তিরমিজি কিতাবুল জুমুআ (জুমুআর নামায) অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ৪৮৮ – ৫৫৫
১. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর দিনের ফযিলত
৪৮৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا الْمُغِيرَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ خَيْرُ يَوْمٍ طَلَعَتْ فِيهِ الشَّمْسُ يَوْمُ الْجُمُعَةِ فِيهِ خُلِقَ آدَمُ وَفِيهِ أُدْخِلَ الْجَنَّةَ وَفِيهِ أُخْرِجَ مِنْهَا وَلاَ تَقُومُ السَّاعَةُ إِلاَّ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي لُبَابَةَ وَسَلْمَانَ وَأَبِي ذَرٍّ وَسَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ وَأَوْسِ بْنِ أَوْسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যেসব দিনে সূর্য উদয় হয় তাঁর মধ্যে জুমু’আর দিনই উত্তম। এ দিনেই আদম (আঃ) -কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এ দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এ দিনই তাঁকে জান্নাত হতে বের করা হয়েছে। আর জুমু’আর দিনেই ক্বিয়ামাত সংঘটিত হবে।
-সহীহ্। সহীহাহ্- (১৫০২), সহীহ্ আবূ দাঊদ- (৯৬১), মুসলিম, তা’লীক সহীহ্ ইবনু খুজাইমাহ- (৩/১১৬)।
এ অনুচ্ছেদে আবূ লুবাবা, সালমান, আবূ যার, সা’দ ইবনু ‘উবাদা ও আওস ইবনু আওস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর দিনে এমন একটি সময় রয়েছে যখন দু’আ ক্ববূলের আশা করা যায়
৪৮৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الصَّبَّاحِ الْهَاشِمِيُّ الْبَصْرِيُّ الْعَطَّارُ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ وَرْدَانَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ الْتَمِسُوا السَّاعَةَ الَّتِي تُرْجَى فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ إِلَى غَيْبُوبَةِ الشَّمْسِ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَيْرِ هَذَا الْوَجْهِ . وَمُحَمَّدُ بْنُ أَبِي حُمَيْدٍ يُضَعَّفُ ضَعَّفَهُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ وَيُقَالُ لَهُ حَمَّادُ بْنُ أَبِي حُمَيْدٍ وَيُقَالُ هُوَ أَبُو إِبْرَاهِيمَ الأَنْصَارِيُّ وَهُوَ مُنْكَرُ الْحَدِيثِ . وَرَأَى بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّ السَّاعَةَ الَّتِي تُرْجَى فِيهَا بَعْدَ الْعَصْرِ إِلَى أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ . وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَالَ أَحْمَدُ أَكْثَرُ الأَحَادِيثِ فِي السَّاعَةِ الَّتِي تُرْجَى فِيهَا إِجَابَةُ الدَّعْوَةِ أَنَّهَا بَعْدَ صَلاَةِ الْعَصْرِ وَتُرْجَى بَعْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জুমু’আর দিনের যে মুহূর্তে (দু’আ ক্ববূল হওয়ার) আশা করা যায় তা আসরের পর হতে সূর্যাস্তের মধ্যে খোঁজ কর।
-হাসান। মিশকাত- (১৩৬০), তা’লীকুর রাগীব- (১/২৫১)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। অন্য একটি সূত্রেও এ হাদীসটি আনাসের নিকট হতে বর্ণিত হয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ হুমাইদ একজন দুর্বল রাবী। একদল বিশেষজ্ঞ তাঁর স্মরণশক্তি দুর্বল বলেছেন। তাঁকে হাম্মাদ ইবনু আবূ হুমাইদও বলা হয়ে থাকে। কেউ কেউ বলেছেন, ইনি আবূ ইবরাহীম আনসারী, ইনি একজন প্রত্যাখ্যাত রাবী। একদল সাহাবা ও তাবিঈর ধারণা হল দু’আ ক্ববূলের এ সময়টি আসরের পর হতে শুরু করে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। ইমাম আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম কথা বলেছেন। আহমাদ বলেছেন, যে সময়ে দু’আ ক্ববূলের আশা করা যায় সে সম্পর্কিত বেশিরভাগ হাদীস হতে জানা যায়, এ সময়টি আসরের পর এবং সূর্য ঢলে যাওয়ার পর হতেও এর আশা করা যায়।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৪৯০
حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ الْمُزَنِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِنَّ فِي الْجُمُعَةِ سَاعَةً لاَ يَسْأَلُ اللَّهَ الْعَبْدُ فِيهَا شَيْئًا إِلاَّ آتَاهُ اللَّهُ إِيَّاهُ ” . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَّةُ سَاعَةٍ هِيَ قَالَ ” حِينَ تُقَامُ الصَّلاَةُ إِلَى الاِنْصِرَافِ مِنْهَا ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي مُوسَى وَأَبِي ذَرٍّ وَسَلْمَانَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلاَمٍ وَأَبِي لُبَابَةَ وَسَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ وَأَبِي أُمَامَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আমর ইবনু আওফ (রাঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জুমু’আর দিনের মধ্যে একটি বিশেষ সময় আছে। এ সময়ে বান্দাহ আল্লাহ তা’আলার নিকট যা চায় আল্লাহ তা’আলা তাকে তা দান করেন। লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এ সময়টি কখন? তিনি বললেনঃ যখন নামায শুরু হয় তখন হতে তা শেষ হওয়া পর্যন্ত।
খুবই দুর্বল, ইবনু মাজাহ (১৩৮৪)।
এ অনুচ্ছেদে আবূ মূসা, আবূ যার, সালমান, আবদুল্লাহ ইবনু সালাম, আবূ লুবাবা ও সা’দ ইবনু উবাদা এবং আবূ উমামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেনঃ আমর ইবনু আওফের হাদীসটি হাসান এবং গারীব।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
৪৯১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْهَادِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” خَيْرُ يَوْمٍ طَلَعَتْ فِيهِ الشَّمْسُ يَوْمُ الْجُمُعَةِ فِيهِ خُلِقَ آدَمُ وَفِيهِ أُدْخِلَ الْجَنَّةَ وَفِيهِ أُهْبِطَ مِنْهَا وَفِيهِ سَاعَةٌ لاَ يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ يُصَلِّي فَيَسْأَلُ اللَّهَ فِيهَا شَيْئًا إِلاَّ أَعْطَاهُ إِيَّاهُ ” . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَلَقِيتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ سَلاَمٍ فَذَكَرْتُ لَهُ هَذَا الْحَدِيثَ فَقَالَ أَنَا أَعْلَمُ بِتِلْكَ السَّاعَةِ . فَقُلْتُ أَخْبِرْنِي بِهَا وَلاَ تَضْنَنْ بِهَا عَلَىَّ قَالَ هِيَ بَعْدَ الْعَصْرِ إِلَى أَنْ تَغْرُبَ الشَّمْسُ . فَقُلْتُ كَيْفَ تَكُونُ بَعْدَ الْعَصْرِ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مَسْلِمٌ وَهُوَ يُصَلِّي ” . وَتِلْكَ السَّاعَةُ لاَ يُصَلَّى فِيهَا فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلاَمٍ أَلَيْسَ قَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ جَلَسَ مَجْلِسًا يَنْتَظِرُ الصَّلاَةَ فَهُوَ فِي صَلاَةٍ ” . قُلْتُ بَلَى . قَالَ فَهُوَ ذَاكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْحَدِيثِ قِصَّةٌ طَوِيلَةٌ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَمَعْنَى قَوْلِهِ ” أَخْبِرْنِي بِهَا وَلاَ تَضْنَنْ بِهَا عَلَىَّ ” . لاَ تَبْخَلْ بِهَا عَلَىَّ وَالضَّنُّ الْبُخْلُ وَالظَّنِينُ الْمُتَّهَمُ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যেসব দিনে সূর্য উদয় হয় তাঁর মধ্যে জুমু’আর দিনই সর্বশ্রেষ্ঠ। এ দিনেই আদম (আঃ) -কে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এদিনেই তাঁকে সেখান হতে (পৃথিবীতে) নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ দিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে যখন কোন মুসলিম বান্দা নামায আদায় করে আল্লাহ তা’আলার নিকট কিছু চাইলে তিনি অবশ্যই তাকে তা দান করেন। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু সালামের সাথে সাক্ষাত করে তাঁকে এ হাদীস প্রসঙ্গে জানালাম। তিনি বলেন, আমি সে সময়টি জানি। আমি বললাম, তাহলে আমাকেও বলে দিন, এ ব্যাপারে কৃপণতা করবেন না। তিনি বললেন, এ সময়টি আসরের পর হতে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত। আমি বললাম, তা কি করে আসরের পর হতে পারে? অথচ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, বান্দা নামাযরত অবস্থায় এই মুহূর্তটি পেয়ে…। অথচ আপনি যে সময়ের কথা বলেছেন, তখন তো নামায আদায় করা হয় না। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেননিঃ যে ব্যক্তি নামাযের অপেক্ষায় বসে থাকে প্রকারান্তরে সে নামাযের মধ্যেই থাকে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, সেটাই এ সময়।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১৩৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর দিন গোসল করা
৪৯২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ أَتَى الْجُمُعَةَ فَلْيَغْتَسِلْ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَأَبِي سَعِيدٍ وَجَابِرٍ وَالْبَرَاءِ وَعَائِشَةَ وَأَبِي الدَّرْدَاءِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সালিম (রহঃ) হতে তাঁর পিতার থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বলতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি জুমু’আর নামাযে আসে সে যেন গোসল করে আসে।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১০৮৮)।
এ অনুচ্ছেদে ‘উমার, আবূ সা’ঈদ, জাবির, বারাআ, ‘আয়িশাহ্ ও আবূ দারদা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘উমারের হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৯৩
وَرُوِيَ عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَذَا الْحَدِيثُ أَيْضًا . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ . وَقَالَ مُحَمَّدٌ وَحَدِيثُ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ وَحَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ كِلاَ الْحَدِيثَيْنِ صَحِيحٌ . وَقَالَ بَعْضُ أَصْحَابِ الزُّهْرِيِّ عَنِ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِي آلُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ .
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতে অন্য সূত্রেও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপরোক্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
- সরাসরি
৪৯৪
قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْغُسْلِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَيْضًا وَهُوَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ رَوَاهُ يُونُسُ وَمَعْمَرٌ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ بَيْنَمَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يَخْطُبُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِذْ دَخَلَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَيَّةُ سَاعَةٍ هَذِهِ فَقَالَ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ النِّدَاءَ وَمَا زِدْتُ عَلَى أَنْ تَوَضَّأْتُ . قَالَ وَالْوُضُوءَ أَيْضًا وَقَدْ عَلِمْتَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِالْغُسْلِ . حَدَّثَنَا بِذَلِكَ أَبُو بَكْرٍ مُحَمَّدُ بْنُ أَبَانَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“একদা ‘উমার (রাঃ) জুমু’আর নামাযের খুতবা দিচ্ছিলেন, এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একজন সাহাবী এসে (মসজিদে) ঢুকলেন। তিনি (উমার) প্রশ্ন করলেন, এটা কোন সময় (দেরি কেন)? তিনি বললেন, আমি আযান শুনেই ওযূ করে চলে এসেছি, মোটেই দেরি করিনি। তিনি (উমার) বললেন, শুধু ওযূই করলেন? অথচ আপনার জানা আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গোসল করারও নির্দেশ দিয়েছেন।
-সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ- (৩৬৭), বুখারী ও মুসলিম।
এ হাদীসটি আরো কয়েকটি সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৯৫
قَالَ وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا أَبُو صَالِحٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الْحَدِيثِ . وَرَوَى مَالِكٌ، هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، قَالَ بَيْنَمَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يَخْطُبُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ . فَذَكَرَ هَذَا الْحَدِيثَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْ هَذَا فَقَالَ الصَّحِيحُ حَدِيثُ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ مَالِكٍ أَيْضًا عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ نَحْوُ هَذَا الْحَدِيثِ .
যুহরী থেকে বর্ণিতঃ
ইউনুস যুহরী হতে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আমি মুহাম্মাদ বুখারীকে এই হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম, তিনি বললেন, সালিম তার পিতা থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
- সরাসরি
৪. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর দিনে গোসলের ফযিলত
৪৯৬
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، وَأَبُو جَنَابٍ يَحْيَى بْنُ أَبِي حَيَّةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عِيسَى، عَنْ يَحْيَى بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَغَسَّلَ وَبَكَّرَ وَابْتَكَرَ وَدَنَا وَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ كَانَ لَهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ يَخْطُوهَا أَجْرُ سَنَةٍ صِيَامُهَا وَقِيَامُهَا ” . قَالَ مَحْمُودٌ قَالَ وَكِيعٌ اغْتَسَلَ هُوَ وَغَسَّلَ امْرَأَتَهُ . قَالَ وَيُرْوَى عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُ قَالَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ ” مَنْ غَسَّلَ وَاغْتَسَلَ ” . يَعْنِي غَسَلَ رَأْسَهُ وَاغْتَسَلَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَسَلْمَانَ وَأَبِي ذَرٍّ وَأَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عُمَرَ وَأَبِي أَيُّوبَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَأَبُو الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيُّ اسْمُهُ شَرَاحِيلُ بْنُ آدَةَ . وَأَبُو جَنَابٍ يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْقَصَّابُ الْكُوفِيُّ .
আওস ইবনু আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ যে ব্যক্তি গোসল করল এবং গোসল করাল, সকাল সকাল মসজিদে আসল, ইমামের নিকটবর্তী হয়ে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল এবং নিশ্চুপ থাকল- তাঁর জন্য প্রতি কদমের বিনিময়ে এক বছরের (নফল) রোযা ও নামাযের সাওয়াব রয়েছে।
ওয়াকী বলেন, ‘গোসল করল এবং করাল’ শব্দের অর্থ নিজে গোসল করল এবং স্ত্রীকে গোসল করাল।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১০৮৭)।
ইবনুল মুবারাক বলেনঃ গোসল করল ও গোসল করাল এর অর্থ হলো- নিজে গোসল করল এবং মাথা ধুল। এ অনুচ্ছেদে আবূ বাক্র, ‘ইমরান ইবনু হুসাইন, সালমান, আবূ যার, আবূ সা’ঈদ, ইবনু ‘উমার ও আবূ আইউব (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। আবূ আশ’আসের নাম শারাহীল। আবূ জানাব হলেন, ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর দিনে ওযূ করা
৪৯৭
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ سُفْيَانَ الْجَحْدَرِيُّ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَوَضَّأَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَبِهَا وَنِعْمَتْ وَمَنِ اغْتَسَلَ فَالْغُسْلُ أَفْضَلُ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَعَائِشَةَ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَمُرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَاهُ بَعْضُ أَصْحَابِ قَتَادَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنِ الْحَسَنِ عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ وَرَوَاهُ بَعْضُهُمْ عَنْ قَتَادَةَ عَنِ الْحَسَنِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُرْسَلٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ بَعْدَهُمُ اخْتَارُوا الْغُسْلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَرَأَوْا أَنْ يُجْزِئَ الْوُضُوءُ مِنَ الْغُسْلِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَمِمَّا يَدُلُّ عَلَى أَنَّ أَمْرَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالْغُسْلِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَنَّهُ عَلَى الاِخْتِيَارِ لاَ عَلَى الْوُجُوبِ حَدِيثُ عُمَرَ حَيْثُ قَالَ لِعُثْمَانَ وَالْوُضُوءَ أَيْضًا وَقَدْ عَلِمْتَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِالْغُسْلِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ . فَلَوْ عَلِمَا أَنَّ أَمْرَهُ عَلَى الْوُجُوبِ لاَ عَلَى الاِخْتِيَارِ لَمْ يَتْرُكْ عُمَرُ عُثْمَانَ حَتَّى يَرُدَّهُ وَيَقُولَ لَهُ ارْجِعْ فَاغْتَسِلْ وَلَمَا خَفِيَ عَلَى عُثْمَانَ ذَلِكَ مَعَ عِلْمِهِ وَلَكِنْ دَلَّ فِي هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّ الْغُسْلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِيهِ فَضْلٌ مِنْ غَيْرِ وُجُوبٍ يَجِبُ عَلَى الْمَرْءِ فِي ذَلِكَ .
সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন শুধু ওযূ করল সেটাই তাঁর জন্য যথেষ্ট। আর যে ব্যক্তি গোসল করল, গোসল করাই উত্তম।
-সহীহ। ইবনু মাজাহ– (১০৯১)।
এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরাইরা, আনাস ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ সামুরার হাদীসটি হাসান। কেউ কেউ উল্লেখিত হাদীসটি মুরসাল হিসাবে বর্ণনা করেছেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী ও তাদের পরবর্তীগণ শুক্রবার গোসল করা উত্তম মনে করেছেন, যদিও শুধু ওযূ করাও যথেষ্ট।
ইমাম শাফিঈ বলেন, জুমু‘আর দিন গোসল করার জন্য নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে হুকুম দিয়েছেন তা মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়। তাঁর বক্তব্যের সপক্ষে দলীল হলঃ উমার (রাঃ) উসমান (রাঃ) -কে বললেন, শুধু ওযূই করলেন? অথচ আপনি জানেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর দিন গোসল করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এ নির্দেশ দ্বারা যদি গোসল করা ওয়াজিব প্রমাণিত হত তবে উমার (রাঃ) উসমান (রাঃ) -কে বসতে দিতেন না; বরং তাঁকে মসজিদ হতে বের হয়ে গোসল করে আসতে বাধ্য করতেন। অধিকন্তু উসমান (রাঃ) নিজেও গোসল করে আসতেন, শুধু ওযূ করে আসতেন না। কেননা উসমান (রাঃ) পর্যাপ্ত জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। অতএব জুমু‘আর দিন গোসল করা উত্তম কিন্তু ওয়াজিব নয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৯৮
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ فَدَنَا وَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ وَزِيَادَةُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ وَمَنْ مَسَّ الْحَصَى فَقَدْ لَغَا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ভালভাবে ওযূ করে জুমু‘আর নামায আদায় করতে আসে, ইমামের নিকটবর্তী হয়ে মনোযোগ সহকারে নীরবে খুতবা শুনে, তাঁর এ জুমু‘আ হতে ঐ জুমু‘আ পর্যন্ত এবং আরো তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি কাঁকর-বালি ইত্যাদি নাড়াচাড়া করল সে বাজে কাজ করল।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১০৯০), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর দিন সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া
৪৯৯
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ غُسْلَ الْجَنَابَةِ ثُمَّ رَاحَ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَدَنَةً وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّانِيَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَقَرَةً وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّالِثَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ كَبْشًا أَقْرَنَ وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الرَّابِعَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ دَجَاجَةً وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الْخَامِسَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَيْضَةً فَإِذَا خَرَجَ الإِمَامُ حَضَرَتِ الْمَلاَئِكَةُ يَسْتَمِعُونَ الذِّكْرَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَسَمُرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন নাপাকির গোসলের মত গোসল সেরে প্রথমে (জুমু‘আর নামায আদায় করার জন্য) মসজিদে আসল সে যেন একটি উট কুরবানী করল। অতঃপর দ্বিতীয় মুহূর্তে যে ব্যক্তি আসল সে যেন একটি গাভী কুরবানী করল। তৃতীয় মুহূর্তে যে আসল সে যেন শিংযুক্ত একটি মেষ কুরবানী করল। চতুর্থ মুহূর্তে যে ব্যক্তি আসল সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করল। পঞ্চম মুহূর্তে যে ব্যক্তি আসল সে যেন একটি ডিম কুরবানী করল। অতঃপর ইমাম যখন (নামাযের জন্য) বের হয়ে আসেন তখন ফেরেশতাগণ আলোচনা শুনার জন্য উপস্থিত হয়ে যান।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১০৯২)।
এ অনুচ্ছেদে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ও সামুরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে । আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭. অনুচ্ছেদঃ
কোন ওজর ছাড়াই জুমু‘আর নামায ছেড়ে দেয়া
৫০০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ عَبِيدَةَ بْنِ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي الْجَعْدِ يَعْنِي الضَّمْرِيَّ، وَكَانَتْ، لَهُ صُحْبَةٌ فِيمَا زَعَمَ مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَرَكَ الْجُمُعَةَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ تَهَاوُنًا بِهَا طَبَعَ اللَّهُ عَلَى قَلْبِهِ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَسَمُرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي الْجَعْدِ حَدِيثٌ حَسَنٌ . قَالَ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنِ اسْمِ أَبِي الْجَعْدِ الضَّمْرِيِّ فَلَمْ يَعْرِفِ اسْمَهُ وَقَالَ لاَ أَعْرِفُ لَهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ هَذَا الْحَدِيثَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَلاَ نَعْرِفُ هَذَا الْحَدِيثَ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو .
আবুল জা’দ আয-যমরী মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমরের ধারণানুযায়ী তিনি একজন সাহাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক নিছক অলসতা ও গাফলতি করে পর পর তিন জুমু‘আ ছেড়ে দেয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অন্তরে মোহর মেরে দেন।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ– (১১২৫)।
এ অনুচ্ছেদে ইবনু ‘উমার, ইবনু ‘আব্বাস ও সামুরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবুল জাদের হাদীসটি হাসান। ইমাম বুখারীকে আবুল জা’দের নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি অজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, তাঁর সূত্রে কেবল এই হাদীসটি বর্ণিত আছে। মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমরের সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এই হাদীসটি জেনেছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮. অনুচ্ছেদঃ
নাই
৫০১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ مَدُّويَهْ، قَالاَ حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ دُكَيْنٍ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ ثُوَيْرٍ، عَنْ رَجُلٍ، مِنْ أَهْلِ قُبَاءَ عَنْ أَبِيهِ، وَكَانَ، مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم – قَالَ أَمَرَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ نَشْهَدَ الْجُمُعَةَ مِنْ قُبَاءَ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي هَذَا وَلاَ يَصِحُّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ وَلاَ يَصِحُّ فِي هَذَا الْبَابِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَيْءٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ الْجُمُعَةُ عَلَى مَنْ آوَاهُ اللَّيْلُ إِلَى أَهْلِهِ ” . وَهَذَا حَدِيثٌ إِسْنَادُهُ ضَعِيفٌ إِنَّمَا يُرْوَى مِنْ حَدِيثِ مُعَارِكِ بْنِ عَبَّادٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ . وَضَعَّفَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيَّ فِي الْحَدِيثِ . قَالَ وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ عَلَى مَنْ تَجِبُ الْجُمُعَةُ فَقَالَ بَعْضُهُمْ تَجِبُ الْجُمُعَةُ عَلَى مَنْ آوَاهُ اللَّيْلُ إِلَى مَنْزِلِهِ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ تَجِبُ الْجُمُعَةُ إِلاَّ عَلَى مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ .
জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে কুবা পল্লী হতে জুমু’আর নামাজে হাযির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই হাদীসটির সনদ দুর্বল
আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি আমরা কেবল উল্লেখিত সনদেই জানতে পেরেছি। এ অনুচ্ছেদে সহীহ্ সনদ সূত্রে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন হাদীস নেই। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “এমন ব্যক্তির উপরও জুমু’আ ওয়াজিব যে নামায আদায় করে রাতের প্রথম দিকেই নিজ পরিবারে পৌছে যেতে পারে”।
এটাও যঈফ হাদীস। কেননা এ হাদীসের এক রাবী আবদুল্লাহ ইবনু সাঈদ আল-মাকবূরী হাদীসশাস্ত্রে দুর্বল। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল কাত্তান তাকে দুর্বল বলেছেন। জুমু’আর নামায কার উপর ওয়াজিব তা নিয়ে আলিমদের মধ্যে মতের অমিল আছে। কেউ কেউ বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমু’আর নামায আদায় করে রাতের মধ্যেই ঘরে পৌঁছে যেতে পারে তার উপর জুমু’আ ওয়াজিব। অন্য একদল মনীষী বলেছেন, যতদূর আযানের শব্দ পৌঁছে ততদূর পর্যন্ত লোকদের উপর জুমু’আ ওয়াজিব। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এই মত দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৫০২
سَمِعْتُ أَحْمَدَ بْنَ الْحَسَنِ، يَقُولُ كُنَّا عِنْدَ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ فَذَكَرُوا عَلَى مَنْ تَجِبُ الْجُمُعَةُ فَلَمْ يَذْكُرْ أَحْمَدُ فِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا . قَالَ أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ فَقُلْتُ لأَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ فِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ أَحْمَدُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ نَعَمْ . قَالَ أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ نُصَيْرٍ حَدَّثَنَا مُعَارِكُ بْنُ عَبَّادٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الْجُمُعَةُ عَلَى مَنْ آوَاهُ اللَّيْلُ إِلَى أَهْلِهِ ” . قَالَ فَغَضِبَ عَلَىَّ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ وَقَالَ لِي اسْتَغْفِرْ رَبَّكَ اسْتَغْفِرْ رَبَّكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى إِنَّمَا فَعَلَ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ هَذَا لأَنَّهُ لَمْ يَعُدَّ هَذَا الْحَدِيثَ شَيْئًا وَضَعَّفَهُ لِحَالِ إِسْنَادِهِ .
আহমাদ ইবনু হাসান থেকে বর্ণিতঃ
আমি (তিরমিযী) আহমাদ ইবনু হাসানকে বলতে শুনেছিঃ আমরা আহমাদ ইবনু হাম্বলের নিকট উপস্থিত ছিলাম। কার উপর জুমু’আ ওয়াজিব এ নিয়ে আলোচনা জমে উঠল। আহমাদ ইবনু হাম্বল এ বিষয়ের উপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর কোন হাদীস উল্লেখ করেননি। আহমাদ ইবনু হাসান বলেন, আমি আহমাদ ইবনু হাম্বলকে বললাম, আবূ হুরাইরা (রাঃ) এ প্রসঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস! আমি বললাম, হ্যাঁ। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি রাত হতে হতে বাড়ি পৌঁছতে পারবে তাঁর উপরও জুমু’আ ওয়াজিব’। এ হাদীস শুনে আহমাদ ইবনু হাম্বল আমার উপর রেগে গেলেন এবং বললেন, তোমার আল্লাহর নিকটে ক্ষমা চাও, তোমার আল্লাহর নিকটে ক্ষমা চাও।
খুবই দুর্বল, মিশকাত (১৩৭৬)
আবূ ঈসা বলেনঃ আহমাদ ইবনু হাম্বল এ কথা এ জন্যই বলেছেন, তিনি এ হাদীসকে গণনাতেই ধরেন না। কেননা তার সনদ দুর্বল।
হাদিসের মানঃ খুবই দুর্বল
- সরাসরি
৯. অনুচ্ছেদঃ
জুমু‘আর নামাযের ওয়াক্ত
৫০৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي الْجُمُعَةَ حِينَ تَمِيلُ الشَّمْسُ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্য ঢলে গেলে জুমু‘আর নামায আদায় করতেন।
-সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ- (৯৯৫), বুখারী।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫০৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ وَجَابِرٍ وَالزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ الَّذِي أَجْمَعَ عَلَيْهِ أَكْثَرُ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ وَقْتَ الْجُمُعَةِ إِذَا زَالَتِ الشَّمْسُ كَوَقْتِ الظُّهْرِ . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَرَأَى بَعْضُهُمْ أَنَّ صَلاَةَ الْجُمُعَةِ إِذَا صُلِّيَتْ قَبْلَ الزَّوَالِ أَنَّهَا تَجُوزُ أَيْضًا . وَقَالَ أَحْمَدُ وَمَنْ صَلاَّهَا قَبْلَ الزَّوَالِ فَإِنَّهُ لَمْ يَرَ عَلَيْهِ إِعَادَةً .
উসমান ইবনু আব্দুর রহমান তাইমী থেকে বর্ণিতঃ
উসমান ইবনু আব্দুর রহমান তাইমীর সূত্রেও আনাস (রাঃ) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে।
এ অনুচ্ছেদে সালামা ইবনুল আকওয়া, জাবির ও যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আনাস (রাঃ) –এর হাদীসটি হাসান সহীহ্। বেশিরভাগ মনীষীর মতে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর জুমু‘আর ওয়াক্ত শুরু হয়, যেমন যুহরের ওয়াক্ত। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এই মত ব্যক্ত করেছেন। একদল ‘আলিমের মতে, জুমু‘আর নামায সূর্য ঢলে যাওয়ার পূর্বে আদায় করে নিলে তাও জায়িয এবং নামায হয়ে যাবে। ইমাম আহমাদ বলেন, যে ব্যক্তি সূর্য ঢলে যাওয়ার পূর্বে জুমু‘আ আদায় করে নিল আমার মতে তার নামায আবার আদায় করা তার উপর ওয়াজিব নয়।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
- সরাসরি
১০. অনুচ্ছেদঃ
মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে খুতবা দেওয়া
৫০৫
حَدَّثَنَا أَبُو حَفْصٍ، عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ الْفَلاَّسُ الصَّيْرَفِيُّ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ، وَيَحْيَى بْنُ كَثِيرٍ أَبُو غَسَّانَ الْعَنْبَرِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ الْعَلاَءِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَخْطُبُ إِلَى جِذْعٍ فَلَمَّا اتَّخَذَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ حَنَّ الْجِذْعُ حَتَّى أَتَاهُ فَالْتَزَمَهُ فَسَكَنَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسٍ وَجَابِرٍ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ وَأُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأُمِّ سَلَمَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ . وَمُعَاذُ بْنُ الْعَلاَءِ هُوَ بَصْرِيٌّ وَهُوَ أَخُو أَبِي عَمْرِو بْنِ الْعَلاَءِ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খেজুর গাছের গুড়ির সাথে ভর দিয়ে জুমু‘আর বক্তৃতা করতেন। যখন মিম্বার তৈরী করা হল খেজুরের গুঁড়িটা কাঁদতে লাগল। তিনি গাছটির নিকট গেলেন এবং তা স্পর্শ করলেন। ফলে এটা চুপ করল।
-সহীহ। সহীহাহ্- (২১৭৪), বুখারী।
এ অনুচ্ছেদে আনাস, জাবির, সাহল ইবনু সা’দ, উবাই ইবনু কা’ব, ইবনু ‘আব্বাস ও উম্মু সালামা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘উমারের হাদীসটি হাসান, গারীব সহীহ্। মু‘আয ইবনুল ‘আলা বাসরার অধিবাসী, তিনি আবূ ‘আমর ইবনুল আলা এর ভাই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১. অনুচ্ছেদঃ
দুই খুতবার মাঝখানে বসা
৫০৬
حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ مَسْعَدَةَ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَخْطُبُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ ثُمَّ يَجْلِسُ ثُمَّ يَقُومُ فَيَخْطُبُ قَالَ مِثْلَ مَا تَفْعَلُونَ الْيَوْمَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهُوَ الَّذِي رَآهُ أَهْلُ الْعِلْمِ أَنْ يَفْصِلَ بَيْنَ الْخُطْبَتَيْنِ بِجُلُوسٍ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর দিনে খুতবা দিতেন, অতঃপর বসতেন, অতঃপর উঠে আবার খুতবা দিতেন, যেমন আজকালকার দিনে তোমরা কর।
সহীহ্ । সহীহ্ আবূ দাঊদ- (১০০২), ইরওয়া- (৬০৪), বুখারী ও মুসলিম সংক্ষিপ্তভাবে।
এ অনুচ্ছেদে ইবনু ‘আব্বাস, জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ ও জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘উমারের হাদীসটি হাসান সহীহ্। বিশেষজ্ঞগণ দুই খুতবার মাঝখানে বসে উভয় খুতবার মধ্যে দূরত্ব রচনা করার কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২. অনুচ্ছেদঃ
খুতবা সংক্ষিপ্ত করা
৫০৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَهَنَّادٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ كُنْتُ أُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَانَتْ صَلاَتُهُ قَصْدًا وَخُطْبَتُهُ قَصْدًا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ وَابْنِ أَبِي أَوْفَى . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে নামায আদায় করেছি। তাঁর নামায ছিল মাঝারি ধরণের এবং খুতবাও ছিল মাঝারি ধরণের (সংক্ষেপও নয়, দীর্ঘও নয়)।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১০৬), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে ‘আম্মার ইবনু ইয়াসির ও ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ জাবির ইবনু সামুরার হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৩. অনুচ্ছেদঃ
মিম্বারের উপর কুরআন পাঠ করা
৫০৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ عَلَى الْمِنْبَرِ (ونَادَوُا يَا مَالِكُ) . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ وَهُوَ حَدِيثُ ابْنِ عُيَيْنَةَ . وَقَدِ اخْتَارَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ يَقْرَأَ الإِمَامُ فِي الْخُطْبَةِ آيًا مِنَ الْقُرْآنِ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَإِذَا خَطَبَ الإِمَامُ فَلَمْ يَقْرَأْ فِي خُطْبَتِهِ شَيْئًا مِنَ الْقُرْآنِ أَعَادَ الْخُطْبَةَ .
সাফওয়ান ইবনু ইয়া’লা (রাঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (ইয়া’লা) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে “ওয়া নাদাও ইয়া মালিকু……” (সূরাঃ যুখরুফ- ৭৭) আয়াত পাঠ করতে শুনেছি।
-সহীহ্। ইরওয়া- (৩/৭৫), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরাইরা ও জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইয়া’লা ইবনু উমাইয়ার হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। একদল বিদ্বান জুমু’আর খুতবায় কুরআনের আয়াত পাঠ করার নীতি অনুসরণ করেছেন। ইমাম শাফিঈ বলেছেন, ইমাম যদি তাঁর খুতবার মধ্যে কুরআনের আয়াত পাঠ না করে থাকে তবে তাকে আবার খুতবা দিতে হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৪. অনুচ্ছেদঃ
ইমামের খুতবার সময় তার দিকে মুখ করে বসতে হবে
৫০৯
حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ يَعْقُوبَ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ بْنِ عَطِيَّةَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَوَى عَلَى الْمِنْبَرِ اسْتَقْبَلْنَاهُ بِوُجُوهِنَا . قَالَ أَبُو عِيسَى وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ وَحَدِيثُ مَنْصُورٍ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ الْفَضْلِ بْنِ عَطِيَّةَ . وَمُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ بْنِ عَطِيَّةَ ضَعِيفٌ ذَاهِبُ الْحَدِيثِ عِنْدَ أَصْحَابِنَا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ يَسْتَحِبُّونَ اسْتِقْبَالَ الإِمَامِ إِذَا خَطَبَ . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَالشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَلاَ يَصِحُّ فِي هَذَا الْبَابِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم شَيْءٌ .
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মিম্বারে উঠতেন তখন আমরা তাঁর দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতাম।
-সহীহ্। সহীহাহ্- (২০৮০), বুখারী অনুরূপ।
এ অনুচ্ছেদে ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। উল্লেখিত হাদীসটি যঈফ। কেননা এর এক বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইবনুল ফযল হাদীসশাস্ত্রে দুর্বল এবং তাঁর স্মারণশক্তি ক্ষীণ। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী ও অন্যরা খুতবা চলাকালে ইমামের দিকে মুখ করে বসা পছন্দ করেছেন। সুফিয়ান সাওরী, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক একই রকম ‘আমল করেছেন।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ অনুচ্ছেদে কোন সহীহ্ হাদীস নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৫. অনুচ্ছেদঃ
ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় কোন ব্যক্তি আসলে তাঁর দুই রাক’আত নামায আদায় করা প্রসঙ্গে
৫১০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ بَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِذْ جَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” أَصَلَّيْتَ ” . قَالَ لاَ . قَالَ ” قُمْ فَارْكَعْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ أَصَحُّ شَيْءٍ فِي هَذَا الْبَابِ .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় একটি লোক এসে উপস্থিত হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি কি (তাহিয়্যাতুল মসজিদ) নামায আদায় করেছ? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ ওঠো এবং নামায আদায় কর।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১১২), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ অনুচ্ছেদে এটি সর্বাধিক সহীহ্ হাদীস।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫১১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عِيَاضِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي سَرْحٍ، أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، دَخَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَمَرْوَانُ يَخْطُبُ فَقَامَ يُصَلِّي فَجَاءَ الْحَرَسُ لِيُجْلِسُوهُ فَأَبَى حَتَّى صَلَّى فَلَمَّا انْصَرَفَ أَتَيْنَاهُ فَقُلْنَا رَحِمَكَ اللَّهُ إِنْ كَادُوا لَيَقَعُوا بِكَ . فَقَالَ مَا كُنْتُ لأَتْرُكَهُمَا بَعْدَ شَيْءٍ رَأَيْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . ثُمَّ ذَكَرَ أَنَّ رَجُلاً جَاءَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِي هَيْئَةٍ بَذَّةٍ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَأَمَرَهُ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ . قَالَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ كَانَ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ إِذَا جَاءَ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ وَكَانَ يَأْمُرُ بِهِ وَكَانَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُقْرِئُ يَرَاهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَسَمِعْتُ ابْنَ أَبِي عُمَرَ يَقُولُ قَالَ سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ كَانَ مُحَمَّدُ بْنُ عَجْلاَنَ ثِقَةً مَأْمُونًا فِي الْحَدِيثِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ وَسَهْلِ بْنِ سَعْدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِذَا دَخَلَ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ فَإِنَّهُ يَجْلِسُ وَلاَ يُصَلِّي . وَهُوَ قَوْلُ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ . وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ . حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا الْعَلاَءُ بْنُ خَالِدٍ الْقُرَشِيُّ قَالَ رَأَيْتُ الْحَسَنَ الْبَصْرِيَّ دَخَلَ الْمَسْجِدَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ . إِنَّمَا فَعَلَ الْحَسَنُ اتِّبَاعًا لِلْحَدِيثِ وَهُوَ رَوَى عَنْ جَابِرٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَذَا الْحَدِيثَ .
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ সারহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) জুমু’আর দিন (মসজিদে) ঢুকলেন। মারওয়ান তখন খুতবা দিচ্ছিল। তিনি নামায আদায় করতে দাঁড়ালেন। মারওয়ানের চৌকিদার তাঁকে বসিয়ে দেওয়ার (নামায হতে বিরত রাখার) জন্য আসল। কিন্তু তিনি তা মানলেন না এবং নামায আদায় করলেন। তিনি অবসর হলে আমরা তাঁর নিকট আসলাম। আমরা বললাম, আল্লাহ তা’আলা আপনার উপর দয়া করুন, তারা আপনাকে পরাজিত করার জন্য এসেছিল। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে এটা করতে দেখেছি। এরপর আমি এ দুই রাক’আত কখনও ছাড়তে পারি না। তারপর তিনি উল্লেখ করলেন, জুমু’আর দিন এক ব্যক্তি তাড়াহুড়া করে উস্কখুস্ক অবস্থায় মসজিদে আসল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন জুমু’আর খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি তাকে নির্দেশ দিলে সে দুই রাক’আত নামায আদায় করল। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুতবা দিতে থাকলেন।
-হাসান সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১১৩)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ হাদীসের এক রাবী ইবনু আবী ‘উমার বলেন, ইবনু উআইনা মসজিদে এসে দুই রাক’আত নামায আদায় করতেন; ইমাম তখন খুতবা দিতে থাকতেন। তিনি এটা আদায় করার নির্দেশও দিতেন। আবূ আবদুর রহমান আল-মাকবুরীও তাঁকে এরকম করতে দেখেছেন। মুহাম্মাদ ইবনু ‘আজলান একজন সিকাহ রাবী এবং হাদীসশাস্ত্রে তিনি নির্ভরযোগ্য ছিলেন। এ অনুচ্ছেদে আবূ হুরাইরা, জাবির এবং সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
একদল আলিম এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক একই রকম মত দিয়েছেন। অপর একদল বিদ্বান বলেছেন, ইমাম যখন খুতবা দিতে থাকেন তখন কোন লোক আসলে সে বসে যাবে এবং নামায আদায় করবে না। সুফিয়ান সাওরী ও কুফাবাসীগণ এই মত পালন করেন। কিন্তু প্রথম মতই বেশি সহীহ্।
‘আলা ইবনু খালিদ আল-কুরাশী (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি হাসান আল-বাসরীকে জুমু’আর দিন মসজিদে ঢুকতে দেখলাম, ইমাম তখন খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি দুই রাক’আত নামায আদায় করলেন, তারপর বসলেন। হাদীসের অনুসরণ করার জন্যই হাসান এরকমটি করলেন। তিনি এ সম্পর্কিত হাদীস জাবির (রাঃ) -এর মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
১৬. অনুচ্ছেদঃ
খুতবা চলাকালে কথাবার্তা বলা মাকরূহ
৫১২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ قَالَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ أَنْصِتْ فَقَدْ لَغَا ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ أَبِي أَوْفَى وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا لِلرَّجُلِ أَنْ يَتَكَلَّمَ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ وَقَالُوا إِنْ تَكَلَّمَ غَيْرُهُ فَلاَ يُنْكِرْ عَلَيْهِ إِلاَّ بِالإِشَارَةِ . وَاخْتَلَفُوا فِي رَدِّ السَّلاَمِ وَتَشْمِيتِ الْعَاطِسِ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ فَرَخَّصَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي رَدِّ السَّلاَمِ وَتَشْمِيتِ الْعَاطِسِ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ وَهُوَ قَوْلُ أَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ . وَكَرِهَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنَ التَّابِعِينَ وَغَيْرِهِمْ ذَلِكَ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি জুমু’আর দিনে ইমামের খুতবা দানকালে (অন্যকে) বুলল, ‘চুপ কর’ সে অকারণে কথা বলল।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১১০), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে ইবনু আবূ আওফা ও জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহীহ্। বিশেষজ্ঞগণ এ হাদীসের উপর আমল করেছেন। তাঁরা ইমামের খুতবা চলাকালে কথা বলাকে মাকরূহ বলেছেন। যদি কেউ কথা বলে তবে হাত দিয়ে ইশারায় তাকে থামিয়ে দিবে। কিন্তু তাঁরা সালামের উত্তর দেওয়া ও হাঁচির জবাব দেওয়ার ব্যাপারে মত পার্থক্য করেছেন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক ইমামের খুতবা চলার সময়ে সালামের উত্তর দেওয়া ও হাঁচির উত্তরে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলার সম্মতি দিয়েছেন। একদল তাবিঈ এটাকে মাকরূহ বলেছেন। ইমাম শাফিঈ এই মত গ্রহণ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৭. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর দিন লোকদের ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া মাকরূহ
৫১৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا رِشْدِينُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ زَبَّانَ بْنِ فَائِدٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ الْجُهَنِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَخَطَّى رِقَابَ النَّاسِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ اتَّخَذَ جِسْرًا إِلَى جَهَنَّمَ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ الْجُهَنِيِّ حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ رِشْدِينَ بْنِ سَعْدٍ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ كَرِهُوا أَنْ يَتَخَطَّى الرَّجُلُ رِقَابَ النَّاسِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَشَدَّدُوا فِي ذَلِكَ . وَقَدْ تَكَلَّمَ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي رِشْدِينَ بْنِ سَعْدٍ وَضَعَّفَهُ مِنْ قِبَلِ حِفْظِهِ .
সাহাল ইবনু মুআয ইবনু আনাস (রাঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (মুয়ায রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জুমু’আর দিন (নামাজের সময়) যে ব্যক্তি লোকের ঘাড় টপকিয়ে (কাতার ভেদ করে) সামনে যাবার চেষ্টা করল সে যেন (এই কাজ টিকে) জাহান্নামের পুল (সাঁকো) বানাল।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (১১১৬)।
এ অনুচ্ছেদে জাবির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। কেবল রিশদীন ইবনু সা’দের সূত্রেই আমরা এ হাদীস জানতে পেরেছি। বিশেষজ্ঞগণ এ হাদীসের পরিপ্রেক্ষিতে লোকদের ঘাড় টপকিয়ে কোন ব্যক্তির সামনে যাওয়া মাকরূহ বলেছেন এবং কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন। এ হাদীসের রাবী রিশদীন ইবনু সা’দকে কিছু হাদীস বিশারদ স্মরণশক্তির দিক হতে দুর্বল বলেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
১৮. অনুচ্ছেদঃ
ইমামের খুতবা চলাকালে পায়ের নলা জড়িয়ে বসা মাকরূহ
৫১৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حُمَيْدٍ الرَّازِيُّ، وَعَبَّاسُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدُّورِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُقْرِئُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي أَيُّوبَ، حَدَّثَنِي أَبُو مَرْحُومٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنِ الْحَبْوَةِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَأَبُو مَرْحُومٍ اسْمُهُ عَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ مَيْمُونٍ . وَقَدْ كَرِهَ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ الْحَبْوَةَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ وَرَخَّصَ فِي ذَلِكَ بَعْضُهُمْ مِنْهُمْ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ وَغَيْرُهُ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ لاَ يَرَيَانِ بِالْحَبْوَةِ وَالإِمَامُ يَخْطُبُ بَأْسًا .
সাহল ইবনু মুআয (রাঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু’আর দিনে ইমামের খুতবা চলার সময়ে দুই হাতে (পায়ের) নলা জড়িয়ে ধরে বসতে নিষেধ করেছেন।
-হাসান। মিশকাত- (১২৯৩), সহীহ্ আবূ দাঊদ- (১০১৭)
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। একদল বিদ্বান জুমু’আর দিনে ইমাম খুৎবা দান কালে পায়ের নলা জড়িয়ে ধরে বসাকে মাকরূহ বলেছেন, কিছু কিছু বিদ্বান এর অনুমতি দিয়েছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু উমার তাদের একজন। ইমাম আহমাদ ও ইসহাকের এটাই অভিমত।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
১৯. অনুচ্ছেদঃ
মিম্বারে অবস্থানকালে দু’আর মধ্যে হাত তোলা মাকরূহ
৫১৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا حُصَيْنٌ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَارَةَ بْنَ، رُوَيْبَةَ الثَّقَفِيَّ، وَبِشْرُ بْنُ مَرْوَانَ، يَخْطُبُ فَرَفَعَ يَدَيْهِ فِي الدُّعَاءِ فَقَالَ عُمَارَةُ قَبَّحَ اللَّهُ هَاتَيْنِ الْيُدَيَّتَيْنِ الْقُصَيِّرَتَيْنِ لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمَا يَزِيدُ عَلَى أَنْ يَقُولَ هَكَذَا وَأَشَارَ هُشَيْمٌ بِالسَّبَّابَةِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
উমারা ইবনু রুওয়াইবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদিন বিশর ইবনু মারওয়ান জুমু’আর খুতবা দেওয়াকালে দু’আ করার সময় উভয় হাত উপরে তুললেন। এতে ‘উমারা বললেন, আল্লাহ এই বেঁটে হাত দুটিকে কুৎসিত করুন। আমি নিশ্চিতরূপে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে দেখেছি, তিনি নিজের হাত দিয়ে এর বেশি কিছু করতেন না। (অধঃস্তন রাবী) হুশাইম এ কথা বলার সময় নিজের তর্জনী দ্বারা ইঙ্গিত করলেন।
-সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ- (১০১২), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২০. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর আযান সম্পর্কে
৫১৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ خَالِدٍ الْخَيَّاطُ، عَنِ ابْنِ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنِ السَّائِبِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ كَانَ الأَذَانُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ إِذَا خَرَجَ الإِمَامُ وَإِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلَمَّا كَانَ عُثْمَانُ رضى الله عنه زَادَ النِّدَاءَ الثَّالِثَ عَلَى الزَّوْرَاءِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাক্র ও উমার (রাঃ) -এর যুগে ইমাম বের হয়ে আসলে এবং নামায শুরু হওয়ার সময় জুমু’আর আযান হত। উসমান (রাঃ) খালীফা হওয়ার পর ‘যাওরায়’ তৃতীয় আযানের প্রচলন করেন।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১৩৫), বুখারী।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২১. অনুচ্ছেদঃ
ইমামের মিম্বার হতে নামার পর কথা বলা
৫১৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُكَلَّمُ بِالْحَاجَةِ إِذَا نَزَلَ عَنِ الْمِنْبَرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ . قَالَ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ وَهِمَ جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ فِي هَذَا الْحَدِيثِ وَالصَّحِيحُ مَا رُوِيَ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَأَخَذَ رَجُلٌ بِيَدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَمَا زَالَ يُكَلِّمُهُ حَتَّى نَعَسَ بَعْضُ الْقَوْمِ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَالْحَدِيثُ هُوَ هَذَا . وَجَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ رُبَّمَا يَهِمُ فِي الشَّىْءِ وَهُوَ صَدُوقٌ . قَالَ مُحَمَّدٌ وَهِمَ جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ فِي حَدِيثِ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي ” . قَالَ مُحَمَّدٌ وَيُرْوَى عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ قَالَ كُنَّا عِنْدَ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ فَحَدَّثَ حَجَّاجٌ الصَّوَّافُ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ تَقُومُوا حَتَّى تَرَوْنِي ” . فَوَهِمَ جَرِيرٌ فَظَنَّ أَنَّ ثَابِتًا حَدَّثَهُمْ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মিম্বার হতে নামতেন তখন প্রয়োজনবোধে কথা বলতেন।
শাজ, ইবনু মাজাহ (১১১৭)
আমি (তিরমিযী) এ হাদীসটি কেবলমাত্র জারীর ইবনু হাযিমের সূত্রে জানতে পেরেছি। আমি মুহাম্মাদকে বলতে শুনেছি, জারীর ইবনু হাযিম এ হাদীসে সংশয়ে পড়ে গেছেন। আনাসের সূত্রে সাবিত যে বর্ণনা করেছেন সেটাই সহীহ্। তাতে আছেঃ “নামাযের জন্য ইকামাত দেওয়া হল। এমন সময় এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর হাত ধরে কথা বলতে থাকল। এমনকি লোকেরা নিদ্রার আবেশে আচ্ছন্ন হতে লাগল”।
মুহাম্মাদ বলেন, আসলে হাদীস হল এটি। কখনও কখনও জারীর ইবনু হাযিম অনুমানে লিপ্ত হন কিন্তু তিনি সত্যবাদী। যেমন এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “নামাযের জন্য ইকামাত হয়ে গেলেও আমাকে না দেখা পর্যন্ত তোমরা নামাযে দাঁড়াবে না”।
জারীরের বর্ণিত সনদের পরিপ্রেক্ষিতে এ হাদীসটি ভুল কিন্তু অন্য সনদে সহীহ্ হাদীস। তিনি রাবীদের সনদ বর্ণনায় ত্রুটি করে ফেলেন। যেমন হাদীসটি সাবিত আল-বুনানী আবূ কাতাদা (রাঃ) -এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু জারীর সংশয়ের বশবর্তী হয়ে আনাস (রাঃ) –এর সূত্রে বর্ণিত বলেছেন।
হাদিসের মানঃ শায
- সরাসরি
৫১৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ لَقَدْ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ مَا تُقَامُ الصَّلاَةُ يُكَلِّمُهُ الرَّجُلُ يَقُومُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْقِبْلَةِ فَمَا يَزَالُ يُكَلِّمُهُ فَلَقَدْ رَأَيْتُ بَعْضَنَا يَنْعَسُ مِنْ طُولِ قِيَامِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি ইক্বামাত হয়ে যাওয়ার পর এক ব্যক্তিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে কথা বলতে দেখলাম। লোকটি তাঁর ও কিবলার মাঝখানে দাঁড়ানো ছিল। সে অনেক সময় কথা বলল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার ফলে আমি লোকদেরকে নিদ্রার আবেশে আচ্ছন্ন হতে দেখেছি।
-সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ- (১৯৭), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর নামাযের কিরা’আত
৫১৯
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ اسْتَخْلَفَ مَرْوَانُ أَبَا هُرَيْرَةَ عَلَى الْمَدِينَةِ وَخَرَجَ إِلَى مَكَّةَ فَصَلَّى بِنَا أَبُو هُرَيْرَةَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَقَرَأَ سُورَةَ الْجُمُعَةِ وَفِي السَّجْدَةِ الثَّانِيَةِ: (ِإذَا جَاءَكَ الْمُنَافِقُونَ ) قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ فَأَدْرَكْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ فَقُلْتُ لَهُ تَقْرَأُ بِسُورَتَيْنِ كَانَ عَلِيٌّ يَقْرَأُ بِهِمَا بِالْكُوفَةِ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ بِهِمَا . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَالنُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ وَأَبِي عِنَبَةَ الْخَوْلاَنِيِّ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَرُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَقْرَأُ فِي صَلاَةِ الْجُمُعَةِ بِـ ( سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى ) وَ (هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْغَاشِيَةِ ) . عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي رَافِعٍ كَاتِبُ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ .
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আযাদকৃত গোলাম আবূ রাফি (রাঃ) -এর পুত্র উবাইদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার মারওয়ান আবূ হুরাইরা (রাঃ) -কে মাদীনায় তাঁর প্রতিনিধি করে মক্কায় চলে গেলেন। আবূ হুরাইরা (রাঃ) আমাদের জুমু‘আর নামায আদায় করালেন। তিনি প্রথম রাক‘আতে সূরা জুমু‘আ এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে সূরা ইযা জাআকাল মুনাফিকূন পাঠ করলেন। উবাইদুল্লাহ বলেন, আমি আবূ হুরাইরার সাথে দেখা করে তাঁকে বললাম, আপনি এমন দুটি সূরা পাঠ করলেন যা ‘আলী (রাঃ) কুফায় পাঠ করতেন। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে এ দুটো সূরা পাঠ করতে শুনেছি।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১১৮), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে ইবনু ‘আব্বাস, নুমান ইবনু বাশীর ও আবূ ইনাবা আল-খাওলানী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ আবূ হুরাইরার হাদীসটি হাসান সহীহ্। অপর এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর নামাযে ‘সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আলা’ ও ‘হাল আতাকা হাদীসুল গাশিয়া’ সূরা পাঠ করতেন। উবাইদুল্লাহ ইবনু আবী রাফি‘ ‘আলী (রাঃ) -এর কাতিব (সচিব) ছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩. অনুচ্ছেদঃ
জুমু‘আর দিন ভোরের নামাযের কিরা‘আত প্রসঙ্গে
৫২০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَخْبَرَنَا شَرِيكٌ، عَنْ مُخَوَّلِ بْنِ رَاشِدٍ، عَنْ مُسْلِمٍ الْبَطِينِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ * (تَنْزِيلُ ) السَّجْدَةَ وَ (هَلْ أَتَى عَلَى الإِنْسَانِ ) . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ سَعْدٍ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رَوَاهُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَشُعْبَةُ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ مُخَوَّلٍ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর দিন ফজরের নামাযে ‘তানযীলুস সাজদাহ’ এবং হাল আতা ‘আলাল ইনসান’ সূরা দুটি পাঠ করতেন।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (৮২১), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে সা’দ, ইবনু মাসঊদ ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহীহ্। সুফিয়ান সাওরী ও অন্যরা এ হাদীসটি মুখাওয়ালের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৪. অবুচ্ছেদঃ
জুমু‘আর (ফরযের) পূর্বের ও পরের নামায
৫২১
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّي بَعْدَ الْجُمُعَةِ رَكْعَتَيْنِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَيْضًا . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ .
সালিম (রহঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর (ফরযের) পরে দুই রাক‘আত নামায আদায় করতেন।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১৩১), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে জাবির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। নাফি (রহঃ) ইবনু ‘উমার (রাঃ) -এর নিকট হতে একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। একদল বিশেষজ্ঞ এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। ইমাম শাফিঈ ও আহমাদ একই রকম কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫২২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ كَانَ إِذَا صَلَّى الْجُمُعَةَ انْصَرَفَ فَصَلَّى سَجْدَتَيْنِ فِي بَيْتِهِ ثُمَّ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصْنَعُ ذَلِكَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি জুমু‘আর (ফরয) নামায শেষ করে বাড়িতে গিয়ে দুই রাক‘আত নামায আদায় করতেন। তারপর তিনি বলতেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটা করতেন।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১৩০), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫২৩
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ كَانَ مِنْكُمْ مُصَلِّيًا بَعْدَ الْجُمُعَةِ فَلْيُصَلِّ أَرْبَعًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ قَالَ كُنَّا نَعُدُّ سُهَيْلَ بْنَ أَبِي صَالِحٍ ثَبْتًا فِي الْحَدِيثِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ . وَرُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّي قَبْلَ الْجُمُعَةِ أَرْبَعًا وَبَعْدَهَا أَرْبَعًا . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رضى الله عنه أَنَّهُ أَمَرَ أَنْ يُصَلَّى بَعْدَ الْجُمُعَةِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَرْبَعًا . وَذَهَبَ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ إِلَى قَوْلِ ابْنِ مَسْعُودٍ . وَقَالَ إِسْحَاقُ إِنْ صَلَّى فِي الْمَسْجِدِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ صَلَّى أَرْبَعًا وَإِنْ صَلَّى فِي بَيْتِهِ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ . وَاحْتَجَّ بِأَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي بَعْدَ الْجُمُعَةِ رَكْعَتَيْنِ فِي بَيْتِهِ وَحَدِيثِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ كَانَ مِنْكُمْ مُصَلِّيًا بَعْدَ الْجُمُعَةِ فَلْيُصَلِّ أَرْبَعًا ” . قَالَ أَبُو عِيسَى وَابْنُ عُمَرَ هُوَ الَّذِي رَوَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّي بَعْدَ الْجُمُعَةِ رَكْعَتَيْنِ فِي بَيْتِهِ وَابْنُ عُمَرَ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي الْمَسْجِدِ بَعْدَ الْجُمُعَةِ رَكْعَتَيْنِ وَصَلَّى بَعْدَ الرَّكْعَتَيْنِ أَرْبَعًا .
حَدَّثَنَا بِذَلِكَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنْ عَطَاءٍ، قَالَ رَأَيْتُ ابْنَ عُمَرَ صَلَّى بَعْدَ الْجُمُعَةِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى بَعْدَ ذَلِكَ أَرْبَعًا . حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَخْزُومِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ قَالَ مَا رَأَيْتُ أَحَدًا أَنَصَّ لِلْحَدِيثِ مِنَ الزُّهْرِيِّ وَمَا رَأَيْتُ أَحَدًا الدَّنَانِيرُ وَالدَّرَاهِمُ أَهْوَنُ عَلَيْهِ مِنْهُ إِنْ كَانَتِ الدَّنَانِيرُ وَالدَّرَاهِمُ عِنْدَهُ بِمَنْزِلَةِ الْبَعْرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى سَمِعْت ابْنَ أَبِي عُمَرَ قَال سَمِعْتُ سُفْيَانَ بْنَ عُيَيْنَةَ يَقُولُ كَانَ عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ أَسَنَّ مِنْ الزُّهْرِيِّ
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জুমু‘আর নামাযের পর নামায আদায় করতে চায় সে যেন চার রাক‘আত আদায় করে।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১৩২)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান।
সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা বলেন, সুহাইল ইবনু আবূ সালিহ হাদীসশাস্ত্রে একজন নির্ভরযোগ্য রাবী। একদল ‘আলিম এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) জুমু‘আর (ফরযের) পূর্বে চার রাক‘আত এবং পরে চার রাক‘আত (সুন্নাত) নামায আদায় করতেন। ‘আলী (রাঃ) প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, তিনি জুমু‘আর পর দুই রাক‘আত তারপর চার রাক‘আত আদায় করার হুকুম দিয়েছেন। সুফিয়ান সাওরী ও ইবনুল মুবারাক (রহঃ) ইবনু মাসঊদের মত গ্রহণ করেছেন। ইসহাক বলেছেন, জুমু‘আর দিন যদি মসজিদে (সুন্নাত) নামায আদায় করা হয় তবে চার রাক‘আত আদায় করবে, আর যদি ঘরে আদায় করে তবে দুই রাক‘আত আদায় করবে। তিনি দলীল হিসাবে এ হাদীস উল্লেখ করেছেন,
“রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমু‘আর পর বাড়িতে গিয়ে দুই রাক‘আত (সুন্নাত) নামায আদায় করেছেন।”
তিনি আরো বলেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জুমু‘আর (ফরযের) পরে নামায আদায় করতে চায় সে যেন চার রাক‘আত আদায় করে।”
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু উমার (রাঃ) যিনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে বর্ণনা করেছেন, “জুমু‘আর পর তিনি বাড়িতে গিয়ে দুই রাক‘আত আদায় করতেন।” তিনিও রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরে জুমু‘আর নামাযের পর মসজিদেই দুই রাক‘আত নামায আদায় করেছেন, তারপর চার রাক‘আত আদায় করেছেন।
আতা (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘উমার (রাঃ) -কে জুমু‘আর (ফরয নামাযের) পর দুই রাক‘আত তারপর চার রাক‘আত নামায আদায় করতে দেখেছি।
-সহীহ্। আবূ দাঊদ (১০৩৫, ১০৩৮)
‘আমর ইবনু দীনার বলেন, যুহরীর চাইতে ভালভাবে হাদীস বর্ণনা করতে আমি আর কাউকে দেখতে পাইনি এবং তাঁর মত আর কাউকে ধন-দৌলতকে তুচ্ছ ভাবিতে দেখিনি। তাঁর দৃষ্টিতে ধন-দৌলত উটের মলতুল্য তুচ্ছ জিনিস। ‘আমর ইবনু দীনার যুহরীর চাইতে বেশি বয়সী ছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫. অনুচ্ছেদঃ
যে ব্যক্তি জুমু‘আর নামাযের এক রাক‘আত পায়
৫২৪
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، وَسَعِيدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَغَيْرُ، وَاحِدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ أَدْرَكَ مِنَ الصَّلاَةِ رَكْعَةً فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلاَةَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ قَالُوا مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ الْجُمُعَةِ صَلَّى إِلَيْهَا أُخْرَى وَمَنْ أَدْرَكَهُمْ جُلُوسًا صَلَّى أَرْبَعًا . وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি (ইমামের সাথে) এক রাক‘আত নামায পেল সে পূর্ণ নামায পেল।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১২২), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বেশিরভাগ সাহাবা ও অন্যান্যরা উল্লেখিত হাদীসের পক্ষে মত দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমামের সাথে জুমু‘আর এক রাক‘আত নামায পায় সে এর সাথে বাকী রাক‘আত পূর্ণ করবে। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় রাক‘আতের বৈঠকে জামা‘আতে উপস্থিত হয় সে চার রাক‘আত (যুহর) আদায় করবে। সুফিয়ান সাওরী, ইবনুল মুবারাক, শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম মত দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৬. অনুচ্ছেদঃ
জুমু‘আর দিন দুপুরের বিশ্রাম (কাইলুলা)
৫২৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، رضى الله عنه قَالَ مَا كُنَّا نَتَغَدَّى فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ نَقِيلُ إِلاَّ بَعْدَ الْجُمُعَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضى الله عنه . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে জুমু‘আর নামাযের পরেই দুপুরের খাবার খেতাম ও বিশ্রাম নিতাম।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১০৯৯), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭. অনুচ্ছেদঃ
জুমু‘আর নামাযের সময় তন্দ্রা আসলে নিজ স্থান হতে উঠে যাবে
৫২৬
حَدَّثَنَا أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، وَأَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا نَعَسَ أَحَدُكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَلْيَتَحَوَّلْ مِنْ مَجْلِسِهِ ذَلِكَ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জুমু‘আর দিন তোমাদের কোন ব্যক্তির ঘুমের আবেশ আসলে সে যেন নিজ জায়গা হতে উঠে যায়।
-সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ- (১০২৫), তা‘লীক ইবনু খুজাইমাহ্- (১৮১৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর দিন সফর করা
৫২৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الْحَجَّاجِ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَبْدَ اللَّهِ بْنَ رَوَاحَةَ فِي سَرِيَّةٍ فَوَافَقَ ذَلِكَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَغَدَا أَصْحَابُهُ فَقَالَ أَتَخَلَّفُ فَأُصَلِّي مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ أَلْحَقُهُمْ . فَلَمَّا صَلَّى مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رَآهُ فَقَالَ ” مَا مَنَعَكَ أَنْ تَغْدُوَ مَعَ أَصْحَابِكَ ” . فَقَالَ أَرَدْتُ أَنْ أُصَلِّيَ مَعَكَ ثُمَّ أَلْحَقَهُمْ . قَالَ ” لَوْ أَنْفَقْتَ مَا فِي الأَرْضِ جَمِيعًا مَا أَدْرَكْتَ فَضْلَ غَدْوَتِهِمْ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . قَالَ عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ قَالَ شُعْبَةُ لَمْ يَسْمَعِ الْحَكَمُ مِنْ مِقْسَمٍ إِلاَّ خَمْسَةَ أَحَادِيثَ . وَعَدَّهَا شُعْبَةُ وَلَيْسَ هَذَا الْحَدِيثُ فِيمَا عَدَّ شُعْبَةُ فَكَأَنَّ هَذَا الْحَدِيثَ لَمْ يَسْمَعْهُ الْحَكَمُ مِنْ مِقْسَمٍ . وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي السَّفَرِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَلَمْ يَرَ بَعْضُهُمْ بَأْسًا بِأَنْ يَخْرُجَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِي السَّفَرِ مَا لَمْ تَحْضُرِ الصَّلاَةُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِذَا أَصْبَحَ فَلاَ يَخْرُجْ حَتَّى يُصَلِّيَ الْجُمُعَةَ .
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)–কে একটি সৈন্য বাহিনীর সাথে পাঠালেন। ঘটনাক্রমে তা ছিল জুমু’আর দিন। তাঁর সঙ্গীরা সকাল বেলা রওয়ানা হয়ে গেলেন। তিনি বললেন, আমি পিছনে থেকে যেতে চাই, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সাথে নামায আদায় করব, তারপর তাদের সাথে মিলিত হব। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সাথে নামায আদায় করলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে দেখে ফেললেন। তিনি তাঁকে বললেন, সকাল বেলা তোমার সঙ্গীদের সাথে একত্রে যেতে কোন্ জিনিষ তোমাকে বাধা দিল? তিনি বললেন, আমি আপনার সাথে নামায আদায় করার ইচ্ছা করেছি, তারপর তাদের সাথে গিয়ে মিলিত হব। তিনি বললেনঃ দুনিয়ার সমস্ত কিছু ব্যয় করলেও তুমি সকাল বেলায় চলে যাওয়া দলের সমান ফাযীলাত ও মর্যাদা লাভ করতে পারবে না।
সনদ দুর্বল
আবু ঈসা বলেনঃ এটা গারীব হাদীস। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র উল্লেখিত সনদেই জেনেছি। শুবা বলেছেন, হাকাম মিকসামের নিকট মাত্র পাঁচটি হাদীস শুনেছেন। শুবা হাদীসগুলো গণনা করেছেন কিন্তু তার মধ্যে উল্লেখিত হাদীসটি নেই। সম্ভবত হাকাম এ হাদীসটি মিকসামের নিকট শুনেননি।
জুমু’আর দিন সফর প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতের অমিল আছে। একদল বলেছেন, যদি নামাযের ওয়াক্ত উপস্থিত না হয় তবে জুমু’আর দিন সফরে বের হওয়ায় কোন সমস্যা নেই। অপর একদল বলেছেন, শুক্রবার সকাল হওয়ার পর জুমু’আর নামায আদায়ের আগে সফরে বের হবে না।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
২৯. অনুচ্ছেদঃ
জুমু’আর দিন মিসওয়াক করা ও সুগন্ধি লাগানো
৫২৮
حدثنا علي بن الحسن الكوفي حدثنا أبو يحيى إسمعيل بن إبراهيم التيمي عن يزيد بن أبي زياد عن عبد الرحمن بن أبي ليلى عن البراء بن عازب قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم حق على المسلمين أن يغتسلوا يوم الجمعة وليمس أحدهم من طيب أهله فإن لم يجد فالماء له طيب قال وفي الباب عن أبي سعيد وشيخ من الأنصار حدثنا أحمد بن منيع حدثنا هشيم عن يزيد بن أبي زياد بهذا الإسناد نحوه قال أبو عيسى حديث البراء حديث حسن ورواية هشيم أحسن من رواية إسمعيل بن إبراهيم التيمي وإسمعيل بن إبراهيم التيمي يضعف في الحديث
বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলমানদের কর্তব্য হল, তারা যেন জুমু’আর দিন গোসল করে। তাদের প্রত্যেকে যেন নিজ পরিবারে সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করে। তা না পাওয়া গেলে গোসলের পানিই তার জন্য সুগন্ধি।
যইফ, মিশকাত (১৪০০)।
এ অনুচ্ছেদে আবূ সাঈদ ও একজন আনসারী (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীস হাসান। উল্লেখিত হাদীসটি হুশাইম ইয়াযীদ ইবনু আবী যিয়াদ হতে উক্ত সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। হুশাইমের এ বর্ণনাটি পূর্ববর্তী ইসমাঈল ইবনু ইবরাহীমের বর্ণনার চেয়ে বেশী উত্তম। কেননা পূর্ববর্তী সনদের রাবী ইসমাঈল ইবনু ইবরাহীমকে হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল বলা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৩০. অনুচ্ছেদঃ
‘ঈদের দিন পায়ে হেঁটে চলাচল করা
৫৩০
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ مُوسَى الْفَزَارِيُّ، حَدَّثَنَا شَرِيكٌ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ مِنَ السُّنَّةِ أَنْ تَخْرُجَ، إِلَى الْعِيدِ مَاشِيًا وَأَنْ تَأْكُلَ شَيْئًا قَبْلَ أَنْ تَخْرُجَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَسْتَحِبُّونَ أَنْ يَخْرُجَ الرَّجُلُ إِلَى الْعِيدِ مَاشِيًا وَأَنْ يَأْكُلَ شَيْئًا قَبْلَ أَنْ يَخْرُجَ لِصَلاَةِ الْفِطْرِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَيُسْتَحَبُّ أَنْ لاَ يَرْكَبَ إِلاَّ مِنْ عُذْرٍ .
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ঈদের মাঠে পায়ে হেঁটে যাওয়া এবং যাওয়ার আগে কিছু খাওয়া সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত।
-হাসান। ইবনু মাজাহ- (১২৯৪-১২৯৭)
আবু ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। বেশিরভাগ বিদ্বান এ হাদীস অনুসারে আমল করেছেন। কোন অজুহাত না থাকলে যানবাহনে চড়ে না গিয়ে বরং ঈদের মাঠে হেঁটে যাওয়াকে তাঁরা মুস্তাহাব বলেছেন। ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে কিছু খাওয়া মুস্তাহাব।
হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
- সরাসরি
৩১. অনুচ্ছেদঃ
খুতবার পূর্বে দুই ‘ঈদের নামায আদায় করবে
৫৩১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، هُوَ ابْنُ عُمَرَ بْنِ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ يُصَلُّونَ فِي الْعِيدَيْنِ قَبْلَ الْخُطْبَةِ ثُمَّ يَخْطُبُونَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّ صَلاَةَ الْعِيدَيْنِ قَبْلَ الْخُطْبَةِ . وَيُقَالُ إِنَّ أَوَّلَ مَنْ خَطَبَ قَبْلَ الصَّلاَةِ مَرْوَانُ بْنُ الْحَكَمِ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাকর ও ‘উমার (রাঃ) খুতবা দেওয়ার পূর্বে দুই ঈদের নামায আদায় করতেন, তারপর খুতবা দিতেন।
-সহী্হ। ইবনু মাজাহ- (১২৭৬), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে জাবির ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘উমারের হদীসটি হাসান সহীহ্। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী ও অন্যরা এ হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। তাঁরা বলেছেন, খুতবা দেওয়ার আগে নামায আদায় করতে হবে। কথিত আছে মারওয়ান ইবনুল হাকামই সর্বপ্রথম নামাযের আগে খুতবা দিয়েছিলেন- মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩২. অনুচ্ছেদঃ
‘ঈদের নামাযে আযান ও ইক্বামাত নেই
৫৩২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْعِيدَيْنِ غَيْرَ مَرَّةٍ وَلاَ مَرَّتَيْنِ بِغَيْرِ أَذَانٍ وَلاَ إِقَامَةٍ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّهُ لاَ يُؤَذَّنُ لِصَلاَةِ الْعِيدَيْنِ وَلاَ لِشَيْءٍ مِنَ النَّوَافِلِ .
জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে দুই ‘ঈদের নামায আযান এবং ইক্বামাত ব্যতীত একবার দু’বার নয় একাধিকবার আদায় করেছি (আহমাদ, মুসলিম, আবূ দাঊদ)।
-হাসান সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাউদ- (১০৪২), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ জাবির ইবনু সামূরার হাদীসটি হাসান সহীহ্। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিশেষজ্ঞ সাহাবীগণ ও অন্যরা এ হাদীস অনুযায়ী দুই ‘ঈদের নামায ও নফল নামাযের জন্য আযান দিতেন না।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৩৩. অনুচ্ছেদঃ
দুই ‘ঈদের নামাযের কিরা’আত
৫৩৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْتَشِرِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ سَالِمٍ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الْعِيدَيْنِ وَفِي الْجُمُعَةِ بِـ ( سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى ) وَ (هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْغَاشِيَةِ ) وَرُبَّمَا اجْتَمَعَا فِي يَوْمٍ وَاحِدٍ فَيَقْرَأُ بِهِمَا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي وَاقِدٍ وَسَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَهَكَذَا رَوَى سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَمِسْعَرٌ عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْتَشِرِ نَحْوَ حَدِيثِ أَبِي عَوَانَةَ . وَأَمَّا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ فَيُخْتَلَفُ عَلَيْهِ فِي الرِّوَايَةِ يُرْوَى عَنْهُ عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْتَشِرِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ حَبِيبِ بْنِ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ . وَلاَ نَعْرِفُ لِحَبِيبِ بْنِ سَالِمٍ رِوَايَةً عَنْ أَبِيهِ . وَحَبِيبُ بْنُ سَالِمٍ هُوَ مَوْلَى النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ وَرَوَى عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ أَحَادِيثَ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْتَشِرِ نَحْوُ رِوَايَةِ هَؤُلاَءِ . وَرُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَقْرَأُ فِي صَلاَةِ الْعِيدَيْنِ بِـ (اقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ ) وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ .
নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুই ‘ঈদের নামাযে এবং জুমু‘আর নামাযে “সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আ’লা” এবং “হাল আতাকা হাদীসুল গাশিয়াহ্” সূরা দুটি পাঠ করতেন। কখনো কখনো ঈদ এবং জুমু’আর নামায একই দিনে হয়ে যেত। তিনি তখনও দুই নামাযে উল্লেখিত সূরা দুটিই পাঠ করতেন।
সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১১১৯), মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে আবূ ওয়াকিদ, সামুরা ইবনু জুনদুব ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ নু‘মান ইবনু বাশীরের হাদীসটি হাসান সহীহ্। আরো কয়েকটি সূত্রে উল্লেখিত হাদীসের মতই বর্ণনা এসেছে। অপর একটি সূত্রে বর্ণিত আছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুই ‘ঈদের নামাযে সূরা ‘কাফ’ ও সূরা ‘ইকতারাবাতিস সাআহ’ পাঠ করতেন। ইমাম সাফিঈ এই মতের সমর্থক।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৩৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مَعْنُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ ضَمْرَةَ بْنِ سَعِيدٍ الْمَازِنِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، سَأَلَ أَبَا وَاقِدٍ اللَّيْثِيَّ مَا كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ بِهِ فِي الْفِطْرِ وَالأَضْحَى قَالَ كَانَ يَقْرَأُ بـــ(ق والقرآنِ الْمَجِيدِ ) (اقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ وَانْشَقَّ الْقَمَرُ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উতবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) আবূ ওয়াকিদ লাইসী (রাঃ) -কে প্রশ্ন করলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাযে কোন্ কোন্ সূরা পাঠ করতেন? তিনি বললেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) ‘কাফ ওয়াল কুরআনিল মাজীদ’ ও ‘ইকতারাবাতিস সা’আতু ওয়ান শাক্কাল কামার’ সূরা দুটি পাঠ করতেন।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১২৮২), মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৪. অনুচ্ছেদঃ
দুই ‘ঈদের নামাযের তাকবীর
৫৩৬
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ عَمْرٍو أَبُو عَمْرٍو الْحَذَّاءُ الْمَدِينِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نَافِعٍ الصَّائِغُ، عَنْ كَثِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَبَّرَ فِي الْعِيدَيْنِ فِي الأُولَى سَبْعًا قَبْلَ الْقِرَاءَةِ وَفِي الآخِرَةِ خَمْسًا قَبْلَ الْقِرَاءَةِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَائِشَةَ وَابْنِ عُمَرَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَدِّ كَثِيرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ وَهُوَ أَحْسَنُ شَيْءٍ رُوِيَ فِي هَذَا الْبَابِ عَنِ النَّبِيِّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ وَاسْمُهُ عَمْرُو بْنُ عَوْفٍ الْمُزَنِيُّ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ . وَهَكَذَا رُوِيَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّهُ صَلَّى بِالْمَدِينَةِ نَحْوَ هَذِهِ الصَّلاَةِ وَهُوَ قَوْلُ أَهْلِ الْمَدِينَةِ . وَبِهِ يَقُولُ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَرُوِيَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ أَنَّهُ قَالَ فِي التَّكْبِيرِ فِي الْعِيدَيْنِ تِسْعَ تَكْبِيرَاتٍ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى خَمْسًا قَبْلَ الْقِرَاءَةِ وَفِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ يَبْدَأُ بِالْقِرَاءَةِ ثُمَّ يُكَبِّرُ أَرْبَعًا مَعَ تَكْبِيرَةِ الرُّكُوعِ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوُ هَذَا وَهُوَ قَوْلُ أَهْلِ الْكُوفَةِ وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ .
কাসীর ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদা থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উভয় ঈদের নামাযে প্রথম রাক‘আতে কিরা‘আত পাঠ করার আগে সাত তাকবীর এবং দ্বিতীয় রাক‘আতে কিরা‘আত পাঠ করার আগে পাঁচ তাকবীর বলেছেন।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১২৭৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান। এ অনুচ্ছেদে ‘আয়িশাহ্, ইবনু ‘উমার ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। এ অনুচ্ছেদে উল্লেখিত হাদীসটিই বেশি উত্তম।
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল সাহাবা ও অন্যরা এ হাদীস আনুযায়ী আমল করেছেন। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও একই রকম বর্ণিত আছে। তিনি মাদীনাতে এভাবেই নামায আদায় করেছেন। মাদীনাবাসীদের এটাই মত। ইমাম মালিক, শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এই মত গ্রহণ করেছেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) ‘ঈদের নামাযের তাকবীর প্রসঙ্গে বলেছেনঃ ঈদের নামাযে মোট নয়টি তাকবীর রয়েছে (মুসনাদে আবদুর রাযযাক)। প্রথম রাক‘আতে কিরা‘আতের পূর্বে পাঁচ তাকবীর। দ্বিতীয় রাক’আতে কিরা’তের পর রুকূর তাকবীরসহ মোট চার তাকবীর। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একাধিক সাহাবী হতেও এরকমই বর্ণিত হয়েছে। কুফাবাসীদের এটাই মত। সুফিয়ান সাওরীও এরূপ মত দিয়েছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৫. অনুচ্ছেদঃ
দুই ‘ঈদের নামাযের পূর্বে এবং পরে কোন নামায নেই
৫৩৭
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الطَّيَالِسِيُّ، قَالَ أَنْبَأَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ يَوْمَ الْفِطْرِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ لَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلاَ بَعْدَهَا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَأَبِي سَعِيدٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَقَدْ رَأَى طَائِفَةٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ الصَّلاَةَ بَعْدَ صَلاَةِ الْعِيدَيْنِ وَقَبْلَهَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ . وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিতরের দিন নামায আদায় করতে বের হলেন। তিনি দুই রাক’আত নামায আদায় করালেন এবং তার পূর্বেও তিনি কোন (নফল) নামায আদায় করেননি এবং পরেও আদায় করেননি।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১২৯১), বুখারী ও মুসলিম।
এ অনুচ্ছেদে আব্দুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ও আবূ সা’ঈদ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু ‘আব্বাসের হাদীসটি হাসান সহীহ্। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর একদল সাহাবী ও তাবিঈ এ হাদীস অনুযায়ী ‘আমল করেছেন। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাক এই মতের পক্ষে (ঈদের নামাযের আগে-পরে কোন নফল নামায নেই)। অপর একদল বিদ্বানের মতে, ‘ঈদের নামাযের আগে বা পরে নফল নামায আদায় করা যায়। এ দুটি মতের মধ্যে প্রথমোক্ত মতই বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৩৮
حَدَّثَنَا أَبُو عَمَّارٍ الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ أَبَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْبَجَلِيِّ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَفْصٍ، وَهُوَ ابْنُ عُمَرَ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ خَرَجَ فِي يَوْمِ عِيدٍ فَلَمْ يُصَلِّ قَبْلَهَا وَلاَ بَعْدَهَا وَذَكَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَعَلَهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি এক ‘ঈদের দিন নামায আদায় করতে বের হলেন। তিনি এর পূর্বেও কোন (নফল) নামায আদায় করেননি এবং পরেও আদায় করেননি। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনটিই করেছেন।
-হাসান সহীহ্। ইরওয়া- (৩/৯৯)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
- সরাসরি
৩৬. অনুচ্ছেদঃ
মহিলাদের ‘ঈদের মাঠে যাওয়া
৫৩৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا مَنْصُورٌ، وَهُوَ ابْنُ زَاذَانَ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُخْرِجُ الأَبْكَارَ وَالْعَوَاتِقَ وَذَوَاتِ الْخُدُورِ وَالْحُيَّضَ فِي الْعِيدَيْنِ فَأَمَّا الْحُيَّضُ فَيَعْتَزِلْنَ الْمُصَلَّى وَيَشْهَدْنَ دَعْوَةَ الْمُسْلِمِينَ قَالَتْ إِحْدَاهُنَّ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنْ لَمْ يَكُنْ لَهَا جِلْبَابٌ قَالَ “ فَلْتُعِرْهَا أُخْتُهَا مِنْ جَلاَبِيبِهَا ” .
উম্মু আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিতর ও ‘ঈদুল আযহার দিন কুমারী, তরুণী, প্রাপ্তবয়স্কা, পর্দানশিন এবং ঋতুবতী সব মহিলাদের (নামাযের জন্য) বের হওয়ার (‘ঈদের মাঠে যাওয়ার) হুকুম করতেন। ঋতুবতী মহিলারা নামাযের জামা’আত হতে এক পাশে সরে থাকতো কিন্তু তারা মুসলমানদের দু’আয় শারীক হত। এক মহিলা বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! যদি কোন নারীর নিকট (শরীর ঢাকার মত) চাদর না থাকে? তিনি বললেনঃ তার (মুসলিম) বোন তার অতিরিক্ত চাদর তাকে ধার দিবে।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১৩০৭, ১৩০৮), বুখারী ও মুসলিম।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৭. অনুচ্ছেদঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক রাস্তা দিয়ে ‘ঈদের মাঠে যেতেন এবং অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসতেন
৫৪১
حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ وَاصِلِ بْنِ عَبْدِ الأَعْلَى الْكُوفِيُّ، وَأَبُو زُرْعَةَ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّلْتِ، عَنْ فُلَيْحِ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا خَرَجَ يَوْمَ الْعِيدِ فِي طَرِيقٍ رَجَعَ فِي غَيْرِهِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ وَأَبِي رَافِعٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَحَدِيثُ أَبِي هُرَيْرَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ . وَرَوَى أَبُو تُمَيْلَةَ وَيُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ فُلَيْحِ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْحَارِثِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ وَقَدِ اسْتَحَبَّ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ لِلإِمَامِ إِذَا خَرَجَ فِي طَرِيقٍ أَنْ يَرْجِعَ فِي غَيْرِهِ اتِّبَاعًا لِهَذَا الْحَدِيثِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ . وَحَدِيثُ جَابِرٍ كَأَنَّهُ أَصَحُّ .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদের দিন এক পথ দিয়ে যেতেন এবং অন্য পথ দিয়ে ফিরে আসতেন।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১৩০১)।
অপর এক সনদসূত্রে এ হাদীসটি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে (বুখারী)। এ অনুচ্ছেদে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার ও আবূ রাফি’ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। কিছু বিদ্বান এ হাদীসের উপর ‘আমল করার জন্য ইমামের এক পথ দিয়ে ‘ঈদের মাঠে যাওয়া এবং অন্য পথ দিয়ে আসাকে মুস্তাহাব বলেছেন। ইমাম শাফিঈ এই মত দিয়েছেন। জাবির (রাঃ) -এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি বেশি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৮. অনুচ্ছেদঃ
‘ঈদুল ফিতরের দিন নামায আদায় করতে যাওয়ার পূর্বে কিছু খাওয়া
৫৪২
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ الْبَزَّارُ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، عَنْ ثَوَابِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يَخْرُجُ يَوْمَ الْفِطْرِ حَتَّى يَطْعَمَ وَلاَ يَطْعَمُ يَوْمَ الأَضْحَى حَتَّى يُصَلِّيَ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَأَنَسٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ بُرَيْدَةَ بْنِ حُصَيْبٍ الأَسْلَمِيِّ حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَقَالَ مُحَمَّدٌ لاَ أَعْرِفُ لِثَوَابِ بْنِ عُتْبَةَ غَيْرَ هَذَا الْحَدِيثِ . وَقَدِ اسْتَحَبَّ قَوْمٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ لاَ يَخْرُجَ يَوْمَ الْفِطْرِ حَتَّى يَطْعَمَ شَيْئًا وَيُسْتَحَبُّ لَهُ أَنْ يُفْطِرَ عَلَى تَمْرٍ وَلاَ يَطْعَمَ يَوْمَ الأَضْحَى حَتَّى يَرْجِعَ .
আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদা (রাঃ) হতে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি (বুরাইদা) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিতরের দিন কিছু না খাওয়া পর্যন্ত নামাযে বের হতেন না এবং ‘ঈদুল আযহার দিন নামায না আদায় করা পর্যন্ত কিছু খেতেন না।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১৭৫৬)।
এ অনুচ্ছেদে ‘আলী ও আনাস (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ‘ঈসা বলেনঃ বুরাইদার হাদীসটি গারীব। ইমাম বুখারী বলেছেন, এ হাদীসটি ছাড়া সাওয়াব ইবনু ‘উতবার সূত্রে বর্ণিত আর কোন হাদীস আমার জানা নেই। একদল মনীষী ‘ঈদুল ফিতরের দিন কিছু খেয়ে ঘর হতে নামাযের জন্য বের হওয়া মুস্তাহাব বলেছেন। তাঁরা খেজুর খাওয়া পছন্দ করছেন। তাদের মতে ‘ঈদুল আযহার দিন নামায হতে আসার পর পানাহার করা মুস্তাহাব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৪৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُفْطِرُ عَلَى تَمَرَاتٍ يَوْمَ الْفِطْرِ قَبْلَ أَنْ يَخْرُجَ إِلَى الْمُصَلَّى . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ صَحِيحٌ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ঈদুল ফিতরের দিন নামায আদায় করতে বের হওয়ার আগে খেজুর দিয়ে নাস্তা করতেন।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১৭৫৪)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯. অনুচ্ছেদঃ
সফরকালে নামায কসর করা
৫৪৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَبْدِ الْحَكَمِ الْوَرَّاقُ الْبَغْدَادِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ سَافَرْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ فَكَانُوا يُصَلُّونَ الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ لاَ يُصَلُّونَ قَبْلَهَا وَلاَ بَعْدَهَا . وَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ لَوْ كُنْتُ مُصَلِّيًا قَبْلَهَا أَوْ بَعْدَهَا لأَتْمَمْتُهَا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عُمَرَ وَعَلِيٍّ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأَنَسٍ وَعِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ وَعَائِشَةَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عُمَرَ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ يَحْيَى بْنِ سُلَيْمٍ مِثْلَ هَذَا . قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ رَجُلٍ مِنْ آلِ سُرَاقَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَطِيَّةَ الْعَوْفِيِّ عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَتَطَوَّعُ فِي السَّفَرِ قَبْلَ الصَّلاَةِ وَبَعْدَهَا . وَقَدْ صَحَّ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَقْصُرُ فِي السَّفَرِ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ صَدْرًا مِنْ خِلاَفَتِهِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا كَانَتْ تُتِمُّ الصَّلاَةَ فِي السَّفَرِ . وَالْعَمَلُ عَلَى مَا رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابِهِ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ وَأَحْمَدَ وَإِسْحَاقَ إِلاَّ أَنَّ الشَّافِعِيَّ يَقُولُ التَّقْصِيرُ رُخْصَةٌ لَهُ فِي السَّفَرِ فَإِنْ أَتَمَّ الصَّلاَةَ أَجْزَأَ عَنْهُ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাক্র, ‘উমার ও ‘উসমান (রাঃ) -এর সাথে একত্রে সফর করেছি। তাঁরা যুহর ও আসরের (ফরয) নামায দুই রাক’আত দুই রাক’আত আদায় করেছেন। তাঁরা এর আগে বা পরে কোন (সুন্নাত বা নফল) নামায আদায় করেননি। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমাকে যদি এর (ফরযের) আগে অথবা পরে নামায আদায় করতেই হত তবে আমি ফরয নামায পূর্ণ আদায় করতাম!
সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১০৭১), বুখারী ও মুসলিম সংক্ষিপ্ত।
এ অনুচ্ছেদে ‘উমার, ‘আলী, ইবনু ‘আব্বাস, আনাস, ‘ইমরান ইবনু হুসাইন ও আয়িশাহ্ (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ইবনু উমারের হাদীসটি হাসান গারীব। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সুলাইমের সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদীসটি জেনেছি। মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল (বুখারী) বলেন, উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার সুরাকার সন্তানের সূত্রে, তিনি ইবনু উমার (রাঃ) -এর সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ ‘আতিয়্যা আল-‘আওফী (রহঃ) ইবনু ‘উমার (রাঃ) -এর সূত্রে বর্ণনা করেনঃ “নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে ফরয নামাযের পূর্বে এবং পরে নফল নামায আদায় করতেন।”
সহীহ্ সনদসূত্রে প্রমাণিত যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আবূ বাক্র ও ‘উমার (রাঃ) সফরে নামায কসর করতেন। ‘উসমান (রাঃ) তাঁর খিলাফতের প্রথম দিকে সফরে কসর করতেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও তাবিঈ সফরে নামায কসর করতেন। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি সফরে সম্পূর্ণ নামায আদায় করতেন (কসর করতেন না, বুখারী)। কিন্তু নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর বেশিরভাগ সাহাবী যেভাবে কসর করেছেন তদানুযায়ী আমল করতে হবে। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাকও একই রকম কথা বলেছেন। কিন্তু ইমাম শাফিঈ আরো বলেছেন, সফরে কসর করাটা ব্যক্তির ইচ্ছাধীন ব্যাপার। যদি কেউ পূর্ণ নামায আদায় করে তবে তার নামায হয়ে যাবে, নতুন করে তা আদায় করতে হবে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৪৫
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدِ بْنِ جُدْعَانَ الْقُرَشِيُّ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، قَالَ سُئِلَ عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ عَنْ صَلاَةِ الْمُسَافِرِ، فَقَالَ حَجَجْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَحَجَجْتُ مَعَ أَبِي بَكْرٍ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَمَعَ عُمَرَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ وَمَعَ عُثْمَانَ سِتَّ سِنِينَ مِنْ خِلاَفَتِهِ أَوْ ثَمَانِيَ سِنِينَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবূ নায্রাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) -কে মুসাফিরের নামায প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হাজ্জ করেছি। তিনি চার রাক’আতের পরিবর্তে দুই রাক’আত আদায় করেছেন। আবূ বাক্র (রাঃ) -এর সাথেও হাজ্জ করেছি তিনিও দুই রাক’আত আদায় করেছেন। ‘উমার (রাঃ) -এর সাথেও এবং তিনিও দুই রাক’আত আদায় করেছেন। আমি ‘উসমান (রাঃ) -এর সাথেও হাজ্জ করেছি। তিনিও তাঁর খিলাফতের (প্রথম) ছয় অথবা আট বছর দুই রাক’আতই আদায় করেছেন।
-সহীহ্। পূর্বের হাদীসের কারণে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৪৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، وَإِبْرَاهِيمَ بْنِ مَيْسَرَةَ، سَمِعَا أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ صَلَّيْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ بِالْمَدِينَةِ أَرْبَعًا وَبِذِي الْحُلَيْفَةِ الْعَصْرَ رَكْعَتَيْنِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ .
মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদির ও ইবরাহীম ইবনু মাইসারা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা দুজনেই আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) -কে বলতে শুনেছেনঃ আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মাদীনায় যুহরের নামায চার রাক’আত আদায় করেছি এবং যুল-হুলাইফায় ‘আসরের নামায দু’রাক্’আত আদায় করেছি।
-সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ- (১০৮৫), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৪৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ مَنْصُورِ بْنِ زَاذَانَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ مِنَ الْمَدِينَةِ إِلَى مَكَّةَ لاَ يَخَافُ إِلاَّ اللَّهَ رَبَّ الْعَالَمِينَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার উদ্দেশ্যে মাদীনা হতে বের হলেন। এ সময় সারা বিশ্বের প্রতিপালক ছাড়া আর কারো ভয় তাঁর ছিল না। তিনি (চার রাক্’আত ফরযের স্থলে) দুই রাক’আত আদায় করেছেন।
-সহীহ্। ইরওয়া- (৩/৬)।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০. অনুচ্ছেদঃ
কত দিন পর্যন্ত কসর করা যাবে?
৫৪৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ الْحَضْرَمِيُّ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْمَدِينَةِ إِلَى مَكَّةَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ . قَالَ قُلْتُ لأَنَسٍ كَمْ أَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمَكَّةَ قَالَ عَشْرًا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَجَابِرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ أَنَسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ أَقَامَ فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ تِسْعَ عَشْرَةَ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ . قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَنَحْنُ إِذَا أَقَمْنَا مَا بَيْنَنَا وَبَيْنَ تِسْعَ عَشْرَةَ صَلَّيْنَا رَكْعَتَيْنِ وَإِنْ زِدْنَا عَلَى ذَلِكَ أَتْمَمْنَا الصَّلاَةَ . وَرُوِيَ عَنْ عَلِيٍّ أَنَّهُ قَالَ مَنْ أَقَامَ عَشَرَةَ أَيَّامٍ أَتَمَّ الصَّلاَةَ . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّهُ قَالَ مَنْ أَقَامَ خَمْسَةَ عَشَرَ يَوْمًا أَتَمَّ الصَّلاَةَ . وَقَدْ رُوِيَ عَنْهُ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ . وَرُوِيَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّهُ قَالَ إِذَا أَقَامَ أَرْبَعًا صَلَّى أَرْبَعًا . وَرَوَى عَنْهُ ذَلِكَ قَتَادَةُ وَعَطَاءٌ الْخُرَاسَانِيُّ . وَرَوَى عَنْهُ دَاوُدُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ خِلاَفَ هَذَا . وَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ بَعْدُ فِي ذَلِكَ فَأَمَّا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَأَهْلُ الْكُوفَةِ فَذَهَبُوا إِلَى تَوْقِيتِ خَمْسَ عَشْرَةَ وَقَالُوا إِذَا أَجْمَعَ عَلَى إِقَامَةِ خَمْسَ عَشْرَةَ أَتَمَّ الصَّلاَةَ . وَقَالَ الأَوْزَاعِيُّ إِذَا أَجْمَعَ عَلَى إِقَامَةِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ أَتَمَّ الصَّلاَةَ . وَقَالَ مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ وَالشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ إِذَا أَجْمَعَ عَلَى إِقَامَةِ أَرْبَعَةٍ أَتَمَّ الصَّلاَةَ . وَأَمَّا إِسْحَاقُ فَرَأَى أَقْوَى الْمَذَاهِبِ فِيهِ حَدِيثَ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ لأَنَّهُ رَوَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ تَأَوَّلَهُ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَجْمَعَ عَلَى إِقَامَةِ تِسْعَ عَشْرَةَ أَتَمَّ الصَّلاَةَ . ثُمَّ أَجْمَعَ أَهْلُ الْعِلْمِ عَلَى أَنَّ الْمُسَافِرَ يَقْصُرُ مَا لَمْ يُجْمِعْ إِقَامَةً وَإِنْ أَتَى عَلَيْهِ سِنُونَ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মক্কার উদ্দেশ্যে মাদীনা হতে রাওয়ানা হলাম। তিনি দুই রাক’আত নামায আদায় করলেন। ইয়াহ্ইয়া ইবনু ইসহাক বলেন, আমি আনাস (রাঃ) -কে প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কত দিন মক্কায় ছিলেন? তিনি বললেন, দশ দিন।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১০৭৭), বুখারী ও মুসলিম।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এ অনুচ্ছেদে ইবনু ‘আব্বাস ও জাবির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
“ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কোন সফরে ঊনিশ দিন থাকলেন। তিনি বরাবর (চার রাক’আত ফরযের স্থলে) দুই রাক’আতই আদায় করতে থাকলেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এজন্য আমরাও ঊনিশ দিন থাকলে দুই রাক’আতই আদায় করে থাকি। যদি এরপর আরো বেশি দিন থাকতে হয় তবে আমরা পূর্ণ নামায আদায় করি।”
‘আলী (রাঃ) বলেন, যদি কোন ব্যক্তি সফরে দশ দিন থাকেন তবে সে পূর্ণ নামায আদায় করবে। ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি পনের দিন থাকবে সে পূর্ণ নামায আদায় করবে। ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি পনের দিন থাকবে সে পূর্ণ নামায আদায় করবে। ইবনু ‘উমার (রাঃ) -এর অপর মতে বার দিনের কথা উল্লেখ আছে। সা’ঈদ ইবনুল মুসায়্যাব (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি চার দিন থাকবে সে চার রাক’আত আদায় করবে। কাতাদা ও আতা তাঁর এ মত বর্ণনা করেছেন। দাঊদ ইবনু আবূ হিন্দ তাঁর নিকট হতে এর বিপরীত বর্ণনা করেছেন।
এ ব্যাপারে ‘আলিমদের মধ্যে যথেষ্ট মতের অমিল রয়েছে। সুফিয়ান সাওরী ও কুফাবাসীগণ পনের দিনের সময়সীমা ঠিক করেছেন। তাঁরা বলেছেন, যদি কমপক্ষে পনের দিন (সফর একই এলাকায়) থাকার নিয়াত করা হয় তবে পূর্ণ নামায আদায় করা। মালিক, শাফিঈ ও আহমাদ বলেন, যদি চার দিন একই জায়গায় থাকার নিয়াত করা হয় তবে পূর্ণ নামায আদায় করতে হবে। ইসহাক বলেন, শক্তিশালী মত হল ইবনু ‘আব্বাসের হাদীসে বর্ণিত মত। তিনি এ হাদীসই অনুসরণ করেছেন। তিনি বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে বর্ণিত তাঁর নিজের হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। এ হাদীসের মর্ম অনুযায়ী যদি কোন ব্যক্তি সফরে কোথাও ঊনিশ দিন থাকার নিয়াত করে তবে সে পূর্ণ নামায আদায় করবে।
বহুবিধ মত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও বিদ্বানগণ একটি বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছেছেন। তা হল, মুসাফির ব্যক্তি কোন স্থানে নির্দিষ্ট কতদিন থাকবে তা যদি নির্ধারণ না করে থাকে বা তার নিয়াত না করে থাকে তবে সে কসরই আদায় করতে থাকবে, তা যত বছরই হোক না কেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৪৯
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ سَافَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَفَرًا فَصَلَّى تِسْعَةَ عَشَرَ يَوْمًا رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنٍ . قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَنَحْنُ نُصَلِّي فِيمَا بَيْنَنَا وَبَيْنَ تِسْعَ عَشْرَةَ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فَإِذَا أَقَمْنَا أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ صَلَّيْنَا أَرْبَعًا . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সফরে গিয়ে ঊনিশ দিন থাকলেন। এ কয়দিন তিনি দুই রাক’আত দুই রাক’আত করে নামায আদায় করলেন (চার রাক’আত ফরযের পরিবর্তে) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমরাও আমাদের (মাদীনার ও মক্কার) মধ্যেকার ঊনিশ দিনের পথে দুই রাক’আত দুই রাক’আত করে নামায আদায় করে থাকি। যখন এর চেয়ে বেশি দিন থাকি তখন চার রাক’আতই আদায় করে থাকি।
-সহীহ্। ইবনু মাজাহ- (১০৭৫), বুখারী।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪১. অনুচ্ছেদঃ
সফরে নফল নামায আদায় করা
৫৫০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ أَبِي بُسْرَةَ الْغِفَارِيِّ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَمَانِيَةَ عَشَرَ سَفَرًا فَمَا رَأَيْتُهُ تَرَكَ الرَّكْعَتَيْنِ إِذَا زَاغَتِ الشَّمْسُ قَبْلَ الظُّهْرِ . وَفِي الْبَابِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ الْبَرَاءِ حَدِيثٌ غَرِيبٌ . قَالَ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدًا عَنْهُ فَلَمْ يَعْرِفْهُ إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ اللَّيْثِ بْنِ سَعْدٍ وَلَمْ يَعْرِفِ اسْمَ أَبِي بُسْرَةَ الْغِفَارِيِّ وَرَآهُ حَسَنًا . وَرُوِيَ عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَتَطَوَّعُ فِي السَّفَرِ قَبْلَ الصَّلاَةِ وَلاَ بَعْدَهَا . وَرُوِيَ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَتَطَوَّعُ فِي السَّفَرِ . ثُمَّ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَرَأَى بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَتَطَوَّعَ الرَّجُلُ فِي السَّفَرِ وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ . وَلَمْ تَرَ طَائِفَةٌ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنْ يُصَلَّى قَبْلَهَا وَلاَ بَعْدَهَا . وَمَعْنَى مَنْ لَمْ يَتَطَوَّعْ فِي السَّفَرِ قَبُولُ الرُّخْصَةِ وَمَنْ تَطَوَّعَ فَلَهُ فِي ذَلِكَ فَضْلٌ كَثِيرٌ . وَهُوَ قَوْلُ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ يَخْتَارُونَ التَّطَوُّعَ فِي السَّفَرِ .
বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আঠার মাস রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গী ছিলাম। আমি তাকে সূর্য ঢলে যাওয়ার পর যুহরের (ফরজ নামাযের) পূর্বে দু’ রাকা’আত (সুন্নাত) নামায ছেড়ে দিতে দেখিনি।
যঈফ, যঈফ আবূ দাঊদ (১১২)
এ অনুচ্ছেদে ইবনু উমার (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। আমি মুহাম্মাদকে (ইমাম বুখারীকে) এ হাদীস প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি এটা লাইস ইবনু সা’দের সূত্রেই জেনেছি এবং তিনি আবূ বুসরার নাম বলতে পারেননি, তবে তাকে উত্তম ধারনা করেছেন।
ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে নামাযের পূর্বে বা পরে সুন্নাত বা নফল নামায আদায় করতেন না। অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনিরাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে নফল নামায আদায় করতেন। অতএব রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পর আলিমদের মধ্যে মত পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে।
একদল সাহাবার মত হল, সফরে নফল নামায আদায় করবে। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক এই মতের পক্ষে। অপর একদল বিশেষজ্ঞ বলেছেন, সফরে ফরয নামাযের আগে বা পরে কোন নফল নামায নেই। যে লোক নফল নামায আদায় করল না সে সম্মতি ও ফুরসতের সুযোগ গ্রহন করল। আর যদি কেউ নফল আদায় করে তবে সে ফাযীলাত লাভ করল। বেশিরভাগ বিদ্বানের মতে সফরে নফল এবং সুন্নাত নামায আদায় করাই ভাল।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৫৫১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ الْحَجَّاجِ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ فِي السَّفَرِ رَكْعَتَيْنِ وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَقَدْ رَوَاهُ ابْنُ أَبِي لَيْلَى عَنْ عَطِيَّةَ وَنَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে সফরে যুহরের নামায দুই রাকা’আত আদায় করেছি। এরপর আরো দুই রাকা’আত আদায় করেছি।
সনদ দুর্বল।
তার বর্ণিত পূর্ববর্তী ৫৩৬ নং হাদীসের বিরোধী হওয়ার ফলে মতন ও মুনকার। আবূ ঈসা বলেনঃ এটি হাসান হাদীস। ইবনু আবী লাইলা আতিয়্যাহ এবং নাফি এর সূত্রে ইবনু উমার হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
- সরাসরি
৫৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْمُحَارِبِيُّ، – يَعْنِي الْكُوفِيَّ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ هَاشِمٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَطِيَّةَ، وَنَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ فَصَلَّيْتُ مَعَهُ فِي الْحَضَرِ الظُّهْرَ أَرْبَعًا وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ وَصَلَّيْتُ مَعَهُ فِي السَّفَرِ الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ وَالْعَصْرَ رَكْعَتَيْنِ وَلَمْ يُصَلِّ بَعْدَهَا شَيْئًا وَالْمَغْرِبَ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ سَوَاءً ثَلاَثَ رَكَعَاتٍ لاَ تَنْقُصُ فِي الْحَضَرِ وَلاَ فِي السَّفَرِ وَهِيَ وِتْرُ النَّهَارِ وَبَعْدَهَا رَكْعَتَيْنِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ . سَمِعْتُ مُحَمَّدًا يَقُولُ مَا رَوَى ابْنُ أَبِي لَيْلَى حَدِيثًا أَعْجَبَ إِلَىَّ مِنْ هَذَا وَلاَ أَرْوِي عَنْهُ شَيْئًا .
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নিজ এলাকায় থাকার সময় এবং সফরে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে নামায আদায় করেছি। বাড়িতে থাকার সময় তাঁর সাথে যুহরের (ফরয)নামায চার রাকা’আত আদায় করেছি। অতঃপর দুই রাকা’আত (সুন্নাত) নামায আদায় করেছি। সফরে তাঁর সাথে যুহরের (ফরয) নামায দুই রাকা’আত আদায় করেছি। অতঃপর দুই রাকা’আত (সুন্নাত) নামায আদায় করেছি। আসরের (ফরয) নামায দুই রাকা’আত আদায় করেছি। তারপর তিনি আর কোন নামায আদায় করেননি। মাগরিবের (ফরয) নামায সফরে ও বাসস্থানে সমানভাবে তিন রাকা’আত আদায় করেছি। এটা সফরে ও বাসস্থানে কম হয় না। আর এটাই হল দিনের বিতরের (বেজোড়) নামায। তারপর দুই রাকা’আত (সুন্নাত) আদায় করেছি।
সনদ দুর্বল, মতন মুনকার। দেখুন পূর্বের হাদীস।
আবূ ঈসা বলেনঃ এটি হাসান হাদীস। আমি মুহাম্মাদকে বলতে শুনেছি, ইবনু আবী লাইলার বর্ণনাগুলোর মধ্যে এই বর্ণনাটিই আমার নিকট বেশী সুন্দর। তবে আমি তার কোন হাদীস বর্ণনা করিনা।
হাদিসের মানঃ অন্যান্য
- সরাসরি
৪২. অনুচ্ছেদঃ
দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে আদায় করা
৫৫৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ، هُوَ عَامِرُ بْنُ وَاثِلَةَ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ إِذَا ارْتَحَلَ قَبْلَ زَيْغِ الشَّمْسِ أَخَّرَ الظُّهْرَ إِلَى أَنْ يَجْمَعَهَا إِلَى الْعَصْرِ فَيُصَلِّيهِمَا جَمِيعًا وَإِذَا ارْتَحَلَ بَعْدَ زَيْغِ الشَّمْسِ عَجَّلَ الْعَصْرَ إِلَى الظُّهْرِ وَصَلَّى الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ جَمِيعًا ثُمَّ سَارَ وَكَانَ إِذَا ارْتَحَلَ قَبْلَ الْمَغْرِبِ أَخَّرَ الْمَغْرِبَ حَتَّى يُصَلِّيَهَا مَعَ الْعِشَاءِ وَإِذَا ارْتَحَلَ بَعْدَ الْمَغْرِبِ عَجَّلَ الْعِشَاءَ فَصَلاَّهَا مَعَ الْمَغْرِبِ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَلِيٍّ وَابْنِ عُمَرَ وَأَنَسٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو وَعَائِشَةَ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَأُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى وَالصَّحِيحُ عَنْ أُسَامَةَ . وَرَوَى عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ عَنْ أَحْمَدَ بْنِ حَنْبَلٍ عَنْ قُتَيْبَةَ هَذَا الْحَدِيثَ .
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাবুকের যুদ্ধে ব্যস্ত থাকাকালে সূর্য ঢলে যাওয়ার আগে নিজের তাঁবু ত্যাগ করলে যুহরের নামায দেরি করে আসরের সাথে একত্রে আদায় করতেন। তিনি সূর্য ঢলে যাওয়ার পর তাঁবু ত্যাগ করলে ‘আসরের নামায এগিয়ে এনে যুহরের সাথে একত্রে আদায় করতেন। তিনি মাগরিবের আগে তাঁবু ত্যাগ করলে মাগরিব দেরি করে ‘ইশার সাথে একত্রে আদায় করতেন। তিনি মাগরিবের পর তাঁবু ত্যাগ করলে ‘ইশাকে এগিয়ে এনে মাগরিবের সাথে একত্রে আদায় করতেন।
-সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ- (১১০৬), ইরওয়া (৫৭৮)
এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ অনুচ্ছেদে ‘আলী, ইবনু ‘উমার, আনাস, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর, ‘আয়িশাহ্, ইবনু ‘আব্বাস, উসামা ইবনু যাইদ ও জাবির (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৫৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّا اللُّؤْلُؤِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ الأَعْيَنُ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمَدِينِيِّ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، بِهَذَا الْحَدِيثِ يَعْنِي حَدِيثَ مُعَاذٍ . وَحَدِيثُ مُعَاذٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ تَفَرَّدَ بِهِ قُتَيْبَةُ لاَ نَعْرِفُ أَحَدًا رَوَاهُ عَنِ اللَّيْثِ غَيْرَهُ . وَحَدِيثُ اللَّيْثِ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ عَنْ مُعَاذٍ حَدِيثٌ غَرِيبٌ . وَالْمَعْرُوفُ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ حَدِيثُ مُعَاذٍ مِنْ حَدِيثِ أَبِي الزُّبَيْرِ عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ عَنْ مُعَاذٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم جَمَعَ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَبَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ . رَوَاهُ قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ وَسُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَمَالِكٌ وَغَيْرُ وَاحِدٍ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ الْمَكِّيِّ . وَبِهَذَا الْحَدِيثِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ . وَأَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ يَقُولاَنِ لاَ بَأْسَ أَنْ يَجْمَعَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ فِي السَّفَرِ فِي وَقْتِ إِحْدَاهُمَا .
আব্দুস সামাদ ইবনু সুলাইমান থেকে বর্ণিতঃ
আব্দুস সামাদ ইবনু সুলাইমান স্বীয় সানাদের কুতাইবার অর্থাৎ মু‘আযের হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। লাইসের সূত্রে কুতাইবা ছাড়া আর কেউ এ হাদীস বর্ণনা করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। লাইস-ইয়াযীদ-আবুত তুফাইল-মুআয (রাঃ) -এর সূত্রে বর্ণনাটি গারীব।
বিদ্বানদের নিকট আবুয-যুবাইর-আবুত তুফাইল-মু‘আয (রাঃ) -এর সনদে বর্ণিত হাদীসটি প্রসিদ্ধ যে, ‘‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাবুক যুদ্ধে যুহর ও আসর এবং মাগরিব ও ‘ইশা একত্রে আদায় করেছেন।” ইমাম শাফিঈ, আহমাদ এবং ইসহাক এই মতের সমর্থক। তাঁরা বলেছেন, সফরে দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে আদায় করতে কোন অপরাধ নেই।
হাদিসের মানঃ নির্ণীত নয়
- সরাসরি
৫৫৫
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ اسْتُغِيثَ عَلَى بَعْضِ أَهْلِهِ فَجَدَّ بِهِ السَّيْرُ فَأَخَّرَ الْمَغْرِبَ حَتَّى غَابَ الشَّفَقُ ثُمَّ نَزَلَ فَجَمَعَ بَيْنَهُمَا ثُمَّ أَخْبَرَهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَفْعَلُ ذَلِكَ إِذَا جَدَّ بِهِ السَّيْرُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَحَدِيثُ اللَّيْثِ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁর নিকট তাঁর কোন এক স্ত্রীর মুমূর্ষু অবস্থার খবর এলে তিনি তাড়াতাড়ি রওনা হলেন এবং পথ চলতে চলতে (পশ্চিম আকাশের লালিমা) অদৃশ্য হয়ে গেল। তারপর তিনি (বাহন হতে) নেমে মাগরিব ও ‘ইশার নামায একত্রে আদায় করলেন। তারপর তিনি সফরসঙ্গীদের বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যখন তাড়াহুড়া করে যাওয়ার দরকার হত তখন তিনি এমনটিই করতেন।
-সহীহ্। সহীহ্ আবূ দাঊদ- (১০৯০), বুখারী ও মুসলিম মারফূরূপে।
আবূ ‘ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস