বুখারী তাফসীর অধ্যায় ৭ম ভাগ হাদিস নং ৪৮৬৪ – ৪৯২১

৬৫/৫৪/১.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হয়ে গেছে। তারা যদি কোন মু‘জিযা দেখে, তবে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সূরাহ আল-কামার ৫৪/১-২)

(54) سُوْرَةُ اقْتَرَبَتْ السَّاعَةُ

সূরাহ (৫৪) : ইক্বতারাবাতিস্ সা-আহ্ (আল-কামার)

قَالَ مُجَاهِدٌ {مُسْتَمِرٌّ} ذَاهِبٌ {مُزْدَجَرٌ} مُتَنَاهٍ {وَازْدُجِرَ} فَاسْتُطِيْرَ جُنُوْنًا {دُسُرٍ} أَضْلَاعُ السَّفِيْنَةِ {لِمَنْ كَانَ كُفِرَ} يَقُوْلُ كُفِرَ لَهُ جَزَاءً مِنْ اللهِ {مُحْتَضَرٌ} يَحْضُرُوْنَ الْمَاءَ وَقَالَ ابْنُ جُبَيْرٍ {مُهْطِعِيْنَ} النَّسَلَانُ الْخَبَبُ السِّرَاعُ وَقَالَ غَيْرُهُ {فَتَعَاطٰى} فَعَاطَهَا بِيَدِهِ فَعَقَرَهَا {الْمُحْتَظِرِ} كَحِظَارٍ مِنْ الشَّجَرِ مُحْتَرِقٍ {ازْدُجِرَ} افْتُعِلَ مِنْ زَجَرْتُ {كُفِرَ} فَعَلْنَا بِهِ وَبِهِمْ مَا فَعَلْنَا جَزَاءً لِمَا صُنِعَ بِنُوْحٍ وَأَصْحَابِهِ {مُسْتَقِرٌّ} عَذَابٌ حَقٌّ يُقَالُ {الأَشَرُ} الْمَرَحُ وَالتَّجَبُّرُ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, مُسْتَمِرٌّ বিলুূপ্ত। مُزْدَجَرٌ বাধা দানকারী। وَازْدُجِرَ তাকে পাগল করে দেয়ার ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। دُسُرٍ নৌকার কীলক। لِمَنْ كَانَ كُفِرَ এর কারণে যে নূহ্ (আঃ)-কে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।جَزَآءً প্রতিদান আল্লাহর তরফ থেকে। مُحْتَضَرٌ তারা পানির জন্য উপস্থিত হবে। ইবনু জুবায়র (রহ.) বলেন, مُهْطِعِيْنَ তারা দ্রুত চলবে। ইবনু জুবায়র (রহ.) ব্যতীত অন্যরা বলেছেন, فَتَعَاطٰى তারপর সে উষ্ট্রীটিকে ধরল এবং তাকে হত্যা করল। الْمُحْتَظِرِ শুকনো গাছের বেড়া যা জ্বলে গেছে। ازْدُجِرَ – زَجَرْتُ ধাতু হতে بابافْتُعِلَ এর زَجَرْتُ، صيحه থেকে এর নিষ্পন্ন। كُفِرَ আমি নূহ্ এবং তাঁর কওমের সঙ্গে যা করেছি তা প্রতিদান ছিল ঐ ‘আমালের, যা তাঁর কওমের লোকেরা তাঁর ও তাঁর সাথীদের সঙ্গে করেছিল। مُسْتَقِرٌّআল্লাহর তরফ থেকে শাস্তি। الْأَشَرُ দাম্ভিকতা ও অহংকার।

৪৮৬৪

مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ وَسُفْيَانَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ أَبِيْ مَعْمَرٍ عَنْ ابْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ انْشَقَّ الْقَمَرُ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِرْقَتَيْنِ فِرْقَةً فَوْقَ الْجَبَلِ وَفِرْقَةً دُوْنَهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اشْهَدُوْا.

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সময় চাঁদ খণ্ডিত হয়েছে। এর এক খণ্ড পর্বতের উপর এবং অপর খণ্ড পর্বতের নিচে পড়েছিল। তখন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমরা সাক্ষী থাক। [৩৬৩৬] (আ.প্র. ৪৪৯৭, ই.ফা. ৪৫০০)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৬৫

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ أَبِيْ مَعْمَرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ انْشَقَّ الْقَمَرُ وَنَحْنُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَصَارَ فِرْقَتَيْنِ فَقَالَ لَنَا اشْهَدُوا اشْهَدُوْا.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, চন্দ্র বিদীর্ণ হল। এ সময় আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। তা দু’টুকরো হয়ে গেল। তখন তিনি আমাদের বললেন, তোমরা সাক্ষী থাক, তোমরা সাক্ষী থাক। [৩৬৩৬] (আ.প্র. ৪৪৯৮, ই.ফা. ৪৫০১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৬৬

يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ بَكْرٌ عَنْ جَعْفَرٍ عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُوْدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ انْشَقَّ الْقَمَرُ فِيْ زَمَانِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কালে চাঁদ খণ্ডিত হয়েছিল। [৩৬৩৮] (আ.প্র. ৪৪৯৯, ই.ফা. ৪৫০২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৬৭

عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَأَلَ أَهْلُ مَكَّةَ أَنْ يُرِيَهُمْ آيَةً فَأَرَاهُمْ انْشِقَاقَ الْقَمَرِ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মক্কাহ্বাসীরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে একটি নিদর্শন দেখাতে বলল। তখন তিনি তাদেরকে চাঁদ খণ্ডিত করে দেখালেন। [৩৬৩৭] (আ.প্র. ৪৫০০, ই.ফা. ৪৫০৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৬৮

مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ انْشَقَّ الْقَمَرُ فِرْقَتَيْنِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, চন্দ্র দু’ খণ্ডে খণ্ডিত হয়েছিল। [৩৬৩৭] (আ.প্র. ৪৫০১, ই.ফা. ৪৫০৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৪/২. .অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ যা চলত আমার চোখের সামনে। এটা ছিল তার জন্য পুরস্কার, যাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। আর আমি একে এক নিদর্শনরূপে রেখে দিয়েছি, অতএব কোন নাসীহাত গ্রহণকারী আছে কি? (সূরাহ আল-কামার ৫৪/১৪-১৫)

قَالَ قَتَادَةُ أَبْقَى اللهُ سَفِيْنَةَ نُوْحٍ حَتَّى أَدْرَكَهَا أَوَائِلُ هَذِهِ الْأُمَّةِ.

ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেন, আল্লাহ্ তা‘আলা নূহ্ (আঃ)-এর নৌকাটি রক্ষা করেছিলেন। ফলে এ উম্মাতের প্রাথমিক যুগের লোকেরাও তা পেয়েছে।

৪৮৬৯

حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ {فَهَلْ مِنْ مُّدَّكِرٍ}.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ পড়তেন। [৩৩৪১; মুসলিম ৫০/হাঃ ৮২৩, আহমাদ ৩৮৫৩] (আ.প্র. ৪৫০২, ই.ফা. ৪৫০৫)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৪/৩.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আর আমি তো কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি নাসীহাত গ্রহণের জন্য; অতএব কোন নাসীহাত গ্রহণকারী আছে কি? (সূরাহ আল-কামার ৫৪/১৭)

قَالَ مُجَاهِدٌ يَسَّرْنَا هَوَّنَّا قِرَاءَتَهُ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, يَسَّرْنَا আমি এর পঠন পদ্ধতি সহজ করে দিয়েছি।

৪৮৭০

مُسَدَّدٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّه كَانَ يَقْرَأُ {فَهَلْ مِنْ مُّدَّكِرٍ}.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ পড়তেন। [৩৩৪১] (আ.প্র. ৪৫০৩, ই.ফা. ৪৫০৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৪/৪.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ উৎপাটিত খেজুর বৃক্ষের কান্ড। অতএব কেমন কঠোর ছিল আমার আযাব ও আমার ভীতিপ্রদর্শন! (সূরাহ আল-কামার ৫৪/২০-২১)

৪৮৭১

أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ أَنَّهُ سَمِعَ رَجُلًا سَأَلَ الْأَسْوَدَ فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ أَوْ مُذَّكِرٍ فَقَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ يَقْرَؤُهَا {فَهَلْ مِنْ مُّدَّكِرٍ} قَالَ وَسَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَؤُهَا {فَهَلْ مِنْ مُّدَّكِرٍ} دَالًا.

আবূ ইসহাক (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি এক ব্যক্তিকে আসওয়াদ (রহ.)-এর নিকট জিজ্ঞেস করতে শুনেছেন যে, আয়াতের মধ্যে فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ না مُدَّكِرٍ । তিনি বললেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্কে আয়াতখানা فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ পড়তে শুনেছি। তিনি বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে আয়াতখানা ‘দাল’ দিয়ে পড়তে শুনেছি। [৩৩৪১] (আ.প্র. ৪৫০৪, ই.ফা. ৪৫০৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৪/৫.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ ফলে তারা হয়ে গেল খোঁয়াড় নির্মাণকারীর দলিত শুষ্ক তৃণ ও বৃক্ষের প্রশাখার ন্যায়। আর আমি তো কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি নাসীহাত গ্রহণের জন্য, অতএব কোন নাসীহাত গ্রহণকারী আছে কি? (সূরাহ আল-কামার ৫৪/৩১-৩২)

৪৮৭২

عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا أَبِيْ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَرَأَ {فَهَلْ مِنْ مُّدَّكِرٍ} الآيَةَ.

‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ পড়েছেন। [৩৩৪১] (আ.প্র. ৪৫০৫, ই.ফা. ৪৫০৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৪/৬.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আর অতি প্রত্যুষে তাদের উপর আঘাত হানল বিরামহীন শাস্তি। বলা হলঃ আস্বাদন কর আমার আযাব এবং আমার সতর্কবাণীর মজা। (সূরাহ আল-কামার ৫৪/৩৮-৩৯)

৪৮৭৩

مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَرَأَ {فَهَلْ مِنْ مُّدَّكِرٍ}.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ পড়েছেন। [৩৩৪১] (আ.প্র. ৪৫০৬, ই.ফা. ৪৫০৯)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৪/৭.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আমি তো ধ্বংস করেছি তোমাদের সমপন্থী দলগুলোকে, অতএব এ থেকে নাসীহাত গ্রহণকারী কেউ আছে কি? (সূরাহ আল-কামার ৫৪/৫১)

৪৮৭৪

يَحْيَى حَدَّثَنَا وَكِيْعٌ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْأَسْوَدِ بْنِ يَزِيْدَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَرَأْتُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَهَلْ مِنْ مُذَّكِرٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم{فَهَلْ مِنْ مُّدَّكِرٍ}.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সামনে فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ পড়ার পর তিনি বললেন ঃ فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ। [৩৩৪১] (আ.প্র. ৪৫০৭, ই.ফা. ৪৫১০)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৪/৮.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ অচিরেই এ দল পরাভূত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পালাবে। (সূরাহ আল-কামার ৫৪/৪৫)

৪৮৭৫

مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ حَوْشَبٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ ح و مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ عَنْ وُهَيْبٍ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَهُوَ فِيْ قُبَّةٍ يَوْمَ بَدْرٍ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَنْشُدُكَ عَهْدَكَ وَوَعْدَكَ اللهُمَّ إِنْ تَشَأْ لَا تُعْبَدْ بَعْدَ الْيَوْمِ فَأَخَذَ أَبُوْ بَكْرٍ بِيَدِهِ فَقَالَ حَسْبُكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلْحَحْتَ عَلَى رَبِّكَ وَهُوَ يَثِبُ فِي الدِّرْعِ فَخَرَجَ وَهُوَ يَقُوْلُ {سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَيُوَلُّوْنَ الدُّبُرَ}.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বদর যুদ্ধের দিন একটি ছোট্ট তাঁবুতে অবস্থান করে এ দু‘আ করেছিলেন- হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট তোমার ওয়াদা ও অঙ্গীকার বাস্তবায়ন কামনা করছি! হে আল্লাহ্! তুমি যদি চাও, আজকের দিনের পর তোমার ‘ইবাদাত না কর হোক….ঠিক এ সময়ই আবূ বাক্র সিদ্দীক (রাঃ) তাঁর হস্ত ধারণ পূর্বক বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! যথেষ্ট হয়েছে। আপনি আপনার প্রতিপালকের নিকট অনুনয়-বিনয়ের সঙ্গে বহু দু‘আ করেছেন। এ সময় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বর্ম পরিহিত অবস্থায় উঠে দাঁড়ালেন। তাই তিনি আয়াত দু’টো পড়তে পড়তে তাঁবু থেকে বেরিয়ে এলেন, “এ দল তো শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠ পৃদর্শন করবে” (সূরাহ আল-কামার ৫৪/৫১)। [২৯১৫] (আ.প্র. ৪৫০৮, ই.ফা. ৪৫১১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৪/৯.অধ্যায়ঃ

‘‘অধিকন্তু ক্বিয়ামাতে তাদের শাস্তির প্রতিশ্রুতিকাল এবং ক্বিয়ামাত বড়ই কঠোর ও তিক্ততর।’’ (সূরাহ আল-কামার ৫৪/৪৬)

৪৮৭৬

إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوْسُفَ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ قَالَ أَخْبَرَنِيْ يُوْسُفُ بْنُ مَاهَكٍ قَالَ إِنِّيْ عِنْدَ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ قَالَتْ لَقَدْ أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم بِمَكَّةَ وَإِنِّيْ لَجَارِيَةٌ أَلْعَبُ {بَلِ السَّاعَةُ مَوْعِدُهُمْ وَالسَّاعَةُ أَدْهٰى وَأَمَرُّ}.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, بَلْ السَّاعَةُ مَوْعِدُهُمْ وَالسَّاعَةُ أَدْهَى وَأَمَرُّ আয়াতটি মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি মাক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। আমি তখন কিশোরী ছিলাম, খেলাধূলা করতাম। [৪৯৯৩] (আ.প্র. ৪৫০৯, ই.ফা. ৪৫১২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৭৭

إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ خَالِدٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَهُوَ فِيْ قُبَّةٍ لَهُ يَوْمَ بَدْرٍ أَنْشُدُكَ عَهْدَكَ وَوَعْدَكَ اللَّهُمَّ إِنْ شِئْتَ لَمْ تُعْبَدْ بَعْدَ الْيَوْمِ أَبَدًا فَأَخَذَ أَبُوْ بَكْرٍ بِيَدِهِ وَقَالَ حَسْبُكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَدْ أَلْحَحْتَ عَلَى رَبِّكَ وَهُوَ فِي الدِّرْعِ فَخَرَجَ وَهُوَ يَقُوْلُ {) سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَيُوَلُّوْنَ الدُّبُرَ – بَلِ السَّاعَةُ مَوْعِدُهُمْ وَالسَّاعَةُ أَدْهٰى وَأَمَرُّ}.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছোট্ট একটি তাঁবুতে অবস্থান করে এ দু‘আ করছিলেন, আয় আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে তোমার ওয়াদা ও অঙ্গীকার পূরণ কামনা করছি। হে আল্লাহ্! যদি তুমি চাও, আজকের পর আর কখনো তোমার ‘ইবাদাত না করা হোক…..। ঠিক এ সময় আবূ বাক্র (রাঃ) রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর হাত ধরে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! যথেষ্ট হয়েছে। আপনি আপনার প্রতিপালকের কাছে অনুনয়-বিনয়ের সঙ্গে বহু দু‘আ করেছেন। এ সময় তিনি লৌহবর্ম পরে ছিলেন। এরপর তিনি এ আয়াত পড়তে পড়তে তাঁবু থেকে বের হয়ে এলেন ঃ একদল তো শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে। অধিকন্তু ক্বিয়ামাত তাদের শাস্তির নির্ধারিত কাল এবং ক্বিয়ামাত হবে কঠিনতর ও তিক্ততর”। (সূরাহ আল-কামার ৫৪/৪৫-৪৬) [২৯১৫] (আ.প্র. ৪৫১০, ই.ফা. ৪৫১৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৫/১.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ সেখানে এ দু’টি ব্যতীত আরও দু’টি বাগান রয়েছে। (সূরাহ আর্ রহমান ৫৫/৬২)

(55) سُوْرَةُ الرَّحْمٰنِ

সূরাহ (৫৫) : আর্-রহমান

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {بِحُسْبَانٍ} كَحُسْبَانِ الرَّحَى وَقَالَ غَيْرُهُ {وَأَقِيْمُوا الْوَزْنَ} يُرِيْدُ لِسَانَ الْمِيْزَانِ وَالْعَصْفُ بَقْلُ الزَّرْعِ إِذَا قُطِعَ مِنْهُ شَيْءٌ قَبْلَ أَنْ يُدْرِكَ فَذَلِكَ الْعَصْفُ {وَالرَّيْحَانُ} رِزْقُهُ {وَالْحَبُّ} الَّذِيْ يُؤْكَلُ مِنْهُ وَالرَّيْحَانُ فِيْ كَلَامِ الْعَرَبِ الرِّزْقُ وَقَالَ بَعْضُهُمْ وَالْعَصْفُ يُرِيْدُ الْمَأْكُوْلَ مِنَ الْحَبِّ وَالرَّيْحَانُ النَّضِيْجُ الَّذِيْ لَمْ يُؤْكَلْ وَقَالَ غَيْرُهُ الْعَصْفُ وَرَقُ الْحِنْطَةِ وَقَالَ الضَّحَّاكُ الْعَصْفُ التِّبْنُ وَقَالَ أَبُوْ مَالِكٍ الْعَصْفُ أَوَّلُ مَا يَنْبُتُ تُسَمِّيْهِ النَّبَطُ هَبُوْرًا وَقَالَ مُجَاهِدٌ الْعَصْفُ وَرَقُ الْحِنْطَةِ وَالرَّيْحَانُ الرِّزْقُ {وَالْمَارِجُ} اللهَبُ الْأَصْفَرُ وَالأَخْضَرُ الَّذِيْ يَعْلُو النَّارَ إِذَا أُوْقِدَتْ وَقَالَ بَعْضُهُمْ عَنْ مُجَاهِدٍ {رَبُّ الْمَشْرِقَيْنِ} لِلشَّمْسِ فِي الشِّتَاءِ مَشْرِقٌ وَمَشْرِقٌ فِي الصَّيْفِ وَرَبُّ الْمَغْرِبَيْنِ مَغْرِبُهَا فِي الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ {لَا يَبْغِيَانِ} لَا يَخْتَلِطَانِ {الْمُنْشَاٰتُ} مَا رُفِعَ قِلْعُهُ مِنْ السُّفُنِ فَأَمَّا مَا لَمْ يُرْفَعْ قَلْعُهُ فَلَيْسَ بِمُنْشَأَةٍ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {كَالْفَخَّارِ} كَمَا يُصْنَعُ الْفَخَّارُ {الشُّوَاظُ} لَهَبٌ مِنْ نَارٍ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {نُحَاسٌ}النُّحَاسُ الصُّفْرُ يُصَبُّ عَلَى رُءُوْسِهِمْ فَيُعَذَّبُوْنَ بِهِ {خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ} يَهُمُّ بِالْمَعْصِيَةِ فَيَذْكُرُ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ فَيَتْرُكُهَا {مُدْهَآمَّتَانِ} سَوْدَاوَانِ مِنْ الرِّيِّ صَلْصَالٍ طِيْنٌ خُلِطَ بِرَمْلٍ فَصَلْصَلَ كَمَا يُصَلْصِلُ الْفَخَّارُ وَيُقَالُ مُنْتِنٌ يُرِيْدُوْنَ بِهِ صَلَّ يُقَالُ صَلْصَالٌ كَمَا يُقَالُ صَرَّ الْبَابُ عِنْدَ الإِغْلَاقِ وَصَرْصَرَ مِثْلُ كَبْكَبْتُهُ يَعْنِيْ كَبَبْتُهُ {فَاكِهَةٌ وَّنَخْلٌ وَّرُمَّانٌ}وَقَالَ بَعْضُهُمْ لَيْسَ الرُّمَّانُ وَالنَّخْلُ بِالْفَاكِهَةِ وَأَمَّا الْعَرَبُ فَإِنَّهَا تَعُدُّهَا فَاكِهَةً كَقَوْلِهِ عَزَّ وَجَلَّ {حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوٰتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطٰى} فَأَمَرَهُمْ بِالْمُحَافَظَةِ عَلَى كُلِّ الصَّلَوَاتِ ثُمَّ أَعَادَ الْعَصْرَ تَشْدِيْدًا لَهَا كَمَا أُعِيْدَ النَّخْلُ وَالرُّمَّانُ وَمِثْلُهَا{أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللهَ يَسْجُدُ لَه” مَنْ فِي السَّمَوٰتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ} ثُمَّ قَالَ وَكَثِيْرٌ مِنْ النَّاسِ {وَكَثِيْرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ} وَقَدْ ذَكَرَهُمْ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيْ أَوَّلِ قَوْلِهِ {مَنْ فِي السَّمَوٰتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ} وَقَالَ غَيْرُهُ {أَفْنَانٍ} أَغْصَانٍ {وَجَنَى الْجَنَّتَيْنِ دَانٍ} مَا يُجْتَنَى قَرِيْبٌ وَقَالَ الْحَسَنُ {فَبِأَيِّ اٰلَآءِ} نِعَمِهِ وَقَالَ قَتَادَةُ {رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ} يَعْنِي الْجِنَّ وَالإِنْسَ وَقَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ {كُلَّ يَوْمٍ هُوَ فِيْ شَأْنٍ} يَغْفِرُ ذَنْبًا وَيَكْشِفُ كَرْبًا وَيَرْفَعُ قَوْمًا وَيَضَعُ آخَرِيْنَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {بَرْزَخٌ}حَاجِزٌ {الْأَنَامُ} الْخَلْقُ [أشار به إلى قوله تعالى : {وَالْأرْضَ وَضَعَهَا لِلْأَنَامِ} وعن ابن عباس والشعبي : الْأنام. كل ذي روح، وقيل : الإنس ةالجن]. {نَضَّاخَتَانِ} فَيَّاضَتَانِ {ذُو الْجَلَالِ} ذُو الْعَظَمَةِ وَقَالَ غَيْرُهُ {مَارِجٌ} خَالِصٌ مِنْ النَّارِ يُقَالُ مَرَجَ الْأَمِيْرُ رَعِيَّتَهُ إِذَا خَلَّاهُمْ يَعْدُوْ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ وَيُقَالُ مَرَجَ أَمْرُ النَّاسِ {مَرِيْجٍ} مُلْتَبِسٌ {مَرَجَ} الْبَحْرَيْنِ اخْتَلَطَ الْبَحْرَانِ مِنْ مَرَجْتَ دَابَّتَكَ تَرَكْتَهَا {سَنَفْرُغُ لَكُمْ} سَنُحَاسِبُكُمْ لَا يَشْغَلُهُ شَيْءٌ عَنْ شَيْءٍ وَهُوَ مَعْرُوْفٌ فِيْ كَلَامِ الْعَرَبِ يُقَالُ لَأَتَفَرَّغَنَّ لَكَ وَمَا بِهِ شُغْلٌ يَقُوْلُ لَآخُذَنَّكَ عَلَى غِرَّتِكَ.

وَأَقِيْمُوا الْوَزْنَএর মাঝে বর্ণিত الْوَزْنَহচ্ছে পাল্লার ডান্ডি। وَالْعَصْفُঘাস, ফসল পাকার পূর্বে যে চারাগুলোকে কেটে ফেলা হয় তাদেরকেই اَلْعَصْفُবলা হয়। الرَّيْحَانُশস্যের পাতা এবং যমীন থেকে উৎপাদিত দানা যা ভক্ষণ করা হয় আরবী ভাষায় রিযকের অর্থে ব্যবহৃত হয়। কারো মতে, الْعَصْفُখাওয়ার উপযোগী দানা এবং الرَّيْحَانُখাওয়ার অনুপযোগী পাকা দানা। মুজাহিদ ব্যতীত অন্যান্য মুফাস্সির বলেছেন, اَلْعَصْفُগমের পাতা। দাহ্হাক (রহ.) বলেন, اَلْعَصْفُমানে ভূষি। আবূ মালিক (রহ.) বলেন, সর্বপ্রথম যা উৎপন্ন হয় তাকে اَلْعَصْفُবলা হয়। হাবশী ভাষায় তাকে هَبُوْرًاহাবুর বলা হয়। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, اَلْعَصْفُগমের পাতা। الرَّيْحَانُখাদ্য। الْمَارِجُহলুদ এবং সবুজ বর্ণের অগ্নিশিখা যা আগুনের উপরে দেখা যায় যখন তা জ্বালানো হয়। মুজাহিদ (রহ.) থেকে কোন কোন মুফাস্সির বলেন, رَبُّ الْمَشْرِقَيْنِসূর্যের শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন উদয়স্থান। তেমনি رَبُّ الْمَغْرِبَيْنِশীত ও গ্রীস্মকালে সূর্যের দুই অস্তস্থল। لَا يَبْغِيَانِ তারা মিলিত হয় না। الْمُنْشَاٰتُনদীতে পাল তোলা নৌকা। আর যে নৌকার পাল তোলা হয়নি তাকে الْمُنْشَاٰتُ বলা হয় না। মুজাহিদ বলেন, نُحَاسٌপিতল, যা তাদের মাথার উপর ঢালা হবে এবং এর দ্বারা তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। خَافَ مَقَامَ رَبِّهٰ সে গুনাহ্ করার ইচ্ছে করে; কিন্তু তার আল্লাহর কথা মনে পড়ে যায়। অবশেষে সে গুনাহ্ করার ইচ্ছা ত্যাগ করে। الشُّوَاظُঅগ্নি শিখা। مُدْهَآمَّتَانِ দেখতে কালো হবে সজীবতার কারণে। صَلْصَالٍমাটি বালির সঙ্গে মিশে পোড়া মাটির মত ঝনঝন করে। বলা হয় صَلْصَالٍ দুর্গন্ধময়। শব্দটির মূল ছিল صَلَّ صَلْصَالٍবলা হয় যেমন صَرَّالْبَابُ বলা হয় এবং صَرَّصَرَّ الْبَابُও বলা হয়। (অর্থাৎ مضاعف رباعىথেকে مضاعفثلاثىএর উৎপত্তি)। যেমন كَبْكَبْتُه ব্যবহার করা হয়। যার মূল فَاكِهَةٌ وَّنَخْلٌ وَّرُمَّانٌ ফলমূল, খেজুর ও আনার। কারো মতে খেজুর ও আনার ফল নয়; কিন্তু আরবীয় লোকেরা এগুলোকেও ফল বলে গণ্য করে। খেজুর ও আনার ফলমূলের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও উপরোক্ত আয়াতে ফলমূলের কথা উল্লেখ করে এরপর খেজুর ও আনারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوٰتِএর মাঝে সকল সালাতের প্রতি যত্নবান হবার নির্দেশ প্রদান করতঃ পরে আবার বিশেষভাবে আসরের সালাতের প্রতি বিশেষ যত্নবান হবার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যেমনভাবে أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللهَ يَسْجُدُ لَهচ مَنْ فِي السَّمَوٰتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ‘‘তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ্কে সাজদাহ করে যা কিছু আছে আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে….। (সূরাহ হাজ্জ ২২/২৮)-এর মধ্যে সকল মানুষ অন্তর্ভুক্ত থাকা সত্ত্বেও وَكَثِيْرٌ مِّنَ النَّاسِ وَكَثِيْرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُআয়াতাংশটি পরে উল্লেখ করা হয়েছে (সুতরাং খেজুর ও আনারকে ফলমূল বহির্ভূত বলা ঠিক নয়)। মুজাহিদ (রহ.) ছাড়া অন্যান্য মুফাস্সির বলেন, أَفْنَانٍ ডালাসমূহ। وَجَنَى الْجَنَّتَيْنِ دَانٍ দুই উদ্যানের ফল হবে তাদের নিকটবর্তী- (সূরাহ আর্ রহমান ৫৫/৫৪)। উভয় উদ্যানের ফল যা পাড়া হবে তা খুবই নিকটবর্তী হবে। হাসান (রহ.) বলেন, فَبِأَيِّاٰلَآءِ আল্লাহর কোন অনুগ্রহকে? ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেন, মানব এবং দানব জাতিকে বোঝাবার জন্য رَبِّكُمَا দ্বি-বচনের صيغه ব্যবহার করা হয়েছে। আবুদ্ দারদা (রাঃ) বলেন, كُلَّ يَوْمٍ هُوَ فِيْ شَأْنٍ (তিনি প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ কার্যে রত)-এর ভাবার্থ হচ্ছে, প্রত্যহ তিনি মানুষের গুনাহ ক্ষমা করেন, বিপদ বিদূরিত করেন, এক সম্প্রদায়কে সুউচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেন এবং অপর সম্প্রদায়ের অবনতি ঘটান। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, بَرْزَخٌ অন্তরাল। الْأَنَامُ সৃষ্ট জীব। نَضَّاخَتَانِ খায়ের ও বারাকাতে উচ্ছলিত। ذُو الْجَلَالِ মহিমাময়। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) ব্যতীত অন্যান্য মুফাসসির বলেছেন, مَارِجُ নির্ধূম অগ্নিশিখা। রাজা প্রজাদের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দেয়ার পর তারা যখন পরস্পর পরস্পরের প্রতি অবাধে অত্যাচার করতে আরম্ভ করে তখন বলা হয়, اَلَامِيْرُمَرَجَالَامِيْرُرِعَيَّتَهمَرَجَاَمْرُالنَّاسِ মানুষের বিষয়টি গোলমেলে হয়ে পড়েছে। مَرِيْجٍ দোদুল্যমান। مَرَجَ الْبَحْرَيْنٍ দুই সমুদ্র পরস্পর মিলিত হয়ে গিয়েছে। مَرَجْتَ دَابَّتَكَ এর উৎপত্তি অর্থাৎ তুমি ছেড়ে দিয়েছ। سَنَفْرُغُ لَكُمْ অচিরেই আমি তোমাদের হিসাব গ্রহণ করব কারণ কোন অবস্থা আল্লাহ্ তা‘আলাকে অন্য অবস্থা হতে গাফিল করতে পারে না। এ ধরনের ব্যবহার-বিধি আরবী ভাষায় সুপ্রসিদ্ধ। যেমন বলা হয়, لَا تَفَرَّ غَنَّ لَكَ অথচ তার কোন ব্যস্ততা নেই (বরং এ ধরনের কথা ধমক-স্বরূপ বলা হয়ে থাকে)। এ বাক্যের মাধ্যমে বক্তা শ্রোতাকে এ কথাই বোঝাতে চায় যে, অবশ্যই আমি তোমাকে তোমার এ গাফলতের মজা আস্বাদন করাব।

৪৮৭৮

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي الأَسْوَدِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ الْعَمِّيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عِمْرَانَ الْجَوْنِيُّ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ جَنَّتَانِ مِنْ فِضَّةٍ، آنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا وَجَنَّتَانِ مِنْ ذَهَبٍ آنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا، وَمَا بَيْنَ الْقَوْمِ وَبَيْنَ أَنْ يَنْظُرُوا إِلَى رَبِّهِمْ إِلاَّ رِدَاءُ الْكِبْرِ عَلَى وَجْهِهِ فِي جَنَّةِ عَدْنٍ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, (জান্নাতের মধ্যে) দু’টি বাগান থাকবে। এ দু’টির সকল পাত্র এবং এর ভিতরে সকল বস্তু রৌপ্য নির্মিত হবে এবং (জান্নাতে) আরো দু’টি উদ্যান থাকবে। এ দু’টির সকল পাত্র এবং ভিতরের সকল বস্তু সোনার তৈরী হবে। জান্নাতে আদনের মধ্যে জান্নাতী লোকেরা তাদের প্রতিপালকের দর্শন লাভ করবে। এ জান্নাতবাসী এবং তাদের প্রতিপালকের এ দর্শনের মাঝে আল্লাহ্‌র সত্তার ওপর জড়ানো তাঁর বিরাটত্বের চাদর ছাড়া আর কোন জিনিস থাকবে না। [৪৮৮০, ৭৪৪৪; মুসলিম ১/৮০, হাঃ ১৮০, আহমাদ ৮৪২৭] (আ.প্র. ৪৫১১, ই.ফা. ৪৫১৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৫/২.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তারা তাঁবুতে সুরক্ষিত গৌর বর্ণের হুর। (সূরাহ আর্ রহমান ৫৫/৭২)

وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ الْحُوْرُ السُّوْدُ الْحَدَقِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ مَقْصُوْرَاتٌ مَحْبُوْسَاتٌ قُصِرَ طَرْفُهُنَّ وَأَنْفُسُهُنَّ عَلَى أَزْوَاجِهِنَّ قَاصِرَاتٌ لَا يَبْغِيْنَ غَيْرَ أَزْوَاجِهِنَّ.

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, حُوْرٌ কালো মনি যুক্ত চক্ষু। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, مَقْصُوْرٰتٌ তাদের দৃষ্টি এবং তাদের সত্তা তাদের স্বামীদের জন্য সুরক্ষিত থাকবে। قَاصِرَاتٌ তারা তাদের জন্যই নির্দিষ্ট থাকবে। তারা তাদের ছাড়া অন্য কাউকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করার আকাঙ্ক্ষাও পোষণ করবে না।

৪৮৭৯

مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى قَالَ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ حَدَّثَنَا أَبُوْ عِمْرَانَ الْجَوْنِيُّ عَنْ أَبِيْ بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ قَيْسٍ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ خَيْمَةً مِنْ لُؤْلُؤَةٍ مُجَوَّفَةٍ عَرْضُهَا سِتُّوْنَ مِيْلًا فِيْ كُلِّ زَاوِيَةٍ مِنْهَا أَهْلٌ مَا يَرَوْنَ الآخَرِيْنَ يَطُوْفُ عَلَيْهِمْ الْمُؤْمِنُوْنَ.

‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, জান্নাতের মধ্যে ফাঁপা মোতির একটি তাঁবু থাকবে। এর প্রশস্ততা হবে ষাট মাইল। এর প্রতি কোণে থাকবে হুর-বালা। এদের এক কোণের জন অপর কোণের জনকে দেখতে পাবে না। ঈমানদার লোকেরা তাদের কাছে যাবে। এতে থাকবে দু’টি বাগান, যার সকল পাত্র এবং ভেতরের সকল বস্তু হবে রূপার তৈরী। [৩২৪৩] (আ.প্র. ৪৫১২, ই.ফা. ৪৫১৫)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৬/১.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ সুবিস্তৃত ছায়া। (সূরাহ ওয়াকি‘আহ ৫৬/৩০)

(56) سُوْرَةُ الْوَاقِعَةِ

সূরাহ (৫৬) : ওয়াকি‘আহ

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {رُجَّتْ} زُلْزِلَتْ {بُسَّتْ} فُتَّتْ لُتَّتْ كَمَا يُلَتُّ السَّوِيْقُ {الْمَخْضُوْدُ} الْمُوْقَرُ حَمْلًا وَيُقَالُ أَيْضًا لَا شَوْكَ لَهُ {مَنْضُوْدٍ} الْمَوْزُ {وَالْعُرُبُ} الْمُحَبَّبَاتُ إِلَى أَزْوَاجِهِنَّ {ثُلَّةٌ} أُمَّةٌ {يَحْمُوْمٍ} دُخَانٌ أَسْوَدُ {يُصِرُّوْنَ} يُدِيْمُوْنَ {الْهِيْمُ} الإِبِلُ الظِّمَاءُ {لَمُغْرَمُوْنَ} لَمَلُوْمُوْنَ {مَدِيْنِيْنَ} مُحَاسَبِيْنَ رَوْحٌ جَنَّةٌ وَرَخَاءٌ {وَرَيْحَانٌ} الرِّزْقُ {وَنُنْشِئَكُمْفِي} أَيِّ خَلْقٍ نَشَاءُ وَقَالَ غَيْرُهُ {تَفَكَّهُوْنَ} تَعْجَبُوْنَ عُرُبًا مُثَقَّلَةً وَاحِدُهَا عَرُوْبٌ مِثْلُ صَبُوْرٍ وَصُبُرٍ يُسَمِّيْهَا أَهْلُ مَكَّةَ الْعَرِبَةَ وَأَهْلُ الْمَدِيْنَةِ الْغَنِجَةَ وَأَهْلُ الْعِرَاقِ الشَّكِلَةَ.

وَقَالَ فِيْ {خَافِضَةٌ} لِقَوْمٍ إِلَى النَّارِ {وَرَافِعَةٌ} إِلَى الْجَنَّةِ {مَوْضُوْنَةٍ} مَنْسُوْجَةٍ وَمِنْهُ وَضِيْنُ النَّاقَةِ وَالْكُوْبُ لَا آذَانَ لَهُ وَلَا عُرْوَةَ {وَالْأَبَارِيْقُ} ذَوَاتُ الْآذَانِ وَالْعُرَى {مَسْكُوْبٍ} جَارٍ {وَفُرُشٍ مَّرْفُوْعَةٍ} بَعْضُهَا فَوْقَ بَعْضٍ {مُتْرَفِيْنَ} مُمَتَّعِيْنَ {مَا تُمْنُوْنَ} مِنْ النُّطَفِ يَعْنِيْ هِيَ النُّطْفَةُ فِيْ أَرْحَامِ النِّسَاءِ {لِلْمُقْوِيْنَ} لِلْمُسَافِرِيْنَ وَالْقِيُّ الْقَفْرُ{بِمَوَاقِعِ النُّجُوْمِ} بِمُحْكَمِ الْقُرْآنِ وَيُقَالُ بِمَسْقِطِ النُّجُوْمِ إِذَا سَقَطْنَ وَمَوَاقِعُ وَمَوْقِعٌ وَاحِدٌ {مُدْهِنُوْنَ} مُكَذِّبُوْنَ مِثْلُ {لَوْ تُدْهِنُ فَيُدْهِنُوْنَ فَسَلَامٌ لَّكَ} أَيْ مُسَلَّمٌ لَكَ إِنَّكَ {مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِيْنِ} وَأُلْغِيَتْ إِنَّ وَهُوَ مَعْنَاهَا كَمَا تَقُوْلُ أَنْتَ مُصَدَّقٌ مُسَافِرٌ عَنْ قَلِيْلٍ إِذَا كَانَ قَدْ قَالَ إِنِّيْ مُسَافِرٌ عَنْ قَلِيْلٍ وَقَدْ يَكُوْنُ كَالدُّعَاءِ لَهُ كَقَوْلِكَ فَسَقْيًا مِنْ الرِّجَالِ إِنْ رَفَعْتَ السَّلَامَ فَهُوَ مِنْ الدُّعَاءِ {تُوْرُوْنَ} تَسْتَخْرِجُوْنَ أَوْرَيْتُ أَوْقَدْتُ {لَغْوًا} بَاطِلًا {تَأْثِيْمًا} كَذِبًا.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, رُجَّتْ প্রকম্পিত হবে। بُسَّتْ চূর্ণ-বিচূর্ণ হওয়া, ছাতু যেমন চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হয় তেমিনভাবে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হবে। الْمَخْضُوْدُ বোঝার কারণে চরম ভারাক্রান্ত। কণ্টকহীন বৃক্ষকেও مَخْضُوْدُ বলা হয়। مَنْضُوْدٍ কলা। الْعُرُبُ স্বামীর কাছে প্রিয়তমা স্ত্রীগণ। ثُلَّةٌ উম্মত। يَحْمُوْمٍ কালো ধোঁয়া। يُصِرُّوْنَ তারা অবিরাম করতে থাকবে। الْهِيْمُ পিপাসিত উট। لَمُغْرَمُوْنَ যাদের উপর ঋণ পরিশোধ করা অপরিহার্য করে দেয়া হয়েছে। رَوْحُ উদ্যান ও কোমলতা। اَلرَيْحَانُ জীবনোপকরণ। نَنْشَأَكُمْ যে কোন আকৃতিতে আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করব। মুজাহিদ ব্যতীত অন্যান্য মুফাস্সির বলেন, تَفَكَّهُوْنَ তোমরা বিস্মিত হয়ে যাবে। عُرُبًا বহুবচন। একবচনে عَرُوْبٌ যেমন, صُبُرٌ বহুবচন। একবচনে صَبُوْرٍ মক্কাবাসী লোকেরা তাকে الْعَرِبَةَ মদিনা্বাসী লোকেরা الْغَنِجَةَ এবং ইরাকী লোকেরা তাকে الشَّكِلَةَ বলে। خَافِضَةٌ তা একদল লোককে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। رَافِعَةٌ তা একদল লোককে জান্নাতে নিয়ে যাবে। مَوْضُوْنَةٍ مَّنْسُوْجَةٍ গ্রথিত। এর থেকেই وَضَيْنُ النَّاقِةٍ শব্দটির উৎপত্তি (অর্থ উটের পালানের রশি) الكُوْبُ নল ও হাতলবিহীন পানপাত্র। الْأَبَارِيْقُ নল ও হাতল সম্পন্ন লোটা। مَسْكُوْبٍ প্রবহমান। وَفُرُشٍ مَّرْفُوْعَةٍ একটির উপর আরেকটি বিছানো শয্যাসমূহ। مُتْرَفِيْنَ ভোগ বিলাসী লোকজন। مَا تُمْنُوْنَ মহিলাদের গর্ভাশয়ে নিক্ষিপ্ত বীর্য। لِلْمُقْوِيْنَ মুসাফিরদের জন্য। الْقِيُّ ঘাস, পানি এবং জন-মানবহীন ভূমি। بِمَوَاقِعِ النُّجُوْمِ কুরআনের মুহ্কাম আয়াতসমূহ। بِمَسْقِطِ النُّجُوْمِ নক্ষত্ররাজির অস্তাচলের স্থান। مَوَاقِعٌএবং مَوْقِعٌ শব্দ দু’টো একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। مُدْهِنُوْنَ তুচ্ছকারী লোকজন। যেমন অন্যত্র আছে, لَوْ تُدْهِنُ فَيُدْهِنُوْنَ যদি তুমি তুচ্ছ কর, তবে তারাও তুচ্ছ করবে। فَسَلَامٌ لَكَ তোমার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। কেননা, তুমি দক্ষিণ পার্শ্বে অবস্থিত। এখানে إِنَّশব্দটি উহ্য আছে। যেমন, اِنِّىْ مُسَافِرٌ عَنْ قَلِيْلٍ এর উত্তরে কথিত أَنْتَ مُصَدَّقٌ مُّسَافِرٌ عَنْ قَلِيْلٍ বাক্যের মাঝে إِنَّ শব্দটি উহ্য আছে। মূলে ছিল إِنَّكَ مُسَافِرٌ শ্রোতার প্রতি দু‘আ হিসেবেও سَلَامَ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন فَسَقْيًا مِّنْ الرِّجَالِ (পরিতৃপ্ত লোকজন) বাক্যটিও দু‘আ হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। سَلَامٌ শব্দটিকে مَرْفُوْعٌ পড়া হলে তা দু‘আ হিসেবেই গণ্য হবে। تُوْرُوْنَ তোমরা বের কর, প্রজ্জ্বলিত কর। পক্ষান্তরে أَوْرَيْتُ بِمَعْزٍ اَوْ فَدْتُ থেকে تُوْرُوْنَ শব্দটির উৎপত্তি। لَغْوًا অসার। تَأْثِيْمًا মিথ্যা বাক্য।

৪৮৮১

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ شَجَرَةً يَسِيْرُ الرَّاكِبُ فِيْ ظِلِّهَا مِائَةَ عَامٍ لَا يَقْطَعُهَا وَاقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ {وَظِلٍّ مَّمْدُوْدٍ}.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, জান্নাতের মধ্যে এমন একটি বৃক্ষ আছে, যার ছায়ায় একজন সওয়ারী একশত বছর চলতে থাকবে, তবুও সে এ ছায়া অতিক্রম করতে পারবে না। তোমার ইচ্ছে হলে তুমি (সম্প্রসারিত ছায়া) পাঠ কর। [৩২৫২] (আ.প্র. ৪৫১৩, ই.ফা. ৪৫১৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৯/১.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।

(57) سُوْرَةُ الْحَدِيْدِ

সূরাহ (৫৭) : আল-হাদীদ

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {جَعَلَكُمْ مُّسْتَخْلَفِيْنَ} مُعَمَّرِيْنَ فِيْهِ {مِنَ الظُّلُمٰتِ إِلَى النُّوْرِ} مِنْ الضَّلَالَةِ إِلَى الْهُدَى {فِيْهِ بَأْسٌ شَدِيْدٌ وَّمَنَافِعُ لِلنَّاسِ} جُنَّةٌ وَسِلَاحٌ {مَوْلَاكُمْ} أَوْلَى بِكُمْ {لِئَلَّا يَعْلَمَ أَهْلُ الْكِتَابِ} لِيَعْلَمَ أَهْلُ الْكِتَابِ يُقَالُ {الظَّاهِرُ} عَلَى كُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا {وَالْبَاطِنُ} عَلَى كُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا {أَنْظِرُوْنَا} انْتَظِرُوْنَا.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, جَعَلَكُمْ مُّسْتَخْلَفِيْنَ আমি তোমাদেরকে তাতে আবাদকারী বানিয়েছি। مِنْ الظُّلُمٰتِ إِلَى النُّوْرِ ভ্রান্তি থেকে হিদায়াতের দিকে। وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ ঢাল ও অস্ত্রশস্ত্র। مَوْلَاكُمْ তিনিই তোমাদের জন্য যোগ্য। لِئَلَّا يَعْلَمَ أَهْلُ الْكِتَابِ যাতে কিতাবী লোকেরা জানতে পারে। বলা হয়, বস্তুর বাহ্যিক বিষয়ের উপরও عِلْمٍ ব্যবহৃত হয়। এমনিভাবে বস্তুর অভ্যন্তরীণ বিষয়ের উপরও عِلْم ব্যবহৃত হয়। أَنْظِرُوْنَا তোমরা আমাদের জন্য একটু অপেক্ষা কর।

(58) سُوْرَةُ الْمُجَادَلَةِ

সূরাহ (৫৮) : মুজাদালাহ

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {يُحَادُّوْنَ} يُشَاقُّوْنَ اللهَ {كُبِتُوْا} أُخْزُوْا مِنَ الْخِزْيِ {اسْتَحْوَذَ} غَلَبَ. سُوْرَةُ الْحَشْرِ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, يُحَادُّوْنَ তারা (আল্লাহর) বিরোধিতা করছে। كُبِتُوْا তাদেরকে অপদস্থ করা হবে। الْخِزْيِ ধাতু হতে উক্ত শব্দটির উৎপত্তি। اسْتَحْوَذَ সে প্রাধান্য বিস্তার করেছে।

(59) سُوْرَةُ الْحَشْرِ

সূরাহ (৫৯) : আল-হাশর

{الْجَلَآءَ} الإِخْرَاجُ مِنْ أَرْضٍ إِلَى أَرْضٍ.

الْجَلَاءَ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নির্বাসিত করা।

৪৮৮২

مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ أَخْبَرَنَا أَبُوْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ سُوْرَةُ التَّوْبَةِ قَالَ التَّوْبَةُ هِيَ الْفَاضِحَةُ مَا زَالَتْ تَنْزِلُ وَمِنْهُمْ وَمِنْهُمْ حَتَّى ظَنُّوْا أَنَّهَا لَنْ تُبْقِيَ أَحَدًا مِنْهُمْ إِلَّا ذُكِرَ فِيْهَا قَالَ قُلْتُ سُوْرَةُ الْأَنْفَالِ قَالَ نَزَلَتْ فِيْ بَدْرٍ قَالَ قُلْتُ سُوْرَةُ الْحَشْرِ قَالَ نَزَلَتْ فِيْ بَنِي النَّضِيْرِ.

সা‘ঈদ ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে সূরাহ তাওবাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এ তো লাঞ্ছনাকারী সূরা। وَمِنْهُمْ وَمِنْهُمْ অর্থাৎ তাদের একদল এই করেছে, আরেক দল ওই করেছে, এ বলে একাধারে এ সূরাহ অবতীর্ণ হতে থাকলে লোকেরা ধারণা করতে লাগলো যে, এ সূরায় উল্লেখ করা হবে না, এমন কেউ আর তাদের মধ্যে বাকী থাকবে না। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাঁকে সূরাহ আনফাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এ সূরাটি বদর যুদ্ধের সময় অবতীর্ণ হয়েছে। আমি তাকে সূরাহ হাশর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এটি বানু নযীর সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। [৪০২৯; মুসলিম ৫৪/৬, হাঃ ৩০৩১] (আ.প্র. ৪৫১৪, ই.ফা. ৪৫১৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৮৩

الْحَسَنُ بْنُ مُدْرِكٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمَّادٍ أَخْبَرَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدٍ قَالَ قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا سُوْرَةُ الْحَشْرِ قَالَ قُلْ سُوْرَةُ النَّضِيْرِ.

সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে ‘সূরাহ হাশর’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এ সুরাকে ‘সূরাহ বানী নাযীর’ বল। [৪০২৯] (আ.প্র. ৪৫১৫, ই.ফা. ৪৫১৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৯/২.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তোমরা যে খর্জুর বৃক্ষগুলো কর্তন করেছ বা যেগুলো কান্ডের উপর স্থির রেখে দিয়েছ, তা তো আল্লাহরই অনুমতিক্রমে; এতো এ জন্য যে, আল্লাহ্ পাপাচারীদেরকে লাঞ্ছিত করবেন- (সূরাহ আল-হাশর ৫৯/৫)।

৪৮৮৪

قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَرَّقَ نَخْلَ بَنِي النَّضِيْرِ وَقَطَعَ وَهِيَ الْبُوَيْرَةُ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {مَا قَطَعْتُمْ مِنْ لِيْنَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوْهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُوْلِهَا فَبِإِذْنِ اللهِ وَلِيُخْزِيَ الْفَاسِقِيْنَ}.

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বানী নযীর গোত্রের খেজুর গাছ জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন এবং কেটে ফেলেছিলেন। এ গাছগুলো ছিল ‘বুয়াইরা’ নামক জায়গায়। এরপর অবতীর্ণ করেছেন আল্লাহ্ তা‘আলাঃ তোমরা যে খর্জুর বৃক্ষগুলো কর্তন করেছ বা যেগুলোকে কাণ্ডের উপর স্থির রেখে দিয়েছ তা তো আল্লাহ্‌রই অনুমতিক্রমে; এ এজন্য যে, আল্লাহ্ পাপাচারীদেরকে লাঞ্ছিত করবেন। [২৩২৬] (আ.প্র. ৪৫১৬, ই.ফা. ৪৫১৯)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৯/৩.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ্ এই জনপদবাসীদের নিকট হতে তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে যা কিছু দিয়েছেন। (সূরাহ আল-হাশর ৫৯/৭)

৪৮৮৫

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ غَيْرَ مَرَّةٍ عَنْ عَمْرٍو عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ بْنِ الْحَدَثَانِ عَنْ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَتْ أَمْوَالُ بَنِي النَّضِيْرِ مِمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَى رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم مِمَّا لَمْ يُوْجِفْ الْمُسْلِمُوْنَ عَلَيْهِ بِخَيْلٍ وَلَا رِكَابٍ فَكَانَتْ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَاصَّةً يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِهِ مِنْهَا نَفَقَةَ سَنَتِهِ ثُمَّ يَجْعَلُ مَا بَقِيَ فِي السِّلَاحِ وَالْكُرَاعِ عُدَّةً فِيْ سَبِيْلِ اللهِ

‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বনু নযীরের বিষয়-সম্পত্তি ঐ সমস্ত বস্তুর অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা আল্লাহ্ তাঁর রসূলকে ‘ফাই’ হিসেবে দিয়েছেন এ জন্য যে মুসলিমরা অশ্বে কিংবা উষ্ট্রে অরোহণ করে যুদ্ধ করেনি। সুতরাং এটা খাস ছিল রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জন্য। এর থেকে তিনি তাঁর পরিবারের জন্য এক বছরের খরচ দান করতেন। এরপর বাকিটা তিনি অস্ত্রশস্ত্র এবং ঘোড়া সংগ্রহের পিছনে ব্যয় করতেন আল্লাহ্‌র পথে জিহাদের প্রস্তুতি হিসেবে। [২৯০৪] (আ.প্র. ৪৫১৭, ই.ফা. ৪৫২০)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৯/৪.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ রসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ কর (এবং যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা হতে বিরত থাক)। (সূরাহ আল-হাশর ৫৯/৭)

৪৮৮৬

مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ لَعَنَ اللهُ الْوَاشِمَاتِ وَالْمُوْتَشِمَاتِ وَالْمُتَنَمِّصَاتِ وَالْمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ الْمُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللهِ فَبَلَغَ ذَلِكَ امْرَأَةً مِنْ بَنِيْ أَسَدٍ يُقَالُ لَهَا أُمُّ يَعْقُوْبَ فَجَاءَتْ فَقَالَتْ إِنَّهُ بَلَغَنِيْ عَنْكَ أَنَّكَ لَعَنْتَ كَيْتَ وَكَيْتَ فَقَالَ وَمَا لِيْ أَلْعَنُ مَنْ لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ هُوَ فِيْ كِتَابِ اللهِ فَقَالَتْ لَقَدْ قَرَأْتُ مَا بَيْنَ اللَّوْحَيْنِ فَمَا وَجَدْتُ فِيْهِ مَا تَقُوْلُ قَالَ لَئِنْ كُنْتِ قَرَأْتِيْهِ لَقَدْ وَجَدْتِيْهِ أَمَا قَرَأْتِ {وَمَآ اٰتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ ج وَمَا نَهٰكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا ج} قَالَتْ بَلَى قَالَ فَإِنَّهُ قَدْ نَهَى عَنْهُ قَالَتْ فَإِنِّيْ أَرَى أَهْلَكَ يَفْعَلُوْنَهُ قَالَ فَاذْهَبِيْ فَانْظُرِيْ فَذَهَبَتْ فَنَظَرَتْ فَلَمْ تَرَ مِنْ حَاجَتِهَا شَيْئًا فَقَالَ لَوْ كَانَتْ كَذَلِكَ مَا جَامَعْتُهَا.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্ লা’নাত করেছেন ঐ সমস্ত নারীর প্রতি যারা অন্যের শরীরে উল্কি অংকণ করে, নিজ শরীরে উল্কি অংকণ করায়, যারা সৌন্দর্যের জন্য ভূরু-চুল উপড়িয়ে ফেলে ও দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে। সে সব নারী আল্লাহ্‌র সৃষ্টিতে বিকৃতি আনয়ন করে। এরপর বানী আসাদ গোত্রের উম্মু ইয়াকূব নামের এক মহিলার কাছে এ সংবাদ পৌঁছলে সে এসে বলল, আমি জানতে পারলাম, আপনি এ ধরনের মহিলাদের প্রতি লা‘নত করেছেন। তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যার প্রতি লা‘নাত করেছেন, আল্লাহর কিতাবে যার প্রতি লা‘নাত করা হয়েছে, আমি তার প্রতি লা‘নাত করব না কেন? তখন মহিলা বলল, আমি দুই ফলকের মাঝে যা আছে তা (পূর্ণ কুরআন) পড়েছি। কিন্তু আপনি যা বলেছেন, তা তো এতে পাইনি। ‘আবদুল্লাহ্ বললেন, যদি তুমি কুরআন পড়তে তাহলে অবশ্যই তা পেতে, তুমি কি পড়নি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাদেরকে যা দেন তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করেন তা হতে বিরত থাক। মহিলাটি বলল, হাঁ নিশ্চয়ই পড়েছি। ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বললেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তখন মহিলা বলল, আমার মনে হয় আপনার পরিবারও এ কাজ করে তিনি বললেন, তুমি যাও এবং ভালমত দেখে এসো। এরপর মহিলা গেল এবং ভালভাবে দেখে এলো। কিন্তু তার দেখার কিছুই দেখতে পেলো না। তখন ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বললেন, যদি আমার স্ত্রী এমন করত, তবে সে আমার সঙ্গে একত্র থাকতে পারত না। [৪৮৮৭, ৫৯৩১, ৫৯৩৯, ৫৯৪৩, ৫৯৪৮; মুসলিম ৩৭/৩৩, হাঃ ২১২৫, আহমাদ ৪৩৪৩] (আ.প্র. ৪৫১৮, ই.ফা. ৪৫২১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৮৭

عَلِيٌّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ عَنْ سُفْيَانَ قَالَ ذَكَرْتُ لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَابِسٍ حَدِيْثَ مَنْصُوْرٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَعَنَ اللهُ الْوَاصِلَةَ فَقَالَ سَمِعْتُهُ مِنْ امْرَأَةٍ يُقَالُ لَهَا أُمُّ يَعْقُوْبَ عَنْ عَبْدِ اللهِ مِثْلَ حَدِيْثِ مَنْصُوْرٍ.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে নারী নকল চুল লাগায়, তার প্রতি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লা‘নাত করেছেন। রাবী (রহ.) বলেন, আমি উম্মু ইয়াকূব নামক মহিলার নিকট হতে হাদীসটি শুনেছি, তিনি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, মানসূরের হাদীসের মতই। [৪৮৮৬] (আ.প্র. ৪৫১৯, ই.ফা. ৪৫২২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৯/৫.অধ্যায়ঃ

‘‘আনসারদের যারা এ নগরীতে বসবাস করে আসছে ও ঈমান এনেছে, (তাঁরা মুহাজিরদেরকে ভালবাসে এবং মুহাজিরদেরকে যা দেয়া হয়েছে, তার জন্য তাঁরা অন্তরে আকাঙক্ষা পোষণ করে না)।’’ (সূরাহ আল-হাশর ৫৯/৯)

৪৮৮৮

أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا أَبُوْ بَكْرٍ يَعْنِي ابْنَ عَيَّاشٍ عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُوْنٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أُوْصِي الْخَلِيْفَةَ بِالْمُهَاجِرِيْنَ الْأَوَّلِيْنَ أَنْ يَعْرِفَ لَهُمْ حَقَّهُمْ وَأُوْصِي الْخَلِيْفَةَ بِالأَنْصَارِ {وَالَّذِيْنَ تَبَوَّءُوا الدَّارَ وَالْإِيْمَانَ} مِنْ قَبْلِ أَنْ يُهَاجِرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَقْبَلَ مِنْ مُحْسِنِهِمْ وَيَعْفُوَ عَنْ مُسِيئِهِمْ.

‘আম্‌র ইব্‌নু মায়মূন (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, আমি আমার পরবর্তী খালীফাকে ওসীয়াত করেছি, প্রথম যুগের মুহাজিরদের হাক আদায় করার জন্য এবং আমি পরবর্তী খালীফাকে আনসারদের ব্যাপারে ওসীয়াত করছি, যারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর হিজরাতের পূর্বে এ নগরীতে বসবাস করতেন এবং ঈমান এনেছিলেন যেন তিনি তাদের পুণ্যবানদের সৎকর্মকে গ্রহণ করেন এবং দোষ-ত্র“টিকে ক্ষমা করে দেন। [১৩৯২] (আ.প্র. ৪৫২০, ই.ফা. ৪৫২৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৫৯/৬.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ এবং তাঁরা তাঁদের নিজেদের উপর প্রাধান্য দেয় (নিজেরা অভাবগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও) শেষ পর্যন্ত। (সূরাহ আল-হাশর ৫৯/৯)

الْخَصَاصَةُ الْفَاقَةُ الْمُفْلِحُوْنَ الْفَائِزُوْنَ بِالْخُلُوْدِ وَالْفَلَاحُ الْبَقَاءُ حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ عَجِّلْ وَقَالَ الْحَسَنُ حَاجَةً حَسَدًا.

الْخَصَاصَةُ ক্ষুধা। الْمُفْلِحُوْنَ যারা (জান্নাতে) চিরকাল থাকার সফলতা অর্জন করেছেন। الْفَلَاحِ স্থায়িত্ব। حَيَّعَلَىالْفَلَاحِ সফলতা ও চিরস্থায়ী জীবনের দিকে তাড়াতাড়ি আস। হাসান (রহ.) বলেন, حَاجَةٌ হিংসা।

৪৮৮৯

يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ كَثِيْرٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ غَزْوَانَ حَدَّثَنَا أَبُوْ حَازِمٍ الْأَشْجَعِيُّ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَتَى رَجُلٌ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَصَابَنِي الْجَهْدُ فَأَرْسَلَ إِلَى نِسَائِهِ فَلَمْ يَجِدْ عِنْدَهُنَّ شَيْئًا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَلَا رَجُلٌ يُضَيِّفُهُ هَذِهِ اللَّيْلَةَ يَرْحَمُهُ اللهُ فَقَامَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ أَنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ فَذَهَبَ إِلَى أَهْلِهِ فَقَالَ لِامْرَأَتِهِ ضَيْفُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَدَّخِرِيْهِ شَيْئًا قَالَتْ وَاللهِ مَا عِنْدِيْ إِلَّا قُوْتُ الصِّبْيَةِ قَالَ فَإِذَا أَرَادَ الصِّبْيَةُ الْعَشَاءَ فَنَوِّمِيْهِمْ وَتَعَالَيْ فَأَطْفِئِي السِّرَاجَ وَنَطْوِيْ بُطُوْنَنَا اللَّيْلَةَ فَفَعَلَتْ ثُمَّ غَدَا الرَّجُلُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَقَدْ عَجِبَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ أَوْ ضَحِكَ مِنْ فُلَانٍ وَفُلَانَةَ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {وَيُؤْثِرُوْنَ عَلٰٓى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ}.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, আমি খুব ক্ষুধার্ত। তখন তিনি তাঁর সহধর্মিণীদের নিকট পাঠালেন; কিন্তু তিনি তাদের কাছে কিছুই পেলেন না। এরপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এমন কেউ আছে কি, যে আজ রাতে এ লোকটিকে মেহমানদারী করতে পারে? আল্লাহ্ তাঁর প্রতি রহমাত করবেন। তখন আনসারদের এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, আমি আছি, হে আল্লাহ্‌র রসূল! এরপর তিনি তাঁকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে গেলেন এবং নিজ স্ত্রীকে বললেন, ইনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মেহমান। কোন জিনিস জমা করে রাখবে না। মহিলা বলল, আল্লাহ্‌র কসম! আমার কাছে ছেলে-মেয়েদের খাবার ছাড়া আর কিছুই নেই। তিনি বললেন, ছেলেমেয়েরা রাতের খাবার চাইলে তুমি তাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে দিও, (খাবার নিয়ে) আমার কাছে আসিও, অতঃপর বাতিটি নিভিয়ে দিও। আজ রাতে আমরা ভুখা থাকব। সুতরাং মহিলা তা-ই করল। পরদিন সকালে আনসারী সহাবী রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর খিদমাতে আসলেন। তিনি বললেন, অমুক ব্যক্তি ও তার স্ত্রীর প্রতি আল্লাহ্ সন্তুষ্ট হয়েছেন অথবা অমুক অমুকের কাজে আল্লাহ্ হেসেছেন। এরপর আল্লাহ্ অবতীর্ণ করলেন ঃ “এবং তাঁরা তাদের নিজেদের উপর অন্যদের প্রাধান্য দেয় নিজেরা অভাবগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও।” [৩৭৯৮] (আ.প্র. ৪৫২১, ই.ফা. ৪৫২৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬০/১.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ (হে মু’মিনগণ!) আমার শত্রু তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। (সূরাহ আল-মুমতাহিনাহ ৬০/১)

(60) سُوْرَةُ الْمُمْتَحِنَةِ

সূরাহ (৬০) : আল-মুমতাহিনাহ

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {لَا تَجْعَلْنَا} فِتْنَةً لَا تُعَذِّبْنَا بِأَيْدِيْهِمْ فَيَقُوْلُوْنَ لَوْ كَانَ هَؤُلَاءِ عَلَى الْحَقِّ مَا أَصَابَهُمْ هَذَا {بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ} أُمِرَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِفِرَاقِ نِسَائِهِمْ كُنَّ كَوَافِرَ بِمَكَّةَ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, لَا تَجْعَلْنَا আমাদেরকে কাফিরদের হাতে শাস্তি দিও না। তাহলে তারা বলবে, যদি মুসলিমরা হাকের ওপর থাকত, তাহলে তাদের ওপর এ মুসীবত আসত না। بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহাবীদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাঁরা যেন তাদের ঐ স্ত্রীদের বর্জন করে, যারা মক্কাতে কাফির অবস্থায় বিদ্যমান আছে।

৪৮৯০

الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ دِيْنَارٍ قَالَ حَدَّثَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ أَنَّهُ سَمِعَ عُبَيْدَ اللهِ بْنَ أَبِيْ رَافِعٍ كَاتِبَ عَلِيٍّ يَقُوْلُ سَمِعْتُ عَلِيًّا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ بَعَثَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَا وَالزُّبَيْرَ وَالْمِقْدَادَ فَقَالَ انْطَلِقُوْا حَتَّى تَأْتُوْا رَوْضَةَ خَاخٍ فَإِنَّ بِهَا ظَعِيْنَةً مَعَهَا كِتَابٌ فَخُذُوْهُ مِنْهَا فَذَهَبْنَا تَعَادَى بِنَا خَيْلُنَا حَتَّى أَتَيْنَا الرَّوْضَةَ فَإِذَا نَحْنُ بِالظَّعِيْنَةِ فَقُلْنَا أَخْرِجِي الْكِتَابَ فَقَالَتْ مَا مَعِيْ مِنْ كِتَابٍ فَقُلْنَا لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَنُلْقِيَنَّ الثِّيَابَ فَأَخْرَجَتْهُ مِنْ عِقَاصِهَا فَأَتَيْنَا بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا فِيْهِ مِنْ حَاطِبِ بْنِ أَبِيْ بَلْتَعَةَ إِلَى أُنَاسٍ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ مِمَّنْ بِمَكَّةَ يُخْبِرُهُمْ بِبَعْضِ أَمْرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَا هَذَا يَا حَاطِبُ قَالَ لَا تَعْجَلْ عَلَيَّ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ كُنْتُ امْرًَا مِنْ قُرَيْشٍ وَلَمْ أَكُنْ مِنْ أَنْفُسِهِمْ وَكَانَ مَنْ مَعَكَ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ لَهُمْ قَرَابَاتٌ يَحْمُوْنَ بِهَا أَهْلِيْهِمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِمَكَّةَ فَأَحْبَبْتُ إِذْ فَاتَنِيْ مِنْ النَّسَبِ فِيْهِمْ أَنْ أَصْطَنِعَ إِلَيْهِمْ يَدًا يَحْمُوْنَ قَرَابَتِيْ وَمَا فَعَلْتُ ذَلِكَ كُفْرًا وَلَا ارْتِدَادًا عَنْ دِيْنِيْ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّهُ قَدْ صَدَقَكُمْ فَقَالَ عُمَرُ دَعْنِيْ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَأَضْرِبَ عُنُقَهُ فَقَالَ إِنَّهُ شَهِدَ بَدْرًا وَمَا يُدْرِيْكَ لَعَلَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ اطَّلَعَ عَلَى أَهْلِ بَدْرٍ فَقَالَ اعْمَلُوْا مَا شِئْتُمْ فَقَدْ غَفَرْتُ لَكُمْ قَالَ عَمْرٌو وَنَزَلَتْ فِيْهِ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوْا عَدُوِّيْ وَعَدُوَّكُمْ} أَوْلِيَاءَ قَالَ لَا أَدْرِي الآيَةَ فِي الْحَدِيْثِ أَوْ قَوْلُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا عَلِيٌّ قَالَ قِيْلَ لِسُفْيَانَ فِيْ هَذَا فَنَزَلَتْ {لَا تَتَّخِذُوْا عَدُوِّي} وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ الآيَةَ قَالَ سُفْيَانُ هَذَا فِيْ حَدِيْثِ النَّاسِ حَفِظْتُهُ مِنْ عَمْرٍو مَا تَرَكْتُ مِنْهُ حَرْفًا وَمَا أُرَى أَحَدًا حَفِظَهُ غَيْرِي.

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যুবায়র (রাঃ), মিকদাদ (রাঃ) ও আমাকে পাঠালেন এবং বললেন, তোমরা ‘রওযা খাখ’ নামক স্থানে যাও। সেখানে এক উষ্ট্রারোহিণী মহিলা পাবে। তার সঙ্গে একখানা পত্র আছে, তোমরা তার থেকে সে পত্রখানা নিয়ে নিবে। এরপর আমরা রওয়ানা হলাম। আমাদের ঘোড়া আমাদেরকে নিয়ে ছুটে চলল। যেতে যেতে আমরা রওযায় গিয়ে পৌঁছলাম। সেখানে পৌঁছেই আমরা উষ্ট্রারোহিণীকে পেয়ে গেলাম। আমরা বললাম, পত্রখানা বের কর সে বলল, আমার সঙ্গে কোন পত্র নেই। আমরা বললাম, অবশ্যই তুমি পত্রখানা বের করবে, অন্যথায় তোমাকে বিবস্ত্র করে ফেলা হবে। এরপর সে তার চুলের বেনী থেকে পত্রখানা বের করল। আমরা পত্রখানা নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এলাম। দেখা গেল, পত্রখানা হাতিব ইব্‌নু আবূ বাল্তাআহ্ (রাঃ)-এর পক্ষ হতে মক্কার কতিপয় মুশরিকের কাছে লেখা যাতে তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিষয় তাদের কাছে ব্যক্ত করে দিয়েছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, হাতিব কী ব্যাপার? তিনি বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার ব্যাপারে ত্বড়িৎ কোন সিদ্ধান্ত নেবেন না। আমি কুরাইশ বংশীয় লোকদের সঙ্গে বসবাসকারী এক ব্যক্তি; কিন্তু তাদের সঙ্গে আমার কোন বংশগত সম্পর্ক নেই। আপনার সঙ্গে যত মুহাজির আছেন, তাদের সবারই সেখানে আত্মীয়-স্বজন আছে। এসব আত্মীয়-স্বজনের কারণে মক্কাহয় তাদের পরিবার-পরিজন এবং ধন-সম্পদ রক্ষা পাচ্ছে। আমি চেয়েছিলাম, যেহেতু তাদের সঙ্গে আমার বংশীয় কোন সম্পর্ক নেই,তাই এবার যদি আমি তাদের প্রতি অনুগ্রহ করি, তাহলে হয়তো তারাও আমার আত্মীয়-স্বজনের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াবে। কুফর ও স্বীয় ধর্ম ত্যাগ করার মনোভাব নিয়ে আমি এ কাজ করিনি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সে তোমাদের কাছে সত্য কথাই বলেছে। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাকে অনুমতি দিন এক্ষুণি আমি তাঁর গর্দান উড়িয়ে দেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। তুমি কি জান না, আল্লাহ্ অবশ্যই বদরের অংশগ্রহণকারীদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ “তোমরা যা চাও কর, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি।” আমর বলেন, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে অবতীর্ণ হয়েছে ঃ “হে ঈমানদারগণ! আমার শত্র“ ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না।” সুফ্ইয়ান (রহ.) বলেন, আয়াতটি হাদীসের অংশ না আমর (রাঃ)-এর কথা, তা আমি জানি না। [৩০০৭] (আ.প্র. ৪৫২২, ই.ফা. ৪৫২৫)

‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, সুফ্ইয়ান ইব্‌নু ‘উয়াইনাহ (রহ.)-কে “হে মু’মিনগণ! আমার শত্র“কে বন্ধুরূপে গ্রহণ করিও না” আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে সুফ্ইয়ান বলেন, মানুষের বর্ণনার মাঝে তো এ রকমই পাওয়া যায়। আমি এ হাদীসটি আমর ইব্‌নু দীনার (রহ.) থেকে মুখস্থ করেছি। এর থেকে একটি অক্ষরও আমি বাদ দেইনি। আমার ধারণা, আমর ইব্‌নু দীনার (রহ.) থেকে আমি ছাড়া আর কেউ এ হাদীস মুখস্থ করেনি। (ই.ফা. ৪৫২৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬০/২.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ (হে মু’মিনগণ!) যখন তোমাদের কাছে মু’মিন নারীরা দেশত্যাগী হয়ে আসে। (সূরাহ আল-মুমতাহিনাহ ৬০/১০)

৪৮৯১

إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ سَعْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَمِّهِ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَمْتَحِنُ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ بِهَذِهِ الآيَةِ بِقَوْلِ اللهِ {يٰٓأَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَآءَكَ الْمُؤْمِنٰتُ يُبَايِعْنَكَ} إِلَى قَوْلِهِ {غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ}قَالَ عُرْوَةُ قَالَتْ عَائِشَةُ فَمَنْ أَقَرَّ بِهَذَا الشَّرْطِ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ قَالَ لَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ بَايَعْتُكِ كَلَامًا وَلَا وَاللهِ مَا مَسَّتْ يَدُهُ يَدَ امْرَأَةٍ قَطُّ فِي الْمُبَايَعَةِ مَا يُبَايِعُهُنَّ إِلَّا بِقَوْلِهِ قَدْ بَايَعْتُكِ عَلَى ذَلِكِ تَابَعَهُ يُوْنُسُ وَمَعْمَرٌ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ إِسْحَاقَ عَنْ الزُّهْرِيِّ وَقَالَ إِسْحَاقُ بْنُ رَاشِدٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ وَعَمْرَةَ.

‘উরওয়াহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) তাকে বলেছেন, কোন মু’মিন মহিলা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে হিজরাত করে এলে, তিনি তাকে আল্লাহ্‌র এই আয়াতের ভিত্তিতে পরীক্ষা করতেন- অর্থঃ “হে নাবী! মু’মিন নারীগণ যখন তোমার কাছে এ মর্মে বায়‘আত করতে আসে যে, তারা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন শরীক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, তারা সজ্ঞানে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবে না, এবং সৎকার্যে তোমাকে অমান্য করবে না, তখন তাদের বায়‘আত গ্রহণ করবে এবং তাদের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।) আল্লাহ্ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু” (সূরাহ আল-মুমতাহিনাহ ৬০/১২)। ‘উরওয়াহ (রহ.) বলেন, ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেছেন, যে মু’মিন মহিলা এসব শর্ত মেনে নিত, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বলতেন, আমি কথার মাধ্যমে তোমাকে বায়‘আত করে নিলাম। আল্লাহ্‌র কসম! বায়‘আত কালে কোন নারীর হাত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর হাতকে স্পর্শ করেনি। নারীদেরকে তিনি শুধু এ কথার দ্বারাই বায়‘আত করতেনقَدْ بَايَعْتُكِ عَلَى ذَلِكِ অর্থাৎ আমি তোমাকে এ কথার ওপর বায়‘আত করলাম।

ইউনুস, মা‘মার ও ‘আবদুর রহমান ইব্‌নু ইসহাক (রহ.) যুহরীর মাধ্যমে উক্ত বর্ণনার সমর্থন করেছেন।

ইসহাক ইব্‌নু রাশিদ, যুহরী থেকে এবং যুহরী ‘উরওয়াহ ও ‘আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। [২৭১৩] (আ.প্র. ৪৪২৩, ই.ফা. ৪৫২৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬০/৩.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ হে নাবী! মু‘মিন নারীরা যখন আপনার কাছে এসে এই মর্মে আনুগত্যের শপথ করে। (সূরাহ আল-মুমতাহিনাহ ৬০/১২)

৪৮৯২

أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيْرِيْنَ عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ بَايَعْنَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَ عَلَيْنَا {أَنْ لَّا يُشْرِكْنَ بِاللهِ شَيْئًا} وَنَهَانَا عَنْ النِّيَاحَةِ فَقَبَضَتْ امْرَأَةٌ يَدَهَا فَقَالَتْ أَسْعَدَتْنِيْ فُلَانَةُ أُرِيْدُ أَنْ أَجْزِيَهَا فَمَا قَالَ لَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا فَانْطَلَقَتْ وَرَجَعَتْ فَبَايَعَهَا.

উম্মি ‘আতিয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে বায়‘আত গ্রহণ করেছি। এরপর তিনি আমাদের সামনে পাঠ করলেন, “তারা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক স্থির করবে না।” এরপর তিনি আমাদেরকে মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ করে কাঁদতে নিষেধ করলেন। এ সময় এক মহিলা তার হাত টেনে নিয়ে বলল, অমুক মহিলা আমাকে বিলাপে সহযোগিতা করেছে, আমি তাকে এর বিনিময় দিতে ইচ্ছা করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে কিছুই বলেননি। এরপর মহিলাটি উঠে চলে গেল এবং আবার ফিরে আসলো, তখন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বায়‘আত করলেন। [১৩০৬] (আ.প্র. ৪৫২৪, ই.ফা. ৪৫২৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৯৩

عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيْرٍ قَالَ حَدَّثَنَا أَبِيْ قَالَ سَمِعْتُ الزُّبَيْرَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ فِيْ قَوْلِهِ تَعَالَى {وَلَا يَعْصِيْنَكَ فِيْ مَعْرُوْفٍ} قَالَ إِنَّمَا هُوَ شَرْطٌ شَرَطَهُ اللهُ لِلنِّسَاءِ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আল্লাহ্‌র বাণী, وَلاَ يَعْصِينَكَ فِي مَعْرُوفٍ -এর ব্যাখ্যায় বলেন যে, এটা একটা শর্ত, যা আল্লাহ্ তা‘আলা নারীদের প্রতি আরোপ করেছেন। (আ.প্র. ৪৫২৫, ই.ফা. ৪৫২৯)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৯৪

عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ الزُّهْرِيُّ حَدَّثَنَاهُ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ إِدْرِيْسَ سَمِعَ عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَتُبَايِعُوْنِيْ عَلَى أَنْ لَا تُشْرِكُوْا بِاللهِ شَيْئًا وَلَا تَزْنُوْا وَلَا تَسْرِقُوْا وَقَرَأَ آيَةَ النِّسَاءِ وَأَكْثَرُ لَفْظِ سُفْيَانَ قَرَأَ الْآيَةَ فَمَنْ وَفَى مِنْكُمْ فَأَجْرُهُ عَلَى اللهِ وَمَنْ أَصَابَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَعُوْقِبَ فَهُوَ كَفَّارَةٌ لَهُ وَمَنْ أَصَابَ مِنْهَا شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ فَسَتَرَهُ اللهُ فَهُوَ إِلَى اللهِ إِنْ شَاءَ عَذَّبَهُ وَإِنْ شَاءَ غَفَرَ لَهُ تَابَعَهُ عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ فِي الآيَةِ.

‘উবাদাহ ইব্‌নু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে ছিলাম, তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি এসব শর্তে আমার কাছে বায়‘আত গ্রহণ করবে যে, তোমরা আল্লাহ্‌র সঙ্গে অন্য কিছুকে শরীক করবে না, যিনা করবে না এবং চুরি করবে না। এরপর তিনি নারীদের শর্ত সম্পর্কিত আয়াত পাঠ করলেন। বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান প্রায়ই বলতেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আয়াতটি পাঠ করেছেন। এরপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমাদের যে ব্যক্তি এসব শর্ত পূরণ করবে, আল্লাহ্ তার প্রতিফল দেবেন। আর যে ব্যক্তি এ সবের কোন একটি করে ফেলবে এবং তাকে শাস্তিও দেয়া হবে। এ শাস্তি তার জন্য কাফ্ফারা হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি এ সবের কোন একটি করে ফেলল এবং আল্লাহ্ তা লুকিয়ে রাখলেন, তাহলে এ বিষয়টি আল্লাহ্‌র কাছে থাকল। তিনি চাইলে তাকে শাস্তি দেবেন, আর তিনি যদি চান তাহলে তাকে ক্ষমাও করে দিতে পারেন। আবদুর রায্যাক (রহ.) মা‘মার (রহ.)-এর সূত্রে এ রকম বর্ণনা করেছেন। [১৮] (আ.প্র. ৪৫২৬, ই.ফা. ৪৫৩০)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৯৫

مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا هَارُوْنُ بْنُ مَعْرُوْفٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ وَهْبٍ قَالَ وَأَخْبَرَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ أَنَّ الْحَسَنَ بْنَ مُسْلِمٍ أَخْبَرَهُ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ شَهِدْتُ الصَّلَاةَ يَوْمَ الْفِطْرِ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِيْ بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ فَكُلُّهُمْ يُصَلِّيْهَا قَبْلَ الْخُطْبَةِ ثُمَّ يَخْطُبُ بَعْدُ فَنَزَلَ نَبِيُّ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَكَأَنِّيْ أَنْظُرُ إِلَيْهِ حِيْنَ يُجَلِّسُ الرِّجَالَ بِيَدِهِ ثُمَّ أَقْبَلَ يَشُقُّهُمْ حَتَّى أَتَى النِّسَاءَ مَعَ بِلَالٍ فَقَالَ {يٰٓأَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَآءَكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ عَلٰٓى أَنْ لَّا يُشْرِكْنَ بِاللهِ شَيْئًا وَّلَا يَسْرِقْنَ وَلَا يَزْنِيْنَ وَلَا يَقْتُلْنَ أَوْلَادَهُنَّ وَلَا يَأْتِيْنَ بِبُهْتَانٍ يَّفْتَرِيْنَه” بَيْنَ أَيْدِيْهِنَّ وَأَرُجُلِهِنَّ} حَتَّى فَرَغَ مِنَ الآيَةِ كُلِّهَا ثُمَّ قَالَ حِيْنَ فَرَغَ أَنْتُنَّ عَلَى ذَلِكَ فَقَالَتْ امْرَأَةٌ وَاحِدَةٌ لَمْ يُجِبْهُ غَيْرُهَا نَعَمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَا يَدْرِي الْحَسَنُ مَنْ هِيَ قَالَ فَتَصَدَّقْنَ وَبَسَطَ بِلَالٌ ثَوْبَهُ فَجَعَلْنَ يُلْقِيْنَ الْفَتَخَ وَالْخَوَاتِيْمَ فِيْ ثَوْبِ بِلَالٍ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ঈদুল ফিত্রের দিন ঈদের সলাতে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সঙ্গে সঙ্গে হাজির ছিলাম এবং আবূ বাক্র (রাঃ), ‘উমার (রাঃ) এবং ‘উসমান (রাঃ)-ও সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা সকলেই খুত্বার আগে সলাত আদায় করেছেন। সলাত আদায়ের পর তিনি খুতবা দিয়েছেন। এরপর আল্লাহ্‌র নাবী মিম্বর থেকে নেমেছেন। তখন তিনি যে লোকজনকে হাতের ইশারায় বসাচ্ছিলেন, এ দৃশ্য আমি এখনো যেন দেখতে পাচ্ছি। এরপর তিনি লোকদের দু’ভাগ করে সামনের দিকে এগিয়ে গেলেন এবং মহিলাদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন। তাঁর সঙ্গে বিলাল (রাঃ)-ও ছিলেন। এরপর তিনি পাঠ করলেন, “হে নাবী! মু’মিন নারীগণ যখন তোমার কাছে এসে বায়‘আত করে এ মর্মে যে, তারা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক স্থির করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তানকে হত্যা করবে না এবং তারা সজ্ঞানে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবে না।” তিনি পূর্ণ আয়াত তিলাওয়াত করে সমাপ্ত করলেন। এরপর তিনি আয়াত শেষ করে বললেন, এ শর্ত পূরণে তোমরা রাজি আছ কি? একজন মহিলা বলল, হাঁ, হে আল্লাহ্‌র রসূল! এ ব্যতীত আর কোন মহিলা কোন উত্তর দেয়নি। এ মহিলাটি কে ছিল, হাসান (রাঃ) তা জানতেন না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা দান করো। বিলাল (রাঃ) তাঁর কাপড় বিছিয়ে দিলেন। তখন মহিলারা তাদের রিং ও আংটি বিলাল (রাঃ)-এর কাপড়ে ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলতে লাগলেন। [৯৮] (আ.প্র. ৪৫২৭, ই.ফা. ৪৫৩১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬১/১.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম ‘আহমাদ’। (সূরাহ আসসাফ ৬১/৬)

(61) سُوْرَةُ الصَّفِّ

সূরাহ (৬১) : আসসাফ্

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {مَنْ أَنْصَارِيْٓ إِلَى اللهِ} مَنْ يَتَّبِعُنِيْ إِلَى اللهِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {مَرْصُوْصٌ}مُلْصَقٌ بَعْضُهُ بِبَعْضٍ وَقَالَ يَحْيَى بِالرَّصَاصِ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, مَنْ أَنْصَارِيْٓإِلَى اللهِ অর্থ, আল্লাহর পথে কে আমার অনুসরণ করবে? ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, مَرْصُوْصٌ ঐ বস্তু যার এক অংশ অপর অংশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সংযুক্ত। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) ব্যতীত অপরাপর তাফসীরকারের মধ্যে رَّصَاصِ (মানে শিলা) ধাতু থেকে مَرْصُوْصًا শব্দটির উৎপত্তি।

৪৮৯৬

أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ عَنْ أَبِيْهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ إِنَّ لِيْ أَسْمَاءً أَنَا مُحَمَّدٌ وَأَنَا أَحْمَدُ وَأَنَا الْمَاحِي الَّذِيْ يَمْحُو اللهُ بِيَ الْكُفْرَ وَأَنَا الْحَاشِرُ الَّذِيْ يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى قَدَمِيْ وَأَنَا الْعَاقِبُ.

যুবায়র ইব্‌নু মুত’ইম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, আমার অনেকগুলো নাম আছে। আমি মুহাম্মাদ, আমি আহ্মাদ এবং আমি মাহী। আমার দ্বারা আল্লাহ্ তা‘আলা সমস্ত কুফরী দূর করবেন। আমি হাশির, আমার পেছনে সমস্ত মানুষকে একত্রিত করা হবে এবং আমি ‘আকিব, সকলের শেষে আগমনকারী। [৩৫৩২] (আ.প্র. ৪৫২৮, ই.ফা. ৪৫৩২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬২/১.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তাকে প্রেরণ করা হয়েছে তাদের অন্যান্য লোকদের জন্যও, যারা এখনও তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি। (সূরাহ আল-জুমু‘আহ ৬২/৩)

(62) سُوْرَةُ الْجُمُعَةِ

সূরাহ (৬২) : আল-জুমু‘আহ

وَقَرَأَ عُمَرُ {فَامْضُوْآ إِلَى ذِكْرِ اللهِ}.

‘উমার (রাঃ) فَاسْعوا إِلٰى ذِكْرِ اللهِ -এর স্থলে (ধাবিত হও আল্লাহর দিকে) পড়তেন।

৪৮৯৭

عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ عَنْ ثَوْرٍ عَنْ أَبِي الْغَيْثِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا جُلُوْسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأُنْزِلَتْ عَلَيْهِ سُوْرَةُ الْجُمُعَةِ {وَاٰخَرِيْنَ مِنْهُمْ لَمَّا يَلْحَقُوْا بِهِمْ} قَالَ قُلْتُ مَنْ هُمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَلَمْ يُرَاجِعْهُ حَتَّى سَأَلَ ثَلَاثًا وَفِيْنَا سَلْمَانُ الْفَارِسِيُّ وَضَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ عَلَى سَلْمَانَ ثُمَّ قَالَ لَوْ كَانَ الإِيْمَانُ عِنْدَ الثُّرَيَّا لَنَالَهُ رِجَالٌ أَوْ رَجُلٌ مِنْ هَؤُلَاءِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে বসেছিলাম। এমন সময় তাঁর উপর অবতীর্ণ হলো সূরাহ জুমু‘আহ, যার একটি আয়াত হলো ঃ “এবং তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনও তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি।” তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারা কারা? তিনবার এ কথা জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও তিনি কোন উত্তর দিলেন না। আমাদের মাঝে সালমান ফারসী (রাঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালমান (রাঃ)-এর উপর হাতে রেখে বললেন, ঈমান সুরাইয়া নক্ষত্রের নিকট থাকলেও আমাদের কতক লোক অথবা তাদের এক ব্যক্তি তা অবশ্যই পেয়ে যাবে। [৪৮৯৮; মুসলিম ৪৪/৫৯, হাঃ ২৫৪৬, আহমাদ ৯৪১০] (আ.প্র. ৪৫২৯, ই.ফা. ৪৫৩৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৮৯৮

عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ أَخْبَرَنِيْ ثَوْرٌ عَنْ أَبِي الْغَيْثِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَنَالَهُ رِجَالٌ مِنْ هَؤُلَاءِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত যে, আমাদের লোক অথবা তাদের কতক লোক অবশ্যই তা পেয়ে যাবে। [৪৮৯৭] (আ.প্র. ৪৫৩০, ই.ফা. ৪৫৩৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬২/২.অধ্যায়ঃ

‘‘আর যখন তারা কোন ব্যবসায়ের কিংবা কোন ক্রীড়াকৌতুকের বস্তু দেখে।’’ (সূরাহ আল-জুমু‘আহ ৬২/১১)

৪৮৯৯

حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ وَعَنْ أَبِيْ سُفْيَانَ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَقْبَلَتْ عِيْرٌ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَنَحْنُ مَعَ النَّبِيِّصلى الله عليه وسلم فَثَارَ النَّاسُ إِلَّا اثْنَيْ عَشَرَ رَجُلًا فَأَنْزَلَ اللهُ {وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوْآ إِلَيْهَا}.

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার জুমু‘আর দিন একটি বাণিজ্য দল আসল, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। বারজন লোক ছাড়া সকলেই সেদিকে ছুটে গেল। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ অবতীর্ণ করলেন ঃ “এবং যখন তারা দেখল ব্যবসা ও কৌতুক, তখন তারা (তোমাকে দাঁড়ান অবস্থায় রেখে) তার দিকে ছুটে গেল” (সূরাহ আল-জুমু‘আহ ৬২/১১)। [৯৩৬] (আ.প্র. ৪৫৩১, ই.ফা. ৪৫৩৫)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৩/১.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ মুনাফিকরা যখন আপনার কাছে আসে তখন তারা বলেঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি অবশ্যই আল্লাহর রসূল। আর আল্লাহ্ জানেন যে, নিশ্চয় আপনি তো তাঁর রসূল এবং আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাচারী। (সূরাহ মুনাফিকুন ৬৩/১)

(63) سُوْرَةُ الْمُنَافِقِيْنَ

সূরাহ (৬৩) : মুনাফিকূন

৪৯০০

عَبْدُ اللهِ بْنُ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ كُنْتُ فِيْ غَزَاةٍ فَسَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ يَقُوْلُ لَا تُنْفِقُوْا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ حَتَّى يَنْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِهِ وَلَئِنْ رَجَعْنَا مِنْ عِنْدِهِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَمِّيْ أَوْ لِعُمَرَ فَذَكَرَهُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَدَعَانِيْ فَحَدَّثْتُهُ فَأَرْسَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ وَأَصْحَابِهِ فَحَلَفُوْا مَا قَالُوْا فَكَذَّبَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَصَدَّقَهُ فَأَصَابَنِيْ هَمٌّ لَمْ يُصِبْنِيْ مِثْلُهُ قَطُّ فَجَلَسْتُ فِي الْبَيْتِ فَقَالَ لِيْ عَمِّيْ مَا أَرَدْتَ إِلَى أَنْ كَذَّبَكَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَقَتَكَ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {إِذَا جَآءَكَ الْمُنٰفِقُوْنَ} فَبَعَثَ إِلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَ فَقَالَ إِنَّ اللهَ قَدْ صَدَّقَكَ يَا زَيْدُ.

যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমি শারীক হয়েছিলাম। তখন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাইকে বলতে শুনলাম, আল্লাহ্‌র রসূলের সঙ্গীদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না, যতক্ষণ না তারা তাঁর থেকে সরে পড়ে এবং সে এও বলল, আমরা মদিনায় ফিরলে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে। এ কথা আমি আমার চাচা কিংবা ‘উমার (রাঃ)-এর কাছে বলে দিলাম। তিনি তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে জানালেন। ফলে তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি তাঁকে বিস্তারিত এ সব কথা বলে দিলাম। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই এবং তার সাথী-সঙ্গীদের কাছে খবর পাঠালেন, তারা সকলেই কসম করে বলল, এমন কথা তারা বলেননি। ফলে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কথাকে মিথ্যা ও তার কথাকে সত্য বলে মেনে নিলেন। এতে আমি এমন মনে কষ্ট পেলাম, যেরূপ কষ্ট আর কখনও পাইনি। আমি (মনের দুঃখে) ঘরে বসে গেলাম। আমার চাচা আমাকে বললেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাকে মিথ্যাচারী মনে করেছেন এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে তুমি কী করে মনে করলে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন, “যখন মুনাফিকগণ তোমার কাছে আসে।” নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাছে লোক পাঠালেন এবং এ সূরাহ পাঠ করলেন। এরপর বললেন, হে যায়দ! আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাকে সত্যবাদী বলে ঘোষণা দিয়েছেন। [৪৯০১, ৪৯০২, ৪৯০৩, ৪৯০৪; মুসলিম ৫০/হাঃ ২৭৭২, আহমাদ ১৯৩০৫] (আ.প্র. ৪৫৩২, ই.ফা. ৪৫৩৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৩/২.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তারা নিজেদের শপথসমূহকে ঢালরূপে ব্যবহার করে। (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/২)

৪৯০১

آدَمُ بْنُ أَبِيْ إِيَاسٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنْتُ مَعَ عَمِّيْ فَسَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ ابْنَ سَلُوْلَ يَقُوْلُ لَا تُنْفِقُوْا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ حَتَّى يَنْفَضُّوْا وَقَالَ أَيْضًا لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَمِّيْ فَذَكَرَ عَمِّيْ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَرْسَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ وَأَصْحَابِهِ فَحَلَفُوْا مَا قَالُوْا فَصَدَّقَهُمْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَذَّبَنِيْ فَأَصَابَنِيْ هَمٌّ لَمْ يُصِبْنِيْ مِثْلُهُ قَطُّ فَجَلَسْتُ فِيْ بَيْتِيْ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {إِذَا جَآءَكَ الْمُنٰفِقُوْنَ} إِلَى قَوْلِهِ {هُمُ الَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ لَا تُنْفِقُوْا عَلٰى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ} إِلَى قَوْلِهِ {لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ} فَأَرْسَلَ إِلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهَا عَلَيَّ ثُمَّ قَالَ إِنَّ اللهَ قَدْ صَدَّقَكَ.

যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার চাচার সঙ্গে ছিলাম। এ সময় আমি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই ইব্‌নু সালূলকে বলতে শুনেছি যে, তোমরা আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গীদের জন্য ব্যয় করবে না, যতক্ষণ না তারা তার থেকে সরে পড়ে এবং সে এও বলল যে, আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে। এ কথা আমি আমার চাচার কাছে বলে দিলাম। আমার চাচা তা (রসূল) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে বললেন। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই এবং তার সাথী-সঙ্গীদেরকে ডেকে পাঠালেন। তারা সকলেই কসম করে বলল, তারা এ কথা বলেনি। ফলে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের কথাকে সত্য এবং আমার কথাকে মিথ্যা মনে করলেন। এতে আমার এমন দুঃখ হল যেমন দুঃখ আর কখনও হয়নি। এমনকি আমি ঘরে বসে গেলাম। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ “যখন মুনাফিকরা তোমার কাছে আসে।” থেকে “তারা বলে আল্লাহ্‌র রসূলের সহচরদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না, যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে” এবং “তথা থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে বহিষ্কৃত করবেই।” এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে ডেকে পাঠালেন এবং আমার সামনে তা তিনি পাঠ করলেন। তারপর বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাকে সত্যবাদী বলে ঘোষণা করেছেন। [৪৯০০] (আ.প্র. ৪৫৩৩, ই.ফা. ৪৫৩৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৩/৩.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ এটা এ কারণে যে, তারা ঈমান আনার পর কুফরী করেছে, ফলে তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে, তাই তারা বোঝে না। (সূরাহ মুনাফিকুন ৬৩/৩)

৪৯০২

آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْحَكَمِ قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ كَعْبٍ الْقُرَظِيَّ قَالَ سَمِعْتُ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ لَا تُنْفِقُوْا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ وَقَالَ أَيْضًا لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ أَخْبَرْتُ بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَلَامَنِي الْأَنْصَارُ وَحَلَفَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ مَا قَالَ ذَلِكَ فَرَجَعْتُ إِلَى الْمَنْزِلِ فَنِمْتُ فَدَعَانِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَتَيْتُهُ فَقَالَ إِنَّ اللهَ قَدْ صَدَّقَكَ وَنَزَلَ {هُمُ الَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ لَا تُنْفِقُوْا} الْآيَةَ وَقَالَ ابْنُ أَبِيْ زَائِدَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ عَمْرٍو عَنْ ابْنِ أَبِيْ لَيْلَى عَنْ زَيْدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই যখন বলল, “আল্লাহ্‌র রসূলের সহচরদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না” এবং এ-ও বলল যে, “যদি আমরা মদিনায় প্রত্যাবর্তন করি…..।” তখন এ খবর আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জানিয়ে দিলাম। এ কারণে আনসারগণ আমাকে ভর্ৎসনা করলেন এবং ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই কসম করে বলল, এমন কথা সে বলেনি। এরপর আমি আমার অবস্থানে ফিরে আসলাম এবং ঘুমিয়ে পড়লাম। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি তাঁর কাছে গেলাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ্ তোমাকে সত্য বলে ঘোষণা করেছেন এবং অবতীর্ণ করেছেন- “তারা বলে তোমরা ব্যয় করবে না….শেষ পর্যন্ত। ইব্‌নু আবূ যায়িদাহ (রহ.) উক্ত হাদীস যায়দ ইব্‌নু আরকামের মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। [৪৯০০] (আ.প্র. ৪৫৩৪, ই.ফা. ৪৫৩৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৩/৪.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আর যখন আপনি তাদেরকে দেখবেন, তখন তাদের দৈহিক গঠন আপনাকে চমৎকৃত করবে। আর যদি তারা কথা বলতে থাকে, আপনি তাদের কথা শুনবেন, যদিও তারা দেয়ালে ঠেস লাগানো কাঠ সদৃশ। তারা প্রত্যেকটি শোরগোলকে নিজেদের বিরুদ্ধে মনে করে। তারাই শত্রু, আপনি এদের থেকে সতর্ক থাকুন। আল্লাহ্ এদেরকে বিনাশ করুন। এরা বিভ্রান্ত হয়ে কোন্ দিকে যাচ্ছে? (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/৪)

৪৯০৩

عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَفَرٍ أَصَابَ النَّاسَ فِيْهِ شِدَّةٌ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ لِأَصْحَابِهِ لَا تُنْفِقُوْا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ حَتَّى يَنْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِهِ وَقَالَ لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ فَأَرْسَلَ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ فَسَأَلَهُ فَاجْتَهَدَ يَمِيْنَهُ مَا فَعَلَ قَالُوْا كَذَبَ زَيْدٌ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَوَقَعَ فِيْ نَفْسِيْ مِمَّا قَالُوْا شِدَّةٌ حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ تَصْدِيْقِيْ فِيْ {إِذَا جَآءَكَ الْمُنٰفِقُوْنَ} فَدَعَاهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِيَسْتَغْفِرَ لَهُمْ فَلَوَّوْا رُءُوْسَهُمْ وَقَوْلُهُ {خُشُبٌ مُّسَنَّدَةٌ} قَالَ كَانُوْا رِجَالًا أَجْمَلَ شَيْءٍ.

যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা কোন এক সফরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে বের হলাম। সফরে এক কঠিন অবস্থা লোকদেরকে গ্রাস করে নিল। তখন ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই তার সাথী-সঙ্গীদেরকে বলল, “আল্লাহ্‌র রসূলের সহচরদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না যতক্ষণ তারা সরে পড়ে যারা তার আশে পাশে আছে।” সে এও বলল, “আমরা মদিনায় প্রত্যাবর্তন করলে তথা হতে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদের বহিষ্কৃত করবেই।” (এ কথা শুনে) আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এলাম এবং তাঁকে এ সম্পর্কে জানালাম। তখন তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাইকে ডেকে পাঠালেন। সে অতি জোর দিয়ে কসম খেয়ে বলল, এ কথা সে বলেনি। তখন লোকেরা বলল, যায়দ রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে মিথ্যা কথা বলেছে। তাদের এ কথায় আমার খুব দুঃখ হল। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ তা‘আলা আমার সত্যতার পক্ষে আয়াত অবতীর্ণ করলেন ঃ “যখন মুনাফিকরা তোমার কাছে আসে।” এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে ডাকলেন, যাতে তিনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, “কিন্তু তারা তাদের মাথা ফিরিয়ে নিল।” (আ.প্র. ৪৫৩৫, ই.ফা. ৪৫৩৯)

আল্লাহ্‌র বাণী ঃ “দেয়ালে ঠেস লাগানো কাঠ সদৃশ” (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/৪)। রাবী বলেন, লোকগুলো দেখতে খুব সুন্দর ছিল। [৪৯০০] (আ.প্র. অনুচ্ছেদ, ই.ফা. অনুচ্ছেদ)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৩/৫.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ

وَإِذَا قِيْلَ لَهُمْ تَعَالَوْا يَسْتَغْفِرْ لَكُمْ رَسُوْلُ اللهِ لَوَّوْا رُؤُوْسَهُمْ وَرَأَيْتَهُمْ يَصُدُّوْنَ وَهُمْ مُّسْتَكْبِرُوْنَ}

আর যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা এসো আল্লাহর রসূল তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন, তখন তারা নিজেদের মাথা ঘুরিয়ে নেয়। আর আপনি তাদের দেখবেন যে, তারা অহংকারের সঙ্গে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সূরাহ মুনাফিকুন ৬৩/৫)

حَرَّكُوا اسْتَهْزَءُوْا بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَيُقْرَأُ بِالتَّخْفِيْفِ مِنْ لَوَيْتُ.

لَوَّوْا তারা মাথা নেড়ে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ঠাট্টা করত। কেউ কেউ لَوَّوْا শব্দটিকে لَوَيْتُ (تَخْفِيْفِ সহকারে) পড়ে থাকেন।

৪৯০৪

عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ كُنْتُ مَعَ عَمِّيْ فَسَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أُبَيٍّ ابْنَ سَلُوْلَ يَقُوْلُ لَا تُنْفِقُوْا عَلَى مَنْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ حَتَّى يَنْفَضُّوْا وَلَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَمِّيْ فَذَكَرَ عَمِّيْ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَدَعَانِيْ فَحَدَّثْتُهُ فَأَرْسَلَ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ أُبَيٍّ وَأَصْحَابِهِ فَحَلَفُوْا مَا قَالُوْا وَكَذَّبَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَصَدَّقَهُمْ فَأَصَابَنِيْ غَمٌّ لَمْ يُصِبْنِيْ مِثْلُهُ قَطُّ فَجَلَسْتُ فِيْ بَيْتِيْ وَقَالَ عَمِّيْ مَا أَرَدْتَ إِلَى أَنْ كَذَّبَكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَمَقَتَكَ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {إِذَا جَاءَكَ الْمُنَافِقُوْنَ قَالُوْا نَشْهَدُ إِنَّكَ لَرَسُوْلُ اللهِ} وَأَرْسَلَ إِلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَرَأَهَا وَقَالَ إِنَّ اللهَ قَدْ صَدَّقَكَ

যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার চাচার সঙ্গে ছিলাম। এ সময় শুনলাম, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই ইব্‌নু সালূল বলছে, “আল্লাহ্‌র রসূলের সঙ্গীদের জন্য তোমরা ব্যয় করবে না যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে” এবং “আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে”। এ কথা আমি আমার চাচার কাছে জানালাম। আমার চাচা তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে জানালেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে ডাকলেন। আমি বিস্তারিতভাবে এ কথা তাঁর কাছে বললাম। তখন তিনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই ও তার সাথী-সঙ্গীদেরকে ডেকে পাঠালেন। তারা সকলেই কসম করে বলল, এ কথা তারা বলেনি। ফলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে মিথ্যাচারী ও তাদেরকে সত্যবাদী মনে করলেন। এতে আমি এমন দুঃখ পেলাম যে, এমন দুঃখ আর কখনও পাইনি। এরপর আমি ঘরে বসে গেলাম। তখন আমার চাচা আমাকে বললেন, এমন কাজের কেন ইচ্ছে করলে, যার ফলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাকে মিথ্যাচারী স্থির করলেন এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন? এ সময় আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন ঃ “যখন মুনাফিকরা তোমার কাছে আসে তারা বলে, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌র রসূল” তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাছে লোক পাঠালেন এবং সূরাটি আমার সামনে তিলাওয়াত করলেন ও বললেন, আল্লাহ্ তোমাকে সত্যবাদী বলে ঘোষণা করেছেন। [৪৯০০] (আ.প্র. ৪৫৩৬, ই.ফা. ৪৫৪০)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৩/৬.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ আপনি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন অথবা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করেন উভয়ই তাদের জন্য সমান। আল্লাহ্ তাদেরকে কখনও ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ্ তো পাপাচারী লোকদেরকে হিদায়াতের তাওফীক দান করেন না। (সূরাহ মুনাফিকুন ৬৩/৬)

৪৯০৫

عَلِيٌّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كُنَّا فِيْ غَزَاةٍ قَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً فِيْ جَيْشٍ فَكَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ الْأَنْصَارِيُّ يَا لَلْأَنْصَارِ وَقَالَ الْمُهَاجِرِيُّ يَا لَلْمُهَاجِرِيْنَ فَسَمِعَ ذَلِكَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا بَالُ دَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ كَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ دَعُوْهَا فَإِنَّهَا مُنْتِنَةٌ فَسَمِعَ بِذَلِكَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ فَقَالَ فَعَلُوْهَا أَمَا وَاللهِ لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَبَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَامَ عُمَرُ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ دَعْنِيْ أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم دَعْهُ لَا يَتَحَدَّثُ النَّاسُ أَنَّ مُحَمَّدًا يَقْتُلُ أَصْحَابَهُ وَكَانَتْ الْأَنْصَارُ أَكْثَرَ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ حِيْنَ قَدِمُوا الْمَدِيْنَةَ ثُمَّ إِنَّ الْمُهَاجِرِيْنَ كَثُرُوْا بَعْدُ قَالَ سُفْيَانُ فَحَفِظْتُهُ مِنْ عَمْرٍو قَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ جَابِرًا كُنَّا مَعَ النَّبِيِ صلى الله عليه وسلم

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা উপস্থিত ছিলাম। বর্ণনাকারী সুফ্ইয়ান (রহ.) একবার جَيْشٍ এর স্থলে غَزَاةٍ বর্ণনা করেছেন। এ সময় জনৈক মুহাজির এক আনসারীর নিতম্বে আঘাত করলেন। তখন আনসারী হে আনসারী ভাইগণ! বলে সাহায্য প্রার্থনা করলেন এবং মুহাজির সহাবী, ওহে মুহাজির ভাইগণ! বলে সাহায্য প্রার্থনা করলেন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা শুনে বললেন, কী খবর, জাহিলী যুগের মত ডাকাডাকি করছ কেন? তখন উপস্থিত লোকেরা বললেন, এক মুহাজির এক আনসারীর নিতম্বে আঘাত করেছে। তিনি বললেন, এমন ডাকাডাকি পরিত্যাগ কর। এটা অত্যন্ত গন্ধময় কথা। এরপর ঘটনাটি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবায়র কানে পৌঁছল, সে বলল, আচ্ছা, মুহাজিররা এমন কাজ করেছে? “আল্লাহ্‌র কসম! আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান থেকে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকেদেরকে অবশ্যই বের করে দিবে।” এ কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে পৌঁছল। তখন ‘উমার (রাঃ) উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি আমাকে অনুমতি দিন। আমি এক্ষুণি এ মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দিচ্ছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাকে ছেড়ে দাও। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এ কথা বলতে না পারে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সঙ্গী-সাথীদেরকে হত্যা করেন। জাবির (রাঃ) বলেন, মুহাজিররা যখন মদিনায় হিজরাত করে আসেন, তখন মুহাজিরদের তুলনায় আনসাররা সংখ্যায় বেশি ছিলেন। অবশ্য পরে মুহাজিররা সংখ্যায় বেশি হয়ে যান। সুফ্ইয়ান (রহ.)…..বলেন, এ হাদীসটি আমি আমর (রহ.) থেকে মুখস্থ করেছি। ‘আম্‌র (রহ.) বলেন, আমি জাবির (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। [৩৫১৮] (আ.প্র. ৪৫৩৭. ই.ফা. ৪৫৪১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৩/৭.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ ‘‘এরাই তারা যারা বলে, আল্লাহর রাসূলের সাহচর্যে যারা রয়েছে তাদের জন্য ব্যয় করো না, যতক্ষণ না তারা সরে পড়ে। আসমান ও যমীনের ধনভান্ডার তো আল্লাহরই। কিন্তু মুনাফিকরা তা বুঝে না।’’ (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/৭)

৪৯০৬

. إِسْمَاعِيْلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِسْمَاعِيْلُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ عُقْبَةَ عَنْ مُوْسَى بْنِ عُقْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ الْفَضْلِ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ حَزِنْتُ عَلَى مَنْ أُصِيْبَ بِالْحَرَّةِ فَكَتَبَ إِلَيَّ زَيْدُ بْنُ أَرْقَمَ وَبَلَغَهُ شِدَّةُ حُزْنِيْ يَذْكُرُ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ اللهُمَّ اغْفِرْ لِلْأَنْصَارِ وَلِأَبْنَاءِ الْأَنْصَارِ وَشَكَّ ابْنُ الْفَضْلِ فِيْ أَبْنَاءِ أَبْنَاءِ الْأَنْصَارِ فَسَأَلَ أَنَسًا بَعْضُ مَنْ كَانَ عِنْدَهُ فَقَالَ هُوَ الَّذِيْ يَقُوْلُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَذَا الَّذِيْ أَوْفَى اللهُ لَهُ بِأُذُنِهِ.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, র্হারায় যাদেরকে শহীদ করা হয়েছিল তাদের খবর শুনে শোকে মুহ্যমান হয়েছিলাম। আমার এ শোকের সংবাদ যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি আমার কাছে পত্র লিখেন। পত্রে তিনি উল্লেখ করেন যে, তিনি রসূলকে বলতে শুনেছেন, হে আল্লাহ্! আনসার ও আনসারদের সন্তানদেরকে তুমি ক্ষমা করে দাও। এ দু‘আয় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আনসারদের সন্তানদের সন্তানদের জন্য দু‘আ করেছেন কিনা এ ব্যাপারে ইব্‌নু ফায্ল (রাঃ) সন্দেহ করেছেন। এ ব্যাপারে আনাস (রাঃ) তার কাছে উপস্থিত ব্যক্তিদের কাউকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, যায়দ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) ঐ ব্যক্তি যার শ্রবণকে আল্লাহ্ তা‘আলা সত্য বলে ঘোষণা দিয়েছেন। [মুসলিম ৪৪/৪৩, হাঃ ২৫০৬, আহমাদ ১৯৬৬২] (আ.প্র. ৪৫৩৮, ই.ফা. ৪৫৪২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৩/৮.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তারা বলে: আমরা যদি মদীনায় ফিরে যাই, তবে প্রতিপত্তিশালীরা সেখান থেকে হীন লোকদের অবশ্যই বের করে দিবে। তাদের জেনে রাখা উচিত যে, ইজ্জত ও প্রতিপত্তি তো একমাত্র আল্লাহরই এবং তাঁর রাসূলের ও মু‘মিনদের। কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না। (সূরাহ মুনাফিকূন ৬৩/৮)

৪৯০৭

الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ حَفِظْنَاهُ مِنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ كُنَّا فِيْ غَزَاةٍ فَكَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ الْأَنْصَارِيُّ يَا لَلْأَنْصَارِ وَقَالَ الْمُهَاجِرِيُّ يَا لَلْمُهَاجِرِيْنَ فَسَمَّعَهَا اللهُ رَسُوْلَهُ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا هَذَا فَقَالُوْا كَسَعَ رَجُلٌ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ فَقَالَ الْأَنْصَارِيُّ يَا لَلْأَنْصَارِ وَقَالَ الْمُهَاجِرِيُّ يَا لَلْمُهَاجِرِيْنَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم دَعُوْهَا فَإِنَّهَا مُنْتِنَةٌ قَالَ جَابِرٌ وَكَانَتْ الْأَنْصَارُ حِيْنَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَكْثَرَ ثُمَّ كَثُرَ الْمُهَاجِرُوْنَ بَعْدُ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ أُبَيٍّ أَوَقَدْ فَعَلُوْا وَاللهِ لَئِنْ رَجَعْنَا إِلَى الْمَدِيْنَةِ لَيُخْرِجَنَّ الْأَعَزُّ مِنْهَا الْأَذَلَّ فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ دَعْنِيْ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم دَعْهُ لَا يَتَحَدَّثُ النَّاسُ أَنَّ مُحَمَّدًا يَقْتُلُ أَصْحَابَهُ.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা যোগদান করেছিলাম। জনৈক মুহাজির আনসারদের এক ব্যক্তির নিতম্বে আঘাত করলেন। তখন আনসারী সহাবী “আনসারী ভাইগণ!” বলে এবং মুহাজির সহাবী “হে মুহাজির ভাইগণ!” বলে ডাক দিলেন। আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের কানে এ কথা পৌঁছিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, এটা কেমন ডাকাডাকি? উপস্থিত লোকেরা বললেন, জনৈক মুহাজির ব্যক্তি এক আনসারী ব্যক্তির নিতম্বে আঘাত করেছে। আনসারী ব্যক্তি “হে আনসারী ভাইগণ!” বলে এবং মুহাজির ব্যক্তি “হে মুহাজির ভাইগণ!” বলে নিজ নিজ গোত্রকে ডাক দিলেন। এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ রকম ডাকাডাকি ত্যাগ কর। এগুলো অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত কথা। জাবির (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন মদিনায় হিজরাত করে আসেন তখন আনসার সহাবীগণ ছিলেন সংখ্যায় বেশি। পরে মুহাজিরগণ সংখ্যায় বেশি হয়ে যান। এ সব কথা শুনার পর ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু উবাই বলল, সত্যিই তারা কি এমন করেছে? আল্লাহ্‌র কসম! আমরা মদিনায় ফিরলে সেখান হতে প্রবল লোকেরা দুর্বল লোকদেরকে বের করে দিবেই। তখন ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি আমাকে অনুমতি দিন। আমি এ মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘উমার! তাকে ছেড়ে দাও, যাতে লোকেরা এমন কথা বলতে না পারে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সাথীদের হত্যা করছেন। [৩৫১৮] (আ.প্র. ৪৫৩৯, ই.ফা. ৪৫৪৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৫/১.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।

(64) سُوْرَةُ التَّغَابُنِ

সূরাহ (৬৪) : আত্-তাগাবুন

وَقَالَ عَلْقَمَةُ عَنْ عَبْدِ اللهِ {وَمَنْ يُّؤْمِنْمبِاللهِ يَهْدِ قَلْبَه”} هُوَ الَّذِيْ إِذَا أَصَابَتْهُ مُصِيْبَةٌ رَضِيَ وَعَرَفَ أَنَّهَا مِنْ اللهِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ التَّغَابُنُ غَبْنُ أَهْلِ الْجَنَّةِ أَهْلَ النَّارِ.

‘আলক্বামাহ (রহ.) ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর বাণীঃ وَمَنْ يُّؤْمِنْمبِاللهِ يَهْدِ قَلْبَهচ ‘‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে, তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন।’’ (সূরাহ আত্-তাগাবুন ৬৪/১১)-এর ব্যাখ্যায় বলেন যে, এর দ্বারা এমন লোককে বোঝানো হয়েছে, যখন বিপদগ্রস্ত হয় তখন আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকে এবং এ কথা বুঝতে পারে যে, এ বিপদ আল্লাহর পক্ষ হতেই এসেছে।

(65) سُوْرَةُ الطَّلَاقِ

সূরাহ (৬৫) : আত্-তালাক

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {إِنْ ارْتَبْتُمْ} إِنْ لَمْ تَعْلَمُوْا أَتَحِيْضُ أَمْ لَا تَحِيْضُ فَاللَّائِيْ قَعَدْنَ عَنِ الْمَحِيْضِ وَاللَائِيْ لَمْ يَحِضْنَ بَعْدُ {فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ} وَبَالَ أَمْرِهَا جَزَاءَ أَمْرِهَا.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, إِنْ ارْتَبْتُمْ যদি তোমরা অবগত না থাক যে তারা ঋতুমতী হবে কি না, যারা ঋতু হতে অবসর গ্রহণ করেছে আর যাদের এখনও তা শুরু হয়নি। فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ তাদের কৃতকর্মের শাস্তি স্বরূপ।

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {إِنْ ارْتَبْتُمْ} إِنْ لَمْ تَعْلَمُوْا أَتَحِيْضُ أَمْ لَا تَحِيْضُ فَاللَّائِيْ قَعَدْنَ عَنِ الْمَحِيْضِ وَاللَائِيْ لَمْ يَحِضْنَ بَعْدُ {فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ} وَبَالَ أَمْرِهَا جَزَاءَ أَمْرِهَا.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, إِنْ ارْتَبْتُمْ যদি তোমরা অবগত না থাক যে তারা ঋতুমতী হবে কি না, যারা ঋতু হতে অবসর গ্রহণ করেছে আর যাদের এখনও তা শুরু হয়নি। فَعِدَّتُهُنَّ ثَلَاثَةُ أَشْهُرٍ তাদের কৃতকর্মের শাস্তি স্বরূপ।

৪৯০৮

يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَالِمٌ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ وَهِيَ حَائِضٌ فَذَكَرَ عُمَرُ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَتَغَيَّظَ فِيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ لِيُرَاجِعْهَا ثُمَّ يُمْسِكْهَا حَتَّى تَطْهُرَ ثُمَّ تَحِيْضَ فَتَطْهُرَ فَإِنْ بَدَا لَهُ أَنْ يُطَلِّقَهَا فَلْيُطَلِّقْهَا طَاهِرًا قَبْلَ أَنْ يَمَسَّهَا فَتِلْكَ الْعِدَّةُ كَمَا أَمَرَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ.

‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তাঁর ঋতুবতী স্ত্রীকে ত্বলাক দেয়ার পর ‘উমার (রাঃ) তা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে উল্লেখ করলেন। এতে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অত্যন্ত নাখোশ হলেন। এরপর তিনি বললেন, সে যেন তাকে ফিরিয়ে নেয়। এরপর পবিত্রাবস্থা না আসা পর্যন্ত তাকে নিজের কাছে রেখে দিক। এরপর ঋতু এসে আবার পবিত্র হলে তখন যদি ত্বলাক দিতে চায় তাহলে পবিত্রাবস্থায় স্পর্শ করার পূর্বে সে যেন তাকে ত্বলাক দেয়। এটি সেই ইদ্দত যেটি পালনের নির্দেশ আল্লাহ দিয়েছেন। [৫২৫১, ৫২৫২, ৫২৫৩, ৫২৫৮, ৫২৬৪, ৫৩৩২, ৫৩৩৩, ৭১৬০] (আ.প্র. ৪৫৪০, ই.ফা. ৪৫৪৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৫/২.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।

{وَأُولَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَنْ يَّضَعْنَ حَمْلَهُنَّ ط وَمَنْ يَّتَّقِ اللهَ يَجْعَلْ لَّه” مِنْ أَمْرِهٰ يُسْرًا}

‘‘তবে গর্ভবতী স্ত্রীলোকদের ইদ্দাত তাদের গর্ভের সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত। যে ব্যক্তি আল্লাহ্কে ভয় করে, তিনি তার প্রত্যেক কাজ সহজ করে দেন।’’ (সূরাহ আত্-ত্বলাক্ব ৬৫/৪)

وَأُوْلَاتُ الْأَحْمَالِ وَاحِدُهَا ذَاتُ حَمْلٍ.

أُوْلَاتُ الْأَحْمَالِ এর একবচন ذَاتُ حَمْلٍ

৪৯০৯

سَعْدُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيَى قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ وَأَبُوْ هُرَيْرَةَ جَالِسٌ عِنْدَهُ فَقَالَ أَفْتِنِيْ فِي امْرَأَةٍ وَلَدَتْ بَعْدَ زَوْجِهَا بِأَرْبَعِيْنَ لَيْلَةً فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ آخِرُ الْأَجَلَيْنِ قُلْتُ أَنَا {وَأُوْلَاتُ الْأَحْمَالِ أَجَلُهُنَّ أَنْ يَضَعْنَ حَمْلَهُنَّ} قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ أَنَا مَعَ ابْنِ أَخِيْ يَعْنِيْ أَبَا سَلَمَةَ فَأَرْسَلَ ابْنُ عَبَّاسٍ غُلَامَهُ كُرَيْبًا إِلَى أُمِّ سَلَمَةَ يَسْأَلُهَا فَقَالَتْ قُتِلَ زَوْجُ سُبَيْعَةَ الْأَسْلَمِيَّةِ وَهِيَ حُبْلَى فَوَضَعَتْ بَعْدَ مَوْتِهِ بِأَرْبَعِيْنَ لَيْلَةً فَخُطِبَتْ فَأَنْكَحَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ أَبُو السَّنَابِلِ فِيْمَنْ خَطَبَهَا.

আবূ সালামাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে ছিলেন, এমন সময় এক ব্যক্তি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কাছে এলেন এবং বললেন, এক মহিলা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর চল্লিশ দিন পর বাচ্চা প্রসব করেছে। সে এখন কীভাবে ইদ্দত পালন করবে, এ বিষয়ে আমাকে ফতোয়া দিন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, ইদ্দত সম্পর্কিত হুকুম্ দু’টির যেটি দীর্ঘ, তাকে সেটি পালন করতে হবে। আবূ সালামাহ (রহ.) বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ্‌র হুকুম তো হল ঃ গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, আমি আমার ভ্রাতুষ্পুত্র অর্থাৎ আবূ সালামার সঙ্গে আছি। তখন ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁর ক্রীতদাস কুরায়বকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করার জন্য উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর কাছে পাঠালেন। তিনি বললেন, সুবায়‘আ আসলামিয়া (রাঃ)-এর স্বামীকে হত্যা করা হল, তিনি তখন গর্ভবতী ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর চল্লিশ দিন পর তিনি সন্তান প্রসব করলেন। এরপরই তার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বিয়ে করিয়ে দিলেন। যারা তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আবুস্ সানাবিল তাদের মধ্যে একজন। [৫৩১৮] (আ.প্র. ৪৫৪১, ই.ফা. ৪৫৪৫)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৬/১.অধ্যায়ঃ

‘‘হে নাবী! আল্লাহ্ আপনার জন্য যা হালাল করেছেন, আপনি তা হারাম করেছেন কেন? আপনি আপনার স্ত্রীদের খুশী করতে চাইছেন। আল্লাহ্ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়াল।’’ (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/১)

(66) سُوْرَةُ التَّحْرِيْمِ

সূরাহ (৬৬) : আত্-তাহরীম

৪৯১১

مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ ابْنِ حَكِيْمٍ هُوَ يَعْلَى بْنُ حَكِيْمٍ الثَّقَفِيُّ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ فِي الْحَرَامِ يُكَفَّرُ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ إِسْوَةٌ حَسَنَةٌ}.

সা‘ঈদ ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, এরূপ হারাম করে নেয়া হলে কাফ্ফারা দিতে হবে। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) এ-ও বলেছেন যে, “রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মাঝে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।” [৫২৬৬; মুসলিম ১৮/৩, হাঃ ১৪৭৩, আহমাদ ১৯৭৬] আ.প্র. ৪৫৪২, ই.ফা. ৪৫৪৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৯১২

إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَشْرَبُ عَسَلًا عِنْدَ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ وَيَمْكُثُ عِنْدَهَا فَوَاطَيْتُ أَنَا وَحَفْصَةُ عَلَى أَيَّتُنَا دَخَلَ عَلَيْهَا فَلْتَقُلْ لَهُ أَكَلْتَ مَغَافِيْرَ إِنِّيْ أَجِدُ مِنْكَ رِيْحَ مَغَافِيْرَ قَالَ لَا وَلَكِنِّيْ كُنْتُ أَشْرَبُ عَسَلًا عِنْدَ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ فَلَنْ أَعُوْدَ لَهُ وَقَدْ حَلَفْتُ لَا تُخْبِرِيْ بِذَلِكَ أَحَدًا.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যয়নব বিন্ত জাহ্শ (রাঃ)-এর কাছে মধু পান করতেন এবং সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করতেন। তাই আমি এবং হাফ্সাহ স্থির করলাম যে, আমাদের যার ঘরেই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আসবেন, সে তাঁকে বলবে, আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? আপনার মুখ থেকে মাগাফীরের গন্ধ পাচ্ছি। তিনি বললেন, না, বরং আমি যয়নব বিন্ত জাহ্শ (রাঃ)-এর নিকট মধু পান করেছি। আমি কসম করলাম, আর কখনও মধু পান করব না। তুমি এ ব্যাপারে অন্য কাউকে জানাবে না। [৫২১৬, ৫২৬৭, ৫২৬৮, ৫৪৩১, ৫৫৯৯, ৫৬১৪, ৫৬৮২, ৬৬৯১, ৬৯৭২] (আ.প্র. ৪৫৪৩, ই.ফা. ৪৫৪৭)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৬/২.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ

{تَبْتَغِيْ مَرْضَاتَ أَزْوَاجِكَ ط وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ – قَدْ فَرَضَ اللهُ لَكُمْ تَحِلَّةَ أَيْمَانِكُمْ ج وَاللهُ مَوْلٰكُمْ ج وَهُوَ الْعَلِيْمُ الْحَكِيْمُ}.

আপনি আপনার স্ত্রীদের খুশী করতে চাইছেন। আল্লাহ তো তোমাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন কসম থেকে মুক্তির ব্যবস্থা। আল্লাহ তোমাদের বন্ধু। তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/১-২)

৪৯১৩

عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ عَنْ يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ بْنِ حُنَيْنٍ أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يُحَدِّثُ أَنَّهُ قَالَ مَكَثْتُ سَنَةً أُرِيْدُ أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ عَنْ آيَةٍ فَمَا أَسْتَطِيْعُ أَنْ أَسْأَلَهُ هَيْبَةً لَهُ حَتَّى خَرَجَ حَاجًّا فَخَرَجْتُ مَعَهُ فَلَمَّا رَجَعْنَا وَكُنَّا بِبَعْضِ الطَّرِيْقِ عَدَلَ إِلَى الْأَرَاكِ لِحَاجَةٍ لَهُ قَالَ فَوَقَفْتُ لَهُ حَتَّى فَرَغَ ثُمَّ سِرْتُ مَعَهُ فَقُلْتُ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ مَنْ اللَّتَانِ تَظَاهَرَتَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَزْوَاجِهِ فَقَالَ تِلْكَ حَفْصَةُ وَعَائِشَةُ قَالَ فَقُلْتُ وَاللهِ إِنْ كُنْتُ لَأُرِيْدُ أَنْ أَسْأَلَكَ عَنْ هَذَا مُنْذُ سَنَةٍ فَمَا أَسْتَطِيْعُ هَيْبَةً لَكَ قَالَ فَلَا تَفْعَلْ مَا ظَنَنْتَ أَنَّ عِنْدِيْ مِنْ عِلْمٍ فَاسْأَلْنِيْ فَإِنْ كَانَ لِيْ عِلْمٌ خَبَّرْتُكَ بِهِ قَالَ ثُمَّ قَالَ عُمَرُ وَاللهِ إِنْ كُنَّا فِي الْجَاهِلِيَّةِ مَا نَعُدُّ لِلنِّسَاءِ أَمْرًا حَتَّى أَنْزَلَ اللهُ فِيْهِنَّ مَا أَنْزَلَ وَقَسَمَ لَهُنَّ مَا قَسَمَ قَالَ فَبَيْنَا أَنَا فِيْ أَمْرٍ أَتَأَمَّرُهُ إِذْ قَالَتْ امْرَأَتِيْ لَوْ صَنَعْتَ كَذَا وَكَذَا قَالَ فَقُلْتُ لَهَا مَا لَكَ وَلِمَا هَا هُنَا وَفِيْمَ تَكَلُّفُكِ فِيْ أَمْرٍ أُرِيْدُهُ فَقَالَتْ لِيْ عَجَبًا لَكَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ مَا تُرِيْدُ أَنْ تُرَاجَعَ أَنْتَ وَإِنَّ ابْنَتَكَ لَتُرَاجِعُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى يَظَلَّ يَوْمَهُ غَضْبَانَ فَقَامَ عُمَرُ فَأَخَذَ رِدَاءَهُ مَكَانَهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى حَفْصَةَ فَقَالَ لَهَا يَا بُنَيَّةُ إِنَّكِ لَتُرَاجِعِيْنَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى يَظَلَّ يَوْمَهُ غَضْبَانَ فَقَالَتْ حَفْصَةُ وَاللهِ إِنَّا لَنُرَاجِعُهُ فَقُلْتُ تَعْلَمِيْنَ أَنِّيْ أُحَذِّرُكِ عُقُوْبَةَ اللهِ وَغَضَبَ رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم يَا بُنَيَّةُ لَا يَغُرَّنَّكِ هَذِهِ الَّتِيْ أَعْجَبَهَا حُسْنُهَا حُبُّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِيَّاهَا يُرِيْدُ عَائِشَةَ قَالَ ثُمَّ خَرَجْتُ حَتَّى دَخَلْتُ عَلَى أُمِّ سَلَمَةَ لِقَرَابَتِيْ مِنْهَا فَكَلَّمْتُهَا فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ عَجَبًا لَكَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ دَخَلْتَ فِيْ كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى تَبْتَغِيَ أَنْ تَدْخُلَ بَيْنَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَزْوَاجِهِ فَأَخَذَتْنِيْ وَاللهِ أَخْذًا كَسَرَتْنِيْ عَنْ بَعْضِ مَا كُنْتُ أَجِدُ فَخَرَجْتُ مِنْ عِنْدِهَا وَكَانَ لِيْ صَاحِبٌ مِنَ الْأَنْصَارِ إِذَا غِبْتُ أَتَانِيْ بِالْخَبَرِ وَإِذَا غَابَ كُنْتُ أَنَا آتِيْهِ بِالْخَبَرِ وَنَحْنُ نَتَخَوَّفُ مَلِكًا مِنْ مُلُوْكِ غَسَّانَ ذُكِرَ لَنَا أَنَّهُ يُرِيْدُ أَنْ يَسِيْرَ إِلَيْنَا فَقَدْ امْتَلَأَتْ صُدُوْرُنَا مِنْهُ فَإِذَا صَاحِبِي الْأَنْصَارِيُّ يَدُقُّ الْبَابَ فَقَالَ افْتَحْ افْتَحْ فَقُلْتُ جَاءَ الْغَسَّانِيُّ فَقَالَ بَلْ أَشَدُّ مِنْ ذَلِكَ اعْتَزَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَزْوَاجَهُ فَقُلْتُ رَغَمَ أَنْفُ حَفْصَةَ وَعَائِشَةَ فَأَخَذْتُ ثَوْبِيْ فَأَخْرُجُ حَتَّى جِئْتُ فَإِذَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ مَشْرُبَةٍ لَهُ يَرْقَى عَلَيْهَا بِعَجَلَةٍ وَغُلَامٌ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلمأَسْوَدُ عَلَى رَأْسِ الدَّرَجَةِ فَقُلْتُ لَهُ قُلْ هَذَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَأَذِنَ لِيْ قَالَ عُمَرُ فَقَصَصْتُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَذَا الْحَدِيْثَ فَلَمَّا بَلَغْتُ حَدِيْثَ أُمِّ سَلَمَةَ تَبَسَّمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَإِنَّهُ لَعَلَى حَصِيْرٍ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ شَيْءٌ وَتَحْتَ رَأْسِهِ وِسَادَةٌ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيْفٌ وَإِنَّ عِنْدَ رِجْلَيْهِ قَرَظًا مَصْبُوْبًا وَعِنْدَ رَأْسِهِ أَهَبٌ مُعَلَّقَةٌ فَرَأَيْتُ أَثَرَ الْحَصِيْرِ فِيْ جَنْبِهِ فَبَكَيْتُ فَقَالَ مَا يُبْكِيْكَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ كِسْرَى وَقَيْصَرَ فِيْمَا هُمَا فِيْهِ وَأَنْتَ رَسُوْلُ اللهِ فَقَالَ أَمَا تَرْضَى أَنْ تَكُوْنَ لَهُمْ الدُّنْيَا وَلَنَا الآخِرَةُ.

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)-কে এ আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য আমি এক বছর অপেক্ষা করেছি। কিন্তু তাঁর ব্যক্তি প্রভাবের ভয়ে আমি তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে পারিনি। অবশেষে তিনি হাজ্জের উদ্দেশে রওয়ানা হলে, আমিও তাঁর সঙ্গে গেলাম। ফেরার পথে আমরা যখন কোন একটি রাস্তা অতিক্রম করছিলাম, তখন তিনি প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের জন্য একটি পিলু গাছের আড়ালে গেলেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, তিনি প্রয়োজন সেরে না আসা পর্যন্ত আমি সেখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলাম। এরপর তাঁর সঙ্গে পথ চলতে চলতে বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীদের কোন্ দু’জন তার বিপক্ষে একমত হয়ে পরস্পর একে অন্যকে সহযোগিতা করেছিলেন? তিনি বললেন, তাঁরা দু’জন হল হাফসাহ ও ‘আয়িশাহ (রাঃ)। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ্‌র শপথ! আমি আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করার জন্য এক বছর যাবৎ ইচ্ছে করেছিলাম। কিন্তু আপনার ভয়ে আমার পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ রকম করবে না। যে বিষয়ে তুমি মনে করবে যে, আমি তা জানি, তা আমাকে জিজ্ঞেস করবে। এ বিষয়ে আমার জানা থাকলে আমি তোমাকে জানিয়ে দেব। তিনি বলেন, এরপর ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ! জাহিলী যুগে মহিলাদের কোন অধিকার আছে বলে আমরা মনে করতাম না। অবশেষে আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের সম্পর্কে যে বিধান অবতীর্ণ করার ছিল তা অবতীর্ণ করলেন এবং তাদের হক হিসাবে যা নির্দিষ্ট করার ছিল তা নির্দিষ্ট করলেন। তিনি বলেন, একদিন আমি কোন এক ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করছিলাম, এমন সময় আমার স্ত্রী আমাকে বললেন, কাজটি যদি তুমি এভাবে এভাবে করতে। আমি বললাম, তোমার কী প্রয়োজন? এবং আমার কাজে তোমার এ অনধিকার চর্চা কেন। সে আমাকে বলল, হে খাত্তাবের বেটা! কি আশ্চর্য, তুমি চাও না যে, আমি তোমার কথার উত্তর দান করি অথচ তোমার কন্যা হাফ্সাহ (রাঃ) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কথার পৃষ্ঠে কথা বলে থাকে। এমনকি একদিন তো সে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে রাগানি¦ত করে ফেলে। এ কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) দাঁড়িয়ে গেলেন এবং চাদরখানা নিয়ে তার বাড়িতে চলে গেলেন। তিনি তাকে বললেন, বেটী! তুমি নাকি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কথার প্রতি-উত্তর করে থাক। ফলে তিনি দিনভর দুঃখিত থাকেন। হাফ্সাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র কসম! আমরা তো অবশ্যই তাঁর কথার জবাব দিয়ে থাকি। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, জেনে রাখ! আমি তোমাকে আল্লাহ্‌র শাস্তি এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অসন্তুষ্টি সম্পর্কে সতর্ক করছি। রূপ-সৌন্দর্যের কারণে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ভালবাসা যাকে গর্বিতা করে রেখেছে, সে যেন তোমাকে প্রতারিত না করতে পারে। এ কথা বলে ‘উমার (রাঃ) ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে বোঝাচ্ছিলেন। ‘উমার (রাঃ) বলেন, এরপর আমি সেখান থেকে বেরিয়ে আসলাম এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর ঘরে প্রবেশ করলাম ও এ ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করলাম। কারণ, তাঁর সঙ্গে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল। তখন উম্মু সালামাহ (রাঃ) বললেন, হে খাত্তাবের বেটা! কি আশ্চর্য, তুমি প্রত্যেক ব্যাপারেই নাক গলাচ্ছ, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তার স্ত্রীদের ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছ। আল্লাহ্‌র কসম! তিনি আমাকে এমন শক্তভাবে ধরলেন যে, আমার রাগ খতম হয়ে গেল। এরপর আমি তাঁর নিকট হতে চলে আসলাম। আমার একজন আনসার বন্ধু ছিল। যদি আমি কোন মাজলিসে অনুপস্থিত থাকতাম তাহলে সে এসে মাজলিসের খবর আমাকে জানাত। আর সে যদি অনুপস্থিত থাকত তাহলে আমি এসে তাকে মাজলিসের খবর জানাতাম। সে সময় আমরা গাস্সানী বাদশার আক্রমণের আশংকা করছিলাম। আমাদেরকে বলা হয়েছিল যে, সে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য রওয়ানা হয়েছে। তাই আমাদের হৃদয়-মন এ ভয়ে শংকিত ছিল। এমন সময় আমার আনসার বন্ধু এসে দরজায় আঘাত করে বললেন, দরজা খুলুন, দরজা খুলুন। আমি বললাম, গাস্সানীরা চলে এসেছে নাকি? তিনি বললেন, বরং এর চেয়েও কঠিন ব্যাপার ঘটে গেছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সহধর্মিণীদের থেকে পৃথক হয়ে গিয়েছেন। তখন আমি বললাম, হাফ্সাহ ও ‘আয়িশাহর নাক ধূলায় ধূসরিত হোক। এরপর আমি কাপড় নিয়ে বেরিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখলাম, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি উঁচু কক্ষে অবস্থান করছেন। সিঁড়ি বেয়ে সেখানে পৌঁছতে হয়। সিঁড়ির মুখে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর একজন কালো গোলাম বসা ছিল। আমি বললাম, বলুন, ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব এসেছেন। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে অনুমতি দিলেন, আমি তাঁকে সব কথা বললাম, আমি যখন উম্মু সালামার কপোপকথন পর্যন্ত পৌঁছলাম তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুচকি হাসলেন। এ সময় তিনি একটা চাটাইয়ের উপর শুয়ে ছিলেন। চাটাই এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মাঝে আর কিছুই ছিল না। তাঁর মাথার নিচে ছিল খেজুরের ছালভর্তি চামড়ার একটি বালিশ এবং পায়ের কাছে ছিল সল্ম বৃক্ষের পাতার একটি স্তূপ ও মাথার উপর লটকানো ছিল চামড়ার একটি মশক। আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এক পার্শ্বে চাটাইয়ের দাগ দেখে কেঁদে ফেললে তিনি বললেন, তুমি কেন কাঁদছ? আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! কিসরা ও কায়সার পার্থিব ভোগ-বিলাসের মধ্যে ডুবে আছে, অথচ আপনি আল্লাহ্‌র রসূল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তারা দুনিয়া লাভ করুক, আর আমরা আখিরাত লাভ করি। [৮৯; মুসলিম ১৮/৫, হাঃ ১৪৭৯] (আ.প্র. ৪৫৪৪, ই.ফা. ৪৫৪৮)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৬/৩.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।

{وَإِذْ أَسَرَّ النَّبِيُّ إِلٰى بَعْضِ أَزْوَاجِهٰ حَدِيْثًا ج فَلَمَّا نَبَّأَتْ بِهٰ وَأَظْهَرَهُ اللهُ عَلَيْهِ عَرَّفَ بَعْضَه” وَأَعْرَضَ عَنْمبَعْضٍ ج فَلَمَّا نَبَّأَهَا بِهٰ قَالَتْ مَنْ أَنْـ.ـبَأَكَ هٰذَا ط قَالَ نَبَّأَنِيَ الْعَلِيْمُ الْخَبِيْرُ}

‘‘স্মরণ কর, নাবী তাঁর স্ত্রীদের একজনের কাছে গোপনে কিছু কথা বলেছিলেন, তারপর যখন সে তা অন্যকে বলে দিল এবং আল্লাহ নাবীকে তা জানিয়ে দিলেন, তখন নাবী সে বিষয়ে কিছু ব্যক্ত করলেন এবং কিছু ব্যক্ত করলেন না। অতঃপর যখন তিনি তা তার স্ত্রীকে বললেন তখন সে বললঃ কে আপনাকে এ ব্যাপারে অবহিত করেছেন? নাবী বললেনঃ আমাকে অবহিত করেছেন আল্লাহ্ যিনি সর্বজ্ঞ, সব কিছুর খবর রাখেন।’’ (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৩)

فِيْهِ عَائِشَةُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

এ বিষয়ে ‘আয়িশাহ (রাঃ)-ও এক হাদীস নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

৪৯১৪

عَلِيٌّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ عُبَيْدَ بْنَ حُنَيْنٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ يَقُوْلُ أَرَدْتُ أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَقُلْتُ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ مَنْ الْمَرْأَتَانِ اللَّتَانِ تَظَاهَرَتَا عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَمَا أَتْمَمْتُ كَلَامِيْ حَتَّى قَالَ عَائِشَةُ وَحَفْصَةُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا. قُوْا {أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيْكُمْ} قَالَ مُجَاهِدٌ أَوْصُوْا.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘উমার (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করতে চাইলাম। আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণীদের কোন্ দু’জন তাঁর ব্যাপারে একমত হয়ে পরস্পর একে অন্যকে সহযোগিতা করেছিলেন? আমি আমার কথা শেষ করার আগেই তিনি বললেন, ‘আয়িশাহ এবং হাফসাহ (রাঃ)। (আ.প্র. ৪৫৪৫, ই.ফা. ৪৫৪৯)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৬/৪.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের অন্তর অন্যায়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছে, তাই তোমরা উভয়ে তাওবা করলে ভাল হয়। (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৪)

صَغَوْتُ وَأَصْغَيْتُ مِلْتُ لِتَصْغَى لِتَمِيْلَ وَإِنْ تَظَاهَرَا عَلَيْهِ فَإِنَّ اللهَ هُوَ مَوْلَاهُ وَجِبْرِيْلُ وَصَالِحُ الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمَلَائِكَةُ بَعْدَ ذَلِكَ ظَهِيْرٌ عَوْنٌ تَظَاهَرُوْنَ تَعَاوَنُوْنَ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {قُوْآ أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيْكُمْ} أَوْصُوْا أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيْكُمْ بِتَقْوَى اللهِ وَأَدِّبُوْهُمْ.

صَغَوْتُ এবং َأَصْغَيْتُ(ثلاثى مجرد وموزيد فيه) উভয়ের অর্থ আমি ঝুঁকে পড়েছি। لِتَصْغَى অর্থ- لِتَمِيْلَ মানে যেন সে অনুরাগী হয়, ঝুঁকে পড়ে। ‘‘কিন্তু যদি তোমরা নাবীর বিরুদ্ধে একে অপরকে সাহায্য কর তবে জেনে রাখ, আল্লাহ্ই তাঁর বন্ধু এবং জিব্রীল ও নেককার মু’মিনরাও, তাছাড়া অন্যান্য মালাকগণও তাঁর সাহায্যকারী’’- (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৪)।ظَهِيْرٌ সাহায্যকারী تَظَاهَرُوْنَ পরস্পর তোমরা একে অপরকে সাহায্য করছ। মুজাহিদ (রহ.) বলেন,قُوْآ أَنْفُسَكُمْ وَأَهْلِيْكُمْ بِتَقْوَى اللهِ وَأَدِّبُوْهُمْ ‘‘তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা কর’’- (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৬)। তাকওয়া অবলম্বন করার জন্য ওসীয়াত কর এবং তাদেরকে আদব শিক্ষা দাও।

৪৯১৫

الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ عُبَيْدَ بْنَ حُنَيْنٍ يَقُوْلُ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ يَقُوْلُ كُنْتُ أُرِيْدُ أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ عَنِ الْمَرْأَتَيْنِ اللَّتَيْنِ تَظَاهَرَتَا عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَمَكَثْتُ سَنَةً فَلَمْ أَجِدْ لَهُ مَوْضِعًا حَتَّى خَرَجْتُ مَعَهُ حَاجًّا فَلَمَّا كُنَّا بِظَهْرَانَ ذَهَبَ عُمَرُ لِحَاجَتِهِ فَقَالَ أَدْرِكْنِيْ بِالْوَضُوْءِ فَأَدْرَكْتُهُ بِالإِدَاوَةِ فَجَعَلْتُ أَسْكُبُ عَلَيْهِ الْمَاءَ وَرَأَيْتُ مَوْضِعًا فَقُلْتُ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ مَنْ الْمَرْأَتَانِ اللَّتَانِ تَظَاهَرَتَا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَمَا أَتْمَمْتُ كَلَامِيْ حَتَّى قَالَ عَائِشَةُ وَحَفْصَةُ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে দু’জন মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে পরস্পর একে অন্যকে সাহায্য করেছিল, তাদের সম্পর্কে ‘উমার (রাঃ)-কে আমি জিজ্ঞেস করার ইচ্ছে করছিলাম। কিন্তু জিজ্ঞেস করার সুযোগ না পেয়ে আমি এক বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। শেষে একবার হজ্জ করার জন্য তাঁর সঙ্গে আমি যাত্রা করলাম। আমরা ‘যাহ্রান’ নামক স্থানে পৌঁছলে ‘উমার (রাঃ) প্রাকৃতিক প্রয়োজনে গেলেন। এরপর আমাকে বললেন, আমার জন্য ওযুর পানির ব্যবস্থা কর। আমি পাত্র ভরে পানি নিয়ে আসলাম এবং ঢেলে দিতে লাগলাম। সুযোগ মনে করে আমি তাঁকে বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! ঐ দু’জন মহিলা কে কে, যারা একে অন্যকে সাহায্য করেছিল? ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি আমার কথা শেষ করার আগেই তিনি বললেন, ‘আয়িশাহ ও হাফ্সাহ (রাঃ)। [৮৯] (আ.প্র. ৪৫৪৬, ই.ফা. ৪৫৫০)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৬/৫.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ

{عَسٰى رَبُّه”ٓ إِنْ طَلَّقَكُنَّ أَنْ يُّبْدِلَهٓ” أَزْوَاجًا خَيْرًا مِّنْكُنَّ مُسْلِمٰتٍ مُّؤْمِنٰتٍ قٰنِتٰتٍ تَآئِبٰتٍ عَابِدٰتٍ سَآئِحٰتٍ ثَيِّبٰتٍ وَّأَبْكَارًا}

‘‘যদি নাবী তোমাদের সবাইকে ত্বলাক দেন, তবে তাঁর রব অচিরেই তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের চেয়ে উত্তম স্ত্রী তাঁকে দিবেন, যারা হবে আজ্ঞাবহ, ঈমানদার, অনুগত, তাওবাহ্কারিণী, ‘ইবাদাতকারিণী, সওম পালনকারীণী, অকুমারী ও কুমারী।’’ (সূরাহ আত্-তাহরীম ৬৬/৫)

৪৯১৬

عَمْرُوْ بْنُ عَوْنٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ اجْتَمَعَ نِسَاءُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْغَيْرَةِ عَلَيْهِ فَقُلْتُ لَهُنَّ {عَسٰى رَبُّه”ٓ إِنْ طَلَّقَكُنَّ أَنْ يُّبْدِلَهٓ” أَزْوَاجًا خَيْرًا مِّنْكُنَّ} فَنَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে সতর্কতা দানের জন্য তাঁর সহধর্মিণীগণ একত্রিত হয়েছিলেন। আমি তাঁদেরকে বললাম, যদি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করেন তবে তাঁর প্রতিপালক সম্ভবত তাঁকে দেবেন তোমাদের অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর স্ত্রী। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিল। [৪০২] (আ.প্র. ৪৫৪৭, ই.ফা. ৪৫৫১)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৮/১.অধ্যায়ঃ

‘‘যে রুক্ষ স্বভাব, এতদ্ব্যতীত জারজ।’’ (সূরাহ আল-ক্বলাম ৬৮/১৩)

(67) سُوْرَةُ الْمُلْكِ تَبَارَكَ الَّذِيْ بِيَدِهِ الْمُلْكُ

সূরাহ (৬৭) : আল-মুলক

{التَّفَاوُتُ} الِاخْتِلَافُ وَالتَّفَاوُتُ وَالتَّفَوُّتُ وَاحِدٌ {تَمَيَّزُ} تَقَطَّعُ {مَنَاكِبِهَا} جَوَانِبِهَا {تَدَّعُوْنَ} وَتَدْعُوْنَ وَاحِدٌ مِثْلُ تَذَّكَّرُوْنَ وَتَذْكُرُوْنَ {وَيَقْبِضْنَ} يَضْرِبْنَ بِأَجْنِحَتِهِنَّ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {صَافَّاتٍ} بَسْطُ أَجْنِحَتِهِنَّ {وَنُفُوْرٌ} الْكُفُوْرُ.

التَّفَاوُتُ বিভিন্নতা। التَّفَاوُتُএবং التَّفَوُّتُ শব্দ দু’টো একই অর্থবোধক। تَمَيَّزُ টুকরো হয়ে যাবে বা ফেটে পড়বে। مَنَاكِبِهَا তার দিগদিগন্ত। تَدَّعُوْنَ এবং تَدْعُوْنَবাক্যদ্বয় تَذَّكَّرُوْنَ ও تَذْكُرُوْنَ এর মতই। يَقْبِضْنَ তারা তাদের পাখা মেলে উড়ে বেড়ায়। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, صَافَّاتٍ তারা তাদের পাখা বিস্তার করে। نُفُوْرٌ কুফর ও সত্যবিমুখতা।

(68) سُوْرَةُ ن وَالْقَلَمِ

সূরাহ (৬৮) : আল-ক্বলাম

وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَتَخَافَتُوْنَ يَنْتَجُوْنَ السِّرَارَ وَالْكَلَامَ الْخَفِيَّ وَقَالَ قَتَادَةُ {حَرْدٍ} جِدٍّ فِيْ أَنْفُسِهِمْ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {لَضَآلُّوْنَ} أَضْلَلْنَا مَكَانَ جَنَّتِنَا وَقَالَ غَيْرُهُ {كَالصَّرِيْمِ} كَالصُّبْحِ انْصَرَمَ مِنْ اللَّيْلِ وَاللَّيْلِ انْصَرَمَ مِنْ النَّهَارِ وَهُوَ أَيْضًا كُلُّ رَمْلَةٍ انْصَرَمَتْ مِنْ مُعْظَمِ الرَّمْلِ وَالصَّرِيْمُ أَيْضًا الْمَصْرُوْمُ مِثْلُ قَتِيْلٍ وَمَقْتُوْلٍ. [{مَكْظُوْمٌ} وَكَظِيْمٌ مَغْمُوْمٌ، تُدْهِنُ فِيُدْهِنُوْن تَرْخُصُ فَيَرْ خُصُوْنَ].

ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেন, حَرْدٍ অর্থ جِدٍّ فِيْٓ أَنْفُسِهِمْ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, اِنَّالَضَآلُّوْنَ অর্থ আমরা আমাদের জান্নাতের স্থানের কথা ভুলে গিয়েছি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) ব্যতীত অন্যান্য ভাষ্যকার বলেছেন, كَالصَّرِيْمِ অর্থ রাত থেকে বিচ্ছিন্ন প্রভাতের মত বা দিন থেকে বিচ্ছিন্ন রাতের মত। صَّرِيْمُ ঐ বালুকণাকেও বলা হয় যা বালুস্তূপ হতে বিচ্ছিন্ন। مَصْرُوْمُ- صَرِيْمُ শব্দ قَتِيْلٍ এবং مَقْتُوْلٍ এর মত।

৪৯১৭

مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ حَصِيْنٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيْمٍ قَالَ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ لَهُ زَنَمَةٌ مِثْلُ زَنَمَةِ الشَّاةِ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيمٍ (রূঢ় স্বভাব এবং তদুপরি কুখ্যাত) আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এ লোকটি হলো কুরাইশ গোত্রের এমন এক লোক, যার স্কন্ধে ছাগলের চিহ্নের মত একটি বিশেষ চিহ্ন ছিল। (আ.প্র. ৪৫৪৮, ই.ফা. ৪৫৫২)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৪৯১৮

أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَعْبَدِ بْنِ خَالِدٍ قَالَ سَمِعْتُ حَارِثَةَ بْنَ وَهْبٍ الْخُزَاعِيَّ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ الْجَنَّةِ كُلُّ ضَعِيْفٍ مُتَضَعِّفٍ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لَأَبَرَّهُ أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ النَّارِ كُلُّ عُتُلٍّ جَوَّاظٍ مُسْتَكْبِرٍ.

হারিস ইব্‌নু ওয়াহাব খুযাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী লোকদের পরিচয় বলব না? তারা দুর্বল এবং অসহায়; কিন্তু তাঁরা যদি কোন ব্যাপারে আল্লাহ্‌র নামে কসম করে বসেন, তাহলে তা পূরণ করে দেন। আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামী লোকদের পরিচয় বলব না? তারা রূঢ় স্বভাব, অধিক মোটা এবং অহংকারী তারাই জাহান্নামী। [৬০৭১, ৬৬৫৭; মুসলিম ৫১/১৩, হাঃ ২৮৫৩, আহমাদ ১৮৭৫৩] (আ.প্র. ৪৫৪৯, ই.ফা. ৪৫৫৩)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৬৮/২.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ পায়ের গোছা পর্যন্ত উন্মুক্ত করার দিনের কথা স্মরণ কর। (সূরাহ আল-ক্বলাম ৬৮/৪২)

৪৯১৯

آدَمُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ خَالِدِ بْنِ يَزِيْدَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ أَبِيْ هِلَالٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ يَقُوْلُ يَكْشِفُ رَبُّنَا عَنْ سَاقِهِ فَيَسْجُدُ لَهُ كُلُّ مُؤْمِنٍ وَمُؤْمِنَةٍ فَيَبْقَى كُلُّ مَنْ كَانَ يَسْجُدُ فِي الدُّنْيَا رِيَاءً وَسُمْعَةً فَيَذْهَبُ لِيَسْجُدَ فَيَعُوْدُ ظَهْرُهُ طَبَقًا وَاحِدًا.

আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমাদের প্রতিপালক যখন তাঁর পায়ের গোড়ালির জ্যোতি বিকীর্ণ করবেন, তখন ঈমানদার নারী ও পুরুষ সবাই তাকে সাজ্দাহ করবে। কিন্তু যারা দুনিয়াতে লোক দেখানো ও প্রচারের জন্য সাজ্দাহ করত, তারা কেবল বাকী থাকবে। তারা সাজদাহ করতে ইচ্ছে করলে তাদের পিঠ একখণ্ড কাঠের ন্যায় শক্ত হয়ে যাবে। [২২] (আ.প্র. ৪৫৫০, ই.ফা. ৪৫৫৪)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৭১/১.অধ্যায়ঃ

আল্লাহর বাণীঃ তোমরা ত্যাগ করো না ওয়াদ, সূওয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নাসারকে। (সূরাহ নূহ ৭১/২৩)

(69) سُوْرَةُ الْحَاقَّةِ

সূরাহ (৬৯) : আল-হাক্কাহ্

{حُسُوْمًا} مُتَتَابُعَةً وَقَالَ ابْنُ جُبَيْرٍ {عِيْشَةٍ رَّاضِيَةٍ} يُرِيْدُ فِيْهَا الرِّضَا {الْقَاضِيَةَ} الْمَوْتَةَ الْأُوْلَى الَّتِيْ مُتُّهَا لَمْ أُحْيَ بَعْدَهَا {مِنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَاجِزِيْنَ} أَحَدٌ يَكُوْنُ لِلْجَمْعِ وَلِلْوَاحِدِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {الْوَتِيْنَ} نِيَاطُ الْقَلْبِ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {طَغٰى}كَثُرَ وَيُقَالُ بِالطَّاغِيَةِ بِطُغْيَانِهِمْ. وَيُقَالُ طَغَتْ عَلَى الْخَزَّانِ كَمَا طَغَى الْمَاءُ عَلَى قَوْمِ نُوْحٍ e. وَغِسْلِيْنٍ : مَا يَسِيْلُ مِنْ صَدِيْدِ أهْلِ النَّارِ. وَقَالَ غَيْرُهُ : {مِنْ غِسْلِنٍ} : كلُّ شَيْءٍ غَسَلْتَهُ فَخَرَجَ مِنْهُ شَيْءٌ فَهُوَ غَسْلَيْنٌ، فِعْلَيْنٌ مِنَ الغَسْلِ مِنَ الْجَرْحِ وَالدُّبُرِ. {أعْجَارُ نَخْلٍ} : أُصُوْلُهَا. {بَاقِيةٍ} : بِقيّةٍ.

عِيْشَةٍ رَّاضِيَةٍ সন্তোষজনক জীবন। الْقَاضِيَةَ প্রথম মৃত্যুটাই যদি এমন হত যে, তারপর আর জীবিত না করা হত। مِنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَاجِزِيْنَ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে তাকে রক্ষা করতে পারে। احِدِ শব্দটি একবচন ও বহুবচন উভয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْوَتِيْنَ হৃদপিন্ডের সঙ্গে যুক্ত রগ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, طَغٰى অতিরিক্ত হয়েছে বা বেশি হয়েছে। বলা হয় بِالطَّاغِيَةِ তাদের বিদ্রোহ এবং কুফ্রীর কারণে طَغَتْ عَلَى الْخَزَّانِ বায়ু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং সামূদ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দিয়েছে যেমন পানি নূহ্ সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল।

(70) سُوْرَةُ المعارج [سَأَلَ سَآئِلٌ]

সূরাহ (৭০) : আল-মা‘আরিজ

{الْفَصِيْلَةُ} أَصْغَرُ آبَائِهِ الْقُرْبَى إِلَيْهِ يَنْتَمِيْ مَنْ انْتَمَى {لِلشَّوٰى} الْيَدَانِ وَالرِّجْلَانِ وَالأَطْرَافُ وَجِلْدَةُ الرَّأْسِ يُقَالُ لَهَا شَوَاةٌ وَمَا كَانَ غَيْرَ مَقْتَلٍ فَهُوَ شَوًى عِزِيْنَ {وَالْعِزُوْنَ} وَالْجَمَاعَاتُ وَوَاحِدُهَا عِزَةٌ. [{يُوْفِضُوْنَ} : الإيفاضُ الإسْرَاعِ]

الْفَصِيْلَةُ তাদের পূর্ব-পুরষদের থেকে সর্বাধিক নিকটাত্মীয়, যাদের থেকে তারা পৃথক হয়েছে এবং যাদের দিকে তাদেরকে সম্পৃক্ত করা হয়। لِلشَّوٰى দু’হাত, দু’পা, শরীরের বিভিন্ন প্রান্ত ভাগ এবং মাথার চামড়া সবগুলোকে شَوَاةٌ বলা হয়। الْعِزُوْنَ দলসমূহ। এর একবচন عِزَةٌ।

(71) سُوْرَةُ نُوْحٍ [إِنَّا أَرْسَلْنَا]

সূরাহ (৭১) : নূহ (ইন্না আরসালনা)

{أَطْوَارًا} طَوْرًا كَذَا وَطَوْرًا كَذَا يُقَالُ عَدَا طَوْرَهُ أَيْ قَدْرَهُ وَالْكُبَّارُ أَشَدُّ مِنَ الْكِبَارِ وَكَذَلِكَ جُمَّالٌ وَجَمِيْلٌ لِأَنَّهَا أَشَدُّ مُبَالَغَةً وَكُبَّارٌ الْكَبِيْرُ وَكُبَارًا أَيْضًا بِالتَّخْفِيْفِ وَالْعَرَبُ تَقُوْلُ رَجُلٌ حُسَّانٌ وَجُمَّالٌ وَحُسَانٌ مُخَفَّفٌ وَجُمَالٌ مُخَفَّفٌ {دَيَّارًا} مِنْ دَوْرٍ وَلَكِنَّهُ فَيْعَالٌ مِنْ الدَّوَرَانِ كَمَا قَرَأَ عُمَرُ الْحَيُّ الْقَيَّامُ وَهِيَ مِنْ قُمْتُ وَقَالَ غَيْرُهُ {دَيَّارًا} أَحَدًا {تَبَارًا} هَلَاكًا وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {مِدْرَارًا} يَتْبَعُ بَعْضُهَا بَعْضًا {وَقَارًا} عَظَمَةً.

طْوَارًا পর্যায়ক্রমে, বলা হয়। عَدَا طَوْرَهُ সে তার মর্যাদাকে অতিক্রম করে গেছে। بِالتَّخْفِيْفِ الكُبَّارُ এর তুলনায় بالتشديد الكُبَّارُ এর অর্থের মাঝে কিছু আধিক্য ও কঠোরতা বিদ্যমান আছে। এমনিভাবে جُمَّالٌ এর মাঝে جَمِيْلٌ -এর তুলনায় অধিকতর সৌন্দর্যের অর্থ বিদ্যমান আছে। كُبَّارٌ الْكَبِيْرُ ও بِالتَّخْفِيْفِ الكُبَّارُ -এর অবস্থা অনুরূপই। আরবীয় লোকের তাশ্দীদের সঙ্গে رَجُلٌ حُسَّانٌ وَجُمَّالٌ ও বলেন, এমনিভাবে তাখ্ফীফের সঙ্গে رَجُلٌ حُسَّانٌ وَجُمَّالٌ ও বলে থাকেন। دَيَّارًا শব্দটির উৎপত্তি دَوْرٍ ধাতু থেকে। তবে যদি তাকে فَيْعَالٌ এর ওযনে ধরা হয় তাহলে এর উৎপত্তি হবে الدَّوَرَانِ শব্দমূল থেকে। যেমন, ‘উমার (রাঃ)الْحَيُّ الْقَيَّامُ পড়েছেন। قُمْتُথেকে الْقَيَّامُ শব্দটির উৎপত্তি। অন্যান্য মুফাস্সির বলেছেন, دَيَّارًا কাউকে। تَبَارًا ধ্বংস। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, مِدْرَارًا একটি অপরটির পেছনে। وَقَارًا শ্রেষ্ঠত্ব।

৪৯২০

إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ وَقَالَ عَطَاءٌ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا صَارَتْ الْأَوْثَانُ الَّتِيْ كَانَتْ فِيْ قَوْمِ نُوْحٍ فِي الْعَرَبِ بَعْدُ أَمَّا وَدٌّ كَانَتْ لِكَلْبٍ بِدَوْمَةِ الْجَنْدَلِ وَأَمَّا سُوَاعٌ كَانَتْ لِهُذَيْلٍ وَأَمَّا يَغُوْثُ فَكَانَتْ لِمُرَادٍ ثُمَّ لِبَنِيْ غُطَيْفٍ بِالْجَوْفِ عِنْدَ سَبَإٍ وَأَمَّا يَعُوْقُ فَكَانَتْ لِهَمْدَانَ وَأَمَّا نَسْرٌ فَكَانَتْ لِحِمْيَرَ لِآلِ ذِي الْكَلَاعِ أَسْمَاءُ رِجَالٍ صَالِحِيْنَ مِنْ قَوْمِ نُوْحٍ فَلَمَّا هَلَكُوْا أَوْحَى الشَّيْطَانُ إِلَى قَوْمِهِمْ أَنْ انْصِبُوْا إِلَى مَجَالِسِهِمْ الَّتِيْ كَانُوْا يَجْلِسُوْنَ أَنْصَابًا وَسَمُّوْهَا بِأَسْمَائِهِمْ فَفَعَلُوْا فَلَمْ تُعْبَدْ حَتَّى إِذَا هَلَكَ أُوْلَئِكَ وَتَنَسَّخَ الْعِلْمُ عُبِدَتْ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে প্রতিমার পূজা নূহ্ (‘আ.)-এর কওমের মাঝে চালু ছিল, পরবর্তী সময়ে আরবদের মাঝেও তার পূজা প্রচলিত হয়েছিল। ওয়াদ “দুমাতুল জান্দাল” নামক জায়গার কাল্ব গোত্রের একটি দেবমূর্তি, সূওয়া‘আ, হল, হুযায়ল গোত্রের একটি দেবমূর্তি এবং ইয়াগুছ ছিল মুরাদ গোত্রের, অবশ্য পরবর্তীতে তা গাতীফ গোত্রের হয়ে যায়। এর আস্তানা ছিল কওমে সাবার নিকটবর্তী ‘জাওফ’ নামক স্থান। ইয়া‘উক ছিল হামাদান গোত্রের দেবমূর্তি, নাস্র ছিল যুলকালা‘ গোত্রের হিময়ার শাখার মূর্তি। নূহ (‘আ.)-এর সম্প্রদায়ের কতিপয় নেক লোকের নাম নাস্র ছিল। তারা মারা গেলে, শয়তান তাদের কওমের লোকদের অন্তরে এ কথা ঢেলে দিল যে, তারা যেখানে বসে মাজলিস করত, সেখানে তোমরা কতিপয় মূর্তি স্থাপন কর এবং ঐ সমস্ত পুণ্যবান লোকের নামেই এগুলোর নামকরণ কর। কাজেই তারা তাই করল, কিন্তু তখনও ঐ সব মূর্তির পূজা করা হত না। তবে মূর্তি স্থাপনকারী লোকগুলো মারা গেলে এবং মূর্তিগুলোর ব্যাপারে সত্যিকারের জ্ঞান বিলুপ্ত হলে লোকজন তাদের পূজা আরম্ভ করে দেয়। (আ.প্র. ৪৫৫১, ই.ফা. ৪৫৫৫)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

  •  সরাসরি

৬৫/৭২/১.অধ্যায়ঃ

পরিচ্ছেদ নাই।

(72) سُوْرَةُ الجن [قُلْ أُوْحِيَ إِلَيَّ]

সূরাহ (৭২) : আল-জ্বিন (ক্বুল উহিয়্যা ইলাইয়া)

قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لِبَدًا أَعْوَانًا. {بَخْسًا} : نَقْصًا.

আর ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, لِبَدًا সাহায্যকারী। بَخْسًا স্বল্পতার ভয় করবে না।

৪৯২১

مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ انْطَلَقَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ طَائِفَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ عَامِدِيْنَ إِلَى سُوْقِ عُكَاظٍ وَقَدْ حِيْلَ بَيْنَ الشَّيَاطِيْنِ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ وَأُرْسِلَتْ عَلَيْهِمْ الشُّهُبُ فَرَجَعَتْ الشَّيَاطِيْنُ فَقَالُوْا مَا لَكُمْ فَقَالُوْا حِيْلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ وَأُرْسِلَتْ عَلَيْنَا الشُّهُبُ قَالَ مَا حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ إِلَّا مَا حَدَثَ فَاضْرِبُوْا مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا فَانْظُرُوْا مَا هَذَا الْأَمْرُ الَّذِيْ حَدَثَ فَانْطَلَقُوْا فَضَرَبُوْا مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا يَنْظُرُوْنَ مَا هَذَا الْأَمْرُ الَّذِيْ حَالَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ قَالَ فَانْطَلَقَ الَّذِيْنَ تَوَجَّهُوْا نَحْوَ تِهَامَةَ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِنَخْلَةَ وَهُوَ عَامِدٌ إِلَى سُوْقِ عُكَاظٍ وَهُوَ يُصَلِّيْ بِأَصْحَابِهِ صَلَاةَ الْفَجْرِ فَلَمَّا سَمِعُوا الْقُرْآنَ تَسَمَّعُوْا لَهُ فَقَالُوْا هَذَا الَّذِيْ حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ فَهُنَالِكَ رَجَعُوْا إِلَى قَوْمِهِمْ فَقَالُوْا يَا قَوْمَنَا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا يَهْدِيْ إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا وَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَى نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم{قُلْ أُوْحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ الْجِنِّ} وَإِنَّمَا أُوْحِيَ إِلَيْهِ قَوْلُ الْجِنِّ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদল সহাবীকে নিয়ে উকায বাজারের দিকে রওয়ানা হলেন। এ সময়ই জিনদের আসমানী খবরাদি শোনার ব্যাপারে বাধা সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে এবং ছুঁড়ে মারা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে লেলিহান অগ্নিশিখা। ফলে জিন শায়ত্বনরা ফিরে আসলে অন্য জিনরা তাদেরকে বলল, তোমাদের কী হয়েছে? তারা বলল, আসমানী খবরাদি সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে আমাদের উপর বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে এবং আমাদের প্রতি লেলিহান অগ্নিশিখা ছুঁড়ে মারা হয়েছে। তখন শয়তান বলল, আসমানী খবরাদি সংগ্রহের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি যে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে, অবশ্যই তা কোন নতুন ঘটনা ঘটার কারণেই হয়েছে। সুতরাং তোমরা পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম দিগন্ত পর্যন্ত সফর কর এবং দেখ ব্যাপারটা কী ঘটেছে? তাই আসমানী খবরাদি সংগ্রহের ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে, এর কারণ খুঁজে বের করার জন্য তারা সকলেই পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিমে অনুসন্ধানে বেরিয়ে পড়ল। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, যারা তিহামার উদ্দেশে বেরিয়েছিল, তারা ‘নাখলা’ নামক স্থানে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এসে উপস্থিত হল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এখান থেকে উকায বাজারের দিকে যাওয়ার মনস্থ করেছিলেন। এ সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সহাবীদেরকে নিয়ে ফাজ্রের সলাত আদায় করছিলেন। জিনদের ঐ দলটি কুরআন মাজীদ শুনতে পেয়ে আরো বেশি মনোযোগ দিয়ে তা শুনতে লাগল এবং বলল, আসমানী খবর আর তোমাদের মাঝে এটাই সত্যিকারে বাধা সৃষ্টি করেছে। এরপর তারা তাদের কওমের কাছে ফিরে এসে বলল, হে আমাদের কওম! আমরা এক আশ্চর্যজনক কুরআন শ্রবণ করেছি, যা সঠিক পথ নির্দেশ করে। এতে আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা কখনও আমাদের প্রতিপালকের কোন শরীক স্থির করব না। এরপর আল্লাহ তাঁর নাবীর প্রতি অবতীর্ণ করলেন ঃ বল, আমার প্রতি ওয়াহী প্রেরিত হয়েছে যে জিনদের একটি দল মনোযোগ দিয়ে শুনেছে। জিনদের উপরোক্ত কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ওয়াহীর মারফত জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। [৭৭৩] (আ.প্র. ৪৫৫২, ই.ফা. ৪৫৫৬)

  •  
  •  
  •  
  •  

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস