৯৬/০০. অধ্যায়ঃ
৯৬/০০. অধ্যায়ঃ
৭২৬৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ الزُّبَيْرِ الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مِسْعَرٍ وَغَيْرِهِ عَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ قَالَ قَالَ رَجُلٌ مِنْ الْيَهُودِ لِعُمَرَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ لَوْ أَنَّ عَلَيْنَا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ {الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمْ الإِسْلاَمَ دِينًا} لاَتَّخَذْنَا ذَلِكَ الْيَوْمَ عِيدًا فَقَالَ عُمَرُ إِنِّي لأَعْلَمُ أَيَّ يَوْمٍ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ نَزَلَتْ يَوْمَ عَرَفَةَ فِي يَوْمِ جُمُعَةٍ سَمِعَ سُفْيَانُ مِنْ مِسْعَرٍ وَمِسْعَرٌ قَيْسًا وَقَيْسٌ طَارِقًا.
ত্বারিক ইব্নু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইয়াহূদীদের এক লোক ‘উমর (রাঃ) – কে বলল, হে আমীরুল মু’মিনীন! আমাদের উপর যদি এ আয়াতঃ “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নি’মাত পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে কবূল করে নিলাম” – (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৩) অবতীর্ণ হত, তাহলে সে দিনটিকে আমরা অবশ্যই ঈদের দিন হিসেবে গণ্য করতাম। ‘উমর (রাঃ) বললেন, আমি অবশ্যই জানি এ আয়াতটি কোন্ দিন অবতীর্ণ হয়েছিল। আরাফাহ্র দিন জুমু‘আহ্র দিনে এ আয়াতটি নাযিল হয়েছিল। হাদীসটি সুফিয়ান (রহঃ) মিসআর (রহঃ) থেকে, মিস্আর কায়স থেকে কায়স (রহঃ) তারিক থেকে শুনেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৭২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৬৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّهُ سَمِعَ عُمَرَ الْغَدَ، حِينَ بَايَعَ الْمُسْلِمُونَ أَبَا بَكْرٍ، وَاسْتَوَى عَلَى مِنْبَرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَشَهَّدَ قَبْلَ أَبِي بَكْرٍ فَقَالَ أَمَّا بَعْدُ فَاخْتَارَ اللَّهُ لِرَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي عِنْدَهُ عَلَى الَّذِي عِنْدَكُمْ، وَهَذَا الْكِتَابُ الَّذِي هَدَى اللَّهُ بِهِ رَسُولَكُمْ فَخُذُوا بِهِ تَهْتَدُوا وَإِنَّمَا هَدَى اللَّهُ بِهِ رَسُولَهُ.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
দ্বিতীয় দিনে যখন মুসলিমরা আবূ বকর (রাঃ) – এর বায়‘আত গ্রহণ করেছিল এবং তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর মিম্বারের উপর উপবিষ্ট ছিলেন; ‘উমর (রাঃ) – কে আবূ বকর (রাঃ) – এর পূর্বে হামদ ও ছানা ও কালেমা শাহাদাত পাঠ করতে তিনি (আনাস) শুনেছেন। তিনি বললেন, অতঃপর আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের জন্য তোমাদের কাছে যা ছিল তার চেয়ে তার নিকট যা আছে সেটাকেই পছন্দ করেছেন। আর এই যে সে কিতাব যার মাধ্যমে আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদের রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে হিদায়াত দিয়েছিলেন।কাজেই একে তোমারা আঁকড়ে ধর। তাহলে এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে যে হিদায়াত দিয়েছিলেন তোমরাও সেই হিদায়াত পাবে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৭৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৭০
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ ضَمَّنِي إِلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ “ اللَّهُمَّ عَلِّمْهُ الْكِتَابَ ”.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (তাঁর শরীরের সঙ্গে) আমাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহ্! তাঁকে কিতাবের ইলম দাও। [১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৭৪)
[১] আল্লাহর রাসূলের এই দু‘আর কারণেই আল কুরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ তাফসীরকারক হলেন ইবনে আব্বাস (রাঃ)।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৭১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَبَّاحٍ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، قَالَ سَمِعْتُ عَوْفًا، أَنَّ أَبَا الْمِنْهَالِ، حَدَّثَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا بَرْزَةَ، قَالَ إِنَّ اللَّهَ يُغْنِيكُمْ أَوْ نَغَشَكُمْ بِالإِسْلاَمِ وَبِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم.
قَالَ أَبُو عَبْد اللَّهِ وَقَعَ هَاهُنَا يُغْنِيكُمْ وَإِنَّمَا هُوَ نَعَشَكُمْ يُنْظَرُ فِي أَصْلِ كِتَابِ الِاعْتِصَامِ.
আবূ বারযা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাদেরকে ইসলাম দ্বারা ও মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দ্বারা মুখাপেক্ষীহীন কিংবা পরিপূর্ণ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৭৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৭২
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، كَتَبَ إِلَى عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَرْوَانَ يُبَايِعُهُ، وَأُقِرُّ لَكَ بِالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ عَلَى سُنَّةِ اللَّهِ وَسُنَّةِ رَسُولِهِ، فِيمَا اسْتَطَعْتُ.
আবদুল্লাহ্ ইব্নু দীনার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) ‘আবদুল মালিক ইব্নু মারওয়ানের বাই‘আত করে লিখলেনঃ আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সুন্নাতের ভিত্তিতে আমার সাধ্যমত (আপনার নির্দেশ) শোনা ও মানার অঙ্গীকার করছি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৭৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/১. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর বাণীঃ আমি ‘জাওয়ামিউল কালিম’ (ব্যাপক অর্থবহ সংক্ষিপ্ত কথা) সহ প্রেরিত হয়েছি।
৭২৭৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ بُعِثْتُ بِجَوَامِعِ الْكَلِمِ، وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ، وَبَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي أُتِيتُ بِمَفَاتِيحِ خَزَائِنِ الأَرْضِ، فَوُضِعَتْ فِي يَدِي ”. قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَقَدْ ذَهَبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنْتُمْ تَلْغَثُونَهَا أَوْ تَرْغَثُونَهَا، أَوْ كَلِمَةً تُشْبِهُهَا.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি ‘জাওয়ামিউল কালিম[১৯০] (ব্যাপক অর্থবহ সংক্ষিপ্ত কথা) সহ প্রেরিত হয়েছি এবং আমাকে প্রভাব দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে। একবার আমি ঘুমের অবস্থায় দেখলাম, পৃথিবীর ভান্ডারগুলোর চাবি আমাকে দেয়া হয়েছে এবং তা আমার হাতে রেখে দেয়া হয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তিকাল করে গেছেন। আর তোমরা তা ব্যবহার করছ কিংবা বলেছিলেন তোমরা তা থেকে উপকার লাভ করছ কিংবা তিনি এরকমই কোন কথা বলেছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৭৭)
[১] (আমি আবির্ভূত হয়েছি সুসংক্ষিপ্ত ও মর্মসমৃদ্ধ বাণীসহ)
ইমাম যুহরী * এর ব্যাখ্যা করে বলেন :
তিনি এমন সংক্ষিপ্ত কথা বলতেন যা শব্দ বা উচ্চারণের দিক থেকে হতো অল্প কিন্তু ব্যাপক অর্থবোধক। ইমাম যুহরী ব্যতীত অন্যজন জোর দিয়ে বলেন যে, (جوام الكلام) থেকে উদ্দেশ্য হলো ‘‘আল-কুরআন’’ তার নির্দশন, রসূল (সাঃ)’র কথা (بعثت), কেননা আল-কুরআন তো শব্দের সংক্ষিপ্ততা ও অর্থের ব্যাপকতার ব্যাপারে শেষ সীমা।
কুরআন جوام الكلام সম্বলিত আয়াতের উদাহরণ যেমন : {وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ يَاْ أُولِيْ الأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ} (বাকারাহ : ১৭৯) এবং وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَخْشَ اللَّهَ وَيَتَّقْهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ (নূর : ৫২)
হাদীসের মধ্যে جوامع الكلام এর উদাহরণ যেমন ’আয়িশাহ’র হাদীস : كُلُّ عَمَلٍ لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ
আবূ হুরাইরাহ’র হাদীস : وإذا أمرتكم بأمر فأتوا منه ما استطعتم (ফাতহুল বারী)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৭৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَا مِنَ الأَنْبِيَاءِ نَبِيٌّ إِلاَّ أُعْطِيَ مِنَ الآيَاتِ مَا مِثْلُهُ أُومِنَ ـ أَوْ آمَنَ ـ عَلَيْهِ الْبَشَرُ، وَإِنَّمَا كَانَ الَّذِي أُوتِيتُ وَحْيًا أَوْحَاهُ اللَّهُ إِلَىَّ، فَأَرْجُو أَنِّي أَكْثَرُهُمْ تَابِعًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ প্রত্যেক নবীকেই কোন-না-কোন অতুলনীয় নিদর্শন দেয়া হয়েছে যার উপর ঈমান আনা হয়েছে, কিংবা লোকেরা তাঁর উপর ঈমান এনেছে। আর আমাকে দেয়া হয়েছে ওয়াহী, যা আল্লাহ্ আমার উপর অবতীর্ণ করেছেন। সুতরাং আমি আশা করি যে, কেয়ামতের দিন আমার অনুসারীর সংখ্যা তাদের সবার চেয়ে বেশি হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৭৮)
আল কুরআন হল সর্বশেষ রাসূলের উপর নাযিলকৃত সর্বশ্রেষ্ঠ মু’যিযা। দুনিয়ার তামাম মানুষ একত্রিত হয়ে কিয়ামত পর্যন্ত চেস্টা সাধনা করলেও আল কুরআনের সূরার মত একটি সূরা তৈরি করতে সক্ষম হবে না। আল্লাহ্ তা‘আলা কুরআনে অতি স্পষ্টভাবে একাধিক জায়গায় এ চ্যালেঞ্জ দিয়ে রেখেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/২. অধ্যায়ঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সুন্নাতের অনুসরণ।
আর আল্লাহ্র বাণীঃ “আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দাও” – (সূরাহ আল-ফুরক্বান ২৫/৭৪)। একজন বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইব্নু আউন বলেন, তিনটি বিষয় আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানার জন্য এ বিষয়ে প্রশ্ন করবে। কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেস্টা করবে এবং জানার জন্য এ বিষয়ে প্রশ্ন করবে এবং মানুষকে একমাত্র কল্যাণের দিকে আহবান জানাবে।
৭২৭৫
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَبَّاسٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ وَاصِلٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، قَالَ جَلَسْتُ إِلَى شَيْبَةَ فِي هَذَا الْمَسْجِدِ قَالَ جَلَسَ إِلَىَّ عُمَرُ فِي مَجْلِسِكَ هَذَا فَقَالَ هَمَمْتُ أَنْ لاَ أَدَعَ فِيهَا صَفْرَاءَ وَلاَ بَيْضَاءَ إِلاَّ قَسَمْتُهَا بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ. قُلْتُ مَا أَنْتَ بِفَاعِلٍ. قَالَ لِمَ. قُلْتُ لَمْ يَفْعَلْهُ صَاحِبَاكَ قَالَ هُمَا الْمَرْآنِ يُقْتَدَى بِهِمَا.
আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এই মসজিদে শায়বাহ্র (রহঃ) কাছে বসেছিলাম। তিনি বললেন, তুমি যেমন বসে আছ, ‘উমর (রাঃ) তেমনি এ জায়গা বসা ছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন, আমি ইচ্ছা করছি যে, এতে সোনা ও রূপার কোন অবশিষ্ট রাখব না বরং সবকিছু মুসলিমদের মাঝে বন্টন করে দেব। আমি বললাম, আপনি তা করবেন না। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কেন? আমি বললাম, আপনার সঙ্গীদ্বয় এমনটা করেননি। তিনি বললেন, তাঁরা দু’জন অনুসরণ করার মত লোকই ছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৭৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৭৬
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ سَأَلْتُ الأَعْمَشَ فَقَالَ عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ، سَمِعْتُ حُذَيْفَةَ، يَقُولُ حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَنَّ الأَمَانَةَ نَزَلَتْ مِنَ السَّمَاءِ فِي جَذْرِ قُلُوبِ الرِّجَالِ، وَنَزَلَ الْقُرْآنُ فَقَرَءُوا الْقُرْآنَ وَعَلِمُوا مِنَ السُّنَّةِ ”.
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, আমানাত আসমান হতে মানুষের অন্তরের অন্তঃস্থলে অবতীর্ণ হয়েছে, তারপর কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে এবং মানুষ কুরআন পাঠ করেছে এবং সুন্নাত শিক্ষা করেছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৭৭
حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنَا عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، سَمِعْتُ مُرَّةَ الْهَمْدَانِيَّ، يَقُولُ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ إِنَّ أَحْسَنَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللَّهِ، وَأَحْسَنَ الْهَدْىِ هَدْىُ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم، وَشَرَّ الأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا، وَإِنَّ مَا تُوعَدُونَ لآتٍ، وَمَا أَنْتُمْ بِمُعْجِزِينَ.
আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সর্বোত্তম কালাম হল আল্লাহ্র কিতাব, আর সর্বোত্তম পথ নির্দেশনা হল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর পথ নির্দেশনা। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল নতুনভাবে উদ্ভাবিত পন্থাসমূহ। “তোমাদের কাছে যার ও’য়াদা দেয়া হচ্ছে তা ঘটবেই, তোমরা ব্যর্থ করতে পারবে না” (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮১)
[১] বিদআত শব্দের আভিধানিক অর্থ হল : اَلشَّيْءُ الْمُخْتَرَعُ عَلٰى غَيْرِ مِثَالٍ سَابِقٍ অর্থাৎ পূর্ববর্তী কোন নমুনা ছাড়াই নতুন আবিষ্কৃত বিষয়। [আন-নিহায়াহ, পৃঃ ৬৯, কাওয়ায়েদ মা’রিফাতিল বিদআ’হ, পৃঃ ১৭]
আর শরীয়তের পরিভাষায়- مَا أُحْدِثَ فِى دِيْنِ اللهِ وَلَيْسَ لَهُ أَصْلٌ عَامٌ وَلاَخَاصٌّ يَدُلُّ عَلَيْهِ. অর্থাৎ আল্লাহর দ্বীনের মধ্যে নতুন করে যার প্রচলন করা হয়েছে এবং এর পক্ষে শরীয়তের কোন ব্যাপক ও সাধারণ কিংবা খাস ও সুনির্দিষ্ট দলীল নেই। [কাওয়ায়েদ মা’রিফাতিল বিদআ’হ, পৃঃ ২৪] এ সংজ্ঞটিতে তিনটি বিষয় লক্ষণীয় :
১. নতুনভাবে প্রচলন অর্থাৎ রাসূল (সাঃ) ও সাহাবায়ে কিরামের যুগে এর কোন প্রচলন ছিল না এবং এর কোন নমুনাও ছিল না।
২. এ নব প্রচলিত বিষয়টিকে দ্বীনের মধ্যে সংযোজন করা এবং ধারণা করা যে, এটি দ্বীনের অংশ।
৩. নব প্রচলিত এ বিষয়টি শরীয়তের কোন ‘আম বা খাস দলীল ছাড়াই চালু ও উদ্ভাবন করা।
সংজ্ঞার এ তিনটি বিষয়ের একত্রিত রূপ হল বিদআত, যা থেকে বিরত থাকার কঠোর নির্দেশ শরীয়তে এসেছে। কঠোর নিষেধাজ্ঞার এ বিষয়টি হাদীসে বারবার উচ্চারিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,
(وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُ(রাঃ)مُوْرِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ) رواه أبو داود والترمذى وقال حديث حسن صحيح.
‘‘তোমরা (দ্বীনের) নব প্রচলিত বিষয়সমূহ থেকে সতর্ক থাক। কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয় বিদআ‘ত এবং প্রত্যেক বিদআত ভ্রষ্টতা’’। [সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৯৯১ ও সুনান আত-তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৭৬। তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান ও সহীহ বলেছেন।] নবী (সাঃ) তাঁর এক খুতবায় বলেছেন :
إِنَّ أَصْدَقَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللهِ وَأَحْسَنَ الْهَدْيِ هَدْيُ مُحَمَّدٍ وَشَرُّ الأُمُوْرِ مُحْدَثَاتُهَا وَكُلُّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلُّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ وَكُلُّ ضَلاَلَةٍ فِي النَّارِ. رواه مسلم والنسائى واللفظ للنسائى.
‘‘নিশ্চয়ই সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব এবং সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মদের আদর্শ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল (দ্বীনের মধ্যে) নব উদ্ভাবিত বিষয়। আর নব উদ্ভাবিত প্রত্যেক বিষয় বিদআত এবং প্রত্যেক বিদআত হল ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫৩৫ ও সুনান আন-নাসায়ী, হাদীস নং ১৫৬০, হাদীসের শব্দ চয়ন নাসায়ী থেকে।]
বিদআতের বৈশিষ্ট্য
বিদআতের চারটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে :
১. বিদআতকে বিদআত হিসেবে চেনার জন্য সুনির্দিষ্ট কোন দলীল পাওয়া যায় না; তবে তা নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে মূলনীতিগত ‘আম ও সাধারণ দলীল পাওয়া যায়।
২. বিদআত সবসময়ই শরীয়তের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও মাকাসিদ এর বিপরীত ও বিরোধী অবস্থানে থাকে। আর এ বিষয়টিই বিদআত নিকৃষ্ট ও বাতিল হওয়ার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। এ জন্যই হাদীসে বিদআতকে ভ্রষ্টতা বলে অভিহিত করা হয়েছে।
৩. অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদআত এমন সব কার্যাবলী সম্পাদনের মাধ্যমে হয়ে থাকে যা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও সাহাবাদের যুগে প্রচলিত ছিল না। ইমাম ইবনুল জাওযী রহ: বলেন, البِدْعَةُ عِبارةٌ عَنْ فِعلٍ لَمْ يَكُنْ فابتُدِعَ
‘বিদআত বলতে বুঝায় এমন কাজকে যা ছিল না, অতঃপর তা উদ্ভাবন করা হয়েছে’। [তালবীসু ইবলীস, পৃ: ১৬]
৪. বিদআতের সাথে শরীয়তের কোন কোন ইবাদাতের কিছু মিল থাকে। দু’টো ব্যাপারে এ মিলগুলো লক্ষ্য করা যায়:
প্রথমত : দলীলের দিক থেকে এভাবে মিল রয়েছে যে, কোন একটি ‘আম দলীল কিংবা সংশয় অথবা ধারণার ভিত্তিতে বিদআতটি প্রচলিত হয় এবং খাস ও নির্দিষ্ট দলীলকে পাশ কাটিয়ে এ ‘আম দলীল কিংবা সংশয় অথবা ধারণাটিকে বিদআতের সহীহ ও সঠিক দলীল বলে মনে করা হয়।
দ্বিতীয়ত : শরীয়ত প্রণীত ইবাদাতের রূপরেখা ও পদ্ধতির সাথে বিদআতের মিল তৈরী করা হয় সংখ্যা, আকার-আকৃতি, সময় বা স্থানের দিক থেকে কিংবা হুকুমের দিক থেকে। এ মিলগুলোর কারণে অনেকে একে বিদআত মনে না করে ইবাদাত বলে গণ্য করে থাকেন।
বিদআত নির্ধারণে মানুষের মতপার্থক্য
বিদআত নির্ধারণে মানুষ সাধারণতঃ তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত :
এক : দলীল পাওয়া যায় না এমন প্রতিটি বিষয়কে এক শ্রেণীর মানুষ বিদআত হিসেবে চিহ্নিত করছে এবং এক্ষেত্রে তারা বিশেষ বাছ-বিচার না করেই সব কিছুকে (এমন কি মু‘আমালার বিষয়কেও) বিদআত বলে অভিহিত করছে। এদের কাছে বিদআতের সীমানা বহুদূর বিস্তৃত।
দুই : যারা দ্বীনের মধ্যে নব উদ্ভাবিত সকল বিষয়কে বিদআত বলতে রাজী নয়; বরং বড় বড় নতুন কয়েকটিকে বিদআত বলে বাকী সবকিছু শরীয়তভুক্ত বলে তারা মনে করে। এদের কাছে বিদআতের সীমানা খুবই ক্ষুদ্র।
তিন : যারা যাচাই-বাছাই করে শুধুমাত্র প্রকৃত বিদআতকেই বিদআত বলে অভিহিত করে থাকেন। এরা মধ্যম পন্থাবলম্বী এবং হকপন্থী।
বিদআতের মৌলিক নীতিমালা
বিদআতের তিনটি মৌলিক নীতিমালা রয়েছে। সেগুলো হল :
১.এমন ‘আমলের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট সাওয়াবের আশা করা যা শরীয়ত সিদ্ধ নয়। কেননা শরীয়তের স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম হল- এমন আমল দ্বারা আল্লাহর নিকট সাওয়াবের আশা করতে হবে যা কুরআনে আল্লাহ নিজে কিংবা সহীহ হাদীসে তাঁর রাসূল মুহাম্মদ (সাঃ) অনুমোদন করেছেন। তাহলেই কাজটি ইবাদাত বলে গণ্য হবে। পক্ষান্তরে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) যে আমল অনুমোদন করেননি সে আমলের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদাত করা হবে বিদআত।
২.দ্বীনের অনুমোদিত ব্যবস্থা ও পদ্ধতির বাইরে অন্য ব্যবস্থার অনুসরণ ও স্বীকৃতি প্রদান। ইসলামে একথা স্বতঃসিদ্ধ যে, শরীয়তের বেঁধে দেয়া পদ্ধতি ও বিধানের মধ্যে থাকা ওয়াজিব। যে ব্যক্তি ইসলামী শরীয়ত ব্যতীত অন্য বিধান ও পদ্ধতি অনুসরণ করল ও তার প্রতি আনুগত্যের স্বীকৃতি প্রদান করল সে বিদআতে লিপ্ত হল।
৩. যে সকল কর্মকান্ড সরাসরি বিদআত না হলেও বিদআতের দিকে পরিচালিত করে এবং পরিশেষে মানুষকে বিদআতে লিপ্ত করে, সেগুলোর হুকুম বিদআতেরই অনুরূপ।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৭৮
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ، قَالاَ كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ “ لأَقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللَّهِ ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও যায়দ ইব্নু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারা বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। (এ সময়) তিনি বললেনঃ আমি অবশ্য অবশ্যই মহান আল্লাহ্ তা’আলার কিতাব অনুযায়ী তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৭৯
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ، قَالاَ كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ “ لأَقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللَّهِ ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও যায়দ ইব্নু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারা বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। (এ সময়) তিনি বললেনঃ আমি অবশ্য অবশ্যই মহান আল্লাহ্ তা’আলার কিতাব অনুযায়ী তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৮০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، حَدَّثَنَا هِلاَلُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” كُلُّ أُمَّتِي يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ، إِلاَّ مَنْ أَبَى ”. قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَنْ يَأْبَى قَالَ ” مَنْ أَطَاعَنِي دَخَلَ الْجَنَّةَ، وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ أَبَى ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার সকল উম্মতই জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু যে অস্বীকার করে। তারা বললেনঃ কে অস্বীকার করবে। তিনি বললেনঃ যারা আমার অনুসরণ করবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার অবাধ্য হবে সে-ই অস্বীকার করবে। [১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮৩)
[১] যারা আল্লাহর রাসূলের সহীহ হাদিসকে জেনে বুঝে স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে পরিত্যাগ ক’রে কারো স্বকপোল কল্পিত রায় কিয়াসের অনুসরন করে তারা আল্লাহ্র রসূলের অবাধ্য।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৮১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَادَةَ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ، حَدَّثَنَا سَلِيمُ بْنُ حَيَّانَ ـ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ـ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مِينَاءَ، حَدَّثَنَا أَوْ، سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ جَاءَتْ مَلاَئِكَةٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ نَائِمٌ فَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّهُ نَائِمٌ. وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّ الْعَيْنَ نَائِمَةٌ وَالْقَلْبَ يَقْظَانُ. فَقَالُوا إِنَّ لِصَاحِبِكُمْ هَذَا مَثَلاً فَاضْرِبُوا لَهُ مَثَلاً. فَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّهُ نَائِمٌ. وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّ الْعَيْنَ نَائِمَةٌ وَالْقَلْبَ يَقْظَانُ. فَقَالُوا مَثَلُهُ كَمَثَلِ رَجُلٍ بَنَى دَارًا، وَجَعَلَ فِيهَا مَأْدُبَةً وَبَعَثَ دَاعِيًا، فَمَنْ أَجَابَ الدَّاعِيَ دَخَلَ الدَّارَ وَأَكَلَ مِنَ الْمَأْدُبَةِ، وَمَنْ لَمْ يُجِبِ الدَّاعِيَ لَمْ يَدْخُلِ الدَّارَ وَلَمْ يَأْكُلْ مِنَ الْمَأْدُبَةِ. فَقَالُوا أَوِّلُوهَا لَهُ يَفْقَهْهَا فَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّهُ نَائِمٌ. وَقَالَ بَعْضُهُمْ إِنَّ الْعَيْنَ نَائِمَةٌ وَالْقَلْبَ يَقْظَانُ. فَقَالُوا فَالدَّارُ الْجَنَّةُ، وَالدَّاعِي مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم فَمَنْ أَطَاعَ مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَقَدْ أَطَاعَ اللَّهَ، وَمَنْ عَصَى مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَقَدْ عَصَى اللَّهَ، وَمُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم فَرْقٌ بَيْنَ النَّاسِ. تَابَعَهُ قُتَيْبَةُ عَنْ لَيْثٍ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِلاَلٍ، عَنْ جَابِرٍ، خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم.
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদল ফেরেশ্তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট আসলেন। তিনি তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। একজন ফেরেশ্তা বললেন, তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] ঘুমিয়ে আছেন। অন্য একজন বললেন, চক্ষু ঘুমিয়ে বটে, কিন্তু অন্তর জেগে আছে। তখন তারা বললেন, তোমাদের এ সাথীর একটি উদাহরণ আছে। সুতরাং তাঁর উদাহরণ তোমরা বর্ননা কর। তখন তাদের কেউ বলল- তিনি তো ঘুমন্ত, আর কেউ বলল, চক্ষু ঘুমন্ত তবে অন্তর জাগ্রত। তখন তারা বলল, তাঁর উদাহরণ হল সেই লোকের মত, যে একটি বাড়ী তৈরি করল। তারপর সেখানে খানার আয়োজন আহবানকারীকে করল এবং একজন (লোকদের ডাকতে) পাঠাল। যারা আহবানকারীর ডাকে সাড়া দিল, তারা ঘরে প্রবেশ করে খানা খাওয়ার সূযোগ পেল। আর যারা আহবানকারীর ডাকে সাড়া দিল না, তারা ঘরেও প্রবেশ করতে পারল না এবং খানাও খেতে পারল না। তখন তারা বললেন, উদাহরণটি ব্যাখ্যা করুন, যাতে তিনি বুঝতে পারেন। তখন কেউ বলল, তিনি তো ঘুমন্ত, আর কেউ বলল, চক্ষু ঘুমন্ত, তবে অন্তর জাগ্রত। তখন তারা বললেন, ঘরটি হল জান্নাত, আহবানকারী হলেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। যারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর অনুসরণ করল, তারা আল্লাহ্র আনুগত্য করল। আর যারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অবাধ্যতা করল, তারা আসলে আল্লাহরই অবাধ্যতা করল। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হলেন মানুষের মাঝে পার্থক্যের মাপকাঠি। কুতাইবাহ জাবির (রাঃ) থেকে এরকম হাদীস বর্ণনা করেছেন, তবে তিনি “নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে বের হয়ে আসলেন”, এই কথাটি বলছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৮২
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ يَا مَعْشَرَ الْقُرَّاءِ اسْتَقِيمُوا فَقَدْ سُبِقْتُمْ سَبْقًا بَعِيدًا فَإِنْ أَخَذْتُمْ يَمِينًا وَشِمَالاً، لَقَدْ ضَلَلْتُمْ ضَلاَلاً بَعِيدًا.
হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হে কুরআন পাঠকারী সমাজ! তোমরা (কুরআন ও সুন্নাহর উপর) সুদৃঢ় থাক। নিশ্চয়ই তোমরা অনেক পশ্চাতে পড়ে আছ। আর যদি তোমরা ডানদিকের কিংবা বামদিকের পথ অনুসরণ কর তাহলে তোমরা সঠিকপথ (হেদায়েত থেকে) অনেক দুরে সরে পড়বে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৮৩
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّمَا مَثَلِي وَمَثَلُ مَا بَعَثَنِي اللَّهُ بِهِ كَمَثَلِ رَجُلٍ أَتَى قَوْمًا فَقَالَ يَا قَوْمِ إِنِّي رَأَيْتُ الْجَيْشَ بِعَيْنَىَّ، وَإِنِّي أَنَا النَّذِيرُ الْعُرْيَانُ فَالنَّجَاءَ. فَأَطَاعَهُ طَائِفَةٌ مِنْ قَوْمِهِ فَأَدْلَجُوا، فَانْطَلَقُوا عَلَى مَهَلِهِمْ فَنَجَوْا، وَكَذَّبَتْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ فَأَصْبَحُوا مَكَانَهُمْ، فَصَبَّحَهُمُ الْجَيْشُ، فَأَهْلَكَهُمْ وَاجْتَاحَهُمْ، فَذَلِكَ مَثَلُ مَنْ أَطَاعَنِي، فَاتَّبَعَ مَا جِئْتُ بِهِ، وَمَثَلُ مَنْ عَصَانِي وَكَذَّبَ بِمَا جِئْتُ بِهِ مِنَ الْحَقِّ ”.
আবূ মুসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার ও আমাকে আল্লাহ্ যা কিছু দিয়ে পাঠিয়েছেন তার উদাহরণ হল এমন যে, এক লোক কোন এক কাওমের নিকট এসে বলল, হে কাওম! আমি নিজের চোখে সেনাবাহিনীকে দেখে এসেছি। আমি সুস্পষ্ট সতর্ককারী। কাজেই তোমরা আত্নরক্ষার চেষ্টা কর। কাওমের কিছু লোক তার কথা মেনে নিল, সূতরাং রাতের প্রথম প্রহরে তারা সে জায়গা ছেড়ে রওনা হল এবং একটি নিরাপদ জায়গায় গিয়ে পৌছল। ফলে তারা রক্ষা পেল। তাদের মধ্যেকার আর একদল লোক তার কথা মিথ্যা জানল, ফলে তারা নিজেদের জায়গাতেই রয়ে গেল। সকাল বেলায় শক্রবাহিনী তাদের উপর আক্রমণ চালাল, তাদেরকে ধ্বংস করে দিল এবং তাদেরকে উৎপাটিত করে দিল। এই হল তাদের উদাহরণ, যারা আমার আনুগত্য করে এবং আমি যা নিয়ে এসেছি তার অনুসরন করে। আর যারা আমার কথা অমান্য করে তাদের দৃষ্টান্ত হল আমি যে সত্য নিয়ে এসেছি তাকে নিথ্যা প্রতিপন্ন করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৮৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَاسْتُخْلِفَ أَبُو بَكْرٍ بَعْدَهُ، وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنَ الْعَرَبِ قَالَ عُمَرُ لأَبِي بَكْرٍ كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ، وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ. فَمَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ. عَصَمَ مِنِّي مَالَهُ وَنَفْسَهُ، إِلاَّ بِحَقِّهِ، وَحِسَابُهُ عَلَى اللَّهِ ”. فَقَالَ وَاللَّهِ لأُقَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ، فَإِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ الْمَالِ، وَاللَّهِ لَوْ مَنَعُونِي عِقَالاً كَانُوا يُؤَدُّونَهُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهِ. فَقَالَ عُمَرُ فَوَاللَّهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ رَأَيْتُ اللَّهَ قَدْ شَرَحَ صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ لِلْقِتَالِ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ الْحَقُّ. قَالَ ابْنُ بُكَيْرٍ وَعَبْدُ اللَّهِ عَنِ اللَّيْثِ عَنَاقًا. وَهْوَ أَصَحُّ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করলেন আর তাঁর পরে আবূ বকর (রাঃ)-কে খালীফা করা হলো এবং আরবের যারা কাফির হবার তারা কাফির হয়ে গিয়েছিল, তখন ‘উমার (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ)-কে বললেন, আপনি কী করে লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি মানুষের সঙ্গে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলার পূর্ব পর্যন্ত যুদ্ধ করার জন্য নির্দেশপ্রাপ্ত। অতএব যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলল, সে তার জান ও মালকে আমার থেকে নিরাপদ করে নিল। তবে ইসলামী বিধানের আওতায় পড়লে আলাদা। তাদের প্রকৃত হিসাব আল্লাহর কাছে হবে। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, যারা সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করে, আমি অবশ্য অবশ্যই তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব। কেননা, যাকাত হল মালের হক। আল্লাহর শপথ! যদি তারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যা আদায় করত, এখন তা (সেভাবে) দিতে অস্বীকার করে, তাহলেও আমি অবশ্যই তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব। ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি দেখছিলাম যে, যুদ্ধ করার জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা আবূ বকরের সিনা খুলে দিয়েছেন। সুতরাং আমি বুঝতে পারলাম এ সিদ্ধান্ত সঠিক।
[ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন] ইবনু বুকায়র ও ‘আবদুল্লাহ্ (রহ.) লায়স-এর সূত্রে উকায়ল থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে। لو منعونى كذا (যদি তারা এ পরিমাণ দিতে অস্বীকার করে)-এর স্থলে لو منعونى عناقا (যদি তারা একটা ছোট উটের বাচ্চাও দিতে অস্বীকার করে) উল্লেখ করেছেন। আর এটিই সবচেয়ে শুদ্ধ। আর এটিকে লোকেরাعَنَاقًا বর্ণনা করেছেন। عزوجل বস্তুত এ স্থানে عقالا পড়াটা জায়েয নয়। আর عقالا শব্দটি শা‘বী-এর হাদীসে মুরসাল সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। সে রকম কুতাইবাহ (রহ.)ও عقالا বলেছেন।[১] [১৩৯৯, ১৪০০) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮৭)
[১] যারা বলে আমরা আল্লাহর কথা মানি, রাসূলের কথা মানিনা, আমরা ওমুক নাবীকে মানি,অন্যদেরকে মানি না, আমরা সলাত কায়েম করব, কিন্তু যাকাত, সিয়াম এগুলো মানি না, এরা সবাই পাক্কা কাফির। ‘‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলদেরকে অস্বীকার করে আর আল্লাহ ও রসূলদের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টি করতে চায় আর বলে (রসূলদের) কতককে আমরা মানি আর কতককে মানি না, আর তারা তার (অর্থাৎ কুফরের ও ঈমানের) মাঝ দিয়ে একটা রাস্তা বের করতে চায় তারাই হল পাক্কা কাফির আর কাফিরদের জন্য আমি অবমাননাকর শাস্তি প্রস্ত্তত করে রেখেছি- (আন-নিসা-১৫০,১৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৮৫
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ لَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاسْتُخْلِفَ أَبُو بَكْرٍ بَعْدَهُ وَكَفَرَ مَنْ كَفَرَ مِنْ الْعَرَبِ قَالَ عُمَرُ لِأَبِي بَكْرٍ كَيْفَ تُقَاتِلُ النَّاسَ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُمِرْتُ أَنْ أُقَاتِلَ النَّاسَ حَتَّى يَقُولُوا لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ فَمَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ عَصَمَ مِنِّي مَالَهُ وَنَفْسَهُ إِلاَّ بِحَقِّهِ وَحِسَابُهُ عَلَى اللهِ فَقَالَ وَاللهِ لأُ×قَاتِلَنَّ مَنْ فَرَّقَ بَيْنَ الصَّلاَةِ وَالزَّكَاةِ فَإِنَّ الزَّكَاةَ حَقُّ الْمَالِ وَاللهِ لَوْ مَنَعُونِي عِقَالاً كَانُوا يُؤَدُّونَهُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَقَاتَلْتُهُمْ عَلَى مَنْعِهِ فَقَالَ عُمَرُ فَوَاللهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ رَأَيْتُ اللهَ قَدْ شَرَحَ صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ لِلْقِتَالِ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ الْحَقُّ قَالَ ابْنُ بُكَيْرٍ وَعَبْدُ اللهِ عَنْ اللَّيْثِ عَنَاقًا وَهُوَ أَصَحُّ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করলেন আর তাঁর পরে আবূ বকর (রাঃ)-কে খালীফা করা হলো এবং আরবের যারা কাফির হবার তারা কাফির হয়ে গিয়েছিল, তখন ‘উমার (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ)-কে বললেন, আপনি কী করে লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি মানুষের সঙ্গে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলার পূর্ব পর্যন্ত যুদ্ধ করার জন্য নির্দেশপ্রাপ্ত। অতএব যে ব্যক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলল, সে তার জান ও মালকে আমার থেকে নিরাপদ করে নিল। তবে ইসলামী বিধানের আওতায় পড়লে আলাদা। তাদের প্রকৃত হিসাব আল্লাহর কাছে হবে। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, যারা সালাত ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করে, আমি অবশ্য অবশ্যই তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব। কেননা, যাকাত হল মালের হক। আল্লাহর শপথ! যদি তারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যা আদায় করত, এখন তা (সেভাবে) দিতে অস্বীকার করে, তাহলেও আমি অবশ্যই তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব। ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি দেখছিলাম যে, যুদ্ধ করার জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা আবূ বকরের সিনা খুলে দিয়েছেন। সুতরাং আমি বুঝতে পারলাম এ সিদ্ধান্ত সঠিক।
[ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন] ইবনু বুকায়র ও ‘আবদুল্লাহ্ (রহ.) লায়স-এর সূত্রে উকায়ল থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে। لو منعونى كذا (যদি তারা এ পরিমাণ দিতে অস্বীকার করে)-এর স্থলে لو منعونى عناقا (যদি তারা একটা ছোট উটের বাচ্চাও দিতে অস্বীকার করে) উল্লেখ করেছেন। আর এটিই সবচেয়ে শুদ্ধ। আর এটিকে লোকেরাعَنَاقًا বর্ণনা করেছেন। عزوجل বস্তুত এ স্থানে عقالا পড়াটা জায়েয নয়। আর عقالا শব্দটি শা‘বী-এর হাদীসে মুরসাল সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। সে রকম কুতাইবাহ (রহ.)ও عقالا বলেছেন।[১] [১৩৯৯, ১৪০০) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮৭)
যারা বলে আমরা আল্লাহ্র কথা মানি, রাসূলের কথা মানিনা, আমরা অমুক নবীকে মানি, অন্যদেরকে মানিনা, আমরা সালাত কায়েম করব, কিন্তু যাকাত, সিয়াম এগুলো মানি না, এরা সবাই পাক্কা কাফির । “যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলদেরকে অস্বীকার করে আর আল্লাহ ও রসূলদের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টি করতে চায় আর বলে (রসূলদের) কতককে আমরা মানি আর কতককে মানি না, আর তারা তার (অর্থাৎ কুফরের ও ঈমানের) মাঝ দিয়ে একটা রাস্তা বের করতে চায় তারাই হল পাক্কা কাফির আর কাফিরদের জন্য আমি আবমাননাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি – (আন-নিসা-১৫০, ১৫১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৮৬
حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَدِمَ عُيَيْنَةُ بْنُ حِصْنِ بْنِ حُذَيْفَةَ بْنِ بَدْرٍ فَنَزَلَ عَلَى ابْنِ أَخِيهِ الْحُرِّ بْنِ قَيْسِ بْنِ حِصْنٍ، وَكَانَ مِنَ النَّفَرِ الَّذِينَ يُدْنِيهِمْ عُمَرُ، وَكَانَ الْقُرَّاءُ أَصْحَابَ مَجْلِسِ عُمَرَ وَمُشَاوَرَتِهِ كُهُولاً كَانُوا أَوْ شُبَّانًا فَقَالَ عُيَيْنَةُ لاِبْنِ أَخِيهِ يَا ابْنَ أَخِي هَلْ لَكَ وَجْهٌ عِنْدَ هَذَا الأَمِيرِ فَتَسْتَأْذِنَ لِي عَلَيْهِ قَالَ سَأَسْتَأْذِنُ لَكَ عَلَيْهِ. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَاسْتَأْذَنَ لِعُيَيْنَةَ فَلَمَّا دَخَلَ قَالَ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ وَاللَّهِ مَا تُعْطِينَا الْجَزْلَ، وَمَا تَحْكُمُ بَيْنَنَا بِالْعَدْلِ. فَغَضِبَ عُمَرُ حَتَّى هَمَّ بِأَنْ يَقَعَ بِهِ فَقَالَ الْحُرُّ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى قَالَ لِنَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم {خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِينَ} وَإِنَّ هَذَا مِنَ الْجَاهِلِينَ. فَوَاللَّهِ مَا جَاوَزَهَا عُمَرُ حِينَ تَلاَهَا عَلَيْهِ، وَكَانَ وَقَّافًا عِنْدَ كِتَابِ اللَّهِ.
আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উয়াইনাহ ইব্নু হিস্ন ইব্নু হুযাইফাহ ইব্নু বাদ্র (রহঃ) তাঁর ভাতিজা হুর ইব্নু কায়স ইব্নু হিস্ন-এর কাছে আসলেন। ‘উমর (রাঃ) যাদের নিজে সন্নিকটে রাখতেন, হুর ইব্নু কায়স (রহঃ) ছিলেন তাদেরই একজন। যুবক হোক কিংবা বৃদ্ধ ক্বারী (আলিম) ব্যাক্তিরাই ‘উমর (রাঃ) – এর মজলিসের সদস্য ও পরামর্শদাতা ছিলেন। উয়ায়না তার ভাতিজাকে বললেন, হে ভাতিজা! তোমার কি আমীরের নিকট এভটুকু প্রভাব আছে যে আমার জন্য সাক্ষাতের অনুমতি গ্রহণ করতে পারবে? সে বলল, আমি আপনার ব্যাপারে তাঁর কাছে অনুমতি চাইব। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন তিনি (হুর) ‘উয়াইনাহ্র জন্য অনুমতি চাইলেন। তারপর যখন ‘উয়াইনাহ (রাঃ) ‘উমর (রাঃ) – এর নিকট গেলেন, তখন সে বলল, হে ইব্নু খাত্তাব! আল্লাহ্র কসম! আপনি আমাদের মাল দিচ্ছেন না, আবার ইনসাফের ভিত্তিতে আমাদের মাঝে ফায়সালাও করছেন না। তখন ‘উমর (রাঃ) রেগে গেলেন, এমন কি তিনি তাকে মারতে উদ্যত হলেন। তখন হুর বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন। আল্লাহ্ তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলেছেনঃ “তুমি ক্ষমা অবলম্বন কর, সৎকাজের আদেশ দাও, আর নির্বোধদের উপেক্ষা কর”। – (সূরাহ আল-আ’রাফ ৭/১৯৯)। এ লোকটি একজন মূর্খ। আল্লাহ্র শপথ! ‘উমর (রাঃ) – এর সামনে এ আয়াতটি পাঠ করা হলে তিনি তা এতটুকু লংঘন করলেন না। বস্তুত তিনি মহান আল্লাহ তা’আলার কিতাবের বড়ই অনুগত ছিলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৮৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ الْمُنْذِرِ، عَنْ أَسْمَاءَ ابْنَةِ أَبِي بَكْرٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّهَا قَالَتْ أَتَيْتُ عَائِشَةَ حِينَ خَسَفَتِ الشَّمْسُ، وَالنَّاسُ قِيَامٌ وَهْىَ قَائِمَةٌ تُصَلِّي فَقُلْتُ مَا لِلنَّاسِ فَأَشَارَتْ بِيَدِهَا نَحْوَ السَّمَاءِ فَقَالَتْ سُبْحَانَ اللَّهِ. فَقُلْتُ آيَةٌ. قَالَتْ بِرَأْسِهَا أَنْ نَعَمْ. فَلَمَّا انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ “ مَا مِنْ شَىْءٍ لَمْ أَرَهُ إِلاَّ وَقَدْ رَأَيْتُهُ فِي مَقَامِي، حَتَّى الْجَنَّةَ وَالنَّارَ، وَأُوحِيَ إِلَىَّ أَنَّكُمْ تُفْتَنُونَ فِي الْقُبُورِ قَرِيبًا مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ، فَأَمَّا الْمُؤْمِنُ ـ أَوِ الْمُسْلِمُ لاَ أَدْرِي أَىَّ ذَلِكَ قَالَتْ أَسْمَاءُ ـ فَيَقُولُ مُحَمَّدٌ جَاءَنَا بِالْبَيِّنَاتِ فَأَجَبْنَا وَآمَنَّا. فَيُقَالُ نَمْ صَالِحًا عَلِمْنَا أَنَّكَ مُوقِنٌ. وَأَمَّا الْمُنَافِقُ ـ أَوِ الْمُرْتَابُ لاَ أَدْرِي أَىَّ ذَلِكَ قَالَتْ أَسْمَاءُ ـ فَيَقُولُ لاَ أَدْرِي سَمِعْتُ النَّاسَ يَقُولُونَ شَيْئًا فَقُلْتُهُ ”.
আসমা বিন্ত আবূ বক্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার সুর্যগ্রহণের সময় আমি ‘আইশাহ (রাঃ) – এর কাছে এলাম। লোকেরা তখন (সালাতে) দাঁড়িয়েছিল এবং তিনিও দাঁড়িয়ে সালাত পড়ছিলেন। আমি জিজ্ঞাসাঃ করলাম, লোকদের কি হল? তিনি হাত দিয়ে আকাশের দিকে ইঙ্গিত করলেন এবং বললেন, সুবহানাল্লাহ! আমি বললাম, এটা কি কোন নিদর্শন? তখন তিনি মাথা নেড়ে হাঁ বললেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাত পড়া শেষ করলেন, তখন তিনি আল্লাহর প্রশংসা করলেন ও ছানা পড়লেন। তারপর বললেন, আমি যা দেখিনি তার সবকিছুই আজকের আমার এ জায়গায় দেখলাম। এমন কি জান্নাত ও জাহান্নামও দেখলাম। আর আমার কাছে ওয়াহী করা হয়েছে যে, কবরে তোমাদের পরীক্ষা করা হবে, প্রায় দাজ্জালের পরীক্ষার মতই। তবে যারা মু’মিন হবে, অথবা (বলেছিলেন) মুসলিম হবে। বর্ননাকারী বলেন, আসমা (রাঃ) ‘মু’মিন’- বলেছিলেন, না ‘মুসলিম’- বলেছিলেন তা আমার স্বরণ নেই। তারা বলবে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে এসেছিলেন, আমরা তার ডাকে সাড়া দিয়েছি এবং ঈমান এনেছি। তখন তাকে বলা হবে, তুমি শান্তিতে ঘুমোও, আমরা জানি তুমি দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলে। আর যারা মুনাফিক হবে অথবা (বলেছিলেন) সন্দেহকারী হবে, বর্ণনাকারী বলেন, আসমা ‘মুনাফিক’- বলেছিলেন না ‘সন্দেহকারী’ বলেছিলেন তা আমার মনে নেই- তারা বলবে, আমি কিছুই জানি না, আমি মানুষকে কথা বলতে শুনেছি, আর তাই বলেছি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৮৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৮৮
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ دَعُونِي مَا تَرَكْتُكُمْ، إِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ بِسُؤَالِهِمْ وَاخْتِلاَفِهِمْ عَلَى أَنْبِيَائِهِمْ، فَإِذَا نَهَيْتُكُمْ عَنْ شَىْءٍ فَاجْتَنِبُوهُ، وَإِذَا أَمَرْتُكُمْ بِأَمْرٍ فَأْتُوا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেনঃ তোমরা আমাকে প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাক, যে পর্যন্ত না আমি তোমাদের কিছু বলি। কেননা, তোমাদের আগে যারা ছিল, তারা তাদের নবীদেরকে অধিক অধিক প্রশ্ন করা ও নবীদের সঙ্গে মতভেদের জন্যই ধ্বংস হয়েছে। তাই আমি যখন তোমাদেরকে কোন ব্যাপারে নিষেধ করি, তখন তা থেকে বেঁচে থাক। আর যদি কোন বিষয়ে আদেশ করি তাহলে সাধ্য অনুসারে মেনে চল।[মুসলিম ১৫/৭৩, হাঃ ১৩৩৭, আহমাদ ৯৭৮৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/৩. অধ্যায়ঃ
অধিক অধিক প্রশ্ন করা এবং অকারণে কষ্ট করা নিন্দনীয়।
এবং আল্লাহ্র বানীঃ তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না , যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/১০১)
৭২৮৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِنَّ أَعْظَمَ الْمُسْلِمِينَ جُرْمًا مَنْ سَأَلَ عَنْ شَىْءٍ لَمْ يُحَرَّمْ، فَحُرِّمَ مِنْ أَجْلِ مَسْأَلَتِهِ ”.
আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিমদের সর্বাপেক্ষা বড় অপরাধী ঐ লোক যে এমন বিষয়ে প্রশ্ন করে যা আগে হারাম ছিল না, কিন্তু তার প্রশ্ন করার কারণে তা হারাম করা হয়েছে।[মুসলিম ৪৩/৩৭, হাঃ ২৩৫৮, আহমাদ ১৫৪৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৯০
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، سَمِعْتُ أَبَا النَّضْرِ، يُحَدِّثُ عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اتَّخَذَ حُجْرَةً فِي الْمَسْجِدِ مِنْ حَصِيرٍ، فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِيهَا لَيَالِيَ، حَتَّى اجْتَمَعَ إِلَيْهِ نَاسٌ، ثُمَّ فَقَدُوا صَوْتَهُ لَيْلَةً فَظَنُّوا أَنَّهُ قَدْ نَامَ، فَجَعَلَ بَعْضُهُمْ يَتَنَحْنَحُ لِيَخْرُجَ إِلَيْهِمْ فَقَالَ “ مَا زَالَ بِكُمُ الَّذِي رَأَيْتُ مِنْ صَنِيعِكُمْ، حَتَّى خَشِيتُ أَنْ يُكْتَبَ عَلَيْكُمْ، وَلَوْ كُتِبَ عَلَيْكُمْ مَا قُمْتُمْ بِهِ فَصَلُّوا أَيُّهَا النَّاسُ فِي بُيُوتِكُمْ، فَإِنَّ أَفْضَلَ صَلاَةِ الْمَرْءِ فِي بَيْتِهِ، إِلاَّ الصَّلاَةَ الْمَكْتُوبَةَ ”.
যায়দ ইব্নু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাটাই দিয়ে মসজিদে একটি হুজরা বানিয়ছিলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার ভিতর কয়েক রাত সালাত পড়লেন। এতে লোকেরা তার সঙ্গে একত্রিত হত। তারপর এক রাতে তারা তাঁর আওয়ায শুনতে পেল না এবং তারা ভাবল, তিনি ঘুমিয়ে পড়েছেন। তাদের কেউ কেউ গলা খাকার দিতে লাগল, যাতে তিনি তাদের নিকট বেরিয়ে আসেন। তখন তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেনঃ তোমাদের এ ক’ দিনের কর্মকান্ড আমি দেখেছি, এতে আমার আশঙ্কা হচ্ছে, তোমাদের উপর তা ফরয করে দেওয়া থেকে পারে। কিন্তু যদি তোমাদের উপর ফরয করে দেওয়া হয় তাহলে তোমরা তা প্রতিষ্ঠিত করবে না। কাজেই ওহে লোকেরা! তোমরা নিজ নিজ ঘরে সালাত পড়। কারন, মানুষের সবচেয়ে উত্তম সালাত হল যা সে তার ঘরে আদায় করে ফরয সালাত ছাড়া।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৯১
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، قَالَ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَشْيَاءَ كَرِهَهَا، فَلَمَّا أَكْثَرُوا عَلَيْهِ الْمَسْأَلَةَ غَضِبَ وَقَالَ ” سَلُونِي ”. فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَبِي قَالَ ” أَبُوكَ حُذَافَةُ ”. ثُمَّ قَامَ آخَرُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَبِي فَقَالَ ” أَبُوكَ سَالِمٌ مَوْلَى شَيْبَةَ ”. فَلَمَّا رَأَى عُمَرُ مَا بِوَجْهِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْغَضَبِ قَالَ إِنَّا نَتُوبُ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ.
আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে কতকগুলো বিষয়ে প্রশ্ন করা হল যা তিনি অপছন্দ করলেন। লোকেরা যখন তাঁকে অধিক অধিক প্রশ্ন করতে লাগল, তিনি রাগাম্বিত হলেন এবং বললেনঃ আমাকে প্রশ্ন কর। তখন এক লোক দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার পিতা কে? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা হল হুযাফা। এরপর আরেকজন দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার পিতা কে? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা শায়বাহ্র আযাদকৃত গোলাম সালিম। ‘উমর (রাঃ) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর চেহারায় রাগের আলামত দেখে বললেন, আমরা আল্লাহর কাছে তওবা করছি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৯২
حَدَّثَنَا مُوسَى، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ، عَنْ وَرَّادٍ، كَاتِبِ الْمُغِيرَةِ قَالَ كَتَبَ مُعَاوِيَةُ إِلَى الْمُغِيرَةِ اكْتُبْ إِلَىَّ مَا سَمِعْتَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. فَكَتَبَ إِلَيْهِ إِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ “ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ، اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ ”. وَكَتَبَ إِلَيْهِ إِنَّهُ كَانَ يَنْهَى عَنْ قِيلَ وَقَالَ، وَكَثْرَةِ السُّؤَالِ، وَإِضَاعَةِ الْمَالِ، وَكَانَ يَنْهَى عَنْ عُقُوقِ الأُمَّهَاتِ وَوَأْدِ الْبَنَاتِ وَمَنْعٍ وَهَاتِ.
মুগীরাহ ইব্নু শু’বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মু’আবিয়া (রাঃ) মুগীরাহ (রাঃ) এর কাছে লিখে পাঠালেন যে, তুমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে যা কিছু শুনেছ তা আমার কাছে লিখে পাঠাও। তিনি বলেন, তিনি তাকে লিখলেন যে, আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি সালাতের পর বলতেনঃ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই। তিনি একক! তাঁর কোন শারীক নেই, সম্রাজ্য কেবলমাত্র তাঁরই, আর সকল প্রশংসা তাঁরই জন্য, তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দান করবে তাকে আটকানোর কেউ নেই, আর তুমি আটকাবে তা দেওয়ার মত কেউ নেই। ধন সম্পদ তোমার দরবারে সম্পদশালীদের কোন উপকার করবে না। তিনি আরো লিখেছিলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তর্কে লিপ্ত হওয়া, বেশি বেশি প্রশ্ন করা ও সস্পদ বিনষ্ট করা থেকে নিষেধ করতেন। আর তিনি মায়েদের অবাধ্য হতে, কন্যা সন্তানদের জীবন্ত কবর দিতে ও প্রাপকের পাওনা দেওয়া থেকে হাত গুটাতে আর নেয়ার ব্যাপারে হাত বাড়িয়ে দিতে নিষেধ করতেন। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ [বুখারী(রহঃ)] বলেন, তারা (কাফির) জাহিলীয়্যাতের যুগে স্বীয় কন্যাদেরকে হত্যা করতেন। অতঃপর আল্লাহ তা হারাম করে দেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৯৩
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كُنَّا عِنْدَ عُمَرَ فَقَالَ نُهِينَا عَنِ التَّكَلُّفِ.
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা ‘উমর (রাঃ) – এর কাছে ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ (যাবতীয়) কৃত্রিমতা হতে আমাদের নিষেধ করা হয়েছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৫)
যাবতীয় মুনাফেকী নীতি অবলম্বন করা, ইবাদতের ক্ষেত্রে অনর্থক বাড়তি কষ্ট করা, নাটক করা, অন্যের চরিত্রে অভিনয় করা, নকল চুল, দাড়ি গোঁফ লাগিয়ে অন্যের মত হওয়া, যেমন খুশি তেমন সাজা, ছেলেদের পাকা চুল, দাড়ি লাগিয়ে মুরুব্বি সাজা ইত্যাদি যাবতীয় কৃএিমতা গ্রহন করতে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৯৪
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ،. وَحَدَّثَنِي مَحْمُودٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه. أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ حِينَ زَاغَتِ الشَّمْسُ فَصَلَّى الظُّهْرَ فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَذَكَرَ السَّاعَةَ، وَذَكَرَ أَنَّ بَيْنَ يَدَيْهَا أُمُورًا عِظَامًا ثُمَّ قَالَ ” مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَسْأَلَ عَنْ شَىْءٍ فَلْيَسْأَلْ عَنْهُ، فَوَاللَّهِ لاَ تَسْأَلُونِي عَنْ شَىْءٍ إِلاَّ أَخْبَرْتُكُمْ بِهِ، مَا دُمْتُ فِي مَقَامِي هَذَا ”. قَالَ أَنَسٌ فَأَكْثَرَ النَّاسُ الْبُكَاءَ، وَأَكْثَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَقُولَ ” سَلُونِي ”. فَقَالَ أَنَسٌ فَقَامَ إِلَيْهِ رَجُلٌ فَقَالَ أَيْنَ مَدْخَلِي يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” النَّارُ ”. فَقَامَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ حُذَافَةَ فَقَالَ مَنْ أَبِي يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ” أَبُوكَ حُذَافَةُ ”. قَالَ ثُمَّ أَكْثَرَ أَنْ يَقُولَ ” سَلُونِي سَلُونِي ”. فَبَرَكَ عُمَرُ عَلَى رُكْبَتَيْهِ فَقَالَ رَضِينَا بِاللَّهِ رَبًّا، وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا، وَبِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم رَسُولاً. قَالَ فَسَكَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَالَ عُمَرُ ذَلِكَ، ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ عُرِضَتْ عَلَىَّ الْجَنَّةُ وَالنَّارُ آنِفًا فِي عُرْضِ هَذَا الْحَائِطِ وَأَنَا أُصَلِّي، فَلَمْ أَرَ كَالْيَوْمِ فِي الْخَيْرِ وَالشَّرِّ ”.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
দুপুরের পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে আসলেন এবং যুহরের সালাত পড়লেন। সালাম ফিরানোর পর তিনি মিম্বরে দাঁড়ালেন এবং কেয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তিনি উল্লেখ করলেন যে, কেয়ামতের আগে অনেক বড় বড় ঘটনা ঘটবে। তারপর তিনি বললেনঃ কেউ যদি আমাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞেস করা পছন্দ করে, তাহলে সে তা করতে পারবে। আল্লাহর শপথ! আমি এখানে অবস্হান করা পর্যন্ত তোমরা আমাকে যে বিষয়েই প্রশ্ন করবে, আমি তা তোমাদের জানাব। আনাস (রাঃ) বলেন, এতে লোকেরা খুব বেশি কাঁদল। আর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেশি বেশি বলতে থাকলেন তোমরা আমার কাছে প্রশ্ন কর। আনাস (রাঃ) বলেন, তখন এক লোক দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার আশ্রয়ের জায়গা কোথায়? তিনি বললেন, জাহান্নাম। তারপর ‘আবদুল্লাহ ইব্নু হুযাফা (রাঃ) দাড়িয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ্র রসূল! আমার পিতা কে? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা হুযাফা। আনাস (রাঃ) বলেন, তারপর তিনি বার বার বলতে লাগলেনঃ তোমরা আমার কাছে প্রশ্ন কর, আমার কাছে প্রশ্ন কর। এতে ‘উমর (রাঃ) হাঁটু গেড়ে বসে গেলেন এবং বললেন, আমরা আল্লাহ্কে রব হিসাবে মেনে ইসলামকে দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করে এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে রসূল হিসাবে বিশ্বাস করে সন্তুষ্ট আছি। আনাস (রাঃ) বলেন, ‘উমর (রাঃ) যখন এ কথা বললেন, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ করলেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ উত্তম! যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ করে বলছি, এই মুহূর্তে আমি যখন সালাতে ছিলাম তখন এ দেয়ালের প্রস্থে জান্নাত ও জাহান্নাম আমার সামনে পেশ করা হয়েছিল। আজকের মত এমন ভাল আর মন্দ আমি আর দেখিনি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৯৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ، أَخْبَرَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، أَخْبَرَنِي مُوسَى بْنُ أَنَسٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا نَبِيَّ اللَّهِ مَنْ أَبِي قَالَ ” أَبُوكَ فُلاَنٌ ”. وَنَزَلَتْ {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ} الآيَةَ.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক লোক জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর নবী! কে আমার পিতা? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা অমুক। তারপর এ আয়াত নাযিল হলঃ “হে মু’মিনরা! তোমরা এমন বিষয়ে প্রশ্ন কর না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে.…’’(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৯৬
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ صَبَّاحٍ، حَدَّثَنَا شَبَابَةُ، حَدَّثَنَا وَرْقَاءُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لَنْ يَبْرَحَ النَّاسُ يَتَسَاءَلُونَ حَتَّى يَقُولُوا هَذَا اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَىْءٍ فَمَنْ خَلَقَ اللَّهَ ”.
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লোকেরা একে অপরকে প্রশ্ন করতে থাকবে যে, এ আল্লাহ সব কিছুরই স্রষ্টা, তবে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করল?[মুসলিম ১/৬০, হাঃ ১৩৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৮)
[১] যদি কেউ এ রকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় তবে সে যেন আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। অর্থাৎ أعوذ بالله من الشيطان الرجيم বলে এবং তা বলা থেকে বিরত থাকে। আর সহীহ মুসলিমের শব্দে রয়েছে :
فَمَنْ وَجَدَ مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا فَلْيَقُلْ آمَنْتُ بِاللَّهِ
আর আবূ দাউদ ও নাসায়ীতে অতিরিক্ত হলো : তখন তোমরা বলবে : الله أحد الله الصمد
অতঃপর বাম দিকে থুথু দিবে ও أعوذ بالله من الشيطان الرجيم বলবে। আর মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত ’আয়িশাহ’র হাদীসে রয়েছে: فَإِذَا وَجَدَ أَحَدُكُمْ ذَلَكَ فَلْيَقُلْ آمَنْتُ بِاللَّهِ وَرَسُوْلِهِ فَإِن ذَلِكَ يَذْهَبُ عَنْهُ
(ফাতহুল বারী)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭২৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ بْنِ مَيْمُونٍ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي حَرْثٍ بِالْمَدِينَةِ، وَهْوَ يَتَوَكَّأُ عَلَى عَسِيبٍ، فَمَرَّ بِنَفَرٍ مِنَ الْيَهُودِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ سَلُوهُ عَنِ الرُّوحِ. وَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ تَسْأَلُوهُ لاَ يُسْمِعْكُمْ مَا تَكْرَهُونَ. فَقَامُوا إِلَيْهِ فَقَالُوا يَا أَبَا الْقَاسِمِ حَدِّثْنَا عَنِ الرُّوحِ. فَقَامَ سَاعَةً يَنْظُرُ فَعَرَفْتُ أَنَّهُ يُوحَى إِلَيْهِ، فَتَأَخَّرْتُ عَنْهُ حَتَّى صَعِدَ الْوَحْىُ، ثُمَّ قَالَ {وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الرُّوحِ قُلِ الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي}.
ইব্নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সঙ্গে মদিনায় এক শস্য ক্ষেতে ছিলাম। তিনি একটি খেজুরের ডালে ভর দিয়ে ইয়াহূদীদের একটি দলের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাদের কেউ বলল, তাকে রূহ্ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা কর। আর কেউ বলল তাঁকে জিজ্ঞাসা করো না, এতে তোমাদেরকে এমন উত্তর শুনতে হতে পারে যা তোমরা অপছন্দ কর। অতঃপর তারা তাঁর কাছে উঠে গিয়ে বলল, হে আবুল কাসিম! আমাদেরকে রূহ্ সস্পর্কে জানান। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। আমি বুঝলাম, তাঁর কাছে ওয়াহী অবতীর্ন হচ্ছে, আমি তার থেকে একটু পিছে সরে দাঁড়ালাম। ওয়াহী শেষ হল। তারপর তিনি বললেনঃ “তাঁরা তোমাকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বল, ‘রূহ আমার প্রতিপালকের আদেশ……’’(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৯৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/৪. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র কাজকর্মের অনুসরণ ।
৭২৯৮
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ اتَّخَذَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ فَاتَّخَذَ النَّاسُ خَوَاتِيمَ مِنْ ذَهَبٍ، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” إِنِّي اتَّخَذْتُ خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ ”. فَنَبَذَهُ وَقَالَ ” إِنِّي لَنْ أَلْبَسَهُ أَبَدًا ” فَنَبَذَ النَّاسُ خَوَاتِيمَهُمْ.
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি সোনার আংটি পরতেন। তখন লোকেরাও সোনার আংটি পরতে লাগল। এরপর (একদিন) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি সোনার আংটি পরছিলাম – তারপর তিনি তা ছুঁড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেনঃ আমি আর কোন দিনই তা পরিধান করব না। ফলে লোকেরাও তাদের আংটিগুলো ছুঁড়ে ফেলল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/৫. অধ্যায়ঃ
দ্বীনের ব্যাপারে অতিরিক্ত কঠোরটা করা, তর্কে লিপ্ত হওয়া, বাড়াবাড়ি করা এবং বিদ্’আত অপছন্দনীয়।
কারন, আল্লাহ্ বলেছেনঃ ওহে কিতাবধারীগণ! তোমরা তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না, আর আল্লাহ্ সম্বন্ধে সত্য ছাড়া কিছু বলো না…….। (সূরাহ আন-নিসা ৪/১৭১)
৭২৯৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” لاَ تُوَاصِلُوا ”. قَالُوا إِنَّكَ تُوَاصِلُ. قَالَ ” إِنِّي لَسْتُ مِثْلَكُمْ، إِنِّي أَبِيتُ يُطْعِمُنِي رَبِّي وَيَسْقِينِي ”. فَلَمْ يَنْتَهُوا عَنِ الْوِصَالِ ـ قَالَ ـ فَوَاصَلَ بِهِمُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَيْنِ أَوْ لَيْلَتَيْنِ، ثُمَّ رَأَوُا الْهِلاَلَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” لَوْ تَأَخَّرَ الْهِلاَلُ لَزِدْتُكُمْ ”. كَالْمُنَكِّلِ لَهُمْ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ইফতার না করে লাগাতার সওম রেখো না। সাহাবীরা বললেন, আপনি তো ইফতার না করে লাগাতার সওম রাখেন। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের মতো নই। আমি রাত কাটাই যাতে আমার রব আমাকে খাওয়ান ও পান করান। কিন্তু তাঁরা লাগাতার সওম রাখা থেকে বিরত হলো না। ফলে তাদের সঙ্গে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও দু’দিন অথবা (বর্ণনাকারী বলেছিলেন) দু’ রাত লাগাতার সওম রাখলেন। এরপর তারা নতুন চাঁদ দেখতে পেলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যদি চাঁদ (আরও কয়েক দিন) দেরী করে উঠত, তাহলে আমিও (লাগাতার সওম রেখে) তোমাদের সওমের সময়কে বাড়িয়ে দিতাম, তাদেরকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেয়ার জন্য। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩০০
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ التَّيْمِيُّ، حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، خَطَبَنَا عَلِيٌّ ـ رضى الله عنه ـ عَلَى مِنْبَرٍ مِنْ آجُرٍّ، وَعَلَيْهِ سَيْفٌ فِيهِ صَحِيفَةٌ مُعَلَّقَةٌ فَقَالَ وَاللَّهِ مَا عِنْدَنَا مِنْ كِتَابٍ يُقْرَأُ إِلاَّ كِتَابُ اللَّهِ وَمَا فِي هَذِهِ الصَّحِيفَةِ. فَنَشَرَهَا فَإِذَا فِيهَا أَسْنَانُ الإِبِلِ وَإِذَا فِيهَا ” الْمَدِينَةُ حَرَمٌ مِنْ عَيْرٍ إِلَى كَذَا، فَمَنْ أَحْدَثَ فِيهَا حَدَثًا فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ، لاَ يَقْبَلُ اللَّهُ مِنْهُ صَرْفًا وَلاَ عَدْلاً ”. وَإِذَا فِيهِ ” ذِمَّةُ الْمُسْلِمِينَ وَاحِدَةٌ يَسْعَى بِهَا أَدْنَاهُمْ، فَمَنْ أَخْفَرَ مُسْلِمًا فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ، لاَ يَقْبَلُ اللَّهُ مِنْهُ صَرْفًا وَلاَ عَدْلاً ”. وَإِذَا فِيهَا ” مَنْ وَالَى قَوْمًا بِغَيْرِ إِذْنِ مَوَالِيهِ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ لاَ يَقْبَلُ اللَّهُ مِنْهُ صَرْفًا وَلاَ عَدْلاً ”.
ইবরাহীম তায়মী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার পিতা বর্ণনা করেছেন যে, একবার ‘আলী (রাঃ) পাকা ইটের তৈরী একটি মিম্বরে উঠে আমাদের উদ্দেশে খুত্বা দিলেন। তাঁর সাথে একটি তলোয়ার ছিল, যার মাঝে একটি সহীফা ঝুলছিল। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমাদের কাছে আল্লাহর কিতাব এবং যা এই সহীফাতে লেখা আছে এ ব্যতীত অন্য এমন কোন কিতাব নেই যা পাঠ করা যেতে পারে। তারপর তিনি তা খুললেন। তাতে উটের বয়স সম্পর্কে লেখা ছিল এবং লেখা ছিল যে, ‘আয়র’ পর্বত থেকে অমুক স্থান পর্যন্ত মদীনা হারাম (পবিত্র এলাকা) বলে গণ্য হবে। যে কেউ এখানে কোন অন্যায় করবে তার উপর আল্লাহ্, ফেরেশ্তামন্ডলী ও সকল মানুষের অভিসস্পাত। আর আল্লাহ্ তার ফরয ও নফল কোন ‘ইবাদতই কবূল করবেন না এবং তাতে আরও ছিল যে, এখানকার সকল মুসলমানের নিরাপত্তা একই স্তরের। একজন নিন্ম স্তরের লোকও (অন্যকে) নিরাপত্তা দিতে পারবে। যদি কেউ অন্য মুসলমানের প্রদত্ত নিরাপত্তাকে লংঘন করে, তাহলে তার উপর আল্লাহ্র, ফেরেশ্তামন্ডলীর ও সকল মানুষের লা’নাত। আল্লাহ তা’আলা তার ফরয ও নফল কোন ‘ইবাদতই গ্রহন করবেন না। তাতে আরও ছিল, যদি কেউ তার (মুক্তি দাতা) মনিবের অনুমতি ছাড়া অন্যকে নিজের (গোলামী কালীন সময়ের) মনিব বলে উল্লেখ করে, তাহলে তার উপর আল্লাহ্র, ফেরেশ্তামন্ডলীর ও সকল মানুষের অভিসম্পাত। আর আল্লাহ্ তা’আলা তার ফরয, নফল কোন ‘ইবাদতই কবূল করবেন না। [১১১; মুসলিম ১৫/৮৫, হাঃ ১৩৭০, আহমাদ ১৩৭, ৬১৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩০১
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ ـ رَضِيَ الله عنها ـ صَنَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا تَرَخَّصَ وَتَنَزَّهَ عَنْهُ قَوْمٌ، فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ ثُمَّ قَالَ “ مَا بَالُ أَقْوَامٍ يَتَنَزَّهُونَ عَنِ الشَّىْءِ أَصْنَعُهُ، فَوَاللَّهِ إِنِّي أَعْلَمُهُمْ بِاللَّهِ، وَأَشَدُّهُمْ لَهُ خَشْيَةً ”.
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজে একটি কাজ করলেন এবং তাতে তিনি অবকাশ দিলেন। তবে কিছু লোক এর থেকে নিবৃত থাকল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে এ খবর পৌছল। তিনি আল্লাহর প্রশংসা করলেন ও ছানা পাঠ করলেন, তারপর বললেনঃ লোকদের কী হল যে, তারা এমন কাজ থেকে নিবৃত থাকে যা আমি নিজে করি। আল্লাহ্র শপথ! আমি আল্লাহ্ সস্পর্কে তাদের চেয়ে বেশি জানি এবং আমি তাদের চেয়ে আল্লাহ্কে অনেক বেশি ভয় করি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩০২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ نَافِعِ بْنِ عُمَرَ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، قَالَ كَادَ الْخَيِّرَانِ أَنْ يَهْلِكَا أَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ، لَمَّا قَدِمَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَفْدُ بَنِي تَمِيمٍ، أَشَارَ أَحَدُهُمَا بِالأَقْرَعِ بْنِ حَابِسٍ الْحَنْظَلِيِّ أَخِي بَنِي مُجَاشِعٍ، وَأَشَارَ الآخَرُ بِغَيْرِهِ، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ لِعُمَرَ إِنَّمَا أَرَدْتَ خِلاَفِي. فَقَالَ عُمَرُ مَا أَرَدْتُ خِلاَفَكَ. فَارْتَفَعَتْ أَصْوَاتُهُمَا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلَتْ {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ} إِلَى قَوْلِهِ {عَظِيمٌ}. قَالَ ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ قَالَ ابْنُ الزُّبَيْرِ فَكَانَ عُمَرُ بَعْدُ ـ وَلَمْ يَذْكُرْ ذَلِكَ عَنْ أَبِيهِ يَعْنِي أَبَا بَكْرٍ ـ إِذَا حَدَّثَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بِحَدِيثٍ حَدَّثَهُ كَأَخِي السِّرَارِ، لَمْ يُسْمِعْهُ حَتَّى يَسْتَفْهِمَهُ.
ইব্নু আবূ মুলাইকাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দু’জন অতি ভাল লোক আবূ বকর (রাঃ) ও ‘উমর (রাঃ) ধ্বংসের কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিলেন। বনী তামীমের প্রতিনিধি দল যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে আসল, তখন তাদের একজন [উমর (রাঃ)] আকরা ইব্নু হাবিস হানযালী নামে বনী মুজাশে গোত্রের ভ্রাতা এক লোকর দিকে ইঙ্গিত করলেন, অন্যজন [আবূ বকর (রাঃ)] আরেক জনের দিকে ইঙ্গিত করলেন। এতে আবূ বকর (রাঃ) ‘উমর (রাঃ) – কে বললেন, আপনার ইচ্ছা হল আমার বিরোধিতা করা। ‘উমর (রাঃ) বললেন, আমি আপনার বিরোধিতার ইচ্ছা করিনি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সামনে তাঁদের দু’জনেরই আওয়াজ উচ্চ হয়ে যায়। ফলে অবতীর্ণ হয়ঃ “হে মু’মিনগগ! তোমরা নবীর গলার আওয়াজের উপর নিজেদের গলার আওয়াজ উচ্চ করবে না……’’ (সূরাহ আল-হুজুরাত ৪৯/২)। ইব্নু আবূ মুলাইকাহ বলেন, ইব্নু যুবায়র (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, এরপরে ‘উমর (রাঃ) যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সঙ্গে কোন কথা বলতেন, তখন গোপন বিষয়ের আলাপকারীর মত চুপে চুপে বলতেন, এমন কি তা শোনা যেত না, যতক্ষন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে আবার জিজ্ঞেস না করতেন। এ হাদীসের রাবী ইব্নু যুবায়র তার পিতা অর্থাৎ নানা আবূ বকর (রাঃ) থেকে উল্লেখ করেননি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩০৩
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فِي مَرَضِهِ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ ”. قَالَتْ عَائِشَةُ قُلْتُ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ الْبُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ. فَقَالَ ” مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ”. فَقَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ لِحَفْصَةَ قُولِي إِنَّ أَبَا بَكْرٍ إِذَا قَامَ فِي مَقَامِكَ لَمْ يُسْمِعِ النَّاسَ مِنَ الْبُكَاءِ، فَمُرْ عُمَرَ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ، فَفَعَلَتْ حَفْصَةُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” إِنَّكُنَّ لأَنْتُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ لِلنَّاسِ ”. قَالَتْ حَفْصَةُ لِعَائِشَةَ مَا كُنْتُ لأُصِيبَ مِنْكِ خَيْرًا.
উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর অসুখের সময় বললেনঃ তোমরা আবূ বক্রকে বল, লোকদের নিয়ে তিনি যেন সালাত আদায় করে নেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম যে, আবূ বকর (রাঃ) যদি আপনার জায়গায় দাঁড়ান তাহলে কান্নার কারনে মানুষকে তার আওয়াজ শোনাতে পারবেন না। কাজেই আপনি ‘উমর (রাঃ) – কে আদেশ করুন, তিনি যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। তিনি আবার বললেন, তোমরা আবূ বক্রকে বল, যেন তিনি লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। ‘আইশাহ (রাঃ) বলেন, আমি হাফসাহ (রাঃ) – কে বললাম, তুমি বল যে, আবূ বক্র আপনার জায়গায় দাড়ালে কান্নার কারনে লোকদেরকে তার আওয়ায শোনাতে পারবেন না। কাজেই আপনি ‘উমর (রাঃ) – কে আদেশ করুন। তিনি যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। হাফসাহ (রাঃ) তাই করলেন। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা তো ইউসুফ (‘আঃ) – এর মহিলাদের মত (যারা তাঁকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল)। আবূ বকরকে বল, তিনি যেন লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করেন। হাফসাহ (রাঃ) ‘আইশাহ (রাঃ) – কে বললেন, আমি আপনার নিকট থেকে কখনই কল্যাণ পাইনি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩০৪
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ جَاءَ عُوَيْمِرٌ إِلَى عَاصِمِ بْنِ عَدِيٍّ فَقَالَ أَرَأَيْتَ رَجُلاً وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِهِ رَجُلاً فَيَقْتُلُهُ، أَتَقْتُلُونَهُ بِهِ سَلْ لِي يَا عَاصِمُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ فَكَرِهَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَسَائِلَ وَعَابَ، فَرَجَعَ عَاصِمٌ فَأَخْبَرَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَرِهَ الْمَسَائِلَ فَقَالَ عُوَيْمِرٌ وَاللَّهِ لآتِيَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، فَجَاءَ وَقَدْ أَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى الْقُرْآنَ خَلْفَ عَاصِمٍ فَقَالَ لَهُ ” قَدْ أَنْزَلَ اللَّهُ فِيكُمْ قُرْآنًا ”. فَدَعَا بِهِمَا فَتَقَدَّمَا فَتَلاَعَنَا، ثُمَّ قَالَ عُوَيْمِرٌ كَذَبْتُ عَلَيْهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنْ أَمْسَكْتُهَا. فَفَارَقَهَا وَلَمْ يَأْمُرْهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِفِرَاقِهَا، فَجَرَتِ السُّنَّةُ فِي الْمُتَلاَعِنَيْنِ. وَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” انْظُرُوهَا فَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أَحْمَرَ قَصِيرًا مِثْلَ وَحَرَةٍ فَلاَ أُرَاهُ إِلاَّ قَدْ كَذَبَ، وَإِنْ جَاءَتْ بِهِ أَسْحَمَ أَعْيَنَ ذَا أَلْيَتَيْنِ فَلاَ أَحْسِبُ إِلاَّ قَدْ صَدَقَ عَلَيْهَا ”. فَجَاءَتْ بِهِ عَلَى الأَمْرِ الْمَكْرُوهِ.
সাহ্ল ইব্নু সা’দ সা’ঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উওয়ায়মির (রাঃ) আসিম ইব্নু আদীর কাছে এসে বলল, আপনার কী অভিমত, যদি কেউ তার স্ত্রীর সঙ্গে অন্য কাউকে পায় এবং তাকে হত্যা করে ফেলে, তাহলে এজন্য আপনারা কি তাকে হত্যা করবেন? হে আসিম! আপনি আমার জন্য এ বিষয়টি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে জিজ্ঞাসা করুন। তিনি জিজ্ঞেস করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন বিষয় জিজ্ঞেস করাকে অপছন্দ করলেন এবং উত্তর দিতে অস্বীকার করলেন। আসিম (রাঃ) ফিরে এসে তাকে জানাল যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিষয়টিকে অপছন্দ মনে করেছেন। উওয়াইমির (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! অবশ্য অবশ্যই আমি নিজেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট যাব। তারপর তিনি আসলেন। আসিম (রাঃ) চলে যাওয়ার পরেই আল্লাহ্ কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা কুরআনের আয়াত নাযিল করেছেন। তিনি তাদের দু”জনকেই (সে ও তার স্ত্রী) ডাকলেন। তারা উপস্থিত হল এবং ‘লি’আন’ করল। তারপর উওয়াইমির (রাঃ) বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! যদি আমি তাকে আটকে রাখি তাহলে তো আমি তার উপর মিথ্যারোপ করেছি, এ বলে তিনি তার সঙ্গে বিবাহ ছিন্ন করলেন। অবশ্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বিবাহ ছিন্ন করতে বলেননি। পরে ‘লি’আন’কারীদের মাঝে এ প্রথাই চালু হয়ে গেল। নবী (মহিলাটি সস্পর্কে) বললেনঃ একে লক্ষ্য রেখ, যদি সে খাটো ওয়াহারার (এক জাতীয় পোকা) মত লালচে সন্তান প্রসব করে, তাহলে আমি মনে করব উওয়াইমির মিথ্যাই বলেছে। আর যদি সে কাল চোখওয়ালা ও বড় নিতম্বধারী সন্তান প্রসব করে, তাহলে মনে করব উওয়াইমির তার ব্যাপারে সত্যই বলেছে। পরে সে অপকর্মের ফল নিয়ে হাজির হয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩০৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي مَالِكُ بْنُ أَوْسٍ النَّصْرِيُّ، وَكَانَ، مُحَمَّدُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ ذَكَرَ لِي ذِكْرًا مِنْ ذَلِكَ فَدَخَلْتُ عَلَى مَالِكٍ فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ انْطَلَقْتُ حَتَّى أَدْخُلَ عَلَى عُمَرَ أَتَاهُ حَاجِبُهُ يَرْفَا فَقَالَ هَلْ لَكَ فِي عُثْمَانَ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ وَالزُّبَيْرِ وَسَعْدٍ يَسْتَأْذِنُونَ. قَالَ نَعَمْ. فَدَخَلُوا فَسَلَّمُوا وَجَلَسُوا. فَقَالَ هَلْ لَكَ فِي عَلِيٍّ وَعَبَّاسٍ. فَأَذِنَ لَهُمَا. قَالَ الْعَبَّاسُ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ اقْضِ بَيْنِي وَبَيْنَ الظَّالِمِ. اسْتَبَّا. فَقَالَ الرَّهْطُ عُثْمَانُ وَأَصْحَابُهُ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ اقْضِ بَيْنَهُمَا وَأَرِحْ أَحَدَهُمَا مِنَ الآخَرِ. فَقَالَ اتَّئِدُوا أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ، هَلْ تَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ”. يُرِيدُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَفْسَهُ. قَالَ الرَّهْطُ قَدْ قَالَ ذَلِكَ. فَأَقْبَلَ عُمَرُ عَلَى عَلِيٍّ وَعَبَّاسٍ فَقَالَ أَنْشُدُكُمَا بِاللَّهِ هَلْ تَعْلَمَانِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ذَلِكَ. قَالاَ نَعَمْ. قَالَ عُمَرُ فَإِنِّي مُحَدِّثُكُمْ عَنْ هَذَا الأَمْرِ، إِنَّ اللَّهَ كَانَ خَصَّ رَسُولَهُ صلى الله عليه وسلم فِي هَذَا الْمَالِ بِشَىْءٍ لَمْ يُعْطِهِ أَحَدًا غَيْرَهُ، فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ {مَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْهُمْ فَمَا أَوْجَفْتُمْ} الآيَةَ، فَكَانَتْ هَذِهِ خَالِصَةً لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، ثُمَّ وَاللَّهِ مَا احْتَازَهَا دُونَكُمْ وَلاَ اسْتَأْثَرَ بِهَا عَلَيْكُمْ، وَقَدْ أَعْطَاكُمُوهَا وَبَثَّهَا فِيكُمْ، حَتَّى بَقِيَ مِنْهَا هَذَا الْمَالُ، وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِهِ نَفَقَةَ سَنَتِهِمْ مِنْ هَذَا الْمَالِ، ثُمَّ يَأْخُذُ مَا بَقِيَ فَيَجْعَلُهُ مَجْعَلَ مَالِ اللَّهِ، فَعَمِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِذَلِكَ حَيَاتَهُ، أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ هَلْ تَعْلَمُونَ ذَلِكَ فَقَالُوا نَعَمْ. ثُمَّ قَالَ لِعَلِيٍّ وَعَبَّاسٍ أَنْشُدُكُمَا اللَّهَ هَلْ تَعْلَمَانِ ذَلِكَ قَالاَ نَعَمْ. ثُمَّ تَوَفَّى اللَّهُ نَبِيَّهُ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ أَنَا وَلِيُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَقَبَضَهَا أَبُو بَكْرٍ فَعَمِلَ فِيهَا بِمَا عَمِلَ فِيهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، وَأَنْتُمَا حِينَئِذٍ ـ وَأَقْبَلَ عَلَى عَلِيٍّ وَعَبَّاسٍ ـ تَزْعُمَانِ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ فِيهَا كَذَا، وَاللَّهُ يَعْلَمُ أَنَّهُ فِيهَا صَادِقٌ بَارٌّ رَاشِدٌ تَابِعٌ لِلْحَقِّ، ثُمَّ تَوَفَّى اللَّهُ أَبَا بَكْرٍ فَقُلْتُ أَنَا وَلِيُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ. فَقَبَضْتُهَا سَنَتَيْنِ أَعْمَلُ فِيهَا بِمَا عَمِلَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبُو بَكْرٍ، ثُمَّ جِئْتُمَانِي وَكَلِمَتُكُمَا عَلَى كَلِمَةٍ وَاحِدَةٍ وَأَمْرُكُمَا جَمِيعٌ، جِئْتَنِي تَسْأَلُنِي نَصِيبَكَ مِنِ ابْنِ أَخِيكَ، وَأَتَانِي هَذَا يَسْأَلُنِي نَصِيبَ امْرَأَتِهِ مِنْ أَبِيهَا فَقُلْتُ إِنْ شِئْتُمَا دَفَعْتُهَا إِلَيْكُمَا، عَلَى أَنَّ عَلَيْكُمَا عَهْدَ اللَّهِ وَمِيثَاقَهُ تَعْمَلاَنِ فِيهَا بِمَا عَمِلَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَبِمَا عَمِلَ فِيهَا أَبُو بَكْرٍ وَبِمَا عَمِلْتُ فِيهَا مُنْذُ وَلِيتُهَا، وَإِلاَّ فَلاَ تُكَلِّمَانِي فِيهَا. فَقُلْتُمَا ادْفَعْهَا إِلَيْنَا بِذَلِكَ. فَدَفَعْتُهَا إِلَيْكُمَا بِذَلِكَ، أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ هَلْ دَفَعْتُهَا إِلَيْهِمَا بِذَلِكَ قَالَ الرَّهْطُ نَعَمْ. فَأَقْبَلَ عَلَى عَلِيٍّ وَعَبَّاسٍ فَقَالَ أَنْشُدُكُمَا بِاللَّهِ هَلْ دَفَعْتُهَا إِلَيْكُمَا بِذَلِكَ. قَالاَ نَعَمْ. قَالَ أَفَتَلْتَمِسَانِ مِنِّي قَضَاءً غَيْرَ ذَلِكَ فَوَالَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ لاَ أَقْضِي فِيهَا قَضَاءً غَيْرَ ذَلِكَ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ، فَإِنْ عَجَزْتُمَا عَنْهَا فَادْفَعَاهَا إِلَىَّ، فَأَنَا أَكْفِيكُمَاهَا.
ইব্নু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মালিক ইব্নু আওস নাযরী (রহঃ) আমাকে এ হাদীসটি বর্ননা করেছেন। অবশ্য মুহাম্মাদ ইব্নু যুবায়র ইব্নু মুতঈম এ সম্পর্কে কিছু কথা বলেছিলেন। পরে আমি মালিকের নিকট যাই এবং তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। তখন তিনি বলেন, ‘উমর (রাঃ) – এর সঙ্গে দেখা করার জন্য রওনা হয়ে তার কাছে হাজির হলাম। এমন সময় তার দ্বাররক্ষক ইয়ারফা এসে বলল, ‘উসমান, ‘আবদুর রহমান, যুবায়র এবং সা’দ (রাঃ) আসতে চাচ্ছেন। আপনার অনুমতি আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারপর তাঁরা প্রবেশ করলেন এবং সালাম দিয়ে আসনে বসলেন। দ্বাররক্ষক (আবার) বলল, ‘আলী এবং ‘আব্বাসের ব্যাপারে আপনার অনুমতি আছে কি? তিনি তাদের দু’জনকে অনুমতি দিলেন। ‘আব্বাস (রাঃ) এসে বললেনঃ হে আমীরুল মু’মিনীন! আমার ও সীমাংঘনকারীর মাঝে ফায়সালা করে দিন। এবং তারা পরস্পরে গালমন্দ করলেন। তখন দলটি বললেন, ‘উসমান ও তাঁর সঙ্গীরা, হে আমীরুল মু’মিনীন! এ দু’জনের মাঝে ফায়সালা করে দিয়ে একজনকে অন্যজন হতে শাস্তি দিন। ‘উমর (রাঃ) বললেন, আপনারা একটু ধৈর্য ধারন করুন। আমি আপনাদেরকে সেই আল্লাহ্র কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি যার হুকুমে আসমান ও যমীন নিজ স্থানে বিদ্যমান, আপনারা কি এ কথা জানেন যে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেনঃ আমাদের সস্পদ ওয়ারিশদের মাঝে বন্টিত হয় না, আমরা যা রেখে যাই তা সদকা হিসাবে গণ্য হয়? এ কথা দ্বারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেকেই বুঝিয়েছিলেন। দলের সবাই বললেন, হ্যাঁ তিনি এ কথা বলেছিলেন। তারপর ‘উমর (রাঃ) ‘আলী ও ‘আব্বাস (রাঃ) – এর দিকে ফিরে বললেন, আপনাদের দু’জনকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, আপনারা কি জানেন যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথা বলেছিলেন? তাঁরা দু’জনেই আল্লাহ্র কসম দিয়ে বললেন, হ্যাঁ। ‘উমর (রাঃ) বললেন, আমি আপনাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছি যে, আল্লাহ তা’আলা এ সম্পদের একাংশ তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র নির্ধারিত করে দিয়েছিলেন, অপর কারো জন্য দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আল্লাহ ইয়াহুদীদের নিকট হতে তার রসূলকে যে ফায় দিয়েছেন তার জন্য তোমরা ঘোড়া কিংবা উটে চড়ে যুদ্ধ করনি…..(৫৯ : ৬)। কাজেই এ সম্পদ একমাত্র রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র জন্যই নির্দিষ্ট ছিল। তারপর আল্লাহর কসম! তিনি আপনাদেরকে বাদ দিয়ে এককভাবে নিজের জন্য তা সঞ্চিত করে রাখেননি, কিংবা এককভাবে আপনাদেরকেও দিয়ে দেননি। বরং তিনি আপনাদের সকলকেই তা থেকে দিয়েছেন এবং সকলের মাঝে বণ্টন করে দিয়েছেন। অবশেষে তা থেকে এ পরিমান সস্পদ অবশিষ্ট রয়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ সম্পদ থেকে তার পরিবারের জন্য তাদের বছরের খরচ দিতেন। এরপর যা অবশিষ্ট থাকত তা আল্লাহর মাল যে পথে ব্যয় হয় সে পথে খরচের জন্য রেখে দিতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জীবিত অবস্থায় এমন করতেন। আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি! আপনারা কি এ ব্যাপারে জ্ঞাত আছেন? সকলেই বললেন, হ্যাঁ। তারপর ‘আলী (রাঃ) ও ‘আব্বাস (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বললেন, আল্লাহর কসম দিয়ে আপনাদের দু’জনকে জিজ্ঞেস করছি! আপনারা কি এ সম্পর্কে জ্ঞাত আছেন? তারা দু’জনেই বললেন, হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তা’আলা তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে মৃত্যু দিলেন। তখন আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্থলাভিষিক্ত। কাজেই তিনি সে সম্পদ অধিগ্রহণ করলেন এবং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে খাতে এ সম্পদ খরচ করতেন তিনিও ঠিক সেভাবেই ব্যয় করতেন। আপনারা তখন ছিলেন। তারপর ‘আলী (রাঃ) ও ‘আব্বাস (রাঃ) – এর দিকে ফিরে বললেন, আপনারা দু’জন তখনও মনে করতেন যে আবূ বকর (রাঃ) এ ব্যাপারে এরূপ ছিলেন। আল্লাহ জানেন তিনি এ ব্যাপারে সত্যবাদী, ন্যায়পরায়ণ, সত্যনিষ্ঠ ও হক্কের অনুসারী ছিলেন। তারপর আল্লাহ তা’আলা আবূ বকর (রাঃ) – কেও মৃত্যু দিলেন। তখন আমি বললাম, এখন আমি আবূ বাকর ও রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর স্থলাভিষিক্ত। সুতরাং দু’বছর আমি তা আমার তত্ত্বাবধানে রাখলাম এবং আবূ বকর (রাঃ) ও রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা যে খাতে খরচ করতেন, আমিও তেমন করতে লাগলাম। তারপর আপনারা দু’জন আমার কাছে এলেন। আপনাদের দু’জনের একই কথা ছিল, দাবিও ছিল একই। আপনি এসেছিলেন নিজের ভাতিজার থেকে নিজের অংশ আদায় করে নেওয়ার দাবি নিয়ে, আর ইনি (‘আলী) এসেছিলেন তাঁর স্ত্রীর পৈতৃক সুত্রে প্রাপ্ত অংশ আদায় করে নেওয়ার দাবি নিয়ে। আমি বললাম যদি আপনারা চান তাহলে আমি আপনাদেরকে তা দিয়ে দিতে পারি, তরে এ শর্তে যে, আপনারা আল্লাহর নামে এই ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হবেন যে, এ সস্পদ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আবূ বকর (রাঃ) যে ভাবে খরচ করতেন এবং আমি এর দায়িত্ব নেয়ার পর যেভাবে তা খরচ করেছি, আপনারাও তেমনিভাবে ব্যায় করবেন। তখন আপনারা দু’জনে বলেছিলেন, এ শর্তেই আপনি তা আমাদের হাতে দিয়ে দিন। ফলে আমি তা আপনাদের কাছে দিয়ে দিয়েছিলাম। আল্লাহর কসম দিয়ে আপনাদেরকে জিজ্ঞেস করছি! আমি কি সেই শর্তাধীনে এদের কাছে সে সম্পদ দিয়ে দেইনি? সকলেই বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি ‘আলী (রাঃ) ও ‘আব্বাস (রাঃ) – এর দিকে তাকিয়ে বললেন, আল্লাহর কসম দিয়ে আপনাদের দু’জনকে জিজ্ঞেস করছি! আমি কি ঐ শর্তাধীনে আপনাদেরকে সে সস্পদ দিয়ে দেইনি? তারা দু’জনে বললেনঃ হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, আপনারা কি আমার নিকট হতে এর ভিন্ন কোন ফয়সালা পেতে চান? সে সঁত্তার কসম করে বলছি, যার হুকুমে আকাশ ও যমীন নিজ স্থানে বিরাজমান, ক্বিয়ামতের পূর্বে আমি এ বিষয়ে নতুন কোন ফয়সালা করব না। যদি আপনারা এর তত্ত্বাবধানে অক্ষম হন, তাহলে তা আমার নিকট সোর্পদ করুন। আপনাদের দু’জনের বদলে আমি একাই এর তত্ত্বাবধানের জন্য যথেষ্ট।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/৬. অধ্যায়ঃ
বিদআতীকে আশ্রয়দানকারীর পাপ। ‘আলী (রাঃ) এ হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন
আলী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ মর্মে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন
৭৩০৬
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، قَالَ قُلْتُ لأَنَسٍ أَحَرَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ. قَالَ نَعَمْ مَا بَيْنَ كَذَا إِلَى كَذَا، لاَ يُقْطَعُ شَجَرُهَا، مَنْ أَحْدَثَ فِيهَا حَدَثًا فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ. قَالَ عَاصِمٌ فَأَخْبَرَنِي مُوسَى بْنُ أَنَسٍ أَنَّهُ قَالَ أَوْ آوَى مُحْدِثًا.
আসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি মাদ্বীনাহ্কে হারাম (পবিত্র এলাকা) হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ, অমুক জায়গা থেকে অমুক জায়গা পর্যন্ত। এখানকার কোন গাছ কাটা যাবে না, আর যে ব্যক্তি এখানে বিদ্আত করবে তার উপর আল্লাহ্, ফেরেশ্তা ও সকল মানুষের অভিশাপ। আসিম বলেন, আমাকে মূসা ইবনু আনাস বলেছেন, বর্ণনাকারী أَوْ آوَى مُحْدِثًا কিংবা বিদ্আতীকে আশ্রয় দেয় বলেছেন। [১৮৬৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/৭. অধ্যায়ঃ
মনগড়া মত ও ভিত্তিহীন কিয়াস নিন্দনীয়।
আর আল্লাহ্র বাণীঃ যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ করো না….। (সুরাহ বনী ইসরাঈল ১৭/৩৬)
৭৩০৭
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ تَلِيدٍ، حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ شُرَيْحٍ، وَغَيْرُهُ، عَنْ أَبِي الأَسْوَدِ، عَنْ عُرْوَةَ، قَالَ حَجَّ عَلَيْنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ إِنَّ اللَّهَ لاَ يَنْزِعُ الْعِلْمَ بَعْدَ أَنْ أَعْطَاهُمُوهُ انْتِزَاعًا، وَلَكِنْ يَنْتَزِعُهُ مِنْهُمْ مَعَ قَبْضِ الْعُلَمَاءِ بِعِلْمِهِمْ، فَيَبْقَى نَاسٌ جُهَّالٌ يُسْتَفْتَوْنَ فَيُفْتُونَ بِرَأْيِهِمْ، فَيُضِلُّونَ وَيَضِلُّونَ ”. فَحَدَّثْتُ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ إِنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو حَجَّ بَعْدُ فَقَالَتْ يَا ابْنَ أُخْتِي انْطَلِقْ إِلَى عَبْدِ اللَّهِ فَاسْتَثْبِتْ لِي مِنْهُ الَّذِي حَدَّثْتَنِي عَنْهُ. فَجِئْتُهُ فَسَأَلْتُهُ فَحَدَّثَنِي بِهِ كَنَحْوِ مَا حَدَّثَنِي، فَأَتَيْتُ عَائِشَةَ فَأَخْبَرْتُهَا فَعَجِبَتْ فَقَالَتْ وَاللَّهِ لَقَدْ حَفِظَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو.
উরওয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু ‘আম্র (রাঃ) আমাদের এ দিক দিয়ে হাজ্জে যাচ্ছিলেন। আমি শুনতে পেলাম, তিনি বলেছেন যে, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) – কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ্ তোমাদেরকে যে ইল্ম দান করেছেন, তা হঠাৎ ছিনিয়ে নেবেন না বরং উলামাগণকে তাদের ইল্মসহ ক্রমশ তুলে নেয়ার মাধ্যমে তা ছিনিয়ে নেবেন। তখন কেবল মূর্খ লোকেরা অবশিষ্ট থাকবে। তাদের কাছে ফাত্ওয়া চাওয়া হবে। তারা মনগড়া ফাত্ওয়া দেবে। ফলে নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে, অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে। ‘উরওয়াহ (রাঃ) বলেন,আমি এ হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) – এর স্ত্রী ‘আয়িশা (রাঃ)-কে বললাম। তারপর ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আম্র (রাঃ) আবার হজ্জ করতে এলেন। তখন ‘আয়িশা (রাঃ) আমাকে বললেন, হে ভাগ্নে! তুমি ‘আবদুল্লাহ্র কাছে যাও এবং তার থেকে যে হাদীসটি তুমি আমাকে বর্ণনা করেছিলেন, তাঁর নিকট থেকে যাচাই করে আস। আমি তাঁর নিকট গেলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে ঠিক সে রকমই বর্ণনা করলেন, যেরকম আগে বর্ণনা করেছিলেন। আমি ‘আয়িশা (রাঃ) – ’র কাছে ফিরে এসে তাকে জানালাম। তিনি আশ্চর্য হয়ে গেলেন এবং বললেন, আল্লাহ্র কসম! ‘আবদুল্লাহ্ ইব্নু আম্র (রাঃ) মনে রেখেছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮০৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩০৮
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنَا أَبُو حَمْزَةَ، سَمِعْتُ الأَعْمَشَ، قَالَ سَأَلْتُ أَبَا وَائِلٍ هَلْ شَهِدْتَ صِفِّينَ قَالَ نَعَمْ. فَسَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ حُنَيْفٍ، يَقُولُ ح وَحَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، قَالَ قَالَ سَهْلُ بْنُ حُنَيْفٍ يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّهِمُوا رَأْيَكُمْ عَلَى دِينِكُمْ، لَقَدْ رَأَيْتُنِي يَوْمَ أَبِي جَنْدَلٍ وَلَوْ أَسْتَطِيعُ أَنَّ أَرُدَّ أَمْرَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَرَدَدْتُهُ، وَمَا وَضَعْنَا سُيُوفَنَا عَلَى عَوَاتِقِنَا إِلَى أَمْرٍ يُفْظِعُنَا إِلاَّ أَسْهَلْنَ بِنَا إِلَى أَمْرٍ نَعْرِفُهُ غَيْرَ هَذَا الأَمْرِ. قَالَ وَقَالَ أَبُو وَائِلٍ شَهِدْتُ صِفِّينَ وَبِئْسَتْ صِفُّونَ.
আমাস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি আবূ ওযায়িলকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি সিফ্ফীনের যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। মূসা ইব্নু ইসমা’ঈল… সাহ্ল ইব্নু হুনায়ফ (রাঃ) বলেন, হে লোকেরা! দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের নিজস্ব মতামতকে গ্রহণযোগ্য মনে করো না। কেননা আবূ জান্দাল দিবসে (হুদাইবিয়াহ্র দিন) আমি ভেবেছিলাম, যদি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) – এর সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করতে পারতাম, তাহলে অবশ্যই আমি তা প্রত্যাখ্যান করতাম। যে কোন ভয়াবহ অবস্থার জন্য আমরা যখনই তলোয়ার কাঁধে নিয়েছি, তখনই তলোয়ার আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের পথ সহজ করে দিয়েছ। বর্তমান বিষয়টি আলাদ। রাবী বলেন, আবূ ওয়ায়িল (রাঃ) বলেছেন, আমি সিফ্ফীনের যুদ্ধে শরীক ছিলাম; কতই না মন্দ ছিল সিফ্ফীনের লড়াই!(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/৮. অধ্যায়ঃ
ওয়াহী নাযিল হয়নি এমন কোন বিষয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) – কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতেন: আমি জানি না কিংবা সে সর্ম্পকে ওয়াহী নাযিল না হওয়া পর্যন্ত কোন জবাব দিতেন না এবং তিনি ব্যক্তিগত মতের উপর ভিত্তি করে কিংবা অনুমান করে কিছু বলতেন না।
কেননা, আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ আল্লাহ্ আপনাকে যা কিছু জানিয়ে দিয়েছেন তদ্দ্বারা (ফয়সালা করুন) । (সুরাহ আন্-নিসা ৪/১০৫)
ইব্ন মাসঊদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ওহী অবতীর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি চুপ ছিলেন।
৭৩০৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ الْمُنْكَدِرِ، يَقُولُ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ مَرِضْتُ فَجَاءَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعُودُنِي وَأَبُو بَكْرٍ وَهُمَا مَاشِيَانِ، فَأَتَانِي وَقَدْ أُغْمِيَ عَلَىَّ فَتَوَضَّأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ صَبَّ وَضُوءَهُ عَلَىَّ فَأَفَقْتُ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ـ وَرُبَّمَا قَالَ سُفْيَانُ فَقُلْتُ أَىْ رَسُولَ اللَّهِ ـ كَيْفَ أَقْضِي فِي مَالِي كَيْفَ أَصْنَعُ فِي مَالِي قَالَ فَمَا أَجَابَنِي بِشَىْءٍ حَتَّى نَزَلَتْ آيَةُ الْمِيرَاثِ.
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম। নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) ও আবূ বকর (রাঃ) আমার নিকট আসলেন। তাঁরা দু’জনেই হেঁটে এসেছিলেন। তাঁরা যখন আমার কাছে আসলেন, তখন আমি বেহুঁশ ছিলাম। নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) উযূ করলেন এবং উযূর পানি আমার উপরে ঢেলে দিলেন। তাতে আমি জ্ঞান ফিরে পেলাম। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! বর্ণনাকারী সুফিয়ান কোন কোন সময় বলতেন হে আল্লাহ্র রসূল-আমার সম্পদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেব? আমার সম্পদগুলো কী করব? (বর্ণনাকারী সাহাবী বলেন) তিনি আমাকে কোন জবাব দিলেন না, অবশেষে মীরাসের আয়াত অবতীর্ণ হল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/৯. অধ্যায়ঃ
নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) উম্মাতের পুরুষ ও নারীদেরকে সে বিষয়েরই শিক্ষা দিতেন, যা আল্লাহ্ তাঁকে শিখিয়ে দিতেন, নিজস্ব মতামত বা দৃষ্টান্তের উপর ভিত্তি করে নয়।
৭৩১০
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الأَصْبَهَانِيِّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، ذَكْوَانَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَهَبَ الرِّجَالُ بِحَدِيثِكَ، فَاجْعَلْ لَنَا مِنْ نَفْسِكَ، يَوْمًا نَأْتِيكَ فِيهِ تُعَلِّمُنَا مِمَّا عَلَّمَكَ اللَّهُ. فَقَالَ ” اجْتَمِعْنَ فِي يَوْمِ كَذَا وَكَذَا فِي مَكَانِ كَذَا وَكَذَا ”. فَاجْتَمَعْنَ فَأَتَاهُنَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَعَلَّمَهُنَّ مِمَّا عَلَّمَهُ اللَّهُ ثُمَّ قَالَ ” مَا مِنْكُنَّ امْرَأَةٌ تُقَدِّمُ بَيْنَ يَدَيْهَا مِنْ وَلَدِهَا ثَلاَثَةً، إِلاَّ كَانَ لَهَا حِجَابًا مِنَ النَّارِ ”. فَقَالَتِ امْرَأَةٌ مِنْهُنَّ يَا رَسُولَ اللَّهِ اثْنَيْنِ قَالَ فَأَعَادَتْهَا مَرَّتَيْنِ ثُمَّ قَالَ ” وَاثْنَيْنِ وَاثْنَيْنِ وَاثْنَيْنِ ”.
আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন , এক মহিলা নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) – এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনার হাদীস তো কেবল পুরুষেরা শুনতে পায়। সুতরাং আপনার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি দিন নির্দিষ্ট করে দিন, যে দিন আমরা আপনার কাছে আসব, আল্লাহ্ আপনাকে যা কিছু শিখিয়েছেন তা থেকে আপনি আমাদের শেখাবেন। তিনি বললেনঃ তোমরা অমুক অমুক দিন অমুক অমুক জায়গায় একত্রিত হবে। সে মোতাবেক তারা একত্রিত হলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) তাদের কাছে এলেন এবং আল্লাহ্ তাঁকে যা কিছু শিখিয়েছেন তা থেকে তাদের শিক্ষা দিলেন এবং বললেনঃ তোমাদের কেউ যদি সন্তানদের থেকে তিনটি সন্তান আগে পাঠিয়ে দেয় (মৃত্যুবরণ করে) তাহলে এ সন্তানরা তার জন্য জাহান্নাম থেকে পর্দা যাবে। তাদের মাঝ থেকে একজন মহিলা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্র রসূল! যদি দু’জন হয়? বর্ণনাকারী বলেন, মহিলা কথাটি দু’দুবার জিজ্ঞেস করলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) বললেনঃ দু’জন হলেও, দু’জন হলেও, দু’জন হলেও। [মুসলিম ৪৫/৪৭, হাঃ ২৬৩৩, আহমাদ ১১২৯৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/১০. অধ্যায়ঃ
নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) – এর বাণীঃ আমার উম্মাতের মধ্যে এক দল সর্বদাই হকের উপর বিজয়ী থাকবেন। আর তাঁরা হলেন (দ্বীনী) ইলমের অধিকারী।
৭৩১১
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُوسَى، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي ظَاهِرِينَ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ ظَاهِرُونَ ”.
মুগীরাহ ইব্নু শু’বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) বলেছেনঃ কেয়ামত আসা পর্যন্ত আমার উম্মাতের এক দল সর্বদাই বিজয়ী থাকবে। আর তাঁরা হলেন বিজয়ী। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৩)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩১২
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي حُمَيْدٌ، قَالَ سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ، يَخْطُبُ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّينِ، وَإِنَّمَا أَنَا قَاسِمٌ وَيُعْطِي اللَّهُ، وَلَنْ يَزَالَ أَمْرُ هَذِهِ الأُمَّةِ مُسْتَقِيمًا حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ، أَوْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ ”.
মু’আবিয়া ইব্নু আবূ সুফয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) – কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ্ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন। আমি (ইল্মের) বন্টনকারী মাত্র; আল্লাহ্ তা দান করে থাকেন। এ উম্মাতের কার্যকলাপ কেয়ামত অবধি কিংবা বলেছিলেন, মহান আল্লাহ্ তা’আলার হুকুম আসা পর্যন্ত (সত্যের উপর) সুপ্রতিষ্ঠিত থাকবে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/১১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্র বাণীঃ অথবা তোমাদেরকে দলে দলে ভাগ করতে … । (সূরাহ আন’আম ৬/৬৫)
৭৩১৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ يَقُولُ لَمَّا نَزَلَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم {قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَى أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ} قَالَ ” أَعُوذُ بِوَجْهِكَ ”. {أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ} قَالَ ” أَعُوذُ بِوَجْهِكَ ”. فَلَمَّا نَزَلَتْ {أَوْ يَلْبِسَكُمْ شِيَعًا وَيُذِيقَ بَعْضَكُمْ بَأْسَ بَعْضٍ} قَالَ ” هَاتَانِ أَهْوَنُ أَوْ أَيْسَرُ ”.
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) – এর উপর এ আয়াতঃ বল, তিনি সক্ষম তোমাদের উর্ধ্বদেশ থেকে শাস্তি প্রেরণ করতে… অবর্তীণ হল, তখন তিনি বললেনঃ (হে আল্লাহ্!) আমি আপনার কাছে (এমন আযাব থেকে) আশ্রয় প্রার্থনা করি (তারপর যখন অবতীর্ণ হল) অথবা তোমাদের পায়ের নিচে থেকে। তখন তিনি বললেনঃ (হে আল্লাহ্!) আমি আপনার নিকট (এমন আযাব থেকে) আশ্রয় প্রার্থনা করি। এরপর যখন নাযিল হলঃ অথবা তোমাদেরকে দলে দলে ভাগ করতে এবং একদলকে অপর দলের সংঘর্ষের স্বাদ আস্বাদন করাতে তখন তিনি বললেনঃ এ দুটি অপেক্ষাকৃত নরম অথবা বলেছেনঃ অপেক্ষাকৃত সহজ।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৫
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- ব্যাখ্যা
- সরাসরি
৯৬/১২. অধ্যায়ঃ
কোন বিষয়ে প্রশ্নকারীকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়ার উদ্দেশে সুস্পষ্ট হুকুম বর্ণিত আছে এরূপ কোন বিষয়ের সঙ্গে আরেকটি বিষয়ের নিয়ম মোতাবেক তুলনা করা।
৭৩১৪
حَدَّثَنَا أَصْبَغُ بْنُ الْفَرَجِ، حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ أَعْرَابِيًّا، أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ امْرَأَتِي وَلَدَتْ غُلاَمًا أَسْوَدَ، وَإِنِّي أَنْكَرْتُهُ. فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” هَلْ لَكَ مِنْ إِبِلٍ ”. قَالَ نَعَمْ. قَالَ ” فَمَا أَلْوَانُهَا ”. قَالَ حُمْرٌ. قَالَ ” هَلْ فِيهَا مِنْ أَوْرَقَ ”. قَالَ إِنَّ فِيهَا لَوُرْقًا. قَالَ ” فَأَنَّى تُرَى ذَلِكَ جَاءَهَا ”. قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ عِرْقٌ نَزَعَهَا. قَالَ ” وَلَعَلَّ هَذَا عِرْقٌ نَزَعَهُ ”. وَلَمْ يُرَخِّصْ لَهُ فِي الاِنْتِفَاءِ مِنْهُ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক বেদুঈন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সালাম) – এর নিকট এসে বলল, আমার স্ত্রী একটি কালো সন্তান জন্ম দিয়েছে। আর আমি তাকে (আমার সন্তান হিসাবে) অস্বীকার করছি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার কি উট আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সেগুলোর কী রঙ? সে বলল, লাল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সেগুলোর মাঝে সাদা কালো মিশ্রিত রঙের কোন উট আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ, সাদা কালো মেশানো রঙের অনেকগুলো আছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন এ রং কিভাবে এল বলে তুমি মনে কর? সে বলল, হে আল্লাহ্র রসূল! বংশ সূত্রের প্রভাবে এমন হয়েছে। তিনি বললেনঃ সম্ভবত তোমার সন্তানও বংশ সূত্রের প্রভাবে (পূর্বপুরুষের কেউ কালো ছিল বলে) এমন হয়েছে। এবং তিনি এ সন্তানটিকে অস্বীকার করার অনুমতি লোকটিকে দিলেন না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৬)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩১৫
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ امْرَأَةً، جَاءَتْ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنَّ أُمِّي نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ فَمَاتَتْ قَبْلَ أَنْ تَحُجَّ أَفَأَحُجَّ عَنْهَا قَالَ ” نَعَمْ حُجِّي عَنْهَا، أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ أَكُنْتِ قَاضِيَتَهُ ”. قَالَتْ نَعَمْ. فَقَالَ ” فَاقْضُوا الَّذِي لَهُ، فَإِنَّ اللَّهَ أَحَقُّ بِالْوَفَاءِ ”.
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক মহিলা নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট এসে বলল, আমার মা হজ্জ করার মানৎ করেছিলেন। এরপর তিনি হজ্জ করার আগেই মারা গেছেন। এখন আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্জ করব? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ, তার পক্ষ থেকে হজ্জ কর। মনে কর যদি তার উপর ঋণ থাকত তাহলে কি তুমি তা আদায় করতে? সে বলল, অবশ্যই। তিনি বললেনঃ কাজেই তার উপর যে মানত আছে তা তুমি আদায় কর। আল্লাহ্ অধিক হক্দার, যে তাঁর জন্য কৃত মানত মানুষেরা পূর্ণ করবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/১৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন, তার ভিত্তিতে ফায়সালার মধ্যে ইজ্তিহাদ করা।
কেননা, আল্লাহ্র কথাঃ আল্লাহ্র নাযিল করেছেন সেই অনুসারে যারা বিধান দেয় না তারাই যালিম…। (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৪৫)
যারা হিক্মাতের সঙ্গে বিচার করে ও হিক্মাতের শিক্ষা দেন এবং মনগড়া কোন ফায়সালা করেন না, (এমন হিক্মাতওয়ালা লোকের) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রশংসা করেছেন। খলীফাদের সঙ্গে পরামর্শ করা এবং বিচারকদের আলেমদের নিকট জিজ্ঞেস করা।
৭৩১৬
حَدَّثَنَا شِهَابُ بْنُ عَبَّادٍ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ حُمَيْدٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً فَسُلِّطَ عَلَى هَلَكَتِهِ فِي الْحَقِّ، وَآخَرُ آتَاهُ اللَّهُ حِكْمَةً فَهْوَ يَقْضِي بِهَا وَيُعَلِّمُهَا ”.
আবদুল্লাহ্ ইব্নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’রকম লোক ব্যতীত কারো উপর হিংসা করা যাবে না। (এক) যাকে আল্লাহ্ সম্পদ দিয়েছেন এবং হকপথে খরচ করার ক্ষমতা দান করেছেন। (দুই) যাকে আল্লাহ্ হিক্মাত (দ্বীনের বিষয়ে তীক্ষ্ন বুদ্ধি) দান করেছেন, আর সে এর আলোকে বিচার করে এবং তা অন্যকে শিখায়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৮)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩১৭
مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيهِ عَنْ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ سَأَلَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ عَنْ إِمْلاَصِ الْمَرْأَةِ هِيَ الَّتِي يُضْرَبُـ بَطْنُهَا فَتُلْقِي جَنِينًا فَقَالَ أَيُّكُمْ سَمِعَ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيهِ شَيْئًا فَقُلْتُ أَنَا فَقَالَ مَا هُوَ قُلْتُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِيهِ غُرَّةٌ عَبْدٌ أَوْ أَمَةٌ فَقَالَ لاَ تَبْرَحْ حَتَّى تَجِيئَنِي بِالْمَخْرَجِ فِيمَا قُلْتَ
মুগীরাহ ইবনু শু’বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) মহিলাদের গর্ভপাত সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেন, অর্থাৎ তার পেটে আঘাত করা হয়, যার ফলে সন্তানের গর্ভপাত ঘটে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ সম্পর্কে কিছু শুনেছ? আমি বললাম, আমি শুনেছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কী শুনেছ? আমি বললাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ সম্পর্কে আমি বলতে শুনেছি যে, এ কারণে গুর্রা অর্থাৎ একটি দাস কিংবা দাসী দান করতে হবে। এ শুনে তিনি বললেন, তুমি যে হাদীস বর্ণনা করেছ এর প্রমাণ হাজির না করা পর্যন্ত তুমি এখান থেকে যেও না। [৬৯০৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০৭ প্রথমাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩১৮
فَخَرَجْتُ فَوَجَدْتُ مُحَمَّدَ بْنَ مَسْلَمَةَ فَجِئْتُ بِهِ فَشَهِدَ مَعِي أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِيهِ غُرَّةٌ عَبْدٌ أَوْ أَمَةٌ تَابَعَهُ ابْنُ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ الْمُغِيرَةِ
মুগীরাহ ইবনু শু’বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তারপর আমি বের হলাম এবং মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ (রাঃ)-কে পেলাম। আমি তাকে নিয়ে হাজির হলাম, সে আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিল, তিনিও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, এতে গুর্রা অর্থাৎ একটি দাস কিংবা দাসী দান করতে হবে। ইবনু আবূ যিনাদ……মুগীরাহ (রাঃ) থেকে একরম একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। [৬৯০৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০৭ শেষাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮১৯)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৯৬/১৪. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর বাণীঃ অবশ্য অবশ্যই তোমরা তোমাদের আগের লোকদের নীতি-পদ্ধতির অনুকরণ করতে থাকবে।
৭৩১৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنِ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، رضى الله عنه عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَأْخُذَ أُمَّتِي بِأَخْذِ الْقُرُونِ قَبْلَهَا، شِبْرًا بِشِبْرٍ وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ ”. فَقِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَفَارِسَ وَالرُّومِ. فَقَالَ ” وَمَنِ النَّاسُ إِلاَّ أُولَئِكَ ”.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামত ক্বায়িম হবে না যে পর্যন্ত না আমার উম্মত পূর্বযুগের লোকদের নীতি পদ্ধতিকে আচার-অভ্যাসকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে গ্রহণ না করবে। বলা হল, হে আল্লাহ্র রসূল! পারসিক ও রোমকদের মত কি? তিনি বললেনঃ এরা ছাড়া মানুষদের মধ্যে অন্য আর কারা?(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২০)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
- সরাসরি
৭৩২০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ، حَدَّثَنَا أَبُو عُمَرَ الصَّنْعَانِيُّ ـ مِنَ الْيَمَنِ ـ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لَتَتْبَعُنَّ سَنَنَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ شِبْرًا شِبْرًا وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ، حَتَّى لَوْ دَخَلُوا جُحْرَ ضَبٍّ تَبِعْتُمُوهُمْ ”. قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى قَالَ ” فَمَنْ ”.
আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অবশ্য অবশ্যই তোমরা তোমাদের আগের লোকদের নীতি-পদ্ধতিকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি দবের গর্তে ঢুকে, তাহলে তোমরাও তাদের অনুকরণ করবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! এরা কি ইয়াহূদী ও নাসারা? তিনি বললেনঃ আর কারা?[৩৪৫৬; মুসলিম ৪৭/৩, হাঃ ২৬৬৯, আহমাদ ১১৮০০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮২১)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস