বুখারী মাগাযী অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ৩৯৪৯ – ৪০৩৬
৬৪/১. অধ্যায়ঃ
‘উশায়রাহ বা ‘উসাইরাহ্র যুদ্ধ
ইব্নু ইসহাক (রহঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথম আবওয়া-র যুদ্ধ করেন, অতঃপর তিনি বুওয়াত্ব, অতঃপর ‘উশায়রার যুদ্ধ করেন।
৩৯৪৯
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا وَهْبٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، كُنْتُ إِلَى جَنْبِ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، فَقِيلَ لَهُ كَمْ غَزَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ غَزْوَةٍ قَالَ تِسْعَ عَشْرَةَ. قِيلَ كَمْ غَزَوْتَ أَنْتَ مَعَهُ قَالَ سَبْعَ عَشْرَةَ. قُلْتُ فَأَيُّهُمْ كَانَتْ أَوَّلَ قَالَ الْعُسَيْرَةُ أَوِ الْعُشَيْرُ. فَذَكَرْتُ لِقَتَادَةَ فَقَالَ الْعُشَيْرُ.
আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি যায়দ ইব্নু আরকামের পাশে ছিলাম। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয়টি যুদ্ধ করেছেন? তিনি বললেন, ঊনিশটি। আবার জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কয়টি যুদ্ধে তাঁর সঙ্গে ছিলেন? তিনি বললেন, সতেরটিতে। বললাম, এসব যুদ্ধের কোনটি সর্বপ্রথম সংগঠিত হয়েছিল? তিনি বললেন, ‘উশাইরাহ বা ‘উশায়র। বিষয়টি আমি ক্বাতাদাহ (রহঃ)-এর কাছে উল্লেখ করলে তিনিও বললেন, ‘উশায়র।
[৪৪০৪, ৪৪৭১; মুসলিম ১৫/৩৫, হাঃ ১২৫৪] (আ.প্র. ৩৬৫৮, ই.ফা. ৩৬৬১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/২. অধ্যায়ঃ
বাদ্র যুদ্ধে নিহতদের ব্যাপারে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভবিষ্যদ্বাণী
৩৯৫০
أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ حَدَّثَنَا شُرَيْحُ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ مَيْمُوْنٍ أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُوْدٍ حَدَّثَ عَنْ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ أَنَّهُ قَالَ كَانَ صَدِيْقًا لِأُمَيَّةَ بْنِ خَلَفٍ وَكَانَ أُمَيَّةُ إِذَا مَرَّ بِالْمَدِيْنَةِ نَزَلَ عَلَى سَعْدٍ وَكَانَ سَعْدٌ إِذَا مَرَّ بِمَكَّةَ نَزَلَ عَلَى أُمَيَّةَ فَلَمَّا قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ انْطَلَقَ سَعْدٌ مُعْتَمِرًا فَنَزَلَ عَلَى أُمَيَّةَ بِمَكَّةَ فَقَالَ لِأُمَيَّةَ انْظُرْ لِيْ سَاعَةَ خَلْوَةٍ لَعَلِّيْ أَنْ أَطُوْفَ بِالْبَيْتِ فَخَرَجَ بِهِ قَرِيْبًا مِنْ نِصْفِ النَّهَارِ فَلَقِيَهُمَا أَبُوْ جَهْلٍ فَقَالَ يَا أَبَا صَفْوَانَ مَنْ هَذَا مَعَكَ فَقَالَ هَذَا سَعْدٌ فَقَالَ لَهُ أَبُوْ جَهْلٍ أَلَا أَرَاكَ تَطُوْفُ بِمَكَّةَ آمِنًا وَقَدْ أَوَيْتُمْ الصُّبَاةَ وَزَعَمْتُمْ أَنَّكُمْ تَنْصُرُوْنَهُمْ وَتُعِيْنُوْنَهُمْ أَمَا وَاللهِ لَوْلَا أَنَّكَ مَعَ أَبِيْ صَفْوَانَ مَا رَجَعْتَ إِلَى أَهْلِكَ سَالِمًا فَقَالَ لَهُ سَعْدٌ وَرَفَعَ صَوْتَهُ عَلَيْهِ أَمَا وَاللهِ لَئِنْ مَنَعْتَنِيْ هَذَا َلأَمْنَعَنَّكَ مَا هُوَ أَشَدُّ عَلَيْكَ مِنْهُ طَرِيْقَكَ عَلَى الْمَدِيْنَةِ فَقَالَ لَهُ أُمَيَّةُ لَا تَرْفَعْ صَوْتَكَ يَا سَعْدُ عَلَى أَبِي الْحَكَمِ سَيِّدِ أَهْلِ الْوَادِيْ فَقَالَ سَعْدٌ دَعْنَا عَنْكَ يَا أُمَيَّةُ فَوَاللهِ لَقَدْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ إِنَّهُمْ قَاتِلُوْكَ قَالَ بِمَكَّةَ قَالَ لَا أَدْرِيْ فَفَزِعَ لِذَلِكَ أُمَيَّةُ فَزَعًا شَدِيْدًا فَلَمَّا رَجَعَ أُمَيَّةُ إِلَى أَهْلِهِ قَالَ يَا أُمَّ صَفْوَانَ أَلَمْ تَرَيْ مَا قَالَ لِيْ سَعْدٌ قَالَتْ وَمَا قَالَ لَكَ قَالَ زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا أَخْبَرَهُمْ أَنَّهُمْ قَاتِلِيَّ فَقُلْتُ لَهُ بِمَكَّةَ قَالَ لَا أَدْرِيْ فَقَالَ أُمَيَّةُ وَاللهِ لَا أَخْرُجُ مِنْ مَكَّةَ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ اسْتَنْفَرَ أَبُوْ جَهْلٍ النَّاسَ قَالَ أَدْرِكُوْا عِيْرَكُمْ فَكَرِهَ أُمَيَّةُ أَنْ يَخْرُجَ فَأَتَاهُ أَبُوْ جَهْلٍ فَقَالَ يَا أَبَا صَفْوَانَ إِنَّكَ مَتَى مَا يَرَاكَ النَّاسُ قَدْ تَخَلَّفْتَ وَأَنْتَ سَيِّدُ أَهْلِ الْوَادِيْ تَخَلَّفُوْا مَعَكَ فَلَمْ يَزَلْ بِهِ أَبُوْ جَهْلٍ حَتَّى قَالَ أَمَّا إِذْ غَلَبْتَنِيْ فَوَاللهِ لَأَشْتَرِيَنَّ أَجْوَدَ بَعِيْرٍ بِمَكَّةَ ثُمَّ قَالَ أُمَيَّةُ يَا أُمَّ صَفْوَانَ جَهِّزِيْنِيْ فَقَالَتْ لَهُ يَا أَبَا صَفْوَانَ وَقَدْ نَسِيْتَ مَا قَالَ لَكَ أَخُوْكَ الْيَثْرِبِيُّ قَالَ لَا مَا أُرِيْدُ أَنْ أَجُوْزَ مَعَهُمْ إِلَّا قَرِيْبًا فَلَمَّا خَرَجَ أُمَيَّةُ أَخَذَ لَا يَنْزِلُ مَنْزِلًا إِلَّا عَقَلَ بَعِيْرَهُ فَلَمْ يَزَلْ بِذَلِكَ حَتَّى قَتَلَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ بِبَدْرٍ
সা’দ ইব্নু মু‘আয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, তাঁর ও উমাইয়াহ ইব্নু খালফের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। উমাইয়াহ মদিনায় আসলে সা’দ ইব্নু মু’আযের মেহমান হত এবং সা‘দ (রাঃ) মক্কায় গেলে উমাইয়াহ্র আতিথ্য গ্রহণ করতেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদিনায় হিজরাত করার পর একবার সা‘দ (রাঃ) ‘উমরাহ করার উদ্দেশ্যে মাক্কাহ গেলেন এবং উমাইয়াহ্র বাড়িতে অবস্থান করলেন। তিনি উমাইয়াহ্কে বললেন, আমাকে এমন একটি নিরিবিলি সময়ের কথা বল যখন আমি বাইতুল্লাহ্র তাওয়াফ করতে পারব। তাই দুপুরের কাছাকাছি সময়ে একদিন উমাইয়াহ তাঁকে সঙ্গে নিয়ে বের হল, তখন তাদের সঙ্গে আবূ জাহলের দেখা হল। তখন সে (উমাইয়াহ্কে লক্ষ্য করে) বলল, হে আবূ সফ্ওয়ান! তোমার সঙ্গে ইনি কে? সে বলল, ইনি সা‘দ। তখন আবূ জাহ্ল তাকে (সা‘দ ইব্নু ম‘আযকে) বলল, আমি তোমাকে নিরাপদে মক্কায় তাওয়াফ করতে দেখছি অথচ তোমরা ধর্মত্যাগীদের আশ্রয় দিয়েছ এবং তাদেরকে সাহায্য ও সহযোগিতা করে চলেছ। আল্লাহ্র কসম, তুমি আবূ সফওয়ানের (উমাইয়াহ) সঙ্গে না থাকলে তোমার পরিজনদের কাছে নিরাপদে ফিরে যেতে পারতে না। সা‘দ (রাঃ) এর চেয়েও উচ্চঃস্বরে বললেন, আল্লাহ্র কসম, তুমি এতে যদি আমাকে বাধা দাও তাহলে আমিও এমন একটি বিষয়ে তোমাকে বাধা দেব যা তোমার জন্য এর চেয়েও কঠিন হবে। মাদীনাহ্র পার্শ্ব দিয়ে তোমার যাতায়াতের রাস্তা (বন্ধ করে দেব)। তখন উমাইয়াহ তাকে বলল, হে সা‘দ! এ উপত্যকার সর্দার আবুল হাকামের সঙ্গে এরূপ উচ্চঃস্বরে কথা বলো না। তখন সা‘দ (রাঃ) বললেন, হে উমাইয়াহ! তুমি চুপ কর। আল্লাহ্র কসম, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, তারা তোমরা হত্যাকারী। ‘উমাইয়াহ জিজ্ঞেস করল, মক্কার বুকে? সা‘দ (রাঃ) বললেন, তা জানি না। উমাইয়াহ এতে অত্যন্ত ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ল। এরপর উমাইয়াহ বাড়ী গিয়ে তার (স্ত্রীকে) বলল, হে উম্মু সফওয়ান! সা‘দ আমার ব্যাপারে কি বলেছে জান? সে বলল, সা‘দ তোমাকে কী বলেছে? উমাইয়াহ বলল, সে বলেছে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে জানিছেন যে, তারা আমার হত্যাকারী। তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তা কি মক্কায়? সে বলল, তা জানি না। অতঃপর ‘উমাইয়াহ বলল, আল্লাহ্র কসম, আমি কখনো মাক্কাহ হতে বের হব না। কিন্তু বদর যুদ্ধের দিন আগত হলে আবূ জাহ্ল সকল জনসাধারণকে সদলবলে বের হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলল, তোমরা তোমাদের কাফেলা রক্ষা করার জন্য আগ্রসর হও। উমাইয়াহ বের হওয়াকে অপছন্দ করলে আবূ জাহ্ল এসে তাকে বলল, হে আবূ সফ্ওয়ান। তুমি এ উপত্যকার অধিবাসীদের নেতা, তাই লোকেরা যখন দেখবে তুমি পেছনে রয়ে গেছ তখন তারাও তোমার সঙ্গে পেছনেই থেকে যাবে। এ বলে আবূ জাহ্ল তার সঙ্গে পীড়াপীড়ি করতে থাকলে সে বলল, তুমি যেহেতু আমাকে বাধ্য করে ফেলছ তাই আল্লাহ্র কসম! অবশ্যই আমি এমন একটি উষ্ট্র ক্রয় করব যা মক্কার মধ্যে সবচেয়ে ভাল। এরপর উমাইয়াহ (স্ত্রীকে) বলল, হে উম্মু সফ্ওয়ান! আমার সফরের ব্যবস্থা কর। স্ত্রী বলল, হে আবূ সফ্ওয়ান! তোমার মাদীনাহবাসী ভাই যা বলেছিলেন তা কি তুমি ভুলে গিয়েছ? সে বলল, না। আমি তাদের সঙ্গে মাত্র কিছু দূর যেতে চাই। রওয়ানা হওয়ার পর রাস্তায় যে মান্যিলেই উমাইয়াহ কিছুক্ষণ অবস্থান করেছে সেখানেই সে তার উট বেঁধে রেখেছে। সারা রাস্তায় সে এমন করল, শেষে বদর প্রান্তরে মহান আল্লাহ্ তাকে হত্যা করলেন। [৩৬৩২]
(আ.প্র. ৩৬৫৯, ই.ফা. ৩৬৬২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৩. অধ্যায়ঃ
বদর যুদ্ধের ঘটনা ও মহান আল্লাহ্র বাণী
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ “আর এ তো সুনিশ্চিত যে, আল্লাহ বাদ্র যুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করেছিলেন, অথচ তোমরা ছিলে দুর্বল, সুতরাং তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর, যেন তোমরা শুকরগুজারী করতে পার। স্মরণ কর, তুমি মু’মিনদের বলেছিলেঃ তোমাদের জন্য একি যথেষ্ট নয় যে, আসমান হতে অবতীর্ণ হওয়া তিন হাজার মালায়িকাহ দিয়ে তোমাদের রব তোমাদের সাহায্য করবেন? হ্যাঁ, অবশ্যই। যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর এবং তাক্ওয়া অবলম্বন কর; তবে কাফির বাহিনী অতর্কিতে তোমাদের উপর আক্রমণ করলে আল্লাহ পাঁচ হাজার চিহ্নিত মালায়িকাহ দিয়ে তোমাদের সাহায্য করবেন। এটা তো আল্লাহ শুধু এজন্য করেছেন যেন তোমাদের জন্য সুসংবাদ হয়, যাতে তোমাদের অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। আর সাহায্য তো শুধুমাত্র পরাক্রমশালী মহাবিজ্ঞ আল্লাহ্র তরফ হতে হয়ে থাকে। যাতে ধ্বংস করে দেন কাফিরদের কোন দলকে অথবা লাঞ্ছিত করে দেন তাদের, যেন তারা নিরাশ হয়ে ফিরে যায়।” (সূরা আলে ‘ইমরান ৩/১২৩-১২৭)
ওয়াহশী (রাঃ) বলেন, বাদ্র যুদ্ধের দিন হাম্যাহ (রাঃ) তু’আয়মা ইব্নু আদী ইব্নু খিয়ারকে হত্যা করেছিলেন। আল্লাহ্র বানীঃ “স্মরণ কর, আল্লাহ্ তোমাদের সঙ্গে ওয়াদা করেছিলেন যে, দু’টি দলের একটি তোমাদের করতলগত হবে।” (সূরা আনফাল ৮/৭)
৩৯৫১
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ كَعْبٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ كَعْبٍ قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ لَمْ أَتَخَلَّفْ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَزْوَةٍ غَزَاهَا إِلَّا فِيْ غَزْوَةِ تَبُوْكَ غَيْرَ أَنِّيْ تَخَلَّفْتُ عَنْ غَزْوَةِ بَدْرٍ وَلَمْ يُعَاتَبْ أَحَدٌ تَخَلَّفَ عَنْهَا إِنَّمَا خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُرِيْدُ عِيْرَ قُرَيْشٍ حَتَّى جَمَعَ اللهُ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ عَدُوِّهِمْ عَلَى غَيْرِ مِيْعَادٍ
‘আবদুল্লাহ ইব্নু কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি কা’ব ইব্নু মালিক (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সব যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন তার মধ্যে তাবূকের যুদ্ধ ব্যতীত অন্য কোন যুদ্ধে আমি অনুপস্থিত ছিলাম না। তবে বদর যুদ্ধে আমি অনুপস্থিত ছিলাম। কিন্তু বদর যুদ্ধে যারা যোগদান করেননি তাদেরকে কোন প্রকার দোষারোপ করা হয়নি। আসলে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরাইশ কাফিলার উদ্দেশ্যেই যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু পূর্ব নির্ধারিত পরিকল্পনা ব্যতীতই আল্লাহ্ তা’আলা তাদের (মুসলিমদের) সঙ্গে তাদের দুশমনদের মুকাবালা করিয়ে দেন। [২৭৫৭]
(আ.প্র. ৩৬৬০, ই.ফা. ৩৬৬৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৪. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ
স্মরণ কর, তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করছিলে তোমাদের রবের কাছে, তিনি তোমাদের প্রার্থনার জবাবে বললেনঃ অবশ্যই আমি তোমাদের সাহায্য করব এক হাজার মালায়িকাহ দিয়ে, যারা ক্রমান্বয়ে এসে পৌঁছবে। আর আল্লাহ্ এ সাহায্য করলেন শুধু সুসংবাদ দেয়ার জন্য এবং যেন তোমাদের অন্তর প্রশান্ত হয়। আর সাহায্য তো কেবল আল্লাহ্র তরফ হতেই হয়। নিশ্চয় আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, হিকমাতওয়ালা। স্মরণ কর, আল্লাহ্ তোমাদেরকে তন্দ্রাচ্ছন্ন করেন নিজের পক্ষ হতে স্বস্তি প্রদানের জন্য এবং তোমাদের উপর আসমান হতে পানি বর্ষণ করেন তা দিয়ে তোমাদেরকে পবিত্র করার জন্য এবং যাতে তোমাদের হতে অপসারিত করে দেন শায়ত্বনের কুমন্ত্রণা, আর যাতে তোমাদের অন্তর সুদৃঢ় করেন এবং যার ফলে তোমাদের পা স্থির করে দিতে পারেন। স্মরণ কর, তোমার রব মালায়িকাহ্কে প্রত্যাদেশ করেন- নিশ্চয় আমি তোমাদের সঙ্গে আছি, সুতরাং মু’মিনদের দৃঢ়চিত্ত রাখ। অচিরেই আমি কাফিরদের অন্তরে আতংক সঞ্চার করে দেব, অতএব, আঘাত কর তাদের গর্দানের উপর এবং আঘাত কর তাদের আঙ্গুলির জোড়ায় জোড়ায়। (সূরা আনফাল ৮/৯-১৩)
৩৯৫২
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ مُخَارِقٍ عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ مَسْعُوْدٍ يَقُوْلُ شَهِدْتُ مِنَ الْمِقْدَادِ بْنِ الْأَسْوَدِ مَشْهَدًا لَأَنْ أَكُوْنَ صَاحِبَهُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا عُدِلَ بِهِ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَدْعُوْ عَلَى الْمُشْرِكِيْنَ فَقَالَ لَا نَقُوْلُ كَمَا قَالَ قَوْمُ مُوْسَى {اذْهَبْ أَنْتَ وَرَبُّكَ فَقَاتِلَا} وَلَكِنَّا نُقَاتِلُ عَنْ يَمِيْنِكَ وَعَنْ شِمَالِكَ وَبَيْنَ يَدَيْكَ وَخَلْفَكَ فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَشْرَقَ وَجْهُهُ وَسَرَّهُ يَعْنِيْ قَوْلَهُ
ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি মিকদাদ ইব্নু আসওয়াদের এমন একটি বিষয় দেখেছি যা আমি করলে তা দুনিয়ার সব কিছুর তুলনায় আমার নিকট প্রিয় হত। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলেন, তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুশরিকদের বিরুদ্ধে দু’আ করছিলেন। এতে মিকদাদ ইব্নু আসওয়াদ (রাঃ) বললেন, মূসা (আঃ) এর কাওম যেমন বলেছিল যে, “তুমি আর তোমার প্রতিপালক যাও এবং যুদ্ধ কর”- (সূরা আল-মায়িদাহ ৫/২৪)। আমরা তেমন বলব না, বরং আমরা আপনার ডানে, বামে, সামনে, পিছনে সর্বদিক থেকে যুদ্ধ করব। ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) বলেন, আমি দেখলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল এবং তার কথা তাঁকে খুব আনন্দিত করল।
[৪৬০৯] (আ.প্র. ৩৬৬১, ই.ফা. ৩৬৬৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫৩
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ حَوْشَبٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ بَدْرٍ اللهُمَّ إِنِّيْ أَنْشُدُكَ عَهْدَكَ وَوَعْدَكَ اللهُمَّ إِنْ شِئْتَ لَمْ تُعْبَدْ فَأَخَذَ أَبُوْ بَكْرٍ بِيَدِهِ فَقَالَ حَسْبُكَ فَخَرَجَ وَهُوَ يَقُوْلُ {سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَيُوَلُّوْنَ الدُّبُرَ}
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাদ্রের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, হে আল্লাহ্! আমি আপনার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার পূরণ করার জন্য প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ্! আপনি যদি চান (কাফিররা জয়লাভ করুক) তাহলে আপনার ‘ইবাদত আর হবে না। আবূ বকর (রাঃ) তাঁর হাত ধরে বললেন, যথেষ্ট হয়েছে। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ আয়াত পড়তে পড়তে বের হলেনঃ “শীঘ্রই দুশমনরা পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে”- (সূরা ক্বামার ৫৪/৪৫)।
[২৯১৫] (আ.প্র. ৩৬৬২, ই.ফা. ৩৬৬৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৫. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই
৩৯৫৪
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الْكَرِيْمِ أَنَّهُ سَمِعَ مِقْسَمًا مَوْلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ الْحَارِثِ يُحَدِّثُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُوْلُ {لَا يَسْتَوِي الْقَاعِدُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ} عَنْ بَدْرٍ وَالْخَارِجُوْنَ إِلَى بَدْرٍ
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, “মু’মিনদের মধ্যে তারা সমান নয় যারা (বাদ্রে না গিয়ে) বসে ছিল”- (সূরা আন-নিসা ৪/৯৫)। এবং যারা বাদ্রে হাজির হয়েছিল মর্মে (আয়াতটি) বদর এবং তদুদ্দেশে ঘর ছেড়ে বের হওয়া সাহাবীদের ব্যাপারে (নাযিল হয়)।
[৪৫৯৫] (আ.প্র. ৩৬৬৩, ই.ফা. ৩৬৬৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৬. অধ্যায়ঃ
বাদ্র যুদ্ধে যোগদানকারীর সংখ্যা
৩৯৫৫
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ اسْتُصْغِرْتُ أَنَا وَابْنُ عُمَرَ حَدَّثَنيِْ مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا وَهْبٌ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ اسْتُصْغِرْتُ أَنَا وَابْنُ عُمَرَ يَوْمَ بَدْرٍ وَكَانَ الْمُهَاجِرُوْنَ يَوْمَ بَدْرٍ نَيِّفًا عَلَى سِتِّيْنَ وَالأَنْصَارُ نَيِّفًا وَأَرْبَعِيْنَ وَمِائَتَيْنِ
বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাদ্রের দিন আমাকে ও ইব্নু ‘উমারকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক গণ্য করা হয়েছিল। [১]
[৩৯৫৬] (আ.প্র. ৩৬৬৪, ই.ফা. নেই)
[১] অর্থাৎ বারা ইব্নু ‘আযির ও আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমার (রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অল্প বয়স্ক গণ্য করায় তারা বাদ্র যুদ্ধে অংশ নিতে পারেননি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫৬
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ اسْتُصْغِرْتُ أَنَا وَابْنُ عُمَرَ حَدَّثَنيِْ مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا وَهْبٌ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ اسْتُصْغِرْتُ أَنَا وَابْنُ عُمَرَ يَوْمَ بَدْرٍ وَكَانَ الْمُهَاجِرُوْنَ يَوْمَ بَدْرٍ نَيِّفًا عَلَى سِتِّيْنَ وَالأَنْصَارُ نَيِّفًا وَأَرْبَعِيْنَ وَمِائَتَيْنِ
বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বাদ্রের দিন আমাকে ও ইব্নু ‘উমারকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক গণ্য করা হয়েছিল, এ যুদ্ধে মুহাজিরদের সংখ্যা ছিল ষাটের বেশী এবং আনসারদের সংখ্যা ছিল দুশ’ চল্লিশেরও অধিক। [২]
[৩৯৫৫] (আ.প্র. ৩৬৬৫, ই.ফা. ৩৬৬৭)
[২] মুসলিম হবার কারণে যারা অমানসিক নির্যাতন ও নিপীড়ন সহ্য করে আশ্রয়ের জন্য মাদীনাহ্ গমন করেছিলেন তারা মুহাজির হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মাদিনাহবাসীদের মধ্য হতে যারা মুহাজিরদের বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তারা আনসার নামে পরিচিত ছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫৭
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ يَقُوْلُ حَدَّثَنِيْ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا أَنَّهُمْ كَانُوْا عِدَّةَ أَصْحَابِ طَالُوْتَ الَّذِيْنَ جَازُوْا مَعَهُ النَّهَرَ بِضْعَةَ عَشَرَ وَثَلَاثَ مِائَةٍ قَالَ الْبَرَاءُ لَا وَاللهِ مَا جَاوَزَ مَعَهُ النَّهَرَ إِلَّا مُؤْمِنٌ
বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যে সব সাহাবী বাদ্রে উপস্থিত ছিলেন তারা আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, তাদের সংখ্যা তালুতের যে সব সঙ্গী নদী পার হয়েছিলেন তাদের সমান ছিল। তাদের সংখ্যা ছিল তিনশ’ দশেরও কিছু বেশী। বারা’ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র কসম, ঈমানদার ব্যতীত আর কেউই তাঁর সঙ্গে নদী পার হতে পারেনি।
[৩৯৫৮-৩৯৫৯] (আ.প্র. ৩৬৬৬, ই.ফা. ৩৬৬৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ كُنَّا أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ نَتَحَدَّثُ أَنَّ عِدَّةَ أَصْحَابِ بَدْرٍ عَلَى عِدَّةِ أَصْحَابِ طَالُوْتَ الَّذِيْنَ جَاوَزُوْا مَعَهُ النَّهَرَ وَلَمْ يُجَاوِزْ مَعَهُ إِلَّا مُؤْمِنٌ بِضْعَةَ عَشَرَ وَثَلَاثَ مِائَةٍ
বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণ পরস্পর আলোচনা করতাম যে, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের সংখ্যা তালুতের সঙ্গে যারা নদী পার হয়েছিলেন তাদের সমানই ছিল এবং তিনশ’ দশ জনের অধিক ঈমানদার ব্যতীত কেউ তাঁর সঙ্গে নদী পার হতে পারেনি।
[৩৯৫৭] (আ.প্র. ৩৬৬৭, ই.ফা. ৩৬৬৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৫৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ ح و حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ كُنَّا نَتَحَدَّثُ أَنَّ أَصْحَابَ بَدْرٍ. ثَلَاثُ مِائَةٍ وَبِضْعَةَ عَشَرَ بِعِدَّةِ أَصْحَابِ طَالُوْتَ الَّذِيْنَ جَاوَزُوْا مَعَهُ النَّهَرَ وَمَا جَاوَزَ مَعَهُ إِلَّا مُؤْمِنٌ
বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা পরস্পর আলোচনা করতাম যে, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীগণের সংখ্যা তিনশ’ দশ জনেরও কিছু অধিক ছিল, তালুতের যে সংখ্যক সাথী তাঁর সঙ্গে নদী পার হয়েছিল; মু’মিন ব্যতীত কেউ তার সঙ্গে নদী পার হতে পারেনি।
[৩৯৫৭] (আ.প্র. ৩৬৬৮, ই.ফা. ৩৬৭০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৭. অধ্যায়ঃ
কুরাইশ কাফির শায়বাহ, ‘উত্বাহ, ওয়ালীদ এবং আবূ জাহ্ল ইব্নু হিশামের বিরুদ্ধে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দু‘আ এবং এদের ধ্বংস হওয়ার বিবরণ
৩৯৬০
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُوْنٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ اسْتَقْبَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْكَعْبَةَ فَدَعَا عَلَى نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ عَلَى شَيْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ وَعُتْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ وَالْوَلِيْدِ بْنِ عُتْبَةَ وَأَبِيْ جَهْلِ بْنِ هِشَامٍ فَأَشْهَدُ بِاللهِ لَقَدْ رَأَيْتُهُمْ صَرْعَى قَدْ غَيَّرَتْهُمْ الشَّمْسُ وَكَانَ يَوْمًا حَارًّا
‘আবদুল্লাহ ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা’বার দিকে মুখ করে কুরাইশ কতিপয় লোকের তথা- শায়বাহ্ ইব্নু রাবী’আ, ‘উত্বাহ ইব্নু রাবী’আ, ওয়ালীদ ইব্নু ‘উত্বাহ এবং আবূ জাহ্ল ইব্নু হিশামের বিরুদ্ধে দু‘আ করেন। আমি আল্লাহ্র নামে সাক্ষ্য দিচ্ছি, অবশ্যই আমি এ সমস্ত লোকদেরকে (বাদ্রের ময়দানে) নিহত হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখেছি। প্রচণ্ড রোদ তাদের দেহগুলোকে বিকৃত করে দিয়েছিল। দিনটি ছিল প্রচণ্ড গরম।
[২৪০] (আ.প্র. ৩৬৬৯, ই.ফা. ৩৬৭১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৮. অধ্যায়ঃ
আবূ জাহলের হত্যা
৩৯৬১
ابْنُ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ أَخْبَرَنَا قَيْسٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ أَنَّهُ أَتَى أَبَا جَهْلٍ وَبِهِ رَمَقٌ يَوْمَ بَدْرٍ فَقَالَ أَبُوْ جَهْلٍ هَلْ أَعْمَدُ مِنْ رَجُلٍ قَتَلْتُمُوْهُ
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন যে, বদর যুদ্ধের দিন আবূ জাহ্ল যখন মৃত্যুর মুখোমুখী তখন তিনি (‘আবদুল্লাহ) তার কাছে গেলেন। তখন আবূ জাহ্ল বলল, (আজ) তোমরা যাকে হত্যা করলে তার চেয়ে নির্ভরযোগ্য লোক আর আছে কি?
(আ.প্র. ৩৬৭০, ই.ফা. ৩৬৭২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬২
أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ح و عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَنْ يَنْظُرُ مَا صَنَعَ أَبُوْ جَهْلٍ فَانْطَلَقَ ابْنُ مَسْعُوْدٍ فَوَجَدَهُ قَدْ ضَرَبَهُ ابْنَا عَفْرَاءَ حَتَّى بَرَدَ قَالَ أَأَنْتَ أَبُوْ جَهْلٍ قَالَ فَأَخَذَ بِلِحْيَتِهِ قَالَ وَهَلْ فَوْقَ رَجُلٍ قَتَلْتُمُوْهُ أَوْ رَجُلٍ قَتَلَهُ قَوْمُهُ قَالَ أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ أَنْتَ أَبُوْ جَهْلٍ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (বাদ্রের দিন) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আবূ জাহলের কী অবস্থা হল কেউ তা দেখতে পার কি? তখন ইব্নু মাস‘ঊদ (রাঃ) বের হলেন এবং দেখতে পেলেন যে, ‘আফ্রার দুই পুত্র তাকে এমনিভাবে মেরেছে যে, মুমূর্ষু অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। ‘আবদুল্লাহ ইব্নু মাস‘ঊদ (রাঃ) বললেন, তুমিই কি আবূ জাহ্ল? রাবী বলেনঃ আবূ জাহ্ল বললঃ সেই লোকটির চেয়ে উত্তম আর কেউ আছে কি যাকে তার গোত্রের লোকেরা হত্যা করল অথবা বলল তোমরা যাকে হত্যা করলে? আহমদ বিন ইউনুসের বর্ণনায় এসেছে, তুমি আবূ জাহ্ল।
[৩৯৬৩, ৪০২০] (আ.প্র. ৩৬৭১, ই.ফা. ৩৬৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৩
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ عَدِيٍّ عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ بَدْرٍ مَنْ يَنْظُرُ مَا فَعَلَ أَبُوْ جَهْلٍ فَانْطَلَقَ ابْنُ مَسْعُوْدٍ فَوَجَدَهُ قَدْ ضَرَبَهُ ابْنَا عَفْرَاءَ حَتَّى بَرَدَ فَأَخَذَ بِلِحْيَتِهِ فَقَالَ أَنْتَ أَبَا جَهْلٍ قَالَ وَهَلْ فَوْقَ رَجُلٍ قَتَلَهُ قَوْمُهُ أَوْ قَالَ قَتَلْتُمُوْهُ
حَدَّثَنِي ابْنُ الْمُثَنَّى أَخْبَرَنَا مُعَاذُ بْنُ مُعَاذٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ أَخْبَرَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ نَحْوَهُ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, বাদ্রের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আবূ জাহ্ল কী করল, তোমাদের কে তা জেনে আসবে? তখন ইব্নু মাস‘উদ (রাঃ) চলে গেলেন এবং তিনি দেখতে পেলেন, ‘আফরার দুই পুত্র তাকে এমনিভাবে পিটিয়েছে যে, সে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে আছে। তখন তিনি তার দাড়ি ধরে বললেন, তুমি কি আবূ জাহ্ল? উত্তরে সে বলল, সেই লোকটির চেয়ে উত্তম আর কেউ আছে কি যাকে তার গোত্রের লোকেরা হত্যা করল অথবা বলল তোমরা যাকে হত্যা করলে? [৩]
ইব্নু মুসান্না (রহঃ)….. আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে অনুরূপ একটি রিওয়ায়াত বর্ণিত আছে।
[৩৯৬২] (আ.প্র. ৩৬৭২, ই.ফা. ৩৬৭৪)
[৩] কুরায়শদের এতবড় একজন প্রভাবশালী সেনাপতি যে কিনা অল্প বয়স্ক দুজন সহোদর মু‘আয ও মু‘আওয়িয এর হাতে নিহত হলো। এটি আল্লাহ্ তা‘আলার বিশেষ নিদর্শন। কারণ এটা কাফিরদের জন্য ছিল একটি লজ্জাজনক ও বিরাট ক্ষতির ব্যাপার। দ্বিতীয়ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নেতৃত্বে সংঘটিত প্রথম যুদ্ধে কাফিররা এক হাজার থাকলেও মুসলিমদের সংখ্যা ছিল মাত্র তিনশত তেরজন। তথাপি আল্লাহ্র অশেষ রাহমাতে মুসলিমগণ এ যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং তাদের মনোবল অনেকগুণ বেড়ে যায়। হাদীসে আবূ জাহালের মৃত্যুপূর্ব অবস্থা বর্ণিত হয়েছে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৪
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَتَبْتُ عَنْ يُوْسُفَ بْنِ الْمَاجِشُوْنِ عَنْ صَالِحِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ فِيْ بَدْرٍ يَعْنِيْ حَدِيْثَ ابْنَيْ عَفْرَاءَ
বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
ইব্রাহীমের দাদা থেকে বদর তথা ‘আফ্রার দুই ছেলের সম্পর্কে এক রেওয়ায়ত বর্ণনা করেছেন।
[৩১৪১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ নেই, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৭৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৫
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الرَّقَاشِيُّ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ يَقُوْلُ حَدَّثَنَا أَبُوْ مِجْلَزٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ أَنَّهُ قَالَ أَنَا أَوَّلُ مَنْ يَجْثُوْ بَيْنَ يَدَيْ الرَّحْمَنِ لِلْخُصُوْمَةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَقَالَ قَيْسُ بْنُ عُبَادٍ وَفِيْهِمْ أُنْزِلَتْ {هٰذَانِ خَصْمَانِ اخْتَصَمُوْا فِيْ رَبِّهِمْ} قَالَ هُمْ الَّذِيْنَ تَبَارَزُوْا يَوْمَ بَدْرٍ حَمْزَةُ وَعَلِيٌّ وَعُبَيْدَةُ أَوْ أَبُوْ عُبَيْدَةَ بْنُ الْحَارِثِ وَشَيْبَةُ بْنُ رَبِيْعَةَ وَعُتْبَةُ بْنُ رَبِيْعَةَ وَالْوَلِيْدُ بْنُ عُتْبَةَ
‘আলী ইব্নু আবূ ত্বলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সর্বপ্রথম আমিই ক্বিয়ামাতের দিন দয়াময়ের সামনে বিবাদ মীমাংসার জন্য হাঁটু গেড়ে বসব। ক্বায়স ইব্নু ‘উবাদ (রাঃ) বলেন, এদের সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়েছেঃ “এরা দু’টি বিবদমান পক্ষ তাদের প্রতিপালক সম্পর্কে বিতর্ক করে”- (সূরা হাজ্জ ২২/১৯)। তিনি বলেন, (মুসলিম পক্ষের) তারা হলেন হাম্যা, ‘আলী ও ‘উবাইদাহ অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) আবূ ‘উবাইদাহ ইব্নুল হারিস (রাঃ) (অপরপক্ষে) শায়বা বিন রাবী‘আহ, ‘উত্বাহ বিন রাবী‘আহ এবং ওয়ালীদ ইব্নু ‘উত্বাহ যারা বদর যুদ্ধের দিন পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন [৪]।
[৩৯৬৭, ৪৭৪৪] (আ.প্র. ৩৬৭৩, ই.ফা. ৩৬৭৬)
[৪] বাদ্রের যুদ্ধের দিন মল্ল যুদ্ধের মাধ্যমে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। হামযাহ (রাঃ) শাইবাহ ইব্নু রাবী‘আহ্কে, ‘আলী (রাঃ) ওয়ালিদ ইব্নু ‘উত্বাহ্কে মল্ল যুদ্ধে পরাজিত করে তাদেরকে হত্যা করেন। কিন্তু ‘উবাইদাহ (রাঃ) ‘উত্বাহ ইব্নু রাবী‘আহ্কে মারাত্মকভাবে আহত করলেও তিনিও মারাত্মক আহত হন এবং পরে শহীদ হন। হামযাহ (রাঃ) ও ‘আলী (রাঃ) ‘উতবাহ ইব্নু রাবী‘আহকে হত্যার ব্যাপারে ‘উবাইদাহকে সহযোগিতা করেছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৬
قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْ هَاشِمٍ عَنْ أَبِيْ مِجْلَزٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ قَالَ نَزَلَتْ {هٰذَانِ خَصْمَانِ اخْتَصَمُوْا فِيْ رَبِّهِمْ} فِيْ سِتَّةٍ مِنْ قُرَيْشٍ عَلِيٍّ وَحَمْزَةَ وَعُبَيْدَةَ بْنِ الْحَارِثِ وَشَيْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ وَعُتْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ وَالْوَلِيْدِ بْنِ عُتْبَةَ
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ “এরা দু’টি বিবদমান দল তারা তাদের প্রতিপালক সম্বন্ধে বিতর্ক করে”-(সূরাহ হাজ্জ ২২/১৯) আয়াতটি কুরাইশ গোত্রীয় ছয়জন লোক সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। তারা হলেন, (মুসলিম পক্ষ) ‘আলী, হামযাহ, ‘উবাইদাহ ইবনুল হারিস (রাঃ) ও (কাফির পক্ষে) শায়বা ইব্নু রাবী‘আহ, ‘উত্বাহ ইব্নু রাবী‘আহ এবং ওয়ালীদ ইব্নু ‘উত্বাহ।
[৩৯৬৮, ৩৯৬৯, ৪৭৪৩] (আ.প্র. ৩৬৭৪, ই.ফা. ৩৬৭৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৭
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ الصَّوَّافُ حَدَّثَنَا يُوْسُفُ بْنُ يَعْقُوْبَ كَانَ يَنْزِلُ فِيْ بَنِيْ ضُبَيْعَةَ وَهُوَ مَوْلًى لِبَنِيْ سَدُوْسَ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ عَنْ أَبِيْ مِجْلَزٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ قَالَ قَالَ عَلِيٌّ فِيْنَا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ {هٰذَانِ خَصْمَانِ اخْتَصَمُوْا فِيْ رَبِّهِمْ}
কায়স ইব্নু উবাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) বলেছেনঃ “এরা দু’টি বিবদমান পক্ষ, তারা তাদের প্রতিপালক সম্পর্কে বিতর্ক করে”-(সূরা হাজ্জ ২২/১৯) আয়াতটি আমাদের সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়েছে।
[৩৯৬৫] (আ.প্র. ৩৬৭৫, ই.ফা. ৩৬৭৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৮
يَحْيَى بْنُ جَعْفَرٍ أَخْبَرَنَا وَكِيْعٌ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ أَبِيْ هَاشِمٍ عَنْ أَبِيْ مِجْلَزٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ يُقْسِمُ لَنَزَلَتْ هَؤُلَاءِ الآيَاتُ فِيْ هَؤُلَاءِ الرَّهْطِ السِّتَّةِ يَوْمَ بَدْرٍ نَحْوَهُ
কায়স ইব্নু উবাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(তিনি বলেছেন) আমি আবূ যার (রাঃ)-কে কসম করে বলতে শুনেছি যে, উপর্যুক্ত আয়াতগুলো উল্লিখিত বাদ্রের দিন ঐ ছয় ব্যক্তি সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছিল।
[৩৯৬৬] (আ.প্র. ৩৬৭৬, ই.ফা. ৩৬৭৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৬৯
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ الدَّوْرَقِيُّ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ أَخْبَرَنَا أَبُوْ هَاشِمٍ عَنْ أَبِيْ مِجْلَزٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ عُبَادٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ يُقْسِمُ قَسَمًا إِنَّ هَذِهِ الآيَةَ {هٰذَانِ خَصْمَانِ اخْتَصَمُوْا فِيْ رَبِّهِمْ} نَزَلَتْ فِي الَّذِيْنَ بَرَزُوْا يَوْمَ بَدْرٍ حَمْزَةَ وَعَلِيٍّ وَعُبَيْدَةَ بْنِ الْحَارِثِ وَعُتْبَةَ وَشَيْبَةَ ابْنَيْ رَبِيْعَةَ وَالْوَلِيْدِ بْنِ عُتْبَ
ক্বায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি আবূ যার (রাঃ)-কে কসম করে বলতে শুনেছি যে, “এরা দু’টি বিবদমান পক্ষ তারা তাদের প্রতিপালক সম্বন্ধে বিতর্ক করে” আয়াতটি বাদ্রের দিন পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হামযা, ‘আলী, ‘উবাইদাহ ইব্নুল হারিস, রাবী‘আহ্র দুই পুত্র ‘উত্বাহ ও শায়বাহ এবং ওয়ালীদ ইব্নু ‘উত্বাহ্র সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয়েছে।
[৩৯৬৬] (আ.প্র. ৩৬৭৭, ই.ফা. ৩৬৮০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭০
أَحْمَدُ بْنُ سَعِيْدٍ أَبُوْ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ السَّلُوْلِيُّ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ سَأَلَ رَجُلٌ الْبَرَاءَ وَأَنَا أَسْمَعُ قَالَ أَشَهِدَ عَلِيٌّ بَدْرًا قَالَ بَارَزَ وَظَاهَرَ
আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি শুনলাম, এক ব্যক্তি বারা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করল, ‘আলী (রাঃ) কি বাদ্রের যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন? তিনি বললেন, ‘আলী ঐ যুদ্ধে মুকাবালা করেছিলেন এবং হাক্কে বিজয়ী করেছিলেন।
(আ.প্র. ৩৬৭৮, ই.ফা. ৩৬৮১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭১
عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ يُوْسُفُ بْنُ الْمَاجِشُوْنِ عَنْ صَالِحِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ كَاتَبْتُ أُمَيَّةَ بْنَ خَلَفٍ فَلَمَّا كَانَ يَوْمَ بَدْرٍ فَذَكَرَ قَتْلَهُ وَقَتْلَ ابْنِهِ فَقَالَ بِلَالٌ لَا نَجَوْتُ إِنْ نَجَا أُمَيَّةُ
‘আবদুর রাহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি উমাইয়া ইব্নু খালফে্র সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম। বদর যুদ্ধের দিন তিনি ‘উমাইয়াহ ইব্নু খালাফ ও তার পুত্রের নিহত হওয়ার কথা উল্লেখ করলে বিলাল (রাঃ) বললেন, যদি ‘উমাইয়াহ ইব্নু খালাফ প্রাণে বেঁচে যেত তাহলে আমি সফল হতাম না। [৫]
[২৩০১] (আ.প্র. ৩৬৭৯, ই.ফা. ৩৬৮২)
[৫] বিলাল (রাঃ) উমাইয়া বিন খালাফের ক্রীতদাস ছিলেন। বিলাল (রাঃ) ইসলাম কবূল করলে এই ইসলামের ঘোর শত্রু তা মেনে নিতে পারলো না। ফলে তাকে অসহনীয় নির্যাতন স্বীকার করতে হয় এমনকি দুপুর রোদের উত্তপ্ত বালুর উপর শুইয়ে বুকের উপর বিশাল আকৃতির পাথর চাপা দিয়ে তাকে ইসলাম ত্যাগ করতে বাধ্য করতে চেয়েছিল কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে ধৈর্য প্রদান করেছিলেন এবং তিনি ইসলাম ত্যাগ করেননি। অতঃপর আবূ বাক্র (রাঃ) তাকে ক্রয় করে আযাদ করে দিয়েছিলেন। বাদ্র যুদ্ধে উমাইয়াহ ও তার পুত্র নিহত হওয়ার কথা শুনে বিলাল (রাঃ) এভাবেই তার অভিব্যক্তি বর্ণনা করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭২
عَبْدَانُ بْنُ عُثْمَانَ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ الْأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَرَأَ {وَالنَّجْمِ} فَسَجَدَ بِهَا وَسَجَدَ مَنْ مَعَهُ غَيْرَ أَنَّ شَيْخًا أَخَذَ كَفًّا مِنْ تُرَابٍ فَرَفَعَهُ إِلَى جَبْهَتِهِ فَقَالَ يَكْفِيْنِيْ هَذَا قَالَ عَبْدُ اللهِ فَلَقَدْ رَأَيْتُهُ بَعْدُ قُتِلَ كَافِرًا
‘আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূরা নাজ্ম তিলাওয়াত করলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে সাজ্দাহ করলেন। এক বৃদ্ধ ব্যতীত নাবীজীর নিকট যারা উপস্থিত ছিলেন তারা সকলেই সাজ্দাহ করলেন। সে বৃদ্ধ একমুষ্ঠি মাটি উঠিয়ে কপালে লাগিয়ে বলল, আমার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, কিছু দিন পর আমি তাকে কাফির অবস্থায় নিহত হতে দেখেছি। [৬]
[১০৬৭] (আ.প্র. ৩৬৮০, ই.ফা. ৩৬৮৩ প্রথমাংশ)
[৬] বৃদ্ধটি ছিল ইসলামের ঘোরতর শত্রু উমাইয়া বিন খালাফ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৩
أَخْبَرَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ مَعْمَرٍ أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ عُرْوَةَ قَالَ كَانَ فِي الزُّبَيْرِ ثَلَاثُ ضَرَبَاتٍ بِالسَّيْفِ إِحْدَاهُنَّ فِيْ عَاتِقِهِ قَالَ إِنْ كُنْتُ لَأُدْخِلُ أَصَابِعِيْ فِيْهَا قَالَ ضُرِبَ ثِنْتَيْنِ يَوْمَ بَدْرٍ وَوَاحِدَةً يَوْمَ الْيَرْمُوْكِ قَالَ عُرْوَةُ وَقَالَ لِيْ عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ مَرْوَانَ حِيْنَ قُتِلَ عَبْدُ اللهِ بْنُ الزُّبَيْرِ يَا عُرْوَةُ هَلْ تَعْرِفُ سَيْفَ الزُّبَيْرِ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَمَا فِيْهِ قُلْتُ فِيْهِ فَلَّةٌ فُلَّهَا يَوْمَ بَدْرٍ قَالَ صَدَقْتَ :
بِـهِـنَّ فُـلُوْلٌ مِـنْ قِـرَاعِ الْـكَـتَـائِـبِ
ثُمَّ رَدَّهُ عَلَى عُرْوَةَ قَالَ هِشَامٌ فَأَقَمْنَاهُ بَيْنَنَا ثَلَاثَةَ آلَافٍ وَأَخَذَهُ بَعْضُنَا وَلَوَدِدْتُ أَنِّيْ كُنْتُ أَخَذْتُهُ
হিশামের পিতা (‘উরওয়াহ) (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, (তার পিতা) যুবায়রের শরীরে তিনটি মারাত্মক জখমের চিহ্ন বিদ্যমান ছিল। এর একটি ছিল তার স্কন্ধে। ‘উরওয়াহ বলেন, আমি আমার আঙ্গুলগুলো ঐ ক্ষতস্থানে ঢুকিয়ে দিতাম, বর্ণনাকারী ‘উরওয়াহ বলেন, ঐ আঘাত তিনটির দু’টি ছিল বদর যুদ্ধের এবং একটি ছিল ইয়ারমুক যুদ্ধের। ‘উরওয়াহ বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু যুবায়র শহীদ হলেন তখন ‘আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান আমাকে বললেন, হে ‘উরওয়াহ, যুবায়রের তরবারি তুমি কি চিন? আমি বললাম হাঁ চিনি। ‘আবদুল মালিক বললেন, এর কি কোন নিশানা আছে? আমি বললাম, এর ধারে এক জায়গায় ভাঙ্গা আছে যা বদর যুদ্ধের দিন ভেঙ্গে ছিল। তখন তিনি বললেন, হাঁ তুমি ঠিক বলেছ, (তারপর তিনি একটি কবিতাংশ আবৃত্তি করলেন)
بِـهِـنَّ فُـلُوْلٌ مِـنْ قِـرَاعِ الْـكَـتَـائِـبِ
সে তরবারির ভাঙ্গন ছিল শত্রু সেনাদের আঘাত করার কারণে। এরপর ‘আবদুল মালিক তরবারি খানা ‘উরওয়ার নিকট ফিরিয়ে দিলেন। হিশাম বলেন, আমরা নিজেরা এর মূল্য স্থির করেছিলাম তিন হাজার দিরহাম। এরপর আমাদের এক ব্যক্তি সেটা নিল। আমার ইচ্ছে হয়েছিল যদি আমি তরবারিটি নিয়ে নিতাম।
[৩৭২১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৩ শেষাংশ)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৪
حَدَّثَنَا فَرْوَةُ حَدَّثَنَا عَلِيٌّ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ كَانَ سَيْفُ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ مُحَلًّى بِفِضَّةٍ قَالَ هِشَامٌ وَكَانَ سَيْفُ عُرْوَةَ مُحَلًّى بِفِضَّةٍ
হিশামের পিতা (‘উরওয়াহ) (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুবায়র (রাঃ)-এর তরবারি রৌপ্যের কারুকার্য মণ্ডিত ছিল। হিশাম (রহঃ) বলেন, ‘উরওয়াহ (রহঃ)-এর তরবারিটিও রৌপ্যের কারুকার্য মন্ডিত ছিল।
(আ.প্র. ৩৬৮২, ই.ফা. ৩৬৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৫
أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ أَصْحَابَ رَسُوْلِ اللهِصلى الله عليه وسلم قَالُوْا لِلزُّبَيْرِ يَوْمَ الْيَرْمُوْكِ أَلَا تَشُدُّ فَنَشُدَّ مَعَكَ فَقَالَ إِنِّيْ إِنْ شَدَدْتُ كَذَبْتُمْ فَقَالُوْا لَا نَفْعَلُ فَحَمَلَ عَلَيْهِمْ حَتَّى شَقَّ صُفُوْفَهُمْ فَجَاوَزَهُمْ وَمَا مَعَهُ أَحَدٌ ثُمَّ رَجَعَ مُقْبِلًا فَأَخَذُوْا بِلِجَامِهِ فَضَرَبُوْهُ ضَرْبَتَيْنِ عَلَى عَاتِقِهِ بَيْنَهُمَا ضَرْبَةٌ ضُرِبَهَا يَوْمَ بَدْرٍ قَالَ عُرْوَةُ كُنْتُ أُدْخِلُ أَصَابِعِيْ فِيْ تِلْكَ الضَّرَبَاتِ أَلْعَبُ وَأَنَا صَغِيْرٌ قَالَ عُرْوَةُ وَكَانَ مَعَهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ الزُّبَيْرِ يَوْمَئِذٍ وَهُوَ ابْنُ عَشْرِ سِنِيْنَ فَحَمَلَهُ عَلَى فَرَسٍ وَوَكَّلَ بِهِ رَجُلًا
‘উরওয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইয়ারমুকের দিন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবাগণ যুবায়র (রাঃ) কে বলেন যে, (মুশরিকদের প্রতি) আপনি কি আক্রমণ জোরদার করবেন না তাহলে আমরাও আপনার সঙ্গে আক্রমণ জোরদার করব। তখন তিনি বলেন, আমি যদি আক্রমণ জোরালো করি তখন তোমরা পিছে সরে পড়বে। তখন তারা বললেন, আমরা তা করব না। এরপর তিনি তাদের উপর আক্রমণ করলেন। এমনকি শত্রুদের ব্যুহ ভেদ করে সামনে এগিয়ে গেলেন। তাদের সঙ্গে আর কেউই ছিল না। ফেরার সময় শত্রুর মুখে পড়লে তাঁর ঘোড়ার লাগাম ধরে ফেলে এবং তাঁর কাঁধের উপর দু’টি আঘাত করে, যে আঘাত দু’টির মাঝেই রয়েছে বদর দিনের আঘাতের চিহ্নটি। ‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, বাল্যবস্থায় ঐ ক্ষত চিহ্নগুলোতে আমার সবগুলো আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে আমি খেলা করতাম। ‘উরওয়াহ (রহঃ) আরো বলেন, ঐদিন তার সঙ্গে ‘আবদুল্লাহ ইব্নু যুবায়র (রাঃ)-ও ছিলেন, তখন তার বয়স ছিল দশ বছর। যুবায়র (রাঃ), তাকে ঘোড়ার পিঠে উঠিয়ে নিলেন এবং এক ব্যক্তিকে তার দেখাশোনার দায়িত্ব দিলেন। [৩৭২১]
(আ.প্র. ৩৬৮৩, ই.ফা. ৩৬৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ سَمِعَ رَوْحَ بْنَ عُبَادَةَ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ عَرُوْبَةَ عَنْ قَتَادَةَ قَالَ ذَكَرَ لَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ عَنْ أَبِيْ طَلْحَةَ أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ يَوْمَ بَدْرٍ بِأَرْبَعَةٍ وَعِشْرِيْنَ رَجُلًا مِنْ صَنَادِيْدِ قُرَيْشٍ فَقُذِفُوْا فِيْ طَوِيٍّ مِنْ أَطْوَاءِ بَدْرٍ خَبِيْثٍ مُخْبِثٍ وَكَانَ إِذَا ظَهَرَ عَلَى قَوْمٍ أَقَامَ بِالْعَرْصَةِ ثَلَاثَ لَيَالٍ فَلَمَّا كَانَ بِبَدْرٍ الْيَوْمَ الثَّالِثَ أَمَرَ بِرَاحِلَتِهِ فَشُدَّ عَلَيْهَا رَحْلُهَا ثُمَّ مَشَى وَاتَّبَعَهُ أَصْحَابُهُ وَقَالُوْا مَا نُرَى يَنْطَلِقُ إِلَّا لِبَعْضِ حَاجَتِهِ حَتَّى قَامَ عَلَى شَفَةِ الرَّكِيِّ فَجَعَلَ يُنَادِيْهِمْ بِأَسْمَائِهِمْ وَأَسْمَاءِ آبَائِهِمْ يَا فُلَانُ بْنَ فُلَانٍ وَيَا فُلَانُ بْنَ فُلَانٍ أَيَسُرُّكُمْ أَنَّكُمْ أَطَعْتُمْ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَإِنَّا قَدْ وَجَدْنَا مَا وَعَدَنَا رَبُّنَا حَقًّا فَهَلْ وَجَدْتُمْ مَا وَعَدَ رَبُّكُمْ حَقًّا قَالَ فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا تُكَلِّمُ مِنْ أَجْسَادٍ لَا أَرْوَاحَ لَهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالَّذِيْ نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ مَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ لِمَا أَقُوْلُ مِنْهُمْ قَالَ قَتَادَةُ أَحْيَاهُمْ اللهُ حَتَّى أَسْمَعَهُمْ قَوْلَهُ تَوْبِيخًا وَتَصْغِيْرًا وَنَقِيْمَةً وَحَسْرَةً وَنَدَمًا
আবূ ত্বলহা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বাদ্রের দিন আল্লাহ্র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশে চব্বিশজন কুরাইশ সর্দারের লাশ বদর প্রান্তরের একটি নোংরা আবর্জনাপূর্ণ কূপে নিক্ষেপ করা হল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন দলের বিরুদ্ধে জয় লাভ করলে সে স্থানের পার্শ্বে তিন দিন অবস্থান করতেন। বদর প্রান্তরে অবস্থানের পর তৃতীয় দিনে তিনি তাঁর সাওয়ারী প্রস্তুত করার আদেশ দিলেন, সাওয়ারীর জিন শক্ত করে বাঁধা হল। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পদব্রজে অগ্রসর হলে সাহাবীগণও তাঁর পেছনে পেছনে চললেন। তাঁরা বলেন, আমরা ভাবছিলাম, কোন প্রয়োজনে তিনি কোথাও যাচ্ছেন। অতঃপর তিনি ঐ কূপের কিনারে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং কূপে নিক্ষিপ্ত ঐ নিহত ব্যক্তিদের নাম ও তাদের পিতার নাম ধরে ডাকতে শুরু করলেন, হে অমুকের পুত্র অমুক, হে অমুকের পুত্র অমুক! তোমরা কি এখন অনুভব করতে পারছ যে, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য তোমাদের জন্য পরম খুশীর বিষয় ছিল? আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন আমরা তো তা সত্য পেয়েছি, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন তোমরাও তা সত্য পেয়েছ কি? বর্ণনাকারী বলেন, ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি আত্মাহীন দেহগুলোর সঙ্গে কী কথা বলছেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ঐ মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, আমি যা বলেছি তা তাদের চেয়ে তোমরা অধিক শুনতে পাচ্ছ না। ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কথার মাধ্যমে তাদেরকে ধমক, লাঞ্ছনা, দুঃখ-কষ্ট, আফসোস এবং লজ্জা দেয়ার জন্য (সাময়িকভাবে) তাদের দেহে প্রাণসঞ্চার করেছিলেন।
[৩০৬৫; মুসলিম ৫১/১৭, হাঃ ২৮৭৫, আহমদ হাঃ ১২০২] (আ.প্র. ৩৬৮৪, ই.ফা. ৩৬৮৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৭
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرٌو عَنْ عَطَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ {اَلَّذِيْنَ بَدَّلُوْا نِعْمَةَ اللهِ كُفْرًا} قَالَ هُمْ وَاللهِ كُفَّارُ قُرَيْشٍ قَالَ عَمْرٌو هُمْ قُرَيْشٌ وَمُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم نِعْمَةُ اللهِ {وَأَحَلُّوْا قَوْمَهُمْ دَارَ الْبَوَارِ} قَالَ النَّارَ يَوْمَ بَدْرٍ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি {اَلَّذِيْنَ بَدَّلُوْا نِعْمَةَ اللهِ كُفْرًا} অর্থাৎ ‘‘যারা আল্লাহর অনুগ্রহের পরিবর্তে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে’’ সূরা ইবরাহীম-এর ২৮ আয়াতাংশ সম্পর্কে বলেছেন, আল্লাহর কসম, এরা হল কাফির কুরাইশ গোষ্ঠী। ‘আমর (রহ.) বলেন, এরা হচ্ছে কুরাইশ গোষ্ঠী এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হচ্ছেন আল্লাহর নি‘য়ামাত এবং {وَأَحَلُّوْا قَوْمَهُمْ دَارَ الْبَوَارِ} (নিজেদের জাতিকে তারা নামিয়ে আনে ধ্বংসের পর্যায়ে) সূরা ইবরাহীম-এর ২৮ আয়াতাংশের মাঝে বর্ণিত الْبَوَارِ এর অর্থ হচ্ছে النَّار জাহান্নাম। (অর্থাৎ বদর যুদ্ধের দিন তারা তাদের জাতিকে জাহান্নামে পৌঁছিয়ে দিয়েছে।)
[৪৭০০] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৮
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ ذُكِرَ عِنْدَ عَائِشَةَ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَفَعَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ الْمَيِّتَ يُعَذَّبُ فِيْ قَبْرِهِ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ فَقَالَتْ وَهَلَ إِنَّمَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّهُ لَيُعَذَّبُ بِخَطِيئَتِهِ وَذَنْبِهِ وَإِنَّ أَهْلَهُ لَيَبْكُوْنَ عَلَيْهِ الآنَ
হিশামের পিতা (‘উরওয়াহ) (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবার পরিজনদের কান্নাকাটি করার ফলে কবরে শাস্তি দেয়া হয়। ইব্নু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কথাটি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর নিকট উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো বলেছেন, মৃত ব্যক্তির অন্যায় ও পাপের কারণে তাকে কবরে শাস্তি দেয়া হয়। অথচ তখনও তার পরিবারের লোকেরা তার জন্য কান্নাকাটি করছে।
[১২৮৮] (আ.প্র. ৩৬৮৬, ই.ফা. ৩৬৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৭৯
قالت وَذَاكَ مِثْلُ قَوْلِهِ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَامَ عَلَى الْقَلِيْبِ وَفِيْهِ قَتْلَى بَدْرٍ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ فَقَالَ لَهُمْ مَا قَالَ إِنَّهُمْ لَيَسْمَعُوْنَ مَا أَقُوْلُ إِنَّمَا قَالَ إِنَّهُمُ الآنَ لَيَعْلَمُوْنَ أَنَّ مَا كُنْتُ أَقُوْلُ لَهُمْ حَقٌّ ثُمَّ قَرَأَتْ {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰى} {وَمَا أَنْتَ بِمُسْمِعٍ مَّنْ فِي الْقُبُوْرِ} يَقُوْلُ حِيْنَ تَبَوَّءُوْا مَقَاعِدَهُمْ مِنْ النَّارِ
‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ কথাটি ঐ কথাটিরই মত যা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ কূপের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, যে কূপে বদর যুদ্ধে নিহত মুশরিকদের নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তিনি তাদেরকে যা বলার বললেন (এবং জানালেন) যে, আমি যা বলছি তারা তা সবই শুনতে পাচ্ছে। তিনি বললেন, এখন তারা ভালভাবে জানতে পারছে যে, আমি তাদেরকে যা বলছিলাম তা ছিল সঠিক। এরপর ‘আয়িশাহ (রাঃ) {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰى} অর্থাৎ ‘‘তুমি তো মৃতকে শুনাতে পারবে না’’- (সূরাহ নামল ২৭/৮০) {وَمَا أَنْتَ بِمُسْمِعٍ مَّنْ فِي الْقُبُوْرِ} অর্থাৎ ‘‘এবং তুমি শুনাতে সমর্থ হবে না তাদেরকে যারা কবরে রয়েছে’’- (সূরাহ ফাতির ৩৫/২২) আয়াতাংশ দু’টো তিলাওয়াত করলেন। ‘উরওয়াহ (রহ.) বলেন, এর মানে হচ্ছে জাহান্নামে যখন তারা তাদের আসন গ্রহণ করে নেবে।
[১৩৭১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮০
عُثْمَانُ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ وَقَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى قَلِيْبِ بَدْرٍ فَقَالَ هَلْ وَجَدْتُمْ مَا وَعَدَ رَبُّكُمْ حَقًّا ثُمَّ قَالَ إِنَّهُمُ الآنَ يَسْمَعُوْنَ مَا أَقُوْلُ فَذُكِرَ لِعَائِشَةَ فَقَالَتْ إِنَّمَا قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّهُمُ الآنَ لَيَعْلَمُوْنَ أَنَّ الَّذِيْ كُنْتُ أَقُوْلُ لَهُمْ هُوَ الْحَقُّ ثُمَّ قَرَأَتْ {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰى} حَتَّى قَرَأَتْ الآيَةَ
ইব্ন ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাদরে অবস্থিত কূপের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, (হে মুশরিকগণ) তোমাদের রব তোমাদের কাছে যা ওয়াদা করেছিলেন তা তোমরা সত্য হিসেবে পেয়েছ কি? পরে তিনি বললেন, এ মুহূর্তে তাদেরকে আমি যা বলছি তারা তা সবই শুনতে পাচ্ছে। এ বিষয়টি ‘আয়িশাহ (রাঃ) এর সামনে উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তার অর্থ হল, তারা এখন জানতে পারছে যে, আমি তাদেরকে যা বলতাম তাই সঠিক ছিল। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেন: {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰى} ‘‘তুমি তো মৃতকে শুনাতে পার না’’- (সূরাহ নামল ২৭/৮০) এভাবে পুরো আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন।
[১৩৭০-৩৭১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮১
عُثْمَانُ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ وَقَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى قَلِيْبِ بَدْرٍ فَقَالَ هَلْ وَجَدْتُمْ مَا وَعَدَ رَبُّكُمْ حَقًّا ثُمَّ قَالَ إِنَّهُمُ الآنَ يَسْمَعُوْنَ مَا أَقُوْلُ فَذُكِرَ لِعَائِشَةَ فَقَالَتْ إِنَّمَا قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّهُمُ الآنَ لَيَعْلَمُوْنَ أَنَّ الَّذِيْ كُنْتُ أَقُوْلُ لَهُمْ هُوَ الْحَقُّ ثُمَّ قَرَأَتْ {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰى} حَتَّى قَرَأَتْ الآيَةَ
ইব্ন ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাদরে অবস্থিত কূপের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, (হে মুশরিকগণ) তোমাদের রব তোমাদের কাছে যা ওয়াদা করেছিলেন তা তোমরা সত্য হিসেবে পেয়েছ কি? পরে তিনি বললেন, এ মুহূর্তে তাদেরকে আমি যা বলছি তারা তা সবই শুনতে পাচ্ছে। এ বিষয়টি ‘আয়িশাহ (রাঃ) এর সামনে উল্লেখ করা হলে তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তার অর্থ হল, তারা এখন জানতে পারছে যে, আমি তাদেরকে যা বলতাম তাই সঠিক ছিল। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেন: {إِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰى} ‘‘তুমি তো মৃতকে শুনাতে পার না’’- (সূরাহ নামল ২৭/৮০) এভাবে পুরো আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন।
[১৩৭০-৩৭১] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/৯. অধ্যায়ঃ
বাদ্র যুদ্ধে যোগদানকারীগণের মর্যাদা
৩৯৮২
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ عَنْ حُمَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا يَقُوْلُ أُصِيْبَ حَارِثَةُ يَوْمَ بَدْرٍ وَهُوَ غُلَامٌ فَجَاءَتْ أُمُّهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَدْ عَرَفْتَ مَنْزِلَةَ حَارِثَةَ مِنِّيْ فَإِنْ يَكُنْ فِي الْجَنَّةِ أَصْبِرْ وَأَحْتَسِبْ وَإِنْ تَكُ الْأُخْرَى تَرَى مَا أَصْنَعُ فَقَالَ وَيْحَكِ أَوَهَبِلْتِ أَوَجَنَّةٌ وَاحِدَةٌ هِيَ إِنَّهَا جِنَانٌ كَثِيْرَةٌ وَإِنَّهُ فِيْ جَنَّةِ الْفِرْدَوْسِ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলতেন, হারিসাহ (রাঃ) একজন নও জওয়ান লোক ছিলেন। বদর যুদ্ধে তিনি শাহাদাত বরণ করার পর তাঁর আম্মা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! হারিসাহ আমার কত প্রিয় ছিল আপনি তা অবশ্যই জানেন। সে যদি জান্নাতী হয় তাহলে আমি সবর করব এবং আল্লাহ্র নিকট সাওয়াবের আশা পোষণ করব। আর যদি ব্যাপার অন্য রকম হয় তাহলে আপনি তো দেখতেই পাবেন, আমি যা করব। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কী হল, তুমি কি অজ্ঞান হয়ে গেলে? জান্নাত কি একটি? জান্নাত অনেকগুলি, সে তো জান্নাতুল ফিরদাউসে রয়েছে।
[২৮০৯] (আ.প্র. ৩৬৮৮, ই.ফা. ৩৬৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮৩
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ إِدْرِيْسَ قَالَ سَمِعْتُ حُصَيْنَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ قَالَ بَعَثَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبَا مَرْثَدٍ الْغَنَوِيَّ وَالزُّبَيْرَ بْنَ الْعَوَّامِ وَكُلُّنَا فَارِسٌ قَالَ انْطَلِقُوْا حَتَّى تَأْتُوْا رَوْضَةَ خَاخٍ فَإِنَّ بِهَا امْرَأَةً مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ مَعَهَا كِتَابٌ مِنْ حَاطِبِ بْنِ أَبِيْ بَلْتَعَةَ إِلَى الْمُشْرِكِيْنَ فَأَدْرَكْنَاهَا تَسِيْرُ عَلَى بَعِيْرٍ لَهَا حَيْثُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْنَا الْكِتَابُ فَقَالَتْ مَا مَعَنَا كِتَابٌ فَأَنَخْنَاهَا فَالْتَمَسْنَا فَلَمْ نَرَ كِتَابًا فَقُلْنَا مَا كَذَبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَنُجَرِّدَنَّكِ فَلَمَّا رَأَتْ الْجِدَّ أَهْوَتْ إِلَى حُجْزَتِهَا وَهِيَ مُحْتَجِزَةٌ بِكِسَاءٍ فَأَخْرَجَتْهُ فَانْطَلَقْنَا بِهَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَدْ خَانَ اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَالْمُؤْمِنِيْنَ فَدَعْنِيْ فَلِأَضْرِبَ عُنُقَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا صَنَعْتَ قَالَ حَاطِبٌ وَاللهِ مَا بِيْ أَنْ لَا أَكُوْنَ مُؤْمِنًا بِاللهِ وَرَسُوْلِهِ أَرَدْتُ أَنْ يَكُوْنَ لِيْ عِنْدَ الْقَوْمِ يَدٌ يَدْفَعُ اللهُ بِهَا عَنْ أَهْلِيْ وَمَالِيْ وَلَيْسَ أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِكَ إِلَّا لَهُ هُنَاكَ مِنْ عَشِيْرَتِهِ مَنْ يَدْفَعُ اللهُ بِهِ عَنْ أَهْلِهِ وَمَالِهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَدَقَ وَلَا تَقُوْلُوْا لَهُ إِلَّا خَيْرًا فَقَالَ عُمَرُ إِنَّهُ قَدْ خَانَ اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَالْمُؤْمِنِيْنَ فَدَعْنِيْ فَلِأَضْرِبَ عُنُقَهُ فَقَالَ أَلَيْسَ مِنْ أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ لَعَلَّ اللهَ اطَّلَعَ إِلَى أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ اعْمَلُوْا مَا شِئْتُمْ فَقَدْ وَجَبَتْ لَكُمُ الْجَنَّةُ أَوْ فَقَدْ غَفَرْتُ لَكُمْ فَدَمَعَتْ عَيْنَا عُمَرَ وَقَالَ اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ মারসাদ, যুবায়র (রাঃ) ও আমাকে কোন স্থানে প্রেরণ করেছিলেন এবং আমরা সকলেই ছিলাম অশ্বারোহী। তিনি আমাদেরকে বললেন, তোমরা যাও। যেতে যেতে তোমরা ‘রাওযা খাখ’ নামক জায়গায় পৌঁছে সেখানে একজন মুশরিকা নারী দেখতে পাবে। তার কাছে মুশরিকদের প্রতি লিখিত হাতিব ইব্নু আবূ বালতার একটি চিঠি আছে। (সেটা নিয়ে আসবে।) ‘আলী (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশিত জায়গায় গিয়ে তাকে ধরে ফেললাম। সে তখন তার একটি উটের উপর চড়ে পথ অতিক্রম করছিল। আমরা তাকে বললাম, পত্রখানা আমাদের নিকট দিয়ে দাও। সে বলল, আমার নিকট কোন পত্র নেই। আমরা তখন তার উটটিকে বসিয়ে তার তল্লাশী করলাম। কিন্তু পত্রখানা বের করতে পারলাম না। আমরা বললাম, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিথ্যা বলেননি। তোমাকে চিঠি বের করতেই হবে। নতুবা আমরা তোমাকে উলঙ্গ করে ছাড়ব। যখন আমাদের শক্ত মনোভাব বুঝতে পারল তখন স্ত্রীলোকটি তার কোমরের পরিহিত বস্ত্রের গিঁটে কাপড়ের পুঁটুলির মধ্য থেকে চিঠিখানা বের করে দিল। আমরা তা নিয়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলাম। ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! সে তো আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল এবং মু’মিনদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দিই। তখন নবী [হাতিব ইব্নু আবূ বালতা (রাঃ) কে ডেকে] বললেন, তোমাকে এ কাজ করতে কিসে বাধ্য করল? হাতিব (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র কসম! আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের প্রতি আমি অবিশ্বাসী নই। বরং আমার মূল উদ্দেশ্য হল শত্রু দলের প্রতি কিছু অনুগ্রহ করা যাতে আল্লাহ্ এ উসিলায় আমার মাল এবং পরিবার ও পরিজনকে রক্ষা করেন। আর আপনার সাহাবীদের প্রত্যেকেরই কোন না কোন আত্মীয় সেখানে রয়েছে, যার দ্বারা আল্লাহ্ তার ধন-মাল ও পরিজনকে রক্ষা করছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে ঠিক কথাই বলেছে। সুতরাং তোমরা তার সম্পর্কে ভাল ব্যতীত আর কিছু বলো না। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, সে তো আল্লাহ্, তাঁর রসূল ও মু’মিনদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সুতরাং আপনি আমাকে ছেড়ে দিন, আমি তাঁর গর্দান উড়িয়ে দেই। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে কি বাদ্রী সাহাবী নয়? অবশ্যই বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদেরকে বুঝে শুনেই আল্লাহ্ বলেছেনঃ “তোমাদের যা ইচ্ছে কর” তোমাদের জন্য জান্নাত অবধারিত অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি। এতে ‘উমার (রাঃ)-এর দু’নয়ন অশ্রু সিক্ত হয়ে উঠল। তিনি বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলই সবচেয়ে অধিক জ্ঞাত। [৭]
[৩০০৭] (আ.প্র. ৩৬৮৯, ই.ফা. ৩৬৯১)
[৭] হাতিব (রাঃ) ছিলেন বাদ্রী সাহাবী। তথাপি তিনি যেটি করেছিলেন তা গুপ্তচরবৃত্তি হিসেবে করেননি বরং তিনি মনে করছিলেন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অকস্মাৎ মাক্কাহ্ আক্রমণ করলে তার পরিবার পরিজনকে তারা হত্যা করতে পারে এবং তার সহায় সম্পদের ক্ষতি করতে পারে। এমন অনেকেরই পরিবার সেখানে ছিল যাদের এরূপ ক্ষতি হতে পারে যাদেরকে আশ্রয় দেয়ার মতো কোন একটি পরিবারও মাক্কাহ্তে ছিল না। হাদীসটি হতে যা প্রমানিত হয়ঃ
(১) আল্লাহ্র নাবীর মু’জিযাহ,
(২) তাঁর কথার উপর সাহাবীদের অগাধ বিশ্বাস,
(৩) প্রতিপক্ষকে জিজ্ঞেস না করে কোন বিষয় মন্তব্য না করা,
(৪) কাউকে মুরতাদ মনে করলেও দায়িত্বশীলের অনুমতি ছাড়া তাকে হত্যা না করা,
(৫) বাদ্রী সাহাবীর ফাযীলাত,
(৬) অন্যায়ের বিরুদ্ধে ‘উমার (রাঃ)-এর কঠোরতা,
(৭) আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ফায়সালাই চূড়ান্ত,
(৮) নিজের ভুল বুঝার পড়ে অনুতপ্ত হওয়া।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/১০. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই
৩৯৮৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ حَدَّثَنَا أَبُوْ أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْغَسِيْلِ عَنْ حَمْزَةَ بْنِ أَبِيْ أُسَيْدٍ وَالزُّبَيْرِ بْنِ الْمُنْذِرِ بْنِ أَبِيْ أُسَيْدٍ عَنْ أَبِيْ أُسَيْدٍ قَالَ قَالَ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ بَدْرٍ إِذَا أَكْثَبُوْكُمْ فَارْمُوْهُمْ وَاسْتَبْقُوْا نَبْلَكُمْ
আবূ উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বলেছিলেন, দুশমনরা তোমাদের নিকটবর্তী হলে তোমরা তীর চালনা করবে এবং তীর ব্যবহারে সংযম অবলম্বন করবে।
[২৯০০] (আ.প্র. ৩৬৯০, ই.ফা. ৩৬৯২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮৫
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أَحْمَدَ الزُّبَيْرِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْغَسِيْلِ عَنْ حَمْزَةَ بْنِ أَبِيْ أُسَيْدٍ وَالْمُنْذِرِ بْنِ أَبِيْ أُسَيْدٍ عَنْ أَبِيْ أُسَيْدٍ قَالَ قَالَ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ بَدْرٍ إِذَا أَكْثَبُوْكُمْ يَعْنِيْ كَثَرُوْكُمْ فَارْمُوْهُمْ وَاسْتَبْقُوْا نَبْلَكُمْ
আবূ উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, তারা তোমাদের নিকটবর্তী হলে তাদের প্রতি তীর চালনা করবে এবং তীর ব্যবহারে সংযম অবলম্বন করবে।
[২৯০০] (আ.প্র. ৩৬৯০, ই.ফা. ৩৬৯৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮৬
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ قَالَ جَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الرُّمَاةِ يَوْمَ أُحُدٍ عَبْدَ اللهِ بْنَ جُبَيْرٍ فَأَصَابُوْا مِنَّا سَبْعِيْنَ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ أَصَابُوْا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ يَوْمَ بَدْرٍ أَرْبَعِيْنَ وَمِائَةً سَبْعِيْنَ أَسِيْرًا وَسَبْعِيْنَ قَتِيْلًا قَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ يَوْمٌ بِيَوْمِ بَدْرٍ وَالْحَرْبُ سِجَالٌ
বারাআ ইব্নু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উহূদ যুদ্ধের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ ইব্নু যুবায়রকে তীরন্দাজ বাহিনীর নেতা নিযুক্ত করেছিলেন। তারা (মুশরিকরা) আমাদের সত্তর জনকে শহীদ করে দেয়। বদর যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তার সাহাবীগণ মুশরিকদের একশ চল্লিশ জনকে নিহত ও গ্রেফতার করে ফেলেছিলেন। যাদের সত্তর জন বন্দী হয়েছিল এবং সত্তর জন নিহত হয়েছিল। আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ) [৮] বললেন, আজকের দিন বাদ্রের বদলা। যুদ্ধ কূপের বালতির মত যাতে হাত বদল হয়।
[৩০৩৯] (আ.প্র. ৩৬৯১, ই.ফা. ৩৬৯৪)
[৮] আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ) উহূদ যুদ্ধের সময় কাফিরদের পক্ষাবলম্বন করে যুদ্ধ করেছিলেন কারণ তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন মাক্কাহ্ বিজয়ের সময়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮৭
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدٍ عَنْ جَدِّهِ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى أُرَاهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَإِذَا الْخَيْرُ مَا جَاءَ اللهُ بِهِ مِنَ الْخَيْرِ بَعْدُ وَثَوَابُ الصِّدْقِ الَّذِيْ آتَانَا بَعْدَ يَوْمِ بَدْرٍ
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি স্বপ্নে [৯] যে কল্যাণ দেখেছিলাম সে তো ঐ কল্যাণ যা পরবর্তী সময়ে আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদেরকে দান করেছেন। আর উত্তম প্রতিদান বিষয়ে যা দেখেছিলাম তা তো আল্লাহ্ আমাদেরকে দান করেছেন বদর যুদ্ধের পর।
[৩৬২২] (আ.প্র. ৩৬৯২, ই.ফা. ৩৬৯৫)
[৯] একদা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বপ্নে কতক গরু কুরবানী করতে দেখেন এবং ইঙ্গিত লাভ করেন কতকগুলো কল্যাণকর বিষয়ের। তিনি গরু কুরবানী করাকে উহূদ যুদ্ধে মুসলিমদের শাহাদাত লাভ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেন এবং দ্বিতীয় বাদ্রের পর মুসলিমগণ যে ঈমানী শক্তি লাভ করেছিলেন সেটিকে তিনি স্বপ্নে দেখা কল্যাণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮৮
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ إِنِّيْ لَفِي الصَّفِّ يَوْمَ بَدْرٍ إِذْ الْتَفَتُّ فَإِذَا عَنْ يَمِيْنِيْ وَعَنْ يَسَارِيْ فَتَيَانِ حَدِيْثَا السِّنِّ فَكَأَنِّيْ لَمْ آمَنْ بِمَكَانِهِمَا إِذْ قَالَ لِيْ أَحَدُهُمَا سِرًّا مِنْ صَاحِبِهِ يَا عَمِّ أَرِنِيْ أَبَا جَهْلٍ فَقُلْتُ يَا ابْنَ أَخِيْ وَمَا تَصْنَعُ بِهِ قَالَ عَاهَدْتُ اللهَ إِنْ رَأَيْتُهُ أَنْ أَقْتُلَهُ أَوْ أَمُوْتَ دُوْنَهُ فَقَالَ لِي الآخَرُ سِرًّا مِنْ صَاحِبِهِ مِثْلَهُ قَالَ فَمَا سَرَّنِيْ أَنِّيْ بَيْنَ رَجُلَيْنِ مَكَانَهُمَا فَأَشَرْتُ لَهُمَا إِلَيْهِ فَشَدَّا عَلَيْهِ مِثْلَ الصَّقْرَيْنِ حَتَّى ضَرَبَاهُ وَهُمَا ابْنَا عَفْرَاءَ
‘আবদুর রাহমান ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, বাদ্রের দিন সৈনিক সারিতে দাঁড়িয়ে আমি এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখলাম, আমার ডানে ও বামে কম বয়সের দু’জন যুবক তাদের মত অল্প বয়স্ক দু’জন যুবকের পাশে আমি নিজেকে নিরাপদ বোধ করছিলাম না। এমতাবস্থায় তাদের একজন তার সঙ্গী থেকে লুকিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল চাচাজী, আবূ জাহ্ল কোনটি আমাকে দেখিয়ে দিন? আমি বললাম, ভাতিজা, তা দিয়ে তুমি কী করবে? সে বলল, আমি আল্লাহ্র সঙ্গে অঙ্গীকার করেছি, তাকে দেখলে তাকে হত্যা করব অন্যথায় নিজেই শহীদ হয়ে যাব। এরপর দ্বিতীয় যুবকটিও তাঁর সঙ্গী থেকে লুকিয়ে আমাকে এভাবেই জিজ্ঞেস করল। আমি এত সন্তুষ্ট হলাম যে, দু’জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মাঝে আমি ততটুকু সন্তুষ্ট হতাম না। এরঃপর আমি তাদের দু’জনকে ইশারায় আবূ জাহ্লকে দেখিয়ে দিলাম। তখন তারা বাজ পাখির তীব্রতায় তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে তাকে আঘাত করল। এরা হল ‘আফরার দু‘পুত্র।
[৩১৪১] (আ.প্র. ৩৬৯৩, ই.ফা. ৩৬৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৮৯
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُمَرُ بْنُ أَسِيْدِ بْنِ جَارِيَةَ الثَّقَفِيُّ حَلِيْفُ بَنِيْ زُهْرَةَ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ بَعَثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَشَرَةً عَيْنًا وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ عَاصِمَ بْنَ ثَابِتٍ الْأَنْصَارِيَّ جَدَّ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ حَتَّى إِذَا كَانُوْا بِالْهَدَةِ بَيْنَ عَسْفَانَ وَمَكَّةَ ذُكِرُوْا لِحَيٍّ مِنْ هُذَيْلٍ يُقَالُ لَهُمْ بَنُوْ لِحْيَانَ فَنَفَرُوْا لَهُمْ بِقَرِيْبٍ مِنْ مِائَةِ رَجُلٍ رَامٍ فَاقْتَصُّوْا آثَارَهُمْ حَتَّى وَجَدُوْا مَأْكَلَهُمْ التَّمْرَ فِيْ مَنْزِلٍ نَزَلُوْهُ فَقَالُوْا تَمْرُ يَثْرِبَ فَاتَّبَعُوْا آثَارَهُمْ فَلَمَّا حَسَّ بِهِمْ عَاصِمٌ وَأَصْحَابُهُ لَجَئُوْا إِلَى مَوْضِعٍ فَأَحَاطَ بِهِمُ الْقَوْمُ فَقَالُوْا لَهُمْ انْزِلُوْا فَأَعْطُوْا بِأَيْدِيْكُمْ وَلَكُمُ الْعَهْدُ وَالْمِيْثَاقُ أَنْ لَا نَقْتُلَ مِنْكُمْ أَحَدًا فَقَالَ عَاصِمُ بْنُ ثَابِتٍ أَيُّهَا الْقَوْمُ أَمَّا أَنَا فَلَا أَنْزِلُ فِيْ ذِمَّةِ كَافِرٍ ثُمَّ قَالَ اللهُمَّ أَخْبِرْ عَنَّا نَبِيَّكَ صلى الله عليه وسلم فَرَمَوْهُمْ بِالنَّبْلِ فَقَتَلُوْا عَاصِمًا وَنَزَلَ إِلَيْهِمْ ثَلَاثَةُ نَفَرٍ عَلَى الْعَهْدِ وَالْمِيْثَاقِ مِنْهُمْ خُبَيْبٌ وَزَيْدُ بْنُ الدَّثِنَةِ وَرَجُلٌ آخَرُ فَلَمَّا اسْتَمْكَنُوْا مِنْهُمْ أَطْلَقُوْا أَوْتَارَ قِسِيِّهِمْ فَرَبَطُوْهُمْ بِهَا.
قَالَ الرَّجُلُ الثَّالِثُ هَذَا أَوَّلُ الْغَدْرِ وَاللهِ لَا أَصْحَبُكُمْ إِنَّ لِيْ بِهَؤُلَاءِ أُسْوَةً يُرِيْدُ الْقَتْلَى فَجَرَّرُوْهُ وَعَالَجُوْهُ فَأَبَى أَنْ يَصْحَبَهُمْ فَانْطُلِقَ بِخُبَيْبٍ وَزَيْدِ بْنِ الدَّثِنَةِ حَتَّى بَاعُوْهُمَا بَعْدَ وَقْعَةِ بَدْرٍ فَابْتَاعَ بَنُو الْحَارِثِ بْنِ عَامِرِ بْنِ نَوْفَلٍ خُبَيْبًا وَكَانَ خُبَيْبٌ هُوَ قَتَلَ الْحَارِثَ بْنَ عَامِرٍ يَوْمَ بَدْرٍ فَلَبِثَ خُبَيْبٌ عِنْدَهُمْ أَسِيْرًا حَتَّى أَجْمَعُوْا قَتْلَهُ فَاسْتَعَارَ مِنْ بَعْضِ بَنَاتِ الْحَارِثِ مُوْسًى يَسْتَحِدُّ بِهَا فَأَعَارَتْهُ فَدَرَجَ بُنَيٌّ لَهَا وَهِيَ غَافِلَةٌ حَتَّى أَتَاهُ فَوَجَدَتْهُ مُجْلِسَهُ عَلَى فَخِذِهِ وَالْمُوْسَى بِيَدِهِ قَالَتْ فَفَزِعْتُ فَزْعَةً عَرَفَهَا خُبَيْبٌ فَقَالَ أَتَخْشَيْنَ أَنْ أَقْتُلَهُ مَا كُنْتُ لِأَفْعَلَ ذَلِكَ قَالَتْ وَاللهِ مَا رَأَيْتُ أَسِيْرًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ خُبَيْبٍ وَاللهِ لَقَدْ وَجَدْتُهُ يَوْمًا يَأْكُلُ قِطْفًا مِنْ عِنَبٍ فِيْ يَدِهِ وَإِنَّهُ لَمُوْثَقٌ بِالْحَدِيْدِ وَمَا بِمَكَّةَ مِنْ ثَمَرَةٍ وَكَانَتْ تَقُوْلُ إِنَّهُ لَرِزْقٌ رَزَقَهُ اللهُ خُبَيْبًا فَلَمَّا خَرَجُوْا بِهِ مِنَ الْحَرَمِ لِيَقْتُلُوْهُ فِي الْحِلِّ قَالَ لَهُمْ خُبَيْبٌ دَعُوْنِيْ أُصَلِّيْ رَكْعَتَيْنِ فَتَرَكُوْهُ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ فَقَالَ وَاللهِ لَوْلَا أَنْ تَحْسِبُوْا أَنَّ مَا بِيْ جَزَعٌ لَزِدْتُ ثُمَّ قَالَ اللهُمَّ أَحْصِهِمْ عَدَدًا وَاقْتُلْهُمْ بَدَدًا وَلَا تُبْقِ مِنْهُمْ أَحَدًا ثُمَّ أَنْشَأَ يَقُوْلُ :
فَـلَسـْتُ أُبَـالِيْ حِيْنَ أُقْتَـلُ مُسْـلِـمًا عَـلَـى أَيِّ جَـنْـبٍ كَـانَ لِلهِ مَـصْـرَعِـي
وَذَلِـكَ فِيْ ذَاتِ الإِلَـهِ وَإِنْ يَـشَــأْ يُـبَـارِكْ عَـلَـى أَوْصَـالِ شِـلْـوٍ مُـمَـزَّعِ
ثُمَّ قَامَ إِلَيْهِ أَبُوْ سِرْوَعَةَ عُقْبَةُ بْنُ الْحَارِثِ فَقَتَلَهُ وَكَانَ خُبَيْبٌ هُوَ سَنَّ لِكُلِّ مُسْلِمٍ قُتِلَ صَبْرًا الصَّلَاةَ وَأَخْبَرَ أَصْحَابَهُ يَوْمَ أُصِيْبُوْا خَبَرَهُمْ وَبَعَثَ نَاسٌ مِنْ قُرَيْشٍ إِلَى عَاصِمِ بْنِ ثَابِتٍ حِيْنَ حُدِّثُوْا أَنَّهُ قُتِلَ أَنْ يُؤْتَوْا بِشَيْءٍ مِنْهُ يُعْرَفُ وَكَانَ قَتَلَ رَجُلًا عَظِيْمًا مِنْ عُظَمَائِهِمْ فَبَعَثَ اللهُ لِعَاصِمٍ مِثْلَ الظُّلَّةِ مِنْ الدَّبْرِ فَحَمَتْهُ مِنْ رُسُلِهِمْ فَلَمْ يَقْدِرُوْا أَنْ يَقْطَعُوْا مِنْهُ شَيْئًا وَقَالَ كَعْبُ بْنُ مَالِكٍ ذَكَرُوْا مَرَارَةَ بْنَ الرَّبِيْعِ الْعَمْرِيَّ وَهِلَالَ بْنَ أُمَيَّةَ الْوَاقِفِيَّ رَجُلَيْنِ صَالِحَيْنِ قَدْ شَهِدَا بَدْرًا
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইব্নু ‘উমার ইব্নু খাত্তাবের নাতি আসিম ইব্নু সাবিত আনসারীর পরিচালনায় দশজন সাহাবীর একটি দল গোয়েন্দা কাজের জন্য পাঠালেন। তাঁরা উসফান ও মক্কার মধ্যবর্তী স্থান হান্দায় পৌঁছলে হুযাইল গোত্রের একটি শাখা বানু লিহয়ানকে তাদের আগমনের কারণ সম্পর্কে জানানো হয়। (এ সংবাদ শুনে) তারা প্রায় একশ’ জন তীরন্দাজ প্রস্তুত হয়ে মুসলিমদের বিপক্ষে যুদ্ধ করার জন্য রওয়ানা হয়ে তাদের পদচিহ্ন ধরে পথ চলতে আরম্ভ করে। যেতে যেতে তারা এমন জায়গায় পৌঁছে যায় যেখানে অবস্থান করে সাহাবীগণ খেজুর খেয়েছিলেন। তা দেখে বানু লিহ্য়ানের লোকেরা ইয়াসরিবের খেজুর বলে তাদের পদচিহ্ন অনুসরণ করে তাদেরকে খুঁজতে লাগল। আসিম ও তাঁর সঙ্গীগণ তাদের আগমন সম্পর্কে বুঝতে পেরে একটি স্থানে গিয়ে আশ্রয় নেন। লিহয়ান কাওমের লোকেরা তাদেরকে ঘিরে ফেলে। তারপর তারা মুসলিমদেরকে নিচে নেমে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে বলল, তোমাদেরকে ওয়াদা দিচ্ছি, আমরা তোমাদের কাউকে হত্যা করব না। তখন আসিম ইব্নু সাবিত (রাঃ) বললেন, হে আমার সাথী ভ্রাতৃবৃন্দ! কাফিরের নিরাপত্তায় আশ্বস্ত হয়ে আমি কখনো নিচে নামবো না। তারপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ্! আমাদের খবর আপনার নাবীকে জানিয়ে দিন। এরপর তারা মুসলিমদের প্রতি তীর ছুঁড়তে শুরু করল এবং ‘আসিমকে (ছয়জন সহ) শহীদ করে ফেলল। বাকী তিনজন, খুবায়ব, যায়দ ইব্নু দাসিনা এবং অপর একজন তাদের ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করে তাদের নিকট নেমে আসলেন। শত্রুগণ তাঁদেরকে পরাস্ত করে নিজেদের ধনুকের রশি খুলে তা দিয়ে তাদেরকে বেঁধে ফেলল। এ দেখে তৃতীয়জন বললেন, এটাই প্রথম বিশ্বাসঘাতকতা। আল্লাহ্র কসম, আমি তোমাদের সঙ্গে যাব না, আমার জন্য শহীদ সঙ্গীদের আদর্শই অনুসরণীয়। অর্থাৎ আমিও শহীদ হয়ে যাব। তারা তাকে বহু টানা হেচড়া করল। কিন্তু তিনি তাদের সঙ্গে যেতে অস্বীকার করলেন। (তারা তাঁকে শহীদ করে দিল) এরপর খুবায়ব এবং যায়িদ ইব্নু দাসিনাকে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে বিক্রি করে দিল। এটা ছিল বদর যুদ্ধের পরের ঘটনা। বদর যুদ্ধে খুবায়ব যেহেতু হারিস ইব্নু আমিরকে হত্যা করেছিলেন। তাই (বদলা নেয়ার জন্য) হারিস ইব্নু আমির ইব্নু নাওফিলের পুত্রগণ তাঁকে ক্রয় করে নিল। খুবায়ব তাদের নিকট বন্দী অবস্থায় কাটাতে লাগলেন। এরপর তারা সবাই তাকে হত্যা করার দৃঢ় সংকল্প করল। তিনি হারিসের কোন এক কন্যার নিকট থেকে ক্ষৌরকর্মের জন্য একটি ক্ষুর চেয়ে নিলেন। হারিসের কন্যার অসতর্ক অবস্থায় তার একটি ছোট বাচ্চা খুবাইবের কাছে গিয়ে পৌঁছল। হারিসের কন্যা দেখতে পেল খুবায়র তার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে রানের উপর বসিয়ে ক্ষুরখানা হাতে ধরে আছেন। হারিসের কন্যা বর্ণনা করেছে, আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়লাম, খুবায়ব তা বুঝতে পারলেন, তিনি বললেন, আমি শিশুটিকে মেরে ফেলব বলে তুমি কি ভয় পেয়েছ? আমি কখনো এমন কাজ করব না। সে আরো বলেছে, আল্লাহ্র কসম! আমি খুবায়বের মত উত্তম বন্দী আর কখনো দেখিনি। আল্লাহ্র কসম একদিন আমি তাকে আঙ্গুরের গুচ্ছ হাতে নিয়ে আঙ্গুর খেতে দেখেছি। অথচ সে লোহার শিকলে বাঁধা ছিল এবং সে সময় মক্কায় কোন ফলই ছিল না। হারিসের কন্যা বলত, ঐ আঙ্গুরগুলো আল্লাহ্ তা‘আলা খুবায়বকে রিয্কস্বরূপ দান করেছিলেন। অবশেষে একদিন তারা খুবায়বকে হত্যা করার জন্য যখন হারামের সীমানার বাইরে নিয়ে গেল তখন খুবায়ব (রাঃ) তাদেরকে বললেন, আমাকে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করার সুযোগ দাও, তারা সুযোগ দিলে তিনি দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করে বললেন, আল্লাহ্র কসম। আমি মৃত্যু ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছি, তোমরা এ কথা না ভাবলে আমি সালাত আরো দীর্ঘায়িত করতাম। এরপর তিনি এ বলে দু’আ করলেন, হে আল্লাহ্! তাদেরকে এক এক করে গুণে রাখ, তাদেরকে বিক্ষিপ্তভাবে হত্যা কর এবং তাদের একজনকেও বাকী রেখ না। এরপর তিনি আবৃত্তি করলেনঃ
“আমি যখন মুসলিম হয়ে মৃত্যুর সৌভাগ্য লাভ করেছি, তাই আমার কোনই ভয় নেই।
আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যে কোন অবস্থাতেই আমার মৃত্যু হোক।
তা যেহেতু একমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্যই,
তাই তিনি ইচ্ছে করলে আমার প্রতিটি কর্তিত অঙ্গে বারাকাত প্রদান করতে পারেন।”
এরপর হারিসের পুত্র আবূ সারুআ ‘উকবাহ তাঁর দিকে দাঁড়াল এবং তাঁকে শহীদ করে দিল। এভাবেই খুবায়ব (রাঃ) সে সব মুসলিমের জন্য দু’ রাক’আত সলাতের সুন্নত চালু করে গেলেন যারা ধৈর্যের সঙ্গে শাহাদাত বরণ করেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐদিনই সাহাবীদেরকে জানিয়েছিলেন যে দিন তাঁরা শত্রু বেষ্টিত হয়ে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। কুরাইশদের নিকট আসিম (রাঃ)-এর নিহত হওয়ার খবর পৌছলে তারা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আসিমের শরীরের কোন অঙ্গ কেটে আনার জন্য কতক কুরাইশ কাফিরকে প্রেরণ করল। যেহেতু (বাদ্রের দিন) আসিম ইব্নু সাবিত তাদের একজন বড় নেতাকে হত্যা করেছিলেন। এদিকে আল্লাহ্ ‘আসিমের লাশকে হিফাযাত করার জন্য মেঘের মত এক ঝাঁক মৌমাছি পাঠিয়ে দিলেন। মৌমাছিগুলো আসিম (রাঃ)-এর লাশকে শত্রু সেনাদের হাত থেকে রক্ষা করল। ফলে তারা তাঁর দেহের কোন অঙ্গ কেটে নিতে পারল না। কা‘ব ইব্নু মালিক (রাঃ) বলেন, মুরারাহ ইব্নু রাবী‘ আল ‘উমারী এবং হিলাল ইব্নু ‘উমাইয়াহ আল ওয়াকিফী [১০] সম্পর্কে লোকেরা বলেছেন যে, তাঁরা দু’জনই আল্লাহ্র নেক বান্দা ছিলেন এবং দু’জনই বদর যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন।
[৩০৪৫] (আ.প্র. ৩৬৯৪, ই.ফা. ৩৬৯৭)
[১০] এ দু’জন বাদ্রী সাহাবী ছিলেন। তহাপিও তারা বিনা ওযরে তাবূক যুদ্ধে অংশ নেয়া হতে বিরত ছিলেন। ফলে আল্লাহ্র নির্দেশে তাদেরকে কিছুদিনের জন্য বয়কট করা হয়। অতঃপর তারা খালিসভাবে আল্লাহ্র নিকট তওবা করলে আল্লাহ্ তা‘আলা তা কবূল করেন এবং তারা পুনরায় মুসলিমদের সাথে স্বাভাবিক জীবন শুরু করেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯০
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ ذُكِرَ لَهُ أَنَّ سَعِيْدَ بْنَ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ وَكَانَ بَدْرِيًّا مَرِضَ فِيْ يَوْمِ جُمُعَةٍ فَرَكِبَ إِلَيْهِ بَعْدَ أَنْ تَعَالَى النَّهَارُ وَاقْتَرَبَتْ الْجُمُعَةُ وَتَرَكَ الْجُمُعَةَ
নাফি‘ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সা’ঈদ ইব্নু ‘আমর ইব্নু নুফায়ল (রাঃ) ছিলেন বদর যুদ্ধে যোগদানকারী একজন সাহাবী। তিনি জুমু‘আহ্র দিন অসুস্থ হয়ে পড়লে ইব্নু ‘উমারের নিকট জুমু‘আহ্র দিন এ খবর পৌঁছলে তিনি সাওয়ারীর পিঠে আরোহণ করে তাঁকে দেখতে গেলেন। তখন বেলা হয়ে গেছে এবং জুমু‘আহ্র সলাতের সময়ও ঘনিয়ে আসছে দেখে তিনি জুমু‘আহ্র সালাত ছেড়ে দিলেন।
(আ.প্র. ৩৬৯৫, ই.ফা. ৩৬৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯১
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ أَبَاهُ كَتَبَ إِلَى عُمَرَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْأَرْقَمِ الزُّهْرِيِّ يَأْمُرُهُ أَنْ يَدْخُلَ عَلَى سُبَيْعَةَ بِنْتِ الْحَارِثِ الْأَسْلَمِيَّةِ فَيَسْأَلَهَا عَنْ حَدِيْثِهَا وَعَنْ مَا قَالَ لَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ اسْتَفْتَتْهُ فَكَتَبَ عُمَرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْأَرْقَمِ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ يُخْبِرُهُ أَنَّ سُبَيْعَةَ بِنْتَ الْحَارِثِ أَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا كَانَتْ تَحْتَ سَعْدِ بْنِ خَوْلَةَ وَهُوَ مِنْ بَنِيْ عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ وَكَانَ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا فَتُوُفِّيَ عَنْهَا فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ وَهِيَ حَامِلٌ فَلَمْ تَنْشَبْ أَنْ وَضَعَتْ حَمْلَهَا بَعْدَ وَفَاتِهِ فَلَمَّا تَعَلَّتْ مِنْ نِفَاسِهَا تَجَمَّلَتْ لِلْخُطَّابِ فَدَخَلَ عَلَيْهَا أَبُو السَّنَابِلِ بْنُ بَعْكَكٍ رَجُلٌ مِنْ بَنِيْ عَبْدِ الدَّارِ فَقَالَ لَهَا مَا لِيْ أَرَاكِ تَجَمَّلْتِ لِلْخُطَّابِ تُرَجِّيْنَ النِّكَاحَ فَإِنَّكِ وَاللهِ مَا أَنْتِ بِنَاكِحٍ حَتَّى تَمُرَّ عَلَيْكِ أَرْبَعَةُ أَشْهُرٍ وَعَشْرٌ قَالَتْ سُبَيْعَةُ فَلَمَّا قَالَ لِيْ ذَلِكَ جَمَعْتُ عَلَيَّ ثِيَابِيْ حِيْنَ أَمْسَيْتُ وَأَتَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ فَأَفْتَانِيْ بِأَنِّيْ قَدْ حَلَلْتُ حِيْنَ وَضَعْتُ حَمْلِيْ وَأَمَرَنِيْ بِالتَّزَوُّجِ إِنْ بَدَا لِيْ تَابَعَهُ أَصْبَغُ عَنْ ابْنِ وَهْبٍ عَنْ يُوْنُسَ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ وَسَأَلْنَاهُ فَقَالَ أَخْبَرَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ ثَوْبَانَ مَوْلَى بَنِيْ عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ أَنَّ مُحَمَّدَ بْنَ إِيَاسِ بْنِ الْبُكَيْرِ وَكَانَ أَبُوْهُ شَهِدَ بَدْرًا أَخْبَرَهُ
‘উবাইদুল্লাহ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উতবাহ থেকে বর্ণিতঃ
তার পিতা ‘উমার ইব্নু ‘আবদুল্লাহ ইব্নু আরকাম আয যুহরী সুবাই‘আহ বিনত হারিস আসলামিয়্যা (রাঃ) এর কাছে গিয়ে তার ঘটনা ও (গর্ভবতী মহিলার ইদ্দত সম্পর্কে) তার প্রশ্নের উত্তরে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে যা বলেছিলেন সে সম্পর্কে পত্র মারফত জিজ্ঞেস করে জানতে আদেশ করলেন। এরপর ইব্নু ‘আবদুল্লাহ ইব্নু আরকাম (রাঃ) ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উতবাহ্কে লিখে জানালেন যে, সুবাই‘আহ বিনতুল হাসির তাকে জানিয়েছেন যে, তিনি বানু আমির ইব্নু লুয়াই গোত্রের সাদ ইব্নু খাওলার স্ত্রী ছিলেন, সা‘দ (রাঃ) বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ছিলেন। তিনি বিদায় হাজ্জের বছর মারা যান। তখন তার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন। তার ইন্তিকালের কিছুদিন পরেই তিনি সন্তান প্রসব করলেন। এরপর নিফাস থেকে পবিত্র হয়েই তিনি বিবাহের পয়গাম দাতাদের উদ্দেশ্যে সাজসজ্জা আরম্ভ করলেন। এ সময় আবদুদ্দার গোত্রের আবুস সানাবিল ইব্নু বা’কাক নামক এক ব্যক্তি তাকে গিয়ে বললেন, কী ব্যাপার, আমি তোমাকে দেখছি যে, তুমি বিবাহের আশায় পয়গাম দাতাদের উদ্দেশ্যে সাজসজ্জা আরম্ভ করে দিয়েছ? আল্লাহ্র কসম! চার মাস দশদিন অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে তুমি বিবাহ করতে পারবে না। সুবাই‘আহ (রাঃ) বলেন, (আবুস সানাবিল আমাকে) এ কথা বলার পর আমি ঠিকঠাক মত কাপড় চোপড় পরিধান করে বিকেল বেলা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলাম এবং এ সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন, যখন আমি সন্তান প্রসব করেছি তখন থেকেই আমি হালাল হয়ে গেছি। এরপর তিনি আমাকে বিয়ে করার নির্দেশ দিলেন যদি আমার ইচ্ছে হয়। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, আসবাগ…. ইউনুসের সূত্রে লায়সের মতই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। লায়স (রহঃ) বলেছেন, ইউনুস আমার নিকট ইব্নু শিহাব থেকে বর্ণনা করেছেন। ইব্নু শিহাব (রহঃ) বলেন, বানু আমির ইব্নু লুয়াই গোত্রের আযাদকৃত গোলাম মুহাম্মাদ ইব্নু আবদুর রহমান ইব্নু সাওবান আমাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, বদর যুদ্ধে যোগদানকারী মুহাম্মাদ ইব্নু ইয়াস ইব্নু বুকায়র-এর পিতা তাকে জানিছেন। [৫৩১৯; মুসলিম ১৮/৮, হাঃ ১৪৮৪] (আ.প্র. ৩৬৯৫, ই.ফা. ৩৬৯৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/১১. অধ্যায়ঃ
বাদ্র যুদ্ধে মালায়িকাহ্র যোগদান
৩৯৯২
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ أَخْبَرَنَا جَرِيْرٌ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ مُعَاذِ بْنِ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ الزُّرَقِيِّ عَنْ أَبِيْهِ وَكَانَ أَبُوْهُ مِنْ أَهْلِ بَدْرٍ قَالَ جَاءَ جِبْرِيْلُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا تَعُدُّوْنَ أَهْلَ بَدْرٍ فِيْكُمْ قَالَ مِنْ أَفْضَلِ الْمُسْلِمِيْنَ أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا قَالَ وَكَذَلِكَ مَنْ شَهِدَ بَدْرًا مِنَ الْمَلَائِكَةِ
মু‘আয বিন রিফাআ‘ ইব্নু রাফি ‘যুরাকী (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তার পিতা বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদের একজন। তিনি বলেন, একদা জিব্রীল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, আপনারা বদর যুদ্ধে যোগদানকারী মুসলিমদরকে কিরুপ গণ্য করেন? তিনি বললেন, তারা সর্বোত্তম মুসলিম অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) এরূপ কোন শব্দ তিনি বলেছিলেন। জিব্রীল (আঃ) বললেন, মালায়িকাদের মধ্যে বদর যুদ্ধে যোগদানকারীগনও তেমনি মর্যাদার অধিকারী।
[৩৯৯৪] (আ.প্র. ৩৬৯৬, ই.ফা. ৩৬৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৩
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ مُعَاذِ بْنِ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ وَكَانَ رِفَاعَةُ مِنْ أَهْلِ بَدْرٍ وَكَانَ رَافِعٌ مِنْ أَهْلِ الْعَقَبَةِ فَكَانَ يَقُوْلُ لِابْنِهِ مَا يَسُرُّنِيْ أَنِّيْ شَهِدْتُ بَدْرًا بِالْعَقَبَةِ قَالَ سَأَلَ جِبْرِيْلُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ أَخْبَرَنَا يَزِيْدُ أَخْبَرَنَا يَحْيَى سَمِعَ مُعَاذَ بْنَ رِفَاعَةَ أَنَّ مَلَكًا سَأَلَ النَّبِيَّ نَحْوَهُ وَعَنْ يَحْيَى أَنَّ يَزِيْدَ بْنَ الْهَادِ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ كَانَ مَعَهُ يَوْمَ حَدَّثَهُ مُعَاذٌ هَذَا الْحَدِيْثَ فَقَالَ يَزِيْدُ فَقَالَ مُعَاذٌ إِنَّ السَّائِلَ هُوَ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَام
মু‘আয ইব্নু রিফাআ‘ ইব্নু রাফি‘ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রিফাআ‘ (রাঃ) ছিলেন বদর যুদ্ধে যোগদানকারী একজন সাহাবী আর রাফি‘ (রাঃ) ছিলেন বায়‘আতে আকাবায় উপস্থিত একজন সাহাবী। রাফি‘ (রাঃ) তার পুত্র (রিফাআ‘)-কে বলতেন, বায়‘আতে ‘আকাবায় শরীক থাকার চেয়ে বদর যুদ্ধে হাজির থাকা আমার কাছে অধিক আনন্দের বিষয় বলে মনে হয় না। কেননা জিব্রীল (আঃ) এ বিষয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন।
(আ.প্র. ৩৬৯৭, ই.ফা. ৩৭০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৪
দুঃখিত! আরবী অংশ এখনো সংযুক্ত করা হয়নি।
মু‘আয ইব্নু রিফাআ‘ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একজন মালাইকা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। (ভিন্ন সনদে) ইয়াহ্ইয়া হতে বর্ণিত যে, ইয়াযীদ ইবনুল হাদ (রহঃ) তাকে জানিয়েছেন যে, যেদিন মু‘আয (রাঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছিলেন সেদিন আমি তার কাছেই ছিলাম। ইয়াযীদ বলেছেন, মু‘আয (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, প্রশ্নকারী ফেরেশ্তা হলেন জিব্রীল (আঃ)।
[৩৯৯২] (আ.প্র. ৩৬৯৮, ই.ফা. ৩৭০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৫
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَوْمَ بَدْرٍ هَذَا جِبْرِيْلُ آخِذٌ بِرَأْسِ فَرَسِهِ عَلَيْهِ أَدَاةُ الْحَرْبِ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বাদ্রের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এই তো জিবরীল (আঃ) সমর সাজে সজ্জিত হয়ে অশ্বের মস্তক হস্তে ধারণ করে আছে।
[৪০৪১] (আ.প্র. ৩৬৯৯, ই.ফা. ৩৭০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/১২. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই
৩৯৯৬
خَلِيْفَةُ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ مَاتَ أَبُوْ زَيْدٍ وَلَمْ يَتْرُكْ عَقِبًا وَكَانَ بَدْرِيًّا
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আবূ যায়দ (রাঃ) মারা যান। তিনি কোন সন্তানাদি ছেড়ে যাননি। তিনি ছিলেন বাদ্রী সাহাবী।
[৩৮১০] (আ.প্র. হাদীস নেই, ই.ফা. ৩৭০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ خَبَّابٍ أَنَّ أَبَا سَعِيْدِ بْنَ مَالِكٍ الْخُدْرِيَّ قَدِمَ مِنْ سَفَرٍ فَقَدَّمَ إِلَيْهِ أَهْلُهُ لَحْمًا مِنْ لُحُوْمِ الْأَضْحَى فَقَالَ مَا أَنَا بِآكِلِهِ حَتَّى أَسْأَلَ فَانْطَلَقَ إِلَى أَخِيْهِ لِأُمِّهِ وَكَانَ بَدْرِيًّا قَتَادَةَ بْنِ النُّعْمَانِ فَسَأَلَهُ فَقَالَ إِنَّهُ حَدَثَ بَعْدَكَ أَمْرٌ نَقْضٌ لِمَا كَانُوْا يُنْهَوْنَ عَنْهُ مِنْ أَكْلِ لُحُوْمِ الْأَضْحَى بَعْدَ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ
ইব্নু খব্বাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ সা‘ঈদ ইব্নু মালিক খুদ্রী (রাঃ) সফর থেকে গৃহে প্রত্যাবর্তনের পর তার পরিবারের লোকেরা তাঁকে কুরবানীর গোশ্ত থেকে কিছু গোশ্ত খেতে দিলেন। তিনি বললেন, আমি জিজ্ঞেস না করে এ গোশ্ত খেতে পারি না। তারপর তিনি তার মায়ের গর্ভজাত ভ্রাতা কাতাদাহ ইব্নু নু’মানের কাছে গিয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি ছিলেন একজন বাদ্রী সাহাবী। তখন তিনি তাকে বললেন, তিন দিন পর কুরবানীর গোশ্ত খাওয়ার ক্ষেত্রে তোমাদের প্রতি যে নিষেধাজ্ঞা ছিল পরে তা পুরোপুরিভাবে রহিত করে দেয়া হয়েছে।
[৫৫৬৮] (আ.প্র. ৩৭০০, ই.ফা. ৩৭০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৮
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ قَالَ الزُّبَيْرُ لَقِيْتُ يَوْمَ بَدْرٍ عُبَيْدَةَ بْنَ سَعِيْدِ بْنِ الْعَاصِ وَهُوَ مُدَجَّجٌ لَا يُرَى مِنْهُ إِلَّا عَيْنَاهُ وَهُوَ يُكْنَى أَبُوْ ذَاتِ الْكَرِشِ فَقَالَ أَنَا أَبُوْ ذَاتِ الْكَرِشِ فَحَمَلْتُ عَلَيْهِ بِالْعَنَزَةِ فَطَعَنْتُهُ فِيْ عَيْنِهِ فَمَاتَ قَالَ هِشَامٌ فَأُخْبِرْتُ أَنَّ الزُّبَيْرَ قَالَ لَقَدْ وَضَعْتُ رِجْلِيْ عَلَيْهِ ثُمَّ تَمَطَّأْتُ فَكَانَ الْجَهْدَ أَنْ نَزَعْتُهَا وَقَدْ انْثَنَى طَرَفَاهَا قَالَ عُرْوَةُ فَسَأَلَهُ إِيَّاهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَعْطَاهُ فَلَمَّا قُبِضَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخَذَهَا ثُمَّ طَلَبَهَا أَبُوْ بَكْرٍ فَأَعْطَاهُ فَلَمَّا قُبِضَ أَبُوْ بَكْرٍ سَأَلَهَا إِيَّاهُ عُمَرُ فَأَعْطَاهُ إِيَّاهَا فَلَمَّا قُبِضَ عُمَرُ أَخَذَهَا ثُمَّ طَلَبَهَا عُثْمَانُ مِنْهُ فَأَعْطَاهُ إِيَّاهَا فَلَمَّا قُتِلَ عُثْمَانُ وَقَعَتْ عِنْدَ آلِ عَلِيٍّ فَطَلَبَهَا عَبْدُ اللهِ بْنُ الزُّبَيْرِ فَكَانَتْ عِنْدَهُ حَتَّى قُتِلَ
‘উরওয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যুবায়র (রাঃ) বলেছেন, বাদ্রের দিন আমি ‘উবাইদাহ ইব্নু সা‘ঈদ ইব্নু আস (রাঃ) কে এমনভাবে বস্ত্রাবৃত দেখলাম যে, তার দু’চোখ ব্যতীত আর কোন কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। তাকে আবূ যাতুল কারিশ বলে ডাকা হত। সে বলল, আমি আবূ যাতুল কারিশ। (তা শুনে) বর্শা দিয়ে আমি তার উপর হামলা চালালাম এবং তার চোখ ফুঁড়ে দিলাম। সে তক্ষুণি মারা গেল। হিশাম বলেন, আমাকে জানানো হয়েছে যে, যুবায়র (রাঃ) বলেছেন, ‘উবাইদাহ ইব্নু সা‘ঈদ ইব্নু আসের লাশের উপর পা রেখে বেশ শক্তি খাটিয়ে আমি বর্শাটি টেনে বের করলাম। এতে বর্শার দু’ প্রান্তভাগ বাঁকা হয়ে যায়। ‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুবায়র নিকট বর্শাটি চাইলে তিনি তা তাঁকে দিয়ে দেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর পর তিনি তা নিয়ে যান এবং পরে আবূ বকর (রাঃ) তা চাইলে তিনি তাকে বর্শাটি দিয়ে দেন। আবূ বাক্রের মৃত্যুর পর ‘উমার (রাঃ) তা চাইলেন। তিনি তাকে বর্শাটি দিয়ে দিলেন। কিন্তু ‘উমারের মৃত্যুর পর যুবায়র (রাঃ) পুনরায় বর্শাটি নিয়ে যান। এরপর ‘উসমান (রাঃ) তার নিকট বর্শাখানা চাইলে তিনি ‘উসমানকে তা দিয়ে দেন। তবে ‘উসমানের শাহাদাতের পর তা ‘আলীর লোকজনের হাতে যাওয়ার পর ‘আবদুল্লাহ ইব্নু যুবায়র (রাঃ) তা চেয়ে নিয়ে যান। অতঃপর শহীদ হওয়া পর্যন্ত বর্শাটি তাঁর নিকটই বিদ্যমান ছিল।
(আ.প্র. ৩৭০১, ই.ফা. ৩৭০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৩৯৯৯
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ إِدْرِيْسَ عَائِذُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ وَكَانَ شَهِدَ بَدْرًا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَايِعُوْنِي
আবূ ইদরীস ‘আয়িযুল্লাহ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উবাদাহ ইব্নু সামিত (রাঃ)- যিনি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন- বর্ণনা করেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমার হাতে বায়‘আত গ্রহণ কর।
[১৮] (আ.প্র. ৩৭০২, ই.ফা. ৩৭০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০০
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ أَبَا حُذَيْفَةَ وَكَانَ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَبَنَّى سَالِمًا وَأَنْكَحَهُ بِنْتَ أَخِيْهِ هِنْدَ بِنْتَ الْوَلِيْدِ بْنِ عُتْبَةَ وَهُوَ مَوْلًى لِامْرَأَةٍ مِنَ الْأَنْصَارِ كَمَا تَبَنَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم زَيْدًا وَكَانَ مَنْ تَبَنَّى رَجُلًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ دَعَاهُ النَّاسُ إِلَيْهِ وَوَرِثَ مِنْ مِيْرَاثِهِ حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {ادْعُوْهُمْ لِآبَآئِهِمْ} فَجَاءَتْ سَهْلَةُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ الْحَدِيْثَ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বদর যুদ্ধে যোগদানকারী সহাবী আবূ হুযাইফাহ (রাঃ) এক আনসারী মহিলার আযাদকৃত গোলাম সালিমকে পালকপুত্র গ্রহণ করেন, যেমন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়দকে পালকপুত্র গ্রহণ করেছিলেন এবং তিনি তাকে তার ভ্রাতুস্পুত্রী হিন্দা বিন্তে ওয়ালীদ ইবনু উতবার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন। জাহিলীয়্যাতের যুগে কেউ পালকপুত্র গ্রহণ করলে লোকেরা তাকে পালনকারীর প্রতিই সম্বোধন করত এবং সে তার ছেড়ে যাওয়া সম্পদের উত্তরাধিকারী হত। অবশেষে আল্লাহ্ তা‘আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেন, {ادْعُوْهُمْ لِآبَآئِهِمْ} অর্থাৎ ‘‘তোমরা তাদেরকে ডাক তাদের পিতার পরিচয়ে।’’ এরপর (আবূ হুযাইফাহর স্ত্রী সাহলাহ নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে হাদীসে বর্ণিত ঘটনা বর্ণনা করলেন।
[৫০৮৮] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭০৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০১
عَلِيٌّ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ ذَكْوَانَ عَنْ الرُّبَيِّعِ بِنْتِ مُعَوِّذٍ قَالَتْ دَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلمغَدَاةَ بُنِيَ عَلَيَّ فَجَلَسَ عَلَى فِرَاشِيْ كَمَجْلِسِكَ مِنِّيْ وَجُوَيْرِيَاتٌ يَضْرِبْنَ بِالدُّفِّ يَنْدُبْنَ مَنْ قُتِلَ مِنْ آبَائِهِنَّ يَوْمَ بَدْرٍ حَتَّى قَالَتْ جَارِيَةٌ وَفِيْنَا نَبِيٌّ يَعْلَمُ مَا فِيْ غَدٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَا تَقُوْلِيْ هَكَذَا وَقُوْلِيْ مَا كُنْتِ تَقُوْلِيْنَ
রুবায়ই বিন্তু মু‘আওয়িয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমার বাসর রাতের পরদিন সকালে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট এলেন এবং তুমি (খালিদ ইব্নু যাকওয়ান) যেমন আমার কাছে বসে আছ ঠিক সেভাবে আমার পাশে আমার বিছানায় এসে বসলেন। তখন কয়েকজন ছোট বালিকা দুফ্ [১১] বাজিয়ে বাদ্রে নিহত শহীদ পিতাদের প্রশংসা গীতি আবৃত্তি করছিল। শেষে একটি বালিকা বলে উঠল, আমাদের মাঝে এমন একজন নবী আছেন, যিনি জানেন, আগামীকাল কী হবে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এমন কথা বলবে না, বরং আগে যা বলেছিলে তাই বল।
[৫১৪৭] (আ.প্র. ৩৭০৪, ইফা. ৩৭০৮)
[১১] একমুখ খোলা অপর প্রান্তে চামড়া লাগানো তবলাকে দুফ্ বলা হয়, বিবাহ ও ‘ঈদের দিন আনন্দ প্রকাশের জন্য তা বাজিয়ে নাবালিকা মেয়েদের আপত্তিকর কথা বিবর্জিত গীত গাওয়া নিঃসন্দেহে বৈধ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০২
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ ح حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَخِيْ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِيْ عَتِيْقٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ طَلْحَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ صَاحِبُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ قَدْ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيْهِ كَلْبٌ وَلَا صُوْرَةٌ يُرِيْدُ التَّمَاثِيْلَ الَّتِيْ فِيْهَا الْأَرْوَاحُ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বাদ্রে যোগদানকারী সাহাবী আবূ ত্বল্হা (রাঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ঘরে কুকুর কিংবা ছবি [১২] থাকে সে ঘরে (রাহমাতের) মালাক প্রবেশ করেন না। ইব্নু ‘আব্বাসের মতে ছবির অর্থ প্রাণীর ছবি।
[৩২২৫] (আ.প্র. ৩৭০৫, ই.ফা. ৩৭০৯)
[১২] অত্র হাদীস দ্বারা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হচ্ছে যে, যে বাড়ীতে কুকুর পালা হয় কিংবা যে ঘরে কোন প্রাণীর ছবি থাকে সেখানে রহমাতের মালাক প্রবেশ করে না। শুধুমাত্র শিকারী কুকুর পোষা জায়িয তবে তাকে বাড়ির বাইরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে যেন সে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ না করে। ঘরের মধ্যে বিভিন্ন প্রাণীর ছবি তা মূর্তি বা পুতুল হোক কিংবা ঘরের বাথরুমের দেয়ালে অংকণ করা হোক তা রাখা হচ্ছে অবৈধ কাজ। ছবি বা মূর্তির ব্যবসা সন্দেহাতীতভাবে হারাম, তা মসুলিমদের কাছে বিক্রির জন্য হোক আর কাফিরদের নিকট বিক্রির জন্য হোক। যারা কাফিরদের অনুসরণ করে নিজেদেরকে আধুনিক হিসেবে জাহির করার জন্য এহেন জঘন্য ও নোংরা কাজ করে তারা মূলত আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল এবং তাদের নির্দেশের প্রতি ধৃষ্টতা প্রদর্শন করে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০৩
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُوْنُسُ ح و حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ أَنَّ حُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ عَلَيْهِمْ السَّلَام أَخْبَرَهُ أَنَّ عَلِيًّا قَالَ كَانَتْ لِيْ شَارِفٌ مِنْ نَصِيْبِيْ مِنَ الْمَغْنَمِ يَوْمَ بَدْرٍ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَعْطَانِيْ مِمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَيْهِ مِنَ الْخُمُسِ يَوْمَئِذٍ فَلَمَّا أَرَدْتُ أَنْ أَبْتَنِيَ بِفَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَام بِنْتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَاعَدْتُ رَجُلًا صَوَّاغًا فِيْ بَنِيْ قَيْنُقَاعَ أَنْ يَرْتَحِلَ مَعِيْ فَنَأْتِيَ بِإِذْخِرٍ فَأَرَدْتُ أَنْ أَبِيْعَهُ مِنْ الصَّوَّاغِيْنَ فَنَسْتَعِيْنَ بِهِ فِيْ وَلِيْمَةِ عُرْسِيْ فَبَيْنَا أَنَا أَجْمَعُ لِشَارِفَيَّ مِنَ الْأَقْتَابِ وَالْغَرَائِرِ وَالْحِبَالِ وَشَارِفَايَ مُنَاخَانِ إِلَى جَنْبِ حُجْرَةِ رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ حَتَّى جَمَعْتُ مَا جَمَعْتُ فَإِذَا أَنَا بِشَارِفَيَّ قَدْ أُجِبَّتْ أَسْنِمَتُهَا وَبُقِرَتْ خَوَاصِرُهُمَا وَأُخِذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا فَلَمْ أَمْلِكْ عَيْنَيَّ حِيْنَ رَأَيْتُ الْمَنْظَرَ قُلْتُ مَنْ فَعَلَ هَذَا قَالُوْا فَعَلَهُ حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَهُوَ فِيْ هَذَا الْبَيْتِ فِيْ شَرْبٍ مِنَ الْأَنْصَارِ عِنْدَهُ قَيْنَةٌ وَأَصْحَابُهُ فَقَالَتْ فِيْ غِنَائِهَا.
أَلَا يَا حَمْزُ لِلشُّرُفِ النِّوَاءِ فَوَثَبَ حَمْزَةُ إِلَى السَّيْفِ فَأَجَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا وَأَخَذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا قَالَ عَلِيٌّ فَانْطَلَقْتُ حَتَّى أَدْخُلَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدَهُ زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ وَعَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الَّذِيْ لَقِيْتُ فَقَالَ مَا لَكَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ عَدَا حَمْزَةُ عَلَى نَاقَتَيَّ فَأَجَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا وَهَا هُوَ ذَا فِيْ بَيْتٍ مَعَهُ شَرْبٌ فَدَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِرِدَائِهِ فَارْتَدَى ثُمَّ انْطَلَقَ يَمْشِيْ وَاتَّبَعْتُهُ أَنَا وَزَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ حَتَّى جَاءَ الْبَيْتَ الَّذِيْ فِيْهِ حَمْزَةُ فَاسْتَأْذَنَ عَلَيْهِ فَأُذِنَ لَهُ فَطَفِقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَلُوْمُ حَمْزَةَ فِيْمَا فَعَلَ فَإِذَا حَمْزَةُ ثَمِلٌ مُحْمَرَّةٌ عَيْنَاهُ فَنَظَرَ حَمْزَةُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى رُكْبَتِهِ ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى وَجْهِهِ ثُمَّ قَالَ حَمْزَةُ وَهَلْ أَنْتُمْ إِلَّا عَبِيْدٌ لِأَبِيْ فَعَرَفَ النَّبِيُّ أَنَّهُ ثَمِلٌ فَنَكَصَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى عَقِبَيْهِ الْقَهْقَرَى فَخَرَجَ وَخَرَجْنَا مَعَهُ
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বদর দিনের গানীমাতের মাল থেকে আমার ভাগে আমি একটি উট পেয়েছিলাম। ‘ফায়’ থেকে প্রাপ্ত এক পঞ্চমাংশ থেকেও সেদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে একটি উট দান করেন। আমি যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা ফাতিমার সঙ্গে বাসর রাত যাপন করার ইচ্ছে করলাম এবং বানু কায়নুকা গোত্রের একজন ইয়াহূদী স্বর্ণকারকে ঠিক করলাম যেন সে আমার সঙ্গে যায়। আমরা ইয্খির ঘাস সংগ্রহ করে নিয়ে আসব। অতঃপর সেই ঘাস স্বর্ণকারদের নিকট বিক্রি করে তা আমি আমার বিয়ের ওয়ালিমায় খরচ করার ইচ্ছে করেছিলাম। আমি আমার উট দু’টোর জন্য গদি, বস্তা এবং দড়ির ব্যবস্থা করছিলাম আর উট দু’টো এক আনসারীর ঘরের পাশে বসানো ছিল। আমার যা কিছু জোগাড় করার তা জোগাড় করে এনে দেখলাম উট দু’টির চূড়া কেটে দেয়া হয়েছে এবং সে দু’টির বুক ফেড়ে কলিজা বের করে নেয়া হয়েছে। এ দৃশ্য দেখে আমি আমার অশ্রু সংবরণ করতে পারলাম না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কাজ কে করেছে? তারা বললেন, আবদুল মুত্তালিবের পুত্র হামযা এ কাজ করেছেন। এখন তিনি এ ঘরে আনসারদের কিছু মদ্যপায়ীদের সঙ্গে মদপান করছেন। সেখানে আছে একদল গায়িকা ও কতিপয় সঙ্গী সাথী। গায়িকা ও তার সঙ্গীগণ গানের মধ্যে বলেছিল, “হে হামযা! মোটা উট দু’টির প্রতি ঝাঁপিয়ে পড়।’’
একথা শুনে হামযায় দৌড়িয়ে গিয়ে তলোয়ার হাতে নিল এবং উট দু’টির চূড়া দু’টো কেটে নিল আর তাদের পেট ফেড়ে কলিজা বের করে নিয়ে আসল। ‘আলী (রাঃ) বলেন, তখন আমি পথ চলতে চলতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট চলে গেলাম। তখন তাঁর নিকট যায়দ ইব্নু হারিসাহ (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন। আমি যে বিপদের সম্মুখীন হয়েছি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা বুঝে ফেলেছেন। তিনি বললেন, তোমার কী হয়েছে? আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আজকের মত কষ্টদায়ক ঘটনা আমি কখনো দেখিনি। হামযা আমার উট দু’টোর উপর খুব যুলুম করেছেন, তিনি উট দু’টোর চূড়া কেটে ফেলেছেন এবং বুক ফেড়ে দিয়েছেন। এখন তিনি একটি ঘরে একদল মদ পানকারীর সঙ্গে আছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাদরখানা চেয়ে নিলেন এবং তা গায়ে দিয়ে হেঁটে চললেন। (‘আলী বলেন) এরপর আমি এবং যায়দ ইব্নু হারিসাহ (রাঃ) তাঁর পেছনে চললাম। (হাঁটতে হাঁটতে) তিনি যে ঘরে হামযা অবস্থান করছিলেন সে ঘরের কাছে পৌছে তার নিকট অনুমতি চাইলেন। তাঁকে অনুমতি দেয়া হলে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হামযাকে তার কর্মের জন্য ভর্ৎসনা করতে শুরু করলেন। হামযাহ তখন নেশাগ্রস্ত। [১৩] চোখ দু’টো তার লাল। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দিকে তাকালেন এবং দৃষ্টি উপর উঠিয়ে তারপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাঁটুর দিকে তাকালেন। এরপর দৃষ্টি আরো একটু উপর দিকে উঠিয়ে তিনি তাঁর চেহারার প্রতি তাকালেন। এরপর হামযা বললেন, তোমরা তো আমার পিতার দাস। (শুনে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বুঝলেন যে, তিনি এখন নেশাগ্রস্ত। তাই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পিছনের দিকে হটে বেরিয়ে পড়লেন, আমরাও তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম।
[২০৮৯] (আ.প্র. ৩৭০৬, ই.ফা. ৩৭১১)
[১৩] মদ হারাম হবার পূর্বে এ ঘটনা ঘটেছিল। মদ হারাম হয়ে যাবার পর কোন সাহাবী কখনো মদ পান করেননি বরং পরিপূর্ণভাবে বর্জন করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০৪
مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ قَالَ أَنْفَذَهُ لَنَا ابْنُ الْأَصْبَهَانِيِّ سَمِعَهُ مِنْ ابْنِ مَعْقِلٍ أَنَّ عَلِيًّا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ كَبَّرَ عَلَى سَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ فَقَالَ إِنَّهُ شَهِدَ بَدْرًا.
ইব্নু মা‘কিল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(তিনি বলেছেন) ‘আলী (রাঃ) সাহল ইব্নু হুনায়ফের (জানাযার সলাতে) তাকবীর উচ্চারণ করলেন এবং বললেন, তিনি (সাহল ইব্নু হুনায়ফ) বদর যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন।
(আ.প্র. ৩৭০৭, ই.ফা. ৩৭১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০৫
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يُحَدِّثُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ حِيْنَ تَأَيَّمَتْ حَفْصَةُ بِنْتُ عُمَرَ مِنْ خُنَيْسِ بْنِ حُذَافَةَ السَّهْمِيِّ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ شَهِدَ بَدْرًا تُوُفِّيَ بِالْمَدِيْنَةِ قَالَ عُمَرُ فَلَقِيْتُ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ فَعَرَضْتُ عَلَيْهِ حَفْصَةَ فَقُلْتُ إِنْ شِئْتَ أَنْكَحْتُكَ حَفْصَةَ بِنْتَ عُمَرَ قَالَ سَأَنْظُرُ فِيْ أَمْرِيْ فَلَبِثْتُ لَيَالِيَ فَقَالَ قَدْ بَدَا لِيْ أَنْ لَا أَتَزَوَّجَ يَوْمِيْ هَذَا قَالَ عُمَرُ فَلَقِيْتُ أَبَا بَكْرٍ فَقُلْتُ إِنْ شِئْتَ أَنْكَحْتُكَ حَفْصَةَ بِنْتَ عُمَرَ فَصَمَتَ أَبُوْ بَكْرٍ فَلَمْ يَرْجِعْ إِلَيَّ شَيْئًا فَكُنْتُ عَلَيْهِ أَوْجَدَ مِنِّيْ عَلَى عُثْمَانَ فَلَبِثْتُ لَيَالِيَ ثُمَّ خَطَبَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَنْكَحْتُهَا إِيَّاهُ فَلَقِيَنِيْ أَبُوْ بَكْرٍ فَقَالَ لَعَلَّكَ وَجَدْتَ عَلَيَّ حِيْنَ عَرَضْتَ عَلَيَّ حَفْصَةَ فَلَمْ أَرْجِعْ إِلَيْكَ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَإِنَّهُ لَمْ يَمْنَعْنِيْ أَنْ أَرْجِعَ إِلَيْكَ فِيْمَا عَرَضْتَ إِلَّا أَنِّيْ قَدْ عَلِمْتُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ ذَكَرَهَا فَلَمْ أَكُنْ لِأُفْشِيَ سِرَّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَوْ تَرَكَهَا لَقَبِلْتُهَا
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উমার ইব্নু খাত্তাবের কন্যা হাফসাহ্র স্বামী খুনায়স ইব্নু হুযাইফাহ সাহ্মী (রাঃ) যিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবী ছিলেন এবং বদর যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, মদিনায় ইন্তিকাল করলে হাফসাহ (রাঃ) বিধবা হয়ে পড়লেন। ‘উমার (রাঃ) বলেন, তখন আমি ‘উসমান ইব্নু আফফানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁর নিকট হাফসাহ্র কথা উল্লেখ করে তাঁকে বললাম, আপনি ইচ্ছা করলে আমি আপনার সঙ্গে ‘উমারের মেয়ে হাফসাহ্র বিয়ে দিয়ে দেব। ‘উসমান (রাঃ) বললেন, ব্যাপারটি আমি একটু চিন্তা করে দেখি। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি কয়েকদিন অপেক্ষা করলাম। পরে ‘উসমান (রাঃ) বললেন, আমার স্পষ্ট মতামত যে, এ সময় আমি বিয়ে করব না। ‘উমার (রাঃ) বলেন, এরপর আমি আবূ বাক্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁকে বললাম, আপনি ইচ্ছা করলে ‘উমারের কন্যা হাফসাকে আমি আপনার নিকট বিয়ে দিয়ে দেব। আবূ বকর (রাঃ) চুপ করে রইলেন, কোন জবাব দিলেন না। এতে আমি ‘উসমানের চেয়েও অধিক দুঃখ পেলাম। এরপর আমি কয়েকদিন চুপ করে থাকলাম, এই অবস্থায় হাফসার জন্য রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেই প্রস্তাব দিলেন। আমি তাঁকে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিলাম। এরপর আবূ বকর (রাঃ) আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললেন, আমার সঙ্গে হাফসার বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার পর আমি আপনাকে কোন উত্তর না দেয়ার কারণে সম্ভবত আপনি মনোকষ্ট পেয়েছেন। আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আপনার প্রস্তাবের জবাব দিতে একটি জিনিসই আমাকে বাধা দিয়েছিল আর তা হ’ল এই যে, আমি জানতাম, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেই হাফসাহ (রাঃ)-এর সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন, তাই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর গোপনীয় বিষয়টি প্রকাশ করার আমার ইচ্ছে ছিল না। যদি তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে গ্রহণ না করতেন, তাঁকে অবশ্যই আমি গ্রহণ করতাম। [৫১২২, ৫১২৯, ৫১৪৫] (আ.প্র. ৩৭০৮, ই.ফা. ৩৭১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০৬
مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَدِيٍّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ يَزِيْدَ سَمِعَ أَبَا مَسْعُوْدٍ الْبَدْرِيَّ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَفَقَةُ الرَّجُلِ عَلَى أَهْلِهِ صَدَقَةٌ
আবূ মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ বদরী সহাবী আবূ মাস‘উদ (রাঃ)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করতে শুনেছেন, তিনি বলেন, স্বীয় আহলের (পরিবার পরিজনের) জন্য ব্যয় করাও সদাক্বাহ। [৫৫]
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭০৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০৭
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ سَمِعْتُ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ يُحَدِّثُ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيْزِ فِيْ إِمَارَتِهِ أَخَّرَ الْمُغِيْرَةُ بْنُ شُعْبَةَ الْعَصْرَ وَهُوَ أَمِيْرُ الْكُوْفَةِ فَدَخَلَ عَلَيْهِ أَبُوْ مَسْعُوْدٍ عُقْبَةُ بْنُ عامِرٍ الْأَنْصَارِيُّ جَدُّ زَيْدِ بْنِ حَسَنٍ شَهِدَ بَدْرًا فَقَالَ لَقَدْ عَلِمْتَ نَزَلَ جِبْرِيْلُ فَصَلَّى فَصَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَمْسَ صَلَوَاتٍ ثُمَّ قَالَ هَكَذَا أُمِرْتُ كَذَلِكَ كَانَ بَشِيْرُ بْنُ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيْهِ
উরওয়াহ ইব্নু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘উমার ইব্নু ‘আবদুল আযীয (রহঃ) তাঁর খিলাফাত কালের বর্ণনা করেছেন যে, মুগীরাহ ইব্নু শু’বাহ (রাঃ) কুফার আমীর থাকা কালে একদা আসরের সলাত আদায় করতে দেরি করে ফেললে যায়দ ইব্নু হাসানের দাদা বাদ্রী সাহাবী আবূ মাস‘উদ ‘উকবাহ ইব্নু ‘আমির আনসারী (রাঃ) তার নিকট গিয়ে বললেন, আপনি তো জানেন যে, জিব্রীল (আঃ) এসে সালাত আদায় করলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করলেন এবং বললেন, আমি এভাবেই সালাত আদায় করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি। বাশীর ইব্ন আবূ মাস‘উদ তার পিতার নিকট হতে হাদীসটি এভাবেই বর্ণনা করতেন।
[৫২১] (আ.প্র. ৩৭১০, ই.ফা. ৩৭১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০৮
مُوْسَى حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيْدَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ الْبَدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الآيَتَانِ مِنْ آخِرِ سُوْرَةِ الْبَقَرَةِ مَنْ قَرَأَهُمَا فِيْ لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ فَلَقِيْتُ أَبَا مَسْعُوْدٍ وَهُوَ يَطُوْفُ بِالْبَيْتِ فَسَأَلْتُهُ فَحَدَّثَنِيْهِ
বাদ্রী সাহাবী আবূ মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সূরা বাকারার শেষে এমন দু’টি আয়াত রয়েছে যে ব্যক্তি রাতের বেলা আয়াত দু’টি তিলাওয়াত করবে তার জন্য এ আয়াত দু’টোই যথেষ্ট। অর্থাৎ রাত্রে কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করার যে হাক রয়েছে, কমপক্ষে সূরাহ বাকারার শেষ দু’টি আয়াত তেলাওয়াত করলে তার জন্য তা যথেষ্ট। ‘আবদুর রহমান (রহঃ) বলেন, পরে আমি আবূ মাস‘উদের সঙ্গে দেখা করলাম। তখন তিনি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করছিলেন। এ হাদীসটির ব্যাপারে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি সেটা আমার নিকট বর্ণনা করলেন।
[৫০০৮, ৫০০৯, ৫০৪০, ৫০৪১; মুসলিম ৬/৪৩, হাঃ ৮০৭] (আ.প্র. ৩৭১১, ই.ফা. ৩৭১৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০০৯
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِيْ مَحْمُوْدُ بْنُ الرَّبِيْعِ أَنَّ عِتْبَانَ بْنَ مَالِكٍ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا مِنَ الْأَنْصَارِ أَنَّهُ أَتَى رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
ইব্নু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে মাহমূদ ইব্নু রাবী‘ (রহঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, ‘ইতবান ইব্নু মালিক (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আনসারী সাহাবী ছিলেন এবং তিনি বদর যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন। তিনি (একদা) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসেছিলেন।
[৪২৪] (আ.প্র. ৩৭১২, ই.ফা. ৩৭১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১০
أَحْمَدُ هُوَ ابْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ ثُمَّ سَأَلْتُ الْحُصَيْنَ بْنَ مُحَمَّدٍ وَهُوَ أَحَدُ بَنِيْ سَالِمٍ وَهُوَ مِنْ سَرَاتِهِمْ عَنْ حَدِيْثِ مَحْمُوْدِ بْنِ الرَّبِيْعِ عَنْ عِتْبَانَ بْنِ مَالِكٍ فَصَدَّقَهُ
ইব্নু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, আমি বানী সালিম গোত্রের হুসাইন ইব্নু মুহাম্মাদ (রহঃ)-কে ইতবান ইব্নু মালিক থেকে মাহমুদ ইব্নু রাবী এর বর্ণিত হাদীসের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি তার সত্যায়ন করলেন।
[৪২৪] (আ.প্র. ৩৭১৩, ই.ফা. ৩৭১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১১
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَامِرِ بْنِ رَبِيْعَةَ وَكَانَ مِنْ أَكْبَرِ بَنِيْ عَدِيٍّ وَكَانَ أَبُوْهُ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ عُمَرَ اسْتَعْمَلَ قُدَامَةَ بْنَ مَظْعُوْنٍ عَلَى الْبَحْرَيْنِ وَكَانَ شَهِدَ بَدْرًا وَهُوَ خَالُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ وَحَفْصَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আমির ইব্নু রাবী‘আ থেকে বর্ণিতঃ
‘উমার (রাঃ) কুদামাহ ইব্নু মায‘উনকে (রাঃ) বাহ্রাইনের শাসনকর্তা নিয়োগ করেছিলেন। তিনি বদর যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন এবং তিনি ছিলেন ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমার (রাঃ) এবং হাফসাহ (রাঃ)-এর মামা।
(আ.প্র. ৩৭১৪, ই.ফা. ৩৭১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১২
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ عَنْ مَالِكٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَنَّ سَالِمَ بْنَ عَبْدِ اللهِ أَخْبَرَهُ قَالَ أَخْبَرَ رَافِعُ بْنُ خَدِيْجٍ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ أَنَّ عَمَّيْهِ وَكَانَا شَهِدَا بَدْرًا أَخْبَرَاهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ كِرَاءِ الْمَزَارِعِ قُلْتُ لِسَالِمٍ فَتُكْرِيْهَا أَنْتَ قَالَ نَعَمْ إِنَّ رَافِعًا أَكْثَرَ عَلَى نَفْسِهِ
রাফি‘ ইব্নু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমারকে বলেছেন যে, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী তার দু’ চাচা তাকে জানিয়েছেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবাদযোগ্য ভূমি ভাড়া দিতে নিষেধ করেছেন। (বর্ণনাকারী বলেন) আমি সালিমকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি তো এমন জমি ভাড়া দিয়ে থাকেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাফি‘ তো নিজের প্রতি বাড়াবাড়ি করেছেন।
[২৩৩৯, ২৩৪৭] (আ.প্র. ৩৭১৫, ই.ফা. ৩৭১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১৩
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ عَنْ مَالِكٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَنَّ سَالِمَ بْنَ عَبْدِ اللهِ أَخْبَرَهُ قَالَ أَخْبَرَ رَافِعُ بْنُ خَدِيْجٍ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ أَنَّ عَمَّيْهِ وَكَانَا شَهِدَا بَدْرًا أَخْبَرَاهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ كِرَاءِ الْمَزَارِعِ قُلْتُ لِسَالِمٍ فَتُكْرِيْهَا أَنْتَ قَالَ نَعَمْ إِنَّ رَافِعًا أَكْثَرَ عَلَى نَفْسِهِ
রাফি‘ ইব্নু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমারকে বলেছেন যে, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী তার দু’ চাচা তাকে জানিয়েছেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবাদযোগ্য ভূমি ভাড়া দিতে নিষেধ করেছেন। (বর্ণনাকারী বলেন) আমি সালিমকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি তো এমন জমি ভাড়া দিয়ে থাকেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। রাফি‘ তো নিজের প্রতি বাড়াবাড়ি করেছেন।
[২৩৩৯, ২৩৪৭] (আ.প্র. ৩৭১৫, ই.ফা. ৩৭১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১৪
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ حُصَيْنِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ شَدَّادِ بْنِ الْهَادِ اللَّيْثِيَّ قَالَ رَأَيْتُ رِفَاعَةَ بْنَ رَافِعٍ الْأَنْصَارِيَّ وَكَانَ شَهِدَ بَدْرًا
‘আবদুল্লাহ ইব্নু শাদ্দাদ ইব্নু হাদ লায়সী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রিফা‘আ ইব্নু রাফি‘ আনসারী (রাঃ)-কে দেখেছি, তিনি বদর যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন।
(আ.প্র. ৩৭১৬, ই.ফা. ৩৭২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১৫
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ وَيُوْنُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَمْرَو بْنَ عَوْفٍ وَهُوَ حَلِيْفٌ لِبَنِيْ عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ وَكَانَ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ أَبَا عُبَيْدَةَ بْنَ الْجَرَّاحِ إِلَى الْبَحْرَيْنِ يَأْتِيْ بِجِزْيَتِهَا وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هُوَ صَالَحَ أَهْلَ الْبَحْرَيْنِ وَأَمَّرَ عَلَيْهِمُ الْعَلَاءَ بْنَ الْحَضْرَمِيِّ فَقَدِمَ أَبُوْ عُبَيْدَةَ بِمَالٍ مِنَ الْبَحْرَيْنِ فَسَمِعَتْ الْأَنْصَارُ بِقُدُوْمِ أَبِيْ عُبَيْدَةَ فَوَافَوْا صَلَاةَ الْفَجْرِ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا انْصَرَفَ تَعَرَّضُوْا لَهُ فَتَبَسَّمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ رَآهُمْ ثُمَّ قَالَ أَظُنُّكُمْ سَمِعْتُمْ أَنَّ أَبَا عُبَيْدَةَ قَدِمَ بِشَيْءٍ قَالُوْا أَجَلْ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ فَأَبْشِرُوْا وَأَمِّلُوْا مَا يَسُرُّكُمْ فَوَاللهِ مَا الْفَقْرَ أَخْشَى عَلَيْكُمْ وَلَكِنِّيْ أَخْشَى أَنْ تُبْسَطَ عَلَيْكُمْ الدُّنْيَا كَمَا بُسِطَتْ عَلَى مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ فَتَنَافَسُوْهَا كَمَا تَنَافَسُوْهَا وَتُهْلِكَكُمْ كَمَا أَهْلَكَتْهُمْ
‘আমর ইব্নু ‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বদর যুদ্ধে যোগদানকারী সহাবী, বানী আমির ইবনু লুওয়াই গোত্রের বন্ধু ‘আমর ইবনু ‘আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ ‘উবাইদাহ ইবনুল জার্রাহ্কে জিযিয়া আনার জন্য বাহরাইনে প্রেরণ করেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাহ্রাইনবাসীদের সঙ্গে সন্ধি করে ‘আলা ইব্নু হাযরামী (রাঃ)-কে তাদের আমীর নিযুক্ত করেছিলেন। আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ) বাহ্রাইন থেকে মাল নিয়ে এসে পৌছলে আনসারগণ তাঁর আগমনের খবর পেয়ে সকলেই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ফাজ্রের সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে হাজির হলেন। সালাত শেষে পর ফিরে বসলে তাঁরা সকলেই তাঁর সামনে আসলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে দেখে মুচকি হেসে বললেন, আমার মনে হয়, আবূ ‘উবাইদাহ কিছু মাল নিয়ে এসেছে বলে তোমরা শুনতে পেয়েছ। তারা সকলেই বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহ্র রসূল তিনি বললেন, সুসংবাদ গ্রহণ কর এবং তোমাদের আনন্দদায়ক বিষয়ের আশায় থাক, আল্লাহ্র কসম, আমি তোমাদের জন্য দরিদ্রতার আশংকা করি না। বরং আমি আশংকা করি যে, তোমাদের কাছে দুনিয়ার প্রাচুর্য আসবে যেমন তোমাদের পূর্বেকার লোকেদের কাছে এসেছিল, তখন তোমরা সেটা পাওয়ার জন্য পরস্পর প্রতিযোগিতা করবে যেমনভাবে তারা করেছিল। আর তা তাদেরকে যেমনিভাবে ধ্বংস করেছিল তোমাদেরকেও তেমনিভাবে ধ্বংস করে দেবে।
[৩১৫৮] (আ.প্র. ৩৭১৭, ই.ফা. ৩৭২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১৬
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا جَرِيْرُ بْنُ حَازِمٍ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا كَانَ يَقْتُلُ الْحَيَّاتِ كُلَّهَا
নাফি‘ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) সব ধরনের সাপকে হত্যা করতেন।
[৩২৯৭] (আ.প্র. ৩৭১৮, ই.ফা. ৩৭২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১৭
حَتَّى حَدَّثَهُ أَبُوْ لُبَابَةَ الْبَدْرِيُّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ قَتْلِ جِنَّانِ الْبُيُوْتِ فَأَمْسَكَ عَنْهَا
বাদ্রী সাহাবী আবূ লুবাবাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাঁকে (ইব্নু ‘উমার (রাঃ)কে) বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে বসবাসকারী (শ্বেতবর্ণের) ছোট সাপ মারতে নিষেধ করেছেন। এতে তিনি তা মারা থেকে নিবৃত্ত থাকেন।
[৩২৯৮] (আ.প্র. ৩৭১৮, ই.ফা. ৩৭২২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১৮
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُلَيْحٍ عَنْ مُوْسَى بْنِ عُقْبَةَ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّ رِجَالًا مِنَ الْأَنْصَارِ اسْتَأْذَنُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا ائْذَنْ لَنَا فَلْنَتْرُكْ لِابْنِ أُخْتِنَا عَبَّاسٍ فِدَاءَهُ قَالَ وَاللهِ لَا تَذَرُوْنَ مِنْهُ دِرْهَمًا
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
কতিপয় আনসারী সাহাবী রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করলেন। তারা বললেন, আমাদেরকে আমাদের ভাগিনা ‘আব্বাসের [১৪] ফিদ্য়া ক্ষমা করে দেয়ার অনুমতি দিন। তিনি বললেন, আল্লাহ্র কসম! তোমরা তাঁর একটি দিরহামও ক্ষমা করবে না।
[২৫৩৭] (আ.প্র. ৩৭১৯, ই.ফা. ৩৭২৩)
[১৪] বাদ্র যুদ্ধের সময় চাচা ‘আব্বাস কাফির অবস্থায় মুসলিমদের হাতে বন্দী হন। তাদের শক্ত করে সারারাত বেঁধে রাখা হয়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তার প্রতি কোনরূপ সহমর্মিতা দেখাতে না পারলেও রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাচার প্রতি মমত্ববোধের কারণে সারারাত নিদ্রাহীনভাবে কাটিয়ে দেন। সাহাবীগণ তা বুঝতে পেরে তার বন্ধন হালকা করে দেন এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট তার মুক্তিপণ ক্ষমা করে দেয়ার জন্য আবেদন জানান। কিন্তু তিনি স্বজনপ্রীতি না করে অন্যান্য বন্দীদের সমপরিমাণ মুক্তিপণের বিনিময়েই মুক্তি দেয়া হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন।
‘আব্বাসের দাদা কুরাইশ নেতা হাশেম বনী নাজ্জার গোত্রের ‘আমর ইব্নু উহায়হার মেয়ে সালামাকে বিবাহ করেছিলেন। ‘আব্বাসের দাদা হাশিম শাম দেশে বাণিজ্য করতে যাবার সময় মদীনাহ্তে খাযরাজ গোত্রের বানী নাজ্জার গোত্রের ‘আমর ইবনে উহায়হার বাড়িতে অবস্থান করতেন। হাশিমের ‘আমর ইবনে উহায়হার মেয়ে সালামাকে দেখে পছন্দ হলে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ‘আমর ইব্নু উহায়হা এই শর্তে বিবাহে রাযী হন যে, বিবাহের পরও সালামাহ পিতৃগৃহেই অবস্থান করবে। হাশিম প্রস্তাব মেনে নিলে কুরাইশ নেতা হাশিমের সালামাহ বিনতু ‘আমর এর সঙ্গে বিবাহ হয়। এবং এই সালামার গর্ভে থেকেই ‘আব্বাসের পিতা ও আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দাদা ‘আবদুল মুত্তালিবের জন্ম হয়।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০১৯
أَبُوْ عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيْدَ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَدِيٍّ عَنِ الْمِقْدَادِ بْنِ الْأَسْوَدِ ح حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ سَعْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَمِّهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَطَاءُ بْنُ يَزِيْدَ اللَّيْثِيُّ ثُمَّ الْجُنْدَعِيُّ أَنَّ عُبَيْدَ اللهِ بْنَ عَدِيِّ بْنِ الْخِيَارِ أَخْبَرَهُ أَنَّ الْمِقْدَادَ بْنَ عَمْرٍو الْكِنْدِيَّ وَكَانَ حَلِيْفًا لِبَنِيْ زُهْرَةَ وَكَانَ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَهُ أَنَّهُ قَالَ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَرَأَيْتَ إِنْ لَقِيْتُ رَجُلًا مِنَ الْكُفَّارِ فَاقْتَتَلْنَا فَضَرَبَ إِحْدَى يَدَيَّ بِالسَّيْفِ فَقَطَعَهَا ثُمَّ لَاذَ مِنِّيْ بِشَجَرَةٍ فَقَالَ أَسْلَمْتُ لِلهِ أَأَقْتُلُهُ يَا رَسُوْلَ اللهِ بَعْدَ أَنْ قَالَهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَقْتُلْهُ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّهُ قَطَعَ إِحْدَى يَدَيَّ ثُمَّ قَالَ ذَلِكَ بَعْدَ مَا قَطَعَهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلملَا تَقْتُلْهُ فَإِنْ قَتَلْتَهُ فَإِنَّهُ بِمَنْزِلَتِكَ قَبْلَ أَنْ تَقْتُلَهُ وَإِنَّكَ بِمَنْزِلَتِهِ قَبْلَ أَنْ يَقُوْلَ كَلِمَتَهُ الَّتِيْ قَالَ
সাহাবী মিকদাদ ইব্নু ‘আম্র কিনদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাকে বলুন, কোন কাফিরের সঙ্গে আমার যদি (যুদ্ধক্ষেত্রে) সাক্ষাৎ হয় এবং আমি যদি তার সঙ্গে লড়াই করি আর সে যদি তলোয়ারের আঘাতে আমার একখানা হাত কেটে ফেলে এবং তারপর আমার থেকে বাঁচার জন্য গাছের আড়ালে গিয়ে বলে “আমি আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে ইসলাম গ্রহণ করলাম” এ কথা বলার পরেও কি আমি তাকে হত্যা করব? তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাকে হত্যা করবে না। এরপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ্র রসূল! সে তো আমার একখানা হাত কাটার পর এ কথা বলেছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় বললেন, না, তুমি তাকে হত্যা করবে না। কেননা, তুমি তাকে হত্যা করলে হত্যা করার পূর্বে তোমার যে মর্যাদা ছিল সে সেই মর্যাদা লাভ করবে, আর ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেয়ার আগে তার যে স্তর ছিল তুমি সেই স্তরে পৌঁছে যাবে।
[৬৮৬৫] (আ.প্র. ৩৭২০, ই.ফা. ৩৭২৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০২০
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ التَّيْمِيُّ حَدَّثَنَا أَنَسٌ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ بَدْرٍ مَنْ يَنْظُرُ مَا صَنَعَ أَبُوْ جَهْلٍ فَانْطَلَقَ ابْنُ مَسْعُوْدٍ فَوَجَدَهُ قَدْ ضَرَبَهُ ابْنَا عَفْرَاءَ حَتَّى بَرَدَ فَقَالَ آنْتَ أَبَا جَهْلٍ قَالَ ابْنُ عُلَيَّةَ قَالَ سُلَيْمَانُ هَكَذَا قَالَهَا أَنَسٌ قَالَ أَنْتَ أَبَا جَهْلٍ قَالَ وَهَلْ فَوْقَ رَجُلٍ قَتَلْتُمُوْهُ قَالَ سُلَيْمَانُ أَوْ قَالَ قَتَلَهُ قَوْمُهُ قَالَ وَقَالَ أَبُوْ مِجْلَزٍ قَالَ أَبُوْ جَهْلٍ فَلَوْ غَيْرُ أَكَّارٍ قَتَلَنِي
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাদ্রের দিন বললেন, আবূ জাহলের কী অবস্থা কেউ দেখে আসতে পার কি? তখন ‘আবদুল্লাহ ইব্নু মাস‘ঊদ (রাঃ) তার খোঁজে বের হলেন। এবং ‘আফরার দুই ছেলে তাকে আঘাত করে মৃতপ্রায় অবস্থায় ফেলে রেখেছে দেখতে পেলেন। তখন তিনি তাকে বললেন, তুমি কি আবূ জাহ্ল? (আবূ জাহ্ল বলল), একজন লোককে হত্যা ব্যতীত তোমরা তো অধিক কিছু করনি? সুলায়মান বলেন, অথবা সে (আবূ জাহ্ল) বলেছিল, একজন লোককে তার কাওমের লোকেরা হত্যা করেছে? আবূ মিজলায (রাঃ) বলেন, আবূ জাহ্ল বলেছিল, চাষী ব্যতীত অন্য কেউ যদি আমাকে হত্যা করত! [১৫]
[৩৯৬২] (আ.প্র. ৩৭২১, ই.ফা. ৩৭২৫)
[১৫] মাদীনাহবাসীগণ অধিকাংশ কৃষিজীবী ছিলেন। এই কৃষিজীবী আনসারের হাতেই আবূ জাহাল মারা গেলে সে অপমানিত বোধ করে এ উক্তি করেছিলো। অর্থাৎ কৃষিজীবী ব্যতীত অন্য কারো হাতে তার মৃত্যু হলে এতটা অপমান বোধ করতো না।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০২১
مُوْسَى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ لَمَّا تُوُفِّيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ لِأَبِيْ بَكْرٍ انْطَلِقْ بِنَا إِلَى إِخْوَانِنَا مِنَ الْأَنْصَارِ فَلَقِيْنَا مِنْهُمْ رَجُلَانِ صَالِحَانِ شَهِدَا بَدْرًا فَحَدَّثْتُ بِهِ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ فَقَالَ هُمَا عُوَيْمُ بْنُ سَاعِدَةَ وَمَعْنُ بْنُ عَدِيٍّ
‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যখন ওফাত হল তখন আমি আবূ বাক্রকে বললাম, আমাদেরকে আনসার ভাইদের নিকট নিয়ে চলুন। পথে আমরা আনসারদের দু‘জন সৎ ব্যক্তির সাক্ষাৎ পেলাম যারা বদর যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, ‘উরওয়াহ ইব্নু যুবায়রের নিকট এ হাদীসটি বর্ণনা করলে তিনি বলেন, তাঁরা হলেন ‘উরওয়াহ ইব্নু সা‘ঈদাহ এবং মা‘ন ইব্নু ‘আদী (রাঃ)।
[২৪৬২] (আ.প্র. ৩৭২২, ই.ফা. ৩৭২৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০২২
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ سَمِعَ مُحَمَّدَ بْنَ فُضَيْلٍ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ قَيْسٍ كَانَ عَطَاءُ الْبَدْرِيِّيْنَ خَمْسَةَ آلَافٍ خَمْسَةَ آلَافٍ وَقَالَ عُمَرُ لَأُفَضِّلَنَّهُمْ عَلَى مَنْ بَعْدَهُمْ
কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বাদ্র যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের ভাতা পাঁচ হাজার পাঁচ হাজার করে নির্ধারিত ছিল। ‘‘উমার (রাঃ) বলেছেন, অবশ্যই আমি বদর যুদ্ধে শরীক সাহাবীদেরকে পরবর্তী লোকদের হতে অধিক মর্যাদা দেব।
(আ.প্র. ৩৭২৩, ই.ফা. ৩৭২৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০২৩
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الْمَغْرِبِ بِالطُّوْرِ وَذَلِكَ أَوَّلَ مَا وَقَرَ الإِيْمَانُ فِيْ قَلْبِى
যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মাগরিবের সলাতে সূরা তূর পড়তে শুনেছি। এ ঘটনা থেকেই সর্বপ্রথম ঈমান আমার অন্তরে স্থান করে নেয়।
[৭৬৫] (আ.প্র. ৩৭২৪, ই.ফা. ৩৭২৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০২৪
وَعَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فِيْ أُسَارَى بَدْرٍ لَوْ كَانَ الْمُطْعِمُ بْنُ عَدِيٍّ حَيًّا ثُمَّ كَلَّمَنِيْ فِيْ هَؤُلَاءِ النَّتْنَى لَتَرَكْتُهُمْ لَهُ وَقَالَ اللَّيْثُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ وَقَعَتْ الْفِتْنَةُ الْأُوْلَى يَعْنِيْ مَقْتَلَ عُثْمَانَ فَلَمْ تُبْقِ مِنْ أَصْحَابِ بَدْرٍ أَحَدًا ثُمَّ وَقَعَتْ الْفِتْنَةُ الثَّانِيَةُ يَعْنِي الْحَرَّةَ فَلَمْ تُبْقِ مِنْ أَصْحَابِ الْحُدَيْبِيَةِ أَحَدًا ثُمَّ وَقَعَتْ الثَّالِثَةُ فَلَمْ تَرْتَفِعْ وَلِلنَّاسِ طَبَاخٌ
যুহরী (রহঃ) মুহাম্মাদ ইব্নু যুবায়র ইব্নু মুত‘ঈমের মাধ্যমে তার পিতা যুবায়র ইব্নু মুত‘ঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাদ্রের যুদ্ধবন্দীর ব্যাপারে বলেছেন, আজ মুত‘ঈম ইব্নু ‘আদী [১৬] যদি বেঁচে থাকতেন আর এসব অপবিত্র লোকদের সম্পর্কে যদি আমার নিকট সুপারিশ করতেন, তাহলে তার সম্মানে এদেরকে আমি (মুক্তিপণ ব্যতীতই) ছেড়ে দিতাম।
লায়স ইয়াহ্ইয়ার সূত্রে সা‘ঈদ ইব্নু মুসায়্যিব (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, প্রথম ফিত্না অর্থাৎ ‘উসমানের হত্যাকাণ্ড [১৭] সংঘটিত হবার পর বদ্রে যোগদানকারী সাহাবীদের আর কেউ বেঁচে ছিলেন না। দ্বিতীয় ফিত্না তথা হাররার ঘটনা সংঘটিত হবার পর হুদাইবিয়াহ্র সন্ধিকালীন সময়ের কোন সাহাবীই আর জীবিত ছিলেন না। এরপর তৃতীয় ফিত্না সংঘটিত হওয়ার পর তা কখনো শেষ হয়নি, যতদিন মানুষের মধ্যে আক্ল ও সদ গুণাবলী বহাল ছিল।
[৩১৩৯] (আ.প্র. ৩৭২৪, ই.ফা. ৩৭২৮)
[১৬] মুত‘ঈম ইব্নু ‘আদী রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে বিভিন্ন সময় কাফিরদের হাত থেকে নিরাপত্তা দিয়ে সহানুভূতি দেখিয়েছেন। তাই তিনি নিজের মনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেছিলেন, আজ যদি সে জীবিত থাকতো আর অনুরোধ করতো তাহলে তিনি তাদেরকে ছেড়ে দিতেন।
[১৭] মিসরবাসী কতক বিদ্রোহী লোকের দ্বারা উনপঞ্চাশ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর তিনি তাদেরই হাতে শহীদ হন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০২৫
الْحَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ النُّمَيْرِيُّ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ بْنُ يَزِيْدَ قَالَ سَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ قَالَ سَمِعْتُ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ وَسَعِيْدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ وَعَلْقَمَةَ بْنَ وَقَّاصٍ وَعُبَيْدَ اللهِ بْنَ عَبْدِ اللهِ عَنْ حَدِيْثِ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم كُلٌّ حَدَّثَنِيْ طَائِفَةً مِنَ الْحَدِيْثِ قَالَتْ فَأَقْبَلْتُ أَنَا وَأُمُّ مِسْطَحٍ فَعَثَرَتْ أُمُّ مِسْطَحٍ فِيْ مِرْطِهَا فَقَالَتْ تَعِسَ مِسْطَحٌ فَقُلْتُ بِئْسَ مَا قُلْتِ تَسُبِّيْنَ رَجُلًا شَهِدَ بَدْرًا فَذَكَرَ حَدِيْثَ الإِفْكِ
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘উরওয়াহ ইব্নু যুবায়র, সা‘ঈদ ইব্নু মুসায়্যিব, ‘আলক্বামাহ ইব্নু ওয়াক্কাস ও ‘উবায়দুল্লাহ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ্র প্রতি অপবাদের ঘটনা শুনেছি। তারা সকলেই হাদীসটির একটি অংশ আমার নিকট বর্ণনা করেছেন, ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, আমি এবং উম্মু মিসতাহ (প্রাকৃতিক প্রয়োজনে) বের হলাম। তখন উম্মু মিসতাহ তার চাদর পেঁচিয়ে পড়ে গেল। এতে সে বলল, মিসতাহ এর জন্য ধংস। [আয়িশাহ (রাঃ) বলেন] তখন আমি বললাম, আপনি বড় খারাপ কথা বললেন। আপনি বদ্রে শরীক ব্যক্তিকে মন্দ বলেছেন! অতঃপর অপবাদ-এর ঘটনা উল্লেখ করলেন।
[২৫৯৩] (আ.প্র. ৩৭২৫, ই.ফা. ৩৭২৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০২৬
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُلَيْحِ بْنِ سُلَيْمَانَ عَنْ مُوْسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ هَذِهِ مَغَازِيْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ الْحَدِيْثَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُلْقِيْهِمْ هَلْ وَجَدْتُمْ مَا وَعَدَكُمْ رَبُّكُمْ حَقًّا قَالَ مُوْسَى قَالَ نَافِعٌ قَالَ عَبْدُ اللهِ قَالَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ تُنَادِيْ نَاسًا أَمْوَاتًا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَنْتُمْ بِأَسْمَعَ لِمَا قُلْتُ مِنْهُمْ
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ فَجَمِيْعُ مَنْ شَهِدَ بَدْرًا مِنْ قُرَيْشٍ مِمَّنْ ضُرِبَ لَهُ بِسَهْمِهِ أَحَدٌ وَثَمَانُوْنَ رَجُلًا وَكَانَ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ يَقُوْلُ قَالَ الزُّبَيْرُ قُسِمَتْ سُهْمَانُهُمْ فَكَانُوْا مِائَةً وَاللهُ أَعْلَمُ
ইব্নু শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
[তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জিহাদসমূহের বর্ণনা দেয়ার পর] বলেছেন, এগুলোই ছিল রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামরিক অভিযান। এরপর তিনি ঘটনা বর্ণনা করলেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুরাইশ কাফিরদের লাশ কূপে নিক্ষেপ করার সময় বললেন, তোমাদের রব তোমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন তা পেয়েছ তো? মূসা নাফি‘র মাধ্যমে ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, এ সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের থেকে কেউ কেউ বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনি মৃতলোকদের আহ্বান জানাচ্ছেন। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার কথাগুলো তোমরা তাদের থেকে অধিক শুনতে পাচ্ছ না।
আবূ আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, গনীমাত লাভ করেছিলেন, এমন কুরাইশী সাহাবী বদ্রে শরীক ছিলেন তাদের সংখ্যা হল একাশি। [১৮] ‘উরওয়াহ ইব্ন যুবায়র বললেন যে, যুবায়র (রাঃ) বলেছেন (বাদ্রী) কুরাইশী সাহাবীদের অংশগুলো বণ্টন করা হয়েছিল। তাদের সংখ্যা ছিল সর্বমোট একশ’ (আল্লাহ্ই ভাল জানেন)।
[১৩৭০] (আ.প্র. ৩৭২৬, ইফা. ৩৭৩০)
[১৮] এখানে সম্ভবত অশ্বারোহীদের বাদ দিয়ে গণনা করা হয়েছে। কারণ পরেই একশত জনের কথা উল্লেখ আছে। আল্লাহ্ই ভাল জানেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০২৭
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ الزُّبَيْرِ قَالَ ضُرِبَتْ يَوْمَ بَدْرٍ لِلْمُهَاجِرِيْنَ بِمِائَةِ سَهْمٍ
যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, বাদ্রের দিন মুহাজিরদেরকে গানীমাতের একশ’ অংশ দেয়া হয়েছিল।
(আ.প্র. ৩৭২৭, ই.ফা. ৩৭৩১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৬৪/১৩. অধ্যায়ঃ
বাদ্র যুদ্ধ অংশগ্রহণকারী সাহাবীদের নামের তালিকা যা আল-জামে গ্রন্থে (সহীহ বুখারীতে) উল্লেখ রয়েছে
১. নাবী মুহাম্মাদ ইব্নু ‘আবদুল্লাহ হাশিমী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ২. ইয়াস ইব্নু বুকায়র, ৩. আবূ বাক্র কুরাইশীর আযাদকৃত গোলাম বিলাল ইব্নু রাবাহ, ৪. হামযা ইব্নু ‘আবদুল মুত্তালিব আল-হাশিমী, ৫. কুরাইশদের বন্ধু হাতিব ইব্নু আবূ বালতাআ, ৬. আবূ হুযাইফা ইব্নু ‘উত্বাহ ইব্নু রাবী‘আহ কুরাইশী, ৭. হারিসা ইব্নু রাবী‘ আনসারী, যিনি বাদ্র যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন; তাঁকে হারিসা ইব্নু সুরাকা বলা হয়, তিনি দেখার জন্য গিয়েছিলেন। ৮. খুবায়র ইব্নু আদী আনসারী, ৯. খুনায়স ইব্নু হাযাফা সাহমী, ১০. রিফা‘আ ইব্নু রাফি আনসারী, ১১. রিফা‘আ ইব্নু আবদুল মুনযির, ১২. আবূ লুবাবা আনসারী, ১৩. যুবায়র ইবনুল আওয়াম কুরাইশী, ১৪. যায়দ ইব্নু সাহল, ১৫. আবূ ত্বলহা আনসারী, ১৬. আবূ যায়দ আনসারী, ১৭. সা‘দ ইব্নু মালিক যুহরী, ১৮. সা‘দ ইব্নু খাওলা কুরাইশী, ১৯. সা‘ঈদ ইব্নু যায়দ ইব্নু ‘আমর ইব্নু নুফায়ল কুরাইশী, ২০. সাহল ইব্নু হুনাইফ আনসারী, ২১. যুহায়র ইব্নু রাফি‘ আনসারী, ২২. এবং তাঁর ভাই (মুযহির ইব্নু রাফি‘ আনসারী), ২৩. ‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উসমান, ২৪. আবূ বাক্র সিদ্দীক কুরাইশী, ২৫. আবদুল্লাহ ইব্নু মাস‘ঊদ হুযালী, ২৬. ‘উতবাহ ইব্নু মাসঊদ হুযালী, ২৭. ‘আবদুর রাহমান ইব্নু আওফ যুহরী, ২৮. ‘উবাইদাহ ইব্নুল হারিস কুরাইশী, ২৯. উবাদাহ ইব্নু সামিত আনসারী, ৩০. ‘‘উমার ইব্নু খাত্তাব আদাবী, ৩১. ‘উসমান ইব্নু আফ্ফান কুরাইশী, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে তার অসুস্থ কন্যার দেখাশোনার জন্য (মদীনায়) রেখে গিয়েছিলেন। কিন্তু গানীমাতের মালের অংশ তাঁকে দিয়েছিলেন। ৩২. ‘আলী ইব্নু আবী ত্বলিব হাশিমী, ৩৩. ‘আমির ইব্নু লুওয়াই গোত্রের মিত্র ‘আম্র ইব্নু আউফ, ৩৪. ‘উকবাহ ইব্নু ‘আম্র আনসারী, ৩৫. ‘আমির ইব্নু রাবী‘আ আনাযী, ৩৬. ‘আসিম ইব্নু সাবিত আনসারী, ৩৭. উওয়াম ইব্নু সাইদা আনসারী, ৩৮. ‘ইতবান ইব্নু মালিক আনসারী, ৩৯. কুদামাহ ইব্নু মাযউন, ৪০. ক্বাতাদাহ ইব্নু নু‘মান আনসারী, ৪১. মু‘আয ইব্নু ‘আমর ইব্নু জামূহ, ৪২. মু‘আববিয ইব্নু আফরা, ৪৩. এবং তাঁর ভাই (মু‘আয), ৪৪. মালিক ইব্নু রাবী‘আ, ৪৫. আবূ উসাইদ আনসারী, ৪৬. মুরারা ইব্নু রাবী আনসারী, ৪৭. মা‘ন ইব্নু আ‘দী আনসারী, ৪৮. মিসতাহ ইব্নু উসাসা ইব্নু আব্বাদ ইব্নু মুত্তালিব ইব্নু আবদে মানাফ, ৪৯. যুহরা গোত্রের মিত্র মিকদাদ ইব্নু ‘আমর কিনদী, ৫০. হিলাল ইব্নু উমাইয়া আনসারী (রাযিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুম আজমা‘ঈন)।
৬৪/১৪. অধ্যায়ঃ
দু’ ব্যক্তি রক্তপণের ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বানী নাযীর গোত্রের নিকট গমন এবং তাঁর সঙ্গে তাদের বিশ্বাসঘাতকতা বিষয়ক ঘটনা
যুহরি (রহঃ) ‘উরওয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, বানু নাযীর যুদ্ধ ওহুদ যুদ্ধের আগের এবং বাদ্র যুদ্ধের পড়ে ষষ্ঠ মাসের প্রারম্ভে সংঘটিত হয়েছিল। মহান আল্লাহ্র বাণীঃ “তিনিই কিতাবওয়ালাদের মধ্যে যারা কাফির তাদেরকে প্রথম সমবেতভাবে তাদের নিবাস থেকে বিতাড়িত করেছিলেন”- (সূরা হাশর ৫৯:২)। বানু নাযীর যুদ্ধের এ ঘটনাকে ইব্নু ইসহাক (রহঃ) বিরে মাউনার ঘটনা এবং উহূদ পরবর্তী ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন।
৪০২৮
إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ مُوْسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ حَارَبَتْ النَّضِيْرُ وَقُرَيْظَةُ فَأَجْلَى بَنِي النَّضِيْرِ وَأَقَرَّ قُرَيْظَةَ وَمَنَّ عَلَيْهِمْ حَتَّى حَارَبَتْ قُرَيْظَةُ فَقَتَلَ رِجَالَهُمْ وَقَسَمَ نِسَاءَهُمْ وَأَوْلَادَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بَيْنَ الْمُسْلِمِيْنَ إِلَّا بَعْضَهُمْ لَحِقُوْا بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَآمَنَهُمْ وَأَسْلَمُوْا وَأَجْلَى يَهُوْدَ الْمَدِيْنَةِ كُلَّهُمْ بَنِيْ قَيْنُقَاعَ وَهُمْ رَهْطُ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَلَامٍ وَيَهُوْدَ بَنِيْ حَارِثَةَ وَكُلَّ يَهُوْدِ الْمَدِيْنَةِ
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, বনু নাযীর ও বনু কুরাইযাহ গোত্রের ইয়াহূদী সম্প্রদায় (মুসলিমদের বিরুদ্ধে) যুদ্ধ শুরু করলে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বনু নাযীর গোত্রকে দেশত্যাগে বাধ্য করেন এবং বনু কুরাইযাহ গোত্রের প্রতি দয়া করে তাদেরকে থাকতে দেন। কিন্তু পড়ে বনূ কুরাইযাহ গোত্র (মুসলিমদের বিরুদ্ধে) যুদ্ধ শুরু করলে কতক লোক যারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দলভুক্ত হবার পর তিনি তাদেরকে নিরাপত্তা দান করেছিলেন তারা মুসলিম হয়ে গিয়েছিল তারা ব্যতীত অন্য সব পুরুষ লোককে হত্যা করা হয় এবং মহিলা সন্তান-সন্তদি ও মালামাল মুসলিমদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনার সব ইয়াহূদীকে দেশান্তর করলেন। ‘আবদুল্লাহ ইব্নু সালামের গোত্র বনু কায়নুকা ও বনু হারিসাসহ অন্যান্য ইয়াহূদী গোষ্ঠীকেও তিনি দেশান্তর করেন।
[মুসলিম ২৩/২০, হাঃ ১৭৬৬] (আ.প্র. ৩৭২৮, ই.ফা. ৩৭৩২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০২৯
الْحَسَنُ بْنُ مُدْرِكٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمَّادٍ أَخْبَرَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ سُوْرَةُ الْحَشْرِ قَالَ قُلْ سُوْرَةُ النَّضِيْرِ تَابَعَهُ هُشَيْمٌ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ
সা‘ঈদ ইব্নু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইব্নু ‘আব্বাসের নিকট সূরা হাশরকে সূরা হাশর নামে উল্লেখ করায়, তিনি বলেন, বরং তুমি বলবে ‘সূরা নাযীর’। [১৯] আবূ বিশ্র থেকে হুশাইমও এ বর্ণনায় তার (আবূ আওয়ানাহ্র) অনুসরণ করেছেন। [৪৬৪৫, ৪৮৮২, ৪৮৮৩] (আ.প্র. ৩৭২৯, ই.ফা. ৩৭৩৩)
[১৯] অত্র সূরাতে বনু নযীর গোত্রের লাঞ্ছনার বর্ণনা রয়েছে তাই ‘আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস সূরা হাশরকে সূরা নযীর উল্লেখ করতে বলেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০৩০
عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِي الْأَسْوَدِ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ عَنْ أَبِيْهِ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ الرَّجُلُ يَجْعَلُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم النَّخَلَاتِ حَتَّى افْتَتَحَ قُرَيْظَةَ وَالنَّضِيْرَ فَكَانَ بَعْدَ ذَلِكَ يَرُدُّ عَلَيْهِمْ
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আনসারগণ কিছু কিছু খেজুর গাছ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্যে নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন। অবশেষে বনু কুরায়বা ও বনু নাযীর জয় করা হলে তিনি ঐ খেজুর গাছগুলো তাদেরকে ফেরত দিয়ে দেন।
[২৬৩০] (আ.প্র. ৩৭৩০, ই.ফা. ৩৭৩৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০৩১
آدَمُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ حَرَّقَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَخْلَ بَنِي النَّضِيْرِ وَقَطَعَ وَهِيَ الْبُوَيْرَةُ فَنَزَلَتْ {مَا قَطَعْتُمْ مِّنْ لِّيْنَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوْهَا قَآئِمَةً عَلٰى أُصُوْلِهَا فَبِإِذْنِ اللهِ}
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বুওয়াইরাই নামক জায়গায় বনু নাযীর গোত্রের যে খেজুর গাছ ছিল তার কিছু জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন এবং কিছু কেটে ফেলেছিলেন। এ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়ঃ
{مَا قَطَعْتُمْ مِنْ لِيْنَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوْهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُوْلِهَا فَبِإِذْنِ اللهِ}
‘‘তোমরা যে খেজুর গাছগুলি কেটে ফেলেছ অথবা যেগুলো কান্ডের উপর ঠিক রেখে দিয়েছ, তা তো আল্লাহরই অনুমতিক্রমে’’- (সূরাহ হাশর ৫৯/৫)। [২৩২৬; মুসলিম ৩২/১০, হাঃ ১৭৪৬]
(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৭৩১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৭৩৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০৩২
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا حَبَّانُ أَخْبَرَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم حَرَّقَ نَخْلَ بَنِي النَّضِيْرِ قَالَ وَلَهَا يَقُوْلُ حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ
وَهَانَ عَلَى سَرَاةِ بَنِيْ لُؤَيٍّ حَرِيْقٌ بِالْبُوَيْرَةِ مُسْتَطِيْرُ
قَالَ فَأَجَابَهُ أَبُوْ سُفْيَانَ بْنُ الْحَارِثِ
أَدَامَ اللهُ ذَلِكَ مِنْ صَنِيْعٍ وَحَرَّقَ فِيْ نَوَاحِيْهَا السَّعِيْرُ
سَتَعْلَمُ أَيُّنَا مِنْهَا بِنُزْهٍ وَتَعْلَمُ أَيُّ أَرْضَيْنَا تَضِيْرُ
ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বনূ নাযীর গোত্রের খেজুর গাছগুলো জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। ইব্নু ‘উমার (রাঃ) বলেন, এ সম্বন্ধেই হাস্সান ইব্নু সাবিত (রাঃ) বলেছেনঃ
“বনূ লুওয়াই গোত্রের নেতাদের (কুরাইশদের) জন্য সহজ হয়ে গিয়েছে
বুওয়াইরাহ নামক স্থানের সর্বত্রই অগ্নিশিখা প্রজ্জ্বলিত হওয়া।”
বর্ণনাকারী ইব্নু ‘উমার (রাঃ) বলেন, এর উত্তরে আবূ সুফ্ইয়ান ইব্নু হারিস বলেছিলঃ
“আল্লাহ্ এ কাজকে স্থায়ী করুন
এবং জ্বালিয়ে রাখুন মদীনার আশে পাশে লেলিহান অগ্নিশিখা,
শীঘ্রই জানবে আমাদের মাঝে কারা নিরাপত্তায় থাকবে
এবং জানবে দুই নগরীর কোনটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে”।
[২৩২৬] (আ.প্র. ৩৭৩২, ই.ফা. ৩৭৩৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০৩৩
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ مَالِكُ بْنُ أَوْسِ بْنِ الْحَدَثَانِ النَّصْرِيُّ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ دَعَاهُ إِذْ جَاءَهُ حَاجِبُهُ يَرْفَا فَقَالَ هَلْ لَكَ فِيْ عُثْمَانَ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ وَالزُّبَيْرِ وَسَعْدٍ يَسْتَأْذِنُوْنَ فَقَالَ نَعَمْ فَأَدْخِلْهُمْ فَلَبِثَ قَلِيْلًا ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ هَلْ لَكَ فِيْ عَبَّاسٍ وَعَلِيٍّ يَسْتَأْذِنَانِ قَالَ نَعَمْ فَلَمَّا دَخَلَا قَالَ عَبَّاسٌ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ اقْضِ بَيْنِيْ وَبَيْنَ هَذَا وَهُمَا يَخْتَصِمَانِ فِي الَّذِيْ أَفَاءَ اللهُ عَلَى رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ بَنِي النَّضِيْرِ فَاسْتَبَّ عَلِيٌّ وَعَبَّاسٌ فَقَالَ الرَّهْطُ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ اقْضِ بَيْنَهُمَا وَأَرِحْ أَحَدَهُمَا مِنَ الْآخَرِ فَقَالَ عُمَرُ اتَّئِدُوْا أَنْشُدُكُمْ بِاللهِ الَّذِيْ بِإِذْنِهِ تَقُوْمُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ هَلْ تَعْلَمُوْنَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا نُوْرَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ يُرِيْدُ بِذَلِكَ نَفْسَهُ قَالُوْا قَدْ قَالَ ذَلِكَ فَأَقْبَلَ عُمَرُ عَلَى عَبَّاسٍ وَعَلِيٍّ فَقَالَ أَنْشُدُكُمَا بِاللهِ هَلْ تَعْلَمَانِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ قَالَ ذَلِكَ قَالَا نَعَمْ قَالَ فَإِنِّيْ أُحَدِّثُكُمْ عَنْ هَذَا الْأَمْرِ إِنَّ اللهَ سُبْحَانَهُ كَانَ خَصَّ رَسُوْلَهُ صلى الله عليه وسلم فِيْ هَذَا الْفَيْءِ بِشَيْءٍ لَمْ يُعْطِهِ أَحَدًا غَيْرَهُ فَقَالَ جَلَّ ذِكْرُهُ {وَمَآ أَفَآءَ اللهُ عَلٰى رَسُوْلِهٰ مِنْهُمْ فَمَآ أَوْجَفْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ خَيْلٍ وَّلَا رِكَابٍ} إِلَى قَوْلِهِ {قَدِيْرٌ} فَكَانَتْ هَذِهِ خَالِصَةً لِرَسُوْلِ اللهِ ثُمَّ وَاللهِ مَا احْتَازَهَا دُوْنَكُمْ وَلَا اسْتَأْثَرَهَا عَلَيْكُمْ لَقَدْ أَعْطَاكُمُوْهَا وَقَسَمَهَا فِيْكُمْ حَتَّى بَقِيَ هَذَا الْمَالُ مِنْهَا فَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِهِ نَفَقَةَ سَنَتِهِمْ مِنْ هَذَا الْمَالِ ثُمَّ يَأْخُذُ مَا بَقِيَ فَيَجْعَلُهُ مَجْعَلَ مَالِ اللهِ فَعَمِلَ ذَلِكَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَيَاتَهُ ثُمَّ تُوُفِّيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ فَأَنَا وَلِيُّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَبَضَهُ أَبُوْ بَكْرٍ فَعَمِلَ فِيْهِ بِمَا عَمِلَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنْتُمْ حِيْنَئِذٍ فَأَقْبَلَ عَلَى عَلِيٍّ وَعَبَّاسٍ وَقَالَ تَذْكُرَانِ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ فِيْهِ كَمَا تَقُوْلَانِ وَاللهُ يَعْلَمُ إِنَّهُ فِيْهِ لَصَادِقٌ بَارٌّ رَاشِدٌ تَابِعٌ لِلْحَقِّ ثُمَّ تَوَفَّى اللهُ أَبَا بَكْرٍ فَقُلْتُ أَنَا وَلِيُّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِيْ بَكْرٍ فَقَبَضْتُهُ سَنَتَيْنِ مِنْ إِمَارَتِيْ أَعْمَلُ فِيْهِ بِمَا عَمِلَ فِيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُوْ بَكْرٍ وَاللهُ يَعْلَمُ أَنِّيْ فِيْهِ صَادِقٌ بَارٌّ رَاشِدٌ تَابِعٌ لِلْحَقِّ ثُمَّ جِئْتُمَانِيْ كِلَاكُمَا وَكَلِمَتُكُمَا وَاحِدَةٌ وَأَمْرُكُمَا جَمِيْعٌ فَجِئْتَنِيْ يَعْنِيْ عَبَّاسًا فَقُلْتُ لَكُمَا إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا نُوْرَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ فَلَمَّا بَدَا لِيْ أَنْ أَدْفَعَهُ إِلَيْكُمَا قُلْتُ إِنْ شِئْتُمَا دَفَعْتُهُ إِلَيْكُمَا عَلَى أَنَّ عَلَيْكُمَا عَهْدَ اللهِ وَمِيْثَاقَهُ لَتَعْمَلَانِ فِيْهِ بِمَا عَمِلَ فِيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُوْ بَكْرٍ وَمَا عَمِلْتُ فِيْهِ مُنْذُ وَلِيْتُ وَإِلَّا فَلَا تُكَلِّمَانِيْ فَقُلْتُمَا ادْفَعْهُ إِلَيْنَا بِذَلِكَ فَدَفَعْتُهُ إِلَيْكُمَا أَفَتَلْتَمِسَانِ مِنِّيْ قَضَاءً غَيْرَ ذَلِكَ فَوَاللهِ الَّذِيْ بِإِذْنِهِ تَقُوْمُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ لَا أَقْضِيْ فِيْهِ بِقَضَاءٍ غَيْرِ ذَلِكَ حَتَّى تَقُوْمَ السَّاعَةُ فَإِنْ عَجَزْتُمَا عَنْهُ فَادْفَعَا إِلَيَّ فَأَنَا أَكْفِيْكُمَاهُ
মালিক ইব্নু আ‘ওস ইব্নু হাদসান নাসিরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(একদা) ‘উমার ইব্নু খাত্তাব তাকে ডাকলেন। এ সময় তার দ্বাররক্ষী ইয়ারফা এসে বলল, ‘উসমান, ‘আবদুর রাহমান, যুবায়র এবং সা‘দ (রাঃ) আপনার নিকট আসার অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি বললেন, হাঁ তাঁদেরকে আসতে বল। কিছুক্ষণ পড়ে এসে বলল, ‘আব্বাস এবং ‘আলী (রাঃ) আপনার নিকট অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি বললেন, হাঁ। তাঁরা উভয়েই ভিতরে প্রবেশ করলেন। ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে, আমীরুল মু’মিনীন! আমার এবং তাঁর মাঝে (বিবাদের) মীমাংসা করে দিন। বনূ নাযীরের সম্পদ থেকে আল্লাহ্ তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ফাই (বিনা যুদ্ধে লব্ধ সম্পদ) হিসেবে যা দিয়েছিলেন তা নিয়ে তাদের উভয়ের মাঝে বিবাদ চলছিল। এ নিয়ে তারা তর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন, (এ দেখে আগত) দলের সকলেই বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! তাদের মাঝে একটি মীমাংসা করে তাদের এ বিবাদ থেকে মুক্তি দিন। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, তাড়াহুড়া করবেন না। আমি আপনাদেরকে আল্লাহ্র নামে শপথ দিয়ে বলছি, যাঁর আদেশে আসমান ও যমীন প্রতিষ্ঠিত আছে। আপনারা কি জানেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের সম্বন্ধে বলেছেন, আমরা (নাবীগণ) কাউকে উত্তরাধিকারী রেখে যাই না। যা রেখে যাই তা সদাকাহ হিসেবেই গণ্য হয়। এর দ্বারা তিনি নিজের কথাই বললেন। উপস্থিত সকলেই বললেন, হাঁ, তিনি এ কথা বলেছেন। ‘উমার (রাঃ) ‘আলী এবং ‘আব্বাসের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, আমি আপনাদের উভয়কে আল্লাহ্র কসম দিয়ে বলছি, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে এ কথা বলেছেন, আপনারা তা জানেন কি? তারা উভয়েই বললেন, হাঁ, এরপর তিনি বললেন, এখন আমি আপনাদেরকে এ বিষয়ে আসল অবস্থা খুলে বলছি। ফাই এর কিছু অংশ আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর রসূলের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, যা তিনি অন্য কাউকে দেননি। এ সম্পর্কে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেনঃ “আল্লাহ্ ইয়াহূদীদের নিকট হতে তাঁর রসূলকে যে ফাই দিয়েছেন, তার জন্য তোমরা অশ্ব কিংবা উষ্ট্র চালিয়ে যুদ্ধ করনি; আল্লাহ্ তো তাঁর রসূলকে যার উপর ইচ্ছা তার উপর কর্তৃত্ব দান করেন; আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান”- (সূরা আন’আম ৬:৫৯)। অতএব এ ফাই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্যই খাস ছিল। আল্লাহ্র কসম! এরপর তিনি তোমাদেরকে বাদ দিয়ে নিজের জন্য এ সম্পদকে সংরক্ষিতও রাখেননি এবং নিজের জন্য নির্ধারিতও করে যাননি। বরং এ অর্থকে তিনি তোমাদের মাঝে বণ্টন করে দিয়েছেন। অবশেষে এ মাল উদ্বৃত্ত আছে। এ মাল থেকে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পরিবার পরিজনের এক বছরের খোরপোশ দিতেন। এর থেকে যা অবশিষ্ট থাকত তা তিনি আল্লাহ্র পথে খরচ করতে দিতেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জীবদ্দশায় এরূপই করেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওফাতের পর আবূ বকর (রাঃ) বললেন, এখন থেকে আমিই হলাম রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওলী (প্রতিনিধি)। এরপর আবূ বকর (রাঃ) স্বীয় তত্ত্বাবধানে নিয়ে এ বিষয়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে নীতি অনুসরণ করেছিলেন তিনিও সে নীতিই অনুসরণ করে চললেন। তিনি ‘আলী ও ‘আব্বাসের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, আজ আপনারা যা বলছেন এ বিষয়ে আপনারা আবূ বকরের সঙ্গেও এ ধরনেরই আলোচনা করেছিলেন। আল্লাহ্র কসম! তিনিই জানেন, এ বিষয়ে আবূ বকর (রাঃ) ছিলেন সত্যবাদী, ন্যায়পরায়ণ এবং হাকের অনুসারী এক মহা ব্যক্তিত্ব। এরপর আবূ বকরের ইন্তিকাল হলে আমি বললাম, (আজ থেকে) আমিই হলাম, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং আবূ বকরের ওলী (প্রতিনিধি)। এরপর এ সম্পদকে আমি আমার খিলাফাতের দুই বছরকাল আমার তত্ত্বাবধানে রাখি এবং এ বিষয়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আবূ বকরের অনুসৃত নীতিই অনুসরণ করে চলছি। আল্লাহ্ তা‘আলাই ভাল জানেন, এ বিষয়ে নিশ্চয়ই আমি সত্যবাদী, ন্যায়পরায়ণ এবং হাকের একনিষ্ঠ অনুসারী। তা সত্ত্বেও পুনরায় আপনারা দু’জনই আমার নিকট এসেছেন। আমি আপনাদের উভয়কেই বলেছিলাম, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমরা (নাবীগণ) কাউকে উত্তরাধিকারী করি না, আমরা যা রেখে যাই তা সদকা হিসেবেই গণ্য হয়। এরপর এ সম্পদটি আপনাদের উভয়ের তত্ত্বাবধানে দেয়ার বিষয়টি যখন আমার নিকট স্পষ্ট হল তখন আমি বলেছিলাম, যদি আপনারা চান তাহলে একটি শর্তে তা আমি আপনাদের নিকট অর্পণ করব। শর্তটি হচ্ছে আপনারা আল্লাহ্র নির্দেশ ও তাঁর দেয়া ওয়াদা অনুযায়ী এমনভাবে কাজ করবেন যেভাবে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আবূ বাক্র করেছেন এবং আমার তত্ত্বাবধানে আসার পর আমি করেছি। অন্যথায় এ বিষয়ে আপনারা আমার সঙ্গে আর কোন আলোচনা করবেন না। তখন আপনারা বলেছিলেন, এ শর্তেই আপনি তা আমাদের নিকট অর্পণ করুন। আমি তা আপনাদের হাতে অর্পণ করেছি। এখন আপনারা আমার নিকট অন্য কোন ফায়সালা কামনা করেন কি? আমি আল্লাহ্র শপথ করে বলছি যাঁর আদেশে আসমান যমীনটিকে ক্বিয়ামাত সংঘটিত হওয়া পর্যন্ত আমি এর বাইরে অন্য কোন ফয়সালা দিতে পারব না। আপনারা যদি এর দায়িত্ব পালনের অক্ষম হয়ে থাকেন তাহলে আমার নিকট ফিরিয়ে দিন। আপনাদের এ দায়িত্ব পালনে আমিই যথেষ্ট।
[২৯০৪] (আ.প্র. ৩৭৩৩, ই.ফা. ৩৭৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০৩৪
قَالَ فَحَدَّثْتُ هَذَا الْحَدِيْثَ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ فَقَالَ صَدَقَ مَالِكُ بْنُ أَوْسٍ أَنَا سَمِعْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَقُوْلُ أَرْسَلَ أَزْوَاجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عُثْمَانَ إِلَى أَبِيْ بَكْرٍ يَسْأَلْنَهُ ثُمُنَهُنَّ مِمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَى رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فَكُنْتُ أَنَا أَرُدُّهُنَّ فَقُلْتُ لَهُنَّ أَلَا تَتَّقِيْنَ اللهَ أَلَمْ تَعْلَمْنَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُوْلُ لَا نُوْرَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ يُرِيْدُ بِذَلِكَ نَفْسَهُ إِنَّمَا يَأْكُلُ آلُ مُحَمَّدٍ فِيْ هَذَا الْمَالِ فَانْتَهَى أَزْوَاجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى مَا أَخْبَرَتْهُنَّ قَالَ فَكَانَتْ هَذِهِ الصَّدَقَةُ بِيَدِ عَلِيٍّ مَنَعَهَا عَلِيٌّ عَبَّاسًا فَغَلَبَهُ عَلَيْهَا ثُمَّ كَانَ بِيَدِ حَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ ثُمَّ بِيَدِ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيٍّ ثُمَّ بِيَدِ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ وَحَسَنِ بْنِ حَسَنٍ كِلَاهُمَا كَانَا يَتَدَاوَلَانِهَا ثُمَّ بِيَدِ زَيْدِ بْنِ حَسَنٍ وَهِيَ صَدَقَةُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَقًّا
বর্ণনাকারী (যুহরী) থেকে বর্ণিতঃ
আমি হাদীসটি উরওয়াহ ইব্নু যুবায়রের নিকট বর্ণনা করার পর তিনি (আমাকে) বললেন, মালিক ইব্নু আওস (রাঃ) ঠিকই বর্ণনা করেছেন। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, (বানী নাযীর গোত্রের সম্পদ থেকে) ফায় হিসেবে আল্লাহ্ তাঁর রসূলকে যে সম্পদ দিয়েছেন তার অষ্টমাংশ আনার জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সহধর্মিণীগণ ‘উসমানকে আবূ বকরের নিকট পাঠাতে চাইলে এই বলে আমি তাদেরকে বারণ করেছিলাম যে, আপনারা কি আল্লাহ্কে ভয় করেন না? আপনারা কি জানেন না যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেন আমরা (নাবী-রসূলগণ) কাউকে উত্তরাধিকারী রেখে যাই না, আমরা যা রেখে যাই তা সদাকাহ হিসেবেই থেকে যায়। এ দ্বারা তিনি নিজেকে মালিক করেছেন। এ সম্পদ থেকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–বংশধরগণ খেতে পারবেন। (তারা এ সম্পদের মালিক হতে পারবেন না।) আমার এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণীগণ বিরত হলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অবশেষে সদাকাহর এ মাল ‘‘আলীর তত্ত্বাবধানে ছিল। তিনি ‘আব্বাসকে তা দিতে অস্বীকার করেন এবং পরিশেষে তিনি ‘আব্বাসের উপরে জয়ী হন। এরপর তা যথাক্রমে হাসান ইব্নু ‘আলী এবং হুসাইন ইব্নু ‘আলীর হাতে ছিল। পুনরায় তা ‘আলী ইব্নু হুসাইন এবং হাসান ইব্নু হাসানের হস্তগত হয়। তাঁরা উভয়ই পর্যায়ক্রমে তার দেখাশোনা করতেন। এরপর তার যায়দ ইব্নু হাসানের তত্ত্বাবধানে যায়। তা অবশ্যই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সদাকাহ।
[৬৭২৭, ৬৭৩০; মুসলিম ৩২/১৫, হাঃ ১৭৫৭, আহমাদ ৩৩৩] (আ.প্র. ৩৭৩৩, ই.ফা. ৩৭৩৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০৩৫
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ فَاطِمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا وَالْعَبَّاسَ أَتَيَا أَبَا بَكْرٍ يَلْتَمِسَانِ مِيْرَاثَهُمَا أَرْضَهُ مِنْ فَدَكٍ وَسَهْمَهُ مِنْ خَيْبَرَ
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ফাতিমাহ এবং ‘আব্বাস (রাঃ) আবূ বকরের কাছে এসে ফাদাক এবং খাইবারের (ভূমির) অংশ দাবী করেন।
[৩০৯২] (আ.প্র. ৩৭৩৪, ই.ফা. ৩৭৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৪০৩৬
فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ لَا نُوْرَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ إِنَّمَا يَأْكُلُ آلُ مُحَمَّدٍ فِيْ هَذَا الْمَالِ وَاللهِ لَقَرَابَةُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ أَصِلَ مِنْ قَرَابَتِي
আবূ বাক্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমরা (নাবী-রাসূলগণ আমাদের সম্পদের) কাউকে উত্তরাধিকারী রেখে যাই না। আমরা যা রেখে যাই সদাকাহ হিসেবেই রেখে যাই। এ মাল থেকে মুহাম্মাদের পরিবার-পরিজনে ভোগ করবে। আল্লাহ্র কসম! আমার আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে আত্মীয়তা দৃঢ় করার চেয়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আত্মীয়তাই আমার নিকট প্রিয়তর।
[৩০৯৩] (আ.প্র. ৩৭৩৪, ই.ফা. ৩৭৩৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস