১. অধ্যায়ঃ
ঈমান, ইসলামের পরিচয় এবং আল্লাহ কর্তৃক ভাগ্য সাব্যস্ত করার প্রতি ঈমান ওয়াজিব হওয়া, ভাগ্যলিপির উপর অবিশ্বাসী লোকের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা ও তাঁর ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণের প্রমাণাদির বর্ণনা
অত্র গ্রন্থের সংকলক ইমাম আবুল হুসায়ন মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ (রহঃ) বলেন, আমরা এ কিতাব আল্লাহর সাহায্যে শুরু করছি এবং তাঁকেই যথেষ্ট মতে করছি। মহা পরাক্রমশালী আল্লাহ ভিন্ন আমাদেরকে আর তাওফীকদাতা কেউ নেই।
১
حَدَّثَنِي أَبُو خَيْثَمَةَ، زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ كَهْمَسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، ح وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، – وَهَذَا حَدِيثُهُ – حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا كَهْمَسٌ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، قَالَ كَانَ أَوَّلَ مَنْ قَالَ فِي الْقَدَرِ بِالْبَصْرَةِ مَعْبَدٌ الْجُهَنِيُّ فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَحُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيُّ حَاجَّيْنِ أَوْ مُعْتَمِرَيْنِ فَقُلْنَا لَوْ لَقِينَا أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْنَاهُ عَمَّا يَقُولُ هَؤُلاَءِ فِي الْقَدَرِ فَوُفِّقَ لَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ دَاخِلاً الْمَسْجِدَ فَاكْتَنَفْتُهُ أَنَا وَصَاحِبِي أَحَدُنَا عَنْ يَمِينِهِ وَالآخَرُ عَنْ شِمَالِهِ فَظَنَنْتُ أَنَّ صَاحِبِي سَيَكِلُ الْكَلاَمَ إِلَىَّ فَقُلْتُ أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ إِنَّهُ قَدْ ظَهَرَ قِبَلَنَا نَاسٌ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ وَيَتَقَفَّرُونَ الْعِلْمَ – وَذَكَرَ مِنْ شَأْنِهِمْ – وَأَنَّهُمْ يَزْعُمُونَ أَنْ لاَ قَدَرَ وَأَنَّ الأَمْرَ أُنُفٌ . قَالَ فَإِذَا لَقِيتَ أُولَئِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنِّي بَرِيءٌ مِنْهُمْ وَأَنَّهُمْ بُرَآءُ مِنِّي وَالَّذِي يَحْلِفُ بِهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ لَوْ أَنَّ لأَحَدِهِمْ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا فَأَنْفَقَهُ مَا قَبِلَ اللَّهُ مِنْهُ حَتَّى يُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ ثُمَّ قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ إِذْ طَلَعَ عَلَيْنَا رَجُلٌ شَدِيدُ بَيَاضِ الثِّيَابِ شَدِيدُ سَوَادِ الشَّعَرِ لاَ يُرَى عَلَيْهِ أَثَرُ السَّفَرِ وَلاَ يَعْرِفُهُ مِنَّا أَحَدٌ حَتَّى جَلَسَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيْهِ إِلَى رُكْبَتَيْهِ وَوَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى فَخِذَيْهِ وَقَالَ يَا مُحَمَّدُ أَخْبِرْنِي عَنِ الإِسْلاَمِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” الإِسْلاَمُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَتُقِيمَ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ وَتَصُومَ رَمَضَانَ وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إِنِ اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبِيلاً . قَالَ صَدَقْتَ . قَالَ فَعَجِبْنَا لَهُ يَسْأَلُهُ وَيُصَدِّقُهُ . قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ الإِيمَانِ . قَالَ ” أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ ” . قَالَ صَدَقْتَ . قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ الإِحْسَانِ . قَالَ ” أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ ” . قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنِ السَّاعَةِ . قَالَ ” مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ ” . قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنْ أَمَارَتِهَا . قَالَ ” أَنْ تَلِدَ الأَمَةُ رَبَّتَهَا وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ ” . قَالَ ثُمَّ انْطَلَقَ فَلَبِثْتُ مَلِيًّا ثُمَّ قَالَ لِي ” يَا عُمَرُ أَتَدْرِي مَنِ السَّائِلُ ” . قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ ” فَإِنَّهُ جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ دِينَكُمْ ” .
ইয়াহ্ইয়া ইবনু ইয়া‘মার থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাসরার অধিবাসী মা‘বাদ জুহাইনাহ্ প্রথম ব্যক্তি যে তাকদীর অস্বীকার করে। আমি ও হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান উভয়ে হাজ্জ অথবা ‘উমরাহ’র উদ্দেশ্যে রওয়ানা করলাম। আমরা বললাম, যদি আমরা এ সফরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যে কোন সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়ে যাই তাহলে ঐ সব লোক তাকদীর সম্বন্ধে যা কিছু বলে সে সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করব। সৌভাগ্যক্রমে আমরা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর মাসজিদে ঢুকার পথে পেয়ে গেলাম। আমি ও আমার সাথী তাঁকে এমনভাবে ঘিরে নিলাম যে, আমাদের একজন তাঁর ডান এবং অপরজন তাঁর বামে থাকলাম। আমি মনে করলাম আমার সাথী আমাকেই কথা বলার সুযোগ দেবে। (কারণ আমি ছিলাম বাকপটু)। আমি বললাম : “হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমাদের এলাকায় এমন কিছু লোকের আবির্ভাব ঘটেছে, তারা একদিকে কুরআন পাঠ করে অপরদিকে জ্ঞানের অন্বেষণও করে। ইয়াহ্ইয়া তাদের কিছু গুণাবলীর কথাও উল্লেখ করলেন। তাদের ধারণা (বক্তব্য) হচ্ছে, তাকদীর বলতে কিছু নেই এবং প্রত্যেক কাজ অকস্মাৎ সংঘটিত হয়।” ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেনঃ “যখন তুমি এদের সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই, আর আমার সাথেও তাদের কোন সম্পর্ক নেই। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) আল্লাহর নামে শপথ করে বললেন, এদের কারো কাছে যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ থাকে এবং তা দান-খয়রাত করে দেয় তবে আল্লাহ তাঁর এ দান গ্রহণ করবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত সে তাকদীরের উপর ঈমান না আনবে। অতঃপর তিনি বললেন, আমার পিতা ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) আমার কাছে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ একদা আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি আমাদের সামনে আবির্ভূত হলো। তারপরনের কাপড়-চোপড় ছিল ধবধবে সাদা এবং মাথার চুলগুলো ছিল মিশমিশে কালো। সফর করে আসার কোন চিহ্নও তাঁর মধ্যে দেখা যায়নি। আমাদের কেউই তাঁকে চিনেও না।
অবশেষে সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে বসলো। সে তাঁর হাঁটুদ্বয় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাঁটুদ্বয়ের সাথে মিলিয়ে দিলো এবং দুই হাতের তালু তাঁর (অথবা নিজের) উরুর উপর রাখলো এবং বললো, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! আমাকে ইসলাম সম্বন্ধে বলুন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ইসলাম হচ্ছে এই- তুমি সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ (মা‘বুদ) নেই, এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রসূল, সলাত কায়িম করবে, যাকাত আদায় করবে, রমাযানের সওম পালন করবে এবং যদি পথ অতিক্রম করার সামর্থ্য হয় তখন বাইতুল্লাহর হাজ্জ করবে। সে বললো, আপনি সত্যই বলেছেন। বর্ণনাকারী [‘উমার (রাঃ) ] বলেন, আমরা তাঁর কথা শুনে আশ্চর্যান্বিত হলাম। কেননা সে (অজ্ঞের ন্যায়) প্রশ্ন করছে আর (বিজ্ঞের ন্যায়) সমর্থন করছে। এরপর সে বললো, আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ঈমান এই যে, তুমি আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর প্রেরিত নাবীগণ ও শেষ দিনের উপর ঈমান রাখবে এবং তুমি তাকদীর ও এর ভালো ও মন্দের প্রতিও ঈমান রাখবে। সে বললো, আপনি সত্যই বলেছেন। এবার সে বললো, আমাকে ‘ইহসান’ সম্পর্কে বলুন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘ইহসান’ এই যে, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ‘ইবাদাত করবে যেন তাঁকে দেখছো, যদি তাকে না দেখো তাহলে তিনি তোমাকে দেখছেন বলে অনুভব করবে। এবার সে জিজ্ঞেস করলো, আমাকে কিয়ামাত সম্বন্ধে বলুন! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাকারীর চেয়ে জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি বেশি কিছু জানে না। অতঃপর সে বললো, তাহলে আমাকে এর কিছু নিদর্শন বলুন। তিনি বললেন, দাসী তাঁর মনিবকে প্রসব করবে [১৫] এবং (এককালের) নগ্নপদ, বস্ত্রহীন, দরিদ্র, বকরীর রাখালদের বড় দালান-কোঠা নির্মাণের প্রতিযোগিতায় গর্ব-অহংকারে মত্ত দেখতে পাবে। [১৬] বর্ণনাকারী [‘উমার (রাঃ) ] বলেন, এরপর লোকটি চলে গেলো। আমি বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, হে ‘উমার! তুমি জান, এ প্রশ্নকারী কে? আমি আরয করলাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জ্ঞাত আছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তিনি জিবরীল। তোমাদের কাছে তিনি তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ১ম খণ্ড, ১; বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার ১ম খণ্ড, ১)
[১৪] জ্ঞাতব্য : প্রথম প্রকাশে হাদীসের পরিভাষা-বিষয়ক নীতিমালা এখানে উল্লেখিত হয়েছিল। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে উক্ত বিষয়টি ‘সহীহ মুসলিম-এর হাদীস বর্ণনার কতিপয় পরিভাষা’ অনুচ্ছেদের পূর্বাংশে আলোচনা করা হয়েছে।
[১৫] বাঁদী মনিবকে প্রসব করবে। এর অর্থ হলো মনিব তাঁর বাঁদীর সাথে যেরূপ ব্যবহার করে, সন্তানগণ তাদের মাতাদের সাথে সেরূপ ব্যবহার করবে, তারা মাতাঁর বাধ্য থাকবে না। সন্তান মাতাঁর অবাধ্য হবে, স্ত্রীর অনুগত হবে। আরো উল্লেখ করা যেতে পারে যে, শারী’আত মোতাবেক বিয়ে শাদী করবে না। বাদশাহ ও ধনী ব্যক্তিগণ দাসী ইচ্ছামত রাখবে। বাঁদী দাসী অধিক কেনাবেচা হবে। সে সময় দাসীকে বিয়ে করবে অথচ সেটা যে তাঁর মা জানতে পারবে না।
[১৬] তুচ্ছ লোক বড় হয়ে যাবে, দুনিয়ার অবস্থা ব্যবস্থা বদলে যাবে। বড় ছোট হয়ে যাবে, সম্মানী ব্যক্তি অপমানিত হবে। অসম্মানী ব্যক্তি মানের দাবী করবে। যারা এ কাজের উপযুক্ত নয়, তারা সে কাজের মালিক মুখতাঁর হয়ে বসবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْغُبَرِيُّ، وَأَبُو كَامِلٍ الْجَحْدَرِيُّ وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ قَالُوا حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ مَطَرٍ الْوَرَّاقِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، قَالَ لَمَّا تَكَلَّمَ مَعْبَدٌ بِمَا تَكَلَّمَ بِهِ فِي شَأْنِ الْقَدَرِ أَنْكَرْنَا ذَلِكَ . قَالَ فَحَجَجْتُ أَنَا وَحُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِمْيَرِيُّ حِجَّةً . وَسَاقُوا الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ كَهْمَسٍ وَإِسْنَادِهِ . وَفِيهِ بَعْضُ زِيَادَةٍ وَنُقْصَانُ أَحْرُفٍ .
ইয়াহ্ইয়া ইবনু ইয়া‘মার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মা‘বাদ (আল জুহানী) তাকদীর সম্পর্কে তার মত ব্যক্ত করলে আমরা তা অস্বীকার করি। তিনি (ইয়াহ্ইয়া ইবনু ইয়া‘মার) বলেন, আমি ও হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান আল হিম্ইয়ারী হাজ্জ পালন করতে গিয়েছিলাম। এরপর কাহমাস-এর হাদীসের অনুরূপ সানাদসহ হাদীসটি বর্ণিত আছে। তবে এ বর্ণনায় কিছু বেশ কম রয়েছে। (ই.ফা. ২; ই.সে. ২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ، حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، وَحُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالاَ لَقِينَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ فَذَكَرْنَا الْقَدَرَ وَمَا يَقُولُونَ فِيهِ . فَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ كَنَحْوِ حَدِيثِهِمْ عَنْ عُمَرَ – رضى الله عنه – عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَفِيهِ شَىْءٌ مِنْ زِيَادَةٍ وَقَدْ نَقَصَ مِنْهُ شَيْئًا .
ইয়াহ্ইয়া বিন ইয়া‘মার এবং হুমায়দ ইবনু ‘আবদুর রহমান থেকে থেকে বর্ণিতঃ
তাঁরা উভয়ে বলেন, একদা আমরা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করি এবং তাঁর কাছে তাকদীর বিষয়ে ঐ সকল লোকেরা (মা‘বাদ ও তাঁর অনুসারীরা) যা মন্তব্য করে তা উল্লেখ করি। অতঃপর এ হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ‘উমার (রাঃ)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনাকারীরা যেরূপ বর্ণনা করেছেন ‘আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদাহ্ ঠিক অনুরূপই বর্ণনা করেছেন। অবশ্য এতে শব্দের কম বেশি আছে। (ই.ফা ৩; ই.সে. ৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪
وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِنَحْوِ حَدِيثِهِمْ .
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাদীসটি উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪; ই.সে. ৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُلَيَّةَ، قَالَ زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي حَيَّانَ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا بَارِزًا لِلنَّاسِ فَأَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الإِيمَانُ قَالَ ” أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكِتَابِهِ وَلِقَائِهِ وَرُسُلِهِ وَتُؤْمِنَ بِالْبَعْثِ الآخِرِ ” . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الإِسْلاَمُ قَالَ ” الإِسْلاَمُ أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ وَلاَ تُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَتُقِيمَ الصَّلاَةَ الْمَكْتُوبَةَ وَتُؤَدِّيَ الزَّكَاةَ الْمَفْرُوضَةَ وَتَصُومَ رَمَضَانَ ” . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الإِحْسَانُ قَالَ ” أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنَّكَ إِنْ لاَ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ ” . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَتَى السَّاعَةُ قَالَ ” مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ وَلَكِنْ سَأُحَدِّثُكَ عَنْ أَشْرَاطِهَا إِذَا وَلَدَتِ الأَمَةُ رَبَّهَا فَذَاكَ مِنْ أَشْرَاطِهَا وَإِذَا كَانَتِ الْعُرَاةُ الْحُفَاةُ رُءُوسَ النَّاسِ فَذَاكَ مِنْ أَشْرَاطِهَا وَإِذَا تَطَاوَلَ رِعَاءُ الْبَهْمِ فِي الْبُنْيَانِ فَذَاكَ مِنْ أَشْرَاطِهَا فِي خَمْسٍ لاَ يَعْلَمُهُنَّ إِلاَّ اللَّهُ ” . ثُمَّ تَلاَ صلى الله عليه وسلم { إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَىِّ أَرْضٍ تَمُوتُ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ} ” . قَالَ ثُمَّ أَدْبَرَ الرَّجُلُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” رُدُّوا عَلَىَّ الرَّجُلَ ” . فَأَخَذُوا لِيَرُدُّوهُ فَلَمْ يَرَوْا شَيْئًا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” هَذَا جِبْرِيلُ جَاءَ لِيُعَلِّمَ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকেদের নিয়ে বসেছিলেন। এমন সময় একজন লোক এসে তাঁকে জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহ্র রসূল! ঈমান কি? তিনি বললেন, ঈমান এই যে, তুমি আল্লাহ্, তাঁর ফেরেশতাকুল, তাঁর (নাযিলকৃত) কিতাব, (আখিরাত) তাঁর সাথে সাক্ষাৎ ও তাঁর রসূলগণের প্রতি ঈমান রাখবে এবং পুনরুত্থান দিবসের উপরও ঈমান আনবে। লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! ইসলাম কি? তিনি বললেন, ইসলাম এই যে, তুমি আল্লার ‘ইবাদাত করতে থাকবে, কিন্তু তাঁর সাথে কাউকে শারীক করবে না, ফারযকৃত সলাত কায়িম করবে, নির্ধারিত ফারয যাকাত আদায় করবে এবং রমাযানের সওম পালন করবে। সে আবার জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! ইহ্সান কি? তিনি বললেন, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ‘ইবাদাত করবে যেন তাঁকে দেখছো; যদি তাঁকে না দেখো তা হলে তিনি তোমাকে দেখছেন (বলে অনুভব করবে)। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহ রসূল! কিয়ামাত কখন হবে? তিনি বললেন, এ ব্যাপারে যাকে প্রশ্ন করা হয়েছে তিনি প্রশ্নকারীর চেয়ে বেশি কিছু জানেন না। তবে আমি তোমাকে তার (কিয়ামাতের) কিছু নিদর্শন বলে দিচ্ছিঃ যখন দাসী তাঁর মনিবকে প্রসব করবে এটা তার নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি। আর যখন বস্ত্রহীন, জুতাহীন (ব্যক্তি) জনগণের নেতা হবে, এটাও তার একটি নিদর্শন। আর মেষ শাবক ও ছাগলের রাখালরা যখন সুউচ্চ দালান-কোঠা নিয়ে পরস্পর গর্ব করবে, এটাও তার একটি নিদর্শন। প্রকৃতপক্ষে যে পাঁচটি জিনিসের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ রাখেন, কিয়ামাতের জ্ঞান তারই অন্তর্ভুক্ত। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিম্নবর্ণিত আয়াত তিলাওয়াত করলেন, “আল্লাহর নিকটই কিয়ামাতের জ্ঞান রয়েছে, আর তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং মাতৃগর্ভে কি আছে তা তিনিই জানেন। কোন প্রাণীই আগামীকাল কী উপার্জন করবে তা জানে না এবং কোন্ জমিনে সে মৃত্যুবরণ করবে তাও জানে না। বস্তুতঃ আল্লাহই সব জানেন এবং তিনি সব বিষয়ই অবগত”-(সূরাহ লুকমান ৩১ : ৩৪)।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর লোকটি চলে গেল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, লোকটিকে আমার নিকট ফিরিয়ে আনো। তাঁরা তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য গেলেন। কিন্তু কাউকে পেলেন না। তারপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইনি জিবরীল (‘আঃ), লোকেদের দ্বীন শিক্ষা দেয়ার জন্য এসেছিলেন। (ই.ফা. ৫, ই.সে ৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو حَيَّانَ التَّيْمِيُّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّ فِي رِوَايَتِهِ “ إِذَا وَلَدَتِ الأَمَةُ بَعْلَهَا ” يَعْنِي السَّرَارِيَّ .
আবূ হাইয়্যান আত্ তাইমী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ হাইয়্যান আত্ তাইমী (রাঃ) থেকে উক্ত সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর বর্ণনায় “দাসী তার মনিব স্বামী জন্ম দিবে” কথাটির উল্লেখ রয়েছে (ই.ফা. ৬; ই.সে. ৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ، – وَهُوَ ابْنُ الْقَعْقَاعِ – عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” سَلُونِي ” فَهَابُوهُ أَنْ يَسْأَلُوهُ . فَجَاءَ رَجُلٌ فَجَلَسَ عِنْدَ رُكْبَتَيْهِ . فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الإِسْلاَمُ قَالَ ” لاَ تُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ وَتَصُومُ رَمَضَانَ ” . قَالَ صَدَقْتَ . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الإِيمَانُ قَالَ ” أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكِتَابِهِ وَلِقَائِهِ وَرُسُلِهِ وَتُؤْمِنَ بِالْبَعْثِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ كُلِّهِ ” . قَالَ صَدَقْتَ . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الإِحْسَانُ قَالَ ” أَنْ تَخْشَى اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنَّكَ إِنْ لاَ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ ” . قَالَ صَدَقْتَ . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَتَى تَقُومُ السَّاعَةُ قَالَ ” مَا الْمَسْئُولُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ وَسَأُحَدِّثُكَ عَنْ أَشْرَاطِهَا إِذَا رَأَيْتَ الْمَرْأَةَ تَلِدُ رَبَّهَا فَذَاكَ مِنْ أَشْرَاطِهَا وَإِذَا رَأَيْتَ الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الصُّمَّ الْبُكْمَ مُلُوكَ الأَرْضِ فَذَاكَ مِنْ أَشْرَاطِهَا وَإِذَا رَأَيْتَ رِعَاءَ الْبَهْمِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ فَذَاكَ مِنْ أَشْرَاطِهَا فِي خَمْسٍ مِنَ الْغَيْبِ لاَ يَعْلَمُهُنَّ إِلاَّ اللَّهُ ” . ثُمَّ قَرَأَ { إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَىِّ أَرْضٍ تَمُوتُ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ} قَالَ ثُمَّ قَامَ الرَّجُلُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” رُدُّوهُ عَلَىَّ ” فَالْتُمِسَ فَلَمْ يَجِدُوهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” هَذَا جِبْرِيلُ أَرَادَ أَنْ تَعَلَّمُوا إِذْ لَمْ تَسْأَلُوا ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (সহাবাদের) বললেন, তোমরা আমাকে প্রশ্ন কর। কিন্তু লোকেরা তাঁকে প্রশ্ন করতে সংকোচবোধ করল। বর্ণনাকারী বলেন, এমন সময় এক ব্যক্তি এসে হাঁটুর কাছে বসে বললোঃ হে আল্লাহর রসূল! ‘ইসলাম’ কি? উত্তরে তিনি বললেনঃ “তুমি আল্লাহর সাথে কাউকে শারীক করবে না, সলাত কায়িম করবে, যাকাত আদায় করবে এবং রমাযানের সওম পালন করবে।” সে বলল, আপনি সত্যই বলেছেন। লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! ‘ঈমান’ কি? তিনি বললেন, ‘তুমি আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল, তাঁর কিতাব, আখিরাতে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ ও তাঁর রসূলগণের প্রতি ঈমান রাখবে। মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার প্রতি ঈমান রাখবে এবং তাকদীরের উপরও পূর্ণ ঈমান রাখবে।’ সে বলল, আপনি সত্যই বলেছেন। এবার সে বলল, হে আল্লাহর রসূল! ‘ইহসান’ কি? তিনি বললেন, “তুমি এমনভাবে আল্লাহকে ভয় করো যেন তুমি তাঁকে দেখছো, আর যদি তুমি তাঁকে না দেখো, তাহলে তিনি তোমাকে দেখছেন বলে অনুভব করো”। সে বলল, আপনি সত্যই বলেছেন। এবার সে জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! কিয়ামাত কখন হবে? তিনি বললেন, এ ব্যাপারে যাকে প্রশ্ন করা হয়েছে সে প্রশ্নকারীর চাইতে অধিক কিছু জানে না। তবে আমি তার নিদর্শন ও লক্ষণসমূহ তোমাকে বলে দিচ্ছিঃ “যখন তুমি দেখবে কোন নারী তার মনিবকে প্রসব করবে’ এটা কিয়ামাতের একটি নিদর্শন। যখন তুমি দেখবে, জুতাবিহীন, বস্ত্রহীন, বধির ও বোবা পৃথিবীতে শাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, এটা একটি নিদর্শন। আর যখন তুমি দেখবে মেষ চালকরা সুউচ্চ দালান-কোঠা নিয়ে গর্ব করছে, এটাও কিয়ামাতের একটি নিদর্শন। যে পাঁচটি অদৃশ্য বস্তুর জ্ঞান আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না, কিয়ামাতের জ্ঞান তাঁরই অন্তর্ভুক্ত। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেন, “অবশ্যই আল্লাহর নিকটই কিয়ামাতের জ্ঞান রয়েছে। আর তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন। মাতৃগর্ভে কী আছে তা তিনিই জানেন। কোন জীবই আগামীকাল কী উপার্জন করবে তা জানে না এবং কোন স্থানে সে মরবে তাও জানেনা”-(সূরাহ লুক্মান ৩১ : ৩৪) তিনি সূরাহর শেষ পর্যন্ত পাঠ করলেন। এরপর লোকটি চলে গেলো। তখন তিনি [রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ] সহাবাদের বললেন, তোমরা লোকটিকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনো। অথচ অনেক খোঁজা-খুজি করা হলো কিন্তু তাঁরা তাকে আর পেলো না। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইনি জিবরীল (‘আঃ) তোমরা প্রশ্ন না করায় তিনি চাইলেন যেন তোমরা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ কর। (ই.ফা. ৭; ই.সে. ৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২. অধ্যায়ঃ
সলাতের বর্ণনা যা ইসলামের একটি রুকন
৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ جَمِيلِ بْنِ طَرِيفِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، – فِيمَا قُرِئَ عَلَيْهِ – عَنْ أَبِي سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ طَلْحَةَ بْنَ عُبَيْدِ اللَّهِ، يَقُولُ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَهْلِ نَجْدٍ ثَائِرُ الرَّأْسِ نَسْمَعُ دَوِيَّ صَوْتِهِ وَلاَ نَفْقَهُ مَا يَقُولُ حَتَّى دَنَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هُوَ يَسْأَلُ عَنِ الإِسْلاَمِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” خَمْسُ صَلَوَاتٍ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ ” . فَقَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهُنَّ قَالَ ” لاَ . إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ وَصِيَامُ شَهْرِ رَمَضَانَ ” . فَقَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهُ فَقَالَ ” لاَ . إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ ” . وَذَكَرَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الزَّكَاةَ فَقَالَ هَلْ عَلَىَّ غَيْرُهَا قَالَ ” لاَ . إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ ” قَالَ فَأَدْبَرَ الرَّجُلُ وَهُوَ يَقُولُ وَاللَّهِ لاَ أَزِيدُ عَلَى هَذَا وَلاَ أَنْقُصُ مِنْهُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ ” .
তাল্হাহ্ ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাল্হাহ্ ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, নাজ্দের বাসিন্দা এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমাতে আসলো। তার মাথার চুলগুলো ছিল এলোমেলো ও বিক্ষিপ্ত। আমরা তার গুন গুন আওয়াজ শুনছিলাম কিন্তু সে কী বলছিল তা বুঝা যাচ্ছিলো না। অতঃপর সে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অতি নিকটে এসে ইসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সলাত’। সে বলল, এ ছাড়া আমার কোন কিছু (সলাত) আছে কি? তিনি বললেন, না তবে নফল আদায় করতে পারো। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে যাকাত প্রদানের কথাও বললেন। সে জিজ্ঞেস করলো, এ ছাড়া আমার উপর আরো কোন কর্তব্য আছে কি? তিনি বললেন, না। তবে নফল দান-সদাকাহ্ করতে পারো। [১৭] বর্ণনাকারী বলেন, এরপর লোকটি এ কথা বলতে বলতে চলে গেল, “আমি এর বেশিও করবো না, আর কমও করবো না।’ তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, লোকটি যদি তার কথার সত্যতা প্রমাণ করতে পারে তাহলে সফলকাম হয়েছে। (ই.ফা. ৮; ই.সে. ৮)
[১৭] ফার্য ব্যতীত যে সব ‘আমাল করা হয়, তা ফার্যের পরিপূরক ও ‘আমালকারীর মর্যাদা বৃদ্ধি করে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯
حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، جَمِيعًا عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنْ أَبِي سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ نَحْوَ حَدِيثِ مَالِكٍ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَفْلَحَ وَأَبِيهِ إِنْ صَدَقَ ” . أَوْ ” دَخَلَ الْجَنَّةَ وَأَبِيهِ إِنْ صَدَقَ ” .
তালহাহ্ ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ইমাম মালিকের বর্ণিত হাদীসের অবিকল বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি এ হাদীসের শেষাংশে বলেছেন, ‘অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “সে সফলকাম হয়েছে তার বাবার কসম! যদি সে সত্য কথা বলে থাকে।” অথবা তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করেছে, যদি সে সত্য কথা বলে থাকে।” [১৮] (ই.ফা. ৯; ই.সে. ৯)
[১৮] তাল্হাহ্ ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাবার নামে কসম খাওয়া প্রমাণিত হচ্ছে অথচ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাবার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কসম আল্লাহ্র নামে করতে হয়।
উত্তরে বলা হয় যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কসম খাওয়া এটা অভ্যাস মোতাবেক। কেননা আরবের লোকজন এভাবে কসম খাওয়ার অভ্যস্ত ছিলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটা কারও সম্মানের জন্য কসম করেননি বা তখন এভাবে কসম খাওয়া নিষেধ হয়নি। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যের নামে কসম করা এজন্য নিষেধ যে, আল্লাহর সামনে কারও স্থান না দেয়া। কতক ‘আলিমের নিকট এটা ছিল আল্লাহ ভিন্ন অন্যের নামে কসম নিষিদ্ধ হবার পূর্বের ঘটনা। (নাবাবী)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩. অধ্যায়ঃ
ইসলামের রুকনসমূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার বর্ণনা
১০
حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ بُكَيْرٍ النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ أَبُو النَّضْرِ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ نُهِينَا أَنْ نَسْأَلَ، رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ شَىْءٍ فَكَانَ يُعْجِبُنَا أَنْ يَجِيءَ الرَّجُلُ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ الْعَاقِلُ فَيَسْأَلَهُ وَنَحْنُ نَسْمَعُ فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ أَتَانَا رَسُولُكَ فَزَعَمَ لَنَا أَنَّكَ تَزْعُمُ أَنَّ اللَّهَ أَرْسَلَكَ قَالَ ” صَدَقَ ” . قَالَ فَمَنْ خَلَقَ السَّمَاءَ قَالَ ” اللَّهُ ” . قَالَ فَمَنْ خَلَقَ الأَرْضَ قَالَ ” اللَّهُ ” . قَالَ فَمَنْ نَصَبَ هَذِهِ الْجِبَالَ وَجَعَلَ فِيهَا مَا جَعَلَ . قَالَ ” اللَّهُ ” . قَالَ فَبِالَّذِي خَلَقَ السَّمَاءَ وَخَلَقَ الأَرْضَ وَنَصَبَ هَذِهِ الْجِبَالَ آللَّهُ أَرْسَلَكَ قَالَ ” نَعَمْ ” . قَالَ وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي يَوْمِنَا وَلَيْلَتِنَا . قَالَ ” صَدَقَ ” . قَالَ فَبِالَّذِي أَرْسَلَكَ آللَّهُ أَمْرَكَ بِهَذَا قَالَ ” نَعَمْ ” . قَالَ وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا زَكَاةً فِي أَمْوَالِنَا . قَالَ ” صَدَقَ ” . قَالَ فَبِالَّذِي أَرْسَلَكَ آللَّهُ أَمْرَكَ بِهَذَا قَالَ ” نَعَمْ ” . قَالَ وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا صَوْمَ شَهْرِ رَمَضَانَ فِي سَنَتِنَا . قَالَ ” صَدَقَ ” . قَالَ فَبِالَّذِي أَرْسَلَكَ آللَّهُ أَمَرَكَ بِهَذَا قَالَ ” نَعَمْ ” . قَالَ وَزَعَمَ رَسُولُكَ أَنَّ عَلَيْنَا حَجَّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً . قَالَ ” صَدَقَ ” . قَالَ ثُمَّ وَلَّى . قَالَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لاَ أَزِيدُ عَلَيْهِنَّ وَلاَ أَنْقُصُ مِنْهُنَّ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” لَئِنْ صَدَقَ لَيَدْخُلَنَّ الْجَنَّةَ ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করার ব্যাপারে আমাদের নিষেধ করা হয়েছিল। আমরা নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত হয়েছিলাম তাই আমরা চাইতাম যে, গ্রাম থেকে কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি এসে তাঁকে প্রশ্ন করুক আর আমরা তা শুনি। তারপর একদিন গ্রাম থেকে এক ব্যক্তি এসে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলল, হে মুহাম্মাদ! আমাদের কাছে আপনার দূত এসে বলেছে, আপনি দাবী করেছেন যে, আল্লাহ আপনাকে রসূল হিসেবে পাঠিয়েছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে সত্য বলেছে। আগন্তুক বলল, আসমান কে সৃষ্টি করেছেন? তিনি বললেন, আল্লাহ। আগন্তুক বলল, জমিন কে সৃষ্টি করেছেন? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ। আগন্তক বলল, এসব পর্বতমালা কে স্থাপন করেছেন এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে তা কে সৃষ্টি করেছেন? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ। আগন্তুক বলল, কসম সে সত্তার! যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন এবং এসব পর্বতমালা স্থাপন করেছেন। আল্লাহই, আপনাকে রসূলরূপে পাঠিয়েছেন? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। আগন্তুক বলল, আপনার দূত বলেছে যে, আমাদের উপর আমাদের মালের যাকাত দেয়া ফারয। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ঠিকই বলেছে। আগন্তুক বলল, যিনি আপনাকে রসূলরূপে পাঠিয়েছেন, তাঁর কসম, আল্লাহই কি আপনাকে এ নির্দেশ দিয়েছেন? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। আগুন্তক বলল, আপনার দূত বলেছে যে, আমাদের মধ্যে যে বাইতুল্লায় যেতে সক্ষম তার উপর হাজ্জ ফার্জ। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সত্যি বলেছে। রাবী বলেন যে, তারপর আগন্তুক চলে যেতে যেতে যেতে বলল, যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন তাঁর কসম, আমি এর অতিরিক্তও করবো না এবং এর কমও করবো না। এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, লোকটি সত্য বলে থাকলে অবশ্যই সে জান্নাতে যাবে। [১৯] (ই.ফা. ১০; ই.সে. ১০)
[১৯] প্রশ্নকারী নবম হিজরীতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসেছিল। তার নাম যিমাম ইবনু সালাবাহ্। সে বানু সা’দ ইবনু বাক্র গোত্রের লোক ছিল। সে ব্যক্তির সত্যপরায়ণাতায় জান্নাতী; এ কথাই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানিয়ে দিয়েছেন। কিংবা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ ব্যক্তির প্রশ্ন ও দৃঢ় প্রত্যয় দেখে আত্মবিশ্বাস থেকে এ কথা বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ هَاشِمٍ الْعَبْدِيُّ، حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، عَنْ ثَابِتٍ، قَالَ قَالَ أَنَسٌ كُنَّا نُهِينَا فِي الْقُرْآنِ أَنْ نَسْأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ شَىْءٍ . وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمِثْلِهِ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে কোন প্রশ্ন করতে কুরআন মাজীদে আমাদের নিষেধ করা হয়েছিল। তারপর তিনি হাদীসটির বাকী অংশ (উল্লিখিত হাদীসের) অনুরূপ বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ১১; ই.সে. ১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪. অধ্যায়ঃ
যে ঈমানের বদৌলত জান্নাতে পাওয়া যাবে এবং যে ব্যক্তি (আল্লাহর) নির্দেশকে আঁকড়ে ধরবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে
১২
وَحَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ أَعْرَابِيًّا، جَاءَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا عَمِلْتُهُ دَخَلْتُ الْجَنَّةَ . قَالَ ” تَعْبُدُ اللَّهَ لاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ الْمَكْتُوبَةَ وَتُؤَدِّي الزَّكَاةَ الْمَفْرُوضَةَ وَتَصُومُ رَمَضَانَ ” . قَالَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ أَزِيدُ عَلَى هَذَا شَيْئًا أَبَدًا وَلاَ أَنْقُصُ مِنْهُ . فَلَمَّا وَلَّى قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى هَذَا ” .
আবূ আইয়ূব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ আইয়ূব (রাঃ) বলেন যে, কোন এক সফরে এক বেদুঈন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মুখে এসে তাঁর উটনীর লাগাম ধরে ফেললো। এ সময় তিনি সফরে ছিলেন। সে বলল, হে আল্লাহর রসূল! অথবা হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাকে এমন কিছু কাজের কথা বলুন যা আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী করে দিবে এবং আগুন (জাহান্নাম) থেকে দূরে রাখবে। বর্ণনাকালী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেমে গেলেন। তিনি সহাবাদের দিকে তাকালেন। অতঃপর বললেনঃ নিশ্চয়ই তাকে অনুগ্রহ করা হয়েছে, অথবা তিনি বললেনঃ তাকে হিদায়াত দান করা হয়েছে। তিনি বললেনঃ তুমি কি বলেছিলে? রাবী বলেন, লোকটি তার কথার পুনরাবৃত্তি করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহর ‘ইবাদাত করো, তাঁর সাথে কোন কিছুকে অংশী স্থাপন করো না, সলাত কায়িম কর, যাকাত আদায় কর, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ, এবার উটনীটি ছেড়ে দাও। (ই.ফা. ১২, ই.সে ১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৩
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ بِشْرٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ، وَأَبُوهُ، عُثْمَانُ أَنَّهُمَا سَمِعَا مُوسَى بْنَ طَلْحَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِ هَذَا الْحَدِيثِ .
আবূ আইয়ূব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উপরের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ أَعْمَلُهُ يُدْنِينِي مِنَ الْجَنَّةِ وَيُبَاعِدُنِي مِنَ النَّارِ . قَالَ ” تَعْبُدُ اللَّهَ لاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ وَتَصِلُ ذَا رَحِمِكَ ” فَلَمَّا أَدْبَرَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنْ تَمَسَّكَ بِمَا أُمِرَ بِهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ ” . وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ أَبِي شَيْبَةَ ” إِنْ تَمَسَّكَ بِهِ ”
আবূ আইয়ূব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমাতে হাযির হয়ে আরয করলো, আমাকে এমন একটি ‘আমালের কথা বলে দিন, যে ‘আমাল আমাকে জান্নাতের কাছে পৌঁছে দিবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। ন্নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললে, তুমি আল্লাহর ‘ইবাদাত করবে, তাঁর সাথে কোন কিছু শারীক করবে না, সলাত কায়িম করবে, যাকাত দিবে এবং আত্মীতার সম্বর্ক বজায় রাখবে। সে ব্যক্তি চলে গেলে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললে, তাকে যে ‘আমালের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা দৃঢ়তার সাথে পালন করলে জান্নতে প্রবেশ করবে। আর আবূ শাইবার বর্ণনায় (আরবী) এর স্থলে (আরবী) রয়েছে। (ই.ফা. ১৪, ই.সে ১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৫
وَحَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ أَعْرَابِيًّا، جَاءَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ إِذَا عَمِلْتُهُ دَخَلْتُ الْجَنَّةَ . قَالَ ” تَعْبُدُ اللَّهَ لاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ الْمَكْتُوبَةَ وَتُؤَدِّي الزَّكَاةَ الْمَفْرُوضَةَ وَتَصُومُ رَمَضَانَ ” . قَالَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ أَزِيدُ عَلَى هَذَا شَيْئًا أَبَدًا وَلاَ أَنْقُصُ مِنْهُ . فَلَمَّا وَلَّى قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى هَذَا ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক বেদুঈন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে আরয করলো, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন কাজের নির্দেশ দিন, যা করলে আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। তিনি বললেন, আল্লাহর ‘ইবাদাত করো, তাঁর সাথে কাউকে অংশীদার করো না, ফারয সলাত কায়িম করো, নির্ধারিত যাকাত আদায় করো এবং রমাযানের সওম পালন করো। সে লোক বলল : সে সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমি কখনো এর মধ্যে বৃদ্ধিও করবো না, আর তা থেকে কমাবও না। লোকটি যখন চলে গেলো, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যদি কেউ কোন জান্নাতী লোক দেখে আনন্দিত হতে চায়, সে যেন এ ব্যক্তিকে দেখে নেয়। (ই.ফা. ১৫; ই.সে. ১৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ – وَاللَّفْظُ لأَبِي كُرَيْبٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم النُّعْمَانُ بْنُ قَوْقَلٍ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ إِذَا صَلَّيْتُ الْمَكْتُوبَةَ وَحَرَّمْتُ الْحَرَامَ وَأَحْلَلْتُ الْحَلاَلَ أَأَدْخُلُ الْجَنَّةَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ نَعَمْ ” .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নু‘মান ইবনু কাওকাল (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেনঃ হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি বলুন, যদি আমি হারামকে জেনে বর্জন করি এবং হালালকে হালাল বলে গ্রহণ করি তাহলে আমি কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘হ্যাঁ’। (ই.ফা. ১৬; ই.সে. ১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৭
وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، وَالْقَاسِمُ بْنُ زَكَرِيَّاءَ، قَالاَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ شَيْبَانَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، وَأَبِي، سُفْيَانَ عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ النُّعْمَانُ بْنُ قَوْقَلٍ يَا رَسُولَ اللَّهِ . بِمِثْلِهِ . وَزَادَ فِيهِ وَلَمْ أَزِدْ عَلَى ذَلِكَ شَيْئًا .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নু‘মান ইবনু কাওকাল (রাঃ) বলেছেন, হে আল্লাহর রসূল! বাকী অংশ উপরোক্ত বর্ণনার অনুরূপ। তবে তিনি তাঁর বর্ণনায় ‘তাতে কোন কিছু বর্ধিত করব না’ কথাটি অতিরিক্ত উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ১৭; ই.সে. ১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮
وَحَدَّثَنِي سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَعْيَنَ، حَدَّثَنَا مَعْقِلٌ، – وَهُوَ ابْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ – عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَرَأَيْتَ إِذَا صَلَّيْتُ الصَّلَوَاتِ الْمَكْتُوبَاتِ وَصُمْتُ رَمَضَانَ وَأَحْلَلْتُ الْحَلاَلَ وَحَرَّمْتُ الْحَرَامَ وَلَمْ أَزِدْ عَلَى ذَلِكَ شَيْئًا أَأَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَالَ “ نَعَمْ ” . قَالَ وَاللَّهِ لاَ أَزِيدُ عَلَى ذَلِكَ شَيْئًا .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কোন এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমাতে আরয করলেন, আপনি কি মনে করেন, যদি আমি ফারয সলাত সমূহ আদায় করি, রমাযানের সিয়াম পালন করি, হালালকে হালাল জানি এবং হারামকে হারাম জানি এবং যদি এর অতিরিক্ত কিছু না করি, তাহলে আমি কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। সে ব্যক্তি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি এর উপর কিছুমাত্র বাড়াবো না। (ই.ফা. ১৮; ই.সে. ১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫. অধ্যায়ঃ
ইসলামের রুকনসমূহ ও তার গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভসমূহ
১৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ، – يَعْنِي سُلَيْمَانَ بْنَ حَيَّانَ الأَحْمَرَ – عَنْ أَبِي مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسَةٍ عَلَى أَنْ يُوَحَّدَ اللَّهُ وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَصِيَامِ رَمَضَانَ وَالْحَجِّ ” . فَقَالَ رَجُلٌ الْحَجِّ وَصِيَامِ رَمَضَانَ قَالَ لاَ . صِيَامِ رَمَضَانَ وَالْحَجِّ . هَكَذَا سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ইসলামের বুনিয়াদ পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত- আল্লাহকে এক বলে বিশ্বাস করা, সলাত কায়িম করা, যাকাত দেয়া, রমাযানের সিয়াম পালন করা এবং হাজ্জ করা। এক ব্যক্তি (এ ক্রম পাঁচটিতে) বলল, হাজ্জ করা ও রমাযানের সিয়াম পালন করা। রাবী বললেন, না ‘রমাযানের সিয়াম পালন করা ও হাজ্জ করা’ এভাবে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছি। (ই.ফা. ১৯, ই.সে ১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২০
وَحَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ عُثْمَانَ الْعَسْكَرِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّاءَ، حَدَّثَنَا سَعْدُ بْنُ طَارِقٍ، قَالَ حَدَّثَنِي سَعْدُ بْنُ عُبَيْدَةَ السُّلَمِيُّ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ عَلَى أَنْ يُعْبَدَ اللَّهُ وَيُكْفَرَ بِمَا دُونَهُ وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَحَجِّ الْبَيْتِ وَصَوْمِ رَمَضَانَ ” .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ পাচঁটি জিনিসের উপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপিত। আল্লাহর ‘ইবাদাত করা এবং তাঁকে ছাড়া আর সব কিছু অস্বীকার করা (অর্থাৎ ‘ইবাদাতের মালিক তিনি একাই), সলাত কায়িম করা, যাকাত আদায় করা, বাইতুল্লাহ্র হাজ্জ করা ও রমাযানের সওম পালন করা। (ই.ফা. ২০; ই.সে. ২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২১
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، – وَهُوَ ابْنُ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ – عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَحَجِّ الْبَيْتِ وَصَوْمِ رَمَضَانَ ”
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পাঁচটি বিষয়ের উপর ইসলামের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রসূল- এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা, সলাত কায়িম করা, যাকাত দেয়া, বাইতুল্লাহর হাজ্জ করা ও রমাযানের সিয়াম পালন করা। (ই.ফা. ২১; ই.সে. ২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২
وَحَدَّثَنِي ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا حَنْظَلَةُ، قَالَ سَمِعْتُ عِكْرِمَةَ بْنَ خَالِدٍ، يُحَدِّثُ طَاوُسًا أَنَّ رَجُلاً، قَالَ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَلاَ تَغْزُو فَقَالَ إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِنَّ الإِسْلاَمَ بُنِيَ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَصِيَامِ رَمَضَانَ وَحَجِّ الْبَيْتِ ” .
তাউস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলো, আপনি জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন না কেন? [২০] তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত- এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, সলাত কায়িম করা, যাকাত আদায় করা, রমাযানের সওম পালন করা ও বাইতুল্লাহ্র হাজ্জ করা। (ই.ফা. ২২; ই.সে. ২২)
[২০] জিহাদ প্রথমতঃ ফারযে কিফায়া, কিছু সংখ্যক মুসলিম আদায় করলেই সকলের পক্ষ থেকে হয়ে যাবে, আর কেউ পালন না করলে সকলেই গুনাহগার হবে। আর যখন মুসলিম বাহিনী অপারগ, তখন সকলের উপর ফারয।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দ্বীনের অনুশাসনের প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দেয়া এবং তার প্রতি মানুষকে আহবান করা, দ্বীন সম্বন্ধে (জানার জন্য) প্রশ্ন করা ও তা সংরক্ষণ করা আর যার কাছে দ্বীন পৌঁছায়নি তার নিকট দ্বীনের দা’ওয়াত পেশ করা
২৩
حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، – وَاللَّفْظُ لَهُ – أَخْبَرَنَا عَبَّادُ بْنُ عَبَّادٍ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَدِمَ وَفْدُ عَبْدِ الْقَيْسِ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا هَذَا الْحَىَّ مِنْ رَبِيعَةَ وَقَدْ حَالَتْ بَيْنَنَا وَبَيْنَكَ كُفَّارُ مُضَرَ فَلاَ نَخْلُصُ إِلَيْكَ إِلاَّ فِي شَهْرِ الْحَرَامِ فَمُرْنَا بِأَمْرٍ نَعْمَلُ بِهِ وَنَدْعُو إِلَيْهِ مَنْ وَرَاءَنَا . قَالَ ” آمُرُكُمْ بِأَرْبَعٍ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ الإِيمَانِ بِاللَّهِ – ثُمَّ فَسَّرَهَا لَهُمْ فَقَالَ – شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَأَنْ تُؤَدُّوا خُمُسَ مَا غَنِمْتُمْ وَأَنْهَاكُمْ عَنِ الدُّبَّاءِ وَالْحَنْتَمِ وَالنَّقِيرِ وَالْمُقَيَّرِ ” . زَادَ خَلَفٌ فِي رِوَايَتِهِ ” شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ” . وَعَقَدَ وَاحِدَةً
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল কায়স-এর (গোত্রের) একটি ওয়াফ্দ [২১] (প্রতিনিধি দল) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমাতে উপস্থিত হয়ে আরয করলো, হে আল্লাহর রসূল! আমরা রাবী‘আহ্ গোত্রের লোক। আমাদের এবং আপনার মধ্যে কাফির মুযার গোত্র বিদ্যমান। আমরা শাহরুল হারাম ব্যতীত আপনার নিকট নিরাপদে পৌঁছাতে পারি না। কাজেই আপনি আমাদের এমন কিছু শিক্ষা দিন আমরা যে সবের উপর ‘আমাল করতে পারি এবং আমাদের অন্যান্যদের তৎপ্রতি আহবান জানাতে পারি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের আমি চারটি বিষয় পালনের আদেশ করছি এবং চারটি বিষয়ে নিষেধ করছি। তারপর তাদের এ সম্বন্ধে বর্ণনা দিলেন এবং বললেন, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রসূল- এ কথার সাক্ষ্য দেয়া, সলাত কায়িম করা, যাকাত দেয়া এবং তোমাদের গনীমাতলদ্ধ সামগ্রীর এক পঞ্চমাংশ আদায় করা। আর আমি তোমাদের নিষেধ করছি দুববা, হানতাম, নাকীর, মুকাইয়্যার থেকে। [২২] খালাফ তাঁর বর্ণনায় আরও উল্লেখ করছেন, ‘আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই’ বলে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি অঙ্গুলি (সংকেতসূচক) বন্ধ করেন। (ই.ফা. ২৩; ই.সে. ২৩)
[২১] ‘ওয়াফ্দ’ বলা হয় ঐ লোকদের যাদেরকে কোন সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী নির্বাচন করে বিশেষ কোন ব্যক্তির নিকট যেমন বাদশাহ, মন্ত্রী, সরকারের নিকট পাঠানো হয়।
‘আবদুল কায়স এক ব্যক্তি যার সন্তানদের বানী ‘আবদুল কায়স বলা হয়, যা আরব সম্প্রদায়ের ‘রাবী‘আহ্’ নামীয় একটা বড় গোত্র। উক্ত গোত্রের ১৪ জন ব্যক্তি সওয়ার হয়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমন করেন। তাদের নেতা ছিলেন “আশাজ্জ আল আসরী” তার সঙ্গে ছিলেন মাযিদাহ বিন মালিক মুহারিবী, ‘উবাইদাহ্ বিন হাম্মাম মুহারিবী। তাদের আগমনের কারণঃ “মুনকায বিন হাইয়্যান” এক ব্যক্তি ব্যবসার জন্য মাদীনায় বেশী আসা যাওয়া করতেন। অজ্ঞতার যুগে সে ব্যক্তি খেজুর ও চাদর নিয়ে মাদীনার এক বস্তি ‘হাজার’’ সেখানে আগমন করেন। আর সে সময় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাক্কাহ্ থেকে মাদীনাহ্ হিজরত করে এসে গেছেন। কোন এক সময় মুনকায রাস্তায় বসে আছেন এমতাবস্থায় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাচ্ছিলেন, তৎক্ষণাৎ মুনকায তোমাদের অবস্থা কেমন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুখে তাদের বড় বড় নেতাদের নাম উল্লেখ শুনে আশ্চর্য হয়ে তখনই সে কালিমা পড়ে মুসলিম হয়ে যায়। আর দু’একটি শিক্ষা লাভ করেন।
অতঃপর মুনকায হাজার (বস্তি) যেতে লাগলেন, সে অবস্থায় ‘আবদুল কায়স গোত্রের নামে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাতে একটা পত্র দিয়ে পাঠালেন কিন্তু মুনকায তা গোপন রাখলেন, পত্র পৌঁছাননি।
একবার মুনকাযের স্ত্রী যিনি মুনযির বিন আয়যের কন্যা, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুনযিরের নাম আশাজ রাখেন, তার স্বামীর কথা বাবা আশাজকে বলেছেন, যখন সে মাদীনাহ্ থেকে এসেছে তখন থেকে তাঁর পরিবর্তন দেখতে পায়। কোমর ঝোকায়, মাথা মাটিতে লাগায়। এ কথাগুলো শুনে যখন জামাই শ্বশুড় এক জায়গায় হয়ে অনেক কথাবার্তা হলো, তখন আশাজের অন্তরে ইসলামের ভাব দেখা গেল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুনকাযের হাতে সেই প্রেরিত পত্র নিজ সম্প্রদায়ের নিকট আনেন। পত্র পাঠে সকলের মন ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
এখন তাদের একটি দল আশাজের নেতৃত্বে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমনের জন্য রওয়ানা হয়ে মাদীনার নিকটবর্তী হয়েছে। সে মতে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সহাবায়ি কিরামগণকে লক্ষ্য করে বলেছেন, তোমাদের নিকট পূর্ব দেশের মধ্য হতে ‘আবদুল কায়সের উত্তম ব্যক্তিগণ আসছে তার মধ্য আশাজও আছে। তারা ইসলাম গ্রহণ না করে ফিরে যাবে না।
[২২] নিষিদ্ধ পাত্রগুলোঃ ‘হানতাম’’ মাটির সবুজ পাত্র বিশেষ। ‘দুব্বা’ কদুর বোল দ্বারা প্রস্তুত পাত্র বিশেষ। ‘নাকীর’ কাঠের পাত্র বিশেষ। ‘মুযাফফাত’ তৈলাক্ত পাত্র বিশেষ। এ সকল পাত্রে তখন শরাব ব্যবহার করা হত। উক্ত পাত্র ব্যবহার করতে নিষেধ করার উদ্দেশ্য পাত্রগুলো দেখলে শরাব পান করার কথা মনে হবে বা চুপচাপ মদ রেখে পান সম্ভাবনা থাকতে পারে, এ পাত্র নিষেধাজ্ঞা চিরদিনের জন্য নয়। সাময়িকভাবে যাতে সেটা দূর হয়ে যায়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَأَلْفَاظُهُمْ، مُتَقَارِبَةٌ – قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، عَنْ شُعْبَةَ، وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، – عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، قَالَ كُنْتُ أُتَرْجِمُ بَيْنَ يَدَىِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَبَيْنَ النَّاسِ فَأَتَتْهُ امْرَأَةٌ تَسْأَلُهُ عَنْ نَبِيذِ الْجَرِّ، فَقَالَ إِنَّ وَفْدَ عَبْدِ الْقَيْسِ أَتَوْا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنِ الْوَفْدُ أَوْ مَنِ الْقَوْمُ ” . قَالُوا رَبِيعَةُ . قَالَ ” مَرْحَبًا بِالْقَوْمِ أَوْ بِالْوَفْدِ غَيْرَ خَزَايَا وَلاَ النَّدَامَى ” . قَالَ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا نَأْتِيكَ مِنْ شُقَّةٍ بَعِيدَةٍ وَإِنَّ بَيْنَنَا وَبَيْنَكَ هَذَا الْحَىَّ مِنْ كُفَّارِ مُضَرَ وَإِنَّا لاَ نَسْتَطِيعُ أَنْ نَأْتِيَكَ إِلاَّ فِي شَهْرِ الْحَرَامِ فَمُرْنَا بِأَمْرٍ فَصْلٍ نُخْبِرْ بِهِ مَنْ وَرَاءَنَا نَدْخُلُ بِهِ الْجَنَّةَ . قَالَ فَأَمَرَهُمْ بِأَرْبَعٍ وَنَهَاهُمْ عَنْ أَرْبَعٍ . قَالَ أَمَرَهُمْ بِالإِيمَانِ بِاللَّهِ وَحْدَهُ . وَقَالَ ” هَلْ تَدْرُونَ مَا الإِيمَانُ بِاللَّهِ ” . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ ” شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَإِقَامُ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ وَصَوْمُ رَمَضَانَ وَأَنْ تُؤَدُّوا خُمُسًا مِنَ الْمَغْنَمِ ” . وَنَهَاهُمْ عَنِ الدُّبَّاءِ وَالْحَنْتَمِ وَالْمُزَفَّتِ . قَالَ شُعْبَةُ وَرُبَّمَا قَالَ النَّقِيرِ . قَالَ شُعْبَةُ وَرُبَّمَا قَالَ الْمُقَيَّرِ . وَقَالَ ” احْفَظُوهُ وَأَخْبِرُوا بِهِ مِنْ وَرَائِكُمْ ” . وَقَالَ أَبُو بَكْرٍ فِي رِوَايَتِهِ ” مَنْ وَرَاءَكُمْ ” وَلَيْسَ فِي رِوَايَتِهِ الْمُقَيَّرِ .
আবূ জামরাহ্ (নাস্র ইবনু ‘ইমরান) থেকে বর্ণিতঃ
আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর সম্মুখে তাঁর ও ভিনদেশী লোকদের মধ্যে দোভাষীর কাজ করতাম। একদা জনৈক মহিলা এসে তাঁকে মাটির কলসীর মধ্যে ‘নাবীয [২৩] প্রস্তুত করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। তিনি বললেন, ‘আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলো। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ কাদের এ প্রতিনিধি দল? অথবা তিনি বললেন, কোন গোত্রের লোক? তারা বলল, রাবী‘আহ্ গোত্রের। তিনি বললেন, ঐ গোত্রের অথবা বললেন, প্রতিনিধি দলের আগমন শুভ হোক। তাদের লজ্জিত হওয়ার ও অপমানিত হওয়ারও কোন কারণ নেই (তারা ইতিপূর্বে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছে)। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এরপর তারা বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমরা দূর-দূরান্ত থেকে সফর করে আপনার কাছে এসেছি। আমাদের ও আপনার মাঝখানে কাফির মুযারা গোত্র বাস করে। তাই আমরা মাহে-হারাম (সম্মানিত মাস) ছাড়া অন্য সময় আপনার কাছে আসতে পারি না। আপনি আমাদেরকে সুস্পষ্টভাবে কোন কাজের কথা বলে দিন যেন আমরা তা আমাদের পশ্চাতের অন্যান্য লোকদের জানিয়ে দিতে পারি এবং সে অনুযায়ী ‘আমাল করে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাদের চারটি বিষয় পালনের নির্দেশ দিলেন এবং চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করলেন। এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন, তোমরা জান এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা কী? তারা আরয করলো, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ বিষয়ে ভালো জানেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রসূল আর তোমরা সলাত কায়িম করবে, যাকাত দিবে, রমাযানের সিয়াম পালন করবে এবং গনীমাতলদ্ধ সামগ্রীর এক পঞ্চমাংশ দান করবে। তিনি তাদের চারটি বিষয়ে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। তা হচ্ছে দুব্বা, হানতাম, মুযাফফাত। চতুর্থটি সম্বন্ধে শু‘বাহ্ বলেন, এরপর রাবী কখনো নাকীর কখনো বা মুকাইয়্যার শব্দ উল্লেখ করেছেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এসব বিধান হিফাযাত করবে এবং যারা আসেনি তাদের তা জানিয়ে দিবে। আবূ বকর (রাঃ)-এর রিওয়ায়াতে (আরবী) (যারা আসেনি) কথাটি রয়েছে কিন্তু (আরবী) শব্দটি নেই। (ই.ফা. ২৪; ই.সে. ২৪)
[২৩] নাবীযঃ কিসমিস খেজুর ইত্যাদি ভিজিয়ে তৈরি পানীয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৫
وَحَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي قَالاَ، جَمِيعًا حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ نَحْوَ حَدِيثِ شُعْبَةَ . وَقَالَ ” أَنْهَاكُمْ عَمَّا يُنْبَذُ فِي الدُّبَّاءِ وَالنَّقِيرِ وَالْحَنْتَمِ وَالْمُزَفَّتِ ” . وَزَادَ ابْنُ مُعَاذٍ فِي حَدِيثِهِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِلأَشَجِّ أَشَجِّ عَبْدِ الْقَيْسِ ” إِنَّ فِيكَ خَصْلَتَيْنِ يُحِبُّهُمَا اللَّهُ الْحِلْمُ وَالأَنَاةُ ” .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
শু‘বাহ্র বর্ণনার অনুরূপ রিওয়ায়াত বর্ণনা করেছেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি তোমাদের দুব্বা, নাকীর, হানতাম ও মুযাফ্ফাত নামক নাবীয তৈরীর পাত্রের ব্যবহার নিষেধ করছি। ইবনু মু’আয (রাঃ) তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত রিওয়ায়াতে আরো উল্লেখ করেন যে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুল কায়স গোত্রের ‘আশাজ্জ’ (ক্ষত বিশিষ্ট দলপতিকে) বললেন, তোমাদের দু’টো বিশেষ গুণ রয়েছে, যা আল্লাহ পছন্দ করেন – ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা। (ই.ফা. ২৫, ই.সে ২৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا مَنْ، لَقِيَ الْوَفْدَ الَّذِينَ قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ عَبْدِ الْقَيْسِ . قَالَ سَعِيدٌ وَذَكَرَ قَتَادَةُ أَبَا نَضْرَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ فِي حَدِيثِهِ هَذَا . أَنَّ أُنَاسًا مِنْ عَبْدِ الْقَيْسِ قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا نَبِيَّ اللَّهِ إِنَّا حَىٌّ مِنْ رَبِيعَةَ وَبَيْنَنَا وَبَيْنَكَ كُفَّارُ مُضَرَ وَلاَ نَقْدِرُ عَلَيْكَ إِلاَّ فِي أَشْهُرِ الْحُرُمِ فَمُرْنَا بِأَمْرٍ نَأْمُرُ بِهِ مَنْ وَرَاءَنَا وَنَدْخُلُ بِهِ الْجَنَّةَ إِذَا نَحْنُ أَخَذْنَا بِهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” آمُرُكُمْ بِأَرْبَعٍ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ اعْبُدُوا اللَّهَ وَلاَ تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَأَقِيمُوا الصَّلاَةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَصُومُوا رَمَضَانَ وَأَعْطُوا الْخُمُسَ مِنَ الْغَنَائِمِ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ عَنِ الدُّبَّاءِ وَالْحَنْتَمِ وَالْمُزَفَّتِ وَالنَّقِيرِ ” . قَالُوا يَا نَبِيَّ اللَّهِ مَا عِلْمُكَ بِالنَّقِيرِ قَالَ ” بَلَى جِذْعٌ تَنْقُرُونَهُ فَتَقْذِفُونَ فِيهِ مِنَ الْقُطَيْعَاءِ – قَالَ سَعِيدٌ أَوْ قَالَ مِنَ التَّمْرِ – ثُمَّ تَصُبُّونَ فِيهِ مِنَ الْمَاءِ حَتَّى إِذَا سَكَنَ غَلَيَانُهُ شَرِبْتُمُوهُ حَتَّى إِنَّ أَحَدَكُمْ – أَوْ إِنَّ أَحَدَهُمْ – لَيَضْرِبُ ابْنَ عَمِّهِ بِالسَّيْفِ ” . قَالَ وَفِي الْقَوْمِ رَجُلٌ أَصَابَتْهُ جِرَاحَةٌ كَذَلِكَ . قَالَ وَكُنْتُ أَخْبَأُهَا حَيَاءً مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ فَفِيمَ نَشْرَبُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” فِي أَسْقِيَةِ الأَدَمِ الَّتِي يُلاَثُ عَلَى أَفْوَاهِهَا ” . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَرْضَنَا كَثِيرَةُ الْجِرْذَانِ وَلاَ تَبْقَى بِهَا أَسْقِيَةُ الأَدَمِ . فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَإِنْ أَكَلَتْهَا الْجِرْذَانُ وَإِنْ أَكَلَتْهَا الْجِرْذَانُ وَإِنْ أَكَلَتْهَا الْجِرْذَانُ ” . قَالَ وَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لأَشَجِّ عَبْدِ الْقَيْسِ ” إِنَّ فِيكَ لَخَصْلَتَيْنِ يُحِبُّهُمَا اللَّهُ الْحِلْمُ وَالأَنَاةُ ” .
কাতাদাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ‘আবদুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাৎকারী এক ব্যক্তি আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন। (বর্ণনাকারী) সা‘ঈদ বলেছেন, কাতাদাহ্ আবূ নায্রার নাম উল্লেখ করেছেন। তিনি আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, ‘আবদুল কায়স গোত্রের ক’জন লোক রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর নবী! আমরা রাবী’আহ্ গোত্রের লোক। আমাদের ও আপনার মাঝখানে কাফির মুযার গোত্রের অবস্থান। তাই আমরা মাহে হারাম ব্যতীত অন্য কোন সময় আপনার কাছে আসতে পারি না। কাজেই আপনি আমাদেরকে এমন কিছু কাজের নির্দেশ দিন, যা করার জন্য আমরা আমাদের পশ্চাতের অন্যান্য লোকদেরকে হুকুম করবো এবং আমরা নিজেরাও তা বাস্তবায়ন করবো যাতে এর মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি তোমাদেরকে চারটি কাজের হুকুম করবো, আর চারটি জিনিস থেকে নিষেধ করবো। তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত করো, তাঁর সাথে অন্য কাউকে অংশীদার করো না, সলাত কায়িম করো, যাকাত দাও এবং রমাযানের সওম পালন কর। আর গনীমাতের সম্পদ থেকে এক পঞ্চমাংশ দান কর এবং তোমাদেরকে চারটি জিনিস (ব্যবহারে) নিষেধ করবোঃ কদুর শুকনো খোল, সবুজ রং লাগানো কলসী, আলকাতরা লাগানো হাঁড়ি-পাতিল ও কাষ্ঠ পাত্র ব্যবহার করতে। তারা বলল, হে আল্লাহর নবী! ‘নাকীর’ (কাষ্ঠ পাত্র) সম্বন্ধে আপনি কতটুকু অবগত? তিনি বললেন, হ্যাঁ। খেজুর গাছের কাণ্ড যা তোমরা খোদাই করে নাও, পরে এর মধ্যে খেজুরের টুকরাগুলো নিক্ষেপ করো, (অর্থাৎ খেজুরের মধ্যে পানি ঢেলে তা দ্বারা ‘নাবীয’ অথবা ‘মদ’ প্রস্তুত করে থাকো)। সা’ঈদ বলেন, অথবা তিনি (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) বলেছেন, খেজুরের টুকরা নিক্ষেপ করো, পরে তম্মধ্যে কিছু পানি ঢেলে দাও। অবশেষে যখন তার ফেনা থেমে যায় (অর্থাৎ তা মদে পরিণত হয়) তখন তোমরা পান করো। ফলে তোমাদের কেউ অথবা তাদের কেউ মদের নেশায় হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে আপন চাচাত ভাইকে তরবারি দিয়ে হত্যা করে। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, উক্ত প্রতিনিধি দলের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি ছিল যার শরীরের মধ্যে ছিল ক্ষতের চিহ্ন। সে বলল, লজ্জাবশতঃ আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে আমার ক্ষত চিহ্নটি লুকিয়ে রাখলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর রসূল! তা হলে আমরা পানীয় বস্তু কিসে পান করবো? তিনি বললেন, চামড়ার থলি বা মশকের মধ্যে যার মুখ রশি দ্বারা বেঁধে দেয়া হয়। তারা বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের এলাকায় ইঁদুরের উপদ্রব খুব বেশী, ফলে চামড়ার থলি একটিও নিরাপদে থাকে না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যদিও তা ইঁদুর খেয়ে ফেলে, যদিও তা ইঁদুর খেয়ে ফেলে, যদিও তা ইঁদুর খেয়ে ফেলে। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুল কায়স গোত্রের ক্ষত চিহ্নওয়ালা লোকটির উদ্দেশ্যে বললেন, অবশ্য তোমার মধ্যে এমন দু’টি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান যা আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়- সহিষ্ণুতা ও ধীরতা-নম্রতা। (ই.ফা. ২৬, ই.সে ২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৭
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي غَيْرُ، وَاحِدٍ، لَقِيَ ذَاكَ الْوَفْدَ . وَذَكَرَ أَبَا نَضْرَةَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ وَفْدَ عَبْدِ الْقَيْسِ، لَمَّا قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِ حَدِيثِ ابْنِ عُلَيَّةَ غَيْرَ أَنَّ فِيهِ “ وَتَذِيفُونَ فِيهِ مِنَ الْقُطَيْعَاءِ أَوِ التَّمْرِ وَالْمَاءِ ” . وَلَمْ يَقُلْ قَالَ سَعِيدٌ أَوْ قَالَ مِنَ التَّمْرِ
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (‘আবদুল কায়স-এর) প্রতিনিধি দলের সাথে যাদের সাক্ষাৎ হয়েছিল তাদের একাধিক ব্যক্তি আমাকে বলেছেন। আবূ নায্রাহ আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ‘আবদুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধিগণ যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলো। হাদীসটির বাকী অংশ ইবনু ‘উলাইয়্যার বর্ণনার অনুরূপ। তবে তাতে উল্লেখ আছে যে, তোমরা এক (কাষ্ঠ পাত্রের) মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খেজুর, খুরমা এবং পানি ঢেলে দিয়ে থাকো। (আরবী) এর পরিবর্তে (আরবী) রয়েছে এবং সা‘ঈদের ‘খেজুর থেকে’ কথাটি উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ২৭; ই.সে. ২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৮
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَكَّارٍ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو قَزَعَةَ، أَنَّ أَبَا نَضْرَةَ، أَخْبَرَهُ وَحَسَنًا، أَخْبَرَهُمَا أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ أَخْبَرَهُ أَنَّ وَفْدَ عَبْدِ الْقَيْسِ لَمَّا أَتَوْا نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالُوا يَا نَبِيَّ اللَّهِ جَعَلَنَا اللَّهُ فِدَاءَكَ مَاذَا يَصْلُحُ لَنَا مِنَ الأَشْرِبَةِ فَقَالَ ” لاَ تَشْرَبُوا فِي النَّقِيرِ ” . قَالُوا يَا نَبِيَّ اللَّهِ جَعَلَنَا اللَّهُ فِدَاءَكَ أَوَتَدْرِي مَا النَّقِيرُ قَالَ ” نَعَمِ الْجِذْعُ يُنْقَرُ وَسَطُهُ وَلاَ فِي الدُّبَّاءِ وَلاَ فِي الْحَنْتَمَةِ وَعَلَيْكُمْ بِالْمُوكَى ” .
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধি দল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসল, তখন বলল, হে আল্লাহর নবী! আল্লাহ আপনার কল্যাণ করুন, অথবা আল্লাহ আমাদের প্রাণ আপনার জন্য উৎসর্গ করুন। পানপাত্রের মধ্যে আমাদের জন্য কোন্ ধরনের পাত্র উপযোগী? তিনি বললেন, ‘নাকীরের’ পানীয় দ্রব্য পান করো না। এবার তারা বলল, হে আল্লাহর নবী! আল্লাহ আপনার জন্য আমাদের কুরবান করুন। ‘নাকীর’ কী, তা আপনি কি জানেন? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ’! নাকীর এক প্রকার পাত্র যা খেজুর গাছ খোদাই করে তৈরিকরা হয়। তিনি আরো বললেন, ‘দুববা বা হানতাম’-এর মধ্যেও পানীয় পান করতে পারবে না, তবে তোমাদের উচিত যে পাত্রের মুখ রশি দ্বারা বাঁধা যায় (অর্থাৎ চামড়ার মশক বা থলি) তা ব্যবহার করা। (ই.ফা. ২৮; ই.সে. ২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭. অধ্যায়ঃ
তাওহীদ ও রিসলাতের শাহাদাত এবং ইসলামের বিধানের দিকে আহবান
২৯
حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، – وَاللَّفْظُ لَهُ – أَخْبَرَنَا عَبَّادُ بْنُ عَبَّادٍ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَدِمَ وَفْدُ عَبْدِ الْقَيْسِ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا هَذَا الْحَىَّ مِنْ رَبِيعَةَ وَقَدْ حَالَتْ بَيْنَنَا وَبَيْنَكَ كُفَّارُ مُضَرَ فَلاَ نَخْلُصُ إِلَيْكَ إِلاَّ فِي شَهْرِ الْحَرَامِ فَمُرْنَا بِأَمْرٍ نَعْمَلُ بِهِ وَنَدْعُو إِلَيْهِ مَنْ وَرَاءَنَا . قَالَ ” آمُرُكُمْ بِأَرْبَعٍ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ الإِيمَانِ بِاللَّهِ – ثُمَّ فَسَّرَهَا لَهُمْ فَقَالَ – شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَإِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَأَنْ تُؤَدُّوا خُمُسَ مَا غَنِمْتُمْ وَأَنْهَاكُمْ عَنِ الدُّبَّاءِ وَالْحَنْتَمِ وَالنَّقِيرِ وَالْمُقَيَّرِ ” . زَادَ خَلَفٌ فِي رِوَايَتِهِ ” شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ” . وَعَقَدَ وَاحِدَةً .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেছেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে (ইয়ামানের প্রশাসক নিযুক্ত করে) পাঠালেন। তিনি বললেন, তুমি এমন এক সম্প্রদায়ের নিকট যাচ্ছো যারা কিতাবধারী। সুতরাং তাদেরকে আহবান জানাবে এ সাক্ষ্য দেয়ার জন্য, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ (উপাস্য) নেই আর আমি আল্লাহর রসূল। যদি তারা তোমার এ কথা মেনে নেয়, তবে তাদেরকে জানিয়ে দিবে যে, প্রত্যহ দিন ও রাতে আল্লাহ তাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত সলাত ফার্য করেছেন। যদি তারা তোমার এ কথাও মেনে নেয়, তবে তাদেরকে জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফার্য করেছেন- যা তাদের ধনীদের থেকে আদায় করা হবে এবং তাদের দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হবে। যদি তারা এ কথাও মেনে নেয়, তবে তাদের ভালো ভালো সম্পদগুলো গ্রহণ করা থেকে বিরত থেকো। আর মাযলূমের অভিশাপকে ভয় কর, কেননা তার ও আল্লাহর মাঝখানে কোন আড়াল নেই। (ই.ফা. ২৯; ই.সে. ২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩০
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ إِسْحَاقَ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ زَكَرِيَّاءَ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ صَيْفِيٍّ، عَنْ أَبِي مَعْبَدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ مُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ “ إِنَّكَ سَتَأْتِي قَوْمًا ” بِمِثْلِ حَدِيثِ وَكِيعٍ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নিশ্চয় তুমি এক সম্প্রদায়ের নিকট যাচ্ছ ….. বাকী অংশ ওয়াকী‘র বর্ণনার অনুরূপ। (ই.ফা. ৩০; ই.সে. ৩০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ جَمِيعًا عَنْ وَكِيعٍ، – قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، – عَنْ زَكَرِيَّاءَ بْنِ إِسْحَاقَ، قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ صَيْفِيٍّ، عَنْ أَبِي مَعْبَدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، – قَالَ أَبُو بَكْرٍ رُبَّمَا قَالَ وَكِيعٌ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ مُعَاذًا، – قَالَ بَعَثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّكَ تَأْتِي قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ . فَادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَأَعْلِمْهُمْ أَنَّ اللَّهَ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ فِي فُقَرَائِهِمْ فَإِنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذَلِكَ فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالِهِمْ وَاتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّهُ لَيْسَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللَّهِ حِجَابٌ ” .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ)-কে ইয়ামানের প্রশাসক করে পাঠানোর সময় বলেছিলেন তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের নিকট যাচ্ছ। তাদের প্রথম যে দা‘ওয়াত দিবে তা হলো, মহান মহিমাময় আল্লাহর ‘ইবাদাতের দিকে আহবান করা। যখন তারা আল্লাহকে চিনে নিবে তখন তাদের জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তা’আলা তাদের জন্য দিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সলাত ফার্য করেছেন। তারা তা করলে তাদের জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফার্য করেছেন। তাদের সম্পদ ধনীদের থেকে আদায় করা হবে এবং তা তাদের গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হবে। এর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করলে তুমি তাদের থেকে তা আদায় করবে কিন্তু তাদের উত্তম মালগুলো গ্রহণ করা থেকে সাবধান থাকবে। (ই.ফা. ৩১; ই.সে. ৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮. অধ্যায়ঃ
লোকদের বিরুদ্ধে জিহাদের নির্দেশ যতক্ষণ না তারা স্বীকার করে যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রসূল এবং সলাত কায়িম করে, যাকাত দেয়, নবী যে শারী‘আতের বিধান এনেছেন তার প্রতি ঈমান আনে, যে ব্যক্তি এসব করবে সে তার জান মালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শারী’আত সম্মত কারণ ব্যতীত, তার অন্তরের খবর আল্লাহর কাছে; যে ব্যক্তি যাকাত দিতে ও ইসলামের অন্যান্য বিধান পালন করতে অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইমামের গুরুত্বারোপ করার নির্দেশ
৩২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَاسْتُخْلِفَ أَبُو بَكْرٍ بَعْدَهُ وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنَ الْعَرَبِ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ لأَبِي بَكْرٍ كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَمَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَقَدْ عَصَمَ مِنِّي مَالَهُ وَنَفْسَهُ إِلاَّ بِحَقِّهِ وَحِسَابُهُ عَلَى اللَّهِ ” . فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَاللَّهِ لأُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ فَإِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ الْمَالِ وَاللَّهِ لَوْ مَنَعُونِي عِقَالاً كَانُوا يُؤَدُّونَهُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهِ . فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَوَاللَّهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ رَأَيْتُ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ شَرَحَ صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ لِلْقِتَالِ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ الْحَقُّ
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের পর আবূ বাক্র (রাঃ) খলীফা নিযুক্ত হন। এ সময় আরবের একদল লোক (যাকাত অস্বীকার করলে) মুরতাদ হয়ে গেল। [আবূ বাক্র (রাঃ) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সংকল্প করলেন] ‘উমার (রাঃ) বললেন, আপনি কিরূপে লোকদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ করবেন? [২৪] অথচ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছেনঃ “আমি (আল্লাহর পক্ষ থেকে) লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি যে পর্যন্ত না তারা বলে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ (আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই) আর যে ব্যক্তি ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলল, সে তার জান-মাল আমার হাত থেকে রক্ষা করলো। অবশ্য আইনের দাবী আলাদা। (অর্থাৎ ইসলামের বিধান অনুযায়ী দণ্ডনীয় কোন অপরাধ করলে তাকে অবশ্যই শাস্তি ভোগ করতে হবে) । তবে তার আসল বিচারের ভার আল্লাহর উপর ন্যস্ত। আবূ বাক্র (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, যে ব্যক্তি সলাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করবে আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো। [২৫] কেননা যাকাত হচ্ছে মালের (উপর বঞ্চিতের) অধিকার। আল্লাহর কসম, যদি তারা আমাকে একখানা রশি প্রদানেও অস্বীকৃতি জানায় যা তারা (যাকাত বাবদ) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রদান করতো, তবে আমি এ অস্বীকৃতির কারণে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো। এবার ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, ব্যাপারটা এ ছাড়া আর কিছুই নয় যে, আল্লাহ তা’আলা আবূ বাক্রের হৃদয়কে যুদ্ধের জন্য প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন। আমি স্পষ্টই উপলদ্ধি করলাম, এটাই (আবূ বাক্রের সিদ্ধান্তই) সঠিক এবং যথার্থ। (ই.ফা. ৩২, ই.সে ৩২)
[২৪] রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইন্তিকালের পর ‘আরাবের কিছু সংখ্যক লোক মুরতাদ হয়ে যায়, কিছু সংখ্যক লোক যাকাত দিতে অস্বীকার করে। ‘উমার (রাঃ)-এর জিজ্ঞাস্য ছিল, যারা যাকাত দিতে অস্বীকার করে অথচ ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলে, তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা কি উচিত?
[২৫] যারা সলাত ফরয মনে করে অথচ যাকাত দেয়া ফার্য মনে করে না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৩
وَحَدَّثَنَا أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، وَأَحْمَدُ بْنُ عِيسَى، قَالَ أَحْمَدُ حَدَّثَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَمَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ عَصَمَ مِنِّي مَالَهُ وَنَفْسَهُ إِلاَّ بِحَقِّهِ وَحِسَابُهُ عَلَى اللَّهِ ”
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই’- এ কথার স্বীকৃতি না দেয়া পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি। সুতরাং যে কেউ ‘আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ্ নেই’ স্বীকার করবে সে আমা হতে তার জান মালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শারী‘আত সম্মত কারণ ব্যতীত। আর তার হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে। (ই.ফা. ৩৩; ই.সে. ৩৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৪
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، – يَعْنِي الدَّرَاوَرْدِيَّ – عَنِ الْعَلاَءِ، ح وَحَدَّثَنَا أُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامَ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، عَنِ الْعَلاَءِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَعْقُوبَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَيُؤْمِنُوا بِي وَبِمَا جِئْتُ بِهِ فَإِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّهَا وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ ”
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই”- এ কথার সাক্ষ্য না দেয়া পর্যন্ত এবং আমার প্রতি ও আমি যা নিয়ে এসেছি তার প্রতি ঈমান না আনা পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। এগুলো মেনে নিলে তারা তাদের জান-মালের নিরাপত্তা লাভ করবে- তবে শারী‘আত সম্মত কারণ ছাড়া। আর তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে। (ই.ফা. ৩৪; ই.সে. ৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৫
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ غِيَاثٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، وَعَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالاَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ ” . بِمِثْلِ حَدِيثِ ابْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ح وَحَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، – يَعْنِي ابْنَ مَهْدِيٍّ – قَالاَ جَمِيعًا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ فَإِذَا قَالُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّهَا وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ ” . ثُمَّ قَرَأَ { إِنَّمَا أَنْتَ مُذَكِّرٌ * لَسْتَ عَلَيْهِمْ بِمُسَيْطِرٍ}
জাবির (রাঃ), আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) ও আবূ সালিহ থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। বাকী অংশ আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে ইবনুল মুসাইয়্যাব-এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। আবূ বাক্র ইবনু শাইবাহ্ ও মুহাম্মাদ ইবনু আল মুসান্না (রাঃ) ….. জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই’-এ কথার স্বীকৃতি না দেয়া পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি। ‘আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই’- এ কথা স্বীকার করলে তারা আমার থেকে তাদের জান মালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শারী’আত সম্মত কারণ ছাড়া। তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে। তারপর তিনি আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ “আপনি তো একজন উপদেশদাতা। আপনি এদের উপর কর্মনিয়ন্ত্রক নন”-(সূরাহহ্ আল গা-শিয়াহ্ ৮৮ : ২১-২২) । (ই.ফা. ৩৫; ই.সে. ৩৫-৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৬
حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ الْمِسْمَعِيُّ، مَالِكُ بْنُ عَبْدِ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ الصَّبَّاحِ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ وَاقِدِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَشْهَدُوا أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَيُقِيمُوا الصَّلاَةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ فَإِذَا فَعَلُوا عَصَمُوا مِنِّي دِمَاءَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ إِلاَّ بِحَقِّهَا وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, লোকদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল এবং সলাত কায়িম করে, যাকাত দেয়, যদি এগুলো করে তাহলে আমা থেকে তারা জান মালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শারী‘আত সম্মত কারণ ছাড়া। আর তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর কাছে। (ই.ফা. ৩৬; ই.সে. ৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৭
وَحَدَّثَنَا سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَرْوَانُ، – يَعْنِيَانِ الْفَزَارِيَّ – عَنْ أَبِي مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَكَفَرَ بِمَا يُعْبَدُ مِنْ دُونِ اللَّهِ حَرُمَ مَالُهُ وَدَمُهُ وَحِسَابُهُ عَلَى اللَّهِ ”
আবূ মালিক তাঁর পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি ‘আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, এ কথা স্বীকার করে এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য উপাস্যকে অস্বীকার করে, তার জান-মাল নিরাপদ। আর তার হিসাব-নিকাশ আল্লাহর নিকট। (ই.ফা. ৩৭; ই.সে. ৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৮
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، ح وَحَدَّثَنِيهِ زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، كِلاَهُمَا عَنْ أَبِي مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ وَحَّدَ اللَّهَ ” ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِهِ .
আবূ মালিক (রহঃ)-এর সূত্রে তার পিতা তারিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলাকে এক বলে স্বীকার করে ….. অতঃপর তিনি উল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৩৮; ই.সে. ৩৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯. অধ্যায়ঃ
মৃত্যুর লক্ষণ দেখা দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঈমান গ্রহণযোগ্য হওয়া, মুশরিকদের ব্যাপারে ইসতিগফার রহিত হওয়া ও মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরণকারীর জাহান্নামী হওয়া এবং সে কোন ওয়াসীলায় পরিত্রাণ না পাওয়ার দলীল
৩৯
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى التُّجِيبِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمَّا حَضَرَتْ أَبَا طَالِبٍ الْوَفَاةُ جَاءَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدَ عِنْدَهُ أَبَا جَهْلٍ وَعَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي أُمَيَّةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَا عَمِّ قُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . كَلِمَةً أَشْهَدُ لَكَ بِهَا عِنْدَ اللَّهِ ” . فَقَالَ أَبُو جَهْلٍ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي أُمَيَّةَ يَا أَبَا طَالِبٍ أَتَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ . فَلَمْ يَزَلْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْرِضُهَا عَلَيْهِ وَيُعِيدُ لَهُ تِلْكَ الْمَقَالَةَ حَتَّى قَالَ أَبُو طَالِبٍ آخِرَ مَا كَلَّمَهُمْ هُوَ عَلَى مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ . وَأَبَى أَنْ يَقُولَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَمَا وَاللَّهِ لأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ مَا لَمْ أُنْهَ عَنْكَ ” . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَنْ يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُوا أُولِي قُرْبَى مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ} . وَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى فِي أَبِي طَالِبٍ فَقَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم { إِنَّكَ لاَ تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ وَلَكِنَّ اللَّهَ يَهْدِي مَنْ يَشَاءُ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ}.
সা‘ঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব থেকে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন আবূ তালিবের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসল রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছে গেলেন এবং সেখানে তিনি আবূ জাহ্ল ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমাইয়্যাহ্ ইবনু মুগীরাহকে উপস্থিত দেখতে পেলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (আবূ তালিবকে লক্ষ্য করে) বললেন, হে আমার চাচা! আপনি ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ কথাটি বলুন। এর দ্বারাই আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য সাক্ষ্য দেব। তখন আবূ জাহল ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমাইয়্যাহ্ বলে ওঠলো, হে আবূ তালিব! তুমি কি ‘আবদুল মুত্তালিবের মিল্লাত (দীন) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে? (অর্থাৎ সে দ্বীন পরিত্যাগ করবে?) এদিকে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বার বার তাঁর কথাটি পেশ করতে থাকলেন। আবূ তালিব শেষ পর্যন্ত যে কথা বললেন তা হলো, তিনি ‘আবদুল মুত্তালিবের মিল্লাতের উপরই অবিচল থাকবেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তিনি “লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” বলতে অস্বীকৃতি জানালেন। এতে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহর শপথ! যতক্ষণ আমাকে নিষেধ না করা হয় আমি আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবো। এ প্রসঙ্গে সুমহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করলেন, “নবী এবং ঈমানদারদের পক্ষে মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা শোভা পায় না, যদিও তারা (মুশরিকরা) নিকটাত্মীয় হয়। কেননা তারা যে জাহান্নামী হবে এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে”-[২৬] (সূরাহ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ১১৩) । আবূ তালিবের প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, “হে নবী! নিশ্চয়ই হিদায়াত আপনার হাতে নয় যে, যাকে আপনি চাইবেন হিদায়াত করতে পারবেন। বরং আল্লাহ যাকে চান তাকে হিদায়াত দান করেন, আর কে হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে তিনিই বেশি জানেন”-[২৭] (সূরাহ আল কাসাস ২৮ : ৫৬) । (ই.ফা. ৩৯; ই.সে. ৪০)
[২৬] আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাচা আবূ তালিব যখন মরণাপন্ন তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট যান, সে সময় আবূ জাহ্ল ও ‘আবদুল্লাহ বিন উমাইয়্যাহ্ উপস্থিত ছিলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলতে বলেন, তখন আবূ জাহ্ল বাধা দিল।
[২৭] রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাচা কাফির হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার পরেও বললেন, আমি আপনার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করব, যতক্ষণ আল্লাহ নিষেধ না করবেন। আল্লাহ নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন মুশরিকদের জন্য ইসতিগফার করা যাবে না। আরও জানা গেল, প্রকৃত হিদায়াতের মালিক আল্লাহ তা‘আলা, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، ح وَحَدَّثَنَا حَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، – وَهُوَ ابْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ – قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، كِلاَهُمَا عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّ حَدِيثَ صَالِحٍ انْتَهَى عِنْدَ قَوْلِهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيهِ . وَلَمْ يَذْكُرِ الآيَتَيْنِ . وَقَالَ فِي حَدِيثِهِ وَيَعُودَانِ فِي تِلْكَ الْمَقَالَةِ . وَفِي حَدِيثِ مَعْمَرٍ مَكَانَ هَذِهِ الْكَلِمَةِ فَلَمْ يَزَالاَ بِهِ .
ইসহাক্ ইবনু ইবরাহীম ও ‘আব্দ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুহরীর সূত্রে একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে সালিহ্-এর হাদীসটি (আরবী) এ বাক্যেই সমাপ্ত হয়েছে এবং তিনি আয়াত দু’টির উল্লেখ করেননি। তিনি তাঁর সূত্রে আরও উল্লেখ করেন (আরবী) “তারা উভয়ই এ বক্তব্যটি পুনরাবৃত্তি করেন।” মা‘মার বর্ণিত হাদীসে (আরবী)-এর স্থলে (আরবী) “তারা উভয়েই তার নিকট এ কথার পুনরাবৃত্তি করতে থাকে” কথার বর্ণনা রয়েছে। (ই.ফা. ৪০; ই.সে. ৪১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَرْوَانُ، عَنْ يَزِيدَ، – وَهُوَ ابْنُ كَيْسَانَ – عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِعَمِّهِ عِنْدَ الْمَوْتِ ” قُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ لَكَ بِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . فَأَبَى فَأَنْزَلَ اللَّهُ { إِنَّكَ لاَ تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ} الآيَةَ .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাচা আবূ তালিবের মৃত্যুর সময় তাকে বলেছিলেন। আপনি ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলুন, কিয়ামাতের দিন আমি আপনার জন্য এর সাক্ষ্য দিব। কিন্তু তিনি তা বলতে অস্বীকার করলেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেনঃ অর্থাৎ “আপনি যাকে পছন্দ করেন, তাকে সৎপথে আনতে পারবেন না”-(সূরাহ আল-কাসাস ২৮ : ৫৬) (ই.ফা. ৪১; ই.সে. ৪২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمِ بْنِ مَيْمُونٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ كَيْسَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ الأَشْجَعِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِعَمِّهِ ” قُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ لَكَ بِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . قَالَ لَوْلاَ أَنْ تُعَيِّرَنِي قُرَيْشٌ يَقُولُونَ إِنَّمَا حَمَلَهُ عَلَى ذَلِكَ الْجَزَعُ لأَقْرَرْتُ بِهَا عَيْنَكَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ { إِنَّكَ لاَ تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ وَلَكِنَّ اللَّهَ يَهْدِي مَنْ يَشَاءُ}
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাচাকে বললেন, আপনি ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলুন, কিয়ামাত দিবসে আপনার পক্ষে আমি এর সাক্ষ্য দিব। তিনি বললেন, আবূ তালিব ভীত হয়ে এ কথা বলেছেন, কুরায়শদের থেকে এরূপ দোষারোপের যদি আশংকা না থাকত তাহলে আমি তা পাঠ করে তোমার চোখ জুড়াতাম। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করলেনঃ “তুমি যাকে চাইবে হিদায়াত করতে পারবে না, কিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন হিদায়াত করেন”-(সূরাহ আল-কাসাস ২৮ : ৫৬) (ই.ফা. ৪২; ই.সে. ৪৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি তাওহীদের উপর মৃত্যুবরণ করবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে- এর দলীল প্রমাণ
৪৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، كِلاَهُمَا عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، – قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، – عَنْ خَالِدٍ، قَالَ حَدَّثَنِي الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ حُمْرَانَ، عَنْ عُثْمَانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ مَاتَ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ ” .
‘উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি অন্তরে এ বিশ্বাস রেখে মৃত্যুবরণ করলো যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [২৮]
মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বাক্র আল মুকাদ্দামী (রাঃ) ….. ‘উসমান (রাঃ) বলেন যে, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অনুরূপ বলতে শুনেছি ….. অবশিষ্টাংশ উপরের হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ৪৩-৪৪; ই.সে. ৪৪-৪৫)
[২৮] আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত বলেন, কালিমায় পূর্ণ বিশ্বাসী হয়ে আল্লাহকে এক বলে স্বীকার করার পর তার দ্বারা যদি কাবীরাহ গুনাহ হয়ে যায় তাহলে একদিন জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে। আর খারিজী মুতাযিলা ফিরকা বলে কাবীরাহ্ গুনাহের দরুন চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ النَّضْرِ بْنِ أَبِي النَّضْرِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو النَّضْرِ، هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ الأَشْجَعِيُّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي مَسِيرٍ – قَالَ – فَنَفِدَتْ أَزْوَادُ الْقَوْمِ قَالَ حَتَّى هَمَّ بِنَحْرِ بَعْضِ حَمَائِلِهِمْ – قَالَ – فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ جَمَعْتَ مَا بَقِيَ مِنْ أَزْوَادِ الْقَوْمِ فَدَعَوْتَ اللَّهَ عَلَيْهَا . قَالَ فَفَعَلَ – قَالَ – فَجَاءَ ذُو الْبُرِّ بِبُرِّهِ وَذُو التَّمْرِ بِتَمْرِهِ – قَالَ وَقَالَ مُجَاهِدٌ وَذُو النَّوَاةِ بِنَوَاهُ – قُلْتُ وَمَا كَانُوا يَصْنَعُونَ بِالنَّوَى قَالَ كَانُوا يَمُصُّونَهُ وَيَشْرَبُونَ عَلَيْهِ الْمَاءَ . قَالَ فَدَعَا عَلَيْهَا – قَالَ – حَتَّى مَلأَ الْقَوْمُ أَزْوِدَتَهُمْ – قَالَ – فَقَالَ عِنْدَ ذَلِكَ “ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ لاَ يَلْقَى اللَّهَ بِهِمَا عَبْدٌ غَيْرَ شَاكٍّ فِيهِمَا إِلاَّ دَخَلَ الْجَنَّةَ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একটি সফরে ছিলাম। এক পর্যায়ে দলের খাদ্যসামগ্রী শেষ হয়ে গেল। পরিশেষে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের কিছু সংখ্যক উট যাবাহ করার মনস্থ করলেন। রাবী বলেন যে, এতে ‘উমার (রাঃ) আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনি যদি সকলের খাদ্য সামগ্রী একত্রিত করে আল্লাহর নিকট দু‘আ করতেন তবে উত্তম হতো। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেটাই করলেন। যার নিকট গম ছিল সে গম নিয়ে এবং যার নিকট খেজুর ছিল তা নিয়ে উপস্থিত হলো। (তাল্হাহ্ ইবনু মুসাররিফ বলেন) মুজাহিদ আরো বর্ণনা করেন যে, যার নিকট খেজুরের আঁটি ছিল সে আঁটি নিয়েই উপস্থিত হলো। আমি (তাল্হাহ্) জিজ্ঞেস করলাম আঁটি দিয়ে কি করতেন? তিনি বললেন, সেটা চুষে পানি পান করতেন। রাবী বলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সংগৃহীত খাদ্যসামগ্রীর উপর দু’আ করলেন। রাবী বলেন, অতঃপর লোকেরা তাদের পাত্রসমূহ খাদ্য দ্বারা পূর্ণ করে নিল। রাবী বলেন, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল। যে এ বিষয় দু’টোর প্রতি নিঃসন্দেহে বিশ্বাস রেখে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (ই.ফা. ৪৫; ই.সে. ৪৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৫
حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ عُثْمَانَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ جَمِيعًا عَنْ أَبِي مُعَاوِيَةَ، – قَالَ أَبُو كُرَيْبٍ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، – عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَوْ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، – شَكَّ الأَعْمَشُ – قَالَ لَمَّا كَانَ غَزْوَةُ تَبُوكَ أَصَابَ النَّاسَ مَجَاعَةٌ . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْ أَذِنْتَ لَنَا فَنَحَرْنَا نَوَاضِحَنَا فَأَكَلْنَا وَادَّهَنَّا . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” افْعَلُوا ” . قَالَ فَجَاءَ عُمَرُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنْ فَعَلْتَ قَلَّ الظَّهْرُ وَلَكِنِ ادْعُهُمْ بِفَضْلِ أَزْوَادِهِمْ ثُمَّ ادْعُ اللَّهَ لَهُمْ عَلَيْهَا بِالْبَرَكَةِ لَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَ فِي ذَلِكَ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” نَعَمْ ” . قَالَ فَدَعَا بِنِطَعٍ فَبَسَطَهُ ثُمَّ دَعَا بِفَضْلِ أَزْوَادِهِمْ – قَالَ – فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَجِيءُ بِكَفِّ ذُرَةٍ – قَالَ – وَيَجِيءُ الآخَرُ بَكَفِّ تَمْرٍ – قَالَ – وَيَجِيءُ الآخَرُ بِكِسْرَةٍ حَتَّى اجْتَمَعَ عَلَى النِّطَعِ مِنْ ذَلِكَ شَىْءٌ يَسِيرٌ – قَالَ – فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِ بِالْبَرَكَةِ ثُمَّ قَالَ ” خُذُوا فِي أَوْعِيَتِكُمْ ” . قَالَ فَأَخَذُوا فِي أَوْعِيَتِهِمْ حَتَّى مَا تَرَكُوا فِي الْعَسْكَرِ وِعَاءً إِلاَّ مَلأُوهُ – قَالَ – فَأَكَلُوا حَتَّى شَبِعُوا وَفَضِلَتْ فَضْلَةٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ لاَ يَلْقَى اللَّهَ بِهِمَا عَبْدٌ غَيْرَ شَاكٍّ فَيُحْجَبَ عَنِ الْجَنَّةِ ” .
আবূ হুরায়রাহ কিংবা আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাবূকের যুদ্ধের সময় লোকদের খুবই খাদ্যাভাব দেখা দেয়। তারা বলল, ইয়া রসূলুল্লাহ! যদি আপনি অনুমতি দেন তাহলে আমরা আমাদের উটগুলো যাবাহ করে তার গোশ্ত খাই এবং তার চর্বি ব্যবহার করি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যাবাহ করতে পার। রাবী বলেন, এমন সময় ‘উমার (রাঃ) আসলেন এবং বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! যদি এমন করা হয় তাহলে বাহন কমে যাবে। বরং আপনি লোকেদেরকে তাদের অবশিষ্ট খাদ্য নিয়ে আসতে বলুন, তাতে তাদের জন্য আল্লাহর দরবারে বারাকাতের দু‘আ করুন। আশা করা যায়, আল্লাহ তাতে বারাকাত দান করবেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ ঠিক আছে। তিনি একটি চাদর আনতে বললেন এবং তা বিছালেন, এরপর সকলের অবশিষ্ট খাদ্য চেয়ে পাঠালেন। রাবী বলেন, তখন কেউ এক মুঠো গম নিয়ে উপস্থিত হলো, কেউ এক মুঠো খেজুর নিয়ে উপস্থিত হলো, কেউ বা এক টুকরো রুটি নিয়ে আসলো, এভাবে কিছু পরিমাণ খাদ্য-সামগ্রী চাদরে জমা হলো। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বারাকাতের দু‘আ করলেন। অতঃপর তিনি বললেন, তোমরা নিজ নিজ পাত্রগুলো খাদ্য দ্বারা পূর্ণ করে নাও। সকলেই আপন আপন পাত্র ভরে নিল, এমনকি এ বাহিনীর কোন পাত্রই আর অপূর্ণ থাকল না। এরপর সকলেই পরিতৃপ্তি সহকারে আহার করলেন। কিছু রয়েও গেল।তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর প্রেরিত রসূল, যে ব্যক্তি নিঃসন্দেহে এ কথা দু’টোর উপর ঈমান রেখে আল্লাহর নিকট উপস্থিত হবে সে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবে না। (ই.ফা. ৪৬; ই.সে. ৪৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، عَنِ ابْنِ مُحَيْرِيزٍ، عَنِ الصُّنَابِحِيِّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّهُ قَالَ دَخَلْتُ عَلَيْهِ وَهُوَ فِي الْمَوْتِ فَبَكَيْتُ فَقَالَ مَهْلاً لِمَ تَبْكِي فَوَاللَّهِ لَئِنِ اسْتُشْهِدْتُ لأَشْهَدَنَّ لَكَ وَلَئِنْ شُفِّعْتُ لأَشْفَعَنَّ لَكَ وَلَئِنِ اسْتَطَعْتُ لأَنْفَعَنَّكَ ثُمَّ قَالَ وَاللَّهِ مَا مِنْ حَدِيثٍ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَكُمْ فِيهِ خَيْرٌ إِلاَّ حَدَّثْتُكُمُوهُ إِلاَّ حَدِيثًا وَاحِدًا وَسَوْفَ أُحَدِّثُكُمُوهُ الْيَوْمَ وَقَدْ أُحِيطَ بِنَفْسِي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ شَهِدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ النَّارَ ” .
‘উবাদাহ্ ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বলে, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, তিনি একক এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রসূল, আর নিশ্চয় ‘ঈসা (‘আঃ) আল্লাহর বান্দা, তাঁর বান্দীর (মারইয়ামের) পুত্র ও তাঁর সে কালিমা- যা তিনি মারইয়ামকে পৌঁছিয়েছেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে প্রেরিত একটি ‘রুহ’ মাত্র, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, আল্লাহ তাকে জান্নাতের আটটি দরজার যেটি দিয়ে প্রবেশ করাতে চাইবেন, প্রবেশ করাবেন।” (ই.ফা. ৪৭; ই.সে. ৪৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৭
وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا مُبَشِّرُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، عَنْ عُمَيْرِ بْنِ هَانِئٍ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ بِمِثْلِهِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ ” أَدْخَلَهُ اللَّهُ الْجَنَّةَ عَلَى مَا كَانَ مِنْ عَمَلٍ ” . وَلَمْ يَذْكُرْ ” مِنْ أَىِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ الثَّمَانِيَةِ شَاءَ ” .
‘উমায়র ইবনু হানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উমায়র ইবনু হানী (রাঃ) থেকে এ সানাদে উপরের বর্ণনার অনুরূপই বর্ণিত হয়েছে, তবে আরো রয়েছে, তার ‘আমাল যা-ই হোক না কেন আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। কিন্তু ‘জান্নাতের আটটি দরজার যেটি দিয়েই সে চাইবে’ এ বাক্যটি এ বর্ণনায় উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ৪৮; ই.সে. ৪৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، عَنِ ابْنِ مُحَيْرِيزٍ، عَنِ الصُّنَابِحِيِّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّهُ قَالَ دَخَلْتُ عَلَيْهِ وَهُوَ فِي الْمَوْتِ فَبَكَيْتُ فَقَالَ مَهْلاً لِمَ تَبْكِي فَوَاللَّهِ لَئِنِ اسْتُشْهِدْتُ لأَشْهَدَنَّ لَكَ وَلَئِنْ شُفِّعْتُ لأَشْفَعَنَّ لَكَ وَلَئِنِ اسْتَطَعْتُ لأَنْفَعَنَّكَ ثُمَّ قَالَ وَاللَّهِ مَا مِنْ حَدِيثٍ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَكُمْ فِيهِ خَيْرٌ إِلاَّ حَدَّثْتُكُمُوهُ إِلاَّ حَدِيثًا وَاحِدًا وَسَوْفَ أُحَدِّثُكُمُوهُ الْيَوْمَ وَقَدْ أُحِيطَ بِنَفْسِي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ شَهِدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ النَّارَ ” .
সুনাবিহী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘উবাদাহ্ ইবনু সামিত (রাঃ)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেন। সুনাবিহী বলেন, ‘উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ) যখন মৃত্যু শয্যায় তখন আমি তাঁর নিকট গেলাম, (তাঁকে দেখে) আমি কেঁদে ফেললাম। এ সময় তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, থামো, কাঁদছো কেন? আলাহর কসম! আমাকে যদি সাক্ষী বানানো হয়, আমি তোমার স্বপক্ষে সাক্ষ্য দিবো, আর যদি সুপারিশ করার অধিকারী হই তবে তোমার জন্য সুপারিশ করবো। আর যদি তোমার কোন উপকার করতে পারি, নিশ্চয়ই সেটাও করবো। অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! এ যাবৎ আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে যে কোন হাদীস শুনেছি, যার মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যাণ নিহিত আছে, তা আমি অবশ্যই তোমাদের কাছে বর্ণনা করেছি। কিন্তু একটি মাত্র হাদীস (যা এতদিন আমি তোমাদেরকে বলিনি) আজ এখনই তা আমি তোমাদের কাছে বর্ণনা করবো। কেননা বর্তমানে আমি মৃত্যুর বেষ্টনীতে আবদ্ধ। আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য দেয় যে, “আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রসূল, আল্লাহ তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন।” (ই.ফা. ৪৯; ই.সে. ৫০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪৯
حَدَّثَنَا هَدَّابُ بْنُ خَالِدٍ الأَزْدِيُّ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ كُنْتُ رِدْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْسَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ إِلاَّ مُؤْخِرَةُ الرَّحْلِ فَقَالَ ” يَا مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ ” . قُلْتُ لَبَّيْكَ رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ . ثُمَّ سَارَ سَاعَةً ثُمَّ قَالَ ” يَا مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ ” . قُلْتُ لَبَّيْكَ رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ . ثُمَّ سَارَ سَاعَةَ ثُمَّ قَالَ ” يَا مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ ” . قُلْتُ لَبَّيْكَ رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ . قَالَ ” هَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ اللَّهِ عَلَى الْعِبَادِ ” . قَالَ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ ” فَإِنَّ حَقَّ اللَّهِ عَلَى الْعِبَادِ أَنْ يَعْبُدُوهُ وَلاَ يُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا ” . ثُمَّ سَارَ سَاعَةً ثُمَّ قَالَ ” يَا مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ ” . قُلْتُ لَبَّيْكَ رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ . قَالَ ” هَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللَّهِ إِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ ” . قَالَ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ ” أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمْ ” .
মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাহনের পিছনে বসা ছিলাম। আমার ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাঝে হাওদার কাঠের টুকরা ব্যতীত কোন ব্যবধান ছিল না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘হে মু’আয ইবনু জাবাল!’ আমি বললাম, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ! উপস্থিত আছি; আপনার আনুগত্য শিরোধার্য’। অতঃপর তিনি কিছু দূর অগ্রসর হয়ে পুনরায় বললেন, ‘হে মু’আয ইবনু জাবাল!’ আমি বললাম, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ! উপস্থিত আছি; আপনার আনুগত্য শিরোধার্য’। তিনি বললেন, তুমি কি জান, বান্দার উপর আল্লাহর কী হক রয়েছে? আমি বললাম, ‘আল্লাহ এবং তাঁর রসূলই তা উত্তম জানেন।’ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘বান্দার উপর আল্লাহর হক হলো তারা তাঁর ‘ইবাদাত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছুকে শারীক করবে না।’ অতঃপর কিছু দূর চললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেন, ‘হে মু’আয ইবনু জাবাল!’ আমি বললাম, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ! উপস্থিত আছি; আপনার আনুগত্য শিরোধার্য’। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘তুমি কি জান, এগুলো করলে আল্লাহর কাছে বান্দার কী হক আছে?’ আমি বললাম, আল্লাহ তাঁর রসূলই ভালো জানেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আল্লাহ তা’আলা তাকে শাস্তি দিবেন না।’ (ই.ফা. ৫০; ই.সে. ৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، سَلاَّمُ بْنُ سُلَيْمٍ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ كُنْتُ رِدْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى حِمَارٍ يُقَالُ لَهُ عُفَيْرٌ قَالَ فَقَالَ ” يَا مُعَاذُ تَدْرِي مَا حَقُّ اللَّهِ عَلَى الْعِبَادِ وَمَا حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللَّهِ ” . قَالَ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ ” فَإِنَّ حَقَّ اللَّهِ عَلَى الْعِبَادِ أَنْ يَعْبُدُوا اللَّهَ وَلاَ يُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَحَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ لاَ يُعَذِّبَ مَنْ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا ” . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ أُبَشِّرُ النَّاسَ قَالَ ” لاَ تُبَشِّرْهُمْ فَيَتَّكِلُوا ” .
মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক সফরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর গাধা ‘উফায়র-এর পিঠে তাঁর পিছনে বসা ছিলাম। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘হে মু’আয! তুমি কি জান, বান্দার উপর আল্লাহর হক কী এবং আল্লাহর উপর বান্দার হক কী?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ তাঁর রসূলই ভালো জানেন।’ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘বান্দার উপর আল্লাহর হক হলো তারা আলাহর ‘ইবাদাত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছু শারীক করবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার হক হলো, যে তাঁর সঙ্গে শারীক করবে না, তাকে তিনি শাস্তি দিবেন না।’ মু’আয বললেন, ‘আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি লোকদের এ সংবাদ জানিয়ে দেব না?’ তিনি বললেন, না; লোকেদের এ সংবাদ দিও না, তাহলে তারা এর উপর ভরসা করে থাকবে। (অর্থাৎ, ‘আমাল করা ছেড়ে দিবে) (ই.ফা. ৫১; ই.সে. ৫২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، وَالأَشْعَثِ بْنِ سُلَيْمٍ، أَنَّهُمَا سَمِعَا الأَسْوَدَ بْنَ هِلاَلٍ، يُحَدِّثُ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَا مُعَاذُ أَتَدْرِي مَا حَقُّ اللَّهِ عَلَى الْعِبَادِ ” . قَالَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ ” أَنْ يُعْبَدَ اللَّهُ وَلاَ يُشْرَكَ بِهِ شَىْءٌ – قَالَ – أَتَدْرِي مَا حَقُّهُمْ عَلَيْهِ إِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ ” . فَقَالَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ ” أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمْ ” .
মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘হে মু’আয! তুমি কি জান, বান্দার উপর আল্লাহর কী হক?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তাঁর রসূলই ভালো জানেন।’ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘তা হলো, আল্লাহর ‘ইবাদাত করা এবং তাঁর সঙ্গে অন্য কিছুকে শারীক না করা’ তিনি বললেন, ‘তুমি কি জান, তা করলে আল্লাহর নিকট বান্দার হক কী?’ মু’আয বললেন, ‘আল্লাহ তাঁর রসূলই ভালো জানেন।’ তিনি বললেন, ‘তাদের তিনি শাস্তি দিবেন না।’ (ই.ফা. ৫২; ই.সে. ৫৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫২
حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ زَكَرِيَّاءَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، عَنْ زَائِدَةَ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ هِلاَلٍ، قَالَ سَمِعْتُ مُعَاذًا، يَقُولُ دَعَانِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَجَبْتُهُ فَقَالَ “ هَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ اللَّهِ عَلَى النَّاسِ ” . نَحْوَ حَدِيثِهِمْ .
মু’আয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ডাকলেন। আমি তাঁর আহ্বানে সাড়া দিলাম। তারপর তিনি বললেন, তুমি কি জান মানূষের উপর আল্লাহর হক কী? ….. বাকি অংশ উপরোক্ত হাদীসের মত। (ই.ফা. ৫৩; ই.সে. ৫৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৩
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو كَثِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو هُرَيْرَةَ، قَالَ كُنَّا قُعُودًا حَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَعَنَا أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ فِي نَفَرٍ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ بَيْنِ أَظْهُرِنَا فَأَبْطَأَ عَلَيْنَا وَخَشِينَا أَنْ يُقْتَطَعَ دُونَنَا وَفَزِعْنَا فَقُمْنَا فَكُنْتُ أَوَّلَ مَنْ فَزِعَ فَخَرَجْتُ أَبْتَغِي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَتَيْتُ حَائِطًا لِلأَنْصَارِ لِبَنِي النَّجَّارِ فَدُرْتُ بِهِ هَلْ أَجِدُ لَهُ بَابًا فَلَمْ أَجِدْ فَإِذَا رَبِيعٌ يَدْخُلُ فِي جَوْفِ حَائِطٍ مِنْ بِئْرٍ خَارِجَةٍ – وَالرَّبِيعُ الْجَدْوَلُ – فَاحْتَفَزْتُ كَمَا يَحْتَفِزُ الثَّعْلَبُ فَدَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ” أَبُو هُرَيْرَةَ ” . فَقُلْتُ نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ ” مَا شَأْنُكَ ” . قُلْتُ كُنْتَ بَيْنَ أَظْهُرِنَا فَقُمْتَ فَأَبْطَأْتَ عَلَيْنَا فَخَشِينَا أَنْ تُقْتَطَعَ دُونَنَا فَفَزِعْنَا فَكُنْتُ أَوَّلَ مَنْ فَزِعَ فَأَتَيْتُ هَذَا الْحَائِطَ فَاحْتَفَزْتُ كَمَا يَحْتَفِزُ الثَّعْلَبُ وَهَؤُلاَءِ النَّاسُ وَرَائِي فَقَالَ ” يَا أَبَا هُرَيْرَةَ ” . وَأَعْطَانِي نَعْلَيْهِ قَالَ ” اذْهَبْ بِنَعْلَىَّ هَاتَيْنِ فَمَنْ لَقِيتَ مِنْ وَرَاءِ هَذَا الْحَائِطِ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُهُ فَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ ” فَكَانَ أَوَّلَ مَنْ لَقِيتُ عُمَرُ فَقَالَ مَا هَاتَانِ النَّعْلاَنِ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ . فَقُلْتُ هَاتَانِ نَعْلاَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَنِي بِهِمَا مَنْ لَقِيتُ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُهُ بَشَّرْتُهُ بِالْجَنَّةِ . فَضَرَبَ عُمَرُ بِيَدِهِ بَيْنَ ثَدْيَىَّ فَخَرَرْتُ لاِسْتِي فَقَالَ ارْجِعْ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ فَرَجَعْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَجْهَشْتُ بُكَاءً وَرَكِبَنِي عُمَرُ فَإِذَا هُوَ عَلَى أَثَرِي فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَا لَكَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ ” . قُلْتُ لَقِيتُ عُمَرَ فَأَخْبَرْتُهُ بِالَّذِي بَعَثْتَنِي بِهِ فَضَرَبَ بَيْنَ ثَدْيَىَّ ضَرْبَةً خَرَرْتُ لاِسْتِي قَالَ ارْجِعْ . فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَا عُمَرُ مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا فَعَلْتَ ” . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي أَبَعَثْتَ أَبَا هُرَيْرَةَ بِنَعْلَيْكَ مَنْ لَقِيَ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُهُ بَشَّرَهُ بِالْجَنَّةِ . قَالَ ” نَعَمْ ” . قَالَ فَلاَ تَفْعَلْ فَإِنِّي أَخْشَى أَنْ يَتَّكِلَ النَّاسُ عَلَيْهَا فَخَلِّهِمْ يَعْمَلُونَ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” فَخَلِّهِمْ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা আমরা (সহাবাগণ) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ঘিরে বসেছিলাম। আমাদের জামা‘আতে আবূ বাক্র এবং ‘উমার (রাঃ)-ও ছিলেন। এ সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাঝ থেকে ওঠে গেলেন। দীর্ঘক্ষণ অতিক্রান্তের পর আমরা শঙ্কিত হলাম যে, তিনি কোথাও কোন বিপদের সম্মুখীন কিনা। তাই আমরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লাম। আর আমি সর্বপ্রথম বিচলিত হলাম। তাই আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খোঁজে বের হয়ে পড়লাম। আমি বানু নাজ্জারের জনৈক আনসারীর বাগানের নিকট এসে উপনীত হলাম। আর বাগানের অভ্যন্তরে প্রবেশের কোন পথ খুঁজে পাওয়া যায় কিনা সেজন্য চারদিকে ঘুরলাম। কিন্তু পেলাম না। হঠাৎ দেখতে পেলাম বাইরের একটি কুয়া থেকে একটি নালা বাগানের অভ্যন্তরে প্রবাহিত হচ্ছে। সংকীর্ণ নালাকে ‘জাদওয়াল’ বলা হয়। অতঃপর আমি নিজেকে শেয়ালের ন্যায় সংকুচিত করে নর্দমার মধ্য দিয়ে গিয়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপনীত হলাম। তিনি বললেন, আবূ হুরায়রাহ নাকি? আমি বললাম, জী-হ্যাঁ, ইয়া রসূলাল্লাহ! তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কি ব্যাপার? আমি বললাম, আপনি আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ উঠে চলে আসলেন, আর দীর্ঘক্ষণ পরও ফিরে না যাওয়ায় আমরা বিচলিত হয়ে পড়েছি। আমাদের অনুপস্থিতিতে কোথাও বিপদের সম্মুখীন হলেন কিনা আমাদের এ আশঙ্কা হলো। আর আমি সর্বপ্রথম বিচলিত হয়ে পড়ি। আমি এ দেয়ালের কাছে এসে শেয়ালের ন্যায় সঙ্কুচিত হয়ে নালার ভিতর দিয়ে এখানে উপস্থিত হলাম। অন্যান্যরা আমার পেছনে আছে। তিনি তাঁর জুতা জোড়া আমাকে দিয়ে বললেন, হে আবূ হুরায়রাহ! আমার জুতা জোড়া সাথে নিয়ে যাও। এ বাগানের বাইরে যার সাথেই তোমার সাক্ষাৎ হয় তাকে বলোঃ ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে এ সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই’ তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও।” বর্ণনাকারী [আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) ] বলেন, সর্বপ্রথম ‘উমার (রাঃ)-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো। তিনি আমাকে বললেন, হে আবূ হুরায়রাহ! জুতা জোড়া কার? আমি বললাম, আল্লাহর রসূলের। তিনি আমাকে এ জুতা জোড়াসহ এই বলে পাঠিয়েছেন যে, ‘যে ব্যক্তি প্রশান্ত মনে এ সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, তাকে তুমি জান্নাতের সুসংবাদ দিবে” তিনি [আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) ] বলেন, আমার এ কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) আমার বুকের উপর এমন জোরে চপেটাঘাত করলেন যে, আমি পেছন দিকে পড়ে গেলাম। আর তিনি বললেন, হে আবূ হুরায়রাহ! তুমি (রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর) নিকট ফিরে চলো। তাই আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কাঁদো কাঁদো অবস্থায় ফিরে আসলাম। আমার পেছনে পেছনে ‘উমার (রাঃ) সেখানে উপস্থিত হলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবূ হুরায়রাহ! তোমার কি হয়েছে? আমি বললাম, আমার সাথে ‘উমারের সাক্ষাৎ হয়েছিল এবং আপনি আমাকে যে সুসংবাদ দিয়ে পাঠিয়েছিলেন তাঁকে এটা জানালে তিনি আমার বুকে এমন জোরে ঘুষি মারলেন যে, আমি পিছন দিকে পড়ে যাই। তিনি এটাও বলেছেন যে, আমি যেন (আপনার নিকট) ফিরে আসি। রসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে ‘উমার! কোন বস্তু তোমাকে এমন কাজ করতে উদ্যত করলো? তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার উপর কুরবান হোক। আপনি কি আপনার জুতা জোড়াসহ আবূ হুরায়রাহ কে এ বলে পাঠিয়েছেন যে, যার সাথে তোমার সাক্ষাৎ হয় তাকে বলো, যে ব্যক্তি সর্বান্তঃকরণে এ সাক্ষ্য দিবে যে, “আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই” তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। ‘উমার (রাঃ) বললেন, এরূপ করবেন না, কেননা আমার আশংকা হচ্ছে এতে লোকেরা (‘আমাল বর্জন করে) এর উপর ভরসা করে বসে থাকবে, কাজেই লোকদেরকে ‘আমাল করার সুযোগ দিন। অতঃপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আচ্ছা তাদেরকে ছেড়ে দাও। (ই.ফা. ৫৪; ই.সে. ৫৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَمُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ رَدِيفُهُ عَلَى الرَّحْلِ قَالَ ” يَا مُعَاذُ ” . قَالَ لَبَّيْكَ رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ . قَالَ ” يَا مُعَاذُ ” . قَالَ لَبَّيْكَ رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ . قَالَ ” يَا مُعَاذُ ” . قَالَ لَبَّيْكَ رَسُولَ اللَّهِ وَسَعْدَيْكَ . قَالَ ” مَا مِنْ عَبْدٍ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ إِلاَّ حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ ” . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ أُخْبِرُ بِهَا النَّاسَ فَيَسْتَبْشِرُوا قَالَ ” إِذًا يَتَّكِلُوا ” فَأَخْبَرَ بِهَا مُعَاذٌ عِنْدَ مَوْتِهِ تَأَثُّمًا .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) একই বাহনের পৃষ্ঠে উপবিষ্ট ছিলেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “হে মু’আয ইবনু জাবাল! মু’আয (রাঃ) বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমি উপস্থিত, আপনার আনুগত্য শিরোধার্য। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় বললেন, ‘হে মু’আয ইবনু জাবাল! মু’আয (রাঃ) বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমি হাযির, আপনার আনুগত্য শিরোধার্য। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি কোন বান্দা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বান্দা ও রসূল- তবে তার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিবেন। মু’আয (রাঃ) বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমি কি লোকদের এ সংবাদ দিব? যাতে তারা সুসংবাদ পায়। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে লোকেরা এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। পরে সত্য কথা গোপন রাখার গুনাহের ভয়ে মু’আয (রাঃ) মৃত্যুর সময় এ খবরটি শুনিয়ে গেছেন। (ই.ফা. ৫৫; ই.সে. ৫৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৫
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، – يَعْنِي ابْنَ الْمُغِيرَةِ – قَالَ حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مَحْمُودُ بْنُ الرَّبِيعِ، عَنْ عِتْبَانَ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَلَقِيتُ عِتْبَانَ فَقُلْتُ حَدِيثٌ بَلَغَنِي عَنْكَ قَالَ أَصَابَنِي فِي بَصَرِي بَعْضُ الشَّىْءِ فَبَعَثْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنِّي أُحِبُّ أَنْ تَأْتِيَنِي فَتُصَلِّيَ فِي مَنْزِلِي فَأَتَّخِذَهُ مُصَلًّى – قَالَ – فَأَتَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ شَاءَ اللَّهُ مِنْ أَصْحَابِهِ فَدَخَلَ وَهُوَ يُصَلِّي فِي مَنْزِلِي وَأَصْحَابُهُ يَتَحَدَّثُونَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ أَسْنَدُوا عُظْمَ ذَلِكَ وَكِبْرَهُ إِلَى مَالِكِ بْنِ دُخْشُمٍ قَالُوا وَدُّوا أَنَّهُ دَعَا عَلَيْهِ فَهَلَكَ وَوَدُّوا أَنَّهُ أَصَابَهُ شَرٌّ . فَقَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الصَّلاَةَ وَقَالَ ” أَلَيْسَ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ ” . قَالُوا إِنَّهُ يَقُولُ ذَلِكَ وَمَا هُوَ فِي قَلْبِهِ . قَالَ ” لاَ يَشْهَدُ أَحَدٌ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ فَيَدْخُلَ النَّارَ أَوْ تَطْعَمَهُ ” . قَالَ أَنَسٌ فَأَعْجَبَنِي هَذَا الْحَدِيثُ فَقُلْتُ لاِبْنِي اكْتُبْهُ فَكَتَبَهُ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাকে মাহমূদ ইবনু রাবী‘ ইত্বান ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, মাহমূদ বলেন, আমি মাদীনায় আসলাম এবং ‘ইত্বানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললাম, আপনার সূত্রে একটি হাদীস আমার কাছে পৌঁছেছে (সুতরাং ঘটনাটি আমাকে সবিস্তারে বলুন) । তিনি (‘ইত্বান) বললেন, আমার দৃষ্টিশক্তি কিছুটা কমে যাওয়ায় আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ মর্মে সংবাদ পাঠালাম যে, আমার ইচ্ছা আপনি আমার বাড়িতে এসে এক জায়গায় সলাত আদায় করবেন এবং আমি সে জায়গাটি সলাতেরজন্য নির্দিষ্ট করে নিবো। তিনি (‘ইত্বান) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসলেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁর সাথে তাঁর কতিপয় সহাবাও আসলেন। তিনি ঘরে প্রবেশ করেই সলাত আদায় করতে লাগলেন। আর তাঁর সহাবাগণ আপোষে কথাবার্তা বলতে থাকলেন। তাঁদের আলোচনার এক পর্যায়ে এসে তাঁরা মালিক ইবনু দুখশুম [২৯] সম্পর্কে মস্ত বড় আপত্তিকর বদদু‘আ করুন এবং সে ধ্বংস হয়ে যাক। আবার কেউ এ ইচ্ছাও প্রকাশ করলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বদদু‘আ করুন এবং সে ধ্বংস হয়ে যাক। আবার কেউ এ বাসনাও প্রকাশ করলেন যে, যদি তার উপর আকস্মিক কোন দুর্ঘটনা নেমে আসতো তাহলে খুবই উত্তম হতো। ইত্যবসরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত সমাপ্ত করলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, সে (মালিক) কি এ কথার সাক্ষ্য দেয় না যে, ‘আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল?’ লোকেরা বলল, সে মুখে বলে ঠিকই কিন্তু তার অন্তরে এর প্রতি কোন উপাস্য নেই। তিনি বললেন, “যে কেউ এ সাক্ষ্য দিবে যে, “আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল” সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।” অথবা তিনি বলেছেন, আগুন তাকে গ্রাস করবে না। আনাস (রাঃ) বলেন, এ হাদীসটি আমার নিকট খুবই চমৎকার মনে হয়েছে। তাই আমি আমার পুত্রকে বললাম, এটা লিখে নাও। সুতরাং সে তা লিখে নিলো। (ই.ফা. ৫৬; ই.সে. ৫৭)
[২৯] মালিক ইবনু দুখশুম ছিলেন বদরী সহাবা আর তাঁর সাক্ষ্য ছিল আন্তরিক।
সহাবাদের মধ্যে মুনাফিকদের বিভিন্ন চরিত্র আলোচনা হতে ছিল। এক পর্যায়ে মালিক সম্পর্কে নানান আপত্তিকর মন্তব্যের সাথে সাথে তাঁকে মুনাফিক বলে ফেললেন। (শারহে নাবাবী)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৬
حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ نَافِعٍ الْعَبْدِيُّ، حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عِتْبَانُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّهُ عَمِيَ فَأَرْسَلَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ تَعَالَ فَخُطَّ لِي مَسْجِدًا . فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجَاءَ قَوْمُهُ وَنُعِتَ رَجُلٌ مِنْهُمْ يُقَالُ لَهُ مَالِكُ بْنُ الدُّخْشُمِ . ثُمَّ ذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ سُلَيْمَانَ بْنِ الْمُغِيرَةِ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘ইত্বান (রাঃ) অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এ বলে খবর পাঠালেন, আপনি আমার ঘরে তাশরীফ আনুন এবং আমার জন্য একটি সলাতেরস্থান নির্দিষ্ট করে দেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে তাশরীফ আনলেন এবং মালিক ইবনু দুখশুম নামক এক ব্যক্তির কথা সেখানে উল্লেখ করা হলো ….. তারপর বর্ণনাকারী সুলাইমান ইবনু মুগীরার মতো হাদীসটি বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৫৭; ই.সে. ৫৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১১. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি আল্লাহকে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রসূল হিসেবে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেয় সে মু’মিন যদিও সে কাবীরাহ গুনাহে লিপ্ত হয়
৫৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ، وَبِشْرُ بْنُ الْحَكَمِ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، – وَهُوَ ابْنُ مُحَمَّدٍ – الدَّرَاوَرْدِيُّ عَنْ يَزِيدَ بْنِ الْهَادِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ، عَنِ الْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ ذَاقَ طَعْمَ الإِيمَانِ مَنْ رَضِيَ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً ”
‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেনঃ সে ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পেয়েছে, যে রব হিসেবে আল্লাহকে, দ্বীন হিসেবে ইসলামকে এবং রসূল হিসেবে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সন্তষ্ট চিত্তে স্বীকার করেছে। (ই.ফা. ৫৮; ই.সে. ৫৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১২. অধ্যায়ঃ
ঈমানের শাখা-প্রশাখার সংখ্যা, তাঁর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখার বর্ণনা, লজ্জা শরমের ফাযীলাত এবং তা ঈমানের অঙ্গ হওয়ার বর্ণনা
৫৮
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ شُعْبَةً وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঈমানের শাখা সত্তরটির চেয়েও বেশী, আর লজ্জা শরম ঈমানের একটি শাখা। (ই.ফা. ৫৯; ই.সে. ৬০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৫৯
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ أَوْ بِضْعٌ وَسِتُّونَ شُعْبَةً فَأَفْضَلُهَا قَوْلُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَدْنَاهَا إِمَاطَةُ الأَذَى عَنِ الطَّرِيقِ وَالْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِنَ الإِيمَانِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ঈমানের শাখা সত্তরটিরও কিছু বেশী। অথবা ষাটটির কিছু বেশী। এর সর্বোচ্চ শাখা হচ্ছে (আল্লাহ ব্যাতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই) এ কথা স্বীকার করা, আর এর সর্বনিম্ন শাখা হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা। আর লজ্জা ঈমানের একটি বিশেষ শাখা। (ই.ফা. ৬০; ই.সে. ৬১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، سَمِعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يَعِظُ أَخَاهُ فِي الْحَيَاءِ فَقَالَ “ الْحَيَاءُ مِنَ الإِيمَانِ ” .
সালিমের পিতা ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি তার ভাইকে লজ্জার ব্যাপারে উপদেশ দিচ্ছিলেন শুনতে পেয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, লজ্জা ঈমানের অংগ। (ই.ফা. ৬১; ই.সে. ৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬১
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ مَرَّ بِرَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ يَعِظُ أَخَاهُ .
যুহরী (রহঃ) থেকে উক্ত সুত্রে থেকে বর্ণিতঃ
তবে তাঁর বর্ণনায় আছে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনৈক আনসারীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, সে আনসারী তার ভাইকে লজ্জার ব্যাপারে নাসীহাত করছিলেন। (ই.ফা. ৬২; ই.সে. ৬৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا السَّوَّارِ، يُحَدِّثُ أَنَّهُ سَمِعَ عِمْرَانَ بْنَ حُصَيْنٍ، يُحَدِّثُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ “ الْحَيَاءُ لاَ يَأْتِي إِلاَّ بِخَيْرٍ ” . فَقَالَ بُشَيْرُ بْنُ كَعْبٍ إِنَّهُ مَكْتُوبٌ فِي الْحِكْمَةِ أَنَّ مِنْهُ وَقَارًا وَمِنْهُ سَكِينَةً . فَقَالَ عِمْرَانُ أُحَدِّثُكَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتُحَدِّثُنِي عَنْ صُحُفِكَ .
‘ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, লজ্জা-সম্ভ্রম কল্যাণকেই ডেকে আনে। বুশায়র ইবনু কা‘ব বলেন, জ্ঞান বিজ্ঞানের পুস্তকে লিখা আছে যে, এর (লজ্জা) মাধ্যমে ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে এবং প্রশান্তি নেমে আসে। তাঁর কথা শুনে ‘ইমরান বলেন, আমি তোমাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুখ নিঃসৃত বাণীই বর্ণনা করছি। আর তুমি আমাকে বলছ, তোমাদের বইয়ের কথা। (ই.ফা. ৬৩; ই.সে. ৬৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ إِسْحَاقَ، – وَهُوَ ابْنُ سُوَيْدٍ – أَنَّ أَبَا قَتَادَةَ، حَدَّثَ قَالَ كُنَّا عِنْدَ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ فِي رَهْطٍ مِنَّا وَفِينَا بُشَيْرُ بْنُ كَعْبٍ فَحَدَّثَنَا عِمْرَانُ، يَوْمَئِذٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” الْحَيَاءُ خَيْرٌ كُلُّهُ ” . قَالَ أَوْ قَالَ ” الْحَيَاءُ كُلُّهُ خَيْرٌ ” . فَقَالَ بُشَيْرُ بْنُ كَعْبٍ إِنَّا لَنَجِدُ فِي بَعْضِ الْكُتُبِ أَوِ الْحِكْمَةِ أَنَّ مِنْهُ سَكِينَةً وَوَقَارًا لِلَّهِ وَمِنْهُ ضَعْفٌ . قَالَ فَغَضِبَ عِمْرَانُ حَتَّى احْمَرَّتَا عَيْنَاهُ وَقَالَ أَلاَ أُرَانِي أُحَدِّثُكَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَتُعَارِضُ فِيهِ . قَالَ فَأَعَادَ عِمْرَانُ الْحَدِيثَ قَالَ فَأَعَادَ بُشَيْرٌ فَغَضِبَ عِمْرَانُ قَالَ فَمَا زِلْنَا نَقُولُ فِيهِ إِنَّهُ مِنَّا يَا أَبَا نُجَيْدٍ إِنَّهُ لاَ بَأْسَ بِهِ .
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا النَّضْرُ، حَدَّثَنَا أَبُو نَعَامَةَ الْعَدَوِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ حُجَيْرَ بْنَ الرَّبِيعِ الْعَدَوِيَّ، يَقُولُ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَ حَدِيثِ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ .
আবূ কাতাদাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমাদের এক দল ‘ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। আমাদের মাঝে বুশায়র ইবনু কা‘বও ছিলেন। তখন ‘ইমরান (রাঃ) আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা প্রসংগে বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন লজ্জার সবটাই মঙ্গলজনক। রাবী বলেন যে, কিংবা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লজ্জা সবটাই কল্যাণকর। বুশায়র ইবনু কা‘ব (রহঃ) বলেন, কোন কোন কিতাবে কিংবা হিকমাতের গ্রন্থে আমরা পেয়েছি যে, লজ্জা থেকেই আল্লাহর জন্য গাম্ভীর্য ও প্রশান্তির উৎপত্তি এবং তা থেকে দুর্বলতারও উৎপত্তি। রাবী বলেন, এ কথা শুনে ‘ইমরান (রাঃ) রেগে গেলেন এমন কি তার দুই চোখ লাল হয়ে গেল। ‘ইমরান (রাঃ) বলেন, সাবধান! আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস বলছি আর তার মুকাবিলায় তুমি পুঁথির কথা বলছ। এরপর ইমরান (রাঃ) পুনরুক্তি করলেন। আর বুশায়রও তার কথার পুনরাবৃত্তি করলেন। এতে ‘ইমরান (রাঃ) খুবই রেগে গেলেন। রাবী বলেন যে, আমরা বলতে লাগলাম, হে আবূ নুজায়দ (‘ইমরানের উপনাম) সে আমাদেরই লোক। তার মধ্যে ত্রুটি নেই।
ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ….. ‘ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) সুত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাম্মাদ ইবনু যায়দের মত হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৬৪, ৬৫; ই.সে. ৬৫-৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৩. অধ্যায়ঃ
ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমুহ
৬৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ جَرِيرٍ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، كُلُّهُمْ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سُفْيَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الثَّقَفِيِّ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قُلْ لِي فِي الإِسْلاَمِ قَوْلاً لاَ أَسْأَلُ عَنْهُ أَحَدًا بَعْدَكَ – وَفِي حَدِيثِ أَبِي أُسَامَةَ غَيْرَكَ – قَالَ “ قُلْ آمَنْتُ بِاللَّهِ فَاسْتَقِمْ ” .
সুফইয়ান ইবনু ‘আবদুল্লাহ ‘আস সাকাফী (রাযি 🙂 থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে এমন একটি কথা বলুন যে, আমাকে এ সম্পর্কে “আপনার পরে” অন্য কারো কাছে জিজ্ঞেস করতে না হয়। আবূ উসামার হাদীসে রয়েছে- আপনি ছাড়া আর কাউকে জিজ্ঞেস করব না। তিনি বললেন, ‘বল আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলাম’, অতঃপর এ উপর অবিচল থাক। (ই.ফা. ৬৬; ই.সে. ৬৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৪. অধ্যায়ঃ
ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে পরস্পর ফাযীলাত ও কোনটি সর্বোত্তম কাজ
৬৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحِ بْنِ الْمُهَاجِرِ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي الْخَيْرِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ رَجُلاً، سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الإِسْلاَمِ خَيْرٌ قَالَ “ تُطْعِمُ الطَّعَامَ وَتَقْرَأُ السَّلاَمَ عَلَى مَنْ عَرَفْتَ وَمَنْ لَمْ تَعْرِفْ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করল যে, কোন ইসলাম উত্তম? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তুমি লোকদের পানাহার করাবে এবং পরিচিত এবং অপরিচিত সবাইকে সালাম করবে। (ই.ফা. ৬৭; ই.সে. ৬৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ الْمِصْرِيُّ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ أَبِي الْخَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، يَقُولُ إِنَّ رَجُلاً سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الْمُسْلِمِينَ خَيْرٌ قَالَ “ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্র ইবনু আল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করল, ‘সর্বোত্তম মুসলিম কে?’ তিনি বললেন, সে ব্যক্তি যার মুখ ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে।’ (ই.ফা. ৬৮; ই.সে. ৬৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৭
حَدَّثَنَا حَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، جَمِيعًا عَنْ أَبِي عَاصِمٍ، – قَالَ عَبْدٌ أَنْبَأَنَا أَبُو عَاصِمٍ، – عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا الزُّبَيْرِ، يَقُولُ سَمِعْتُ جَابِرًا، يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ ” .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি যে, সত্যিকার মুসলিম সে যার মুখ ও হাত থেকে অন্যান্য মুসলিম নিরাপদ থাকে। (ই.ফা. ৬৯; ই.সে. ৭০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৮
وَحَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأُمَوِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا أَبُو بُرْدَةَ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ بْنِ أَبِي مُوسَى، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَىُّ الإِسْلاَمِ أَفْضَلُ قَالَ “ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ ” .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! কোন্ ইসলাম উত্তম? তিনি বললেন, উত্তম ইসলাম হলো তার, যার মুখ ও হাত থেকে সকল মুসলিম নিরাপদ থাকে।
ইবরাহীম ইবনু সা‘ঈদ আল জাওহারী (রাঃ) ….. বুরায়দ ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে এ সানাদে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সর্বোত্তম মুসলিম কে? রাবী হাদীসের বাকী অংশ উপরোক্ত হাদীসের মতো বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৭০; ই.সে. ৭১-৭২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৫. অধ্যায়ঃ
যে এসব গুনে গুণান্বিত হবে সে ঈমানের মিষ্টতা পাবে
৬৯
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ أَبِي عُمَرَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، جَمِيعًا عَنِ الثَّقَفِيِّ، – قَالَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، – عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ ثَلاَثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ بِهِنَّ حَلاَوَةَ الإِيمَانِ مَنْ كَانَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا وَأَنْ يُحِبَّ الْمَرْءَ لاَ يُحِبُّهُ إِلاَّ لِلَّهِ وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِي الْكُفْرِ بَعْدَ أَنْ أَنْقَذَهُ اللَّهُ مِنْهُ كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِي النَّارِ ” .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনটি বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে রয়েছে, সে ঈমানের প্রকৃত স্বাদ অনুভব করবে। (১) অন্য সবার তুলনায় যার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রসূল অধিক প্রিয়। (২) যে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তাঁর বান্দাকে ভালোবাসে। (৩) এবং যাকে আল্লাহ কুফ্র থেকে মুক্তি দিয়েছেন, তারপর সে কুফ্রের দিকে ফিরে যাওয়াকে এমন অপছন্দ করে যেমন আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অপছন্দ করে।’ (ই.ফা. ৭১; ই.সে. ৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ ثَلاَثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ طَعْمَ الإِيمَانِ مَنْ كَانَ يُحِبُّ الْمَرْءَ لاَ يُحِبُّهُ إِلاَّ لِلَّهِ وَمَنْ كَانَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا وَمَنْ كَانَ أَنْ يُلْقَى فِي النَّارِ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ أَنْ يَرْجِعَ فِي الْكُفْرِ بَعْدَ أَنْ أَنْقَذَهُ اللَّهُ مِنْهُ ” .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তিনটি গুন যার মধ্যে বিদ্যমান সে ঈমানের প্রকৃত স্বাদ পায়। (১) যে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কাউকে ভালবাসে (২) যার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রসূল অন্য সব কিছু থেকে অধিক প্রিয় (৩) এবং যাকে আল্লাহ কুফ্র থেকে মুক্তি দিয়েছেন; তারপর সে কুফ্রের দিকে ফিরে যাওয়ার তুলনায় আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অধিক পছন্দ করে। (ই.ফা. ৭২; ই.সে. ৭৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَنْبَأَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، أَنْبَأَنَا حَمَّادٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِنَحْوِ حَدِيثِهِمْ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ “ مِنْ أَنْ يَرْجِعَ يَهُودِيًّا أَوْ نَصْرَانِيًّا ” .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ পূর্বের হাদীসের অনুরূপ। তবে এ সূত্রে উল্লেখ আছে, তিনি বলেনঃ “ইয়াহূদী অথবা নাসারা ধর্মের দিকে পুনর্বার ফিরে যাওয়ার চেয়ে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকেই ভালো মনে করে।’’ (ই.ফা. ৭৩; ই.সে. ৭৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৬. অধ্যায়ঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে স্ত্রী, পুত্র, পরিজন ও পিতামাতা তথা সকলের চাইতে অধিক ভালোবাসা ওয়াজিব এবং যে ব্যক্তি এরূপ ভালোবাসবে না তার ঈমান নেই বলা হয়েছে
৭২
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، ح وَحَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ يُؤْمِنُ عَبْدٌ – وَفِي حَدِيثِ عَبْدِ الْوَارِثِ الرَّجُلُ – حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ ” .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “কোন বান্দা (রাবী ‘আবদুল ওয়ারিসের বর্ণনায় ‘কোন ব্যক্তি’) ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ আমি তার নিকট তার পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ ও অন্যান্য লোকদের চাইতে অধিকতর প্রিয় না হব।” (ই.ফা. ৭৪; ই.সে. ৭৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَلَدِهِ وَوَالِدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা কেউই ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার নিকট তাঁর সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা এবং অন্যান্য লোকদের চাইতে অধিকতর প্রিয় না হব। (ই.ফা. ৭৫; ই.সে. ৭৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৭. অধ্যায়ঃ
নিজের জন্য যে কল্যাণ পছন্দ করে তা অপর মুসলিম ভাইয়ের জন্য পছন্দ করা ঈমানের বৈশিষ্ট্যের অন্তর্গত
৭৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ سَمِعْتُ قَتَادَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لأَخِيهِ – أَوْ قَالَ لِجَارِهِ – مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ ” .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা যা পছন্দ করো তা অন্য ভাইয়ের জন্যও পছন্দ করবে। আরো বর্ণনায় রয়েছে, প্রতিবেশীর জন্যও পছন্দ করবে। (ই.ফা. ৭৬; ই.সে. ৭৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৫
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ حُسَيْنٍ الْمُعَلِّمِ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتَّى يُحِبَّ لِجَارِهِ – أَوْ قَالَ لأَخِيهِ – مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ ” .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সে মহান সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! কোন বান্দা ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা যা পছন্দ করো তা অন্য ভাইয়ের জন্যও পছন্দ করবে। অথবা তোমার প্রতিবেশীর জন্য। (ই.ফা. ৭৭; ই.সে. ৭৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৮. অধ্যায়ঃ
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া হারাম
৭৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، جَمِيعًا عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، – قَالَ ابْنُ أَيُّوبَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – قَالَ أَخْبَرَنِي الْعَلاَءُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ لاَ يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ না থাকে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (ই.ফা. ৭৮; ই.সে. ৮০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১৯. অধ্যায়ঃ
প্রতিবেশী ও মেহমানকে সম্মান প্রদর্শন করতে উৎসাহিত করা, কল্যাণ সাধন ব্যতীত নিরবতা অবলম্বন করা এবং এগুলো ঈমানের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বর্ণনা
৭৭
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَنْبَأَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ جَارَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে সে যেন ভালো কথা বলে, নতুবা চুপ থাকে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে, সে যেন প্রতিবেশীর সাথে সদ্ধ্যবহার করে। যে ব্যক্তি আল্লাহর আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন মেহমানদের সমাদর করে। (ই.ফা. ৭৯; ই.সে. ৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلاَ يُؤْذِي جَارَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَسْكُتْ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয় এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন ভালো কথা বলে নতুবা চুপ থাকে।
(ই.ফা. ৮০; ই.সে. ৮২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৯
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِ حَدِيثِ أَبِي حَصِينٍ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ “ فَلْيُحْسِنْ إِلَى جَارِهِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পরবর্তী অংশ রাবী আবূ হাসীনের অনুরূপ। তবে এতে রয়েছে “তার প্রতিবেশীর প্রতি যেন ভালো ব্যবহার করে।” (ই.ফা. ৮১; ই.সে. ৮৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮০
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، – قَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، – عَنْ عَمْرٍو، أَنَّهُ سَمِعَ نَافِعَ بْنَ جُبَيْرٍ، يُخْبِرُ عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُحْسِنْ إِلَى جَارِهِ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَسْكُتْ ” .
আবূ শুরায়হ্ আল খুযা‘ঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন ভালো কথা বলে, নতুবা নিরবতা অবলম্বন করে। (ই.ফা. ৮২; ই.সে. ৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২০. অধ্যায়ঃ
মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা ঈমানের অঙ্গ। ঈমান হ্রাস ও বৃদ্ধি হয়। ভালো কাজের আদেশ করা ও মন্দ কাজের নিষেধ করা ওয়াজিব
৮১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، كِلاَهُمَا عَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، – وَهَذَا حَدِيثُ أَبِي بَكْرٍ – قَالَ أَوَّلُ مَنْ بَدَأَ بِالْخُطْبَةِ يَوْمَ الْعِيدِ قَبْلَ الصَّلاَةِ مَرْوَانُ فَقَامَ إِلَيْهِ رَجُلٌ فَقَالَ الصَّلاَةُ قَبْلَ الْخُطْبَةِ . فَقَالَ قَدْ تُرِكَ مَا هُنَالِكَ . فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ أَمَّا هَذَا فَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ ” .
তারিক ইবনু শিহাব (আবূ বাক্র ইবনু আবী শাইবার হাদীসে) থেকে বর্ণিতঃ
মারওয়ান ঈদের দিন সলাতের পূর্বে খুত্বাহ্ দেয়ার (বিদ‘আতী) প্রথা প্রচলন করে। এ সময় এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ‘‘খুতবার আগে সলাত’’ (সম্পন্ন করুন)। মারওয়ান বললেন, এখন থেকে সে নিয়ম পরিত্যাগ করা হলো। সাথে সাথে আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) উঠে বললেন, ঐ ব্যক্তি তার কর্তব্য পালন করেছে। আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ গর্হিত কাজ হতে দেখলে সে যেন স্বহস্তে (শক্তি প্রয়োগে) পরিবর্তন করে দেয়, যদি তার সে ক্ষমতা না থাকে, তবে মুখ (বাক্য) দ্বারা এর পরিবর্তন করবে। আর যদি সে সাধ্যও না থাকে, তখন অন্তর দ্বারা করবে, তবে এটা ঈমানের দুর্বলতম পরিচায়ক। (ই.ফা. ৮৩; ই.সে. ৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮২
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَعَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، فِي قِصَّةِ مَرْوَانَ وَحَدِيثِ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِ حَدِيثِ شُعْبَةَ وَسُفْيَانَ .
আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
মারওয়ানের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। আর এ হাদীসটি শু‘বাহ্ ও সুফ্ইয়ানের বর্ণিত হাদীসের মতোই। (ই.ফা. ৮৪; ই.সে. ৮৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৩
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ النَّضْرِ وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ – وَاللَّفْظُ لِعَبْدٍ – قَالُوا حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَكَمِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْمِسْوَرِ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَا مِنْ نَبِيٍّ بَعَثَهُ اللَّهُ فِي أُمَّةٍ قَبْلِي إِلاَّ كَانَ لَهُ مِنْ أُمَّتِهِ حَوَارِيُّونَ وَأَصْحَابٌ يَأْخُذُونَ بِسُنَّتِهِ وَيَقْتَدُونَ بِأَمْرِهِ ثُمَّ إِنَّهَا تَخْلُفُ مِنْ بَعْدِهِمْ خُلُوفٌ يَقُولُونَ مَا لاَ يَفْعَلُونَ وَيَفْعَلُونَ مَا لاَ يُؤْمَرُونَ فَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِيَدِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِلِسَانِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِقَلْبِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلَيْسَ وَرَاءَ ذَلِكَ مِنَ الإِيمَانِ حَبَّةُ خَرْدَلٍ ” . قَالَ أَبُو رَافِعٍ فَحَدَّثْتُهُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ فَأَنْكَرَهُ عَلَىَّ فَقَدِمَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَنَزَلَ بِقَنَاةَ فَاسْتَتْبَعَنِي إِلَيْهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ يَعُودُهُ فَانْطَلَقْتُ مَعَهُ فَلَمَّا جَلَسْنَا سَأَلْتُ ابْنَ مَسْعُودٍ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَحَدَّثَنِيهِ كَمَا حَدَّثْتُهُ ابْنَ عُمَرَ . قَالَ صَالِحٌ وَقَدْ تُحُدِّثَ بِنَحْوِ ذَلِكَ عَنْ أَبِي رَافِعٍ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পূর্বে আল্লাহ তা‘আলা যে নবীকেই কোন উম্মাতের মধ্যে পাঠিয়েছেন, তাদের মধ্যে তাঁর জন্য একদল অনুসারী ও সহাবা ছিল। তারা তাঁর সুন্নাতকে সমুন্নত রাখত এবং তাঁর নির্দেশের অনুসরণ করত। অতঃপর তাদের অবর্তমানে কতগুলো মন্দ লোক স্থলাভিষিক্ত হয়। তারা মুখে যা বলে নিজেরা তা করে না। আর যা করে তার জন্য তাদেরকে নির্দেশ করা হয়নি। অতএব যে ব্যক্তি তাদের হাত (শক্তি) দ্বারা মুকাবিলা করবে, সে মু’মিন। এরপর আর সরিষার দানা পরিমাণও ঈমানের স্তর নেই। আবূ নাফি’ বলেন, আমি এ হাদীসটি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে বললাম। তিনি আমার সামনে এটা অস্বীকার করলেন। পরে এক সময় ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) ‘কানাত’ (মাদীনার কাছাকাছি একটি) নামক স্থানে আসলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) অসুস্থ ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদকে দেখার জন্য আমাকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন। আমি তাঁর সাথে গেলাম। যখন আমরা বসে পড়লাম, তখন আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদকে এ হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে অবিকল সেরূপ-ই বর্ণনা করলেন, যেরূপ আমি ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে বর্ণনা করেছিলাম।
সালিহ বলেন, আবূরাফি’ থেকে হুবহু এরূপই বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ৮৫; ই.সে. ৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৪
وَحَدَّثَنِيهِ أَبُو بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ بْنِ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي الْحَارِثُ بْنُ الْفُضَيْلِ الْخَطْمِيُّ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَكَمِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، مَوْلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَا كَانَ مِنْ نَبِيٍّ إِلاَّ وَقَدْ كَانَ لَهُ حَوَارِيُّونَ يَهْتَدُونَ بِهَدْيِهِ وَيَسْتَنُّونَ بِسُنَّتِهِ ” . مِثْلَ حَدِيثِ صَالِحٍ وَلَمْ يَذْكُرْ قُدُومَ ابْنِ مَسْعُودٍ وَاجْتِمَاعَ ابْنِ عُمَرَ مَعَهُ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘‘যে কোন নবীর জন্য এমন কিছু সংখ্যক নিবেদিত প্রাণ সহচর জুটেছিল, যারা তাঁর নির্দেশিত পথে জীবন যাপন করেছেন এবং তাঁর সুন্নাতকে সমুন্নত রেখেছেন।” হাদীসের অবশিষ্টাংশ হুবহু সালিহ-এর হাদীসের অনুরূপ। তবে এ বর্ণনায় ইবনু মাস‘ঊদের আগমন ও তাঁর সাথে ইবনু ‘উমারের একত্রিত হওয়ার কথা উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ৮৬; ই.সে. ৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২১. অধ্যায়ঃ
মু’মিনদের মধ্যে একে অপরের চাইতে ঈমানের গুনে প্রাধান্য থাকা এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীরা অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত
৮৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، كُلُّهُمْ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ سَمِعْتُ قَيْسًا، يَرْوِي عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ أَشَارَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ نَحْوَ الْيَمَنِ فَقَالَ “ أَلاَ إِنَّ الإِيمَانَ هَا هُنَا وَإِنَّ الْقَسْوَةَ وَغِلَظَ الْقُلُوبِ فِي الْفَدَّادِينَ عِنْدَ أُصُولِ أَذْنَابِ الإِبِلِ حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنَا الشَّيْطَانِ فِي رَبِيعَةَ وَمُضَرَ ” .
আবূ মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাত দিয়ে ইয়ামানের দিকে ইশারা করে বললেন, জেনে রাখো, ঈমান সেখানেই। কঠোর ও পাষাণ হৃদয় হচ্ছে শয়তানের দুই শিংয়ের মধ্যে বসবাসকারী সে সব লোক যারা উটের লেজের গোড়া থেকে চীৎকার দিয়ে থাকে, অর্থাৎ রাবী‘আহ্ ও মুযারা গোত্র। (ই.ফা. ৮৭; ই.সে. ৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৬
حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، أَنْبَأَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ جَاءَ أَهْلُ الْيَمَنِ هُمْ أَرَقُّ أَفْئِدَةً الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْفِقْهُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ইয়ামানের অধিবাসীরা এসেছে; তাদের হৃদয় বড়ই কোমল। ঈমান রয়েছে ইয়ামানবাসীদের মধ্যে, ধর্মীয় গভীর জ্ঞান রয়েছে ইয়ামানবাসীদের মধ্যে এবং হিকমাত রয়েছে ইয়ামানবাসীদের মধ্যে। (ই.ফা. ৮৮; ই.সে. ৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، ح وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ يُوسُفَ الأَزْرَقُ، كِلاَهُمَا عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পরবর্তী অংশ উপরোক্ত হাদিসের মতোই। (ই.ফা. ৮৯; ই.সে. ৯১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৮
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَحَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، – وَهُوَ ابْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ – حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ الأَعْرَجِ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَتَاكُمْ أَهْلُ الْيَمَنِ هُمْ أَضْعَفُ قُلُوبًا وَأَرَقُّ أَفْئِدَةً الْفِقْهُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের নিকট ইয়ামানবাসীরা এসেছে। তারা নম্রচিত্ত ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। ধর্মীয় গভীর জ্ঞান ইয়ামানবাসীদের মধ্যে এবং হিকমাতও ইয়ামানবাসীদের মধ্যে রয়েছে। [৩০] (ই.ফা. ৯০; ই.সে. ৯২)
[৩০] উল্লিখিত হাদীসে ﻭاﻠﺤﻜﺔ اﻠﻔﻘﻪ (আল ফিক্হ ওয়াল হিকমাহ্) অর্থাৎ জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে ইয়ামানের দিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৮৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ رَأْسُ الْكُفْرِ نَحْوَ الْمَشْرِقِ وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلاَءُ فِي أَهْلِ الْخَيْلِ وَالإِبِلِ الْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْوَبَرِ وَالسَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الْغَنَمِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কুফ্রের মূল উৎস হচ্ছে পূর্ব দিকে। অহংকার ও দাম্ভিকতা রয়েছে উচ্চৈঃস্বরে চিৎকারকারী পশুপালক ঘোড়া ও উট ওয়ালাদের মধ্যে। আর নম্রতা রয়েছে বকরীওয়ালাদের মধ্যে। [৩১] (ই.ফা. ৯১; ই.সে. ৯৩)
[৩১] প্রকৃত “ফাদ্দাদিন” হাদিসে শব্দের বিভিন্ন রকম অর্থ হয়ে থাকে। যেমন কেউ বলেন, গাই গরু যার দ্বারা জমিন আবাদ করা হয়। কেউ এ অর্থ অস্বীকার করেও বলেন যে, উচ্চৈঃস্বরে চিৎকার করে প্রকৃতপক্ষে উট ঘোড়াওয়ালা স্বাভাবিকভাবে চিল্লাচিল্লি করে থাকে। আর “আবার” উটের পশমকেও বলা হয়। আর নম্রতা বকরীওয়ালাদের মধ্যে, এজন্য বকরী চরানোর মাধ্যমে নবীদের মন মেজাজে নম্রতার শিক্ষা দেয়া হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯০
وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، – قَالَ ابْنُ أَيُّوبَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – قَالَ أَخْبَرَنِي الْعَلاَءُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْكُفْرُ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالسَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الْغَنَمِ وَالْفَخْرُ وَالرِّيَاءُ فِي الْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْخَيْلِ وَالْوَبَرِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ঈমানের উৎস হচ্ছে ইয়ামানবাসীদের মধ্যে, আর কুফ্রের উৎস হচ্ছে পূর্ব দিকে এবং নম্রতা বকরীওয়ালাদের মধ্যে। আর অহংকার ও রিয়া চিৎকারকারী ঘোড়া ও উট পালকদের মধ্যে। (ই.ফা. ৯২; ই.সে. ৯৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯১
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ الْفَخْرُ وَالْخُيَلاَءُ فِي الْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْوَبَرِ وَالسَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الْغَنَمِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, অহংকার ও দাম্ভিকতা চিৎকারকারী উট পালকদের মধ্যে এবং নম্রতা বকরীওয়ালাদের মধ্যে। (ই.ফা. ৯৩; ই.সে. ৯৫)
এখানে ইয়ামান দ্বারা কি উদ্দেশ্য এ সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। কাজী আয়ায সকল মতামতকে সমন্বয় করেছেন। তন্মধ্যে একটি মতামত হচ্ছে এখানে ইয়ামান দ্বারা মাক্কাহ্ নগরীকে বুঝানো হয়েছে। দ্বিতীয় মতামত হচ্ছে, এর দ্বারা মাক্কাহ্ ও মাদীনাহ্ উভয় স্থানকে বুঝানো হয়েছে। বর্ণিত আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন এ কথাটি বলেছিলেন তখন তিনি তাবূকে অবস্থা করছিলেন। তখন মাক্কাহ্ ও মাদীনাহ্ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ইয়ামানের মধ্যখানে ছিল। তাই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাক্কাহ্ ও মাদীনাকে বুঝাতে গিয়ে ইয়ামানের দিকে ইঙ্গিত করেছেন যেমন কা’বা ঘরের যে কোন্টি ইয়ামানের দিকে অবস্থিত তাকে বুঝানোর জন্য রুকনে ইয়ামানী বলা হয়। (শারহুন্ নাবাবী আলা মুসলিম, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯২
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ، أَخْبَرَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ وَزَادَ “ الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ ” .
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
উপরোক্ত সূত্রে অবিকল বর্ণনা করেন। তবে এতে এ বাক্য অতিরিক্ত রয়েছে “ঈমান ইয়ামানবাসীদের মধ্যে এবং হিকমাত ইয়ামানবাসীদের মধ্যে”। (ই.ফা. ৯৪; ই.সে. ৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا أَبُو الْيَمَانِ، عَنْ شُعَيْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ جَاءَ أَهْلُ الْيَمَنِ هُمْ أَرَقُّ أَفْئِدَةً وَأَضْعَفُ قُلُوبًا الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ السَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الْغَنَمِ وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلاَءُ فِي الْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْوَبَرِ قِبَلَ مَطْلِعِ الشَّمْسِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের নিকট ইয়ামানের লোকেরা উপস্থিত হয়েছে। তারা নম্রচিত্ত ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। ঈমান ইয়ামানীদের মধ্যে এবং হিকমাত ইয়ামানীদের। নম্রতা বকরীওয়ালাদের মধ্যে এবং অহংকার ও দাম্ভিকতা, চিৎকারকারী উট পালকের মধ্যে, যাদের অবস্থান সূর্যোদয়ের দিকে। (ই.ফা. ৯৫; ই.সে. ৯৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَتَاكُمْ أَهْلُ الْيَمَنِ هُمْ أَلْيَنُ قُلُوبًا وَأَرَقُّ أَفْئِدَةً الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ رَأْسُ الْكُفْرِ قِبَلَ الْمَشْرِقِ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের নিকট ইয়ামানের লোকেরা উপস্থিত হয়েছে। তারা নম্রচিত্ত ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। ঈমান ইয়ামানীদের মধ্যে এবং হিকমাত ইয়ামানীদের। আর কুফ্রের উৎস হচ্ছে পূর্ব দিকে। (ই.ফা. ৯৬; ই.সে. ৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৫
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَلَمْ يَذْكُرْ “ رَأْسُ الْكُفْرِ قِبَلَ الْمَشْرِقِ ” .
আ’মাশ (রহঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদেই অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর বর্ণনায় ‘কুফ্রের উৎস রয়েছে পূর্ব দিকে’ কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৯৭; ই.সে. ৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، ح وَحَدَّثَنِي بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، – يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَ حَدِيثِ جَرِيرٍ وَزَادَ “ وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلاَءُ فِي أَصْحَابِ الإِبِلِ وَالسَّكِينَةُ وَالْوَقَارُ فِي أَصْحَابِ الشَّاءِ ” .
মুহাম্মাদ ইবনু আল মুসান্না ও বিশ্র ইবনু খালিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে জারীর (রাঃ) বর্ণিত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এতে বর্ণনাকারী শু’বাহ্, অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন ‘অহংকার ও দাম্ভিকতা উট মালিকদের মধ্যে, আর নম্রতা ও গাম্ভীর্য বকরীর মালিকদের মধ্যে। (ই.ফা. ৯৮; ই.সে. ১০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৭
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحَارِثِ الْمَخْزُومِيُّ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ غِلَظُ الْقُلُوبِ وَالْجَفَاءُ فِي الْمَشْرِقِ وَالإِيمَانُ فِي أَهْلِ الْحِجَازِ ” .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মনের কঠোরতা ও অন্তরের নিষ্ঠুরতা পূর্ব দিকের মানুষের মধ্যে আর ঈমান হিজাযবাসীদের মধ্যে। (ই.ফা. ৯৯; ই.সে. ১০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২২. অধ্যায়ঃ
মু’মিন ব্যতীত কেউই জান্নাতে প্রবেশ করবে না, মু’মিনদের ভালোবাসা ঈমানের অঙ্গ আর তা অর্জনের উপায় হলো পরস্পর অধিক সালাম বিনিময়
৯৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا . أَوَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى شَىْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ঈমানদার ছাড়া কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদের তা বলে দিব না, কি করলে তোমাদের মাঝে পারস্পরিক ভালোবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো, তোমরা পরস্পর বেশি সালাম বিনিময় করবে। [৩২] (ই.ফা. ১০০; ই.সে. ১০২)
[৩২] প্রথমে ঈমান আনতে হবে, তারপর মুসলিম ব্যক্তি পরিচিত হোক আর না হোক সালাম বিনিময় করবে, সালাম বিনিময় ঈমান লাভের উপকরণ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৯
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، أَنْبَأَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا ” . بِمِثْلِ حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ وَوَكِيعٍ .
আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সে সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা ঈমান আন। পরবর্তী অংশ আবূ মু’আবিয়াহ্ ও ওয়াকী’-এর হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ১০১; ই.সে. ১০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
২৩. অধ্যায়ঃ
সদুপদেশই দীন
১০০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ قُلْتُ لِسُهَيْلٍ إِنَّ عَمْرًا حَدَّثَنَا عَنِ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِيكَ، قَالَ وَرَجَوْتُ أَنْ يُسْقِطَ، عَنِّي رَجُلاً قَالَ فَقَالَ سَمِعْتُهُ مِنَ الَّذِي سَمِعَهُ مِنْهُ أَبِي كَانَ صَدِيقًا لَهُ بِالشَّامِ ثُمَّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ سُهَيْلٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” الدِّينُ النَّصِيحَةُ ” قُلْنَا لِمَنْ قَالَ ” لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ ” .
তামীম আদ্ দারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সদুপদেশ দেয়াই দীন। আমরা আরয করলাম, কার জন্য উপদেশ? তিনি বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর কিতাবের, তাঁর রসূলের, মুসলিম শাসক এবং মুসলিম জনগণের। [৩৩] (ই.ফা. ১০২; ই.সে. ১০৪)
[৩৩] তামীম আদ্ দারী (রাঃ) হতে বুখারীতে কোন হাদীস বর্ণনা নেই আর মুসলিমে এটা ব্যতীত নেই। “নাসীহাত”একটি ‘আরাবী ও অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। যার একটি অর্থ সমস্ত কল্যাণ একত্রে করা। ঐরূপ ‘কালাহ’ শব্দ, এটাও দু’রকম কল্যাণকে বোঝায়। কারও মতে, “নাসীহাত” এর আরেকটি অর্থ কারও ভিতর ত্রুটি থাকায় তাকে সংশোধনের লক্ষ্যে আলোচনা করা। যেমন- ﺒﻪ ﺜﻭ ﺠل اﻠر ﻨﺼﺡ “উমুক ব্যক্তি তার ছেড়া কাপড় সেলাই করেছেন, যাতে তা পড়ার উপযুক্ত হয়।” তেমনি কারও ভিতর কোন ত্রুটি থাকায় নাসীহাত করার অর্থ হলো সংশোধন করা, যা তার জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর হয়। প্রথমতঃ আল্লাহর দিকে নাসীহাত। অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ঈমানের দিকে প্রত্যাবর্তন করা ও তাঁর সঙ্গে শারীক না করার উপদেশ দেয়া।
দ্বিতীয়তঃ আল্লাহর কিতাব “নাসীহাত” হলো এটা আল্লাহর কথা হিসেবে আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করা তিনি অবতীর্ণ করেছেন মানুষের রচিত নয়, আর তার মত তৈরি করা পৃথিবীতে আল্লাহ ব্যতীত সকলে একত্রিত হয়েও পারবে না।
তৃতীয়তঃ তাঁর রসূলের দিকে “নাসীহাত” আল্লাহ তাকে মানুষের হিদায়াতের জন্য পাঠিয়েছেন বিশ্বাস করা। রসূলের আদেশ ও নিষেধকে মেনে চলা, বিশ্বাস করা যে, তিনি শেষ নবী ও রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ।
চতুর্থতঃ “নাসীহাত” মুসলিম শাসকের আনুগত্য করা যতক্ষণ কুরআন হাদীস মুতাবিক নির্দেশ দিবে। জিহাদ যুদ্ধে শারীক হওয়া, তার পিছনে সলাত আদায় করা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০১
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ .
তামীম আদ্ দারী (রাঃ) এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উপরোক্ত হাদীসের মতোই বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১০৩; ই.সে. ১০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০২
وَحَدَّثَنِي أُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، – يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ – حَدَّثَنَا رَوْحٌ، – وَهُوَ ابْنُ الْقَاسِمِ – حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ، سَمِعَهُ وَهُوَ، يُحَدِّثُ أَبَا صَالِحٍ عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ .
তামীম আদ্ দারী (রাঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১০৪; ই.সে. ১০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسٍ، عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ بَايَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى إِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ .
জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সলাত আদায়ের, যাকাত দেয়ার এবং প্রত্যেক মুসলিম কল্যাণ সাধন করার জন্য রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বাই’আত করেছি। (ই.ফা. ১০৫; ই.সে. ১০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلاَقَةَ، سَمِعَ جَرِيرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ بَايَعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلَى النُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ .
জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি প্রত্যেক মুসলিমের কল্যাণ করার শর্তে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বাই’আত করেছি। [৩৪] (ই.ফা. ১০৬; ই.সে. ১০৮)
[৩৪] সলাত ও যাকাতকে নির্দিষ্ট করেছেন, শাহাদাতাইনের পরই এর স্থান, আর বাই’য়াত শব্দ ব্যাপক অন্যান্য সকল ‘ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
১০৫
حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ، وَيَعْقُوبُ الدَّوْرَقِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ سَيَّارٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ بَايَعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فَلَقَّنَنِي “ فِيمَا اسْتَطَعْتَ ” . وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ . قَالَ يَعْقُوبُ فِي رِوَايَتِهِ قَالَ حَدَّثَنَا سَيَّارٌ .
জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে শ্রবণ ও আনুগত্যের বাই’আত গ্রহন করলে তিনি আমাকে শিখিয়ে দিলেন, (বলো) যতদূর আমার সাধ্যে কুলায় (কেননা সাধ্যের অতিরিক্ত করতে বান্দা অপারগ)। আর প্রত্যেক মুসলিমের উপদেশ দেয়ার ব্যাপারেও (বাই’আত করেছি)। ইয়া’কূব তার বর্ণনায় বলেন, সাইয়্যার আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। [৩৫] (ই.ফা. ১০৭; ই.সে. ১০৯)
[৩৫] জারীর (রাঃ) তাঁর এক দাসকে বললেন যে, আমার জন্য একটা ঘোড়া ক্রয় করে আন, দাস তিনশত দিরহাম দাম দিয়ে একটি ঘোড়া ক্রয় করেন। বিক্রেতা সাথে সাথে আসলেন দাম গ্রহন করার জন্য। জারীর বললেন, তোমার ঘোড়ার দাম এর থেকে বেশি হবে। বিক্রেতা বললেন, যেটা ভাল মনে করেন। জারীর ঘোড়ার দাম বাড়াতে বাড়াতে আটশত দিরহামে ক্রয় করেন। উচিৎ হলো, মুসলিমদের কাউকে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত না করা।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস