৪৫. অনুচ্ছেদঃ
বুধবার ও বৃহস্পতিবারের রোযা রাখা প্রসঙ্গে
৭৪৮
حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْحَرِيرِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ مَدُّويَهْ، قَالاَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا هَارُونُ بْنُ سَلْمَانَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ مُسْلِمٍ الْقُرَشِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَأَلْتُ أَوْ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ صِيَامِ الدَّهْرِ فَقَالَ “ إِنَّ لأَهْلِكَ عَلَيْكَ حَقًّا صُمْ رَمَضَانَ وَالَّذِي يَلِيهِ وَكُلَّ أَرْبِعَاءٍ وَخَمِيسٍ فَإِذًا أَنْتَ قَدْ صُمْتَ الدَّهْرَ وَأَفْطَرْتَ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ مُسْلِمٍ الْقُرَشِيِّ حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى بَعْضُهُمْ عَنْ هَارُونَ بْنِ سَلْمَانَ عَنْ مُسْلِمِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ .
উবাইদুল্লাহ্ ইবনু মুসলিম আল-কুরাশী (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে পুরো বছর রোযা রাখা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম বা তাঁকে প্রশ্ন করা হল। তিনি বলেনঃ তোমার উপর অবশ্যই তোমার পরিবারের অধিকার আছে। অতএব তুমি রামাযান ও এর পরের মাস (শাওয়ালের ছয়টি নফল রোযা) এবং প্রতি বুধ ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখ। এই পদ্ধতি মানলে তুমি যেন পুরো বছরই রোযা রাখলে এবং রোযা ভেঙে ফেলার সুযোগ পেলে।
যঈফ, যঈফ আবূ দাঊদ (৪২০)
এ অনুচ্ছেদে আইশা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, মুসলিম আল-কুরাশীর হাদীসটি গারীব। কেউ কেউ এটিকে হারূন ইবনু সালমান হতে তিনি মুসলিম ইবনু উবাইদুল্লাহ্ হতে তিনি তার পিতা উবাইদুল্লাহ্ (রহঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৪৬. অনুচ্ছেদঃ
আরাফার দিন রোযা পালনের ফাযীলাত
৭৪৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْبَدٍ الزِّمَّانِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي قَتَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدِ اسْتَحَبَّ أَهْلُ الْعِلْمِ صِيَامَ يَوْمِ عَرَفَةَ إِلاَّ بِعَرَفَةَ .
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আরাফাতের দিনের রোযা সম্পর্কে আশা করি যে, তিনি এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৩০), মুসলিম
আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ কাতাদা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। আরাফাতে অবস্থানরত ব্যক্তিদের ছাড়া অন্যদের জন্য এই দিনে রোযা পালন করাকে বিশেষজ্ঞ আলিমগণ মুস্তাহাব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৭. অনুচ্ছেদঃ
আরাফাতে অবস্থানকালে সে দিনের রোযা পালন করা মাকরূহ্
৭৫০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَفْطَرَ بِعَرَفَةَ وَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ أُمُّ الْفَضْلِ بِلَبَنٍ فَشَرِبَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَأُمِّ الْفَضْلِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ حَجَجْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَصُمْهُ يَعْنِي يَوْمَ عَرَفَةَ وَمَعَ أَبِي بَكْرٍ فَلَمْ يَصُمْهُ وَمَعَ عُمَرَ فَلَمْ يَصُمْهُ وَمَعَ عُثْمَانَ فَلَمْ يَصُمْهُ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ الإِفْطَارَ بِعَرَفَةَ لِيَتَقَوَّى بِهِ الرَّجُلُ عَلَى الدُّعَاءِ وَقَدْ صَامَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ يَوْمَ عَرَفَةَ بِعَرَفَةَ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরাফাতে রোযা ভেঙ্গে ফেলেন। সেদিন তাঁর জন্য উম্মুল ফাদল (রাঃ) কিছু দুধ পাঠিয়েছিলেন। তিনি তা পান করেন।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২১০৯), তা’লীক আলা ইবনু খুযাইমা (২১০২), উম্মুল ফাযল হতে (বুখারী ও মুসলিম )
আবূ হুরায়রা, ইবনু উমার ও উম্মুল ফাযল (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
ইবনু উমার (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমি হাজ্জ করেছি কিন্তু আরাফার দিন তিনি রোযা পালন করেননি; আবূ বাক্র (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, তিনিও সেদিন রোযা পালন করেননি; উমার (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, তিনিও সেদিন রোযা পালন করেননি এবং উসমান (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি কিন্তু তিনিও রোযা পালন করেননি।
এ হাদীস অনুযায়ী বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ আলিম আমলের কথা বলেছেন। তাঁরা আরাফার দিন দু’আর ক্ষেত্রে শক্তিলাভের জন্য রোযা পালন না করাকে মুস্তাহাব বলেছেন। অবশ্য আরাফাতে অবস্থানকালে কোন কোন আলিম সে দিনের রোযা পালন করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، وَإِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سُئِلَ ابْنُ عُمَرَ عَنْ صَوْمِ، يَوْمِ عَرَفَةَ بِعَرَفَةَ فَقَالَ حَجَجْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَصُمْهُ وَمَعَ أَبِي بَكْرٍ فَلَمْ يَصُمْهُ وَمَعَ عُمَرَ فَلَمْ يَصُمْهُ وَمَعَ عُثْمَانَ فَلَمْ يَصُمْهُ . وَأَنَا لاَ أَصُومُهُ وَلاَ آمُرُ بِهِ وَلاَ أَنْهَى عَنْهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ رَجُلٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . وَأَبُو نَجِيحٍ اسْمُهُ يَسَارٌ وقد سمع من ابن عمر.
ইবনু আবূ নাজীহ্ (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আরাফাতের দিন রোযা পালন প্রসঙ্গে ইবনু উমার (রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হাজ্জ করেছি, তিনি সেদিন রোযা পালন করেননি। আবূ বাক্র (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, ঐ দিন তিনিও রোযা পালন করেননি। উমার (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, ঐ দিন তিনিও রোযা পালন করেননি। উসমান (রাঃ)-এর সাথেও হাজ্জ করেছি, ঐ দিন তিনিও রোযা পালন করেননি। এ দিন আমি নিজেও রোযা পালন করিনা, কাউকে রোযা রাখতেও বলি না এবং নিষেধও করি না।
-সনদ সহীহ্
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। এই হাদীসটি ইবনু আবূ নাজীহ্, তার পিতা আবূ নাজীহ্ হতে, তিনি জনৈক ব্যক্তি হতে, তিনি ইবনু উমার (রাঃ)-এর সূত্রেও বর্ণিত হয়েছে। আবূ নাজীহ্-এর নাম ইয়াসার।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৮. অনুচ্ছেদঃ
আশূরার দিন রোযা পালনের উৎসাহ প্রদান করা
৭৫২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْبَدٍ الزِّمَّانِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” صِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَمُحَمَّدِ بْنِ صَيْفِيٍّ وَسَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ وَهِنْدِ بْنِ أَسْمَاءَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَالرُّبَيِّعِ بِنْتِ مُعَوِّذِ بْنِ عَفْرَاءَ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَلَمَةَ الْخُزَاعِيِّ عَنْ عَمِّهِ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ ذَكَرُوا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ حَثَّ عَلَى صِيَامِ يَوْمِ عَاشُورَاءَ . قَالَ أَبُو عِيسَى لاَ نَعْلَمُ فِي شَيْءٍ مِنَ الرِّوَايَاتِ أَنَّهُ قَالَ ” صِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ كَفَّارَةُ سَنَةٍ ” . إِلاَّ فِي حَدِيثِ أَبِي قَتَادَةَ . وَبِحَدِيثِ أَبِي قَتَادَةَ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার নিকট আমি আশাপোষণ করি যে, তিনি আশূরার রোযার মাধ্যমে পূর্ববর্তী এক বছরের (গুনাহ্) ক্ষমা করে দিবেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৩৮), মুসলিম
এই অনুচ্ছেদে আলী, মুহাম্মাদ ইবনু সাইফী, সালামা ইবনুল আকওয়া, হিন্দ ইবনু আসমা, ইবনু আব্বাস, রুবাই বিনতু মুআওবিয ইবনু আফ্রা, আবদুর রাহমান ইবনু সালামা আল-খুযাঈ, তার চাচার বরাতে এবং আবদুল্লাহ্ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) প্রমুখ বর্ণনা করেনঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদেরকে আশূরার দিন রোযা পালন করতে উৎসাহিত করেছেন।
আবূ ঈসা বলেন, আবূ কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটি ছাড়া আর অন্য কোন বর্ণনায় “আশূরার দিনের রোযা এক বছরের (গুনাহের) কাফ্ফারা স্বরূপ” এই কথা উল্লেখ আছে বলে আমাদের জানা নেই। ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাক (রহঃ) আবূ কাতাদা (রাঃ)-এর হাদীস অনুযায়ীই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৯. অনুচ্ছেদঃ
আশূরার দিন রোযা পালন না করার সুযোগ
৭৫৩
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ عَاشُورَاءُ يَوْمًا تَصُومُهُ قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُهُ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ صَامَهُ وَأَمَرَ النَّاسَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا افْتُرِضَ رَمَضَانُ كَانَ رَمَضَانُ هُوَ الْفَرِيضَةَ وَتَرَكَ عَاشُورَاءَ فَمَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ تَرَكَهُ . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ وَقَيْسِ بْنِ سَعْدٍ وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَمُعَاوِيَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَالْعَمَلُ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَى حَدِيثِ عَائِشَةَ وَهُوَ حَدِيثٌ صَحِيحٌ لاَ يَرَوْنَ صِيَامَ يَوْمِ عَاشُورَاءَ وَاجِبًا إِلاَّ مَنْ رَغِبَ فِي صِيَامِهِ لِمَا ذُكِرَ فِيهِ مِنَ الْفَضْلِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুরাইশরা জাহিলী যুগে এমন একটি দিনে রোযা রাখত যে দিনটি ছিল আশূরা। সেদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও রোযা পালন করতেন। তিনি মাদীনায় আসার পরও ঐ রোযা পালন করেছেন এবং রোযা পালনের জন্য লোকদেরকেও আদেশ করেছেন। রমযান মাসের রোযা ফরয হওয়ার পর এটাই ফরয হিসাবে রয়ে গেল এবং তিনি আশূরার রোযা ছেড়ে দিলেন। ফলে এই দিনে যে লোক ইচ্ছা করে সে রোযা পালন করতে পারে আর যে ইচ্ছা না করে সে তা ছেড়েও দিতে পারে।
-সহীহ, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২১১০), বুখারী, মুসলিম
ইবনু মাসঊদ, কাইস ইবনু সা’দ, জাবির ইবনু সামুরা, ইবনু উমার ও মুআবিয়া (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করার মত ব্যক্ত করেছেন। এই হাদীস সহীহ্। আশূরার রোযাকে তারা ওয়াজিব মনে করেন না। কিন্তু কোন ব্যক্তির এই দিনে রোযা রাখার আগ্রহ হলে সে তা রাখতে পারে। কারণ, বিভিন্ন হাদীসে এই দিনের রোযা প্রসঙ্গে অনেক ফাযীলাতের কথা উল্লেখ আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫০. অনুচ্ছেদঃ
কোন্টি আশূরার দিন?
৭৫৪
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ حَاجِبِ بْنِ عُمَرَ، عَنِ الْحَكَمِ بْنِ الأَعْرَجِ، قَالَ انْتَهَيْتُ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ وَهُوَ مُتَوَسِّدٌ رِدَاءَهُ فِي زَمْزَمَ فَقُلْتُ أَخْبِرْنِي عَنْ يَوْمِ عَاشُورَاءَ أَىُّ يَوْمٍ هُوَ أَصُومُهُ فَقَالَ إِذَا رَأَيْتَ هِلاَلَ الْمُحَرَّمِ فَاعْدُدْ ثُمَّ أَصْبِحْ مِنَ التَّاسِعِ صَائِمًا . قَالَ فَقُلْتُ أَهَكَذَا كَانَ يَصُومُهُ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ .
হাকাম ইবনুল আ’রাজ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। তখন তিনি যমযম কূপের সামনে তার চাদরকে বালিশের মত করে হেলান দেওয়া অবস্থায় ছিলেন। আমি বললাম, আমাকে আশূরা প্রসঙ্গে কিছু বলে দিন তো, কোন দিনটিতে আমি রোযা রাখব? তিনি বললেন, যখন মুহার্রামের চাঁদ দেখতে পাবে তখন হতেই তুমি দিন গুনতে থাকবে। আর রোযা শুরু করবে নয় তারিখ ভোর হতে। আমি বললাম, এভাবেই কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা পালন করতেন? তিনি বললেন হ্যাঁ।
-সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২১১৪), মুসলিম
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِصَوْمِ عَاشُورَاءَ يَوْمَ الْعَاشِرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي يَوْمِ عَاشُورَاءَ فَقَالَ بَعْضُهُمْ يَوْمُ التَّاسِعِ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ يَوْمُ الْعَاشِرِ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ قَالَ صُومُوا التَّاسِعَ وَالْعَاشِرَ وَخَالِفُوا الْيَهُودَ . وَبِهَذَا الْحَدِيثِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (মুহার্রামের) দশম তারিখে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আশূরার রোযা পালন করতে আদেশ করেছেন।
-সহীহ, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২১১৩), মুসলিম আরও পূর্ণাঙ্গ রূপে।
আবূ ঈসা ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। আলিমগণের মধ্যে আশূরার দিন প্রসঙ্গে দ্বিমত রয়েছে। কেউ কেউ (মুহার্রামের) নয় তারিখের কথা বলেন, আবার অন্য একদল দশ তারিখের কথা বলেছেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, তোমরা নয় ও দশ (এই দুই দিন) রোযা পালন কর এবং (এই ক্ষেত্রে) ইয়াহূদীদের বিপরীত কর। এই হাদীস অনুযায়ী মত প্রকাশ করেছেন ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫১. অনুচ্ছেদঃ
যুলহিজ্জা মাসের (প্রথম) দশ দিন রোযা পালন প্রসঙ্গে
৭৫৬
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صَائِمًا فِي الْعَشْرِ قَطُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا رَوَى غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنِ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ . وَرَوَى الثَّوْرِيُّ وَغَيْرُهُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمْ يُرَ صَائِمًا فِي الْعَشْرِ . وَرَوَى أَبُو الأَحْوَصِ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَائِشَةَ . وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنِ الأَسْوَدِ . وَقَدِ اخْتَلَفُوا عَلَى مَنْصُورٍ فِي هَذَا الْحَدِيثِ وَرِوَايَةُ الأَعْمَشِ أَصَحُّ وَأَوْصَلُ إِسْنَادًا . قَالَ وَسَمِعْتُ أَبَا بَكْرٍ مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ يَقُولُ سَمِعْتُ وَكِيعًا يَقُولُ الأَعْمَشُ أَحْفَظُ لإِسْنَادِ إِبْرَاهِيمَ مِنْ مَنْصُورٍ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি কখনও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (যুলহিজ্জা মাসের) দশ দিন রোযা পালন করতে দেখিনি।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭২৯), মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি একাধিক বর্ণনাকারী আমাশ হতে, তিনি ইব্রাহীম হতে, তিনি আসওয়াদ হতে, তিনি আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে এভাবেই বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসটিকে সাওরী প্রমুখ বর্ণনাকারী মানসূর হতে, তিনি ইবরাহীম… সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এই দশ দিন কখনও রোযা অবস্থায় দেখা যায়নি। এই হাদীসটিকে আবূল আহওয়াস মানসূর হতে, তিনি ইবরাহীম হতে, তিনি আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বর্ণনাকারী আসওয়াদের উল্লেখ করেননি। এই হাদীসের সনদে মানসূরের পরবর্তী বর্ণনাকারীগণ উক্ত মতবিরোধ করেছেন। আমাশের বর্ণনাটিই এই সনদগুলোর মধ্যে অধিক সহীহ্ এবং মুত্তাসিল। ওয়াকী বলেন, মানসূরের নিকট হতে বর্ণনার ক্ষেত্রে ইবরাহীম অপেক্ষা আমাশ বেশি বিশ্বস্ত সংরক্ষক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫২. অনুচ্ছেদঃ
যুলহিজ্জা মাসের দশ দিনের সৎকাজের ফাযীলাত
৭৫৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُسْلِمٍ، هُوَ الْبَطِينُ وَهُوَ ابْنُ عِمْرَانَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا مِنْ أَيَّامٍ الْعَمَلُ الصَّالِحُ فِيهِنَّ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ هَذِهِ الأَيَّامِ الْعَشْرِ ” . فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَلاَ الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَلاَ الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ إِلاَّ رَجُلٌ خَرَجَ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ فَلَمْ يَرْجِعْ مِنْ ذَلِكَ بِشَيْءٍ ” . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন কোন দিন নেই যে দিনসমূহের সৎকাজ আল্লাহ্ তা’আলার নিকট যুলহিজ্জা মাসের এই দশ দিনের সৎকাজ অপেক্ষা বেশি প্রিয়। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ্ তা’আলার পথে জিহাদ করাও কি (এত প্রিয়) নয়? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’আলার পথে জিহাদও তার চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। তবে জান-মাল নিয়ে যদি কোন লোক আল্লাহ তা’আলার পথে জিহাদে বের হয় এবং এ দু’টির কোনটিই নিয়ে যদি সে আর ফিরে না আসতে পারে তার কথা (অর্থাৎ সেই শহীদের মর্যাদা) আলাদা।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭২৭), বুখারী
ইবনু উমার, আবূ হুরায়রা, আবদুল্লাহ ইবনু আমর ও জাবির (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা ইবনু আব্বাস (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ نَافِعٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مَسْعُودُ بْنُ وَاصِلٍ، عَنْ نَهَّاسِ بْنِ قَهْمٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَا مِنْ أَيَّامٍ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ أَنْ يُتَعَبَّدَ لَهُ فِيهَا مِنْ عَشْرِ ذِي الْحِجَّةِ يَعْدِلُ صِيَامُ كُلِّ يَوْمٍ مِنْهَا بِصِيَامِ سَنَةٍ وَقِيَامُ كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْهَا بِقِيَامِ لَيْلَةِ الْقَدْرِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مَسْعُودِ بْنِ وَاصِلٍ عَنِ النَّهَّاسِ . قَالَ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَلَمْ يَعْرِفْهُ مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ مِثْلَ هَذَا . وَقَالَ قَدْ رُوِيَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً شَيْءٌ مِنْ هَذَا . وَقَدْ تَكَلَّمَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ فِي نَهَّاسِ بْنِ قَهْمٍ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ এমন কোন দিন নেই যে দিনগুলোর (নফল) ইবাদাত আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট যিলহাজ্জ মাসের দশ দিনের ইবাদাত হতে বেশী প্রিয়। এই দশ দিনের প্রতিটি রোযা এক বছরের রোযার সমকক্ষ এবং এর প্রতিটি রাতের ইবাদাত কাদ্রের রাতের ইবাদাতের সমকক্ষ।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৭২৮),
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি গারীব। শুধু উল্লেখিত সূত্রেই আমরা হাদীসটি জেনেছি। আমি মুহাম্মাদ আল-বুখারীকে এই হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনিও এই সূত্র ব্যতীত অনুরূপ কিছু বলতে পারেননি। তিনি বলেন, কাতাদা হতে সাঈদ ইব্নুল মুসায়্যিব (রহঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উল্লিখিত হাদীসের কিছু অংশ মুরসাল হিসেবে বর্ণিত আছে। ইয়াহ্ইয়া ইব্নু সাঈদ (রহঃ) নাহ্হাস ইবনু কাহ্ম-এর স্মরণশক্তির সমালোচনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৫৩. অনুচ্ছেদঃ
শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করা
৭৫৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ فَذَلِكَ صِيَامُ الدَّهْرِ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَثَوْبَانَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي أَيُّوبَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدِ اسْتَحَبَّ قَوْمٌ صِيَامَ سِتَّةِ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ بِهَذَا الْحَدِيثِ . قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ هُوَ حَسَنٌ هُوَ مِثْلُ صِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ . قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ وَيُرْوَى فِي بَعْضِ الْحَدِيثِ ” وَيُلْحَقُ هَذَا الصِّيَامُ بِرَمَضَانَ ” . وَاخْتَارَ ابْنُ الْمُبَارَكِ أَنْ تَكُونَ سِتَّةَ أَيَّامٍ فِي أَوَّلِ الشَّهْرِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ إِنْ صَامَ سِتَّةَ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ مُتَفَرِّقًا فَهُوَ جَائِزٌ . قَالَ وَقَدْ رَوَى عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ وَسَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ ثَابِتٍ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَذَا . وَرَوَى شُعْبَةُ عَنْ وَرْقَاءَ بْنِ عُمَرَ عَنْ سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ هَذَا الْحَدِيثَ . وَسَعْدُ بْنُ سَعِيدٍ هُوَ أَخُو يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيِّ وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْحَدِيثِ فِي سَعْدِ بْنِ سَعِيدٍ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ . حَدَّثَنَا هَنَّادٌ قَالَ أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ الْجُعْفِيُّ عَنْ إِسْرَائِيلَ أَبِي مُوسَى عَنِ الْحَسَنِ الْبَصْرِيِّ قَالَ كَانَ إِذَا ذُكِرَ عِنْدَهُ صِيَامُ سِتَّةِ أَيَّامٍ مِنْ شَوَّالٍ فَيَقُولُ وَاللَّهِ لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ بِصِيَامِ هَذَا الشَّهْرِ عَنِ السَّنَةِ كُلِّهَا .
আবূ আইয়ূব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক রমযান মাসে রোযা পালন করলো, তারপর শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করলো, সে লোক যেন সম্পূর্ণ বছরই রোযা পালন করলো।
-হাসান সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭১৬), মুসলিম
জাবির, আবূ হুরায়রা ও সাওবান (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ আইয়ূব (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। একদল বিশেষজ্ঞ আলিম এই হাদীসের ভিত্তিতে শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা পালন করাকে মুস্তাহাব মনে করেন। ইবনুল মুবারাক বলেন, প্রতি মাসে তিন দিন রোযা পালনের মত এটিও মুস্তাহাব। এ রোযা রমযানের রোযার পরপরই পালনের কথা কোন কোন হাদীসে উল্লেখ আছে। তাই তিনি এই ছয়টি রোযা শাওয়াল মাসের শুরুর দিকে পালন করাকে বেশি পছন্দীয় মনে করেছেন তিনি আরও বলেছেনঃ শাওয়াল মাসের ভিন্ন ভিন্ন দিনের রোযা পালন করাও জায়িয আছে।
আবূ ঈসা বলেন, বর্ণনাকারী আবদুল আযীয ইবনু মুহাম্মাদ এই হাদীসটি সাফওয়ান ইবনু সুলাইম ও সা’দ ইবনু সাঈদের সূত্রে উমার ইবনু সাবিত হতে আবূ আইয়ূব (রাঃ)-এর সনদে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। শুবা (রাঃ) এই হাদীস ওয়ার্কা ইবনু উমার হতে সা’দ ইবনু সাঈদ (রহঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এই সা’দ ইবনু সাঈদ হলেন ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ আল-আনসারীর ভাই। একদল হাদীস বিশেষজ্ঞ তার স্মৃতিশক্তির সমালোচনা করেছেন।
হাসান বাসরী হতে বর্ণিত আছে যে, তার নিকট শাওয়ালের ছয়টি রোযার উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ তিনি পূর্ণ বৎসরের পরিবর্তে এই মাসের রোযার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সনদ সহীহ্, মাকতু।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৫৪. অনুচ্ছেদঃ
প্রতি মাসে তিন দিন রোযা পালন করা
৭৬০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ أَبِي الرَّبِيعِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ عَهِدَ إِلَىَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَةً أَنْ لاَ أَنَامَ إِلاَّ عَلَى وِتْرٍ وَصَوْمَ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَأَنْ أُصَلِّيَ الضُّحَى .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনটি বিষয়ে আমার নিকট হতে প্রতিশ্রুতি নেন। আমি যেন বিত্র আদায়ের পূর্বে না ঘুমাই, প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোযা আদায় করি এবং চাশ্তের নামায নিয়মিত আদায় করি।
-সহীহ্, ইরওয়া (৯৪৬), সহীহ আবূ দাঊদ (১২৮৬), বুখারী, মুসলিম
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৬১
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ سَامٍ، يُحَدِّثُ عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَا أَبَا ذَرٍّ إِذَا صُمْتَ مِنَ الشَّهْرِ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ فَصُمْ ثَلاَثَ عَشْرَةَ وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ وَخَمْسَ عَشْرَةَ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي قَتَادَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَقُرَّةَ بْنِ إِيَاسٍ الْمُزَنِيِّ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي عَقْرَبٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَعَائِشَةَ وَقَتَادَةَ بْنِ مِلْحَانَ وَعُثْمَانَ بْنِ أَبِي الْعَاصِي وَجَرِيرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي ذَرٍّ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ فِي بَعْضِ الْحَدِيثِ أَنَّ ” مَنْ صَامَ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ كَانَ كَمَنْ صَامَ الدَّهْرَ ” .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বলেছেনঃ হে আবূ যার! তুমি প্রতি মাসে তিন দিন রোযা পালন করতে চাইলে তের, চৌদ্দ ও পনের তারিখে তা পালন কর।
-হাসান সহীহ্, ইরওয়া (৯৪৭), মিশকাত তাহকীক ছানী (২০৫৭)
আবূ কাতাদা, আবদুল্লাহ ইবনু আমর, কুররা ইবনু ইয়াস আল-মুযানী, আবদুল্লাহ্ ইবনু মাসঊদ, আবূ আকরাব, ইবনু আব্বাস, আইশা, কাতাদা ইবনু মিলহান, উসমান ইবনু আবুল আস ও জারীর (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ যার (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। কোন কোন হাদীসে বর্ণিত আছেঃ প্রতি মাসে যে লোক তিন দিন রোযা পালন করলো সে যেন সারা বছর রোযা পালন করলো।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৭৬২
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ النَّهْدِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ صَامَ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ فَذَلِكَ صِيَامُ الدَّهْرِ ” . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ تَصْدِيقَ ذَلِكَ فِي كِتَابِهِ : (مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا ) . الْيَوْمُ بِعَشَرَةِ أَيَّامٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ أَبِي شِمْرٍ وَأَبِي التَّيَّاحِ عَنْ أَبِي عُثْمَانَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতি মাসে যে লোক তিন দিন রোযা পালন করে তা যেন সারা বছরই রোযা পালনের সমান। আল্লাহ্ তা’আলা এর সমর্থনে তার কিতাবে আয়াত অবতীর্ণ করেছেনঃ “কোন লোক যদি একটি সাওয়াবের কাজ করে তাহলে তার প্রতিদান হচ্ছে এর দশ গুণ” (সূরাঃ আন‘আম- ১৬০)। সুতরাং এক দিন দশ দিনের সমান।
-সহীহ্, ইরওয়া
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। শুবা এই হাদীসটি আবূ শিম্র হতে ও আবূত তাইয়্যাহ হতে, তারা উভয়ে উসমান হতে, তিনি আবূ হুরায়রা হতে, তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৬৩
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ يَزِيدَ الرِّشْكِ، قَالَ سَمِعْتُ مُعَاذَةَ، قَالَتْ قُلْتُ لِعَائِشَةَ أَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُومُ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ قَالَتْ نَعَمْ . قُلْتُ مِنْ أَيِّهِ كَانَ يَصُومُ قَالَتْ كَانَ لاَ يُبَالِي مِنْ أَيِّهِ صَامَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَيَزِيدُ الرِّشْكُ هُوَ يَزِيدُ الضُّبَعِيُّ وَهُوَ يَزِيدُ بْنُ الْقَاسِمِ وَهُوَ الْقَسَّامُ وَالرِّشْكُ هُوَ الْقَسَّامُ بِلُغَةِ أَهْلِ الْبَصْرَةِ .
মু’আযাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আইশা (রাঃ)-কে বললাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি আবার বললাম, কোন্ কোন্ তারিখে তিনি এই রোযা রাখতেন? তিনি বললেন, তিনি যে কোন দিন এই রোযা রাখতেন, এই বিষয়ে তিনি কোন সংকোচ করতেন না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭০৮), মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। বর্ণনাকারী ইয়াযীদ আর-রিশ্ক হলেন ইয়াযীদ আয-যুবাঈ এবং ইনিই ইয়াযীদ ইবনুল কাসিম। ইনি ছিলেন বণ্টনকারী। বসরাবাসীদের ভাষায় ‘রিশ্ক’ অর্থ বণ্টনকারী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৫. অনুচ্ছেদঃ
রোযা পালনের ফাযীলাত
৭৬৪
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مُوسَى الْقَزَّازُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ رَبَّكُمْ يَقُولُ كُلُّ حَسَنَةٍ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ وَالصَّوْمُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ الصَّوْمُ جُنَّةٌ مِنَ النَّارِ وَلَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ وَإِنْ جَهِلَ عَلَى أَحَدِكُمْ جَاهِلٌ وَهُوَ صَائِمٌ فَلْيَقُلْ إِنِّي صَائِمٌ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ وَكَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ وَسَلاَمَةَ بْنِ قَيْصَرٍ وَبَشِيرِ ابْنِ الْخَصَاصِيَةِ . وَاسْمُ بَشِيرٍ زَحْمُ بْنُ مَعْبَدٍ وَالْخَصَاصِيَةُ هِيَ أُمُّهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের প্রতিপালক বলেন, “প্রতিটি সৎ কাজের প্রতিদান হলো দশ গুণ হতে সাত শত গুণ পর্যন্ত। কিন্তু রোযা শুধুমাত্র আমার জন্যই এবং এর প্রতিদান আমি নিজেই দিব।” রোযা জাহান্নাম হতে (বাঁচার) ঢালস্বরূপ। আল্লাহ্ তা’আলার নিকট রোযা পালনকারীর মুখের গন্ধ কন্তুরী ও মিশ্ক আম্বরের গন্ধের চেয়েও অধিক পছন্দনীয়। তোমাদের কোন রোযা পালনকারীর সাথে যদি কোন জাহিল মূৰ্খতা সুলভ আচরণ করে তবে সে যেন বলে, আমি রোযাদার।
-সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (২/৫৭-৫৮), সহীহ আবূ দাঊদ (২০৪৬)
মুআয ইবনু জাবাল, সাহ্ল ইবনু সা’দ, কা’ব ইবনু উজরা, সালামা ইবনু কাইসার ও বাশীর ইবনুল খাসাসিয়্যা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। বাশীর (রাঃ)-এর নাম যাহ্ম ইবনু মা’বাদ, খাসাসিয়্যা হলেন তাঁর মাতা। আবূ ঈসা এই সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৬৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، عَنْ هِشَامِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَبَابًا يُدْعَى الرَّيَّانَ يُدْعَى لَهُ الصَّائِمُونَ فَمَنْ كَانَ مِنَ الصَّائِمِينَ دَخَلَهُ وَمَنْ دَخَلَهُ لَمْ يَظْمَأْ أَبَدًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
সাহ্ল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “রাইয়্যান” নামে জান্নাতে একটি দরজা আছে। রোযা পালনকারীকে এই দরজা দিয়ে প্রবেশের জন্য ডাকা হবে। যে সব লোক রোযা পালন করে তারা এই দরজা দিয়ে (জান্নাতে) প্রবেশ করবে। আর তাতে যে লোক প্রবেশ করবে সে আর কখনও পিপাসার্ত হবে না।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৪০), “পিপাসার্ত হবে না” বাক্যাংশ ব্যতীত – বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান, সহীহ্ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৬৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ حِينَ يُفْطِرُ وَفَرْحَةٌ حِينَ يَلْقَى رَبَّهُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোযা পালনকারীর জন্য দু’টি আনন্দ আছে- একটি আনন্দ যখন সে ইফ্তার করে এবং আরেকটি আনন্দ যখন সে তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করবে।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৬৩৮), মুসলিম
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৬. অনুচ্ছেদঃ
সারা বছর রোযা পালন করা প্রসঙ্গে
৭৬৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْبَدٍ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ بِمَنْ صَامَ الدَّهْرَ قَالَ ” لاَ صَامَ وَلاَ أَفْطَرَ ” . أَوْ ” لَمْ يَصُمْ وَلَمْ يُفْطِرْ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ الشِّخِّيرِ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَأَبِي مُوسَى . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي قَتَادَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ صِيَامَ الدَّهْرِ وَأَجَازَهُ قَوْمٌ آخَرُونَ وَقَالُوا إِنَّمَا يَكُونُ صِيَامُ الدَّهْرِ إِذَا لَمْ يُفْطِرْ يَوْمَ الْفِطْرِ وَيَوْمَ الأَضْحَى وَأَيَّامِ التَّشْرِيقِ فَمَنْ أَفْطَرَ هَذِهِ الأَيَّامَ فَقَدْ خَرَجَ مِنْ حَدِّ الْكَرَاهِيَةِ وَلاَ يَكُونُ قَدْ صَامَ الدَّهْرَ كُلَّهُ . هَكَذَا رُوِيَ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ . وَقَالَ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ نَحْوًا مِنْ هَذَا وَقَالاَ لاَ يَجِبُ أَنْ يُفْطِرَ أَيَّامًا غَيْرَ هَذِهِ الْخَمْسَةِ الأَيَّامِ الَّتِي نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْهَا يَوْمِ الْفِطْرِ وَيَوْمِ الأَضْحَى وَأَيَّامَ التَّشْرِيقِ .
আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! সে সব লোকের কাজগুলো কেমন যে সব লোক সারা বছর রোযা পালন করে? তিনি বললেনঃ তার রোযা পালনও হল না, ইফতারও হলো না।
-সহীহ্, ইরওয়া (৯৫২), মুসলিম
আবদুল্লাহ ইবনু আমর, আবদুল্লাহ ইবনু শিখ্খীর, ইমরান ইবনু হুসাইন ও আবূ মূসা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। সারা বছর রোযা পালন করাকে আলিমগণের একদল মাকরূহ্ মনে করেন। আরেক দল আলিম সারা বছর রোযা পালন করা জায়িয মনে করেন। তারা বলেন, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা ও আইয়্যামে তাশ্রীকের দিনও (কুরবানীর দিনের পরবর্তী তিন দিন) যদি কোন লোক রোযা পালন করে তবে সেটা হবে সারা বছর রোযা (যা মাকরূহ্)। যেসব লোক এই দিনগুলোতে রোযা পালন করবে না সে উপরোক্ত মাকরূহ-এর মধ্যে পড়বে না এবং সে সারা বছর রোযাদার হবে না। একইরকম অভিমত ইমাম মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) হতেও বর্ণিত আছে। ইমাম শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর বক্তব্যও এটাই। তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, আইয়্যামে তাশ্রীক এই পাঁচ দিন রোযা পালন করতে নিষেধ করেছেন। সেই পাঁচটি দিন ছাড়া অন্য কোন দিনের রোযা ত্যাগ করা ওয়াজিব নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৭. অনুচ্ছেদঃ
অব্যাহতভাবে রোযা পালন করা
৭৬৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ صِيَامِ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم قَالَتْ كَانَ يَصُومُ حَتَّى نَقُولَ قَدْ صَامَ وَيُفْطِرُ حَتَّى نَقُولَ قَدْ أَفْطَرَ . قَالَتْ وَمَا صَامَ رَسُولُ اللَّهُ صلى الله عليه وسلم شَهْرًا كَامِلاً إِلاَّ رَمَضَانَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রোযা পালন প্রসঙ্গে আইশা (রাঃ)-কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা পালন করেই যেতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি তো রোযা পালন করেই যাচ্ছেন। আবার রোযা পালন হতে তিনি বিরত থাকতেন, এমনকি আমরা বলতাম, তিনি বুঝি আর রোযা পালন করবেন না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনও রমযান মাস ব্যতীত সম্পূর্ণ মাস রোযা পালন করেননি।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭১০), বুখারী, মুসলিম
আনাস ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৬৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ صَوْمِ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم قَالَ كَانَ يَصُومُ مِنَ الشَّهْرِ حَتَّى نَرَى أَنَّهُ لاَ يُرِيدُ أَنْ يُفْطِرَ مِنْهُ وَيُفْطِرُ حَتَّى نَرَى أَنَّهُ لاَ يُرِيدُ أَنْ يَصُومَ مِنْهُ شَيْئًا وَكُنْتَ لاَ تَشَاءُ أَنْ تَرَاهُ مِنَ اللَّيْلِ مُصَلِّيًا إِلاَّ رَأَيْتَهُ مُصَلِّيًا وَلاَ نَائِمًا إِلاَّ رَأَيْتَهُ نَائِمًا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর রোযা প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোন মাসে তিনি রোযা পালন করতে শুরু করলে মনে হত যে, তাঁর হয়তো আর রোযা ত্যাগের ইচ্ছা নেই। আবার যখন তিনি রোযা পালন করা ছেড়ে দিতেন তখন মনে হত তিনি হয়তো আর রোযা পালন করবেন না। তুমি যদি তাঁকে রাতে নামায রত অবস্থায় দেখতে ইচ্ছা করতে তবে সে অবস্থায়ই দেখতে পেতে। আর তুমি যদি তাঁকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে ইচ্ছা করতে তবে সে অবস্থায়ই দেখতে পেতে।
-সহীহ, বুখারী (১৯৭২), মুসলিম (৩/১৬২) নামাযের বাক্যাংশ বাদে সংক্ষিপ্তভাবে।
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৭০
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مِسْعَرٍ، وَسُفْيَانَ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي الْعَبَّاسِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَفْضَلُ الصَّوْمِ صَوْمُ أَخِي دَاوُدَ كَانَ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا وَلاَ يَفِرُّ إِذَا لاَقَى ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو الْعَبَّاسِ هُوَ الشَّاعِرُ الْمَكِّيُّ الأَعْمَى وَاسْمُهُ السَّائِبُ بْنُ فَرُّوخَ . قَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ أَفْضَلُ الصِّيَامِ أَنْ تَصُومَ يَوْمًا وَتُفْطِرَ يَوْمًا . وَيُقَالُ هَذَا هُوَ أَشَدُّ الصِّيَامِ .
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার ভাই দাঊদ (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রোযা হল সবচেয়ে উত্তম রোযা। তিনি একদিন রোযা পালন করতেন এবং একদিন পালন করতেন না। আর যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর মুখোমুখী হলে তিনি পালাতেন না।
-সহীহ্, বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। বর্ণনাকারী আবূল আব্বাস একজন মক্কার কবি ছিলেন এবং তিনি একজন অন্ধ ব্যক্তি। তার নাম সাইব ইবনু ফার্রূখ। কিছু বিশেষজ্ঞ আলিম বলেন, সবচেয়ে উত্তম (নফল) রোযা হচ্ছে সেই রোযা যা একদিন পরপর পালন করা হয়। বলা হয় যে, এই নিয়মে রোযা রাখা কঠিন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৮. অনুচ্ছেদঃ
দুই ঈদের দিন রোযা পালন করা মাকরূহ্
৭৭১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي الشَّوَارِبِ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي عُبَيْدٍ، مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ شَهِدْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ فِي يَوْمِ النَّحْرِ بَدَأَ بِالصَّلاَةِ قَبْلَ الْخُطْبَةِ ثُمَّ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَى عَنْ صَوْمِ هَذَيْنِ الْيَوْمَيْنِ أَمَّا يَوْمُ الْفِطْرِ فَفِطْرُكُمْ مِنْ صَوْمِكُمْ وَعِيدٌ لِلْمُسْلِمِينَ وَأَمَّا يَوْمُ الأَضْحَى فَكُلُوا مِنْ لُحُومِ نُسُكِكُمْ . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو عُبَيْدٍ مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ اسْمُهُ سَعْدٌ وَيُقَالُ لَهُ مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَزْهَرَ أَيْضًا وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَزْهَرَ هُوَ ابْنُ عَمِّ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ .
আবদুর রাহ্মা্ন ইবনু আওফ (রাঃ)-এর মুক্তদাস আবূ উবাইদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-কে কুরবানীর দিন দেখতে পেয়েছি যে, খুত্বা দেওয়ার আগে প্রথমে তিনি নামায আদায় করলেন। এরপর তিনি বললেন, এই দুই ঈদের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি রোযা পালন করতে নিষেধ করতে শুনেছি। ঈদুল ফিত্রের দিন হল তোমাদের (সারা মাসের) রোযা ভঙ্গের দিন এবং মুসলিমদের ঈদের দিন। আর তোমরা ঈদুল আযহার দিন তোমাদের কুরবানীর গোশ্ত খাবে।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭২২), বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা এই হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)-এর মুক্ত দাস আবূ উবাইদের নাম সা’দ। তাকে আবদুর রাহমান ইবনু আযহারের মাওলাও বলা হয়। আবদুর রাহমান ইবনু আযহার হলেন আবদুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)-এর চাচাত ভাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৭২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ صِيَامَيْنِ يَوْمِ الأَضْحَى وَيَوْمِ الْفِطْرِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَعَائِشَةَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَعَمْرُو بْنُ يَحْيَى هُوَ ابْنُ عُمَارَةَ بْنِ أَبِي الْحَسَنِ الْمَازِنِيُّ الْمَدَنِيُّ وَهُوَ ثِقَةٌ رَوَى عَنْهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَشُعْبَةُ وَمَالِكُ بْنُ أَنَسٍ .
আবূ সাঈদ আল-খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’দিন রোযা পালন করতে বারণ করেছেনঃ ঈদুল আয্হা এবং ঈদুল ফিত্রের দিন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭২১), বুখারী, ইরওয়া (৯৬২), আর রাওয (৬৪৩), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৮৮), মুসলিম।
উমার, আলী, আইশা, আবূ হুরায়রা, উক্বা ইবনু আমির ও আনাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। আবূ ঈসা বলেন, আমর ইবনু ইয়াহ্ইয়া হলেন ইবনু উমারা ইবনু আবূল হাসান আল-মাযিনী আল-মাদানী। তিনি একজন বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী। সুফিয়ান সাওরী, শুবা ও মালিক ইবনু আনাস তাঁর সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৯. অনুচ্ছেদঃ
আইয়্যামে তাশ্রীক-এ রোযা পালন করা মাকরূহ্
৭৭৩
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُلَىٍّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ يَوْمُ عَرَفَةَ وَيَوْمُ النَّحْرِ وَأَيَّامُ التَّشْرِيقِ عِيدُنَا أَهْلَ الإِسْلاَمِ وَهِيَ أَيَّامُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَسَعْدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرٍ وَنُبَيْشَةَ وَبِشْرِ بْنِ سُحَيْمٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُذَافَةَ وَأَنَسٍ وَحَمْزَةَ بْنِ عَمْرٍو الأَسْلَمِيِّ وَكَعْبِ بْنِ مَالِكٍ وَعَائِشَةَ وَعَمْرِو بْنِ الْعَاصِ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَكْرَهُونَ الصِّيَامَ أَيَّامَ التَّشْرِيقِ إِلاَّ أَنَّ قَوْمًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ رَخَّصُوا لِلْمُتَمَتِّعِ إِذَا لَمْ يَجِدْ هَدْيًا وَلَمْ يَصُمْ فِي الْعَشْرِ أَنْ يَصُومَ أَيَّامَ التَّشْرِيقِ . وَبِهِ يَقُولُ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأَهْلُ الْعِرَاقِ يَقُولُونَ مُوسَى بْنُ عَلِيِّ بْنِ رَبَاحٍ وَأَهْلُ مِصْرَ يَقُولُونَ مُوسَى بْنُ عُلَىٍّ . وَقَالَ سَمِعْتُ قُتَيْبَةُ يَقُولُ سَمِعْتُ اللَّيْثَ بْنَ سَعْدٍ يَقُولُ قَالَ مُوسَى بْنُ عَلِيٍّ لاَ أَجْعَلُ أَحَدًا فِي حِلٍّ صَغَّرَ اسْمَ أَبِي .
উক্বা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাদের মুসলিম জনগণের ঈদের দিন হচ্ছে আরাফার দিন, কুরবানীর দিন ও তাশ্রীকের দিন। এ দিনগুলো হচ্ছে পানাহারের দিন।
-সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৯০), ইরওয়া (৪/১৩০)
আলী, সা’দ, আবূ হুরায়রা, জাবির, নুবাইশা, বিশ্র ইবনু সুহাইম, আবদুল্লাহ ইবনু হুযাফা, আনাস, হামযা ইবনু আমর আল-আসলামী, কা’ব ইবনু মালিক, আইশা, আমর ইবনুল আস ও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা উকবা ইবনু আমির হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ আলিমগণ আমল করেছেন। তাশ্রীকের দিনগুলোতে রোযা পালন করাকে তারা মাকরূহ্ (হারাম) মনে করেন। কিন্তু তামাত্তু হাজ্জ পালনকারীর জন্য রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অন্যান্য আলিম এই দিনগুলোতে রোযা পালনের সুযোগ দিয়েছেন- যদি তারা কুরবানীর জানোয়ার না পায় এবং প্রথম দশ দিনের মধ্যে রোযা পালন করতে না পেরে থাকে। এরকম মতই প্রকাশ করেছেন ইমাম মালিক, শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক (রহঃ)। আবূ ঈসা বলেন, ইরাকবাসী মুহাদ্দিসগণ বলেন, (বর্ণানাকারী নাম) মূসা ইবনু আলী ইবনু রাবাহ্। মিসরবাসীগণ বলেন, মূসা ইবনু উলাই। আবূ ঈসা আরও বলেন, কুতাইবাকে আমি বলতে শুনেছি, তিনি বলতে শুনেছেন যে, মূসা ইবনু আলী বলেছেন,আমার পিতার নাম তাসগীররূপে (উলাই) উচ্চারণ কারো জন্য হালাল মনে করি না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬০. অনুচ্ছেদঃ
রোযা থাকা অবস্থান রক্তক্ষরণ করানো
৭৭৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ النَّيْسَابُورِيُّ، وَمَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، وَيَحْيَى بْنُ مُوسَى، قَالُوا حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَارِظٍ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” أَفْطَرَ الْحَاجِمُ وَالْمَحْجُومُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَسَعْدٍ وَشَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ وَثَوْبَانَ وَأُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ وَعَائِشَةَ وَمَعْقِلِ بْنِ سِنَانٍ وَيُقَالُ ابْنُ يَسَارٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي مُوسَى وَبِلاَلٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَذُكِرَ عَنْ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ أَنَّهُ قَالَ أَصَحُّ شَيْءٍ فِي هَذَا الْبَابِ حَدِيثُ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ . وَذُكِرَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ أَنَّهُ قَالَ أَصَحُّ شَيْءٍ فِي هَذَا الْبَابِ حَدِيثُ ثَوْبَانَ وَشَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ لأَنَّ يَحْيَى بْنَ أَبِي كَثِيرٍ رَوَى عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ الْحَدِيثَيْنِ جَمِيعًا حَدِيثَ ثَوْبَانَ وَحَدِيثَ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمُ الْحِجَامَةَ لِلصَّائِمِ حَتَّى أَنَّ بَعْضَ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم احْتَجَمَ بِاللَّيْلِ مِنْهُمْ أَبُو مُوسَى الأَشْعَرِيُّ وَابْنُ عُمَرَ وَبِهَذَا يَقُولُ ابْنُ الْمُبَارَكِ . قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْتُ إِسْحَاقَ بْنَ مَنْصُورٍ يَقُولُ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ مَنِ احْتَجَمَ وَهُوَ صَائِمٌ فَعَلَيْهِ الْقَضَاءُ . قَالَ إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ وَهَكَذَا قَالَ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ . وَقَالَ أَبُو عِيسَى وَأَخْبَرَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ الزَّعْفَرَانِيُّ قَالَ قَالَ الشَّافِعِيُّ قَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ احْتَجَمَ وَهُوَ صَائِمٌ وَرُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ” أَفْطَرَ الْحَاجِمُ وَالْمَحْجُومُ ” . وَلاَ أَعْلَمُ وَاحِدًا مِنْ هَذَيْنِ الْحَدِيثَيْنِ ثَابِتًا وَلَوْ تَوَقَّى رَجُلٌ الْحِجَامَةَ وَهُوَ صَائِمٌ كَانَ أَحَبَّ إِلَىَّ وَلَوِ احْتَجَمَ صَائِمٌ لَمْ أَرَ ذَلِكَ أَنْ يُفْطِرَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَكَذَا كَانَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ بِبَغْدَادَ وَأَمَّا بِمِصْرَ فَمَالَ إِلَى الرُّخْصَةِ وَلَمْ يَرَ بِالْحِجَامَةِ لِلصَّائِمِ بَأْسًا وَاحْتَجَّ بِأَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم احْتَجَمَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ وَهُوَ مُحْرِمٌ صَائِمٌ .
রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক রক্তক্ষরণ করে এবং যাহার রক্তক্ষরণ করানো হয় তাদের দু’জনের রোযাই নষ্ট হয়ে যায়।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৭৯-১৬৮১)
আলী, সা’দ, শাদ্দাদ ইবনু আওস, সাওবান, উসামা ইবনু যাইদ, আইশা, মা’কিল ইবনু সিনান (বলা হয় ইনি মালিক ইবনু ইয়াসার), আবূ হুরায়রা, ইবনু আব্বাস, আবূ মূসা ও বিলাল (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা রাফি ইবনু খাদীজ হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। আহ্মাদ ইবনু হাম্বাল (রহঃ) বলেন, রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসই এ বিষয়ে সবচেয়ে সহীহ্ হাদীস এবং আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, সাওবান শাদ্দাদ ইবনু আউস হতে বর্ণিত হাদীসই হচ্ছে এ বিষয়ে সবচেয়ে সহীহ্ হাদীস। ইয়াহ্ইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহঃ) আবূ কিলাবা (রাঃ) হতে সাওবান ও শাদ্দাদ ইবনু আওমের দু’টি হাদীসই বর্ণনা করেছেন।
রোযা অবস্থায় রক্তক্ষরণ করানোকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর একদল বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপারাপর আলিমের একটি দল মাকরূহ্ মনে করেন। এমনকি অনেক সাহাবী (রমযানের) রাতে তা করাতেন যেমন আবূ মূসা আল-আশাআরী ও ইবনু উমার (রাঃ)। এরকম মতপ্রকাশ করেছেন ইবনুল মুবারাকও। আবদুর রাহমান ইবনু মাহদী বলেছেন, কেউ যদি রোযা থাকা অবস্থায় রক্তক্ষরণ করায় তাহলে তাকে এর কাযা আদায় করতে হবে। এরকম মত দিয়েছেন আহ্মাদ ইবনু হাম্বাল ও ইসহাকও। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেছেন, রোযা পালনরত অবস্থায়ও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রক্তক্ষরণ করিয়েছেন। আবার এটাও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেনঃ রক্তক্ষরণকারী এবং যে লোকের রক্তক্ষরণ করা হয় তাদের উভয়ের রোযাই বাতিল হয়ে গেল। আমার এ দু’টি হাদীসের মধ্যে একটিও সঠিক বলে জানা নেই। কোন ব্যক্তি যদি রোযা থাকাবস্থায় রক্তক্ষরণ করানো হতে দূরে থাকে তাহলে সেটাই আমার মতে বেশী পছন্দনীয়। আর যদি কোন লোক তার রোযা থাকাবস্থায় রক্তক্ষরণ করায় সেক্ষেত্রে আমি মনে অরি না এতে তার রোযা বাতিল হয়। আবূ ঈসা বলেন, বাগদাদে থাকা অবস্থায় ইমাম শাফিঈর মত ছিল এটাই। কিন্তু এই বিষয়ে তিনি মিসরে যাওয়ার পর রক্তক্ষরণের অনুমতির পক্ষপাতী ছিলেন এবং কোন রকম সমস্যা আছে বলে মনে করেননি রোযা থাকাবস্থায় রক্তমোক্ষণ করানোতে। তার এই মতের সমর্থনে তিনি দলীল হিসেবে বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা ও ইহ্রাম অবস্থায় বিদায় হাজ্জে রক্তক্ষরণ করিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬১. অনুচ্ছেদঃ
এই বিষয়ে (রক্তক্ষরণের) অনুমতি প্রসঙ্গে
৭৭৫
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ هِلاَلٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ احْتَجَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مُحْرِمٌ صَائِمٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَهَكَذَا رَوَى وُهَيْبٌ نَحْوَ رِوَايَةِ عَبْدِ الْوَارِثِ . وَرَوَى إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ عِكْرِمَةَ مُرْسَلاً وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রোযা পালন ও ইহরাম অবস্থায় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রক্তক্ষরণ করিয়েছেন।
-সহীহ্, এই অর্থে “রোযা থাকাবস্থায় তিনি রক্তক্ষরণ করিয়েছেন”, বুখারী, ইবনু মা-জাহ (১৬৮২)
এই হাদীসটিকে আবূ ঈসা সহীহ্ বলেছেন। আবদুল ওয়ারিসের বর্ণনার ন্যায় ওহাইবও বর্ণনা করেছেন। ইসমাঈল ইবনু ইবারাহীম আইয়্যূব হতে তিনি ইকরিমা হতে মুর্সাল রূপে বর্ণনা করেছেন ইবনু আব্বাসের উল্লেখ না করে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৭৬
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيُّ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ الشَّهِيدِ، عَنْ مَيْمُونِ بْنِ مِهْرَانَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم احْتَجَمَ وَهُوَ صَائِمٌ . هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রোযা থাকাবস্থায় রক্তক্ষরণ করিয়েছেন।
-সহীহ্, প্রাগুক্ত
আবূ ঈসা বলেন, উপরোক্ত সূত্রে হাদীসটি হাসান গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৭৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي زِيَادٍ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم احْتَجَمَ فِيمَا بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ وَهُوَ مُحْرِمٌ صَائِمٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَجَابِرٍ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ وَلَمْ يَرَوْا بِالْحِجَامَةِ لِلصَّائِمِ بَأْسًا . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَمَالِكِ بْنِ أَنَسٍ وَالشَّافِعِيِّ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা ও মদীনার মাঝখানে ইহ্রাম ও রোযা অবস্থায় রক্তক্ষরণ করিয়েছেন।
এই শব্দের হাদীসটি মুনকার। প্রাগুক্ত।
এই অনুচ্ছেদে আবূ সাঈদ, জাবির ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান সহীহ্। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এক দল সাহাবী ও তাবিঈ এই হাদীস অনুসারে অভিমত দিয়েছেন যে, রোযাব্রত অবস্থায় রক্তক্ষরণ (শিঙ্গা লাগানো) করানোতে কোন সমস্যা নেই। সুফিয়ান সাওরী, মালিক ইবনু আনাস ও শাফিঈ (রহঃ)-এর একই মত।
হাদিসের মানঃ মুনকার
- সরাসরি
৬২. অনুচ্ছেদঃ
সাওমে বিসাল মাকরূহ্
৭৭৮
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، وَخَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ تُوَاصِلُوا ” . قَالُوا فَإِنَّكَ تُوَاصِلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ ” إِنِّي لَسْتُ كَأَحَدِكُمْ إِنَّ رَبِّي يُطْعِمُنِي وَيَسْقِينِي ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَجَابِرٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَبَشِيرِ ابْنِ الْخَصَاصِيَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا الْوِصَالَ فِي الصِّيَامِ . وَرُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنَّهُ كَانَ يُوَاصِلُ الأَيَّامَ وَلاَ يُفْطِرُ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাওমে বিসাল কর না। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি তো সাওমে বিসাল করেন। তিনি বললেনঃ আমি তো তোমাদের কারো মত নই। আমাকে আমার প্রতিপালক পানাহার করান।
সহীহ্, বুখারী
আলী, আবূ হুরায়রা, আইশা, ইবনু উমার, জাবির, আবূ সাঈদ ও বাশীর ইবনুল খাসাসিয়্যা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আনাস (রাঃ)-এর হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করেছেন। সাওমে বিসালকে তারা মাকরূহ্ বলে মত দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একাধিক দিন সাওমে বিসাল করতেন এবং ইফ্তার করতেন না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৩. অনুচ্ছেদঃ
রোযা পালন করতে ইচ্ছা পোষণকারীর নাপাক অবস্থায় ফজর হওয়া
৭৭৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، قَالَ أَخْبَرَتْنِي عَائِشَةُ، وَأُمُّ سَلَمَةَ زَوْجَا النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُدْرِكُهُ الْفَجْرُ وَهُوَ جُنُبٌ مِنْ أَهْلِهِ ثُمَّ يَغْتَسِلُ فَيَصُومُ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَقَدْ قَالَ قَوْمٌ مِنَ التَّابِعِينَ إِذَا أَصْبَحَ جُنُبًا يَقْضِي ذَلِكَ الْيَوْمَ . وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ .
আবূ বাক্র ইবনু আবদুর রাহমান ইবনু হারিস ইবনু হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী আইশা ও উম্মু সালামা (রাঃ) জানিয়েছেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর (কোন কোন সময়) কোন স্ত্রীর (সাথে সহবাসের) কারণে নাপাক অবস্থায় ফজর হয়ে যেত। এরপর তিনি গোসল করতেন এবং রোযা পালন করতেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭০৩), বুখারী, মুসলিম
আইশা ও উম্মু সালামা হতে বর্ণিত হাদীসকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ সাহাবী ও তাবিঈ আমল করেছেন। এ মত দিয়েছেন সুফিয়ান, শাফিঈ, আহ্মাদ ও ইসহাক (রহঃ)। তাবিঈগণের একটি দল বলেন, সহবাসজনিত কারণে নাপাক অবস্থায় কোন লোকের ফজর হয়ে গেলে সে লোককে এই দিনের রোযার কাযা করতে হবে। তবে প্রথমে বর্ণিত মতটিই অধিক সহীহ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪. অনুচ্ছেদঃ
রোযা থাকাবস্থায় দাওয়াত গ্রহণ করা
৭৮০
حَدَّثَنَا أَزْهَرُ بْنُ مَرْوَانَ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَوَاءٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا دُعِيَ أَحَدُكُمْ إِلَى طَعَامٍ فَلْيُجِبْ فَإِنْ كَانَ صَائِمًا فَلْيُصَلِّ ” . يَعْنِي الدُّعَاءَ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কাউকে খাবারের দাওয়াত দেওয়া হলে সে লোক যেন তা গ্রহণ করে। সে রোযাদার হলে (দাওয়াতকারীর জন্য) যেন দু’আ করে।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৫০), মুসলিম
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৮১
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا دُعِيَ أَحَدُكُمْ وَهُوَ صَائِمٌ فَلْيَقُلْ إِنِّي صَائِمٌ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَكِلاَ الْحَدِيثَيْنِ فِي هَذَا الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কোন রোযাদারকে যদি খাবারের দাওয়াত দেওয়া হয় তাহলে সে যেন বলে, আমি রোযা আছি।
-সহীহ, প্রাগুক্ত
আবূ ঈসা আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত উভয় হাদীসকেই হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৫. অনুচ্ছেদঃ
স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর (নফল) রোযা আদায় করা মাকরূহ্
৭৮২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَنَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، قَالاَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ تَصُومُ الْمَرْأَةُ وَزَوْجُهَا شَاهِدٌ يَوْمًا مِنْ غَيْرِ شَهْرِ رَمَضَانَ إِلاَّ بِإِذْنِهِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عُثْمَانَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মহিলা যেন স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ছাড়া রমযান মাসের রোযা ব্যতীত একদিনও অন্য কোন (নফল) রোযা পালন না করে।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৬১), নাসা-ঈ- রমযানের উল্লেখ ব্যতীত।
ইবনু আব্বাস ও আবূ সাঈদ (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। এ হাদীসটি আবূয যানাদ হতে, তিনি মূসা ইবনু আবূ উসমান হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে তিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সূত্রেও বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৬. অনুচ্ছেদঃ
রমযানের রোযার কাযা আদায়ের ক্ষেত্রে বিলম্ব করা প্রসঙ্গে
৭৮৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ السُّدِّيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ الْبَهِيِّ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا كُنْتُ أَقْضِي مَا يَكُونُ عَلَىَّ مِنْ رَمَضَانَ إِلاَّ فِي شَعْبَانَ حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَقَدْ رَوَى يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيُّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ نَحْوَ هَذَا .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি শাবান মাস ব্যতীত আমার রমযান মাসের কাযা রোযা আদায় করতে পারতাম না (কোন সংগত ওজরবশত), রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকাল পর্যন্ত এই অবস্থা ছিল।
-সহীহ্, ইরওয়া (৯৪৪), রাওযুন নাযীর (৭৬৩), সহীহ্ আবূ দাঊদ (২০৭৬), তামামুল মিন্নাহ, বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। হাদীসটিকে ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাইদ আনসারী (রহঃ) আবূ সালামা হতে আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৭. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদারের সামনে খাবার খেলে তার (রোযাদারের) ফাযীলাত
৭৮৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ لَيْلَى، عَنْ مَوْلاَتِهَا، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الصَّائِمُ إِذَا أَكَلَ عِنْدَهُ الْمَفَاطِيرُ صَلَّتْ عَلَيْهِ الْمَلاَئِكَةُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَرَوَى شُعْبَةُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ حَبِيبِ بْنِ زَيْدٍ عَنْ لَيْلَى عَنْ جَدَّتِهِ أُمِّ عُمَارَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ .
লাইলা (রহঃ) হতে তাঁর আযাদকারিনী মহিলা (উম্মু উমারা) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোযাদার ব্যক্তির সামনে বেরোযদার লোকেরা যদি খাবার খায় তাহলে ফেরেশতাগণ তার (রোযাদারের) জন্য দু‘আ করেন।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১৭৪৮),
আবূ ঈসা বলেন, শুবা এই হাদীসটি হাবীব ইবনু যাইদ….. তাঁর পিতামহী উম্মু উমারা (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৭৮৫
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ سَمِعْتُ مَوْلاَةً، لَنَا يُقَالُ لَهَا لَيْلَى تُحَدِّثُ عَنْ جَدَّتِهِ أُمِّ عُمَارَةَ بِنْتِ كَعْبٍ الأَنْصَارِيَّةِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَيْهَا فَقَدَّمَتْ إِلَيْهِ طَعَامًا فَقَالَ ” كُلِي ” . فَقَالَتْ إِنِّي صَائِمَةٌ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ الصَّائِمَ تُصَلِّي عَلَيْهِ الْمَلاَئِكَةُ إِذَا أُكِلَ عِنْدَهُ حَتَّى يَفْرُغُوا ” . وَرُبَّمَا قَالَ ” حَتَّى يَشْبَعُوا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَهُوَ أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ شَرِيكٍ .
হাবীব ইবনু যাইদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের আযাদকৃত দাসী লায়লাকে উম্মু উমারা বিনতু কা’ব আল-আনসারিয়্যা (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সময় তার বাড়িতে আসেন। তখন তিনি তাঁর সামনে খাবার আনলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তুমিও খাও। তিনি বলেন, আমি (নফল) রোযা রেখেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ রোযাদার ব্যক্তির সামনে বেরোযদার লোকেরা যদি খায় তাহলে ফেরেশতাগণ তার (রোযাদারের) জন্য দু‘আ করেন। রাবী কোন কোন সময় “হাত্তা ইয়াফরুগূ” (খাওয়া শেষ না করা পর্যন্ত)-এর জায়গায় “হাত্তা ইয়াশবাউ” (পরিতৃপ্ত না হওয়া পর্যন্ত) শব্দ বর্ণনা করেছেন।
যঈফ, প্রাগুক্ত।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ। এই হাদীসটি শারীকের হাদীসের চাইতে অধিক সহীহ।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৭৮৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ مَوْلاَةٍ، لَهُمْ يُقَالُ لَهَا لَيْلَى عَنْ جَدَّتِهِ أُمِّ عُمَارَةَ بِنْتِ كَعْبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ وَلَمْ يَذْكُرْ فِيهِ “ حَتَّى يَفْرُغُوا أَوْ يَشْبَعُوا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَأُمُّ عُمَارَةَ هِيَ جَدَّةُ حَبِيبِ بْنِ زَيْدٍ الأَنْصَارِيِّ .
উম্মু উমারা বিনতি কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উম্মু উমারা বিনতি কা’ব (রাঃ)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর একই রকম হাদীস বর্ণিত আছে। তবে এই বর্ণনায় “হাত্তা ইয়াফরুগূ আও ইয়াশবাঊ” শব্দাবলীর উল্লেখ নেই। (পূর্বের হাদীসের ন্যায়)।
এটিও যঈফ,
আবূ ঈসা বলেন, উম্মু উমারা (রাঃ) হলেন হাবীব ইবনু যাইদ আল-আনসারী (রহঃ)-এর পিতামহী।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৬৮. অনুচ্ছেদঃ
ঋতুবতী মহিলার রোযা কাযা করা ও নামায কাযা না করা প্রসঙ্গে
৭৮৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عُبَيْدَةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُنَّا نَحِيضُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ نَطْهُرُ فَيَأْمُرُنَا بِقَضَاءِ الصِّيَامِ وَلاَ يَأْمُرُنَا بِقَضَاءِ الصَّلاَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ مُعَاذَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَيْضًا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ لاَ نَعْلَمُ بَيْنَهُمُ اخْتِلاَفًا أَنَّ الْحَائِضَ تَقْضِي الصِّيَامَ وَلاَ تَقْضِي الصَّلاَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَعُبَيْدَةُ هُوَ ابْنُ مُعَتِّبٍ الضَّبِّيُّ الْكُوفِيُّ يُكْنَى أَبَا عَبْدِ الْكَرِيمِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমরা মাসিক ঋতুর পর পবিত্র হলে তখন আমাদেরকে তিনি রোযার কাযা আদায়ের হুকুম করতেন কিন্তু নামায কাযা আদায়ের কথা বলতেন না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৬৩১) মুসলিম, বুখারীতে নামাযের কথা উল্লেখ নেই।
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। মুআযা হতে আইশা (রাঃ)-এর সূত্রেও এ হাদীসটি বর্ণিত আছে। এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ আমল করার কথা বলেছেন। এই বিষয়ে তাদের মাঝে কোন মতভেদ আছে বলে আমাদের জানা নেই অর্থাৎ ঋতুবতী মহিলাকে তার বাদপড়ে যাওয়া রোযার কাযা আদায় করতে হবে কিন্তু নামাযের কাযা করতে হবে না। আবূ ঈসা বলেন, বর্ণনাকারী উবাইদা হলেন ইবনু মুআত্তিব আয যাব্বী আল-কূফী তাঁর উপনাম আবূ আবদুল কারীম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৯. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদারের নাকের ভিতরে পানি পৌঁছানো মাকরূহ্
৭৮৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَبْدِ الْحَكَمِ الْبَغْدَادِيُّ الْوَرَّاقُ، وَأَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ، حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَاصِمَ بْنَ لَقِيطِ بْنِ صَبْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَخْبِرْنِي عَنِ الْوُضُوءِ، . قَالَ “ أَسْبِغِ الْوُضُوءَ وَخَلِّلْ بَيْنَ الأَصَابِعِ وَبَالِغْ فِي الاِسْتِنْشَاقِ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَائِمًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ كَرِهَ أَهْلُ الْعِلْمِ السَّعُوطَ لِلصَّائِمِ وَرَأَوْا أَنَّ ذَلِكَ يُفْطِرُهُ وَفِي الْحَدِيثِ مَا يُقَوِّي قَوْلَهُمْ .
লাকীত ইবনু সাবিরা (রহঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! ওযূ প্রসঙ্গে আমাকে জানিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ ভালোভাবে ওযূ কর, আঙ্গুলগুলোর মাঝে খিলাল কর এবং রোযা পালনকারী নাহলে নাকের গভীরে পানি পৌঁছাও।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪০৭)
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। রোযা পালনকারীর জন্য নাক দিয়ে ঔষধ গ্রহণ করাকে আলিমগণ মাকরূহ্ বলেছেন। এরফলে রোযা ভেঙ্গে যায় বলে তারা মনে করেন। এই মতের পক্ষে উল্লেখিত হাদীস হতে জোরালো সমর্থন পাওয়া যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭০. অনুচ্ছেদঃ
কোন ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের মেহমান হলে তাদের অনুমতি ব্যতীত (নফল) রোযা রাখবে না
৭৮৯
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُعَاذٍ الْعَقَدِيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ بْنُ وَاقِدٍ الْكُوفِيُّ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ نَزَلَ عَلَى قَوْمٍ فَلاَ يَصُومَنَّ تَطَوُّعًا إِلاَّ بِإِذْنِهِمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ مُنْكَرٌ لاَ نَعْرِفُ أَحَدًا مِنَ الثِّقَاتِ رَوَى هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ . وَقَدْ رَوَى مُوسَى بْنُ دَاوُدَ عَنْ أَبِي بَكْرٍ الْمَدِينِيِّ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوًا مِنْ هَذَا . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ ضَعِيفٌ أَيْضًا . وَأَبُو بَكْرٍ ضَعِيفٌ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ وَأَبُو بَكْرٍ الْمَدَنِيُّ الَّذِي رَوَى عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ اسْمُهُ الْفَضْلُ بْنُ مُبَشِّرٍ وَهُوَ أَوْثَقُ مِنْ هَذَا وَأَقْدَمُ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ কোন সম্প্রদায়ের অতিথি হলে সে যেন তাদের সম্মতি ছাড়া নফল রোযা না রাখে।
খুবই দুর্বল, ইবনু মাজাহ (১৭৬৩),
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি মুনকার। কোন নির্ভরযোগ্য রাবী হিশাম ইবনু উরওয়া হতে এই হাদীসটি রিওয়াত করেছেন বলে আমরা অবগত নই। মূসা ইবনু দাঊদ, আবূ বাকর মাদানী হতে তিনি হিশাম ইবনু উরওয়া-তৎপিতা উরওয়া হতে তিনি আইশা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একই রকম এক হাদীস বর্ণনা করেছেন। এই রিওয়াতটিও যঈফ। আবূ বাক্র বিশেষজ্ঞদের মতে দুর্বল। জাবির ইবনু আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে আবূ বাক্র আল মাদানী উপনামের যে রাবী হাদীস রিওয়াত করেছেন তার নাম আল-ফাযল ইবনু মুবাশশির। তিনি এই আবূ বাক্র আল মাদানী হতে বেশী বিশ্বস্ত ও অগ্রগণ্য।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
৭১. অনুচ্ছেদঃ
ইতিকাফের বর্ণনা
৭৯০
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَعُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ وَأَبِي لَيْلَى وَأَبِي سَعِيدٍ وَأَنَسٍ وَابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরায়রা ও আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রমযানের শেষদশকেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ইতিকাফ করতেন।
-সহীহ, ইরওয়া (৯৬৬), সহীহ আবূ দাঊদ (২১২৫), বুখারী, মুসলিম
উবাই ইবনু কা’ব, আবূ লাইলা, আবূ সাঈদ, আনাস ও ইবনু উমার (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ হুরায়রা ও আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৯১
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَرَادَ أَنْ يَعْتَكِفَ صَلَّى الْفَجْرَ ثُمَّ دَخَلَ فِي مُعْتَكَفِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَمْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلاً . رَوَاهُ مَالِكٌ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَمْرَةَ مُرْسَلاً . وَرَوَاهُ الأَوْزَاعِيُّ وَسُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَقُولُونَ إِذَا أَرَادَ الرَّجُلُ أَنْ يَعْتَكِفَ صَلَّى الْفَجْرَ ثُمَّ دَخَلَ فِي مُعْتَكَفِهِ . وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ وَإِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَعْتَكِفَ فَلْتَغِبْ لَهُ الشَّمْسُ مِنَ اللَّيْلَةِ الَّتِي يُرِيدُ أَنْ يَعْتَكِفَ فِيهَا مِنَ الْغَدِ وَقَدْ قَعَدَ فِي مُعْتَكَفِهِ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَمَالِكِ بْنِ أَنَسٍ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিকাফ করার ইচ্ছা করতেন তখন ফজরের নামায আদায় করে ইতিকাফের জায়গায় প্রবেশ করতেন।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৭১), বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা বলেন, ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ-আম্রার সূত্রে এই হাদীসটি মুরসালরূপে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীসটি ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ হতে আমরার সূত্রে ইমাম মালিক (রহঃ) এবং একাধিক বর্ণনাকারী মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। আওযাঈ ও সুফিয়ান সাওরী-ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ হতে, তিনি আমরা হতে, তিনি আইশা (রাঃ) হতে এই হাদীসটিকে বর্ণনা করেছেন। এ হাদীস অনুযায়ী কোন কোন আলিমের মতে, কোন ব্যক্তি ইতিকাফ করতে চাইলে ফজরের নামায আদায়ের পর তাকে ইতিকাফের জায়গায় প্রবেশ করতে হবে। ইমাম আহ্মাদ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীমের এই মত। অপর একদল আলিম বলেছেন, যে দিন হতে কোন ব্যক্তি ইতিকাফ শুরু করতে চায় সে দিনের পূর্বের রাতের সন্ধ্যায় সূর্য ডুবে যাওয়ার পর যেন সে ব্যক্তি ইতিকাফে বসে। এরকম মতই সুফিয়ান সাওরী ও মালিক ইবনু আনাস (রহঃ)-এর।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২. অনুচ্ছেদঃ
লাইলাতুল কাদর (কাদরের রাত্রি)
৭৯২
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُجَاوِرُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ وَيَقُولُ ” تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ ” . وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَأُبَىٍّ وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَابْنِ عُمَرَ وَالْفَلَتَانِ بْنِ عَاصِمٍ وَأَنَسٍ وَأَبِي سَعِيدٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُنَيْسٍ وَأَبِي بَكْرَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَبِلاَلٍ وَعُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَوْلُهَا يُجَاوِرُ يَعْنِي يَعْتَكِفُ . وَأَكْثَرُ الرِّوَايَاتِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ” الْتَمِسُوهَا فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ فِي كُلِّ وِتْرٍ ” . وَرُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ أَنَّهَا لَيْلَةُ إِحْدَى وَعِشْرِينَ وَلَيْلَةُ ثَلاَثٍ وَعِشْرِينَ وَخَمْسٍ وَعِشْرِينَ وَسَبْعٍ وَعِشْرِينَ وَتِسْعٍ وَعِشْرِينَ وَآخِرُ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى قَالَ الشَّافِعِيُّ كَأَنَّ هَذَا عِنْدِي وَاللَّهُ أَعْلَمُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُجِيبُ عَلَى نَحْوِ مَا يُسْأَلُ عَنْهُ يُقَالُ لَهُ نَلْتَمِسُهَا فِي لَيْلَةِ كَذَا فَيَقُولُ الْتَمِسُوهَا فِي لَيْلَةِ كَذَا . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَأَقْوَى الرِّوَايَاتِ عِنْدِي فِيهَا لَيْلَةُ إِحْدَى وَعِشْرِينَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ أَنَّهُ كَانَ يَحْلِفُ أَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ . وَيَقُولُ أَخْبَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِعَلاَمَتِهَا فَعَدَدْنَا وَحَفِظْنَا . وَرُوِيَ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ أَنَّهُ قَالَ لَيْلَةُ الْقَدْرِ تَنْتَقِلُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ بِهَذَا .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রমযান মাসের শেষের দশদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে থাকতেন (ইতিকাফ করতেন)। তিনি বলতেনঃ রমযান মাসের শেষের দশদিন তোমরা কাদরের রাতকে খোঁজ কর।
-সহীহ্, বুখারী, মুসলিম
উমার, উবাই ইবনু কা’ব, জাবির ইবনু সামুরা, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ, ইবনু উমার, ফালাতান ইবনু আসিম, আনাস, আবূ সাঈদ, আবদুল্লাহ ইবনু উনাইস, আবূ বাক্রা, ইবনু আব্বাস, বিলাল ও উবাদা ইবনুস সামিত (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। ‘ইউজাবিরু’ শব্দের অর্থ তিনি ইতিকাফ করতেন। এই ক্ষেত্রে বেশিরভাগ হাদীসের শব্দ হচ্ছেঃ শেষ দশদিনের প্রতি বিজোড় রাত্রে তোমরা লাইলাতুল কাদর খোঁজ কর। লাইলাতুল কাদর প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত আছে যে, তা হল একুশ, তেইশ, পঁচিশ, সাতাশ, ঊনত্রিশ বা রমযানের শেষরাত্র।
ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, আমার মতে এর অর্থ হল, আল্লাহ তা’আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেভাবেই উত্তর প্রদান করতেন তাঁকে যেভাবে প্রশ্ন করা হত। তাঁর কাছে কোন ব্যক্তি প্রশ্ন করেছে, অমুক রাত্রে কি আমরা তা খোঁজ করব? উত্তরে তিনি বলেছেন, তোমরা অমুক রাত্রে তা খোঁজ কর। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) আরও বলেন, আমার নিকটে একুশ তারিখ সম্পর্কিত রিওয়ায়াতটি হচ্ছে এ বিষয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী। আবূ ঈসা বলেন, উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) শপথ করে বলতেনঃ তা হল সাতাশ তারিখের রাত্রি।
তিনি আরও বলতেন, এর আলামত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন এবং তা আমরা হিসাব করে রেখেছি এবং স্মরণ রেখেছি।
আবূ কিলাবা (রাঃ) বলেন, লাইলাতুল কাদর শেষ দশকের মাঝে আবর্তিত হতে থাকে। আব্দ ইবনু হুমাইদ আবদুর রাযযাক হতে, তিনি মা’মার হতে, তিনি আইয়ূব হতে, তিনি আবূ কিলাবা (রাঃ) হতে এই বক্তব্যটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৯৩
حَدَّثَنَا وَاصِلُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ زِرٍّ، قَالَ قُلْتُ لأُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ أَنَّى عَلِمْتَ أَبَا الْمُنْذِرِ أَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ قَالَ بَلَى أَخْبَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَنَّهَا لَيْلَةٌ صَبِيحَتُهَا تَطْلُعُ الشَّمْسُ لَيْسَ لَهَا شُعَاعٌ ” . فَعَدَدْنَا وَحَفِظْنَا وَاللَّهِ لَقَدْ عَلِمَ ابْنُ مَسْعُودٍ أَنَّهَا فِي رَمَضَانَ وَأَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ وَلَكِنْ كَرِهَ أَنْ يُخْبِرَكُمْ فَتَتَّكِلُوا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যির (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-কে আমি বললাম, হে আবুল মুনযির! এই যে সাতাশের রাত লাইলাতুল কাদর আপনি সেটা কি করে জানতে পারলেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ অবশ্যই, আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, এই রাত্রের পরবর্তী সকালে সূর্য উদিত হয় ক্ষীণ আলো নিয়ে দীপ্তিহীন অবস্থায়। আমরা সেটাকে গুনে এবং স্মরণ করে রেখেছি। আল্লাহ তা’আলার শপথ! ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-ও জানেন যে, সেটা হচ্ছে রমযানের রাত্র এবং সাতাশেরই রাত্র। কিন্তু তোমাদেরকে তিনি তা জানাতে পছন্দ করেননি, তোমরা যদি পরে এটার উপর নির্ভর করে বসে থাক।
-সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (১২৪৭), মুসলিম অনুরূপ
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৯৪
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا عُيَيْنَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، ذُكِرَتْ لَيْلَةُ الْقَدْرِ عِنْدَ أَبِي بَكْرَةَ فَقَالَ مَا أَنَا بِمُلْتَمِسِهَا، لِشَيْءٍ سَمِعْتُهُ مِنْ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ فَإِنِّي سَمِعْتُهُ يَقُولُ “ الْتَمِسُوهَا فِي تِسْعٍ يَبْقَيْنَ أَوْ فِي سَبْعٍ يَبْقَيْنَ أَوْ فِي خَمْسٍ يَبْقَيْنَ أَوْ فِي ثَلاَثٍ أَوْ آخِرِ لَيْلَةٍ ” . قَالَ وَكَانَ أَبُو بَكْرَةَ يُصَلِّي فِي الْعِشْرِينَ مِنْ رَمَضَانَ كَصَلاَتِهِ فِي سَائِرِ السَّنَةِ فَإِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ اجْتَهَدَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবদুর রাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লাইলাতুল কাদর প্রসঙ্গে একবার আবূ বাক্রা (রাঃ)-এর কাছে আলোচনা হল। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একটি বাণী শোনার কারণে আমি রমযান মাসের শেষ দশদিন ব্যতীত অন্য কোন রাত্রে লাইলাতুল কাদরকে খোঁজ করি না। আমি তাঁকে বলতে শুনেছিঃ তোমরা কাদরের রাত্রে খোঁজ কর রমযানের নয়দিন বাকী থাকতে বা সাতদিন বাকী থাকতে বা পাঁচদিন বাকী থাকতে বা তিন দিন বাকী থাকতে অথবা এর শেষ রাত্রে।
-সহীহ, মিশকাত তাহকীক ছানী (২০৯২)
বর্ণনাকারী বলেন, রমযানের বিশদিন পর্যন্ত আবূ বাক্রা (রাঃ) সারা বছরের মতই নামায আদায় করতেন, কিন্তু তিনি শেষ দশদিন আসলে যতটুকু সম্ভব সাধনা করতেন।
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩. অনুচ্ছেদঃ
লাইলাতুল কাদ্র সম্পর্কেই
৭৯৫
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ هُبَيْرَةَ بْنِ يَرِيمَ، عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُوقِظُ أَهْلَهُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রমযানের শেষ দশদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পরিবারের সদস্যদেরকে (ইবাদাতে মগ্ন থাকার জন্য) ঘুম থেকে উঠাতেন।
-সহীহ, ইবনু মা-জাহ (১৭৬৮), বুখারী, মুসলিম
আইশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৯৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَجْتَهِدُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مَا لاَ يَجْتَهِدُ فِي غَيْرِهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রমযানের শেষ দশদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ইবাদাতে) এত বেশি সাধনা করতেন যে, অন্য কোন সময়ে এরকম সাধনা করতেন না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৬৭)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৪. অনুচ্ছেদঃ
শীতকালের রোযা
৭৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ نُمَيْرِ بْنِ عَرِيبٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الْغَنِيمَةُ الْبَارِدَةُ الصَّوْمُ فِي الشِّتَاءِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ مُرْسَلٌ . عَامِرُ بْنُ مَسْعُودٍ لَمْ يُدْرِكِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ وَالِدُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَامِرٍ الْقُرَشِيِّ الَّذِي رَوَى عَنْهُ شُعْبَةُ وَالثَّوْرِيُّ .
আমির ইবনু মাসঊদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, শীতকালের রোযা হচ্ছে বিনা পরিশ্রমে যুদ্ধলব্ধ মালের অনুরূপ।
-সহীহ, সহীহা (১৯২২), আর-রাওয (৬৯)
আবূ ঈসা হাদীসটিকে মুরসাল বলেছেন। কারণ, আমির ইবনু মাসঊদ (রহঃ)-এর সাক্ষাৎ ঘটেনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে। যার সূত্রে শুবা ও সাওরী হাদীস বর্ণনা করেছেন তিনি হলেন ইবরাহীম ইবনু আমির আল-কুরাশীর পিতা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫. অনুচ্ছেদঃ
“যেসব লোক রোযা আদায়ের সমর্থ হয়েও…” প্রসঙ্গে
৭৯৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الأَشَجِّ، عَنْ يَزِيدَ، مَوْلَى سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ : (وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ ) كَانَ مَنْ أَرَادَ مِنَّا أَنْ يُفْطِرَ وَيَفْتَدِيَ حَتَّى نَزَلَتِ الآيَةُ الَّتِي بَعْدَهَا فَنَسَخَتْهَا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَيَزِيدُ هُوَ ابْنُ أَبِي عُبَيْدٍ مَوْلَى سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ .
সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন এই আয়াত অবতীর্ণ হলঃ “যেসব লোক রোযা আদায়ের ক্ষেত্রে সামর্থবান হয়েও (না রাখবে) সেসব লোক যেন একজন মিসকীনের আহার দেয়” আমাদের মধ্যে তখন যার ইচ্ছা হত সে রোযা পালন না করে তার পরিবর্তে ফিদ্ইয়া আদায় করত। অতঃপর এর পরবর্তী আয়াত “তোমাদের মধ্যে যে লোক রমযান মাস পায় সে লোক যেন রোযা পালন করে” অবতীর্ণ হলে উপরের আয়াতের (সূরাঃ বাকারা- ১৮৪) বিধান বাতিল হয়ে যায়।
-সহীহ্ ইরওয়া (৪/২২), বুখারী, মুসলিম
আবূ ঈসা হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ গারীব বলেছেন। ইয়াযীদ হলেন, ইবনু আবূ উবাইদ সালামা ইবনু আকওয়ার মুক্তদাস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৬. অনুচ্ছেদঃ
খাবারের পর কোন লোক সফরের উদ্দেশ্যে বের হলে
৭৯৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ، أَنَّهُ قَالَ أَتَيْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ فِي رَمَضَانَ وَهُوَ يُرِيدُ سَفَرًا وَقَدْ رُحِلَتْ لَهُ رَاحِلَتُهُ وَلَبِسَ ثِيَابَ السَّفَرِ فَدَعَا بِطَعَامٍ فَأَكَلَ فَقُلْتُ لَهُ سُنَّةٌ قَالَ سُنَّةٌ . ثُمَّ رَكِبَ .
মুহাম্মাদ ইবনু কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রমযান মাসে আমি আনাস (রাঃ)-এর নিকট আসলাম। তখন তিনি সফরের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁর সফরের উট-টিতে হাওদা বেঁধে দেওয়া হল। তিনি সফরের পোশাক পরলেন এবং খাবার নিয়ে আসতে বললেন, তারপর তিনি তা খেলেন। আমি বললাম, এটা কি সুন্নাত? তিনি বললেন, সুন্নাত। তারপর তিনি জন্তুযানে আরোহণ করলেন।
-সহীহ্ (তাসহীহ হাদীসে ইফতারিস সা-য়িমি কাবলা সাফারিহি বা’দাল ফাজরি(পৃঃ ১৩-২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮০০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، قَالَ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ، قَالَ أَتَيْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ فِي رَمَضَانَ فَذَكَرَ نَحْوَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَمُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ هُوَ ابْنُ أَبِي كَثِيرٍ هُوَ مَدِينِيٌّ ثِقَةٌ وَهُوَ أَخُو إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ . وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ هُوَ ابْنُ نَجِيحٍ وَالِدُ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْمَدِينِيِّ وَكَانَ يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ يُضَعِّفُهُ . وَقَدْ ذَهَبَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِلَى هَذَا الْحَدِيثِ وَقَالُوا لِلْمُسَافِرِ أَنْ يُفْطِرَ فِي بَيْتِهِ قَبْلَ أَنْ يَخْرُجَ وَلَيْسَ لَهُ أَنْ يَقْصُرَ الصَّلاَةَ حَتَّى يَخْرُجَ مِنْ جِدَارِ الْمَدِينَةِ أَوِ الْقَرْيَةِ . وَهُوَ قَوْلُ إِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيِّ .
মুহাম্মাদ ইবনু কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রমযান মাসে আমি আনাস (রাঃ)-এর নিকট আসলাম। …… পূর্বোক্ত হাদীসের মতই।
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা হাসান বলেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু জাফর হলেন ইবনু আবূ কাসীর মাদীনী, তিনি একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী। তিনি ইসমাঈল ইবনু জাফরের ভাই। আবদুল্লাহ ইবনু জাফর হলেন ইবনু নাজীহ; তিনি আলী ইবনু আবদুল্লাহ মাদীনীর পিতা। তাঁকে ইয়াহ্ইয়া ইবনু মাঈন দুর্বল বর্ণনাকারী বলেছেন। এ হাদীসটির ভিত্তিতে কোন কোন আলিম বলেন, কোন মুসাফির লোক বাড়ী হতে সফরের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পূর্বে রোযা ভঙ্গ করে পানাহার করে নিতে পারবে, কিন্তু নামায কসর করতে পারবে না তার গ্রাম বা নগরপ্রাচীর অতিক্রম না হওয়া পর্যন্ত। এরকম মতই প্রকাশ করেছেন ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
- সরাসরি
৭৭. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদারের জন্য উপহার
৮০১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ سَعْدِ بْنِ طَرِيفٍ، عَنْ عُمَيْرِ بْنِ مَأْمُونٍ، عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ “ تُحْفَةُ الصَّائِمِ الدُّهْنُ وَالْمِجْمَرُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِذَاكَ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ سَعْدِ بْنِ طَرِيفٍ . وَسَعْدُ بْنُ طَرِيفٍ يُضَعَّفُ وَيُقَالُ عُمَيْرُ بْنُ مَأْمُومٍ أَيْضًا .
হাসান ইবনু আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রোযাদারের জন্য তোহফা হল তৈল ও লোবান জাতীয় সুগন্ধি।
মাওযূ, যঈফা (১৬৬০),
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি গারীব, এর সনদ খুব একটা মজবুত নয়। সা’দ ইবনু তারীফ ব্যতীত অন্য কোন সূত্রে এই প্রসঙ্গে আমরা জানি না। সা’দকে দুর্বল রাবী বলা হয়েছে। উমাইর ইবনু মামূনকে উমাইর ইবনু মামূমও বলা হয়।
হাদিসের মানঃ জাল হাদিস
- সরাসরি
৭৮. অনুচ্ছেদঃ
কোন সময়ে ঈদুল ফিত্র ও ঈদুল আয্হা হয়
৮০২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ الْيَمَانِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الْفِطْرُ يَوْمَ يُفْطِرُ النَّاسُ وَالأَضْحَى يَوْمَ يُضَحِّي النَّاسُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى سَأَلْتُ مُحَمَّدًا قُلْتُ لَهُ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ سَمِعَ مِنْ عَائِشَةَ قَالَ نَعَمْ يَقُولُ فِي حَدِيثِهِ سَمِعْتُ عَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকেরা যেদিন রোযা ভেঙ্গে ফেলে সেদিন হল ঈদুল ফিত্র এবং লোকেরা যেদিন কুরবানী করে সেদিন ঈদুল আয্হা।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৬৬০)
আবূ ঈসা বলেন, মুহাম্মাদ (বুখারী)-কে আমি প্রশ্ন করলাম, আইশা (রাঃ)-এর নিকট কি মুহাম্মাদ ইবনু মুনকাদির হাদীস শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তার হাদীসে তিনি বলেন, আইশা (রাঃ)-এর নিকট আমি শুনেছি। এই সূত্রে আবূ ঈসা হাদীসটিকে হাসান গারীব সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৯. অনুচ্ছেদঃ
ইতিকাফ ভঙ্গ করার পর পুনরায় ইতিকাফ করা
৮০৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، قَالَ أَنْبَأَنَا حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَعْتَكِفُ فِي الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ فَلَمْ يَعْتَكِفْ عَامًا فَلَمَّا كَانَ فِي الْعَامِ الْمُقْبِلِ اعْتَكَفَ عِشْرِينَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ حَدِيثِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الْمُعْتَكِفِ إِذَا قَطَعَ اعْتِكَافَهُ قَبْلَ أَنْ يُتِمَّهُ عَلَى مَا نَوَى فَقَالَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا نَقَضَ اعْتِكَافَهُ وَجَبَ عَلَيْهِ الْقَضَاءُ . وَاحْتَجُّوا بِالْحَدِيثِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ مِنِ اعْتِكَافِهِ فَاعْتَكَفَ عَشْرًا مِنْ شَوَّالٍ . وَهُوَ قَوْلُ مَالِكٍ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنْ لَمْ يَكُنْ عَلَيْهِ نَذْرُ اعْتِكَافٍ أَوْ شَيْءٌ أَوْجَبَهُ عَلَى نَفْسِهِ وَكَانَ مُتَطَوِّعًا فَخَرَجَ فَلَيْسَ عَلَيْهِ أَنْ يَقْضِيَ إِلاَّ أَنْ يُحِبَّ ذَلِكَ اخْتِيَارًا مِنْهُ وَلاَ يَجِبُ ذَلِكَ عَلَيْهِ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ . قَالَ الشَّافِعِيُّ فَكُلُّ عَمَلٍ لَكَ أَنْ لاَ تَدْخُلَ فِيهِ فَإِذَا دَخَلْتَ فِيهِ فَخَرَجْتَ مِنْهُ فَلَيْسَ عَلَيْكَ أَنْ تَقْضِيَ إِلاَّ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রমযানের শেষ দশদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিকাফ করতেন। কিন্তু তিনি এক বছর ইতিকাফ করতে সক্ষম হননি। তাই তিনি পরের বছর বিশ দিন ইতিকাফ করেন।
-সহীহ, সহীহ আবূ দাঊদ (২১২৬)
এ হাদীসটিকে আবূ ঈসা আনাস ইবনু মালিকের হাদীস হিসেবে হাসান গারীব সহীহ্ বলেছেন। আলিমগণের মধ্যে নিয়্যাত করার পর পূর্ণ করার আগেই ইতিকাফ ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে মতভেদ রয়েছে। একদল আলিম তার কাযা আদায় করাকে ওয়াজিব বলেছেন। নিম্নোক্ত হাদীসটি দ্বারা তারা দলীল গ্রহণ করেনঃ “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইতিকাফ ত্যাগ করে বেরিয়ে আসলেন, পরে শাওয়াল মাসের দশদিন ইতিকাফ করেন।” এরকম মত ইমাম মালিক (রহঃ)-এরও। অন্য একদল আলিম বলেন, মানত বা নিজেদের জন্য অবশ্য পালনীয় ইতিকাফ যদি না হয়ে থাকে এবং যদি নফল ইতিকাফ হয়ে থাকে তাহলে এমতাবস্থায় ইতিকাফ ছেড়ে বের হয়ে গেলে তার কাযা আদায় করা ওয়াজিব নয়। যদি কেউ স্বেচ্ছায় কাযা করে তবে তা করতে পারে কিন্তু তা তার উপর ওয়াজিব নয়। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) এই মত দিয়েছেন। তিনি বলেন, তোমার জন্য যেসব আমল ছেড়ে দেয়া জায়িয তুমি যদি এ ধরণের কোন আমল করতে শুরু কর এবং তা পূর্ণ না করে ছেড়ে দাও তাহলে তোমার উপর এ ধরণের কোন আমল কাযা করা ওয়াজিব নয় শুধুমাত্র হাজ্জ ও উমরা ব্যতীত। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮০. অনুচ্ছেদঃ
প্রয়োজনবোধে ইতিকাফকারী বের হতে পারে কি না?
৮০৪
حَدَّثَنَا أَبُو مُصْعَبٍ الْمَدَنِيُّ، قِرَاءَةً عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، وَعَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اعْتَكَفَ أَدْنَى إِلَىَّ رَأْسَهُ فَأُرَجِّلُهُ وَكَانَ لاَ يَدْخُلُ الْبَيْتَ إِلاَّ لِحَاجَةِ الإِنْسَانِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . هَكَذَا رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ وَعَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ . وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ . وَالصَّحِيحُ عَنْ عُرْوَةَ وَعَمْرَةَ عَنْ عَائِشَةَ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ইতিকাফে থাকতেন, আমার দিকে তাঁর মাথা এগিয়ে দিতেন এবং আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম। মানবীয় প্রয়োজন (প্রশ্ৰাব-পায়খানা) ব্যতীত তিনি ঘরে আসতেন না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (৬৩৩) ও (১৭৭৮)
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে একাধিক বর্ণনাকারী হাদীসটি একইরকম বর্ণনা করেছেন। তবে আইশা (রাঃ) হতে উরওয়া ও আম্রা (রহঃ)-এর সনদটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮০৫
حَدَّثَنَا بِذَلِكَ، قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، وَعَمْرَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا اعْتَكَفَ الرَّجُلُ أَنْ لاَ يَخْرُجَ مِنِ اعْتِكَافِهِ إِلاَّ لِحَاجَةِ الإِنْسَانِ وَاجْتَمَعُوا عَلَى هَذَا أَنَّهُ يَخْرُجُ لِقَضَاءِ حَاجَتِهِ لِلْغَائِطِ وَالْبَوْلِ . ثُمَّ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي عِيَادَةِ الْمَرِيضِ وَشُهُودِ الْجُمُعَةِ وَالْجَنَازَةِ لِلْمُعْتَكِفِ فَرَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنْ يَعُودَ الْمَرِيضَ وَيُشَيِّعَ الْجَنَازَةَ وَيَشْهَدَ الْجُمُعَةَ إِذَا اشْتَرَطَ ذَلِكَ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ لَيْسَ لَهُ أَنْ يَفْعَلَ شَيْئًا مِنْ هَذَا وَرَأَوْا لِلْمُعْتَكِفِ إِذَا كَانَ فِي مِصْرٍ يُجَمَّعُ فِيهِ أَنْ لاَ يَعْتَكِفَ إِلاَّ فِي مَسْجِدِ الْجَامِعِ لأَنَّهُمْ كَرِهُوا الْخُرُوجَ لَهُ مِنْ مُعْتَكَفِهِ إِلَى الْجُمُعَةِ وَلَمْ يَرَوْا لَهُ أَنْ يَتْرُكَ الْجُمُعَةَ فَقَالُوا لاَ يَعْتَكِفُ إِلاَّ فِي مَسْجِدِ الْجَامِعِ حَتَّى لاَ يَحْتَاجُ إِلَى أَنْ يَخْرُجَ مِنْ مُعْتَكَفِهِ لِغَيْرِ قَضَاءِ حَاجَةِ الإِنْسَانِ لأَنَّ خُرُوجَهُ لِغَيْرِ قَضَاءِ حَاجَةِ الإِنْسَانِ قَطْعٌ عِنْدَهُمْ لِلاِعْتِكَافِ . وَهُوَ قَوْلُ مَالِكٍ وَالشَّافِعِيِّ . وَقَالَ أَحْمَدُ لاَ يَعُودُ الْمَرِيضَ وَلاَ يَتْبَعُ الْجَنَازَةَ عَلَى حَدِيثِ عَائِشَةَ . وَقَالَ إِسْحَاقُ إِنِ اشْتَرَطَ ذَلِكَ فَلَهُ أَنْ يَتْبَعَ الْجَنَازَةَ وَيَعُودَ الْمَرِيضَ .
ইবনু শিহাব থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু শিহাব হতে উরওয়া ও আম্রা-আইশা (রাঃ)-এর সূত্রে লাইস ইবনু সা’দও হাদীসটিকে বর্ণনা করেছেন।
-সহীহ্, দেখুন পূর্বের হাদীস
এ হাদীস অনুযায়ী আলিমগণ বলেছেন, মানবীয় প্রয়োজন ছাড়া ইতিকাফকারী ইতিকাফস্থল হতে বাইরে বের হতে পারবে না। তারা সকলেই এই বিষয়ে একমত যে, অবশ্যই সে প্রশ্ৰাব-পায়খানার প্রয়োজন হলে বের হতে পারবে। তবে ইতিকাফকারী রোগী দেখা, জুমু’আ ও জানাযার নামাযে অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না তাদের মাঝে এ বিষয়ে মতপার্থক্য আছে। কোন কোন সাহাবী ও তাবিঈর মতে সে লোক যদি ইতিকাফে বসার সময় এসব প্রয়োজনে বের হওয়ার শর্ত করে থাকে তাহলে সে লোক রোগী দেখতে, জানাযায় এবং জুমু’আর নামাযে উপস্থিত হতে পারবে। এরকম মতই দিয়েছেন সুফিয়ান সাওরী ও ইবনুল মুবারাক। কোন কোন আলিম বলেন, সে লোক উল্লিখিত উদ্দেশ্যে বাইরে বের হতে পারবে না। তাদের মতে শহরে বসবাসকারী জামে মাসজিদ ব্যতীত আর অন্য কোথাও ইতিকাফ করবে না। জুমু’আর জন্য ইতিকাফের জায়গা ছেড়ে বের হওয়াকেও তারা মাকরূহ্ বলেন, আবার জুমু’আ ত্যাগ করাকেও তারা জায়িয মনে করেন না। সুতরাং তারা বলেন, ইতিকাফ শুধু জামে মাসজিদেই আদায় করবে যেন ইতিকাফস্থল হতে মানবীয় প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়ার প্রয়োজন না হয়। মানবীয় প্রয়োজন ছাড়া বের হলে ইতিকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে। এরকম মত প্রকাশ করেন ইমাম মালিক ও শাফিঈ।
ইমাম আহ্মাদ বলেন, আইশা (রাঃ)-এর হাদীসের আলোকে সে লোক রোগী দেখতে ও জানাযায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে বের হতে পারবে না। ইমাম ইসহাক বলেন, এই বিষয়ে সে লোক যদি পূর্বেই নিজে নিজে শর্ত করে নেয় তবে জানাযায় অংশগ্রহণ ও রোগী দেখার উদ্দেশ্যে বাইরে বের হতে পারবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮১. অনুচ্ছেদঃ
রমযান মাসের কিয়াম (রাত্রের ইবাদাত)
৮০৬
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفُضَيْلِ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْجُرَشِيِّ، عَنْ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ صُمْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يُصَلِّ بِنَا حَتَّى بَقِيَ سَبْعٌ مِنَ الشَّهْرِ فَقَامَ بِنَا حَتَّى ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ ثُمَّ لَمْ يَقُمْ بِنَا فِي السَّادِسَةِ وَقَامَ بِنَا فِي الْخَامِسَةِ حَتَّى ذَهَبَ شَطْرُ اللَّيْلِ فَقُلْنَا لَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ نَفَّلْتَنَا بَقِيَّةَ لَيْلَتِنَا هَذِهِ فَقَالَ “ إِنَّهُ مَنْ قَامَ مَعَ الإِمَامِ حَتَّى يَنْصَرِفَ كُتِبَ لَهُ قِيَامُ لَيْلَةٍ ” . ثُمَّ لَمْ يُصَلِّ بِنَا حَتَّى بَقِيَ ثَلاَثٌ مِنَ الشَّهْرِ وَصَلَّى بِنَا فِي الثَّالِثَةِ وَدَعَا أَهْلَهُ وَنِسَاءَهُ فَقَامَ بِنَا حَتَّى تَخَوَّفْنَا الْفَلاَحَ . قُلْتُ لَهُ وَمَا الْفَلاَحُ قَالَ السُّحُورُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي قِيَامِ رَمَضَانَ فَرَأَى بَعْضُهُمْ أَنْ يُصَلِّيَ إِحْدَى وَأَرْبَعِينَ رَكْعَةً مَعَ الْوِتْرِ . وَهُوَ قَوْلُ أَهْلِ الْمَدِينَةِ وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَهُمْ بِالْمَدِينَةِ . وَأَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَى مَا رُوِيَ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَغَيْرِهِمَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عِشْرِينَ رَكْعَةً . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَابْنِ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيِّ . وَقَالَ الشَّافِعِيُّ وَهَكَذَا أَدْرَكْتُ بِبَلَدِنَا بِمَكَّةَ يُصَلُّونَ عِشْرِينَ رَكْعَةً . وَقَالَ أَحْمَدُ رُوِيَ فِي هَذَا أَلْوَانٌ . وَلَمْ يَقْضِ فِيهِ بِشَيْءٍ . وَقَالَ إِسْحَاقُ بَلْ نَخْتَارُ إِحْدَى وَأَرْبَعِينَ رَكْعَةً عَلَى مَا رُوِيَ عَنْ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ . وَاخْتَارَ ابْنُ الْمُبَارَكِ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ الصَّلاَةَ مَعَ الإِمَامِ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ . وَاخْتَارَ الشَّافِعِيُّ أَنْ يُصَلِّيَ الرَّجُلُ وَحْدَهُ إِذَا كَانَ قَارِئًا . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَالنُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে আমরা রোযা পালন করেছি। তিনি আমাদেরকে নিয়ে রমযান মাসে কোন (নফল) নামায আদায় করেননি। অবশেষে তিনি রমযানের সাত দিন বাকী থাকতে আমাদেরকে নিয়ে নামাযে দাঁড়ালেন। এতে এক-তৃতীয়াংশ রাত চলে গেল। আমাদেরকে নিয়ে তিনি ষষ্ঠ রাতে নামাযের উদ্দেশ্যে দাঁড়াননি। তিনি আবার আমাদের নিয়ে পঞ্চম রাতে নামাযের উদ্দেশ্যে দাঁড়ান। এতে অর্ধেক রাত চলে গেল। আমরা তাকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল। যদি আমাদের বাকী রাতটিও নামায আদায় করে পার করে দিতেন। তিনি বললেনঃ ইমামের সাথে যদি কোন লোক (ফরয) নামাযে শামিল হয় এবং ইমামের সাথে নামায আদায় শেষ করে তাহলে সে লোকের জন্য সারা রাত (নফল) নামায আদায়ের সাওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর মাসের তিন রাত বাকী থাকা পর্যন্ত তিনি আর আমাদের নিয়ে নামায আদায় করেননি। আবার তিনি তৃতীয় (২৭শে) রাত থাকতে আমাদের নিয়ে নামাযের জন্য দাঁড়ালেন। তাঁর পরিজন ও স্ত্রীগণকেও তিনি এ রাতে ডেকে তুললেন। এত (দীর্ঘ)-সময় ধরে তিনি নামায আদায় করলেন যে, যার ফলে সাহ্রীর সময় চলে যাওয়ার সংশয় হল আমাদের মনে। বর্ণনাকারী জুবাইর ইবনু নুফাইর বলেন, আবূ বকর (রাঃ)-কে আমি বললামঃ ফালাহ্” কি? তিনি বললেন, সাহ্রী খাওয়া।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৩২৭)
আবূ ঈসা হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন। আলিমগণের মধ্যে রমযানের রাতসমূহে (তারাবীহ্ নামায ও নফল ইবাদাতের উদ্দেশ্যে) দণ্ডায়মান হওয়া প্রসঙ্গে দ্বিমত আছে। কোন কোন আলিম বলেন, বিতর সহকারে এর রাক’আত সংখ্যা একচল্লিশ। মাদীনায় বসবাসকারীদের অভিমত এটাই এবং এরকমই আমল করেন এখানকার লোকেরা। কিন্তু আলী ও উমার (রাঃ) প্রমুখ সাহাবায়ি কিরাম হতে বর্ণিত রিওয়ায়াত অনুযায়ী বেশিরভাগ আলিমের অভিমত অর্থাৎ (তারাবীহ্) বিশ রাক’আত। এই মত সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক ও শাফিঈ (রহঃ)-এর। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, আমাদের মক্কা নগরীর লোকদেরকেও বিশ রাক’আত আদায় করতে দেখেছি। আহ্মাদ (রহঃ) বলেন, এই বিষয়ের উপর বিভিন্ন প্রকার রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে। এই ব্যাপারে তিনি কোন রকম সিদ্ধান্ত দেননি। ইসহাক বলেন, আমরা উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ)-এর বর্ণনানুযায়ী একচল্লিশ রাক’আত আদায় করাকেই পছন্দ করি।
রমযান মাসে ইমামের সাথে তারাবীহ্ আদায় করাকে ইবনুল মুবারাক, আহ্মাদ ও ইসহাক সমর্থন করেছেন। ইমাম শাফিঈ কুরআনের হাফিয ব্যক্তির জন্য একাকী (তারাবীহ্র) নামায আদায় করাকে উত্তম বলেছেন। আইশা, নু’মান ইবনু বাশীর ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮২. অনুচ্ছেদঃ
রোযাদারকে ইফতার করানোর ফাযীলাত
৮০৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي سُلَيْمَانَ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الصَّائِمِ شَيْئًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
যাইদ ইবনু খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন রোযা পালনকারীকে যে লোক ইফতার করায় সে লোকের জন্যও রোযা পালনকারীর সমপরিমাণ সওয়াব রয়েছে। কিন্তু এর ফলে রোযা পালনকারীর সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র কমানো হবে না।
-সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (১৭৪৬)
আবূ ঈসা এ হাদীসটিকে হাসান সহীহ্ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৩. অনুচ্ছেদঃ
রমযান মাসে (রাত্রের ইবাদাত) দণ্ডায়মান হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা এবং এর ফাযীলাত
৮০৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُرَغِّبُ فِي قِيَامِ رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَأْمُرَهُمْ بِعَزِيمَةٍ وَيَقُولُ “ مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ” . فَتُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالأَمْرُ عَلَى ذَلِكَ ثُمَّ كَانَ الأَمْرُ كَذَلِكَ فِي خِلاَفَةِ أَبِي بَكْرٍ وَصَدْرًا مِنْ خِلاَفَةِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَلَى ذَلِكَ . وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ أَيْضًا عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ عن النبي قال أبو عيسى هذا حديث حسن صحيح.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রমযানের (রাত্র জেগে) ইবাদাত-বন্দিগীতে মাশ্গুল থাকতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উৎসাহিত করতেন, তবে সেটাকে বাধ্যতামূলক হিসেবে নির্দেশ দেননি। তিনি বলতেনঃ ঈমানের সাথে এবং সাওয়াবের আশা করে যে লোক রমযান মাসে (রাতে ইবাদাতে) দন্ডায়মান হবে সে লোকের পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হবে। এ নিয়মই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু পর্যন্ত চালু ছিল। এ বিষয়টি আবূ বকর (রাঃ)-এর খিলাফত এবং উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)-আর খিলাফতের প্রথম দিকেও এমনই ছিল।
-সহীহ্, সহীহ আবূ দাঊদ (১২৪১), নাসা-ঈ, ইমাম বুখারীর মতে মৃত্যু পর্যন্ত…এই বাক্যাংশটি যুহরী হাদীসে সংযোগ করেছেন।
আইশা (রাঃ) হতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। যুহরী-উরওয়া হতে, তিনি আইশা (রাঃ)-হতে এই সূত্রেও এই হাদীসটি বর্ণিত আছে। এই হাদীসিটিকে আবূ ঈসা হাসান সহীহ বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস