৪৩. অধ্যায়ঃ
ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বিরত থাকা এবং অল্পতুষ্ট থাকা সম্পর্কে
২৩১৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمُقْرِئُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي، أَيُّوبَ حَدَّثَنِي شُرَحْبِيلُ، – وَهُوَ ابْنُ شَرِيكٍ – عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ قَدْ أَفْلَحَ مَنْ أَسْلَمَ وَرُزِقَ كَفَافًا وَقَنَّعَهُ اللَّهُ بِمَا آتَاهُ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার ইবনুল ’আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ‘যে ব্যক্তির ইসলাম কবুল করার সৌভাগ্য হয়েছে, যাকে প্রয়োজন পরিমাণ রিয্ক্ব দেয়া হয়েছে এবং আল্লাহ্ তা’আলা তাকে যে সম্পদ দিয়েছেন এর উপর পরিতৃপ্ত হওয়ার শক্তি দিয়েছেন, সে-ই (জীবনে) সফলতা লাভ করেছে’। ( ই.ফা. ২২৯৪, ই.সে. ২২৯৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩১৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ قَالُوا حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، كِلاَهُمَا عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ اللَّهُمَّ اجْعَلْ رِزْقَ آلِ مُحَمَّدٍ قُوتًا ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদের পরিবার-পরিজনের রিয্ক্ব (বা পানাহারের ব্যবস্থা) প্রয়োজন পরিমান রাখুন।” ( ই.ফা. ২২৯৫, ই.সে. ২২৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪. অধ্যায়ঃ
কঠোরতা ও অশোভন আচরণ করা সত্ত্বেও প্রার্থনাকারীকে কিছু দান করা
২৩১৮
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ سَلْمَانَ، بْنِ رَبِيعَةَ قَالَ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رضى الله عنه قَسَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَسْمًا فَقُلْتُ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَغَيْرُ هَؤُلاَءِ كَانَ أَحَقَّ بِهِ مِنْهُمْ . قَالَ “ إِنَّهُمْ خَيَّرُونِي أَنْ يَسْأَلُونِي بِالْفُحْشِ أَوْ يُبَخِّلُونِي فَلَسْتُ بِبَاخِلٍ ” .
‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছু যাকাতের মাল বন্টন করলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি যাদেরকে দিয়েছেন প্রকৃত পক্ষে এরা পাওয়ার যোগ্য নয়। বরং পাওয়ার যোগ্য হল অন্য লোক। উত্তরে তিনি বললেন, তারা আমাকে এমনভাবে বাধ্য করেছে যে, আমি তাদেরকে যদি না দিতাম তাহলে তারা আমার কাছে নির্লজ্জভাবে প্রশ্ন করত অথবা আমাকে কৃপন বলে আখ্যায়িত করত। সুতরাং আমি কৃপণতার আশ্রয় গ্রহণকারী নই (অর্থাৎ কৃপণ নই)। ( ই.ফা. ২২৯৬, ই. সে. ২২৯৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩১৯
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ سُلَيْمَانَ الرَّازِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ مَالِكًا، ح وَحَدَّثَنِي يُونُسُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، – وَاللَّفْظُ لَهُ – أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي مَالِكُ، بْنُ أَنَسٍ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كُنْتُ أَمْشِي مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَعَلَيْهِ رِدَاءٌ نَجْرَانِيٌّ غَلِيظُ الْحَاشِيَةِ فَأَدْرَكَهُ أَعْرَابِيٌّ فَجَبَذَهُ بِرِدَائِهِ جَبْذَةً شَدِيدَةً نَظَرْتُ إِلَى صَفْحَةِ عُنُقِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ أَثَّرَتْ بِهَا حَاشِيَةُ الرِّدَاءِ مِنْ شِدَّةِ جَبْذَتِهِ ثُمَّ قَالَ يَا مُحَمَّدُ مُرْ لِي مِنْ مَالِ اللَّهِ الَّذِي عِنْدَكَ . فَالْتَفَتَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَضَحِكَ ثُمَّ أَمَرَ لَهُ بِعَطَاءٍ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে পথ চলছিলাম, তাঁর পরনে ছিল নাজরানের তৈরি মোটা আঁচল বিশিষ্ট চাদর। এক বেদুঈন তাঁর কাছে আসলো। সে তাঁর চাদর ধরে তাকে সজোরে টান দিল। আমি দেখলাম ফলে তাঁর ঘাড়ে দাগ পরে গেল। সজোরে তার এ টানের কারণে চাদরের আঁচলও পরে গেল। সে (বেদুঈন) বলল, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্র দেয়া যে সব মাল তোমার কাছে আছে এ থেকে আমাকে কিছু দেয়ার জন্য নির্দেশ দাও। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে তাকিয়ে হেসে দিলেন এবং তাকে কিছু মাল দেয়ার নির্দেশ দিলেন। (ই.ফা. ২২৯৭, ই.সে. ২২৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩২০
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، ح وَحَدَّثَنِي سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، كُلُّهُمْ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ، بْنِ مَالِكٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ . وَفِي حَدِيثِ عِكْرِمَةَ بْنِ عَمَّارٍ مِنَ الزِّيَادَةِ قَالَ ثُمَّ جَبَذَهُ إِلَيْهِ جَبْذَةً رَجَعَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي نَحْرِ الأَعْرَابِيِّ . وَفِي حَدِيثِ هَمَّامٍ فَجَاذَبَهُ حَتَّى انْشَقَّ الْبُرْدُ وَحَتَّى بَقِيَتْ حَاشِيَتُهُ فِي عُنُقِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর একই হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
‘আমরের বর্ণিত হাদিসে আরও আছে “তারপর সে (বেদুঈন) এমন জোরে চাদর ধরে টান দিল যে, আল্লাহ্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেদুঈনের ঘাড়ের সাথে লেগে গেল”।
আর হাম্মামের বর্ণনায় আছেঃ এমন জোরে তাঁর চাদর ধরে টান দিল যে, তা ফেটে গেল এবং এর আঁচল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর ঘাড়ে থেকে গেল। (ই.ফা. ২২৯৮, ই. সে. ২২৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩২১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ، أَنَّهُ قَالَ قَسَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَقْبِيَةً وَلَمْ يُعْطِ مَخْرَمَةَ شَيْئًا فَقَالَ مَخْرَمَةُ يَا بُنَىَّ انْطَلِقْ بِنَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . فَانْطَلَقْتُ مَعَهُ قَالَ ادْخُلْ فَادْعُهُ لِي . قَالَ فَدَعَوْتُهُ لَهُ فَخَرَجَ إِلَيْهِ وَعَلَيْهِ قَبَاءٌ مِنْهَا فَقَالَ ” خَبَأْتُ هَذَا لَكَ ” . قَالَ فَنَظَرَ إِلَيْهِ فَقَالَ ” رَضِيَ مَخْرَمَةُ ” .
মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছু সংখ্যক ক্বাবা (শেরওয়ানী) বণ্টন করলেন। কিন্তু (আমার পিতা) মাখরামাহ্কে একটিও দিলেন না। মাখরামাহ্ বললেন, বৎস ! আমার সাথে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে চলো। আমি তার সাথে গেলাম। তিনি বললেন, তুমি ঘরের ভিতর গিয়ে তাঁকে (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে) ডাক। আমি তাঁকে ডাকলাম। তিনি যখন বেরিয়ে আসলেন, ঐ ক্বাবাগুলোর একটি তার পরনে ছিল। তিনি বললেন, ‘এটা আমি তোমার জন্যই রেখেছিলাম।’ বর্ণনাকারী বলেন, তিনি মাখরামার দিকে তাকালেন এবং বললেন, “মাখরামাহ্ সন্তুষ্ট হয়েছে”। (ই.ফা. ২২৯৯, ই.সে. ২৩০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩২২
حَدَّثَنَا أَبُو الْخَطَّابِ، زِيَادُ بْنُ يَحْيَى الْحَسَّانِيُّ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ وَرْدَانَ أَبُو صَالِحٍ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ السَّخْتِيَانِيُّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ، قَالَ قَدِمَتْ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَقْبِيَةٌ فَقَالَ لِي أَبِي مَخْرَمَةُ انْطَلِقْ بِنَا إِلَيْهِ عَسَى أَنْ يُعْطِيَنَا مِنْهَا شَيْئًا . قَالَ فَقَامَ أَبِي عَلَى الْبَابِ فَتَكَلَّمَ فَعَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صَوْتَهُ فَخَرَجَ وَمَعَهُ قَبَاءٌ وَهُوَ يُرِيهِ مَحَاسِنَهُ وَهُوَ يَقُولُ “ خَبَأْتُ هَذَا لَكَ خَبَأْتُ هَذَا لَكَ ” .
মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে কিছু সংখ্যক ক্বাবা (পোশাক-পরিচ্ছেদ পরিধানের জন্য কাপড় বিশেষ) আসলো। আমার পিতা মাখরামাহ্ আমাকে বললেন, “আমার সাথে তাঁর (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে চলো, হয় তো তিনি আমাদেরকে তা থেকে দু’ একটা দিতে পারেন।” বর্ণনাকারী বলেন, আমার পিতা গিয়ে তাঁর দরজায় দাঁড়িয়ে কথা বললেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কণ্ঠস্বর বুঝতে পারলেন। তিনি একটি ক্বাবা সাথে করে তার কারুকাজ ও সৌন্দর্য দেখতে দেখতে বের হলেন এবং বলতে থাকলেনঃ “আমি এটি তোমার জন্য উঠিয়ে রেখেছিলাম; আমি এটি তোমার জন্য উঠিয়ে রেখেছিলাম”। ( ই.ফা. ২৩০০, ই.সে. ২৩০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫. অধ্যায়ঃ
যাকে না দিলে ঈমান থেকে বিচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তাকে দান করা প্রসঙ্গে
২৩২৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، – وَهُوَ ابْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ – حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عَامِرُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، سَعْدٍ أَنَّهُ أَعْطَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَهْطًا وَأَنَا جَالِسٌ فِيهِمْ قَالَ فَتَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْهُمْ رَجُلاً لَمْ يُعْطِهِ وَهُوَ أَعْجَبُهُمْ إِلَىَّ فَقُمْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَارَرْتُهُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا لَكَ عَنْ فُلاَنٍ وَاللَّهِ إِنِّي لأَرَاهُ مُؤْمِنًا . قَالَ ” أَوْ مُسْلِمًا ” . فَسَكَتُّ قَلِيلاً ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَعْلَمُ مِنْهُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا لَكَ عَنْ فُلاَنٍ فَوَاللَّهِ إِنِّي لأَرَاهُ مُؤْمِنًا . قَالَ ” أَوْ مُسْلِمًا ” . فَسَكَتُّ قَلِيلاً ثُمَّ غَلَبَنِي مَا أَعْلَمُ مِنْهُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا لَكَ عَنْ فُلاَنٍ فَوَاللَّهِ إِنِّي لأَرَاهُ مُؤْمِنًا . قَالَ ” أَوْ مُسْلِمًا ” . قَالَ ” إِنِّي لأُعْطِي الرَّجُلَ . وَغَيْرُهُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْهُ خَشْيَةَ أَنْ يُكَبَّ فِي النَّارِ عَلَى وَجْهِهِ ” . وَفِي حَدِيثِ الْحُلْوَانِيِّ تَكْرَارُ الْقَوْلِ مَرَّتَيْنِ .
সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার উপস্থিতিতে কতিপয় লোককে কিছু দান করলেন। আমিও তখন তাদের মধ্যে ছিলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে দেয়া থেকে বিরত থাকলেন। সে আমার দৃষ্টিতে তাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম লোক ছিল। সুতরাং আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি অমুক ব্যক্তিকে দেননি কেন? আল্লাহ্র শপথ! আমি জানি সে মু’মিন লোক। তিনি বললেন, বরং সে মুসলিম। অতঃপর আমি সামান্য সময় চুপ করে থাকলাম। কিন্তু তার সৎগুলাবলী ও ঈমানী চরিত্র সম্পর্কে আমার অবগতি আমাকে প্রভাবিত করায় পুনরায় বললাম, “হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি অমুক ব্যক্তিকে কেন দেননি? আল্লাহ্র শপথ! আমি জানি সে মু’মিন লোক”। তিনি (এবারও) বললেন, বরং সে মুসলিম। আমি এবারও সামান্য সময় চুপ করে থাকলাম। কিন্তু তার সম্পর্কে আমার অবগতি পুনরায় আমাকে প্রভাবিত করল। তাই আমি বললাম, আল্লাহ্র রসূল! আপনি অমুক ব্যক্তিকে কিছু দেননি কেন? আল্লাহ্র শপথ! আমি ভাল করেই জানি সে মু’মিন। তিনি বললেন, বরং সে মুসলিম। তৃতীয়বার বললেন, আমি অধিকাংশ সময় কোন ব্যক্তিকে দেই কিন্তু অপর ব্যক্তি আমার কাছে তার তুলনায় অধিক প্রিয়। এর কারণ হচ্ছে – যদি তাদেরকে না দেই তাহলে হয়তো তাদেরকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
আল হুলওয়ানীর বর্ণনায় দু’বারের উল্লেখ আছে। ( ই.ফা.২৩০১, ই.সে. ২৩০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩২৪
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، ح وَحَدَّثَنِيهِ زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ، ح وَحَدَّثَنَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَعَبْدُ، بْنُ حُمَيْدٍ قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، كُلُّهُمْ عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ عَلَى مَعْنَى حَدِيثِ صَالِحٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ .
যুহরী (রাঃ) থেকে সালিহ (রহঃ) -এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ২৩০২, ই.সে. ২৩০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩২৫
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ سَعْدٍ، يُحَدِّثُ بِهَذَا الْحَدِيثِ – يَعْنِي حَدِيثَ الزُّهْرِيِّ الَّذِي ذَكَرْنَا – فَقَالَ فِي حَدِيثِهِ فَضَرَبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ بَيْنَ عُنُقِي وَكَتِفِي ثُمَّ قَالَ “ أَقِتَالاً أَىْ سَعْدُ إِنِّي لأُعْطِي الرَّجُلَ ” .
মুহাম্মাদ ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সূত্রেও যুহরী বর্ণিত হয়েছে। এ বর্ণনায় আরও আছে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (স্নেহ ভরে) আমার ঘাড় ও কাধের মাঝে হাত মেরে বললেনঃ হে সা’দ! তুমি কি আমার সাথে লড়তে চাও? নিশ্চয়ই আমি কোন ব্যক্তিকে দিয়ে থাকি। (ই.ফা. ২৩০৩, ই.সে. ২৩০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৬. অধ্যায়ঃ
ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য মুয়াল্লিফাতে কুলুবকে দান করা এবং দৃঢ় ঈমানের অধিকারীকে না দেয়া প্রসঙ্গে
২৩২৬
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى التُّجِيبِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ أُنَاسًا، مِنَ الأَنْصَارِ قَالُوا يَوْمَ حُنَيْنٍ حِينَ أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْ أَمْوَالِ هَوَازِنَ مَا أَفَاءَ فَطَفِقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُعْطِي رِجَالاً مِنْ قُرَيْشٍ الْمِائَةَ مِنَ الإِبِلِ فَقَالُوا يَغْفِرُ اللَّهُ لِرَسُولِ اللَّهِ يُعْطِي قُرَيْشًا وَيَتْرُكُنَا وَسُيُوفُنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ . قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ فَحُدِّثَ ذَلِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ قَوْلِهِمْ فَأَرْسَلَ إِلَى الأَنْصَارِ فَجَمَعَهُمْ فِي قُبَّةٍ مِنْ أَدَمٍ فَلَمَّا اجْتَمَعُوا جَاءَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” مَا حَدِيثٌ بَلَغَنِي عَنْكُمْ ” . فَقَالَ لَهُ فُقَهَاءُ الأَنْصَارِ أَمَّا ذَوُو رَأْيِنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ فَلَمْ يَقُولُوا شَيْئًا وَأَمَّا أُنَاسٌ مِنَّا حَدِيثَةٌ أَسْنَانُهُمْ قَالُوا يَغْفِرُ اللَّهُ لِرَسُولِهِ يُعْطِي قُرَيْشًا وَيَتْرُكُنَا وَسُيُوفُنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” فَإِنِّي أُعْطِي رِجَالاً حَدِيثِي عَهْدٍ بِكُفْرٍ أَتَأَلَّفُهُمْ أَفَلاَ تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالأَمْوَالِ وَتَرْجِعُونَ إِلَى رِحَالِكُمْ بِرَسُولِ اللَّهِ فَوَاللَّهِ لَمَا تَنْقَلِبُونَ بِهِ خَيْرٌ مِمَّا يَنْقَلِبُونَ بِهِ ” . فَقَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدْ رَضِينَا . قَالَ ” فَإِنَّكُمْ سَتَجِدُونَ أَثَرَةً شَدِيدَةً فَاصْبِرُوا حَتَّى تَلْقَوُا اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنِّي عَلَى الْحَوْضِ ” . قَالُوا سَنَصْبِرُ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হুনায়নের দিনে আল্লাহ তা’আলা তাঁর রাসূলকে বিনা যুদ্ধে হাওয়াযিন গোত্রের ধন-সম্পদ থেকে যা (গনীমাত হিসাবে) দান করেছিলেন এ থেকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরাইশদের কয়েকজন লোককে একশ’ উট প্রদান করলেন। আনসারদের মধ্যে কয়েক ব্যক্তি বলল, “আল্লাহ্ তাঁর রাসূল কে ক্ষমা করুন, তিনি আমাদের না দিয়ে কুরাইশদের দিচ্ছেন। অথচ তাদের তরবারি থেকে এখনও তাদের রক্ত ঝরছে। ”
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, এ খবর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে পৌঁছলে তিনি আনসারদেরকে ডেকে পাঠালেন। তিনি একটি চামড়ার তাঁবুতে তাদের একত্রিত করলেন। তারা জড়ো হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে বললেন, তোমাদের পক্ষ থেকে আমার কাছে যে কথা পৌঁছেছে তাঁর মানে কি? আনসারদের মধ্যে থেকে বুদ্ধিমান ব্যক্তিগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদের মধ্যে যারা বুদ্ধিমান ও অভিজ্ঞ তারা তো কিছুই বলেনি। তবে আমাদের মধ্যে যারা কম বয়সী তারা বলেছেন – আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ক্ষমা করুন, তিনি আমাদের না দিয়ে কুরাইশদের দিচ্ছেন। অথচ এখনো আমাদের তরবারি থেকে তাদের রক্ত টপকে পড়ছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “আমি এমন লোকদের দিয়ে থাকি যারা সেদিনও কাফির ছিল যাতে তাদের মন সন্তুষ্ট (ও ইসলামের দিকে আকৃষ্ট) থাকে। তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তারা (গনীমাতের) মাল নিয়ে তাদের ঘরে চলে যাবে আর তোমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে নিয়ে ঘরে যাবে?” আল্লাহ্র শপথ! ওরা যা নিয়ে ঘরে ফিরবে তার চেয়ে উত্তম হচ্ছে তোমরা যা নিয়ে ঘরে ফিরবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমরা যা নিচ্ছি তাই উত্তম এবং আমরা সন্তুষ্ট আছি। পুনরায় তিনি বললেন, ভবিষ্যতেও এভাবে তোমাদের উপর অন্যদের (দানের ব্যাপারে) প্রাধান্য দেয়া হবে। তখন তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে সাক্ষাৎ করা পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করবে এবং হাওযে কাওসারের কাছে থাকবে। তারা বললেন, এখন থেকে আমরা ধৈর্য ধারণ করব। (ই.ফা. ২৩০৪, ই.সে. ২৩০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩২৭
حَدَّثَنَا حَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، – وَهُوَ ابْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ – حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، حَدَّثَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّهُ قَالَ لَمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مَا أَفَاءَ مِنْ أَمْوَالِ هَوَازِنَ . وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ بِمِثْلِهِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ قَالَ أَنَسٌ فَلَمْ نَصْبِرْ . وَقَالَ فَأَمَّا أُنَاسٌ حَدِيثَةٌ أَسْنَانُهُمْ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে এ সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
হাওয়াযিন গোত্র থেকে বিনা যুদ্ধে সম্পদ লাভ ও বণ্টন সম্পর্কিত উপরের হাদিসের অনুরূপ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তবে এখানে আরও আছেঃ আনাস (রাঃ) বলেছেন, আমরা ধৈর্য ধারণ করতে পারিনি এবং ‘আমাদের কিছু লোক’ শব্দটি উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ২৩০৫, ই.সে. ২৩০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩২৮
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، . وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمِثْلِهِ . إِلاَّ أَنَّهُ قَالَ قَالَ أَنَسٌ قَالُوا نَصْبِرُ . كَرِوَايَةِ يُونُسَ عَنِ الزُّهْرِيِّ .
আনাস ইবনু মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তবে আনাস (রাঃ) বলেছেন যে, তারা বললেন, “আমরা ধৈর্য ধারণ করব।” যেমন যুহরী ইউনুসের রিওয়ায়াতে বর্ণিত আছে। (ই.ফা. ২৩০৬, ই.সে. ২৩০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩২৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ جَمَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الأَنْصَارَ فَقَالَ ” أَفِيكُمْ أَحَدٌ مِنْ غَيْرِكُمْ ” . فَقَالُوا لاَ إِلاَّ ابْنُ أُخْتٍ لَنَا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ ابْنَ أُخْتِ الْقَوْمِ مِنْهُمْ ” . فَقَالَ ” إِنَّ قُرَيْشًا حَدِيثُ عَهْدٍ بِجَاهِلِيَّةٍ وَمُصِيبَةٍ وَإِنِّي أَرَدْتُ أَنْ أَجْبُرَهُمْ وَأَتَأَلَّفَهُمْ أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَرْجِعَ النَّاسُ بِالدُّنْيَا وَتَرْجِعُونَ بِرَسُولِ اللَّهِ إِلَى بُيُوتِكُمْ لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَسَلَكَ الأَنْصَارُ شِعْبًا لَسَلَكْتُ شِعْبَ الأَنْصَارِ ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের এক স্থানে সমবেত করে বললেনঃ তোমরা অর্থাৎ আনসারগণ ছাড়া অন্য কেউ এখানে আছে কি? তারা (আনসারগণ) বললেন, না। তবে আমাদের এ ভাগ্নে এখানে উপস্থিত আছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বোনের ছেলে বা ভাগ্নে (মাতুল) গোত্রের অন্তর্ভূক্ত। অতঃপর তিনি বললেনঃ কুরায়শরা কেবলমাত্র জাহিলিয়্যাত পরিত্যাগ করেছে এবং সবেমাত্র বিপদ থেকে মুক্তি পেয়েছে। তাই আমি চাচ্ছি। তোমরা কি সন্তুষ্ট নও যে, মানুষ দুনিয়া নিয়ে ফিরে যাক, আর তোমরা আল্লাহর রসূলকে নিয়ে ঘরে প্রত্যাবর্তন কর? তোমাদের সাথে আমার ভালবাসা ও হৃদ্যতার স্বরূপ এই যে, দুনিয়ার সব লোক যদি উপত্যকার দিকে ছুটে আর আনসারগণ যদি কোন গিরিপথে যায় তাহলে আমি আনসারদের গিরিপথেই যাবো (তাদের সাথেই থাকব)। (ই.ফা. ২৩০৭, ই.সে. ২৩০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৩০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ لَمَّا فُتِحَتْ مَكَّةُ قَسَمَ الْغَنَائِمَ فِي قُرَيْشٍ فَقَالَتِ الأَنْصَارُ إِنَّ هَذَا لَهُوَ الْعَجَبُ إِنَّ سُيُوفَنَا تَقْطُرُ مِنْ دِمَائِهِمْ وَإِنَّ غَنَائِمَنَا تُرَدُّ عَلَيْهِمْ . فَبَلَغَ ذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَمَعَهُمْ فَقَالَ ” مَا الَّذِي بَلَغَنِي عَنْكُمْ ” . قَالُوا هُوَ الَّذِي بَلَغَكَ . وَكَانُوا لاَ يَكْذِبُونَ . قَالَ ” أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَرْجِعَ النَّاسُ بِالدُّنْيَا إِلَى بُيُوتِهِمْ وَتَرْجِعُونَ بِرَسُولِ اللَّهِ إِلَى بُيُوتِكُمْ لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا أَوْ شِعْبًا وَسَلَكَتِ الأَنْصَارُ وَادِيًا أَوْ شِعْبًا لَسَلَكْتُ وَادِيَ الأَنْصَارِ أَوْ شِعْبَ الأَنْصَارِ ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাক্কাহ্ বিজয়ের পরে গনীমাতের মাল কুরায়শদের মধ্যে বন্টন করা হলে আনসারগন বললেন, এটা অত্যন্ত আশ্চর্যের কথা যে, আমাদের তরবারি দিয়ে এখনো তাদের রক্ত ঝরছে আর আমাদের গনীমাত তারাই লুটে নিচ্ছে। এ কথা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি তাদেরকে সমবেত করে বললেন, এ কেমন কথা যা তোমাদের পক্ষ থেকে আমার কাছে পৌঁছেছে? তারা বললেন, হ্যাঁ; এ ধরনের কথা হয়েছে। তারা কখনো মিথ্যা বলেন না। তিনি বললেন, তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, অন্যান্য লোকেরা দুনিয়া নিয়ে ঘরে ফিরুক আর তোমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিয়ে ঘরে ফিরে যাও? অন্যান্য লোকেরা যদি কোন উপত্যকা বা গিরিপথে চলে এবং আনসারগণ যদি অপর কোন উপত্যকা বা গিরিপথ ধরে চলে তাহলে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথেই চলব (আমি আনসারদের সাথেই থাকব)। (ই.ফা. ২৩০৮, ই.সে. ২৩০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৩১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَرْعَرَةَ، – يَزِيدُ أَحَدُهُمَا عَلَى الآخَرِ الْحَرْفَ بَعْدَ الْحَرْفِ – قَالاَ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ مُعَاذٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ عَنْ هِشَامِ بْنِ زَيْدِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ أَقْبَلَتْ هَوَازِنُ وَغَطَفَانُ وَغَيْرُهُمْ بِذَرَارِيِّهِمْ وَنَعَمِهِمْ وَمَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَئِذٍ عَشَرَةُ آلاَفٍ وَمَعَهُ الطُّلَقَاءُ فَأَدْبَرُوا عَنْهُ حَتَّى بَقِيَ وَحْدَهُ – قَالَ – فَنَادَى يَوْمَئِذٍ نِدَاءَيْنِ لَمْ يَخْلِطْ بَيْنَهُمَا شَيْئًا – قَالَ – فَالْتَفَتَ عَنْ يَمِينِهِ فَقَالَ ” يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ ” . فَقَالُوا لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَبْشِرْ نَحْنُ مَعَكَ – قَالَ – ثُمَّ الْتَفَتَ عَنْ يَسَارِهِ فَقَالَ ” يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ ” . قَالُوا لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَبْشِرْ نَحْنُ مَعَكَ – قَالَ – وَهُوَ عَلَى بَغْلَةٍ بَيْضَاءَ فَنَزَلَ فَقَالَ أَنَا عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ . فَانْهَزَمَ الْمُشْرِكُونَ وَأَصَابَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غَنَائِمَ كَثِيرَةً فَقَسَمَ فِي الْمُهَاجِرِينَ وَالطُّلَقَاءِ وَلَمْ يُعْطِ الأَنْصَارَ شَيْئًا فَقَالَتِ الأَنْصَارُ إِذَا كَانَتِ الشِّدَّةُ فَنَحْنُ نُدْعَى وَتُعْطَى الْغَنَائِمُ غَيْرَنَا . فَبَلَغَهُ ذَلِكَ فَجَمَعَهُمْ فِي قُبَّةٍ فَقَالَ ” يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ مَا حَدِيثٌ بَلَغَنِي عَنْكُمْ ” . فَسَكَتُوا فَقَالَ ” يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ أَمَا تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالدُّنْيَا وَتَذْهَبُونَ بِمُحَمَّدٍ تَحُوزُونَهُ إِلَى بُيُوتِكُمْ ” . قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ رَضِينَا . قَالَ فَقَالَ ” لَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَسَلَكَتِ الأَنْصَارُ شِعْبًا لأَخَذْتُ شِعْبَ الأَنْصَارِ ” . قَالَ هِشَامٌ فَقُلْتُ يَا أَبَا حَمْزَةَ أَنْتَ شَاهِدٌ ذَاكَ قَالَ وَأَيْنَ أَغِيبُ عَنْهُ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুনায়নের যুদ্ধে হাওয়াযিন, গাত্বফান ও অন্যান্য গোত্রের লোকেরা তাদের সন্তান-সন্ততি ও গবাদি পশু নিয়ে এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দশ হাজারের এক বিরাট বাহিনী এবং মাক্কার তুলাক্বাদের নিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন। তুমুল যুদ্ধের মুখে এরা সবাই পিছে হটে গেল এবং (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একা যুদ্ধ ক্ষেত্রে রয়ে গেলেন। সেদিন তিনি দু’টি ডাক দিলেন কিন্তু এর মাঝখানে কোন কথা বলেননি। প্রথমে তিনি ডান দিকে ফিরে ডাক দিয়ে বললেনঃ “হে আনসার সম্প্রদায়”! তারা তাকে সাড়া দিয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা আপনার সাথেই আছি- আপনি এ সুসংবাদ গ্রহণ করুন। অতঃপর তিনি বাম দিকে ফিরে পুনরায় ডেকে বললেনঃ হে আনসার সম্প্রদায়! তারা ডাকে সাড়া দিয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা আপনার সাথেই আছি, আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। বর্ণনাকারী বলেন, এ সময় তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাদা বর্ণের একটি খচ্চরের পিঠে উপবিষ্ট ছিলেন। অতঃপর তিনি নীচে নেমে এসে বললেন, “আমি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল! মুশরিকরা পরাজিত হলো, গনীমাতের অনেক মাল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হস্তগত হলো। তিনি এসব মাল মুহাজির ও তুলাক্বাদের মধ্যে বন্টন করে দিলেন। তিনি আনসারদের এ থেকে কিছুই দিলেন না। এতে অসন্তুষ্ট হয়ে আনসারগণ বললেন, “বিপদের সময় আমাদের ডাকা হয়, আর গনীমাত বন্টনের সময় মজা লুটে অন্যরা। তাঁদের এ উক্তি তাঁর কানে গিয়ে পৌঁছল। তিনি তাদেরকে একটি তাঁবুর নীচে একত্র করে বললেন, হে আনসার সম্প্রদায়! তোমাদের পক্ষ থেকে কী কথা আমার কাছে পৌঁছেছে? তাঁরা সবাই নীরব হয়ে গেলেন। তিনি বলেন, হে আনসার সম্প্রদায়! তোমরা কি এতে খুশী নও যে, অন্যান্য লোক দুনিয়া নিয়ে ঘরে ফিরবে আর তোমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সঙ্গে নিয়ে ফিরবে? তারা (উত্তরে) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা এতে খুশী আছি। রাবী বলেন, অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “যদি অন্য লোকেরা এক গিরিপথের দিকে যায় আর আনসারগণ অন্য গিরিপথে চলে তাহলে আমি আনসারদের পথই আনুসরণ করব। বর্ণনাকারী হিশাম বলেন, “আমি আনসারকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আবূ হামযাহ্! আপনি কি তখন উপস্থিত ছিলেন! তিনি বললেন, আমি তাঁকে ছেড়ে কোথায় যাব?” (ই.ফা. ২৩০৯, ই.সে. ২৩১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৩২
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، وَحَامِدُ بْنُ عُمَرَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، قَالَ ابْنُ مُعَاذٍ حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ حَدَّثَنِي السُّمَيْطُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ افْتَتَحْنَا مَكَّةَ ثُمَّ إِنَّا غَزَوْنَا حُنَيْنًا فَجَاءَ الْمُشْرِكُونَ بِأَحْسَنِ صُفُوفٍ رَأَيْتُ – قَالَ – فَصُفَّتِ الْخَيْلُ ثُمَّ صُفَّتِ الْمُقَاتِلَةُ ثُمَّ صُفَّتِ النِّسَاءُ مِنْ وَرَاءِ ذَلِكَ ثُمَّ صُفَّتِ الْغَنَمُ ثُمَّ صُفَّتِ النَّعَمُ – قَالَ – وَنَحْنُ بَشَرٌ كَثِيرٌ قَدْ بَلَغْنَا سِتَّةَ آلاَفٍ وَعَلَى مُجَنِّبَةِ خَيْلِنَا خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ – قَالَ – فَجَعَلَتْ خَيْلُنَا تَلْوِي خَلْفَ ظُهُورِنَا فَلَمْ نَلْبَثْ أَنِ انْكَشَفَتْ خَيْلُنَا وَفَرَّتِ الأَعْرَابُ وَمَنْ نَعْلَمُ مِنَ النَّاسِ – قَالَ – فَنَادَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَا لَلْمُهَاجِرِينَ يَا لَلْمُهَاجِرِينَ ” . ثُمَّ قَالَ ” يَا لَلأَنْصَارِ يَا لَلأَنْصَارِ ” . قَالَ قَالَ أَنَسٌ هَذَا حَدِيثُ عِمِّيَّةٍ . قَالَ قُلْنَا لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ – قَالَ – فَتَقَدَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – قَالَ – فَايْمُ اللَّهِ مَا أَتَيْنَاهُمْ حَتَّى هَزَمَهُمُ اللَّهُ – قَالَ – فَقَبَضْنَا ذَلِكَ الْمَالَ ثُمَّ انْطَلَقْنَا إِلَى الطَّائِفِ فَحَاصَرْنَاهُمْ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً ثُمَّ رَجَعْنَا إِلَى مَكَّةَ فَنَزَلْنَا – قَالَ – فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُعْطِي الرَّجُلَ الْمِائَةَ مِنَ الإِبِلِ . ثُمَّ ذَكَرَ بَاقِيَ الْحَدِيثِ كَنَحْوِ حَدِيثِ قَتَادَةَ وَأَبِي التَّيَّاحِ وَهِشَامِ بْنِ زَيْدٍ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা মাক্কাহ্ বিজয় করার পর হুনায়নের যুদ্ধ করলাম। আমি দেখেছি এ যুদ্ধে মুশরিকরা অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও সুবিন্যস্তভাবে কাতারবন্দী হয়েছিল। এদের প্রথম সারিতে অশ্বারোহীগণ, তারপর পদাতিকগণ, এদের পিছনে স্ত্রী লোকেরা যথাক্রমে বকরী অন্যান্য গবাদি পশুগুলো সারিবদ্ধ হয়েছিল। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা সংখ্যায় অনেক লোক ছিলাম। আমাদের সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার পৌঁছে ছিল। আমাদের একদিকে খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) আমাদের অশ্বারোহী বাহিনীর অধিনায়ক ছিলেন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে আমাদের ঘোড়া পিছু হটতে লাগলো। এমনকি আমরা টিকে থাকতে পারছিলাম না। বেদুঈনরা পালাতে শুরু করল। আমার জানা মতে আরো কিছু লোক পালিয়ে গেল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথম মুহাজিরদের ধমক দিয়ে ডাকলেন, হে মুহাজিরগণ! হে মুহাজিরগণ! অতঃপর আনসারদের ধমক দিয়ে বললেন, হে আনসারগণ! হে আনসারগণ! আনসার (রাঃ) বলেন, এ হাদীস আমার নিকট লোক বর্ণনা করেছেন অথবা তিনি বলেছেন, আমার চাচা বর্ণনা করেছেন। রাবী বলেন, আমরা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বললাম, “হে আল্লাহর রসূল! আমরা আপনার সাথেই আছি। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সামনে অগ্রসর হলেন। আনসার (রাঃ) আরো বলেন, আল্লাহর শপথ! আমাদের পৌঁছার পূর্বেই আল্লাহ তা’আলা তাদের পরাজিত করবেন এবং আমরা তাদের সকল প্রকার মাল হস্তগত করলাম। তারপর আমরা ত্বায়িফে গেলাম। ত্বায়িফের অধিবাসীদের চল্লিশ দিন যাবৎ অবরোধ করে রাখলাম, অতঃপর আমরা মাক্কায় ফিরে আসলাম এবং অভিযান সমাপ্ত করলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক ব্যক্তিকে একশ’টি করে উট দিলেন ও অতঃপর হাদীসের বাকী অংশ ক্বাতাদাহ্, আবূ তাইয়্যাহ ও হিমাম ইবনু যায়দ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ২৩১০, ই.সে. ২৩১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৩৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عُمَرَ بْنِ سَعِيدِ بْنِ مَسْرُوقٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبَايَةَ بْنِ رِفَاعَةَ، عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، قَالَ أَعْطَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَبَا سُفْيَانَ بْنَ حَرْبٍ وَصَفْوَانَ بْنَ أُمَيَّةَ وَعُيَيْنَةَ بْنَ حِصْنٍ وَالأَقْرَعَ بْنَ حَابِسٍ كُلَّ إِنْسَانٍ مِنْهُمْ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ وَأَعْطَى عَبَّاسَ بْنَ مِرْدَاسٍ دُونَ ذَلِكَ . فَقَالَ عَبَّاسُ بْنُ مِرْدَاسٍ أَتَجْعَلُ نَهْبِي وَنَهْبَ الْعُبَيْدِ بَيْنَ عُيَيْنَةَ وَالأَقْرَعِ فَمَا كَانَ بَدْرٌ وَلاَ حَابِسٌ يَفُوقَانِ مِرْدَاسَ فِي الْمَجْمَعِ وَمَا كُنْتُ دُونَ امْرِئٍ مِنْهُمَا وَمَنْ تَخْفِضِ الْيَوْمَ لاَ يُرْفَعِ قَالَ فَأَتَمَّ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِائَةً .
রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ সুফ্ইয়ান ইবনু হার্ব, সফ্ওয়ান ইবনু উমাইয়্যাহ্, ‘উয়াইনাহ্ ইবনু হিস্ন ও আক্বরা’ ইবনু হাবিসকে একশ’টি করে উট দিলেন এবং ‘আব্বাস ইবনু মিরদাসকে এদের চেয়ে কিছু কম দিলেন। তখন মিরদাস এ কবিতা পাঠ করলেনঃ
আপনি কি আমার ও আমার ‘উবায়দ’ নামক ঘোড়াটির অংশ
‘উয়াইনাহ্ ও আক্বরা’-কে প্রদত্ত অংশের মাঝামাঝি নির্ধারণ করেছেন?
বস্তুতঃ ‘উয়াইনাহ্ এবং আক্বরা’ উভয়ই সমাজ ও সমাবেশে মিরদাসের চেয়ে
অধিক অগ্রসর হতে বা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারে না।
আর প্রতিযোগিতায় আমি তাদের দু’জনের তুলনায় পিছিয়ে নেই।
আজ যে অনগ্রসর ও হীন বলে গণ্য হবে সে আর উর্ধ্বে উঠতে সক্ষম হবে না।
বর্ণনাকারী বলেন, এ কবিতা শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার উটের সংখ্যাও একশ’ পূর্ণ করে দিলেন। (ই.ফা. ২৩১১, ই.সে. ২৩১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৩৪
وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عُمَرَ بْنِ سَعِيدِ بْنِ مَسْرُوقٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَسَمَ غَنَائِمَ حُنَيْنٍ فَأَعْطَى أَبَا سُفْيَانَ بْنَ حَرْبٍ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِنَحْوِهِ وَزَادَ وَأَعْطَى عَلْقَمَةَ بْنَ عُلاَثَةَ مِائَةً .
‘উমার ইবনু সা’ঈদ ইবনু মাসরূক্ব (রহঃ) থেকে এ সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুনায়ন যুদ্ধে প্রাপ্ত গনীমাতের মাল বন্টন করলেন এবং আবূ সুফ্ইয়ানকে একশ’ উট দিলেন। ….. অবশিষ্ট অংশ উপরে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। এ বর্ণনায় আরো আছে- তিনি ‘আলক্বামাহ্ ইবনু ‘উলাসাকেও একশ’ উট দিলেন। (ই.ফা. ২৩১২, ই.সে. ২৩১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৩৫
وَحَدَّثَنَا مَخْلَدُ بْنُ خَالِدٍ الشَّعِيرِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ سَعِيدٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَلَمْ يَذْكُرْ فِي الْحَدِيثِ عَلْقَمَةَ بْنَ عُلاَثَةَ وَلاَ صَفْوَانَ بْنَ أُمَيَّةَ وَلَمْ يَذْكُرِ الشِّعْرَ فِي حَدِيثِهِ.
‘উমার ইবনু সা’ঈদ থেকে এ সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এ সূত্রে ‘আলক্বামাহ্ ইবনু ‘উসালাহ্ এবং সফ্ওয়ান ইবনু উমাইয়্যার নাম উল্লেখ নেই। তাছাড়া হাদীসে কবিতারও উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ২৩১৩, ই.সে. ২৩১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৩৬
حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى بْنِ عُمَارَةَ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا فَتَحَ حُنَيْنًا قَسَمَ الْغَنَائِمَ فَأَعْطَى الْمُؤَلَّفَةَ قُلُوبُهُمْ فَبَلَغَهُ أَنَّ الأَنْصَارَ يُحِبُّونَ أَنْ يُصِيبُوا مَا أَصَابَ النَّاسُ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَخَطَبَهُمْ فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ ” يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ أَلَمْ أَجِدْكُمْ ضُلاَّلاً فَهَدَاكُمُ اللَّهُ بِي وَعَالَةً فَأَغْنَاكُمُ اللَّهُ بِي وَمُتَفَرِّقِينَ فَجَمَعَكُمُ اللَّهُ بِي ” . وَيَقُولُونَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمَنُّ . فَقَالَ ” أَلاَ تُجِيبُونِي ” . فَقَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمَنُّ . فَقَالَ ” أَمَا إِنَّكُمْ لَوْ شِئْتُمْ أَنْ تَقُولُوا كَذَا وَكَذَا وَكَانَ مِنَ الأَمْرِ كَذَا وَكَذَا ” . لأَشْيَاءَ عَدَّدَهَا . زَعَمَ عَمْرٌو أَنْ لاَ يَحْفَظُهَا فَقَالَ ” أَلاَ تَرْضَوْنَ أَنْ يَذْهَبَ النَّاسُ بِالشَّاءِ وَالإِبِلِ وَتَذْهَبُونَ بِرَسُولِ اللَّهِ إِلَى رِحَالِكُمُ الأَنْصَارُ شِعَارٌ وَالنَّاسُ دِثَارٌ وَلَوْلاَ الْهِجْرَةُ لَكُنْتُ امْرَأً مِنَ الأَنْصَارِ وَلَوْ سَلَكَ النَّاسُ وَادِيًا وَشِعْبًا لَسَلَكْتُ وَادِيَ الأَنْصَارِ وَشِعْبَهُمْ إِنَّكُمْ سَتَلْقَوْنَ بَعْدِي أَثَرَةً فَاصْبِرُوا حَتَّى تَلْقَوْنِي عَلَى الْحَوْضِ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হুনায়নের যুদ্ধে জয়লাভ করার পর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গনীমাতের মাল ‘মুয়াল্লাফাতুল কুলূব-দের মধ্যে বন্টন করলেন। অতঃপর তিনি জানতে পারলেন যে, অন্যান্য লোকেরা যেভাবে গনীমাতের মাল পেয়েছে আনসারগণও অনুরূপ পেতে চায়। তাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে তাদের উদ্দেশ্যে খুতবাহ্ দান করলেন। খুতবার শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পর বললেনঃ “হে আনসার সম্প্রদায়! আমি কি তোমাদের পথভ্রষ্ট, দারিদ্র্য ও পরস্পর বিচ্ছিন্ন পাইনি?” তারপর আমার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন, দারিদ্র্যের অভিশাপ হতে মুক্ত করে ধনী করেছেন। আর তাঁরা বলতেন, আল্লাহ ও তাঁর রসূল অত্যন্ত আমানাতদার। অতঃপর তিনি বললেন, তোমরা আমার কথা জবাব দিচ্ছ না কেন? তখন তাঁরা বললেন, অত্যন্ত আমানাতদার। (অর্থাৎ তিনি যা করেছেন ঠিক করেছেন এবং এতে আমরা রাযী আছি)। অতঃপর তিনি বললেন, যদি তোমরা এভাবে এভাবে বলতে চাও আর বাস্তবে কাজ এরূপ ও এরূপ হয়। ‘আম্র (রাঃ) বলেন, এই বলে তিনি কতগুলো জিনিসের কথা উল্লেখ করলেন যা আমি মনে রাখতে পারিনি। অতঃপর তিনি বললেন, তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, অন্যান্য লোকেরা ছাগল ও উট নিয়ে ঘরে ফিরে যাক আর তোমরা রসূলুল্লাহ (সা)-কে নিয়ে ঘরে ফিরে যাও? তিনি আরো বললেনঃ আনসারগণ হচ্ছে আচ্ছাদন (শরীরের সাথে লেগে থাকা আবরণ) আর অন্য লোকেরা আমাদের থেকে দূরের। যদি হিজরাত না হতো তাহলে আমি আনসারদের মাঠ ও গিরিপথেই যাব। আমার পরে তোমাদেরকে (দেয়ার ব্যাপারে) পিছনে ফেলে রাখা হবে। তখন তোমরা আমার সাথে হাওজের কাছে সাক্ষাৎ করা পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করবে। (ই.ফা. ২৩১৪, ই.সে. ২৩১৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৩৭
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ حُنَيْنٍ آثَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَاسًا فِي الْقِسْمَةِ فَأَعْطَى الأَقْرَعَ بْنَ حَابِسٍ مِائَةً مِنَ الإِبِلِ وَأَعْطَى عُيَيْنَةَ مِثْلَ ذَلِكَ وَأَعْطَى أُنَاسًا مِنْ أَشْرَافِ الْعَرَبِ وَآثَرَهُمْ يَوْمَئِذٍ فِي الْقِسْمَةِ فَقَالَ رَجُلٌ وَاللَّهِ إِنَّ هَذِهِ لَقِسْمَةٌ مَا عُدِلَ فِيهَا وَمَا أُرِيدَ فِيهَا وَجْهُ اللَّهِ . قَالَ فَقُلْتُ وَاللَّهِ لأُخْبِرَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – قَالَ – فَأَتَيْتُهُ فَأَخْبَرْتُهُ بِمَا قَالَ – قَالَ – فَتَغَيَّرَ وَجْهُهُ حَتَّى كَانَ كَالصِّرْفِ ثُمَّ قَالَ ” فَمَنْ يَعْدِلُ إِنْ لَمْ يَعْدِلِ اللَّهُ وَرَسُولُهُ ” . قَالَ ثُمَّ قَالَ ” يَرْحَمُ اللَّهُ مُوسَى قَدْ أُوذِيَ بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصَبَرَ ” . قَالَ قُلْتُ لاَ جَرَمَ لاَ أَرْفَعُ إِلَيْهِ بَعْدَهَا حَدِيثًا .
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন হুনায়ুনের যুদ্ধ সংঘটিত হলো রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গনীমাতের মাল দেয়ার ব্যাপারে কতক লোককে প্রাধান্য দিলেন অর্থাৎ কতক লোককে বেশী দিলেন। সুতরাং তিনি আক্বরা’ ইবনু হাবিসকে একশ’ উট দিলেন, ‘উয়াইনাকেও অনুরূপ সংখ্যক উট দান করলেন এবং আরবের নেতৃস্থানীয় কিছু লোককেও অগ্রাধিকার দিলেন। এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর শপথ! এ বন্টন ইনসাফ ভিত্তিক হয়নি এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টির দিকেও লক্ষ্য রাখা হয়নি। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তখন মনে মনে বললাম, আল্লাহর শপথ! আমি এ কথা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পৌঁছাব। রাবী বলেন, আমি তাঁর কাছে গিয়ে লোকটির উক্তি তাঁকে শুনালাম। ফলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুখমন্ডল রক্তিম বর্ণ ধারন করল। তিনি বললেনঃ আল্লাহ এবং তাঁর রসূলই যদি সুবিচার না করেন তাহলে কে আর ইনসাফ করবে? তিনি পুনরায় বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা মূসা (আঃ)-কে রহমাত করুন, তাঁকে এর চেয়েও বেশী কষ্ট দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আজ থেকে আর কখনও এ ধরনের কোন ব্যাপার তাঁকে জানাব না। (কেননা এতে তাঁর কষ্ট হয়)। (ই.ফা. ২৩১৫, ই.সে. ২৩১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৩৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَسَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَسْمًا فَقَالَ رَجُلٌ إِنَّهَا لَقِسْمَةٌ مَا أُرِيدَ بِهَا وَجْهُ اللَّهِ – قَالَ – فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَسَارَرْتُهُ فَغَضِبَ مِنْ ذَلِكَ غَضَبًا شَدِيدًا وَاحْمَرَّ وَجْهُهُ حَتَّى تَمَنَّيْتُ أَنِّي لَمْ أَذْكُرْهُ لَهُ – قَالَ – ثُمَّ قَالَ “ قَدْ أُوذِيَ مُوسَى بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصَبَرَ ” .
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গনীমাতের কিছু মাল বন্টন করলেন। এক ব্যক্তি বলল, এ বন্টনে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের দিকে লক্ষ্য রাখা হয়নি। বর্ণনাকারী বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গিয়ে এ কথা তাঁকে চুপে চুপে অবহিত করলাম, এতে তিনি অত্যন্ত রাগান্বিত হলেন। ফলে সিদ্ধান্ত নিলাম এ ধরনের কথা তাঁকে আর কখনও বলব না। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি বললেনঃ মূসা (আঃ)-কে এর চেয়েও বেশী কষ্ট দেয়া হয়েছে এবং তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন। (ই.ফা. ২৩১৬, ই.সে. ২৩১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৭. অধ্যায়ঃ
খারিজী সম্প্রদায় ও তাদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা
২৩৩৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحِ بْنِ الْمُهَاجِرِ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي، الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ أَتَى رَجُلٌ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْجِعْرَانَةِ مُنْصَرَفَهُ مِنْ حُنَيْنٍ وَفِي ثَوْبِ بِلاَلٍ فِضَّةٌ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقْبِضُ مِنْهَا يُعْطِي النَّاسَ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ اعْدِلْ . قَالَ ” وَيْلَكَ وَمَنْ يَعْدِلُ إِذَا لَمْ أَكُنْ أَعْدِلُ لَقَدْ خِبْتَ وَخَسِرْتَ إِنْ لَمْ أَكُنْ أَعْدِلُ ” . فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رضى الله عنه دَعْنِي يَا رَسُولَ اللَّهِ فَأَقْتُلَ هَذَا الْمُنَافِقَ . فَقَالَ ” مَعَاذَ اللَّهِ أَنْ يَتَحَدَّثَ النَّاسُ أَنِّي أَقْتُلُ أَصْحَابِي إِنَّ هَذَا وَأَصْحَابَهُ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنْهُ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ ” .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুনায়নের যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জি’রানাহ্ নামক স্থানে অবস্থান করেছিলেন। বিলাল (রাঃ)-এর কাপড়ে কিছু রৌপ্য ছিল এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুঠি ভরে তা লোকদেরকে দিচ্ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল- “হে মুহাম্মাদ! ইনসাফ কর।” তিনি বললেন, হতভাগা, আমিই যদি ইনসাফ না করি তাহলে কে ইনসাফ করবে? আর আমি যদি সুবিচার না করি তাহলে তুমি তো হতভাগ্য ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। এ কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে অনুমুতি দিন আমি এ মুনাফিক্বটাকে হত্যা করি। তিনি বললেন, আমি আল্লাহর আশ্রয় কামনা করি। তাহলে লোক বলবে, আমি আমার সঙ্গী-সাথীদের হত্যা করি। আর এ ব্যক্তি ও তার সাথীরা কুরআন পাঠ করবে- কিন্তু তাদের এ পাঠ তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না (অর্থাৎ অন্তরে কোন প্রকার আবেদন সৃষ্টি করবে না)। তারা কুরআন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। (ই.ফা. ২৩১৭, ই.সে. ২৩১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৪০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ سَعِيدٍ، يَقُولُ أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، ح. وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحُبَابِ، حَدَّثَنِي قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْسِمُ مَغَانِمَ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গনীমাতের মাল বন্টন করছিলেন ….. পূর্বের হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ২৩১৮, ই.সে. ২৩১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৪১
حَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، بْنِ أَبِي نُعْمٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ بَعَثَ عَلِيٌّ – رضى الله عنه – وَهُوَ بِالْيَمَنِ بِذَهَبَةٍ فِي تُرْبَتِهَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَسَمَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَرْبَعَةِ نَفَرٍ الأَقْرَعُ بْنُ حَابِسٍ الْحَنْظَلِيُّ وَعُيَيْنَةُ بْنُ بَدْرٍ الْفَزَارِيُّ وَعَلْقَمَةُ بْنُ عُلاَثَةَ الْعَامِرِيُّ ثُمَّ أَحَدُ بَنِي كِلاَبٍ وَزَيْدُ الْخَيْرِ الطَّائِيُّ ثُمَّ أَحَدُ بَنِي نَبْهَانَ – قَالَ – فَغَضِبَتْ قُرَيْشٌ فَقَالُوا أَتُعْطِي صَنَادِيدَ نَجْدٍ وَتَدَعُنَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنِّي إِنَّمَا فَعَلْتُ ذَلِكَ لأَتَأَلَّفَهُمْ ” فَجَاءَ رَجُلٌ كَثُّ اللِّحْيَةِ مُشْرِفُ الْوَجْنَتَيْنِ غَائِرُ الْعَيْنَيْنِ نَاتِئُ الْجَبِينِ مَحْلُوقُ الرَّأْسِ فَقَالَ اتَّقِ اللَّهَ يَا مُحَمَّدُ . – قَالَ – فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” فَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ إِنْ عَصَيْتُهُ أَيَأْمَنُنِي عَلَى أَهْلِ الأَرْضِ وَلاَ تَأْمَنُونِي ” قَالَ ثُمَّ أَدْبَرَ الرَّجُلُ فَاسْتَأْذَنَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فِي قَتْلِهِ – يُرَوْنَ أَنَّهُ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ – فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّ مِنْ ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمًا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ يَقْتُلُونَ أَهْلَ الإِسْلاَمِ وَيَدَعُونَ أَهْلَ الأَوْثَانِ يَمْرُقُونَ مِنَ الإِسْلاَمِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ لَئِنْ أَدْرَكْتُهُمْ لأَقْتُلَنَّهُمْ قَتْلَ عَادٍ ” .
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার ‘আলী (রাঃ) ইয়ামান থেকে কিছু অপরিশোধিত স্বর্ণ অরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পাঠালেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা চার ব্যক্তি যথা- (১) আক্বরা’ ইবনু হাসিব আল হানযালী, (২) ‘উয়াইনাহ্ ইবনু বাদ্র আল ফাযারী, (৩) ‘আলক্বামাহ্ ইবনু ‘উলাসাহ্ আল ‘আমিরী ও (৪) বানী কিলার গোত্রীয় এক ব্যক্তির মধ্যে বন্টন করলেন এবং এরপর তায়ী গোত্রীয় যায়দ আল খায়র ও বানী নাব্হান গোত্রের এক ব্যক্তিতে এ থেকে দান করলেন। এতে কুরায়শ গোত্রের লোকেরা ক্ষেপে গিয়ে বললেন, “আপনি কেবল নাজ্দের নেতৃস্থানীয় লোকদের দান করেছেন আর আমাদের বাদ দিচ্ছেন, এটা কেমন ব্যাপার?” এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি তাদের শুধু চিত্তাকর্ষণ অর্থাৎ তাদের অন্তরে ইসলামের প্রতি ভালবাসা ও অনুরাগ সৃষ্টির জন্য দিচ্ছি। এমন সময় ঘন দাড়ি, স্ফীত গাল, গর্তে ঢোকা চোখ, উঁচু ললাট ও নেড়া মাথা বিশিষ্ট এক ব্যক্তি এসে বললঃ হে মুহাম্মাদ! আল্লাহকে ভয় কর। তখন রসূউল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমিই যদি আল্লাহর অবাধ্য হই, তাহলে কে তাঁর অনুগত হবে? আল্লাহ আমাকে দুনিয়াবাসীদের জন্য আমানাতদার হিসেবে পাঠিয়েছেন আর তুমি আমাকে আমানাতদার মনে করছো না। এরপর লোকটি ফিরে চলে গেল। উপস্থিত লোকদের মধ্যে এক ব্যক্তি তাকে হত্যা করার অনুমতি চাইল। লোকদের ধারণা, হত্যার অনুমতি প্রার্থী ছিলেন খালিদ ইবনু ওয়ালীদ। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এর মূলে এমন একটি সম্প্রদায় রয়েছে যারা কুরআন পাঠ করে অথচ তাদের এ পাঠ কন্ঠনালী অতিক্রম করে না (অর্থাৎ হৃদয়ে আবেদন সৃষ্টি করে না)। এরা ইসলামের অনুসারীদের হত্যা করে এবং মূর্তিপূজারীদের ছেড়ে দেয়। তীর যেভাবে শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায় তারাও অনুরূপভাবে ইসলাম থেকে বেরিয়ে যায়। যদি আমি তাদেরকে পেতাম তাহলে তাদেরকে এমনভাবে হত্যা করতাম যেভাবে ‘আদ সম্প্রদায়ের লোকদেরকে হত্যা করা হয়েছে (অর্থাৎ সমূলে নিপাত করতাম)। (ই.ফা. ২৩১৯, ই.সে. ২৩২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৪২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ، الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي نُعْمٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ بَعَثَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْيَمَنِ بِذَهَبَةٍ فِي أَدِيمٍ مَقْرُوظٍ لَمْ تُحَصَّلْ مِنْ تُرَابِهَا – قَالَ – فَقَسَمَهَا بَيْنَ أَرْبَعَةِ نَفَرٍ بَيْنَ عُيَيْنَةَ بْنِ حِصْنٍ وَالأَقْرَعِ بْنِ حَابِسٍ وَزَيْدِ الْخَيْلِ وَالرَّابِعُ إِمَّا عَلْقَمَةُ بْنُ عُلاَثَةَ وَإِمَّا عَامِرُ بْنُ الطُّفَيْلِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِهِ كُنَّا نَحْنُ أَحَقَّ بِهَذَا مِنْ هَؤُلاَءِ – قَالَ – فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم . فَقَالَ ” أَلاَ تَأْمَنُونِي وَأَنَا أَمِينُ مَنْ فِي السَّمَاءِ يَأْتِينِي خَبَرُ السَّمَاءِ صَبَاحًا وَمَسَاءً ” . قَالَ فَقَامَ رَجُلٌ غَائِرُ الْعَيْنَيْنِ مُشْرِفُ الْوَجْنَتَيْنِ نَاشِزُ الْجَبْهَةِ كَثُّ اللِّحْيَةِ مَحْلُوقُ الرَّأْسِ مُشَمَّرُ الإِزَارِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ اتَّقِ اللَّهَ . فَقَالَ ” وَيْلَكَ أَوَلَسْتُ أَحَقَّ أَهْلِ الأَرْضِ أَنْ يَتَّقِيَ اللَّهَ ” . قَالَ ثُمَّ وَلَّى الرَّجُلُ فَقَالَ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلاَ أَضْرِبُ عُنُقَهُ فَقَالَ ” لاَ لَعَلَّهُ أَنْ يَكُونَ يُصَلِّي ” . قَالَ خَالِدٌ وَكَمْ مِنْ مُصَلٍّ يَقُولُ بِلِسَانِهِ مَا لَيْسَ فِي قَلْبِهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنِّي لَمْ أُومَرْ أَنْ أَنْقُبَ عَنْ قُلُوبِ النَّاسِ وَلاَ أَشُقَّ بُطُونَهُمْ ” . قَالَ ثُمَّ نَظَرَ إِلَيْهِ وَهُوَ مُقَفٍّ فَقَالَ ” إِنَّهُ يَخْرُجُ مِنْ ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمٌ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ رَطْبًا لاَ يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ – قَالَ أَظُنُّهُ قَالَ – لَئِنْ أَدْرَكْتُهُمْ لأَقْتُلَنَّهُمْ قَتْلَ ثَمُودَ ” .
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার ‘আলী (রাঃ) ইয়ামান থেকে বাবুল গাছের ডাল দিয়ে রঙ্গিন করা একটি চামড়ার থলিতে করে কিছু অপরিশোধিত স্বর্ণ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পাঠালেন। তিনি তা চার ব্যক্তির মধ্যে বন্টন করলেন। তারা হলোঃ ‘উয়াইনাহ্ ইবনু বাদ্র, আক্বরা’ ইবনু হাবিস, যায়দ আল খায়ল এবং চতুর্থ ব্যক্তি হয় ‘আলক্বামাহ্ ইবনু ‘উলাসাহ্ অথবা ‘আমির ইবনু তুফায়ল। তাঁর সহাবীগনের মধ্যে এক ব্যক্তি বলল, তাদের তুলনায় আমরা এর হাক্বদার ছিলাম। বর্ণনাকারী বলেন, এ খবর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি বললেনঃ “আসমানের অধিবাসীদের কাছে আমি আমানাতদার বলে গণ্য অথচ তোমরা কি আমাকে আমানাতদার মনে করছ না? আমার কাছে সকাল-সন্ধ্যায় আসমানের খবর আসছে। অতঃপর গর্তে ঢোকা চোখ, ফোলা গাল বা স্ফীত গাল, উঁচু কপাল ঘন দাড়ি নেড়া মাথা বিশিষ্ট এক ব্যক্তি নিজের পরনের কাপড় সাপটে ধরে অপবাদের সুরে দাঁড়িয়ে বলল,
হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি তার ঘাড়ে আঘাত হানব না, হত্যা করব না? তিনি বললেনঃ না, কারণ হয়তো সে সলাত আদায়কারী হতে পারে। খালিদ (রাঃ) বললেন, অনেক নামাযী আছে যে মুখে এমন কথা বলে যা তার অন্তরের বিপরীত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মানুষের অন্তর বা পেট চিরে দেখার জন্য আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়নি। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি বললেন, এর মূল থেকে এমন সব লোকের আবির্ভাব হবে যারা সহজেই আল্লাহর কিতাব (কুরআন) পড়তে পারবে, কিন্তু এ পাঠ তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। রাবী বলেন, আমার মনে হয়, তিনি বলেছেনঃ যদি আমি তাদেরকে পাই, তাহলে সামূদ জাতির ন্যায় তাদেরকে হত্যা করব। (ই.ফা. ২৩২০, ই.সে. ২৩২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৪৩
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ قَالَ وَعَلْقَمَةُ بْنُ عُلاَثَةَ وَلَمْ يَذْكُرْ عَامِرَ بْنَ الطُّفَيْلِ وَقَالَ نَاتِئُ الْجَبْهَةِ وَلَمْ يَقُلْ نَاشِزُ . وَزَادَ فَقَامَ إِلَيْهِ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ – رضى الله عنه – فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلاَ أَضْرِبُ عُنُقَهُ قَالَ ” لاَ ” . قَالَ ثُمَّ أَدْبَرَ فَقَامَ إِلَيْهِ خَالِدٌ سَيْفُ اللَّهِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلاَ أَضْرِبُ عُنُقَهُ قَالَ ” لاَ ” . فَقَالَ ” إِنَّهُ سَيَخْرُجُ مِنْ ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمٌ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ لَيِّنًا رَطْبًا – وَقَالَ قَالَ عُمَارَةُ حَسِبْتُهُ قَالَ ” لَئِنْ أَدْرَكْتُهُمْ لأَقْتُلَنَّهُمْ قَتْلَ ثَمُودَ ” .
‘উমার ইবনুল ক্বা’ক্বা’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সূত্রেও উপরের হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এ সূত্রে ‘আলক্বামাহ ইবনু উলাসার নাম উল্লেখ আছে, ‘আমির ইবনু তুফায়লের নাম উল্লেখ নেই। এ বর্ণনায় ‘স্ফীত কপাল’ উল্লেখ আছে এবং ‘নাশিযু’ শব্দের উল্লেখ নেই। এতে আরো আছে, ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি তার ঘাড়ে আঘাত হানব না? তিনি বললেন, না। তিনি আরো বললেন, অচিরেই এদের বংশ থেকে এমন একটি দলের আবির্ভাব হবে যারা সুমিষ্ট সুরে সহজে কুরআন পাঠ করবে। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছেন, আমি যদি তাদের সাক্ষাৎ পেতাম তাহলে সামূদ জাতির মতো হত্যা করতাম। (ই.ফা. ২৩২১, ই.সে. ২৩২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৪৪
وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ بَيْنَ أَرْبَعَةِ نَفَرٍ زَيْدُ الْخَيْرِ وَالأَقْرَعُ بْنُ حَابِسٍ وَعُيَيْنَةُ بْنُ حِصْنٍ وَعَلْقَمَةُ بْنُ عُلاَثَةَ أَوْ عَامِرُ بْنُ الطُّفَيْلِ . وَقَالَ نَاشِزُ الْجَبْهَةِ . كَرِوَايَةِ عَبْدِ الْوَاحِدِ . وَقَالَ إِنَّهُ سَيَخْرُجُ مِنْ ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمٌ وَلَمْ يَذْكُرْ “ لَئِنْ أَدْرَكْتُهُمْ لأَقْتُلَنَّهُمْ قَتْلَ ثَمُودَ ” .
‘উমার ইবনুল ক্বা’ক্বা’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কিছুটা শাব্দিক পার্থক্য সহকারে এ সূত্রে উপরের হাদীস অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ২৩২৩, ই.সে. ২৩২৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৪৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ سَعِيدٍ، يَقُولُ أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، وَعَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، أَنَّهُمَا أَتَيَا أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ فَسَأَلاَهُ عَنِ الْحَرُورِيَّةِ، هَلْ سَمِعْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُهَا قَالَ لاَ أَدْرِي مَنِ الْحَرُورِيَّةُ وَلَكِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ يَخْرُجُ فِي هَذِهِ الأُمَّةِ – وَلَمْ يَقُلْ مِنْهَا – قَوْمٌ تَحْقِرُونَ صَلاَتَكُمْ مَعَ صَلاَتِهِمْ فَيَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ . لاَ يُجَاوِزُ حُلُوقَهُمْ – أَوْ حَنَاجِرَهُمْ – يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ مُرُوقَ السَّهْمِ مِنَ الرَّمِيَّةِ فَيَنْظُرُ الرَّامِي إِلَى سَهْمِهِ إِلَى نَصْلِهِ إِلَى رِصَافِهِ فَيَتَمَارَى فِي الْفُوقَةِ هَلْ عَلِقَ بِهَا مِنَ الدَّمِ شَىْءٌ ” .
আবূ সালামাহ্ ও ‘আত্বা ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারা উভয়ে আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাযীঃ)-এর কাছে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হারূরিয়াহ্ (খারিজী জাতি) সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে শুনেছেন? তিনি বলেন, ‘হারূরিয়াহ্’ কে তা আমি জানি না, তবে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ “এ উম্মাতের মধ্যে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে (কিন্তু তিনি তখনকার উম্মাতকে নির্দিষ্ট করে বলেননি) যাদের সলাতের তুলনায় তোমরা নিজেদের সলাতকে নিম্নমানের মনে করবে। তারা কুরআন পাঠ করবে, অথচ এ পাঠ তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে- তীর ছুঁড়লে যেভাবে বেরিয়ে যায়। অতঃপর শিকারী তার ধনুক, তীরের ফলা এবং এর পালকের দিকে লক্ষ্য করে। সে এর লক্ষ্য বস্তুর দিকে দৃষ্টি প্রসারিত করে চিন্তা করে তীরের কোন অংশ রক্তে রঞ্জিত হয়েছে কিনা (অর্থাৎ তাদের মধ্যে ইসলামের নামগন্ধ এবং সামান্যতম চিহ্নও থাকবে না)। (ই.ফা. ২৩২৩, ই.সে. ২৩২৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৪৬
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، ح . وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْفِهْرِيُّ، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَالضَّحَّاكُ الْهَمْدَانِيُّ، أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، قَالَ بَيْنَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَقْسِمُ قَسْمًا أَتَاهُ ذُو الْخُوَيْصِرَةِ وَهُوَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ اعْدِلْ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَيْلَكَ وَمَنْ يَعْدِلُ إِنْ لَمْ أَعْدِلْ قَدْ خِبْتَ وَخَسِرْتَ إِنْ لَمْ أَعْدِلْ ” . فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رضى الله عنه يَا رَسُولَ اللَّهِ ائْذَنْ لِي فِيهِ أَضْرِبْ عُنُقَهُ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” دَعْهُ فَإِنَّ لَهُ أَصْحَابًا يَحْقِرُ أَحَدُكُمْ صَلاَتَهُ مَعَ صَلاَتِهِمْ وَصِيَامَهُ مَعَ صِيَامِهِمْ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الإِسْلاَمِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ يُنْظَرُ إِلَى نَصْلِهِ فَلاَ يُوجَدُ فِيهِ شَىْءٌ ثُمَّ يُنْظَرُ إِلَى رِصَافِهِ فَلاَ يُوجَدُ فِيهِ شَىْءٌ ثُمَّ يُنْظَرُ إِلَى نَضِيِّهِ فَلاَ يُوجَدُ فِيهِ شَىْءٌ – وَهُوَ الْقِدْحُ – ثُمَّ يُنْظَرُ إِلَى قُذَذِهِ فَلاَ يُوجَدُ فِيهِ شَىْءٌ سَبَقَ الْفَرْثَ وَالدَّمَ . آيَتُهُمْ رَجُلٌ أَسْوَدُ إِحْدَى عَضُدَيْهِ مِثْلُ ثَدْىِ الْمَرْأَةِ أَوْ مِثْلُ الْبَضْعَةِ تَدَرْدَرُ يَخْرُجُونَ عَلَى حِينِ فُرْقَةٍ مِنَ النَّاسِ ” . قَالَ أَبُو سَعِيدٍ فَأَشْهَدُ أَنِّي سَمِعْتُ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَشْهَدُ أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ – رضى الله عنه – قَاتَلَهُمْ وَأَنَا مَعَهُ فَأَمَرَ بِذَلِكَ الرَّجُلِ فَالْتُمِسَ فَوُجِدَ فَأُتِيَ بِهِ حَتَّى نَظَرْتُ إِلَيْهِ عَلَى نَعْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي نَعَتَ .
আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম এবং তিনি কিছু জিনিস বন্টন করেছিলেন। এমন সময় বানী তামীম গোত্রের যুল-খুওয়াই সিরাও নামক এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! ইনসাফ করুন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হতভাগ্য, তোমার জন্য আফসোস! আমি যদি ইনসাফ না করি, তাহলে কে ইনসাফ করবে? আমি যদি ইনসাফ না করি তাহলে তুমি তো ক্ষতিগ্রস্ত ও বিফল হয়ে যাবে। অতঃপর ‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে তার শিরচ্ছেদ করার অনুমতি দিন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাকে ছেড়ে দাও, কেননা তার কিছু সঙ্গী সাথী রয়েছে যাদের সলাত সিয়ামের তুলনায় তোমাদের সলাত সিয়াম নিম্নমানের বলে মনে হয়। তারা কুরআন পাঠ করবে অথচ তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তীর যেভাবে শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। তারাও সেভাবে ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবে। অতঃপর সে (ধনুকধারী) তীরের ফলার মূলভাগ পরীক্ষা করে দেখে। এতেও সে কিছুই দেখতে পায় না, তারপর সে তীর পরীক্ষা করে দেখে এতেও সে দেখে না। অবশেষে সে তীরের পালক পরীক্ষা করে দেখে এতেও সে কিছু পায় না, তীর এত দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যায় যে, রক্ত বা মলের দাগ এতে লাগতে পারে না। এ সম্প্রদায়কে চেনার উপায় হলো, এদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তির আবির্ভাব হবে যার এক বাহুতে মহিলাদের স্তনের ন্যায় একটি অতিরিক্ত মাংসপেশী থাকবে এবং তা থলথল করতে থাকবে। এদের আবির্ভাব এমন সময় হবে যখন মানুষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেবে। আবূ সা’ঈদ (রাঃ) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এ কথা আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে শুনেছি এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, ‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) তাদের সাথে যখন যুদ্ধ করেছিলেন, আমি স্বয়ং তার সাথে ছিলাম। অতঃপর তিনি উল্লেখিত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে আনার জন্য নির্দেশ দিলেন। তাকে খুঁজে পাওয়া গেল এবং ‘আলীর সামনে উপস্থিত করা হলো। আমি তাকে প্রত্যক্ষ করে দেখলাম তার মধ্যে সব চিহ্ন ও বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সম্বন্ধে বলেছেন। (ই.ফা. ২৩২৪, ই.সে. ২৩২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৪৭
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ذَكَرَ قَوْمًا يَكُونُونَ فِي أُمَّتِهِ يَخْرُجُونَ فِي فُرْقَةٍ مِنَ النَّاسِ سِيمَاهُمُ التَّحَالُقُ قَالَ ” هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ – أَوْ مِنْ أَشَرِّ الْخَلْقِ – يَقْتُلُهُمْ أَدْنَى الطَّائِفَتَيْنِ إِلَى الْحَقِّ ” . قَالَ فَضَرَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَهُمْ مَثَلاً أَوْ قَالَ قَوْلاً ” الرَّجُلُ يَرْمِي الرَّمِيَّةَ – أَوْ قَالَ الْغَرَضَ – فَيَنْظُرُ فِي النَّصْلِ فَلاَ يَرَى بَصِيرَةً وَيَنْظُرُ فِي النَّضِيِّ فَلاَ يَرَى بَصِيرَةً وَيَنْظُرُ فِي الْفُوقِ فَلاَ يَرَى بَصِيرَةً ” . قَالَ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ وَأَنْتُمْ قَتَلْتُمُوهُمْ يَا أَهْلَ الْعِرَاقِ .
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন এক সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করলেন যারা তার ক্বওমের মধ্যে আবির্ভাব হবে। সমাজে তখন বিভেদ বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়বে এ সময় আত্মপ্রকাশ করবে। আর তাদেরকে চিনাত উপায় হলো – তারা নেড়া মাথা বিশিষ্ট হবে। তিনি আরো বলেছেন, এরা হবে নিকৃষ্টতম সৃষ্টির নিকৃষ্ট লোক তাদের দু’দলের মধ্যে এমন দলটি হত্যা করবে যারা হবে হাক্বের নিকটতর। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের মধ্যে একটি উদাহরণ অথবা একটি কথা বলেন। তা হলো – কোন ব্যাক্তি শিকারের দিকে অথবা লক্ষ্যবস্তুর দিকে তীর নিক্ষেপ করল অতঃপর সে তীরের ফলার দিকে লক্ষ্য করল। কিন্তু কোন চিহ্ন দেখতে পায় না, সে তীরের দিকে তাকিয়ে দেখে – তাতেও কোন চিহ্ন দেখতে পায় না। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, সে ইরাকের অধিবাসীগণ! তোমরাই তাদেরকে [আলী (রাঃ) -এর সাথে মিলে] হত্যা করেছো। (ই.ফা. ২৩২৫ ই.সে. ২৩২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৪৮
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ، – وَهُوَ ابْنُ الْفَضْلِ الْحُدَّانِيُّ – حَدَّثَنَا أَبُو نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ تَمْرُقُ مَارِقَةٌ عِنْدَ فُرْقَةٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يَقْتُلُهَا أَوْلَى الطَّائِفَتَيْنِ بِالْحَقِّ ” .
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন মুসলিমের মধ্যে কলহ ও মতভেদ সৃষ্টি হবে তখন একদল লোক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং এ দু’দলের মধ্যে যেটি হাক্বের অধিকতর নিকটবর্তী হবে সেটিই ঐ সম্প্রদায়কে হত্যা করবে। (ই. ফা. ২৩২৬ ই. সে. ২৩২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৪৯
حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ تَكُونُ فِي أُمَّتِي فِرْقَتَانِ فَتَخْرُجُ مِنْ بَيْنِهِمَا مَارِقَةٌ يَلِي قَتْلَهُمْ أَوْلاَهُمْ بِالْحَقِّ ” .
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাত দু’দলে বিভক্ত হয়ে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এর মধ্যে যে দলটি হাক্বের অধিকতর নিকটবর্তী হবে সেটিই ঐ সম্প্রদায়কে হত্যা করবে। (ই.ফা. ২৩২৭ ই.সে. ২৩২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৫০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي، سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ تَمْرُقُ مَارِقَةٌ فِي فُرْقَةٍ مِنَ النَّاسِ فَيَلِي قَتْلَهُمْ أَوْلَى الطَّائِفَتَيْنِ بِالْحَقِّ ” .
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “লোকদের মাঝে যখন কলহ ও বিবাদের সৃষ্টি হবে তখন একদল লোক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এর মধ্যে যে দলটি হাক্বের অধিকতর নিকটবর্তী হবে সেটিই অপরটিকে হত্যা করবে।” (ই.ফা. ২৩২৮ ই.সে. ২৩২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৫১
حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ الْقَوَارِيرِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنِ الضَّحَّاكِ الْمِشْرَقِيِّ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي حَدِيثٍ ذَكَرَ فِيهِ قَوْمًا يَخْرُجُونَ عَلَى فُرْقَةٍ مُخْتَلِفَةٍ يَقْتُلُهُمْ أَقْرَبُ الطَّائِفَتَيْنِ مِنَ الْحَقِّ .
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) অপর এক হাদীসে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
যখন বিভিন্ন প্রকার কলহের আবির্ভাব হবে তখন একটি দল বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং দু’দলের মধ্যে যেটি সত্যের অধিক নিকটতর সেটি তাদের হত্যা করবে। (ই.ফা. ২৩২৯ ই.সে. ২৩৩০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৮. অধ্যায়ঃ
খারিজী সম্প্রদায়কে হত্যা করতে উৎসাহ প্রদান প্রসঙ্গে
২৩৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ الأَشَجُّ، جَمِيعًا عَنْ وَكِيعٍ، – قَالَ الأَشَجُّ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، – حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ خَيْثَمَةَ، عَنْ سُوَيْدِ بْنِ غَفَلَةَ، قَالَ قَالَ عَلِيٌّ إِذَا حَدَّثْتُكُمْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلأَنْ أَخِرَّ مِنَ السَّمَاءِ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ أَقُولَ عَلَيْهِ مَا لَمْ يَقُلْ وَإِذَا حَدَّثْتُكُمْ فِيمَا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ فَإِنَّ الْحَرْبَ خَدْعَةٌ . سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ سَيَخْرُجُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ قَوْمٌ أَحْدَاثُ الأَسْنَانِ سُفَهَاءُ الأَحْلاَمِ يَقُولُونَ مِنْ خَيْرِ قَوْلِ الْبَرِيَّةِ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ فَإِذَا لَقِيتُمُوهُمْ فَاقْتُلُوهُمْ فَإِنَّ فِي قَتْلِهِمْ أَجْرًا لِمَنْ قَتَلَهُمْ عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” .
সুওয়াইদ ইবনু গাফালাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) বলেছেনঃ আমি কোন কথা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে বানিয়ে বলার চেয়ে – আমার আকাশ থেকে পড়ে যাওয়া শ্রেয় মনে করি। আর যখন আমি আমার ও তোমাদের মধ্যকার ব্যাপার নিয়ে কথা বলি তখন মনে রাখবে যে, যুদ্ধে কৌশল ও চাতুরকার আশ্রয় নেয়া বৈধ। আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনিঃ সে যুগে (অর্থাৎ কিয়ামাতের পূর্বে) এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা অল্প বয়স্ক ও স্বল্প-বুদ্ধি সম্পন্ন হবে। তারা সৃষ্টি জগতের চেয়ে ভাল ভাল কথা বলবে, তারা কুরআন মাজীদ পাঠ করবে কিন্তু তা তাদের গলার নিচে যাবে না। তীর যেভাবে শিকার থেকে বেরিয়ে যায় তারাও অনুরূপভাবে বেরিয়ে যাবে। অতএব, তোমারা তাদের মুখোমুখী হলে তাদের হত্যা করে ফেলবে। কেননা তাদেরকে যারা হত্যা করবে তারা ক্বিয়ামাতের আল্লাহর কাছে সোয়াব পাবে। (ই.ফা. ২৩৩০ ই.সে. ২৩৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৫৩
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي، بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ وَأَبُو بَكْرِ بْنُ نَافِعٍ قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، كِلاَهُمَا عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَهُ .
আ’মাশ (রহঃ)-এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। (ই. ফা. ২৩৩১ ই. সে. ২৩৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৫৪
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، كِلاَهُمَا عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . وَلَيْسَ فِي حَدِيثِهِمَا “ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ ” .
আ’মাশ (রহঃ) থেকে অপর এক সানাদ থেকে বর্ণিতঃ
উপরে বর্ণিত হাদীসটির অনুরূপ একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তবে এখানে- “তীর যেভাবে শিকার থেকে বেরিয়ে যায় তারা অনুরূপভাবে দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে” কথাটির উল্লেখ নেই। (ই. ফা. ২৩৩২ ই. সে. ২৩৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৫৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، وَحَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُمَا – قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبِيدَةَ، عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ ذَكَرَ الْخَوَارِجَ فَقَالَ فِيهِمْ رَجُلٌ مُخْدَجُ الْيَدِ – أَوْ مُودَنُ الْيَدِ أَوْ مَثْدُونُ الْيَدِ – لَوْلاَ أَنْ تَبْطَرُوا لَحَدَّثْتُكُمْ بِمَا وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ يَقْتُلُونَهُمْ عَلَى لِسَانِ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم – قَالَ – قُلْتُ آنْتَ سَمِعْتَهُ مِنْ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِي وَرَبِّ الْكَعْبَةِ إِي وَرَبِّ الْكَعْبَةِ إِي وَرَبِّ الْكَعْبَةِ .
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
। তিনি খারিজীদের সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, তাদের মধ্যে এমন এক ব্যাক্তি থাকবে যার হাত খাটো বা মহিলাদের স্তনের ন্যায় হবে। তোমরা যদি অহংকারে লিপ্ত না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে পার তাহলে আমি তোমাদেরকে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যবানে আল্লাহ প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি সম্বন্ধে আলোচনা করব যা তিনি তাদের হত্যাকারীদের সম্পর্কে বলেছেন। (ই. ফা. ২৩৩৩ ই. সে. ২৩৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৫৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبِيدَةَ، قَالَ لاَ أُحَدِّثُكُمْ إِلاَّ مَا سَمِعْتُ مِنْهُ، . فَذَكَرَ عَنْ عَلِيٍّ، نَحْوَ حَدِيثِ أَيُّوبَ مَرْفُوعًا .
মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবীদাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি সরাসরি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুখে এ কথা শুনেছেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ, কা‘বার প্রভুর শপথ! হ্যাঁ কা‘বার প্রভুর শপথ! হ্যাঁ, কা‘বার প্রভুর শপথ! (ই. ফা. ২৩৩৪ ই. সে.)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৫৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ بْنُ هَمَّامٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ كُهَيْلٍ، حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ الْجُهَنِيُّ، أَنَّهُ كَانَ فِي الْجَيْشِ الَّذِينَ كَانُوا مَعَ عَلِيٍّ – رضى الله عنه – الَّذِينَ سَارُوا إِلَى الْخَوَارِجِ فَقَالَ عَلِيٌّ رضى الله عنه أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ يَخْرُجُ قَوْمٌ مِنْ أُمَّتِي يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَيْسَ قِرَاءَتُكُمْ إِلَى قِرَاءَتِهِمْ بِشَىْءٍ وَلاَ صَلاَتُكُمْ إِلَى صَلاَتِهِمْ بِشَىْءٍ وَلاَ صِيَامُكُمْ إِلَى صِيَامِهِمْ بِشَىْءٍ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ يَحْسِبُونَ أَنَّهُ لَهُمْ وَهُوَ عَلَيْهِمْ لاَ تُجَاوِزُ صَلاَتُهُمْ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الإِسْلاَمِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ ” . لَوْ يَعْلَمُ الْجَيْشُ الَّذِينَ يُصِيبُونَهُمْ مَا قُضِيَ لَهُمْ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِمْ صلى الله عليه وسلم لاَتَّكَلُوا عَنِ الْعَمَلِ وَآيَةُ ذَلِكَ أَنَّ فِيهِمْ رَجُلاً لَهُ عَضُدٌ وَلَيْسَ لَهُ ذِرَاعٌ عَلَى رَأْسِ عَضُدِهِ مِثْلُ حَلَمَةِ الثَّدْىِ عَلَيْهِ شَعَرَاتٌ بِيضٌ فَتَذْهَبُونَ إِلَى مُعَاوِيَةَ وَأَهْلِ الشَّامِ وَتَتْرُكُونَ هَؤُلاَءِ يَخْلُفُونَكُمْ فِي ذَرَارِيِّكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَاللَّهِ إِنِّي لأَرْجُو أَنْ يَكُونُوا هَؤُلاَءِ الْقَوْمَ فَإِنَّهُمْ قَدْ سَفَكُوا الدَّمَ الْحَرَامَ وَأَغَارُوا فِي سَرْحِ النَّاسِ فَسِيرُوا عَلَى اسْمِ اللَّهِ . قَالَ سَلَمَةُ بْنُ كُهَيْلٍ فَنَزَّلَنِي زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ مَنْزِلاً حَتَّى قَالَ مَرَرْنَا عَلَى قَنْطَرَةٍ فَلَمَّا الْتَقَيْنَا وَعَلَى الْخَوَارِجِ يَوْمَئِذٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ الرَّاسِبِيُّ فَقَالَ لَهُمْ أَلْقُوا الرِّمَاحَ وَسُلُّوا سُيُوفَكُمْ مِنْ جُفُونِهَا فَإِنِّي أَخَافُ أَنْ يُنَاشِدُوكُمْ كَمَا نَاشَدُوكُمْ يَوْمَ حَرُورَاءَ . فَرَجَعُوا فَوَحَّشُوا بِرِمَاحِهِمْ وَسَلُّوا السُّيُوفَ وَشَجَرَهُمُ النَّاسُ بِرِمَاحِهِمْ – قَالَ – وَقُتِلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَمَا أُصِيبَ مِنَ النَّاسِ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ رَجُلاَنِ فَقَالَ عَلِيٌّ رضى الله عنه الْتَمِسُوا فِيهِمُ الْمُخْدَجَ . فَالْتَمَسُوهُ فَلَمْ يَجِدُوهُ فَقَامَ عَلِيٌّ – رضى الله عنه – بِنَفْسِهِ حَتَّى أَتَى نَاسًا قَدْ قُتِلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ قَالَ أَخِّرُوهُمْ . فَوَجَدُوهُ مِمَّا يَلِي الأَرْضَ فَكَبَّرَ ثُمَّ قَالَ صَدَقَ اللَّهُ وَبَلَّغَ رَسُولُهُ – قَالَ – فَقَامَ إِلَيْهِ عَبِيدَةُ السَّلْمَانِيُّ فَقَالَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ لَسَمِعْتَ هَذَا الْحَدِيثَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِي وَاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ . حَتَّى اسْتَحْلَفَهُ ثَلاَثًا وَهُوَ يَحْلِفُ لَهُ .
যায়দ ইবনু ওয়াহব আল জুহানী থেকে বর্ণিতঃ
যে সৈন্যদল ‘আলী (রাঃ)-এর সাথে খারিজীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছিল – তিনি তাদের সাথে উপস্হিত ছিলেন। ‘আলী (রাঃ) বললেন, হে লোক সকল! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতে শুনেছিঃ “আমার উম্মাতের মধ্যে এমন সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে যারা কুরআন পাঠ করবে। তোমাদের পাঠ তাদের পাঠের তুলনায় নিম্মমানের হবে। অনুরূপভাবে তাদের সালাম ও সিয়া্মের তুলানায় তোমাদের সলাত-সিয়াম সামান্য বলে মনে হবে। কুরআন পাঠ করে তারা ধারণা করবে এতে তাদের লাভ হচ্ছে। অথচ এটা তাদের জন্য ক্ষতিরই কারণ হবে। তাদের সালাত তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা ইসলাম থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমনটি তীর বেরিয়ে যায় শিকার থেকে। আর যে সৈন্যদল তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে তারা যদি তাদের নীরব মাধ্যমে কৃত ওয়া’দা সম্পর্কে জানতে পারত তাহলে তারা এ কাজের (পুরস্কারের) উপরই ভরসা করে বসে থাকত। সে দলের চিহ্ন হলো – তাদের মধ্যে এমন এক লোক থাকবে যার বাহুর অগ্রভাগে স্ত্রীলোকের স্তনের বোঁটার ন্যায় একটি মাংসপেশি থাকবে। এর সাদা পশম থাকবে। ‘আলী (রাঃ) বলেন, অতএব তোমরা মু’আবিয়াহ ও সিরিয়ার অধিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানে যাচ্ছ। অপরদিকে তোমরা নিজেদের সন্তান-সন্তুতি ও ধন-সম্পদের পিছনে এদেরকে (খারিজী) রেখে যাচ্ছ। আল্লাহর শপথ ! আমার বিশ্বাস এরাই হচ্ছে সেই সম্প্রদায় (যাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করার ব্যাপারে তোমাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে)। কেননা এরা অবৈধভাবে রক্তপাত ঘটিয়েছে ও মানুষের গবাদি পশু লুটপাট করেছে। সুতরাং আল্লাহর নাম নিয়ে যাত্রা শুরু কর।
সালামহ ইবনু কুহায়ল বলেন, অতঃপর যায়দ ইবনু ওয়াহব (রাঃ) প্রতিটি মঞ্জিলের বর্ণনায় আমাকে দেয়েছেন। এমনকি তিনি বলেছেন, “আমারা একটি পুলের উপর দিয়ে অতিক্রম করে খারিজীদের মুখোমুখি হলাম। এ দিন ‘আবদুল্লাহ ইবনু ওয়াহব আর রাসিবী খারিজীদের সেনাপতি ছিলেন। সে তাদেরকে বলল, তোমরা বল্লম ফেলে দিয়ে খাপ থেকে তরবারি বের কর। কেননা আমার আশঙ্কা হচ্ছে, তারা হারূরার দিনের ন্যায় আজও তোমাদের উপর চরম আঘাত হানবে। সুতরাং তারা ফিরে গিয়ে বল্লম ফেলে দিয়ে তরবারি খাপ থেকে বের করে নিল। লোকজন বল্লম দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হল। তারা একের পর এক নিহত হতে লাগল। সেদিন ‘আলী (রাঃ)-এর দল থেকে মাত্র দু’জন লোক নিহত হল। অতঃপর ‘আলী (রাঃ) বললেন, তোমরা এদের মধ্যে থেকে সে বিকলাঙ্গ ব্যাক্তিকে খুঁজে বের কর। অতঃপর তারা তাকে খুঁজে পেল না। তখন ‘আলী (রাঃ) নিজেই দাঁড়ালেন এবং নিহতদের পাশে গিয়ে লাশগুলো সরাবার নির্দেশ দিলেন। তিনি তাকে জমীনের উপর পড়ে থাকা অবস্হায় দেখতে পেয়ে – “আল্ল-হু আকবর” বলে উঠলেন। অতঃপর তিনি পুনরায় বললেন, “আল্লাহ তা’য়ালা সত্য কথাই বলেছেন এবং তাঁর রাসুল সঠিক সংবাদ পৌছিয়েছেন”। রাবী বলেন, এরপর ‘আবিদাহ আস সালমানী তাঁর কাছে দাঁড়িয়ে বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! সে মহান আল্লাহর শপথ যিনি ছাড়া অন্য কোন মা’বুদ নেই। আমিও এ হাদীসটি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে শুনেছি। এভাবে তিনি (‘আলী) তিনবার শপথ করে ‘আবদাহ্ আস সালমানীকে একই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন। (ই. ফা. ২৩৩৫ ই. সে. ২৩৩৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৫৮
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَيُونُسُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى، قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ بُكَيْرِ بْنِ الأَشَجِّ، عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّ الْحَرُورِيَّةَ لَمَّا خَرَجَتْ وَهُوَ مَعَ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ – رضى الله عنه – قَالُوا لاَ حُكْمَ إِلاَّ لِلَّهِ . قَالَ عَلِيٌّ كَلِمَةُ حَقٍّ أُرِيدَ بِهَا بَاطِلٌ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَصَفَ نَاسًا إِنِّي لأَعْرِفُ صِفَتَهُمْ فِي هَؤُلاَءِ “ يَقُولُونَ الْحَقَّ بِأَلْسِنَتِهِمْ لاَ يَجُوزُ هَذَا مِنْهُمْ – وَأَشَارَ إِلَى حَلْقِهِ – مِنْ أَبْغَضِ خَلْقِ اللَّهِ إِلَيْهِ مِنْهُمْ أَسْوَدُ إِحْدَى يَدَيْهِ طُبْىُ شَاةٍ أَوْ حَلَمَةُ ثَدْىٍ ” . فَلَمَّا قَتَلَهُمْ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ – رضى الله عنه – قَالَ انْظُرُوا . فَنَظَرُوا فَلَمْ يَجِدُوا شَيْئًا فَقَالَ ارْجِعُوا فَوَاللَّهِ مَا كَذَبْتُ وَلاَ كُذِبْتُ . مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا ثُمَّ وَجَدُوهُ فِي خَرِبَةٍ فَأَتَوْا بِهِ حَتَّى وَضَعُوهُ بَيْنَ يَدَيْهِ . قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ وَأَنَا حَاضِرُ ذَلِكَ مِنْ أَمْرِهِمْ . وَقَوْلِ عَلِيٍّ فِيهِمْ زَادَ يُونُسُ فِي رِوَايَتِهِ قَالَ بُكَيْرٌ وَحَدَّثَنِي رَجُلٌ عَنِ ابْنِ حُنَيْنٍ أَنَّهُ قَالَ رَأَيْتُ ذَلِكَ الأَسْوَدَ .
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুক্ত গোলাম ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু রাফি’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যখন হারূরিয়াহ বের হলো এবং যখন সে ‘আলী (রাঃ)-এর সাথে ছিল তখন বলল, “আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো হুকুম দেয়ার অধিকার নেই” ‘আলী (রাঃ) বলেন, “এ কথাটি সত্য কিন্তু এর পেছনে তাদের হীন উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে।” রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যাক্তি সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছিলেন আমি তাদের মধ্যে সে চিহ্নগুলো ভালভাবেই লক্ষ্য করেছি। তারা মুখে সত্য কথা বলে কিন্তু তা তাদের এটা থেকে অতিক্রম করে না। এ বলে তিনি (‘উবাইদুল্লাহ) তার কন্ঠনালীর দিকে ইঙ্গিত করলেন। (অর্থাৎ সত্য কথা গলার নীচে যায় না)। আল্লাহর সৃষ্টি জগতে এরা তাঁর চরম শত্রু। তাদের মধ্যে কালো বর্ণের এক ব্যাক্তি রয়েছে যার একটি হাত বকরীর স্তন বা স্তনেত বোঁটার ন্যায়। অতঃপর ‘আলী (রাঃ) তাদেরকে হত্যা করার পর বললেন, তোমরা তাকে খুঁজে বের কর। কিন্তু তারা তাকে খুঁজে পেল না। তিনি পুনরায় বললেন, তোমরা গিয়ে আবার খোঁজ কর। আল্লাহর শপথ! আমি মিথ্যা বলিনি এবং আমার কাছেও মিথ্যা বলা হয়নি। (অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কাছে মিথ্যা বলেননি এবং আমিও তোমাদের কাছে মিথ্যা বলছি না।) এ কথাটি তিনি দু’ অথবা তিনবার বললেন। তারা তাকে ধ্বংস-স্তুপের মধ্যে পেয়ে গেল এবং নিয়ে এসে তাঁর সামনে রাখল। ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, তাদের এ তৎপরতার সময় এবং ‘আলী (রাঃ) খারিজীদের সম্বন্ধে এ উক্তিটি করার সময় আমি সেখানে উপস্হিত ছিলাম।
ইউনুসের বর্ণনায় আরও আছে, বুকায়র বলেনঃ ‘আমার কাছে এক ব্যাক্তি ইবনু হুনায়নের সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “সে কালো লোকটিকে আমি দেখেছি”। (ই. ফা. ২৩৩৬ ই. সে. ২৩৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৯ অধ্যায়ঃ
সৃষ্টি ও চরিত্রগত দিক দিয়ে খারিজী সম্প্রদায় সবচেয়ে নিকৃষ্ট
২৩৫৯
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ هِلاَلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الصَّامِتِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنَّ بَعْدِي مِنْ أُمَّتِي – أَوْ سَيَكُونُ بَعْدِي مِنْ أُمَّتِي – قَوْمٌ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ حَلاَقِيمَهُمْ يَخْرُجُونَ مِنَ الدِّينِ كَمَا يَخْرُجُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ ثُمَّ لاَ يَعُودُونَ فِيهِ هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ وَالْخَلِيقَةِ ” . فَقَالَ ابْنُ الصَّامِتِ فَلَقِيتُ رَافِعَ بْنَ عَمْرٍو الْغِفَارِيَّ أَخَا الْحَكَمِ الْغِفَارِيِّ قُلْتُ مَا حَدِيثٌ سَمِعْتُهُ مِنْ أَبِي ذَرٍّ كَذَا وَكَذَا فَذَكَرْتُ لَهُ هَذَا الْحَدِيثَ فَقَالَ وَأَنَا سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পরে আমার উম্মাতের মধ্যে বা অচিরেই আমার উম্মাতের মধ্যে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে – তারা কুরআন পাঠ করবে কিন্তু তা তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না, তীর যেভাবে শিকার ভেদ করে চলে যায় তারাও তেমনি দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে, আর ফিরে আসবে না। সৃষ্টিকূলের মধ্যে তারা নিকৃষ্ট ও অধম।
ইবনু সামিত (রাঃ) বলেন, আমি হাকাম আল গিফারির ভাই রাফি’ ইবনু ‘আমর আল গিফারির সাথে সাক্ষাৎ করে বললাম, আমি আবূ যার (রাঃ) থেকে এ ধরনের হাদীস শুনেছি এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? তার সামনে এ হাদীসটিও উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, আমি এ হাদীসটি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে শুনেছি। (ই. ফা. ২৩৩৭ ই. সে. ২৩৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ يُسَيْرِ بْنِ، عَمْرٍو قَالَ سَأَلْتُ سَهْلَ بْنَ حُنَيْفٍ هَلْ سَمِعْتَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ الْخَوَارِجَ فَقَالَ سَمِعْتُهُ – وَأَشَارَ بِيَدِهِ نَحْوَ الْمَشْرِقِ “ قَوْمٌ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ بِأَلْسِنَتِهِمْ لاَ يَعْدُو تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ ” .
ইউসায়র ইবনু ‘আমর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে খারিজীদের সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে হাত দিয়ে পূর্ব দিকে ইঙ্গিত করে বলতে শুনেছিঃ এরা এমন এক সম্প্রদায়, তারা কুরআন পড়ে কিন্তু তা তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার থেকে বেরিয়ে যায়। (ই. ফা. ২৩৩৮ ই. সে. ২৩৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬১
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كَامِلٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ الشَّيْبَانِيُّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ يَخْرُجُ مِنْهُ أَقْوَامٌ .
সুলায়মান আশ্ শায়বানী (রহঃ)-এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
এ সনদে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এ উম্মাতের থেকে কতিপয় সম্প্রদায় আবির্ভূত হবে। (ই. ফা. ২৩৩৯ ই. সে. ২৩৩৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ، جَمِيعًا عَنْ يَزِيدَ، – قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، – عَنِ الْعَوَّامِ بْنِ حَوْشَبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ الشَّيْبَانِيُّ، عَنْ أُسَيْرِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ يَتِيهُ قَوْمٌ قِبَلَ الْمَشْرِقِ مُحَلَّقَةٌ رُءُوسُهُمْ ” .
সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “মাথা নেড়া এক সম্প্রদায় (খারিজী) পূর্ব দিক থেকে বেরুবে।” (ই. ফা. ২৩৪০ ই. সে. ২৩৪০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫০ অধ্যায়ঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর বংশ পরিবারের জন্য সদাক্বাহ্ যাকাত খাওয়া হারাম, এরা হচ্ছে বনূ হাশিম ও বানী মুত্ত্বালিব; এরা ছাড়া অন্য কারো জন্য যাকাত-সদাক্বাহ্ খাওয়া হারাম নয়
২৩৬৩
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدٍ، – وَهُوَ ابْنُ زِيَادٍ – سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ أَخَذَ الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ تَمْرَةً مِنْ تَمْرِ الصَّدَقَةِ فَجَعَلَهَا فِي فِيهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ كِخْ كِخْ ارْمِ بِهَا أَمَا عَلِمْتَ أَنَّا لاَ نَأْكُلُ الصَّدَقَةَ ” .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাসান ইবনু ‘আলী (রাঃ) যাকাতের খেজুর থেকে একটি খেজুর তুলে মুখে দিলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ “তুমি থু থু করে ফেলে দাও। তুমি কি জান না আমারা সদাক্বাহ্ বা যাকাত খাই না”। (ই. ফা. ২৩৪১ ই. সে. ২৩৪১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ جَمِيعًا عَنْ وَكِيعٍ، عَنْ شُعْبَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ “ أَنَّا لاَ، تَحِلُّ لَنَا الصَّدَقَةُ ” .
শু’বাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে এতে আছে, “আমাদের জন্য সদাক্বাহ্-যাকাতের মাল হালাল নয়”। (ই. ফা. ২৩৪২ ই. সে. ২৩৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ، أَبِي عَدِيٍّ كِلاَهُمَا عَنْ شُعْبَةَ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ كَمَا قَالَ ابْنُ مُعَاذٍ “ أَنَّا لاَ، نَأْكُلُ الصَّدَقَةَ ” .
শু’বাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সূত্রেও ইবনু মু’আয বর্ণিত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছেঃ “আমরা যাকাত-সদাক্বাহ্ ইত্যাদি খাই না”। (ই. ফা. ২৩৪৩ ই. সে. ২৩৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬৬
حَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، أَنَّ أَبَا يُونُسَ، مَوْلَى أَبِي هُرَيْرَةَ حَدَّثَهُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ إِنِّي لأَنْقَلِبُ إِلَى أَهْلِي فَأَجِدُ التَّمْرَةَ سَاقِطَةً عَلَى فِرَاشِي ثُمَّ أَرْفَعُهَا لآكُلَهَا ثُمَّ أَخْشَى أَنْ تَكُونَ صَدَقَةً فَأُلْقِيهَا ” .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি ঘরে ফিরে গিয়ে (কোন কোন সময়) আমার বিছানার উপর খেজুর পড়ে থাকতে দেখি। আমি তা খাওয়ার জন্য তুলে নেই। কিন্তু পরক্ষণেই সদাক্বার খেজুর হতে পারে এ আশঙ্কায় তা ফেলে দেই (এবং খাওয়া থেকে বিরত থাকি)। (ই. ফা. ২৩৪৪ ই. সে. ২৩৪৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬৭
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ بْنُ هَمَّامٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ، مُنَبِّهٍ قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ وَاللَّهِ إِنِّي لأَنْقَلِبُ إِلَى أَهْلِي فَأَجِدُ التَّمْرَةَ سَاقِطَةً عَلَى فِرَاشِي – أَوْ فِي بَيْتِي – فَأَرْفَعُهَا لآكُلَهَا ثُمَّ أَخْشَى أَنْ تَكُونَ صَدَقَةً – أَوْ مِنَ الصَّدَقَةِ – فَأُلْقِيهَا ” .
হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) আল্লাহর রসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করেন। তার মধ্যে একটি হাদীস নিম্নরূপঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “আল্লাহর শপথ! আমি ঘরে ফিরে আমার বিছানায় অথবা (তিনি বলেছেন) আমার ঘরের মধ্যে খেজুর পড়ে থাকতে পাই। আমি তা খাওয়ার জন্য হাতে তুলে নেই। পরক্ষণেই আমার সন্দেহ হয়, এটা সদাক্বার খেজুর হতে পারে। তাই আমি তা ফেলে দেই।” (ই. ফা. ২৩৪৫, ই. সে. ২৩৪৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَجَدَ تَمْرَةً فَقَالَ “ لَوْلاَ أَنْ تَكُونَ مِنَ الصَّدَقَةِ لأَكَلْتُهَا ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাস্তায় একটি খেজুর পেয়ে বললেন, যদি এটা সদাক্বার খেজুর হওয়ার সম্ভাবনা না থাকত তাহলে আমি এটা খেয়ে নিতাম। (ই. ফা. ২৩৪৬, ই. সে. ২৩৪৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৬৯
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِتَمْرَةٍ بِالطَّرِيقِ فَقَالَ “ لَوْلاَ أَنْ تَكُونَ مِنَ الصَّدَقَةِ لأَكَلْتُهَا ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাস্তায় একটি খেজুর দেখতে পেলেন। তিনি বলেন, এটি যদি সদাক্বার খেজুর হওয়ার সম্বাবনা না থাকত তাহলে আমি এটা তুলে খেয়ে নিতাম (নষ্ট হতে দিতাম না)। (ই. ফা. ২৩৪৭, ই. সে. ২৩৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৭০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَجَدَ تَمْرَةً فَقَالَ “ لَوْلاَ أَنْ تَكُونَ صَدَقَةً لأَكَلْتُهَا ” .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি খেজুর দেখতে পেয়ে বললেন, এটা যদি সদাক্বার খেজুর হওয়ার সম্ভাবনা না থাকত তাহলে আমি এটা তুলে খেয়ে নিতাম। (এভাবে নষ্ট হতে দিতাম না)। (ই. ফা. ২৩৪৮, ই. সে. ২৩৪৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫১. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বংশধরকে সদাক্বাহ্ উসূলকারী নিযুক্ত না করা প্রসঙ্গে
২৩৭১
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ الضُّبَعِيُّ، حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نَوْفَلِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، حَدَّثَهُ أَنَّ عَبْدَ الْمُطَّلِبِ بْنَ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ حَدَّثَهُ قَالَ اجْتَمَعَ رَبِيعَةُ بْنُ الْحَارِثِ وَالْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالاَ وَاللَّهِ لَوْ بَعَثْنَا هَذَيْنِ الْغُلاَمَيْنِ – قَالاَ لِي وَلِلْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ – إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَكَلَّمَاهُ فَأَمَّرَهُمَا عَلَى هَذِهِ الصَّدَقَاتِ فَأَدَّيَا مَا يُؤَدِّي النَّاسُ وَأَصَابَا مِمَّا يُصِيبُ النَّاسُ – قَالَ – فَبَيْنَمَا هُمَا فِي ذَلِكَ جَاءَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ فَوَقَفَ عَلَيْهِمَا فَذَكَرَا لَهُ ذَلِكَ فَقَالَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ لاَ تَفْعَلاَ فَوَاللَّهِ مَا هُوَ بِفَاعِلٍ . فَانْتَحَاهُ رَبِيعَةُ بْنُ الْحَارِثِ فَقَالَ وَاللَّهِ مَا تَصْنَعُ هَذَا إِلاَّ نَفَاسَةً مِنْكَ عَلَيْنَا فَوَاللَّهِ لَقَدْ نِلْتَ صِهْرَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَمَا نَفِسْنَاهُ عَلَيْكَ . قَالَ عَلِيٌّ أَرْسِلُوهُمَا . فَانْطَلَقَا وَاضْطَجَعَ عَلِيٌّ – قَالَ – فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ سَبَقْنَاهُ إِلَى الْحُجْرَةِ فَقُمْنَا عِنْدَهَا حَتَّى جَاءَ فَأَخَذَ بِآذَانِنَا . ثُمَّ قَالَ ” أَخْرِجَا مَا تُصَرِّرَانِ ” ثُمَّ دَخَلَ وَدَخَلْنَا عَلَيْهِ وَهُوَ يَوْمَئِذٍ عِنْدَ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ – قَالَ – فَتَوَاكَلْنَا الْكَلاَمَ ثُمَّ تَكَلَّمَ أَحَدُنَا فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنْتَ أَبَرُّ النَّاسِ وَأَوْصَلُ النَّاسِ وَقَدْ بَلَغْنَا النِّكَاحَ فَجِئْنَا لِتُؤَمِّرَنَا عَلَى بَعْضِ هَذِهِ الصَّدَقَاتِ فَنُؤَدِّيَ إِلَيْكَ كَمَا يُؤَدِّي النَّاسُ وَنُصِيبَ كَمَا يُصِيبُونَ – قَالَ – فَسَكَتَ طَوِيلاً حَتَّى أَرَدْنَا أَنْ نُكَلِّمَهُ – قَالَ – وَجَعَلَتْ زَيْنَبُ تُلْمِعُ عَلَيْنَا مِنْ وَرَاءِ الْحِجَابِ أَنْ لاَ تُكَلِّمَاهُ – قَالَ – ثُمَّ قَالَ ” إِنَّ الصَّدَقَةَ لاَ تَنْبَغِي لآلِ مُحَمَّدٍ . إِنَّمَا هِيَ أَوْسَاخُ النَّاسِ ادْعُوَا لِي مَحْمِيَةَ – وَكَانَ عَلَى الْخُمُسِ – وَنَوْفَلَ بْنَ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ ” . قَالَ فَجَاءَاهُ فَقَالَ لِمَحْمِيَةَ ” أَنْكِحْ هَذَا الْغُلاَمَ ابْنَتَكَ ” . لِلْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ فَأَنْكَحَهُ وَقَالَ لِنَوْفَلِ بْنِ الْحَارِثِ ” أَنْكِحْ هَذَا الْغُلاَمَ ابْنَتَكَ ” . لِي فَأَنْكَحَنِي وَقَالَ لِمَحْمِيَةَ ” أَصْدِقْ عَنْهُمَا مِنَ الْخُمُسِ كَذَا وَكَذَا ” . قَالَ الزُّهْرِيُّ وَلَمْ يُسَمِّهِ لِي .
‘আবদুল মুত্ত্বালিব ইবনু রবী’আহ্ ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রবী’আহ্ ইবনু হারিস ও ‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) সম্মিলিতভাবে বললেন, আল্লাহর শপথ! আমরা এ ছেলে দু’টিকে অর্থাৎ আমি ও ফায্ল ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে যদি পাঠিয়ে দিতাম এবং তারা উভয়ে তার কাছে গিয়ে তাদেরকে যাকাত আদায়কারী হিসেবে নিয়োগের জন্য আবেদন করত। অতঃপর তারা অন্যান্য আদায়কারীদের ন্যায় যাকাত আদায় করে এনে দিতে এবং অন্যান্যরা যেভাবে পারিশ্রামিক পায় তারাও সেভাবে পারিশ্রামিক পেত। রাবী বলেন, তাঁরা এ ব্যাপার নিয়ে আলাপ করছিলেন, এমন সময় ‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) এসে তাঁদের মাঝে দাঁড়ালেন। তাঁরা এ প্রস্তাবটি তাঁর কাছে উত্থাপন করলেন। ‘আলী (রাঃ) বললেন, তোমরা এ কাজ করো না। আল্লাহর শপথ! তিনি এটা করবেন না (কারণ আমাদের জন্য যাকাত হারাম)। তখন রাবী’আহ্ ইবনু হারিস (রাঃ) তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে বললেন, আল্লাহর শপথ! “তুমি শুধু বিদ্বেষের বশীভূত হয়েই আমাদের সাথে এরূপ করছো। অথচ তুমি যে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জামাতা হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছো এজন্যে তো তোমার প্রতি আমরা কোন প্রকার বিদ্বেষ পোষণ করছি না!” তখন ‘আলী (রাঃ) বললেন, এদের দু’জনকে পাঠিয়ে দাও। অতঃপর তারা উভয়ে চলে গেল এবং ‘আলী (রাঃ) বিছানায় শুয়ে থাকলেন। ‘আবদুল মুত্ত্বালিব ইবনু রাবী’আহ্ বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সলাত আদায় করলেন। আমরা তাড়াতাড়ি করে তাঁর প্রত্যাবর্তন করার পূর্বেই তাঁর কামরার কাছে গিয়ে তাঁর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকলাম। তিনি এসে আমাদের দু’জনের কান ধরে (স্নেহসিক্ত কন্ঠে) বললেন, “কোন মতলবে এসেছো, আসল কথাটা সাহস করে বলে ফেলো।” তারপর তিনি ও আমরা হুজরার মধ্যে প্রবেশ করলাম। এ সময় তিনি যায়নাব বিনতু জাহ্শ (রাঃ)-এর ঘরে অবস্থান করছিলেন। রাবী বলেন, এবার আমরা পরস্পরকে কথাটি তোলার জন্য বলছিলাম। অবশেষে আমাদের একজনে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! “আপনি সর্বশ্রেষ্ট অনুগ্রহকারী এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী। আমাদের এখন বিয়ের বয়স হয়েছে, অথচ আমরা বেকার। তাই আপনার শরনাপন্ন হয়েছি, অন্যান্য যাকাত আদায়কারীদের মত আপনি আমাদেরকেও যাকাত আদায়কারী হিসেবে নিয়োগ করুন; অন্যান্যরা যেভাবে যাকাত আদায় করে এনে দেয় আমরা তাই করব এবং তাতে আমরাও কিছু পারিশ্রামিক পাব।” এ কথার পর তিনি দীর্ঘ সময় ধরে চুপ করে থাকলেন। এমনকি আমরা পুনর্বার কথা বলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। পর্দার আড়াল থেকে যায়নাব (রাঃ) কথা না বলার জন্য আমাদেরকে ইঙ্গিত করলেন। অতঃপর তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবার-পরিজন তথা বংশধরদের জন্য ‘যাকাত’ গ্রহণ করা সমীচীন নয়। কেননা যাকাত হলো মানুষের (সম্পদের) ময়লা। বরং তোমরা গিয়ে খুমুসের কোষাধ্যক্ষ মাহ্মিয়্যাহ্ এবং নাওফাল ইবনু হারিস ইবনু ‘আবদুল মুত্ত্বালিবকে আমার কাছে ডেকে আনো। রাবী বলেন, তারা দু’জনে উপস্থিত হলে প্রথমে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাহ্মিয়্যাহ্ বললেনঃ “তুমি তোমার কন্যাকে এ ছেলে অর্থাৎ ফায্ল ইবনু ‘আব্বাসের সাথে বিয়ে দাও। তিনি তাই করলেন। অতঃপর তিনি নাওফাল ইবনু হারিসকে বললেনঃ তুমি এ ছেলের (অর্থাৎ আমার) সাথে তোমার কন্যার বিয়ে দাও। তিনি আমাকে বিয়ে করিয়ে দিলেন। অতঃপর তিনি মাহ্মিয়্যাকে বললেন, এ দু’জনের পক্ষ থেকে এত এত পরিমাণ মুহরানা খুমুসের তহবিল থেকে আদায় করে দাও।
যুহরী বলেন, আমার শায়খ ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ আমার কাছে মুহরের নির্দিষ্ট কোন পরিমাণ উল্লেখ করেননি। (ই. ফা. ২৩৪৯, ই. সে. ২৩৪৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৭২
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ، شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ نَوْفَلٍ الْهَاشِمِيِّ، أَنَّ عَبْدَ الْمُطَّلِبِ بْنَ رَبِيعَةَ بْنِ الْحَارِثِ، بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَاهُ رَبِيعَةَ بْنَ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَالْعَبَّاسَ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ قَالاَ لِعَبْدِ الْمُطَّلِبِ بْنِ رَبِيعَةَ وَلِلْفَضْلِ بْنِ عَبَّاسٍ ائْتِيَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِنَحْوِ حَدِيثِ مَالِكٍ وَقَالَ فِيهِ فَأَلْقَى عَلِيٌّ رِدَاءَهُ ثُمَّ اضْطَجَعَ عَلَيْهِ وَقَالَ أَنَا أَبُو حَسَنٍ الْقَرْمُ وَاللَّهِ لاَ أَرِيمُ مَكَانِي حَتَّى يَرْجِعَ إِلَيْكُمَا ابْنَاكُمَا بِحَوْرِ مَا بَعَثْتُمَا بِهِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . وَقَالَ فِي الْحَدِيثِ ثُمَّ قَالَ لَنَا ” إِنَّ هَذِهِ الصَّدَقَاتِ إِنَّمَا هِيَ أَوْسَاخُ النَّاسِ وَإِنَّهَا لاَ تَحِلُّ لِمُحَمَّدٍ وَلاَ لآلِ مُحَمَّدٍ ” . وَقَالَ أَيْضًا ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” ادْعُوَا لِي مَحْمِيَةَ بْنَ جَزْءٍ ” . وَهُوَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي أَسَدٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَعْمَلَهُ عَلَى الأَخْمَاسِ .
‘আবদুল মুত্ত্বালিব ইবনু রবী’আহ্ ইবনু হারিস ইবনু ‘আবদুল মুত্ত্বালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল মুত্ত্বালিব ইবনু রাবী’আহ্ ইবনু হারিস ও ‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্ত্বালিব উভয়ে নিজ নিজ পুত্র ‘আবদুল মুত্ত্বালিব ইবনু রাবী’আহ্ ও ফায্ল ইবনু ‘আব্বাসকে বললেন, তোমরা দু’জন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে যাও। হাদীসের বাকী অংশ মালিক কর্তৃক বর্ণিত উপরের হাদীসের অনুরূপ। এ বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে- তারপর ‘আলী (রাঃ) নিজের চাদর বিছিয়ে শুয়ে পড়লেনে এবং বললেন, “আমি হাসানের পিতা এবং সাইয়্যিদ। আল্লাহর শপথ! তোমরা যে কথা বলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে তোমার ছেলেদের পাঠিয়েছো তারা তার জবাব নিয়ে না আসা পর্যন্ত আমি এখান থেকে নড়ব না।
এ হাদীসে আরো আছে, তিনি আমাদের উদ্দেশে বললেনঃ “যাকাতের এ অর্থ হলো মানুষের (সম্পদের) আবর্জনা। তাই এ অর্থ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর বংশধরদের জন্য হালাল নয়।” অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মাহ্মিয়্যাহ্ ইবনু জায-কে আমার কাছে ডেকে আনো। তিনি বানী আসাদ গোত্রের লোক ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে খুমুসের (গনীমাতের মালের) কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ করেছিলেন। (ই. ফা. ২৩৫০, ই. সে. ২৩৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫২. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), বানী হাশিম ও বানী মুত্ত্বালিবের জন্য হাদিয়্যাহ্ উপঢৌকন গ্রহণ করা জায়িয যদিও হাদিয়্যাহ্ দাতা তা সদাক্বাহ্ সরূপ পেয়ে থাকে, সদাক্বাহ্ যখন গ্রহীতার হস্তগত হয় তখন তা থেকে সদাক্বার বৈশিষ্ট্য দূরীভূত হয়ে যায় এমনকি যাদের জন্য সদাক্বাহ্ ভক্ষণ করা হারাম তাদের জন্যও তা হালাল হয়ে যায়
২৩৭৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ عُبَيْدَ بْنَ السَّبَّاقِ، قَالَ إِنَّ جُوَيْرِيَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَيْهَا فَقَالَ ” هَلْ مِنْ طَعَامٍ ” . قَالَتْ لاَ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا عِنْدَنَا طَعَامٌ إِلاَّ عَظْمٌ مِنْ شَاةٍ أُعْطِيَتْهُ مَوْلاَتِي مِنَ الصَّدَقَةِ . فَقَالَ ” قَرِّبِيهِ فَقَدْ بَلَغَتْ مَحِلَّهَا ” .
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী জুওয়াইরিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাকে এ হাদীস অবহিত করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে এসে বললেনঃ খাওয়ার কিছু আছে কি? তিনি (উত্তরে) বললেন, আল্লাহর শপথ! হে আল্লাহ্র রসূল! আমাদের খাওয়ার কিছু নেই। তবে বকরীর কয়েকটি হাড় আছে। এটা আমার মুক্ত দাসীকে সদাক্বাহ্ হিসেবে দেয়া হয়েছে। তিনি বললেনঃ তা আমার কাছে নিয়ে এসো, কেননা সদাক্বাহ্ তার নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে গেছে। (ই. ফা. ২৩৫১, ই. সে. ২৩৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৭৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ .
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সূত্রেও উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। (ই. ফা. ২৩৫২, ই. সে. ২৩৫২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৭৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ، الْمُثَنَّى وَابْنُ بَشَّارٍ قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، كِلاَهُمَا عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، ح وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ أَهْدَتْ بَرِيرَةُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَحْمًا تُصُدِّقَ بِهِ عَلَيْهَا فَقَالَ “ هُوَ لَهَا صَدَقَةٌ وَلَنَا هَدِيَّةٌ ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বারীয়াহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কিছু গোশ্ত উপহার দিলেন। এটা তাকে সদাক্বাহ্ হিসেবে দেয়া হয়েছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ গোশ্ত তার (বারীরার) জন্য সদাক্বাহ্ কিন্তু আমাদের জন্য হাদিয়্যাহ্ বা উপঢৌকন হিসেবে গণ্য। (ই. ফা. ২৩৫৩, ই. সে. ২৩৫৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৭৬
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ بَشَّارٍ – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ، وَأُتِيَ النَّبِيُّ، صلى الله عليه وسلم بِلَحْمِ بَقَرٍ فَقِيلَ هَذَا مَا تُصُدِّقَ بِهِ عَلَى بَرِيرَةَ . فَقَالَ “ هُوَ لَهَا صَدَقَةٌ وَلَنَا هَدِيَّةٌ ” .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে কিছু গরুর গোশ্ত আনা হলো। অতঃপর বলা হলো এ গোশ্ত বারীরাকে সদাক্বাহ্ হিসেবে দান করা হয়েছে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এটা তার জন্য সদাক্বাহ্ কিন্তু আমাদের জন্য হাদিয়্যাহ্ বা উপঢৌকন।” (ই. ফা. ২৩৫৪, ই. সে. ২৩৫৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৭৭
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، – رضى الله عنها – قَالَتْ كَانَتْ فِي بَرِيرَةَ ثَلاَثُ قَضِيَّاتٍ كَانَ النَّاسُ يَتَصَدَّقُونَ عَلَيْهَا وَتُهْدِي لَنَا فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ “ هُوَ عَلَيْهَا صَدَقَةٌ وَلَكُمْ هَدِيَّةٌ فَكُلُوهُ ” .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বারীরাহ্ (রাঃ)-কে মুক্বদ্দামার প্রেক্ষিতে শারী’আতের তিনটি হুকুম প্রবর্তিত হয়। লোকজন তাকে সদাক্বাহ্ দিত এবং তিনি তা আমাদেরকে উপহার হিসেবে দান করতেন। এ ব্যাপারে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানালাম। তিনি বললেন, এটা তার জন্য সদাক্বাহ্ এবং তোমাদের জন্য হাদিয়্যাহ্। সুতরাং তোমরা তা খাও। (ই. ফা. ২৩৫৫, ই. সে. ২৩৫৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৭৮
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، ح . وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ، الرَّحْمَنِ بْنَ الْقَاسِمِ قَالَ سَمِعْتُ الْقَاسِمَ، يُحَدِّثُ عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِ ذَلِكَ .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে আর একটি হাদীস বর্ণনা করেন। তবে এ হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, “এ তো আমাদের জন্য তার পক্ষ থেকে হাদিয়্যাহ্।” (ই. ফা. ২৩৫৬, ই. সে. ২৩৫৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৭৯
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ رَبِيعَةَ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِ ذَلِكَ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ “ وَهُوَ لَنَا مِنْهَا هَدِيَّةٌ ” .
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
অনুরূপ আর একটি হাদীস বর্ণনা করেন। তবে এ হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, “এ তো আমাদের জন্য তার পক্ষ থেকে হাদিয়্যাহ্।” (ই. ফা. ২৩৫৭, ই. সে. ২৩৫৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৮০
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ حَفْصَةَ، عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ بَعَثَ إِلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِشَاةٍ مِنَ الصَّدَقَةِ فَبَعَثْتُ إِلَى عَائِشَةَ مِنْهَا بِشَىْءٍ فَلَمَّا جَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَائِشَةَ قَالَ ” هَلْ عِنْدَكُمْ شَىْءٌ ” . قَالَتْ لاَ . إِلاَّ أَنَّ نُسَيْبَةَ بَعَثَتْ إِلَيْنَا مِنَ الشَّاةِ الَّتِي بَعَثْتُمْ بِهَا إِلَيْهَا قَالَ ” إِنَّهَا قَدْ بَلَغَتْ مَحِلَّهَا ” .
উম্মু ‘আতিয়্যাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার জন্য সদাক্বার একটি বকরী পাঠালেন। অতঃপর আমি এ থেকে কিছু গোশ্ত ‘আয়িশা (রাঃ)-এর জন্য পাঠালাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ)-এর কাছে এসে বললেন, তোমাদের কাছে খাওয়ার কিছু আছে কি? তিনি (উত্তরে) বললেন, না; তবে আপনি নুসায়বার (উম্মু ‘আতিয়্যাহ্) কাছে (সদাক্বার) বকরী পাঠিয়ে ছিলেন। এ থেকে সে আমার জন্য কিছু গোশ্ত পাঠিয়েছে। তিনি বললেন, এ (সদাক্বাহ্) তো তাঁর যথাযথ স্থানে পৌঁছে গেছে (অর্থাৎ উম্মু ‘আত্বিয়ার জন্য সদাক্বাহ্ ছিল। সে তা হস্তান্তর করার পর এখন তোমার জন্য এটা হাদীয়্যাহ। কাজেই তুমি খাও, আমাকে দাও)। (ই. ফা. ২৩৫৮, ই. সে. ২৩৫৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৩. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক হাদিয়া গ্রহণ এবং সদকা প্রত্যাখ্যান প্রসঙ্গে
২৩৮১
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَلاَّمٍ الْجُمَحِيُّ، حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ، – يَعْنِي ابْنَ مُسْلِمٍ – عَنْ مُحَمَّدٍ، – وَهُوَ ابْنُ زِيَادٍ – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، . أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أُتِيَ بِطَعَامٍ سَأَلَ عَنْهُ فَإِنْ قِيلَ هَدِيَّةٌ أَكَلَ مِنْهَا وَإِنْ قِيلَ صَدَقَةٌ لَمْ يَأْكُلْ مِنْهَا .
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে কোন প্রকার খাদ্যদ্রব্য আসলে তিনি এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে নিতেন। যদি বলা হত, এটা হাদিয়্যাহ্ হিসেবে দেয়া হয়েছে, তাহলে তিনি এটা খেতেন, আর যদি বলা হত এটা সদাক্বাহ্ তাহলে তিনি তা খেতেন না। (ই. ফা. ২৩৫৯, ই. সে. ২৩৫৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৪. অধ্যায়ঃ
সদাক্বাহ্ প্রদানকারীর জন্য দু’আ করার বর্ণনা
২৩৮২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَعَمْرٌو النَّاقِدُ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي أَوْفَى، ح . وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَمْرٍو، – وَهُوَ ابْنُ مُرَّةَ – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي أَوْفَى، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَاهُ قَوْمٌ بِصَدَقَتِهِمْ قَالَ ” اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِمْ ” . فَأَتَاهُ أَبِي أَبُو أَوْفَى بِصَدَقَتِهِ فَقَالَ ” اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى آلِ أَبِي أَوْفَى ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে কোন গোত্র সদাক্বাহ্ নিয়ে আসলে তিনি তাদের জন্য দু’আ করতেন, হে আল্লাহ! আপনি তাদের উপর সদয় হোন।” একবার আমার পিতা আবূ আওফা তার সদ্বাকাহ্ নিয়ে তাঁর কাছে আসলে তিনি দু’আ করলেন, “হে আল্লাহ! আবূ আওফার পরিবার-পরিজনের উপর রহমত বর্ষণ করুন।” (ই. ফা. ২৩৬০, ই. সে. ২৩৬০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩৮৩
وَحَدَّثَنَاهُ ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ شُعْبَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ “ صَلِّ عَلَيْهِمْ ” .
শু’বাহ্ (রহঃ)-এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এ বর্ণনায় আছেঃ (হে আল্লাহ)! তাদের প্রতি অনুগ্রহ করুন। (ই. ফা. ২৩৬১, ই. সে. ২৩৬১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৫. অধ্যায়ঃ
যাকাত আদায়কারীর সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করার বর্ণনা
২৩৮৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، وَأَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، وَابْنُ، أَبِي عَدِيٍّ وَعَبْدُ الأَعْلَى كُلُّهُمْ عَنْ دَاوُدَ، ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا دَاوُدُ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِذَا أَتَاكُمُ الْمُصَدِّقُ فَلْيَصْدُرْ عَنْكُمْ وَهُوَ عَنْكُمْ رَاضٍ ” .
জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কাছে যাকাত আদায়কারী আসলে তার সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহার কর, যাতে সে তোমাদের উপর সন্তুষ্ট অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। (ই. ফা. ২৩৬২, ই. সে. ২৩৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস