نُعْطِكَ وَرِقَكَ . فَقَالَ عُمَرُ كَلاَّ وَاللَّهِ لَتُعْطِيَنَّهُ وَرِقَهُ أَوْ لَتَرُدَّنَّ إِلَيْهِ ذَهَبَهُ فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” الْوَرِقُ بِالذَّهَبِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَمَعْنَى قَوْلِهِ ” إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ ” يَقُولُ يَدًا بِيَدٍ .
মালিক ইবনু আওস ইবনু হাদসান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এই বলতে বলতে সামনে এগিয়ে গেলাম, কে রূপার মুদ্রা পরিবর্তন করবে? তালহা ইবনু উবাইদুল্লাহ এ সময়ে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-এর নিকট ছিলেন। তিনি বললেন, তোমার স্বর্ণ আমাদেরকে দেখাও এবং (কিছুক্ষণ) পরে আমাদের কাছে আস। আমাদের খাদিম আসার পরই তোমাকে রূপার মুদ্রা প্রদান করব। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বললেন, আল্লাহর শপথ! তা কখনও হতে পারে না। হয় এখনই তাকে রূপার মুদ্রা প্রদান কর না হয় তাকে তার স্বর্ণ ফেরত দাও। কেননা, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ স্বর্ণের পরিবর্তে রূপার মুদ্রা নগদ আদান-প্রদান না হলে তা গ্রহণ করা সূদের অন্তর্ভুক্ত। গমের পরিবর্তে গম নগদ আদান-প্রদান না হলে তা সূদের অন্তর্ভুক্ত; যবের পরিবর্তে যবের নগদ বিনিময় না হলে তা সূদের অন্তর্ভুক্ত এবং খেজুরের পরিবর্তে খেজুরের নগদ বিনিময় না হলে সুদ হবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২৫৩), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। ‘হাআ ওয়া হাআ’-এর অর্থ ‘নগদ ও উপস্থিত বিনিময়’ ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫. অনুচ্ছেদঃ
তাবীরের পর খেজুর গাছ ক্রয় করা এবং সম্পদশালী গোলাম ক্রয় করা
১২৪৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ” مَنِ ابْتَاعَ نَخْلاً بَعْدَ أَنْ تُؤَبَّرَ فَثَمَرَتُهَا لِلَّذِي بَاعَهَا إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ وَمَنِ ابْتَاعَ عَبْدًا وَلَهُ مَالٌ فَمَالُهُ لِلَّذِي بَاعَهُ إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ . وَحَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . هَكَذَا رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ” مَنِ ابْتَاعَ نَخْلاً بَعْدَ أَنْ تُؤَبَّرَ فَثَمَرَتُهَا لِلْبَائِعِ إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ وَمَنْ بَاعَ عَبْدًا وَلَهُ مَالٌ فَمَالُهُ لِلْبَائِعِ إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ ” . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” مَنِ ابْتَاعَ نَخْلاً قَدْ أُبِّرَتْ فَثَمَرَتُهَا لِلْبَائِعِ إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ ” . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنْ عُمَرَ أَنَّهُ قَالَ مَنْ بَاعَ عَبْدًا وَلَهُ مَالٌ فَمَالُهُ لِلْبَائِعِ إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ . هَكَذَا رَوَى عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ وَغَيْرُهُ عَنْ نَافِعٍ الْحَدِيثَيْنِ . وَقَدْ رَوَى بَعْضُهُمْ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَيْضًا . وَرَوَى عِكْرِمَةُ بْنُ خَالِدٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ حَدِيثِ سَالِمٍ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدِيثُ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَصَحُّ مَا جَاءَ فِي هَذَا الْبَابِ .
সালিম (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (পিতা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছিঃ তাবীরের পর কোন লোক খেজুর বাগান কিনলে এর ফলের মালিক হবে বিক্রেতা, যদি ক্রয়কারীর জন্য (মালিকানা) শর্ত করা না হয়। যদি কোন লোক সম্পদশালী গোলাম কিনে তবে ঐ সম্পদের অধিকারী হবে বিক্রেতা, ক্রেতার জন্য ঐ সম্পদের যদি কোনরূপ শর্ত করা না হয়।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২১০, ২২১২), নাসা-ঈ
জাবির (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। একইভাবে একাধিক সূত্রে যুহরী হতে, তিনি সালিমের সূত্রে, তিনি ইবনু উমারের সূত্রে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক তাবীরের পর খেজুর গাছ কিনলে বিক্রেতাই তার ফল ভোগ করবে, যদি ক্রয়কারী এর মালিকানার কোন শর্ত না করে থাকে। একইভাবে কোন লোক যদি সম্পদশালী গোলাম কিনে তবে বিক্রেতা তার সম্পদের অধিকারী হবে, যদি ক্রেতার জন্য কোন শর্ত নির্ধারণ করা না হয়। ইবনু উমর (রাঃ)-এর সূত্রে নাফি (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তাবীরের কাজ পূর্ণ হওয়ার পর কোন লোক খেজুর বাগান কিনলে এর ফল বিক্রেতা পাবে, কিন্তু ক্রেতার জন্য শর্ত করা হলে তা সে পাবে। নাফি (রাঃ) হতে ইবনু উমার (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি উমার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, যদি কোন লোক সম্পদশালী গোলাম কিনে তবে বিক্রেতাই এই সম্পদের মালিক হবে, কিন্তু ক্রেতার জন্য শর্ত করা হলে তা সে পাবে। একইরকম হাদীস আরো কয়েকটি সূত্রে বর্ণিত আছে।
এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। একই কথা বলেছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও। ইমাম বুখারী বলেছেন, সালিমের সূত্রে যুহুরী হতে বর্ণিত ইবনু উমারের হাদীসটি এ অনুচ্ছেদে সর্বাধিক সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৬. অনুচ্ছেদঃ
একে অপর হতে আলাদা হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের (ক্রয়-বিক্রয় প্রত্যাখ্যানের) স্বাধীনতা বজায় থাকে
১২৪৫
حَدَّثَنَا وَاصِلُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا أَوْ يَخْتَارَا ” . قَالَ فَكَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَا ابْتَاعَ بَيْعًا وَهُوَ قَاعِدٌ قَامَ لِيَجِبَ لَهُ الْبَيْعُ .
قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَاب عَنْ أَبِي بَرْزَةَ وَحَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَسَمُرَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَقَ وَقَالُوا الْفُرْقَةُ بِالْأَبْدَانِ لَا بِالْكَلَامِ وَقَدْ قَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مَعْنَى قَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا يَعْنِي الْفُرْقَةَ بِالْكَلَامِ وَالْقَوْلُ الْأَوَّلُ أَصَحُّ لِأَنَّ ابْنَ عُمَرَ هُوَ رَوَى عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَعْنَى مَا رَوَى وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يُوجِبَ الْبَيْعَ مَشَى لِيَجِبَ لَهُ وَهَكَذَا رُوِيَ عَنْ أَبِي بَرْزَةَ الْأَسْلَمِيِّ
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ ক্রেতা ও বিক্রেতা একে অপর হতে আলাদা না হওয়া পর্যন্ত অথবা উভয়ে ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করতে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত তাদের জন্য ক্রয়-বিক্রয় বাতিল করার স্বাধীনতা বজায় থাকে। বর্ণনাকারী বলেন, বসে থাকাবস্থায় ইবনু উমার (রাঃ) কোন জিনিস কিনলে (তা নির্ধারিত করার জন্য) উঠে দাড়িয়ে যেতেন।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২১৮১), নাসা-ঈ
আবূ বারযা, হাকীম ইবনু হিযাম, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, সামুরা, আবূ হুরাইরা ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল সাহাবী ও তাবিঈ আমল করেছেন। এই মত প্রকাশ করেছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও। তারা বলেন, একে অপর হতে আলাদা হওয়ার অর্থ হচ্ছেঃ সশরীরে আলাদা হওয়া, বাক্যালাপ বন্ধ করা নয়। অপর একদল আলিম বলেছেন, আলাদা হওয়ার অর্থ হচ্ছে কথাবার্তা বন্ধ হওয়া (অর্থাৎ চুক্তি অনুষ্ঠিত হলে এবং আলোচনার প্রসঙ্গ পরিবর্তিত হলে স্বাধীনতা বজায় থাকবে না)। কিন্তু প্রথম মতই অধিকতর সহীহ্। কেননা, এ হাদীসের বর্ণনাকারী ইবনু উমার (রাঃ)। এজন্য তিনিই এ হাদীসের মর্ম বেশি ভাল বুঝতে পেরেছেন। তার প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, তিনি ক্রয়-বিক্রয় বাধ্যতামূলক করতে চাইলে উঠে দাঁড়িয়ে যেতেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২৪৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ صَالِحٍ أَبِي الْخَلِيلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا بُورِكَ لَهُمَا فِي بَيْعِهِمَا وَإِنْ كَتَمَا وَكَذَبَا مُحِقَتْ بَرَكَةُ بَيْعِهِمَا ” . هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَرْزَةَ وَحَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَسَمُرَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ وَقَالُوا الْفُرْقَةُ بِالأَبْدَانِ لاَ بِالْكَلاَمِ . وَقَدْ قَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مَعْنَى قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ” مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا ” . يَعْنِي الْفُرْقَةَ بِالْكَلاَمِ . وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ لأَنَّ ابْنَ عُمَرَ هُوَ رَوَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ أَعْلَمُ بِمَعْنَى مَا رَوَى وَرُوِيَ عَنْهُ أَنَّهُ كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يُوجِبَ الْبَيْعَ مَشَى لِيَجِبَ لَهُ . وَهَكَذَا رُوِيَ عَنْ أَبِي بَرْزَةَ الأَسْلَمِيِّ أَنَّ رَجُلَيْنِ اخْتَصَمَا إِلَيْهِ فِي فَرَسٍ بَعْدَ مَا تَبَايَعَا . وَكَانُوا فِي سَفِينَةٍ فَقَالَ لاَ أَرَاكُمَا افْتَرَقْتُمَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا ” . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَهْلِ الْكُوفَةِ وَغَيْرِهِمْ إِلَى أَنَّ الْفُرْقَةَ بِالْكَلاَمِ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَهَكَذَا رُوِيَ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ كَيْفَ أَرُدُّ هَذَا وَالْحَدِيثُ فِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صَحِيحٌ . وَقَوَّى هَذَا الْمَذْهَبَ . وَمَعْنَى قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ” إِلاَّ بَيْعَ الْخِيَارِ ” . مَعْنَاهُ أَنْ يُخَيِّرَ الْبَائِعُ الْمُشْتَرِيَ بَعْدَ إِيجَابِ الْبَيْعِ فَإِذَا خَيَّرَهُ فَاخْتَارَ الْبَيْعَ فَلَيْسَ لَهُ خِيَارٌ بَعْدَ ذَلِكَ فِي فَسْخِ الْبَيْعِ وَإِنْ لَمْ يَتَفَرَّقَا . هَكَذَا فَسَّرَهُ الشَّافِعِيُّ وَغَيْرُهُ . وَمِمَّا يُقَوِّي قَوْلَ مَنْ يَقُولُ الْفُرْقَةُ بِالأَبْدَانِ لاَ بِالْكَلاَمِ حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্রেতা-বিক্রেতা একে অপর হতে আলাদা না হওয়া পর্যন্ত উভয়ের জন্য (ক্রয়-বিক্রয় বাতিল করার) স্বাধীনতা বজায় থাকে। যদি তারা দুজনেই সততা অবলম্বন করে এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে তবে তাদের এই লেন-দেনে বরকত হয়। যদি তারা মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে এবং দোষ-ত্রুটিগুলো গোপন করে রাখে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের বারকাত তুলে নেয়া হয়।
সহীহ্, ইরওয়া (১২৮১), বেচা-কেনার হাদীস, নাসা-ঈ
এ হাদীসটি সহীহ্। আবূ বারযা আসলামী (রাঃ) হতেও একইভাবে বর্ণিত আছে যে, নৌকায় বসে দুটি লোক একটি ঘোড়া কেনা-বেচা করল। এরপর দুজনের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হলে তারা আবূ বারযা (রাঃ)-এর নিকট এর সমাধান চায়। তখন তিনিও নৌকায় ছিলেন। তিনি বললেন, আমি তোমাদের দুজনকে একে অপর হতে আলাদা হতে দেখি না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “ক্রেতা ও বিক্রেতা একে অপরে আলাদা না হওয়া পর্যন্ত উভয়ের বেচা-কেনা বাতিল করার স্বাধীনতা বজায় থাকে।”
কূফার আলিমগণ বলেন, আলাদা হওয়ার অর্থ কথাবার্তা হতে আলাদা হওয়া। সুফিয়ান সাওরীরও এই মত। একইরকম মত ইমাম মালিক হতেও বর্ণিত হয়েছে। ইবনুল মুবারাক বলেন, এ হাদীসের দলীল (সশরীরে পৃথক হওয়ার) আমি কিভাবে খণ্ডন করতে পারি? অথচ এ হাদীস সহীহ্ সনদে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত হয়েছে যা এই মতকেই মজবুত করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ স্বাধীনতামূলক ক্রয়-বিক্রয়ের অর্থ হলঃ ক্রয়-বিক্রয় বাধ্যতামূলক হওয়ার পরও যদি বিক্রেতা ক্রেতাকে তা বাতিলের স্বাধীনতা প্রদান করে কিন্তু ক্রেতা তারপরও তা ক্রয় ঠিক রাখে, তারপর উভয়ে পৃথক না হলেও ক্রয়-বিক্রয় বাতিল করার স্বাধীনতা আর থাকে না। এ হাদীসের ব্যাখ্যা ইমাম শাফিঈ ও অন্যান্যরা এরূপই করেছেন। কিন্তু ইবনু উমারের হাদীস দ্বারা সশরীরে পৃথক হওয়ার মতটি প্রমাণিত হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২৪৭
أَخْبَرَنَا بِذَلِكَ، قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَفْقَةَ خِيَارٍ وَلاَ يَحِلُّ لَهُ أَنْ يُفَارِقَ صَاحِبَهُ خَشْيَةَ أَنْ يَسْتَقِيلَهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَمَعْنَى هَذَا أَنْ يُفَارِقَهُ بَعْدَ الْبَيْعِ خَشْيَةَ أَنْ يَسْتَقِيلَهُ وَلَوْ كَانَتِ الْفُرْقَةُ بِالْكَلاَمِ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ خِيَارٌ بَعْدَ الْبَيْعِ لَمْ يَكُنْ لِهَذَا الْحَدِيثِ مَعْنًى حَيْثُ قَالَ صلى الله عليه وسلم ” وَلاَ يَحِلُّ لَهُ أَنْ يُفَارِقَهُ خَشْيَةَ أَنْ يَسْتَقِيلَهُ ” .
আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে একে অপর হতে আলাদা না হওয়া পর্যন্ত তাদের জন্য (ক্রয়-বিক্রয় প্রত্যাখ্যানের) স্বাধীনতা বজায় থাকে, কিন্তু স্বাধীনতামূলক বেচা-কেনা হলে (আলাদা হওয়ার পরও স্বাধীনতা বজায় থাকে)। দুজনের মধ্যে যে কোন একজন ক্রয় বা বিক্রয় প্রত্যাখ্যান করতে পারে, এই ভয়ে তাড়াতাড়ি আলাদা হওয়াও বৈধ নয়।
হাসান সহীহ্, ইরওয়া (১৩১১)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। এ হাদীসের তাৎপর্য হলঃ
কোন জিনিস বিক্রয়ের পর ক্রেতা বা বিক্রেতা তা ফেরত দিতে বা নিতে পারে-এই ভয়ে তাড়াতাড়ি করে আলাদা হওয়া উচিত নয়। যদি কথার দ্বারা পৃথক হওয়া নির্ধারিত হত এবং বিক্রয়ের পর স্বাধীনতা না থাকত, তাহলে “ক্রয়-বিক্রয় বাতিলের ভয়ে তাড়াতাড়ি আলাদা হয়ে যাওয়া বৈধ নয়’’। এ হাদীসের কোন অর্থই হত না।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
২৭. অনুচ্ছেদঃ
ক্রয়-বিক্রয়ের পর একে অপরের সন্তুষ্টি ছাড়া আলাদা না হওয়া
১২৪৮
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَهُوَ الْبَجَلِيُّ الْكُوفِيُّ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ بْنَ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَتَفَرَّقَنَّ عَنْ بَيْعٍ إِلاَّ عَنْ تَرَاضٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্রেতা ও বিক্রেতা ক্রয়-বিক্রয়ের পর দুজনেই একে অপরের সন্তুষ্টি ছাড়া আলাদা হবে না।
হাসান সহীহ্, ইরওয়া (৫/১২৫, ১২৬)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা গরীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
১২৪৯
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ الشَّيْبَانِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَيَّرَ أَعْرَابِيًّا بَعْدَ الْبَيْعِ . وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক বেদুইনকে বিক্রয় সম্পন্ন হওয়ার পরেও তা বাতিলের স্বাধীনতা প্রদান করেছিলেন।
হাসান, বেচা-কেনার হাদীস
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
২৮. অনুচ্ছেদঃ
যে লোক ক্রয়-বিক্রয়ের কালে প্রতারিত হয়
১২৫০
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ حَمَّادٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَجُلاً، كَانَ فِي عُقْدَتِهِ ضَعْفٌ وَكَانَ يُبَايِعُ وَأَنَّ أَهْلَهُ أَتَوُا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ احْجُرْ عَلَيْهِ . فَدَعَاهُ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَهَاهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي لاَ أَصْبِرُ عَنِ الْبَيْعِ . فَقَالَ “ إِذَا بَايَعْتَ فَقُلْ هَاءَ وَهَاءَ وَلاَ خِلاَبَةَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . وَحَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَقَالُوا يُحْجَرُ عَلَى الرَّجُلِ الْحُرِّ فِي الْبَيْعِ وَالشِّرَاءِ إِذَا كَانَ ضَعِيفَ الْعَقْلِ . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَلَمْ يَرَ بَعْضُهُمْ أَنْ يُحْجَرَ عَلَى الْحُرِّ الْبَالِغِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এক ব্যক্তি খুবই দুর্বল ছিল। সে ক্রয়-বিক্রয় করত (কিন্তু ঠকে যেত)। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এসে তার পরিবারের লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তাকে ক্রয়-বিক্রয় হতে বিরত থাকতে বলুন। নাৰী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ডেকে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করলেন। সে বলল, হে আল্লাহ্র রাসূল! ক্রয়-বিক্রয় হতে বিরত থাকার কাজটি আমার ধৈর্যের উরধে। তিনি বললেনঃ যখন তুমি ক্রয়-বিক্রয় করবে তখন বলবে নগদ লেন-দেন হবে এবং যেন প্রতারণা না করা হয়।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩৫৪), নাসা-ঈ
আবূ ঈসা বলেন, ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। তারা বলেন, দুর্বল জ্ঞানের অধিকারী লোক স্বাধীন হলেও তাকে ক্রয়-বিক্রয় হতে বিরত রাখা উচিত। এই মত ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাকের। অন্য একদল আলিমের মতে, প্রাপ্তবয়স্ক স্বাধীন লোকের উপর (আর্থিক লেন-দেনে) প্রতিবন্ধকতা (হাজর) আরোপ করা উচিত নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৯. অনুচ্ছেদঃ
দুধ জমিয়ে স্তন ফুলানো পশুর বর্ণনা
১২৫১
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ مَنِ اشْتَرَى مُصَرَّاةً فَهُوَ بِالْخِيَارِ إِذَا حَلَبَهَا إِنْ شَاءَ رَدَّهَا وَرَدَّ مَعَهَا صَاعًا مِنْ تَمْرٍ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَرَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (দুধ জমা করে) স্তন ফুলানো পশু যদি কোন ব্যক্তি কিনে তবে তার জন্য (ক্রয় বাতিল করার) স্বাধীনতা আছে। সে চাইলে দুধ দোহনের পর তা ফেরত দিতে পারবে। তবে তাকে এর সাথে এক সা খেজুরও দিতে হবে।
সহীহ্ ইবনু মা-জাহ (২২৩৯), নাসা-ঈ
আবূ ঈসা বলেন, আনাস (রাঃ) এবং আরও একজন সাহাবী হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” مَنِ اشْتَرَى مُصَرَّاةً فَهُوَ بِالْخِيَارِ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ فَإِنْ رَدَّهَا رَدَّ مَعَهَا صَاعًا مِنْ طَعَامٍ لاَ سَمْرَاءَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَصْحَابِنَا مِنْهُمُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَمَعْنَى قَوْلِهِ ” لاَ سَمْرَاءَ ” . يَعْنِي لاَ بُرَّ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ স্তনে দুধ জমা করে রাখা পশুকে যদি কোন লোক কিনে তবে সে (ক্রয় বাতিলের জন্য) তিন দিনের স্বাধীনতা পাবে। সে তা ফেরত দিলে এর সাথে গম ব্যতীত এক সা’ খাদ্যদ্রব্যও প্রদান করবে।
সহীহ্, প্রাগুক্, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আমাদের সাথীদের মতে এ হাদীস অনুযায়ী আমল করতে হবে। তাদের অন্তর্ভুক্ত আছেন ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক। “লা সামরা” অর্থঃ ‘গম ব্যতীত অন্য কিছু’।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০. অনুচ্ছেদঃ
পশু বিক্রয়ের সময় এর পিঠে চড়ার শর্ত রাখা
১২৫৩
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ زَكَرِيَّا، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ بَاعَ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعِيرًا وَاشْتَرَطَ ظَهْرَهُ إِلَى أَهْلِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رُوِيَ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنْ جَابِرٍ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ . يَرَوْنَ الشَّرْطَ فِي الْبَيْعِ جَائِزًا إِذَا كَانَ شَرْطًا وَاحِدًا . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ يَجُوزُ الشَّرْطُ فِي الْبَيْعِ وَلاَ يَتِمُّ الْبَيْعُ إِذَا كَانَ فِيهِ شَرْطٌ .
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তিনি একটি উট বিক্রয় করেন এবং শর্ত রাখেন এর পিঠে আরোহণ করে বাড়ী পর্যন্ত পৌছানোর।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২২০৫), নাসা-ঈ
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। জাবির (রাঃ) হতে বিভিন্ন সূত্রে উল্লেখিত বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীস অনুযায়ী একদল সাহাবী ও তাবিঈ আমল করেছেন। তাদের মতে, একটিমাত্র শর্ত ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলে তা জায়িয। এই মত দিয়েছেন ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাকও। অন্য একদল আলিম বলেন, ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে শর্তারোপ করা জায়িয নয়। শর্ত আরোপ করলে এ ধরণের ক্রয়-বিক্রয় জায়িয হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১. অনুচ্ছেদঃ
বন্ধকী জিনিসের ব্যবহার প্রসঙ্গে
১২৫৪
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَيُوسُفُ بْنُ عِيسَى، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ زَكَرِيَّا، عَنْ عَامِرٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الظَّهْرُ يُرْكَبُ إِذَا كَانَ مَرْهُونًا وَلَبَنُ الدَّرِّ يُشْرَبُ إِذَا كَانَ مَرْهُونًا وَعَلَى الَّذِي يَرْكَبُ وَيَشْرَبُ نَفَقَتُهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَامِرٍ الشَّعْبِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ . وَقَدْ رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ مَوْقُوفًا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لَيْسَ لَهُ أَنْ يَنْتَفِعَ مِنَ الرَّهْنِ بِشَيْءٍ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বাহনের পশুকে বন্ধক রাখা হলে তার পিঠে আরোহণ করা যাবে। দুগ্ধবতী পশুকে বন্ধক রাখা হলে তার দুধ পান করা যাবে। যে লোক আরোহণ করবে এবং দুধ পান করবে তাকে পশুর খরচও প্রদান করতে হবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৪৪০), বুখারী
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। আমরা এ হাদীসটিকে কেবল আমিরের সূত্রেই আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে মারফূভাবে জেনেছি। এটিকে আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী আবূ সালিহ (রহঃ) হতে মাওকূফভাবে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। এই মত দিয়েছেন ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাকও। অপর একদল আলিমের মতে, বন্ধক রাখা জিনিস ব্যবহার করা জায়িয নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩২. অনুচ্ছেদঃ
স্বর্ণ ও পুঁতির দানা খচিত মালা কেনা প্রসঙ্গে
১২৫৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ أَبِي شُجَاعٍ، سَعِيدِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ خَالِدِ بْنِ أَبِي عِمْرَانَ، عَنْ حَنَشٍ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ فَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ، قَالَ اشْتَرَيْتُ يَوْمَ خَيْبَرَ قِلاَدَةً بِاثْنَىْ عَشَرَ دِينَارًا فِيهَا ذَهَبٌ وَخَرَزٌ فَفَصَّلْتُهَا فَوَجَدْتُ فِيهَا أَكْثَرَ مِنِ اثْنَىْ عَشَرَ دِينَارًا فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ “ لاَ تُبَاعُ حَتَّى تُفَصَّلَ ” .
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ أَبِي شُجَاعٍ، سَعِيدِ بْنِ يَزِيدَ بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ لَمْ يَرَوْا أَنْ يُبَاعَ السَّيْفُ مُحَلًّى أَوْ مِنْطَقَةٌ مُفَضَّضَةٌ أَوْ مِثْلُ هَذَا بِدَرَاهِمَ حَتَّى يُمَيَّزَ وَيُفَصَّلَ . وَهُوَ قَوْلُ ابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَدْ رَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي ذَلِكَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ .
ফাযালা ইবনু উবাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি খাইবারের যুদ্ধের সময় বার দীনারে একটি মালা ক্রয় করলাম। এতে স্বর্ণ ও পুঁতির দানা মিশানো ছিল। আমি এগুলোকে আলাদা করে বার দীনারের বেশি পরিমাণ স্বর্ণ পেলাম। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এটা উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তা বিক্রয় করা যাবে না যতক্ষণ না তা আলাদা করা হবে।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস, মুসলিম
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। ইবনুল মুবারকও উল্লিখিত সনদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল সাহাবী ও অপরাপর আলিম আমল করেছেন। তাদের মতে রূপার কারুকার্য খচিত তরবারি, কোমরবন্ধ, তরবারির খাপ ইত্যাদি দিরহামের বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয় করতে হলে এর সাথে রূপা পৃথক করে নিতে হবে। এই মত দিয়েছেন ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও। অন্য একদল সাহাবী ও অপরাপর আলিম এগুলো আলাদা না করেই তা ক্রয়-বিক্রয়ের সম্মতি দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
গোলাম বিক্রয়ের সময় ওয়ালার শর্ত করা নিষেধ
১২৫৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا أَرَادَتْ أَنْ تَشْتَرِيَ، بَرِيرَةَ فَاشْتَرَطُوا الْوَلاَءَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ اشْتَرِيهَا فَإِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْطَى الثَّمَنَ أَوْ لِمَنْ وَلِيَ النِّعْمَةَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ . قَالَ وَمَنْصُورُ بْنُ الْمُعْتَمِرِ يُكْنَى أَبَا عَتَّابٍ . حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ الْعَطَّارُ الْبَصْرِيُّ عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْمَدِينِيِّ قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ سَعِيدٍ يَقُولُ إِذَا حُدِّثْتَ عَنْ مَنْصُورٍ فَقَدْ مَلأْتَ يَدَكَ مِنَ الْخَيْرِ لاَ تُرِدْ غَيْرَهُ . ثُمَّ قَالَ يَحْيَى مَا أَجِدُ فِي إِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ وَمُجَاهِدٍ أَثْبَتَ مِنْ مَنْصُورٍ . قَالَ وَأَخْبَرَنِي مُحَمَّدٌ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي الأَسْوَدِ قَالَ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ مَنْصُورٌ أَثْبَتُ أَهْلِ الْكُوفَةِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বারীরা নাম্নী গোলামকে কিনতে চাইলেন, কিন্তু মালিক পক্ষ ওয়ালার শর্ত আরোপ করল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি তাকে কিনতে পার। কেননা, যে লোক মূল্য পরিশোধ করে অথবা এর মালিক হয় সেই ওয়ালার অধিকারী হয়।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৫২১), নাসা-ঈ
ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ বলেন, যখন তোমার নিকট মানসূরের সূত্রে বর্ণনা করা হয় তখন তুমি মনে করবে যে, তুমি তোমার হাত কল্যাণে পরিপূর্ণ করলে। আমি ইবরাহীম নাখঈ ও মুজাহিদ হতে রিওয়ায়াতের ক্ষেত্রে মানসূরের তুলনায় বেশি আস্থাভাজন অন্য কাউকে পাইনি। আবদুর রাহমান ইবনু মাহ্দী বলেন, কুফাবাসীদের মধ্যে মানসূর সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য লোক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
প্রতিনিধি কর্তৃক দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করে মূলধন ও মুনাফা মালিককে দিয়ে দেয়া
১২৫৭
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ أَبِي حُصَيْنٍ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ حَكِيمَ بْنَ حِزَامٍ يَشْتَرِي لَهُ أُضْحِيَّةً بِدِينَارٍ فَاشْتَرَى أُضْحِيَّةً فَأُرْبِحَ فِيهَا دِينَارًا فَاشْتَرَى أُخْرَى مَكَانَهَا فَجَاءَ بِالأُضْحِيَّةِ وَالدِّينَارِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ “ ضَحِّ بِالشَّاةِ وَتَصَدَّقْ بِالدِّينَارِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَحَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ لَمْ يَسْمَعْ عِنْدِي مِنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ .
হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের জন্য এক দীনারে একটি কুরবানীর পশু কেনার উদ্দেশ্য তাকে (বাজারে) পাঠান। তিনি (এক দীনারে) একটি পশু কিনে (তা আবার বিক্রয় করে) এক দীনার লাভ করেন। এর পরিবর্তে তিনি আরও একটি পশু কিনেন। তারপর তিনি একটি পশু ও এক দীনারসহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে চলে আসেন। তিনি বললেনঃ বকরীটা কুরবানী কর এবং দীনারটি দান-খাইরাত কর।
যঈফ, বেচা-কেনার হাদীস অধ্যায়
আবূ ঈসা বলেন, হাকীম ইবনু হিযামের হাদীসটি আমরা শুধু উল্লেখিত সূত্রেই জেনেছি। আমার মতে হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) এর নিকট হতে হাবীব ইবনু আবূ সাবিত কিছু শুনেননি।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১২৫৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا حَبَّانُ، وَهُوَ ابْنُ هِلاَلٍ أَبُو حَبِيبٍ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا هَارُونُ الأَعْوَرُ الْمُقْرِئُ، وَهُوَ ابْنُ مُوسَى الْقَارِئُ حَدَّثَنَا الزُّبَيْرُ بْنُ الْخِرِّيتِ، عَنْ أَبِي لَبِيدٍ، عَنْ عُرْوَةَ الْبَارِقِيِّ، قَالَ دَفَعَ إِلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دِينَارًا لأَشْتَرِيَ لَهُ شَاةً فَاشْتَرَيْتُ لَهُ شَاتَيْنِ فَبِعْتُ إِحْدَاهُمَا بِدِينَارٍ وَجِئْتُ بِالشَّاةِ وَالدِّينَارِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . فَذَكَرَ لَهُ مَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ فَقَالَ لَهُ “ بَارَكَ اللَّهُ لَكَ فِي صَفْقَةِ يَمِينِكَ ” . فَكَانَ يَخْرُجُ بَعْدَ ذَلِكَ إِلَى كُنَاسَةِ الْكُوفَةِ فَيَرْبَحُ الرِّبْحَ الْعَظِيمَ فَكَانَ مِنْ أَكْثَرِ أَهْلِ الْكُوفَةِ مَالاً .
উরওয়া আল-বারিকী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তাঁর নিজের জন্য একটি ছাগল কেনার উদ্দেশ্যে একটি দীনার প্রদান করলেন। আমি তাঁর জন্য দু’টি ছাগল কিনলাম। আমি এর মধ্য হতে একটিকে এক দীনারের বিনিময়ে বিক্রয় করে দিলাম। তারপর আমি একটি ছাগল ও একটি দীনারসহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলাম। (অধঃস্তন বর্ণনাকারী বলেন) তিনি তাঁকে পুরো ঘটনা বর্ণনা করে শুনালেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তোমার ডান হাতের ব্যবসায়ে বারকাত দান করুন। তিনি কূফার অদূরে কুনাসা নামক জায়গায় চলে যান এবং ব্যবসায়ে অনেক মুনাফা অর্জন করেন। ফলে তিনি কূফার সম্পদশালী লোকে পরিণত হন।
সহীহ্, বেচা-কেনার হাদীস
উপরোক্ত হাদীসের মত আবূ লাবীদের সূত্রেও বর্ণিত আছে। এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম মত দিয়েছেন। একই কথা বলেছেন ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাকও। এ হাদীস অনুযায়ী অন্য একদল আলিম মত গ্রহণ করেননি। তাদের মধ্যে ইমাম শাফিঈ অন্যতম। সাঈদ ইবনু যাইদ হাম্মাদ ইবনু যাইদের ভাই, আবূ লাবীদের নাম লিমাযাহ্ পিতার নাম যাব্বার।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
মুকাতাব গোলামের মূল্য পরিশোধ করার মত টাকা থাকলে
১২৫৯
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْبَزَّازُ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِذَا أَصَابَ الْمُكَاتَبُ حَدًّا أَوْ مِيرَاثًا وَرِثَ بِحِسَابِ مَا عَتَقَ مِنْهُ ” . وَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” يُؤَدِّي الْمُكَاتَبُ بِحِصَّةِ مَا أَدَّى دِيَةَ حُرٍّ وَمَا بَقِيَ دِيَةَ عَبْدٍ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَهَكَذَا رَوَى يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرَوَى خَالِدٌ الْحَذَّاءُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ عَلِيٍّ قَوْلَهُ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ . وَقَالَ أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمُ الْمُكَاتَبُ عَبْدٌ مَا بَقِيَ عَلَيْهِ دِرْهَمٌ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুকাতাব গোলামের দিয়াত বা ওয়ারিসী স্বত্ব পাওয়ার সুযোগ এলে সে যতটুকু পরিমাণ মুক্ত হয়েছে ততটুকু অংশ পরিমাণ মালিক হবে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেছেনঃ মুকাতাব গোলামের যতটুকু অংশ মুক্ত তাকে ততটুকু মুক্তির সমান দিয়াত প্রদান করতে হবে এবং বাকীগুলোর জন্য গোলামের সমান পরিমাণ দিয়াত প্রদান করতে হবে।
সহীহ্, ইরওয়া (১৭২৬)
উন্মু সালামা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনু কাছীর ও ইকরিমা হতে, তিনি ইবনু আব্বাস হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উপরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। ইকরামার সূত্রে আলী (রাঃ)-এর বক্তব্য হিসাবেও এটাকে খালিদ আল-হাযযা বর্ণনা করেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল সাহাবী ও তাবিঈ আমল করেছেন। কিন্তু বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈ বলেন, মুকাতাব গোলামের চুক্তিকৃত টাকার মধ্যে এক দিরহাম অনাদায়ী থাকলেও সে গোলামই গণ্য হবে (এবং গোলামের সমান আইনগত সুযোগ-সুবিধা পাবে)। এই মত দিয়েছেন সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২৬০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ يَقُولُ “ مَنْ كَاتَبَ عَبْدَهُ عَلَى مِائَةِ أُوقِيَّةٍ فَأَدَّاهَا إِلاَّ عَشْرَ أَوَاقٍ أَوْ قَالَ عَشَرَةَ دَرَاهِمَ ثُمَّ عَجَزَ فَهُوَ رَقِيقٌ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّ الْمُكَاتَبَ عَبْدٌ مَا بَقِيَ عَلَيْهِ شَيْءٌ مِنْ كِتَابَتِهِ . وَقَدْ رَوَى الْحَجَّاجُ بْنُ أَرْطَاةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ نَحْوَهُ .
আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (দাদা) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর এক বক্তৃতায় বলতে শুনেছিঃ একশত উকিয়া প্রদানের শর্তে কোন লোক তার গোলামকে মুক্তির চুক্তিপত্র প্রদান করল। সে চুক্তির মূল্য পরিশোধ করতে থাকল। কিন্তু দশ উকিয়া বা দশ দিরহাম পরিমাণ পরিশোধ করতে সে অসমর্থ হয়ে পড়ল। এরকম পরিস্থিতিতে সে গোলামই রয়ে যাবে।
হাসান, ইবনু মা-জাহ (২৫১৯)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান গরীব বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈ আমল করেছেন। তাদের মতে, মুকাতাব গোলাম গোলামই রয়ে যাবে চুক্তিকৃত পরিমাণ টাকার অল্প পরিমাণ বাকী থাকলেও। হাজ্জাজ ইবনু আরতাত ও আমর ইবনু শুআইব হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১২৬১
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ نَبْهَانَ، مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا كَانَ عِنْدَ مُكَاتَبِ إِحْدَاكُنَّ مَا يُؤَدِّي فَلْتَحْتَجِبْ مِنْهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَمَعْنَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَى التَّوَرُّعِ وَقَالُوا لاَ يُعْتَقُ الْمُكَاتَبُ وَإِنْ كَانَ عِنْدَهُ مَا يُؤَدِّي حَتَّى يُؤَدِّيَ .
উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কোন মহিলার মুকাতাব ক্রীতদাসের নিকটে নিজেদের স্বাধীন করার মত সম্পদ থাকলে সে যেন তার থেকে পর্দা করে।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (২৫২০)
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। বিশেষজ্ঞ আলিমদের মতে এই হাদীসের মর্মার্থ হলঃ তাকওয়া ও পরহিযগারী হাসিলের জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পর্দা করা কর্তব্য। তারা বলেন, মুকাতাব ক্রীতদাসের নিকটে নিজেকে মুক্ত করার মত সম্পদ থাকলে সে ক্রীতদাস হিসেবেই বিবেচিত। চুক্তি অনুযায়ী সকল দেনা পাওনা মিটিয়ে দেবার পরই সে মুক্ত বলে বিবেচিত হবে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩৬. অনুচ্ছেদঃ
দেউলিয়া লোকের নিকট পাওনাদারের মাল পাওয়া গেলে
১২৬২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ أَيُّمَا امْرِئٍ أَفْلَسَ وَوَجَدَ رَجُلٌ سِلْعَتَهُ عِنْدَهُ بِعَيْنِهَا فَهُوَ أَوْلَى بِهَا مِنْ غَيْرِهِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَمُرَةَ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ هُوَ أُسْوَةُ الْغُرَمَاءِ . وَهُوَ قَوْلُ أَهْلِ الْكُوفَةِ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক দেউলিয়া (মুফলিস) বলে ঘোষিত হওয়ার পরেও কোন ব্যক্তি নিজের মাল পূর্বাবস্থায় তার নিকট পেয়ে গেলে সে তাতে অন্য লোকদের চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাবে।
সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৩৫৮), নাসা-ঈ
সামুরা ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী একদল আলিম আমল করেছেন। একথা বলেছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাকও। অন্য একদল আলিম বলেছেন, দেউলিয়াত্ব লোকের নিকট কোন ব্যক্তি তার মাল পূর্বাবস্থায় পেলেও তাকে তা অন্যান্য পাওনাদারদের সাথে সমান ভাগে ভাগ করে নিতে হবে। কূফাবাসী আলিমদের এই অভিমত।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস